Thursday, July 10, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1892



ডেভিল বর অন্তিম পর্ব

0

ডেভিল বর
অন্তিম পর্ব
শিফা_আফরিন
.
.
?
রেহান মুচকি হেসে আঁচলের কোমড় জড়িয়ে ধরে বসে।
অনেকক্ষণ দু’জন ঘুরাঘুরি করে শপিং এ যায়।

আঁচল – শপিংমল এ আসলেন কেনো?

রেহান – কিছু কেনাকাটা করতে।

আঁচল – কই! বাসায় তো বলেন নি?

রেহান – আরেহ বেশি কিছু না। জাস্ট তোমার কয়েকটা শাড়ি।

আঁচল – আমার শাড়ি তো আছেই। আর কিনতো হবে না। চলুন এখান থেকে।

রেহান রাগি চোখে আঁচলের দিকে তাকায়। আঁচল রেহানের চাহনি দেখে ভয়ে চুপ মেরে যায়।

রেহান আঁচলকে নিয়ে একটা শপে ঢুকে। হটাৎ পেছন থেকে কেউ ডাক দেয়….

— আঁচল…

আঁচল রেহান দু’জনই পেছন ফিরে তাকায়।

আঁচল মানুষ টাকে দেখে কিছুক্ষনের জন্য স্তব্ধ হয়ে যায়। আচমকাই আঁচলের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে…..

আঁচল – জিসান….

আঁচলের মুখে জিসান নাম টা শুনেই রেহান চমকে যায়। তার মানে সামনে থাকা লোক টা জিসান। রেহান একহাতে আঁচলের কোমড় ধরে জিসানের দিকে এগুতে থাকে।

জিসান – বাহহ বিয়ে করে নিয়েছো? কতো দিন হলো?

আঁচল কিছু বলছে না শুধু একদৃষ্টিতে জিসানের দিকে তাকিয়ে আছে।

রেহান – হেই ব্রো… আমি রেহান আঁচলের হাসবেন্ড। তুমিই জিসান!

জিসান – জ্বী।

রেহান – তোমাকে দেখার অনেক ইচ্ছে ছিলো আমার জানো তো! স্পেশালি একটা কথা বলার জন্য।

জিসান – কী কথা?

রেহান – থ্যাংকস

জিসান – কেনো?

রেহান – আঁচলকে ফিরিয়ে দিয়ে তুমি যে আমার কতোবড় উপকার করেছো নিজেও জানো না। তোমার জন্যই আঁচলকে পেলাম। না হলে হয়তো খাটি হিরে হারিয়ে ফেলতাম।

জিসান রেহানের কথা শুনে অবাক হয়ে যায়।

জিসান – আঁচল আপনাকে আমার সম্পর্কে বলেছে।

রেহান – আঁচল বলেনি তবে বিয়ের আগে আঁচলের মা বাবা আই মিন আমার শশুর শাশুড়ি বলেছে। আর বিয়ের পর অবশ্য আঁচল অনেক বারই তোমার নাম নিয়েছে কিন্তু এখন মনে হই তোমার নামটাও ও ভুলে গেছে। কি আঁচল তাই তো? (আঁচলের দিকে তাকিয়ে)

আঁচল এতোখন রেহানের কথা শুনছিলো। আঁচল কিছু না বুঝেই বলে দেয়….

আঁচল – হ্যা।

রেহান – দেখলে তো? এই না হলে আমার বউ। পুরনো সব কথাই ভুলে গেছে। জানো ও আমাকে অনেক ভালোবাসে। মাত্র তো কয়েক টা দিন হলো বিয়ের এর মাঝেই এতোটা ভালোবেসে ফেলেছে কি বলবো আর।
আজ অফিস গিয়েছিলাম কিছুক্ষন পরই ফোন দিয়ে বলে বাসায় চলে আসো।

আঁচল রেহানের কথা শুনে হা হয়ে যায়। বলে কি!!
এতো বড় মিথ্যে??

রেহান – বাই দ্য ওয়ে উনি কে? তোমার মিসেস? (জিসানের সাথের মেয়েটিকে উদ্দেশ্য করে)

আঁচল এতক্ষন জিসান কে দেখায় এতোটাই ব্যাস্ত ছিলো যে জিসানের সাথে যে আরও একজন আছে তার দিকে খেয়ালই করেনি। রেহানের মুখে শুনে আঁচল তাকিয়ে দেখে জিসানের সাথে একটা মেয়ে।
দেখতে অতোটাও সুন্দরী না যতোটা আঁচল।

জিসান – হ্যা। সায়নী।

আঁচল – কেমন আছো ভাবি? (সায়নীকে উদ্দেশ্য করে)

সায়নী – হুম ভালো। আপনি?

আঁচল – এমন একখানা বর পেয়ে কেউ কি খারাপ থাকতে পারে বলো!! আমিও আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি। (রেহানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে)

আঁচলের কথা শুনে জিসান অনেকটা জেলাস ফিল করছে আর রেহান বেচারা তো শেষ। সব যেনো তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।

রেহান – ( কি হলো এটা!! জিসান কে দেখে ওর মাথা খারাপ হয়ে গেলো না তো? মনে মনে)

আঁচল – আচ্ছা জিসান ভাইয়া সায়নী ভাবি ভালো থাকবেন কেমন। আল্লাহ হাফেজ।

জিসানের তো এবার রাগ উঠে যায়। চেয়েছিলো আঁচলকে ছ্যাকা দিয়ে সারা জীবন কাঁদাবে এখন তো আঁচলই উল্টো জিসানকে ছ্যাকা দিয়ে ব্যাকা করে দিলো।

আঁচল রেহানের হাত ধরে টেনে নিয়ে আসে।

রেহান আঁচলের কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে….

রেহান – কি হলো বলো তো? এমন বিহেভ করলে যে!

আঁচল – ইচ্ছে হয়েছে তাই। আপনার কোনো সমস্যা?

রেহান – না না সমস্যা কিসের।

রেহান আঁচলের জন্য কিছু শাড়ি কেনে রেস্টুরেন্টে চলে আসে। তার পর দুজনে একসাথে ডিনার করে বাড়ি ফেরে।

৫ দিন পর….

আঁচল কিচেনে রান্না করছে আর রেহান আঁচলকে সাহায্য করছে। শুধু সাহায্য বললে ভুল হবে সাথে জ্বালিয়ে মারছে।

হটাৎ বেল বাজতেই আঁচল বলে…

আঁচল – দাড়ান আমি দেখে আসি।

রেহান – আমি থাকতে আমার বউ টার কষ্ট করা লাগবে না। (আঁচলের নাক টেনে)

রেহান গিয়ে দরজা খুলে দেখে রেহানের মা বাবা আর রিমি।

রেহান – মা বাবা তোমরা চলে আসলে যে।
আমাকে তো বলোনি আজ আসবে।

রেহানের বাবা – বলতাম পরে ভাবলাম আঁচল একা একা থাকবে বাড়িতে তাই বলিনি।

রেহান – বলতে তো পারতে। আর আমি অফিস গেলে আঁচল তো একাই থাকে। বাই দ্য ওয়ে আসতে অসুবিধে হয়নি তো?

রেহানের মা – একদমই না।

রেহান – আচ্ছা তোমরা ফ্রেশ হয়ে আসো।

রেহানের বাবা মা রিমি সবাই যার যার রুমে চলে যায়। আঁচল কিচেন থেকে বেরিয়ে আসে….

আঁচল – কে আসলো?

রেহান – মা বাবা।

আঁচল – তাই!! রিমি আসেনি?

রেহান – হুম। রুমে গেছে।

আঁচল মুচকি হেসে চলে আসে।

রিমি ফ্রেশ হয়ে বিছানায় রেস্ট নিচ্ছে এমন সময় আঁচল আসে…

আঁচল – রিমি…

রিমি – ওহহ ভাবি আসো।

আঁচল – কেমন কাটলো গ্রামে দিনগুলো?

রিমি – অনেক ভালো। তবে একটু টেনশনেও ছিলাম বটে।

আঁচল – কিশের টেনশন?

রিমি – আমরা চলে গেলাম। তুমি না জানি আমার ভাইটাকে কতো কষ্ট দিয়েছো। (মন খারাপ করে)

আঁচল – কষ্ট দিই নি গো। আমি তো তোমার ভাইয়ের প্রেমে পড়ে গেছি। (মুচকি হেসে)

রিমি – কিহহহহহ!!

আঁচল – হুম। গল্প পরে হবে এখন খেতে চলো।

আঁচল চলে যায় সবার জন্য খাবার রেডি করতে।
রেহানের মা বাবাও আসে।

রেহানের মা – আঁচল তোমার কোনো সমস্যা হয়নি তো?

আঁচল – না মা।

রেহানের বাবা – এই সুযোগে রেহানের অফিস যাওয়া টা শুরু হলো কি বলো।

রিমি – হ্যা বাবা একদম।

রেহান মুচকি হাসে সাথে আঁচলও।

রাতে…..

আঁচল রুমে এসে দেখে রেহান বেলকনিতে দাড়িয়ে আছে।

আঁচল ধীর পায়ে রেহানের কাছে গিয়ে রেহান কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।

রেহান বুঝতে পারে মানুষ টা কে। কারন তার শরীরের ঘ্রান, প্রতিটা স্পর্শ রেহানের চেনা। খুব চেনা।

রেহান আঁচলের হাত দু’টো চেপে ধরে।

রেহান – আজ সূর্য কোন দিকে উঠলো বলো তো?

আঁচল – কেনো?

রেহান – এতো ভালোবাসা যে?

আঁচল – আমার বর। আমি ভালোবাসবো। এতে তোমার পারমিশন নিতে হবে বুঝি?

রেহান মুচকি হেসে আঁচলের কোমড় জড়িয়ে ধরে।

রেহান – মোটেই না। তবে এতোদিন যে কষ্ট দিয়েছো তার শাস্তি তো পেতেই হবে তাই না।

আঁচল – আমি সব শাস্তির জন্যই রেডি আছি বুঝছো।

রেহান – এই ওয়েট ওয়েট….. তুমি আমাকে তুমি করে বলছো যে…!

আঁচল – হু…

রেহান – বাহ বাহ এতো পরিবর্তনের কারন কি জানতে পারি।

আঁচল – প্রেমে পড়ে গেছি।

রেহান – কার?

আঁচল – আমার ডেভিল বর এর। এমন ভাবে প্রশ্ন করছো যেনো অন্য কারো প্রেমে পড়েছি।

রেহান – অন্য কারো প্রেমে পড়ে দেখো না তুলে আছাড় মারবো।

রেহানের কথা শুনে আঁচল হেসে দেয়।

রেহান – এবার তো বলো।

আঁচল – কী?

রেহান – ভালোবাসি…

আঁচল – সব কিছুই কি মুখে বলতে হই হুহহহ…

রেহান মুচকি হেসে আঁচলকে কোলে তুলে নেয়।

রেহান – নাহ মুখে বললে তো হয়না প্র্যাক্টিকালি করে দেখাতে হয়। (চোখ মেরে)

আঁচল লজ্জায় চোখ বন্ধ করে রেহানের গলা জড়িয়ে ধরে।

সমাপ্ত

( ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ ❤)

চারুর_সংসার পর্ব_৪

0

চারুর_সংসার
পর্ব_৪
#Written_by_Nowshin_Noor

.
?
.

চারু মারার ভান করে আনাফের দিকে আগায়।আনাফ ভয় পেয়ে বলে…….

আনাফঃএই না,না??
চারুঃএইতো লাইনে এসেছো বাবু??।

এরপর চারু আনাফ কে খাবার দেয়।

আনাফঃআমি খাবো?
চারুঃতো কে খাবে শুনি?
আনাফঃমানে আমি নিজের হাতে খাবো?তুমি খাইয়ে দাও?।

চারু হতভম্ব হয়ে যায় আনাফের এই কথা শুনে!

চারুঃআ…আমি দিবো খাইয়ে?
আনাফঃহ্যা তুমি(বাচ্চাদের মতো করে ঠোঁট উল্টিয়ে)
চারুঃআচ্ছা দিচ্ছি।

চারু আনাফকে খাইয়ে দেয়।আনাফও বাচ্চাদের মতো করে খেয়ে নেয়।খাওয়া শেষে…….

চারুঃআচ্ছা আমি এগুলো রেখে আসি।
আনাফঃআচ্ছা যাও তাড়াতাড়ি আসিও।

চারু চলে যায়।কিচেনে যায় গিয়ে দেখে মা রান্না করছে।

চারুঃকী করেন মা?
মাঃএইতো রান্না করি চারু।
চারুঃআমি হেল্প করি?
মাঃনা,না। কোনো দরকার নেই।অহ হ্যা তুমি তো কিছু খাও ও নি।আচ্ছা আমি নাস্তা দিচ্ছি।শবনম ও খায় নি,দুজন মিলে খেয়ে নিবে।
চারুঃওক্কে।

চারু মায়ের সাথে গল্প করতে থাকে আর খুটিনাটি হেল্প করে।তখনি সেখানে শবনমের উপস্থিতি ঘটে।

শবনমঃকী হচ্ছে এখানে?
মাঃএইতো আমি আর চারু মিলে গল্প করছি আর রান্না বান্না করছি।
চারুঃফাইনালি তুমি উঠলে শবনম।
শবনমঃহ্যা ভাবী।
চারুঃএই একদমি ভাবি বলবে না?।আপু বলে ডাকবে কেমন??
শবনমঃঅক্কে মেরি জান।
মাঃআচ্ছা তোরা গিয়ে টেবিলে বস, আমি নাস্তা নিয়ে আসছি।

দুজন মিলে নাস্তা খেতে লাগলো আর গল্প করছিলো।।

চারুঃআচ্ছা শবনম শুনো। তোমাদের বাড়িটা এত্ত বড় আমার মনেহয় আমি হারিয়ে যাবো।আমি পুরো বাড়ি চিনিই না।তাই বলি কী তুমি আমাকে পুরো বাড়িটা…..
শবনমঃহ্যা হ্যা বুঝে পারছি।আচ্ছা খাবারটা খেয়ে নেই তাহলে পুরো বাড়ি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাবো।
চারুঃওকে।।

খাওয়া শেষে দুজম মিলে পুরো বাড়ি ঘুরে।শবনম কোনটা কী!সবকিছু বুঝিয়ে দেয় চারুকে।চারু যতো দেখছে ততো অবাক হচ্ছে।মনে হচ্ছে সে সপ্ন দেখছে।সব শেষে তারা শবনমের রুমে আসে।

শবনমের রুমটা অনেক সুন্দর।ঝলমল করছিলো ওর রুম।রুমের বিছানার চারিদিকে অনেকগুলো ডল রাখা,আর ছোট ছোট লাইট দেওয়া। যেগুলো বিয়ে বাড়িতে লাগানো হয়।রুমের দেয়ালে শবনমের ছবি,আনাফের সাথে ছবি এবং ওদের পুরো ফ্যামিলি মেম্বারদের ছবি লাগানো।আর বারান্দা!!বারান্দা টাও অনেক সুন্দর।তাছাড়া বারান্দায় বিভিন্ন রকমের ফুল গাছ দিয়ে ভরা পুরো রুম ফুলের গন্ধে ভরে গেছে।বসে আড্ডা দেওয়ার জন্য আছে সোফা,দোলনা।

.
?
.

চারুঃওয়াও শবনম!তোমার রুম এত্ত সুন্দর।আমি ক্রাশড তুমার রুমের উপর।সুধু ক্রাশড না প্রেমে পড়ে গেছি বলতে পারো??।
শবনমঃহাহহা।আপু তোমার যখন ইচ্ছা তখন চলে আসবে রুমে।দুজন মিলে আড্ডা দিবো?।
চারুঃহ্যা!!

দুজন আরো কিছুক্ষন গল্প করে।এরপর হঠাৎ চারুর আনাফের কথা মনে পড়ে দৌড়ে রুমে যায় চারু…

.
?
.

আনাফঃউফফফফফ এতক্ষনে আসলে তুমি!বোর হচ্ছিলাম আমি।
চারুঃআসলে আমি শবনমের সাথে ছিলাম।ওর সাথে গল্প করছিলাম।
আনাফঃহুম।ইসসস না পারছি হাটতে,না পারছি কিছু করতে খুব বিরক্ত লাগছে।
চারুঃখুব ভালো হয়েছে।তখন আমার কথা শুনেছিলেন????
আনাফঃউফফফ এই কথা শুনতে শুনতে আমার কান জ্বালাপালা হয়ে গেলো।কেন যে এমন করছিলাম!!

চারু ফিক করে হেসে দেয়।হঠাৎ চারুর মনে পড়ে যে আনাফের পায়ে মালিশ করে দিতে হবে।

চারুঃঅহহহ হ্যাঁ আপনাকে মালিশ করে দিতে হবে।আমি ভুলেই গিয়েছিলাম।
আনাফঃনা,না।লাগবেনা।
চারুঃবেশি কথা বলেন আপনি।

চারু আনাফের পায়ে মালিশ করে দিতে থাকে যত্ন করে।

আনাফঃউফফফ চারু আস্তে দাও এত্ত জোরে কেউ মালিশ করে?।
চারুঃএইরকম জোরে দিলে ব্যাথা কমবে বুঝছেন?
আনাফঃহুম?।(বেচারা??)

আনাফের এমন চেহারা দেখে ভিতরে ভিতরে হাসতে হাসতে শেষ চারু।না পারছে মন খুলে হাসতে?।

আনাফঃএই চারু আমার অনেক বোরিং লাগছে আসো কিছু করি!
চারুঃকী করবেন?(ভ্রু কুচকে)
আনাফঃউমমমম!!!!হ্যা পেয়েছি! আসো ট্রুথ ওর ডেয়ার খেলি।
চারুঃকচু!!আমি এসব খেলিনা ওকে?
আনাফঃধুরররররররর!!!!
চারুঃআচ্ছা অন্য সময় খেলবো নে।

কলিংবেল……………

চারুঃএই আমি দেখে আসি কে আসলো।
আনাফঃআচ্ছা যাও।

চারু দেখতে গেলো কে এসেছে।

.
?
.

চারু দরজা খুলতেই স্ট্যাচু হয়ে যায়।অবাক হয়ে যায় চারু।

চারুঃতু….তু…মি??
—–আমি মনেহয় ভুল ঠিকানায় চলে আসছি
চারুঃতুমি এখানে কী করছো আবির?
আবিরঃআমি শবনমের কাছে এসেছে!তুমি এখানে কী করছো চারু?
চারুঃএ….এটা আমার শ্বশুরবাড়ি!তুমি কী এখানে এসেছো আবার আমার ক্ষতি করতে?
আবিরঃনা চারু!হ্যা আমি আগে তোমাকে পাওওয়ার জন্য তোমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করেছি।তার জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থি।আমি আগে তোমাকে ভালোবাসতাম।যখন আমি বুঝতে পারি আমি তুমাকে পাবোনা তখন থেকেই আমি তোমার পিছু ছেড়ে দেই।এরপর আমার জীবনে শবনম আসে।এখন আমি ওকে ভালোবাসি।শবনম ও আমাকেভালোবাসে।কাল ঝগড়া করেছিলো আর ওর ফোন এখন পর্যন্ত বন্ধ।তাই আমি টেন্সন করতে করতে শেষ। তাইতো চলে আসলাম।প্লিজ্জজ তুমি আমাকে ভুল বুঝো না।আমি শবনমের সাথে দেখা কররেই চলে যাবো!!

চারুঃআচ্ছা আমি ওকে ডেকে দিচ্ছি।

শবনমঃআপুউউউউ কে এসেছে??

শবনম আসতেই দেখে আবির দাড়িয়ে।

শবনমঃতুমি??????
আবিরঃহ্যা!আসলে……

চারুঃআচ্ছা তোমরা কথা বলো আমি আসছি।ও হ্যাঁ আবির তুমি কফি খেয়ে যেওয়।

এরপর আবির শবনমের সাথে কথা বলে চলে যায়।

তারপর????????????

চলবে……….

খুশি?বড় করে দিছি!

আজ একদিনে মোট ৩ টা পার্ট দিছি??।উপহারস্বরূপ ভালো ভালো কমেন্ট কইরেন নেক্সট নেক্সট ছাড়া??

চারুর জীবনে কিন্তু ভিলেন এন্ট্রি নিচ্ছে??।

চারুর_সংসার পর্ব_৩

0

চারুর_সংসার
পর্ব_৩
#Written_by_Nowshin_Noor

.
?
.

চারু বারান্দায় দাড়িয়ে চোখ বুজে শীতল হাওয়া মন ভরে অনুভব করতে থাকে।কিচ্ছুক্ষন পর চারু ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়তে যায়।নিজের নামাজ পড়া শেষে আনাফ কে ডাকতে যায়।আনাফের ঘুমন্ত শান্তশিষ্ট চেহারা দেখে আর ডাক দেয় না। ভাবে সকালে উঠে পড়ে নিবে?।

এরপর চারুও ঘুমিয়ে পড়ে।

সকালে,,,,,,

চারু সকাল ৯ টার সময় উঠে পড়ে আবার।ঘুম থেকে উঠতেই দেখে সকাল ৯ টা বাজে একপ্রকার লাফ দিয়ে উঠে।তাকিয়ে দেখে আনাফ এখনো ঘুমাচ্ছে।চারু হাফ ছেড়ে বাচলো!

চারুঃআমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম আমি এখন আর মামাবাড়ি নয় এখন আমি আমার শ্বশুরবাড়ি।যাক বাবা অন্তত মামির ঝাড়ি খেতে হবে না লেইট করে উঠলে?(মনে মনে)

চারুঃকিভাবে ভাবলাম আমি আর ঝাড়ি খেতে হবে না?।শ্বাশুড়ির ঝাড়িও তো খেতে পারি নাকি??।যাই হোক ফ্রেশ হতে যাই।

চারু ফ্রেশ হতে চলে গেলো।চারু ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় যায়।বারান্দার ফুল গাছ গুলোতে পানি দেয় আর গুনগুন করে গান গাইতে থাকে?

অন্যদিকে আনাফের ঘুম ভাংগে চারুর গুনগুন করে গাওয়া গানের শব্দে❤।আনাফ বুঝতে পারে চারু গান গাইছে।নিজের অজান্তেই আনাফের মুখে হাসি ফুটে।সে বিছানা থেকে নামতে নিলেই পায়ে প্রচন্ড ব্যাথা পায়।ব্যাথার চুটে আনাফ শব্দ করে আহহহহহহ করে?।

চারু বারান্দা থেকে শুনতে পেয়ে দৌড়ে আসে।এসে দেখে আনাফ মাটিতে বসে আছে পায়ে হাত দিয়ে।

চারুঃকী হয়েছে?আর হঠাৎ এভাবে পড়ে গেলেন কিভাবে?আপনি একা একা হাটতে নিলেন কেনো? কখন উঠেছেন ঘুম থেকে?আমাকে ডাক দিতেন আমি ধরে নিয়ে যেতাম!!!
আনাফঃআহহহহহা?এত্ত অস্থির হচ্ছো কেনো?আমি বিছানা থেকে নামতে নিলেই পড়ে যায় হাটতে পারছিলাম না?।মাটিতে পা ফেলতে পারছি না।আসলে ক.কা.ল রাতের পড়ে যাওয়া…….
চারুঃখুব ভালো হয়েছে খুব।বলেছিলাম না আমি????।এখন মাকে আমি কী বলবো???
আনাফঃ??????

৳ক৳

চারু আনাফকে শুইয়ে দেয় বিছানায় আবার।

চারুঃআমি আপনার জন্য চা-নাস্তা নিয়ে আসছি।চুপচাপ শুয়ে থাকেন।
আনাফঃআচ্ছা?।আমার ল্যাপটপ টা দিয়ে যাও প্লিজ্জজ্জ আমার একটু কাজ আছে??।
চারুঃআপনি ল্যাপটপ চালাবেন কীভাবে?
আনাফঃআরে আমি এগুলো পারি??।
চারুঃঅহহহহ।আচ্ছা আমি আসছি।

চারু রান্নাঘরে চলে গেলো।রুম থেকে বেরিয়ে হাটা শুরু করলো কিচ্ছু চিনেনা জানেনা।

চারুঃআল্লাহ এত্ত বড় বাড়ি।আমি তো হারাই যাবো এখানে?।কোথায় যে পাই কিচেনটা খুজে?।(বিড়বিড় করে)

তখনি মা আসলেন হাতে একটা ট্রে।চারুকে বিড়বিড় করতে দেখে বল্লেন।

—–কীরে চারু কী বকবক করছিস?
—–না না কিছু না।উনার জন্য নাস্তা নিতে আসছি কিন্তু কিচেনটা তো খুজে পাচ্ছিনা?।
——তোকে আর খুজতে হবে না এই নে আমি নিয়ে আসছি। পুরোটা খাইয়ে রেখে দিস।কেয়ার টেইকার এসে নিয়ে যাবে।তোকে রেখে আসতে হবে না।
——–ওকে থ্যানকু????

.
?
.

চারু নিজেদের রুমে নাস্তার ট্রে নিয়ে যায়।দেখে আনাফ ল্যাপটপ চালাচ্ছে।ট্রেটা রাখতে রাখতে আনাফকে বলে……

চারুঃপায়ে কী খুব বেশি ব্যাথা করছে?
আনাফঃহ্যা?।(অসহায় দৃস্টিতে)

চারুঃআপনাকে আমি বলেছিলাম না যে আমি ধরে নিয়ে যাবো?কথা শুনলেন না কেনো?এখন মজা বুঝেন??।
আনাফঃতো এখন আমি কী করবো???যা হওয়ার তা তো হয়ে গেছে?।
চারুঃআচ্ছা এখন খাবার এনেছি খাবেন তারপর মালিশকরে দিবো পায়ে।
আনাফঃনা আমি কিচ্ছু খাবো না!আমাকে এককাপ ব্লাক কফি এনে দাও?।
চারুঃ??।আগেও জেদ ধরে পায়ের সর্বনাশ করেছেন এখন আবার জেদ ধরছেন।মেরেই ফেলবো?।

চারু মারার ভান করে আনাফের দিকে আগায়।আনাফ ভয় পেয়ে বলে…….

আনাফঃএই না,না??
চারুঃএইতো লাইনে এসেছো বাবু??।

এরপর?????????

চলবে……..

ডেভিল বর পর্ব – ২০

0

ডেভিল বর
পর্ব – ২০
শিফা_আফরিন
.
.
?
রেহান – বেইবি… এখন কিন্তু আমার কাছ থেকে পালাতে পারবে না আর… (মুচকি হেসে)

রেহানের কথা শুনে আঁচল রাগি চোখে রেহানের দিকে তাকায়…

আঁচল – ( এই ছেলেটার সমস্যা টা কি বুঝি না। একেই তো দেখতে পারছে আমার মন ভালো না তার উপর আবার উল্টো পাল্টা কথা শুরু করে দিয়েছে। ইচ্ছে করছে নাকটা ফাটিয়ে দিই। যত্তসব….)

রেহান মুচকি হেসে ড্রাইভ করতে থাকে পথে আঁচলকে আর জ্বালায় নি রেহান।

কিছুক্ষনের মধ্যেই ওরা বাড়ি পৌঁছে।

আঁচল রুমে গিয়েই শুয়ে পড়ে।

রেহান – আঁচল… ফ্রেশ হয়ে নাও তারপর না হয় ঘুমাউ।

আঁচল – আমি কি বলেছি আপনাকে যে আমি ঘুমাবো? (ভ্রু কুঁচকে)

রেহান – তা বলোনি। ভাবলাম এতোটা পথ জার্নি করেছো আর তুমিই তো শুয়ে পড়লে।

আঁচল – ঘুমাবো না এমনিই শুয়েছি। আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন তারপর আমি যাবো।

রেহান আর কিছু না বলে ফ্রেশ হতে চলে যায়।

কিছুক্ষন পর আঁচল বিছানা ছেড়ে উঠে হাতে নিজের কাপড় নেয়। এরি মধ্যে রেহানও বের হয়ে আসে।

রেহান – রাতের রান্না করবে? নাকি বাহিরে থেকে আনিয়ে নিবো?

আঁচল – না আমিই রান্না করবো বাহিরে থেকে আনাতে হবেনা। বাহিরের খাবার খাওয়া ঠিক না।

রেহান আঁচলের কথায় মুচকি হেসে ফ্লাই কিস দেয়। আঁচল মুখ ভেংচি কেটে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে।

রাতে….

আঁচল ডিনার রেডি করছে হটাৎ কেউ আঁচল কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে।

আঁচল কিছুটা ভয় পেয়ে যায় পরে বুঝতে পারে এটা রেহান ছাড়া আর কারো কাজ না।

আঁচল – কি হচ্ছে টা কি! দেখতেই তো পারছেন কাজ করছি। অযথা বিরক্ত কেনো করছেন?

রেহান – ওহো…. আমি টাচ করলে তুমি ডিস্টার্ব ফিল করো তাই না? ওকে ফাইন আজ থেকে আর তোমার ধারে কাছেও ঘেঁষবো না।
যে কথাটা বলতে এসেছিলাম কাল থেকে অফিস যাবো। বাবা নেই এমনি তেও এখন সব আমাকেই সামলাতে হবে তাই।

আঁচল – বাহহ তা তো ভালো কথা।

আঁচলকে আর কিছু বলতে না দিয়েই রেহান কিচেন থেকে চলে আসে।

আঁচল – যাহ বাবা উনি তো দেখছি সত্যি সত্যি রাগ করলেন? ডেভিল টার রাগও আছে দেখছি!!

রেহান রুমে এসে শুয়ে পড়ে। আঁচল ডিনার রেডি করে রেহান কে ডাকছে কিন্তু রেহানের কোনো সাড়া নেই।

আঁচল রেগে রুমে এসে দেখে রেহান শুয়ে আছে। আঁচল বুঝতে পারে রেহান বোধহয় একটু বেশিই হার্ট হয়েছে।

আঁচল – শুয়ে পড়লেন যে! খেতে আসুন।

রেহান ——-

আঁচল – কি হলো? উঠুন

রেহান ——

রেহানের কোনো সাড়া না পেয়ে আঁচল আরও রেগে যায়। আঁচল রেহান কে টেনে উঠে বসানোর চেষ্টা করে কিন্তু বেচারি ব্যার্থ হলো। কেননা রেহানের মতো বডিবিল্ডারের কাছে আঁচলের কাঠির মতো শরীর খানা কিছুই না।

আঁচলের চেষ্টা দেখে রেহান হেসে দেয়। কিন্তু হাসিটা আঁচলকে বুঝতে দেয়নি। রেহান উঠে বসে গম্ভীর কন্ঠে বলে….

রেহান – আমি খাবো না তুমি বরং খেয়ে নাও।

আঁচল – ঐ সময়ের জন্য সরি। এবার তো চলুন।

রেহান – শুধু সরি? (মুচকি হেসে)

আঁচল – তো?

রেহান – আরও কিছু চাই।

আঁচল – কী?

রেহান – (আঙুল দিয়ে নিজের ঠোঁট ইশারা করে দেখায়।)

আঁচল – পারবো না। (রেগে)

রেহান – আমিও খাবো না। যদিও খুব ক্ষিদে পেয়েছিলো।

আঁচল অসহায় ভাবে রেহানের দিকে তাকায়। রেহান ভ্রু নাচিয়ে আঁচলের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে।

আঁচল রেহানের পাশে বসে দু’হাতে রেহানের মাথাটা কাছে এনে রেহানের ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়ায়। রেহান আঁচলের কোমড় চেঁপে ধরে।

আঁচল – এবার হয়েছে? চলুন।

রেহান – বাবাহ আমার বউ টা দেখি আমার থেকেও বেশি রোমান্টিক। (মুচকি হেসে)

আঁচল রেহানের কথায় লজ্জা পেয়ে চলে যায়।

রেহানও আসে।

দুজনের খাওয়া শেষ হলে ঘুমাতে চলে যায়। আঁচল পাশ ফিরে শুয়ে পড়তেই রেহান টেনে আঁচলকে নিজের কাছে আনে।

আঁচল – আপনি ঘুমান। সকালে কী ডাকতে হবে?

রেহান – হুম ৯ টায় অফিস।

আঁচল – আচ্ছা ঠিক আছে।

রেহান আঁচলকে বুকে এনে ঘুমিয়ে পড়ে।

সকালে…

আঁচলের আগেই রেহানের ঘুম ভেঙে যায়।
রেহান আঁচলের কপালে চুমু দেয়। আঁচল নড়েচড়ে উঠতেই রেহান ঘুমের ভান ধরে।

আঁচল তাকিয়ে দেখে ৭ টা বাজে। রেহানের দিকে একপলক তাকিয়ে আঁচল উঠে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট বানাতে চলে যায়।

আঁচল ব্রেকফাস্ট রেডি করে রেহান কে ডাকতে এসে দেখে রেহান কে ডাকতে এসে দেখে রেহান ভেজা শরীরে টাওয়েল পেঁচিয়ে দাড়িয়ে চুল ঝাড়ছে।
আঁচলকে দেখা মাত্রই রেহান মুচকি হাসে।

আঁচল – রেডি হয়ে আসুন।

রেহান – হুম আসছি।

আঁচল চলে গেলে রেহান রেডি হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে আসে।

রেহান – আমাকে খাইয়ে দাও।

আঁচল কিছু না বলে রেহান কে খাইয়ে দেয়।

রেহান – এবার খুশি তো? নিজের টাকায় বউ কে খাওয়াবো। (মুচকি হেসে)

আঁচল – হুহহহ এখনো তো যাননি এতেই এতো কথা বলছেন।

রেহান – যাচ্ছি তো।

রেহান আঁচলের কাছে এসে আঁচলের কপালে চুমু দেয়।

রেহান – আসি বেইবি। আমায় মিস করলে ফোন করো সাথে সাথে চলে আসবো।

আঁচল – করবো ও না মিস হুহহহ।

রেহান – হুহহ নাকি হুম দেখায় যাবে বউ।

রেহান চলে যেতেই আঁচল দরজা লক করে নিজের রুমে চলে আসে। এসে টিভি দেখা শুরু করে।

কিন্তু কিছুক্ষন কাটার পরই বেচারির বোরিং লাগছে। এতো সময় কি টিভি দেখে পার করা সম্ভব নাকি!

আঁচল বার বার ঘড়ি দেখছে। আর ভাবছে লাঞ্চের টাইমে রেহান কে ফোন করবে।

কিছুক্ষন পর রেহান নিজেই ফোন করে।

আঁচল – হ্যা বলুন।

রেহান – মিস করছো আমায়?

আঁচল – (বাপরে এই ডেভিল টা বুঝলো ক্যামনে? মনে মনে)
নাহ মিস করতে যাবো কেনো আজিব।

রেহান – হুম জানি তো। মিস করবেই। আমি আসছি কিছুক্ষনের মধ্যে।

আঁচল – আচ্ছা।

রেহানের কথায় আঁচল শুধু আচ্ছা বললেও বেচারি মনে মনে খুবই খুশি হয়।

আঁচল গিয়ে লাঞ্চ রেডি করতে থাকে। কিছুক্ষন পর বেল বাজতেই আঁচল দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দেয়।

আঁচল দরজা খুলে তো পুরাই অবাক।
রেহান হাতে অনেক গুলো আইসক্রিম, চকলেট নিয়ে দাড়িয়ে আছে।

রেহান – কী বউ? হা করে তাকিয়ে আছো যে? নিবে না?

আঁচল মুচকি হেসে রেহানের কাছ থেকে চকলেট আর আইসক্রিম গুলো নেয়।

বিকেলে…

রেহান – আঁচল কোথাও যাবে ঘুরতে? তোমার কিছু লাগবে?

আঁচল – না কিছুই লাগবে না।

রেহান – তাহলে চলো কোথাও ঘুরে আসি। একেবারে রাতে ডিনার করে ফিরবো।

আঁচল – আচ্ছা।

রেহান – ওকে রেডি হয়ে এসো।

আঁচল রেডি হয়ে চলে যায়। রেহান ও রেডি হয়ে নেয়।
আঁচল রেডি হয়ে আসতেই রেহান আঁচলকে দেখে হা হয়ে যায়।
আরও বেশি অবাক হয় আঁচল রেহানের সাথে মিল রেখে ড্রেস পড়েছে।

রেহান – বেশি সাজতে হবেনা নরমাল সাজবা বুঝছো?

আঁচল – হুম।

আঁচল শুধু ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক দেয় আর আর চোখে কাজল সাথে নরমাল জুয়েলারি। তাতেই আঁচলকে দেখতে মাশআল্লাহ বলতেই হবে।

রেহান – রিকশা করে ঘুরলে কেমন হয়?

আঁচল – হুম। মন্দ না।

রেহান আঁচলকে নিয়ে রিকশায় উঠে।

রেহান – এতো দূরত্ব বজায় রাখলে তো পড়ে যাবা। তার চেয়ে ভালো আমার কাছে এসে বসো। (চোখ মেরে)

আঁচল – এই জন্যই রিকশায় করে ঘুরতে চেয়েছেন তাই না? (রেগে)

রেহান মুচকি হেসে আঁচলের কোমড় জড়িয়ে ধরে বসে।

চলবে…

ডেভিল বর পর্ব – ১৯

0

ডেভিল বর
পর্ব – ১৯
শিফা_আফরিন
.
.
?
হিয়া – হ্যা কর না। আমি তো এক পায়ে খাড়া।
বাই দ্য ওয়ে আপুই ভাইয়া কোথায়? ঘুম থেকে উঠেনি নাকি?

আঁচল – ও চলে গেছে রিমি কে নিয়ে।

হিয়া – মানে! এতো সকাল সকাল চলে গেলো?

আঁচল – আসলে মা বাবা আর রিমি আজ গ্রামের বাড়ি যাবে তাই সকাল সকাল রিমিকে নিয়ে বেরিয়ে গেছে।
বিকেলে এসে আমাকে নিয়ে যাবে।

হিয়া – রিমিও চলে গেলো। মেয়েটার সাথে ভালো করে কথাও বলা হলো না। আর তুইও চলে যাবি ধুর ভাল্লাগে না।

আঁচল – মন খারাপ করার কি আছে বোকা মেয়ে। এখন তো আর নিজের স্বাধীনতায় চলতে পারবো না বোন।

হিয়া – হুম। আপুই তোকে একটা কথা বলবো? কিছু মনে করিস না প্লিজ।

আঁচল – হ্যা বল।

হিয়া – রেহান ভাইয়া সত্যিই অনেক ভালো। ঐ জিসান ছ্যামড়ার মতো না। তুই ভাইয়াকে আর কষ্ট দিস না আপুই প্লিজ।

আঁচল – হুম জানি তো। (মুচকি হেসে)

আঁচল আর হিয়া কথা বলছে অমনি রিয়াদ আঁচলের বাবা মা আসে।

রিয়াদ – কি কথা হচ্ছে দু’জনের?

আঁচল – কিছুনা ভাইয়া। এমনিই।

আঁচলের বাবা – রেহান কোথায় আঁচল? ও কি ঘুম থেকে উঠে নি?

আঁচলের মা – আরে ও তো সকাল সকাল বেরিয়ে গেছে রিমি কে নিয়ে। আজ ওদের গ্রামের বাড়ি যেতে হবে কাজ আছে কিসের তাই।

আঁচলের বাবা – ওহহ আচ্ছা। আঁচল ও চলে যাবি?

আঁচল – হ্যা বাবা। বিকেলে যাবো।

রিয়াদ – সেকি! আর দুটো দিন থাক।

আঁচল – না ভাইয়া।

রিয়াদ – বাবা দেখেছো তোমার মেয়ে কেমন জামাই পাগল হয়েছে? (মুচকি হেসে)

আঁচল – ভাইয়া…..

আঁচলের বাবা – হয়েছে এবার খাওয়া শেষ কর তোরা।

এদিকে…

রেহান ওর বাবা মা আর রিমিকে স্টেশন এ ড্রপ করে দেয়।

রেহানের মা – রেহান শোন….

রেহান – হুম বলো মা।

রেহানের – ঐ দিনের মতো আবার ঝামেলা করিস না। যদি আমি শুনি তুই আবার ড্রিংক করেছিস তো তোর কপালে শনি আছে বলে গেলাম।

রেহান – ওহো মা আমি এই সব করিনা তুমি তো জানোই।

রেহানের বাবা – করিস না তো ঐ দিন কে করেছিলো?? আমি??

রেহান – মেবি (মাথা চুলকিয়ে)

রেহানের বাবা – দেখেছো তোমার ছেলে কতো টা বজ্জাত হয়েছে? এই বয়সের বাবাকে বলছে ড্রিংক করে!!!

রেহান – আমি কোথায় বললাম? তুমিই তো বললে!!

রেহানের মা – আহা হয়ছে তোমরা থামো তো। রেহান শোন… আঁচল কে দেখে রাখিস। ওর কিছু প্রয়োজন হলে এনে দিস।
আর ওকে একা ফেলে রেখে বেশি খন কোথাও থাকিস না।

রেহান – ওক্কে মেরি মা।

রিমি – ভাইয়া তুই বাসায় চলে যা এবার ট্রেন ছাড়ার টাইম হয়ে গেছে।
সাবধানে থাকিস কেমন?

রেহান – হ্যা তুইও। (মুচকি হেসে)

তারপর রেহান সবাইকে বিদায় জানিয়ে চলে আসে৷

আঁচল হিয়ার সাথে অনেকক্ষণ গল্প করে নিজের রুমে চলে আসে।

আঁচল রুমে আসতেই দেখে রেহানের মিসডকল।
আঁচল একটা বই নিয়ে বেলকনির দোলনায় বসে পড়তে থাকে। আঁচল ভেবেছিলো রেহান হয়তো আবার ওকে ফোন দিবে কিন্তু না রেহান আর ফোন দেয়নি।
আঁচল একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ফোন টা নিজের পাশে রেখেই চোখ বন্ধ করে।

বিকেলে…

হটাৎ দরজায় বেল বাজতেই হিয়া গিয়ে দরজা খুলে দেয়।

হিয়া – ভাইয়া! আপনি সকালে না বলেই চলে গেলেন যে?

রেহান – শালিক পাখি ভেতরে আসতে দিবে না? নাকি দরজার বাহিরে থেকেই সব বলবো? (মুচকি হেসে)

হিয়া – হ্যা হ্যা আসুন। কিন্তু শালিক পাখি মানে টা কি (অবাক হয়ে)

রেহান – শালিকার আদুরে ডাক হলো শালিক পাখি। (ভেতরে আসতে আসতে)

হিয়া – ওহো ভাইয়া এতো বুদ্ধি থাকে কই?

রেহান – আমার বুদ্ধি নিয়ে গবেষণা করে তুমি পেরে উঠবে না শালিকা তার চেয়ে বরং এটা নাও। (একটা বক্স প্যাকেট করা)

হিয়া – এটা কি?

রেহান – ধরে নাও এটাই তোমার ট্রিট।

হিয়া উৎসাহিত হয়ে প্যাকেট টা খুলে দেখে একটা নতুন মোবাইল।

হিয়া – ওওওমাই গডডড!!! ভাইয়াআআ!! নতুন ফোন! এত্তোগুলো ধন্যবাদ ভাইয়া।

রেহান হেসে দেয়।

রেহান – এবার বলো আমার আমানত কোথায়?

হিয়া – আমানত?? (অবাক হয়ে)

রেহান – আরে পিচ্চি!! আমার বউ কোথায় বলো?

হিয়া – ওহো! আপুই নিজের রুমে ভাইয়া।

রেহান – ওক্কে শালিক পাখি।

রেহান আঁচলের রুমে এসে দেখে আঁচল নেই।
রেহান বেলকনিতে যেতেই দেখে আঁচল একটা বই বুকের উপর রেখে ঘুমিয়ে আছে।
রেহান মুচকি হেসে আচলের কাছ থেকে বই টা সরিয়ে নিয়ে আঁচল কে কোলে তোলে নেয়।

আঁচলের ঘুম ভেঙ্গে যেতেই দেখে রেহান আঁচল কে কোলে নিয়ে দাড়িয়ে আছে।

আঁচল – আপনি এসে গেছেন?

রেহান – হুম। যাবে না?

আঁচল – যাবো তো। আপনি বসুন আমি ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিই।

রেহান আঁচল কে কোল থেকে নামিয়ে আঁচলের কপালে চুমু দিয়ে বলে….

রেহান – যাও। আমি ওয়েট করছি।

আঁচল মুচকি হেসে ওয়াশরুমে চলে যায়।

রেহান খাটে আধশোয়া হয়ে বই পড়ছে। কিছুক্ষণ পর আঁচল বের হতেই রেহানকে দেখে মুচকি হাসে।

রেহান – বেইবি এই ভাবে হেসো না মরে যাবো তো।

আঁচল রেহানের কথা শুনে জোরে হেসে দেয়।

রেহান – শুনো… শাড়ি পড়েই চলো। গাড়ি করেই তো যাবো সমস্যা নেই।

আঁচল – ওকে। শুনুন…

রেহান – হ্যা বলো

আঁচল – একটু হিয়াকে ডেকে দিন না প্লিজ।

রেহান – কেনো? (ভ্রু কুঁচকে)

আঁচল – এতো প্রশ্ন না করে ডেকে দিন।

রেহান – আগে বলো কেনো?

আঁচল – ইয়ে মানে… আমার সেফটিপিন
টা লাগিয়ে দিতে।

রেহান – ওওও এই কথা?
তো আমি আছি কি করতে শুনি?

আঁচল – আপনি মানে (চোখ বড়বড় করে)

রেহান – আমি মানে আমি!! আমি লাগিয়ে দিই। (চোখ মেরে)

আঁচল – আপনিইই!!!

রেহান – হুম বেইবি। (আঁচলের দিকে এগুতে এগুতে)

আঁচল – লাগবে না আপনার হেল্প। আমিই হিয়াকে ডেকে আনছি —- বলেই চলে যেনে নেয়। রেহান আঁচলের হাত ধরে টেনে আঁচল কে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়৷

আঁচল – আ আপনার হেল্প ল লাগবে না।

রেহান – চুপপপ…

রেহান আঁচল কে পিছনে ঘুরিয়ে শাড়ির আঁচল টা ঠিক করে সেফটিপিন টা হাতে নিয়ে ইচ্ছে করে আঁচলের ঘাড়ে লাগিয়ে দেয়।

আঁচল – আউউউচচচ। আমি কাপড়ে লাগাতে বলেছি আমার শরীরে না। স্টুপিড কোথাকার।

রেহান – মুচকি হেসে শাড়িতে পিন টা লাগিয়ে দেয়।

রেহান – বেশি লেগেছে বউ? (আঁচলের কানে ফিসফিসিয়ে)

আঁচল – উহুম। সরুন।

রেহান আঁচলের ঘাড়ে চুমু দিয়ে আঁচল কে ছেড়ে দেয়।
হটাৎ রেহানের এমন কাজে আঁচল থমকে যায়।

আঁচল কে স্থির থাকতে দেখে রেহান আঁচলের কাছে এসে বলে…

রেহান – আরও লাগবে চুমু… চোখ মেরে

রেহানের কথায় আঁচলের ধ্যান ফিরে। আঁচল রাগি সুরে বলে…

আঁচল – ডেভিল কোথাকার। আচ্ছা একটা কথা বলুন তো… আপনি শাড়িতে পিন লাগানো শিখেছেন কিভাবে?

রেহান – কিভাবে আবার! আগে আরও ৪, ৫ টা বউয়ের শাড়িতে পিন লাগিয়ে দিয়েছি তাই। (দাঁতে দাঁত চেঁপে)

আঁচল – কিইইই!!

রেহান – আর একটা কথাও না বলে রেডি হও। নয়তো তোমার খবর আছে (ধমক দিয়ে)

আঁচল – আমি তো রেডিই।

রেহান – ওকে চলো তাহলে।

আঁচল আর রেহান নিচে নামতেই দেখে সবাই ড্রয়িং রুমে বসে টিভি দেখছে।

ওদের কে দেখেই আঁচলের বাবা বলে উঠে….

আঁচলের বাবা – চলে যাচ্ছিস?

আঁচল – হ্যা বাবা। (আঁচলের মন টা খারাপ হয়ে যায়।)

আঁচলের মা – সাবধানে থাকিস মা।

আঁচল – হ্যা মা চিন্তা করো না।

রিয়াদ – আঁচল শোন। রেহানের সাথে আর খারাপ ব্যবহার করিস না।

হিয়া – হ্যা আপুই। ভাইয়ার সাথে রাগ করিস না।

আঁচল – আচ্ছা বাবা ঠিক আছে। তোমরা সবাই ভালো থেকো।

রিয়াদ – সাবধানে যাস।

আঁচল – ঠিক আছে ভাইয়া।

আঁচল আর রেহান বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।

আঁচল বেচারি মন খারাপ করে গাড়িতে বসে আছে। রেহান বুঝতে পারছে আঁচলের মন খারাপ।

রেহান – বেইবি… এখন কিন্তু আমার কাছ থেকে পালাতে পারবে না আর। (মুচকি হেসে)

চলবে….

Writer – শিফা আফরিন

ডেভিল বর পর্ব – ১৮

0

ডেভিল বর
পর্ব – ১৮
শিফা_আফরিন
.
.
?
রেহান – ছাড়তে বললেই ছেড়ে দেয়ার মানুষ আমি নই সোনা। (মুচকি হেসে)

আঁচল – কেনো! ছাড়বেন না কেনো শুনি?
আপনার হিয়া আছে তো! যান ওর কাছেই যান। অসহ্য…

রেহান – আচ্ছা তোমার এতো জ্বলছে কেনো বলো তো? তার মানে সামথিং সামথিং। (চোখ মেরে)

আঁচল – নাথিং —- বলেই রেহান কে ধাক্কা মেরে উঠে চলে আসে।

বিকেলে…

রেহান হিয়া আর নিশাত (আঁচলের কাজিন) বেরিয়ে পড়ে।

এদিকে আঁচল নিচে নামতেই আঁচলের মা বলে…

আঁচলের মা – গেলি না কেনো তুই? একটু ঘুরে আসলে তো ভালো লাগতো।

আঁচল – তার মানে ওরা চলে গেছে তাই তো?

আঁচলের মা – হ্যা। মাত্র বেরিয়েছে।

আঁচল – (বাহ বাহ…! আমাকে একবার জিগ্যেস করার প্রয়োজন বোধ করেনি। মনে মনে)

আঁচলের মা – কিরে কি হলো?

আঁচল – কিছুনা মা আমি রুমে যাই।

আঁচল অনেক খন রুমে বসে থেকে ছাদে চলে আসে।

এদিকে রেহান, নিশাত আর হিয়া সন্ধার দিকে বাড়ি ফেরে।

রেহান রুমে গিয়ে দেখে আঁচল নেই।

রেহান বেলকনিতে ও খুঁজে আঁচল কে পায়নি।

রেহান একে একে সবার রুমে দেখে আঁচল কোথাও নেই।

রেহান – কোথায় গেলো? পুরো বাড়িই তো খুঁজলাম।

আঁচলের মা – কি হলো রেহান আঁচলকে পেয়েছো?

রেহান – না মা।

আঁচলের মা – তাহলে! কোথায় মেয়েটা। ও তো না বলে বাহিরে যাওয়ার মেয়ে না।

রেহান – মা আমি একটু ছাদে গিয়ে দেখে আসি।

আঁচলের মা – এরকম সন্ধা বেলা ও ছাদে যাবে কেনো বলো তো?

রেহান – তাও। আমি দেখিই না একবার।

আঁচলের মা – হ্যা তাই করো।

রেহান একপ্রকার দৌড়ে সিড়ি বেয়ে উঠে।
ছাদে আসতেই দেখে আঁচল ছাদের এক কোণে গ্রীল ধরে দাড়িয়ে আছে।

রেহান ধীর পায়ে আঁচলের কাছে যায়। আঁচলের কাধে হাত রাখে।

হটাৎ কারো স্পর্শ পেয়ে আঁচল চমকে উঠে পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে রেহান।

রেহান আঁচলকে দেখে স্তব্ধ হয়ে যায়। চোখ দু’টি ফুলে গেছে, মুখটাও লাল হয়ে আছে দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনেকক্ষন কান্না করছিলো।

আঁচলকে এরকম দেখে রেহানের ভিতর টা মোচড় দিয়ে উঠে।
রেহান আঁচলকে জেলাস ফিল করাতে চাইছিলো, কষ্ট দিতে না।

রেহান – আঁচল কি হয়েছে? কাঁদছিলে কেনো?

আঁচল – কই!! কাঁদবো কেনো আবার?

রেহান – আমি সরি সোনা।।

আঁচল – কেনো? আপনি তো কোনো ভুল করেন নি। আর হিয়া সত্যিই অনেক সুন্দরী। আপনার জন্য পারফেক্ট। আপনার তো এতে কোনো ভুল হইনি।

রেহান এবার বুঝতে পারে আঁচলের কান্না করার কারন।

রেহান – (নাহ! অনেক হয়েছে আর কষ্ট দিতে পারবো না ওকে। তার চেয়ে বরং সব কিছু বলে দিই।)

রেহান – দেখো আঁচল তুমি ভুল ভাবছো। হিয়াকে আমার ভালো লাগতে যাবে কেনো। আমার তো বউ আছে নাকি? এতো কিউট বউ থাকতে অন্য মেয়ের দিকে কেনো নজর দিবো বলো তো? (আঁচলের গালে হাত রেখে)

আঁচল – থাক। এই সব নিয়ে কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। যান রুমে যান।

রেহান – আরেহ বাবা আমি তো তোমাকে জেলাস ফিল করানোর জন্য এমন করছিলাম।

আঁচল – (ওহো!! এতো চালাক তুমি? ইচ্ছে করে আমায় কষ্ট দিয়েছো এতো দিন? দাড়াও আমি যে কি জিনিস হারে হারে বুঝাবো তোমায়…. মনে মনে)

আঁচল – আপনি এখানে থাকতে চাইলে থাকুন আমি নিচে গেলাম।

আঁচল চলে আসতে নিলে রেহান আঁচলের হাত ধরে আটকে ফেলে।

রেহান – কি হয়েছে আঁচল? বললাম না তোমাকে জেলাস ফিল করাতে চাইছিলাম। ইভেন হিয়ার ও একি উদ্দেশ্যে বুঝেছো?

আঁচল – আমি এই সব কথা শুনতে চাইনা। ছাড়ুন। — আঁচল নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে রুমে চলে আসে।

আঁচল মুখে যতোই কথা শুনাক, রাগ দেখাক কিন্তু সে তো আজ মহা খুশি! কারন রেহান হিয়াকে ভালোবাসে না।

আঁচল নিচে আসতেই হিয়ার সাথে দেখা হয়। আঁচল মুখে একটা গম্ভীর ভাব এনে হিয়াকে ভেংচি কেটে চলে আসে।

হটাৎ পেছন থেকে কারো ডাক শুনে দাড়িয়ে যায় আঁচল। পেছন তাকিয়ে দেখে রিয়াদ অনেক গুলো আইসক্রিম নিয়ে দাড়িয়ে আছে।

রিয়াদ – এই নিন মহারানি। আপনার আইসক্রিম।

আঁচল – এত্তোগুলো!!! আঁচল এক লাফে সব গুলো আইসক্রিম নিয়ে নেয়।
এদিকে রেহান দাড়িয়ে দাড়িয়ে আঁচলের কান্ড দেখে হাসছে।
এতো বড় মেয়ে তাও আইসক্রিম দেখে বাচ্চাদের মতো বিহেভ করছে!!

আঁচল নিজের রুমে চলে যায়।

রিয়াদ – রেহান…

রেহান – জ্বী ভাইয়া বলুন।

রিয়াদ – আঁচল কে সব বলে দিয়েছো?

রেহান – জ্বী ভাইয়া। তাও আপনার বোন বিশ্বাস করতে চাইছেনা।

রিয়াদ – কোনো ব্যাপার না ঠিক হয়ে যাবে। (মুচকি হেসে)

হিয়া – ভাইয়া আমার ট্রিট খানা?

রেহান – ওরে মারে! শালিকা তোমার ট্রিট পেয়ে যাবা। আপাতত তোমার সাথে কথা বললেও আমার বউ আমায় ১৬ টা বাজাবে।

হিয়া – হিহিহিহি নো সমস্যা! সময় মতো চেয়ে নিবো।

রেহান – ওকে ডিয়ার। এবার আমি যাই বউয়ের রাগ ভাঙ্গাতে না জানি কি কি করতে হয়।

রেহান রুমে এসে দেখে আঁচল বিছানায় বসে আইসক্রিম খেয়ে যাচ্ছে।
আঁচলের মুখ দেখে রেহান হাসি চেঁপে রাখতে পারছে না।
বাচ্চাদের মতো মুখে আইসক্রিম লাগিয়ে ফেলেছে বেচারি।

রেহান আঁচলের পাশে বসতেই আঁচল ভ্রু কুঁচকে রেহানের দিকে তাকায়।

আঁচল – কি চাই?

রেহান – আইসক্রিম চাই। (মুচকি হেসে)

আঁচল কথা না বাড়িয়ে একটা আইসক্রিম রেহানের দিকে এগিয়ে দিতেই রেহান হাত দিয়ে আটকে ফেলে।

রেহান – উহুম… এটা না।

আঁচল – তাহলে কোনটা। আমার কাছে আর আইসক্রিম নেই। এটা নিলে নিন না হলে বিদায় হোন।

রেহান আঁচলের কথা শুনে মুচকি হেসে আঁচলের দিকে এগিয়ে যায়।

রেহানের এগিয়ে আসা দেখে আঁচল ভয় পেয়ে যায়।
আঁচল কিছু বুঝে উঠার আগেই রেহান আঁচলের ঠোঁটের পাশে লেগে থাকা আইসক্রিম টুকু খেয়ে ফেলে।

আঁচল রেহানের এমন কাছে স্ট্যাচু হয়ে যায়। আঁচল এমন ভাবে রেহানের দিকে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে আঁচলের চোখ দু’টি এখনি বেরিয়ে আসবে।

রেহান – এটাই আমার কাছে স্পেশাল। (মুচকি হেসে)

আঁচল কিছু না বলে বেলকনিতে চলে আসে।

অনেকক্ষণ পর রেহান ও বেলকনিতে যায়।

রেহান – আর কতদিন ওয়েট করতে হবে বলো তো?

আঁচল – মানে! কিশের জন্য?

রেহান – ” ভালোবাসি ” কথাটা শুনার জন্য।

আঁচল – এতোই যখন শুনতে ইচ্ছে করছে তো যান না হিয়ার কাছ থেকে শুনে আসুন।

রেহান – কে হিয়া!! আমি তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই বুঝেছো?

আঁচল – অসম্ভব। বলেই চলে আসে।

রেহান – ভাঙ্গবে তবুও মচকাবে না।

আঁচল রুমে এসে শুয়ে পড়ে।
রেহানের মোবাইলে ফোন আসাতে রেহান রুমে আসেনি। বেলকনিতে দাড়িয়ে কথা বলছে।

আঁচল – এতোখন কার সাথে কথা বলছে? ঐ হিয়া শাকচুন্নি টা নয় তো?
আঁচল কান পেতে শুনার চেষ্টা করে রেহান কি কথা বলছে। কিন্তু কিছুই শুনতে পারে না।

আঁচল একরাশ বিরক্ত আর রাগ নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।

সকালে….

আঁচল চোখ খুলতেই দেখে রেহান ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে রেডি হচ্ছে। আঁচল চোখ পিটপিট করে রেহানকে দেখে যাচ্ছে।

আঁচল – ( কি হলো!! এতো সকাল সকাল উঠে কোথায় যাচ্ছে? মনে মনে)

রেহান – বেইবি…. উঠে গেছো?

আঁচল – হুম।

রেহান – ওকে। শুনো কাল রাতে বাবা ফোন করেছিলো মা বাবা আর রিমি গ্রামের বাড়িতে যাবে জমি নিয়ে মেবি সমস্যা হয়েছে। আমি যেতে চাইছিলাম মা বারন করেছে। তুমি তো একা থাকতে পারবে না তাছাড়া তোমাকে নিয়ে যাওয়া ও সম্ভব না। এমনিতেই ঝামেলা বেঁধে আছে। তাই আমি থেকে যাবো।

আঁচল – (ওহহহ যাক বাবা কাল রাতে ঐ শাকচুন্নি টা ফোন করেনি! মা ফোন করেছিলো। মনে মনে)

রেহান – কি হলো চুপ কেনো?

আঁচল – কিছুনা। আপনি এখন কোথায় যাবেন?

রেহান – আমি মা বাবাকে স্টেশন অব্দি দিয়ে আসবো। তারপর ট্রেনে করে চলে যাবে। আমি বিকেলে তোমায় নিতে আসবো রেডি থেকো।

আঁচল – আমি কোথায় যাবো?

রেহান – বাবা মা চলে যাচ্ছে বাড়ি খালি পড়ে থাকবে? তাই ভাবছিলাম আমরা চলে গেলেই ভালো হয়।

আঁচল – আচ্ছা ঠিক আছে।

রেহান আঁচলের কাছে এসে আঁচলের কপালে চুমু দিয়ে বেরিয়ে যায়।

আঁচল উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসে।

আঁচলের মা – কিরে রেহান চলে গেলো কেনো? না খেয়ে এতো সকাল সকাল বেরিয়ে গেছে যে?

আঁচল – মা আমার শশুর শাশুড়ি আর রিমি উনাদের গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। তাই ও চলে গেছে উনাদের ড্রপ করে আসতে।
আর আজ বিকেলে আমিও চলে যাবো। ও বলে গেছে রেডি হয়ে থাকতে। ও নিয়ে যাবে এসে।

আঁচলের মা – সেকি! আজই চলে যাবি?

আঁচল – হ্যা।

আঁচলের মা – (বাহ! আমার মেয়েটা কতো পরিবর্তন হয়ে গেছে। যাক ঐ অসভ্য ছেলেটার ভুত মাথা থেকে নেমেছে এটাই অনেক। মনে মনে)

আচ্ছা এখন খেতে আয়।

আঁচল – হুম আসছি।

আঁচল খেতে বসে। হিয়াও আসে।

হিয়া – আপুই শোন…

আঁচল – হয়ছে রে পাকনি বুড়ি আর বলতে হবে না ও আমাকে সব বলেছে। (মুচকি হেসে)

হিয়া – ভাইয়া তোকে বলেছে?? (অবাক হয়ে)

আঁচল – হুম। তুই যে এতোবড় ড্রামা কুইন আমি জানতামই না।

হিয়া – এই আপুই তুই আর আমার উপর রেগে নেই তো? জানিস আমারও কষ্ট হচ্ছিলো। কিন্তু ভাইয়া বললো তোর মুখ থেকে ভালোবাসি কথা শুনতেই এতো কিছু। বাই দ্যা ওয়ে তুই ভাইয়া কে বলেছিস তো?

আঁচল – কি বলবো? (অবাক হয়ে)

হিয়া – ঐযে যার জন্য এতোকিছু। (চোখ মেরে)

আঁচল – বেয়াদব মেয়ে। বেশি বড় হয়ে গেছিস না? দাড়া তোর বিয়ের ব্যাবস্থা করছি৷

হিয়া – হ্যা কর না। আমি তো এক পায়ে খাড়া। (হেসে দিয়ে)

চলবে….

চারুর_সংসার পর্ব_২

0

চারুর_সংসার
পর্ব_২
#Written_by_Nowshin

.
?
.

গাড়ি এক বিরাট বাড়ির সামনে এসে থামলো।এত বড় বাড়ি?।চকচক করছে পুরো বাড়িতে।চারু একদৃস্টিতে তাকিয়ে আছে।হঠাৎ আনাফ বলল…..

——কী হলো নামেন!

চারু হচকিয়ে যায় এই কথা শুনে।কাপা কাপা কন্ঠে বলে জ্বী জ্বী!!

চারুরা সবাই গাড়ি থেকে নামে।বাড়ির ভিতরে ঢুকে সবাই।চারু যতো আগাচ্ছে ততো অবাক হচ্ছে,কত বড়,সুন্দর বাড়ি।চারুকে আনাফের রুমে নিয়ে বসানো হয়।চারু পুরো রুমটা ঘুরে দেখে।অনেক বড় রুম।সাথে বারান্দা।বারান্দা টা চারুর অনেক পছন্দ হয়েছে?।চারু কী করবে কিছুই ভেবে পাচ্ছেনা।অনেক আনইজি ফিল হচ্ছে ওর??।

—–চারু……..

চারু নিজের নাম শুনতেই পিছনে ফিরে তাকায় দেখে আনাফের মা ডাকছে তাকছে?।চারু কাপা কাপা গলায় বলল,,,,,

চারুঃজ্বী,বলেন
মাঃআমি তোমার কী হই?
চারুঃশাশুড়ি!!
মাঃতাহলে আমাকে মা বলে ডাকবে কেমন?
চারুঃআচ্ছা?।
মাঃশুনো এখন থেকে আনাফকে দেখে রাখার দায়িত্ব তোমার।ওকে কখনো কস্ট দিও না?।ছোটবেলা থেকেই আমার ছেলেটা একা একা বড় হয়েছে।দেখতে পায় না,একা একা থাকতো।আমি তোমাকে বিশ্বাস করু।আমি জানি তুমি আমার বিশ্বাস ভাংগবে না।
চারুঃআমি আমার যথাসাধ্য চেস্টা করবো!আচ্ছা একটা কথা জিগ্যেস করি?
মাঃসিউর!
চারুঃআচ্ছা উনাকে কেউ চোখ দিলো না?আপনারা বিভিন্ন হাসপাতালে খুজতেন পেয়ে যেতেন।
মাঃনারে মা অনেক খুজেছি?।পাইনি!পেলেও ওর ব্লাডের সাথে মিলেনা।ওর ব্লাড গ্রুপ এবি-?।
চারুঃবলেন কী!! আমারও তো এবি-☺
মাঃতাই নাকি☹।আচ্ছা আমি এখন আসি।কিচ্ছুক্ষন পর আনাফ আসবে রুমে?।
চারুঃআচ্ছা।

এই বলে উনি চলে যান। চারু বসে থাকে একা একা।কিচ্ছুক্ষন পর আনাফ আসে রুমে।শবনম মানে আনফের বোন এসে রুমে দিয়ে যায়।আনাফ কে খাটে বসিয়ে চলে যায় শবনম।

আনাফঃতুমি কী জানো আমি দেখতে পাই না!
চারুঃহ্যা জানি!
আনাফঃতাহলে জেনেশুনে কেনো বিয়ে করলে আমাকে?কেনো জেনেশুনে নিজের জিবন নস্ট করলে?
চারুঃ………(নিশ্চুপ)
আনাফঃআচ্ছা বাদ দাও।আচ্ছা ছাদে যাবে?আজকে আকাশটা অনেক সুন্দর।
চারুঃআপনি কিভাবে দেখলেন??
আনাফঃহাহাহাহা??।আমি কীভাবে দেখবো?ফিল করেছি?।
চারুঃঅহহ আচ্ছা।চলেন যাই?

আনাফ কে দুহাত দিয়ে ধরে চারু নিয়ে যায়।সিড়ির সামনে এসে আনাফ বলে আমি আর যেতে পারবো।ছেড়ে দাও।…..

চারুঃআজব তো!!সরেন আমি নিয়ে যাবো।
আনাফঃছাড়ো আমাকে আমি যেতে পারবো।
চারুঃজেদ ধরবেন না!

আনাফ একপ্রকার জোর করে চারুর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে সিড়ি দিয়ে উঠতে শুরু করে।টার্গেট করে ৩-৪ সিড়ি উঠতে পারে।আর বাকিগুলো উঠতে নিলেই পা পিছলিয়ে পড়ে যায়।চারু দৌড়ে আসে।

চারুঃদেখলেন তো?পড়ে গেলেন। বলেছিলাম না।ভালো কথা কানে যায় না।??।এখন মাকে আমি কী বলবো??????

আনাফঃআগে তো আমাকে তুলো??।।

চারু অনেক কস্টে টেনে আনাফকে মাটি থেকে তুলে। এরপর নিচে চলে যায়।রুমে নিয়ে আসে।

চারুঃআরে আপনার পা তো মচকে গেছে।খুব ভালো হইছে।না পারলাম ছাদে যাইতো।বজ্জাত কোথাকার।

জোরে শব্দ করে হেসে দিলো আনাফ।চারুর রাগ সপ্তম আকাশে আনাফের হাসি দেখে।রাগে গজগজ করে আনাফকে বলে,,

—–খুব হাসি হচ্ছে না?? সরেন, আমি ঘুমাবো?।
—–ইসস তোমার মুখের হাসিটা যদি দেখতে পারতাম।

আনাফের মুখে এমন কথা শুনে চারুর রাগান্বিত মুখ নিমিশেই ফ্যাকাসে হয়ে যায়।চারু আর কিছু না বলে আনাফকে ঘুমিয়ে যেতে বলে।আনাফও ঘুমানোর প্রস্তুতি নেয়।।চারু ওয়াশ্রুমে ঢুকে ফ্রেশ হতে।

চারুঃধুর ছাই☹।কারো বাথরুম এত্ত বড় হয় নাকি।মনে হচ্ছে আস্ত একটা হাতি?।আমাদের বাড়ির দুই রুম মিলেয়ও এত্ত বড় হবে না।উফফফ এখানে তো যে কেউ সংসার করতে পারবে সুখে শান্তিতে?।ধুর ভাল্লাগেনা,এখানে কী আমি দৌড়াদৌড়ি করবো??‍♀।আল্লাহ তুমি রহম করো যে এই বাথরুম টা বানাইছে?‍♀।(মনে মনে)

চারু বকবক করতে করতে বের হলো?‍♀।দেখে আনাফ ঘুমাই গেছে।চারু ও ঘুমিয়ে পড়বে ভাবে।কিন্তু কই ঘুমাবে সে?

চারুঃআচ্ছা আমি কই ঘুমাবো?আমি কী উনার পাশে গিয়ে শুবো?না না,,,?‍♀।আমার তো লজ্জা করে। কোথায় যে ঘুমাই☹।

চারু এদিক-ওদিক তাকায় দেখে পাশেই একটা সোফা আছে?।

—-এই তো পেয়েছি এই সোফায় ঘুমাবো।

একটা বালিশ এনে ঘুমিয়ে পড়ে চারু।

.
?
.

ফজরের আজান শুনে চারুর ঘুম ভাংগে।আড়মোড়া ভাংতে ভাংগতে উঠে চারু।বারান্দায় যায় চারু।

বারান্দায় শীতল হাওয়া বইছিলো।চারুর মন ভরে যায়।

চারুঃইশসসস এক কাপ চা/কফি হলে অনেক ভালো হতো!???কিন্তু আমি এখানকার রান্নাঘর কিছুই তো চিনি না জানিনা।কিভাবে বানাবো?।(মনে মনে)

চারু বারান্দায় দাড়িয়ে চোখ বুজে শীতল হাওয়া মন ভরে অনুভব করতে থাকে।কিচ্ছুক্ষন পর চারু ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়তে যায়।নিজের নামাজ পড়া শেষে আনাফ কে ডাকতে যায়।আনাফের ঘুমন্ত শান্তশিষ্ট চেহারা দেখে আর ডাক দেয় না। ভাবে সকালে উঠে পড়ে নিবে?।

এরপর চারুও ঘুমিয়ে পড়ে।

সকালে❤………

চলবে……..

(গল্পটি একজন কপি করেছিলো তাই লেখার মন মানশিকতা চলে যায়।কিন্তু অনেকে চায় লিখি তাই লিখলাম।গল্প লিখি শখের বশে।প্রায় সবাই ই গল্প লিখা অফ করে দিয়েছে এইরকম কপিবাজদের জন্য।??।যাই হোক কেমন হয়েছে জানাবেন এইসব নেক্সট নেক্সট করবেন না প্লিজ্জ??।গঠনমূলক মন্তব্য চাই।আরেকটা কথা,যাদের আমার গল্পটা নাটকের কপি মনে হচ্ছে তারা প্লিজ্জ পুরো গল্প পড়েন।এসব সিরিয়াল ফিরিয়াল আমি দেখি না??।গল্পটা আমার মাথায় এসেছে আর লিখে ফেল্লাম?।)

চারুর সংসার পর্ব_১

0

চারুর সংসার
পর্ব_১
#Written_by_Nowshin

বিয়ের দিন জানতে পারি আমার স্বামী অন্ধ।চোখে দেখে না।ছোটবেলা এক এক্সিডেন্টে চোখে আঘাত লাগায় দৃস্টিশক্তি হারায়।

আমি অনেক্ষন চুপ হয়ে ছিলাম এই কথা শুনে।মামা-মামী কীভাবে পারলো জেনেশুনে এভাবে বিয়ে দিতে।তারা কী একবারও আমার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করলো না?

অরুঃনা রে! ছেলের পরিবারের অনেক টাকা অনেক!মেলা টাকা।বড়লোক পরিবার।তাই আম্মা রাজ্বি হইয়া গেছে।
চারুঃঅহ!!সামান্য টাকার কাছে হেরে গেলো সবকিছু।টাকার জন্য উনারা আমাকে অন্ধ লোকের সাথে বিয়ে দিয়ে দিলেন?একবারও আমার কাছ থেকে অনুমতি নিলেন না?বাহহহ।আজ মা-বাবা বেচে থাকলে হয়তো এই দিনটি দেখতে হতো না।
অরুঃআচ্ছা আমি গেলাম বর মনে হয় আইয়া পড়ছে?।

চারদিকে শুধু বর এসেছে, বর এসেছে……..

কত সপ্ন ছিলো আমার বিয়ে নিয়ে কিন্তু এক নিমিষেই সব শেষ হয়ে গেলো।

বারান্দা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখলাম সবাই বাহিরে দাড়িয়ে আছে।হঠাৎ দেখলাম আমার হবু স্বামী গাড়ি থেকে বের হচ্ছেন কেউ একজন তাকে ধরে আনছে।মাশাল্লাহ?।দেখতে অনেক সুন্দর।আমি মেনে নিলাম আমার ভাগ্যে হয়তো উনিই লেখা।ভাগ্যকে তো মেনে নিতে হবে।

অহহ হ্যা আমি চারু।কলেজে পড়তাম। হয়তো আর পড়ালেখা হবে না?।মা-বাবা ছোট বেলাই মারা যান।মামা-মামীর কাছে বড় হয়েছি।মামী আমাকে দেখতে পারতো না অত্যাচার করতো?।কাউকেই কিছু বলতে পারতাম না।আরু আমার মামাতো বোন। ভাবছেন আরুর সাথে আমার বন্ডিং অনেক ভালো?মোটেও না সেই ছোট বেলা থেকে আমাকে হিংসা করে।মারামারি করতো,ঝগড়া করতো।মামীর কাছে বানিয়ে বানিয়ে বলে আমাকে কথা শুনাতো।
আমরা গ্রামে থাকি।ততো টাকা পয়সা নেই।গরিব পরিবার।মামা মাঠে কাজ করতো। কোনোমতে সংসার চলতো?।তাইতো বড়লোক পরিবার দেখে বিয়ে দিয়ে দিলো! আমার অনুমতিও নিলো না।

|
|
|
|
|

এতক্ষনে সবাই জেনে গেছে আমার হবু বর চোখে দেখতে পায় না।লোকে কানাকানি করছে চারুর বর অন্ধ।আমার অনেক খারাপ লাগছিলো।কিছুক্ষণ পর একজন এসে তো আমাকে বলেই দিলো যে—চারু শুনলাম তর বর নাকি অন্ধ?

আমি কিছুই বলিনি।ছোটখাটো অনুসঠানের আয়োজন করা হয়েছে।উনারা নাকি বলেছেন পরে বড় করে আয়োজন করে বিয়ে দিবেন আবার?।

হঠাৎ মামা এসে আমার পাশে বসলেন…..আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন……….

মামাঃচারুরে,আমায় ক্ষমা করে দিস আমি জেনে শুনে তোকে ওই ছেলের সাথে বিয়ে দিলাম।আমার কিছুকরার ছিলোনা।তর মামী……
চারুঃমামা আমি বুঝতে পারছি?
মামাঃআমায় ক্ষমা করে দিস?।
চারুঃমামা এভাবে বলছো কেনো?তোমার কোনো দোষ নেই।

মামার সাথে কিছুক্ষন কথা বলে মামা চলে গেলেন।।

আরুর কাছ থেকে জানতে পারলাম উনার নাম আনাফ?।

উনাকে আমার পাশে এনে বসানো হলো।উনি তো আর আমাকে দেখতে পারবেননা??।আমি উনার দিকে তাকালাম দেখি সামনের দিকে তাকিয়ে আছেন।উনার মাকে অর্থাৎ আমার শ্বাশুড়ি অনেক সুন্দর শাড়ি পড়ে এসেছেন।ঘা ভর্তি গহনা।অনেক সুন্দর লাগছিল উনাকে।আর আমার ননদ যে সে সেজে এসেছে।হিল পড়ে এসেছে।অনেক সুন্দর ড্রেস পড়ে এসেছে।হাতে দামী মোবাইল!বড়লোক বলে কথা?।

আমার শ্বাশুড়ি মা আমার পাশে এসে বসলেন বল্লেন কেমন আছও?আমি বল্লাম জ্বি ভালো আছি।

বিয়ে পড়ানো হলো…..

আমাকে কবুল বলতে বলা হলো।শ্বাশুড়ি মা মাথায় হাত দিয়ে বললেন বলো মা কবুল?।

আমি ছলছল চোখে তাকিয়ে বললাম—–কবুল,কবুল, কবুল।

সবাই—-আলহামদুল্লিলাহ?।

আমার বরও কবুল বলল।দোয়া হলো…

খাওয়াদাওয়া হলো।বিয়ে শেষ!এখন বিদায়ের পালা।

মামা-মামী কে সালাম করলাম। মামাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করেছি আমি।।

অতঃপর গাড়িতে উঠলাম শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্য রওয়ানা হবো বলে।২ ঘন্টা নাকি লাগবে পৌছাতে।

চলবে……

ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। কেমন হয়েছে জানাবেন।

[আপনাদের রেসপন্স পেলে নেক্সট পর্ব দিবো?।নাহলে এখানেই সমাপ্ত?⛔]

ডেভিল বর পর্ব – ১৭

0

ডেভিল বর
পর্ব – ১৭
শিফা_আফরিন
.
.
?
রেহান – সব সময় তোমার রাগের কাছে হার মানতে হবে আমার?
কি ভাবো কি নিজেকে? ভালোই ভালোই বলছি এখানে ঘুমাউ নয়তো তোমার কপালে দুঃখ আছে আঁচল।

আঁচল রেহানের ধমক শুনে চুপ করে যায়।

আঁচল – ( হ্যা এখন তো আমার সাথেই রাগ দেখাবেন। এখন তো আপনার ঐ হিয়া টিয়া আছে না!! এখন আমাকে আর সহ্যই করতে পারবেন না… মনে মনে)

আঁচল কিছু না বলে পাশ ফিরে শুতে নিলেই রেহান আঁচল কে নিজের দিক ঘুরিয়ে নেয়।
আঁচল কিছু বলতে যাবে তার আগেই রেহান আঁচলের গলায় গভীর ভাবে চুমু দেয়। আঁচল কেঁপে উঠে।
রেহান আঁচলে মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে আঁচল চোখ বন্ধ করে আছে।আঁচলের ঠোঁট জোড়া কাঁপছে।

রেহান মুচকি হেসে আঁচলের ঠোঁটে চুমু দিয়ে আঁচল কে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে।

সকালে..

রেহানের আগেই আঁচলের ঘুম ভাঙ্গে।আঁচল নিজেকে রেহানের বুকে দেখে মুচকি হেসে রেহানের দিকে ঝুঁকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।

রেহানের গোলাপি রং এর ঠোঁট দু’টো দেখে আচমকা আঁচলের হাত টা রেহানের ঠোঁটে চলে যায়।
আঁচল আঙুল দিয়ে রেহানের ঠোঁটে স্লাইভ করছে।

হটাৎ রেহান খপ করে আঁচলের হাত টা ধরে ফেলে।
আঁচলের আত্মা যেনো কেঁপে উঠে রেহানের এমন কান্ডে।

রেহান – আমাকে আদর করতে ইচ্ছে করছিলো তাই না। (মুচকি হেসে)

আঁচল – ক কই! না তো। আপনাকে কেনো আদর করতে যাবো আজিব!

রেহান – হুম। তা তো দেখতেই পেলাম। বাই দ্যা ওয়ে তুমি চাইলে কিন্তু লিপকিস করতেই পারো।

রেহানের কথা শুনে আঁচলের চোখ বড়বড় হয়ে যায়।

আঁচল – আমি আপনাকে লিপকিস করবো?? অসম্ভব।

রেহান – এই অসম্ভব টাই সম্ভব হতো যদি আমি তোমার হাত টা না ধরে ফেলতাম। (চোখ মেরে)

আঁচল – একদম বাজে কথা বলবেন না। আপনার ঠোঁটে মশা বসেছিলো তাই ঐ টাকে সরাচ্ছিলাম। ভেবেছিলাম আপনি ঘুমিয়ে আছেন তাই। কে জানে আপনি এতোটা অসভ্য। ঘুমের ভান করে পড়ে থাকেন।

রেহান – মশা বসলে বুঝি স্লাইভ করে কেউ। আর যদি ঘুমের ভান না ধরতাম তাহলে কি জানতে পারতাম আমার রাগি বউ টা আমার প্রেমে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। (মুচকি হেসে)

আঁচল – আপনার প্রেমে কে পড়েছে শুনি? আপনার প্রেমে পড়ার আগে পুকুরে পড়ে যাবো তাও আপনার মতো ডেভিল অসভ্যর প্রেমে পড়বো না.. নেভার।

রেহান – পড়বে কি পড়ে তো গেছোই বেইবি। এবার শুধু টেনে তোলার পালা।

আঁচল – ওফ… আপনার সাথে কথা বলাটাই পাগলের কাজ। — বলেই উঠে যেতে নিলে রেহান ধরে ফেলে।
আঁচল রেগে কিছু বলতে যাবে তার আগেই রেহান আঁচলকে টান দিয়ে বুকে ফেলে দেয়।

আঁচলের চুল গুলো রেহানের মুখে ছড়িয়ে পড়ে।

রেহান – আহহ… কি মনমাতানো ঘ্রান। আমি তো আহত হয়ে যাবো সোনা।

আঁচল – আহত নিহত যা ইচ্ছে হোন না মানা করলো কে?
আমায় যেতে দিন দয়া করে।

রেহান – এ বাবা!! আমি নিহত হলে তোমাকে জ্বালাবে কে বলো তো!!

আঁচল – বিরক্তিকর!! বলেই উঠে চলে যায়।
রেহান মুচকি হাসে।

আঁচল ফ্রেশ হয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে চুলের মুছছে।

রেহান শুয়ে আঁচলকে দেখে মুচকি হাসছে।

আঁচল – কি হলো? এভাবে ৩৬ খানা দাঁত বের করে রেখেছেন কেনো? মানুষ কে দেখানে চান আপনার দাঁত গুলো চকচকে! তা যান না বাহিরে গিয়ে দেখান। যত্তসব।

আঁচলের কথায় রেহানের কোনো রিএকশন নেই। সে আঁচলকে দেখা নিয়েই ব্যাস্ত।
কেননা আঁচল কালো রং এর তাঁতের শাড়ি পড়েছে যার মধে নীল রং এর পাড়।

আঁচলের ফর্সা শরীরে শাড়িটা যেনো অপরূপ ভাবে মানিয়েছে।
হটাৎ রেহান খেয়াল করে আঁচলের পেটের কিছুটা অংশ দেখা যাচ্ছে। রেহানের যেনো কেমন একটা ঘোর লেগে যাচ্ছে।

আঁচল রেহানের দিকে তাকিয়ে দেখে রেহান খুব মনযোগ দিয়ে আঁচলকে দেখে যাচ্ছে।
আঁচল তারাতারি করে শাড়ি ঠিক করে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

রেহান মুচকি হেসে উঠে ওয়াশরুমে চলে যায়।

আঁচল নিচে নামতেই দেখে হিয়া টিভি দেখছে। আঁচল কে দেখে একখানা মিষ্টি হাসি উপহার দেয়।
এতে আঁচলের রাগের পরিমাণ খানাও অনেক বেড়ে যায়। যা আঁচল এই মূহুর্তে প্রকাশ করতে পারছেনা।

হিয়া – আপুই…

আঁচল – কিছু বলবি? (বিরক্ত হয়ে)

হিয়া – ভাইয়া কোথায় আপুই? কখন থেকে ওয়েট করছি ভাইয়ার জন্যে।

হিয়ার কথা শুনে আঁচলের রাগ আরও বেড়ে যায়।

আঁচল – ভাইয়াকে কি দরকার শুনি। (দাঁতে দাঁত চেপে)

হিয়া – না ইয়ে মানে….

আঁচল – এই মেয়ে কি মানে মানে করছিস বল তো? আর রেহান তোর জিজু হয়। ওর সাথে কিশের এতো আড্ডা তোর?

হিয়া – আপুই রেগে যাচ্ছো কেনো? এমনিই ভাইয়ার সাথে আড্ডা দিই। আসলে ভাইয়া অনেক মিশুক তো!! আর আমিও তো অনেক মিশুক তাই আরকি।।

আঁচল – তাই না? এতোই যখন মিল তো নিজে গিয়ে খুজ না। আমাকে কেনো জিগ্যেস করছিস। যত্তসব — বলেই রেগে রান্না ঘরে চলে যায়।

হিয়া এখনো দাড়িয়ে মুখ টিপে হাসছে।

আঁচল রান্না ঘরে গিয়ে দেখে আঁচলের মা রান্না করছে।

আঁচলের মা – কিরে তুই রেগে আছিস কেনো?

আঁচল – এমনি। খেতে দাও জলদি।

আঁচলের মা – হ্যা আনছি। রেহান উঠেছে?

আঁচল – আমি জানিনা।

আঁচলের মা – শুনো মেয়ের কথা!! তুই না জানলে কে জানবে শুনি?

আঁচল – কেনো? হিয়া জানবে!!

আঁচলের মা বুঝতে পারে আঁচলের রেগে থাকার কারন টা কি!
(নিশ্চয় ঐ হিয়া টা আবার আমার মেয়েটাকে কিছু বলেছে… মনে মনে)

আঁচলের মা – এ মা এই সব কি বলিস। তোর বর তুই জানবি না হিয়া জানবে?

আঁচল – জানবে বলেই তো বললাম। এতো কথা বলো না তো। খেতে দাও আমায়।

আঁচলের মা – আচ্ছা ঠিক আছে বাবা। যা গিয়ে বস তুই আমি খাবার রেডি করে আনছি।

আঁচল রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে হিয়া আসে।

হিয়া – আন্টি কি করছো গো?

আঁচলের মা – চুপ বজ্জাত মাইয়া। আমার মেয়েটার পিছন এভাবে লেগে আছিস কেনো বলতো? ও কতো কষ্ট পাচ্ছে জানিস?

হিয়া – আমি কি করবো বলো? ভাইয়াই তো বললো। আর তুমি জানো এতে তোমার মেয়েরই লাভ হবে। আপুই নিশ্চয় ভাইয়াকে বলে দিবে ও ভাইয়াকে ভালোবাসে। তখন ভাইয়া আর আপুই আরও ভালো থাকবে তোমি দেখো।

আঁচলের মা – তাই জেনো হয়।

এদিকে আঁচল রেগে খাবার টেবিলে বসে আছে।
হিয়া ও এসে বসে।

হিয়া – আপুই চলো না আজ কোথাও ঘুরতে যাই।

আঁচল – তুই যা। আমাকে বলছিস কেনো? (রেগে)

হিয়া – আরেহ! আমি একা যাবো নাকি? তোমাকে আর ভাইয়াকেও নিয়ে যাবো।

আঁচল – ওও তাই বল! তোর ইচ্ছে হয়ছে তোর আদরের ভাইয়াকে নিয়ে ঘুরতে যাবি। তা যা না বরন করলো কে!

— হ্যা যাবেই তো!

হটাৎ কারো কন্ঠ শুনতে পেয়ে আঁচল আর হিয়া দু’জনই পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে রেহান দু’হাত পকেটে গুঁজে মুচকি হেসে দাড়িয়ে আছে।

হিয়া – এইতো ভাইয়া চলে এসেছে। ভাইয়া চলুন না কোথাও বেরিয়ে আসি। আমার না এ বাসায় বসে থাকতে একদম বোরিং লাগছে।

আঁচল – কেনো রে? এতো দিন তোর বোরিং লাগে নি? আজ কেনো এ কথা বলছিস? ফাজিল মেয়ে।

রেহান – আহ! আঁচল। চুপ করো। ওকে ধমকাচ্ছো কেনো?
শুনে শালিকা তোমার যখন যেতে মন চাইছে তো বিকেলে আমরা বের হবো কেমন?

হিয়া – ইয়েএএ!!! ভাইয়া এত্তো গুলো থ্যাংকস্

রেহান – আঁচল তুমিও চাইলে আমাদের সাথে যেতে পারো।

আঁচল – মা!! আমার খাবার দিয়ে যাও তারাতারি।

রেহান – আঁচল আমি তোমায় কিছু বলছি।

আঁচল – আমার এতো বাজে কথা শুনার টাইম নেই।

রেহান – ওকে। হিয়া বিকেলে রেডি থেকো আমরা বেরুবো।

হিয়া – ওকে ভাইয়া।

আঁচল রেহানের কথার কোনো জবাব না দিয়ে খেয়ে উঠে যায়।

কিছুক্ষন পরই রিয়াদ আর আঁচলের বাবা আসে।

আঁচলের বাবা – আঁচল কোথায় রেহান?

রেহান – ও তো খেয়ে চলে গেলো।

রিয়াদ – কি বলো! ও সবার আগে খেয়ে চলে গেলো?

রেহান – মেবি পেটে কিছু ঢুকেছে! (হেসে)

আঁচলের বাবা আর রিয়াদ ও হেসে দেয়।

আঁচল বিছানায় বসে আছে। এমনি রেহান রুমে আসে।

রেহান আঁচলের ঘা ঘেঁষে বসতেই আঁচল রেগে রেহানের দিকে তাকায়।

রেহান – ওভাবে তাকিয়ে আছো যে!

আঁচল – বসার আর জায়গা পান না নাকি?

রেহান আঁচলে কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়ে……

রেহান – উহুম…

আঁচল – কি হলো? শুয়েছেন কেনো? (বিরক্তি নিয়ে)

রেহান – ইচ্ছে করছে তাই।

আঁচল রেহানকে কিছু বলতে গিয়েও পারছে না।

রেহান – চলো না কোথাও ঘুরে আসি। ভালো লাগবে দেখো! (আঁচলের পেটে নাক ঘষে।)

আঁচল – আমি কোথাও যাবো না। দেখি সরুন!

রেহান আঁচলের পেটে চুমু দিয়ে আঁচলের কোমড় জড়িয়ে ধরে।

রেহান – ছাড়তে বললেই ছেড়ে দেয়ার মানুষ আমি নই সোনা।

চলবে…

ডেভিল বর পর্ব – ১৬

0

ডেভিল বর
পর্ব – ১৬
শিফা_আফরিন
.
.
?
রিয়াদ কে আঁচল বরাবরই অনেক ভয় পায় তাই আর কথা না বারিয়ে খেয়ে শুরু করে দেয়।
আঁচলের খাওয়া শেষ হলে রিয়াদ চলে যায়।
আঁচল অনেকক্ষণ ধরে রুমে বসে আছে কিন্তু রেহানের আসার কোনো খবর নেই। আঁচল প্রচন্ড রেগে যায়।

আঁচল – দেখেছো? ঐ লুচু টা ওর হিয়ার কাছ থেকে আসতেই চাইছেনা। ঘরে যে ওর বউ বসে আছে সেদিকে কোনো খেয়ালই নেই।

আঁচল অনেকক্ষন রুমে পায়চারি করে দেখে রেহান এখনো আসে নি। আঁচল রেগে শুয়ে পরে।

রাতে…

রিয়াদ – আঁচল এই আঁচল…. এখনো ঘুমাচ্ছিস? তোর শরীর ঠিক আছে তো?

আঁচল – কি হয়েছে ভাইয়া? চেঁচামেচি করছো কেনো? (ঘুম ঘুম কন্ঠে)

রিয়াদ – চেচাঁমেচি করছি কি আর শখে! রাত ১০ টা বাজে এখনো তুই ঘুমাচ্ছিস?

আঁচল এক লাফে উঠে বসে রুমে এদিক সেদিক তাকায়।

রিয়াদ – কি হলো? কাউকে খুঁজছিস?

আঁচল – কই? নাতো।

রিয়াদ – ঠিক আছে। ফ্রেশ হয়ে নিচে আয় খেয়ে নিবি। তারাতারি আসবি কিন্তু।

রিয়াদ চলে যায়। আঁচল মন খারাপ করে বসে থাকে।

আঁচল – আমি এতো খন ঘুমিয়েছিলাম অথচ উনি একবারও আমায় ডাকতে আসলেন না?
একবার দেখতেও আসলেন না?

আঁচল ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে দেখে সবাই খাবার টেবিলে ওয়েট করছে।
কিন্তু হটাৎ আঁচলের মন টা ভালো হয়ে যায় কারন হিয়া রেহানের সাথে বসেনি। আঁচল আর রেহান একসাথে বসেছে। আর হিয়া ওদের বিপরীত দিকে।

রেহান – ওহো হিয়া… সরি গো। তোমার সাথে বসতে পারলাম না। আর তুমিও না! আমার পাশের চেয়ার টা দেখছো খালি পড়ে আছে বসলে না কেনো বলো তো?

রেহানের কথা শুনে আঁচল অনেকটা কষ্ট পায়। আঁচলের চোখের কোণে পানি চলে আসে।

আঁচল – ( তার মানে চেয়ার টা হিয়ার জন্যই ছিলো! মাঝখানে আমি চলে এসেছি? মনে মনে)

হিয়া – থাক না ভাইয়া। একবেলা না হয় বসে গেলাম। (মুচকি হেসে)

আঁচল চেয়ার থেকে উঠে যেতে নিলে রেহান আঁচলের হাত ধরে ফেলে।

রেহান – কি হলো উঠে পড়ছো যে? দুপুরের মতো এখনো তোমার পেট ভরে গেছে নাকি? (ধমক দিয়ে)

আঁচল – না আমি ভাইয়ার পাশে বসবো।

রেহান – এটা কি ছেলেমানুষি আঁচল!! একবার বসছো আবার চেঞ্জ করবে কেনো?

আঁচল আর কথা না বাড়িয়ে বসে খেতে শুরু করে।

হটাৎ আঁচল খেয়াল করলো কেউ তার পায়ে খুচা দিচ্ছে।

আঁচল সামনে তাকিয়ে দেখে হিয়া রেহানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে।

আঁচল মাথা নিচু করে দেখে এটা হিয়ার পা।

আঁচল – হিয়া কি হচ্ছে টা কি? এরকম কেনো করছিস বল তো?

হিয়া – ওহো সরি আপুই ভুলে তোকে বিরক্ত করে ফেললাম।

আঁচল – (ভুলে মানে!! ওহ বুঝেছি উনার পায়ে খুচা দিতে চাইছিলো তাই!! মনে মনে)

আঁচল হালকা খেয়ে উঠে রুমে চলে যায়। আঁচল যে মারাত্মক রেগে আছে এটা কারো চোখ এড়াতে পারেনি।

হিয়া – ভাইয়া… ডোজ টা বেশি হয়ে গেলো না তো?

রেহান – না শালিকা তুমি তো একদম জমিয়ে দিয়েছো। (চোখ মেরে)

হিয়া – তাও। আমি জানি আপুই কতোটা রাগি। তাছাড়া আপুই অনেক অভিমানী ও। যদি আপনাকে ভুল বুঝে তো সহজে ওকে আর সত্যি টা বুঝাতে পারবেন না। ও ভুল টা নিয়েই পড়ে থাকবে।

রেহান – এই সব নিয়ে তুমি একদম ভেবো না ডিয়ার শালিকা। আমি আছি তো!

হিয়া – হুম সেই।

রিয়াদ – রেহান দেখো আবার যেনো গন্ডগোল বাধিয়ে ফেলো না।

আঁচলের মা – হ্যা তাইতো। আমার মেয়েটা বোধহয় অনেক কষ্ট পাচ্ছে। কি দরকার ওকে এভাবে কষ্ট দেয়ার বলো তো।

রেহান – মা, ভাইয়া আপনারা একদম চিন্তা করবেন না। আমি আছি তো। আমি সামলে নিবো।

রিয়াদ – হুম তোমার উপর আমার অনেকটা বিশ্বাস আছে।

রেহান – আচ্ছা আমি উঠি তাহলে।

আঁচলের মা – হ্যা বাবা যাও।

রিয়াদ – হুম দেখো গিয়ে তোমার মহারানি কি করছে।

রেহান মুচকি হেসে চলে আসে।

এদিকে আঁচল বেলকনিতে দাড়িয়ে আছে।
রেহান রুমে এসে দেখে আঁচল নেই। রেহান বুঝতে পারে আঁচল কোথায় থাকতে পারে।
রেহান বেলকনিতে গিয়ে দেখে আঁচল একদৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।

রেহান আঁচলকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে।
হটাৎ কারো স্পর্শ পেয়ে আঁচল কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। আঁচল পেছন ফিরে দেখে রেহান।

মূহুর্তেই আঁচলের মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেয় রেহান কে।

রেহান – কি হলো সোনা? এমন করছো কেনো? (মুচকি হেসে)

রেহানের এমন বিহেভ আঁচলের অসহ্য লাগছে। আঁচল রেহানের কথার জবাব না দিয়ে রুমে এসে পড়ে।

রেহান আঁচলের কান্ড দেখে মুখ চেঁপে হাসছে।

রেহান – কোথায় যেনো কি পুড়ছে মনে হচ্ছে?

রেহানের কথায় আঁচল অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে রেহানের দিকে।
কিন্তু কোনো উত্তর না দিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে চুল আঁচড়াতে শুরু করে।

রেহান – জানো… হিয়া মেয়েটা কি সুন্দর তাইনা? যেমন সুন্দর দেখতে তেমনি সুন্দর কথা বলার স্টাইল। হাসিটা ও মাশআল্লাহ।

আঁচল এবার আর চুপ থাকতে পারেনি।

আঁচল – এতোই যখন অপ্সরি মনে হচ্ছে তো যা না ঐ হিয়ার বাচ্চার সাথেই ঘুমাতে যা। আমার রুমে কেনো এসেছিস। (চিৎকার করে)

রেহান – এ মা! তুমি আমাকে তুই তোকারি করছো!! দেখলে হিয়া তো একবারও আমাকে তুই করে বলেনি? তাছাড়া তুমি আমার বউ। সারা দিন হিয়ার সাথে আড্ডা দিলেও রাতে তো তোমার সাথেই ঘুমাতে হবে তাই না? না হলে লোকে কি বলবে বলো তো!

আঁচল – ন্যাকামো করবেন না ওকে। — বলেই বালিশ নিয়ে সোফায় শুয়ে পড়ে।

রেহান আঁচলের এমন কাজে অবাক হয়ে যায়।

রেহান – তুমি সোফায় শুয়েছো কেনো? (দাঁতে দাঁত চেপে)

আঁচল – আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই।

রেহান – এক্ষুনি বিছানায় আসো বলছি।

আঁচল – আসবো না। আমি এখানেই ঘুমাবো।

রেহান রেগে গিয়ে আঁচলকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় ধপ করে ফেলে দেয়।

আঁচল – আরেহহ আজিব। আপনি কি আমার কোমড় টা ভেঙে ফেলবেন নাকি।

রেহান আঁচলের কথার কোনো জবাব না দিয়ে আঁচলের উপর উঠে পড়ে।

আঁচল – কি হচ্ছে এটা। অসভ্যতামির একটা লিমিট থাকা দরকার বুঝলেন। উঠুন বলছি।

রেহান এবার আঁচলের দু’হাত চেঁপে ধরে আঁচলের ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে নিয়ে নেয়।
আঁচল নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করতে নিলে রেহান আঁচলের ঠোঁটে অনেক জোরে কামড় বসিয়ে দেয়। আঁচল চিৎকার করে উঠে।

রেহান – সব সময় তোমার রাগের কাছে হার মানতে হবে আমার?
কি ভাবো কি নিজেকে? ভালোই ভালোই বলছি এখানেই ঘুমাউ নয়তো তোমার কপালে দুঃখ আছে আঁচল।

চলবে….