Saturday, July 12, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1511



Gangster In Love Part-16+17

0

#Gangster In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#Part__16

🦋🦋…
..
..
..
..
..
..
আব্রাহাম-আইরাত-আবির আহমেদ-অয়ন সবাই প্রায় ৫-৬ ঘন্টা শপিং করল। এবার বাসায় ফেরার পালা। আব্রাহাম রাশেদ কে ফোন দিয়ে জলদি গাড়ি পারকিং থেকে বের করতে বলল। সবাই গাড়িতে উঠে বসে পড়লো। আব্রাহাম ড্রাইভ করতে লাগলো। মাঝে মাঝে সে আইরাতের দিকে তাকাচ্ছে। আইরাতের এখনো মন খারাপ। সে গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে আনমনে তাকিয়ে আছে। আব্রাহাম আইরাত কে দেখে মুচকি হাসি দিয়ে ড্রাইভ করতে লাগলো। কিছুক্ষণ ড্রাইভ করার পর আব্রাহাম গাড়ির সাইড গ্লাসে খেয়াল করলো যে একটা সাদা রঙের গাড়ি ঠিক তাদের পিছু পিছু আসছে। তা দেখে আব্রাহাম কিছু টা কপাল ভাজ করলো। আব্রাহাম আবার ড্রাইভিং করাতে মনযোগ দিলো। কিন্তু না আব্রহামরা যেইদিকে যাচ্ছে সেই গাড়িটি ও ঠিক সেই দিকেই যাচ্ছে। আব্রাহাম এইবার একদম কনফার্ম হয়ে গেলো যে গাড়িটা তাদের কেই ফলো করছে। আব্রাহাম আর কিছু দূরে গিয়ে U-turn নিয়ে নিলো। কিছুটা আকাবাকা পথে ড্রাইভ করতে লাগলো এবং দ্রুত যেতে লাগলো। বেশকিছুক্ষন পর তারা বাড়িতে এসে পড়লো। সবাই গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলো।

অয়ন;; যাক বাবা অবশেষে আমরা বাসায় ফিরলাম। আমি তো ভেবেছিলাম যে আজকে আর বাসায় ই আসা হবে না।
আব্রাহাম;; তো বাসায় আসলি কেন আগে বলতি তোকে বাইরেই রেখে আসতাম
অয়ন;; ভাবিইইইই,, তুমি তোমার জামাই কে কিছু বলো সবসময় আমার পিছে লেগে থাকে।
আবির আহমেদ;; আহহহহ, মাত্রই বাসায় আসলি আর এসেই তোদের শুরু হয়ে গেছে। থাম তোরা (ধমক দিয়ে) রুমে গিয়ে রেস্ট নে।

আইরাতের এতোক্ষন মন খারাপ থাকলেও অয়ন-আব্রাহাম কে তাদের বাপির বকা দেয়াতে আইরাত হেসে দিলো। তা দেখে আবির আহমেদ ও হালকাভাবে হেসে দিলেন।

আব্রাহাম;; আব… বাপি আমার বাইরে কিছু দরকারি কাজ ছিলো তো আমি যাই
আবির আহমেদ;; আরে মাত্রই না বাসায় এলি। পরে যা
আব্রাহাম;; না বাপি খুব জরুরি কাজ আমি কিছুক্ষনের মধ্যেই এসে পরব।

এই বলে আব্রাহাম দ্রুত পায়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে গেলো। আব্রাহামের কানে ব্লুটুথ ছিলো তাই সে রাশেদের সাথে কথা বলতে লাগলো

আব্রাহাম;; রাশেদ Catch them
রাশেদ;; Yes sir

আব্রাহাম কথা বলতে বলতে বেরিয়ে গেলো। আব্রাহামের আর বুঝতে বাকি নেই যে,, যেই গাড়িটা তাদের ফলো করছিল তারা আইরাতের পিছু করতে করতে এসেছিল। আইরাতের বাবা আশরাফুল আহমেদ চৌধুরী রাজনীতির কাজে জড়িত। চাইলে আর না চাইলেও চারিদিকে তার অনেক শত্রু রয়েছে। এবং অনেক সময় শত্রুপক্ষ রা বড়দের রাগ-প্রতিশোধ ছোটদের ওপর তুলে। ঠিক তেমন ই হয়েছে আইরাতের সাথে। আইরাতের ওপর অনেক লোক হামলা করতে চেয়েছিলো। কিন্তু আইরাত সবসময় তার বাপির সুরক্ষা তে থাকতো যার ফলে কেউ তাকে কখন কোন ক্ষতি করতে পারতো না। আর আশরাফুল আহমেদের অনেক ক্ষমতা থাকার ফলে কারো সাহস ও হতো না আইরাত কে আঘাত দেয়ার। কিন্তু যখন থেকে সবাই শুনেছে যে আইরাত নিজের বাসা থেকে দূরে রয়েছে তখন থেকে আশরাফুল আহমেদের শত্রুরা চারিদিকে আরো ছড়িয়ে পড়েছে। আজ যখন আইরাত আব্রাহামদের সাথে শপিং এ যায় তখন শপিংমলে আশরাফুল আহমেদের শত্রুপক্ষের একজন আইরাত কে দেখে ফেলে এবং তাদের বস কে ফোন দেই। তারা তাদের চেলাপেলা দের নিয়ে আইরাত কে পদে পদে নজর রাখতে শুরু করে।। আইরাত যখন আব্রাহামের গাড়িতে উঠে তখন তারাও আইরাতের পিছু ছুটতে শুরু করে। এবং আব্রাহাম তা ভালোভাবে বুঝে যায় যে এরা আইরাতের ক্ষতি করার জন্য এসেছে,, আব্রাহামের মাথায় রক্ত উঠে যায়। সবাই কে জানে মেরে ফেলার জন্য ভেবে নেই আব্রাহাম। কিন্তু গাড়িতে নিজেকে যথাসাধ্য সামলে নিয়েছিল আব্রাহাম। কিন্তু এখন তো আর সম্ভব না রাগ কন্ট্রোলের বাইরে চলে গেছে তার।

আবির আহমেদ;; আরে, আব্রাহাম তো ওর ফোন এখানেই রেখে গেছে (টেবিলের ওপর থেকে আব্রাহামের ফোন নিয়ে) আইরাত মা
আইরাত;; জি বাপি
আবির আহমেদ;; মা আব্রাহাম তাড়াতাড়িতে ওর ফোন এখানেই রেখে গেছে। আর ও তো কোথাও ওর ফোন ছাড়া বাইরে যায়ই না। তুই একটু জলদি বাইরে গিয়ে ওকে ফোন টা দিয়ে আয় না
আইরাত;; (সালা উগান্ডা একটা বাইরে যাবি যা না সব দরকারি জিনিস তো নিজে যাবি কিন্তু না রেখে গেছে ফোন, এখন আমি তো বাপি কে না ও বলতে পারছি না ধুর বাবা ভালো লাগে না,, মনে মনে) জ জি বাপি দিন আমি দিয়ে আসছি।
আবির আহমেদ;; এই নে

আইরাত মুচকি হেসে তার বাপির কাছ থেকে আব্রাহামের ফোন টা নিয়ে বাইরে যেতে লাগলো এবং আব্রাহাম কে বকতে লাগলো। বাইরে আসতেই আইরাত ভাবলো যে ফোনটা একবার অন করে দেখুক। যেই ভাবা সেই কাজ আইরাত ফোনটা অন করলো। অন করতেই দেখলো আব্রাহামের ফোনের ওয়ালপেপারে আইরাতের ছবি দেওয়া। আইরাতের একটা হাস্যজ্জল ছবি ফোনের স্কিনে ভাসছে। এই ছবি গুলো আব্রাহাম যে কখন তুলেছে আইরাত তা নিজেও জানে না। আইরাত বকতে বকতে একদম বাড়ির প্রায় বাইরেই চলে এসেছে কিন্তু ভিতর থেকে দেখা যাচ্ছে যে বাইরে বেশ কিছু মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। আইরাত হাটছে এবং উকি দিচ্ছে।

আইরাত;; কেন মনে হচ্ছে যে বাইরে অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। বেপার কি যাই দেখি তো।

আইরাত হাটতে হাটতে যেই বাইরে এক কদম রাখবে, ঠিক তার সাথে সাথেই আইরাতের চোখের সামনে একটা লোকের মাথায় গুলি লাগলো। লোকটি তার চোখ উল্টিয়ে দিলো এবং পরক্ষনেই মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। লোকটি সোজা গিয়ে আইরাতের পায়ের কাছে পড়েছে। আইরাত বাকরুদ্ধ হয়ে লোকটির দিকে তাকিয়ে আছে। আইরাত যেন বিশ্বাস ই করতে পারছে যে সবে মাত্রই কি হয়ে গেলো। আইরাতের হাত পা সব থর থর করে কাপছে। চোখে পানি টলমল করছে। আইরাত কাপতে কাপতে মাথা তুলে ওপরে তাকাতেই দেখলো আব্রাহাম গুলি হাতে হিংস্র চোখে তাকিয়ে আছে। আব্রাহামের হাতে থাকা গুলি থেকে ধুয়া বের হচ্ছে,, দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে আব্রাহাম ই গুলি করেছে। আব্রাহাম কে এই অবস্থায় দেখে আইরাতের হাত থেকে ফোন নিচে পরে গেলো। আইরাত কান্নারত চোখে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আছে। তার যেন দম আটকে আসছে। আইরাত আশে-পাশে চোখ বুলিয়ে দেখলো যে আরো অনেক লোক প্রায় ১০-১২ জনের মতো মানুষ আধামরা হয়ে পরে আছে। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে আছে আব্রাহামের বডিগার্ড রা। যারা নিচে পরে কাতরাচ্ছে তারা প্রায় মরেই গেছে। মনে হয় না পুনরায় কোনদিন নিজের পায়ের দাঁড়াতে পারবে।
আব্রহাম যেই লোকটিকে গুলি করেছে তার শার্টের কলার ধরে উচিয়ে চিৎকার করতে বলতে লাগলো

আব্রাহাম;; জানোয়ার সাহস কি করে হয়,, বল সাহস কি করে হয় তোদের আমার জানপাখির দিকে নজর দেয়ার। তোদের সাহস অনেক বেশি হয়ে গেছে তাই না,, তোদের সাহস আজ আমি বের করে দিব। তোরা, তোরা আমার আইরাত আমার কলিজার দিকে হাত বাড়িয়েছিস। আজ তোদের কলিজা টুকরো টুকরো করে কেটে আমি রাস্তার কুকুর দের খাওয়াব। তোরা আমার আইরাতের ক্ষতি করতে এসেছিলি তাই না আমার আইরাতের। এখন দেখি তোদের কে বাচায়।

এই কথা বলে আব্রাহাম তার হাতে থাকা Gun এর বাকি সব গুলি গুলো সেই লোকটির বুকে shoot করে দিলো। নদীর পানির মতো রক্ত বইতে শুরু করলো। আইরাত চকমে চিল্লিয়ে উঠলো। আইরাত খিচে চোখ বন্ধ করে দুহাত দিয়ে নিজের কান চেপে ধরলো। আইরাত আর নিতে পারছে না এইসব। প্রচুর ভয়ে আইরাত তার হাত দুটো মুঠিবদ্দ করে বেশ কয়েক কদম পিছিয়ে গেলো। আইরাতের ভয়ে গলা দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না। আইরাত পিছাতে পিছাতে বাড়ির ভিতরে এসে পড়লো। এক সময় সে দৌড়ে একদম বাড়ির ভিতরে চলে গেলো। আব্রাহামের এতোক্ষনে হুস ফিরলো যে আইরাত তো সব কিছু দেখে ফেলেছে। এখন কি হবে।

আব্রাহাম;; Ohh Noo,, আইরাত। আইরাত কেন এখানে এসেছিল। ও তো সব দেখে ফেললো এবার, এবার আমি কি করব। না না যে করেই হোক আইরাত কে সামলাতে হবে, বোঝাতে হবে আমার।
রাশেদ…

রাশেস;; জি স্যার

আব্রাহাম;; মূহুর্তের মধ্যেই যেন এইখান টা একদম আগের মতো হয়ে যায়। কেউ যাতে ভুল করেও টের না পায় যে এখানে আদৌ কিছু হয়েছিল কিনা ওকে,,,

রাশেদ;; জি জি স্যার।

আব্রাহাম তার Gun রাশেদের কাছে দিয়ে গেলো। এবং দৌড়ে বাড়ির ভিতরে চলে গেলো। তার মাথায় এখন শুধু আইরাতের কথা ঘুরপাক খাচ্ছে। তার মনে ভয় আবার বাসা বেধেছে। আইরাত কে হারানোর ভয়। আইরাত যদি আবার আব্রাহাম কে ভুল বুঝে দূরে সরে যেতে চায় তাহলে আব্রাহাম তো মরেই যাবে। সম্ভব না একদমই সম্ভব না আইরাত কে ছাড়া আব্রাহামের থাকা।
আব্রাহাম এসব ভাবছে এবং বাড়িতে যাচ্ছে।
আইরাত একদৌড়ে বাড়ির ভিতরে এসে পরে। কাউকে কিছু না বলেই একেবারে নিজের রুমে চলে যায়। নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে আইরাত ফ্লোরে বসে পরে৷ আইরাতের মাঝে ভয় কান্না দুটোই একসাথে কাজ করছে। মুখে হাতচাপা দিয়ে আইরাত কান্না করতে লাগলো। চোখের সামনে বার বার লাশ গুলো ভেসে আসছে

আইরাত;; আ আব্রাহাম আআআপনি একজন খুনি। খুনি আপনি। আপনি মানুষ মারেন। আআমি নিনিনিজের চোখে আআপনাকে গুগুগুলি করতে দেদেদেখেছি। আপনি খুখুখুনি।

আইরাত এইসব বলছে আর কান্না করেই চলেছে। আব্রাহাম দৌড়ে আইরাতের রুমের সামনে এলো।

আব্রাহাম;; আইরাত আইরাত জানপাখি। জান আমার প্লিজ তুমি আমাকে ভুল বুঝো না প্লিজ দরজা খুলো প্লিজ।

আইরাত আব্রাহামের সব কথা শুনছে কিন্তু দরজা খোলার সাহস আইরাতের নেই। সে কান্না করছে তো করছেই।

আব্রাহাম;; Baby girl,, plz open the door..
Open it just once. জানপাখি মরেই যাবো তোমায় ছাড়া প্লিজ দরজা খোল।

আইরাত;; আপনি যান প্লিজ এখন এখান থেকে। আমি কারো সাথে এখন কথা বলতে চাচ্ছি না, plz leave me alone..

আব্রাহাম;; আইরাত, প্লিজ আমাকে explain করতে দাও। তুমি যা ভাবছো তা নয়। আইরা…

আইরাত;; আপনি শুনেন নি আমি একবার কি বলেছি। যান প্লিজ এখান থেকে।

আব্রাহাম বুঝলো যে এখন আইরাত কে একা থাকতে দেওয়াই ভালো হবে। আর এখন সে কারো কথাই শুনবে না। অবশেষে আব্রাহাম আইরাতের কাছ থেকে এসে পড়লো।

আব্রাহাম নিচে নেমে পড়লো। আবির আহমেদ দেখলো যে আব্রাহামের মন খারাপ তা দেখে আবির আহমেদ জিজ্ঞেস করলো।

আবির আহমেদ;; আব্রাহাম বাবা
আব্রাহাম;; হুম,, হুম বাপি
আবির আহমেদ;; কি কিছু কি হয়েছে
আব্রাহাম;; ক কয় না না তো বাপি
আবির আহমেদ;; তাহলে তোর মুখ ওমন কেন,
আব্রাহাম;; না বাপি কিছু হয় নি সব ঠিক আছে
আবির আহমেদ;; আচ্ছা,, আইরাত মামনি কোথায়
আব্রাহাম;; আছে ও ওর রুমে।
আবির আহমেদ;; আরে রুমে কি করছে যা যা ডেকে নিয়ে আয় সবাই একসাথে খাবো।
আব্রাহাম;; না মানে বাবা আসলে আইরাতের শরীর একটু খারাপ। অনেক ধকল গিয়েছে তো তাই আর কি। ও মনে হয় ঘুমোচ্ছে।
আবির আহমেদ;; ওহহ আচ্ছা আচ্ছা থাক তাহলে ডাকার দরকার নেই। তুই আয় খেয়ে নিবি আমি অয়ন কে ডেকে আসি
আব্রাহাম;; হ্যাঁ বাপি ঠিক আছে।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
অন্য দিকে আইরাত,,,

আইরাত;; আব্রাহাম একজন খুনি। ও ও যে কাউকে খুন করতে পারে। যেখানে ও নিরিহ মানুষদের মারতে পারে সেখানে ও যে কাউকেই মেরে ফেলতে পারে। আমি করবো না করবো না আমি বিয়ে কখনই না। আর যাই হোক একজন খুনি কে আমি বিয়ে করতে পারব না।

আইরাত এই সব কথা ভাবছে এবং একসময় কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লো।

………………রাতে………………..
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
আইরাতের ঘুম ভেংে গেলো। মাথা টা খুব ভার ভার লাগছে তার। কান্না করার ফলে এমনটা হয়েছে। ঘুম থেকে উঠে আবারও আইরাতের সেই মানুষ মারার দৃশ্য গুলো চোখে ভাসতে লাগলো। আইরাত তার দুহাত দিয়ে মাথা চেপে ধরলো। মাথায় ভীষণ যন্ত্রণা হচ্ছে তার। আইরাত ধীরে ধীরে উঠে গিয়ে ফেশ হয়ে আসলো। ফ্রেশ হয়ে আসতেই দরজায় কারো নক করার শব্দ পেলো। আইরাত গিয়ে দরজা খুলে দিলো দেখলো যে তার বাপি দাঁড়িয়ে আছে হাতে খাবার নিয়ে। আইরাত তার বাপি কে দেখে তাড়াতাড়ি করে ভিতরে আসতে বলল।

আইরাত;; আরে বাপি ভিতরে আসুন। আর আপনি কষ্ট করে খাবার নিয়ে আসতে গেলেন কেন
আবির আহমেদ;; আরে না মামনি এতে কষ্ট কিসের। আসলে তুই তো তখন কিছু খাস নি ঘুমিয়ে ছিলি তাই আর ডাকতে চাই নি। মনে পড়লো তুই তো কিছু খাস নি তাই খাবার নিয়ে আসলাম।
আইরাত;; বাপি আমাকে নিচে ডাকলেই পারতেন।
আবির আহমেদ;; না থাক এখন আর যেতে হবে না,, এবার বোস আমার কাছে হা কর আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
আর শোন কেউ কি কারো বাবা কে আপনি বলে ডাকে বল। তুমি করে ডাকবি আমাকে। আমি কি তোর বাবা নই। জানিস আমার না খুব ইচ্ছে ছিলো যে আমার একটা মেয়ে হবে ঠিক তোর মতো এখন মনে হয় যে আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করেছে।

আইরাত আর কিছু না বলে তার বাপির পাশে বসে পড়লো। আর তার বাপি তাকে খাইয়ে দিতে লাগলো। আইরাতের খুব খারাপ লাগছে। কেন যানি আইরাতের খুব কান্না আসতে লাগলো। টুপ করে আইরাতের চোখ থেকে একফোটা পানি গড়িয়ে পরলো।

আবির আহমেদ;; আরে মামনি তুমি কাদছো কেন। কি হয়েছে মা
আইরাত;; বাপি, জানো তুমি না খুব ভালো বাপি।
আবির আহমেদ;; আরে মা (এই বলেই আইরাত আবির আহমেদ কে জড়িয়ে ধরলেন)

এর মধ্যেই অয়ন এলো। এবং দেখলো আইরাত তার বাপি কে ধরে কানছে এবং তার বাপি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।

অয়ন;; উহুম উহুম (দরজায় দাঁড়িয়ে গলা খাকারি দিয়ে)

আইরাত মাথা তুলে দরজায় তাকালো দেখলো অয়ন। আবির আহমেদ অয়ন কে দেখে বলে উঠলো।

আবির আহমেদ;; অয়ন যে দাঁড়িয়ে আছিস কেন ভিতরে আয়
অয়ন;; বাবা মেয়ের আদর দেখে এখন আমি নিজেই একটু এমোশনাল হয়ে গেলাম। তো আদর কি একা শুধু নিজের মেয়ে কেই দিবে নাকি আমার জন্যও কিছু থাকবে।

আইরাত অয়নের কথা শুনে হেসে দিলো সাথে আবির আহমেদ ও।

আবির আহমেদ;; আরে আয় আয় তোরা সবাই আমার কাছে একই।

তিন জন মিলে একটু আকটু আড্ডা দিয়ে যে যার রুমে এসে পড়লো। আইরাত তার রুমের জানালার কাছে বসে পড়লো। এই রুমে এখন আইরাতের দম বন্ধ হয়ে আসে। একা এই এক ঘরে আর কতোক্ষন থাকা যায়। অনেক বোর লাগে এই ঘরে থাকতে থাকতে আর ভালো লাগে না। তবে আইরাতের এই বিয়ে টা করতে বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। কিন্তু আব্রাহাম এই সব মানুষ গুলো কে মিথ্যে বলে রেখেছে যে আমার ও এই বিয়ে তে মত আছে। এই বাড়ির মানুষ গুলো অনেক ভালো আর আইরাত কোন ভাবেই এই মানুষ গুলো কে কষ্ট দিতে চাচ্ছে না নয়তো অনেক আগেই এখান থেকে আবার সে পালানোর চেষ্টা করতো। কিন্তু এখন যদি আইরাত এইখান থেকে পালায় তাহলে এই মানুষ গুলোও কষ্ট পাবে এবং তার সাথে নিজের পরিবারের লোক গুলোর ওপর ও বিপদ আসবে। আইরাত নদীর মাঝ খানে এসে থেমেছে। না যেতে পারছে ডান দিকে আর না ই যেতে পারছে বা দিকে। কি করলে এখান থেকে মুক্তি পাবে সে। আর কোন পথ ই যে আইরাত তার চোখের সামনে খুজে পাচ্ছে না। আইরাত এই সব কিছু ভাবছিলো কিন্তু আইরাতের ভাবনাতে ছেদ ঘটিয়ে অয়ন এলো আইরাতের রুমে

অয়ন;; ভাবি
আইরাত;; আরে অয়ন, এসো ভিতরে এসো
অয়ন;; ভাবি আসলে, আমি তোমাকে কিছু দিতে এসেছিলাম
আইরাত;; কি
অয়ন;; ভাবি এগুলো বাপির ঔষধ। প্রতিদিন তো ভাইয়া নইতো আমি দিয়ে আসি। আজ তুমি দিয়ে আসো। বাপির অনেক ভালো লাগবে। আর এর অভ্যাস করে নাও এখন থেকে কিন্তু রোজ তোমাকেই দিতে হবে।
আইরাত;; হুমমম দাও (হেসে অয়নের কাছ থেকে ঔষধ নিয়ে)
অয়ব;; ভাবি আমি তাহলে আসি
আইরাত;; আচ্ছা

এই বলে অয়ন বেরিয়ে গেলো। আইরাতও তার রুম থেকে বের হয়ে পড়লো তার বাপির রুমে যাওয়ার জন্য। আইরাত তার বাপির কাছে গেলো।

আইরাত;; বাপি আসবো
আবির আহমেদ;; আয় মা আয়। এতে বলার কি আছে আয়।

আইরাত গিয়ে দেখলো আবির আহমেদ বই পড়ছে। আইরাত গিয়ে তার বাপির পাশে বসে পড়লো।

আবির আহমেদ;; কিরে মা কিছু বলবি?
আইরাত;; তুমি এতো ভুলো মন কেন বলতো, তুমি তোমার ঔষধ যে খাও নি তার খেয়াল আছে
আবির আহমেদ;; কেন বাড়িতে দু দুটো ছেলে আর মেয়ে থাকতে আমি খাবো কেন।

আইরাত তার বাপির কথা শুনে হেসে দিল।

আইরাত;; হ্যাঁ হ্যাঁ হয়েছে। এই নাও ধরো এবার ঔষধগুলো খাও।

আবির আহমেদ ঔঔষধ খেয়ে নিলেন।

আবির আহমেদ;; মামিনি অনেক রাত হয়েছে যা এবার ঘুমিয়ে পড় কেমন (মাথায় হাত বুলিয়ে)
আইরাত;; আচ্ছা বাপি, Good night
আবির আহমেদ;; Good night মামনি।

আইরাত তার বাপির ঘর থেকে বের হয়ে পড়লো।
আইরাত;; এখন গিয়ে আবার সেই রুমে বসে থাকো। ধুর ভালো লাগে না। আচ্ছা এই বাড়ি টা তো অনেক বড়ো। অবশ্যই বাড়িতে কোন ছাদ রয়েছে। কিন্তু এই ছাদ টা কোথায়।

আইরাত ভাবতে ভাবতে হাটতে লাগলো। যেতে যেতে আইরাত দেখতে পেলো একটা সিড়ি। সিড়ি টা ঠিক নিচ থেকে উপরের দিকে গিয়েছে। উপরের অংশ থেকে সিড়ির ওপর জোছনার আলোর মতো কিছুটা পড়েছে। এতে সিড়ি টা ভারি সুন্দর লাগছে। আইরাতের তা দেখে বেশ কৌতুহল লাগলো। কিন্তু আইরাত ভাবছে যে এতো রাতে ওখানে যাওয়া টা কি ঠিক হবে। আইরাত দোটানায় পরে গেলো যে যাবে কি যাবে না। একসময় ভাবতে ভাবতে আইরাত কৌতুহল বশত উপরে চলেই গেলো। এবং আইরাত উপরে গিয়ে যা দেখলো তাতে আইরাতের চোখ কপালে উঠে গেল। আইরাত ভাবতেও পারে নি যে এখানে এসে এমন কিছু একটা সে দেখবে ………………..
.
.
.
.
.
.
.
.
🌺🌺চলবে~~~~~
.
.
.
#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#part__ 17

🦋🦋
..
..
..
..
..
উপরে এসে আইরাত যা দেখলো তাতে তার চোখ কপালে উঠে গেলো। আইরাত ভাবতেও পারে নি যে এখানে এসে সে এমন কিছু একটা দেখবে…..

উপরে ছাদ রয়েছে, কিন্তু এটাকে ছাদ বললে ভুল হবে। ছাদটা অসম্ভব সুন্দর। ছাদ ও যে এতো সুন্দর হয় তা আইরাতের জানা ছিলো না,, সব দিক দিয়ে ফুলের গাছ, চাঁদের আলো তে ঝলমল করছে চারিদিক। জোৎসার আলোতে হাসছে সবকিছু। সবকিছু গন্ধরাজ এবং বেলীফুলের সুগন্ধে মৌ মৌ করছে। গাছের ফুলগুলো যেন কথা বলছ। পাশেই বসার জন্য দু একটা সিট রিয়েছে। একটা দোলনা ও রয়েছে। পাশের রাস্তার দুপাশে সারি সারি লাম্প পোস্ট রয়েছে,, তাদের আলোও কিছুটা ছাদে এসে পড়েছে। হালকা হাওয়া বয়ে চলেছে। সব কিছু মিলিয়ে যেন এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। আইরাত অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এক দমকা হাওয়া এসে আইরাতের চুলগুলো কে উড়িয়ে নিয়ে গেলো। আইরাত ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলো। কিছুটা দূরে গিয়ে বুক ভরে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিলো। বহুদিন পর কোন পাখিকে খাচায় আটকে রেখে যখন মুক্ত আকাশে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং সে তার ইচ্ছেডানা গুলো মেলে সেই অসীম আকাশে উড়ে যায় এই সময় ঠিক তেমন অনূভুতি হচ্ছে আইরাতের। মুখের কোণে হাসি ফুটে উঠলো তার।
..
..
..
..
..
..
অন্যদিকে আব্রাহাম সেই দুপুর থেকে ঘরের বাইরে বের হয়নি,, আইরাতের ছেড়ে যাওয়ার ভয় তাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। দেখাও করতে পারছে না সে আইরাতের সাথে কেননা আইরাত চায় না। সিগারেট খেতে খেতে আব্রাহাম এই কথা গুলো আনমনে ভাবছে। অবশেষে আর থাকতে না পেরে আব্রাহাম তার ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়লো আইরাতের কাছে যাওয়ার জন্য।

আব্রাহাম;; আমি জানি না কিভাবে কিন্তু তোমাকে ছাড়তে পারবো না আমি জানপাখি। তুমিই আমার অস্তিত্ব,, আমার মন মস্তিষ্কের সাথে মিশে আছো তুমি। তোমাকে ছাড়া এক কথায় অসম্ভব আমার বেচে থাকা। তোমাকে আমার চাই এবং তোমাকে আমার হতেই হবে তা তুমি চাইলেও আর না চাইলেও।

আব্রাহাম এই কথা গুলো একা একাই বলছে এবং আইরাতের রুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আব্রাহাম গিয়ে দেখলো আইরাতের রুমের দরজা খোলা। তা দেখে আব্রাহামের মাথায় বাজ পড়লো। আব্রাহাম কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো। আব্রাহাম যা ভাবছিলো তা সত্যি হলো না তো। আব্রাহাম তার হাত শক্ত করে মুঠি করে নিলো। আইরাতকে না দেখলে তার মাথায় রক্ত উঠে যায়। রেগে বোম হয়ে গেছে আব্রাহাম। না জানি এখন আইরাত কে সামনে পেলে কি করবে সে। আইরাত না বলেই এতো রাতে রুমের বাইরে কোথায় গিয়েছে তাই ভাবছে আব্রাহাম। সে ভাবছে আইরাত আবার কোন উপায়ে এখান থেকে পালিয়ে টালিয়ে গেলো না তো। আব্রাহাম ভাবছে যে করেই হোক আইরাত কে খুজে আনতে হবে। আব্রাহাম রেগে সেখান থেকে চলে আসতে ধরলে উপর থেকে ছোট বাচ্চার মতো খিলখিল করে হাসির শব্দ তার কানে যায়। আব্রাহাম উপরে তাকিয়ে কপাল হালকা ভাজ করে নেয়।

আব্রাহাম;; ছাদে আবার এতো রাতে কে, আর হাসির শব্দ কোথা থেকে?! যাই গিয়ে দেখতে হবে

আব্রাহাম উপরের দিকে এগোতে থাকল। সিড়ি বেয়ে ওপরে উঠে আব্রাহাম যা দেখলো তাতে আব্রাহামের রাগ এক নিমিষেই পানি হয়ে গেলো। আইরাত ছোট বাচ্চার মতো করে ছাদের এক কিনারা থেকে আর এক কিনারায় দৌড়াচ্ছে। মুখে তার বিশ্বজয়ের হাসি। আব্রাহাম এতো গুলো দিনের মধ্যে কখনোই আইরাত কে এভাবে হাসতে দেখে নি। খোলা হাওয়াতে আইরাতের লাগামহীন চুলগুলো উড়ছে। আইরাত গাছের ফুলগুলো কে ছুয়ে ছুয়ে দেখছে এবং তাদের থেকে সুবাস নিচ্ছে। আব্রাহাম যেন আইরাতে হারিয়ে গেছে। কোনদিকে কোন রকম হুশ নেই তার। চোখের পলক ফেলতেও ভুলে গেছে সে। আব্রাহাম শুধু আইরাত এবং আইরাতের মাঝেই মুগ্ধ। আব্রাহাম দুহাত ভাজ করে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে তার আইরাত কে দেখছে। অনেকক্ষন এভাবে ঘুরাঘুরির পর আইরাত ছাদের এক কোণাতে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো। অনেকদিক পর আইরাত স্বাধীনভাবে নিজেকে উপভোগ করলো। কিন্তু আইরাতের কেন যেন মনে হতে লাগলো যে কেউ তাকে খুব পর্যবেক্ষন করে দেখছে। আইরাত তার আশে-পাশে তাকাতাকি করছে। কিন্তু ঠিক তখনই আইরাত তার কোমড়ে কারো ঠান্ডা হাতের স্পর্শ পেলো। আইরাতের পুরো শরীর কেপে উঠলো। পিছনে তাকাতে চেয়েও তাকাতে পারলো না আইরাত। আব্রাহাম আইরাত কে পিছন থেকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরলো। আইরাত অবাকের চরম পর্যায়। আব্রাহাম আইরাতের ঘাড়ে মুখ গুজে দিলো। আইরাত চেয়েও কিছু বলতে পারছে না। মুখ দিয়ে কোন কিছু বের হচ্ছে না তার,, সে বাকরুদ্ধ।।

আব্রাহাম;; জানপাখি তুমি এভাবে না বলেই এতো রাতে ঘরের বাইরে চলে এসেছ কেন বলত। আমি গিয়েছিলাম তোমার রুমে গিয়ে দেখি তুমি নেই। জানো কতটা ঘাবড়ে গিয়েছিলাম অনেক রাগ ও লেগেছিল আমার। তোমাকে সামনে না পেলে ঠিক থাকতে পারি না আমি। কিন্তু এখন তোমাকে এখানে দেখে আমার প্রাণে প্রাণ চলে এসেছে। ভালোবাসি জানপাখি ভালোবাসি অনেক। প্লিজ কখনো ছেড়ে যাওয়ার কথা মাথায়ও এনো না প্লিজ। তুমি ছাড়া আমি নিঃস্ব। আমি আমার অস্তিত্ব খুজে পাই না তুমিহীন। তোমাকে পেয়ে আমি আমার বেচে থাকার আশা খুজে পেয়েছি। I Love you baby girl love you more then anything…..

এই বলে আব্রাহাম আইরাতের ঘাড়ে কিস করে দিতে লাগলো। আইরাত এক রাশ বিরক্তি নিয়ে আব্রাহামের কাছে দাঁড়িয়ে আছে। ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু লাভ নেই আব্রাহাম নাছোরবান্দা। আব্রাহাম আইরাতকে এমন ভাবে জড়িয়ে ধড়েছে যেন ছেড়ে দিলেই আইরাত হারিয়ে যাবে, চলে যাবে। আইরাতের কানে এখন শুধু একটাই কথা বাজছে তা হলো “” I love you baby girl love you more then anything””…. কিন্তু তখনই আইরাতের সামনে আব্রাহামের সেই হিংস্র চোখ, বাঘের মতো গর্জে উঠা সব কিছুই কেমন ভাসতে লাগলো। মানুষ মারা, Heartless এর মতো গুলি করা,, সব কিছু আইরাতের চোখে ভাসছে । আইরাতের কেমন একটা ভয় ভয় হতে লাগলো। অন্যদিকে আব্রাহাম আইরাতের কোমড় জড়িয়ে ধরে একাধারে কিস দিয়েই যাচ্ছে। আইরাত এক সময় বিরক্তি এবং রাগের বসে নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে আব্রাহাম কে ধাক্কা দিলো। আচকমা এমন হওয়াতে আব্রাহাম কিছুটা ভরকে গেলো এবং কয়েক কদম পিছিয়ে এলো। আব্রাহাম আইরাতের দিকে আহত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। আইরাতের চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরছে। আইরাত কান্না করছে এবং ঘন ঘন নিঃশ্বাস ছাড়ছে।

আইরাত;; ভালোবাসা,, আপনি একে ভালোবাসা বলেন। ভুল আপনি। আপনি কখনোই কাউকে ভালোবাসতে পারবেন না কখনোই না। কেননা একজন খুনি আর যাই হোক কখনোই কাউকে ভালোবাসতে পারে না। জোর করে কোন কিছুই হয় না। আপনি আমাকে জোড় করে এখানে তুলে এনেছেন এবং নিজের বন্দি করে রেখেছেন। এবং আমার উপর নিজের জোড় খাটিয়ে বলছেন যে আপনি আমাকে ভালোবাসেন। একে আর যাই হোক ভালোবাসা বলে না এটাকে জোড় জাবরদস্তি বলে। আপনি জোড় করে আমাকে পেতে পারেন কিন্তু আমার ভালোবাসা আপনি কখনোই পাবেন না। আমি বিয়ে করবো না আপনাকে সম্ভব না আমার পক্ষে, সম্ভব না। যে ভালোবাসে সে অন্যের ইচ্ছার মূল্য দিতে জানে আপনার মতো না যে সবসময় তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে করে। I hate you i just hate you আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী।

আইরাত এই কথা গুলো বলেই দৌড়ে সিড়ি দিয়ে নিচে নেমে তার রুমে চলে যায়। এবং ফুপিয়ে কান্না করতে থাকে।

আইরাত;; পাপা-মামনি প্লিজ কোথায় তোমরা আমাকে এখান থেকে এসে নিয়ে যাও প্লিজ। আমার দম আটকে আসছে এখানে আর ইচ্ছে করে না এখানে থাকার। মিস করি খুব মিস করি তোমাদের।

ছাদে আব্রাহাম সেই একই ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। আইরাতের কথা গুলো ভাবছে সে। আইরাত কখনোই তাকে ভালোবাসবে না,, ভালোবাসতে পারবে না। কিন্তু আইরাত কে ছাড়া তো সে জীবন্ত লাশ হয়ে যাবে। আইরাত কে তার যে কোন মূল্যেই হতে হবে। আব্রাহাম আর কিছু না বলে ছাদের উপর থেকে নেমে সোজা নিজের ঘরে ঢুকে পড়লো।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
পরের দিন সকালে🌅🌄“““““

জানালার পর্দার ফাক দিয়ে সূর্যের আলো আইরাতের চোখে এসে পড়লো। আইরাত ধীরে ধীরে উঠে বসলো। ঠিক সেই সময় তার দরজাতে টোকা পড়লো। আইরাত চোখ ডলতে ডলতে ভিতরে আসতে বললো। তৎক্ষনাত হুড়মুড়িয়ে রুমে কয়েকজন মেয়ে ঢুকলো। আইরাত থ মেরে বসে আছে। অবশেষে আব্রাহাম মেয়েদের মাঝ খান থেকে এসে সামনে দাড়ালো। পরনে তার Ash colour কোর্ট, Black colour পেন্ট+শার্ট, মুখে চাপদাড়ি এবং সেই সাথে কাতিলানা হাসি তো আছেই। আইরাত এই সবকিছু হা হয়ে দেখছে। কি হচ্ছে সে কিছুই বুঝতে পারছে না। কিন্তু আইরাতের ভাবনাতে ছেদ ঘটিয়ে আব্রাহাম বলে উঠলো…..
.
.
.
.
আব্রাহাম;; Very good morning baby girl..
আইরাত;;……………..
আব্রাহাম;; যাক অবশেষে ঘুম তো ভাংলো আমার ঘুমপাখির…
আইরাত;; আপনি এতো সকালে এখানে কেন আর এরা কারা (মেয়ের দের উদ্দেশ্যে)
আব্রাহাম;; ওহ এরা,, এরা হচ্ছে Parlor girls
আইরাত;; মানে এরা এখানে কেন? (হাল্কা ভ্রু কুচকে)
আব্রাহাম;; এরা সবাই আমাকে Date করতে এসেছে তাই
আইরাত;; হ্যাঁ তো যান না বাইরে গিয়ে করুন আপনার এইসব ডেট টেট, এখানে কি করছেন বের হন।আব্রাহাম;; কিন্তু আমার তো তোমাকে শুধুই তোমাকে প্রয়োজন। আইরাতকে চাই আমি…
আইরাত;; মানে কি, আপনি কি আমার সাথে ফাজলামি করছেন😤
আব্রাহাম;; উহু একদম না,, আমি ফাজলামি করার মুড এ নেই এখন।
আইরাত;; তাহলে এরা এখানে কি করছে
আব্রাহাম;; Baby girl ভুলে গেলে এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে,, আজ না আমাদের বিয়ে তুমি কিভাবে ভুলতে পারো বলো।
আইরাত;; কিইইইইইইইইইইইইইইইইই, 😳
আব্রাহাম;; Yes my Queen, এতে এতো অবাক হওয়ার কিছুই নেই। আজই আমাদের বিয়ে আর আমি আজই করবো।
আইরাত;; অসম্ভব।
আব্রাহাম;; কিছুই অসম্ভব না। আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী পারে না এমন কিছুই নেই
আইরাত;; দেখুন আমি আপনাকে এর আগেও বলেছি আর এখনও বলছি আমি আপনাকে ভালোবাসি না আর না ই আপনাকে আমি বিয়ে করতে পারবো। কেন বুঝতে চাচ্ছেন না আপনি
আব্রাহাম;; কিছু কি বললে জানপাখি,, (কিছু যেন হয়নি এমন একটা ভাব নিয়ে)
আইরাত;; you r just impossible,😤
আব্রাহাম;; I know baby এর জন্যই তো বলি যে আমার সাথে লাগতে এসো না। আর শুনো তুমি চাও বা না চাও আর ভালোবাসো বা না বাসো তাতে আমার কোন কিছুই যায় আসে না ওকে। বিয়ে তো তুমি আমাকে করবেই আর তাও আজকেই। আর বেবি আমি তোমাকে এতোটাই ভালোবাসি যে তোমার ভালোবাসার কোন দরকারই নেই। আমার একার ভালোবাসাই আমাদের দুইজনের জন্য যথেষ্ট 😘
আইরাত;; অসহ্যকর
আব্রাহাম;; সহ্য করে নাও।
.
.
.
আব্রাহাম;; আইরাত baby girl,, আরে যাও বসে আছো কেন ফ্রেশ হয়ে আসো জলদি। আর এই যে মেয়েরা তোমরা তাড়াতাড়ি সুন্দর করে আমার জানপাখি কে রেডি করে দাও। কোন কিছুর কমতি যেন না থাকে Get that?!
মেয়েরা;; Yes sir…..

এই বলে আব্রাহাম ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লো। আইরাত তব্দা খেয়ে সেই একই জায়গাতে বসে রয়েছে। আব্রাহাম তাকে তোয়াক্কা না করেই হনহনিয়ে চলে গেলো। রাগে আইরাতের মাথা ফেটে যাচ্ছে। মেয়েদের মধ্যে একজন এগিয়ে এসে আইরাত কে বলল…

মেয়ে;; ম্যাম, আপনি প্লিজ ফ্রেশ হয়ে আসুন। আপনাকে রেডি করাতে হবে

আইরাত অগ্নি চোখে মেয়েটির দিকে তাকালো। এবং চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো

আইরাত;; হবো না আমি রেডি যে তোমাদের কে ডেকেছে তাকেই গিয়ে রেডি করাও,, যত্তসব

এই কথা বলে আইরাত রেগে বিছানা থেকে নেমে ওয়াসরুমে গিয়ে ধিরিম করে দরজা লাগিয়ে দিলো। মেয়েরা সবাই চমকে উঠলো।

মেয়ে;; বাবা রে বাবা দুই জামাই-বউ এর ই আকাশ ছোয়া রাগ। রাগ যেন নাকের ডগায় বসবাস করে।..
..
..
..
..
..
..
..
বেশকিছুক্ষন পরে আইরাত ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে এলো। দেখলো যে মেয়েরা সব কিছু তৈরি করে রাখছে। আইরাতের তা দেখে মাথা খারাপ হয়ে গেলো।

আইরাত;; তোমরা কি একটা কথা বললে শুনো না,, আমি কোন রেডি টেডি হবো না। করবো না আমি এই বিয়ে।

আইরাত এই সব কিছু বলে রাগে টেবিলের উপর থাকা কাচের একটি শো পিস নিচে ফ্লোরে আছাড় দিলো। সাথে সাথে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো। এভাবেই রাগে ঘরের জিনিসপত্র ভাংচুর করছে আইরাত। সব গুলো মেয়েই ভয়ে হীম হয়ে গেলো। তাদের মধ্যে একটি মেয়ে বলে উঠলো

মেয়ে;; ম্যাম ম্যাম প্লিজ ম্যাম আপনি আপনার মাথা ঠান্ডা করুন। এভাবে ভাংচুর করবেন না প্লিজ স্যার দেখলে অনেক রেগে যাবেন। ম্যাম প্লিজ শান্ত হন।

কে শুনে কার কথা। আইরাতের মাথায় এখন রক্ত চড়ে বসেছে। রাগের বসে সব কিছু ভেংে গুড়ো গুড়ো করে দিচ্ছে আইরাত।

আব্রাহাম নিচ থেকে ভাংচুর এর আওয়াজ পায়। দৌড়ে উপরে চলে যায় সে। দরজা খুলে দেখে আইরাত পুরো পাগল হয়ে গেছে। রাগে সব কিছু তছনছ করে ফেলছে সে। আইরাত ইয়ায়া বড় একটা টব তুলেছে ভাংার জন্য কিন্তু তখনই আব্রাহাম এসে আইরাতের কাছে যায়। আইরাত হাত ধরে ফেলে সে। আইরাতের হাত থেকে টব নিয়ে দূরে ছুড়ে ফেলে দেয়। আব্রাহাম আইরাতের দুইবাহু ধরে ঝাকিয়ে বলে….

আব্রাহাম;; আইরাত পাগল হয়ে গিয়েছো তুমি, কি করছ কি এইসব
আইরাত;; হ্যাঁ হ্যাঁ আমি পাগল, আমি পাগল হয়ে গিয়েছে একমাত্র আপনার জন্য। আপনি আমার জীবন টা শেষ করে দিয়েছেন। আমি বিয়ে করবো না পারবো না আপনার সাথে নিজের সারাজীবন কাটাতে। কেন বুঝেন না আপনি কেন (কান্না করতে করতে)

আব্রাহাম হুট করেই এবার আইরাত কে জড়িয়ে ধরে। অনেক শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। আইরাত কান্না করেই যাচ্ছে।

আব্রাহাম;; দেখো বেবি তোমার যতো ইচ্ছা তুমি ভাংচুর কর। যতো খুশি জিনিসপত্র ভাংতে থাকো। তুমি একটা ভাংবে আমি তোমাকে দশটা এনে দিবো। কিন্তু দেখো যদি তুমি ব্যাথা পেয়ে যাও তখন কষ্ট তো আমার ই হবে তাই না। প্লিজ এবার বন্ধ করো জান।।

আইরাত;; (এক ঝটকাতে আব্রাহামের কাছ থেকে সরে এসে) আপনি আসলেই একটা ঘাড়ত্যাড়া লোক, খুব খারাপ আপনি। আমি কি বলছি আর আপনি কি বলছেন। আমি করবো না করবো না বিয়ে আপনাকে। আমি ভালোবাসি ন ন….

আইরাত আর কিছু বলতে পারলো না। তার আগেই আব্রাহাম আইরাতের চুলের মুঠি ধরে সবার সামনে আইরাতকে কিস করতে লাগলো। আব্রাহাম অনেক জোরে আইরাতকে ধরে রেখেছে। আইরাত প্রানপণে ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। রুমে থাকা সব মেয়েরা লজ্জায় নিজেদের চোখ তাদের হাত দিয়ে ঢেকে ফেললো। প্রায় ৫-১০ মি. পর আব্রাহাম আইরাত কে ছেড়ে দিল। আইরাত হাপাতে হাপাতে বেশ কিছুটা দূরে চলে গেলো। আব্রাহাম মুচকি হেসে আইরাতের দিকে তাকিয়ে তার ঠোঁটের কোণা বা হাতের তালু দিয়ে মুছে ফেললো।

আইরাত;; লুচু কথাকার, অসভ্য, বেশরম, ইতর, লোফার। লজ্জা শরমের মাথা খেয়েছেন ঘরে যে আরো কতো মেয়ে রয়েছে তা কি ভুলে গেছেন।
আব্রাহাম;; What, আমি কেন দেখব যে আমার আশে পাশে কে আছে আমার জানপাখি আমার বউ যখন যা ইচ্ছা করবো আমার কোন problem নেই। যার problem সে চোখ ঢাকুক। I totally don”t care baby…

আব্রাহাম ধীরে পায়ে আইরাতের দিকে এগিয়ে গেলো। আইরাতকে একদম দেয়ালের সাথে ঠেকিয়ে ধরে দাড়ালো। আইরাত এবার মাথা নিচু করে ফেলল। আব্রাহাম দু পাশে তার দুহাত রেখে আইরাতের দিকে একদম ঝুকে কানের কাছে গিয়ে বলল…..

আব্রাহাম;; Baby girl, এতো ঘাবড়াচ্ছো কেন বলত। চিন্তা কর না আমি এখন তোমার সাথে কিছুই করব না যা করার তা বাসর ঘরেই করবো। (আইরাতের দিকে তাকিয়ে লুচু মার্কা হাসি হেসে)

আইরাত চোখ রাংিয়ে আব্রাহামের দিকে তাকালো। তার চোখে রাগ স্পষ্ট।

আব্রাহাম;; হায় কয়ি তো রোকলো। জান এভাবে প্লিজ তাকিয়ো না,, ঘায়েল তো হয়েই গেছি এখন মরেই যাবো।
দেখো বেবি ভয় পেয় না এখন তোমাকে কিছুই করবো না। So take it easy ok… বাট বাট বাট কিছু না করেই একদম ছেড়ে দিয়েই তো আমি আর পাচ্ছি না। তো এখন কি করি কি করি।। ওহহ বেবি তুমি তো আমাকে বিয়ে করবে না রাইট,, ওকে করো না।
তাহলে এর পর তোমার পরিবারের সাথে যা হবে তা দেখার জন্য তুমি প্রস্তুত থাকো কেমন (ডেভিল স্মাইল)

আইরাত;; মা মা মানে,, কি বলছেন আপনি?
আব্রাহাম;; listen i am very stright forward… আমি ঘুড়িয়ে পেচিয়ে কথা না নিজে বলি আর না ই পছন্দ করি। সো আমি সোজা সোজি বলছি,, আইরাত তুমি যদি right now আমাকে বিয়ে না করো তাহলে আমি তোমার পিরিবারের ক্ষতি করতে বাধ্য হবো।

আইরাত এবার একদম থমকে গেলো। আইরাত এবার মাথা তুলে আব্রাহামের দিকে অশ্রুসিক্ত চোখে তাকালো।

আব্রাহাম;; দেখো এভাবে তাকিয়ে লাভ নেই আমি আব্রাহাম যা বলি তাই করি। আর যদি তুমি চাও যে এমন কিছু একটা না হোক তবে আমাকে বিয়ে করার জন্য ভালোভাবে রাজি হয়ে যাও।

আইরাত আর কিছুই শুনতে পারছে না। তার কানে শুধু আব্রাহামের বলা কথা বাজছে। আব্রাহাম তার পরিবারের ক্ষতি করে দিবে। আর আইরাত মরে গেলেও তা সহ্য করতে পারবে না। তাহলে কি নিজ হাতে নিজের জীবন এই মানুষ রুপি পশুর নিকট সপে দিবে,, যে কিনা তাকে ভালোবাসি দাবি করে। নিজের পরিবারের ক্ষতি হওয়া থেকে ভালো সে নিজে শেষ হয়ে যাক। আইরাত এইসব ভাবছে এবং মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছে।

আব্রাহাম;; জানপাখি কিছু বলছো না কেন। নিঃশ্চুপ হয়ে আছো কেন। আইরাত Baby girl চুপ থাকা সম্মতির লক্ষণ। তাহলে কি আমি ধরে নিবো যে তুমি বিয়েতে রাজি। And anyway তোমার রাজি না হয়েও কোন উপায় নেই।

আব্রাহাম আইরাতের কপালে চুমু দিয়ে ঘুড়ে দাঁড়ালো। এবং মেয়েদের উদ্দেশ্যে বলল…….

আব্রাহাম;; Dear Girls!!!
মেয়েরা;; জি স্যার….
আব্রাহাম;; আমার জানপাখি কে রেডি করো। And she must be look special ok….
মেয়েরা;; Of course sir…

আব্রাহাম আবার পিছন ঘুরে আইরাতের দিকে তাকালো। আইরাত ও তার দিকে তাকালো। আব্রাহাম সাথে সাথে আইরাত কে চোখ মেরে দিল। আব্রাহাম দ্রুত হেটে রুম থেকে বেরিয়ে পড়লো।
.
.
.
.
.
.
.
.
আইরাত এখনো থ মেরে সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েরা আইরাতকে নিয়ে বসিয়ে দিলো। সবাই ব্যস্ত হয়ে পরল আইরাতকে বধূরুপে সাজানোর জন্য।
আইরাতের সামনে শুধু তার পরিবারের কথা ঘুরপাক খাচ্ছে। শেষে আইরাত তার চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলল এবং তার চোখ বেয়ে দু ফোটা অশ্রুবিন্দু গড়িয়ে পড়লো
.
.
.
.
.
.
🖤🦋চলবে~~~~~

Gangstar In Love Part-14+15

0

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#part__14

🍁🍁
.
.
.
.
.
.
.
.
আইরাত কে পেয়ে যেন চৌধুরী বাড়িতে খুশির বন্যা বয়ে গেলো।

আবির আহমেদ; আয় মা আয় ভিতরে আয়। অনেক বছর পর আমার এই শুন্য পরিবার টাকে তুই এবার পূর্ণ করতে এসেছিস।

আইরাত-আব্রাহাম এক সাথে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করলো। আইরাত সারা বাড়ি চোখ ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে দেখতে লাগলো।

আব্রাহাম; এভাবে দেখার কি আছে। এখন থেকে তো আজীবন এখানেই থাকবে

আব্রাহামের প্রতিটি কথায় আইরাতের রাগ যেন বেড়ে উঠছে বার বার। তবুও নিজেকে যথাসাধ্য সামলে নিচ্ছে। কেননা আব্রাহামের বাবা অনেক ভালো একজন মানুষ। এখন যদি আইরাত কিছু বলে তাহলে তিনি কষ্ট পেতে পারেন। এই ভেবে চুপ করে রেয়েছে।

আবির আহমেদ; আব্রাহাম কিরে তুই বউমা কে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছিস কেন,, ওকে নিয়ে উপরে যা,, রুমে নিয়ে যা কিছু টা ফ্রেশ হয়ে পরে খেতে আয়। আমি আজ সব তোদের পছন্দের খাবার বানিয়েছি। নে যা আইরাত মা কে তার রুম দেখিয়ে দে

অয়ন; আরে ওয়েট ওয়েট,, আমার একমাত্র হবু ভাবি কে আমি নিয়ে যাবো। চলো ভাবি

আইরাত মুচকি হেসে অয়নের সাথে চলে গেলো। অয়ন আইরাত কে নিয়ে উপরে যেতে লাগলো। খুশিতে গদগদ হয়ে অয়ন বলল

অয়ন; ভাবি, আমার না কেন যেন মনে হয় তুমি না অনেক ভালো।
আইরাত; আরে ভাই, কিন্তু তোমার ভাই তো আমাকে ভালো থাকতে দেয় না। সবসময় রাগ দেখায়, হাহ
অয়ন; (ফিক করে হেসে দিয়ে) ভাবি আসলে ভাইয়া এমন ই। বলতে পারো ভাইয়া নারকেল এর মতো। বাইরে থেকে শক্ত আর ভিতর থেকে একদম নরম।
আইরাত; হুমম বুঝলাম,, আর তুমি কি ভাবি ভাবি ডাকা শুরু করলে এখনো তো বিয়ে হয় নি।
অয়ন; ওহহ মেরি পেয়ারি ভাবি, বিয়ে হয় নি কিন্তু হতে কতক্ষন। আমি ভাবতেও পারি না যে আমার ভাই মানে আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী ও প্রেমে পরেছে।
আইরাত; কেন, উনি কি মানুষ নন নাকি প্রেমে পরবে না কেন?
অয়ন; আরে ভাবি তুমি বুঝ নি,, ভাইয়ার আসলে মেয়ে দের থেকে এলারজি আছে। কিন্তু ইদানীং আমার ধারনা ভুল ছিলো এমনকি বাপির ও।
আইরাত; আচ্ছা অয়ন,, তোমার ভাই কি আগে থেকেই এই রকম নাকি! মানে রাগি, জেদি, একগুয়ে?
অয়ন; (এক লম্বা নিঃশ্বাস ফেলে) নাহ ভাবি, সবার জীবন ই গোছালো থাকে, হাসি খুশি থাকে কিন্তু ভাগ্য সবসময় সংগ দেয় না। ঠিক তেমন এ আমার ভাই টার সাথেও হয়েছে। সবই ঠিক ছিলো কিন্তু মাঝ খান থেকে এক ঝড়হাওয়া এসে সব বিখরে দিলো।

আইরাত ভ্রু জোড়া কুচকে অয়নের দিকে তাকিয়ে রইলো।

অয়ন; যাজ্ঞে ভাবি, তুমি এই প্রথম আমাদের বাসায় এসেছো তো এইসব কথা বাদ দেই আমরা।

কথা বলতে বলতে অয়ন আইরাত একটা সুন্দর রুমের সামনে এসে পড়লো। রুমটা খুব সুন্দর করে সাজানো দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে আইরাত আসবে বলে গোছানো হয়েছে।

অয়ন; ভাবি, এই রুমটা তোমার এই কিছুদিন এর জন্য। তারপর তো ভাইয়া আর তোমার রুম একটাই হবে। নাও এবার তুমি জলদি ফ্রেশ হয়ে নিচে এসে পরো কেমন। আমি যাই
আইরাত; আচ্ছা

অয়ন এসে পড়লো। আইরাত বিছানাতে ধোপ করে বসে পড়লো। কি থেকে কি হচ্ছে। আচ্ছা আব্রাহাম কি আইরাত কে নিয়ে তার বাপির কাছে মিথ্যা কথা বলল। হে বলেছে হয়তো। কারণ আব্রাহামের বাপি যদি জানতো যে আইরাত কে আব্রাহাম তুলে এনেছে তাহলে কখনোই আব্রাহামের বাপি চুপ করে বসে থাকতো না আর না ই এতো খুশি থাকতে পারতো। আইরাত ভাবছে সুযোগ বুঝে আব্রাহামের বাপি কে সবকিছু বলে দিবে। তারপর তো আর আব্রাহাম আইরাতকে আর আটকে রাখতে পারবে না। হ্যাঁ, এইটাই বেস্ট আইডিয়া। আইরাত এতো কিছু ভাবতে ভাবতে ফ্রেশ হতে চলে গেলো। প্রায় ১৫-২০ মি. পর আইরাত রুমে এসে পড়লো।

রুমে এসেই আইরাত দেখলো আব্রাহাম বিছানাতে আধা শোয়া হয়ে আছে এবং হাত আড়াআড়ি ভাবে ভাজ করে আছে। আইরাত এভাবে হুট করেই আব্রাহাম কে দেখে চমকে গেলো এবং দিলো এক চিল্লানি।
আব্রাহাম দ্রুত উঠে গিয়ে আইরাতের মুখ চেপে ধরলো।

আব্রাহাম; আরে আস্তে আস্তে,, এভাবে ভুত দেখার মতো চিল্লাচ্ছো কেন!
আইরাত; উম উম্ম উম্মম উম…..
আব্রাহাম; ওহহ সরি সরি (তাড়াতাড়ি করে আইরাতের মুখ থেকে হাত সরিয়ে)।
আইরাত; আহহহ ( জোড়ে জোড়ে দম নিয়ে)। আপনি আসলেই একটা তার ছিড়া পাগল। এভাবে কেও কারো রুমে ঢুকে।
আব্রাহাম; যেখানে মানুষ টা সহ পুরো রুম টাই আমার সেখানে বলে কয়ে কেন আসবো।
আইরাত; ওহ হেলো মিস্টার, কার বউ। আমি বলেছিনা আমি মরে যাবো আপনাকে বিয়ে করবো না।
আব্রাহাম; Baby girl আমাকে বিয়ে না করলে তোমাকে এমনিতেই আমি মেরে ফেলবো। তারপর নিজে মরে যাবো। কিন্তু মূল কথা হচ্ছে এমন দিন কখনো আসবেই না কেননা বিয়ে তো তুমি আমাকেই করবে তাও দুই দিনের মধ্যেই।
আইরাত; না,, আবব……
আব্রাহাম; আর যদি তুমি ভেবে থাকো যে তুমি আমার বাপি কে বলে দিবে তাহলে পুরোটাই ভুল ভাবছো।
আইরাত; প্লিজ আপনি কেন এভাবে আমার জীবন টাকে নস্ট করে দিচ্ছেন। আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি (কেদে কেদে)

আব্রাহাম আইরাতের হাত ধরে টান দিলো। আইরাত টাল সামলাতে না পেরে আব্রাহাম উপর পরে গেলো। আইরাত উঠে আসতে চাইলে আব্রাহাম আইরাতের কোমড় জড়িয়ে ধরে। আব্রাহাম আইরাতের মাথা তার মাথার সাথে ঠেকিয়ে দিলো। আইরাত চোখ বন্ধ করে ফেললো।

আব্রাহাম; আমি তোমার জীবন নষ্ট করতে না বরং তোমাকে আমার জীবনে এনে আমার সাদা কালো জীবন টাকে রঙিন করতে চাচ্ছি। তুমিই সেই রঙধনু যে তার রঙ দিয়ে আমার জীবন টাকে রাংিয়ে তুলবে। জানপাখি I need you.. U have to stay in my life…

আইরাত; (নিজেকে আব্রাহামের কাছ থেকে টেনে সরিয়ে) না, সবকিছুই আপনার মতো করে চলবে না। ভালোবাসি না বাসি না আর কতো আর কতো করে বলবো। আপনি আমাকে এক প্রকার আটকিয়ে রেখেছেন জোর করে। আমি চাইলেও যেতে পারছি না। আমি আর থাকতে পারছি না এখানে,, আমার দম বন্দ হয়ে আসছে। ছেড়ে দিন আমায় প্লিজ (কেদে)

আব্রাহাম এবার রেগে গেলো,

আব্রাহাম; অনেক, অনেক বুঝিয়েছি তোমায় কিন্তু তুমি তো ঘাড় তেড়া। বাকা পথেই চলবে। আইরাত নিজের পরিবারের ভালো চাও তো কোন রকম কোন তাল বাহানা না করে আমায় বিয়ে করতে রাজি হয়ে যাও নয়তো তোমার সাথে এবং তোমার পরিবারের সাথে কি হবে তা তোমার কল্পনার বাইরে

আইরাত; ককি বলছেন আপনি। আপনি এখন আমার পরিবারের পিছনে কেন পরলেন।

আব্রাহাম; ঘি যখন সোজা আঙুলে না উঠে তখন আঙুল বাকা করতেই হয় জান তো জানপাখি।
তোমার বাড়ির চারপাশে ২৪ ঘন্টা নজর রাখছে আমার লোকজন। কে কোথায় যাচ্ছে কি করছে। দেখো বেবি এখন যদি তুমি ভালোয় ভালোয় রাজি হয়ে যাও তাহলে তো ভালোই আর যদি রাজি না হও তাহলে তোমার এই ভুলের মাশুল তোমার পরিবার কে ভোগ করতে হবে।

আইরাত কিছু বলছে না। এক দৃষ্টিতে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আছে। চোখ গুলো তে অশ্রুবিন্দু টলমল করছে।

আইরাত; মানুষ কতটা নিচে নামতে পারে তা হয়তো আপনাকে না দেখলে বুঝতাম না। I hate you i just hate you

আব্রাহাম; তোমার জন্য যতো নিচে নামার আমি নামবো, যা করতে হয় আমি করবো কিন্তু তোমাকে যে কোন মূল্যেই হোক আমার হতে হবে। তোমার পরিবারের কোন ক্ষতি করতে আমি চাই নি সো প্লিজ তুমি আমাকে এমন কিছু একটা করতে বাধ্য করো না। আর রইলো আমার বাপি কে সত্য বলার তাহলে সে খেয়াল তুমি তোমার মাথা থেকে বের করে ফেলো।

আব্রাহাম আইরাত কে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে হনহন করে নিচে চলে আসলো। আইরাত রাগে দুঃখে বিছানাতে বসে দুহাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে কান্না করতে লাগলো। বেশ কিছুক্ষন এভাবে থাকার পর চোখ মুছে আইরাত নিচে আসলো।

আবির আহমেদ; আরে মা তাড়াতাড়ি আয়। বোস বোস

আইরাত দেখলো ডাইনিং টেবিলে হাজার টা পদের খাবার। আইরায় চোখ বড় বড় করে আবির আহমেদ এর দিকে তাকালো।

আবির আহমেদ; কিরে মা এভাবে কি দেখছিস। তুই আসবি বলেই আমি এতো কিছু রান্না করেছি।

হঠাৎ আব্রাহাম ধপ করে আইরাতের পাশে বসে পড়লো। আইরাত এক রাশ বিরক্তি নিয়ে মুখ ঘুড়িতে নিলো। সবাই খেতে বসলো কিন্তু আবির আহমেদ সেই সময় হঠাৎ বলে উঠলো

আবির আহমেদ; আইরাত মা যদি তুই মনে কিছু না করিস তাহলে একটা কথা বলি
আইরাত; জি আংকেল বলুন
আবির আহমেদ; যদি তুই মনে কিছু না করিস তাহলে আমি তোকে নিজের হাতে তুলে খাইয়ে দিই

সাথে সাথে আইরাতের চোখজোড়া ভিজে উঠলো। তার পাপার কথা মনে হতে লাগলো। আইরাত বাসায় থাকতে কখনোই তার নিজ হাতে খেতো না হয়তো তার আম্মু নইতো তার পাপা তাকে খাইয়ে দিতো। তবে পাপাই বেশি খাইয়ে দিতো। আজ পাপার কথা খুব করে মনে পড়ছে। পাপার সাথে দেখা হয় না কতো দিন তার। আইরাত আর কিছু না বলে মুখে হাসি ফুটিয়ে হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ালো।

আবির আহমেদ পরম আদরে আইরাত কে তুলে খাইয়ে দিতে লাগলো। আইরাত চোখের পানি ফেলতে লাগলো। আবির আহমেদ তা খেয়াল করলেন

আবির আহমেদ; আরে একি মা তুই কান্না করছিস কেন। মা-বাবার কথা মনে পরছে বুঝি।

আইরাত অশ্রুসিক্ত চোখে আবির আহমেদ এর দিকে তাকালো

আবির আহমেদ; আরে পাগলি মা আমার কান্না করে না এভাবে। আজ থেকে আমি ই তোর মা আমি তোর বাবা ঠিক আছে। আর শুন আমাকে কিন্তু ওইসব আংকেল টাংকেল কোন কিছু বলতে পারবি না। আব্রাহাম-অয়নের মতো করে বাপি ডাকতে হবে

আইরাত; আচ্ছা বাপি

আবির আহমেদ; এইতো আমার লক্ষি মেয়ে। নে এবার হা কর দেখি

আব্রাহাম; আমাদের দিকেও তো কেও দেখো। বাপি তো আমাদের ভুলেই গেলো। সব আদর ওকে দিচ্ছে😒

অয়ন; আর বাপি যে আমাকে ঠিক কবে লাস্ট খাইয়ে দিয়েছিলো তাও আমার মনে নেই

আব্রাহাম-অয়নের কথা শুনে আবির আহমেদ এবং আইরাত ফিক করে হেসে উঠলো।

আবির আহমেদ; সর তোরা, আমার মেয়ে এসেছে আমি এখন থেকে আমার মেয়ে কেই আদর করবো। তোরা ভাগ

আব্রাহাম-অয়ন আহত দৃষ্টিতে আইরাত আর আবির আহমেদ এর দিকে তাকিয়ে থাকতে লাগলো।

আইরাতের খাওয়া শেষে আবির আহমেদ আইরাতকে তার রুমে যেতে বলল এবং রেস্ট নিতে বলল। আইরাত ভালো মেয়ে মতো তার রুমে চলে গেলো। এবার আবির আহমেদের উদ্দেশ্যে আব্রাহাম বলে উঠলো

আব্রাহাম; বাপি
আবির আহমেদ; হুমম বল
আব্রাহাম; বাপি আমি চাচ্ছি আইরাত আর আমার বিয়ে আগামি দুইদিনের মধ্যেই সেরে যাক
আবির আহমেদ; আরে তুই তো আমার মনের কথা বলে দিলি। যতো জলদি সম্ভব আইরাত মামনি কে বিয়ে করে ফেল। আমরাও তাই চাই। তাহলে আগামীকাল থেকেই আমি তোদের বিয়ের আয়োজন শুরু করি কি বলিস?!
অয়ন; আরে বাপি বলা বলির কি আছে বিয়ের কাজ শুরু করো। বিয়ে এমন হওয়া উচিত যেন সবাই তাক লেগে যায়।
আব্রাহাম; 😅।

খাওয়া দাওয়া শেষে সবাই যে যার রুমে চলে গেলো। আব্রাহাম রুমে গিয়ে ফোনে কথা বলতে লাগলো

রাশেদ; স্যার, সকল information পেয়ে গেছি
আব্রাহাম; হুমম
রাশেদ; স্যার, কালো টাকার কালো বাজারে সবার আগে নাম উঠে এসেছে আশরাফুল আহমেদ এর। তিনি ই সব কিছুর মূল।
আব্রাহাম; আমি জানতাম এমন কিছু একটাই হবে। রাশেদ Call the media, নিউজ টা যেন পাবলিক হয়ে যায়। প্রতিটি চ্যানেলে যেন হেডলাইন এইটাই হয়। শুশুড়মশাই এর সবকিছু তিলে তিলে শেষ করে দিবো আমি।
রাশেদ; জি স্যার

রাত ঘনিয়ে এলো। সবাই যে যার রুমে। কিন্তু আইরাতের চোখে ঘুম নেই। সারা ঘর পায়চারি করছে সে। চিন্তায় মগ্ন সে।

আইরাত; পালানোর তো কোন পথ এখন আর খোলা নেই। তাহলে কি নিজের সাথে যা হতে যাচ্ছে তা চুপচাপ মেনে নিবো। নিজের জীবন টাকে এভাবে শেষ করে দিবো। আর যদি এখান থেকে পালিয়েও যাই তাহলে নিজের পরিবারের ক্ষতি হবে। নিজের চোখের সামনে তো আর নিজের পরিবারের ক্ষতি দেখতে পারবো না। না না আর কিছুই ভাবেতে পারছি না। মাথা ফেটে যাচ্ছে।।

আইরাত এই সব কিছু ভাবছে। অবশেষে আইরাত কেদে উঠলো। বালিশে মুখ গুজে কাদতে লাগলো।
অন্য দিকে আব্রাহামের ও একই দশা সে আইরাতের কথা ভেবে ঘুমাতে পারছে না। একসময় আব্রাহাম উঠে আইরাতের রুমে যেতে লাগলো। আব্রাহাম নক না করেজ আইরাতের রুমে ঢুকে পোড়ল। আইরাত তো পুরা বাচ্চার মতো করে কানছিলো কিন্তু আব্রাহামের এভাবে রুমে এসে পড়াতে আইরাত মুখ তুলে তাকালো।
আইরাতের চোখমুখ সব ফুলে গেছে কান্না করতে করতে,, আইরাতের কান্নারত মুখ দেখে আব্রাহামের বুকের বা পাশে মোচড় দিতে উঠলো।

আব্রাহাম; আমি তো এমন করতে চাই নি জানপাখি। এভাবে তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনি। কিন্তু কি করবো বলো তোমাকে না পেলে আমি মরেই যাবো। আর আমার চাচাজান কেও তো তার কর্মের ফল ভোগ করতে করতে হবে বল (মনে মনে)

আইরাত; কেন এসেছেন আপনি (চোখ মুছতে মুছতে)
আবার আমাকে কষ্ট দিতে এসেছেন। প্লিজ চলে যান
আব্রাহাম; জানপাখি, আমি তোমাকে কষ্ট দিতে না ভালোবাসতে এসেছি। && Baby girl এভাবে কেন কান্না করছ বলত। আরে এখন ই এভাবে কান্না করলে বিয়ে তে কি করবে। বিয়ের জন্য কিছু তো বাচিয়ে রাখো।

আইরাতের রাগ হতে লাগলো প্রচুর। কিন্তু আব্রাহাম তাকে অবাক করে দিয়ে আইরাতের পাশে গিয়ে শুয়ে পড়লো।
আইরাত সাথে সাথে বিছানা থেকে উঠে গেলো।

আইরাত; আরে আরে একি আপনি এখানে কেন শুয়েছেন?
আব্রাহাম; তো কি করবো। তোমাকে ছাড়া আমার ঘুম আসছে না তাই এসে পরলাম। যানো তো তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারি না
আইরাত; এতো রাতে এটা কি ধরনের পাগলামি। প্লিজ উঠুন আপনি এবং আপনার রুমে যান।
আব্রাহাম; দেখ আমি অনেক জেদি টাইপের মানুষ। আর এতো টাও ভালো না যে তুমি বলবে আর আমি সাথে সাথে চলে যাবো কখনই না। এবার তুমি ভালো মেয়ের মত এদিকে আসো দেখি
আইরাত; না ( এই বলে আইরাত আর কিছুটা দূরে সরে দাড়ালো)
আব্রাহাম এবার আর কিছু না বলে হালকা উঠে আইরাতের কোমড় ধরে দিলো এক টান। আইরাত হুমড়ি খেয়ে আব্রাহামের উপরে পরে গেলো।

আইরাত; আহহহহ, কি করছেন কি আপনি
আব্রাহাম; জানপাখি এখনো কিছুই করিনি। আর আমি এতোটাও খারাপ না যে এখনই সব করে ফেলবো। যা করার বিয়ের পর তখন চাইলেও তুমি আমার থেকে দূরে পালাতে পারবে না।

আইরাত; এবার কিন্তু বেশি বারাবারি হচ্ছে

আব্রাহাম আর কোন কথা না বলে খপ করে আইরাতের ঠোঁটে কিস করে বসলো। আইরাত অনেক ধাক্কাচ্ছে কিন্তু কিছু লাভ নেই। ৫-১০ মিন পর আব্রাহাম আইরাত কে ছেড়ে দিলো।

আব্রাহাম; একে বলে বারাবারি। আর তেমন কিছুই করিনি আমি। তুমিই বাড়িয়ে বলছিলে এর জন্য বারাবারি টা দেখিয়ে দিলাম।

আইরাত; কুত্তা,হারামি,গরু,ছাগল,ভেড়ার বাচ্চা, কুমির, হাতি, ধলা বিলাই, পাগলের বাচ্চা সাইকো (মনে মনে)

আব্রাহাম; এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে না থেকে আমাকে না বকে ঘুমিয়ে পড়ো।

আইরাত;😒😒

আব্রাহাম; ঘুমাও এখানেই

আইরাত আর কিছু না বলে বাধ্য মেয়ের মতো আব্রাহামের বুকেই ঘুমিয়ে পড়লো।

……….পরেরদিন সকালে🌞🦋““““““““`
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
In নীড় মহল………

ডাইনিং টেবিলে আশরাফুল আহমেদ মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে।

আতিয়া আহমেদ; কি হলো বসে রয়েছ কেন, কিছু তো খাও
আশরাফুল আহমেদ; কি আর খাই মেয়ে বাসা থেকে নিখোঁজ আজ ৫ দিন কেউ কোন খবর পাচ্ছে না। সকল অফিসার রা হন্ন হয়ে খুজেও পেল না আমার মামনি কে। না জানি কোথায় আছে কেমন আছে কি করছে

আতিয়া আহমেদ; দেখ তুমি দেখ আমাদের আইরু একদিন ফিরে আসবেই শুধু সময়ের অপেক্ষা (কেদে কেদে)

আয়ুশ; আম্মু আম্মু,, আপি কি আবার আমাদের ছেড়ে চলে গেলো। দূরে চলে গেলো

আতিয়া আহমেদ; না বাবা, তোমার আপি কোথাও যাই নি এখানেই আছে। এবার তুমি খেয়ে নাও

ডাইনিং টেবিলে সবাই বসে ছিল ঠিক সেই সময় দুলাল(আশরাফুল আহমেদ এর সাথে কাজ করে) দৌড়ে আসলেন এবং অস্থির হয়ে বলতে লাগলেন

দুলাল; স্যার স্যার স্যার
আশরাফুল আহমেদ; আরে দুলাল যে কি হয়েছে এভাবে দৌড়ে আসছ কেন। সব ঠিক আছে তো
দুলাল; না স্যার না কিছুই ঠিক নেই। স্যার রহিম মোহাম্মদ যিনি এতো দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন উনার লাশ পাওয়া গেছে ব্রীজের নিচে। লাশ পচে গেছে চিনার উপায় নেই তার আইডি কার্ড থেকে তার পরিচয় পাওয়া গেছে
আশরাফুল আহমেদ; কিহ, কি যা তা বলছ এইসব
দুলাল; জি স্যার আমি ঠিক ই বলছি। স্যার আপনি টিভি অন করুন সব চ্যানেল দেখুন। আপনার কালো টাকার ব্যবসার খবর সব জায়গা তে লিগ হয়ে গেছে। প্রতিটি টিভি চ্যানেলে তা ব্রেকিং নিউজে দেখানো হচ্ছে। স্যার সব কিছু লন্ডভন্ড হয়ে গেল প্লিজ আপনি দেখুন।
.
.
.
.
.
.
.
.
আশরাফুল আহমেদ হন্তদন্ত হয়ে টিভি অন করলো এবং দেখলো যে দুলাল যা বলছে তার সবটাই ঠিক।আশরাফুল আহমেদ এর কালো বাজারি সবার সামনে এসে পড়েছে এবং সবার আগে নাম উঠে এসেছে আশরাফুল আহমেদ এরই। এই সব দেখে আশরাফুল আহমেদের মাথা ৪৪০° ঘুরে গেলো। সোফার ওপর ধোপ করে বসে পড়লেন তিনি।
.
.
.
.
.
.
.
🤎চলবে~~~~

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#writer; Tamanna Islam

#part__15

❣️❣️
..
..
..
..
..
আশরাফুল আহমেদ ধপ করে সোফার ওপর বসে পরলেন। তিনি কিছু ভেবে পাচ্ছেন না। কে তার পিছু লাগলো। তার সবকিছু বরবাদ করে দিতে উঠে পরে লাগলো। টিভি তে বারবার বলছে “আজকের ব্রেকিং নিউজ, কালো টাকার পর্দা ফাস এবং সবার আগে নাম খোলাসা হলো প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা আশরাফুল আহমেদ চৌধুরীর” বার বার এই একই খবর বলছে প্রত্যেক চ্যানেলে। আশরাফুল আহমেদ আর সহ্য করতে না পেরে উঠে দাঁড়িয়ে হুক্কার ছেড়ে রিমোট টিভির গ্লাসে জোড়ে এক ঢিল মারলেন। এক বিকট শব্দ হয়ে টিভি অফ হয়ে গেলো। রাগে সাপের মতো ফুসছেন তিনি।

আশরাফুল আহমেদ;; কে কে করছে এসব। আমি গত ২৫ বছর যাবৎ এই রাজনীতি তে রয়েছি কেউ আজ পর্যন্ত চোখ তুলে তাকানোর সাহস পায় নি কিন্তু আজ, আজ আমার সব কালো বাজারি জনগনের সামনে এসে পড়েছে। কোন হারামির বাচ্চা এমন করছে আমি ছাড়বো না ছাড়বো না আমি ওকে। (জোড়ে চিল্লিয়ে)

আশরাফুল আহমেদ রেগে চিল্লিয়ে কথা গুলো বলছিলেন ঠিক সেই সময় তার ফোনে আবার ও আননোন নাম্বার থেকে Call আসে।

আশরাফুল আহমেদ;; হ্যালো
……………. ;; আরে এতো চিল্লাচ্ছো কেন শশুড়মশাই। এই জোড়ে কথা বলার অভ্যাস এখনো গেলো না তোমার তাই না। আস্তে কথা বলতে শিখো কেননা এইটা তো শুধু ট্রেইলার ছিলো এর পরের কাহিনি দেখলে না ই তুমি বড়ো গলা করে কথা বলতে পারবে আর না ই তুমি সেই অবস্থায় থাকবে।
আশরাফুল আহমেদ;; হারামজাদা, কেন আমাদের পিছনে পরেছিস তুই। কি চাস কি তুই? দেখ এর পরিনাম কিন্তু ভালো হবে না। আমার সাথে টক্কর দিতে আসিস না বললাম
……………. ;; দেখো আমি যা চাই তা তো আমি বলে কয়ে নিই না, সোজা কেড়ে নিই। আর আমার যা চাই তা আমি নিয়েই নিয়েছি। আর কথা হলো তোমাকে টক্কর দেয়ার তাহলে না আমি তোমাকে টক্কর দিতে না শুধু তোমার সাথে কিছু পুরনো হিসেব বরাবর করতে এসেছি।
আশরাফুল আহমেদ;; কিসের পুরনো হিসেব কি বলতে চাচ্ছিস?
…………… ;; তোমার কিছু পুরনো অতীত। ইতিহাসের পাতা ঘেটে দেখতে পারো।
আশরাফুল আহমেদ;; দেখ তুই আমার যা করার কর কিন্তু আমার মেয়ে তো তোর কাছে। আমার মেয়ের যেন কিছু না হয়। আমার মেয়ের একটা টোকা লাগলে তোকে জানে খতম করে দিবো।
…………… ;; হাহাহা, পারবি না কখনোই তা তুই পারবি না। আর এইটাও মাথায় রাখ তুই যে তোর মেয়ে এখন আমার কাছে। আমার যখন ইচ্ছা আমি তোর মেয়ের সাথে তাই করতে পারি। আর তোর মেয়ের চিন্তা বাদ দে। আমার জানপাখি আমার কাছে চিন্তা কিসের। তুই এখন শুধু তোর নিজের চিন্তা কর আর ঘড়ির কাটা গুনা শুরু করে দে। কেননা খুব দ্রুতই তুই আরো একটা ধামাকার খবর শুনবি।………………… (রেগে ফোন কেটে দিলো)

আশরাফুল আহমেদ;; আমি তাকে মেরেই ফেলবো। আম……. হ্যালো হ্যালো হ্যা….

আব্রাহাম এতোক্ষন আশরাফুল আহমেদের সাথে কথা বলছিলো। কথা বলছিলো বললে ভুল হবে আব্রাহাম তাকে ধমকি দিচ্ছিলো। হঠাৎ ফোন কেটে দেওয়ায় আশরাফুল আহমেদ চিল্লিয়ে ফোন নিচে আছাড় দিলো। এবং দুলাল কে বলতে লাগলো

আশরাফুল আহমেদ;; দুলাল, যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব সবকিছু ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করো। খবর যেন আর বেশি না ছড়াতে পারে এবং সবাই যেন এটা জানতে পারে যে এটা একটা ভুয়া খবর ছিলো। যতো টাকা লাগে নাও। যতো লাগে আমি দিবো কিন্তু তবুও সবার মুখে তালা লাগাও।
দুলাল;; জি জি স্যার।

এই বলে দুলাল তাদের বাসা থেকে বের হয়ে গেলো। আশরাফুল আহমেদ মাথা ধরে বসে পরলেন। তিনি কিছুই বুঝতে পারছেন না। এতো বছর পর আবার কে এলো যে তার পরিবারের সুখ শান্তি কেড়ে নেয়ার পিছনে পড়লো। এরই মধ্যে আতিয়া আহমেদ এলো। একটু আগে যা কিছু হয়েছে তিনি সব কিছুই দেখেছেন।

আতিয়া আহমেদ;; একটা কথা জানো তো যে মানুষ যা করে ফল সরুপ তাই পায়। তুমিও তাই পাবে যা তুমি অতীতে করে এসেছো। অতীত মানুষের পিছু ছাড়ে না কখনো কোন না কোন ভাবে তা সামনে আসেই। আমি যদি সেদিন জানতাম যে তুমি তোমার বড় ভাই-ভাবির সাথে এমন কিছু করতে যাচ্ছো তাহলে আমি কোনদিন ও ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতাম না। আমি বুঝি নি যে আমি এক অমানুষের সাথে ঘর করছি, এক অমানুষ কে ভালোবেসেছি। যা করে এসেছো তুমি তার জন্য না ই তোমাকে আল্লাহ ক্ষমা করবে আর না ই কোনদিন তোমার অতীত তোমার পিছু ছাড়বে। কখনো কখনো বাবা-মার কর্মের জন্য তাদের সন্তানদের বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। আজ আমার আইরাত আমার কাছ থেকে দূরে আর তা শুধুই তোমার জন্য। মনে রেখো এটা তোমার কর্মের ফল।

এই বলে আতিয়া আহমেদ রেগে চলে গেলেন। আশরাফুল আহমেদ আগের মতোই মাথায় হাত দিয়ে বসে রইলেন।
তিনি পুলিশ অফিসারদের এবং এসইপি কে খবর দিলেন। কিছুক্ষন পর তারা নীড় মহলের এসে হাজির হলেন।

অফিসার;; স্যার, ওই লোকটি আপনাকে যে নাম্বার থেকে call করেছিলো আমরা তা ট্রেক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি কিন্তু কাজ হচ্ছে না।
আশরাফুল আহমেদ; অফিসার আপনি যে করেই হোক ওই কামিনা কে খুজে বের করুন।
অফিসার;; জি স্যার আমরা তাকে যে কোন মূল্যে বের করে আনবো। কিন্তু স্যার পুরো শহর তো আপনার সেই কালো টাকার বাজারের খবর নিয়ে থই থই।
আশরাফুল আহমেদ;; অফিসার আপনার যতো টাকা লাগে আপনি নিন। বেপার টাকে ধামাচাপা দিন as soon as possible…
অফিসার;; জি স্যার,
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
চৌধুরী ভবন………….।।।।।।।।।

সূর্যের আলো আইরাতের চোখে পড়লো। এতে আইরাত কিছুটা বিরক্ত হলো। ধীরে ধীরে চোখ খুলে তাকালো, দেখলো যে সকাল হয়ে গেছে। পাশে তাকিয়ে দেখলো আব্রাহাম নেই। আইরাত বিছানাতে উঠে বসলো। আইরাতের তার আম্মুর কথা মনে পড়ে গেলো। বাসায় থাকতে আইরাত কখনোই নিজে একা উঠতে পারতো না। তার মাকে রোজ রোজ একতরফা যুদ্ধ করতে হতো তাকে ঘুম থেকে জাগানোর জন্য। আইরাত আনমনেই এইসব ভেবে হেসে উঠলো। কিন্তু আম্মু তো আর ডাকে না এখন একা একাই ঘুম ভেংে যায় আইরাতের। আবার আইরাতের মুখের হাসি খানা উড়ে গেলো। বিছানা থেকে নেমে ফ্রেশ হতে চলে গেলো। ফ্রেশ হয়ে এসে নিচে নেমে পড়লো আইরাত। সিড়ি দিয়ে নিচে নামার সময় আবির আহমেদ আইরাতকে দেখতে পেলেন।

আবির আহমেদ;; কিরে মা উঠে পড়েছিস। ঘুম কেমন হলো তোর?
আইরাত;; হ্যাঁ বাপি ভালো (মুচকি হেসে)
আবির আহমেদ;; নে আয় খেয়ে নে।

আইরাত খাবার টেবিলে বসে পড়লো। অয়ন রুম থেকে বেরিয়ে এলো সেও টেবিলে বসে পড়লো।

অয়ন;; Good morning Cute ভাবি
আইরাত;; হুম morning

আইরাত আশে পাশে তাকাতাকি করতে লাগলো। অয়ন তা খেয়াল করে আইরাত কে বলে উঠলো

অয়ন;; ভাবি কাওকে খুজছো?
আইরাত;; ককই না না তো
অয়ন;; হুমম বুঝেছি বুঝেছি। চিন্তা করো না ভাইয়া একটু বাইরে গেছে রাস্তায় আছে আসছে।

অয়নের কথায় আইরাত একটু লজ্জাই পেলো। আবির আহমেদ অয়নকে ধমক দিয়ে বললেন।

আবির আহমেদ; আহা অয়ন, কেন মেয়েটা কে জালাচ্ছিস। খেতে দে আর তুই ও খা। আইরাত মামনি তুই খাওয়া শুরু কর তো ওর কথায় কান দিস না

আইরাত মলিন হেসে খাওয়া শুরু করলো। কিছুক্ষন পরেই আব্রাহাম বাসায় আসলো।

আব্রাহাম;; Hlw everyone
অয়ন;; ভাই এসে পড়েছিস। বোস বোস
আবির আহমেদ;; তোর জন্য মেয়েটা সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছে এই তোর আসার সময়। তাড়াতাড়ি খেতে বোস।

আবির আহমেদ এর কথায় আইরাত কিছু টা বোকা বলে গেলো। কেননা আইরাত যাকে দুচোখেও দেখতে পারে না আর সে কিনা অপেক্ষা করছিলো তাও আবার এই খাটাস টার জন্য। আবির আহমেদ এর কথা শুনে আব্রাহাম এক ভ্রু উচিয়ে কিছুটা বাকা হাসলো। আইরাতের পাশে বসে পড়লো।

আব্রাহাম;; Ohh really?! (আইরাতের দিকে তাকিয়ে)

আইরাত মুখ ঘুড়িয়ে নিলো। খাওয়ার মাঝ খানে আব্রাহাম বলে উঠলো।

আব্রাহাম;; বাপি, বলছি কি খাওয়া দাওয়া শেষে রেডি হয়ে নাও। আমরা সবাই মিলে শপিং এ যাবো, বিয়ের শপিং।

আব্রাহামের কথা শুনে আইরাতের খাবার গলায় আটকে পড়লো। কাশতে কাশতে শেষ হচ্ছে। সবাই পানি দেয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়লো। আব্রাহাম আইরাতের মাথায় আস্তে করে বারি দিতে লাগলো।

আবির আহমেদ;; আস্তে মা আস্তে। দেখে শুনে খাবি তো।
অয়ন;; ভাবি ধীরে ধীরে পানি খাও।
আব্রাহাম;; হঠাৎ বিয়ের শপিং এর কথা শুনে কাশি উঠে গেলো কেন তোমার?

আইরাত অসহায় দৃষ্টিতে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে রইলো। আইরাতের কাশি কমে এলো। সবাই আবার বসে খেতে শুরু করলো। আব্রাহাম নিচে তাকিয়ে ফিসফিস করে বলতে লাগলো

আব্রাহাম;; শুনো যতো বাহানাই করো না কেন তোমার আর আমার বিয়ে হচ্ছেই আর তোমাকে আমাদের সাথে যেতেও হবে
আইরাত;; যাবো না আমি, আমার শরীর ভালো ঠেকছে না।
আব্রাহাম;; হুমম বুঝেছি একটু আদর লাগবে তোমার খাওয়া শেষ করো তারপরে বুঝাচ্ছি।

আইরাত ফাটা দৃষ্টিতে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে থাকলো

আব্রাহাম;; বেবি প্লিজ এভাবে তাকিয় না নিজেকে কোন্ট্রোল করতে পারি না।

আইরাত সাথে সাথে চোখ নিচে নামিয়ে ফেললো।

সবাই যার যার খাওয়া শেষ করে রুমে চলে গেলো। আইরাত রুমে এসে ভাবতে লাগলো যে কি করে আব্রাহাম কে শপিং এ যাওয়া থেকে আটকাতে পারে। ভাবতে ভাবতে রুমে কেউ প্রবেশ করলো। আইরাত পিছনে ঘুরে দেখলো যে আব্রাহাম।

আইরাত;; এই রে মরেছে এই পাগলের বাচ্চা তো এসে পড়লো এখন বলবে শপিং এ যেতে। কিন্তু আমি তো যাবো না এখন একে আটকাই কি করে(মনে মনে)

আব্রাহাম;; এতো ভেবে লাভ নেই আমরা যাচ্ছি,, চলো
আইরাত;; না মানে আমার শরীর টা ভালো না যেতে পারবো না
আব্রাহাম;; তাই না

এই বলে আব্রাহাম আইরাতের দিকে এগোতে লাগলো এবং আইরাত পিছাতে লাগলো

আইরাত; কি কি হলো আপনি এভাবে এগোচ্ছেন কেন। প্লিজ থামুন সামনে বাড়বেন না।

কিন্তু আইরাতের কথার পুরো উলটা করে আব্রাহাম একদম আইরাতের সামনে এসে পড়লো এবং আইরাত কে এক হাত দিয়ে দেয়ালে চেপে ধরলো। আইরাত অন্য দিক দিয়ে যেতে ধরলে আব্রাহাম আবার তার হাত দিয়ে আটকে দিলো। আব্রাহাম ফু দিয়ে আইরাতের চুল গুলো উড়িয়ে দিলো। আইরাত তার চোখজোড়া বন্ধ করে ফেলল। আইরাতের ঠোঁট জোড়া কাপছে যা আব্রাহামকে চুম্বকের মতো কাছে টানছে। আব্রাহাম ক্রমশ আইরাতের ঠোঁটের দিকে এগুতে লাগলো। আইরাত আব্রাহামের নিশ্বাস অনুভব করতে পারছে। যার ফলে সে আরো খিচে চোখ বন্ধ করে ফেললো। আব্রাহাম আইরাতের ভীত চেহারা টা দেখে মুচকি হাসি দিলো। আইরাতের এই মায়াভরা চেহারা টাই আব্রাহাম কে পাগল করে ছেড়েছে। আব্রাহাম আইরাতের কপালে এক দীর্ঘ চুমু দিয়ে দূরে সরে এলো। কিছু করছে না টের পেয়ে আইরাত চোখ মেলে তাকালো। এবং দেখলো আব্রাহাম তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে দাঁড়িয়ে আছে।

আব্রাহাম;; জানপাখি বাহানা না করে get ready..

আইরাত ভীত চোখে ছোট ছোট করে আব্রাহামের দিকের তাকালো তার এবং মাথা আস্তে করে এপাশ ওপাশ করলো অথ্যাৎ না সূচক। আব্রাহাম আর কিছু না বলে আইরাত থেকে একটু দূরে গিয়ে দুহাত আড়াআড়ি ভাবে ভাজ করে আইরাত কে উপর থেকে নিচে এক নজর দেখে নিলো।।

আব্রাহাম; যেমন আছো চলবে,, চলো।

এই বলে পরক্ষনেই আব্রাহাম আইরাত কে কোলে তুলে নিলো। আইরাত তো পুরাই অবাক।

আইরাত;; আরে আরেএ কি করছেন টা কি নিচে নামান নিচে নামান বলছি।
আব্রাহাম;;………………….
আইরাত;; নামাতে বলছি না আপনাকে। কি করছেন আপনি আর কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে?
আব্রাহাম;; এটা কথা না শুনার ফল এবার ভোগ করো।

আব্রাহাম আইরাত কে কোলে করে নিচে নিয়ে এসে পড়লো।

আব্রাহাম;; করিম চাচা(ড্রাইভার) গাড়ি বের করো Fast

করিম চাচা আর কিছু না বলে দ্রুত গাড়ি বের করে বাড়ির বাগানে নিলো। আব্রাহাম আইরাতকে কোলে করে নিয়েই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এলো। বের হয়ে দেখলো আবির আহমেদ এবং অয়ন বাইরে ওদের জন্য অপেক্ষা করছে। অয়ন আব্রাহাম আর আইরাতকে এভাবে দেখে হেসে দিলো।

আব্রাহাম;; আব্বে ওই আমার বউ আমি যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে নিবো,, এতে লোকে যা ইচ্ছা বলুক I really Don’t care… জাহান্নামে যাক আর তুই দাত কেলানো বন্ধ কর নইতো তোর দাত আর দাতের জায়গায় থাকবে না বুঝলি।

অয়ন সাথে সাথে মুখ অফ করে ফেললো। আইরাত ইচ্ছে মতো আব্রাহাম কে গালি দিতে লাগলো।

আইরাত;; হনুমান একটা লাজ লজ্জার মাথা খেয়েছে, নিজের বাপি ভাইয়ের সামনে কেউ এভাবে আসে। আমাকে চেঞ্জ পর্যন্ত করতে দেই নি হারামি, কুত্তা।

আইরাত কে লজ্জায় পরতে দেখে আবির আহমেদ বলে উঠলো….

আবির আহমেদ;; আইরাত মা, কি করবি বল আমার ছেলেটা এমন ই। কারো পর‍য়া করে না। নে নে এবার সবাই উঠে বস।

আইরাত আব্রাহামের দিকে তাকালো। আব্রাহাম সাথে সাথে আইরাত কে একটা চোখ মারলো

আইরাত;; অসভ্য কোথাকার (মনে মনে)

আব্রাহাম আইরাতকে নিয়ে সামনে বসে পড়লো। আবির আহমেদ এবং অয়ন পিছনের সিটে। আব্রাহাম ড্রাইভ করতে শুরু করলো। আব্রাহাম আইরাতের দিকে তাকিয়ে দেখে আইরাত মুখ দুগাল ফুলিয়ে বসে আছে।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
একসময় তারা শপিংমলে চলে এলো। প্রথমেই তারা চলে গেলো লেহেংার দোকানে। মলের মেনেজার আব্রাহাম এবং তার বাপিকে দেখে দাঁড়িয়ে গেলো। এবং দ্রুত তাদের কাছে গেলো

মেনেজার;; আরে এ আমি কাকে দেখছি,, মি. আবির আহমেদ চৌধুরী এবং মি. আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী। আপনারা আমার মলে এসেছেন। আমি যাস্ট বিলিভ করতে পারছি না। আপনারা কেন কষ্ট করে আসতে গেলেন আপনারা শুধু একটাবার ফোন করতেন। আমরা আমাদের বেস্ট ডিজাইনার দের আপনাদের কাছে পাঠিয়ে দিতাম।

আব্রাহাম;; আরে না না ঠিক আছে।

মেনেজার;; স্যার প্লিজ আপনারা ভিতরে আসুন।

আব্রাহাম-আইরাত-আবির আহমেদ-অয়ন সবাই ভিতরে গেলো। আবির আহমেদ মেনেজারের উদ্দেশ্যে বললেন

আবির আহমেদ;; মি. রনি(মেনেজার)
মেনেজার;; জি স্যার বলুন
আবির আহমেদ;; আমার ছেলের বিয়ে, বেস্ট কাপড় গুলো দেখান
মেনেজার;; জি স্যার অবশ্যই,, তা আর বলতে
আবির আহমেদ;; হুমমম
মেনেজার;; লিয়া, পুরো মলের বেস্ট এবং ডিজাইং কাপড় গুলো নিয়ে এসো জলদি

দোকানের সবাই লেগে পরলো আব্রাহাম এবং আইরাতের কাপড় সিলেক্ট এর জন্য। মেনেজার বেস্ট থেকে বেস্ট জিনিসগুলো দেখাতে লাগলো কিন্তু আইরাতের ওদিকে কোন খেয়াল ই নেই। সে মন মরা হয়ে বসে রয়েছে। আব্রাহাম নিজের পছন্দেই আইরাতের জন্য বেশ অনেকগুলো কাপড় নিয়ে নিলো। মোট তিনটে লেহেংগা নিলো আব্রাহাম। সবই তার পছন্দের। একটা মেরুন কালার, একটা এস কালার আর সাদা কালারের মিক্স, আর একটা মিস্টি কালারের। আব্রাহাম অয়ন জমিয়ে বিয়ের শপিং করতে লাগলো। কিন্তু আইরাতের এই সবের কিছুই যেন ভালো লাগছে না। আইরাতের বিয়ে নিয়ে কতো কল্পনা-জল্পনা ছিলো যে বাবা-মা-আয়ুশ সবাই থাকবে খুব ধুম ধাম করে বিয়ে করবে। অনেক মজা করবে বান্ধবী দের সাথে। এখনো বিয়ে তো হচ্ছে কিন্তু নিজের ইচ্ছে তে না, নিজের মতে না। বরং এক প্রকার জোর করেই বিয়ে হচ্ছে আইরাতের। যেখানে কেউ নেই না ই বাবা মা আয়ুশ আর না ই কোন বন্ধবী। আর নিজের Life partner এর কথা না হয় না বলাই থাক। আইরাত এই সবকিছুই এখন ভাবছে……..

🥀🥀চলবে~~~~

Gangstar In Love Part-12+13

0

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#part__12

🍁🍁
.
.
.
.
.
.
.
.
সকালে🌞…….

আব্রাহাম; বাপি, আমি অফিসে যাচ্ছি (সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে) আর অয়ন তুই ও চলে আসিস

অয়ন; আচ্ছা ঠিক আছে ঠিক আছে (খেতে খেতে)

আবির আহমেদ; আরে কিন্তু কিছু তো খেয়ে যা

আব্রাহাম; না বাপি আমি পরে অফিস থেকে কিছু খেয়ে নিবো,, এখন আমি যাই। নিজের খেয়াল রেখো

আবির আহমেদ; আচ্ছা সাবধানে যাস।

আব্রাহাম বাড়ি থেকে চলে আসলো। কিন্তু অফিসে না গিয়ে সে তার কটেজে চলে গেলো যেখানে আইরাত রয়েছে। বেশ কিছুক্ষন ড্রাইভ করার পর আব্রাহাম কটেজে এসে পড়লো। বাসায় গিয়েই আব্রাহাম ড্রোইং রুমে দাড়ালো এবং রুবিনা কে ডাকতে লাগলো…

আব্রাহাম; রুবিনা,, রুবিনা

রুবিনা; জজজি স্যার (ছুটে এসে)

আব্রাহাম; তোমার ম্যাম কোথায়?

রুবিনা; সসস্যার, আইরাত ম্যাম কাল যে রুম লক করে ভিতরে ঢুকেছে আর তো বাইরে আসেনি। আমি অনেক চেষ্টা করেছি,, অনেক ডেকেছি ম্যাম কে কিন্তু ম্যাম বের হয় নি

আব্রাহাম; Ohh No, কাল একটু বেশিই rude behave করে ফেলেছি আমি আমার জানপাখির সাথে। না জানি কিছু উলটা-পাল্টা করে ফেললো না তো।

এই বলে আব্রাহাম দৌড়ে উপরে চলে গেলো। আব্রাহাম গিয়ে দেখলো রুম ভিতরে থেকে লোক করা। আব্রাহাম কয়েকবার knock করলো দরজাতে কিন্তু খোলার নাম নেই।

আব্রাহাম; আইরাত Baby girl, plz open the door… আমি কাল একটু বেশিই বাজে ব্যবাহার করে ফেলেছি তোমার সাথে, যা করা আমার মোটেও ঠিক হয় নি। আইরাত প্লিজ দরজা খুলো জান
………………………………………………..

আব্রাহাম; জানপাখি এমন করে না, প্লিজ দরজা খোল baby আর এমন হবে না I am sorry plz forgive me একটা বার দরজা খোল
………………………………………………..

আব্রাহাম; (এবার আব্রাহামের রাগ উঠে গেলো কারণ অনেক ধাক্কানোর পরেও আইরাতের দরজা খোলার নাম নেই) আইরাত I am telling you for the last time…. Open the door আইরাত আমি কিন্তু দরজা ভেংে ফেলবো
……………………………………………….

আব্রাহাম আর কিছুই না বলে এক লাথি দিয়ে দরজা ভেংে ফেললো। আব্রাহাম হুড়মুড় করে ভিতরে ঢুকে পড়লো। এবং যা দেখলো তাতে আব্রাহাম পুরোই অবাক। আইরাত কাল যেমন ছিলো এখনো তেমনই আছে। কাল কে আব্রাহাম রুমে যে ভাংচুর করেছিলো এখনো ঠিক তেমন ভাবেই সবকিছু ভেংে পড়ে আছে আর আইরাত গুটিসুটি মেরে বিছানার এক কোণে ঘুমিয়ে আছে, গভীর ঘুম। আইরাতকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে কাল রাতে অনেক কেদেছে সে,, চোখের নিচে দাগ স্পষ্ট। আব্রাহামের আইরাতকে দেখে বেশ মায়া লাগলো। আব্রাহাম ধীর পায়ে আইরাতের দিকে এগিয়ে গেলো আইরাতের পাশে বসলো। আইরাতের দিকে বেশ কিছুটা ঝুকে আব্রাহাম বলতে লাগলো…….

আব্রাহাম; I am sorry জানপাখি i am really sorry। আমার তোমার উপর এতো টা রেগে যাওয়া উচিত হয় নি। সব সবকিছু আমার জন্য হয়েছে। Sorry

এই বলে আব্রাহাম আইরাতের কপালে চুমু একেঁ দিলো। আইরাতকে কোলে তুলে নিলো আব্রাহাম,, এবং যাওয়ার সময় সার্ভেন্ট কে বলে গেলো

আব্রাহাম; ১০ মি. এর মধ্যে যেন এই রুম ক্লিন হয়ে যায় ওকে।

সার্ভেন্ট; জি স্যার

আব্রাহাম আইরাতকে কোলে তুলে নিয়ে অন্য রুমে চলে গেলো। সাবধানে আইরাতকে বিছানাতে শুইয়ে দিলো। আইরাতের কপালের উপর এসে পরা ছোট ছোট চুলগুলো আলতো করে সরিয়ে দিলো। আব্রাহাম বার বার sorry বলতে লাগলো এবং ঠোঁটে বার বার চুমু খেতে লাগলো। আর আইরাত তো গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।
আব্রাহাম আইরাতের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ পরেই আইরাতের ঘুম ভেংে গেলো। আইরাত চোখ মেলতেই দেখলো আব্রাহাম তার দিকে অপলোক ভাবে তাকিয়ে আছে। আইরাত ধীরে ধীরে চোখ মেলে পুরো রুম টা একবার দেখে নিলো। আইরাত উঠে বসলো। মাথা টা কেমন যেন ঝিম ঝিম করছে তার।

আব্রাহাম; Baby girl খুম ভাংলো তাহলে। পুরো ১৩ ঘন্টা ঘুমিয়েছো তুমি ।

আইরাত; আআআপনি এখানে কখন, কিকিভাবে?

আব্রাহাম; যাহ বাবা সবকিছু ভুলে গেলে নাকি, আচ্ছা সব ভুলো ঠিক আছে কিন্তু আমাকে ভুলে যেও না তাহলেই হবে (মেকি হাসি দিয়ে)

আইরাত; আমি চাই না আপনার চেহারা দেখতে কিন্তু জানি না কেনো প্রতিবার চোখ খুললেই সবার আগে আপনাকে দেখতে হয়

আব্রাহাম; দেখতে হবে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত দেখতেই হবে জান। Btw তাড়াতাড়ি উঠে পড়ো কাল থেকে কিছুই মুখে তুলো নি তুমি আমি যেভাবে রেখে গিয়েছিলাম সেভাবেই আছো। উঠো ফ্রেশ হও আমি খাবার আনছি।

আইরাত; আমি আব……..

আব্রাহাম; Shusssssssssssssss…. একদম চুপ কোন কথা না (আইরাতের ঠোঁটে আংুল দিয়ে)। ইদানিং অনেক বেশি বক বক করো তুমি। আর যদি খাওয়া নিয়ে কিছু বলেছো তো আমি কিন্তু উল্টো পথে বেশ ভালো করেই খাওয়াতে জানি। এখন কি তুমি চুপচাপ খাবে নাকি আমি কিছু করবো??!!

আইরাত; এই যে পাগল,, কে জানে না খেলে কখন আমাকেই মেরে ফেলে। না বাবা থাক আমি এতো সহজে মরতে চাই না এর থেকে ভালো খেয়ে নিই (মনে মনে)

আব্রাহাম; Good, নিজের ভালো পাগলেও বুঝে আর তুমিও বুঝতে পেরেছো

আইরাত;মনে মনে কথা বল্ব শান্তি নেই…………………

আব্রাহাম; না নেই।

আইরাত বিছানা থেকে দ্রুত নেমে ফ্রেশ হতে চলে গেলো। আব্রাহাম আইরাতের জন্য খাবার আনতে গেলো। আইরাত ফ্রেশ হয়ে আব্রাহাম কে রুমে দেখলো না এতে একটু ভালো লাগলো আইরাতের। কিন্তু তার কয়েকমিনিট পরই আব্রাহাম রুমে এলো ট্রে তে করে খাবার নিয়ে। আব্রাহাম রুমে ঢুকে দেখলো আইরাত তার চুল বাধছে। আব্রাহাম আর এক মূহুর্ত দেরি না করে আইরাতের পিছনে দাঁড়িয়ে গেলো। আব্রাহাম আইরাতের পেট চেপে ধরে নিজের দিকে টেনে নিলো,, আইরাতের কাধের চুলগুলো সরিয়ে নিজের থুতনি আইরাতের কাধে রাখলো। আইরাতের ঘারে নাক ঘসতে ঘসতে আব্রাহাম বলে উঠলো……..

আব্রাহাম; আমার সামনে কখনোই নিজের চুল বাধবে না ওকে। তোমাকে, তোমার চুলকে দেখার অধিকার শুধুই আমার বুঝলে। তাই কখনোই আমার সামনে চুল বাধবে না। আজকে এমন করেছো করেছোই এর পর থেকে যেন এমন না হয় বুঝলে।

আইরাত যেন পুরা পাথর হয়ে গিয়েছে,, নড়াচড়া করছে না কোন কথা বলছে না, আব্রাহাম আইরাতের মাথার কাটা টা খুলে দিলো,, আইরাতের চুলগুলো ঝড়ঝড় করে পিঠের উপর ছড়িয়ে গেলো। আব্রাহাম আইরাতের চুলে মুখ গুজে দিলো। এরে আইরাত কিছুটা কেপে উঠলো। কিছু সময় পর আব্রাহাম আইরাত কে ছেড়ে দাঁড়ালো।

আব্রাহাম; Baby come খেয়ে নাও,, কিছুই খাওয়া হয় নি। এদিকে আসো আমি খাইয়ে দিচ্ছি।

আইরাত কিছু বলছে না, সে সেখানেই ঠাই দাঁড়িয়ে আছে। এবার আব্রহাম উঠে গিয়ে আইরাত কে টেনে নিজের সামনে বসিয়ে দিলো। আব্রাহাম আইরাতের মুখের সামনে খাবার তুলে ধরলো

আব্রাহাম; হা করো
আইরাত;……………….
আব্রাহাম; বেশি নেকামি না করে হা করো

আইরাত আর কিছু না বলে খেয়ে নিলো চুপচাপ। কারণ জানে যে বেশি খাবো না খাবো না করলে কপালে শনি, রবি, সোম সবই আছে।

আব্রাহাম আইরাত কে খাইয়ে দিলো। খাওয়া শেষে আব্রাহাম আইরাত কে নিজের সামনে ঠাই বসিয়ে দিলো এবং গালে হাত দিয়ে তাকিয়ে থাকতে লাগলো

আইরাত; কি হলো, এভাবে তাকিয়ে থাকার কি আছে?
আব্রাহাম; দেখছি
আইরাত; কি
আব্রাহাম; তোমাকে
আইরাত; প্রথম দেখছেন নাকি,, এতো দেখার আছে
আব্রাহাম; ও তুমি বুঝবে না

আব্রাহাম এবার হুট করেই আইরাতের কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো। আইরাত কি করবে কিনা করবে বুঝছে না। আব্রাহাম আইরাতের কোলে মাথা রেখে আরামে শুয়ে থাকতে লাগলো

আইরাত; আপনি তো বালিশেও শুয়ে থাকতে পারেন নাকি
আব্রাহাম; হ্যাঁ, বালিশে শুয়ে থাকতে পারি কিন্তু তোমার কাছে যতো টা শান্তি পাওয়া যাবে তা আর কোথাও পাবো না। এবার চুপ করে থাকো তো।

আইরাত বুঝলো যে একে হাজার বলেও লাভ নেই তাই চুপ করে রইলো। কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকার পর আব্রাহাম বলল………

আব্রাহাম; জানপাখি, জানো খুব ভালোবাসি তোমাকে খুব। প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না কখনো তাহলে আমি তুমিহীন মরেই যাবো। তোমার মাঝে আমি প্রথম আমার বেচে থাকার কারণ খুজে পেয়েছি আমাকে একা ফেলে রেখে প্লিজ দূরে যেও না। থেকে যাও না আমার কাছে। ভালোবাসি,অনেক ভালোবাসি আইরাত

কথা বলতে বলতে আব্রাহামের চোখের কোণে পানি জমে গেল। আইরাতের কেন জানি আব্রাহামের প্রতি অনেক মায়া হতে লাগলো। কিন্তু পরোক্ষনেই তার প্রতি আব্রাহামের অত্যাচারের কথা মনে পড়ে গেলো আইরাতের। এবং আইরাত চেতে উঠলো। এক ঝটকাতে আব্রাহাম কে নিজের থেকে সরিয়ে দিলো।

আইরাত; হাহা,, হাসালেন আপনি। যে ছেলে কোন মেয়ের সম্মান করতে পারে না,, তুলে এনে নিজের কাছে বন্দি করে রাখে সে ভালোবাসে তাও আবার আমাকে। আমি থাকবো না আপনার কাছে। আপনাকে আমি ভালোবাসি না আর কখনো ভালোবাসতেও পারবো না বুঝেছেন আপনি।

আব্রাহাম হাহা করে হেসে উঠলো খুবি ভয়ংকর ভাবে হেসে উঠলো। যা শুনে আইরাতের শরীরের রক্ত হীম হয়ে গেলো। আব্রাহাম পাগলের মতো করে হাসছে। একসময় হাসি থামিয়ে আব্রাহাম দুহাত দিয়ে মাথা চেপে ধরলো। আসলে মূলত আব্রাহাম তার রাগ টাকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে এভাবে হেসে কেননা সে আইরাতের সাথে যা করেছে তা আর সেই পুনরায় রিপিট করতে চাচ্ছে না। কিন্তু আব্রাহাম আইরাতের দিকে রাগি চোখে তাকালো। আইরাত পারছে না কান্না করে দিতে। সে ভাবছে কাল তার সাথে যা হয়েছে আজ ও কি তাই হবে নাকি

আইরাত; এই মরেছে আবার আমি তাকে রাগিয়ে দিলান এখন, এখন যদি তিনি আবার আমাকে,,,, এই না না না না কি সব ভাবছি আমি আল্লাহ এই বারের মতো বাচিয়ে নাও না প্লিজ ( মনে মনে)

আব্রাহাম; কিভাবে আমার থেকে দূরে থাকতে পারো আমি তাই দেখবো মিস. নুজাইফা বিনতে আইরাত।
সামনে তোমার জন্য খুব বড়ো একটা Surprise ওয়েট করছে, যা তুমি কল্পনাও করতে পারবে না বেবি। So get ready for that (ডেভিল স্মাইল)

আব্রাহাম হন হন করে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো এবং রুবিনা কে আইরাতের উপর কড়া নজর রাখতে বলে গেলো।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
In নীড় মহল……

আশরাফুল আহমেদ; অফিসার, আমার মেয়ের কোন খোজ পেলেন আপনারা?

অফিসার; স্যার, আমরা আমাদের বেস্ট ট্রাই করছি আপনার মেয়ে কে খুজে আনার

আশরাফুল আহমেদ; কি, এখনো আপনারা চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছেন। অফিসার যদি আমার মেয়ে সহি-সালামত আমার কাছে না ফিরে আসে তাহলে আপনাকে অকালে আপনার চাকরি আর জীবন দুটোই হারাতে হবে, mind it

এই বলে আশরাফুল আহমেদ রাগে গজগজ করতে করতে ফোন কেটে দিলো। মেয়ের চিন্তা যেন তাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
আব্রাহাম তার অফিসে বসে আছে আর হাতে গ্লোব নিয়ে ঘুরাচ্ছে। ভাবতে ভাবতে সে তার বাপি কে ফোন দিলো।

আব্রাহাম; বাপি, আমি ভাবছি যে আইরাত কে আজই আমাদের বাসায় এনে পড়ি

আবির আহমেদ; আরে হ্যাঁ হ্যাঁ এতো অনেক ভালো কথা,, তুই বাবা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব আইরাত মাকে নিয়ে আয়। আরে আমি ও তো দেখবো আমার পুত্রবধূকে তাই না

আব্রাহাম; বাপি আমি কাল ই আইরাত কে আমাদের বাসায় নিয়ে আসবো

আব্রাহামের যেন খুশির সীমা নেই। অবশেষে,, অবশেষে আইরাত আব্রাহামের হতে যাচ্ছে।

রাতে,,,,,,,

আব্রাহাম আইরাতের কাছে গেলো এবং গিয়ে দেখলো আইরাত জানালার দিকে ঘুরে বসে আছে, দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে ওর মন খারাপ। আব্রাহাম মুচকি হেসে আইরাতের কাছে গেল। রুমে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে আইরাত পিছনে ঘুরে তাকালো।

আব্রাহাম; Baby girl, তোমার জন্য একটা breaking news আছে।
আইরাত;………………..
আব্রাহাম; Guess what?!
আইরাত;………………..
আব্রাহাম; আচ্ছা থাক আমি ই বলে দিচ্ছি কিছুদিন পর “”আমাদের বিয়ে””

আব্রাহামের কথা শুনে যেন আইরাতের মাথায় আকাশ ভেংে পড়লো। সে ভেবে পাচ্ছে না কি করবে আর কি বলবে। আইরাত পুরোপুরি Shock.

আব্রাহাম; আরে আমি তোমাকে এতো সুন্দর একটা news দিলাম আর তুমি এভাবে statue হয়ে বসে আছো। Come on yaar কিছু তো বলো

আইরাত; ককককি বববলছেন আআপনি। বিবিবিয়ে মামানে কার বিয়ে কিসের বিয়ে

আব্রাহাম; আরে আরে এতো ঘাবরে যাচ্ছো কেন। আমি বলেছি “আমাদের বিয়ে,, আব্রাহাম+আইরাতের বিয়ে”

আইরাত; অসম্ভব, এটা একদম অসম্ভব। আমি কখনোই আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না কখনোই না।

আব্রাহাম; কেন, কারণ কি? আমি কি দেখতে খারাপ নাকি! ( দুহাত ছড়িয়ে)

আইরাত; দেখুন বুঝেও অবুঝ এর মতো আচরণ করবেন না। আমি না ই আপনাকে ভালোবাসি আর না ই আপনাকে বিয়ে করতে পারবো।

আব্রাহাম; দেখো চাপাচাপি করে তো লাভ নেই বিয়ে তো তোমাকে আমায় ই করতে হবে। জানপাখি দেখো আমি তোমাকে জোর করে বিয়ে করতে চাচ্ছি না কিন্তু যদি তুমি আমাকে তা করতে বাধ্য করো তাহলে আমি তাই করবো। So, প্লিজ নিজের বিপদ নিজে ডেকে এনো না,, ভালোই ভালোই রাজি হয়ে যাও।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
🍁চলবে~~~~

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#part__13

🍁🍁
.
.
.
.
.
.
আইরাত; আপনি একটা কথা মাথায় রাখুন আমি মরে যাবো তবুও আপনাকে বিয়ে করবো না,, শুনেছেন আপনি করবো না।

আব্রাহাম; Right now, i am not interested to argument with you… আর সময় ই বলে দিবে যে কে কাকে বিয়ে করে

আব্রাহাম রুম থেকে বেরিয়ে পড়লো। আইরাত তো রাগে ফেটে পরছে। নিজের চুল নিজেরই এখন ছিড়তে ইচ্ছে হচ্চে তার। রেগে আইরাত হাতের সামনে যা পাচ্ছে তাই ভেংে ফেলছে। আব্রাহাম কটেজ থেকে ফিরে এলো। ড্রাইভিং সিটে বসে কানে এয়ার পড লাগিয়ে ড্রাইভ করতে লাগলো। আব্রাহাম রাশেদ কে ফোন দিলো

আব্রাহাম; রাশেদ, আমার হাজার খানেক ক্যাকটাস গাছ লাগবে!
রাশেদ; ক্যাকটাস গাছ? কিন্তু কেন স্যার,, ওই গাছগুলোতে অনেক বিশ থাকে স্যার। একবার গায়ে ফুটলে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর ব্যাথার কথা তো না বললাম
আব্রাহাম; Yeah, i know that, but i need that..
রাশেদ; ওকে স্যার পেয়ে যাবেন আজ রাতের মধ্যেই
আব্রাহাম; Good… Btw রাশেদ, আশরাফুল আহমেদ এর খবর কি?
রাশেদ; স্যার, কে তার ঔষধের কারখানা পুড়িয়ে দিয়েছে উনি তাকে দিন রাত এক করে খুজছেন।
আব্রাহাম; হাহা ভালো তো, খুজতে দাও দেখি বের করতে পারে কি না। রাশেদ, এই এলাকায় যতো কালো টাকার ব্যাবসা আছে তার সব Information চাই আমার within 1 hour ok?!
রাশেদ; জি স্যার পেয়ে যাবেন।

আব্রাহাম গাড়ি ঘুরিয়ে চৌধুরী ভবনের দিকে নিয়ে গেলো।

অয়ন; ওই দেখো জামাই এসে গেছে

আব্রাহাম; Wait, what!

আবির আহমেদ; আরে অয়ন এখন থেকেই তোর বিয়ে নিয়ে পরে গেছে, তোর বিয়ে তে এই করবে সেই করবে

অয়ন; আরে করবো না, এক মাত্র ভাই এর বিয়ে বলে কথা। আর আমার অবশ্য একটা প্লেন আছে যে হবু ভাবির কোন বোন বা বান্ধবী থাকলে আমার সুবিধা হতো আর কি😇

আব্রাহাম; 😡😡

অয়ন; 🤐😒

আব্রাহাম; বাপি, আমি কাল আইরাত কে বাসায় নিয়ে আসবো। তো…….

আবির আহমেদ; তো আমরা আমাদের মেয়ে কে বরণ করে আনতে পারবো তা নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না

আব্রাহাম; না মানে

আবির আহমেদ; হয়েছে হয়েছে আর না মানে ইয়ে
মানে করতে হবে না রুমে গিয়ে রেস্ট নে কাল অনেক কাজ আছে

আব্রাহাম; হ্যাঁ বাপি

আব্রাহাম সিড়ি বেয়ে ওপরে চলে গেলো। ফ্রেশ হয়ে খেয়ে দেয়ে ল্যাপটপে কাজ করতে লাগলো। সেই সময় রাশেদের ফোন আসলো।

আব্রাহাম; হ্যাঁ বলো
রাশেদ; স্যার, হাজার ক্যাকটাস পেয়ে গেছি
আব্রাহাম;Great…. কি করতে হবে যানো তো!
রাশেদ; জি স্যার
আব্রাহাম; Then go do it
রাশেদ; ওকে স্যার

আব্রাহাম ফোন রেখে দিল। এবং এক সময় ঘুমিয়ে পড়লো।

পরেরদিন সকালে🌞………..

আব্রাহাম রেডি হয়ে নিলো। white colour জিংস্ , white colour শার্ট, Sky blue colour জেকেট & shoes, হাতে ব্রেন্ড watch, Silky চুল 🥰 বেস রেডি হয়ে গেলো আব্রাহাম। নিচে নেমে এলো।

আব্রাহাম; বাপি, বাপি
অয়ন; আরেএএএ ওয়াহহহহহ, এইটা কি আমার দাদাভাই নাকি, আজ অনেক বেশিই Handsome লাগছে তোকে
আব্রাহাম; Thank u thank u
আবির আহমেদ; আব্রাহাম বাবা বাইরে যাচ্ছিস?
আব্রাহাম; হ্যাঁ বাপি, আমি আইরাতের কাছে যাচ্ছি
আবির আহমেদ; যা জলদি যা,, তাড়াতাড়ি আইরাত মাকে বাড়ি নিয়ে আয়
আব্রাহাম; আচ্ছা বাপি আমি যাই

আব্রাহাম বের হয়ে পড়লো আইরাত কে আনার উদ্দেশ্যে। আব্রাহামের মনে শুধু এখন এক্টাই কথা বার বার আসছে আর তা হলো যে করেই হোক আইরাতকে তার হতেই হবে, আইরাতকে তার আপন করে নিতেই হবে। আইরাত শুধুই আব্রাহামের।
গাড়ি চালাতে চালাতে আব্রাহাম কটেজের সামনে এসে দাড়ালো। মুখে ভুবন ভুলানো হাসি নিয়ে আব্রাহাম ওপরে চলে গেলো। আর যেতেই যা দেখলো তাতে আব্রাহাম থ মেরে গেলো। দেখলো যে আইরাত রুমের সব জানালার পর্দা একসাথে বাধছে। আব্রাহাম এভাবে যে রুমে ঢুকে পড়বে তা আইরাতের ভাবনার বাইরে ছিলো। আইরাত আসলে এখান থেকে পালানোর জন্য সব কাপড় একসাথে বাধছিলো কিন্তু আব্রাহাম যে এসেই একদম আইরাত কে হাতে নাতে ধরে ফেলবে তা জানা ছিল না। আইরাতের চোখ তার কোটর থেকে বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম। আইরাতের আত্না টা কেমন যানি চমকে উঠলো। দোয়া–দরুদ যা আছে সব পড়তে লাগলো আইরাত। মনে হচ্ছে এখন ই কোন একটা তুফান উঠবে। আব্রাহাম ধীরে ধীরে ভিতরে প্রবেশ করলো,, আইরাতের দিকেই সে একাধারে তাকিয়ে আছে যেন এখনই কাচা চিবিয়ে খেয়ে ফেলবে। আইরাতের তো যায় যায় অবস্থা। কয়েকটা শুকনো ঢোক ও গিললো। আব্রাহাম দাতের চোয়াল শক্ত করে আইরাতের দিকে এগোতে লাগলো। আইরাত ভয়ে চোখ খিচে বন্ধই করে ফেললো।

কিন্তু না হলো তার পুরো উল্টো টা। আব্রাহাম আইরাতের কাছে গিয়েই ফিক করে হেসে দিলো। পেট ধরে হাসতে লাগলো। আইরাত হুহুহাহা হাসির শব্দে পিট পিট করে চোখ খুললো। এবং সামনে তাকিয়ে দেখলো আব্রাহাম হেসে কুটি কুটি হচ্ছে। এবার আইরাত একদম বোকা বনে গেলো। আব্রাহাম পেট ধরে বিছানাতে বসে হাসছে। আইরাত এবার চোখ ছোট ছোট করে আব্রাহামের দিকে তাকালো।

আইরাত; এএএভাবে হাহাহাসার কি হলো?
আব্রাহাম; Oh god, baby girl like seriously!
আইরাত;……………………………
আব্রাহাম; তুমি এক একটা কাজ যে করো না। হায় আল্লাহ,, কাজ করার আগে নিজের আশে-পাশে কোথায় কি আছে তা তো একবার খেয়াল করা উচিত তাই না জানপাখি
আইরাত; ককককি বলতে চাচ্ছেন আপনি?
আব্রাহাম; Baby girl, তোমার রুমের সামনে করিডোর রয়েছে, আর আমি জানি যে তুমি যদি পালানোর চেষ্টা করো তাহলে তুমি প্রথমে এখান থেকেই ট্রাই করবে। যদিও এখান থেকে পালানোর উপায় আর নেই,, নেই বলতে আমি রাখি নি। তাও তুমি পালানোর চেষ্টা করেছো,, ওয়াহহহ আমার বউ এর দেখি অনেক কনফিডেন্স। জানপাখি, এবার এক কাজ করো তুমি একটু তোমার করিডোর থেকে নিচের দিকে উকি দাও।
আইরাত;…………………………
আব্রাহাম; আরে কি হলো যাও, যাও।

আইরাত ধীর পায়ে করিডোরের দিকে গেলো। তারপর হালকা ঝুকে নিচের দিকে তাকালো। নিচের দিকে তাকিয়ে আইরাতের চোখ ছানাবাড়া। আইরাত যেন অবাকের উপর অবাক হয়ে গেলো গায়ে কাটা দিয়ে উঠলো।। আইরাত নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলো সব ইয়ায়া বড়ো বড়ো ক্যাকটাস গাছ। করিডোরের নিচেই অনেক বড়ো বাগান আর সেই পুরো বাগান জুড়ে রয়েছে এই ক্যাকটাস গাছ,, একদম ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে একবার নিচে লামলেই শেষ। আইরাতের তো আগেই ভিষণ ভয় লাগতে লাগলো। গাছের কাটা গুলো যেন চাকুর ধার কেও হার মানাবে। এগুলো যদি কোনভাবে কারো গায়ে ফুটে এবং বিশ শরীরের ভিতরে চলে যায় তাহলে সোজা হসপিটালে। আইরাত নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলো ঠিক তখনই আব্রাহাম পিছন থেকে এসে আইরাত কে ধাক্কা দিলো। আইরাত ভয়ে অনেক জোড়ে চিল্লিয়ে উঠলো। আব্রাহাম সাথে সাথে আইরাত কে টেনে নিজের সাথে লাগিয়ে দিলো এবং পেট চেপে ধরলো। আইরাতের কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলতে লাগলো

আব্রাহাম; জানপাখি তুমি নিজেকেও ততোটা ভালো করে চিনো না যতোটা আমি তোমাকে চিনি। আমি জানতাম যে তুমি একদিন না একদিন এখান থেকে পালানোর চেষ্টা অবশ্যই করবে,, আর আমার কেন যেন মনে হলো যে গতকাল যেহেতু তোমাকে আমাদের বিয়ের কথা বলেছি তো তুমি আজই হয়তো পালানোর কথা মাথায় আনবে তো তাই আমার এই ব্যাবস্থা করা। কি করবো জান বলো আমি তো তোমাকে এভাবে যেতে দিতে পারি না তাই এমন করলাম। আমি তোমার ক্ষতি চাই না কিন্তু তুমি যদি আমার থেকে দূরে যাওয়ার বা আমার কথার অবাধ্য হওয়ার চেষ্টা করেছো তো তাহলে প্রথমে তোমাকে মারবো পরে নিজে মরবো বুঝলে বেবি।

আইরাতের গলা দিলে কোন কথা নামছে না। আব্রাহাম মাথা তুলে আইরাতের দিকে তাকালো, দেখলো আইরাত বড়ো বড়ো চোখে নিচে তাকিয়ে আছে। আব্রাহামের অনেক হাসি পাচ্ছে কিন্তু এখন হাসা যাবে না। আব্রাহাম আইরাত কে ভিতরে নিয়ে আসলো এবং বলতে লাগলো

আব্রাহাম; Baby girl দেখো অযথা এখান থেকে পালানোর ব্যার্থ চেষ্টা করো না কারণ আমি এখান থেকে তোমার পালানোর সব রাস্তা অফ করে দিয়েছি। And for your kind information আমি তোমাকে বলে দেই যে এই পুরো বাসাতে CCTC camera লাগানো আছে

আইরাত আব্রাহামের দিকে আহত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আব্রাহাম আইরাতের দিকে বুঝতে পারলো যে সে কি ভাবছে,, আব্রাহাম তাড়াতাড়ি বলে উঠলো

আব্রাহাম; আরে না না,, তুমি যা ভাবছো তা মোটেও না আমি শুধু তোমার রুমে লাগিয়েছি র পুরো বাসাতে। ওয়াসরুমে না। এতো টাও অভদ্র নই আমি। আর এখন হোক কিছুক্ষণ পর হোক অভদ্রতামি তো আমি করবোই তাও তোমার সাথে আমার বউ এর সাথে।

আইরাত; কি শুরু করেছেন কি আপনি। কি এক কখন থেকে বউ বউ বউ লাগিয়ে রেখেছেন। কে বউ কার বউ। আমি কখনোই আপনার বউ হতে পারবো না আর না ই আপনাকে নিজের হাসবেন্ড হিসেবে মেনে নিতে পারবো। কোন বিয়ে হবে না আমি বিয়ে করবো না আপনাকে। আরে আপনাকে তো আমি ঠিকমতো চিনি ও না। আর কোন ভদ্র ঘরের ছেলে যে এমন করে একটা মেয়ে কে বন্দী করে রাখবে না তা আমি জানি। পারবো না পারবো না আমি আপনাকে বিয়ে করতে।

আব্রাহাম চাইছে না রাগ করতে তাই নিজেকে যথেষ্ট সামলে নিয়ে আস্তে করে উঠে গিয়ে আইরাতের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। আব্রাহাম আইরাতের গালগুলো নিজের দুই হাতের ভাজে নিয়ে নিলো, কপালে অতি যত্নে একটা চুমু একে দিলো। আইরাতের প্রচুর বিরক্তি লাগতে লাগলো তবুও কিছুই বলতে পারছে না।

আব্রাহাম; জানপাখি, আমরা এক জায়গায় যাবো, তাই ফ্রেশ হয়ে সুন্দর করে রেডি হয়ে এসো। আমি মেয়েদের পাঠিয়ে দিচ্ছি।

এই বলে আব্রাহাম আইরাতে কে ছেড়ে চলে যেতে নিলো। কিন্তু আইরাত পিছন থেকে হাল্কা চিল্লিয়ে আবার বলতে লাগলো

আইরাত; আপনি কি বুঝেন না। শুনেন নি আমি কি বলেছি,,পারবো না আমি আপনার হতে। আর কোথাও যাবো না আমি। আমি আমার পাপার বাড়িতে যাবো

আব্রাহাম আর কিছু না বলে অগ্নিচোখে আইরাতের দিকে তাকালো। বেস এইটুকুই যথেষ্ট ছিলো আইরাতের জন্য। আইরাত নিমিষেই ভিজা বিড়াল হয়ে গেলো। আর কিছু না বলে সোজা ওয়াসরুমের ভিতরে চলে গেলো। আইরাত চলে গেতেই আব্রাহাম বাকা মুচকি হাসি দিলো। আইরাত ওয়াসরুমের ভিতরে গিয়ে যেন প্রানে বাচলো। বেশ কিছুক্ষন পর আইরাত ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে পড়লো। রুমে এসেই আইরাত ২জন মেয়ে কে দেখতে পেলো। আইরাত কিছুটা কপাল কুচকালো।

আইরাত; কে তোমরা?
২জন মেয়ে; মেডাম আমাদের আব্রাহাম স্যার পাঠিয়েছে। আপনাকে রেডি করানোর জন্য
আইরাত; এই না না তোমরা যাও আমি কোন রেডি টেডি হবো না
২জন মেয়ে; মেডাম প্লিজ জেদ করবেন না নইতো স্যার আমাদের অনেক বকবে ইভেন স্যার আমাদের চাকরি ও খেয়ে দিতে পারেন। মেডাম প্লিজ
আইরাত; আল্লাহহহ উঠাইয়া নেও আমারে তুমি। এই কোন পাগলের পাল্লায় পরলাম আমি। সবসময় মানুষকে ভয়ের উপরে রাখে (মনে মনে)

আইরাত; আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে রেডি করো আমাকে।

আইরাত এক রাশ বিরক্তি নিয়ে বসে পড়লো এবং মেয়েরা তাকে রেডি করিয়ে দিতে লাগলো। অবশেষে কাজ শেষ হলো।

আইরাত একটা আকাশি কালারের চুড়িদার পরেছে। হাতে সাদা-নিল কালারের চুড়ি, চোখে গাঢ় কাজল, চুল গুলো ছেড়ে দেওয়া, কানে ঝুমকা এক কথায় অসম্ভব সুন্দরী লাগছে আইরাত কে। আইরাত উপর থেকে নিচে নামতে লাগলো। আব্রাহাম দরজায় দাঁড়িয়ে ফোনে কার সাথে যেন আলাপ করছিলো কারো শব্দ পেয়ে পিছন ফিরে তাকালো, দেখল যে আইরাত নেমে আসছে। আব্রাহাম কথা শেষ না করেই ফোন কেটে দিলো। আব্রাহাম আইরাতের দিকে তাকিয়ে আছে যে আছেই। চোখ সরানোর নাম নেই। নাম নেই বলতে আব্রাহাম চাইছে না চোখ সরাতে। আব্রাহাম চাইছে সময় টা যেন এখানেই থেমে যায়। এক ঘোর লাগা নয়নে আব্রাহাম তাকিয়ে আছে। আইরাত যত সামনে এগিয়ে আসছে আব্রাহামের হ্রদ স্পন্দন ততো বাড়ছে। আইরাত কে দেখে আব্রাহাম তার বুকের বাম পাশে হাত রেখে দিলো। আব্রাহামের এমন চাহনি দেখে আইরাতের বেশ অসস্থি লাগতে লাগলো। আইরাতের মনে হচ্ছে কোথাও কিছু হয়েছে তাই বার বার নিজের চুল আর জামা ঠিক করছে,, আইরাত দেখলো আব্রাহাম সেই একই ভাবে তাকিয়ে আছে। এবার আইরাত দুবার গলা খাকারি দিল। আব্রাহামের ঘোর কেটে গেলো এতে। আব্রাহাম আইরাতের দিকে এগিয়ে গেলো। আব্রাহাম আইরাতের কোমড় জড়িয়ে ধরে নিজের একদম কাছে টেনে নিলো। নেশা লাগানো কন্ঠে বলতে লাগলো

আব্রাহাম; দেখো প্লিজ এভাবে আমার সামনে বার বার এসো না আমি মরেই যাবো। নিজেকে সামলাতে পারি না এভাবে দেখতে তোমায়। Out of control হয়ে পরি। তুমি এভাবেই আমাকে সেই প্রথম দিন থেকে ঘায়েল করে যাচ্ছো। আইরাত বেবি প্লিজ এবার তো থামো। ভালোবাসি, অনেক ভালোবাসি।

আইরাত এবার আব্রাহামের দিকে মুখ তুলে তাকালো।আব্রাহাম মুচকি হেসে আবার আইরাত কে বলতে লাগলো

আব্রাহাম; জানপাখি, আমরা আমাদের বাড়িতে যাচ্ছে। মানে তোমার হবু শশুড় বাড়ি। সেখানে আমার বাপি-ভাই আছে। আর এভাবে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই তোমাকে যেতেই হবে। আর শুনো তুমি যদি সেখানে গিয়ে উলটা পালটা কিছু করেছো বা আমার কথার বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেছো তাহলে মনে রেখো আমার থেকে খারাপ আর কেও হবে না। সেখানে বাপি যা বলবে তুমি তা মেনে নিবে। ভুলেও বাপি যেন না জানতে পারে যে আমি আমার বউ কে তুলে এনেছি। আর আমি তোমাকে যেমন ভালোবাসি ঠিক তেমনই আমার বাপি-ভাই কেও ভালোবাসি তো প্লিজ কোন পাগলামি করবে না…. Is that clear baby girl?!

আইরাত; হুমম (হাল্কা ভাবে মাথা নেড়ে)

আব্রাহাম আইরাতের হাত ধরে বাড়ির বাইরে নিয়ে এলো। গাড়িতে বসিয়ে দিলো। আইরাত পুতুলের মতো বসে সব শুধু দেখে যাচ্ছে।

আইরাত; আমরআ কোথায় যাচ্ছি?
আব্রাহাম;………….মুচকি হাসি…………..
আইরাত; কি হলো কিছু বলছেন না যে, যাচ্ছি কোথায় আমরা?

আব্রাহাম আর কিছু না বলে ডন্ট কেয়ার একটা ভাব নিয়ে সিটি বাজাতে লাগলো। আইরাতের প্রচুর রাগ হতে লাগলো। আইরাত আর কোন কথা না বলে দুহাত ভাজ করে মুখ ফুলিয়ে বসে রইলো
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
আব্রাহাম গাড়ি চালাতে চালাতে চৌধুরী ভবনের সামনে চলে এলো। প্রথমে নিজে নেমে এলো তারপর আইরাত কে নামিয়ে আনলো। আইরাত অবাক হয়ে সব কিছু দেখছে ।

আইরাত; আব…. আমরা
আব্রাহাম; আমরা আমাদের বাড়িতে। এবার কথা কম Let’s go jaan….

আব্রাহাম-আইরাত বাড়ির ভিতরএ যেতে লাগলো। আইরাত মুগ্ধ দৃষ্টিতে বাড়ি দেখছে। দুপাশে অনক সুন্দর বাগান, বাগানের মাঝখানে সুন্দর বড়ো ঝর্ণা। সেখান থেকে ঝরঝর করে পানি পরছে। আর এই সবকিছুর ঠিক মাঝখানে রয়েছে সুন্দর বাড়ি। আইরাত-আব্রাহাম বাড়ির সামনে এসে পড়লো। আব্রাহাম কলিং বেল চাপ দিলো। আব্রাহামের বাপি দরজা খুলে দিলো। আবির আহমেদ এর মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠেছে। আব্রাহাম তার বাপি কে দেখা মাত্রই জড়িয়ে ধরে।

আব্রাহাম; বাপি, This is the girl i love…
আইরাত আব্রাহামের বাপি আবির আহমেদ কে দেখলো। আইরাতের কেমন যেন চিনা চিনা লাগতে লাগলো কিন্তু তবুও কিছু না বলে চুপ করে রইলো

আবির আহমেদ; আমার ছেলের পছন্দ আছে বলতে হবে, মুখের মায়া যেন চাঁদটা কেও হার মানাবে।
আব্রাহাম; হ্যাঁ বাপি, আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরীর বউ বলে কথা। নাও সরো দেখি ভিতরে তো যেতে দিবে।
আবির আহমেদ; এই দাড়া দাড়া কোথায় যাচ্ছিস।
আব্রাহাম; বাপি আবার কি
আবির আহমেদ; আরে আমার লক্ষি এসেছে আমার ঘরে বরণ তো করতে দে
আব্রাহাম; হুমম হুমম করো যতো ইচ্ছে। আচ্ছা আমার গুনধর ভাই টা কোথায়?
আবির আহমেদ; আছে, আসছে

আবির আহমেদ; অয়ননননন, বরণের ডালা টা তাড়াতাড়ি এদিকে নিয়ে আয়
অয়ন; এইতো বাপি এসে গেছি

আব্রাহাম; আইরাত জানপাখি, এই হচ্ছে আমার ওয়ান এন্ড অনলি ভাই অয়ন আহমেদ চৌধুরী। আর তোমার হবু দেবর সাহেব

অয়ন; আহহহহহ হয়েছে হয়েছে তোর বলতে হবে না আমি আমার সুইট, কিউট ভাবির সাথে নিজে পরিচিত হয়ে নিতে পারবো।

এইসব কিছু যেন আইরাতের মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। কি করবে সে কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না। অবশেষে বরণ করা শেষ হলো

আবির আহমেদ; নে নে বরণ শেষ এবার তাড়াতাড়ি বউমা কে নিয়ে ভিতরে আয় তো

আব্রাহাম আইরাত কে নিয়ে ভিতরে চলে গেলো।
আইরাত বাড়িতে আসায় সবার মাঝে খুশির বন্যা বয়ে গেলো
.
.
.
.
.
🍂চলবে~~~~

Gangstar In Love Part-10+11

0

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#part__10

🍁🍁.
.
.
.
.
.
.
আব্রাহাম আইরাতকে দেখতে দেখতে আইরাতের পাশেই শুয়ে পড়লো এবং বলতে লাগলো….

আব্রাহাম; খুব খুব বেশি কাছে পেতে ইচ্ছে করে তোমাকে,, এতো কাছে যে তোমার আর আমার মধ্যে কোন দূরত্ব না থাকে।। পুরো পুরি আপন করে নিতে ইচ্ছে করে তোমাকে জানপাখি। কিন্তু আমি চাই আমাদের মাঝে যেন বৈর্ধ সম্পর্ক গড়ুক। আর সেই সম্পর্ক খুব তাড়াতাড়ি ই গড়ে উঠবে জান শুধু কিছু সময়ের অপেক্ষা। তখন তো আর পালাই পালাই করবে না। তোমাকে কোথাও পালাতে দিবো না আমার কাছ থেকে।

আব্রাহাম শুয়ে থাকতে থাকতে একসময় ঘুমের ঘোরে তলিয়ে গেলো।

সকালে🌞….
..
..
..
..
..
আইরাত ঘুম থেকে জেগে ওঠে। বিছানা থেকে উঠতে চাইলে সে পারে না তাকিয়ে দেখে আব্রাহাম তাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে। আইরাত একবার ধাক্কা দিয়ে উঠতে চেয়েও দিলো না। সে আব্রাহাম দিকে তাকিয়ে থাকলো। একদম বাচ্চা লাগছে কেও দেখলে বলবেই না যে এই লোকটি এতো টা ভয়ংকর। আইরাত আব্রাহানের মাথায় হাত দিতে চেয়েও হাত আবার নামিয়ে নিলো। আইরাত দূরে সরে আসতে চাইলে আব্রাহাম তাকে আরো জোড়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। আইরাতের বেশ অসস্তি লাগছে। আর কোন উপায় না পেয়ে আইরাত আব্রাহাম কে দিলো এক ধাক্কা। আব্রাহাম তো একদম চমকে উঠলো, উঠে দেখলো আইরাত তাকে ধাক্কা দিয়েছে। আব্রাহামের মেজাজ গেলো চটে।

আব্রাহাম; এই মেয়ে এই সমস্যা কি তোমার এভাবে ধাক্কা দিলে কেন?
আইরাত; আপনি আমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরেছেন কেন?
আব্রাহাম; ওই আমি জড়িয়ে ধরি না অন্য কিছু করি তাতে তোমার কি, অনেক বেশি সাহস হয়ে গিয়েছে তোমার তাই না (রেগে)
আইরাত; আমার ভালো লাগছিলো না তাই আর কি
আব্রাহাম; ভালো লাগলেও তুমি আমার,, আর আমাকে সহ্য করতে হবেই তোমাকে জানপাখি। Btw আমি শুধু এখানে রাত টুকু থাকতে এসেছিলাম কেননা তোমাকে ছাড়া থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না। আমি এখন বের হবো কিছুক্ষণ পরে আবার আসবো কিন্তু তুমি, তুমি কোন রকম কোন ফালতু কাজ করবে না। কারণ তুমি জানো যে কিছু করেও লাভ নেই।

আইরাত; জানি না আবার নিজ বাড়ি থেকে পর্যন্ত তুলে এনে পড়েছে এই পাগল,, (মনে মনে)

আব্রাহাম; আমাকে পাগল-টাগল বলা হলে এবার ফ্রেশ হয়ে আসো Breakfast করে নাও

আইরাত; এখন কি মনে মনে কথা বলেও শান্তি নেই নাকি
আব্রাহাম; না, আমার কাছে তোমার কিছুই গোপন থাকবে না থাকতে পারে না বুঝলে। এবার যাবে নাকি আমি রেখে আসবো আর আমি যদি রেখে আসি তাহলে তুমি তা মোটেও পছন্দ করবে না
আইরাত; সবসময় হুমকি কেন দেন যাচ্ছি তো
আব্রাহাম; Good

আইরাত ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে আসলো। নিচে গিয়ে দেখলো আব্রাহাম টেবিলের ওপর খাবার রাখছে।

আব্রাহাম; Baby girl এসে গেছো নাও নাও এবার তাড়াতাড়ি খেতে বসো।
আইরাত; খেতে ইচ্ছে করছে না
আব্রাহাম; কি বললে (আইরাতের দিকে তাকিয়ে দাত কটমট করতে করতে)
আইরাত; না মানে খাবো আমি খাবো আর কি

আইরাত খেতে বসলো,, অল্প কিছু খেয়ে চলে যেতে নিলো আব্রাহাম কে কিছু না বলেই

আব্রাহাম; এই কোথায় যাচ্ছো
আইরাত; ওপরে
আব্রাহাম; আমি কি তোমায় যেতে বলেছি
আইরাত; না মানে খাওয়া তো শেষ তাহলে আর থেকে কি করবো
আব্রাহাম; বেশি বুঝা বন্ধ করো তুমি। এদিকে এসো (ধমক দিয়ে)
আইরাত ধীরে ধীরে আব্রাহামের কাছে গেলো…

আব্রাহাম; খাইয়ে দাও আমায়
আইরাত; কিইই
আব্রাহাম; কানে কি বেশি শুনো নাকি, কথা মাথায় ঢুকে না,, খাইয়ে দিতে বলেছি আমায়
আইরাত; আপনি তো নিজেও হাত দিয়ে খেতে পারেন আমি কেন (আমতা আমতা করে)

আব্রাহাম; আমি যদি নিজেই খেতাম তাহলে তোমাকে আর বলতাম না। এবার পেচাল কম পারো আর খাইয়ে দাও তো আমাকে

আইরাত আর কিছু না বলে বাধ্য মেয়ের মতো খাইয়ে দিতে লাগলো আব্রাহামকে। মাঝে মাঝে আব্রাহাম ইচ্ছে করেই আইরাতের আংঙুলে কামোড় দিচ্ছে। আইরাত বিরক্তি নিয়ে আব্রাহাম কে খাইয়ে দিয়ে উঠলো। খাওয়া শেষ হলে আইরাত আর কিছু না বলে সোজা উপরে চলে গেলো।

আব্রাহাম রুবিনা কে বলে গেলো আইরাত কে দেখার জন্য। আব্রাহাম বাইরে বেড়িয়ে পড়লো। এবং চৌধুরী ভবনে (আব্রাহামের নিজ বাড়ি) এসে পড়লো।

আব্রাহাম বাড়িতে এসে দেখলো তার বাপি আর অয়ন বসে আছে।

আবির আহমেদ; কিরে কোথায় গিয়েছিলি তুই ঘুম থেকে জেগে ওঠে তো তোকে পেলাম না
আব্রাহাম; বাপি আসলে আমি একটু বাইরে গিয়েছিলান তোমরা তো ঘুমে ছিল তাই ডাকতে চাই নি।
অয়ন; আচ্ছা আয় খেয়ে নে এবার..
আব্রাহাম; এই না না আমার পেট ভরা আমি এখন খেতে পারবো না
অয়ন; কখন কি খেলি তুই
আব্রাহাম; আরে না এমনি
আবির আহমেদ; আচ্ছা যখন ইচ্ছা খেয়ে নিস
আব্রাহাম; হুমমম

আব্রাহাম ওপরে যেতে নিলে আবির আহমেদ আব্রাহামকে পিছন থেকে ডাক দেয়….

আবির আহমেদ; আব্রাহাম বাবা
আব্রাহাম; হ্যাঁ বাপি বালো
আবির আহমেদ; তোর সাথে কিছু কথা ছিলো আমার
আব্রাহাম; হুমম বলো না বাপি
আবির আহমেদ; বাবা তুই আর অয়ন তো চলে যাস কাজে আমি পড়ে থাকি বাড়িতে একা। আমার সময় কাটে না রে খুব বরিং লাগে,, আমি এই পরিবার টাকে তিন জন থেকে চার জনের করতে চাই। আমি এই পরিবার টাকে পূর্ণ করতে চাই বাবা। আমি কি বলতে চাচ্ছি বুঝতে পারছিস তুই!!
আব্রাহাম; বাপি,
অয়ন; হ্যাঁ ভাই, আমার ও একটা ভাবি চাই
আব্রাহাম; আহা তোমরা মিলে কি শুরু করলে বলো তো
অয়ন; বাপি ভাইকে ভালোভাবে বললে বুঝবে না কিছু করো
আবির আহমেদ; আব্রাহাম বিয়ে টা এবার করে নে না বাবা আর কতো এভাবে থাকবো আমি। আমার কি ইচ্ছে করে না যে আমার ও নাতি-নাতনি হবে আমি তাদের সাথে খেলবো বল না
আব্রাহাম; আচ্ছা আচ্ছা তোমরা থামো প্লিজ। ঠিক আছে আমি বিয়ে করবো
অয়ন; কিইইই ভাই সত্যি,, যাক অবশেষে তোর বিয়ে তো খাবো।

আব্রাহাম আর কিছুই না বলে ওপরে চলে যেতে লাগলো।

আবির আহমেদ; অয়ন, আমার আব্রাহাম হ্যাঁ বলেছে রে তাড়াতাড়ি পাত্রী দেখা শুরু করে দে

আব্রাহাম থেমে গেলো এবং আবির আহমেদ– অয়নের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো যে

আব্রাহাম; বাপি, পাত্রী রেডি আছে already
এই বলে আব্রাহাম চলে গেলো।

আবির আহমেদ–অয়ন একসাথে;; কিইইইইইইইইইই

অয়ন; বাপি আমি ঠিক শুনছি তো,, আমার বিশ্বাস হচ্ছে না মানে যে ছেলে কিনা মেয়ের দের থেকে ১০০ হাত দূরে থাকতো সে কিনা বলছে যে তার জন্য পাত্রী রেডি হয়ে আছে।। দেখেছো বাপি দেখেছো তোমার ছেলে ছুপা রুস্তাম বের হলো। তলে তলে কতো কি করে বেড়াচ্ছে।।।

আবির আহমেদ; আরে মেয়ে যে পছন্দ করেছে তাই অনেক। এখন শুধু ওর পেট থেকে বের করতে হবে যে কে সেই মেয়ে যার ওপর আমার ছেলে পাগল হয়ে গেছে।

আব্রাহাম রুমের এসে……

আব্রাহাম; কিভাবে আমি বলবো যে আমার পছন্দ করা মেয়ে আর কেও না বাপির ই ভাই আশরাফুল আহমেদ চৌধুরীর মেয়ে। যাকে বাপি এখন ভাই না বরং শত্রুর চোখে দেখে তারই মেয়ের প্রেমে পড়ে গিয়েছি আমি। এতো টাই ভালোবেসে ফেলেছি যে তাকে ছাড়া এখন আমি নিজেকে কল্পনাই করতে পারি না। কিভাবে বলবো আমি বাপিকে,

আব্রাহাম এইসব ভাবছিলো ঠিক তখনই আব্রাহামের ফোনে call আসে। আব্রাহাম ফোন রিসিভ করে …….

ওপর পাশ; স্যার, কাজ হয়ে গেছে।
আব্রাহাম; রাশেদের হাতে টাকা গুলো তুই পেয়ে যাবি।আর আমি আসছি

এই বলে আব্রাহাম ফোন কেটে দিলো। আব্রাহাম রেডি হয়ে নিচে নেমে এলো।

আব্রাহাম; বাপি আমি অফিসে যাচ্ছি আসতে দেরি হবে
আবির আহমেদ; ঠিক আছে যা আর বাড়িতে এসে আগে আমার সাথে কথা বলবি কিছু দরকারি কথা আছে তোর সাথে
আব্রাহাম; আচ্ছা বাপি

আব্রাহাম বের হয়ে গেলো। আব্রাহাম তার মনিটর রুমে গেলো। গিয়ে সকল ক্যামেরা চেক করতে লাগলো।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
In নীড় মহল……

আশরাফুল আহমেদ; আতিয়া কিছু হাল্কা খেয়ে নাও। তুমি এভাবে না খেয়ে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে পরবে পরে আয়ুশকে কে দেখবে বলো

আতিয়া আহমেদ; আমার মেয়ে কে এনে দাও তুমি আমি আর কিচ্ছু চাই না আমার আইরাত কে এনে দাও

আশরাফুল আহমেদ; তুমি চিন্তা করো না আইরাত ফিরে আসবে কিছু হবে না

আব্রাহাম এই সব কিছু ক্যামেরা তে দেখছে আর বাকা হাসছে। আব্রাহাম কিছু একটা ভাবলো তারপর অন্য একটা ফোন দিয়ে আশরাফুল আহমেদ কে ফোন দিলো

ফোনের স্ক্রিনে আননোন নাম্বার দেখে আশরাফুল আহমেদ কিছুটা ভ্রু কুচকালো। আশরাফুল আহমেদ ফোন রিসিভ করলেন

আশরাফুল আহমেদ; Hello
আব্রাহাম; আহহহ অনেক বছর পর এই চিরচেনা কন্ঠ টা শোনার ভাগ্য হলো।
আশরাফুল আহমেদ; কে কে বলছেন
আব্রাহাম; আপনার আপনজন তো ছিলাম ই কিন্তু আর কিছু দিন পরে আপনার মেয়ের জামাই এ পরিনত হবো
আশরাফুল আহমেদ; Whaaaaaattttttttt… এই এইই কে তুই আমার মেয়ে তোর কাছে। আমার মেয়ে কে কোথায় নিয়ে গিয়েছিস বল। আমার মেয়ের যদি একটা আচর ও এসেছে তাহলে আমি তোকে জানে মেরে ফেলবো

আব্রাহাম; আরে আরে আস্তে শশুড়।। তুমি তো দেখি আগেই মারামারিতে নেমে এসেছ। শুনো আমি বলি কি এতো চিল্লিয় না নইতো আগেই তুমি পরপারে চলে যাবে। যা আমি এতো তাড়াতাড়ি চাচ্ছি না। আর শুনো তোমার মেয়ের গায়ে আচর না শুধু তোমাকে একদম নানাভাই বানানোর কাজ করে আসবো বুঝলে

আশরাফুল আহমেদ; এইইইই হারামজাদা মুখ সামলিয়ে কথা বল তুই জানিস তুই কার সাথে কথা বলছি

আব্রাহাম; আওয়াজ নিচে। খুব ভালো করেই জানি আমি কার সাথে কথা বলছি, In fact আমার থেকে ভালো আর কেও তোকে চিনবেও না। একজন ধোকাবাজ, হত্যাকারী, বেইমানের সাথে কথা বলছি আমি যে নিজের বড়ো ভাই ভাবি কেও মারতে পিছপা হয় নি। তুই তোর মেয়ে না তুই এখন তোর চিন্তা কর কেননা তোর মেয়ে তো আমারই। আর তুই অযথা চিন্তা নিয়ে মরিস না কারণ তোকে আমি আমার নিজ হাতে মারবো।

আশরাফুল আহমেদ বড়ো ভাই-ভাবির কথা শুনে কিছুটা ভরকে গেলো এবং ভয় পেয়ে গেলো তবুও তিনি জোড়ে চিল্লিয়ে বললেন,,,,,

আশরাফুল আহমেদ; তোকে আমি একবার পাই কি যে করবো আমি তা নিজেও জানি না

আব্রাহাম; আমাকে যা করার তা পরে করিস আগে নিজের ব্যাবস্থা কর

আশরাফুল আহমেদ; মানে, কি বলতে চাচ্ছিস তুই (কিছুটা চিন্তিত হয়ে)

আব্রাহাম; নিউ মার্কেটে তোর যে অবৈধ ঔষধের ব্যাবসা আছে না সেই ব্যাবসার খুবই তাড়াতাড়ি ই ইন্না-লিল্লাহ হতে যাচ্ছে। (বাকা হেসে)

আশরাফুল আহমেদ; ককককি বববলতে চাচ্ছিস তুই

আব্রাহাম; আরে এতো তাড়াতাড়ি ভয় পেয়ে গেলি, এখনও তো কিছুই করলাম না তার আগেই এতো ভয়। শোন এখন আমি তোকে ঠিক ১০ মিন টাইম দিচ্ছি পারলে তোর অবৈধ কাজের ব্যাবসা কে বাচিয়ে দেখা

আশরাফুল আহমেদ; ননা এএএমন কিছুই হবে না, আমি থাকতে হতে দিবো না। আমি আসছি

আব্রাহাম; যা যা পারলে বাচিয়ে নে, ১০ মিন তোর হাতে রয়েছে।

আশরাফুল আহমেদ ফোন কেটে দিলো এবং দৌড়ে যেতে লাগলো তার গোডাউনে…..

আশরাফুল আহমেদ; আতিয়া তুমি আয়ুশের এবং নিজের দিকে খেয়াল রেখো আমি আসছি

আতিয়া আহমেদ; যাচ্ছো কোথায়? আর কার ফোন ছিলো?

আশরাফুল আহমেদ; দুলাল(ড্রাইভারের নাম) জলদি,, জলদি গাড়ি বের কর আর গোডাউনের দিকে যা…..

আশরাফুল আহমেদ আর কিছু না বলে দ্রুত বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলো…..

অন্যদিকে আব্রাহাম ফোন রেখে পাগলের মতো হাসতে লাগলো

আব্রাহাম; এতো ট্রেইলার থা চাচাজান,,পিকচার আভি ভি বাকি হে। বরবাদি শুরুউউউউউ

আশরাফুল আহমেদ কিছুক্ষণ পর তার গোডাউনের সামনে চলে আসলো এবং গিয়ে দেখলো কিছুই হয় নি সব কিছুই ঠিক রয়েছে। তা দেখে আশরাফুল আহমেদ এক সস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো। ঠিক সেই সময় ই আবার তার ফোনে call আসলো।

আব্রাহাম; হাহাহা কি ভয় পেয়ে গেলে বুঝি। আরে না আমি এতো টাও খারাপ না যে তোমাকে এতো টা টেনশন দিবো যদি তুমি মরে যাও তাহলে আমার কি হবে আমি কাকে মারবো বলো।

আশরাফুল আহমেদ; হারামি তুই যেই হোস না কেন তোকে আমি খুজে বের করে আনবোই। আমার সাথে যা করছিস তুই তা একদমই খারাপ করছিস। এর ফল তোকে ভোগ করতেই হবে,, করতেই হবে (চিল্লিয়ে)

আব্রাহাম; আমাকে পরে দেখে নিস আগে সামনে দিকে তাকিয়ে একটু সুন্দর দৃশ্য তো উপভোগ করে নে…..

আশরাফুল আহমেদ সামনে তাকালো আর সাথে সাথেই এক বিকট বিস্ফোরণের শব্দে তার পুরো গোডাউন উড়ে গেলো। আশরাফুল আহমেদ ব্যাপক ভাব চমকে গেলেন এবং বেশ দূরে সরে গেলেন। তার চোখের সামনে তার পুরো কারখানা জলে পুরে ছাড়খার হয়ে গেলো। রাগে গজগজ করছে আশরাফুল আহমেদ। তার ফোন বেজে উঠলো তিনি তা ধরলেন,,,,,,

আব্রাহাম; হাহাহাহাহাহাহাহা,,,,,, কিরে কিছু মনে পড়লো, ঠিক এভাবেই একদিন এক হাসিখুশি পিরিবারকে জালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছিলি তুই,, এবার তোর পালা।। এখন তো কেবল তোর গোডাউন উড়িয়েছি আস্তে আস্তে তোর সব কিছু উড়িয়ে দিব আর একদিন তোকেও। খুব তো মানুষ কে মেরেছিস আর ধ্বংস করেছিস এবার তুই নিজের চোখে নিজের বরবাদি দেখ। Get ready শশুড়মশাই

আব্রাহাম ফোন রেখে দিল। এবং ভাবতে লাগলো যে কে হতে পারে এই যে তার মেয়ের এবং তার পিছু পড়লো। আশরাফুল আহমেদ রেগে ফেটে পড়লেন। একসময় বাড়ি ফিরে গেলেন।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
আব্রাহাম;; এবার আমি আমার জানপাখির কাছে যাবো। চাচাজানের যে কাজ করে দিয়েছি মনে হয় না ২-৩ দিনের আগে তিনি এই shock থেকে বের হতে পারবেন।

এদিকে আইরাত বসে বসে ভাবছে যে এভাবে তো আর সারাদিন এক ঘরে বসে থাকা যায় না। আইরাত শেষে রুবিনা কে ডাক দিলো……..

আইরাত; রুবিনা, রুবিনা
রুবিনা; জি ম্যাম
আইরাত; আচ্ছা তুমি কি এই বাড়ির সব দিক ভালো করে চিনো?
রুবিনা; জি ম্যাম, কিন্তু কেন!
আইরাত; না মানে আমি না আসলে এখানে বসে বসে বরিং হচ্ছি খুব। তুমি কি আমাকে পুরো বাড়ি টা একবার ঘুড়িয়ে দেখাবে?!
রুবিনা; এই রে কি বলছে ম্যাম, আমি যদি এখন ম্যাম কে বাড়ি দেখাতে নিয়ে যাই আর ম্যাম যদি আবার পালিয়ে যায় তাহলে আব্রাহাম স্যার তো আমাকে পুরা কাচা চিবিয়ে খেয়ে ফেলবেন (মনে মনে)

আইরাত; আরে না না এতো ভাবার কিছুই নেই। আমি পালাবো না কারণ আমি এখন নিজেও জানি যে এখান থেকে পালিয়ে লাভ নেই। উনি আমাকে আকাশ পাতাল থেকেও ধরে আনবেন নিজের কাছে। তাই যেহেতু পালিয়ে লাভ নেই সেহেতু আর পালাবো ও না। এখন কি তুমি প্লিজ আমাকে নিয়ে যাবে

রুবিনা; Yeah ma’am sure.. আসুন

আইরাত আর রুবিনা চলে গেলো বাড়ি ঘুড়ে দেখতে।

এইদিকে আব্রাহাম গাড়িতে উঠে পড়লো এবং গাড়ি চালিয়ে যেতে লাগলো।
.
.
.
.
.
.
.
আব্রাহাম বাড়ির সামনে এসে পড়লো। গাড়ি থেকে নেমে ভিতরে আসতে লাগলো। আব্রাহাম ওপরে যেতেই দেখলো আইরাতের রুমের দরজা খোলা। আব্রাহামের সাথে সাথে পায়ের রক্ত মাথায় উঠে গেলো। আব্রাহাম ভেবেছে আইরাত তাকে ফেলে রেখে আবার পালিয়ে গেছে।

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#part__11

🍁🍁
.
.
.
.
.
.
.
.
আব্রাহাম ভেবেছে আইরাত তাকে ফেলে রেখে আবার পালিয়ে গেছে। আব্রাহাম আইরাতের নাম নিয়ে গর্জে উঠলো।

আব্রাহাম; আইরায়ায়ায়ায়ায়াত আইরায়ায়ায়ায়াত।
আবার, আবার আমাকে রেখে তুমি পালিয়ে গেছো। যতোই তোমাকে আমার কাছে আগলে রাখতে চাই ততোই তুমি আমার কাছ থেকে দূরে চলে যাও। জীবনের সবকিছু হারিয়ে তোমাকে আকড়ে ধরে বাচতে চেয়েছিলাম আমি কিন্তু তুমি আর তা হতে দিলে না। বার বার আমাকে আঘাত করে চলে যাও। তোমাকে তো আমার কাছে আসতেই হবে

আব্রাহাম রেগে ঘরের জিনিসপত্র সব ভাংচুর করতে লাগলো। পাশে থাকা ফুলদানি টা তুলে সামনে থাকা বড়ো টেবিলে এক আছাড় দিলো,, ঝড়ঝড় করে টেবিল ভেংে গেলো। আব্রাহাম রাগে শুধু ফুসছে,, দুইহাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে বিছানায় বসে পড়লো। আইরাত কে সামনে না পেয়ে আব্রাহাম যেন পুরো এক বদ্ধ উন্মাদ হয়ে গিয়েছে। আব্রাহাম কোন মতেই তার রাগ কন্ট্রোল করতে পারছে না। সে আবার উঠে ঘরের জিনিসপত্র ছুড়াছুড়ি করতে লাগলো।

আইরাত আর রুবিনা বাড়ির পিছনে বাগানে হাটছে। আইরাতের বেশ ভালো লাগছে জায়গাটা। অনেক খোলা-মেলা, বিভিন্ন রকম ফুলের গাছ, সবুজ ঘাসে ঢাকা, আর কিছুটা সামনে ছোট পানির ঝরণা আর পাশেই একটা সুন্দর দোলনা ঠিক যেমনটা ছিলো আইরাতদের বাড়িতে। রুবিনা আর আইরাত কথা বলছিলো কিন্তু হঠাৎ উপর থেকে প্রচুর ভাংচুর এর আওয়াজ পেলো। আইরাত কিছুটা ঘাবড়ে গেলো।

আইরাত; ওপরে এতো আওয়াজ কিশের,, কি হচ্ছে?

রুবিনা; ম্যাম,, ম্যাম আমার মনে হয় স্যার ফিরে এসেছে। আপনাকে তো বাইরে আসতে নিষেধ করেছিলো কিন্তু আপনি এসেছেন। ম্যাম, স্যার মনে হয় আপনাকে রুমের ভিতর না পেয়ে ভাংচুর করছে।

আইরাত; কিইইইই, এই লোকটা এমন পাগল কেন?

রুবিনা; ম্যাম, প্লিজ আপনি তাড়াতাড়ি উপরে যান

আইরাত আর কিছু না বলে দৌড়ে উপরে যেতে লাগলো।

আইরাত; হায় আল্লাহ, এনি তো মনে হচ্ছে সব শেষ করে ফেলবেন। আমি বাইরে এসেছি এখন আমাকে সামনে পেলে না জানি কি করে, আইরাত রে আজকে তুই শেষ

আইরাত ভয়ে ভয়ে উপরে যেতে লাগলো। আইরাত রুমের সামনে যেতেই থ হয়ে গেলো। রুমের সব কিছু তছনছ করা, যেন এখানে মাত্রই কোন ঘূর্ণিঝড় হয়ে গেছে। আইরাতের সাহস হচ্ছে না রুমের ভিতরে যাওয়ার। কেননা আব্রাহাম সামনে কাচের জানালাতে এক হাত দিয়ে আর এক হাত পকেটে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সাথে হাতে এক Gun ও আছে। ঝড় আসার আগে যেমন সব শান্ত থাকে কিন্তু পরে শুরু হয় ধ্বংসলীলা,, ঠিক তেমন। রুমের সবকিছু তো ধ্বংস হয়েই গেছে এখন আবার সব শান্ত মনে হয় আবার ঝড় আসবে। আর তা আব্রাহাম কে দেখে বেশ ভালোই বুঝা যাচ্ছে। আইরাতের ভয়ে গলা শুকিয়ে গেছে,, হাত-পা কাপছে। আইরাত যদি আগে যানতো যে মাত্র তার ঘরের বাইরে যাওয়াতে এমন একটা কিছু হয়ে যাবে তাহলে সে কোনদিন ও বাইরে পা দিতো না। এখন আইরাত কিভাবে কি করবে কিছুই ভেবে পাচ্ছে না। আইরাত ভাবছিলো কিন্তু ঠিক তখনই হুট করে আব্রাহাম পিছনে তাকালো। আইরাত এতো টাই ভয়ে ছিলো ছিলো যে আব্রাহামের রাগ আর চোখ দেখে দিলো এক চিৎকার।

আব্রাহাম ঝড়ের বেগে আইরাতের সামনে গেলো এবং আইরাতের মুখ চেপে ধরলো। আব্রাহাম এর মনে হচ্ছে যে এখন আগে আইরাত মারুক তারপর নিজে মরে যাক।

আব্রাহাম; তোর এতো সাহস হয় ক করে হে, তোকে বার বার বলে গিয়েছি আমি যে এই ঘর থেকে এক কদম ও বাইরে যাবি না। তার পরেও আমার কথার অবাধ্য হওয়ার সাহস কি করে হলো তোর বল (আইরাতের চুলের মুঠি ধরে রাগে চিল্লিয়ে)

আইরাত; আআআআমি ততো শুধু এএএকটু বাবাবাইরে গিয়েছিলাম। ঘঘঘরে দদম আটকে আসছিলো বববলে।

আব্রাহাম; কেন তুই বাইরে যাবি, কেন যাবি তুই। যদি তুই আবার পালিয়ে যেতি তখন তখন আমি কি করতাম। জানিস কতো টা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম আমি তোকে না দেখতে পেয়ে। তোর খুব সাহস হয়ে গিয়েছে তোর এই সাহস আমি ঘুচিয়ে দেবো (আইরাতকে আরো জোড়ে চেপে ধরে)

আইরাত; আহহহ, প্লিপ্লিজ আমাকে ছাছাড়ুন আমি খুখুব বব্যাথা পাপাচ্ছি (আইরাত শেষ কান্নাই করে দিলো)

আব্রাহাম; ব্যাথা, ব্যাথা তো আমিও পেয়েছিলাম এই যে এইখানে (হাতে থাকা Gun দিয়ে বুকের বা পাশে দেখিয়ে)
তোকে সামনে না দেখতে পেয়ে ভেবেছিলাম আবার দূরে হারিয়ে গেছিস তুই আমার থেকে।

আইরাত তো লাগাতার কেদেই যাচ্ছে।

আব্রাহাম; তোর, তোর এই সাহস আমি একদম শেষ করে দিবো

এই বলেই আব্রাহাম আইরাতকে বিছানাতে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো। আইরাত তাল সামলাতে না পেয়ে বেশ জোড়েই পড়ে গেলো, যার ফলে হালকা ব্যাথা ও পেলো। আব্রাহাম পুরো পাগলের মতো কাজ করছে। আব্রাহাম তার এক হাত দিয়ে আইরাতের দুই হাত বেডের সাথে চেপে ধরলো। আব্রাহাম আইরাতের ওরনা গলা থেকে এক টানে ফেলে দিলো।

আইরাত; কককি করছেন আপনি, প্লিজ ছাড়ুন আমায় আমি ব্যাথা পাচ্ছি (কেদে কেদে)

কিন্তু কে শোনে কার কথা,, আব্রাহাম আইরাতের খুব কাছে এসে পড়লো। সে নেশা লাগানো দৃষ্টিতে আইরাতের দিকে তাকিয়ে আছে। আব্রাহাম নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলো না,, আইরাতের গলায় মুখ গুজে দিলো এবং কোমরে হাত দিয়ে চেপে ধরলো। আইরাতের পুরো শরীর যেন কেপে উঠলো। আইরাত আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই আব্রাহাম আইরাতের ঠোঁট জোড়া আকড়ে ধরলো। আইরাতের চোখ তো বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম। আইরাত অনেক চেষ্টা করছে ছাড়া পাওয়ার জন্য কিন্তু আব্রাহামের মতো বডিবিল্ডার এর সাথে আইরাত কেন আইরাতের মতো আরো দশ জনও পেরে উঠবে না। আব্রাহাম যেন এক ঘোরের মধ্যে হারিয়ে গেছে, আশে পাশে কি হচ্ছে তাতে তার কোন খেয়াল নেই। সে আইরাতের নেশাতে মগ্ন রয়েছে। আইরাত অনেক ঠেলাঠেলি করছে আব্রাহাম কে দূরে সরানোর কিন্তু লাভ নেই। অবশেষে আইরাত সহ্য করতে না পেরে ঢুকরে কেদে উঠলো। আব্রাহাম এবার চোখ মেলে তাকালো এবং আইরাতের চোখে পানি দেখলো। আইরাতের চোখের পানি দেখে এবার যেন আব্রাহামের হুশ ফিরে আসলো,, আব্রাহাম সাথে সাথে আইরাত কে ছেড়ে দিলো। আইরাতের চোখ বেয়ে পানি পরছে। আইরাত ভাবতে পারছে না যে মাত্রই তার সাথে কি হয়ে গেলো,, আইরাত কোন রকমে বিছানাতে উঠে বসলো। আব্রাহাম নিচ থেকে ওরনা তুলে আইরাতের সামনে গেলো। আইরাতের সামনে বসে আব্রাহাম আইরাতের গলায় ওরনা জড়িয়ে দিতে দিতে বলল……………

আব্রাহাম; আশা করছি এর পর থেকে আমার কথার অবাধ্য হতে গেলে এই দিন টার কথা মনে করবে, হুমমম?! (আইরাতের ঠোঁটে স্লাইভ করতে করতে)

আইরাত আর কিছু বলল না এক ঝটকায় আব্রাহাম কে দূরে থেলে দিলো,, আইরাত পিছাতে লাগলো আর কাদতে কাদতে বলতে লাগলো….

আইরাত; আপনি কি ভেবেছেন আপনি এভাবে জোড় করলেই আমি আপনার কাছে থেকে যাবো না কখনোই না,, আমি আজ হোক কাল হোক আমি ঠিক একদিন পালিয়ে যাবো। আপনার এই অত্যাচার আমি আর মেনে নিতে পারছি না। প্রথমে আমাকে তুলে আনলেন তারপর আমাকে এভাবে আটকিয়ে রেখেছেন,, এতে লাভ কি হচ্ছে আপনার বলুন। আমি মুক্তি চাই,, আপনি কেন কেন আপনি আমার সাথে এমন করছেন, এতে কি পাচ্ছেন আপনি। আপনি একটা সাইকো, পাগল আপনি একটা। কোন অধিকার,, কোন অধিকারে আপনি আমার সাথে এমন করেন। আমার উপর অধিকার খাটাতে আসেন, কে হন আপনি আমার I hate you…..

আইরাতেএ কথা শুনে আব্রাহানের রাগ তো সাত আসমানে চলে গেলো। I hate you কথা টা যেন সোজা আব্রাহামের বুকে গিয়ে লাগলো। আব্রাহাম এবার আইরাত কে কিছু না করে Gun বের করে উপরে শুন্যে Shoot করে দিলো। আইরাত চমকে গিয়ে চিল্লিয়ে উঠলো।

আব্রাহাম; কে তাই না কে,, আমি কে হই তোর? তা খুব তাড়াতাড়ি ই জানতে পারবি যে আমি তোর কে হই। আর তখন তুই আমার থেকে দূরে কিভাবে পালাস তাই আমি দেখবো,, wait and watch

আব্রাহাম এই বলে Gun হাতে নিয়ে রেগে আগুন হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।

আইরাত; আমি আর পারছিনা এইসব নিতে,, পারছি না আমি।

আইরাত কান্না করতে লাগলো। কোন ভাবেই আইরাত তার কান্না থামাতে পারছে না। আব্রাহামের কাজে খুবই Hurt হয়েছে আইরাত। কান্না করতে করতে হিচকি উঠে গেছে আইরাতের।

আইরাত; পাপা, আম্মু কোথায় তোমরা, প্লিজ নিয়ে যাও না আমায় এখান থেকে আমি আর থাকতে পারছি না। খুব খারাপ লাগছে আমার তোমাদের কে খুব মিস করছি। আয়ুশের কথা মনে পরছে খুব।

আব্রাহাম রেগে মেগে বাইরে চলে এলো। এখন তার একটু একা থাকা দরকার। তাহলেই মাথা ঠিক হবে তার। আব্রাহাম গাড়ি নিয়ে দূরে এক ফাকা জাইগা তে এসে দাড়ালো। এটাকে সাধারনত Highway বলে। আব্রাহাম প্রায় ই আসা যাওয়া করে যখনই তার একা লাগে বা ভালো না লাগে। Highway এর পাশেই একটা ছোট নদী আছে। নদীরে পাশেই বসার জন্য কয়েকটা টেবিল রেয়েছে। আব্রাহাম গাড়ি থেকে নেমে এসে নদীরে পাশে গিয়ে বসে পড়লো। আব্রাহাম এর খুব খারাল লাগছে এখন, সে ভাবছে আইরাতের সাথে রাগের মাথায় যা করছে তা একদমই ঠিক করে নি। আইরাত এতে খুব কষ্ট পেয়েছে। আব্রাহাম তার মাথায় Gun দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছে। আর ভাবছে কি থেকে ক করে ফেললো রাগের মাথায়। কেন যে সে তার রাগটাকে সামলাতে পারে না,, অনেক চেষ্টা করেও সে পারে না।

আব্রাহাম; Sorry জান, I am really very very sorry.. আমি নিজের অজান্তেই তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি। আমি তো এমন কিছু করতে চাই নি, তুমিই আমাকে বাধ্য করেছো, কে বলেছিলো তোমাকে রুমের বাইরে পা রাখার। আমি, আমি সত্যি অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম তোমাকে না পেয়ে। সবসময় তোমাকে হারানোর ভয়ে থাকি আমি। কিন্তু এখন আর না। তোমাকে সারাজীবন এর জন্য কিভাবে নিজের কাছে বন্ধি করে রাখতে পারি তারই ব্যাবস্থা করবো আমি। তোমাকে তো আমার হতেই হবে তাও খুব শীঘ্রই My Love…..

আব্রাহাম সেখানে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে এলো।।

আব্রাহাম; নাহ অনেক সময় ধরে আমার শশুড়মশাই কে দেখছি না,, একটু দেখতে হয়। কে জানে পাগল টাগল হয়ে গেলো না তো আবার

আব্রাহাম এই বলে মনিটর রুমে ঢুকে পোড়ল। আব্রাহাম দেখছে আশরাফুল আহমেদ মাথায় Ice beg দিয়ে বসে আছে। প্রেশার বেড়ে যাওয়ায় তাকে তার বডিগার্ড রা দু পাশ দিয়ে বাতাস করছে। তা দেখে আব্রাহাম হাহাহা করে হেসে উঠলো।

আব্রাহাম; আরে চাচাজান Oops sry শশুড়মশাই এই টুকু তেই যদি তোমার এই দশা হয় তাহলে সামনে তোমার কি হবে ভাবতে পারছো। এর পরের কান্ড কারখানা দেখলে তো তোমায় Direct ICU তে যেতে হবে। (হাসতে হাসতে)

In নীড় মহল……….

আতিয়া আহমেদ; আচ্ছা তোমার হয়েছি কি বলো তো সেই কখন থেকে দেখছি এভাবে বসে আছো। আর তখন ওভাবে অস্থির হয়ে কোথায় বেরিয়ে গেলে। কি হলো কিছু বলছো না যে

আশরাফুল আহমেদ; কি বলবো, কি বলবো আমি আতিয়া। আমার সব শেষ সব। আমার ঔষধের কারখানা কে যেন জালিয়ে দিয়েছে। তখন এক অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আছে আমি ধরতেই ওপাশ থেকে বলে উঠে পারলে বাচিয়ে নে তোর কারখানা কে। কিছুই নেই আতিয়া

আতিয়া আহমেদ; কিহহহহহ,, কি বলছো কি তুমি কিভাবে কি হলো। প্রথমে তো মেয়ের চিন্তা আর এখন এই কান্ড। কি হচ্চে কি এসব, কে করছে

আশরাফুল আহমেদ; জানি না আতিয়া জানি না। আমিও তাই ভাবছি যে কার এতো সাহস হয়ে গেছে যে আমার ক্ষতি করে।

আতিয়া আহমেদ; দেখো, দেখো তুমি একদমই চিন্তা করো না। আমাদের অঢেল সম্পত্তি রয়েছে। সারাজীবন যদি বসেও খাই তবুও কম পড়বে না। তুমি চিন্তা করো না

আশরাফুল আহমেদ; না আতিয়া আমি তার জন্য চিন্তা করছি না চিন্তা করছি এমন কাজ কে করতে পারে আর কেনই বা করছে। কি চাই ও।
আচ্ছা তুমি এইসব বাদ দাও আমি সামলে নিবো। তুমি আয়ুশের খেয়াল রাখো।

আতিয়া আহমেদ; হুমম

আতিয়া আহমেদ ওপরের ঘরে চলে গেলো আর এই দিকে আশরাফুল আহমেদ সব কিছু ভাবছে যে কি থেকে কি হয়ে গেলো।

অন্যদিকে আব্রাহাম এই সব কিছুই ক্যামেরা তে দেখছে। একসময় আব্রাহাম মনিটর রুম থেকে বেরিয়ে আসে। বেরিয়ে এসে রাশেদ কে ফোন দিলো।

আব্রাহাম; Hello রাশেদ…
রাশেদ; জি স্যার বলুন
আব্রাহাম; অফিসের কাজ কতোটুকু, আর আমার কি আসতে হবে?
রাশেদ; স্যার, কাজ বলতে গেলে শেষই। আর না স্যার আপনার আসতে হবে না আমি সব সামলিয়ে নিয়েছি।
আব্রাহাম; Good, রাখছি
রাশেদ; জি স্যার

আব্রাহাম ফোন কেটে দিলো। বাড়ির উদ্দেশ্যে যেতে লাগলো। বাড়ির সামনে গেলে বডিগার্ড রা গেট খুলে দিলো। গাড়ি নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো আব্রাহাম। আব্রাহামের ফোনে আমেরিকা থেকে একটা Important Call আসলো। আব্রাহাম কথা বলতে বলতে বাড়ির ভিতরে যাচ্ছে। ভিতরে গিয়ে আব্রাহাম দেখলো তার বাপি আর অয়ন একসাথে বসে দাবা খেলছে। আব্রাহাম তাদের দেখে মুচকি হেসে call কেটে দিয়ে এগিয়ে এলো।

আব্রাহাম; Hay guys, what’s up!
অয়ন; ভাই এসেছিস, দেখ না অনেক জোড়দার একটা খেলা হচ্ছে বাপি আর আমার মাঝে।
আব্রাহাম; হুমম তা তো দেখতেই পাচ্ছি
আবির আহমেদ; আব্রাহাম বল তো কে জিতবে অবশেষে?
অয়ন; ভাই😒

অয়ন আহত দৃষ্টি নিয়ে আব্রাহামের দিকে তাকালো। কেননা অয়নের বাপিই জিতবে যা তাদের খেলা দেখে ক্লিয়ার বুঝা যাচ্ছে। এটা নতুন কিছু না অয়ন কখনোই তার বাপির সাথে দাবা খেলা তে পেরে উঠে না ।
আব্রাহাম তবুও কিছুটা আমতা আমতা করে বলতে লাগলো।

আব্রাহাম; না আসলে বাপি দেখো বলে তো লাভ নেই কারণ উত্তর আমরা সবাই জানি। আর উত্তর হচ্ছে হামার প্রিয় গুনধর ভাই আজ ও আমার বাপির সাথে পেরে উঠবে না,, তাই না আমার Expert ভাই (অয়নকে পিঞ্চ করে)

অয়ন; ভাই, (এই বলে অয়ন আব্রাহামকে সোফার বালিশ দিয়ে মারতে লাগলো)

আব্রাহাম; আরে আরে মারছিস কেন, আমি কি করেছি সত্য কথার বলা জন্য বুঝি মার খেতে হয়

আবির আহমেদ; আরেএএ তোরা থাম।

অয়ন; আজ আমি দাবা খেলা পারি না বলে তোমরা দুই বাপ-বেটা মিলে আমাকে চেতাচ্ছো।

আব্রাহাম; আহারে বেচারা।

তারপর সবাই একসাথে হেসে উঠলো। এবার আব্রাহাম কিছুটা সিরিয়াস মুড নিয়ে তার বাপিকে বলে উঠলো………

আব্রাহাম; বাপি কিছু কথা ছিলো!
আবির আহমেদ; হে বাবা বল না
আব্রাহাম; বাবা একটা মেয়ে কে খুব ভালোবাসি,, এতো টাই ভালোবাসি যে তাকে ছাড়া হইতো আমি মরেই যাবো।
আবির আহমেদ; বাবা, আমি সবসময় আল্লাহর কাছে চেয়েছি যেন আমার দুই ছেলে খুশি থাকুক, ভালো থাকুক। আমি সব সময় চেয়েছি যে পৃথিবীর সকল খুশি তোদের দেয়ার। এখন তোরা বড় হয়েছিস, বুঝতে শিখেছিস, আমি জানি আমার ছেলেরা কখনও খারাপ কিছু করবে না। ভালো করবে পুরো বিশ্বাস আছে আমার তোদের ওপর। আর, আর তুই এখন যা শুনালি তাতে তো আমি পুরো অবাক যে আমার এই পাগল ছেলেটাও কারো প্রেমে পড়েছে, কাউকে ভালোবেসেছে। আরে এতো খুশির খবর (আব্রাহামের মাথায় হাত বুলিয়ে) নে এবার তাড়াতাড়ি বল দেখি তো যে আমার পুত্রবধূ টা কে, যে আমার ছেলেকে পাগল করে ছেড়েছে!!

আব্রাহাম; বাপি, ওর নাম নুজাইফা বিনতে আইরাত

আবির আহমেদ; মাশআল্লাহ অনেক সুন্দর নাম। তা মেয়ে কি করে কোথায় থাকে?

আব্রাহাম; ( মনে মনে,,বাপি আইরাতের নাম শুনে কিছুই বলল না যে, তাহলে কি বাপি আইরাত নিজের ভাই এর মেয়ে কে ভুলে গেলো)

আবির আহমেদ; কিরে বল

আব্রাহাম; ওহ বাপি। আব.. আসলে বাপি আইরাত এতিম খানায় থাকে ওর বাবা মা নেই কেউ (sorry বাপি মাফ করে দিও মিথ্যা বললাম তোমায়)

আবির আহমেদ; ওহহ আচ্ছা। তাহলে এক কাজ কর ওকে বাড়িতে নিয়ে এসে পড় আমরা ওর সব দায়িত্ব নিবো আর তুই তো ওকে ভালোবাসিস। বিয়ে দিয়ে দিবক তোদের।

আব্রাহাম; হ্যাঁ বাপি, আমি ওকে খুব তাড়াতাড়িই নিজের কাছে নিয়ে আসবো।

অয়ন; “আজক খুশির চাঁদ উঠেছে, আজকে খুশির বাধ ভেংেছে ওহহ বিয়ে হবে রে ওহহ বিয়ে হবে রে, আমার ভাই এর বিয়ে হবে রে” 📢📢📢

আবির আহমেদ-আব্রাহাম;; হাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহা।

অয়ন; যাক শেষে কিনা আমার ভাই এর বিয়ে হবে। আর তারপর আমার

আব্রাহাম; ওরে বাদর তোর আমার বিয়ে নিয়ে খুশি হচ্ছে নাকি তোর নিজের বিয়ের কথা চিন্তা করে কোনটা (অয়নের কান মলে)

অয়ন; আহ ভাই ছাড় লাগছে আমার

আব্রাহাম; বাপি আমি তোমাকে বলে দিচ্ছি এই বাদর টার বিয়ে তুমি ১০০ বছরেও দিবে না। দাড়া তোর বিয়ের করার সাধ মিটাচ্ছি আমি!
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
সবাই সব খুনশুটি শেষে খেয়ে দেয়ে যে যার ঘরে গিয়ে শুরে পড়লো
.
.
.
.
.
.
.
🌸🌼চলবে~~~~~

Gangstar In Love Part-09

0

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#part__09
.
.
.
.
.
.

🍁🍁…..

আব্রাহাম; কেনো জানপাখি কেনো বুঝো না যে কতোটা ভালোবাসি তোমায় (আইরাতের গালে দুই হাত রেখে)
বাচতে পারবো না তোমাকে ছাড়া। একটু বুঝতে চেষ্টা করো। থেকে যাও না আমার কাছে, আমি জীবনে অনেক কিছু সহ্য করেছি অনেক কিছুই হারিয়েছি,, আর যতো টুকু পেয়েছি তা খুবই কষ্ট করে। তোমাকে হারাতে পারবো না প্লিজ জান আমাকে একা করে দিয়ে যেও না প্লিজ (আইরাতের মাথার সাথে মাথা ঠেকিয়ে)

আইরাত আর না পেরে এক ঝটকায় আব্রাহাম কে নিজের থেকে দূরে ঠেলে দিলো। এতে আব্রাহাম কিছুটা পিছিয়ে সরে গেলো।

আইরাত; আপনি কেনো বুঝেন না যে আমি ভালোবাসি না আপনাকে আমার ভয় হয় ভিষন ভয় হয় তাও আপনার কাছ থেকে, এতো মানুষ মারেন কখন না আমাকে মেরে ফেলেন, কেনো থাকবো আমি আপনার কাছে কেনো… আপনি কে হন আমার কোন অধিকারে আপনি আমার সাথে এমন করেন। আমি থাকতে চাই না আপনার কাছে।

আব্রাহাম বেশ রেগে গেলো। ঝট করেই আইরাতের দিকে চোখ তুলে তাকালো। আইরাত আব্রাহাম এর রাগ দেখে কাদো কাদো অবস্থা।

আব্রাহাম; ভুল করেছি আমি ভুল। তোমাকে ভালোভাবে বুঝানোই আমার ভুল। ওহহ সরি সরি আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম যে তুমি কার মেয়ে। মিঃ আশরাফুল আহমেদ চৌধুরীর মেয়ে তুমি বাকা পথে তো চলবেই। সোজা কথা বুঝা তোমার আর তোমার বাবার পক্ষে সম্ভব না। আচ্ছা এখন যখন সোজা ভাবে বুঝলেই না তাহলে বাকা পথ ই Apply করে দেখি। আর অধিকার তাই না, অধিকার তো আমি আদায় করে নিবোই তুমি চাইলেও আর না চাইলেও আর তা খুব তাড়াতাড়ি ই।

এই বলে আব্রাহাম হন হন করে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। আর আইরাত রাগ+কান্না দুটোই নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।।

আইরাত; কি ভেবেছে তুলে আনলেই সব কিছু এতো সহজে মেনে নিব না কখনোই না।।। আমি মরে যাবো তবুও আপনাকে মেনে নিবো না।

কিছুক্ষন পর রুমে একটি মেয়ে প্রবেশ করলো হাতে তার একটি ট্রে, ট্রে তে কিছু খাবার।

আইরাত; তুমি রুবিনা তাইনা?
রুবিনা; জি ম্যাম। ম্যাম আমাকে স্যার পাঠিয়েছে আপনাকে খাওয়ানোর জন্য
আইরাত; খাবো না আমি খাবো না (অনেক রেগে)
যে এগুলো পাঠিয়েছে তাকেই গিয়ে খাওয়াও।

সাথে সাথে রুমে আব্রাহাম এলো, এবং পিছন থেকে বলতে লাগলো,,,,

আব্রাহাম; কেও যদি না খায় তাহলে খাওয়ানোর অন্য রাস্তা ও আমার জানা আছে, এখন বলছি কি যে ভালোভাবে খাবে নাকি আমি কিছু করবো?! (রাগি চোখে)

আইরাত; (এই ছেলের বিশ্বাস নেই, কখন যে কি করে বসে ঠিক নেই আর যে রাগ) আরে না না আপনি সবসময় এমন রেগে বলেন কেন, আআআমি খাবো তো। রুরুবিনা তুমি ট্রে টা রেখে যাও আমি পরে খেয়ে নিবো।

আব্রাহাম; রুবিনা তুমি ট্রে টা আমাকে দাও আর তুমি যাও আর এই যে ঘার ত্যাড়া (আইরাতের উদ্দেশ্যে) যাও ফ্রেশ হয়ে এসো।

আইরাত আর কোন কথা না বলে ওয়াসরুমে চলে গেলো এবং ইচ্ছা মতো আব্রাহাম কে বকতে লাগলো। ৩০ মিন. এর উপরে হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আইরাতের বের হওয়ার নাম নেই। আর আব্রাহাম বসে থাকতে থাকতে রেগে গেলো।

আব্রাহাম; এই মেয়ে কি করছে এতোক্ষন, এতো দেরি করছে কেন, আবার উলটা পালটা কিছু করে বসলো না তো

আব্রাহাম ওয়াসরুমের দরজার সামনে গেলো গিয়ে আইরাত কে ডাকতে লাগলো,,

আব্রাহাম; Baby girl,, baby girl,,
………………………
আব্রাহাম; জানপাখি কি করছো তুমি এতোক্ষন সময় লাগে,,প্লিজ বের হও,,,
……………………..
আব্রাহাম; আইরাত,,আইরাত

ওপাশ থেকে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে আব্রাহাম বেশ চিন্তার মধ্যে পড়ে গেলো

আব্রাহাম; আইরাত আমি শেষ বারের মতো বলছি এইবার যদি দরজা না খুলেছো তাহলে আমি কিন্তু দরজা ভেংে দিবো তাই বলছি Open the door….
……………………………………………..

আব্রাহামের এইবার বেশ রাগ চেপে বসলো। সে আর কিছু না বলে এক লাথি দিয়ে দরজা ভেংে ফেললো এবং যা দেখলো তাতে আব্রাহাম পুরোই বোকা বনে গেলো। আব্রাহাম দেখলো আইরাত বসে বসে পানি দিয়ে খেলছে।

আব্রাহাম; এই মেয়ে তুমি কি পাগল নাকি

আইরাত একবার আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আবার পানি দিয়ে খেলতে শুরু করে দিলো

আব্রাহাম তো পারছে না আইরাত কে এক আছাড় দিতে।
আব্রাহাম; আইরাত এখনই যদি তুমি এই ঠান্ডা পানি থেকে না উঠেছো তাহলে আমি কি যে করবো আমি নিজেও জানি না।

আইরাত তবুও খেলেই যাচ্ছে। এবার আব্রাহাম আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারলো না,, আইরাতের হাত ধরে এক টানে দাড় করিয়ে ঠাটিয়ে দিলো এক থাপ্পর।

আব্রাহামের থাপ্পর খেয়ে আইরাতের দুনিয়া যেন ঘুরে গেলো। আইরাত গালে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

আব্রাহামের তো আইরাতে কে থাপ্পর মেরে এখন নিজেরই খারাপ লাগছে। আব্রাহাম মাথায় হাত দিয়ে এক লম্বা নিঃশ্বাস ছাড়লো পরক্ষনেই আইরাত কে জড়িয়ে ধরলো….

আব্রাহাম; কেন একই কাজ বার বার করো বলোতো। যে কাজ গুলোতে আমি রেগে যাই সেগুলোই বার বার করো পরে আমি উলটা পালটা কিছু করে বসি। এখন যে এই ঠান্ডা পানি দিয়ে খেলছো পরে তো ঠান্ডা লেগে যাবে,,জর এসে যাবে এমন ছেলেমানুষী কেন যে করতে যাও।। আমি তো এমন করতে চাই না জানপাখি কিন্তু তুমি আমাকে বাধ্য করো। জানোই যে তোমাকে নিয়ে কতোটা টেনশন করি আমি। কখন থেকে দরজা ধাক্কাচ্ছিলাম খোলার নামই নেই, ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম,, ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে তুমি আবার আমাকে ছেড়ে পালিয়ে গেলে না তো।

এই দিকে আইরাতের দম আটকে আসছে ছাড়ার চেষ্টা করেও লাভ নেই আব্রাহাম তাকে ছাড়বে না।

আইরাত; আমাকে ছাড়ুন, আমার কষ্ট হচ্ছে প্লিজ

আব্রাহাম আইরাতকে ছেড়ে দিলো। এবং টেনে বাইরে নিয়ে আসলো,

আইরাত; আহহ আপনি বার বার এভাবে আমাকে নিয়ে টানাটানি করেন কেন বলুন তো
আব্রাহাম; আমার ইচ্ছা আমি টেনেছি,, যা ইচ্ছা করবো তুমি বলার কে হুমমম?!
আইরাত; বারে, আমাকে নিয়েই টানবেন আর আমি কিছু বললেই দোষ
আব্রাহাম; এই চুপ একদম মুখ বন্ধ

এই বলেই আব্রাহাম আইরাতের মুখের সামনে খাবার ধরলো,, আইরাত কিছু বলতে যাবে তার আগেই আব্রাহাম বলে উঠলো…..

আব্রাহাম; এখন যদি বলেছো যে খাবো না তাহলে I Swear কিস সাথে আরো অনেক কিছু করে বসবো

আইরাত; এএএএইইইই নননা আআ আমি খাচ্ছি দিন দিন আমি খাবো

আব্রাহাম; Good baby girl…..

আব্রাহাম আইরাত কে খাইয়ে দিয়ে এসে পড়লো এবং তার সাথে আইরাতকে সুন্দর করে বুঝিয়েও দিয়ে আসলো যাতে পালানোর চেষ্টা একদমই না করে যাকে বলে থ্রেইট আর কি। আইরাত ও সুন্দর করে মাথা নাড়িয়ে হে বলে দিলো,, ভেজা বিড়াল।

আইরাত; আব্রাহাম শয়তানের বাচ্চা দেখে নিবো তোকে হাহ (মনে মনে)

আব্রাহাম বাইরে বের হয়ে সোজা মনিটর রুমে গেলো এবং গিয়ে দেখতে লাগলো কোথায় কি হচ্ছে,, কারণ আব্রাহাম আইরাতদের বাসায় মানে নীড় মহলের পুরোটাই ক্যামেরা ফিট করে দিয়ে এসেছে,, কোথায় কখন কে কি করছে তা সহজেই দেখতে পারবে আব্রাহাম। আব্রাহাম রকিং চেয়ারে বসে হাতে ব্লু কালারের একটা গ্লোব নিয়ে ঘুড়াতে থাকলো আর ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে থাকলো……
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
নীড় মহল……….

আইরাতের মা আতিয়া আহমেদ সেই কখন থেকে মেয়ের জন্য কেদেই যাচ্ছে। আশরাফুল আহমেদ কোমিশনারের সাথে রাগারাগি করছেন।

আশরাফুল আহমেদ; চেষ্টা করছেন মানে কি চেষ্টা করছেন আপনারা।।। আপনারা এতো জন মানুষ মিলেও আমার মেয়ের কিডনেপার কে ধরতে পারলেন না। আমার মেয়ে টাকে প্রথমে তুলে নিয়ে গেলো তখনও আপনারা কিছুই করেন নি। এখন আমার মেয়ে কে ওই হারামজাদা টা নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেছে আর এখনো আপনারা হাতে হাত রেখে বসে আছেন কি করছেন আপনারা। দেখুন আমি কিছুই জানি না আমি আমার মেয়ে কে সহি-সালামোত আমার সামনে চাই বেস (রেগে বোম হয়ে)

কমিশনার; দেখুন মি. আশরাফুল আহমেদ আপনি একদমই চিন্তা করবেন না। We will try our best দিন রাত এক করে দিবো আমরা আপনার মেয়ে কে খুজে আনতে আমাদের শুধু কিছুটা সময় দিন।

আশরাফুল আহমেদ; সময় সময় সময় আর কতো সময় দিবো আপনাদের কে বাড়িতে এতো গার্ড থাকা সর্তেও আমার মেয়ে কে নিয়ে গেলো। কমিশনার আমি আমার মেয়ে কে চাই নইতো এইটা মাথায় রাখবেন যে আপনার হাত থেকে আপনার চাকরি গেছে।

কমিশনার; ননা সস্যার এমন ভাবে বলবেন না,, আমরা যে করেই হোক আইরাত মামনি কে খুজে নিয়ে আসবো কোন চিন্তা করেবেন না আপনি,,,, এই তোমরা সবাই চলো (পুলিশদের উদ্দেশ্যে বলে)

কমিশনার এই বলে বেরিয়ে গেলো এবং আশরাফুল আহমেদ ধপ করে সোফাতে বসে পড়লেন

আতিয়া আহমেদ; ওগো তুমি এভাবে ভেংে পড়ো না ব্লাড প্রেশার বেরে যাবে যে তুমি শান্ত হও।

আশরাফুল আহমেদ; কিভাবে আতিয়া কিভাবে শান্ত হই। মেয়েকে দু-দুবার তুলে নিয়ে গেলো অথচ আমি বাবা হয়ে কিছুই করতে পারলাম না। (কেদে কেদে)

আতিয়া আহমেদ; তুমি দেখো আমাদের মেয়ের কিছুই হবে না ঠিক আমাদের কাছে চলে আসবে তুমি ধৌর্য্য ধরো।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
ওইদিকে আইরাতের বাবা-মা চিন্তায় মরে যাচ্ছে। আর এইদিকে আব্রাহাম পায়ের ওপর পা তুলে তাদের Camera তে দেখছে আর বাকা হাসছে

আব্রাহাম; কি ভেবেছো কি চাচাজান,,তোমার কালো অতীত এতো সহজেই তোমার পিছ ছাড়বে না না তা কি করে হয়,, কেননা আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী এখনো বেচে আছে। আর এই আব্রাহাম বেচে থাকার প্রথম কারণ হচ্ছে আইরাত তার জানপাখি আর সেকেন্ড হচ্ছে তোমার মি. আশরাফুল আহমেদ চৌধুরীর বরবাদি। তোমাকে বলেছিলাম না যে নিজের আপন কেও যখন নিজের থেকে দূরে চলে যায় তখন কেমন লাগে তা তোমাকে আমি হারে হারে বুঝাবো। নাও এখন বুঝো।

আইরাতের তার বাবা মা ভাইয়ের কথা অনেক মরে পড়ছে কানতে কানতে চোখের নিচে কালো দাক পড়ে গিয়েছে। একসময় আইরাত কানতে কানতে ঘুমিয়ে পড়লো।

আব্রাহাম এবার তার নিজ বাড়িতে গেলো,, যেখানে তার বাবা ভাই রয়েছে।

আব্রাহাম; বাপি বাপিইই
আবির আহমেদ; কিরে এই তোর আসার সময় তুই না বলেছিলি যে তোর এক রাত থাকতে হবে বাইরে কোন এক কাজের জন্য তাহলে তো আজকে সকালেই আসার কথা তুই ফিরে এলি রাতে বেপার কি?
আব্রাহাম; উফফ বাপি একটু কাজ বেশিই ছিলো তুমি তো দেখছি আমাকে পুরা CID এর মতো জিগ্যেস করছো… রাখো না এখন এইসব আচ্ছা বলো অয়ন কোথায়?

অয়ন; এইইইই যে আমি ভাই ( পিছন থেকে এসে)

আব্রাহাম; কিরে খবর কি তোর, অফিসে গিয়েছিলি?

অয়ন; হুমম ভাই গিয়েছিলাম তো আর সব ফাইল ও চেক করে এসেছি। বাট তুই আসতে এতো দেরি করলি যে

আব্রাহাম ; আরে ওইতো কাজের চাপ একটু বেশিই ছিলো

আবির আহমেদ; নে এবার চল খেয়ে তারাতারি সুয়ে পড় কাল তো আবার দুই ভাই কে কাজে যেতে হবে

অয়ন; হুমম বাপি আসছি,, চল ভাই

আব্রাহাম; তুই যা আমি একটু ওপর থেকে আসি

অয়ন; আচ্ছা

আব্রাহাম সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলো এবং ফোনে কথা বলতে লাগলো..

আব্রাহাম; Is everything done?
……………….yes, sir
আব্রাহাম; Good, এখন শুধু কাল সকালের অপেক্ষা। তুই তোর বাকি টাকা কাল কের মধ্যেই পেয়ে যাবি
……………….Thank you sir

আব্রাহাম ফোন কেটে দিলো। ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে আসলো। তারপর আবির আহমেদ- অয়ন- আব্রাহাম একসাথে খেয়ে যে যার যার রুমে চলে গেলো।

আব্রাহাম ঘুমোতে চেয়েও পারছে না,, আইরাতের কথা বার বার মনে পড়ছে তার,, শেষে আর না পেরে আব্রাহাম কালো হুডি টা পড়ে বাড়ির পিছন দিয়ে চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর আব্রাহাম একটি বাড়ির সামনে চলে এলো ধীর পায়ে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলো। আইরাতের রুমের দিকে এগুতে লাগলো। আব্রাহাম গিয়ে দেখে আইরাত বিছানার এক কোণ জোড়সোড় হয়ে শুয়ে আছে দেখতে একদমই বাচ্ছা লাগছে। বাইরের আলো ভিতরে হাল্কা এসে পড়েছে তাতে আইরাতের মুখখানা দেখতে মায়াবি লাগছে। আব্রাহাম তার পাশে এসে বসে পড়লো। আইরাতের গালগুলো হালকা হাতে ছুয়ে দিতে লাগলো….

আব্রাহাম; তোমার এই মায়াতে আমি আটকা পড়েছি। এক মৃত্যু বেতীত কেও আমাকে তোমার কাছ থেকে আর তোমাকে আমার কাছ থেকে আলাদা করতে পারবে না। আর শাস্তি তো আমি তোমার বাবা মানে চাচাজানকে দিতে এসেছি। তোমাকে তো ভালোবেসে আগলে রাখতে এসেছি। তুমি আমার আইরাত শুধুই আমার,, তুমি আব্রাহামের আইরাত আর আমি আইরাতের আব্রাহাম (আইরাতের কপালে কিস দিয়ে)

🍁চলবে~~~~

Gangstar In Love Part-08

0

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#Part_08

❣️❣️
.
.
.
.
.
.
.
.
.
আব্রাহাম একটি অন্ধকার ঘরে চেয়ারে হেলান দিয়ে সুয়ে আছে। একদৃষ্টিতে উপরে তাকিয়ে আছে। আইরাত এর চেহারা টা চোখে ভাসছে তার। মানুষ বলে যে প্রথম দেখাইতেই কেও কাউকে ভালোবাসতে পারে না। আর যদি বাসেও তাহলে তা Attraction ভালো বাসা না। কিন্তু না তারা ভুল বলে ভালোবাসার জন্য শুধু মাত্র কয়েক সেকেন্ড এর দরকার পরে, ভালোবাসা যে কারো সাথে যে কনো মূহুর্তের মধ্যে হয়ে যেতে পারে,, ঠিক যেমনটি হয়েছে আব্রাহাম এর ক্ষেত্রে। আইরাত কে তো সে ঠিক ভাবে চেনতো ও না কিন্তু এই আইরাতের মায়াতেই সে আবদ্ধ হয়ে গেছে। আর আব্রাহাম চাইলেও এই মায়ার বেড়াজাল থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারবে না। আর আব্রাহাম তা চায় ও না। আইরাত এখন তার নিঃশ্বাস এ পরিনত হয়েছে। এক বিন্দু ও আইরাত কে ছাড়া তার চলবে না আর আব্রাহাম এখন তা হারে হারে টের পাচ্ছে। প্রচন্ডভাবে ভালোবেসে ফেলেছে সে আইরাত কে। কিন্তু হঠাৎ করেই আব্রাহাম এর আইরাতের পালিয়ে যাওয়ার এবং তার আশরাফুল আহমেদ এর ধোকা দেয়ার কথা মনে পড়ে গেলো,,, প্রতিশোধের আগুনে জ্বলতে লাগলো আব্রাহাম,, রাগ তার মাথা চেপে বসেছে চোখ গুলো মূহুর্তেই রক্তের মতো লাল হয়ে গেছে। আব্রাহাম লাগাতার Vodka খেতে লাগলো, এইটা আর নতুন না আব্রাহামের রাগ যখন কোন্ট্রলের বাইরে চলে যায় তখন সে এমনই করে। আব্রাহাম আইরাতের একটি ছবি তার সামনে ধোরলো এবং নেশা নেশা চোখে বলতে লাগলো……….

আব্রাহাম; যতই দূরে চলে যাও,, পালিয়ে যাও শেষে তো তোমাকে এই আমার কাছেই ফিরে আসতে হবে। সেটা তুমি চাইলেও আর না চাইলেও আর আমি আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী বেশ ভালো করেই নিজের জিনিস আদায় করে নিতে জানি। এখন আমি দেখি মিস. নুজাইফা বিনতে আইরাত যে তুমি আমার কাছ থেকে দূরে পালিয়ে কোথায় আর কতো দূর যেতে পারো। (Alcohol খেতে খেতে)…………

In নীড় মহল “”””””””””””

আইরাত আব্রাহাম ভয়ে ভীত হয়ে আছে আর ওর কথা ভাবছিলো হঠাৎ করে পিছন থেকে কারো হাত কাধে পড়ায় আইরাত চমকে পিছনে তাকালো দেখলো তার পাপা। আইরাত অশ্রুসিক্ত চোখে তার পাপা কে জড়িয়ে ধরলো। আশরাফুল আহমেদ তার মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন।

আইরাত; পাপা, আমি সত্যিই জানি না যে ওই লোকটি কে ছিলো। কেনই বা আমাকে তুলে নিয়ে গেলো, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না পাপা। ওই লোক সবসময় বন্দুক নিয়ে ঘুরে, খুবই ভয়ংকর ওই লোক। পাপা ওই লোক বলেছে যে আমাকে যে করেই হোক আবার ধরে নিয়ে যাবে। পাপা ও পাপা প্লিজ আমি যাবো না ওর সাথে। আমার তো ওকে দেখলেই ভয় লাগে।

আশরাফুল আহমেদ; না মা তুই একদম ভয় পাস না আমি থাকতে তোর কিছুই হবে না। ওই ছেলে কেন ওর ছেলের চৌদ্দগুস্টি ও তোমাকে কিছুই করতে পারবে না। তুই নিশ্চিন্তে থাক মা, ভয় পাস না। আমি বাসার বাইরে কড়া নজরদারি দিয়ে রেখেছি। বিনা অনুমতিতে কেও বাইরে থেকে ভিতরে আসতে পারবে না। তুই খেয়ে দেয়ে চুপ করে সুয়ে পর তোর রেস্ট দরকার মা চিন্তা করিস না পাপা এখনো বেচে আছে তোর।

আইরাত; ঠিক আছে পাপা Good night…

আশরাফুল আহমেদ; Good night মামনি (আইরাতের মাথায় হাত বুলিয়ে বেরিয়ে পড়লেন)
.
.
.
.
.
.
আব্রাহাম; আইরাত Baby girl তুমি কি ভেবেছো আমি তোমাকে এতো তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিবো,, ন্যাহ। তোমাকে তো আমি নিজের করেই ছাড়বো। I am coming জান।

এই বলে আব্রাহাম গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো আইরাত দের বাড়ির উদ্দেশ্যে। অবশেষে আব্রাহাম আইরাত দের বাড়ি পৌছে গেলো গিয়ে দেখলো আইরাতের বাবা আশরাফুল আহমেদ অনেক কড়া Guard দিয়ে রেখেছেন। আব্রাহাম তা দেখে তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললো…..

আব্রাহাম; আরে চাচাজান উরফে শশুড়মশাই আপনি যদি পৃথীবির সকল Guard দের ও পাহারাতে রেখে যান তাহলেও আপনার মেয়ে কে আপনি আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারবেন না। আপনার মেয়ে কে আমি আমার আর আপনাকে তো আমি ধ্বংস করেই ছাড়বো। Get ready শশুড় তোমার জামাই আসছে।

আব্রাহাম তার গাড়ি থেকে কালো হুডি আর একটা মাস্ক পরে নিলো। তারপর ঝরের গতিতে বাইরে থাকা Guard দের সামনে গিয়ে দাড়ালো এবং সাথে সাথে তাদের মুখে কিছু একটা স্প্রে করে দিলো Guard রা কিছু বলার সময় টুকু পেলো না। তারপর আব্রাহাম ধীরে ধীরে গেট দিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে একটা Guard এর ঘাড়ে তার বুড়ো আংুল দিয়ে প্রেস করলো Guard টি সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে নিচে পরে গেলো। তারপর আব্রাহাম ধীর পায়ে হেটে বাড়ির পিছনে গেলো এবং দেয়াল টপকে করিডোরে উঠে সোজা আইরাতের রুমে ঢুকে পড়লো। আব্রাহাম গিয়ে দেখে তার প্রানপাখি তাকে অশান্তি তে রেখে আরামছে ঘুমাচ্ছে। তা দেখে আব্রাহাম হালকা কিছুটা রেগে গেলো, আইরাত তার কাছ থেকে বার বার পালানোর চেষ্টা করে বলে আব্রাহাম এর রাগ চড়ে গেলো। কিন্তু আইরাতের মায়া ভরা মুখ খানা দেখে মূহুর্তেই আব্রাহাম রাগ যেন হাওয়া হয়ে গেলো। আব্রাহাম নিজেকে আর আটকাতে না পেরে আইরাতের পাশে গিয়ে বসে পড়লো। বাইরে থেকে আসা চাঁদের আলো তে আর একটি চাঁদের মুখে উজ্জ্বল হয়ে গিয়েছে।। আব্রাহাম আইরাতের মুখের সামনে এসে পরা চুল গুলো হালকা হাতে সরিয়ে দিলো।এতে আইরাত কিছুটা নড়েচড়ে উঠলো।
আইরাতের না চাইতেও কেন জানি তার অনেক ভয় লাগছে। কেন জানি মনে হচ্ছে যে কেও তার উপর নজর রাখছে। ঘুমানোর বেশ কিছুক্ষন পর আইরাত বুঝতে পারছে যে কেও তাকে খুব কাছ থেকে গভীরভাবে দেখছে। তার নিঃশ্বাস গুনতে পারছে আইরাত। কিন্তু প্রচন্ড ঘুমের ঘোরে থাকার কারণে আইরাত এর শক্তি হচ্ছে না চোখ মেলে তাকানোর। আইরাতের ভয় যেন দ্বিগুণ হয়ে গেলো। আব্রাহাম এক ধেনে আইরাতের দিকে তাকিয়ে আছে। আব্রাহাম খুব করে চাচ্ছে আইরাত কে নিজের করে নিতে। কিন্তু সে এখন চাইলেও তা পারবে না। কিন্তু আইরাত কে নিজের কাছে রাখতে পারবে তারপর আপন করে নিতেও সময় লাগবে না তার। আব্রাহাম এগুলো ভাবছে আর আইরাত কে দেখে মুচকি হাসছে। আব্রাহাম আইরাতের একদম কাছে গিয়ে কানের কাছে বলতে লাগলো ””””’

আব্রাহাম; I am back baby girl……… (বাকা হাসি)

আইরাত সাথে সাথে চোখ মেলে তাকালো,, সামনে তাকিয়েই আইরাত দেখতে পেলো একজন লোক পুরো কালো জামা পরে তার দিকে উপুড় হয়ে তাকিয়ে আছে। মুখে মাস্ক থাকায় এবং অন্ধকার থাকার ফলে চেহারা কিছুই বুঝতে পারছে না আইরাত। আইরাত তো দেখে ভয়ে জমে গেছে। যেই না আইরাত চিৎকার দিতে যাবে, তখনই আব্রাহাম আইরাতের মুখ চেপে ধরলো এবং বলতে লাগলো

আব্রাহাম; আরে আরে কি করছো কি জান,, ধরা পড়ে যাবো তো ওই তোমার so-called পাপার কাছে। চাইলে আমি তোমাকে সবার সামনে থেকেই তুলে নিয়ে যেতে পারবো কিন্তু আমি এখন তা করছি না কেননা সবার ঘুমের বেঘাত ঘটবে আর তোমার পাপা কে আমি একটু surprise দিতে চাই। আর তুমি কেন আমার কাছ থেকে পালিয়ে এসেছো তার শাস্তি না হয় আমি তোমায় পরে দিবো কেমন জানপাখি। তো Baby girl যাওয়া যাক Let’s go (এক ভ্রু উচিয়ে বাকা হেসে)

এই বলে আব্রাহাম আইরাতের নাকের কাছে ক্লোরফোম স্প্রে করে দিলো এবং সাথে সাথেই আইরাত জ্ঞান হারিয়ে ফেললো। আব্রাহাম খুবই সাবধানে আইরাত কে তুলে এনে গাড়িতে বসালো এবং ড্রাইভ করে আব্রাহামের বাসার নিয়ে যেতে লাগলো।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
পরের দিন দকালে🌞………….

.
.
.
.
.
.
আইরাতের মা আইরাতকে প্রতিদিন কার মতো ডাকতে এলো।

আতিয়া আহমেদ; আইরাত মা আই,, আয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া ( পুরো কথা তিনি আর শেষ করতে পারলেন না তার আগেই দিলেন এক চিৎকার)

উপর থেকে আতিয়া আহমেদ এর চিৎকার শুনে নিচে থেকে আশরাফুলে আহমেদ দৌড়ে এলেন উপরে।

আশরাফুল আহমেদ; ককি হয়েছে এভাবে চিল্লালে কেন আতিয়া কি………………

তারপর সামনে তাকালো আশরাফুল আহমেদ। তার মেয়ের রুমের দেয়ালে সুন্দর করে রক্ত দিয়ে লেখা
“” হবু শশুড়মশাই আপনার মেয়ে আমার ছিলো আর আমারই থাকবে, আমি আপনার মেয়ে কে নিয়ে গেলাম একদম নানুভাই বানানোর প্রস্তুতি নিয়ে আসবো কেমন,, আর আপনার বরবাদ হওয়ার দিন এগিয়ে আসছে So get ready for that আর হ্যাঁ আপনার মেয়ে কে খুজার একদমই ব্যার্থ চেষ্টা করবেন না কেননা আপনি তা পেরে উঠবেন না শুধু এইটা ভেবে রাখুন যে আপনার মেয়ে আমার কাছে ভালো এবং সাবধানে আছে Goodbye””……..

এই দেখে আতিয়া আহমেদ কেদে দিলেন এবং নিচে বসে পড়লেন। আশরাফুল আহমেদ তো রাগে দাত কোটমোট করছে এবং রাগে হাত মুসঠিবদ্ধ করে ফেললেন। তিনি দ্রুত পুলিশ অফিসারের কাছে ফোন দিলেন।

অন্যদিকে……..

সূর্য্যের আলো আইরাতের চোখে পড়তেই আইরাতের চোখ জোড়া কুচকে নিলো,, মাথায় হাত দিয়ে ধীরে ধীরে বিছানায় বসে পড়লো,, মাথা টা বেশ ভারি ভারি লাগছে তার। উঠে বসতেই আইরাত তার চারপাশে চোখ বুলাতে লাগলো। রুমের চারপাশে দেখে আইরাতের চোখ যেন চড়কগাছ। আইরাত এখানে এলো কি করে। সে তো কাল রাতে তার পাপার বাড়িতে নিজের রুমে ছিলো কিন্তু হুট করেই এখানে কিভাবে এসব ভাবতে ভাবতে আইরাত আবার মাথা চেপে ধরলো। এবার আইরাত ভালো করে ঘরটি দেখতে লাগলো
.
.
.
.
.

আইরাত; আআমি, আমি এখানে কি করে। কে নে এলো আমাকে এখানে।.
.
.
.
.
ধীরে ধীরে আইরাতের কাল রাতের সব কথা মনে পোড়তে লাগলো এবং আইরাত ভয়ে আৎকে উঠলো। আইরাত ভাবতে লাগলো যে তাকে তুলে এনেছে সে আব্রাহাম নয় তো। এজন্যই তার আরো বেশি ভয় লাগছে।
আইরাত রুমটির সারা টা ভালোভাবে দেখছে আর যতোই দেখছে ততোই অবাক হচ্ছে কেননা সম্পূর্ণ ঘর জুড়ে রয়েছে শুধু আইরাত আর আইরাতের ছবি,, আইরাতের চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে থাকার ছবি,, হাসোজ্জল ছবি,, বিভিন্ন রকম পোজের ছবি রয়েছে আইরাত। আইরাত এগুলো দেখে পুরো ধমে অবাক হয়ে গেলো কারণ এই ছবি গুলো যে কখন,কিভাবে তুলা হয়েছে তা সে জানে না। আইরাত এগুলো গোল গোল চোখে দেখছিলো ঠিক তখনই আব্রাহাম এলো রুমে। আইরাত এতো টাই ছবি দেখাতে বেস্ত হয়ে ছিলো যে আব্রাহাম কখন রুমে এসেছে তা সে খেয়াল ই করে নি। আব্রাহাম এসে দেখলো আইরাত ঘুম থেকে উঠে ছবির সামনে দাঁড়িয়ে আছে আব্রাহাম তা দেখে মুচকি হেসে আইরাতের পিছনে গিয়ে দাড়ালো। কানের একদম কাছে এসে আব্রাহাম বলল……….

আব্রাহাম; Baby girl (স্লো ভয়েসে)

আব্রাহামের এমন করে বলায় আইরাত চমকে উঠ দূরে সরে আসে। এবং হাপাতে লাগে

আব্রাহাম; Hay baby chill It’s me তোমার জামাই😉

আইরাত; আপনি আবার,, আমাকে কেন আবার তুলে এনেছেন আপনি। আসলে কি চাই আপনার, কেন এভাবে জালাচ্ছেন আমাকে এবং আমার পুরো পরিবার কে। আমি মুক্তি চাই মুক্তি প্লিজ যেতে দিন আমাকে। কেন পাগলামি করছেন কি চাই আপনার?!

আব্রাহাম; তোমাকে, তোমাকে শুধুই তোমাকে চাই আমার (আইরাতের দিকে এগোতে এগোতে)

আইরাত; আআআপনি এভাবে এএএগোচ্ছেন কেকেন। আর এক পা ও এগোবেন না বলে দিচ্ছি,, খুব খাখারাপ হয়ে যাবে কিকিন্তু,,

আব্রাহাম; জানপাখি, আমার থেকে খারাপ আর কেও কখনো হতেও পারবে না। আমি খারাপ ও হবো তোমার জন্য, ভালো ও হবো তোমার জন্য,, আমি তোমার জন্য সব করতে পারি Baby girl সব।। তোমার জন্য জান দিতেও পারি আবার এই তোমার জন্য কারো জান নিতেও পারি ( চোখ লাল করে রাগে).
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
🍁চলবে~~~~~

Gangster In Love Part-07

0

#Gangster In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#Part__ 07

আব্রাহাম গাড়িতে বসে যাচ্ছে। চোখে Sunglass, কানে Air pod,

আব্রাহাম; কোথায় ও?
ওপর পাশ; স্যার ওকে তো তুলে এনেছি। কিন্তু প্রচুর দেমাগ দেখাচ্ছে কোন ভাবেই কথা স্বীকার করতে চাচ্ছে না
আব্রাহাম; হাহা ওর ওই দেমাগ গুড়িয়ে দিতে আমার মাত্র কয়েক সেকেন্ড লাগবে। ওকে ধরে রেখো আমি আসছি।

এই বলে আব্রাহাম ফোন কেটে দিলো। আব্রাহাম মূলত একটি গোডাউনে যাচ্ছে। কিছুক্ষন পরে আব্রাহাম পৌঁছে গেলো,,,,,

সেই লোকটিকে একটি চেয়ারের সাথে বেধে রাখা হয়েছে। লোকটি ছটফট করছে ছুটার জন্য কিন্তু পেরে উঠছে না।

আব্রাহাম; আরে থাম থাম এতো তাড়া কিসের মাত্র তো আসলাম এখনই চলে যাওয়ার জন্য এতো কাতড়াচ্ছিস।
লোকটি; দেখ ভালো হবে না বলে দিচ্ছি। যেতে দাও আমাকে। আমাকে তুলে এনে কোন লাভ নেই কারণ আমার কাছ থেকে এমন কিছুই তুমি জানতে পারবে না যা তোমার কাজে আসে….(ছটফট করতে করতে)

আব্রাহাম; যদি না ই জানতে পারতাম তাহলে কি তোর মতো সামান্য একটা ক্ষুদ্র পিপড়ে কে তুলে আনতাম।

লোকটি; কি চাই তোমার?
আব্রাহাম; কিছু প্রশ্নের উত্তর,, তোর নাম রহিম মোহাম্মদ তাই না!
রহিম মোহাম্মদ(লোকটি); হ্যাঁ,
আব্রাহাম; তুই আশরাফুল আহমেদ এর খুবই বিশ্বাসি একজন তাই না?
রহিম মোহাম্মদ; হ্যাঁ, আর আমি মরে যাবো কিন্তু তবুও স্যার এর কিছু হতে দিব না (রেগে)
আব্রাহাম; হাহাহাহাহা,,, আরে তোর স্যার এর তো অনেক আগেই অনেক বড়ো ক্ষতি আমি করে ফেলেছি তার একমাত্র কন্যা কে তুলে এনে। আর তোর মরার দরকার নেই কিন্তু তোর বদলে যদি অন্য কেও মরে তো?
রহিম মোহাম্মদ; মানে কি, কি বলতে চাচ্ছো তুমি?
আব্রাহাম; বুঝলি না তাই তো, ওকে আমি বুঝাচ্ছি তোর ছেলে আইডিয়াল স্কুলে পড়ে রাইট! আর এখন তো ফেয়ার ও সময় হয়ে গেছে তাই না,, আর তোর স্ত্রী এখন তোর ছেলে কে আনতে যাবে ঠিক?! একবার ভাব তো যে এখন যদি তোর ছেলে কে খুজে না পাওয়া যায় তাহলে আর তোর স্ত্রীর যদি এক্সিডে……

রহিম মোহাম্মদ; ননা না ককি বলছো তুমি না না প্লিজ এমন কিছু করো না প্লিজ।। যা করার আমাকে করো প্লিজ তবুও আমার ছেলে- স্ত্রী কে ছেড়ে দাও ওদের কিছু করো না ওরা কিছুই জানে না (অনেক ভয় পেয়ে)

আব্রাহাম; ঠিক এমন, ঠিক এমন ভাবেই আমি আমার বাবা-মা,ভাই ভয় পেয়েছিলাম বার বার আল্লাহর কাছে দোয়া করছিলাম যেন আমরা safe ভাবে বেচে যাই কিন্তু কি হয়েছে জানিস আমার পরিবার টা পুরোপুরি এলোমেলো হয়ে গেছে আর তা তোর স্যার আর তোর জন্য হয়েছে একমাত্র তদের জন্য।।। সেই দিন যদি তোরা মিলে আমাদের বাসায় বোমা লাগিয়ে না আসতি তাহলে আমার মা আজ বেচে থাকতো আমাদের সাথে থাকতো আমার বাপি এভাবে ভিতর থেকে ভেংে পড়তো না ( রেগে আগুন হয়ে)

রহিম মোহাম্মদ; আআআমাকে ক্ষক্ষমা করে দাও।
আব্রাহাম; হাহা ক্ষমা, ক্ষমা নামক কোন শব্দ আমার ডিকশনারি তে নেই ,, সরি ক্ষমা তো তোকে আর তোর স্যার কে করতে পারবো না। এবার বল কেন আশরাফুল আহমেদ কে সাহায্য করেছিলি একটা নির্দোষ পরিবার কে মেরে ফেলে জন্য,, বল ( জোড়ে চিল্লিয়ে ধমক দিয়ে)
লোকটা হালকা কেপে উঠলো আব্রাহামের ধমকে, সে বলতে লাগলো

রহিম মোহাম্মদ; আমি অনেক আআগে থেথেকেই আশরাফুল স্যার এর সাথে কাজ করি রাজনীতি তে। কিন্তু স্যার একদিন তার ই বড়ো ভাই কে এবং তার ছেলে-স্ত্রী কে মারার জন্য আমাকে বেশ কিছু টাকা দেন এবং বোমা লাগিয়ে আসতে বলেন। আমি লোভে পরে যাই এবং বোমা লাগিয়ে আসি সবার মারা যাবার জন্য।

আব্রাহাম লোকটির কাছ থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে কপালে Gun দিয়ে স্লাইভ করছিলো আর কথা গুলো শুনছিলো। কিন্তু শেষ কথা টা যেন ওর মাথায় বারি খেলো এবং কথাটি সহ্য করতে না পেরে দ্রুত পিছনে ঘুরে আব্রাহাম লোকটির ঠিক কপাল বরাবর shoot করে দেয়। সব bodyguard আব্রাহামের ভয়ে থর থর করে কাপছে কেও কোন কথা বলার সাহস পাচ্ছে না।

আব্রাহাম; রাশেদ, (অনেক চিল্লিয়ে+রেগে)
রাশেস; জজজি সস্যার,
আব্রাহাম; ঠিক ৫ মিন. এর মধ্যে এর লাশ কে এখান থেকে বিদায় করো এবং এই জায়গা দেখে যেন এমন লাগে যে এখানে কিছুই হয় নি
রাশেদ; ওওওকে স্যার।

এই বলে আব্রাহাম হন হন করে বেরিয়ে পড়লো এবং বলতে লাগলো…..

আব্রাহাম; আমার প্রিয় চাচাজান উরফে আশরাফুল আহমেদ চৌধুরী এবং আমার হবু শশুড়মশাই এতো সহজে তো তোমাকে আমি ছেড়ে দিব না।। আমি তোমাকেও হারে হারে বুঝাবো যে যখন নিজের কাছ থেকে তার প্রিয় মানুষ দূরে চলে যায় তখন তার কেমন লাগে। তোমার সব কালো কির্তী-কলাপ সবার সামনে আনবোই আর তাও খুব তাড়াতাড়ি। তোমার ধ্বংসের Count down শুরু চাচাজান ( বাকা হেসে)
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
অন্য দিকে আইরাত ঘরে এক কোণে চুপ করে বসে আছে আর চোখের পানি ফেলছে কি করবে কি না করবে সে ভেবে পাচ্ছে না.

আইরাত; নাহ এভাবে কিছুই হবে না আমাকে এখান থেকে দূরে পালিয়ে যেতে হবে,, কিন্তু কিভাবে কিভাবে ভাব আইরু ভাব কিছু একটা করতে হবে ঠান্ডা মাথায় ভাব আইরাত। Ideaaaaaaa (চিল্লিয়ে এক লাফ দিয়ে দাঁড়িয়ে) পেয়ে গেছি আমি পেয়ে গেছি। কিন্তু এর জন্য তো আমাকে বাইরে বের হতে হবে আর ওই সাইকো টা তো আমাকে পিছন দিক দিয়ে বন্ধ করে রেখে গেছে।

ঠিক সেই সময় আইরাত বিছানার দিকে তাকালো, তার মাথায় একটা শয়তানি বুদ্ধি এলো।

আইরাত; পেয়েছি,,

এই বলে আইরাত বিছানার চাদর দরজার একটা পর্দা একসাথে বেধে নিলো এবং জানালা দিয়ে ধীরে ধীরে বেয়ে বাইরে নেমে পড়লো কিন্তু এবার সে পড়লো আর এক বপদে সামনে তাকিয়েই দেখলো ইয়ায়ায়ায়ায়া বড়ো বড়ো দেহ ওয়ালা সব bodyguard রা দাঁড়িয়ে আছে আইরাত কিছুটা শুকনো ঢোক গিললো।।

আইরাত; আইরু আইরু ভয় পাস না,এখন ভয় একদমই পাওয়া যাবে না,, যা ই করিস প্লিজ ভালো ভাবে করিস কিছু উলটা পালটা যেন না হয় ( নিজের মনে মনে সাহস জুটিয়ে)

.
.
.
.
.
.
.
.
আইরাত; আআব আমি বাইরা যাবো ( bodyguard এর সামনে দাঁড়িয়ে)
Bodyguard; সরি ম্যাম, আমরা আপনাকে বাইরে যেতে দিতে পারবো না স্যার এর কড়া order
আইরাত; আরে কিছু হবে না আর আমি তোমাদের স্যার এর কাছ থেকে already permission নিয়ে নিয়েছি
Bodyguard; No mem. Sorry we can’t let u go from here…
আইরাত; আরেএএ আমি বলছি না যে আমি তোমাদের স্যার এর কাছ থেকে পারমিশন নিয়ে নিয়েছি আর আমাকে যেতেও বলেছে তার পরেও তোমারা আমার কথা অমান্য করছো। ভাবতে পারো এর ফলে কি হবে (কিছুটা রেগে চিল্লিয়ে)
Bodyguard; ok mem wait,, তাহলে আমরা আগে একটু স্যার এর কাছ থেকে শুনে নেই (এই বলে বডিগার্ড আব্রাহাম কে ফোন করতে গেলো)
আইরাত মনে মনে; এএমা যদি এই লোক টা এখন ওই সাইকো কে ফোন দিয়ে সব বলে দেয় তাহলে তো নির্ঘাত ফেসে যাবো আর তারপর ওর পাগল টা যে আমাকে কি করবে,, না যে করেই হোক আমাকে আটকাতে হবে।

আইরাত; এই এই না,, তোমার স্যার একটি খুবই দরকারি কাজে গেছেন ওনাকে এখন আর ফোন দেয়ার দরকার নেই নইতো তিনি রেগে যেতে পারেন। আর আমি বলছি তো যে আমি পারমিশন নিয়ে নিয়েছে আমাকে এখন ভালোই ভালোই যেতে দাও বলছি।

দুটো Bodyguard একে অন্যের দিকে তাকাতাকি করছে, আসলে তারাও দোটানা তে পরে গেছে যে যেতে দিবে কি দিবে না।

আইরাত; কি হলো কথা কানে যায় না নাকি, যেতে দাও

অবশেষে Bodyguard রা আর আইরাতের সাথে কথা কাটাকাটি না করে আইরাতকে যেতে দিলো। আইরাত যেন হাফ ছেড়ে বাচলো। আইরাত এক দৌড়ে গেটের অপর পাশে এসে পড়লো। এক লম্বা নিঃশ্বাস ছাড়লো। কিন্তু পরক্ষনের আইরাতের মনে হলো যে তার কাছে তো কোন টাকা নেই সে তার বাড়িতেই বা যাবে কিভাবে, রাস্তা-ঘাট ও তো সে ভালো ভাবে চিনে না তাহলে। আইরাত এইবার হুট করেই পিছনে তাকালো দেখলো Bodyguard রা এখনো সেই মূর্তির মতো দাড়িয়ে আছে। আইরাত আবার bodyguard দের কাছে গেলো,, গিয়ে বলতে লাগলো………

আইরাত; এই শুনো
Bodyguard; জি ম্যাম বলুন
আইরাত; তোমাদের কাছে টাকা হবে?

আইরাতের এমন উদ্ভট প্রশ্নে Bodyguard একদম বোকা বনে গেলো। অবাক হয়ে সে অন্য আর এক bodyguard এর দিকে তাকিয়ে আছে।

আইরাত; আরে কি হলো বলো আছে? আসলে হয়েছে কি আমার কাছে না কোন ভাংা টাকা নেই তো তার জন্যই আর কি তোমাদের স্যার আসলে আমি তার কাছ থেকেই নিয়ে তোমাদের দিয়ে দিবো।

Bodyguard; না ম্যাম, তার কোন দরকার নেই কিন্তু আপনার টাকার কি দরকার আপনি স্যার এর গাড়ি নিয়ে যেতে পারেন… চাইলে আমি ড্রাইভার কে বলে দিচ্ছি সে আপনাকে নিয়ে যাবে আপনি যেখানে যেতে চাইবেন।

আইরাত; আরে না না তার কোন প্রয়োজন নেই আমি বরং একাই চলে যেতে পারবো। তোমার কাছে টাকা থাকলে দাও।

Bodyguard; জি ম্যাম আপনারা যতো লাগে আপনি নিয়ে যান। (আজব আব্রাহাম স্যার এর হবু বউ চাচ্ছে সামান্য একজন বডিগার্ড থেকে টাকা কি যে করি, মনে মনে) ম্যাম এই নিন।

আইরাত; আরে ১০০০ টাকার নোট দিয়ে কি করবো আমি তুমি এককাজ করো আমাকে ৫০০ টাকা ভাংা দাও

Bodyguard; 😳😳
.
.
.
.
.
.
.
এই বলে আইরাত বেড়িয়ে গেলো। একদম রাস্তায় এসে পড়েছে সে, সব কিছু কেমন অদ্ভুত লাগছে তার কাছে । কোন কিছুই সে ঠিক ভাবে চিনতে পারচ্ছে না। এদিক ওদিক তাকাতাকি করছে সে। কোন গাড়ি ও খুজে পাচ্ছে না

আইরাত; পালিয়ে তো এলাম কিন্তু এখন কোন দিকে যাবো কিছুই তো বুঝতে পারছি না।। নাহ এখান থেকে দ্রুত বেড়োতে হবে নইতো ওই আব্রাহামের বাচ্চা যদি একবার আমাকে ধরে ফেলে তাহলে আর আমার রক্ষে নেই। এই বলে আইরাত দৌড়ে যেতে লাগলো।
যেতে যেতে একটা রিকশা খুজে পেলো আইরাত এবং সেই রিকশা করেই যেতে লাগলো তার বাড়ির উদ্দেশ্যে।

আইরাত পালিয়ে চলে যাওয়ার ৩০-৪৫ মিন. পরেই আব্রাহাম আইরাতের জন্য এতো গুলো জিনিস নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো। Bodyguard রা গেটের দরজা খুলে দিলো। আব্রাহাম গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত পায়ে আইরাতের রুমের দিকের গেলো। কিন্তু দরজা খুলেই আব্রাহামের মাথায় রাগ উঠে গেলো। পুরো রুমের কোথাও আইরাত নেই আব্রাহাম হন্ন হয়ে পুরো ঘর খুজেও আইরাত কে পেলো না। আব্রাহাম বেশ বুঝতে পারলো যে আইরাত এখান থেকে পালিয়েছে।। আব্রাহাম রেগে তার হাতের সব জিনিস গুলো বিছানার উপর ছুড়ে ফেলে দিলো এবং রাগে ফুসতে ফুসতে বললো

আব্রাহাম; Baby girl, কাজটা তুমি একদম ই ঠিক করো নি। তুমি আবার ও আমার কাছ থেকে দূরে যাওয়ার চেষ্টা করেছ। তোমাকে তো আমি যে কোন মূল্যেই আবার আমার কাছে ফিরিয়ে আনবোই কিন্তু তার বদলে যে তোমাকে শাস্তি পেতে হবে বেবি (রেগে টেবিলের উপর লাথি দিয়ে)
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
অন্য দিকে নীড় মহলে………..

আইরাতের বাবা আশরাফুলে আহমেদ মেয়ের চিন্তায় এবং রাগে মাথায় Ice beg দিয়ে রেখেছে।। রাগে তার যায় যায় অবস্থা এবং তিনি বার বার পুলিশ অফিসারের কাছে ফোনে রাগারাগি করছেন। আর আতিয়া আহমেদ তাকে ধৌর্য্য ধরতে বলছেন।

কিন্তু আইরাত ভয়ে ভয়ে তার বাড়ির দিকে যাচ্ছে। বেশ কিছুক্ষন পর আইরাত তার বাড়িতে পৌঁছে গেলো এবং দৌড়ে রিকশা থেকে নেমে বাড়ির ভিতরে চলে গেলো।

আইরাত; পাপা পাপা,, আম্মু পাপা কোথায় তোমরা আম্মু পাপা!!! ( দৌড়ে বাসার ভিতরে যেতে যেতে)

আশরাফুল আহমেদ মেয়ে কে দেখে যেন প্রানে প্রান ফিরে পেলো। তিনি মেয়ে কে দেখে দৌড়ে কাছে গিয়ে মেয়ে কে জড়িয়ে ধরলেন এবং অঝোরে কেদে দিলেন।আতিয়া আহমেদ ও দ্রুত মেয়ের কাছে গেলেন।

আশরাফুল আহমেদ; মারে মা আমার কোথায় চলে গিয়েছিলি আমাদের ফেলে কত্তো হয়রান হয়ে গিয়েছিলাম আমরা কতোটা ভয়ে ছিলাম জানিস তুই ( আইরাতের কপালে চুমু দিয়ে)

আতিয়া আহমেদ; কোথায় গিয়েছিলি মা (কান্না করতে করতে)

আইরাত; জানি না মা পাপা আমি জানি না। কে যেন আমাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলো। আমি ওকে চিনি না এমনকি কখনো দেখি ও নি। আমি অনক পালানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু ওই লোকটি আমাকে ধরে ফেলেছে আজ সুযোগ বুঝে পালিয়ে এসেছি। তোমাদের অনেক মিস করেছি। (কান্না করে)

আয়ুশ; আপি আমাকে রেখে আর কথাও যাবে না তো?
আইরাত; না সোনা আর কোথাও যাবো না এইতো আমি চলে এসেছি (জড়িয়ে ধরে)

ঠিক সেই সময় বাসায় পুলিশ অফিসার আসলো। এবং আইরাত কে দেখে অবাক হলো

পুলিশ; স্যার (আশরাফুল আহমেদের উদ্দেশ্যে) স্যার আইরাত ম্যাম ফিরে এসেছে এখন আমরা একটু ওনার সাথে কথা বলতে চাই। মানে তাকে কে কিভাবে ধরে নিয়ে গেলো কোথায় ই বা নিয়ে গেলো আমাদের জানা টা খুবই জরুরি।

আশরাফুল আহমেদ; নাহ থাক তার আর এখন দরকার নেই। আমার মেয়ে অনেক ক্লান্ত এখন ওর রেস্ট দরকার। এই বপারে পরেও কথা বলা যাবে এখন আমার মেয়ে আমার কাছে ফিরে এসেছে এইটাই অনেক আপনারা এখন যেতে পারেন।

পুলিশ; জি স্যার ( এই বলে তারা চলে গেলো)

আশরাফুল আহমেদ; মা তুই তোর রুমে যা। তুই ফ্রেশ হয়ে নে তোর মা তোকে খাইয়ে দিবে। তারপর একটু বিশ্রাম নে।। পরে আমরা এই বিষয়ে আলাপ করবো ঠিক আছে মা (গালে হাত দিয়ে)

আইরাত; ঠিক আছে বাপি

এই বলে আইরাত তার রুমে চলে গেলো। আর আব্রাহাম রাগে সব কিছু তছনছ করে ফেলছে সব স্টাফরা এবং বডিগার্ড রা ভয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

আব্রাহাম; কিভাবে, কিভাবে এতো কড়া safety, বডিগার্ড থাকা সর্তেও আইরাত এখানে থেকে পালিয়ে গেলো কিভাবে (রাগে প্রচন্ড চিল্লিয়ে চেয়ার দেয়ালে বারি দিয়ে)

সবাই ভয়ে জোড়োসড়ো হয়ে গিয়েছে।

আব্রাহাম; Speak up damn it

Bodyguard; সসসস্যার আমরা মেডাম কে অনেক চেষ্টা করেছি আটকানো জন্য কিন্তু মেডাম বলল যে মেডাম নাকি আপনার কাছ থেকে পারমিশন নিয়ে নিয়েছে।। আমরা আপনার কাছে ফোন ও দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু মেডাম আমাদের দিতে দেন নি আর অনেক জোড়াজুড়ি করছিলো যাওয়ার জন্য পরে আমরা আর আটকাই নি।

আব্রাহাম সাথে সাথে তার কোটের পকেট থেকে gun বের করে ওই bodyguard এর মাথায় তাক করলো
বডিগার্ড পুরো থতমত খেয়ে গেলো।

আব্রাহাম; এখন যদি আমি তোকে বিনা নটিসে পরোপারে পাঠিয়ে দি তাহলে।

বডিগার্ড টি থর থর করে কাপতে লাগলো এবং বলতে লাগলো

Bodyguard; স্যার স্যার প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দিন স্যার প্লিজ এমন আর কখনো হবে না স্যার প্লিজ স্যার ক্ষমা করে দিন এইবারের মতো স্যার আর একটা সুযোগ দিন স্যার ক্ষমা করে দিন।

আব্রাহাম; ঠিক আছে যা দিলাম আরও একটা সুযোগ কিন্তু একটা কথা মাথায় রাখিস যদি আবার কোন ভুল হয় তাহলে আর কোন কথা বলবো না আমি Got that…..

এই বলে রাগে গজগজ করতে করতে আব্রাহাম বেরিয়ে গেলো।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
ওদিকে আইরাত দোলনাতে বসে বসে ভাবছে যে কে আসলে ওই লোক। আইরাত তো তাকে চিনেই না তাহলে কেন ওকে অযথা তুলে নিয়ে গেলো, এতে কি লাভ ওর, কি চায় সে।

🍁চলবে~~~~~~~

Gangstar In Love Part-06

0

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#part__ 06

“In নীড় মহল………………

আতিয়া আহমেদ; আইরাত, আইরাত। এই মেয়ের সাথে আমি আর পারি না। একে ঘুম থেকে তোলার জন্য আমাকে প্রতিদিন সকালে উঠে যুদ্ধ করতে হয়। এইইইইই আইরাত উঠ মা। কত্তো বেলা হয়ে গেছে খেয়াল আছে কিছু,, আজ কি কলেজে যাওয়ার ইচ্ছে নেই তোর তাড়াতাড়ি উঠে পর।

আইরাত; উফফফ মা চিল্লাচ্ছো কেন আর আবার শুরে হয়ে গেছে তোমার সেই ভাংগা রেকর্ড 🥱 (ঘুম থেকে উঠে হাই তুলতে তুলতে)

আতিয়া আহমেদ; কি আমি চিল্লাচ্ছি একবার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখেছিস কটা বাজে😤

আইরাত; কটা আর বাজবে ৬/৭ হইতো

আতিয়া আহমেদ; জি না নবাবের বেটি, এখন বাজছে ৪ঃ২০ আর ঠিক ৯ টাই আপনার কলেজ আছে

আইরাত; কিইইইইইইইইইইই

আতিয়া আহমেদ; জিইইইইইইইইইইই

আইরাত; আম্মু এত্তো বেলা হয়ে গেছে তুমি আমাকে আরও আগে ডাকো নি কেন (বিছানা থেকে তাড়াতাড়ি করে উঠে)

আতিয়া আহমেদ; কি বললি আমি তোকে গতো ১ ঘন্টা যাবৎ ডেকে চলেছি কিন্তু তোর তো উঠার কোন নাম গন্ধই নেই

আইরাত; আচ্ছা হয়েছে তুমি নিচে গিয়ে Breakfast বানাও আমি দ্রুত ফ্রেশ হয়ে আসছি (এই বলে আইরাত ওয়াসরুমে চলে গেলো)

আতিয়া আহমেদ নিচে রান্নাঘরে গিয়ে সবার জন্য নাস্তা বানাতে লাগলো। আশরাফুল আহমেদ (আইরাতের বাবা) টেবিলে এসে পেপার পড়াতে মনোযোগ দিলেন। কিছুক্ষণ পরে আইরাত ফ্রেশ হয়ে একটা মিস্টি কালারের চূড়িদার পরে নিচে নেমে এলো।

আইরাত; পাপা, পাপা
আশরাফুল আহমেদ; Good morning মামনি
আইরাত; Very good morning পাপা, (জড়িয়ে ধরে)
আশরাফুল আহমেদ; তা ঘুম কেমন হলো?
আইরাত; অনেক ভালো পাপা
আশরাফুল আহমেদ; নে নে এবার তাড়াতাড়ি খাবার টেবিলে বস তোর মা নাস্তা আনছে।
আইরাত; না পাপা এখন আর খাবো না হাতে একদম সময় নেই
আতিয়া আহমেদ; ঘুম থেকে এত্তো বেলা করে উঠলে এমন ই হবে। হালকা কিছু খেয়ে যা ( রান্না ঘরে থেকে আসতে আসতে)
আইরাত; না আম্মু দেরি হয়ে যাবে খেতে গেলে, আর আমি এটা খেয়ে নিবো ( ফলের ঝুড়ি থেকে একটা আপেল হাতে নিয়ে)

ঠিক সেই সময় লাফাতে লাফাতে আয়ুশ (আইরাতের ভাই) এলো।
আয়ুশ; Good morning আপি
আইরাত; good morning সোনা

আশরাফুল আহমেদ; আচ্ছা দাড়া দাড়া তাহলে আমি ড্রাইভার কে বলে দিচ্ছি সে তোকে কলেজে নামিয়ে দিবে।
আইরাত; না বাবা আবনি আসবে ( আইরাতের Best friend) আমি ওর সাথেই চলে যাবো।
আতিয়া আহমেদ; আচ্ছা যা তাহলে সাবধানে যাস।
আইরাত; হুমম ঠিক আছে, আয়ুশ থাক (আয়ুশের মাথায় কিস দিয়ে) আম্মু-পাপা আমি যাই,, আল্লাহ হাফেয
আশরাফুলে আহমেদ; আল্লাহ হাফেয মামনি

এই বলে আইরাত সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে পড়লো। বাইরে এসে আইরাত বারবার আবনি কে ফোন দিচ্ছে কিন্তু অবনি ফোন ধরছে না।

আইরাত; আল্লাহ এই মেয়ে কবে মানুষ হবে, কাজের সময়ই এই মেয়ে আর কোথাও খুজে পাওয়া যায় না (রেগে বোম হয়ে)। এদিকে সব রিকশাওয়ালা রা কি বিয়ে করতে গেছে নাকি একটা কেও আজ দেখা যাচ্ছে না। বাবা বলল গাড়ি নিয়ে যেতে কেন যে নিয়ে এলাম না ধের ভালো লাগে না (বিরক্তি হয়ে)

এই বলে আইরাত সামনে এগিয়ে যেতে লাগলো। কিন্তু কিছু দূরে যেতেই কথা থেকে যেন একটা কালো গাড়ি এসে আইরাতের পথ আটকে ধরলো। গাড়ি থেকে কে যেন নেমে আইরাতের সামনে এসে দাড়ালো এবং কিছু একটা স্প্রে করলে আইরাত তৎক্ষনাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। সে আর কেও না বরং আব্রাহাম ছিলো।

আব্রাহাম আইরাত কে গাড়িতে তুললো, সারা রাস্তা আব্রাহাম নেশা লাগানোর মতো আইরাতের দিকে তাকিয়ে ছিলো ,, তারপর আইরাত কে নিয়ে গিয়ে একটা বাংলোতে যায়।
আর তার পরের কাহিনি তো আপ্নারা জানেন ই

~~অতীত শেষ “”””””

বর্তমান——————–

আইরাতের পাশে সুয়ে পুরনো অতীত গুলো ভাবছিলো আব্রাহাম, আইরাতের দিকে তাকিয়ে দেখলো আইরাত গভীর ঘুমে,, আব্রাহাম তাকে দেখে মুচকি হেসে উঠে গেলো,, Corridor এ গিয়ে দুইহাত ভাজ করে দাড়ালো আব্রাহাম,,,

তার কিছুক্ষণ পরে আইরাতের ঘুম ভেংে গেলো। আইরাত ধীরে ধীরে উঠে নিজের চারপাশে তাকিয়ে দেখতে লাগলো। কিন্তু না সে কোথায় আছে এখন তাকে যখন প্রথম তুলে আনা হয় তখন তো এই ঘর ছিলো না তাহলে এইটা এখন কোন ঘর। মাথায় হাত দিয়ে ভাবতে লাগলো আইরাত। এই রুমটি পুরো পুরি আলাদা কিন্তু রুমটি অনেক সুন্দর করে সাজানো। এবং আইরাত একটি গোল বিছানাতে রয়েছে।।পরক্ষনেই তার সব কিছু মনে পরে গেলো যে সে তো এখান থেকে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল কিন্তু তা আর পাড়লো না আব্রাহাম তাকে আবার খুজে বের করে ধরে এনেছে তার কাছে,, আইরাত নিজের দিকে খেয়াল করে দেখলো তার শরীরের জায়গায় জায়গায় কামড়ের দাগ রয়েছে।। আইরাতের এখন ভীষণ কান্না পাচ্ছে।। তবুও নিজেকে সামলে নিলো,, আইরাত খেয়াল করলো তার গায়ে ওরনা নেই।। ঠিক সেই সময় আব্রাহাম রুমে আসলো এবং আইরাত কে দেখে বলতে লাগলো

আব্রাহাম; কি miss ঘুম ভাংলো?
আইরাত;………………….
আব্রাহাম; Baby girl!
আইরাত কিছু বলছে না সে তার ওরনা খুজছে। আব্রাহাম বেপার টা খেয়াল করে বলে উঠলো

আব্রাহাম; তোমাকে ওরনা ছাড়াই ভালো লাগে (বাকা হাসি)
আইরাত; অসভ্য (ওরনা পরতে পরতে)
আব্রাহাম; অসভ্য বলো আর যাই বলো আমি তোমার ই
আইরাত; আপনি কেন বুঝতেছেন না যে আমি আপনাকে ভালোবাসি না। এভাবে জোড়াজুড়ি করে আর জাই হোক কখনো ভালোবাসা হয় না। আপনি প্লিজ আমাকে যেতে দিন আমি বাড়ি যাবো সবাই আমার জন্য চিন্তা করছে।
আব্রাহাম; ন্যাহ জান, আমি তো তোমাকে চলে যাওয়ার জন্য ধরে আনি নি। তুমি আমাকে ভালো বাস আর না ই বাস তাতে আমার কোন কিছুই যায় আসে না।। কেননা আমার ভালোবাসাই আমাদের দুইজনের জন্য যথেষ্ট। আর আমি তোমাকে আমার জন্য এনেছি,,আমার ভালো থাকার জন্য Bcz i need u badly আমার তোমাকে লাগবে যে করেক হোক যে ভাবেই হোক। তুমি আমার
আইরাত; টাকা,, টাকা তাইনা টালা লাগবে আপনার। আপনি টাকার লোভে এমন টা করেছেন তাই না। কতো ঠিক কতো টাকা লাগবে আপনার,, বলুন আমার বাবা আপনাকে সব দিবে তাও প্লিজ আপনি আমাকে যেতে দিন প্লিজ
আব্রাহাম; হাহাহাহাহা (জোড়ে জোড়ে হেসে)
আইরাত; এভাবে পাগলের মতো হাসার কি আছে
আব্রাহাম; Baby girl,, Like seriously….. আমি আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী টাকার জন্য তাও আবার তোমাকে তুলে আনবো হাহাহাহাহা,, হাসালে জান
আইরাত; আমাকে এখান থেকে যেতে দিন,, ভালোই ভালোই বলছি আমার বাবা একবার জানতে পারলে আপনাকে মেরে ফেলবে (রেগে গিয়ে)
আব্রাহাম; We shall see,, দেখা যাক কে কাকে মারে
আইরাত; মানে, কি বলতে চাচ্ছেন কি আপনি?
আব্রাহাম; তা তোমার ওই ছোট্ট মাথায় ঢুকবে না। বাদ দাও (মুখে অন্য দিকে ঘুরিয়ে)
আইরাত; আমি থাকবো না এখানে চলে যাবো আমি এখনই।

এই বলে আইরাত দরজার দিকে যেতে লাগলে আব্রাহাম খোপ করে আইরাতের হাত ধরে ফেলে। আইরাতের দুইহাত মুচরিয়ে পিছনে ধরে আইরাতকে নিজের সাথে একদম চেপে ধরে আব্রাহাম। আইরাত ব্যাথায় কুকড়িয়ে উঠে। আব্রাহাম আইরাতের মুখের কাছে মুখ এনে বলতে লাগে…….

আব্রাহাম; কোথায় যাচ্ছো জানেমান,, তুমি কি ভেবেছো এত সহজেই আমি তোমাকে এখান থেকে যেতে দিবো কখনোই না। এখানে এই আব্রাহামের হুকুম ছাড়া একটা পাতাও নড়ে না আর তুমি কি করে ভাবলে যে আমি তোমাকে ছেড়ে দেবো। (রেগে গিয়ে)

আইরাত ব্যাথায় চোখ বন্ধ করে রয়েছে। আইরাত চোখ জোড়া খুলে আব্রাহামের দিকে তাকালো,, তাকিয়ে দেখলো আব্রাহাম রক্ত চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে আইরাত ভয় পেয়ে গেল।। ভয়ে কয়েকটা শুকনো ঢোক ও গিললো। আব্রাহাম হাত জোড়া আরও শক্ত করে চেপে ধরলে আইরাত আবারও চোখ খিচে বন্ধ করে ফেললো। এভাবে কিছুক্ষন থেকে আব্রাহাম আইরাতের হার ছেড়ে দিলো। এবার হুট করে আইরাত কে টাইটলি জড়িয়ে ধরলো এবং কানের কাছে বলতে লাগলো,,,,,,,,,

আব্রাহাম; কেন জান কেন রাগিয়ে দাও আমায় বার বার। আমি আমার রাগ সামলাতে পারি না। প্লিজ এমন আর কোর না। আমার থেকে দূরে যেও না প্লিজ জান।। আমি আমার জীবনে অনেক কিছু হারিয়েছি কিন্তু তোমাকে হারাতে পারবো না।।। কেননা তুমি আমার অস্তিত্ব তোমাকে হারালে আমি আমাকে হারিয়ে ফেলবো। জেন্ত লাশ হয়ে যাবো আমি প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না।।।।

আইরাত বুঝতে পারলো যে আব্রাহাম কিছুটা ইমোশনাল হয়ে পড়েছে। আব্রাহাম আইরাতে কে ছাড়িয়ে বললো……….

আব্রাহাম; Baby girl তোমার অনেক খিদে পেয়েছে তাই না। আমি জানি তুমি খিদে কিছুতেই সহ্য করতে পারো না। আর সকাল থেকে তুমি কিছুই খাও নি।আমি তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসছি।

এই বলে আব্রাহাম আইরাতের গালে টুক করে একটা কিস দিয়ে চলে গেলো। আইরাত অবাকের শেষ প্রান্তে।
যাওয়ার আগে আব্রাহাম আইরাতের রুমের দরজা পিছনে দিক দিয়ে লাগিয়ে রেখে গেলো

আইরাত আস্তে করে বিছানাতে বসে পড়লো এবং ভাবতে লাগলো যে কি থেকে কি হয়ে গেলো। কে এই লোক বার বার নিজেকে আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী বলে দাবি করছে। আইরাত তো এই লোক কে ভালোভাবে চিনেও না। তাহলে কেনই বা তাকে তুলে আনা হলো। কি চাই এই লোক। লোকট পুরোই পাগল কি সব অদ্ভুত অদ্ভুত আচরণ করে বেড়ায়। সব কিছু যেন আইরাতের মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। আইরাতের বসে বসে এইসব ভাবছিল তখনই আব্রাহাম প্লেটে করে খাবার নিয়ে এলো।

আব্রাহাম; আমাকে নিয়ে ভাবা শেষ হলে এখন খেয়ে নিতে পারো
আইরাত; আপনি কিভাবে জানলেন?
আব্রাহাম; Come on baby girl তুমি আমার আর হবু বউ ও তাহলে আমি তোমার মনের কথা জানবো না
তো আর কে জানবে শুনি।
আইরাত; কিহহহহ মানে কিই,, কে কার হবু বউ এসব কি বলছেন আপনি? (অনেক অবাক হয়ে)
আব্রাহাম; তুমি আমার হবু বউ। এই আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরীর হবু বউ,,,
আইরাত; ককি যাত,,,,,,,,,,,,

আর কিছু বলতে পারলো না আইরাত আব্রাহাম আইরাতের ঠোঁটে আংগুল দিয়ে চুল করিয়ে দিলো।

আব্রাহাম; hussssssssss!! আর একটা কথাও না এবার খাবার টা খেয়ে নাও তাড়াতাড়ি। আর যদি বেশি বক বক করেছো তো আমি মুখ বন্ধ করার অন্য রাস্তা অবলম্বন করবো।

আইরাত আব্রাহামের দিকে তাকালে আব্রাহাম টুক করে আইরাত কে চোখ টিপ মারে। আইরাত অবাক হয়ে যায় + খুব রেগে যায়।।

আব্রাহাম; Baby girl, হা করো (এই বলে আব্রাহাম আইরাতের সামনে খাবার ধরলো)
আইরাত………………
আব্রাহাম; হা করো জান
আইরাত; খাবো না আমি
আব্রাহাম; দেখো আমি বেশ ভালো করেই জানি যে তোমার অনেক খিদে পেয়েছে তো অযাথা Time waste না করে চুপচাপ খেয়ে নাও।। হা করো।
আইরাত; আমি বলছি তো খাব না
আব্রাহাম; (এবার আব্রাহাম আইরাতের হাতে কামড় দিলো আইরাত ব্যাথা পেয়ে চিল্লিয়ে উঠলো)

আইরাত; আম্মুউউউউউউউউউউউউউউউউউ

এই সুযোগে আব্রাহাম আইরাতের মুখে খাবার পুড়ে দিলো। আইরাত তো পুরাই বোকা বনে গেলো। আইরাত উমম উমম আওয়াজ করতে লাগলো। আব্রাহাম তা দেখে দিলে এক ধমক। আইরাত ভয় লেয়ে একদম চুপসে গেলো। তারপর খেতে লাগলো।

আব্রাহাম; Baby girl,, তুমি থাকো আমি একটু বাইরে যাচ্ছি ok একটু পরেই ফিরে আসবো। তুমি রেস্ট নাও।আর শুনো উল্টা-পাল্টা কোন কিছু করা তো দূর ভেবেও না তাহলে কপালে শনি আছে। অবশ্য চাইলেও তুমি এখান থেকে আমার permission ছাড়া বেড়তে পারবে না কেননা এখানে ১৫ জন Bodyguard পাহারা দিচ্ছে। নাই বাইরে থেকে কেও ভিতরে আসতে পারবে আর নাই ভিতর থেকে কেও বাইরে যেতে পারবে। So Don’t try to escape from here ok baby girl.. Love you😘 i”ll be back after sometime Bye…..

এই বলে আব্রাহাম চলে গেলো। আইরাত জানালার কাছে গিয়ে দাড়ালো। এক মনে আকাশের দিকে দিকে তাকিয়ে আছে আইরাত আর চোখের পানি ফেলছে।। আম্মু- পাপা – আয়ুশের কথা খুব মনে পড়ছে আইরাতের না জানি তারা কেমন আছেন, কি করছেন।

অন্যদিকে নীড় মহলে…………………

আশরাফুল আহমেদ; আমার মেয়ে কে পাওয়া যাচ্ছে না মানে কি অফিসার। আমার মেয়ে সেই সকালে কলেজের জন্য বেড়িয়ে গেছে আর এখন বাজে রাত ৯ টা এখনো আমার মেয়ে বাসায় এলো না। কোথায় গেলো আমার মেয়ে আমি কিছু জানি না যে করেই হোক আমার মেয়েকে আমার সামনে আমি দেখতে চাই অফিসার।। আমি টাকা দিয়ে এই অপদার্থ গুলোকে পালছি।। অফিসার আমি আমার মেয়ে কে আমার সামনে চাই বেস। ( প্রচন্ড রেগে চোখ মুখ লাল করে)

আতিয়া আহমেদ; ওগো শুনছো আমি তো আবনি কে ফোন করেছিলাম আবনি বলল যে আইরাত নাকি আজকে কলেজেই যায় নি। ওর সাথে দেখাই হই নি।। আমি জানি না আমি কিচ্ছু জনি না তুমি আমার মেয়ে কে আমার কাছে এনে দাও যে করেই হোক এনে দাও ( আইরাতের মা কান্নায় ভেংেপড়ে)

আশরাফুল আহমেদ; আহা আতিয়া এভাবে ভেংে পড়লে কি চলবে শক্ত হও। ধৈর্য্য ধরো আমরা খুব শীঘ্রই আমাদের মেয়ে কে আমাদের সামনে পাবো। তুমি শান্ত হও আতিয়া।

আয়ুশ; পাপা পাপা,, আপি কোথায় চলে গেছে আমাদের ছেড়ে।।

আশরাফুল আহমেদ; না বাবা তোমার আপি কোথাও জাই নি,, তোমার আপি তাড়াতাড়িই ফিরে আসবে আমাদের কাছে।

আইরাতের পুরো পরিবার আইরাতের চিন্তায় মগ্ন। আর অন্য দিকে আইরাতের কান্না করতে করতে নাজেহাল অবস্থা।

🍁চলবে~~~~~~

Gangstar In Love part-05

0

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#writer; Tamanna Islam

#Part__05

গাড়িতে করে অফিসের উদ্দেশ্যে যেতে লাগলো আব্রাহাম আর রাশেদ। আব্রাহাম গাড়ির গ্লাস দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। রাশেদ হঠাৎ করে বলে উঠলো

রাশেদ; স্যার, আজকে আপনি প্রথম আপনার বাবার অফিসে যাচ্ছেন তাই আমি মেনেজার কে বলে রেখেছি যাতে আপনাকে তারা বিশেষ ভাবে welcome করে। তারা সবাই রেডি আছে শুধু আপনার যাওয়ার অপেক্ষা।

আব্রাহাম; হুমমম, আমেরিকা থেকে আজ নতুন কিছু ক্লাইন্ট আসার কথা তাদের সাথে আজ ডিলের বেপারে কিছু কথা আছে। তারা কখন আসবে?

রাশেদ; এসে পড়বে স্যার, আমার তাদের সাথে কথা হয়েছে।

আব্রাহাম;Good

আব্রাহাম আর রাশেদ কথা বলছিলো কিন্তু তাদের ড্রাইভার হুট করেই অনেক জোড়ে গাড়ির Break কশে আব্রাহাম গেলো রেগে,,,,,,

আব্রাহাম; What the hell,, এভাবে গাড়ি কেন Break করলে?

ড্রাইভার; Sorry স্যার, আসলে সামনে কি যেন একটা এসে পড়েছে। আমি দেখছি স্যার

আব্রাহাম; হুমম

ড্রাইভার গাড়ি থেকে নেমে পড়লো। বেশ কিছুক্ষন হয়ে যাওয়ার পরও যখন ড্রাইভার ফিরে আসছে না তখন আব্রাহাম ই গাড়ি থেকে নেমে পড়লো। সামনে গিয়ে দেখলো ড্রাইভার দাঁড়িয়ে আছে

আব্রাহাম; ড্রাইভার, কি হয়েছে?
ড্রাইভার; স্যার, দেখুন না কথা থেকে যেন একটি বিড়াল গাড়ির সামনে এসে পড়েছে আর এই মেয়েটি বিড়ালকে বাচাঁনোর জন্য সামনে এসে দাড়ায়, আমি মেয়েটিকে সরিয়ে দিতে চাইলে মেয়েটি এখন আমার সাথে কথা কাটাকাটি বাজিয়ে দিয়েছে……………
এবার রাশেস ও গাড়ি থেকে নেমে পড়ে।

আব্রাহাম সাথে সাথে সামনে তাকালো। সামনে তাকিয়ে আব্রাহামের চোখ কপালে উঠে গেল। এ তো সেই মেয়েটি যাকে দেখে আব্রাহাম তার চোখের পলক ফেলতেও ভুলে গেছিলো। সেই এক মেয়ের সাথেই কেন যে তার বারবার দেখা হয় সেটা অজানা, মেয়েটির সাথে তার এক আলাদা connection জুড়ে রয়েছে। মেয়েটা বার বার আব্রাহামের সামনে আসে আর তার রাতের ঘুম হারাম করে চলে যায়। আব্রাহাম খেয়াল করলো মেয়েটি বিড়ালকে কোলে নিয়ে আদর করছে। তা দেখে আব্রাহাম মুচকি হাসলো। এবার মেয়েটি দাঁড়িয়ে পড়লো।

মেয়ে; আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয় হচ্ছে আমরা মানুষ তাই অন্তত মনুষ্যত্ব তো থাকা দরকার তাই না। এভাবে সাই সাই করে গাড়ি না চালিয়ে আসে-পাশে কোথায় কি আছে, কে কিভাবে যাচ্ছে তার দিকে একটু খেয়াল করে গেলে ভালো হয় না। আপনি জানেন বিড়াল টা অল্পের জন্য Accident করা থেকে বেচে গেছে। ওদের ও তো জীবন আছে, পরিবার আছে। পরের বার থেকে খেয়াল রাখবেন প্লিজ র এভাবে সাই সাই করে গাড়ি চালাবেন না (মেয়েটি আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে একাধারে কথা গুলো বলে চলে গেলো)

আব্রাহাম যেন অন্য এক জগৎ এ হারিয়ে গেছে। এতক্ষন সে এক ঘোরে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে ছিলো। তার কথা বলা, ঘায়েল চোখ দিয়ে তাকিয়ে থাকা ঠোঁটজোড়ার একধারে কথা বলা সব কিছুই যেন আব্রাহাম কে ভিতরে ভিতরে ক্ষত-বিক্ষত করে দিচ্ছিলো। এই প্রথম সে এই মেয়েটিকে তার সামনে কথা বলতে দেখলো। মেয়েটি কথা গুলো আব্রহামের চোখের দিকে তাকিয়ে বলছিলো। আব্রাহামের Heartbeat কয়েকটা মিসও গেছে তাতে কোন সন্দেহ নেই,, বুকের ভিতর টা কেমন ধুকপুক ধুকপুক করছে। মেয়েটি যে আব্রাহাম সামনে থেকে কখন সরে গেছে আব্রাহামের তাতে কোন হুশ ই নেই।

রাশেদ; স্যার, স্যার
আব্রাহাম; হ্যাঁ হ্যাঁ বলো (রাশেদের ডাকে হুশ ফিরলো আব্রাহামের)
রাশেদ; স্যার, আমাদের যাওয়া উচিত। দেরি হচ্ছে।
আব্রাহাম; yeah,

আব্রাহাম, রাশেদ গাড়িতে উঠে যেতে লাগলো। আব্রাহাম কিছুক্ষন কি যেন একটা ভাবলো। তারপর রাশেদ কে বলে উঠলো

আব্রাহাম; রাশেদ…
রাশেদ; জি স্যার
আব্রাহাম; only 1 hour এর মধ্যে আমার এই মেয়েটির সব information চাই, got it.
রাশেস; জি স্যার পেয়ে যাবেন আপনি নিশ্চিতে থাকুন।

তার কিছুক্ষণের পর তারা অফিসে পৌঁছে গেলো। আব্রাহাম গাড়ি থেকে নেমে চোখ থেকে glasses খুলে এক নজর অফিসকে দেখে নিলো। দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস ফেলে ভিতরে হাটা ধরলো আব্রাহাম। ভিতরে গিয়েই উপর থেকে বিভিন্ন ধরনের লাল-নিল কাগজ পড়তে লাগলো আব্রাহামের ওপর সামনে তাকিয়ে দেখলো সবাই হাতে করে ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আব্রাহাম কে Welcome করবে বলে। আব্রাহাম সামনে এগিয়ে যেতে লাগলো

রেদওয়ান শেখ(অফিসের মেনেজার); Welcome sir welcome,, (হাতে থাকা ফুলের তোড়া আব্রাহামের দিকে এগিয়ে দিয়ে)
আব্রাহাম; Thank u
রেদওয়ান শেখ; Nice to met u sir,, আপনাকে অফিসে দেখে অনেক ভালো লাগলো।
আব্রাহাম; এখন থেকে রোজ দেখতে হবে।
রেদওয়ান শেখ; জি স্যার চলুন আপনাকে আপনার কেবিন দেখিয়ে দিই।

আব্রাহাম সবার সাথে দেখা করে মেনেজারের সাথে নিজের কেবিনে চলে গেলো। কেবিনে গিয়েই ল্যাপটপে মুখ গুজে কাজ করতে শুরু করে দিল আব্রাহাম। কিন্তু কোন ভাবেই সে তার কাজে মনোযোগ দিতে পারছে না।। না চাইতেও সেই অপরিচিত মেয়েটির মুখ চোখের সামনে এসে পড়ছে। অবশেষে সে তার চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়ালো। আব্রাহাম বড় কাচের দেয়ারে ওপর হাত রেখে বাইরের বেস্ত শহরকে দেখতে লাগলো মাঝে মধ্যে কফির কাপে চুমুক দিচ্ছে সে।। হঠাৎ করে কেবিনের বাইরে কে যেন এসে বললো

রাশেদ; May i come in sir?!
আব্রাহাম; আরে রাশেদ yeah come in……..
রাশেদ; স্যার, আপনি যে মেয়েটির কথা বলেছিলেন তার পুরো information এতে আছে (সামনে একটি ফাইল এগিয়ে দিয়ে)
আব্রাহাম; Very good ( বাকা হেসে)
রাশেস; স্যার, মেয়েটির নাম “নুজাইফা বিনতে আইরাত”। পড়াশোনা করছে এবার ইন্টার ২য় বর্ষের ছাত্রী। তিনি এবং তার একটি ছোট ভাই ও রয়েছে। মার নাম আতিয়া আহমেদ তিনি হাউসওয়াইফ। তার বাবা আশরাফুল আহমেদ চৌধুরী। তিনি মূলত রাজনৈতিক কাজে জড়িত। রাজনীতি তে তার যেমন অনেক খ্যাতি রয়েছে ঠিক তেমনই অনেক দূর্নাম ও রয়েছে। তবে শুনেছি যে এই রাজনৈতিক দন্ডের কারণে তার পরিবার ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো বোম বিস্ফোরণ হয়েছিলো আর এতে নাকি তার ই হাত রয়েছিলো।

আব্রাহামের চোখগুলো মূহুর্তেই রক্তবর্ণ ধারণ করে। হাত মুঠিবদ্ধ করে ফেলে সে। কপালের রোগ গুলো ভেসে উঠে। আব্রাহাম আবার রাশেদকে জিজ্ঞাসা করলো,,

আব্রাহাম; রাশেদ, কি বললে। তার বাবার নাম কি?
রাশেদ; স্যার, আশরাফুল আহমেদ চৌধুরী পেশায় একজন রাজনীতিবিদ।

আব্রাহাম; হুমম এবার তুমি যেতে পারো।

রাশেদ; জি স্যার।

এই বলে রাশেদ চলে গেলো।
কিন্তু আব্রাহাম রাগে অগ্নিমূর্তি ধারন করেছে। আব্রাহামের চোখ দিয়ে যেন লাভা বের হচ্ছে,, রাগে মাথা ফেটে যাওয়ার উপক্রম। রাগে গা কাপছে তার।শেষে রাগ সামলাতে না পেরে আব্রাহাম এক ঝটকাতে চেয়ার থেকে উঠে পড়লো, টেবিলের ওপরে থাকা গ্লাসটি নিয়ে দেয়ালে এক ঢিল দিল আব্রাহাম,, সাথে সাথে কাচের দেয়ালটি ঝর ঝর করে ভেংে নিচে পড়ে গেলো । সব ফাইলগুলো টেনে ছিড়ে ফেললো, কোন ভাবেই রাগ কমছে না আব্রাহামের মনে পরে যাচ্ছে বার বার কিভাবে তার আপন চাচা তাদের শেষ করে দেয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিলো। যাকে এতো বছর ধরে আব্রাহাম পাগলের মতো খুজছে সে আর কেও না তার ই আপন চাচা আশরাফুল আহমেদ চৌধুরী। হ্যাঁ হ্যাঁ, আশরাফুল আহমেদ চৌধুরী আর কেউ নয় আব্রাহামের ই আপন চাচা। তার এই আপন চাচাই রাজনীতির জন্য আর সম্পত্তির লোভে আব্রাহাম দের কে প্রানে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো। আব্রাহাম, আব্রাহামের মা কুসুম আহমেদ চৌধুরী বাবা আবির আহমেদ চৌধুরী,, আব্রাহামের চাচা আশরাফুল আহমেদ চৌধুরী এবং তার স্ত্রী আতয়া আহমেদ চৌধুরী সবাই একইসাথে একই পরিবারে থাকতো। তখন আইরাত মাত্র ২-৩ বছরের ছোট্ট বাচ্চা মেয়ে আর আব্রাহাম ৮-৯ বছরের ছেলে। সবাই মিলে মিশে থাকলেও আশরাফুল আহমেদের মনে ছিলো তার বড়ো ভাই এর জন্য শুধু ঘৃণা আর ঘৃণা। সবার সামনে ভালো থাকার অভিনয় করতো মাত্র। আশরাফুল আহমেদের রাজনৈতিক ঝামেলা থাকায় বাড়িতে দুই দিন পর পরই মানুষ জন বিভিন্ন বিচার নিয়ে আসতো। এতে অতিস্ট হয়ে আবির আহমেদ এক সময় আশরাফুল আহমেদ কে হুমকি দেন যে তিনি যদি এগুলা ঝামেলা না থামায় তাহলে তিনি আশরাফুল আহমেদ কে বাড়ি থেকে বের করে দিতে বাধ্য হবে।। সবার সামনে আশরাফুল আহমেদ কিছু না বললেও রুমে গিয়ে অনেক রেগে যান রাগে ফুসতে লাগে সে। আর সেইদিনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে আবির আহমেদ কে যে করেই হোক শেষ করে দিবেন তিনি। যেই ভাবা সেই কাজ আশরাফুল আহমেদ plan করেন যে “”বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ করাবেন। কিন্তু তখন তিনি তার স্ত্রী আতিয়া আহমেদ এবং তার মেয়ে আইরাত বাড়িতে থাকবেন না”” তিনি অবশ্য তার এই প্লেনে অন্য আর এক জনের সাহায্য নিয়ে ছিলেন। পরের দিন সকালে আশরাফুল আহমেদ তার স্ত্রী এবং তার মেয়ে নিয়ে তার শশুড় বাড়ির কথা বলে বেড়িয়ে পড়েন।। বাড়িতে থেকে যায় শুধু আব্রাহাম তার বাবা আবির আহমেদ চৌধুরী তার মা কুসুম আহমেদ চৌধুরী সেইদিন অয়ন ও আব্রাহাম দের বাড়িতে ছিল। এইদিকে আশরাফুল আহমেদ বাড়িতে বোমা ফিট করে এসেছেন,, বাড়ির থেকে দূরে এসে আশরাফুল আহমেদ দাঁড়িয়ে আছেন,, হাতে তার একটি রিমোট মুখে লেগে আছে বাকা হাসি।। তিনি “” Good bye বড়ো ভাই-ভাবি”” এই বলেই রিমোটের বাটনে চাপ দিয়ে দিলেন।



















এক বিকট শব্দে বাড়ি থেকে আগুনের লাভা বেড়িয়ে এলো।। আকাশে কালো ধোয়া উড়ে যেতে লাগলো। বাড়ির ভিতরে থাকা আব্রাহাম তার বাবা মা অয়ন সবাই ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে গেলো।। ভাগ্য ভালো যে সেইদিন তাদের গাড়ির ড্রাইভার ছিলো তিনি শব্দ শুনে ছুটে আসেন এবং দেখেন এই অবস্থা।। তিনি দ্রুত গিয়ে আব্রাহাম, তার বাবা ও অয়নকে বাইরে নিয়ে আসলো কিন্তু আব্রাহামের মা কে কোথাও খুজে পাওয়া যাচ্ছিল না।। অনেক খুজেও তাকে যখন পাওয়া গেলো না তখন এক প্রকার বাধ্য হয়েই ড্রাইভার তাদের কে নিয়ে বাড়ির বাইরে এসে পড়ে। বাড়ির বাইরে আসার সাথে সাথেই সম্পূর্ণ বাড়ি এক ভয়ংকর আওয়াজে বিস্ফোরণ হয়ে গেলো। সাথে আব্রাহামের মা ও মারা গেলেন।আর অন্যদিকে আশরাফুল আহমেদ চৌধুরী অট্টহাসি তে ফেটে পড়লেন। ভাগ্য ভালো আব্রাহাম, তার বাবা এবং অয়ন প্রানে বেচে যায়। আব্রাহামের বাবা আবির আহমেদ হাটু গেড়ে মাটিতে বসে পড়লেন এবং কান্নায় ভেংগে পড়লেন। তাদের ড্রাইভার চাচ্চু তাদের নিয়ে তার বাড়িতে চলে গেলেন এবং তাদের দেশের বাইরে যাওয়ার ব্যাবস্থা করে দিলেন। কিন্ত আবির আহমেদ যেতে নারাজ। তিনি বললেন “” না আমি দেশের বাইরে যাবো না আমি এখানেই থাকবো””। আবির আহমেদের হঠাৎ করেই মনে পরে আশরাফুল আহমেদের কথা,,তিনি তাদেরর ড্রাইভারের ফোন দিয়ে আশরাফুল আহমেদের কাছে ফোন দেন। আশরাফুল আহমেদ ভালো ভাবে ফোনের দিকে না তাকিয়েই ফোন রিসিভ করেন এবং হাসতে হাসতে বলেন “” হাহাহাহা আমার, আমার এতো দিনের আশা পূর্ণ হয়েছে রে পূর্ণ হয়েছে আমার পথের সবথেকে বড়ো কাট কে আমি তুলে ছুড়ে ফেলেছি এখন আমার পথে আএ কেউ কখনো আসবে না বাধা হয়ে দাঁড়াবে না হাহাহাহা “””। আবির আহমেদের মাথায় যেন আকশ ভেংগে পড়লো তিনি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। তারই আপন ছোট ভাই কিনা তারই পরিবার কে শেষ করে দেয়ার পিছনে লেগেছে। আবির আহমেদের চোখ দিয়ে নোনা পানি গড়িয়ে পড়লো। আর এই সবকিছুই আব্রাহাম দেখছে। আবির আহমেদ তাদের ড্রাইভার কে বললো সে যেন তাদের দেশে থাকার ই ব্যাবস্থা করে দেন কিন্তু কেউ যেন তা জানতে না পারে বিশেষ করে তার ভাই আশরাফুল আহমেদ নইতো তিনি আবার ও তাদের জান নেয়ার জন্য আদা লবন খেয়ে লাগবেন। এতো টা বছর আব্রাহাম তার বাবা আবির আহমেদ এবং অয়ন গা ঢাকা দিয়ে ছিলো দেশে। কিন্তু যখন আব্রাহাম বড়ো হলো তখন তাকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয়ার কথা বললেন আবির আহমেদ।। অয়ন কেও পাঠিয়ে দিতে চাইলে অয়ন যেতে চায় না যার ফলে সে দেশেই তার বাপির কাছে থেকে যায়। অন্য দিকে আশরাফুল আহমেদ চৌধুরী আবার তার রাজনীতিতে লেগে পড়ে আবার তার কুকান্ড শুরু হয় এবং আবির আহমেদ বেশিরভাগ সম্পত্তিই তার নামে করে নেন।বাকি টুকু করতে পারেন না কেননা বাকি সম্পত্তির পেপাস গুলো সেই বাড়ির সাথেই জলে পুড়ে যায়।। কিন্তু এর মধ্যে তাদের ড্রাইভার চাচ্চু মারা জান ফের শোকের ছায়া নেমে আসে আবির আহমেদের জীবনে।। অবশেষে সব কিছু পাড়ি দিয়ে আবির আহমেদ চৌধুরী,, অয়ন নতুন করে বাচতে শিখে,, অনাথ আশ্রমের বাচ্চা দের দেখা শুনা করতে থাকেন,, আর সেই থেকেই আব্দুল কাদিরের সাথে আবির আহমেদ এর খুবই গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। কিন্তু সবাই সবকিছু ভুলে গেলেও আব্রাহাম তার মনের দেয়াল থেকে এই কালো স্মৃতি গুলো কোন ভাবেই ভুলতে পারে না তার চোখে এবং মস্তিষ্কে শুধুই একই কথা ঘুরতে থাকে তা হলো “প্রতিশোধ”। আর আমেরিকা তে নিজের আলাদা Business হওয়ার কারণে আর তার এই প্রতিশোধ নেয়ার আগুনে তাকে এই মাফিয়া জগৎ এ নেমে আসতে হয়েছে আর ধীরে ধীরে আব্রাহাম হয়ে ওঠে
#আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী The Mafia King🎭

আব্রাহাম এতো দিন তার আপন চাচা অথাৎ আশরাফুল আহমেদ চৌধুরী কেই খুজে এসেছিলেন অবশেষে পাওয়া গেলো।।।








আব্রাহাম এই সব কিছু মনে করছে আর রাগে ফুসছে। চোখ বন্ধ করে রাগ টাকে কোন রকমে সামলে নিলো আব্রাহাম। টেবিলের ওপর হাত রেখে ধুপ করে চোখ খুললো আব্রাহাম।। তাকে দেখে ভয়ংকর লাগছে। আব্রাহাম তার ঠোঁটে বাকা হাসি ঝুলিয়ে বলতে লাগলো……………











আব্রাহাম; মিস. নুজাইফা বিনতে আইরাত,, তোমাকে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলেছিলাম আমি। ভেবেছিলাম তোমাকে ভালোবেসে আপন করে নিবো কিন্তু তুমি তো আমার ই চাচাজানের একমাত্র মেয়ে বের হলে।। এতোদিন তোমাকে চাইতাম ভালোবাসা হিসেবে কিন্তু এখন তো তুমি আমার জিদেও পরিণত হলে। ভালো বাসতে হলেও এখন আমার তোমাকে চাই আর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য হলেও এখন আমার তোমাকেই চাই।।। I want you only you,, At any cost baby Girl… এখন তুমি চাইলেও আমার আর না চাইলেও আমারই। যদি তুমি নিজে আমার কাছ ধরা দাও তাহলে ভালো আর যদি না দাও তাহলে তোমাকে কি করে পেতে হয় তা আমার ভালো করেই জানা আছে (বাকা হাসি)…………………..

🍁চলবে~~~~~~

Gangstar In Love Part-04

0

#Gangstar In Love🖤🥀___ A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#Part__04

🍂
🍂
🍂
🍂

পরেরদিন সকালে🌞🌞🌞……………………………..

আব্রাহাম; 🥱🥱🥱 Hay, what’s up everyone?! ( সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে)

অয়ন; ঘুম ভাংলো তোর 🙄

আব্রাহাম; আমি তোর মতো না যে এতো ঘুমাবো 😏

অয়ন; oo hlw,, আমি তোর আগে উঠেছি

আব্রাহাম; আচ্ছা বুঝলাম এবার বল বাপি কোথায় দেখছি না যে?

অয়ন; বাপি তো বারান্দায় বসে চা খাচ্চে

আব্রাহাম; আচ্ছা আমি দেখছি ( এই বলে কফির মগটা হাতে নিয়ে চলে গেলো বারান্দাতে)

আব্রাহাম গিয়ে দেখে তার বাপি রকিং চেয়ারে বসে বসে চা খাচ্ছে আর খবরের কাগজে মুখ গুজে রয়েছে

আব্রাহাম; Good morning বাপি ( পিছন থেকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে)

আবির আহমেদ; Very good morning young man (আব্রাহামের মাথায় হাত দিয়ে)

আব্রাহাম; কি করছ তুমি

আবির আহমেদ; তেমন কিছু না বসে আছি আর ভাবছি

আব্রাহাম; কি ভাবছ? ( বাপির দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচকে)

আবির আহমেদ; ভাবছি যে তুই কবে থেকে Office join করছিস

আব্রাহাম; বাপি মাত্রই তো আমেরিকা থেকে দেশে ফিরলাম আর কটা দিন জাক তারপর Join করছি। এখন আমাকে একটু ঘুরতে দাও তো

আবির আহমেদ; হাহাহা আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে। তোর যখন ইচ্ছা

আব্রাহাম; 😊😊😊

তারপর আবির আহমেদ -অয়ন-আব্রাহাম একসাথেই Breakfast করতে বসলো।

অয়ন; তা ভাই আজকে কোথায় যাওয়ার plan আছে তোর? ( খেতে খেতে)

আবির আহমেদ; না আজকে আর তোমাদের কোথাও যাওয়া হচ্ছে না। অয়ন Office এ একটা জরুরি Metting আছে আর তা তোমাকেই দেখতে হবে তো খেয়ে তারাতারি office এ জাও

অয়ন; আচ্ছা🙁,, ভাই office এ আর একা একা কতো তুই কবে থেকে যাচ্ছিস?

আব্রাহাম; আর ২-৪ টা দিন যেতে দে তারপর join করবো। বাপি আমার খাওয়া শেষ আমি রুমে যাচ্ছি কিছু ফাইল দেখতে হবে। আর অয়ন তোর সাথে আমার পরে দেখা হচ্ছে।

আবির আহমেদ; আচ্ছা যা

আব্রাহাম রুমে এসে পড়লো,, তারপর যে যার যার কাজে চলে গেলো।

রাতের বেলা,,,,

আব্রাহাম কাকে যেন ফোন দিল

আব্রাহাম; কাজ হয়েছে?

অপর পাশ; জি স্যার,, আমরা এতো দিন জাকে হন্ন হয়ে খুজছি সে বাইরে কোথাও নেই স্যার তারা দেশেই রয়েছে

আব্রাহাম; এবার দেখি কথায় পালায় তারা( বাকা হাসি দিল)



বিকেলবেলা,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

Ash কালার টি-শার্ট, Black কালার পেন্ট Black কালার জেকেট পরে রেডি হচ্ছে আব্রাহাম,, আয়নাতে নিজে একবার ভালো করে দেখে নিচে নেমে এলো,,,

আব্রাহাম; বাপি, বাপি,,,

আবির আহমেদ; কিরে কোথাও যাচ্ছিস নাকি?

আব্রাহাম; হ্যাঁ বাপি আমার একটু কাজ ছিলো তো তার জন্য বাইরে যেতে হচ্চে। আর আমি আজকে একটু এতিমখানাতে যাবো

আবির আহমেদ; অনেক ভালো করেছিস বাবা,, এতো দিন পর ফিরে এলি যা সবার সাথে দেখা করে আয় ভালোও লাগবে।

আব্রাহাম; হ্যাঁ, বাবা। আর অয়নের আসতে দেরি হবে আজ বুঝলে

আবির আহমেদ; ঠিক আছে,, সাবধানে যাস

আব্রাহাম; হুমম আর তুমিও নিজের খেয়াল রেখো ba-bye বাপি

আবির আহমেদ; bye…..

আব্রাহাম গাড়ি চালাচ্ছে আপন গতিতে। বেশ কিছুক্ষন পর গাড়ি একটা এতিমখানার সামনে এসে দাড়ালো । গাড়ি থেকে নেমে এলো আব্রাহাম। আজ বহুদিন পর এখানে আসা হলো তার নইত বা দেশের বাইরে থেকে একদম এখানে আসা-যাওয়া বন্ধই হয়ে গিয়েছিল।
সামনে এগুতে লাগলো আব্রাহাম। যেতেই দেখতে পেলো একটি লোকের সামনে সবাই দাঁড়িয়ে আছে আর সেই লোকটি সবাইকে অর্ডার দিয়ে যাচ্ছে। আব্রাহাম ধীরে ধীরে লোকটির কাছে গিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। এতে সেই লোকটি প্রায় চমকে গেলো। তারাহুড়ো করে পিছনে তাকাতেই লোকটি দেখতে পেল আব্রাহাম। এক ঝটকায় আব্রাহামকে বুকে টেনে নিল এবং চোখের পানি বিসর্জন দিতে লাগলো।

আব্রাহাম; আরে আরে চাচ্চু তুমি কান্না করছ কেন। আমি এতো দিন পর এসেছি তোমার এই চোখের পানি দেখতে নাকি। আহা কান্না থামাও তো

আব্দুল কাদির; আজ ৬-৬ টা বছর পরে তোকে নিজের সামনে দেখছি নিজেকে কি করে আটকাই বল। তোর কথা অনেক মনে পড়েছে রে অনেক। ভাইজান(আবির আহমেদ) এমন একদিন ও নেই যে তোর কথা বলেনি।
তোকে ছাড়া কেমন ফাকা ফাকা লাগে রে বাবা আর কোথাও যাস না আমাদের রেখে

আব্রাহাম; আরে না আমি আর তোমাদের রেখে কথাও জাচ্ছি না Promise

আব্দুল কাদির; কেমন আছিস বাবা?

আব্রাহাম; অনেক ভালো চাচ্চু। তুমি কেমন আছো আর বাকিরা সব কই?

আব্দুল কাদির; তুই এসে পড়েছিস না এখন অনেক ভালো। আর এখানেই আছে সবাই

এটা একটা এতিমখানা কিন্তু কেও দেখে বলবে না যে এইটা এতিমখানা। সবাই একই পরিবারের মতো থাকে এখানে। আব্রাহামের বাবা আবির আহমেদ অনেক আগে থেকেই এই এতিমাখানা দেখা শুনা করে আসছেন। তাই আব্রাহাম ও আগে এইখানে অনেক এসেছে কিন্তু তার বিদেশ যাওয়ার ফলে এখানে তেমন আর আসা হতো না। আর আজ যখন বাইরে থেকে ফিরেছে তাই সবার সাথে দেখা করতে চলে এলো। আর এনি হচ্ছেন আব্দুল কাদির, আব্রাহাম অয়ন তাকে চাচ্চু বলেই ডাকে। তিনি সবসময় এই খানেই থাকেন এবং সবাইকে দেখে রাখেন পারিবার বলতে এখন তার এই এতিমখানা আর আব্রাহাম রাই রয়েছে।

আব্রাহাম দেখলো কতো ছোট ছোট বাচ্চা রা খেলা করছে আবার কিছু বড়ো বড়ো ছেলে-মেয়ে ও রয়েছে তারা আব্রাহাম কে দেখে খুবই খুশি। আব্রাহাম সবাই কে নতুন ড্রেস, জুতো, স্কুল বেগ, গিফট আরও অনেক কিছু দিলো।

আব্রাহাম আর আব্দুল কাদির বাগানের পাশে হাটছে আর কথা বলছে।।

আব্দুল কাদির; আব্রাহাম বাবা অতীতের কথা কেও মনে রাখে না সবাই চায় তার কালো অতীত ভুলে যেতে তুমিও ভুলে জাও বাবা সব কিছু তো শেষ হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই তুমিও সব ভুলে গিয়ে নতুন রুপে শুরু করো। তুমি বাইরের দেশে থেকেছ জানি কিন্তু কখনোই আমাদের কথা ভুলে যাও নি সবসময় তুমি আমাদের খেয়াল রেখেছ।

আব্রাহাম; হ্যাঁ চাচ্চু, এইটা আমার দায়িত্ব আর আমি তা সবসময় পালন করে যাবো। (কিভাবে ভুলি চাচ্চু কিভাবে, তারা আমার পরিবারকে যেভাবে কষ্ট দিয়েছে যেভাবে ধ্বংস করেছে,, কিভাবে ভুলি তা আমি তাদের ছাড়বো না)

আব্দুল কাদির; আমি জানি বাবা তোমার উপর আমার পুরো বিশ্বাস রয়েছে।

আব্রাহাম; চাচ্চু এই নাও কিছু টাকা আমি বেশিরভাগই তোমাদের Account এ জমা করে দিয়েছি আর বাকি গুলো তোমার হাতে দিলাম

আব্দুল কাদির; এগুলো কেন করতে গেলি বাবা এমনিতেই তো ঠিক ছিলো

আব্রাহাম; আহা নাও তো

আব্দুল কাদির টাকা গুলো নিল। আব্রাহাম আরও কিছুক্ষণ সময় তার চাচ্চু আর বাচ্চাকাচ্চা দের সাথে থেকে এসে পড়লো। এতিমখানা থেকে বের হওয়ার সময় আব্রাহামের কানে কিছু বাচ্চাদের হাসির আওয়াজ এলো বাগানের পাশ থেকে। আব্রাহাম সেই আওয়াজ অনুসরণ করে এগিয়ে গেলো। গিয়ে দেখল কতো গুলো বাচ্চা একটা মেয়ের সাথে কানামাছি খেলছে।। মেয়েটির চোকে কাপর বাধা, সেও তাদের ধরার জন্য এদিক ওদিক ছুটতে লাগলো। বাচ্চাদের সে কি আনন্দ। একসমাই মেয়েটি একটা বাচ্চা কে ধরে ফেলল সবাই খুশিতে হাততালি দিতে লাগলো। মেয়েটি তার চোখ থেকে কাপর সরিয়ে ফেললো আব্রাহাম মেয়েটিকে দেখে অবাক হলো।। সেই দিন Coffee shop এ সে বৃষ্টি তে ভিজতে যে মেয়েটিকে দেখেছিল এই সেই মেয়ে আব্রাহাম মেয়েটির দিকে এক নয়নে তাকিয়ে আছে মেয়েটির মুখে সবসময় হাসি লেগে থাকে হাসি যেন মুখ থেকে সরতেই চাই না এটাই হইতো তার চেহারাতে মায়া বাড়ানোর প্রধান কারণ ।। মেয়েটি বাচ্চাদের এতো গুলা বেলুন, chocolates দিয়ে চলে যেতে লাগলো।
আব্রাহাম মেয়েটির পিছু যেতে লাগলো। মেয়েটি যেতে যেতে দেখতে পেল রাস্তায় এক মহিলা একটি ছোট্ট বাচ্চা কে কোলে নিয়ে বসে আছে মেয়েটি দাঁড়িয়ে পড়লো সে দোকান থেকে বেশ কিছু খাবার কিনে এসে সেই অসহায় মহিলা টিকে দিলো আর সাথে কিছু টাকাও দিলো। সাথে থাকা ছোট বাচ্চা টিকে অনেক গুলো কেক আর chocolates দিয়ে মেয়েটি এসে পড়লো,,, আর এইসব কিছুই গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন করছিলো আব্রাহাম,, ভাবতে লাগলো কি আছে এই মেয়েটির মধ্যে যা এতো গভীর করে কাছে টানে আব্রাহাম কে। আব্রাহাম চাইলেও মেয়েটির কাছ থেকে নিজের চোখ ফেরাতে পারে না। সত্যি বলতে সে চোখ ফেরাতে চায় না,, চোখজোড়া থেমে যায় মেয়েটির মাঝে,,,

হঠাৎ করেই আব্রাহামের ফোন বেজে উঠলো,, ফোন আসায় আব্রাহাম সামনে থেকে চোখ সরিয়ে ফোন ধরলো

আব্রাহাম; Hlw
অপর পাশ; sir, যার কথা বলেছিলেন তাকে তুলে এনেছি
আব্রাহাম;Good
অপর পাশ; কিন্তু sir ও তো কিছুই বলছে না। অনেক মেরেছি স্যার, মারতে মারতে পুরো আধা মরা করে ফেলেছি কিন্তু স্যার মুখ দিয়ে কোন কথাই বের হচ্চে না
আব্রাহাম; Huh (তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে) যাক তাও তো একদিক দিয়ে ভালো হলো। নিজের মালিকের সাথে অন্তত বিশ্বাসঘতকতা করে নি,, যেমনটি করেছিল আমার নিজের পরিবারের লোক।
অপর পাশ; স্যার কিছুই বলছে না অনেক চেষ্টা করেছি,,
আব্রাহাম ; Shoot him
অপর পাশ; স্যার
আব্রাহাম; I said just shoot him, and i wanna hear that sound (প্রচুর রেগে)
অপর পাশ ;Yes sir

ফোনের অপর পাশ থেকে গুলি করার বিকট শব্দ কানে এলো আব্রাহামের।। আব্রাহামের মুখে বাকা হাসি ফুটে এলো।

অপর পাশ; Done sir

আব্রাহাম ফোন কেটে দিয়ে সামনে তাকালো কিন্তু সামনে তাকিয়ে আব্রাহাম আর সেই মেয়েটিকে দেখতে পেল না।। আব্রাহাম এদিক ওদিক খুজতে লাগলো মেয়েটিকে কিন্তু মেয়েটি ততক্ষনে চলে গেছে।।

আব্রাহাম তারপর বাড়িতে এসে পড়লো।

আব্রাহাম; বাপি বাপি i am home
আবির আহমেদ; কিরে এসে পড়েছিস
আব্রাহাম; হে বাপি,
আবির আহমেদ; তা সেখানে সবাই কেমন রয়েছে?
আব্রাহাম ; সবাই ভালো বাবা আব্দুল চাচ্চু বাচ্চারা সবাই অনেক ভালই আছে?
আবির আহমেদ; আলহামদুলিল্লাহ।
আব্রাহাম; কিরে তুই এই সময়ে? তোর না আজকে আসতে দেরি হওয়ার কথা ছিল? (অয়নকে দেখে অবাক হয়ে)
অয়ন; কথা ছিল কিন্তু আমি তারাতারি এসে পড়েছি কি করব বল এতো গুলা কাজ ছিল আমার মাথায় আর ধরছিল না তাই সব মেনেজার কে বুঝিয়ে দিয়ে আমি চলে এসেছি😁
আব্রাহাম; আস্ত একটা ফাকিবাজ, বাপি তুমি তোমার ছেলেকে কিছু বল তোমার আহ্লাদে ছেলেটা আরও গেলো,, আর তুই(অয়নের উদ্দেশ্যে) ভাই একটু তো কাজে focus দে
অয়ন; 😁😁🙃

আব্রাহাম আর কিছু না ঘরে চলে গেলো।। রাত হলো, আব্রাহাম রকিং চেয়ারে বসে আঙুল দিয়ে কপাল ঘসছে আর বলতে লাগলো বাইরে ছিলাম এতো দিন নয় বেচেঁ গেছ কিন্তু এখন আমি দেশ এসে পরেছি এখন দেখি আমার থেকে কতোদূর পর্যন্ত পালিয়ে বেড়াতে পারো তোমারা। আব্রাহাম corridor এ চলে গেলো সিগারেট টানতে লাগলো আর সেই মেয়েটির মায়া ভরা চেহারা না চাইতেও বার বার তার সামনে আসতে লাগলো। সারা রাত এভাবেই কেটে যেতে লাগলো।।

সকালে🌞🌹,,,,,,,,,,,,,,,,,

অয়ন; Good morning everyone 😴( হাই তুলতে তুলতে Drawing room এ এসে পড়লো অয়ন)

কিন্তু সামনে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলো অয়ন কেননা রুমে কেও নেই রান্নাঘর থেকে শব্দ আসতে লাগলো শব্দ শুনে অয়ন রান্নাঘর এর দিকে গেল।। গিয়ে যা দেখলো তাতে তার চোখ চড়কগাছ। কারণ সামনে তাকিয়ে দেখে আব্রাহাম রান্না করছে আর তার বাপি হাতে হাত গুজে তা দেখছে

অয়ন; কি দেখছি কি আমি ভাই তুই রান্না করছিস?😮

আব্রাহাম; এতে এতো অবাক হওয়ার কি আছে। বাপির শরীর ভালো না আর বাপি রোজ রাধবে তা আমি কোন ভাবেই মেনে নিতে পারবো না।

আবির আহমেদ; আমি আর ছেলের সাথে পারি না আমাকে টেনে রান্না ঘর থেকে সরিয়ে দিয়েছে আজকে নাকি সে রাধবে

অয়ন; ভাই তুই পারিস রান্না করতে?

আব্রাহাম; আরে আমেরিকা তে তো একা থাকতে হতো আর কোন servant এর হাতের রান্না আমি খেতে পারতাম না তো হালকা পাতলা রান্না করতে করতে শিখে গিয়েছি।

অয়ন; (আব্রাহামের পিছনে দাঁড়িয়ে) ভাই আমার ভয় লাগছে at lest খাওয়ার যোগ্য তো হবে নাকি?

আব্রাহাম; (অয়নের পেটে গুতো মেরে) মারবো না একটা টেনে, আমার রান্না খেয়ে না হাত চাটতে থাকবি তুই বুঝলি

অয়ন; ওওও বাবা তাই নাকি তাহলে আমি যাই fresh হয়ে আসি

আবির আহমেদ; হুমম হুমম তারাতারি যা

আব্রাহাম- আবির আহমেদ রান্নার কাজ শেষ করে সবাই মিলে খেতে বসলো

আব্রাহাম; বাপি আমি আজকে থেকেই office join করতে চাচ্ছি।

আবির আহমেদ; হে তা বলার কি আছে এটা তো খুশির খবর আরো

অয়ন; আহহ তাহলে আমার কাজের pressure টা একটু হলেও কমবে বল

আব্রাহাম; একদম না উল্টো বাড়বে। আর আমি আজ-এখন থেকেই office এ যাবো। কাল রাতে আমার মেনেজারের সাথে কথা হয়েছে

অয়ন; তাহলে আমি আর আজকে যাচ্ছি না

আবির আহমেদ; কি, কেন যাবি না?

অয়ন; আরে আজকে ভাইয়া যাচ্ছে office এ আর মেনেজার তো জানেই তাহলে আজ আর আমি না জাই আজকে ভাইয়াই সামলাক সব কিছু আমি বরং আগামীকাল থেকে যেতে শুরু করি। আজকে আমার Rest day

আব্রাহাম; ফাকিবাজ কি আর বলি সাধে!!😤😤

অয়ন;😒😒😒

আচ্ছা বাপি আমার খাওয়া শেষ তাহলে আমি জাই এখন আর রাশেদ ও আমার সাথে যাবে বুঝলে ওর কাজ আছে। আমি চলি (বাপিকে জড়িয়ে ধরে) এই বাদর থাক (অয়নের মাথায় গাট্টা মেরে) নিজের খেয়াল রাখিস আর বাপি কে দেখে রাখবি সময় মতো medicine দিবি bye bye

এই বলে আব্রাহাম এবং রাশেদ গাড়িতে করে Office এর উদ্দেশ্যে চলে গেলো………………

🍁
🍁
🍁
🍁
🍁
🍁
🍁
🍁
🍁

চলবে ~~~~~~