Friday, July 4, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1422



প্রেমের আটফোড়ন পর্ব-০৭

0

#প্রেমের আটফোড়ন 🍁🍁
#writer :Arshiya shiratul falak
#পর্ব : 7
রিহান অধরার কাছ থেকে এসে যখন ভার্সিটির মাঠে এসে দাড়ালো তখন মেয়েরা এক এক করে হাই হ্যালো জানাচ্ছে,,

রিহান কাউকেি পাত্তা দিল না,, চোখে ব্ল্যাক চশমা, হাতে একটা ব্ল্যাক রুঙের ঘরি, গায়ে ব্ল্যাক রঙের টিশার্ট উপরে ব্ল্যাক জ্যাকেট,, সব মিলিয়ে তাকে ব্ল্যাক ম্যান দেখা যাচ্ছে ভার্সিটির মেয়েরা সবাই এক অভাক চোখে তাকিয়ে আছে,, একটা ছেলে এতটা সুন্দর হয় কি করে হাউ সে্ট্রঞ্জ,,,

ঐদিকে অধরা ভার্সিটির ২তলা থেকে সব দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছে আর বলছে,,

হুম কি ডং 😏

রিহান যখনি ক্লাসের দিকে আসবে তখন ইশিতা এসে সামনে দাড়ালো, ইশিতাকে দেখা মাত্রই অধরার চোখ বড় বড় হয়ে এল কারন ওর জন্য আজ বিয়ে নামক প্যারায় পড়তে।হয়েছে। মন চাচ্ছে গিলে ফেলতে,,,
।কিন্তু পারছেনা কোথাও যেন একটা দুর্বল জায়গা রয়েই গেল,,,

হাই বেইবি কেমন আছো,,( ইষিতা)

রিহান এবার রেগে গেলো,, কিন্তু তার রাগ দেখিয়েও কোনো লাভ নাই,, মাছির মতো পেছন পেছন ঘুরতেই থাকে এই মেয়ে । তাই রিহান একটা ছোট্ট হাসি দিয়ে বলতে লাগলো।,,

ইশিতা তোমার এই নেকা কন্ঠে আজাইরা ডাক দেওয়া বন্ধ করবা করবা , আমি জাস্ট আর পারছি না তোমার এই নেকা নেকা স্বর শুনতে,,,

এমন কেন কর বেইবি,,,

ওফ সরো আমার ক্লাস আছে,,,

সেখানে আর কোনো কথা বাড়ালো না যে যার মত রইলো,,,

_____________
রেহানা বলেছিলো বাড়িতে তার সাথে যেতে কিন্তু অধরা রাজি হয়নি,, কারন বড়লোকে তার এলার্জি,, কাল রাতটা কাটিয়েছেই ভীষন কষ্টে কাউকে বুঝতে দেয়নি ।
তাই সে তার বাড়ি ফিরে যায়। রেহানার জোরাজুরিও রাজি হয়নি,,,

এদিকে আরীফ চৌধুরি অধরাকে রেহানার সাথে দেখতে না পেয়ে রিহান কে কল করে রিহান জানায়, সে তার বাপের বাড়িতে আছে তাও এক বছরের জন্য এমনি মাঝে মাঝে এসে নাকি দেখে যাবে অনার্স কমপ্লেট হলে বাড়ি আসে এসব হাবিজাবি বলে বাবাকে বুঝিয়েছেন,, কিন্তু আরিফ চৌধুরি সন্দেহ করছে ছেলেকে,,

ফোন কেটে রিহানও ভাবেতে লাগলো হঠাৎ মেয়েটা আমার বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গেল, তাকে কি করে ফেরাব আমি,,,,,

বিকেল গনিয়ে রাত এল, রাত শেষে ভোর হলো,, অধরা নামায পড়ে বের হল টিউশনির উদ্দ্যেশ রাস্তায় বের হতেই ভাবি তাকে ৩তলা থেকে ডাক দিলেন সাথে আব্রাহামও। আব্রাহাম অধরাকে বলতে লাগলেন,,

পুফি পুফি আমাদের বাতায় আতো না আমি তোমাকে মিত তরি প্রতুর,, তুমি থুব পতা পতা আমাকে দেততে আতো না,,

অধরা খিল খিল করে হাসলে অাব্রহামের। তারপর বলল,

আচ্ছা সোনা আমি আসবো কিন্তু আমার জন্য চলকেট রাখতে হবে তোমাকে,,

আত্তা রাখবো,,,, আতর দিলাম(হাত দিয়ে চুমু দিল ,) তুমি দিবে না,,

না সোনা আমি তোমাকে কাছে থেকে দেব,,, এখন যাই ফুপি পরে কথা বলব,,

বলেই অধরা চলে গেল, তাদের এই কথা বার্তা আড়াল থেকে একজন শুনেছে মন কাড়া একটা হাসি দিয়ে অধরাকে ফলো করতে লাগলো,, কিন্তু অধরা সেটা টের পেল না , সে তার নিজের কাজে ব্যস্ত টিউশনি করিয়ে বাসায় এল, এসে রান্না বান্না, সব কিছু করে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিল,,,

ভার্সিটিতে গিয়ে দেখতে পেল, রেহানা কান্না করছে,, তার সামনে দিয়ে রৌদ্দুর হেটে যাচ্ছে,,, রেহানা সেদিকে না তাকিয়ে দৌড়ে রৌদ্দুরের কাছে গেল সেখানে তুর্য, হিমেল, বসে আছে আকাশ এখনো আসেনি ,,, অধরা রৌদ্দুর এর কাছে এসে বলতে লাগলো,,,,

ভাইয়া বোনকে বুঝি ভুলে গেলে তুমি,,, ( হাপাতে হাপাতে)

না রে বোন আমি তো আজ তকে দেখতে গিয়েছিলাম রিহানদের বাসায়। গিয়ে আংকেল থেকে জানতে পারি তুই নাকি চলে গেছস তাওএক বছরের জন্য,,

অধরা আর একটু চিন্তিত হলো এক বছরের জন্য মানেটা বুঝলো না। তাই সেদিকে কোনো কথা না বাড়িয়ে ভাইযের সামনে একটা ছোট্ট হাসি দিল।

তা তদের এক বছরের দুরত্বটা কি জন্য শুনতে পারি কি আমি???

তখনি রিহান এসে বলতে লাগলো, আরে শালাবাবু একটু ওয়েট করো, বলেই একটা চোখ টিপ দিলো,,
অধরা বোকার মতো তাকিয়েই রইলো মুখে দিয়ে কোনো ভাষাই প্রকাশ করলো না,,,

রিহান একটা হলুদ রঙের টিশার্ট পড়ে আছে, সেটা দেখে অধরাছোট খাটো ক্রাশ খেলো,, রিহান দেখতে পেল অধরা তার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে,, তাই নরম কন্ঠে মুখখানা হাসি মিশ্রিত করে বলতে লাগলো অধরা,, অধরা তাও শুনলো না পাশ থেকে রৌদ্দুর সেপা টের পেল তাই সে চলে গেল, রিহান অধরাকে ডাকছে তাও অধরার কোনো সারা শব্দ নেই,

রিহান ভাবতে থাকে মেয়েটাকে ভূতে পেল নাকি,, সে আবার ডাকলো কিন্তু কোনো রেসপন্স পেল না তাই বাধ্য হয়ে ধাক্কা দিল,, অধরাকে ধাক্কা দেওয়ায় সে ধরফরিয়ে উঠলো,, তারপর লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে দিলো দৌড় ক্লাস রুমে,, রিহান একটা মুচকি হাসি দেয় আর বলতে থাকে হেসেছো তো ফেসেছো,,,,

ভার্সিটি শেষ করে বাড়ি গেল অধরা বাড়ি গিয়ে খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিল,, কিছুক্ষন পর টিউশনি গেল,, টিউমনি শেষ করে বাড়ি ফিরল, তাকে কেউ ফলো করছে পেছন পেছন সেটা এখনো বুঝতে পারলোনা , রাত হয়ে গেলো টিউশনি মেষ করতে। তাই প্রতিদিনের মতো বাড়ি ফিরে খাবার খেয়ে ভার্সিটির কিছু নোট লেখার বাকি সেগুলো লেখলো, তারপর বসে বসে গান গাইতে লাগলো,,

আমারও পরানো যাহা চায়,,, তুমি তাই তাই গো…. আর গাইতে পারলোনা কিছু একটা পরার শব্দ পেল,,,

জানালা দিয়ে ওকি দিল কিছু দেখতে পেল না,,, তবে একটা ছায়া দেখতে পেল সেটা একটা পুরুষ।, অধরা ছায়াটা দেখা মাত্রই ভয় পেয়ে চিৎকার দিতে যাবে,, তখনই মনে পড়লো দোয়া ইউনুসের কথা তাই সে চিৎকার না করে দোয়াটা পড়তে লাগলো । এত রাতে যদি চিৎকার করে তাহলে লোকে তাকে পাগল ছাড়া কিছুই ভাববে না,,

_______________________

এদিকে রেহানা বসে আছে ভাইয়ের অপেক্ষায় কখন ভাই আসবে আর কখন খাবার খাবে,,, হঠাৎ দেখতে পেল রিহান দরজায় ডুকছে ডুকা মাত্রই গিয়ে জরিয়ে ধরলো ভাইকে। তারপর একসাথে ডিনার করতে বসলো,, আরিফ চৌধুরি খেয়ে ঘুমিয়ে পরেছে,,, অধরার জন্য তার মন খারাপ, তাই সে কারো সাথে তেমন কথা বলে না প্রয়োজন ছাড়া।,
রিহান খাবার খাওয়ার জন্য হাত বাড়াতেই রেহারা প্রশ্ন করল, ভাই তোমার হাতে কি হইছে কেমন যেন দেখা যাচ্ছে,??
আরে না কিছুনা হালকা একটু কেটে গেছে,,,
ও,সেভলন লাগাইছো,,??
না লাগিয়ে নেব,,,
দাও প্লেট দেও আমি খাইয়ে দিচ্ছি,,
রিহান আর কথা বাড়ালোনা রেহানা রিহানকে লোকমা দিয়ে দিচ্ছে আর রিহান পেট ভরে খাচ্ছে এ যেন মায়ের হাতের অমৃত খাচ্ছে,
———-++——————

সকালবেলা অধরার আযানের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে ঘুম থেকে উঠে যেই না দরজা খুলল তখন একটা ঝুড়ি দেখতে পেল। ঝুড়িটার ভেতর কতগুলো চকলেট এর মতো হালকা অন্ধকারে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে না,,
অধরা সেগুলোকে ঘরের ভেতর এনে নামাযের জন্য ওযু করতে গেল, ওযু করে এসে নামায পড়ে চেখ গেল ঝুড়িটার ভেতর। তরপর ঝুড়িটা হাতে করে টেবিলের সামনে রাখলো রাখার পর দেখতে পেল অনেকগুলো চকলেট সাথে একটা চিরকুট,, সেখানে লেখা,,

প্রিয়তমা, চকলেটগুলো তোমার জন্য, তোমার পাগল প্রেমিক এর দেওয়া গিফ্ট,,

এতটুকুই লেখা ছিল,, অধরা ভাবতে থাকে কে দিল এই চকলেট। দাও আবার পাগল প্রেমিক।

অধরা একটু হাসলো কারন তার মত অসহায় মেয়ের আবার পাগল প্রেমিক,,

আজ ফ্রাইডে তাই ভার্সিটি বন্ধ + টিউশনিও নেই তাই সকালের ঠান্ডা পরিবেশটাকে উপভোগ করতে একটু বাহির হয়,,
হালকা কুয়াশা, চারদিকে পাখির কিচিরমিচির,, রাস্তাঘাট ফাকা,, ঠান্ডা বাতাস কানের কাছে এসে শুশু করেছে,, নিস্তব্ধতা পরিবেশ দারুন লাগছে, অধরার কাছে,, এই নিজর্ন জায়গায় একা একা হাটছে,,, আর ভাবছে রিহানের কথা কেন সে তাকে বিয়ে করলো, আচ্ছা রিহান কি তাকে মেনে নিবে, মেনে নিবে কি করে, সে কোথায় আর অধরা কোথায়, এসব ভাবতে ভাবতে বসার সামনে এসে দাড়ায়, দরজা খুলে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে আবার ঝুড়িটার দিকে নজর দেয়। কে দিতে পারে এই ঝুড়ি একরাশ চিন্তিত নিয়ে,, খাবার খাওয়ার জন্য হাত উঠে,,

পাতিলের কাছে গিয়ে দেখতে পেলো, ভাতগুলো নষ্ট হয়ে আছে। কাল রাতে খাবার খেয়ে পানি দিতে মনে ছিলনা। বাসায় তো আর ফ্রিজ নেই, যে ফ্রিজে রেখে দেবে। ভাতে পানি না দেওয়ার কারেন বাতগুলো নষ্ট হয়ে একাকার হয়ে আছে,,,

ইশ কেন যে ভাতগুল,তে পানি দিলাম না এখন খাব কি,, ভাত গুলো ঠিক থাকলে তো কাচা মরিচ দিয়ে খেতে পারতাম,,৷ উপুস কি থাকতে পারবো এতক্ষন। ঐদিকে তো চাল ও শেষ হয়ে যাচ্ছে,, রান্না কমাতে হবে আগে রান্না করতাম দুইবার এখন করতে হবে একবার। উফ কি যে করব ভেবে পাচ্ছি না।

বলেই তার লাগেজ এর কাছে গেল,, লাগেজ থেকে একটা বোয়াম বের করল সেখানে দশ থেকে বারোটা বিস্কুট দেখতে পেল, সেখান থেকে দুইটা বিস্কুট খেয়ে নিল , তারপর পানি খেয়ে বিশ্রাম নিল,, হঠাৎ আব্রবাহামের কথা মাথায় এল তাই তাড়াড়াড়ি করে উঠে পরলো, উঠে চুলগুলো আচড়ে ছেড়ে দিল। বেড়িয়ে পড়লো আব্রাহামের বাসার উদ্দশ্যে….
কিছু দূর যাওয়ার পরে দেখতে পেল,, দূর থেকে একজন বাইক নিয়ে আসছে তার দিক অনুসরন করে,,

কোথায় যাচ্ছেন( রিহান)

কেন আপনাকে বলতে যাব কোন দুঃখে।

এই আপনি কি আমার সাথে সুন্দর করে একটু কথা বলতে পারেন না।

যে যেমন তার সাথে ঠিক তেমন ব্যবহার করতে হয়,,

এই মেয়ে দেখেন আপনার সাঝে রাস্তায় ঝড়গা করার মোড নাই,। সো তাড়াতাড়ি উঠুন বাইকে।

আজিব আমি৷ বাইকে উঠতে যাব কেন?? আর আপনি আমার ঠিকানা জানলেন কিভাবে??

প্রথমত বাবা বলছে বাসায় যেতে, আর দ্বীতৃয়ত বাসার ঠিকানা,টেলেন্ট থাকতে হয় মিস,, 😉যেগুলো আপনার নাই,,,। তাই এত কথা না বাড়িয়ে উঠে পরুন,।

দেখেন আমি এখন আব্রাহামের বাসায় যাব,

জানি তো,,,
আপনি জানেন কি করে,,
রিহান এবার ডুক গিলল তারপর কথা ঘুরালো,,
আব্রাহাম কে আব্রাহাম,,
এতক্ষন যেভাবে বলছিলেন জানি,, আমি তো মনে করছি আপনি মনে হয় চিনেনও,, যাক বাদ দেন। আপনি আপনার বাসায় যান। আমি এখন আব্রবাহামের কাছে যাব।
তাহলে আমিও যাব। আপনাকে না নিয়ে বাসায় যাচ্ছিনা মেডাম তাই এসেছি যেহেতু একসাথেই যাব….. ❤️❤️

#চলবে

প্রেমের আটফোড়ন পর্ব-০৬

0

#প্রেমের আটফোড়ন 🍁
#writer : Arshiya shidratul falak
পর্ব:৬

আমার কোমর গেল রে,,, মা এবার মনে হয় তোমার মেয়ে পঙ্গু হলো,,,

কোমড়ে হাত দিয়ে নেকা কান্না করছে অধরা,, রিহান তো আকাশ থেকে পড়ার মতো অবস্হা এখন তার রাগ দেখানোর কথা কিন্তু সে রাগ না নিয়ে ই উল্টো সরি বলছে,, অধরা তো আরেকটু সায় পেল তাই আরো জোরে জোরে নেকা কান্না শুরু করলো,,, বেচারা রিহান তো এবার অসহায় ফেস করে রেখেছে।

দেখুন এভাবে কাদতে হবেনা আপনাকে,, সরি বলছি তো আমি আর এমন করবনা। প্লিজ প্লিজ কান্না থামান।

অধরা এবার একটু কান্না থামালো তারপর ঝাঝ গলায় বলল, কান্না করলে যে টিস্যু দিতে হয় এটুকু কনমসেন্স নাই নাকি কারো,,,

রিহান এবার রেগে গেল তাও নিজের রাগকে কন্ট্রোল করে বলল,,
আসলে মনে ছিলনা এত রাতে কান্না তাও জোরে জোরে তাই এসব মাথায় আসেনি,,

তবে আপনার সাথে আমার একটু কথা আছে,,,

জি বলেন,,
রিহান এবার বলতে লাগলো,,

আসলে বিয়েটা আমি করেছিলাম বাবার প্যারা থেকে মুক্ত হতে। সেদিন রাস্তায় আজ রাস্তায় আপনার সাথে যখন ঝগড়া আমি আপনাকে থাপ্পর দিয়েছিলাম। তারপর আপনি সেন্সলেস হয়ে পড়েন। তখন আমি আপনাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য রেড়ি হই, তারপর বাবার কল আসে। বাবার কল আসায় বাবা শুধু বলেছেন তার পুত্রবধূ চাই। নয়তো সে নাকি সুইসাইড করবে। বলেন তো আজ পর্যন্ত শুনছেন কখনো ছেলে বিবাহ না করায বাবার মৃত্যু। আমিও ভয় পাই, বাবর এমন কথা বার্তা শুনে, আর সে জন্য কোনো উপায় না পেয়ে আপনাকে সামনে দেখি আর আমার বন্ধুদের বলে বিয়ের সব কাগজপত্র রেডি করি। রৌদ্দর তো প্রথমে ভেবেছিলো যে আমি ফান করি। কিন্তু যখন পরে সব খুলে বল্লাম তারপর বিশ্বাস করলো,,,

একনাগারে কথাগুলো বলে থামলো রিহান ,, এদিকে অধরা ঘুমিয়ে একাকার হয়ে আছে। বেচারা এবার কাদবে নাকি আসবে নাকি রাগবে কিছুই খুজে পায় না। তাই সে সোফায় গিয়ে শুয়ে পড়ে,, অধরাকে আর জাগালোনা,,

পরের দিন সকালে অধরা সবার আগে ঘুম থেকে ওঠে ঔঠে ফ্রেস হয়ে নামায পড়ে বাড়ির নাস্তা থেকে শুরু করে সব যাবতীয় কাজ সেরে শশুরের রুমে যায়,, চা নিয়ে,

আরিফ চৌধুরি হাতে পেপার নিয়ে বসে আছে,,

আংকেল আসবো, ,,??

আরে আসো আসো, কি যেন তোমার নাম???

জি অধরা,,

বাবা াপনার জন্য চা নিয়ে আসছিলাম।

মা চায়ের ভিতর কি চিনি দিছো,,?

জি বাবা কেন.??

আসলে মা আমার সুগার খাওয়া নিষেধ, কারন আমার ডায়বেটিস তো তাই,,,

ও বাবা আমি তো জানি না সরি সরি সরি বাবা আর হবে না (কান ধরে)

অধরার এমন বাচ্চামো ভঙ্গি দেখে আরিফ চৌধুরি অট্টহাসিতে মেতে উঠলেন । তারপর অধরা আরো এক কাপ চা চিনি ছাড়া বানিয়ে আনেন।তারপর শশুরকে দিয়ে চলে যান।তারপর আরিফ চৌধুরি নিচে যান গিয়ে দেখে সব খাবার রেডি করা। সবকিছু দেখে তিনি একটা মুচকি হাসি দেন। আর মনে মনে ভাবতে থাকে, যাক ছেলেটা সত্যি সত্যিই বিয়ে করেছে তবে আমি কি তাকে বেশি প্যারা দিলাম যার কারনে সে কোনো অনুষ্ঠান আয়োজন ছাড়া একাই বিয়ে করে নিল।

_______________________

সবায় ব্রেক ফাস্ট করে যে যার কাজে লেগে গেলো এদিকে রিহান অধরাকে নিষেধ করেছে ভার্সিতে না যেতে, আধরাতো নাছোর বান্দা তাই রিহানের কোনো কথা রাখলো না রেহানার সাহায্য ভার্সিটিতে পৌছালো,,, রিহান তার বন্ধুদের সাথে কথা বলছিলো হঠাৎ দেখতে পেল,,, একটি সাদা রঙের কামিজ পড়া মেয়ে চুলগুলো ছাড়া। রহান এক ধ্যানে মেয়েটার দুকে তাকিয়ে রইল, কিছুটা কাছে আসার পর দেখতে পেল সেটা আর কেউ না সয়ং অধরা,
রিহান আর এক পা দাড়ালো না দৌড়ে অধরার কাছে গেল । গিয়ে অদরাকে হেচকা টান দিয়ে দেয়ালের সাথে গিয়ে ফেলল, অধরা বেচারি তো কান্না করার অবস্হা

হেই মিস্টার বানু তোমাকে না নিষেধ করলাম ভার্সিটি না আসতে,

অধরা বুঝে ওঠতে পারছেনা তার সাথে এসব কি হচ্ছে,, এই ছেলেটা কেন তার পেছনে এভাবে লেগে আছে সে ভেবে পাচ্ছে না,, প্রথমত বিয়ে, তারপর এখন ভার্সিটি না জানি আরো কতো কি করবে এনব ভাবতে থাকে,,,

এদিকে রিহানের রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে আছে, সেটা দেখে অধরা মনে মনে আল্লাহকে ডাকতে থাকে।

এই মেয়ে তুমি আমার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছনা কেন???

আপনি আমার এতো কাছে আসছেন কেন সরুন বলছি। 😥

না সরবোনা আফ্টারঅল ইউর হাসবেন্জ,,,,
এ এহাসবেন্জ 😝😝😝
কথাও কি শেখেন নি শব্দটা হাজবেন্ড হাসবেন্জ না
ও রেইলি,, তাহলে তুমি আমাকে হাজবেন্ড মানছো,,

ইস কি নেকা ওনাকে হাজবেন্ড ভাবতে যাব,, আপনাকে হাজবেন্ড ভাবার চেয়ে কচু ক্ষেতে ফাসি দেওয়া একই কথা,,, যান সরেন সামনে থেকে আপনার সাথে কথা বলার মুড নাই এখন,,,

এই মেয়ে শুনুন ভার্সিতে যখন চলেই আসছেন কাউকে বরবেন না আমারা বিবাহিত।।।
আমি কি বসে আছি নাকি,বলতে যে, আসেন আপারা ভাইয়া এসে দেখে যান আমি বিবাহিত,,,

না সেটা আমি রেহানা + বন্ধুদের বলে দিছি যে তারা এসব না বলতে, তাই আপনিও বলবেন না,

যতসব ডং😏😏

বলেই হন হন করে চলে গেল রিহানের কাছ থেকে চলে গেল অধরা,,,

আল্লাহ এই মেয়েকে কি একটু সুন্দর করে কথা বলতে শেখাতে পারো না,,,

#চলবে

প্রেমের আটফোড়ন পর্ব-০৫

0

#প্রেমের আটফোড়ন 🍁
#writer : Arshiya shidratul falak
#পর্ব:৫

রিহান এবার আস্তে আস্তে এক পা এক পা করে অধরার দিকে আসতে থাকে।অধরা তো ভয়ে গলা শুকিয়ে যাওয়ার অবস্হা,,,

এ এ এই আ আ আপনি আমার দিকে এভাবে এগোচ্ছেন কে কে কে কেন????

কি করতে এগোচ্ছি তুমি জানো না,,,

ন ন না তো,,

রিহান এবার অধরার থেকে সরে দাড়ায় তারপর গম্ভীর গলায় বলে,,

এই ইস্টুপিট মেয়ে তোমার এসব আজাইরা কথা শুনার জন্য এই রিহান চৌধুরির সময় নেই। সামনে থেকে সরো,,,

কি আমাকে এভাবে ইগনোর করা,,, মিস্টার রিহান চৌধুরি তোমাকে তো আমি দেখে নেব,, হায় আল্লাহ আজকে দিনটাতে আমার সাথে কি হচ্ছে এসব মনে মনে বলতে থাকে ,।

এই যে শুনুন মিষ্টার রিহান না ফিহান আমার দিকে তাকান,,,

ডিনার করবে বলে রেডি হচ্ছিলো নিচে যাওয়ার জন্য আচমা এমন গলা শুনে রিহান ফিরে তাকালো। সে তো ভাবতেই পারছে না যে মেয়ে তাকে দেখে ভেজা রিডালের মতো হয়ে যায় সে মেয়ে তাকে ডাক দিচ্ছে তাও আবার রিহান ফিয়ান,,

এই মেয়ে আপনি কি বললেন আমাকে,,???

কেন আপনার নাম ধরেই তো ডাক দিলাম,, এসব বাদ দেন বিয়ে তো করছেন এবার আমার জামা কাপড় কই, আমি কি এসব পড়ে থাকবো নাকি,, আমার বাসায় তো যেতে দেন নি, এখন আমার জামা দেন নয়তো দেখবেন কি করি আপনার সাথে,,,

রিহান এবার বোকা বনে গেল একটা জামার জন্য এতোগুলো কথা শুনাতে হলো তাকে,, কি মেয়ে রে বাবা প্রথমে ভেবেছিলাম শান্তশিষ্ট মেয়ে হবে এখন তো দেখি সি ইজ ডেঞ্জারাস,, ভাবতে থাকে,, ভাবনায় এতোটাই ভিভোর ছিল যে অধরা ওয়াস রুম থেকে ফ্রেস হয়ে এসে দেখে গালে হাত দিয়ে সোফার উপর বসে রিহান এক মনে ধ্যান করছে,, অধরা তখন রিহানের সামনে এসে হাত দিয়ে তুরি মারলো

এই যে মিস্টার টিয়ান শুনতে পাচ্ছেন,,

হঠাৎ নিজের নামটা কারো মুখে উল্টে শুনে ভাবনার জগত থেকে নামলো ,,

কি আপনি আমাকে এই নামে ডাকলেন কেন আপনারর সাহস তো কম না আমার এত সুন্দর একটা নাম থাকতে কি আজেবাজে নামে ডাকেন,।

কি করব বলেন আপনার নামটা এত এত এত সুন্দর যে আমি ভুলেই যাই, তাই এটা বলেই ডাকবো,, আচ্ছা বাদ দেন খাবার খাব রাত তো অনেক হয়ে গেল ঘুম পাচ্ছে, আমি খাবার খাব,,

রিহান এতক্ষন অধরার দিকে খেয়াল করে নি যখনি খেয়াল করলো তখন তার চোখ গেল কপালে।

এ মেয়ে আপনার সাহস দেখে আমি অভাক হচ্ছি আপনি আমার শার্ট আর লুঙ্গি পড়ে আছেন কেন??? 😂😂

কি করব বলেন আমার তো কিছুই নাই তাই এসব পড়ছি,, আরেকটা কাজ করলে পাড়ি সেটা হচ্ছে,, একেবারে কিছু না পরে থাকা,,

এই মেয়ে আপনার কি কোনো লজ্জাবোধ নেই নাকি। কি বলছেন এসব??

কি বলব বলেন আপনি আমার বিবাহিত দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র স্বামী আপনার সামনে তো সেভাবে থাকতেই পারি তাইনা 😌😌

রিহান এবার মনে মনে বলতে থাকে কি জন্য যে বাবার প্যারা বন্ধ করতে এই বউ নামক প্যারার ফাদে পা দিলাম আল্লাহ জানে,,,
রিহান আর কথা বাড়ালোনা নিচে চলে গেল ডিনার করতে, এদিকে অধরা বেচারিতো খুশি আত্মহারা কার রিহানকে সে জব্দ করতে পেরেছে।

বাবে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান,, এবার দেখেবে রিহান চৌধুরি অধরা কত ধানে কত চাল ,
আমার এই প্যারাই তোমাকে বুঝাবে মজা,, বিয়ে করার শখ হইছিলো বেশি তাই না,, তোমার শখ আমি মজাচ্ছি,, বলেই নিজে নিজে হাসতে থাকে,,,

রিহান নিচে নেমে দেখতে পেল রেহানা টেবিলে খাবার সাজাচ্ছে তাই সে রেহানাকে ডেকে তার থেকে জামা নিয়ে অধরাকে দিয়ে আসতে বলল,, রেহানাও তার ভাইয়ের কথা মতো রুমে গেল গিয়ে দেখতে পেল তার গুনধর বন্ধু লুঙ্গি আর শার্ট পরে বসে আছে,,

বেচারি তো এমন কাহিনী দেখে হাসতে হাসতে মরে যাওয়ার অবস্হা, তাও নিজেকে কন্ট্রোল করে ওর থেকে জামা দিল অধরা সেগুলো পড়ে নিল,,তারপর খাবার খাওয়ার জন্য রেহানার সাথে নিচে নেমে এল, এসে দেখতে পেল সেখানে আরিফ চৌধুরি আর রিহান বসে আছে, তাই অধরা মাথায় গোমটা দিল দিয়ে, আরিফ চৌধুরির উদ্দেশ্য সালাম জানালেন,।

তারপর দাড়িয়ে রইলেন,,, সেটা দেখে অরিফ চৌধুরি বলতে লাগলেন,,
কি হল মা বসো তুমি, খাবার খাবে না???
ওনার মুখে মা শব্দটা যতবার শুনেছে ততোবার চোখে দিয়ে পানি এসেছে না চাইতেও,, এবারও ব্যতীক্রম হলো না না চাইতেও পানি এসে গেলো,,
এটা দেখে সবাই অভাক চোখে অধরা দিকে তাকিয়ে রইলেন, তখন আরিফ চৌধুরি পূশ্ন করলেন,,

কি হলো তুমি এভাবে কান্না করছো কেন,

না আ আ আ

আর বলতে দিল না রিহান।

এই মেয়ে তোমাকে কে কি তোমার বাবা মা আ আ কক এসব বাদে আর কিছু শেখায় নি নাকি,,, আমার সাথে তো ভালোই পটর পটর করে কথা বলে ফেল, এখন বলো না কেন,,,

রিফাত চৌধুরি অভাক চোখে তাকিয়ে আছে ছেলের দিকে,, এবার অধরা গোমটা খুলে শশুরের সামনেই শুরু
করে তমুল ঝগড়া,,

এই কি বললেন আমার বাবা মাকে নিয়ে,, আপনি জানেন আপনি কি বলছেন,, আমার বাবা মাকে নিয়ে কিছু বল্লে আমার ইগোতে লাগে বুঝচ্ছেন, খাবার খেতে আসছেন খাবার খান, খেয়ে সোজা রুমে যান, নয়তো বাবাকে বলব,,

আরিফ চৌধুরি কিছুই বুঝে ওঠতে পারছেনা তাদের এসব ঝগড়া করার আগামাথা। তাই সে জোরে দমক দিলো বেচারি রেহানা তো ঝগড়ার৷ দৃশ্যই দেখে যাচ্ছে কিছুই বলছেনা,,
সবাই চুপচাপ খাবার খাও,, আর বৌমা তুমিও খাবার খাও,, রেহানা সবাইকে খাবার দাও,,,

এই না না রেহানা তুই বস আমি খাবার দিচ্ছি??(অধরা)

না ভাবি তুমি বসো আমি খাবার দিচ্ছি অধরা আর কোনো কথা বাড়ালো না সোজা খেয়ে রুমে চলে গেলো,,

আরিফ চৌধুরি বসে বসে ভাবছে সত্যিই কি ছেলর বিয়ে করেছে নাকি তামাশা করছে ওনার সাথে,,,
______________________

রাতে খাবার খেয়ে অধরা গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো,,
রিহান রুমে ডুকে কোনো দিকে না তাকিয়েই ধপাস করে বিছানায় গিয়ে পড়লো,,,

এই কোন মোটোরে আমার উপর পরলো আ আ আ কমোর গেল রে আমার,,,

#চলবে ❤️❤️

প্রেমের আটফোড়ন পর্ব-০৪

0

#প্রেমের আটফোড়ন 🍁
#writer : Arshiya shidratul falak
#পর্ব :৪

অধরা চোখের পাতা দুটো এক করে ফেলে ভয়ে। একরাশ ভয় তাকে ঘিরে চেপে আছে,,, কিছুতে চোখ দুটো খোলছে না।
অধরা চোখের পাতা দুটো এক করে ফেলে ভয়ে। একরাশ ভয় তাকে ঘিরে চেপে আছে,,, কিছুতে চোখ দুটো খোলছে না।

তাকে অভাক করে দিয়ে আরিফ চৌধুরি, অধরার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বল্লেন,,

ঘরর আসো মা,,,,,

অধরা মা শব্দটা শুনে বুকটখানি মোচড় দিয়ে উঠলো। কারন তার বাবা কখনো তাকে এমন ভাবে ডাকেনি। ডাকবেই বা কি করে তার বাবা যে তার জন্মের পর পরই মারা যায়।

অধরা স্হিরভাবে চোখ দুটো মেলল, তাকিয়ে দেখলো একজন সুঠাম বৃদ্ধ লোক তার সামনে দাড়িয়ে আছে বয়স 4৫-৫০ হবে আনুমানিক,,

ততারপর আরিফ সাহেব রেহানার উদ্দেশ্যে বলতে লাগলেন,,,
বৌমাকে ঘরে নিয়ে যাও রেহানা,।
রেহানাও বাবার কথায় সম্মতি দেয়।

রেহানা এবার বলতে লাগলো কি রে কি করে হলো এসব,, , কবে থেকে প্রেমের টাংকি চলছে তদের হুম,,,,,
রেহানার কথা থামিয়ে এবার অধরা বলতে লাগলো, তুই যে ঐ এনাকন্ডার বোন আমাকে বলিস নি কেন,,,

অধরার মুখে ভাইয়ের নাম এনাকন্ডা নাম শুনে হো হো করে হেসে উঠলো রেহানা, ,, কারন তার ভাই যা রাগি এসব শুনলে। অধরাকে তার বাড়ি পৌছে দিয়ে আসবে,,

আরে না তোকে বলতাম কোনো না কোনো দিন,, তবে দেখ তর সাথে আজই আমার প্রথম দেখা হলো। আর আজই তোদের বিয়ে এসব,,, তাহলে বলার মতো চান্সটা কোথায়,এখন আমি কিছু সুনতে চাইনা আগে বল তদের বিয়ে কিভাবে হল আমার জানামতে তো কেউ কাউকে চিনিস না তাহলে??

তারপর অধরা ভার্সিটি থেকে এখন অপদি যা যা হল সব কিছু রেহানাকে খুলে বলল।রেহানা তো এগুলো শুনে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। কিন্তু ভাইয়া হঠাৎ বিয়ের ডিসিশন নিল কেন সেটাই তো বুঝলো না,,,, তাই অধরাকে প্রশ্ন করল,,,

আচ্ছা অধরা ভাইয়া হঠাৎ বিয়ের সিদ্ধান্ত নিল কেন, রে। আর তুই বা জানা নেই শুনা নেই বিয়ে করে ফেললি তাকে যাচাইও করতে গেলি না। হোয়াই???

অধরা কিছুটা ভাবান্তর হয়ে রইল। তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,,,

ওনি আমাকে বিয়ে কেন করেছেন আমি জানিনা,, শুনেছি ওনার জন্য নাকি সুন্দর সুন্দর মেয়েরা লাইন লেগে থাকে,, সেখানে হয়তো আমি কিছুই না,, তবে আমি বিয়ে করেছি রৌদ্দুর ভাইয়ার জন্য এটা বলতে পারব,,,।।

রৌদ্দুর এর কথা শুনে রেহানা বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে রইলো অধরার দিকে,,

রৌদ্দুর ভাইয়ার জন্য মানে,,,

আমি যখন সেন্সলেস হই,তখন নিজেকে কাজী অফিসে দেখে চমকে ওঠি। তার কিছুক্ষন পর রৌদ্দুর ভাইয়া আমাকে ডাক দেয়,,ওনার সাথে আমি একটা রুমে যাই,, তারপর ভাইয়া আমাকে করোন কন্ঠে বলে,,,

তোমার বাসায় কে কে আছে,,,,,,
ওনার এই প্রশ্নে আমি কিছুই বলিনি শুধু বলেছি আপনার আপন বলতে দুনিয়ায় কেউ নেই,, তারপর উনাকে সব বলি,,

তারপর দেখি তার চোখেপানি,, ওনার চোখে পানি দেখে কেন জানিনা মায়া হল,,

মানুষ বড়ই অদ্ভুত। আমার মতো মেয়ের জীবন কাহিনী শুনেও ওনার চোখে পানি। বিশ্াবস করতে পারছিলাম। কারন এই পৃথিবীটা তো বড়লোকের কেনা,, সেখানে আমাদের মতো সামান্য মানুষ কিছুইনা,,
তারপর ওনি বলতে লাগলেন,,,

জানো তোমার মতো আমিও এতিম,, আমারও এই বন্ধু গুলো বাদে কিছু নেই,, যখন ক্লাস ৫ম ভর্তি হই তখন আমার মা মারা যায়। তারপর বাবা বিয়ে করেন, আমি পরিবারের বড় সন্তান ছিলাম, কিন্তু মা মারা যাওয়ার পর বাবা বিয়ে করেন,, বাবা বিয়ে করার পর থেকে নতুন মায়ের কথা মতো চলতে থাকেন, নতুন মা আমাকে দু চোখে সহ্য করতে পারেন নি।বাবা দিনে অফিস করে যখন রাতে বাসায় ফিরতেন তখন নতুন মা আমার নামে তার কাছে নানা রকমের কথা বার্তা বলতে এবং তিনি মাকেই বিশ্বাস করতেন। ওনাকে বিশ্বাস করে আমাকে মারধর করতেন, সেদিন থেকেই নিজেকে এতিম ভাবতে শুরু করি। তারপর কোনো রকমে এসএসসি পাশ করে ঢাকায় আসি,,ঢাকায় আসার পর থেকে এ বন্ধুগুলোই এক মাত্র আপন।

ওনার কথাগুলো শুনে কেন জানিনা নিজের অজান্তেই কেদে ফেলি তখন ওনি আমার চোখে পানি মুছে বলে,,,

যারা অন্যের দুঃখে কান্না করতে যানে, পৃথিবীতে তারাই বালো মনের মানুষ বলে গন্য করি ৷ তারপর ওনি বললেন,,

আমার বোন হবে তুমি,, কথা দিচ্ছি একজন ভালো দায়িত্বশীল বড় ভাই হয়ে দেখাব তোমাকে,,
কেন জানিনা ওনার কথাটা শুনে কিছু না বলেই হ্যা বলে দেই,,, তারপর ওনি বল্লেন,,,

তাহলে ওয়াদা দাও আমি যা বলি তুমি তাই করবে একজন ছোট বোন হিসাবে,,,
আমি তার কথার সম্মতি দেই,,
তারপর ওনি যা বল্লেন সেটার শুনার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না, ওনি বল্লেন আমাকে,,,

বিয়েটা করে ফেল তুমি, ওনার কথা শুনে ওনার কাছে অবাক চোখে তাকাই,,
আর বলতে থাকি,, জানেো ভাইয়া ওনার সাথে আমার যখনই দেখা হয় তখনই ঝগড়া বাদে আর তার সাথে কিভাবে সারাজীবন থাকবো এসব কি বল,,

তারপর ভাইয়া বলে
আমি রিহানকে অনেকদিন যাবত চিনি, আর সে অনেক ভালো একটা ছেলে,, তাই তুই রাজি হ,
বড় ভাই হিসাবে তোর কাছে এ চাওয়াটাই আমার,, আজ যদি তোর নিজের ভাই হতাম তাহলে তো কিছুই বলতি না রাজি হতি। আমি তো তোর কিছুই না পর।

পর শব্দটা শুনে বুকের ভেতরটা মোচর দিয়ে ওঠলো তাই আর কিছুই বল্লাম না ভাইয়ের সম্মতিতেই বিয়েটা করে নেই,,,

অধরা সব কিছু বলে রেহানার দিকে তাকায় দেখে রেহানার চোখেও পানি৷

ওকি তুই আবার কাদছিস কেন

কই না তো এমনেই, আচ্ছা চল তুই ফ্রেস হয়ে নে আমি খাবার বাড়ছি,,

তারপর অধরা কিছুক্ষন বসে রইল,, রেহানা দেখতে পেল অধরা বসে আছে এখনো তারপর বলতে লাগলো,, কিরে তুই এখানে বসে আছিস তকে না বল্লাম ফ্রেশ হতে,,,

আসলে আমি তো কিছু চিনিনা কোথায় যাব এত বড় ঘরের ভেতর দিয়ে,,

ও আসলে আমি পাগল তকে খেয়ালই ছিলনা।
তারপর রেহানা অধরাকে রিহানের রুমে নিয়ে গেল,,,

রিহান তখন ওয়াস রুমে। পানির শব্দ শুনা যাচ্ছে, অধরা কিছুক্ষন বসে রইলো তারপর রিহান ওয়াস রুম থেকে বের হল,, সে তো অধরাকে দেখে নি তাই খালি গায়ে তোয়ালে পেচিয়ে ওয়াস রুম থেকে বের হয়,,,

অধরা রিহানের এমন অবস্হা দেখে বিছানা থেকে লাফিয়ে আ আ আ করে দেয় চিল্লান ,,,
অধরার এমন চিল্লানের আওয়াজ শুনে রিহান তো বোকার মতো চেয়েই রইল,, তারপর হুস ফিরতেই দিল দৌড় আবার ওয়াস রুমে,, তারপর সেখান থেকে টিশার্ট আর টাওজার পরে বের হয়,,

কপালে ভেজা চুলগুলো লেপ্টে আছে সেগুলো থেকে ক্রমশই বিন্দু বিন্দু পানি পড়ছে,,ফর্সা শরীরে হলুদ টিশার্ট ভিজে একাকার হয়ে আছে,,
অধরা না চাইতেও চেয়ে রইলো এদিকে রিহান তো রাগে ফুসছে,,,

তারপর অধরার কাছে এসে বলতে লাগলো,,,

হেই ইউ, তুমি জানো না কারো রুমে ডুকতে হলে নক করে ডুকতে হয়,,

আ আ আ আ

এভাবে আ আ আ আ করছো কেন???

আ আ আ ক ক ক

এসব কি অ আ ক কি এসব???

ভুলে গেছি 😂😂

কি আজিব কি ভুলে গেছ??

ক ক কথা।

রিহানের এবার হাসি পাচ্ছে সাথে রাগও…. !!!!!

#চলবে

প্রেমের আটফোড়ন পর্ব-০৩

0

#প্রেমের আটফোড়ন🍁🍁
#writer : Arshiya shidratul falak
#পর্ব :৩

বাইকের সামনে হনহনিয়ে গেল অধরা । গিয়ে বলতে লাগলো,,,

এই যে মিস্টার কানা যে হইছেন বাড়ির লোক জানে???

,,,এই মেয়ে বেশি কথা বলবেন না,,,

কি একে তো বাইক দিয়ে ধাক্কা মারলেন তার উপর আবার এমন বিহে…..

কথাটা আর বলতে পারলনা,, তার আগে গালে ঠাস করে চড় পড়লো চড়টা এতোটাই জোরে ছিল যে অধরা জ্ঞান হারালো,,,

চোখ খুলে নিজেকে কাজী অফিসের সামনে উপস্হাপন করলেন,, তারপাশে রিহান ও কয়েকটা ছেলে দাড়িয়ে আছে,,,

ছেলেগুলোকে কিছুটা চিন্তিত দেখা যাইতাছে।অধরা বুঝে উঠতে পারছে না সে কাজী অফিস আসলো কিভাবে। সে তো এখন টিউশনি থাকার কথা। তাহলে কাজী অফিস কেন। যতদূর মনে পরে বাইকের সাথে তার এক্সিডেন হয়, তারপর থাপ্পর খায়,, পরবর্তী কিছুই মনে আসছে না,,,

হায় আল্লাহ আমি কাজী অফিস কেন আসলাম,, ও মনে হয় ঐ ছেলেগুলোর মধ্য কেউ বিয়ে করবে,, তাই সাক্ষী হিসাবে আমাকে আনছে,, তাই বলে এভাবে আনতে হয় আমাকে বল্লেই তো চলে আসতাম,,, কিন্তু মিষ্টার রিহান চৌধুরি আপনাকে তো আমি ছাড়ছিনা, আপনাকে দেখে নেব পরে আগে বিয়ের কাজ সমপূর্ন করি,, তারপর আপনার কাজ,, একে তো আমার একদিনের টিউশনি মিস করাইছেন তারওপর আবার থাপ্পর এক্সিডেন,, সব একেবারে শুধে আসলে নেব,,, আমাকে আপনি চিনেন নাই।আমার ভিতু ফেইস দেখছেন। কিন্তু ঝাঝটা একখনো বাকি 😎😎

মনে মনে এসব বলতে থাকে। তখন রিহান তার পাশে একটা রেজিস্ট্রার পেপার দরিয়ে বলে নিন সাইন করুন।

রেজিস্ট্রার পেপার দেখে তো অধরার চোখ কপালে,,,

কি হল নেন সাইন করুন,,,

কেন আমি এসবে কেন সাইন করতে যাব। আমি কি পাগল হইছি নাকি। এসবে সাইন করতে যাব

ভালোই ভালোই সাইন কর বলছি,,( রেগে)

আজিব কেন সাইন করব ??

কারন তোমাকে বিয়ে করব তাই সাইন করবে??

এতক্ষন অধরা মনে করেছিল হয়তো ভুলভাল কিছু হবে। এখন যখন রিহানের মুখ থেকে শুনলো সে তো শক খাওয়ার অবস্হা।

এই ছেলে আপনি কি বলছেন জানেন???আপনার কাছে হয়তো এই জিনিসটা মজার হতে পারে কিন্তু আমার কাছে না সো এসব আবল তাবোল কথাবার্তা বাদ দিন,,

এই মেয়ে আমাকে একদম রাগাবেন না বলে দিলাম যা বলছি তাই করেন। নয়তো কিন্তু খারাপ কিছু হবে।

পাশে থাকা রৌদ্দুর তাদের ঝগড়া দেখে অধরাকে ডাক দিল,,, অধরা কান্না মিশ্রিত কন্ঠে রৌদ্দুরের সামনে গিয়ে দাড়াল,, তারপর রৌদ্দুর অধরাকে একটা রুমে নিয়ে গেলো,,,

সেখান থেকে ১০ মিনিট পরে বাহির গয়ে সোজা গিয়ে সাইন করে দিলো। কোনো শব্দও করলো না ,,
অধরার এমন কান্ডে সবাই অবাক হয়ে আছে,,,
সবার মনে একই প্রশ্ন জাগছে যে রৌদ্দুর অধরাকে কি এমন বলল যে অধরা সোজা সাইন করে দিলো,,,
তাদের ভাবনা ছেদ ঘটিয়ে অধরা রৌদ্দুরকে ডাকলো,,

ভাইয়া সাইন করেছি আর কি করব এখন….

তোকে আর কিছু করতে হবে না বাকিটা রিহান করবে…..।।

আচ্ছা ঠিক আছে..

তাদের এমন কথা বার্তা । আর অধরার হাসি মাখা মুখখানি দেখে সবাই মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো,, শুধু রিহান ছাড়া।

রিহানও রেজিস্ট্রারপেপারে সাইন করে বিয়ে সমপূন্ন করলো। এবার রৌদ্দুর বলতে লাগলো রিহানকে,,,

আমার এই এতিম বোনটাকে কষ্ট দিস না রিহান,, সে যে বড্ড একা,,, কেউ নেই তার পৃথিবীতে,, কিন্তু বোন তুই টেনশন করবি না আজ থেকে এই ভাই আছে তোর পাশে ছায়ার মতো,,,, শুদু ভাইকে বিশ্বাস করে যা,,,

রৌদ্দুরের এমন কথা কেউ বুঝলো না তবে অধরার কেউ নেই। এটা শুনে রিহানের কাছে খারাপ লাগলো, কিন্তু এখন এসব বিষয়ে কোনো পাত্তা দিল না এখন মাথায় শুধু রাগ আর রাগ,, কিন্তু অপর পাশে আকাশ, হিমেল, তুর্য বোকার মতো তাকিয়েই আছে কেউ কিছু বলে না ,,, সবার এমন কাহিনী দেখে হিমেল বলেই ফেলল,,,

কি রে রৌদ্দুর বোন ভাই কিছুই তো মাথায় আসছে না,,,

আরে বোকা অধরা এতিম,, সো আমিও অধরার বাবা মা নাই আমারও নাই,, অধরা একা আমিও একা,, এখন মোট কথা হলো আমারও বোন নাই অধরারও ভাই নাই। তাই আজ থেকে আমি অধরার বড় ভাই অধরা আমার ছোট বোন এই সিম্পল বিষয়টাকে বুঝিস না,,,,

এটা বলার সাথে সাথেই রিহান, আকাশ, হিমেল, তুর্য সবাই এসে রৌদ্দুরকে জরিয়ে ধরে।অধরা তো অভাক হয়ে আছে তাদের এমন কান্ডে। তখন রৌদ্দুরকে ছাড়িয়ে
রিহান বলতে থাকে…

এই তকে না একদিন বলছি নিজেকে কখনো একা ভাববি না আমরা আছি তোর সাথে,, এতটাই পর ভাবিস আমাদের তাইনা,,,

আরেনা বোকা ছেলে কথাই কথা বল্লাম তোরাই তো আমার আপন সব চাইতে কাছের ভাই +বন্ধু
এবার অধরা পাশ থেকে বলেই ফেল,,,

তাহলে বোনকে বাদ দিলা তাই তো,, তোমার কথায় আমি বিয়ের জন্য রাজি হইছি। কারন পৃথীবিতে আমার কেউ নাই,, একমাত্র তুমিই সেই প্রথম ব্যক্তি যে আমাকে নিজের বোন মনে করে দুফোটা চোখের পানি মাটিতে ফেলেছো। হয়তো এক মায়ের পেটের ভাই বোন হতে পারিনি,, তবে তোমাকেই আমার ভাই বলে সম্ভোধন করলাছি (কান্না মিশ্রিত কন্ঠে)

তারপর রৌদ্দুর অধরার পাশে গেল,, তাকে জরিয়ে কান্না করতে করতে বল্ল,,
পাগলী বোন আমার,,
______________________________

বাড়ির দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে রিহান আর অধরা,,,

অধরা তো ভাইয়ের কথায় বিয়ে করে ফেলল। কিন্তু এখন ভাবাচ্ছে তাকে যে ছেলের সাথে তার এক সেকেন্ড মেচ হয় না সে ছেলের সাথে সারাজীবন কাটাবে কি করে,,, আর রিহানের বাড়িঘর দেখে তো মনে হচ্ছে অনেক বড় লোক । সেখানে সে অধরা কিছুইনা অনাথ একটা মেয়ে ,,,,,, অধরাকে কি রিহানের পরিবার মেনে নেবে, বিষেশ করে রিহান সে কি মেনে নেবে, হয়তো রাগের মাথায় বিয়ে করছে ঠিকই কিন্তু পরে কি মেনে নেবে। এমন হাজার চিন্তা ভাবনায় বিভোর হয়ে আছে অধরা। ভাইয়ের ওয়াদা রাখার জন্য বিয়ে করল কিন্তু এখন কি হবে তার।

__________
দরজায় কলিং বেল চাপ দিতেই,, রেহানা এসে দরজা খুলে দিলেন,, ভাইকে দেখে খুশি হয়ে জরিয়ে ধরলেন এটা রেহানার প্রতিদিনরই রুটিন দরজা খুলে ভাইকে আগে জরিয়ে ধরবে পরে বাকি সব। ভাইকে ছাড়িয়ে পাশে ফিরে দেখে অধরা,, চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে,, অধরাকে দেখে হতভম্ব হয়ে ভাইকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো,,

ভাই অধরা এখানে কেন, তুমি কি করে চিনো তাকে, তোমাদের তো আমি কখনো পরিচয় করাই নাই। আর সে তো আজ নতুন ভার্সিটিতে আসলো,, আর এখন তো রাত এই রাতে সে এখানে কেন,,, কি রে অধরা তুই কিছু বল,,,
অধরা বোকার মত রেহানার দিকে তাকিয়েই রইল চুপচাপ। কিছুই বলল না।

রিহানও কিছুই বললনা সোজা রুমের ভেতর গেল। গিয়ে বাবাকে ডাকতে লাগলেন। রিহানের এমন জোরে ডাকাডাকির আওয়াজে বাবা তাড়াতাড়ি নিচে নেমে এলেন,,, অধরা এখনো বাহিরে সে তো ভয়ে একাকার,,, রেহানা তাকে একহাত দিয়ে জরিয়ে বার বার জিজ্ঞেস করছে কিন্তু প্রতিউত্তর কিছুইনা,, মেয়েটা কাপছে রেহানা সেটা বুঝতে পেরে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরলো,,,,,
রিহানের বাবা তার সামনে আসায় বাবাকে বলতে লাগলো,,,

বাবা আমি বিয়ে করেছি।।

বাবা আর রেহানা তো বড় ধরনের শক খেলেন,, ছেলে কি বলছে এগুলো,,,, মানছে সে ছেলেকে বিয়ের জন্য প্যারা দিচ্ছিলো বাট এটা কিভাবে হলো, সবার মাথায় একই প্রশ্ন,,,

রেহানা তো মনে মনে অনেক খুশি কারন তার বেস্ট ফ্রেন্ড যে ভাবিতে পরিনত হবে সেটা কখনো ভাবেনাই,,

রিহানকে বাবা চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,,

কিভাবে কি করে এসব হলো,,,,

তার এমন প্রশ্নে রিহান ব্রুকুচকে বলল,,

তোমার দরকার ছিল ছেলেের বউ দেখার। এনে দিয়েছি,, সো এত প্রশ্ন করবে না ,।নাও সো বি কেয়াফুল ইউ,,,,,,,,,,
বলেই হনহনিয়ে রুমের দিকে চলে গেল,, আধরা তো বোকার মতো সব দৃশ্যে দেখে যাচ্ছে আর ভয়ে কাপছে,,বাবা আস্তে আস্তে অধরার সামনে গেলে,, অধরা তো এবার কাচুমাচু হয়ে আছে,,,,,,,

#চলবে

প্রেমের আটফোড়ন পর্ব-০২

0

#প্রেমের আটফোড়ন 🍁🍁
পর্ব :২
writer : arshiya shidratul falak
.
.
.

ক্লাসে রেহানা আর অধরা পাশাপাশি বসেছে,। রেহানা ক্লাশে বেশ মনযোগ দিয়ে আছে,, স্যার জীববিজ্ঞান নিয়ে চর্চা করছে। কিন্তু অধরা পড়ে আছে তার সকালে ঘটে যাওয়া ঘটনাটাকে নিয়ে, বেচারি বেশ ভয়ে আছে।

অধরার এমন ভাবনার মাঝে ডুবে থাকা রেহানার পছন্দনা।তাই রেহানা অধরাকে ডাকতে লাগলো,,,,

অধরা এই অধরা কি হইছে তর এভাবে বসে আছিস,, স্যার তো কেলাবে তকে,,,

আরে সে কিছু আসলে মাথাটা একটু ধরেছে এই আরকি।

হোয়াট কি বলছিস তুই। তাহলে চল ডাক্তারের কাছে যাই,,,,

ডাক্তারের নাম শুনে তো অধরা মুখটা মলিন করে ফেলে,,, কারন তার হাতে এখন টাকা নেই,, যা টাকা ছিল, সব বাসা বাড়া দিয়ে দিয়েছে, ৩টা টিউশনি করে আর কি টাকা পাবে,, পাশের বাসার ভাবি আছে বলেই আজ অধরা টিউশনির টাকায় নিজের খরচ এবং পড়ালেখার খরচ চালাতে পারেন। ভাবিটা বড্ড ভালো যখন যা চায় তাই পায় ,, অধরা জোর পূর্বক হাসি টেনে বলল,,,

পাগল হইছেন আপনি???

অধরার মুখে শব্দটা শুনে রেহানার ভীষন রাগ হতে লাগলো,,,

এই মেয়ে তুই আমাকে আপনি করে বললি কেন, বন্ধুত্বের মাঝে কখনো আপনি করে বলাটা কোন উপন্যাস কিংবা ডিকশনারিতে পেলি বল তো,,,????

আসলে আপনি অনেক বড়লোক বড় মনের মানুষ। আমার সাথে যে ফ্রেন্ডশীপ করছেন সেটাই হয়তো ভাগ্য। কারন আপনি কোথায় আর আমি কোথায়।

অধরা এবার কিন্তু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে,, আমি তোকে একটা কথা বলি। আমাদের মাথার সবগুলো চুল কিন্তু এক সমান না কিন্তু তবুও সব চুল একসাথে থাকে, সো ধনী গরিব এসব বাদ দিন শেষে তোরা যেমন মানুষ আমরাও তেমনই,, সব চেয়ে বড় কথা বলো আমাদের বাবা আমাদের কখনো সেই শিক্ষা দেয়নি ,,,,

রেহানা এগুলো কি বলল এসব কিছুই মাথায় গেল না অধরার তবে শেষের কথাটা বেশ বুঝলো, তাদের বাবা তাদের এমন শিক্ষা দেয় নি,,, নিজের অজান্তেই তাকে স্যালুট জানাতে ইচ্ছে করছে অধরার। কত বড় মনের মানুষ হতে পারে রেহানার বাবা ।।

এসব ভাবতে ভাবতে ক্লাস শেষ হল পড়ায় আর মনোযোগ বসাতে পারলনা,,,

_____________________

ভার্সিটি শেষে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হতে যায়,, তখনই রেহানা পেছন থেকে ডাক মারে

অধরা এই অধরা দাড়া একমিনিট।

অধরা দাড়িয়ে রইল তারপর রেহানা দৌড়ে আসলো এসেই বলল তর নোট আমার কাছে নিয়ে গেলাম, কাল দিয়ে দেব। আসলে কিছু ইম্পোটেন্ট লিখা আমি তুলি নাই। কিছু মনে করিস না কাল দিয়ে দেব,,,

আচ্ছে ঠিক আছে।
তারপর বলল বাড়িতে যাচ্ছিস,,,???
হুম!!!
তাহলে চল তোকে ড্রাইভ করে আমি বাসায় যাব।।

না রে দোস্ত আমি হেটেই যেতে পারব, তুই বরং যা আমার লেট হবে একটু।।

কি বললি হেটে যাবি এত দূর, পাগল হলি নাকি এত দূর হেটে যাওয়া কি সম্ভব,,,

দোস্ত আমার একটা টিউশনি আছে এখন তুই যা । আমি পারব আমার অভ্যাস আছে।।

অনেক রিকোয়েস্টের পর রেহানা বাধ্য হয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো নিজের গন্তব্য অধরা একা একা হেটে চলেছে রাস্তার পাশ দিয়ে, কিছু দূর যাওয়ার পর দেখতে পেল একটা ছেলে বাইক নিয়ে এগিয়ে আসছে অধরার দিকে ,, অধরা বেশ বুঝতে পেরেছে এই ছেলেটি সেই ছেলটি কিন্তু কি যেন নাম……
ও হে রিহান চৌধুরি। আলু ঢেরশের বর্তা,, আমার পিছন এভাবে লেগে আছে কেন আমি কিছু করেছি তাকে,, তাকে আমি চুমো দিছে পরিবর্তে যে আমার গাল ছোয়েছে তার সাথে,, আর চুমোটাকে কি আমি ইচ্ছাকৃত ভাবে দিছি নাকি বিপদে পড়ে দিছি ,, আমার পিছন এভাবে লালগো কেন সব তো সমান সমানই,,,,

অধরার ভাবনার মাঝেই রিহান এসে বলে

মিস কি যেন নাম……

অধরা বিনতে যাবা

ও রিয়েলি অধরা বিনতে সাবা তা আপনি আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন,,, আমি জানি আমি সুন্দর তাই বলে এভাবে তাকাবেন আমারও তো লজ্জা আছে নাকি,,,,

অধরা মনে মনে বলে এএএ কোথাকার কোন গুন্ডাপান্ডা আইছে ভাব দেখাইতে,,, নিজের প্রসংশা নিজে করে,,,
আদরা তকে শক্ত হতে হবে।। শক্ত হ শক্ত হ ভয় পেলে চলবে না নিজে নিজেই বলে

এই মেয়ে এভাবে তাকাবেন না,, জানি ক্রাশ খাইছেন ইনফেক্ট সব ভার্সিটির সব মেয়েই আমার উপর ক্রাশ সেখানে আপনি তো……..

থামুন অনেক বলছেন এবার থামুন,,,,, 😡
কি বল্লেন ক্রাশ তাও আপনাকে দেখে হাস্যকর বিষয়। আপনার এই গুনধর চেহারার ক্রাশ খাওয়ার চেয়ে হিরো আলমকে দেখা অনেক বেটার মনে করি আমি।।

রিহান গেল এবার রেগে,,

কি বললেন আপনি। আপনি আমার সাথে হিরো আলমের তুলনা করতে গেছেন,,,

তা নয়তো কি নায়ক সালমান খানের সাথে তুলনা করব নাকি!!!!!!

অধরার কথা শুনে রিহান বেশ অভাক হয়। যেখানে রিহানের সাথে কথা বলার জন্য মেয়েরা সারিবব্দ ভাবে দাড়িয়ে থাকে,, এমন কি যুদ্ধও লেগে যায় সেখানে তাকে এই মেয়ে হিরো আলমের সাথে তুলনা করল,, এই মেয়েকে তো ছাড়া যায় না।।

এই মেয়ে মুখ সামলে কথা বলেন । আপনাকে কিন্তু সম্মান দিয়ে কথা বলতাছি।।

আজিব মুখ আবার সামলাবো কি করে,,, অধরা কি পাগল হইছিস নাকি মাঝ রাস্তায় কোথাকার কোন উগান্ডার সাথে কথা বলছিস,,, তর না টিউশনি আছে যা বাগ,,, নিজে নিজেই বলতে বলতে চলে গেল।।

এই মেয়ে আমাকে কি বলল উগান্ডা আমি। আবার হিরো আলমও।

এই মেয়ে দাড়ান বলছি দাড়ান কে শুনে কার কথা অধরা হেটে চলেই যাচ্ছে। কিছু দূর যাওয়ার পর আর ডাকলো না রিহান কারন তার ফোনে তার বাবার কল, তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে তাই আর থামলো না। তবে হিসবা তোলা রইল।।।।।।।।।।

বাসায় গিয়ে দেখতে পেল বাবা একদিক ফিরে বসে আছে, আর বোন একদিকে,, বোনটা আর কেউ না অধরার বন্ধুবী রেহানাই রিহানের একমাত্র আদরের ছোট বোন,,,,,,

তাদের মুখের এমন অবস্হা দেখে রিহান ফিক করে হেসে দিল,,,, তার রেহেনাকে উদ্দেশ্যে করে বলতে লাগলো,,,,,

কি রে তেতুল গাছের শাকচুন্নি এভাবে মুখটাকে বাংলা পেচার মতো করে আছিস কেন,????

কি বলল তুমি,,, আমি শাকচু্ন্নি আর কি বলল পেচা 😡তাহলে তুমি কি ভাইয়া,,

আমি হলাম রিহান চৌধুরি,,, 😎😎

এএএ আইছে রিহান চৌধুরি। তোমাকে তো দেখে নিব আমি, আগে যাও তোমার গুনধর বাবাকে বুঝাও মিষ্টি জিনিসটা একটু কম খেতে। কত করে বলছি সুগারে তোমার সমস্যা বেশি সুগার করো না তা তো না ওনি উল্টাই আমাকে জ্ঞান দিতে আসে,,, আমার সব জ্বালা একদিকে গুধর ভাই, আরেক দিকে বাবা ওফ আর পারছিনা,, কবে যে এই ঘরে বৌ আসবে আল্লাহ জানে। আর যে বৌ আসে তাকে নির্ঘাত পাগল হতে হবে। আমি এখন সিক সো পরে কথা বলব রুমে গেলাম।

রেহানা হন হনিয়ে চলে গেল।রিহান বোকার মতো তাকিয়েই আছে। বোনের চলে যাওয়ার দিকে। তারপর ধ্যান ভেঙ্গে বাবার কাছে যায়।।

বাবা আজকেও তুমি মিষ্টি খাইছো,??

আরিফ চৌধুরি এবার একটু নার্ভাস হয়ে যায়,, অসহায়ত্ব ফেস নিয়ে রিহানের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে,,,

আসলে তোরা কেউ তো বাসায় ছিলিনা। আর রহিমাকেও(কাজের মেয়ে) তো দুইদিনের ছুটি দিয়েছি তার বাবা অসুস্থতা দেখে। তাই ভাবলাম ঘর যেহেতু ফাকা একটু তো খাওয়া যেতেই যা ভাবা তাই কাজ। ফ্রিজ খোলে একটু মিষ্টি নিলাম প্লেটে মুখে দিতেই কি না দিতে তোর বোন সামনে হাজির,,, তবে এবার হাজির হইছে হাতে লাঠি নিয়ে। তারপর আরো কত কি ।।

হইছে থামো এবার। তোমার কি আমাদের জন্য মায়া হয়না জানো না আমি রেহানা তোমাকে কতটা ভালোবাসি। তুমি তো জানো সুগারে তোমার প্রবলেম তাহলে কেন বার বার এসব খেতে যাও,,

হয়েছে আর বলতে হবে না, তবে তোর কাছে একটা রিকোয়েস্ট আছে আমার!!!

হুম বলল কি বলবা,????

রাখবি তো?? ৷

আগে বলেই দেখনো,,, আমি কি তোমার কোনো রিকোয়েস্ট অমান্য করেছি নাকি।

সেটা ঠিক তবে আজকের টা ভিন্ন

আচ্ছা বল।।

বয়সো অনেক হলো এবার তো একটা বিয়ে করা দরকার।।।

বাবার মুখে এমন কথা শুনে রিহান যেন আকাশ থেকে পড়লো,,

কি বলল বাবা বিয়ে। তাও এই বয়সে পাগল হইছো। এই বয়সে কে আসবে তোমাকে বিয়ে করতে????

আরে বোকা ছেলে আমার জন্য না তো তোর কথা বলছি আমি।।

রিহান নিজের কথা শুনে কিছু অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে বলল,,,

বাবা ছেলে যখন হয়েছি বিয়ে একদিন করতেই হবে সো এখন এসব বিষয়ে জড়াতে চাই না। সময় আসোক তারপর দেখা যাবে।

বাবাও ছেলের কথার উপর আর কিছু বলল না। মুখটাকে গোমরা করে চলে গেলেন।

রিহানও এসব আর পাত্তা দিলেন না চলে গেলেন রুমে,,, ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে বন্ধুদের আড্ডায়,,,,,,,,,,,

____________________________

এদিকে অধরা টিউশনি করে বাসায় ফিরে। বিকেল ৫টায় আরেকটা টিউশনি আছে,, এসব ভাবার মাঝেই ভাবী আসলেন,,,

অধরা আসবো???

জি ভাবী আসেন। বসুন এখানে,,,

অদরা খেয়াল করলো ভাবী হাতে টিফিন নিয়ে দাড়িছে আছে।

কি হলো,, ভাবি বসুন

না অধরা আজকে বসবো না , অন্য একদিন আড্ডা দিব। নাও ভাবি আব্রাহামের (ভাবির ছেলের) জুরাজুরিতে একটু বিরিয়ানি রান্না করছিলাম তুমি তো জানো ছেলেটা কেমন নাছোর বান্দা। তাই বাবলাম তোমাকেও একটু দিয়ে আসি,,,

তা কি দরকার ছিল ভাবী। আমি তো এখন রান্না করতামই।

রান্না করতে অনেক সময় লেগে যাবে তোমার তাই একটু খেয়ে নাও। তারপর রান্না বসাও।।

ভাবির জুরাজুরিতে অধরা খেয়ে নিল,, ভাবিও চলে গেলেন,, তারপর রান্না বান্না সেরে বিছানায় গা এলিয়ে দিলেন সারাদিন অনেক খাটাখাটি করলেন তাই চোখেন অনেক ঘুম।। কখন যে সেই নিদ্রায় তলিয়ে গেলেন বুঝতেই পারেন নি

________________

এই আকাশ দেখ আমাদের হিরো সাহেব এভাবে ক্ষেপে আছে কেন রে,,,

তুই যেখানে আমারও সেখানে।

এই তুর্য তুই জানিস কিছু???

আজিব আমি করে জানবো 🤨🤨

তাহলে রৌদ্দুর নিশ্চয়ই জানবে,, কি রে রৌদ্দুর তুই কিছু জানিস।

কই নাতো।

তারপর সবাই আগ্রহস্বরে বলতে লাগলো,,

কি রে রিহান কি হইছে তর।। রৌদ্দুর প্রশ্ন করল, ,

আকাশ, তুর্য, হিমেল, রৌদ্দুর, এরা হলো রিহানের ভার্সিটির প্রান প্রিয় বন্ধু,, তবে সবার থেকে রৌদ্দরকে একটু আপন ভাবে, াপনাদের তো বলাই হয়নি রিহান আর তার বন্ধরা এবার মাস্টার্স ১বর্ষে আছে।

রিহান কিছুই বলল না ,, তারপর আকাশ রৌদ্দর কে ইশারা করলেন কাছে গিয়ে বলতে।
তারপর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন

কি রে কি হইছে তর???

তারপর রিহানের সাতে ভার্সিটিতে ঘটে যাওয়া সব বলল,, সব কিছু শুনে তো সবাই হাসাহাসি করতে করতে লুটোপুটি খাচ্ছে ,,,, হিমেল তো বললেই ফেলল,,

মেয়ে কেস মামা, মেয়ে কেস,,

তাদের হাসি দেখে রিহান রাগের চরম সিমায় পৌছে , সেখানে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে ববাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়,,

এদিকে অধরা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়ে টিউশনির গন্তব্য। কিছুদূর যাওয়ার পর রাস্তার মাঝ কিনারে বাইকের সাথে এক্সিডেন হয়।

তারপর সেখান থেকে ওঠে রাগে ফুসতে ফুসতে লোকটার কাছে আসে। লোকটাকে দেখে তো রাগ আরো মাথায় ওঠলো।।।

#চলবে

প্রেমের আটফোড়ন পর্ব-০১

0

#প্রেমের আটফোড়ন
#সূচনা পর্ব
writer : Arsiya Shidratul Falak

এই মেয়ে আর ইউ মেড,,, আপনি আমার গালে চুমু খেলেন। তাও আবার চোখ বাধা অবস্হায়। জানেন আমি কে?? আপনাকে কি করতে পারি এখন। এই মুহূর্তে,,,!!!

ছেলেটির দিকে তাকিয়ে মেয়েটি হতভম্ব হয়ে রইল। কি বলবে বুঝে ওঠতে পারছেনা। চোখ খুলে দেখতে পেল তার সামনে একজন সুদর্শন পুরুষ দাড়িয়ে আছে,, মুখে তার এক সমুদ্র রাগের আভা দেখা যাচ্ছে। কানগুলো রাগে লাল বর্ন ধারন করেছে,, লোকটির রাগ দেখে মেয়েটি এবার ভয় লাগলো মনে মনে,,, কিন্তু সেটা নিজের ভেতর রেখে জোর পূর্বক হাসি টেনে বলল,,

আ আ আসলে আমি স সরি,,

হোয়াট সামান্য সরি বললেই আপনি যদি মনে করে থাকেন আমি ক্ষমা করে দিব তাহলে ভুল ধারনা আপনার,,, এই রিহান চৌধুরি তেমন লোক না,
আপনি যেমন মনে করছেন,

আসলে আমি ইচ্ছে করে কিছু করি নি,,

আই নো এখন মন গড়া কাহিনী বলবেন আর আমি আপনার কাহিনী শুণে গলে যাব,,, বাট সেটা তো হতে দিতে পারি না,,, কি করা যায়,,
ইউরস্ নেইম,,

অধরা বিনতে সাবা ….
সো মিস অধরা আপনাকে আমি কি করতে পারি তার বদলে বলবেন,,,,

ক ক কি করবেন (ভয়ে ভয়ে)

কি করতে পারি, কি করতে পারি,, (অধরার কাছে আসতে আসতে)
অধরা তো ভয়ে কুকরে যাওয়ার অবস্থা ,,,

হায়রে আল্লাহ ছেলেটা আমার এত কাছে আসছে কেন,,,( চোখ বন্ধ করে)

রিহান এবার অধরার একবারে কাছে গিয়ে নিজের গালের সাথে অধরার গালটা আলতো করে ছুড়ে দিল দৌড়,,,
এদিকে অধরা রিহানের এমন কান্ডে বিস্মিত হয়ে রইল। এটা কি ছিল। কিছ না তো কি ছিল এটা। এসব ভাবতে ভাবতে চোখের পাতা দুটো মেলে দেখলো তার সামনে কেউ নাই। অধরাতো এদিক ওদিক তাকিয়ে খুজছে লোকটিকে কিন্তু খুজে পাচ্ছে না,।।

ফ্ল্যাশব্যাক,,,,

ভার্সিটির ক্যম্পাসে পা রাখতেই না রাখতেই কতগুলো মেয়ে অধরাকে ডাক দিল। মেয়েগুলোর ডাক অনুশরন করে অধরা তাদের সামনে গেল,, অধরাকে দেখে মেয়ে গুলো নানা রকমের কথা বলতে থাকে,, মেয়েদের ড্রেস দেখে তো অধরা মনে মনে বলতে থাকে,,, ছি,, এগুলো কি পড়ছে,,
পাশে থাকা একটি মেয়ে বলে উঠল,,,

হাই,, আমি লুপা, তোমার নাম কি??
জি অধরা বিনতে সাবা।
পাশে আরেকটি মেয়ে বলে উঠল, তা নতুন, কোন ইয়ারে আছো,,

আসলে অনার্স ১মবর্ষে,,,।।
তার পাশে থাকা একটি মেয়ে ঝাঝালো কন্ঠে বলে উঠলো,, তাহলে আমাদের ছোট তুমি তোমার থেকে ১বছরের সিনিয়র আমরা বুঝেছো আশা করি,,,,

জি আপু,,, এবার যাই আমি,,( বিরক্তি নিয়ে)

দাড়াও, তুমি তো দেখি সিনিয়রদের সম্মান করতেও জানোনা দেখছি,,,

সরি আপু

ওকে ওকে,, কাজের কথায় আসি। তোমাকে এখন একটা কাজ করতে হবে,,,

কি কাজ??

এই ক্যাম্পাসের সামনের গেইট দিয়ে যেই ছেলে আগে প্রবেশ করবে,তার গালে তোমাকে প্রথম কিস করতে হবে,,

এটা শুনে তো অধরা বাকরুদ্ধ হয়ে রইলো কি বলে এই মেয়ে,,, অসহায় ভঙ্গিতে তাকিয়ে রইলো মেয়েটির দিকে,,,

আপু এটা কি বল্লেন,, এটা তো ঠিক না অন্য কাজ দেন প্লিজ আপু,,,

না এটাই করতে হবে তোমাকে নয়তো ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিব,,, আমাকে তো চিনো না আমি হলাম ইসিতা খান।আরিয়ান খান ইন্ডাস্ট্রির মালিকের এক মাত্র বোন আমি,, সো বুঝতেই পারছো কি কি করতে পারি,, তোমাদের মতো মেডেল ক্লাসের মেয়েদের সাথে,,,
ইশিতার কথাগুলো যেন অধরার কানে বিষের মত বাধছে,,, কিন্তু কিছুই করার নেই তার,, তাকে যে উঁচু গলায় কথা বলা বারন। তাই কিছুই বলল না চুপচাপ দাড়িয়ে রইলো,,, তখন ইশিতা বলে উঠলো এই লুপা,,
উরনা দিয়ে ওর চোখ বেধে দে,,,

তারপর লুপা এসে চোখ দুটো বেধে দেয়,,, তারপর অধরাকে ধরে গেটের কিছু দূর দাড় করিয়ে দেয়,, তারপর অধরা আস্তে আস্তে সামনে দিকে যেতে থাকে। তখন একটি ছেলে ডুকে তরপর তো জানেনই

এবার গল্পে আশা যাক,,,,,,

অধরা হল আমাদের গল্পের নায়িকা,, পৃথিবীতে তার আপন বলতে কেউ নেই ,, ছোট বেলায় বাবা মারা যায়। একমাত্র আপন বলে ছিলেন তার মা কিছুদিন আগে মা তাকে ছেড়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নেন।অধরার মা ক্যন্সারে আক্রান্ত ছিলেন,,, টাকার অভাবে মাকে ভালো চিকিৎসা করাতে পারেন নাই।
গরিব ঘরের মেয়ে অধরা,, ছোট বেলা বাবা মারা যাওয়ার পর মাকে নিয়ে চলে আসে ঢাকা শহরে। মা মানুষের বাসায় কাজ করে অধরার লেখা পড়ার খরচ বহন করে ছিলেন, কিন্তু যখন অধরা আস্তে বড় হয় তখন মাকে সেসব কাজ থেকে বিরত রাখে কয়েকটা টিউশনি করে সংসার চালায়। তারপর এই পরিনতি ,,,

রিহান হলেন আমাদের গল্পের নায়ক, রিফাত চৌধুরির একমাত্র সন্তান ,, লম্বা ৬ফুটের কাছাকাছি,, দেখতে যেমন সুদর্শন তেমন তার বডি ফিগার,, ফর্সা গালো খুচা খুচা দাড়ি , ঠোটগুলো গোলাপি রঙ ধারন করা, ক্যাম্পাসের সব মেয়েদের ক্রাশ,, পরিবার বলতে বাবা আর ছোট বোন নিয়েই তার পরিবার,, মা নেই ছোট বেলায় মাকে হারিয়েছেন ,,, বাবাই তাকে আর তার বোনকে মানুষ করেছেন,,,,

____________

ক্লাসে ভেতর বসে আছে অধরা। আর ভাবছে আজ ঘটে যাওয়া কাহিনী। এই দুনিয়ায় গরিবদের মানুষ তুচ্ছ ভাবে, যার টাকা আছে তার সব আছে,।যার টাকা নাই তার কিছুই নাই। বিশাল এই পৃথিবীতে বড্ড বেমানান লাগে নিজেকে। তার ভাবনার ছেদ পড়ে একটি মেয়ের কন্ঠে,, মেয়েটি তাকে হায় জানি পাশে বসতে বসতে বলল,,,

, আমি রেহানা,তোমার নাম কি????

আমি অধরা,,

খুব সুন্দর নাম তো,, তা আমাদের ক্লাসে নতুন মনে হচ্ছে,,,
হুম আজই জয়েন করেছি,,
তুমি কি আমার বন্ধু হবে,, মেয়েটি বলল

অধরা মেয়েটির কথা শুনে অবাক চোখে তাকালো , তাকানোরই কথা মেয়েটিকে দেখে তা বড়লোক ঘরের মেয়ে মনে হচ্ছে। ধব ধবে ফরসা গায়ের রং চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা,, চুলগুলো কেমন যেন কুকড়ানো কোমর অব্দি। এই মেয়ে এসে বলছে বন্ধু হতে,, ভার্সিটিতে আসার পর কোনো মেয়েরাই অধরার সাথে কথা বলে নাই। সবাই তাকে মেডেল ক্লাসের মেয়ে হিসাবে গন্য করে,, আর এই মেয়ে নিজে থেকে এসে বলল,,,ভাবার বিষয়, অধরার ভাবনা ভাঙে রেহানার হাতের তুরিতে,,,

হ্যালো মিস অধরা ইউ আর ওকে??
হুম।
তাহলে আমরা বন্ধু তো,,
আচ্ছা ঠিক আছে,,,

রেহানা আর অধরা অনেকক্ষন যাবত গল্প করছে। ভার্সিটির পাশে একটা বটগাছের নিচে বসে,, এতক্ষন গল্প করে বুঝতে পারলো মেয়েটা বেশ মিসুক স্বাভের সহজেই কাউকে আপন করে নিতে জানে।

তখন দূর থেকে লক্ষ্য করলো ভার্সিটির গেইট দিয়ে কতগুলো ছেলে আগমন করছে তাদের মধ্যে একজনকে দেখে তো অধরা প্রান যায় যায় অবস্থা কি করবে এখন,,, কিছু না ভেবেই রেহানা পেছনে গিয়ে পালালো,,,

ছেলেটি আর কেউ না রিহান,, কলেজের সব মেয়েরা একের পর সিরিয়াল লাগাচ্ছে তাকে দেখার জন্য, ব্রাউন রঙের জ্যাকেট নিচে কালো টি শাট,, চুলগুলো স্পাইক করা যা দারুন লাগছে মেয়েরা একের পর এক লাইন লাগাচ্ছে,,

রিহান সবাইকে পাশ কাটিয়ে সামনের দিকে তাকালো, যেখানে রেহানা দাড়িয়ে ছিল সেখানে একটা ছোট করে স্মাইল দিল,, রেহানাও, কিন্তু পেছনে অন্যজনকে দেখে থমকে যায়,, তারপর আবার কি মনে করে সামনের দিকে হাটা ধরে।

অধরা ভেবেছিল কিছু একটা বলবে।সে ভয়ে চোখ দুটো বন্ধ করে নাওযুবিল্লাহ নাওযুবিল্লাহ পড়তে থাকে। কিন্তু তার ভাবনা মিথ্যা করে ছেলেটি চলে গেল চোখ খুলে পেছনের দিকে তাকিয়ে রইল,,, রিহানের চলে যাওয়া দেখছে হঠাৎ চোখ গেল মাথার উপরে। সেখানে রিহান একটা আঙ্গুল দুলালাতে দুলাতে যাচ্ছে,,৷ অধরা এবার ভয় করতে লাগলো,, হতো এটা তার কোনো ইঙ্গিত হতে পারে।।।।
________
গল্পটি কেমন লিখেছি জানি না। তবে চেষ্টা করেছি সুন্দর করে তুলে ধরার। বাকিটা আপনাদের কাছে। আমার লেখা প্রথম গল্প। আপনাদের কেমন লাগে জানাবেন কমেন্টের মাধ্যমে,,,

চলবে 🍁🍁

ভালোবাসার লুকোচুরি পর্ব-১৩ এবং শেষ পর্ব

1

#ভালোবাসার_লুকোচুরি
#পর্ব_১৩
#মেহরাজ_হোসেন_রনি

কথাটা শুনে রিয়া রেগে আগুন।মুখে কিছু বলছে না।কিন্তু মনে মনে আকাশ ইচ্ছে মত বকা দিচ্ছে।রিয়াকে দেখে বাসার সবাই হাসছে।আকাশকে বিয়ে করবে বলে সেই কবে থেকে বসে আছে রিয়া কিন্তু এখনো বিয়ে হল না।এবার আকাশের আম্মু বলল

“আচ্ছা আকাশ যেহেতু বিয়েতে রাজি হয়েছে তাহলে পরের শক্রবারে বিয়ের তারিখটা ঠিক করি।কি বলো আকাশের আব্বু?”

আকাশের আব্বু কিছু বলবে তার আগেই রিয়া বলল
“এত দেড়ি করার কি আছে ফুপি।বিয়েটা এই শক্রবারে করলেই তো হয়।”

“এত তাড়াতাড়ি কি সব আয়োজন করা যাবে?”

“করা যাবে ফুপি।আয়ান আর নিরা ভাবি তো আছে।তাহলে এত টেনশন করার কি আছে।ফুপি তুমি বিয়ের তারিখটা এই শক্রবারে রাখো তাহলে ভালো হবে বেশি।”

আকাশের আব্বু বলল
“আচ্ছা রিয়া যখন এত করে বলছে তাহলে বিয়েটা এই শক্রবারেই হবে।এবার খুশি রিয়া মা।”

“হ্যা ফুপা খুব খুশি।আমি খবরটা আম্মু আব্বুকে বলে আসছি।”

রিয়া রুমে চলে গেল।আকাশের আব্বু বলল
“আয়ান আকাশের বিয়ের দায়িত্বটা পুরোটা তোর।এবার কিন্তু আকাশের বিয়েতে কোনো সমস্যা করিস না আয়ান।”

আয়ান মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল
“আগের বার যেটার জন্য সমস্যাটা করেছিলাম সেটা পেয়ে গেছে আমি।তাই ভাবছি এবার ভাইয়াকে বিয়েটা করতে দিবো।”

আয়ানের কথা শুনে সবাই নিরার দিকে তাকিয়ে হাসছে।নিরার দিকে এইভাবে সবাই তাকিয়ে থাকাতে নিরা কিছুটা লজ্জা পেল।নাস্তা শেষ করে আয়ান রুমে আসতেই নিরা বলল

“তোমার কি লজ্জাশরম কিছুই নেই।সবার সামনে কিভাবে কথাটা বললে।”

“আমি লজ্জা পাবো কেনো?লজ্জা পেয়েছো তুমি সেটা বলো।কিন্তু যাই বলো লজ্জা পেলে তোমাকে কিন্তু বেশ সুন্দর লাগে।”

“ইস তোমার মুখে কিছু আটকায় না তাই না।”

“আটকাবে কেনো?যা সত্যি তাই বলেছি।”

“হ্যা হ্যা জানি।আমার সত্যবাদী হাজব্যান্ড।”

বিকালে রিয়াদ আর নিলা দেখা করবে বলে ঠিক করেছিল।কিন্তু সকালেই বিয়ের তারিখ ঠিক হওয়ার পর থেকে নিলা কিছুটা টেনশন আছে।কারন নিলা আজ কিভাবে রিয়াদের সাথে দেখা করতে যাবে সেটাই ভাবছে।দুপুরের লাঞ্চ শেষ করে অনেক ভাবনা চিন্তা করে নিলা ওর আপুকে কল দিলো।

“কিরে নিলা বাসার ভিতরে আছিস তাহলে কল দিচ্ছিস কেনো পাশের রুম থেকে?

“আপু আমি যেই রুমে আছি সেই রুমে একটু আসো তো।কথা আছে।”

“তুই আমাদের রুমে চলে আয়।সমস্যা নেই আয়ান রুমে নেই এখন।”

“আচ্ছা।”

নিলা আয়ানের সামনে কথাগুলো বলতে চাচ্ছিল না।তাই নিরাকে একা রুমে ডেকেছিল।কিন্তু আয়ান যে রুমে নেই সেটা নিলা জানতো না।নিলা নিরা রুমে গিয়ে দেখে নিরা খাটে বসে আছে।নিরার পাশে বসে নিলা বলল

“আপু একটা কথা ছিল?”

“হ্যা বল।”

“আমি বিকালে একটু বাইরে যেতে চাচ্ছিলাম।”

“যার সাথে দেখা করতে যাবে তাকে এইখানে ডেকে দেখা করলেই তো পারো নিলা।”

রুমের ভিতরে আসতে আসতে কথাটা বলল রিয়া।রিয়ার কথা শুনে নিরা বলল

“নিলা তুই কার সাথে দেখে করতে যাবি?”

রিয়া বলল
“ভাবি তুমিও না।বুঝো না কিছুই।আরে রিয়াদের সাথে দেখা করতে যাবে তাই না নিলা।”

নিলা বলল
“আপু তেমন কিছু না।”

রিয়া বলল
“আমার কাছে কিন্তু তোমাদের সব খোজ আছে।”

নিরা বলল
“আচ্ছা নিলা তুই আমার থেকে এইসব লুকাতে চাচ্ছিস?”

“নাহ আপু।”

এবার নিরা আর রিয়া না হেসে পারলো না।নিলা বোকার মত ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।হাসি থামিয়ে নিরা বলল

“তুই কি মনে করিস আমি কিছু জানি না?আমি আর রিয়া সব জানি বুঝেছিস।একটু পরে রিয়াদ আসবে তখন ওর সাথে বাইরে থেকে ঘুরে আসিস।এবার খুশি।”

“আপু তুমিও না।”

নিলা রুম থেকে চলে গেল।রিয়া বলল
“ভাবি আমি কিন্তু কিছুদিন পর পার্মানেন্ট ভাবে চলে আসতেছি।”

“হুম সেটাই ভালো হবে।তা বিয়ের শপিং কবে থেকে শুরু করবে?”

“আগামীকাল থেকে।আর তুমিও আমার সাথে যাবে।”

“হুম সেটা না হয় গেলাম।”

বিকালে রিয়াদ এই বাসাতে আসলো।সবার সাথে কিছুসময় কথা বলে নিলাকে নিয়ে বাইরে বেড়িয়ে গেল।বাইরে আসতেই নিলা বলল

“আপনি সব কথা আপুদের কেনো বলেন?”

“ভাবি বলেছে যদি তাকে সব কিছু না বলে তাহলে নাকি আপনার সাথে কথা বলতে দিবে না।আর রিয়া আপুর থেকে আমি কিছু লুকাই না।আমার বিষয়ে সব জানে আপু।সেটা খারাপ বা ভালো যাই হোক না কেনো।সেটা আমি আপুকে বলি।”

“হুম ভালো।কিন্তু এখন থেকে আমাদের মধ্যে যে সব কথা হবে সেটা নিরা বা রিয়া আপু কেউ যেন না জানে।মনে থাকবে?”

“হ্যা থাকবে।কিন্তু কেউ যদি সত্যিটা জানতে চায় তখন আমি মিথ্যা বলতে পারবো না।”

“আপনি হঠাৎ এত সত্যবাদী হলেন যে?”

“ভাবি বলেছে আয়ান ভাইয়ার মত না হলে নাকি আপনার সাথে রিলেশনশিপ করতে দিবে না।”

“ওই আমি আপনার সাথে আবার কবে রিলেশনশিপ ছিলাম?”

“তাহলে এখন আমাদের মধ্যে যেটা আছে সেটা কি?”

নিলা রিয়াদের বাম হাতটা জড়িয়ে ধরে বলল
“আমাদের মধ্যে যেটা আছে সেটা অন্য কিছু।এবার চুপ করে হাটেন।”

রিয়াদ কিছু আর না বলে মুচকি হাসলো।পরের দিন রিয়ার আম্মু আব্বু আকাশদের বাসায় চলে আসলো।আকাশের আম্মু বলেছে বিয়ে অনুষ্ঠান এইখানেই হবে।যেহেতু বিয়েতে আত্মীয়স্বজন আসবে তাই আর আলাদা ভাবে অনুষ্ঠান করার দরকার নেই সব এক সাথেই হবে।

বিকালে সবাই মলে চলে গেল শপিং এর জন্য।বড়রা একসাথে আর ছোট একসাথে শপিং করবে।নিরা আর রিয়া একসাথে সব কিনছে।রিয়াদ আর নিলাও শপিং এ এসেছে কিন্তু শপিং মলটা ভিন্ন।কারন ওদের কথাটা এখনো বড়রা জানে না।আর এই দিকে আকাশ আর আয়ানের অবস্থা অনেকটা খারাপ।দুই ভাইয়ের হাতে শুরু শপিং ব্যাগ।আকাশ একবার অসহায় হয়ে আয়ানের দিকে তাকাচ্ছে।আবার আয়ান অসহায় হয়ে আকাশের দিকে তাকাচ্ছে।পর পর দুই দিন শপিং করে রিয়া আর আকাশের বিয়ের শপিং শেষ হলো।

আজ সন্ধ্যায় আকাশ আর রিয়ার গায়ে হলুদ।হলুদের অনুষ্ঠান আকাশদের বাসার ছাদে হবে।বাসায় মেহমান অনেক।কারন আগের বার শুধু আকাশদের আত্মীয়রা এসেছিল কিন্তু এবার রিয়াদের আত্মীয়রাও এসেছে তাই আত্মীয়স্বজনের সংখ্যাটা একটু বেশি।

আয়ানের কোনো খোজ নেই।সেই সকালে বেড়িয়েছে এখনো আসার নাম নেই।নিরা অনেকবার কল দিয়েছে কিন্তু ফোন ধরছে না আয়ান।বিকাল হওয়ার কিছুসময় আগে আয়ান বাসায় আসলো।নিরা তো রেগে আছে আয়ানের উপর।নিরা যে রেগে আছে সেটা আয়ান ঠিকই খেয়াল করেছে।কিন্তু সবার সামনে কিছু জিজ্ঞাস করে নি।আয়ান ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে নিরা রুমেই আছে।

“তা আমার বউটা এত রেগে আছে কেনো হ্যা?”

নিরা চুপ করে আছে কিছু বলছে না।আয়ান এবার নিরার গা ঘেসে বসে বলল

“কি হয়েছে বলো না।এত রেগে আছো কেনো?”

“তুমি সারা সকাল কোথায় ছিলে?”

“আসলে ভাইয়া আর রিয়ার বিয়ের সব আয়োজন একসাথে শেষ করে এসেছি।যাতে রাতে আর আগামীকাল কোনো সমস্যা না হয়।”

“তাহলে আমার কল রিসিভ করো নি কেনো?”

“আসলে ফোনটা সাইলেন্ট মুডে ছিল।”

“হুম।”

“আচ্ছা আমার না একটা কথা মনে পরেছে আজ?”

“কি কথা?”

“আমি বলছিলাম আমাদের তো এখনো বাসর হয় নি।আগামীকাল তো ভাইয়ার বিয়ে।তাই ভাবছিলাম ওদের সাথে আমরাও আমাদের বাসর করে ফেলতে।”

“ছিঃ ছিঃ আয়ান এই সব কি ধরনের কথা?আমি না তোমার বড়?তাহলে তুমি এই সব কি বলছো?”

“তাতে কি?তুমি আমার বিয়ে করা বউ নিরু।”

“ওই এই নিরুটা আবার কে?”

“আরে তোমাকেই নিরু বলছি।এখন তুমি যদি না চাও তাহলে আমরা বাসর করবো নাহলে করবো না।”

“আমার এই সব ভালো লাগে না।আমি যাই আমার কাছে আছে।”

নিরা রুম থেকে চলে গেল।আয়ানও ভেবে নিয়েছে ওর আর বাসর হবে না।সন্ধ্যার দিকে সবাই ছাদে চলে গেল হলুদের অনুষ্ঠানের জন্য।আকাশকে মুরুব্বীরা আর ছেলেরা হলুদ লাগাচ্ছে।কোনো মেয়ে আকাশকে হলুদ লাগাতে পারবে না।এইটা রিয়ার আদেশ।আকাশের পাশেই রিয়া বসে আছে।

বড়রা সবাই আকাশ আর রিয়াকে হলুদ লাগিয়ে দিয়েছে।এখন শুধু আকাশ আর রিয়ার কাজিনরা হলুদ লাগে।প্রথমেই আয়ান আসলো আকাশকে হলুদ লাগাতে।আকাশকে হাল্কা হলুদ লাগিয়ে আয়ান চলে যাচ্ছিল তখন রিয়া বলল

“এখন থেকে আমাকে ভাবি বলবি বুঝেছিস?”

আয়ান রিয়ার সামনে এসে বলল
“তোকে এখন থেকে ভাবি বলতে হবে তাই তো?”

“হুম।”

“আচ্ছা ভাবি।”

কথাটা শেষ করতেই আয়ান দুই হাত ভরতি হলুদ রিয়ার গালে লাগিয়ে দিয়ে দৌড়ে পালালো।রিয়া তো এমন পুরাই রেগে আগুন।রিয়ার মন চাচ্ছে আয়ানের চুল টেনে ছিড়ে ফেলতে।কিন্তু এত মানুষের সামনে থেকে উঠাটা ঠিক হবে না তাই রাগ নিয়ে চুপ করে বসে আছে।সবাই আয়ান আর রিয়ার কান্ড দেখে হাসছে।

নিলা রিয়াদকে অনেকসময় ধরে খুজছে কিন্তু পাচ্ছে না।হঠাৎ নিলা ওর গালে কারো ছোঁয়া অনুভব করে।পিছনে তাকিয়ে দেখে রিয়াদ হাসছে।আর রিয়াদের হাতে হলুদ লাগানো।এবার নিলা নিজের গালে হাত দিয়ে দেখে ওর দুই গালে হলুদ লাগানো।

“আপনি আমার গালে হলুদ লাগালেন কেনো?”

“আমার হবু বউ এর গালে একটু হলুদ লাগালাম।তাতে সমস্যা কোথায়?”

“কে আপনার হবু বউ?”

“কে আবার তুমি।”

“এই সব কি বলছেন আপনি?”

“আমার আম্মু তোমার আম্মু আর আপুর সাথে কথা বলেছে আমাদের বিষয়ে।সবাই রাজি হয়েছে।”

“সত্যি!”

“হ্যা।আমি যখন জব করবো তখন আমাদের বিয়ে হবে।সবাই এটাই ঠিক করেছে।”

“কিন্তু আমি যে আপনাকে বিয়ে করবো সেটা আপনাকে কে বলেছে হ্যা?”

“আচ্ছা সমস্যা নেই।আমি তাহলে অন্য কাউকে খুজে নিচ্ছি।”

রিয়াদ চলে যাচ্ছিল তখন নিলা রিয়াদের হাত ধরে বলল
“ভালোবাসি আপনাকে আর আপনাকেই বিয়ে করতে চাই।”

চোখ বন্ধ করে দারিয়ে আছে নিলা।রিয়াদ নিলার কাছে এসে নিজের গালের সাথে নিলার গাল লাগিয়ে বলল
“আমিও আমার নিলুকে খুব ভালোবাসি।তাই তো কেউ তোমাকে আমার থেকে নিয়ে যাওয়া আগেই আমার করে রেখে দিলাম।যাতে আমাদের মাঝে অন্য কেউ না আসতে পারে।”

নিলার চোখ না খুলেই মুচকি হাসলো।রাতে আয়ান আর নিরাকে কাছে পেলো না।অন্য রুমে নাকি শুয়েছে নিরা।

পরের দিন সবাই ব্যস্ত হয়ে পরলো বিয়ের আয়োজন নিয়ে।ছেলেরা সবাই আকাশকে রেডি করাতে ব্যস্ত হয়ে পরেছে আর মেয়েরা রিয়াকে রেডি করাচ্ছে।আকাশ আর রিয়াকে রেডি করিয়ে স্টেজে বসিয়ে দেয়া হল।সবাই আজ অনেক খুশি।কিন্তু তার থেকেও বেশি খুশি রিয়া।

আকাশ আর রিয়ার বিয়েটা খুব সুন্দর ভাবে হয়ে গেল।রিয়া ফিসফিস করে বলল

“অবশেষে এই পিচ্চিকেই বিয়ে করলেন?”

“হুম তো।তুই তো আমাকে পাগল বানিয়ে ছাড়লি।বিয়ে তোকে করতেই হবে।তাই তো বিয়েটা করলাম।নাহলে এখনো অনেক মেয়ে আছে আমাকে বিয়ে করার জন্য।”

রিয়া কিছু বলছে না।কিন্তু মনে মনে ঠিক করছে কিভাবে আকাশে শাস্তি দেয়া যায়।
রিয়াকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে।আকাশ রুমে বসে আছে রিয়া।অবশেষে পার্মানেন্ট ভাবে এই রুমটা রিয়ার হলো।আকাশের বিষয়ে ভাবছে আর মনে মনে লজ্জা পাচ্ছে রিয়া।

আকাশকে ওর রুমের ভিতরে দিয়ে এসে আয়ান নিজের রুমে আসলো।কিন্তু আয়ান হয়তো ভুল কোনো রুমে এসে পরেছে।সেটাই আয়ানের মধ্যে মনে হচ্ছে।তাই আবার রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছিল তখন নিরা বলল

“বাইরে যাওয়ার দরকার নেই।এইটা আমাদেরই রুম।আজ ওদের সাথে আমাদেরও বাসর হবে।তোমার শেরওয়ানি ওয়াশরুমে রেখে এসেছে।যাও গিয়ে রেডি হয়ে এসো।”

খাট থেকে কথাটা বলল নিরা।আয়ান হেসে ওয়াশরুমে চলে গেল।কিছুসময় পরে আয়ান শেরওয়ানি পরে নিরার সামনে এসে বসলো।আয়ান নিরার ঘোমটা সরিয়ে বলল

“ইস আমার নিরু আজ খুব সুন্দর লাগছে।”

নিরা নিচের দিকে তাকিয়ে হাসছে।অনেকসময় হয়ে গেল আয়ান কিছু বলছে না দেখে নিরা এবার সামনে তাকিয়ে দেখে আয়ান নিরার দিকে এক ধ্যানে দিকে তাকিয়ে আছে।নিরা বলল

“সেই কখন থেকে কি এমন দেখছো আয়ান?”

“দেখছি এই নিরুটা যদি আমার লাইফে না আসতো তাহলে আমার কি হতো।”

“কিছুই হত না।আমি কি সারাদিন এইভাবে বসে থাকবো?”

“কেনো ভালোই তো লাগছে।”

“তাহলে আমি নিলার কাছে চলে যাই।থাকো তুমি।”

“সেটা তো হচ্ছে না ম্যাডাম।”

নিরাকে আর কিছু বলতে দিলো না আয়ান।কারন নিরার ঠোট আয়ান নিজের অধীনে নিয়ে নিয়েছে।

সকালে রিয়া ঘুম থেকে উঠে দেখে আকাশের বুকে শুয়ে আছে।রিয়া কিছুসময় আকাশের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ওয়াশরুমে যাচ্ছিল তখনি আকাশ রিয়ার হাত ধরে টান দিলো।রিয়া বলল

“কি করেছেন ছাড়েন।আমি ফ্রেশ হয়ে যাবো।”

“নাহ তুই এখন কোথাও যাবি না।”

আকাশের দুষ্টু হাসি দেখে রিয়া বলল
“এখন আর কিছু হবে না।রাতে এই পিচ্ছিকে ঠিক মত ঘুমাতে দেন নি।এখন ছাড়েন।”

“সেটা তো হচ্ছে না পিচ্চি।”

রিয়াকে আর একা ফ্রেশ হতে যেতে দিলো না আকাশ।নিজেই কোলে করে নিয়ে গেল ওয়াশরুমে।

রিয়াদ ছাদে দারিয়ে আছে।রিয়াদের পাশে দারিয়ে আছে নিলা।রিয়াদ নিলার হাত ধরে বলল

“আমাদের বিয়েটা আজ হয়ে গেলে কত ভালো হতো তাই না।”

নিলা কিছু না বলে বাকা চোখে রিয়াদের দিকে তাকিয়ে আছে।রিয়াদ আবার বলল

“এখন যদি বিয়েটা হয়ে যেতে তাহলে সামনের বছরের মধ্যে আমাদের একটা বা দুইটা বেবি থাকতো।”

“আপনি এত খারাপ কেনো?মুখে কিছু আটকায় না আপনার?”

“আমি জানি তুমি আপসোস করছো বিয়েটার জন্য।সেটা তুমি যাই বলো না কেনো।”

রিয়াদের কথা শুনে নিলা রিয়াদকে মারতে মারতে বলল

“আপনি খুব খারাপ।”

“সেটা আমি জানি।”

কিছুসময় মারার পর রিয়াদকে জড়িয়ে ধরে নিলা।এবার রিয়াদ বলল

“বিয়ের আগেই এইভাবে জড়িয়ে ধরতে নেই।পরে যদি আমার দ্বারা কোনো ভুল হয়ে যায় তাহলে কিন্তু সেটা আমার দোষ না।”

নিলা কিছু না বলে রিয়াদকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মনে মনে হাসছে নিলা।কারন নিলা বুঝে গেছে এই ছেলেকে ছাড়া নিলার একা থাকা দুষ্কর।

-সমাপ্ত-

ভালোবাসার লুকোচুরি পর্ব-১২

0

#ভালোবাসার_লুকোচুরি
#পর্ব_১২
#মেহরাজ_হোসেন_রনি

রাতের খাবার খেয়ে আকাশের আব্বু রুমে যাচ্ছিল তখন ওনার শ্যালক কল দিলো মানে রিয়ার আব্বু।রিয়ার আব্বু এত রাতে কল দেয়াতে আরিফ মাহমুদ কিছুটা অবাক হলেন।সে কলটা রিসিভ করতেই তার শ্যালক বলল

“হ্যালো দুলাভাই আপনার সাথে একটু দরকারি কথা ছিল।”

“হুম বলো।”

“রিয়ার তো বিয়ের বয়স হয়েছে কিন্তু আকাশ বলেছে আয়ান বাসায় না আসা পর্যন্ত নাকি আকাশ বিয়ে করবে না।তা দুলাভাই এখন করবো?”

“আমাকে কি করতে বলছিস সেটা বল।”

“আপনি যদি আয়ানকে বাসায় নিয়ে আসতেন তাহলে ভালো হতো।আগে যা হয়েছে সেটা নিয়ে তো আর সারাজীবন বসে থাকলে হবে না।আর রিয়াকে তো আপনার মেয়ের মতই।ওর কথা ভেবে না হয় আয়ানকে বাসায় নিয়ে আসলেন।”

“তোর কি মনে হয় আমার ছেলে বাসায় আসুক সেটা আমি চাই না?আমি না হয় ভুল করে ওকে চলে যেতে বলেছিলাম।তাই বলে চলে গিয়ে এখন বাসায় আসবে না।আমি কয়েকদিন ধরে চাচ্ছিলাম ওর কাছে যেতে কিন্তু আমার কাছে তো ওর ঠিকানাটা নেই।”

“আচ্ছা আমি আপনাকে আয়ানের ঠিকানাটা দিচ্ছি।আপনি ওকে নিয়ে আসুন দুলাভাই।”

“আচ্ছা শুন।”

“হ্যা বলেন।”

“আমি যে তোর থেকে ওর ঠিকানা নিয়েছি।সেটা কাউকে বলার দরকার নেই।আর আমি যে ওর কাছে যাচ্ছি সেটাও কাউকে বলার দরকার নেই বুঝেছিস।”

“হ্যা দুলাভাই বুঝেছি।”

“আচ্ছা তাহলে ওর ঠিকানাটা আমাকে মেসেজ করে পাঠিয়ে দে।”

“আচ্ছা।”

আয়ানের আব্বু কিছুটা হ্যাপি।আয়ানের ঠিকানাটা পেয়ে গেছে।রিয়ার আব্বু তার দুলাভাইয়ের সাথে কথা শেষ করে রিয়াকে কল দিলো।

রিয়া অনেক চিন্তা ভাবনা করে ঠিক করে ওর আব্বুকে দিয়ে ওর ফুপাকে কল দিয়ে বলতে বলবে আয়ানকে বাসায় নিয়ে আসতে।রিয়া অপেক্ষা করছে কখন ওর আব্বু ওকে কল দিবে।কিছুসময় অপেক্ষা করার পর রিয়ার আব্বু কল দিলো।রিয়া কলটা রিসিভ করে বলল

“হ্যা আব্বু বলো ফুপা কি বলল?”

“দুলাভাই রাজি হয়েছে।আয়ানকে ফিরিয়ে আনতে যাবে বলেছি।আমার থেকে আয়ানের ঠিকানাটা চেয়েছে।তুই আমাকে আয়ানের ঠিকানাটা দে।আমি দুলাভাইকে ঠিকানাটা মেসেজ করে পাঠিয়ে দেই।”

“অনেক ভালো একটা খবর শুনালে আব্বু।আমি একটু পরেই তোমাকে ঠিকানাটা মেসেজ করে দিচ্ছি।”

“আর শুন তুই কিন্তু তোর ফুপাকে এই বিষয়ে কিছু বলিস না।তাহলে কিন্তু সমস্যা হবে।”

“নাহ আব্বু আমি তেমন কিছুই করবো না।”

“আচ্ছা এখন রাখছি।”

“আচ্ছা আব্বু।”

রিয়া ওর আব্বুকে আয়ানের ঠিকানাটা মেসেজ করে দিয়েছে।রিয়া শুধু এখন অপেক্ষা করছে আয়ানের বাসায় ফিরে আসার।

পরের দিন সকালে আয়ানের আব্বু অফিসে না গিয়ে ডাইরেক্ট এয়ারপোর্টে চলে গেল।রাতেই প্লেনের টিকেট কেটে রেখেছিল আয়ানের আব্বু। যাতে কোনো সমস্যা না হয়।

আয়ান সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে নিরা পাশে নেই।আয়ান ফ্রেশ হয়ে রান্না ঘরে গিয়ে দেখে নিরা রান্না করছে।আয়ান কিছু না বলেই নিরাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।
নিরা আজ কিছুটা সকালেই উঠে গেছে কারন রিয়া গতকাল রাতেই কল দিয়ে বলে দিয়েছে আয়ানের আব্বু আজ আসবে।তাই নিরা ভালো কিছু রান্না করছে।হঠাৎ করেই নিরাকে কেউ পিছন থেকে জড়িয়ে ধরাতে কিছুটা ভয় পেয়ে যায়।কিন্তু নিরা পরে বুঝতে পারে এইটা আয়ান।তাই বলল

“কি স্যার আজ রান্না ঘরে?”

“আমার বউটা আজ খুব আদর করতে মন চাচ্ছিল তাই এসে পরলাম।”

“ইস কত ভালোবাসা।এত দিন কই ছিল আমার প্রতি ভালোবাসা হ্যা?আমাকে ছেড়ে তো ভালোই ছিলে এত দিন?”

“তুমি কি মনে করো আমাকে হ্যা?দূরে ছিলাম ঠিকই কিন্তু তোমার সব খোজ আমার কাছে ছিল।”

“আমাকে একটা চিমটি দেও তো আয়ান?”

“কেনো কি হয়েছে?”

“আমি কি ভুল কিছু শুনলাম?তুমি আমাকে আপনি থেকে তুমি বলছো?আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না।”

আয়ান এবার নিরাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলল
“এখন বিশ্বাস হয়েছে তোমার।নাকি অন্য কিছু করে বুঝাতে হবে।”

“এই নাহ নাহ।আমার অনেক কাজ আছে আয়ান।”

“আচ্ছা তুমি রান্না করো।আমি রেডি হয়ে নাস্তা করতে আসছি।”

“রাগ করলে?”

“নাহ।রাগ করি নি।কিন্তু একটু অভিমান হয়েছে।”

নিরা এবার আয়ানের গলা জড়িয়ে বলল
“এখনো অভিমান আছে?”

“হ্যা।”

“এখন তাহলে কি করতে হবে আমার।”

“তোমার কিছু করতে হবে না।আমিই করছি।”

কথাটা শেষ না করতেই আয়ান নিরার গলাতে আলতোভাবে একটা চুমু দিলো।নিরা তো আয়ানের এমন কাজে পুরো বরফের মত জমে গেছে।কি করলো আয়ান এটা।নিরা পুরাই শক।আয়ান নিরার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে মুচকি হেসে রুমে চলে গেল।

সকালে ঘুম থেকে উঠে নিলা ফোনটা অন করলো।রিয়াদকে কল দিবে।অনেক দিন হলো রিয়াদের সাথে নিলা কথা বলে না।রিয়াদ ঘুমাচ্ছিল তখন ফোনটা বেজে উঠলো।কিছুটা বিরক্ত হয়েই রিয়াদ কলটা রিসিভ করে বলল

“হ্যালো কে?”

“এত সকাল হয়েছে গেছে আপনি এখনো ঘুমাচ্ছেন?”

কথাটা শুনেই রিয়াদ ঘুম থেকে লাভ দিয়ে উঠে নাম্বার দেখে বলল
“আপনি এত দিন ফোন অফ করে রেখেছিলেন কেনো?”

“এমনেই।”

“জানেন আমি কত টেনশন করেছিলাম।”

“হ্যা সেটা তো এখন বুঝতেই পেরেছি।যে কি না আরাম করে ঘুমাচ্ছে সে নাকি আমার জন্য টেনশন করেছে।”

“আচ্ছা এখন থেকে আর সকালে বেশি ঘুমাবো না।এবার হয়েছে।”

“হুম গুড বয়।”

নিলা আর রিয়াদ আরো অনেক কথা বলল।আয়ান নাস্তা করে ওর কাজে চলে যায়।নিরা কিছুটা লজ্জা পাচ্ছিল তাই আয়ানের সামনে আসে নি।

দুপুরের মধ্যে আয়ানের আব্বু আয়ানের বাসায় এসে পৌছে।আয়ানের আম্মু আর নিরা খুব খুশি আয়ানের আব্বুকে দেখে।আয়ানের আব্বু বলল

“আয়ান কোথায়?ও কি বাসায় নেই?”

নিরা বলল
“আব্বু আয়ান তো রেস্টুরেন্টে গেছে।”

“রেস্টুরেন্টে কেনো?”

“আসলে আব্বু আয়ান রেস্টুরেন্টে ম্যানেজারের জব করে।”

“আয়ানকে বলো এখনি বাসায় আসতে।আমি এসেছি বলো।”

“আব্বু আয়ান একটু পরেই চলে আসবে।”

আয়ানের আব্বু আর কিছু বলল না।ফ্রেশ হয়ে এসে খাবার খেয়ে নিলো আয়ানের আব্বু।

কিছুসময় পরে আয়ান বাসায় আসলো।ড্রয়িংরুমে আয়ান ওর আব্বুকে দেখে কিছুটা শক।আয়ানের আব্বু বলল

“কিরে এখনো আমার উপর রেগে আছিস?”

“নাহ।রাগ করার মত কিছু নেই।”

“আমি জানি তুই আমার উপর রাগ করে আছিস।”

“নাহ আব্বু তেমন কিছু না।”

“তাহলে এত দিন পর দেখা হল কিন্তু আমি কেমন আছি সেটা একবার জানতে চাইলে না যে?”

এবার আয়ান আর দারিয়ে থাকতে পারলো না।ওর আব্বুকে জড়িয়ে ধরলো।আয়ান ওর আব্বুকে অনেক ভালোবাসে।সেটা আয়ানের আব্বু ভালো করেই জানে।আয়ানের আব্বু বলল

“আমি রাগ করে চলে যেতে বললাম তাই চলে আসতে হবে তোর?বাসাটা কি একা আমার তোদের না।”

“ভুল করে ফেলেছি।সরি আব্বু।”

“হয়েছে।এখন বাসায় চল।আমি আর এইভাবে থাকতে পারছি না।তোরা সবাই আজ আমার সাথে বাসায় যাবি।”

“কিন্তু আব্বু..”

“আর কোনো কিন্তু না।আমি যা বলেছি সেটাই।”

“আমি আগেই যেতে চেয়েছিলাম আব্বু কিন্তু আম্মু যেতে মানা করেছিল।”

আয়ানের আম্মু বলল
“দেখেছিস নিরা মা এখন আয়ান আমার দোষ দিচ্ছে।রিয়া ঠিকই বলেছিল তুই আসলেই শয়তানের হাড্ডি।”

সবাই হাসছে আয়ানের কান্ড দেখে।সন্ধ্যার মধ্যে সবাই রেডি হয়ে বেড়িয়ে পরলো।আয়ানদের সাথে নিলাও আছে।আয়ানের আব্বু প্লেনের টিকেট কেটে রেখেছিল আসার সময়।তাই আর সমস্যা হয় নি।

রাতে রিয়া আর আকাশ বাসায় একা।তাই আকাশ বলছে

“তুই আজ বাসায় চলে গেলেই পারতিস।আব্বু যে আজ কই গেছে হঠাৎ।”

“তাতে সমস্যা কোথায়?আপনি কি ভয় পাচ্ছেন নাকি?”

“তোকে দিবো মাইর।আমাদের এইভাবে বাসাতে একা থাকাটা ঠিক না।”

“আরে ভয় পেয়েন না।আপনার কোনো ক্ষতি করবো না বিয়ের আগে।যা করার সেটা বিয়ের পরেই করবো।”

“ফাজিল মেয়ে একটা।”

বলেই আকাশ রুমে চলে গেল।রিয়া হাসছে আকাশের দেখে।প্রায় ঘন্টা দুইএক পরে সবাই বাসায় চলে আসে।রিয়া তো অনেক খুশি।এখন আকাশের সাথে ওর বিয়েটা হবে।আর কোনো সমস্যা নেই।সবার কথার শব্দ শুনে ভিতর থেকে আকাশ বেড়িয়ে এসে সবাইকে দেখে কিছুটা শক তার সাথে হ্যাপিও।সবাই খুব খুশি।কারন আয়ান আবার বাসায় চলে এসেছে।

পরের দিন সকালে নাস্তা করার সময় রিয়া সবাইকে বলল
“ওনি বলেছিল আয়ান বাসায় আসলে আমাদের বিয়েটা হবে।এখন সবাই মিলে আমাদের বিয়ের তারিখটা ঠিক করো।”

সবাই আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।এই কথাটা কেউ জানে না।আকাশ রিয়াকে এই কথা বলেছে কারো বিশ্বাস হচ্ছে না।আকাশ বলল

“সবাই এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?রিয়া বিয়ের জন্য জোড় করেছিল তাই আমি রাজি হয়েছিলাম।নাহলে এই পিচ্চিকে বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে ছিল না আমার।”

কথাটা শুনে রিয়া রেগে আগুন।মুখে কিছু বলছে না।কিন্তু মনে মনে আকাশ ইচ্ছে মত বকা দিচ্ছে।

#চলবে…

ভালোবাসার লুকোচুরি পর্ব-১১

0

#ভালোবাসার_লুকোচুরি
#পর্ব_১১
#মেহরাজ_হোসেন_রনি

আয়ানের আম্মুর কথাতে ওরা চুপ হয়ে গেল।খাওয়া শেষে আয়ানের আম্মু বলল

“আয়ান এখন তাহলে বাসায় চল।অনেক তো হল এবার।”

“নাহ আমি ওই বাসাতে যাবো না।আমি এইখানেই ঠিক আছি আম্মু।”

“তাহলে আমিও যাবো না বাসাতে।এইখানেই থাকবো।”

“থাকো আম্মু।সেটা তো আমার জন্য আরো ভালো।”

“আকাশ তুই রিয়াকে নিয়ে বাসায় চলে যাস।তোর আব্বুকে বলে দিস আমি এইখানেই থাকবো।”

আকাশ বলল
“তুমি এইখানে থাকলে আমি কেনো ওই বাসাতে থাকবো?আমিও এইখানে থাকবো।”

“নাহ তুই এইখানে থাকবি না।তোর আব্বু যতদিন না আয়ানকে এসে বাসায় নিয়ে যাচ্ছে ততদিন আমি আয়ানের সাথেই থাকবো।তুই আর রিয়া বাসায় চলে যাস।”

এবার রিয়া বলল
“ফুপি যা বলেছে তাই হবে।আমরা বাসায় চলে যাবো।বাসায় গিয়ে ফুপাকে বলে দিবো আয়ান বাসায় না যাওয়া পর্যন্ত ফুপিও বাসায় যাবে না।”

আকাশ আর কথা বাড়ালো না।সন্ধ্যার পরে আকাশ আর রিয়া বেড়িয়ে পরলো বাসার জন্য।রিয়া কিছুটা খুশি কারন রিয়া আর আকাশ আজ একা।আকাশের কাধে মাথা রেখেছে রিয়া।আকাশ নিজের মত করে ড্রাইভ করছে।

আজ কি মনে রিয়াদকে কল দিলো নিলা।রিয়াদ ওর ফ্রেন্ডদের সাথে বাইরে আড্ডা দিচ্ছিলো।তখন রিয়াদের ফোনে রিং হলো।কিন্তু যখন ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো নিলার নাম্বার থেকে কল এসেছে তখন রিয়াদ কিছুটা শক।রিয়াদ সাইডে গিয়ে কলটা রিসিভ করে বলল

“হুম বলেন ম্যাডাম।”

“আপনি এখন কোথায়?”

“আমি তো ফ্রেন্ডদের সাথে একটু বাইরে এসেছি।”

“রাত প্রায় নয়টা বাজে আপনি এখন বাইরে কি করছেন হ্যা?”

“ফ্রেন্ডদের সাথে একটু আড্ডা দিচ্ছিলাম।”

“আপনাকে আমি ভালো ছেলে ভেবেছিলাম কিন্তু আপনি তো দেখছি বাকি ছেলেদের মত।”

“আরে এইখানে খারাপ কি করে ফেললাম?”

“আপনি এখনি বাসায় যান।আগামীকাল থেকে সন্ধ্যার পর থেকে বাসার বাইরে থাকবেন না।”

“এইটা আবার কেমন কথা?বাসায় থেকে কি করবো?”

“থাক আমার কথা আপনার শুনা লাগবে না।যা মন চায় করেন।বাই।”

রিয়াদ তো পুরাই বোকা বনে গেল।হতভম্ব হয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে রিয়াদ।ভাবছে কি হচ্ছে এই সব।নিলা মনে মনে হাসছে।আবার পরে কল দিবে রিয়াদকে।

রাতের সব রান্না নিরা একাই রেঁধেছে।খাওয়া শেষে সবাই ঘুমাতে রুমে গেল।নিরা আর আয়ান ওদের রুমেই ঘুমাতে গেল।আর আয়ানের আম্মু নিলা আর সায়রা এক রুমে শুয়ে পরলো।

সকালে প্রায় দশটার দিকে আকাশ আর রিয়া বাসায় পৌছে যায়।ওরা বাসায় গিয়ে দেখে আকাশের আব্বু আজ বাসায় আছে।আকাশকে দেখে ওর আব্বু বলল

“আকাশ তোর আম্মু আর ভাই কোথায়?ওরা আসে নি?”

“আয়ান বলেছে এই বাসাতে আসবে না।আর আয়ান এইখানে আসবে না দেখে আম্মু আয়ানের কাছে থেকে গেছে।”

“তুই ওকে একটু বুঝিয়ে বাসায় আনতে পারলি না।”

“আব্বু তুমি ভালো করেই জানো আয়ান কেমন।তোমার কি মনে হয় আমি ওকে জোড় করি নি?”

আকাশের আব্বু আর কিছু বলল না।আকাশ ওর রুমে চলে গেল।আরিফ মাহমুদ বুঝতে পেরেছেন সে যদি তার ছেলে আনতে না যায় ততদিন আয়ান এই বাসাতে আসবে না।

আজ এক সপ্তাহ হয়ে গেছে আয়ানের আম্মু আয়ানের কাছে আছে।আকাশ আর রিয়া প্রতিদিন আয়ান আর ওর আম্মু সাথে কথা বলে।এর মধ্যে রিয়ার মাথায় বিয়ের জোখ ধরেছ।রিয়া ওর আম্মু আব্বুকে এইটা বলেছে কিন্তু তারা তেমন কিছুই বলে নি।রাতে আকাশ অফিস থেকে ফিরে আসতেই রিয়া বলল

“আমাদের বিয়েটা কবে হবে হ্যা?আমি আর এইভাবে কয়দিন থাকবো?”

আকাশ ভ্রু কুচকে বলল
“তোর আবার আজ কি হলো হঠাৎ?”

“আর কত দিন এইভাবে থাকবো আমি?আপনি জলদি আমাকে বিয়ে করে নেন।আমি এইভাবে আর থাকতে পারছি না।”

“আয়ান আগে বাসায় আসুক তারপর।”

“আয়ানকে বাসায় নিয়ে আসলে বিয়ে করবেন আমাকে?”

“আয়ান বাসায় আসার এক সপ্তাহের মধ্যে তোকে বিয়ে করবো।এবার হয়েছে।এখন আয়ানকে বাসায় আনার চিন্তা কর।”

“আপনি কিন্তু বলেছেন আয়ান বাসায় আসলে আমাকে বিয়ে করবেন।”

“আমাকে কি তোর মিথ্যুক মনে হয়?”

“আমি সেটা বলি নি।কিন্তু আয়ান আসলে আবার এই কথা ভুলে যেয়েন না।”

পরের দিন রিয়া ওর ফুপিকে কল দিলো।ফুপিকে বলল

“ফুপি তোমার বড় ছেলে কিন্তু বিয়ে করতে রাজি হয়েছে।আয়ানকে বলো এখন বাসায় এসে পরতে।”

“তুই এই কথা আমাকে বলছিস কেনো?আয়ানকে বল বাসায় চলে আসতে।আমাকে এইসব বলে লাভ নেই।”

“ওই শয়তানের সাথে কথা বললেই আমাকে অনেক কথা শুনিয়ে দিবে।তার থেকে তুমি একটু আয়ানকে বুঝিয়ে বলো যাতে আয়ান বাসায় চলে আসে।এখন ওনি রাজি হয়েছে পরে যদি আবার মত চেঞ্জ করে ফেলে তাহলে?”

“আমাকে এই সব বলে কিছু হবে না রিয়া।আয়ান বাসায় আসলে আমি তোর কথা গুলো ওকে বলল।কিন্তু বাকিটা আয়ানের উপর।সেটা আমি কিছু জানি না।”

“আচ্ছা ফুপি তুমি একটু ভালো করে বললেই হবে।এখন রাখছি।”

রিয়া এখন বসে বসে ভাবছে কি করা যায়।কিছু যদি একটা না করে তাহলে আকাশের সাথে এখন আর বিয়েটা করতে পারবে না।এই দিকে আজ অনেকদিন হল নিলার সাথে কথা বলতে পারছে না রিয়াদ।কারন নিলা ফোন বন্ধ করে রেখেছে।তাই আজ আবার কল দিলো নিলার নাম্বারে।কিন্তু সেই আগের মতই নাম্বার বন্ধ।এবার নিরাকে কল দিলো।

নিলা আর নিরা ড্রয়িংরুমে বসে কথা বলছিল তখন নিরা ফোনটা বেজে উঠলো।ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো রিয়াদ কল দিয়েছে।নিলা বলল

“আপু কে কল দিয়েছে?”

“রিয়াদ কল দিয়েছে।নে কথা বল।তোর জন্যই মনে হয় কল দিয়েছে।”

“নাহ আমি কথা বলল না এখন।তুমি কথা বলো।আমার কথা বললে বলবে আমি সায়রাদের বাসায় চলে গেছি।আর কলটা রিসিভ করে লাউডস্পিকার অন করো।আমিও শুনবো।”

নিরা আর কিছু না বলে কলটা রিসিভ করে লাউডস্পিকার অন করে বলল

“হ্যা রিয়াদ বলো।”

“ভাবি তোমার বোন কোথায়?”

“কে নিলা?”

“হ্যা ভাবি।”

“ও তো সায়রাদের বাসায় চলে গেছে।কেনো ভাই কি হয়েছে?”

“আর বইলো না ভাবি।সেই দিন রাতে কল দিয়ে আমাকে বলল আমি কোথায়।আমি বলেছিলাম বাইরে আছি বন্ধুদের সাথে।আমি এত রাতে বাইরে কেনো।এইটা কিছু একটু কথা বলার পরে ফোন অফ করে রেখেছে।এখনো কল দিয়েছি কিন্তু নাম্বার বন্ধ বলছে।ভাবি আমি এখন কি করবো বলো।”

“তোমার তো ওর কথাটা শুনা উচিত ছিল।এখন আমি কি বলল ভাই।আমার কাছে থাকলে হয়তো কিছু বলতাম কিন্তু ও তো এইখানে নেই।আচ্ছা আমি সায়রার সাথে কথা বলে দেখি নিলার সাথে কথা বলা যায় কি না।”

“তুমি একটু চেষ্টা করো।”

“আচ্ছা ভাই।এখন রাখছি।”

“আচ্ছা ভাবি।”

কলটা কাটতেই নিলা আর নিরা হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে।নিরা বলল
“তুই তো রিয়াদকে পাগল বানিয়ে ছাড়বি।”

“পাগল হলেও চলবে।কিন্তু খারাপ হলে না।রিয়া আপু বলেছে ওনি নাকি ভার্সিটি মারামারি করে।তাই এমন করেছি।না হলে পরেও এমন করবে।”

“যা করবি বুঝে শুনে করবি।কিছু হলে কিন্তু সবাই পরে আমাকে ধরবে।”

“হ্যা এখন তো তোমার দেবরই সব।আমি তো কিছু না।”

“আমি কি সেটা বলেছি তোকে।”

“হুম জানি সেটা।”

আরিফ মাহমুদ অনেক চিন্তা ভাবনা করে ঠিক করেছে আয়ানকে সে নিয়ে আসবে।বাসাটাও কেমন খালিখালি লাগছে আয়ানকে ছাড়া।কিন্তু আয়ানের ঠিকানা তো আরিফ মাহমুদের কাছে নেই।কি করে আয়ানের ঠিকানাটা পাবে সেটাই চিন্তা করছে।

রাতে কাজ শেষ করে আয়ান বাসায় এসেছে।আয়ান ফ্রেশ হয়ে আসতেই নিরা আয়ানের গলা জড়িয়ে ধরে।আয়ান বলে

“কি ম্যাডাম আজ কিছুটা অন্য রকম লাগছে?”

“আমরা আর কত দিন এইভাবে থাকবো আয়ান?”

“মানে!”

“রিয়া আজ কল দিয়েছিল আম্মুকে।তোমার ভাই নাকি বিয়েতে রাজি হয়েছে কিন্তু তুমি বাসায় না গেলে নাকি বিয়ে করবে না।এখন রিয়া তো টেনশনে আছে।পরে যদি আকাশ ভাইয়া মত চেঞ্জ করে ফেলে।”

“ওই পেত্নীর জন্য আমি বাসায় যেতে পারবো না।আমার কোনো ইচ্ছে নেই ওই বাসাতে যাওয়ার।”

“আমি তোমাকে জোড় করবো না আয়ান।কিন্তু আমি চাই না এইভাবে থাকতে।আমারো মন চায় সবাইকে একসাথে নিয়ে থাকতে।”

“হুম ভালো।”

রাতের খাবার খেয়ে আকাশের আব্বু রুমে যাচ্ছিল তখন ওনার শ্যালক কল দিলো মানে রিয়ার আব্বু।রিয়ার আব্বু এত রাতে কল দেয়াতে আরিফ মাহমুদ কিছু অবাক হলেন।সে কলটা রিসিভ করতেই তার শ্যালক বলল

“হ্যালো দুলাভাই আপনার সাথে একটু দরকারি কথা ছিল।”

#চলবে…