প্রেমের আটফোড়ন পর্ব-০১

0
2308

#প্রেমের আটফোড়ন
#সূচনা পর্ব
writer : Arsiya Shidratul Falak

এই মেয়ে আর ইউ মেড,,, আপনি আমার গালে চুমু খেলেন। তাও আবার চোখ বাধা অবস্হায়। জানেন আমি কে?? আপনাকে কি করতে পারি এখন। এই মুহূর্তে,,,!!!

ছেলেটির দিকে তাকিয়ে মেয়েটি হতভম্ব হয়ে রইল। কি বলবে বুঝে ওঠতে পারছেনা। চোখ খুলে দেখতে পেল তার সামনে একজন সুদর্শন পুরুষ দাড়িয়ে আছে,, মুখে তার এক সমুদ্র রাগের আভা দেখা যাচ্ছে। কানগুলো রাগে লাল বর্ন ধারন করেছে,, লোকটির রাগ দেখে মেয়েটি এবার ভয় লাগলো মনে মনে,,, কিন্তু সেটা নিজের ভেতর রেখে জোর পূর্বক হাসি টেনে বলল,,

আ আ আসলে আমি স সরি,,

হোয়াট সামান্য সরি বললেই আপনি যদি মনে করে থাকেন আমি ক্ষমা করে দিব তাহলে ভুল ধারনা আপনার,,, এই রিহান চৌধুরি তেমন লোক না,
আপনি যেমন মনে করছেন,

আসলে আমি ইচ্ছে করে কিছু করি নি,,

আই নো এখন মন গড়া কাহিনী বলবেন আর আমি আপনার কাহিনী শুণে গলে যাব,,, বাট সেটা তো হতে দিতে পারি না,,, কি করা যায়,,
ইউরস্ নেইম,,

অধরা বিনতে সাবা ….
সো মিস অধরা আপনাকে আমি কি করতে পারি তার বদলে বলবেন,,,,

ক ক কি করবেন (ভয়ে ভয়ে)

কি করতে পারি, কি করতে পারি,, (অধরার কাছে আসতে আসতে)
অধরা তো ভয়ে কুকরে যাওয়ার অবস্থা ,,,

হায়রে আল্লাহ ছেলেটা আমার এত কাছে আসছে কেন,,,( চোখ বন্ধ করে)

রিহান এবার অধরার একবারে কাছে গিয়ে নিজের গালের সাথে অধরার গালটা আলতো করে ছুড়ে দিল দৌড়,,,
এদিকে অধরা রিহানের এমন কান্ডে বিস্মিত হয়ে রইল। এটা কি ছিল। কিছ না তো কি ছিল এটা। এসব ভাবতে ভাবতে চোখের পাতা দুটো মেলে দেখলো তার সামনে কেউ নাই। অধরাতো এদিক ওদিক তাকিয়ে খুজছে লোকটিকে কিন্তু খুজে পাচ্ছে না,।।

ফ্ল্যাশব্যাক,,,,

ভার্সিটির ক্যম্পাসে পা রাখতেই না রাখতেই কতগুলো মেয়ে অধরাকে ডাক দিল। মেয়েগুলোর ডাক অনুশরন করে অধরা তাদের সামনে গেল,, অধরাকে দেখে মেয়ে গুলো নানা রকমের কথা বলতে থাকে,, মেয়েদের ড্রেস দেখে তো অধরা মনে মনে বলতে থাকে,,, ছি,, এগুলো কি পড়ছে,,
পাশে থাকা একটি মেয়ে বলে উঠল,,,

হাই,, আমি লুপা, তোমার নাম কি??
জি অধরা বিনতে সাবা।
পাশে আরেকটি মেয়ে বলে উঠল, তা নতুন, কোন ইয়ারে আছো,,

আসলে অনার্স ১মবর্ষে,,,।।
তার পাশে থাকা একটি মেয়ে ঝাঝালো কন্ঠে বলে উঠলো,, তাহলে আমাদের ছোট তুমি তোমার থেকে ১বছরের সিনিয়র আমরা বুঝেছো আশা করি,,,,

জি আপু,,, এবার যাই আমি,,( বিরক্তি নিয়ে)

দাড়াও, তুমি তো দেখি সিনিয়রদের সম্মান করতেও জানোনা দেখছি,,,

সরি আপু

ওকে ওকে,, কাজের কথায় আসি। তোমাকে এখন একটা কাজ করতে হবে,,,

কি কাজ??

এই ক্যাম্পাসের সামনের গেইট দিয়ে যেই ছেলে আগে প্রবেশ করবে,তার গালে তোমাকে প্রথম কিস করতে হবে,,

এটা শুনে তো অধরা বাকরুদ্ধ হয়ে রইলো কি বলে এই মেয়ে,,, অসহায় ভঙ্গিতে তাকিয়ে রইলো মেয়েটির দিকে,,,

আপু এটা কি বল্লেন,, এটা তো ঠিক না অন্য কাজ দেন প্লিজ আপু,,,

না এটাই করতে হবে তোমাকে নয়তো ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিব,,, আমাকে তো চিনো না আমি হলাম ইসিতা খান।আরিয়ান খান ইন্ডাস্ট্রির মালিকের এক মাত্র বোন আমি,, সো বুঝতেই পারছো কি কি করতে পারি,, তোমাদের মতো মেডেল ক্লাসের মেয়েদের সাথে,,,
ইশিতার কথাগুলো যেন অধরার কানে বিষের মত বাধছে,,, কিন্তু কিছুই করার নেই তার,, তাকে যে উঁচু গলায় কথা বলা বারন। তাই কিছুই বলল না চুপচাপ দাড়িয়ে রইলো,,, তখন ইশিতা বলে উঠলো এই লুপা,,
উরনা দিয়ে ওর চোখ বেধে দে,,,

তারপর লুপা এসে চোখ দুটো বেধে দেয়,,, তারপর অধরাকে ধরে গেটের কিছু দূর দাড় করিয়ে দেয়,, তারপর অধরা আস্তে আস্তে সামনে দিকে যেতে থাকে। তখন একটি ছেলে ডুকে তরপর তো জানেনই

এবার গল্পে আশা যাক,,,,,,

অধরা হল আমাদের গল্পের নায়িকা,, পৃথিবীতে তার আপন বলতে কেউ নেই ,, ছোট বেলায় বাবা মারা যায়। একমাত্র আপন বলে ছিলেন তার মা কিছুদিন আগে মা তাকে ছেড়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নেন।অধরার মা ক্যন্সারে আক্রান্ত ছিলেন,,, টাকার অভাবে মাকে ভালো চিকিৎসা করাতে পারেন নাই।
গরিব ঘরের মেয়ে অধরা,, ছোট বেলা বাবা মারা যাওয়ার পর মাকে নিয়ে চলে আসে ঢাকা শহরে। মা মানুষের বাসায় কাজ করে অধরার লেখা পড়ার খরচ বহন করে ছিলেন, কিন্তু যখন অধরা আস্তে বড় হয় তখন মাকে সেসব কাজ থেকে বিরত রাখে কয়েকটা টিউশনি করে সংসার চালায়। তারপর এই পরিনতি ,,,

রিহান হলেন আমাদের গল্পের নায়ক, রিফাত চৌধুরির একমাত্র সন্তান ,, লম্বা ৬ফুটের কাছাকাছি,, দেখতে যেমন সুদর্শন তেমন তার বডি ফিগার,, ফর্সা গালো খুচা খুচা দাড়ি , ঠোটগুলো গোলাপি রঙ ধারন করা, ক্যাম্পাসের সব মেয়েদের ক্রাশ,, পরিবার বলতে বাবা আর ছোট বোন নিয়েই তার পরিবার,, মা নেই ছোট বেলায় মাকে হারিয়েছেন ,,, বাবাই তাকে আর তার বোনকে মানুষ করেছেন,,,,

____________

ক্লাসে ভেতর বসে আছে অধরা। আর ভাবছে আজ ঘটে যাওয়া কাহিনী। এই দুনিয়ায় গরিবদের মানুষ তুচ্ছ ভাবে, যার টাকা আছে তার সব আছে,।যার টাকা নাই তার কিছুই নাই। বিশাল এই পৃথিবীতে বড্ড বেমানান লাগে নিজেকে। তার ভাবনার ছেদ পড়ে একটি মেয়ের কন্ঠে,, মেয়েটি তাকে হায় জানি পাশে বসতে বসতে বলল,,,

, আমি রেহানা,তোমার নাম কি????

আমি অধরা,,

খুব সুন্দর নাম তো,, তা আমাদের ক্লাসে নতুন মনে হচ্ছে,,,
হুম আজই জয়েন করেছি,,
তুমি কি আমার বন্ধু হবে,, মেয়েটি বলল

অধরা মেয়েটির কথা শুনে অবাক চোখে তাকালো , তাকানোরই কথা মেয়েটিকে দেখে তা বড়লোক ঘরের মেয়ে মনে হচ্ছে। ধব ধবে ফরসা গায়ের রং চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা,, চুলগুলো কেমন যেন কুকড়ানো কোমর অব্দি। এই মেয়ে এসে বলছে বন্ধু হতে,, ভার্সিটিতে আসার পর কোনো মেয়েরাই অধরার সাথে কথা বলে নাই। সবাই তাকে মেডেল ক্লাসের মেয়ে হিসাবে গন্য করে,, আর এই মেয়ে নিজে থেকে এসে বলল,,,ভাবার বিষয়, অধরার ভাবনা ভাঙে রেহানার হাতের তুরিতে,,,

হ্যালো মিস অধরা ইউ আর ওকে??
হুম।
তাহলে আমরা বন্ধু তো,,
আচ্ছা ঠিক আছে,,,

রেহানা আর অধরা অনেকক্ষন যাবত গল্প করছে। ভার্সিটির পাশে একটা বটগাছের নিচে বসে,, এতক্ষন গল্প করে বুঝতে পারলো মেয়েটা বেশ মিসুক স্বাভের সহজেই কাউকে আপন করে নিতে জানে।

তখন দূর থেকে লক্ষ্য করলো ভার্সিটির গেইট দিয়ে কতগুলো ছেলে আগমন করছে তাদের মধ্যে একজনকে দেখে তো অধরা প্রান যায় যায় অবস্থা কি করবে এখন,,, কিছু না ভেবেই রেহানা পেছনে গিয়ে পালালো,,,

ছেলেটি আর কেউ না রিহান,, কলেজের সব মেয়েরা একের পর সিরিয়াল লাগাচ্ছে তাকে দেখার জন্য, ব্রাউন রঙের জ্যাকেট নিচে কালো টি শাট,, চুলগুলো স্পাইক করা যা দারুন লাগছে মেয়েরা একের পর এক লাইন লাগাচ্ছে,,

রিহান সবাইকে পাশ কাটিয়ে সামনের দিকে তাকালো, যেখানে রেহানা দাড়িয়ে ছিল সেখানে একটা ছোট করে স্মাইল দিল,, রেহানাও, কিন্তু পেছনে অন্যজনকে দেখে থমকে যায়,, তারপর আবার কি মনে করে সামনের দিকে হাটা ধরে।

অধরা ভেবেছিল কিছু একটা বলবে।সে ভয়ে চোখ দুটো বন্ধ করে নাওযুবিল্লাহ নাওযুবিল্লাহ পড়তে থাকে। কিন্তু তার ভাবনা মিথ্যা করে ছেলেটি চলে গেল চোখ খুলে পেছনের দিকে তাকিয়ে রইল,,, রিহানের চলে যাওয়া দেখছে হঠাৎ চোখ গেল মাথার উপরে। সেখানে রিহান একটা আঙ্গুল দুলালাতে দুলাতে যাচ্ছে,,৷ অধরা এবার ভয় করতে লাগলো,, হতো এটা তার কোনো ইঙ্গিত হতে পারে।।।।
________
গল্পটি কেমন লিখেছি জানি না। তবে চেষ্টা করেছি সুন্দর করে তুলে ধরার। বাকিটা আপনাদের কাছে। আমার লেখা প্রথম গল্প। আপনাদের কেমন লাগে জানাবেন কমেন্টের মাধ্যমে,,,

চলবে 🍁🍁

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে