Tuesday, July 8, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1409



আস্থা পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব

0

#আস্থা

অন্তিম পর্ব

Farzana akter mithila

গুলির আওয়াজ পাওয়া মাত্র রায়েদ রায়ান আইরা বলে চিতকার করে উঠলো

শুট করতে দেখে আইরা সরে যেতে গেলেও পারেনি সোজা এসে আইরার পেটে লাগে গুলি টা সাথে সাথে রক্তক্ষরন শুরু হয়ে যায়

তিথি আইরা কে ধরে রায়ানকে বলে এখনি ওকে হসপিটালে নিয়ে যা

রায়ানঃ কিন্তু তুই

তিথিঃ আমাকে নিয়ে ভাবিস না আগে ওকে বাচা
রায়েদঃ আমি ওর কিছু হতে দেবনা
রায়ান তারাতাড়ি চল
বলেই রায়েদ আইরাকে কোলে তুলে নিয়ে হাটতে শুরু করল

মিতুর হাতে থাকা ছুরি দিয়ে শিমুল কে মারতে থাকে মিতু
কিন্তু শিমুল এর শক্তির সাথে মিতু পেরে উঠে না শিমুল মিতুর থেকে ছুরি কেড়ে নিয়ে মিতুর পেটে আঘাত করে

রুবেল নিজের মেয়েকে এই অবস্থায় দেখে শান্ত থাকতে পারেনা
গান নিয়ে শিমুল কে শুট করে সাথে শিমুল পড়ে যায়

তিথি পুলিশকে ইনফর্ম করে

কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে রুবেল আর শিমুল কে নিয়ে যায়

তিথি মিতুকে নিয়ে হসপিটাল এ যায়

১০ বছর পর

আইরাঃ এই রায়েদ উঠো কত বেলা হয়েছে দেখেছো আজ যে রায়ান দেশে আসবে সেই খেয়াল আছে?

রায়েদঃ হু আছে

আইরাঃ তাহলে এখনো ঘুমাচ্ছো কেন ওদের আনতে যাবা তো

রায়েদঃ আগে আদর দাও তারপর যাব

আইরাঃ তুমি কি বাচ্চা নাকি যে আদর দিতে হবে

রায়েদঃ না আমি বাচ্চা না তবে বাচ্চা আনার ব্যবস্থা করতে আদর চায়

আইরাঃ ইশ শখ কত

রায়েদঃ উহু আমার শখ না আমার মেয়ে আমার কাছে একটা ভাই চেয়েছে আমি কি করে না দিয়ে থাকি

আইরাঃ এখন ঢং করনা তারাতাড়ি উঠ

রায়েদঃ নিরামিষ বউ একটা

আইরাঃ সেদিন মরে গেলে ভালো হত একটা আমিষ বউ বিয়ে করে আনতে পারতে

রায়েদঃহুশ একদম মরার কথা বলবেনা

আইরাঃ সেদিন মিতু যদি আমাকে না বাচাতো তবে তুমি আমাকে আর পেতে না রায়েদ

আমার পেট এ গুলি লাগায় কিডনি তে প্রব্লেম হয় কিডনি চেঞ্জ করাতে হয় কিন্তু ওই মুহুর্তে আমাকে কে কিডনি ডোনেট করে তোমরা জানতে না
মিতু যখন জানতে পারে আমার কিডনি লাগবে ও তখন গোপনে কিডনি দিয়ে দেই কিন্তু আমাকে বাচিয়ে ও নিজে মারা যায়

রায়েদঃ কি বলছো মিতু তোমাকে কিডনি দিয়েছিল

আইরাঃ হ্যাঁ ওর জন্য আজ বেচে আছি আমি।সেদিন তোমরা যখন কিডনির জন্য পাগল হয়ে গেছিলে তখন মিতু আমার কেবিনে আসে আমি চোখ বন্ধ করে ছিলাম মিতু ভেবেছিল আমি ঘুমিয়ে আছি ও আমার হাত ধরে মাফ বলছিল

পারলে আমাকে মাফ করে দিয়েন,আপনার থেকে অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছি আমি কিন্তু নিজের করে রাখতে পারিনি আমি জানি আমি মরে যাব পেটে আঘাত লাগাই টিউমার ফেটে গেছে যেকোনো সময় আমি চলে যাব আপনার থেকে অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছি সেগুলো ফেরত দিতে পারবনা কিনতু কিডনি তো দিতে পারি
আমি আপনার সাথে যা করেছি তার ফল আমি পেয়েছি তবুও পারলে আমাকে মাফ করে দিবেন
বলেই মিতু যেতে গেলে আমি ওর হাত ধরি কিন্তু কিছু বলার শক্তি আমার ছিলনা সেদিন ওকে বলতে চেয়েছিলাম ওকে আমি মাফ করে দিয়েছি কিন্তু পারিনি বলতে
ও আমাকে শুধু বলেছিল ও আমাকে কিডনি দিয়েছে সেটা জেনো কাউকে না বলি
অপারেশন এর পর ওর কাছে যখন যেতে চায় তখন তোমরা বল ও মারা গেছে

রায়েদঃ আইরা কষ্ট পেয়োনা ওর জন্য

আইরাঃ আমি চেয়েছিলাম আমার সাথে করা অন্যায় এর শাস্তি পাক কিন্তু আমি তো ওর মৃত্যু চাইনি

রায়েদঃ হায়াতের উপর আমাদের কারোর হাত নেই

আইরাঃ হুম দেরী হয়ে যাচ্ছে যাও

রায়েদঃ হুম

এয়ারপোর্টে
আহমেদ ফ্যামিলির সকল সদস্য দাঁড়িয়ে আছে

রায়ান তিথি আর ওদের ছেলে মায়ান আজ দেশে ফিরছে
৫ বছর আগের মায়ানের জন্ম হয়। মায়ান হওয়ার পর ওর চোখে প্রব্লেম হয়ে তার জন্য বিদেশে থেকে ট্রিটমেন্ট করাতে হয় এখন মায়ান সম্পুর্ন সুস্থ

আহমেদ পরিবার আজ পরিপূর্ণ কোন

আজিজ স্ত্রী, ৩ছেলে, বউমা নাতি নাতনিদের আজ খুব খুশি
আইরা রায়েদ এর দিকে এক মনে তাকিয়ে আছে
হ্যাঁ এটাই তার #আস্থা

সমাপ্ত

আস্থা পর্ব-১০

0

#আস্থা

পর্ব ১০
Farzana Akter Mithila

The first step is complete
Get ready for the next step

তিথি মুচকি হেসে একজনকে এস,এম,এস দিল

মুখোশ খোলার সময় এসে গেছে সব কিছুর রেডী থেকো

আইরা,রায়েদ,রাইদা,রায়ান তিথি এবং শিমুল রওনা হলো আইরার নানাবাড়ির উদ্দেশ্যে

আইরার মনে এক অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে এই প্রথম সে মায়ের বাসায় যাবে

রাইদাঃ মাম্মা আমলা তোতাই যাত্তি

আইরাঃ আমার মামনির বাবার বাসায় যাচ্ছি

রায়েদঃ তুমি খুব খুশি তাইনা আইরা

আইরাঃ হ্যাঁ রায়েদ।প্রথম নানাবাড়ি যাচ্ছি আমি সত্যি খুব খুশি

গাড়ির মধ্যে আইরা রায়েদ এর বুকে মাথা রাখল কিন্তু রায়ান যে আইরার দিকে তাকিয়ে আছে এটা তিথির চোখ এড়ালো না

আইরাকে রায়েদ এর বুক দেখে রায়ান মুচকি একটা হাসি দিল কিন্তু ওর বুকের ভিতর ঝড় শুরু হয়ে গেলো হয়তো আজও রায়ান আইরাকে ভালোবাসা

তিথি রায়ান কে বলল সাবধানে ড্রাইভ কর

রায়ানঃ হুম

২ঘন্টা পর সবাই আইরার নানাবাড়িতে পৌছে গেল

শহর থেকে কিছুটা দূরে বিশাল ডুপ্লেক্স বাড়ি গেট দিয়ে ঢুকেই একপাশে সুইমিংপুল অন্য দিকে বাগান

আইরা গাড়ি থেকে নেমে সোজা বাসার ভিতরে চলে গেল

কিন্তু এত বড় বাসায় কাউকে না দেখে কেমন যেন লাগছে আইরার

রায়েদঃ বাসা তো পুরো ফাকা সবাই কোথায়

শিমুলঃ উপরে চল

আইরা রায়েদ এর হাত ধরে হাটছে রাইদা তিথির আর রায়ান এর হাত ধরে আছে

শিমুল সিড়িতে দারিয়ে বলল আমার সাথে এসো

উপরে একটা রুমে একজন বয়স্ক লোক সাথে একজন নার্স দাড়িয়ে আছে

আইরাঃ উনি কি আমার নানা

শিমুলঃ হ্যা

আইরা ছুটে ওর নানার কাছে গেল

আইরাঃ নানা আপনি কেমন আছেন আমি আমি আপনার মেয়ে শিমলার মেয়ে

নানাঃ আমি ভালো নেই তুই কেন এসেছিস এই নরকে

আইরাঃ আপনি তো আমাকে দেখতে চেয়েছেন তাই এসেছি ভালো নেই মানে আর নরক মানে

নানাঃ আমি তোকে আসতে বলিনি ওরা তোকে মিথ্যে বলে এনেছে পালিয়ে যা তুই

আইরাঃ মানে কি বলছো এসব

শিমুলঃ আমি বলছি আইরা তোকে আমি মিথ্যে বলে এনেছি

আইরাঃ কেন

শিমুলঃ তোর সব সম্পত্তি আমার চায় তোর মায়ের কোটি টাকার সম্পত্তি আমার নামে লিখে দিবি তুই

নানাঃ না আইরা তুই কখনও দিবিনা ওই সয়তানকে

আইরাঃ রায়েদ কি হচ্ছে এখানে আমি বাসায় যাব চল

শিমুলঃ হা হা হা আর তো বাসায় যেতে পারবেনা মা আগে এই দলিলে সাইন করবে তারপর ওদের সাথে যাবে

রায়ানঃ কিসের দলিল ও কোন দলিলে সই করবেনা

শিমুলঃ সই না করলে রাইদাকেউ ওর নানা নানির কাছে পাঠিয়ে দিব

আইরাঃ রায়েদ আমার রাইদা কোথায়

রায়েদঃ তিথির কাছে ছিল তিথি কোথায়

আশপাশে কোথাও তিথি কে দেখতে পেল না

শিমুলঃ তিথি আমার লোক ও রাইদা কে নিয়ে গেছে

আইরাঃ আমার রাইদা কে ফিরিয়ে দিন আমি সাইন করে দিচ্ছি

শিমুলঃ এইযে পেপার এইখানে সাইন করবি

আইরা সাইন করতে গেলে মিতু এসে বলে না ভাবি আপনি সাইন করবেন না

শিমুলঃ মিতু কি বলছিস তুই এতদিন পর আমাদের স্বপ্ন পুরন হবে আর তুই বাধা দিচ্ছিস

মিতুঃ আংকেল ঠিকি বলছি এসব শত্রুতা বাদ দিন ৩০ বছর পার হয়ে গেছে আজও প্রতিশোধের নেশায় মেতে আছেন আপনি

আইরাঃ কিসের প্রতিশোধ কি হচ্ছে এসব

মিতুঃ আপনি শুধু সাইন করে দিলেও আপনি বাচতে পারবেন না ভাবি ওরা আপনাকে মেরে ফেলবে

রায়ানঃ মিতু কি বলছো এসব কারা মেরে ফেলবে

মিতু কিছু না বলেই শিমুল এর পিছনে ছুরি ধরে বলে সবাই কে যেতে দিন না হলে কিন্তু আপনাকে শেষ করে দিব আমি

শিমুলঃ তুই এইভাবে বেইমানি করবি আমি জানতাম তাই তো নিজেকে সুরক্ষিত করে এসেছি

মিতু মা মানে

হাহাহা আমি এত বোকা নয় তুই রায়ান এর জন্য সব করতে পারিস এটা আমি খুব ভালো করেই জানি কিন্তু আমাকে তুই আটকাতে পারবিনা

ওদের সবাইকে বেধে ফেলো

কয়েকজন মুখোশ পরে এসে সবাইকে বেধে দিল

শিমুল ঃ রুবেল তোর মেয়ে কে সামলা না হলে কিন্তু ওকেও শেষ করে দিব

রুবেলঃ না ওকে কিছু করিস না ওকে আমি নিয়ে যাচ্ছি

শিমুলঃ আইরা তুই সাইন কর
না হলে

মিতুঃ না সাইন করবেনা সাইন করলেও বাচতে পারবেনা

এর মাঝে তিথি একটা বাচ্চাকে নিয়ে এসে বলে

তোর সব খেলা শেষ ওদের ছেড়ে দে না হলে তোর একমাত্র ছেলেকে শেষ করতে আমার ১ মিনিট লাগবে না

শিমুলঃ তুই ও আমার সাথে বেইমানি করলি এর ফল ভালো হবেনা

তিথিঃ আগে ওদের ছেড়ে দে না হলে কিন্তু

শিমুলঃ না ওকে কিছু করবিনা ওদের সবাইকে ছেড়ে দিচ্ছি

একজন এসে সবাইকে বাধন মুক্ত করে দেই

আইরাঃ আপু আমার রাইদা কোথায় ও ঠিক আছে তো

তিথিঃ রাইদা কে আমি সুরক্ষিত জায়গায় রেখে এসেছি ও সম্পুর্ণ সুস্থ আছে

রায়ানঃ অনেক হয়েছে লুকোচুরি আর নয়

আইরাঃ মানে? তুমি সব জানতে

রায়ানঃ হ্যা মিতু আমাকে সব জানায় তাই আমি তোমাদের সাথে আসি

আইরাঃ আমাকে সব খুলে বল কিছু বুঝতে পারছিনা আমি

মিতুঃ আমি বলছি
আব্বু আর আম্মু শিমলা আন্টি আর মহিন আংকেল কে হেল্প করেছিল বিয়ে করতে তখন আন্টির বিয়ে ঠিক হয় কিন্তু পাত্র পক্ষ শিমুল আংকেল কে অনেক বাজে কথা শোনায় সেই থেকে আব্বু আমম্মুর প্রতিশোধ নিতে চায় শিমুল আংকেল কিন্তু প্রতিশোধ এর নেশায় এত মেতে ছিল যে নিজের বোনকে শেষ করতে একবার ভাবেনি
আমার আব্বু উনার কথায় গাড়ির ব্রেক নষ্ট করে কিন্তু আমরা জানতাম আইরাকে শেষ করার জন্য এমন করেছে
যখন জানতে পারে আইরা বেচে আছে তখন ওকেও মেরে ফেলতে চায় কিন্তু যখন জানতে পারে নানা ভাই সব কিছু শিমলা আন্টির নামে করে দিয়েছিল আন্টি মারা যাওয়ায় সব কিছু আইরা পাবে তখন থেকে অপেক্ষা করছে এই দিন টার নানাভাইকেও অনেক কষ্ট দিয়েছি একে তো শিমলা আন্টি পালিয়ে যায় আবার সব কিছু তার নামে করে দেয়ায় আরো ও ক্ষেপে যায়
শুধু তোমাদের কে না আহমেদ পরিবারকেও শেষ করতে চায় উনি

আইরাঃ সব বুজলাম কিন্তু আব্বু আম্মুকে কেন মারতে চায়

মিতুঃ আম্মুকে উনি ভালোবাসত বিয়ের প্রস্তাব দেই কিন্তু আম্মু আব্বুকে ভালোবাসত তাই রিজেক্ট করে দেয় আর মহিন আংকেল কে আব্বু আম্মু হেল্প করে এজন্য

কিন্তু চিন্তা কর না তোমাদের কারোর কিছু হতে দিব না আমি আর তিথি আপু
তিথি আপুকে আমি সব বুঝিয়ে আমাদের প্লানিং এ এনেছিলাম যাতে ও আমাকে হেল্প করতে পারে

শিমুলঃ তোরা বেচে গেলেও আমি আইরাকে ছাড়ব না
বলেই আইরা দিকে শুট করল

চলবে

আস্থা পর্ব-০৯

0

#আস্থা

পর্ব ৯

writer #Farzana akter mithila

কিন্তু আড়াল থেকে কেউ শয়তানি হাসি দিয়ে বলল আজ থেকে খেলা শুরু হাহাহা আহমেদ ম্যানশন এর কেউ ভালো থাকবে না কেউ না

পরের দিন

রায়েদঃ আইরা আইরা উঠ

আইরাঃ একটু ঘুমাতে দাওনা সকাল সকাল ঘুম ভাংতে ভালো লাগে

রায়েদঃ সকাল সকাল মানে? ১২ টা বাজে

আইরাঃ তো কি হয়ছে আমার সকাল এখনো হইনি

রায়েদঃ সরি বুজতে পেরেছি
বলেই আইরাকে জড়িয়ে ধরে আইরার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ছুয়ে দিল। আইরা ভালোবাসা নিয়ে উঠে পড়লো বিছানা থেকে

আইরাঃ এখন আমার সকাল হয়েছে

রায়েদ বিছানা থেকে উঠে আইরার পাশে দাঁড়িয়ে বলে যদি কখনো তোমাকে সকালের ভালোবাসা না দিতে পারি তখন কি তুমি উঠবে না

আইরাঃ না

রায়েদঃ কেন

আইরাঃ কারন আমার প্রতিদিন শুরু হয় তোমার ভালোবাসায় শেষ হয় তোমার ভালোবাসায় তোমার ভালোবাসা না পেলে আমি দিন শুরু করব কেন

রায়েদঃ যদি মরে যায় তখন

আইরা কথা টা শুনেই বেলকনিতে গিয়ে কান্না শুরু করে দেয়
রায়েদ আইরার কাছে যায়

রায়েদঃ আইরা কান্না করবেনা একদম তুমি জানোনা তোমার চোখ এর পানি আমার সহ্য হয়না

আইরাঃ,,,

রায়েদঃ কান্না থামাও

আইরাঃ আমার চোখের পানি তোমার সহ্য হয়না আর তুমি একটু আগে কি বললে তুমি আমাকে ছেড়ে একদম চলে যাবে আমার কষ্ট হয়না রায়েদ? আমিও তো রক্তে মাংসে গড়া মানুষ
সব কিছু হারিয়ে একা হয়ে গেছিলাম তখন তুমি আমাকে নতুন জীবন দিলে তোমার উপর #আস্থা রেখে নতুন করে শুরু করলাম আর এখন বলছো তুমি চলে যাবে তাহলে কি নিয়ে বাচব আমি

রায়েদঃ সরি আমি ওইভাবে বলিনি আইরা আমাকে ভুল বুঝোনা প্লিজ সরি সরি এই দেখো কান ধরছি

আইরাঃ আর নাটক করতে হবেনা হইছে
বলেই আইরা রায়েদ কে জড়িয়ে ধরল রায়েদ ও আইরা শক্ত করে জড়িয়ে ধরল

অন্য দিকে

রায়ানঃ তুই কেন আমাকে বিয়ে করলি তিথি

তিথিঃ আমি তোকে ভালো রাখতে চায় তোর জীবন টা সুন্দর করে দিতে চায়।

রায়ানঃ আমার সময় লাগবে

তিথিঃ যত সময় লাগে নে কোন সমস্যা নেই শুধু আমার উপর #আস্থা রাখিস কখনো ভুল বুজিস না কারন সামনে অনেক বড় আসতে চলেছে

রায়ানঃ কিসের ঝড়

তিথি কিছুটা ভেবাচেকা খেয়ে বলল
তিথিঃ মিতুর পরিবার এত সহজে সব মেনে নেবেনা(এখনি সব তোকে বলতে পারবনা রায়ান সময় হলে সব বলব)

রায়ানঃ তা ঠিক বলছিস যা হবে দেখা যাবে

তিথিঃ হুম

লিভিং রুমে

আজিজঃ রায়েদ তুই এবার আমার ব্যবসার হাল ধর রিয়াদ হাসপাতালে থাকে আমি আর রায়ান ব্যবসা দেখতাম কিন্তু বয়স হচ্ছে এত প্রেসার নিতে পারছিনা আমি

রায়েদঃ আচ্ছা আব্বু কালকে থেকে রায়ান এর সাথে আমি অফিসে যাব

আজিজঃ আইরা তুই চাইলে অফিস যেতে পারিস রায়েদের সাথে

আইরাঃ না আব্বু আমি অফিসে যাবনা।ভাবছি পথশিশু দের কিছু একটা করব

আজিজঃ কি করতে চাস তুই

আইরাঃ আব্বু আমি একটা এতিমখানা করব সেখানে কিছু পথশিশু থাকবে ওদের পড়াশোনা করাবো আমি

আজিজঃ কিন্তু তোর একার পক্ষে এটা সম্ভব না মা

আইরাঃ কেন সম্ভব নয় আব্বু
আমাদের সব প্রোপার্টি বেচে আমি এতিম খানা করব
সব কিছু তো অযথা পড়েই আছে তাই ভাবছি শুধু বাসা টা বাদে সব বেচে দিয়ে বাসার পাশেয় এতিমখানা খুলব

আজিজঃ এটা তোর ব্যক্তিগত মতামত এটা নিয়ে আমি কিছু বলবনা কিন্তু যদি কখনো এই বাবা টাকে প্রয়োজন হয় তবে বলিস

আইরাঃ আমি জানি আব্বু তোমরা সবাই আমার সাথে থাকবে

রায়েদঃ ইনশাআল্লাহ সবসময় আছি আমরা

আইরাঃ হুম আম্মু তুমি কি বল

রাবেয়াঃ আমি খুব খুশি হয়েছি মা তুই পথ শিশুদের পাশে দাড়াবি এর থেকে খুশির কিছু নেই

পুরুষ কণ্ঠে একজন বলল

পথশিশুর জন্য ভাবছিস কিন্তু আপনজনের খোজ কখনো নিয়েছিস

আইরাঃ আপনি কে ঠিক চিনলাম না

লোকটা ঃ আমাকে তুই চিনবিনা

রাবেয়াঃ ভাইয়া আপনি এত বছর পরে
কেমন আছেন

লোকটাঃ আমাকে চিনতে পেরেছিস তাহলে

রাবেয়াঃ কেন চিনব না ভিতরে আসুন।আইরা ওনি তোর মামা

আইরাঃ মামা?

রাবেয়াঃ হ্যাঁ তোর মায়ের একমাত্র ভাই

আইরাঃ আমি তো কখনো শুনিনি আমার মামা আছে আর মামনিও আমাকে কিছু বলেনি

রাবেয়াঃ হুম কারন তোর মামা বাড়ির কারোর সাথে শিমলা যোগাযোগ রাখেনি

আইরাঃ কেন আম্মু

রাবেয়াঃ তোর মা মহিন ভাইয়াকে ভালোবাসত তোর নানা জানতে পেরে তোর মায়ের অন্য কোথাও বিয়ে ঠিক করে সেদিন ওরা পালিয়ে আমাদের বাসায় এসে বিয়ে করে যখন আরফান হয় তখন তোর বাবা শিমলাকে জোর করে নিয়ে তোর নানা বাড়ি যায় সেদিন তোর বাবাকে তোর নানা আর মামা মিলে অনেক অপমান করে শিমলা সেই অপমান সহ্য করতে পারেনা তাই তোর নানাবাড়ির সাথে সব সম্পর্কে শেষ করে দেয়
তোর নানারা পড়ে মেনে নিলেও শিমলা কখনো ওই বাড়ি যাইনি

আইরাঃ ওহ

লোকটাঃ তোর মা বাবার মৃতুর খবর শুনে স্ট্রোক করে তোর নানা। এখন শয্যাশায়ী হয়ে গেছে তোকে একবার দেখতে চায় তুই কি যাবি?

আইরা কি করব বুজে পাচ্ছেনা আহমেদ পরিবার বাদেও তার আপনজন আছে এটা ভেবে খুশি হল

রায়েদঃ আইরা তুমি কি যেতে চাও

আইরাঃ হ্যাঁ আমি যাব সাথে তুমি আর রাইদা যাবে আমার সাথে

রায়েদঃ আচ্ছা যাব

শিমুল(আইরার মামা)ঃআজ চল বাবার অবস্থা ভালো না যে কোনো সময় কিছু হয়ে যেতে পারে

আইরাঃ কিন্তু

রাবেয়াঃ কিন্তু কি কোন কিন্তু না যা নানাবাড়ি থেকে ঘুরে আয়

আইরাঃ আচ্ছা

রায়ানঃ যদি কিছু না মনে করে আমিও যেতে যায়

আইরাঃ কি মনে করব চলো আমাদের সাথে তিথি আপু তুমি যাবে
কিছুটা ভেবে উত্তর দিল
তিথিঃহ্যাঁ আমিও যাব ( এত সহজে রাজী হয়ে গেলে এখন কি করব আমি যায় হোক তোমাদের একা ছাড়ব না আমি )

আইরাঃ আচ্ছা সবাই গিয়ে রেডি হয়ে আসো আমিও যায়

সবাই রেডি হতে গেল
তিথির ফোন হাতে নিয়ে দেখে একটা মেসেজ

The first step is complete
Get ready for the next setp

চলবে

আস্থা পর্ব-০৮

0

#আস্থা

পর্ব ৮

#writer Farzana Akter Mithila

আইরা চুপ করে ভালোবাসা অনুভব করছে আজ নিজেকে অনেক সুখী লাগছে

রায়েদঃ আজ আমি একটা জিনিস চাই তোমার কাছে দিবে??

আইরাঃ বল কি চাও

রায়েদঃ আমি আর কানাডা যেতে চায়না আইরা সবার সাথে একসাথে থাকতে চায়

আইরাঃ ওহ আচ্ছা

রায়েদঃ তুমি রাজি

আইরাঃ আমি তো তোমাকে কখনো না বলিনি তুমি ফ্যামিলির সাথে থাকতে চাও থাকবে আমাকে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিও আমি চলে যাব

রায়েদঃ আইইরা তুমি কি আমার ফ্যামিলি মেম্বার না? এটা কি তোমার ফ্যামিলি না? তোমাকে আর রাইদা কে ছাড়া আমি নিজেকে ভাবতে পারিনি
প্লিজ থেকে যাওনা আইরা

আইরাঃ কি করে থাকব রায়েদ একই ছাদের নিচে আমার পরিবারের খুনির সাথে কি করে থাকব আমি বলতে পারো

এই প্রশ্নের উত্তর রায়েদ এর কাছে নেই নিশ্চুপ হয়ে হেটে চলেছে

সকালে

সকাল সকাল বাসায় এত জোরে জোরে কথা বলছে কে ভাবতে ভাবতে রায়েদ আমি নিচে নেমে এলাম

লিভিং রুমে বাসার সবাই উপস্থিত সাথে মিতুর আব্বু আম্মু ও আছে আর তিথি আপুকে দেখে অনেক অবাক হলাম

আইরাঃতিথি আপু কেমন আছো

তিথিঃ ভালো আছি তুই কেমন আছিস

আইরাঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি
এত সকালে তুমি এখানে

তিথিঃ আজ আমি আর রায়ান বিয়ে করব

আইরাঃ মানে?

তিথিঃ হ্যা রায়ান আমাকে বিয়ে করতে চায়।আমিও রাজি

আইরাঃ ওহ আম্মু ওনারা কি এই বাড়িতে থাকবে?

রাবেয়াঃ না ওরা মিতুকে নিয়ে চলে যাবে

মিতুর আব্বুঃ আপা আমার ভুলের শাস্তি আমার মেয়েটাকে দিস না
মিতুর আব্বু আইরা হাত ধরে বলে মা আমাকে মাফ করে দাও দয়া করে আমার মেয়ের সংসার টা তুমি বাচাও তুমি বললে আপা এই বিয়ে হতে দিবেনা

আইরা ওনার হাত টান দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বলল

আইরাঃ আমি আপনাকে কখনো মাফ করতে পারবনা আপনার জন্য আমি আমার পরিবারের সবাই কে হারিয়েছি আপনার জন্য আমার ভাই ভাবি তাদের অনাগত সন্তানের মুখ দেখতে পারেনি নিস্পাপ শিশু টা দুনিয়ায় আসতে পারিনি আমি কি ভাবে আপনাকে মাফ করব?? আপনাকে আমি কখনো মাফ করতে পারবনা আর আপনার মেয়ের সংসার আমি টিকিয়ে দিব হাহাহা ভাবলেন কি করে? যার জন্য আমি আমার সব কিছু হারিয়েছিলাম তার জন্য আমি আম্মুকে বলব যেই মেয়েটা আমার থেকে আমার ভালোবাসার মানুষ টাকে কেড়ে নিয়েছে যার জন্য আপনি আমার পরিবার কে খুন করছেন তার সংসার আমি ঠিক করে দিব
১০ বছর আগে দিয়েছিলাম ঠিক করে কিন্তু আর না
রায়ান কিছু না করেও সে শাস্তি পেয়ে যাচ্ছে তারও কষ্ট হয় কিন্তু এখানে আমার কিছু করার নেই ওর ভুলের জন্য ও শাস্তি পেয়েছে

রায়েদঃ রায়ান যদি তার ভুল শুধরে নিজের জীবন নতুন করে শুরু করতে চায় তবে আমরা বাধা দিতে পারিনা

রায়ানঃ আমি মিতুকে কখনো ভালোবাসতে পারিনি আর না কখনো পারব আইরার কথায় আর দায়িত্বের জন্য এতদিন কিছু বলিনি কিন্তু আমার তো বাবার হওয়ার অধিকার আছে ওর জন্য আমি আমার ভালোবাসা হারিয়েছি কিন্তু বাবা হওয়ার সুখ হারাতে চায়না তাই আমি তিথিকে বিয়ে করতে চায়

মিতুঃ পারলে আমাকে সবাই মাফ করে দিয়েন আমি আর কখনো এ বাড়িতে আসব না
মেজো ভাবি আপনার সাথে সব থেকে বেশি অন্যায় করেছি আমি জানি আমি ক্ষমার যোগ্য নয় তবুও বলছি পারলে মাফ করে দিয়েন
রায়ান আমি তোমার লাইফে আসব কখনো আর তোমার বিয়েতেও আমি বাধা দিব না শুধু আমার একটায় চাওয়া আমাকে কখনো ডিভোর্স দিওনা আমি তোমার স্ত্রী হয়ে মরতে চায় শুধু এই চাওয়া টুকু রেখো
আব্বু আম্মু চল

সবাই চুপ করে আছে ওরা ৩ জন চলে গেছে

তিথিঃ রায়ান আমার কাজ শেষ আমি যায় এবার

আইরাঃ তোমার কাজ শেষ মানে বিয়ে করবেনা?

রায়ানঃ না বিয়ে হবেনা

রিয়াদঃ কি বলছিস একটু আগে বললি

রায়ানঃ মিতুকে আমার লাইফ থেকে সরানোর জন্য এই নাটক

আইরাঃ তিথি আপু তোমার কি রায়ানকে বিয়ে করতে কোন আপত্তি আছে?

তিথিঃ আইরা তুমি হয়তো আমার বিষয়ে সব জানো না
আমার বিয়ে হয়েছিল

আইরাঃ ওহ সরি আপু আমি জানতাম না তো তোমার হ্যাসবেন্ড কে নিয়ে এসো পরিচিত হব

তিথিঃ ও বেচে নেই আইরা আমাদের বিয়ের ১ বছর পরে ও মারা যায়

আইরাঃ আর বিয়ে করোনি

তিথিঃ না
আইরাঃ রায়ান কে বিয়ে করবে

তিথি কিছু বলেনা আইরা বুঝে নেই তিথির আপত্তি নেই

আইরাঃ আম্মু তোমার কাছে আজ কিছু চাইবো দিবে?

আম্মুঃ তুই চাইলে আমি কখনো না করেছি

আইরাঃ আজ রায়ান আর তিথি আপুর বিয়ে হবে রায়েদ তুমি সব ব্যবস্থা কর

রায়ানঃ না আইরা আমি আর বিয়ে করব না

আইরাঃ কেন রায়ান তোমার ও ভালো থাকার অধিকার আছে দেখো সময় কখনো কারোর জন্য থেমে থাকেনা
অতীত কে নিয়ে বাচতে গেলে কষ্ট ছাড়া কিছুই পাবেনা সব ভুলে আবার নতুন করে সব শুরু কর।তিথি আপুর উপর আমার #আস্থা আছে ও তোমাকে ভালো রাখবে তুমি রাজি হয়ে যাও

রায়ানঃ কিন্তু

রায়েদঃ কোন কিন্তু নয় রায়ান

রায়ানঃ আচ্ছা আমি রাজি কিন্তু তোমরা আর কানাডা যাবেনা

রায়ান এর কথা শুনে রায়েদ আইরার দিকে তাকায়

আইরাঃ আচ্ছা আমরা এবার থেকে এই বাড়িতে থাকব

আম্মুঃ সত্যি

আইরাঃ হ্যাঁ আম্মু সত্যি
আমি তোমাদের সাথে থাকব রায়েদ গেলে যাক আমি রাইদা যাবনা

রায়েদঃ বাহ আমাকে কানাডা পাঠিয়ে তোমরা সব ভালবাসা নিবে তাইনা তা হবেনা

আইরাঃ সেটা তোমার ইচ্ছে

আহমেদ ম্যানশন এ আজ সবাই খুব খুশি

সন্ধ্যায়

তিথির বাবা মা আর তিথি এসেছে
তিথিকে আইরা আর নিলা সাজাচ্ছে

অন্যদিকে রায়েদ রিয়াদ রায়ান কে নিয়ে লিভিং রুমে বসে আছে

আইরা নিলা তিথিকে নিয়ে নিচে নামছে ৩ ভাই সেদিকে হা কর তাকিয়ে আছে

নুহাসঃ বাবাই তুমি ও কি আজ মাম্মা কে বিয়ে করবে

রাইদাঃ তি মদা তি মদা আতকে তবাই বিয়ে তলবে

আজিজ রাইদাকে কোলে নিয়ে বলল

আজিজঃ হ্যাঁ দাদুভাই আজ সত্যিই খুব মজা আজ আমার পরিবারের সব দুখ শেষ

রায়ান তিথির বিয়ে হয়ে যায়

কিন্তু আড়াল থেকে কেউ শয়তানি হাসি দিয়ে বলে আজ থেকে খেলা শুরু
হাহাহা।আহমেদ ম্যানশন এর কেউ ভালো থাকবেনা কেউ না

চলবে।

আস্থা পর্ব-০৭

0

#আস্থা

পর্ব ৭

Farzana Akter Mithila

প্রথম ভালবাসা হয়তো কখনো ভোলা যায়না

রায়েদ ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে আছি এখনো ওর এলো মেলো হয়ে যাওয়া চুল গুলো সরিয়ে কপালে ভালোবাসার পরশ দিতেই রায়েদ আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল ঘুমন্ত রায়েদ কে এত ভালো লাগে? তাহলে একবারে ঘুমিয়ে যায়

আইরাঃ চুপ একদম এমন কথা বলবে না।তোমাকে সব সময় ভালোলাগে

রায়েদঃ তাহলে আমি জেগে থাকলে কেন আদর করনা হুম শুধু ঘুমালে তুমি নিজে আমার কাছে আসো

আইরা রায়েদ এর কথা শুনে লজ্জা পেয়ে যায়

রায়েদঃ আমার লজ্জাবতী আজ একটু বেশিই লজ্জা পেয়েছে

আইরাঃ তুমি ঘুমাওনি কেন এখনো

রায়েদঃ আমার পাগলি টা কষ্ট পেয়ে জেগে আছে আমি কি করে ঘুমায় বল

আইরাঃ আমি ঘুমায়নি তুমি কি করে বুজলে

রায়েদঃ আল্লাহ তোমাকে বোঝার ক্ষমতা আমাকে দিয়েছে এই জন্য বুজতে পারি

আইরাঃ হুম সত্যিই তুমি আমাকে অনেক বোঝ

রায়েদঃ চল

আইরাঃ কোথায়

রায়েদঃ #আস্থা আছে আমার উপর??

আইরাঃ নিজের থেকেও বেশি

রায়েদঃ তাহলে চল

আইরাঃ কিন্তু রাইদা??

রায়েদঃ ওর ২ পাশে বালিশ দিয়ে দাও

আইরাঃ আচ্ছা
আইরা রাইদার ২ পাশে বালিশ দিয়ে রায়েদ সাথে যাচ্ছে
রায়েদ আইরা বাসা থেকে বেড়িয়ে রাস্তায় হাটতে শুরু করছে আইরা হাটতে হাটতে রায়েদ এর হাত ধরলো রায়েদ মুচকি হেসে আইরার হাত শক্ত করে ধরল

রায়েদঃ একটা গল্প শুনবে??

আইরাঃ কিসের গল্প বলো শুনবো

রায়েদঃ আমার প্রেম এ পড়ার গল্প

আইরাঃ তুমি প্রেমে পড়েছো?? কার কবে কখন

রায়েদঃ হ্যা আমিও প্রেমে পড়েছিলাম,এখনো পড়ি।
প্রথম প্রেমে পড়েছিলাম আজ থেকে ১৪ বছর আগে

আইরাঃ তার মানে বিয়ের আগেই তুমি কারো প্রেমে পরেছো

রায়েদঃ হ্যা।শুনবে?

আইরাঃ ইন্টারেস্টিং গল্প বলো শুনব

রায়েদঃ গ্রীষ্মের দুপুরে কলেজ থেকে বাসায় যাচ্ছিলাম আর তখনি এক তরুণী কে দেখে চোখ আটকে যায় আমার।স্কুল ইউনিফর্ম পড়া কাধে স্কুল ব্যাগ,চুল ২ পাশে বেনী করা কথার সাথে মুক্ত ঝরা হাসি

আইরাঃ তারপর

রায়েদঃ তারপর রোজ তাকে লুকিয়ে দেখতাম কিন্তু কখনো সামনে যায়নি

আইরাঃ তারপর

রায়েদঃ তারপর আর কি আমার ভিসা চলে আসল আর আমি চলে গেলাম

আইরাঃ ইশ কি কষ্ট।আর দেখা হলোনা

রায়েদঃ কে বলছে দেখা হইনি

আইরাঃ তুমি তো কানাডা ছিলে তাহলে

রায়েদঃ ফেসবুকে ওর ছবি দেখতাম

আইরাঃ তার ফেসবুক আইডি পেলে কি করে

রায়েদঃ তার ফেসবুক ছিলো না রায়ান এর আইডি তে দেখতাম,আর এখনো তার ছবি দেখি

আইরাঃ মানে তুমি রায়ান এর ফ্রেন্ড তিথি আপুর প্রেমে পড়ে ছিলে?আর এখনো তুমি ওর ছবি লুকিয়ে দেখো😤😤😤😤
বলেই আইরা রায়েদ এর হাত ছেড়ে জোরে হাটতে শুরু করল

রায়েদঃ আরে পুরো টা শুনে যাও

আইরাঃ আর কিছু শুনতে চায় না তোমার প্রেম তিথির কাছে যাও গা

রায়েদঃ এই তিথি কে?? আর আমি তো আমার প্রেমের সামনে দাঁড়িয়ে আছি

আইরাঃমানে তোমার প্রেম এর সামনে মানে

রায়েদঃ হ্যা আইরা আমার প্রথম আর শেষ প্রেম তুমি

আইরাঃ কি বলছো এসব??

রায়েদঃ হুম আইরা আমি তোমাকে অনেক আগে থেকেই ভালোবাসতাম।
তোমাকে ছোট থেকেই চিনি জানি কিন্তু সেদিন তুমি যখন স্কুল থেকে বাসায় যাচ্ছিলে তখন তোমাকে দেখে চোখ আটকে যায় রেগুলার তোমাকে দেখার জন্য স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম কিন্তু তুমি ছোট ছিলে তাই তোমাকে কিছু বলিনি এভাবে কিছু দিন যাওয়ার পরে আমার ভিসা চলে আসে কানাডা যেতে খুব কষ্ট হচ্ছিল এইভেবে তোমাকে আর দেখতে পারবনা কিন্তু রায়ান এর যখন তোমাদের কিছু কিছু পিক আপলোড করতে তখন মনে মনে খুব ধন্যবাদ দিতাম আমি জানতাম তুমি আর রায়ান ফ্রেন্ড ভেবেছিলাম কানাডা থেকে ফিরে তোমাকে প্রপোজ করব টিকেট কেটে বাসায় ফিরে জানতে পারি যে তোমার সাথে রায়ান এর এনগেজমেন্ট সেদিন খুব কেদেছিলাম আর তোমার ছবি গুলো দেখছিলাম কিন্তু বিশ্বাস কর আমি কখনো চায়নি তোমরা আলাদা হও আমি তোমাকে হ্যাপি দেখতে চেয়েছিলাম

আইরা চুপ

রায়েদঃ বাংলাদেশ এ এসে বাসায় গিয়ে যখন সব শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গেছিলাম রায়ান কে সেদিন খুব মেরেছিলাম কিন্তু ও কোন প্রতিবাদ করেনি

আইরাঃ আমাকে এত ভালোবাসেও কখনো আমাকে বলোনি কেন

রায়েদঃ আমি তোমাকে ভালোবেসি তোমাকে হ্যাপি দেখতে চেয়েছি সেটা হোক আমার সাথে বা অন্যের সাথে তোমার মুখের হাসি আমার ভালো থাকার কারন

আইরাঃ আমাকে কখনো নিজের করে নিতে চাওনি কেন

রায়েদঃ ভালোবাসলেই কি তাকে নিজের করে পেতে হবে? আমার কাছে ভালোবাসা মানে এটা নয় যে ভালোবাসাকে পেতেই হবে
ভালোবাসা মানে তো ভালবাসার মানুষকে মুক্ত করে রাখা তার চাওয়া গুলো পূরন করে তার মুখে হাসি ফোটানো

আইরাঃ একই দুনিয়ায় কত রকম মানুষ
কেউ ভালোবেসে ত্যাগ করে কেউ ভালোবেসে ভালো বাসা কেড়ে নেই

রায়েদঃ একটা কথা বলব

আইরাঃ একটা কেন ১০০ টা বল

রায়েদঃ আমি জানি আইরা আজ ও তুমি রায়ান কে ভুলতে পারোনি কিন্তু প্লিজ কখনো আমাকে ছেড়ে যেওনা আইরা

আইরাঃ আমার উপর #আস্থা রেখে দেখো ঠকবে না

রায়েদঃ ভালোবাসি

আইরাঃ বড্ড ভালোবাসি

বলেই আইরা রায়েদ কে জড়িয়ে ধরল রায়েদ ও আইরাকে জড়িয়ে ধরল

রায়েদঃ এই যে মেডাম

আইরাঃ হু

রায়েদঃ এবার বাসায় চল

আইরাঃ আমি আর হাটতে পারবনা না পা ব্যাথা হয়ে গেছে কতদুর চলে এসেছি রাইদা উঠে পরেছে কি না কে জানে

রায়েদ কিছু না বলে আইরা কে কোলে তুলে হাটা শুরু করল

আইরা চুপ করে ভালোবাসা অনুভব করছে
আজ নিজেকে অনেক সব থেকে সুখী লাগছে

চলবে

ভুল গুলো ক্ষমা করবেন ধন্যবাদ

আস্থা পর্ব-৫+৬

0

#আস্থা

পর্ব ৫+৬

Farzana Akter Mithila

গাড়ি এক্সিডেন্ট তার আরফান,আন্নি,শিমলা জায়গায় মারা যায় আর তার বাবা আইসিইউতে আছে তার অবস্থাও ভালো না

আইরার চিতকার দিয়ে উঠে
আল্লাহ আমার সাথে কেন এমন করলে সব কিছু আমার থেকে কেড়ে নিলে কেন আল্লাহ আমি কি দোষ করেছিলাম

রাবেয়াঃ মারে তুই শান্ত হও তোকে সান্তনা দেয়ার ভাষা আমার জানা নেই তবুও বলছি একটু শান্ত হও তুই নিজেও অসুস্থ

আইরাঃ ভাইয়া ভাবি মামনি কোথায়??

রাবেয়াঃ ওদের কে লাশ ঘরে রাখা হয়েছে

আইরাঃ আমাকে নিয়ে যাবে

রাবেয়াঃ তুই নিজেকে একবার দেখ তোর কি অবস্থা এই অবস্থায় তোকে কোথাও নিয়ে যেতে পারব না

আইরা নিজের দিকে তাকালো
হাতে ক্যানোল লাগানো রক্ত যাচ্ছে বেড থেকে ওঠার ক্ষমতা নেই তার
মাথায় ব্যথা অনুভব করতে আস্তে আস্তে মাথায় হাত দিয়ে বুজলো মাথায় ব্যান্ডেজ করা আর মাথা কোন চুল নেই

আইরা শান্ত স্বরে বলল
আমার চুল কি কেটে ফেলেছে আন্টি??

রাবেয়াঃ হ্যাঁ রে মা তোর মাথার অনেক জায়গায় কেটে গেছে তাই চুল কাটতে হয়েছে

আইরাঃ ভালোই হইছে চুল কেটে ফেলেছে

রাবেয়াঃ কেন রে মা চুল গুলো কি দোষ করেছিল

আইরাঃ আমি তো নিজেকে সামলাতে পারতাম না মামনি আর ভাবি আমার সব করে দিত আমার চুল আছড়ে দিত তেল দিয়ে দিত
ওরা তো আল্লাহর কাছে চলে গেছে

রাবেয়া আইরার কথার কোন উত্তর না দিয়ে ফুপিয়ে কেদে উঠল

এখন থেকে নিজেকে সামলাতে শেখো আইরা

পরিচিত কণ্ঠ শুনে আইরা দরজার দিকে তাকালো

আইরাঃ রায়েদ ভাইয়া আপনি

রায়েদঃ হুম আমি

রাবেয়াঃ তুই কখন আসলি??
একবারও আমাকে জানালি তুই আসবি

রায়েদঃ সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম আম্মু কিন্তু আমি নিজেই সারপ্রাইজ হয়ে গেছি

রাবেয়াঃ কোথা থেকে কি হয়ে গেলো

রায়েদঃ আমি সব শুনেছি আম্মু

আইরাঃ পাপা এখন কেমন আছে

রায়েদঃঅবস্থা ভালো নয় আইরা যেকোনো সময় কিছু হয়ে যেতে পারে

আইরাঃ ভাইয়া আমাকে একটু পাপার কাছে নিয়ে যাবেন??

রায়েদঃ এই অবস্থা তুমি যেতে পারবেনা

আইরাঃ আমি পারব

রায়েদঃ আচ্ছা আমি দেখছি

হঠাৎ নার্স এসে রায়েদ কে বলল আপনাদের পেশেন্ট আইরা নামের কাউকে খুজছে ওনাকে আনার ব্যবস্থা করুন পেশেন্ট এর অবস্থা খুব খারাপ

আইরা পাপা বলে চিতকার দিয়ে ক্যানোল খুলে উঠে গেলেই পড়ে গেল

রায়েদঃ আইরা সাবধানে আমি নিয়ে যাচ্ছি তোমাকে
সিস্টার একটা হুইলচেয়ার এর ব্যবস্থা করুন

নার্সঃ ওকে স্যার

রায়েদ হুইলচেয়ারে করে আইরাকে আইসিইউতে নিয়ে গেল

আইরা কে দেখে মহিন একটু শান্ত হল

ডক্টরঃ আপনি আইরা?

আইরাঃ জি

ডক্টরঃ আপনারা কথা বলুন তবে পেশেন্ট কি বেশি কিছু বলতে দিয়েন না

রায়েদঃ ওকে ডক্টর

আইরাঃ পাপা

মহিনঃ তো তোর কু খুব লেগেছে

আইরাঃ না পাপা আমার কোথাও লাগেনি।

মহিনঃ আ আ আমাকে তো তোর মাআ মনি ডাকছে যে যেতে হবে আ আ আমার কাছে সময় খুব কম তু তু তুই নিজের খেয়াল রা রাখিস

আইরাঃ পাপা তুমি আমাকে ছেড়ে যেওনা আমি কি নিয়ে বাচবো তুমি চলে গেলে আমি যে একদম একা হয়ে যাব পাপা প্লিজ তুমি যেওনা

মহিনঃ রা রা রায়ে( উত্তেজিত হয়ে)

রায়েদঃ আংকেল আমি আছি আপনি উত্তেজিত হয়েন না

মহিন কিছু বলতে পারছেনা
হাত এগিয়ে আইরার হাত ধরতে গেলে আইরা মহিন এর হাত ধরে বলে পাপা তুমি আমাকে ছেড়ে যেওনা প্লিজ পাপা

মহিন আইরার হাত রায়েদ এর হাতে দিয়ে আবার বলতে চেষ্টা করল

মহিনঃ আ আজিজ আ আ আমার মেয়েটাকে তু তুই নি নিজ কা কাছে রা রাখিস ওর তো তো তোয়া চা ছাড়া আ আর কে কেউ নেই

আজিজ বুজতে পারল মহিন কি বলতে চাচ্ছে

আজিজঃ দোস্ত তুই সুস্থ হয়ে আয় একবার তোর মেয়েটা আমি আমার বাসায় নিয়ে আসব ধুমধাম করে তোর চিন্তা করতে হবেনা

মহিনঃ রা রা য়েদ তু তুই আই আরা কে বি বি বিয়ে করি স ও ওকে কখনো ক ক কষ্ট দিস না বাআ বা

আ আমাকে মা মাফ ক-এর দিস মা আ
রা রা য়েদ কে নিয়ে ভা লও থা

আর কিছু বলতে পারেনা মহিন
শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে চলে গিয়েছে সে

আইরাঃ পাপায়ায়ায়া
বলেই সেন্সলেস হয়ে যায়

আজিজ রায়েদ কে জড়িয়ে কান্না করে দেই নিজেক সামলাতে পারছেনা

রায়েদঃ আব্বু তুমি শান্ত হও তুমি ভেঙে পড়লে আমি আইরা কে সামলাবো কি করে বল??

আজিজ কান্না থামানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা
পারবে কি করে তার প্রান প্রিয় বন্ধু তার চোখের সামনে চলে গেল
আজিজ এর মহিন ছাড়া এই শহরে অন্য কেউ নেই
মহিন এর তাই
ছোট বেলাই মা বাবা কে হারিয়ে এতিম খানায় একসাথে বড় হয় আজিজ মহিন সেই ছোট থেকেই তাদের এই বন্ধুত্ব সেই বন্ধুত্বের বন্ধন ছিন্ন করে মহিন চলে গেছে এটা সে মানতে পারছেনা

অন্যদিকে
আইরা পাপা পাপা বলেই চিতকার করে উঠতে আবার সেন্সলেস হয়ে যাচ্ছে

রায়েদ রিয়াদ কে ফোন করে বলল দাফন এর সব ব্যবস্থা করতে

রাবেয়া বেগম আইরা পাশে বসে কান্না করছে
শিমলা আর সে ছিল বেস্টফ্রেন্ড। বেস্টফ্রেন্ড কে হারিয়ে সে নিস্তব্ধ হয়ে আছে
১দিনের ব্যবধানে কি হয়ে গেলো

আইরার জ্ঞান ফেরার পর একদম চুপ হয়ে গেছে কোন কথা বলছেনা

আজিজঃ ডক্টর আইরার কি অবস্থা এখন

ডক্টরঃ এখন ও বিপদ মুক্ত কিন্তু ওকে মানসিক ভাবে ভাল রাখতে হবে।মানসিক ভাবে অনেক ভেঙে পড়ছে

আজিজঃ এক সাথে মেয়েটা সব হারায়ে ফেলছে মানসিক ভাবে কি করে ভাল থাকবে

ডক্টরঃ ওকে আনন্দের মধ্যে রাখবেন সব সময়।

আজিজঃ ওকে কি বাসায় নিয়ে যাওয়া যাবে

ডক্টরঃ এই অবস্থায় কিভাবে

রিয়াদঃ স্যার আমি ওর খেয়াল রাখব কিন্তু ওকে
এখন বাসায় নিয়ে যেতে হবে
আসর বাদ এর পরিবারের দাফন

ডক্টরঃ তুমি যেহেতু আছো তাহলে প্রব্লেম নেই।নিয়ে যাও আর কোন প্রব্লেম হলে আমাকে জানিও

রিয়াদঃ ওকে স্যার

আহমেদ ম্যানশন

আইরা এখনো ঘুম নিলা পাশে বসে আছে

কিছুসময় পর আইরা পাপা বলে চিতকার করে উঠলো

আইরাঃ ভাবি আমার পাপা কোথায় মামনি ভাইয়া ভাবি কোথায়

নিলাঃ বাগানে

আইরাঃ আমাকে নিয়ে চল

নিলাঃ চল

নিলা ধরে ধরে আইরাকে বাগানে নিয়ে যাচ্ছে

আইরা কে এই অবস্থায় দেখে রায়ানের বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে ওঠে
রায়ান মনে মনে বলল
আর এই অবস্থার জন্য একমাত্র আমি দায়ী আমার জন্য এমন হলো

কিন্তু ওদের গাড়ির ব্রেক কিভাবে ফেল করল

রায়ান এর কাধে মিতু হাত রেখে বলল পারলে আমাকে মাফ করে দিও আমার জন্য এসব হয়েছে

রায়ানঃ তোমার জন্য মানে

মিতুঃ হুম আমার জন্য রায়ান

রায়ানঃ সব খুলে বল

মিতুঃ আইরাকে আব্বু মেরে ফেলতে চেয়েছিল যাতে ও আমার আর তোমার মাঝে না আসে।কালকে যখন ওরা যাবে তার কিছু সময় আগে আব্বু গাড়ির ব্রেক নষ্ট করে দেয়

মিতুর কথা শুনে
রায়ান মিতু কে চেপে ধরে দেয়াল এর সাথে

রায়ানঃ কেন করলে তোমরা এমন?? কেন করলে?? আমার ভুলের শাস্তি আমাকে দিতে।আমি তো আমার ভুলের জন্য তোমাকে বিয়ে করেছি তাহলে কেন এমন করলে
আইরা আর ওর ফ্যামিলি তো কোন দোষ করেনি মিতু কেন মারলে ওদের

মিতুঃ আব্বু এমন করবে আমি জানতাম না সকালে আম্মু ফোন করে বলেছে আমাকে।

রায়ান মিতুকে ছেড়ে দিয়ে বাগানে চলে যায় গিয়ে দেখে আইরা একধ্যানে লাশ গুলো দেখে যাচ্ছে এই দেখায় তার শেষ দেখা আর কখনো তার আপন মানুষ গুলোকে দেখতে পারবেনা

লাশ গুলো নিয়ে যাচ্ছে আর আইরা সবার দিকে তাকিয়ে আছে

দাফন শেষে সবাই বাসায় ফিরেছে

কারোর মুখে কোন কথা নেই সবাই চুপ করে বসে আছে
আইরা ঘিরে

ছাদে রায়ান একা একা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে হঠাৎ কেউ কাধে হাত দিতেই পিছেনে ফিরে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিল রায়ান

রায়েদঃ সত্যি কি তুই মিতুকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিস রায়ান?? বড় ভাইয়ার থেকে যতটুক শুনেছি তাতে আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা তুই আইরার সাথে টাইম পাস করেছিস

রায়ান চুপ

রায়েদঃ কি জন্য মিতুকে বিয়ে করলি আমাকে বল রায়ান

রায়ান বলতে শুরু করল

২মাস আগে একটা কাজে মামাদের বাসায় যায় আমি
৫দিন ছিলাম আমি
কিছু দিন আগে মিতু আমাকে ফোন করে ওদের বাসায় যেতে বলে
আমি ওদের বাসায় গিয়ে দেখি বাসায় কেউ নেই তখন মিতু আমাকে বলে
একদিন রাতে নাকি আমি নেশা করে মিতুর সাথে খারাপ কিছু করেছি আর মিতু প্রেগন্যান্ট কিন্তু আমি বিশ্বাস করিনি কারন আমি কখনো নেশা করিনি
মিতু আমাকে বলে আমি জানি তোমার কিছু মনে নেই এটা দেখো
মিতুর ফোনে একটা ভিডিও দেখে আমি কাপতে থাকি এটা কি করে সম্ভব বুজতে পারিনি আমি
মিতু তখন বলে ওকে যদি আমি বিয়ে না করি তবে ও সুইসাইড করবে
আমার কাছে ওকে বিয়ে করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না ভাইয়া নিজের ভুলের মাশুল যে আইরাকে এই ভাবে দিতে হবে আমি কখনো কল্পনা করতে পারিনি

রায়েদঃ আমি ভাবতে পারছিনা কিছু

রায়ানঃ আমি জানি আমি ভুল করেছি কিন্তু আমার ভুলের জন্য আইরা ওর পরিবারকে হারিয়েছে ভাইয়া

রায়েদঃ মানে

রায়ানঃ গাড়ির ব্রেক নষ্ট ছিল না নষ্ট করা হয়েছে

রায়েদঃ কি বলছিস তুই

রায়ানঃ হ্যা ভাইয়া এসব মিতুর বাবা করেছে

রায়েদঃ মামা এসব করেছে কিন্তু কেন

রায়ানঃ আইরা যাতে আমার জীবনে আর কখনো না আসে

রায়েদঃ আমি উনাকে ছাড়বনা

রায়ানঃ আমি পুলিশ কে ইনফর্ম করেছি ওরা আসছে

রায়েদঃ নিচে চল

লিভিং রুমে

পুলিশকে দেখে সবাই অবাক হয়ে যায় এত রাতে পুলিশ কেন

পুলিশঃ স্যার ক্রিমিনাল কে

রায়ান মিতুর বাবার দিকে দেখিয়ে দিয়ে বলে উনি

কেউ কিছু বুজতে পারছেনা কি হচ্ছে

পুলিশ মিতুর আব্বুকে এরেস্ট করে

পুলিশঃ স্যার ওনার শাস্তির জন্য প্রুফ লাগবে

রায়ানঃ হুম আমি প্রুফ দিচ্ছি
বলে রায়ান নিজের রুম গিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে আসে

রায়ানঃ এই ফূটেজে স্পষ্ট দেখতে পারবেন উনি গাড়ির ব্রেক নষ্ট করছে
আর এই অডিও রেকর্ড এ যথেষ্ট

পুলিশঃ জি স্যার, কালকে একটু অফিসে আসবেন প্লিজ যদিও এখন আপনাকে অফিসে আসা ঠিক না তবুও একটু আসবেন প্লিজ

রায়ানঃ আচ্ছা আমি যাব উনার শাস্তির জন্য যা করা লাগে আমি করব উনাকে নিয়ে যায়

পুলিশ মিতুর আব্বুকে নিয়ে চলে যায়।

মিতুর আব্বুর পাওয়ার থাকায় মাত্র ২ বছর জেলে হয় তার

সময় কারোর জন্য থেমে থাকেনা
দেখতে দেখতে ৪ মাস পেরিয়ে গেছে
এত বড় বাড়িতে আইরা আর ২ জন কাজের লোক থাকে আজিজ আইরাকে নিজের কাছে রাখতে চেয়েছিলেন কিন্তু আইরা থাকেনি এই ৪ মাসে সে একবার আহমেদ ম্যানশন এ যায়নি এই ৪মাসে অনেক বদলে গেছে আইরা এখন নিজেকে সামলাতে পারে সব কাজ করতে পারে এককথায় সংসারী মেয়ে হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলেছে সেদিনের রায়ানের কথা গুলো আজ ও তার কানে বাজে সেই কথার ভিত্তিতেই তার পরিবর্তন। মাঝেমধ্যে আহমেদ ফ্যামিলির সবাই আসে। রায়েদ এসসে আইরার সাথে সময় কাটায়।প্রথম দিকে বিরক্ত হলেও এখন নরমাল হয়ে গেছে

আজিজঃ মা তুই ঠিক আছিস তো?? তোর কিছু হইনি তো

আইরাঃ না আংকেল আমি একদম ঠিক আছি এতো অস্থির হইয়োনা

আজিজঃ এত রাতে কল দিলে টেনশন হইনা এত বার বললাম আমার বাসায় থাক থাকলি না

আইরাঃ এবার থাকব

আজিজঃ সত্যি মা? আমি আসব তোকে নিতে?

আইরাঃ এখন না কালকে এসো।আর সাথে সবাইকে নিয়ে আসবে
আমি এখন তোমার পরিবারর যোগ্য হয়ে গেছি।তোমার আপত্তি না থাকলে আমি কালকে রায়েদ কে বিয়ে করতে চায়।

আজিজঃ আমার কোন আপত্তি নেই কিন্তু রায়েদ

আইরাঃ উনি রাজি আছে কালকে সবাই কে নিয়ে তারাতাড়ি চলে এসো আমি একা কয়দিক দেখবো বলতো

আজিজঃ তোর কালকে কিছু করতে হবেনা সব আমি করব আচ্ছা মা ঘুমিয়ে পড় কালকে দেখা হবে

সকালে

সবাই বসে আছে আইরা আর রায়েদ পাশাপাশি
আইরার সামনে রায়ান বসা

কাজি বিয়ে পড়াচ্ছে আইরা রায়ানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে কবুল বলল
রায়ান এর কতটা কষ্ট পাচ্ছে সেটা আইরা বেশ বুজতে পারছে

আইরা ছোট করে নিশ্বাস নিল

সে এখন রায়েদ এর বউ তার সব থেকে বড় পরিচয় সে মিসেস রায়েদ আহমেদ
আহমেদ ফ্যামিলির সবাই খুশি হলেও রায়ান খুশি হতে পারেনি নিজের ভালোবাসার মানুষ টাকে ভাইয়ের বউ হিসাবে কেউ মানতে পারেনা কিন্তু রায়ানের কিছু করার নেই তাকে মানতে হবে

আহমেদ ম্যানশন

৪ মাস হয়ে গেলেও মিতুর মধ্যে কোন পরিবর্তন আসে না এটা নিয়ে রাবেয়া তাকে জিজ্ঞেস করতেই ঘাবড়ে যায় মিতু।কিছু না বলে এড়িয়ে যায় এই ব্যাপার

কিছু দিন পর রায়ান মিতুকে নিয়ে ডক্টর এর কাছে গিয়ে জানতে পারে মিতু প্রেগন্যান্ট না
কথা টা শুনে রাগী চোখে মিতুর দিকে তাকিয়ে থাকে

গাড়িতে

রায়ানঃ বাচ্চা কোথায় মিতু??

মিতুঃ,,,,,

রায়ানঃ বাচ্চা কোথায় 😤😤😤

মিতুঃ আ আ আসলে আমি প্রেগন্যান্ট না

রায়ানঃ তাহলে কেন সেদিন মিথ্যা বলছিলে??
মিতুঃ তোমাকে পাওয়ার জন্য

রায়ানঃ মানে

মিতুঃ হুম আমি তোমাকে অনেক আগে থেকেই ভালোবাসি কিন্তু তুমি আইরা ভাবিকে ভালোবাসতে
কোনভাবে আমি তোমাদের আলাদা কর‍তে না পেরে মিথ্যে নাটক করি
সেই রাতে তোমাকে খাবার এর সাথে নেশার ওষুধ আমি মিশিয়ে ভিডিও টা করি আমাকে মাফ করে দাও রায়ান আমি তোমাকে পাওয়ার জন্য এসব করেছি প্লিজ আমাকে মাফ করে দাও

রায়ানঃ ছি মিতু তুমি এতটা নিচু মনের মানুষ আমার ভাবতে ঘৃনা হচ্ছে

মিতুঃ আমি যা করেছি শুধু তোমাকে পাওয়ার জন্য রায়ান

রায়ান কিছু না বলে বাসায় চলে আসে

লিভিং রুমে

রায়ানঃ বড় ভাবি

নিলাঃ হুম বল

রায়ানঃ ডির্ভোস পেপার রেডি কর

নিলাঃ কি বলছো এসব কার ডিভোর্স

রায়ানঃ আমার আর মিতুর

সবাই হতবাক রায়ানের কথা শুনে

আজিজঃ তোমার যখন যা মন চায় তাই করবে তখন

রায়ানঃ না আব্বু আমাকে মাফ করে দিও আমার জন্য এত কিছু হয়েছে কিন্তু এমন নিচু মনের একটা মেয়ের সাথে আমি থাকতে পারবনা

রায়ান সবাইকে সব বলল
রাবেয়া মিতুর গালে ঠাস করে চড় মারল

রায়ানঃ এর পরের কি তোমরা বলবে ওর সাথে থাকতে

আইরা সব কিছু শুনেও কিছু বলছেনা চুপ করে সব দেখছে
অন্যদিকে রায়েদ ভাবছে আইরা কি রায়ান এর কাছে ফিরে যাবে

রায়েদ চাইনা মিতু রায়ান আলাদা হোক সে আইরাকে হারাতে চায়না

রায়েদঃ ও যা করেছে তার ক্ষমা হয়না কিন্তু ও সব তোর জন্য করেছে। আর ওকে তো তুই বিয়ে করেছিস রায়ান বিয়ে টা ছেলেখেলা নয়

রায়ানঃ ভাইয়া আমি জানি বিয়ে কোন ছেলেখেলা নয় কিন্তু ওর মত প্রতারক এর সাথে কিভাবে থাকব আমি

আইরাঃ রায়ান তোমাকে মিতু ভালোবাসে বলেই এসব করেছে আর ওকে ডিভোর্স দিলেই আগের মত কিছু হবেনা
ওকে মাফ করে দিয়ে ওকে নিয়ে হ্যাপি থাকো

রায়ানঃ ওকে মাফ করব কি করে আইরা?? ও আমাকে তোমাকে আলাদা করে দিয়েছে।আমি আজো তোমাকে ভালোবাসি আইরা

রায়ান এর কথা শুনে রায়েদ আরও ভয় পেয়ে যায়

আইরাঃ আইরা নয় ভাবি বল।ভুলে যেওনা আমি তোমার ভাইয়ের বিবাহিত স্ত্রী।আর ওকে ডিভোর্স দিলে কি আমাকে পাবে?? কখনো না আমার একাকী জীবন যে আমার সাথে ছিল আমার পাশে ছিল আমাকে সার্পোট করেছে তাকে আমি কখনো ছাড়বনা।

রায়ানঃ আইরা

আইরাঃ হুম রায়ান আমি রায়েদ এর সাথে অনেক ভালো আছি তুমিও মিতুকে নিয়ে ভালো থাকো

রায়েদ আইরার কথা শুনে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল

কিন্তু আইরা মুখে রায়ান কে মিতু কে ক্ষমা করতে বললেও নিজে ক্ষমা করতে পারবেনা

দিন যেতে থাকল

আইরাকে সবাই খুব ভালো বাসে কিন্তু আইরা মিতুকে সহ্য করতে পারেনা এটা রায়েদ বুজে সিদ্ধান্ত নেই সে কানাডা চলে যাবে আইরা কে নিয়ে

বাসার সবার আপত্তি থাকলেও আইরার কথা ভেবে সবাই রাজি হয়ে যায়

পাসপোর্ট ভিসা কম্পলিট করে রায়েদ আইরা কানাডা পাড়ি দেই

বর্তমানে

আর ভাবতে পারছেনা আইরা

পাশে তাকাতেই রায়েদের ঘুমন্ত চেহারা দেখে ভাবে পাপা ভুল মানুষের হাতে আমাকে দিয়ে যায়নি পাপার শেষ কথা রাখতেই রায়েদ কে বিয়ে করেছিলাম কিন্তু আমি ওর প্যারসোনাল্টি আমাকে বাধ্য করেছে ওকে ভালোবাসতে

কিন্তু রায়ান এর জায়গায় রায়ান রয়ে গেছে

প্রথম ভালবাসা হয়তো কখনো ভোলা যায়না

চলবে।

আস্থা পর্ব-০৪

0

#আস্থা

পর্ব ৪

Farzana Akter Mithila

আরফানঃ আমার বোন কে নিয়ে এত মজা করনা দেখো একদিন সব ও এক হাতে সামলাবে

এইভাবেই খুনশুটি আনন্দের মধ্যে আইরার পরীক্ষা শেষ হয়

মহিনঃ আইরা তোমার সাথে কিছু কথা আছে

আইরাঃ পাপা কি কথা বল

মহিনঃ আমি তোমার বিয়ে ঠিক করেছি

আইরা বিয়ের কথা শুনতে অবাক হয়ে যায় মনে মনে ভাবতে থাকে পাপা আমাকে কিছু না জানিয়ে বিয়ে ঠিক করে ফেলল এখন কিভাবে বলি আমি রায়ান কে ভালবাসি

মহিনঃ আশা করি তোমার কোন আপত্তি নেই।ছেলে ভালো ফ্যামিলি ও ভালো

আইরাঃ পাপা আসলে

মহিনঃ আসলে কি?

আইরাঃ আমি এই বিয়ে করতে পারবনা

মহিনঃ আচ্ছা করোনা।পরে বলোনা তুমি বিয়ে করবা

আইরাঃ বলবো না

আন্নিঃ ছেলেটা কে দেখে রিজেক্ট কর

আইরাঃ দেখার প্রয়োজন নেই ভাবি

আন্নিঃ আফসোস করবি

আইরা চুপ

আন্নি একটা ছবি আইরার সামনে ধরল

আইরা ছবিটি দেখে অবাক-

মহিনঃ আন্নি ওকে জোর করিস না।আমি আজিজ কে বারন করে দিচ্ছি

আইরাঃ না পাপা আমি এই বিয়ে তে রাজি
বলেই মহিন কে জড়িয়ে ধরল

মহিনঃ আমি তো জানি আমার মেয়েটা রায়ান কে ভালবাসে অন্য কারোর সাথে আমি কিভাবে বিয়ে ঠিক করি।কিন্তু রায়ান এখনো জানেনা আজিজ ওর বার্থডে তে সারপ্রাইজ দিবে।ওকে বলিস না

আইরাঃ তুমি বেস্ট পাপা আই লাভ ইউ

বলেই আইরা নিজের রুমে চলে গেল

আইরা খুব খুশি নিজের ভালোবাসার মানুষের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে

আজ রায়ান এর বার্থডে

আইরা লাল টুকটুকে একটা শাড়ি পড়েছে সাথে হালকা সোনার গয়না কালো লম্বা চুল গুলো ছেড়ে দিয়ে কানের পাশে ২টো কাঠগোলাপ গুজে দিল
অসাধারণ লাগছে তাকে নিজে কে আয়নায় দেখে লজ্জা পেয়ে গেলো আর কিছু সময় পর রায়ান তার অনামিকা আংগুল এ আংটি পড়াবে ভাবতেই মুখে হাসি চলে আসল

আন্নিঃ কিরে তোর হয়েছে

আইরাঃ এইতো ভাবি হয়েছে চল

আন্নিঃ বাহ খুব সুন্দর লাগছে তোকে আজ তো রায়ান চোখ সরাতে পারবেনা
আইরাঃ ☺️☺
আন্নিঃ থাক আর লজ্জা পেতে হবেনা

আইরাঃ নিচে চল ভাবি

আন্নিঃ হুম চল

আইরা আর আন্নি নিচে আসতেই আরফান আন্নি কে জড়িয়ে ধরল
আন্নি সবার সামনে লজ্জা পেয়ে গেল

আইরাঃ ভাইয়া এটা লিভিং রুম

আরফান তাকিয়ে দেখে সবাই ওর দিকে তাকিয়ে আছে

আরফানঃ বোন আজ আমি খুব খুব খুশি

আন্নিঃ কেন আমাকে বিদায় করে দিবি বলে?

আরফানঃ হুর পাগলি
আমি বাবা হতে চলেছি

আন্নিঃ সত্যি

আরফানঃ এই দেখো রিপোর্ট

আন্নিঃ ৫ বছর এই দিন টার অপেক্ষাই ছিলাম আল্লাহ তুমি আমার ডাক শুনেছে

মহিনঃ আজ আমি সব থেকে বেশি খুশি আমার ২ ছেলে মেয়ে মন থেকে খুশি আজ আল্লাহ আমার পরিবারকে সারাজীবন এইভাবে খুশি রেখো

শিমলাঃ এখন থেকে সাবধানে থাকবি আর কোন কাজে হাত দিবিনা

আন্নিঃ আচ্ছা মামনি এবার চল

আরফানঃ হুম চল

সবাই রায়ান দের বাসার উদ্দেশ্য বের হলো

৩০ মিনিট এর মধ্যে চলে আসল রায়ান দের বাসায়

আইরা গাড়ি থেকে নেমে দেখে গোলাপ এর পাপড়ি দিয়ে রাস্তা সাজানো
আইরা অবাক হয়ে সবার দিকে তাকিয়ে আছে

আজিজঃ কি হলো মা আমার বাসার মেয়ে হয়ে আসবিনা??

আইরা কিছু বলল না খুশিতে চোখে পানি চলে এলো

রায়ান এর আম্মু এগিয়ে এসে আইরাকে বাসার ভিতরে নিয়ে এলো

কিছু সময় পর

রিয়াদঃ আসসালামু আলাইকুম আজ আমার ছোট ভাই রায়ান আহমেদ এর শুভ জন্মদিন এর এই ছোট আয়োজন আছে একটা গুড নিউজ

বলতেই রায়ান দরজার পাশে দাঁড়িয়ে বলল আমিও তোমাদের একটা গুড নিউজ দিতে চায়

সবাই রায়ান এর দিকে তাকালো আইরা এক দৃষ্টিতে রায়ান এর দিকে তাকিয়ে আছে অসম্ভব সুন্দর লাগছে রায়ানকে

রায়ানঃ আজ আমার জীবনের সব থেকে খুশির দিন আজ আমি আমার প্রিয় মানুষ টাকে নিজের করে নিয়েছি
মিতু প্লিজ কাম

মিতু দরজার পিছন থেকে রায়ান এর কাছে এসে ওর হাত ধরলো

রায়ানঃ আপনাদের সকল এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি এই হচ্ছে আমার ওয়াইফ মিতু আজ আমরা বিয়ে করেছি সকলে আমাদের জন্য দোয়া করবেন

রায়ান এর কথা শুনে আইরা পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে রইল

রায়ান আর আইরার এর পরিবার রায়ান এর এই কথা শুনে অবাকের শীর্ষে

আজিজ আহমেদ কিছু বলতে যাবে তখন আইরা বলল

আইরাঃ কংগ্রাচুলেশনস রায়ান আহমেদ এন্ড মিতু আফরোজ
প্লিজ আপনারা এসে কেক কাটুন সবাই অপেক্ষা করছে

রায়ান মনে মনে
পারলে আমাকে মাফ করে দিস আইরা কিন্তু আমার যে আর কিছু করার নেই আমি নিরুপায় হয়ে আজ মিতু কে বিয়ে করতে বাধ্য হলাম

রায়ানঃ ধন্যবাদ
মিতু চল কেক কাটি

রায়ান আর মিতু মিলে কেক কাটে
পরিবারের মানুষ গুলো নিরব হয়ে সব দেখছে
অতিথি গন হাতে তালি দিচ্ছে আর সেই তালির আওয়াজে আইরার বুক ক্ষত হয়ে চলেছে

অতিথি রা খাওয়া দাওয়া করে সবাই চলে গেছে

আহমেদ ম্যানশন এ চুপ করে দাড়িয়ে আছে ২পরিবারের লোক

আজিজঃ রায়ান তুমি আমাদের কাউকে না জানিয়ে এমন করবে আমরা কল্পনা করতে পারিনি

রায়ানঃ আমি মিতু কে ভালবাসি আব্বু আর মিতু অনেক ভালো মেয়ে ওকে তোমরা মেনে নিবে তাই

রাবেয়া(রায়ানের আম্মু) রায়ানের গালে থাপ্পড় দিয়ে বলল

রাবেয়াঃ কেন করলি এমন?? মেয়েটা কি দোষ করেছিল??

রায়ানঃ আম্মু তুমি ওর জন্য আমাকে মারলে?? ওর মত কেয়ার লেস মেয়েকে বিয়ে করা যায়? ও এখন নিজেকে সামলাতে পারেনা সংসার কিভাবে সামলাবে?? ওর সাথে জাস্ট টাইম পাস করেছি আসলে আমি মিতুকে ভালোবাসি আর আইরাকে বন্ধু হিসাবে রাখা যায় বউ হিসাবেনা।আর মিতু খুব ভালো নম্র ভদ্র সংসারী মেয়ে

রাবেয়াঃ কে কেমন আমাকে বুঝাতে আসিস না
মিতু তোর বাবা জানে তুই বিয়ে করেছিস

মিতুঃ জি ফুপি আব্বু জানে

আইরাঃ আন্টি যা হওয়ার হয়ে গেছে তুমি ওদের বরন করে নাও
রায়ান তো ঠিক বলেছে কোথায় মিতু আর কোথায় আমি

রাবেয়াঃ তুই চুপ কর

আইরাঃ আন্টি আমাকে তো মেয়ে মনে কর তাই না

রাবেয়াঃ মনে করিনা তুই আমার মেয়েই

আইরাঃ তাহলে ওদের মেনে নাও

আরফানঃ কি বলছিস তুই এত কিছুর পরও তুই ওর কথা ভাবছিস?? ওকে আমি তো আমি

আইরাঃ না ভাইয়া ওকে তুমি কিছু করবা না

আরফানঃ আইরা

আইরাঃরিয়াদ ভাইয়া তুমি আমাকে একটা হেল্প করবে?

রিয়াদঃ কি হেল্প বল

আইরাঃ আমাকে কিছু ফুল এনে দাও রায়ান এর বাসর ঘর সাজাতে হবে তো

মহিনঃ অনেক হয়েছে আইরা আর সহ্য করতে পারছিনা আমি

আইরাঃ আমি সহ্য করতে পারলে তোমরা কেন পারবেনা পাপা?? রায়ান এর কথা গুলো তো সত্তি তাইনা আমি তো ওর যোগ্য ছিলাম না আর আল্লাহ ওর ভাগ্যে আমাকে রাখেনি তাই ওর সাথে আমার বিয়ে হইনি
ওর ভাগ্যে যে ছিল তাকেই বিয়ে করছে

মহিনঃ বাসায় চল সবাই।

আইরাঃ না

মহিনঃ না মানে বাসায় চল

আইরাঃ আরে পাপা রায়ান আমার ভালোবাসা ছিল কিন্তু তার সাথে আমার বন্ধু ও ছিল ভালোবাসা শেষ হলেও বন্ধুত্ব শেষ হইনি আজকে ওর খুশির দিনে আমি ওর সাথে থাকব না এটা হয়না
বাসায় যাব একটু পরে ওর বাসর সাজিয়ে

আরফানঃ তুই কি পাগল হয়ে গেছিস??
আইরাঃ না তো ভাইয়া আমি একদম ঠিক আছি

আইরার জেদ এর কাছে সবাই হার মানে
বাধ্য হয় আইরার পাগলামি তে তাল মিলাতে

আইরা নিজে হাতে রায়ান এর বাসর সাজাচ্ছে

বাসর সাজিয়ে মিতুকে রায়ান এর রুমে দিয়ে আসল

রায়ান কে ডেকে রুমে যেতে বলল
আর বলল

আইরাঃ আজ আমার সাথে যা হল তার বিচার উপর এর বিচারক করবে একটা কথা মনে রাখবেন প্রকৃতি কখনো ক্ষমা করবে না।ভালো থাকবেন।

আইরা নিচে চলে আসে বুক ফেটে কান্না আসছে আইরার কিন্তু কাদতে পারছে না
মনে মনে আইরা বলল
আমি চায়না আমার জন্য তোমার কষ্ট পাও

মহিনঃ যা বলেছিস সবাই শুনেছে এবার বাসায় চল

আইরাঃ হুম পাপা যাব
আংকেল আন্টি ভালো থেকো নিজেদের খেয়াল রেখো
রাবেয়া আইরা কে জড়িয়ে ধরে বলে মা রে আমাকে মাফ করে দিস

আইরাঃ তোমাদের কোন দোষ নেই আন্টি আমি তোমাদের মেয়ে হয়েই না হয় থাকলাম

আজিজ মহিন এর কাছে গিয়ে হাত ধরে বলে
আজিজঃ আমাকে মাফ করে দিস দোস্ত আমার ছেলেটা এমন হবে আমি কল্পনা করতে পারিনি

মহিনঃ তোর কোন দোষ নেই
কিন্তু আমার মেয়েটার কি দোষ ছিলো

আইরাঃ পাপা এসব বাদ দাও বাসায় চল

আইরা সহ তার পরিবার বাসার উদ্দেশ্য রওনা হয়
কিন্তু মাঝ পথে ঘটে দুর্ঘটনা
গাড়ির ব্রেক ফেল করে
আরফান কোন ভাবে কন্ট্রোল করতে পারেনা
আইরাকে ওর পাপা গাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেই
আইরা একটা গাছের সাথে বাড়ি খেয়ে রাস্তায় পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে
জ্ঞান ফেরার পর যা শুনে আইরার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে

চলবে।।

আস্থা পর্ব-০৩

0

#আস্থা

পর্ব ৩

Farzana Akter Mithila

অতীত

আইরাঃ রায়ান দাড়া নাইলে তোর খবর আছে কিন্তু

রায়ানঃ আমারে কি পাগল পাইছিস আমি দাঁড়ায় আর তুই এসে কেলানি দিস

আইরাঃ আমি তোকে কিছু বলবনা দোস্ত তুই শুধু দাড়া

রায়ানঃ সত্যি তো

আইরাঃ হুম সত্যি

রায়ান দাঁড়িয়ে পড়ে
আইরা রায়ান এর কাছে এসে রায়ান এর হাতের চকলেট গুলো নিয়েয় পালিয়ে যায়

দুর থেকে দাঁড়িয়ে আজিজ আহমেদ আর মহিন রহমান দেখে মুচকি হেসে হাটতে শুরু করল

মহিন(আইরার বাবা)ঃ ছেলে মেয়ে ২টো কত বড় হয়ে গেছে তবুও ওদের ছেলে মানুষি গেল না।আমার পাগলি টা যে কবে বুজবে

আজিজঃ আরে কি বুজবি এখন যেমন আছে তেমনি ঠিক আছে বুজলি

মহিনঃ এমন বাদর মেয়েকে কে বাড়ির বউ করবে বল
ইন্টারে পরে তবুও দেখ রাস্তায় মধ্যে ওর পাগলামি

আজিজঃ তোর মেয়ে টা সরল সোজা। আর আমার বাসা থাকতে ওকে অন্য বাসায় বিয়ে দেয়ার চিন্তা করিস না

মহিনঃ কি বলছিস?

আজিজঃ হুম ওই দেখ

বলে আইরা আর রায়ান এর দিকে দেখালো

রায়ান আর আইরা মারামারি করতে করতে যাচ্ছে

আজিজঃ কি ভাবছিস ওরা শুধু বন্ধু?? না ওরা ২জন ২জন কে ভালোবাসে অনেক আগে থেকে

মহিনঃকি বলছিস তুই?? আমার ছোট পাগলি কাউকে ভালোবাসে

আজিজঃ হুম আমিও জানতাম না কিছুদিন আগে তোর ভাবি বলল

মহিন কিছু না বলে আজিজ কে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো

অন্যদিকে

রায়ানঃ ওই পিচ্চি বাসায় চলে এসেছি নাম

আইরাঃ চল না আজকে একটু ঘুরি

রায়ানঃ একদমি না
পরশু থেকে তোর এইচএসসি পরীক্ষা ভুলে গেছিস?? এখন বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে পড়তে বসবি
আমি রাতে কল দিব

আইরাঃ প্লিজ চলনা

রায়ানঃ একদমি না নামবি নাকি জোর করে নামাবো

আইরাঃ নামছি কিন্তু আর কখনো তোর গাড়ি তে উঠব না তুই খুব খারাপ

রায়ানঃ হুহ দেখা যাবে যা

আইরা মন খারাপ করে বাসার মধ্যে চলে আসলো

মহিন নিচে নামতে নামতে দেখে আইরা মন খারাপ করে আছে

মহিনঃ কি হয়েছে আমার মা টার

আইরাঃ কিছু হইনি

মহিনঃ কিছু না হলে তো মুখে হাসি থাকত কিন্তু আমার মেয়ের মুখে হাসি নেই কেন

আইরা কিছু না বলে মহিনকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বলে
আইরাঃ পাপ্পা বাদরকে বলছিলাম একটু ঘুরতে নিয়ে যেতে কিন্তু ও আমাকে উপদেশ নিয়ে চলে গেল

মহিনঃ তুই বাদর এর সাথে ঘুরতে যেতে চেয়েছিলি?? বাদর তোকে উপদেশ দিয়ে গেলো

আন্নিঃ বাবাই ওটা ওই বাদর না ওটা রায়ান বাদর( আইরার ভাবি)

মহিনঃ ওহ আচ্ছা বুজলাম।কি উপদেশ দিল

আইরাঃ পরশু থেকে পরীক্ষা তাই এখন থেকে পড়তে হবে

আচ্চা পাপা তুমি বল এখনো কত সময় বাকি একটু ঘুরতে নিয়ে গেলে কি হত

মহিনঃ বাদর টা খারাপ কিছু বলেনি মা

আইরাঃ পাপা তুমিও ওর মত বলছো

আন্নিঃ আইরা শোন ও তোর ভালোর জন্য বলছে,যদি তোর রেজাল্ট খারাপ হয় তখন সবাই তোকেই বলবে মাথা মোটা সেটা কি ভালো হবে বল

আইরাঃ কিহ আমি মাথা মোটা??

আন্নিঃ আমি তাই বলছি নাকি
যদি খারাপ রেজাল্ট হয় তখন সবাই বলবে বুজলি

আইরাঃ হুহ বুজছি দেখো আমার রেজাল্ট

আমার জন্য একটু কফি দিও তো আমি উপরে যাচ্ছি

আন্নিঃ আচ্ছা যা

মহিনঃ পাগলি একটা

আন্নিঃ বাবাই তোমাকে কফি দিব কি??

মহিনঃ হুম দিস

আন্নিঃ মেয়েটা কবে যে বড় হবে

মহিনঃ তোর ননদ বড় হয়ে গেছে অনেক আগেই

আন্নিঃ কি বলো

মহিনঃ হুম এবার ওকে বিয়ে দিয়ে দিতে হবে

আন্নিঃ কি বলো এগুলা ও নিজেকে এখন সামলাতে পারেনা শশুর বাড়ি কি ভাবে সামলাবে

মহিনঃ হুম।ওর পরীক্ষা হয়ে গেলেই এনগেজমেন্ট করে রাখব পরে বিয়ে দিব

আন্নিঃ কার সাথে

মহিনঃ রায়ান এর সাথে

আন্নিঃ কিহ। ২ বাদর একসাথে । ওরা তো দুজন সারাদিন মারামারি করবে

মহিনঃ বিয়ের পর ঠিক হয়ে যাবে

আন্নিঃ আইরা কি রাজি হবে

মহিনঃ হবে মানে হয়ে বসে আছে

আন্নিঃ মানেএএ

মহিনঃ হুম ও রায়ানকে ভালোবাসে।

আন্নিঃ আমি জানতে পারলাম না

মহিনঃ আমিও আজ জানলাম, ওকে কোন কষ্ট পেতে দেইনি আমি আর আমি বেচে থাকতে কোন কষ্ট পেতে দিব না।তুই তো জানিস মেয়েটা বড্ড অভিমানি

আন্নিঃ হুম বাবাই জানি তুমি বস আমি কফি করে আনি

মহিনঃ আচ্ছা যা

আন্নি কফি করতে গেল

মহিন আর শিমলার এর ২ছেলে মেয়ে আরফান আর আইরা।আন্নি আরফানের ওয়াইফ ।এই ৫ জন মিলেই আইরার পরিবার

মহিনঃ শিমলা কোথায় তুমি

আন্নিঃ বাবাই মামনি তো একটু তার বান্ধুবির বাসায় গেছে

মহিনঃ আমাকে না বলেই গেল যে

আন্নিঃ তোমার ফোন চেক কর

মহিন ফোন বের করতে একটা ঢোক গিললো

আন্নিঃ মামনি আসার সময় হয়ে গেছে কিন্তু বাবাই সাবধানে
এই নাও কফি আমি আইরা কি দিয়ে আসি

আইরার রুমে

আন্নিঃ আসব

আইরাঃ হ্যা এসো কিন্তু কবে থেকে পারমিশন নেয়া শুরু করলে

আন্নিঃ যখন জানতে পারলাম আমার ননদ বড় হয়ে গেছে

আইরাঃ মানে

আন্নিঃ হুম আমার ননদ বড় হয়ে গেছে প্রেম করছে

আইরাঃ,,,,,

আন্নিঃ থাক আর লজ্জা পেতে হবেনা।পরশু পরীক্ষা সেই খেয়াল আছে তো ভালো করে পড়

আইরাঃ হুম পড়ছি

পরীক্ষায় দিন সকাল ৬ টাই রায়ান আইরার বাসায় হাজির

মহিনঃ এত সকালে তুই কোন সমস্যা

রায়ানঃ না আংকেল আজ তো আইরার পরীক্ষার প্রথম দিন তাই আসলাম

মহিনঃ ওহ আচ্ছা গিয়ে দেখ আইরা কি করে

রায়ানঃ কেন ও পড়ছে না??

মহিনঃ হাহাহা

রায়ানঃ আংকেল হাসো কেন

মহিনঃওতো ঘুম

রায়ানঃ কিহ ওর আজ পরীক্ষা না পড়ে ও ঘুমাচ্ছে

মহিনঃ হুম
শিমলাঃ তোর আংকেল এর জন্য মেয়েটা এমন হইছে আদরে আদরে বাদর বানাইয়া ফেলছে

মহিনঃ এখন সব দোষ আমার

আরফানঃ রায়ান তুই গিয়ে দেখ

রায়ানঃ হুম ভাইয়া যাচ্ছি

রায়ানঃ আইরার বাচ্চা তোর আজ পরীক্ষা আর তুই এখনো ঘুমাচ্ছিস

কি হল উঠ আইরায়ায়ায়ায়ায়া

আইরাঃ সারাদিন জ্বালাস এখন স্বপ্ন এও জ্বালাসিস

রায়ানঃ স্বপ্ন মানে? আমি তোর সামনে দাঁড়িয়ে আছি

আইরা আবার ঘুমিয়ে গেছে

আইরার রুমে আন্নি এক জগ পানি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে

রায়ান পানি দেখে শয়তানি হাসি দিয়ে জগ হাতে নিয়ে পানি আইরার উপর ফেলে দিলো

আইরা উঠে চিৎকার দিয়ে বলল
আইরাঃ পাপ্পায়ায়া

রায়ানঃ আওয়াজ নিচে বেবি

আইরাঃ তুই এখানে?? আমার উপর তুই পানি ফেলেছিস? কেন

রায়ানঃ আজ তোর এক্সাম সেই খেয়াল আছে??

আইরাঃ হুম আছে তো

রায়ানঃ তাহলে এখন ঘুমাচ্ছিস কেন

আইরাঃ কয়টা বাজে

রায়ানঃ ৬টা ৩০

আইরাঃ মাত্র আর এখনি তুই ঘুম ভাঙালি?? এক্সাম তো ১০ টায় ৯ টায় বের হলেই হবে

রায়ানঃ পড়তে হবেনা??

আইরাঃ কি পড়ব??

রায়ানঃ বই পড়বি

আইরাঃ ওত পড়ে কি হবে??

রায়ানঃ পড়তে হবে মানে হবে যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে পড়তে বস
ভাবি আপনি ওর জন্য নাস্তা আনুন

আন্নিঃ আচ্ছা যাচ্ছি

আন্নি বের হতেই রায়ান আইরাকে জড়িয়ে ধরল

আইরাঃ ছাড় আমাকে সকাল সকাল ঘুম এর বারোটা বাজিয়ে দিলি

রায়ানঃ তোর ভালোর জন্য তো

আইরাঃ হুহ খুব ভালো হইছে আমার

রায়ানঃ হইনি তবে হবে যা ফ্রেশ হয়ে নে

আইরা বিড়বিড় করতে করতে ওয়াসরুমে চলে গেল

রায়ান মনে মনে ভাবছে
মেয়েটা এত কেয়ারলেস কেন আজ এক্সাম তবুও কোন গুরুত্ব নেই, সব সময় কি কেয়ারলেস থাকলে কি হয়
নিজেকে নিয়ে একটু ভাব্বে না কখনো

আইরাঃ ওত ভাবতে হবে না আমাকে নিয়ে আমি জানি আমাকে ভাবার জন্য কেউ আছে

রায়ানঃ তোকে কে বলেছে আমি তোকে নিয়ে ভাবছি

আইরাঃ আমার মন বলছে

রায়ানঃ হুহ আইছে মন আলা
পড়তে বস

আইরাঃ হুম বসছি

৯টা

আইরাঃ মামনি পাপ্পা আমি যাচ্ছি দোয়া করো
ভাইয়া ভাবি গেলাম

সবাই একসাথে বলল সাবধানে যাস আর ভালো ভাবে পরীক্ষা দিস

মহিনঃ রায়ান ওকে একটু ভালো ভাবে বুঝিয়ে দিও

রায়ানঃ ওকে আংকেল তুমি চিন্তা করোনা

আইরাঃ আমি কি কিছু বুঝিনা? ওর কিছু বুঝায় দিতে হবেনা

রায়ানঃ বের হওয়ার সময় ঝামেলা করিস না

আইরাঃ কিহ আমি ঝামেলা করছি? যাহ যাব না তোর সাথে ভাইয়া আমাকে নিয়ে চল

রায়ানঃ ঢং কম করে চল দেড়ি হয়ে যাচ্ছে

আইরাঃ আমি যাবনা তোর সাথে

শিমলাঃ আইরা😤😤

আইরাঃ পাপা

মহিনঃ আমি কিছু বলতে পারবনা তোর মা যা বলে শোন

রায়ানঃ যাবি নাকি মার খাবি

আইরাঃ যাচ্ছি যাচ্ছি
বলে বাসা থেকে বের হয়ে গেল

শিমলাঃ এই পাগলকে নিয়ে কি করব আমি

আন্নিঃ তোমাকে কিছু করতে হবেনা মামনি যা করারা বাবাই করবে

শিমলাঃ কি করবে তোর বাবাই

মহিনঃ ওদের ৪ হাত এক করে দিব

শিমলাঃ ওদের মানে

আন্নিঃ রায়ান আইরার

শিমলাঃ ২বাদর একসাথে?? আমার বান্ধুবি নিশ্চিত পাবনা চলে যাবে

আরফানঃ আমার বোন কে নিয়ে এত মজা করনা দেখো ও একদিন সব এক হাতে সামলাবে

চলবে।।

আস্থা পর্ব-০২

0

#আস্থা

পর্ব ২

Farzana Akter Mithila

এই বলেই আইরা রুম থেকে বেড়িয়ে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলল

আইরা নিচে এলো

নিলাঃ এইতো তুমি চলে এসেছো আমি যাচ্ছিলাম তোমাকে ডাকতে

আইরাঃ কেন ভাবিপু

নিলাঃ আম্মু তোমাদের জন্য রান্না করছে গরম গরম খাওয়ার জন্য ডাকতে বলল

আইরাঃ এই গরমের মধ্যে আম্মুর কিচেন এ যাওয়ার কি দরকার ছিল

নিলাঃ আমাদের এইখানে তো সব সময় এমন গরম থাকে

আইরাঃ হুম,নুহাস কোথায় ওকে তো দেখলাম
না

নিলাঃ ও ঘুমিয়ে পড়ছে একটু অসুস্থ

আইরাঃ ওহ।রাইদার খিদে পেয়েছে ওর জন্য একটু খাবার এনে দিবা

নিলাঃ হুম আনছি তুমি বস

নিলা উঠতে গেলেই মিতু এসে বলে ভাবি রাইদা কে আমার কাছে দিন আমি খাইয়ে দিচ্ছি

আইরাঃ ও কিন্তু খুব দুষ্ট খেতে চায়না জোর করে খাওয়াতে হয় পারবে তো

মিতুঃ পারব ভাবি দাও

মিতু রাইদা কে নিয়ে তার রুমে গেল খাওয়াতে

নিলা মিতুর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলল মেয়েটা এত বাচ্চা ভালোবাসে কিন্তু আল্লাহ ওকে একটা বাচ্চা দেইনা

আইরাঃ প্রকৃতি কাউকে ছাড় দেইনা,যে যা করে তার ফল সে পাই কিন্তু আমরা হয়তো বুজতে পারিনা,ও আমার থেকে কেড়ে নিয়েছিল আল্লাহ ওর থেকে কেড়ে নিয়েছে

আইরা আনমনে বলল

আম্মুঃ মারে জানি সব কিছু আগের মতো করা সম্ভব না কিন্তু আমার তো ইচ্ছা হয় তোদের নিয়ে থাকতে

আইরাঃ তোমার জন্য তো এসেছি আম্মু

আম্মুঃ আর যাবিনা তো

আইরাঃ ফিরে তো যেতেই হবে

আম্মুঃ কেন যেতে হবে?? একবারে কি চলে আসা যায়না

আইরাঃ না আম্মু কিভাবে আসব বল? তোমার ছেলের জব ওখানে আমিও জব করি ওখানে

আম্মুঃ তোর আব্বুর কম আছে? তোরা সারাজীবন বসে খেতে পারবি

আইরাঃ এটা হয়না
(তুমি কেন বোঝনা আম্মু আমি কি করে থাকব?? ১০ বছর পর ও ওকে দেখে ক্ষতটা জেগে উঠেছে সহ্য করতে পারছিলাম না বলেই তো বিদেশ এ পাড়ি দিয়েছিলাম তবুও পারিনি তাকে ভুলতে)

আম্মুঃ যা খুশি কর

জানি আম্মু তুমি কষ্ট পাচ্ছো কিন্তু আমার যে কিছু করার নেই আমি চাইলেও পারবনা তোমাদের সাথে থাকতে আমার অতীত আজও আমার পিছু ছাড়েনি
মনে মনে বলল আইরা

আম্মুঃ নিলা সবাইকে ডাক দাও রাতের খাবার খাওয়ার জন্য

নিলাঃ আচ্ছা
আম্মুঃ রহিমা আমার সাথে কিচেনে আয় খাবার গুলো নিয়ে আসবি টেবিলে

রহিমাঃ আপা আপনি যান আমি আইতাসি

আম্মুঃআচ্ছা তারাতারি আই

রহিমাঃ আইচ্ছা

রহিমাঃ আপনারে আমি কি কইয়া ডাকমু??মেডাম??

আইরাঃ কেন ভাবিপু,মিতু কে কি বল

রহিমাঃ বড় আম্মা আর ছোট আম্মা কই

আইরাঃ তাহলে আমারে মেজো আম্মা বলবা

রহিমাঃ আপনি কিছু মনে করবেন না তো

আইরাঃ না
রহিমাঃ আইচ্চা মেজো আপা আমি এহন যায়

আইরাঃ হুম যাও

আইরাঃ রায়েদ এখনো নিচে এলে না

রায়েদঃ খুব টায়ার্ড লাগছে

আইরাঃ কফি বানায় দিবো?

রায়েদঃ না তুমিও তো জার্নি করে এসেছো তোমার ও খারাপ লাগছে

আইরাঃ না আমার খারাপ লাগছে না আব্বু আম্মুকে দেখে সব খারাপ লাগা চলে গেছে

রায়েদঃ হুম

আইরাঃ নিচে চল আম্মু রান্না করছে নিজ হাতে

রায়েদঃ যাক ১০ বছর পর মন ভরে খেতে পারব

আইরাঃ এতদিন কি মন ভরতো না??

রায়েদঃ তোমার হাতের রান্না খেয়ে মন ভরে??

আইরাঃ খাইতে কেন নিজে রান্না করে খেতে

রায়েদঃ নিজে রান্না করলে তো খেতাম মন ভরে সময় পেতাম না তাই

আইরাঃ তাই নাকি

রায়েদঃ হুহ তাই চল নিচে যাই

আইরাঃ চল

রায়েদ আর আইরা নিচে গিয়ে দেখে সবাই টেবিলে বসে আছে

আব্বুঃ তারাতাড়ি আয়, খুব খিদে পেয়েছে

আইরাঃ আব্বু তুমি খেয়ে নিতে

আব্বুঃ তোর আম্মু এখনো কাউকে খেতে দেইনি

আইরাঃ কেন আম্মু

আম্মুঃ তোরা টেবিলে ছিলিনা বলে এখন এসেছিস এখন দিচ্ছি

আইরাঃ দাও আমি সবাইকে সার্ভ করি

আম্মুঃ না না তুই বস আমি দিচ্ছি

আইরাঃ না আম্মু তুমি বস আমি দিচ্ছি

আইরা আর কিছু বলতে না দিয়ে খাবার সার্ভ করা শুরু করল

আজিজ আহমেদ (আইরার শশুর) আর দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে মনে মনে বলল
কত কষ্ট লুকিয়ে মেয়েটা হাসি মুখে সবার সাথে কথা বলছে

হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠল

আব্বুঃ এই অসময়ে কে এলো

রিয়াদঃ আমি দেখছি আব্বু

আব্বুঃ আচ্ছা যা।তোমরা খাওয়া শুরু কর

আম্মুঃ আইরা বস এখানে আমি তোকে খাইয়ে দিচ্ছি

রায়েদঃ এখন আর আমার কোন মূল্য নাই তাই না সব আদর ও পাবে

আম্মুঃ হ্যা ও পাবে
বলে আইরার মুখে খাবার দিলো
আইরা পরম যত্নে খাবার খাচ্ছে আর তার নিজের মায়ের কথা ভাবছে

১১ বছর আগে তার মামনি এইভাবে খাইয়ে দিত

আব্বুঃ রিয়াদ কে এসেছে

রিয়াদ কিছু বলল না চুপচাপ নিজের রুমে চলে গেল

আম্নুঃ হুট করে চলে গেল কেন ও

আব্বু পিছনে তাকাতেই দেখে মিতুর আব্বু আম্মু এসেছে তার হাসি মুখে রাগ ভেসে উঠল

আইরা ওদের কে দেখতেই ছুটে উপরে চলে গেল

আব্বুঃ তোমরা এখন কেন এসেছো

মিতুর আব্বু ঃ মেয়ের বাসায় এসেছি মেয়েকে দেখতে

আব্বুঃ মিতুউউ

মিতুঃ আব্বু আ আ আসলে আসলে

আম্মুঃ কি আসলে ওরা কেন এসেছে??

মিতুঃ আসলে ওরা যখন জানতে পারে রায়েদ ভাইয়ারা এসেছি তখন থেকে আসতে চেয়েছি তাই আসতে বলছিলাম

আব্বুঃ তোমাদের জন্য মেয়েটা কিছু না খেয়েই চলে গেল

রায়েদঃ মিতু আর কত কষ্ট দিতে চাও আইরাকে?? মেয়েটাকে কত কষ্ট করে বুজিয়ে এনেছিলাম বাংলাদেশ কিন্তু শেষ রক্ষা হলোনা।
এই বলে রায়েদ উপরে চলে গেল

রায়ান রাগে কটমট করতে করতে নিজের রুমে চলে যায়

আম্মুঃ মিতু এবার খুশি তো তুই??

আব্বুঃ কেন এসেছো তোমরা আর কি চাও,??

মিতুর আব্বু ঃ আপা আমি বুঝতে পারিনি আমরা আসলে এমন হবে

আম্মুঃ নিলা আমি উপরে যাচ্ছি তোমাদের খাওয়া হলে সব গুছিয়ে রাখতে বল রহিমাকে

নিলাঃ আমার খিদে নেই আম্মু খাবনা

মিসেস আহমেদ কিছু না বলে নিজের ঘরে চলে গেলেন

নিলা বসে আছে

আব্বুঃ আমার ও খিদে নেই বড় বউমা তুমি গিয়ে ঘুমিয়ে পড়

নিলাঃ আচ্ছা আব্বু

অন্য দিকে আইরা রুমে গিয়ে কান্না করতে থাকে রায়েদ রুমে এসে দেখে ফ্লোরে বসে হাটুর মধ্যে মাথা গুজে কান্না করছে আইরা

রায়েদ আইরার পাশে গিয়ে ওর কাধে হাত রাখতেই আইরা রায়েদ কে জড়িয়ে ধরে

রায়েদঃ আইরা শান্ত হও

আইরা কিছু না বলে কান্না করেই যাচ্ছে

রাইদাঃ পাপা মাম্মা কাদতে তেন দাদান তি মাম্মালে বতা দেতে

রায়েদঃ না মা মাম্মাকে ভুত ভয় দিয়েছে তাই

রাইদাঃ মাম্মা তুমি আমাল কাতে আত ভুত কে আমি তালিয়ে দেব

রায়েদঃ আইরা কান্না কর না রাইদা আছে

আইরা কান্না থামাতে চায় কিন্তু হেচকি থামছেনা

রায়েদ রুম লক করে আইরার কাছে এসে দেখে আইরা একদম চুপ হয়ে গেছে

রায়েদঃ আইরা উপরে গিয়ে শুয়ে পড়

আইরাঃ রায়েদ তুমি তো বলেছিলে ওরা আসবেনা তবে কেন এসেছে

রায়েদঃ আমি জানিনা

আইরাঃ আমার জন্য টিকিট এর ব্যবস্থা কর আমি চলে যাব

রায়েদঃ আজি তো আসলাম আইরা

আইরাঃ তুমি থাকো আমি তোমাকে যেতে বলছিনা

রায়েদঃ আইরা

আইরাঃ আমি পারবনা আমার পরিবারের খুনিকে চোখের সামনে দেখতে

রায়েদঃ ওরা চলে যাবে তো

আইরাঃ যাবে আবার আসবে আমার মেয়েকেও কেড়ে নিবে না না আমি এটা হতে দিবনা
আমি চলে যাব

রায়েদঃ শান্ত হও আইরা ওরা আর কিছু করবেনা

আইরা কিছু না বলে বিছানায় শুয়ে পড়ল

রায়েদ ও পাশে গিয়ে শুয়ে আইরাকে বুকের উপর শোয়াল

আইরা রায়েদ এর বুকে শুয়ে অতিত এ ডুব দিল

চলবে।।

আস্থা পর্ব-০১

0

আস্থা
পর্ব ১
Farzana Akter Mithila

১০ বছর পর দেশে ফিরেই যে প্রাক্তন এর দেখা পাবো ভাবতে পারিনি ভেবেছিলাম সে হয়তো আসবেনা কিন্তু সবার সাথে সেও দাঁড়িয়ে আছে। ওহ সে তো শুধু আমার প্রাক্তন নয় সে আমার হাসবেন্ড এর ছোট ভাই।
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম হঠাৎ রায়েদ (আমার হাসবেন্ড) ঘাড়ে হাত দিয়ে বলল কি হল চল

আমি আমার মেয়ে রাইদা কে নিয়ে এগিয়ে গেলাম রায়েদ পিছনে রায়ান এর সাথে কথা বলতে বলতে আসছে
আমাকে দেখতে আম্নু(আমার শাশুড়ী) এগিয়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে অভিমানী কণ্ঠে বলল

আম্মুঃ এত দিন পর আমাকে দেখতে ইচ্ছে হলো??

আমিঃ রোজ এ তো দেখতাম আম্মু

আম্মুঃ এই দেখা সেই দেখা এক না রে পাগলি তখন চাইলেও তোকে ছুতে পারতাম না কিন্তু এখন পারব

আমিঃ হুম আম্মু এইতো চলে এসেছি এখন যত ইচ্ছা ছুয়ে দাও
রিয়াদ ভাইয়া রাইদা কে কোলে নিয়ে বলল

রিয়াদঃ এখানে না বাসায় গিয়ে যত খুশি গল্প করো তোমরা এবার চল

আমিঃ হুম ভাইয়া চলুন

গাড়ি তে গিয়ে বসতেই রায়েদ আর রায়ান চলে এলো
গাড়ি চলতে শুরু করেছে

আমি রায়েদ এর দিকে তাকিয়ে আছি সে হয়তো কিছু বুজতে পেরে আমার হাত টা তার হাতের মধ্যে নিয়ে ইশারায় বলল আমার উপর আস্থা রাখো সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে
আমি তার কথা শুনে একটা স্বস্তির নিশ্বাস নিলাম

বাসায় যেতে যেতে আপনাদের সাথে পরিচিত হয়ে যায়

(আমি আইরা তাসনিম পেশায় ফ্যাশন ডিজাইনার
আমার হাসবেন্ড রায়েদ আহমেদ আর রাইদা হচ্ছে আমার আর রায়েদ এর কলিজা আমাদের একমাত্র মেয়ে।
রায়েদ রা ৩ ভাই
রিয়াদ ভাইয়া বড় রায়েদ মেজো আর রায়ান ছোট ওদের কোন বোন নাই।

বাকিটা পরে জানবেন বাসায় চলে এসেছি

গাড়ি থেকে নেমে বাসা টার দিকে সব সময় আল্লাহর কাছে চাইতাম আমি এই বাসার বউ হব হ্যা হয়েছি কিন্তু যাকে নিয়ে স্বপ্ন ছিলো যার হাত ধরে এই বাসায় ঢোকার কথা ছিলো সে অন্য কাউকে বউ করে নিয়ে এসেছিল
সেদিন আমিও লাল টুকটুকে শাড়ি পড়েছিলাম,সুন্দর করে সেজেছিলাম ৫ বছরের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছিল আমার কিন্তু আমি জানতাম না আমার সাথে কি হতে চলেছে

হঠাৎ আম্মুর ডাকে অতিত থেকে ফিরে এলাম

বাসার ভিতরে গেলাম
আমাকে দেখেই মিতু (রায়ান এর বউ)এসে জড়িয়ে ধরল আমাকে

মিতুঃ ভাবি কেমন আছেন

আমিঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি তুমি কেমন আছো??

মিতুঃ এইতো আছি, ভাবি আপনি বসুন আমি আমি কফি করে আনি

আমিঃ বসো তো এখনি কফি করতে হবেনা

মিতুঃভাবি আপনি কি এখন আমার উপর রেগে আছেন??

আমিঃ তোমার উপর কেন রেগে থাকব

মিতুঃ আমার জন্য তো আপনি

মিতুকে আর কিছু বলতে না দিয়ে আমি বললাম

আমিঃ পুরাতন কথা মন থেকে বাদ দাও ভুলে যাও অনেক গুলো বছর চলে গেছে বুজেছো এখন এসব কথা মন থেকে ঝেড়ে ফেলো

মিতুঃ কিন্তু

আমিঃ কোন কিন্তু নয়
আচ্ছা আমরা কোন রুম এ থাকব??

নিলাঃ তোমাদের আগের রুমেই থাকবে

ভাবিপু(রিয়াদ ভাইয়ার বউ)এসে আমার পাশে বসতে বসতে বলল

আমিঃ ওহ আচ্ছা।
কেমন আছো??

নিলাঃ এইতো ভালো আছি
জার্নি তে কোন প্রব্লেম হইনি তো

আমিঃ না না কোন প্রবলেম হইনি,আজ কোর্ট এ যাওনি??

নিলাঃ কি বলছো এত বছর পর এসেছো আর আমি কোর্টে যাব??

আমিঃ এসেছি তো তোমারা তো যাওনি কখনো

নিলাঃ কিভাবে যায় বল

আমিঃ হুম

পিছন থেকে কেউ বুড়ি বলে ডাকতেই ছুটে গেলাম তার কাছে

আব্বু বলে জড়িয়ে ধরলাম তাকে

আব্বুঃ এতদিন পর অভিমান ভাংলো

আমিঃ তোমাদের উপর কোন অভিমান নেই আব্বু, সব কিছু হারিয়ে তোমাদের কাছেই তো ঠাই মিলল

আব্বু: আমাদের জন্য তুই সব হারিয়েছিস

আমিঃ না আব্বু তোমাদের দোষ ছিলো না দোষ আমার ভাগ্য এর ছিলো এই জন্য সব কিছু একসাথে হারিয়েছিলাম
আচ্ছা পুরাতন কথা বাদ দাও,কেমন আছো বল

আব্বুঃ একটু আগ পর্যন্ত ভাল ছিলাম না তোকে দেখে অনেক ভালো হয়ে গেছি

রায়েদঃ সব আদর ওর আর আমি বুজি পানির জলে ভেসে এসেছি

আব্বুঃ তোরে তো সত্যি নদীর পাড় থেকে কুড়িয়ে এনেছিলাম

রাইদাঃ আব্বু তত্তি তোমালে দাদান পানিল তেতে তুরাই পাইতিলো

রিয়াদঃ হুন মাম্না ওকে আমরা কুড়িয়ে পেয়েছিলাম

ভাইয়ার কথা শুনে বাসার সবাই হেসে উঠল

সবার এই হাসি দেখে মন টা ভরে গেল
আমার কপালে এত সুখ সইবে তো??

রায়েদঃ উপরে চল ফ্রেশ হয়ে একটু রেস্ট নিয়ে তাই গল্প কর না হলে শরিল খারাপ করবে
আমিঃ হুম চল
রায়েদঃ রায়ান ব্যাগ গুলো একটু রুমে নিয়ে
রায়ানঃ তোরা যা আমি নিয়ে আসছি

রাইদাঃ আমালে নিয়ে তলো আমাল থুব দরম লাগতে

আমিঃ হুম মাম্না চল
রায়েদ রাইদা কে উপরে যাচ্ছে আমি ওর পিছনে যাচ্ছি
রুমে ঢুকে অবাক হয়ে গেলাম
রুম টা পুরো আমার মনের মত করে সাজানো

দেয়ালে আমাদের ৩জনের ছবি পেইন্ট করা
আরেক দেয়ালে আমাদের বিশেষ মুহূর্তের কিছু ছবি দিয়ে সাজানো

কিন্তু এগুলো কে করেছে এটাই ভাবছি

রাইদাঃ মাম্মা দেতো এই তবিটা তত্ত তুন্দর

আমিঃ হুম মা খুব সুন্দর, তোমার পছন্দ হয়েছে রুম??

রাইদাঃ হ্যা তিন্ত থুব গলম

আমিঃ এসি অন করে দিয়েছি সোনা

রায়েদঃ মাম্না তুমি এইখানে থাকবে??

রাইদাঃ হ্যা পাপ্পা থাতব,দাদান,দিতা,কাকায় অলেক ভালো

আমিঃ রায়েদ কি বলছো আমরা শুধু বেড়াতে এসেছি

রায়েদঃ পুরোপুরি কি থাকা যায়না আইরা?? ১০ বছর চলে গেছে এখন অতীত নিয়ে কেন ভাব?? তুমি কি আমাকে নিয়ে হ্যাপি নও আইরা??

আমিঃ তুমি আমাকে ভুল বুঝোনা রায়েদ, আমি তোমাকে নিয়ে হ্যাপি আর তোমাকে নিয়েই থাকতে চায় কিন্তু এইখানে আমি থাকতে পারবনা রায়েদ।এই শহর টা আমার থেকে সব কিছু কেড়ে নিয়েছিল নতুন করে আমি তোমাকে আর আমার রাইদা কে হারাতে চায়না

রায়েদঃ আইরা যা হওয়ার হয়ে গেছে। এখনো ভয় পেলে হবে??
আমরা মারা যাব জেনেও তো দুনিয়ায় এসেছি তাহলে কেন এত ভয় পাও

আমিঃ তোমাদের হারানোর ভয় পায় রায়েদ সব কিছু হারিয়ে একা হয়ে গেছিলাম তখন কিভাবে আমার দিন যেত আমি জানি একমাত্র
এই শহর টাকে বড্ড ভয় করে

রায়ানঃ ভাইয়া আসব

রায়েদঃ হুম আয়।আইরা তুমি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও

হুম যাচ্ছি
বলে আইরা ল্যাগেজ থেকে কাপড় বের করে ওয়াস রুমে চলে গেল

রায়ানঃ ভাইয়া কিছু মনে না করলে একটা কথা বলি?

রায়েদঃ হুম বল

রায়ানঃ আমি তোমাদের কথা সব শুনেছি।জানি আড়াল থেকে কিছু শোনা ঠিক না কিন্তু না শুনে নিজেকে সামলাতে পারিনি

রায়েদঃ সমস্যা নেই

রায়ানঃ তোরা কি আবার কানাডা ফিরে যাবি??

রায়েদঃ আইরা ফিরে যেতে চাই কিন্তু আমি থাকতে চায়।

রায়ানঃ আইরা কে সবাই মিলে বোঝালে কি ও থাকবেনা

রায়েদঃ আমি জানিনা রে ভাই
ওকে অনেক বুঝিয়েছি তবুও ওকে মানাতে পারিনি

রায়ানঃ আইরা এখনো আমাকে মাফ করতে পারিনি ভাইয়া,আমার জন্য ও হয়তো থাকবেনা

ওকে বলিস ও যদি চায় তবে আমি মিতু কে নিয়ে অন্য কোথাও চলে যাব

রায়েদঃ রায়ান তুই ভুল বুঝছিস ও তোর জন্য না
ও এই শহর কে ভয় পায় সেই এক্সিডেন্ট এর পর থেকে এখনো রাতে ভয় পেয়ে চেচিয়ে উঠে

রায়ানঃ সব কিছুর জন্য আমি দায়ী ভাইয়া পারলে আমাকে মাফ করে দিস

রায়েদঃ নিজেকে দোষ দিস না।যা হওয়ার হয়ে গেছে বাদ দে

রায়ান আর রায়েদ এর কথা মধ্যে আইরা ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে বলল

আইরাঃ কি কথা হচ্ছে এখানে

রায়েদ রায়ান কে ইশারায় চুপ থাকতে বলল

রায়েদঃ ও বলছে যে রুম পছন্দ হয়েছে কিনা

আইরাঃ আমার রুম টা খুব পছন্দ হয়েছে কে সাজিয়েছে

রায়ানঃ মিতু

আইরাঃ ওহ খুব সুন্দর হয়েছে

আচ্ছা তোমরা কথা বল আমি রাইদা কে নিচে যায়

রায়েদঃ আচ্ছা যাও

আইরাঃ নিচে যাওয়ার সময় গিফট গুলো নিয়ে এসো

এই বলেই আইরা রুম থেকে বেড়িয়ে একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলল

চলবে???