বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1182



Angry_Husband Season_2_ Part_29

0
Angry_Husband Season_2_ Part_29
Angry_Husband Season_2_ Part_29

Angry_Husband
Season_2_ Part_29
Written by Avantika Anha
আরাভ- আস্তে খাও রে।
আমি- আপনি চুপ করুন। এতোদিন পর ফুচকা খাচ্ছি। আপনি কি বুঝবেন? আমার মতো আলাদা তো ছিলেন না।
আরাভ- হুম বুঝছি তাও আস্তে খাও নইলে গলায় লাগবে।
আমি- লাগবে না।
.
খেয়ে খেয়ে প্রায় অনেক গুলো ফুচকা খেয়ে ফেললাম। আরাভ পানি এগিয়ে দিলো পানি খেলাম।
আরাভ- আনহা একটা কথা বলবো?
আমি- হুমম বলুন।
আরাভ- আমি তো জানতামই না আমার বউ এতো বড় পেটুক।
আমি- কি বললেন ?
আরাভ- পেটুক বললাম পেটুক।
আমি- এই ভালো হচ্ছে না কিন্তু আপনাকে আমি মাইরালাম।
আরাভ- আহা পেটুক বউ আমার।
আমি- আমি পেটুক না ওকে?
আরাভ- পেটুক না হলে এতোগুলো ফুচকা কে একা খায়?
আমি- এতোদিন পর হলে যে কেউ খাবে আর ওটা যদি কোনো মেয়ে হয় তাহলে এমনি হবে।
আরাভ- তাও সবশেষে তুমি পেটুক।
আমি- ভালো হচ্ছে না কিন্তু।
আরাভ- হুহাহা আনহা পেটুক।
আমি- ওই angry husband আপনাকে আমি কুচি কুচি করবো আফ্রিকান ইঁদুর কোনেকার।
আরাভ- হায়য়য়য়।
আমি- কি?
আরাভ- এতোদিন পর এই নাম তোমার মুখে শুনে আমি তো পুরাই দিওয়ানা।
.
আমি ওর দিকে তাকায় ভেংচি দিলাম।
.
সেদিন রাতে,,,,
আমি ভাবতেছি কি করা যায়? মাফ করবো কি না? মন বলছিলো মাফ কর, আবার ব্রেইন বলছিলো যে এতো কষ্ট দিলো এতো সহজে মাফ না করতে। কি করবো কিছুই বুঝছিলাম না। আনভীর ঘুমোচ্ছিলো। আনভীরের কথা ভাবছিলাম, ওরও বাবা প্রয়োজন। তাহলে কি মাফ করে দিবো ওকে। কিছু মাথায় আসছিলো না। আরাভ ঘরে আসলো।
আরাভ- ঘুমাইছে বাবু?
আমি- হুমমম।
আরাভ- তুমি ঘুমাবা না?
আমি- ঘুমাচ্ছিলাম এখনি।
আরাভ- বুঝি বুঝি আমার অপেক্ষা করছিলে।
আমি- একদম না।
আরাভ- ম্যাম আমি জানি আপনি কেমন সো মিথ্যা বলে লাভ নাই।
আমি- হাহা যদি জানতেন সেদিন তাহলে মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে আমাকে নিজের থেকে দূর করতেন না। এমনকি বুঝতেন যে আমি সব পরিস্থিতিতেই আপনার‌ পাশে থাকতে চাই।
.
আরাভ আর কিছু বললো না। শুয়ে পড়লো। পরেরদিন খবর এলো আরাভের মা নাকি অনেক অসুস্থ। আরাভ আর অপেক্ষা করলো না। আমাকে আর আনভীরকে নিয়েই হসপিতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। দেখলাম এক ক্যাবিনে মা আছেন।
.
আমাকে দেখেই মা ইশারায় ডাকলেন। সবার কাছে শুনলাম হালকা নাকি চিন্তার কারণে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছেন উনি।
.
আমি- আসসালামুয়ালাইকুম।
মা- (ইশারায় সালাম নিলো)
আমি- (আনভীরকে দেখালাম) আপনার নাতি।
মা- (আনভীরের মাথায় হাত রাখলো। দু ফোঁটা পানি পড়লো তার চোখ দিয়ে)
.
পরিবারের বাকীরাও আমাকে বুঝানোর চেষ্টা করলো। আনভীরকে কোলে নিয়ে আদর করতে লাগলো। তবুও আমি কারো প্রশ্নের জবাব দিলাম না। মা কিছুটা সুস্থ হয়ে বললো আমাকে তাদের ছেড়ে যেন না যাই। কিছু বলতে পারলাম না। তাকে বললাম, “হুম আমি আর যাবো না।”
.
মা কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে এলো। রাতে আরাভ এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
আমি- ছাড়ুন।
আরাভ- কেনো গো?
আমি- আমি মায়ের কথায় এখানে আছি। আপনাকে আমি এখনো মাফ করি নি মাথায় রাখবেন।
.
আরাভ কিছু না বলে আমাকে ছেড়ে দিলো।
আমি- হুমমম।
.
আরাভ রাগে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। আরাভের মাঝে এখনো রাগ আছে এই জিনিসটা দেখে আমি মুচকি মুচকি হাসলাম। কারণ আমি ঠিক করছি আরাভকে মাফ করবো কিন্তু এতো সহজে না।
.
রাতে আরাভ ঘরে এলো,
আরাভ- আনহা।
আমি- কন।
আরাভ- আমি না।
আমি- কি?
আরাভ- তোমাকে অন্নেক ভালোবাসি।
আমি- আপনি কি ড্রিংক করেছেন?
আরাভ- হুমমম। তুমি আমাকে এতো কষ্ট দেও কি করবো বলো?
আমি- তাই বলে ড্রিংক?
আরাভ- হুম খাবা তুমি।
আমি- আপনার হুশ নাই এখন। আসুন শুয়ে পড়ুন।
আরাভ- না আগে তুমি বলো তুমিও আমাকে ভালোবাসো।
আমি- না বলবো না।
আরাভ- আমিও শুবো না।
আমি- আপনি শুয়ে পড়ুন প্লিজ।
আরাভ- না আমি মায়ের কাছে যাবো মাকে গিয়ে বলবো তুমি বলছো না আমাকে।
.
আমি ভাবলাম যে, মা ওকে এই অবস্থায় দেখলে আরো চিন্তায় পড়বে। সব ঘরে থাকলেই ভালো তাই,
আমি- যাইয়েন না। আই লাভ ইউ।
আরাভ- এভাবে না আমাকে হাগ করে বলো।
আমি- না শুয়ে পড়ুন।
আরাভ- আমি গেলাম।
আমি- আচ্ছা আচ্ছা।
.
আরাভকে হাগ করে ভালোবাসি বললাম।
আরাভ- এবার একটা কিসসি।
আমি- একদম না।
আরাভ- আচ্ছা গেলাম।
আমি- ওকে যান।
আরাভ- সত্যি গেলাম।
আমি- যান যান আমি তো আর মানা করি নি।
.
আসলে আরাভ ড্রিংক করে নি। নাটক করছিলো। প্রথমে বুঝি নি। কিন্তু হাগ করে বুঝলাম। কারণ প্রথমে টললেও জড়িয়ে ধরার সময় আরাভ সোজা ছিলো। আর সেই সাথে তার হার্টবিটও ঠিক ছিলো।
আরাভ- না কিসসি দেও।
আমি- দাড়ান।
আরাভ- না আমি দাড়াবো না।
আমি- একটু।
আরাভ- জ্বলদি আসো।
.
একটা লাঠি আনে আরাভকে মারা শুরু করলাম।
আরাভ- আরে আরে এসব কি বর নির্যাতন হচ্ছে।
আমি- নাটক আমার সাথে। বুঝাচ্ছি মজা।
আরাভ- আরে আরে বইন থাম।
আমি- থামানো বুঝাচ্ছি।
.
আরাভ দৌড়াচ্ছে। আমিও পিছনে লাঠি নিয়ে দৌড়াচ্ছি।
কিছু সময় পর, আমি হাপিয়ে গেলাম। সাথে আরাভও। দুজনেই হাপাচ্ছি।
আরাভ- ওই গুন্ডি থামো রে।
আমি- নাটক কেন করলেন?
আরাভ- ভালোবাসা নিতে।
আমি- তোর ভালোবাসার গুষ্টি কিলাই। আমি এখনো তোরে মাফ করি নি। কর তো যা ইচ্ছা তা। (রাগে বললাম)
.
আরাভ কিছু বললো না। কিন্তু হাসতে লাগলো।
আমি- হাসছো কেনো?
আরাভ- কিছু না গো। তুমি আমাকে মাফ করবাই আমি জানি।
আমি- দেখা যাবে।
আরাভ- হুহাহা।
আমি- বুইড়া বেডার ঢং বেশি।
আরাভ- যাই বলবা বলো আমি বুড়া না ওকে?
আমি- বুড়া বুড়া বুড়া।
আরাভ- আনহা বেশি হচ্ছে আমি বুড়া না।
আমি- মি. আরাভ বুইড়া বুইড়া।
আরাভ- আনহার বাচ্চি দেইখা নিমু তোরে।
আমি- এই যে দেখেন।
আরাভ- খাড়া রে।
.
আরাভ উঠতে ধরবে তার আগেই আমি রুমের বাইরে চলে গেলাম। আরাভ ভাবছিলো ধীরে ধীরে আমি আগের অবস্থায় আসছি। তাই ও কিছুটা খুশি হলো।
.
বাইরে দেখি, আভা টিভি দেখছে। টিভিতে এক মহিলাকে দেখাচ্ছে। যার স্বামী তাকে ছেড়ে দিছে ও প্রেগনেন্ট অবস্থায়। এসময় সে কষ্ট পাচ্ছে। এসব দেখে নিজের অবস্থা মনে পড়লো। আভা আমাকে দেখেই চ্যানেল পাল্টালো কিন্তু‌ আমার খুব কষ্ট লাগছিলো।
কিছু সময় পর রুমে ঢুকতেই,
.
আরাভ- ওগো কাছে আসো। (একটু ঢং করে)
আমি- শুনুন আমার সাথে ঢং করবেন না। আমি এখনো আপনাকে মাফ করি নি। এখানে আছি আমি শুধু মায়ের জন্য।
আরাভ- মানে কি?
আমি- যা শুনলেন।
আরাভ- তুমি আমাকে ভালোবাসো না?
আমি- না বাসি না।
আরাভ- ওহ।
আমি- জ্বী
.
আরাভ মন খারাপ করে শুয়ে পড়লো।
.
 

 

রাতে,,, আরাভ ভাবছে, “আমি কি আনহার উপর জোর করছি? ও তো আমাকে মনে হয় না আর ভালোবাসে। কি করবো কিছু বুঝছি না।” আরাভের মাথায় এসবই ঘুরছে। কিন্তু সে কি করবে কিছুই বুঝছে না। সে ভাবলো আনহা যদি সত্যি ওকে না চায়, ও তাকে মুক্তি দিয়ে দিবে।
.
কিন্তু আনহাকে ছাড়া থাকতে হবে এই কথাটা ভাবতেই আরাভের মন আরো খারাপ হয়ে উঠলো। কারণ ও এখন আনহাকে আরো বেশি ভালোবেসে ফেলেছে।
.
পরেরদিন,,,,,,
আনভীর কাঁদছিলো।
আমি- আনভীরকে একটু দেখুন তো কি হয়েছে?
.
আরাভ চুপচাপ‌ আনভীরকে কোলে নিয়ে চলে গেলো ঘরের বাইরে। এটা দেখে আমি কিছুটা অবাক হলাম। কারণ অন্য দিন হলে আরাভ আনভীরকে কোলে নিয়েই আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে অনেক কথা বলতো।‌আজ আবার কি হলো ওর?” এটাই ভাবছিলাম।
.
কিন্তু বিশেষ কোনো গুরুত্ব দিলাম না। আমি সকালে গোসল করে নিলাম। বের হয়ে দেখি আরাভ অফিসে গেছে। কিন্তু আমার কেমন খটকা লাগলো। কারণ আরাভ যাওয়ার আগে আমাকে একবারও কিছু বললো না।
..
মনে মনে ভাবছি, “আমি কি বেশি কিছু বলে ফেলছি ওকে?” ভেবে নিলাম, আর না। আমিও আর এভাবে ঝগড়ার মাঝে থাকতে পারবো না। ঠিক করে নিলাম ওকে মাফ করে আবার নতুন শুরু করবো।”
.
যেই ভাবা সেই কাজ। চলে গেলাম রান্নাঘরে। দেখলাম ওখানে আভা কি জানি করছে। আমাকে দেখেই,
আভা- ভাবি এখানে যে?
আমি- না মানে রান্না করতে আসছি একটু।
ভাবি- ও আচ্ছা আসো আসো। একটা কথা ছিলো বলবো?
আমি- হুমম বলো।
আভা- ভাবি তোমাদের ঝগড়া তো মিটে গেছে তাই না?
আমি- না মানে হ্যা। কিন্তু কেনো?
আভা- না মনে হলো ভাইয়ার মন খারাপ। কাল রাতে পানি আনতে এসেছিলাম। দেখি ভাইয়া সোফার ঘরে হেলানি দিয়ে আছে। মুখ দেখে মনে হচ্ছিলো কষ্টে আছে তাই আস্ক করলাম আরকি। কিছু মনে করো না।
আমি- একটু ঝগড়া হইছিলো আর কি।
আভা- ওওও আমি ভাবলাম কি না কি। যাই হোক মিটিয়ে নিও।
আমি- হুমম ওর‌ জন্যই রান্না করতে আসছি। দুপুরে ওর জন্য খাবার নিয়ে যাবো।
আভা- বাহ দারুণ তো।
আমি- তুমি আনভীরকে একটু দেখবে?
আভা- আচ্ছা বলার কি আছে। আমি দেখে রাখবো আনভীরকে।
আমি- থেংকস। আমাকে চিন্তামুক্ত করলে।
আভা- এখন রান্না করো। কোনো সাহায্য লাগবে নাকি?
আমি- না না আমি নিজেই করবো নে। তুমি শুধু আনভীরকে একটু দেখে রেখো।
আভা- আচ্ছা।
.
খুশি মন নিয়ে রান্নাঘরে আরাভের পছন্দের বিরিয়ানি বানাইলাম। অনেকদিন পর প্রিয় মানুষটির জন্য কিছু রান্না করতে গিয়ে এমনিই মনটা প্রচুর ভালো হয়ে গেলো।
.
আমি রান্নাশেষে তৈরি হয়ে নিলাম। তারপর আরাভের অফিসের ওদিক রওয়ানা হলাম।
.
অফিসে যেতেই অনেকে অামাকে দেখে অবাক হলো। হয়তো এতোদিন পর বলে। আবার অনেকে খুশিও হলো। অনেকের সাথে কথা বলে আরাভের ক্যাবিনের বাইরে যেতেই শব্দ পেলাম একটা মেয়ের, “আরে সোজা হন। নড়ছেন কেনো?” এই টাইপ কথা। তাড়াতাড়ি দরজা খুলে যা দেখলাম রাগ ৩৬০° তে উঠে গেলো।
.
“ভিতরে এক মেয়ে আরাভের ব্লেজারে কফির দাগ মুছে দিচ্ছে।” আর হাসে হাসে কথা বলছে।
.
আমি- ওই শয়তান্নি ছাড় উনাকে।
.
আমার কথা শুনে আরাভ আর ওই মেয়ে দুজনেই আমার দিকে ঘুড়লো।
আমি- ওই শাকচুন্নি ছাড় ওনাকে শুনতে পাচ্ছিস না।
.
মেয়েটা কিছু বলতে যাবে কিন্তু আরাভ চুপ করতে বললো।
আরাভ- তুমি এখানে যে?
আমি- তুই চুপ কর। আগে ওই শাকচুন্নি তোর সাহস তো কম না উনার গায়ে হাত দিস।
আরাভ- আনহা বিহেভ ইওরসেল্ফ একটা বাচ্চার মা তুমি। তাও এমন কেনো?
আমি- ওই শয়তান তোর লজ্জা করে না? তুইও তো একটা বাচ্চার বাপ। তাও শাকচুন্নিদের সাথে থাকস কেন?
আরাভ- আনহা।
আমি- নাম নেওয়া বন্ধ কর। বুড়া বেডা। কয়েকদিন পর টাকলু হবি তাও মাইয়াগো লগে এতো কাছাকাছি যাস।
আরাভ- বউ কাছে না আসলে কি করবো?
আমি- আমি যাই না তোর কাছে? হা গতকাল রাতেও তো… (পুরোটা বলতে পারলাম না। আরাভ এসে মুখ চেপে ধরলো)
.
.
আরাভ- চুপ একদম চুপ। আশা এখন এখান থেকে যাও। পরে আসবা।
.
আমি তার হাতে কামড় দিলাম। আরাভ একটু আহ করে হাত নামিয়ে নিলো।
আমি- তুই চুপ।
আরাভ- আ…
আমি- বললাম না চুপ। ওই মাইয়া তুই উনার কাছে গেলি কেন? তুই আর আসবি না। তোর চাকরি ওভার যা তুই। গেট আউট ইউ শাকচুন্নি।
আশা- ম্যাম আমি তো যাস্ট।
আমি- কোনো যাস্ট না তুই কেনো আমার উনার কাছে আসবি। আমার উনার উপর আমি ছাড়া কেউ লাইন মারতে পারবে না। ইউ আফ্রিকার তেলাপোকা গেট আউট।
আশা- ম্যাম আমার চাকরি খাইয়েন না। আই নিড দিস।
আমি- এক মিনিট।
.
ব্যাগ থেকে একটা ব্রাদার্স ব্যান্ড বের করলাম।
আমি- এটা পড়া উনাকে।
.
মেয়েটা একবার আমার দিকে তাকালো একবার আরাভের দিকে। অগত্যা ওই ব্যান্ড পড়ায় দিলো আরাভকে।
আমি- বলো এবার।
আশা- কি?
আমি- আজ থেকে
আশা- আজ থেকে…
আমি- আরাভ স্যার আমার নিজের ভাই এর মতো।
আশা- আরাভ স্যার আমার নিজের ভাই এর মতো।
আমি- আমি আর তার দিকে ভাই ছাড়া অন্য নজরে তাকাবো না। যদি তাকাই তাহলে ম্যাম যেন আমাকে কুচি কুচি করে টমিকে খাওয়ায়।
আশা- (বললো)
আমি- এবার গেট আউট এখান থেকে ইউ শাকচুন্নি
.
.
মেয়েটা আর কথা না বাড়িয়ে চলে গেলো। আমি ভালোই বুঝলাম মেয়েটা ভয় পাইছে। বাট মেয়েটা যেতেই মাথায় এলো আমি কি কি করলাম? আমি আরাভের দিকে তাকালাম,
আরাভ- এটা কেমন বিহেভ?
আমি- ইয়ে মানে।
আরাভ- হোয়াট দা হেল। মেয়েটাকে কাঁদিয়ে ছাড়লা।
.
আমি মাথা নিচু করে আছি।
আরাভ- জবাব দেও না কেন? এমনি বলো ভালোবাসো না। এটা আবার কেনো করলা?
আমি- আমি আপনাকে…
আরাভ- চুপপপপ। যাস্ট গেট আউট।
আমি- না মানে।
আরাভ- বললাম না যাও।
আমি- ওকে ফাইন। আর শুন মুখবাকা আমি তোরেই ভালোবাসি। ভাবলাম সব ঝগড়া মিটাবো। তোর লাইগা বিরিয়ানিও বানাইছিলাম। বাট না আর দিবো না। সব আমিই খাবো। গেলাম আমি। ইউ ইঁদুর হুহ।
.
আরাভ কিছু বলার সুযোগ পেলো না। আমি চলে আসলাম।
.
আমি বেড়িয়ে আসতেই আরাভও বেড়িয়ে এলো। আমাকে থামাতে। কিন্তু আমি চলে আসতে ধরেছিলাম। আরাভ রাগের মাথায় আমাকে ওসব বললো। কারণ আমার রাতের ব্যবহার তার মাথায় গেঁথে ছিলো।
.
আমি বুঝেছি কিন্তু এতোটা বলবে কেনো? এই রাগে আমি বাড়ি এলাম। দেরি করেই ফিরলাম। কারণ আগে বিরিয়ানি খামু আমি। তাই এক রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম। আরাভ আমার গাড়ি এক রেস্টুরেন্টের বাইরে দেখলো। ও নিজেও ভিতরে গেলো।যেয়ে দেখে আমি টিফিন খুলে বিরিয়ানি খাচ্ছি আর আইসক্রিমও খাচ্ছি রেস্টুরেন্ট থেকে। এটা দেখে আরাভের প্রচন্ড হাসি পেলো। ও ভাবতে লাগলো, “আজব পাগলি। এরকম কে করে?”
.
ও আমার সামনে এসে দাড়ালো। আমি একবার তাকালাম কিন্তু পরে ইগনোর করলাম।
আরাভ- সরি ম্যাম। রেগে ছিলাম।
আমি- কে আপনি?
আরাভ- চিনো না?
আমি- না।
আরাভ- তাই?
আমি- জ্বী। গেট আউট। আমি বিরিয়ানি খাচ্ছি।
আরাভ- আমাকে দিবা না?
আমি- নো। এটা আমিই খাবো।
আরাভ- ওকে।
.
আরাভ সামনে বসে পড়লো। আর আমি খেতে লাগলাম। ও ভেবেছিলো আমি ওকে দিবো। কিন্তু না আমি বলছি যে, আমি খাবো মানে আমিই। ঠিকই সব খেলাম।
আরাভ- আনহা তুমি দিন দিন পেটুক হচ্ছো।
আমি- ভালো।
আরাভ- আরে সরি।
আমি- নো।
আরাভ- আর হবে না সরি।
আমি- আপনি সবসময় আমাকে কষ্ট দেন। আপনি ভালো না। চলে যান।
আরাভ- আর হবে না।
আমি- ঠিকই করবেন।
আরাভ- আর করবো না। ওই শুনো মিটায় ফেলি সব চলো।
আমি- মিটাইতে চাইছিলাম। কিন্তু আর মিটাবো না।
আরাভ- ওই সরি তো।
আমি- না।
আরাভ- সরি সরি সরি।
আমি- এক শর্তে।
আরাভ- রাজি।
আমি- প্রপোজ করতে হবে এখানে সবার সামনে ।
আরাভ- এই বয়সে?
আমি- জানি তো বুড়া হইছেন তবুও করেন।
আরাভ- ওকে।
আমি- সরিও বলতে হবে কান ধরে।
আরাভ- কিইইই?
আমি- হুম।
আরাভ- না কখনো না।
আমি- ওকে আপনি যান আমি আইসক্রিম খাই।
.
আরাভ ঠিকই উঠে চলে গেলো। আমি ভাবলাম রাগে গেছে। যাই হোক আইাক্রিম আগে শেষ করি। আমি এক নাগাড়ে খেয়ে যাচ্ছি। আরেকটা আইসক্রিম অর্ডার দিলাম। খাচ্ছিলাম এমন সময় আরাভ এলো। হাত ভর্তি মেলা গুলো কিটক্যাট এক বক্সে। এতো কিটক্যাট দেখে আমি তো অবাক।
.
.
কিটক্যাট গুলো এগিয়ে দিয়ে,
আরাভ- ম্যাম আমি জানি আমি ভুল করি। কিন্তু কোনোদিন এমন পরিস্থিতি আসবে না যে আমাকে ছাড়তে হবে। আমি আপনার সব জুড়ে আবারো থাকতে চাই। ভালোবাসি আপনাকে। এক্সেপ্ট করবেন?
আমি- এতো কিটক্যাট দেইখা তো মোরে অন্য কেউ প্রপোজ করলেও এক্সেপ্ট করমু। জ্বলদি দেও।
আরাভ- তোরে আমি প্রপোজ করতাম না। ভাগ।
আমি- ইয়ে মানে সরি। তোমাকেই এক্সেপ্ট করমু তো আর কাউকে না। এবার তো দেও।
আরাভ- না।
আমি- ওগো প্রিয় ইঁদুর দেও তো।
আরাভ- হায়রে পাগলি। এই নেও।
.
আমি- লাভ ইউ।
.
এই বলে সবার সামনে জড়িয়ে ধরলাম। বাকী সবাই তালি দিলো।
.
.
সমাপ্ত। কাল্পনিক গল্প এটা।
এরপর আসছে #এক_রাতের_বউ আশা করি পাশে থাকবেন সবাই।

Angry_Husband Season_2_Part_28

0
Angry_Husband Season_2_Part_28
Angry_Husband Season_2_Part_28

Angry_Husband
Season_2_Part_28
Written by Avantika Anha
ও ধীরে ধীরে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আমার প্রচুর রাগ উঠে গেলো এবার।
আমি- ওই হারামি ছাড় আমারে।
আরাভ- নো ম্যাম ছাড়বো না।
আমি- ছাড়বি কি না বল?
আরাভ- অনেক কষ্টের পর পাইছি তোমাকে কেমনে ছাড়ি বলো?
আমি- তোকে ছাড়তেই হবে।
আরাভ- না আমি ছাড়বো না।
.
রাগ উঠে গেলো রাগের বসে আরাভের পায়ে দিলাম এক লাথি আরেক ঘুসি দিলাম কুনুই দিয়ে ওর পেটে। সাথে সাথে আরাভ ছাড়ে দিলো আমাকে।
আরাভ- ডাইনি এভাবে কেউ স্বামীকে মারে?
আমি- হিহি ভালো হইছে।
আরাভ- সিরিয়াসলি লাগছে আর তুমি হাসছো।
আমি- কই দেখি?
.
আরাভের দিকে হেলতেই ও আমাকে আবারো চিপে ধরলো। এবার দুই হাতও ধরে ফেললো।
আমি- ওই ইঁদুর ছাড় আমাকে।
আরাভ- না মিসেস আহমেদ।
আমি- তুই ছাড়বি কি না বল?
.
(দুজনেই ফিসফিস করে কথা বলছি। যেনো আনভীর না উঠে যায়)
আরাভ- নো আমি তো ছাড়বো না।
আমি- ভার মে যা রাক্ষস।
.
এই বলে আরাভের হাতে কামড় বসিয়ে দিলাম। এতো জোড়ে দিলাম যে আরাভ কিছুটা চিৎকার দিলো এবার। ও ভাবে নি আমি এতো জোড়ে ওকে কামড় দিবো।
.
আরাভ- রাক্ষসী।
আমি- হিহিহি।
আরাভ- তোরে আমি দেখে নিচ্ছি।
.
এই বলে আরাভ আমার কাছাকাছি চলে আসলো।
আমি- দূরে যান।
আরাভ- নাহ আরো কাছে আসবো দূরে যেতে বললে।
আমি- ওহো তাহলে কাছে আসেন।
আরাভ- আসছি কাছে।
.
(আরাভ কাছে আসলো আরো)
আমি- এটা চিটিং তুমি এখনো চিটার। এতোদিনেও বদলাও নি। (ঘোরে চলে যাচ্ছিলাম)
আরাভ- হাহা আমি এমনি।
আমি- নাহিইইইইই।
আরাভ- চুপ। (ঠোঁটে আঙ্গুল দিলো)
.
আমি আরো ঘোরে ডুবে গেলাম। আরাভ একদম কাছাকাছি আসবে এমন সময়ই আনভীর কেঁদে উঠলো। আর আমার ঘোর ভেঙ্গে গেলো।আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে আনভীরকে চুপ করাতে লাগলাম।
.
আরাভ- বাবা তুই কাঁদারো সময় পেলি না। আব্বু আম্মুর রোমান্সের বারোটা বাজালি। (আস্তে বললাম)
.
আমি- কিছু বললেন আপনি?
আরাভ- না না কিছু না। ইউ কন্টিনিউ চুপ করাও বাবুকে।
আমি- জ্বী।
.
আমি তখনো রাগের কথা ভুলে গেছিলাম। কিন্তু কিছু সময় পর মনে পড়লো। আবারো অভিমানী আনহা হয়ে উঠলাম।
আরাভ- আমি আসবো?
আমি- না। এতোদিন নিজে সামলাইছি। সামনেও আমিই সামলাবো। কোনো স্বার্থপর মানুষের সাহায্য লাগবে না।
আরাভ- আনহা আমি স্বার্থপর নই।
আমি- হা হা হা। আপনি স্বার্থপরই। নাহলে আমাকেই চিনেন না। তাই তো স্বার্থপর ভাবছেন আমাকে।
আরাভ- মানে ভালো করে বলো।
আমি- না কিছু না।
.
আমি আর কিছু বললাম না। আরাভও আর কথা বাড়ালো না। কারণ ও বুঝেছে আমি কি মিন করেছি। আরাভ নিজে অনুতপ্ত। “আমি তখনি বুঝেছি আরাভ এর বেশি দোষ নাই। কিন্তু বিষয় সেটা ছিলো না। বিষয় হলো সে কখনো আমাকে চিনতেই পারে নি। মিথ্যের আশ্রয় না নিয়ে আমাকে পাশে রাখতো। বিষয়টা যদি সত্যিও হতো আমি তো আর ওকে ছেড়ে যেতাম না।” এই বিষয়গুলো আমার মাথায় ঘুরতেছিলো। আরাভও ভাবছিলো সব ওর দোষ। কিন্তু ও সব ঠিক করবে এটা ফিক্স করলো। রাতটা কোনোমতে পার হলো।
.
পরেরদিন আরাভ ভিডিও কলে তার পরিবারকে কল দিলো। ওখানে সবাই ছিলো আমার পরিবারও। চিন্তার কারণে আমার খোঁজ নিতেই আম্মু আব্বু নাকি ওখানে গিয়েছে। যা কথায় কথায় শুনলাম।কলেও সবাই আমাকে বুঝানোর চেষ্টা করতে লাগলো। কিন্তু আমি জেদ ধরে রাজি হলাম না। শেষে সবাই আরাভকে বললো, “তুই-ই বুঝা ওকে। ভালো করে।” আরাভ হুম বললো।
.
নাস্তার টেবিল থেকে শুরু সব জায়গায় আরাভ আমার সাথে থাকতেছে। এমনকি আমাকে জ্বালাচ্ছেও। শান্তিমতো প্লানও করতে দিচ্ছে না। কোনোমতে ছাদে যাইতে দিয়েছে। ভেজা কাপড় শুকোতে দিয়ে ঘরে গিয়ে দেখি আরাভ আনভীরের সাথে খেলছে। আর কি কি বলছে।
.
কথাগুলো এরুপ, “বাবা তোর মায়ের রাগ কবে কমবে? তুই জ্বলদি বড় হ আচ্ছা। তখন দুজনে মিলে তোর মায়ের রাগ ভাঙ্গাবো। ও না না বেশি দেরি হয়ে যাবে। তোর মাকে ছাড়া তো আর আমি থাকতে পারবো না।” আনভীরও কি বুঝছে হাসতেছে”। ওদের এই অবস্থা দেখে আমি হাসবো না কাঁদবো বুঝছি না।
.
আমি কেনো যেন চাইলেও আরাভকে ক্ষমা করতে পারছি না। কি জানি আমাকে একটা আটকাচ্ছে ওকে ক্ষমা করতে। আমি হয়তো মাফ করতাম কিন্তু খারাপ তখন লেগেছে যখন ও আমাকে এতোদিনেও চিনেনি। তাই কিছু না বলেই অন্য দিকে চলে এলাম। রুমে গেলাম না আর।
.
কিছু সময় জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছি। কেনো যেন নিস্তব্ধ লাগছে চারপাশ। এই নিস্তব্ধতাও আমাকে গ্রাস করছে। এক অজানা কারণে মনটাকে আরো বেশি উদাসী করছে। কি হচ্ছে নিজেও বুঝছি না। চোখে পানি টলমল করা শুরু করছে। চুপচাপ দাড়িয়ে আছি। কিছু সময় পর হঠাৎ কে জানি আমাকে পিছন দিয়ে জড়িয়ে ধরলো।
আমি- আপনি ছাড়ুন আমাকে। আনভীর কই?
আরাভ- ছাড়ার জন্য এই হাত ধরি নি। আনভীর ঘুমাচ্ছে।
আমি- হাহাহা।
আরাভ- হাসছো যে?
আমি- আপনি তো ছাড়ার জন্য ধরেন নি। ধরেছেন ইচ্ছা মতো চালানোর জন্য তাই তো ইচ্ছা হয়েছে ছেড়েছেন। ইচ্ছা হয়েছে আবার ধরতে এসেছেন। ছাড়ুন আমার ঘুম পাচ্ছে।
.
আরাভ ছেড়ে দিলো।
আরাভ- তুমি তো দিনে ঘুমাও না।
আমি- কিছু অভ্যাস পরিবর্তনশীল। লাইক এটাও।
আরাভ- হুমম বদলে গেছো সত্যি। এখন তোমার কথায় বড় বড় ভাব এসেছে।পিচ্চি পিচ্চি ভাব নাই।
আমি- তা তো হবেই জীবন শিখিয়েছে। আপনি শিখিয়েছেন। আচ্ছা যাই আমি ঘুমাই। বের তো হতে দিবেন না।
.
আমি চলে গেলাম। আরাভের খুব কষ্ট হচ্ছে কথাগুলো শুনে। কিন্তু ও নিজেকে সামলে দিলো। এই বলে যে, ও দোষী।
.
বিকালে আনভীরকে নিয়ে ডাইনিং রুমে এসে দেখি ফুচকা রাখা। আমি থ এইনে ফুচকা কেমনে?
আরাভ- আমি আনছি।
আমি- আমি কি জিজ্ঞেস করছি? (যদিও মনে মনে ঠিকই করছি)
আরাভ- মনের কথা তোমার এখনো বুঝি মিসেস আহমেদ।
আমি- (ভেংচি দিলাম)
.
আরাভ কাছে এসে আনভীরকে কোলে নিলো।
আরাভ- নেন ম্যাম শুরু করুন। আপনার জন্যই।
.
আমি অপেক্ষা না করে খেতে লাগলাম। কারণ অনেক দিন পর খাচ্ছি।
.
আমি খেয়েই যাচ্ছি।
.
এদিকে আরাভ আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে।
আমি- হাসবেন না। একদম না। আমার জায়গায় হলে বুঝতেন। এতোদিন পর আহা। টেস্টি।
.
ঝাল লাগছে তাও খাচ্ছি। আরাভ পানি এগিয়ে দিলো।
.
চলবে…..

 Angry_Husband  Season_2_Part_27

0
 Angry_Husband  Season_2_Part_27
 Angry_Husband  Season_2_Part_27

Angry_Husband
Season_2_Part_27
Written by Avantika Anha

আমি সিম অফ করে ফেললাম। যেই সিমটা সবাই জানে সেটাই অফ করলাম। কারণ আমার মাঝে এখনো ভয় যে, আরাভ হয়তো আনভীরকে কেড়ে নিবে। এদিকে আরাভসহ পরিবারের বাকীরা আমাকে খুঁজতে লাগলো। আমার ধারণা সঠিক ছিলো ওরা প্রথমে মিমির বাড়িই গেলো। যা মিমি আমাকে জানিয়েছিলো। তাড়াহুড়ায় ওরা মিমিকে জান্নাতের কর্মকান্ডের সত্যি বলতে পারে নি তাই আমিও জানতে পারলাম না তবুও সব সত্যি।‌
.
হোটেলের রুমে বসে তাড়াতাড়ি টিকিটের খোঁজ করছি। ভিসা ছিলোই আর তাড়াতাড়ি টিকিটও পেয়ে গেলাম পরেরদিনের। আমি এখন কিছুটা হলেও নিশ্চিন্ত হলাম।
.
এদিকে খোঁজ নিয়েও আরাভ আমার ঠিকানা পেলো না। এমনকি অফিসে গিয়েও খোঁজ পেলো না। অফিসে গিয়ে শুনলো আমি ছুটি নিয়েছি। আরাভ রুমে এসে শুয়ে পড়লো।
.
ওর চোখ দিয়ে দু ফোটা পানি পড়লো।
আরাভ- কই তুমি আনহা? কই গেলা? একবার তো তোমাকে নিজের দোষে হারালাম এবারও হারাতে চাই না। “হে আল্লাহ দয়া করে আমাকে ওকে খুঁজে দিন।”
.
এদিকে আমি তবুও অনভীরকে জড়িয়ে শুয়ে আছি। আরাভ ওদিকে চোখ বন্ধ করে আছে। হঠাৎ ওর‌ মাথায় আসলো আনহা তো ফরেইন থেকে আসছে এর মানে ও কার্ড ইউজ করবে। ওর কাছে তো বেশি ক্যাশ থাকবেও না। আরাভ তাড়াতাড়ি খোঁজ নেওয়া শুরু করলো। বড় পরিচিতি আছে আরাভের বিজনেসম্যান হিসেবে। তাই আরাভ খোঁজ নিয়ে পরেরদিন সকালে জানতে পারলো আমি এক হোটেলে কার্ড ইউজ করছি আর টিকিট কাটতেও কার্ড ইউজ করছি। আরাভ বুঝে গেলো আমি ফরেইন ব্যাক করছি।
.
আরাভ তাড়াতাড়ি বের হয়ে পড়লো। সাথে আর কাউকে নিলো না। আনভীরকে ঘুম পাড়াচ্ছিলাম। এমন সময় রুমে কে জানি নক দিলো।
.
আমি- কে?
অপর প্রান্তে- রুম সার্ভিস। (অন্য আওয়াজ বের করার চেষ্টা করলো আরাভ)
আমি- (আওয়াজটা কেমন পরিচিত আজব আজব লাগছে।তবুও জবাব দিলাম) আমি তো কিছু চাই নি।
অপর প্রান্তে- ম্যাম আমি কিছু জিনিস নিয়ে যেতে এসেছি।
আমি- কি??? সময় পান না? আফ্রিকান বিলাই কোনেকার আমি আমার বাচ্চাকে ঘুম পাড়াচ্ছি। আপনি পরে আসেন।
অপর প্রান্তে- ম্যাম দরকার আছে একটু খুলুন নিয়েই চলে যাবো।
.
আমি- ওয়েট।
.
দরজা খুলে আমি আরাভকে দেখেই শকড।
আরাভ- জ্বী ম্যাম আমি আমার জিনিসই নিতে আসছি।
.
আমি তাড়াতাড়ি দরজা লাগাতে চেষ্টা করলাম কিন্তু আরাভের শক্তির কাছে পারলাম না। এক কোলে আনভীরও ছিলো।
আমি- আপনি কেনো এসেছেন?
আরাভ- আমার বউ আর বাচ্চাকে নিতে এসেছি।
আমি- আমরা যাবো না আপনার সাথে।
আরাভ- মিস আপনাকে যেতেই হবে।
আমি- হোয়াট? না আমরা যাবো না।
আরাভ- আনহা ভালোভাবে বলছি চলো নইলে তুলে নিয়ে যাবো।
আমি- আমি আপনার সাথে যাবো না। আমার আনভীরকেও দিবো না আপনাকে।
আরাভ- আমি তো নিবোই।
আমি- ওই আফ্রিকান ইঁদুর যান এখান থেকে আপনি।
আরাভ- আহা এতোদিন পর তোমার মুখে এসব কথা শুনে ইচ্ছে করছে হাওয়ায় ভাসি।
আমি- প্লিজ আপনি যান এখান থেকে। (কেঁদে ফেললাম)
আরাভ- (খারাপ লাগলো ওকে কাঁদতে দেখে) সিওর?
আমি- প্লিজ যান এখান থেকে।
আরাভ- ওকে ম্যাম। আসতেছি তাহলে।
আমি- আচ্ছা।
.
আরাভ বের হয়ে চলে গেলো। আমি স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম। কিন্তু আমার আর এখানে থাকলেও চলবে না। আমি তাড়াতাড়ি জিনিস গুছিয়ে নিলাম।
.
আমি তাড়াতাড়ি সব মিটমাট করে অন্য হোটেলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলাম। হঠাৎ কে জানি আমার চোখে পট্টি বেঁধে ফেললো। আমার ভয় লেগে গেলো। কে জানি আমার কোল থেকে আনভীরকে কেড়ে নিলো। আমার শ্বাস বন্ধ হতে লাগলো। কারণ আনভীর আমার জীবন। কে জানি আমাকে টেনে গাড়িতে তুললো। আমি কিছু বলতে পারছিলাম না কারণ আমার মুখও বেঁধে ফেলা হয়েছিলো।
.
কই জানি এনে আমাকে নামানো হলো। কোনো এক বাড়িতে আমকে ঢুকানো হলো।
.
কিছু সময় পরে আমার চোখ খুলে দেওয়া হলো। চোখ খুলে দেখি আমার সামনে আরাভ। এর মানে আরাভই আমাকে কিডন্যাপ করেছে। কিন্তু এই বাড়িটা কার?
.
সেই সময় আরাভ বের হয়ে ওর কিছু বন্ধুকে ডাকলো। আর প্লান অনুযায়ী আমাকে কিডন্যাপ করলো। হোটেলে কিছু করলে মানুষ আটকাবে তাই ও বাহির থেকে কিডন্যাপ করলো। কারণ ও জানতো আনহা এই হোটেলে আর থাকবেই না। সামনে কি হলো সবাই তো জানিই।
.
.
আমি- আপনি এমন কেনো করছেন আমার আনভীর কই?
আরাভ- ঘুমাচ্ছা ঘরে ম্যাম।
আমি- এসবের মানে কি?
আরাভ- ম্যাম আমার জিনিসকে আমি ছাড়ছি না।
আমি- বাহ আজ আসছেন আমার জিনিস আমার জিনিস করতে এতোদিন কই ছিলেন? কই ছিলেন তখন যখন আমি প্রেগনেন্ট ছিলাম। সব যন্ত্রণা একা সহ্য করেছি। অপারেশন থিয়েটারেও একা ছিলাম। কেউ ছিলো না পাশে। তখন কি হয়েছিলো আপনার?
আরাভ- আনহা জানি আমি ভুল করছি কিন্তু আমার কোনো দোষ ছিলো না। জান্নাত চাল চেলেছিলো।
আমি- কি এমন চাল চেলেছিলো যে আপনি আমাকে ছেড়ে দিলেন?
আরাভ- (সব বললাম)
আমি- ও ভালোই।
আরাভ- দেখো আমার দোষ নাই কোনো।
আমি- ভালোই।
আরাভ- সব জেনেও এমন করছো কেনো?
আমি- এমনি আমার কাল ফ্লাইট আছে আমাকে যেতে দেন।
আরাভ- না কখনোই না।
আমি- অলটাইম জেদ ভালো লাগে না।
আরাভ- আমার জেদ তোমাকে মানতেই হবে।ভুলবা না আমরা এখনো ডিভোর্স নেই নি।
আমি- দূররর।
আরাভ- দূররর বলে লাভ নাই। কিছু খেয়ে নেও। আর লাভ নাই চেষ্টা করেও পালাতে পারবা না। এটা আমারই ফ্লাট। বাইরে সিকিওরিটি লাগানো মিস।
.
আমি আর জবাবই দিলাম না। কারণ আমার প্রচুর রাগ উঠছিলো।
.
অগত্যা আমি আনভীরের পাশে গিয়ে বসলাম।
কিছু সময় পর আরাভ এলো।
আরাভ- চলো বাবু খাবে।
.
আমি হা করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি। কারণ ও একটু বেশিই রোমান্টিক হচ্ছে। আগেএ হতো বাট প্রায় ২ বছর পর এটা আজবই লাগে।
আরাভ- হাওয়া খেয়ে পেট ভরবে না ম্যাম চলেন খাবেন আর বাবু তো ঘুমোচ্ছে।
আমি মনে মনে ওরে গালি দিতে লাগলাম।
আরাভ- মনে মনে পরে গালি দিয়েন চলেন খাবেন আর যদি না খান তাহলে ফিল্মে দেখি জোড় করে খাইয়ে লিপ দিয়ে আর কি বুঝাতে হবে?
আমি- যাচ্ছি।
.
চুপচাপ খেয়ে নিয়ে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়লাম। আর প্লান করতে লাগলাম কি করা যায়? কিন্তু তাও হলো না আরাভ পিছন দিয়ে এসে জড়িয়ে ধরলো।
আমি- ছাড়ুন আমাকে।
আরাভ- এতোদিন পর ধরেছি ছাড়বো না মিস।
.
চেষ্টা করেও লাভ হলো না। কারণ ওর শক্তি বেশি। আমি চুপচাপ ভাবতে লাগলাম কি করা যায়?
.
চলবে….

Angry_Husband Season_2_Part_26

0
Angry_Husband Season_2_Part_26
Angry_Husband Season_2_Part_26

Angry_Husband
Season_2_Part_26
Written by Avantika Anha
সকাল হতেই আরাভ দ্রুত তৈরি হয়ে নিলো। আরাভকে বের হতে দেখেই ওর মা,
মা- আরাভ।
আরাভ- জ্বী আম্মু।
মা- তুমি কাল রাতে কই গেছিলা? আর তোমার মামা কেনো জানি ফোন ধরছে না। একটু দেখে আসিও।
আরাভ- আচ্ছা পরে যাবোনে।
মা- আচ্ছা।
.
আরাভ তাড়াতাড়ি আনহাকে ফোন দিলো বের হয়েই,
আরাভ- হ্যা তোমার অফিসে আসা লাগবে না। আমিই তোমার বাড়ির সামনে আসছি।
আমি- না আমিই নিয়ে নিবো।
আরাভ- তোমার এতো বের হতে হবে না। তুমি তোমার আনভীরের খেয়াল রাখো। (আরাভও ইনডিরেক্ট বললো)
আমি- হুম। আচ্ছা বাড়ির সামনের কফি শপে আসুন।
.
এটুকু বলে ফোন কেটে দিলাম। কেনো জানি আরাভের কথা শুনে আজব লাগছিলো। কেমন একটা রহস্যের মতো। রেডি হয়ে বাইরে বের হয়ে দেখি প্রেয়সির শশুড়বাড়ির লোকজন বসে আছে।
আমি- আসসালামুয়ালাইকুম।
বড়রা সালাম নিলো।
.
প্রেয়সির চাচি শাশুড়ি- এইতো মেয়েই এখানে ওর সামনেই কথা হোক।
আমি- মানে কি কথা?
আম্মু- আনহা এদিকে আয়। (আম্মু আমাকে এক কোণায় নিয়ে গিয়ে যা বললো তা শুনে আমি থ।)
.
কারণ তারা আমার বিয়ের প্রস্তাব এনেছে।
আমি- আম্মু আমি বিয়ে করবো না।
আম্মু- কেনো করবি না? সারাজীবন কি এভাবে থাকবি নাকি? তাছাড়া তুই তো একা না। আনভীরও আছে।
আমি- আমি তো তোমাদের উপর বোঝা হয়ে নেই। তাহলে? আমি বিয়ে করবো না এটাই ফাইনাল। আর আমি এমনিও ২ দিনের মধ্যে UsA করতাম। আমি‌ এখানে থাকবো না আর সাথে আমার ছেলেকেও নিয়ে যাচ্ছি। থাকো তোমরা।
.
আমি সেখানে গিয়ে,
আমি- আমাকে আপনারা ক্ষমা করবেন। কিন্তু আমি বিয়ে করতে পারবো না। আমি আমার ছেলেকে নিয়েই আমার বাকী জীবনটা কাটাতে চাই। দয়া করে আপনারা বুঝার চেষ্টা করুন।
.
আমি আমার সব জিনিস নিয়ে লুকিয়ে বাড়ির‌ বাইরে চলে এলাম। সবাই গল্প করছিলো যখন ঠিক সেই সময়ে।
কারণ আমি জানি আমাকে ইমোশনাল করবেই আম্মু। কিন্তু আমি বিয়ে করতে চাই না। আমার জীবনের এক মাত্র পুরুষ হিসেবে শুধু আরাভই। ওর পরে আমি আর কাউকে আপন করতে পারবো না। তাই বাধ্য হয়ে সব জিনিস আর সাথে আনভীরকে কোলে নিয়েই অগত্যা বের হতে হলো। সব কিছু মিমিকে বলতেই ও ওর বাড়িতে যেতে বললো। কিন্তু আমি জানি আমার মা ও পরিবারের বাকীরা প্রথম খোঁজ ওখানেই নিবে। তাই অগত্যা হোটেলের উদ্দেশ্যে বের হলাম।
.
আমি এতো কিছুর চক্করে ভুলেই গেছিলাম আরাভকে ডেকেছিলাম। তবুও অগত্যা হাটতে লাগলাম। হঠাৎ সামনে দিয়ে একটা গাড়ি আসলো। আমার নজর আনভীরের দিকে ছিলো আর হাতে লাগেজ তাই সরে যেতে দেরী হয়ে গেলো। ভাবলাম হয়তো এক্সিডেন্ট হবে। কিন্তু গাড়িটা থামিয়ে দিলো। গাড়ি থেকে আরাভ বের হলো।
.
এমন অবস্থায় আমার প্রথম দিনের কথা মনে পড়লো। আরাভের সাথে আমার পাঙ্গা। কিন্তু পরক্ষণে আমার মাথায় এলো আরাভ আনভীরকে দেখে‌ ফেলেছে।
আমাকে এখান থেকে দ্রুত যেতে হবে।
আমি- ব্যাগটা দেন।
আরাভ- আনহা এটা কার বাচ্চা?
আমি- এটা মিমির বাচ্চা। (কথা ঘুরাতে)
আরাভ- তাই?
আমি- জ্বী। আপনি ব্যাগ দেন।
আরাভ- (ব্যাগটা এগিয়ে দিলো) তা মিমির বাচ্চাকে নিয়ে তুমি কই যাচ্ছো? তাও লাগেজ হাতে?
আমি- মিমি এক জায়গায় গেছে তাই আমাকে একটু দিয়েছে। আর আমি USA ব্যাক করছি। আচ্ছা আসি। আপনার কাজ পুরো হয়ে যাবে।
আরাভ- তাই?
আমি- জ্বী।
.
তাড়াতাড়ি ঘুরে গেলাম।
আরাভ- আর কতো লুকাবে আমার ছেলের কথা।
আমি- ম.. মানে?
আরাভ- তুমি জানো আনহা এটা আমারো ছেলে।
আমি- আনভীর শুধু আমার। আর আমরা চলে যাচ্ছি।
আরাভ- আনহা এবার কিন্তু আমার রাগ উঠছে।
আমি- যাই হোক।
আরাভ- বাড়ি ফিরে চলো আর দেখি আনভীরকে আমার কোলে দেও।
আমি- না আমি আমার বাচ্চা কাউকে দিবো না।
আরাভ- আনহা বেশি হচ্ছে।
.
আমি কোনো জবাব না দিয়ে হাটতে শুরু করলাম। আরাভ আমার হাত ধরে টেনে আমার গালে চড় বসিয়ে দিলো।
চড়ের শব্দে আনভীর কেঁদে উঠলো।
আমি ওকে চুপ করাতে লাগলাম।
আরাভ- দেও আমাকে দেও।
আমি- না আমি আমার ছেলেকে কাউকে দিবো না।
আরাভ- এটা আমারো ছেলে আনহা।
আমি- আপনি থাকেন না আপনার সংসার নিয়ে।‌ আমার বাঁচার সম্বল কেনো কেড়ে নিতে আসছেন? আমি কখনো কি আপনার জীবনে কিছু বলেছি?
আরাভ- আমার সংসারই নাই ইয়ার। আমি বিয়েই করি নি আর।
আমি- হাহাহা তাই নাকি? ওই মেয়েটাকেও ছেড়ে দিছেন।
আরাভ- আনহা তুমি আমাকে ভুল বুঝছো।
আমি- আমি কোনো ভুল বুঝছি না। যা জানার বা বুঝার জানি।
আরাভ- আনহা জান্নাত অনেক বড় চাল চেলেছিলো। তুমি জানো না।
আমি- ওহ। আর কিছু। (অভিমানে)
আরাভ- আনহা বুঝার চেষ্টা করো।
আমি- আমার কিছু বুঝার নাই।
.
হঠাৎ আরাভের ফোনে কল আসলো, “ও জানতে পারলো ওর মামা হার্ট এ্যাটাকে মারা গিয়েছে আর এটা শুনে তার মা অজ্ঞান।” এসব শুনে আরাভ আর কিছু না ভেবেই সেখানে চলে গেলো।
.
আমি বুঝলামও না জানলামও না কি হয়েছে? আমি সেখান থেকে গিয়ে একটি হোটেলে উঠলাম।
.
এদিকে সবাই কান্নাকাটি করছে। সবচেয়ে বেশি জান্নাত। আরাভকে দেখতেই,
জান্নাত- আমাকে ক্ষমা করে দে। আমি জেদের বশেই এসব করেছি এই জন্যই আব্বু আমাকে ছেড়ে চলে গেলো। প্লিজ ক্ষমা করে দে।
.
আরাভ জান্নাতকে দেখতেই তার আনহার কথা মনে পড়লো।ও টেনশনে পড়ে গেলো যে, ও আনহাকে এখন কই খুঁজে পাবে? কিন্তু ওকে খুঁজতেই হবে। জানাযা কবর দেওয়া সব শেষে, আরাভ আর ওর পরিবারের বাকীরা বাড়ি ফিরে এলো। আরাভ ভাবছে এখনি বলা উচিত ওর সবাইকে সব কিছু।
আরাভ- মা।
মা- বল বাবা।
আরাভ- মা আনহা কারো সাথে পালায় নি।
মা- মানে? কি বলছিস?
আরাভ- মা জান্নাত,,,,,,,,,,, (সব কিছু বললো)
মা- তার মানে আমার বিশ্বাস ভুল ছিলো না?
আরাভ- না মা।
আভা- ভাবিকে তাহলে আমরা ভুল বুঝলাম।
আরাভ- হুম।
মা- বাবা কই আমার নাতি?
আরাভ- জানি না মা। কিন্তু এই শহরেই হয়তো আছে। অথবা এই দেশের কোথাও।
মা- আমাকে আমার নাতিকে এনে দে।
আরাভ- হুমম মা আনবো।
.
এদিকে আমার খুব ভয় হচ্ছে। আরাভ আনভীরকে কেড়ে না নেয়। কিন্তু আমি এখনো জানি না আরাভ কেনো এমন করেছে। জেদের বশে শুনিই নি। আর ওদিকে আরাভ আমাকে খুঁজা শুরু করেছে। প্রথমে ওরা সবাই আমার বাড়ি গেলো। সব শুনেও আমার পরিবারের মানুষ আরাভকে পুরোপুরি ক্ষমা না করলেও কিছুটা মাফ করেছে।
.
.
চলবে…….

Angry_Husband Season_2_Part_25

0

Angry_Husband
Season_2_Part_25
Written by Avantika Anha

আরাভ তার ঘরের ভেতর বসে আছে। আনহার ব্যাগটা ওর সামনে। ওর খুব জানতে ইচ্ছে করছে এখনো কি আনহার ব্যাগে অনেকগুলো কিটক্যাট থাকে? সে কয়েক পা এগিয়ে গেলো। কিন্তু আবার পিছিয়ে গেলো। এই ভেবে যে তার আর অধিকার নাই।‌
.
আমি সেদিন ব্যাগের কথা ভুলেই গেছিলাম। সারাদিন আনভীরকে কোলে নিয়ে ছিলাম। রাতে হঠাৎ ব্যাগের কথা মনে পড়লো। সাথে সাথে ফোন খুলে দেখি আরাভের মিসড কল অনেকগুলো। ফোন ভাইব্রেশনে থাকায় দেখি নি। দেরী না করেই তাড়াতাড়ি আরাভকে কল দিলাম,
আমি- আসসালামুয়ালাইকুম।
আরাভ- ওয়ালাইকুম আসসালাম আনহা।
আমি- জ্বী স্যার বলুন।
আরাভ- স্যার বলছেন যে,
আমি- ইচ্ছা করছে তাই। বলুন কি বলবেন।
আরাভ- ওইতো তোমার ব্যাগটা আমার কাছে।
আমি- ও থেংক গড। আমি কাল নিয়ে নিবো আপনার অফিস থেকে। আর প্রজেক্ট এর অনেক কাজ পূর্ণ। আমি কাল রাতে চলে যাবো USA । বাকী কাজ আরেকজন সামলাবে।
আরাভ- আচ্ছা।
আমি- হুমম।
আরাভ- হুমমম।
আমি- আচ্ছা তাহলে।
আরাভ- আচ্ছা।
আমি- কল কাটবেন না?
আরাভ- ও সরি সরি।
আমি- হিহিহি।
আরাভ- হাসছো যে।
আমি- কিছু পুরোনো কথা মনে পড়েছিলো।
আরাভ- আচ্ছা।
আমি- মাঝে মাঝে পুরোনো স্মৃতি অনেক কষ্ট দেয় তাই না?
আরাভ- হুমমম। তা কি করছিলে?
আমি- ওইতো আনভীরের (আনভীরের নাম নিতেই চুপ করে গেলাম)
আরাভ- ও ব্যস্ত ?
আমি- জ্বী।
.
হঠাৎ পিছন থেকে আনভীর কান্না করে উঠলো।
আমি- আচ্ছা রাখি।
.
আমি ফোনটা কোনো রকমে কাটার চেষ্টা করে রেখে দিলাম। ভুল করে ফোনটা কাটাই হইলো না।
.
আমি আনভীরের কাছে গিয়ে, “ওরে আমার সোনা বাবা কাঁদে না। এইতো আম্মু তোমার কাছে। ওওও ওও। আনভীর বাবু চুপ করো। আমার ছোট্ট রাজকুমার আনভীর।”
.
এদিকে আরাভ সব কথা শুনছিলো। আরাভ পুরোই শক খেয়ে গেলো।
.
ওর মাথা কাজ করছে না। মাথায় একটাই প্রশ্ন, “তাহলে আনভীর কি আনহার বাচ্চা? আনহা যে বললো ওর স্বামী। তাহলে কি ও মিথ্যে বললো। আনভীর কি তাহলে আমার আর আনহার ছেলে?”
“না এটা কেনো হবে। ডক্টর তো বলেছিলো আমি কখনো বাবা হতে পারবো না।”
.
আরাভের মাথা কাজ করছে না।
.
আবার এদিকে,
আমি অনেক সময় চেষ্টা করে আনভীরকে চুপ করালাম। তারপর ফোন হাতে নিয়ে দেখি কল এখনো কাটা হয় নি। আমি পুরো ভয় পেয়ে গেলাম। ফোনটা হাতে নিয়ে,
আমি- হ্যালো। (ভয়ে ভয়ে)
আরাভ- জবাব দিলো না।
.
আমি কয়েকবার হ্যালো হ্যালো করলাম কিন্তু আরাভ জবাব দিলো না। তাই আমি ভাবলাম ও হয়তো শুনেই নি। কিছুটা স্বস্থির নিশ্বাস ফেললাম। আরাভ শুধু জানার জন্যই কিছু বললো না।
.
আরাভ আনহার ব্যাগে হাত দিলো। এই ভেবে কোনো প্রমাণ পাওয়া যাবে হয়তো। ও আনহার আর আনভীরের পাসপোর্টের ফটোকপি পেলো। যেখানে দেওয়া আছে আনহার একটা বাচ্চা আছে। যার নাম আনভীর। স্বামীর নামের জায়গায় আরাভের নাম। আর আনভীরের বাবার নামেও আরাভের নাম। আরাভের চোখ বড় হয়ে গেলো। ও বুঝছে না কিছুই। তাহলে কি আমার ছেলে আছে। কিন্তু ডক্টর। আরাভ সাথে সাথে এক ডক্টরকে কল দিলো, জরুরী একটা টেস্ট করবে বলে।
আরাভ- রাজ।
রাজ- বল।
আরাভ- আমি একটা টেস্ট করাতে চাই এখনি।
রাজ- কি টেস্ট?
আরাভ- আমি জানতে চাই আমার মাঝে কোনো সমস্যা আছে কি না?
রাজ- মানে?
আরাভ- আমার বাবা হওয়ার ক্ষমতা আছে কি না আমি জানতে চাই।
রাজ- কি বলছিস এসব কেনো?
আরাভ- আমার মনে হয় আমি গোলক ধাঁধায় আটকে গেছি। বের হতেই হবে দোস্ত সাহায্য কর।
রাজ- এখন তো অনেক রাত। কাল সকালে করি।
আরাভ- জানি প্লিজ দোস্ত মনে হচ্ছে অনেক সমস্যায় জড়িয়েছি। কাল অনেক দেরী হয়ে যাবে।
রাজ- ওকে। আমি তোর বাড়ির সামনে আসতেছি। তুই বের হ।
আরাভ- ওকে।
.
আরাভ সাথে সাথে কোনোমতে রেডি হয়ে বাইরে গেলো। টেস্ট করায় জানা গেলো আরাভের বাবা হওয়ার ক্ষমতা আছে। আরাভ পুরোই হতভম্ভ। কীভাবে সম্ভব? তাহলে আগের ডক্টর এমন করেছে কেনো? আরাভ পুরো বিষয় রাজকে বললো। রাজ সব শুনে,
রাজ- ডক্টরের নাম বল।
আরাভ- ডক্টর. জুনায়েদ চৌধুরী।
রাজ- চল আজই ধরবো। তার ঠিকানা আমি জানি। দাড়া আরো কয়েকজনকে ডাকি।
.
আরাভের অন্য কিছু বন্ধু মিলে ওই ডক্টরের বাড়ি যাওয়া হলো। ডক্টর আরাভকে দেখে শকড। হয়তো খারাপ কাজ বেশি মনে থাকে।
জুনায়েদ- আপনি এখানে?
আরাভ- চিনছেন তাহলে।
জুনায়েদ- মানে?
রাজ- ডক্টর হয়ে এমন কিভাবে করলেন? ফেক রিপোর্ট কেনো?
জুনায়েদ- কি বলছেন এসব?
.
আরাভ রেগে ড. জুনায়েদকে একটা ঘুসি দিলো।
আরাভ- সত্যি বল জ্বলদি নইলে আজ তোকে মেরেই ফেলবো।
.
জুনায়েদ প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও আরাভের কাছে ও‌ বাকীদের কাছে মার খেয়ে সত্যি বললো। কে ওকে টাকা দিয়েছে থেকে শুরু করে সবকিছু। আরাভের রাগ অনেক বেশি। তাই তার মার খেয়ে ড. জুনায়েদের অবস্থা খারাপ হয়ে গেলো। আরাভ সাথে সাথে জান্নাতের বাড়ির দিকে রওয়ানা হলো। ওকে আজ রাতেই সব ঠিক করে আনহাকে আবার নিজের করতেই হবে।
.
আরাভ জান্নাতের বাড়ির গেটে বেল চাপলো।
জান্নাত- তুমি এখানে যে? (কিছুটা ভনিতা করে)
আরাভ- তুই এমন কেনো করলি?
জান্নাত- আমি আবার কি করলাম?
আরাভ- কেনো করলি আমার আর আনহার সাথে এমন?
জান্নাত- ও তাহলে জেনে গেছিস? প্রতিশোধ এটা বুঝলি?
.
আরাভ রেগে জান্নাতের গালে থাপ্পড় দিলো। জান্নাত দূরে গিয়ে পড়লো। এতে একটু শব্দ হলো। এতে বাড়ির বাকীরা বেড়িয়ে এলো।
.
আরাভ- আরে তোর মতো মেয়েকে কে ভালোবাসবে? তুই তো ভালোবাসার যোগ্যই না। আরে বেয়াদপ মেয়ে তুই ভালোবাসা বুঝিস? তোর বাপ মা তোকে শিখায় নি? আরো অনেক কিছু বললো।
.
আরাভ আরও গালি দিলো। রাগের মাথায়। আরাভের মামা বুঝছেই না আরাভ কেনো এমন করছে?
আরাভের মামা- কি হয়েছে আরাভ? তুমি আমার মেয়েকে এভাবে মারতে পারো না।
আরাভ- আপনার জন্যই এমন হয়েছে। মেয়েকে আরো মাথায় উঠান। কি কি করছে জিজ্ঞেস করুন। প্রথম থেকে।
.
আরাভ সবকিছু বললো। বলে সেখান থেকে চলে আসলো। আর জান্নাতকে সাবধান করে দিলো। জান্নাতের বাবা খুব কষ্ট পেয়ে জান্নাতকে বুঝালো।
.
আরাভ ভাবছে, ওকে আনহার ভালোবাসা আবার জয় করতেই হবে। ও জানে আনহাকে সব বললেও ও মানবে না। ওকে আবার কিছু করতেই হবে। কালই। আরাভ ভাবতে লাগলো, কিভাবে সব ঠিক করা যায়। তারও উপরে ওর বিশ্বাসই হচ্ছে না ওর একটা ছেলে আছে। আরাভ আনহার‌ ব্যাগে আনভীরের আরো ছবি পেলো সেদিন রাতে। সব দেখে ও‌ বুঝলো‌ ওদিনের বাচ্চাটা মিমির না আনহার ছিলো।
.
আরাভ সেদিন রাতটা কোনোমতে আনভীরের ছবি বুকে জড়িয়ে কাটালো। সে ভাবছিলো হয়তো সব ঠিক হবে। কিন্তু কে জানে হবে কিনা? জানতে সাথে থাকুন।
.
চলবে….

Angry_Husband Season_2_Part_24

0
Angry_Husband Season_2_Part_24
Angry_Husband Season_2_Part_24

Angry_Husband
Season_2_Part_24
Written by Avantika Anha

আমি বাড়িতে আনভীরের সাথে সময় কাটাচ্ছিলাম। এমন সময় ঘরে প্রেয়সি আসলো।
প্রেয়সি- আপু চল তো একটু বাইরে যাই।
আমি- তুই যা। বড় হইছিস তো। প্রবলেম হলে রায়ানকে(ওর হবু বর) বল আসতে।
প্রেয়সি- আরে ওর সাথেই দেখা করতে যাচ্ছি। তুইও চল আমার ভয় করছে।
আমি- দূরর কিসের ভয়?
প্রেয়সি- তোর সময় যে আমি গেছিলাম, (কথাটা বলেই ও জিহ্বায় কামড় দিলো। কারণ ও বুঝেছে যে, কথাটা ভুলে হলেও আমাকে আঘাত করেছে)
আমি- তুই যাবি এখান থেকে? (কিছুটা চিৎকার দিয়ে কারণ কথাটা আমাকে আরাভের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে)
.
প্রেয়সি আর কিছু না বলে ওখান থেকে চলে গেলো। আমি আনভীরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। আনভীরই আমার সব। আরাভের দেওয়া ধোঁকার পর আমার বাঁচার সম্বলই সে। তাই কষ্ট হলে তাকেই আকড়ে ধরি।
.
আরাভ এখনো জানে না ওর সন্তান আছে।
..
..
প্রেয়সির বিয়ের অনুষ্ঠানগুলো শুরু হয়ে গেলো। সব ভালো ভাবেই হচ্ছিলো। কিন্তু আমি তবুও লুকিয়ে চলছিলাম। কারণ চারপাশের মানুষের অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছিলো আমার। বিয়ের দিন। পারিবারিক ভাবে ছোট করে অনুষ্ঠান হচ্ছিলো। কারণ পরে বড় করে হবে। প্রতিটা অনুষ্ঠান আমাকে আরাভের কথা মনে করিয়ে কাঁদাচ্ছিলো।
.
এক কোণায় দাড়িয়ে ছিলাম।
রাহাত- চুপচাপ দাড়িয়ে আছেন যে?
আমি- না এমনিই আমি কি করবো? বিয়ে তো ওদের।
রাহাত- আপনি নাকি খুব চঞ্চল?
আমি- জ্বী সন্দেহ?
রাহাত- না তা তো দেখছিই। তা আপনি পরে আর বিয়ে করছেন না কেনো?
আমি- আমি আমার ছেলেকে নিয়ে সুখেই আছি। লাগবে না আমার পরিবারে অন্য কাউকে।
রাহাত- তবুও সমস্যা কই?
আমি- আপনি করেন নি কেনো?
রাহাত- একজনকে ভালোবাসতাম সে ধোঁকা দিয়েছে তাই আরকি। তারপর আর ইচ্ছেই হয় নি কাউকে আপন করার। কিছুটা আপনার মতোই।
আমি- হাহা হয়তোবা।
.
.
তারপর দুজনেই চুপ হয়ে গেলাম। আমার খুব বিরক্তি লাগছিলো। তাই ব্যাগ থেকে কিটক্যাট বের করে খেতে লাগলাম।
আমি- খাবেন ? (আরেকটা কিটক্যাট এগিয়ে)
রাহাত- কিটক্যাট?
আমি- না বিষ। দেখছেনই তো নাম লিখা। তাইলে কি আমি পঁচা ডিমের ভর্তা খাওয়াবো?
রাহাত- না মানে?
আমি- হায় রে। থাক ভাইয়া আপনার খাওয়া লাগবে না।
.
এই বলে আমি খেতে লাগলাম। আনভীর ঘুমিয়েছিলো তাই ওকে পাশের ঘরে শুইয়ে রেখেছিলাম।
রাহাত- আপনি বাচ্চার মতো।
আমি- হতে পারে।
রাহাত- আসলেই।
আমি- হুমম। (একটা ফেক হাসি দিয়ে অন্য দিকে সরে গেলাম। কারণ এই পোলাটা বড়ই কেমন কেমন লাগছে আমার। লাইক একটু বেশিই নরম।)
.
বিয়ে হয়ে গেলো। আমি ঘরে গেলাম একটু আনভীরকে দেখতে গেলাম। কিন্তু ঘরে গিয়ে দেখি আনভীর নাই। অনেক খুঁজে দেখলাম আনভীর মি. রাহাতের কোলে।
আমি- আপনার কাছে আনভীর কেমনে?
রাহাত- না মানে উঠে কাঁদছিলো আর কি? আপনার বাবুটা অনেক কিউট। একদম আপনার মতো।
আমি- হাহা না। ও একদম ওর বা. (বলে থেমে গেলাম)
রাহাত- ওর একটা ছবি তুলি?
আমি- জ্বী। (বুঝলাম উনি বিষয়টা বুঝেছে)
.
তারপর বিয়ে হয়ে গেলো। প্রায়ই সময় কাটলো একটু করে সবার সাথে। ধীরে ধীরে আমার ফিরে যাওয়ার দিনও কাছে আসতে লাগলো। আমি খুশি কারণ আরাভের স্মৃতি থেকে আবার দূরে যাওয়া যাবে। কষ্ট হচ্ছে বাকীদের জন্য যদিও।
.
একদিন… মেইন অফিসে এক কাজে গেছিলাম। কাজ শেষ হয়ে বাইরে যেতে যাবো অমন সময় আরাভের সাথে ঢাক্কা খেলাম। আরাভকে দেখে আমি ভুত দেখার মতো চমকে উঠলাম। আরাভও কিছুটা চমকালো।
রাজ- শুন আনহা। এটা আরেক কোম্পানির মালিক। আমরা একসাথে একটা প্রজেক্ট করবো। তুইও শুন হেল্প হবে। আমার মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছিলো না। রাজ আরাভকে চিনে না। ও আমার বিয়ের টাইমে আসে নি। যদিও ও পিকও দেখে নি। কারণ মাঝে ঝগড়া হয়েছিলো এক কারণে।
আরাভ- কেমন আছো? (আস্তে)
আমি- জানা লাগবে না আপনার। (আস্তে)
.
রাজ- ভেতরে আসুন।
আরাভ- হুমমম।
.
মিটিং টাইপই কথা হলো। যদিও পুরো সময়ই আমি আর আরাভ বারবার একে অপরের দিকে তাকাচ্ছিলাম। সেই সাথে আমরা কেউই কথা বললাম না বেশি। যদিও শেষে কিছু আইডিয়া দেওয়ায় আমার দায়িত্বেই পড়ে গেলো প্রজেক্ট টা। রাজকে মানাও করতে পারলাম না। কারণ ও এমনিই আমাকে অনেক বেশিই হেল্প করেছে।
.
যাওয়ার সময়…
আরাভ ডাক দিলো, “আনহা”
.
আমি ওর দিকে গেলাম।
আমি- জ্বী বলুন।
আরাভ- সুখে আছো তুমি?
আমি- জ্বী অনেক।
আরাভ- তা তোমার স্বামী কি করে?
আমি- (আশ্চর্য হলাম কারণ আমার তো বিয়েই হয় নি ও স্বামীর কথা আস্ক করে কেনো? তাই জবাবও দিলাম না)
আরাভ- কি হলো বলো? কেমন তোমার নতুন সংসার?
আমি- আমি আনভীরকে নিয়ে অনেক সুখী। (ইনডিরেক্ট উত্তরটা দিলাম)
আরাভ- আচ্ছা। আসি তাহলে। (আরাভ ভাবলো আনভীর হয়তো আনহার নতুন বরের নাম)
.
আমি গাড়িতে উঠলাম। আরাভ ওদিকে নিজের গাড়িতে। আমার কান্না পাচ্ছে তাই কাঁদতে লাগলাম। ওদিকে আরাভের কষ্ট হচ্ছে তাই ও চুপচাপ আছে। সেদিন রাতে একটা মুহূর্তে অনেক কষ্ট হতে লাগলো দুজনেরই। আমার কষ্টের পরিমাণ বেড়ে গেলো তাই আমি নিজেকে আঘাত করতে লাগলাম। চাকু দিয়ে হাতে কয়েকটা দাগ কাটলাম।
.
ওদিকে আরাভ দেয়ালে বাড়ি মারতে লাগলো। একটা সময় আমার মা ঘরে এসে আমাকে থাপ্পড় দিয়ে আটকালো। আমি অনেক সময় পর শান্ত হলাম। সেদিন পুরো রাত জেগে থাকলাম। ওদিকে আরাভও জেগে ছিলো।
বারবার মনে একটাই প্রশ্ন, “কি কমতি ছিলো আমার ভালোবাসার?” কিন্তু আমি জানিও না প্রকৃত দোষী কে?
পরেরদিন অফিসে যেতে হলো। আমাকে একটা কেবিন দেওয়া হলো। হঠাৎ কল আসলো, টেলিফোন রিসিভ করতেই, “হ্যালো”
আরাভ- আনহা? (কন্ঠ শুনেই বুঝলাম এটা আরাভ)
আমি- বলুন।
আরাভ- ডিলটা আমি অন্য কাউকে দিচ্ছি তোমার আর সমস্যা হবে না।
আমি- জ্বী না। ডিল আপনাকেই শেষ করতে হবে মি. রাহিদ আহমেদ আরাভ।
আরাভ- তোমার প্রবলেম?
আমি- আমি কি আপনাকে বলেছি আমার সমস্যা ? হাহা না বলতেই এতো কিছু ভাবতে নেই মি.
আরাভ- ওকে সরি।
আমি- দরকার নেই। ইটস ওকে।
আরাভ- ডিনার হোক অথবা কফিতে একটু দেখা করি প্রজেক্ট নিয়েই কথা আছে। (যদিও মূল বিষয় আনহাকে একটু দেখা)
আমি- আচ্ছা আজ দুপুরে লাঞ্চ হোক। (আমিও না করতে পারলাম না। কারণ আমারও খুব ইচ্ছে করছিলো আরাভকে দেখার।)
.
.
সেদিন রেস্টুরেন্টে,,,,,
দুজনেই চুপচাপ বসে আছি। আমিই কথা শুরু করলাম।
আমি- ডিল নিয়ে কথা শুরু করা যাক?
আরাভ- অনেক বদলে গেছো।
আমি- পরিস্থিতি বদলায় মানুষকে। আর এখানে আমরা পার্সনাল বিষয়ে কথা বলতে আসি নি। তাই ডিল নিয়ে কথা হোক।
.
…..ডিল নিয়ে কিছু কথা বলার পর……
আরাভ- কি খাবে?
আমি- আপনার যা ইচ্ছা অর্ডার করেন। আমার খেতে ইচ্ছে করছে না। আপনার পছন্দের কিছু অর্ডার করুন।
আরাভ- আইসক্রিম খাবা শেষে? ওটা তো তোমার প্রিয়।
আমি- এখন খাই না।
আরাভ- কেনো?
আমি- মাঝে মাঝে কিছু প্রিয় জিনিস ছাড়তে হয়। এটা তো শুধুই আইসক্রিম।
.
সেদিন বেশি কথা বললাম না।
..
হঠাৎ ফোনে কল আসলো,
আমি- হ্যা আসসালামুয়ালাইকুম।
অপর পাশে আম্মু- আনহা আনভীর পড়ে গেছে বিছানা থেকে।
আমি- কিইইই? ওকে দেখো নি কেনো? কেমন আছে ও কই ও?
আম্মু- মাথায় একটু লেগেছে। ফুলে আছে। কাঁদছে। জ্বলদি আয় তুই।
আমি- আমি এখনি আসছি।
.
কলটা কেটেই,,
আমি তাড়াতাড়ি ওখান থেকে চলে আসলাম। তাড়াহুড়া করতে গিয়ে সেদিন ব্যাগটা ওখানেই রেখে আসলাম।
.
তাড়াতাড়ি নিজেই ড্রাইভ করে বাড়ি গেলাম। গিয়ে আনভীরকে থামালাম। ওর কিছু হলে মনে হয় জীবন বের হয়ে গেলো। তাই নিজেই অনেকটা সময় কাঁদলাম। ব্যাগের কথা ভুলেই গেলাম সেদিন। আরাভ ব্যাগটা তার সাথে নিয়ে যায়।
.
.
চলবে……

Angry_Husband Season_2_Part_23

0
Angry_Husband Season_2_Part_23
Angry_Husband Season_2_Part_23

Angry_Husband
Season_2_Part_23
Written by Avantika Anha
রাত….
আরাভ আনহাকে অনেক মিস করছে। ওর সব জায়গায়ই আনহার স্মৃতি। ওর চোখের সামনে স্মৃতিগুলো ভাসছে। ওর খুব কষ্ট হচ্ছে। ওর মাথায় চিন্তা আনহা কই? আর ও কি সব ঠিক করেছে?
.
অপরদিকে,,, আমি ক্লোজ কারো সাথে যোগাযোগ করলাম না। হাতের কিছু টাকা নিয়ে এক বাড়িতে উঠলাম। আমি এক ফ্রেন্ডের সাথে যোগাযোগ করলাম। যে বর্তমানে বিদেশে ছিলো। ওকে সব বলার পরই ও আমাকে ওদের অফিস জয়েন করতে বললো। তার সাহায্যর জন্য ওকে থেংকু বললাম। কিন্তু একদিন আরাভের সাথে দেখা হয়ে গেলো। যদিও ও আমাকে দেখে নি। কেনো যেন ওর চাহনিতে ক্লান্তি দেখতে পেলাম। ওকে দেখে আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো। আমার সাথে আমার ফ্রেন্ডটা ছিলো। ও বুঝলো সব। সবশেষে ও আমাকে ওর কোম্পানির বিদেশের শাখায় যেতে সাজেশন দিলো।
আমি- দোস্ত আমার জন্য এতো কিছু কেনো করছিস?
রাহাত- আরে ব্যাপার না। আমি তো আছি তাই নয় কি? আমি এমনিও প্রায়ই ওই দেশে যাই। কারণ ওখানে আমার কাজ বেশি থাকে। তুই থাকলে আমার বেশি যেতে হবে না।
আমি- আচ্ছা।
.
রাজি হয়ে গেলাম। কারণ এখানে আমার নতুন যাত্রা। আজকাল প্রায় রাতে আরাভের কথা ভেবে কাঁদি। আর পেটে হাত রেখে, বাবুর সাথে কথা বলি।
.
USA চলে গেলাম। ওখানে সব কাজ করতাম সারাদিন আর রাতে একাই সময় কাটাতাম। হঠাৎ মনে হলো আম্মুর সাথে যোগাযোগ করি। আম্মুর সাথে যোগাযোগ করে বাড়ির সবাই কান্নাকাটি করলো। সবাইকে বুঝালাম। সবাই বিষয়টা বুঝলো। এদিকে আরাভকে আমার পরিবারের কেউই আর দেখতে পারতো না। কেউ আর ওর খোঁজও নিতো না।
.
আরাভের রাগের পরিমাণ দিন দিন বাড়তে লাগলো। ওর পরিবারের মানুষেরা আমাকেই দোষী ভাবতে লাগলো। আরাভও কিছু বললো না। কারণ ও জানে যদি এদের কিছু বলা যায় তাহলে সবাই আবার আমাকে আরাভের জীবনে আনার চেষ্টা করবে।
কিন্তু আরাভ এখনো জানে না আনহা কই? প্রতিনিয়ত খোঁজ নেওয়ার চেষ্টায় সে,,,
একদিন আরাভের সামনে আনহার মা পড়লো,
আরাভ- আসসালামুয়ালাইকুম মা।
মা- মা বলার অধিকার তোমার নাই।
আরাভ- আচ্ছা। আনহা কেমন আছে?
মা- খুব সুখেই আছে তোমাকে ছাড়া। ওর নতুন দুনিয়ায়। (যদিও এটা বলে ওর কষ্টকে বুঝিয়েছে। কিন্তু আরাভ তা বুঝলো না)
আরাভ- আচ্ছা।
.
.
বাড়ি ফিরে আরাভ চুপচাপ ঘরের দেয়ালে ঘুসি মারতে লাগলো। আজকাল এটা নতুন না,
আরাভের মা- কেন ওই মেয়ের জন্য এমন করিস? যে একদম ভালোনা।
আরাভ- মা না জেনে কাউকে খারাপ বলবা না। যাও তো এখান থেকে।
মা- যাচ্ছি বাপু যাচ্ছি। অন্য মেয়ের জন্য আমার ছেলে কষ্ট পাচ্ছে। ওই মেয়ে কখনো সুখী হবে না।
.
.
আরাভের মা এটা বলতে বলতে চলে গেলো। আরাভের প্রচুর খারাপ লাগছিলো কথাটা। যেখানে আনহার কোনো দোষই নাই। ওপরদিকে এসবে সবচেয়ে বেশি খুশি জান্নাত। ও জানে এখনো ও আরাভকে পাবে না। কিন্তু ও খুশি যে আনহাও আরাভকে পাবে না।
.
এদিকে আনহা একাকিত্বে সাথী বানিয়ে নিয়েছে ওর মাঝে অবস্থানরত আরাভ আর ওর সন্তান কে। সময় যেতে থাকে আরো দুজনে দু প্রান্তে কষ্টে।
.
.
প্রায় ১ বছর পর,,,
আনহার ছেলে হয়েছে। ও নাম রেখেছে আনভীর। শখ করে নাকি ভালোবেসে। ব্যস্ততার ভিড়ে।
.
দেশে এসেছে,,, আজ প্রথম ওর ছেলেকে নিয়ে। সবাইকে সারপ্রাইজ দিতে। এক মাসের জন্য।
ওকে নিতে এসেছে ওর বেস্টু আর তার ছোট বোন। মূলত ওর বোনের বিয়েতে ওর আসা। আজকাল কষ্টকে সে ইগনোর করে।
প্রেয়সি- আপুউউউউউউউ।
.
আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি প্রেয়সি।
আমি- তুই আসছিস আনতে? আহা বেবি তুমিও।
মিমি- তুমি আসবা আর আমি না এসে কিভাবে পারি গো?
আমি- তাই নাকি। জিজু আসসালামুয়ালাইকুম।
ইমরান- ওয়ালাইকুম আসসালাম।
আমি- আপনিও এসেছেন যে?
ইমরান- তুমি তো আমার বোনই তাই না?
আমি- হুম ভাইয়া হুম।
মিমি- বাহ আনভির দেখি অনেক কিউট হইছে।
আমি- হবেই তো ছেলেটা কার দেখতে হবে তো?
মিমি- আমার বাবুটাও এতো বড় হতো তাই না রে? (মিমির বাবুটা নষ্ট হয়ে যায় এক্সিডেন্টে)
আমি- এটা তো তোরও বাচ্চা রে। তোর আর আমার বাচ্চা কি আলাদা নাকি?
মিমি- কোলে নেই দে।
আমি- এই নে।

মিমি আনভীরকে কোলে নিলো। এগিয়ে গেলাম আমরা। রাস্তায় একটা গাড়ি আমাদের গাড়িতে ঢাক্কা দিলো। রাগ উঠে গেলো। আজকাল আমারো রাগ বেড়ে গেছে।
আমি- ওই আফ্রিকান হাতির দল সাবধানে গাড়ি চালাতে পারেন না? হা কি লাগাইছেন এখানে?
মিমি- বাদ দে।
আমি- বাদ দিবো মানে? এই একেকটা নাইজেরিয়ান বিড়াল।
.
পিছন থেকে বেশি কিছু বললো না। একটা ছেলে সরি বললো যাস্ট। আমিও আর কথা বাড়ালাম না। বাড়িতে সবাই খুশি। মেয়ে বাড়ি ফিরেছে। সবাই সবার মাঝে খুশি। পরেরদিন রাতে,,,
মা- আনহা মা।
আমি- হুমম বলো। (আমি আনভীরের সাথে খেলছিলাম)
মা- তুই আরেকটা বিয়ে করলেই পারিস।
আমি- মা আমি ঠিক চলতে পারছি। আর তোমাদের সমস্যা হলে বলো। আমি জ্বলদি রিটার্ন করবো।
মা- না থাক ব্যাপার না।
আমি- ওকে আমার খাওয়া হয়ে গেছে আমি ঘরে গেলাম।
.
আমি আনভীরকে নিয়ে ঘরে গেলাম। আমার জীবন এখন ওকে ঘিরেই।‌দেশে ফিরে কেনো যেনো আরাভের কথা খুব মনে পড়ছে। বুকের ভিতরের চিনচিন ব্যাথাটা ওর প্রতি আরো বেড়ে গেছে। অপরদিকে আরাভেরও বুকের ঢুকবুকানি বেড়ে গেছে। আজ কেনো যেনো আরাভের ঘুম আসছে না।
.
এদিক ওদিক হাটাহাটি করছে। বেলকনিতে দাড়িয়ে আনহার কথা ভাবছে। ভাবছে ও হয়তো নতুন সংসারে অনেক সুখী। আরাভ ইচ্ছে করেই আনহার খোঁজ নেয় না। নিজেকে শক্ত করে রেখেছে। হঠাৎ ঘুমিয়ে গেলো। স্বপ্নে,,,
আরাভ আনহার হাত ধরে হাটছে। আনহা বলছে, ” তোমার জন্য একটা গিফ্ট এই বলে আরাভের হাতটা এগিয়ে ওর দিকে আনছিলো” হঠাৎ ওর ঘুম ভেঙ্গে গেলো। ওর কপালে ভাজে ভাজে ঘাম। বিরহের কষ্ট ওর মাঝেও স্পষ্ট।
.
২ দিন পরে,,
আভা- ভাইয়া।
আরাভ- বল।
আভা- আমার একটা জিনিস লাগবে মল থেকে নিয়ে যাবি?
আরাভ- আমি ব্যস্ত।
আভা- তুই কি সবসময় ব্যস্ত?
আরাভ- তোর বরকে বল।
আভা- ও নাই দেশে ভুলে গেছিস? তাই তো আমি বাড়িতে।
আরাভ- ওহ হুমমম।
আভা- আজকাল বড্ড ভুলে যাস তুই সব।
আরাভ- চুপ করবি? চল নিয়ে যাচ্ছি।
আভা- হুমমম চল।
.
.
মলের ভিতরে আরাভ মিমির দেখা পেলো। সেই সাথে মিমির কোলে একটা বাচ্চা। বাচ্চাটা আনভীর ছিলো। কিন্তু আরাভ ভাবলো, এটাই হয়তো মিমির বাচ্চা। হঠাৎ ওর আনহার কথা মনে পড়লো। আনহার বাচ্চার প্লান। ওর মুখে মুচকি হাসির রেখা ফুঁটে উঠলো। ও অস্ফূট ভাবে বললো, পাগলি।
.
আরাভ- কেমন আছেন মিমি?
মিমি- আপনি? (রেগে। কারণ ও জানে আরাভ খারাপ)
আরাভ- হুমমম মলে আসছিলাম। তোমাকে দেখলাম তাই।
মিমি- ও নতুন বউ এর সাথে বুঝি?
আরাভ- হুমমম। (মিথ্যে)
মিমি- ভালো।
আরাভ- তোমার ছেলেটা অনেক কিউট।
মিমি- জানি।
আরাভ- একটু কোলে নেই। (আরাভের খুব কোলে নিতে ইচ্ছে করছিলো আনভীরকে)
মিমি- আচ্ছা। (মিমি বাঁধা দিলো না। কারণ যাই হোক বাচ্চাটা তো তারও)
.
আরাভ কোলে নিলো। আমি একটা দোকান থেকে একটু বের হতেই আরাভের কোলে আনভীরকে দেখি। আমি লুকিয়ে যাই। মিমিকে কল দেই।
মিমি- হুমমম।
আমি- ওর কোলে কেনো? ও যেনো না বুঝে আমার সাথে কথা বলছিস।
মিমি- এই তো এমনিই ঘুরছিলাম আরকি।
আমি- জ্বলদি আয়।
মিমি- ওকে আসছি।
.
.
মিমি- দেন আনভীরকে।
আরাভ- কি নাম বললে?
মিমি- আনভীর। আনহা রেখেছে এই নাম। (ইচ্ছা করেই বললো)
আরাভ- ও কেমন আছে?
মিমি- জানা লাগবে না আপনার। দেন বাবুকে।
.
আনভীরকে মিমি ওর কোলে নিতেই কেঁদে উঠলো। হয়তো বাবার স্পর্শ বুঝেছে। এটা দেখে আমার চোখে পানি এলো। নাহ আরাভ জানলে যদি আনভীরকে নিয়ে নেয়। এই জন্য চোখের পানি মুছে ফেললাম। আরাভের মনে হচ্ছিলো ওর অনেক কাছের কিছু নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কি বুঝছিলো না। মিমি আনভীরকে আনতেই আমি ওকে তাড়াতাড়ি কোলে নিয়ে জড়িয়ে ধরলাম। মনে মনে বলছিলাম, “না আমার ছেলেকে আমি কাউকে দিবো না।”
.
প্রেয়সির বিয়ের আগে দুই পরিবারের সদস্যদের খাওয়ার একটা আয়োজন করা হলো। যেখানে আমি গেলাম যদিও একটু লেটে। আনভীর প্রেয়সির কাছেই ছিলো। আমি অফিসের একটা কাজে মেইন অফিস গেছিলাম তাই যদিও একটু লেট হলো। রেস্টুরেন্টে ঢুকতেই একজনের সাথে ঢাক্কা খেলাম,,,,
আমি- সরি সরি দেখি নি।
লোকটি- ইটস ওকে আমারো ভুল।
আমি- জ্বী।
লোকটি- আপনাকে মনে হয় কোথাও দেখেছি।
আমি- আমারো মনে হচ্ছে।
লোকটি- উপপপপসসস আপনি সে না যে আফ্রিকান নাইজেরিয়ান বলে আমাকে একদিন গালি দিয়েছিলেন। কারণ ভুলে গাড়ি ঢাক্কা লাগছিলো।
আমি- ইয়ে মানে। ভাইয়া ওইটা আপনার না?
.
লোকটি‌ ওইদিকে তাকাতেই আমি পালালাম। নইলে বকাও দিতেও পারে। ওখানে খাওয়ার টেবিলে কিছু সময় পর ওই লোকটাও এলো।
আমি তাকে দেখে থ। যদিও সে-ও কিছুটা আশ্চর্য। তার নাম রাহাত। ছেলের চাচাতো ভাই। যদিও সে নাকি কোনো এক কারণে বিয়ে করে নি। যদিও বা আমার কিছুই যায় আসে না। তাই আমি ওখানে বেশি কথা বললাম না। প্রেয়সির হবু শশুড় পরিবারের সবাই জানে আমি ডিভোর্সি। যদিও ডিভোর্স হয় নি। কিন্তু কথা বাড়ালাম না।
.
.
চলবে……..

 Angry_Husband Season_2_Part_22

0
 Angry_Husband Season_2_Part_22
 Angry_Husband Season_2_Part_22

 Angry_Husband
Season_2_Part_22
Written by Avantika Anha
আরাভ রিপোর্ট হাতে নিয়ে বসে আছে হাসপাতালে। তার সামনে আনহার বাচ্চাদের ভালোবাসা থেকে শুরু করে বাচ্চা চাওয়া। বাচ্চার নাম ঠিক করা সব মনে পড়ছে। সব তার সামনে ভাসতে লাগলো। তার চিন্তার পরিমাণ বেড়ে গেলো সেই সাথে কান্নাও। ছেলেরা নাকি কাঁদতে পারে না। কিন্তু আজ এই কথাটা আরাভের সহ্য হচ্ছে না। আরাভ ভাবছে কি করবে। সেদিন আরাভ একটু রাত করেই বাড়ি ফিরলো।
আমি- কি মি. এতো লেট যে।
.
আরাভ কোনো জবাব দিলো না। কোনো রকমে ফ্রেশ হয়ে কাপড় চেঞ্জ করে শুয়ে পড়লো। ওর এমন বিহেভ দেখে আমি কিছুটা স্তম্ভিত। কিন্তু ভাবলাম হয়তো কিছু হয়েছে।‌ আমি গিয়ে ওর হাত ধরে টানতে লাগলাম।
আমি- ওই কি হইছে?
আরাভ- উইল ইউ যাস্ট স্টপ? (জোড়ে)
আমি- কিচ্চে এতো এংরি মুড কেনো?
আরাভ- তুমি কি যাবা?
আমি- না আমি যাবো না।
আরাভ- ওকে ফাইন আমি যাচ্ছি।
আমি- আরে আরে কি হলো?
.
আরাভ জবাব না দিয়ে চলে গেলো ঘরের বাইরে। আমি একটু শকড হলাম। কারণ ওর রাগ অনেক জানি কিন্তু এতো পরিমাণ কোনোদিন ছিলো না। হঠাৎ এমন বিহেভের কারণ কি?
.
আমি নিজের পেটের উপর হাত রেখে বলতে লাগলাম, “কিরে বাবু তুইও বাবার মতো হবি নাকি?” “একদম রাগী হবি না বুঝলি? তুই আম্মুর মতো পাগলি হবি। তখন তুই আর আমি একসাথে আব্বুর রাগ ভাঙ্গাবো।” এসব বলে আমি বিছানায় হেলানি দিয়ে আরাভের অপেক্ষা করতে লাগলাম।
এদিকে আরাভ ভাবতে লাগলো ও কি করবে? ওর প্রচুর কষ্ট হচ্ছে। ও ঠিক করলো ও এই বিষয়ে কাউকে কিছু বলবে না।
.
ও ওর পরিচিত একজন উকিলকে আর্জেন্ট ডিভোর্স পেপার বানাতে বললো। এদিকে এসব নিয়ে অজানা আমি আরাভের অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লাম। মাঝরাতে আরাভ ঘরে আসলো। এসে দেখলো আমি কাচুমাচু হয়ে ঘুমিয়ে আছি। আরাভ আমার পাশে বসলো। বসে আমার কপালে চুমু খেলো। ওর কান্না পেলো। ওর চোখের দুই ফোটা পানি আমার মুখে পড়লো। আমি কিছুটা নড়ে উঠলাম। আরাভ তাড়াতাড়ি চোখের পানি মুছে ফেললো। আমাকে ঠিক করে দিলো। আর বলতে লাগলো, “তোমার ভালোর জন্য আমার দূরে যাওয়াটাই শ্রেয় রে পাগলি। খুব ভালোবাসি তোকে।” আমি জানিও না আমার জীবনে কতোগুলো বিপদ আসতে চলেছে।
.
.
পরেরদিন সারাদিন আরাভ আর আমার সাথে কথা বললো না। সেদিনই আমি ঠিক করছিলাম আমার আর ওর বাবুর কথা আরাভকে বলবো বলে। কিন্তু জানতাম না তা বলা হবে না।
.
সেদিন আরাভের অপেক্ষা করছিলাম আমি। কিছুটা সেজেই। কিন্তু আরাভ আসছে না। কিছু সময় পর আরাভ এলো। আরাভ আসতেই আমি ওকে জড়িয়ে ধরলাম।
আমি- এই শুনো তোমাকে কিছু বলার আছে। কাল তো তোমার জন্মদিন। রাতের গিফ্ট।
আরাভ- আমার কিছু চাওয়ার আছে আনহা।
আমি- না আগে আমি।
আরাভ- প্লিজ আমাকে বলতে দেও।
আমি- উহু।
আরাভ- আনহা প্লিজ।
আমি- উকে উকে কও কও। আমি আগে আর পরে কি।
আরাভ- আনহা আমি যা বলছি মনোযোগ দিয়ে শুনো। এটা বলা জরুরী।
আমি- উকে উকে শুনতেছি।
আরাভ- আমার ডিভোর্স চাই।
আমি- ও আচ্ছা। (প্রথমে মাথায় ঢুকে নি)
আরাভ- কি বললাম শুনলা?
আমি- হু মজা করছো। আচ্ছা কবে লাগবে এখন? দেখি পেপারে সাইন করি।(মজা ভেবে)
আরাভ- এই নেও।
.
আরাভ সত্যি পেপার আগায় দিলো। আমি ওটাকে ফেক পেপার ভাবলাম।
আমি- আহা কত্ত মজা। ভালা ভালা। এখন আমার কথা শুনো তোমার এক জোক্সে মজা নাই।
আরাভ- আনহা আমি সিরিয়াস পেপার চেক করো।
আমি- হাহা তাই নাকি।
.
.
আমি পেপার নিয়ে দেখি সত্যি রিয়েল পেপার। তাহলে কি সত্যি আরাভ আমাকে ডিভোর্স দিতে চায়। আমার চোখে পানি চলে আসলো।
আমি- কেনো আমাকে ছাড়তে চাও? আমি কি জানতে পারি?
আরাভ- আমার আর ভালো লাগছে না তোমাকে। আজকাল আমি একটা মেয়ের সাথে অনেক ক্লোজ হয়ে আসছি। আমি তার সাথে থাকতে চাই।
আমি- তুমি কি মনে করো আমি বিলিভ করবো? আই বিলিভ ইউ। হুহ। হইছে ঢং করছো কেনো? (তবুও আশা নিয়ে বললাম)
আরাভ- সে মা হতে চলেছে। আর আমি তাকে ছাড়তে পারবো না। একটা ভুল হয়েছে। কিন্তু আমি ওকে এখন ছাড়তে পারছি না। মেয়েটার কেউ নাই। তুমি এখনো জীবন শুরু করতে পারবা। কাউকে বিয়ে করে নিও। সব খরচ আমি দিতে রাজি। তোমার সারাজীবনের।
আমি- আচ্ছা কাল সাইন করে দিবো। আর কিছু বলতে হবে না।
আরাভ- আচ্ছা। ও ফ্লাটে একা আছে। আমি গেলাম। (যদিও কেউ নাই পুরোই মিথ্যা বললো আরাভ)
আমি- আচ্ছা।
.
.
আরাভ চলে গেলো। এদিকে আমার প্রচুর কান্না পাচ্ছিলো। সারারাত ভাবছিলাম কি করা যায়। ঠিক করে নিলাম কি করবো? অপর দিকে আরাভ সারারাত রাস্তায় বসে কাটালো। তার মনেও কষ্ট কিন্তু সে আমার সুখ চায়।
.
সকালের দিকে আরাভ বাড়ি ফিরলো। ফিরতে দেখেই….
মা- কি রে সকালে কই ছিলি? নাকি রাতেই আসিস নি?
আরাভ- না মানে মা‌ কাজ ছিলো।
মা- চোখ লাল কেনো কাঁদছিলি নাকি?
আরাভ- না কাজ ছিলো।
মা- এতো কাজ। আনহা কই রে? ও ঠিক আছে? এখনো আসে নি যে।
আরাভ- ওর মাথা ব্যাথা।
.
আরাভ ভাবলো আনহা রাগ করেছে। হয়তো কাঁদছে এই জন্যই উঠে নি। আরাভ ঘরে গেলো,
ঘরে দেখে আনহা নাই। ও ভাবছে আমি ওয়াশরুমে। অনেক সময় অপেক্ষা করেও খুলতে না দেখে ও চেক করলো। কিন্তু ওখানে পেলো না। ও ভাবছে আনহা কি চলে গেলো নাকি? ও ডিভোর্স পেপারে সাইন করছে কি না? চেক করতে গিয়ে দেখে সাইন নাই। কিন্তু ওখানে একটা চিঠি রাখা,,,
“প্রিয়,
.
আমার কাছে চিরকাল প্রিয়ই থাকবে তুমি। হুম জানি তোমার ভুল। হয়তো কোথাও ভুল আমারো। আচ্ছা তোমার সুখই আমার কাছে বড়। জানো আমার না কিছু বলার সাহস হচ্ছে না। প্রচুর কান্না পাচ্ছে। আচ্ছা সত্যি কি তোমার শরীরে অন্য নারীর গন্ধ মিশেছে? আচ্ছা সত্যিই কি ওই বুকে অন্য কেউ মাথা রেখেছে? কেনো দিলে। আমার না খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু থাক না। তুমি আমার কাছে একটা গিফ্ট চাইলা। কিভাবে না দিয়ে থাকি বলো? তোমার চাওয়াই পূরণ হলো। আমি চলে যাচ্ছি। কিন্তু একটা প্রাপ্তি নিয়ে যাচ্ছি। থেংকু। অনেক বেশি ধন্যবাদ। ভালোবাসি আমার প্রিয় রাগী মানুষটাকে। নিজের খেয়াল রেখো। আর চিন্তা করো না। কোনোদিন অধিকার ফলাতে আসবো না। তুমি বিয়ে করে ফেলো ওই মেয়েটাকে। তোমার সন্তান আসছে। সুখের ব্যাপার তোমার। আর শুনো রান্নাঘরে আরেকটা চিঠি আছে। মা জানবে আমি অন্যের সাথে পালিয়েছি। কিছু বলো না তাকে কষ্ট পাবে। আমি কিন্তু সাইন করলাম না। কারণ সাহস নেই। সমস্যা নেই বিয়ে করো। সুখী হইয়ো।
.
ইতি,
অপ্রিয় একজন আনহা।
চিঠিটা পড়ে আরাভের কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু ও খুশি যে আনহা এখন ওর অতীতকে ভুলাতে পারবে। কিন্তু ওকে কারো কাছে খারাপ হতে দিবো না। আরাভ তাড়াতাড়ি যায় চিঠিটা সরিয়ে ফেলতে। কিন্তু আগেই তার মা পড়ে ফেল। সবাই আনহাকে খারাপ ভাবতে শুরু করে। কেউ জানলো না অপর চিঠির সত্যি। কিন্তু আনহা খারাপ হয়ে গেলো সবার কাছে। আরাভ চেষ্টা করেও আনহাকে কারো কাছে ভালো করতে পারলো না। আনহা তার বাবার পরিবারের কারো সাথেও যোগাযোগ করলো না। করলো না তার প্রিয় বান্ধবীর সাথে যোগাযোগ।
.
.
চলবে……

 Angry_Husband Season_2_ Part_21

0
 Angry_Husband Season_2_ Part_21
 Angry_Husband Season_2_ Part_21

 Angry_Husband
Season_2_ Part_21
Written by Avantika Anha

রাতে মিমি কল দিলো,,,
আমি- হুমম দোস্ত বল।
মিমি- ভাইয়াকে বললি? নিউ বেবি আসার কথাটা?
আমি- না সিক্রেট পরে কমু।
মিমি- আহা এটাও স্পেশালভাবে বলবি নাকি ভাইয়াকে?
আমি- হুমমম। বুঝতে হপ্পে গো।
মিমি- আহা শুনবো নে কি কি করিস।
আমি- আচ্ছা কমু। তোর কয় মাস ?
মিমি- ৩ মাস। হারামি আরেকটু আগে প্রেগনেন্ট হইতি। একসাথে বেবি হতো তাইলে।
আমি- হারামি আমি জানি নাকি?
মিমি- এমনি সময় অলওয়েজ ফার্স্ট। এইবার লেট।
আমি- লেট তো‌ কি? হলেই হলো।
মিমি- হুহ।
আমি- হুহ তুই। পেত্নি যা ভাগ।
মিমি- রাক্ষসী।
আমি- আফ্রিকান ইঁদুর।
মিমি- বিড়াল।
আমি- যা ভাগ।
মিমি- তুই ভাগ। নিজে আমার পরে প্রেগনেন্ট হইলি আর কথা বলে।
আমি- হইলেই হলো দেরির কি?
.
হঠাৎ আরাভ পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো আমাকে। আমি হকচকিয়ে উঠলাম। ও কিছু শুনলো না তো আবার?
আমি- আচ্ছা রাখি আরাভ আসছে।
মিমি- সাবধান না জানে যেন।
আমি- হুম হুম।
.
আরাভ আমাকে ওর দিকে ঘুরিয়ে নিলো।
আরাভ- কি হইছে দেরি করে?
আমি- কি জানি হইছে ও হ্যা ওর বিড়ালের বাচ্চা হবে।
আরাভ- তো দেরি এর কি আর মিমি নিজেও তো মে বি প্রেগনেন্ট।
আমি- হুমম কিন্তু বিড়াল পরে প্রেগনেন্ট হইছে মিমির। এই জন্য ওয় রেগে আছে।
আরাভ- কি? এতে রাগের কি?
আমি- কেনো লেটে হইলো ওর সাথে বা কাছাকাছি না এটা নিয়ে এই আর কি।
আরাভ- কি বলছো এসব?
আমি- ইয়ে কি জানি কিছু না।
আরাভ- দূররর পাগলি।
.
আরাভ আমার কপালে কিস করে আমাকে কোলে তুলে নিলো। এমা হেতে রোমান্টিক মুডে নাকি।
আরাভ- রাত কয়টা বাজে দেখছো?
আমি- হুমম ১টা।
আরাভ- চলো ঘুমাই।
আমি- শুনেন।
আরাভ- কি?
আমি- আপনার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে। ৫ দিন পর কমু।
আরাভ- তাই?
আমি- হুমমম।
আরাভ- এখনি বলো।
আমি- উহু। ঘুমামু।
আরাভ- ওকে।
.
আমি ঘুমানোর চেষ্টা করলেও পরছিলাম না। কারণ পেটের মধ্যে কথাটা ডিস্কো ডান্স করছিলো। তবুও কষ্ট করে ঘুমানোর চেষ্টা করছিলাম। ২ দিন চলে গেলো। আমি ধরা পড়তে পড়তে বাঁচে যেতে ধরতাম।
.
এইতো সেদিন নেটে প্রেগনেন্ট মেয়েদের সম্পর্কে পড়তেছিলাম আরাভ চলে এলো। এসেই জিজ্ঞেস করে,
আরাভ- কি পড়ো প্রেগনেন্টদের সম্পর্কে।
আমি- ইয়ে মানে।
আরাভ- কি?
আমি- মিমির জন্য পড়তেছি।
আরাভ- হুম, আমাদেরও বেবি নেওয়া দরকার।
আমি- হুমমম হুমমম নিবো পরে।
আরাভ- খালি পরে পরে করে কবে নিবো। ইচ্ছা করছে এখনি শুরু করি।
আমি- ওই লুইচ্চা যান এখান থেকে।
আরাভ- আনহা কষ্টে রাগ কমাইছি। বাড়াইয়ো না।
আমি- হিহি।
আরাভ- হুহ যাচ্ছি।
.
সেদিন রাতে আমি ঘুমের মধ্যে দেখছি আমার দুইটা জমজ বাচ্চা হইছে। একটা মেয়ে একটা ছেলে। আরাভ দুইটাকে নিয়ে আইসক্রিম খাচ্ছে আর আমাকে দিচ্ছে না। আমি রাগের ঘোরে আরাভকে কামড় দিলাম। আরাভ আমাকে পিডাইতে আসতেছে। এমন সময় আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো আরাভের ডাকে। কিন্তু আমি ভাবছি স্বপ্নটা সত্যি। তাই আবার আরাভের হাতে কামড় দিলাম।
আরাভ- কামড় দেও কেনো?
আমি- আপনি ভালো না। বাবুদের জন্য আইসক্রিম আনছেন আমার কই?
আরাভ- কি কোন বাবু?
আমি- কি আমার বাবু কই? আয়নি আর আয়ান কই?
আরাভ- আনহা স্বপ্ন দেখছিলা তুমি।
আমি- না আমার বাচ্চা।
আরাভ- আরে কই? কি হইছে বাচ্চা বাচ্চা করছো কেনো?
.
হঠাৎ ঘোর কেটে গেলো। এই রে স্বপ্ন দেখছিলাম তাহলে। আরাভ কি ভাবছে যে?
আমি- ইয়ে সরি স্বপ্ন দেখছিলাম তো তাই ভুলে গেছি।
আরাভ- কি কি যে স্বপ্ন দেখো। তা হঠাৎ বাচ্চার স্বপ্ন দেখছো কেনো?
আমি- কে জানি?
আরাভ- আমি কিন্তু জানি।
আমি- ক… কি? (ভয়ে)
আরাভ- তোতলাও কেনো? মিমির বাচ্চা হবে দেখে তাই না?
আমি- হ্যা।
আরাভ- জানি তো আমি ব্রিলিয়ান্ট।
আমি- হুম হুম। (মনে মনে হালারপো জানেই না আর বলে জানি)
আরাভ- তোমার প্রাউড ফিল করা উচিত।
আমি- হুমম করি তো। (মনে মনে ওকে গাঁধা বলছি)
আরাভ- আহা তাই?
আমি- হুমমম। এখন নামায পড়ে রেডি হন। অফিস আছে।
আরাভ- হায়রে। মানুষের বউরা তার বরকে যেতে মানা করে আে আমি এমন এক বউ পাইছি যে তার বরকে খালি অফিসে পাঠায়। রোমান্স এরও সুযোগ দেয় না রে।
আমি- ওহো আমার ড্রামাকিং হাজবেন্ড ঢং কইরেন না।
আরাভ- হায় রে।
আমি- যাবেন কি না?
আরাভ- যাচ্ছি। আজকাল তুমি এংরি হচ্ছো।
আমি- হুম আপনার প্রভাবে।
.
সেদিন আরাভ নাকি কিছুটা মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলো অফিসে। যদিও সে তা আমাকে বলে নি। চিন্তা করবো বলে। কিন্তু সেদিন সে ডাক্তারের কাছে চেকাপও করে নি। কিছু হয় নি ভেবে। কিন্তু পরের দিন আবার একই ঘটনা। আরাভ নিজেই ডক্টরের কাছে গেলো। সেদিন‌ আরাভ চেকাপ করে বেড়িয়ে আসতেই জান্নাত ডক্টরের কেবিনে গেলো,
ডক্টর- কে আপনি?
জান্নাত- সেটা বড় কথা নয়। বর্তমানে যা বলছি তা করুন। ফলস্বরূপ আপনাকে আমি ৫ লাখ টাকা দিবো।
ডক্টর- কি বলছেন এসব? আমি কোনো খারাপ কাজ করবো না।
জান্নাত- ৬ লাখ দিবো।
ডক্টর- আমি বিক্রিত নই।
জান্নাত- ১০ লাখ।
ডক্টর- নাহ।
জান্নাত- ১৫ লাখ।
ডক্টর- ওকে আমি রেডি বলুন কি করতে হবে?
জান্নাত- বর্তমানে যে বেড়িয়ে গেলো রাহিদ আহমেদ আরাভের রিপোর্টে লিখবেন সে কখনো বাবা হতে পারবে না।
ডক্টর- এতে আপনার লাভ কি?
জান্নাত- লাভ তো আছেই। তা আপনার না জানলেও‌ চলবে। কাজটা করে দিবেন।
ডক্টর- ওকে।
.
পরেরদিন আরাভ রিপোর্ট দেখে থমকে উঠে। তার মাথা কাজ করা বন্ধ করে দেয়। সে ভাবতে থাকে যে, আনহাকে সে কি বলবে?
.
চলবে……

Angry_Husband Season_2_Part_20

0
Angry_Husband Season_2_Part_20
Angry_Husband Season_2_Part_20

Angry_Husband
Season_2_Part_20
Written by Avantika Anha

আমি- ওয়াও ভুতের মুভি।
আরাভ- হুমমম।
.
ভুতের মুভি শুরু হলো। অন্যান্য দিন আমার ভুতের মুভি ভয় লাগলেও আজ কেন জানি ভয় লাগছে না। লাগলেও কম। আবার হঠাৎ হঠাৎ অনেক ভয় লাগছে। আমি কি পাগল হয়ে যাচ্ছি? এতো ক্যারেক্টার চেঞ্জ হচ্ছে কেনো? এসবই ভাবছিলাম।
আরাভ- আনহা দেখি সাহসী হয়ে গেছো।
আমি- কেনো? আমি তো সাহসীই।
আরাভ- না অন্যান্য দিন এতক্ষণে হয় জড়িয়ে ধরো, নাহয় মুখ লুকাও, ভুতের মুভি দেখে নিজে কমিডি করো। আজ কমে গেছে কেনো?
.
হঠাৎ করে আবার ভয় লাগলো অনেক বেশি। এবার আরাভকে অনেক জোড়ে জড়িয়ে ধরলাম।
আরাভ- না ঠিকই ভয় পাওয়া আনহাই আছো তুমি।
আমি- ইইইইই মোটেই ভয় পাই না।
আরাভ- তাই নাকি?
আমি- হুম।
আরাভ- তাহলে তো দেখি কাছে যেতে হবে তোমার।
.
এই বলে আরাভ আমার আরো কাছে আসতে লাগলো। আমার লজ্জা লাগতে লাগলো। তাই আমি বললাম, “টাইম প্লিজ”
আরাভ- কেনো?
আমি- কাজ আছে।
আরাভ- তোমাকে আমি চিনি নিশ্চয়ই পালানোর প্লান করছো।
আমি- নাহ আরে ওভেনে পপকর্ণ রাখছি। নিয়ে আসছি।
.
আমি তাড়াতাড়ি পালাতে লাগলাম কিন্তু আরাভ হাতটা ধরে ওর দিকে টান দিলো। ওর হাত আমার কোমড়ে।
আমি- কি হলো ছাড়ুন নিয়েই আসছি।
আরাভ- তোমাকে ভরসা নাই।
আমি- ইয়ে মানে আমি না আপনার বউ।
আরাভ- তাই তো বউকে একটু আদর করবো।
.
আমি ওকে কামড় দিয়ে পালাইলাম। গিয়ে কফি বানিয়ে নিলাম। আমি ঠিক করলাম এখনি ঘরে যাবো না। কিন্তু কিছু ভাবার আগে আরাভ কিচেনে চলে আসলো।
আমি- আপনি এখানে কেনো?
আরাভ- আজ আপনাকে ছাড়বো না ম্যাডাম।
আমি- ইয়ে কফিটা বানায় নেই।
আরাভ- ওকে আমার সামনে বানাও।
আমি- আচ্ছা।
.
আরাভকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে আমার ভয় লাগতে লাগলো। কারণ ওর শয়তানি হাসি আমার ভয় বাড়িয়ে তুলছিলো। তাই ভয়ের বশে কিচেনে রাখা এলকহলিক পাউডার জাতীয় কিছু আমি কফিতে দিয়ে ফেললাম। যদিও আরাভ ওটা বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করলো না। এমনকি আমিও করি নি।
কফি হতেই,,
আমি- খাবেন ?
আরাভ- খাও তুমি জ্বলদি শেষ করো।
.
এদিকে আরাভ একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এটা দেখে আমি তাড়াতাড়ি কফিটা খেয়ে ফেললাম।
আরাভ- কফি ডান?
আমি- না আমি আরো খাবো।
আরাভ- আমারটাও খাও।
আমি- আচ্ছা।
আরাভের কাপের কফিও খেয়ে ফেললাম।……
আরাভ-ম্যাডাম এতক্ষণ অনেক দেখলাম আপনার ঢং। এবার কই যাবেন?
.
আরাভ কাছাকাছি এসে আমাকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে গেলো।
আমাকে নামিয়ে দিলো, এবার আমার হাতদুইটা পিছনের দিকে নিয়ে ধরে ফেললো,,
.
আরাভ আমার দিকে আগাতে লাগলো। হঠাৎ করে কিস করে বসলো কিছু বুঝার আগে।ই আমার ঠোঁটজোড়া কাঁপতে লাগলো। কি হলো হঠাৎ?
আরাভ- কি ম্যাডাম লজ্জা পাচ্ছেন কেনো এতো?
আমি- আপনি একটা রেপিস্ট।
.
আরাভ হকচকিয়ে আমাকে ছেড়ে দিলো।
আরাভ- কিইইই?
আমি- জ্বী অবশ্যই। আমার ঠোঁট আপনার কি ক্ষতি করছে? খালি রেপ করেন আমার ঠোঁটের।
আরাভ- আনহা তুমি জানো তুমি কি বলছো?
আমি- সত্যি তাই।
আরাভ- এই তোমার মাথা ঠিক আছে?
আমি- আছে আছে।
আরাভ- মনে হয় না।
আমি- আপনি পঁচা। অনেক পঁচা। খালি আমার ঠোঁটে কিস করেন। ভালো করে হাগও করেন না। খালি কিস।
আরাভ- আনহা তুমি কি কিছু খেয়েছো?
আমি- হুমমম কফি। টেস্টি ছিলো। আপনি না ভালো না। মিমির আমার চেয়ে পরে বিয়ে হলো কিন্তু ও আমার আগে প্রেগনেন্ট।
আরাভ- আমিও তো বেবি নিতে চাচ্ছি তুমিই তো লজ্জা পাও।
আমি- তাই বলে কি নিবো না নাকি? আপনি বাচ্চা দেন আমাকে।
আরাভ- এই পাগলি তুমি কি কি বলছো নিজেও জানো না।
আমি- জানি জানি কিসার বয়। খালি কিস এখানে কিস ওখানে কিস। আপনি কিস কিস করেন কেনো?
আরাভ- থামো। আজ আমার লজ্জা লাগছে তোমার সামনে।
আমি- হ্যা লজ্জা খালি লজ্জাও দেন। কিন্তু আমার না ভালো লাগে আপনি পাশে থাকলে।
আরাভ- তাই ? আর কি? (মজা নিতে)
আমি- আপনাকে বলবো না আমি। আমি মিমিকে বলবো।
আরাভ- আমাকেই বলো।
আমি- আপনার না..
আরাভ- কি?
আমি- আপনার প্রিয় ব্লেজারটা আমি না পুড়িয়ে ফেলছি এটা আমি আপনাকে বলবো না।
আরাভ- কিইইইই?
আমি- হিহি বলবো না।
আরাভ- শয়তান।
আমি- আপনি রোজ আমাকে কিস করেন আজ আমি করবো আপনাকে আমি আপনার ঠোঁটকে ধর্ষণ করবো।
.
এই বলে আমি আরাভের কাধে হাত রাখলাম। ওর পায়ের উপর ভর দিয়ে উচু হয়ে ওকে কিস করলাম। আরাভ কিছু বললো না।
আমি- হিহি আমিও করে দিছি।
আরাভ- হুমম করছো। তুমি নিশ্চয়ই এলকোহল জাতীয় কিছু খাইছো। এখানেই দাড়াও আমি আসছি।
.
আরাভ কিচেনে গিয়েই বুঝে গেলো আমি কি খাইছি। আরাভ ভাবলো ভালোই মজা নেওয়া যাবে। আরাভ রুমে ফিরে দেখে আমি বমি করে ফেলছি।
আরাভ- কি করলা এসব?
আমি- আমি ঘুমাবো।
আগে আমাকে তারপর আরাভ বাকী সব পরিষ্কার করে নিলো। এসে দেখে আমি ঘুমিয়ে পড়েছি।
আরাভ হাসতে লাগলো আর বলতে লাগলো, মেয়েটা পুরাই পাগলি। হকচকিয়ে কফিতে যে কি দিয়ে ফেলছে নিজেও জানে না।
.
সকাল বেলা,,,
মাথাটা ধরে গেলো।
আমি- কাল রাতে কিছু কি হইছে?
আরাভ- হুমমম অনেক কিছু।
আমি- কি????
আরাভ- হুমমম।
আমি- ওমা গো কি হলো?
আরাভ- অনেক কিছু। এতো বলা যায় নাকি?
আমি- এ্যা। আচ্ছা অনেক কিছু হোক কিন্তু আমার মনে পড়ে না কেনো?
আরাভ- গাধী কফিতে এলকোহল পাউডার দিয়ে ফেলছিলা।
আমি- কিইইইইই।
আরাভ- হুমমমম।
আমি- সত্যি?
আরাভ- জ্বী।
.
.
পরেরদিন আমি মিমিদের বাড়িতে গেলাম। যদিও আরাভ রেখে গেলো। জান্নাতের জন্য আমাকে একা কম ছাড়ে সে।
মিমি- আমাকে তো ভুলেই গেছিস।
আমি- না গো বাবু।
মিমি- বাহ আজকাল গ্লো করে কেনো তোর ফেশ।
আমি- আহা তাই নাকি?
মিমি- হুম।
.
হঠাৎ করে মাথা কিছুটা ধরে গেলো।
মিমি- কি রে ঠিক আছিস?
আমি- জানি না রে কয়েকদিন ধরে কেমন যেন লাগছে মেবি মরে যাবো হিহি।
মিমি- মজা বন্ধ কর সিরিয়াসলি বল।
আমি মিমিকে সব বললাম।
মিমি- দোস্ত।
আমি- বল।
মিমি- টেস্ট কর। মনে হয় গুড নিউজ।
আমি- কিইইইই।
মিমি- আমারো এমন হইছিলো।
আমি- কিট আছে?
মিমি- কিট লাগবে না। আমাদের পাশের বাড়িতে এক মহিলা ডাক্তার আছে চল যাই।
আমি- ওকে।
.
সেদিন জানলাম সত্যিই আমি প্রেগনেন্ট। অসম্ভব খুশি হলাম। তাড়াতাড়ি আরাভকে ফোন দিলাম। আর বললাম আমাকে তাড়াতাড়ি নিতে আসতে। ওকে কিছু বললাম না। কারণ এই জিনিসটা ওকে সিক্রেট ভাবে বলবো।
সেদিন কিছু বললাম না। কারণ আমি অপেক্ষা করছি আরাভের জন্মদিনের। যা আর ৫ দিন পরেই। ওইদিনই বলবো বলে ফিক্স করলাম। আমি ভেবেছিলাম সুখের দিন কিন্তু জানতাম না শেষে জান্নাত শেষ চাল চালবে। যা আমাকে আর আরাভকে আলাদা করবে।
.
চলবে……

Angry_Husband Season_2_ Part_19

0
Angry_Husband Season_2_ Part_19
Angry_Husband Season_2_ Part_19

Angry_Husband
Season_2_ Part_19
Written by Avantika Anha
বাড়িতে বাকীরা সবকিছু শুনে বারবার জিজ্ঞেস করতে লাগলো আমি ভালো আছি কি না? সবাইকে বললাম ভালোই আছি। রুমে আসার পর….
আরাভ- পা এর কি শুধু ওই জায়গায় কাটছে?
আমি- হুমমম।
আরাভ- আচ্ছা।
আমি- শুনেন না আজ আমি মরে গেলে কি করতেন?
.
আরাভ এই কথা শুনে আমাকে একটা চর মারলো। আমার হাত গালে চোখে পানি। আর ওকে আদুরে+কাঁদুরে গলায় জিজ্ঞেস করলাম,
আমি- কি করলাম আমি?
আরাভ- কতোবার মানা করছি মরার কথা বলতে না।
আমি- ইয়ে মানে..
আরাভ- তুমি মরলে আমি নিজে জীবিত লাশ হয়ে যেতাম।
আমি- উরিম্মা কত্ত ভালোবাসা।
আরাভ- আনহা সিরিয়াস হও।
আমি- এতো সিরিয়াস হয়ে কি করবো একদিন তো মরেই যাবো। আজও তো মরেই যাইতাম। আপনার তো ভালোই হইতো আর কেউ জালাইতো না।
.
আরাভ হাত আবার আমার আরেক গালে। অর্থাৎ আরাভ আবার আমাকে থাপ্পড় মারলো। আমার আরেক হাত আরেক গালে। এখন আমি দুই গালে হাত দিয়ে আছি। মনে মনে, “শয়তান,লাল বান্দরটা খালি মারে”
আরাভ- কি মনে মনে গালি দিচ্ছো? নিশ্চয়ই বলতেছো শয়তান, লাল বান্দর।
আমি- (অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম) আপনি কিভাবে জানলেন? মনের কথা পড়া শিখছেন নাকি?
.
আরাভ বিনিময়ে জবাব না দিয়ে একটা রহস্যের হাসি দিয়ে ওর ব্লেজার খুলতে লাগলো। আমিও ছাড়ার পাত্রি না। ও কেমনে আমার মনের কথা জানলো আমাকে তা জানতেই হবে। গাল থেকে হাত নামিয়ে আমি আরাভের সামনে গিয়ে দাড়ালাম।
আমি- ওই বলেন না কেমনে জানলেন?
আরাভ- এটা সিক্রেট মিস।
আমি- না না আপনাকে বলতেই হবে।
আরাভ- সরো কাজ আছে।
আমি- আমি করে দিবো আগে বলেন।
আরাভ- আগে নিজের খেয়াল রাখো। আর তোমার ব্যাথা উঠতে পারে ওষুধ খেয়ে নেও।
আমি- কিহ। না ওষুধ তিতা।
আরাভ- আনহা ওষুধ খাবা নাকি থাপ্পড়?
আমি- আপনি আমাকে আরো মারবেন? (আদুরে গলায় আরাভকে জিজ্ঞেস করলাম)
আরাভ- এমন করে বলিও না পাগলি ইচ্ছা করে কিস করে দেই।
আমি- কিইইইইইই। (লজ্জা পাইলাম)
আরাভ- জ্বী। কাছে আসো একটা কিস করি।
.
আমি আর কিছু না বলে উল্টা দিকে দৌড় দিয়ে ঘরের বাইরে চলে গেলাম। আরাভ হাসতে লাগলো
আর বলতে লাগলো, “তোমার এসব পাগলামি আর লজ্জায়ই তো আমি কাবু হইছি ম্যাডাম।” আমাকে দৌড়াতে দেখে আভা জিজ্ঞেস করলো,
আভা- কি ভাবি দৌড়াচ্ছো কেনো?
আমি- এমনি ব্যায়াম স্বাস্থ্যের জন্য ভালো জানো না?
আভা- হাহাহা তাইইইই।
আমি- হুমমম।
আভা- ভাবি এখন অবস্থা কেমন?
আমি- আমার কি মহা এক্সিডেন্ট হইছে নাকি। ভালোই আছি।
আভা- দুই গাল লাল হয়ে আছে কেনো? মার খাইছো নাকি লাভ বাইট।
আমি- আভা মাঝে মাঝে তোমার ভাই মনে হয় ঠিকই বলে তোমার বিয়ে দেওয়া উচিত।
আভা- ভাবি তুমি কি আমার শত্রু?
আমি- না তো বাবু।
আভা- বাই দি ওয়ে আমার কথা ভাইয়াকে বললা?
আমি- হুমমম। বলছে তুমি যেন তোমার উনিকে তোমার ভাইয়ার সাথে কথা বলতে বলো।
আভা- আচ্ছা। আমি বলতেছি। কয়েকদিন পরে রেস্টুরেন্টে দেখা করুক।
আমি- ওকে বাবু।
আভা- ওকে।
.
রাতের দিকে,, আরাভ বিছানায় শুয়ে ল্যাপটপে কাজ করছিলো। আমি রুমে ঢুকলাম। আরাভ আমার দিকে তাকালো না। কি ব্যাপার? তাকায় না কেনো? এমনি সময় তো বারবার তাকায় তাকায় দেখে এখনো তাকায় না কেনো? আমি সোফায় বসলাম। আরাভ এখনো তাকাচ্ছে না। কিছু সময় পর ল্যাপটপ বন্ধ করে ও ফোন হাতে নিলো। এবার মুচকি হাসতেছে ফোনের স্ক্রিনে তাকায়। ব্যাপারটা বুঝতে হবে। আমার তো রাগ উঠতাছে। আমার ফোনটাও নাই যে নিজেকে ব্যস্ত রাখবো। “ওয় কি করে?” এটা জানতেই হবে আমাকে। আমি উঠে ওর দিকে চুপি চুপি পায়ে আগালাম।
আরাভ- এভাবে হাটছো কেনো?
আমি- ওমা আপনি আমাকে কেমনে দেখছেন? আমার দিকে তো তাকানই নি।
আরাভ- হাহা ম্যাডাম। আমি বুঝছি আপনি এসেছেন। যতোই আস্তে আসেন না কেনো? আপনার উপস্থিতি আমি বুঝবোই। আপনি আসে কথা বললেন না। বুঝছি কিছু একটা হইছে। তাই ফোনের ক্যামেরা অন করে ফোনে আপনাকে দেখতেছিলাম।
আমি- তার মানে আপনি আমাকে দেখে হাসতেছিলেন?
আরাভ- জ্বী ম্যাডাম।
আমি- বান্দর পোলা। আমাকে খালি জ্বলান।
আরাভ- নিজের বউকে জ্বলাবো না তো কাকে জ্বলাবো?
আমি- একটা গুড নিউজ আছে।
আরাভ- কি?
আমি- আপনি বাবা হতে চলেছেন।
আরাভ- সত্যি?
আমি- হিহি মজা করলাম।
আরাভ- আনহা এই বিষয়েও মজা?
আমি- হুমমম।
আরাভ- তুমি না দুই বাচ্চার মা হলেও এমনি থাকবা।
আমি- অবশ্যই।
আরাভ- হায়রে পাগলি।
.
এমন সময় আরাভের ফোনে একটা কল আসলো। কথা গুলো শুনে আরাভ কিছুটা রেগে গেলো। আর কাকে যেন বললো জ্বলদি কিছু করতে। ফোন কাটার পর,,,
আমি- কি হইছে? কার সাথে কথা বললেন?
আরাভ- পুলিশ।
আমি- কিন্তু কিনু?
আরাভ- আজকের এক্সিডেন্ট নিয়ে।
আমি- ওওওও।
আরাভ- এক্সিডেন্ট টা জান্নাত করিয়েছে।
আমি- জানি।
আরাভ- কিভাবে?
আমি- রাস্তায় একটা নাম্বার থেকে মেসেজ আসছিলো। লিখা ছিলো। “tmk mortei hbe ekhn anha. bye bye.”
আরাভ- ওই মেয়েকে আমি মেরেই ফেলবো।
.
আরাভের চোখ লাল হয়ে গেলো। ওর এতোটা রাগান্বিত মুখ আমি কখনো দেখি নি। আমি আরাভের রাগ কমাতে ওর পাশে গিয়ে বসলাম আর ওর হাতটা ধরলাম।
আরাভ- ডোন্ট ওয়ারি আমি এখনি বের হচ্ছি। ওকে তো আমি গুলি করবো।
আমি- আমাকে ভালোবাসেন?
আরাভ- অনেক বেশি।
আমি- আপনি আজ ওকে কিছু করলে যদি পুলিশ আপনাকে নিয়ে যায় আমার কি হবে?
আরাভ- কিন্তু।
আমি- চুপ। (আঙ্গুলটা ওর ঠোঁটে রেখে চুপ করালাম)
আপনাকে ছাড়া আমি একটুও থাকতে পারবো না। প্লিজ রাগের বশে কিছু করবেন না।
.
এইটুকু বলে আরাভকে জড়িয়ে ধরলাম। আরাভও আমাকে জড়িয়ে ধরলো। জড়িয়ে থাকা অবস্থায় আমি তাকে আভার রাজের কথা বললাম। আরাভ রাজি হলো। জান্নাতের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গেলো না। যদিও একদিন এক অনুষ্ঠানে আরাভ আর আমি গেছিলাম। জান্নাতও ওখানে ছিলো। উল্টা কথা বলায় আরাভ ওকে থাপ্পড় মেরেছিলো, সেই সাথে মেরে ফেলার হুমকি দিছিলো। সেদিন আমি আরাভকে আটকে নিয়েছিলাম। নাহলে হয়তো আরো খারাপ কিছু হতো। ফিরার পথে
.
আমি- আহা আমি ভালোই আছি ভাগ্যিস।
আরাভ- কেন?
আমি- আপনি আমাকে আস্তে মারেন। আজ জান্নাতের তো একেবারে দাঁত ভাঙ্গে যাইতো।
আরাভ- আনহা তুমি একটা পাগলি।
আমি- আমি তো জানি।
কয়েকদিন পর…..
.
আরাভ- আজকে দেখা করবো তোমার ননদের রাজের সাথে।
আমি- আমিও যাবো।
আরাভ- না।
আমি- প্লিজ প্লিজ প্লিজ।
আরাভ- ওকে চলো।
আমি আর আরাভ গাড়িতে করে যাচ্ছি।
আমি- মি. আরাভ গাড়ি থামান।
আরাভ- কেনো?
আমি- ফুচকা খাবো।
আরাভ- হুররর।
আমি- প্লিজ।
.
আরাভ গাড়ি থামালো। কেনো জানি বেশিই খাইতে ইচ্ছা করছে। তাই আমি একে একে তিন প্লেট ফুচকা একাই খাইলাম।
আরাভ- এক্সিডেন্ট এর জন্য মনে হয় তোমার ক্ষুধাও বেড়ে গেছে।
আমি- মনে হয়। কয়েকদিন ধইরা আজব লাগে।
আরাভ- হুমমম বুঝি তোমার তো সবসময়ই আজব লাগে।
আমি- হুহ শয়তান পোলা।
আরাভ- এবার চলো।
.
ক্যাফের মাঝে। রাজ আর আরাভ সামনা সামনি বসে আছে। আমার সামনে আভা। আরাভ একটা কেমন লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে। রাজও মেবি ভয় পাচ্ছে। সাথে আমি আর আভাও ভয় পাচ্ছি।
আরাভ- কি করো তুমি?
রাজ- জ্বী আমি সিএইচ কোম্পানির সিইও।
আরাভ- ওহ। আমার বোনকে সুখে রাখতে পারবে?
রাজ- আমি ওকে কষ্টে না রাখার পুরো চেষ্টা করবো। আমি যেভাবে থাকবো সেভাবেই রাখবো। যদি এক ঘরেও থাকি তবুও ওকে ভালো রাখার চেষ্টা করবো।
.
সব প্রশ্ন শেষে আরাভ রাজি হয়ে গেলো। খাবার অর্ডার করা হলো। চাওমিং। সবাই খেতে লাগলো সবার ভালো লাগলেও আমার কেনো জানি মুখে দিতেই খারাপ লাগলো। এর আগেও আমি এখানকার খাবার খেয়েছি কিন্তু এমন হয় নি। আমি ওয়াশরুমে গেলাম বমি হলো। কিন্তু আজব ব্যাপার এমন হচ্ছে কেনো?
আভা- ভাবি ভালো আছো? এমন লাগছে কেনো তোমাকে?
আমি- জানি না।
আভা- ডক্টর দেখাইয়ো।
আমি- লাগবে না।
আরাভ- আরে তিন প্লেট ফুচকা খাইছে। পেট খারাপ তো হবে।
আমি- না সেটা না।
আরাভ- বুঝি।
আমি- হুহ। আমি দই ফুচকা খাবো।
আরাভ- এখন?
আমি- যা খাইছি বমি হইছে। আমাকে এখন আবার খেতে ইচ্ছা করছে।
আরাভ- না।
আমি- হুহ।
আরাভ- এটা খাও।
আরাভ আমাকে ফালুদা খাওয়ায় দিলো জোড় করে। আমাদের এসব দেখে রাজ বললো,
রাজ- ভাইয়া ভাবির ভালোবাসা অনেক।
আমি- নজর দিয়েন না জামাইবাবু।
রাজ- আরে ভাবি না না।
আরাভ- আনহা এখানেও বাচ্চামি?
আমি- আমি এমনি হিহি।
রাজ- ভাবি আপনি ভারি মজার মানুষ।
আমি- সেটা তো তোমার ভাইয়া হারে হারে বুঝে আমি কেমন?
আরাভ- হুমম।
.
বাড়ি ফেরার পথে একসাথে ফিরলাম। হঠাৎ করে কোন এক আত্মীয়ের বাড়িতে মাকে আর আভাকে যেতে হলো। আবারো পুরো বাড়িতে আমি আর আরাভ একা।
খাওয়ার টেবিলে..
আরাভ- ম্যাডাম আজ তো আপনি আর আমি। রোমান্টিকতা হারে হারে দেখবেন।
আমি- ইয়ে মানে আমার ঘুম পাচ্ছে।
আরাভ- আনহা আসো মুভি দেখবো। (অন্য কারণে)
আমি- সত্যি চলেন।
.
আরাভ আসলে ভুতের মুভি দেখতে ডাকছিলো আমাকে। এমনিতে ওর কাছে কম যাই। কিন্তু আমি ভুতের মুভি ভয়ও পাই আবার ভালোওবাসি। তাই রুমে গেলাম। আরাভ ভুতের মুভি ছেড়ে দিলো।
.
চলবে…….

Angry_husband Season_2_Part_18

0
Angry_husband Season_2_Part_18
Angry_husband Season_2_Part_18

Angry_husband
Season_2_Part_18
Written by Avantika Anha
খাওয়া শেষে, আরাভ আমার দিকে তাকায় মুচকি হাসতেছে। এটা দেখে জিজ্ঞেস করলাম,
আমি- কি এরাম ভিলেন মার্কা হাসি মারতেছেন কেনো?
আরাভ- ভাবতেছি যা বললা সত্যি করার সময় হয়ে গেছে।
আমি- মানে?
আরাভ- পরিবার বাড়ানো উচিত।
আমি- ওহ। একটু চোখ বন্ধ করেন গিফ্ট আছে।
আরাভ- আগে এইটা বলো বাবু। বাবু কবে নিবা?
আমি- বন্ধ করেন ১ মিনিটের জন্য।
আরাভ- ওকে।
.
আরাভ এইদিকে চোখ বন্ধ করছে ওইদিকে আমি দৌড় মারছি। বিষয় হলো আমার লজ্জা লাগছে। এক মিনিট পর আরাভ চোখ খুলে আমাকে খুঁজতে লাগলো। বের হয়ে একজনকে জিজ্ঞেস করলো,
আরাভ- তোমাদের ম্যাডামকে দেখেছো?
রাই- স্যার ম্যাডাম তো এই কেবলমাত্র দৌড় দিয়ে পালালো। জিজ্ঞেস করলাম কিছু বললো না।
আরাভ- ওহ।
.
আরাভ ওর কেবিনের জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখে আমি গাড়িতে উঠছি। আরাভের রাগ বেড়ে গেলো। ওর মতে ওকে বলে যেতে পারতো। আর লজ্জা লাগলে পালানোর কি আছে? এসবই আরাভ ভাবছিলো। এমন সময় ওর ফোনে একটা মেসেজ এলো। আমার মেসেজটা পড়তে না পড়তেই আরেকটা মেসেজ এলো,
১ম মেসেজ
“apni ekta hulo viral. amar ki lojja nai naki? ki bolen esob? but ktha ta vul na. babu neoa jay… but amar lojja lagse tai palailam hihihi”
আরাভ মেসেজটা পড়ে মুচকি হাসলো। আর নিজের অজান্তেই “পাগলি” বললো।আরাভ ভেবেছিলো ২য় মেসেজটাও আমার কিন্তু ওটা ছিলো জান্নাতের কিন্তু অচে
“baby Ami to tmk sartesi na. amader majhe theke anhakei sorte hbe. tmk pete Ami anhake sorateo pisupa HBO na lv u arav. lv u so much.bachate paro to bachao tmr anha k. just Ber holo tmr office theke tai na?”
.
আরাভের টেনশন উঠে গেলো। ও আনহাকে ফোন দিলো,
আমি- ওহো এংরি ম্যান কি রাগে গেছেন নাকি?
আরাভ- আনহা মজার টাইম না। তুমি কই আছো?
আমি- কই আবার বাড়ি যাচ্ছি।
আরাভ- ফাঁকা রাস্তা ধরছো নাকি এমনি রাস্তা?
আমি- ওই যে ফাঁকাটা কেনো?
আরাভ- থামো যেখানে আছো ওখানেই থাকো আমি আসতেছি আর কথা বলতে থাকো।
আমি- ইইইই বুঝি না আমাকে বকবেন তাই না। আমি একাই যামু হিহি।
.
আমি কল কেটে দিলাম। আরাভের রাগও বেড়ে গেলো সাথে টেনশনও। আরাভ তাড়াতাড়ি গাড়ি বের করলো। হাই স্প্রিডে গাড়ি চালানো শুরু করলো। আর আমাকে কল দিলো আবার, এবার আর আমি কল রিসিভ করছিলাম না। কারণ আমি এক ধরনের ফুল নিতে নেমেছিলাম আর ফোন গাড়িতে ছিলো। আবার গাড়িতে গিয়ে দেখি আরাভের কল,
আমি- হুমমম বলেন এতো কল কেনো?
আরাভ- ওই মেয়ে কই তুমি হা? এতোবার কল দিচ্ছি ধরো না কেনো?
আমি- এই যে আমি ফুল নিচ্ছিলাম। আম্মুউউউউউউউউউউউউউউউউ
একটা চিংকার দিয়ে আমার ফোন অফ হয়ে গেলো। কারণ একটা বড় ট্রাক আমার গাড়িটাকে ধাক্কা দিয়েছে।
.
আরাভের চিন্তা হচ্ছিলো ও দ্রুত গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলো। কিছুদূর গিয়ে দেখে আমার গাড়ির এক্সিডেন্ট হয়েছে। আরাভ দৌড়ে গাড়িতে এগিয়ে দেখে গাড়িতে কেউ নাই। কিন্তু ওখানে রক্তের ছাপ স্পষ্ট। আরাভের ভয়ের মাত্রা বেড়ে গেলো।
.
আরাভ ওখানেই বসে পড়লো, কাঁদতে আমি- ো। এমন সময় আরাভের ফোনে একটা কল এলো। রিসিভ করতেই,
আমি- হ্যালো মি. আরাভ।
আমার কন্ঠ শুনতেই,,,
আরাভ- আনহা তুমি ঠিক আছো?
আমি- হুমমম।
আরাভ- কই তুমি?
আমি- হাসপাতালে। আমাদের ড্রাইভার কাকু আছেন না উনার এক্সিডেন্ট হইছে। তার পায়ে লেগেছে আর মাথায় কিছুটা।
আরাভ- কোন হাসপাতালে?
আমি- সিটি ক্লিনিক।
আরাভ- আমি আসছি।
.
আরাভ তাড়াতাড়ি গেলো। হাসপাতালে গিয়ে খুঁজতে লাগলো, খুব দ্রুতই তার পরিচিত মুখটাকে পেয়ে গেলো। গিয়েই সবার সামনে জড়িয়ে ধরলো আমাকে। আশে পাশের অনেকে দাড়িয়ে দেখতে লাগলো। ফ্রি টিকিটে রোমান্স আরকি,
আরাভ- কিভাবে হলো? (যদিও জানে কে করছে এসব)
আমি- লাস্ট যখন কথা বলছিলাম তখন গাড়িতেই ছিলাম। বাট আরেকটা ফুল ভালো লাগছিলো। তাই দৌড় মারতে গিয়েছিলাম জঙ্গলের দিকে বের হতে গিয়ে দেখি একটা ট্রাক আসছে। ড্রাইভার কাকুকে বলি একসাথেই পালাতে ধরি। কিন্তু আমি কিছুটা আগে বের হই। ড্রাইভার কাকুও পালায় ঠিকই কিন্তু ট্রাকটা গাড়িকে ধাক্কা দেয় আর তার কিছুটা লাগে। পরে মানুষ যাচ্ছিলো তাদের সাহায্য নিয়ে হাসপাতালে আসি।
আরাভ- তোমার কোথাও লাগছে?
আমি- না।
আরাভ- সিওর?
আমি- ইয়ে আমার হাতে একটু লাগছে।
আরাভ- চলো ওষুধ লাগাবা।
আমি- গাড়িটার বেশি ক্ষতি হয় নি মনে হয়। তবুও যতোটা হইছে মেলা টাকা যাবে।
আরাভ- তা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না।
আমি- উকে। বাদ দেন। প্রথমবার এক্সিডেন্ট হইলো আমার। এখনি একটা পোস্ট করবো আমার ফোননননননন।
আরাভ- কি?
আমি- ফোন তো মনে হয় গেছে গা। এএএএএ আমার ফোন।
আরাভ- গাধী মাইয়া নিজে বাঁচে গেছো ওটাই প্রে করো।
আমি- হিহি। উকে। নতুন ফোন দিবেন তো?
আরাভ- তোরে মারবো আমি। একা পালাতে কে বলছে?
আমি- আপনি-ই তো বাচ্চা বাচ্চা করছেন তাই লজ্জা পাইছি।
.
হঠাৎ পাশের মানুষগুলো হেসে উঠলো। আমি ভুলেই গেছিলাম যে আমরা মানুষের ভিড়ে আছি। আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম। সাথে আরাভও।
আমি- আমি বাড়ি গেলাম টাটা।
.
এই বলে দৌড় মারতে গেলাম। কিন্তু হঠাৎ উস্টা খেতে গেলাম কিন্তু আরাভ হাত ধরে ফেললো।
আরাভ- দৌড়াদৌড়ি কমাও মোর মা।
আমি- লজ্জা লাগছে।
আরাভ- আমারও তো লাগছে তাই বলে কি আমি পালাচ্ছি?
আমি- ইয়ে মানে।
আরাভ- এখানে দাড়াও একটু আমি দেখে আসতেছি রহিম কাকার অবস্থা কেমন?
আমি- ওকে।
.
আরাভ খোঁজ নিয়ে আসলো। কিন্তু এসে দেখে আমি একটা বাচ্চাকে কোলে নিয়ে আছি।
আরাভ- এটা কার বাচ্চা। দেখে তো মনে হচ্ছে ২ দিনের বাচ্চা।
আমি- আমার বাচ্চা।
আরাভ- বাহ আমি বাচ্চার বাবাও হয়ে গেলাম। কেবল তো বাচ্চারই কথা বলছিলাম।
আমি- আরে দেখেন কতো কিউট পুচকু একটা। আমার মতো দেখতে তাই না।
আরাভ- কে হয় তোমার?
আমি- কেউ না।
আরাভ- মানে?
আমি- মানে কেউ হয় না তো।
আরাভ- কোলে নিয়ে আছো যে?
আমি- চুরি করছি।
আরাভ- আনহা তুমি কার বাচ্চা তুলে আনছো?
আমি- এটাও জানি না।
আরাভ- আমি পাগল হয়ে যাবো। আরে গাধী কি করছো?
আমি- পুচকুটারে খুব কিউট লাগছে। তাই….
আরাভ- তাই কি?
আমি- পরে কমু। নার্স আইছে।
নার্স- থেংকু ম্যাম আপনার জন্য বেঁচে গেলাম।
আমি- ব্যাপার না মানুষই মানুষের জন্য।
.
নার্স বাচ্চাটাকে নিয়ে চলে গেলো। আরাভ জিজ্ঞেস করলো, “কিছুই বুঝলাম না।”
আমি- যেতে যেতে বলছি। চলেন বাড়ি যাই।
.
আরাভ আর আমি হাটতে লাগলাম। তারপর গাড়িতে,
আরাভ- এবার বলো।
আমি- কিতা?
আরাভ- বাচ্চাটা কেমনে নিলা? আর নার্সটা কিছু বললো না কেনো?
আমি- বাচ্চাটাকে দেখলাম খুব কোলে নেওয়ার ইচ্ছা করছিলো। নার্সের কোলে ছিলো। পাশে একটা ৫ বছরের বাচ্চা ছিলো। ওকে একটা কিটক্যাট ধরায় দিয়ে বললাম, যেনো এই জুসটা ওই নার্সের মুখে আর হাতে ফেলে। বাচ্চাটা তাই করলো। নার্সটা বকাবকি করতে চাইলো কিন্তু বাচ্চাটা পালাইলো। আমি বললাম দেন আপু বাবুটাকে আমি ধরতেছি। উনি ভাবলো আমি তার সাহায্য করছি। কিন্তু আমি যে কি করছি হিহিহি তা তো আমি জানি।
.
আরাভ শকড একটা মেয়ে এতো পাগলামি করতে পারে ও আমাকে না দেখলে জানতো না।
আরাভ- ফাজিল মাইয়া।
আমি- হিহি।
.
আরাভ আর আমি বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হলাম। আরাভের মাথায় রাগ উঠে গেছে। আরাভ যে জান্নাতকে ছাড়বে না ও মনে মনে ফিক্স করলো।
চলবে…….

Angry_Husband Season_2_Part_17

0
Angry_Husband Season_2_Part_17
Angry_Husband Season_2_Part_17

Angry_Husband
Season_2_Part_17
Written by Avantika Anha
ফোনটা রেখে পাশে তাকিয়ে দেখি আরাভের ঘুম ভেঙ্গে গেছে।
আরাভ- কে ফোন করছিলো?
আমি- মানুষ।
আরাভ- নাম কি?
আমি- মানুষের নাম তো মানুষ। এটাই তো তাদের পরিচয় তাই না?
আরাভ- জান্নাত ফোন করছে?
আমি- আরে সকাল কয়টা বাজে গেছে দেখছো। এতো দেরি হলো।
আরাভ- এই মেয়ে কথা ঘুরাবি না বলতে বলছি বল কে ফোন করছে?
আমি- জান্নাত। (ভয়ে ভয়ে বলে ফেললাম)
আরাভ- ওই মেয়ের প্রবলেমটা কি হা? আজ ওকে আমি দেখে নিবো। দাড়াও।
.
আরাভ উঠে যেতে ধরলো আমি তখন ওর হাতটা ধরে ফেললাম।
আরাভ- আনহা ছাড়ো।
ওকে কিছুটা জড়িয়ে ধরলাম।
আমি- আমি আর আপনি একসাথে আছি তো? আমাদের আলাদা করতে পারবে না ও।
আরাভ- কিন্তু?
আমি- কোনো কিন্তু না। ভালোবাসা থাকলে বিশ্বাসও থাকে আর ও আমার বিশ্বাস কখনো ভাঙতে পারবে না। বুঝলেন রাগী মি.।
আরাভ- ওকে আজ আটকে নিলা। তুমি পাশে থাকলে রাগ কমাতে পারবো নাহয় কিন্তু তুমি না থাকলে আমিও কন্ট্রোলে থাকতে পারবো না হয়তো।
আমি- আমি পাশে আছি আপনার। যদি মরেও যাই তাহলেও আপনার মাঝে বাঁচবো।
আরাভ- তুই মরার কথা তুললি কেন? বেশি ঢং?
আমি- খাইছে আবার রাগ?
আরাভ- এই বিষয় আসলো কেনো?
আমি- ইয়ে মানে ডায়লগ মারলাম ইট্টু।
আরাভ- ডায়লগ এর গুষ্টি কিলাই।
আমি- ওয়াও আপনি আমার মতো গালি দেন এখন?
আরাভ- পাগলির সাথে থাকে থাকে পাগল না হলে সম্ভব নাকি?
আমি- হিহি।
আরাভ- তা সকালের শুরুটা একটু মিষ্টি দিয়ে করাও। (রোমান্টিক মুডে)
আমি- এক মিনিট দাড়ান।
.
তাড়াতাড়ি দৌড়ে গিয়ে আমি একটা বাটিতে মিষ্টি নিয়ে আসলাম। আমাকে দেখেই আরাভের মুখে হাসি ফুটে উঠলো। আমার ভাষায় শয়তানি হাসি।
আরাভ- কাছে আসো।
আমি- আগে এটা খান।
আরাভ- মিষ্টি?
আমি- হুমমম। আপনিই তো মিষ্টি চাইলেন।
আরাভ- দূরররররর লাগবে না আমার কিছু।
আমি- আপনিই তো মিষ্টি চাইলেন।
আরাভ- ওই মিষ্টি না গাধী আমি কিস চাইছি।
আমি- ও কিস?
আরাভ- হুমম।
আমি- কিইইইই কিস?
আরাভ- হুমমম তাই।
আমি- চোখ বন্ধ করেন।
আরাভ- কেনো কিস দিবা?
আমি- করেন ১০ সেকেন্ড এর জন্য।
আরাভ- না এক মিনিট।
আমি- আচ্ছা।
.
আরাভ চোখ বন্ধ করলো। “কই তুমি” আরাভ ডাক দিলো। আমার জবাব পেলো না। আারো কয়েকবার ডাক দিলো কিন্তু কোনো জবাবই পেলো না আরাভ। চোখ খুলে দেখে আমি নাই। কারণ ওই সময়েই আমি পালাইছি। আরাভের রাগ উঠলেও কিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে বাইরে বের হলো। বাইরে আমি আভার রুমে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে বসেছিলাম। কারণ নাস্তা আগেই তৈরি করে নিছেন কাজের বুয়া আর আমাদের উঠতে দেরী হয়ে গেছিলো। আমি নাস্তা খাচ্ছি আর ওর দিকে তাকায় ভিলেনমার্কা হাসি দিচ্ছি। আরাভ রাগী মুখে আমার দিকে তাকাচ্ছে।
আভা- কি রে এতো ঘুম আজকাল দেখি।
আরাভ- তোর কি?
আভা- হাহা বুঝি। আয় নাস্তা কর।
আরাভ- বেশি বুঝিস বিয়ে দিবো তোর ওই যে R..
আভা- তোকে কে বললো?
আরাভ- বাবু আমি তোমার ভাই।
আভা- ভাবি তুমি বলছো?
আমি- গাধী মাইয়া ওয় জানতোই না আন্দাজি কইছে তোমার খাতায় দেখছিলো। আর তুমি স্বীকার কইরা নিলা।
আভা- হায় ভাবি আগে কইবা না?
আমি- জিগাইছো আমাকে মনু?
.
এমন সময় মা আসলো। তাই আমরা আর কথা আগাইলাম না…
মা- আরাভ নাস্তা খেতে বস।
আরাভ- হুমম মা। মা শুনো তোমার মেয়ের বিয়ে দিবা কবে?
মা- ভাবছি তো রে বাবা পাত্র পাই ভালো। তারপর দিয়ে দিবো।
আরাভ- আমার পছন্দ আছে একটা ছেলে। কথা চালাই?
মা- চালা তোর যা ভালো মনে হয়।
.
এসব কথা শুনে আভার মুখের অবস্থা বারোটা হয়ে গেছে। আমি ভালো করেই বুঝতেছিলাম। খাওয়া শেষে মা চলে যাওয়ার পর..
আভা- ভাইয়া তুই আমার সাথে এমন করিস না।
আরাভ- শুন বড়দের উপর কথা বলবি না। এটা সারা জীবনের ব্যাপার।
আভা- কিন্তু ভাইয়া।
আরাভ- নো কিন্তু। যা হবে আমার ইচ্ছায়।
.
আরাভও খাওয়া করে উঠে গেলো। আমার খাওয়া আগেই শেষ তবুও আমি বসে আছি আভার জন্য।
আভা- ভাবি এখন কি হবে?
আমি- গাধী আমি আছি না? আর তোমার ভাইয়া প্রেমের শত্রু না বুঝলে?
আভা- সিওর ?
আমি- হুমমম।
খাওয়া শেষ করে আমি রুমে গেলাম। আরাভ অফিসের জন্য রেডি হচ্ছিলো। আমি গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। ইহা কাজ করানোর ধান্দা।
আরাভ- বাহ এতো কাছে। কি কাজ বলো?
আমি- ইয়ে মানে..
আরাভ- মানে মানে না কইরা জ্বলদি বলো।
আমি- আপনি তো খুব ভালো মানুষ তাই না?
আরাভ- না আমি তো রাক্ষস, বান্দর তুমিই বলো।
আমি- না না আপনি অনেক ভালো।
আরাভ- তাই?
আমি- হুম।
আরাভ- আভার জন্য আসছো?
আমি- হুম। ইয়ে না না আমি তো এমনি আসছি। আমি আমার বরের কাছে কি আসতে পারি না?
আরাভ- ম্যাডাম আমি ভাই হলেও বোনের খারাপ চাইবো না। আভাকে বলিও ছেলেটা যেন আমার সাথে দেখা করে। ও ভালো হলে আমি নিজে বিয়ে দিবো। (আমাকে সোজা করে ঘুরিয়ে দিলো)
আমি- এমনি বলি আমার রাক্ষসটা বেস্ট।
আরাভ- আবার রাক্ষস?
আমি- হিহি। সারাজীবন শুনবেন।
আরাভ- আচ্ছা রাজি।
আমি- এই খুশিতে বলেন দুপুরে কি খাবেন?
আরাভ- যা আপনার ইচ্ছা।
আমি- আপনার তো চিকেন পছন্দ তাহলে কি কাবাব বানাবো?
আরাভ- ওকে।
আমি- আপনার অফিসে আসমু আজ। আবার যদি কোনো শাকচুন্নিকে দেখি খবর আছে।
আরাভ- ওকে পাবা না।
.
এরপর আরাভ অফিসে চলে যায়। আমি শখ করে ওর জন্য রান্না করি। দুপুরের দিকে আমি আরাভের অফিসে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি আরাভের ক্যাবিন থেকে ঝগড়ার আওয়াজ পেলাম কিছুটা। যতোটা শুনতেছি মনে হচ্ছে একটা মেয়ে আরাভের সাথে ঝগড়া করতেছে। এগিয়ে গেলাম শুনতে,
জান্নাত- আমি সত্যি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
আরাভ- ও হ্যালো সাইকো আমি যাস্ট আনহাকে ভালোবাসি। আমাদের লাইফে ঝগড়া বাঁধানোর চেষ্টা করছো কেনো?
জান্নাত- আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না।
আরাভ- আমি আনহাকে ছাড়া বাঁচবো না।
জান্নাত- তাহলে আনহাকে আমি বাঁচতে দিবো না।
আরাভ- আমি তোমাকে মারে ফেলবো আনহার কিছু হলে।
জান্নাত- তোমাদের একসাথে থাকতে দিবো না।
আমি ভিতরে ঢুকে বললাম- আমাদের আলাদা করতেও পারবেন না।
জান্নাত- ওহো বউও এখানে?
(আমি জান্নাতকে দেখে কিছুটা শক কারণ ও সেই মেয়েটা যে উল্টা পাল্টা প্লান করছিলো। তাহলে কি আরাভই ওই মুখ ঢাকা ছেলেটা?)
আমি- হুমম আপু। আপনার প্রবলেম কি?
জান্নাত- ওকে ছেড়ে দে নইলে ফল খারাপ হবে।
আমি- আগেও বলছি। আমি ছাড়বো না।
জান্নাত- মেরে ফেলবো কিন্তু।
আমি- মারতে পারেন তাও ছাড়বো না।
আরাভ- দাড়াও আমি বের করাচ্ছি।
.
আরাভ এগিয়ে আসতে গিয়েও আমি ওকে থামতে বললাম।
আমি- আপু আপনি কি পাগল? আমাদের মাঝে আসেন কেন?
জান্নাত- আমি তোমাদের না তুমি আমাদের মাঝে আসছো।
আরাভ- ওয়েট কি বলো? আমি সবসময়ই তোমাকে না বলছি।
আমি- ওই আপনি যাবেন নাকি ঝাটা দিয়া পিটামু শাকচুন্নি কোনেকার আমার বরের উপর নজর দিস।
জান্নাত- এই মেয়ে মুখ সামলাও।
আমি- ওইটা পরে আপু গুড নিউজ আছে।
জান্নাত- মানে?
আমি- আমাদের বাবু হতে চলেছে। গুড নিউজ না?
জান্নাত- কিহ?
আমি- হুমমম। আপনাদের বাড়িতে মিষ্টি পাঠাবো নে । এখন যান। ওই তোমার অফিসে সিকিউরিটি নাই।
আরাভ- ওকে ডাকছি।
জান্নাত- তোমাদের একসাথে থাকতে দিবো না আরাভ শুধু আমার।
.
জান্নাতকে বের করে দেওয়া হলো।
আরাভ- সত্যি নাকি?
আমি- কি?
আরাভ- বাবুর কথা।
আমি- না মিছা কথা কইছি।
আরাভ- আনহা ভাবতেছি।
আমি- কি?
আরাভ- পরিবার বড় করা উচিত।
আমি- ইয়ে মানে টপিক বদলান লজ্জা লাগে।
আরাভ- তাই নাকি?
আমি- হুমম। চলেন খাবেন।
আরাভ- হুমম
.
চলবে…

Angry_Husband Season_2_Part_16

0
Angry_Husband Season_2_Part_15
Angry_Husband Season_2_Part_15

Angry_Husband
Season_2_Part_16
Written by Avantika Anha
আমি আলো জালিয়ে দিলাম। চারপাশ ফুল আর নেটে সাজানো। সাথে মোমবাতিও আছে। আর বেলুনও লাগিয়েছি সাদা রং এর। একে একে আমি সব মোম জ্বালিয়ে দিলাম যা আই লাভ ইউ লিখা ফুটে তুলতেছে।সাথে আমার আর আরাভের নাম লাভ মার্ক এর সাথে। আরাভ সবকিছু দেখে অবাক হচ্ছে কারণ ওর ধারনা ছিলো না যে আমি‌ এভাবে সব সাজাতে পারবো।
আমি- কেমন হলো?
আরাভ- আমার বউ এর মতো কিউট।
.
তারপর আরাভ আমার দিকে তাকিয়ে আমাকে ভালো করে দেখতে লাগলো। ওর এভাবে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমার অনেক লজ্জা লাগছতবুও
আমি- কি হইছে? ক্রাশ খাইলেন নাকি?
আরাভ- হুমমম অনেক বড় ক্রাশ খাইছি।
আমি- ওমা ক্রাশ খাইলে এতো খাবার যে রেডি করা ওগুলো কে খাবে?
আরাভ- দূররর। সব রোমান্টিক জিনিসের মাঝে কি সব আনো।
আমি- কই কি আমি কি করলাম আবার?
আরাভ- না কিছু করো নি। আমি নিচে গেলাম।
.
এই বলে আরাভ রাগ করে নিচে যাইতে লাগলো। আমি ভাবছি, যাহ মজাটা কি বেশি হয়ে গেলো নাকি? তাড়াতাড়ি আরাভের হাত ধরে ফেললাম।
আরাভ- কি হইছে? হাত ছাড়ো। (কিছুটা রাগী স্বরে)
আমি- বাব্বাহ এতো রাগ কিনু আপনার?
আরাভ- চুপপপপ।
আমি- ওকে আমি চুপই আছি।
আরাভ- আমি নিচে যাবো হাত ছাড়ো।
আমি- না মি. হাজবেন্ড আজ আমি কোনো রাগ দেখতে চাই না।
আরাভ- হাত ছাড়বা কি না?
আমি- আপনি যদি এখন যান তাহলে আমি ছাদ থেকে লাফ দিবো।
আরাভ- আবার?
আমি- এবার দিমুই।
আরাভ- হুহ।
আমি- বিলিভ হয় না। ওকে দাড়ান তাহলে দেখুন খালি আমি পারি কি না?
.
এইটা বলে আমি আবার ছাদের কোণার দিকে আগালাম। “ওমা গো ছাদ এতো উপরে কেনো?” এটা ভাবতেছি। ভয়ে ভয়ে পিছুতে যাবো এমন সময় পা জমে গেলো আমার। না না ঠান্ডায় না ভয়ে। আমি ভয়ের কারণে ওই জায়গা থেকে নড়তে পারছিলাম না। পিছনে ফিরে দেখি আরাভ আমার পিছনেই দাড়িয়ে ২ হাত দূরে।
আরাভ- কি ভয় লাগে?
আমি- না মানে একটু।
আরাভ- তা সবসময় ছাদ থেকে লাফ দিতে চাও কেনো?
আমি- হিহি মজা লাগে।
আরাভ- দূরর পাগলি। চলো ওদিক। (হেসে)
আমি- বাই দি রাস্তা আমি ক্রাশ খাইছি আপনার স্মাইলে। চলুন।
.
এই বলে পা বাড়াতে গিয়ে পিছলে গেলো। আমি ধরেই নিলাম আমি মরে যাবো। তাই তাড়াতাড়ি চোখ বন্ধ করে নিলাম। কিছু সময় পর ভাবলাম আমি মরেই গেছি। চোখ খুলে দেখি আরাভ ধরে আছে আমাকে আর ও রেগে গেছে। ওর দিকে টান দিলো। আমার মাথা ওর বুকে চলে গেলো। ওর বুকের ধুকধুক শব্দ কানে আসছিলো। খুব জোড়ে চলছিলো হয়তো ও ভয় পেয়ে গেছে। নাহয় রাগে।
আমি- সরি।
আরাভ- না না সরি বলছেন কেনো? উচ্চতা যে ভয় পান একটু তা জেনেও সাইডে যান কেনো?
আমি- না মানে।
আরাভ- চুপ।
আমি- রাগলেও আপনাকে কিউট লাগে।
আরাভ- পাম মারে লাভ নাই।
আমি- হুহ। এইখান থেকে যাই প্লিজ। আমার ভয় করছে।
আরাভ- চলো।
.
এই বলে আরাভ আমার হাত ধরে টান দিলো। কিন্তু আমি গেলাম না। ও আমার দিকে ফিরে জিজ্ঞেস করলো কেনো যাবো না? পরিবর্তে আমি মুচকি হাসি দিলাম।
আরাভ- কি হাসছো কেনো?
আমি- কোলে নেন।
আরাভ- কিহ?
আমি- হুম নইলে যাবো না।
আরাভ- এখন আবার কি হলো? এতো রোমান্টিক?
আমি- ইয়ে মানে। হেটে যেতে ইচ্ছে করছে না। এসব আমি সাজিয়েছি। এখন বাকীটা আপনি করবেন। ইট্টু রোমান্স।
আরাভ- একটু কেনো বেশিই করবো দেখবা নাকি?
আমি- দেখান।
.
আরাভ আমাকে কোলে তুলে নিলো।
আরাভ- পাগলি।
আমি- হুম কিন্তু আপনাকে কে বললো, আমি যে উচ্চতা একটু ভয় পাই‌ এটা।
আরাভ- তোমার বোন।
আমি- ওই হারামিকে আমি ছাড়বো না। নামান আমাকে।
আরাভ- না তোমার যা ইচ্ছা হবে সবসময় তা-ই যে হবে তা তো না। মাঝে মাঝে আমার ইচ্ছাও চলবে ম্যাডাম। আর এখন আমি রোমান্টিক মুডে আছি রাগালে ফল কতোটা ভয়ানক হতে পারে তা কি বলা লাগবে?
আমি- নাহি নো রাগগগগগ আজঙ
আরাভ- হুমমম।
.
আরাভ আমাকে একটা চেয়ারে বসিয়ে দিলো।
আমি- দেখেন কতো কিছু করছি। এর জন্য আমাকে গিফ্ট দিবেন না?
আরাভ- তুমি কি গিফ্ট এর জন্য এমন করছো?
আমি- না আবার হুম।
আরাভ- মানে?
আমি- প্রপোজ করমু তাই।
আরাভ- তাইলে? তবুও গিফ্ট চাও কেনো?
আমি- হুহ। ওকে থাক লাগবে না।
আরাভ- তাই?
আমি- হুমম।
আরাভ- ভালো তো এক মিনিট দাড়াও আমার গরম লাগছে ব্লেজারটা খুলে আসছি।
আমি- উকে। জ্বলদি আসেন।
.
আরাভ উঠে আমার পিছনে দাড়ালো। তারপর আমার সামনে একটা পেনডেন্ড মেলে ধরলো।
আমি- ও মা গিফ্ট?
আরাভ- হুমম।
আমি- কার লাইগা?
আরাভ- আমার যে ২নাম্বার বউ আছে তার জন্য।
আমি- আপনার আরো বউ আছে?
আরাভ- হুম ২টা বউ আমার জানো না?
আমি- সত্যি?
আরাভ- হুম কেনো বিশ্বাস হয় না?
আমি- আচ্ছা। (মন খারাপ করে বসলাম। দুই ফোটা চোখের জলও গড়িয়ে পড়লো। আরাভ আমার সামনে দাড়িয়ে গেলো। এটা দেখেই ও হাসতে লাগলো। আর আমাকে বলতে লাগলো এমন কিছুই নাই। ও নাকি শুধুই মজা করে বলছে)
আমি- না। আপনার জীবনে অন্য কেউ আছে।
আরাভ- আরে গাধী নাই।
আমি- তাহলে বললেন কেনো?
আরাভ- তুমি গাধীর মতো প্রশ্ন করলা কেনো? আমি আর কাকে দিবো হা?
আমি- আমি তো গিফ্ট এখন চাইলাম আপনি কেমনে এখনি আনলেন?
আরাভ- হাহা এটা আরাভ স্টাইল।
আমি- ওই আপনি আমাকে কপি করছেন?
আরাভ- তোমার সাথে থাকে থাকে আমিও যে পাগল হয়ে যাচ্ছি।
আমি- ওহো তাহলে তো আমরা পাগল পাগলি কাপল।
আরাভ- হুমমম।
আমি- তাহলে আমার বাচ্চা কাচ্চা কি পাগল হবে নাকি পাগলি?
আরাভ- পাগলি হবে কারণ আমার মেয়ে চাই।
আমি- না আমার ছেলে চাই।
আরাভ- আগে মেয়ে-ই হবে।
আমি- না ছেলে।
আরাভ- আমার মেয়ে চাই। আল্লাহ যদি দেন তাহলে।
আমি- ওটাই বাট আমার ইচ্ছা ছেলের। আমি আজ থেকে এটার জন্য দোয়া করবো।
আরাভ- না একদম না।
আমি- দূরররর কইছি না আমার পোলা হবে।
আরাভ- ও রেলি?
আমি- হ্যা হ্যা হ্যা।
.
ঝগড়ার আওয়াজ শুনে আভা উপরে আসলো।
আভা- কিরে তোরা ঝগড়া করছিস কেনো?
আমি- দেখো তোমার ভাই বলে তার নাকি মেয়ে চাই কিন্তু আমার যে ছেলে চাই।
আরাভ- শুন আমি বলছি আমার প্রথম মেয়ে হবে মানে মেয়ে।
আভা- গাধার দল থামবি? আগে ভাবি প্রেগনেন্ট তো হোক তারপর প্লান কর। এখনি ঝগড়া।
.
এই কথা শুনে আমি আর আরাভ দুজনেই লজ্জায় পড়ে গেলাম। আভা আমাদের ভালোভাবে থাকতে বলে নিচে চলে গেলো। কিছু সময় দুজনেই লজ্জায় চুপ থাকলাম । তারপর আরাভ আমাকে পেনডেন্টটা পড়িয়ে দিলো।
আমি- মি. আরাভ আপনাকে আমি অনেক ভালোবাসি। কিভাবে বাসলাম জানি না। কিভাবে এই রাগী মানুষটার প্রেমে পড়লাম জানি না। এখন আমার আর কিছু চাওয়ার নাই। যতোদিন বেঁচে আছি শুধু আপনার সাথে থাকতে চাই। আর চাই আপনার আর আমার সংসারে ছোট্ট সদস্যকে। চাই প্রতি সকাল আপনার চেহারা দেখে যেনো হয়। চাই মাঝরাতে খুনশুটি করতে। আমার সবটা জুড়ে শুধু আপনাকে চাই আর কিছুই না। চাই আপনি যে মাঝে মাঝে থাপ্পড় মারেন তারপর ওই জায়গায় যেনো হাতের স্পর্শ দিয়ে সরি পাগলি বলেন।
আরাভ- আই লাভ ইউ টু।
আমি- কেমন হইলো?
আরাভ- সেই। আজ বুঝছি তুমি রোমান্টিকও আছো।
আমি- ভালো হবে না নাকি? মিমি আভা সবার হেল্প নিয়া লিখছি। ভালো তো হতেই হবে।
আরাভ- মানে নিজে লিখো নি?
আমি- আমিই তো লিখছি।
আরাভ- শয়তান।
আমি- ফিমেল ভার্সনে গালি দেন। শয়তান তো ছেলে ওটা হলে তো আপনি হবেন।
আরাভ- হুহ।
আমি- চলেন আবার রোমান্টিক মুডে যাই।
.
অতঃপর আমি আর আরাভ একে অপরকে খাইয়ে দিলাম। আরও অনেক্ষণ গল্প করলাম। তারপর আমি আরাভের কাধে মাথা রেখে ছিলাম। শেষ মুহূর্তে আরাভ আমাকে কোলে করে রুমে নিয়ে গেলো।
.
পরেরদিন…..
ফোনে কল আসলো…
জান্নাত- আনহা।
আমি- জ্বী বলুন কে?
জান্নাত- জান্নাত।
আমি- ও ভিলেন আপু।
জান্নাত- হোয়াট?
আমি- কি?
জান্নাত- নিজের ভালো চাও তো আরাভকে ছেড়ে দেও।
আমি- সরি পারবো না।
জান্নাত- এখনো সময় আছে ভেবে বলো।
আমি- ভাবার কিছু নাই। আমি ওকে ছাড়বো না।
জান্নাত- হাহাহা। রেডি থাকো। তোমাদের লাইফে ঝড় আসতে চলেছে।
.
এই বলে জান্নাত ফোন কেটে দিলো।
.
চলবে……

Angry_Husband Season_2_Part_15

0
Angry_Husband Season_2_Part_15
Angry_Husband Season_2_Part_15

Angry_Husband
Season_2_Part_15
Written by Avantika Anha
মাঝরাতে মাথায় একটা জিনিস আসলো। সাথে সাথে উঠে বসলাম। আরাভের এক হাত আমার হাতের উপর ছিলো। আমি উঠে বসায় ও নিজেও টের পেয়ে গেলো।
আরাভ- কি হলো?
আমি- বান্দর পোলা, শয়তান, কুকুর, রাস্তার ছেলে, কুমির, পেঙ্গুইন, আলু, পটল, লাউ, কদু কোনেকার।
আরাভ- হোয়াট? কি বলছো এসব?
আমি- চুপ কথা বলবি না একদব তুই।
আরাভ- তুমি আমাকে তুই বলছো?
আমি- একশোবার বলবো। তোর জন্য আমার সব প্লান মাটি।
আরাভ- কি বলছো এসব? (তাকিয়ে দেখি ওর রাগ হচ্ছে। তাতে আমার কি ওই শয়তানের জন্য আমার প্লান মাটি)
আমি- চুউউউউউউপ।
আরাভ- হোয়াট?
আমি- এ্যা এ্যা এ্যা আমার প্লান নষ্ট। (কাঁদতে লাগলাম)
আরাভ- কি হলো? কাঁদছো কেনো? মাথায় প্রেসার দিও না।
আমি- ওই হালা একটজ মাথা ফাটছে। অনেক বড় কিছু হয় নি আর তুই কথা বলবি না।
আরাভ- চুপ কি শুরু করছো রাতের বেলা? (ধমক দিয়ে)
আমি- এ্যা এ্যা এ্যা (ধমক খেয়ে কান্নার সাউন্ড বেড়ে গেছে)
আরাভ- এই কাঁদছো কেনো?
আমি- কিছু না এ্যা এ্যা এ্যা। (কেঁদেই যাচ্ছি)
.
আরাভ আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো আর জিজ্ঞেস করতে লাগলো “কি হয়েছে আসলে?” কিন্তু আমি কোনো জবাব দিচ্ছিলাম না। কারণ আমার কান্না পাচ্ছিলো খুব। কারণ আমি যা করতে চাচ্ছিলাম তা আর হবে না। আমি এবার ওকে জড়িয়ে ধরলাম। আরাভ কিছুটা চিন্তিত হয়ে গেলো। কারণ এমন করে হঠাৎ কেনো কাঁদছি আমি এটা সে জানে না। কিন্তু ওর একটু রাগ উঠছিলো আমার উপর। কিন্তু এভাবে ওকে জড়িয়ে ধরায় ওর রাগ কমে গেলো।
আরাভ- ওই পাগলি কি হয়েছে?
আমি- আপনি ভালো না।
আরাভ- হুমমম ভালো না এবার বলো।
আমি- না কেনো হবে না? উহু। আমি আর পারবো না।
আরাভ- কি হলো?
আমি- সব দোষ আপনার। আমার মাথা ফাটাইছেন তাই আমার মাথা গেছে গা এ্যা এ্যা এ্যা।
আরাভ- হইছে টা কি?
আমি- কাল রাতে…
আরাভ- রাতে কি?
আমি- আপনাকে লাভ ইউ টু বলে ফেলছি আমি আবেগে।
আরাভ- (ভ্রূ কুচকে) তো কি হইছে? অন্য কাউকে বলবা নাকি?
আমি- না কিন্তু…
আরাভ- তো কি তোমার স্বামীকেই তো বলছো। এমনি সময় তো আমাকে বলো আমার স্বামী আমার স্বামী।
আমি- কিন্তু আপনাকে আলাদা ভাবে বলার ইচ্ছা ছিলো। কিছুটা স্পেশাল ভাবে।
আরাভ- হায়রে এই জন্য এতো কান্না?
আমি- তা কি?
আরাভ- হাহাহা।
আমি- ওই ভিলেন তোর দাত ভাঙ্গে দিবো।
আরাভ- কি বললা? (কিছুটা গম্ভীর লুকে)
আমি- আমার সব ইচ্ছা শেষ। দূরররর ঘুমাবো আমি। গুড নাইট।
আরাভ- হুম যাও যাও।
আমি- হুহ।
.
এই বলে আমি শুয়ে পড়লাম। আরাভ কিছুসময় ওভাবেই বসে ছিলো। ভালো করেই বুঝছি আমি হেতে লাগ কলছে সরি রাগ করছে। আজকাল মাথা ফাটার কারণে এতো ভুল বকি কে জানে? কিছুসময় পর আরাভও শুয়ে পড়লো। কিন্তু আমাকে জড়িয়ে ধরে। আমি অবাক ও রাগ কিভাবে কন্ট্রোল করে নিলো। আমি এবার ভাব নিতে হাতটা ছাড়িয়ে নিলাম। আরাভ আবার জড়িয়ে ধরলো। আমি আবার ছাড়িয়ে নিলাম কারণ ওর জন্য আমার প্লান নষ্ট।
আরাভ এবার আমাকে টান দিয়ে ওর দিকে ঘুরিয়ে নিলো।
আমি- কি প্রবলেম আপনার?
আরাভ- কি প্রবলেম মানে। আমার বউকে আমি জড়িয়ে ধরবো।
আমি- না ধরবেন না। আপনার জন্য আমার প্লান নষ্ট।
আরাভ- আরে ইয়ার প্রপোজ তো আমাকেই করতা তাই না? তো আমাকেই তো বলছো।
আমি- আমি স্পেশাল ভাবে করতাম।
আরাভ- ওই তুমি যেভাবেই বলবা সেটাই আমার কাছে স্পেশাল।
আমি- না আমি স্পেশাল ভাবে করবো।
আরাভ- তা আমি এখন কি করবো?
আমি- রুম থেকে বের হন।
আরাভ- মানে?
আমি- ওকে। কাল স্পেশাল সারপ্রাইজ আছে আপনার জন্য। টাকা দেন তো।
আরাভ- এতো রাতে?
আমি- হুমমম হুমমম দেন।
আরাভ- আমার টাকায় আমাকেই প্রপোজ?
আমি- দিবি কি না বল?
আরাভ- আবার তুই?
আমি- দে বলছি।
আরাভ- ওই মাথা ফাটার পর কি তোমার মাথা গেছে নাকি?
আমি- হুমম দে।
.
অগত্যা মাঝরাতে আমি আরাভের কাছ থেকে টাকা নিলাম মাঝরাতে। টাকা পাওয়ার পর সেই হাসি মুখে ঘুমিয়ে পড়লাম। কিন্তু আরাভ ঠিকই বলতেছে। মাথা ফাটার পর আমার মাথা গেছে। যাই হোক কালকে মেলা কাম। ঘুমায় নেই।
সকালে….
মাথা ফাটার কারণে সবাই খালি কেয়ার নিচ্ছে আমার। মিমি সহ সব ফ্রেন্ডরা কল দিচ্ছে। আহা অন্য সময় খোঁজ নাই এসব পেত্নীগুলোর। কয়েকটা বড় আপু ভাইয়ারাও খোঁজ নিলো। কিন্তু আমার তো প্লান অন্য। কি করবো না করবো সব আভাকে বললাম। আভা শুনে তো সেই ইম্পরেস হলো। ও নাকি আমার সাহায্য করবে। আমিও রাজি হয়ে গেলাম। কারণ মিমি আজ একটু ব্যস্ত আর আমার সাহায্য লাগবেই। মানুষ যে স্বার্থপর তা আমি ভালোই বুঝি। আভা সাহায্য করছে কারণ ফিউচারে কখনো তার সাহায্য লাগলে করতে হবে।
.
আরাভকে আজ রাতের আগে বাড়ি ঢুকতে মানা করছি। কিন্তু ও আসতে ধরছিলো একবার। দরজা থেকেই ফিরিয়ে দিছি। আমাদের টিমে মা আছে। তাই মা খাবারের দায়িত্ব নিয়েছে। আমি আর আভা ছাদের ঘরটা সাজাচ্ছি। সেটাকে ঘর বললে ভুল হবে টেবিল আছে, চেয়ারও আছে সব সিমেন্টের। উপর দিয়ে গোলাকার ছাউনি। কালার ল্যাম্প আনে লাগালাম। টেবিলের উপর ফুলও রাখলাম। নেটও লাগালাম। অনেকগুলো মোমবাতি আনলাম। সব রেডি করলাম ওর জন্য। মাথায় ব্যান্ডেজটা ছোট করে নিলাম আর চুল দিয়ে ঢেকে নিলাম। আমি মিষ্টি কালারের একটা শাড়ি পড়লাম। সেই সাথে ম্যাচড জুয়েলারি। আভা আমাকে পুরো সাহায্য করলো। কাজল পড়ে নিলাম।
.
রাতে আরাভ এলো। সেই আশা নিয়ে ঘরে গেলো। দেখে ঘর অন্ধকার। আমি কোথাও নাই। আরাভকে দেখে আভা মুচকি হাসতে লাগলো।
আরাভ- তোর ভাবি কই?
আভা- বলবো কিন্তু কি দিবি বললে?
আরাভ- বিয়ে দিবো তোর।
আভা- ভাইয়া ভালো হচ্ছে না কিন্তু।
আরাভ- বল তো।
আভা- ৫০০ টাকা দে।
আরাভ- নাহ।
আভা- ওকে খুঁজতে থাক।
আরাভ- এই নে।
আভা- ছাদে যা।
আরাভ তাড়াতাড়ি ছাদে চলে গেলো। ছাদে গিয়ে দেখে শুধুই চাঁদের আলো পড়ছে। আর সামনে একজন দাড়িয়ে আছে। চুলগুলো হাওয়ায় উড়ছে। আরাভ দেখার অপেক্ষা করছে। আরাভ আমার দিকে এগিয়ে আসতেই আমি পিছনে ঘুরলাম আমার হাতে মোমবাতি ছিলো। আমাকে দেখে আরাভ চমকে উঠলো। কারণ আমার মুখে মাস্ক ছিলো ভুতের মাস্ক। যা পড়ার পর নিজেকে দেখামাত্র আমি নিজেই ভয় পাইছি। ছাদেও ভয় লাগছিলো। কিন্তু শান্ত ছিলাম। কারণ কোনো ভুত যদি আমাকে দেখে ভাববে আমিও তারই মতো হিহিহি। আমি একটা কালো চাদর দিয়ে নিজেকে ঢেকে রাখছিলাম। আরাভ কিছুটা চমকে পিছনে গিয়ে দাড়ায়।
আরাভ- কে?
আমি- হিহিহি।
আরাভ- আনহা তুমি? হায় রে এভাবে কেউ বরকে ভয় দেখায়?
আমি- আপনি নাকি সাহসী?
আরাভ- এভাবে হঠাৎ যে কেউ ভয় পাবে তুমি কি জানো?
আমি- হিহিহি। কেমন স্টাইল এর প্রপোজ মি.। আই লাভ ইউ।
আরাভ- আজব প্রপোজ। নট এক্সেপ্টেড।
আমি- ওহ। আমি গেলাম।
আরাভ- আরে কই যাও? মাস্ক খুলো তারপর।
.
আমি তাড়াতাড়ি মাস্ক আর চাদরটা খুলে ফেললাম। আরাভ এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। চুল বাতাসে কিছুটা এলোমেলো হয়ে আসছে। মোমের আলো আর চাদের আলোয় এক নতুন আমিকে দেখছে আরাভ। নিজের অজান্তেই আরাভ আমার দিকে এগিয়ে এসে চুলগুলো ঠিক করে দিলো।
.
চলবে……

Angry_Husband Season_2_Part_14

0
Angry_Husband Season_2_Part_14
Angry_Husband Season_2_Part_14

Angry_Husband
Season_2_Part_14
Written by Avantika Anha
সকালে ঘর থেকে বের হওয়ার পর মা ও আভা জিজ্ঞেস করতে লাগলো মাথা ব্যাথা কমেছে কি না? তাদের এই কথা শুনে আমি ভাবতে লাগলাম আমার মাথা ব্যাথা আবার কখন হলো। হঠাৎ করে মাথায় এলো এটা নিশ্চয়ই আরাভ মিথ্যে বলছে। হয়তো নিজের দোষ ঢাকতে। নিজের স্বামীকে বাঁচানো আমারো দায়িত্ব তাই আমিও আর কিছু বললাম না।
আভা- কি ভাবি চুপচাপ দাড়িয়ে আছো যে?
আমি- না কিছুনা।
আভা- ঘুরলা তো বেশ এখন বলো আমাদের পরিবারে ছোট সদস্য কবে আসছে?
আমি- আভা তুমি কিন্তু বেশি দুষ্ট হয়ে গেছো।
আভা- তোমার কাছেই তো শিখছি এসব।
আমি- তাই নাকি?
আভা- হুম তো।
আমি- ভাবতেছি আভামনি বড় হয়ে গেছে বিয়ে দেওয়া উচিত।
আভা- ধ্যাত ভাবি কি বলো। (কিছুটা লজ্জা পেলো)
আমি- ঠিকই তো দাড়াও তোমার মা আর ভাইয়াকে বলি।
আভা- ভাবি ভালো হচ্ছে না কিন্তু।
আমি- বাবু আমিও পারি।
আভা- একটু বেশিই পারো।
আমি- তাই তো।
আভা- হানিমুনে কি কি করলা কাল তো ভালো করে শুনলামই না।
আমি- পরে বলবো নে।
আভা- তোমার গলাটা বসা বসা লাগছে। জ্বর এলো নাকি দেখি। (হাত কপালে রেখে দেখে কপাল কিছুটা গরম)
-ভাবি তোমার জ্বর তো।
আমি- ও কিছু না।
আভা- কিছু না মানে ? কিভাবে হলো?
আমি- ওইতো ঠান্ডা লাগছিলো আরকি।
আভা- কখন থেকে জ্বর?
আমি- সকাল থেকে।
আভা- আচ্ছা ওষুধ খাও ভাবি। আমি মাকে বলছি।
আমি- আরে বাদ দেও।
আভা- উহু।
.
আভা চলে গেলো। আমি পিছন দিকে ঘুরে দেখি আরাভ দাড়িয়ে। তারমানে ও আমার আর আভার কথা গুলো শুনছিলো।
আরাভ- ওকে বললে না যে কি হয়েছে আসলে?
আমি- উমমম আমার স্বামীকে কেউ খারাপ বলুক আমি তা চাই না।
আরাভ- বাহ আমার বউ দেখি আজকাল বুদ্ধিমতি হয়ে গেছে।
আমি- শুনুন ফ্রিতে ছাড়ছি না তো এর পরিবর্তে আমাকে গিফ্ট দিতে হবে।
আরাভ- যেমন কি তেমনি আছো দূরররর।
আমি- হিহিহি।
আরাভ- পারবো না।
আমি- মাকে বলবো?
আরাভ- না।
আমি- তো দিবেন কি না?
আরাভ- ওকে কি নিবা?
আমি- একজোড়া নুপুর।
আরাভ- বিকালেই পেয়ে যাবা।
আমি- প্রমিস ?
আরাভ- আচ্ছা।
.
সেদিন বিকেলে আমি আরাভের অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু আরাভ ফিরে নি। প্রায় রাতের দিকে আরাভ ফিরলো। কিন্তু তার চোখ মুখ দেখে বুঝছিলাম না ও এমন কেনো লাগছে যেনো ও চিন্তিত। ওকে চিন্তিত দেখে আমি এগিয়ে গেলাম শুনতে…
আমি- কি হইছে আপনার?
আরাভ- কিছু না। যাও এখান থেকে
আমি- এতো দেরি হলো যে? আর আমার নুপুর কই?
আরাভ- যেতে বললাম না এখান থেকে। এখনি বেড়িয়ে যাও ঘর থেকে।
আমি- আপনি এভাবে কথা বলছেন কেনো? কি হয়েছে আমাকে বলুন?
আরাভ কিছু বলার সুযোগ দিলো না। আমাকে জোড়ে ধাক্কা দিলো। পিছনে টেবিল ছিলো আরাভ লক্ষ্য করে নি আর আরাভের ধাক্কাটা একটু বেশিই জোড়ে ছিলো। তা সহ্য করতে না পেরেই আমি পড়ে যাই নিচে। আঘাত পেয়ে যাই মাথায় হাত দিয়ে দেখি রক্ত। মাথাটায় ঝিম ধরে উঠে আর আমি হুশ হারিয়ে ফেলি। আরাভ প্রচন্ড রাগে ছিলো কারণ রাস্তায় জান্নাতের সাথে ওর দেখা হয়েছিলো আর জান্নাত ওকে একটা ছবি দেখায় যেগুলোতে আরাভ আর ও নগ্ন অবস্থায় ছিলো। কিন্তু ছবিগুলো যে মিথ্যে তা আরাভও জানে জান্নাতও। জান্নাত এখন ওর আর আমার সম্পর্ক ভাঙ্গার জন্য এমন করতে চলেছে। এ নিয়েই চিন্তায় ছিলো আরাভ। কারণ ও কোনো মতেই আমাকে হারাতে চায় না। আরাভ আমার দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে যায় কারণ আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। আরাভ তাড়াতাড়ি আমাকে কোলে তুলে হসপিতালের ওদিক রওয়ানা হলো। সাথে মা আর আভাও। সেই সময় বাবা(আরাভের আব্বু) বাড়িতে ছিলো না। মা বারবার আরাভকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো কিভাবে এমনটা হলো? আরাভ জবাব না দিলেও বাকীরা ঠিকই বুঝেছে আরাভই আমাকে ধাক্কা দিয়েছে। কারণ আরাভের রাগ সবাই জানে।
কিছু সময় পর আমার জ্ঞান ফিরে আসলো। আমার মাথায় হাত দিয়ে দেখি ব্যান্ডেজ করা। মনে পড়লো সবকিছু। কিন্তু আরাভ আমার সাথে এমন করার মানুষ না। ওর রাগ আছে আমিও জানি কিন্তু এমন না। আমাকে জানতেই হবে কি হইছে?
আমি তাকিয়ে দেখি আরাভের চোখে পানি। মায়ের চোখেও। সবার চোখে চিন্তা স্পষ্ট। নিজের মনের প্রতি তৃপ্তি আসছে। কারণ তারা যে আমাকে কতোটা ভালোবাসে আমি বুঝতেছি। সেদিনই আমি বাড়ি ফিরে এলাম। বাড়ি ফিরার পর আরাভ আমার চোখে চোখ রাখছে না। বরং কাজ করার নামে আমার কাছে থেকে দূরে থাকছে। আমি ওকে ডাকলাম….
আমি- ওই মি. রাগকুমার।
আরাভ- হুমমম বলো কি লাগবে?
আমি- কি হয়েছে? চিন্তিত কেন? আর সেই সময় এমন করলে কেনো?
আরাভ- কিছু হয় নি। অফিসের কাজ নিয়ে।
আমি- সত্যি বলো কি হয়েছে তোমাকে আমার কসম।
আরাভ- তোমাকে আমার একটা কাজিনের কথা বলছিলাম মনে আছে?
আমি- হুমমম।
আরাভ- ও আমার আর ওর বাজে ছবি ইডিট করে বানাইছে। তোমাকে দিবে বলে।
আমি- ওটা কি এগুলো? (কিছু ছবি দেখিয়ে যেগুলো আরাভকে জান্নাত দিয়েছিলো। ওটা সকালেই আমার ফোনে এসেছিলো। কিন্তু আমি আরাভকে বলি নি। কারণ আমি জানি আরাভ এমন কিছু করবে না।)
আরাভ- তোমাকে আগেই দিয়েছে?
আমি- হুমমম সকালেই দিছে।
আরাভ- তুমি আমাকে বললে না যে? বিশ্বাস করো এগুলো মিথ্যে।
আমি- মি. রাগকুমারের উপর আমার ভরসা আছে বুঝলেন। জান্নাত কেও বলছি যে এসব দিয়া লাভ নাই।
আরাভ- ও কি বললো?
আমি- ও বললো ওর সব তুমি নিয়ে নিছো। ওর ইজ্জত আমার হাতে। আমি বলছি। আরাভ এমন কিছু করবে না।
আরাভ- তারপর।
আমি- ও বললো ও যদি প্রেগনেন্ট হয় তাহলে কি হবে? এই আরকি।
আরাভ- তুমি কি বললে?
আমি- ইয়ে মানে…
আরাভ- বলো।
আমি- আমি বলছি আমি প্রেগনেন্ট আপনার বাচ্চার আর আমাদের জীবন থেকে চলে যাক। এইটা বলে কাটে দিছি।
আরাভ- কিইইই (চোখ বড় করে)
আমি- তা এতো সহজে আপনাকে ছাড়বো না আমি।
আরাভ- আই লাভ ইউ পাগলি। সত্যি তুমি মাঝে মাঝে অসাধারণ জিনিস করো।
আমি- আই লাভ ইউ টু। (আরাভ আমাকে জড়িয়ে ধরলো)
আরাভ- তা ভাবছি তোমার বলা কথাটা সত্যি করে দেই।
আমি- কোনটা?
আরাভ- ওই যে বাচ্চা।
আমি- চুপ শয়তান।
আরাভ- শয়তানির কি দেখছো ম্যাডাম। দেখাবো নাকি।
আমি- না আমি ঘুমাবো। এমনি মাথা ফাটছে। ব্যাথা। (কথাটা শুনে আরাভের মুখ কালো হয়ে গেলো)
আরাভ- সরি আমার জন্য তোমার এই অবস্থা।
আমি- আরে বাদ দেন। আমার সব আপনার। সেই সাথে আপনার সবকিছুই আমার। সো নিজেকে আঘাত করার অধিকার আপনার আছে।
আরাভ- থেংকু ফর বিং উইথ মি।
আমি- ওয়েলকাম। কিন্তু আমি আমার নুপুর পাই নি।
আরাভ- সরি। কাল আনবো।
আমি- উকে। সাথে কিটক্যাটও। মাথা ফাটাইছেন যেমন তেমন শাস্তি।
আরাভ- ওকে ঘুমাও। কাল পেয়ে যাবে।
আমি- উকে।
.
চলবে…..

Angry_Husband Season_2_Part_13

0
Angry_Husband Season_2_Part_13
Angry_Husband Season_2_Part_13

Angry_Husband
Season_2___Part_13
Written by Avantika Anha
বাড়িতে পৌঁছাইতেই সবাই গল্প শুরু করে দিলো। এর মাঝে আমার আর আরাভের একান্তে কোনো কথা হলো না। আমি নিজেই লজ্জা পাচ্ছিলাম। আমি ফ্রেশ হতে বাথরুমে ঢুকেছিলাম। ভালো করে দেখে আরাভ রুমে আছে কি না? তারপর ঢুকি কিন্তু বের হয়ে দেখি আরাভ বাইরে বাথরুমের দরজার দিকেই তাকিয়ে আছে। আমি দরজা খুলার সাথে সাথে ও আমাকে দেখে ফেলে। ওর ঠোঁটের কোণায় শয়তানি হাসি ফুটে ওঠে। আমি লজ্জায় তাড়াতাড়ি করে দরজা লাগায় দেই। আমি ভালো করেই জানি এটা দেখে আরাভের প্রচন্ড রাগ উঠে গেছে। এই কয়েকমাসে ওকে অনেকটাই চিনে গেছি। কিন্তু আমার আবার ওকে রাগাইতে সেই লাগে। কিছু সময় পর আবার দরজা খুলে দেখি আরাভ ওখানেই বসে আছে। ওর মুখটা পুরাই লাল। একদম টমেটোর মতো হয়ে আছে। একবার ভাবলাম আবার দরজা লাগাবো। কিন্তু ও আরো রেগে যাবে। এই ভয়ে দরজা খুলে বের হলাম।
আরাভ- বের হলে কেনো ভিতরে যাও।
আমি- ওকে।
.
এই বলে আমি আবার বাথরুমে চলে গেলাম। দরজাটাও লাগিয়ে দিলাম।
প্রায় কিছু সময় পর আমি দরজা খুললাম আবার।
আরাভ- দরজা খুলছো কেন আবার লাগাও।
আমি- আর কতো সময় থাকবো?
আরাভ- পুরো দিন।
আমি- না।
আরাভ- ঢুকবা নাকি আমি যাবো ওখানে।
আমি- ওকে ওকে। এতো শাস্তি দূররররর।
আরাভ- যা বলছি করো।
আমি- কি করবো আমি ওখানে এতো?
আরাভ- গোসল করো। বসে থাকো। গোসলেই তো প্রথমে ঢুকছিলা।
আমি- তাই বলে বারবার গোসল করবো?
আরাভ- জ্বী।
আমি- ভাই গিজার নষ্ট ঠান্ডা পানি।
আরাভ- যা বলছি করবা কি না? (ভাই বলার কারণে রেগে গেছি)
আমি- ওকে ফাইন। তাহলে ঢুকলাম। খুলতে বললেও আমি আপনার জন্য দরজা খুলবো না। বুঝিয়েন। আমি অসুস্থ হলে বুঝবেন।
আরাভ- যাস্ট বলবা নাকি করবাও?
আমি- ইনসাল্ট। ওকে। আই হেট ইউ।
আরাভ- যাবা কি না? (রাগ উঠে গেলো আরো বেশি)
.
আমি আর কিছু না বলেই বাথরুমে ঢুকে গেলাম। আমারো রাগ আছে। অনেকটাই। আরাভকে আজ আমি এটার প্রমাণ দিবোই। আমি ঝর্ণা ছেড়ে দিলাম। ঠান্ডা পানি ছিলো প্রচুর ঠান্ডা লাগছিলো। কিন্তু আমি জেদ করে ওর নিচে দাড়িয়ে আছি। সময় যেতে লাগলো। আমি সহ্য করতে দাড়িয়ে ছিলাম। ধীরে ধীরে প্রচুর ঠান্ডা লাগতে লাগলো। আমি দাঁতে দাঁত চেপে দাড়িয়ে আছি। এরকম করে প্রায় ঘন্টা খানেক দাড়িয়ে থাকতে থাকতে আর পারছিলাম না। তাই ওখানেই বসে পড়লাম।
.
এদিকে আরাভ ঘরে বসে ওর অফিসের কাজগুলো করছিলো। ওর প্রচুর রাগ হয়ে আছে আমার প্রতি। রাগ কমাতে কাজ করছিলো। প্রায় কাজ শেষ করে দেখে ২ ঘন্টা ১০ মিনিট পার হয়ে গেছে। ওর মনে একটু খটকা লাগলো আমি এখনো বের হচ্ছি না কেনো?
.
ওর বিশ্বাস ছিলো, আমার এতোটা সাহস নাই যে নিজের এতো ক্ষতি করতে পারবো। তবুও নিজের আকর্ষণটা দূর করতে ও দরজায় টোকা দিলো। আমি পানির শব্দের মাঝে আর এতো সময় ভিজার পরে উঠার শক্তি পাচ্ছিলাম না।
আরাভ- আনহা দরজা খুলো। হইছে যাও তোমার শাস্তি শেষ।
.
ভিতর থেকে জবাব দিতে পারছিলাম না।
আরাভ- হইছে আর নাটক করে বসে থাকতে হবে না।
.
হালকা শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। মুখ দিয়ে কোনো আওয়াজ বের হচ্ছিলো না।
আরাভ- ওই ঢং করছো কেন? আমাকে ভয় দেখানোর জন্য মজা করছো। কি ভাবো আমি বুঝি না।
.
আমি অনেক কষ্টে তাকে বলতে চাচ্ছিলাম যে আমি নাটক করছি না। কিন্তু অস্ফূত স্বর ছাড়া আর কিছু পারছিলাম না। আরাভ আমার কিছু অস্ফূত স্বর শুনতে পেলো। আরাভের ভয়ের মাত্রা বেড়ে গেলো। যে আরাভের মুখ রাগে লাল হতো, সে এখন ভয়ে লাল হচ্ছে। আরাভ তাড়াতাড়ি দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করলো। চেষ্টা করে ভাঙ্গে ফেললো। আরাভ দেখে আমি প্রায় আধশোয়া অবস্থায় রয়েছি। চোখটা হালকা খুলছি আবার বন্ধ করে ফেলছি। আরাভকে দেখে আমি আমার হাতটা কিছুটা তুলে হাত বাড়ালাম। কিছুটা উঠানোর পরে পড়ে গেলো।
.
আরাভ তাড়াতাড়ি আমাকে কোলে তুলে নিলো। ও ঘরের দরজা আগেই লাগিয়ে রেখেছিলো। কারণ সবাই জানে আরাভ রাগলে দরজা লাগায়। এর আগেও অনেক কয়েকবারই লাগিয়েছিলো। তাই কেউ আর বেশি সন্দেহ করলো না। আরাভ আমাকে বিছানায় শুঁয়ে দিলো। আমার জ্ঞান ছিলো কিন্তু আমি কোনো শক্তি পাচ্ছিলাম না।
.
আরাভ আমাকে বাইরেও নিয়ে যাইতে পারছিলো না। কারণ বাইরে সবাই আছে।আরাভ আমার ভিজা কাপড় পাল্টে দিলো তাড়াতাড়ি। আরাভ তাড়াতাড়ি তার এক বন্ধুকে ফোন দিলো, ফ্যামিলি ডক্তরকে ফোন দিলো না কারণ সে জানে তাকে জানাইলে পুরো পরিবার জেনে যাবে।
আরাভ- দোস্ত তোর ভাবি অনেকক্ষণ ধরে পানিতে ভিজতেছিলো। এখন প্রায় অজ্ঞান অবস্থা। তুই একটু কষ্ট করে বাড়ি আয়। কাউকে বলিস না। চুপচাপ চলে আয়।
রাফি- ওকে আমি আসতেছি। কিভাবে হলো?
আরাভ- আয় তারপর বলতেছি।
রাফি- ওকে।
.
রাফির বাড়ি কাছাকাছি হওয়ায় তাড়াতাড়ি চলে আসলো। রাফি ভালো করে আমার চেকআপ করলো।
আরাভ- কোনো সমস্যা হইছে নাকি?
রাফি- না ব্যাপার না। ঠান্ডায় অনেক ভিজেছে তাই এমন হইছে। কিন্তু এমন হলো কিভাবে?
আরাভ- আসলে রাগ করে আমি…. (সব বললো)
রাফি- তোর রাগ একটু কমা রে।
আরাভ- হুমম কমাতে হবে। আমি জানতাম নাকি ও নিজে জেদ করবে। আমি তো যাস্ট রাগে..
রাফি- থাম থাম। আমাকে বোঝাইতে হবে না। আমি জানি তোর রাগ কতো।
আরাভ- হুমমম।
রাফি- আমার কাজ আছে। শুন মেডিসিন গুলো দিচ্ছি খাইয়ে দিস। আর ভাবির কিন্তু জ্বর আসার সম্ভাবনা আছে।
আরাভ- আচ্ছা আমি খাইয়ে দিবো।
রাফি- যতো পারিস গরম রাখার চেষ্টা করবি। যেহরতু তোরা কাপল আমার মনে হয় না প্রব্লেম হবে।
আরাভ- ওকে।
.
রাফি আসার সময় মা দেখেছিলো।
মা- কিরে বাবা হঠাৎ এলে যে?
রাফি- ওইতো অনেকদিন আরাভের সাথে দেখা হয় নি তো তাই এসেছিলাম।
মা- এখনি যাচ্ছো কেনো?
রাফি- জরুরী কাজ পড়ে গেছে আন্টি। যেতেই হবে।
মা- কিছু খেয়ে তো যাও।
রাফি- আবার আসবো তখন খাবো।
মা- খালি বলো আসো তো না।
রাফি- এবার আসবো।
মা- আচ্ছা।
.
রাফি যাওয়ার পর আরাভের মা আরাভের ঘরে গেলো। গিয়ে দেখে দরজা লাগা। আরাভের মা ভালো করেই বুঝেছে কেনো লাগা। তাই সে আরাভকে ডাক দিলো।
মা- আরাভ।
আরাভ- কি মা?
মা- বউমাকে বেশি বকিস না। রাগ করছিস বুঝি?
আরাভ- হুমম।
মা- ও কই?
আরাভ- বাথরুমে।
মা- ও খায় নি কিছু নাস্তা খাবে না? ওকে জিজ্ঞেস কর।
আরাভ- ঘরে খাবে। এতো লং জার্নি করে ওর মাথা ব্যাথা।
মা- ওহো। আচ্ছা তুই নিয়ে যা খাবার।
আরাভ- আচ্ছা।
.
আরাভ তাড়াতাড়ি নাস্তা এনে পাশে রেখে আমার পাশে বসলো। আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আরাভ আমার মাথায় হাত বুলালো। তারপর কপালে একটা ঠোঁটের ছোঁয়া বসিয়ে দিলো। রাতের দিকে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
আমি তাকিয়ে দেখি আরাভ পাশেই চোখ বুজে হেলান দিয়ে হালকা শুয়ে আছে। উঠতে চেষ্টা করে বুঝলাম আমার হাত পা গুলো ব্যাথা করছে। সাধারণত জ্বর হলে আমার এমন হয়। কিছুক্ষণে কি কি হয়েছে মনে করার চেষ্টা করতেই মনে পড়ে গেলো সব। আমার হাসি পেলো। কিন্তু ঘুম ভাঙ্গে গেলেও কিছুটা ঘোরে ছিলাম। কারণ আমি জানি আরাভের চিন্তায় বারোটা বাজে গেছিলো নিশ্চয়ই।
.
আমি উঠে বসতেই আরাভের হালকা ঘুম ভেঙ্গে গেলো। কিছু সময় আরাভ আর আমি একে অপরের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। কেউ কিছু বলছিলাম না। হঠাৎ করে আরাভ আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
আমি- কিচ্চে রাগ কমছে?
আরাভ- চুপ করো।
আমি- ওকে আমি চুপই আছি।
আরাভ- কে বলছে এতক্ষণ পানির নিচে থাকতে?
আমি- আপনিই তো বললেন।
আরাভ- তাই বলে এতো সময়?
আমি- আমার কি দোষ?
আরাভ- জানো আমি কতো ভয় পাইছিলাম।
আমি- হিহি।
আরাভ- হাসবা না। দাড়াও আমি খাইয়ে দেই। ওষুধও আছে খেয়ে নেও।
আমি- না তিতা।
আরাভ- খাবা কি না?
আমি- পঁচা।
আরাভ- মুখ খোলো।
আমি- আপনি খান।
আরাভ- চুপচাপ খাবা কি না? (কিছুটা জোড়ে)
আমি- খাচ্ছি খাচ্ছি। খালি রাগ দেখায়।
আরাভ- খাও।
.
ওষুধ খেয়ে নিলাম। রাতে ঘুমানোর আগে আরাভের হেল্প নিয়ে আমি ফ্রেশ হয়ে নিলাম। কিন্তু ঘুম আসছিলো না। রাত বাড়তে শুরু করছিলো সেই সাথে আমার মনে হচ্ছিলো আমি কোনো এক ঘোরের মাঝে এগিয়ে যাচ্ছি। আরাভ আমার পাশেই শুয়েছিলো। আমার খুব ঠান্ডা লাগছিলো। যদিও গায়ে লেপ ছিলো। আমি আরাভের দিকে এগিয়ে গেলাম। আমার স্পর্শ ওর গায়ে পড়তেই ও বুঝে গেলো আমার জ্বর বেড়ে গেছে। ও তাড়াতাড়ি আমার মাথায় জলপট্টি দিতে লাগলো।
.
আমি- আরাভ তুমি একদম ভালোনা।
আরাভ শকড হয়ে গেলো। কারণ ওকে আমি কখনো তুমি বলি নি। কিন্তু আমি যে ঘোরের মধ্যে কথা বলছি ও ভালো করেই বুঝে গেলো। আমার কথা গুলো একে ওপরের সাথে বেঁধে বেঁধে আসছিলো।
আরাভ- আমি কি করছি?
আমি- তুমি খালি বকো আমাকে একটুও ভালো না।
আরাভ- তুমি আমাকে রাগাও কেনো?
.
আমি জবাব দিলাম না। আরাভ আবার জিজ্ঞেস করলো…
আরাভ- বলো।
আমি- তোমাজে রাগলে কিউট লাগে ইচ্ছা করে কিসসি দেই।
আরাভ- তাই?
আমি- কিন্তু তুমি ভালো না।
আরাভ- জানি।
আমি- আয়াভ আসলে দেখিও আমি আর ও তোমাকে মারবো অনেক।
আরাভ- আয়াভ কে?
আমি- আমাদের বাবু।
আরাভ- নামও ঠিক?
আমি- হিহি হুমম কিন্তু আমি নাম বলবো না।
আরাভ- আচ্ছা।
আমি- আমার ঠান্ডা লাগছে। একটু জড়িয়ে ধরো তো।
আরাভ- আসো।
.
আরাভ আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমি যে ঘোরে কি বলছি আমার মাথায় ছিলো না। আরাভের এবার খুব হাসি পাচ্ছিলো। আমার এমন কথা শুনে। সকালে….
আমার জ্বরের পরিমাণ কিছুটা কম লাগছিলো।
আরাভ- গুড মর্নিং ম্যাডাম।
আমি- হুম। আমার কি হইছে?
আরাভ- জানো না?
আমি- ও জ্বর মনে হয়।
আরাভ- হুমম। জ্বরের ঘোরে কাল কি সব করলে।
আমি- কি আমি কি করলাম?
আরাভ- আমার তো লজ্জা করছে বলতে।
আমি- কি আমি উল্টা পাল্টা কিছু করছি?
আরাভ- হুমম।
আমি- সত্যি?
আরাভ- হুমমম।
আমি- কি করছি?
আরাভ- আমার কাছে আসলা তারপর..
আমি- তারপর কি?
আরাভ- লজ্জা লাগে।
আমি- এ্যা এ্যা এ্যা (কাঁদতে লাগলাম)
আরাভ- আরে কেঁদো না। কিছু করো নি খালি জড়িয়ে ধরছো। আর কিছু উল্টা পাল্টা বকছো।
আমি- সত্যি?
আরাভ- হুমমম।
.
আমি উঠে দাড়ানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু তাকিয়ে দেখি আমার গায়ের কাপড়টা ভিন্ন।
আমি- কাপড় কে পাল্টাইছে?
আরাভ- আমি কেনো?
আমি- কিহ?
আরাভ- হুম তো কি?
আমি- আপনি আমার সব দেখছেন?
আরাভ- হুমমম।
আমি- আমার ইজ্জত গেলো গা আম্মুউউউউ।
আরাভ- আমি তোমার স্বামী।
আমি- ওহো ভুলে গেছিলাম। তাহলে সমস্যা নাই।
আরাভ- কিন্তু আমি সব দেখছি।
আমি- ইইইইইই
.
আমি তাড়াতাড়ি ওখান থেকে পালালাম লজ্জায়।
.
চলবে….

Angry_Husband Season_2___Part_12

0

Angry_Husband
Season_2___Part_12
Written by Avantika Anha
আরাভ- আমাকে আনরোমান্টিক বলো আর নিজে কি?
আমি- আমি তো রোমান্টিক মেলা।
আরাভ- হাহা দেখাই যায়।
আমি- কি বললেন?
আরাভ- বাচ্চা বাচ্চা ব্যবহার সবসময় আর আসছে রোমান্টিক বলে।
আমি- কি কইলেন?
আরাভ- শুনতে পাও না। আজকাল ঠসা হয়েও গেছো নাকি?
আমি- ইনসাল্ট এতো বড় ইনসাল্ট আমি এখানে থাকবোই না। আমি গেলাম।
.
এই বলে আমি‌ ওখান থেকে চলে যাচ্ছিলাম। পিছনে একবার ঘুরে দেখি আরাভ আমার দিকে তাকায় হাসতেছে। ওর এই শয়তানি হাসি দেখলে আমার প্রচুর রাগ পায়। ওয় আমাকে কথা শুনায় হুহ।আমি আসছি নাকি ও আনছে আমাকে, এখন আবার আমাকে কথাও শুনায়। এই জন্য আমাকে আনছে। ঢং সব। আমারে রাগ দেখায় খালি। এখন আবার মজাও নেয়। মজা তো মজা আবার ইনসাল্টও করে আমার। এই মূল্য আমার।
.
এই সব আস্তে আস্তে বলতে বলতে আমি রুমে চলে গেলাম। রুমে ঢুকেই দরজা লাগায় দিলাম। আর নিজেকে বলতে লাগলাম, “হুহ এবার বুঝুক মজা।” এই বলে আমি কানে ইয়ারফোন লাগায় গান শুনতে শুনতে ঘুমায় গেলাম। কিছু সময় পরে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো কে জানি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। “কিন্তু আমি তো দরজা লাগায় দিছিলাম ঢুকলো কেমনে?” এই প্রশ্ন আমার মাথার মাঝে ঘুরতেছিলো। আমার আবার মাথায় কোনো প্রশ্ন থাকলে ওটার উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত ঘুম আসে না। আরাভকে তাই ডাক দিলাম। ভেবেছিলাম ও ঘুমিয়ে আছে কিন্তু পরে দেখি ও জেগে আছে।
.
আমি- ওই আপনি আমাকে ধরে আছেন কেনো? আর আপনি রুমে ঢুকলেন কেমনে? আর এখানে কেমনে?
আরাভ- বাহ এতো প্রশ্ন।
আমি- ওই হেয়ালি না করে জবাব দেন আপনি এখানে কেমনে?
আরাভ- ম্যাডাম রুমের এক্সট্রা চাবি সবসময় থাকে হোটেল স্টাফদের কাছে। তা মাথায় এতো বুদ্ধি এই ছোট জিনিসটা আসে নি?
আমি- উউউউউউহু আপনি সরেন এখান থেকে। বাজে মানুষ কোথাকার।
আরাভ- কি বললা?
আমি- বাজে মানুষ বলছি আপনাকে হুহ।
আরাভ- আরেকবার বলো।
আমি- আমাকে ঠসা বলছেন না। নিজে কি? কয়বার বলবো বাজে বাজে বাজে।
.
আরাভ আমাকে আরো শক্ত করে চিপে ধরলো।
আমি- আম্মুউউউউউ।
আরাভ- এবার বলো।
আমি- ছাড়েন ভাই। (লাগছিলো)
আরাভ- ও আমি তোমার ভাই?
আমি- একদম না আপনি তো আমার রাক্ষস সরি সরি হাজবেন্ড। জানু, মনু, সনু আপনি আমার।
আরাভ- চালাকি?
আমি- একদম না। আপনি মেলা ভালো। আপনাকে‌ একটা গিফ্টও দিমু নে। চকলেট নাকি আইসক্রিম কি নিবেন কন কন।
আরাভ- ডিলটা ভালো। মিষ্টি জাতীয় অন্য কিছু খাবো।
আমি- মানে?
আরাভ- ইউ উইল কিস মি।
আমি- হাতটা দেন।
আরাভ- কেন?
আমি- আরে দেন তো।
.
আরাভ হাত এগিয়ে দিলো আমি ওর হাতে কিস করলাম।
আরাভ- চালাক আছো কিন্তু আজ আমি ছাড়বো না। হানিমুনে আসছি একটা কিস তো নিবোই।
আমি- দিছি তো ভাই।
আরাভ- আবার ভাই। আগে এমনিতে হলেও মাফ করতাম আজ আর মাফ নাই।
আমি- দিমু না।
আরাভ- যদি না দেও আমি এর চেয়ে বেশি কিছু করবো। লাস্ট নাইট মুড অফ করতে চাচ্ছি না। আনহা ডু হোয়াট আই সে।
আমি- বান্দর আমি কিস করতে পারি না। হইছে?
আরাভ- দূরররর। ও ওকে তুমি পারবা না তো কি? আমি তো পারবো।
আমি- ও নো।
আরাভ- বি রেডি বেবি।
.
এই বলে আরাভের লিপ আমার দিকে এগুতে লাগলো। এদিকে আমার হার্টের ধুকধুকানি বেড়ে যাচ্ছিলো। প্রচুর ভয় লাগছিলো। আমার ভয়ে বারোটা বাজে যাচ্ছিলো। আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। কিছু সময় পর মনে হলো পরাভ আমাকে ছেড়ে দিলো। তবুও আমি চোখ বন্ধ করেই রাখলাম খুললাম না আর।
আরাভ- ম্যাডাম চোখ খুলুন।
আমি- ও হয়ে গেলো। আমি বুঝলামই না মানুষ ঠিকই তো বলে তাইলে কখন হয় বোঝাই যায় না।
আরাভ- কি বললা?
আমি- কেনো ?
আরাভ- কে বলছে তোমাকে এসব?
আমি- আমি এক মেয়ের কাছে শুনছিলাম। আই মিন পাশে দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন শুনেছিলাম।
আরাভ- এসব মেয়ের সাথে মিশো নাকি?
আমি- একদম না। আমি তো ভালো মেয়ে।
আরাভ- কেমন ভালো মেয়ে বুঝি। আর ভয় পেতে হবে না। তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমি কিছু করবো না।
আমি- ওয়াও আপনি তো তাইলে ভালো পোলা।
আরাভ- হাহা ওকে।
.
এই বলে আরাভ ওখান থেকে উঠে বেলকোনিতে চলে গেলো। ওর মুখ দেখে মনে হলো ও কিছুটা মাইন্ড করছে। কিন্তু কেনো তা বুঝলাম না। আমি উঠে গিয়ে ওর পাশে দাড়ালাম।
আমি- চাঁদটা খুব সুন্দর লাগছে তাই না?
আরাভ- হুমম।
আমি- আজকের রাতটা জেগেই পার করি?
আরাভ- হাহা ওকে।
আমি- মি. আরাভ।
আরাভ- হুম।
আমি- আপনার কাধে মাথা রেখে আপনার হাতটা ধরি?
আরাভ- এর আগেও রেখেছিলে জিজ্ঞেস করছো কখনো?
আমি- না মানে তাও।
আরাভ- আচ্ছা আমি কি তোমাকে সবকিছুতে বাধ্য করি?
আমি- হ্যা মানে না।
আরাভ- ওহ। সরি। আমি রাগে বেশি কিছু করি তাই না?
আমি- না।
আরাভ- এই যে না বলে জড়িয়ে ধরি।
আমি- এভাবে বলছেন কেনো?
আরাভ- না কিছু না।
আমি- শুনুন।
আরাভ- হুম বলো।
আমি- আপনি আমার স্বামী। আপনার পুরো অধিকার আছে আমার উপর। আপনার যা ইচ্ছা করতে পারেন।
আরাভ- তাই?
আমি- জ্বী।
আরাভ- তাই তো‌ বউ এর কাছে একটা কিসও পাই না।
আমি- কেনো পাবেন না। দিবো তো।
আরাভ- তো দাও। কিস করতে গেলে ভয় পাও কেন?
আমি- আচ্ছা আপনি কি নাটক করছেন?
আরাভ- আজকাল চালাক হয়ে গেছো।
আমি- বান্দর, রাক্ষস।
.
এই বলে আরাভের গায়ে কিল ঘুষি মারতে লাগলাম।
আরাভ- আরে আরে মারো কেনো? দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র বর তোমার।
আমি- আপনি আজকাল আমার মতো হয়ে যাচ্ছেন।
আরাভ- পাগলির সাথে থাকলে পাগল তো হতেই হবে।
আমি- তা ঠিক।
আরাভ- দূর ছাঁই কি করতে বিয়া করলাম। বউ এর কাছে কিসও পাই না।
আমি- আরেকটা বিয়া করেন। ওই যে কাজিনটারে কি নাম যেনো?
আরাভ- জান্নাত। হুম ওরেই করতে হবে।
আমি- কি বললেন?
আরাভ- এই যে জান্নাতকে বিয়ে করতে হবে এটা।
আমি- দূররররর হন। আপনি আর আমার সামনে আসবেন না। যান আপনার জান্নাতের কাছে।
.
এই বলে কাঁদতে কাঁদতে ওখান থেকে চলে আসলাম। কেনো যেনো কষ্ট হলো। পিছু পিছু আরাভও এলো।
আরাভ- ওই আমি মজা করছিলাম।
আমি- ওহ।
আরাভ- এমনি সময় তো মজা করো। আজ আবার সিরিয়াস কেমনে?
.
আমি কিছু না বলে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। কেনো যেনো ওর উপর নিজেে একটা অধিকার আছে বলে মনে হয়। কেনো অধিকার হবে না? ও তো আমার স্বামী।
আমি- প্লিজ আমাকে ছাড়া অন্য মেয়ের কাছে যাবেন না। আমি আপনাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না।
আরাভ- ওই পাগলি।
আমি- প্লিজ।
আরাভ- যাবো না কখনো।
.
আরাভ আমার কপালে কিস করলো।
আমি- আমি একটা জিনিস ভাবছি।
আরাভ- কি?
আমি- আপনি আমাকে হানিমুনে গিফ্ট দিলেন না যে।
আরাভ- বেবি এতো শপিং কইরা ব্যাগ ভর্তি কার টাকায় করলা?
আমি- খোটা দেন? আর ওটা গিফ্ট নাকি?
আরাভ- উহু।
আমি- তো আমাকে কি দিবেন আর? চলেই তো যাচ্ছি কাল।
আরাভ- চোখ বন্ধ করো।
আমি- কেনো?
আরাভ- আরে করোই তো।
আমি- ওকে।
.
আমি চোখ বন্ধ করেই আছি কিন্তু খুলতে ইচ্ছে করছে। একটু চোখ খুলার চেষ্টা করলাম।
আরাভ- ম্যাডাম চিটিং করছেন কেনো?
আমি- সরি সরি আর হবে না।
আরাভ- চোরের মন পুলিশ পুলিশ আমি আন্দাজ করলাম মাত্র।
আমি- চালাক মানুষ।
আরাভ- চোখ খুলো।
.
আমি চোখ খুলে দেখি আরাভের হাতে একটা লকেট।
আমি- ওয়াও সেই চয়েজ তো।
আরাভ- হাহা দেখতে হবে কার চয়েজ।
আমি- থেংকু। উম্মাহ। (আরাভের গালে কিস করলাম)
আরাভ- জানলে তো আরো কিছু আনতাম যদি লিপে পেতাম এর বদৌলতে।
আমি- যা লুচু।
আরাভ- ওকে ফাইন। নেও লকেট। (আরাভ চলে যেতে লাগলো।)

.
আমি ওর হাত ধরে নিলাম।
আমি- সরি।
আরাভ- ব্যাপার না লুচুদের সরি বলতে নেই।
আমি- কেনো?
আরাভ- এমনি।
আমি- এতো সিরিয়াস কেনো আজ?
আরাভ- না এমনি বললাম তো।
আমি- আপনি লুচু না।
আরাভ- ওহ।
.
আমি আর কিছু না বলে আরাভের লিপে কিস করলাম। সাহস কই থেকে পেলাম জানি না।
আরাভ- এটা কি ছিলো?
আমি- কিছু না। স্মৃতি রাখতে চাইছিলেন না? দিয়ে দিলাম।
আরাভ- এটা করবা আগে জানলে আগেই সিরিয়াস হয়ে যেতাম।
.
এই বলে আমাকে আরাভ কোলে তুলে নিলো।
আমি- এ্যা। আন্নে কি করেন?
আরাভ- একটু ভালোবাসা।
আমি- মি. আরাভ একটু নামান আপনাকে একটা জিনিস দেখাবো।
আরাভ- কি?
আমি- আরে নামান দেখাচ্ছি।
.
আরাভ নামানোর সাথে সাথে আমি দৌড় দিলাম বাথরুমে।
আরাভ- চালাকি করলা?
আমি- হুমম।
আরাভ- একদিন আমারো সময় আসবে।
আমি- আপাতত আমার আসছে।
আরাভ- বের হও কিছু করবো না।
আমি- প্রমিস?
আরাভ- হুম।
.
আমি বের হয়ে এলাম। তারপর দুজনে আবার বেলকনিতে বসে কিছু সময় আড্ডা দিলাম। আড্ডা দিতে দিতেই ঘুমিয়ে গেলাম। তখন আরাভ আমাকে ঘুমের ঘোরে কোলে করে রুমে এনে শুইয়ে দিলো।
.
পরেরদিন আমি আর ও বাড়ির দিকে রওয়ানা হলাম। কিন্তু সকাল থেকে আমি আরাভের সাথে লজ্জায় কথা বলি নি। রাতে বলতে পারলেও সকালে আমার লজ্জা লাগছিলো। কারণ আমি কিভাবে ওটা করলাম আর আমার সাহসই হচ্ছিলো না। ভয় করছিলো। কিন্তু আরাভ ঠিকই মজা নিচ্ছিলো। চোখ মারছিলো আর ইশারা করছিলো।
.
(আমার মনে হচ্ছিলো আমাদের জীবনটা সুখ পূর্ণ হয়ে উঠেছে। কিন্তু সামনে যে কোন বিপদ তা জানা ছিলো না।)
.
চলবে…..

Angry_Husband Season_2___Part_11

0

Angry_Husband
Season_2___Part_11
Written by Avantika Anha
.
আমি- বান্দরের মতো হাসছেন কেনো ?
আরাভ- কি বললা ?
আমি- না কিছু না তো আমি তো চুপ আছি। ফ্রেশ হন জ্বলদি। আমার সেই ঠান্ডা লাগছে।
আরাভ- হাহা হিটার অন করে নেও।
আমি- চুলটা আগে শুকাই।
আরাভ- ড্রায়ার আনো নি?
আমি- আনছি কিন্তু আমার ওইটা ইউজ করতে ভাল্লাগে না।
আরাভ- হাহা। তো ভিজা চুলেই থাকো।
আমি- কেনো আমাকে ভিজা চুলে খারাপ লাগে নাকি।
.
আরাভ আমার এই কথা শুনে আমার দিকে তাকালো। কিছু সময় তাকিয়েই রইলো, মনে মনে ভাবছে, “ভিজা চুল এলোমেলো করা। মুখে কোনো প্রকার আধুনিকতা লেগে নেই। একদম সদ্য ফোটা ফুলের মতো লাগছে ওকে।” আরাভকে একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমার কেমন যেন লাগছিলো। এটা লজ্জা নাকি আজব লাগা বুঝতেছিলাম না।
আমি- কি এমন করে তাকিয়ে আছেন কেনো ?
আরাভ- না কিছু না। ভালো লাগছে থাকো তুমি আমি ফ্রেশ হবো। (আমার কথায় হকচকিয়ে পালানোর জন্য গেলো)
আমি- হু ওকে।
.
কিছুদিন ভালোই ঘুরলাম আমরা। শেষ দিন দুপুরে আমি আর আরাভ আরও কিছু জায়গা ঘুরলাম। গিয়ে একটা নদীর সামনে দাড়ালাম। হোটেলের কাছাকাছিই নদীটি। নদীটির পানিগুলো অনেক পরিষ্কার। আমি আরাভের হাত টা ধরে ফেললাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই অনেক মোহিত করে। আমি আরাভের গা ঘেষে দাড়ালাম। ওর কাছাকাছি থাকলে আজকাল আমার অনুভূতিগুলো ভিন্ন হয়। কিছুটা লজ্জা লাগে আবার ভালোও লাগে। আমি যে ওকে ভালোবাসি এতে কোনো সন্দেহ নাই।
আরাভ- বাহ আজকাল মিস পকপকানি রোমান্টিক হচ্ছে।
আমি- কি বললেন ?
আরাভ- না কিছু না। ফানুস উড়িয়েছো কখনো ?
আমি- না কেনো?
আরাভ- উড়াবে?
আমি- হুম।
আরাভ- ওকে রাতে উড়াবো।
আমি- মি. আরাভ।
আরাভ- হুম বলো।
আমি- উ আই নি।(জাপানি ভাষায় আই লাভ ইউ)
আরাভ- মানে?
আমি- কিছু না।(এতো সহজে মানে বলবো না)
আরাভ- পাগলি তুমি সত্যি। কি যে ভাষায় কথা বলো আল্লাহ জানেন।
আমি- হিহিহি। আমি আইসক্রিম খাবো।
আরাভ- ঠান্ডা করছে এখন খেলে জ্বর আসবে।
আমি- প্লিজ। আমি খাবো।
আরাভ- ওকে দাড়াও।
আমি- আছি আছি দাড়িয়েই আছি।
.
আরাভ আইসক্রিম আনতে গেলো। আমি দাড়িয়েই ছিলাম। কিন্তু একপাশে অনেক গুলো ফুলগাছ দেখতে পেলাম। এমনি আমার ফুল অনেক ভালো লাগে। সেই সাথে ওই ফুলগুলো নিতে খুব ইচ্ছে করলো। যেই ভাবা সেই কাজ আমি চলে গেলাম ফুলগুলো পারতে। কিন্তু গাছের ডালটি একটু বেশিই উচুতে ছিলো। আমি নিতে পারছিলাম না। তবুও অনেক কষ্টে কয়েকটা নিলাম। কিন্তু আমার আরও নিতে ইচ্ছে করছিলো। এমন সময় আরাভ আইসক্রিম এনে দেখে আমি ওখানে নেই। আমাকে ওখানে না দেখে আরাভ কিছুটা চিন্তিত হয়ে গেলো। ওর কিছুটা রাগ হলো আবার চিন্তাও। আরাভ ভয় পেয়ে গেলো আমি আবার নদীর পানিতে পড়ে গেলাম নাকি এটা ভেবে। ও খুব ভালো করেই জানে যে আমি সাতার পারি না। আরাভের চিন্তা আরো বেড়ে গেলো। ও কয়েকবার আমাকে ডাক দিলো। আমি হালকা শুনতে পেলাম। তাই আবার নদীর পাড়ের দিকে গেলাম। গিয়ে দেখি আরাভ নদীতে নামতে যাচ্ছে। আর হেলে নদীর পানির দিকে তাকিয়ে আমাকে ডাকছে।
আমি- ওইদিক আমাকে খুঁজছেন কেনো? আমি কি নদীর পানিতে থাকবো নাকি? আমি তো সাতারও পারি না
আরাভ- কই গেছিলে? (রেগে বললো)
আমি- না মানে ওই দিকে ফুল ছিলো আরকি।
আরাভ- আবা ফুল। তুমি পাগল নাকি। তোমাকে না বললাম এখানে থাকতে।
.
এই বলে আরাভ আমার হাতদুটো অনেক শক্ত করে ধরলো। সেই সময় ভাগ্যিস গাছগুলো কিছুটা দূরে ছিলো। নইলে ওর ভরসা একদম নাই। কিন্তু আরাভ আমার হাত দুটোকে এতোটাই শক্ত করে ধরেছিলো যে আমার অনেক লাগছিলো। আরাভের নখগুলোও আমার হাতে লাগছিলো। ব্যাথা করছিলো খুব।
আরাভ- ইচ্ছা করছে তোমাকে এখনি দুইটা থাপ্পড় দেই। ভেবেছিলাম ঘুরতে এসেছি মুড খারাপ করবো না। কিন্তু তুমি সেই সুযোগ করে দিচ্ছো। এই মেয়ে তুমি আমার কথা শুনো না কেনো?
আমি- আমি তো ফুল..
আরাভ- চুপ একদম চুপ। কোনো কথাই বলবা না আর। চুপ থাকো।
আমি- বকেন। বকবেনই তো। আর কি পারেন? একটুও নরম না। এমনকি ভালোও বাসেন না আমাকে। সবসময় যাস্ট বকা আর থাপ্পড়।
আরাভ- ভালোবাসি কি না তুই তো বুঝবি না। বুঝলে আমাকে চিন্তায় ফেলতি না।
আমি- এমা আপনি তুই তুই বলছেন।
আরাভ- হ্যা বলবো। তোকে তুই ই বলবো আমি কোনো সমস্যা?
আমি- না না কোনো সমস্যা নাই। (ওর চোখ রাগে লাল হয়ে গেছে)
আরাভ- কি বললি তখন আর?
আমি- কি কিছুই না তো।
আরাভ- তোকে ভালোবাসি না তাই না?
আমি- না মানে বাসেন তো।
আরাভ- ওহ। ভালো।
আমি- হাত ছাড়েন।
আরাভ- ছাড়বোনা প্রব্লেম।
আমি- দূররররর সব কিছুতে রাগ রাগ রাগ। দেখান আরও রাগ। যে ভালোবাসা দেখাতে পারে না সে তো রাগ দেখাবেই।
.
আরাভ কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আমার ঠোঁটজোড়া ওর ঠোঁটে আবদ্ধ করে নিলো। মিনিট খানেক পরে ও ছেড়ে দিলো। আমি ভাবতেও পারি নি ও এমন করে বসবে। জীবনে প্রথম এক প্রকার আলাদা অনুভূতি ছিলো ওটা। কিন্তু এমন একটা নির্জন জায়গায় আর প্রকৃতির মাঝে কেমন একটা আজব লাগছিলো। লজ্জা লাগছিলো প্রকৃতির কাছেই।
আরাভ- দেখলি ভালোবাসা আরও দেখবি?
আমি- (নিশ্চুপ লজ্জায়)
আরাভ- কথা বল।
আমি- এইডা কি করলেন?
আরাভ- (আরাভের রাগ থেকে হুস ফিরলো। ও ভাবতে লাগলো, ঠিকই তো আমি হঠাৎ করে কি করে বসলাম।) সরি।
আমি- আপনি আমার ফুলগুলো নষ্ট করে ফেললেন।
আরাভ- কিহ ।(আরাভ ভেবেছিলো কিস নিয়ে কথা বলছে)
আমি- আমাকে এখন ফুল এনে দেন আমি কিছু জানি না। (ওই বিষয়ে আর কথা বাড়ালাম না। কারণ আমার খুব বেশিই লজ্জা লাগছিলো।)
আরাভ- হুম ওকে।
আমি- আমার আইসক্রিম কই?
আরাভ- ওহ ওখানে রেখে ছিলাম। মে বি গলে গেছে।
আমি- দূরররররররররর।
আরাভ- দাড়াও তোমাকে ফুল এনে দিই।
.
আমি আর আরাভ ওখানে গেলাম। কিন্তু আরাভও কয়েকটাই ফুল নিতে পারছিলো। বাকীগুলো ওর হাতেও আসছিলো না।
আমি- নিজেও তো পারছেন না। ওই ডালের ফুলগুলো সুন্দর একটু চেষ্টা করেন তো।
আরাভ- না হাতে আসছে না। (চেষ্টা করার পর)
আমি- ওহো। আইডিয়া। আমাকে কোলে উঠান তো একটু তাহলে মনে হয় পারবো।
আরাভ- ও হুমমম পারবো। আইডিয়া টা আগে আসলো না।
আমি- আপনি যে বোকা আর আমি যে চালাক প্রমাণ।
আরাভ- হুম আর মেইন বিষয়ে উনি বোকা। (বিড়বিড় করে)
আমি- কিছু বললেন নাকি ?
আরাভ- না কিছু না।
.
এরপর আমাকে আরাভকোলে তুলে নিলো। এবার অনেকগুলো ফুলই নিতে পারলাম। অনেক ফুল ছিড়ে সেগুলোকে ওড়নায় নিয়ে নিলাম।
আরাভ- এতো ফুল দিয়ে কি করবা?
আমি- পরে বলবো। হোটেলে চলেন তো।
আরাভ- ওকে।
.
এরপর আমি আর আরাভ হোটেলের রুমে চলে গেলাম। কিছু সময় পর আরাভ চলে গেলো ফানুস আনতে। আমি গাছের সাথে ধরাধরি করায় জামাটা একটু নোংরা হয়ে গিয়েছিলো। তাই তাড়াতাড়ি করে জামা পাল্টে ফেললাম। ফুলগুলো সাদা রং এর ছিলো তাই আমি একটা সাদা গাউন থ্রি-পিস গুলো পড়ে ফেললাম। তারপর ফুল গুলো দিয়ে একটা ক্রাউন, দুল, হাতের ব্রেসলেট সব বানিয়ে ফেললাম। তাড়াতাড়ি করে সেগুলো পড়ে ফেললাম। তারপর আয়নায় দাড়িয়ে নিজের অয়রবটাকে দেখতে লাগলাম। মোটামোটি ভালোই লাগছিলো। হঠাৎ দরজা খুলার শব্দ পেয়ে আমি পিছনে তাকালাম। দেখি আরাভ এসেছে। আমাকে এভাবে দেখে ও হা করে ফেললো।
আমি- মি. আরাভ আমাকে কেমন লাগছে।
আরাভ- প্রকৃতির মেয়ে যেন আমার সামনে। তার স্নিগ্ধতার চাদর যেন তোমাকে আবদ্ধ করে লিখেছে। হাজারো কবির মায়াকন্যা যেন তোমার রূপ নিয়েছে।
আমি- হিহিহি। আমি কিচ্ছু বুঝি নি। ইট্টু ভালো করে কন তো।
আরাভ- দূরররর। কিছু না। দারুণ লাগছে। এর জন্য ফুল নিয়েছিলে?
আমি- হুমমম।
আরাভ- নিচে চলো ফানুস উড়াবো।
আমি- খাড়ান ফোনটা নেই। ইট্টু পিক তুলমু। মিমি আর প্রেয়সিরে পাঠামু।
আরাভ- দুররর পাগলি। চলো।
.
আমি আর আরাভ নিচে গেলাম। কিছুটা নির্জন জায়গায় গেলাম।
আমি- মি. আরাভ আমার না ভয় করছে।
আরাভ- আরে চলো। কিছু হবে না। শেষ দিন এখানে একটু স্মৃতির পাতায় রাখি। দেখি ওদিক দুটো চেয়ার টেবিল রাখা। আরো লাগানো আছে। হয়তো কাপলদের জন্যই জায়গাটা।
আমি- ওয়াও সেইরাম তো।
আরাভ- জানি ম্যাম অল ক্রেডিটস গোস টু মি।
আমি- এইরাম ফুল ফিল্মি। কতো টাকা গেলো?
আরাভ- তুমি ইঞ্জয় করো। টাকার কথা ভাবো কেনো?
আমি- কয়েকটা পিক তুলেন জ্বলদি। মিমিরে জ্বলামু।
আরাভ- হায় রে।
আমি- তুলেন তুলেন।
.
আরাভ আমার কয়েকটা পিক তুলে দিলো। তারপর আমি ওরও ছবি তুলে দিলাম। আমরা একসাথেও কয়েকটা ছবি তুললাম। দেখলাম ওখানে একটা ছোট পেস্ট্রি কেক রাখা।
আমি- এটা কেনো?
আরাভ- এমনিই আনলাম। আজ আমাদের বিয়ের ৮মাস হয়ে গেছে।
আমি- ওয়াও আমি ৮ মাস ধরে আপনাকে সহ্য করতেছি।
আরাভ- কি বললা?
আমি- হিহি মজা করলাম। আসেন কেক কাটি।
.
আরাভ আর আমি মিলে পেস্ট্রি কেকটাই কাটলাম।
আমি- মি. আরাভ আপনি না মেলা রোমান্টিক।
আরাভ- ও তাই নাকি?
আমি- হিহি হুমমম। চলেন ফানুস উড়াই।
আরাভ- আরে আগে খেয়ে তো নেও।
আমি- আচ্ছা।
.
কিছুটা খেয়ে…
আমি- আমার খাওয়া শেষ চলেন ফানুস উড়াই।
আরাভ- আগে সব শেষ করো। নইলে উড়াবো না।
আমি- হুহ আচ্ছা আচ্ছা।
.
তারপর খেয়ে নিয়ে আমি আর আরাভ মিলে ফানুসটা উড়ালাম।
আরাভ- আনহা এদিক কয়েকজন বিলিভ করে এটা উড়ানোর সময় কাপলরা উইশ করলে পূরণ হয়।
আমি- সত্যি?
আরাভ- হুম।
আমি- আমিও উইশ করবো।
.
আমি আর আরাভ যেনো একসাথে থাকি। আমাদের যেনো ২০টা বাচ্চা হয়। তাদের মাঝে যেনো জমজ বাবুও থাকে। আমরা যেনো ভালো থাকি। এই বলে উড়ায় দিলাম। তারপর আরাভের দিকে তাকালাম। আমার উইশ শুনে আরাভ থ।
আমি- কি?
আরাভ- ২০ টা বাচ্চা?
আমি- হু।
আরাভ- হায়রে।
আমি- হিহি।
তারপর আমি ফানুসটার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। তারপর হঠাৎ করে আরাভকে জড়িয়ে ধরলাম, “আজকের দিনটা কখনো ভুলবো না। থেংক ইউ মি. হাজবেন্ড।”আরাভ ভাবে নি আমি ওকে জড়িয়ে ধরবো। তারপর আরাভও আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
হঠাৎ একটা জিনিস মাথায় আসতে আমি তাড়াতাড়ি ওকে ছেড়ে দিলাম।
আরাভ- কি হলো?
আমি- ফুলগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। এই জন্য ছেড়ে দিলাম।
আরাভ- দূরররর মাইয়া।
আমি- হিহিহি
.
চলবে…..

Angry_Husband Season_2___Part_10

0

Angry_Husband
Season_2___Part_10
Written by Avantika Anha
মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলো আমার। কারণ পাশে কেমন একটা ডাক শুনতে পাচ্ছিলাম। ভয় পেয়ে আরাভকে ডাক দিতে লাগলাম।
আরাভ- কি হইছে এতো রাতে ডাকছো কেনো?
আমি- আমার ভয় করছে।
আরাভ- কেনো কি হলো? এখানেও ভুতের ভয় পাইলা নাকি?
আমি- হুম। দেখেন বাইরে কিসের জানি শব্দ হচ্ছে।
.
আরাভ কিছুক্ষণ মনোযোগ দিয়ে শুনে হাসতে শুরু করে দিলো।
আমি- ভুতের মতো হাসছেন কেনো?
আরাভ- শিয়াল ডাকছে।
আমি- ও আচ্ছা। ওমা গো শিয়াল মানে আশে পাশে ভুত আছে?
আরাভ- আরে না।
আমি- আম্মু আমার ভয় লাগছে।
.
এইটা বলে আমি আরাভের আরও কাছাকাছি গেলাম।
আমি- এখন কি হবে? ভুউউউত। (আরাভের একটা হাত ধরে ফেললাম)
আরাভ- আরে ভয় পাইয়ো না তো।
আমি- আমার ভয় লাগতেছে খুব।
আরাভ- আমি আছি তো।
.
এমন সময় হোটেলের লাইট গুলোও অফ হয়ে গেলো।
আরাভ- দাড়াও খোঁজ নিয়ে আসছি।
আমি- না আপনি কোথাও যাবেন না। আমিও যাবো আপনার সাথে।
আরাভ- আরে দেখো পুরো হোটেলে লাইট অফ হয়ে গেছে। হোচট খেলে কি হবে?
আমি- জানি না আমি যাবো আপনার সাথে।
আরাভ- আচ্ছা চলো। ফোনের লাইটই সম্বল।
.
আমি আরাভের হাত ধরে এগিয়ে গেলাম। আমাদের মতো অনেকে বের হয়ে এসেছে। পুরো হোটেলেই ইলেক্ট্রিসিটি নাই। আমি আরাভের হাত অনেক শক্ত করে ধরে আছি। আরাভ ভালো করেই বুঝেছে যে আমি ভয় পাচ্ছি। নিজে গিয়ে শুনলাম কি একটা প্রব্লেম হইছে। সকালের আগে ঠিক হবে না। ইলেক্ট্রিক মেকানিক আসবে এখনি জরুরীভাবে ডাকা হয়েছে। সবাইকে অপেক্ষা করতে বলা হলো। রুমে বসে আর কি করবো এই ভেবে আমি আরাভকে বললাম বাইরে হাঁটি একটু। আরাভ প্রথমে রাজী না হলেও পরে রাজী হলো। মাঝরাতে বাইরে কখনো হাঁটি নি। এটাও প্রথম অনুভূতি। এই এতো ঘুরতে আসাটাও প্রথম অনুভূতির মতো। কারণ আমি কোনোদিন এতোদূরে ঘুরতে আসি নি। প্রথম একবার কক্সবাজার যেতে চেয়েছিলাম। টাকাও ম্যানেজ কিন্তু আম্মু আমাকে যেতে দিবে না এতোদূর একা একা।
আরাভ- কি চুপচাপ যে।
আমি- রাতে অন্ধকার আকাশের সৌন্দর্য অনেক বেশি তাই না। চাঁদটাও দারুণ লাগছে।
আরাভ- হুমম। কিন্তু তোমাকে তো ভুতের মতোই লাগছে।
আমি- কিহ? কেমনে কি?
আরাভ- এলোমেলো চুলে।
আমি- আপনি কি জানেন একসময় এক কাজিন আমার এলোমেলো চুল নিয়া কবিতা লিখছিলো আর বলেছিলো আমাকে এলোমেলো চুলে দারুণ লাগে।
আরাভ- তোমাকে কিভাবে দেখলো?
আমি- কাজিনটা আমাদের বাড়িতে ঘুরতে আসছিলো তখন ওর বোন আমার রুমে ছিলো। ওকে ডাকতে এসেই দেখেছিলো। আমার দূর সম্পর্কের কাজিন হয়।
আরাভ- ওহ। আজকের পর এলোমেলো চুলে কারো সামনে যাবা না। মাথা ঢেকে ফেলো।
আমি- হিহি পোড়া পোড়া গন্ধ।
আরাভ- যা বলছি করো। (একটু জোড়েই বললো)
আমি- ঢাকতেছি। এতো রাগার দরকার নাই। বাচ্চা মেয়ে
আমি।
আরাভ- ন্যাকামি করবা না।
আমি- ফাইন আমি থাকবোই না। আমি গেলাম রুমে।
.
আমার রাগ উঠে গেছে। যখন তখন বকে কেনো আমাকে? আমি কি করছি। একটুতেই রাগে। চারপাশে কিছু মানুষও ছিলো। ওরা কি ভাবছিলো। খালি বকে আমাকে। এই ভেবে আমি অন্ধকারেই হোটেলের দিকে চলে গেলাম। কিন্তু যাবো কোনদিকে জানি? হঠাৎ করে রুম কোনদিকে তা ভুলে গেলাম। আল্লাহ আমি যাবো কই? প্রচুর ভয় পেয়ে গেছিলাম। তাই না জেনেই একপাশের সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে গেলাম। কিন্তু মনে হচ্ছে ভুল দিকে চলে আসলাম। ভয়ে পুরা লাল হয়ে যাচ্ছিলাম আমি। হাটতে হাটতে দেখলাম সামনে এক দিকে কোয়েকটা ছেলে ড্রিংক করছে। এটা দেখে উল্টা দিকে দৌড় মারলাম। তাড়াহুড়া করে আবার কোন পাশে গেলাম জানি না। এবার কোনো কোনো দিকে হালকা আলো দেখতে পাচ্ছিলাম। কিন্তু আমি যে হারায় গেছি তা বুঝছিলাম। এতোই ভয় লাগছিলো যে মনে হচ্ছিলো এটা একটা দুঃস্বপ্ন। নিজের উপর রাগ উঠছিলো কেনো যে চলে আসলাম। ভয়ে কাঁদতে কাঁদতে কোনদিক যাচ্ছিলাম জানি না। হঠাৎ করে আবার সিড়ি পেলাম কিন্তু নিচে নামে দেখি ওইদিক আরো অন্ধকার। আমি কোনদিক যাবো বুঝছিলাম না। আমি যে কই আছি এটাও জানি না। ফোন সাথে না নেওয়ায় রাস্তাও পাচ্ছিলাম না। তাই হাটতে হাটতে কোনদিক জানি চলে আসলাম। হঠাৎ কে জানি আমার হাত ধরে টান দিলো আর আমার হাত গালে চলে গেলো। কারণ আমি থাপ্পড় খেয়েছি। এই থাপ্পড়ের সাথে আমি গভীরভাবে পরিচিত। হুম আরাভই থাপ্পড় মেরেছে।
আরাভ- তুমি কি পাগল? কে যায় এভাবে? কখন থেকে খুঁজে যাচ্ছি। কোন পাগল হোটেলের পিছন সাইডে আসে? আমি ভাগ্যিস একবার দেখতে এলাম। নইলে যাইতা যে কই আল্লাহ জানেন ? কি হলো কানে কথা যায় না? কথা বলো না কেনো? ইচ্ছা করছে তোমাকে আমি আরও কয়েকটা থাপ্পড় মারি।
.
আমি কিছু না বলেই ওকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলাম। ও কিছু বলছে না। আমি ওকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। আমি কাঁদতেই ছিলাম। আরাভ এখনো কিছু বলছে না। হঠাৎ ও নিজেও আমাকে জড়িয়ে ধরলো। তার কিছু সময় পর আমাকে ছেড়ে দিয়ে আমার চোখ মুছে দিলো।
আমি- সরি। আধরলাম। জানতাম না। আমার না খুব ভয় করছিলো। (ভয়ে ভয়ে সব কথা বলছিলাম। সেই সাথে কাঁদার ফলে শব্দ গুলোও থেমে থেমে বের হচ্ছিলো)
আরাভ- চুপ একদম চুপ বাদ দেও। ভয় লাগে নি একা যেতে।
আমি- অনেক ভয় লেগেছে।
.
এই বলে আবার কেঁদে আরাভকে জড়িয়ে ধরলাম।
আরাভ- সত্যি পাগলি। কি এখন কি ঘরে যাবা?
আমি- হুম। আপনি আমার হাত ধরে থাকুন ছাড়বেন না কিন্তু আমার না ভয় করছে।
আরাভ- মরে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ছাড়বো না।
আমি- মরবেন না। আমি এখানে থাকবো না রুমে চলেন।
আরাভ- আচ্ছা। তোমার ফোন কই?
আমি- আনি নি।
আরাভ- ও আচ্ছা কল দিছিলাম। কিন্তু ধরো নাই।
আমি- আমার কাছে তো ছিলোই না।
.
আমি আর আরাভ রুমে চলে গেলাম। আরাভের কাধে মাথা দিয়েই বলতে লাগলাম কি কি হলো কেমন কেমন হলো। নিজেকে ওর পাশে বড্ড সুরক্ষিত লাগছিলো। আমি জানে গেছি ভালো করেই যে আমি আরাভকে ভালোবাসি। আরাভ আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো। আরাভ যে অনেক কেয়ারফুল আজকাল আমি ভালো করেই বুঝতেছি। আমি ঘুমিয়েই পড়লাম।
আরাভ- কি হলো কথা বলছো না যে?
.
আমার জবাব না পেয়ে আলো আমার দিকে দিয়ে দেখলো আমি ঘুমিয়ে গেছি। আরাভও আমার মায়ায় জড়িয়ে গেছে। কিন্তু ওর রাগটা অনেক বেশি যার প্রমাণ সে আমার গালে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে। গাল লাল হয়ে আছে। ও আমার গালে হালকা স্পর্শ দিয়ে আমার কপালে কিস করলো। নিজেও হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়লো ব্যালকোনির সোফায় হেলানি দিয়ে। সকালে একটু দেরিতেই ঘুম ভাঙলো আমার। আমি নড়ে উঠতেই আরাভেরও ঘুম ভেঙ্গে গেলো। আমার আবার ঘুম থেকে উঠে মাথা বেশি চলে। কারণ আমি ঘুমের ঘোরেও কিছু না কিছু ভাবি। আরাভকে নিজের ভালোবাসার কথাটা বলবো। কিন্তু এতো স্পেশাল একটা জিনিস যে আমাকে স্পেশাল ভাবেই বলতে হবে এটা ভাবছিলাম। কিভাবে করবো ? এখান থেকে যাওয়ার আগেই নাকি যাওয়ার পরে এটা ভাবছিলাম। ভাবলাম স্পেশিয়াল জিনিসটা যাওয়ার পরেই করবো। মিমির সাথে আলোচনা করে প্লান করবো তারপর করবো নে প্রপোজ এটাই ভাবছিলাম।
আরাভ- কি ঘুমের ঘোর কি কাটে নি?
আমি- কাটছে। কিন্তু একটা জিনিস ভাবছি।
আরাভ- কি?
আমি- আপনি আর আমি তো বর বউ তাই না। আমরা আমাদের লাইফ এর সব একে অপরকে জানাই নাই এখনো তাই নায
আরাভ- হুম তা ঠিক।
আমি- তাহলে চলেন বলি একে অপরকে। আমি একবার আম্মুর এক সেট ভেঙ্গে ফেলছিলাম পরে দোষ প্রেয়সির ঘাড়ে চাপাইছি।
আরাভ- আমার এমন কিছু নাই। আমি সবসময় স্বীকার করি।
আমি- ….(আমি অন্যান্য বিভিন্ন জিনিস বললাম।)
আরাভ- একবার এক মেয়ে আমার নামে মিথ্যে নালিশ দিছিলো। আমি শাস্তি পেয়েছিলাম। ওর কিছুদিন পর ছুটির সময় আমি ওকে কাঁদায় ফেলে দৌড় দিছিলাম। ও আমাকে দেখে নি।
আমি- হিহি আপনিও ফাজিল তাইলে। আমি তো একবার একদল ছেলের গায়ে পানি ঢেলে দিছিলাম। কারণ ওরা এক মেয়েকে জ্বালাচ্ছিলো।
আারাভ- ফাজিল ঠিক না। আমার সাথে কেউ কিছু করলে আমি তাকে ছাড়ি না।
আমি- কোনো মেয়ে আপনাকে‌ লাইন মারে নি? আই মিন হাত কাটে নি অথবা পাগলামি।
আরাভ- এক কাজিন অনেক বাজে কাজ করেছিলো।
আমি- কি?
আরাভ- ও আমাকে লিপ কিস করতে ট্রাই করেছিলো।
আমি- ওই বান্দরনি টা কে ? আপনাকে কিস করতে আইবো কেনো? লুচু মাইয়া।
আরাভ- বউ না করলে তো করবেই।
আমি- না আপনাকে কিস করলে আমি করবো ও কেনো? যতো কিস লাগবে আমি দিবো আপনি না।
আরাভ- তাই নাকি ।
.
এমা আমি কি বলে ফেললাম। অনেক লজ্জা পেয়ে গেলাম। কিছু না বলেই বাথরুমে দৌড় দিলাম। ফ্রেশ হয়ে এসে আরাভের দিকে তাকাচ্ছিলাম না। কিন্তু অনেক লজ্জা পাচ্ছিলাম। আরাভ আমার এই অবস্থা দেখে মুচকি হাসছিলো।
.
চলবে….