Angry_Husband Season_2_Part_25

0
2604

Angry_Husband
Season_2_Part_25
Written by Avantika Anha

আরাভ তার ঘরের ভেতর বসে আছে। আনহার ব্যাগটা ওর সামনে। ওর খুব জানতে ইচ্ছে করছে এখনো কি আনহার ব্যাগে অনেকগুলো কিটক্যাট থাকে? সে কয়েক পা এগিয়ে গেলো। কিন্তু আবার পিছিয়ে গেলো। এই ভেবে যে তার আর অধিকার নাই।‌
.
আমি সেদিন ব্যাগের কথা ভুলেই গেছিলাম। সারাদিন আনভীরকে কোলে নিয়ে ছিলাম। রাতে হঠাৎ ব্যাগের কথা মনে পড়লো। সাথে সাথে ফোন খুলে দেখি আরাভের মিসড কল অনেকগুলো। ফোন ভাইব্রেশনে থাকায় দেখি নি। দেরী না করেই তাড়াতাড়ি আরাভকে কল দিলাম,
আমি- আসসালামুয়ালাইকুম।
আরাভ- ওয়ালাইকুম আসসালাম আনহা।
আমি- জ্বী স্যার বলুন।
আরাভ- স্যার বলছেন যে,
আমি- ইচ্ছা করছে তাই। বলুন কি বলবেন।
আরাভ- ওইতো তোমার ব্যাগটা আমার কাছে।
আমি- ও থেংক গড। আমি কাল নিয়ে নিবো আপনার অফিস থেকে। আর প্রজেক্ট এর অনেক কাজ পূর্ণ। আমি কাল রাতে চলে যাবো USA । বাকী কাজ আরেকজন সামলাবে।
আরাভ- আচ্ছা।
আমি- হুমম।
আরাভ- হুমমম।
আমি- আচ্ছা তাহলে।
আরাভ- আচ্ছা।
আমি- কল কাটবেন না?
আরাভ- ও সরি সরি।
আমি- হিহিহি।
আরাভ- হাসছো যে।
আমি- কিছু পুরোনো কথা মনে পড়েছিলো।
আরাভ- আচ্ছা।
আমি- মাঝে মাঝে পুরোনো স্মৃতি অনেক কষ্ট দেয় তাই না?
আরাভ- হুমমম। তা কি করছিলে?
আমি- ওইতো আনভীরের (আনভীরের নাম নিতেই চুপ করে গেলাম)
আরাভ- ও ব্যস্ত ?
আমি- জ্বী।
.
হঠাৎ পিছন থেকে আনভীর কান্না করে উঠলো।
আমি- আচ্ছা রাখি।
.
আমি ফোনটা কোনো রকমে কাটার চেষ্টা করে রেখে দিলাম। ভুল করে ফোনটা কাটাই হইলো না।
.
আমি আনভীরের কাছে গিয়ে, “ওরে আমার সোনা বাবা কাঁদে না। এইতো আম্মু তোমার কাছে। ওওও ওও। আনভীর বাবু চুপ করো। আমার ছোট্ট রাজকুমার আনভীর।”
.
এদিকে আরাভ সব কথা শুনছিলো। আরাভ পুরোই শক খেয়ে গেলো।
.
ওর মাথা কাজ করছে না। মাথায় একটাই প্রশ্ন, “তাহলে আনভীর কি আনহার বাচ্চা? আনহা যে বললো ওর স্বামী। তাহলে কি ও মিথ্যে বললো। আনভীর কি তাহলে আমার আর আনহার ছেলে?”
“না এটা কেনো হবে। ডক্টর তো বলেছিলো আমি কখনো বাবা হতে পারবো না।”
.
আরাভের মাথা কাজ করছে না।
.
আবার এদিকে,
আমি অনেক সময় চেষ্টা করে আনভীরকে চুপ করালাম। তারপর ফোন হাতে নিয়ে দেখি কল এখনো কাটা হয় নি। আমি পুরো ভয় পেয়ে গেলাম। ফোনটা হাতে নিয়ে,
আমি- হ্যালো। (ভয়ে ভয়ে)
আরাভ- জবাব দিলো না।
.
আমি কয়েকবার হ্যালো হ্যালো করলাম কিন্তু আরাভ জবাব দিলো না। তাই আমি ভাবলাম ও হয়তো শুনেই নি। কিছুটা স্বস্থির নিশ্বাস ফেললাম। আরাভ শুধু জানার জন্যই কিছু বললো না।
.
আরাভ আনহার ব্যাগে হাত দিলো। এই ভেবে কোনো প্রমাণ পাওয়া যাবে হয়তো। ও আনহার আর আনভীরের পাসপোর্টের ফটোকপি পেলো। যেখানে দেওয়া আছে আনহার একটা বাচ্চা আছে। যার নাম আনভীর। স্বামীর নামের জায়গায় আরাভের নাম। আর আনভীরের বাবার নামেও আরাভের নাম। আরাভের চোখ বড় হয়ে গেলো। ও বুঝছে না কিছুই। তাহলে কি আমার ছেলে আছে। কিন্তু ডক্টর। আরাভ সাথে সাথে এক ডক্টরকে কল দিলো, জরুরী একটা টেস্ট করবে বলে।
আরাভ- রাজ।
রাজ- বল।
আরাভ- আমি একটা টেস্ট করাতে চাই এখনি।
রাজ- কি টেস্ট?
আরাভ- আমি জানতে চাই আমার মাঝে কোনো সমস্যা আছে কি না?
রাজ- মানে?
আরাভ- আমার বাবা হওয়ার ক্ষমতা আছে কি না আমি জানতে চাই।
রাজ- কি বলছিস এসব কেনো?
আরাভ- আমার মনে হয় আমি গোলক ধাঁধায় আটকে গেছি। বের হতেই হবে দোস্ত সাহায্য কর।
রাজ- এখন তো অনেক রাত। কাল সকালে করি।
আরাভ- জানি প্লিজ দোস্ত মনে হচ্ছে অনেক সমস্যায় জড়িয়েছি। কাল অনেক দেরী হয়ে যাবে।
রাজ- ওকে। আমি তোর বাড়ির সামনে আসতেছি। তুই বের হ।
আরাভ- ওকে।
.
আরাভ সাথে সাথে কোনোমতে রেডি হয়ে বাইরে গেলো। টেস্ট করায় জানা গেলো আরাভের বাবা হওয়ার ক্ষমতা আছে। আরাভ পুরোই হতভম্ভ। কীভাবে সম্ভব? তাহলে আগের ডক্টর এমন করেছে কেনো? আরাভ পুরো বিষয় রাজকে বললো। রাজ সব শুনে,
রাজ- ডক্টরের নাম বল।
আরাভ- ডক্টর. জুনায়েদ চৌধুরী।
রাজ- চল আজই ধরবো। তার ঠিকানা আমি জানি। দাড়া আরো কয়েকজনকে ডাকি।
.
আরাভের অন্য কিছু বন্ধু মিলে ওই ডক্টরের বাড়ি যাওয়া হলো। ডক্টর আরাভকে দেখে শকড। হয়তো খারাপ কাজ বেশি মনে থাকে।
জুনায়েদ- আপনি এখানে?
আরাভ- চিনছেন তাহলে।
জুনায়েদ- মানে?
রাজ- ডক্টর হয়ে এমন কিভাবে করলেন? ফেক রিপোর্ট কেনো?
জুনায়েদ- কি বলছেন এসব?
.
আরাভ রেগে ড. জুনায়েদকে একটা ঘুসি দিলো।
আরাভ- সত্যি বল জ্বলদি নইলে আজ তোকে মেরেই ফেলবো।
.
জুনায়েদ প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও আরাভের কাছে ও‌ বাকীদের কাছে মার খেয়ে সত্যি বললো। কে ওকে টাকা দিয়েছে থেকে শুরু করে সবকিছু। আরাভের রাগ অনেক বেশি। তাই তার মার খেয়ে ড. জুনায়েদের অবস্থা খারাপ হয়ে গেলো। আরাভ সাথে সাথে জান্নাতের বাড়ির দিকে রওয়ানা হলো। ওকে আজ রাতেই সব ঠিক করে আনহাকে আবার নিজের করতেই হবে।
.
আরাভ জান্নাতের বাড়ির গেটে বেল চাপলো।
জান্নাত- তুমি এখানে যে? (কিছুটা ভনিতা করে)
আরাভ- তুই এমন কেনো করলি?
জান্নাত- আমি আবার কি করলাম?
আরাভ- কেনো করলি আমার আর আনহার সাথে এমন?
জান্নাত- ও তাহলে জেনে গেছিস? প্রতিশোধ এটা বুঝলি?
.
আরাভ রেগে জান্নাতের গালে থাপ্পড় দিলো। জান্নাত দূরে গিয়ে পড়লো। এতে একটু শব্দ হলো। এতে বাড়ির বাকীরা বেড়িয়ে এলো।
.
আরাভ- আরে তোর মতো মেয়েকে কে ভালোবাসবে? তুই তো ভালোবাসার যোগ্যই না। আরে বেয়াদপ মেয়ে তুই ভালোবাসা বুঝিস? তোর বাপ মা তোকে শিখায় নি? আরো অনেক কিছু বললো।
.
আরাভ আরও গালি দিলো। রাগের মাথায়। আরাভের মামা বুঝছেই না আরাভ কেনো এমন করছে?
আরাভের মামা- কি হয়েছে আরাভ? তুমি আমার মেয়েকে এভাবে মারতে পারো না।
আরাভ- আপনার জন্যই এমন হয়েছে। মেয়েকে আরো মাথায় উঠান। কি কি করছে জিজ্ঞেস করুন। প্রথম থেকে।
.
আরাভ সবকিছু বললো। বলে সেখান থেকে চলে আসলো। আর জান্নাতকে সাবধান করে দিলো। জান্নাতের বাবা খুব কষ্ট পেয়ে জান্নাতকে বুঝালো।
.
আরাভ ভাবছে, ওকে আনহার ভালোবাসা আবার জয় করতেই হবে। ও জানে আনহাকে সব বললেও ও মানবে না। ওকে আবার কিছু করতেই হবে। কালই। আরাভ ভাবতে লাগলো, কিভাবে সব ঠিক করা যায়। তারও উপরে ওর বিশ্বাসই হচ্ছে না ওর একটা ছেলে আছে। আরাভ আনহার‌ ব্যাগে আনভীরের আরো ছবি পেলো সেদিন রাতে। সব দেখে ও‌ বুঝলো‌ ওদিনের বাচ্চাটা মিমির না আনহার ছিলো।
.
আরাভ সেদিন রাতটা কোনোমতে আনভীরের ছবি বুকে জড়িয়ে কাটালো। সে ভাবছিলো হয়তো সব ঠিক হবে। কিন্তু কে জানে হবে কিনা? জানতে সাথে থাকুন।
.
চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে