Thursday, August 21, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 454



ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও পর্ব-১২

0

#ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও(১২)

ইশান যখন বাসায় আসে তখন রাত এগারোটা বেজে গেছে মুন নিশ্চয়ই একা একা ভয় পেয়েছে? অবশ্য ইশান এক ঘন্টা পর পর কল করেছিলো বলেছে রাতে রান্না করতে হবেনা সে সাথে খাবার নিয়ে আসবে। মুন বিছানায় শুয়ে ছিলো ইশান ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে একাও ভেতরে এসেছে। মুন বিছানা থেকে নেমে প্রথমেও চুল গুলি বেধেঁ নেয়।

একা একা কি খারাপ লাগছিলো?

হ্যাঁ। বলেছিলেন দ্রুত ফিরবেন।

ইশান খুব ভালো করেই মুনের অভিমান বুঝলো কন্ঠে আকুলতা ফুটিয়ে বললো, ‘আসলে আম টাইম চেঞ্জ করে নিয়েছি। সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত আসলে আজকে আমি ক্লিনিকে গিয়েছিলামই দেরিতে তাই ফিরতেও লেট হলো। এখন থেকে সময় মতো ফিরবো মুন!

বুঝলাম।

চলো খাবার খেয়ে নেবে আমি খাবার নিয়ে এসেছি কাল একদম সকালের বাজারেই চলে যাবো আমার সাথে তুমি ও যাবে কেমন?

আমি কেন?

সংসার সামলাবে তুমি মুন!আমি জানি তুমি অনেক অল্প বয়সী মুন!তবুও এখানে তুমিই সব তাই কিসব লাগবে তুমি নিজে হাতে নিয়ে এসে সাজাবে। আমি তোমার পছন্দকে এখন থেকেই মুল্য দিতে চাই।

মুন ইশানের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে তবে কিছু মুখে বলেনা।

——–
মাসুদের সাথে এক টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছে ইমরান। ওর খালার এই একটাই ছেলে তাই তো ইশাম আর ইমরান এখানে থেকে পড়াশোনা করেছে। বড় খালা মায়ের মতোই আগলে আগলে রেখেছে দুই ভাইকে। মাসুদ ভাই ইকবালের সমবয়সী হলেও এখনো বাবা হতে পারেনি। ইমরান চুপ করে বসে প্লেট এর ভাত নাড়াচাড়া করছে তবে কোন খাবার মুখে দিচ্ছে না। মাসুদ ইমরানের পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,

কি হলো? আজ তোর ভাবীর হাতের খাবার ভালো হয় নাই?

ইমরান মাসুদের স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বলে, ভাবী সব সময় সুন্দর রান্না করে মাসুদ ভাই। আমি দোয়া করি এই সুন্দর রান্নার জন্য হলেও তোমার ঘরে শত মেয়ের জামাই চলে আসুক।

মাসুদ ওর স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে দেখে একটা সন্তানের জন্য কত রাতই না মেয়ে টা কান্নাঁ করে।

মাসুদ আবার ও ইমরানকে বলে, তুই তবে খাচ্ছিস না যে?

আজকে এমনিতেই ভালো লাগছেনা মাসুদ ভাই। খাবো না, রুমে গেলাম ভাবী।

সে কি! দুপুরেও খাবার খাস নি তুই।

আহ্ মাসুদ ভাই আমি বাইরে খেয়েছিলাম।
ইমরান ওর জন্য দেওয়া রুমে আসে জানালার কাছে গিয়ে বুকের ভেতরের জ্বালা অনুভব করে। ইশান কে সে কি একবার কল করে সরি জানিয়ে দেবে?নাহ্ ব্যাপারটা কেমন হয়ে যাবে না?আর মুন?দুই বার সে ভুল মেয়ের প্রতি অনুভূতি সাজিয়েছে আর নয় যে ভাবেই হোক ওও হিমুর মতো মুনকেও ভুলতে হবে। মুনকে তার ভাই যখন স্ত্রী হিসেবে মানতে চাইছে সে আর ঝামেলা করবেনা। অথচ এখন মুনকেও ভুলতে পারছেনা। সে কি ইচ্ছে করে মুনের প্রেমে পরেছে?ইশান চলে আসার পর মুনকে বাসাতে ইমরানই বেশি সময় দিয়েছে মুনের পছমদের সকু সামগ্রী এনে সামনে হাজির করিয়েছে। তখন এই ইমরান আজকের ইমরান ছিলো না তখন চেয়েছে ইশান আর মুনের সম্পর্ক ঠিক করতে অথচ সে নিজেই ভালোবাসা নামক মায়ায় পরে গেলো। মুনের জন্যই হিমুর প্রত্যাখ্যান মেনে নিতে পেরেছে এখন কি হবে?যখন মুন তার হবে না আর কখনো ভেবেছিলো ইশান মুনকে কখনো মানিয়ে নিতেই পারবেনা তখন সবাইকে বলে মুন আর ইমরানের সম্পর্ক বাধাঁতে চাইবে।

ইমরান বিছানায় শুয়ে পরে । আর ভাবতে ইচ্ছে করছেনা মস্তিস্ক কে এবার চাপ দেওয়া বন্ধ করে আরাম দিতে হবে ঘুমিয়ে যাওয়াই ভালো কিন্তু ঘুম কি আর সব সময় হয়?

—–
মুন সকাল সকাল রেডি হয়েছে ইশানের সাথে বের হবে বলে ইশান ও মুনকে সাথে করে নিয়ে বের হয়। ফোর্থ ফ্লোর থেকে সিড়ি বেয়েই নেমে এসেছে দুজনে। মুন এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছে সবটা ইশান গাড়ি নিয়ে সামনে এসে ওকে তুলে নেয়। সব কেনাকাটা করে মুনকে মাসুদদের বাসাতে আসে ইশান। মাসুদের স্ত্রী দরজা খুলতেই মুন ওকে সালাম দেয়। এর আগেও দেখা হয়েছিলো সবার সাথে। মুনকে ভাবী ভেতরে নিয়ে যায়। ওর রুমে নিয়ে গিয়ে বসায়। ইশানের খালা আসে সেই রুমেই মুনের সাথে কথা বলে এর মাঝেই নাস্তা সাজিয়ে এনে দেউ মাসুদের স্ত্রী। মুন ভাবীকে বলে,

ইমরান ভাইয়া নেই?

না মুন। ও তো সকালেই বের হয়েছে।

এত সকালে?

হ্যাঁ। বললো কোচিং করতে যাবে।

ওহ।

দুপুরে ফিরবে বলেছে তখন দেখা করতে পারবে।

কিন্তু ইশান ভাইয়া যে আমাকে এক্ষুনি নিয়ে যাবে ওই বাসাতে।

আমি তোমায় আজকে যেতে দিবো না মুন।

মুন কিছুই বললো না। ইশান ঘড়িতে টাইম দেখে বলে, মুন চলো তামাক নামিয়ে দিয়ে আমায় আবার ক্লিনিকে যেতে হবে।

ভাবী এসে ইশান কে বলে, এখন না ও আজ এখানেই থাকুক পরে কাল এসে নিয়ে যাস কেমন?

তুমি তো সবটা বুঝতেই পারছো ভাবী সব সাজাতে হবে আমাদের গুছানোর কাজ চলছে গাড়ি তে অনেক সামগ্রী রয়েছে আজ নিয়ে যাই অন্য একদিন আবার নিয়ে আসবো মুনকে।

ভাবী মন খারাপ করে খালামুনিও সবটা বুঝে আর জেড়া করেনা। নতুন বাসা গুছাতে অনেক সময় লাগে।

আচ্ছা তাহলে আবার এসো মুন!

হু।
ইমরান ভাইয়া এলে বলেদেবেন ভাইয়া যেনো আমাদের সাথে দেখা করে আসে।

আচ্ছা বলে দেব।
ইশান মুনের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভাবে এরপর মুনকে নিয়ে বের হয়।

মুনকে ফ্ল্যাটে দিয়ে এসে ইশান বের হয়ে যায়। আর মুন সব বাজার ফ্রিজে রাখে। দুপুরের রান্না বসিয়ে দেয় ইশান আসবে আবার খেতে দ্রুত কাজ করতে হবে।
—–
ইমরান মাঠের মাঝখানে বাইক রেখে দাঁড়িয়ে আছে।
নাইম আর আরিফ পাশেই রয়েছে কলেজ এখিন অনেক ফাঁকা কেউ তেমন আসেনি।
আরিফ অনেকটা সময় আমতা আমতা করে বলে,কিরে ইমরান কাল ওমন মেজাজ দেখিয়ে গেলি কেন?কিছু নিয়ে কি তুই আপসেট?

না।

শান্ত গলার আওয়াজ শুনে আরিফ আবার বলে,

জেরিন কাল অনেম সময় কান্নাঁ করেছে ইমরান।

কাদুঁক।আমার কি তাতে?

মেয়েটা তোকে অনেক ভালোবাসে………

আমি বলেছি ওকে যে আমাকে ভালোবাসুক?

না।

তাহলে আমায় কেন বলছিস? আমি কিছুই শুনতে চাইনা এ নিয়ে আরিফ।

কিন্তু……

আবার কিসের কিন্তু?

ও তোকে সত্যই ভালোবাসে ইমরান। মেয়েটা দেখতে সুন্দরী, পড়……

প্লিজ চুপ কর। কালকের মতো আমাকে চলে যেতে বাধ্য করিস না।

আচ্ছা নে কিছুই বলবো না আমরা। তোর যা ইচ্ছে কর তুই!!

চলবে
#মিশকাতুল

ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও পর্ব-১১

0

#ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও(১১)

ইশান সকাল সকাল কাচাঁ বাজার কিনতে বের হয়েছে। মুন কিচেনে এসে দেখে ইশানকে লম্বা একটা লিস্ট করে দিয়েছে যে সকল সামগ্রী তার দরকার। মাসুদ অবশ্য কল করে ইশান আর মুনকে সেখানেই দুই দিন থাকতে বলেছে তবুও ইশান শুনেনি আজ হোক কাল হোক সব তো নিজেদেরকেই গুছিয়ে নিতে হবে। আপাততঃ ইশান ছোটো রকমের ভাত ফুটানোর জন্য কুকার কিনেছে, কড়াই,কুন্তি, দাঁ,থালা,মিনি ফ্রিজ ও মশলা সহ কাচাঁ সবজি কিছু ডিম। ফ্রিজ সেটিং না করে তো আর কোন কিছু বরফ করতে পারবেনা। বাসায় আসতেই এগারোটা বেজে গেছে । মুন কে সকালে বাইরে থেকে খাবার এনে দিয়ে গেছিলো ইশান। ইশানের সাথে আরও একটা ছেলে এসেছে সে সব কিছু বাসার ভেতরে এনে সেটিং করে দিয়ে চলে গেছে। মুন কিচেনে এসে দেখে ইশান সব কিছু গুছানোর চেষ্টা করছে। মুন ও হাতে হাতে সব রাখে।

আপনি কি বিকেলে ফ্রি?

কেন? তোমার একাঁ থাকতে ভয় করবে?

না সেরকম নয়।

আমি তিন ঘন্টা পর আসার চেষ্টা করবো মুন।

না। বাসায় আমি সুস্থই থাকবো শুধু শুধু কেন আপনি ওখানে অসুস্থ মানুষ রেখে দ্রুত ফিরবেন?আমি তাহলে রান্না বসাই?

তুমি আসলেই পারবে মুন?

হুম। দাদী আমায় অনেক রান্নাই শিখিয়েছেন।

এই না হলে আমার বউ?

মুন লজ্জা পায় তবে কিছুই বলেনা। চালের বস্থা থেকে চাউল বের করে নিয়েউ কুকারে বসায় ভাত ফুটাতে। সবজির সাথে ডিম দেখে সেগুলো দিয়েই রান্না করে। সকালে হালকা বাইরের খাবার খেয়েছে ইশান নিশ্চয়ই অনেক ক্ষুদা পেয়েছে?

ইশান গোসল করে নিয়ে একেবারে রেডি হয় আজকে চেম্বারে বসতে হবে। মুন টেবিলে প্লেট সাজিয়ে ইশানকে ডাকতে যায়। পরিপাটি ইশানকে দেখে মুন থমকে যায় এত সুন্দর কেন ইশান?রোজ এভাবেই সেজে গুজে যায় নাকি?মুনের থেকে বছর দশের বড় কে বলেছে ইশান?ইশানকে দেখে এখন দশ বছরের বাচ্চা মেয়েরাও ক্রাশ খাবে। ক্রাশ তো অতিরিক্ত স্বাদের মা’রাত্ত’ক একটা খাবার।

ইশান আয়নার দিকে তাকিয়ে মুনকে বলে,কাজ শেষ?

হ্যাঁ।

তুমি ফ্রেশ হও আমি বসে আছি।

আপনি খাবার খেয়ে যাবেন তারপর আমি একেবারে গোসল করে নেবো।

না না। তুমি আমার সাথেই খাবার খাবে। দুই বছরে এই প্রথম বার স্ত্রীর হাতের রান্না করা খাবার খাবো আবার তাও স্ত্রী কে পাশে না নিয়েই? তা কি করে হয়। চলো আমার সাথে আমি নিজের হাতে তোমায় খাইয়ে দেবো।

মুন অবাক চোখে ইশানকে দেখে ইশান কি সত্যই এরকম করে কথা বলছে তার সাথে?আবার মুনকে নিজের হাতে তুলে খাইয়েও
দিবে বলেছে!! মুন আর অপেক্ষা করবে কেন?

ইশান ওকে ফ্রেশ হতে বলে রুম থেকে বের হয়ে টেবিলের দিকে যায়। মুন হাত মুখ ধুয়ে এসে তোয়ালে দিয়ে মুছেঁ নিয়ে বের হয়। ইশান সত্যই তার জন্য অপেক্ষা করে বসে আছে খাবার টেবিলে। মুন কে দেখেই ইশান পাশের চেয়ারে বসতে বলে, মুন বসতেই ইশান বলে, আমি খাইয়ে দিই?

মুন কিছুই বলতে পারেনা,কি বলবে?তার তো মনের মাঝে লাড্ডু ফুটছে!!

———————-
ইমরান কলেজের সামনের চা স্টলে বসে আছে বন্ধুদের সাথে তাদের সাথে থেকেও যেনো সে এখানে নেই মনটা সেই ইশানেতেই রয়েছে ইশান তার বড় ভাই। ইকবালের থেকেও ইশানের সাথে তার মোহাব্বাত অনেক বেশি।ইকবালের বয়স ইশানের চেয়েও পাচঁ বছর এর বেশি আর ইশান ইমরানের তিন বছরের বড় তাই তো ছোটো দুই ভাইয়ের মাঝে ভালোবাসা ছিলো অনেক বেশি। দুই একটা ভুল হলে ইকবাল বা বাবা মা ইমরানকে শাসন করেছে কিন্তু দাদু আর ইশান ভাই কখনো বকা দেয়নি তারা ভালোবেসে আগলে নিয়েছে।
আর আজকে এসে এসব কি থেকে কি হলো?
ইমরানের মন উদাস হয়ে আছে চোখে মুখে অস্থিরতা ভাইয়ের কাছে মুখ দেখাবে কি করে?আর মুন??মুনকে নিয়ে যে অনুভূতি সৃষ্টি হলো তার কি হবে?

কিরে ইমরান?এভাবে চুপ চাপ বসে আছিস কেন?তুই তো বন্ধুদের মাঝে সব থেকে বেশি চঞ্চল তোকে চুপ থাকা মানায়?

তোরা মজা কর না আরিফ! আমাকে বাদ দে আমি এখানেই রয়েছি।

এটা একটা কথা বললি তুই ইমরান?তোকে মন খারাপ অবস্থা দেখেও আমরা মজা করতে পারব?

আমি জানি তোরা সবাই আমাকে কতটা ভালোবাসিস নাইম!

তাহলে?কি হয়েছে আমাদের খুলে বল! আমরা ও শুনি!

সেরকম কিছু নয় আরিফ। নাইম চাবি দে বাসায় চলে যাই মাসুদ ভাইয়ার সাথে আমাকে বের হতে হবে বিকেলে।

না ভাই আজ আর তুই চাবি সহজে পাচ্ছিস না। বাইক রেখে অটোতে করে চলে যা। না হয়…….

ইমরান এবার যথেষ্ট উত্তেজিত হয় তার এসব ত্যাড়ামো কথা বার্তা শুনতে একদম ভালো লাগছেনা,
ফাইজালামি পাইছস?

আরিফ থতমত খেয়ে যায় -হুট করে ইমরান এত উত্তেজিত হবে কেন?

ইমরান…….
চুপ কর সা’লা তারাতাড়ি চাবি দে…….. কান পরিস্কার নেই তোদের? শুনতে পাস না?

ইমরামের দিকে উপস্থিত সবাই অবাক চোখে তাকায় ছয়জন বন্ধুই অবাক হয়ে গেছে এত দিনেও ইমরান এভাবে হুট করে রে’গে যায়নি। এর মাঝেই নাইমের হাত থেকে চাবি নিয়ে রাস্তার দিকে এগিয়ে যায় কিন্তু সেই সময় জেরিন আসে ইমরানের সামনে মেয়েটা এবার অনার্স এ নতুন ভর্তি হয়েছে এই কয়েক মাসেই ইমরানকে বেশ কয়েক বার সে প্রেমের প্রস্তাব পাঠিয়ে দিয়েছে। জেরিন ওকে দেখেই লজ্জা পেয়ে যায় তবুও সাহসে মাথা তুলে বলে,

আপনি কি আ……….
ব্যাস রা’গের মাথায় থাকা ইমরান আর কিছুই শুনতে চায় না টাস করে একটা চ’ড় বসিয়ে দেয় জেরিনের গালে।
এমন হুট করে যে ইমরান জেরিনের গায়ে হাত তুলবে তা ক্ষুনাক্ষরেও জেরিন ভাবেনি।
টলমল চোখে ইমরানের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে। ইমরানের পিছু পিছু আসা সকল বন্ধুরাও হতবাক হয়ে যায় এই ইমরানের আসলে হয়েছেটা কি.?সকাল বেলা আজকে কয়েক দিন পর গ্রামের বাসা থেকে এসেই কলেজ এ এসেছে। শুনেছে গত কাল ফিরেছে এখানে। সকাল থেকেই চুপচাপ ছিলো বলে সবাই মিলে এখামে এসে বসেছে এই বিকেলে কিন্তু কি থেকে কি হয়ে যাচ্ছে এখন আবার জেরিন কেও চ ড় বসিয়েছে!!

ইমরান জ্জেরিনের দিকে না তাকিয়েই বাইকে বসে চলে যায় খালার বাসার দিকে। জেরিন ওর চলে যাওয়া পথের দিকেই তাকিয়ে থাকে। নাইমরা সবাই কাছে এসে বলে,জেরিন…….

জেরিন প্লিজ কিছু মনে করো না। আমাদের বন্ধু সকাল থেকেই একটু অন্যরকম হয়ে ছিলো তাই হুট করে তোমাকে……..

আমি কিছু মনে করি নাই ভাইয়া। আমার হয়তো এটাই উপযুক্ত পাওনা ছিলো তাই পেয়ে গেলাম। আমি…….
আমি আসছি।

—————–

মুন জানালার পাশে বসে রয়েছে ইশান যাওয়ার সময় তাকে একটা মোবাইল দিয়ে গেছে। কোন প্রয়োজন হলে কল করতে বলেছে সকলের নাম্বার রয়েছে সেভ লিস্ট এ। মিমের সাথে ভিডিও কলে কথা বলছে। মিমের জন্য তার মন কেমন করে আপুটার সাথে হুট হাট দেখাও হয় না। দুলাভাইয়ের কাজের জন্য আপুটা অনেক দূরে রয়েছে। তারপর কল করে রিয়ার কাছে রাইফি সহ সকলের সাথেই লথা বলে। এরপর দেখে ইশান কল করছে তাই রিয়াত কল রেখে ওর টা রিসিভ করে।

কি করছিলে?

কিছুনা বসে আছি।

ভয় লাগছে?

না। ঠিক আছি আপনি ফিরবেন কখন?

অনেক গুলো পেশেন্ট রয়েছে তাদের সাথে মিট করেই যাবো রাত হতে পারে

ওহ।

মুন!

হু।

আমাকে তুমি , আপনি করে নয় তুমি বলেই বলো… কেমন?

হু।

আচ্ছা রাখছি এখন। ব্যাস্ত রয়েছি এখন।

হুম দ্রুত আসার চেষ্টা করবে।

ইশানের ভালো লাগে। মুন সহজ ভাবেই সব নিতে শিখছে সব এবার শুধু তাকে পুরোটা ভালোবাসলেই হয়।

চলবে
#মিশকাতুল

ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও পর্ব-১০

0

#ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও(১০)

ইশান ফ্রেশ হয়ে আসে শার্ট বদলে হোয়াইট চিকন হাতার গেঞ্জি পরে নেয়। বিছানার দিকে গিয়ে মুনের পাশেই শুয়ে পরে। ইমরানের গা’য়ে এই প্রথম সে হাত তুলেছে তাই একটু নয় অনেক বেশিই খারাপ লাগছে। রাত এখন অনেক হয়েছে বাইরে শীতল বাতাস বইছে। জানালার ফাকঁ গলিয়ে ভেতরে প্রবেশ করছে। মুন শীতলতায় নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে বিছানায় রাখা পাতলা কম্বল তুলে দেয় মুনের শরীরে। মুন গরম ভাব অনুভব করে তা ভালো করে জড়িয়ে নেয়। ইশান ওর থেকে সরে আসতে নিতেই মুন ইশানের ডান হাত এক হাত দিয়ে ধরে ফেলে ইশান চমকে ওঠে তবে বুঝতে পারে ঘুমের মাঝেই ধরে নিয়েছে মুন। মুন সেই হাত নিয়ে আলগোছে নিজের পে’টের উপরে রাখে ইশানের সমস্ত শরীর কে’পে ওঠে। পাগোল করে ফেলবে নাকি এই মেয়ে এখন তাকে।
ইশান সে ভাবেই বসে থাকে পাশে একসময় ঘুমিয়েও যায়। সকাল বেলা মুনের আগে ঘুমে ভাংগে পাশে তাকিয়ে দেখে ইশান বিছানার সাথে হেলান দিয়ে ঘুমিয়েছে আর ইশানের এক হাত ওর নিজের হাত দিয়ে বুকের সাথে চেপেঁ ধরে আছে!মুন লজ্জা পায় পর পর বিছানা থেকে নেমে ইশানের মাথা ধরে বালিশে রাখতে চায় কিন্তু ইশান নড়ে চড়ে একেবারে মুনের দিকে তাকিয়ে বলে, ঘুম হলো?

হ্যাঁ।

তোমার প্রয়োজনীয় এখানে যা আছে সব প্যাক করে নাও বাকিটা আমি সপিং করতে নিয়ে যাবো কেমন?

হু।

——-
ইমরান সকাল সকাল ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে বের হয়েছে ওকে দেখে শাহেদা অবাক হয় এত সকালে কোথায় যাবে ইমরান?রিয়াও এসে বলে,
তুমি না কয়েকদিনের ছুটি পেয়েছো কলেজ থেকে!

হ্যাঁ।

তাহলে এত তারাতাড়ি ফিরছো যে?

কাজ আজে আমার ওখানে।

ইশানের বাবা এসে জিজ্ঞেস করে, কি কাজ আছে?যে খাবার না খেয়েই বের হতে হবে।

আব্বু প্লিজ !

কোন সমস্যা হয়েছে?

সেরকম নয় আব্বু।

তাহলে?

তাহলে আর কি কিছুই না আমি ফিরে যাবো এটাই।

কিন্তু সে তো বিকেলেও যাওয়া যায়। আজকে ইশান চলে যাবে সাথে মুন ও যাচ্ছে ওদের বিদায় দিয়ে যেও।

ইমরান উত্তেজিত হয়ে বলে, এত কথা কেন আসছে?
আমি এখন যেতে চাইছি মানে এখনই যাবো।

ইমরানের উচ্চ আওয়াজে কথা শুনে ইশান আর মুন রুম থেকে বের হয়ে আসে।
কি হয়েছে?
ইশানকে দেখে ইমরান মাথা নিচু করে ফেলে মুন ইমরানের দিকে অবাক হয়ে দেখছে ইমরানকে কখনো রা’গতে দেখেনি মুন।কি হলো এমন?
যে এই সকাল সকাল ইমরাম ক্ষে’পে আছে?

মুন ভয়ে চুপসে আছে এতদিন শুধু তিন ভাইয়ের মাঝে ইশানকেই রাগ করতে দেখেছে আজ আবার ইমরান ও শুরু করেছে। বসার রুমে ইশান,রিয়া মা বাবা আর ইমরান ছিলো এতক্ষন এখন ইকবাল ও রাইফিকে নিয়ে বের হয়েছে।

কি হয়েছে ওর রিয়া?

রিয়া আমতা আমতা করে বলে,জানিনা। ইমরান হুট করেই আজকে কেমন যেনো করছে।

ইকবাল ইমরানের দকে এগিয়ে যায় মাথায় হাত রেখে বলে, দাদুর বয়স হয়েছে ইমরান এখন উনি যদি এসে দেখে তুই ও ইশানের মতো রা’গ করে চলে যেতে চাইছিস তিনি কতটা হার্ট হবে তা তুই জানিস। দাদু আমাদের তিন ভাইকেই অনেক ভালোবাসে ইমরান। আস্তে কথা বল। তোর সমস্যার কথা আমাদের সবাইকে খুলে বল।

ইমরান ব্যাগ সোফায় রেখে বলে, আচ্ছা ঠিক আছে আমি নাস্তা করতে বসছি আর বিকেলেও যাবো হয়েছে??

কেউ আর কিছুই বললো না। ইশান মুনের দিকে তাকিয়ে একবার দেখলো। তারপর টেবিলে গিয়ে বসলো।

বিকেল হতেই ইশান আর মুন ল্যাগেজ নিয়ে গাড়ির দিকে এগিয়ে এলো মুনের দাদা দাদু ও বাবা মাও এসেছে দুপুরে মেয়েকে বিদায় দিতে। দাদী অনেক কিছুই শিখিয়ে দিচ্ছে মুনকে এখন তো ওখানে কেউ থাকবেনা দুজন ছাড়া নিজেদেরকেই সব মানিয়ে, বুঝে নিতে হবে।
মুনের এখন খারাপ লাগছে সবাইকে ছেড়ে ইশানের সাথে চলে যেতে তখন যদিও খুশি হয়েছিলো । ইমরান সদর দরজাতেই দাঁড়িয়ে রয়েছে গাড়ি পর্যন্ত আসেনি সে। মুন হাতের ইশারাতে ওকে বিদায় জানিয়ে গাড়ির ভেতরে গিয়ে বসে। রিয়া আর ইকবাল ইশানকে অনেক পরামর্শ দিচ্ছে এই প্রথম বউ নিয়ে যাচ্ছে কি না!মুন তো ছোটো হয়তো দুই একটা কথা কা’টা’কা’টি হবে জীবন গড়তে গিয়ে সংসার সামাল দিতে গিয়ে তবে রে’গে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবেনা।

ইশান ও সবাইকে বিদায় দিয়ে মুনকে নিয়ে বের হয়। গাড়িতে মুন চুপচাপ থেকেছে ইশান যদি কিছু জিজ্ঞেস করেছে তার উত্তর দিয়েছে।
ইশানের গাড়ি থামে একটা ফ্ল্যাটের সামনে। ইশান ওকে জানায় এই বিল্ডিং এর একটা ফ্ল্যাট সে কিনে নিয়েছে। ইশানের সাথেই চারতলা ভবনে আসে মুন। উত্তর দিকে একটা ফ্ল্যাটের
সামনে এসে চাবি দিয়ে দরজা খুলে দেয় ইশান মুন ভেতরে আসে প্রথমেই বসার জন্য জায়গা রয়েছে কছুটা তার ডান পাশে কিচেন ও টেবিল রয়েছে আর বসার রুমের সাথেই দুটো বেডরুম। ইশান একটা তে চলে যায় মুনকেও আসতে বলে মুন ভেতরে আসে রুমের সাথেই ওয়াশরুম রয়েছে। ইশান ওকে ফ্রেশ হয়ে নিতে বলে। মুন ব্যাগ থেকে ফেসওয়াশ বের করে নেয়। বোরকা খুলে ওড়না নিয়ে নেয়। ওয়াশ রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে। মুখে হালকা করে প্রসাধনী ব্যবহার করে নিয়ে বিছানায় বসে। জানালার পাশে বিছানা ছোট একটা বেলকুনি রয়েছে।রুমের ভেতরে স্টিলের আলমারি তার পাশেই ড্রেসিন টেবিল ও কাপড় রাখার ট্রলি। দুটো সিংগেল সোফা ও সামনে ছোটো একটা কাচের টেবিল। মুনের রুম পছন্দ হয়েছে। ইশান ফ্রেশ হয়ে এসে বলে, এখানে তুমি আর আমি ছাড়া কেউ নেই আমাদের নিজেরই সব ব্যাবস্থা করে নিতে হবে এত দিন আমি খালামুনির বাসাতে ছিলাম মানে মাসুদ ভাইয়াদের সাথে। তুমি কি রান্না করতে পারো?

রান্না?

হ্যাঁ। যদি না জানো সমস্যা নেই আমি রান্নার লোক নিয়ে আসবো।

আমি পারি।

আচ্ছা। ওহ হ্যাঁ একটা মেয়ে আসে আমি ওকে বলে দেব তোমার কিছু কিছু কাজ সে প্রতিদিন করে দিয়ে যাবে। এখন তো রাত হয়েছে রান্না করতে অনেক সময় লাগবে। চলো বাইরে থেকে খাবার খেয়ে আসি।

চলুন।

ইশান ওকে নিয়ে বের হয়।
পাশের রুম দেখিয়ে মুন বলে, ওখানে কি আছে?

কিছুই নেই একদম ফাকাঁ আমি মাসুদ ভাইকে বলে দুই দিনের মাঝে এতটুকুই সাজাঁতে পেরেছি। রুমে যা কিছু দেখছো তা গত কাল রাতে মাসুদ ভাই আর তার স্ত্রী এসে গুছিয়ে দিয়ে গেছে।

ওহ আচ্ছা।

এখানে যে কাউকে সহজে বিশ্বাস করবেনা।
সবাই তোমার মতো হবেনা।

আচ্ছা।

আমাকে বিশ্বাস করো তো মুন?

ইশান মুনের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে উত্তর কি বলবে মুন তা শোনার জন্য আগ্রহী চোখ নিয়ে তাকিয়ে দেখে মুনকে।

করি। আপনি আমার স্বামী না?আপনাকে অবিশ্বাস করবো কেন?

আর বিশ্বাস ই বা করবে কেন?আমি তো তোমার সাথে কখনো ভালো ব্যাবহার ও করিনি। তাই না?

সেরকম নয়। আমি জানি আপনি যথেষ্ট দায়িত্ববান নিজের স্ত্রী এর সাথে অমানবিকতা দেখাবেন না।

ইশানের ভালো লাগে। মুন শুধু পড়াশোনাতে ভালো বলেই নয় সব দিক থেকে ভালো আছে। যথেষ্ট বুদ্ধিমতী মেয়ে। ইশানের হয়ে থাকবে তো সব সময়!!

চলবে
#মিশকাতুল

ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও পর্ব-০৯

0

#ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও(৯)

ইমরানের মেজাজ প্রচুর খারাপ। মা বাবা দাদাও ইশানকে সম্মতি দিয়ে ফেলেছে সে মুনকে নিয়ে যেতে চাইলে নিয়ে যাবে কিন্তু কেউ ইমরানকে বুঝতে পারছেনা কেন?ইমরানের ভেতর ভেতর কেমন সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে তা কি কেউ বুঝবে?মুন?মুনও কি ইমরানের ভালোবাসা বুঝবে না?হিমুর মতো সেও চলে যাবে তার জীবন থেকে?হিমু যখন জেনেছিলো ইমরান আর মুনের সম্পর্ক আছে প্রেমের এই ধারণা থেকেই একদিন সে ইমরানের সামনে দাঁড়িয়ে তাকে অপমান করে। চলে যায় ইমরানের সামনে থেকে। হিমুর চলে যাওয়াতে ইমরানের মনে হয়েছিলো তার বুকের বাম পাশটা চুর্ণ হয়ে গেলো এরপর প্রায় মাস দুয়ের মতো নিজেকে সবার থেকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে হিমু তাকে চরিত্রহীনা বলেছে?কিন্তু কেন?সে জানেনা!!মুনের সাথে মিশতে মিশতে মনে হলো মুন শুধুই তার আর কারো না ভুল করে ইশানের সাথে বিয়ে হয়েছে তাতে কি হয়েছে মুন কে সে নিজের করবেই।

বাসার পরিবেশ একদম শান্ত। রাতের চাদেঁর আলোতে বাসার সামনের জায়গা টুকু আলোকিত হয়ে আছে মুন সেখানেই দাঁড়িয়ে দেখছে ইশান কাল চলে যাবে?আবার তাকে একা করে দিয়ে ইশান চলে যাবে। ইশান বুঝবে কখন?মুন তাকে ভালোবাসে?তার প্রথম প্রেম, প্রথম আবেগ,প্রথম অনুভূতি সবটাই ইশান। বান্ধবীরা বলতো ইশান অনেক বড়, সে তোর সাথে যোগাযোগ রাখেনি মনে হয় ইশান ভাই শহরের কোন মেয়েকে ভালোবাসে। মুন তখন চুপ করেই থাকে কিছুই বলতে পারেনা। ইশানের সাথে বছর তিনেক আগেও যেরকম ফ্রি মাইন্ড থাকতো এখন কেমন জানি বয়সের সাথে দুরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। অথচ সে ইশানের বিয়ে করা বউ।
ইশান রুমে আসে মুনকে রুমে না দেখে বেলকুনিতে যায় মুন পেছন ফিরে দাঁড়িয়ে আছে ইশান ওর পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পরে।

এখানে কি করছ? মুন!

ভাবছিলাম।

কি?

আপনি আমাকে তুই থেকে তুমি বলছেন!কাল থেকে কেন?

কারণ আমার থেকেও ভালো তুমি বলতে পারবে।

আমি?আমি কিভাবে?

কেননা!তুমি নিজেই আমাকে তুমি থেকে আপনিতে নিয়ে গেছো মুন! সে হিসেবে আমিও সম্বোধন চেঞ্জ করলাম। আমার টা সুন্দর না?

সুন্দর।

কোন কলেজ এ ভর্তি হতে চাও?

স্থানীয়তে হলেও অসুবিধে নেই।

আমি তোমাকে আমার সাথে নিয়ে যেতে চাইছি মুন।

মুন ইশানের দিকে ঘুরে দাড়াঁয়। ইশান ওকে সাথে নিয়ে যাবে?কবে? ইশানের সাথে থাকবে সে?সে তো তাই চায় ইশানকে পেতে চায়। তার স্বামী ইশান। ইশান মুনের দিকে তাকিয়েই বলে,আগামীকাল আমি সকালেই চলে যেতাম মুন কিন্তু তোমাকে সাথে করে নিয়ে যেতে চাচ্ছি আব্বু আম্মুকেও জানিয়েছি আমার বাবা মাকেও বলা হয়েছে এখন যদি তুমি রাজি হও তবেই নিয়ে যাবো।

মুন খুশি হয়! আনন্দে তার নাচঁ করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু পারছে না। সে ইশানের সাথে যাবে?

কিন্তু আমি তো সেরকম কিছুই গুছাতে পারলাম না।

আমি আছি তো! সবটা গুছিয়ে নেব!

মুন এই একটা কথা তেই অনেক ভরসা পায়। ইশান আছে তো সবটা গুছিয়ে দিতে আর কি লাগবে তার?

দরজায় কেউ নক করছে ইশান মুনকে ঘুমুতে বলে বাইরে যায়। ইমরান এসেছে। চিন্তায় আছে বেশ দেখেই বুঝে ফেলেছে ইশান।

কি হয়েছে?চোখ মুখ এরকম ফ্যাকাশে লাগছে কেন?

আমার তোর সাথে কিছু কথা আছে ভাইয়া।
ইশান ইমরানের মাথা থেকে পাঁ অবধি দেখে নিয়ে বলে, আচ্ছা বল।

এখানে নয়। চলো ছাদে যাই।

ওকে।

ইশান ইমরানের কথা মতো ছাদে আসে। এক পাশে অনেক রকম ফলের ও সব্জির গাছ লাগিয়েছে আরেক পাশে বসার জন্য দোলনা রাখা হয়েছে আম গাছের ডালটা এসে কিছুটা ছাদ ঢেকে দিয়েছে। ইশান আর ইমরান গিয়ে দোলনায় বসে। ইশান ইমরানের দিকে পর্যবেক্ষন করে বলে, কি যেনো বলতে চাস তুই?

ইমরান ইশানকে ভালো করে দেখে নিয়ে প্রথম থেকেই শুরু করে ইমরান,
ভাইয়া তুই মুনকে নিয়ে যেতে কেন চাইছিস সাথে করে?

আমার মনে হিয় দুজনের কাছাকাছি থাকা দরকার এভাবে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক হবেনা। দূরে রাখলে সম্পর্ক শুরুর আগেই শেষ হবে কিন্তু একবার ভালোবাসা জন্মালে দুরত্ব কখনো ভালোবাসা কমিয়ে রাখতে পারবে না । তাই চাইছি নিয়ে যেতে কেন?

আসলে, আসলে ভাই আমি……..

ইশানের কেমন ভয় ভয় লাগে এবার ইমরান কি বলতে পারে?

তুই আসলে?

আমি আসলে মুনকে পছন্দ করি।
।ইশান মুহুর্তে চোয়াল শক্ত করে ইমরানের গালে থা প্প ড় বসিয়ে দেয়। রা*গ উঠে যাচ্ছে ইশানের এসব কি ধরনের কথা বলা শুরু করে দিয়েছে ইমরান?

আজে বাজে বকিস না ইমরান ভুলে যাচ্ছিস ও তোর ভাবী।

কিন্তু তুমি তো ওকে স্ত্রী হিসেবে চাওনা। ওকে আমায় দিয়ে দাও ভাইয়া। আমি আর কখনো তোমার কাছে কিছুই চাইবো না।

ইশান আবার ও থা প্প ড় বসায় আরেক গালে। ইমরান মাটিতে বসে পরে ইশানের পায়ের কাছে। সেই অবস্থাতেই বলে, আমি তোমার পায়ে পরছি ভাইয়া! আমাকে মুনকে দিয়ে দাও। আমি ওকে নিজের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছি। আমি দুর্বল হয়ে যাচ্ছি মুনকে ছাড়া।

ইশান শক্ত গলায় ঘৃণার সাথে বলে, আমারই ভুল হয়েছে ইমরান যে মুনকে আমি আগে থেকেই সময় দিতে পারিনি। তোর মানসিক চিন্তা ভাবনা বদলানো শুরু করে দে ইমরান যেটা ভাবছিস সেটা আমাদের ইসলাম গ্রহন করবেনা।বিশ্বাস না হলে অনেক আলেমদের ভিডিও ক্লিপ রয়েছে দেখতে পারিস। মুনের সাথে তোর সম্পর্ক দেবর আর বড় ভাবীর বয়সে হোক না মুন তোর ছোটো। ওর সাথে সেভাবেই কথা বলবি ও আচরণ করবি। ভাবিস না আমার স্ত্রী বলে আমি তোকে আঘা*ত করেছি। তুই আমার ভাই আমি চাই না আমার সামনেই আমার ভাই কোন ভুল কাজ করুক বা ভুল করার চেষ্টা করুক। ইমরান আমি জানি তুই বুঝদার ছেলে অল্পতেও বুঝে যাবি নিজেকে সামলানো শেখা শুরু করে দে ইমরান। মুন আমাকে স্বামী হিসেবেই সন্মান করে ওর ছোটো মস্তিস্ক বুঝতে আমার সময় লাগেনা ইমরান। ও তোকে বড় ভাই ও বন্ধু ভাবে শুধু। আমি আসছি আর তুই……… নিজেকে ঠিক করার চেষ্টা কর।

ইশান রুমে আসে ততক্ষনে মুন ঘুমিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইশান প্রথমে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে চিন্তারা মাথার ভেতরে ছুটোছুটি করছে কেন??

চলবে
#মিশকাতুল

ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও পর্ব-০৮

0

#ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও(৮)

সকালবেলা ইশান ঘুম থেকে উঠেই দেখে মুন বিছানাতে নেই। বুকের বাম পাশে ব্যাথার সৃষ্টি হয় মুন কি তাহলে সত্যই ওকে স্বামী হিসেবে চায় না?ইশান জানতেও পারলো না মুন তার জন্য সারা রাত অপেক্ষা করেছে কখন ইশান নিজে থেকে ওকে ডাকবে? ইশান সাথে করে ব্রাশ আনেনি গত কাল এখন কি হবে?ওর চিন্তা ভাবনা বাড়তে না দিয়েই মুন রুমে আসে। ইশানের দিকে এগিয়ে এসে মাথা নিচু করে বলে, আপনার ব্রাশ!!

ইশানের ভেতরটা কেঁপে ওঠে এতদিন পর? এত গুলি দিন পর মুন ওর সাথে কথা বলছে?তাও আবার তুমি থেকে আপনি তে পৌছেঁ?ইশান কিছুই বলেনা মুনের হাত থেকে ব্রাশ নিয়ে নেয় নতুন ব্রাশ!এবার ইশান নিজেকে স্বাভাবিক করে নেয় সময় দিতে চায় সে যথেষ্ট মুনকে। মুন ইশানের কোন কথার আওয়াজ না পেয়ে ওর দিকে চোখ তুলে দেখে, ইশান ব্রাশের দিকে দেখিছে যেনো কিছু একটা ভাবছে?কি ভাবছে?এভাবে মুনকে দেখে কি সে বিরক্ত??

টুথ পেষ্ট?

মুন ডেসিনের সামনে থেকে টুথ পেস্ট এনে দেয়। ইশানের দিকে এগিয়ে দেয়।
ইশান তা না নিয়েই মুনকে প্রশ্ন করে, আমার সাথে কথা বলছিস না কেন তুই??

মুনের ভেতরটা যেনো ভেংগে আসতে চাইছে এইবার। ইশান কি করে বুঝবে মনের ভেতরে কত না বলা কথা রয়েছে মুনের?প্রথম প্রেম হিসেবে সে তো তার স্বামী কেই জানে অথচ ইশান তাকে দূরে সরে দিচ্ছে বার বার। কেন এমন করছে?ইশান কি তাকে বউ হিসেবে কখনোই মেনে নেবে না?মুন ইশানের চোখের দিকে চোখ তুলে দেখে, চোখে চোখ পরতেই মুন হাসফাস শুরু করে বলে, আসলে অনেক দিন পর দেখা! কি বলবো বুঝে উঠতে পারিনা!

ওহ। তুই ব্রাশ করেছিস?

মুনের মনে পরে যায় বিয়ের পরদিন সে ব্রাশ না করেই ইশানকে চু**মু দিয়েছিলো। হাত কচঁলিয়ে বলে, হ্যাঁ।

ভালো। খুব ভালো। তা…….
মুনকে একবার দেখে নিয়ে বলে, আম্মু তোকে নিয়ে যেতে বলেছে আমার সাথে যাবি?

মুন উত্তর দিতে পারেনা। মা বলেছে?শুধু মা বলেছে বলেই ইশান নিয়ে যাবে? নিজের ইচ্ছে থেকে নয়?ছোটো মুন ইশানের ভেতরটা পড়তে পারেনা। ততটা গভীর আবেগ সে ধরতেও জানেনা। তাই তো আবার ও অভিমান হয় ইশানের প্রতি।
তবুও বলে, যাবো ।

ইশান ফ্রেশ হয়ে আসে সকলের সাথে নানা রকম পিঠা পুলি দিয়ে নাস্তা করে মুনকে নিয়ে আসে নিজেদের বাসাতে। মুনকে দেখেই রিয়া এগিয়ে আসে। রাইফি মুনকে দেখেই ওর দিকে এসে ঝাপিয়ে পরে ওর কাছে যেতে। ওকে কোলে তুলে নেয় মুন। বাসার ভেতরে এসে সবার সাথে কথা বলে ইমরান আসছে আজকে। মুন খুশি হয় ইমরান আসার কথা শুনে। ইমরান তার খুবই ভালো একজন বন্ধু।
ইশান যতবার মুনের আশে পাশে আসে ওকেই দেখতে থাকে। এত সুন্দরী কেন হচ্ছে মুন?
নৌমি! ইশানের ক্লাসমেট ছিলো একসময়। ইশান তাকে বন্ধু ভাবলেও নৌমি ইশানের সুদর্শনতার প্রেমে আটঁকেছিলো ইশান ওকে রিফিউজ করলে ও ঠিক করে নেয় ইশান কে ফাসিয়ে হলেও বিয়ে করবে বাসায় চলে এসে বলবে যে ইশানের সাথে তার প্রেম ছিলো কিন্তু ইশান তা জানা মাত্রই বাসায় ফিরে মায়ের কাছে জানায় সে বিয়ে করবে। তারপর ওই ছোট মুনের সাথে বিয়ে!আর যা ইশানের পছন্দ হলো না। ইশানের সাথে কি মুনের বয়স মেলে?মুন সেই সময় বাবা মায়ের পছন্দে বিয়ে করলেও পরে যখ ন বয়স বাড়বে বুঝতে শিখবে তখন কি ইশান কে নিজের পাশে চাইবে যা নিয়ে চিন্তার শেষ নেই ইশানের তাই তো মুনকে সময় দিতে চেয়েছে।
বিকেলেই ইমরান চলে আসে ইশান, মুন, রাইফি তখন তিনজন মিলে বসার রুমে রাইফির সাথে খেলা করছিলো। ইমরান ব্যাগ নিয়ে সোফায় রেখে ইশান আর মুনের মাঝের ফাঁকা জায়গায় বসে পরে। মুন বিরক্ত হচ্ছে আজকে কি?হ্যাঁ হয়েছে! সে এতক্ষন ইশানকে ভালোভাবে দেখতে পাচ্ছিলো কিন্তু এই হনুমান এসে কি করলো? সারা রুমে জায়গা রেখে মাঝে এসে বসেছে। ইশান নিজেও ভাইয়ের কাজে আ*হত হয়। এভাবে কেউ বসে?মুনের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছে সে।

কেমন আছিস ভাই?

ভালো তুই?

ভালো। মুন তুই কবে এসেছিস?

সকালে।

ইমরান মুনকে ভালো করে দেখে নেয়, আজকাল এই মুখটা সে বেশিক্ষন না দেখে থাকতেও পারেনা। কিভাবে যে মুনের প্রতি আসক্ত হয়ে গেলো ইমরান!!
এক সময় যে ইমরান চাইতো মুন আর ইশানের সম্পর্ক ঠিক হয়ে যাক সেই ইমরান এখন ইশানের সাথে মুনের বিচ্ছেদ চায়। মনে প্রাণে চায় দুজনে আলাদা হোক।

কার সাথে এসেছিস?তুই তো নিজে থেকে আসার মানুষ না!
মুন আমতা আমতা করে বলে,ইশান…. ইশান ভাইয়ের সাথে।

ইশানের ভালো লাগে মুন তার নাম মুখে নিয়েছে বলে। কিন্তু ইমরানের?তার একদম ভালো লাগছেনা ইশান ভাই কি সম্পর্ক ঠিক করতে চাইছে নাকি?না না এ কিছুতেই হতে দিবে না ইমরান । প্রথমে হিমুকে চেয়েছে অথচ হিমু তাকে চাইলো না এখন যদি মুনকেও না পায়?সে বাচঁবে কি নিয়ে?
ইশান ইমরান এর পেছন দিকে মাথা দিয়ে মুনকে দেখলো এরপর রুমে চলে গেলো।
ইমরান ইশানে চলে যেতেই মুনকে বলে, তোর জন্য গিফট এনেছি আজকে।

মুন খুশি হয়ে বলে, কি দেখাও আমায়!
ইমরান ব্যাগ থেকে একটা বক্স বের করে এতে রয়েছে সাদা পাথরের দুল। মুনের খুব পছন্দ এই সাদা পাথর। ইমরানকে ধন্যবাদ দিয়ে বক্স নিয়ে রুমে যায়। ইশান সোফাতে বসে টিভি দেখছে রুমে মুন যেতেই বলে, আমার থেকেও আমার ভাইয়ের সাথে বেশি মিশে যাচ্ছো অথচ আমার সাথে কথাই বলতে চাওনা
আজকাল দেখছি।
মুন অবাক হয় ইশান তাকে তুমি করে কথা বলছে?সে তো তুমি বলেনা, তুই করে বলে।

সেরকম নয়।

তাহলে কি রকম?

অন্যরকম। যেমনটা আপনি ভাবকছেন সেরকম নয়।

আমি আবার কি ভাববো?

অনেক কিছুই ভাবতে পারেন। ইমরান ভাইয়া আমার কাছে খুব ভালো একজন বন্ধু।

আর আমি?
ইশান জানতে চায় মুনের কাছে।

মুন স্বাভাবিক ভাবেই বলে, আপনি তো সব সময় আমার থেকে পালিয়ে বাঁচেন। এখন আপনিই ভাবুন আপনি আমার কাছে কেমন?

ইশানের মনে হয় মুন তার আবেগ এর সাথে কথাটা বলেছে ইশানের পালিয়ে যাওয়াতে কি মুন ব্যাথা পেয়েছে?কই?মুন তো এ নিয়ে কখনো কিছুই বলেনা। বুঝবে কি করে?

আমি তোমার থেকে পালিয়ে বাঁচি?

তা নয়তো কি?দুই বছর তো পালিয়ে বেড়ালেন!! কখনো আমায় ধরা দিয়েছিলেন??ইশান ভাইয়া!!

ইশান নির্বিকার শুনে যায় মুনের অভিযোগ আসলেই তাই সে তো মুনের থেকে দুরেই সরে দাঁড়িয়ে থেকেছে কখনো ওর সাথে সম্পর্ক নিয়ে কথাও বলেনি। মুনের সাথে সে সেই সময়ে কি কথাই বা বলতো মুন তো নিজেও তখন বুঝতে চাইতো না। এই যে মুন এখন অভিযোগ জানাচ্ছে সে যে আবেগে বলছে সেও জানে ইশান। যখন মুন সসম্পুর্ন বুঝতে শিখবে তখন?তখন ও কি এখনের মতো চাইবে ইশান কে?? দশটা বছরের গ্যাপ রয়েগেছে দুজনের মাঝে চার পাঁচ বছরের গ্যাপ তবুও মানান সই!! মুন আর কিছুই বলেনা বক্স রেখে বাইরে আসে। ইশান রিমোট দিয়ে টিভি অফ করে বেলকুনিতে যায়। কাল বিকেলেই তাকে আবার চলে যেতে হবে। তবে এবার সে একা যাবেনা। মুনকে সাথে নিয়ে যাবে। পাশাপাশি রাখলে সবটা বুঝতে শিখবে মুন। রাতে খাবার খাওয়া শেষ করেই ইশান বাবা আর দাদুর সাথে কথা বলে আগামীকাল তার সাথে মুনকেও সে নিয়ে যেতে চায় ওনারা সম্মতি দিয়েছেন এখন শুধু রুমে গিয়ে মুনকে জানাতে হবে।

মুনকে সাথে নিয়ে যাবে শুনেই ইমরান চিন্তিত হয়! মুনকে নিয়ে যাবে মানে?মুনকে তো ইশান স্ত্রী হিসেবে মানে না তাহলে কেন মুনকে সাথে নিয়ে যাবে। যপ্ত দ্রুত সম্ভব মুনকে মনের কথা জানিয়ে দিতে হবে তারপর ইশানের সাথে এই খেলনা বিয়ের সম্পর্ক ও শেষ করতে হবে তারপর……………মুন শুধু তার হবে।

চলবে
#মিশকাতুল

ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও পর্ব-০৭

0

#ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও(৭)

মুন স্কুল থেকে ফেরার পর থেকেই কেমন চুপচাপ হয়ে আছে সেরকম বেশি কথাও বলছেনা আবার রুম থেকে বের ও হচ্ছেনা। সেই যে বিকেলে ৪টার
দিকে এসে রুমে ঢুকেছে এখনো বের হয়নি । ইশান জানে কেন আসছেনা? নিশ্চয়ই বন্ধুদের সাথে ইশান কে নিয়ে সমালোচনা করা হয়েছে নিজের এই বয়সে এসে বিয়ে করা আবার তার থেকেও অনেকটাই বড় একটা ছেলেকে!! ছোটো মুন কি ওকে নিয়ে ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছে?এতে তো সব দিক থেকেই মুনের ক্ষতি! ইশান বুঝে নিলো মুনের থেকে তাকে আরও দূরত্ব বাড়িয়ে দিতে হবে। ইশান ও মুনকে আর ডাকলো না। এমনিতেই সেদিনের পর থেকে মুন খুব একটা ইশানের সাথে মিশছেনা। রিয়ার ডাকে নিচে আসলো ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ করাও হয়নি তার বিকেলের দিকেই খাবার খেয়ে নিচ্ছে তাই। ইশান বই নিয়ে সোফা থেকে উঠে রুমের দিকে চলে গেলো। ব্যাগটা গুছিয়ে নিলো এমনিতেই কাল তাকে চলে যেতে হবে ক্লাস মিস্ দেওয়া চলবেনা এই সময়ে। সে রাতেও মুন ইশানের সাথে আর কোন প্রকার কথা বললো না। চুপ করে অন্যদিক ফিরে ঘুমিয়ে গেলো আজ আর ক্লাসের দেওয়া পড়া গুলোও ছুঁয়ে দেখলো না। ইশানের খারাপ লাগলো একটু এই কয় দিনে মুনের সাথে ঘুমাতে এসে কম বেশি কথা হতো আজ একদম চুপ করে রয়েছে তবে ইশান ওকে কিছুই বললো না কি দরকার শুধু শুধু মায়া বাড়ানো মেয়েটার প্রতি??আজকে বন্ধুদের কথাতেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে!!

পরের দিনই ইশান চলে গেলো ঢাকাতে আর মুন রইলো এখানেই। মুনের খারাপ লাগলো ইশান চলে গেলো অথচ নিজে থেকে একটা কথাও বললো না। কেন?ইশান কি তাহলে সত্য ওকে বউ হিসেবে একদমই পছন্দ করে না?হয়তো তাই! মুনের আর এখানে থাকার ইচ্ছে নেই চলে যেতে চায় সে। দাদুর রুমে গিয়ে বললো, সে চলে যেতে চায়। দাদুও মানা করলেন না। ইশান ও চলে গেছে আবার যখন ইশান আসবে তখন না হয় আবার নিয়ে আসবে। মুনের মোন খারাপ বলে ইমরান ওকে নিয়ে বের হলো বাইরে উদ্দেশ্য মেয়েটার পছন্দের সকল সাজুগুজুর তৈজসপত্র কিনে দিবে সেদিন তো ইশান ভাইয়া সব ফেলে দিয়েছে। মুনকে নিয়ে ইমরান বের হয়েছে কসমেটিকস এর দোকানের সামনে গাড়ি থামিয়ে মুনকে নিয়ে দোকানে এসেছে সেই মুহুর্তে হিমু আর ওর দুই বান্ধবী ও এদিকেই এসেছে ইমরানের সাথে কোন মেয়েকে দেখেই হিমুর পাশে থাকা মেয়ে দুটোর মাঝে একজন বলে,

বলেছিলাম না?বড় লোকের ঘরের ছেলেরা কখনো একটা মেয়ের পেছনে পরে থাকে না?

আসলেই দেখলি হিমু তোর সাথে কাল সকালেই না কত তামাশা করতে চলে গেছিলো? আর আজকেই অন্য একটা মেয়েকে নিয়ে এসেছে সপিং করতে! চেহারা দেখেছিস মেয়েটা? তোর থেকেও হাজার গুন সুন্দরী!

হিমু ওদের দিকে দেখে নিয়ে বলে, এই জন্যই আমি ইমরান কে হ্যাঁ বলতে ভয় পাচ্ছিলাম! আমার মতো মেয়েকে কেন ইমরান ভালোবাসবে?তাদের মতো আমাদের অর্থ নেই সম্পদ নেই বিলাসবহুল ফ্ল্যাট নেই ওদের সাথে আমাদের কিছুই মিলবেনা।

হ্যাঁ রে হিমু ভালো করেছিস তুই ইগনোর করিস ওকে। আজকে তো নিজের চোখেই দেখলাম সব!আমরা আরও ভাবছিলাম তোকে সাহস জুগিয়ে দেব।ছেলেটা ভালো বলে!

আজ তো মুখোশ এর বাইরেটা দেখলি! চল ওদিকে যাই।

হিমুরা চলে গেলো অন্যদিকে আর ইমরান মুনকে খুশি করতে গিয়ে ওর পছন্দের অনেক কিছুই কিনে দিলো এরপর নিজেই মুনকে ওর বাবার বাসায় রেখে এলো। এর মাঝে আর ইশান বাসায় ফিরে নি। মুন ও আসেনি। প্রায় ছয় মাস পর রিয়ার বাচ্চা হলে রিয়ার মায়ের বাসাতে গিয়েই দেখে এসেছে। রিয়া ওখানেই থাকবে কিছু দিন। এদিকে মুনের অর্ধবার্ষিক এক্সাম চলছে। ইশান এসেছে বাসায় তবে এক্সামের কারনে ওকে শাহেদা আনেন নাই তবে ছেলেকে বলেছে ওই বাসাতে গিয়ে মেয়েটাকে একটু দেখে আয় বার বার বলার পরে ইশান চলে আসে দেখা করতে কিন্তু ওই যে ভাগ্য খারাপ সেই সময় মুন বাসায় ছিলো না প্রায়ভেট ছিলো বলে আর দেখা হয়নি। ইশানের একটু খারাপ লাগে মেয়েটার সাথে কথাও হয় না দেখাও হয় না আজকে দেখা করতে এসেও দেখা হলো না কেমন আছে মুন??আচ্ছা সে তো মুনকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নেয়নি তাহলে মুন কেমন আছে তা ওর কেন জানতে ইচ্ছে করবে?স্ত্রী বলেই কি?হবে হয়তো!! ইশানকে মিথিলা আর শামছুননাহার থাকতে বললেও সে থাকেনা। বলে আবার আসবে। ইশানের শেষ ইয়ার চলছে এই সময় চাপ বেশি তাই চলে যেতে হয় দ্রুত। দুটো ইঁদ চলে গেলেও
ইশানের আসা হয় না। মুন অবশ্য এই ইদঁ গুলি শশুড় এর বাসাতেই করেছে যেহেতু সকলেই ছিলো এতে ওর মোন কেমন করে না। তবে ইচ্ছে করে ইশানের সাথে একটু কথা বলতে। ইশানের কি মুনের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে না?মুন কে যখন শাহেদা বা রিয়া, ইমরান বলে যে ইশানের সাথে কথা বলবে কি না?মুনের ইচ্ছে করলেও না করে দেয় কেননা,ইশান তার কথা মনে করে একবার ও কিছুই জিজ্ঞেস করেনা সেখানে মুন কেন বেহায়ার মতো ওর সাথে কথা বলতে যাবে?রিয়ার ছেলেটা এখন বসা শিখেছে ইশান এখন পুরোপুরি ডাক্তার হয়েগেছে একটা ক্লিনিকে রোজ রাত ৮ টা থেকে ২টা পর্যন্ত বসে সে আবার অন্য একটা তে সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ২ টা পর্যন্ত সব মিলিয়ে সে খুবই ব্যাস্ত ঢাকা থেকে রোজ গ্রামে আসতে পারেনা সে মাঝে মাঝে এলেও হুট করে রাতে এসে সকালেই চলে যেতে হয়। এর মাঝে ইশানের সাথে মুনের শুধু একবার দেখা হয়েছে তাও মুনের বাসাতে এসে দেখা করে গেছে ইশান। মুন এখন বড় হয়ে যাচ্ছে আগের থেকেও বেশি সুন্দরী হয়ে যাচ্ছে সে এখন ইশানের সামনে আসতেও নাকি লজ্জা পায় তাই তো সেভাবে কথাও বলা হয় না মুনের সাথে।
ইশান প্রায় দেড় বছর পর তিন দিনের ছুটি পেয়ে গ্রামে এসেছে। বাসায় রিয়া আছে ওর ছেলে রাইফি এখন একটু একটু কথা বলতে শুরু করেছে। মা, বাবা,দাদা,নানা,বু,কাকাই এগুলোই শিখছে এখনো। ইশান বাসায় এসেছে শুনে, মুনের বাবা মা ওকে দাওয়াত করে আসে যতই হোক মেয়ে জামাই কিনা?এত দিন পর ফিরেছে! ওরাও এখন জানে মুনের আর ইশানের সম্পর্ক স্বাভাবিক নয়। তবে চাপ দিচ্ছেনা মেয়ে তাদের ছোটো ইশান অবুঝ নয় ও সময় মতো সব মিলিয়ে নেবে। তাই তো সে নিয়ে মোন খারাপ করে না। ইশান যাবে কি যাবে না করতে করতেও যাবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় মুনের সাথেও একবার দেখা করা দরকার কতদিন হয় দেখা হয় না? কথা তো আর ও অনেক আগে থেকেই হয়না। সেই যে ইশান কে স্কুলে সাথে নিয়ে জোড় করলো তার পর থেকেই কেমন ইশানের কাছে থেকে লুকিয়ে চলে সে। মুন কি তাহলে ওকে স্বামী হিসেবে আর চাইছে না?হতেও পারে। ইশান একাই চলে আসে পরের দিন বিকেলে। হাত ভর্তি প্যাকেট গুলো নিয়ে এসে সোফায় বসে। ওকে দেখেই মুনের দাদি এগিয়ে আসে পাশে বসে কথা বলে। মুনের দাদুও বাসায় ছিলেন না তিনি এসেও ইশানের সাথে গল্প করে। মিথিলা মেয়ের জামাইয়ের আনা মিষ্টি সাথে আরও কিছু নাস্তা সাজিয়ে ইশানের সামনে দেয়। মুন ইশানকে রুমের দরজা থেকে দেখেই রুমে গিয়ে বিছানায় বসে আছে। ইশান কে সে দেখেছে, এত দিনে ইশান একটুও বদলায়নি মুনের কাছে মনে হয় গম্ভীর মানুষ টা আরও সুন্দর হয়েছে।কেমন একটা ভাব নিয়ে সবার সাথে কথা বলে। বছর দুই আগে স্কুলের বন্ধুরা ওকে বলেছিলো, ইশান ভাইয়া কি তোকে ভালোবাসে??
মুন আমতা আমতা করে উত্তর দিয়েছিলো, না বাসেনা।
ওরা শুনেই বলেছিল, তার মানে আমাদের ধারণাই সত্য! ইশান ভাইয়া শহরে থাকে মেডিকেলে পড়ছে ফিউচারে বড় ডাক্টার হবে কেন তোকে সে ভালোবাসবে?
যদিও তুই অনেক বেশি সুন্দরী আমাদের মাঝে তবুও তুই তো স্মার্ট নস!তোকে আমার মনে হয় ইশান ভাইয়া পছন্দ করে না।

মুন তখন কিছুই বলেনি সে নিজেও জানে ইশান তাকে পছন্দ করেনা। সেদিন থেকেই মাথায় চেপেছে ইশান শহরের কাউকে ভালোবাসে তাহলে কেন মুন তার পেছনে পরে রইবে? তাই তো মুন দূরত্ব বাড়িয়েছে এতে অবশ্য ইশান ও কিছুই বলেনি সে নিজেও তো দূরত্ব চেয়েছে। মুন আর নিচেই গেলো না, ওর মা আর দাদী ডেকে নিলেন সময় নিয়ে বের হলো মুন। থ্রি পিস এর ওড়না দিয়ে মাথায় বউ দিয়ে নিচে এসে দাদুর পাশেই বসেছে। ইশান ওকে এক পলক দেখে নেয়, মুন আরও বড় হয়েছে যথেষ্ট যুবতী মেয়েদের মতো। সাথে বেড়েছে ওর ভেতরের লজ্জা কেমন নিচের দিকে তাকিয়ে রয়েছে অথচ এর আগে মুন এমন ছিলো না। চঞ্চল ছিলো, এটা ওটা বলে মাথা খারাপ করিয়ে দিতে ওস্তাদ ছিলো।
এস এস সি দিয়ে শেষ করেছে দশ দিন হবে। ইশান ওকে সবার সামনে কি প্রশ্ন করবে? তাই চুপ করেই রইলো। মুন কিছু সময় বসে থেকে ওর মায়ের কাছে কিচেনে এলো। ডিনারের সব রান্না মায়ের হাতে হাতে টেবিলে সাজিয়ে রাখলো। ইশানের সাথে বসে মুনের বাবা দাদু আর দাদী ও মুন বসলো মিথিলা এক হাতেই সবাইকে এগিয়ে দিলেন। মুনের খাওয়া শেষ হতেই রুমে চলে গেলো আর ইশান তার শশুড়ের সাথে গল্প করতে বসলো। ইশান যখন মুনের রুমে এলো দেখলো মুন বিছানার এক পাশে জায়গা করে দিয়ে অপর পাশে ঘুমিয়ে গেছে। ইশান একটু অবাক হলো মুনের বিছানাতে একটা পুতুল ও নেই সব সরিয়ে রেখেছে। ভেবেছিলো রুমে এসে মুনের সাথে আজকে দুই একটা কথা বলবে কিন্তু মুন তো আগেই ঘুমিয়েছে ইশান জানে ওর সাথে কথা বলতে চায়না বলেই এরকম করে আগেই ঘুমিয়েছে। ইশান একটা ধীর্ঘ শ্বাস ফেলে অন্য পাশে ঘুমিয়ে পরে।

চলবে
#মিশকাতুল

ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও পর্ব-০৬

0

#ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও(৬)

মুনের বিছানাতে শোয়ার স্টাইল খুবই ভালো যেভাবে শুয়ে পরে সকালে উঠে একদম সেভাবেই কিন্তু সেদিক থেকে ইশানের ঘুমানোর স্টাইল একদমই বাজ্ব। আশে পাশে সাইড বালিশ না রাখলে সারা বিছানায় তার পদচারণ হয়।বিগত বছর গুলো তে সাইড বালিশ রেখেই ঘুমিয়েছে সে কিন্তু এই মুন!মুন চলে আসার পর সকল সাইড বালিশ সরিয়ে সেখানে স্থান করে নিয়েছে টেডিবিয়ার। ইশান এ নিয়েও বিরক্ত। যেনো দুই বছরের বাচ্চা একটা যত্তসব!মাঝের টেডি মুন নিজেই জড়িয়ে রেখেছে আর ইশান?সে তো এক পাঁ সরাসরি মুনের পেটের উপর দিয়ে তুলে দিয়েছে। এতে করে মুনের ঘুমের সমস্যা হয়ে গেলো তবুও তেমন করেই রইলো সকালে ইশানের আগে মুনের ঘুম ছুঁটে গেলো। নতুন করে ক্লাস শুরু হয়েছে মুনের স্কুলে সে আজ যাবে তাই তো সকাল সকাল স্কুল ইউনিফর্ম পরে তৈরি হয়ে নিয়েছে। ইমরান ওকে আসতে দেখেই নাস্তা করে নিতে বললো, মুন ওর পাশের চেয়ারেই বসলো তার একটু পরেই ইশান ও চলে এলো দাদুর পাশের চেয়ারেই সে বসেছে। রিয়া আজ আর নিচে আসেনি সে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে দিন দিন । মুন নাস্তা করে স্কুলের জন্য বের হবে সেই সময় ইমরান বললো, থামো ভাবী আমি নিয়ে যাচ্ছি ওদিকেই যাবো আমি।

ইমরান মুনকে কখনো কখনো ভাবী বলে যতই মেয়েটা ছোটো বোন হোক না কেন এখন সে বড় ভাইয়ের বউ সন্মান তো দিতেই হবে। ইশান ওদের দিকে তাকিয়ে আবার নাস্তা করতে মোন দিলো কিন্তু এবার মুখ খুলেছে শামছুর আহমেদ নিজেই। ইশানের দিকে তাকিয়ে বললো, ইশান দাদু ভাই তোমার বউকে তুমিই আজকে না হয় নিয়ে যাও। ওর বন্ধু রা তোমাকে দেখতে চেয়েছে। হাজার হলেও তাদের বান্ধবীর এক মাত্র স্বামী বলে কথা!

দাদু প্লিজ!আমাকে আর এরকম কথা শুনিওনা ! তোমার ওই নাতবউকে নিয়ে দয়া করে আমাকে আর একটা কথাও শুনাবেনা। আমার পছন্দ নয় ওকে। বলেই ইশান উঠে রুমের দিকে যেতে নেয় তখন ইমরান বলে,তবুও বউ কিন্তু তোরই ভাইয়া এভাবে ওকে নিয়ে ইগো দেখানোর কি আছে?

ইশান ইমরানের দিকে তাঁকিয়ে রয় ইমরান টা ওর ভাই কম বন্ধু বেশি ওর সাথে ইশান সব প্রায় শেয়ার করে কেউ না জানলেও ইমরান জানে সে কেন হুট করে বিয়ে করতে চেয়েছে সেই ভাইও আজ মুনের দিকে কথা বলছে?বলুক সমস্যা কি?তারই তো বিয়ে করা বউ!!

দেখা গেলো ইশান নিজেই মুনকে রাখতে এসেছে। মুনের বান্ধবীদের আর ডাকতে হলো না গেট এর পাশেই দেখা হয়ে গেলো মুন সবার সাথে ইশানের পরিচয় করিয়ে দিলো সবাই ওকে হ্যাই, হ্যালো জানালেও ইশান থাকলো চুপচাপ যে টুকু সময় ওদের সাথে ছিলো সে। সকলকেই আইস্ক্রিম ধরিয়ে দিয়ে ফিরে আসার সময় শুনলো একজন মুনকে বলছে, তোর বাবা মায়ের কি পছন্দরে?ছেলে সুন্দর মানলাম তাই বলে বয়স দেখবেনা?তোর থেকে তো কম করে হলেও ১২-১৩ বছরের বড় হবে ।

আরেকজন বলছে, আসলেই মুন তুই তো আমাদেরই বয়সে ছোটো শুধু ট্যালেন্ট এর কারনে উপর ক্লাসে এসেছিস। এভাবে কেন বিয়ে দিলো তোকে? এখন তবুও ভাইয়া স্মার্ট আছে কিন্তু কয়েক বছর গেলে কি হবে বুঝতে পারছিস?তোর আবার না বিয়ে করতে হয়!একদম মানাবে না তখন আর তুই নিজেও মানিয়ে নিতে পারবি না আমার কথা গুলি মিলিয়ে নিস তখন।

মুন কিছুই বললো না আরেকজন ও কিছু বলছে কিন্তু ইশান উল্টো দিকে চলে আসায় তা আর শুনতে পেলো না। তবে ঠোঁটের কোণায় তাচ্ছিল্য হাসিঁ আকঁলো। গাড়ি তে বসে জানালার কাচঁ তুলে দিলো মুনের দিকে তাকিয়ে দেখল, মুন ওর গাড়ির দিকেই দেখছে চিন্তিত চোখে মুখে! হয়তো বন্ধুদের বলা কথা গুলোই ভাবছে! ভাবুক!এতে ইশানেরই ভালো আসলেই মুন তার থেকে অনেক ছোটো ওর বয়স হিসেবে ক্লাস নাইনে নয় সিক্সে থাকার কথা অথচ পড়াশোনাতে ভালো থাকার কারণে কয়েকটা ক্লাসের বই সে তিন থেকে চার মাসেই শেষ করে দিয়েছে তাই তো এত দ্রুত উপর ক্লাসে এসেছে মুন। লম্বায় বড় হলেও বাচ্চামো রয়ে গেছে। এমন একটা মেয়ে কিছুতেই সারা জীবন ইশানের স্ত্রী হয়ে থাকতে চাইবে না। এখন ছোটো রয়েছে মা বাবার ইচ্ছেতে বিয়ে করেছে কিন্তু যখন নিজে সব বুঝতে শিখবে তখন কি ইশানকে মোন থেকে মেনে নিতে পারবে?হয়তো না! আবার হয়তো হ্যাঁ!

————————————
ইমরান ছুটেছে পাশের গ্রামে সেখানেই একটা মেয়েকে গত এক বছর ধরে পটানোর চালিয়ে যাচ্ছে সে। গ্রামের কলেজেই সে পড়াশোনা করছে সেম ব্যাস দুজনের মেয়েটা তার কথাই শুনতে চায়না। ইমরান জানাবে কি করে যে তার মোনের লুকানো কথা গুলো তাই বুঝতে পারেনা। কলেজ থেকে বেশ কিছুটা ফাকেঁ দাঁড়িয়ে রয়েছে সে এখন এই পথেই আসবে মেয়েটা আজকে যে করেই হোক বলতেই হবে মেয়েটাকে। ওর ভাবনার মাঝেই দল বেধেঁ কয়েকটা মেয়ে আসলো ওর সামনে দিয়ে ইমরানের বুকের মাঝে ঢিপঢিপ আওয়াজ শুরু হয়ে গেলো কি থেকে কি শুরু করবে?এত গুলি মেয়ের মাঝে একটা মেয়েকে সে কি করে প্রেম নিবেদন জানাবে?ভেবেই হাত পা শীতল হয়ে আসছে! সব গুলোকেই প্রেম নিবেদন জানাবে কি?ধ্য্যাতঁ কি সব চিন্তা ভাবনা করছে ইমরান?একটা মেয়েকেই জানাতে হবে!যাকে সে চাইছে হাতের ঘড়ির দিকে সময় দেখে নিয়ে রাস্তার দিকে এগিয়ে এলো, মেয়েদের সামনে যেতেই সবাই হিমু নামের মেয়েটাকে রেখে চলে গেলো হিমু বিরক্ত হয়ে ইমরানকে দেখলো ছেলেটা তাকে বছর খানেক সময় ধরে বিরক্ত করে চলেছে।

সমস্যা কি আপনার?

ইমরান একটু এগিয়ে আসে হিমুর দিকে তাকিয়েই বলে, কতদিন হয় দেখা কর‍তে আসিনা তাই চলে এলাম!খুশি হওনি নাকি?

না! একদম খুশি হইনি কেন এসেছেন?

কেনো আবার? তোমাকে দেখা দিতে এলাম!

ওহ আপনি বলতে চাইছেন আমি আপনার চাঁদবদন মুখটা দেখার জন্য অস্থির হয়ে ছিলাম?

ইমরান মুখের হাসিঁটা বজায় রেখেই বলে, একদম!আমি তো তাই বুঝাতে চেয়েছিলাম কি ভাবে বুঝলে তুমি?

সেভাবেই!যত্তসব!আপনি এখন আসতে পারেন। আমার ক্লাস আছে।

আমার কিছু কথা আছে তোমার সাথে।

আমি শুনতে চাইনা

তোমার শুনতেই হবে।

বাধ্য করতে চাইছেন?

তেমনটাই! আমার কথা শুনবে তুমি! আমি তোমাকে যা বলতে চাই সব শুনতে হবে তোমাকে।

না শুনলে কি করবেন?

জোড় করবো শুনাতে।

আমার ক্লাস আছে হাতে সময় নেই আসছি এখন।

তাহলে আমি কাল আবাএ আসবো তুমি একটু আগেই আসার চেষ্টা করো, ওকে?

একদম না।আমি আসবো না কালকে। আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাইছিনা এখন যান আপনি।

সে কাল দেখা যাবে।

ইমরান ঘড়িতে সময় দেখে চলে এলো আসলেই ইমুর সময় নেই এখন ক্লাস শুরু হবে। এই হিমু কি কখনোই ওর ভালোবাসা বুঝবে না??

বাসায় ফিরে এসে দেখে ইশান সোফায় বসে বই এর দিকে নজর দিয়ে আছে আর মাত্র একটা বছর তারপরেই ইশান ডাক্টার
হয়ে বের হবে । হার্ট সার্জন কি না#

কি অবস্থা?

এই তো! যেমন রাখলি সবাই মিলে!

নৌমির জন্য তুই মুনকে কেন মেনে নিচ্ছিস না?

নৌমি আমার কেউ ছিলো না ইমরান আর না আমি ওকে ভালোবাসতাম। নৌমিকে আমি শুধু ভালো বন্ধু হিসেবেই মেনেছি।

কিন্তু ও তো তা মনে করেনি ইশান ভাইয়া।

সে ওর ব্যাপার এসব নিয়ে কেন কথা বলছিস?

তাহলে তুই ওর সাথে জেদ করে কেন বিয়ে করলি?

বিয়ে করতে চেয়েছি যেনো ও জানে এবং বুঝতে পারে আমার স্ত্রী আছে! আর আমার পক্ষে ওকে ভালোবাসা সম্ভব না।

তাহলে মুনকে কেন মেনে নিচ্ছিস না?

কারন ওর সাথে আমার কোন কিছুই মিলছেনা আর মিলবেও না ও সব দিক থেকেই আমার অনেক ছোটো। তুই বিশ্বাস না হলে ওকেও জিজ্ঞেস করিস দেখবি বলে দেবে! মুন আর যাই হোক সব বুঝতে পারবে আমার মনে হয়।

সময় নিয়ে চেষ্টা তো একবার করা দরকার তাই না ভাইয়া?ও কি বলেছে যে তোকে পছন্দ করে না?ও তোকে মেনে নেওয়ার চেষ্টা তো করছে।

মোন থেকে নয় ইমরান ও আমাকে ওর বাবা মায়ের জন্যই মেনে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
ইমরান আর কিছুই বললো না। এটা ঠিক মুন ওকে বিয়ে হয়েছে বলেই সন্মান বাড়িয়ে দিয়েছে ইশানের প্রতি নিজের অনুভূতি থেকে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়নি।

চলবে
#মিশকাতুল

ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও পর্ব-০৫

0

#ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও(৫)

মেলার ভেতরে চলে এসেছে মুন ইমরান, ইশান আর ওই ছেলেটা ওর থেকে বেশ কিছুটা আগে আগে যাচ্ছে আর মুন পেছনে পরে গেছে। বৌ মেলা নাম হলেও এখানে ছেলেরাও এসেছে অনেক বেশি বেশির ভাগ মেয়েদের সরঞ্জাম পাওয়া যাচ্ছে বলেই হয়তো বউ মেলা নাম দেওয়া হয়েছে। মুনের যেদিকে চোখ যাচ্ছে সেটাই পছন্দ হয়ে যাচ্ছে। কি রেখে কি নেবে সে?সাথে টাকা রাখার জন্য পার্স ও রয়েছে মানে এখন ইমরান বা ইশানের থেকে ওর টাকা নিতে হবে না ইচ্ছে করলেই সে পছন্দের অনেক কিছুই কিনে ফেলতে পারে তাহলে ওর ওদের পিছুঁ পিছুঁ ঘুর ঘুর করার কোনো মানে হয় কি?না হয়না। তাই তো মুন ওদের পিছুঁ নেওয়া বন্ধ করে দিলো। আশে পাশে যেদিকে চোখ যাচ্ছে সেদিকেই হাটঁছে আর এটা ওটা কিনে ফেলছে। এভাবেই কেনা*কা*টা করতে করতে সময়ের দিকে একদম খেয়াল করলো না মুন। যখন দেখলো সব দোকানে বিদ্যুতিক আলো জ্বালানো হয়েছে তখন খেয়াল করলো অনেক সময় নিয়ে ফেলেছে সে। যখন বাসা থেকে বের হয় তখন ছিলো বিকেল দুটো এখানে আসতে সময় লেগেছে এক ঘন্টার ও কিছু সময় বেশি আর এখন হাতের ঘড়ির কা*টা জানিয়ে দিচ্ছে রাত আটটা বেজে দশ মিনিট। মুন হাতে ধরে রাখা সব গুলি ব্যাগ দেখে নিলো না হলেও দশ থেকে এগারোটা ব্যাগ নেওয়া হয়েছে আর এর মাঝে অসংখ্য মেয়েলী জিনিস পত্র কেনা হয়েছে হাতের চুড়ি থেকে শুরু করে পায়ের নুপুর সব কিনে ফেলেছে মুন। এখন ফিরবে কোন দিকে?কোন দিক থেকে সে এখানে প্রবেশ করেছে বুঝতেই পারছে না। যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই একই রকম প্রবেশ করার গেট করা হয়েছে এই খোলা মাঠে এখন এত বড় একটা মেলার কোন দিকে যাবে সে?ইমরান আর ইশান? ওরা কোন দিকে আছে?কেনা জিনিস কিনতেই সব টাকা শেষ করে ফেলেছে মুন এখন যদি ওদের সাথে দেখা না হয়?তবে ফিরবে কি করে?এক ঘন্টার রাস্তা তো ফিরতে ফিরতে দুই তিন ঘন্টা লেগে যাবে । ভাবতে ভাবতেই মেলার ভেতর থেকে বাইরে এলো এদিকে ওদিকে দুই চোখ মেলে তাকাতেঁই ঝড়ের গতিতে কেউ ওর হাত টেনে সামনের দিকে ফেরালো মুন কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাম গালে সজোড়ে টাস টাস আওয়াজে তিনটা থা প্প ড় পরে গেলো ইমরান আহম্মক বনে গেলো সামনের দিকে তাকিয়ে। ইশান ও কম নয়। মুন কান্নাঁ ভেজাঁ চোখে সামনের দিকে তাকিয়েই বুঝলো ওর মা দাঁড়িয়ে আছে রুদ্রমুর্তি হয়ে। যেখানে চ*ড় গুলি পরেছে সেখানে এখনো যেনো জ্বলছে। মিথিলা আবার ও হাত তুলবে তার আগেই শাহেদা এসে থামালেন ওনাকে।

আহ্ ভাবী ছাড়ুন না সবাই দেখছে আমার বৌমাকে!
যা বলার বাসায় গিয়ে বললেই হয়।
মিথিলা থেমে গেলেন। মেয়ে কি এখন শুধু তার একার আছে? বিয়ে হয়েছে শাহেদাও ওর অবিভাবক ওনার কথার ও দাম দিতে হবে। মিথিলা আর কিছুই বললো না। তবে চোয়াল শক্ত করে রাখলো। মুনের হাতের ব্যাগ গুলি আলগোছে ইমরান নিয়ে নিলো। সেই বিকেল তিনটা থেকেই ওরা হন্য হয়ে খুজেঁছে মুনকে অথচ পুরো মেলাতে ঘুড়েও ওর দেখা পেলো না আসলে হয়েছে এমনটা যে যখন ওরা মুনকে খুঁজতে উত্তর পাশে যায় তখন মুন থাকে দক্ষিন দিকে আবার পুর্ব দিকে খুঁজতে যায় তখন তার পশ্চিম পাশে এভাবে পাবে কি করে বিকেলে থেকে ওর চিন্তায় দুই ভাই কাউকে কিছু জানাতেও পারেনি পাগলের মতো খুজেঁছে কিন্তু আটটা বাজতেই এই খবর রিয়ার মাধ্যমে বাসার সবাই জেনেছে আসলে রিয়া কল করেছিলো ওরা এখনো ফিরছেনা কেন? এই জানতে কিন্তু কল করেই জানলো মুন কে পাচ্ছেনা। তাই তো সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে রিয়া। ওরা এসে মাত্রই গাড়ি থেকে নেমেছে আর সামনে দেখে মুন চিন্তিত মুখে এদিক ওদিকে দেখছে।
মিথিলার মাথায় রক্ত উঠে যাচ্ছে তার মেয়ে হয়ে মুন এত বোকা হলো কি করে?এরকম মেয়ে তো সে চায়নাই!একটুও কি আলাদা জ্ঞান থাকবেনা মেয়ের মাঝে?সব সময় বই নিয়ে থাকলে কি এরকম হবে?আলাদা জ্ঞানের কি দরকার নেই

মুনকে নিয়ে ইশানদের বাসাতেই এসেছে সকলে মুনের বাবাও রয়েছে দাদুও এসেছে তবে সে মেলাতে খুজঁতে যায়নি। ইশান এর বাবা মা আর মুনের বাবা মা গিয়েছিলেন। মুন সোফায় বসে রিয়ার সাথে লেপ্টে বসে কান্নাঁ করছে রিয়া ওকে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে শান্তনা দিচ্ছে । কিন্তু থামার নাম নিচ্ছে না মুন।

ইশানের দাদু মুনের থেকে চোখ ফিরিয়ে বাকি সবার দিকে তাকিয়ে বললেন, আচ্ছা ওর অল্প বয়স ভুল করেছে! আর ও কি ইচ্ছে করে হাড়িয়ে যেতে চেয়েছে নাকি?এভাবে ওকে বকা দেওয়ার কি আছে।

সবাই মানলেন তবে মিথিলা বসে রইলেন না মুনের দিকে তাকিয়ে শক্ত গলায় বলেন,তুই কি এখনো ছোটো আছিস মুন?তোর বয়সে আমি মিম কে জন্ম দিয়েছিলাম। আর তুই?মানলাম তুই একটু বাইরে গেছিস কম তাই বলে হারিয়ে যাবি?তুই জানিস?তোকে খুজঁতে কত কষ্ট করেছে ইশান আর ইমরান?ছেলে দুটো কতটা হয়রানি হয়েছে সে হিসেব আছে?ওদের সাথে গিয়ে থাকতে থাকতে তুই হাওয়া যাবি পেছন থেকে? ইমরান?ব্যাগ গুলি এখানে আনো দেখি আগে কি সব কিনেছে যার জন্য এত সময় লেগেছে ওর?ইমরান হাতের ব্যাগ গুলো পেছনে লুকিয়ে ফেললো কিন্তু ইশান সেসব ব্যাগ ওর হাত থেকে ছাড়িয়ে নিলো সামনের দিক্ব ছুড়েঁ ফেলে দিয়ে চলে গেলো রুমের দিকে এইবার! এইবারে তো মুনের কান্নাঁ নতুন উদ্যোগ নিয়ে শুরু হলো।

—————–
চলে গেলো আরও দুটো দিন। এই দুই দিনে মুন ইশান এর রুমেও শুতে যায়নি ফাকাঁ রুমে একা থেকেছে কিন্তু আজকে রিয়া তাকে জোড় করে ইশানের রুমে দিয়েগেছে। সেদিন মুনের কেনা সব জিনিস প্রায় ইশান ফেলে দিয়ে নষ্ট করে দিয়েছে। তাই তো দুঃখ পায় সে ইশানের মুখটা দেখলেই কত সময় নিয়ে বেছেঁ বেছেঁ সে সব সাজুগুজু কিনেছিল?ইশানের রুমে এসে বিছানায় চুপ করে আগেই শুয়ে আছে মুন ওই লোকের সাথে আর কোন কথা নেই। রাত যখন এগারোটা বেজে গেছে তখন ইশান রুমে এসেছে সে এতক্ষন বেলকুনিতে ছিলো বই নিয়ে। রুমে এসে বিছানায় মুনকে দেখে বিরক্ত হলো এই মেয়েটা আবার ধেইঁ ধেইঁ করে থাকতে চলে এলো?

কি ব্যাপার ওই রুমে কি সমস্যা দেখা দিয়েছে?যস দুই রাত না যেতেই চলে এসেছ?

মুন আমতা আমতা করে বলে,আমি মানে আমাকে ভাবী এনে রেখে গেলো।

কেন?

কেন আমার?আমি আর তুমি বর বউ না ইশান ভাইয়া?আমাদের তো এক বিছানাতেই থাকা দরকার।।

তা আর কি দরকার বর বউ এর মাঝে?

কি আবার প্রেম করাটাও দরকার!

শুধু প্রেম?আর কিছু?

আর আবার কি দরকার?প্রেম তো করতেই হবে আমাদের দুজনকে। আচ্ছা তুমি কবে থেকে আমার সাথে প্রেম করবে?

প্রেম করলে আমি কি কি পাব?

তুমি?এই যেমন ধরো সপ্তাহে একবার করে লিপ কিস! তারপর প্রতিদিন হাত ধরতে পারবে শুধু তাই নয় তুমি চাইলে আমাকে হাগও করতে………

ইশান চোয়াল শক্ত করে ধমকের সুরে বললো, থাম!অনেক বলেছিস তুই!!তুই তো আর বাচ্চা নস রে মুন!!তুই তো ইঁচড়ে পাঁকা!!

আমি!!ইচ…….

হ্যাঁ হ্যাঁ যাকে বলে অকাল পঁক্ক!!
মুন ব্যাকরণ খুব ভালো জানে এই বাগধারাও সে বুঝেছে তাকে ইশান অপমান করলো তাহলে?এই মুনকে?মুন অপমানিত হয়েছে?নাহ্ কিভাবে অপমানিত হবে সে?সে তো রুমে একা। আর ইশানের কাছে তো নিজেকে সে অপমানিত মনে করবেই না। তাহলে আর ভাবনার কি আছে?কেউ দেখেনি এই কথা বলতে ইশান কে ভেবেই মনে মনে হাসলো মুন!!
ইশান ওর দিকে ভ্রঁু কুচঁকে দেখে পাশে রাখা জায়গায় শুয়ে পরলো যত্তসব!!

চলবে
#মিশকাতুল

ভালোবাসায় রাঙিয়ে দাও পর্ব-০৪

0

#ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও(৪)

ইশানের চলে যাওয়ার দুই মাস হয়ে গেছে এর মাঝে আর সে ফিরে আসেনি বাসাতে। মুন ও নিজের বাবার বাসাতে এসেছে এখানেই থাকছে সে। ইশানের মা আর ইকবালের স্ত্রী রিয়া এসেছে মুনের সাথে দেখা করতে। ইশা ন চলে যাওয়ার পর আর কারো সাথেই যোগাযোগ করেনি এমনকি মায়ের সাথেও কথা বলেনি। মুন অবশ্য এ নিয়ে কিছু ভাবেওনি। সে তো নিজের মতো করেই রয়েছে । ক্লাস নাইনে ভর্তি হবে সে। তার আগেই সাইন্সের বই নিয়ে এসে পড়াশোনা
শুরু করে দিয়েছে। ইমরান ও চলে গেছে নিজের কলেজ এ । মিম তার স্বামীর সাথেই চলে গেছে। এ বাসাতে রয়েছে শুধু মুন, বাবা, মা, আর দাদা, দাদী।
রিয়া আসার কথা কানে যেতেই মুন বই রেখে বসার রুমে চলে এসেছে। রিয়ার গর্ভে সন্তান এসেছে চার মাস হয়। রিয়া খুব সুন্দরী হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। শাহেদা মুনকে কাছে ডাকলেন। পাশে বসিয়ে কেমন আছে জিজ্ঞেস করে খোজ নিলেন।
ইমরান আসছে আগামী কাল। তাই মুনকেও নিয়ে যাবে আজ। ইশানের ও নাকি আসার কথা। ইমরানই বলেছে তার মাকে। ইকবালের সাথে কথা বললেও আসার খবর জানায়নি বাসার কাউকে । তাই তো মুনকে নিয়ে যেতে এসেছে।

মুন! মা আমার! আমাদের বাসাতে নিয়ে যেতে এসেছি আমি তোমায় যাবেনা?

মুন কিছুটা ভাবলো তারপর বললো, কিভাবে যাবো? আমার তো দুই দিন পর থেকেই ক্লাস শুরু হবে স্কুলে।

ওখান থেকেই ক্লাস করবে।

তুমি আমাকে পড়তেও দিবে?আমি না তোমার ছেলের বউ?

এই জন্যই তো সকল প্রকার সুবিধা পাবে তুমি আমার থেকে কারণ তুমি আমার ছেলের বউ।

মুন আর কিছুই বললো না। নিজের ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে ওদের সাথে চলে আসলো। এক মাস আগে একবার এখানে এসে দুই দিন থেকে চলে গেছিলো ইশান তখন ছিলো না। মুন জানে বিয়ে হলে জামাই এর সাথে রোজ কথা হয় ওর বন্ধু জেমির বিয়ে হয়েছে রোজ জেমিকে কল করে কথা বলে। অথচ তার কার সাথে বিয়ে হলো ওই ইশান ভাইয়ের সাথে যে মনের ভুলেও দুই মাসে মুনের খোজ নেয় নি। এতে করে মুনের খারাপ লাগে। ক্লাসের সবাই বলে, মুন, তোর না বিয়ে হয়েছে? জামাই কে তো দেখালিনা। তখন মুন কিছুই বলতে পারেনা। ইশান ভাইকে তার আগেই থেকেই ভয় লাগে কেমন রাগী টাইপ একটা মানুষ এখন তো আরোও ভয় লাগে।

ইশানের রুমে এসে বসে আছে মুন ইমরান ভাই এলেই তার একজন গল্প করার সাথী পেয়ে যাবে ইমরান ভাইয়া খুব ভালো। মুনের এখন বলতে ইচ্ছে করে সবাইকে কেন ইশানের সাথে তার বিয়ে দিল? ইমরান ভাইকে কি কারো চোখে পরেনি?ইমরান ভাই কত্ত ভালো! শুধু একটু শ্যমলা ইশান ভাইয়ের থেকে। তাতে কি মানুষ হিসেবে ইমরান ভাইকে তার খুব পছন্দ।

ইশানের দাদুর সাথে বাগানে এসেছে মুন। দাদু খুব ভালো গল্প জানেন, সেগুলোই বলছে এক দমে মুনকে। ইমরান চলে আসাতে রিয়া ওকে ডেকে গেলো। বাসার ভিতরে গিয়েই দেখলো শুধু ইমরান নয় পাশেই ইশান বসে আছে। এক দৌড়েঁ ইশানের দিকে চলে এলো। ইশান রিয়ার দেওয়া শরবত মুখে দিয়েছে মাত্র।

ইশান ভাইয়া কখন এলে তুমি?আমাকে বিয়ে করে রেখে পালিয়ে গেছিলে কেন?

ইশান অবাক হয় ওর কথা শুনে। হাতের গ্লাস রেখে ওর দিকে তাকিয়ে বলে, আমার পড়াশোনা আছে মুন ! বিয়ে করে কি বাসাতেই থেকে যেতে হবে?

তা নয় কিন্তু তুমি ত………

আমি তো?

ইশানের ধমকে যা বলতে চেয়েছিলো মুন তা ভুলে গেলো। ভীতু নয়নে একবার শাহেদাকে দেখলো এরপর রিয়ার দিকে এগিয়ে গেলো। থ্রি পিসের ওড়না ধরে এক কোনায় দাঁড়িয়ে থাকলো আর কিছুই বললো না।

মুন চলে যেতেই রিয়া ইশানে দিকে গেলো ওর সামনে দাঁড়িয়ে বললো, ইশান তুমি এভাবে কেন ওর সাথে বিহেভ করছো? তুমি তো বাচ্চা নও ইশান! বিয়ের পর দিন বউ রেখে পালিয়ে গেলে আবার আজ ফিরে এলে ওর সাথে সেই আগের মতো বিহেভ শুরু করলে কেন?এমন করে রিয়েক্ট করছিলে যেনো মুন আসলেই বাচ্চা একটা মেয়ে#ক্লাস সেভেনের মেয়েরাও এখন এক বাচ্চার মা হচ্ছে অহরহ!

তুমি শুধু আমার দিকটাই দেখলে ভাবী?মুনকে দেখেছ?এখনো কেমন ছোট বাচ্চা মেয়েদের মতো বিহেভ ওর।

এভাবে বলোনা ইশান। ও হলো আদরের বাবা মায়ের। কখনো বাইরের পরিবেশের সাথে ওর পরিচয় হয়নি তাই তো সব কিছুতে বাচ্চামো রয়েছে ওকে বুঝতে দাও ইশান। ওর সাথে একটু ভালো করে আচরণ করার চেষ্টা করো।

বড় ভাইয়ের বউকে ইশান যথেষ্ট সন্মান করে। তাই আর রিয়াকে কিছুই বললো না সে। ব্যাগ নিয়ে নিজের রুমে দিকে গেলো। রুমে এসেও আরেক ঝামেলা এই মেয়েটা তার রুমেই অবস্থান নিয়েছে। শুধু কি বাচ্চা একটা মেয়ে বলেই সে মানতে পারছেনা নাকি?আসলে তো ওর মুনকে স্ত্রী হিসেবে পছন্দই না। যে যাই বলুক না কেন?

মুন ইশান কে দেখে বিছানা থেকে নেমে আবার বাইরে চলে গেলো। ধমকিয়ে কথা বলেছেনা ওর সাথে?ও আর কথাই বলবেনা ইশানের সাথে। ইমরানের রুমে গিয়ে বসলো সোফায়। ইমরান ফোনে কারো সাথে কথা বলছিলো মুনকে দেখেই বলল, কি হলো? ভাইয়ার বউ কে কি ভাইয়া আবার কিছু বলেছে নাকি?

মুন স্পষ্ট ভাষী একটা মেয়ে মনে যা আসে তাই বলে দেয় ইমরানে আহ্লাদের সহীত বলাতে সেও মোনের ভেতরে রাখা কথা মুখে আনল, তোমার সাথে কেন আমার বিয়ে দিলো না সবাই?

ইমরান হকচকিয়ে গেলো মুনের কথাতে। নিজেকে স্বাভাবিক করে এনে বললো, এসব কি ধরনের কথা মুন?আমি তোমার বড় ভাইয়া। ইশান আমার নিজের ভাই ওর বউ তুমি মানে আমার ভাবী বুঝলে?

হুম!

ভাইয়ার সাথে আমি নিজে তোমার সম্পর্ক ঠিক করে দেব। সময় দাও প্লিজ মুন।

ওকে।

মুন আবার গেলো শাহেদার কাছে কিচেনে রয়েছে সে । ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ইমরান ভাবলো, ভাইয়া তো তোমাকে ভালোবাসেনা মুন তাই সহজ ভাবে স্ত্রী হিসেবে মানতে পারছেনা । শুধু তোমাকে কেন যার সাথেই আম্মু ভাইয়ার দিতো তাকেই মানতে পারতো না । শুধু মাত্র জেদের বশে তোমায় বিয়ে করেছে ভাইয়া। তাতে কি আমি তোমাকে ভাইয়ার কাছে ভালোবাসায় রুপান্তর করে দেব। ভাইয়া তো ভুল মানুষ কে ভালোবেসে আজ হেরে গেছে মুন।

———-

ইমরান প্রায় ঘন্টা খানেক সময় ধরে একটা নাম্বারে কল করেই যাচ্ছে কিন্তু কেউ রিসিভ করছেনা। বিরক্ত হয়ে ফোন রেখে ডিনার করতে এলো। ইশান, ইমরান আর ইকবাল এক সাথে বসেছে ইকবাল মুনকেও সাথে বসিয়েছে। রিয়া আর শাহেদা সার্ভ করে দিচ্ছে। খাবার শেষ করে মুন রুমে এসে আগেই ঘুমিয়েছে। ইশান পর পর এসে পাশের ফাকাঁ জায়গাতে শুয়ে পরেছে।
পরের দিন ইমরান মুনকে সাথে নিয়ে বের হলো ঘুর‍তে নিয়ে যাবে বলে। ইশান কেও আসতে দেখা গেলো রিয়া ইমরানের দিকে তাকিয়ে কিছু বললো ইমরান চোখের ইশারাতেই কিছু বুঝিয়ে দিলো।
ইমরানের পাশে মুনকে দেখে ইশান বলে,
ওকে কেন নিচ্ছিস আমাদের সাথে?

ও বাসায় একা একা করবে কি? ভাবীর তো এসময় ঘঘোরাফেরা করা রিস্ক। কিন্তু মুনকে নিতে কোন সমস্যা নেই। তাইনা ভাবী?

হ্যাঁ, অবশ্যই মুন সারা সময় বাসাতেই থাকে একটু বাইরের পরিবেশ ও ওর দরকার।

গাড়িতে মুনকে ইশানের পাশে সামনে বসিয়েছে ইমরান। কিছু বলতেও পারছেনা
ইশান। ইমরানের এক বন্ধুর সাথে রাস্তায় দেখা হয়ে যাওয়াতে ইমরান ওকে পেছনে নিজের পাশেই বসিয়ে দিলো। ইশান দেখছে মুন চুপ করে আছে তাই জিজ্ঞেস করলো, রাত থেকে দেখছি চুপ করে আছো তোমার কি সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ হয়ে গেলো নাকি?

মুন রে*গে গেলো উচ্চ কন্ঠে বললো, আমার আপনার সাথে আর কোন কথা নেই।
পেছনে ইমরান আর ইমরানের বন্ধু হকচকিয়ে গেলো মুনের কথা শুনে ইশান ওদের দিকে তাকিয়ে আর ততক্ষণে কিছুই বললো না মুনকে তবে কঠিন চোখে দেখে নিলো। তারপর চুপ চাপ গাড়ি ড্রাইভ করে মাঠের দিকের রাস্তা ধরলো। সেখানেই মেলা বসেছে।
আগে এই দুজন আলাদা হোক তারপর এই মুনের একটা ব্যবাস্থা সে করবে এভাবে তার সাথে কথা বলা অন্যর সামনে?বুঝিয়ে দেবে। অসহ্য মেয়ে একটা!!

চলবে
#মিশকাতুল

ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও পর্ব-০৩

0

#ভালোবাসায়_রাঙিয়ে_দাও(৩)

মুন নিজের বাসায় এসে বেশ খুশি। একদিনের জন্য হলেও ওই বাসাতে থাকতেই কেমন দম বন্ধ হয়ে আসছিলো। এখানে এসেই শাড়ি ছেড়ে থ্রি পিস পরে নিয়েছে। মিমের সাথে ঘুরছে সে এখন। ইশান আর ইমরান বসার ঘরে আছে এখন। ইমরান কে সাথে নিয়ে এসেছে ইশান এখানে তো মিমের জামাই ছাড়া আর কোন ছেলে নেই তেমন একটা কার সাথে বসে গল্প করবে সে?
মুনের হাতে নাস্তা দিয়ে মিম বললো, যা ইশান দেরকে দিয়ে আয়।

আমি কেন?

তুই না তো কে যাবে?বিয়ে হয়েছে তোর না?যা গিয়ে দিয়ে আয় আমি তোর ভাইয়াকে খুজে নিয়ে আসি।

আচ্ছা।

মুন নাস্তার প্লেট নিয়ে টেবিলে দিয়ে এলো। ইমরান ভাইয়া তার কাছে বেশ ভালো ওর সাথে মিলে বেশি মুনের। আর ইশান?আগে থেকেই রাগ*চটা জানে তা মুন।
মুন আবার উঠে এলো ওর রুমের দিকে। ঘুম পাচ্ছে তার সকাল থেকেই সকলের হৈ চৈ এ মাথা ব্যাথা শুরু করে দিয়েছে।

রাতের খাবার টাও খায়নি মুন ওভাবেই ঘুমিয়েছে সে। ইশান কে এখানে এনে দিয়ে গেছে মুনের দাদী। ইশান রুমে এসে দরজা বন্ধ করে পেছন ঘুরতেই দেখে, এত এত টেডি দিয়ে বিছানা সাজিয়েছে মুন যে ও ছাড়া আরেকজন থাকবে তার জন্যও জায়গা রাখা নাই ইশানের রা*গ হলো সে এখন কোথায় ঘুমাবে তা হলে?বিছানার দিকে এগিয়ে গিয়ে সব ফেলে দিয়ে নিজে শুয়ে পরলো।

সকাল হতেই মুনের সে কি কান্নাঁ শুরু ওর আওয়াজেই ঘুম ভেংগেছে। মুন কান্নাঁ করছে আর নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। ইশান ওর দিকে বিরক্ত হয়ে দেখে বলে,
সমস্যা কি?

আমার পুতুল গুলি ফেলে দিয়েছো কেন তুমি?

না ফেললে আমি ঘুমাতাম কোথায়?

কোথায় মানে?আমায় ডাকবে না তুমি ইশান ভাইয়া এভাবে ফেলে দিয়েছ?

আচ্ছা! এখন কাদঁছিস কেন? তুলে রেখে দে পাশে তাই তো হয়।

না #তা হয় না!ওরা সারা রাত ব্যাথা পেয়েছে না?

না।

কিহ?

ওরা কি মানুষ যে ব্যাথা পাবে?

মানুষ ছাড়া আর বুঝি কেউ ব্যাথা পায় না?

না পায় না।

তাই নাকি অনেক প্রানীরাও ব্যাথা পায়, গরু,ছাগল,……..

ওরা আর এই পুতুল কি এক হলো নাকি?

না কি আবার?আমার কাছে এক।ওদের ও ব্যাথা আছে ।

আচ্ছা নে এবার ধর। যত্তসব!!

বলেই ইশান ফ্রেশ হতে চলে গেলো। সে আর এখানে থাকবেনা। এই সকালে নাস্তা করেই চলে যাবে। বউ পেয়েছে নাকি ছাগোল পেয়েছে সে?
ইশান নিজের ভাবনা মতোই কাজ করলো ইমরানকে ঘুম থেকে তুলে দিয়ে ওকে নিয়ে নাস্তা করেই চলে যেতে চাইলো মিলন হক ও শামছুরনাহার কিছুক্ষন বুঝালেন দুপুরের পর যেতে কিন্তু ইশান জানিয়ে দিলো সে এখনই চলে যেতে চায়। তাই ইশানের সাথেই মুনকে নিয়ে যেতে বললেন সবাই। মুন ও নাস্তা করে চলে এলো ইশানদের সাথে। ইশানের মা শাহেদা
এই সকাল সকাল ছেলে বউকে ফিরতে দেখে এগিয়ে গেলেন জিজ্ঞেস করলেন এত দ্রুত ফেরার কারন?
ইশান সে প্রশ্নের উওর না দিয়েই নিজের রুমের দিকে চলে গেলো শাহেদা সেদিকে আর না তাকিয়ে মুনের কাছে গিয়ে বললো রুমে গিয়ে ইশানের পাশে থাকতে। ছেলে মেয়ে দুটো পাশাপাশি থাকলেই না দুজনকে বুঝতে পারবে!! সম্পর্ক সঠিক হবে।

———-
ইশান রুমে এসে নিজের একটা বই নিয়ে বেলকুনির দিকে গেলো চেয়ারে বসে বই খুলে মনোযোগ দিলো। একটু পরেই মুন এসে পাশের চেয়ারে বসলো ইশান তা দেখেও সেরকম খেয়াল করলো না । মুন কিছুক্ষন থেকে সেভাবেই চেয়ারে ঘুমিয়ে গেলো। ইশান দুপুরের দিকে বই রেখে পাশের চেয়ারে খেয়াল করলো মুন তখন এসেই ঘুমিয়ে গেছে ওর দিকে তাকিয়ে দেখে আবার রুমে এলো। নিজের ব্যাগ গুছিয়ে রেখে নিচে গেলোখাবার খেতে। ওর দাদু ওকে একা দেখে জিজ্ঞেস করলো, নাতবউ কই?

ঘুমিয়েছে।
রিয়া প্লেট দিতে দিতে ইশানকে বললো,
ডেকে আনবেনা?দুপুর হয়ে এসেছে খাবার খাবে না?

ইমরান ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বুঝলো রিয়ার কথায় সে বিরক্ত হয়েছে। সামান্য বছর তিনেক এর ছোটো সে ইশানের থেকে সে জানে ভাই বিয়েটা নিজের পছন্দতে করেনি। দাদুর জন্য আর পরবারের সম্পর্ক ঠিক রাখার জন্যই শুধু বিয়েটা করেছে।
রিয়ার দিকে তাকিয়ে ইমরান বললো, ভাবী যাও মুনকে নিয়ে এসো। খাবার টা খেয়ে আবার না হয় ঘুমাবে।
শাহেদা রিয়াকে পাঠালো মুনকে নিয়ে আসতে। রিয়া রুমে গিয়ে দেখলো মুন বেলকুনিতে চেয়ারে বসেই ঘুমিয়েছে। ওকে তুলে দিলো সে। তারপর মুনকে নিয়ে নিচে এলো। এতক্ষনে ইশানের খাবার খাওয়া হয়ে গেছে। মুন গিয়ে ইমরানের পাশে বসলো।
ইকবাল ওকে দেখে হাসি বিনিময় করলো, খাবার খেতে শুরু করতেও জানালো।
মুন নিজের মতো খাবারটা শেষ করে রুমে চলে আসে।
ইশান ওকে আসতে দেখেই বলে,

তুমি এখানে কত দিন থাকবে?

কতদিন আবার? আমার আপনার সাথে বিয়ে হয়েছে না?যতদিন আপনার বউ ততদিন থাকতে হবে।

না। তুমি এখানে কেন থাকবে?তুমি না পড়াশোনা করবে?

এখানে আর ওখানে কি আছে?আমাদের বাসা তো একদম পাশাপাশি। এক জায়গা থেকে হলেই হবে।

ওহ আচ্ছা। আসলে আমার একটা কথা ছিলো।

জ্বি বলুন না!

আসলে, আমি তোমাকে স্ত্রী হিসেবে চাইনি কখনো। আমি বিয়েটা করতেও চাইছিলাম না। কিন্তু বাবা আমাকে না জানিয়ে আগেই তোমার বাবা আর দাদুর সাথে বিয়ের কথা বলে চলে এসেছিলেন। আমি তখন আর মানা করে দিতে পারিনি। আর এখন আমি তোমাকে স্ত্রী হিসেবেও মানতে পারছিনা। যেহেতু তুমি নিতান্তই একটা বাচ্চা মেয়ে তাই আমি চাই এই বিয়ে নামক নাম মাত্র সম্পর্ক তুমি মনে রেখো না। নিজের মতো করে পড়াশোনা চালিয়ে যাও। যখন আমাদের সময় সুযোগ হবে আমরা আলাদা হয়ে যাবো কেমন??

কিন্তু আমার তো আপনার সাথেই বিয়ে হয়েছে।

মুনের কথায় ইশানের রা*গ হয় কিন্তু তা চেপেঁ বুঝানোর সুরে বলে, বিয়ে হয় মোন থেকে সম্পর্ক করতে চাইলে যা আমি চাইনি তাই এই বিয়ে কোনো বিয়ের মাঝেই পরে না!

কিন্তু আমি তো চেয়েছিলাম আমার আপনার সাথে বিয়ে হোক।

ইশান এবার ধম*কের সুরে বলে, মোন থেকে কি চাইলে কি তুমি?ভালোবাসা বুঝ?দাদী আর বাবা মা যা বলেছে তাই করলে। তোমাকে বিয়ে করতে বলেছে বলেই তুমি নিজে রাজি হয়েছে। কিন্তু নিজের ইচ্ছেতে তো আর চাওনি আমাদের বিয়ে হোক। আমি অতশত কথা বলতে চাইনা ,
তুমি আমার আমি স্রেফ নাম মাত্র স্বামী স্ত্রী। আমাদের মাঝে কখনো কোন সম্পর্ক হবেনা। তোমাকে আমার কোনো ভাবেই পছন্দ নয়। তাই আমার থেকে দূরে থাকবে। আর হ্যাঁ আমি এখন আসছি। আমাকে ফিরতে হবে।

কথা শেষ করেই ইশান নিজের ব্যাগ নিয়ে বের হলো। ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুন ভাবলো, দাদী কেন এই লোকের সাথে তাকে বিয়ে দিল? কেমন ধমকিয়ে চলে গেলো? আবার বলে কি না!বিয়ে হয়নি?তখন কি তাহলে খেলা হয়েছে?যত্তসব!#

চলবে
#মিশকাতুল