Monday, August 25, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2362



Angry_Husband Season_2_Part_17

0
Angry_Husband Season_2_Part_17
Angry_Husband Season_2_Part_17

Angry_Husband
Season_2_Part_17
Written by Avantika Anha
ফোনটা রেখে পাশে তাকিয়ে দেখি আরাভের ঘুম ভেঙ্গে গেছে।
আরাভ- কে ফোন করছিলো?
আমি- মানুষ।
আরাভ- নাম কি?
আমি- মানুষের নাম তো মানুষ। এটাই তো তাদের পরিচয় তাই না?
আরাভ- জান্নাত ফোন করছে?
আমি- আরে সকাল কয়টা বাজে গেছে দেখছো। এতো দেরি হলো।
আরাভ- এই মেয়ে কথা ঘুরাবি না বলতে বলছি বল কে ফোন করছে?
আমি- জান্নাত। (ভয়ে ভয়ে বলে ফেললাম)
আরাভ- ওই মেয়ের প্রবলেমটা কি হা? আজ ওকে আমি দেখে নিবো। দাড়াও।
.
আরাভ উঠে যেতে ধরলো আমি তখন ওর হাতটা ধরে ফেললাম।
আরাভ- আনহা ছাড়ো।
ওকে কিছুটা জড়িয়ে ধরলাম।
আমি- আমি আর আপনি একসাথে আছি তো? আমাদের আলাদা করতে পারবে না ও।
আরাভ- কিন্তু?
আমি- কোনো কিন্তু না। ভালোবাসা থাকলে বিশ্বাসও থাকে আর ও আমার বিশ্বাস কখনো ভাঙতে পারবে না। বুঝলেন রাগী মি.।
আরাভ- ওকে আজ আটকে নিলা। তুমি পাশে থাকলে রাগ কমাতে পারবো নাহয় কিন্তু তুমি না থাকলে আমিও কন্ট্রোলে থাকতে পারবো না হয়তো।
আমি- আমি পাশে আছি আপনার। যদি মরেও যাই তাহলেও আপনার মাঝে বাঁচবো।
আরাভ- তুই মরার কথা তুললি কেন? বেশি ঢং?
আমি- খাইছে আবার রাগ?
আরাভ- এই বিষয় আসলো কেনো?
আমি- ইয়ে মানে ডায়লগ মারলাম ইট্টু।
আরাভ- ডায়লগ এর গুষ্টি কিলাই।
আমি- ওয়াও আপনি আমার মতো গালি দেন এখন?
আরাভ- পাগলির সাথে থাকে থাকে পাগল না হলে সম্ভব নাকি?
আমি- হিহি।
আরাভ- তা সকালের শুরুটা একটু মিষ্টি দিয়ে করাও। (রোমান্টিক মুডে)
আমি- এক মিনিট দাড়ান।
.
তাড়াতাড়ি দৌড়ে গিয়ে আমি একটা বাটিতে মিষ্টি নিয়ে আসলাম। আমাকে দেখেই আরাভের মুখে হাসি ফুটে উঠলো। আমার ভাষায় শয়তানি হাসি।
আরাভ- কাছে আসো।
আমি- আগে এটা খান।
আরাভ- মিষ্টি?
আমি- হুমমম। আপনিই তো মিষ্টি চাইলেন।
আরাভ- দূরররররর লাগবে না আমার কিছু।
আমি- আপনিই তো মিষ্টি চাইলেন।
আরাভ- ওই মিষ্টি না গাধী আমি কিস চাইছি।
আমি- ও কিস?
আরাভ- হুমম।
আমি- কিইইইই কিস?
আরাভ- হুমমম তাই।
আমি- চোখ বন্ধ করেন।
আরাভ- কেনো কিস দিবা?
আমি- করেন ১০ সেকেন্ড এর জন্য।
আরাভ- না এক মিনিট।
আমি- আচ্ছা।
.
আরাভ চোখ বন্ধ করলো। “কই তুমি” আরাভ ডাক দিলো। আমার জবাব পেলো না। আারো কয়েকবার ডাক দিলো কিন্তু কোনো জবাবই পেলো না আরাভ। চোখ খুলে দেখে আমি নাই। কারণ ওই সময়েই আমি পালাইছি। আরাভের রাগ উঠলেও কিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে বাইরে বের হলো। বাইরে আমি আভার রুমে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে বসেছিলাম। কারণ নাস্তা আগেই তৈরি করে নিছেন কাজের বুয়া আর আমাদের উঠতে দেরী হয়ে গেছিলো। আমি নাস্তা খাচ্ছি আর ওর দিকে তাকায় ভিলেনমার্কা হাসি দিচ্ছি। আরাভ রাগী মুখে আমার দিকে তাকাচ্ছে।
আভা- কি রে এতো ঘুম আজকাল দেখি।
আরাভ- তোর কি?
আভা- হাহা বুঝি। আয় নাস্তা কর।
আরাভ- বেশি বুঝিস বিয়ে দিবো তোর ওই যে R..
আভা- তোকে কে বললো?
আরাভ- বাবু আমি তোমার ভাই।
আভা- ভাবি তুমি বলছো?
আমি- গাধী মাইয়া ওয় জানতোই না আন্দাজি কইছে তোমার খাতায় দেখছিলো। আর তুমি স্বীকার কইরা নিলা।
আভা- হায় ভাবি আগে কইবা না?
আমি- জিগাইছো আমাকে মনু?
.
এমন সময় মা আসলো। তাই আমরা আর কথা আগাইলাম না…
মা- আরাভ নাস্তা খেতে বস।
আরাভ- হুমম মা। মা শুনো তোমার মেয়ের বিয়ে দিবা কবে?
মা- ভাবছি তো রে বাবা পাত্র পাই ভালো। তারপর দিয়ে দিবো।
আরাভ- আমার পছন্দ আছে একটা ছেলে। কথা চালাই?
মা- চালা তোর যা ভালো মনে হয়।
.
এসব কথা শুনে আভার মুখের অবস্থা বারোটা হয়ে গেছে। আমি ভালো করেই বুঝতেছিলাম। খাওয়া শেষে মা চলে যাওয়ার পর..
আভা- ভাইয়া তুই আমার সাথে এমন করিস না।
আরাভ- শুন বড়দের উপর কথা বলবি না। এটা সারা জীবনের ব্যাপার।
আভা- কিন্তু ভাইয়া।
আরাভ- নো কিন্তু। যা হবে আমার ইচ্ছায়।
.
আরাভও খাওয়া করে উঠে গেলো। আমার খাওয়া আগেই শেষ তবুও আমি বসে আছি আভার জন্য।
আভা- ভাবি এখন কি হবে?
আমি- গাধী আমি আছি না? আর তোমার ভাইয়া প্রেমের শত্রু না বুঝলে?
আভা- সিওর ?
আমি- হুমমম।
খাওয়া শেষ করে আমি রুমে গেলাম। আরাভ অফিসের জন্য রেডি হচ্ছিলো। আমি গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। ইহা কাজ করানোর ধান্দা।
আরাভ- বাহ এতো কাছে। কি কাজ বলো?
আমি- ইয়ে মানে..
আরাভ- মানে মানে না কইরা জ্বলদি বলো।
আমি- আপনি তো খুব ভালো মানুষ তাই না?
আরাভ- না আমি তো রাক্ষস, বান্দর তুমিই বলো।
আমি- না না আপনি অনেক ভালো।
আরাভ- তাই?
আমি- হুম।
আরাভ- আভার জন্য আসছো?
আমি- হুম। ইয়ে না না আমি তো এমনি আসছি। আমি আমার বরের কাছে কি আসতে পারি না?
আরাভ- ম্যাডাম আমি ভাই হলেও বোনের খারাপ চাইবো না। আভাকে বলিও ছেলেটা যেন আমার সাথে দেখা করে। ও ভালো হলে আমি নিজে বিয়ে দিবো। (আমাকে সোজা করে ঘুরিয়ে দিলো)
আমি- এমনি বলি আমার রাক্ষসটা বেস্ট।
আরাভ- আবার রাক্ষস?
আমি- হিহি। সারাজীবন শুনবেন।
আরাভ- আচ্ছা রাজি।
আমি- এই খুশিতে বলেন দুপুরে কি খাবেন?
আরাভ- যা আপনার ইচ্ছা।
আমি- আপনার তো চিকেন পছন্দ তাহলে কি কাবাব বানাবো?
আরাভ- ওকে।
আমি- আপনার অফিসে আসমু আজ। আবার যদি কোনো শাকচুন্নিকে দেখি খবর আছে।
আরাভ- ওকে পাবা না।
.
এরপর আরাভ অফিসে চলে যায়। আমি শখ করে ওর জন্য রান্না করি। দুপুরের দিকে আমি আরাভের অফিসে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি আরাভের ক্যাবিন থেকে ঝগড়ার আওয়াজ পেলাম কিছুটা। যতোটা শুনতেছি মনে হচ্ছে একটা মেয়ে আরাভের সাথে ঝগড়া করতেছে। এগিয়ে গেলাম শুনতে,
জান্নাত- আমি সত্যি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
আরাভ- ও হ্যালো সাইকো আমি যাস্ট আনহাকে ভালোবাসি। আমাদের লাইফে ঝগড়া বাঁধানোর চেষ্টা করছো কেনো?
জান্নাত- আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না।
আরাভ- আমি আনহাকে ছাড়া বাঁচবো না।
জান্নাত- তাহলে আনহাকে আমি বাঁচতে দিবো না।
আরাভ- আমি তোমাকে মারে ফেলবো আনহার কিছু হলে।
জান্নাত- তোমাদের একসাথে থাকতে দিবো না।
আমি ভিতরে ঢুকে বললাম- আমাদের আলাদা করতেও পারবেন না।
জান্নাত- ওহো বউও এখানে?
(আমি জান্নাতকে দেখে কিছুটা শক কারণ ও সেই মেয়েটা যে উল্টা পাল্টা প্লান করছিলো। তাহলে কি আরাভই ওই মুখ ঢাকা ছেলেটা?)
আমি- হুমম আপু। আপনার প্রবলেম কি?
জান্নাত- ওকে ছেড়ে দে নইলে ফল খারাপ হবে।
আমি- আগেও বলছি। আমি ছাড়বো না।
জান্নাত- মেরে ফেলবো কিন্তু।
আমি- মারতে পারেন তাও ছাড়বো না।
আরাভ- দাড়াও আমি বের করাচ্ছি।
.
আরাভ এগিয়ে আসতে গিয়েও আমি ওকে থামতে বললাম।
আমি- আপু আপনি কি পাগল? আমাদের মাঝে আসেন কেন?
জান্নাত- আমি তোমাদের না তুমি আমাদের মাঝে আসছো।
আরাভ- ওয়েট কি বলো? আমি সবসময়ই তোমাকে না বলছি।
আমি- ওই আপনি যাবেন নাকি ঝাটা দিয়া পিটামু শাকচুন্নি কোনেকার আমার বরের উপর নজর দিস।
জান্নাত- এই মেয়ে মুখ সামলাও।
আমি- ওইটা পরে আপু গুড নিউজ আছে।
জান্নাত- মানে?
আমি- আমাদের বাবু হতে চলেছে। গুড নিউজ না?
জান্নাত- কিহ?
আমি- হুমমম। আপনাদের বাড়িতে মিষ্টি পাঠাবো নে । এখন যান। ওই তোমার অফিসে সিকিউরিটি নাই।
আরাভ- ওকে ডাকছি।
জান্নাত- তোমাদের একসাথে থাকতে দিবো না আরাভ শুধু আমার।
.
জান্নাতকে বের করে দেওয়া হলো।
আরাভ- সত্যি নাকি?
আমি- কি?
আরাভ- বাবুর কথা।
আমি- না মিছা কথা কইছি।
আরাভ- আনহা ভাবতেছি।
আমি- কি?
আরাভ- পরিবার বড় করা উচিত।
আমি- ইয়ে মানে টপিক বদলান লজ্জা লাগে।
আরাভ- তাই নাকি?
আমি- হুমম। চলেন খাবেন।
আরাভ- হুমম
.
চলবে…

Angry_Husband Season_2_Part_16

0
Angry_Husband Season_2_Part_15
Angry_Husband Season_2_Part_15

Angry_Husband
Season_2_Part_16
Written by Avantika Anha
আমি আলো জালিয়ে দিলাম। চারপাশ ফুল আর নেটে সাজানো। সাথে মোমবাতিও আছে। আর বেলুনও লাগিয়েছি সাদা রং এর। একে একে আমি সব মোম জ্বালিয়ে দিলাম যা আই লাভ ইউ লিখা ফুটে তুলতেছে।সাথে আমার আর আরাভের নাম লাভ মার্ক এর সাথে। আরাভ সবকিছু দেখে অবাক হচ্ছে কারণ ওর ধারনা ছিলো না যে আমি‌ এভাবে সব সাজাতে পারবো।
আমি- কেমন হলো?
আরাভ- আমার বউ এর মতো কিউট।
.
তারপর আরাভ আমার দিকে তাকিয়ে আমাকে ভালো করে দেখতে লাগলো। ওর এভাবে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমার অনেক লজ্জা লাগছতবুও
আমি- কি হইছে? ক্রাশ খাইলেন নাকি?
আরাভ- হুমমম অনেক বড় ক্রাশ খাইছি।
আমি- ওমা ক্রাশ খাইলে এতো খাবার যে রেডি করা ওগুলো কে খাবে?
আরাভ- দূররর। সব রোমান্টিক জিনিসের মাঝে কি সব আনো।
আমি- কই কি আমি কি করলাম আবার?
আরাভ- না কিছু করো নি। আমি নিচে গেলাম।
.
এই বলে আরাভ রাগ করে নিচে যাইতে লাগলো। আমি ভাবছি, যাহ মজাটা কি বেশি হয়ে গেলো নাকি? তাড়াতাড়ি আরাভের হাত ধরে ফেললাম।
আরাভ- কি হইছে? হাত ছাড়ো। (কিছুটা রাগী স্বরে)
আমি- বাব্বাহ এতো রাগ কিনু আপনার?
আরাভ- চুপপপপ।
আমি- ওকে আমি চুপই আছি।
আরাভ- আমি নিচে যাবো হাত ছাড়ো।
আমি- না মি. হাজবেন্ড আজ আমি কোনো রাগ দেখতে চাই না।
আরাভ- হাত ছাড়বা কি না?
আমি- আপনি যদি এখন যান তাহলে আমি ছাদ থেকে লাফ দিবো।
আরাভ- আবার?
আমি- এবার দিমুই।
আরাভ- হুহ।
আমি- বিলিভ হয় না। ওকে দাড়ান তাহলে দেখুন খালি আমি পারি কি না?
.
এইটা বলে আমি আবার ছাদের কোণার দিকে আগালাম। “ওমা গো ছাদ এতো উপরে কেনো?” এটা ভাবতেছি। ভয়ে ভয়ে পিছুতে যাবো এমন সময় পা জমে গেলো আমার। না না ঠান্ডায় না ভয়ে। আমি ভয়ের কারণে ওই জায়গা থেকে নড়তে পারছিলাম না। পিছনে ফিরে দেখি আরাভ আমার পিছনেই দাড়িয়ে ২ হাত দূরে।
আরাভ- কি ভয় লাগে?
আমি- না মানে একটু।
আরাভ- তা সবসময় ছাদ থেকে লাফ দিতে চাও কেনো?
আমি- হিহি মজা লাগে।
আরাভ- দূরর পাগলি। চলো ওদিক। (হেসে)
আমি- বাই দি রাস্তা আমি ক্রাশ খাইছি আপনার স্মাইলে। চলুন।
.
এই বলে পা বাড়াতে গিয়ে পিছলে গেলো। আমি ধরেই নিলাম আমি মরে যাবো। তাই তাড়াতাড়ি চোখ বন্ধ করে নিলাম। কিছু সময় পর ভাবলাম আমি মরেই গেছি। চোখ খুলে দেখি আরাভ ধরে আছে আমাকে আর ও রেগে গেছে। ওর দিকে টান দিলো। আমার মাথা ওর বুকে চলে গেলো। ওর বুকের ধুকধুক শব্দ কানে আসছিলো। খুব জোড়ে চলছিলো হয়তো ও ভয় পেয়ে গেছে। নাহয় রাগে।
আমি- সরি।
আরাভ- না না সরি বলছেন কেনো? উচ্চতা যে ভয় পান একটু তা জেনেও সাইডে যান কেনো?
আমি- না মানে।
আরাভ- চুপ।
আমি- রাগলেও আপনাকে কিউট লাগে।
আরাভ- পাম মারে লাভ নাই।
আমি- হুহ। এইখান থেকে যাই প্লিজ। আমার ভয় করছে।
আরাভ- চলো।
.
এই বলে আরাভ আমার হাত ধরে টান দিলো। কিন্তু আমি গেলাম না। ও আমার দিকে ফিরে জিজ্ঞেস করলো কেনো যাবো না? পরিবর্তে আমি মুচকি হাসি দিলাম।
আরাভ- কি হাসছো কেনো?
আমি- কোলে নেন।
আরাভ- কিহ?
আমি- হুম নইলে যাবো না।
আরাভ- এখন আবার কি হলো? এতো রোমান্টিক?
আমি- ইয়ে মানে। হেটে যেতে ইচ্ছে করছে না। এসব আমি সাজিয়েছি। এখন বাকীটা আপনি করবেন। ইট্টু রোমান্স।
আরাভ- একটু কেনো বেশিই করবো দেখবা নাকি?
আমি- দেখান।
.
আরাভ আমাকে কোলে তুলে নিলো।
আরাভ- পাগলি।
আমি- হুম কিন্তু আপনাকে কে বললো, আমি যে উচ্চতা একটু ভয় পাই‌ এটা।
আরাভ- তোমার বোন।
আমি- ওই হারামিকে আমি ছাড়বো না। নামান আমাকে।
আরাভ- না তোমার যা ইচ্ছা হবে সবসময় তা-ই যে হবে তা তো না। মাঝে মাঝে আমার ইচ্ছাও চলবে ম্যাডাম। আর এখন আমি রোমান্টিক মুডে আছি রাগালে ফল কতোটা ভয়ানক হতে পারে তা কি বলা লাগবে?
আমি- নাহি নো রাগগগগগ আজঙ
আরাভ- হুমমম।
.
আরাভ আমাকে একটা চেয়ারে বসিয়ে দিলো।
আমি- দেখেন কতো কিছু করছি। এর জন্য আমাকে গিফ্ট দিবেন না?
আরাভ- তুমি কি গিফ্ট এর জন্য এমন করছো?
আমি- না আবার হুম।
আরাভ- মানে?
আমি- প্রপোজ করমু তাই।
আরাভ- তাইলে? তবুও গিফ্ট চাও কেনো?
আমি- হুহ। ওকে থাক লাগবে না।
আরাভ- তাই?
আমি- হুমম।
আরাভ- ভালো তো এক মিনিট দাড়াও আমার গরম লাগছে ব্লেজারটা খুলে আসছি।
আমি- উকে। জ্বলদি আসেন।
.
আরাভ উঠে আমার পিছনে দাড়ালো। তারপর আমার সামনে একটা পেনডেন্ড মেলে ধরলো।
আমি- ও মা গিফ্ট?
আরাভ- হুমম।
আমি- কার লাইগা?
আরাভ- আমার যে ২নাম্বার বউ আছে তার জন্য।
আমি- আপনার আরো বউ আছে?
আরাভ- হুম ২টা বউ আমার জানো না?
আমি- সত্যি?
আরাভ- হুম কেনো বিশ্বাস হয় না?
আমি- আচ্ছা। (মন খারাপ করে বসলাম। দুই ফোটা চোখের জলও গড়িয়ে পড়লো। আরাভ আমার সামনে দাড়িয়ে গেলো। এটা দেখেই ও হাসতে লাগলো। আর আমাকে বলতে লাগলো এমন কিছুই নাই। ও নাকি শুধুই মজা করে বলছে)
আমি- না। আপনার জীবনে অন্য কেউ আছে।
আরাভ- আরে গাধী নাই।
আমি- তাহলে বললেন কেনো?
আরাভ- তুমি গাধীর মতো প্রশ্ন করলা কেনো? আমি আর কাকে দিবো হা?
আমি- আমি তো গিফ্ট এখন চাইলাম আপনি কেমনে এখনি আনলেন?
আরাভ- হাহা এটা আরাভ স্টাইল।
আমি- ওই আপনি আমাকে কপি করছেন?
আরাভ- তোমার সাথে থাকে থাকে আমিও যে পাগল হয়ে যাচ্ছি।
আমি- ওহো তাহলে তো আমরা পাগল পাগলি কাপল।
আরাভ- হুমমম।
আমি- তাহলে আমার বাচ্চা কাচ্চা কি পাগল হবে নাকি পাগলি?
আরাভ- পাগলি হবে কারণ আমার মেয়ে চাই।
আমি- না আমার ছেলে চাই।
আরাভ- আগে মেয়ে-ই হবে।
আমি- না ছেলে।
আরাভ- আমার মেয়ে চাই। আল্লাহ যদি দেন তাহলে।
আমি- ওটাই বাট আমার ইচ্ছা ছেলের। আমি আজ থেকে এটার জন্য দোয়া করবো।
আরাভ- না একদম না।
আমি- দূরররর কইছি না আমার পোলা হবে।
আরাভ- ও রেলি?
আমি- হ্যা হ্যা হ্যা।
.
ঝগড়ার আওয়াজ শুনে আভা উপরে আসলো।
আভা- কিরে তোরা ঝগড়া করছিস কেনো?
আমি- দেখো তোমার ভাই বলে তার নাকি মেয়ে চাই কিন্তু আমার যে ছেলে চাই।
আরাভ- শুন আমি বলছি আমার প্রথম মেয়ে হবে মানে মেয়ে।
আভা- গাধার দল থামবি? আগে ভাবি প্রেগনেন্ট তো হোক তারপর প্লান কর। এখনি ঝগড়া।
.
এই কথা শুনে আমি আর আরাভ দুজনেই লজ্জায় পড়ে গেলাম। আভা আমাদের ভালোভাবে থাকতে বলে নিচে চলে গেলো। কিছু সময় দুজনেই লজ্জায় চুপ থাকলাম । তারপর আরাভ আমাকে পেনডেন্টটা পড়িয়ে দিলো।
আমি- মি. আরাভ আপনাকে আমি অনেক ভালোবাসি। কিভাবে বাসলাম জানি না। কিভাবে এই রাগী মানুষটার প্রেমে পড়লাম জানি না। এখন আমার আর কিছু চাওয়ার নাই। যতোদিন বেঁচে আছি শুধু আপনার সাথে থাকতে চাই। আর চাই আপনার আর আমার সংসারে ছোট্ট সদস্যকে। চাই প্রতি সকাল আপনার চেহারা দেখে যেনো হয়। চাই মাঝরাতে খুনশুটি করতে। আমার সবটা জুড়ে শুধু আপনাকে চাই আর কিছুই না। চাই আপনি যে মাঝে মাঝে থাপ্পড় মারেন তারপর ওই জায়গায় যেনো হাতের স্পর্শ দিয়ে সরি পাগলি বলেন।
আরাভ- আই লাভ ইউ টু।
আমি- কেমন হইলো?
আরাভ- সেই। আজ বুঝছি তুমি রোমান্টিকও আছো।
আমি- ভালো হবে না নাকি? মিমি আভা সবার হেল্প নিয়া লিখছি। ভালো তো হতেই হবে।
আরাভ- মানে নিজে লিখো নি?
আমি- আমিই তো লিখছি।
আরাভ- শয়তান।
আমি- ফিমেল ভার্সনে গালি দেন। শয়তান তো ছেলে ওটা হলে তো আপনি হবেন।
আরাভ- হুহ।
আমি- চলেন আবার রোমান্টিক মুডে যাই।
.
অতঃপর আমি আর আরাভ একে অপরকে খাইয়ে দিলাম। আরও অনেক্ষণ গল্প করলাম। তারপর আমি আরাভের কাধে মাথা রেখে ছিলাম। শেষ মুহূর্তে আরাভ আমাকে কোলে করে রুমে নিয়ে গেলো।
.
পরেরদিন…..
ফোনে কল আসলো…
জান্নাত- আনহা।
আমি- জ্বী বলুন কে?
জান্নাত- জান্নাত।
আমি- ও ভিলেন আপু।
জান্নাত- হোয়াট?
আমি- কি?
জান্নাত- নিজের ভালো চাও তো আরাভকে ছেড়ে দেও।
আমি- সরি পারবো না।
জান্নাত- এখনো সময় আছে ভেবে বলো।
আমি- ভাবার কিছু নাই। আমি ওকে ছাড়বো না।
জান্নাত- হাহাহা। রেডি থাকো। তোমাদের লাইফে ঝড় আসতে চলেছে।
.
এই বলে জান্নাত ফোন কেটে দিলো।
.
চলবে……

Angry_Husband Season_2_Part_15

0
Angry_Husband Season_2_Part_15
Angry_Husband Season_2_Part_15

Angry_Husband
Season_2_Part_15
Written by Avantika Anha
মাঝরাতে মাথায় একটা জিনিস আসলো। সাথে সাথে উঠে বসলাম। আরাভের এক হাত আমার হাতের উপর ছিলো। আমি উঠে বসায় ও নিজেও টের পেয়ে গেলো।
আরাভ- কি হলো?
আমি- বান্দর পোলা, শয়তান, কুকুর, রাস্তার ছেলে, কুমির, পেঙ্গুইন, আলু, পটল, লাউ, কদু কোনেকার।
আরাভ- হোয়াট? কি বলছো এসব?
আমি- চুপ কথা বলবি না একদব তুই।
আরাভ- তুমি আমাকে তুই বলছো?
আমি- একশোবার বলবো। তোর জন্য আমার সব প্লান মাটি।
আরাভ- কি বলছো এসব? (তাকিয়ে দেখি ওর রাগ হচ্ছে। তাতে আমার কি ওই শয়তানের জন্য আমার প্লান মাটি)
আমি- চুউউউউউউপ।
আরাভ- হোয়াট?
আমি- এ্যা এ্যা এ্যা আমার প্লান নষ্ট। (কাঁদতে লাগলাম)
আরাভ- কি হলো? কাঁদছো কেনো? মাথায় প্রেসার দিও না।
আমি- ওই হালা একটজ মাথা ফাটছে। অনেক বড় কিছু হয় নি আর তুই কথা বলবি না।
আরাভ- চুপ কি শুরু করছো রাতের বেলা? (ধমক দিয়ে)
আমি- এ্যা এ্যা এ্যা (ধমক খেয়ে কান্নার সাউন্ড বেড়ে গেছে)
আরাভ- এই কাঁদছো কেনো?
আমি- কিছু না এ্যা এ্যা এ্যা। (কেঁদেই যাচ্ছি)
.
আরাভ আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো আর জিজ্ঞেস করতে লাগলো “কি হয়েছে আসলে?” কিন্তু আমি কোনো জবাব দিচ্ছিলাম না। কারণ আমার কান্না পাচ্ছিলো খুব। কারণ আমি যা করতে চাচ্ছিলাম তা আর হবে না। আমি এবার ওকে জড়িয়ে ধরলাম। আরাভ কিছুটা চিন্তিত হয়ে গেলো। কারণ এমন করে হঠাৎ কেনো কাঁদছি আমি এটা সে জানে না। কিন্তু ওর একটু রাগ উঠছিলো আমার উপর। কিন্তু এভাবে ওকে জড়িয়ে ধরায় ওর রাগ কমে গেলো।
আরাভ- ওই পাগলি কি হয়েছে?
আমি- আপনি ভালো না।
আরাভ- হুমমম ভালো না এবার বলো।
আমি- না কেনো হবে না? উহু। আমি আর পারবো না।
আরাভ- কি হলো?
আমি- সব দোষ আপনার। আমার মাথা ফাটাইছেন তাই আমার মাথা গেছে গা এ্যা এ্যা এ্যা।
আরাভ- হইছে টা কি?
আমি- কাল রাতে…
আরাভ- রাতে কি?
আমি- আপনাকে লাভ ইউ টু বলে ফেলছি আমি আবেগে।
আরাভ- (ভ্রূ কুচকে) তো কি হইছে? অন্য কাউকে বলবা নাকি?
আমি- না কিন্তু…
আরাভ- তো কি তোমার স্বামীকেই তো বলছো। এমনি সময় তো আমাকে বলো আমার স্বামী আমার স্বামী।
আমি- কিন্তু আপনাকে আলাদা ভাবে বলার ইচ্ছা ছিলো। কিছুটা স্পেশাল ভাবে।
আরাভ- হায়রে এই জন্য এতো কান্না?
আমি- তা কি?
আরাভ- হাহাহা।
আমি- ওই ভিলেন তোর দাত ভাঙ্গে দিবো।
আরাভ- কি বললা? (কিছুটা গম্ভীর লুকে)
আমি- আমার সব ইচ্ছা শেষ। দূরররর ঘুমাবো আমি। গুড নাইট।
আরাভ- হুম যাও যাও।
আমি- হুহ।
.
এই বলে আমি শুয়ে পড়লাম। আরাভ কিছুসময় ওভাবেই বসে ছিলো। ভালো করেই বুঝছি আমি হেতে লাগ কলছে সরি রাগ করছে। আজকাল মাথা ফাটার কারণে এতো ভুল বকি কে জানে? কিছুসময় পর আরাভও শুয়ে পড়লো। কিন্তু আমাকে জড়িয়ে ধরে। আমি অবাক ও রাগ কিভাবে কন্ট্রোল করে নিলো। আমি এবার ভাব নিতে হাতটা ছাড়িয়ে নিলাম। আরাভ আবার জড়িয়ে ধরলো। আমি আবার ছাড়িয়ে নিলাম কারণ ওর জন্য আমার প্লান নষ্ট।
আরাভ এবার আমাকে টান দিয়ে ওর দিকে ঘুরিয়ে নিলো।
আমি- কি প্রবলেম আপনার?
আরাভ- কি প্রবলেম মানে। আমার বউকে আমি জড়িয়ে ধরবো।
আমি- না ধরবেন না। আপনার জন্য আমার প্লান নষ্ট।
আরাভ- আরে ইয়ার প্রপোজ তো আমাকেই করতা তাই না? তো আমাকেই তো বলছো।
আমি- আমি স্পেশাল ভাবে করতাম।
আরাভ- ওই তুমি যেভাবেই বলবা সেটাই আমার কাছে স্পেশাল।
আমি- না আমি স্পেশাল ভাবে করবো।
আরাভ- তা আমি এখন কি করবো?
আমি- রুম থেকে বের হন।
আরাভ- মানে?
আমি- ওকে। কাল স্পেশাল সারপ্রাইজ আছে আপনার জন্য। টাকা দেন তো।
আরাভ- এতো রাতে?
আমি- হুমমম হুমমম দেন।
আরাভ- আমার টাকায় আমাকেই প্রপোজ?
আমি- দিবি কি না বল?
আরাভ- আবার তুই?
আমি- দে বলছি।
আরাভ- ওই মাথা ফাটার পর কি তোমার মাথা গেছে নাকি?
আমি- হুমম দে।
.
অগত্যা মাঝরাতে আমি আরাভের কাছ থেকে টাকা নিলাম মাঝরাতে। টাকা পাওয়ার পর সেই হাসি মুখে ঘুমিয়ে পড়লাম। কিন্তু আরাভ ঠিকই বলতেছে। মাথা ফাটার পর আমার মাথা গেছে। যাই হোক কালকে মেলা কাম। ঘুমায় নেই।
সকালে….
মাথা ফাটার কারণে সবাই খালি কেয়ার নিচ্ছে আমার। মিমি সহ সব ফ্রেন্ডরা কল দিচ্ছে। আহা অন্য সময় খোঁজ নাই এসব পেত্নীগুলোর। কয়েকটা বড় আপু ভাইয়ারাও খোঁজ নিলো। কিন্তু আমার তো প্লান অন্য। কি করবো না করবো সব আভাকে বললাম। আভা শুনে তো সেই ইম্পরেস হলো। ও নাকি আমার সাহায্য করবে। আমিও রাজি হয়ে গেলাম। কারণ মিমি আজ একটু ব্যস্ত আর আমার সাহায্য লাগবেই। মানুষ যে স্বার্থপর তা আমি ভালোই বুঝি। আভা সাহায্য করছে কারণ ফিউচারে কখনো তার সাহায্য লাগলে করতে হবে।
.
আরাভকে আজ রাতের আগে বাড়ি ঢুকতে মানা করছি। কিন্তু ও আসতে ধরছিলো একবার। দরজা থেকেই ফিরিয়ে দিছি। আমাদের টিমে মা আছে। তাই মা খাবারের দায়িত্ব নিয়েছে। আমি আর আভা ছাদের ঘরটা সাজাচ্ছি। সেটাকে ঘর বললে ভুল হবে টেবিল আছে, চেয়ারও আছে সব সিমেন্টের। উপর দিয়ে গোলাকার ছাউনি। কালার ল্যাম্প আনে লাগালাম। টেবিলের উপর ফুলও রাখলাম। নেটও লাগালাম। অনেকগুলো মোমবাতি আনলাম। সব রেডি করলাম ওর জন্য। মাথায় ব্যান্ডেজটা ছোট করে নিলাম আর চুল দিয়ে ঢেকে নিলাম। আমি মিষ্টি কালারের একটা শাড়ি পড়লাম। সেই সাথে ম্যাচড জুয়েলারি। আভা আমাকে পুরো সাহায্য করলো। কাজল পড়ে নিলাম।
.
রাতে আরাভ এলো। সেই আশা নিয়ে ঘরে গেলো। দেখে ঘর অন্ধকার। আমি কোথাও নাই। আরাভকে দেখে আভা মুচকি হাসতে লাগলো।
আরাভ- তোর ভাবি কই?
আভা- বলবো কিন্তু কি দিবি বললে?
আরাভ- বিয়ে দিবো তোর।
আভা- ভাইয়া ভালো হচ্ছে না কিন্তু।
আরাভ- বল তো।
আভা- ৫০০ টাকা দে।
আরাভ- নাহ।
আভা- ওকে খুঁজতে থাক।
আরাভ- এই নে।
আভা- ছাদে যা।
আরাভ তাড়াতাড়ি ছাদে চলে গেলো। ছাদে গিয়ে দেখে শুধুই চাঁদের আলো পড়ছে। আর সামনে একজন দাড়িয়ে আছে। চুলগুলো হাওয়ায় উড়ছে। আরাভ দেখার অপেক্ষা করছে। আরাভ আমার দিকে এগিয়ে আসতেই আমি পিছনে ঘুরলাম আমার হাতে মোমবাতি ছিলো। আমাকে দেখে আরাভ চমকে উঠলো। কারণ আমার মুখে মাস্ক ছিলো ভুতের মাস্ক। যা পড়ার পর নিজেকে দেখামাত্র আমি নিজেই ভয় পাইছি। ছাদেও ভয় লাগছিলো। কিন্তু শান্ত ছিলাম। কারণ কোনো ভুত যদি আমাকে দেখে ভাববে আমিও তারই মতো হিহিহি। আমি একটা কালো চাদর দিয়ে নিজেকে ঢেকে রাখছিলাম। আরাভ কিছুটা চমকে পিছনে গিয়ে দাড়ায়।
আরাভ- কে?
আমি- হিহিহি।
আরাভ- আনহা তুমি? হায় রে এভাবে কেউ বরকে ভয় দেখায়?
আমি- আপনি নাকি সাহসী?
আরাভ- এভাবে হঠাৎ যে কেউ ভয় পাবে তুমি কি জানো?
আমি- হিহিহি। কেমন স্টাইল এর প্রপোজ মি.। আই লাভ ইউ।
আরাভ- আজব প্রপোজ। নট এক্সেপ্টেড।
আমি- ওহ। আমি গেলাম।
আরাভ- আরে কই যাও? মাস্ক খুলো তারপর।
.
আমি তাড়াতাড়ি মাস্ক আর চাদরটা খুলে ফেললাম। আরাভ এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। চুল বাতাসে কিছুটা এলোমেলো হয়ে আসছে। মোমের আলো আর চাদের আলোয় এক নতুন আমিকে দেখছে আরাভ। নিজের অজান্তেই আরাভ আমার দিকে এগিয়ে এসে চুলগুলো ঠিক করে দিলো।
.
চলবে……

Angry_Husband Season_2_Part_14

0
Angry_Husband Season_2_Part_14
Angry_Husband Season_2_Part_14

Angry_Husband
Season_2_Part_14
Written by Avantika Anha
সকালে ঘর থেকে বের হওয়ার পর মা ও আভা জিজ্ঞেস করতে লাগলো মাথা ব্যাথা কমেছে কি না? তাদের এই কথা শুনে আমি ভাবতে লাগলাম আমার মাথা ব্যাথা আবার কখন হলো। হঠাৎ করে মাথায় এলো এটা নিশ্চয়ই আরাভ মিথ্যে বলছে। হয়তো নিজের দোষ ঢাকতে। নিজের স্বামীকে বাঁচানো আমারো দায়িত্ব তাই আমিও আর কিছু বললাম না।
আভা- কি ভাবি চুপচাপ দাড়িয়ে আছো যে?
আমি- না কিছুনা।
আভা- ঘুরলা তো বেশ এখন বলো আমাদের পরিবারে ছোট সদস্য কবে আসছে?
আমি- আভা তুমি কিন্তু বেশি দুষ্ট হয়ে গেছো।
আভা- তোমার কাছেই তো শিখছি এসব।
আমি- তাই নাকি?
আভা- হুম তো।
আমি- ভাবতেছি আভামনি বড় হয়ে গেছে বিয়ে দেওয়া উচিত।
আভা- ধ্যাত ভাবি কি বলো। (কিছুটা লজ্জা পেলো)
আমি- ঠিকই তো দাড়াও তোমার মা আর ভাইয়াকে বলি।
আভা- ভাবি ভালো হচ্ছে না কিন্তু।
আমি- বাবু আমিও পারি।
আভা- একটু বেশিই পারো।
আমি- তাই তো।
আভা- হানিমুনে কি কি করলা কাল তো ভালো করে শুনলামই না।
আমি- পরে বলবো নে।
আভা- তোমার গলাটা বসা বসা লাগছে। জ্বর এলো নাকি দেখি। (হাত কপালে রেখে দেখে কপাল কিছুটা গরম)
-ভাবি তোমার জ্বর তো।
আমি- ও কিছু না।
আভা- কিছু না মানে ? কিভাবে হলো?
আমি- ওইতো ঠান্ডা লাগছিলো আরকি।
আভা- কখন থেকে জ্বর?
আমি- সকাল থেকে।
আভা- আচ্ছা ওষুধ খাও ভাবি। আমি মাকে বলছি।
আমি- আরে বাদ দেও।
আভা- উহু।
.
আভা চলে গেলো। আমি পিছন দিকে ঘুরে দেখি আরাভ দাড়িয়ে। তারমানে ও আমার আর আভার কথা গুলো শুনছিলো।
আরাভ- ওকে বললে না যে কি হয়েছে আসলে?
আমি- উমমম আমার স্বামীকে কেউ খারাপ বলুক আমি তা চাই না।
আরাভ- বাহ আমার বউ দেখি আজকাল বুদ্ধিমতি হয়ে গেছে।
আমি- শুনুন ফ্রিতে ছাড়ছি না তো এর পরিবর্তে আমাকে গিফ্ট দিতে হবে।
আরাভ- যেমন কি তেমনি আছো দূরররর।
আমি- হিহিহি।
আরাভ- পারবো না।
আমি- মাকে বলবো?
আরাভ- না।
আমি- তো দিবেন কি না?
আরাভ- ওকে কি নিবা?
আমি- একজোড়া নুপুর।
আরাভ- বিকালেই পেয়ে যাবা।
আমি- প্রমিস ?
আরাভ- আচ্ছা।
.
সেদিন বিকেলে আমি আরাভের অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু আরাভ ফিরে নি। প্রায় রাতের দিকে আরাভ ফিরলো। কিন্তু তার চোখ মুখ দেখে বুঝছিলাম না ও এমন কেনো লাগছে যেনো ও চিন্তিত। ওকে চিন্তিত দেখে আমি এগিয়ে গেলাম শুনতে…
আমি- কি হইছে আপনার?
আরাভ- কিছু না। যাও এখান থেকে
আমি- এতো দেরি হলো যে? আর আমার নুপুর কই?
আরাভ- যেতে বললাম না এখান থেকে। এখনি বেড়িয়ে যাও ঘর থেকে।
আমি- আপনি এভাবে কথা বলছেন কেনো? কি হয়েছে আমাকে বলুন?
আরাভ কিছু বলার সুযোগ দিলো না। আমাকে জোড়ে ধাক্কা দিলো। পিছনে টেবিল ছিলো আরাভ লক্ষ্য করে নি আর আরাভের ধাক্কাটা একটু বেশিই জোড়ে ছিলো। তা সহ্য করতে না পেরেই আমি পড়ে যাই নিচে। আঘাত পেয়ে যাই মাথায় হাত দিয়ে দেখি রক্ত। মাথাটায় ঝিম ধরে উঠে আর আমি হুশ হারিয়ে ফেলি। আরাভ প্রচন্ড রাগে ছিলো কারণ রাস্তায় জান্নাতের সাথে ওর দেখা হয়েছিলো আর জান্নাত ওকে একটা ছবি দেখায় যেগুলোতে আরাভ আর ও নগ্ন অবস্থায় ছিলো। কিন্তু ছবিগুলো যে মিথ্যে তা আরাভও জানে জান্নাতও। জান্নাত এখন ওর আর আমার সম্পর্ক ভাঙ্গার জন্য এমন করতে চলেছে। এ নিয়েই চিন্তায় ছিলো আরাভ। কারণ ও কোনো মতেই আমাকে হারাতে চায় না। আরাভ আমার দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে যায় কারণ আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। আরাভ তাড়াতাড়ি আমাকে কোলে তুলে হসপিতালের ওদিক রওয়ানা হলো। সাথে মা আর আভাও। সেই সময় বাবা(আরাভের আব্বু) বাড়িতে ছিলো না। মা বারবার আরাভকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো কিভাবে এমনটা হলো? আরাভ জবাব না দিলেও বাকীরা ঠিকই বুঝেছে আরাভই আমাকে ধাক্কা দিয়েছে। কারণ আরাভের রাগ সবাই জানে।
কিছু সময় পর আমার জ্ঞান ফিরে আসলো। আমার মাথায় হাত দিয়ে দেখি ব্যান্ডেজ করা। মনে পড়লো সবকিছু। কিন্তু আরাভ আমার সাথে এমন করার মানুষ না। ওর রাগ আছে আমিও জানি কিন্তু এমন না। আমাকে জানতেই হবে কি হইছে?
আমি তাকিয়ে দেখি আরাভের চোখে পানি। মায়ের চোখেও। সবার চোখে চিন্তা স্পষ্ট। নিজের মনের প্রতি তৃপ্তি আসছে। কারণ তারা যে আমাকে কতোটা ভালোবাসে আমি বুঝতেছি। সেদিনই আমি বাড়ি ফিরে এলাম। বাড়ি ফিরার পর আরাভ আমার চোখে চোখ রাখছে না। বরং কাজ করার নামে আমার কাছে থেকে দূরে থাকছে। আমি ওকে ডাকলাম….
আমি- ওই মি. রাগকুমার।
আরাভ- হুমমম বলো কি লাগবে?
আমি- কি হয়েছে? চিন্তিত কেন? আর সেই সময় এমন করলে কেনো?
আরাভ- কিছু হয় নি। অফিসের কাজ নিয়ে।
আমি- সত্যি বলো কি হয়েছে তোমাকে আমার কসম।
আরাভ- তোমাকে আমার একটা কাজিনের কথা বলছিলাম মনে আছে?
আমি- হুমমম।
আরাভ- ও আমার আর ওর বাজে ছবি ইডিট করে বানাইছে। তোমাকে দিবে বলে।
আমি- ওটা কি এগুলো? (কিছু ছবি দেখিয়ে যেগুলো আরাভকে জান্নাত দিয়েছিলো। ওটা সকালেই আমার ফোনে এসেছিলো। কিন্তু আমি আরাভকে বলি নি। কারণ আমি জানি আরাভ এমন কিছু করবে না।)
আরাভ- তোমাকে আগেই দিয়েছে?
আমি- হুমমম সকালেই দিছে।
আরাভ- তুমি আমাকে বললে না যে? বিশ্বাস করো এগুলো মিথ্যে।
আমি- মি. রাগকুমারের উপর আমার ভরসা আছে বুঝলেন। জান্নাত কেও বলছি যে এসব দিয়া লাভ নাই।
আরাভ- ও কি বললো?
আমি- ও বললো ওর সব তুমি নিয়ে নিছো। ওর ইজ্জত আমার হাতে। আমি বলছি। আরাভ এমন কিছু করবে না।
আরাভ- তারপর।
আমি- ও বললো ও যদি প্রেগনেন্ট হয় তাহলে কি হবে? এই আরকি।
আরাভ- তুমি কি বললে?
আমি- ইয়ে মানে…
আরাভ- বলো।
আমি- আমি বলছি আমি প্রেগনেন্ট আপনার বাচ্চার আর আমাদের জীবন থেকে চলে যাক। এইটা বলে কাটে দিছি।
আরাভ- কিইইই (চোখ বড় করে)
আমি- তা এতো সহজে আপনাকে ছাড়বো না আমি।
আরাভ- আই লাভ ইউ পাগলি। সত্যি তুমি মাঝে মাঝে অসাধারণ জিনিস করো।
আমি- আই লাভ ইউ টু। (আরাভ আমাকে জড়িয়ে ধরলো)
আরাভ- তা ভাবছি তোমার বলা কথাটা সত্যি করে দেই।
আমি- কোনটা?
আরাভ- ওই যে বাচ্চা।
আমি- চুপ শয়তান।
আরাভ- শয়তানির কি দেখছো ম্যাডাম। দেখাবো নাকি।
আমি- না আমি ঘুমাবো। এমনি মাথা ফাটছে। ব্যাথা। (কথাটা শুনে আরাভের মুখ কালো হয়ে গেলো)
আরাভ- সরি আমার জন্য তোমার এই অবস্থা।
আমি- আরে বাদ দেন। আমার সব আপনার। সেই সাথে আপনার সবকিছুই আমার। সো নিজেকে আঘাত করার অধিকার আপনার আছে।
আরাভ- থেংকু ফর বিং উইথ মি।
আমি- ওয়েলকাম। কিন্তু আমি আমার নুপুর পাই নি।
আরাভ- সরি। কাল আনবো।
আমি- উকে। সাথে কিটক্যাটও। মাথা ফাটাইছেন যেমন তেমন শাস্তি।
আরাভ- ওকে ঘুমাও। কাল পেয়ে যাবে।
আমি- উকে।
.
চলবে…..

Angry_Husband Season_2_Part_13

0
Angry_Husband Season_2_Part_13
Angry_Husband Season_2_Part_13

Angry_Husband
Season_2___Part_13
Written by Avantika Anha
বাড়িতে পৌঁছাইতেই সবাই গল্প শুরু করে দিলো। এর মাঝে আমার আর আরাভের একান্তে কোনো কথা হলো না। আমি নিজেই লজ্জা পাচ্ছিলাম। আমি ফ্রেশ হতে বাথরুমে ঢুকেছিলাম। ভালো করে দেখে আরাভ রুমে আছে কি না? তারপর ঢুকি কিন্তু বের হয়ে দেখি আরাভ বাইরে বাথরুমের দরজার দিকেই তাকিয়ে আছে। আমি দরজা খুলার সাথে সাথে ও আমাকে দেখে ফেলে। ওর ঠোঁটের কোণায় শয়তানি হাসি ফুটে ওঠে। আমি লজ্জায় তাড়াতাড়ি করে দরজা লাগায় দেই। আমি ভালো করেই জানি এটা দেখে আরাভের প্রচন্ড রাগ উঠে গেছে। এই কয়েকমাসে ওকে অনেকটাই চিনে গেছি। কিন্তু আমার আবার ওকে রাগাইতে সেই লাগে। কিছু সময় পর আবার দরজা খুলে দেখি আরাভ ওখানেই বসে আছে। ওর মুখটা পুরাই লাল। একদম টমেটোর মতো হয়ে আছে। একবার ভাবলাম আবার দরজা লাগাবো। কিন্তু ও আরো রেগে যাবে। এই ভয়ে দরজা খুলে বের হলাম।
আরাভ- বের হলে কেনো ভিতরে যাও।
আমি- ওকে।
.
এই বলে আমি আবার বাথরুমে চলে গেলাম। দরজাটাও লাগিয়ে দিলাম।
প্রায় কিছু সময় পর আমি দরজা খুললাম আবার।
আরাভ- দরজা খুলছো কেন আবার লাগাও।
আমি- আর কতো সময় থাকবো?
আরাভ- পুরো দিন।
আমি- না।
আরাভ- ঢুকবা নাকি আমি যাবো ওখানে।
আমি- ওকে ওকে। এতো শাস্তি দূররররর।
আরাভ- যা বলছি করো।
আমি- কি করবো আমি ওখানে এতো?
আরাভ- গোসল করো। বসে থাকো। গোসলেই তো প্রথমে ঢুকছিলা।
আমি- তাই বলে বারবার গোসল করবো?
আরাভ- জ্বী।
আমি- ভাই গিজার নষ্ট ঠান্ডা পানি।
আরাভ- যা বলছি করবা কি না? (ভাই বলার কারণে রেগে গেছি)
আমি- ওকে ফাইন। তাহলে ঢুকলাম। খুলতে বললেও আমি আপনার জন্য দরজা খুলবো না। বুঝিয়েন। আমি অসুস্থ হলে বুঝবেন।
আরাভ- যাস্ট বলবা নাকি করবাও?
আমি- ইনসাল্ট। ওকে। আই হেট ইউ।
আরাভ- যাবা কি না? (রাগ উঠে গেলো আরো বেশি)
.
আমি আর কিছু না বলেই বাথরুমে ঢুকে গেলাম। আমারো রাগ আছে। অনেকটাই। আরাভকে আজ আমি এটার প্রমাণ দিবোই। আমি ঝর্ণা ছেড়ে দিলাম। ঠান্ডা পানি ছিলো প্রচুর ঠান্ডা লাগছিলো। কিন্তু আমি জেদ করে ওর নিচে দাড়িয়ে আছি। সময় যেতে লাগলো। আমি সহ্য করতে দাড়িয়ে ছিলাম। ধীরে ধীরে প্রচুর ঠান্ডা লাগতে লাগলো। আমি দাঁতে দাঁত চেপে দাড়িয়ে আছি। এরকম করে প্রায় ঘন্টা খানেক দাড়িয়ে থাকতে থাকতে আর পারছিলাম না। তাই ওখানেই বসে পড়লাম।
.
এদিকে আরাভ ঘরে বসে ওর অফিসের কাজগুলো করছিলো। ওর প্রচুর রাগ হয়ে আছে আমার প্রতি। রাগ কমাতে কাজ করছিলো। প্রায় কাজ শেষ করে দেখে ২ ঘন্টা ১০ মিনিট পার হয়ে গেছে। ওর মনে একটু খটকা লাগলো আমি এখনো বের হচ্ছি না কেনো?
.
ওর বিশ্বাস ছিলো, আমার এতোটা সাহস নাই যে নিজের এতো ক্ষতি করতে পারবো। তবুও নিজের আকর্ষণটা দূর করতে ও দরজায় টোকা দিলো। আমি পানির শব্দের মাঝে আর এতো সময় ভিজার পরে উঠার শক্তি পাচ্ছিলাম না।
আরাভ- আনহা দরজা খুলো। হইছে যাও তোমার শাস্তি শেষ।
.
ভিতর থেকে জবাব দিতে পারছিলাম না।
আরাভ- হইছে আর নাটক করে বসে থাকতে হবে না।
.
হালকা শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। মুখ দিয়ে কোনো আওয়াজ বের হচ্ছিলো না।
আরাভ- ওই ঢং করছো কেন? আমাকে ভয় দেখানোর জন্য মজা করছো। কি ভাবো আমি বুঝি না।
.
আমি অনেক কষ্টে তাকে বলতে চাচ্ছিলাম যে আমি নাটক করছি না। কিন্তু অস্ফূত স্বর ছাড়া আর কিছু পারছিলাম না। আরাভ আমার কিছু অস্ফূত স্বর শুনতে পেলো। আরাভের ভয়ের মাত্রা বেড়ে গেলো। যে আরাভের মুখ রাগে লাল হতো, সে এখন ভয়ে লাল হচ্ছে। আরাভ তাড়াতাড়ি দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করলো। চেষ্টা করে ভাঙ্গে ফেললো। আরাভ দেখে আমি প্রায় আধশোয়া অবস্থায় রয়েছি। চোখটা হালকা খুলছি আবার বন্ধ করে ফেলছি। আরাভকে দেখে আমি আমার হাতটা কিছুটা তুলে হাত বাড়ালাম। কিছুটা উঠানোর পরে পড়ে গেলো।
.
আরাভ তাড়াতাড়ি আমাকে কোলে তুলে নিলো। ও ঘরের দরজা আগেই লাগিয়ে রেখেছিলো। কারণ সবাই জানে আরাভ রাগলে দরজা লাগায়। এর আগেও অনেক কয়েকবারই লাগিয়েছিলো। তাই কেউ আর বেশি সন্দেহ করলো না। আরাভ আমাকে বিছানায় শুঁয়ে দিলো। আমার জ্ঞান ছিলো কিন্তু আমি কোনো শক্তি পাচ্ছিলাম না।
.
আরাভ আমাকে বাইরেও নিয়ে যাইতে পারছিলো না। কারণ বাইরে সবাই আছে।আরাভ আমার ভিজা কাপড় পাল্টে দিলো তাড়াতাড়ি। আরাভ তাড়াতাড়ি তার এক বন্ধুকে ফোন দিলো, ফ্যামিলি ডক্তরকে ফোন দিলো না কারণ সে জানে তাকে জানাইলে পুরো পরিবার জেনে যাবে।
আরাভ- দোস্ত তোর ভাবি অনেকক্ষণ ধরে পানিতে ভিজতেছিলো। এখন প্রায় অজ্ঞান অবস্থা। তুই একটু কষ্ট করে বাড়ি আয়। কাউকে বলিস না। চুপচাপ চলে আয়।
রাফি- ওকে আমি আসতেছি। কিভাবে হলো?
আরাভ- আয় তারপর বলতেছি।
রাফি- ওকে।
.
রাফির বাড়ি কাছাকাছি হওয়ায় তাড়াতাড়ি চলে আসলো। রাফি ভালো করে আমার চেকআপ করলো।
আরাভ- কোনো সমস্যা হইছে নাকি?
রাফি- না ব্যাপার না। ঠান্ডায় অনেক ভিজেছে তাই এমন হইছে। কিন্তু এমন হলো কিভাবে?
আরাভ- আসলে রাগ করে আমি…. (সব বললো)
রাফি- তোর রাগ একটু কমা রে।
আরাভ- হুমম কমাতে হবে। আমি জানতাম নাকি ও নিজে জেদ করবে। আমি তো যাস্ট রাগে..
রাফি- থাম থাম। আমাকে বোঝাইতে হবে না। আমি জানি তোর রাগ কতো।
আরাভ- হুমমম।
রাফি- আমার কাজ আছে। শুন মেডিসিন গুলো দিচ্ছি খাইয়ে দিস। আর ভাবির কিন্তু জ্বর আসার সম্ভাবনা আছে।
আরাভ- আচ্ছা আমি খাইয়ে দিবো।
রাফি- যতো পারিস গরম রাখার চেষ্টা করবি। যেহরতু তোরা কাপল আমার মনে হয় না প্রব্লেম হবে।
আরাভ- ওকে।
.
রাফি আসার সময় মা দেখেছিলো।
মা- কিরে বাবা হঠাৎ এলে যে?
রাফি- ওইতো অনেকদিন আরাভের সাথে দেখা হয় নি তো তাই এসেছিলাম।
মা- এখনি যাচ্ছো কেনো?
রাফি- জরুরী কাজ পড়ে গেছে আন্টি। যেতেই হবে।
মা- কিছু খেয়ে তো যাও।
রাফি- আবার আসবো তখন খাবো।
মা- খালি বলো আসো তো না।
রাফি- এবার আসবো।
মা- আচ্ছা।
.
রাফি যাওয়ার পর আরাভের মা আরাভের ঘরে গেলো। গিয়ে দেখে দরজা লাগা। আরাভের মা ভালো করেই বুঝেছে কেনো লাগা। তাই সে আরাভকে ডাক দিলো।
মা- আরাভ।
আরাভ- কি মা?
মা- বউমাকে বেশি বকিস না। রাগ করছিস বুঝি?
আরাভ- হুমম।
মা- ও কই?
আরাভ- বাথরুমে।
মা- ও খায় নি কিছু নাস্তা খাবে না? ওকে জিজ্ঞেস কর।
আরাভ- ঘরে খাবে। এতো লং জার্নি করে ওর মাথা ব্যাথা।
মা- ওহো। আচ্ছা তুই নিয়ে যা খাবার।
আরাভ- আচ্ছা।
.
আরাভ তাড়াতাড়ি নাস্তা এনে পাশে রেখে আমার পাশে বসলো। আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আরাভ আমার মাথায় হাত বুলালো। তারপর কপালে একটা ঠোঁটের ছোঁয়া বসিয়ে দিলো। রাতের দিকে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
আমি তাকিয়ে দেখি আরাভ পাশেই চোখ বুজে হেলান দিয়ে হালকা শুয়ে আছে। উঠতে চেষ্টা করে বুঝলাম আমার হাত পা গুলো ব্যাথা করছে। সাধারণত জ্বর হলে আমার এমন হয়। কিছুক্ষণে কি কি হয়েছে মনে করার চেষ্টা করতেই মনে পড়ে গেলো সব। আমার হাসি পেলো। কিন্তু ঘুম ভাঙ্গে গেলেও কিছুটা ঘোরে ছিলাম। কারণ আমি জানি আরাভের চিন্তায় বারোটা বাজে গেছিলো নিশ্চয়ই।
.
আমি উঠে বসতেই আরাভের হালকা ঘুম ভেঙ্গে গেলো। কিছু সময় আরাভ আর আমি একে অপরের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। কেউ কিছু বলছিলাম না। হঠাৎ করে আরাভ আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
আমি- কিচ্চে রাগ কমছে?
আরাভ- চুপ করো।
আমি- ওকে আমি চুপই আছি।
আরাভ- কে বলছে এতক্ষণ পানির নিচে থাকতে?
আমি- আপনিই তো বললেন।
আরাভ- তাই বলে এতো সময়?
আমি- আমার কি দোষ?
আরাভ- জানো আমি কতো ভয় পাইছিলাম।
আমি- হিহি।
আরাভ- হাসবা না। দাড়াও আমি খাইয়ে দেই। ওষুধও আছে খেয়ে নেও।
আমি- না তিতা।
আরাভ- খাবা কি না?
আমি- পঁচা।
আরাভ- মুখ খোলো।
আমি- আপনি খান।
আরাভ- চুপচাপ খাবা কি না? (কিছুটা জোড়ে)
আমি- খাচ্ছি খাচ্ছি। খালি রাগ দেখায়।
আরাভ- খাও।
.
ওষুধ খেয়ে নিলাম। রাতে ঘুমানোর আগে আরাভের হেল্প নিয়ে আমি ফ্রেশ হয়ে নিলাম। কিন্তু ঘুম আসছিলো না। রাত বাড়তে শুরু করছিলো সেই সাথে আমার মনে হচ্ছিলো আমি কোনো এক ঘোরের মাঝে এগিয়ে যাচ্ছি। আরাভ আমার পাশেই শুয়েছিলো। আমার খুব ঠান্ডা লাগছিলো। যদিও গায়ে লেপ ছিলো। আমি আরাভের দিকে এগিয়ে গেলাম। আমার স্পর্শ ওর গায়ে পড়তেই ও বুঝে গেলো আমার জ্বর বেড়ে গেছে। ও তাড়াতাড়ি আমার মাথায় জলপট্টি দিতে লাগলো।
.
আমি- আরাভ তুমি একদম ভালোনা।
আরাভ শকড হয়ে গেলো। কারণ ওকে আমি কখনো তুমি বলি নি। কিন্তু আমি যে ঘোরের মধ্যে কথা বলছি ও ভালো করেই বুঝে গেলো। আমার কথা গুলো একে ওপরের সাথে বেঁধে বেঁধে আসছিলো।
আরাভ- আমি কি করছি?
আমি- তুমি খালি বকো আমাকে একটুও ভালো না।
আরাভ- তুমি আমাকে রাগাও কেনো?
.
আমি জবাব দিলাম না। আরাভ আবার জিজ্ঞেস করলো…
আরাভ- বলো।
আমি- তোমাজে রাগলে কিউট লাগে ইচ্ছা করে কিসসি দেই।
আরাভ- তাই?
আমি- কিন্তু তুমি ভালো না।
আরাভ- জানি।
আমি- আয়াভ আসলে দেখিও আমি আর ও তোমাকে মারবো অনেক।
আরাভ- আয়াভ কে?
আমি- আমাদের বাবু।
আরাভ- নামও ঠিক?
আমি- হিহি হুমম কিন্তু আমি নাম বলবো না।
আরাভ- আচ্ছা।
আমি- আমার ঠান্ডা লাগছে। একটু জড়িয়ে ধরো তো।
আরাভ- আসো।
.
আরাভ আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমি যে ঘোরে কি বলছি আমার মাথায় ছিলো না। আরাভের এবার খুব হাসি পাচ্ছিলো। আমার এমন কথা শুনে। সকালে….
আমার জ্বরের পরিমাণ কিছুটা কম লাগছিলো।
আরাভ- গুড মর্নিং ম্যাডাম।
আমি- হুম। আমার কি হইছে?
আরাভ- জানো না?
আমি- ও জ্বর মনে হয়।
আরাভ- হুমম। জ্বরের ঘোরে কাল কি সব করলে।
আমি- কি আমি কি করলাম?
আরাভ- আমার তো লজ্জা করছে বলতে।
আমি- কি আমি উল্টা পাল্টা কিছু করছি?
আরাভ- হুমম।
আমি- সত্যি?
আরাভ- হুমমম।
আমি- কি করছি?
আরাভ- আমার কাছে আসলা তারপর..
আমি- তারপর কি?
আরাভ- লজ্জা লাগে।
আমি- এ্যা এ্যা এ্যা (কাঁদতে লাগলাম)
আরাভ- আরে কেঁদো না। কিছু করো নি খালি জড়িয়ে ধরছো। আর কিছু উল্টা পাল্টা বকছো।
আমি- সত্যি?
আরাভ- হুমমম।
.
আমি উঠে দাড়ানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু তাকিয়ে দেখি আমার গায়ের কাপড়টা ভিন্ন।
আমি- কাপড় কে পাল্টাইছে?
আরাভ- আমি কেনো?
আমি- কিহ?
আরাভ- হুম তো কি?
আমি- আপনি আমার সব দেখছেন?
আরাভ- হুমমম।
আমি- আমার ইজ্জত গেলো গা আম্মুউউউউ।
আরাভ- আমি তোমার স্বামী।
আমি- ওহো ভুলে গেছিলাম। তাহলে সমস্যা নাই।
আরাভ- কিন্তু আমি সব দেখছি।
আমি- ইইইইইই
.
আমি তাড়াতাড়ি ওখান থেকে পালালাম লজ্জায়।
.
চলবে….

Angry_Husband Season_2___Part_12

0

Angry_Husband
Season_2___Part_12
Written by Avantika Anha
আরাভ- আমাকে আনরোমান্টিক বলো আর নিজে কি?
আমি- আমি তো রোমান্টিক মেলা।
আরাভ- হাহা দেখাই যায়।
আমি- কি বললেন?
আরাভ- বাচ্চা বাচ্চা ব্যবহার সবসময় আর আসছে রোমান্টিক বলে।
আমি- কি কইলেন?
আরাভ- শুনতে পাও না। আজকাল ঠসা হয়েও গেছো নাকি?
আমি- ইনসাল্ট এতো বড় ইনসাল্ট আমি এখানে থাকবোই না। আমি গেলাম।
.
এই বলে আমি‌ ওখান থেকে চলে যাচ্ছিলাম। পিছনে একবার ঘুরে দেখি আরাভ আমার দিকে তাকায় হাসতেছে। ওর এই শয়তানি হাসি দেখলে আমার প্রচুর রাগ পায়। ওয় আমাকে কথা শুনায় হুহ।আমি আসছি নাকি ও আনছে আমাকে, এখন আবার আমাকে কথাও শুনায়। এই জন্য আমাকে আনছে। ঢং সব। আমারে রাগ দেখায় খালি। এখন আবার মজাও নেয়। মজা তো মজা আবার ইনসাল্টও করে আমার। এই মূল্য আমার।
.
এই সব আস্তে আস্তে বলতে বলতে আমি রুমে চলে গেলাম। রুমে ঢুকেই দরজা লাগায় দিলাম। আর নিজেকে বলতে লাগলাম, “হুহ এবার বুঝুক মজা।” এই বলে আমি কানে ইয়ারফোন লাগায় গান শুনতে শুনতে ঘুমায় গেলাম। কিছু সময় পরে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো কে জানি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। “কিন্তু আমি তো দরজা লাগায় দিছিলাম ঢুকলো কেমনে?” এই প্রশ্ন আমার মাথার মাঝে ঘুরতেছিলো। আমার আবার মাথায় কোনো প্রশ্ন থাকলে ওটার উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত ঘুম আসে না। আরাভকে তাই ডাক দিলাম। ভেবেছিলাম ও ঘুমিয়ে আছে কিন্তু পরে দেখি ও জেগে আছে।
.
আমি- ওই আপনি আমাকে ধরে আছেন কেনো? আর আপনি রুমে ঢুকলেন কেমনে? আর এখানে কেমনে?
আরাভ- বাহ এতো প্রশ্ন।
আমি- ওই হেয়ালি না করে জবাব দেন আপনি এখানে কেমনে?
আরাভ- ম্যাডাম রুমের এক্সট্রা চাবি সবসময় থাকে হোটেল স্টাফদের কাছে। তা মাথায় এতো বুদ্ধি এই ছোট জিনিসটা আসে নি?
আমি- উউউউউউহু আপনি সরেন এখান থেকে। বাজে মানুষ কোথাকার।
আরাভ- কি বললা?
আমি- বাজে মানুষ বলছি আপনাকে হুহ।
আরাভ- আরেকবার বলো।
আমি- আমাকে ঠসা বলছেন না। নিজে কি? কয়বার বলবো বাজে বাজে বাজে।
.
আরাভ আমাকে আরো শক্ত করে চিপে ধরলো।
আমি- আম্মুউউউউউ।
আরাভ- এবার বলো।
আমি- ছাড়েন ভাই। (লাগছিলো)
আরাভ- ও আমি তোমার ভাই?
আমি- একদম না আপনি তো আমার রাক্ষস সরি সরি হাজবেন্ড। জানু, মনু, সনু আপনি আমার।
আরাভ- চালাকি?
আমি- একদম না। আপনি মেলা ভালো। আপনাকে‌ একটা গিফ্টও দিমু নে। চকলেট নাকি আইসক্রিম কি নিবেন কন কন।
আরাভ- ডিলটা ভালো। মিষ্টি জাতীয় অন্য কিছু খাবো।
আমি- মানে?
আরাভ- ইউ উইল কিস মি।
আমি- হাতটা দেন।
আরাভ- কেন?
আমি- আরে দেন তো।
.
আরাভ হাত এগিয়ে দিলো আমি ওর হাতে কিস করলাম।
আরাভ- চালাক আছো কিন্তু আজ আমি ছাড়বো না। হানিমুনে আসছি একটা কিস তো নিবোই।
আমি- দিছি তো ভাই।
আরাভ- আবার ভাই। আগে এমনিতে হলেও মাফ করতাম আজ আর মাফ নাই।
আমি- দিমু না।
আরাভ- যদি না দেও আমি এর চেয়ে বেশি কিছু করবো। লাস্ট নাইট মুড অফ করতে চাচ্ছি না। আনহা ডু হোয়াট আই সে।
আমি- বান্দর আমি কিস করতে পারি না। হইছে?
আরাভ- দূরররর। ও ওকে তুমি পারবা না তো কি? আমি তো পারবো।
আমি- ও নো।
আরাভ- বি রেডি বেবি।
.
এই বলে আরাভের লিপ আমার দিকে এগুতে লাগলো। এদিকে আমার হার্টের ধুকধুকানি বেড়ে যাচ্ছিলো। প্রচুর ভয় লাগছিলো। আমার ভয়ে বারোটা বাজে যাচ্ছিলো। আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। কিছু সময় পর মনে হলো পরাভ আমাকে ছেড়ে দিলো। তবুও আমি চোখ বন্ধ করেই রাখলাম খুললাম না আর।
আরাভ- ম্যাডাম চোখ খুলুন।
আমি- ও হয়ে গেলো। আমি বুঝলামই না মানুষ ঠিকই তো বলে তাইলে কখন হয় বোঝাই যায় না।
আরাভ- কি বললা?
আমি- কেনো ?
আরাভ- কে বলছে তোমাকে এসব?
আমি- আমি এক মেয়ের কাছে শুনছিলাম। আই মিন পাশে দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন শুনেছিলাম।
আরাভ- এসব মেয়ের সাথে মিশো নাকি?
আমি- একদম না। আমি তো ভালো মেয়ে।
আরাভ- কেমন ভালো মেয়ে বুঝি। আর ভয় পেতে হবে না। তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমি কিছু করবো না।
আমি- ওয়াও আপনি তো তাইলে ভালো পোলা।
আরাভ- হাহা ওকে।
.
এই বলে আরাভ ওখান থেকে উঠে বেলকোনিতে চলে গেলো। ওর মুখ দেখে মনে হলো ও কিছুটা মাইন্ড করছে। কিন্তু কেনো তা বুঝলাম না। আমি উঠে গিয়ে ওর পাশে দাড়ালাম।
আমি- চাঁদটা খুব সুন্দর লাগছে তাই না?
আরাভ- হুমম।
আমি- আজকের রাতটা জেগেই পার করি?
আরাভ- হাহা ওকে।
আমি- মি. আরাভ।
আরাভ- হুম।
আমি- আপনার কাধে মাথা রেখে আপনার হাতটা ধরি?
আরাভ- এর আগেও রেখেছিলে জিজ্ঞেস করছো কখনো?
আমি- না মানে তাও।
আরাভ- আচ্ছা আমি কি তোমাকে সবকিছুতে বাধ্য করি?
আমি- হ্যা মানে না।
আরাভ- ওহ। সরি। আমি রাগে বেশি কিছু করি তাই না?
আমি- না।
আরাভ- এই যে না বলে জড়িয়ে ধরি।
আমি- এভাবে বলছেন কেনো?
আরাভ- না কিছু না।
আমি- শুনুন।
আরাভ- হুম বলো।
আমি- আপনি আমার স্বামী। আপনার পুরো অধিকার আছে আমার উপর। আপনার যা ইচ্ছা করতে পারেন।
আরাভ- তাই?
আমি- জ্বী।
আরাভ- তাই তো‌ বউ এর কাছে একটা কিসও পাই না।
আমি- কেনো পাবেন না। দিবো তো।
আরাভ- তো দাও। কিস করতে গেলে ভয় পাও কেন?
আমি- আচ্ছা আপনি কি নাটক করছেন?
আরাভ- আজকাল চালাক হয়ে গেছো।
আমি- বান্দর, রাক্ষস।
.
এই বলে আরাভের গায়ে কিল ঘুষি মারতে লাগলাম।
আরাভ- আরে আরে মারো কেনো? দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র বর তোমার।
আমি- আপনি আজকাল আমার মতো হয়ে যাচ্ছেন।
আরাভ- পাগলির সাথে থাকলে পাগল তো হতেই হবে।
আমি- তা ঠিক।
আরাভ- দূর ছাঁই কি করতে বিয়া করলাম। বউ এর কাছে কিসও পাই না।
আমি- আরেকটা বিয়া করেন। ওই যে কাজিনটারে কি নাম যেনো?
আরাভ- জান্নাত। হুম ওরেই করতে হবে।
আমি- কি বললেন?
আরাভ- এই যে জান্নাতকে বিয়ে করতে হবে এটা।
আমি- দূররররর হন। আপনি আর আমার সামনে আসবেন না। যান আপনার জান্নাতের কাছে।
.
এই বলে কাঁদতে কাঁদতে ওখান থেকে চলে আসলাম। কেনো যেনো কষ্ট হলো। পিছু পিছু আরাভও এলো।
আরাভ- ওই আমি মজা করছিলাম।
আমি- ওহ।
আরাভ- এমনি সময় তো মজা করো। আজ আবার সিরিয়াস কেমনে?
.
আমি কিছু না বলে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। কেনো যেনো ওর উপর নিজেে একটা অধিকার আছে বলে মনে হয়। কেনো অধিকার হবে না? ও তো আমার স্বামী।
আমি- প্লিজ আমাকে ছাড়া অন্য মেয়ের কাছে যাবেন না। আমি আপনাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না।
আরাভ- ওই পাগলি।
আমি- প্লিজ।
আরাভ- যাবো না কখনো।
.
আরাভ আমার কপালে কিস করলো।
আমি- আমি একটা জিনিস ভাবছি।
আরাভ- কি?
আমি- আপনি আমাকে হানিমুনে গিফ্ট দিলেন না যে।
আরাভ- বেবি এতো শপিং কইরা ব্যাগ ভর্তি কার টাকায় করলা?
আমি- খোটা দেন? আর ওটা গিফ্ট নাকি?
আরাভ- উহু।
আমি- তো আমাকে কি দিবেন আর? চলেই তো যাচ্ছি কাল।
আরাভ- চোখ বন্ধ করো।
আমি- কেনো?
আরাভ- আরে করোই তো।
আমি- ওকে।
.
আমি চোখ বন্ধ করেই আছি কিন্তু খুলতে ইচ্ছে করছে। একটু চোখ খুলার চেষ্টা করলাম।
আরাভ- ম্যাডাম চিটিং করছেন কেনো?
আমি- সরি সরি আর হবে না।
আরাভ- চোরের মন পুলিশ পুলিশ আমি আন্দাজ করলাম মাত্র।
আমি- চালাক মানুষ।
আরাভ- চোখ খুলো।
.
আমি চোখ খুলে দেখি আরাভের হাতে একটা লকেট।
আমি- ওয়াও সেই চয়েজ তো।
আরাভ- হাহা দেখতে হবে কার চয়েজ।
আমি- থেংকু। উম্মাহ। (আরাভের গালে কিস করলাম)
আরাভ- জানলে তো আরো কিছু আনতাম যদি লিপে পেতাম এর বদৌলতে।
আমি- যা লুচু।
আরাভ- ওকে ফাইন। নেও লকেট। (আরাভ চলে যেতে লাগলো।)

.
আমি ওর হাত ধরে নিলাম।
আমি- সরি।
আরাভ- ব্যাপার না লুচুদের সরি বলতে নেই।
আমি- কেনো?
আরাভ- এমনি।
আমি- এতো সিরিয়াস কেনো আজ?
আরাভ- না এমনি বললাম তো।
আমি- আপনি লুচু না।
আরাভ- ওহ।
.
আমি আর কিছু না বলে আরাভের লিপে কিস করলাম। সাহস কই থেকে পেলাম জানি না।
আরাভ- এটা কি ছিলো?
আমি- কিছু না। স্মৃতি রাখতে চাইছিলেন না? দিয়ে দিলাম।
আরাভ- এটা করবা আগে জানলে আগেই সিরিয়াস হয়ে যেতাম।
.
এই বলে আমাকে আরাভ কোলে তুলে নিলো।
আমি- এ্যা। আন্নে কি করেন?
আরাভ- একটু ভালোবাসা।
আমি- মি. আরাভ একটু নামান আপনাকে একটা জিনিস দেখাবো।
আরাভ- কি?
আমি- আরে নামান দেখাচ্ছি।
.
আরাভ নামানোর সাথে সাথে আমি দৌড় দিলাম বাথরুমে।
আরাভ- চালাকি করলা?
আমি- হুমম।
আরাভ- একদিন আমারো সময় আসবে।
আমি- আপাতত আমার আসছে।
আরাভ- বের হও কিছু করবো না।
আমি- প্রমিস?
আরাভ- হুম।
.
আমি বের হয়ে এলাম। তারপর দুজনে আবার বেলকনিতে বসে কিছু সময় আড্ডা দিলাম। আড্ডা দিতে দিতেই ঘুমিয়ে গেলাম। তখন আরাভ আমাকে ঘুমের ঘোরে কোলে করে রুমে এনে শুইয়ে দিলো।
.
পরেরদিন আমি আর ও বাড়ির দিকে রওয়ানা হলাম। কিন্তু সকাল থেকে আমি আরাভের সাথে লজ্জায় কথা বলি নি। রাতে বলতে পারলেও সকালে আমার লজ্জা লাগছিলো। কারণ আমি কিভাবে ওটা করলাম আর আমার সাহসই হচ্ছিলো না। ভয় করছিলো। কিন্তু আরাভ ঠিকই মজা নিচ্ছিলো। চোখ মারছিলো আর ইশারা করছিলো।
.
(আমার মনে হচ্ছিলো আমাদের জীবনটা সুখ পূর্ণ হয়ে উঠেছে। কিন্তু সামনে যে কোন বিপদ তা জানা ছিলো না।)
.
চলবে…..

Angry_Husband Season_2___Part_11

0

Angry_Husband
Season_2___Part_11
Written by Avantika Anha
.
আমি- বান্দরের মতো হাসছেন কেনো ?
আরাভ- কি বললা ?
আমি- না কিছু না তো আমি তো চুপ আছি। ফ্রেশ হন জ্বলদি। আমার সেই ঠান্ডা লাগছে।
আরাভ- হাহা হিটার অন করে নেও।
আমি- চুলটা আগে শুকাই।
আরাভ- ড্রায়ার আনো নি?
আমি- আনছি কিন্তু আমার ওইটা ইউজ করতে ভাল্লাগে না।
আরাভ- হাহা। তো ভিজা চুলেই থাকো।
আমি- কেনো আমাকে ভিজা চুলে খারাপ লাগে নাকি।
.
আরাভ আমার এই কথা শুনে আমার দিকে তাকালো। কিছু সময় তাকিয়েই রইলো, মনে মনে ভাবছে, “ভিজা চুল এলোমেলো করা। মুখে কোনো প্রকার আধুনিকতা লেগে নেই। একদম সদ্য ফোটা ফুলের মতো লাগছে ওকে।” আরাভকে একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমার কেমন যেন লাগছিলো। এটা লজ্জা নাকি আজব লাগা বুঝতেছিলাম না।
আমি- কি এমন করে তাকিয়ে আছেন কেনো ?
আরাভ- না কিছু না। ভালো লাগছে থাকো তুমি আমি ফ্রেশ হবো। (আমার কথায় হকচকিয়ে পালানোর জন্য গেলো)
আমি- হু ওকে।
.
কিছুদিন ভালোই ঘুরলাম আমরা। শেষ দিন দুপুরে আমি আর আরাভ আরও কিছু জায়গা ঘুরলাম। গিয়ে একটা নদীর সামনে দাড়ালাম। হোটেলের কাছাকাছিই নদীটি। নদীটির পানিগুলো অনেক পরিষ্কার। আমি আরাভের হাত টা ধরে ফেললাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই অনেক মোহিত করে। আমি আরাভের গা ঘেষে দাড়ালাম। ওর কাছাকাছি থাকলে আজকাল আমার অনুভূতিগুলো ভিন্ন হয়। কিছুটা লজ্জা লাগে আবার ভালোও লাগে। আমি যে ওকে ভালোবাসি এতে কোনো সন্দেহ নাই।
আরাভ- বাহ আজকাল মিস পকপকানি রোমান্টিক হচ্ছে।
আমি- কি বললেন ?
আরাভ- না কিছু না। ফানুস উড়িয়েছো কখনো ?
আমি- না কেনো?
আরাভ- উড়াবে?
আমি- হুম।
আরাভ- ওকে রাতে উড়াবো।
আমি- মি. আরাভ।
আরাভ- হুম বলো।
আমি- উ আই নি।(জাপানি ভাষায় আই লাভ ইউ)
আরাভ- মানে?
আমি- কিছু না।(এতো সহজে মানে বলবো না)
আরাভ- পাগলি তুমি সত্যি। কি যে ভাষায় কথা বলো আল্লাহ জানেন।
আমি- হিহিহি। আমি আইসক্রিম খাবো।
আরাভ- ঠান্ডা করছে এখন খেলে জ্বর আসবে।
আমি- প্লিজ। আমি খাবো।
আরাভ- ওকে দাড়াও।
আমি- আছি আছি দাড়িয়েই আছি।
.
আরাভ আইসক্রিম আনতে গেলো। আমি দাড়িয়েই ছিলাম। কিন্তু একপাশে অনেক গুলো ফুলগাছ দেখতে পেলাম। এমনি আমার ফুল অনেক ভালো লাগে। সেই সাথে ওই ফুলগুলো নিতে খুব ইচ্ছে করলো। যেই ভাবা সেই কাজ আমি চলে গেলাম ফুলগুলো পারতে। কিন্তু গাছের ডালটি একটু বেশিই উচুতে ছিলো। আমি নিতে পারছিলাম না। তবুও অনেক কষ্টে কয়েকটা নিলাম। কিন্তু আমার আরও নিতে ইচ্ছে করছিলো। এমন সময় আরাভ আইসক্রিম এনে দেখে আমি ওখানে নেই। আমাকে ওখানে না দেখে আরাভ কিছুটা চিন্তিত হয়ে গেলো। ওর কিছুটা রাগ হলো আবার চিন্তাও। আরাভ ভয় পেয়ে গেলো আমি আবার নদীর পানিতে পড়ে গেলাম নাকি এটা ভেবে। ও খুব ভালো করেই জানে যে আমি সাতার পারি না। আরাভের চিন্তা আরো বেড়ে গেলো। ও কয়েকবার আমাকে ডাক দিলো। আমি হালকা শুনতে পেলাম। তাই আবার নদীর পাড়ের দিকে গেলাম। গিয়ে দেখি আরাভ নদীতে নামতে যাচ্ছে। আর হেলে নদীর পানির দিকে তাকিয়ে আমাকে ডাকছে।
আমি- ওইদিক আমাকে খুঁজছেন কেনো? আমি কি নদীর পানিতে থাকবো নাকি? আমি তো সাতারও পারি না
আরাভ- কই গেছিলে? (রেগে বললো)
আমি- না মানে ওই দিকে ফুল ছিলো আরকি।
আরাভ- আবা ফুল। তুমি পাগল নাকি। তোমাকে না বললাম এখানে থাকতে।
.
এই বলে আরাভ আমার হাতদুটো অনেক শক্ত করে ধরলো। সেই সময় ভাগ্যিস গাছগুলো কিছুটা দূরে ছিলো। নইলে ওর ভরসা একদম নাই। কিন্তু আরাভ আমার হাত দুটোকে এতোটাই শক্ত করে ধরেছিলো যে আমার অনেক লাগছিলো। আরাভের নখগুলোও আমার হাতে লাগছিলো। ব্যাথা করছিলো খুব।
আরাভ- ইচ্ছা করছে তোমাকে এখনি দুইটা থাপ্পড় দেই। ভেবেছিলাম ঘুরতে এসেছি মুড খারাপ করবো না। কিন্তু তুমি সেই সুযোগ করে দিচ্ছো। এই মেয়ে তুমি আমার কথা শুনো না কেনো?
আমি- আমি তো ফুল..
আরাভ- চুপ একদম চুপ। কোনো কথাই বলবা না আর। চুপ থাকো।
আমি- বকেন। বকবেনই তো। আর কি পারেন? একটুও নরম না। এমনকি ভালোও বাসেন না আমাকে। সবসময় যাস্ট বকা আর থাপ্পড়।
আরাভ- ভালোবাসি কি না তুই তো বুঝবি না। বুঝলে আমাকে চিন্তায় ফেলতি না।
আমি- এমা আপনি তুই তুই বলছেন।
আরাভ- হ্যা বলবো। তোকে তুই ই বলবো আমি কোনো সমস্যা?
আমি- না না কোনো সমস্যা নাই। (ওর চোখ রাগে লাল হয়ে গেছে)
আরাভ- কি বললি তখন আর?
আমি- কি কিছুই না তো।
আরাভ- তোকে ভালোবাসি না তাই না?
আমি- না মানে বাসেন তো।
আরাভ- ওহ। ভালো।
আমি- হাত ছাড়েন।
আরাভ- ছাড়বোনা প্রব্লেম।
আমি- দূররররর সব কিছুতে রাগ রাগ রাগ। দেখান আরও রাগ। যে ভালোবাসা দেখাতে পারে না সে তো রাগ দেখাবেই।
.
আরাভ কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আমার ঠোঁটজোড়া ওর ঠোঁটে আবদ্ধ করে নিলো। মিনিট খানেক পরে ও ছেড়ে দিলো। আমি ভাবতেও পারি নি ও এমন করে বসবে। জীবনে প্রথম এক প্রকার আলাদা অনুভূতি ছিলো ওটা। কিন্তু এমন একটা নির্জন জায়গায় আর প্রকৃতির মাঝে কেমন একটা আজব লাগছিলো। লজ্জা লাগছিলো প্রকৃতির কাছেই।
আরাভ- দেখলি ভালোবাসা আরও দেখবি?
আমি- (নিশ্চুপ লজ্জায়)
আরাভ- কথা বল।
আমি- এইডা কি করলেন?
আরাভ- (আরাভের রাগ থেকে হুস ফিরলো। ও ভাবতে লাগলো, ঠিকই তো আমি হঠাৎ করে কি করে বসলাম।) সরি।
আমি- আপনি আমার ফুলগুলো নষ্ট করে ফেললেন।
আরাভ- কিহ ।(আরাভ ভেবেছিলো কিস নিয়ে কথা বলছে)
আমি- আমাকে এখন ফুল এনে দেন আমি কিছু জানি না। (ওই বিষয়ে আর কথা বাড়ালাম না। কারণ আমার খুব বেশিই লজ্জা লাগছিলো।)
আরাভ- হুম ওকে।
আমি- আমার আইসক্রিম কই?
আরাভ- ওহ ওখানে রেখে ছিলাম। মে বি গলে গেছে।
আমি- দূরররররররররর।
আরাভ- দাড়াও তোমাকে ফুল এনে দিই।
.
আমি আর আরাভ ওখানে গেলাম। কিন্তু আরাভও কয়েকটাই ফুল নিতে পারছিলো। বাকীগুলো ওর হাতেও আসছিলো না।
আমি- নিজেও তো পারছেন না। ওই ডালের ফুলগুলো সুন্দর একটু চেষ্টা করেন তো।
আরাভ- না হাতে আসছে না। (চেষ্টা করার পর)
আমি- ওহো। আইডিয়া। আমাকে কোলে উঠান তো একটু তাহলে মনে হয় পারবো।
আরাভ- ও হুমমম পারবো। আইডিয়া টা আগে আসলো না।
আমি- আপনি যে বোকা আর আমি যে চালাক প্রমাণ।
আরাভ- হুম আর মেইন বিষয়ে উনি বোকা। (বিড়বিড় করে)
আমি- কিছু বললেন নাকি ?
আরাভ- না কিছু না।
.
এরপর আমাকে আরাভকোলে তুলে নিলো। এবার অনেকগুলো ফুলই নিতে পারলাম। অনেক ফুল ছিড়ে সেগুলোকে ওড়নায় নিয়ে নিলাম।
আরাভ- এতো ফুল দিয়ে কি করবা?
আমি- পরে বলবো। হোটেলে চলেন তো।
আরাভ- ওকে।
.
এরপর আমি আর আরাভ হোটেলের রুমে চলে গেলাম। কিছু সময় পর আরাভ চলে গেলো ফানুস আনতে। আমি গাছের সাথে ধরাধরি করায় জামাটা একটু নোংরা হয়ে গিয়েছিলো। তাই তাড়াতাড়ি করে জামা পাল্টে ফেললাম। ফুলগুলো সাদা রং এর ছিলো তাই আমি একটা সাদা গাউন থ্রি-পিস গুলো পড়ে ফেললাম। তারপর ফুল গুলো দিয়ে একটা ক্রাউন, দুল, হাতের ব্রেসলেট সব বানিয়ে ফেললাম। তাড়াতাড়ি করে সেগুলো পড়ে ফেললাম। তারপর আয়নায় দাড়িয়ে নিজের অয়রবটাকে দেখতে লাগলাম। মোটামোটি ভালোই লাগছিলো। হঠাৎ দরজা খুলার শব্দ পেয়ে আমি পিছনে তাকালাম। দেখি আরাভ এসেছে। আমাকে এভাবে দেখে ও হা করে ফেললো।
আমি- মি. আরাভ আমাকে কেমন লাগছে।
আরাভ- প্রকৃতির মেয়ে যেন আমার সামনে। তার স্নিগ্ধতার চাদর যেন তোমাকে আবদ্ধ করে লিখেছে। হাজারো কবির মায়াকন্যা যেন তোমার রূপ নিয়েছে।
আমি- হিহিহি। আমি কিচ্ছু বুঝি নি। ইট্টু ভালো করে কন তো।
আরাভ- দূরররর। কিছু না। দারুণ লাগছে। এর জন্য ফুল নিয়েছিলে?
আমি- হুমমম।
আরাভ- নিচে চলো ফানুস উড়াবো।
আমি- খাড়ান ফোনটা নেই। ইট্টু পিক তুলমু। মিমি আর প্রেয়সিরে পাঠামু।
আরাভ- দুররর পাগলি। চলো।
.
আমি আর আরাভ নিচে গেলাম। কিছুটা নির্জন জায়গায় গেলাম।
আমি- মি. আরাভ আমার না ভয় করছে।
আরাভ- আরে চলো। কিছু হবে না। শেষ দিন এখানে একটু স্মৃতির পাতায় রাখি। দেখি ওদিক দুটো চেয়ার টেবিল রাখা। আরো লাগানো আছে। হয়তো কাপলদের জন্যই জায়গাটা।
আমি- ওয়াও সেইরাম তো।
আরাভ- জানি ম্যাম অল ক্রেডিটস গোস টু মি।
আমি- এইরাম ফুল ফিল্মি। কতো টাকা গেলো?
আরাভ- তুমি ইঞ্জয় করো। টাকার কথা ভাবো কেনো?
আমি- কয়েকটা পিক তুলেন জ্বলদি। মিমিরে জ্বলামু।
আরাভ- হায় রে।
আমি- তুলেন তুলেন।
.
আরাভ আমার কয়েকটা পিক তুলে দিলো। তারপর আমি ওরও ছবি তুলে দিলাম। আমরা একসাথেও কয়েকটা ছবি তুললাম। দেখলাম ওখানে একটা ছোট পেস্ট্রি কেক রাখা।
আমি- এটা কেনো?
আরাভ- এমনিই আনলাম। আজ আমাদের বিয়ের ৮মাস হয়ে গেছে।
আমি- ওয়াও আমি ৮ মাস ধরে আপনাকে সহ্য করতেছি।
আরাভ- কি বললা?
আমি- হিহি মজা করলাম। আসেন কেক কাটি।
.
আরাভ আর আমি মিলে পেস্ট্রি কেকটাই কাটলাম।
আমি- মি. আরাভ আপনি না মেলা রোমান্টিক।
আরাভ- ও তাই নাকি?
আমি- হিহি হুমমম। চলেন ফানুস উড়াই।
আরাভ- আরে আগে খেয়ে তো নেও।
আমি- আচ্ছা।
.
কিছুটা খেয়ে…
আমি- আমার খাওয়া শেষ চলেন ফানুস উড়াই।
আরাভ- আগে সব শেষ করো। নইলে উড়াবো না।
আমি- হুহ আচ্ছা আচ্ছা।
.
তারপর খেয়ে নিয়ে আমি আর আরাভ মিলে ফানুসটা উড়ালাম।
আরাভ- আনহা এদিক কয়েকজন বিলিভ করে এটা উড়ানোর সময় কাপলরা উইশ করলে পূরণ হয়।
আমি- সত্যি?
আরাভ- হুম।
আমি- আমিও উইশ করবো।
.
আমি আর আরাভ যেনো একসাথে থাকি। আমাদের যেনো ২০টা বাচ্চা হয়। তাদের মাঝে যেনো জমজ বাবুও থাকে। আমরা যেনো ভালো থাকি। এই বলে উড়ায় দিলাম। তারপর আরাভের দিকে তাকালাম। আমার উইশ শুনে আরাভ থ।
আমি- কি?
আরাভ- ২০ টা বাচ্চা?
আমি- হু।
আরাভ- হায়রে।
আমি- হিহি।
তারপর আমি ফানুসটার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। তারপর হঠাৎ করে আরাভকে জড়িয়ে ধরলাম, “আজকের দিনটা কখনো ভুলবো না। থেংক ইউ মি. হাজবেন্ড।”আরাভ ভাবে নি আমি ওকে জড়িয়ে ধরবো। তারপর আরাভও আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
হঠাৎ একটা জিনিস মাথায় আসতে আমি তাড়াতাড়ি ওকে ছেড়ে দিলাম।
আরাভ- কি হলো?
আমি- ফুলগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। এই জন্য ছেড়ে দিলাম।
আরাভ- দূরররর মাইয়া।
আমি- হিহিহি
.
চলবে…..

Angry_Husband Season_2___Part_10

0

Angry_Husband
Season_2___Part_10
Written by Avantika Anha
মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলো আমার। কারণ পাশে কেমন একটা ডাক শুনতে পাচ্ছিলাম। ভয় পেয়ে আরাভকে ডাক দিতে লাগলাম।
আরাভ- কি হইছে এতো রাতে ডাকছো কেনো?
আমি- আমার ভয় করছে।
আরাভ- কেনো কি হলো? এখানেও ভুতের ভয় পাইলা নাকি?
আমি- হুম। দেখেন বাইরে কিসের জানি শব্দ হচ্ছে।
.
আরাভ কিছুক্ষণ মনোযোগ দিয়ে শুনে হাসতে শুরু করে দিলো।
আমি- ভুতের মতো হাসছেন কেনো?
আরাভ- শিয়াল ডাকছে।
আমি- ও আচ্ছা। ওমা গো শিয়াল মানে আশে পাশে ভুত আছে?
আরাভ- আরে না।
আমি- আম্মু আমার ভয় লাগছে।
.
এইটা বলে আমি আরাভের আরও কাছাকাছি গেলাম।
আমি- এখন কি হবে? ভুউউউত। (আরাভের একটা হাত ধরে ফেললাম)
আরাভ- আরে ভয় পাইয়ো না তো।
আমি- আমার ভয় লাগতেছে খুব।
আরাভ- আমি আছি তো।
.
এমন সময় হোটেলের লাইট গুলোও অফ হয়ে গেলো।
আরাভ- দাড়াও খোঁজ নিয়ে আসছি।
আমি- না আপনি কোথাও যাবেন না। আমিও যাবো আপনার সাথে।
আরাভ- আরে দেখো পুরো হোটেলে লাইট অফ হয়ে গেছে। হোচট খেলে কি হবে?
আমি- জানি না আমি যাবো আপনার সাথে।
আরাভ- আচ্ছা চলো। ফোনের লাইটই সম্বল।
.
আমি আরাভের হাত ধরে এগিয়ে গেলাম। আমাদের মতো অনেকে বের হয়ে এসেছে। পুরো হোটেলেই ইলেক্ট্রিসিটি নাই। আমি আরাভের হাত অনেক শক্ত করে ধরে আছি। আরাভ ভালো করেই বুঝেছে যে আমি ভয় পাচ্ছি। নিজে গিয়ে শুনলাম কি একটা প্রব্লেম হইছে। সকালের আগে ঠিক হবে না। ইলেক্ট্রিক মেকানিক আসবে এখনি জরুরীভাবে ডাকা হয়েছে। সবাইকে অপেক্ষা করতে বলা হলো। রুমে বসে আর কি করবো এই ভেবে আমি আরাভকে বললাম বাইরে হাঁটি একটু। আরাভ প্রথমে রাজী না হলেও পরে রাজী হলো। মাঝরাতে বাইরে কখনো হাঁটি নি। এটাও প্রথম অনুভূতি। এই এতো ঘুরতে আসাটাও প্রথম অনুভূতির মতো। কারণ আমি কোনোদিন এতোদূরে ঘুরতে আসি নি। প্রথম একবার কক্সবাজার যেতে চেয়েছিলাম। টাকাও ম্যানেজ কিন্তু আম্মু আমাকে যেতে দিবে না এতোদূর একা একা।
আরাভ- কি চুপচাপ যে।
আমি- রাতে অন্ধকার আকাশের সৌন্দর্য অনেক বেশি তাই না। চাঁদটাও দারুণ লাগছে।
আরাভ- হুমম। কিন্তু তোমাকে তো ভুতের মতোই লাগছে।
আমি- কিহ? কেমনে কি?
আরাভ- এলোমেলো চুলে।
আমি- আপনি কি জানেন একসময় এক কাজিন আমার এলোমেলো চুল নিয়া কবিতা লিখছিলো আর বলেছিলো আমাকে এলোমেলো চুলে দারুণ লাগে।
আরাভ- তোমাকে কিভাবে দেখলো?
আমি- কাজিনটা আমাদের বাড়িতে ঘুরতে আসছিলো তখন ওর বোন আমার রুমে ছিলো। ওকে ডাকতে এসেই দেখেছিলো। আমার দূর সম্পর্কের কাজিন হয়।
আরাভ- ওহ। আজকের পর এলোমেলো চুলে কারো সামনে যাবা না। মাথা ঢেকে ফেলো।
আমি- হিহি পোড়া পোড়া গন্ধ।
আরাভ- যা বলছি করো। (একটু জোড়েই বললো)
আমি- ঢাকতেছি। এতো রাগার দরকার নাই। বাচ্চা মেয়ে
আমি।
আরাভ- ন্যাকামি করবা না।
আমি- ফাইন আমি থাকবোই না। আমি গেলাম রুমে।
.
আমার রাগ উঠে গেছে। যখন তখন বকে কেনো আমাকে? আমি কি করছি। একটুতেই রাগে। চারপাশে কিছু মানুষও ছিলো। ওরা কি ভাবছিলো। খালি বকে আমাকে। এই ভেবে আমি অন্ধকারেই হোটেলের দিকে চলে গেলাম। কিন্তু যাবো কোনদিকে জানি? হঠাৎ করে রুম কোনদিকে তা ভুলে গেলাম। আল্লাহ আমি যাবো কই? প্রচুর ভয় পেয়ে গেছিলাম। তাই না জেনেই একপাশের সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে গেলাম। কিন্তু মনে হচ্ছে ভুল দিকে চলে আসলাম। ভয়ে পুরা লাল হয়ে যাচ্ছিলাম আমি। হাটতে হাটতে দেখলাম সামনে এক দিকে কোয়েকটা ছেলে ড্রিংক করছে। এটা দেখে উল্টা দিকে দৌড় মারলাম। তাড়াহুড়া করে আবার কোন পাশে গেলাম জানি না। এবার কোনো কোনো দিকে হালকা আলো দেখতে পাচ্ছিলাম। কিন্তু আমি যে হারায় গেছি তা বুঝছিলাম। এতোই ভয় লাগছিলো যে মনে হচ্ছিলো এটা একটা দুঃস্বপ্ন। নিজের উপর রাগ উঠছিলো কেনো যে চলে আসলাম। ভয়ে কাঁদতে কাঁদতে কোনদিক যাচ্ছিলাম জানি না। হঠাৎ করে আবার সিড়ি পেলাম কিন্তু নিচে নামে দেখি ওইদিক আরো অন্ধকার। আমি কোনদিক যাবো বুঝছিলাম না। আমি যে কই আছি এটাও জানি না। ফোন সাথে না নেওয়ায় রাস্তাও পাচ্ছিলাম না। তাই হাটতে হাটতে কোনদিক জানি চলে আসলাম। হঠাৎ কে জানি আমার হাত ধরে টান দিলো আর আমার হাত গালে চলে গেলো। কারণ আমি থাপ্পড় খেয়েছি। এই থাপ্পড়ের সাথে আমি গভীরভাবে পরিচিত। হুম আরাভই থাপ্পড় মেরেছে।
আরাভ- তুমি কি পাগল? কে যায় এভাবে? কখন থেকে খুঁজে যাচ্ছি। কোন পাগল হোটেলের পিছন সাইডে আসে? আমি ভাগ্যিস একবার দেখতে এলাম। নইলে যাইতা যে কই আল্লাহ জানেন ? কি হলো কানে কথা যায় না? কথা বলো না কেনো? ইচ্ছা করছে তোমাকে আমি আরও কয়েকটা থাপ্পড় মারি।
.
আমি কিছু না বলেই ওকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলাম। ও কিছু বলছে না। আমি ওকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। আমি কাঁদতেই ছিলাম। আরাভ এখনো কিছু বলছে না। হঠাৎ ও নিজেও আমাকে জড়িয়ে ধরলো। তার কিছু সময় পর আমাকে ছেড়ে দিয়ে আমার চোখ মুছে দিলো।
আমি- সরি। আধরলাম। জানতাম না। আমার না খুব ভয় করছিলো। (ভয়ে ভয়ে সব কথা বলছিলাম। সেই সাথে কাঁদার ফলে শব্দ গুলোও থেমে থেমে বের হচ্ছিলো)
আরাভ- চুপ একদম চুপ বাদ দেও। ভয় লাগে নি একা যেতে।
আমি- অনেক ভয় লেগেছে।
.
এই বলে আবার কেঁদে আরাভকে জড়িয়ে ধরলাম।
আরাভ- সত্যি পাগলি। কি এখন কি ঘরে যাবা?
আমি- হুম। আপনি আমার হাত ধরে থাকুন ছাড়বেন না কিন্তু আমার না ভয় করছে।
আরাভ- মরে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ছাড়বো না।
আমি- মরবেন না। আমি এখানে থাকবো না রুমে চলেন।
আরাভ- আচ্ছা। তোমার ফোন কই?
আমি- আনি নি।
আরাভ- ও আচ্ছা কল দিছিলাম। কিন্তু ধরো নাই।
আমি- আমার কাছে তো ছিলোই না।
.
আমি আর আরাভ রুমে চলে গেলাম। আরাভের কাধে মাথা দিয়েই বলতে লাগলাম কি কি হলো কেমন কেমন হলো। নিজেকে ওর পাশে বড্ড সুরক্ষিত লাগছিলো। আমি জানে গেছি ভালো করেই যে আমি আরাভকে ভালোবাসি। আরাভ আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো। আরাভ যে অনেক কেয়ারফুল আজকাল আমি ভালো করেই বুঝতেছি। আমি ঘুমিয়েই পড়লাম।
আরাভ- কি হলো কথা বলছো না যে?
.
আমার জবাব না পেয়ে আলো আমার দিকে দিয়ে দেখলো আমি ঘুমিয়ে গেছি। আরাভও আমার মায়ায় জড়িয়ে গেছে। কিন্তু ওর রাগটা অনেক বেশি যার প্রমাণ সে আমার গালে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে। গাল লাল হয়ে আছে। ও আমার গালে হালকা স্পর্শ দিয়ে আমার কপালে কিস করলো। নিজেও হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়লো ব্যালকোনির সোফায় হেলানি দিয়ে। সকালে একটু দেরিতেই ঘুম ভাঙলো আমার। আমি নড়ে উঠতেই আরাভেরও ঘুম ভেঙ্গে গেলো। আমার আবার ঘুম থেকে উঠে মাথা বেশি চলে। কারণ আমি ঘুমের ঘোরেও কিছু না কিছু ভাবি। আরাভকে নিজের ভালোবাসার কথাটা বলবো। কিন্তু এতো স্পেশাল একটা জিনিস যে আমাকে স্পেশাল ভাবেই বলতে হবে এটা ভাবছিলাম। কিভাবে করবো ? এখান থেকে যাওয়ার আগেই নাকি যাওয়ার পরে এটা ভাবছিলাম। ভাবলাম স্পেশিয়াল জিনিসটা যাওয়ার পরেই করবো। মিমির সাথে আলোচনা করে প্লান করবো তারপর করবো নে প্রপোজ এটাই ভাবছিলাম।
আরাভ- কি ঘুমের ঘোর কি কাটে নি?
আমি- কাটছে। কিন্তু একটা জিনিস ভাবছি।
আরাভ- কি?
আমি- আপনি আর আমি তো বর বউ তাই না। আমরা আমাদের লাইফ এর সব একে অপরকে জানাই নাই এখনো তাই নায
আরাভ- হুম তা ঠিক।
আমি- তাহলে চলেন বলি একে অপরকে। আমি একবার আম্মুর এক সেট ভেঙ্গে ফেলছিলাম পরে দোষ প্রেয়সির ঘাড়ে চাপাইছি।
আরাভ- আমার এমন কিছু নাই। আমি সবসময় স্বীকার করি।
আমি- ….(আমি অন্যান্য বিভিন্ন জিনিস বললাম।)
আরাভ- একবার এক মেয়ে আমার নামে মিথ্যে নালিশ দিছিলো। আমি শাস্তি পেয়েছিলাম। ওর কিছুদিন পর ছুটির সময় আমি ওকে কাঁদায় ফেলে দৌড় দিছিলাম। ও আমাকে দেখে নি।
আমি- হিহি আপনিও ফাজিল তাইলে। আমি তো একবার একদল ছেলের গায়ে পানি ঢেলে দিছিলাম। কারণ ওরা এক মেয়েকে জ্বালাচ্ছিলো।
আারাভ- ফাজিল ঠিক না। আমার সাথে কেউ কিছু করলে আমি তাকে ছাড়ি না।
আমি- কোনো মেয়ে আপনাকে‌ লাইন মারে নি? আই মিন হাত কাটে নি অথবা পাগলামি।
আরাভ- এক কাজিন অনেক বাজে কাজ করেছিলো।
আমি- কি?
আরাভ- ও আমাকে লিপ কিস করতে ট্রাই করেছিলো।
আমি- ওই বান্দরনি টা কে ? আপনাকে কিস করতে আইবো কেনো? লুচু মাইয়া।
আরাভ- বউ না করলে তো করবেই।
আমি- না আপনাকে কিস করলে আমি করবো ও কেনো? যতো কিস লাগবে আমি দিবো আপনি না।
আরাভ- তাই নাকি ।
.
এমা আমি কি বলে ফেললাম। অনেক লজ্জা পেয়ে গেলাম। কিছু না বলেই বাথরুমে দৌড় দিলাম। ফ্রেশ হয়ে এসে আরাভের দিকে তাকাচ্ছিলাম না। কিন্তু অনেক লজ্জা পাচ্ছিলাম। আরাভ আমার এই অবস্থা দেখে মুচকি হাসছিলো।
.
চলবে….

Angry_Husband Season_2___Part_9

0
Angry_husband season_2, Angry_Husband Season_2_Part_4, Avantika Anha
Angry_husband season_2, Angry_Husband Season_2_Part_4, Avantika Anha

Angry_Husband
Season_2___Part_9
Written by Avantika Anha
.
আরাভ দেখলো আমি ছাদের কিনারায় দাড়িয়ে গাছের ডালে আটকে থাকা ঘুড়িটিকে নামানোর চেষ্টা করছি আর পাশের বাড়িতে থাকা বাচ্চাগুলো আমাকে তাড়াতাড়ি ঘুড়িটিকে নামিয়ে আনতে বলছে। কিছু সময় চেষ্টার পর আমি ঘুড়িটিকে নামিয়ে আনি ঠিকই কিন্তু হঠাৎ নিচের দিকে তাকিয়ে আমার মাথা ঘুরে যায়। আর ভয় পেয়ে চিল্লাতে শুরু করি।।
.
এই অবস্থা দেখে আরাভ এসে আমাকে কোলে তুলে নেয়।
আমি চোখ বন্ধ করে আছি ভিষন লজ্জা লাগতাছে।ওমা আরাভ তো কোলে তুলে নিয়েছে এবার কি তাহলে ছাদ থেকে ফেলে দিবে নাকি।
ভয় লাগতাছে…. ধুররর না আর এই বিপদের মধ্যে থাকা যাবেনা।তবে খুব একটা খারাপ ও লাগতাছেনা। ওর জন্য তো মরতেও পারি…! ইয়ে মানে আমি মরে গেলে আবার ওর বাচ্চার আম্মু কে হবে? তখন আবার অন্যএকজনকে বিয়ে করে নিবে। 

 নাহ এইটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায়না।
আনহা লাফ দিয়ে কোল থেকে নেমে পড়ে।
আরাভের দিকে তাকায়,
.
– ওই বজ্জাত মেয়ে ভয় পাও তাহলে ওখানে কেনো গেছো?(আরাভ)

– কেনো গেছি…..! হুম কেনো যানি গেছি? ওহ মনে পড়ছে ওইযে বাচ্চা ওদের জন্যই তো গেলাম।(আমি)

– রাখো তোমার বাচ্চা, নিজেই তো একটা বাচ্চা আবার আরেক বাচ্চাকে হেল্প করতে গেছে।(আরাভ)
.
আমার সেই লেভেলের মেজাজ খারাপ হচ্ছে। আমিতো সাহায্য করছি তার জন্যও ঝাড়বে আমাকে। হুহ এইযে আবার রাগ করলাম দেখি এবার কিভাবে রাগ ভাঙায় হুহ।
.
রাগ করে ছাদ থেকে নেমে রুমে চলে আসলাম।
আরাভ ও বেশ রেগে আছে তবে আজকে আমি বেশি রাগগ করছি। কি ভাবে ও নিজেকে হিরো? ধুরো হিরো কেনো হইতে যাইবো ও তো ভিলেন। ডেভিল……
,
মন খারাপ আর রাগের একটা কম্বো মুড নিয়ে বসি আছি।
তখন আরাভ রুমে আসলো। বিছানায় বসে বললো,
– রান্না বান্না কিছু হইছে?(আরাভ)
– আমিতো কারো মতো এতো পচা না যে না খাইয়ে রাখবো।(আমি)
– হইছে এতো ভালো হইতে হবেনা খাবার দাও আমার ক্ষুদা লাগছে।(আরাভ)
– পারবোনা।পারলে নিজে খেয়ে নেন। আমি অনেক রাগ করছি।(আমি)
– তুমি যাবা কি না??(আরাভ)
– যাবোনা যাবোনা যাবোনা।আর খাবোওনা কিছু দেখি আপনি কি করেন।(আমি)
– কি করবো দেখবা।(আরাভ)
– হ দেখবো আপনি কি করতে পারেন।(আমি)
– ওকে দেখো কি করি।(আরাভ)
.
কথাটা বলেই আরাভ আমাকে কোলে তুলে নিলো তারপর বিছানা থেকে আমার ওড়নাটা হাতে নিলো।
তারপর আমাকে সহ খাবার টেবিল এ চলে আসলো।
.
তারপর জোর করে চেয়ারে বসিয়ে দিলো।
আমি ছুটার চেষ্টা করতাছি কিন্তু বদমাইশটারর শক্তি অনেক বেশি তাই ওর সাথে পারতাছি না।
আরাভ ওড়নাটা নিয়ে আমার দিকে তাকালো।
তারপর কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার হাত বেধে ফেললো চেয়ারের সাথে।
.
তারপর একপ্লেট ভাত নিলো। আমার দিকে তাকিয়ে শয়তানের মতো একটা হাসি দিলো। ভয়ে অন্তরটা কেপে উঠলো। কিন্তু সেটা বড় কথা না বড় কথা হচ্ছে যে ও এখন কি করে সেটাই দেখার।
আমি চিৎকার করে বলতে লাগলাম,
– ওই ছাড়েন আমাকে।(আমি)
– কি যানি বলছিলা আমি যাবোনা খাবোনা…ব্লা ব্লা ব্লা… তুমি আসছো এবার খাবাও।(আরাভ)
– আমি খাবোনা।(আমি)
– দেখাই যাক।(আরাভ)
.
আরাভ প্লেটে ভাত আর তরকারি নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসলো।তারপর জোর করে খাইয়ে দিলো। মাথায় বুদ্ধি আসছে আমার হাত বেধে রাখছে কিন্তু মুভ বাধে নাইই ওরে খাইছি আজকে বজ্জাত পোলা আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করো। দাড়াও দেখাচ্ছি মজা।
পরেরবার আরাভ আমার মুভে ভাত তুলে দিতেই দিলাম এক কামড়। আরাভ চিৎকার করে উঠলো।
.
– ওই তুমি কি করলা?(আরাভ)
– আপনি কি অন্ধ চোখে দেখেন না কি করছি।(আমি)
– আমি ভালো মতো খাইয়ে দিতাছিলাম আর তুমি হাতে কামড় দিলা?(আরাভ)
– হুহ তো কি করবো আপনি আমার হাত কেনো বাধছেন?বললেই পারেন খাইয়ে দিবেন এমনিতেই খেতাম।(আমি)
.
আরাভ কিছু না বলে হাতের বাধন খুলে দিয়ে না খেয়েই চলে গেলো। রাগ করলো নাকি? করলে করুক তাতে আমার কি আমিও তো রেগেই আছি।
……………………………………………………………………………….
বিকেল হয়ে গেলো এখনো আরাভ আসছেনা কেনো??
ফোনটাও তো বন্ধ। কেমন যানি লাগতাছে খুব ঝগড়া করতে ইচ্ছা করতাছে কোথায় উনি। রাগ করে আবার কোথাও চলে যায়নি তো?
উফফ ভালোলাগতাছে না। ফোনটা তো খোলা রাখলেই পারতো। কেনো যানি খুব টেনশন হচ্ছে উনার জন্য।
রাগের মাত্রাটা আরো বেড়ে গেলো।
সন্ধা হয়ে গেলো এখনো আসতাছে না কেনো??
আমার তো ভয় লাগতাছে —- ভুউউত আসবে কি করবো।
ভয়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছি হঠাৎ কলিংবেলের আওয়াজ শুনলামম। দৌড়ে গিয়ে দড়জা খুলে দিতেই আরাভকে দেখে প্রান ফিরে পেলাম। সব ভয় গায়েব হয়ে গেছে। হঠাৎ মনে পড়লো আমিতো রাগ করছি।
.
তাই নিজের অভিনয়ে ফিরলাম। ইয়ে মানে অভিনয় না রাগি মুডে আরকি। আমি রুমে চলে আসলাম। এসে বিছানায় বসলাম।
আরাভ আমার পাশে এসে বসলো,
– খাইছো??(আরাভ)
– না।(আমি)
– কেনো??(আরাভ)
– খাইনি এমনি আমার ইচ্ছা আপনার কি?(আমি)
– খুব বেশি রাগ করছো নাকি?(আরাভ)
– হু।
– রাগ কি ভাঙবে না? কোনো ঘুষ অথবা অন্যকিছু দিলে?(আরাভ)
– কোনো কিছুতেই ভাঙবে না আমি প্রচন্ড রেগে আছি।(আমি)
– তাহলে আর কি করার আইসক্রিম আর কিটক্যাট গুলা আমি একা একাই খাই। রাগ যখন ভাঙবেই না।(আরাভ)
.
কিটক্যাট আর আইসক্রিমের কথা শুনতেই লোভে পড়ে গেলাম।
আরাভ কিটক্যাট বের করে আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে খাওয়া শুরু করলো। আর সহ্য হচ্ছেনা।
– ওই মিয়া আমারটা দেন।(আমি)
– কেনো? আপনি তো খাবেনন না?(আরাভ)
– খাবোনা বলেই খাবোনা?(আমি)
.
বলেই আইসক্রিম আর কিটক্যাট কেড়ে নিলাম।
কিন্তু হঠাৎ খেয়াল করলাম ওর হাতে ব্যানে্ডজ করা।
– ওই হাতে কি হইছে?(আমি)
– ইদুর এ কামড় দিয়া কেটে ফেলছে।(আরাভ)
– কিহ ইদুর কে??(আমি)
– কেও না।(আরাভ)
.
রাতে খাওয়া দাওয়ার পর আরাভ গিয়ে সুয়ে পড়লো।
আমিও ওর পাশে শুয়ে পড়লাম। শীতের রাত কম্বল সহজে গরম হয়না। তবুও আরাভের পাশে শুয়ে খুব ভালো লাগতাছিলো। এভাবেই ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুমের মধ্যে কি রোমান্টিক একটা স্বপ্ন দেখলাম। আমি আরাভকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছি। অবশ্য সত্তিই ঘুমের ঘোরে ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাইগেছি। কিন্তু সালার লোকটা এতোই বাজে যে স্বপ্নের মধ্যেও ঝগড়া শুরু করে দিছে।
ধুরররর আর ভালোলাগেনা।
……………………………………………………………………………
এভাবে তিনদিন কেটে গেলো তিনদিন। ঝগড়া আর ঝগড়া তবে ঝগড়া করতে ভালোই লাগে।
আজ ভার্সিটি যাবো।
আরাভ নিচে অপেক্ষা করতাছে কিন্তু আমার দেরি হচ্ছে।
দুই দুই মিনিট করে ২০ মিনিট সময় খেয়ে ফেলছি।
এভাবে আরো কিছুক্ষন চলে গেলো। আমি রেডি হয়ে নিচে গিয়ে দেখি আরাভ নাই।
তার মানে চলে গেছে।
ওদিকে আরাভ অপেক্ষা করতে করতে লেট হয়ে যাচ্ছে তাই আনহাকে রেখেই চলে আসছে। ভার্সিটির মেয়েগুলা আড়চোভে দেখছে আরাভকে। অনেক হ্যান্ডসাম তবে ঝগড়াটে আর বদরাগি। কিন্তু তারপরও মেয়েগুলা কেনো যে ওর ওপর ক্রাশ খায় আমি বুঝিনা।
.
কি আর করার একাই ভার্সিটিতে আসতে হলো।
এমনিতেই রেগে আছি উনি রেখে কেনো আসলো।
তারওপর রাগটা আরো বেড়ে গেলো যখন দেখলাম আরাভ মেয়েগুলার সাথে হেসে হেসে কথা বলতাছে।
এমন ভাবে হাসতাছে মনে হয় প্রেমিকা।
অথচ আমার সাথে সবসময় খারাপ ব্যাবহার করে।
দাড়াও দেখাচ্ছি মজা। আমি দৌড়ে গেলামম আরাভের কাছে। আজকে ঘটনা একটা ঘটাবোই।
রাইসা- কিরে আনহা জিজু তো সেই।
আমি- হুম তো।
রাইসা- তোর আগে আমি পেলে তো সিওর বিয়া করতাম।
আমি- হুম স্বভাব বুঝি এমন তোর?
.
রাইসা জবাব দিলো না মুখ কালো করে চলে গেলো।
.
আমি- শুনুন চলেন বাড়ি আমার কাজ আছে তাড়াতাড়ি চলুন।
আরাভ- আচ্ছা চলো।
.
আমি আর আরাভ একসাথে বাড়ির পথে যেতে লাগলাম। আরাভ কয়েকবার জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে? কিন্তু আমি জবাব দিলাম না।
.
বাড়িতে…..
মা ও আভা চলে এসেছে।
আমি- মা কি হয়েছিলো মামার ?
মা- কিছু না মা। এমনি ডেকেছিলো।
আমি- আপনি যে বলেছিলেন অসুস্থ।
মা- না রে। আরাভ ভুল শুনেছিলো।
আমি- ভুল না কি আমি জানি। (বিড়বিড় করে)
মা- কিছু বললি?
আমি- না। বসুন আমি খাবার আনি।
মা- আচ্ছা।
.
সেদিন রাতে….
মা- তোরা তো ফ্রি আছিস। কোথাও থেকে ঘুরে আয়।
আমি- না থাক।
মা- তোদের বয়সে বিয়ের এতোদিনে আমি ৩ জায়গা ঘুরে এসেছি আরাভের আব্বুর সাথে।
আমি- হিহি তাহলে কাহিনী একটু আমাদেরও শুনান।
আরাভ- আনহা চুপ।
মা- যাই বল কই ঘুরতে যাবি বিদেশে নাকি?
আরাভ- যাওয়া যায়।
আমি- আমার পাসপোর্ট নাই।
আরাভ- সাব্বাস। এতোদিনেও এটা জানাও নাই।
আমি- আমার কি দোষ?
আরাভ- হুম বুঝি। বাদ দেও মা প্লান।
মা- বাদ দিবো কেনো দেশে কি ঘুরতে পারবি না? কক্সবাজার বা বান্দরবান যা।
আরাভ- হুম যাওয়া যায়। কই যাবো তুমি ই বলো।
মা- পাহাড়েই যা।
আরাভ- হুমমম শীতে পাহাড়ে কুলফি।
আমি- আমি পাহাড়েই যাবো।
আরাভ- ওকে ফাইন যাবো নে।
.
প্লান অনুযায়ী আমরা কিছুদিন পর বান্দরবানের ওদিক ঘুরতে গেলাম। আমার প্রথম বান্দরবান ঘুরতে আসা। খুব মজা লাগছিলো। আমি ভাবছিলাম এই পরিবেশে হয়তো ওই রাগী মানব আর রাগ করবে না।
.
রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম আমি। আরাভ ফ্রেশ হওয়ার জন্য নিজের কাপড় খুঁজতে গিয়ে দেখে ৩টা শার্ট, একটা প্যান্ট আর একটা জ্যাকেট ছাড়া ওর কিছু নাই। চিৎকার দিয়ে আমাকে ডাকলো…
আরাভ- আনহা
আমি- কি?
আরাভ- আমার বাকী কাপড় কই?
আমি- আমি কেমনে কমু ছিলো তো।
আরাভ- নীল ব্যাগ কই?
আমি- আভার ঘরে।
আরাভ- মানে?
আমি- আপনিই তো বললেন নীলটা আভার ঘরে দিতে।
আরাভ- আমি নীলটা না লাল ব্যাগটা আভার ঘরে দিতে বলেছিলাম।
আমি- ইয়ে মানে। তাহলে ভুল হয়ে গেছে।
আরাভ- আমি পড়বো কি? (দাঁতে দাঁত চেপে)
আমি- শাড়ি।
আরাভ- কিহ?
আমি- না মানে আমার শাড়ি আনি নি মে বি। আপনি শপিং করে নেন।
আরাভ- ওটাই করতে হবে। তোমার মতো বউ যার থাকবে তার কপাল পোঁড়া।
আমি- ইনসাল্ট করেন?
আরাভ- না তারিফ করি।
আমি- হুহ বুঝি।
আরাভ- যাই হোক। ঠান্ডার কাপড় পড়ে নেও।
আমি- আরে লাগবে না।
আরাভ- যা বললাম করো।
.
আরাভ ফ্রেড হয়ে এলো। তারপর আমাকে নিয়ে কয়েকটা জিনিস কিনে নিলো। বিকেলের পত আমরা হাটতে বের হলাম।
আমি- ওই ঠান্ডা খুব হোটেল চলেন।
আরাভ- বললাম ঠান্ডার কাপড় বেশি পড়ো।
আমি- আমি কি জানতাম এই টাইমে এতো ঠান্ডা এখানে।
আরাভ- ভালো ভালো। এদিক শপও নাই যে চাদর কিনে দিবো। হোটেলই যেতে হবে।
আমি- না আরেকটু হাঁটি তারপর যাই।
আরাভ- না।
আমি- যাবো যাবো যাবো।
আরাভ- ইচ্ছা। পরে মজা বুইঝো।
.
কিছু সময় হেঁটে আমি আর ঠান্ডা সহ্য করতে পারছিলাম না। তাই আমরা হোটেল ফিরে গেলাম। হোটেলে আমি কাঁপতে কাঁপতে শেষ।
আরাভ- হাহা আরো কাঁপো। কথা তো শুনো না।
আমি- চ..চুপ। লেপ কোনে। আমি ঢুকুম।
আরাভ- নাও এটা গায়ে দেও।
.
আমি তাড়াতাড়ি বিছানায় চলে গেলাম। তারপর বসে গেম খেলতে লাগলাম। কিছু সময় পর আরাভও বিছানায় এলো।
আমি- ওই ওই সরুন। আপনার হাত পা ঠান্ডা। আমি কতো কষ্টে গরম করছি।
আরাভ- কি বললা?
আমি- এটা ছাড়বো না। আপনি অন্য লেপ নেন।
আরাভ- আমি এটাই নিবো।
আমি- না না।
.
আমি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না। ও আমার গা ঘেসে বসলো। ওর প্রতি রাগী লুক নিয়া তাকালাম। কিন্তু ওয় শয়তানি হাসি দিচ্ছিলো। আজকাল মনে হচ্ছে এংরি বর ফাজিল হচ্ছে । কিন্তু কেমনে আর কিনু? রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়লাম।
……
চলবে?

Angry_Husband Season_2___Part_8

0
Angry_husband season_2, Angry_Husband Season_2_Part_4, Avantika Anha
Angry_husband season_2, Angry_Husband Season_2_Part_4, Avantika Anha

Angry_Husband
Season_2___Part_8
Written by Avantika Anha
রাতে খাবার টেবিলে আরাভ আসলো না। হয়তো রাগ নিয়ে বসে আছে। আমি ভালো করেই জানি রেগে আছে।তাতে আমার কি? ও আমাকে মারলো কেনো? হুহ। এসবই মাথায় চলছিলো।
তবুও আমি আভার হাত দিয়ে আরাভের জন্য রুমে খাবার পাঠালাম। কিছু সময় পর আভা এসে বললো, আরাভ নাকি খাবার ফেলে দিয়েছে। খাবে না বলে। আজব ব্যাপার রাগ করছি আমি। রাগ এর প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে আরাভ। মাঝে মাঝে ভাবি মানুষ এতো পরিমাণ রাগী কিভাবে হতে পারে।
মা- বউমা তুমি যাবে নাকি?
আমি- বকে যদি কি হবে?
মা- তোরা পারিসও বটে। আচ্ছা বাদ দে আমি নিয়ে যাচ্ছি।
.
আরাভের মা ওর জন্য খাবার নিয়ে গেলো। আরাভ আর যাই হোক ওর মাকে না বলতে পারে না। আমি এদিকে সেই খুশি। কারণ ওয়‌ আমাকে এখন বকতেও পারবে না। বাজে পোলা, লুইচ্চা কোনেকার। হুহ। বেয়াদপ।
.
এই সব ভেবে আমি রাতে ঘুমাতে চলে গেলাম। মাঝে মাঝে এভাবে রুম চেঞ্জ ভালোই লাগে। আর আমি তো রাগে আছি। যাক না ওই শাকচুন্নির কাছে।
.
এদিকে আরাভের অবস্থা খারাপ। ওর পুরো রুম অনেক ফাঁকা লাগছে। আরাভের যে আনহার অভ্যাস হয়ে গেছে তা ও ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে। ওর প্রচন্ড রাগ হচ্ছে। ইচ্ছে করছিলো তার যে, আনহাকে তুলে নিয়ে আসুক। কিন্তু এটা করবে না সে। নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করছে আরাভ ভালো করেই। ওর কিছুতেই ঘুম আসছে না। রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে যাচ্ছে। ওর মতে বর্তমানে আনহা ভুল। এরকম বিহেভ করা ভুল। কিছু সময় পর মনে হতে লাগলো ওর যে, “যেকোনো মেয়ে তার স্বামীর সাথে অন্য মেয়েকে ওভাবে দেখলে রাগ করবেই। আনহাই বা ভিন্ন হবে কেনো?” “এটা তো জ্বেলেসির অংশ। তাহলে কি ও আমাকে ভালোবেসে ফেলছে? প্রশ্নের উত্তর তো শুধু ওই দিতে পারবে।” আরাভ ওর রাগ কমায় আমার নম্বরে কল দিলো।
.
এদিকে আমি মায়ের পরম স্নেহের আবেশে ঘুমের চেষ্টা করছিলাম। হঠাৎ ফোন আসলো। উঠে দেখি আরাভ আমি কাটতে লাগলাম। আরাভ বারবার কল দিতে লাগলো আমি বারবার কেটে দিলাম। হঠাৎ ফোনে মেসেজ আসলো…..
আরাভ- room a aso now.
আমি- jabo na Ami.
আরাভ- asba n now. kono ktha sunte chacci na. 5 minute er majhe Ami tmk room a chai.
আমি- Ami ghumacci tata .
আরাভ- asba .
.
আমি ঘুমে মনোযোগ দিলাম। গেলাম না ফোন বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়লাম। মায়ের সামনে এভাবে আনহাকে তুলে আনতে পারবে না। এই ভেবে আরাভ যাচ্ছে না। আরাভের রাগের পরিমাণ চরমে উঠে গেলো। সারারাত আর আরাভ ঘুমালো না শুধুই রাগের আবেশে।
.
সকাল ১০ টার ওদিক মায়ের ফোনে কল আসে.. তাকে আর আভাকে নাকি তাদের মামার বাড়ি যেতে হবে কোনো এক দরকারে। কে জানি অসুস্থ। তাই সেদিন তাড়াতাড়ি সবকিছু গুছিয়ে তারা চলে গেলো। আমি এদিকে ভয়ে শেষ। কারণ এমনি আরাভের উপর রেগে আছি আমি। এই চক্করে আরাভের রাগও বাড়ায় দিছি। মা যখন যাচ্ছিলো আমি ভেজা বিড়ালের মতো হয়ে আছি। একবার আরাভের দিকে তাকালাম ওর মুখ লাল রাগে। প্লাস মুখে শয়তানি লুক দেখলাম। এটা খেয়া আমার ভয়ে অবস্থা শেষ।
.
মা যাওয়ার সময়…
মা- আনহা তুই নিজের আর আরাভের খেয়াল রাখিস।
আমি- মা আমারেও নিয়া যাও। ওয় আমাকে ছাড়বে না।
মা- ওই আরাভ তুই আমার বউমাকে একটুও বকবি না। আর ওর রাগ ভাঙ্গাবি।
আরাভ- হুম মা। তুমি একদম চিন্তা করো না। (আমার দিকে তাকায় একবার চোখ মারলো।)
আমি- মা মা আমি যাবো। ৫ মিনিট দাড়ান আমি তৈরি হয়ে আসছি।
মা- তোর নাকি কি কাজ আছে পরশু ভার্সিটিতে। এই জন্যই তো নিলাম না।
আমি- না না আমি যাবো। ফেল করি তাও আমি থাকবো না এখন একা।
মা- আরে
আমি- ৫ মিনিট দাড়ান।
.
এই বলে আমি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আসলাম ৫ মিনিট পরে। এসে দেখি মা নাই। আমি দেখি আরাভ হাসছে। শয়তানি হাসি।
আমি- মা কই?
আরাভ- চলে গেছে।
আমি- আমিও যাবো।
আরাভ- ম্যাডাম তা তো আর হচ্ছে না।
আমি- ভাই মাফ করেন আর আমি কাউকে ঢাক্কা দিবো না। ওই শাকচুন্নিকে আপনি যা ইচ্ছা করেন। তাও কিছু বলবো না।
আরাভ- (জবাব দিলো না)
.
ওর দিকে তাকায় দেখি ওয় আরো বেশি রেগে গেছে। চোখ লাল হয়ে গেছে। আমি ভয়ে কথা ঘুরানোর চেষ্টা করতে লাগলাম।
আমি- সরি আর কিছু বলবো না। এই দেখেন কানও ধরছি আমি। (কান ধরে)
আরাভ কিছু না বলে বাড়ির দরজা লাগিয়ে দিলো। এখন বাড়িতে আমি আর আরাভ ছাড়া কেউ নাই।
আমি- ওই কিছু তো বলেন।
আরাভ- আর কিছু বলার আছে তোমার ?
আমি- না। আমি আম্মুর কাছে যাবো। যাই আচ্ছা রেডিই আছি তো।
আরাভ- ওহ ওকে।
আমি- আচ্ছা আমি গেলাম।
.
এই বলে আমি তাড়াতাড়ি কিছু জামা নিয়ে বাড়ি যেতে বের হচ্ছিলাম। কিন্তু বাইরের দরজায় দেখি তালা। বুঝছি আজ আমার নিস্থার নাই। আরাভের রুমে গেলাম পা টিপে টিপে।
আরাভ- কি যাবা না?
আমি- কি চান আপনি। এরাম কেন? আমি বাড়ি যাম।
আরাভ- তো যাও।
আমি- চাবি দেন।
আরাভ- ওকে কান ধরে ৫০ বার উঠবস করো।
আমি- তাহলে যেতে দিবেন?
আরাভ- হুম।
আমি- একটু কমানো যায় না?
আরাভ- যাবা কি না?
আমি- যাবো যাবো।
আরাভ- স্টার্ট।
.
পুরো ৫০ বার উঠবস করলাম।
আমি- এবার যেতে দেন।
আরাভ- চলো।
আমি- আপনিও যাবেন?
আরাভ- হুম।
আমি- ওকে রেখে আসিয়েন।
আরাভ- হুম।
.
বের হয়ে গাড়িতে উঠলাম। গাড়ি চলছে। হঠাৎ মাথায় এলো আমি না থাকলে আরাভ খাবে কি?
আমি- গাড়ি ঘুরান ।
আরাভ- কেনো?
আমি- বাড়ি যাবো না।
আরাভ- কিন্তু কেনো?
আমি- না থাকলে খাবেন কি। যতই আপনি মুখপোড়া হনুমান আর রাগী বিড়াল হন। আমার একটা দায়িত্ব আছে না। আমি তো ভালো মেয়ে।
.
কথাটা বলে আরাভের দিকে তাকালাম। দেখলাম ওয় আবার রেগে গেছে।
আমি- না থাক রাগতেছেন কেন? আমি তো এমনি বলছি। আপনি অনেক ভালো। এসব তো আমি নিজে।
.
আরাভ গাড়ি চালায় যাচ্ছিলো কোনো কথা বলে না। কিছু সময় পর দেখি ওয় আমাকে অন্য রাস্তায় নিয়ে যাচ্ছে। আচ্ছা ওয় কি আমাকে মেরে ফেলবে? এইসব ভাবতেছি। আর ভয়ে শেষ হচ্ছি। আচ্ছা রাগ তো আমি করছি। থাপ্পর তো ওয় মারছে। তাহলে আমি ওর কথা শুনতেছি কেন?
আমি- ওই মি. আরাভ। রাগ তো মে বি আমি করছি। তাহলে আপনি লাল লাল টমেটো হচ্ছেন কেনো? (মজা করার জন্য)
আরাভ- চুপ।
আমি- আচ্ছা একটা জোক শুনাই হুম,
“একটা হুতুম পেচা ছিলো। দেখতে লাল। কারণ সে রাগলেই লাল লাল হতো। তাই ওর নাম দিলো লাল টমেটো।
.
একদিন সে পা পিচলে পড়ে গেলো। সবাই বলতে লাগলো। লাল টমেটো পড়ে ভর্তা হলো। তারপর থেকে আপরা ভর্তা খাই। মজার না। হিহি।”
.
আমি জোক টি বলে আরাভের দিকে তাকালাম। মনে হয় না সে বিশেষ খুশি হইছে। বরং রেগে গেছে। কিন্তু রাগলো কেনো? আমি তো আর কিছু বললাম না।
.
“পাঠকরা কি জানেন? আরাভ কেনো রাগলো?”
.
হঠাৎ আরাভ গাড়ি থামায় দিলো। খুন করবে নাকি?
আরাভ- বের হও গাড়ি থেকে।
আমি- প্লিজ আমাকে মারিয়েন না। কেবল তো বিয়ে হলো। এখনো তো বাচ্চাও হয় নাই। দেখেন আমি আপনাকে কতোদিন রান্না করে খাওয়ালাম। আরও খাওয়াবো নে। তাও মারে ফেলিয়েন না। দেখেন আমি মরলে আপনার বাচ্চাও মা হারা হবে। আপনার ছোট বাচ্চাদের মা কে মাইরেন না।
আরাভ- কি বলছো এসব?
আমি- মারিয়েন না প্লিজ।
আরাভ- ১-৩ বলবো না বের হলে ফল খারাপ হবে।
.
আমি চুপচাপ বের হলাম। জায়গাটা অন্ধকার। দেখা যাচ্ছে না কিছু। হঠাৎ আরাভ একটা মোমবাতি জ্বালালো। মোমের আলোয় দেখলাম আরাভের হাতে চাকু। তার মানে ও এটা দিয়ে আমাকে মারবে।
.
আমি আর নাই।
আরাভ আরও কিছু মোম জ্বালিয়ে দেখে আমি পাশে নাই।
.
এদিকে আমি দৌড়াচ্ছি। বাঁচলেই ভালো। হঠাৎ কে জানি হাত ধরে ফেললো। ঘুরে দেখি আরাভ।
আমি- মারিয়েন না। দেখেন মারলে বিষ খাওয়ান। চাকু দিয়ে কেনো মারবেন। আপনি না ভালো ছেলে। খুনি হইয়েন না।
আরাভ- তুমি কি পাগল? চলো ওখানে।
আমি- না না না আমি যাবো না।
.
আরাভ কিছু বলার সুযোগ দিলো না আমাকে। কোলে তুলে ওখানে নিয়ে গেলো। গিয়ে দেখি কেক। কিন্তু কেনো আজ কি তবে আমার জন্মদিন?
আমি- কেক?
আরাভ- জ্বী।
আমি- ওয়াও আমার আজকে জন্মদিন। মনেই ছিলো না। থেংকু গিফ্ট কই?
আরাভ- এটা অ্যানেভার্সেরি কেক আমাদের।
আমি- ওওওওও আমাদের ১ বছর হয়ে গেলো। এটাও জানতাম না। মনেই ছিলো না।
আরাভ- ৭মাস হলো আজ আমাদের বিয়ের।
আমি- কি ৭ মাস। এতোদিন ধরে আমি আপনাকে সহ্য করছি।
আরাভ- বাড়ি চলো।
আমি- সরি মজা করলাম। চলেন কেক কাটি।
.
কেক কাটা শেষে ওখানকার পরিবেশ উপোভোগ করে আমরা বাড়ি ফিরে এলাম। কিন্তু উনি এতো রাগী হওয়া সত্ত্বেও এরকম রোমান্টিক জানতামও না। ওমা আমি যে রাগ করছি।
.
রাতে….
আমি মায়ের রুমে যাচ্ছিলাম। দেখি আরাভ টিভি দেখছে।
আমি- আমি ঘুমোতে গেলাম।
আরাভ- সব জিনিস রুমে আনো।
আমি- না আমি রেগে আছি।
আরাভ- ঢং করবা না।
আমি- না না না।
আরাভ- আনহা আজ রাতটা অন্ধকার খুব তাই না।
আমি- কি
আরাভ- হুম। ভুত আসতে পারে তাই না? দেখো শব্দ পাচ্ছো?
আমি- আম্মুউউউউ। (বলে তাড়াতাড়ি আরাভের পাশে বসে পড়লাম)
আরাভ- কই ঘুমাবা?
আমি- আপনার পাশে।
আরাভ- না না থাক।
আমি- প্লিজ আমার ভয় লাগছে।
আরাভ- কেনো?
আমি- প্লিজ।
আরাভ- যাও। তোমার সব জিনিস ঘরে আনো।
আমি- আপনিও চলেন। আমার ভয় করছে।
.
অতঃপর আরাভ আনহার সব জিনিস রুমে নিয়ে আসলো। আজ প্রথম হয়তো আরাভ নিজের রাগকে কন্ট্রোল করছে। শুধু আনহার জন্য এই ভেবে ওর মুখে হাসি ফুটলো। রাতে আরাভের আরাম লাগছে। কারণ ১ রাত পর আনহা ওর পাশে। আরাভ যে পুরোপুরি আনহার মায়ায় পড়েছে। ও ভালো করেই বুঝতে পারছে।
.
পরেরদিন….
আরাভ উঠে দেখে আনহা পাশে নাই। হঠাৎ ছাদে চিল্লাচিল্লির আওয়াজ এলো। আরাভ তাড়াতাড়ি দৌড়ে গেলো। তারপর যা দেখলো চোখ উপরে….
.
চলবে……