Monday, August 25, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2361



 Angry_Husband  Season_2_Part_27

0
 Angry_Husband  Season_2_Part_27
 Angry_Husband  Season_2_Part_27

Angry_Husband
Season_2_Part_27
Written by Avantika Anha

আমি সিম অফ করে ফেললাম। যেই সিমটা সবাই জানে সেটাই অফ করলাম। কারণ আমার মাঝে এখনো ভয় যে, আরাভ হয়তো আনভীরকে কেড়ে নিবে। এদিকে আরাভসহ পরিবারের বাকীরা আমাকে খুঁজতে লাগলো। আমার ধারণা সঠিক ছিলো ওরা প্রথমে মিমির বাড়িই গেলো। যা মিমি আমাকে জানিয়েছিলো। তাড়াহুড়ায় ওরা মিমিকে জান্নাতের কর্মকান্ডের সত্যি বলতে পারে নি তাই আমিও জানতে পারলাম না তবুও সব সত্যি।‌
.
হোটেলের রুমে বসে তাড়াতাড়ি টিকিটের খোঁজ করছি। ভিসা ছিলোই আর তাড়াতাড়ি টিকিটও পেয়ে গেলাম পরেরদিনের। আমি এখন কিছুটা হলেও নিশ্চিন্ত হলাম।
.
এদিকে খোঁজ নিয়েও আরাভ আমার ঠিকানা পেলো না। এমনকি অফিসে গিয়েও খোঁজ পেলো না। অফিসে গিয়ে শুনলো আমি ছুটি নিয়েছি। আরাভ রুমে এসে শুয়ে পড়লো।
.
ওর চোখ দিয়ে দু ফোটা পানি পড়লো।
আরাভ- কই তুমি আনহা? কই গেলা? একবার তো তোমাকে নিজের দোষে হারালাম এবারও হারাতে চাই না। “হে আল্লাহ দয়া করে আমাকে ওকে খুঁজে দিন।”
.
এদিকে আমি তবুও অনভীরকে জড়িয়ে শুয়ে আছি। আরাভ ওদিকে চোখ বন্ধ করে আছে। হঠাৎ ওর‌ মাথায় আসলো আনহা তো ফরেইন থেকে আসছে এর মানে ও কার্ড ইউজ করবে। ওর কাছে তো বেশি ক্যাশ থাকবেও না। আরাভ তাড়াতাড়ি খোঁজ নেওয়া শুরু করলো। বড় পরিচিতি আছে আরাভের বিজনেসম্যান হিসেবে। তাই আরাভ খোঁজ নিয়ে পরেরদিন সকালে জানতে পারলো আমি এক হোটেলে কার্ড ইউজ করছি আর টিকিট কাটতেও কার্ড ইউজ করছি। আরাভ বুঝে গেলো আমি ফরেইন ব্যাক করছি।
.
আরাভ তাড়াতাড়ি বের হয়ে পড়লো। সাথে আর কাউকে নিলো না। আনভীরকে ঘুম পাড়াচ্ছিলাম। এমন সময় রুমে কে জানি নক দিলো।
.
আমি- কে?
অপর প্রান্তে- রুম সার্ভিস। (অন্য আওয়াজ বের করার চেষ্টা করলো আরাভ)
আমি- (আওয়াজটা কেমন পরিচিত আজব আজব লাগছে।তবুও জবাব দিলাম) আমি তো কিছু চাই নি।
অপর প্রান্তে- ম্যাম আমি কিছু জিনিস নিয়ে যেতে এসেছি।
আমি- কি??? সময় পান না? আফ্রিকান বিলাই কোনেকার আমি আমার বাচ্চাকে ঘুম পাড়াচ্ছি। আপনি পরে আসেন।
অপর প্রান্তে- ম্যাম দরকার আছে একটু খুলুন নিয়েই চলে যাবো।
.
আমি- ওয়েট।
.
দরজা খুলে আমি আরাভকে দেখেই শকড।
আরাভ- জ্বী ম্যাম আমি আমার জিনিসই নিতে আসছি।
.
আমি তাড়াতাড়ি দরজা লাগাতে চেষ্টা করলাম কিন্তু আরাভের শক্তির কাছে পারলাম না। এক কোলে আনভীরও ছিলো।
আমি- আপনি কেনো এসেছেন?
আরাভ- আমার বউ আর বাচ্চাকে নিতে এসেছি।
আমি- আমরা যাবো না আপনার সাথে।
আরাভ- মিস আপনাকে যেতেই হবে।
আমি- হোয়াট? না আমরা যাবো না।
আরাভ- আনহা ভালোভাবে বলছি চলো নইলে তুলে নিয়ে যাবো।
আমি- আমি আপনার সাথে যাবো না। আমার আনভীরকেও দিবো না আপনাকে।
আরাভ- আমি তো নিবোই।
আমি- ওই আফ্রিকান ইঁদুর যান এখান থেকে আপনি।
আরাভ- আহা এতোদিন পর তোমার মুখে এসব কথা শুনে ইচ্ছে করছে হাওয়ায় ভাসি।
আমি- প্লিজ আপনি যান এখান থেকে। (কেঁদে ফেললাম)
আরাভ- (খারাপ লাগলো ওকে কাঁদতে দেখে) সিওর?
আমি- প্লিজ যান এখান থেকে।
আরাভ- ওকে ম্যাম। আসতেছি তাহলে।
আমি- আচ্ছা।
.
আরাভ বের হয়ে চলে গেলো। আমি স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম। কিন্তু আমার আর এখানে থাকলেও চলবে না। আমি তাড়াতাড়ি জিনিস গুছিয়ে নিলাম।
.
আমি তাড়াতাড়ি সব মিটমাট করে অন্য হোটেলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলাম। হঠাৎ কে জানি আমার চোখে পট্টি বেঁধে ফেললো। আমার ভয় লেগে গেলো। কে জানি আমার কোল থেকে আনভীরকে কেড়ে নিলো। আমার শ্বাস বন্ধ হতে লাগলো। কারণ আনভীর আমার জীবন। কে জানি আমাকে টেনে গাড়িতে তুললো। আমি কিছু বলতে পারছিলাম না কারণ আমার মুখও বেঁধে ফেলা হয়েছিলো।
.
কই জানি এনে আমাকে নামানো হলো। কোনো এক বাড়িতে আমকে ঢুকানো হলো।
.
কিছু সময় পরে আমার চোখ খুলে দেওয়া হলো। চোখ খুলে দেখি আমার সামনে আরাভ। এর মানে আরাভই আমাকে কিডন্যাপ করেছে। কিন্তু এই বাড়িটা কার?
.
সেই সময় আরাভ বের হয়ে ওর কিছু বন্ধুকে ডাকলো। আর প্লান অনুযায়ী আমাকে কিডন্যাপ করলো। হোটেলে কিছু করলে মানুষ আটকাবে তাই ও বাহির থেকে কিডন্যাপ করলো। কারণ ও জানতো আনহা এই হোটেলে আর থাকবেই না। সামনে কি হলো সবাই তো জানিই।
.
.
আমি- আপনি এমন কেনো করছেন আমার আনভীর কই?
আরাভ- ঘুমাচ্ছা ঘরে ম্যাম।
আমি- এসবের মানে কি?
আরাভ- ম্যাম আমার জিনিসকে আমি ছাড়ছি না।
আমি- বাহ আজ আসছেন আমার জিনিস আমার জিনিস করতে এতোদিন কই ছিলেন? কই ছিলেন তখন যখন আমি প্রেগনেন্ট ছিলাম। সব যন্ত্রণা একা সহ্য করেছি। অপারেশন থিয়েটারেও একা ছিলাম। কেউ ছিলো না পাশে। তখন কি হয়েছিলো আপনার?
আরাভ- আনহা জানি আমি ভুল করছি কিন্তু আমার কোনো দোষ ছিলো না। জান্নাত চাল চেলেছিলো।
আমি- কি এমন চাল চেলেছিলো যে আপনি আমাকে ছেড়ে দিলেন?
আরাভ- (সব বললাম)
আমি- ও ভালোই।
আরাভ- দেখো আমার দোষ নাই কোনো।
আমি- ভালোই।
আরাভ- সব জেনেও এমন করছো কেনো?
আমি- এমনি আমার কাল ফ্লাইট আছে আমাকে যেতে দেন।
আরাভ- না কখনোই না।
আমি- অলটাইম জেদ ভালো লাগে না।
আরাভ- আমার জেদ তোমাকে মানতেই হবে।ভুলবা না আমরা এখনো ডিভোর্স নেই নি।
আমি- দূররর।
আরাভ- দূররর বলে লাভ নাই। কিছু খেয়ে নেও। আর লাভ নাই চেষ্টা করেও পালাতে পারবা না। এটা আমারই ফ্লাট। বাইরে সিকিওরিটি লাগানো মিস।
.
আমি আর জবাবই দিলাম না। কারণ আমার প্রচুর রাগ উঠছিলো।
.
অগত্যা আমি আনভীরের পাশে গিয়ে বসলাম।
কিছু সময় পর আরাভ এলো।
আরাভ- চলো বাবু খাবে।
.
আমি হা করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি। কারণ ও একটু বেশিই রোমান্টিক হচ্ছে। আগেএ হতো বাট প্রায় ২ বছর পর এটা আজবই লাগে।
আরাভ- হাওয়া খেয়ে পেট ভরবে না ম্যাম চলেন খাবেন আর বাবু তো ঘুমোচ্ছে।
আমি মনে মনে ওরে গালি দিতে লাগলাম।
আরাভ- মনে মনে পরে গালি দিয়েন চলেন খাবেন আর যদি না খান তাহলে ফিল্মে দেখি জোড় করে খাইয়ে লিপ দিয়ে আর কি বুঝাতে হবে?
আমি- যাচ্ছি।
.
চুপচাপ খেয়ে নিয়ে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়লাম। আর প্লান করতে লাগলাম কি করা যায়? কিন্তু তাও হলো না আরাভ পিছন দিয়ে এসে জড়িয়ে ধরলো।
আমি- ছাড়ুন আমাকে।
আরাভ- এতোদিন পর ধরেছি ছাড়বো না মিস।
.
চেষ্টা করেও লাভ হলো না। কারণ ওর শক্তি বেশি। আমি চুপচাপ ভাবতে লাগলাম কি করা যায়?
.
চলবে….

Angry_Husband Season_2_Part_26

0
Angry_Husband Season_2_Part_26
Angry_Husband Season_2_Part_26

Angry_Husband
Season_2_Part_26
Written by Avantika Anha
সকাল হতেই আরাভ দ্রুত তৈরি হয়ে নিলো। আরাভকে বের হতে দেখেই ওর মা,
মা- আরাভ।
আরাভ- জ্বী আম্মু।
মা- তুমি কাল রাতে কই গেছিলা? আর তোমার মামা কেনো জানি ফোন ধরছে না। একটু দেখে আসিও।
আরাভ- আচ্ছা পরে যাবোনে।
মা- আচ্ছা।
.
আরাভ তাড়াতাড়ি আনহাকে ফোন দিলো বের হয়েই,
আরাভ- হ্যা তোমার অফিসে আসা লাগবে না। আমিই তোমার বাড়ির সামনে আসছি।
আমি- না আমিই নিয়ে নিবো।
আরাভ- তোমার এতো বের হতে হবে না। তুমি তোমার আনভীরের খেয়াল রাখো। (আরাভও ইনডিরেক্ট বললো)
আমি- হুম। আচ্ছা বাড়ির সামনের কফি শপে আসুন।
.
এটুকু বলে ফোন কেটে দিলাম। কেনো জানি আরাভের কথা শুনে আজব লাগছিলো। কেমন একটা রহস্যের মতো। রেডি হয়ে বাইরে বের হয়ে দেখি প্রেয়সির শশুড়বাড়ির লোকজন বসে আছে।
আমি- আসসালামুয়ালাইকুম।
বড়রা সালাম নিলো।
.
প্রেয়সির চাচি শাশুড়ি- এইতো মেয়েই এখানে ওর সামনেই কথা হোক।
আমি- মানে কি কথা?
আম্মু- আনহা এদিকে আয়। (আম্মু আমাকে এক কোণায় নিয়ে গিয়ে যা বললো তা শুনে আমি থ।)
.
কারণ তারা আমার বিয়ের প্রস্তাব এনেছে।
আমি- আম্মু আমি বিয়ে করবো না।
আম্মু- কেনো করবি না? সারাজীবন কি এভাবে থাকবি নাকি? তাছাড়া তুই তো একা না। আনভীরও আছে।
আমি- আমি তো তোমাদের উপর বোঝা হয়ে নেই। তাহলে? আমি বিয়ে করবো না এটাই ফাইনাল। আর আমি এমনিও ২ দিনের মধ্যে UsA করতাম। আমি‌ এখানে থাকবো না আর সাথে আমার ছেলেকেও নিয়ে যাচ্ছি। থাকো তোমরা।
.
আমি সেখানে গিয়ে,
আমি- আমাকে আপনারা ক্ষমা করবেন। কিন্তু আমি বিয়ে করতে পারবো না। আমি আমার ছেলেকে নিয়েই আমার বাকী জীবনটা কাটাতে চাই। দয়া করে আপনারা বুঝার চেষ্টা করুন।
.
আমি আমার সব জিনিস নিয়ে লুকিয়ে বাড়ির‌ বাইরে চলে এলাম। সবাই গল্প করছিলো যখন ঠিক সেই সময়ে।
কারণ আমি জানি আমাকে ইমোশনাল করবেই আম্মু। কিন্তু আমি বিয়ে করতে চাই না। আমার জীবনের এক মাত্র পুরুষ হিসেবে শুধু আরাভই। ওর পরে আমি আর কাউকে আপন করতে পারবো না। তাই বাধ্য হয়ে সব জিনিস আর সাথে আনভীরকে কোলে নিয়েই অগত্যা বের হতে হলো। সব কিছু মিমিকে বলতেই ও ওর বাড়িতে যেতে বললো। কিন্তু আমি জানি আমার মা ও পরিবারের বাকীরা প্রথম খোঁজ ওখানেই নিবে। তাই অগত্যা হোটেলের উদ্দেশ্যে বের হলাম।
.
আমি এতো কিছুর চক্করে ভুলেই গেছিলাম আরাভকে ডেকেছিলাম। তবুও অগত্যা হাটতে লাগলাম। হঠাৎ সামনে দিয়ে একটা গাড়ি আসলো। আমার নজর আনভীরের দিকে ছিলো আর হাতে লাগেজ তাই সরে যেতে দেরী হয়ে গেলো। ভাবলাম হয়তো এক্সিডেন্ট হবে। কিন্তু গাড়িটা থামিয়ে দিলো। গাড়ি থেকে আরাভ বের হলো।
.
এমন অবস্থায় আমার প্রথম দিনের কথা মনে পড়লো। আরাভের সাথে আমার পাঙ্গা। কিন্তু পরক্ষণে আমার মাথায় এলো আরাভ আনভীরকে দেখে‌ ফেলেছে।
আমাকে এখান থেকে দ্রুত যেতে হবে।
আমি- ব্যাগটা দেন।
আরাভ- আনহা এটা কার বাচ্চা?
আমি- এটা মিমির বাচ্চা। (কথা ঘুরাতে)
আরাভ- তাই?
আমি- জ্বী। আপনি ব্যাগ দেন।
আরাভ- (ব্যাগটা এগিয়ে দিলো) তা মিমির বাচ্চাকে নিয়ে তুমি কই যাচ্ছো? তাও লাগেজ হাতে?
আমি- মিমি এক জায়গায় গেছে তাই আমাকে একটু দিয়েছে। আর আমি USA ব্যাক করছি। আচ্ছা আসি। আপনার কাজ পুরো হয়ে যাবে।
আরাভ- তাই?
আমি- জ্বী।
.
তাড়াতাড়ি ঘুরে গেলাম।
আরাভ- আর কতো লুকাবে আমার ছেলের কথা।
আমি- ম.. মানে?
আরাভ- তুমি জানো আনহা এটা আমারো ছেলে।
আমি- আনভীর শুধু আমার। আর আমরা চলে যাচ্ছি।
আরাভ- আনহা এবার কিন্তু আমার রাগ উঠছে।
আমি- যাই হোক।
আরাভ- বাড়ি ফিরে চলো আর দেখি আনভীরকে আমার কোলে দেও।
আমি- না আমি আমার বাচ্চা কাউকে দিবো না।
আরাভ- আনহা বেশি হচ্ছে।
.
আমি কোনো জবাব না দিয়ে হাটতে শুরু করলাম। আরাভ আমার হাত ধরে টেনে আমার গালে চড় বসিয়ে দিলো।
চড়ের শব্দে আনভীর কেঁদে উঠলো।
আমি ওকে চুপ করাতে লাগলাম।
আরাভ- দেও আমাকে দেও।
আমি- না আমি আমার ছেলেকে কাউকে দিবো না।
আরাভ- এটা আমারো ছেলে আনহা।
আমি- আপনি থাকেন না আপনার সংসার নিয়ে।‌ আমার বাঁচার সম্বল কেনো কেড়ে নিতে আসছেন? আমি কখনো কি আপনার জীবনে কিছু বলেছি?
আরাভ- আমার সংসারই নাই ইয়ার। আমি বিয়েই করি নি আর।
আমি- হাহাহা তাই নাকি? ওই মেয়েটাকেও ছেড়ে দিছেন।
আরাভ- আনহা তুমি আমাকে ভুল বুঝছো।
আমি- আমি কোনো ভুল বুঝছি না। যা জানার বা বুঝার জানি।
আরাভ- আনহা জান্নাত অনেক বড় চাল চেলেছিলো। তুমি জানো না।
আমি- ওহ। আর কিছু। (অভিমানে)
আরাভ- আনহা বুঝার চেষ্টা করো।
আমি- আমার কিছু বুঝার নাই।
.
হঠাৎ আরাভের ফোনে কল আসলো, “ও জানতে পারলো ওর মামা হার্ট এ্যাটাকে মারা গিয়েছে আর এটা শুনে তার মা অজ্ঞান।” এসব শুনে আরাভ আর কিছু না ভেবেই সেখানে চলে গেলো।
.
আমি বুঝলামও না জানলামও না কি হয়েছে? আমি সেখান থেকে গিয়ে একটি হোটেলে উঠলাম।
.
এদিকে সবাই কান্নাকাটি করছে। সবচেয়ে বেশি জান্নাত। আরাভকে দেখতেই,
জান্নাত- আমাকে ক্ষমা করে দে। আমি জেদের বশেই এসব করেছি এই জন্যই আব্বু আমাকে ছেড়ে চলে গেলো। প্লিজ ক্ষমা করে দে।
.
আরাভ জান্নাতকে দেখতেই তার আনহার কথা মনে পড়লো।ও টেনশনে পড়ে গেলো যে, ও আনহাকে এখন কই খুঁজে পাবে? কিন্তু ওকে খুঁজতেই হবে। জানাযা কবর দেওয়া সব শেষে, আরাভ আর ওর পরিবারের বাকীরা বাড়ি ফিরে এলো। আরাভ ভাবছে এখনি বলা উচিত ওর সবাইকে সব কিছু।
আরাভ- মা।
মা- বল বাবা।
আরাভ- মা আনহা কারো সাথে পালায় নি।
মা- মানে? কি বলছিস?
আরাভ- মা জান্নাত,,,,,,,,,,, (সব কিছু বললো)
মা- তার মানে আমার বিশ্বাস ভুল ছিলো না?
আরাভ- না মা।
আভা- ভাবিকে তাহলে আমরা ভুল বুঝলাম।
আরাভ- হুম।
মা- বাবা কই আমার নাতি?
আরাভ- জানি না মা। কিন্তু এই শহরেই হয়তো আছে। অথবা এই দেশের কোথাও।
মা- আমাকে আমার নাতিকে এনে দে।
আরাভ- হুমম মা আনবো।
.
এদিকে আমার খুব ভয় হচ্ছে। আরাভ আনভীরকে কেড়ে না নেয়। কিন্তু আমি এখনো জানি না আরাভ কেনো এমন করেছে। জেদের বশে শুনিই নি। আর ওদিকে আরাভ আমাকে খুঁজা শুরু করেছে। প্রথমে ওরা সবাই আমার বাড়ি গেলো। সব শুনেও আমার পরিবারের মানুষ আরাভকে পুরোপুরি ক্ষমা না করলেও কিছুটা মাফ করেছে।
.
.
চলবে…….

Angry_Husband Season_2_Part_25

0

Angry_Husband
Season_2_Part_25
Written by Avantika Anha

আরাভ তার ঘরের ভেতর বসে আছে। আনহার ব্যাগটা ওর সামনে। ওর খুব জানতে ইচ্ছে করছে এখনো কি আনহার ব্যাগে অনেকগুলো কিটক্যাট থাকে? সে কয়েক পা এগিয়ে গেলো। কিন্তু আবার পিছিয়ে গেলো। এই ভেবে যে তার আর অধিকার নাই।‌
.
আমি সেদিন ব্যাগের কথা ভুলেই গেছিলাম। সারাদিন আনভীরকে কোলে নিয়ে ছিলাম। রাতে হঠাৎ ব্যাগের কথা মনে পড়লো। সাথে সাথে ফোন খুলে দেখি আরাভের মিসড কল অনেকগুলো। ফোন ভাইব্রেশনে থাকায় দেখি নি। দেরী না করেই তাড়াতাড়ি আরাভকে কল দিলাম,
আমি- আসসালামুয়ালাইকুম।
আরাভ- ওয়ালাইকুম আসসালাম আনহা।
আমি- জ্বী স্যার বলুন।
আরাভ- স্যার বলছেন যে,
আমি- ইচ্ছা করছে তাই। বলুন কি বলবেন।
আরাভ- ওইতো তোমার ব্যাগটা আমার কাছে।
আমি- ও থেংক গড। আমি কাল নিয়ে নিবো আপনার অফিস থেকে। আর প্রজেক্ট এর অনেক কাজ পূর্ণ। আমি কাল রাতে চলে যাবো USA । বাকী কাজ আরেকজন সামলাবে।
আরাভ- আচ্ছা।
আমি- হুমম।
আরাভ- হুমমম।
আমি- আচ্ছা তাহলে।
আরাভ- আচ্ছা।
আমি- কল কাটবেন না?
আরাভ- ও সরি সরি।
আমি- হিহিহি।
আরাভ- হাসছো যে।
আমি- কিছু পুরোনো কথা মনে পড়েছিলো।
আরাভ- আচ্ছা।
আমি- মাঝে মাঝে পুরোনো স্মৃতি অনেক কষ্ট দেয় তাই না?
আরাভ- হুমমম। তা কি করছিলে?
আমি- ওইতো আনভীরের (আনভীরের নাম নিতেই চুপ করে গেলাম)
আরাভ- ও ব্যস্ত ?
আমি- জ্বী।
.
হঠাৎ পিছন থেকে আনভীর কান্না করে উঠলো।
আমি- আচ্ছা রাখি।
.
আমি ফোনটা কোনো রকমে কাটার চেষ্টা করে রেখে দিলাম। ভুল করে ফোনটা কাটাই হইলো না।
.
আমি আনভীরের কাছে গিয়ে, “ওরে আমার সোনা বাবা কাঁদে না। এইতো আম্মু তোমার কাছে। ওওও ওও। আনভীর বাবু চুপ করো। আমার ছোট্ট রাজকুমার আনভীর।”
.
এদিকে আরাভ সব কথা শুনছিলো। আরাভ পুরোই শক খেয়ে গেলো।
.
ওর মাথা কাজ করছে না। মাথায় একটাই প্রশ্ন, “তাহলে আনভীর কি আনহার বাচ্চা? আনহা যে বললো ওর স্বামী। তাহলে কি ও মিথ্যে বললো। আনভীর কি তাহলে আমার আর আনহার ছেলে?”
“না এটা কেনো হবে। ডক্টর তো বলেছিলো আমি কখনো বাবা হতে পারবো না।”
.
আরাভের মাথা কাজ করছে না।
.
আবার এদিকে,
আমি অনেক সময় চেষ্টা করে আনভীরকে চুপ করালাম। তারপর ফোন হাতে নিয়ে দেখি কল এখনো কাটা হয় নি। আমি পুরো ভয় পেয়ে গেলাম। ফোনটা হাতে নিয়ে,
আমি- হ্যালো। (ভয়ে ভয়ে)
আরাভ- জবাব দিলো না।
.
আমি কয়েকবার হ্যালো হ্যালো করলাম কিন্তু আরাভ জবাব দিলো না। তাই আমি ভাবলাম ও হয়তো শুনেই নি। কিছুটা স্বস্থির নিশ্বাস ফেললাম। আরাভ শুধু জানার জন্যই কিছু বললো না।
.
আরাভ আনহার ব্যাগে হাত দিলো। এই ভেবে কোনো প্রমাণ পাওয়া যাবে হয়তো। ও আনহার আর আনভীরের পাসপোর্টের ফটোকপি পেলো। যেখানে দেওয়া আছে আনহার একটা বাচ্চা আছে। যার নাম আনভীর। স্বামীর নামের জায়গায় আরাভের নাম। আর আনভীরের বাবার নামেও আরাভের নাম। আরাভের চোখ বড় হয়ে গেলো। ও বুঝছে না কিছুই। তাহলে কি আমার ছেলে আছে। কিন্তু ডক্টর। আরাভ সাথে সাথে এক ডক্টরকে কল দিলো, জরুরী একটা টেস্ট করবে বলে।
আরাভ- রাজ।
রাজ- বল।
আরাভ- আমি একটা টেস্ট করাতে চাই এখনি।
রাজ- কি টেস্ট?
আরাভ- আমি জানতে চাই আমার মাঝে কোনো সমস্যা আছে কি না?
রাজ- মানে?
আরাভ- আমার বাবা হওয়ার ক্ষমতা আছে কি না আমি জানতে চাই।
রাজ- কি বলছিস এসব কেনো?
আরাভ- আমার মনে হয় আমি গোলক ধাঁধায় আটকে গেছি। বের হতেই হবে দোস্ত সাহায্য কর।
রাজ- এখন তো অনেক রাত। কাল সকালে করি।
আরাভ- জানি প্লিজ দোস্ত মনে হচ্ছে অনেক সমস্যায় জড়িয়েছি। কাল অনেক দেরী হয়ে যাবে।
রাজ- ওকে। আমি তোর বাড়ির সামনে আসতেছি। তুই বের হ।
আরাভ- ওকে।
.
আরাভ সাথে সাথে কোনোমতে রেডি হয়ে বাইরে গেলো। টেস্ট করায় জানা গেলো আরাভের বাবা হওয়ার ক্ষমতা আছে। আরাভ পুরোই হতভম্ভ। কীভাবে সম্ভব? তাহলে আগের ডক্টর এমন করেছে কেনো? আরাভ পুরো বিষয় রাজকে বললো। রাজ সব শুনে,
রাজ- ডক্টরের নাম বল।
আরাভ- ডক্টর. জুনায়েদ চৌধুরী।
রাজ- চল আজই ধরবো। তার ঠিকানা আমি জানি। দাড়া আরো কয়েকজনকে ডাকি।
.
আরাভের অন্য কিছু বন্ধু মিলে ওই ডক্টরের বাড়ি যাওয়া হলো। ডক্টর আরাভকে দেখে শকড। হয়তো খারাপ কাজ বেশি মনে থাকে।
জুনায়েদ- আপনি এখানে?
আরাভ- চিনছেন তাহলে।
জুনায়েদ- মানে?
রাজ- ডক্টর হয়ে এমন কিভাবে করলেন? ফেক রিপোর্ট কেনো?
জুনায়েদ- কি বলছেন এসব?
.
আরাভ রেগে ড. জুনায়েদকে একটা ঘুসি দিলো।
আরাভ- সত্যি বল জ্বলদি নইলে আজ তোকে মেরেই ফেলবো।
.
জুনায়েদ প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও আরাভের কাছে ও‌ বাকীদের কাছে মার খেয়ে সত্যি বললো। কে ওকে টাকা দিয়েছে থেকে শুরু করে সবকিছু। আরাভের রাগ অনেক বেশি। তাই তার মার খেয়ে ড. জুনায়েদের অবস্থা খারাপ হয়ে গেলো। আরাভ সাথে সাথে জান্নাতের বাড়ির দিকে রওয়ানা হলো। ওকে আজ রাতেই সব ঠিক করে আনহাকে আবার নিজের করতেই হবে।
.
আরাভ জান্নাতের বাড়ির গেটে বেল চাপলো।
জান্নাত- তুমি এখানে যে? (কিছুটা ভনিতা করে)
আরাভ- তুই এমন কেনো করলি?
জান্নাত- আমি আবার কি করলাম?
আরাভ- কেনো করলি আমার আর আনহার সাথে এমন?
জান্নাত- ও তাহলে জেনে গেছিস? প্রতিশোধ এটা বুঝলি?
.
আরাভ রেগে জান্নাতের গালে থাপ্পড় দিলো। জান্নাত দূরে গিয়ে পড়লো। এতে একটু শব্দ হলো। এতে বাড়ির বাকীরা বেড়িয়ে এলো।
.
আরাভ- আরে তোর মতো মেয়েকে কে ভালোবাসবে? তুই তো ভালোবাসার যোগ্যই না। আরে বেয়াদপ মেয়ে তুই ভালোবাসা বুঝিস? তোর বাপ মা তোকে শিখায় নি? আরো অনেক কিছু বললো।
.
আরাভ আরও গালি দিলো। রাগের মাথায়। আরাভের মামা বুঝছেই না আরাভ কেনো এমন করছে?
আরাভের মামা- কি হয়েছে আরাভ? তুমি আমার মেয়েকে এভাবে মারতে পারো না।
আরাভ- আপনার জন্যই এমন হয়েছে। মেয়েকে আরো মাথায় উঠান। কি কি করছে জিজ্ঞেস করুন। প্রথম থেকে।
.
আরাভ সবকিছু বললো। বলে সেখান থেকে চলে আসলো। আর জান্নাতকে সাবধান করে দিলো। জান্নাতের বাবা খুব কষ্ট পেয়ে জান্নাতকে বুঝালো।
.
আরাভ ভাবছে, ওকে আনহার ভালোবাসা আবার জয় করতেই হবে। ও জানে আনহাকে সব বললেও ও মানবে না। ওকে আবার কিছু করতেই হবে। কালই। আরাভ ভাবতে লাগলো, কিভাবে সব ঠিক করা যায়। তারও উপরে ওর বিশ্বাসই হচ্ছে না ওর একটা ছেলে আছে। আরাভ আনহার‌ ব্যাগে আনভীরের আরো ছবি পেলো সেদিন রাতে। সব দেখে ও‌ বুঝলো‌ ওদিনের বাচ্চাটা মিমির না আনহার ছিলো।
.
আরাভ সেদিন রাতটা কোনোমতে আনভীরের ছবি বুকে জড়িয়ে কাটালো। সে ভাবছিলো হয়তো সব ঠিক হবে। কিন্তু কে জানে হবে কিনা? জানতে সাথে থাকুন।
.
চলবে….

Angry_Husband Season_2_Part_24

0
Angry_Husband Season_2_Part_24
Angry_Husband Season_2_Part_24

Angry_Husband
Season_2_Part_24
Written by Avantika Anha

আমি বাড়িতে আনভীরের সাথে সময় কাটাচ্ছিলাম। এমন সময় ঘরে প্রেয়সি আসলো।
প্রেয়সি- আপু চল তো একটু বাইরে যাই।
আমি- তুই যা। বড় হইছিস তো। প্রবলেম হলে রায়ানকে(ওর হবু বর) বল আসতে।
প্রেয়সি- আরে ওর সাথেই দেখা করতে যাচ্ছি। তুইও চল আমার ভয় করছে।
আমি- দূরর কিসের ভয়?
প্রেয়সি- তোর সময় যে আমি গেছিলাম, (কথাটা বলেই ও জিহ্বায় কামড় দিলো। কারণ ও বুঝেছে যে, কথাটা ভুলে হলেও আমাকে আঘাত করেছে)
আমি- তুই যাবি এখান থেকে? (কিছুটা চিৎকার দিয়ে কারণ কথাটা আমাকে আরাভের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে)
.
প্রেয়সি আর কিছু না বলে ওখান থেকে চলে গেলো। আমি আনভীরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। আনভীরই আমার সব। আরাভের দেওয়া ধোঁকার পর আমার বাঁচার সম্বলই সে। তাই কষ্ট হলে তাকেই আকড়ে ধরি।
.
আরাভ এখনো জানে না ওর সন্তান আছে।
..
..
প্রেয়সির বিয়ের অনুষ্ঠানগুলো শুরু হয়ে গেলো। সব ভালো ভাবেই হচ্ছিলো। কিন্তু আমি তবুও লুকিয়ে চলছিলাম। কারণ চারপাশের মানুষের অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছিলো আমার। বিয়ের দিন। পারিবারিক ভাবে ছোট করে অনুষ্ঠান হচ্ছিলো। কারণ পরে বড় করে হবে। প্রতিটা অনুষ্ঠান আমাকে আরাভের কথা মনে করিয়ে কাঁদাচ্ছিলো।
.
এক কোণায় দাড়িয়ে ছিলাম।
রাহাত- চুপচাপ দাড়িয়ে আছেন যে?
আমি- না এমনিই আমি কি করবো? বিয়ে তো ওদের।
রাহাত- আপনি নাকি খুব চঞ্চল?
আমি- জ্বী সন্দেহ?
রাহাত- না তা তো দেখছিই। তা আপনি পরে আর বিয়ে করছেন না কেনো?
আমি- আমি আমার ছেলেকে নিয়ে সুখেই আছি। লাগবে না আমার পরিবারে অন্য কাউকে।
রাহাত- তবুও সমস্যা কই?
আমি- আপনি করেন নি কেনো?
রাহাত- একজনকে ভালোবাসতাম সে ধোঁকা দিয়েছে তাই আরকি। তারপর আর ইচ্ছেই হয় নি কাউকে আপন করার। কিছুটা আপনার মতোই।
আমি- হাহা হয়তোবা।
.
.
তারপর দুজনেই চুপ হয়ে গেলাম। আমার খুব বিরক্তি লাগছিলো। তাই ব্যাগ থেকে কিটক্যাট বের করে খেতে লাগলাম।
আমি- খাবেন ? (আরেকটা কিটক্যাট এগিয়ে)
রাহাত- কিটক্যাট?
আমি- না বিষ। দেখছেনই তো নাম লিখা। তাইলে কি আমি পঁচা ডিমের ভর্তা খাওয়াবো?
রাহাত- না মানে?
আমি- হায় রে। থাক ভাইয়া আপনার খাওয়া লাগবে না।
.
এই বলে আমি খেতে লাগলাম। আনভীর ঘুমিয়েছিলো তাই ওকে পাশের ঘরে শুইয়ে রেখেছিলাম।
রাহাত- আপনি বাচ্চার মতো।
আমি- হতে পারে।
রাহাত- আসলেই।
আমি- হুমম। (একটা ফেক হাসি দিয়ে অন্য দিকে সরে গেলাম। কারণ এই পোলাটা বড়ই কেমন কেমন লাগছে আমার। লাইক একটু বেশিই নরম।)
.
বিয়ে হয়ে গেলো। আমি ঘরে গেলাম একটু আনভীরকে দেখতে গেলাম। কিন্তু ঘরে গিয়ে দেখি আনভীর নাই। অনেক খুঁজে দেখলাম আনভীর মি. রাহাতের কোলে।
আমি- আপনার কাছে আনভীর কেমনে?
রাহাত- না মানে উঠে কাঁদছিলো আর কি? আপনার বাবুটা অনেক কিউট। একদম আপনার মতো।
আমি- হাহা না। ও একদম ওর বা. (বলে থেমে গেলাম)
রাহাত- ওর একটা ছবি তুলি?
আমি- জ্বী। (বুঝলাম উনি বিষয়টা বুঝেছে)
.
তারপর বিয়ে হয়ে গেলো। প্রায়ই সময় কাটলো একটু করে সবার সাথে। ধীরে ধীরে আমার ফিরে যাওয়ার দিনও কাছে আসতে লাগলো। আমি খুশি কারণ আরাভের স্মৃতি থেকে আবার দূরে যাওয়া যাবে। কষ্ট হচ্ছে বাকীদের জন্য যদিও।
.
একদিন… মেইন অফিসে এক কাজে গেছিলাম। কাজ শেষ হয়ে বাইরে যেতে যাবো অমন সময় আরাভের সাথে ঢাক্কা খেলাম। আরাভকে দেখে আমি ভুত দেখার মতো চমকে উঠলাম। আরাভও কিছুটা চমকালো।
রাজ- শুন আনহা। এটা আরেক কোম্পানির মালিক। আমরা একসাথে একটা প্রজেক্ট করবো। তুইও শুন হেল্প হবে। আমার মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছিলো না। রাজ আরাভকে চিনে না। ও আমার বিয়ের টাইমে আসে নি। যদিও ও পিকও দেখে নি। কারণ মাঝে ঝগড়া হয়েছিলো এক কারণে।
আরাভ- কেমন আছো? (আস্তে)
আমি- জানা লাগবে না আপনার। (আস্তে)
.
রাজ- ভেতরে আসুন।
আরাভ- হুমমম।
.
মিটিং টাইপই কথা হলো। যদিও পুরো সময়ই আমি আর আরাভ বারবার একে অপরের দিকে তাকাচ্ছিলাম। সেই সাথে আমরা কেউই কথা বললাম না বেশি। যদিও শেষে কিছু আইডিয়া দেওয়ায় আমার দায়িত্বেই পড়ে গেলো প্রজেক্ট টা। রাজকে মানাও করতে পারলাম না। কারণ ও এমনিই আমাকে অনেক বেশিই হেল্প করেছে।
.
যাওয়ার সময়…
আরাভ ডাক দিলো, “আনহা”
.
আমি ওর দিকে গেলাম।
আমি- জ্বী বলুন।
আরাভ- সুখে আছো তুমি?
আমি- জ্বী অনেক।
আরাভ- তা তোমার স্বামী কি করে?
আমি- (আশ্চর্য হলাম কারণ আমার তো বিয়েই হয় নি ও স্বামীর কথা আস্ক করে কেনো? তাই জবাবও দিলাম না)
আরাভ- কি হলো বলো? কেমন তোমার নতুন সংসার?
আমি- আমি আনভীরকে নিয়ে অনেক সুখী। (ইনডিরেক্ট উত্তরটা দিলাম)
আরাভ- আচ্ছা। আসি তাহলে। (আরাভ ভাবলো আনভীর হয়তো আনহার নতুন বরের নাম)
.
আমি গাড়িতে উঠলাম। আরাভ ওদিকে নিজের গাড়িতে। আমার কান্না পাচ্ছে তাই কাঁদতে লাগলাম। ওদিকে আরাভের কষ্ট হচ্ছে তাই ও চুপচাপ আছে। সেদিন রাতে একটা মুহূর্তে অনেক কষ্ট হতে লাগলো দুজনেরই। আমার কষ্টের পরিমাণ বেড়ে গেলো তাই আমি নিজেকে আঘাত করতে লাগলাম। চাকু দিয়ে হাতে কয়েকটা দাগ কাটলাম।
.
ওদিকে আরাভ দেয়ালে বাড়ি মারতে লাগলো। একটা সময় আমার মা ঘরে এসে আমাকে থাপ্পড় দিয়ে আটকালো। আমি অনেক সময় পর শান্ত হলাম। সেদিন পুরো রাত জেগে থাকলাম। ওদিকে আরাভও জেগে ছিলো।
বারবার মনে একটাই প্রশ্ন, “কি কমতি ছিলো আমার ভালোবাসার?” কিন্তু আমি জানিও না প্রকৃত দোষী কে?
পরেরদিন অফিসে যেতে হলো। আমাকে একটা কেবিন দেওয়া হলো। হঠাৎ কল আসলো, টেলিফোন রিসিভ করতেই, “হ্যালো”
আরাভ- আনহা? (কন্ঠ শুনেই বুঝলাম এটা আরাভ)
আমি- বলুন।
আরাভ- ডিলটা আমি অন্য কাউকে দিচ্ছি তোমার আর সমস্যা হবে না।
আমি- জ্বী না। ডিল আপনাকেই শেষ করতে হবে মি. রাহিদ আহমেদ আরাভ।
আরাভ- তোমার প্রবলেম?
আমি- আমি কি আপনাকে বলেছি আমার সমস্যা ? হাহা না বলতেই এতো কিছু ভাবতে নেই মি.
আরাভ- ওকে সরি।
আমি- দরকার নেই। ইটস ওকে।
আরাভ- ডিনার হোক অথবা কফিতে একটু দেখা করি প্রজেক্ট নিয়েই কথা আছে। (যদিও মূল বিষয় আনহাকে একটু দেখা)
আমি- আচ্ছা আজ দুপুরে লাঞ্চ হোক। (আমিও না করতে পারলাম না। কারণ আমারও খুব ইচ্ছে করছিলো আরাভকে দেখার।)
.
.
সেদিন রেস্টুরেন্টে,,,,,
দুজনেই চুপচাপ বসে আছি। আমিই কথা শুরু করলাম।
আমি- ডিল নিয়ে কথা শুরু করা যাক?
আরাভ- অনেক বদলে গেছো।
আমি- পরিস্থিতি বদলায় মানুষকে। আর এখানে আমরা পার্সনাল বিষয়ে কথা বলতে আসি নি। তাই ডিল নিয়ে কথা হোক।
.
…..ডিল নিয়ে কিছু কথা বলার পর……
আরাভ- কি খাবে?
আমি- আপনার যা ইচ্ছা অর্ডার করেন। আমার খেতে ইচ্ছে করছে না। আপনার পছন্দের কিছু অর্ডার করুন।
আরাভ- আইসক্রিম খাবা শেষে? ওটা তো তোমার প্রিয়।
আমি- এখন খাই না।
আরাভ- কেনো?
আমি- মাঝে মাঝে কিছু প্রিয় জিনিস ছাড়তে হয়। এটা তো শুধুই আইসক্রিম।
.
সেদিন বেশি কথা বললাম না।
..
হঠাৎ ফোনে কল আসলো,
আমি- হ্যা আসসালামুয়ালাইকুম।
অপর পাশে আম্মু- আনহা আনভীর পড়ে গেছে বিছানা থেকে।
আমি- কিইইই? ওকে দেখো নি কেনো? কেমন আছে ও কই ও?
আম্মু- মাথায় একটু লেগেছে। ফুলে আছে। কাঁদছে। জ্বলদি আয় তুই।
আমি- আমি এখনি আসছি।
.
কলটা কেটেই,,
আমি তাড়াতাড়ি ওখান থেকে চলে আসলাম। তাড়াহুড়া করতে গিয়ে সেদিন ব্যাগটা ওখানেই রেখে আসলাম।
.
তাড়াতাড়ি নিজেই ড্রাইভ করে বাড়ি গেলাম। গিয়ে আনভীরকে থামালাম। ওর কিছু হলে মনে হয় জীবন বের হয়ে গেলো। তাই নিজেই অনেকটা সময় কাঁদলাম। ব্যাগের কথা ভুলেই গেলাম সেদিন। আরাভ ব্যাগটা তার সাথে নিয়ে যায়।
.
.
চলবে……

Angry_Husband Season_2_Part_23

0
Angry_Husband Season_2_Part_23
Angry_Husband Season_2_Part_23

Angry_Husband
Season_2_Part_23
Written by Avantika Anha
রাত….
আরাভ আনহাকে অনেক মিস করছে। ওর সব জায়গায়ই আনহার স্মৃতি। ওর চোখের সামনে স্মৃতিগুলো ভাসছে। ওর খুব কষ্ট হচ্ছে। ওর মাথায় চিন্তা আনহা কই? আর ও কি সব ঠিক করেছে?
.
অপরদিকে,,, আমি ক্লোজ কারো সাথে যোগাযোগ করলাম না। হাতের কিছু টাকা নিয়ে এক বাড়িতে উঠলাম। আমি এক ফ্রেন্ডের সাথে যোগাযোগ করলাম। যে বর্তমানে বিদেশে ছিলো। ওকে সব বলার পরই ও আমাকে ওদের অফিস জয়েন করতে বললো। তার সাহায্যর জন্য ওকে থেংকু বললাম। কিন্তু একদিন আরাভের সাথে দেখা হয়ে গেলো। যদিও ও আমাকে দেখে নি। কেনো যেন ওর চাহনিতে ক্লান্তি দেখতে পেলাম। ওকে দেখে আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো। আমার সাথে আমার ফ্রেন্ডটা ছিলো। ও বুঝলো সব। সবশেষে ও আমাকে ওর কোম্পানির বিদেশের শাখায় যেতে সাজেশন দিলো।
আমি- দোস্ত আমার জন্য এতো কিছু কেনো করছিস?
রাহাত- আরে ব্যাপার না। আমি তো আছি তাই নয় কি? আমি এমনিও প্রায়ই ওই দেশে যাই। কারণ ওখানে আমার কাজ বেশি থাকে। তুই থাকলে আমার বেশি যেতে হবে না।
আমি- আচ্ছা।
.
রাজি হয়ে গেলাম। কারণ এখানে আমার নতুন যাত্রা। আজকাল প্রায় রাতে আরাভের কথা ভেবে কাঁদি। আর পেটে হাত রেখে, বাবুর সাথে কথা বলি।
.
USA চলে গেলাম। ওখানে সব কাজ করতাম সারাদিন আর রাতে একাই সময় কাটাতাম। হঠাৎ মনে হলো আম্মুর সাথে যোগাযোগ করি। আম্মুর সাথে যোগাযোগ করে বাড়ির সবাই কান্নাকাটি করলো। সবাইকে বুঝালাম। সবাই বিষয়টা বুঝলো। এদিকে আরাভকে আমার পরিবারের কেউই আর দেখতে পারতো না। কেউ আর ওর খোঁজও নিতো না।
.
আরাভের রাগের পরিমাণ দিন দিন বাড়তে লাগলো। ওর পরিবারের মানুষেরা আমাকেই দোষী ভাবতে লাগলো। আরাভও কিছু বললো না। কারণ ও জানে যদি এদের কিছু বলা যায় তাহলে সবাই আবার আমাকে আরাভের জীবনে আনার চেষ্টা করবে।
কিন্তু আরাভ এখনো জানে না আনহা কই? প্রতিনিয়ত খোঁজ নেওয়ার চেষ্টায় সে,,,
একদিন আরাভের সামনে আনহার মা পড়লো,
আরাভ- আসসালামুয়ালাইকুম মা।
মা- মা বলার অধিকার তোমার নাই।
আরাভ- আচ্ছা। আনহা কেমন আছে?
মা- খুব সুখেই আছে তোমাকে ছাড়া। ওর নতুন দুনিয়ায়। (যদিও এটা বলে ওর কষ্টকে বুঝিয়েছে। কিন্তু আরাভ তা বুঝলো না)
আরাভ- আচ্ছা।
.
.
বাড়ি ফিরে আরাভ চুপচাপ ঘরের দেয়ালে ঘুসি মারতে লাগলো। আজকাল এটা নতুন না,
আরাভের মা- কেন ওই মেয়ের জন্য এমন করিস? যে একদম ভালোনা।
আরাভ- মা না জেনে কাউকে খারাপ বলবা না। যাও তো এখান থেকে।
মা- যাচ্ছি বাপু যাচ্ছি। অন্য মেয়ের জন্য আমার ছেলে কষ্ট পাচ্ছে। ওই মেয়ে কখনো সুখী হবে না।
.
.
আরাভের মা এটা বলতে বলতে চলে গেলো। আরাভের প্রচুর খারাপ লাগছিলো কথাটা। যেখানে আনহার কোনো দোষই নাই। ওপরদিকে এসবে সবচেয়ে বেশি খুশি জান্নাত। ও জানে এখনো ও আরাভকে পাবে না। কিন্তু ও খুশি যে আনহাও আরাভকে পাবে না।
.
এদিকে আনহা একাকিত্বে সাথী বানিয়ে নিয়েছে ওর মাঝে অবস্থানরত আরাভ আর ওর সন্তান কে। সময় যেতে থাকে আরো দুজনে দু প্রান্তে কষ্টে।
.
.
প্রায় ১ বছর পর,,,
আনহার ছেলে হয়েছে। ও নাম রেখেছে আনভীর। শখ করে নাকি ভালোবেসে। ব্যস্ততার ভিড়ে।
.
দেশে এসেছে,,, আজ প্রথম ওর ছেলেকে নিয়ে। সবাইকে সারপ্রাইজ দিতে। এক মাসের জন্য।
ওকে নিতে এসেছে ওর বেস্টু আর তার ছোট বোন। মূলত ওর বোনের বিয়েতে ওর আসা। আজকাল কষ্টকে সে ইগনোর করে।
প্রেয়সি- আপুউউউউউউউ।
.
আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি প্রেয়সি।
আমি- তুই আসছিস আনতে? আহা বেবি তুমিও।
মিমি- তুমি আসবা আর আমি না এসে কিভাবে পারি গো?
আমি- তাই নাকি। জিজু আসসালামুয়ালাইকুম।
ইমরান- ওয়ালাইকুম আসসালাম।
আমি- আপনিও এসেছেন যে?
ইমরান- তুমি তো আমার বোনই তাই না?
আমি- হুম ভাইয়া হুম।
মিমি- বাহ আনভির দেখি অনেক কিউট হইছে।
আমি- হবেই তো ছেলেটা কার দেখতে হবে তো?
মিমি- আমার বাবুটাও এতো বড় হতো তাই না রে? (মিমির বাবুটা নষ্ট হয়ে যায় এক্সিডেন্টে)
আমি- এটা তো তোরও বাচ্চা রে। তোর আর আমার বাচ্চা কি আলাদা নাকি?
মিমি- কোলে নেই দে।
আমি- এই নে।

মিমি আনভীরকে কোলে নিলো। এগিয়ে গেলাম আমরা। রাস্তায় একটা গাড়ি আমাদের গাড়িতে ঢাক্কা দিলো। রাগ উঠে গেলো। আজকাল আমারো রাগ বেড়ে গেছে।
আমি- ওই আফ্রিকান হাতির দল সাবধানে গাড়ি চালাতে পারেন না? হা কি লাগাইছেন এখানে?
মিমি- বাদ দে।
আমি- বাদ দিবো মানে? এই একেকটা নাইজেরিয়ান বিড়াল।
.
পিছন থেকে বেশি কিছু বললো না। একটা ছেলে সরি বললো যাস্ট। আমিও আর কথা বাড়ালাম না। বাড়িতে সবাই খুশি। মেয়ে বাড়ি ফিরেছে। সবাই সবার মাঝে খুশি। পরেরদিন রাতে,,,
মা- আনহা মা।
আমি- হুমম বলো। (আমি আনভীরের সাথে খেলছিলাম)
মা- তুই আরেকটা বিয়ে করলেই পারিস।
আমি- মা আমি ঠিক চলতে পারছি। আর তোমাদের সমস্যা হলে বলো। আমি জ্বলদি রিটার্ন করবো।
মা- না থাক ব্যাপার না।
আমি- ওকে আমার খাওয়া হয়ে গেছে আমি ঘরে গেলাম।
.
আমি আনভীরকে নিয়ে ঘরে গেলাম। আমার জীবন এখন ওকে ঘিরেই।‌দেশে ফিরে কেনো যেনো আরাভের কথা খুব মনে পড়ছে। বুকের ভিতরের চিনচিন ব্যাথাটা ওর প্রতি আরো বেড়ে গেছে। অপরদিকে আরাভেরও বুকের ঢুকবুকানি বেড়ে গেছে। আজ কেনো যেনো আরাভের ঘুম আসছে না।
.
এদিক ওদিক হাটাহাটি করছে। বেলকনিতে দাড়িয়ে আনহার কথা ভাবছে। ভাবছে ও হয়তো নতুন সংসারে অনেক সুখী। আরাভ ইচ্ছে করেই আনহার খোঁজ নেয় না। নিজেকে শক্ত করে রেখেছে। হঠাৎ ঘুমিয়ে গেলো। স্বপ্নে,,,
আরাভ আনহার হাত ধরে হাটছে। আনহা বলছে, ” তোমার জন্য একটা গিফ্ট এই বলে আরাভের হাতটা এগিয়ে ওর দিকে আনছিলো” হঠাৎ ওর ঘুম ভেঙ্গে গেলো। ওর কপালে ভাজে ভাজে ঘাম। বিরহের কষ্ট ওর মাঝেও স্পষ্ট।
.
২ দিন পরে,,
আভা- ভাইয়া।
আরাভ- বল।
আভা- আমার একটা জিনিস লাগবে মল থেকে নিয়ে যাবি?
আরাভ- আমি ব্যস্ত।
আভা- তুই কি সবসময় ব্যস্ত?
আরাভ- তোর বরকে বল।
আভা- ও নাই দেশে ভুলে গেছিস? তাই তো আমি বাড়িতে।
আরাভ- ওহ হুমমম।
আভা- আজকাল বড্ড ভুলে যাস তুই সব।
আরাভ- চুপ করবি? চল নিয়ে যাচ্ছি।
আভা- হুমমম চল।
.
.
মলের ভিতরে আরাভ মিমির দেখা পেলো। সেই সাথে মিমির কোলে একটা বাচ্চা। বাচ্চাটা আনভীর ছিলো। কিন্তু আরাভ ভাবলো, এটাই হয়তো মিমির বাচ্চা। হঠাৎ ওর আনহার কথা মনে পড়লো। আনহার বাচ্চার প্লান। ওর মুখে মুচকি হাসির রেখা ফুঁটে উঠলো। ও অস্ফূট ভাবে বললো, পাগলি।
.
আরাভ- কেমন আছেন মিমি?
মিমি- আপনি? (রেগে। কারণ ও জানে আরাভ খারাপ)
আরাভ- হুমমম মলে আসছিলাম। তোমাকে দেখলাম তাই।
মিমি- ও নতুন বউ এর সাথে বুঝি?
আরাভ- হুমমম। (মিথ্যে)
মিমি- ভালো।
আরাভ- তোমার ছেলেটা অনেক কিউট।
মিমি- জানি।
আরাভ- একটু কোলে নেই। (আরাভের খুব কোলে নিতে ইচ্ছে করছিলো আনভীরকে)
মিমি- আচ্ছা। (মিমি বাঁধা দিলো না। কারণ যাই হোক বাচ্চাটা তো তারও)
.
আরাভ কোলে নিলো। আমি একটা দোকান থেকে একটু বের হতেই আরাভের কোলে আনভীরকে দেখি। আমি লুকিয়ে যাই। মিমিকে কল দেই।
মিমি- হুমমম।
আমি- ওর কোলে কেনো? ও যেনো না বুঝে আমার সাথে কথা বলছিস।
মিমি- এই তো এমনিই ঘুরছিলাম আরকি।
আমি- জ্বলদি আয়।
মিমি- ওকে আসছি।
.
.
মিমি- দেন আনভীরকে।
আরাভ- কি নাম বললে?
মিমি- আনভীর। আনহা রেখেছে এই নাম। (ইচ্ছা করেই বললো)
আরাভ- ও কেমন আছে?
মিমি- জানা লাগবে না আপনার। দেন বাবুকে।
.
আনভীরকে মিমি ওর কোলে নিতেই কেঁদে উঠলো। হয়তো বাবার স্পর্শ বুঝেছে। এটা দেখে আমার চোখে পানি এলো। নাহ আরাভ জানলে যদি আনভীরকে নিয়ে নেয়। এই জন্য চোখের পানি মুছে ফেললাম। আরাভের মনে হচ্ছিলো ওর অনেক কাছের কিছু নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কি বুঝছিলো না। মিমি আনভীরকে আনতেই আমি ওকে তাড়াতাড়ি কোলে নিয়ে জড়িয়ে ধরলাম। মনে মনে বলছিলাম, “না আমার ছেলেকে আমি কাউকে দিবো না।”
.
প্রেয়সির বিয়ের আগে দুই পরিবারের সদস্যদের খাওয়ার একটা আয়োজন করা হলো। যেখানে আমি গেলাম যদিও একটু লেটে। আনভীর প্রেয়সির কাছেই ছিলো। আমি অফিসের একটা কাজে মেইন অফিস গেছিলাম তাই যদিও একটু লেট হলো। রেস্টুরেন্টে ঢুকতেই একজনের সাথে ঢাক্কা খেলাম,,,,
আমি- সরি সরি দেখি নি।
লোকটি- ইটস ওকে আমারো ভুল।
আমি- জ্বী।
লোকটি- আপনাকে মনে হয় কোথাও দেখেছি।
আমি- আমারো মনে হচ্ছে।
লোকটি- উপপপপসসস আপনি সে না যে আফ্রিকান নাইজেরিয়ান বলে আমাকে একদিন গালি দিয়েছিলেন। কারণ ভুলে গাড়ি ঢাক্কা লাগছিলো।
আমি- ইয়ে মানে। ভাইয়া ওইটা আপনার না?
.
লোকটি‌ ওইদিকে তাকাতেই আমি পালালাম। নইলে বকাও দিতেও পারে। ওখানে খাওয়ার টেবিলে কিছু সময় পর ওই লোকটাও এলো।
আমি তাকে দেখে থ। যদিও সে-ও কিছুটা আশ্চর্য। তার নাম রাহাত। ছেলের চাচাতো ভাই। যদিও সে নাকি কোনো এক কারণে বিয়ে করে নি। যদিও বা আমার কিছুই যায় আসে না। তাই আমি ওখানে বেশি কথা বললাম না। প্রেয়সির হবু শশুড় পরিবারের সবাই জানে আমি ডিভোর্সি। যদিও ডিভোর্স হয় নি। কিন্তু কথা বাড়ালাম না।
.
.
চলবে……..

 Angry_Husband Season_2_Part_22

0
 Angry_Husband Season_2_Part_22
 Angry_Husband Season_2_Part_22

 Angry_Husband
Season_2_Part_22
Written by Avantika Anha
আরাভ রিপোর্ট হাতে নিয়ে বসে আছে হাসপাতালে। তার সামনে আনহার বাচ্চাদের ভালোবাসা থেকে শুরু করে বাচ্চা চাওয়া। বাচ্চার নাম ঠিক করা সব মনে পড়ছে। সব তার সামনে ভাসতে লাগলো। তার চিন্তার পরিমাণ বেড়ে গেলো সেই সাথে কান্নাও। ছেলেরা নাকি কাঁদতে পারে না। কিন্তু আজ এই কথাটা আরাভের সহ্য হচ্ছে না। আরাভ ভাবছে কি করবে। সেদিন আরাভ একটু রাত করেই বাড়ি ফিরলো।
আমি- কি মি. এতো লেট যে।
.
আরাভ কোনো জবাব দিলো না। কোনো রকমে ফ্রেশ হয়ে কাপড় চেঞ্জ করে শুয়ে পড়লো। ওর এমন বিহেভ দেখে আমি কিছুটা স্তম্ভিত। কিন্তু ভাবলাম হয়তো কিছু হয়েছে।‌ আমি গিয়ে ওর হাত ধরে টানতে লাগলাম।
আমি- ওই কি হইছে?
আরাভ- উইল ইউ যাস্ট স্টপ? (জোড়ে)
আমি- কিচ্চে এতো এংরি মুড কেনো?
আরাভ- তুমি কি যাবা?
আমি- না আমি যাবো না।
আরাভ- ওকে ফাইন আমি যাচ্ছি।
আমি- আরে আরে কি হলো?
.
আরাভ জবাব না দিয়ে চলে গেলো ঘরের বাইরে। আমি একটু শকড হলাম। কারণ ওর রাগ অনেক জানি কিন্তু এতো পরিমাণ কোনোদিন ছিলো না। হঠাৎ এমন বিহেভের কারণ কি?
.
আমি নিজের পেটের উপর হাত রেখে বলতে লাগলাম, “কিরে বাবু তুইও বাবার মতো হবি নাকি?” “একদম রাগী হবি না বুঝলি? তুই আম্মুর মতো পাগলি হবি। তখন তুই আর আমি একসাথে আব্বুর রাগ ভাঙ্গাবো।” এসব বলে আমি বিছানায় হেলানি দিয়ে আরাভের অপেক্ষা করতে লাগলাম।
এদিকে আরাভ ভাবতে লাগলো ও কি করবে? ওর প্রচুর কষ্ট হচ্ছে। ও ঠিক করলো ও এই বিষয়ে কাউকে কিছু বলবে না।
.
ও ওর পরিচিত একজন উকিলকে আর্জেন্ট ডিভোর্স পেপার বানাতে বললো। এদিকে এসব নিয়ে অজানা আমি আরাভের অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লাম। মাঝরাতে আরাভ ঘরে আসলো। এসে দেখলো আমি কাচুমাচু হয়ে ঘুমিয়ে আছি। আরাভ আমার পাশে বসলো। বসে আমার কপালে চুমু খেলো। ওর কান্না পেলো। ওর চোখের দুই ফোটা পানি আমার মুখে পড়লো। আমি কিছুটা নড়ে উঠলাম। আরাভ তাড়াতাড়ি চোখের পানি মুছে ফেললো। আমাকে ঠিক করে দিলো। আর বলতে লাগলো, “তোমার ভালোর জন্য আমার দূরে যাওয়াটাই শ্রেয় রে পাগলি। খুব ভালোবাসি তোকে।” আমি জানিও না আমার জীবনে কতোগুলো বিপদ আসতে চলেছে।
.
.
পরেরদিন সারাদিন আরাভ আর আমার সাথে কথা বললো না। সেদিনই আমি ঠিক করছিলাম আমার আর ওর বাবুর কথা আরাভকে বলবো বলে। কিন্তু জানতাম না তা বলা হবে না।
.
সেদিন আরাভের অপেক্ষা করছিলাম আমি। কিছুটা সেজেই। কিন্তু আরাভ আসছে না। কিছু সময় পর আরাভ এলো। আরাভ আসতেই আমি ওকে জড়িয়ে ধরলাম।
আমি- এই শুনো তোমাকে কিছু বলার আছে। কাল তো তোমার জন্মদিন। রাতের গিফ্ট।
আরাভ- আমার কিছু চাওয়ার আছে আনহা।
আমি- না আগে আমি।
আরাভ- প্লিজ আমাকে বলতে দেও।
আমি- উহু।
আরাভ- আনহা প্লিজ।
আমি- উকে উকে কও কও। আমি আগে আর পরে কি।
আরাভ- আনহা আমি যা বলছি মনোযোগ দিয়ে শুনো। এটা বলা জরুরী।
আমি- উকে উকে শুনতেছি।
আরাভ- আমার ডিভোর্স চাই।
আমি- ও আচ্ছা। (প্রথমে মাথায় ঢুকে নি)
আরাভ- কি বললাম শুনলা?
আমি- হু মজা করছো। আচ্ছা কবে লাগবে এখন? দেখি পেপারে সাইন করি।(মজা ভেবে)
আরাভ- এই নেও।
.
আরাভ সত্যি পেপার আগায় দিলো। আমি ওটাকে ফেক পেপার ভাবলাম।
আমি- আহা কত্ত মজা। ভালা ভালা। এখন আমার কথা শুনো তোমার এক জোক্সে মজা নাই।
আরাভ- আনহা আমি সিরিয়াস পেপার চেক করো।
আমি- হাহা তাই নাকি।
.
.
আমি পেপার নিয়ে দেখি সত্যি রিয়েল পেপার। তাহলে কি সত্যি আরাভ আমাকে ডিভোর্স দিতে চায়। আমার চোখে পানি চলে আসলো।
আমি- কেনো আমাকে ছাড়তে চাও? আমি কি জানতে পারি?
আরাভ- আমার আর ভালো লাগছে না তোমাকে। আজকাল আমি একটা মেয়ের সাথে অনেক ক্লোজ হয়ে আসছি। আমি তার সাথে থাকতে চাই।
আমি- তুমি কি মনে করো আমি বিলিভ করবো? আই বিলিভ ইউ। হুহ। হইছে ঢং করছো কেনো? (তবুও আশা নিয়ে বললাম)
আরাভ- সে মা হতে চলেছে। আর আমি তাকে ছাড়তে পারবো না। একটা ভুল হয়েছে। কিন্তু আমি ওকে এখন ছাড়তে পারছি না। মেয়েটার কেউ নাই। তুমি এখনো জীবন শুরু করতে পারবা। কাউকে বিয়ে করে নিও। সব খরচ আমি দিতে রাজি। তোমার সারাজীবনের।
আমি- আচ্ছা কাল সাইন করে দিবো। আর কিছু বলতে হবে না।
আরাভ- আচ্ছা। ও ফ্লাটে একা আছে। আমি গেলাম। (যদিও কেউ নাই পুরোই মিথ্যা বললো আরাভ)
আমি- আচ্ছা।
.
.
আরাভ চলে গেলো। এদিকে আমার প্রচুর কান্না পাচ্ছিলো। সারারাত ভাবছিলাম কি করা যায়। ঠিক করে নিলাম কি করবো? অপর দিকে আরাভ সারারাত রাস্তায় বসে কাটালো। তার মনেও কষ্ট কিন্তু সে আমার সুখ চায়।
.
সকালের দিকে আরাভ বাড়ি ফিরলো। ফিরতে দেখেই….
মা- কি রে সকালে কই ছিলি? নাকি রাতেই আসিস নি?
আরাভ- না মানে মা‌ কাজ ছিলো।
মা- চোখ লাল কেনো কাঁদছিলি নাকি?
আরাভ- না কাজ ছিলো।
মা- এতো কাজ। আনহা কই রে? ও ঠিক আছে? এখনো আসে নি যে।
আরাভ- ওর মাথা ব্যাথা।
.
আরাভ ভাবলো আনহা রাগ করেছে। হয়তো কাঁদছে এই জন্যই উঠে নি। আরাভ ঘরে গেলো,
ঘরে দেখে আনহা নাই। ও ভাবছে আমি ওয়াশরুমে। অনেক সময় অপেক্ষা করেও খুলতে না দেখে ও চেক করলো। কিন্তু ওখানে পেলো না। ও ভাবছে আনহা কি চলে গেলো নাকি? ও ডিভোর্স পেপারে সাইন করছে কি না? চেক করতে গিয়ে দেখে সাইন নাই। কিন্তু ওখানে একটা চিঠি রাখা,,,
“প্রিয়,
.
আমার কাছে চিরকাল প্রিয়ই থাকবে তুমি। হুম জানি তোমার ভুল। হয়তো কোথাও ভুল আমারো। আচ্ছা তোমার সুখই আমার কাছে বড়। জানো আমার না কিছু বলার সাহস হচ্ছে না। প্রচুর কান্না পাচ্ছে। আচ্ছা সত্যি কি তোমার শরীরে অন্য নারীর গন্ধ মিশেছে? আচ্ছা সত্যিই কি ওই বুকে অন্য কেউ মাথা রেখেছে? কেনো দিলে। আমার না খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু থাক না। তুমি আমার কাছে একটা গিফ্ট চাইলা। কিভাবে না দিয়ে থাকি বলো? তোমার চাওয়াই পূরণ হলো। আমি চলে যাচ্ছি। কিন্তু একটা প্রাপ্তি নিয়ে যাচ্ছি। থেংকু। অনেক বেশি ধন্যবাদ। ভালোবাসি আমার প্রিয় রাগী মানুষটাকে। নিজের খেয়াল রেখো। আর চিন্তা করো না। কোনোদিন অধিকার ফলাতে আসবো না। তুমি বিয়ে করে ফেলো ওই মেয়েটাকে। তোমার সন্তান আসছে। সুখের ব্যাপার তোমার। আর শুনো রান্নাঘরে আরেকটা চিঠি আছে। মা জানবে আমি অন্যের সাথে পালিয়েছি। কিছু বলো না তাকে কষ্ট পাবে। আমি কিন্তু সাইন করলাম না। কারণ সাহস নেই। সমস্যা নেই বিয়ে করো। সুখী হইয়ো।
.
ইতি,
অপ্রিয় একজন আনহা।
চিঠিটা পড়ে আরাভের কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু ও খুশি যে আনহা এখন ওর অতীতকে ভুলাতে পারবে। কিন্তু ওকে কারো কাছে খারাপ হতে দিবো না। আরাভ তাড়াতাড়ি যায় চিঠিটা সরিয়ে ফেলতে। কিন্তু আগেই তার মা পড়ে ফেল। সবাই আনহাকে খারাপ ভাবতে শুরু করে। কেউ জানলো না অপর চিঠির সত্যি। কিন্তু আনহা খারাপ হয়ে গেলো সবার কাছে। আরাভ চেষ্টা করেও আনহাকে কারো কাছে ভালো করতে পারলো না। আনহা তার বাবার পরিবারের কারো সাথেও যোগাযোগ করলো না। করলো না তার প্রিয় বান্ধবীর সাথে যোগাযোগ।
.
.
চলবে……

 Angry_Husband Season_2_ Part_21

0
 Angry_Husband Season_2_ Part_21
 Angry_Husband Season_2_ Part_21

 Angry_Husband
Season_2_ Part_21
Written by Avantika Anha

রাতে মিমি কল দিলো,,,
আমি- হুমম দোস্ত বল।
মিমি- ভাইয়াকে বললি? নিউ বেবি আসার কথাটা?
আমি- না সিক্রেট পরে কমু।
মিমি- আহা এটাও স্পেশালভাবে বলবি নাকি ভাইয়াকে?
আমি- হুমমম। বুঝতে হপ্পে গো।
মিমি- আহা শুনবো নে কি কি করিস।
আমি- আচ্ছা কমু। তোর কয় মাস ?
মিমি- ৩ মাস। হারামি আরেকটু আগে প্রেগনেন্ট হইতি। একসাথে বেবি হতো তাইলে।
আমি- হারামি আমি জানি নাকি?
মিমি- এমনি সময় অলওয়েজ ফার্স্ট। এইবার লেট।
আমি- লেট তো‌ কি? হলেই হলো।
মিমি- হুহ।
আমি- হুহ তুই। পেত্নি যা ভাগ।
মিমি- রাক্ষসী।
আমি- আফ্রিকান ইঁদুর।
মিমি- বিড়াল।
আমি- যা ভাগ।
মিমি- তুই ভাগ। নিজে আমার পরে প্রেগনেন্ট হইলি আর কথা বলে।
আমি- হইলেই হলো দেরির কি?
.
হঠাৎ আরাভ পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো আমাকে। আমি হকচকিয়ে উঠলাম। ও কিছু শুনলো না তো আবার?
আমি- আচ্ছা রাখি আরাভ আসছে।
মিমি- সাবধান না জানে যেন।
আমি- হুম হুম।
.
আরাভ আমাকে ওর দিকে ঘুরিয়ে নিলো।
আরাভ- কি হইছে দেরি করে?
আমি- কি জানি হইছে ও হ্যা ওর বিড়ালের বাচ্চা হবে।
আরাভ- তো দেরি এর কি আর মিমি নিজেও তো মে বি প্রেগনেন্ট।
আমি- হুমম কিন্তু বিড়াল পরে প্রেগনেন্ট হইছে মিমির। এই জন্য ওয় রেগে আছে।
আরাভ- কি? এতে রাগের কি?
আমি- কেনো লেটে হইলো ওর সাথে বা কাছাকাছি না এটা নিয়ে এই আর কি।
আরাভ- কি বলছো এসব?
আমি- ইয়ে কি জানি কিছু না।
আরাভ- দূররর পাগলি।
.
আরাভ আমার কপালে কিস করে আমাকে কোলে তুলে নিলো। এমা হেতে রোমান্টিক মুডে নাকি।
আরাভ- রাত কয়টা বাজে দেখছো?
আমি- হুমম ১টা।
আরাভ- চলো ঘুমাই।
আমি- শুনেন।
আরাভ- কি?
আমি- আপনার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে। ৫ দিন পর কমু।
আরাভ- তাই?
আমি- হুমমম।
আরাভ- এখনি বলো।
আমি- উহু। ঘুমামু।
আরাভ- ওকে।
.
আমি ঘুমানোর চেষ্টা করলেও পরছিলাম না। কারণ পেটের মধ্যে কথাটা ডিস্কো ডান্স করছিলো। তবুও কষ্ট করে ঘুমানোর চেষ্টা করছিলাম। ২ দিন চলে গেলো। আমি ধরা পড়তে পড়তে বাঁচে যেতে ধরতাম।
.
এইতো সেদিন নেটে প্রেগনেন্ট মেয়েদের সম্পর্কে পড়তেছিলাম আরাভ চলে এলো। এসেই জিজ্ঞেস করে,
আরাভ- কি পড়ো প্রেগনেন্টদের সম্পর্কে।
আমি- ইয়ে মানে।
আরাভ- কি?
আমি- মিমির জন্য পড়তেছি।
আরাভ- হুম, আমাদেরও বেবি নেওয়া দরকার।
আমি- হুমমম হুমমম নিবো পরে।
আরাভ- খালি পরে পরে করে কবে নিবো। ইচ্ছা করছে এখনি শুরু করি।
আমি- ওই লুইচ্চা যান এখান থেকে।
আরাভ- আনহা কষ্টে রাগ কমাইছি। বাড়াইয়ো না।
আমি- হিহি।
আরাভ- হুহ যাচ্ছি।
.
সেদিন রাতে আমি ঘুমের মধ্যে দেখছি আমার দুইটা জমজ বাচ্চা হইছে। একটা মেয়ে একটা ছেলে। আরাভ দুইটাকে নিয়ে আইসক্রিম খাচ্ছে আর আমাকে দিচ্ছে না। আমি রাগের ঘোরে আরাভকে কামড় দিলাম। আরাভ আমাকে পিডাইতে আসতেছে। এমন সময় আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো আরাভের ডাকে। কিন্তু আমি ভাবছি স্বপ্নটা সত্যি। তাই আবার আরাভের হাতে কামড় দিলাম।
আরাভ- কামড় দেও কেনো?
আমি- আপনি ভালো না। বাবুদের জন্য আইসক্রিম আনছেন আমার কই?
আরাভ- কি কোন বাবু?
আমি- কি আমার বাবু কই? আয়নি আর আয়ান কই?
আরাভ- আনহা স্বপ্ন দেখছিলা তুমি।
আমি- না আমার বাচ্চা।
আরাভ- আরে কই? কি হইছে বাচ্চা বাচ্চা করছো কেনো?
.
হঠাৎ ঘোর কেটে গেলো। এই রে স্বপ্ন দেখছিলাম তাহলে। আরাভ কি ভাবছে যে?
আমি- ইয়ে সরি স্বপ্ন দেখছিলাম তো তাই ভুলে গেছি।
আরাভ- কি কি যে স্বপ্ন দেখো। তা হঠাৎ বাচ্চার স্বপ্ন দেখছো কেনো?
আমি- কে জানি?
আরাভ- আমি কিন্তু জানি।
আমি- ক… কি? (ভয়ে)
আরাভ- তোতলাও কেনো? মিমির বাচ্চা হবে দেখে তাই না?
আমি- হ্যা।
আরাভ- জানি তো আমি ব্রিলিয়ান্ট।
আমি- হুম হুম। (মনে মনে হালারপো জানেই না আর বলে জানি)
আরাভ- তোমার প্রাউড ফিল করা উচিত।
আমি- হুমম করি তো। (মনে মনে ওকে গাঁধা বলছি)
আরাভ- আহা তাই?
আমি- হুমমম। এখন নামায পড়ে রেডি হন। অফিস আছে।
আরাভ- হায়রে। মানুষের বউরা তার বরকে যেতে মানা করে আে আমি এমন এক বউ পাইছি যে তার বরকে খালি অফিসে পাঠায়। রোমান্স এরও সুযোগ দেয় না রে।
আমি- ওহো আমার ড্রামাকিং হাজবেন্ড ঢং কইরেন না।
আরাভ- হায় রে।
আমি- যাবেন কি না?
আরাভ- যাচ্ছি। আজকাল তুমি এংরি হচ্ছো।
আমি- হুম আপনার প্রভাবে।
.
সেদিন আরাভ নাকি কিছুটা মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলো অফিসে। যদিও সে তা আমাকে বলে নি। চিন্তা করবো বলে। কিন্তু সেদিন সে ডাক্তারের কাছে চেকাপও করে নি। কিছু হয় নি ভেবে। কিন্তু পরের দিন আবার একই ঘটনা। আরাভ নিজেই ডক্টরের কাছে গেলো। সেদিন‌ আরাভ চেকাপ করে বেড়িয়ে আসতেই জান্নাত ডক্টরের কেবিনে গেলো,
ডক্টর- কে আপনি?
জান্নাত- সেটা বড় কথা নয়। বর্তমানে যা বলছি তা করুন। ফলস্বরূপ আপনাকে আমি ৫ লাখ টাকা দিবো।
ডক্টর- কি বলছেন এসব? আমি কোনো খারাপ কাজ করবো না।
জান্নাত- ৬ লাখ দিবো।
ডক্টর- আমি বিক্রিত নই।
জান্নাত- ১০ লাখ।
ডক্টর- নাহ।
জান্নাত- ১৫ লাখ।
ডক্টর- ওকে আমি রেডি বলুন কি করতে হবে?
জান্নাত- বর্তমানে যে বেড়িয়ে গেলো রাহিদ আহমেদ আরাভের রিপোর্টে লিখবেন সে কখনো বাবা হতে পারবে না।
ডক্টর- এতে আপনার লাভ কি?
জান্নাত- লাভ তো আছেই। তা আপনার না জানলেও‌ চলবে। কাজটা করে দিবেন।
ডক্টর- ওকে।
.
পরেরদিন আরাভ রিপোর্ট দেখে থমকে উঠে। তার মাথা কাজ করা বন্ধ করে দেয়। সে ভাবতে থাকে যে, আনহাকে সে কি বলবে?
.
চলবে……

Angry_Husband Season_2_Part_20

0
Angry_Husband Season_2_Part_20
Angry_Husband Season_2_Part_20

Angry_Husband
Season_2_Part_20
Written by Avantika Anha

আমি- ওয়াও ভুতের মুভি।
আরাভ- হুমমম।
.
ভুতের মুভি শুরু হলো। অন্যান্য দিন আমার ভুতের মুভি ভয় লাগলেও আজ কেন জানি ভয় লাগছে না। লাগলেও কম। আবার হঠাৎ হঠাৎ অনেক ভয় লাগছে। আমি কি পাগল হয়ে যাচ্ছি? এতো ক্যারেক্টার চেঞ্জ হচ্ছে কেনো? এসবই ভাবছিলাম।
আরাভ- আনহা দেখি সাহসী হয়ে গেছো।
আমি- কেনো? আমি তো সাহসীই।
আরাভ- না অন্যান্য দিন এতক্ষণে হয় জড়িয়ে ধরো, নাহয় মুখ লুকাও, ভুতের মুভি দেখে নিজে কমিডি করো। আজ কমে গেছে কেনো?
.
হঠাৎ করে আবার ভয় লাগলো অনেক বেশি। এবার আরাভকে অনেক জোড়ে জড়িয়ে ধরলাম।
আরাভ- না ঠিকই ভয় পাওয়া আনহাই আছো তুমি।
আমি- ইইইইই মোটেই ভয় পাই না।
আরাভ- তাই নাকি?
আমি- হুম।
আরাভ- তাহলে তো দেখি কাছে যেতে হবে তোমার।
.
এই বলে আরাভ আমার আরো কাছে আসতে লাগলো। আমার লজ্জা লাগতে লাগলো। তাই আমি বললাম, “টাইম প্লিজ”
আরাভ- কেনো?
আমি- কাজ আছে।
আরাভ- তোমাকে আমি চিনি নিশ্চয়ই পালানোর প্লান করছো।
আমি- নাহ আরে ওভেনে পপকর্ণ রাখছি। নিয়ে আসছি।
.
আমি তাড়াতাড়ি পালাতে লাগলাম কিন্তু আরাভ হাতটা ধরে ওর দিকে টান দিলো। ওর হাত আমার কোমড়ে।
আমি- কি হলো ছাড়ুন নিয়েই আসছি।
আরাভ- তোমাকে ভরসা নাই।
আমি- ইয়ে মানে আমি না আপনার বউ।
আরাভ- তাই তো বউকে একটু আদর করবো।
.
আমি ওকে কামড় দিয়ে পালাইলাম। গিয়ে কফি বানিয়ে নিলাম। আমি ঠিক করলাম এখনি ঘরে যাবো না। কিন্তু কিছু ভাবার আগে আরাভ কিচেনে চলে আসলো।
আমি- আপনি এখানে কেনো?
আরাভ- আজ আপনাকে ছাড়বো না ম্যাডাম।
আমি- ইয়ে কফিটা বানায় নেই।
আরাভ- ওকে আমার সামনে বানাও।
আমি- আচ্ছা।
.
আরাভকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে আমার ভয় লাগতে লাগলো। কারণ ওর শয়তানি হাসি আমার ভয় বাড়িয়ে তুলছিলো। তাই ভয়ের বশে কিচেনে রাখা এলকহলিক পাউডার জাতীয় কিছু আমি কফিতে দিয়ে ফেললাম। যদিও আরাভ ওটা বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করলো না। এমনকি আমিও করি নি।
কফি হতেই,,
আমি- খাবেন ?
আরাভ- খাও তুমি জ্বলদি শেষ করো।
.
এদিকে আরাভ একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এটা দেখে আমি তাড়াতাড়ি কফিটা খেয়ে ফেললাম।
আরাভ- কফি ডান?
আমি- না আমি আরো খাবো।
আরাভ- আমারটাও খাও।
আমি- আচ্ছা।
আরাভের কাপের কফিও খেয়ে ফেললাম।……
আরাভ-ম্যাডাম এতক্ষণ অনেক দেখলাম আপনার ঢং। এবার কই যাবেন?
.
আরাভ কাছাকাছি এসে আমাকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে গেলো।
আমাকে নামিয়ে দিলো, এবার আমার হাতদুইটা পিছনের দিকে নিয়ে ধরে ফেললো,,
.
আরাভ আমার দিকে আগাতে লাগলো। হঠাৎ করে কিস করে বসলো কিছু বুঝার আগে।ই আমার ঠোঁটজোড়া কাঁপতে লাগলো। কি হলো হঠাৎ?
আরাভ- কি ম্যাডাম লজ্জা পাচ্ছেন কেনো এতো?
আমি- আপনি একটা রেপিস্ট।
.
আরাভ হকচকিয়ে আমাকে ছেড়ে দিলো।
আরাভ- কিইইই?
আমি- জ্বী অবশ্যই। আমার ঠোঁট আপনার কি ক্ষতি করছে? খালি রেপ করেন আমার ঠোঁটের।
আরাভ- আনহা তুমি জানো তুমি কি বলছো?
আমি- সত্যি তাই।
আরাভ- এই তোমার মাথা ঠিক আছে?
আমি- আছে আছে।
আরাভ- মনে হয় না।
আমি- আপনি পঁচা। অনেক পঁচা। খালি আমার ঠোঁটে কিস করেন। ভালো করে হাগও করেন না। খালি কিস।
আরাভ- আনহা তুমি কি কিছু খেয়েছো?
আমি- হুমমম কফি। টেস্টি ছিলো। আপনি না ভালো না। মিমির আমার চেয়ে পরে বিয়ে হলো কিন্তু ও আমার আগে প্রেগনেন্ট।
আরাভ- আমিও তো বেবি নিতে চাচ্ছি তুমিই তো লজ্জা পাও।
আমি- তাই বলে কি নিবো না নাকি? আপনি বাচ্চা দেন আমাকে।
আরাভ- এই পাগলি তুমি কি কি বলছো নিজেও জানো না।
আমি- জানি জানি কিসার বয়। খালি কিস এখানে কিস ওখানে কিস। আপনি কিস কিস করেন কেনো?
আরাভ- থামো। আজ আমার লজ্জা লাগছে তোমার সামনে।
আমি- হ্যা লজ্জা খালি লজ্জাও দেন। কিন্তু আমার না ভালো লাগে আপনি পাশে থাকলে।
আরাভ- তাই ? আর কি? (মজা নিতে)
আমি- আপনাকে বলবো না আমি। আমি মিমিকে বলবো।
আরাভ- আমাকেই বলো।
আমি- আপনার না..
আরাভ- কি?
আমি- আপনার প্রিয় ব্লেজারটা আমি না পুড়িয়ে ফেলছি এটা আমি আপনাকে বলবো না।
আরাভ- কিইইইই?
আমি- হিহি বলবো না।
আরাভ- শয়তান।
আমি- আপনি রোজ আমাকে কিস করেন আজ আমি করবো আপনাকে আমি আপনার ঠোঁটকে ধর্ষণ করবো।
.
এই বলে আমি আরাভের কাধে হাত রাখলাম। ওর পায়ের উপর ভর দিয়ে উচু হয়ে ওকে কিস করলাম। আরাভ কিছু বললো না।
আমি- হিহি আমিও করে দিছি।
আরাভ- হুমম করছো। তুমি নিশ্চয়ই এলকোহল জাতীয় কিছু খাইছো। এখানেই দাড়াও আমি আসছি।
.
আরাভ কিচেনে গিয়েই বুঝে গেলো আমি কি খাইছি। আরাভ ভাবলো ভালোই মজা নেওয়া যাবে। আরাভ রুমে ফিরে দেখে আমি বমি করে ফেলছি।
আরাভ- কি করলা এসব?
আমি- আমি ঘুমাবো।
আগে আমাকে তারপর আরাভ বাকী সব পরিষ্কার করে নিলো। এসে দেখে আমি ঘুমিয়ে পড়েছি।
আরাভ হাসতে লাগলো আর বলতে লাগলো, মেয়েটা পুরাই পাগলি। হকচকিয়ে কফিতে যে কি দিয়ে ফেলছে নিজেও জানে না।
.
সকাল বেলা,,,
মাথাটা ধরে গেলো।
আমি- কাল রাতে কিছু কি হইছে?
আরাভ- হুমমম অনেক কিছু।
আমি- কি????
আরাভ- হুমমম।
আমি- ওমা গো কি হলো?
আরাভ- অনেক কিছু। এতো বলা যায় নাকি?
আমি- এ্যা। আচ্ছা অনেক কিছু হোক কিন্তু আমার মনে পড়ে না কেনো?
আরাভ- গাধী কফিতে এলকোহল পাউডার দিয়ে ফেলছিলা।
আমি- কিইইইইই।
আরাভ- হুমমমম।
আমি- সত্যি?
আরাভ- জ্বী।
.
.
পরেরদিন আমি মিমিদের বাড়িতে গেলাম। যদিও আরাভ রেখে গেলো। জান্নাতের জন্য আমাকে একা কম ছাড়ে সে।
মিমি- আমাকে তো ভুলেই গেছিস।
আমি- না গো বাবু।
মিমি- বাহ আজকাল গ্লো করে কেনো তোর ফেশ।
আমি- আহা তাই নাকি?
মিমি- হুম।
.
হঠাৎ করে মাথা কিছুটা ধরে গেলো।
মিমি- কি রে ঠিক আছিস?
আমি- জানি না রে কয়েকদিন ধরে কেমন যেন লাগছে মেবি মরে যাবো হিহি।
মিমি- মজা বন্ধ কর সিরিয়াসলি বল।
আমি মিমিকে সব বললাম।
মিমি- দোস্ত।
আমি- বল।
মিমি- টেস্ট কর। মনে হয় গুড নিউজ।
আমি- কিইইইই।
মিমি- আমারো এমন হইছিলো।
আমি- কিট আছে?
মিমি- কিট লাগবে না। আমাদের পাশের বাড়িতে এক মহিলা ডাক্তার আছে চল যাই।
আমি- ওকে।
.
সেদিন জানলাম সত্যিই আমি প্রেগনেন্ট। অসম্ভব খুশি হলাম। তাড়াতাড়ি আরাভকে ফোন দিলাম। আর বললাম আমাকে তাড়াতাড়ি নিতে আসতে। ওকে কিছু বললাম না। কারণ এই জিনিসটা ওকে সিক্রেট ভাবে বলবো।
সেদিন কিছু বললাম না। কারণ আমি অপেক্ষা করছি আরাভের জন্মদিনের। যা আর ৫ দিন পরেই। ওইদিনই বলবো বলে ফিক্স করলাম। আমি ভেবেছিলাম সুখের দিন কিন্তু জানতাম না শেষে জান্নাত শেষ চাল চালবে। যা আমাকে আর আরাভকে আলাদা করবে।
.
চলবে……

Angry_Husband Season_2_ Part_19

0
Angry_Husband Season_2_ Part_19
Angry_Husband Season_2_ Part_19

Angry_Husband
Season_2_ Part_19
Written by Avantika Anha
বাড়িতে বাকীরা সবকিছু শুনে বারবার জিজ্ঞেস করতে লাগলো আমি ভালো আছি কি না? সবাইকে বললাম ভালোই আছি। রুমে আসার পর….
আরাভ- পা এর কি শুধু ওই জায়গায় কাটছে?
আমি- হুমমম।
আরাভ- আচ্ছা।
আমি- শুনেন না আজ আমি মরে গেলে কি করতেন?
.
আরাভ এই কথা শুনে আমাকে একটা চর মারলো। আমার হাত গালে চোখে পানি। আর ওকে আদুরে+কাঁদুরে গলায় জিজ্ঞেস করলাম,
আমি- কি করলাম আমি?
আরাভ- কতোবার মানা করছি মরার কথা বলতে না।
আমি- ইয়ে মানে..
আরাভ- তুমি মরলে আমি নিজে জীবিত লাশ হয়ে যেতাম।
আমি- উরিম্মা কত্ত ভালোবাসা।
আরাভ- আনহা সিরিয়াস হও।
আমি- এতো সিরিয়াস হয়ে কি করবো একদিন তো মরেই যাবো। আজও তো মরেই যাইতাম। আপনার তো ভালোই হইতো আর কেউ জালাইতো না।
.
আরাভ হাত আবার আমার আরেক গালে। অর্থাৎ আরাভ আবার আমাকে থাপ্পড় মারলো। আমার আরেক হাত আরেক গালে। এখন আমি দুই গালে হাত দিয়ে আছি। মনে মনে, “শয়তান,লাল বান্দরটা খালি মারে”
আরাভ- কি মনে মনে গালি দিচ্ছো? নিশ্চয়ই বলতেছো শয়তান, লাল বান্দর।
আমি- (অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম) আপনি কিভাবে জানলেন? মনের কথা পড়া শিখছেন নাকি?
.
আরাভ বিনিময়ে জবাব না দিয়ে একটা রহস্যের হাসি দিয়ে ওর ব্লেজার খুলতে লাগলো। আমিও ছাড়ার পাত্রি না। ও কেমনে আমার মনের কথা জানলো আমাকে তা জানতেই হবে। গাল থেকে হাত নামিয়ে আমি আরাভের সামনে গিয়ে দাড়ালাম।
আমি- ওই বলেন না কেমনে জানলেন?
আরাভ- এটা সিক্রেট মিস।
আমি- না না আপনাকে বলতেই হবে।
আরাভ- সরো কাজ আছে।
আমি- আমি করে দিবো আগে বলেন।
আরাভ- আগে নিজের খেয়াল রাখো। আর তোমার ব্যাথা উঠতে পারে ওষুধ খেয়ে নেও।
আমি- কিহ। না ওষুধ তিতা।
আরাভ- আনহা ওষুধ খাবা নাকি থাপ্পড়?
আমি- আপনি আমাকে আরো মারবেন? (আদুরে গলায় আরাভকে জিজ্ঞেস করলাম)
আরাভ- এমন করে বলিও না পাগলি ইচ্ছা করে কিস করে দেই।
আমি- কিইইইইইই। (লজ্জা পাইলাম)
আরাভ- জ্বী। কাছে আসো একটা কিস করি।
.
আমি আর কিছু না বলে উল্টা দিকে দৌড় দিয়ে ঘরের বাইরে চলে গেলাম। আরাভ হাসতে লাগলো
আর বলতে লাগলো, “তোমার এসব পাগলামি আর লজ্জায়ই তো আমি কাবু হইছি ম্যাডাম।” আমাকে দৌড়াতে দেখে আভা জিজ্ঞেস করলো,
আভা- কি ভাবি দৌড়াচ্ছো কেনো?
আমি- এমনি ব্যায়াম স্বাস্থ্যের জন্য ভালো জানো না?
আভা- হাহাহা তাইইইই।
আমি- হুমমম।
আভা- ভাবি এখন অবস্থা কেমন?
আমি- আমার কি মহা এক্সিডেন্ট হইছে নাকি। ভালোই আছি।
আভা- দুই গাল লাল হয়ে আছে কেনো? মার খাইছো নাকি লাভ বাইট।
আমি- আভা মাঝে মাঝে তোমার ভাই মনে হয় ঠিকই বলে তোমার বিয়ে দেওয়া উচিত।
আভা- ভাবি তুমি কি আমার শত্রু?
আমি- না তো বাবু।
আভা- বাই দি ওয়ে আমার কথা ভাইয়াকে বললা?
আমি- হুমমম। বলছে তুমি যেন তোমার উনিকে তোমার ভাইয়ার সাথে কথা বলতে বলো।
আভা- আচ্ছা। আমি বলতেছি। কয়েকদিন পরে রেস্টুরেন্টে দেখা করুক।
আমি- ওকে বাবু।
আভা- ওকে।
.
রাতের দিকে,, আরাভ বিছানায় শুয়ে ল্যাপটপে কাজ করছিলো। আমি রুমে ঢুকলাম। আরাভ আমার দিকে তাকালো না। কি ব্যাপার? তাকায় না কেনো? এমনি সময় তো বারবার তাকায় তাকায় দেখে এখনো তাকায় না কেনো? আমি সোফায় বসলাম। আরাভ এখনো তাকাচ্ছে না। কিছু সময় পর ল্যাপটপ বন্ধ করে ও ফোন হাতে নিলো। এবার মুচকি হাসতেছে ফোনের স্ক্রিনে তাকায়। ব্যাপারটা বুঝতে হবে। আমার তো রাগ উঠতাছে। আমার ফোনটাও নাই যে নিজেকে ব্যস্ত রাখবো। “ওয় কি করে?” এটা জানতেই হবে আমাকে। আমি উঠে ওর দিকে চুপি চুপি পায়ে আগালাম।
আরাভ- এভাবে হাটছো কেনো?
আমি- ওমা আপনি আমাকে কেমনে দেখছেন? আমার দিকে তো তাকানই নি।
আরাভ- হাহা ম্যাডাম। আমি বুঝছি আপনি এসেছেন। যতোই আস্তে আসেন না কেনো? আপনার উপস্থিতি আমি বুঝবোই। আপনি আসে কথা বললেন না। বুঝছি কিছু একটা হইছে। তাই ফোনের ক্যামেরা অন করে ফোনে আপনাকে দেখতেছিলাম।
আমি- তার মানে আপনি আমাকে দেখে হাসতেছিলেন?
আরাভ- জ্বী ম্যাডাম।
আমি- বান্দর পোলা। আমাকে খালি জ্বলান।
আরাভ- নিজের বউকে জ্বলাবো না তো কাকে জ্বলাবো?
আমি- একটা গুড নিউজ আছে।
আরাভ- কি?
আমি- আপনি বাবা হতে চলেছেন।
আরাভ- সত্যি?
আমি- হিহি মজা করলাম।
আরাভ- আনহা এই বিষয়েও মজা?
আমি- হুমমম।
আরাভ- তুমি না দুই বাচ্চার মা হলেও এমনি থাকবা।
আমি- অবশ্যই।
আরাভ- হায়রে পাগলি।
.
এমন সময় আরাভের ফোনে একটা কল আসলো। কথা গুলো শুনে আরাভ কিছুটা রেগে গেলো। আর কাকে যেন বললো জ্বলদি কিছু করতে। ফোন কাটার পর,,,
আমি- কি হইছে? কার সাথে কথা বললেন?
আরাভ- পুলিশ।
আমি- কিন্তু কিনু?
আরাভ- আজকের এক্সিডেন্ট নিয়ে।
আমি- ওওওও।
আরাভ- এক্সিডেন্ট টা জান্নাত করিয়েছে।
আমি- জানি।
আরাভ- কিভাবে?
আমি- রাস্তায় একটা নাম্বার থেকে মেসেজ আসছিলো। লিখা ছিলো। “tmk mortei hbe ekhn anha. bye bye.”
আরাভ- ওই মেয়েকে আমি মেরেই ফেলবো।
.
আরাভের চোখ লাল হয়ে গেলো। ওর এতোটা রাগান্বিত মুখ আমি কখনো দেখি নি। আমি আরাভের রাগ কমাতে ওর পাশে গিয়ে বসলাম আর ওর হাতটা ধরলাম।
আরাভ- ডোন্ট ওয়ারি আমি এখনি বের হচ্ছি। ওকে তো আমি গুলি করবো।
আমি- আমাকে ভালোবাসেন?
আরাভ- অনেক বেশি।
আমি- আপনি আজ ওকে কিছু করলে যদি পুলিশ আপনাকে নিয়ে যায় আমার কি হবে?
আরাভ- কিন্তু।
আমি- চুপ। (আঙ্গুলটা ওর ঠোঁটে রেখে চুপ করালাম)
আপনাকে ছাড়া আমি একটুও থাকতে পারবো না। প্লিজ রাগের বশে কিছু করবেন না।
.
এইটুকু বলে আরাভকে জড়িয়ে ধরলাম। আরাভও আমাকে জড়িয়ে ধরলো। জড়িয়ে থাকা অবস্থায় আমি তাকে আভার রাজের কথা বললাম। আরাভ রাজি হলো। জান্নাতের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গেলো না। যদিও একদিন এক অনুষ্ঠানে আরাভ আর আমি গেছিলাম। জান্নাতও ওখানে ছিলো। উল্টা কথা বলায় আরাভ ওকে থাপ্পড় মেরেছিলো, সেই সাথে মেরে ফেলার হুমকি দিছিলো। সেদিন আমি আরাভকে আটকে নিয়েছিলাম। নাহলে হয়তো আরো খারাপ কিছু হতো। ফিরার পথে
.
আমি- আহা আমি ভালোই আছি ভাগ্যিস।
আরাভ- কেন?
আমি- আপনি আমাকে আস্তে মারেন। আজ জান্নাতের তো একেবারে দাঁত ভাঙ্গে যাইতো।
আরাভ- আনহা তুমি একটা পাগলি।
আমি- আমি তো জানি।
কয়েকদিন পর…..
.
আরাভ- আজকে দেখা করবো তোমার ননদের রাজের সাথে।
আমি- আমিও যাবো।
আরাভ- না।
আমি- প্লিজ প্লিজ প্লিজ।
আরাভ- ওকে চলো।
আমি আর আরাভ গাড়িতে করে যাচ্ছি।
আমি- মি. আরাভ গাড়ি থামান।
আরাভ- কেনো?
আমি- ফুচকা খাবো।
আরাভ- হুররর।
আমি- প্লিজ।
.
আরাভ গাড়ি থামালো। কেনো জানি বেশিই খাইতে ইচ্ছা করছে। তাই আমি একে একে তিন প্লেট ফুচকা একাই খাইলাম।
আরাভ- এক্সিডেন্ট এর জন্য মনে হয় তোমার ক্ষুধাও বেড়ে গেছে।
আমি- মনে হয়। কয়েকদিন ধইরা আজব লাগে।
আরাভ- হুমমম বুঝি তোমার তো সবসময়ই আজব লাগে।
আমি- হুহ শয়তান পোলা।
আরাভ- এবার চলো।
.
ক্যাফের মাঝে। রাজ আর আরাভ সামনা সামনি বসে আছে। আমার সামনে আভা। আরাভ একটা কেমন লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে। রাজও মেবি ভয় পাচ্ছে। সাথে আমি আর আভাও ভয় পাচ্ছি।
আরাভ- কি করো তুমি?
রাজ- জ্বী আমি সিএইচ কোম্পানির সিইও।
আরাভ- ওহ। আমার বোনকে সুখে রাখতে পারবে?
রাজ- আমি ওকে কষ্টে না রাখার পুরো চেষ্টা করবো। আমি যেভাবে থাকবো সেভাবেই রাখবো। যদি এক ঘরেও থাকি তবুও ওকে ভালো রাখার চেষ্টা করবো।
.
সব প্রশ্ন শেষে আরাভ রাজি হয়ে গেলো। খাবার অর্ডার করা হলো। চাওমিং। সবাই খেতে লাগলো সবার ভালো লাগলেও আমার কেনো জানি মুখে দিতেই খারাপ লাগলো। এর আগেও আমি এখানকার খাবার খেয়েছি কিন্তু এমন হয় নি। আমি ওয়াশরুমে গেলাম বমি হলো। কিন্তু আজব ব্যাপার এমন হচ্ছে কেনো?
আভা- ভাবি ভালো আছো? এমন লাগছে কেনো তোমাকে?
আমি- জানি না।
আভা- ডক্টর দেখাইয়ো।
আমি- লাগবে না।
আরাভ- আরে তিন প্লেট ফুচকা খাইছে। পেট খারাপ তো হবে।
আমি- না সেটা না।
আরাভ- বুঝি।
আমি- হুহ। আমি দই ফুচকা খাবো।
আরাভ- এখন?
আমি- যা খাইছি বমি হইছে। আমাকে এখন আবার খেতে ইচ্ছা করছে।
আরাভ- না।
আমি- হুহ।
আরাভ- এটা খাও।
আরাভ আমাকে ফালুদা খাওয়ায় দিলো জোড় করে। আমাদের এসব দেখে রাজ বললো,
রাজ- ভাইয়া ভাবির ভালোবাসা অনেক।
আমি- নজর দিয়েন না জামাইবাবু।
রাজ- আরে ভাবি না না।
আরাভ- আনহা এখানেও বাচ্চামি?
আমি- আমি এমনি হিহি।
রাজ- ভাবি আপনি ভারি মজার মানুষ।
আমি- সেটা তো তোমার ভাইয়া হারে হারে বুঝে আমি কেমন?
আরাভ- হুমম।
.
বাড়ি ফেরার পথে একসাথে ফিরলাম। হঠাৎ করে কোন এক আত্মীয়ের বাড়িতে মাকে আর আভাকে যেতে হলো। আবারো পুরো বাড়িতে আমি আর আরাভ একা।
খাওয়ার টেবিলে..
আরাভ- ম্যাডাম আজ তো আপনি আর আমি। রোমান্টিকতা হারে হারে দেখবেন।
আমি- ইয়ে মানে আমার ঘুম পাচ্ছে।
আরাভ- আনহা আসো মুভি দেখবো। (অন্য কারণে)
আমি- সত্যি চলেন।
.
আরাভ আসলে ভুতের মুভি দেখতে ডাকছিলো আমাকে। এমনিতে ওর কাছে কম যাই। কিন্তু আমি ভুতের মুভি ভয়ও পাই আবার ভালোওবাসি। তাই রুমে গেলাম। আরাভ ভুতের মুভি ছেড়ে দিলো।
.
চলবে…….

Angry_husband Season_2_Part_18

0
Angry_husband Season_2_Part_18
Angry_husband Season_2_Part_18

Angry_husband
Season_2_Part_18
Written by Avantika Anha
খাওয়া শেষে, আরাভ আমার দিকে তাকায় মুচকি হাসতেছে। এটা দেখে জিজ্ঞেস করলাম,
আমি- কি এরাম ভিলেন মার্কা হাসি মারতেছেন কেনো?
আরাভ- ভাবতেছি যা বললা সত্যি করার সময় হয়ে গেছে।
আমি- মানে?
আরাভ- পরিবার বাড়ানো উচিত।
আমি- ওহ। একটু চোখ বন্ধ করেন গিফ্ট আছে।
আরাভ- আগে এইটা বলো বাবু। বাবু কবে নিবা?
আমি- বন্ধ করেন ১ মিনিটের জন্য।
আরাভ- ওকে।
.
আরাভ এইদিকে চোখ বন্ধ করছে ওইদিকে আমি দৌড় মারছি। বিষয় হলো আমার লজ্জা লাগছে। এক মিনিট পর আরাভ চোখ খুলে আমাকে খুঁজতে লাগলো। বের হয়ে একজনকে জিজ্ঞেস করলো,
আরাভ- তোমাদের ম্যাডামকে দেখেছো?
রাই- স্যার ম্যাডাম তো এই কেবলমাত্র দৌড় দিয়ে পালালো। জিজ্ঞেস করলাম কিছু বললো না।
আরাভ- ওহ।
.
আরাভ ওর কেবিনের জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখে আমি গাড়িতে উঠছি। আরাভের রাগ বেড়ে গেলো। ওর মতে ওকে বলে যেতে পারতো। আর লজ্জা লাগলে পালানোর কি আছে? এসবই আরাভ ভাবছিলো। এমন সময় ওর ফোনে একটা মেসেজ এলো। আমার মেসেজটা পড়তে না পড়তেই আরেকটা মেসেজ এলো,
১ম মেসেজ
“apni ekta hulo viral. amar ki lojja nai naki? ki bolen esob? but ktha ta vul na. babu neoa jay… but amar lojja lagse tai palailam hihihi”
আরাভ মেসেজটা পড়ে মুচকি হাসলো। আর নিজের অজান্তেই “পাগলি” বললো।আরাভ ভেবেছিলো ২য় মেসেজটাও আমার কিন্তু ওটা ছিলো জান্নাতের কিন্তু অচে
“baby Ami to tmk sartesi na. amader majhe theke anhakei sorte hbe. tmk pete Ami anhake sorateo pisupa HBO na lv u arav. lv u so much.bachate paro to bachao tmr anha k. just Ber holo tmr office theke tai na?”
.
আরাভের টেনশন উঠে গেলো। ও আনহাকে ফোন দিলো,
আমি- ওহো এংরি ম্যান কি রাগে গেছেন নাকি?
আরাভ- আনহা মজার টাইম না। তুমি কই আছো?
আমি- কই আবার বাড়ি যাচ্ছি।
আরাভ- ফাঁকা রাস্তা ধরছো নাকি এমনি রাস্তা?
আমি- ওই যে ফাঁকাটা কেনো?
আরাভ- থামো যেখানে আছো ওখানেই থাকো আমি আসতেছি আর কথা বলতে থাকো।
আমি- ইইইই বুঝি না আমাকে বকবেন তাই না। আমি একাই যামু হিহি।
.
আমি কল কেটে দিলাম। আরাভের রাগও বেড়ে গেলো সাথে টেনশনও। আরাভ তাড়াতাড়ি গাড়ি বের করলো। হাই স্প্রিডে গাড়ি চালানো শুরু করলো। আর আমাকে কল দিলো আবার, এবার আর আমি কল রিসিভ করছিলাম না। কারণ আমি এক ধরনের ফুল নিতে নেমেছিলাম আর ফোন গাড়িতে ছিলো। আবার গাড়িতে গিয়ে দেখি আরাভের কল,
আমি- হুমমম বলেন এতো কল কেনো?
আরাভ- ওই মেয়ে কই তুমি হা? এতোবার কল দিচ্ছি ধরো না কেনো?
আমি- এই যে আমি ফুল নিচ্ছিলাম। আম্মুউউউউউউউউউউউউউউউউ
একটা চিংকার দিয়ে আমার ফোন অফ হয়ে গেলো। কারণ একটা বড় ট্রাক আমার গাড়িটাকে ধাক্কা দিয়েছে।
.
আরাভের চিন্তা হচ্ছিলো ও দ্রুত গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলো। কিছুদূর গিয়ে দেখে আমার গাড়ির এক্সিডেন্ট হয়েছে। আরাভ দৌড়ে গাড়িতে এগিয়ে দেখে গাড়িতে কেউ নাই। কিন্তু ওখানে রক্তের ছাপ স্পষ্ট। আরাভের ভয়ের মাত্রা বেড়ে গেলো।
.
আরাভ ওখানেই বসে পড়লো, কাঁদতে আমি- ো। এমন সময় আরাভের ফোনে একটা কল এলো। রিসিভ করতেই,
আমি- হ্যালো মি. আরাভ।
আমার কন্ঠ শুনতেই,,,
আরাভ- আনহা তুমি ঠিক আছো?
আমি- হুমমম।
আরাভ- কই তুমি?
আমি- হাসপাতালে। আমাদের ড্রাইভার কাকু আছেন না উনার এক্সিডেন্ট হইছে। তার পায়ে লেগেছে আর মাথায় কিছুটা।
আরাভ- কোন হাসপাতালে?
আমি- সিটি ক্লিনিক।
আরাভ- আমি আসছি।
.
আরাভ তাড়াতাড়ি গেলো। হাসপাতালে গিয়ে খুঁজতে লাগলো, খুব দ্রুতই তার পরিচিত মুখটাকে পেয়ে গেলো। গিয়েই সবার সামনে জড়িয়ে ধরলো আমাকে। আশে পাশের অনেকে দাড়িয়ে দেখতে লাগলো। ফ্রি টিকিটে রোমান্স আরকি,
আরাভ- কিভাবে হলো? (যদিও জানে কে করছে এসব)
আমি- লাস্ট যখন কথা বলছিলাম তখন গাড়িতেই ছিলাম। বাট আরেকটা ফুল ভালো লাগছিলো। তাই দৌড় মারতে গিয়েছিলাম জঙ্গলের দিকে বের হতে গিয়ে দেখি একটা ট্রাক আসছে। ড্রাইভার কাকুকে বলি একসাথেই পালাতে ধরি। কিন্তু আমি কিছুটা আগে বের হই। ড্রাইভার কাকুও পালায় ঠিকই কিন্তু ট্রাকটা গাড়িকে ধাক্কা দেয় আর তার কিছুটা লাগে। পরে মানুষ যাচ্ছিলো তাদের সাহায্য নিয়ে হাসপাতালে আসি।
আরাভ- তোমার কোথাও লাগছে?
আমি- না।
আরাভ- সিওর?
আমি- ইয়ে আমার হাতে একটু লাগছে।
আরাভ- চলো ওষুধ লাগাবা।
আমি- গাড়িটার বেশি ক্ষতি হয় নি মনে হয়। তবুও যতোটা হইছে মেলা টাকা যাবে।
আরাভ- তা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না।
আমি- উকে। বাদ দেন। প্রথমবার এক্সিডেন্ট হইলো আমার। এখনি একটা পোস্ট করবো আমার ফোননননননন।
আরাভ- কি?
আমি- ফোন তো মনে হয় গেছে গা। এএএএএ আমার ফোন।
আরাভ- গাধী মাইয়া নিজে বাঁচে গেছো ওটাই প্রে করো।
আমি- হিহি। উকে। নতুন ফোন দিবেন তো?
আরাভ- তোরে মারবো আমি। একা পালাতে কে বলছে?
আমি- আপনি-ই তো বাচ্চা বাচ্চা করছেন তাই লজ্জা পাইছি।
.
হঠাৎ পাশের মানুষগুলো হেসে উঠলো। আমি ভুলেই গেছিলাম যে আমরা মানুষের ভিড়ে আছি। আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম। সাথে আরাভও।
আমি- আমি বাড়ি গেলাম টাটা।
.
এই বলে দৌড় মারতে গেলাম। কিন্তু হঠাৎ উস্টা খেতে গেলাম কিন্তু আরাভ হাত ধরে ফেললো।
আরাভ- দৌড়াদৌড়ি কমাও মোর মা।
আমি- লজ্জা লাগছে।
আরাভ- আমারও তো লাগছে তাই বলে কি আমি পালাচ্ছি?
আমি- ইয়ে মানে।
আরাভ- এখানে দাড়াও একটু আমি দেখে আসতেছি রহিম কাকার অবস্থা কেমন?
আমি- ওকে।
.
আরাভ খোঁজ নিয়ে আসলো। কিন্তু এসে দেখে আমি একটা বাচ্চাকে কোলে নিয়ে আছি।
আরাভ- এটা কার বাচ্চা। দেখে তো মনে হচ্ছে ২ দিনের বাচ্চা।
আমি- আমার বাচ্চা।
আরাভ- বাহ আমি বাচ্চার বাবাও হয়ে গেলাম। কেবল তো বাচ্চারই কথা বলছিলাম।
আমি- আরে দেখেন কতো কিউট পুচকু একটা। আমার মতো দেখতে তাই না।
আরাভ- কে হয় তোমার?
আমি- কেউ না।
আরাভ- মানে?
আমি- মানে কেউ হয় না তো।
আরাভ- কোলে নিয়ে আছো যে?
আমি- চুরি করছি।
আরাভ- আনহা তুমি কার বাচ্চা তুলে আনছো?
আমি- এটাও জানি না।
আরাভ- আমি পাগল হয়ে যাবো। আরে গাধী কি করছো?
আমি- পুচকুটারে খুব কিউট লাগছে। তাই….
আরাভ- তাই কি?
আমি- পরে কমু। নার্স আইছে।
নার্স- থেংকু ম্যাম আপনার জন্য বেঁচে গেলাম।
আমি- ব্যাপার না মানুষই মানুষের জন্য।
.
নার্স বাচ্চাটাকে নিয়ে চলে গেলো। আরাভ জিজ্ঞেস করলো, “কিছুই বুঝলাম না।”
আমি- যেতে যেতে বলছি। চলেন বাড়ি যাই।
.
আরাভ আর আমি হাটতে লাগলাম। তারপর গাড়িতে,
আরাভ- এবার বলো।
আমি- কিতা?
আরাভ- বাচ্চাটা কেমনে নিলা? আর নার্সটা কিছু বললো না কেনো?
আমি- বাচ্চাটাকে দেখলাম খুব কোলে নেওয়ার ইচ্ছা করছিলো। নার্সের কোলে ছিলো। পাশে একটা ৫ বছরের বাচ্চা ছিলো। ওকে একটা কিটক্যাট ধরায় দিয়ে বললাম, যেনো এই জুসটা ওই নার্সের মুখে আর হাতে ফেলে। বাচ্চাটা তাই করলো। নার্সটা বকাবকি করতে চাইলো কিন্তু বাচ্চাটা পালাইলো। আমি বললাম দেন আপু বাবুটাকে আমি ধরতেছি। উনি ভাবলো আমি তার সাহায্য করছি। কিন্তু আমি যে কি করছি হিহিহি তা তো আমি জানি।
.
আরাভ শকড একটা মেয়ে এতো পাগলামি করতে পারে ও আমাকে না দেখলে জানতো না।
আরাভ- ফাজিল মাইয়া।
আমি- হিহি।
.
আরাভ আর আমি বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হলাম। আরাভের মাথায় রাগ উঠে গেছে। আরাভ যে জান্নাতকে ছাড়বে না ও মনে মনে ফিক্স করলো।
চলবে…….