অদ্রি ধীরে ধীরে এগোতে লাগলো। ঘুম ঘুম চোখে সবকিছুই কেমন ঝাপসা লাগছে। নিদ্রের রুমের দিকে যতো এগোচ্ছে ততই কেউ একজনকে বেশ ভালোভাবে দেখা যাচ্ছে। কেউ একজন আর কেউই না লিলি!
এতো রাতে লিলিকে এখানে দেখে অবাক হয়েই অদ্রি জিজ্ঞেস করলো
– লিলি এখানে এতো রাতে কী করছিস?
লিলি ভাবতেই পারেনি অদ্রির এইসময় এখানে উপস্থিত হবে। কিছু একটা না বললেই নয়। লিলি বিরক্তি নিয়ে বললো
– এমনি।
– এখানকার লাইটটা জ্বালাস নেই কেনো?
– ইচ্ছে হয়নি তাই!
– এই তোর কী হয়েছে রে? মুখে মুখে কথা বলার সাহস পাস কোথা থেকে?
– তুমি প্রশ্ন করবা আর আমি উত্তর দিলেই দোষ!
– ভদ্রভাবে উত্তর দেয়া যায়না?
লিলি দাঁত চিবিয়ে চিবিয়ে বললো
– তুমি কোথাকার কী যে, তোমার সাথে ভদ্র ব্যবহার করতে হবে?
রাগে শরীর কাঁপছে অদ্রির। এতটুকু মেয়ে তাকে কী বললো? সেদিনই মেয়েটাকে এক আবর্জনা থেকে তুলে এনে নিজের ছোটো বোনের মতো রেখেছে। আর সে কী না!
লিলির ডান গালে ঠাস করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলো। চিৎকার করে বলতে শুরু করলো
– আবর্জনা, আবর্জনাই থাকে!
ছাদ থেকে অদ্রির চিৎকার শুনে রিতা প্রায় দৌঁড়ে নেমে এলেন।
কিছু বুঝে ওঠার আগে অদ্রি রিতাকে বললো
– লিলি যেন আমার সামনে না আসে। বেয়াদব মেয়ে, কথাবার্তার কোনো শ্রী নেই।
রিতা লিলিকে বললেন
– যাও নিজের রুমে যাও।
লিলি চলে যাওয়ার পর রিতা অদ্রিকে বললেন
– এতো রাতে ঘুম ভাঙলো কীভাবে?
অদ্রি মাথার ঘোমটা নামিয়ে দিয়ে বললো
– খুব তৃষ্ণা লেগেছিলো। রুমে পানিও নাই তাই ভাবলাম নিচে নেমে পানি খেয়ে আসি। আর তখনই দেখলাম লিলি এখানে দাঁড়িয়ে আছে….
রিতা অদ্রির কথার মাঝেই বললেন
– আমি নিজ হাতে তোমার রুমে খাবার পানি আর গ্লাস রেখে এসেছি।
– না তো, আমি পেলাম না তো।
– আচ্ছা চলো তোমার রুমে চলো। তুমি শোবে আর আমি খাবার পানি নিয়ে আসি।
রিতা অদ্রির রুমে ঢুকে লাইট জ্বালিয়ে দেখলেন বিছানার পাশে ছোটো টেবিলে খাবার পানি আর গ্লাস রাখা।
অদ্রিরও ছোটো টেবিলের উপর চোখ আটকে গেলো।কিছুক্ষণ আগেও তো এখানে পানি ছিলো না তাহলে কীভাবে আসলো?
রিতা অদ্রিকে বললেন
– কাঁচা ঘুম ভেঙেছিলো তো তাই হয়তোবা দেখতে পাওনি।
আর লিলির বিষয় নিতে এতো চিন্তা করার কিছুই নাই। বেশি রকম বেয়াদবি করলে ওর বাসায় ফেরত পাঠিয়ে দিলেই হবে।
তিন গ্লাস পানি শেষ করার পরও অদ্রির মনে হচ্ছে তার তৃষ্ণা মেটেনি।
আর পানি খেতে হবেনা তোমাকে। তুমি এখন ঘুমাও – রিতা কথাটা বলে রুমের লাইট অফ করে দিয়ে চলে যাচ্ছিলো। অদ্রি বললো
– ছাদের দরজা তালা দেয়া হয়েছে?
রিতা বলল
– না, আমি আজকে ওখানেই ঘুমাবো।
– ভয় লাগবেনা?
রিতা হেসে বললেন
– তুমি ঘুমাও তো।
লিলি বিছানার উপর শুয়ে কাঁদছে। অদ্রির তাকে এভাবে থাপ্পড় মারাটা ঠিক হয়নি। সে দেখে নেবে!
এই বাসায় সে কাজের বিনিময়ে থেকেছে, বিনে পয়সায় না! দু’দিন যাবত রিতা কোথাকার কে এসে তার জায়গা নিয়ে নিবে? এতো সহজ নাকি!
অদ্রির মতো একজন মেয়ের সাহস কীভাবে হয় এসব তাকে বলার?
অদ্রির ঘুম আসছে কিন্তু ঘুমাতে ইচ্ছা করছে না। কিছু ভাবতে ইচ্ছে করছে আমার তাকে নিয়ে। যদিও সে আমার কিনা জানা নেই।হবেও কিনা সেই নিশ্চয়তা নেই। ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সবারই জানার ইচ্ছা থাকে কিন্তু ক’জনই বা জানতে পারে। যদি কোনো ভাবে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানা যেত।
নাজমুল সাহেব মনে মনে নিজেকে বাহবা দিলেন। কতো সুন্দর করে গুছিয়ে মিথ্যে কথাটা বললেন তিনি কিন্তু কেউই ধরতে পারলো না। আসলে তিনি তিনটি টিকিট কিনেছেন। সাথে অনেক কেনাকাটাও করেছেন। এতো দিন পর দেশে যাচ্ছে খালি হাতে যাওয়া যায় নাকি?
বারান্দায় দাঁড়িয়ে নিদ্রের হঠাৎ মনে হলো অনেক দিন পর তার বুকের উপর থাকা বোঝাটা কিছুটা হালকা হয়েছে। তার খরচ কিছুটা হলেও কমবে বাবা সাথে গেলে। মোবাইলের স্ক্রিনে অদ্রির ছবিটাতে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে থাকতে একসময় চোখ ঝাপসা হয়ে গেলো নিদ্রের। সুখের কান্না কিছুটা অন্যরকম হয়। যদিও পুরুষদের কাঁদতে নেই।
যদি ও রাজি না হয় তখন সে কী করবে?
ভাবতেও ভয় হয়, যে ও ফিরিয়ে দিতে পারে! যদি দেয় তখন…..?
নেগেটিভ চিন্তা করে লাভ নেই। আপাতত পজিটিভ কিছু ভেবে ভালো থাকা যাক।
তাকে কাছে পাওয়ার মাঝে আত্মতৃপ্তি থাকবে। অদ্রির ঠোঁটে আলতো করে চুমু এঁকে দিয়ে ওর দেহের শিহরণ দেখার মাঝে, উপভোগ করার মাঝে আনন্দটাই অন্যরকম। ঠোঁটে গভীরভাবে চুমু এঁকে দেয়ার আহবান টাও অসম্ভব সুন্দর অনূভুতি জাগাবে।অদ্রির দেহের প্রতিটি শিহরণ দেখার অদম্য ইচ্ছাকে দমিয়ে রাখার ব্যর্থ চেষ্টায় ব্যস্ত সে।
নিশ্বাসের সাথে অদ্রির দেহের অধিকারটাও যে তার চাই !
আশা করি আপনাদের আর কিছু বলতে হবে না, এই বলে মিথিলা বেরিয়ে যায়,,
পরীক্ষা শেষে নতুন করে পরিচিত হওয়া এক বান্ধবীর সাথে দেখা করলো মিথিলা
মিথিলা- তৃধা আমার না কিছু টিউশনি খুব দরকার,একটু খুঁজে দিতে পারবি?
তৃধা- দোস্ত আমার ছোট একটা বোন আছে পড়া শুনায় ফাঁকিবাজ, তুই যদি তারে পড়াশ তা হলে পাঁচ হাজার করে পাবি
মিথিলা- পাঁচ হাজার কেনো, একটা টিউশনি তে এতো দেয় নাকি
তৃধা- শুন আমার বোন কে কোন টিচার ই পড়াতে চায় না, দূর্বল, ক্লাস সেভেনে এই চার বছর আছে,এর আগের এক টিচার কে তো আট হাজার টাকা করে দিতাম,, কিন্তু তা ও কিছু হয়,এই টা লাষ্ট সান্স
সে হিসেবে তোকে অনেক কম ই বলেছি
মিথিলা- ওকে ডান, প্রতি দিন সন্ধায় আজ থেকেই শুরু করবো,কিন্তু তৃধা আমার আর ও কিছু টিউশনি দরকার, মানে যা দিয়ে তিন চার জনের সংসার খুব ভালো ভাবে চলতে পারবে
তৃধা একটু ভেবে বল্লো
– দোস্ত টিউশনি করে তুই সংসার চালাতে পারবি না কারন দেখ অনেক স্টুডেন্ট এর গার্ডিয়ানরা মাস শেষে বেতন দিতে গড়িমসি করে,,যদি এই টিউশানির ফাকে তুই কোন প্রাইভেট কম্পানিতে জব নিস,বা প্রাইভেট স্কুলে তা হলে গিয়ে একটু বরকত পাবি
মিথিলা- তুই আমার জন্য টিউশনি খুঁজে দে, রেজাল্ট বের হলে জবের কথা ভাববো
তৃধা- ঠিক আছে,
মিথিলা তা হলে আমি যাই এখন
মিথিলা বাসায় চলে আসে অনেক রাত আয়ান এখন ও ফেরেনি,মিথিলা জেগে বসে আছে আজ আয়ানের সাথে কথা বলতেই হবে
আনুমানিক রাত একটায় আয়ান আসে
মিথিলা আয়ানের রুমে যায়
আয়ান মিথিলা কে দেখে মনে মনে বল্লো ভাগ্যিস আজ সেন্সে আছি নইলে আপু যে কি বলতো
মিথিলা গিয়ে আয়ানের পাশে বসে
আয়ান ছুপটি মেরে বসে আছে
কথা শুরু করলো মিথিলা ই
– ভাই যেদিন আমি এস,এস, সি তে প্লাস পেয়ে বাসায় আসি সেদিন মা বাবার পাশা পাশি তুই ও অনেক খুশি হয়েছিলি বরাবর তোর আর নির্ঝরের দুষ্টুমির কারনে আমি ভাবতাম পড়াশুনা নিয়ে তোদের বুঝি কোন ভাবনা নেই
কিন্তু সেদিন নির্ঝরী আমার সাথে ফাজলামি করলে ও তুই আমার ধারনা পালটে দিয়েছিলি, মনে আছে তোর সেদিনের কথা?
আয়ান মিথিলার দিকে তাকায় মুখে তার কথা নেই,,কি বলবে সে ভাষা ও খুজে পাচ্ছে না
মিথিলা ই বলতে শুরু করল
– তুই সেদিন আমায় একটা কলম গিফট করেছিলি,আর বলেছিলি কলম একটা শিক্ষা উপকরণ এটা তার হাতে ই মানায় যে এটার মূল্য বোঝে,আর ও বলে ছিলি,টিপিনের টাকা জমিয়ে তুই আমার জন্য কলম টা কিনেছিলি বেশ দামি ছিলো কলম টা
আমি সেদিন খুব খুশি এতো টা খুশি হয়েছিলাম যে তোরা দুজন ই বুঝতে পারিস নি, আমি সেদিন তোকে নিয়ে দূরে ভবিষ্যৎ দেখতে থাকি,,এই কলম ই হবে তোর ভবিষ্যৎ এর পথ চলার ছাবি কাঠি,,
এতোটুকু বলে মিথিলা থেমে যায়,,একটা শূন্যতা ভরা নিঃশ্বাস গোপন করে আবার বলতে শুরু করলো
– কিন্তু আব্বুর মৃত্যুর পর তুই এমন হয়ে যাবি আমি ভাবতে ও পারিনি,দেখ তোর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত
তোর সাথে আমার নির্ঝর সবার ভবিষ্যৎ ঝড়িয়ে শুধু আমাদের দুজনের কেনো জিমি আপু কে আব্বু বিয়ে দিলে ও একদিনের জন্য ও সে তার স্বামির কাছে সুখি হয়নি,তাকে যদি আমরা না দেখি কে দেখবে বল
আচ্ছা আমার কথা বাদ দে আমি না হয় কোন ভাবে আমার জীবন টা পার করে দিবো, যদি তোদের নিয়ে আমার কেনো চিন্তা না থাকতো,কিন্তু এখন আমার প্রতিনিয়ত টেনশন তোদের কি হবে,
জানিস মা শেষেবার আমাকে দেখে ইশারায় অনেক কথা বলে ছিলো,সেটা তোরা না বুঝলে ও আমি বুঝেছি,
মায়ের মৃত্যুর আগের রাতে আমি স্বপ্নে দেখি বাবা মা দুজনেই এক সাথে বসে আছে,আর আমাকে বলছে মিথিলা তুই তোর ভাই বোন দের দেখিস
আমি বল্লাম- তোমরা থাকতে আমি কেনো?
তখন মা বল্লো আমরা তো সব সময় থাকবো না তার পরেই আমার ঘুম ভেঙে যায়
মিথিলা থামতেই আয়ান মিথিলা কে ঝড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করলো
মিথিলা কিছু বল্লো না কাঁদতে দিলো আয়ান কে কাঁদলে হয়তো মনটা হালকা হবে
কিছুক্ষন পর আয়ান নিজেকে সামলে নিয়ে বল্লো
– আপু আমি এখন কি করবো বল
মিথিলা- দেখ এখন ও অনেক দেরি হয়ে যায়নি,সময় আছে তুই পড়াশুনা শুরু কর, আমি আছি তোদের পাশে,যখন যা দরকার হবে আমাকে বলবি আমি আমার রক্ত বেছে হলে ও তোদের পাশে থাকবো
আয়ান- আপু দুলা ভাইয়ের সাথে তোমার কি হয়েছে
মিথিলা কিছুক্ষন ছুপ করে থেকে বল্লো
-তুই এখন ও ছোট যখন বড় হবি তখন নিজেই বুঝতে পারবি,এখন শুয়ে পড় অনেক রাত হয়েছে
আয়ান আর নির্ঝর আবার পড়াশুনা শুরু করে,,ওদের পড়াশুনার খরচ, সংসার খরচ সব চালাতে মিথিলা হিমসিম খেয়ে যাচ্ছে তবু ও হাল ছাড়েনি, ভাই বোন দের একটা পর্যায়ে না পৌছানো পর্যন্ত শান্তি নেই তার
জে.এস.সি তে আয়ান টেনে টুনে পাশ করলে ও নির্ঝরী অনেক ভালো রেজাল্ট করে যদি এ প্লাস পায়নি তবু ও ভালো হয়েছে
আয়ান- আপু তুই বলছিস, আমার দ্বারা ভালো রেজাল্ট হবে
মিথিলা- হ্যারে পাগল,অবশ্যই পারবি,
মিথিলা এখন ছয়টা টিউশনি করায় সব মিলিয়ে মাসে পনেরো ষোল হাজার হয় কিন্তু তবু ও
ওদের পড়া শুনা আর সংসারে ঠিক মতো হয়ে উঠে না,নির্ঝরিণীর পরনে একটা ভালো ড্রেস নেই, আয়ানের ভালো একটা শার্ট নেই,,মিথিলা কি করবে ভেবে পাচ্ছে না,,
এইচ,এস,সি র পরে নিজে আর পড়াশুনার কথা ভাবেনি এতো খরচ চালাবে কি দিয়ে,,
অনেক চেষ্টার পর টিউশানির পাশা পাশি একটা প্রাইভেট স্কুলে মিথিলার জব হয়, মাথা থেকে যেন কিছু টা চিন্তা গেলো,
স্কুল শেষ করে মিথিলা, তাড়াতাড়ি রান্না বসালো কিছুক্ষন পর নির্ঝর আর ভাই আসবে অনেক ক্ষুর্ধাত্ব থাকবে, খাবার রেডি না হলে কি যে হবে
সন্ধায় আবার তৃধার বোন তৃনা কে পড়াতে যেতে হবে মেয়েটা এতো অমনোযোগী পড়া শুনায়, তবু ও টেনে টুনে সেভেনের বছর পার করিয়ে এনেছে তৃনার মা বাবা অনেক খুশি তাদের অনুরোধ এইটের বছর ও মিথিলা কেই পড়াতে হবে দরকার হলে বেতন বাড়িয়ে দিবে
নির্ঝরিণী বাসাতে প্রবেশ করতেই চিৎকার করে করে মিথিলা কে ডাকতে লাগলো আপি এই আপি শুন না কি ঘটেছে আজ
আয়ান- এই নির প্লিজ আপুকে কিছু বলিস না
মিথিলা- কি হয়েছে রে নির্ঝরী, আমাকে বললে কি হবে
আয়ান- আপু তুই ওর কথা শুনিস না, ও এমনিতেই ফাজিল
নির্ঝরিণী – আপু আমি মটেও ফাজিল নয় সত্যি বলছি,
পাশের বাসার আন্টির মেয়ে উতলা, ভাই কে রোজ আসা যাওয়ার পথে চোখ মারে,আর আমাদের রোমিও লজ্জায় মাথা তুলে তাকাতে ও পারে না হা হা হা
মিথিলা ও মুচকি মুচকি হাসতে থাকে
আয়ান লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে
মিথিলা- হয়েছে যা হাত মুখ ধুয়ে আয় খেতে দিচ্ছি
হ্যারে আয়ান উতলা যেন কিসে পড়ে?
আয়ান- আপু নিউ টেনে
মিথিলা- ওপ্স আমার ভাই নয়,ভাইয়ের বউ দশ
নির্ঝরিণী – আপি এক সাথেই থাকার কথা আমাদের আদুভাইয়ের এক বছর মিস হয়েছে না
আয়ান- আপু তোরা কি শুরু করেছিস,ধূর ভাল লাগে না
মিথিলা- ওকে নির্ঝর আর কোন ফান নয় খেতে আয়
নির্ঝরিণী – খেতে খেতে বল্লো জানিস আপু কালকে না আমাদের স্কুলে কন্সার্ট হবে,, অনেক বড় নাম করা শিল্পী কে আনবে
আমি কাল তাড়া তাড়ি স্কুল যাবো
মিথিলা- কি জানি আমি তো গান ফান এতো শুনি না, তাই শিল্পী দের নাম ও জানি না,কোন শিল্পী আসবে রে
আয়ান- আরেহ আপু শিল্পি আয়াপ খান, নতুন করে মাথা ঝাড়া দিয়ে উঠেছে তাই এখানে সেখানে যায় আর কি
নির্ঝরিণী – আপু তুই ওর কথায় কান দিস না,আয়াপ সত্যি অনেক ভালো গান করে,ওর ছেলে ফ্যানের থেকে মেয়ে ফ্যান অনেক,,সবার ক্রাশ উনি,,
আয়ান- হা আপু আমাদের ফাটা বাশওয়ালির ও ক্রাশ
মিথিলা- কি সব বলছিস বলতো, নির্ঝরের কন্ঠ সত্যি অনেক সুন্দর ফাটা বাশ হতে যাবে কেনো
আয়ান- শুন নির তুই না সাবধানে থাকিস ফাকনামি করে আবার স্টেজে তোর ফাটা গলায় গান ধরিস না নইলে স্কুলে আমার মান থাকবে না সবাই জানে তুই আয়ানের বোন
মিথিলা ভাই বোন দের ধমক দিয়ে বল্লো- ছুপ কর তোরা খাওয়ার সময় এতো কথা বলতে নেই
মিথিলা- তোরা খা আমার একটু মার্কেটে যেতে হবে সেখান থেকে তৃনা কে পড়িয়ে একেবারে আসবো
নির্ঝরিণী – হুম তাড়া তাড়ি এসো আর শুনো আপি তোমাকে আর বেশি দিন কষ্ট করতে হবে না আমি এস.এস.সি দিয়ে তোমার মতো টিউশনি করাবো
আয়ান- আপু তুই যদি ওর আশায় থাকিস তা হলে তুই বুড়ি হবি আমি বুড়া হবো তবু ও ঝড়ের টিউশনি ঝুটবে না হি হি হি
মিথিলা আয়ান কে ধমক দিয়ে বেরিয়ে গেলো
আজ মিথিলার মার্কেটে যাওয়ার কারন নির্ঝরিণীর জন্য একটা ভালো ড্রেস কিনবে
মিথিলা একটা মার্কেটে ডুকলো,
এই দোকানদার মেয়ে,মিথিলা বেছে বেছে এই দোকানেই আসলো কারন মেয়েদের সাথে ধামা ধামি ভালো করা যায়,
মিথিলা দোকানি কে বল্লো
আমাকে একটা চুড়িদার দেখান তো
দোকানি পাশে ফিরে থাকা একটা মেয়ে কে ডাক দিয়ে বল্লো
– এই রাহি এই ম্যাম কে চুড়িদার দেখা তো
রাহি সামনে ফিরতেই মিথিলা ভুত দেখার মতো চমকে উঠে
-আরেহ রাহি তুই এখানে
রাহি- আমি তো এখানে কাজ করি কিন্তু তুই এখানে?
মিথিলা কিছুক্ষন আর কথা বলতে পারলো না
রাহি এসে মিথিলা কে ঝড়িয়ে ধরলো
রাহি- তোর সব কথা শুনেছি কিন্তু সময়ের কারনে তোর সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি
আর তোর নাম্বার টা ও হারিয়ে ফেলেছি
মিথিলা- ওহ
রাহি – চল কোথাও গিয়ে বসি
মিথিলা প্রথমে যেতে চায়নি পরে ভাবলো ইহানের খবর জানে কি না জিজ্ঞাস করা যাবে তাই বল্লো চল যাই
ওরা একটা কফিশপে গিয়ে বসলো
রাহি- তো দিন কাল কাটছে তোর
মিথিলা- ভালো,পড়াশুনা করছিস না এখন ও
রাহি- হুম সেটা তো করতেই হবে সব বন্ধুরা দেশের বাইরে ডিগ্রী নিতে গেছে আমি বিদেশে না যেতে পারি দেশে থেকে তো পারবো
মিথিলা- হুম,সব বন্ধুরা মানে তুই আর কার কার কথা বলছিস
রাহি- ইহান,সাম্মি, অরনি ওদের কথা বলছি
ইহানের কথা শুনে আবেগে মিথিলার কন্ঠ ভারী হয়ে যায় অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়ে বল্লো
ইহানের খবর কোথায় ফেলি
রাহি- ইহানের খবর তেমন বেশি জানি না,অস্ট্রিয়া তে সাম্মি যায় সেখানে একটা ভার্সিটি তে ইহানের সাথে দেখা হয় তার,সেখান থেকেই জানতে পারি ইহান এখন অস্ট্রিয়া তে আছে,আর অরনি আমেরিকায়
মিথিলা- অরনি আমেরিকায় কেনো
রাহি- কারন অরনি জানে না ইহান যে অস্ট্রিয়া তে আছে, তাই অরনি তার আন্টির কাছে আমেরিকায় যায়
মিথিলা- ওহ,
রাহি- তবে লাস্ট মান্থে শুনেছি অরনি অসুস্থ, হোসপিটালে ভর্তি আছে
মিথিলা- কি হয়েছে অরনির
রাহি- সেটা জানি না,বাই দ্যা য়ে জিজুর খবর রাখিস?
মিথিলা গম্ভীর হয়ে বল্লো
যখম সম্পর্ক টার কোন মূল্য নেই তখন মানষ টার খবর রেখে কি হবে
রাহি- শুনেছি জিজুর সাথে তার বাবা মা,র কোন সম্পর্ক নেই,এ দিকে নায়া আপুর সাথে সে আলাদা ফ্ল্যাটে থাকে,বিয়ে ও করে নিয়েছে
মিথিলা অবাক হয়ে বল্লো
– নায়া কে তুই ছিনিস নাকি,আপু বললি যে
রাহি- আরেহ তুই তো জানিস না,নায়া আপু ইহানের বড় বোন
মিথিলা- হোয়াট
রাহি- হুম,নায়া অস্ট্রিয়া থেকেই পড়া শুনা করেছে আর জিজু ও সেখানে ছিলো তাদের পরিচয় সেখানেই হয়,দেশে আসার পর জিজুর মা,বাবা মানে তোর শ্বশুর শ্বাশুড়ি ঝোর করে তোর সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়,তার পর নায়া দেশে ফিরে যা করার তা করলো
মিথিলা পাথরের মতো বসে আছে
রাহি মিথিলার কাদে একটা হাত রেখে বল্লো
– মন খারাপ করিস না,নায়া আপু যে এমন আমি ও ভাবতে পারিনি,তবে শুনেছি ইহান এই নিয়ে নায়ার সাথে রাগা রাগি করে বাংলাদেশে আসা বন্ধ করে দিয়েছে ফ্যামেলীর কারো সাথে যোগাযোগ নেই ইহানের
মিথিলা – ওহ, আমি এখন উঠি রে,
মিথিলা রাহি কে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে বেরিয়ে যায়,রাহি পিছন থেকে ডাকলে ও শুনে না
আজ আর তৃনা কে পড়ানো হয়নি সোজা বাসায় চলে আসে
নির্ঝরিণী – আপু তুমি না বললে দেরি হবে তোমার আসতে
মিথিলা কিছু বল্লো না সোজা নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়
নির্ঝরিণী – কি হলো আপুর, যাওয়ার সময় তো সব ঠিক ই ছিলো
মিথিলা রুমের লাইট অফ করে বসে আছে ভাবছে ইভানের কথা বিয়ের পর তার পাগলামির কথা
সব ই তো ঠিক ছিলো,তা হলে এমন হলো কেনো, ভালো বাসা হুম ওদের ভালোবাসার কাছে আমি হেরে গেছি,
ওরা ঠিক ই ওদের ভালোবাসা জয় করে নিয়েছে,,আমার ভালোবাসায় অনেক খাদ ছিলো তাই হয়তো ইভান কে নিজের করতে পারিনি হয়তো ওকে নায়ার মতো করে ভালোবাসতে পারিনি,
ভালো থাকুক ওরা,,,
সকালে মিথিলার খুব ঝামেলা হয় ভাই বোন দের খাইয়ে তার পর স্কুলের জন্য বের হতে হয়
আজ নির্ঝরিণী ও কোন হেল্প করেনি সকাল থেকেই স্কুলে যাওয়ার জন্য তার কতো আয়োজন ভাবা যায় বিখ্যাত শিল্পি আয়াপ খান আসছে
মিথিলা রুমে চলে এলো
নাহ এই বাড়িতে আমি আর এক মুহুর্ত থাকবো না,আমাকে ছোট করে কথা বলছে তো বলছে আমার মৃত বাবা কে অপমান করছে হায়রে মানুষ গিরগিটির মতো রঙ বদলায়,এদের আসল রুপ ছিনতে সময় লেগে যায়,ইভান যে এমন করবে ভাবতে ও পারিনি,
তার শিক্ষা এতো খারাপ ছিঃ
মিথিলা ভিড় ভিড় করছে আর নিজের জামা কাপড় গুছিয়ে নিচ্ছে,চোখ আটকে যায় চশমার বাক্সে ইহানের কথা মনে পড়ে যায়,ইহানের শেষ কথা ছিলো আমি কখনো শুখি হতে পারবো না,ইহানের কথা ফলে গেছে,, আজ বুঝতে পারছি ইহান কতো টা কষ্ট পেয়েছে সেদিন,
‘ ক্ষমা করে দিস আমায় ইহান’
মিথিলা- সেটা আপনার ছেলে আসলে তার কাছে জিজ্ঞাস করবেন,তবে এখন আমি এই টুকু ই বলবো,,আমার এখানে থাকার ছেয়ে আমার অসুস্থ মা,,আর অসহায় ভাই বোনের পাশে থাকা খুব জরুরী, আশা করি আপনি আর কোন প্রশ্ন করবেন না আমায়
মিসেস আয়মন- মা কি হয়েছে বলো,তোমার শ্বশুর এখন দেশে নেই,এই সুযোগে ইভান কি কিছু করেছে
মিথিলা- বললাম না আপনার কোন কথা উওর দিবো না,তবে হা আপনার বিদেশ ফিরত ছেলের সাথে আমার মতো সাধা সিধে মেয়ের বিয়ে না দিলে আজ দুটি জীবন অনেক সুখের হতো
এই বলে মিথিলা মিসেস আয়মন কে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে বেরিয়ে যায়
মিসেস আয়মন- কি হলো এটা
ছেলেটা আবার কি করেছে, আমি এখন ই কল দিচ্ছি ওকে
কল রিসিভ হলো সাথে সাথেই
মিসেস আয়মন- ইভান তুই কোথায় এখন ই বাসায় আসবি
ইভান- কি হয়েছে আম্মু?
মিসেস আয়মন- তুই আয় তার পর বলছি
মিসেস আয়মন কল অফ করে দিয়ে অফিসের রিসেপসেনিষ্ট কে ফোন দেয়
রিসেপসেনিষ্ট জারা
– হ্যালো
জারা- হ্যা ম্যাম স্যারের পি এ, খুব এক্টিভ,স্যার কে সব কাজে হেল্প করে
মিসেস আয়মন অবাক হলো কিন্তু তা ছেপে গিয়ে বল্লো
– ও হা তাই তো,আচ্ছা ইভানের পি এ, এর নামটা যেন কি,আসলে মনে পড়ছে না এই মুহুর্তে
জারা- নায়া চৌধুরী
মিসেস আয়মনের মন টা কেপে উঠে,তার পর নিজেকে সামলে নিয়ে বল্লো
– ঠিক আছে আমি রাখছি
মিসেস আয়মন কল অফ করে দিয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো,তা হলে মিথিলার এমন ভাবে যাওয়ার কারন এটাই, আচ্ছা কি দেখেছিলো মিথিলা অফিসে গিয়ে, যে জন্য ওকে এ ভাবে চলে যেতে হয়েছে, ছেলে টা কে শুদরাতে পারিনি
মিসেস আয়মন শান্ত আর স্বাভাবিক কন্ঠে বল্লো
– মিথিলা চলে গেছে
ইভান কথা টা শুনেই মায়ের দিকে তাকায় আবার চোখ নামিয়ে নেয়
মিসেস আয়মন- তুই কিছু বলবি না, ছুপ করে থাকবি
ইভান – আ- মি কি. কি বলবো
মিসেস আয়মন- সত্যি ই তো তুই কি বলবি তোর তো এখন খুশি হওয়ার কথা,নায়ার সাথে তোর দিন গুলি নির্ভেজাল কাটবে
ইভান- আম্মু
-ঠাসসসসসসসস,মিসেস আয়মন ইভান কে চড় মারে,এই শিক্ষা দিয়ে মানুষ করেছি তোকে আজকের এই দিন দেখার জন্য,
আজ থেকে আমি ভাববো আমার কোন সন্তান নেই বেরিয়ে যা,,আর কখনো তুই এ বাড়িতে পা রাখবি না
মিসেস আয়মন ইভান কে টেনে বের করে দরজা বন্ধ করে দিলো
ইভান- আম্মু আমার কথা শুনো
মিসেস আয়মন- তোর কোন কথা শুনবো না,
ইভান কিছুক্ষন দরজা ধাক্কায়ে বিরক্ত হয়ে বাড়ির বাইরে চলে এলো
ছোট লোকের মেয়ে তোর সাহস হয় কি করে আমার বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার আমার আম্মুর কাছে আমাকে দোষী করার,, খুব গেছিস না ভেবেছিস তোকে ফিরিয়ে আনবো কখনো না,,
ইভান নায়ার কাছে ফিরে এলো
নায়া- ডার্লিং তোমায় এমন দেখাচ্ছে কেনো কি হয়েছে বলো আমায়
ইভান সব কথা নায়া কে বলে,শুনে নায়া মনে মনে পিচাশি হাসি হাসে (খুব কাজে দিয়েছে আমার মেসেজ টা নইলে ওকে ঘাড় থেকে নামানো ই যেতো না)ডার্লিং মন খারাপ করো না সব ঠিক হয়ে যাবে আমি আছি তো তোমার পাশে
ইভান নায়ার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে
– এখন তুমি আমার বেছে থাকার সম্বল নায়া
নায়া- আমি অলওয়েজ তোমারি আছি জান
মিথিলা বাড়িতে এসে কাউকে দেখতে ফেলো না অসুস্থ মা শুয়ে আছে বিছানায় কোন কথা তার মুখে নেই শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে ছেয়ে আছে
মিথিলার আজ আর কান্না আসছে না,কেনো যেন মনে হচ্ছে চোখের পানি সব শুকিয়ে গেছে
মিথিলা মায়ের পাশে বসে আছে, নির্ঝরিণী কোথায়? মাকে এ ভাবে একা ফেলে কোথায় গেছে সে
বেশ কিছু সময় পর নির্ঝরিণী আসে
মিথিলা- কোথায় গিয়েছিস মাকে একা ফেলে
নির্ঝরিণী – এ ছাড়া কোন উপায় ছিলো না ঘরে চাল ডাল সব ফুরিয়ে গেছে মায়ের ওষুধ ও শেষ
পাশের বাসার আন্টি বলেছে উনার সাথে ব্যাগ বানিয়ে দিলে কিছু টাকা দিবে তাই গিয়েছি সেখানে
মিথিলা ছেয়ে আছে নির্ঝরিণীর দিকে ছোট বোন আমার এতো কষ্ট করছে কতো ই বা আর বয়স হয়েছে এতো তাড়া তাড়ি বাস্তবতার সম্মুখীন হতে হয়েছে
নির্ঝরিণী – এ ভাবে ছেয়ে আছো কেনো আপি,তুমি এসেছো আমি খুশি হয়েছি দুলা ভাই আসলে আর ও খুশি হতাম
মিথিলা- আসবে না দুলা ভাই
নির্ঝরিণী ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বল্লো
– কেনো?
মিথিলা একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে বল্লো,
কিছু না,
নির্ঝরিণী আর কথা বাড়ালো না
– আপু তোমার তো কাল পরীক্ষা যাও তুমি গিয়ে পড়তে বসো আমি মাকে ওষুধ খাইয়ে রান্না বসাচ্ছি
মিথিলা – হুম ঠিক বলে ছিস আমি তা হলে যাই
অনেক রাত জেগে মিথিলা পড়ছে, বিয়ে সংসার সব কিছুর ঝামেলায় পড়া টা পিছিয়ে গেছে,
হঠ্যাৎ মায়ের ঘর থেকে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসলো মিথিলা কান খাড়া করে শুনলো হুম নির্ঝরিণীর কান্নার আওয়াজ মিথিলার বুকের ভিতর ছ্যাত করে উঠে দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে মায়ের রুমে আসে,
মা অসাড় হয়ে পড়ে আছে দেখেই বুঝা যাচ্ছে তার শরিরে আর প্রান নেই
নির্ঝরিণী এসে মিথিলা কে ঝড়িয়ে ধরে কাঁদছে
মিথিলা নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, আল্লাহ কি করে এতো টা নিষ্টুর হলো,বাবা কে নিয়ে গেছে মা কে কেনো রাখলো না আমাদের জন্য, কি নিয়ে বাছবো আমরা,,
প্রায় রাত দুটোতে আয়ান বাড়ি আসে, বাড়িতে এসে আয়ান আবার মাকে হারানোর সংবাদ পেয়ে সেন্সলেস হয়ে পড়ে যায়, পাড়া প্রতিবেশিরা সবাই ততক্ষনে চলে আসে কেউ আয়ানের জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করছে,
পরদিন সকাল আট টা বাজেই দাপনের ব্যাবস্থা করা হয় কেননা দশটায় মিথিলার পরীক্ষা,
ইভান কে খবর দেয়া হয়েছে সে আসেনি,,
জিমি এসে মায়ের লাশের পাশে বসে আছে কাঁদছে সে, তার কি হবে সে কার কাছে এসে কষ্টের কথা বলবে
নির্ঝরিণী – জিমি আপু বলো তো আমাদের কি হবে এবার বাবা মা দুজনেই আমাদের একা করে চলে গেলো কেনো
জিমি নির্ঝরিণী কে ঝড়িয়ে ধরে হাউ মাউ করে কাঁদছে
দূরে মিথিলা দাঁড়িয়ে আছে তার চোখে আজ খরা নদীর বুকে চর উঠে গেছে তাই তো মিথিলার চোখের পানি ও শুকিয়ে গেছে
সকাল আট টায় দাপনের কাজ সম্পূর্ণ হয়
মিথিলা পরীক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য তৈরী হচ্ছে
প্রতিবেশী মুরুব্বীরা মিথিলা কে আজকের পরীক্ষা না দিতে বলছে,গুরু মরা মাথার উপরে আজ যেন বাড়ির বাইরে না বের হয়
মিথিলা শান্ত আর গম্ভীর কন্ঠে বল্লো
– আমাদের চার ভাই বোনের ভাগ্যে এই কষ্ট টা ই লিখা আছে এটা হবেই তাই বলে পরীক্ষা না দিয়ে ঘরে বসে কাঁদলে এর সমাধান হবে না,আমার ছোট ভাই বোন দের কথা ভাবতে হবে,আশা করি আপনাদের আর কিছু বলতে হবে না মিথিলা বেরিয়ে যায়