Thursday, August 28, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2342



জুয়াড়ি স্বামী পর্ব/ ৭

0

জুয়াড়ি স্বামী পর্ব/ ৭
লেখক/ ধ্রুব

????????

মা/ তাই বলে তোর চলে আসাটা একদম ঠিক হয়নি ধ্রুব

নীলার বাড়ি লোকেরা কি ভাববে

আমি মা”কে কি করে বোঝাই নীলা ওদের বাড়ি নয় অন্য বাড়ি আছে

মায়ের কথায় সাড়া না দিয়ে ঘরে দিয়ে শুয়ে রইলাম

চোখ বন্ধ করতে ভেসে উঠে নীলার চিৎকার আর সাগরের জোড়াজুড়ি

মনটা মানেনা কিন্তু কি করবো কি করার আছে টাকা ছাড়া আমি সাগরের সামনে দাঁড়াবো কি করে

অনেক রাত হয়ে গেছে মা ডাকছে খাওয়ার জন্য

আমি মাকে বলে দিলাম আমি খাবোনা খেতে ইচ্ছে করছেনা

যখন চোখ বন্ধ করি এমনি ভেসে উঠে নীলা আর সাগরের…….

এদিকে রাত ১২টা বাজতে সাগর নীলার কাছে যায়

নীলা বসে বসে ভাবছে এই বুঝি আমাকে ছিঁড়ে খাবে হিংস্র বাঘের মত

সাগর গিয়ে নীলার পাশে বসে বললো

সাগর/ শুয়ে যাও ঐ জুয়াড়ির কথা ভেবে রাত থেকে কি হবে

নীলা/ এই শুনুন আমার স্বামীকে নিয়ে একদম বাজে কথা বলবেন না

সে যেমন-ই হোক সে আমার স্বামী আমার শেষ আশ্রয়

আপনার যা ইচ্ছা তাই করুন আমার সাথে আমি একটুও বাঁধা দিবনা

সাগর খিল খিল করে হাঁসতে বলে

সাগর/ হুমমমমম করবো তো অনেককিছু করবো আমার পাওনাটা তো আমাকে শোঁধ করে নিতে হবে
সেটা যা কিছুতে হোক

নীলা/ তো শুরু করুন এখনও দেরি করছেন কেন এই আমি শুয়ে পড়লাম

সাগর/ এত তাড়া কিসের এখনও তো অনেক সময় আছে

সাগর/ নীলাকে স্পর্শ করে বলে

সাগর/ কিছু খেয়েছো

নীলা/ তা জেনে আপনার কি

সাগর/ অনেককিছু

আমার বাড়িতে এসে আমার বোনটা না খেয়ে রাত কাটাবে আর আমি খেয়ে শান্তিতে ঘুমাবো
তা কি করে হয়

সাগরের মুখে বোন শব্দটা শুনতে পেয়ে নীলার চোখ কপালে উঠে

আর ভাবে

লোকটা কি পাগল হয়ে গেলো
এসব কি বলছে মনে হয় মাথা ঠিক নেই খুশির ঠ্যালায় আবোল তাবোল বকে

সাগর/ এই চোখ দুটো বড় বড় করে কি ভাবছো

তবে আমি জানি তুমি কি ভাবছো

তুমি হয়তো ভাবছো নোংরামি করতে এনে এখন বোন ডাকছে কেন

দেখ বোন…. কিছুক্ষণ আগে তুমি আমাকে নিয়ে যেটা ভাবছো সেটা সত্যি নয়

আর এখন যেটা দেখছো সেটা সত্যি

তোমার সাথে নোংরামি করতে তোমাকে এখানে আনা হয়নি

নীলা/ তবে কেন আনলেন

সাগর/ সব জানতে পারবে
আগে খেয়ে নাও

পাখি এ পাখি কোথায় তুই খাবার নিয়ে আয়

পাখি ভিতরে আসলো খাবার নিয়ে

পাখি/ এই নিন সাহেব

সাগর খাবার নিয়ে নীলাকে খাইয়ে নীলাকে খাইয়ে দিতে যাবে

তখন-ই নীলা

নীলা/ না আমি খাবোনা আমার একদম ক্ষুধা নেই

সাগর নীলাকে একটা ধমক দিয়ে বলে

সাগর/ চুপ একদম চুপ পিচ্চি মেয়ের মত বসে থাকো

তুমি কি চাও তোমার জন্য আমরা সবাই না খেয়ে থাকি

নীলা একটু ভয়ে ভয়ে বলে

নীলা/ আপনারা কেন না খেয়ে থাকবেন

সাগর/ কারন আমরা ভাইবোন বলে

বোন না খেলে ভাই কি পারে খেতে

নীলা কিছু বলতে যাবে তখন-ই

সাগর/ উঁহু… আর কোন প্রশ্ন নয় এবার লক্ষী মেয়ের মত খেয়ে নাও

সাগর ভাত তুলে দিলো নীলার মুখে

ভাত আর চোখের জল দুটো পেটে যাচ্ছে নীলার…
আর মনে মনে ভাবছে
ভাবলাম কি আর হলো কি

সাগর/ এই তুই কি শুধু কাঁদবি নাকি আমাকেও খাইয়ে দিবি

এবার নীলাও ভাত তুলে দিলো সাগরের মুখে

খাওয়া দাওয়া শেষ করে

সাগর নীলার চোখের মুছে দিয়ে বলে

সাগর/ আর কান্নাকাটি নয়
এবার ঘুমিয়ে যাও

ভয় নেই নেই তোমার সাথে পাখিও থাকবে

আমি এবার তাহলে যাই অনেক রাত হলো

পাখি ওর দিকে খেয়াল রাখিস বলে নিজের ঘরে যাবে সাগর

তখন- ই
নীলা/ ভাইয়া তোমার ফোনটা একটু দিবে

সাগর/ কে জুয়াড়ির সাথে কথা বলবি

জুয়াড়ি বলাতে নীলা এখন সাগরকে কিছু বলছেনা

শুধু মাথাটা নাড়িয়ে সাড়া দিলো

নীলা/ হুমমমম খুব মনে পড়ছে মানুষটা কি খাইছে নাকি না খেয়ে শুয়ে রইলো

সাগর/ ফোন আছে কিন্তু এখন দেয়া যাবেনা

কারন…. ঐ বেটা আগে বুঝুক তারপর

বলে সাগর বের হয়ে গেলো

চলবে???

জুয়াড়ি স্বামী পর্ব/ ৬

0

জুয়াড়ি স্বামী পর্ব/ ৬
লেখক/ ধ্রুব

????????

নীলা আমার হাতটা ধরে বললো

নীলা/ চলো এবার যাওয়া যাক আমার হয়ে গেছে

আমি নীলার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম এসব ওর মনের কথা নয়

আমাকে আঘাত করে বলছে

আমি নীলাকে হাতটা ছেড়ে দিতে বললাম

আমি/ হাত ছাড়ো আর শোন
যাবো ঠিক-ই তবে এখন নয় আর একটু পরে সন্ধ্যা নামুক

নীলা/ দ্যাতততত আগে বলবেন না

আমিও চুপ নীলাও চুপ
বড্ড অভিমান করে আছি দুজন

দুজন যেন দুজনার অপরিচিত

সন্ধ্যা নামতে নীলাকে নিয়ে বের হতে যাবো

তখন-ই মা বলে

মা/কিরে খোকা শুশুর বাড়ি যাচ্ছিস বুঝি

আমি/ হ্যাঁ মা তুমিনা বললে ওঁকে নিয়ে ওদের বাড়ি থেকে বেড়াতে তাই যাচ্ছি

মা/ খুব ভালো করেছিস গিয়ে আমায় ফোন দিবি

নীলা মায়ের পাঁ ধরে সালাম করে বিদায় নিলো

আমি/ ঠিক আছে আমি গিয়ে ফোন দিবো

বলে বের হয়ে গেলাম

সাগরের বাড়ির দরজার সামনে গিয়ে দরজায় নক করলাম

একটা মেয়ে এসে দরজা খুললো

আর আমাদের ভিতরে গিয়ে বসতে বললো

আমি আর নীলা দুজনে বসে রইলাম

কেউ কারও দিকে তাকাইনা

আমি হয়তো লজ্জায় আর নীলা ঘৃণায়

একটু পরে সাগর দেখি ভিতর থেকে আসতেছে
আসতে আসতে বলে

সাগর/ কিরে ধ্রুব এই বুঝি তোদের আসার সময় হলো

সেই কখন থেকে আমি অপেক্ষা করছি তোদের জন্য

আমি মনে মনে বলতে লাগলাম

শালা লুইচ্ছা আমাদের জন্য নয় বল আমার বউয়ের জন্য

আমি/ না কই আর দেরি হলো

সাগর/ বাদ দে আমিতো মজা করতেছি
এখনও তো পুরো রাতটা পড়ে আছে

পাখি এই পাখি আমাদের জন্য চা করে নিয়ে আয়

বলতে বলতে গিয়ে বসলো নীলার গা ঘেঁষে

মন চায় শালার মাথায় বাড়ি দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেই

তারপরও নিজেকে বুঝ দিলাম

হয়তো রাতে আরও অনেককিছু হবে তখন কি পারবো আমি ওকে আঁটকাতে

আমি/ এই পাখিটা কে

সাগর/ আমাদের কাজের মেয়ে খুব ভালো

নীলা আর সাগরের পরিচয় করিয়ে দিলাম

ওরা বসে বসে গল্প করছে

আমি উঠে আড়ালে চলে গেলাম আর মনে মনে ঠিক করলাম এই জুয়াড়ি আর জুয়াড়ি থাকবেনা

শুঁধরে নিবো নিজেকে

একটু পরে সাগর বলে

সাগর/ চল আমরা বাহির থেকে ঘুরে আসি

আমি বুঝেছি সাগর আমাকে তাড়ানোর জন্য বাহির যেতে চাইছে কি আর করা যেতে হবে

আমি/ আচ্ছা চল

বলতে নীলা তাকালো আমার দিকে আর হয়তো মনে মনে ভাবছে আমাকে একা করে যেওনা

বাসা থেকে বের হতে নীলাকে বললাম

আমি/ আমি তাহলে যাচ্ছি কাল এসে তোমায় নিয়ে যাবো

নীলা আমার দিকে না তাকিয়ে উত্তর দিলো

নীলা/ যান

বাহিরে গিয়ে সাগর আর আমি একটা দোকানে চা খাইলাম

আমি একটা সিগারেটও জ্বালানাম

সিগারেট টানতে টানতে

সাগর বলে

সাগর/ তোর বউটা সত্যি হেব্বি
প্রথম দেখাতে আমার ওকে অনেক ভালো লেগেছে

কখনও ভাবিনি এতটা কাছে পাবো ওকে

আচ্ছা আমি এখন গেলাম তবে তুইও বাসায় ফিরে যা

সাগর হাঁটতে লাগলো

পিছনে ডাকার মত মুখ আমার নেই

আমিও বাসায় চলে গেলাম

বাসায় ঢুকতে মা বলে

মা/ কিরে খোকা তুই চলে আসলি যে বউমা কোথায়

আমি/ আমার একটা জরুরি কাজ আছে তাই তলে আসতে হলো

নীলা ওদের বাড়িতে আছে ভয়ের কিছু নেই

চলবে

জুয়াড়ি স্বামী পর্ব/ ৫

0

জুয়াড়ি স্বামী পর্ব/ ৫
লেখক/ ধ্রুব

✍✍✍✍✍✍✍✍

আমি/ তাহলে এখন যাইরে কাল সন্ধ্যায় বউকে নিয়ে তোর বাসায় আসবো

সাগর/ এই তোর বউ রাজি হয়েছে

আমি/ তারমানে কি তুই কি ভাবছিস আমি মিথ্যা বলছিস

দেখ জুয়াড়ি হতে পারি মিথ্যাবাদী নয়

আমি বলছি আমার বউ কাল তোর ঘরে থাকবে তোর হয়ে

সাগর/ ঠিক আছে কাল দেখা হচ্ছে তাহলে

একটু তাড়াতাড়ি আসিস

আমি/ আচ্ছা আসবো এখন গেলাম

সাগরের সাথে কথা শেষ করে বাসায় গেলাম

ঢুকতে আম্মু বলে

আম্মু/ কিরে ধ্রুব বউমাকে কি বলছিস সকাল থেকে দেখি কেমন মনমরা হয়ে আছে মেয়েটা

আমি/ ও কিছুনা মা হয়তো বাড়ির কথা মনে পড়ছে তাই

আম্মু/ হ্যাঁ সেটাই হবে….
তুই এক কাজ কর বউমাকে নিয়ে কাল-ই ওর বাবার বাড়ি যা

আমি মনে মনে এটা চাইতেছি

আমি বলার আগে যখন আম্মু বলে দিছে তখন তো আরও খুব ভালো হয়েছে

আমি/ আচ্ছা আম্মু কাল বিকালে দিয়ে আসবো

বলে রুমে গিয়ে দেখি নীলা দাঁড়িয়ে আছে জানালার পাশে

একটা কথা কি জানোতো

রুমের জানালাটা না মেয়েদের খুব আপনের চেয়েও আপন হয়

আমি নীলার গায়ে হাত রেখে বললাম

আমি/ কি ভাবছো

নীলা/ চোখের জলটা মুছে বলে

নীলা/ কিছুনা

আমি/ আমি জানি কি ভাবছো কিন্তু বলো আমি কি করতে পারি আমি কখনও ভাবিনি এমনটা হবে

সত্যি বলছি এমনটা আমি কখনও চাইনি

ক্ষমা করে দাও আমায়

নীলা/ কি বলছেন এসব সত্যি বলছি আমি ঐসব নিয়ে ভাবছিনা যা হবার তা হবে সব আমাদের কপাল
এতে আপনার কি দোষ

উফফফফ…. বড় বাঁচা বাঁচলাম

রাতে খেয়েদেয়ে ঘুমাতে গিয়ে চোখটা বন্ধ করলাম

একটু পরে নীলাও আসলো ঘুমাতে কিন্তু নীলা ঘুমায়না

শুধু চটপট করে আর গড়াগড়ি দেয়

আমার কখন যে চোখটা লেগে এলো বুঝতে পারিনি

মাঝরাতে ঘুম ভাঙ্গতে দেখি নীলা এখনও ঘুমায়নি

আমি/ এই কি হলো ঘুমাবেনা

নীলা/ আচ্ছা ঘুম না আসলে কি মানুষ ঘুমাতে পারে

কি আর করা নীলাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বললাম

আমি/ এবার চোখটা বন্ধ করো দেখবে ঘুম চলে আসবে

কিছুক্ষণের মধ্যে নীলা ঘুমিয়ে পড়লো

সাথে আমিও

সকাল হতে উঠে গেলাম
কিন্তু আজকের সকালটা অন্যদিনের মত নয়
একদম ভিন্ন নেই কোন আয়োজন নেই কোন ঝগড়া

আমি উঠে দোকানে নাস্তা করলাম

কিছুক্ষণ পরে সাগর ফোন দিলো

সাগর/ কিরে খেলবিনা

আমি/ না
কিছুক্ষণ ভেবে উত্তর দিলাম

সাগর/ কেন টাকা নেই বলে
টাকা আমি দেব তুই চলে আসিস

আমি তাও না করে দিলাম

কেন জানি খেলতেও আজ মন চাইছেনা

মাথায় শুধু একটা চিন্তা নীলাকে ছাড়া কিভাবে সাগরের টাকা গুলো শোঁধ করা যায়

কিন্তু এতগুলো টাকা কে দিবে আমায় জুয়াড়ি বলে কেউতো বিশ্বাস করেনা আমায়

অনেকজনের কাছে চেয়েছি কিন্তু কোথাও পাইনি

এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করতে করতে দুপুরটা শেষ হয়ে যায়

বাসায় ফিরতে নীলা তাকিয়ে আছে আমার দিকে

আর হয়তো মনে মনে ভাবছে

সাহেবের খেলা এখন শেষ হয়েছে

কিন্তু নীলাতো এটা জানেনা তাকে বাঁচানোর জন্য এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করছি

নীলা/ টেবিলে খাবার দেয়া আছে গিয়ে খেয়ে নিন
ততক্ষণে আমি রেডি হয়ে নেই

নয়তো পরে দেরি হয়ে যাবে

আমি গিয়ে হাতমুখ ধুঁয়ে খাওয়ার টেবিলে বসলাম

কিন্তু গলা দিয়ে খাবার নামেনা

নিজের বউকে অন্যের বিছানা ভাবতে কেমন জানি লাগে

একটু পরে হাতটা ধুঁয়ে উঠে গেলাম গেলাম রুমে

গিয়ে দেখি নীলা একেবারে নতুন বউয়ের সাঁজে নিজেকে সাঁজিয়ে নিলো

আমি দেখতে হতবাক হলাম…

আমি/ এসব কি এত সাঁজগোজ কেন

একটা অচেনা মানুষের ঘরে যাচ্ছি

একটু সাঁজগোজ না করলে কি হয়

আমি/ তাই বলে এভাবে

নীলা/ তাতে কি স্বামীর ঋণ শোধ করতে যাচ্ছি

যদি আমাকে দেখে তার পছন্দ নাহয় দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয় তখন কি হবে তাই আগে থেকে একটু সাঁজগোজ করে নিলাম

চলবে……

জুয়াড়ি স্বামী পর্ব/ ৪

0

জুয়াড়ি স্বামী পর্ব/ ৪
লেখক/ ধ্রুব

?‍♂?‍♂?‍♂?‍♂?‍♂?‍♂?‍♂?‍♂

নীলা/ কতটাকা পাবে আপনার থেকে সে

আমি/ অনেক

নীলা/ কেন নিয়ে ছিলেন
সব টাকা কি জুয়া খেলে উড়িয়েছেন

আমি চুপচাপ বসে রইলাম

নীলা/ কি হলো কিছুতো বলেন এভাবে চুপ থাকলে হবে

আচ্ছা ঠিক আছে আমি আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি বলুন

আমি এবার একটু সাহস পেলাম ভাবলাম বলছে যখন সুযোগটা কাজে লাগিয়ে ফেলি

আমি/ কিছু করতে হবেনা তোমার তুমি শুধু দুটো রাত ওর সাথে থাকলে হবে

নীলা/ ছিঃ ছিঃ এসব আপনি কি বলছেন
আপনার কি মাথা ঠিক আছে

স্বামী হলেও আপনার সাহস হয় কি করে নিজের বউকে দেনার দায়ে অন্যের বিছানা পাঠাতে

আমি নীলার হাত ধরে কাকুতি মিনতি করতে লাগলাম

আমি/ তুমি কি চাও কারও দেনার দায়ে আমি পালিয়ে বেড়ায়
তুমি কি চাও কারও দেনার দায়ে আমি জেলে যাই

তুমি কি চাও কারও দেনার দায়ে হাঁট বাজারে কেউ আমায় অপমান করুক

নিশ্চয় চাইবেনা তাইনা

এবার নীলাও চুপচাপ

আমি/ আমি জানি এটা কোন মেয়ে মেনে নিবেনা স্বামীর দেনা সে নিজের দেহ দিয়ে শোঁধ করবে

কিন্তু এটা ছাড়াতো আর কোন উপায় নেই

নীলা/ তাই বলে নিজের বউকে অন্যের বিছানা পাঠাবেন

এতে আপনার সম্মান নষ্ট হবেনা

আমি/ দেখ সম্মান নষ্ট হবে তখন যখন পাড়া প্রতিবেশি জানবে

কেউ না জানলে কি করে নষ্ট হবে

কেউ জানবেনা শুধু তুমি আমি আর আমার বন্ধু ছাড়া

প্লিজ এটুকু আমার জন্য করো

দেখ আমি তোমার স্বামী তোমাকে কলঙ্কিনী বলে আমিতো আর দূরে ঠেলে দিবোনা

প্লিজ আর না করোনা আমার জন্য এটুকু করো

নীলা খুব সহজসরল একটা মেয়ে আমার চোখের জল বুকভরা কান্না দেখে আর না করতে পারেনি

একটু পরে বোবা মেয়েটা বলে

নীলা/ আজ থেকে কি যেতে হবে

নীলার মুখে হ্যাঁ কথাটা শুনে চোখের জলটা মুছে ফেলে বললাম

আমি/ আজ নয় কাল থেকে যেতে হবে

নীলা/ ঠিক আছে আমি যাবো কোন জুয়াড়ির জন্য নয়
শুধুমাত্র নিজের স্বামীরটার জন্য

নীলাকে একটা চুমু খেয়ে বললাম

আমি/ আমার লক্ষীসোনা আমি জানতাম আমার কষ্ট তোমার একটুও সহ্য হবেনা

ঘর বের হয়ে আবার গিয়ে বসলাম সে জুয়ার আসরে কিন্তু আশেপাশে তাকিয়ে দেখি সাগর নেই

অন্য আরেকজনকে জিজ্ঞেস করতে বলে কিছুক্ষণ আগে এসে চলে গেছে

উফফফফ….. আমিও না সব কাজে দেরি করে ফেলি

খুঁজতে খুঁজতে সাগরের দেখা পেলাম এক দোকানে বসে বসে চা খাচ্ছে…

আমি ওর পাশে গিয়ে বললাম

আমি/ কিরে কেমন আছিস

সাগর আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলে

সাগর/ কিরে তোকে এখন এত খুশি খুশি কেন

আমি/ আমি কি খুশি শুনলে আমার চেয়ে আরও বেশি তুই খুশি হবি

সাগর/ তাই বল তাহলে শুনি সে খুশির খবরটা কি

আমি/ আরে এখানে নয়
একটু আড়ালে চল ওখানে বলছি

সাগর চায়ের কাপটা রেখে আমার সাথে আড়ালে আসলো

এসে বলে

সাগর/ বল কি বলবি আমার আবার কাজ আছে….

আমি/ কিছু টাকা দে ভাই আমায়

সাগর/ মাথা খারাপ হয়েছে তোর এমনিতে অনেক টাকা পাই তোর কাছ থেকে

আমি/ এই শোন না তুই যা চাইবি তাই পাবি

এমন কি আমার বউকেও

সাগর এতক্ষণ আমার কথা শুনতে চাইছেনা যেমনি বউয়ের কথা বললাম

তেমনি আমাকে বলে

সাগর/ কি বললি তুই

আমি/ হুমমমম যা বলছি সত্যি

সাগর/ এই আমার কথা তুই তোর বউকে বলছিস

আমি/ হুমমমম তাইতো আরও কিছু টাকা চাইতে এলাম তোর কাছে
দিবি

সাগর/ আরে দিবি মানে কি
বলে পকেট থেকে কিছু টাকা বের করে দিলো

আমি গনে দেখি বেশি না

মাত্র ২৩০০ টাকার মত হবে

আমি/ আরে এটা কি দিলি তুই ভিক্ষা

দেখ এত অল্প টাকা আমার হবেনা

সাগর/ দূর বেটা এখন এটা রাখ যখন বউ নিয়ে আসবি তখন আরও দিবো
পকেটে নিয়ে হাঁটতে পারবিনা

চলবে???

জুয়াড়ি স্বামী পর্ব/ ৩

0

জুয়াড়ি স্বামী পর্ব/ ৩
লেখক/ ধ্রুব

????????

আমি/ এ কি তুমি আবার এগুলো পড়লে কেন

নীলা/ কেন আবার সকালে নাক কান গলা হাত খালি দেখে আম্মু অনেক বকেছে

এগুলো খুলে রাখলে নাকি স্বামীর অমঙ্গল হয় তাই আবার পড়ে নিলাম

আমি/ ওহহহ তুমিও না মায়ের মত সেই আগের দিনগুলোতে পড়ে আছো

দাও হয়না গুলো খুলে আমাকে দাও

নীলা/ এ কি বলছেন আপনি
রাতে নিয়ে গিয়ে আবার দিলেন এখন আবার দিয়ে দিতে বলছেন

আচ্ছা হয়েছে টা কি আপনার বলুনতো

আমি/ উফফফ কোন প্রশ্ন নয় যা বলছি তাই কর উচিত শিক্ষা দিবো আমি তাদের ফকির বানিয়ে ছাড়বো সব শালাকে

নীলা/ ওরা কারা কার কথা বলছেন আপনি

আমি/ ঐসব শোনে তোমার কাজ নেই যা বলছি তা দাও জলদি করে সবসময় এত প্রশ্ন ভালো লাগেনা

নীলা কোন পথ না পেয়ে সব খুলে দিয়ে দিলো

হয়না গুলো সাগরের কাছে বন্ধক রেখে টাকা নিলাম

যা নিলাম সবটা উড়িয়ে দিলাম

আর কিছু নেই একদম খালি

সাগরকে বললাম

আমি/ দোস্ত আরকিছু টাকা দে আমাকে একসাথে তোকে সব দিয়ে দিবো তোকে

সাগর/ না ভাই আমি জুয়াড়িদের বিশ্বাস করিনা

কিছু দাও আর টাকা নাও

আমি/ এই নে ঘড়িটা রেখে কিছু টাকা দে আমায়

সাগর/ আমাকে বোকা পাইছো এই ঘড়ির দাম কত হা হাহা

না ভাই এই ঘড়িতে হবেনা
তুই অন্যকারও থেকে চেয়ে নে

আমি/ এখানে দেবার মত আর কেউ নেই শুধুমাত্র তুই ছাড়া

সাগর/ হুমমম তা জানি কিন্তু আমিতো এমনি এমনি দিতে পারিনা

তবে দিতে পারি একটা শর্তে

আমি/ কি শর্ত বল তুই যা চাইবি তাই পাবি

সাগর/ সত্যিতো যা চাইবো তাই দিবি

আমি/ ধ্রুব কখনও মিথ্যা বলেনা
যা চাইবি তাই পাবি তারপরও আমার টাকা চাই

সাগর/ ঠিক আছে আর বলতে হবেনা বুঝেছি আমি

আমি/ বল তোর শর্তটা কি

সাগর/ শোন তবে তুইতো নতুন বিয়ে করেছি বউটা নাকি অনেক সুন্দর পাঠিয়ে দে একরাতের জন্য আমার কাছে

বলতে আমি সাগরের গলা টিপে ধরলাম

আমি/ কি বললি তুই তোর এত সাহস আমার বউকে তোর বিছানা পাঠাবো এটা তুই ভাবলি কি করে

সাগর/ তুই কিন্তু ওয়াদা করেছিস যা চাইবো তাই দিবো
আর আমি তাইতো আমার গলা টিপে ধরলি

যা তোকে কোন টাকা দেবনা আমি

কি করবো বুঝতেছিনা সাগরের প্রস্তাবে রাজি হবো

না না তা কিরে হয় জুয়াড়ি হতে পারি কিন্তু তাই বলে নিজের বউকে অন্যের বিছানা শুতে দিবো না না এটা একেবারে অসম্ভব

সাগর/ আরে শালা এত ভাবছিস কি তোর দরকার টাকা আমার দরকার তোর বউকে

ভালো করে চিন্তা করে দেখ তুই রাজি হলে দুজনের ইচ্ছাটা পূরণ হবে

অনেক টাকা দেব তোকে অনেক টাকা

কোন টাকা আমাকে ফেরত দিতে হবেনা

জুয়াড়ি বলে লোভ লেগে গেলো টাকার কথা শুনতে

ওখান থেকে উঠে চলে আসলাম

ভাবতেছি কি করবো এখন আর নীলাকে কি করে বলবো আর কি দিয়ে রাজি করাবো

বাসায় গিয়ে শুয়ে রইলাম একটু পরে নীলা এসে বললো

নীলা/ না খেয়ে কি ভাবছেন এত

আমি/ ভাবছি আমি মনে হয় আর বেশিদিন বাঁচবনা বলতে নীলা আমার মুখটা চেপে ধরে বলে

নীলা/ ছিঃ ছিঃ এসব কি বলছেন আপনি
কি হয়েছে আপনার আমাকে সব খুলে বলুন

আমি/ কি আর বলবো টাকা পঁয়সা গয়নাগাটি সব উড়িয়ে দিয়েছি আমি

তারপর এক বন্ধুর কাছ থেকে অনেক টাকা ধার করলাম

বুঝতেছিনা ওর টাকা গুলো কিভাবে শোধ করবো

নীলা/ এসব আপনি কি বলছেন কি করে হলো এসব
আর এত টাকা কি করে উড়ালেন

আমি/ জুয়া খেলে

নীলা/ কি আপনি মানে আমার স্বামী একটা জুয়াড়ি

আমি কি আর বলবো বুঝতেছিনা

মাথাটা নিচু করে রাখলাম নীলাও মাথায় হাত দিয়ে বসে রইলো

স্বামীর কষ্ট মানে বউটার কষ্ট
ঠিক তেমনি নীলাও সহ্য করে থাকতে পারেনি

একটু পরে নীলা আমাকে বলে

চলবে???

জুয়াড়ি স্বামী পর্ব/ ২

0

জুয়াড়ি স্বামী পর্ব/ ২
লেখক/ অসভ্য

????????

নীলা/ না কিছুনা ফোনটা দেয়ে যাবে একটু

খুব ছোট করে বললো জুয়াড়ি গলে কি হবে বউয়ের সাথে একটু মজাতো করতে পারি তাইনা

আমি/ কেন এত সকাল সকাল ফোন দিয়ে কি করবে
ওহহহ বুঝেছি বফ কে সান্তনা দিবে ঠিক বলছিনা

নীলা/ ছিঃ ছিঃ এসব আপনি কি বলছেন
আমার কোন বফ নেই

মা বাবার কথা খুব মনে পড়ছে তাই একটু কথা বলার জন্য ফোনটা চাইলাম

থাক লাগবেনা আমার ফোন বলবনা কথা

বলে নীলা গাল ফুলিয়ে বসে রইলো আয়নার সামনে

উফফফফ…. বউ হয়ে আসা মেয়ে গুলোর রাগ অভিমান দেখতে কেমন যে লাগে লিখে বোঝানো যাবেনা

আমি পিছন থেকে নীলাকে জড়িয়ে ধরে বললাম

আমি/ বাবু রাগ করলে বুঝি এই নাও ফোন কথা বলো মায়ের সাথে

ফোনটা নাও বলতে

নীলা/ কই দিন

ফোনটা দিতে নীলা তার মায়ের সাথে কথা বলতে লাগলো

আমি শুয়ে রইলাম

কয়েক মিনিট কথা বলে নীলা ফোনটা রেখে দিলো

এই নিন আপনার ফোন

আমি ফোনটা নিয়ে নাম্বারটা দেখতে

নীলা/ টাকা দেখতে হবেনা

আপনি চাইলে আমি দিয়ে দিবো

আমি/ মানে কি আমিতো নাম্বারটা সেভ করতেছি

নীলা/ ওহহহহ

একটু পরে হাতমুখ ধুয়ে নাস্তা করে এসে বালিশের নীচে হাত দিয়ে দেখি সিগারেটের প্যাকেটা খুঁজতে লাগলাম

কিন্তু খুঁজে আর কি হবে যদি কেউ সেটা লুকিয়ে রাখে

নীলা/ এটাই খুঁজছেন তাইনা

আমি/ আরে এটা তোমার কাছে কেন আমাকে দাও

নীলা/ আচ্ছা সিগারেট খাওয়াতো ভালো তাইনা
তাই ভাবছি আমিও একটা জ্বালাবো

আমি/ আরে না কি বলো তুমি সিগারেট খাওয়া একদম খারাপ প্যাকেটটা আমাকে দাও

নীলা/ সিগারেট খাওয়া যদি খারাপ হয় তাহলে আপনি খান কেন

আমি/ নেশা হয়ে গেছে তাই
প্যাকেটটা দাও বলছি নয় কিন্তু খারাপ হবে

নীলা ভয় পেয়ে প্যাকেট আমাকে দিয়ে দিলো

এর-ই মাঝে বন্ধুর ফোন

বন্ধু/ দোস্ত চলে আয় আমরা তোর অপেক্ষা আছি

আমি/ তোরা একটু অপেক্ষা কর আমি এখন-ই আসতেছি

ফোনটা রেখে দিয়ে টাকা নিয়ে বের হবো ঠিক তখন-ই নীলা পথ আঁগলে দাঁড়ালো

নীলা/ এই টাকা গুলো নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন এখন

আমি/ পথ ছাড়ো নীলা আর আমি যেখানে যাই তা তোমাকে বলতে হবে নাকি

নীলা/ হ্যাঁ অবশ্যই বলতে হবে কারন আমি আপনার বউ আর আপনি আমার স্বামী

আমি/ হ্যাঁ আমিও জানি বলার কি আছে আবার নতুন করে

নীলা/ তাহলে বলে যান কোথায় যাচ্ছেন

আমি একটু দুষ্টুমি করে বললাম

আমি/ তোমার সতীনকে ঘরে তুলতে এবার হলো যেতে দাও আমায়

নীলা হা করে তাকিয়ে রইলো আর বলে পাগল একটা

পিছন থেকে নীলার বলা কথাটা আমার কানে আসে

আমিও আবার পিছন ফিরে নীলাকে উত্তর দিলাম

আমি/ শুকরিয়া জানাও দুহাত তুলে আমার মত একটা পাগলকে জীবন সঙ্গী করে পেলে

নীলা মুচকি মুচকি হাঁসতে লাগলো

আমিও গিয়ে খেলতে বসলাম

খেলতে খেলতে আমার সব টাকা চলে গেলো

একটু পরে এক সাগর বলে কিরে শালা তুইতো ফকির হয়ে গেলি

এখন কি দিয়ে খেলবি

সাগর খেলেনা কিন্তু সবসময় আমাদের পাশে বসে থাকে টাকা নিয়ে

যে চায় তাকে দেয় কোনকিছুর বিনিময়ে

আমি একদম খালি হয়ে যাওয়াতে চোখে আঁধার দেখছি এতগুলো টাকা সব উড়িয়ে দিলাম

টাকা শেষ হতে দৌড় দিলাম বাসায়

নীলার গয়নাগাটি গুলোতো আছে ঐগুলো বন্ধক রেখে টাকা নিবো সাগরের কাছ থেকে

আমি/ তোরা বস আমি আসতেছি

এদিকে বাসায় গিয়ে দেখি সব গয়নাগাটি নীলা পড়ে ফেলছে

চলবে???

জুয়াড়ি স্বামী প্রথম পর্ব

0

জুয়াড়ি স্বামী প্রথম পর্ব
লেখক/ ধ্রুব

?‍♂?‍♂?‍♂?‍♂?‍♂?‍♂?‍♂?‍♂

বাঁসর ঘরে ডুকে নতুন বউয়ের নাকে কানে গলা থেকে গয়নাগাটি গুলো নিয়ে বের হতে নতুন বউ(নীলা) বলে উঠলো

নীলা/ এতরাতে এই গয়নাগাটি গুলো নিয়ে আপনি কোথায় যাচ্ছেন

ওহহহ বুঝেছি… শাশুড়ি আম্মাকে দিবেন যত্নে রাখার জন্য তাইনা

বউয়ের কথা শুনে বউয়ের দিকে চোখ দুটো বড় বড় করে বললাম

আমি/ যা দেখেছিস ভুলে যা
কান থাকতে বয়রা আর চোখ থাকতে অন্ধ হয়ে থাকবি

আর শোন বেশি প্রশ্ন করবিনা তাহলে এ বাড়ি নয় বাপের বাড়ি গিয়ে থাকতে হবে

ঘুমিয়ে যা তুই আমার ফিরতে দেরি হবে

আমি যে এসব গয়নাগাটি নিচ্ছি তা যেন কেউ না জানে
যদি কেউ জানতে পারে তাহলে তখন-ই আমি তোকে তালাক দিবো

বলে বের হয়ে চলে আসলাম

নীলা ঘরে বসে বসে কাঁদছে আর ভাবছে এ কার সাথে আমার বিয়ে হলো
যে বাঁসর রাতে বউকে একা রেখে বাহিরে রাত কাটায়

আমি গয়নাগাটি গুলো বন্ধক রেখে এক বন্ধুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে খেলতে বসলাম

সাথে মদ সিগারেট তো আছে
একটার পর একটা সিগারেট টানতে লাগলাম

শেষরাতে বাড়ি ফিরে দরজা টোকা দিতে নীলা দরজা খুলে

আমি একটু অবাক হলাম

এত তাড়াতাড়ি নীলা কিভাবে দরজা খুললো

নীলাকে জিজ্ঞেস করতে সে বলে

আমি/ কি ব্যপার টোকা দিতে না দিতে তুমি দরজা কিভাবে খুললে

নীলা/ আমিতো ঘুমাইনি দরজায় হেলান দিয়ে বসে রইলাম
আপনার আসার অপেক্ষা

আমি একটু তাড়াহুড়ো করে ভিতরে ঢুকলাম

যদি কেউ জানতে পারে তাহলে সর্বনাশ হয়ে যাবে

ভিতরে ঢুকে অনেক গুলো টাকা আর গয়নাগাটি গুলো নীলাকে দিয়ে বললাম

আমি/ এই নাও তোমার গয়নাগাটি আর এই কিছু টাকা তোমার কাছে রেখে দাও

নীলা/ এই গয়নাগাটি এতগুলো টাকা কোথায় পেয়েছেন আপনি

আমি/ বললামনা কোন প্রশ্ন করবিনা যা বলছি তাই করে
একটু ধমক দিয়ে বললাম নীলাকে

নীলা ভয় পেয়ে আমাকে বলে

নীলা/ কোথায় রাখবো

আমি/ আমার মাথায়
যত্তসব ন্যাকামি

নীলার কাছ থেকে গয়নাগাটি আর টাকা গুলো নিয়ে আম রাখলাম

কিরে তোকে তো আজ খুব সুন্দর লাগছে আয় একটু কাছে আয়

ভোর হতে এখনও কিছুটা সময় বাকি আছে তাই চল তোকে একটু আদর করি

আজ না আমাদের বাঁসর রাত

বলে আমি নীলাকে টান দিয়ে কাছে টেনে নেই

নীলাকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে

ওর হাতে আমার হাত ওর পাঁয়ে আমার পাঁ

নীলাকে চুমু খাচ্ছি একটু জোর করে বটে কিন্তু তাতে কি বউ হয় আমার জোর হোক আর ইচ্ছাতে হোক আমার পাওনা আমি ঠিক-ই বুঝে নিবো

নীলাকে চুমু খেতে নীলা ওয়াক ওয়াক করতে। লাগলো

মাথা খারাপ হয়ে গেছে আমার এই মেয়ের এখন বমি করার শখ হলো

নীলা/ ছাড়ুন আমাকে আপনার মুখ থেকে খুব বাজে গন্ধ বের হচ্ছে আমার একদম সহ্য হচ্ছেনা

একে নেশা মাতাল ছিলাম ২এ নারীর দেহের ছোঁয়া

তাই নীলাকেও আমি ছাড়িনি

নীলা অনেক চেষ্টা করেছে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে কিন্তু পারেনি

কারন… আমি একটা হিংস্র বাগের মত ক্ষুধার্তো ছিলাম তাই

নিজের স্বাদটা পুরোপুরি নিয়ে নীলাকে ছেড়ে দিলাম

অন্যদিক ফিরে শুয়ে রইলাম

এলোমেলো হয়ে শুয়ে আছে নীলা

চোখে জল বুকভরা কান্না

কিন্তু কে শুনে তার এই কান্নার শব্দ আর শুনলে কি কেউ এগিয়ে আসবে

সবাইতো জানে আজ আমাদের বাঁসর রাত

কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম বুঝতে পারিনি

সকালবেলায় কারও চুলের পানি চোখে পড়লো তাতে আমার ঘুম ভাঙ্গে

চোখ মেলতে দেখি সে আর কেউনা আমার নতুন বউ নীলা

আমি/কি ব্যপার কি হয়েছে

নীলা/ কই

আমি/ তাহলে আমার ঘুম ভাঙ্গলে কেন

নীলা/ না মা……নে আপনার ফোনটা নিতে গিয়ে আপনার ঘুম ভাঙ্গে গেলো সরি

আমি উঠে নীলার কপালে একটা চুমু খেয়ে বললাম

আমি/ ছোটবেলার স্বপ্ন আমার প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গতে বউয়ের কপালে চুমু খাবো

আজ সেই স্বপ্নটা বাস্তব করলাম

আমার কথাটা শুনে নীলা হারিয়ে গেলো অন্য এক জগতে

এই মানুষটা কি সে মানুষ….. যে শেষরাতে আমার সাথে জোর করে…..

রাত আর সকাল দুটোর মাঝে কতটা পার্থক্য

আমি/ এই কি ভাবছো

চলবে….????

মন ফড়িং ❤ ১৩. 

0
মন ফড়িং ❤
১৩.
অদ্রি ধীরে ধীরে এগোতে লাগলো। ঘুম ঘুম চোখে সবকিছুই কেমন ঝাপসা লাগছে। নিদ্রের রুমের দিকে যতো এগোচ্ছে ততই কেউ একজনকে বেশ ভালোভাবে দেখা যাচ্ছে। কেউ একজন আর কেউই না লিলি!
এতো রাতে লিলিকে এখানে দেখে অবাক হয়েই অদ্রি জিজ্ঞেস করলো
– লিলি এখানে এতো রাতে কী করছিস?
লিলি ভাবতেই পারেনি অদ্রির এইসময় এখানে উপস্থিত হবে। কিছু একটা না বললেই নয়। লিলি বিরক্তি নিয়ে বললো
– এমনি।
– এখানকার লাইটটা জ্বালাস নেই কেনো?
– ইচ্ছে হয়নি তাই!
– এই তোর কী হয়েছে রে? মুখে মুখে কথা বলার সাহস পাস কোথা থেকে?
– তুমি প্রশ্ন করবা আর আমি উত্তর দিলেই দোষ!
– ভদ্রভাবে উত্তর দেয়া যায়না?
লিলি দাঁত চিবিয়ে চিবিয়ে বললো
– তুমি কোথাকার কী যে, তোমার সাথে ভদ্র ব্যবহার করতে হবে?
রাগে শরীর কাঁপছে অদ্রির। এতটুকু মেয়ে তাকে কী বললো? সেদিনই মেয়েটাকে এক আবর্জনা থেকে তুলে এনে নিজের ছোটো বোনের মতো রেখেছে। আর সে কী না!
লিলির ডান গালে ঠাস করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলো। চিৎকার করে বলতে শুরু করলো
– আবর্জনা, আবর্জনাই থাকে!
ছাদ থেকে অদ্রির চিৎকার শুনে রিতা প্রায় দৌঁড়ে নেমে এলেন।
কিছু বুঝে ওঠার আগে অদ্রি রিতাকে বললো
– লিলি যেন আমার সামনে না আসে। বেয়াদব মেয়ে, কথাবার্তার কোনো শ্রী নেই।
রিতা লিলিকে বললেন
– যাও নিজের রুমে যাও।
লিলি চলে যাওয়ার পর রিতা অদ্রিকে বললেন
– এতো রাতে ঘুম ভাঙলো কীভাবে?
অদ্রি মাথার ঘোমটা নামিয়ে দিয়ে বললো
– খুব তৃষ্ণা লেগেছিলো। রুমে পানিও নাই তাই ভাবলাম নিচে নেমে পানি খেয়ে আসি। আর তখনই দেখলাম লিলি এখানে দাঁড়িয়ে আছে….
রিতা অদ্রির কথার মাঝেই বললেন
– আমি নিজ হাতে তোমার রুমে খাবার পানি আর গ্লাস রেখে এসেছি।
– না তো, আমি পেলাম না তো।
– আচ্ছা চলো তোমার রুমে চলো। তুমি শোবে আর আমি খাবার পানি নিয়ে আসি।
রিতা অদ্রির রুমে ঢুকে লাইট জ্বালিয়ে দেখলেন বিছানার পাশে ছোটো টেবিলে খাবার পানি আর গ্লাস রাখা।
অদ্রিরও ছোটো টেবিলের উপর চোখ আটকে গেলো।কিছুক্ষণ আগেও তো এখানে পানি ছিলো না তাহলে কীভাবে আসলো?
রিতা অদ্রিকে বললেন
– কাঁচা ঘুম ভেঙেছিলো তো তাই হয়তোবা দেখতে পাওনি।
আর লিলির বিষয় নিতে এতো চিন্তা করার কিছুই নাই। বেশি রকম বেয়াদবি করলে ওর বাসায় ফেরত পাঠিয়ে দিলেই হবে।
তিন গ্লাস পানি শেষ করার পরও অদ্রির মনে হচ্ছে তার তৃষ্ণা মেটেনি।
আর পানি খেতে হবেনা তোমাকে। তুমি এখন ঘুমাও – রিতা কথাটা বলে রুমের লাইট অফ করে দিয়ে চলে যাচ্ছিলো। অদ্রি বললো
– ছাদের দরজা তালা দেয়া হয়েছে?
রিতা বলল
– না, আমি আজকে ওখানেই ঘুমাবো।
– ভয় লাগবেনা?
রিতা হেসে বললেন
– তুমি ঘুমাও তো।
লিলি বিছানার উপর শুয়ে কাঁদছে। অদ্রির তাকে এভাবে থাপ্পড় মারাটা ঠিক হয়নি। সে দেখে নেবে!
এই বাসায় সে কাজের বিনিময়ে থেকেছে, বিনে পয়সায় না! দু’দিন যাবত রিতা কোথাকার কে এসে তার জায়গা নিয়ে নিবে? এতো সহজ নাকি!
অদ্রির মতো একজন মেয়ের সাহস কীভাবে হয় এসব তাকে বলার?
অদ্রির ঘুম আসছে কিন্তু ঘুমাতে ইচ্ছা করছে না। কিছু ভাবতে ইচ্ছে করছে আমার তাকে নিয়ে। যদিও সে আমার কিনা জানা নেই।হবেও কিনা সেই নিশ্চয়তা নেই। ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সবারই জানার ইচ্ছা থাকে কিন্তু ক’জনই বা জানতে পারে। যদি কোনো ভাবে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানা যেত।
 বার্গারে বড়সড় কামরায় দিয়ে চিবুতে চিবুতে নিদ্র বললো
– আমার টাকা জমানো হয়ে গেছে। এখন তারিখ বলো টিকিট কাটবো।
আসমা জামান পানির গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বললেন
– তোর বাবা দুটো টিকিট গতরাতে আমাকে দিলো।
নিদ্র বেশ অবাকই হলো।
– তাই নাকি? দেখো তো আসল টিকিট কিনা? থাকে সবসময় নেশার ঘোরে তার আবার কোনো ঠিক আছে?
– আসলই তো মনে হলো।
– দেখলে না রুমের মধ্যে উল্টো করে বই পড়ছিলো।
– তা তো দেখলামই। তোর বাবাকে সাথে নিয়ে গেলে কেমন হয়?
– খুবই বাজে হবে। পুরো আনন্দটাকে বিসর্জন দিয়ে দিতে হবে।
নাজমুল সাহেব ছেলের কথা উত্তরে বললেন
– no my son, you are wrong.
– বাবা খেতে বসো।
আসমা জামান প্লেটে বার্গার আর স্যুপের বাটিতে স্যুপ দিয়ে বললেন
– নিদ্র ঠিকই বলেছে। তোর আজকাল যে,অবস্থা তাতে রাস্তায় ন্যাংটা হয়ে বের হওয়াটাই বাকি আছে!
নিদ্র হাসতে হাসতে বললো
– তা তুমি ঠিকই বলেছো।
নাজমুল সাহেব চাপা স্বরে বললেন
– ছাড়ার চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি কই?
– বাবা মিথ্যা বলো না। তুমি মোটেও ছাড়ার চেষ্টা করছো না।
– তাহলে তোর চ্যালেঞ্জ এক্সেপ্ট করলাম।
– কোন চ্যালেঞ্জ বাবা?
– এইযে তোদের সাথে যাওয়ার।
– তুমি সত্যি কোনো ঝামেলা বাঁধাবে না?
– যদি বাঁধাই তাহলে আমাকে ফেরত পাঠায় দিবি। ব্যস ঝামেলা শেষ।
নাজমুল সাহেব মনে মনে নিজেকে বাহবা দিলেন। কতো সুন্দর করে গুছিয়ে মিথ্যে কথাটা বললেন তিনি কিন্তু কেউই ধরতে পারলো না। আসলে তিনি তিনটি টিকিট কিনেছেন। সাথে অনেক কেনাকাটাও করেছেন। এতো দিন পর দেশে যাচ্ছে খালি হাতে যাওয়া যায় নাকি?
বারান্দায় দাঁড়িয়ে নিদ্রের হঠাৎ মনে হলো অনেক দিন পর তার বুকের উপর থাকা বোঝাটা কিছুটা হালকা হয়েছে। তার খরচ কিছুটা হলেও কমবে বাবা সাথে গেলে। মোবাইলের স্ক্রিনে অদ্রির ছবিটাতে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে থাকতে একসময় চোখ ঝাপসা হয়ে গেলো নিদ্রের। সুখের কান্না কিছুটা অন্যরকম হয়। যদিও পুরুষদের কাঁদতে নেই।
যদি ও রাজি না হয় তখন সে কী করবে?
ভাবতেও ভয় হয়, যে ও ফিরিয়ে দিতে পারে! যদি দেয় তখন…..?
নেগেটিভ চিন্তা করে লাভ নেই। আপাতত পজিটিভ কিছু ভেবে ভালো থাকা যাক।
তাকে কাছে পাওয়ার মাঝে আত্মতৃপ্তি থাকবে। অদ্রির ঠোঁটে আলতো করে চুমু এঁকে দিয়ে ওর দেহের শিহরণ দেখার মাঝে, উপভোগ করার মাঝে আনন্দটাই অন্যরকম। ঠোঁটে গভীরভাবে চুমু এঁকে দেয়ার আহবান টাও অসম্ভব সুন্দর অনূভুতি জাগাবে।অদ্রির দেহের প্রতিটি শিহরণ দেখার অদম্য ইচ্ছাকে দমিয়ে রাখার ব্যর্থ চেষ্টায় ব্যস্ত সে।
নিশ্বাসের সাথে অদ্রির দেহের অধিকারটাও যে তার চাই !
চলবে…..!
© Maria Kabir

খেলাঘর পর্ব-২৭

0

খেলাঘর পর্ব-২৭
লেখা-সুলতানা ইতি

আশা করি আপনাদের আর কিছু বলতে হবে না, এই বলে মিথিলা বেরিয়ে যায়,,

পরীক্ষা শেষে নতুন করে পরিচিত হওয়া এক বান্ধবীর সাথে দেখা করলো মিথিলা

মিথিলা- তৃধা আমার না কিছু টিউশনি খুব দরকার,একটু খুঁজে দিতে পারবি?

তৃধা- দোস্ত আমার ছোট একটা বোন আছে পড়া শুনায় ফাঁকিবাজ, তুই যদি তারে পড়াশ তা হলে পাঁচ হাজার করে পাবি

মিথিলা- পাঁচ হাজার কেনো, একটা টিউশনি তে এতো দেয় নাকি

তৃধা- শুন আমার বোন কে কোন টিচার ই পড়াতে চায় না, দূর্বল, ক্লাস সেভেনে এই চার বছর আছে,এর আগের এক টিচার কে তো আট হাজার টাকা করে দিতাম,, কিন্তু তা ও কিছু হয়,এই টা লাষ্ট সান্স

সে হিসেবে তোকে অনেক কম ই বলেছি
মিথিলা- ওকে ডান, প্রতি দিন সন্ধায় আজ থেকেই শুরু করবো,কিন্তু তৃধা আমার আর ও কিছু টিউশনি দরকার, মানে যা দিয়ে তিন চার জনের সংসার খুব ভালো ভাবে চলতে পারবে

তৃধা একটু ভেবে বল্লো
– দোস্ত টিউশনি করে তুই সংসার চালাতে পারবি না কারন দেখ অনেক স্টুডেন্ট এর গার্ডিয়ানরা মাস শেষে বেতন দিতে গড়িমসি করে,,যদি এই টিউশানির ফাকে তুই কোন প্রাইভেট কম্পানিতে জব নিস,বা প্রাইভেট স্কুলে তা হলে গিয়ে একটু বরকত পাবি

মিথিলা- তুই আমার জন্য টিউশনি খুঁজে দে, রেজাল্ট বের হলে জবের কথা ভাববো

তৃধা- ঠিক আছে,

মিথিলা তা হলে আমি যাই এখন
মিথিলা বাসায় চলে আসে অনেক রাত আয়ান এখন ও ফেরেনি,মিথিলা জেগে বসে আছে আজ আয়ানের সাথে কথা বলতেই হবে

আনুমানিক রাত একটায় আয়ান আসে
মিথিলা আয়ানের রুমে যায়
আয়ান মিথিলা কে দেখে মনে মনে বল্লো ভাগ্যিস আজ সেন্সে আছি নইলে আপু যে কি বলতো

মিথিলা গিয়ে আয়ানের পাশে বসে
আয়ান ছুপটি মেরে বসে আছে
কথা শুরু করলো মিথিলা ই
– ভাই যেদিন আমি এস,এস, সি তে প্লাস পেয়ে বাসায় আসি সেদিন মা বাবার পাশা পাশি তুই ও অনেক খুশি হয়েছিলি বরাবর তোর আর নির্ঝরের দুষ্টুমির কারনে আমি ভাবতাম পড়াশুনা নিয়ে তোদের বুঝি কোন ভাবনা নেই
কিন্তু সেদিন নির্ঝরী আমার সাথে ফাজলামি করলে ও তুই আমার ধারনা পালটে দিয়েছিলি, মনে আছে তোর সেদিনের কথা?

আয়ান মিথিলার দিকে তাকায় মুখে তার কথা নেই,,কি বলবে সে ভাষা ও খুজে পাচ্ছে না

মিথিলা ই বলতে শুরু করল
– তুই সেদিন আমায় একটা কলম গিফট করেছিলি,আর বলেছিলি কলম একটা শিক্ষা উপকরণ এটা তার হাতে ই মানায় যে এটার মূল্য বোঝে,আর ও বলে ছিলি,টিপিনের টাকা জমিয়ে তুই আমার জন্য কলম টা কিনেছিলি বেশ দামি ছিলো কলম টা

আমি সেদিন খুব খুশি এতো টা খুশি হয়েছিলাম যে তোরা দুজন ই বুঝতে পারিস নি, আমি সেদিন তোকে নিয়ে দূরে ভবিষ্যৎ দেখতে থাকি,,এই কলম ই হবে তোর ভবিষ্যৎ এর পথ চলার ছাবি কাঠি,,
এতোটুকু বলে মিথিলা থেমে যায়,,একটা শূন্যতা ভরা নিঃশ্বাস গোপন করে আবার বলতে শুরু করলো
– কিন্তু আব্বুর মৃত্যুর পর তুই এমন হয়ে যাবি আমি ভাবতে ও পারিনি,দেখ তোর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত

তোর সাথে আমার নির্ঝর সবার ভবিষ্যৎ ঝড়িয়ে শুধু আমাদের দুজনের কেনো জিমি আপু কে আব্বু বিয়ে দিলে ও একদিনের জন্য ও সে তার স্বামির কাছে সুখি হয়নি,তাকে যদি আমরা না দেখি কে দেখবে বল

আচ্ছা আমার কথা বাদ দে আমি না হয় কোন ভাবে আমার জীবন টা পার করে দিবো, যদি তোদের নিয়ে আমার কেনো চিন্তা না থাকতো,কিন্তু এখন আমার প্রতিনিয়ত টেনশন তোদের কি হবে,

জানিস মা শেষেবার আমাকে দেখে ইশারায় অনেক কথা বলে ছিলো,সেটা তোরা না বুঝলে ও আমি বুঝেছি,
মায়ের মৃত্যুর আগের রাতে আমি স্বপ্নে দেখি বাবা মা দুজনেই এক সাথে বসে আছে,আর আমাকে বলছে মিথিলা তুই তোর ভাই বোন দের দেখিস

আমি বল্লাম- তোমরা থাকতে আমি কেনো?
তখন মা বল্লো আমরা তো সব সময় থাকবো না তার পরেই আমার ঘুম ভেঙে যায়

মিথিলা থামতেই আয়ান মিথিলা কে ঝড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করলো
মিথিলা কিছু বল্লো না কাঁদতে দিলো আয়ান কে কাঁদলে হয়তো মনটা হালকা হবে

কিছুক্ষন পর আয়ান নিজেকে সামলে নিয়ে বল্লো
– আপু আমি এখন কি করবো বল

মিথিলা- দেখ এখন ও অনেক দেরি হয়ে যায়নি,সময় আছে তুই পড়াশুনা শুরু কর, আমি আছি তোদের পাশে,যখন যা দরকার হবে আমাকে বলবি আমি আমার রক্ত বেছে হলে ও তোদের পাশে থাকবো

আয়ান- আপু দুলা ভাইয়ের সাথে তোমার কি হয়েছে

মিথিলা কিছুক্ষন ছুপ করে থেকে বল্লো
-তুই এখন ও ছোট যখন বড় হবি তখন নিজেই বুঝতে পারবি,এখন শুয়ে পড় অনেক রাত হয়েছে

আয়ান আর নির্ঝর আবার পড়াশুনা শুরু করে,,ওদের পড়াশুনার খরচ, সংসার খরচ সব চালাতে মিথিলা হিমসিম খেয়ে যাচ্ছে তবু ও হাল ছাড়েনি, ভাই বোন দের একটা পর্যায়ে না পৌছানো পর্যন্ত শান্তি নেই তার

জে.এস.সি তে আয়ান টেনে টুনে পাশ করলে ও নির্ঝরী অনেক ভালো রেজাল্ট করে যদি এ প্লাস পায়নি তবু ও ভালো হয়েছে

আয়ানের মন খারাপ
মিথিলা গিয়ে ভাইয়ের পাশে বসলো
আয়ান মন খারাপ করছিস কেনো?
এখন রেজাল্ট খারাপ হয়েছে তাতে কি, এস.এস.সি তে অবশ্যই ভালো হবে,ভালো করে পড়াশুনা কর

আয়ান- আপু তুই বলছিস, আমার দ্বারা ভালো রেজাল্ট হবে
মিথিলা- হ্যারে পাগল,অবশ্যই পারবি,

মিথিলা এখন ছয়টা টিউশনি করায় সব মিলিয়ে মাসে পনেরো ষোল হাজার হয় কিন্তু তবু ও
ওদের পড়া শুনা আর সংসারে ঠিক মতো হয়ে উঠে না,নির্ঝরিণীর পরনে একটা ভালো ড্রেস নেই, আয়ানের ভালো একটা শার্ট নেই,,মিথিলা কি করবে ভেবে পাচ্ছে না,,

এইচ,এস,সি র পরে নিজে আর পড়াশুনার কথা ভাবেনি এতো খরচ চালাবে কি দিয়ে,,
অনেক চেষ্টার পর টিউশানির পাশা পাশি একটা প্রাইভেট স্কুলে মিথিলার জব হয়, মাথা থেকে যেন কিছু টা চিন্তা গেলো,

স্কুল শেষ করে মিথিলা, তাড়াতাড়ি রান্না বসালো কিছুক্ষন পর নির্ঝর আর ভাই আসবে অনেক ক্ষুর্ধাত্ব থাকবে, খাবার রেডি না হলে কি যে হবে

সন্ধায় আবার তৃধার বোন তৃনা কে পড়াতে যেতে হবে মেয়েটা এতো অমনোযোগী পড়া শুনায়, তবু ও টেনে টুনে সেভেনের বছর পার করিয়ে এনেছে তৃনার মা বাবা অনেক খুশি তাদের অনুরোধ এইটের বছর ও মিথিলা কেই পড়াতে হবে দরকার হলে বেতন বাড়িয়ে দিবে

নির্ঝরিণী বাসাতে প্রবেশ করতেই চিৎকার করে করে মিথিলা কে ডাকতে লাগলো আপি এই আপি শুন না কি ঘটেছে আজ

আয়ান- এই নির প্লিজ আপুকে কিছু বলিস না

মিথিলা- কি হয়েছে রে নির্ঝরী, আমাকে বললে কি হবে

আয়ান- আপু তুই ওর কথা শুনিস না, ও এমনিতেই ফাজিল

নির্ঝরিণী – আপু আমি মটেও ফাজিল নয় সত্যি বলছি,
পাশের বাসার আন্টির মেয়ে উতলা, ভাই কে রোজ আসা যাওয়ার পথে চোখ মারে,আর আমাদের রোমিও লজ্জায় মাথা তুলে তাকাতে ও পারে না হা হা হা

মিথিলা ও মুচকি মুচকি হাসতে থাকে
আয়ান লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে

মিথিলা- হয়েছে যা হাত মুখ ধুয়ে আয় খেতে দিচ্ছি

হ্যারে আয়ান উতলা যেন কিসে পড়ে?
আয়ান- আপু নিউ টেনে

মিথিলা- ওপ্স আমার ভাই নয়,ভাইয়ের বউ দশ

নির্ঝরিণী – আপি এক সাথেই থাকার কথা আমাদের আদুভাইয়ের এক বছর মিস হয়েছে না
আয়ান- আপু তোরা কি শুরু করেছিস,ধূর ভাল লাগে না

মিথিলা- ওকে নির্ঝর আর কোন ফান নয় খেতে আয়

নির্ঝরিণী – খেতে খেতে বল্লো জানিস আপু কালকে না আমাদের স্কুলে কন্সার্ট হবে,, অনেক বড় নাম করা শিল্পী কে আনবে
আমি কাল তাড়া তাড়ি স্কুল যাবো

মিথিলা- কি জানি আমি তো গান ফান এতো শুনি না, তাই শিল্পী দের নাম ও জানি না,কোন শিল্পী আসবে রে

আয়ান- আরেহ আপু শিল্পি আয়াপ খান, নতুন করে মাথা ঝাড়া দিয়ে উঠেছে তাই এখানে সেখানে যায় আর কি

নির্ঝরিণী – আপু তুই ওর কথায় কান দিস না,আয়াপ সত্যি অনেক ভালো গান করে,ওর ছেলে ফ্যানের থেকে মেয়ে ফ্যান অনেক,,সবার ক্রাশ উনি,,

আয়ান- হা আপু আমাদের ফাটা বাশওয়ালির ও ক্রাশ

মিথিলা- কি সব বলছিস বলতো, নির্ঝরের কন্ঠ সত্যি অনেক সুন্দর ফাটা বাশ হতে যাবে কেনো

আয়ান- শুন নির তুই না সাবধানে থাকিস ফাকনামি করে আবার স্টেজে তোর ফাটা গলায় গান ধরিস না নইলে স্কুলে আমার মান থাকবে না সবাই জানে তুই আয়ানের বোন

মিথিলা ভাই বোন দের ধমক দিয়ে বল্লো- ছুপ কর তোরা খাওয়ার সময় এতো কথা বলতে নেই

মিথিলা- তোরা খা আমার একটু মার্কেটে যেতে হবে সেখান থেকে তৃনা কে পড়িয়ে একেবারে আসবো

নির্ঝরিণী – হুম তাড়া তাড়ি এসো আর শুনো আপি তোমাকে আর বেশি দিন কষ্ট করতে হবে না আমি এস.এস.সি দিয়ে তোমার মতো টিউশনি করাবো

আয়ান- আপু তুই যদি ওর আশায় থাকিস তা হলে তুই বুড়ি হবি আমি বুড়া হবো তবু ও ঝড়ের টিউশনি ঝুটবে না হি হি হি

মিথিলা আয়ান কে ধমক দিয়ে বেরিয়ে গেলো
আজ মিথিলার মার্কেটে যাওয়ার কারন নির্ঝরিণীর জন্য একটা ভালো ড্রেস কিনবে

মিথিলা একটা মার্কেটে ডুকলো,
এই দোকানদার মেয়ে,মিথিলা বেছে বেছে এই দোকানেই আসলো কারন মেয়েদের সাথে ধামা ধামি ভালো করা যায়,

মিথিলা দোকানি কে বল্লো
আমাকে একটা চুড়িদার দেখান তো

দোকানি পাশে ফিরে থাকা একটা মেয়ে কে ডাক দিয়ে বল্লো
– এই রাহি এই ম্যাম কে চুড়িদার দেখা তো

রাহি সামনে ফিরতেই মিথিলা ভুত দেখার মতো চমকে উঠে
-আরেহ রাহি তুই এখানে

রাহি- আমি তো এখানে কাজ করি কিন্তু তুই এখানে?

মিথিলা কিছুক্ষন আর কথা বলতে পারলো না
রাহি এসে মিথিলা কে ঝড়িয়ে ধরলো
রাহি- তোর সব কথা শুনেছি কিন্তু সময়ের কারনে তোর সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি
আর তোর নাম্বার টা ও হারিয়ে ফেলেছি

মিথিলা- ওহ

রাহি – চল কোথাও গিয়ে বসি
মিথিলা প্রথমে যেতে চায়নি পরে ভাবলো ইহানের খবর জানে কি না জিজ্ঞাস করা যাবে তাই বল্লো চল যাই

ওরা একটা কফিশপে গিয়ে বসলো
রাহি- তো দিন কাল কাটছে তোর

মিথিলা- ভালো,পড়াশুনা করছিস না এখন ও

রাহি- হুম সেটা তো করতেই হবে সব বন্ধুরা দেশের বাইরে ডিগ্রী নিতে গেছে আমি বিদেশে না যেতে পারি দেশে থেকে তো পারবো

মিথিলা- হুম,সব বন্ধুরা মানে তুই আর কার কার কথা বলছিস

রাহি- ইহান,সাম্মি, অরনি ওদের কথা বলছি

ইহানের কথা শুনে আবেগে মিথিলার কন্ঠ ভারী হয়ে যায় অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়ে বল্লো
ইহানের খবর কোথায় ফেলি

রাহি- ইহানের খবর তেমন বেশি জানি না,অস্ট্রিয়া তে সাম্মি যায় সেখানে একটা ভার্সিটি তে ইহানের সাথে দেখা হয় তার,সেখান থেকেই জানতে পারি ইহান এখন অস্ট্রিয়া তে আছে,আর অরনি আমেরিকায়

মিথিলা- অরনি আমেরিকায় কেনো

রাহি- কারন অরনি জানে না ইহান যে অস্ট্রিয়া তে আছে, তাই অরনি তার আন্টির কাছে আমেরিকায় যায়
মিথিলা- ওহ,

রাহি- তবে লাস্ট মান্থে শুনেছি অরনি অসুস্থ, হোসপিটালে ভর্তি আছে

মিথিলা- কি হয়েছে অরনির

রাহি- সেটা জানি না,বাই দ্যা য়ে জিজুর খবর রাখিস?

মিথিলা গম্ভীর হয়ে বল্লো
যখম সম্পর্ক টার কোন মূল্য নেই তখন মানষ টার খবর রেখে কি হবে

রাহি- তোদের তো ডিভোর্স হয়নি,,তুই চাইলে তো জিজু কে আইনের জাঁতাকলে আটকাতে পারিস

মিথিলা- ওসব করে কি লাভ বলতো থাকনা সে নিজের মতো

রাহি- শুনেছি জিজুর সাথে তার বাবা মা,র কোন সম্পর্ক নেই,এ দিকে নায়া আপুর সাথে সে আলাদা ফ্ল্যাটে থাকে,বিয়ে ও করে নিয়েছে

মিথিলা অবাক হয়ে বল্লো
– নায়া কে তুই ছিনিস নাকি,আপু বললি যে

রাহি- আরেহ তুই তো জানিস না,নায়া আপু ইহানের বড় বোন

মিথিলা- হোয়াট

রাহি- হুম,নায়া অস্ট্রিয়া থেকেই পড়া শুনা করেছে আর জিজু ও সেখানে ছিলো তাদের পরিচয় সেখানেই হয়,দেশে আসার পর জিজুর মা,বাবা মানে তোর শ্বশুর শ্বাশুড়ি ঝোর করে তোর সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়,তার পর নায়া দেশে ফিরে যা করার তা করলো

মিথিলা পাথরের মতো বসে আছে

রাহি মিথিলার কাদে একটা হাত রেখে বল্লো
– মন খারাপ করিস না,নায়া আপু যে এমন আমি ও ভাবতে পারিনি,তবে শুনেছি ইহান এই নিয়ে নায়ার সাথে রাগা রাগি করে বাংলাদেশে আসা বন্ধ করে দিয়েছে ফ্যামেলীর কারো সাথে যোগাযোগ নেই ইহানের

মিথিলা – ওহ, আমি এখন উঠি রে,
মিথিলা রাহি কে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে বেরিয়ে যায়,রাহি পিছন থেকে ডাকলে ও শুনে না

আজ আর তৃনা কে পড়ানো হয়নি সোজা বাসায় চলে আসে

নির্ঝরিণী – আপু তুমি না বললে দেরি হবে তোমার আসতে

মিথিলা কিছু বল্লো না সোজা নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়

নির্ঝরিণী – কি হলো আপুর, যাওয়ার সময় তো সব ঠিক ই ছিলো

মিথিলা রুমের লাইট অফ করে বসে আছে ভাবছে ইভানের কথা বিয়ের পর তার পাগলামির কথা
সব ই তো ঠিক ছিলো,তা হলে এমন হলো কেনো, ভালো বাসা হুম ওদের ভালোবাসার কাছে আমি হেরে গেছি,
ওরা ঠিক ই ওদের ভালোবাসা জয় করে নিয়েছে,,আমার ভালোবাসায় অনেক খাদ ছিলো তাই হয়তো ইভান কে নিজের করতে পারিনি হয়তো ওকে নায়ার মতো করে ভালোবাসতে পারিনি,
ভালো থাকুক ওরা,,,

সকালে মিথিলার খুব ঝামেলা হয় ভাই বোন দের খাইয়ে তার পর স্কুলের জন্য বের হতে হয়
আজ নির্ঝরিণী ও কোন হেল্প করেনি সকাল থেকেই স্কুলে যাওয়ার জন্য তার কতো আয়োজন ভাবা যায় বিখ্যাত শিল্পি আয়াপ খান আসছে

চলবে
ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন

খেলাঘর.পর্ব-২৬

1

খেলাঘর.পর্ব-২৬
লেখা-সুলতানা ইতি

এলো মেলো পা ফেলে হাটছে মিথিলা উদ্দেশ্য হীন ভাবে
এভাবে অনেকটা সময় কেটে যাওয়ার পর মিথিলা বাসায় ফিরে এলো

মিসেস আয়মন মিথিলা কে দেখেই হাসি মুখে জিজ্ঞাস করলো
– কিরে কেমন দেখলি ইভুর অফিস

মিথিলা- ভালো

মিসেস আয়মন- তোকে এমন দেখাচ্ছে কেনো, কি হয়েছে বল

মিথিলা – কিছু হয়নি, আমি একটু আসছি

মিথিলা রুমে চলে এলো
নাহ এই বাড়িতে আমি আর এক মুহুর্ত থাকবো না,আমাকে ছোট করে কথা বলছে তো বলছে আমার মৃত বাবা কে অপমান করছে হায়রে মানুষ গিরগিটির মতো রঙ বদলায়,এদের আসল রুপ ছিনতে সময় লেগে যায়,ইভান যে এমন করবে ভাবতে ও পারিনি,
তার শিক্ষা এতো খারাপ ছিঃ

মিথিলা ভিড় ভিড় করছে আর নিজের জামা কাপড় গুছিয়ে নিচ্ছে,চোখ আটকে যায় চশমার বাক্সে ইহানের কথা মনে পড়ে যায়,ইহানের শেষ কথা ছিলো আমি কখনো শুখি হতে পারবো না,ইহানের কথা ফলে গেছে,, আজ বুঝতে পারছি ইহান কতো টা কষ্ট পেয়েছে সেদিন,
‘ ক্ষমা করে দিস আমায় ইহান’

মিথিলা সব গুছিয়ে বেরিয়ে এলো
মিসেস আয়মন অবাক হয়ে বল্লো- কিরে কোথায় যাচ্ছিস ব্যাগ প্যাক নিয়ে

মিথিলা- সেটা আপনার ছেলে আসলে তার কাছে জিজ্ঞাস করবেন,তবে এখন আমি এই টুকু ই বলবো,,আমার এখানে থাকার ছেয়ে আমার অসুস্থ মা,,আর অসহায় ভাই বোনের পাশে থাকা খুব জরুরী, আশা করি আপনি আর কোন প্রশ্ন করবেন না আমায়

মিসেস আয়মন- মা কি হয়েছে বলো,তোমার শ্বশুর এখন দেশে নেই,এই সুযোগে ইভান কি কিছু করেছে

মিথিলা- বললাম না আপনার কোন কথা উওর দিবো না,তবে হা আপনার বিদেশ ফিরত ছেলের সাথে আমার মতো সাধা সিধে মেয়ের বিয়ে না দিলে আজ দুটি জীবন অনেক সুখের হতো
এই বলে মিথিলা মিসেস আয়মন কে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে বেরিয়ে যায়

মিসেস আয়মন- কি হলো এটা
ছেলেটা আবার কি করেছে, আমি এখন ই কল দিচ্ছি ওকে
কল রিসিভ হলো সাথে সাথেই

মিসেস আয়মন- ইভান তুই কোথায় এখন ই বাসায় আসবি

ইভান- কি হয়েছে আম্মু?

মিসেস আয়মন- তুই আয় তার পর বলছি

মিসেস আয়মন কল অফ করে দিয়ে অফিসের রিসেপসেনিষ্ট কে ফোন দেয়
রিসেপসেনিষ্ট জারা
– হ্যালো

মিসেস আয়মন- মিসেস আয়মন আতাহার চৌধুরী বলছি

জারা- বলুন ম্যাম

মিসেস আয়মন- অফিসের খবর কি, ইভান অফিস দেখাশুনা করছে তো?

জারা- হ্যা ম্যাম স্যারের পি এ, খুব এক্টিভ,স্যার কে সব কাজে হেল্প করে

মিসেস আয়মন অবাক হলো কিন্তু তা ছেপে গিয়ে বল্লো
– ও হা তাই তো,আচ্ছা ইভানের পি এ, এর নামটা যেন কি,আসলে মনে পড়ছে না এই মুহুর্তে

জারা- নায়া চৌধুরী

মিসেস আয়মনের মন টা কেপে উঠে,তার পর নিজেকে সামলে নিয়ে বল্লো
– ঠিক আছে আমি রাখছি
মিসেস আয়মন কল অফ করে দিয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো,তা হলে মিথিলার এমন ভাবে যাওয়ার কারন এটাই, আচ্ছা কি দেখেছিলো মিথিলা অফিসে গিয়ে, যে জন্য ওকে এ ভাবে চলে যেতে হয়েছে, ছেলে টা কে শুদরাতে পারিনি

বাইরে গাড়ির হর্ন শুনা গেলো, ইভান এসেছে
মিসেস আয়মন উঠে দাড়ালো

ইভান- আম্মু আর্জেন্ট কল করে ডেকেছো কিছু হয়েছে

মিসেস আয়মন শান্ত আর স্বাভাবিক কন্ঠে বল্লো
– মিথিলা চলে গেছে

ইভান কথা টা শুনেই মায়ের দিকে তাকায় আবার চোখ নামিয়ে নেয়

মিসেস আয়মন- তুই কিছু বলবি না, ছুপ করে থাকবি

ইভান – আ- মি কি. কি বলবো

মিসেস আয়মন- সত্যি ই তো তুই কি বলবি তোর তো এখন খুশি হওয়ার কথা,নায়ার সাথে তোর দিন গুলি নির্ভেজাল কাটবে

ইভান- আম্মু

-ঠাসসসসসসসস,মিসেস আয়মন ইভান কে চড় মারে,এই শিক্ষা দিয়ে মানুষ করেছি তোকে আজকের এই দিন দেখার জন্য,
আজ থেকে আমি ভাববো আমার কোন সন্তান নেই বেরিয়ে যা,,আর কখনো তুই এ বাড়িতে পা রাখবি না

মিসেস আয়মন ইভান কে টেনে বের করে দরজা বন্ধ করে দিলো

ইভান- আম্মু আমার কথা শুনো

মিসেস আয়মন- তোর কোন কথা শুনবো না,
ইভান কিছুক্ষন দরজা ধাক্কায়ে বিরক্ত হয়ে বাড়ির বাইরে চলে এলো
ছোট লোকের মেয়ে তোর সাহস হয় কি করে আমার বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার আমার আম্মুর কাছে আমাকে দোষী করার,, খুব গেছিস না ভেবেছিস তোকে ফিরিয়ে আনবো কখনো না,,

ইভান নায়ার কাছে ফিরে এলো
নায়া- ডার্লিং তোমায় এমন দেখাচ্ছে কেনো কি হয়েছে বলো আমায়

ইভান সব কথা নায়া কে বলে,শুনে নায়া মনে মনে পিচাশি হাসি হাসে (খুব কাজে দিয়েছে আমার মেসেজ টা নইলে ওকে ঘাড় থেকে নামানো ই যেতো না)ডার্লিং মন খারাপ করো না সব ঠিক হয়ে যাবে আমি আছি তো তোমার পাশে

ইভান নায়ার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে
– এখন তুমি আমার বেছে থাকার সম্বল নায়া

নায়া- আমি অলওয়েজ তোমারি আছি জান

মিথিলা বাড়িতে এসে কাউকে দেখতে ফেলো না অসুস্থ মা শুয়ে আছে বিছানায় কোন কথা তার মুখে নেই শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে ছেয়ে আছে

মিথিলার আজ আর কান্না আসছে না,কেনো যেন মনে হচ্ছে চোখের পানি সব শুকিয়ে গেছে
মিথিলা মায়ের পাশে বসে আছে, নির্ঝরিণী কোথায়? মাকে এ ভাবে একা ফেলে কোথায় গেছে সে

বেশ কিছু সময় পর নির্ঝরিণী আসে

মিথিলা- কোথায় গিয়েছিস মাকে একা ফেলে

নির্ঝরিণী – এ ছাড়া কোন উপায় ছিলো না ঘরে চাল ডাল সব ফুরিয়ে গেছে মায়ের ওষুধ ও শেষ

পাশের বাসার আন্টি বলেছে উনার সাথে ব্যাগ বানিয়ে দিলে কিছু টাকা দিবে তাই গিয়েছি সেখানে

মিথিলা ছেয়ে আছে নির্ঝরিণীর দিকে ছোট বোন আমার এতো কষ্ট করছে কতো ই বা আর বয়স হয়েছে এতো তাড়া তাড়ি বাস্তবতার সম্মুখীন হতে হয়েছে

নির্ঝরিণী – এ ভাবে ছেয়ে আছো কেনো আপি,তুমি এসেছো আমি খুশি হয়েছি দুলা ভাই আসলে আর ও খুশি হতাম

মিথিলা- আসবে না দুলা ভাই

নির্ঝরিণী ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বল্লো
– কেনো?

মিথিলা একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে বল্লো,
কিছু না,

নির্ঝরিণী আর কথা বাড়ালো না
– আপু তোমার তো কাল পরীক্ষা যাও তুমি গিয়ে পড়তে বসো আমি মাকে ওষুধ খাইয়ে রান্না বসাচ্ছি

মিথিলা – হুম ঠিক বলে ছিস আমি তা হলে যাই
অনেক রাত জেগে মিথিলা পড়ছে, বিয়ে সংসার সব কিছুর ঝামেলায় পড়া টা পিছিয়ে গেছে,

হঠ্যাৎ মায়ের ঘর থেকে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসলো মিথিলা কান খাড়া করে শুনলো হুম নির্ঝরিণীর কান্নার আওয়াজ মিথিলার বুকের ভিতর ছ্যাত করে উঠে দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে মায়ের রুমে আসে,

মা অসাড় হয়ে পড়ে আছে দেখেই বুঝা যাচ্ছে তার শরিরে আর প্রান নেই

নির্ঝরিণী এসে মিথিলা কে ঝড়িয়ে ধরে কাঁদছে
মিথিলা নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, আল্লাহ কি করে এতো টা নিষ্টুর হলো,বাবা কে নিয়ে গেছে মা কে কেনো রাখলো না আমাদের জন্য, কি নিয়ে বাছবো আমরা,,

প্রায় রাত দুটোতে আয়ান বাড়ি আসে, বাড়িতে এসে আয়ান আবার মাকে হারানোর সংবাদ পেয়ে সেন্সলেস হয়ে পড়ে যায়, পাড়া প্রতিবেশিরা সবাই ততক্ষনে চলে আসে কেউ আয়ানের জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করছে,

পরদিন সকাল আট টা বাজেই দাপনের ব্যাবস্থা করা হয় কেননা দশটায় মিথিলার পরীক্ষা,
ইভান কে খবর দেয়া হয়েছে সে আসেনি,,
জিমি এসে মায়ের লাশের পাশে বসে আছে কাঁদছে সে, তার কি হবে সে কার কাছে এসে কষ্টের কথা বলবে

নির্ঝরিণী – জিমি আপু বলো তো আমাদের কি হবে এবার বাবা মা দুজনেই আমাদের একা করে চলে গেলো কেনো
জিমি নির্ঝরিণী কে ঝড়িয়ে ধরে হাউ মাউ করে কাঁদছে

দূরে মিথিলা দাঁড়িয়ে আছে তার চোখে আজ খরা নদীর বুকে চর উঠে গেছে তাই তো মিথিলার চোখের পানি ও শুকিয়ে গেছে

সকাল আট টায় দাপনের কাজ সম্পূর্ণ হয়
মিথিলা পরীক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য তৈরী হচ্ছে

প্রতিবেশী মুরুব্বীরা মিথিলা কে আজকের পরীক্ষা না দিতে বলছে,গুরু মরা মাথার উপরে আজ যেন বাড়ির বাইরে না বের হয়

মিথিলা শান্ত আর গম্ভীর কন্ঠে বল্লো
– আমাদের চার ভাই বোনের ভাগ্যে এই কষ্ট টা ই লিখা আছে এটা হবেই তাই বলে পরীক্ষা না দিয়ে ঘরে বসে কাঁদলে এর সমাধান হবে না,আমার ছোট ভাই বোন দের কথা ভাবতে হবে,আশা করি আপনাদের আর কিছু বলতে হবে না মিথিলা বেরিয়ে যায়

চলবে
ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন