Monday, August 25, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2012



স্বপ্নীল ০৩

0

স্বপ্নীল
০৩

ঠাস ঠাস করে তামিমের গালের থাপ্পড় মারে সোহাগি বেগম।থাপ্পড় আওয়াজে যেন মির্জা বাড়ি কেঁপে উঠেছে। তারপরে বলে
-“আমার তোর সাথেই বোরখা পড়া মেয়েটাকে আগেই সন্দেহ হয়েছিল।কেন যে আমি তখন মুখটা দেখি নাই।আর তামিম তুই কেমন ভাই।বোনকে পালাতে সাহায্য করেছিস।তোকে আগেই সাবধানে করেছি এমন কোনো কান্ড করেছিস না।আমার কথা তুই শুনলি না কেন??
রোকেয়া বেগম এসে বলে,
-“ছোট থাম। তামিম কে বকে কি লাভ। দোষ তো আমার উড়নচণ্ডী মেয়েটার। সবাই আদর দিয়ে দিয়ে বাদর বানিয়েছে। আগেই বলেছি এতো আদর দিয়ে মাথা যেন না তুলে কেউ আমার কথা শুনল না।আজকে এই দিনটা দেখতে হতো না।
সোহাগি বেগম তামিম কে উদ্দেশ্য করে বলে
-“এই ছেলে যদি সাহস না দিতো তাহলে কদম কখন পালিয়ে যেত না।
সোহাগি বেগম নিজের শশুড় কে উদ্দেশ্য করে বলে,
-“বাবা এই ছেলে কি এখন ও পিচ্ছি আছে যে, আমাদের কোনটা মান সম্মান যাবে, কোনটাই যাবে না, ভালো খারাপ বুঝে না। বুঝে ও কেন কদমকে পালাতে সাহায্য করেছে। আজ ওর জন্য আপনার আমাদের সবার মান সম্মান দূলে মিশে গেছে।

সোলোমান মির্জা সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়।এগিয়ে যায় তামিমে দিকে।তিনি গিয়ে তামিমের গালের থাপ্পড় মারে
-“এই থাপ্পড় মেরেছি তোকে কেন জানিস।তুই বুঝদার হয়ে অবুঝে মতো এই কাজ করলি তাই।কদম না হয় বুঝে না । তুই কেন এমন করলি।”
এই কথা বলে আর এক মুহুর্ত না দাঁড়িয়ে উপরে চলে যায়।
রোকেয়া বেগম এতক্ষন ধরে খেয়াল করছে সোহা মাথা নিচু করে আছে। তাই সোহা কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে
-“সোহা তুই কি জানতি কদম যে পালিয়ে যাবে।”
সোহা যেই ভয়টা পেয়েছে সেটাই হচ্ছে।সোহা মা আমেনা বেগম ঘাপড়ে যায়। রোকেয়া বেগম এই প্রশ্নে।আমেনা বেগম এই বাড়ি কাজের লোক।আমেনা বেগম সাথেই এই বাড়ি লোকের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক। কদম আর তামিম তাকে খালা বলে ডাকে।
সোহা মাথা তুলে তাকায়।
-“বড় মা……
আর বলতে না দিয়ে তামিম বাজ পাখির মতো সোহা মুখ থেকে কথা কেঁড়ে নিয়ে বলে
-“বড় মা সোহা কিছু জানতো না।এটা আমি আর নীল ছাড়া কে জানে না।”

রোকেয়া বেগম একবার তামিমের দিকে তাকায় একবার সোহা দিকে তাকায়।
-“কদম এখন কোথায় গেছে।
-“প্রাচ্য সাথে সাজেক গেছে।
-“এবার আসুক বাড়ি। এবার পা দুটো ভেঙে দিবো।যাতে আর পালাতে না পারে।”
এটা বলে চলে যায়।
সোহাগি বেগম এসে বলে
-“আমেনা আফা এই ছেলেকে দুইদিন কোন খাবার দিবে না।ওর শাস্তি হলো দুইদিন যেন কিছু না খেতে পারে।”
_____________________________________

তৃণ বলে,”একবার যে আমাদের সাথে কক্সবাজার ট্যুরে গেছিল তামিম নামের এক ছেলে।তোর যে কাজিন হয়।সেই তামিম।

প্রাচ্য বলে,
-“হুম।তামিম ভাইয়া।
রোদ বলে,
-” তোর বোন কদম ফুল যে এই ভাবে পালিয়ে বেড়ায়।এর কি পালানোর রোগ আছে নাকি।
নীল বলে
-“পালানোর মজাই আলাদা আপু।একবার পালিয়ে কোথায় ঘুরে দেখবেন তাহলে বুঝতে পারবেন।
-“আমার পালানোর দরকার নাই। আমার ফ্যামিলি এমনিতে আমায় স্বাধীনতা দিয়েছে।তাই পালানো কোনো প্রয়োজন নেই।”

প্রাচ্য বলে
-“আমাদের ফ্যামিলিতে এই স্বাধীনতা দিয়েছে।”
ধূসর বলে,
-“তাহলে এভাবে পালানো কোনো মানে আছে??
-“নীল যে এই ভাবে পালিয়ে যায়।তাই সবাই মিলে ঠিক করে নীলের বিয়ে দিয়ে দেবে।বিয়ে দিলে সংসার করলেই।তারএই পালানোর ধান্ধা মাথা থেকে বের হয়ে যাবে।তাই সবাই ওর বিয়ে ঠিক করে।ওর মতামত নিয়ে। নীল যখন বলেছে, ওবিয়েতে রাজি তখন দাদু বিয়ে ঠিক করে…..
রোদ বলে,
-“যখন ওর মতামত নিয়ে বিয়ে ঠিক করে তাহলে পালিয়ে আসল কেন???
-“মাঝ পথে কথা থামিয়ে দিলি।বলার তো সুযোগ দিবি নাকি?? ”
-“হুম। বল
-“তারপর আমার সাথে ওর কথা হয়।ও আমাকে বলে বিয়ে করবে না পালিয়ে যাবে।আমি তখন ওকে বলি দাদুকে বলে দিতে।কিন্তু আমায় নীল বলে, প্রাচ্য আপু আমি বিয়ে থেকে পালাতে চাই দুইটা কারণে।আমি তাকে বলে কি কারণ।নীল আমায় বলে, আপু আমার অনেক দিনের স্বপ্ন বিয়ে থেকেই পালিয়ে যাওয়ার। অনেক সিনেমা দেখেছি নাইকা বিয়েদিন পালিয়ে গিয়ে ভ্রমন করে। আমি সেই রকম করবো।তখন আমি বলি দ্বিতীয় কারন কি?? নীল আমার বলে, আপু আমি না ভালো বেসে বিয়ে করবো। ভালো বেসে বিয়ে করলে তো বিয়ের দিন আর পালিয়ে যেতে পারবো না।তাই আমার স্বপ্ন পূরন করতে পারবো না। তাই দাদুর এই সুযোগ কাজে লাগাবো। এদিকে আমার স্বপ্ন পূরন হবে।আর সেই স্বপ্ন রাজ্য থেকে আমার রাজ কুমার খুজে বের করে দাদু সামনে যেয়ে বলবো দাদু আমি আমার স্বপ্ন দেশ থেকে আমার রাজকুমার খুজে এনেছি।এবার আমার বিয়ে দিয়ে দাও।আর আমি পালাবো না। “”

প্রাচ্য কথা শুনে হো হো হো করে হেসে দেয়।রোদ বলে,
-“এবার তার স্বপ্ন দেশে থেকেই রাজ কুমার খুজে ফেলেই হবে।”

আবার বলা শুরু করে
-“একবার নীল পালিয়ে যায়।বাসা থেকে কোনো জিনিস নিয়ে পালাতে পারে না।তাই দাদি দেওয়া লকেট বিক্রি করে দেয়।বাসায় যখন আসে।তখন বড় মা ওর গলায় লকেট না দেখে অনেক মারে।ওর গায়ে কখনো কেউ হাতে তুলে নিয়ে, সেইদিন প্রথম বড় নীলের গায়ে হাত তুলে। নীল যেই দোকান বিক্রি করে পরে ছোট কাকাই, মানে তামিম আব্বু। যেয়ে সেই দোকানদার কে দ্বিগুন টাকা দিয়ে সেই লকেট কিনে আনে।কারন সেই লকেট আমার দাদি শেষ সৃতি ছিলো।একই রকম লকেট আমাকে আর নীল কে দেয়।
প্রাচ্য এবার নিজের গলার লকেট বের করেই সবাইকে দেখায়।

ধূসর বলে
-“বাব্বাহ তোদের ফ্যামিলিতে তোদেরকে হেব্বি প্যেয়ার করে।
-“হুম

তৃণ খোঁচা মেরে বলে,
-প্রাচ্য নোয়াখাইল্লা থেকে একটা জিনিস এনেছে ধূসর।

তৃণ কথা শুনে রেগে যায়।
-“এই কি বললি তুই।
স্বপ্ন এবার বলে,
-“প্রাচ্য এখন আর ঝগড়া শুরু করিস না।কিছুক্ষন ঘুমিয়ে নেয়, ভোর হওয়ার আর বেশি দেরী নেই।

প্রাচ্য এবার বলে
-“স্বপ্ন আমার নাম খুব ঠাণ্ডা লাগছে। প্রচুর ঠাণ্ডা লাগছে।
-“এই জন্য আমি তোদের বলেছি এসি বাস নিব।কিন্তু তোরা বলছি নন এসি বাস ও করে যাবি।এই সময় নন এসি বাসে করেই গেলেই বাসের জানালা দিয়ে প্রচুর ঠাণ্ডা লাগে।আর এসি বাসে করে আসলে আর এতো ঠান্ডা লাগত না।
-“আমরা কি কখন আগে সাজেক এসেছি যে আমরা জানতাম।তুই তো আমাদের আগেই বলতে পারতি।
ধুসর বলে,
-“এই জন্য মেয়েদের ভালো করতে নেই।আমি আর স্বপ্ন তোকে বলি নাই এসি বাস নিবো। তোরা কি বলেছিস। নন এসি বাসে করে যাবি।আর এখন বলছিস আমরা বলি নাই।
প্রাচ্য কিছু বলতে যাবে।তার আগেই স্বপ্ন বলে,
-“হইছে আর বলতে হবে না।প্রাচ্য জ্যাকেট আছে না তা পরে নেয় তাহলে ও ঠান্ডা কিছুটা কম লাগবে।
-” হুম।স্বপ্ন, নীল কি ঘুমিয়ে গেছে।এর সাড়াশব্দ শুনা যাচ্ছে না।
স্বপ্ন নীলের কথা মনেই ছিলো না। ওদের কথাই মগ্ন ছিলো।কখন সে কোনো মেয়ে জীবন কাহিনী এভাবে শুনে নি।আজ প্রথম নিজের আগ্রহ নীলের কাহিনি শুনতে মনেযোগ দেয়।স্বপ্ন তাকিয়ে দেখে নীল জানালার পাশে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে।চাঁদের আলোই নীলের মুখ পর্যবেক্ষণ করে।ভালো করে তাকানো সুযোগ পায়নি।

দুধে আলতাব মেশানো গায়ের রং। গোলাপের পাপড়ি মতো ওষ্ঠযুগল।পান পাতার মতো চিবুক। প্রশস্ত ললাট। উন্নত নাসিকা। তরবারির মতো চিকন লম্বা ব্রু।হরিণীর মতো ডাগর দু’নয়ন।সব মিলিয়ে যেনো বিধাতার নিজ হাতের সৃষ্টি নীল। সুন্দর মুখটি যেন পূণির্মার চাঁদ।যেনো মেঘের আড়ালে দিয়ে উঁকি মারছে এই আধাঁরে।

স্বপ্ন তাকিয়ে দেখে নীল শীতে কাঁপছে। নিজের জ্যাকেট খুলে নীলের গায়ের উপর দেয়।জানালা থেকে মাথা তুলে সিটে রাখে। স্বপ্ন চোখ বুঝে ঘুমানোর জন্য। বাসের ঝাঁকুনিতে নীলের মাথা ঠলে পড়ে স্বপ্ন কাঁধে।সঙ্গে সঙ্গে চোখে খুলে ফেলে।অদ্ভুত একটা শিহরণ জাগে শরীর । কখনো এতো কাছে কোনো মেয়ে আসেনি। নীলের মাথা তুলতে যেয়ে আর তুলেনি।

তামিম চাঁদে দাঁড়িয়ে সিগারেট খায়। কারণ তাকে সিগারেট খেতে দেখলে কেউ, আবার কেলেঙ্কারি হবে।তাই সে মাঝে মাঝে চাঁদে লুকিয়ে সিগারেট খায়।একবার নীলের কাছে ধরা পড়ে যায়।নীলকে ঘুষ দিয়ে মুখ বন্ধ করায়। পাঁচ হাজার টাকা নেয় নীল তামিমের কাছ থেকে, একটা কথা গোপন রাখার জন্য। তামিম বাধ্য হয়ে দিয়ে দেয়।কারন এই উড়নচণ্ডী যে বলে দিতে পারে দাদু কাছে।সেই ভয়ে দিতে বাধ্য হয়। আর সেই টাকা নীল, করিম চাচার মেয়েকে অসুস্থ দেখে তার চিকিৎসা জন্য দিয়ে দেয়।আর তামিম তাকে আবার পাঁচহাজার টাকা দেয়।নীল একশ টাকা নিয়ে বলে-“এই একশ টাকা নিলাম আমি আর সোহা ফুসকা খাবো বলে”
তামিম দৃঢ় বিশ্বাস আছে তার বোন কোনো দিন খারাপ কাজ করতেই পারে না তাই সে সব সময় নীলের সঙ্গে দেয়।।

তামিম আকাশের দিকে তাকিয়ে সিগারেট আরেকটা টান মেরে বলে,
-” এতো রাতে কেন এসেছিস এখানে”
-“আমি যে এখানে আসলাম আপনি কি করে জানলেন।আমি আসতে কোনো শব্দ হয়নি। তাহলে বুঝলেন কি করেই।

তামিম এবার সোহা দিকে ঘুরে বলে,
-“তুমি শব্দ না করে হাঁটলে আমি তোমার উপস্থিতি টের পাই।
-“কিভাবে টের পান ছোট সাহেব।
এবার তামিম চোখ লাল হয়ে যায়। সে কতো বার মানা করছে তাকে যেন ছোট সাহেব বলে না ডাকে।তারপর সে ছোট সাহেব বলবে।তাই রেগে গিয়ে সিগারেট পেলে। সোহা হাত মেরে ছাদের দেওয়ালের রেলিঙ সাথে চেপে ধরে বলে
-“তোকে কতোবার বলেছি আমায় ছোট সাহেব বলবি না।আমার কথা শুনিস না কা কেন???
সোহা খুব শান্ত গলায় বলে,
-“চাকর আর মালিকে মধ্যকার সম্পর্ক এই রকম হয়।মালিক দের কে এই নামে সম্মোধন করা লাগে।
-“কে চাকর সোহা।তোকে আমি কতোবার বলেছি নিজেকে চাকর মনে করবি না।এরপর কোনো দিন যদি শুনি এইরকম কথা তোর মুখে ঠাটি একচড় মারবো।
-“আমার মা এই বাড়ি কাজের লোক।আমি তার মেয়ে সেই হিসাবে আমি ও এই বাড়ি কাজের লোক।

তামিম এবার রাগ উঠে যায়।দাঁত কিড়মিড় করে বলে
-“কি যাতা বলছি।আমেনা খালাকে আমাদের পরিবারে কেউ কাজের লোক মনে করে না।। সবাই আমেনা খালা কে এই পরিবারে একজন মনে করে।
-“আমায় ছাড়ুন প্লিজ।কেউ এভাবে দেখে ফেললে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।

তামিম এবার হাত ছেড়ে দিয়ে সোহার কোমর হাত দিয়ে কাছে টেনে নেয়।তা দেখে সোহার হাত পা কাঁপতে শুরু করে। দ্রুত হার্টবিট চলতে থাকে।এক্ষুনি যেন হার্ট এ্যাটাক করবে এই অবস্থা সোহার।কাঁপা কাঁপা গলায় বলে
-“কি করছেন কি????
তামিম আর কিছু না বলে নিজে সোহার মুখের দিকে এগিয়ে আসে।সোহা চোখ দুটো বন্ধ করে নিয়েছে তার সাথে ঠোঁট কাঁপছে।তামিম গরম নিশ্বাস সোহার ঠোঁটে পড়তেই সারা শরীর যেন কেমন করেই কেঁপে উঠল।শরীর প্রত্যকেটা রক্তকণা শীতল হয়ে বরফের মতো জমে গেলো।কেমন যেন এক অজানা সুখের রাজ্য হারিয়ে গেলো সে।সোহা হার্টবিট দ্বিগুন হয়ে গেলো।তার নিশ্বাস যেন ভারী হয়ে আসছে।নাড়াছাড়া শক্তি পাচ্ছে না।হাত পা যেন অবশ হয়ে আসছে।চোখে দুটো বন্ধ করে ফেলে।তামিম গভীর নিশ্বাস সোহা মুখে আঁচড়ে পড়ছে। সেই ধরে নিয়েছে হয়ত ছোট সাহেব।তার ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে নিবে।কিন্তু তামিম তা না করেই। সোহা মুখে উপরে পড়ে থাকা চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে কানের কাছে গুজে দেয়। নেশা ধরা কন্ঠে কানের কাছে ফিসফিস করে বলে
-“এবার ঠিক আছে
সোহা সাহস যোগিয়ে হাত সরিয়ে একটু দূরে দাঁড়িয়ে বলে,
-“তখন মিথ্যে কেন বলেছেন??
তামিম এবার পিছন থেকে সোহা কোমরে হাত দিয়ে নিজের কাছে টেনে নেয়।সোহার পিঠ ঠেকে তামিমের বুকে।সোহা কাঁধে চিবুক রেখে বলে
-“আমি জানতাম যদি বড় মা জেনে যায় তুই ও ছিলি তাহলে। তোকে ও আমার মত বকা ঝকা করত।আর খালা শুনলে তোকে মাইর দিত।
-“আমায় মাইর দিলে আপনার কি???
-“আমার কি মানে??আমার ভালোবাসার মানুষ কে বকাঝকা+মাইর দিবে আর আমি এগুলো চেয়ে দেখবো।
চলবে
#Kawsar_Sorna

স্বপ্নীল ০২

0

স্বপ্নীল
০২

ঢাকা থেকে প্রাচ্য,স্বপ্ন, তৃন,ধূসর,রোদ সবাই সাজেক ভ্যালি ট্যুরে যাবে।বাস ঢাকা থেকে কুমিল্লা বাস স্ট্যান্ড থামে।সবাই মিলে নাস্তা করে এখন অপেক্ষা করছে। তখনই ধূসর বলে
-“কিরে প্রাচ্য তোর বয়ফ্রেন্ড নীলের জন্য আর কতক্ষন অপেক্ষা করবো। তাড়াতাড়ি ফোন কর।
তখনই তৃন বলে,
-“এখানেই অনেকের বয়ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ড আছে।আমাদের কারো বয়ফ্রেন্ড গার্ল, গার্লফ্রেন্ড নিয়ে যাচ্ছি না।তাহলে কেন আমরা আমাদের বন্ধুমহল ট্যুরে বাহিরে লোক যোগ হবে কেন???কই আমরা তো আর প্রাচ্য মতো কাউকে নিয়ে যাচ্ছি না।এখানে আমরা সব বন্ধুর যাচ্ছি।
প্রাচ্য দাঁত কিড়মিড় করে বলে,
-আমরা কি তোকে মানা করেছি যে তোর গার্ল ফ্রেন্ড এই ট্যুরে নেওয়া যাবে না। তোর এতো জ্বলে কেন?? আমি আমার বয়ফ্রেন্ড সঙ্গ নিয় নাকি অন্য কাউকে নিয়ে সেটা আমার ব্যপার।তুই নাক গলাচ্ছিস কেন???তোর মন চাইলে তোর ওই গার্ল ফ্রেন্ড গুলো কি যেন নাম

আর তখনই রোদ বলে ঊঠে,
-“টিনা, মিনা, শিনা,রিনা।
-“হ্যাঁ, তোর ওই টিনা, মিনা, শিনাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারিস।আমরা কেউ মানা করবো না।
সবার উদ্দেশ্য করে বলে প্রাচ্য,
-“তৃন যদি এই ট্যুরে গার্লফ্রেন্ড নিয়ে আসতো।তাহলে কি তোরা মানা করতি।
ধূসর আর রোদ বলে,
-“না।কিন্তু স্বপ্ন …
-“স্বপ্ন কি,, বলবি মানা করত, একদম মানা করত না।এই তৃন তো গার্ল ফ্রেন্ড ছাড়াই চলে না
তূর্ন বলে,
-“আমি জাস্ট সামন্য কথা বলেছি। আর তোরা সবাই একটা একটা কথে করে ১০টা কথা শুনাইলি।
-“বেশ করেছি।তোর জ্বলে কেন??
স্বপ্ন পাশে দাঁড়িয়ে তার বন্ধুরে ঝগড়া দেখছে।এরা সবাই এক হলেই সামন্য কথা নিয়ে ঝগড়া করে। ঝগড়া শেষে সবাই আবার এক হয়ে যায়।এবার স্বপ্ন বলে
-“প্রাচ্য ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস কর। আর কতক্ষন লাগবে আসতে লেট হয়ে গেলেই আবার সমস্যা হবে।
প্রাচ্য ফোন বের করে কল করে।রিসিভ করে নীল।প্রাচ্য বলে
-“নীল কোথায় তুই । আর কতক্ষন লাগবে তোর।
-“এতো আপু বাস থেকে নামতেছি আমি।
-“আচ্ছা তাড়াতাড়ি আস।আমরা বাস স্ট্যান্ড দাঁড়িয়ে আছি।
নীল ফোনে কথা বলতে বলতে বাস থেকে নামে। বোরখা বাসে বসেই খুলে ফেলে।একহাতে বোরখা আরেক হাত ফোন কান নিয়ে ধরে আছে।
ধূসর তাকিয়ে দেখে বাসের থেকে একটা বউ নেমে আসছে তাও আবার এত রাতে একলা একলা তা দেখে একটু জোরে সবাইকে বলে
-“তোরা সবাই এই দিকে দেখ
ধূসর কথা শুনে পিছনে তাকায় সবাই।সবাই লাল শাড়ি পড়া একটা মেয়েকে দেখতে পায়। সবাই দেখে বুঝে গেছে মেয়েটা বিয়ের কনে।। আর এতো রাতে বাহিরে মানে পালিয়ে যাচ্ছে।স্বপ্ন মেয়েটা দিকে তাকিয়ে আছে। লালশাড়ি পড়া একটা পরি যেন বাস থেকে নামছে।প্রাচ্য নীলকে দেখে হাসে। তখনই ধূসর বলে,
-“আমি ১০০%সিউর আজকে এই মেয়ে বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে যাচ্ছে বয় ফ্রেন্ড কাছে।
তখনই রোদ বলে
-“মেয়েটা কে দেখে তো বিয়ের কনে মনে হচ্ছে। মনে পালিয়ে এসেছে।
নীল এইদিক ওইদিক তাকিয়ে তারপর সামন্য তাকিয়ে প্রাচ্য দেখে খুশি হয়ে দৌড় দেয়।
সবাই মেয়েটাকে তাদের দিকে দৌড়িয়ে আসার কারণ বুঝতে পাচ্ছে না।নীল তখনই দৌড়ে এসে স্বপ্ন পাশে দিয়ে যেয়ে প্রাচ্যকে জড়িয়ে ধরে।সবাই অবাক হয়। এই বিয়ের কনে সঙ্গে প্রাচ্য কি সম্পর্ক। প্রাচ্য বলে
-“কদম ফুল তোর আসতে কোনো অসুবিধা হয়নি তোর।”
-“না আপু।
প্রাচ্য কে মেয়েটার সাথে কথা বলতে দেখে সবাই শিউর হয়। এই মেয়েটাকে প্রাচ্য চেনে।সবাই প্রাচ্য দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে দেখে।প্রাচ্য নীল কে সরিয়ে বলে
-“ও হচ্ছে কদমফুল….
একটু থেমে বলে
-“ও হচ্ছে নীল যার জন্য এতক্ষন অপেক্ষা করছিলাম।
প্রাচ্য যখন সবাইকে বলেছে তার এক কাজিন তাদের সাথে সাজেক ট্যুরে যাবে। নাম বলেছে নীল।সবাই ভেবেছে ছেলে হবে।কারণ নীল নামটা বেশিভাগ ছেলেদের হয়।কিন্তু এখন এখানে একজন কনে মেয়েদেখে সবাই অবাক। আর সবার মনে একই প্রশ্ন। এই মেয়ে এই সাজ কেন??? বিয়ের সাজে কেউ ট্যুরে যায় নাকি।তখনই ধূসর বলে উঠে,
-কিরে প্রাচ্য তোদের নোয়াখাইল্লারা কি ট্যুরে যায় বিয়ের সাজে।আজ তোর এই কাজিনকে না দেখলেই বুঝতে পারতাম না।আমাদের পাশের দেশ নোয়াখাইল্লারা ট্যুরে যায় বউ সেজে যায়।
ধূসর কথা শুনে স্বপ্ন বাদে সবাই হো হো হো করে হেসে দেয়।কারণ স্বপ্ন দের দেশের বাড়ি নোয়াখালীতে।এবার তৃন বলে
-“আমি নামের বাহার শুনে মনে করেছি।ছেলে হবে। এখন দেখি এখন জলজ্যান্ত মেয়ে। প্রাচ্য যেন মেয়েটা কি নামে প্রথম ডেকেছে।
তখনই রোদ বলে,
-“কদম ফুল
তৃণ আর ধুসর হো হো করে হেসে দেয়। ধূসর ব্যাঙ্গ করে বলে,
-“কদম ফুল, লাল, নীল সবুজ,রোদ,বৃষ্টি মেঘ
সবার দেখা আমদের সাথেই হয়,এদের ফ্যামিলি মনে হয় সব ছেলেদের নাম রাখতে পছন্দ করে।নামের কি ছিঁড়ি।

রোদ চোখ গরম করে ধূসর তাকিয়ে বলে,
-“আমার নাম রোদেলা রোদ। তুই আমার নাম ব্যাঙ্গ করবি না বলে দিলাম।
-“তোর নাম দেখে সবাই মনে করবে ছেলে। আসলে তো তুই আটা ময়দা মাখা সুন্দরী।
এবার স্বপ্ন মুখে খুলে,তোরা কি থামবি।
সবাই চুপ হয়ে যায়।স্বপ্ন প্রাচ্য ইশারা বুঝায় “মেয়েটা এই সাজে কেন???প্রাচ্য সবাই বলে,
-“সবার অনেক প্রশ্ন আছে কদম ফুলকে নিয়ে সে এই সাজে কেন।আমি সবাইকে সেই প্রশ্ন উত্তরএকটু পরে দিবো।আগে কদমের ফ্রেশ হওয়া উচিত।”
তখনই নীল বলে,
-“আপু তোমাকে কতোবার বলেছি আমায় এই কদম নামে ডাকবে না। আমায় নীল বলে ডাকবে।
-“আচ্ছা ডাকবো না
—“নীল এরা সবাই আমার ফ্রেন্ড।আর এই হচ্ছে কদম মানে নীল। আমার কাজিন।নীল তুই এখানে দাঁড়া আমি তোর জামা কাপড় নিয়ে আসছি।

প্রাচ্য কিছু জামা সহ একটা ওয়াশরুম খুজে নীলকে নিয়ে সেখানে যায়।।একটা জিন্স আর টপস পড়ে আসে।
স্বপ্ন কখনো কোনো মেয়েদিকে এইভাবে তাকায় নিয়ে তবু বার বার এই মেয়েদিকে তাকায় । এতক্ষন শাঁড়ি পড়ে কেমন বউ বউ লাগছিল।আর এখন জিন্স আর টপস পড়ে কেমন পিচ্ছি পিচ্ছি লাগছে।
প্রাচ্য বলে,চল
ধুসর বলে,
-“প্রাচ্য তোর কদম ফুল উপরে যে ক্রাশ খাইছি।
নীল বলে
-“একদম আমায় কদম টদম ফুল বলবেন না। আমার নাম নীল
প্রাচ্য বলে,ওর দিকে নজর দিলে চোখ তুলে ফেলবো।তোদের ওই টিনা মিনা রিনা দের উপরে ক্রাশ খাইছ।আমার বোনের উপরে না।

প্রাচ্য কথা শুনে নীল হো হো হো করে হেসে দেয়।
স্বপ্ন বলে, বাসে উঠে ও কথা বলা যাবে। এখানে দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট করার দরকার নাই।
নীল এবার নজর যায় স্বপ্ন দিকে। সুদর্শন ছেলে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ব্লু জিন্স পড়া কালো টি-শার্ট পড়া মাথা হ্যাট পড়া । জাস্ট একথা অসাধারণ। তারপর পাশে থাকা দুটো ছেলেদিকে নজর যায়।তারা কোনো অংশ কম নয়।একথা তিন জনে হ্যান্ডসাম।। তার তামিম আর সমুদ্র ভাইয়ের মতো।
স্বপ্ন আবার বলে-“চল সবাই
সবাই মিলে বাসে উঠে।
তৃণ আর ধূসর এক সঙ্গে বসে।প্রাচ্য জানালার সিট ছাড়া বসতে পারে না। তাই সে জানালার সিটে বসেছে।। তার পাশেই রোদ বসেছে।কিন্তু নীল ও জানালার সিট ছাড়া বসতে পারে না।সোনারগাঁ যাওয়ার সময় সবাই জানালার সিট দখল করে নিয়ে ছিল।তার বসার জন্য জানালার পাশে কোনো সিট নাই।তখনই তার এক ক্লাসমেট সাথে মারামারি করে জানালার সিট নিয়েছে।
নীল বলে,
-“আপু আমি কোথায় বসবো।

স্বপ্ন সিট ও জানালার পাশেই

প্রাচ্য উঠে এসে স্বপ্ন কে বলে।
-“স্বপ্ন তোর সিট টা নীল কে দেয়। নীলের সিটে তুই এসে বস।নীল জানালার সিট ছাড়া বসতে পারে না।
স্বপ্ন আর কিছু না বলেই নীল কে সিট দেয়।নীল জানালার সিট পেয়ে খুশি হয়ে বসে পড়ে।
বাসের দুই সারি মধ্যে এক সারি মধ্যে, রোদ আর প্রাচ্য সিট তারপর তৃণ আর ধূসরে।তাদের চারজনের সিট মাঝ বরারব অন্যসারিতে স্বপ্ন আর নীলের সিট।

রোদ বলে’
-“প্রাচ্য তোর এই কদম ফুল বিয়ের সাজে কেন এসেছে।
-“ও বিয়ে থেকে পালিয়ে এসেছে।
সবাই এক সঙ্গে বলে”কি???
-“কুল, কুল, বলছি তোদের কে??
প্রাচ্য কথা কেড়ে নিয়ে নীল বলে
-“আমি বলি
-“হ্যাঁ তুই বল
-“আসলে আমি প্রাচ্য আপু সাথে ট্যুর যাবো বলে বিয়ে থেকে পালিয়ে এসেছি।
নীলের এমন কথা শুনে সবাই হতবাক।আজ পর্যন্ত তারা কেউ এমন মেয়ে দেখে নাই। যে ট্যুরে যাবে বলেই বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে আসে।প্রাচ্য তার বন্ধুদের মুখের এই করুন অবস্থা দেখে বলে
-“তোরা সবাই বানরে মতো মুখ করে রেখেচি কেন???
তৃণ বলে
-“তোর এই কদম ফুলের কথা শুনে।
প্রাচ্য বলে’

-“এখন কিছু শুনেসনি।ওর জীবন বিত্তান্ত শুনলে তোরা সবাই হার্ট ফেল করবি।ওশুধু ওখন পালায় নি এই নিয়ে ও ৩৬বার পালিয়েছে।
সবাই বলে
-“৩৬বার
-“হুম
রোদ বলে,
-“আমি যতটুকু জানি তোর দাদু নিজের এলাকায় সম্মানিত ব্যক্তি । তার নাতনি যদি এভাবে পালায় সবাই কে ভাবে।আর ও কেন এভাবে পালায়
তখন নীল বলে
-“আমার স্বপ্ন জন্য।
নীলের মুখে স্বপ্নর নাম শুনে সবাই স্বপ্ন দিকে ভ্রু কুচকে তাকায়।তা দেখে স্বপ্ন বলে
-“এভাবে তোরা তাকিয়ে আছিস কেন????
তৃণ বলে,
-“প্রাচ্য বোন কদম ফুল কি বলেছে।সে নাকি পালিয়ে আসে তোর জন্য।
স্বপ্ন কিছু বলতে যাবে তার আগেই নীল বলে,
-“আমি উনার জন্য পালাতেই যাবো কেন???
ধূসর বলে,
-“তুমি তো একটু আগেই বললেই তুমি নাকি স্বপ্ন জন্য পালাও।
-“হ্যাঁ আমার স্বপ্ন জন্য।আমার স্বপ্ন হলো এই পৃথিবী সব সুন্দর সুন্দর জায়গা ঘুরে বেড়ানো।এটা আমার স্বপ্ন।

নীলের কথা শুনে প্রাচ্য বাদে সবাই ভ্যাবাচ্যাকা খায়।
তৃণ বলে
-” আমি ভাবছি আমাদের স্বপ্ন জন্য। পালালে।

-“আপনাদের স্বপ্ন মানে??
ধূসর বলে
-“আপনার পাশেই যে ব্যক্তি বসে আছে তাহার নাম স্বপ্ন
নীল খুশি হয়ে বলে “সত্যি ”
আবার বলে
-“স্বপ্ন আর নীল। স্বপ্ন আর নীল দুটো নাম মিলে একটা নাম উৎপত্তি হলে হয় #স্বপ্নীল।আপনার আর আমার নাম মিলেই হয়ে যায় স্বপ্নীল।সুন্দর না।
সবাই নীলের কান্ড দেখছে।তখনই ধুসর বলে
-“হুম খুব সুন্দর।আর তোমাদের দুজনের নামের সাথে যেমন মিল আছে।তেমন তোমাদের দুজনকে একসঙ্গ খুব সুন্দর লাগছে।
নীল খুশি হয়ে বলে
-“সত্যি ”
-“হুম
স্বপ্ন এবার ধূসর দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকায়।তাই আর কিছু বলতে যেয়ে বলে না। তখনই প্রাচ্য বলে।
-“নীল এবার কি বিক্রি করেছি।
প্রাচ্য কথা শুনে স্বপ্ন বলে
-“বিক্রি করেছে মান??
-“নীলের মুখে শুনিস
নীল বললো,
-“কি আর করবো।মায়ের দেওয়া বিয়ের সব গয়না গাটি বিক্রি করে এসেছি ট্যুরে যাওয়ার জন্য
এই মেয়ের এইসব কথা বার্তা শুনে সবাই আহত হয়।এমন কি কেউ আছে যে মায়ের দেওয়া গয়না ঘাটি বিক্রি করে ট্যুরে আসে।
রোদ বলে,

-“গয়না বিক্রি করে ট্যুরে,, impossible
-“এটা শুধু এবার নয়।৩৬বার যখন পালিয়েছে কিছু না কিছু বিক্রি করেছে। তাই ওর কাছেimpossible বলতে কিছু নেই।।।

প্রাচ্য নিলের উদ্দেশ্য করে বলে,
-“কোথায় বিক্রি করে এসেছি। বলে এসেছি।
-“হুম তামিম ভাইয়া কাছে বলে এসেছি।
-“এবার কি তামিম ভাইয়া পালাতে সাহায্য করেছে।
-“তামিম ভাইয়া আর সোহা বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত এসেছে।
চলবে
#kawsar _sorna

স্বপ্নীল part-01

0

মির্জা বাড়ি একমাত্র মেয়ে কদমের বিয়ে। পুরো বাড়িতে মরিচ বাতির আলো আলোকিত করেছে।পুরো বাড়িতে ফুল আর বাতি দিয়ে সুন্দর করে ডেকোরেশন করেছে।তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। সাঁত-পাঁচ গ্রামে এরকম বিয়ে গ্রামের লোক দেখেনি। তাই দূর -দূরান্ত থেকে মানুষ আসছে।।

নীল মানে কদম বউ সেজে নিজের রুমে পায়চারি করছে কি ভাবে পালাতে পারবে। নানা রকম চিন্তা ভাবনা করছে বিয়ে বাড়ি থেকে কিভাবে বের হবে।তাকে যে পালাতেই হবে।।

নীল বালিশের নিচে থেকে মোবাইল বের করে।তার ছোটকাকা ছেলে তামিম কে ফোন করে।

_ ব্যবস্থা হয়েছে।

_হুম করেছ।একটু ওয়েট কর!আমরা আসছি।

_”কবে আসবে।আমার বিয়ে হয়ে গেলে।বর যাত্রী আসার সময় হয়ে গেছে।।

_”রাগ করছিস কেন???ব্যবস্থা করতে সময় লাগে না।আর বাড়ি কতো লোকজন তাদের চোখে ফাঁকি দিতে হবে।।৫মিনিট মধ্যে চলে আসছি।

_আচ্ছা বায়।

নীল কানের থেকে ফোন নিয়ে রেখে নিতেই তার দাদু ঘরে আসে,
তাকে দুইনয়ন ভরে দেখে বলে,

_আমার কদম দাদু ভাইকে আজ খুব সুন্দর লাগছে।বর যে আজ চোখ সরাতে পারবে না।আমার যে খুব হিংসে হচ্ছে । আমার বউ কে যে আজকে নিয়ে যাবে ”

_””চাইলে আমায় রেখে দিতে পারো।আমি তোমাকে বিয়ে করার জন্য এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছি।তুমি তো আমায় বিয়ে করতে পারো। তাহলে তো আজ আমায় এ বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে না”

দাদু কদমের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
_””দাদু ভাই আমি যে বুড়ো হয়ে গেছি।আমি যদি ইয়াং থাকতাম তাহলে তোমায় বিয়ে করে নিতাম।তার জন্য তোমায় চিন্তা করতে হতো না।””

নীল দাদু গলায় জড়িয়ে ধরে বলে,
_”দাদু আমার কিন্তু বুড়ো বর অনেক পছন্দ। তোমাকে আমার কিন্তু হেব্বি পছন্দ হয়ছে।””

_না, না আমার একমাত্র নাতনি কদমের বিয়ে হবে বুড়ো সাথে। কখনো না।সবাই আমায় কদম দাদু ভাইকে নিয়ে হাসাহাসি করবে বুড়ো বর কে নিয়ে।তাই তো ইয়াং বর খুজে নিয়ে এসেছি।

_আমার ইয়াং বর চাইনা দাদু।আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।আমার বুড়ো বর অনেক ভালো লাগে।

_কদম

দাদুকে আর বলতে না দিয়ে নিজেই প্রশ্ন করে

_দাদু একটা কথা জিজ্ঞেস করি।

_করো দাদু ভাই।

_তুমি তো আমার নাম নীল রেখেছো।আগে তো আমায় নীল বলে ডাকতে।এখন কেন এই ক্ষ্যাত নাম, কদম বলে ডাকো।।আমার এই নাম বলে ডাকবে না বলে দিলাম।

_এই নামটা তোমার সতীন রেখেছে।মানে তোমার দাদি রেখেছে।আর আমি তোমার নাম রেখেছি নীল। তোমার দাদি আর আমার মধ্যে নাম নিয়ে অনেক কাটাকাটি হয়েছে। সে বলেছে তুমি বর্ষার ঋতু জন্ম নিয়েছো।তাই তোমার নাম সে কদম রেখেছে।তোমার দাদি মারা যাওয়ার পর। তার প্রিয় নামে আমি তোমাকে ডাকি।তোমার মাঝে যে আমি তোমার দাদি কে দেখতে পাই।
লাস্ট কথা বলতে নীলের দাদুর চোখে কোনে জল চলে আসে। নীলের চোখ তা এড়ানি।নীল তার দাদুর চোখে থেকে চশমা খুলে। চোখে পানি মুছে দিয়ে বলে,

_”দাদু তুমি কি দাদি কে অনেক লাভ করতে “””

_লাভ কি??দাদু ভাই।

_মানে ভালোবাসতে।

_”হ্যাঁ তোমার দাদি আমাকে খুব ভালো বাসতো।আমি তাকে খুব ভালোবাসতাম।।”

_””এখন মিস করছো দাদি কে””

_হ্যঁা দাদু ভাই খুব মিস করি। কিন্তু তুমি তো তোমার দাদি খালি জায়গা শূন্যস্থান পূরন করে দিয়েছো।তাই মিস করার সময় পাইনা তো দাদু ভাই”

তখনি নীলের ছোট কাকা।মানে তামিমের আব্বু রুমে এসে বলে,

_””দাদু নাতনি কি গোপন কথা বলছে। আমি কি শুনতে পারি””

দাদু তখন বলে,”আসাদ বর যাত্রী আসবে কখন।

_বাবা চলে আসবে।

ছোটকাকা নীলের থুতনি ধরে বলে,”আমার পুঁচকো টা যে কখন বড় হয়ে গেলো। বুঝতে পারিনি। এখন সে অন্যের ঘরে চলে যাবে।”
নীল স্পর্শ দেখতে পায় তার কাকু চোখে পানি। কাকু চোখে পানি মুছে দিয়ে বলে।

_”” তোমরা তো আমায় বিদায় করার জন্য উঠে পরে লেগেছো।।আমি তোমাদের উপরে বোঝা হয়ে গেছি। তাই তো বিদার করা ব্যবস্থা করেছো।”
তখনই ছোটমা।মানে ছোটকাকা স্ত্রী সোহাগী বেগম বলে উঠে,
-“এইটাই নিয়তি মা, মেয়েদের জন্ম হয় পরে ঘরে চলে যাওয়ার জন্য।।যেঘরে তাড়া বেড়ে উঠে সেই ঘর একদিন ত্যাগ করতে হয়।সেই বাপের ঘরটা তখন পরেই ঘর হয়।স্বামী ঘরটাই আসল ঠিকানা হয় মেয়েদের।। “”

নীল ছোটমা কে জরিয়ে ধরে কান্না করে দেয়। দাদু। কাকা সবাই কান্না করে দেয়।কাকার চোখে জল মুছে নীলের মাথায় হাত ভুলিয়ে দেয়,

_এই পুচকে কান্না থামা।

ছোটমায়ের বুক থেকে মাথা তুলে বলে,কাকাই তোমায় কতোবার বলেছি। আমায় পুঁচকে বলবে না।আমি এখন ছোট না কাকাই।

ছোট কাকা দুই কানে হাত দিয়ে বলে,”সরি আমি তো ভুলে গেছি। আমাদের পুঁচকে যে বড় হয়ে গেছি।তার যে এখন বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। আর কখনো পুচঁকে বলবো না।

কাকার কান্ড দেখে নীল সহ সবাই হো হো হো করে হেসে দেয়।
তখনই রোকেয়া বেগম মানে নীলের মা রুমে এসে বলে,,,

_বাবা আপনার সবাই নিচে যান। আমার কদমের সাথে একা কিছু কথা আছে।

সবাই চলে যায়।রোকেয়া বেগম মেয়েকে নিয়ে খাটে বসে। নিজের কিছু গয়না আছে সেগুলো পড়িয়ে দেয় আর বলে
_কদম মা। সব সময় তুমি পালিয়ে যায় যেখান থেকে , সেখান থেকে।আশা করি আজকে সেই কাজ করবে না।আগের সব ব্যপার আর এখনকার ব্যপার আলাদা।এই বিয়েতে তোমার দাদু, বাবা, কাকাই, সবার মান সম্মান জড়িয়ে আছে।।এই গ্রামে সবাই তোমার দাদুকে আলাদা একটা সম্মানের চোখে দেখে তা তুমি জানো।আশা করি এমন কিছু করবে না।

নীল মনে মনে বলে,আমি এতো কিছু জানি না। আমি পালিয়ে যাবো। যখন আমি ঠিক করেছি পালিয়ে যাবো তার মানে আমি যাবো।পালিয়ে যাওয়ার মজাই আলাদা।সেটা তুমি বুঝবে না মা।তুমি যদি আমার মতো পালিয়ে যেতে তাহলে বুঝতে পারতে পালিয়ে যাওয়ার মজাই কি।আমি যে পালাবো আমার স্বপ্ন জন্য।। স্বপ্ন যে আমায় তাড়িয়ে বেড়ায়।তোমরা চাইছো বিয়ে দিয়ে আমায় যেনো বেঁধে রেখে দিতে পারো।কিন্তু আমি তো তা হতে দিতে পারিনা।। তাই তো পালিয়ে যাবো।

রোকেয়া বেগম বলে,”কদম কি ভাবছ”

_”না , মা! কিছু না ”

-“কিছু না ভাবলেই চলে।মাথা যতো কুবুদ্ধি আছে সব ঝেড়ে ফেলো। নতুন জীবন ভালো করে শুরু করবে কিভাবে সেটা নিয়ে ভাবো”

নীল মায়ের কথা ঘাড় কাত করে হ্যাঁ জানায়।রোকেয়া বেগম চলে যায়।

তামিম সাথে একটা বোরকা পড়া মেয়ে আসে।মুখে নেকাব দেওয়া। সিঁড়ি দিয়ে দুজনে উপরে যেতেই নিলেই তার মায়ের সাথে দেখা হয়।তার মা ভ্রু-কুচকে একবার তামিমের দিকে তাকায় একবার বকরা পড়া মেয়েটা দিকে তাকায়।। তামিম মায়ের এই তীক্ষ্ণ চাউনি দেখে ভয়ে ঢোক গিলে তার মা কিছু বুঝতে পেরেছে কিনা।মায়ের পাশ কাটিয়ে যেতেই নিলেই তার মা ডাক দেয়,
_তামিম”

তামিম মায়ের ডাক শুনে থমকে দাঁড়ায়।ভয়ে হাত পা কাঁপছে।মা কিছু বুঝতে পেরেছি কি না। আর বুঝতে পারলে।আজ সে শেষ। অনেক বার নীলকে পালানো জন্য সাহায্য করার জন্য অনেক বকা খাইছি।আজকে যদি ধরা খাই। তার সঙ্গে নীল পেশে যাবে।আর নীল তাহলে আমাকে আস্তো গিলে খাবে পালাতে না পারলে। না তামিম সাহস জোগায়। তোকে পারতেই হবে।
এসব ভেবে তামিম ঘুরে দাঁড়ায় । মায়ের মুখোমুখি হয়ে বলে,
-“কেন ডাকছো মা??”
-“তোর সাথে এই বকরা পড়া মেয়ে টা কে????

যা ভয় পেয়েছিলাম। তাই হয়েছে। মা তার মানে সন্দেহ করেছে।এখন কি করি। কি বলবো মাকে।মা যদি ধরে ফেলে।মা গিয়ে বড় মাকে বলবে।আর বড় মা কি করে আল্লাহই জানে।এখন যে করেই মায়ের হাত থেকে রেহাই পেতেই হবে।।

_মা মেয়েটা নীলের বেষ্ট ফ্রেন্ড। নীলের সাথে দেখা করতে নিয়ে যাচ্ছি।”
-“মেয়েটা এই বিয়ে বাড়িতে বোরখা পড়ে আসছে কেনো??? আর নীলের সব ফ্রেন্ড কে তো আমি চিনি।সবাই এই বাড়ি এসেছে। তখন কেউ বোরখা পড়ে আসেনি। “!
-“মা ও পর্দা করে তাই কখন আসেনি আমাদের বাসায়। তাই তুমি চিনতে পারছো না ”

_মেয়েটাকে বল, নেকাব খুলতেই আমি তার মুখ দেখবো।

যে ভয়টা পেয়েছি সেটাই হয়েছে।এখন কি করবো। কি করে মায়ের হাত থেকে বাঁচবো।
তামিম আমতাআমতা করে বলে,”মা কারো সামনে মুখ খুলে না। বলেছিলাম না ও পর্দা করেই।।”

_পর্দা করে ভালো কথা। আমিও মেয়ে মানুষ আমার সামনে মুখ খুললেই সমস্যা কি?”

_”মা ওর লজ্জা বেশি”

-“লজ্জা বেশি ভালো কথা।কিন্ত আমি এতো কথা বলছি এই মেয়েটা কোনো কথা বলছে না কেন??নাকি কথা বলতেই লজ্জা লাগে। ”

_”মাগো মা তুমি কবে থেমে গোয়েন্দা খাতায় নাম দিলা।এই ভাবে জেরা করছো।”

_জেরা করা কারন অবশ্যই আছে।তোমার উপরে কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে।যাতে কোনো উলটাপালটা যেন কিছু করতে না পারো।এই মেয়ে তোমার নাম কি???

আল্লাহ গো আল্লাহ এবার আমায় বাঁচা ও। কথা বললেই মা বুঝতে পারবে। বকরা ভিতরে মেয়ে না আসলে একজন ছেলে।।এটা যদি জানতে পারে।আমায় যাবতজীবন কারাদণ্ড দিবো। কি করি,এখন কি করি, মাকে আটকাতে হবে।তামিমের ভাবনার ছেদ করে বড় মায়ের ডাকে।

_এই ছোট এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?? এদিকে আয়।

সোহাগি বেগম বলে তামিমের দিকে তাকিয়ে বলে “আসছি”

তামিম তার মা যাওয়ার পর বড় বড় কয়েকটা নিশ্বাস ফেলে বলে,”যাক বাবা এবারে জন্য বাঁচা গেলো।চল।”

বকরা পড়া ছেলে টা ঘাড় কাত করে সম্মতি জানায়।

দুজনে মিলেই নীলের রুমে যায়।নীল তাদের দেখে বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায়।।তাড়াতাড়ি দৌড়িয়ে যেয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।।
তামিমের বন্ধু সাদেক বোরখা খুলে নীলের মুখে ছুড়ে ফেলে বলে,, তামিম তোর মা কি জেরা টাই করছে।আমি তো ভাবছি ধরা খেয়ে যাবো।। লাস্ট পর্যন্ত বেঁচে গেলাম।”
_”হুম”নীল বকরা পড়ে নেয়। না হলেই বের হওয়া যাবে না।কড়া গার্ড রেখেছে তোর আর আমার জন্য। যা করতে হবে। ভেবে চিনতে করতে হবে।

সাদেক আবার বলে, “তামিম তুই কেমন ভাইরে।বোন কে বিয়ে থেকে পালাতেই সাহায্য করছিস। তুই তো ইতিহাস রচনা করছিস। ভাই হয়ে বোন কে পালাতে সাহায্য করে। তাও আবার বিয়ে মতো কোনো সিরিয়াস মেটার নিয়ে।।কোথায় বোন কে বুঝাবি, আর সেটা না করে পালানোর ব্যবস্থা করে দিচ্ছিস।”
নীলের সাদেক কথা শুনে রাগ উঠে যায়,”তামিম ভাইয়া তুমি তোমার বন্ধু মুখ বন্ধ করতেই বলো, না হলেই। এই ফুলদানি দিয়ে মাথা পাঠিয়ে দিবো”

তামিম সাদেক বলে”সাদেক চুপ কর”
_তোর বোন দেখি লেডি ডন। যার এতো বড় উপকার করছি সে বলে আমার মাথা পাঠিয়ে দিবে।উপকারে নামে থাপ্পড়। ”

তামিম সাদেক কাছে এসে বল, এবার চুপ কর ভাই। কেউ এসে শুনলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।

_”নীল তুই রেডি তো”
_হ্যাঁ।

তামিম এখন ভাবতে থাকে কি ভাবে তাড়া বের হবে। তামিম এবার খাটের উপর থেকে শাড়ি এনে বারান্দা রেলিঙ সাথে বাঁধে শাড়ি এক অংশ, আরেক অংশ নিচে ফেলে দেয়।

_”নীল শাড়ি দিয়ে নিচে নামতে পারবি তো।”

_পারবো।

_আচ্ছা তুই দাঁড়া।আমি নিচে যেয়ে গাড়ি খুচ্ছি।আর নিচে তোর ফ্রেন্ড সোহা দাঁড়িয়ে আছে। যে মানুষ পাহারা দিচ্ছে।কাউকে এখানে আসতে দিবে না।তুই নেমে যায়।
আর সাদেক তুই রুমের দরজা আটকিয়ে রাখবি।যাতে কেউ না আসে। আমরা বাস স্ট্যান্ড গেলে তোকে ফোন করে বলবো।আর তুই তখন এই দরজা খুলে এই শাড়ি দিয়ে নিচে নেমে যাবি।

_আচ্চা

তামিম এটা বলে দরজা খুলে নিচে চলে যায়। তখনই বড় মায়ের সাথে দেখা হয়।

_”তামিম কোথায় যাচ্ছো”???

পথে পথে খালি বিপদ।

_বড় মা বর যাত্রী আসার সময় হয়ে গেছে।তাদের আনার জন্য যাচ্ছি।
_ যাও ভালো কথা।কোনো গণ্ডগোল যেন না হয় বলে দিলাম”

_জ্বী বড় মা।

নীল নেমে যায়। সোহা সহ রাস্তা দাঁড়িয়ে থাকে।।তামিম সিএনজি নিয়ে আসে।দুজনে মিলেই উঠে যায়।

_এবার কোথায় যাবি নীল।

_কোথায় আবার প্রাচ্য আপু সাথে এবার সাজেক ভ্যালি টু্্যরে যাবো।

_একা একা কুমিল্লা যেতেই পারবেই তো।

_পারবো ভাইয়া।

_তুই কখন একা যাসনি।আর রাস্তা ঘাট ও কিছু জিনিস না।

_ভাইয়া আমি কুমিল্লা গেছিলাম কোর্টবাড়িতে।।সেটাতে পালিয়ে গেছিলাম।আর তুমি আমায় সাহায্য করেছিলে। একটু একটু চিনবো।কোনো সমস্যা হবে না। আর প্রাচ্য আপু বাসস্ট্যান্ড অপেক্ষা করবে।

_টাকা নিয়েছিস।

_হ্যা বিয়ে গয়না বিক্রি করে দিলাম।।

_আবার।। তোর মনেই নেই দাদি দেওয়া লকেট বিক্রি করে দিয়েছিস বলে বড় মা তোকে মাইর দিয়েছে।

_তো কি হয়েছে।আমি যে দোকানে বিক্রি করে দিলাম সেই দোকান থেকে পরে কাকাই কিনে নিয়ে এসেছে।এবার আমার বেছে দেওয়া গয়না গুলো তারা কিনে নেবে।তাই আমাদের গ্রামের বাজারে বিক্রি করে দিয়েছি। যাতে তাদের কিনতে অসুবিধা না হয়।এগুলো তারা আরো আগে কিনে নিবে।এই গুলো তাদের বংশ ঐতিহ্য গয়না।তোমাকে চিন্তা করতে হবে না।। তুমি শুধু তাদের বলবে,আমি গয়না গুলো যে দোকানে বিক্রি করেছি সেই দোকানের নাম বলে দিবে।।
তামিম আর কিছু বলবে না। এই মেয়ে আসলেই উড়নচণ্ডী । কথা বলতে বলতে সিএনজি বাস স্ট্যান্ড গাড়ি থামে।সবাই নেমে যায়।

তামিম সোহা। দুজনে বিদায় জানায়। তখনই নীল তামিমের কাছে এসে বলে
_”ভাইয়া আমার না তোমাকে চুমু খেতে ইচ্ছে করছে”

নীলের একথা শুনে তামিম গাল এগিয়ে দিয়ে বলে,”তোকে কি কেউ মানা করছে নাকি???

_মানা করে নাই।যদি একজন রাগ করে।সে যদি আমায় বলে। তার আগেই আমি কেন তোমায় চুমু খেলাম?? যদি রাগ করে।

সোহাকে উদ্দেশ্য করে বলে নীল।তা সোহা বুঝতে পারে।

_আমি কাউকে মানা করতে যাবো কেন। আর তুই তোর ভাইকে চুমু খাবি আমার কি যায় আসে।আমি কি তোর ভাইয়ের গার্লফেন্ড নাকি যে আমি জেলাস ফিল করবো।
_আচ্ছা তোর কিছু যায় আসে না।ঠিক আছে।এবার ঘুরে আসি।তারপর আমি আমার ভাইয়া জন্য মেয়ে দেখবো।তখন দেখবো কেউ জ্বলে কিনা।

_দেখিস

নীল আর কিছু বলে না। তামিমের গালে চুমু খায় সাথে সোহার গালেও।তাদের জন্য আজ সে পালিয়ে যেতে পাচ্ছে।
বিদায় নিলে চলে যায় নীল।তার উদ্দেশ্য সাজেক ভ্যালি।

স্বপ্নীল part-01
#Kawsar_sorna

Protected: নিখোঁজ সংবাদ

0

This content is password protected. To view it please enter your password below:

Protected: ঝড়ের পরে

0

This content is password protected. To view it please enter your password below:

Protected: শুরুতেই শেষ

0

This content is password protected. To view it please enter your password below:

Protected: গল্প:মাতৃত্ত

0

This content is password protected. To view it please enter your password below:

প্রিয় অভিমান পর্ব ১০

1

#প্রিয়_অভিমান

পার্ট : ১০

লেখা নিশাত সিদ্দিকা
.
আমি অসহায়ের মতো একা একা বসে কাদঁতে লাগলাম,শেষ পর্যন্ত মা ও আমায় ভুল বুঝলেন,
কেউই আমার কোনো কথা শুনলো না সবাই কাব্য ভাইয়ের বলা মিথ্যা কথাগুলো বিশ্বাস করে নিল,
কাব্য ভাইয়া সবটা এতো নিখুঁত ভাবে সাজিয়ে ,আমায় এমন এক সিচুয়েশনে এনে দাঁড় করালেন যেখানে সত্যিটা আমি চিৎকার করে বললেও কেউ বিশ্বাস করবে না।
তারা ভাবছে আমি ভয় পেয়ে মিথ্যা কথা বলছি।
কারন সবাই জানে আমি ছোট বেলা থেকেই ভীতু প্রকৃতির ,কাব্য ভাইয়া আমার এই দুর্বলতারই সুযোগ নিলেন,
উনি খুব জগন্য একজন মানুষ ,উনার সাথে একটু রেগে কথা বলার জন্য উনি আমার এত বড় একটা ক্ষতি করে প্রতিশোধ নিলেন।
শুধু মাএ উনার জন্য মা আমাকে ভুল বুঝে এতোটা কষ্ট পেয়েছেন।
এর জন্য কাব্য ভাইয়াকে আমি কোনদিনও মাফ করবো না।
,
.
কিছুক্ষন আগের ঘটনা,
আমি মাথা তুলে মায়ের দিকে তাকালাম কিছু বলার জন্য ,আমি মায়ের দিকে তাকিয়ে করুন কন্ঠে বলে উঠলাম,
মা তোমাকে আমার অনেক কিছু বলার আছে,মা কাব্য ভাইয়া আমাকে,
এটুকু বলার মাঝে মা আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলতে লাগলেন ,
তোকে আর সাফাই গাইতে হবে না আমি সবটা শুনেছি,আর এখানে এসে যা দেখলাম তাতে আমার কাছে সবটা জলের মতো পরিষ্কার ,
তুই কাব্যকে আগ থেকে পছন্দ করতি ,সেটা আমাদের বললেই পারতি,
আমি মায়ের কথার মাঝখানে কেঁদে কেঁদে বললাম,
-মা আগে আমার কথাটা তো তুমি শুনো,তুমি আমায় ভুল বোঝছো,
আমার কথা শুনে মা আমাকে একটা ধমক দিয়ে বললেন,
আর কি শুনার বাকি রেখেছিস,কাউকে ভালবাসা তো অপরাধ না ,আমাদের একটিবার বলে দেখতে পারতি আমরা কি করি, তা না করে কাউকে কিছু না জানিয়ে
সবাইকে লুকিয়ে বিয়ে করে ফেললি,লুকিয়ে বিয়ে করতে ভয় করেনি এখন সেটা সবার কাছে স্বীকার করতে ভয় পাচ্ছিস।
তুই যে এভাবে এমন একটা কাজ করবি আমরা ভাবতে পারিনি ।তোর কাছ থেকে আমরা এটা আশা করিনি ,তোর এই কাজের জন্য তোর বাবা এবং আমি খুব কষ্ট পেয়েছি,
বলেই মা কেঁদে কেঁদে চলে গেলেন ,আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ।
,
হঠাৎ কারো আগমনের সারা পেয়ে আমার ভাবনার ঘোর কাটল,তাকিয়ে দেখি আপু এসেছেন,
আপু আমার কাছে আসতেই আমি আপুকে জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে বলতে লাগলাম,
আপু মা আমাকে ভুল বুঝে কষ্ট পেয়ে চলে গেলেন,
মা,বাবা আমার জন্য কষ্ট পাচ্ছেন আমি তাদের কাছে যেতে চাই,প্লিজ আপু আমায় বাড়ি যাবার ব্যবস্তা করে দে,
আমার নিজেকে ভীষন অপরাধী লাগছে,নিজেকে নিজে শেষ করে দিতে মন চাইছে,মায়ের চোঁখে অপরাধী হয়ে আমি বাঁচতে পারবো না,
আমাকে এই ভাবে পাগলের মতো কাঁদতে দেখে আপু আমার পিঠে হাত বুলিয়ে আমাকে শান্ত হতে বলতে লাগলেন,
সুহা শান্ত হও বোন আমার এভাবে কাঁদিস না,তুই যা করেছিস তাতে বাবা,মায়ের খারাপ লাগারি কথা,কষ্ট পেয়ে মা অভিমান করে চলে গেছেন ,কিন্তু তারা তোর উপর বেশিদিন রাগ করে থাকতে পারবেন না,
দেখিস কিছুদিন পর সবটা ঠিক হয়ে যাবে ।
এরি মাঝে আন্টি ও রুমে চলে এলেন তিনি এসে ও আমায় শান্তনা দিতে লাগলেন,আন্টি বললেন,তিনি আমাদের নাকি বাবা,মায়ের কাছে নিয়ে যাবেন ক্ষমা চাওয়ার জন্য তাহলে নাকি তারা আর আমাদের উপর রাগ করে থাকতে পারবেন না,আরো বললেন বাবা , মারা সন্তানের উপর রাগ করে থাকতে পারে না সন্তান যত বড় ভুলই করোক না কেন।
আন্টি আর আপু কথায় আমি ভরসা পেয়ে কান্না থামিয়ে শান্ত হলাম,অপরাধ না করে ও আজ আমি কাব্য ভাইয়ের করা অপরাধের সমান অংশীদার ,কিন্তু উনাকে তো কেউ কিছু বলছে সব কথা আমাকে শুনতে হচ্ছে।
আপু আর আন্টি আমার কাছে বসে আমাকে আরো অনেক কিছু বুঝাতে লাগলেন,
তারপর অনেক রাত হয়েছে বলে তারা আমাকে খাবার খাওয়ার জন্য জোর করতে লাগলেন,তাদের অনেক করে বললাম যে আমি খাবো না আমার খিদে নেই কিন্তু তারা আমার কোনো কথাই শুলো না জোর করে আমাকে নিয়ে গেলেন।
,
.
নিচে এসে দেখি কাব্য ভাইয়া স্নেহাকে কোলে নিয়ে হাঁটছেন আর স্নেহা উনার কোলে ঘুমিয়ে পরেছে,
কি সুন্দর একটা বাচ্চাকে কোলে নিয়ে পরম যত্নে ঘুম পাড়াচ্ছে একে দেখলে কারো বুঝার সাধ্য নেই এ এতো বড় একটা শয়তান।
আমি মাথা নিচু করে উনাকে পাশ কাটিয়ে চলে এসে আন্টির পাশে ডাইনিং চেয়ারে বসলাম,
খানিক্ষন পর আপু আর উনি ও চলে আসলেন,উনি এসে আমার সামনের চেয়ারে বসলেন,
আমি কোনদিকে না তাকিয়ে মাথা নিচু করে খেতে লাগলাম,
হঠাৎ পায়ে কিছুর স্পর্শ পেয়ে আমি চমকে উঠলাম ,আমি খাওয়া থামিয়ে বুঝার চেষ্টা করতে লাগলাম জিনিসটা কি,
এটা প্রথমে আমার পা চেপে ধরল তারপর পায়ের মাঝে আস্তে আস্তে স্লাইড করতে লাগল,আমি প্রথমে ভীষন ভয় পেয়ে গেলাম কিন্তু
কিছুক্ষনের ব্যবধানে আমার আর বুঝতে বাকি রইল না এটা কি ,আমি অগ্নি দৃষ্টি উনার দিকে তাকালাম কিন্তু সে আমার অগ্নিদৃষ্টিকে উপেক্ষা করে মহা আনন্দ খেতে খেতে আমার পায়ে স্লাইড করতে লাগল,
উনার এই পায়ে ঘষাঘষির অত্যাচারে আমার খাওয়া বন্ধ হয়ে গেল,এই আপদটা যে আমাকে জ্বালিয়ে পুরিয়ে কয়লা বানিয়ে শান্ত হবে সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত ।
পৃথিবীতে এতো এতো ভালো মানুষ থাকতে এর মতো একটা বজ্জাত লোকই আমার বোনের দেবর হতে হলো,
আর আজ থেকে আবার সে বজ্জাতটা আমার বর হয়ে গেল,ইশ!!আমার ভাগ্যটা এতো হলো কেন কে জানে,
আমি পা সরিয়ে নিতে চাইলে সে আমার পা শক্ত করে চেপে ধরছে,
বসে বসে এই অত্যাচার সহ্য করছি আর খাবার নাড়া ছাড়া করছি,
গলা দিয়ে আমার খাবার নামছে না,
আমাকে এইভাবে বসে থাকতে দেখে আন্টি প্রশ্ন করলেন,
কি হলো সুহা তুমি খাচ্ছো না কেন কোনো সমস্যা,
কিছু হয়েছে তোমার মুখটা এমন দেখাচ্ছ কেন?
আমি আন্টির দিকে তাকিয়ে জোর করে মুখে একটা শুকনো হাসি এনে বললাম,
কিছু হয়নি আন্টি এইতো খাচ্ছি।
খাবার ছেড়ে উঠতেও পারছি না আপু আর আন্টির জন্য,উনারা কি ভাববেন,
উনার এই স্পর্শগুলো বারবার আমার শরীর কাঁপিয়ে তুলছে,আমার এই অবস্তা দেখে উনি মজা পাচ্ছেন কিছুক্ষন পর পর আমার দিকে তাকিয়ে মিটমিয়ে হাসছেন,উনার এই হাসি দেখে রাগে আমার ইচ্ছা হচ্ছিল খাবার প্লেটটা উনার মুখে ছুঁড়ে মারি ,কিন্তু ইচ্ছে হলেই তো হবে না আমি যদি তার মুখে প্লেট ছুঁড়ে মারি দেখা যাবে এই রাক্ষসটা আমাকেই আছাড় মেরে ফেলে বর্তা বানিয়ে ফেলেছে ,নিজের ইচ্ছাকে নিজের মাঝে দমিয়ে রেখে
দাঁতে দাঁত চেপে খাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেলাম,মনে মনে উনাকে ভয়ংকর সব গালি দিতে লাগলাম ,অবশেষে অসহ্য হয়ে খানিক্ষন পর প্লেটে পানি ঢেলে উঠে পরলাম ,
,
.
ডাইনিং টেবিল থেকে উঠে সোজা আপুর রুমে চলে এলাম,
কিছুক্ষন পর আপুও চলে এলেন,আপুর সঙ্গে বসে গল্প করতে লাগলাম ,বিয়ের সত্যিটা আর ভয়ে বলতে যাইনি ,বললেও বিশ্বাস করবে না উল্টো আমাকে ধমক দিয়ে বলবে বারবার একি মিথ্যে কথা কেন বলছি ,অনেকক্ষন আপুর সাথে কথা বললাম ,খুব ঘুম পাচ্ছে আপুকে ঘুমানোর কথা বলতেই আপু বলে উঠলেন,
কাব্য ভাইয়ার রুমে গিয়ে ঘুমাতে ,আজ থেকে নাকি ওটাই আমার রুম,
আপুর মুখে এমন কথা শুনে আমার অন্তর আত্মা কেঁপে উঠল,আমি ওই রাক্ষসটার সাথে একি রুমে অসম্ভব !!!
আপুকে ব্ল্যাকমেইল করতে হবে,আজকের রাতটা কোনো মতে আপুর সাথে কাটিয়ে কালই আমাকে এখান থেকে পালাতে হবে,
আমি আপুর দিকে তাকিয়ে কাতর কন্ঠে রিকুয়েস্ট করতে লাগলাম,
আপু আজ আমি তোমার সাথে থাকবো ,প্লিজ আপু তুমি মানা করো না ,একটা রাত তোমার সাথে থাকিনা ,আমার শরীরটা খুব খারাপ লাগছে মাকে ভীষন মনে পরছে ,বাড়িতে থাকলে তো মায়ের সাথে ঘুমাতাম,তুমি কি তোমার কাছে আমায় থাকতে দিবে না,প্লিজ আপু প্লিজ !
-কিন্তু সুহা ভাইয়া কি এটা মানবেন,
-প্লিজ আপু তুমি উনাকে একটু বুঝিয়ে বলো না,
আমার রিকুয়েস্ট করার মাঝে কাব্য ভাইয়া রুমে এসে ঢুকেলেন,উনাকে দেখে আমি থেমে গিয়ে অসহায় দৃষ্টি আপুর দিকে তাকিয়ে রইলাম,
উনি এসে আপুকে বলে উঠলেন,
কি হল ভাবি আমি কি এবার আমার বৌ কে নিয়ে যেতে পারি ,
আমি তখনও আপুর দিকে অসহায় মতো তাকিয়ে রইলাম,আপু একবার আমার দিকে তাকালেন তারপর কাব্য ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললেন,
ভাইয়া একটা রিকোয়েস্ট ছিল,
আপুর কথা শুনে কাব্য ভাইয়া বলে উঠলেন,
ভাবি এমন কোনো রিকোয়েস্ট করো না যেটা আমি রাখতে পারবো না,
উনার কথা শুনে আপু দমে গেলেন,
কাব্য ভাইয়ার রাগ সম্পর্কে সবার ধারনা আছে তাই আপু উনাকে আর না ঘাঁটিয়ে ,আমার দিকে তাকিয়ে চোঁখ দিয়ে ইশারা করলেন আমি যাতে উনার সঙ্গে চলে যাই,
কাব্য ভাইয়া আমার দিকে আদেশের সুরে বলে উঠলেন,
সুহা রুমে চলো অনেক রাত হয়েছে,
উনার কথায় আমি জেদের সাথে বলে উঠলাম,
আমি কোথাও যাবো না আজ আমি আপুর সাথে এখানেই থাববো,
আমার কথায় উনি রেগে গিয়ে বলে উঠলেন,
আমাকে রাগালে কিন্তু খুব খারাপ হবে যেটা বলছি শুনো ,আমার সঙ্গে এক্ষুনি রুমে চলো,
উনার কথা শুনে আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল কি পেয়েছেটা কি এই লোক সবসময় শুধু জোর খাটানো
আমি তো আজ কিছুতেই উনার সাথে যাবো না,
আমি উনার রাগকে তোয়াক্কা না করে বললাম,
আমি কারো সাথে কোথাও যেতে পারবো না আমি এখানেই ঘুমাবো বলেই আমি ঘুমানোর জন্য খাটে উঠতে যাবো তখনই কাব্য ভাইয়া এসে আমাকে পাজো কোলে তুলে নিলেন,
উনার এমন কান্ডে আমি হতবিহ্বল হয়ে পরলাম,তারপর চিৎকার করে বলতে লাগলাম ,ছাড়ো আমাকে আমি তোমার সাথে যাবো না ,আমি আপুর সাথে থাকবো,হাত পা ছুঁড়তে লাগলাম নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ,কিন্তু উনি কিছু না বলে আমাকে কোলে নিয়ে নির্লিপ্তভাবে হেঁটে যেতে লাগলেন ,উনার মুখের ভাব ভঙ্গি এমন যেন আমি উনার নিজের সম্পত্তি ,আর আপু নিরব দর্শকের মতো তাকিয়ে রইলেন আমাদের দিকে।
,
.
কাব্য ভাইয়া আমাকে উনার রুমে নিয়ে এলেন আমি তখনও মৃদু চিৎকার করছিলাম আমাকে ছাড়ার জন্য,
রুমে এসেই উনি আমাকে একটা ধমক দিলেন,
চিৎকার থামাও না হলে এক্ষুনি কোল থেকে ফেলে দিবো,
উনার ধমক শুনে আমি নিস্তব্ধ হয়ে গেলাম,
মুখ বন্ধ করে তাকালাম চারিদিকে তাকিয়ে আমি অবাক,
উনি আমাকে নিয়ে খাটে বসিয়ে দিলেন,তারপর উনি গিয়ে দরজাটা লাগিয়ে দিলেন,
উনার দরজা লাগানো দেখে ভয়ে আমার সমস্ত শরীর কাঁপতে লাগল ,
উনি একটা শয়তানি হাসি দিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলেন ।(চলবে)

প্রিয় অভিমান পর্ব ৯

0

#প্রিয়_অভিমান

পার্ট : ৯

লেখা : নিশাত সিদ্দিকা

.
সন্ধ্যা হয়ে গেছে আমি ফ্রেশ হয়ে একটা ব্লু কালারের জামদানী শাড়ী পরে আপু রুমে বসে রইলাম,শাড়ী টারি পরার কোনো ইচ্ছাই ছিল না কিন্তু আপুর নির্দেশে পরতে হলো ।
বসে বসে ভাবছি মা আসলে আজই আমি মায়ের সাথে এখান থেকে চলে যাবো কিছুতেই এখানে থাকবো না।
এত বড় মিথ্যেবাদী শুধু মিথ্যেবাদী নয় মহা মিথ্যাবাদী লোকের সাথে আমি কিছুতেই থাকবো না।
মানুষ এতোটা খারাপ হতে পারে সেটা উনাকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না।
নিজের বোকামীর জন্য এইভাবে ফেঁসে যাবো বুঝতেই পারিনি ভীষন রাগ লাগছে নিজের উপর ।কি থেকে কি ঘটে গেল আমার জীবনে।মাকে কিভাবে সব সত্যি কথা বুঝাবো সেটাই ভাবতে লাগলাম,মা নিশ্চই আমার কথা বিশ্বাস করবেন।
হঠাৎ দরজা লাগানোর শব্দে আমার সম্মতি ফিরল,
সামনে তাকাতেই দেখি কাব্য ভাইয়া দরজা লাগিয়ে বাঁকা হেসে আমার দিকে এগোচ্ছেন,
উনার পরনে ছাই রংয়ে টাউজার আর ব্লু রংয়ে টি শার্ট চুলো গুলো ভেজা কিছু কপালের সাথে লেপ্টে আছে,বোধহয় এই মাএ গোসল করে এসেছেন।
উনাকে এভাবে এগোতে দেখে ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল,
এই পাজি অসভ্য ছেলেটা এখানে কি চায় ,একি আমায় একটুও শান্তি দেবে না।
এর সাথে দেখা হবার পর থেকে আমার জীবনে শান্তি নামক জিনিসটা ডিলিট হয়ে গেছে।
এখন আবার কি করবে কে জানে এই ছেলেকে একদম বিশ্বাস নেই।এর প্রতিটা কাজে আমাকে ফাঁসানোর প্লান থাকে।নিশ্চই কোনো কুমতলবে এসেছে।
আমি উনার দিকে ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে একটা শুকনো ঢোক গিলে বলে উঠলাম,
দরজা বন্ধ করলে কেন ?আর তুমি এখানে কেন এসেছো এক্ষুনি বেরিয়ে যাও,
উনি আমার কাছে এসে বসে বলে উঠলেন,
বারে দরজা বন্ধ করবো না স্বামী স্ত্রী মাঝে প্রাইবেসি বলে একটা ব্যাপার আছে না , আর আমি আসবো না তো কে আসবে সদ্য নতুন বিয়ে করেছি বৌকে ছাড়া কি করে থাকি ,
ভীষন মিস করছিলাম তোমাকে,
তুমিও নিশ্চই আমাকে মিস করছিলে তাই না ,দেরি করে এসেছি বলে রাগ করে বের করে দিচ্ছো,বলেই আমার দিকে তাকিয়ে চোঁখ মারলেন,তারপর হাত দিয়ে চুল
ঠিক করতে করতে আবার বলে উঠলেন ,ইশ! কি অভিমানী আমার বৌ টা,এজন্য তো এত্তগুলা ভালবাসি,
ব্লু শাড়িতে তোমায় কি মিষ্টি দেখাচ্ছে একদম পার্ফেক্ট নতুন বৌ,আজকের পর থেকে তুমি বাড়ি সবসময় শাড়ী পরে থাকবে কিন্তু বাইরে বেরোলে কখনই শাড়ী পরে যাবে না,কথাটা যেন মাথায় থাকে ।বলেই আমার আরো কাছে চলে আসলেন ,
উনি আমার কাছে আসায় আমি পিছন দিকে পিছিয়ে একটু সরে বসলাম,আমার কান্ড দেখে উনি মিটমিটিয়ে হাসতে লাগলেন ,
উনার হাসি আর উনার বলা কথাগুলো শুনে রাগে আমার সমস্ত কাঁপতে লাগল,
তাকে আমি দুই চোঁখে সহ্য করতে পারিনা আর সে বলে কিনা তাকে আমি মিস করছিলাম,আর মামার বাড়ীর আবদার সবসময় শাড়ী পরে থাকবে ,আমাকে হুকুম করা হচ্ছে ,রাগে মন চাইছিল উানার সিল্কি চুলগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেই চুলগুলোর সাথে সাথে শয়তানের কারখানায়টাও পুরে ছাই হয়ে যাক,
আমি রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে বলে উঠালাম,
তুমি এমটা কেন করলে নিজে আমাকে ফাঁসিয়ে বিয়ে করে আবার সব দোষ আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিলে,
আমাকে বোকা বানিয়ে সব এমন ভাবে সাজালে এখন সবাইকে সব সত্যিটা বলেও কাউকে কিছু বিশ্বাস করাতে পারছি না,
তুমি খুব খারাপ,তুমি খুব খারাপ একজন মানুষ ,
কিছুতেই আমি তোমার সাথে থাকবো না মা আসলেই আমি মায়ের সাথে এখান থেকে চলে যাবো।
আমার কথাগুলো শুনে কাব্য ভাইয়া একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বলে উঠলেন,
তোমার ফ্যামেলি যদি সত্যি জানে যে আমি তোমাকে জোর করে বিয়ে করেছি তাহলে তারা কখনই এই বিয়ে মেনে নিবে না,আর তোমাকে আমার সাথে থাকতে দিবে না।তার জন্যই তো এতোটা নাটক করতে হলো,তুমি কি জানো সুহাপাখি এই বিয়ের প্লানিং করতে আমার কতটা কষ্ট হয়েছে আমার কত বুদ্ধি খরচ করতে হয়েছে।
কাল সারা রাত জেগে জেগে এই প্লানিংগুলো করেছি।একটুও ঘুমাই নি ।এন্ড ফাইনাললি আম সাকসেসফুল ।
আর তুমি কিনা বলছো আমাকে ছেড়ে চলে যাবে,
আমার শাশুড়ী মা তোমাকে সাথে নিয়ে গেলে তো তুমি যাবো,তোমার চলে যাওয়ার কোনো পথই আমি খোলা রাখবো না,
বলেই উনি আমার কোলে মাথা রেখে ,আমার কোমড় শক্ত করে ধরে পেটে মুখ গুঁজে দিলেন,উনার আচমকা এমন কান্ডে আমার চোঁখ কপালে উঠে গেল ,উনি আস্তে আস্তে আমার পেট থেকে শাড়ী সরাতে লাগলেন আমি উনাকে বাঁধা দেওয়ার জন্য উনার হাত ধরতেই উনি একবার আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে উনার একটা হাত দিয়ে আমার হাত ধরে অন্য হাত দিয়ে শাড়ী সরিয়ে আমার উন্মুক্ত পেটে কিস করে বসলেন,সাথে সাথে আমার সমস্ত শরীর কাটা দিয়ে উঠলো ,পিটের শিড় দ্বারা বেয়ে এক শীতল স্রোত বয়ে গেল,হৃদপিন্ড ছুটলো ট্রেনের গতিতে,উনি আমার হাত ছাড়তেই আমি দু হাত দিয়ে উনাকে ধাক্কাতে লাগলাম,উনাকে যতই আমি ছাড়াবার চেষ্টা করছি ততই উনি আমাকে আরে শক্ত করে ধরতে লাগলেন ,
কিছুক্ষন পর উনি আমার পেট ছেড়ে দিয়ে গলায় মুখ গুঁজলেন,
উনার দু হাত এলোমেলো ভাবে আমার সমস্ত শরীরে বয়ে বেরাতে লাগলো,উনার এমন কান্ডে
আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হলো,আমি চোঁখ বন্ধ করে বড় বড় নি:শ্বাস নিতে লাগলাম ,আর প্রানপণে চেষ্টা করতে লাগলাম উানাকে ছাড়ানোর ,
কিন্তু উনাকে কিছুতে সরাতে পারছিনা,আমি যতই উনাকে সরাবার চেষ্টা করছি উনি ততই আরো শক্ত করে আমাকে আকড়ে ধরতে লাগলেন,
হঠাৎ দরজায় নক হওয়ার শব্দে কাব্য ভাইয়া আমাকে ছেড়ে দাঁড়িয়ে গেলেন , উনি আমাকে ছাড়তেই যেন আমি দেহে প্রান ফিরে ফেলাম,
উনি হাত দিয়ে চুল ঠিক করতে করতে দরজা খুলতে চলে গেলেন,
আমি দড়ফড়ি উঠে অপ্রস্তুত অবস্তায় শাড়ী ঠিক করতে লাগলাম ।
কিন্তু আমি সম্পূর্ন ঠিক হওয়ার আগেই কাব্য ভাইয়া দরজা খুলে দিলেন,
আমি সামনে তাকিয়ে দেখি দরজার ওপারে মা দাড়িয়ে আছেন,
আমি এলোমেলো চুল আর এলোমেলো শাড়ী নিয়ে এক লজ্জাজনক অবস্তায় পরলাম মায়ের সামনে,
অপ্রস্তুত ভাবে সব কিছু ঠিক করতে লাগলাম ,কোনো মতে নিজেকে সামলিয়ে কাব্য ভাইয়ার দিকে আড় চোখে তাকালাম ,
আমি তাকাতেই উনি একটা রহস্যময়ি হাসি দিয়ে বাইরে চলে গেলেন,
উনার এভাবে হাসার কোনো মানেই আমি বুঝতে পারলাম না,
কাব্য ভাইয়া বেরিয়ে যেতেই মা রুমে ঢুকলেন,
মায়ের সামনে এমন অপ্রীতিকর অবস্থায় পরে আমি লজ্জায় ভয়ে ঘামতে লাগলাম,যা যা ভেবে রেখেছিলাম মাকে বলবো সব কিছু গুলিয়ে গেল,কি থেকে কি বলবো ভেবে পরাচ্ছিলাম না ,এমন একটা অবস্থায় দেখার পর মা আদো আমার কথা বিশ্বাস করবেন কি না কে জানে,কোথা থেকে কি শুরু করবো বুঝতে পারছিলাম না,
আমি কিছু না বলে মায়ের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম।(চলবে )

প্রিয় অভিমান পর্ব ৮

0

#প্রিয়_অভিমান

পার্ট : ৮

লেখা : নিশাত সিদ্দিকা

.
কাব্য ভাইয়া আপু আর আন্টির দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলেন,
আমি আর সুহা একে অপরকে ভালবাসি ,
অনেক দিন ধরে আমাদের রিলেশন । ভেবেছিলাম কিছুদিন পর সবাইকে সবটা জানাবো এবং সবার মত নিয়ে আমরা বিয়ে করবো।
কিন্তু সুহার বাসায় বিয়ের কথা চলছে এটা শুনে ও ভীষন ভয় পেয়ে গেছে ওর ধারনা আমাদের রিলেশন আমাদের দুই পরিবারের কেউ মেনে নিবে না।
কাল এখানে আসার পর থেকে আমার কাছে এসে শুধু কান্না করছে ও না কি আমাকে ছাড়া বাঁচবে না ,
অন্য কোথাও বিয়ে করতে পারবে না।
তোমরা তো জানো ও একটু ভীতু সবাইকে সবটা বলতে ওর ভয় করছে।
আমি বলেছিলাম আমি সবার সাথে কথা বলবো সেটা শুনে ও ভয়ে আরো কান্না করতে লাগল,
আমাকে মানা করতে লাগল যাতে সবাইকে কিছু না বলি,
আমিও ওকে অনেক ভালবাসি ওর কান্না আমি একদম সহ্য করতে পারিনি, তাই বাধ্য হয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে ওকে বিয়ে করে ফেলেছি,
এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো বলে কাব্য ভাইয়া থামলে ,
আমি এতক্ষন অবাক হয়ে কাব্য ভাইয়ার কথা গুলো শুনছিলাম ,আমার কান্না থেমে গেছে অনেকক্ষন আগে সেখানে জন্ম নিয়েছে একরাশ বিস্ময় ,আমার মাথা হ্যাং হয়ে আছে সব শুনে, কি সব বলছেন উনি আমাদের বাসায় আমার বিয়ের কথা চলছে অথচ আমি জানি না ,
এই বিষয়ে কেউ আমার সাথে কোনো কথা বলে নি,
উনার সাথে নাকি আমার রিলেশন ছিল,আমি নাকি উনাকে ছাড়া বাঁচবো না ,কত বড় মিথ্যা কথা।
নিজে অপরাধ করে সব দোষ আমার ঘারে চাপিয়ে
দিচ্ছেন।
কি সাবলিল ভাষায় এতো গুলো মিথ্যে কথা বলে গেলেন,
যে কেউ উনার এই ভাবে সুন্দর করে গুছিয়ে বলা মিথ্যে কথাগুলোকে চোঁখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে নিবে।
উনার কথা শুনে আন্টি কিছু বললেন না অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন আমাদের দুজনের দিকে।
আপু আমার কাছে এসে বলতে লাগলেন,
সুহা আমরা তোর কাছে এতটা পর হয়ে গেলাম,
আমরা তো শুধু তোর বিয়ের ব্যাপারে কথা বলছিলাম তুই যখন ভাইয়াকে পছন্দ করিস তাহলে আমাদের একবার বলে দেখতি আমরা কি করি।
এত দিনে তুই আমাদের এই চিনেছিস আমরা কি তোর মতে বিরোদ্ধে গিয়ে জোর করে তোর বিয়ে দিয়ে দিতাম,
আপু কথাগুলো শুনে আমি কান্না করতে লাগলাম কাব্য ভাইয়ার বলা মিথ্যে কথার জন্য আপু আমায় ভুল বুঝছেন তাহলে তো মা ও আমায় ভুল বুঝে ভীষন কষ্ট পাবেন,
আপুকে সব সত্যি কথা বলতে হবে ,আমি কেঁদে কেঁদে আপুকে বলতে লাগলাম,
আপু আমি কিছু করিনি,এই বিয়ে আমি করতে চাইনি, কাব্য ভাইয়া আমাকে জোর করে এই কথার মাঝে কাব্য ভাইয়া আমাকে থামিয়ে দিয়ে উনি করুন মুখ বানিয়ে বলতে লাগলেন,
ছি! সুহা ভয় পেয়ে এখন সব দোষ আমায় দিয়ে দিচ্ছো ,তুমি যদি না চাইতে তাহলে কি আমি তোমায় বিয়ে করতে পারতাম,
তুমিই বলো ভাবী কাউকে এই ভাবে এতো সুন্দর করে বিয়ের সাঁজে সাঁজিয়ে জোর করে বিয়ে করা যায়,যদি তার নিজের মত না থাকে।
কাব্য ভাইয়া কথা শুনে আপু আমাকে ধমক দিয়ে বলে উঠলেন,
এ সব কি হচ্ছে সুহা অপরাধ করেছিস আবার মিথ্যে কথা বলছিস ।বিয়ে করার আগে তো ভয়ে সত্যিটা বলতে পারিস নি , এখনও কেন বলতে পারছিস না, এখন কিসের ভয় পাচ্ছিস।
এভাবে সেঁজেগুজে বিয়ে করতে ভয় করেনি আর সেটা বলতে ভয় করছে।
আপুর ধমক শুনে আমার কান্নার বেগ আরো বেড়ে গেলো ,সত্যি তো আমার এভাবে সাঁজগুজ দেখে কেউই বিশ্বাস করবে না যে আমাকে জোর করে বিয়ে করা হয়েছে,
আমি আর কিছুই খুঁজে পেলাম না বলার ,চুপচাপ মাথা নিচু করে দাড়িয়ে অশ্রু বিসর্জন দিতে লাগলাম।
আপু আমাকে বকছেন দেখে আন্টি গম্ভীর কন্ঠে আপুকে বলে উঠলেন ,
বড় বৌ মা ওকে এভাবে বকছো কেনো যা হবার তা তো হয়ে গেছে , দেখো না ওকে কেমন নার্ভাস দেখাচ্ছে ভয় পেয়ে হয়তো এমন বলছে ,তুমি সুহাকে তোমার রুমে নিয়ে যাও ।আমি বেয়াইনকে ফোন দিচ্ছি আমাদের এখানে আসার জন্য তারপর এ বিষয় নিয়ে কথা হবে।
তুমি একটু এ দিকে এসো কথা আছে, বলে আন্টি আপুকে নিয়ে একটু দূরে সরে গিয়ে কি যেন কথা বলতে লাগলেন ,
আমি একা কাব্য ভাইয়ার পাশে জড়েসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম,ভীষন ভয় লাগছে মাকে কি বলবো আর সবটা শুনে মা কি রিয়েক্ট করবেন সেটা ভেবে।
আমি কাব্য ভাইয়ার দিকে তাকালাম ,আমি তাকাতেই উনি চোঁখ মারলেন যেটা দেখে আমার মাথায় আগুন ধরে গেল রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম,
আমার এভাবে তাকানো দেখে কাব্য ভাইয়া শয়তানি হাসি হেসে আমার কাছে এসে ঝুকে ফিসফিসিয়ে বলতে লাগলেন,
ওগো শুনছো সোনাবউ আমার ,যাও বাসর রাতের জন্য গিয়ে রেডি হও ,আজ তো আমাদের বাসর রাত ।আর এভাবে রাগি লুক দিয় না প্লিজ !!তুমি কি জানো তোমার এভাবে তাকানো সরাসরি গিয়ে আমার কলিজায় লাগে ইচ্ছে করে তোমায় খেয়ে ফেলি।
এভাবে পাগল বানিয়ে দিও না আমাকে তা নাহলে কিন্তু আমি রাত পর্যন্ত ওয়েট করতে পারবো না।
উনার এসব অসভ্য কথা বর্তা শুনে রাগে আমার মন চাইছিল উনার মাথায় বোমা মেরে উনাকে পৃথিবী থেকে উরিয়ে দেই ,
আমি রাগি রাগি কন্ঠ নিয়ে উনাকে ফিসফিসিয়্ বলতে লাগলাম ,
আজ তুমি যা করলে তার জন্য আমি তোমাকে কখনই ক্ষমা করবো না ,
আমার কথা শুনে কাব্য ভাইয়া বাঁকা হেসে বলে উঠলেন,
আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি না কি ,যে তুমি আমাকে ক্ষমা করবে কি না করবে সেটা ভাবছো।স্বামী স্ত্রীর মাঝে ক্ষমা টমা আসলো কি করে আমাদের মাঝে তো শুধু থাকবে ভালোবাসা বাসি অনলি ফুল রোমান্স ।
উনার এমন কথা শুনে বুঝতে পারলাম এই ইতর লোকটা জীবনে ও
ঠিক হবে না।আমার সিরিয়ার কথার মাঝে ও তার অসভ্য কথাগুলো ঢুকিয়ে দিয়েছে।
আপু আমাদের দিকে এগিয়ে আসছেন দেখে কাব্য ভাইয়া সোজা হয়ে দাঁড়ালেন,
আপু এসে বলতে লাগলেন সারারাত পরে আছে বরের সাথে কথা বলার জন্য এখন চল ফ্রেশ হবি।
আর এই যে বর সাহেব আপনিও যান গিয়ে ফ্রেশ হোন গিয়ে ।
আপুর কথা শুনে কাব্য ভাইয়া হেসে মাথা নাড়লেন।
আপু আমাকে উনার সঙ্গে যাবার কথা বলে যেই ঘুরলেন অমনি কাব্য ভাইয়া আমার কাছে এসে আমার গালে কিস করে বসলেন।
উনার এমন কান্ডে আমি জমে ফ্রিজড হয়ে গেলাম।
(চলবে)