Tuesday, July 15, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1911



psycho_is_Back? season _2 part 4

0

psycho_is_Back?
season _2
part 4
#apis_indica

——ঠাসসসসসসস!!
কোন এক খামবার সাথে বেজে নিচে পরে গেলাম।।সাথে সাথে চেচিয়ে বলে উঠলাম,,
——কোন গাচ্ছা ইন্দুররে……!!!
বলে সামনে তাকাতেই ভয়ে চুপসে গেলাম।।কারণ সামনে আর কেউ না সাইকো দাড়িয়ে।।তাউ আবার রাগে কটমট করে তার বিলাই চোখের সাদা খানি লাল লাল করে মারবেলের মতো গোল গোল করে তাকিয়ে আছে।।এই বুঝি টুপ করে পানি ছাড়া গিলে ফেলবেন।।
আমি ভয়ে ভয়ে ঢোক গিললাম আর বললাম,,
—-সরি ভাইয়া আমি আপনাকে দেখিনি।।
উনি আমার কথার উপেক্ষা করে দাঁতে দাঁত চাপে বলতে লাগে,,
—–ছেলেটি কে ছিল???
আমি আমতা আমতা করে বললাম,,
—-ভাইয়া উনি আমাদের স্কুলে পরেন সিনিয়র।।
তিনি আমার দিকে আরো দু কদম গিয়ে বলে উঠেন,,
—- কি কথা বলছিলি??
—–উনি আমার বার্থডে উইশ করছিল…!!
—–বাহ্!! পাড়ার সবাই জানে কুহু রানির বার্থ ডের কথা হুম!!!
আমি কিছু বললাম না পাশ কাটিয়ে চলে আসতে নেই তখনি তিনি আমার বাহুতে চেপে ধরে তার বরাবর দাড় করায়।। তার এমন ভাবে আমার বাহুতে চেপে ধরায় বেথ্যা কুকিয়ে উঠলাম।।সাথে সাথে চোখ দিয়ে দু ফোঁটা পানি পড়ে গেল।।তিনি এসব কিছুর গুরুত্ব না দিয়ে আমার দিক ঝুকে শাসিয়ে বলতে লাগে,,
—–আর যেন কোন ছেলের সাথে কথা বলতে তো দূর কাছে ঘেসতে না দেখি….!! তাহলে জানে মেরে ফেলবো তোকে…!! আর তারপর নিজে মরে যাবো।।
আমি উনার কথা শুনে থম মেরে রইলাম।।
সাথে সাথে উনা চোখের দিকে তাকালাম।।আজ তার সুন্দর চোখ জোড়ায় হিংস্রতা দেখতে পাচ্ছি।। তারপর তিনি আমাকে হালকা ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে আঙ্গুল উঁচু করে নাড়াতে নাড়াতে বললেন,,
—–মাইন্ড ইট…!!তারপর চলে গেলেন।।
আমি এখনো তার যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলাম।।কিছুক্ষণ আগে যে হাতে টানটান ব্যথা অনুভব হচ্ছিলো।। তা যেন এখন টেরি পাচ্ছি না।।হয়ত তার এমন ব্যবহার মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে আমার।।
আমিও দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে, নিচে চলে আসলাম।।

নিচে এসে আরেক দফা শক্ড দেখাম।।
মুনতানিছা আপি বলে এক চিৎকার করে জড়িয়ে ধরলাম তাকে।।তিনি হচ্ছেন বড় মামা মানে মিরাজ মামার মেয়ে তারা দুই ভাই বোন।। তার ফ্যামিলিরা ওয়ার্ল্ড ট্যুর গেছিলেন।।আজ ১ মাস পর তার দেখা পেলাম।।উনি গুনে গুনে আমার ২ বছরের বড়।। কিন্তু আমাদের বন্ডিং অনেক ভালো।।মুনতানিশা আপু আমাকে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলেন,,
—–কেমন আছিস পিচ্চি??
—–ভাল আছি তুমি?? আল্লাহ আপি তুমি চুল কালার করসো??
—–ভাল আছি।।হুম করছি সুন্দর লাগতেছেনা??
—–হুম খুব সুন্দর লাগতেসে তোমারে বার্বি ডল মনে হইতেছে।।
মুনতানিশা আপি আমার গাল টেনে বলল,,
—–তাই!! তুই করবি???
আমিও খুশিতে গদ গদ হয়ে বলে উঠলাম,,
——হুম করবো।।
তখনি পিছন থেকে কেউ আমার চোখে হাত দিয়ে ঢেকে ফেলে।।আমি আরো জোরে চেচিয়ে বলি,,
—–বড় ভাইয়া….!!
রাহুল বলল,,
——বাহ ভুলিসনি তাহলে হুম!!
আমি তাকে জড়িয়ে ধরে বলি,,
—–তোমাকে কেমনে ভুলবো ভাইয়া।।তা আমার জন্য কি এনেছো??
রাহুল কুহুর দিক একটি লাগেজ এগিয়ে দিয়ে বলতে লাগে,,
—–এটা তোর।।
—–ধন্যবাদ ভাইয়া এতগুলো।।বড় ভাইয়া মাথায় হাত বুলিয়ে চলে গেলেন।।
আমি বড় মামা, বড় মামীর সাথে কথা বলে নিলাম।।আমার ছোট পরিবারে একজন ছাড়া সবাই অনেক ভালবাসে।।আর সে হচ্ছে এক মাত্র ইউসুফ ভাইয়া।।হুহ।।

পরেদিন সকালে,,
খাবার টেবিল সবাই উপস্থিত তখনি কথার ছলে বলে ফেলি বড় মামী, ছোট মামী,,আর নানুমাকে উদ্দেশ্য করে।।
——আমি চুল কালার করবো মুনতানিশা আপুর মতো।।
বড় মামী বলল,,
——কবে করতে চাস আম্মু??
আমি মুখের মাঝে হাসি নিয়ে বলতে লাগি,,
—–আজকেই…!!
ছোট মামী অর্থাৎ ইউসুফের মা বলল,,
—–ঠিক আছে তাহলে আজি করে নিস।।
তখনি পিছন থেকে ইউসুফ খেকিয়ে বলে উঠে,,
—- খবরদার যদি চুলে কালার করিস তাহলে চুল আর একটাও থাকবে না তোর মাথায়।।

আমি আহত চোখে তাদের দিক তাকাতেই বড় ভাইয়া বলল,,
—–ইউসুফ এসব কি কথা?? ছোট মানুষ চাইছে বাঁধা কেন দিচ্ছিস।।
ইউসুফ গম্ভীর ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
——আমি যা বলেছি এটাই ওর মানতে হবে আদারওয়াইজ এদিকে সেদিক হলে আই উইল ডো ওয়াট আই হ্যাভ সেইড।।বলে খাবার টেবিল ছেড়ে উঠে চলে গেল।।

আর আমি কেঁধে দিলাম।।সেদিন দিনটি ামার কাঁদতে কাঁদতে গেল।।এই সাইকো আসার পর থেকে আমার সব কেড়ে নিচ্ছে।।আমার ইচ্ছের দাম দিচ্ছেই না।।
সেদিন রাতে ভাত না খেয়ে অনশনে বসলাম।। কেউ দেখে সেদিন আমাকে ভাত খাওয়াতে ব্যর্থ হয়েছেন।। তখনি রুমে ঢুকে ইউসুফ।। তাকে দেখি আমার কাপাকাপি শুরু।। কারণ তিনি আমাকে একটু ভিলেন মার্কা লোক দিলেন।। তারপর বলতে লাগেন,,
—–কিরে খাবি না কেন??
—–আমার ইচ্ছে।।
—–তোর ইচ্ছে তো জানতে চাইনি।।নে খেয়ে নে বলে ভাত মাখিয়ে মুখের সামনে তুলে ধরলেন।। আমি মুখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে তাকালাম।।নাহ আর যাই হোক এই বজ্জাত হাত থেকে খাব না।। তিনি এবার রাগ নিয়ে বললেন,,
—–ভালোই ভালোই বলছি খেয়ে নে না হিতে বিপরীত হবে।।
তাও আমি পাত্তা দিলাম না।। তিনি এবার আমার গাল চেপে খাবারটা মুখে পুরে দিলেন।।যেই কাবার টা মুখ থেকে ফেলে দিতে নিলাম ওমনি উনি এক বাজখাই ধমক মারলেন।। সাথে সাথে আমি ভয়ে আতকে উঠলাম।। তারপর বললেন,,
—–একটা ভাতও যদি মুখ থেকে বের হয়।। তাহলে তোকে পাবলিক টয়লেটে নিয়ে আটকে রাখব।।
টয়লেটের কথা শুনে আমার বমি আসতে লাগলো।। তারপরও নিজেকে সংযোগ রেখে খাবারটা খেয়ে নিলাম।। খাবার শেষে তিনি আমার মুখ মুছে বলতে লাগলেন।।
—-বাবুই পাখি দেখ আমি তোকে কিছু বলছি,, তোর চুল গুলো আমার খুব ভাল লাগে।। তাই এটাতে কিছু করার ট্রাই করিস না।।জানিস তো আমি একরোখা মানুষ।। সত্যই তোর চুল আর থাকবে না।।
তারপর উনি আমার সামনে পরে থাকা কাঁটা চুল গুলো কানের পিছনে গুজে দিয়ে বলতে লাগে,,
—–তোর এই কালো কুচকুচে চুল গুলোর উপর আমি খুব দুর্বল রে।। তুই জানিস তোর এই চুলের জন্য তোকে কতটা, কিউট, মায়বী, এন্ড….!!
তিনি আমার কাছে কিছুটা ঝুকে কানের কাছে এসে স্লো ভয়েসে বলল,,হট লাগে??
আমি সাথে সাথে বিষম খেয়ে উঠলাম।। আর তার দিক বড় বড় চোখ করে থাকালাম।।তার একথায় আমার হার্ট বিট করতে লাগল জোরে জোরে।। এ বুঝি লাফবয়ে বেরিয়ে গেল।। তিনি আমার এই অবস্থা দেখে মুচকি হেসে রুম থেকে চলে গেলেন।। আমি তখন তেমনি বসে রইলাম দম আটকে আসচ্ছিল মনে হচ্ছিল।।

পরেদিন সকালে,,
মুনতানিশা আপু আর আমি জয়নাল আবেদিন পার্কে গেলাম ফুচকা খেতে সানন্দার।। ময়মনসিংহের বেস্ট ফুচকা হচ্ছে সানন্দার ফুচকা।। আপু দেশে ছিল যখন তখন প্রতিদিন আসতাম আমরা ফুচকা খেতে।। আপু ঘুরতে যাওয়ার সময় আর আসা হয়নি কখনো।। আজ এক মাস পর ফুচকা খেতে এসেছি।। সাথে সাথে পাঁচ প্লেট ফুচকার অর্ডার দিয়ে দিলাম দুজনে।। এখানে টকদই এত ইয়াম্মী।।ঈদের দিন আসলে সিরিয়াল দিয়ে বসতে হয় এত ফেমাস।।মামা ামাদের এত দিন পর দেখে জিগাসা করলেন,,
—–এত দিন কই ছিলেন মামারা??
—–মামা আপি ছিল না বসায়।।আর আপি কে ছাড়া আমাকে একা ছাড়বে না তাই আসতে পারিনি।।
মুনতানিশা আপি বলতে লাগে,,
এইজন্যই তো গত এক বছরে ফুচকা আজকে সবার করে দিবো আমরা দুজনে।। বলে হাসতে লাগলাম আমরা।।
পুচকা শেষে পার্কের ভিতর দোলনায় গিয়ে বসলাম দুজনে।। তারপর নানান কথাবার্তা বললাম।। আপু কোথায় কোথায় ঘুরেছে সব বলল।। সেখান থেকেই চুল কালার করে এসেছেন সেটাও বললো।। চুল কালার করার কথা শুনে হাসি মুখটা চুপসে গেল।।আপি বিঝতে পেরে বলল,,
—–কুহু তুই সত্যি কালার করবি??
আমি উপর-নিচ মাথা নাড়ালাম।।
আপু বলল,,
—–তাহলে চল দুর্গাবাড়ি!!
—–দুর্গাবাড়ি কেন?
—–দুর্গাবাড়ি ওমেন্স ওয়ার্ল্ড পার্লার থেকে করাবো তোর চুল কালার।।
আমি মন খারাপ করে বললাম,,,
—-ইউসুফ ভাইয়া জানতে পারলে আমার মাথা চুল একটাও থাকবে না আপু…!! জানেও মেরে ফেলতে পারে।।
—–ধুর পাগলি!! শুন একবার কালার করে ফেললে ছোট ভাইয়া কেন তার বাপ ও কিছু করতে পারবে না।।বলেই হেসে দিল।।
——কিন্তু??
——কোনো কিন্তু না চল। বলে টানতে টানতে গাড়িতে উঠালো।।তারপর ড্রাইভার চাচাকে বললো দুর্গাবাড়ি ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের সামনে নিয়ে যেতে।।

কিছুক্ষণ পর গাড়ি এসে পার্লারের সামনে থামে।।আমার আটটা ধড়াস ধড়াস করে শব্দ করছে পার্লারে গিয়ে।। আপু বুঝতে পেরে সাহস দিতে লাগলো।। যখন ভয় কম ছিলনা তখন ছোট মামি কে ফোন দিল।। ছোট মামী আমাকে অভয় দিয়ে বললেন তিনি সব সামলে নিবেন।। এবার মনে মনে সাহস নিয়ে করিয়ে ফেললাম।।
তিন ঘন্টা পর,,
নিজের চুল দেখে আমি নিজে ক্রাশ খাইলাম।।
আপু বলল,
—–কুহু তোকে ইরানি মেয়েদের মত লাগছে।।
পার্লারের আপু আমার খুব সুনাম করছিল।।
আমি খুশীতে লাফাতে লাগলাম।।
তারপর বিল পে করে আমরা বাসায় চলে আসলাম।।
বাসায় আসতেই সবাই আমাকে দেখে শক্ড। মামী বলল,,
——আল্লাহ আমার মেয়েকে যে পুতুল লাগছে আজ।।বলে কঁপালে চুমু এঁকে দিল।।
আমি খিলখিল করে হেসে দিলাম।।

তখনি পিছন থেকে রেগে ফুসফুস করতে বলে উঠে,,
—–মানা করেছিলাম না।।

আমি তাকে দেখি জ্ঞান হারিয়ে ফেলার অতিক্রম।। তখনি তিনি এসে আমাকে রুমে নিয়ে আটকে দিলেন।।

তার কিছুক্ষন পর,,,

—-ইউসুফ ভাইয়া প্লিজ আমার এতো বড় সর্বনাশ করবেন না।।

—–আগে মনে ছিল না?? না করেছিলাম না??

—–সরি ভাইয়া,, আর হবে না!! (কাঁদতে কাঁদতে বললাম পায়ে ধরে সাইকোর)

—-তাতো হচ্ছে নারে বাবুইপাখি?? দোষ যখন করেছিস শাস্তিতো পেতেই হবে তো!! এই কে আছিস এরে বানতো চেয়ারের সাথে।।

আমি আরো জোড়ে কাঁদতে কাঁদতে চেঁচিয়ে বললাম,,
—-মামী ও মামী আমাকে বাঁচাও!! তোমার বিদেশ পলাতোক সাইকো আমার চুলের বলি দিয়ে দিচ্ছে গো।।মামী ও মামী।।।

ইউসুফের সাঙ্গু পাঙ্গুরা আমার হাত বেঁধে দিলো চেয়ারের সাথে।।

বাহির থেকে মামা মামি দরজা ধাক্কাতে লাগলেন জোড়ে জোড়ে।।সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ না করে সাইকো এগিয়ে আসলো আমার দিকে।।আর আমার গাল চেঁপে ধরলো জোড়ে।।আর দাঁতে দাঁত পিশে বলতে লাগে,,

—-চুলে কালার করার সময় মনে ছিল না তোর?? বলেছিলাম না কালার না করতে?? শুনিশ নিতো এবার ভোগ কর।।বলেই তিনি কাকে যেন ইশারা করলেন,, সাথে সাথে ইয়া মোটা একটা লোক এসে হাজির,, হাতে তার কেঁচি,,।।

লোকটি এসেই গজ গজ করে আমার হাটু ওবদু সদ্য ব্রাউন কালার চুল গুল কেঁটে দিলো।।আমি ভ্যা করে কেঁদেই যাচ্ছি।।কিন্তু কোনো কাজ হলো না।।চুল ছোট ছোট কাটার পর ব্লেট দিয়ে ঘেজা ঘেজ আদিল করে দিল।।তারপর আয়না সামনে এনে ধরে বলল সাইকো,,

—–দেখ দেখ বাবুইপাখি তোকে আদিল মাথায় আরো হট লাগচ্ছে।।বলে হাসতে লাগলেন।।

আর আমি রাগে দুঃখে এক চিৎকার দিলাম শরীর সর্ব শক্তি দিয়ে।।সাথে সেখানের সবাই গায়েব।। ইউসুফ বাঁদে।।তিনি আমাকে এক রাম ধমক দিয়ে বলতে লাগে,,

—-নেক্সটাইম আমার কথার খেলাপ হবি,, তো এর থেকে করুন হাল করবো বলে রুমের দরজা খুলে বের হয়ে গেলেন তিনি।।।

আমি এখন আর পারলাম না মাটিতে পড়ে থাকা ইয়া লম্বা লম্বা বড় চুল গুলো আমার দেখে বুঁক ফেটে কান্না আসতে লাগলো।।মনে মনে যত বাজে গালি ছিল সব দিয়ে দিলাম।।

চলবে,,

psycho_is_back? season 2 part_3

0

psycho_is_back?
season 2
part_3
#writer_Apis_Indica?
ঘুমিয়ে আছে কুহু!
চুপিচুপি রুমে ঢুকে ইউসুফ।।হাতে তার একটি গিফট বক্স।।
ইউসুফ পা টিপে টিপে কুহুর বেডের কাছে বসল আর মাথা হাত বুলিয়ে দিতে লাগল।।
কুহু গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।।

ইউসুফ মুচকি হেসে বলতে লাগে,,
—-আমার ঘুম কাতর বাবুইপাখি!!

কঁপালে চুমু এঁঁকে দিল সে!!

আবার বলতে লাগে,,

—ছোট থেকেই তোর প্রতি দুর্বল ছিলাম।।তুই জানিস তোর বাচ্চামো গুলো কতটা ভালবাসি!! আমার পিচ্চি কুহু কবে বড় হবি তুই?? তাড়াতড়ি হয়ে যা।। তোর জন্য ওয়েট করছি যে আমি।। দেখ আজ ও প্রতিবারের মত সবার প্রথম তোর বার্থডে উইশ করছি।। হেপি বার্থ ডে কুহু।।
বলে আবার কপালে চুমু একে বের হয়ে যায় ইউসুফ রুম থেকে।।

নিজের রুমের বেলকনিতে চলে আসে সে।।
দূর আকাশের এক চিলতে চাঁদ দেখা যাচ্ছে।।
ইউসুফের কাছে মনে হচ্ছে চাঁদ তাকে দেখে হাসচ্ছে আর বলছে,,
—–কিরে পাগল ১৩ বছর বয়সী বাচ্চা মেয়ের মাঝে কি পেলি? যে এমন পাগল পাগল হয়ে উঠেছিস??

ইউসুফ হাসলো!!
কখন ভালবাসা হয়ে যায় বুঝার উপায় নেই।।কখন কার চোখে কে আঁটকে পড়ে সে কি কারো জানা..!! তেমনি তার হয়েছে…!!
তেমনি আটকে গেছিল তার মনে তার আট বছর বয়সে, ১ বছরের বাচ্চার উপর।।

ইউসুফ মৃদু কন্ঠে বলে উঠে,,
—– যে পাগল দিন দিন তুমি আমায় করে চলেছ বাবুই পাখি…এ পাগলের সুস্থ হওয়ার মেডিসিন ও তুমি।।

_____________♣
খাবার টেবিলে বসে আছে সবাই কুহু বাদে।।কারণ কুহু ঘুম…..!!!!

তখন ইউসুফের দাদু বলে উঠেন,,
——কদিন থাকবি??

ইউসুফ মুখে খাবার পুরে বলতে লাগে,,
——এইতো আর কিছুদিন দাদু।।

——তোর পড়াশুনা কত দূর বাকি?

——-এইতো তিন বছর।।

——-আরো তিন বছর দূর থাকতে হবে তোকে আমাদের থেকে?

——হে দাদু! তোত দিন আমার বাবুইপাখিকে দেখে রেখ!!নেক্সট যখন দেখে ফিরবো ওকে আমি বিয়ে করে নিজের করে নিব!!

তখন ইউসুফ বাবা বলতে লাগে,,
——আগে তুমি বড় হও!!

ইউসুফ বলল,,
—–আমি যথেষ্ট বড় বাবা,, ২১ বছর চলছে আমার।।আর তিন বছর পর আমি ওল রেডি ২৪ হবো।।এবং বিয়ের বয়সও হয়ে যাবে তখন।।

ইউসুফের মা বলল,,
—–তোর মতো বুড় ছেলের কাছে আমার মেয়েকে বিয়ে দেব না।।আর ও বড় হতে এখন অনেক দেড়ি!! তার উপর তার পছন্দর একটা বেপার সেপার আছে তো নাকি??

মায়ের কথায়, ইউসুফ কপাট রাগ দেখিয়ে হাতের সামনের গ্লাস চেপে ধরে ভেঙ্গে ফেলে সাথে সাথে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হতে লাগে যা দেখে সবাই ভয় পেয়ে যায়।।

তখন চিল্লিয়ে বলতে লাগে,,
—–কুহু শুধু আমার!! কেউ চাইলেও না চাইলেও।।সে কুহু নিজেই হোক না কেন।।
বলে সেখান থেকে চলে যায়।।
উপস্থিত সবাই হতভম্ব হয়ে গেল।।
আর তারা বুঝেও গেল আর যাই হোক ইউসুফ কুহুকে ছাড়বে না।।

ইউসুফের বাবা হতাশ দৃষ্টিতে চেয়ে বলে উঠেন তার স্ত্রীকে,
—–কেন এমন বলতে গেলে!!
ইউসুফের মা মিলা বললেন,,
—–আমিতো মজার ছলে বলে ছিলাম।।
____________

ঘুম থেকে চোখ ঢলতে ঢলতে উঠে বসি।।
মাথার কাছে গিফট দেখে খুশিতে লাফাতে লাগি।।
আজও ঘুম থেকে উঠে গিফট পেলাম।।প্রতিবার আমার বার্থডে তে এমন একটি গিফট পাই।।

গিফটি খুলে আমি হা হয়ে গেলাম।।সাথে সাথে দিলাম এক চিৎকার।।আমার চিৎকারে নানুমা, আর মামী দৌড়ে রুমে আসলেন আর বলতে লাগেন এক সাথে,,

——কি হয়েছে কুহু?

আমি খুশিতে নানুমা আর মামীকে জড়িয়ে ধরে থ্যাংকস বলতে লাগলাম একনাগাড়ে।।

মামী বলল,,
——থ্যাংকস কেন?? আর এত জোরে চিৎকার করলি কেন তুই??

মামী আর নানুমাকে গিফট বক্স দেখিয়ে বলতে লাগি,,
——আমাকে সিনড্রেলা ড্রেস গিফট করার জন্য।।

মামী আর নানুমা একে ওপরকে কিছু ইশারা করলেন।।
পরে মামী বলতে লাগেন,,
—–ওয়েলকাম বাচ্চা!! এখন রেডি হয়ে জলদি নিচে আসো।।শুভ জন্মদিন বাচ্চা।।

——-ধন্যবাদ মামী।।

——-হে রে বুড়ি ড্রেসটি আমাদের পরে দেখাবি না।। যা যা জলদি পরে নিচে।।

আমি খুশিতে গদগদ হয়ে ওয়াশরুমে দৌড় লাগাই।।

রেডি হয়ে নিচে নামতেই আমার ফ্রেন্ড ইনা, মিনা, টিনা, রিনাকে দেখে এক চিৎকারে গ্রুপ হাগ করলাম সবাই।।
তারা এক সাথে বলল,,
——হ্যাপি বার্থ ডে কুহু!!!!

সন্ধ্যায় বড় করে পার্টির আয়োজন করা হয়।।বড় একটি কেক আনা হয়।।তেকের মাঝে ১৪ টা মম দিয়ে সাজানো হয়।।মানে আজকে কুহুর ১৪ বছরে পা দিল।।
কুহুকে তার মামী সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছেন।।তার বড় চুল গুলো খুব সুন্দর সেট করে দিয়েছেন।।

দেখতে দেখতে কেক কাটার সময় হয়ে যায়।।
সবাইকে কেক খাওয়াই দিছি ইউসুফ ও সামনে হাজির হা করে বলল,,
——আমাকে ভুলে গেলি?? দে খাইয়ে দে….!!

আমি কোনো কিছু না ভেবে খাইয়ে দিতে নিলাম।।আর উনি হুট করে কেক সহ আমার আঙ্গুল তার মুখে পুরে নিল।।তার ঠোঁটে আমার আঙ্গুল স্পর্শ করতেই কারেন্টের শক্ড খেলাম মনে হল।।আমি সাথে সাথে বের করতে নিতেই তিনি আমার হালকা কামুড় বসিয়ে দিল।।আমি তো চোখ বড় বড় করে তার দিক তাকিয়ে।।তিনি আমার হাত ছেড়ে দিয়ে, তার সামনের চুল গুলো পিছে ঠেলে দিয়ে বললতে লাগে,,
—–নাইস টেষ্ট।।বলে মুচকি হাসতে হাসতে চলে গেলেন।।

কি হলো বুঝলামি হাত ধরে বসে রইলাম।।
_________
পরেরদিন বিকেলে গাছে পানি দিচ্ছিলাম।।
তখন পাশের ছাদ থেকে কেউ ডাকে।।

—–হাই কুহু!! হেপি বার্থ ডে!!
আমি পিছনে ফিরে দেখি রিয়াজ ভাইয়া।।উনি আমাদের স্কুলের ১০ শ্রেনীতে পরে।।এবং আমাদের স্কুলে ক্রাশ।।আমি হাসি মুখে বললাম,,
——ধন্যবাদ ভাইয়া।।
ভাইয়া ডাক কেন জানি রিয়াজ ভাইয়া শুনতে চান না।।কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পরেন তিনি।।তখন তাকে দেখতে সেই লাগে।।তাই আমি বার বার এমন করি,, হি হি।।
রিয়াজ বলল,,
—–কুহু আমাকে ভাইয়া না বললে হয় না??
——ভাইয়া না বললে কি বলব??
——নাম ধরে ডাকতে পার?
——না না ভাইয়া বড়দের নাম ধরে ডাকতে নেই।।ভাইয়া ডাক পছন্দ না হলে আমি আপনাকে চাচা ডাকতে পারি, মামা ডাকতে পারি??কোনটা ডাকবো??
রিয়াজ ছোট একটি শ্বাস ফেলে হতাশ ভঙ্গিতে বলতে লাগে,,
—–থাক কুহু ভাইয়াই ডেকো!!
বলে চলে গেলেন।।আর আমি হাসতে হাসতে শেষ।।বরাবরই তিনি এমন করেন।।তার কথাতে বুঝাতে চান।।
হি লাইকস মি!!! বাট আমি এত জলদি কারো কাছে ধরা দিচ্ছি না।।

হাসতে হাসতে যেই না পিছনে ফিরলাম,,,
—-ঠাসসসসসসসসসসসস!!!!!

চলবে!!

(ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন!!)

psycho_is_back? season 2 part 2

0

psycho_is_back?
season 2
part 2
#APIs Indica

ইউসুফ সোফার উপর আরাম করে বসে আছে।।তার হাতে আমার ফোন।।তার পাশেই মামা-মামী, নানুমা বসে আছেন।।আর আমি দু হাত মুচড়াই তেসি।।
আমার দিক তাকিয়ে ইউসুফ মুখ খুল্লো…!!

—–মা ওকে তোমরা এই বয়সে ফোন দিসো কেন?? মাত্রতো ক্লাস সেভেনে পড়ে??

মামী বললেন,,
—–ছোট মানুষ জিদ ধরছে তাই দিছি!!আর তাছাড়া সিম টিম তো দেই নাই।।আর শুধু ইউটিউবে কার্টুন দেখে আর গেমস খেলে।।কেন কি হইছে??

ইউসুফ বাঁকা হাসলো আমার দিকে তাকিয়ে পরে বলল,,
—–কিছু না!!

আমি সেই সুযোগে বললাম মামীকে,,
—–মামী প্লিজ দিতে বল না,, ফোনটা??

মামী বলল,,
—–কান্না করাস না তো দিয়ে দে!!

ইউসুফ আমাকে হাতে ইশারায় কাছে ডাকলো!!
আমি যেতেই বলল,,
—-পাসওয়ার্ড বল!!

আমি আমতা আমতা করে বললাম,,
—-পাসওয়ার্ড কেন??

ইউসুফ ফিসফিস করে বলল,,
—–বলবি নাকি সব বলে দেব??

আমি বললাম,,
—–দিমুনা!!

তিনি আবার বললেন,,
—-পাসওয়ার্ড দে না হলে তোর খবর আছে।।

আমি আবার বললাম,,
—-দিমুনা বললাম তো!!

উনি এবার ধমকে উঠলেন,,
—–মারবো এক চড় চাপার দাঁত যে কয়টা না পড়ছে সব পড়ে যাবে।।

আমি কাঁদো কাঁদো হয়ে বললাম,,,
—–কল দিতাছি পাসওয়ার্ড দিমু না।।

তিনি এবার চেঁচিয়ে বলতে লাগেন,,
—–তোর সাহস তো কম না,, তুই আমার মুখের উপর কথা বলিস!!! যা তুই আর ফোন পাবি না।।

আমি এবার হিচকি তুলে কেঁদে বললাম,,,
—–পাসওয়ার্ড আমি বলছি দিবেন না কেন?? আমার ফোন দেন!!!

তিনি তার ভ্রু কুঁচকে বললেন,,
—–কখন বললি?? কখন থেকেই এক কথাই জপিতেছিস দিমুনা দিমুনা!! পাসওয়ার্ড কখন বললি।।

আমি এবার কান্না থামিয়ে বললাম,,
—-পাসওয়ার্ড হচ্ছে দিমুনা।।

এবার ইউসুফ থম মেরে বসে বললো সোফায়।।আর ড্যাব ড্যাব করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।।তার তাকানো দেখে ভয় করছে তাই দৌড়ে পালালাম।।

কিছুক্ষণ পর,,
কেউ আমার ঘরের দরজায় নক করল।। খুলতে ইউসুফ ঘরে ঢুকে বলল,,
—–এই নে তোর ফোন।।
বলে গট গট করে বেরিয়ে গেল।।

ফোন হাতে নিতেই আমার চোখ কঁপালে।। আমার ফোনের সিম নাই।। আমি দৌড়ে তার ঘরে গেলাম।।তিনি তয়লা কাঁধে ওয়াশরুমে ঢুকছিল।। আমাকে দেখিয়ে থামল।।

আর বলল,,
—-কিছু বলবি??

আমি মাথা নাড়ালাম।।

তিনি বললেন,,
—দুই মিনিট সময় দিচ্ছি যা বলার বলে ফেলো।।

আমি কোন ভনিতা না করে ডাইরেক্ট জিজ্ঞেস করলাম,,
— আমার সিম কই??

তিনি বললেন,,
—-মা না বলল তোর ফোনে সিম নেই!!

আমি আমতা আমতা করে বললাম,,
—-দেখুন ওটা আমার ২ মাসের টিফিনের টাকা জমানোর পর কিনা সিম…!!! প্লিজ দিয়ে দেন??

তিনি বুকের মাঝে দুই হাত বেঁধে বললেন,,,
—–সিম কেন চাই তোর?? আবার কারো সাথে টাংকি মারতে আব্বা বলে ডাকি!! তোর কললিস্টে ক্রাশ তো অভাব নাই!! সব কিছু কপি মাইরা রাখছি আমার কাছে।। এখন বলছেন লাগবো তাহলে আমি মাকে বলি।।

আমি রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চলে আসলাম??।। এখন বেশী কিছু বললে হিতে বিপরীত হবে।। দেখা যাবে আমার শখের ফোনটাও হাত ছাড়া হবে।।??

রুমে এসে ফোনের লক খুলে ওয়াইফাই কানেক্ট দিয়ে ফেসবুকে ঢুকতে নিলাম ,, একি বেটা সাইকো, আমার ফেইসবুক, টিউটর, ইনস্টাগ্রাম, সবকিছুর পাসওয়ার্ড চেঞ্জ।।। কান্না পাচ্ছে??।।

নিউ খুলবো তার কোন ওয়ে নেই।।সিম ছাড়া কেমনে ঢুকমু??।।পরক্ষনেই মনে পড়ল আমার তো একটা ফেক আইডি আছে।। সাথে সাথে সেই আইডি অন করে ফেসবুকে ঢুকলাম এখন একটু শান্তি লাগতাছে।। আমার আগের আইডির পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করে ফেলছে।। কত ছবি ছিল আমার ??।।

শালা আমি অভিশাপ করলাম,, তোর শরীরে কিড়া পড়বে, তেলাপোকা পড়বে, মাকড়শা জাল বুনবে??।।

________________?

পরেদিন,,

বাহিরে মিডিয়ারা মাথা নষ্ট করে ফেলতেছে।। তার সাথে এলাকার মানুষের ভিড় জমিয়েছে ইউসুফ সাহেবের সাথে দেখা করার জন্য।। ইউসুফ আর মামা বাহিরে মিডিয়া আর বাকি সবার সাথে কথা বলে ভিতরে চলে আসে।।

এদিকে এসব দেখে গা আমার জলে যাচ্ছে।।তাই আমার লম্বা চুলগুলো দুটো বেনি করে নিলাম ।। কাঁধে করে দড়ি লাফ নিয়ে দুলতে দুলতে বেরিয়ে গেলাম।। উদ্দেশ্য মাঠে যাব ইনা, মিনা, রিনা সাথে খেলবো।। বাহিরে যেতেই মিডিয়াগুলো আমাকে জেঁকে বসলো।।

বরাবরের মতো আমার মাথাও দুষ্টবুদ্ধি চলে এলো এবং শায়েস্তা করার জন্য একটা চাল চেলে দিলাম…!!

মিডিয়াদের মধ্য একজন বলল,,
—-আম্মু তুমি মডেল ইউসুফের কি হও?

আমি দাঁত কেলিয়ে উত্তর দিলাম,,
—–সে আমার মামাতো ভাই।।

আরেক জন বলল,,
—-তো তোমার ভাইয়ের সম্পর্কে কিছু বল আমরা শুনি।।

আমি হাসতে হাসতে বললাম,,
—-অবশ্যই বলব কেন বলব না!!! আমার ভাই এত বড় মডেল বলে কথা!! উনার বিষয়ে আপনাদের সিক্রেট কিছু কথা বলি??

সবাই যেন মনোযোগ আমার দিকে দিল।। আর কতগুলো মাইক আমার মুখের সামনে ধরল।। আমিও শয়তানি হাসি দিয়ে শুরু করলাম বলা।।

—–জানেন আপনাদের মডেল সাহেব অনেক ভাল!! কিন্তু উনি ৭ দিন পর পর গোসল করে,, মাসে একবারও দাঁত মাজে না।। যখন ঘুমায় তখন মুখ দিয়ে লালা পড়তে থাকে।।

আমার কথা শুনে কলরব সৃষ্টি হল।।
সবাই এ কথা সে কথা বলাবলি করতে লাগল।। তারপর সবাই বলল তারপর তারপর…!!

আমি হালকা একটু কেশে গলা টা পরিষ্কার করে নিয়ে আবার বললাম,,
—–জানেন উনি না তেলাপোকার খায়,, কেঁচো খায়,, যত যত পচা খাবার আছে সব খায়।
এভাবে আরো বানিয়ে বানিয়ে অনেক কিছু বলে সেখান থেকে ছুটে চলে গেলাম।।

এদিকে ইউসুফ টিভিতে লাইভ দেখতে পেল ইউসুফের নামে এত কিছু ফালতু কথা কুহু বলছে।।ইউসুফের রাগ উঠে গেল চিল্লি এককে ডাকতে লাগলো।। মামা মামি এসব দেখে বলতে লাগে,,

—-ছোট মানুষ!! দুষ্টমি করে বলে ফলছে।। দাড়া আমি এই নিউজ বন্ধ করতেছি।। ভিডিওর মানুষগুলো কেমন ছোট মানুষদের কাছ থেকে যা শুনচ্ছে তা টিভিতে দেখাচ্ছে আজিব সব।।

—–আমার ক্যারিয়ার নষ্ট করে দিয়েছে তোমার ভাগ্নি!! আর তুমি দুষ্টামি বলতেছো!! ওরে আমি ছাড়বো না।। বলে রুমে চলে গেল ইউসুফ।।

ইউসুফের রুমে গিয়ে দেখি ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে।।আর বারবার নিজের চুল টানতে সে রাগে!!

আমি বললাম,,
—-কি হইছে ভাইয়া??আপনি কি কোন কারনে চিন্তিত??

তিনি বললেন,,
—-তুই আমার ঘুম হারাম করে দিছিস!!

আমি এবার তার পিছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললাম,,
—–আপনি আমার সিম হাতিয়ে নিছেন আমি আপনার ঘুম হাতিয়ে নিয়েছি।। হিসাব বরাবর।।

তিনি আমার দিকে রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকালেন,,,
—-তবে রে দাঁড়া!!

আমারে আর পায় কে আমি এক দৌড়ে রুমে চলে গেলাম।।গিয়ে দরজা আটকে দিলাম।। না জানি আবার কি করে?।।

psycho_is_back? season_2part_1

0

psycho_is_back?
season_2part_1

#apis_indica

আমি কুহু!! ভাল নাম কায়নাত কুহু।। আমি সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী!!আমার রোল নাম্বার ৩৭!!আমি মোটেও ভাল স্টুডেন্ট নই,, তাই বলে সব কিছুতে আমার মামাতো ভাই সাথে কম্পেয়ার করতে থাকে যা মোটেও আমার পছন্দ না,,,আই হেট দিস গায়!! আমার বাসা ময়মনসিংহ বিভাগের কালিবাড়িতে।।আমি প্রিমিয়ার আইডিয়াল হাই স্কুলে পড়ি।। আজ আমাদের ক্লাসে মাসিক টেষ্ট।।তাই তাড়াহুড়ো করছি।।

কারণ আমি বরাবরই লেট লতিফ।।যেদিন মাসিক পরীক্ষা থাকে তখন এমনিতেই লেট হয় কেন জানি”” আই ডোন্ট নো””।। এই মাসিক নামটা শুনলে কেমন ঘেন্না ঘেন্না লাগে।। তারপরও না চাইতেও বলতেই হয়।।আর তার উপর যখন অংক করতে যাই সেখানেও এক!! উফ!! মাসিক বেতন,, মাসিক আয়,, মাসিক ব্যয়।। অসহ্য।।যেই নামটি বইয়ে ছাপিয়েছে তাকে মাঝে মাঝে মনে হয় যে পাছায় লাথী দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদীতে ফেলে দেই।।হুহ!!

কথা বলতে বলতে স্কুল গেটের কাছে এসে হাজির হয়ে গেলাম তখনি লাফাতে লাফাতে ইনা এসে হাজির।।ইনা আমার ফ্রেন্ড,,ইনা ছাড়া আরো অাছে,,মিনা, টিনা, রিনা।।আমাকে ভাল করে পর্যবেক্ষণ করে হাসতে লাগলো ইনা।।বরাবরই এর হাসি আমার কাছে বিরক্তির প্রধান কারণ।।

আমি ধমক দিয়ে বললাম,,
__”” ওই এভাবে ক্যালচ্ছিস কেন””
সে হাসি থামিয়ে বলল,,
__আজ কি পড়ে এসেছিস??
__কেন স্কুল ড্রেসেই পড়েছি, বরাবরের মতো!!
ইনা তার মাথা চাপর দিয়ে বলল,,
__জুতো কি পড়েছিস??
আমি বললাম,,
__কি আর পড়বো স্কুলের জুতা।।বলে পায়ের দিক তাকালাম।।ইয়া আল্লাহ আমি জুতা পড়তে ভুলে গেছি ?।।
ইনা হাসতে হাসতে বলল,,
__আজকে বেবি তুমি শেষ।।বলে হাত দিয়ে গলায় ইশারা করলো।।
আর আমি মনে মনে ভাবচ্ছি,,
__এতো বড় ভুল কেমনে করলাম!! আমি তো নরমাল জুতা না টয়লেটের স্যান্ডেল পড়ে আসচ্ছি।।ভাগ্যিস কেউ বুঝেনি??!!এখন তো আর ফিরার সময়ও নেই কি করবো ?।।

ভয়ে ভয়ে ক্লাসের সামনে আসলাম।।ক্লাস ওল রেডি শুরু হয়ে গেছে।।আমি ক্লাসের সামনে দাড়ালাম।।রিপন স্যার ক্লাসে ঢুকেছেন।।

আমি বললাম,,
__মে আই কাম ইন স্যার!!
স্যার বলল,,
__নো ইউ নট কামিং।।
আমি মাথা নিচু করে বললাম,,
__হোয়াই স্যার??(জানি এখনি শুরু হবে সেই ইউসুফ নামের ভাষণ!! উফ লাইফটা আমার তেজপাতা))
__আপনার জুতা কই স্কুলের।।যখন আপনার ভাই স্কুলে পড়তো কতটা ডিসিপ্লিন মেন্টেন করে চলত জানেন।।আর আপনি!!
__স্যার সরি!! তাড়াহুড়া করতে গিয়ে ভুলে গেছি ??!!
__ওকে আমিও ভুলে গেছি আপনি এই ক্লাসের।।গেট আউট।।
__সরি স্যার?
__আমিও সরি।।
__প্লিজ স্যার।।ওকে যেহেতু আপনি আমাদের শহরের মেয়রের ভাগ্নি আর সাবেক আমাদের প্রিয় স্টুডেন ইউসুফের বোন তাই আপনাকে একটু শাস্তি দিয়ে ক্লাসে ঢুকতে দিবো।।
__কি স্যার।।(মনে মনে বললাম,, শালা ইউসুফ ভুত তোর জন্য আমার লাইফ হেল হইয়া গেল তোর কথা শুন্তে শুনতে)
__মাঠে মধ্যখানে যাবেন আর ১০ বার উঠ বস করে চলে আসবেন।।যান!!
__স্যার ??
__গো বলে জোড়ে ধমক দিলেন আমি সোজাসুজি দৌড়ে মাঠে এসে কানে ধরে উঠ বস করতে লাগলাম।।যেহেতু আমাদর স্কুলে ছেলে মেয়ে সবাই আছে।।সবাই খিল খিল করে হাসতে লাগলো।। বাট আমি মাথা নত কনে ধরে আছি কারণ এটা নতুন নয় ।।কানে ধরে উঠ বস করে যখন ক্লাসে আসবো তখনি মুহিত স্যার হাজির।।ইনিও ওই ইউসুফের ভকত?।।

__কিরে আবার কি করেছিস তুই??
__স্যার সমস্যা হয়ে গেছে।। স্কুলের জুতা পড়তে গেছি ভুলে স্যান্ডেল পরে চলে আসচ্ছি!!?
স্যার বললেন,,
__মানুষ সমস্যায় পড়ে,, আর তোর পিছে সমস্যা ঘুর ঘুর করে।। তোর ইউসুফ ভাই যখন স্কুলে ছিল সবার নাম রেখেছে কত গড়ব আমাদের।।আর তুই সব ডুবাচ্ছিস।।বলে চলে গেলেন।।

এবার কান্না পাচ্ছে??!!

_____
স্কুল ছুটির পর বাসায় আসচ্ছিলাম তখনি আমার ফ্রেন্ডরা বলতে লাগলো,,
—-জানিস আজকে আমাদের ক্রাশ আসবে!!
ইনা বলল,,
—-কেরে??
মিনা বলল,,
—-তুই চিনিস না?
ইনা বলল
—-আমি তো নতুন কেমনে চিনবো !!
—-কি যে বলিস!!উনাকে টিভি খুললেই দেখা যায়।।ওই যে দেখ (সামনের পোষ্টারে দিক দেকিয়ে)তার কথাই বলছি।। আমাদের স্কুলের সভাপতি, +মেয়র + আর আমাদের কুহুর লাইপে ভিলেন ও বটে।।বলে কিটকিটেয়ে হাসতে লাগলো তারা।।
আমি সেদিকে খেয়াল না দিয়ে বললাম,,
—-হুম তো কি হইছে??
ইনা বলল,,
—-দোস্ত আমিও তার অনেক বড় ফেনরে।।ইশ!!! এবার সামনে থেকে দেখবো।।বিশ্বাস হচ্ছে না এত বড় মডেল আমাদের শহরের।।তাও কুহুর ভাই!!
মিনা বলল,,
—-বুদ্ধু!! ইয়াং মডেল বল,, ,কত গুলো কম্পানি তাকে হায়ার করে রাখছে জানিস না?? তার উপর এত অল্প বয়সে সে কত খ্যাতি অর্জন করেছে।। চলচ্চিত্র জগত থেকে কত ওফার আসে জানিস।।
আমি বললাম,,
—-হুম জানি সব জানি!! এবং আমেরিকার অনেক বড় মডেলও বটে।।তো তুই এসব কেমনে জানিস??
ইনা বলল,,
—-তুই এতো কিছু জানিস আর আমাদের বলিস নি কেন?? আর তোর তো রাজ কঁপাল।। সে তোর ভাই।।আর আমি যতটুকু জানি!! তার ফেইসবুক, পেইজ, ইন্সটাতে ফোলো করা। জানিস কবে থেকে রিকু দিয়ে রাখিছি।। এখনো কনফার্ম করে না..!!

আমি বললাম,,
—কচু!! আমার এরে একদম ভাল লাগে না।।আর আমি বুঝ হবার পর এরে দেখিও নাই,,শুধু ফোটো ছাড়া।।ভাল হইছে করে নাই?আর আমি ওরে ব্লক করে রাখচি?।।
—-কি যাতা বলিস তুই!!
—-সুত্যই বলছি এরে আমার ভাললাগেনা।।?

সবাই থ মেরে রইল।।আমি এদের পাত্তা না দিয়ে চলে আসলাম।।ছোট থেকেই এই বেটা নাম শুনতে শুনতে আমি ফেড আপ।। যেমন,,
—-কুহু দেখ ইউসুফ কত ভদ্র এর মত হও।।ইউসুফ স্কুলের ফাস্ট বয় ছিল তোকেও ওর মতো হতে হবে।।ইউসুফ ওমুক, ইউসুফ তমুক অসহ্য।।স্কুল, বাসা, বান্ধবী সবাই তার জপনী করতেই থাকে।। আর ভাল লাগে না।।??

______♣

বাসায় আজ সবাই আনন্দে আটখানা হয়ে কাজ করে চলছে।।চারিদিকে নানা রকম খাবারের আইটেমের গন্ধে মোঁ মোঁ করছে।।আমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছি।।

নানুমা এসে বলল,,
—-কুহু দাড়িয়ে আছিস কেন?? যা তাড়াতাড়ি রেডি হো আমরা এখনি বের হবো।।

মামি এসে বললেন,,
—–কুহু এই ফ্রক টা পড় তোরে সেই লাগবে।।একদম বেবি ডলের মতো।।

—-মামী আমরা কি কোথাও যাবো???
—-ভুলে গেলি!! আজ তোর ভাইয়া আসবে তো চল চল।।
—-মামী আমি যামু না।।
—-মারবো এক চড়!! যা রেডি হ!!
—-ওকে ?

_____♣

এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে আছি।। মামার হাতে ইয়া বড় গলার মালা।।তার সাথে তার চেলাপেলার হাতেও।।আজ বুঝি এরে মালা পড়িয়েই বিদায় দিবে সবাই।।হা হা।।

প্লেন হয়তো লেন্ড করেছে সবাই এক এক করে বের হচ্ছে।। তখনি কিছু বডিগার্ড সহ তার আগমন ঘটে।।ইউসুফরে দেখে আমার চোখ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি।।আর মুখ দিয়ে শুধু বের হইছে,, মাশাআল্লাহ ???????!!

এতো জিনের মত সুন্দর।।
কিন্তু আমিতো জিন দেখি নাই?।।
হুহ!!!যাই হোক না না করতে কারতে মে ক্রাশ খা গাই??।।আমি আড় চোখে দেকতে লাগিলাম তারে।।আহ্ কি নূরানি চেহেরা তার।।লাল লাল টমেটোর মত টোল পড়া গাল,, বিড়াল চোখ,,ফর্সা রং।।আহ্ পুড়াই শসা, টমেটোর মত??।।ছবি তে কত দেখেছি কিন্তু তখন ভাল একদম লাগে নি।। বাট মানতে হবে বেটা অতি সুন্দর।।যাকে বলে ভয়ানক সুন্দর।।

তিনি এসে মামাকে জড়িয়ে ধরলেন,,সাথে সাথে সবাই মামা মালা পড়ালেন।।সাথে বাকি সবাই।।তার মাথাই দেখা যাচ্ছে না।।তা দেখে আমার হাসি পাচ্ছে।।

সবার সাথে কথা বলে আমাকে দেখে জিগাসা করলেন,,
—-মা এই পুচকি টা কে??
মামী বললেন,,
—-তোর ফুপুর মেয়ে!!
—-ওমা কত বড় হয়ে গেছিসরে।।তোকে সেই লেংটা কালে দেখছিলাম তখন তুই খালি গায়ে,, হাফ পেন্ট পরে,, সারা এলাকা চড়ে বেড়াতিস।।আর মানুষের পিছনে তোর ছোট ছোট দাঁত দিয়ে কুটুস কুটুস কামড়াতিস।।বলে হাসতে লাগলো।।

সাথে আমাদের সদ্য সবাই হাসতে লাগলো।।

নিজের সম্পর্কে এত সুন্দর কথা শুন আমার হাসি মুখটি চুপসে গেল।।শালা খাচর কি বলে।। বেটা অসভ্য??।।আমার নিজের উপর ঘেন্না হতে লাগলো,,ছি!!! এর উপর নাকি কিছুক্ষণ আগে ক্রাশ খেয়েছি।।হুহ।।গাটা জলে যাচ্ছে।। এর প্রতি শোধ আমি নিবই।।সবার চোখের মনি, জেন্টলম্যান,, সবার গড়বরে না ঘোল খাইয়েছি তো আমার নাম কুহু নয় হুহ!!!!

______♣♣

কখন থেকে আমার ফোন টা ঘেন ঘেন করেি যাচ্ছে আল্লাহ।।না পরে ফোনটা নিলাম স্ক্রিনে লিখা বাটপাড় নং ৭…!!! বাট এ কেন কল করে?? ভাবতে ভাবতে আবার রিং হলো।।

কল ধরতেই বলল,,
—-আমার বাবুটা কি করে??
—-জাহিদ ভাই!! আমি আপনার বাবু হলেতো আপনাকে বাবা ডাকতে হয়?? অবশ্য আমার অনেক শখ ইয়াং বাবার তা আজ পেয়ে গেলাম।। এখন থেকে আপনাকে আব্বা ডাকবো জাহিদ আব্বা।?
তিনি ভরকে গেলেন,,আর ধমকের সুরে বললেন,,।
—-এই চুপ!! আমি তোর কোন মারে বিয়ে করছি যে তুই আমাকে আব্বা ডাকবি।।
—–তো কি ডাকবো?? আপনিতো বার বার বাবু ডাকেন?? আমি কি করবো আব্বা???
তিনি রাগে কল কেঁটে দিলেন।।আর আমি বেডে বসে গড়া গড়ি খাচ্ছি হাসতে হাসতে??।।বেটাকে ভাল জব্দ করেছি।।

তখনি পিছন থেকে কেউ এসে আমার কান টেনে ধরে,, আর বলতে লাগে,,
—-কারে আব্বা বানাচ্ছিস তুই??
—-কাুকে না ভাইয়া।। প্লিজ ছাড়েন।।
___তোর ফোনটা দে আমাকে দেখি।।
—-আমার ফোন আপনাকে কেন দিব?? আর আপনি আমার রুমে কি করছেন।।
—-আমার বাড়ি আর আমার কাছে কৈফত চাস হুম!!
বলে জোড়ে কান মলে দিলেন তিনি।। আর আমার ফোনটা নিয়ে গট গট করে চলে গেলেন।।
আমি অবাক হয়ে রইলাম।। আসচ্ছে একদিনও হয়নি আমার হাতিয়ে নিল।।এখন আমার সব রহস্য খুলে যাবে ইয়া আল্লাহ বাচাও??????

psycho_is_back? apis_indica

0

psycho_is_back?
apis_indica
#last_part❤
সাইকোর হাতে গরম করা দুটো শিক যা টকটকে লাল হয়ে আছে,,আমি তা দেখে চিৎকার দেই।।এসব ভাবলেশহীন ভাবে বলতে লাগে,,
—–ন্যাকামি করছিস কেন চুপ করে বস।। আর এটা সাইন কর।।
আমি ভয়ে ভয়ে বললাম,,
—–এটা কি??
—–তোর ডানা কাটার ব্যবস্থা করেছি।।সাইন কর!!
নয়তো এই গরম লোহা তোর চোখে ঢুকিয়ে দিব।। আর তুই সারাজীবন অন্ধ হয়ে থাকবে।। আর পালাবার চেষ্টা করতে পারবি না।।
ইউসুফ এর কথা শুনে আমি ঢোক গিলতে লাগলাম।। কি সাংঘাতিক কথাবার্তা।।আমি ভয়ে ভয়ে সাইন করে দেই।। আর তারপর ইউসুফ ভাইয়া আমাকে কোলে তুলে নেন।।আর সেই রুম থেকে বের হয়ে যান।।এই দেড় বছরে উনি অনেক পরিবর্তন হয়েছে।।চুল গুলো বড় করেছেন,, মুখের দাড়ি গুলোও বড় করেছেন সব মিলিয়ে যে খুব সুন্দর লাগচ্ছে তাকে।।আমি তার মুখে তাকিয়ে থেকে নিজের শারীরিক ব্যথা সব ভুলে গেলাম।। কিছুক্ষণ আগে এতো অত্যাচার নিমিষেই ভ্যানিশ হয়ে গেল।। আমি উনার দিক তাকিয়ে থাকতে থাকতে এক সময় চোখের সামনে ঝাপসা হয়ে যায় সব।।ধীরে ধীরে জ্ঞান হাড়াই।।

যখন জ্ঞান ফিড়ে তখন নিজেকে খাঁচায় আবিষ্কার করি।।সাথে উঠে বসি,,চোখের ভুল ভেবে।। কিন্তু না সত্যিই আমি খাঁচায় বন্দী।। ইউসুফ সত্যই তার কথা রাখলেন আমায় খাঁচায় বন্ধ করে দিলেন।।খাঁচার রড ধরে নিচে বসে পড়ি,,আমি।।একদিন কথার মাঝে বলে ছিলাম,,
—–আপনার বাবুইপাখি কিন্তু সত্যই একদিন উড়াল দিবে!!
সেদিন তিনি আমার গাল চেঁপে ধরে বলেছিলেন,,
—–পাখির ডানা কেঁটে খাঁচায় বন্দী করে রাখবো।। ঠিক তাই হলো।।ভেবে মৃদু হাসলাম।।আর ডুব দিলাম অতীতে।।
__________________________________________________
তিন বছর আগে,,
দিন গুলো ভালই কাঁটছিল আমার,,
ইউসুফ ভাইয়ার লাভিং কেয়ারিং,,
প্রতি মুহুর্তে ভালবাসি বাবুইপাখি বলা,,
দিনের শুরুতে আর রাতে ঘুমতে যাওয়ার আগে সবার অগোচরে চুমু খাওয়া,,
নানান রকম খুনসুটি তো আছেই,,
কিন্তু রাগটা যেন তার নাকের ডগায় সব সময় থাকে তার!!

বেলকনির কার্নিশ ঘেঁষে বসে আছি ফ্লোরে,,
পড়ন্ত বিকেলে, আকাশের সেই লাল আভা, তার সাথে মাতাল হাওয়া, তার সাথে ভালবাসার মানুষটির কথা ভেবে লজ্জা পাওয়া,, সব কিছুর অনুভুতিটি খুব সুন্দর।।সত্যি আপনি যাকে মন প্রান দিয়ে চাইবেন, ভালবাসবেন,, তাকে প্রতিটি মুহুর্তে আপনি অনুভব করবেন।।

আজ ১ মাস হয়েছে,,ইউসুফ ভাইয়া আর আমার নতুন পথ চলার।।এ এক মাসে অনেক কিছু বদলে গেছে,, মানুষ বদলেছে,, তাদের ব্যবহার বদলেছে,,শুধু সব কিছুর মাঝে বেরেছে ইউসুফ ভাইয়ার ভালবাসা।।এখন শুধু দোয়া করি।।যেন আমাদের ভালবাসা না কমে, কারও নজর যেন না লাগে।।

সন্ধ্যার আযান দিচ্ছে বাহিরে,,
কি মিষ্টি এ সুর।।যার কোনো তুলনা হয় না।।যা অতুলনীয়।। আযান শুনে ঘরে চলে আসলাম,, ওয়াশরুমে গিয়ে অজু করে নিলাম।। নামাজ পড়ে নানু মার ঘরে পা বাড়ালাম।।

নানু মা শরীর এখন আরো খারাপের দিক তিনি বিছানা নিয়ে নিয়েছেন।।খুব মিস করি সে দিন গুলো,, নানুমার আমাকে জোড় করে মাথায় তেল দেয়া,,খাইয়ে দেয়া,, ঘুমুতে না পাড়লে গল্প শুনানো,,ককনো আমার সাথে খেলা করা,, কখনো কাপড় দিয়ে পুতুল বানিয়ে দেয়া,, নামাজ পড়া শিখানো,,
বাহির থেকে এসে তাকে জড়িয়ে ধরা।।সব কিছু খুব মিস করি।।

ঘরে আসতেই অনবরত ফোনটি বাঁজতে লাগলো।।রিসিভ করার আগেই কেটে গেল।।ফোনটা হাতে নিতেই দেখতে পেলাম হোয়াটসঅ্যাপে অনেক গুলা মেসেজ ছবি ভিডিও একটি আননোন নাম্বার থেকে পাঠানো হয়েছে।।ফোন স্ত্রুল করতেই আমার চোখ ছানাবড়া।। আমার হাত পা কাঁপতে লাগলো কিছু মুহুর্তে।। তখন আবার ফোনটি বেঁজে উঠলো আমার সেই আননোন নাম্বার,, কাঁপাকাঁপা হাতে ফোনটি রিসেভ করতেই চোখ দিয়ে অধর ধারা বইতে লাগলো।।
——কেমন আছো?
—–আপনি!!কাঁপা কন্ঠে বললাম।।
—–ভয় পাচ্ছো?
আমি চুপ।।
—–নাকি পুরোনো স্মৃতি মনে করে কাঁদছো।।
——কোনোটিই না।।বুঝলেন রিয়ন?
—–বাট আমার তো মনে পরে তোমার সাথে কাঁটানো সময় গুলো।।তাইতো পিক তুলে রেখিছিলাম।।আর ভাবলাম তুমিও মিস করছো তাই!! তোমাকেও পাঠালাম।।আচ্ছা এই গুলো পিক যদি আমি ইউসুফকে পাঠাই!! মন্দ হবে না বলো!!
—-আপনি আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছেন??
—-তেমন কিছুই?
—–আমি ভয় পাইনা!!
—-তাই নাকি!! ওকে!! দেন আমি ইউসুফের সাথে সাথে সোশ্যাল মিডিয়াতে আপলোড করে দিই।। তুমি তো আবার পরিচিত ফিগার।।বলে হাসতে লাগলো।।
এদিকে আমার কলিজার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে।।এই পিক গুলো যে অপ্রত্যাশিত ছিল আমার জন্য।। কারণ,, এখানে এমন অনেক পিক আছে,, যেগুলোতে বুঝা যাচ্ছে,, তার সাথে আমি কোনো ঘনিষ্ঠ কাজে লিপ্ত।। এখানে সব কিছুই সেদিন হঠাৎ ঘটেছিল।। অ্যাক্সিডেন্ট ভেবে ভুলে গিয়েছিলাম।। এগুলোর সাজানো যে ষড়যন্ত্র বুঝতে পারিনি।।
—–কি হলো! বেবী? আগে তো জারজ না চাইছিলে এখন ক্যারেক্টারেলস হলো কেমন হবে??হুম!!
আমি কি বলবো বুঝতে পারছিনা বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি।। তাউ নিজেকে সামলে বলতে লাগি,,
—–কি চান আপনি??
—–গুড কোশ্চেন।। মিট করো আমার সাথে??অ্যাড্রেস সেন্ড করছি।।বলেই কল কেঁটে দিল।।
তখনি একটি মেসেজ আসে।।আর আমি বের হয়ে যাই।।সেটাই যেন ছিল আমার করা ভুল।।

পার্কের একটি বেঞ্চে বসে আছি।। সন্ধ্যার সময় তাই আশেপাশে মানুষ না নাই বললেই চলে।। আমার ভয় করছে খুব।।না জানি কি হতে চলেছে আবার আমার লাইফে।।তখনি একটি গাড়ি এসে থামে আমার সামনে।।গাড়ির জানালা খুলে ভিতরে আসতে বলে সে।।আমি তখন আমতা আমতা করে বলি,,
—-যা বলার এখানেই বলেন!!
—–গাড়িতে উঠো!
—–বললামতো যা বলার এখানে বলেন!!
—–ঠিক আছে,, আমি তোমার মামা-মামী, আর ইউসুফের ফোনে এসব পাঠিয়ে দিচ্ছি।।
এ কথা মুনার পর আমি দেড়ি না করে গাড়িতে উঠে বসি।।তখন সাথে সাথে রিয়ান আমাকে বলে,,
—–আমাকে বিয়ে কর।। প্রবলেম সলভ।।
আমি তার কথায় চমকে যাই।। আর বলতে লাগি,,।.
—-কি যাতা বলছেন!! আমার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে!!
—-আইনো।।বাট!! এ বিয়ে হবে না।।হয়তো আমাকে বিয়ে কর নয়তো আমি সব লিক করে দিব।।
—–যা ইচ্ছা করেন,,! আমি আপনাকে বিয়ে করবো না!! বলে বের হয়ে চলে আসি।।কিন্তু তখনি রিয়ান আমার হাত ধরে বলতে লাগে,,
—-ওকে দেন তুমি যা চাও তাই হবে।।বলে সে আমাকে তার কাছে নিয়ে আসে!! আর কিছু বুঝে উঠার আগেই,, সে আমাকে জড়িয়ে ধরে ফেলে।।আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে শরিয়ে দেই।।তখন আমার শরীর কাঁপা শুরু হয়ে গেছে অলরেডি।। গাড়ি থেকে নামতেই মুখো মুখি হই মামীর।।আর তিনি আমাকে কসে থাপড় মেরে দেন।।আর তখন রিয়ান গাড়ি থেকে নেমে মামীকে বলতে লাগেন,,
—–আন্টি আপনি ওর গায় হাত তুলেলেন কেন??
—–এখানে তোমরা নষ্টামি করবে আর আমি চুপ থাকবো ভেবেছো।। ভাগীস তোর পিছু নিয়েছিলাম নয় তা জানতামি না কিছু।।ইউসুফের জেদের কাছে হার মেনে বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম।। কিন্তু তুই!!মা যেমন তুই তার থেকে খারাপ।।কেমনে পাড়িস তুই হুমম।।আর এই তুমি!! তুমি জানো না ওর বিয়ে ঠিক হয়েছে!! তাহলে কেন ওর সাথে সম্পর্ক রাখছো??
—-আন্টি ও আমাকে ডেকেছে আমি তো আসি নি।।
এবার মামী আমাকে আরেক চড় মারলেন।।আমি কিছু বলতে চাইলাম তিনি আমাকে বলতেই দিলেন না।।তিনি আমাকে টেনে হিচড়ে বাসায় নিয়ে আসলেন।। তখন মাত্র ইউসুফ বাসায় এসে হাজির হয়েছে।।হলে সবাই উপস্তিত।।
মামী ইউসুফের কাছে গিয়ে বলতে লাগেন,,
—–খুবতো বড় মুখ করে বলেছিলে,, কুহু ভাল মেয়ে।। বার বার বলেছিলাম রক্তের ধারা কেউ ছেড়ে দেয় না।। পঁচা রক্ত যে পঁচা হয় তা নিজে দেখে নেও বলে তিনি তখন গাড়িতে রিয়ান আমাকে জড়িয়ে ধরে ছিল।।তা আন্টি তুলে ছিল।।আর তাই ইউসুফ দেখে তার মাথায় ধক করে আগুন জলে উঠে,, ইউসুফ তেড়ে এসে আমাকে মেরে বসে।।সেখানে উপস্থিত নানুমা এসব দেখে সইতে পারেন না সাথে সাথে স্টোক করেন।।সব কিছু এত জলধি হয়ে গেছে যে বুঝার বাহিরে।। নানু মাকে হসপিটালে নিয়া হয়।।আর ততখনে অনেক দেড়ি হয়ে গেছে।।ডাক্তার জানায় নানু মা আর নেই।।পুরো পরিবারে তখন শোকের ছায়া।।সব দোষ এসে পড়ে আমার ঘরে।।সেদিন নানুমার কাফন দাফনের পর ইউসুফ কোথায় যেন হাড়িয়ে যায়।।এসবের মাঝে নানান কথা বার্তা,, আর রিয়ানের অত্যাচার আর সইতে পারছিলাম না।।সে দিন সাহস করে বিষের বোতল নিয়ে বসে ছিিলাম রুমে।।আর ইউসুফের বলা লাস্ট কথা মাথায় ঘুরছিল যে,,
—-তুই আমার বিশ্বাস ভেঙ্গে,, আমাকেই ভেঙ্গে দিলি রে!! আমি তো তোকে কম ভালবাসি কেন করলি আমার সাথে এমন।। এখন থেকে এর শাস্তি তুই পাবি।। বলেই সে চলে যায়।।তার পর থেকে ৭ দিন তার কোনো খবর ছিল না।।সেদিন আমি চিৎকার করে বলেছিলাম আমি নির্দোষ।। কিন্তু আমার কথা কেউ বিশ্বাস করেনি।।
৭ দিন পর একদিন আমার ঘরে মামী আসেন।।
আর বলতে লাগেন,,
—- তোর মা, তোর বাবার সংসার তছনছ করে ছিল আর তুই আমার করে দিয়েছিস।।বলে তিনি খুব কাঁদেন।।তার কান্না অনেক কষ্ট দিচ্ছিল আমাকে।।আমি তার কাছে বসে বলে ছিলাম,,
—–আন্টি মা!! বিশ্বাস করো আমি কিছু করি নি সেদিন।।
তখন আমি আমাকে আরো কিছু পিক দেখালেন যেগুলো রিয়ান আমাকে দিয়েছিল।।আমি এগুলো দেখে চুপ হয়ে যাই।। কিছু যে বলার ছিল না আমার কি বলব আর আমি।।তখন তিনি বলতে লাগেন,,
—–আর কিছু বলার আছে?জানি কিছু বলতেও পারবে না আর।।তারপর তিনি চলে গেলেন আর বলে গেলেন,,ইউসুফ আর ফিরবে না।।আমরাও চলে যাবো আবার।। এখন তুমি করবে ভেবে দেখো।।আমি সেদিন শুধু চুপ হয়ে শুনেছি।।তার মানে ইউসুফ ও আমাকে ভুল বুঝলো!! নিজের মনকে অনেক বুঝেয়েছি সেদিন।।সত্যিই আমার এখন কেউ নেই।। আর এবাসায় না আছে থাকার রাইট।।সেদিনের পর দুদিন ঘর বন্ধী থাকি।। নিজের সাথে যুদ্ধ করে সব কিছু গুছিয়ে নেই।।আর তখন চোখ যায় আমার মা সেই বক্সটার দিক।।কখনো খোলার সাহস করে দেখিনি আমি।।কিন্তু আজ করছি।।সেখানে একটি চিঠি আর তার সাথে নাম্বার, আর ব্যাংকের কিছু ডকুমেন্ট ছিল। হয়তো আমার মা জানতো তার মেয়ের জীবনে এমন কোনো দিন আসবে।।তাই এ ব্যবস্থা করে গেছেন।।সেই চিঠিতে লিখা ছিল,,
—–কুহু আমাকে ক্ষমা করে দিস!! আমি মা হয়ে তোর জন্য কিছু করতে পাড়িনি।।আর এখানে একটি নাম্বার আছে যদি কখনো বিপদে পড়িস এ নাম্বারে কল করিস।।আর পাড়লে আমাকে ক্ষমা করে দিস।।

আমি চিঠিটা বুকে জরিয়ে ধরে অনেক কেঁদেছিলাম।।তার পর সেই নাম্বারের কন্ট্রাক্ট করি।।মহিলাটি ফোন রিসিভ করে বললেন উনি আমার মার খুব ক্লোজড ফ্রেন্ড।। আর উনার সাথে কথা বলে সব ব্যবস্থা করে দেশের বাহিরে চলে আসি।।এভাবে কেঁটে যায় দেড় বছর।।দেশের বাহিরে এসে,, এখানে কাঁজও পেয়ে গেলাম।।সেই আন্টির হেল্পে।।ধীরে ধীরে নিজের জীবন গুছিয়ে নিচ্ছিলাম তখনি হাজির হয় আবার ইউসুফ আর তুলে নিয়ে আসে এখানে যার খাঁচায় আমি বন্ধী।।
অতীত ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে যাই যানি না।।
__________________________________________________
ঘারের উপর গরম নিশ্বাস,, আর গরম কিছু তরল পদার্থ পড়াতে ঘুমটা ভেঙ্গে যায় আমার।।তাকিয়ে দেখি ইউসুফ।।তার চোখে পানি।।ইউসুফ কাঁদছে।।আমি তার চোখের পানি মুছে বলতে লাগি,,
—-কাঁদছেন কেন!
—-অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমাকে আমি সরি বাবুইপাখি।।সেদিন আমার চলে যাওয়া ঠিক হয়নি।।আমিতো আমার রাগ ঠান্ডা করতে চেয়েছিলাম,, তাই দূরে ছিলাম।। নয়তো তোমার ক্ষতি করে বসতাম।।কেন তুমি আমাকে রেখে পালিয়ে গেল বল?
—-ভাইয়া আমি আপনার যোগ্য না।।আপনি ভাল মেয়ে ডিজার্ভ করেন।।আমার মতো পরিচয়হীন, ক্যারেকটারলেস মেয়ে নয়।।
—-মারবো এক চড়!! ফালতু কথা বলিস!! কে বলেছে তোর পরিচয় নেই?? আজ থেকে তুই আমার পরিচয়ে বাঁচবি,, আমার বউ হয়ে।। উনার কথায় চোখে জল চলে আসে আমার।। আমি উনাকে ঝাঁপটে ধরি।।আর তিনি আমার ঘারে মুখ গুজে গভীর চুমু এঁকে দেয়।।আর আমরা দুজনে দুজনাতে হাড়িয়ে যাই।।
__________________________________________________
পাঁচ বছর পর,,
ইউসুফ আমার পায় আলতা পড়িয়ে দিচ্ছে।।আমি আজ পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।। আমাদের ঘরে আলোকিত করতে ছোট একটি বেবীর আগমন ঘটতে চলেছে।।

সেদিন আন্টির কথা গুলো সব চেঁপে গেছিলাম আমি।। আন্টি বলে ছিলেন আমি রিয়ানের সাথে পালিয়েছি।।যা ইউসুফ সহ্য করতে না পেরে আমাকে সেদিন মেরে ছিল।।রিয়ানকেও কেলিয়ে আবার হসপিটালে পাঠিয়েছিল।।বেচারা এখনো কোমায় আছেন।।আর ইউসুফের জেদের কাছে হাড় মেনে আমাদের বিয়ে মেনে নেন তারা।।কিন্তু আন্টি এখনো কথা বলে না আমার সাথে।। আর আমার বাবাও আর যোগাযোগ করেন নি,, এহসান ভাইয়ার বিয়ে হয়ে গেছে।। তিন বছরের বেবী আছ।। তানহাও তার মন মতো কাউকে খুজেঁ পেয়েছে।।
সবাই সবার মতো করে নিজের লাইফ গুছিয়ে নিয়েছেন।।সাথে আমরাও।। একে ওপরের সাথে ভাল আছি।।চোখের পলকে দিন গুলো কিভাবে চলে যায়।। বুঝাই যায় না।।
—–বাবুইপাখি একটু হাসো।।
আমি দাঁত দেখিয়ে বলি,,
—-ইইই
তিনি হাসতে হাসতে সেভাবেই পিক তুলে নেয়।।আর বলতে লাগে,,
বেষ্ট পিক ওফ দ্যা ইয়ার।।
ইটি বাবু হওয়ার পর দেখাবো।।
—–এই না না,, প্লিজ ডিলিট করেন।।
—–উম করবো এক শর্তে!
—–কি???
—-আমাকে চুমু খাও।। তাহলে করে দিব।।
—-না!
—-ওকে তাহলে আপলোড করে দেই এফবিতে হুম,,!!
—-না না করবো করবো।।
—-ওকে তো কর?? বলে তিনি তার মুখ আমার দিকে এগিয়ে দিলেন,,
—-চোখ বন্ধ করেন!!
—–ওকে! এখনো লজ্জা লাগে,,!! বাচ্চার মা করে ফেলেছি তার পরও।।
—-ইসসস!!
—-আচ্ছা,, আচ্ছা।।এটা কি দিলা?? গালে কেন ঠোঁটে দবা।। মাথা নাড়িয়ে লাভ নেই।।আমি নিলে কিন্তু পুরোটাই নিবো।। কিছু মানবো না।।
আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম।।আর উনি টুপ করে চুমু খেয়ে বসলেন আমাকে।।আর ডুবে গেলাম আমরা আবার ভালবাসার সাগরে!!!

সমাপ্ত❤

__________________________________________________
লাষ্ট পর্যন্ত শেষ হলো।।অনেই হাফ ছেড়ে বাঁচলেন! আমি ও!! সো ভাল থাকবেন।।আর ভুল বেয়াদবি মাফ করবেন।।আর এত দিন ধৈর্য ধরে পড়েছেন তার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।।?

psycho_is_back? part_22

0

psycho_is_back?
part_22
#apis_indica❤
দেড় বছর পর,,,
বন্দুক তাক করে রেখেছে ইউসুফ কুহুর মাথার উপর।।মুখে তার ভয়ানক হাসি।।কুহুর সামনে চেয়ারের উপর এক পা রেখে কুহুর মাথা বরাবর বন্দুক ধরে রেখেছে,,বন্দুকের টিগারে তার এক আঙ্গুল।।যা দেখে বার বার কেঁপে উঠছে কুহু।।

কুহু ইউসুফের সকমনে হাটু গেরে বসে,,আর তার দু হাত পিছনে শক্ত করে বাঁধা।।মুখে তার কসটেপ দেয়া।।সে কিছু বলতে পারছেনা।।শুধু চোখ দিয়ে বন্যা বয়ে যাচ্ছে।।

—–কেমন আছো বেবী??বলে বাঁকা হাসলো ইউসুফ।।

আমি শুধু উম উম করে যাচ্ছি।।হটাৎ করে ইউসুফকে দেখে আমার ভয়ে আত্না বের হয়ে যাচ্ছে।।

—-উপস! তুমি কথা কিভাবে বলবে?? আমি তো তোমার মুখ বন্ধ করে রেখেছি।।এক মিনিট খুলে দিচ্ছি।।

বলে জোড়ে টান মারলো কসটেপ।।যার জন্য ব্যথায় আপনা আপনি বের হয়ে গেল মুখ থেকে আহ্ শব্দ টি।।

—–ভাইয়া প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন!!মুখ খুলতেই বলে উঠলাম।।

তিনি সাথে সাথে আমার গাল চেপে ধরলেন।।আর বলতে লাগলেন,,

—–ছেড়ে দিব?? হুম!! দিবো ছেড়ে তার আগে আমার হিসাব-নিকাশটা করে নেই।।এই দেড় বছরের প্রতিটি মুহুর্তের, প্রতিটি সেকেন্ডের, প্রতিটি ঘন্টার,, প্রতিটি দিনের, প্রতিটি মাসের,,প্রতিটি বছরের হিসাব নিয়েই তাররপর তোকে ছাড়বো।।
খুব শক না তোর পালাবার,, আমাকে ছেড়ে যাবার।। আজ সব শক আমি তো মিটাবো।।বলেই তিনি আমার গাল চেপে ওঠালেন।। এবং তার বরাবর দাড় করালেন।।

—-বাহ্ তুইতো আগে থেকে অনেক সুন্দর হয়েছিস।।ভাল বডি বানিয়েছিস।।ছোট ছোট কাপড় পরতে শুরু করেছিস।। সব মিলিয়ে তোকে সেই হট লাগচ্ছেরে।।বলে ঠোঁট কামড়ে ধরলো তার নিজের।।
তারপর আবার বলল,,
—-মনে হচ্ছে আজই তোর মাঝে ডুব দেই বলে।।অট্টহাসি দিতে লাগলো।।আমার ভয়ে যে মুখ দিয়ে কথাই বেড় হচ্ছেনা।।তার উপর তার এমন কথা কান লাল হয়ে যাচ্ছে আমার।।

তখনি তিনি আমার সামনে এসে হিসহিসিয়ে বলতে লাগেন,,,
—–ভয় করছে হুম?? বলে তিনি তার বাম হাত দিয়ে আমার পিছনের চুলের মুঠি ধরে টান দিলেন জোড়ে।।

আমি সইতে না পরে বলতে লাগি কাঁদতে কাঁদতে,,
—- ভাইয়া ভাইয়া প্লিজ,, আমার লাগচ্ছে।।

তিনি এবার আরো জোড়ে ধরে বলতে লাগেন,
—–বাবুইপাখি আমিতো লাগার জন্যই ধরেছি।।তোকে আদর করবো বলে তো ধরি নি?? বলেছিলাম না।।আমাকে ছেড়ে কখনো যাস না। তাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।।বলেছিলাম না।।

—-ভাইয়া আমাকে ক্ষমা করে দেন।।

—-ক্ষমা আমার ডিকশনারিতে নেই।।যেটা আছে সেটা শাস্তি।।তুই জানিস তোকে কতটা খুঁজেছি! পাগলা কুত্তা হয়ে গেছিলাম তোর জন্য।।আমার ফিলিংসের কোনো দাম নেই না?? চিৎকার করে বলতে লাগেন তিনি।।

তার এমন চিৎকারে চোখ বন্ধ করে নেই শক্ত করে।।

তিনি আবার বলতে লাগেন,,
—-বলেছিলাম বার বার এমন কিছু করিস না যে আমার আসল রূপ টা তোকে দেখানো লাগে।।বলেই তিনি আমাকে কষে চড় মারলেন।।

আর আমি ছিটকে নিচে পড়ে গেলাম।।তাতেও যেন তার রাগ কমছে না তিনি টেবিলের উপর উপর থেকে একটি লাঠি নিয়ে আমার সামনে বসে পরলেন।।আর আমাকে টেনে তুলে বিচানায় ফেলে দিলেন।।

তারপর আমার পা ধরে টান মেরে তার সামনে তুললেন।। আমি বুঝতে পারছি না ভাইয়া কি করতে চাইছেন।।তখনি তিনি আমার পায়ের তালাতে
জোরে জোরে বাড়ি দিতে লাগলেন বেত দিয়ে।।
আমি পা সরাতে চাইছি কিন্তু পারছি না।।

ব্যথায় চিৎকার করে যাচ্ছি এতে যেন ভাইয়া আরো জোড়ে দিতে লাগলেন।।আমি পা সরানোর জন্য মুচড়া মুচড়ি করছি।।হাত টা বাঁধা তার জন্য কিছু করতেও পারছিন।।আমার চিৎকার এই ঘরে চার দেয়ালের মাঝে হাড়িয়ে যাচ্ছে।।

—-খু্ব শখ না তোর পালাবার আমার থেকে।।সব শখ মেটাবো এবার।। এসেব বলে তিনি আরো জোড়ে মারতে লাগলেন।।

আমি জোড়ে চিৎকার করে বলে যাচ্চি,,
—-ভাইয়া আমাকে ছেড়ে দিন।। আমি আর কখনো এমন করবো না।। ভাইয়া..!!

মনে হয় না আমার কথা গুলো তার কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে।। এভাবে কিছুক্ষণ পর তিনি আমাকে ছেড়ে দেন।।আর বেত ফালিয়ে আমার সামনে আসেন।।আমি শুধু চোখের জল ফালছি।।ব্যথায় মুখ দিয়ে কোনো শব্দ যেন বের হচ্ছেনা।। তখন ইউসুফ আমার গালে আলতো করে স্লাইড করতে করতে বললেন,,
—–বাবুইপাখি কষ্ট হচ্ছে খুব তাইনা।।আমারো যে হয়ে ছিল।।খুব কষ্ট হয়েছেল ঠিক এ জায়গায়(বুকের বা পাশে দিকে আঙ্গুল দিয়ে)।
আমি অনেক কষ্ট বলতে চেষ্টা করলাম,,
—-ভাইয়া আমাকে আর মেরো না।। আমি আর করবো না এমন কখনো।।আমকে ছেড়ে দেও।।
তিনি শুধু আমার কথা শুনে হাসলেন।।তার এই হাসির মাঝে কোনো মায়া দয়া নেই।।তার এই মুখে হিংস্রতা ফুঁটে উঠেছে।। তিনি বলতে লাগলেন,,
—-তোকে এতো তাড়াতাড়ি তো ছাড়ছি না।।তোর শাস্তি এখন মাত্র শুরু।।হিসহিসেয় বলে উঠে গেলেন।।

আর কাউকে কল করে বললেন,,
—-হুম।। গরম করেছিসতো??
—-
—-গুড যব।।নিয়ে আয় ভিতরে।।
বলে ফোন কেটে দিলেন।।
আর তিনি আমার কাছে এসে বলতে লাগলেন,,
—-বলেছিলাম আমাকে সাইকো রূপে দ্বিতীয়বার দেখাবো না।। বাট তুইতো কাঁঠালের আঠা।। তোকে ভালো করার জন্য আমাকে সাইকো হতেই হচ্ছে।। নাউ #psycho_is_back.. ?

সাইকোর কথা শুনে আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেল।।তখনি কেউ দড়জায় নক করে।।আর ইউসুফ সেখানে যায়।।আর হাত বাড়িয়ে কিছু নিয়ে এসে টেবিলের উপর রাখে।।সামনের জিনিসটি দেখে নিজে শরীরের সর্ব শক্তি দিয়ে চিৎকার করে বললাম,,,
—–নাহহহহহ।।।
________________________
ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।। আর 2,3 পর্বের শেষ করে দিব।। বুঝতে পারছি আপনাদের ভালো লাগছে না আর স্টোরিটা।। যাই হোক ধন্যবাদ।। ?

psycho_is_back? part_21

0

psycho_is_back?
part_21
#apis_indica❤
________________________________________________
চোখ থেকে অনর্গল পানি পড়ছে,,মনে মনে আল্লাহ ডাকচ্ছি।।সে যেন…..ভাল থাকেন, তার কোনো ক্ষতি না হয়।।আমি দৌড়ে বের হতেই ড্রাইভার চাচার সাথে দেখা তিনি আমাকে দেখে বলতে লাগেন,,
——কি হয়ছে মা কান্দেন কেন?
——চাচা, ভাইয়া এক্সিডেন্ট করেছে।। সেখানে যাচ্ছি।।
——ওগো বুঝবাম পারছি! আপনি গাড়িতে বহেন আমি নিয়া যাইতাসি।।
আমি সম্মতি জানিয়ে গাড়িতে বসে পরলাম।। তখন কেউ একজন ভাইয়ার নাম্বার থেকে কল করে বলেছেন তিনি এক্সিডেন্ট করেছেন।। আর গুরুতরভাবে আহত।। গাড়ি চলছে,, আমি এদিকে কাঁদতে কাঁদতে শেষ।।এত ঘৃণার মাঝে, সেই তো একজন যে আমাকে ভালবাসে,, তার কিছু হলে যে আমি অচল হয়ে পরবো।।এদিকে আমি কাঁদতে কাঁদতে শেষ।।কোনো হুশ নেই আমার।।গাড়ি কই যাচ্ছে তাও জানি না।।শুধু চোখ বন্ধ করে আল্লাহর কাছে দোয়া করে যাচ্ছি।।

একটি জায়গায় এসে গাড়ি থেমে যায়।।আমি বের হই,, দেখি এটি একটি কোনো নদীর পাড়।। আমি গাড়ি থেকে নামতেই চাচা বললেন,,
—–মা আপনের গন্তব্য সামনে।। এখান থেকে একাই যাইতে হবে আপনার।।
আমি উনার কথা কিছু বুঝলাম না।।মাথায় শুধু ঘুরছে আমার সাইকো ঠিক আছে তো।।আমি আর কিছু না ভেবে দৌড়ে সামনে গেলাম।।কিছুটা যেতে সামনের ব্যাক্তিটাকে দেখে হাটু গেড়ে বালি বসে পরলাম।। দু হাতে মুখ ধরে কাঁদতে লাগলাম।।ইউসুফ অক্ষত অবস্থায় দাড়িয়ে আছে সামনে।।আমাকে ওখানে বসে পড়তে দেখে তিনি দৌড়ে এসে আমার সামনে বসে পড়লেন,, আর বলতে লাগলেন,,,

—-কি হয়েছে বাবুইপাখি??
আমি তার কথা না শুনে তাকে কিল ঘুশি দিতে লাগলাম।।আর কান্নার বেগ যেন আরো বেরে গেল।।
—–আপনি খুব খারাপ,,সব সময় এমন করেন,, কেন করলের এমন,, কত ভয়ে পেয়েছি আমি জানেন?? থাকবো না আর আমি।।
বলে উঠে যেতে নিলাম তিনি আমাকে টেনে তার বুকের মাঝে নিয়ে শক্ত করে জগিয়ে ধরে বললেন,,
—–বাবুইপাখি,, আমি ঠিক আছি,, কিছু হয়নি আমার দেখ।।আর কেঁদো না প্লিজ?? আচ্ছা আম সরি,, কানে ধরছি এবার।। বলে ইউসুফ কুহুকে ছেড়ে কানে ধরলো।।

আমি দুহাত বুকে গুজে দাড়িয়ে আছি,, অন্যদিক মুখ করে,, আর যাই হোক আমি ওর সাথে কথা বলবো না।। এটা কেমন কাজ করলেন তিনি।।তখন আমার মনে হচ্ছিল আমার কলিজাটা কেউ চিরে বের করে ফেলছে।।মুখ অন্য দিকে ঘুড়িয়ে রেখেছি।।তখনি তিনি বলতে লাগেন,,

—–এখন রাগ করে থাকলে সত্যই মরে যাবো কিন্তু।।
উনার কথা শুনে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠি উনি বলতে লাগেন,,
—-আরে পাগলি আবার কাঁদে কেন??
—-আপনি এমন কেন করলে?? আমার কাছেতো হাতে গোনা ২/৪ টা মানুষ ছাড়া আপন বলতে কেউ নেই।।আর আপনি আমার সাথে এমন করলেন।।
—-আচ্ছা বাবুইপাখি আমি সরি।। এত গুলো,, দু হাত দেখিয়ে,, আবার বলল, না এত গুলা।।
—–আমি হেসে দেই।।
আর উনি আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে।। আমি তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরি।।তার বুকে যে শান্তি লাগছে বলার বাহিরে।।এ মানুষটিকে যে না চাইতেও ভাল বেসে ফেলেছি আমি।।আর কিছুতে হাড়াতে চাই না তাকে।।তার সাথে বাঁচার লোভ জাগচ্ছে দিন দিন খুব করে।।জানি তিনি মাঝে মাঝে সাইকো রূপ ধারণ করেন।। তাতে কি?? আমি মানিয়ে নিতে পারবো সব তার জন্য।।

—–বাবুইপাখি??
——হুম!!
——বলেছিলাম না তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে?
——হুমম।।
—–আসো!! বলে তিনি আমাকে হাতে ধরে কাউকে কল করে এগিয়ে গেলেন,, তখন ২ টা লেডি বডিগার্ড যাদের আমার জন্য রাখা হয় তারা আসেন,,
—-বাবুইপাখি তাদের সাথে যাও।।আর হে ওরা যা যেমন ভাবে বলে তা শুনবে।। না হলে!!!
—–না হলে!! মারবেন?? চোখ পিট পিট করে বললাম।।
তিনি হেসে বললেন,,
—-না কষ্ট পাবো।।

ঘন্টাখানিক পর,,,

আমাকে তারা প্রিন্সেস এর মত প্রিন্সেস সাজিয়ে দিয়েছে,, সিনড্রেলার মত একটি গাউন ড্রেস পরানো হয়েছেন নীল কালারের।। যার ঘের অনেক।।ড্রেসটির ম্যাগি হাতা।। খুব সুন্দর করে চুল গুলো খোপা করে দিয়ে কিছুটা ছেড়ে দিয়েছে।। মাথায় ডায়মন্ডের ক্রাউন পড়ানো হয়েছে।। সাথে কানে ডায়মন্ডের ছোট টপ, আর গলায় লকেট।। সব মিলিয়ে নিজেকে রূপকথার রাজকন্যা মনে হচ্ছে।।

সাজার পর তারা আমাকে নিয়ে সেই নদীর পারে আসলেন,,এটা নদীর পাড়ের কোনো রেসোর্ট।। এখানে খুব সুন্দর করে ডেকোরেশন করা, ছোট একটা টেবিলের পাশর রাউন্ড করে লাইটিং করা।।আর বালিতে নানা রকমের আলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।। তারা আমাকে কিছু দূর রেখে চলে যায়।।আমি ধীরে পায়ে এগিয়ে যাই সামনের দিক।।সামনে দিকে যেতেই ইউসুফকে দেখতে পাই।।তাকে দেখে মনে ধক করে উঠে,, উনাকেও অনেক সুন্দর লাগছে,, নীল কালারের সুট পরেছেন তিনি।।কোর্টের এক পাশে সুন্দর ব্রোজ লাগানো।।মাথার চুল গুলো জেল দিয়ে সেট করা।।সব মিলিয়ে আরেক দফা ক্রাশ খেলাম।। সত্যই মানুষ এত সুন্দর কেমনে হয়?? তার চোখ গুলো যে আমাকে ঘায়েল করে প্রতি বার।।তার চাহনীতে আমাকে পাওয়ার কত নেশা বুঝা যায়।।

ইউসুফ তার বাবুইপাখিকে দেখে থমকে গেছে।।বুকের ভিতর চিনচিন করে ব্যথা অনুভব করছে।।সে যে এই পিচ্চি মেয়েটিকে মনে গহীন থেকে ভালবেসে ফেলেছে!! আচ্ছা ভালবাসার মানুষের কি নজর লাগে?? তাহলে হয় ইউসুফে নজরটা লেগে যাবে।।এসব ভেবে ইউসুফ কুহুর দিক পা বাড়ায়।।
কুহু তার গাউন ধরে ছোট কদমে হেটে আসচ্ছে।।যা দূর থেকে বারবি ডল বলে মনে হচ্ছে।।ইউসুফ কুহুর কাছে দাড়িয়ে অনেকক্ষণ যাবৎ।। কিন্তু কিছু বলছো না।। শুধু তার বাবুই পাখির মুখটা বিচরণ করে যাচ্ছে।। তার পর হুট করেই কুহুর চোখের নিচ থেকে কাজল নিয়ে কুহুর কানের পিছনে লাগিযে দিল।। আর বলল,,
—–এখন আর কারো নজর লাগবে না।। আমারো না!!
আমি হেসে দিলাম।।
—–আপনাকে এসব কে বলছে??
—–মম মাঝে মাঝে আমার সাথে এমন করেন।।
—-ও হো এক মিনিট।। বলে আবার আমার চোখে কাছ থেকে কাজল নিয়ে ইউসুফের কানে দিয়ে বললাম,, এবার আপনারও লাগবে না নজর।।
দুজনেই হেসে দিলাম।।
তখনি ইউসুফ তার হাত আমার দিক বাড়িয়ে দিল আর বলল,,
—-মে আই!!
—-হুম বলে হাত বাড়িয়ে দিলাম।।
তিনি আমাকে নিয়ে সেই টেবিলের কাছে গেলে।।দূর থেকে না যত সুন্দর লাগছিল কাছ থেকে আরো বেশি সুন্দর লাগচ্ছে,, তার সাথে ব্যাকগ্রাউন্ড এ স্লো মোশন সং চলছে।।ইউসুফ আমাকে সেখানে নিয়ে এসে একপাশে দাড়ালো।। আমি একটু এগিয়ে গিয়ে সব কিছু দেখছি।।এ যে কোনো স্বপ্নের চেয়ে কম নয়।।আচ্ছা এত সব সইবে তো আমার কঁপালে।। এসব ভাবচ্ছি তখনি গিটার বেজে উঠে,,
আর আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি,, ইউসুফ একটি চেয়ারে বসে হাতে তার গিটার।।আমি তার দিকে তাকাতেই উনি মুচকি হেসে গাইতে লাগলেন,,
—-Bahot pyaar karte hain tumko sanam

Kasam chaahe le lo khuda kee kasam

ইউসুফ নীচে তাকিয়ে গান শুরে করে ২ লাইন গাওয়ার পর,, আবার আমার দিক তাকিয়ে গাইতে লাগেন।।আমি চেয়ারে বসে টেবিলের উপর এক হাত দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছি।।

Hamaaree gajal hain,

tasawwur tumhaara

Tumhaare bina

abb naa jina ganwaara

Tumhe yu hee chaahenge

jab tak hain dam

উনি চেয়ার থেকে উঠে এসে,, আমার সামনে হাত রাখে।।আমি তার হাতের উপর হাত রাখতেই, তিনি আমাকে সামনে নিয়ে গেলেন।।আর এক হাত আমার কোমরে আরেক হাত আর হাতে রেখে ডান্স করতে লাগলেন।।আমিও তার সাথে তাল মিলাতে লাগলাম।।

Saagar kee baaho

me mauje hain jitanee

Hamko bhee tumse

mohabbat hain utanee

Ke yeh bekararee naa

abb hogee kam

Bahot pyaar karte hain tumko sanam

Kasam chaahe le lo khuda kee kasam

Hamaaree gajal hain,

tasawwur tumhaara

Tumhaare bina

abb naa jina ganwaara

Tumhe yu hee chaahenge

jab tak hain dam

Saagar kee baaho

me mauje hain jitanee

Hamko bhee tumse

mohabbat hain utanee

Ke yeh bekararee naa

abb hogee kam

গানের শেষে তিনি আমার সামনে হাটু গেড়ে বসে পড়লেন।। আর আমার সামনে একটি বক্স থেকে একটি রিং বের করে বলতে লাগেন,,
—-বাবুইপাখি,,তোমার মনের কোনে আমার জায়গা দিবে কি?? আমার বিছানার বামপাশের জায়গাটা নিবে কি?? আমার ছোট রাজ্যের রাজকন্যা হবে কি?? তোমার ওই বিশাল মনের কোনে ছোট জায়গা পাবো কি?? শ্রাবণের বৃষ্টিতে ভিজতে আমার সঙ্গী হবে কি??মন খারাপের সাথি হবে কি??জীবনের চলার সাথী হিসেবে আমাকে নেবে কি?? রাতের আঁধারে ঘুরতে যাওয়ার সাথী হবে কি?? আমার যে সব কিছুতেই তোমাকে চাই??জীবন মরণ, হাশর, জান্নাত, দুঃখ, কষ্ট, সুখ, হাসি কান্না,, প্রতিটি মুহুর্তে আমার তোমাকে চাই।।আমার হাতে হাত ধরবে কি??বলে ইউসুফ রিংটা এগিয়ে দিল।।
আমি উনার প্রপোজ করা দেখে প্রথমে শকড খেলাম,, কিন্তু পরে হাসি লাগচ্ছে,,সাথে বুক ফেঁটে কান্না আসচ্ছে,, এ যে দুঃখের কান্না নয়।।এ ডে আমার সুখের কান্না।। আমি তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলাম সে আমাকে রিং পড়িয়ে দিলেন।।আর আমি তাকে ঝাপটে ধরলাম।।আজ কান্না যেন থামচ্ছে না।।আজ যে আনন্দ টুকু পাচ্ছি,, এটা যে আমি রিয়ানের প্রপোজ করার সময় পায় নি।।তাহলে কি আমি সত্যিই আমার ভালবাসা পেয়ে গেছি।।

আমরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরতেই সাথে সাথে আকাশে আতশবাজি ফুটতে লাগল।। চারিদিক রংবেরঙের আলো উঠতে লাগলো।। তার সাথে অনে ফানুস।। আমি ইউসুফকে ছেড়ে পিছনে ঘুড়ে দেখছি তখনি।।ইউসুফ আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে।।আর আমার কাঁধে তার ঠোঁট ধারা গভীর স্পর্শ করে।।সাথে সাথে আমার শরীরে কেমন কম্পন সৃষ্টি হয়।।আমি ইউসুফের হাতে উপর হাত রাখি।।কিছুক্ষণ পর সেখান তার থুতনি দিয়ে আমার কানের কাছে ফিস ফিস করে বলতে লাগে,,
—–হ্যাপি বার্থডে বাবুইপাখি।।মেনি মেনি হ্যাপি রিটার্নস অফ দা ডে।। বলেই আমার গালে শব্দ করে চুমু খেলেন।।আমি লজ্জায় লাল হয়ে গেছি।।তার দিকে তাকানোর সামর্থ্য আমার নাই।।তার সাথে আমার চোখে পানি।।আজ পর্যন্ত কেউ আমার বার্থডে এভাবে করে নি।।কখনো ভাবিনি এমন ও সময় আমার জন্য আছে।।আমি নিঃশব্দে কেঁদে দিলাম।। ইউসুফ হয়তো বুঝতে পারছে।।সে আমাকে তার দিকে ফিরিয়ে তার কঁপালের সাথে আমার কঁপাল ঠেকিয়ে একদম মৃদুস্বরে নেশা লাগানো কন্ঠে বলতে লাগেন,,,
——হোয়াই আর ইউ ক্রইং বাবুইপাখি!! তোমার কান্না যে ঠিক এই জায়গায় (বাম পাশে হাত দিয়ে দেখিয়ে) লাগে।।আমি তোমাকে ভালবাসি বাবুইপাখি খুব।।আই লাভ ইউ।।
—–লাভ ইউ টু!! বলে জড়িয়ে ধরলাম।।আমার জন্য এত কিছু কেউ কখনো করে নি।।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ,,এত সুন্দর একটি মুহুর্থ করার জন্য।।
—-ধন্যবাদ আমার চাই না।। আমার রিটার্ন গিফ্ট চাই।।
—–আমার কাছেতো এখন কিছু নেই।।বলে মাথা নিচু করে ফেললাম।।
তিনি তার হাতের আঙ্গুল দিয়ে আমার থুঁতনির নিচে দিয়ে আমার মুখটা উঁচু করে বলতে লাগেন,,
—-তুমিকি জানো আমার লাইফের সবচেয়ে বড় গিফ্ট তুমি।। আর রইল রিটার্ন গিফ্ট আমি নিয়ে নিচ্ছি।।বলেই তিনি আমার ঠোঁট তার ঠোঁটের ভাঁজে আবদ্ধ করে নিলেন।। সাথে সাথে চোখ বড় হয়ে গেল।।এমন কিছু সাইকো করবে ভাবিনি।।কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দেয় তিনি।। আর কাউকে কল দেন।। সাথে সাথে একজন কেক নিয়ে হাজির।।কেক রেখে তিনি চলে যান।।ইউসুফ আর আমি মিলে কেক কাঁটলাম।। আমি তাকে খাইয়ে দিলাম সে আমাকে খাইয়ে দিল।।অনেক গুলো পিক তুললাম।। আরো কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে খালি পায়ে দুজন দুজনে হাত ধরে হাটতে লাগলাম।।গন্তব্য হীন ভাবে নদীর পার ধরে হাঁটে যেতে লাগলাম আমরা।।রাতের চাঁদের আলোতে দুজন দুজনাতে হাড়িয়ে যেতে লাগলাম।।
________________________________________________________________________________________________
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।।তো কেমন দিলাম হুম!!!??!! সবাই কি ভাবলেন? আর হলো টা কি?? রিয়েকশন কেমন আপনাদের।।হুম হুম।।কই ভাবচ্ছিলেন,, নানু মা মারা গেছে!! আর কি হয়ে গেল?? তাই না।।। এখন আপনাদের ফিলিংস কেমন??

psycho_is_back? part_20(রহস্য খোলার পর্ব)

0

psycho_is_back?
part_20(রহস্য খোলার পর্ব)
#apis_indic(সুরাইয়া সাত্তার)❤
এক পর্যায় আমরা বন্ধু থেকে বেশি কিছু হয়ে যাই।।যার নাম ছিল না!!
কারণ হাবিব বিবাহিত ছিল, তার সংসার ছিল, সন্তান ছিল,,তাই আমরা ওখানেই সব স্টোপ করে দেই।।এভাবে কেঁটে যায় কয় সপ্তাহ।। এর মাঝে এক দিন অফিসে বড় একটি ডিল পাওয়ার উপলক্ষে একটি পার্টি থ্রো করে।। সেদিন হাবিব অনেক ড্রিংস করে ফেলে এবং অসুস্থ হয়ে যায়।।যে হেতু পার্টি ওদের বাসায় থ্রো করা হইসিলো,, তাই তাকে রুমে দিতে যাই।।তার তো কোনো জ্ঞান ছিল না।।আর সেইটাই যেন আমার ভুল ছিল,, সে রাতে না চাইতোও আমরা ভুল করে বসি।।এর পর থেকেই হাবিব গাছাড়া ভাব চলে এসে পরে,, আর আমি আমার মাঝে তার অংশ বুঝতে পারি।।এবং তাকে জানাই।।আর সে ছুটে চলে আসে,, আসবেই বা না কেন এ যে তার সন্তান আমি আমার পেটে ধারণ করেছি।।এরপর আমরা আমাদের নতুন দুনিয়া শুরু করি।।যেখানে আমি আর হাবিব ছিলাম।।একদিন হাবিব বের হয়ে যাওয়ার পর একজন মেয়ে আসে,, তার সাথে একজন মধ্য বয়সি মহিলা।।তাদের দেখে চিন্তে অসুবিধে হয়না আমার,, সে যে তার প্রথম স্ত্রী,, আর তার মা।।তাদের সাথে একটি ১৩ বছরে ছেলে ও একটি ২ বছরের মেয়ে ছিল।।মালা(হাবিবের স্ত্রী) বলতে লাগে,,

—–কেন করলে এমন??

আমি তখন বুঝতে পারিনি কি বলছেন তিনি।।
—-মানে?

—–মানে? বলে একটি পেপার ছুড়ে দিলেন তিনি।।

আমি পেপারসটি হাতে নিয়ে দেখি ডিভোর্স পেপার।।তার মানে হাবিব তাকে ডিভোর্স দিবে,, ভেবে আনন্দ ফুঁটে উঠলো মনে।।যা শুধু ক্ষনিকের জন্য ছিল।।কথায় বলে না অন্যের সুখ-শান্তি নষ্ট করে কখনো সুখি হওয়া যায় না।।আমারও তাই হলো।।

সেদিন মালা অনেক আকুতি-মিনতি করেছিল যেন তাকে ফিরিয়ে দেই।।কিন্তু আমি যে সার্থপর হয়ে গেছিলাম।।তাই তাকে ফিরিয়ে দেই।।কারণ প্রাণ থাকতে আমি যে তাকে ছাড়তে পারবো না।।তখনি সেই ১৩ বছরে বাচ্চাটি আমার কাছে এসে বলে,,

—–আন্টি,, আমার পাপাকে ফিড়িয়ে দেও,, যানো সে এখন আর খেলে না আমার সাথে,, আগের মতো কথাও বলে না,, আমাকে খাইয়েও দেয় না।।খুব কষ্ট হয় আমার।।প্লিজ!! বলে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিল সেই ছেলেটি।।

সেদিন আমি শতাব্দ হয়ে যাই।।হব না কেন?? আমিও তো মা হতে চলছি।।
তখন হাবিবের মা বলেছিলেন,,,

——তুমি আমার সংসার ভেঙ্গেছো! তুমি এ জিবনে না শান্তি পাবে আর না ও জিবনে।। একটি একটি মার অভিশাপ।। মনে রেখ অবৈধ তোমাদের সম্পর্ক।। জানোতো এসব মেয়েদের কি বলে? রক্ষিতা বলে।।

আমি সেদিন শুধু চোখে পানি ফেলেছি,, সত্যিই অনেক বড় ভুল আমি করেছি।।হাবিব তার পরিবারকে অনেক ভালবাসতো,,আয়মান তার জান ছিল।।আমার জন্য সে সব ছেড়ে দিতে রাজি ছিল।।কিন্তু অন্যের সুখ করে কেমনে সুখি হতাম।।

আমার সাথে থাকা কালিন হাবিবকে লক্ষ করাতাম ও খুশি বাহিরে থাকলেও ভিতরে ভিতরে মরে যাচ্ছিল।।তাই সব ছেড়ে নিজের ভালবাসার বিসর্জন দিয়ে ওকে দূরে ঠেলে দেই।।এক প্রকার ইগনোর করতে লাগি।।একদিন এসব নিয়ে খুব ঝগড়া হয় আমাদের মাঝে।।আর হাবিব আমাকে ছেড়ে চলে যায়। যা আমি চাইছিলাম।।সে চলে গেল।।

আর একবারো পিছনে তাকায়নি হয়তো তাকালে আর যেতে পারতো না।।এভাবে কাঁটছিল দিন গুলি আমার,,দূর থেকে দাড়িয়ে দেখতাম আমি হাবিবকে আর তার পরিবারকে কত হাসি খুশি তারা।আয়মানের সেই হাসিটি যেন ফিরে এসেছে তার মুখে।।একদিন আয়মানের সাথে দেখা হয়ে যায়।।

সে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল,,
—-আন্টি তুমি অনেক ভাল তোমাকে ধন্যবাদ আমার পাপাকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য।।

—-ধন্যবাদের কিছু নেই আব্বু তোমার পাপা তোমাকে অনেক ভালবাসেন তাই ফিরে গেছেন।।
বলেন মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে চলে আসচ্ছিলাম তখন মালার সাথে দেখা হয়,,
আমাকে দেখে মালা বলতে লাগে,,,

—–দেখলে তো বৈধ শক্তির জোড়! তোমাদের মতো মেয়েতো হাজার আসে যায়।।কিন্তু ভাগ্য লাগে কারো বউ হতে।।রক্ষিতারা সেই রক্ষিতাই থাকে।।

আমি কিছু বলিনি,, শুধু হেসে বলেছি,,
—-ভাল থাকবেন চলি!!

বলে সেদিন চলে আসি তোমার কাছে মা!!সত্যি মা কারও বউ হতে ভাগ্য লাগে।। আমি যে অনেক বড় পাপি মা।। আমার বাচ্চা বাবার নাম পাবে না মা কখনো আমি জানি।।যদি আমার কিছু হয়ে যায়,, আমার নামে আমার মেয়ের নাম রেখ।।

সেদিন আমার কায়নাতের কথায় খুব খারাপ লাগলেও খুশি হয়েছি সে আমার মেয়ে নিজে পুড়ে ছাই হয়ে অন্যের সংসার জুড়ো লাগিয়েছে।।
এর পর দেখতে দেখতে ডেলিভারি সময় এসে যায়।।এর মাঝে কায়নাতের শরীর খারাপ হতে লাগে,,
ও বলতো মা আমি আর বাচ্চবো না মা।।আমার বাচ্চার কি হবে মা?? ওর যে মাও থাকবেনা আর বাবাও মা আমার মেয়ের কি হবে।।

সত্যই কুহু হওয়ার সময় কায়নাত মারা যায়।।কুহুকে হাতে নিয়ে হাসপাতালের করিডরে বসে আমি দিশেহারা।।তখন আমি না পেরে হাবিবকে কল করি।।আর কল পেতেই হাবিব ছুটে চলে আসে।।কায়নাতে কবর দেয়া হয়।।হাবিব যেন শতব্দ হয়ে যায়।।তার মেয়ে কুলে নিয়ে কাঁদতে লাগে।।

এভাবে কেঁটে যায় তিনদিন,, হাবিব কুহুকে নিয়ে কাটিয়ে দেয় তিনদিন।।তার মাঝে আমি হাবিবকে বলি ওর চলে যাওয়া উচিত।।কিন্তু সে যেন কিছু শুন্তে রাজি না।।৭ দিনের মাথায় ওর ফুল পরিবার এসে হাজির হয়।।অনেকে অনেক কথা বলে,, হাবিবের মা তার সন্তানদের দুহায় দিয়ে তাকে নিয়ে যায়।।কিন্তি হাবিব কুহুকে নিতে চায়,, যা মালা চায় না।।এক পর্যায় এ নিযে তর্ক শুরু হয়।।

তারা এক পর্যায় এটা বলতে লাগেন,, কায়নাতের চরিত্র ভাল না আর কুহু হাবিবের সন্তান না।।অন্যর সন্তান হাবিবের ঘারে চাপি দিচ্ছি আমরা।।এবং মালা আয়মানের কসম দিয়ে বসে আর বলে,, ওকে তাদের সাথে নিলে বা কোনো সম্পর্ক রাখলে আয়মান, আর তানহাকে নিয়ে ট্রেনের নিচে পরে যাবে।।তারপর থেকে আর কখনো তাদের সাথে যোগাযোগ রাখেন নি তারা।।

আর মাসে মাসে কুহুর জন্য হাবিব টাকা পাঠাতো যা এহসানের বাবা দিয়ে যেত।।এটুকু বলে নানুমা দম নিলেন।। আর চোখের পানি ছেড়ে দিলেন।।নানু মার সামনে বসে থাকা সবাই শতাব্দ।। আমি কাঁদতে কাঁদতে নানু মাকে জড়িয়ে ধরি।।সে দিন নানু মা আমাকে একটা বক্স এগিয়ে দেন, যা মা আমাকে দিতে বলে গেছেন।।
_______________________★

এদিকে হাবিব তার রুমে বসে সেই ছোট কুহুর সাথে তুলা ছবি দেখে কাঁদছেন,, তিনি চাইলেও যে তার মেয়েকে আদর করতে পারছেন না।। কতবড় হয়েছে তার মেয়ে, দেখতে ঠিক কায়নাতের মতো হয়েছে।।হাবিব ছবি দেখতে ব্যস্ত তখন রুমে মালা ঢুকে,, আর তার হাতে প্রতিবারের মতো সেই ছবি দেখে মাথা আগুন জ্বলে উঠে এবং ফোঁসফোঁস করতে করতে বের হয়ে যেতে নেয় তখন হাবিব বলে উঠে,,

—–অতীতের জের ধরে আর কত বর্তমানকে নষ্ট করবে মালা।।আমি ভুল করেছি আমি মানি… তাই বলে এভাবে আর কত মুখ ফিরিয়ে রাখবে আমার থেকে?? এবারতো এসব ভুলে আমরা আগে বাড়তে পাড়ি?

তখনি মালা রাগে বলতে থাকে,,
—-পারতাম আরো আগে ভুলে যেতে তুমি দিচ্ছো কই ভুলতে?? হাবিবের হাতে ছবি গুলো নিয়ে বলতে লাগে আবার,,

—–এই যে তোমার আকড়ে রাখা স্মৃতি! আমাকে ভুলতে দিচ্ছে কই? হুম বল প্রতি রাতে এগুলো ধরে কাঁদ,, আর আমাদের অপরাধী করে তুলো তুমি।। তোমার কাছে আমাদের চেয়ে এসব দামি।।আমি থাকি বা মরে যাই কি আসে যায় বলো।।
বলে ঘর থেকে বের হতে নেয়।।আর তখন হাবিব মালাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগে আর বলতে লাগে,,,

—–মালা প্লিজ!! আমার জিবনে তোমরা যেমন ইম্পরট্যান্ট তেমনি কুহু ও।।ওতো আমরি অংশ।
তখনি মালা ধাক্কা মারে হাবিবকে আর বলে,,
—-তাহলে ছেড়ে দেও আমাদের নিজের অংশ নিয়ে বাঁচ বলে বের হয়ে যায়।।আর যাই হোক কোনো মেয়ে যে তার স্বামীর ভাগ দিতে পারে না।।

_______________________★
সেদিনের পর থেকে নানুমার অবস্থা খারাপ হতে লাগে,, আপনা মানুষ গুলো ও পরিবর্তন হতে লাগে।।আন্টি মা, মামা,, তাদের আমার প্রতি করা আচরণে পরিবর্তন চলে আসে।।

যা খুব কষ্ট দায়ক।।যেমন–তারা আমার সাথে এক টেবিলে বসে খায় না,, আগের মতো কথা বলে না।।কেমন একটা গাছাড়া ভাব।।মাঝে এমন ভাব তারা প্রকাশ করে যেন তারা আমার প্রতি বিরক্ত।। আন্টি তো আমাকে আন্টি মা ডাকতে না করে দিয়েছেন।।

আর যত সম্ভব নিজের রুমে থাকতে বলেছেন।।হয়তো আমি নাজায়েজ বলে ইগনোর শুরু করেছেন তারা।।এসব কিছুই ইউসুফ খেয়াল করছিল।।সে যত সম্ভব আমাকে হাসি খুশি রাখতো।।আমি ভার্সিটিতে যাওয়া স্টার্ট করি।।একমাত্র যতক্ষণ ওখানে থাকি বান্ধুবি দের সাথে হাসি খুশি থাকি।।

একদিন ভার্সিটি থেকে বাসায় চলে আসি তখনি একটা কল আসে,,,
কলটা রিসিভ করতেি সাথে সাথে হাত থেকে ফোনটা পরে যায় আমার।।আর আমি দৌড়ে বের হয়ে যাই।।চোখ থেকে অনর্গল পানি পড়ছে,,মনে মনে আল্লাহ ডাকচ্ছি।।সে যেন…..!!

_________________________
ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।।আজ হয়তো ক্লিয়ার হয়ে গেছেন সবটা আপনারা???

psycho_is_back? part_19(রহস্য _খোলার পর্ব)?

0

psycho_is_back?
part_19(রহস্য _খোলার পর্ব)?
#apis_indica(সুরাইয়া সাত্তার)❤
—-তুমি??

—-হুম আমি।।সারপ্রাইজ হচ্ছো?

—–মোটেও না বাট বিরক্ত হচ্ছি।।বলে পাশ কাঁটিয়ে চলে যেতে নেয় ইউসুফ।। তখনি তার হাত খপ করে ধরে ফেলতেই ইউসুফ তার হাত ঝাড়া দিয়ে সরিয়ে চেঁচিয়ে বলতে লাগে,,

—-ডোন্ট টাচ মি?? ডোন্ট ড্যার তানহা।।আঙ্গুল উঁচু করে বললো।।

—–আমাকে কি আর একটা সুযোগ দেয়া যায় না।।

—-নাহহহ!! একটা মানুষ কে কয়বার সুযোগ দেয়া যায়? একবার, দুবার, নয়ত তিনবার।।আর তোমাকে আমি হাজার বার সুযোগ দিয়োছি??

—–প্লিজ আর একটা সুযোগ।।তুমি তো আমাকে ভালবাসো তাই না।।প্লিজ!!!বলে আবার জড়িয়ে ধরলো তানহা।।

ইউসুফ তখন ঝাটকা মেরে ফেলে দেয় তানহাকে।।
যার ফলে তানহা ছিটকে কিছুটা দূরে গিয়ে পরে যেতে নেয় কিন্তু সামলে নে নিজেকে।।
আর ইউসুফ বলে উঠে,,

—-ভালবাসতাম,, কিন্তু এখন ভালবাসি না।।বুঝেছো??এসব কিছু তোমার জন্য হয়েছে।।তুমিতো মুক্তি চেয়েছিল,,দিয়ে ছিলাম মুক্ত করে তোমায়।।তো কেন আবার ফিরতে চাইছো!!!ওহো তোমার সো কল্ড বয়ফ্রেন্ড তোমাকে ছেড়ে দিয়েছে?? হুম!!

—–ইউসুফ আমি জানি আমি খুব বড় ভুল করেছি।।আমি ক্ষমা চাইছি।।আমি সত্যি বুঝতে পেরেছি,,, তুমি ছাড়া আমি অচল,, তোমার মতো কেউ ভালবাসবে না আমাকে!! প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেও।।কাঁদতে কাঁদতে বলল তানহা।।

কিন্তু ইউসুফের মন গলছে না বরং জমে থাকা রাগ গুলো সব মাথায় চেপে বসচ্ছে।।

সে দাঁতের চোয়াল শক্ত করে বলে উঠে,,
—-লিসেন তানহা!! আগের সেই ইউসুফ হলে,,যে তোমার ভালবাসায় একটাইমে পাগল ছিল,, তাহলে হয়তো তোমার এই ন্যাকা কান্না দেখলে গলে যেত।।বাট এখন যে ইউসুফ দাড়িয়ে,, সে তোমাকে বিন্দুমাত্র সহ্য করতে পারে না।।কারণ তোমাদের মত মেয়েদের ছ্যাছড়ামী স্বভাব, কখনো ঠিক হবে না।।আর রইলো ভালবাসা?? তা সেই এক বছর আগে তোমার সাথে কবর দিয়েছি।।আর হে আমার লাইফে যেমন মেয়ে চাইতাম, স্বপ্ন দেখতা, তার নখের সমানো তুমি নই!! আমি যেমনটি চাই তাম, যা তোমার মাঝে খুজঁতাম!! তেমন মেয়ে আমি পেয়েছি।।আর ও তোমার থেকে শত গুনে ভাল আছে।।সো গো টু হ্যাল।।বলেই সামনের দিক আগাতে নেয়।।তখনি তানহা চেঁচিয়ে বলতে লাগে,,

—-হে ঠিক!! হতে চাইও না তোমার সেই মেয়ের মতো!! কারণ আমি তো আর বাবা-মা ছাড়া নই!!

ইউসুফের পা থেমে গেল।।সে ভ্রুকুটি কুঁচকে বলে উঠে,,
—-মানে!!

এবার তানহার ঠোঁটে বাঁকা হাসি,,
—–মানে!! কেন তুমি জানো না!! তোমার সেই স্বপ্নের মতো মেয়ের খবর,,, বলে তাচ্ছিল্যের হাসি দিল।।

—–যা বলার সাফ সাফ বলো!!

—–ও বেবী,, যাকে তুমি দ্বিতীয়বার ভালবাসতে শুরু করেছো তার সম্পর্কে জানো তো??

—–জানব না কেন সে আমার ফুফাতো বোন কুহু!!
কুহুর নামটি শুনে তেলে বেগুনে জলে উঠে তানহা আর বলতে লাগে,,,

—-কত তাজ্জব বিষয়,, তাই না!! দ্যা ওয়ান এন্ড অনলি স্টার ইউসুফ, সে ভালবাসে এমন এক মেয়েকে যে পিতৃত্ব হীন, যার জানাই নেই সে কার মেয়ে,, যার নিজের কোনো পরিচয় ও নেই,, যাকে সমাজ বলে,, জারজ,,নাজায়েজ।। হাহ্হহ।। সো ফানি!!

ইউসুফের এটি শুনে যেন মাথা আকাশ ভেঙ্গে পড়ল।।কি বলছে এসব।। সব কিছু তার এলো মেলো লাগছে,, তজরপর ও নিজেকে সামলে বলে উঠে ,,,

—-ওর নাম, পরিচিতি দিয়ে আমার কিছু যায় আসে না,, দরকার হলে, সে তার নামেই বাঁচবে,, বা আমার নামে,,।। বলে চলে যেতে নে তার পর আবার ফিরে এসে,, তাহনাকে বলে,

—-ও যদি কোনো পতিতালয় থেকে উঠে আসতো না..!! তাও আমি তাকে একি রকম ভাবে ভালবাসবো।।বলে হন হন করে চলে যায় ইউসুফ।।
আর তানহা এতো অপমান সহ্য করতে না পেরে মাটি বসে নিচের চুল ছিড়তে লাগলো।।আর চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো।।

_____________________________________________★

নানুমা ধীরে ধীরে চোখ খুললেন।।আর চারপাশে চোখ বুলালেন।।তখন বেহুঁশ হওয়ার পর তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়।।জ্ঞান না ফিরায় ডাক্তার ডাকা হয়।।তিনি ধীরে ধীরে বসে পরেন,, সামনে তার ছেলে, ছেলের বউ, তার নাতি-নাতনী বসে।।

কুহু তার নানুমার হাত ধরে বসে।।তার ছেলে, আর ছেলের বউ হাজার প্রশ্ন চোখে তাকিয়,,
এবার না পাড়তে তিনি মুখ খুলে বলতে লাগলেন,,,

—–সে বার কায়নাত ভার্সিটি পাশ করে বের হয়ে,, ঢাকা আসে চাকরির জন্য।। সেখানেই থাকার জন্য তার বান্ধুবির সাথে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে ওঠে।। ভাল চলছি সব।।তখন তোরা বিদেশে থাকিশ,, তখন মাত্র তুই সেখানে নিজের বিজনেস দাঁড় করিয়েছিস,, আর এখানে পাওনাদারের টাকা শোদ করতে হিমশিম খাচ্ছিলাম তোর পাঠানো টাকা দিয়ে।।তোকে চাপ ও দিতে পারছিলাম না তখন।।তাই বাধ্য হয়েই কায়নাতকে ছাড়ি একা।। সেটাই যেন হয়েছিল ভুল।।বলে তিনি কিছুক্ষন থামলেন তারপর আবার বলতে লাগলেন,,
কিছু মাস ভালই কাঁটছিল, তখন তোরও বিজনেস এর সফলতা আসতে লাগলো,, পাওনাদারের ঝামেলা মিটে গেল।।তাই ভাবলাম আমি নিজে গিয়ে এবার কায়নাতকে নিয়ে আসবো,, আর চাকরি করতে দিব না।।এবার বিয়ে দিয়ে ফরজ কাজ আদায় করব।। কিন্তু তা যেন আর হলোই না।মপরের দিন খুব ভোরে বাসার ডোরবেল বেঁজে উঠে,, যেয়ে দেখি কায়নাত এসেছে,, দেখতে কেমন যেন বিধ্বস্ত লাগছে,, উস্কোখুস্কো চুল,, শুকনো মুখ, চোখের নিচে কালো দাগ পরে গেছে তার,, মনে হচ্ছিল কত রাত জানি নির্ঘুমভাবে কেঁটে গেছে তার।।এসব দেখে বুকটা আমার ধক করে উঠে।।আমাকে দেখে কায়নাত জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগে,,
তখন কায়নাত,, ওকে আমরা খুব কম কান্না করতে দেখেছি।।সে কান্না করতে করতে এক পর্যায় বেহুঁশ হয়ে যায়।।আমি এঁকা মানুষ, কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না,, কাজের মেয়েটিকে দৌড়ে পাশের বাসায় একটি ভাবি থাকতো,, তিনি আবার ডাক্তার ছিলেন,,তাকে ডাকতে পাঠাই।।উনি এসে কায়নাত দেখে চিন্তিত সুরে বললেন,,

—–আপা আপনার মেয়ে কি ম্যারেড?

—–না আপা।।

—–ওতো প্রেগন্যান্ট।।

—–কি বলছেন,,??

—–জি আমি ঠিক বলছি,, আর ওই নাওয়া, খাওয়া একদম বন্ধ করে দিয়েছে,, তাই ওই সেন্সলেস হয়ে গেছে।। আপনি চাইলে টেষ্ট করাতে পারেন, আমার কথা বিশ্বাস না হলে।। আমি আসি।।

সেদিন আমার পায়ের নিচে থেকে মাটি সরে গেছিল।।এত কষ্টে মানুষ করে কি লাভ হলো কায়নাত আমার বিশ্বাস ভেঙ্গে দিল।।সেদিন খুব মেরে ছিলাম কায়নাতকে।। সে শুধু কেঁদে কেঁদে বলেছিল,,

—–মা আমি কোনো দোষ করি নি।। এ যে আমার ভালবাসার চিহ্ন।।

ওই তারপর থেকে একদম চুপচাপ হয়ে যেতে লাগলো,,শুধু পেটে হাত দিয়ে বিরবির করে কথা বলতো শুধু।। এর মাঝে এলকায় জানাজানি হবে বলে তাকে গর্ভপাত করারনোর জন্য হাসপালে নিয়ে যাই।।কিন্তু তখন অনেক দেড়ি হয়ে গেছে।।
তাই ওকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যাই।।এর মাঝে কায়নাতে কাছে কি ভাবে কি হলো জানতে চাই কায়নাত তখন বলে,,

—–মা,, ভালবাসা কি ভুল!!

—–ভালবাসা ভুল না ভুল মানুষকে ভালবাসা ভুলরে মা।।

তখন কায়নাত দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে এর একটি বক্স এগিয়ে দেয়।।
আর বলতে লাগে,,

—–মা আমি যে অফিসে যব করতাম,, সেই অফিসের আঙ্কেল আমাকে অনেক আদর করতেন।।তার দুই ছেলে বড় ছেলে হাবিব(আয়মানের বাবা) আর ছোট ছেলে ফাহিম(এহসানের বাবা)।।হাবিব তখন বিদেশ থাকতো,, আর ফাহিম দেশেই থাকতো।।ফাহিমের সাথে আমার ভাল বন্ধুত্ব হয়ে উঠে।।কিন্তু হাবিবের সম্পর্কে কিছু জানতাম না তখন।।আমি ভাবতাম সে একাই।।এক দিন আমাদের বস মানে হাবিবের বাবা খুব অসুস্থ হয়ে যাওয়ায়, ফাহিম তাকে নিয়ে চলে যায় আব্রড।। তখন অফিস সামলাতে দেশে আসে হাবিব।।তার পি এ হিসেবে কাজ করতে লাগলাম।।এক পর্যায় তার সাথে ও আমার বন্ডিং ভাল হতে লাগলো,,বন্ধুত্ব হতে লাগে,, এক পর্যায় আমরা…..!!
_____________________________________________★
ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।।আশাকরি কিছুটা হলে ক্লিয়ার করতে পেরেছি।। যাদের মাথার উপর দিয়ে গেছিল,, তাদের হয়তো মাথা ঢুকেছে এবার….!!?

psycho_is_back? part_18

0

psycho_is_back?
part_18
#apis_indica(সুরাইয়া সাত্তার)❤
খুব সকালে চোখটা খুলে যায় আমার।।
বাহিরের আজানের মিষ্টি সুর কানে আসচ্ছে।।
ধীরে ধীরে উঠে বসি আমি,,মাথাটা কেমন ভার ভার লাগচ্ছে।।রাতের কথা গুলো মনে পড়তেই আবার চোখটা ঝাপসা হতে লাগলো।।চোখের কোন থেকে জল গড়িয়ে পড়তে লাগলো অনর্গল।। চোখটা মুছে বিছানা থেকে ওয়াশরুমে চলে যাই।।শাওয়ার টা ছেড়ে কিছুক্ষণ ভিজতে থাকি।।মনের মাঝে অনেক প্রশ্ন জমা হয়েছে,, সকল প্রশ্নের উত্তর যে বের করতে হবে আমার…!!

ফ্রেস হয়ে নামাজ আদায় করে নেই।।এই একটি জায়গায় যেন কোনো কষ্ট, দুঃখ নেই শান্তি আর শান্তি।।মনের সকল অভিযোগ, অভিমান, মোনাজাতের মধ্যে আল্লাহর কাছে তুলে ধরি।।নামাজ শেষে,, নিজের ব্যাগপত্র গুছিয়ে নি।।
এখানে যে আর এক মুহুর্তে থাকা সম্ভব না আমার।।আমি তো না…জায়েজ, অশুভ আত্মা।।আমার মতো মানুষ গুলোর এ ভদ্র পরিবেশে কোনো জায়গা নেই যে…!!

ব্যাগপত্র হাতে নিয়ে বের হতেই রুমের বাহিরে দেখা হয় আমার মা মানে সৎ মা তিনি আমাকে দেখে দাড়ালেন, আর ভ্রু কুচকে জিগাসা করলেন,,
—–এই মেয়ে এত সকালে কই যাও?
আমি মুচকি হেসে জবাব দিলাম,,
—–চলে যাচ্ছি,, মা,,, সরি আন্টি।।
—–চলে যাচ্ছো মানে কি? তাও এতো সকালে?? বাহিরে আলোও ফুঁটে নি এখনো!!
—–না আন্টি সমস্যা নেই চলে যেতে পারবো,,এমনিতে না চাইতো অনেক ঝামেলায় ফেলে দিয়েছি।।তার জন্য ক্ষমা করবেন।।আর চেষ্টা করবো আপনাদের সবার থেকে দূরে থাকতে।।
বলেই সামনে পা বাড়ালাম।।
তখনি তিনি বলে উঠেন,,
—–ঠিক মার মতো হয়েছো,,, সে ডং করতো তুমিও তাই!! তোমার এখন এখান থেকে চলে যাওয়ার সকল দোষ আবার এসে পরবে আমাদের গায়।।কেন শান্তি দেও না তোমরা।।
আন্টির কথায় পা থেমে গেল আমার,,আমার আর মার জন্য তার মনে কতো ক্ষোভ তার মনে।। আমি হেসে বললাম,,
—–আন্টি চিন্তা করবেন না আমি বলে দিবনে ভাইয়াকে।।
—–তোমার কি মনে হয়? তোমার এভাবে চলে যাওয়া হাজার বার তুমি বললেও সব দোষ পড়বে আমাদের।।তার উপর দেখা যাবে এহসান এঙ্গেজমেন্টটাই করবে না।। যা রুমে যাও তোমার, আর অনুষ্ঠানের পর চলে যেও দয়া করে আর কোনো তামাশা করো না প্লিজ,, আর হে আজকের পর থেকে তোমার এই চেহারা আমাকে দেখিও না।। তোমাকে দেখলে আমার ভিতরে ক্ষত গুলো তাজা হয়ে যায়।।
বলে তিনি চলে গেলেন।।
আমি কি করবো ভাবচ্ছি থাকবো না চলে যাবো তখন চাচি আম্মু এসে হাজির,,,।।
—–কুহু তুই কই যাচ্ছিস??
—–বাসায়।
—–মারবো এক চড়! যা ঘরে।।এহসান এ গুলো শুনলে কত রাগ করবে জানিস তুই।।বলে তিনি আমাকে টানতে টানতে রুমে নিয়ে এসে বেডে বসিয়ে দেন।।আর শাসনের সুরে বলেন,,
—-আনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগে এক পা বাড়ালে ভুলে যাস আমাকে…!! বলে চলে গেলেন।।

তাই বাধ্য হয়ে থাকতে হলো।।আর যাই হোক ছোট থেকে চাচা চাচি আম্মু, এহসান ভাইয়া অনেক করেছেন আমার জন্য,, তাদের খুশির জন্য এতটুকু করতে পারি।।

সন্ধ্যা হতেই সবাই চলে এসেছে।।চারিদিক খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছ।।এহসান ভাইয়া, আর নুহা আপুকে স্টেজে বসানো হয়েছে।।নুহা আপুকে অনেক সুন্দর লাগচ্ছে।।পার্লার থেকে সেজেছে।।আমি এক কর্ণারে দাড়িয়ে সব দেখছি।।

এদিকে ইউসুফ, তার বাবা-মা, আর তার দাদু গাড়িতে বসে পড়ে,, গন্তব্য এহসানের বাসা।।
গাড়ি স্টার্ট দিয়ে নানান রকম কথা বলছেন তারা।।কিন্তু দাদু যেন চুপ,, আজকে না এহসান যবে থেকে কুহুকে নিয়ে গেছে তবে থেকেই তার মনটা কেমন খচখচ করছে।।
এহসানদের বাসার রাস্তায় এসে গাড়ি থামায় তারা।।আজকেই প্রথম এসেছে তাই বাড়ি চিনে না।।
সামনের লোকটিকে জিগাসা করতেই বাড়ি দেখিয়ে দিল।।

বাড়িতে ঢুকতেই ইউসুফ কারো সাথে ধাক্কা লাগে।।
দু জনেই বলে উঠে এক সাথে,, সরি!!বলে দুজন দুজনের দিক তাকায়।।আবার দুজনেই বলে উঠে,,
—-তুই?? বলে দু জন দু জনকে জড়িয়ে ধরে।।আর ইউসুফ বলতে লাগে,,
—তুই এখানে??
—-হে আমার ভাইয়ের এঙ্গেজমেন্ট।।আর তুই?
—-এহসান তোর ভাই??ওই আমাদের ইন্ভাইট করেছে।।
—-হে চাচাতো ভাই আমার।।তুই এহসানকে কিভাবে চিনিস??
—-আমার ফুপাতো বোন কুহুর চাচাতো ভাইসে।।
আয়মান এবার চমকে গেল।।কিছু না বলে হেসে দিল।। আর পিছন থেকে ইউসুফের আব্বু আম্মুকে দেখে সালাম দিয়ে ভিতরে যেতে বলেন।।আর তার পিছনে নানু মা কে দেখে আয়মানের মুখটা গম্ভীর হয়ে যায়।।কিছু বলতে নিবে তার আগেই ইউসুফ বলতে লাগে,,
—-ওহো তোকে পরিচয় করিয়ে দেই?? দাদু আমার।।আর দাদু ও হচ্ছে আয়মান আমার বন্ধু বিদেশে আমরা এক সাথে পড়াশুনা করেছি।।
আয়মান কি বলবে বুঝতে পারছেনা।।সে চুপ থেকে কিছুক্ষণ,, তার হেসে বলতে লাগে,,
—-আসসালামু আলাইকুম দাদু।।আসেন ভিতের।।

এদিকে ভিতরে গিয়ে ইউসুফ তার বাবইপাখিকে খুঁজতে লেগে পড়ে।।এবং দেখলো কুহু একটি কোনায় দাড়ানো।।ইউসুফ সেখানে গিয়ে পিছন থেকে কুহুর চোখ ধরে ফেলে।।
—-ইউসুফ ভাইয়া?? আপনি…! আমি জানি। কখন আসলেন??
ইউসুফ আমার চোখের উপর থেকে হাত সরিয়ে সামনে এসে বলে,,
—-কেমনে বুঝলি বাবুইপাখি, হালকা গাল টিপে দিয়ে বলল ইউসুফ।।
—–আমি বুঝতে পারি।।
—–কিভাবে??
—-বলবো না,, সিক্রেট।।
—-বাহ আপনার সিক্রেট ও আছে??
—-হুম আছে অনেক,, আনমনে বলে দিলাম।।
ইউসুফ ভ্রুকুটি কুচঁকে বললো,,
—-মানে??
—-না না কিছু না।। ভাইয়া সবাই এসেছেন??
—-হুম এসেছে।।তুই কি বলতে….!!
ইউসুফের কল চলে আসে।।
তখন আমি বলি,,
—-আপনি কথা বলুন আমি নানু মাদের সাথে দেখা করে আসি।।
—-হুম।।বলে ফোন রিসিভ করেন।।

ফোনে কথা বলে পিছনে ঘুরতেই মুড খারাপ হয়ে যায় ইউসুফের।।খুব বিরক্তি নিয়ে নাক মুখ কুচঁকে বলতে লাগে,,,
—–তুমি!!!

আয়মানের বাবা-মা, আর ইউসুফের বাবা-মা কথা বলতে থাকেন।।এত বছরের সম্পর্ক তাদের সম্পর্ক শুধু শুনেছে যে আয়মানের একটি ছোট চাচা আছেন।।তারা বাংলাদেশে থাকেন।।আর তার উপর এহসানের বাবাই যে তার ছোট জানা ছিল না তাদের।।তার উপর এখানে কিছু জিনিস কেমন জানি ঘোলাটে লাগছে তাদের কাছে।।যেমন, আয়মানের বাবা আর এহসানের বাবা দু ভাই আর এক বোন হলে..!! কুহু তাহলে আয়মানের বাবার সন্তান কিন্তু।।ইউসুফের বাবা-মা যতটুকু জানে,, তার বোনের মৃত্যুর পর তার বাবা বিয়ে করেছে তাহলে,, কুহুর বাবা কে???

আর এদিকে আয়মানের ফ্যামিলি পুরাই শকড,,, কুহুর মা তাদের পরিবারের অংশ??কিন্তু এত বছর সাথে ছিল তারা বিদেশে শুধু তাদের সম্পর্কে যানত মা আর বোন আছে,,বোনটা মারা গেছে,,তার নাকি একটা বাচ্চা রেখে গেছে।।এর থেকে বেশী জানা হয়ে উঠেনি কারো।।সকলেই এখন শুধু অনুষ্ঠান শেষের অপেক্ষায়।।

দু পরিবারের মাঝে অনেক প্রশ্ন হলেও,, সবচেয়ে বেশী প্রশ্ন কুহুর মামা-মামীর।।কি হচ্ছে মাথায় কিছু আসচ্ছেনা।।এ সকল প্রশ্নের উত্তর শুধু আছে নানু মার কাছে।।এদিকে নানু মার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসচ্ছে।। যা এত দিন যাবৎ লুকানো ছিল তা এভাবে সবার সামনে আসবে জানা ছিল না তাঁর।।এখানে আসার পর থেকেই কেমন জানি লাগচ্ছে তাঁর,,তিনি স্টেজের একটু দূরে বসে আছেন।।তখনি দেখেন তাঁর ছেলের বউ আর ছেলে তার দিকে আসচ্ছে।।তাঁরা এসেই প্রশ্ন ছুড়লো!!
—–মা এসব কি হচ্ছে??কুহুর বাবা কে?
নানু মা হয়তো এই ভয়ে করছিলেন।।তিনি ঘামতে লাগলেন।।আর তাঁর সাথে উনা কথা গুরো কেমন জড়িয়ে যাচ্ছে।।
—–আমি,, আমি…!!
—–কি হয়েছে মা।।
নানু মা আর কথা বলতে পারলেন না সেখানেই জ্ঞান হারালেন।।

_________________________
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।।