প্রভাতের প্রথম প্রহরে দূর্বাঘাসে জমে থাকা
শিশিরের রৌদ্র ছোঁয়ার তীব্র প্রতীক্ষার মতো
তোমার হেঁটে যাওয়া ব্যস্ত পথের প্রান্তে,
রেখে যাওয়া পদচিহ্নে দু’কদম হাটবো বলে মুঠোবন্দি অপেক্ষাদের নীরব যন্ত্রণায় তড়পে মরেছিলাম।
অথচ দু’দন্ড সময় নেই
তোমার রঙচঙে আর ভারী কাঁচের দামী গাড়ীটির।
আমি খুব অল্পই চেয়েছিলাম।
দিন শেষ সমস্ত ব্যস্ততা গুছিয়ে ঘরে ফিরে এলে,
দামী কোনো উপহার নয়,
শুধু কপাল জুড়ে এক জোড়া ঠোঁটের কমল স্পর্শ চেয়েছিলাম।
চাওয়াটা খুব অল্পই ছিলো।
শেষ বিলেকের করিডরে গোধূলীর রক্তিম আভা ছুঁয়ে দেয়া এক টুকরো মুহূর্ত,
সন্ধ্যে নামতেই চায়ের কাপে তোমার চুমুক দেয়ার শব্দ, এক আধটু খুনসুটি।
প্রশস্থ নয়, একটি বিশ্বস্ত বক্ষ চেয়েছিলাম।
যেখানে মাথা এলিয়ে দিতেই মিলিয়ে যাবে
সমস্ত গ্লানি।
খামছে ধরা নয়, এক জোড়া আগলে রাখা হাত চেয়েছিলাম।
যেন নির্ভরতায় হাত রাখতেই কেটে যাবে
তোমায় হারিয়ে ফেলার ভয়।
কাব্যের চরণে ছন্দপতন,
গানের সুরে বেতাল কথন,
সাদা ক্যানভাস ভরে না রঙেতে,
গদ্যের বর্ণনা রয়ে যায় অসম্পূর্ণ শব্দচয়নের অভাববোধে,
আসলে আমিতে আমিটাই তো নেই এ ভুবনে,
হারিয়েছি এক নাম না জানা উজানে।
যেথায় শুধু কালোর রাজত্ব,
আর্তনাদের বসবাস আর
অশ্রু পতনের অসহ্য ধব্বনি।
নতুন সে শহরটা আমার অচেনা তবুও
কেমন যেন আপন,
শহরটা আমার ভাষা বোঝে না তবুও
কান্নার ভাষা তার চিরচেনা,
শহরটা দুঃখের চাঁদরে মোড়ানো তবুও
প্রশান্তির বাতাসে মাতানো,
শহরটা বড্ড ছোট তবুও
কান্নার স্বাধীনতায় কঠোর।
নোনাজলে ভরা নদীর দেখা মেলে সেখানে,
সেই পানিতে ভেসে ওঠে শত শত বিনিদ্র রাতের কাহিনী।
চাঁদের মৃদু রূপালি আলোর দেখা মেলে সেখানে,
সেই আলোয় চকচক করে গাল বেয়ে নেমে আসা মুক্তোগুলি।
বৃষ্টির ফোঁটায় নেয়ে ওঠে শুকনো গাছগুলি সেথায়,
সেই বৃষ্টির ছন্দেই তো শোনা যায় আর্তচিৎকারের গানগুলি।
আর কতকাল রইবে নিরব, মুখ বুজে সহ্য করবে অন্যায়?
মিনতিপূর্বক শোষকের তরে জীবনের কতকাল করবে ব্যয়?
প্রখরতা আনো ব্যক্তিত্বে, রুখে দাঁড়াও হিংস্রতার বিরুদ্ধে।
তিক্ততায় জীবনকে না বিষিয়ে লড়তে হবে জীবন যুদ্ধে।
বাঁশির সুরে মূর্ছাতুর নয়, সত্যের পথে গড়তে হবে প্রতিবাদী আন্দোলন।
দীঘির জলে ফোঁটা পদ্ম না হয়ে হও দীঘির তীরে কাঁপন তোলা আলোড়ন।
আড়ালে তোমার নিন্দে করে, আছে যত নিন্দুকের দল।
মিছিলে হয় শামিল, খুঁজতে তোমার দূর্বলতার ফল।
প্রত্যয়ে হতে হবে তোমায় দৃঢ়, সত্যের আহ্বানে দাও সাড়া।
তিরস্কারে থেমো না, ডাকছে তোমায় আগামীর ধরা।
বাধাকে করতে হবে অতিক্রম, হতে হবে তোমায় আগুয়ান।
দীর্ঘ হোক না চলার পথ, তাতে কী? তুমি তো নওজোয়ান।
আড়ম্বরপূর্ণ জীবনে ভাবছো তুমি, পুষ্পাগমে পেয়েছ সুখের ছোঁয়া।
মিনিট খানিক ভাবো তবে, বোধ কি করছো পূর্ণ হলো হিয়া?
প্রজন্মের তরে নেই কি কিছু করার? একাই করবে ভোগবিলাস?
তিমিরে রইলে তুমি, বৃথা জীবন! যদি না থাকে স্বকীয় অভিলাষ।
বালুচরে বেঁধেছ বাসা, সময় এবার উঠে দাঁড়ায় করো হুঙ্কার!
দীক্ষা নাও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সর্বদা থাকবে সোচ্চার।
আজ তব এসেছে সেই ক্ষণ, দূর নীলিমা হতে করছি আহ্বান।
মিতালি হোক তোমার সাগরের সাথে, তার ন্যায় সম্মুখে হও ধাবমান।
প্রগতি করুক তোমার সন্ধান, তুমি ছুটে চলো বীরের বেশে।
তিমির কেটে আসুক প্রভা তোমার হাত ছুঁয়ে, সোনার বাংলাদেশে।
বাক্যে তোমার থাকুক ঝাঁঝ, যখন তোমার মাঝে থাকে প্রতিবাদী ঝড়।
দীপ্তি প্রভা আঁধার কাটুক, তোমার হাত ধরে আসুক আলয়ে নব প্রহর।
(বিঃদ্রঃ যদিও কবিতাটি অহ্বান মূলক কিন্তু প্রতিটি অনুচ্ছেদের প্রথম বর্ণ মিলালে হয় আমি প্রতিবাদী)
#গল্পপোকা_কবিতা_লিখন_প্রতিযোগিতা
কবিতাঃবন্ধু
লেখায়ঃফাইজা হাবীব
নির্মল সেই শৈশব কি ভুলে যেতে পারি?
চকলেট থেকে পেন্সিল সেই পুরাতন দিন!
এক বেঞ্চে বসে সেই শিশুপাঠ পড়া
সেই দিনগুলিতে কি ফিরে যাওয়া যায়?
শুয়োপোকা থেকে প্রজাপতি হবার স্মৃতি
বন্ধুত্ব তখন লাভ ক্ষতির হিসাবের বাইরে
সেই নির্ভেজাল ভালবাসা, পবিত্রতা
আজকের কলুষিত পৃথিবীতে কি পাওয়া যায়?
আজ স্মৃতির সিড়ি গোড়ায় দাড়িয়ে
পিছু ফিরে চাই সেই নির্মল হাসিমুখ দেখার আশায়,
জীবনের শেষ প্রান্তে দাড়িয়ে,
মন হারিয়ে যায় বন্ধুত্বের বিকেল বেলায়।
কিন্তু সেই মুখগুলি যে আর দেখা যায় না,
না পাওয়া যায় সেই নিষ্পাপ ভালবাসা
তাই তো তারা রয়ে যায় স্মৃতির মণিকোঠায়।
রাস্তার ধারের ঐ হিজল গাছটা,
ধুলো পড়ে পাতাগুলো নোংরা হয়ে আছে।
হঠাৎ একদিন বর্ষা এলো,
আসল সুখের বানী নিয়ে।
একটি একটি করে গড়িয়ে পড়ল জল,
কাশফুলের মতো কোমল পাতাগুলোতে।
নোংরা পানিগুলো আামার পদযুগল স্পর্শ করল।
আমার মনে হলো, ওরা যেন আমাকে ভর্ৎসনা করছে।
আমি উদাসীন কিনা ?
আমি ভাবুক কিনা?
আমার জীবন সেই হিজল পাতাগুলোর মতো ধুলো পরে নির্জীব হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু তুমিও আমার জীবনে মুক্ত ঝরিয়ে এলে।
তোমাকে দেখিনি কতদিন,
কতদিন তোমায় স্পর্শ করিনি।
তোমাকে মনে করে বানিয়ে ফেলি ‘ছেড়াপতার কাব্য’।
তোমাকে বলতে ইচ্ছে করে, “যেও না, আরেকটু সময় থেকে যাও”।
আমি জানি তুমি শুনবে না তবুও,
তুমি অপেক্ষা করবে না তবুও,
তোমার কথা এ হিয়ার পরতে পরতে গঁাথা।
দেখো,একদিন ঠিক আমাদের দেখা হবেই।
তোমার হাত ধরে হাটব খালি পায়,
বকুল ঝরানো পথে, তোমারই সাথে।