Friday, July 11, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1897



বউ চুরি পর্বঃ ২

0

বউ চুরি
পর্বঃ ২
লেখিকা : জান্নাতুল নাঈমা

মুসকান ভয় পেয়ে কাঁদতে শুরু করলো। ইরাবতী দৌরে এলো।
কি হয়েছে মা কাঁদছো কেনো।

মুসকান ভয়ে ভয়ে ইমনের দিকে ইশারা দিলো।

ইরাবতী চমকে ওঠলো।
ইমনের মাথায় হাত দিয়ে- বাবা কি হয়েছে?

ইমন আর কিছু না বলে চলে গেলো রুম থেকে।এখানে থাকলে মুসকানের কান্না সহ্য করতে পারবেনা আর মা কে ও এমন কথা বলতে পারবে না। যে তার বউ তার পুতুল মেয়ের মামা বানিয়ে দিয়েছে  তাকে। রাগে গট গট করতে করতে বেরিয়ে গেলো ইমন।

ইরাবতী কিছু না বুঝে মুসকানকে জিগ্যাসা করলো কি হয়েছে?

মুসকান আল্হাদী স্বরে বললো- ইমন ভাইয়া ভয় দেখিয়েছে ।

কেনো মা কি করেছো?
কিছু করিনি বলেই কাঁদতে লাগলো।

বিকাল বেলা মুসকান ঘুম থেকে ওঠে দেখে তার পাশে তার আদরের পুতুল নেই। ইরাবতী পুরো বাড়ি খুজেও পেলো না পুতুল  । দ্বিপান্বীতার কাছে যে পুতুল ছিলো সব ইমন সরিয়ে ফেলেছে। ইরাবতী মোজাম্মেল চৌধুরী কে নতুন পুতুল কিনে আনার জন্য ফোন করতেই সে জানালো ইমনের কড়া নিষেধ মুসকানকে পুতুল কিনে দেওয়া যাবে না।
ইরাবতীর মাথায় কিছু ঢুকছেনা। পুতুল কিনতে নিষেধ করেছে তার মানে পুতুল ইমনই সরিয়েছে।
মুসকান রাতে খাবেনা জেদ ধরেছে। তার পুতুল চাই পুতুল না পেলে সে খাবেনা। ইমন চুপচাপ রয়েছে কিছু বলছেনা। এদিকে মুসকান ও খাচ্ছে না। বাড়ির সবাই মুসকান কে খাওয়ানোর চেষ্টা করেছে পারেনি। ড্রয়িং রুমে সোফায় বসে টিভি দেখছে ইমন। অপেক্ষা করছে তার বাবা কাকা চলে যাওয়ার। তারা চলে যাওয়ার পর ইমন ইরাবতীকে ডেকে মুসকান এর খাবাড় নিয়ে আসতে বললো।আর মুসকানকেও নিয়ে আসতে বললো।ইরাবতী খুব খুশি হলো সে ভাবলো ইমন মুসকানকে খাওয়িয়ে দিবে। ইরাবতী খাবাড় নিয়ে এসে ছোট ট্রি টেবিলে সোফার সামনে রাখলো মুসকানকেও নিয়ে আসলো। মুসকান খাবাড় দেখেই বললো-
আমি খাবনা মামনি, আমি একটুও খাবনা।
ইমন রাগি চোখে তাকালো মুসকানের দিকে। এই মেয়ের এতো জেদ আসে কোথা থেকে।
মা তুমি রুমে যাও।আমি দেখছি বিষয় টা।
ইরাবতী মুসকানকে বসিয়ে চলে গেলো। মুসকান ও পেছন যাওয়ার জন্য ওঠতেই ইমন মুসকানের হাত ধরে আবার বসিয়ে দিলো।
মুসকান আল্হাদী গলায় কাঁদো কাঁদো  হয়ে বললো- আমি খাবনা আমি মামনির কাছে যাবো।
হ্যাঁ তুমি মামনির কাছে যাবে তার আগে রাতের খাবাড়টা খেয়ে নিবে।
না আমার মেয়েকে ছাড়া আমি খাবনা। আমার পুতুল চাই। ইমন টিভিটা বন্ধ করলো একহাত দিয়ে মুসকানের পিচ্চি হাত ধরেই আছে। আচ্ছা তুমি খাবে নাকি আমি আমি তোমাকে কোলে নিয়ে বাসার বাইরে রেখো আসবো। মুসকান ইমনের দিকে তাকালো। ছোটো ছোটো গোল গোল চোখ দিয়ে দেখছে ইমন কে। ইমন এর হাসি পেলেও সেটা চেপে রেখে বললো- হয় ভাত খাবে নয় তো আজ বাসার বাইরে থাকবে। রাস্তায় শেয়াল, কুকুর তোমাকে ভয় দেখাবে। তোমার হাতে কামড়ে দিবে সেখান থেকে রক্ত বের হবে রক্ত বের হতে হতে তোমার সব রক্ত শেষ হয়ে পোকা বের হওয়া শুরু করবে। পোকা গুলো কুচকুচে কালো হবে। মুসকান ভয়ে ঢোক গিলে মামনি বলেই কাঁদতে লাগলো।দীপান্বিতা কান্না শুনে বের হবে এমন সময় ইরাবতী দীপান্বিতার রুমের সামনে গিয়ে বললো- ওকে খাওয়ানোর দায়িত্ব নিয়েছে আমরা কেউ পারিনি ওদের ব্যাপার ওরাই বুঝে নিক। দীপান্বীতা বললো- তোমার ছেলের মতি গতি কিছু বুঝিনা বাচ্চা মেয়ে পুতুল খেলবে সেটা নিয়ে এতো কিসের সমস্যা। বউ তাতে কি এখন তো আমাদের ও মেয়ে তাইনা।
হুম কিন্তু ওর উপর ইমনের হকটাইতো বেশী । আর তুই চিন্তা করিস না মুসকানের প্রতি ইমন যথেষ্ট সেনসেটিভ। আর ও যা করছে অবশ্যই কোনো কারন আছে। বউ ওর। ছোটো থেকে আজ অবদি যা যা করেছে এতে তো এইটুকু বুঝেছিস মুসকান এর ভালোর জন্য ইমন ওর কলিজাটা কেটে খাওয়াতেও দ্বীধা করবে না।
হুম তাতো ঠিকি। তোমার ছেলের স্পেশাল বউ। একমাএ বউ। তোমার ছেলেও যে বাচ্চা সেটা তো আমরা সবাই ভুলেই গেছি।না না তোমার ছেলে বাচ্চা হবে কি করে সে তো এখন কারো স্বামী।
দুজনেই হেসে ওঠলো। ইরাবতী বললো- আমার সংসারটা যেনো এমনই থাকেরে এই খুশিটা যেনো সবসময় থাকে। ওরা বড় হোক ইমন কে নিয়ে কোনো চিন্তা নেই তবে মুসকান কে নিয়ে খুব চিন্তা হয়।
চিন্তা করো না ভাবি মুসকান কে আমরা দুজন খুব ভালো ভাবে মানুষ করবো। আমাদের সবার ভালবাসা ইমনের ভালবাসা বৃথা যাবে না। ছেলেটা যে সেই বাচ্চা থেকেই মন দিয়ে বসে আছে তাকে। আর ইমনের উপর সম্পূর্ণ ভরসা আছে। ওর ভালবাসা ঠিক বুঝে নিবে,ওর বউ কে ওর আয়ত্তে করে নিবে। আর মুসকান বড় হলে সবটা বুঝতে শিখলে ঠিকি সব মেনে নিবে।এতো ভালবাসার অবজ্ঞা করতে পারবেনা দেখো।
তাই যেনো হয়।

“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
কান্না করলে চোখ দিয়েও পোকা পড়বে। কান্না বন্ধ করো।
আমার পুতুল চাই, আমার পুতুল চাই।
চুপপ….( ধমকে ওঠলো ইমন)
মুসকান ভয়ে চুপটি মেরে বসে রইলো। খাবে নাকি আমি বাসার বাইরে দিয়ে আসবো।
কাঁদো কাঁদো গলায়- খাওয়িয়ে দাও। (আল্হাদী স্বরে)
স্কুলে ভর্তি হয়েছো এখনো কেনো খাওয়িয়ে দিবো। নিজের হাতে খাও। আমি বসে বসে দেখি।
মুসকান অবাক হয়ে তাকালো। সে নিজের হাতে কখনো খায়নি দুই মায়ের আদরেই মানুষ হচ্ছে। তারা দুজনেই তাকে খাওয়িয়ে দেয়। নিজের হাতে খাওয়াটাও শেখায় নি কেউ তাহলে কিভাবে খাবে সে।
কি হলো খাও।
মুসকান ওর ছোটো হাত দিয়ে ভাতে হাত দিলো।ইমন বুঝতে পারছে সে নিজের হাতে খেতে পারবেনা। কিন্তু তাকে তো শিখতে হবে। তাই সে ভাত মেখে দিয়ে গোল গোল লাড্ডুর মতো করে লোকমা করে দিলো।মুসকান কে দেখিয়ে দিলো মুসকান ও খেতে শুরু করলো। সবটাই ভয় পেয়ে।অর্ধেক খেয়ে যখন আর খেতে চাইলো না ইমন তখন আবার ধমকে ভয় দেখিয়ে খাওয়ালো। খাওয়া শেষে মুসকান তার আম্মুর কাছে যেতে চাইলো ( দীপান্বিতা)  কিন্তু ইমন বললো – না তুমি আমার পাশে বসে টিভি দেখো ছোট কাকি ঘুমিয়ে গেছে। তুমি আম্মুর সাথে ঘুমাবে। ( ইরাবতী )
না আমি টিভি দেখবো না। আমি মামনির কাছে যাবো।
বলছিতো এখানেই থাকো সময় হলে নিয়ে যাবো।
মুসকান ভয়ে চুপসে গেলো গুটিসুটি মেরে বসে রইলো।শীতের রাত বেশ ঠান্ডা ও। হালকা ফুপাচ্ছে মুসকান। এইভাবে এই বাড়ির কেউ তাকে ধমকায় না। জোর খাটায় না । তার চোখে ইমন খুবই খারাপ মানুষ। কারন ইমন তাকে আজ খুব বকেছে। একরাশ অভিমান নিয়ে চুপটি করে বসে রইলো মুসকান। ইমন মনের সুখে টিভি দেখছে। এদিকে মুসকান ঝিমুচ্ছে । একসময় সে সোফাতে কাত হয়েই  ঘুমিয়ে গেলো।ইমন এই সময়েরই অপেক্ষায় ছিলো। টিভিটা বন্ধ করে মুসকানকে সে কোলে তুলে নিলো। কোলে নিয়ে মায়ের রুমের উদ্দেশ্য পা বাড়ালো। মায়ের রুমে ঢোকার আগে মুসকানের মুখের দিকে তাকালো।এক নিষ্পাপ বাচ্চা,অবুঝ শিশু তার কোলে ঘুমিয়ে আছে। এই মায়া ভরা মুখ টা দেখলেই তার কলিজা টা ঠান্ডা হয়ে যায়। যখনি এই মুখের দিকে তাকায় তখনি সেই প্রথম দিনের কথা তার মনে পড়ে যায়। সেই একি রকম অনুভূতি হয় তার। বয়সটা তারও কম। কিন্তু সে যে অল্প বয়সেই বেশ পেকে গেছে। সে যে সেই আটবছর বয়সেই তার জীবনসঙ্গিনী খুঁজে পেয়েছে।নিজ বাড়িতে নিয়ে এসেছে। আট বছর বয়স থেকেই আগলে রাখছে তার এই পিচ্চি বউ, চুরি করা বউ কে। শান্তির এক নিঃশ্বাস ছেড়ে মুসকানের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে একটা তৃপ্তির হাসি দিয়ে তার কপালে, চোখের পাতায় চুমু দিলো। এতো শাসনের পর একটু আদর না করলে কি চলে??

মায়ের পাশে মুসকান কে শুইয়িয়ে দিয়ে সে চলে গেলো।ইরাবতী ছেলের কান্ডে এখন আর অবাক হয় না। সে যে ইচরে পাকা। অল্প বয়সেই বেশ পেকে গেছে। মুসকানকে বুকে জরিয়ে সে ঘুমিয়ে গেলো।

ইমন মুসকান কে ছোট থেকেই যথেষ্ট সেফ করে রাখছে। সেই সাথে বেড়ে ওঠছে দুজনেই। ইমনের এতো কেয়ার এতো যত্নে মুসকান ইমনের প্রতি খুবই বিরক্ত সেইসাথে ইমনের প্রতি তার বেশ ভয় ও তৈরী হচ্ছে।এ বাড়িতে যদি সব থেকে বেশী অপছন্দ কাউকে করে থাকে তাহলে সেটা ইমন।কিন্তু ইমন সেদিকে পাত্তা দিচ্ছেনা সে নিজের মতো করে তার জীবন গোছাচ্ছে সেই সাথে মুসকানের ও। বাড়িতে যেমন ইমন নিজের একরোখা জেদী, রাগী বাইরেও এর বিপরীত নয়। অল্প বয়সেই সে যথেষ্ট ম্যাচিওর। স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছে সে। বাবার নাম ডাক থাকায় সব জায়গায় তার আলাদা এক সম্মান রয়েছে।সেই সাথে কলেজ লাইফে পলিটিকস এর প্রতি তার বেশ ঝোক তৈরী হয়ে যায়। বড় বড় নেতারা তার আগ্রহ দেখে অবাক হয়ে যায় । স্টুডেন্ট ও বেশ ভালো  সব দিক দিয়েই সে অনেক টা এগিয়ে। যতো দিন যাচ্ছে ততো তার মধ্যে জমিদার বংশের ত্যাজ ফুটে ওঠছে। সারাদিন বাইরে থাকে সে রাতে পড়ায় সময় দেয় সেই সাথে মুসকানের খবড় নিয়ে নেয়। দিনগুলো বেশ ভালোই যাচ্ছে। কিন্তু ইমন কি জানে সামনে তার জীবনটা বেশ জটিলতার মধ্যে পড়ে যাবে। সেই জটিলতা কি সে সামলে ওঠতে পারবে?  নাকি তার ত্যাজ আরো আগুন হয়ে জালিয়ে ফেলবে সব কিছু? 

আট বছর পর –

আজ মুসকানের কলেজের প্রথম দিন। ইমনের সাথে যাওয়ার কথা থাকলেও ইমন সময় বের করতে পারেনি। ছাএ নেতাদের নির্বাচন চলছে তাই সে সকাল সকালেই বেরিয়ে গেছে।
মুসকান কে কলেজে রেখে মোজাম্মেল চৌধুরী প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলে অফিসে চলে গেলেন।
মুসকান আর তার স্কুল ফ্রেন্ড রায়া একসাথে ক্যান্টিনে বসে আছে। এমন সময় দুটা ছেলে এসে ওদের সাথে পরিচিত হলো ওরাও ফার্স্ট ইয়ার। কথা শেষে একটা ছেলে মুসকানের কাছে ওর ফোন নাম্বার চাইছে। মুসকান বললো- আমার ফোন নেই।
ছেলেটা বললো- তাহলে আমার টা নিয়ে যাও। আমরা তো বন্ধু যে কোনো প্রয়োজনে, পড়াশোনার ব্যাপারে খোঁজ নিতে পারবো। রায়া তো তার টা দিয়েই দিলো । আর মুসকান নাম্বার রেখে দিলো।

প্রথম দিন বেশ ভালোই কাটলো মুসকানের। কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে আছে তার বড় বাবার জন্য। ( মোজাম্মেল চৌধুরী)
কিন্তু গাড়ি আসলো ইমনের। সাদা পান্জাবি, সাদা পাজামা, গোল্ডেন কালারের কোর্ট, কালো চশমা পড়া। তার পোশাকেই বোঝা যাচ্ছে বড় সড় একজন নেতা সে। কলেজের অধিকাংশ ছেলে তাকে সালাম দিলো, ভাই বলে সম্বোধন করলো। অধিকাংশ মেয়ে হা করে তাকিয়ে রইলো তার দিকে।
মুসকান…. চলো।
মুসকান রায়ার সাথে কথা বলছিলো।
ইমন কে দেখে সে বিরক্ত হলো।আর নরম কন্ঠে বললো- তুমি?  বড় বাবা কোথায়।
বাবা বিজি আছে চলো।তারাতারি সময় নেই।
মুসকান মনে মনে ইমন কে ভেঙচি কেটে রায়া কে বাই জানিয়ে গাড়িতে এসে বোসলো।
ইমন ও ওঠে গাড়ি স্টার্ট দিলো।

বাড়ি পৌঁছে দিয়ে ইমন আবার চলে গেলো বাইরে। খাবাড়টাও খেয়ে যায়নি। কিসের মিটিং আছে বলেই বেরিয়েছে।

রাত এগারোটার দিকে ইমন বাড়ি ফিরে রাতের খাবাড় খেয়ে তার রুমে ঢোকার আগে তার ডানপাশের রুম এর সামনে গিয়ে দরজায় নক করবে এমন সময় গুনগুন গানের আওয়াজ ভেসে এলো রুম থেকে….

“এক কাপ চায়ে আমি তোমাকে চাই,
ডাইনে ও বায়ে আমি তোমাকে চাই,
দেখা না দেখায় আমি তোমাকে চাই,
না বলা কথায় আমি তোমাকে চাই…

ইমন দরজায় জোরে জোরে শব্দ করতে লাগলো।মুসকান গান স্টপ করে দৌড়ে দরজা খুলে ইমন কে দেখে ভয়ে ঢোক গিললো।আর মনে মনে বললো- ওরে আল্লাহ এখন যে এই কর্কশ টা কি জ্ঞানের ঝুড়ি খুলবে জ্ঞানদাতা হয়ে তুমিই ভালো জানো।

চলবে…………

বউ চুরি পর্ব -১

0

বউ চুরি
লেখিকা : জান্নাতুল নাঈমা
পর্ব : ১

বাস্তব কখনো গল্পের মতো হয় না তুমি কখনো জানবে না আমি তোমাকে কতটা ভালবাসি।। হয়তো জানবে কিন্তু উপলব্ধি করতে পারবে না। বা উপলব্ধি করার ইচ্ছাটাও তোমার হবেনা। সত্যি কি তাই ষোল বছরের কষ্ট কি তাহলে বৃথা হবে আমার। আমিতো সেইভাবে চেষ্টাই করিনি। একবার তো চেষ্টা করে দেখতে পারি ভালবাসায় রাঙিয়ে দিতে পারি যে সুপ্ত প্রেম জমিয়ে রেখেছি সেটা উজার করে দিতে পারি। এখনোতো সে কিশোরিই রয়েছে এখন যদি আমি তাকে না জানাই তাহলে হয়তো খুব দেরী হয়ে যাবে। আর এক দুই বছর পরেই যৌবনে পদার্পণ করবে সে।তখন তার মনের মধ্যে যদি অন্যকেউ বাসা বাঁধে? আতকে ওঠলো ইমন। না এটা কিছুতেই হতে দেওয়া যাবে না । এখন সময় এসেছে আমার জিনিস আমাকেই বুঝে নিতে হবে। 

আকাশের দিকে তাকিয়ে একমনে ভেবে যাচ্ছে ইমন।

অতীতঃ
মোতালেব চৌধুরীর পাঁচ ছেলে পাঁচ জনই বিবাহিত, আল্লাহর রহমতে পাঁচ জনের ই সুখের সংসার তিন ছেলে গ্রামে থাকেন। দুই ছেলে শহড়ে থাকেন বড় ছেলেটা অনেক স্ট্রাগল করে নিজের আধিপত্য বিস্তার করেছেন ছোটো ছেলেও সাথে যুক্ত হয়েছে। সব ছেলে বিয়ে করার পর বড় ছেলে বিয়ে করেছে। গ্রামে মোতালেব চৌধুরীর বেশ সুনাম  জমিদার বংশের ছেলে তিনি  পাঁচ ছেলে নিয়ে তার ভরা সংসার। দুঃখের লেশ মাএ নেই বললেই চলে। কিন্তু আসলেই কি তাই সয়ংসম্পূর্ন মানুষ কি এই পৃথিবীতে হয়। না হয় না। মোতালেব চৌধুরীর ও তাই বড় শখ ছিলো একটা কন্যা সন্তানের। কিন্তু সেই সৌভাগ্য তার হয়ে ওঠেনি। পাঁচ টা ছেলের পর যখন অধীর আগ্রহে ছিলেন একটা কন্যা সন্তানের তখনো তার আশা নিরাশে পরিনত হয়েছে। ছয় নম্বর ছেলে জন্ম নিলো। জন্মের পচিশ মিনিট পরেই তার মৃত্যু ঘটে। কন্যা সন্তান লাভ করতে পারেন নি। সেই আশা তার নিরাশাতেই রূপ নিয়েছে। চার ছেলে বিয়ে করানোর পর চার জনের ঘরেই প্রথম পুএ সন্তান জন্ম নেয়। অনেক আশা নিয়ে বড় ছেলে বিয়ে করানো হলো সবার অধীর আগ্রহ ছিলেন এইবার হয়তো বংশে লক্ষী আসবে না এবারেও আসেনি৷ পরপর আবারো চার ছেলে বাবা হলো  নাহ ছেলেই হলো।

সমাজে কতো অহরহ পরিবার ছেলে ছেলে করে হায় হুতাশ পারছে৷ আর এনার পুরা বংশই যখন মেয়ে মেয়ে করে হতাশ হচ্ছে তখন কেউ ই একটা কন্যা সন্তান লাভ করতে পারছে না।

সাতবছর পর খুশির ঢেউ খেলে যাচ্ছে। গ্রামেও খবড় পাঠানো হয়েছে। মোজাম্মেল চৌধুরী তার পিতা মোতালেব চৌধুরী কে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছে  তার বউ এর পেটে কন্যা সন্তান বেড়ে ওঠছে। আটমাস। আর দুমাস পরেই ঘরে লক্ষী আসবে। পুরো বংসের প্রদীপ। সবাই বলে ছেলেরা নাকি বংশের প্রদীপ। কিন্তু মোতালেব চৌধুরীর বংশে সবার ওলটোটা  তার বংশের প্রদীপ একজন নারী।  যে কিনা পৃথিবীতেই আসেনি। পুরো গ্রামে মিষ্টি খাওয়ানো হলো। মোজাম্মেল চৌধুরী ও তার সহপাঠী দের মিষ্টি খাওয়ালো। তার ছেলে ইমন কে নিয়ে মসজিদেও মিষ্টি দিয়ে আসলো। ইরাবতী ও আজ খুব খুশি ছেলে ইমন কে আর স্বামী মোজাম্মেল কে এতো খুশি দেখে তার চোখে পানি এসে গেছে । গ্রাম থেকে শশুর মোতালেবও এসেছে বউমার আদর যত্নে যেনো ত্রুটু না  হয় সেটা দেখাশোনা করাই তার উদ্দেশ্য।

দের মাস পর –

হসপিটালে সুয়ে আছে  ইরাবতী। মেয়ে হয়েছে তার মেয়েটা কে সবাই দেখতে এসেছে সবাই খুব খুশি ।

পনেরো দিন পর-

কান্নার ঢেউ বেজে ওঠলো চৌধুরী বাড়ি। তাদের বংশের প্রদীপ যে নিভে গেছে৷ নিউমোনিয়া হয়ে মারা গেছে ইরাবতী আর মোজাম্মেল চৌধুরীর মেয়ে। ডক্টর কে লাখ লাখ টাকা দেখিয়েও ফিরিয়ে আনতে পারেনি মেয়েকে৷ সবাই কষ্ট সামলে ওঠলেও সামলে ওঠলো না ইরাবতী৷ মেয়ে শকে পাগল প্রায়৷  ইমন সবটা দেখে স্তব্ধ প্রায় বোন হারানোর কষ্ট  সেই সাথে মায়ের অস্বাভাবিক আচরন  একদম থমকে গেছে ছেলেটা। এই বয়সে এতোটা সহ্য করার ক্ষমতা কি আদেও তার হয়েছে। হঠাৎ ই যেনো থমকে গেলো সব । ইমনের ওই ছোট্ট মনে মাকে খুশি রাখার চিন্তা ঢুকে গেলো। কীভাবে করবে মা কে খুশী৷

বাড়ির সবার কথাতে আবারো চেষ্টা করলো মোজাম্মেল চৌধুরী। বাবা হওয়ার নয়তো তার বউকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো যাবে না। কন্যা শকে ইরাবতী নির্বাক হয়ে গেছে৷ কয়েকমাস পর মোজাম্মেল চৌধুরী ডক্টরের কাছে যায় ইরাবতীকে নিয়ে। যাবতীয় টেষ্ট করে  নাহ ফলাফল শূন্য। মা হতে পারছেনা ইরাবতী। কথাটা বাড়ির সবাই জেনে গেলো। ডক্টর তেমন আশা দিতে পারেনি।

বাড়ির সবাই আশে পাশের সবাই ইরাবতীকে সান্তনা দিতো৷ সবাই বলতো ইমন যখন বড় হয়ে বিয়ে করবে  ওর বউই তোর মেয়ে হয়ে সারাজীবন কাছে থাকবে। আরেকটু বড় হলেই ছেলের বউ নিয়ে আসবি। ইমনকে ও সবাই বলতো তোর বউ ই তোর মায়ের মেয়ে হবে দেখিস৷ মোতালেব চৌধুরী ও বললেন এ বংশে মেয়ে নেই । নাতীদের বিয়ে করিয়েই ঘরে লক্ষী আনবো। যেমন পাঁচ ছেলেকে বিয়ে করিয়ে পাঁচ টা লক্ষী এনেছিলাম। এবারতো তাদের ঘরে জোরা জোরা ছেলে জোরা জোরা লক্ষী আসবে শুধু ইমন দাদাভাইয়ের একটা আসবে। তবে তারটা হবে স্পেশাল । ইরাবতীর নয়নের মনি হবে সে।

সবার বলা কথা ইমনের ঐ ছোট্ট মনে গভীরভাবে গেঁথে গেলো। সেই সাথে জেদ ও চেপে বসলো মায়ের মুখে হাসি ফোটানোর জেদ। এই বয়সেই ছেলেটা বড্ড বেশিই জেদী।

একবছর পর-

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় যাচ্ছে ইমন। তার মেজো চাচার ছেলে রক্তিম ভাইয়ের সাথে। তার খালাম্মা নাকি অসুস্থ। তাকে দেখতেই যাচ্ছে। সেখানে যাওয়ার পর বেশ কিছুদিন থাকলো।তারপর ময়মনসিংহ শহর ঘুরাফিরা করছিলে দুইভাই আগামিকাল ই চলে যাবে তারা। হঠাৎ ইমনের চোখ পড়লো রাস্তায় ভ্যানগাড়িতে এক গর্ভবতী মহিলাকে নিয়ে যাচ্ছে আরেকটি বৃদ্ধ মহিলা।মহিলা টির বয়স সাতাশ কি আটাশ। পাশের বৃদ্ধ মহিলাটি হয়তো মহিলাটির মা। ইমন ওর ভাইকে কিছু না বলেই ঐ ভ্যান গাড়ির পিছন যেতে লাগলো।রক্তিম ও ডাকতে লাগলো কই যাস। না তার কোনো খেয়াল নেই। কে জানে কীসের টানে যাচ্ছে সে একেই হয়তো বলে ভাগ্য চক্র।ভ্যানটা বেশ এগিয়ে গেছে ইমন তাই একটা রিকশা ডাক দিলো। রিকশাওয়ালা পিছনে একজন বড় ছেলে দেখতে পেয়ে থামলো ইমন ওঠে বললো ঐ ভ্যানের পিছন পিছন নিয়ে যাবেন।রক্তিম বড় বড় করে তাকিয়ে রিকশায় ওঠে বোসলো। তার খুব কৌতুহল হলো ইমন কেনো এতো ছটফট করছে। ছোটো মানুষ একাতো ছাড়া যাবে না। তাই রক্তিম ও বললো যাও। রক্তিম এর কথায় রিকশা যেতে শুরু করলো। কোথায় যাবি?? আর ঐ ভ্যান ফোলো করছিস কেনো কাহিনি কি? কিসের পাকনামো হচ্ছে??

ইমন কিছু বললো না সে তার দৃষ্টি স্থির রেখেছে সামনের দিকে। রক্তিম কিছু বললো না আর দেখা যাক। বাচ্চা পোলাপান কি উদয় হয়েছে মনে কে জানে। তার তো আবার জেদ ষোল আনা।

ভ্যানটা ময়মনসিংহ সদর হাসপাতালের সামনে থামলো।রিকশাটাও থামলো। রক্তিম ভাড়া দিলো এইদিকে ইমন ভিতরে চলে গেছে। রক্তিম পেছন তাকিয়ে দেখে ইমন নেই। এই যা কই গেলো পাজিটা। রিকশাওয়ালা বললো- ভিতরে গেছে।

রক্তিম একটা সস্থির শ্বাস ফেলে ভিতরে গিয়ে খুঁজতে লাগলো। এইদিকে ইমন ঐ মহিলাদের ফোলো করে বৃদ্ধ মহিলাটার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। রক্তিম ইমন কে খুজতে লাগলো কিন্তু পাচ্ছে না।

কিছুক্ষন পর একজন নার্স এসে একটা ফুটফুটে বাচ্চা  কে দিয়ে গেলো বৃদ্ধ মহিলাটির কাছে। বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনে ইমন বৃদ্ধ মহিলাটির সামনে এসে দাঁড়ালে। বৃদ্ধ মহিলাটি কাদছিলো আর বলছিলো হ্যা আল্লাহ কেনো আবার এমন ফুটফুটে বাচ্চা আনলে পৃথিবীতে । একটা ছেলে সন্তান কি দিতে পারলে না।আমার মেয়েটার কপালে কি সুখ লিখোনি তুমি। তিনবার কন্যাসন্তানের জননী হলো। এইবার ও যদি ওর স্বামী শুনে মেয়ে হয়েছে তাহলে যে মা মেয়ে কাউকে বাঁচতে দিবেনা । বলেই আরো কাঁদতে লাগলো। বাচ্চাটাও কাঁদছে। ইমন গিয়ে বললো- দাদু বাবুটাকে একটু দাওতো কোলে নেই।বৃদ্ধ মহিলাটি ভাবলো হয়তো ছোটো বাবু দেখে ভালো লেগেছে তাই কোলে নিতে চাচ্ছে সেওতো বাচ্চা ছেলেই। তাই কোলে দিলো ইমনের ইমন কোলে নিতেই বাচ্চাটা একদম চুপ হয়ে গেলো।বৃদ্ধ মহিলাটি অবাক হলো একটু। তারপর সে বললো দাদুভাই আমি ভিতর থেকে আসি তুমি এখানেই থাকো।
ইমন বাচ্চাটার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো। আর ভাবলো এইটা যদি আমার বউ হয়?? আমি বড় হলে তো এই বাবুটাও বড় হবে তখন তো বিয়ে করা যাবে। হুম এটাই আমার বউ। আমি আজি ওকে বাড়ি নিয়ে যাবো আম্মুর ও মেয়ে হবে আমারো বউ হবে। আম্মুর আর কষ্ট হবেনা৷
এই পিচ্চি তুই কি আমার মায়ের বউ মা হবি??
রঙিন শাড়ী চুরি কিনে দিবো।।
বলেই খিলখিল করে হাসতে লাগলো ইমন।
কি ব্যাপার এখানে দাড়িয়ে হাসছিস। তোকে খুজতে খুজতে পাগল হলাম।এখানে কি তোর চল এখান থেকে।

সাথে সাথেই বাচ্চটা কেঁদে ওঠলো। রক্তিমও খেয়াল করলো ইমনের কোলে সদ্য জন্মানো এক ফুটফুটে বাচ্চা।
একি এটা কে??
এটা আমার বউ।

কিহ বলেই হাসিতে ফেটে পড়লো রক্তিম।
কি হচ্ছে এখানে চুপ করুন আপনারা এটা একটা হাসপাতাল।(একজন নার্স এসে চোখ রাঙিয়ে বললো রক্তিম চুপ হয়ে গেলো)

আস্তে করে বললো- কার বাচ্চা এটা??
জানিনা।
তাহলে তোর কোলে কে দিলো।
ওর নানী।
তোকে দিলো কেনো?
আমার বউ আমাকে দিবেনা তো কাকে দিবে?
রক্তিম ইমনের কথা শুনে হা হয়ে গেলো। বিশ বছরের জীবনে আমি একটা গার্লফ্রেন্ড জুটাতে পারলাম না আর আট বছর বয়সেই বউ জুটিয়ে ফেললি?
হুম আমার বউ এটা।
পাগলামো না করে যার বাচ্চা তাকে দিয়ে চল এখান থেকে৷
না যাবোনা

দাও দাদুভাই আমাকে।
ইমনের মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেলো। মলিন মুখ করে দিয়ে দিলো বাচ্চাটাকে।
রক্তিম ও বুঝিয়ে সুঝিয়ে নিয়ে গেলো ইমন কে।
পরেরদিন তাদের ফেরার কথা হলেও ইমনের জেদের কারনে সেটা হয়নি। নিয়ম করে চারদিন ধরে ইমন হাসপাতালে রয়েছে। বাচ্চার মা আর বৃদ্ধ মহিলাটি বাচ্চার বায়না ভেবে কিছু বলেনি। তারাও ইমনকে এই কদিনে আপন করে নিয়েছে।পাঁচ দিনের দিন বৃদ্ধ মহিলাটি আবারো কান্না কাটি করছিলো এমন সময় ইমন হসপিটাল যায়। রক্তিম হাসপাতালের বাইরে ঘুরাঘুরি করছে। কারন সে জানে আজ ইমন কি করবে৷ আর কারো সাধ্য নেই তাকে আটকানোর সে যে এক রোঘা ছেলে।এই বয়সেই তার ব্যাপক ত্যাজ। তার মধ্যেই জমিদার বংশের আসল ত্যাজ ফুটে ওঠেছে এই বয়সেই।

হাসপাতাল গিয়ে বৃদ্ধ মহিলাটির কাছে ইমন জানতে পারলো বাচ্চাটাকে তার বাবা মেনে নিবেন না। টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিবেন।  নয়তো ঠিক ভাবে মানুষ করবেন না। খাওয়ার অভাব বা কাপড়ের অভাবে বড় হবে।তাই ইমন বললো- আমি ওকে আমার সাথে নিয়ে যাবো। বিয়ে করবো ওকে।
বৃদ্ধ মহিলাটি প্রথমে ইমনের কথা পাত্তা না দিলেও পরে বুঝতে পারলো এই ছেলে বড্ড জেদী। আর ভালো পরিবারের ছেলে। তাই সে ইমনকে জিগ্যাসা বাদ শুরু করলো। ইমন ও সব বললো পরিবারের বিষয়ে। তার মায়ের বিষয়ে  সব শুনে মনে হলো তার যে বাচ্চাটাকে দিয়ে দিলে কেমন হয়। কিন্তু আমার মেয়েতো রাজি হবেনা৷ তাই মহিলাটি সিদ্ধান্ত নিলো গোপনে দিয়ে দিবে৷ আর মেয়েকে বলবে হারিয়ে গেছে। এতে ওর অত্যাচার ও কমবে আর বাচ্চাটাও একটা সুন্দর জীবন পাবে।

ইমন তার কথা শুনে খুব খুশি হলো আর তার সহায়তায় ই বাচ্চাটাকে রক্তিম আর ইমনে হাতে তুলে দিলো।ইমন বাচ্চা তাই রক্তিমকে বুঝিয়ে দিয়ে দিলো। দুধের শিশু ডক্টরের পরামর্শ অনুযায়ী প্যাকেট দুধ ও সাথে দিয়ে দিলো।রক্তিম তার বাবার একাউন্ট থেকে দশ হাজার টাকা বৃদ্ধ মহিলাটিকে জোর করে দিয়ে দিলো।তবে সেটা বাচ্চার জন্য না। তার মায়ের জন্য।
এদিকে হাসপাতালে গুঞ্জন ছরিয়ে পড়লো বাচ্চা চুরি হয়েছে।বাচ্চার মা কান্নায় ভেঙে পড়লো। বৃদ্ধ মহিলাটি তাকে শান্ত করার চেষ্টা করলো। গরীব মানুষ থানা পুলিশ হবে না যেখানে বাচ্চার বাবাই আসেনি। এ নিয়েও কতো লোকের কৌতুহল বাচ্চার মা ভাবলো হয়তো এটার পিছনেও বড় কোনো কারন রেখেছে আল্লাহ। আমার মেয়েটা যেখানে থাকুক ভালো থাকুক। দূর্ভাগ্য নিয়ে আমার কোলে এসেছিলো। আবার চলেও গেলো।

ইমন আর রক্তিম আজি ঢাকা ফিরছে। তারা ট্রেনে করে যাচ্ছে । হঠাৎ রক্তিম বলে ওঠলো-তুই কি জিনিস ভাই কি করে পারলি এটা করতে। এতো সাহস কই থেকে এলো তোর। চুরি করলি।
অনেক চোর দেখেছি তোর মতো এমন হাই লেভেলের চোর জীবনে প্রথম দেখলাম। শেষ মেষ চুরি করলি তাও বউ চুরি। কিভাবে পারলি ভাই।
মানুষ টাকা -পয়সা চুরি করে, গয়না চুরি করে। মোবাইল চুরি করে, গাছের আম,লিচু,জাম সব চুরি করে। কতো রকমের চুরি দেখেছি ভাই কিন্তু মাইয়া চুরি দেখিনাই। তাও বউ করার জন্য চুরি, মাইয়া চুরি। ভাই আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা। এই বয়সেই তুই কি করলিরে ভাই। জানিনা ভবিষ্যতে কি করবি তুই।

কিন্তু মাইয়াতো মইরা যাইবো।  দুধের শিশু নাড়ই পড়ে নাই। কেমনে কি করবি ভাই।
এতো বক বক করেও কাজ হচ্ছিল না৷
কোনো কিছুতেই যেনো আর খেয়াল নেই তার।  কিন্তু যখনি পাঁচদিনের বাচ্চার কান্নার আওয়াজ গেলো কানে হুশ ফিরলো ইমনের চমকে ওঠলো সে। এই কান্নারত গলাটা তার কানে তীরের মতো বাজলো।

সেদিন বাড়ি ফিরতে ফিরতে ইমন আর  রূপমের রাত আটটা বেজেছিলো।বাচ্চা মেয়েটা ইমনের বুকেই ঘুমিয়ে পড়েছে। পাঁচ দিনের বাচ্চাকে ফিটারের দুধ খাওয়ানো খুবই কষ্টকর তবুও তারা দুইভাই মিলে সামলেছে পিচ্চিটাকে।বাড়ি ফেরার পর  মোজাম্মেল চৌধুরী ইরাবতী প্রশ্নের পাহাড় বসিয়ে দিয়েছে রূপম ধীরে সুস্থে সবটা বুঝিয়ে বললো।ইরাবতী বাচ্চা মেয়েটা কে বুকে জরিয়ে দুচোখ বন্ধ করে ফেললো। তার বুকের ভিতর যে আগুন জলছিল নিমিষেই সব ঠান্ডা হয়ে গেলো। ইমন কে কাছে টেনে কপালে চুমু একে দিলো।মোজাম্মেল চৌধুরী ও ছেলের কাজে সমর্থন করলেন। তাছারা দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। এই পরিবারে অনেক ভালো ভাবেই মানুষ হবে। এটাই ভাবলো তার এই বাচ্চা ছেলের এতো সাহস দেখে সে ভারী খুশি সেই সাথে অবাক ও। ইরাবতী বাচ্চার জন্য যাবতীয় যা লাগবে সব তার স্বামী কে বলে দিলেন হঠাৎ ই ইরাবতী অনেক স্বাভাবিক হয়ে গেছেন।যা দেখে ইমন খুবই খুশি হলো। বাড়িতে যেনো খুশির ঢেউ খেলে গেলো।

ছোট চাচা মইন চৌধুরীর বউ দীপান্বিতা বেরিয়ে আসলো।ইরাবতীর কোলে বাচ্চা দেখে সে অবাক হয়ে জিগ্যাস করলো কার বাচ্চা?
রূপম তাকেও সব খুলে বললো।সে তো অবাকের চরম পর্যায়ে। ইমনের দিকে একবার আবার বাচ্চার দিকে তাকাচ্ছে। তারপর ইমনের কাছে গিয়ে ঝুকে বললো-
বা বা এই বয়সেই মেয়ে ওঠিয়ে আনলি বড় হলে কি করবি রে তুই । ইমন শুধু মুখভরা হাসি উপহার দিলো।
বাড়ির সবাই বাচ্চাটাকে খবই সন্তুষ্ট মনে মেনে নিলো।
সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো সে বড় হলে ইমনেরই বউ হবে।
ইরাবতী বাচ্চাটা কে নিয়ে রুমে চলে গেলো।
এদিকে ইমন তার বাবাকে বললো-

বাবা আমার আলাদা রুম চাই । আম্মুর সাথে তো পিচ্চি থাকবে তাহলে আমার এখন আলাদা রুম দরকার।
মোজাম্মেল চৌধুরী ছেলের কথায় হাহা করে হেসে ওঠলেন  । আর বললেন বউ আসতে না আসতেই আলাদা রুম চাই। কথাটা শুনে সবাই হেসে ওঠলো।
বাড়িটা অনেকদিন পর খুশির আমেজে ভরে ওঠলো।

দীপান্বিতা চাচীর ছেলে দ্বিপক ইমনের একবছরের ছোট সেও ভীষন খুশি ছোট একটা বোন পেলো।

রাতে ইমন আর ইরাবতীর মাঝখানে রাখা হলো বাচ্চাটাকে। মোজাম্মেল চৌধুরীর আজ আর জায়গা হলো না এই রুমে সে পাশের রুমে চলে গেলো।

পরেরদিন বাচ্চার যা যা লাগে সব আনা হলো। ইমনের আলাদা রুম করা হলো।পুরো বাড়িতেই খুশির ঢেউ খেলে গেলো।বাড়িতে যে লক্ষীর পা পড়েছে। মোতালেব চৌধুরী ও ঘটনা শুনে গ্রাম থেকে চলে আসলেন। বাচ্চা দেখে ভারী খুশি হলেন। সে তো এক দেখাতেই গিন্নী বলে সম্বোধন করলেন।সেই শুনে ইমন দাদুকে চোখ রাঙালো। সেই নিয়ে পুরো বাড়ি হাসি তামাসায় মেতে ওঠলো।

বাচ্চার নাম ও রাখা হলো- মুসকান জান্নাত।

নামটা ইমনেরই দেওয়া।
সেই থেকে শুরু হয়ে গেলো চৌধুরী বাড়ির সুখের জীবন। ইমন ও তার পিচ্চি বউকে নিয়ে সময় কাটায় পড়াশোনার ফাকে বউকে সময় দেয়। মা কে সময় দেয়।মুসকানকে ছোট চাচী আইনি ভাবে এডপ্ট নেন।আশে পাশের সবাই জানে মুসকান মইন চৌধুরী আর দীপান্বিতা চৌধুরীর মেয়ে। ইরাবতী ই মুসকানের সব কিছু সামলায় দীপান্বিতা ও নিজের মেয়ের মতোই তাকে ভালোবাসেন । এক কথায় বাড়ির সকলের চোখের মনি সে। আর ইমন তার তো শুধু চোখের মনি না৷ তার হৃদপিন্ড সে।

আজ মুসকানের চতুর্থ তম জন্ম দিন। সামাজিক রীতি তে ইমন মুসকানের বিয়ে হয়ে গেলো৷ মুসকান ও তিন কবুল বলেছে  ইমনও তিন কবুল বলেছে । পিচ্চি বউ কে কোলে নিয়ে বসে আছে সে। স্কুলে ভর্তি করানোর আগে ইমন বিয়েটা সেরে নিলো এই বাচ্চা মস্তিষ্কে যে এতো গভীর চিন্তা তার কীভাবে আসে বাড়ির লোকেরা সেটাই ভেবে পায় না।
স্কুলে ভর্তি করানো হলো মুসকানকে। ক্লাস এইটে পড়ছে ইমন   পড়াশোনার পাশাপাশি তার বউ এর দিকে বেশ নজর  তার দুটাই দর্বলতা এক তার মা দুই মুসকান।

রাগি, জেদী,ঘারত্যারা,বদমেজাজী, রোমায়েন্টিক, দুষ্ট সব উপমাই তার জন্য দেওয়া যায়। বাড়ির সকলে তাকে যেমন ভালোবাসে সেই সাথে ভয় ও পায়। রাগ তার ১৬আনা।

একদিন স্কুল থেকে ফিরে মুসকান খাচ্ছে আর পুতুল খেলছে ইরাবতী তাকে খাওয়িয়ে। হাত ধুতে চলে গেলো।ইমন বাইরে থেকে এসে মুসকানকে দেখতে মায়ের রুমে ঢুকেছে । মুসকান পিছন ফিরে তার মেয়ে পুতুলের সাথে কথা বলছে –

বাবু কাঁদো কেনো? তোমার বাবা তো বিদেষ থাকে । বাবার কোলে তো ওঠতে পারবেনা। কিন্তু তোমার তো তিনটা মামা আছে বড় মামা এসে তোমাকে কোলে নিবে নি তাও কেঁদো না।

ইমন ভ্রু কুচকে মুসকানের সামনে গেলো।
কি করছো মুসকান??

মুসকানের মুখে খুশির ঝলক দিয়ে ওঠলো।
আর পুতুলের দিকে তাকিয়ে বললো- এইতো তোমার মামা এসে গেছে।

ইমন তো অবাক দাড়িয়ে চোখ গরম করে জিগ্যাস করলো কে মামা কিসের মামা??

মুসকান ও খাটের উপর দাঁড়িয়ে বললো-
এটা আমার মেয়ে।(পুতুল দেখিয়ে)
তাহলে তুমিতো ওর মামাই। দেখোনা আম্মুর ভাইয়া আমার মামা। (দীপান্বিতার ভাই) এই বাবু যাও মামার কোলে যাও বলেই পুতুল এগিয়ে দিলো ইমনের দিকে।

ইমনের মাথায় রক্ত ওঠে গেলো কথা শুনে বড় বড় করে তাকালো মুসকানের দিকে । তার বউ তাকে  পুতুল বাচ্চার মামা বানিয়ে দিলো।তার মানে বিদেশে পুতুলের বাবা থাকে  বাহ দারুন তো। এই বয়সেই বিদেশী বরের সপ্ন দেখছে। সামনে সত্যিকারের বর রেখে বিদেশী বর । তোমার বিদেশী বরের সপ্ন আমি দেখাচ্ছি দাঁড়াও।

চলবে…

Dangerous_Villain_Lover Last_Part

0

Dangerous_Villain_Lover
Last_Part
#writer_Tanjina_Akter_Misti

চোখ খুলে খাটেই পেলাম নিজেকে উঠে বসলাম। নিজেকে পাগল পাগল লাগছে সব শেষ আববু আম্মু সবাই আমার জন্য আমার ভুলের জন্য এতো বড় শাস্তি পেল। আমি সবাইকে মেরে ফেললাম হাটুতে মুখ গুজে একাধারে কেদে চলেছি। কেন আমি ভাইয়াকে বিশ্বাস করতে গেলাম কেন আপনজনকে বিশ্বাস করা ভুল আমি সেটা টের পাচ্ছি। ভাইয়া কাকে বলছি ওই নর পশু কারো ভাই না না র্করো ছেলে ফুফি কে ও ছারে নি। এতো খারাপ মানুষ কি করে হয় না ও মানুষ ও না জানোয়ার হয়ে গেছে। রাহুল ও কি এমন ও তো মাফিক না আমার রাহুল এতো পাষাণ হতেই পারে না আমার রাহুল ওর মতো জানোয়ার না।

কি করবো আমি আমার বেচে থেকে কি হবে যার জন্য সবাই মরে গেল সে বেচে থাকা উচিত না আমি মরে যাবো মরে গেল মৃত্যু প্রতিশোধ নেব কি করে? মরার আগে আমি ওই পাষাণকে মেরে দেব কি করে মারবো। জানি না কিছু জানি না যেভাবেই হোক ওই ভাইয়া নামক শএু কে মেরে তারপর মরবো। আমাকে পারতেই হবে যার জন্য আমি এতিম হয়েছি তাকে আমার মারতেই হবে ও বেচে থাকলে আর ও অনেক নির্রহ মানুষের প্রাণ যাবে।
একবার মারবে ভাবছে তত একবার মারবে না ভাবেছে। ছোঁয়া পাগলের মতো কাদছে আবার কাদা বন্ধ করে হেসে মারতে চাইছে। মাররে তো আমি খুনি হয়ে যাবো আমি খুনি। ভেবে আবার হাসছে।

আসিফ রুমে এসে ছোঁয়া কে এভাবে বিরবির করতে দেখে একবার হাসে তো একবার কেদে উঠে। ভ্রু কুচকে তাকিয়ে এগিয়ে আসে হাতে বিয়ের ড্রেস আর গহনা এনে খাটে রেখে ছোঁয়ার মাথায় হাত দিয়ে ডাকে ” ছোঁয়া ” এই দেখ তোর পছন্দের ড্রেস এনেছি লাল রঙের লেহেঙ্গা তুই তো তাই চেয়েছিলি আগে বলতি মনে আছে। বলেই লেহেঙ্গা ছোঁয়ার দিকে মেলে ধরে দেখাতে ছোঁয়া মাথা তুলে একবার লেহেঙ্গার দিকে তাকায় তারপর সেটা হাতে নিয়ে নেয়। আসিফ তো খুশি তে বাচে না মনে হচ্ছে ছোঁয়ার পছন্দ হয়েছে। কিন্তু ওর আশায় জল ঢেলে দিয়ে ছোঁয়া সেটা মেঝেতে ফেলে দেয়। যা দেখে আসিফ চিৎকার করে উঠে বকতে লাগে।

উপরোক্ত ছোঁয়া কিছু বলে না মাথা নিচু করে বসে থাকে। ও ভাবেছে কি ভাবে মারা যায় আচ্ছা চাকু থাকলে গলায় বসিয়ে দেব কিন্তু চাকু পাব কই। না এটা বাদ বন্ধুক আছে সবার কাছে এখানে আমাকি যেভাবে সেটা হাতে নিতে হবে।

— ছোঁয়া তুমি ড্রেসটা ফেলে দিলি। কি হলো কথা বল এভাবে মাথা নিচু করে আছিস কেন? তুই যার কর না কেন বিয়ে তো আজ হবেই সেটা তুই চাইলে ও আর না চাইলে ও। তাই এখন আমি মাথা গরম করছি না এমনিতেই আজ আমার বিয়ে কতো দিনে সপ্ন আমার পূরণ হচ্ছে ভাবতে পারবি না সেই ছোট থেকে আমার এই একটাই ইচ্ছে তোকে বউ করা আজে সেটা পূরণ হচ্ছে। আমি আজ অনেক খুশি তাই চিৎকার চেচামেচি করবো না ভালো ভাবেই বলছি বেশি তেরেমেরি করিছ না একটু পর দুজন এসে তোকে রেডি করাবে চুপচাপ রেডি হয়ে নিবি।

একাই কথা গুলো বলে আসিফ বেরিয়ে এলো রুম থেকে। ছোঁয়া ওইভাবেই বসে রইল নরাচরা বাদ দিয়ে।
কিছুক্ষণ পর
দুটো মেয়ে এলো রুমে এসে ছোঁয়া কাছে গিয়ে ওকে উঠে দাড় করাতে চায় সঙ্গে সঙ্গে ছোঁয়া রেগে ধাক্কা দিয়ে উঠে মেয়ে দুটো দূরে সিটকে পরে।

— ডোন্ট টাচ মি?

— ম্যাম

— একদম আমাকে ছুবে না। আমি কিছু পরবো না কোন বিয়ে করবো না। যদি আমার কাছে আস না দুজন কেই মেরে ফেলবো।

— ম্যাম কি সব বলছেন? প্লিজ আমাদের কে আমাদের কাজ করতে দিন নয়তো স্যার আমাদের ক্ষতি করে দেব প্লিজ।

— লজ্জা করে মিথ্যে বলতে।

— আমরা মিথ্যা বলছি না ম্যাম বিশ্বাস করুন। এনারা আমাদের ধরে এনেছে কাজ ঠিক মতে না করলে বলেছে আমাদের ক্ষতি করে দিবে। প্লিজ আমাদের এতো বড় ক্ষতি করবে না আপনি রাজি না আমরা জানি কিন্তু এতে আমরা আপনাকে কোন হেল্প করতে পারবো না আপনি ইচ্ছৈর বিরুদ্ধে হলেও আমাদের জন্য রেডি হন প্লিজ।

ছোঁয়া চুপ করে ওদের কথা শুনলো। ও বুঝতে পারলো আসলেই যে নিজের মাকে মারতে পারে আপন জনদের মারে তার অন্য জন্য তো কোন মায়া নেই এই মেয়েদের ও তো যা খুশি তাই করতে পারে। আর তার জন্য আমি দায়ী থাকবো না আমি এটা হতে দিতে পারি না নিজের জন্য অন্যের ক্ষতি করতে পারি না।
দুজনের দিকে তাকিয়ে রাজি হয়ে গেলাম বিয়ে তো করবোই না ওকে আমি খুন করবো কিন্তু তার জন্য এখন বসেসথাকলে এদের ক্ষতি হবে। দুজন মিলে আমার রেডি করে দিল।

মেয়ে দুটো চলে গেছে আমাকে রেডি করিয়ে দিয়ে ভাইয়া এসে আমাকে নিতে আমি কিভাবে বন্ধুক নিবো সেই চিন্তায় আছি আমাকে দেখে নানা কথা বলল আমি চুপ করে আছি দরজায় কাছে এসে ভাইয়ার দিকে ঘুরে দাড়ালাম।

— কি হলো দাড়িয়ে পরলি কেন? যাই করিস না কেন বিয়ে হবেই তাই চল।

আমি কিছু না বলে ভাইয়াকে জরিয়ে ধরলাম আচমকা ঘটনায় ভাইয়া হতদ্বভ হয়ে গেল হয়তো ভাবে নি এটা তার ভাবনার বাইরে ছিলো।

— আর ইউ ওকে ছোঁয়া তুই আমাকে জরিয়ে ধরেছিস। তাহলে কি আমাকে মেনে নিয়েছিস?

আমি কিছু না বলে আবার ছেড়ে দিলাম। তারপর আগে আগে হাটতে লাগলাম।

— ছোঁয়া দাড়া?

–তারাতারি আসো বিয়ে করবে না?

— কিরে এতো তারাতারি পাল্টে গেলি কেমনে তুই? এদিকে কই যাচ্ছ।

— বিয়ের আগে চলো একবার ছাদে থেকে ঘুরে আসি?

— এখন না আগে বিয়ে তারপর সব।

— আমি তো বিয়ে করবোই চলো আগে একটু ছাদে থেকে আসি মনটা ফ্রেশ করে কান্না করে মুড নষ্ট হয়ে গেছে আমার।

ভাইয়া রাজি হলো দুজন ছাদে এলাম ভাইয়া তো খুলিতে গদগদ আমি সেই সুযোগটাই নিলাম ভাইয়া আগে আগে যাচ্ছে আমি পেছনে ঘুম ছাদে দরজা বন্ধ করে দিলাম। সবার সাথে পেরে উঠবো না ভাইয়াকে একা করে তারপর করতে পারবো ।

ভাইয়া এগিয়ে যাচ্ছে আমি ছাদের দরজা বন্ধ করে ভাইয়ার দিকে বন্ধুক তাক করলাম হাত কাপছে আমার কি করে খন করবো আমি পারছি না সাহস হচ্ছে না ঘেমে একাকার হয়ে যাচ্ছি না আমাকে পারতেই হবে।
চোখ বন্ধ করে খুলি করলাম সব কি শেষ আস্তে আস্তে চোখ খুলে ভয় পেয়ে গেলাম হাতে থেকে ঠাস করে বন্ধুক পরে গেল ভাইয়া আমার সামনে আগুন চোখে তাকিয়ে আছে আমি ভয়ে পিয়ে যাচ্ছি ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে আসছে। আমি গুলি করলাম এ বাচলো কমনে।

— আমাকে তুই এই আসিফ কে মারবি তাই না। আমি আগেই সন্দেহ করেছিলাম তোর এই ভালো বিহেভ এ তাই তো যখন জরিয়ে ধরলো তখন ই টের পেয়েছি এটাহাতাতে ধরেছিস। ভালোবাসি বলে তোকে কিছু করিনি কিন্তু না তোকে তো বাচানো যাবে না আমাকে মারবি না তোকে বিয়ে নয় আজ খুন করবো।

বলেই ভাইয়া বন্ধুক উঠিয়ে আমার দিকে তাক করলো মরতে চাইছিলাম কিন্তু এখন নজের মৃত্যু কাছে এসে গেছে ভ য় নয় রাহুল কে দেখতে ইচ্ছে করছে আর কি কখনো দেখতে পারবোনা। ছোঁয়া পেছাতে পেছাতে একেবারে দেয়াল ঘেষে গেছে। আসিফ বন্ধুক ছোঁয়ার কপালে ধরে। হঠাৎ তীব্র শব্দ আসিফ বন্ধুক ভাথা থেকে সরিয়ে পেছনে ফিরে তাকায় সাথে ছোঁয়া চোখ খুলে তাকায় আর মুখে হাসি ফুটে উঠে সামনে দরজা ভেঙে রাহুল দাড়িয়ে আছে। ছোঁয়া আসিফ কে ধাক্কা দিয়ে রাহুলের দিকে ছোট লাগায় গিয়ে রাহুল কে জরিয়ে ধরে বুকে মুখ গুজে দেয় কতো দিন পর রাহুল কে পেয়েছে। শক্ত করে ধরে আছে রাহুল ছোঁয়া কে নিজের থেকে ছারিয়ে আসিফ সাথে লাগতে আসে পেছনে থেকে রাহুলের আর লোক আসে। বাইরের সবাই কে রাহুলের লোক আধমরা করে ফেলছে এখন সবাই আসিফ কে মারতেথাকে আসিফ এতো জনের সাথে পেরে উঠছে না। রাহুল সরে ছোঁয়া পাশে আসে।

— রাহুল ওকে আমি মারতে চাই প্লিজ সবাইকে বলো ছেড়ে দিতে। ও আমাকে এতিম করে দিয়েছে আমি নিজে ওকে শাস্তি দিতে চাই।

রাহুলের হাত ধরে। রাহুল এক ধারে ছোঁয়া র দিকে তাকিয়ে আছে ছোঁয়া কথা বলেই যাচ্ছে রাহুল কিছু না শুনে ছোঁয়া কে দেখে চলেছে কতো দিন পর মায়াবতী কে দেখতে পাচ্ছে ছোঁয়া কে টেনে বুকে জরিয়ে ধরে।

–রাহুল প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও আমি ওই জানোয়ার কে বিশ্বাস করেছিলাম তোমাকে অবিশ্বাস্য করে। যার ফল সরুপ আমি আমার মা বাবা কে হারিয়েছি ও সবাইকে আমার কাছে থেকে নিয়ে নিয়েছে আমাকে ওকে মারতে দাও।

বলেই ছোঁয়া কাদতে লাগে।রাহুল ছোঁয়া কে ছেড়ে দিয়ে হাত ধরে নিয়ে যায় সবাই কে আসিফকে ছেড়ে দিতে বলে আসিফ নিচে পরে আছে পুরো শরীর রক্তে মাখা ছোয়া দেখে শরীর কাপে উঠে রাহুল ছোঁয়া রা হাতে বন্ধুক দেয় ছোঁয়া কাপা কাপা হাথে বন্ধুক হাতে নেয় চোখ বন্ধ করে গুলি করে রাহুলের হাত খামচে ধরে পেছনে ফিরে তাকায়।

একমাস পর

ছোঁয়া অনেক ড্রিপেশণে ছিলো সবাইকে হারিয়ে কিন্তু রাহুল সামলে নিয়েছে। ছোঁয়া রুমে বসে আছে হঠাৎ দরজা খুলে ছোঁয়া মা প্রবেশ করলো রুমে ছোঁয়া তো ভূত দেখার মতো চমকৈ উঠো। ভা তো মারা গেছে এখানে কোথায় থেকে এলো পেছনে রাহুল ও আছে মুখে হাসি।

— কি রে চমকে দিলাম আমাকে ভূত ভাবছিস নাকি?

— আম্মু তুমি কিভাবে?

— আমি মারা যাই নি সেদিন রাহুল আমাকে বাচিয়ে ছিল। তোর ফুফিকে ও বাচেতে চেয়েছিল কিন্তু আল্লাহ রাখে নি।

ছোঁয়া দৌড়ে এসে মাকে জরিয়ে কাদতে লাগলো মাকে পেলে ও বাবাকে আর পাবে না সে কিন্তু ভাকে পেয়ে একটু খুশি লাগেছে এভাবে বাবা ও যদি ফিরে আসতো কিন্তু তা সম্ভব না মরে গেলে কেউ ফিরে আসে না।

রাতে ছাদে ছোঁয়া আর রাহুল দাড়িয়ে আছে। ছোঁয়া রাহুলের কাধে মাথা দিয়ে আছে। আমি সামনের জোসনা ভরা আকাশ দেখছে।
রাহুল ছোঁয়ার হাত শক্ত করে ধরে আছে।

— রাহুল তুমি আমাকে ক্ষমা করেছো তো?

— আমি তোমাকে কখনো ভুলই বুঝি নি ক্ষমা কেন করবো ?

— এতো ভালো কেন বাস আমি তো তোমার বিশ্বাস করতে পারিনি?

— ওঈসব কথা বাদ ওইখানে তোমার দোষ নেই। আসিফ তোমায় ভুল বুঝিয়ে ছিলো তাই।

— আই লাভ ইউ রাহুল।

— লাভ ইউ টু মায়াবতী।

বলেই রাহুল ছোঁয়ার কপালে চুমু খায়। ছোঁয়া রাহুলকে জরিয়ে ধরে।

সমাপ্ত

[ যারা গল্প টাকে সাপোর্ট করেছেন সবাই অনেক অনেক ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য। কেমন হয়েছে জানাবেন ]

Dangerous_Villain_Lover part 27

0

Dangerous_Villain_Lover
part 27
#Writer_Tanjina_Akter_Misti

আববুকে দেখে এসে কিছুটা ভালো লাগছে। কত দিন পর আববু কে দেখলাম। বারান্দায় বসে আছি বিকেল এখন চারটার মতো বাজে ভাইয়ার কথা গুলো ভাবাচ্ছে ভাইয়া বলেছে আববু কোথায় সেটা দেখে জানাতে এখন আমি তো কোথায় জানি না কিন্তু আমি সিউর আববু এই বাড়িতেই কোথা ও আছে কারণে কালকে রাহুল আমাকে কোন গাড়ি করে কোথায় ও নিয়ে যায় নি। তাই আমি নিশ্চিত এখানে আছে কিন্তু কোথায় খুজে দেখতে হবে। রাহুল কোথায় গেছে জানি না ও কোথায় গেলে ও দশ পনেরো মিনিটের মধ্যে আবার ফিরে আসে এখন কিছু করা যাবে না।

বিকেল ভর ওখানেই বসে ভাবতে আছি এর মাঝে রাহুল আসে।কোন দিকে না গিয়ে ভালোই হয়ে ছে রাহুলের কাছে ধরা খেতাম। উঠে রুমে চলে এলাম রাহুল নেই মনে হয় বাথরুমে গেছে আমি খাটের কোনায় বসতে গিয়ে আবার ফোনটা চোখে পরলো। ধরতে গিয়ে ও থেমে গেলাম সেদিন যে ভয় টা পেয়েছিলাম আজ আর ধরুম না। আগে আববু কে খুজে নেই তারপর। ভাইয়াকে জানিয়ে দেব।

রাহুল ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে চুল নারতে লাগলো আমি একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে এলাম। ডয়িং রুমে এসে বসলাম আমি একাই আছি এমন একা কারো ভালো লাগে অসহ্য লাগে জাস্ট বাইরে তো বের হতেই ভালত লাগে না একদিন বাগানে যেতে ছিলাম ভ য়ে আবার ঘুরে চলে এসেছী সবাই কেমন কালো পোশাক পরে হাতে বন্ধুক নিয়ে দাড়িয়ে আছে মনে হয় রোবক কেউ কারোদিকে তাকায় না।
বসে বসে ভাবছি হঠাৎ জোরে চিৎকার শুনে চমকে উঠে দাড়ালাম….
রাহুলের কণ্ঠ পাচ্ছি আমার নাম করে ডাকছে। রুমে না পেয়ে এমন করছে সব সময় তার সামনে থাকতে হবে আমাকে অসহ্য কিন্তু মুখ বুজে সহ্য করতে হচ্ছে।

পরদিন আমি খাটের কোনে বসে রাহুলকে দেখছি আর রাহুল রেডি হচ্ছে সবকিছুই নিয়ে। রেডি হয়ে আমার কাছ এসে একটা কথায় বলল….

– জান সাবধানে থেকো বাসার বাইরে একেবারে যাবে না বুঝছো। আর আমার আজকে আসতে একটু সময় লাগবে নিজের খেয়াল রাখবে ওকে।

আমি মাথা দুলিয়ে হুম জানালা রাহুল মুচকি হেসে আমার কপালে চুমু খেয়ে বেরিয়ে গেল। আমি তো এই সুযোগের জন্য ই ছিলাম দেরি হবে তাহলে আববু কে খুজতে থাকি হুম তাই করতে থাকলাম কিন্তু আমাদের রুমের পূর্বের একটা রুম আছে যেটায় তালা দেওয়া আমি সেটায় গেলাম কিন্তু তালা দেওয়া রুমে ঢুকবো কেমনে উপায় না পেয়ে ব্যথ হয়ে রুমে আসলাম নয়টা বাজে রাহুল বেরিয়েছে এক ঘন্টা হলো।

হঠাৎ চোখ গেল ড্রেসিং টেবিলের উপর রাহুলের ফোন দেখেই খুশিতে নেচে উঠলাম ভাইয়া ফোন দিয়ে বলি।
আর কিছু না ভেবে চরম ভুল করে বসলাম যা আমার জীবন সব চেয়ে খারাপ পরিস্থিতির সমোক্ষিণ হযে হলো। নিজেই এর জন্য দায়ি আর কেউ না সেইদিন ভাইয়াকে যদি না ফোন করতাম এখন আমি এখানে থাকতাম না।

সেদিন ভাইয়াকে ফোন দিয়ে বলি রাহুল বাড়িতে নেই আসতে লেট হবে। এটা জানার পর এক ঘন্টা বাদে ভাইয়া এসে উপস্থিত হয় বাড়িতে আমি খুশি মনে থাকি ভাইয়া আসবে বলে কিন্তু ভাইয়াকে দেখে অবাকের চরম সীমায় পৌঁছে যায় ভাইয়া গুন্ডা দের মতো ড্রেস আপ করে এসেছে হাতে বন্ধুক সাথে আরো কতো গুলো গুন্ডা বাড়ির র্গাড দের সাথে মারামারি করতে লাগে আমি বারান্দায় দাড়িয়ে দেখে ভয়ে শিউরে উঠি।

এখন বুঝেছি রাহুল আমাকে ঠিকই বলেছিলো ভাইয়া ও একজন মাফিয়া যেটা আমাদের সবার কাছে থেকে ভাইয়া লুকিয়েছে। আমি ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে আছি ভাইয়া একে একে অনেক গুলো মেরে ফেলছে আর বলছে
” রাহুল কে মিথ্যে কথা বলে দূরে পাঠিয়েছি সেখানে আমার সাথে যুদ্ধ করবে বলে বেচারা বসে আছে কিন্তু ও জানে ও না এখানে আমি এসে ওর সব কিছু ছিনিয়ে নিয়ে যাবো। ”

এটা আমার ভাইয়া ভাবতেই আমি ভ য়ে মরে যাচ্ছি কি হিংস্র লাগছে। রাহুল এতো মারামারি করে কিন্তু কখনো ওকে এতো হিংস্র লাগে না একটা। আমি কতো বড় ভুল করলাম এখন রাহুল কে খবর কি করে দেব। রাহুল বলেছিল ও না ভাইয়া মেরেছে আমি বিশ্বাস করি নি এখন আমি সিউর ভাইয়া ই আববু ক্ষতি করেছে রাহুল না। কিন্তু দেরি তে বুঝলাম রক্তে বন্যা বয়ে যাচ্ছে রক্ত দেখে আমার মাথা ঘুরতে থাকে। তারপর আর কিছু মনে নেই চোখ খুলে নিজেকে একটা বিছানায় পায় কিন্তু এটা কোথায় অচনা জায়গা।

হঠাৎ দরজা খুলে ভাইয়া প্রবেশ করে তাকে দেখে ভ য় পেয়ে যায়।

– ততুমমি এখা নে

– ছোঁয়া তুই আমাকে ভ য় পাচ্ছিস কেন তুই তো চেয়েছিলি ওখানে থেকে আসতে আমি তো তোর ইচ্ছে পূরণ করলাম।

– না আমি আসতে চাই না আমাকে আবার রেখে আস আমি তোমার কাছে থাকবো না এটা কোথায় নিয়ে এসেছো আমাকে।

– এটা তো আমার বাসা নতুন কিনেছি দেখতো তোর পছন্দ হয় কিনা না হলে বল চেন্জ করে ফেলবো।

– আমি কিছু দেখবো না আমাকে বাড়িতে দিয়ে আস তুমি একটা মিথ্যে বাদী মাফিয়া আববু কে তুমি কষ্ট দিয়েছো আর বলেছো রাহুল।

– ছোঁয়া তুই সব জেনে গেলি কি করে?

– আমাকে রাহুল আগেই বলেছিল কিন্তু আমি বিশ্বাস করে ছিলাম না। আজকে তোমার ওঈ রুপ না দেখলে হয়তো বুঝতে ই পারতামনা।

– ভালোই হয়েছে জেনে গেছিস সবাই তো জেনে গেল তোর বাবা আই মিন আমার মামু ও জেনে গেছিল তাই তো আধমরা করেছি ভেবছিলাম মেরে দেব হঠাৎ তোকে আসতে দেখে রাহুল দিকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে গেলাম যাতে সব দোষ রাহুলের হয় আর তুই রাহুল কে ভুল বুঝিস তাই তো হলো বল। আবার আম্মু জেনে গেছে তাকে আর তোর মাকে ও কাল মেরে দিয়েছি। এখন তোর বাবাকৈ ও মেরে দিয়ে এলাম এখন তুই ও জেনেছিস তোকে কি করা য় বলতো। মেরে দেবো না না এটা তো আমি করবো না কারণে আমি তো তোকে ভালোবাসি কি করে মারি বল তোকে বাচীয়ে ই রাখবো।
আর রইল রাহুল ওক মারতে পারলেই আমার সব শএু শেষ।

সব শুনে আমি পাথর হয়ে আছি আববু আম্মু ফুফি সবাই কে মেরে দিছে কী সব বলছে আবার রাহুলকেও। আমার মাথা ঘুরছে

– তুমি সবাইকে মেরে দিছো?

– হুম রে

– আববু তো রাহুলের কাছে ছিলো।

– ছিলো হসপিটালে মারতে গেছিলাম কিন্তু রাহুলের লোক এসে নিয়ে বাচিয়ে দিলো তার কি করবো বল বুঝছিলাম না হঠাৎ তুই ফুন দিলি আর বললি আমি তোকে বললাম আর তুই তাঈ করলি আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না কোথায় আছে তুই বলে সহজ করে দিলি। কিন্তু সমস্যা হলো তোর মা আর আর মা জেনে গেল সব আর আমাকে শাস্তি দিতে চাইলো কি করো বলো আমি মারতে চাইনি কিন্তু আমি কি করে নিজেকে শাস্তি দেয় ওদের বাচিয়ে রেখে তাই তত মেরে দিলাম।
আর মামুসকে কষ্ট করে ন য় সে তো গিড়ির ঝাকিতেই শেষ তুই তো ওজ্ঞান তখন তিন এভাবে ই ছিলি।

আমি আর কিছু ভাবতে পারলাম না চোখ বন্ধ হয়ে এলো গরিএ।য়ে খাটে পরে গেলাম।

চলবে❤

Dangerous_Villain_Lover part 26

0

Dangerous_Villain_Lover
part 26
#Writer_Tanjina_Akter_Misti

এক সপ্তাহ চলে গেল এভাবে। এখন আর কিছু বলি না রাহুল কে ওর কথা নেমে নেই একটা কারণে আববুর জন্য যদি আমার জন্য আববুর কোন ক্ষতি করে বসে। রাহুল কে বিশ্বাস নেই ওর মতো একজন মাফিয়ার পক্ষে সব করা সম্ভব। কি করে পালাব প্রথমে ভেবেছি পালিয়ে যাবো কিন্তু এখন তো তাও করতে পারবো না আববু কে আগে রাহুলের কাছে থেকে ছারাতে হবে তারপর যা করার করতে হবে।

আববু কে ছারাবো কি করে কিছু মাথায় আসছে না এই অবস্থায় আববু কে কিভাবে রাখছে নিশ্চয়ই অনেক কষ্ট দিচ্ছে। কতো দিন হলো আববু কে আম্মু কে দেখি না সব এ গুন্ডাটার জন্য হয়েছে ওর জন্য আমার জীবন টা এলোমেলো হয়ে গেছে। কখনো ক্ষমা করবো না কখনো না রাহুলকে আমি কখনো ক্ষমা করবো না।
কতো দিন হলো আম্মুর সাথে কথা হয় আ হবে কী করে রাক্ষসটা তো আমার ফোন ও আনতে দেয় নি না কখনো দরতে দিয়েছে। আম্মুকে খুব মিস করছি সেদিন কতো বাজে কথায় আ শুনালো আমার মুখ নাকী দেখতে চায় না। আমি জানি তো এগুলো কিছুই মনের কথা না সব অভিমানের আর এই অভিমান হয়েছে রাহুলের জন্য।

আম্মুর সাথে যদি একটু কথি বলতে পারতাম। কি ভাবে বলবো কি করে আম্মুর সাথে ফোন পাবো কোথায় রাহুলকে বললে তো কখনো দেবে না। যেকরেই হোক ফোনটা নিতে হবে কি কৌশলে। একমনে কথা ভেবে চলেছে ছোঁয়া কোন দিকে খেয়াল নেই ওর এখন রাত আটটার মতো বাজে খাটে বসে এসব ভাবছে ছোঁয়া। হঠাৎ নরম হাত পেটে পরলো সাথে গরম নিশ্বাস গারে পরছো চমকে পেছনে ঘুরার আগেই রাহুলের কণ্ঠ পেল।

–কি ভাবছে আমার জানটা এতো মনোযোগ দিয়ে?

আমি কিছু বললাম না ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরিয়ে উঠে দাড়ালাম।

— কি হলো?

— কিছু না। আববু কে একটু দেখতে দেন না প্লিজ কতো দিন ধরে আববু কে দেখি না খুব মিস করছি।( কান্না করার মতো করে বললাম )

— আহ জান কাদছো কেন? কেদো না প্লিজ আববু কে দেখতে চাও তো ওকে কালকেই নিয়ে যাবো তবুও কেদো না তোমার কান্না আমার সহ্য হয় না বুকে ব্যাথা হয়।

— সত্যি নিয়ে যাবেন তো।

— ইয়েস জান সত্যি নিয়ে যাবো আমার জান কষ্ট পাবে যাতে তা কি আমি করতে পারি।

আমি মনে মনে বললাম আমার কষ্ট বুঝলে আববু কে এভাবে ধরে রাখতে পারতেন না। আর আমাকে জোর করে আটকে রাখতেন না এতো অভিনয় কেন করেন সেটাই আমি বুঝৈ উঠতে পারছি না। ভাইয়া তো বলেছিল রাহুল মেয়েদের সাথে মেসে অনেক প্রতিদিন তার নতুন কাউকে লাগে পেয়ে গেলেঈ ছুড়ে ফেলে দেয়।

কিন্তু আমার সাথে এত ভালো সাজার কারণ কী এখন চাইলেই জোর করে কীছু করতে পারে কিন্তু আমি সেদিন রাতে আমার কাছে আসতে মানা করার পর রাহুল আর আসে নি কাছে বলছে আমি না চাইছলে কখনো আসবে না। রাতে জোর করে জরিয়ে ধরে কিন্তু এর বেশি কিছু করে না ওর বিহেভ দেখলে মাঝে মাঝে কষ্ট হয় কেন অভিনয় করো এটাই তুমি কেন নও? খুব কষ্ট হয় এই অভিনয় টাকেই আমি হারাতে চাইনা হ কিন্তু মুখে বলতে পারি না ও সামনে ওকে অবহেলা করে বুঝিতে চাই এখন আর আমার মধ্যে ওর জন্য ভালোবাসা নাই কিন্তু আমি তো জানি এই মনের ঘরে এখন রাহুল নামের ঠকটা বস করছে এতো কিছু করেছে তবুও সরাতে পারছি না।

আমি দাড়িয়ে কথা গুলো ভেবে চলেছি চোখ দিয়ে পানি পরছে হঠাৎ কারো হাতের ছোঁয়া বাস্তবে আসলাম দেখলাম রাহুল একদম আমার মুখের কাছে দাড়িয়ে আছে আমি কিছু বলভো আচমকা রাহুল আমার কপালে চুমু খেলো না করতে গিয়ে ও করতে পারলাম না। তারপর হাত দিয়ে চোখ মুছে দিলো।

— জান কেদো না প্লিজ খুব তারাতারি তোমার সমস্ত কষ্ট দূর হয়ে যাবে সব কিছু তোমার সাভনে স্পট হবে।

আমি কিছু বুঝলাম না কি বলল।

পরদিন রাহুল আমাকে চোখ বেধে দিলো আমি বারবার বলছি চোখ বাধলে কেন কিন্তু কিছু না বলে বেধে দিলো।
কোলে করে কোথাও যেতে লাগল জানিনা কোথায় যাচ্ছে গাড়িতে যে উঠায়নি এটা সিউর। কিছুসময় পর আমাকে কোথায় ও নামিয়ে দিলো সাথে চোখের বাধন ও খুলল।

— রাহুল আমি কোথা…..

আর বললাম না সামনের দিকে অবিক হয়ে তাকিয়ে আছি আববু খাটে শুয়ে আছে মুখে পাশে ডাক্তার ও আছে। নার্স সব আছে আমি আর কিছু না দেখে ছোটে আববুর কাছে গিয়ে কাদতে লাগলাম কতো দিন পর দেখছি। কাদছি আর কথা বলছি আববু কথা বলতে বলছি আববু কিছু বলছে না।

দুইদিন পর

সকালে

রাহুল বাথরুমে গেছে এই সুযোগ ফোনটা টেবিলের উপর আছে আমি নিয়ে আগে আম্মুকে কল দিলাম আম্মু ধরছে না। বসে নক কামড়াচ্ছি আর ভাবছি আর কাকে দেওয়া যায় ভাবতেই আবার আম্মুকে দিলাম এবার আম্মু ধরলো।

আম্মু ও পাশ থেকে বলছে কে কে কিন্তু আমার মুখ দিয়ে কদা বের হচ্ছে না গলায় যেন সব কথা আটকে আছে। কতো দিন পর আম্মুর কণ্ঠ শুনতে পাচ্ছি।

— হ্যালো আম্মু

–কে

— আম্মু আমি

— তুই আমাকে ফোন দিয়েছিস কেন? আর কখনো ফোন দিবি না?

আর কিছু বলতে না দিয়ে আম্মু ফোন রেখে দিলো। আম্মুর কি আমার জন্য একটু কষ্ট হচ্ছে না এভাবে ফোন রাখতে পারলো কান্না পাচ্ছে কিন্তু এখন কান্না করার সময় না ভাইয়াকে কল করি একবার ভাইয়া আমাকে হেল্প করতে পারবে।

ভাইয়ার সাথে কথা বলছি হঠাৎ কেউ আমার গারে হাত দিলো সঙ্গে সঙ্গে আমার হাত থেকে ঠাস ফোনটা নিচে পরে গেলো। ভয়ে আমি কাপাঁকাপি করছি……

চলবে❤

Dangerous_Villain_Lover part 25

0

Dangerous_Villain_Lover
part 25
#Writer_Tanjina_Akter_Misti

–হ্যালো কাজ হয়েছে?

–হুম বস আমাদের কাজ শেষ।

–গুড আজকের রাতটা ওইখানেই রাখ সাথে ডাক্তার আছে তো !

–হ্যা ডাক্তার নিয়েই এসেছি অবস্থা তো ভালো না ডাক্তার দের বন্ধুক দেখিয়ে ভয়ে রেখেছি যাতে কাউরে কিছু না বলে। ডাক্তার শিকার করেছে কাউকে কিছু বলবে না আর ভালো ভাবেই চিকিৎসা করবে।

— আচ্ছা কোন গন্ডগোল যেন না হয়?

— বস আসিফের লোক পিছে লেগেছিল একটুর জন্য ধরা পরিনি।

— ওই আসিফকে তো আমি খুন করে ফেলবো বাস্টার। ও যেন কোন ভাবেই ছোঁয়ার বাবার কাছে আসতে না পারে কাল আমি এসে একটা কিছু করবো সে পযর্ন্ত ছোঁয়ার বাবাকে দেখে রাখিস।

— আচ্ছা বস।

ফোন রেখে হাতে নিলো রাহুল ছোঁয়া বাবাকে কিডনাপ করেছে রাহুলের লোকেরা। সেই বিষয়ে কথা হচ্ছিলো এতোক্ষণ এখন একটা বাজে বারান্দায় থেকে রুমে আসার জন্য পিছনে ঘরতেই কেউ রাহুলের কলার চেপে ধরলো ঘটনা টা হঠাৎ ঘটায় রাহুল ভয় পেয়ে যায়। কিন্তু ছোঁয়া কে দেখে অবাক হয় এখন ছোঁয়া জেগে কি ভাবে ওকে তো ঘুমের ঔষধ দিয়েছিলাম তাহলে জাগলো কি করে।

— জান তুমি জেগে গেছো?

— তুই কার সাথে কথা বলছিলি আববুকে তুই তুলে এনেছিস?

— কি বলছো ছোঁয়া এমন কিছু না আমি তো

— আমাকে মিথ্যে বলবি না আমি নিজের কানে শুনেছি। তুই আববু কে নিয়ে কথা বলছিলি সাথে ভাইয়ার নাম ও নিয়েছিস। কি করতে চাস তুই আববু কে মেরে ফেলতে আববুর কিছু হলে আমি তোকে খুন করে ফেলবো। আমার আববু কে ছেড়ে দে এমনিতেই আববুর অবস্থা ভালো নয়।

— জান আমার কথা শুনো আমি আন্কেলের কোন ক্ষতি করবো না বরং ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা করবো তাই তো।

— কি বললি রক্ষা তোর মুখে এই কথা মানায় না তুই রক্ষা না খুন করতে চাইছিস। আমি তোকে ছারবো না ভেরে ফেলবো কি ক্ষতি করেছিলাম আমি তোর যার জন্য এতো কষ্ট দিচ্ছিস বল।

ছোঁয়া গলা টিপে ধরে কথা বলে চলেছে। রাহুল অনেক কষ্ট ছোঁয়া থেকে নিজেকে ছারিয়ে নিলো। ছোঁয়া একের পর এক কথা বলেই রাহুলের উপর ঢলে পরলো। ঘুম রে মাঝেই জেগে উঠেছিলো কিন্তু বেশিক্ষণ রইলো না জেগে থাকতে কারণে ঘুমের ঔষধ খাওয়ানো হয়েছে তাই সেই রিয়াকশণ রয়ে গেছে।

রাহুল ছোয়াকে রুমে এনে খাটে শুয়ে দিলো তারপর নিজেও পাশে শুয়ে পরলো।

পরদিন

ছোঁয়া ঘুমে থেকে উঠে নিজেকে কারো বুকে পায় তাকিয়ে দেখে রাহুল দেখা মাএ ওর চোখ মুখ শক্ত হয়ে আসে আর সঙ্গে সঙ্গে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরিয়ে দেয়। হঠাৎ ধাক্কা খেয়ে রাহুল চোখ খুলে তাকিয়ে অবাক হয় ছোঁয়া রাগী চেহারা দেখে।

— তোর সাহস কি করে হলো আমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমানোর আর আমি ঘুমালাম কখন?

–জান তুমি খুব অভদ্র হয়ে তুই তোকানি করছো কেন সব সময়?

— কি বললি আমি অভদ্র হয়েছি? ভালো এবার আমি খুনি হবো?

— হুয়াট জান কি বলছো সকাল সকাল একে তে সুন্দর ঘুম নষ্ট করলে এখন খুনি হবে মানে কি জান?

–হুম তোকে মেরে ফেলবো বল আমার আববু কোথায় বল? আববুর কোন ক্ষতি করেসি করে থাকলে……

রাহুল ছোঁয়া মুখে হাত দিয়ে থামিয়ে বলে।

— ছোঁয়া তোমার আববু এখন আমার কাছে তাই আমার কথা মতো না চললে তোমার আববুর ক্ষতি হবে আর যদি শুনো কিছু করবো না বুঝছো জান?

— উম উম উম

রাহুল বুঝতে পারলো ও ছোঁয়ার মুখ চেপে ধরেছে। সাথে সাথে মুখে থেকে হাত ছুটালো ছোঁয়া সঙ্গে সঙ্গে রাহুলের হাত মুঠো করে ধরে ফেলল……

— প্লিজ রাহুল আববুর কোন ক্ষতি করো না। আববু র কিছু হলে আমি মরে যাব?

— এই কথা বলো না জান তোমার কিছু হবে না আমি রাহুল থাকতে তোমার কিছু হবে না।

— আমার কথা না রাহুল প্লিজ আববু কে ছেড়ে দাও আমার জন্য আববু কে কষ্ট দিয় না কেন তুমি আববু কে এমন করে ফেললে। আমি তো তোমাকে কে ভালোবেসে ছিলাম কিন্তু তুমি আমাকে ঠকীয়েছো কষ্ট দিয়েছে?

রাহুল কিছু বলল না ছোঁয়ার কথা শুনে যাচ্ছে। ছোঁয়া ভনে যে অভিমানের পাহার হয়েছে তা বুঝছে। কিন্তু এটা ভেবে ভালো লাগছে ছোঁয়া ওকৈ এখন ও ভালোবাসি বলেছে কিন্তু ওকে ঠক বাজ ভাবছে খুব তারাতারি তোমার কাছে থেকে আবার আগৈর ভালোবাসা আনবো জান।

বিকেলে

ছোঁয়া রুমে বসে আছে। রাহুল বলেছে কোন তেরিমেরি না করতে করলো আববুর ক্ষতি করে দেবে তাই কিছু করছে না। কোন ভাবেই আববুর কিছু কতে দেওয়া যাবেনা। রাহুল ছোঁয়ার বাবার কাছে গেছে এমন একটা জায়গায় রাখতে হবে যেখানে আসিফ পৌছাতে পারবে না।

রাতে

–জান খেয়ে নাও প্লিজ সব সময় খাওয়া নিয়ে এমন করো কেন? তোমার শরীর অসুস্থ হয়ে যাবে এমনিতেই তোমার শরীর অনেক র্দূবল।

— আমি খাব না তুই খা।

— ছোঁয়া আবার তুই তোকানি করছো?

— হ্যা করছি।

— তোমার আববু কিন্তু আমার কাছে আছে।

— তোকে আমি ছারবো না।

— ওকে ছারতে বলেছে কে সারাজীবন ধরে রাখো আমি তো তাই চাই।

— ইডিয়েট,

রাহুলের কথা শুনে ছোঁয়া খেতে লাগল কারণে ও চায় না ওর জন্য আববুর কোন কষ্ট হোক কিন্তু মনে মনে রাহুল গোষ্ঠী উদ্ধার করে দিচ্ছে। এখানে থেকে পালানো ও সম্ভব না আববু কে যে করেই হোক ওর কাছে থেকে বাচাতে হবে ভাইয়ার সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

খাওয়া শেষে রাহুল ছোঁয়া কে ছাদে নিয়ে এলো।

— এখানে কেন?

— আসো জোসনা দেখি।

— নাহ আমার ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুভাবো আপনি দেখেন।

— আপনি একটু আগে না তুই বললা।

— হুম এখন থেকে আপনি করে বলবো।

— না তুমি করে বলো।

–ঘুমাবো আমি যাই।

–না দেখো না প্লিজ।

আমি জোর করে চলে আসলাম। ঘুমের কথা বলাতে রাহুল জোর করলো না কিন্তু মুখে কষ্ট স্পর্ট কিন্তু আমার খারাপ লাগছে না আগে হলে হয়তো খারাপ লাগতো কিন্তু এখন লাগছে না। এই মানুষ টাকে এক সময় ভালোবাসতাম ভাবতেই ঘৃণা হয়।

চলবে❤

[ ছোট বলে কেউ চিল্লাচিল্লি করবেন না ইনশাআল্লাহ নেক্সট পর্ব বড় করে দেবো ]

Dangerous_Villain_Lover part 24

0

Dangerous_Villain_Lover
part 24
#Writer_Tanjina_Akter_Misti

ছোঁয়া একাধারে কেদেই চলেছে কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। রাহুল কাছে ঘেষলেই চিৎকার করে বাড়ি মাথায় নিচ্ছে আর খুনি বলে চলেছে। এখানে আসার পর থেকেই এমন পাগলামো করে চলেছে ছোঁয়া রাহুল ওকে দেখলে বেশি পাগলামি করে তাই বাইরে কিছু ক্ষণ বসে রইল কিন্তু এভাবে আর পারা যাচ্ছে না। ছোঁয়া একেকটা চিৎকার ওর বুকে শিকের মতো বিধছে। বসেনা থেকে উঠে রুমে যাওয়া ধরলো কে জানে আবার কি করে বসে।
দরজা খুলে ভিতরে উকি দিয়ে দেখলো ছোঁয়া কেদে চলেছে চোখ মুখ লাল হয়ে আছে।

রাহুল এগিয়ে গিয়ে ছোঁয়ার পাশে বসলো হাত নিয়ে ছোঁয়া দুগালে রাখলো। ছোঁয়া শান্ত দৃষ্টি তে রাহুলের দিকে তাকালো। রাহুল ছোঁয়া চোখের পানি আগুল দিয়ে মুছে দিতে যাবে হঠাৎ ছোঁয়া মুখে অগ্নি র্মূতি ধারণ করে ধাক্কা ইয়ে বসলো রাহুল কে আচমকা ঘটনায় রাহুল নিজেকে সামলাতে পারলো না নিচে পরে গেল। খাটের কোনায় লেগে মাথায় ব্যাথা ও পেল কিন্তু সেদিকে রাহুল খেতাল নেই ছোঁয়া যে ধাক্কা দিতে গিয়ে নিজে ও নিচে পরে গেছে সে আছে ছোঁয়ার চিন্তায় উঠে দৌড়ে ছোয়ার কাছেগেল।

ছোঁয়া কি হয়েছে দেখি কোথায় লেগেছে কিন্তু ছোঁয়া কথা না বলে চোখ বন্ধ করে আছে। রাহুল গালে হাত দিয়ে একমনে ডেকে চলেছে চিৎকার করে কিন্তু ছোঁয়া চোখ খুলছে না। রাহুলের চিৎকার শুনে সব র্গাডরা রুমে ছুটে আসে এমন অবস্থা দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। রাহুলকে কোন মেয়ের জন্য এমন কাদতে দেখে। সুমন এসে রাহুল কে শান্ত হতে বলে আর ডাক্তার কে কল করে আসতে বলে। রাহুল নিজেকে শান্ত করে ছোঁয়া কে কোলে করে খাটে শুইয়ে দেয়।

— জান চোখ খুল? কি হয়েছে চোখ খুলো প্লিজ তোমাকে এভাবে চুপ থাকতে দেখে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে প্লিজ কথা বলো মারো আমাকে।

কথা বলে যাচ্ছে রাহুল ডাক্তার এলে অনেক বলে হাত ছারিয়ে সরিয়ে আনে সুমন। ডাক্তার দেখতে বসে রাহুল একটা পর একটা কথা বলে যায় এভাবে এটা করে ওটা করেন ইনজেকশন দিতে যাবে রাহুল ছুটে যায় কিছু তেই দিতে দিবে না। বলছে আমার মায়াবতী ব্যাথা পাবে।

— আপনি এমন করলে আমি কিছু করতে পারবো না। এতো যেহেতু ব্যাথা পাবে তাহলে আমাকে এনেছেন কেন সব কিছু তেই আপনার এটা না ওটা।

ডাক্তার কথাটা বলে রাহুলের দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে গেল। রাগী চোখে তাকিয়ে আছে এবার ডাক্তার মিনমিন করে বলতে লাগে……

— সরি আসলে আপনি যেমন করছেন এমন করলে তো ওনার ক্ষতি হবে। আমাকে আমার কাজ করতে দিন।

— কি হয়েছে ওর ডাক্তার আমার মায়াবতির কি হয়েছে?

— ওনার শরীর প্রচণ্ড র্দূবল অনেক দিন ধরে ঠিক মতো খাবার খায় না। আর অনেক টেনশন করে যার জন্য এমন হয়েছে ওনাকে ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করাতে হবে না হলে বড় কোন প্রবলেম হবে।

প্রবলেমের কথা শুনেই রাহুল ডাক্তাররের কলার চেপে ধরে। সুমন অনেক কষ্টে হাত ছাড়িয়ে সরিয়ে আনে রাহুল বকেই যাচ্ছে।

.

.

ছোঁয়া মিটিমিটি কএ চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে ওর হাত রাহুল ধরে রেখেছে। আর এক দৃষ্টি তে তাকিয়ে আছে ওর দিকে ছোঁয়া তাকাতেই রাহুলের মুখ জলমল করে উঠে রাহুল ছোঁয়া মাথা টেনে বুকের মাঝে চেপে ধরে।

— জান এতো নড়াচড়া করো না প্লিজ। আমার খুব এই বুকে জ্বলছে খুব একটু শান্ত হয়ে থাক পা প্লিজ?

— ছার বলছি আমি কোন খুনির বুকে থাকতে চাইনা। তোর জন্য আমি আববু কে হারাতে বসেছি।

–জান তুমি আমাকে ভুল বুঝছো আমি কিছু করি নি?

— আমি নিজের চোখে সব দেখিছি।

— তোমার দেখায় ভুল ছিলো জান।

— আমি কোন ভুল দেখিনি। ছার তুই ছার।

ছোঁয়া ছুটাছুটি করতে আছে কিন্তু রাহুল শক্ত করে ধরে রইল।

রাতে

রাহুল ছোঁয়া খাবার রুমে নিয়ে এলো। ছোঁয়া কে খেতে দিচ্ছে খাবে না।

— রাহুল আমাকে যেতে দে বলছি তোকে আমি কখনো ক্ষমা করবো না এভাবে জোর করে আটকে রেখে তুই কি প্রমাণ করতে চাইছিস। ভালোবাসি এই মিথ্যে ভালোবাসা কেন দেখাচ্ছিস?

— আমি কোন মিথ্যে ভালোবাসা দেখাচ্ছি না জান তুমি সেটা ভালো জানো।

— নাহ আমি কিছু জানি না। একজন মাফিয়া গুন্ডার কিছু আমি জানি না। যাকে আমি ভালোবাসতাম সে তুই না তুই তো একটা খুনি পাষাণ তোর জন্য আববু এতো কষ্ট পাচ্ছে। আম্মু আমাকে এতো কথা শুনালো কষ্ট পেয়ে চলে গেল মেয়ে বলে অশিকার করলো ভালোবাসলে আমার এতো ক্ষি করতি না তুই। এখন এসেছিস খাওয়াতে

রাহু নিরব ভাবে তাকিয়ে আছে ছোঁয়ার মনে যে পাহার সুমান অভিমাণ জমেছে রাহুল বুঝতে পারলো। এখানে ঘৃণা পায়নি এখনো ভালোবাসে ছোঁয়া আমাকে ভাবতে আনন্দে মনটা নেচে উঠলো। ছোঁয়া কথা বলে যাচ্ছে রাহুল ফট করে মুখে ঢুকিয়ে দিলো।

চলবে ❤

[ ভুল – ক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]

Dangerous_Villain_Lover part 23

1

Dangerous_Villain_Lover
part 23
#Writer_Tanjina_Akter_Misti

রুমে বসে আছি চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরে যাচ্ছে। কিছু তেই থামাতে পারছি না রাহুলের জন্য আববুর এই অবস্থা তবুও ওর জন্য কেন কষ্ট হচ্ছে আমার কেন? যার জন্য আমি আমার আববুর সাথে কথা বলতে পারছি না। আববু নরতে পারছে না কিছু করতে পারছে না, আম্মু কষ্ট পাচ্ছে সবাই রাহুলের জন্য কষ্ট পাচ্ছে ওক আমি ঘৃণা কেন করছি না। কেন ওকে হারিয়ে আমার এতো কষ্ট হচ্ছে আজকের পর আর চাইলে ও আর রাহুলের কাছে যেতে পারবো না। আমি কি ভুল করছি, নাহ এইসব আর ভাববো না আমি কোন ভুল করছি না যা করছি সব ঠিক করছি আগে যা করেছি তা ভুল ছিলো। রাহুল নামের বিশ্বাসঘাতকে ভালোবাসাটাই আমার ভুল ছিলো।
যার সাথে ভালোবাসার পর থেকে যা জেনেছিলাম মিথ্যে ছিলো কোন সত্য ছিলো না। সে একজন মাফিয়া যার পেশা লোক ঠকানো। নির্রিহ মানুষ কে কষ্ট দেওয়া যখন যে তার বিরুদ্ধে যাবে তাকে গুলি করে হত্যা করা। আববু ও প্রতিবাদ করতে গিয়েছিল বিনিময়ে কি পেলে? এমন একজন মাফিয়া কে আমি ভালোবাস

একমনে কথা গুলো ভাবছিল ছোঁয়া হঠাৎ আম্মু আসে রুমে তাই ভাবনা চিন্তা বাদ দেয়। আম্মুর সাথে নিচে আসি সবাই বসে আছে আমার অপেক্ষায় ই ছিলো আমাকে নিয়ে ভাইয়ার পাশে বসতে বলে যেই বসতে যাব কেউ টান মেরে দূরে সরিয়ে নেয় আচমকা এমন হওয়ায় সবাই বসা থেকে দাড়িয়ে যায়। লোকটির দিকে তাকিয়ে আতকে উঠি এ তো আর কেউ না রাহুল। কি বিচ্ছিরি অবস্থা হয়েছে চোখ দুটো লাল টকটকে হয়ে আছে চোখে নিচে কালো চুল গুলো উসকো খুসকো কতো দিন ঠিক করেনি কে জানে। এমন অবস্থা একে নিজের অজান্তেই বুকে কষ্ট অনুভব করলাম জানি কেন কষ্ট হচ্ছে? হঠাৎ ভাইয়ার চিৎকার শুনে ঘুরে তাকালাম……

–তুই এখানে কি করছিস? তোর সাহস কি করে হলো ছোঁয়া হাত ধরার ছার বলছি?

–আমার সাহসের এখন ও কিছুই দেখিসনি তুই? খুব শখ না বিয়ে করার করবি ভালো কথা মেয়ের কি দেশে অভাব পরেছে যে একজন বিবাহিত মেয়েকে বিয়ে করছিস?

–হুয়াট কে বিবাহিত কি বলছিস তুই?

— একি তুই জানিস না? যাকে বিয়ে করছিস তার সম্পর্কে সব না জেনেই বিয়ের জন্য হ্যা করে দিয়েছিস।

–রাহুল তোর ফালতু কথা শুনার মতো সময় আমার নেই ছোঁয়া কে ছার?

— অসম্ভব ছোঁয়া কে তো কখনো ছারতে পারবো না? সি ইজ মাই সুইট ওয়াইফ বলে কথা। বউ কে কেউ ছারে বুঝি?

–বউ মানে

— বউ মানে বউ।

— অসম্ভব আমি বিশ্বাস করি না ছোঁয়া এমন কাজ কখনো করবে না।ও কাউকে না জানিয়ে এমন একটা ডিসিশন একা নিবে না।

— নিয়েছে নিবে না কি? ছোঁয়া আমাকে ভালোবাসে আমি ও তাই এটা না নেওয়ার কি আছে? আর তোর বিশ্বাস না হলে ও এটাই ঠিক আর আমি তোকে বিশ্বাস করাতে ও চাই না। তুই যে নোংরা খেলা খেলছিস খুব তারাতারি আমি তা শেষ করে দেব কিন্তু এখন ছোঁয়া আমার সাথে যাবে।

এতোক্ষণ আমি চুপ করে দুজনের কথা শুনছিলাম। এখন কিছু বলতে যাবে আম্মু আমার কাছে এসে দাড়ালো সাথে সাথে রাহুল আমার আত ছেড়ে দেয়। আর সাথে সাথে আম্মু চর দেওয়ার জন্য হাত উঠায় আমি ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করে নেই কিন্তু কোন কিছু না হয় তাই চোখ খুলে দেখি রাহুল আম্মুর হাত ধরে রেখেছে যা দেখে আমার মাথায় রক্ত উঠে যায় পেয়েছে কি?

— স্যরি শাশুড়ি আম্মা, এটা আমি করতে দিতে পারবো না ছোঁয়া গায়ে হাত উঠাতে আপনি পারবেন না।

–রাহুল আম্মুর হাত ছারেন। আপনার এতো বড় সাহস আমার আম্মুর সাথে এভাবে কথা বলছেন। আম্মু আমাকে যা খুশি তাই করবে মারতে ইচ্ছে হলে মারবে এতে আপনি বাধা দেওয়ার কে?

–আমি তোমার স্বামী।

–মানি না আমি একজন মাফিয়া কখনো আমার স্বামী হতে পারে না। যার জন্য আমার আববু মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে তাকে আমি কখনো স্বামী মানিনা।

–আমি তোমার আববুকে কিছু করি নি সব তো

— মিথ্যে কথা একদম বলবেন না আমি নিজে আববুর পাশে আপনাকে দেখেছি। চলে যান আমি কখনো আপনার সাথে যাব না।

— স্যরি জান আমি যেতে পারবো না তোমাকে আমার সাথে যেতেই হবে।

— নাহ কখনো না।

এবার আম্মুর দিকে তাকালাম আম্মু কিছু বলছে না অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। তারপর একটা কথা বলল যাতে আমি অবাকে চরম সীমায় পৌঁছে গেলাম ভাইয়া ও কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে। কারণে রাহুল বিয়ের কাগজ সবাই কে দেখিয়েছে।

— আপনি আপনার বউ কে নিয়ে যান।

— আম্মু কি সব বলছো তুমি?

— স্যরি আমি কারো আম্মু না, আমার একটা মেয়ে ছিলো যে অনেক ভালো ছিলো একটু জেদি দুষ্টু ছিলো কিন্তু বিশ্বাসঘাতক ছিলো না। সে যাই করুক না কেন বাবা মাকে সব বলতো। আর আমার সামনে এখন যে দাড়িয়ে আছে যে সে আমার মেয়ে না সে একজন বিশ্বাস ঘাতক যে গুন্ডার বউ। যে একাই তার বিয়ের ডিসিশন নিয়েছে আমার ভেয়ে এভাবে ডিসিশন কখনো নিতো না কখনো না আমি তোর মুখ ও দেখতে চাই না তুই আমার চোখে সামনে থেকে চলে যা। যার জন্য তোর বাবার এই অবস্থা তাকে তুই ভালোবাসি এমন দিন দেখার আগে আমার মরণ হলো নাক কেন?

ভাইয়া আমার কাছে এগিয়ে এলো। কিছু বলতে যাবে কিন্তু রাহুলের দিকে তাকিয়ে চুপ করে আবার চলে গেল।

আম্মু দৌড়ে উপরে চলে গেল আমি পেছনে যেতে গেলে রাহুল হাত টেনে ধরে।সবাঈ চলে যায় কেউ রইল না পাশে।

চলবে❤

[ গল্প লেখার মন মানুষিকা হারিয়ে ফেলেছি আমি। কিছু মানুষের কথায় এতো কষ্ট হয় মন চায় আর লেখবো না কিন্তু কিছু ভালো পাঠকের জন্য আবার লিখতে বসি। গল্প শুরু যেহেতু করেছি আপনারা খারাপ বললেও আমি ডিসিশন নিয়েছি গল্প শেষ করবো। আর লেখা অফ করবো তাও না আর ও বেশি লেখবো যত সমালোচনা করার ইচ্ছে করতে পারেন সমস্যা নেই। না প্রতিবাদ করেছি না করবো। শুধু এইটুকুই বলবো আমি লেখিকা একদমই ভালো না তাই প্রচুর ভালো পাঠক/ পাঠিকারা আমার গল্প থেকে দয়া করে দশ হাত দূরে থাকুন। ]

Dangerous_Villain_Lover part 22

0

Dangerous_Villain_Lover
part 22
#Writer_Tanjina_Akter_Misti (তানজিনা আক্তার মিষ্টি )

এক সপ্তাহে চলে গেছে এই এক সপ্তাহে রাহুল ছোঁয়া কাছে একবার ও যেতে পারে নি। ছোঁয়া কে দেখতে ও পারে নি রাহুল হিংস বাগের মতো রেগে আছে মনে শান্তি নেই তার ছোঁয়া তার পাশে নেই। এটা কিছু তেই মেনে নিতে পারছে না? ছোঁয়া রাহুল কে জাস্ট সহ্য করতে পারনে না রাহুল লুকিয়ে দুই দিন গেছিলো ছোঁয়ার রুমে কিন্তু একদিন ছোঁয়া ঘুম ছিলো আরেকে দিন ছোঁয়া জেগে যায় আর। এতো পাগলামো করে আমার গলা টিপে ধরে বলছিল।

— আমি তোকে মেরে ফেলবো তুই আমার আববু কে কষ্ট দিয়েছিস? তোর জন্য আমার আববু হসপিটালে নিস্তেজ হয়ে পরে আছে কথা বলে না নরে না চরে না। তোকে আমি ভালোবেসে এই প্রতিদান পেলাম কেন ঠকালি আমাকে উওর দে।

এতো জোর গলা চেপে ধরেছিলো যে আমার ধম বন্ধ হয়ে আসছিল কিন্তু তবুও আমার ভালো লাগছি আমার জান আমাকে ছোয়ে ছিলো। কিন্তু বেশিক্ষণ থাকতে পারলাম না ছোঁয়া এতত জোর চেচামেচি কথা বলছিলো যে বাসার সবাই জেগে যায় আর দরজা ধাক্কা দিতে লাগে। রাহুলের অবশ্যই সবাই জানলে ও সমস্যা নেই ও কাউকে প্ররোয়া করে না কিন্তু ছোঁয়া র যে দুর্নাম হবে সবাই একটা ছেলে কে অবিবাহিত মেয়ের ঘরে দেকলে তাকে জেকে ধরবে। কিন্তু কেউ তত জানে না আমি অন্য কারো কাছে আসি নি আমি আবউ এল কাছে এসেছি কিন্তু এটা এখন ও বলার সময় আসে নি। তাই রাহুল ছোঁয়া হাত গলা থেকে ছুটায় অনেক কষ্টে ছোঁয়া কিছু তেই ছারবে না। অনেক কষ্টে ছারিয়ে রাহুল ছোঁয়া মাথা টেনে কাছে এনে কপালে কিস করে বারান্দায় দিয়ে বেরিয়ে আসি।

এর পর আর ছোঁয়ার সাথে দেখা করতে পারে না পুরো বাড়ি পাহারা থাকে। হয়তো কিছু সন্দেহ করেছে। কতো গিয়ে রাত বর দাঁড়িয়ে থেকে আবার ফিরে এসেছে রাহুল মায়াবতী না দেখে রাহুলের অবস্থা বেহাল। আর এভাবে আকা যায় না ছোঁয়া আমার বউ আমি কেন ওর কাছে যেতে ভয় পাব। আমি রাহুল কাউকে দেখে ভয় পায় না শুধু মাএ ছোঁয়ার জন্য এভাবে চুপ করে ছিলাম কাউকে এই বিয়ের ব্যাপারে জানাতে চাই নি কিন্তু এখন সেটা সমম্ভব না আমি আমার ছোঁয়া র কাছে ঘেষতে পারছি না এভাবে তো চলযে দেওয়া যায় না।

.
.

এদিকে ছোঁয়ার ভেতরে ভেতরে একেবারে ভেঙে পরেছে না আছে হাসি না আছে কান্না শুধু পাথরের মতো বসে থাকে। কিছু তেই রাহুলের থেকে এতো বড় ধাক্কায় টা মেনে নিতে পারছে না। আববু তুমি তারাতারি সুস্থ হয়ে উঠ না প্লিজ আমার খুব একা লাগছে নিজেকে খুব আমি বাচতে পারছি না।

আমি তো সত্যি ভালোবাসি রাহুল কে তাহলে রাহুল কেন আমাকে ঠকালো কেন বলল না ও একটা মাফিয়া নিজের পরিচয় লুকিয়ে আমাকে ভালোবাসতে বাধ্য করলো। তারপর বিয়ে আর ভাবতে পারছি না যদিও মেনে নিতাম মাফিয়া বললে ও তো আমি ওকে মেনে নিতাম কারণে আমি ভালোবাসি সত্যি এটা। ও যা তাতে মেনে নিতাম কিন্তু ও সব লুকিয়ে ছে তবুও মানতাম কিন্তু ও তোমার ক্ষতি কিভাবে করলো ওর হাত কাপলো না। তোমাকে কষ্ট কি করে দিলো কি করে।

ছোঁয়া হাটু ভাজ করে মাথা নিচু করে কাদছে দুজন মানুষ কে সব চেয়ে বেশি ভালোবাসি তারাই কিনা এভাবে কষ্ট দিলো।এদিকে আবার রিফাত ভাইয়া বিয়ের জন্য পাগল করে ফেলছে। আববু ইচ্ছে ছিলো আববু নাকি বিয়ে হলেই ঠিক হয়ে যাবে বলে চলেছে আমি কিছু বলি নি কি করে অন্য কাউকে বিয়ে করবো আমি যে অনেক একজনের বউ।

আমার কথার গুরুত্ব না দিয়ে মা রাজি হয়ে গেছে। আমি ও কিছু বলি নি রাহুল এর থেকে ভাইয়া অনেক ভালো। যার জন্য আববুর এই অবস্থা তাকে কিছু তেই আমি স্বামী হিসেবে মানি না।

সারা বাড়িতে বিয়ের তোরজোর তেমনি বড় না হলেও আত্মীয় সজন আছে অনেক। আমাকে মা সাজিয়ে দিচ্ছে আমি বিয়ে করে নিলে কি সত্যি আববু সুস্থ হবে। তবুও রাহুল এর জন্য কষ্ট হচ্ছে প্রচুর কষ্ট হচ্ছে ঘৃণা কেন করতে পারছি না কেন?

চলবে❤

Dangerous_Villain_Lover Part 21

0

Dangerous_Villain_Lover
Part 21
#writer_Tanjina_Akter_misti

হসপিটালে কডিডরে বসে আছে ছোঁয়া আর অনবরত কেদেই চলেছে কিছু তেই কান্না থামাতে পারছে না। একে তে আববু এই অবস্থা আবার তার জন্য দায়ী রাহুল কিছু তেই কিছু মেনে নিতে পারছেনা ছোঁয়া এতো বড় ধোকা রাহুল কি করে আমাকে দিতে পারলে। কেন আমার বিশ্বাস নিয়ে এইভেবে খেলা করলো কেন? আববুর পর আমি রাহুল কে বিশ্বাস করেছিলাম সেই মানুষটাকে ভালোবেসেছিলাম মনে প্রাণে আজ সেই ঠকালো। মনে মনে কথা গুলো আওরাচ্ছিল ছোঁয়া আর ভাবতে পারছি না মাথা ফেটে যাচ্ছে ছোঁয়ার চোখ বন্ধ করে চেয়ার এ হেলান দিয়ে বসলো কিন্তু মাথা ঠান্ডা হচ্ছে না পাশে বসে যে আরেক জন কথা বলেই যাচ্ছে।

–ছোয়া আমি তোকে কালেই বলেছিলাম রাহুল ভালো না ওর পরিচয় জানলে তুই ওকে ঘৃণা করবি। তোকে সব জানাতে চাইলাম কিন্তু তুই তো আমার কথা বিশ্বাস ও করলি না মুখের উপর ফোন রেখে দিলি। আবার ফেসবুকে প্রমাণ ও দিয়েছিলাম সেগুলো ও সিন করিস নি। এখন বিশ্বাস হলো তো রাহুল একজন মাফিয়া ওর পেশায় মানুষকে মারা আর সেটাই করেছে দেখেছিস রাস্তায় মাঝে খুনোখুনি করছিল মামু গিয়ে বাধা দেওয়াতে কি করলো এখন মামু যদি মারা যায় তার সব দোষ ওই রাহুলেও?

মারা যাওয়ার কথা শুনতেই ছোঁয়া চেচিয়ে উঠে…. চুপ করো ভাইয়া আববুর কিছু হবে না। আববু আমাকে ছেড়ে কোথায় ও যাবে না আমি জানি তুমি এইসব বাজে কথা আর বলবে না।

–আমি বলছি না তো সবাই বলছে মাথায় অনেক জোরে আঘাত পরেছে বাচবে কিনা জানি না আমি তো চাই আমার মামু সুস্থ হোক। ওই রাহুলের বাচ্চা ক আমি ছারবো না?

–নাহ তুমি কিছু করবে না ওকে?

–মানে যার জন্য তোর আববুর এই অবস্থা তাকে কিছু করতে মানা করছিস?

–হুম ভাইয়া আমার অনেক কষ্ট হবে ওকে শাস্তি দিতে আমি যে ওকে অনেক ভালোবাসি?

— কি বলছিস ভালোবাসি যার জন্য তোর আববুর এই অবস্থা যার জন্য সবাই ভয়ে থাকে কতো মানুষকে ই না মেরেছে তোর সাথে যে ভালোবাসা ওআ সব ও ওর নাটক কতো মেয়ের সাথে এই সব নাটক করেছে কে যানে। মাফিয়া কখনো ভালোবাসতে পারে না ওরা শুধু খুন করে।

— এসব বাদ দাও প্লিজ আমার মাথা ব্যাথাকরছে প্রচণ্ড মনে হচ্ছে মরে যাবো। আর কিছু বলো না?

কিন্তু আসিফ থামলো না ও ছোঁয়ার মনে রাহুল জন্য ঘৃণা তৈরি করেই ছারবে। নানা ভাবে রাহুল খারাপ কথা বলেই চলেছে কানের কাছে ছোঁয়া কাদতে ছে। বাড়িতে খবর দেওয়া হয়েছে সবাই বলযে ছোঁয়ার মা আর কিছু আত্মীয় সজন রা চলে এসেছে ছোঁয়া মা তো কেদে কেদে অজ্ঞান হয়ে গেল এসেই তাকেও এডমিট করা হলো। এমন পরিস্থিতি হবে কখনো ভাবে নি ছোঁয়া আজ নিজে শক্ত আছে পাশে কেউ নেই বলে নাকি সব সময় ছোঁয়া অল্প তেঈ ভেঙে পরে অথচ আজ মনে সাহস করে বসে আছে ভেঙে পরছে না আববু তো বলেছিল সময় মানুষ কে সাহসী করে তুলো আমাকে ও কি তাই। হঠাৎ ডাক্তার বেরিয়ে এলো অপারেশন থিয়েটার থেকে আমি দৌড়ে গেলাম আর জিগ্গেস করতে লাগলাম ডাক্তার মুখটা ছোট করে আছে আমি জিগ্গেস করছি কিছু বলছে না।
ভাইয়া এসে আমাকে শান্ত করলো তারপর ডাক্তার যা বলল তাতে আমার পৃথিবী নিস্তব্ধ হয়ে গেল।

.
.

রাতে খাটে ঘুমের ঔষধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। প্রচুর পাগলামো করছে ছোঁয়াকে কিছু তেই থামানো যাচ্ছে না বলেই ঘুমের ঔষধ দিয়ে রাখা হয়েছে।
রাহুল বারান্দায় দিয়ে ছোঁয়া রুমে এলো নিজেকে খুব অসহায় লাগলছে কি থেকে কি হয়ে গেল আমার ছোঁয়া আমাকে দেখতে পারছে না। সহ্য করতে পারে না ছোঁয়ার পাশে বসে হাত ধরে এক দৃষ্টি তে তাকিয়ে আছে ছোঁয়া দিকে এক দিনে কি অবস্থা হয়েছে মেয়েটার রাহুল তাকিয়ে বুকে চিনচিন ব্যাথা অনুভব করলো। এভাবে ছোঁয়া সামনে নরা পরে যাবে ভাবে নি রাহুল ভেবেছিল সব জানিয়ে দেবে ধীরে সুস্থে কিন্তু তা হলো কই।
হঠাৎ কোথায় থেকে ছোঁয়া চলে এলো আর ওই লোকটি ছোঁয়ার বাবা রাহুল জানতো ও না ছোঁয়া তখন কতোটা হিংস হয়ে গেছিলো আমার গলা চেপে ধরেছিল এতেই বুঝা গেছে ও ওর বাবাকে কতোভালোবাসে। রাহুল ছোঁয়া কপালে চুমু দিয়ে গভীর ভাবে তাকিয়ে আছে না ছোঁয়া কে ছাড়া থাকা অসম্ভব আমার ছোঁয়া কে আমি আমার কাছে খুব তারাতারি নিয়ে যাব ছোঁয়া বাবাকে ও সুস্থ হতে হবে।

চলবে❤