Friday, August 1, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1540



হৃদয়ের অন্তরা পর্ব-১১

0

#হৃদয়ের_অন্তরা❤️
#part_11
#sarika_Islam
,
,
_আচ্ছা তাহলে আমি তোমাকে কিস করেই দেখি,,,
_নাহ নাহ,,

কে শুনে কার কথা অন্তরার এত্ত বাধার পরও হৃদয় অন্তরাকে কিস করল,,অন্তরা হাত দিয়ে ঠেলাঠেলি করতে লাগল দূরে সরাতে চাইছে কিন্তু না সে ব্যার্থ,,অন্তরা এমন নড়াচড়া করছে দেখে হৃদয় তার এক হাত দিয়ে অন্তরার দুই হাত পিছে নিয়ে একসাথে ধরে আরেক হাত অন্তরার চুল ধরে রেখেছে,,অন্তরা বেচারি এখন পুরোই হৃদয়ের কাবযায়,সে আর না পেরে চুপ করে রইল,,বেশ কিছুক্ষন পর হৃদয় অন্তরাকে ছাড়লো,,দুইজনই হাপিয়ে গেল ঘন ঘন শ্বাস নিতে লাগল,,হৃদয় অন্তরার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে আর অন্তরা রাগে ফুসছে,,,হৃদয় কিছু বলবে তার আগেই অন্তরার বারান্দায় চলে গেল,,,হৃদয়ও অন্তরার পিছু পিছু গেল,,অন্তরা এক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে,,হৃদয় তার পাশে আছে সেদিকেও তার এখন খেয়াল নেই,,সে অন্য যগতের চিন্তা ভাবনা করতে বেস্ত,,,হৃদয়ও কিছুক্ষন আকাশের দিকে তাকিয়ে অন্তরার হাত ধরে বলল,,

_চলো ঘুমাবো,,

অন্তরা হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিল,,তারপর হৃদয়কে বলল,,

_আমি আপনার সাথে একি বিছানায় শুবো না,,আমি বরং এখানেই ঠিক আছি আপনি যান,,

হৃদয়ের মাথায় যেন ধপ করে আগুন জলে উঠলো,,সে অন্তরার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলল,,,

_চলতে বলেছি চলো,,তোমার এইসব বাহানা শুনতে চাইনি,,

অন্তরা হৃদয়ের রাগী ফেস দেখেও না দেখার ভান করে বলল,,

_আমি একবার বলেছি যাবো না মানি যাবো না,,(মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে)

হৃদয় এইবার যেন রাগ আরও বেড়ে গেল সে হুট করে অন্তরাকে কোলে নিয়ে নিল,,এভাবে হুট করে কোলে নেওয়ায় অন্তরা ঘাবড়ে গেল হৃদয়ের খালি শরিরের সাথে একদম লেপ্টে গেল গলা জড়িয়ে ধরল,,চোখ খিচে বন্ধ করে নিল,,হৃদয় অন্তরার দিকে তাকিয়ে হেসে দিল,,

_আমার সাথে লাগার বাহানা,,,হুমমমমম,,

অন্তরা এইবার বুঝলো সে হৃদয়ের কোলে ফটাফট গলা ছেড়ে দিল নামার জন্য হাত পা নাড়াতে লাগলো,,হৃদয় অন্তরাকে বিছানায় শুয়ে দিল,,তার পাশে নিজেও ঘুমালো,অন্তরা একদম বিছানার এক কোন ঘেষে শুয়ে আছে,,হৃদয় হুট করে অন্তরাকে টান মেরে নিজের বুকের উপর ফেলে দিল,অন্তরাকে নিজের বুকের সাথে একদম মিশিয়ে নিল,,অন্তরা হৃদয়ের বুকে ধাক্কা দিতে লাগলো,,হৃদয় অন্তরার কানের কাছে মুখ নিয়ে ঘোর লাগা কন্ঠে বলল,,

_হুশশশশশ,,একদম নরবে না নাহলে কিন্তু বাসর রাতে যা করে আজ তাই করে ফেলবো,,(বলেই কানের লতিতে শব্দ করে চুমু খেল)

এই কথা শুনার পর মুহুর্তেই অন্তরার নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেল,,সে চুপ করে হৃদয়ের বুকে শুয়ে আছে,,হৃদয় অন্তরা চুপ থাকা দেখে মুচকি হাসলো,,অন্তরার মাথা চুমু দিয়ে আরও একটু টাইট করে ধরে ঘুমিয়ে গেল,,,অন্তরার তো দম বন্ধ হয়ে আসছে সে নড়তেও পারছে না কিছু বলতেও পারছে না,,

_শালা বদমাইশ বেটা,,পেশায় একজন ডাক্তার কিন্তু কোন সভ্যতা নেই যখন তখন কিস করে বসে,,

মনে মনে আরও কিছু বলে সেও ঘুমিয়ে গেল,,,

কাচের জানালা ভেদ করে পর্দার ফাক দিয়ে এক টুকরো রোদ অন্তরার মুখে এসে পড়লো,,ঘুমের মাঝেই অন্তরা চোখ মুখ কুচকে এলো,,আবার হঠাৎই রোদ চলে গেল,তার মুখে আর পরল না,অন্তরা মুখ আবার স্বাভাবিক করে নিল,,আবার হঠাৎ মুখের রোদ চলে আসলো,,আবার চলে গেল,আবার আসলো,,এইবার অন্তরার খুব বিরক্ত লাগছে,,কপাল কুচকে পিটপিট করে চোখ মেলল,,চোখ মেলে দেখে হৃদয় এক চিতলে হাসি দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে,,আর তার ডান হাত দিয়ে অন্তরাকে জড়য়ে রেখেছে বা হাত দিয়ে একবার রোদ ঢাকছে তো একবার খুলছে,,অন্তরা কপাল কুচকানো আবার স্বাভাবিক হওয়ার দৃশ্য গুলো দেখছে আর মজা নিচ্চে,,অন্তরা এইবার বুঝতে পারলো,,এইসব এতখন কে করছিল,,অন্তরা বিরক্তি নিয়ে হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে উঠে বসলো,,চুলগুলো হাত খোপা করতে লাগলো ওই সময় হৃদয় বলল,,

_good morning jan

বলেই অন্তরার গালে চুমু খেল,,অন্তরা খোপা শেষ করে হৃদয়ের দিকে তাকালো,,,হৃদয় মুচকি হেসে তাকিয়ে আছে,,অন্তরা কিছু না বলে নিচে নামতে নিলে হৃদয় ধরে ফেলে,,অন্তরা ঘুরে হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে বলল,,

_কি?(ভ্রু কুচকে)
_I said good morning,,
_হুম morning,

হুট করেই হৃদয় অন্তরাকে নিজের দিকে ঘুরয়ে পেট দেখতে লাগলো,,,অন্তরা অবাক হয়ে গেল,,হৃদয় অন্তরার পেটের এপাশ ওপাশ হাত বুলিয়ে দেখেতে লাগলো,,অন্তরা নিজের পেট থেকে হৃদয়ের হাত সরিয়ে বলল,,

_কি হচ্ছে কি?
_আরেহ দাড়াও না,

বলেই আবারও হাত দিল,,অন্তরা তো পুরুই রেগে গেল এইবার,,

_কি হচ্ছে এইসব হৃদয়?(বেশ রেগে)
_আরে দেখছিলাম তুমি প্রেগন্যান্ট হয়েছ নাকি,,(বলেই ভেটকি মারলো)
_ধুররর ফালতু,,

বলেই বিছানা ছেড়ে নেমে গেল,,হৃদয় হাসতে লাগলো,,অন্তরা ওয়াশ্রুমের ভিতরে ঢুকবে ওই সময় অন্তরাকে ডাক দিল হৃদয়,,

_অন্তরা,,

অন্তরা পিছে ফিরে তাকালো,,হৃদয়ের ফেস দেখে মনে হচ্ছে কিছু সিরিয়াস কথা বলবে, একদম সিরিয়াস হয়ে আছে,,তাই অন্তরা হৃদয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল,,,হৃদয় বলল,,

_আমার মর্নিং কিস কই?
_মর্নিং কিস?
_হুম কাল রাতে শর্ত হয়েছিল মনে নেই?আমার মনে আছে আসো দাও,,

অন্তরা সেখানেই দারিয়ে আছে,অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে হৃদয়ের দিকে,,

_আচ্ছা দাড়াও আমিই আসছি,,

বলেই বিছানা থেকে নামতে লাগলো,,অন্তরার এইবার যেন হুশ ফিরলো, সে এক দৌড়ে ওয়াশ্রুমের ভিতর গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল,,হৃদয় দুই এক বার দরজা ধাক্কা দিল,,

_অন্তরা এইটা কিন্তু চিটিং করছ তুমি,,ঠিক আছে সমস্যা নেই বাহিরে আসো একবারে দুইটা কিস নিবো,,,

অন্তরা কোন কথাই বলছে না,,, চুপচাপ গোসল সাড়ছে,,গোসোলের শেষে তাওয়াল দিয়ে শরির মুছলো,,জামা পরবে এখন তো জামা ই আনা হলো না,,

_উফফফফ,,ওই হৃদয়ের বাচ্চার জন্য আমার জামা আনা হলো না,,ধ্যাত ভাল্লাগেনা,

অন্তরা আস্তে আস্তে দরজা খুল্ল খুলে দেখলো হৃদয় ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুচছে,,হয়তো অন্য ওয়াশ্রুম থেকে গোসল করে এসেছে,,অন্তরা সব চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়ে হৃদয়কে ডাক দিল,,

_হৃদয়,,,,

হৃদয় নিজের নাম শুনে পিছে ফিরে তাকালো,,দেখলো অন্তরা দরজা একটু ফাকা করে মাথা বের করে রেখেছে,,,,হৃদয় অন্তরার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,,

_কি?
_বলছিলাম কি আমার জামা না আনা হয়নি যদি আপনি একটু দিতেন?

হৃদয় কাবার্ড খুলে একটি কালো কালারের শাড়ি বের করলো,,তারপর অন্তরার দিকে বাড়িয়ে কি যেন ভেবে আবার হাত পিছিয়ে নিলো,,অন্তরা ভ্রু কুচকে তাকালো,,হৃদয় একটা ভেটকি মেরে বলল,,

_আগে একটু সুন্দর করে ডাকো তারপর দিব,,
_শুরু হলো ঢং,,(মনে মনে বলল অন্তরা)
_আরে দেন না ভিজে শরিরে দাড়িয়ে আছি ঠান্ডা লাগবে তো,,
_আমি ডাক্তার ঠান্ডা লাগলে সারিয়ে দিব আগে বলো,,

অন্তরা বাধ্য হয়ে বলল,,

_ও গো শুনছো আমার জামাটা একটু দাও তো,,
_আহা কি মধুর এক ডাক,,এখন বলো “সোনা আমার জামাটা একটি দাও তো”,,
_সোনা আমার জামাটা একটু দাও তো,,(দাতে দাত চেপে)
_নাও জান,,

বলেই জামাটা এগিয়ে দিল,,অন্তরা জামাটা হাতে পেয়ে তারাতারি করে দরজা লাগিয়ে দিল,,জামাটা খুলতে দেখে শাড়ি,,আবার দরজা খুল্ল,,

_এই আমি শাড়ি পরতে পারি না,, আমাকে কোন এক থ্রি-পিস দেন,,
_নতুন বউ আজ প্রথম দিন শাড়ি না পরলে কি হয়,,
_কিন্তু আমি যে পরতে পারি না,,
_তুমি সব পরে আসো আমি বেবস্তা করছি,,

অন্তরা শাড়ি বাদে সব পরে বের হলো,,হৃদয় তার দিকে কেমন কেমন করে তাকিয়ে আছে দেখে সে তারাতারি শাড়িটা নিজের শরির ঢেকে দিল,,

_আরে আমিই তো ঢাকার কি আছে,,,
_আপনি বেশি পেচাল না পেরে আন্টিকে ডাকুন,,
_আচ্ছা দাড়াও,,

বলেই দরজা খুলে মাকে ডাকলো,,

_মা অন্তরা শাড়ি পরতে পারে না তুমি একটু পরিয়ে দাও তো,,

বলেই হৃদয় নিচে চলে গেল,হেনা চৌধুরী অন্তরার দিকে এগিয়ে গেল,,হাত বাড়িয়ে শাড়িটা নিল,,অন্তরাকে শড়িটা পরাতে লাগল আর বলতে লাগল,,

_তুই জখন আমার বাসায় ছিলি আমি তখন ও এমন ভাবে তোকে শাড়ি পরিয়ে দিয়েছিলাম,,

আরও কতো কি বলতে লাগলো,,অন্তরা কিছু বলছে না চুপচাপ শুনছে,,শাড়ি পরানো শেষ হলে অন্তরাকে আয়না বরাবর দাড় করায়,,

_মাসাল্লাহ আমার মেয়েটাকে ওই দিনের থেকে বেশি আজ সুন্দর লাগছে,,সেদিন তুই লাল শাড়ি পরেছিলি,,কিন্তু কালো টা বেশ মানিয়েছে,,

অন্তরা কিছু বলল না এইবারও,,সেদিনের মতো হেনা চৌধুরি অন্তরাকে আজও নিজের হাতে সাজিয়ে দিল,,চোখে কাজল হাতে স্বনের চুরি নাকে স্বনের নাকফুল কানে ছোট ছোট টপ,,বেস এটুকুতেই অন্তরাকে বেশ সুন্দর লাগছে,,হেনা চৌধুরি অন্তরা কানের নিচে নজর লাগিয়ে দিল,,

_আমার মেয়ের যেন নজর না লাগে,,,

বলেই কপালে একটি চুমু দিয়ে চলে গেল,,অন্তরা আয়নায় নিজেকে দেখছে খুটিয়ে খুটিয়ে,,আজ তাকে সত্যি এক বিবাহিত নারী লাগছে,,আনমনেই অন্তরা হেসে দিল,,

_হায়য়য় মে মারজাবা,,(বুকে হাত দিকে)

এইটা শুনে অন্তরা পিছে ফিরে তাকালো দেখলো দরজার সাথে হেলান দিয়ে বুকে হাত দিয়ে হৃদয় দারিয়ে আছে,,হৃদয়কে দেখে অন্তরা লজ্জা পেয়ে গেল,,,

_আয়হায়,,

বলে হৃদয় অন্তরার দিকে এগিয়ে গেল,,পিছন থেকে অন্তরাকে জড়িয়ে কাধে থুতনি রেখে বলল,,

_এভাবে লজ্জা পেও না জান আমি তো হার্ট অ্যাটাক করবো,,

অন্তরা কিছু বলতে যাবে তার আগেই নিচথেকে হেনা চৌধুরির ডাক পরলো খাবারের জন্য,,

_চলো খাবে,,

বলেই অন্তরার হাত ধরে নিচে নিয়ে গেল,,দুইজন একসাথে সিড়ি দিয়ে নামছে,,হৃদয়ের বাবা মা খাবার টেবিলে বসে দুইজনকে দেখছে,,হৃদয়ের মুখে হাসি লেগে আছে অন্তরাকে ধরে নামছে,,হেনা চৌধুরি ছেলের এই খুশি মুখ দেখে তার স্বামী কে বলল,,,

_আমার হৃদয় কতো খুশি অন্তরাকে পেয়ে,,এই কয়দিন মরার মতো হয়েছিল,,আল্লাহ যেন সব সময় ওকে খুশি রাখে,,,

দুইজন খাবার টেবিলে আসলো,হৃদয় সবাইকে “গুড মর্নিং” বসে পরলো,,অন্তরা হেনা চৌধুরির পাশে গিয়ে তাকে বলল,,

_আন্টি আমাকে দিন আমি সার্ব করি আপনি বসুন,,
_এই কাকে আন্টি বলিস মা বল আমাকে তুই তো আমার মেয়েই,,

অন্তরা মুচকি হেসে বলল,,

_আচ্ছা ঠিক আছে মা তুমি বসো আমি দেই,,
_এই না হলো আমার মেয়ে,,নাহ তুই বস আমি দেই,,

হেনা চৌধুরির জুরাজুরিতে অন্তরা বসলো,,হৃদয়ের পাশে,,তারা খাবার খাচ্ছে তার বাবা বলল,,

_তো হানিমুনের জন্য কোথায় যাবা?

এই কথা শুনে অন্তরা বিষম খেল,খাবার গলায় আটকে গেল,কাশি শুরু হয়ে গেল,,হৃদয় অন্তরার পিঠ হাতাতে লাগল হেনা চৌধুরি পানি দিল,,,

_কি হয়েছে তোমার?(বেস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করল হৃদয়)
_আমি ঠিকাছি,,

বলেই আবার খাওয়ায় মনোযোগ দিল,,হৃদয় বলল,,

_আমি প্লান করেছি সাজেক ঘুরে আসি,,কি বলো অন্তরা?

অন্তরা হৃদয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল,,

_হানিমুন টানিমুনে না গেলে হয় না?(অসহায় ভাবে)
_সেকি তাকি হলো,,যা ঘুরে আয় ভালো লাগবে,,(পাশ থেকে হেনা চৌধুরি বলল)
_আচ্ছা,,(মাথা নিচু করে)
_তো কবে যাবা?
_বাবা কাল,,
_আচ্ছা আমি হোটেল বুক করে দিবনে,,
_ঠিক আছে বাবা,,

সবাই খাবার শেষ করলো,,হেনা চৌধুরি আর অন্তরা মিলে টেবিল পরিষ্কার করছে,,হৃদয় আর তার বাবা সোফায় বসে কথা বলছে,,হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠলো,অন্তরা যেতে নিলে হৃদয় বলল,,

_দাড়াও আমি দেখছি,,

বলেই দরজা খুলতে গেল,,দরজা খুলে দেখলো রায়হান(হৃদয়ের চাচাতো ভাই) দাঁড়িয়ে আছে রায়হানকে দেখে হৃদয় খুশি হয়ে গেল,,জরিয়ে ধরলো,,

_আরে কেমন আছিস তুই?কতো দিন পর দেখা,,
_হুম ভালোই আছি,লন্ডন থেকে ফিরে তো দেখাও করলি না,,
_আরে বিজি ছিলাম,,
_আচ্ছা এখন ঘরে ঢুকাবি নাকি বাহির থেকেই চলে যাবো?
_আরে আয় এত্ত দিন পর তোকে দেখছি তো এক্সসাউটেড হয়ে গিয়েছিলাম,,

দোনজন হেসে ভিতরে ঢুকলো,,রায়হান তার চাচা কে ধরলো,,

_কেমন আছিস?
_জি চাচা আলহামদুলিল্লাহ,

চাচির কাছে গিয়ে তাকে সালাম করলো,,,,হেনা চৌধুরির পাশেই অন্তরা দাঁড়িয়ে ছিল,,রায়হান অন্তরাকে দেখে বলল,,

_হৃদয় এইটা কে?
_আমার বউ তোদের ভাবি,,

বলেই অন্তরাকে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরল,,

_আরে ভাবি কেমন আছেন?(হাত বাড়িয়ে)
_জি আলহামদুলিল্লাহ,,(হাত মিলালো)
_আমিই আপনের একমাত্র দেবর আর কোন দেবর নেই কিন্তু আপনার,,ভাবি দেবরের রিস্তা তো জানেনি,,
_হুম,,

সেই কখন হাত ধরেছে অন্তরার এখন পর্যন্ত ছাড়ার নাম নেই,,অন্তরা বারে বারে হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু না ছাড়ছে না,,তা দেখে হৃদয় বলল,,

_রায়হান হাত ছাড়,,
_ওহ আমি তো ভুলেই গিয়েছি,,এত্ত নরম হাত ভাবির ছাড়তেই ইচ্ছে করে না,,(বলেই সয়তানি হাসি হাসলো)

যা হৃদয়ের ভালো ঠেকলো না,,তাও হৃদয় কিছু বলল না,,,,,,,

চলবে🖤
(ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টতে দেখবেন🥰)

হৃদয়ের অন্তরা পর্ব-১০

0

#হৃদয়ের_অন্তরা❤️
#part_10
#sarika_Islam
,
,
হৃদয় অন্তরাকে নিজের বুক থেকে তুলে ঝাকিয়ে বলল,,,

_প্রেমটা কিন্তু তুমিই আমাকে শিখিয়েছ অন্তরা,,
_আমি?(অবাক হয়ে)
_হুম তুমিই,,
_আমি মানি না,আমি তো আপনাকে চিনিই না তাহলে কিভাবে?(ভ্রু কুচকে)
_দাড়াও,,

বলেই অন্তরাকে ছেড়ে তার পকেট থেকে ফোন বের করে তাদের সেদিনের সেল্ফিটা দেখলো,,

_দেখ,,

বলেই অন্তরার মুখের সামনে ধরেছে,,অন্তরা দেখে তো অবাক,, হ্যা সত্যি তো আমিই হৃদয়কে পিছন থেকে জরিয়ে রেখেছি,,এইসব ভাবতে লাগল,,হৃদঅয় অন্তরার চুপ্টি দেখে বলল,,

_তুমিই সারাদিন আমার সাথে থাকতা, আমার সাথে ঘুমাতা,আমার এত্ত কাছে এসে এখন চলে যাবা তাতো হবে না কখনো,,তোমার অভ্যাস বানিয়েছো তুমি আমাকে,এখন আমি এই অভ্যাস ছাড়তে পারবো না,,তুমি মনে করো সমস্যা নেই আমি সময় দিব,কিন্তু বিয়ে করে তারপর মনে করো,আমার তুমি আমার কাছেই থাকবে নাকি জিসানের কাছে,বুজেছ,,,

অন্তরা কিছু বলল না মাথা নিচু করে চুপ করে রইল,,হৃদয় বলল,,

_এখন রেডি হও ভালো মানুষের মতো আমি তোমার হ্যা বা না শুনতে চাই না,,,

বলেই অন্তরাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে গেল,,,অন্তরা সেখানেই বসে রইল,,হৃদয়কে বের হতে দেখে অন্তরার মা তরিঘরি করে অন্তরার রুমে ঢুকলো,,ঢুকে দেখে অন্তরা এখনও সে রকম ভবেই বসে আছে,,সে তারাতারি অন্তরাকে তুলে নিল,,অন্তরা কোন কথা বলছে না মু্র্তির মতো হয়ে আছে তার মা তাকে যেভাবে নারাচ্ছে সে নরছে,যেভাবে ঘুরাচ্ছে সে ঘুরছে,,সাজগুজ শেষ করে তার মা তাকে আয়নার সামনে নিয়ে গেল,,

_মাসাল্লাহ,, আমার মেয়েকে তো পুরাই পরি পরি লাগছে,,তুই খুব লাকি হৃদয়ের মতো একজন জীবন সঙ্গি পেয়ে,,আল্লাহ তোদের সব সময় ভালো রাখুক,,

বলেই চলে গেল,,,অন্তরার এখন টনক নরল,,তার বিয়ে হয়ে জাচ্ছে সেও আবার ওই হৃদয়ের সাথে?সে এই বিয়ে করবে না কখনও না,,সে পালাবে হ্যা পালাবে জিসানের সাথে,,তারাতারি করে ফোন করল জিসানের নাম্বারে,,দেখল নাম্বার বিজি আসে,,অন্তরা বেশ কয়েক বার ট্রায় করল কিন্তু নাহ সেই একিই,,যিদ্দে রাগে ফোন্টা বিছানায় ছুরে মারল,,সে বারান্দায় গিয়ে দারালো,,এখান থেকে ঝাপ দিবে মরে যাবে তাও ওর কাছে বিয়ে বসবে না,,লেহেংগা উচু করে বারান্দায় রেলিংএ উঠতে যাবে ঠিক সেই মুহুর্তে কেউ তাকে পিছন থেকে ধরে ফেলল,,অন্তরার বুক কেপে উঠলো,,বুকটা ধুকধুক করতে লাগলো পিছে ফিরে তাকালো,,যাকে দেখলো সে মটেও তাকে আশা করেনি,,ঘুরে দেখে হৃদয় রক্ত চক্ষু নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে,,সেই চোখ যে কতোটা ভয়ানক লাগছে অন্তরার কাছে মনে হচ্ছে এখনি কাচা গিলে খাবে,,হৃদঅয় কিছু না বলে অন্তরাকে টেনে টেনে নিয়ে বারান্দার থেকে নিয়ে আসল,,অন্তরা চিল্লাতে লাগলো,,

_আমি বিয়ে করবো না আমি জিসানকেই বিয়ে করবো,,,

হৃদয় চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে নিজের রাগটাকে কান্ট্রল করছে,,অন্তরার হাত ধরে হাটছে,,অন্তরার সেই একিই কথা আবারও বলল,,এইবার হৃদয়কে আর আটকায় কে?সে অন্তরার দিকে ঘুরে কষে দিল এক থাপ্পর,,অন্তরা থপ্পর খেয়ে কিছুটা দূরে সরে গেল,,গালে হাত দিয়ে ছল ছল চোখে হৃদয়ের দিকে তাকালো,,হৃদয় অন্তরার সামনে এসে তার বাহু ধরে ঝাকিয়ে বলল,,

_জিসানের গার্লফ্রেন্ড আছে,,জিসান একটা কেরেক্টারলেস ছেলে,,ওর তোর মতো অনেকেই আসে যাকে পায় তাকেই চায়,,তোর প্রতি ওর চাওয়াটা সেই আগের থেকেই,,
_আপনি ওতো কেটেক্টারলেস,,(মাথা নিচু করে বলল)
_হ্যা আমি কেরেক্টারলেস আমি কেরেক্টারলেস শুধু মাত্র তোর জন্য অন্য কারো জন্য না তোর জিসানের মতো,,, আর শুনে রাখ লাস্টবারের মতো বলছি তোর মুখে যেন জিসানের নাম আমি আরেকবার না শুনি,,

অন্তরা এইবার কান্নাই করে দিল,,হৃদয় এত্ত করে তাকে ধমকাচ্ছে আবার বাহুটা এত্ত জোরে চেপে ধরে রেখেছে সব দলা পকিয়ে কান্না করে দিল,,হৃদয় অন্তরার কান্না দেখে বাহু ছেরে দিল,,অন্তরার হাতের আঙ্গুলের ভাজে ভাজে তার আঙ্গুল দিয়ে হাত চেপে ধরল,,তারপর হাটা দিল বাহিরে,,বাহিরে গিয়ে সবাইর উদ্দেশ্য হৃদয় বলল,,

_দ্রুত বিয়ে পরান,আমি আর এক মুহুর্তও দেরি করতে চাই না,,

বলেই দুইজন একসাথেই বসল,,অন্তরার হাত আর ছারলো না যদি আবার পালিয়ে যায় তার কোন ভরসা নেই,,কাজি বিয়ে পরানো শুরু করলো,,হৃদয় ঝটপট কবুল বলে ফেল্ল,কিন্তু অন্তরা বলছে না, সে তার হাত ছুটানো নিয়ে পরে আছে কিন্তু হৃদয়ের শক্তির সাথেকি আর পেরে উঠবে?তাই মোচড়ামুচড়ি করতে লাগল,,কাজি সাহেব আবার অন্তরার উদ্দেশ্যে বলল,,

_বলো মা কবুল,,

অন্তরার কানে যেন কথা পৌছাচ্ছেই না,,হৃদঅয় এইবার অন্তরার দিকে তাকালো,,অন্তরা হাতের দিক থেকে মাথা তুলে হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে আতকে উঠলো,, হৃদয় চোখ রাঙ্গিয়ে অন্তরা দিকে তাকিয়ে আছে,,অন্তরা হৃদয়ের এই চাহনি দেখে ভয়ে ঢোক গিলল,তারপর বলেই দিল কবুল,,,কাজি সাহেব বলল,,

_আলহামদুলিল্লাহ বিয়ে সম্পন্ন,, এখন থেকে আপনারা দুইজন স্বামী স্ত্রী,,

হৃয়ের মুখে হাসি ফুটে উঠলো,, অবশেষে অন্তরা তার হয়েছে,,খালেদ মিয়া হাসান চৌধুরী একে অন্যকে জরিয়ে ধরে বাধাই দিল,,হেনা চৌধুরী আর অন্তরার আম্মুও,,হৃদয় এখন আর এখানে থাকবে না সে তার বউকে নিয়ে তার বাসায় যাবে,,

_আমরা এখন চলি,,,

খালেদ মিয়া বলল,,

_একি বাবা এখনি চলে যাবে তাকি হলো?তুমি বরং কাল সকালে যেও,,এখন তো রাত হয়ে গেছে,,
_নাহ চাচা আমি এখনি যাবো,,চলো আব্বু,,

বলেই সেই একিইভাবে অন্তরার হাত ধরে উঠলো,, অন্তরার এবার বেশ বিরক্ত লাগছে তার হাত ছাড়ার নামই নিচ্ছে না হৃদয়,এখন তো বিয়ে হয়ে গিয়েছে এখনওকি সে পালাবে নাকি,,অন্তরা বলল,,

_আমি রুমে যাবো হাত ছাড়েন,,

হৃদয় অন্তরার কথা শুনে তার দিকে তাকিয়ে বলল,,

_চলো,,

বলেই হাটা দিতে নিলে অন্তরা বলল,,

_আমি একা যেতে পারবো ছাড়েন,আমি কোন বাচ্চা না হারিয়ে যাবো,,(বেশ বিরক্ত হয়ে বলল)
_চলো বলেছি আমি নিয়ে যাবো চলো,,(ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)
_উফফফফফ,,

বলেই চলে গেল হৃদয়ের সাথে,,হৃদয় মুচকি হেসে হাটা দিল,,

অন্তরা আর হৃদয় রুমে গিয়ে দাড়ালো,,অন্তরা এইবার হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে বলল,,

_ওয়াশ্রুমে যাবো সেখানেও কি আপনি সাথে যাবেন?(দাতে দাত চেপে বলল)
_তুমি চাইলে যেতে পারি জানেমান(বলেই এক চোখ টিপ মারল)
_উফফফফ,অসভ্য,,

হৃদয় হাতের বাধন ঢিলে করতেই হাত ছারিয়ে দর মারল অন্তরা,,ওয়াশ্রুমে গিয়ে দরজা আটকে দিল,,ঘন ঘন শ্বাস ছাড়লো,,যেই হাতটা ধরা ছিল সেই হাতটা অন্য হাত দিয়ে ঘসছে মনে হচ্ছে এতক্ষন কি জানি ছিল হাতে আল্লাহ,,বেশ কিছুক্ষন পর অন্তরা বের হলো,,দেখলো হৃদয় বাহিরেই দারিয়ে দারিয়ে ফোন গুতাচ্ছে,,,অন্তরার বেশ বিরক্ত লাগল,,মনে হয় আমি পালিয়ে যাবো আমাকে পাহাড়া দেই যত্তসব,,বলেই হাটা দিতে নিলে হৃদয় আটকে দেয়,,,

_দারাও,,

অন্তরা দাঁড়িয়ে যায় হৃদয়ের দিকে ভ্রু কুচকে তাকায়,,হৃদয় ডান হাতে ফোন নিয়ে বাম হাতে অন্তরার ডান হাত আবার ধরে নিল,,অন্তরা এইবার বলেই ফেল্ল,,

_কি হচ্ছে টাকি?আমি কি বাচ্চা যে সব সময় ধরে রাখতে হয়?
_তাহলে তুমি বড় চলো বাসর সেরে ফেলি,,কি বলো?(বলেই মুচকি হাসল)
_উফফ যত্তসব ফালতু,,,

বলেই হাটা ধরলো হৃদয়ও হাটা ধরলো,, বাহিরে গিয়ে সবার থেকে বিদায় নিয়ে নিজের বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিলো,,অন্তরা খুব কান্না করেছে তার মা বাবাকে ধরে,,গাড়িতে উঠে বসলো,,অন্তরা একদম জানালা ঘেষে বসেছে আর হৃদয় একদম অন্তরাকে ঘেষে বসেছে,,হাসান চৌধুরী ড্রাইভ করছে আর তার পাশে বসা তার বউ হেনা চৌধুরী,,,অন্তরা বাহিরে দৃশ্য দেখতে বেস্ত,,,আর হৃদয় অন্তরাকে দেখতে,, অন্তরা বাহিরের প্রকৃতি দেখছে হঠাৎ অনুভব হলো কেউ তার শাড়ি ভেদ করে পেট ধরে রেখেছে,,সে শাড়ির উপর দিয়ে সেই হাতের উপর হাত রাখলো,,তার পাশে তাকাতেই দেখল হৃদয় 32টা দাত বের করে তার দিকে তাকিয়ে আছে,হৃদয় তার পিছে আর সামনে দুই হাত দিয়ে তাকে একদম নিজের কাছে ঘিরে রেখেছে অন্তরা না পারছে নড়তে না পারছে কিছু বলতে,,সে হৃদয়ের দিকে চোখ রাঙ্গিয়এ তাকালো তাতেও হৃদয়ের কোন হেলদুল নেই সে তার মতোই অন্তরাকে ঝাপ্টে ধরে বসে আছে,,অনেক দূর পথ পার করে অবশেষে তারা বাসায় পৌছালো,,হৃদয় আর অন্তরা তাদের রুমে গেল,,রুমে গিয়ে হৃদয় বলল,,

_জাও তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো, অনেক জার্নি করেছ আমিও ফ্রেশ হই,,

অন্তরা কিছু না বলে নিজের একটা জামা হাতে নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেল,,হৃদয়ও আরেক ওয়াশ্রুমে চলে গেল ফ্রেশ হতে,,,হৃদয় ফ্রেশ হয়ে এসে পরেছে,,অন্তরা কিছুক্ষন পর বেরিয়ে আসলো,,হৃদয় অন্তরার দিকে তাকিয়ে থমকে গেল,,হাল্কা মিষ্টি রঙ্গের একটি নাইটি পরেছে,,চুল থেকে পানি পরছে,,ভিজা চুলে অন্তরাকে আরও মায়াবি লাগছে,,অন্তরাও হৃদঅয়ের দিকে তাকিয়ে আছে,,হৃদয় শুধু টাওজার পরেছে,,শরীর এখনও বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে,,দুইজন দুইজনের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,হৃদয় মুচকি মুচকি হাসছে তা দেখে অন্তরা তারাতারি চোখ নামিয়ে নিল,, এখন নিজের কাছেই নিজের কেমন যেন লাগছে কেন বেহায়ার মতো তাকিয়ে ছিল অন্তরা?লজ্জা শরমের মাথা খেয়েছে,,নিজেকে হাজারটা গালি দিয়ে সামনে গেল,,দরজার সামনে আস্তেই হৃদঅয় অন্তরার পথ আটকায়,,অন্তরা ভ্রু কুচকে বলল,,

_কি হলো?যেতে দিন আমায় পথ আটকেছেন কেন?
_নাহ কোথাও যেতে দিব না,,এই রাতে কোথায় যাবে তুমি?আমার কাছেই থাকো আসো,,

বলেই অন্তরার হাত দেয়ালে চেপে ধরলো,,নেশা লেগে গেছে হৃদয়ের তার এখন অন্তরাকে চাই খুব করে চাই,,আস্তে আস্তে অন্তরার দিকে হৃদয়ের মাথা আনতে লাগলো,,অন্তরা বারে বারে তার মাথা এদিক অদিক সরাতে লাগলো,, হৃদয়ের এবার বেশ বিরক্ত লাগছে,,

_কি সমস্যা?এমন করছ কেন?
_আমাকে কি মেরে ফেলতে চান আপনি?

বলেই হৃদয়কে ধাক্কা মারলো,,হৃদয় ছিটকে কিছুটা দূরে সরে গেল,,অবাক হয়ে অন্তরার দিকে তাকিয়ে আছে,,

_কিস করলে কেউ মরে?(অবাক হয়ে)
_হ্যা,,কিস কিরলে প্রেগন্যান্ট হয় তারপর বাচ্চা হওয়ার সময় মেয়েরা মারা জায় আমি অকালে মরতে চাই না,,,

হৃদয় আরেকদফা অবাক হলো,,কি বলছে ও এগুলো?হৃদয় বলল,

_তোমাকে কে বলেছে এগুলো?
_আমি ছোট থেকেই যানি,,(বলেই মুখ ফুলালো)

হৃদয় ফিক করে হেসে দিল,,হৃদঅয় হাসি থামিয়ে বলল,,

_আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে আজকে দেখো কিস করলে প্রেগন্যান্ট হয় নাকি,,যদি কালকে না হও তাহলে একটা শর্ত আছে তা মানতে হবে,,
_কি শর্ত?(ভ্রু কুচকে)
_প্রতিদিন তুমি আমাকে কিস করবা,,ঘুম থেকে উঠার পর কিস,আমি ক্লিনিকে জাওয়ার সময় কিস,,ক্লিনিক থেকে আসার সময় কিস,, রাতে তো আছেই,,(বলেই চোখ টিপ মারলো)
_আল্লাহ তাহলে তো আপনি প্রেগন্যান্ট হয়ে যাবেন তাও এত্তগুলি বাচ্চা,,(অবাক হয়ে বলল)

হৃদঅয় বেচারা ভেবাচেকা খেয়ে গেল,,সে অন্তরাত থেকে এই কথা আশা করেনি,,সে এখন হাসবে না কাদবে সে নিজেও যানে না,,

চলবে🖤
(ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🥰)

হৃদয়ের অন্তরা পর্ব-০৯

0

#হৃদয়ের_অন্তরা❤️
#part_9
#sarika_Islam
,
,
এইদিকে,,অনেক রাত করে হৃদয় বাসায় ফিরল,,ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করে না,, সেই সকালে বের হয় অনেক রাত করে বাড়ি ফিরে,ঘরের কারো সাথে কথা বলে না,নিজের মতো করে চলে,,

2 3 দিন পর,,

হৃদয় আবারও আজকে একিই রকম করে দের রাতে বাড়ি ফিরল,,ফিরে ডাইরেক্ট নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল,,তার মা হেনা চৌধুরী হৃদয়ের এই জিনিস গুলো প্রায় অনেক দিন ধরে লক্ষ করছে,,আজও করল,,

সকালে,,,

হেনা চৌধুরী আগে আগে উঠে হৃদয়ের রুমে গেল,,যেন হৃদয় উঠেই চলে যেতে না পারে,,দরজায় নক পরায় হৃদয় উঠে দরজা খুলে দিল,,হেনা চৌধুরীকে দেখে ভিতরে আস্তে দিল,,হেনা চৌধুরী ছেলের দিকে তাকিয়েই রইল,একি হাল করেছে ও?চোখ ফুলে লাল হয়ে আছে এ যেন কয়েকদিন যাবত না ঘুমানোর দশা,,হেনা চৌধুরী জিজ্ঞেস করল,,

_হৃদয় বাবা কি হয়েছে তোর?এমন দেখাচ্ছে কেন?(হৃদয়ের মাথায় হাত দিয়ে)
_কই নাতো আকি ঠিক আছি,,

বলেই চলে যেতে নিলে হেনা চৌধুরী হৃদয়কে আটকে আবার বলল,,

_দেখ আমি তোর মা, আমি বুঝি কখন আমার ছেলের সুখ কখন দুঃখ,,তো এখন বল বাবা কি হয়েছে,,,

হৃদয়ের হাল কেউ এইভাবে জিজ্ঞেস করায় হৃদয় তো বেচারা কান্নাই করে দিল,,তার মা তার দুঃখ কষ্ট বুঝেছে,,সে তার মাকে জড়িয়ে হাউমাউ করে কেদে দিল,,হেনা চৌধুরী ছেলের এভাবে কান্না করায় ঘাবড়ে গেল,, অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করতে লাগল “কি হয়েছে” কিন্তু না হৃদয় সেই আগের ন্যায় মাকে ধরে কান্না করেই চলছে,,হেনা চৌধুরী ছেলেকে বিছানায় বসালো তারপর আদুরে হয়ে জিজ্ঞেস করল,,

_কি হয়েছে বাবা কান্না করছিস কেন?আমাকে বল,,
_মা আমি অন্তরাকে ভালোবাসি,,আমি আর পারছিনা ওকে ছাড়া থাকতে,,(হেচকি তুলতে তুলতে বলল)

“অন্তরাকে ভালোবাসি” এই কথাটা শুনে যেন হেনা চৌধুরী কিছুক্ষনেইর জন্য হাড়িয়ে গেল,সে নেই তার মধ্যে তার ছেলে কি বলল এইটা?সে যা শুনেছে তাকি আদো সত্যি?হেনা চৌধুরী জিজ্ঞেস করল,

_অন্তরাও কি তোকে ভালোবাসে?
_অন্তরার তো কিছুই মনে নেই মা ও আমাকে ভুলে গেছে,ভুলে গেছে মা আমাকে ভুলে গেছে,,

কথা গুলো বলতে হৃদয়ের গলা ধরে আসছিল,,তার চোখ থেকে আবার পানি পরছে,,তার মা হেনা চৌধুরী বলল,,,

_তোর বাবা ডাক্তার সোলাইমানের মেয়ে রিয়াকে তোর সাথে বিয়ে দিবে বলে ঠিক করেছে,, রিয়াও এইবার ডাক্তারি পড়া শেষ করল,,
_নাহ মা আমি অন্তরাকে ছাড়া কারো সাথে বিয়ে করবো না,আমার অন্তরাকেই চাই ওকেই চাই মানি চাই,,

বলেই মার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরল আর বলে বিড়বিড় করতে লাগল “আমি অন্তরাকেই চাই আমার ওকেই চাই” হেনা চৌধুরী ছেলের পাগলামি দেখে চোখের কোন ভিজে আসলো,,তার ছেলে তো এমন ছিল না,,অন্তরার প্রেম আজ আমার ছেলেকে কোথায় নিয়ে এসেছে,,ঘুম খাবার সব হারাম হয়ে গেছে,,এসব ভেবেই চোখ ভড়ে এলো,,টপ করে ছেলের মুখের উপর এক ফোটা জল পরল,,ছেলের মাথায় হাত বুলাতে লাগল,,হৃদয় গুটিশুটি মেরে তার মায়ের কোলে শুয়ে আছে,,না যানি কতো দিন ধরে ছেলেটা নির্ঘুম,,

হেনা চৌধুরী আস্তে করে ছেলের মাথা নিজের কোল থেকে বালিশে রেখে বাহিরে আসলো,,আর মনে মনে বলতে লাগল,,

_আমার ছেলেকে আমি অন্তরাকেই এনে দিবো,,আমার একটি মাত্র ছেলে আমি কোন মনেই তাকে হারাতে পারবো না,,,আমি বুঝাবো হৃদয়ের বাবাকে,,

ওইদিকে অন্তরা আর জিসান পুকুরের কিনারা ঘেষে ঘুরে বেরাচ্ছে,,বেশ ভাব জমেছে তাদের,,হাটতে হাটতে হঠাৎ জিসান থেমে গেল,,অন্তরা জিসানের দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো,,,জিসান বলল,,

_অন্তরা আজ আমি তোমাক্ব কিছু বলতে চাই,,
_হুম বলুন,,
_অন্তরা আমি তোমাকে ভালোবাসি,,সেই ছোট বেলা থেকে আমি তোমাকে ভালোবেসে এসেছি,,তোমাকে দেখে রাখি তোমার প্রটেক্ট করে রাখি, আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না অন্তরা আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই তুমি কি রাজি?

অন্তরা চুপচাপ জিসানের চাপা গুলো শুনছিল,,জিসান অতি আগ্রহ নিয়ে অন্তরার দিকে উত্তরের জন্য তাকিয়ে আছে,,অন্তরা হাল্কা মুচকি হেসে মাথা নিচু করে ফেল্ল,,জিসান যেন তার উত্তর পেয়ে গেছে,বিশ্ব জয়ের হাসি দিল,,

পরেরদিন,,

হেনা চৌধুরী অনেক কষ্টে তার স্বামি হাসান চৌধুরীকে মানালো ছেলের খাতির হাসান চৌধরী ও রাজি হয়ে গেল,,তারা তিনজন গ্রামের উদ্দেশ্য রওনা হলো,,

গাড়ি চলছে আপন গতিতে,,হাসান চৌধরী ড্রাইভ করছে তার পাশে তার বউ হেনা চৌধিরী আর হৃদয় পিছের সিটে বসেছে,,যেতে যেতে হঠাৎ হৃদয়ের চোখ পরল নদির পারে বসা অন্তরার দিকে,,জিসান আর অন্তরা বসে আছে খুব ক্লোজ হয়ে,,অন্তরার সাথে অন্য ছেলেকে দেখা মাত্র হৃদয়ের মুহুর্তে যেন মাথা গরম হয়ে গেল,,চোখ লাল হয়ে আছে,,রাগে যিদ্দে শরীর ফেটে যাচ্ছে,,পারছে না কিছু বলতে ভদ্রতার খাতিরে,তাই সে চুপচাপ সিটে বসে আছে আর চোখ মুখ শক্ত করে রেখেছে,,প্রায় কিছুক্ষন পর তারা পৌছে গেল প্রেমতলায়,,

মাদবর সাহেব হঠাৎ হাসান চৌধুরীকে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেল,,মাদবর সাহেব হাসান চৌধিরীর উদ্দেশ্য বলল,,

_আরে ভাই আপনি আজ হঠাৎ?
_হুম আপনার সাথে জরুরি তলবে এসেছি,

খালেদ মিয়া চিন্তায় পরে গেল তার সাথে আবার জরুরি তলব কি হতে পারে,,তার ভাবনার ছেদ কেটে হাসান চৌধুরী বলল,,

_ভিতরে নিবেন না?

খালেদ মিয়া হাল্কা হেসে ভিতরে ঢুকালো,,সবাই মিলে সোফায় বসল,,হাসান চৌধুরী বলা শুরু করল,,

_আমরা আমাদের ছেলের জন্য আপনার মেয়ে অন্তরাকে নিতে চাই ভাই,,

খালেদ মিয়া যেন এক বড়সড় সক খেল,,আমতা আমতা করে বলল,,

_কি কি বলছেন আপনি?
_হুম ঠিকি বলছি আমার হৃদয়ের জন্য আপনার অন্তরাকে নিতে চাই যদি আপনার কোন আপত্তি না থাকে,,
_আরে নাহ নাহ আমার আবার কিসের আপত্তি থাকবে,আমি খুব খুশি,,

বলেই দুইজন কোলাকুলি করল,,হৃদয়ও খুব খুশি তার মুখে তৃপ্তির হাসি,,হেনা চৌধুরী ছেলের মুখে হাসির ঝলক দেখে খুশি হয়ে গেলেন,,তারপর খালেদ সাহেব আবার বললেন,,

_আমি অন্তরাকে জিজ্ঞেস করতে চাই একবার যদি ও রাজি থাকে,,,,,,

হৃদয় এবার ভড়ক গেল, কারন অন্তিরা তো রাজি হবেনা,, সে উঠে খালেদ মিয়ার পাশে গিয়ে বসে তার হাতে হাত রেখে নরম শুরে বলল,,

_চাচা আপনি না বলেছেন আমি যা চাইবো আমাকে দিবেন?
_হুম বাবা,,
_তাহলে আমি এখন অন্তরাকে চাইছি আমাকে অন্তরা দেন চাচা,,

খালেদ মিয়া হৃদয়ের এভাবে করুন শুরে বলায় খুব মায়া হলো সে বলল,,

_আচ্ছা ঠিক আছে,,,

হৃদয় মুহুর্তে খুশি হয়ে গেল,,সেই সময় অন্তরা মাত্র ঘরে ঢুকলো,,হাসান চৌধুরী আর হেনা চৌধুরীকে দেখে তাদের সামনে গিয়ে তাদের সালাম দিল,,কিছু টুকটাক কথা বলে নিজের রুমেত দিকে চলে গেল,,হৃদয়ের দিকে একটি বারের মতো ফিরেও তাকায়নি,,হৃদয় তো এতক্ষন অন্তরার দিকেই তাকিয়ে ছিল এক ধেনে,,অন্তরা তার দিকে না তাকাতে তার কিছুটা কষ্ট হলো,তারপর কিছু একটা ভেবে আবার খুশি হয়ে গেল,,

দুপুরে সবাই একসাথে বসে খাবার খাচ্ছে,,অন্তরা আর তার মা সবাইকে বেড়ে দিচ্ছে খাবার,,খাবার খেয়ে যে যার রুমে চলে গেল,,

বিকেলের দিকে অন্তরা তার রুমে বসে আছে,,তার মা তার রুমে ঢুকলো মাকে দেখে মার দিকে তাকালো,,তার মা তার কাছে এসে দারালো,,অন্তরা মাকে এভাবে দাড়াতে দেখে ভ্রু কুচকে তাকালো,,তার মা সোজাসাপ্টা ভাবে বলল,,

_রেডি হয়ে নে এখন কাজি আসবে তোর বিয়ে পরাতে,,

অন্তরা যেম আকাশ থেকে পরল,,তার মাথায় বাজ পরল,,একি বলছে তার মা?তার বিয়ে মানে?সে চট করে উঠে দারালো মায়ের মুখোমুখি,,তারপর জিজ্ঞেস করল,,

_কি বলছ তুমি এসব আমার বিয়ে?কার সাথে?
_হৃদয়ের সাথে আর তাও এখন,,

অন্তরা যেন আরো একদফা সক খেল,সে মুহুর্তেই বলে দিল,,

_আমি হৃদয়কে বিয়ে করবো না বেস,,
_বেশি কথা না বলে রেডি হয়ে নে কাজি চলে আসবে,,(বলেই তার হাতে একটি শাড়ি ধরিয়ে দিল)
_আমি বললাম তো আমি বিয়ে করবো না(বলেই শাড়ি ফেল দিল)
_আমরা সবাই রাজি এখন তোর মত নিতে আসিনি,,

বলেই চলে গেল,,অন্তরা তো চিল্লাতে লাগলো সে এই বিয়ে করবে না,,কিন্তু নাহ কেউ তার কথা কানেও নিচ্ছে না,,তার চিল্লাফাল্লা শুনে হৃদয় অন্তরার মাকে বলল,,

_আন্টি আমি অন্তরার সাথে কথা বলতে চাই,,
_ঠিক আছে বাবা যাও,,

হৃদয় অন্তরার রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিল,,দরজা লাগানো শব্দে অন্তরা পিছে ফিরে তাকালো দেখলো হৃদয় দারিয়ে আছে,,সে হৃদয়কে দেখে চলে যেতে নিল দরজার পাশে হৃদয় চট করে অন্তরার হাত ধরে ফেলে,,,অন্তরা ঝারা দিয়ে নিজের হাত সরিয়ে নেয়,,এভাবে হাত নেওয়ায় হৃদয়ের খুব রাগ হলো,,তাও সে নিজের রাগকে কান্ট্রল করল,,অন্তরা আবার দরজার লক খুলে যাবে এইবার হৃদয় আর নিজের রাগ কান্ট্রল করতে পারল না,,অন্তরার দুই হাত চেপে ধরে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে নিল,,অন্তরা ছারার জন্য ছুটছুটি করছে আর বলছে,,

_আমি আপনাকে বিয়ে করবো না,,আমি জিসানকে ভালোবাসি ওকেই বিয়ে করবো,,

“জিসানকে ভালোবাসি” অন্তরার মুখ থেকে অন্য কেউকে ভালোবাসি শুনে আরও খেপে গেল হাত আরও চেপে ধরে দাতে দাতে চেপে বলল,,

_তুই আমার আমার কাছেই থাকবি আমাকেই ভালোবাসবি,,এক মুখ দিয়ে শুধু আমাকে ভালোবাসি বলবি যদি অন্য কারো নাম শুনি তাহলে তোর হাল এমন করবো যা ভেবেও পাবি না,,

কথা গুলো বলতে বলতে চোখ গুলো লাল হয়ে গেল,অন্তরা হাতের ব্যাথায় কান্নাই করে দিল,,হৃদয় অন্তরার কান্না দেখে তার হুশ ফিরল, সে তারাতারি অন্তরার হাত ছেরে দিল,,অন্তরা হাত ছাড়া পাওয়ায় হাত ধরে নিচে বসে কান্না করতে লাগল,,হৃদয় অন্তরার কান্না দেখে ঘবড়ে গেল,,সেও নিচে বসে পরল অন্তরার বরাবর,অন্তরাকে নানান জিনিস বলে সান্তনা দিচ্ছে,,

_জান তুমি কান্না কর না দেখ তোমার কান্না আমার সহ্য হয় না প্লিজ থামো,,

বলেই অন্তরাকে বুকে জরিয়ে নিল,অন্তরা হৃদয়ের বুক থেকে উঠে আস্তে চাইলে হৃদয় অন্তরার মাথা তার বুকে আরো জোরে চেপে ধরে আর বলে,,

_কেন তুমি আমার থেকে দূরে দূরে থাকো?আমার বুকের ভিতর অনেক ব্যাথা হয় বিশ্বাস করো আমি বাচবো না তোমাকে ছাড়া,,

অন্তরা আর কিছু বলল না সে চুপ করে রইল,,,

চলবে🖤
(ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🥰)

হৃদয়ের অন্তরা পর্ব-০৮

0

#হৃদয়ের_অন্তরা❤️
#part_8
#sarika_Islam
,
,
সকালে,,,

হৃদয় নিচে নামল ব্রেকফাস্ট করতে,,ডাইনিং টেবিলে খেতে বসল,,ডাইনিং টেবিলের বরাবর রান্না ঘর,,হৃদয় লক্ষ করল অন্তরাও তার মার সাথে রান্নায় সাহায্য করছে,,দেখে কিছুটা অবাক হলো,,পর মুহুর্তে ভাবলো কাল রাতের কথা,,,কিছুক্ষনের মধ্যে তার বাবাও আসল,, হেনা চৌধুরী তাদের জন্য খাবার নিয়ে আসল আর বলল,,

_দেখ হৃদয় সকাল থেকে অন্তরা আমাকে রান্নায় হেল্প করছে,,আমার কি মনে হয় মেয়েটা সুস্থ হয়ে গেছে,,(বলেই খুশি হয়ে গেল)
_সুস্থ হলে তো ভালোই,,(খুশি হয়ে তার বাবাও বলল)

সবাই একসাথে খাবার খাওয়ার জন্য বসল,হেনা চৌধুরী অন্তরাকে বলল,,

_অন্তরা তুইও বোস একসাথে খাই,,

অন্তরা মাথা নাড়িয়ে বসে পরল হেনা চৌধুরীর সাথের চেয়ারে,,হৃদয়ের বরাবর,,হৃদয় লক্ষ করল অন্তরা আজ খুব পরিপাটি ভাবে বসেছে,গায়ের ওড়নাটা খুব সুন্দর ভাবে জরিয়ে রেখেছে,মাথা নিচু করে চুপচাপ খেয়ে চলছে,,হৃদয় এক দৃষ্টিতে অন্তরার দিকে তাকিয়ে আছে,,কিন্তু অন্তরা একবারের জন্যও হৃদয়ের দিকে তাকায় নি, হৃদয় খুব কষ্ট পেল,,হেনা চৌধুরী হাসান চৌধুরীকে বলল,,

_শুনছ খালেদ মিয়াকে ফোন দিও তো অন্তরা নাকি চলে যাবে,,

অন্তরার চলে যাওয়ার কথা শুনে হৃদয়ের বুকের ভিতর ছেত করে উঠলো,তার মনে হচ্ছে তার শ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে,,তখন হাসান চৌধুরী অন্তরাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,

_কেন মা? তুমি সবেই তো সুস্থ হয়েছ,ঢাকা শহর টা ঘুরে দেখ, ভালো লাগবে,,হৃদয় তুই ওকে ঘুরাবি আজ,,

হৃদয় যেন নিজের শ্বাস একটু হলেও ফিরে পেয়েছে,,সেতো এমনি একটা সুযোগ চেয়েছিল,,সে খুশি হয়ে হাসি মুখে অন্তরার দিকে তাকাল,কিন্তু অন্তরা তাকাল না সে মাথা নিচু করে খাচ্ছে,,হৃদয়ের কাছে অন্তরার এই বিহেভিয়ারটা অনেক কষ্ট লাগল, পুরো বুকে যেয়ে লাগল,,,

_আমার খাবার শেষ,,

বলেই নিশ্চুপে উঠে চলে গেল,,হৃদয় নিজের রুমে গিয়ে যিদ্দে বসে রইল,,এক সাইডে যিদও উঠছে আবার কষ্টও লাগছে,,

দুপুরে,,,

সবাই দুপুরের খাবার খেয়ে নিল,,অন্তরা উপরে যেতে নিলে হেনা চৌধুরী বলে উঠল,,,

_অন্তরা তুই রেডি হয়ে নে,হৃদয় তোকে ঘুরতে নিয়ে যাবে,,
_আমি যাবো না আমার শরীরটা ভালো ঠেকছে না,,

পিছে না ফিরেই বলে চলে গেল,,হৃদয়ের তো এখন অনেক পরিমাণের রাগ লাগছে অন্তরা পেয়েছে টাকি?নিজেকে কি ভাবে হ্যা?রাগে যিদ্দে গটগট করে অন্তরার পিছু পিছু উপরে চলে গেল,,অন্তরা নিজের রুমে গিয়ে যেই দরজা আটকাতে নিবে অমনি খপ করে হৃদয় দরজা ধরে ফেলে,ঠেলেঠুলে ভিতরে ঢুকে,,

_কি হচ্ছে টাকি?(অন্তরা বলল)
_অন্তরা রেডি হও আমি তোমাকে বাহিরে নিয়ে যাবো,,(খুব শান্ত শুরে)

অন্তরা কিছু বলছে না চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে,,হৃদয় রাগ যেন আরও বেড়ে গেল,

_আমি কি বলছি শুনছ না?(ধমকের শুরে)

হৃদয়ের ধমকে অন্তরা কেপে উঠলো,,আস্তে আস্তে বলল,,

_আমি তো বলেছি আমি যাবো না,,(মাথা নিচু করে)

হৃদয় এইবার আর নিজেকে কান্ট্রল করতে পারল না,অন্তরার হাত ধরে এক টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসল একদম কাছে,,দুইজন দুই জনের নিশ্বাসে বারি খাচ্ছে,,হৃদয় বলল,,

_তুই আমারে ইগ্নর করস কেন হ্যা?তুই আমারে ইগ্নর কেন করস?আমারে চিনিস না তুই হ্যা চিনিস না আমারে?(জোরে চিল্লিয়ে)
_নাহ আমি চিনি না আপনাকে,,(বলেই হাত মুচরামুচরি করতে লাগল)

এই কথা বলায় হৃদয়ের মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পরল,,তার কানে যেন একটা কথাই বারি খাচ্ছে,,তার পুরো পৃথিবী ঘুরছে,,সে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,, অন্তরা কাদো কাদো হয়ে আবার বলল,,

_আমি থাকবো না এখানে এক মুহুর্ত, আমি চলে যাবো আমি থাকবো না,,(বলেই ঝারা দিয়ে হাত ছারিয়ে নিল)

হাত ঝারা দেওয়ায় হৃদয়ের যেন হুশ ফিরে আসল,,সে অন্তরার কাছে গিয়ে অন্তরার দুই বাহু ধরে তার দিকে মুখ উঠিয়ে বলল,,

_তুই চলে যাবি মানি কি?তোর একদিনের ইগ্নর আমার সহ্য হয় না আবার তুই চলে যেতে চাস আমার কাছ থেকে তোর তো সাহস কম হয়নি,,তুই কোথাও যাবি না আমার কাছ থেকে আমার সাথেই থাকবি,আমার অভ্যাস তুই তোকে ছাড়া আমার এক মুহুর্ত চলবে না,,আমি ভালোবাসি তোকে ভালোবাসি বুঝেছিস তুই,,

অন্তরা হা করে হৃদয়েএ মুখের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে সব শুনছে,,কি বলছে কি হৃদয়?হুশ আছে ও কি বলছে?

_আমি তো আপনাকে চিনিই না ভালোবাসেন কিভাবে?(অবাক হয়ে হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে)
_আচ্ছা ঠিক আছে তোর মনে নেই আমি মনে করিয়ে দিব,,
_নাহ আমি মনে করতে চাই না কিচ্ছু মনে করতে চাই না,,(বলেই হাত ঝারা দিল)
_কেন?(হৃদয় অবাক হয়ে বলল)
_আপনি একজন চরিত্রহহীন, প্রথম দেখাতেই আমারে আপনি কিস করেছেন আপনাকে আমি কিভাবে ভালোবাসবো?কখনও না,ভাবতেই আমার গা গুলিয়ে আসে ছিহহহহ,,আর আপনি আমাকে ভালোবাসেন কোন মুখে বলেন লজ্জা করে না?

চিল্লিয়ে কিথা গুলো বলে দৌড়ে ওয়াশ্রুমে গিয়ে দরজা আটকে দিল,,দরজা আটকে দরজার সাথে হেলান দিয়ে কাদতে কাদতে বসে পরল,হাটুর মাঝে মুখ গুজে ইচ্ছেমতো কাদতে লাগল,,

আর এইদিকে হৃদয় তো অন্তরার থেকে এইসব কথা শুনে হা হয়ে রইল,,সে কখনও ভাবেনি অন্তরা এইভাবে এইসব বলবে তার ভালোবাসাকে এইভাবে অপমান করবে,,হৃদয় তারাহুরু করে ওয়াশ্রুমের দরজার কাছ্ব গেল,,দরজা পেটাতে পেটাতে বলল,,

_দেখ অন্তরা আমি তোকে সব খুলে বলব কেন আমি করেছি এইসব একবার আমাকে বলার সু্যোগ দে?
_নাহ আমি কিচ্ছু শুনতে চাই না কিচ্ছু না,,আমি বাসায় যাবো বাসায় যাবো,,

বলেই আরও জোরে কান্না করতে লাগল,,হৃদয়ও ব্যার্থ হয়ে চলে গেল,,

রাতে হাসান চৌধুরী খালেদ মিয়াকে ফোন করল,,,

_তোমার জন্য সুখবর আছে,,
_কি?(আশ্চর্য হয়ে বলল)
_তোমার মেয়ে তো সুস্থ হয়ে গেছে,,
_সত্যি?
_হুম
_আমি কালকেই আসছি আমার পাখির কাছে,,
_আচ্ছা ঠিক আছে,,

ফোন রেখে দিল,,খালেদ মিয়ার চোখের থেকে নোনাজল পরছে,,তার বউ অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে কি বলেছে?সে তার বউকে সান্তনা দিয়ে বলল,,

_আমাদের অন্তরা ঠিক হয়ে গিয়েছে,,

অন্তরার মা খুশিতে কান্নাই করে দিল খালেদ মিয়া তার বউকে জরিয়ে ধরে সেও কান্না করে দিল,,কিন্তু এই কান্না খুশির কোন কিছু ফিরে পাওয়া খুশির,,

সকালে,,,

অন্তরা ঘুমের থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে গেল,,নিচে গিয়ে তার বাবাকে দেখে দৌড়ে গিয়ে জরিয়ে ধরল,,কতো শতো পর যেন দুইজনের দেখা,অন্তরা কান্না করে দিল,,তার বাবা তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল,,

_আজ আমি খুব খুশি মা,খুব খুশি,,চল আমি তোকে নিতে এসেছি,তোর মা তোর জন্য অপেক্ষা করছে,,

অন্তরা বাবাকে ছেরে মাথা নেড়ে সায় জানাল,,তারপর সে চলে গেল পেকিং করতে,,পেকিং করা শেষে নিচে নামল,,হৃদয়ও মাত্র ঘুম থেকে উঠলো, উঠে নিচে নামল ব্রেকফাস্টের জন্য,, দেখল অন্তরা হাতে লাকেস নিয়ে দাড়িয়ে আছে,,হৃদয় বুকে চিন চিন ব্যাথা হচ্ছে, কিন্তু কি আর করার যার জন্য এই মন কাদে সেতো আর বুঝে না,,ভেবেই একটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো,,খালেদ মিয়া হৃদয়কে দেখে মুখে হাসি নিয়ে হৃদয়ের কাছে গেল,,বলল,,

_তুই আমাকে আজ অনেক বড় একটা উপহার দিয়েছ যার জন্য আমি সারাজিবনের ঋণি হয়ে গেলাম,,বলো বাবা তোমার কি চাই?
_আমি যা চাইবো দিবেন তো?
_জি জি অবশ্যই,
_ঠিক আছে যখন দরকার তখন চেয়ে নিবো,
_ঠিক আছে বাবা তুমি চেয়ে নিও আমার সাধ্যে থাকলে অবশ্যই দিব,
_ঠিক আছে,,

বলেই উপরে চলে গেল,,অন্তরা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে রইল,,হৃদয় উপরে উঠছে আর মনে মনে বলল,,

_তোমার চলে জাওয়া আমি কখনই দেখতে পারবো না,,

অন্তরা তার বাবার সাথে চলে গেল,,হৃদয় নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে অনেক কান্না করল,,অনেক কষ্ট পেল সে,,সারাদিনও নিজের রুমের থেকে বের হয়নি,,

এইদিকে গ্রামে,,

অন্তরার আম্মু তার মেয়ের জন্য অনেক খাবারের আয়োজন করল,,গ্রামের অনেক মানুষ আসল তার মেয়েকে দেখতে,,পিংকুও আসল,,অন্তরা আসল সবার সাথে কথা বার্তা বলে খেয়ে নিল,,

পরের দিন সকালে,,

খালেদ মিয়া তার মেয়ের ভালো হওয়ার জন্য গ্রামের সবাইকে খাওয়ালো,,সেখানে জিসানের বাবও আসল,,জিসানের বাবা আর খালেদ মিয়া খুব ভালো বন্ধু,,হঠাৎ জিসানের বাবা খালেদ মিয়াকে বলল,,

_দোস্ত তোর মেয়েতো মাসাল্লাহ খুবি সুন্দর, আমার ছেলে জিসানের বউ করে নিতে চাই,,আর ছেলে আমার আরোদে বসে এখন তুই যদি চাস আমরা বন্ধু থেকে বিয়াই হয়ে যেতে পারি,,
_আচ্ছা দোস্ত আমাকে সময় দে আমি এখন কথা দিতে পারলাম না,, অন্তরা সবেই তো সুস্থ হয়েছে,,
_আচ্ছা তুই সময় নে,,

অন্তরা ঘরের এক কোনে বসে বসে সব দেখছে,,হঠাৎ পিছন থেকে পিংকু ডাক দিল,,

_কিরে অন্তরা আমাকে ভুলে গেছিস?

অন্তরা পিছে ফিরে দেখল পিংকু দাঁড়িয়ে আছে,,পিংকু তার সামনে এসে দাড়ালো,,অন্তরা বলল,

_নাহ ভুলি নি,,(বলেই হচকচিয়ে গেল)
_আমি বুঝেছি তুই আমাকেও ভুলে গেছিস,,(বলেই মুখ ফুলিয়ে নিল)

অন্তরা পিংকুর এভাবে মুখ ফুলানো দেখে মনে মনে ভাবলো,,

_হয়তো আমি ওর সাথে খেলতাম,থাক এভাবে পিচ্চিটাকে কষ্ট দেওয়া উচিত হবে না,,

সে পিংকুকে জরিয়ে ধরে বলল,,

_তোকে কি ভুলা যায় বল?

পিংকুও খুশি হয়ে গেল,সেও অন্তরাকে জরিয়ে ধরল,,পিংকু অন্তরাকে বলল,,

_চল আমরা ঘুরে আসি,,,
_আচ্ছা চল,,

বলেই তারা দুইজন ঘুরতে বের হলো,,পিংকু অন্তরাকে এক এক করে সব দেখাচ্ছে,,

_দেখ অন্তরা এইখানে আমরা খেলতাম,এইখানে ঝুলতাম,,

বলেই সব দেখাতে লাগল,,অন্তরা কিচ্ছু হলছে না চুপচাও দেখে যাচ্ছে,,হাটতে হাটতে হঠাৎ জিসানের সাথে দেখা হলো,,জিসানকে দেখে সাইড কেটে চলে যেতে নিলে জিসান অন্তরাকে ডাকতে লাগল,,,

_এই অন্তরা অন্তরা,,

অন্তরা পিছে ফিরে তাকালো,,অন্তরা চিনতে পারছে না কে সে যে তাকে চিনে,,পিংকু বলে উঠলো,,

_কিরে অন্তরা তুই জিসান ভাইয়াকে চিনিস না?

অন্তরা শুধু মাথা নাড়ালো,যে না সে চিনে না,,জিসান বলে উঠলো,,

_পিংকু কই হয়েছে অন্তরার?
_আমাদের অন্তরা ভালো হয়ে গেছে,,

ভালো হয়ে গেছে শুনে জিসান খুশি হয়ে গেল,সে অন্তরার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল,,

_আমি জিসান,,

অন্তরা প্রথমে হাত দিতে চায়নি,, অনেকক্ষন ধরে হাত দিয়ে রাখায় ভদ্রতার খাতিরে হাত মিলিয়ে বলল,,

_আমি অন্তরা(বলেই মুচকি হাসল)

জিসানের সাথে হেসে হেসে টুকটাক কথা বলল,,

_আচ্ছা জিসান ভাইয়া আমাদের বাসায় আইসেন,,
_আচ্ছা

বলেই অন্তরা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেল,,জিসান তো মহান খুশি, এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি,,,

চলবে🖤
(ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🥰)

হৃদয়ের অন্তরা পর্ব-০৭

0

#হৃদয়ের_অন্তরা❤️
#part_7
#sarika_Islam
,
,
সকালে,,হৃদয় তার বুকে অন্তরাকে আবিষ্কার করল,,সে অন্তরার কপালে হাত দিয়ে দেখল হাল্কা কমেছে,,তাও অনেক জর আছে,,হৃদয় আর অন্তরাকে উঠালো না আস্তে করে তার পাশ থেকে সে উঠে নিজের রুমে চলে গেল,, সেখান থেকে ফ্রেশ হয়ে নিচে গেল নাস্তা করতে,গিয়ে দেখল তার আম্মু আব্বু বসে বসে নাস্তা করছে,,সেও তাদের সাথে জয়েন করল,,,নাস্তা খেতে খেতে হৃদয় তার মাকে বলল,,

_মা অন্তরার জর এসেছে আমি ওকে নাস্তা দিয়ে আসি,
_আচ্ছা দিয়ে আয়,,মেয়েটার যে কিভাবে আবার জর আসল,,তারাতারি যেন সুস্থ হয়,
_হুম,,,

বলেই হৃদয় খাবার শেষ করে অন্তরার জন্য নাস্তা নিয়ে তার রুমে গেল,গিয়ে দেখল অন্তরা এখনও শুয়ে আছে কম্বল মুড়ি দিয়ে,, হৃদয় অন্তরার পাশে গিয়ে বসল তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে লাগল,,

_অন্তরা উঠ, নাস্তা এনেছি খেয়ে ঔষধ খেয়ে নে তাহলে তুই একদম সুস্থ হয়ে যাবি,,

অন্তরা কোনরকম উঠলো,, হৃদয় ওকে নাস্তা খাইয়ে দিল,,তারপর বলল,,

_তুই বস একদম নরাচরা করবি না আমি ঔষধ নিয়ে আসি,,

অন্তরা শুধু মাথা নাড়াল যার মানি “ঠিকআছে” হৃদয় অন্তরার জন্য ঔঔষধ আনতে তার রুমে গেল,,জরে টেবলেট আর ইঞ্জেকশন নিল,,,নিয়ে আসল অন্তরার রুমে অন্তরাকে মেডিসিন খাইয়ে দিল আর চতুর্থ নাম্বার ইঞ্জেকশন দিল,,আর বলল,,,

_তুই ছুটছুটি করিস না লক্ষ্মি মেয়ের মতো বসে থাকবি,,

অন্তরাও চুপচাপ শুয়ে রইল,,

2দিন পর,,,,

হৃদয় আর ওর মা বাব ডাইনিং রুমে বসে সবাই চা খাচ্ছে আর টিভি দেখছে,,,হঠাৎ হাসান চৌধুরী বলে উঠল,,

_অন্তরার জর এখন কমেছে?
_হ্যা বাবা কমেছে,
_ওহ,,

হেনা চৌধুরী বলে উঠল,,

_অন্তরার কি হয়েছে রে হৃদয়?কারো সাথে এখন আর কথা বলে না দুষ্টুমি করে না নিচেও নামে না,,কি হয়েছে রে ওর?
_মা ওকে ডোজ দিচ্ছি হয়ত ওইটার এফেক্ট হচ্ছে,,দোয়া করো যেন ভালো হয়ে যায়,, কাল ওকে লাস্ট ডোজ দিব,,
_হুম,,দোয়া করি মেয়েটা যেন তারাতারি সুস্থ হয়ে উঠে৷

সন্ধ্যায়,,হৃদয় তার রুমে গিয়ে ডাক্তার চাচাকে ফোন দিল,,

_চাচা সব ডোজ তো শেষ হলো,,শুধু কালকের টা বাকি,,
_কোন পরিবর্তন কি পাও?
_জি চাচা আগের থেকে কম কথা বলে৷ কম কি এখন ধরতে গেলে কথাই বলে না আগের মতো দুষ্টুমি করে না নিজের ঘরেই থাকে শুধু,,,
_ওহ যাক তাহলে তো ভালই,,কালকের ডোজ সম্পর্কে কিছু বলবো যদি চেম্বারে আসতে?
_জি জি আমি এখনি আসছি,

বলেই ফোন রেখে চলে গেল ডাক্তার চাচার কাছে,,

_আস্তে পারি চাচা?
_আরে হৃদয় আসো আসো,,,

হৃদয় কাচের দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকল,,

_বসো বসো,,কেমন অবস্থা তোমার?
_জি আলহামদুলিল্লাহ ভালোই,,
_এই যে এই ইঞ্জেকশনটা কালকে ওকে দিবা,,(ইঞ্জেকশনটা হাতে নিয়ে)
_হুম ঠিক আছে,,
_তারপর তুমি বুজবে কিভাবে যে ও ঠিক হয়েছে?
_হুম কিভাবে?(ভ্রু কুচকে তাকাল)
_আসো আসো আমি বলি,,(বলেই হাস্তে লাগল)

হৃদয় তার চাচার হাসির রহস্য খুজে পেল না আগের ন্যায় ভ্রু জোরা কুচকে রেখেছে,,ডাক্তার চাচা বলতে শুরু করল,,

_ডোজটা দেওয়ার পর কিছুক্ষন পর প্রায় এক দেড় ঘন্টা পির ওকে ডেকে তোমার ঘর বা ছাদে গিয়ে ওকে কিস করবা,, লিপ কিসসস,,(বলেই মুচকি হাসল)

হৃদয় ডাক্তার চাচার কথা শুনে আকাশ থেক পরল এইসব কি বলে চাচা?মাথা কি ঠিক আছে?হৃদয় তারাতারি করে বলল,,

_নাহ নাহ ইম্পসিবল, আমি পারবো না,,(বলেই চেয়ার থেকে উঠে দাড়ালো)
_এইটা তো তোমাকে করতেই হবে এইটা জাস্ট একটা টেস্ট নাথিং ইলস,,
_দেখেন চাচা আমি সত্যি ওকে ভালোবাসি,,আমি চাই না ও আমাকে ভুল বুঝুক,,
_আরে হৃদয় এইটা ওর ট্রিটমেন্টের একটা অংশ,,আর আমি দেখেছি তুমি ওকে কতোটা ভালোবসো,,আর তোমার এই ভালোবাসার জিতার জন্যই তোমার এইটা করতে হবে,,,

ডাক্তার চাচার অনেক জোরাজুরিতে অবশেষে হৃদয় রাজি হয়,,

_তাহলে তুমি আমাকে জানিও,,,
_ঠিক আছে,,

বলেই চলে আসল বাসাদ উদ্দেশ্যে,,বাসায় এসে ডিনার করে অন্তরার রুমে উকি মেরে দেখল অন্তরা ঘুমিয়ে গেছে, সেও তার রুমে গিয়ে শুয়ে পরল,,,

সকাল 9টা,,,

হৃদয় উঠে ফ্রেশ হয়ে অন্তরার রুমে গেল ইঞ্জেকশন নিয়ে,, গিয়ে দেখল অন্তরা উঠে গিয়েছে,,বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে অন্তরা, হৃদয় অন্তরাকে ডাকল,অন্তরা বারান্দা থেকে বের হয়ে আসল বিছানায় বসল,,হৃদয় অন্তরাকে ইঞ্জেকশন দিল,,ইঞ্জেকশন দেওয়ার সময় অন্তরা “আহহহ” শব্দ করল হৃদয় কিছুক্ষন অন্তরার দিকে তাকিয়ে রইল,,তারপর নিজের কাজে ধেয়ান দিল,,ইঞ্জেকশন দেওয়ার শেষে অন্তরা চুপ্টি করে উঠে গেল,, কোন কথা বলল না হৃদয় ও আর কোন কথা বলল না চলে গেল,,

প্রায় 1ঘন্টা পর,,হৃদয় অন্তরার রুমের দরজার সামনে এসে বলল,,

_অন্তরা একটু ছাদে আসো কথা আছে,,

বলেই সে আগে আগে গটগট করে চলে গেল,,অন্তরাও কিছু বলল না সেও মাথা নিচু করে চলে গেল ছাদে,,গিয়ে দেখল হৃদয় এক কোনে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে,,অন্তরাও হৃদয়ের পাশে গিয়ে দাড়ালো কিছু দুরুত্ব রেখে,,,,বেশ কিছুক্ষন নিরবতা চলল দুইজনের মধ্যে,, তারপর অন্তরাই মুখ ফুটে বলল,,

_ভাইয়া কিছু বলবেন,,(বলে হৃদয়ের দিকে মুখ করে দাড়ালো)

হৃদয় কি বলবে? কিভাবে বলবে? কিছুই ভেবে পাচ্ছে না,,খুব বেশি নার্ভাস হৃদয়,,হঠাৎ অন্তরাকে জরিয়ে ধরে কিস দিয়ে বসল,,অন্তরা তো হা কি হলো? কি করলো এইটা?অন্তরা বুঝে উঠতে পারায় তারাতারি করে হৃদয়কে সরিয়ে ঠাসসসসস করে থাপ্পর দিল,,

_অসভ্য ছেলে,,তোর সাহস কি হয় আমারে কিস করার,,
_অন্তরায়ায়া(গালে হাত দিয়ে)
_কে অন্তরা আমি চিনি না,,

বলেই দৌড়ে নিচে বলে গেল,,ঠিক সেই সময়ে হৃদয়ের ফোন বেজে উঠলো,,ফোন হাতে নিয়ে দেখল ডাক্তার চাচা,,ফোন রিসিভ করল,,

_কাজ হয়েছে?(খুব এক্সাইটেড হয়ে)
_হুম,আমি একটা থাপ্পর ও খেয়েছি,,(গালে হাত ঘসতে ঘসতে)
_কে থাপ্পর দিয়েছে?
_অন্তরা,,

বলার সাথে সাথেই ডাক্তার চাচা জরে চিতকার করে উঠলো

_ইয়াহুউউউউউউ well done my son…

হৃদয় বুঝতে পারল না৷ চাচার এই খুশির জিনিস,,

_কি হয়েছে চাচা?
_তুমি সাকসেস তোমার অন্তরা ভালো হয়ে গিয়েছে,,

হৃদয় মুহুর্তেই খুশি হয়ে গেল,,ফোন রেখে দিল,,তার থাপ্পরের কথা ভুলে খুশু হলো যে তার অন্তরা ভালো হয়ে গেছে,,তারপর মুখ টা আবার মলিন হয়ে গেল,,

_অন্তরা কি আমাকে ভুলে যাবে নাকি আমি মনে থাকবো?আমার ভালোবাসা কি সে বুঝবে?

ভেবেই আবার উদাস হয়ে গেল,,,

চলবে🖤

(ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🥰)

হৃদয়ের অন্তরা পর্ব-০৬

0

#হৃদয়ের_অন্তরা❤️
#part_6
#sarika_Islam
,
,
হৃদয়ের বুক ধক করে উঠল,,কিছুক্ষন অন্তরার দিকে তাকিয়ে রইল,,তারপর আবেগের বশে “হুম” বলে দিল,, তারপর বলল,,,

_তুমি কিভাবে জানলে?
-আরেএএ আমাকে আন্টি বলেছে,,

“আন্টি বলেছে” কথাটা শুনেই হৃদয়ের টনক নরল তার আম্মু?আম্মু কিভাবে জানল?হৃদয় কিছুটা সজা হয়ে বসল,,অন্তরা আবার বলল,,

_আন্টি বলেছে যে আমাকে আদর করে সেই আমাকে ভালোবাসে তুমিও তো আমাকে অনেক আদর করো,,,

হৃদয়ের ভিতর যেন জান ফিরে আসল এতক্ষনে,,এতক্ষন মনে হচ্ছিল কেউ তার শ্বাস আটকে রেখেছিল,,,, হৃদয় বলল,

_হুম,,
_তাহলে আমাকে ভালোবেসে কিছু দাওওও,

হৃদয় পরল এখন মুস্কিলে তাকে কি দিবে এখন?ভেবে পাচ্ছে না আর অন্তরা চাইতেই আছে,,

_আচ্ছা আসো আমরা একটা সেল্ফি তুলি তারপর এইটা তোমাকে আমি ফ্রেম করে দিব ঠিক আছ?
_হুম হুম ঠিক আছে,,

হৃদয় উঠে তার ফোন নিয়ে অন্তরার কাছে গেল,,ফোন এর কেমেরাটা অন করে অন্তরার সামনে এসে তার ফোনটা ধরল অন্তরা হুট করে হৃদয়কে জরিয়ে ধরল,,,এইভাবে হুট করে ধরায় হৃদয় কিছুটা ভরকে গেল,,পর মুহুর্তে হৃদয়ও তাকে এক হাতে জরিয়ে নেয়,,এইভাবে তারা সেল্ফি তুলে,,অন্তরা বলল,,

_আচ্ছা আমাকে কবে দিবা এইটা?
_আগে এইটা ফ্রেম করে নেই তারপর ঠিক আছে,,
_আচ্ছা,,

হঠাৎ ঝুম করে বাহিরে বৃষ্টি নেমে গেল,,অন্তরা হৃদয়ের রুমের জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখে খুশি হয়ে গেল তারপর কিছুটা লাফিয়ে বলল,,

_ভাইয়া,, চলো না আমরা বৃষ্টিতে ভিজি,,আমার বৃষ্টিবিলাস করতে খুব ভালোলাগে,,চলো না,,
_নাহ তুই রুমে জা আমার কিছু কাজ আছে,,

অন্তরার মুখটা মলিন হয়ে গেল,,সে চুপচাপ মাথা নিভু করে চলে গেল,,হৃদয় তার কাজে আবার মন দিল,,অন্তরা হৃদয়ের রুম থেকে বের হয়ে ছাদে চলে গেল সে বৃষ্টিতে আজ ভিজবেই,,অন্তরা একা একা চলে গেল,,,গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে লাগল অনেক মজা করে,,লাফাতে লাগল হঠাৎ লাফাতে লাফাতে ঠাসসসসসস করে পরে গেল,,,অন্তরা “আহ” করে উঠল কিছুটা জোরে,,হৃদয় শুনতে পেল অন্তরার চিৎকার, সে একপ্রকার দৌড়ে প্রথমে তার রুমে গেল গিয়ে দেখল অন্তরা নেই,,ভাবতে লাগল অন্তিরা কোথায় হয়ে পারে,,তারপর কান্নার শব্দ আসছে সে কান্নার অনুসরণ করে উপরে গেল,,গিয়ে দেখে অন্তরা নিচে বসে পা ধরে কান্না করছে,,হৃদয় হাতে ছাতা নিয়ে তারাতারি অন্তরার কাছে গেল,,অন্তরাকে আইস্তা করে উঠাল,,অন্তরাকে ছাদের একটি বেঞ্চে বসাল,,তারপর অন্তরা তার পা উপরে তুলে পা ডলছে আর কান্না করছে,,হৃদয় বুজতে পারল অন্তরার পায়ে ব্যাথা পেয়েছে,,সে অন্তরার পায়ের থেকে শাড়ি কিছুটা উপরে তুল্ল,অন্তরার সাদা পা টা এই প্রথম হৃদয় দেখল কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে যখন হৃদয় অন্তরার পায়ে হাত দিয়ে মাসাজ করতে লাগল,এমন সময় অন্তরা হুট করে হৃদয়ের বা হাত নিজের দান হাত দিয়ে চেপে ধরল,,হঠাৎ এভাবে চেপে ধরায় হৃদয় অন্তরার দিকে ভ্রু কুচকে তাকাল,,

_কি হয়েছে?
_নাহ কেমন জানি গা শিউরে উঠল,,

হৃদয় দ্রুত অন্তরার পায়ের থেকে হাত সরিয়ে নিল,,,তারপর উঠে দাড়াল,,হৃদয় ভাবতে লাগল,,

_হয়ত ইঞ্জেকশন কাজে লেগেছে, ওর অনুভুতি গুলো ও বলতে পারছে,,

এইসব ভেবে আনমনেই হেসে দিল হৃদয়, তাহলে তার অন্তরা সুস্থ হয়ে উঠবে খুব শীগ্রই,,,অন্তরা উঠে হৃদয়ের পাশে দাড়াল,,বলল,,

_হৃদয় ভাইয়া তুমিও ভিজ খুব মজা লাগছে,,

হৃদয় পাশ ফিরে অন্তরার দিকে তাকিয়ে বলল,,

_নাহ চলো এখন অনেক ভিজা হয়েছে ঠান্ডা লেগে যাবে,,

বলেই হৃদয় যেতে নিল হুট করে অন্তরা হৃদয়ের হাত থেকে টান মেরে ছাতা নিয়ে ফেলে দিল,হৃদয় এই কাজ টার জন্য মটেও প্রস্তুত ছিল না,,হৃদয় ভিজে গেল প্রায় বেশখানিক এখন সে যেতেও পারবে না ভিজেই তো গেছে,,অন্তরা হৃদয়কে ভিজাতে পেরেছে বলে খুবি খুশি,,লাফাতে লাগল অন্তরা দুই হাত মেলে আকাশের দিকে মুখ তুলে ঘুরতে লাগল,,হৃদয় এতক্ষনে অন্তিরাকে ভালো করে দেখল,,তার পরনে লাল শাড়িটা একদম শরিরের সাথে লেপ্টে গেছে তার শরিরের সব কিছুই বুঝা জাচ্ছে,,হৃদয় লজ্জায় চোখ সরিয়ে নিল,ছাদের এক কোনে চলে গেল৷ সে আর অন্তরাকে এইভাবে দেখতে পারবে না, হয়ত নিজের ভিতর কন্ট্রল করাটা মুস্কিল হয়ে পরবে,, তাই তার এখন চোখ ফিরানোটাই বেস্ট,,,অনেকক্ষন ভেজার পর হৃদয় বলল,,

_চলো অন্তরা নিচে চলো,,
_নাহ আমি আরও ভিজবো বৃষ্টি শেষ হওয়া পর্যন্ত,,

হৃদয় অনেক করে বলছে কিন্তু অন্তরা তার কথাতেই অটুট,,, হৃদয় আর না পেরে অন্তরাকে কোলে তুলে নিল,,অন্তরা হৃদয়ের কোল থেকে নামার জন্য ছুটছুটি করছে,,

_আমাকে নামাও ভাইয়া আমি ভিজবো,,
_বেশি কথা বললে এখনি ফেলে দিবো,

বলে হাতের বাধন হাল্কা করল,,অন্তরা পরে যেতে নিলে শক্ত করে হৃদয়ের গলা জরিয়ে ধরল,,হৃদয় অন্তরাকে নিচে নিয়ে গেল,,অন্তরার রুমের ওয়াশ্রুমে নিয়ে ছারল,

_এইগুলো চেঞ্জ করে বের হবা তারাতারি,,(ধমকের শুরে)

অন্তরা ধমক খেয়ে ঠোট উল্টে নিল তারপর জোরে দরজা লাগিয়ে দিল,,,হৃদয় ও নিজের রুমে চলে গেল ফ্রেশ হতে,,

সন্ধ্যায়,, হৃদয় তার আম্মু আব্বু সবাই মিলে টিভি দেখছে আর পপকর্ন খাচ্ছে,,টিভি দেখতে দেখতে হেনা চৌধুরী এক সময় বলে উঠল,,

_অন্তরা কোথায় হৃদয় ওকে তো দেখছি না,
_আমি জানি না,,হয়ত নিজের রুমেই আছে

টিভির দিকে তাকিয়ে বলল,,হেনা চৌধুরীও আর কিছু বলল না,,

রাতে ডিনারের সময়ও অন্তরা আসল না,,হেনা চৌধুরী হৃদয়কে বলল,,

_যাতো বাবা অন্তরাকে খাবার দিয়ে আয় হয়ত ওর ভালো লাগছে না তাই আসেনি,,
_আচ্ছা,,

হৃদয় খাওয়া শেষে অন্তরার রুমে গেল তার জন্য খাবার নিয়ে,,রুমের দরজা খুলে দেখল ঘরের লাইট অফ,,হৃদয় ঘরের লাইট জালাল,,দেখল অন্তরা কাথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে আসে গুটিশুটি মেরে,,হৃদয় অন্তরার কাছে গেল গিয়ে অন্তিরাকে ডাকতে লাগল,,

_আমি অন্তরা উঠ উঠ খেয়ে নে,,
_নাহ ভাইয়া আমি খাবো না আমার মাথাটা ব্যাথা করছে,,,,(ভাংগা কন্ঠে)
_আমি বলেছিলাম বৃষ্টিতে ভিজিস না কিন্তু না আমার কথা কি তুই শুনিস,,এখন উঠ খেয়েনে,,(কিছুটা রেগে বলল)

হৃদয় অন্তরাকে জোর করে উঠিয়ে কয়েক নালা ভাত খাইয়ে দিল,,অন্তরা আর খেতে পারছে না,হৃদয়ও আর জোর করল না তাকে ঔষধ খাইয়ে শুয়ে দিল,,,,হৃদয় চলে গেল,,,

হৃদয় নিজের রুমে গিয়ে কিছু কাজ করল,,রাত প্রায় 2টা,,,তার কাজ শেষ,হৃদয় পানি খাবে দেখল জগে পানি নেই সে পানি আনতে নিচে জাওয়ার জন্য নিজের রুমের থেকে বের হলো,,,অন্তরার রুম অতিক্রম করার সময় “উহহহহহ আহহহহহ” এমন কিছু শব্দ শুনল,,হৃদয় অন্তরার রুমের দরজা হাল্কা খুলে ভিতরে ঢুকে দেখল অন্তরা গুটিশুটি মেরে শুয়ে কাপছে,,হৃদয় তারাতারি অন্তরার পাশে গেল,গিয়ে অন্তরার কপালে হাত দিয়ে দেখল খুব জর এসেছে,,,সে তারাতারি করে তার রুম থেকে থার্মোমিটার নিয়ে আসল,,অন্তরার জর মাপল,,অন্তরার জর দেখে হৃদয় মাথা ঘুরে গেল,,102 জর এত্ত,,,হৃদয় কি করবে ভেবে পাচ্ছে না সে তরিঘরি করে তার আম্মুর রুমে গেল গিয়ে দেখল তার আম্মু শুয়ে আছে,,এখন তাকে জাগানোটা শ্রেয় হবে না বলে হৃদয়ের মনে হলো,তাই সে আবার বেক করল অন্তরার রুমে,,সে একজন ডাক্তার তার সব জানার কথা কিন্তু এইসময় তার মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে,, হঠাৎ তার মাথায় জলপট্টি দেওয়ার চিন্তা আসল, যেই ভাবা সেই কাজ,,,জলদি গিয়ে একটি বাটিতে পানি আর একটা রুমাল নিয়ে আসল,,অন্তরার পাশে বসল তার কপালে জলপট্টি দিতে লাগল,,,বেশ কিছুক্ষন পর অন্তরা পিটপিট করে চোখ খুলল,হৃদয়ের অবস্থা এতক্ষন নাজেহাল হয়ে ছিল,, অন্তরার চোখ খুলায় সে যেন তার মধ্যে ফিরে আসল,,,

_এই অন্তরা অন্তরা
_শীত শীত,,

বলতে লাগল অন্তরা,হৃদয় উঠে কাবার্ড থেকে কম্বল আনল তার শরিরে দিয়ে দিল,,তাও যেন অন্তরার শীত কমছে না সে কেপেই চলছে,, হঠাৎ অন্তরা বলে উঠল,,

_তুমি আমার পাশে ঘুমাও আমার জর আসলে আম্মুও আমার পাশে আমাকে জরিয়ে শুয়ে পরত,,

হঠাৎ এমন কথা বলায় হৃদয় অন্তরার দিকে তাকাল,,,বেচারার মুখটা মলিন হয়ে গেছে এই এক রাতেই,,,হৃদয়ের খুব মায়া হলো,,অন্তরা আস্তে করে তার পাশে একটু জাগা করল হৃদয়ের জন্য,,হৃদয় কোন উপায়ন্তর না পেয়ে শুয়ে পরল কিছুটা ডিসটেন্স রেখে,,,অন্তরার মাথায় হাত বুলাতে লাগল,,হুট করে অন্তরা ঘুমের ঘোরে হৃদয়কে জরিয়ে ধরল,,এভাবে হুট করে জরিয়ে ধরায় হৃদয় কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে গেল,,সে হাত বারাল অন্তরাকে সরানোর জন্য কিন্তু অন্তরার কাপাকাপি দেখে আর সরাতে মন চাইল না,,সেও একপাশে অন্তিরাকে জরিয়ে ধরল,,অন্তরা ঘুমের মধ্যে একদম হৃদয়ের সাথে মিশে যাচ্ছে আস্তে আস্তে,,হৃদয় অন্তরার দিকে একবার তাকিয়ে তাকে সুন্দর ভাবে নিজের সাথে শক্ত ভাবে জরিয়ে নিল,,হৃদয়ের শরিরের তাপে অন্তরার কাপাকাপি কিছুটা কমল,,,হৃদয় ও এক পর্যায় অন্তরাকে জরিয়েই শুয়ে পরল,,,

চলবে🖤
(গল্পটা আপনাদের কেমন লাগছে অবশ্যই জানাবেন,,ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🥰)

হৃদয়ের অন্তরা পর্ব-০৫

0

#হৃদয়ের_অন্তরা❤️
#part_5
#sarika_Islam
,
,
অন্তরা আন্টি আন্টি করে বাহিরে যেতে লাগল,,পিছন থেকে হৃদয় বলল,,

_এই অন্তরা কি হয়েছে? আম্মুকে ডাকছ কেন?
_ভাইয়া আমার খিদে পেয়েছে,,(বলেই পেটে হাত রাখল)
_আচ্ছা তুমি বসো তোমার আন্টি তো বাসায় নেই আমিই নিয়ে আসি,,,
_আচ্ছা,,

বলেই বিছানায় বসে পরল,,হৃদয় নিচ থেকে খাবার নিয়ে আসল আর অন্তরার জামাটাও,,হৃদয় অন্তরার দিকে তার জামাটা এগিয়ে দিয়ে বলল,,

_এই নাও অন্তরা এইটা পরে নাও,ঠান্ডা লাগবে বাহিরে তো বৃষ্টিও হচ্ছে,,

অন্তরা হৃদয়ের হাত থেকে জামাটা নিয়ে পরে নিল,,,অন্তরা খাবার নিয়ে সামনে বসে আছে হৃদয় জিজ্ঞেস করল,

_কি হলো অন্তরা খাচ্ছ না যে?
_আমাকে খাইয়ে দাও আমি হাত দিয়ে খাবো না,,

হৃদয় আর কোন উপায় না পেয়ে অন্তরাকে নিজ হাতে খাইয়ে দিল,,তারপর ঔষুধ খাইয়ে দিল,, তারপর বলল,,,,

_অন্তরা তুমি তোমার রুমে গিয়ে ঘুমাও যাও,
_আচ্ছা,,

বলেই অন্তরা চলে গেল,,হৃদয়ও খাওয়া দাওয়া সেরে কিছু কাজ করছে লেপ্টপে,,রাত প্রায় 2টা,, হৃদয়ের কাজ শেষ,

_অন্তরাকে জেয়ে দেখে আসি ঘুমিয়েছে নি,,(মনে মনে)

চলে গেল অন্তরার রুমে ওকে দেখার জন্য,, অন্তরা বিছানার এক কোনে গুটিশুটি মেরে বসে আছে ভয়ে কাপছে,,কিছুক্ষন পর পর বিদুৎ গর্জনের আওয়াজে কেপে উঠছে,,মুখে কিছু একটা বিরবির করছে,,অন্তরা তার ঘরের ভিতর ছায়া দেখতে পেয়ে জোরে চিৎকার দিয়ে উঠে,,

_ভুততততত,,,

হৃদয় তড়িঘড়ি করে রুমের লাইট অন করে তারপর এক প্রকার দৌড়ে অন্তরার কাছে গিয়ে তার সামনে তার সাথে নিচে বসে,অন্তরা দুই হাটুর মাঝে মুখ গুজে রেখেছে,,হৃদয় ধীরে ধীরে অন্তরার মাথা উঠাল,,অন্তরা এখনও দুই চোখ খিচে বন্ধ করে রেখেছে,,হৃদয় নরম শুরে বলল,,

_অন্তরা,,

হৃদয়ের কন্ঠ পেয়ে অন্তরা পিটপিট করে চোখ খুল্ল,হৃদয়কে দেখে এক মুহুর্ত নষ্ট না করে জোরে জরিয়ে ধরল,,আর বলল,,

_ভাইয়া আমার এইখানে ভয় করছে,,আমি এইখানে ঘুমাবো না,,
_আচ্ছা ঠিক আছে চল আমার সাথে ঘুমুবি,

বলে অন্তরাকে কোলে তুলে নিল হৃদয়,, অন্তরা হৃদয়ের বুকে মাথা রেখে গলা জরিয়ে রেখেছে,,হৃদয় তার রুমে নিয়ে গিয়ে বিছানায় শুয়ে দিল অন্তরাকে,,আর বলল,,

_ঘুমা আমি এইখানেই আছি,,
_নাহ আমি তুমি আমার সাথেই ঘুমাবে,,(বলেই হৃদয়ের হাত ধরে ফেলল)
_আচ্ছা,,

বলেই অন্তরার পাশে গিয়ে শুয়ে পরল,,অন্তরাকে ভালোভাবে ব্লান্ককেট জরিয়ে নিজে তার পাশে শুয়ে রইল,,অন্তরা হুট করে হৃদয়কে জরিয়ে ধরে তার বুকে মাথা রেখে শুয়ে পরল,,এত তারাতারি ঘটনা ঘটে জাওয়ায় হৃদয় হা হয়ে গেল,,বেশ কিচ্ছুক্ষন অন্তরার দিকে তাকিয়ে সেও তাকে জরিয়ে ধরল,,কপালে চুমু দিল আর অন্তরার মাথায় হাত বুলাতে লাগল,,অন্তরা ঘুমিয়ে পরল হৃদয় মনে মনে ভাবতে লাগল,,

_তুই কবে ভালো হবি অন্তরা?তোর এই বাচ্চামো তোর হাশিখুশি সব আমাকে তোর দিকে আকর্ষন করছে,বারে বারে তোর থেকে দূরে থাকতে চেয়েও পারি না,,তোকে একবার না দেখলে নিজেকে পাগল পাগল লাগে,,তুই কবে বুঝবি আমার এই ফিলিংস গুলো,, কবে আমাকে আমার থেকেও বেশি ভালোবাসবি,,,তোকে না দেখা তোর প্রতি কেয়ার করা এইগুলো কি আমার ভালোবাসা?নাকি সবিই আবেগ?নাহ আবেগ না আমি ভালোবাসি হ্যা আমি ভালোবাসি আমার অন্তরাকে আমার পাগলিটাকে,যাকে না দেখলে আমার দিন ভালো যায় না,,তোর দুষ্টুমি ভরা কথা তোর দুষ্টুমিগুল আমাকে খুব করে টানে তোর দিকে,,

বলেই অন্তরার কপালে একটি চুমু খেয়ে খুব ভালোভাবে অন্তরাকে জরিয়ে শুয়ে পরল,,

সকালে 10টা,,,

কলিং বেলের শব্দে ঘুম ভাংগে হৃদয়ের,,,ভাবলো হয়তো আম্মু আব্বু এসেছে,,তার পাশে তাকিয়ে অন্তরাকে তার বাহুতে দেখে মুচকি হাসল,,অন্তরা পরম আবেশে হৃদয়ের বাহুতে ঘুমিয়ে আছে কি না সান্তির ঘুম,,হৃদয় অন্তরার কপালে ভালোবাসার পরশ একে উঠে গেল,,উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে গেল,,গিয়ে দরজা খুলে দেখল ডাক্তার চাচা এসেছে,হৃদয়ের মুখে হাসি ডাক্তার তার এই হাসির রহস্য খুজে পেল না,,হৃদয় তাকে ভিতরে ঢুকালো,,ডাক্তার চাচা জিজ্ঞেস করল,,

_অন্তরা কোথায়?
_আসেন চাচা আমার রুমেই,,

বলেই হৃদয় তার রুমে নিয়ে গেল,,ডাক্তার চাচা গিয়ে দেখল অন্তরা খুব সুন্দর ভাবে হৃদয়ের বিছানায় শুয়ে আছে,,ডাক্তার চাচা হৃদয়ের দিকে দুষ্টু ভরা চাহনি নিয়ে তাকাল,,আর বলল,,

_ভালোবাসতে বলেছিলাম কিন্তু বেশি ভালোবেসে ফেল না নাহলে কিন্তু বিপদ হবে,(বলেই চোখ টিপ মারল)
_ইয়ে মানে,,(বলেই নিচের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে মাথা চুলকাতে লাগল)
_আচ্ছা ঠিক আছে বুচ্ছি,,(বলেই হেসে দিল)

হৃদয় গিয়ে অন্তরাকে উঠালো,,

_অন্তরা এই অন্তরা দেখ কে আসছে,,

অন্তরা আড়মোড়া ভেংগে উঠে পাশ ফিরে দেখল ডাক্তার চাচা,,

_খোকা তুমি এসেছ,,(বলেই হাসি দিল)
_হ্যা মা আমি এসেছি,,,উঠ মা এখানে আসো,,

অন্তরা উঠে ডাক্তারের পাশে বসল,,কিছুক্ষন ডাক্তারের সাথে কথা বলল,তারপর ডাক্তার বলল,,

_দেখি মা তোমার হাত টা দাও,,

অন্তরা খুশি খুশি তার হাত ডাক্তার চাচার হাতে দিল,,ডাক্তার ইঞ্জেকশন টা দিতে যাবে তখন অন্তরার মুখটা একদম মলিন হয়ে গেল,,কাদো কাদো ফেস করে ডাক্তারের দিকে তাকাল আবার হৃদয়ের দিকে তাকাল,হৃদয় অন্তরার চাহনি দেখে বুঝতে পারল ও খুব ভয় পাচ্ছে,,তাই সে অন্তরার মুখ বরাবর হাটু গেড়ে বসল বসে বলল,,

_কিচ্ছু হবে না অন্তরা আমি আছি তো,,

বলেই অন্তরার হাত নিজের হাতের মাঝে নিয়ে নিল,,অন্তরার দুই হাত হৃদয় দুই হাত দিয়ে খুব শক্ত ভাবে ধরে রেখেছে,,ডাক্তার চাচা যেই অন্তরার ইঞ্জেকশন দিবে অন্তরা খিচে চোখ বন্ধ করে ফেল্ল আর হৃদয়ের হাত টা আরও শক্ত করে ধরল,,হৃদয় বলল,

_অন্তরা দেখ শেষ, চোখ খুল,,

অন্তরা পিটপিট করে চোখ খুলল,দেখল সত্যি শেষ,,অন্তরা যেন হাফ ছেরে বাচল,,হৃদয় অন্তরার দুই হাত নিয়ে চুমু খেল,,ডাক্তার তাদের কান্ড দেখে মুচকি মুচকি হাসছে,,হৃদয় ডাক্তারের হাসি দেখে অন্তরার হাত ছেরে দিয়ে উঠে দারাল,,নিজের চুলে হাত দিতে লাগল খুব অসস্তি ফিল হচ্ছে,,ডাক্তার চাচ তার অসস্তি বুঝে বলল,,

_হুম যা ভেবেছিলাম দেখছি তাই হয়েছে,,

বলেই হৃদয়ের পাশে গিয়ে দারাল,,হৃদয় কোন কথা বলছে না মাথা নিচু করে রেখেছে,,ডাক্তার হৃদয়ের পিঠে চাপর মারল,,হৃদয়ও মুচকি হাসল,,ডাক্তার নিচে গেল নিচে গিয়ে দেখল হেনা চৌধুরী আর হাসান চৌধুরী বাড়ির ভিতর ঢুকছে,হাসান চৌধুরী ডাক্তার কে দেখে মুচকি হেসে হেন্ডশেক করল,,তারপর ডাক্তার কে সফায় বসাল,,ডাক্তার তাদের কাছে অন্তরার কথা সব খুলে বলল,,,

_যদি এই সাত টা ইঞ্জেকশনে ঠিক হয়ে যায় তাহলে তো আলহামদুলিল্লাহ, আর যদি না হয় তাহলে ওকে ঠিক করা আমাদের পক্ষে আর পসিবল না,,
_হায় আল্লাহ তুমি বাচ্চাটাকে ঠিক করে দিও,,(হেনা চৌধুরী বলল)

ডাক্তারের সাথে আর টুকটাক কথা বলে ডাক্তার তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেল,,

বিকালে,,,

হেনা চৌধুরীর রুমে অন্তরা বসে আছে,,আর হেনা চৌধুরী আলমারি ঠিক করছে,,অন্তরা বলল,,

_আন্টি আপনের এত্ত শাড়ি!আপনাকে শাড়ি পরলে খুবি সুন্দর লাগে,,
_হুম,,

অন্তরা হাতে একটি লাল শাড়ি নিয়ে হাত বুলাতে বুলাতে বলল,,

_আন্টি এই শাড়িটা তোমাকে কে দিয়েছে?
_তোমার আংকেল দিয়েছে আমাকে ভালোবাসা দিবসে❤️
_ভালোবাসা দিবস কি আন্টি?

হেনা চৌধুরী অন্তরার দিকে তাকিয়ে একটি দীর্ঘশ্বাস ছেরে বলল,,

_ভালোবাসা মানে যে তোমাকে আদর করে তোমাকে খাইয়ে দেয় তোমার খেয়াল রাখে তোমাকে চুমু দেয়,,তাকে বলে,,এখন বুঝেছ,,(বলেই মুচকি হাসি দিয়ে অন্তরার দিকে তাকাল)
_ওহহহহ,,আব্বু আমাকে অনেক আদর করে তাহলে আব্বু আমাকে অনেক ভালোবাসে?
_হুম,,
_তাহলে তো আরেকজনও,,
_আরেকজন কে?(ভ্রু কুচকে অন্তরার দিকে তাকাল)
_হৃদয় ভাইয়া,,(বলে হাসি দিল)

হেনা চৌধুরী অন্তরার দিকে কিছুক্ষন অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল তারপর বলল,,

_তাই বুঝি?তোমার হৃদয় ভাইয়া তোমাকে অনেক আদর করে?
_হুম আমাকে খাইয়ে দেয় চুমু ও দেয়,,

হেনা চৌধুরী আর কিছু বলল না,,আলমারির দিকে তাকিয়ে চিন্তা করতে লাগল,,পিছে ফিরে দেখে অন্তরা লাল শাড়িটা নিজের গায়ে কোনরকম পেচিয়ে রেখেছে,,হেনা চৌধুরী অন্তরাকে দেখে হেসে দিল তারপর বলল,,

_তুমি পরবে এইটা?
_হুম আমি পরবো,,
_আচ্ছা ঠিক আছে আসো আমি পরিয়ে দেই,,

বলেই হেনা চৌধুরী অন্তরাকে শাড়ি টা খুব সুন্দর ভাবে পরিয়ে দেয় হাল্কা সাজিয়ে দেয়,তারপর হেনা চৌধুরী অন্তরাকে দেখে বলে,,

_তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে এই শাড়িতে পুরুই বউ বউ,,

অন্তরা তার কথা শুনে ফিক করে হেসে দিল,,অন্তরা তার ডল নিয়ে খেলা করতে লাগল,,খেলতে খেলতে হৃদয়ের ঘরর চলে গেল,,হৃদয় লেপ্টপে কিছু কাজ করছিল,,অন্তরা গিয়ে হৃদয়কে পিছন থেকে ধাক্কা মারল,,পিছন থেকে ধাক্কা মারায় পিছন ফিরে তাকাল পিছন ফিরে তাকিয়ে হৃদয় হা হয়ে গেল অন্তরাকে দেখে,,এ যেন কোন লাল পরি এসে তার সামনে দারিয়ে আছে,,,লাল শাড়িতে অন্তরাকে কোন পরির থেকে কম কিছু লাগছে না,,হৃদয় তো বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে তাকে পা থেমে মাথা পর্যন্ত দেখছে,,চোখে কাজল ঠোটে লাল লিপ্সটিক পুরুই স্টোবেরির মতো লাগছে,,হৃদয়ের চোখ অন্তরার ঠোটে গিয়ে আটকে গেল পুরুই স্টোবেরি,,, অন্তরা পটর পটর করছে হৃদয় অন্তরার ঠোটের দিকে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে,,অন্তরা হঠাৎ বলে উঠল,,

_তুমি আমাকে ভালোবাস?

অন্তরার কথা শুনে হৃদয়ের ভিতর তোলপাড় শুরু হয়ে গেল,,হৃদয় অবাক দৃষ্টিতে অন্তরার দিকে তাকিয়ে আছে,,,

চলবে🖤
(ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🥰)

হৃদয়ের অন্তরা পর্ব-০৪

0

#হৃদয়ের_অন্তরা❤️
#part_4
#sarika_Islam
,
,
অন্তরা কান্না করছে,,পেটে হাত দিয়ে “ব্যাথা ব্যাথা ” বলছে, হৃদয় কি করবে ভেবে পাচ্ছে না,,সে অন্তরাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,

_আচ্ছা তুমি দাড়াও আমি আম্মুকে ডেকে আনি,(বলেই পিছে ফিরতে নিলে অন্তরা বাধা দেয়)
_নাহ আমাকে একা রেখে যাবেন না,,
_আচ্ছা ঠিক আছে যাব না, তুমি একটু দাড়াও আমি আসছি,,

বলেই দৌড় লাগাল তার আম্মুর রুমে,,কিছুক্ষন পর তার আম্মুকে নিয়ে রুমে ঢুকল,,দেখল অন্তরা আগের মতই দাঁড়িয়ে আছে,,হেনা চৌধুরী দ্রুত অন্তরার কাছে গেল,,হৃদয় বাহিরে চলে গেল,,হেনা চৌধুরী আরামসে সব সামলাল,তারপর অন্তরার আম্মুকে ফোন করল,,সব কিছু খুলে বলায় তার আম্মা বলল,,

_ভাবি আমার মেয়েটা কিছুই বুঝে না এইসময়,আমি অনেক কষ্টে ওকে বুঝাই ওকে সামলাই,,আপনিও একটু বুঝিয়েন,,(বলেই কান্না করে দিল)
_আরে ভাবি কান্না করেন না, আমিও ওকে আমার মেয়ের মতোই রাখব,,মেয়ের মতো কি ওতো আমার মেয়েই,,আপনি একদম চিন্তা নিবেন না,,

আরও টুকটাক কথা বলে ফোন রেখে দিল,দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে সবাই সবার রুমে গেল,,,হৃদয় তার মার রুমের দরজায় নক করল,,

_আম্মু আসব?
_আরে আয়,
_আম্মু অন্তরা এখন কেমন আছে? ও
কোথায়?
_ওতো ওর রুমে,
_আচ্ছা ঠিক আছে,

বলেই চলে গেল অন্তরার রুমে,,অন্তরা মন খারাপ করে বসে আছে,,হৃদয় অন্তরার পাশে গিয়ে বসল,,

_অন্তরা চলো ঔষুধ খাবে,,
_নাহ আমি খাবো না,,আমি লাফালাফি করতে পারব না আন্টি বাড়ন করে গিয়েছে,আর আমার এভাবে বসে থাকতে ভালো লাগে না,আমি কি করবো হৃদয় ভাইয়া?সারাদিন কি এভাবে বসেই থাকবো?(মুখ ফুলিয়ে)
_আচ্ছা তাহলে একটা কাজ করি তোমার জন্য রাতে একটা ডল নিয়ে আসবো আসার সময় এখন তো ঠিকআছে?
_হুম হুম ঠিক আছে,,(বলেই হৃদয়ের গলা জরিয়ে ধরল)

হৃদয় মুচকি হেসে তার মাথায় হাত রাখল,,, হৃদয় অন্তরাকে ঔষুধ খাওয়াল,তারপর শুয়িয়ে দিল,,হৃদয় তার রুমে আসল,,হঠাৎ ফোন টা বেজে উঠল স্ক্রিনে দেখল ডাক্তার চাচা ফোন করেছে,

_হ্যা চাচা বলেন,,
_হৃদয় তোমার রোগির অবস্থা কেমন?
_হুম ভালোই, যা ভেবেছিলাম তা হই নি,
_যাক তাহলে তো ভালোই,,শরিরে এডজাস্ট হয়েছে,, আর শুনো একটা কথা,,
_জি বলুন,,
_ওকে সাতটা ইঞ্জেকশন দিতে হবে সাত দিনে,আর এই ইঞ্জেকশনের মধ্যে ওর ব্রেন আস্তে আস্তে খুলবে,,এই সময় তুমি ওকে খেয়াল রাখবা,দেখে রাখবা আগলে রাখবা,পারবে না হৃদয়?

হৃদয় কোন কথা বলছে না,,কিচ্ছুক্ষন চুপ করে আছে,হৃদয়ের নিশ্চুপে ডাক্তার আবার বলল,,

_কি হলো হৃদয়?তুমি কি পারবে না?
_জি জি,ডাক্তার চাচা আমি পারবো,,
_গুড,তুমি একজন ডাক্তার তোমাকে তো পারতেই হবে,,,আচ্ছা তাহলে রাখি,
_ঠিক আছে,

বলেই ফোন রেখে দিল হৃদয়,,,সে ভাবতে লাগল সে কি পারবে?নাকি পারবে না,,তার প্রথম ট্রিটমেন্ট হবে অন্তরাকে নিয়ে সে কি সফল হবে?নাহ তাকে কোন মতেই হক সফল হতেই হবে,,নানান কথা আওড়াতে লাগল,,,

সন্ধ্যায় হৃদয় বাহিরে গিয়ে অন্তরার জন্য খুব সুন্দর একটি ডল কিনল,,অন্তরার রুমে গেল তাকে ডল দেওয়ার জন্য গিয়ে দেখল অন্তরা ঘুমিয়ে গিয়েছে,,হৃদয় অন্তরার পাশে ডল টা রেখে ভালো ভাবে তার গায়ে কাথা মুড়ি দিয়ে চলে গেল,,

সকালে,,হেনা চৌধুরী কফি হাতে তার ছেলের রুমে গেল,গিয়ে দেখল তার ছেলে ঘুম,,তার ছেলেকে ডাকতে লাগল,,

_হৃদয় বাবা উঠ,,

হৃদয় আড়মোড়া দিয়ে উঠল,,দেখল পাশে তার মা হাতে কফি নিয়ে বসে আছে,,

_আম্মু,,তুমি,
_হুম,, আমি আর তোর আব্বু বাহিরে জাচ্ছি,,তোর আব্বুর বিসনেস পার্টি আছে সেখানে যেতে হবে,,তুই বাবা একটু অন্তরার খেয়াল রাখিস,,
_ঠিকআছে আম্মু,তোমারা নিশ্চিন্তে যাও,,অন্তরা কোথায় উঠেছে?
_নাহ এখনও উঠেনি,,উঠে নাস্তা দিস ওকে,,
_আচ্ছা ঠিকআছে,,

হেনা চৌধুরী চলে গেল,,হৃদয় উঠে ফ্রেশ হয়ে অন্তরার রুমে গেল, অন্তরা উঠেছে নাকি দেখার জন্য,,গিয়ে দেখল অন্তরা এখনও উঠে নি,,হৃদয় আর অন্তরাকে জাগাল না সে নিচে গিয়ে একাই ব্রেকফাস্ট করে নিল,,হৃদয় তার রুমে গিয়ে লেপ্টপে কাজ কর‍তে লাগল,,হঠাৎ হাসির শব্দ পেল,,হাসির শব্দ শুনে হৃদয় উঠল,ভাবল অন্তরা হয়ত জেগে গেছে তাকে ঔষুধ খাওয়াতে হবে,,অন্তরা তো তার ডল পেয়ে খিলখিলিয়ে হাসছে,,,হৃদয় গিয়ে দেখল অন্তরা তার ডল নিয়ে হাসছে খেলছে,,হৃদয় ও অন্তরার পাশে গিয়ে বসল,,অন্তরা হৃদয়কে দেখে বলল,,

_হৃদয় ভাইয়া দেখ, কে জানি এই ডল টা এইখানে নিয়ে এসেছে,,
_হুম,,(বলেই হাসল)অন্তরা তোমার খিদা লেগেছে না আসো খাবা,,
_আচ্ছা চলো,,

হৃদয় অন্তরার জন্য খাবার নিয়ে এলো,তাকে খাইয়ে দিল,সাথে ঔষুধও,তারপর অন্তরাকে বলল,,

_তুমি খেল ডল দিয়ে,, কিছু লাগলে আমাকে ডাক দিও,,

অন্তরা ডলের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়াল,যার অর্থ “ঠিকআছে” হৃদয় তার রুমে চলে গেল আবার কাজ করতে,,হঠাৎ বিদুৎ এর গর্জনে অন্তরা দৌড়ে হৃদয়ের রুমে চলে এল,,ভয়ে থরথর করে কাপছে,,ডল টাকে ঝাপ্টে ধরে আছে,,হৃদয় অন্তরার দিকে তাকিয়ে দৌড়ে অন্তরার কাছে গেল,,

_কি হয়েছে অন্তরা?
_আমার একা ঘরে ভয় করে,,
_আচ্ছা ঠিক আছে তুমি এইখানে বসে খেল আমি কাজ করি,,
_আচ্ছা,,

অন্তরা হৃদয়ের বিছানায় বসে খেলছে,আর হৃদয় কাজ করছে,,হঠাৎ অন্তরা হৃদয়কে প্রশ্ন করে বসে,,

_আচ্ছা হৃদয় ভাইয়া ডলের আম্মু আব্বু কোথায়?

হৃদয় অন্তরার দিকে হা করে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইল,, কি থেকে কি বলে ফেল্ল অন্তরা?কিচ্ছুক্ষন এভাবে তাকিয়ে থেকে বলল,,

_তুমিই তো ডলের আম্মু দেখ তুমি কত্ত আদর কর ডলকে,,
_হ্যা ঠিক বলেছ,,তাহলে আব্বু কে?

হৃদয় ভবতে লাগল আব্বু কে?কাকে বলবে?অন্তরা আবার বলল,,

_তাহলে তুমি ডলের আব্বু,,

হৃদয় কিছু না বলে তাকিয়ে রইল অন্তরার দিকে,

_ভাইয়া বল না,,
_হুম ঠিক আছে এখন খেল,,

অন্তরা তার ডল নিয়ে খেলায় বেস্ত,, আর হৃদয় কাজ করছে আর আড়চোখে অন্তরাকে দেখে জাচ্ছে,,,অন্তরা আবার বলল,,

_ভাইয়া আসো না আমরা খেলি,,পিংকু আগে আমার সাথে কত্ত খেলতো,,তুমিও খেলবে আসো না,,,
_কি খেলতে পিংকুর সাথে?
_ছুটোছুটি,কানামাছি আরও অনেক কিছুই,,কিন্তু এখন তো আর ছুটোছুটি করতে পারব না তুমি আর আন্টি বাড়ন করেছ,,এখন আমরা অন্য কিছু খেলব,,
_কি খেলবে তুমি?
_আমরা ডলের আম্মু আব্বু খেলব,,

হৃদয় তাকিয়ে রইল অন্তরার দিকে কি বলবে সে খেলবে?যদি না খেলে অন্তরা মন খারাপ করবে,,না ও করতে পারছে না আবার হ্যা বলতে ও কেমন জানি লাগছে,,এত্ত চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়ে হৃদয় বলল,,

_আচ্ছা ঠিকআছে তুমি শুরু করো কিভাবে খেলবে?
_আচ্ছা,,

বলেই অন্তরা বাহিরে গেল,,হৃদয় শুধু দেখছে অন্তরা কি কি করছে,,অন্তরা রুমে ঢুকল, হৃদয় হায়ায়া করে অন্তরার দিকে তাকিয়ে আছে,,অন্তরা নিজের ড্রেস খুলে ব্লাউজ বিহিন শারি পরেছে ওড়না দিয়ে,,তা দেখে হৃদয় অবাক হয়ে শুধু তাকিয়েই আছে,,আর ভাবতে লাগল,,

_এত্ত সুন্দর মেয়ে কি করে হয় বুঝি না আমি পুরাই রাধিকা,,(মনে মনে)

হৃদয়ের হাত পা কাপা কাপি করছে,,অন্তরার ঝাকিনিতে হৃদয় হুশ ফিরে,,

_হৃদয় ভাইয়া,হৃদয় ভাইয়া,এই নাও,

হৃদয়ের হাতে একটি সিগারেট আর এক্সট্রে ধরিয়ে দিল,হৃদয় একবার সিগারেটের দিকে তাকায় একবার অন্তরার দিকে,,অন্তরা বল্ল,

_তুমি ইজি চেয়ারে বসে এই এইটা খাবা আর এইখানে ফালাবা, আমি আমার আব্বুকে দেখেছি,,যাও যাও,,

অন্তরা ঠেলে হৃদয়কে উঠিয়ে দিল,,হৃদয় গিয়ে বসল, অন্তরা আবার বলল,,

_তুমি বসে আমাকে দেখবে আর আমি আমদের বাবুকে ঘুম পারাবো,, আমি আম্মুকে দেখেছি,,

হৃদয়ের আর কি করার সে বসে রইল অন্তরার দিকে তাকিয়ে,সে কখন সিগারেট মুখে দেই নি কিন্তু অন্তরার জন্য করতে হল,,সে সিগারেট জ্বালাল কিন্তু মুখে দিল না,,অন্তরা আবার বলল,,

_আমাদের বাবু ঘুমিয়ে গেছে,,,
_তো?
_তো কি আসো আমরাও ঘুমুবো,,

বলেই হৃদয়ের কাছে গিয়ে দাড়াল,হৃদয় এখন ও আগের মতোই অন্তরার দিকে এক দৃষ্টি তে তাকিয়ে আছে,,অন্তরা আবার বলল,,

_কি হলো আমাকে কোলে নাও,,
_কেন?
_কেন কি আমি তোমার বউ না তাহলে আমাকে কোলে নিয়ে বিছানায় যাও,,

হৃদয় বাকরুদ্ধ হয়ে গেল,,সে এক অন্য ঘোড়ে চলে গেল নেশা ধরে গেছে তার, সে অন্তরাকে কোলে নিল,,তাকে বিছানায় বসালো হৃদয় আগের ন্যায় অন্তরার দিকে তাকিয়েই আছে,,তার চোখ সরছেই না অন্তরার থেকে,,অন্তরার পাশে বসল হৃদয়,, অন্তরা বলল,,

_দাড়াও আমি বাবু টাকে সরাই,,

বলেই ডল টাকে হাল্কা সাইড করল,ডল টাকে ঘুড়ানোর সময় হৃদয়ের দিকে পিঠ দিয়ে বসল,,পিঠ থেকে তার চুল সরে গিয়েছে,,কালো তিল দেখা যাচ্ছে,,যা হৃদয়ের ভিতর তোলপাড় শুরু করে দিয়েছে,,হৃদয় যেন আরও নেশা কাজ করছে,,সে নেশার ঘোড়ে অন্তরাকে পিছন থেকে টাইট করে ধরে সেই তিল টাতে জোরে কামড় বসিয়ে দিল,এত্ত জরেই ছিল কামড়টা রক্ত বের হয়ে গেল,,অন্তরা উফফফফ করে উঠল,,কান্না করতে লাগল, অন্তরার কান্নায় হৃদয় ছেড়ে দিল অন্তরাকে,, অস্থির হয়ে পরল,,

_আমি কান্না করলে আম্মু আমাকে চুমু দেয় তুমিও দাও,,(বলেই কান্না করতে লাগল)

হৃদয় দিতে চাইছে না কিন্তু অন্তরার জোরাজুরির সাথে আবার পারছে ওনা,,হঠাৎ হৃদয়ের অন্তরার ঠোটের দিকে চোখ যায়,গোলাপের পাপড়ির মতো ঠোট,,ডুবে গেলও যেন তৃষ্ণা মিটে যাবে,,এইসব ভাবতে লাগল হৃদয়,,অন্তরার জোরাজুরিতে আর না পেড়ে অন্তরার গালে হাত দিয়ে শক্ত করে ধরে তার ঠোটে নিজের ঠোট ডুবিয়ে দিল,,হৃদয় অন্তরার নরম ঠোট জোরা শুষে নিচ্ছে পরম আবেশে,সে যেন এক অন্য দুনিয়ায় চলে গেছে,তার যেন ঘোড় কাটছেই না,,হঠাৎ অন্তরা “উমমমমম” কর‍তে লাগল,,অন্তরার শব্দে সে হুশে ফিরল,,

_এ আমি কি করছি,,ও ছেলেমানুষী দেখে কি আমিও?আমার কি হয়ে গেছে?

মনে মনে বলে তারাতারি অন্তরাকে ছেরে এক মুহুর্ত নষ্ট না করে বারান্দায় চলে গেল,,ছেড়ে দেওয়ায় অন্তরা যেন নিজের জান ফিরে পেয়েছে,,ঘন ঘন শ্বাস নিচ্ছে, হৃদয় বারান্দায় দাঁড়িয়ে ঘন ঘন শ্বাস নিতে লাগল,,সে একি করল আজ?হঠাৎ তার ফোন বেজে উঠল,,,

_হ্যালো আম্মু,,
_হ্যা হৃদয় আজ আমরা আসব না,,আমরা তোর খালাদের বাসায় থাকব,, বাহিরে কত বৃষ্টি,,
_আচ্ছা ঠিক আছে,,
_অন্তরার ধেয়ান রাখিস,, কেমন আছে অন্তরা?তোকে জালাত্বন করছে না তো?
_না নাহ মা,, আচ্ছা রাখি,

বলেই জবাবের আশা না করে ফোন রেখে দিল,,সে বারান্দার থেকে অন্তরার দিকে তাকিয়ে রইল,,দেখল অন্তরা আগের মতো ডল নিয়ে খেলতে লাগল তার কোন পরিবর্তন নেই,,হৃদয়ের বুক চিড়ে একটু দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল,,

চলবে🖤,,,
(ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🥰)

হৃদয়ের অন্তরা পর্ব-০৩

0

#হৃদয়ের_অন্তরা❤️
#part_3
#sarika_Islam
,
,
হৃদয়ের আশেপাশে পাগলের মতো খুজতে লাগল,,কোথাও খুজে পাচ্ছে না অন্তরাকে,

এইদিকে, অন্তরা বেলুন ওয়ালার পিছন পিছন যেতে যেতে একটি জঙ্গলের ভিতর দিকে চলে গেল, সেখানে অনেকগুলো ছেলে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছিল,ছেলেগুলো অন্তরাকে দেখে উঠে দাড়াল,,সবাই একেকজন একেকজন এর দিকে তাকিয়ে বিশ্রি হাসি হাসল,,তারপর সবাই অন্তরার দিকে এক এক করে এগিয়ে আসল,,অন্তরার কাছে চলে আসায় অন্তরা তাদের দেখে বলল,,

_এইখানে বেলুনওয়ালাকে দেখেছেন?আমি বেলুন নিবো,,(খুব মাসুম ফেস করে বলল)

ওই ছেলেদের মধ্যে একটি ছেলে অন্তরার মাসুমিয়াত বুঝল তারপর বলল,,

_হ্যা হ্যা এইখানে আছে বেলুনওয়ালা,চলো আমাদের সাথে,,তোমাকে কিনে দিবনে,,

বলে সবার দিকে তাকাল,, সবার মুখে বাকা হাসি,,,অন্তরাও খুশি খুশি তাদের সাথে চলে গেল আরও গভির জঙ্গলে,,অনেক দূর জাওয়ার পর একটি সিটে বসাল অন্তরাকে,অন্তরা নিজের গলার ওড়না টাকে নিয়ে হাতের মধ্যে পেচাতে পেচাতে বলল,,

_আমার বেলুন কই?আমার বেলুন চাই,,(কান্নার মতো ফেস করে বলল)

তাদের মধ্যে একটি ছেলে অন্তরার হাত থেকে ওড়না নিয়ে তার গলায় পেচিয়ে দিল আর তার পাশে বসতে বসতে বলল,,

_আসো আমার কাছে আসো আমি তোমাকে বেলুন দিব,,

বলেই অন্তরার ঠোটের দিকে এগুতে নেয় হঠাত পিছন থেকে কেউ তাকে সজরে লাথি মারে,,হঠাত লাথি মারায় ছেলেটা দূরে ছিটকে পরে যায়,,হৃদয় তেরে এসে সেই ছেলেটাকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে,,একজনকে এভাবে মারছে ভয়ে সবাই পালালো,,হৃদয় রাগি লুক নিয়ে অন্তরার দিকে তাকাল,,অন্তরা বলল,,

_আপনি তাদের মারলেন কেন?তারা আমাকে বেলুন দিতো,,আপনি খুব পচা,,(বলে মুখ ঘুরিয়ে নিল)

হৃদয় তার উপর রাগ কি করবে উল্টো বকা হয়ে গেল,,কি বলল ও?হৃদয় বোকার মতো ফেস বানাল,নিচে অন্তরার ওড়না পরা ছিল হৃদয় সেটা উঠিয়ে অন্তরার গায়ে জরিয়ে দিল,,

_নিজের ওড়না ঠিক মতো রাখ,,
_নাহ আমি রাখবনা আমাকে বেলুন কিনে দিন,,(কাদো কাদো ফেস করে বলল)
_আচ্ছা ঠিক আছে তোমাকে বেলুন ও কনে দিব আইস্ক্রিমও ঠিক আছে?
_কিহহ,, সত্যি?কি মজা মজা চলেন চলেন,,

বলেই হৃদয়ের হাত ধরে হাটা শুরু করল,,হৃদয় মুচকি হেসে তার সাথে হাটতে লাগল,,গাড়ির কাছে এসে হৃদয় অন্তরার জন্য অনেকগুলো বেলুন আনলো আর আইস্ক্রিম আনল,,অন্তরার আইস্ক্রিম খেতে খেতে বলল,,

_আসো এই মাঠে আমরা খেলি,তোমাদের বাসায় তো জায়গা নেই,,
_নাহ আমরা বাসায় গিয়ে খেলবো, আম্মু আমাদের জন্য চিন্তা করছে না,,চলো বাসায় চলো,,
_আচ্ছা ঠিক আছে,,

বলেই গাড়িতে বসল,হৃদয় ও গাড়িতে বসে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলো,,বাড়িতে এসে হৃদয় তার নিজের রুমে চলে গেল,অন্তরাও তার রুমে চলে গেল,,

দুপুরে হেনা চৌধুরী খাবারের জন্য সবাইকে ডাকল, সবাই খাবার খেয়ে যার যার রুমে গেল,,হৃদয় তার রুমে বসে কম্পিউটারে কাজ করছে এমন সময় তার মা তার রুমের দরজা নক করল,,

_আসবো?

হৃদয় কম্পিউটার থেকে মাথা তুলে দেখল তার মা,,

_আরে আম্নু আসো,পারমিশন নেওয়ার কি আছে,
_নাহ ভাবল তুই কাজ করছিস তাই ডিস্টার্ব করতে চাই নি,
_আচ্ছা,
_আচ্ছা শুন,ডাক্তার কি বলল,?
_ডাক্তার বলল ওকে খুব কেয়ার করতে ভালোবাসা দিতে তাহলে ও ঠিক হতে পারবে,,
_হুম তাহলে তো ভালই হলো,, মেয়েটা খুবি মিস্টি,,আচ্ছা তুই কাজ কর আমি আসি,
_আচ্ছা ঠিক আছে,,

হেনা চৌধুরী চলে গেল,,বিকাল দিকে হঠাত অন্তরার ঘুম ভেংগে গেল,ঘুমের থেকে উঠে চোখ ডলতে ডলতে হৃদয়ের রুমে গেল,গিয়ে দেখল হৃদয় কাজ করছে,তার পাশে গিয়ে দাড়াল,হৃদয় তার পাশে কারো উপ্সথিতি টের পেয়ে পাশ ফিরে তাকায় দেখল অন্তরা তার দিকে তাকিয়ে আছে,সে মুচকি হেসে বলল,,

_কিরে তোর ঘুম হয়েছে?
_হুম,চলো আমরা খেলব,,(বলেই হৃদয়ের হাত ধরে টান দিতে লাগল)
_আরে ছাড় তুই বরং এখন আম্মুর কাছে যা আমরা পরে খেলব।।
_নাহ আমি এখন খেলব এখন খেলব(বলে হাত ঝাকাতে লাগল)

হৃদয় ধমক দিল, হৃদয়ের ধমক শুনে অন্তরা কাদতে কাদতে নিজের ঘরে গেল,হৃদয় নিজের কাজ শেষ করে ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় গেল,,হঠাৎ অন্তরা কথা মনে পরল,,সে না তাকে ধমক দিয়েছে?হৃদয় তরিঘরি করে অন্তরার রুমে গেল,গিয়ে দেখল অন্তরা মেঝেতে শুয়ে আছে,,অন্তরার প্লাজু হাল্কা উপরে উঠানো,ওড়না নেই গায়ে জামা টাও হাল্কা এলোমেলো,,হৃদয় অন্তরার পাশে গিয়ে বসল,,অন্তরা এখনও হেচকি তুলে কান্না করছে,,

_অন্তরা,,

হৃদয়ের ডাকে অন্তরা পিছে ফিরল না সে আগের মতো মুখ ফিরে শুয়ে আছে,

_অন্তরা কিছু খাবে খেয়ে নাও,তারপর আবার ঔষুধ খেতে হবে,
_নাহ আমি খাবো না, আমি আমার আব্বুর কাছে যাবো, আমি পিংকুর সাথে খেলব,, তোমরা সবাই পচা,
_অন্তরা দেখ যিদ করে না উঠো খেয়ে নাও,,
_নাহ নাহ নাহ
_আচ্ছা ঠিকআছে খেয়ে অসুধ খেলে আমরা তোমার বাবার কাছে যাব,খেলব,,,খাও এখন,,

অন্তরা উঠে হৃদয়কে এলোপাতাড়ি মারতে লাগল,হৃদয়ের রাগ উঠে গেল সে অন্তরাকে মারার জন্য হাত উঠাল অন্তরার চেহারার দিকে তাকিয়ে থাপ্পর দিল না, হাত নামিয়ে নিল,,রাগে দাত কটমট করতে লাগল,অন্তরাকে খাওয়ায়ে তাকে শুয়ালো,,

_তুমি ঘুমাও আমি আসছি,,
_আচ্ছা ঠিকআছে,,

বলে হৃদয় চলে গেল,,অন্তরাকে ঘুমের ডোস দেওয়ায় সে আর উঠল না ঘুমিয়ে গেল,,হৃদয় তার রুমে চলে গেল,সে আধশোয়া হয়ে অন্তরার কথা চিন্তা করছে,

_কত্ত মাসুম একটি মেয়ে,অনেক মায়া হয় ওর জন্য, আল্লাহ ওকে জলদি ভালো করে দিও,,

এইসব চিন্তা ভাবনার মাঝে হঠাত হৃদয়ের ফোন বেজে উঠল,,ফোন হাতে নিয়ে দেখল ডাক্তার চাচা ফোন করেছে,,হৃদয় ফোন রিসিভ করল,,

_হ্যালো,,হৃদয় তুই কি অন্তরাকে ঔষুধ দিয়ে দিয়েছ?
_জি আংকেল,কেন?
_ইশশশশ,আর কিছু ক্ষন আগে ফোন করলে ভালো হতো,,
_কেন আংকেল কি হয়েছে?
_ওকে বেশি পাওয়ারের ঔষুধ দিয়ে দিয়েছি,ওর শরিরে জন্য একাটু বেশিই পাওয়ার ফুল হয়ে যাবে,,
_তাহলে আংকেল আপনি এইটা আগে দেখবেন না এখন যদি উল্টা রিয়েকশন হয়?
_নাহ তেমন কিছু হবে না,যদি ওর শরির মেনে নিতে পারে পাওয়ারটা তাহলে প্রবলেম।নাই,আর যদি না নিতে পারে,,,
_না পারলে কি আংকেল?
_নাহ পারলে কাল সকালে একটু বেশিই পাগলামি করতে পারে,তুমি একটু সামলে নিও হৃদয়,,আর আমজ ওকে কাল এসে চেকআপ করে যাব,
_আচ্ছা আংকেল ঠিকআছে,,

ফোন কেটে দিল,,হৃদয়ের তো অনেক চিন্তা হচ্ছে অন্তরার জন্য, যদি না নিতে পারে তখন?কি হবে?এইসব নানান ধরনের চিন্তা তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে,চিন্তা করতে করতে হৃদয় ঘুমিয়ে গেল,,

সকালে,, চিল্লানির আওয়াজে হৃদয়ের ঘুম ভেংগে গেল,,হৃদয় লাফ দিয়ে বিছানার থেকে উঠে,,হঠাত কাল রাতে ডাক্তার এর কথা মনে পরে যায়,সে তরিঘরি করে অন্তরার রুমে গেল,,হৃদয় যা দেখল তার জন্য মটেও প্রস্তুত ছিল না,,অবাক হয়ে তাকাল অন্তরার দিকে, অন্তরা বিছানার এক কোনে দাড়য়ে আছে,,তার পা বেয়ে রক্ত পরে মেঝে প্রায় খানিকটুক ভরে গেছে,,,

চলবে🖤
(ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🥰)

হৃদয়ের অন্তরা পর্ব-০২

0

#হৃদয়ের_অন্তরা❤️
#part_2
#sarika_Islam
,
,
,
দুপুরে সবাই একসাথে খেতে বসল,,হাসান চৌধুরী খালেদ মিয়ার উদ্দেশ্য বলল,,

_অন্তরা মামুনিকে আমরা নিয়ে জাই আমাদের সাথে ওর চিকিৎসা দরকার,,এভাবে তো আর রাখা যায় না,,আর ও বড় হয়েছে ওকে তো বিয়ে দিতে হবে,
_নাহ, আমার মেয়ে পিচ্চি কিচ্ছু বুঝে না আমি ওকে বিয়ে দিব না,,ওকে আমার কাছেই রাখবো, আমি ওকে ছাড়া থাকতে পারি না,,(বলেই কান্না করে দিল)
_দেখ খালেদ আমি ওকে আমার মেয়ের মতো আদর করব,,আমাদের কাছে দে ওকে সুস্থ বানিয়ে দিব,,আমার ছেলে হৃদয় কাল আসবে লন্ডন থেকে আর আমার বিশ্বাস হৃদয় ওকে ঠিক করতে পারবে,,তুই অমত করিস নে,
_আচ্ছা ঠিক আছে,,অন্তরা যদি রাজি হয় তাহলে যাবে আমার কোন আপত্তি নেই,,

হেনা চৌধুরী আর অন্তরার মা অন্তরাকে ধরে ধরে নিয়ে আসছে,,খালেদ মিয়া নিজের মেয়ের কান্না দেখে মেয়ের কাছে ছুটে গেল,অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করল,,

_কি হয়েছে আমার পখির?(মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)
_কিচ্ছু হয়নি আমার,,(খালেদ মিয়ার বুকের সাথে লেপ্টে গেল)
_তোর আন্টিদের বাসায় বেড়াতে যাবি?
_নাহ আমি তোমাকে ছাড়া কোথাও যাব না,
_যাহ কিছু দিনের জন্য ঘুরে আয় ভালো লাগবে,
_নাহ নাহ,আমি যাব না তোমাকে ছাড়া,

পাশ থেকে হাসান চৌধুরী বলল,,

_ঠিকআছে খালেদ তুইও চল, দিয়ে না হয় চলে আসিস,,
_আচ্ছা ঠিকআছে,,

দুপুরে খাবার শেষে সবাই একসাথে ঢাকার উদ্দেশ্যে রোওনা হল,,

সন্ধ্যা 6,,

_এত্ত বড় বাসা তোমাদের?এত্ত সুন্দর? যান আন্টি আমি কখন এত্ত বড় বাসা দেখি নি,,

বলেই এদিক সেদিক ছুটছুটি করছে,,হেনা চৌধুরী অন্তরার বাচ্চামো দেখে হাসছে,,খালেদ মিয়া তার মেয়েকে দিয়ে বিদায় নিয়ে আবার নিজের ঠিকানায় চলে গেল,,অন্তিরা তো বাড়ি দেখাতে এত্ত বেস্ত তার বাবা চলে গেছে সেই দিকেও খেয়াল নেই,,

সকাল,,

অন্তরা ঘুম থেকে উঠে নিচে গেল গিয়ে তো পুরা হা,এত্ত সুন্দর করে বাড়ি সাজিয়েছে,অন্তিরা পুরো বাড়ি দেখছে আর সিরি বেয়ে নামছে,,অন্তরা হেনা চৌধুরীর পাশে গিয়ে দাড়াল,,

_আন্টি এত্ত সুন্দর করে বাড়ি সাজানো হচ্ছে কেন?

হেনা চৌধুরী পাশ ফিরে অন্তরাকে দেখে মুচকি হেসে বলল,,

_তোমার একটা ভাই আসবে,, আমার ছেলে আসবে হৃদয়,
_সেকি খেলবে আমার সাথে পিংকুর মতো?
_হুম খেলবেতো,,
_কি মজা কি মজা,,(বলেই হাত তালি দিয়ে লাফাতে লাগল)

হেনা চৌধুরী অন্তরার খুশি দেখে মুচকি হেসে তার মাথায় হাত বলিয়ে রান্না ঘরে চলে গেল,,হৃদয় এসেছে যেইনা ঘরের ভিতর ঢুকতে নিবে অমনি অন্তরা লাফাতে লাফাতে হৃদয়ের সাথে ধাক্কা লেগে নিচে পরে যায়,হৃদয়ের হাতের সব বেগ নিচে পরে যায়,,অন্তরা মেঝেতে পরে রাগি লুক নিয়ে হৃদয়ের দিকে তাকাল,,

_আপনি কি চোখে দেখেন না?আমাকে ফেলে দিলেন,সরেন আমার হৃদয় ভাই আসবে,,

বলেই হৃদয়কে দরজার সামনে থেকে সরাতে লাগল,,হৃদয় উঠে দারাল কিছু বলতে নিবে অমনি হেনা চৌধুরী “হৃদয় ” বলে ডাকতে লাগল, হেনা চৌধুরী এত্ত বছর পর ছেলেকে দেখে চোখের জল ছেরে দিল,,হৃদয় মাকে দেখে মার কাছে গিয়ে তাকে জরিয়ে ধরল,,অন্তরা আর কিছু না বলে সোজা নিজের রুমের দিকে অগ্রসর হলো,,

দুপুরে খাওয়ার সময় হৃদয় খেতে খেতে বলল,

_মা ঢুকার সময় একটা মেয়েকে দেখলাম ওকি আমাদের নিউ সার্বেন্ট?
_আরে নাহ ওতো তোর খালেদ চাচা আছে না আমাদের গ্রামের মাদবর তার মেয়ে অন্তরা,,
_ওহ আচ্ছা,,তোকে একটা কথা বলার ছিল,
_হুম বলো,,(খেতে খেতে)
_দেখ বাবা তুই ওকে চিকিৎসা করবি,
_কিহহহহহ
_হুম আমরা ওর বাবা মাকে কথা দিয়ে এসেছি তুই ওকে চিকিৎসা করে ঠিক করবি,আমাদের মান সম্মানের বেপার,,
_আচ্ছা ঠিকআছে আমি চেষ্টা করব,

বলেই চলে গেল,,উপরে গিয়ে নিজের রুমে যাবে অমনি কারো কান্নার শব্দ হৃদয়ের কানে ভেসে আসে,তার রুমের পাশেই অন্তরার রুম,সে দরজাটা হাল্কা খুলে দেখলো পুরো ঘর জুরে অন্ধকার ছেয়ে আছে,হৃদয় দরজা পুরোটা খুলে ভিতরে ঢুকে দেখতে লাগল কে কান্না করছে,কিন্তু কেউকে খুজে পেল না,হঠাত পিছন থেকে হৃদয়কে জরিয়ে ধরল,এভাবে হঠাত ধরায় হৃদয় অনেকটা ঘাবড়ে যায়, অন্তরা হৃদয়কে ধরে চিৎকার করতে লাগল,,

_বাচাও বাচাও,

হৃদয় বুজতে পারল কে ধরেছে,সে আস্তে আস্তে অন্তরাকে নিজের সামনে এনে দাড় কড়াল,,তারপর রুমের লাইট জালিয়ে দিল,

_কি হয়েছে তোমার আমাকে বলো,,
_বিছানায় তেলাপোকা আমি তেলাপোকা খুব ভয় পাই,,(হাত দিয়ে ইশারায় দেখাল)
_আচ্ছা আমি তেলাপোকা তাড়িয়ে দিচ্ছি,(বলেই বিছানার দিকে গেল)কোথাও তো তেলাপোকা নেই,,(অন্তরার দিকে তাকিয়ে বলল)
_নাহ নাহ এখানেই ছিল,,
_আচ্ছা চলে গেছে ঘুমিয়ে পড়,,
_নাহ নাহ আমাকে ছেরে জাবেন না আমার খুব ভয় করছে,,,(বলেই হৃদয়ের এক হাত ধরে ফেল্ল)

হৃদয় অন্তরার দিকে তাকাল, ভিতু ফেস করে রেখেছে অন্তরা,হৃদয় অন্তরাকে দেখে থমকে গেল,তার আয়তকৃষ্ণ দুটি চোখ, কাজল রেখার মতো ভ্রুযুগল,কালো কালো দুটি চোখের ঢলঢল চাহনি মনপ্রান কেড়ে নেয়,এক ধ্যানে তার দিকে তাকয়ে আছে হৃদয়,

_কি সুন্দর একটি মেয়ে মাসাল্লাহ,যে কোন মানুষের মন কেড়ে নেওয়ার মতো, কিন্তু সে নাকি,,,,,,(বলে একটি দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ল)

অন্তরার ডাকে ধ্যান ভাংগে,

_আমি ঘুমাবো,
_আচ্ছা ঠিকআছে ঘুমাও,(বলেই অন্তরাকে ধরে বিছানায় শুয়ে দিল)

হৃদয় উঠে যেতে নিলে অন্তরা তার হাত ধরে ফেলে,

_আমাকে ছেরে যাবেন না প্লিজ,
_আচ্ছা ঠিক আছে তুমি ঘুমাও,,(বলেই অন্তরার পাশে বসল)

অন্তরা ঘুমিয়ে গেছে দেখে আস্তে করে তার পাশ থেকে উঠে নিজের রুমে চলে গেল,

রাতে সবাই একসাথে ডিনার করতে বসল,,এমন সময় হৃদয় তার মাকে বলল,

_মা আমি কাল সকালে ওকে মার বড় স্যারের কাছে নিয়ে যাবো তুমি ওকে রেডি করে দিও,
_আচ্ছা ঠিকআছে,
_আর ও কোথায় এখন খাবে না?
_ওর খাবার ওর রুমে পাঠিয়ে দিয়েছি,টেবিলে বস্ব খাবারের অভ্যাস নেই,
_ওহ আচ্ছা,,

তারপর খাওয়া শেষে যে যার রুমে গিয়ে শুয়ে পরল,,

সকালে,,

হেনা চৌধুরী অন্তরার রুমে গিয়ে তাকে ডাক দিল,,

_অন্তরা এই অন্তরা উঠ মা,
_উমমমম
_উঠ মা উঠ,(মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)

অন্তরা উঠে বসল,
_যা ফ্রেশ হয়ে আয়,,

অন্তরা উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেল,ফ্রেশ হয়ে এসে তাকে খাবার খাইয়ে দিল,তারপএ হেনা চৌধুরী তাকে একটি লাল কালারের থিপিস পরিয়ে দিল,,অন্তরা তার পড়নে জামাটা নাড়ছে আর বলছে,,

_কোথায় যাব আমরা?
_তোর হৃদয় ভাউ তোকে ঘুরতে নিয়ে যাবে,,
_ওয়াও আমি ঘুরতে যাব কি মজা,,(বলে লাফাতে লাগল)
_আহা নরিস না তোর চুল বাধতে দে,,

অন্তরা কি আর চুপ থাকার মেয়ে ওতো ওর মতো করে নরেই যাচ্ছে,তারপর হেনা চৌধুরী অন্তরাকে নিচে নিয়ে আসল,হৃদয় নিচে নামছে আর অন্তরাকে দেখছে,অন্তরা তার ওড়না বারে বারে ফেলে দিচ্ছে হেনা চৌধুরী তার ওড়না বারে বারে গায়ে জরিয়ে দিচ্ছে,,হৃদয় তাদের সামনে এসে দাড়াল হেনা চৌধুরী হৃদয়কে বলল,

_বাবা ওর খেয়াল রাখিস ঠিক আছে,
_আচ্ছা মা তুমি চিন্তা কর না,,

হৃদয় গাড়িতে করে হসপিটালে নিয়ে গেল,,ডাক্তারের চেম্বারে বসল,,অন্তরা বসে টেবলের উপর পৃথিবীর চাকা তাকে ঘুড়াচ্ছে,এটা সেটা নেড়ে নেড়ে দেখছে,,ডাক্তার তার তাকে চেকআপ করতে লাগল,অন্তরা ভয় পেতে লাগল,,ডাক্তার চেকআপ করছে আর অন্তরার সাথে কথা বলছে,,

_তোমার নাম কি?
_আমার?আমার নাম অন্তরা
_ওহ খুবি সুন্দর একটি নাম ঠিক তোমার মতো,
_আচ্ছা তোমার নাম কি?
_আমার নাম রফিক,,(হাল্কা হেসে)
_ওহ,

অন্তরা ডাক্তারের দিকে তাকিয়ে আছে,,ডাক্তার আবার বলল,

_তাহলে তুমি আমার একটা নাম রাখ,,

অন্তরা হেসে ফেল্ল তারপর বলল,

_খোকা,,(বলে হেসে দিল)
_আচ্ছা ঠিকআছে আজ থেকে তুমি আমার মা আমি তোমার খোকা ঠিকআছে,
_আচ্ছা ঠিকআছে,,,

ডাক্তারের চেপআপ শেষে হৃদয়ের কাছে গেল,হৃদয়কে বলল,,

_হৃদয় ও ঠিক হবে ঠিক হওয়ার চান্স আছে,কিন্তু ওকে সব সময় কেয়ার করতে হবে ভালোবাসা দিতে হবে,প্রচুর ভালোবাসা দরকার অন্তরার,,আর এই ঔষুধ গুলো লিখে দিচ্ছি এইগুলো ওকে খাওয়াবা,আর আমি 2দিন পর তোমাকে যানাব কি করতে হবে ওর সাথে,,
_আচ্ছা ঠিকআছে,,

অন্তরা আর হৃদয় গাড়ি দিয়ে চলে গেল,,অন্তরা বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে এক মনে,,হঠাত হৃদয়কে খামছাতে লাগল,,হৃদয় জিজ্ঞেসাদৃষ্টিতে অন্তরার দিকে তাকাল,,অন্তরা হাত দিয়ে ইশারা করে বাহিরে আইস্ক্রিম আলা দেখাল,অর্থাৎ সে আইস্ক্রিম খাবে,,হৃদয় গাড়ি থামাল,

_আচ্ছা ঠিক আছে আমি নিয়ে আসছি কিন্তু তুমি এইখনেই থাকবে বের হবেনা,

অন্তরা মাথা নেড়ে সায় দিল যে সে বেড় হবে না,,হৃদয় আইস্ক্রিম আনতে গেল,,আইস্ক্রিম নিয়ে ফিরে অন্তরাকে আইস্ক্রিম দিতে নিবে দেখে সিটে অন্তরা নেই,,,,,

চলবে🖤
(ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🥰)