Tuesday, July 29, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1535



আলো থেকে অন্ধকার পর্ব-১০

0

#আলো_থেকে_অন্ধকার
Part:-10
Writer:#Esrat_jahan_Esha

– আচ্ছা লিমা তুমি এরকম প্রতিদিন সরবত করে দাও আবার ঝগড়াও কর।
– মানে কি বলতে চান?
– আরে তুমি রাগ করছ কেনো আমি বলতে চাইছি যে তুমি সব সময় আমাকে চোখ গরমে রাখ যাই যা হয়ে যাগ কিন্তু সরবত খাওয়াতে ভুল না।

আমি ভ্রু কুঁচকে ওনার দিকে তাকালাম।
– আপনি শুধু আমার রাগারাগি টাই দেখলেন ভালোবাসা দেখলেন না। আপনি বাড়িতে আসার সাথে সাথে আমার মন অস্থির হয়ে উঠে আমি সাথে সাথে আপনাকে সরবত বানিয়ে দেই। সারাদিন কত খাটাখাটি করেন যাতে একটু হলেও ক্লান্তি দূর হয়।
আর আপনি আমাকে এমন ভাবে প্রশ্ন করেন যেন আমি আপনাকে বিষ দিতাছি।
– তা নয়। আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাস তার জন্যই তো তুমি আমাকে ঝগড়া করার পর আবার ভালোবাস।
– হুমম বুঝতে হবে। বলেই আমি কান্না শুরু করে দিলাম। রাগের মাথায় কি বলি না বলি সেটা আপনি ধরে রাখেন।
– কি হলো এখন আবার কান্না শুরু করলে কেন?
– জানি না।
– মহা মুশকিল তো। কান্না থামাও প্লিজ।
– হুমম থামাব তবে একটা কথা আছে যদি রাখেন
– কি কথা বল
– আমি সেলাইয়ের কাজ শিখতে চাই।
– ওহ্হ এটা তো অনেক ভালো কথা।
-আপনি তাহলে যেতে দিবেন?
– যেতে দিব মানে? আমি তোমাকে মহিলা টিচার রেখে দিব সে এসে শিখাবে।
– নাহ ঐ খানে সেলাইয়ের কাজ শিখানো হবে ফ্রিতে আমি সেখানে যাব।
– নাহ ঘরে বসে শিখ।
– আমি যাব এটাই শেষ কথা।
– আচ্ছা।

জায়েদ আর কোনো কথা বাড়ালো না। সে ঘর থেকে বের হয়ে গেল।

আজ ১ তারিখ সুমিকে নিয়ে আমি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গেলাম। সুমি তো প্রশ্নের পর প্রশ্ন ভাবি আমি কি চান্স পাব। ভাবি তুমি তার সাথে কথা বলেছ?

– আরে হ্যা আমি কথা বলেছি। পাব মনে হয়।
– জানিনা ঐখানে গেলে কি হবে আজ। কত স্বপ্ন নিয়ে যাচ্ছি কাজ শিখতে।
– আমিও রে

– এ যে তোমরা এসে গেছ?
– হুমম তুহিন আমরা এসে গেছি। এখানে সব রেডি?
– হুমম সব ঠিক আছে। তোমরা ২ জনেই শিখতে পারবে। তবে অনেক কষ্ট হইছে ম্যানেজ করতে।
– ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের উপকার করার জন্য। এখন ঋনি আপনার কাছে। (সুমি)
– শুকনো ধন্যবাদে হবে না। (তুহিন)
-আচ্ছা আচ্ছা হইছে এখন চলো তো। (লিমা)
– আচ্ছা ভাবি এখানে ছেলে মেয়ে সবাই মিলে কাজ করবে? আমার কেমন জেন আনইজি লাগছে।
– তোমরা ২ জনের একজন কোনো টেনশন করো না। কেউ কিছু বল্লে আমাকে বলবে। আমি তো আছি নাকি। তোমরা মন দিয়ে কাজ শিখ।

এভাবে ১০ দিন ভালো মতই কাজ শিখি। বাড়িতে বসে ননদ ভাবি মিলে কাজ শিখি। আমি না পারলে সুমি দেখিয়ে দেয়। আর সুমি না পারলে আমি দেখিয়ে দেই।
সবই ঠিক ছিল। আবার তুহিন মাঝখানে এসে সব পেচ পাকিয়ে দিল।
– লিমা তোমার কাজ কেমন আগাচ্ছে?
– হুমম ভালোই।
– লিমা আজকে কাজ শিখা লাগবে না।
– চলো আজকে একটু ঘুরে আসি।
– কি বল? সুমি দেখলে বাড়িতে বলে দিবে।
– কিছু বলবে না। তুমি কাজ শেখার মাঝে বলবে আমার অনেক পেটে ব্যাথা বাড়ি যেতে হবে। তারপর সুমি আসতে চাইবে তুমি কিছু একটা বুঝিয়ে ওরে রেখে চলে আসবে। আমি ঐ বট গাছের নিচে অপেক্ষা করব।

– আচ্ছা চেষ্টা করে দেখি।

আমি তুহিনের কথামতই কাজ করলাম।

– সুমি এই সুমি।
– কি হইছে ভাবি বল।
– আমার পেট ব্যথা করছে আমি বরং বাড়ি যাই তুমি কাজ শিখ। তুমি ভালো করে শিখে আসো আমি তোমার থেকে শিখে নিব।
– আচ্ছা ভাবি যাও।

তারপর আমি ঐখান থেকে ছুটি নিয়ে চলে যাই তুহিনের সাথে।
– কি আসছ? আমি জানতাম তুমি আসবে।
– হুমম এসেছি। যা বলার বল।
– এখানে নয়। চলো অন্য কোথাও যাই লোকজন কি বলবে।
– হুমম তাও ঠিক চলো তাহলে।

তুহিন কে নিয়ে ঐদিন আমি অনেক ক্ষন ঘুরাফিরা করি। সুমি বাড়িতে যাওয়ার আগে আমিই বাড়িতে চলে গেলাম।

-সুমি তুমি এসেছ?
– হুমম ভাবি। তোমার পেটের ব্যথা কমছে?
– হুমম কমছে।
– কমলেই ভালো। আমি তো ভাবছি হটাৎ কেন ব্যথা হলো।

তারপর দুজনে মিলে ঘরের কাজ শেষ করে নিলাম। চোরের মনে সব সময় পুলিশ পুলিশ থাকে আমার অবস্থাও তেমন হলো। বার বার খালি ভাবছি যদি আমার বিষয় সবাই জানতে পারে তখন কি হবে? তাই কেউ যেন সন্দেহ না করে সব সময় সুমির সাথে আর শ্বাশুড়ি মায়ের সাথে ভালো ব্যবহার করতাম।

এখন আমি প্রায় প্রায় তুহিনের সাথে দেখা করতে যাই। ওর সাথে অনেক ঘুরাঘুরি করি।

★★★
– লিমা আমার ছেলে কে কি খাওয়ালো? ধুর আমি ও শুধু শুধু টেনশন করছি সরবতি তো দিচ্ছে। হুমম সরবত কিন্তু হাতে ঐটা কি? সরবত এর মধ্যে ওটা ভিজানোর কি দরকার ছিলো?
সুমিকে কথা টা বলতে হবে ৷ বউয়ের মধ্যে কিছু তো একটা গন্ডগোল আছে।

– সুমি তুই কি কখনো খেয়াল করেছিস।
– কি?
– তোর ভাবি প্রতিদিন তোর ভাইয়াকে সরবত করে খাওয়ায়?
– সরবত খাওয়ায় এখানে দোষের কি মা? ভাই সারাদিন কত কাজ কর্ম করে আসে ভাবি ভাইয়াকে ভালোবেসে সরবত করে দেয় তা নিয়ে তোমার টেনশন
– চুপ থাক কথা না শুনে এত কথা বলিস না। তোর ভাবি সরবত দেওয়ার আগে কি একটা যেন তোর ভাইয়ার সরবতের মধ্যে টি ব্যাগ এর মত ভিজিয়ে রেখে আবার উঠেয়ে ফেলে।
– কি বল মা?

– হুমম তাই। আমার আগে থেকেই সন্দেহ হত। আমার বড় খোকা কখনোই এমন ছিল না৷ ওর আচার আচরণ সব কিছু অস্বাভাবিক।
– মা কালকে ভাইয়া আসলে খেয়াল করতে হবে৷

আজকে সুমি জায়েদ আসার সাথে সাথে ওদের উপর নজর রাখে। ঠিকি তো ভাবি সরবত করে আবার টি ব্যাগ এর মত এটা কি ভিজাচ্ছে?
লিমা আবার ঐ জিনিসটা জায়েদের বালিসের নিচে রেখে দিল।

সুমি ওর মায়ের কাছে সব ঘটনা খুলে বলে।
– তার মানে ঐ শাঁকচুন্নি আমার ছেলেকে বস করে রাখছে?
– মা সেটাই তো মনে হয়।
– কাল সকালেই আমি হুজুরের কাছে যাব।
– মা তার আগে আমরা যখন কাজ শিখতে যাব তুখন তুমি আমাদের নেমে যাওয়ার পর ভাইয়ার রুমে যাবে আর সব কিছু ভিতরে গিয়ে দেখবে। তাবিজ গুলো বেড় করে আনবে তারপর বিকালে আমি তুমি মিলে যাব হুজুরের কাছে৷
– আচ্ছা সেটাই হবে।

পরবর্তী দিন সুমি লিমা দুজনে কাজে শিখতে চলে গেল। সেই সুজুকে জায়েদ এর মা পুরু ঘর ভালোভাবে দেখে৷ তারপর জায়েদের বালিশের মধ্যে ২ টা তাবিজ পায় একটা বালিশের নিচে আরেকটা বালিশের ভিতরে।
★★★

আমি আর সুমি বাড়িতে চলে আসি। যখন আমি রান্নাঘরে গেলাম দেখি সুমি আর শ্বাশুড়ি মা দুজনেই গভির ভাবে আলোচনা করছে। আমি যাওয়াতে তারা থেমে গেল।
– ভাবি তুমি এসেছ? এই নাও ভাইয়া লাল শাখ এনেছে এগুলো কুটো।
– হুমম দাও আমার কাছে।

আজকে সুমিকে খেয়াল করলাম বার বার আমার দিকে তাকাচ্ছে মনে হয় আমাকে কখনো দেখেনি সেই ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
– সুমি তুমি বারবার এভাবে আমাকে কি দেখছ?
– সুমি লাফিয়ে উঠে। না ভাবি আজকে তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে তাই তোমাকে দেখছি।
– পাগল ( হি হি হি)
– আচ্ছা ভাবি তোমার গলায় ঐটা কিসের তাবিজ?

কথাটা শুনে আমি চমকে গেলাম। কি বলব না বলব বুঝে উঠতে পারছি না।

– নাহ আসলে বাবু হওয়ার সময় আমার মা আমাকে দিয়েছিল যেন কোনো বদ নজর না লাগে।
– ওহ্হ ভাবি। তা তুমি তো আমাদের কখনো বলনি।
– সুমি এতো কথা বলিস না। ওর মা দিছে থাক বিয়ান হয়ত মেয়ের ভালোর জন্যই দিছে।

– মা আমি একটু ঘর থেকে আসি।
– আচ্ছা যাও।
ঘরে এসে আমি ২-৩ গ্লাস পানি খেয়ে নিলাম। মনেহয় কলিজার পানি শুকিয়ে গেল।

বিকালে সুমি ওর মাকে নিয়ে হুজুরের কাছে গেল। তার হাতে ঐ তাবিজ ২ টা দিল আর সকল ঘটনা খুলে বলল।
– হুমম আপনাদের ধারনা ঠিক আছে এটা হল বসি করন তাবিজ যার জন্য আপনার ছেলের আচরণ আগের মত না।
– হুজুর তাহলে আমরা এখন কি করতে পারি।
– আপনি রুকাইয়া করেন। আর আমি এই তাবিজ নষ্ট করে দিচ্ছি।
– রুকাইয়া কি?( সুমি)
– কুরআন এর আয়াত দ্বারা সকল প্রকার জাদু টোনা বদ নজরের চিকিৎসা।
– ওহ্হ আচ্ছা। কিন্তু হুজুর তাবিজ দুটো আজকে সন্ধায় ভাবি না পেলে তো সন্দেহ করবে।
– সমস্যা না। আমি ভিতরের সব কিছু নষ্ট করে দিচ্ছি। আপনার এই তাবিজ আবার জায়গা মত রেখে দিবেন।
– আচ্ছা।

সুমি আর সুমির মা দুজনেই চলে আসে ঘরে। এসে দেখে লিমা আলিফ কে ঘুম পাড়াচ্ছে।

– সুমি ভাবি আলিফ কি ঘুম পড়ছে?
– হুমম এইতো ঘুমালো। কেন কিছু বলবে?
– নাহ আসলে মা তোমাকে ডেকেছিল। তারাতারি যেতে বলছে। আমি ততক্ষণ আলিফের পাশে বসি।
– আচ্ছা ঠিক আছে।

লিমা বেড় হওয়ার পরই সুমি তাবিজ গুলো জায়গা মত রেখে দিল।
আমার কাজ শেষ ভাবি। তুমি এবার তোমার জালেই ধরা পড়বে।

– মা আপনি আমাকে ডেকেছেন?
– হুমম আজকে এই ফুলের কাথাটা এঁকেছি। আসো ২ জনে মিলে এটা সেলাই করি।
– এই জন্য আমাকে ডাকা লাগে ভাবছি একটু ঘুমাবো এই বুড়ি এখান আমাকে দিয়ে কাঁথা সেলাই করাবে। যত্তসব। ( মনে মনে)
– কি হলো?
– আচ্ছা চেষ্টা করছি।
_______

৫-৬ দিন পর তুহিনের সাথে ঘুরতে যাই আজ সেটা সুমি জেনে গেছে। আজকে হয়ত বাড়িতে একটা তুলকালাম ঘটনা ঘটবে।

– ভাবি এই তুহিন কে? আর প্রতিদিন তুমি এর সাথেই দেখা করতে যাও কাজ না শিখে মিথ্যা বলে এখান থেকে চলে যাও। সেদিন জলিল চাচা আর সেলিম চাচা ২ জনই বলছে তোমার কথা। তুমি নাকি এই ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে যাও। আবার রেহানা ভাবি সেও বলেছিল যে তোমার সাথে হয়ত কারো সম্পর্ক আছে৷

আজকে তো নিজের চোখে দেখলাম। এতটা নিচ তুমি হলে কিভাবে ভাবি?

– সুমি আসলে তুমি যা ভাবছ তা না।
– আমি কি ভাবছি সেটা বাসায় চলো তাহলে বুঝতে পারবে। চলো বাড়িতে আজ।

এদিকে সব কথা জায়েদ কে জায়েদ এর মা খুলে বলে। জায়েদ সব শুনে যেন চুপ হয়ে গেল।
আর হাউমাউ করে মায়ের পা ধরে ক্ষমা চাইল।
মা আমি এতদিনের ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চাই। আমি তোমাকে কখনো কষ্ট দিয়ে কথা বলিনি।

আর লিমা এতটা জঘন্য কিভাবে হলো আল্লাহ ও কেন এমন করল আমার ছেলের কি কোনো ভবিষ্যৎ নাই।

জানিস মিম এখান থেকেই আমার সব শেষের দিকে আমি এতটাই খারাপ ছিলাম যে পরবর্তী কথা গুলো শুনলে হয়ত তুইও আমাকে ঘৃর্না করতে শুরু করবি।

– কি বলিস এগুলো তুই কি এমন করেছিস?
,,,,,,,

,,,,,

বাড়িতে যাওয়ার পরই সবাই আমাকে একের পর এক প্রশ্ন শুরু করে। কি বলব কোনো উওর আমার কাছে নাই। নিজেকে তো যেভাবে হোক বাচাতে হবে।শেষ চেষ্টা করে দেখি।

তাই আমি সাথে সাথে নিজেকে সামলে নিলাম।

– কি সমস্যা সবাই আমার সাথে এমন করছ কেন? আমি কি করেছি? আমি নাকি খারাপ বার বার খালি ঐ ছেলেটা কে কি সম্পর্ক এগুলো জিজ্ঞেস করছ? আমি ঐ ছেলেকে চিনি না। সব সুমি জানে সুমি আমাকে ঐ ছেলের ফোন নম্বর দিছে। মাঝে মাঝে ও কথা বলত। সুমি কে জিজ্ঞেস করো কে ঐ ছেলে।

এর জন্যেই তো আগে ঘরে অশান্তি হয়েছে। সুমি আমার ফোন দিয়ে কথা বলত সেটা আমি ধরে ফেলি আর সুমি আমাকে বলতে বাড়ন করে তাই আমি কিছু বলেনি। আমি নিজে দোষ মাথায় নিছি ওর জন্যই তো ঘরে এত অশান্তি।

– ভাবি???
– চুপ কর আর একটা কথাও বলবে না আজকে তোমার সব কুকির্তি ফাঁস করে দিব। আজ আর কিছু লুকিয়ে রাখতে যাব না।

– এগুলো সব মিথ্যা।
– সব মিথ্যা তাহলে এই ছবি গুলো কি মিথ্যা??????

চলবে,,,,,,,,,

( আসসালামু আলাইকুম। ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

আলো থেকে অন্ধকার পর্ব-০৯

0

#আলো_থেকে_অন্ধকার
Part:-09
Writer:-#Esrat_jahan_Esha

-সকাল সকাল আমি সুমির ঘরে গেলাম। সুমি সুমি কি কর?
– এইতো নামাজ পরে বসে আছি। তুমি এত সকাল সকাল?
– আরে সারারাত তো ঘুমাতে পারিনি। তাই তো সকাল সকাল তোমার ঘরে চলে আসছি।
– কেন? কোনো সমস্যা?
– আরে না সমস্যা না। আমি না চিন্তা করছি একটা বিজনেস করব। মানের আমরা কাজ শিখে একটা দোকান দিব। তারপর সেখানে ব্যবসা করব কাপুরের আর আমরা নিজেরা জামা কাপর তৈরি করব। আস্তে আস্তে আমাদের ব্যবসাটা অনেক বড়ো হবে। অনেক টাকা পয়সা হবে আমাদের। কি বল?
– এত চিন্তা ভাবনা তুমি করে ফেলেছ?
– হুমম কেন তোমার এমন ইচ্ছে হয় না?
– হুমম হয়ত নিজে ঘরে বসে পর্দার সাথে কিছু করি। যাতে আমি নিজেও ইনকাম করতে পারি আর সাথে আমার মত আরো মেয়েদের সাখানে কাজ দিতে পারি। গরিব দুঃখিদের সাহায্য করতে পারি।

– আচ্ছা যাই হোক তোমার স্বপ্ন আর আমার স্বপ্ন মিলিয়ে এক করে পুরুন করব কি বল?
– হুমম সেটা না হয় পড়ে দেখা যাবে আগে তো আমরা কাজ টা শিখি।

– হুমম। টেনশন নিও না। শিখে যাব।
– তা তোমার ঐ বন্ধুর সাথে কথা হইছে?
– হুমম সে বলছে ৩-৪ পর জানাবে।
– ওকে।

অনেক ক্ষন সুমির সাথে কথা বলে আমি সুমির ঘর থেকে চলে যাই। মনে আমার সারাদিন এই কথাই ঘুর পাক খাচ্ছে তুহিন কতো ভালো আমাকে নিয়ে কত টেনশন ছেলেটার। আসলেই ও আমার ভালো বন্ধু।
আচ্ছা তুহিন কে আমার প্লান এর কথা জানালে কেমন হয়। ও আমাকে আরো ভালো বুদ্ধি দিতে পারবে৷ এখন তাহলে ফোন দিব। না থাক কয়েকদিন পড়ে না হয় এ বিষয় বলব।
তারপর নিজের কাজে মন দিলাম।

________

-সুমি দেখ তুই তোর ভাবির কথায় নাচিস না। আমার কেমন যেন ভালো লাগে না।
– মা তুমি শুধু শুধু টেনশন কর ভাবি অনেক ভালো হয়ে গেছে।
– প্রয়োজনে তোকে ব্যবহার করছে।
-মা বাদ দেও না। ভাবি তো তোমার মেয়ের মত যা হইছে ভুলে যাও তো মা। মনে মনে এই রকম খারাপ ধারণা পোষণ করে রেখ না।
-তুই তোর বাবার সাথে একটু কথা বলে দেখতি তোর বাবা কি বলে।
– মা দেখ বাবা কে তো পরেও জানানো যাবে তাইনা? এখন কিছু বল না বাবা আবার এটা নিয়ে অতিরিক্ত জিজ্ঞেসাবাদ করবে তারপর শেষে যেতেও দিবে না আরো বকাঝকা করবে।
– আচ্ছা তুই যা ভালো বুঝ তাই কর। কিন্তু লিমাকে এই প্রজেক্ট শুরু হইছে এর কথা কে বল্ল?
– মা ভালো কথা মনে করছ। সবই ঠিক আছে কিন্তু আমার মনেও এই একই প্রশ্ন।
– বুঝলাম না। এত না পেচিয়ে সোজা করে বল।
– মা যে এই খবর দিছে সে একজন ছেলে। সে নাকি ভাবির বন্ধু আর ভাইয়াও এ বিষয় কিছু জানে না।
– কি বলিস তোর ভাবির ছেলে বন্ধু?
– হ্যা মা,,, আর তাদের কথা শুনে মনে হয় তাদের মধ্যে আগে কোনো সম্পর্ক ছিল।
– তোকে আগেই বলেছিলাম ওর ভিতরে কোনো গন্ডগোল আছে। ওর ভিতর সাপের বিষের মত। ও আমার ছেলেটাকে শেষ করে দিছে আমার ছেলে আর আগের মত নাই। এখন তোকেও শেষ করতে চায়।
– ওফফ মা কি শুরু করলা?
– মা রে মা তুই ওর সাথে আর যাস না। কথায় আছে
____সৎ সংঙ্গে সর্গ বাস
_____অসৎ সংঙ্গে সর্বনাশ

তুই তোর ভাবিকে বিশ্বাস করিস না করের মেয়ে ঘরে থাক তোর কিছু হলে তোর বাবা আমাকে মেরে ফেলবে। তোর জন্য ছেলে দেখতাছে হঠাৎ করে দেখবি তোর বিয়ে হয়ে গেছে। তুই ওর সাথে মিশিস না।
-মা শুধু শুধু টেনশন কর না তো। কিছু হবে না। কাজ শিখব আর ঐ ছেলে কে আর ভাবির সাথে কিসের সম্পর্ক সব আমাকে জানতে হবে। ভাবি যদি খারাপ হয় তাহলে তো ভাইয়া শেষ হয়ে যাবে।

সুমির চিন্তা ভাবনা এমন হয়ে পরে যে ভাবি এখন যাই করুক আগে কাজটা শিখি ভালো কাজ পারলে সার্টিফিকেট সেলাই মেশিন সবই তো পাব। ভাবি তো আর কোথাও চলে যাচ্ছে না। কাজ টা শিখে ভাবিকে ধরব। ভাবির ব্যপারে ভাইয়ার কাছে সব পরে জানাব।

-কিরে কি ভাবছিস?
– মা তুমি টেনশন করো না। কিছু হবে না। আর ভাবির উপর খেয়াল রাখা দরকার। সুতরাং এখন ভাবির ছায়া হয়ে থাকতে হবে।
– আচ্ছা তাও মা তুই সাবধানে থাকিস। দোয়া করি আল্লাহ তোর মনের আশা পুরন করুন ( আমিন)

_______

– আচ্ছা ভাবি কিছু জানতে পেরেছ?
– হুমম ৩-৪ দিন পরেই শুরু হবে।
– সবাইকে নিবে?
– সেটা গেলেই জানতে পারব।

তারপর সুমির সাথে আমার অনেক ক্ষন কথা হয়। মায়ের ডাকে সুমি রান্না ঘরে চলে যায় আমিও এই সুজুকে তুহিন কে ফোন দেই।
– হ্যালো তুহিন
– হুমম লিমা বল।
– কবে থেকে কাজ শিখানো হবে?
– ১তারিখ থেকে।
– ওহ্হ আচ্ছা তাহলে তো ৪ দিন পর তাহলে আমার অনুমান ঠিক আছে। আচ্ছা কতদিনের কোর্স এটা?
– ৩ মাসের কোর্স।
– ওহ্হ আচ্ছা।
– তুমি কি তোমার জামাইকে বলছিলে তোমার এই কাজের কথা?
– না বলিনি।
– বল দেখ কি বলে।
– কি বলবে? যেতে দিবে না।
– কেন? দিবে না সে তোমার সব কথা শুনতে বাধ্য।
– আরে না কয়েক দিন ধরে কেমন যেন একটু পরিবর্তন আসছে।
– মানে কি?
– মানে সে আগের মতই আচরণ করে। কয়েকদিন আগে আমাকে বলে লিমা আমার যেন কেমন কেমন লাগে আমার মনে হয় আমি স্বাভাবিক না। আর নামাজেও কেমন যেন অমনোযোগী হয়ে গেছি।
আর তার মধ্যে সেই আগের মত স্বাভাবিকতা ফুটে উঠে।
– কি বল এসব আচ্ছা তুমি কি সেই তাবিজ ভিজিয়ে পানি পড়া খাওয়াও না?
– কয়েকদিন আমার খাওয়াতে মনে নেই।
-উফফ ডেম তুমি আজকে থেকে আবার শুরু করো।
– আচ্ছা মাই ডিয়ার।
_____

জানিস মিম আমি আগে সত্যি তুহিন কে অনেক ভালোবাসতাম আর তুহিন আমাকে ভালোবাসত আমি মনে করতাম ইউসুফ জুলেখার প্রেম এর মত। আর তুহিনের সাথে যোগাযোগ হওয়ার পর ওকে বন্ধু ভাবতাম কিন্তু জিবীন শেষ হবে বুঝতে পারিনি।

-আচ্ছা লঘিমা ইউসুফ জুলেখা কি আসলেই প্রেম করেছিল?
– আরে মিম না। এটা একটা মিথ্যা ধারনা। আমি অবশ্য সব কিছু হারানোর পর জানতে পারি। কিন্তু পবিত্র কুরআনে স্পষ্ট এর ব্যাখা আছে।

– আচ্ছা লঘিমা কি ব্যাখা আছে একটু ক্লিয়ার কর তো।
– ওকে তাহলে শোন_____

“যারা প্রেমের রেফারেন্স এ ইউসুপ, জোলাইখা কে টানেন তাদের জন্য এই রেফারেন্স।

ইউসুফ আঃ কেন কারারুদ্ধ হলেন? কারণ তিনি তো ছিলেন নিরপরাধ?

এটা আছে পবিত্র কুর’আনে>>

(Yusuf 12:32)

قَالَتْ فَذَٰلِكُنَّ ٱلَّذِى لُمْتُنَّنِى فِيهِۖ وَلَقَدْ رَٰوَدتُّهُۥ عَن نَّفْسِهِۦ فَٱسْتَعْصَمَۖ وَلَئِن لَّمْ يَفْعَلْ مَآ ءَامُرُهُۥ لَيُسْجَنَنَّ وَلَيَكُونًا مِّنَ ٱلصَّٰغِرِينَ

(আযীযের স্ত্রী যুলাইখা) বললো> এই সেই (ইউসুফ) যার সম্বন্ধে তোমরা আমাকে ভৎর্সনা করেছ! আমি তো তার কাছে যৌন-মিলন কামনা করেছি; কিন্তু সে নিজেকে পবিত্র রেখেছে! আমি তাকে যা আদেশ করি, সে যদি তা না করে, তাহলে অবশ্যই সে কারারুদ্ধ হবে এবং লাঞ্ছিতদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
(অধ্যায় ১২,, সুরা ইউসুফ,, আয়াত ৩২)

এই আয়াত থেকে আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে, মূলত আযীযের স্ত্রী #যুলাইখার কুপ্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় তার আক্রোশের কারণেই #ইউসুফ আঃ #কারারুদ্ধ হয়েছিলেন!

এছাড়াও ইউসুফ আঃ দোয়া করেছিলেন ★

(Yusuf 12:33)

قَالَ رَبِّ ٱلسِّجْنُ أَحَبُّ إِلَىَّ مِمَّا يَدْعُونَنِىٓ إِلَيْهِۖ وَإِلَّا تَصْرِفْ عَنِّى كَيْدَهُنَّ أَصْبُ إِلَيْهِنَّ وَأَكُن مِّنَ ٱلْجَٰهِلِينَ

ইউসুফ আঃ বলেছিলেন>>হে আমার প্রতিপালক! এই মহিলারা আমাকে যার প্রতি আহ্বান করছে তা অপেক্ষা কারাগার আমার কাছে অধিক প্রিয়! আপনি যদি তাদের ছলনা হতে আমাকে রক্ষা না করেন তাহলে আমি তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব এবং অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হব। [১]

[১] ইউসুফ (আঃ) মনে মনে উক্ত দু’আ করেছিলেন। কারণ বিপদ-আপদে মুমিনের জন্য দু’আ একটি হাতিয়ার! হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে>> “কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা ৭ ব্যক্তিকে তাঁর আরশের ছায়ার নিচে স্থান দেবেন! তাদের মধ্যে একজন হ’ল সেই ব্যক্তি, যাকে একজন সুন্দরী ও সম্ভ্রান্ত নারী কু-কর্ম করার জন্য আহ্বান করে। কিন্তু সে তাকে এই বলে উত্তর দেয় যে, আমি আল্লাহকে ভয় করি (৩) যেটা অত্র সুরার ২৩ নাম্বার আয়াতেই আছে। এবং আল্লাহ তা’আলা তাকে কারাগৃহ থেকে স্ব-সন্মানে মুক্তও করেন যেটা ১০০ নাম্বার আয়াতে উল্লেখিত আছে।

ইনশাআল্লাহ ইউসুফ আঃ কিয়ামতের দিন তাদের অন্তর্ভুক্ত হবেন যাঁরা মহান আল্লাহর আরশের ছায়ার নিচে স্থান পাবেন।

(৩)
সহীহ আল-বুখারী হা/৬৬০
সহীহ মুসলিম হা/১০৩১
সুনান আত-তিরমিযী হা/২৩৯১
মুসনাদে আহমাদ হা/৯৬৬৫

#বিঃদ্রঃ ইউসুফ আঃ এর সাথে জুলেখার বিয়ে হয়ে ছিলো এটা মিথ্যাচার। আর সঠিক নামটি হবে #যুলাইখা ,, জুলেখা নয়! তবে বাংলাভাষীরা #জুলেখা নামেই জানে! কিন্তু আমি নামটি #যুলাইখা ব্যবহার করলাম! কারণ আমি পবিত্র কুর’আন ও বিশুদ্ধ তাফসীর উপেক্ষা করে নামের বিকৃতি ঘটাতে পারিনা।

আশাকরি ইউসুফ জুলেখা নিয়ে যে বানোয়াট ধারনা চিল কিছু ভন্ড বেহায়া প্রেমিকদের কাছে তার কিছুটা হলেও অবসান হবে।

– ওহ্হ আচ্ছা আমিও তো এতে দিন ভুল জানতাম।

– আচ্ছা তারপর কি হয়েছিল?

আমি জায়েদ সাহেব কে রাতে আবার সরবত করে তাবিজ ভিজিয়ে পানি পড়া খাইয়ে দেই। তখন সে আমার দিকে একটা প্রশ্ন ছুড়ে দেয়,,,,,,,

( আসসালামু আলাইকুম।ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

আলো থেকে অন্ধকার পর্ব-০৮

0

#আলো_থেকে_অন্ধকার
part:-08
Writer:-#Esrat_jahan_Esha

– আচ্ছা ভাবি তোমার ছেলে বন্ধু আছে? এটা আমি কখনো ভাবি নাই। তাহলে কি তুমি এর সাথেই কথা বলতে?
সুমি এখন এত কথা বল না তো কাজে আসছি কাজ করতে দাও।

সুমি মনে মনে অনেক চিন্তা মাথায় আর্ট করে নেয়। ভাবির সাথে এই ছেলের সম্পর্ক কি? এই ছেলের সাথেই কি ভাবির সম্পর্ক ছিল?এর সাথেই কি সেদিন সে কথা বলেছে যা আমি আর মা দেখেছি। আর ভাবিকে এই ছেলে এত সাপোর্ট করছে কেন?
ভাইয়া কি এই ছেলের কথা জানে?

– এই তো আমরা এসে গেছি।
– ওহ্হ এই যায়গা?
– হ্যা।
– আচ্ছা তুহিন এখানে তো ছেলে মেয়ে সবাই আছে। মেয়েদের জন্য আলাদা জায়গা করা হয়নি?
– লিমা কি বল এসব? মেয়েদের জন্য আবার আলাদা হবে কেন?
– ভাবি তাহলে কিভাবে কাজ শিখব আমিতো পারবো না। তুমি সব জেনেশুনে আসবা না ভাবি? (সুমি)
– তাতে কি হয়েছে যে যার মত করে কাজ শিখবে এখানে ছেলে হোক বা মেয়ে। দেখ লিমা তোমার ননদ কে বলো এত বেশি না বুঝতে।

সুমি তো শুনে রাগে সেই আগুন। কি আমি বেশি বুঝি এটা কোনো কথা আমি আর আসব না।

-আচ্ছা তুহিন বাদ দাও তো। আমরা আগে যাই তারপর দেখি কি হয়। আর সুমি তুমি কিছু মনে কর না।

____

– এই দুজন কে এখানে ভর্তি করাতে চাই।
– ওহ্হ তাদের পরিচয় পত্র দেন।সবার ছবি দেন ২ কপি।
– আচ্ছা তোমাদের যা যা আনতে বলেছি আনছ?
– হুমম এনেছি।
– কই দাও আমার কাছে।
আচ্ছা আমি সব কিছু জমা দিয়ে দেই৷ পড়ে সব তারা সিলেক্ট করবে কাকে কাকে নিবে।
– আচ্ছা তাহলে আমরা চলে যাই।

যাবে তো কিন্তু আমার প্লান তো কাজ করাতে হবে। কি চাইলাম আর কি করছ। (তুহিন মনে মনে)

– হুমম যাবে কিন্তু তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিল।
– হুমম বলো।
– নাহ এখানে নাহ।
– ওহ্হ। আচ্ছা সুমি তুমি একটু দাড়াও আমি আসছি।

সুমি আর চোখে আমাকে দেখছে মুখে কিছুই বলছে না। আমার মনে হয় সুমি আমার উপর একটু সন্দেহ নিয়ে তাকাল। আমি তার ভ্রু ক্ষেপ না করে তুহিন কে নিয়ে একটু আড়ালে গেলাম।
– হুমম বলো।
– আরে তুমি তোমার ননদ কে কেন আনছ? তোমাকে না বলছি তুমি একা আসবা। তুমি ওরে বলতে গেলে কেন।
– আরে কাউকে না বল্লে আমাকে আসতে দিত।
-কে আসতে দিবে না। তোমার স্বামীকে বল্লেই তো আসতে দিত। দুইটা চোখ গরম দিলে কবে আসতে দিত।

– ওহ্হ কিন্তু ওকে তো বলে ফেলেছি এখন কি করব।
– আমি দেখছি।
– তুহিন এখন চলো সুমি সন্দেহ করতে পারে।
-হুম চলো।

-আচ্ছা তোমরা এখন যাও পরবর্তী যা যা লাগে তা আমি ফোনে জানাব।
– ওকে তুহিন ভালো থেক।

আমরা ওখান থেকে চলে আসি বাড়িতে। আসার সময় সুমি আমাকে অনেক প্রশ্ন করে। কিন্তু আমি তেমন কোনো উওর করিনা। পরে বিরক্ত নিয়ে বলি তুমি কি আসলে কাজ শিখতে চাও নাকি????

– হুমম ভাবি শিখতে চাই।
– তাহলে এতো কথা বলো না। আমি যেমন বলব তেমন হবে।

বাড়িতে যেতেই আমার শ্বাশুড়ি প্রশ্ন ছুরে দিল।

– হ্যারে তোরা কোথায় গিয়েছিলি? আমি তোদের ২ জন কে কত খুঁজেছি। এদিকে আলিফ খুব কান্নাকাটি করছে। পড়ে লিমা কে খুজে না পেয়ে তোকে খুঁজি কিন্তু তোদের ২ জনার একজন কেও তো পাচ্ছি না। কিরে কোথায় গিয়েছিলি কথা বল।
– আসলে মা আমি কিছু জানি না তুমি ভাবিকে জিজ্ঞেস কর।
– আচ্ছা মা আমরা বসি তারপর আপনাকে সব বুঝিয়ে বলছি।

তারপর আমি আমার শ্বাশুড়ি কে বল্লাম।
– আসলে মা আমরা চাই একটু হাতের কাজ শিখতে। যাতে নিজেদের জামাকাপর নিজেরা তৈরি করতে পারি।
– তার জন্য কোথায় গিয়ে ছিলে?
– মা ঐ যে সামনে যে ত্রীমোহনীর রাস্তা টা আছে ঐখানে গিয়েছিলাম। ঐখানে আমাদের কাজ শিখানো হবে।
– হুমম কাজ শিখ সেটা তো ভালো কথা।
– হুমম মা তাই তো সুমিকে নিয়ে গেলাম ভাবছি ২ জনেই শিখব।
– এটা তো ভালো কথা তো জায়েদ কে কি বলছ?
– নাহ মা বলি নি বলব পড়ে আগে কয়েক দিন যাই।
মা এখন কাউকে বলার দরকার নেই। পড়ে জানাব আপনি কিছু বইলেন না।
– তবে আমার এটা যেন কেমন ঠিক হয়না তার চেয়ে ঘরে টিচার রাখি। জায়েদ কে বলে একজন মহিলা ট্রেইলার রেখে দেই ।
– উফফ মা আপনি বুঝেন না। এখানে কোনো টাকা লাগবে না বিনা পয়সায় এখানে শিখানো হবে। আর আপনার ছেলের ও এখন হাতে টাকা নাই। ব্যবসার লস হলো সব মিলিয়ে এখন কোনো বার্তি খরচের দরকার নাই। এখানেই শিখব।
– কিন্তু তাও কেমন যেন আমার মন সায় দিচ্ছে না।
– সুমি তুমি মাকে একটু বুঝাও তো।

– মা এত টেনশনের কি আছে কাজটা শিখলে তো ভালোই হয়। আর এখানে শেখার জন্য কোনো টাকা লাগবে না। তুমি রাজি হয়ে যাও মা। আর বাবা কে কিছু বল না। তুমি কি চাও না তোমার মেয়ে স্বাবলম্বী হোক?
– আচ্ছা তোরা যা ভালো বুঝ তাই কর। কিন্তু কোনো যেন ঝামেলা হয় না। আর সুমি অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ।

আমি জানি কথাটা আমাকে উদ্দেশ্য করেই বলা হয়েছে। তাই একটু রাগ নিয়ে শ্বাশুড়ির দিকে তাকালাম।
অনেক কষ্টে রাগ কন্ট্রোল করলাম।

– আচ্ছা মা আমি আলিফ কে নিয়ে ঘরে যাই। আর আপনি এগুলো নিয়ে শুধু শুধু টেনশন কইরেন না। আর কাউকে বইলেন না।
– আচ্ছা ঠিক আছে। তবে ঘরে যেন শান্তি বিরাজ থাকে।

আমি আমার ঘরে চলে গেলাম। আলিফ কে খাইয়ে তুহিন কে ফোন দিলাম।
– হ্যালো
– হুমম বলো।
– আমাদের ২ জনেকেই কি এখানে এডড করে দেওয়া যায় না?
– দুজন কেন? তুমি একলাই আসো এত ননদ টনদ এর চিন্তা করা লাগবে না।
– আরে নাহ তুমি বুঝার চেষ্টা কর। ওরে না নিয়ে গেলে আমি আসতে পারব না। আমাকে ঘর থেকে বেড় হতে হলে আমাকে সুমিকে নেওয়া দরকার।
– আচ্ছা দেখি কি করা যায়।
_______

উফফ কি ভাবছি আর কি হচ্ছে। কোথায় ভাবলাম লিমাকে আসতে আসতে নিজের কাছে এনে ফেলব। এখন সব গন্ডগোল পাকিয়ে দিল সুমি।
কি করা যায়,,,
মাথা চুলকাচ্ছে আর ভাবছে তুহিন সুমি সুমি সুমি। তুহিন কিছু একটা ভাব কি করা যায়। তোর প্লান কোনো ভাবে নষ্ট করা যাবে না।
অনেক খুন ভাবনার পর তুহিন। আরে তুহিন তোর তো কপাল খুলে গেছে। এতো মেঘ না চাইতে জল একটার সাথে আর একটা ফ্রি। এতে তো আমারি লাভ আমি দুজন কেই কব্জা করতে পারব।

তুহিন ওর মাথায় অন্য প্ল্যান ছক করে যাতে তার সব দিকেই লাভ।
________

সুমি মা সুমি,,,,
– হুমম মা বল।
– মা বলছিলাম কি তুই তোর ভাবির সাথে এভাবে মিশিস না। তোর ভাবির মতলব ভালো না তুই তার সাথে যাস না।
– না মা ভাবি অনেক ভালো হয়ে গেছে। আর শোনো মা আমি তো কোনো খারাপ কাজে যাচ্ছি না। আমি তো হাতের কাজ শিখব আর তাও ফ্রী তে। সুতরাং আমারি লাভ হবে। আর ঘরে সারাদিন শুয়ে বসে থাকি হাতের কাজ শিখলে তো আর কোনো সমস্যা নাই আরো ভালো হবে ঘরে বসে পর্দার সাথে ঘরে বসে কাজ করতে পারব
– সব বুঝলাম। দেখ তুই কাজ শিখতে চাস এটা অনেক ভালো কথা। আর তুই তোর রেহানা ভাবির কাছেও শিখতে পার। ওত দূর গিয়ে শেখার কি আছে৷ তোর ভাই বাবা শুনলে কি মনে করবে?
– মা বাদ দাও কিছু হবে না। আর কারো ঘরে গিয়ে শিখা লাগবে না। রেহানা ভাবির কাছে শিখলে ৩-৪হাজার টাকা লাগবে। আর ঐখানে ফ্রীতে শিখব।সাথে সার্টিফিকেট দিবে। তুমি এত টেনশন কর না।

আমার রাতে একটুও ঘুম হয় না সারারাত এপাশ ওপাশ করছি। চোখ বন্ধ করলেই দেখি আমি সেলাইয়ের কাজ করছি। মাথায় নানা রকম স্বপ্ন ঘুরাফিরা করছি।
সকাল সকাল আমি সুমি ঘরে গেলাম। গিয়ে সুমি কে বল্লাম,,,,,,,,,

চলবে,,,,,,,,,,,

(আসসালামু আলাইকুম,,,,,। ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। )

আলো থেকে অন্ধকার পর্ব-০৭

0

#আলো_থেকে_অন্ধকার
Part:-07
Writer:-Esrat jahan Esha

-‘হ্যাঁ বলো তুহিন – তোমার সকাল ফোন দেওয়ার কথা ছিলনা?’
-‘হ্যা ছিল কিন্তু সকালে আমি একটা কাজে গিয়ে আঁটকে গিয়েছিলাম বুঝলে? সেই জন্য ফোন দেওয়া হয় নি।’
-‘কোথায় গিয়েছিলে তুমি ? আমাকে তো কিছু বলোনি?’
-‘একটা সারপ্রাইজ আছে লিমা-যেখানে গিয়েছিলাম তোমার জন্যই গিয়েছিলাম।’
লিমা বেশ আগ্রহান্বিত হয়ে তুহিনের কথা শোনার জন্য এবার হেড ফোনটাকে কানে গুঁজে নিল।’
-‘আমার জন্য? ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারলাম না!’
-‘শুনো আমাদের ত্রিমোহীনির মোড়ে একটা টেইলারিং ট্রেনিং সেন্টার খুলেছে – যার নাম হল টেনশন ফ্রি ট্রেনিং সেন্টার অর্থাৎ TFTC । ওটা কেবল মাত্র মহিলাদের জন্য। তিন মাসের ট্রেনিং। শেখার শেষে সরকার থেকেই একটা অনুদান দিবে যাতে করে একটা আয়ের পথ তৈরী হয়। আমি চাই তুমি ঐ ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হবে।’
-‘বেশ মজার তো? আমি অবশ্য একটু একটু সেলাই এর কাজ আগে থেকেই জানি।’ খুশি খুশি মনে বলল লিমা।
-‘তুমি যে করেই হোক বাড়িতে সবাইকে ম্যানেজ করে ঐ ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তির ব্যবস্থা করে ফেল। আমার যতদূর জানা তোমার হ্যাবলাকান্তটা ব্যবসা করতে গিয়ে ব্যবসাটাকে লাটে তুলেছে- তাই সংসারে একটা অভাব কিন্তু আছে। কথায় বলে না অভাবে স্বভাব নষ্ট। এই সুযোগ কিন্তু হাতছাড়া করা যাবেনা। তুমি কাল থেকেই প্রপোজাল দিতে থাকো।’
-‘ওকে মাই ডিয়ার – আজ বুঝতে পারলাম সত্যি তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসো- তা না হলে আমাকে নিয়ে এত ভাবতে না। আজ রাতে আমার আর ঘুম হবে না- আনন্দে।’ বলল লিমা।

পরের দিন বেশ সকাল সকাল বিছানা থেকে উঠল লিমা। গ্রাম্য গ্রহস্থবাড়ির ভোর ভোরের যে সব ঝাড়ু-ঝাটা দেওয়া, সকাল বেলা নাস্তা পানি তৈরী করা সে সব সে বেশ মনোযোগ দিয়ে তৈরী করল। অবশ্য এতে সারাক্ষণ সহযোগিতা করে গেছে ননদ সুমি। মেয়েটা অমায়িক। এইচ এসসি দিয়ে বাড়িতে বসে আছে। এখনও তিন মাস পর রেজাল্ট। লিমা শ্বশুর শাশুড়ি বা তার স্বামী জায়েদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে মন ধরাধরি করলেও এই সুমির সঙ্গে কখনো রাগারাগি করার কোনো স্কোপই পাইনি। যাই হোক লিমা প্রথম সুমির কাছেই TFTC কথা তুলল। ব্যাপারটিতে লিমার থেমে সুমিরই যেন বেশি আগ্রহ দেখা দিল। কেননা সে এমনই কর্মচঞ্চল, যে কোনো ভালো বিষয়ে উদ্যোগি।
সুমির এই আগ্রহ দেখে লিমার এবার মনে মনে বলল –‘এই বালকে বলাই ভুল হয়েছে দেখছি, এ তো এখন পিছু ছাড়বে না।’
শেষে হলোও তাই – লিমা ও সুমি ভর্তি হয়ে গেল টেনশন ফ্রি ট্রেনিং সেন্টার এ। সপ্তাহে দুদিন ক্লাস।
নারীদেরকে স্বরোজগার করে তোলার এই ব্যবস্থাপনা কতটা ইতিবাচক তা আজকে ভেবে দেখার অবকাশ আছে বলে আমি মনে করি। দেখুন যেখানে মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন নারী জাতিকে একেবারে উপযুক্তভাবে হেফাজত করার তথা তার সার্বিক কল্যাণের জন্য প্রথম দায়িত্ব চাপিয়েছেন তার পিতার উপর।এখানে সেই পিতার এটাই ধর্ম।তাই তো হাদীসে এসেছে-আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যার তিনটি কন্যাসন্তান থাকবে এবং সে তাদের কষ্ট-যাতনায় ধৈর্য ধরবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুহাম্মদ ইবন ইউনূসের বর্ণনায় এ হাদীসে অতিরিক্ত অংশ হিসেবে এসেছে) একব্যক্তি প্রশ্ন করলো, হে আল্লাহর রাসুল, যদি দু’জন হয়? উত্তরে তিনি বললেন, দু’জন হলেও। লোকটি আবার প্রশ্ন করলো, যদি একজন হয় হে আল্লাহর রাসুল? তিনি বললেন, একজন হলেও। ’ (বাইহাকি, শুয়াবুল ঈমান : ৮৩১১)
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয়, তখন তার মুখ অন্ধকার হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে। তাকে শোনানো সুসংবাদের দুঃখে সে লোকদের কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে থাকে। সে ভাবে, অপমান সহ্য করে তাকে থাকতে দেবে নাকি তাকে মাটির নিচে পুতে ফেলবে। শুনে রাখো, তাদের ফয়সালা খুবই নিকৃষ্ট। ’ (সুরা আন-নাহল, আয়াত : ৫৮-৫৯)
সত্যি কথা বলতে পৃথিবীতে ইসলামের এই সুমহান বার্তা আসার আগে কিন্তু পাল্লা পাল্লি দিয়ে অনেক পিতা তার কন্যা সন্তানটিকে জিবন্তই মাটিতে পুতে দিত। আর এটা তখন তাদের সমাজে তার সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধির কারণ হত। কি অবস্থা ছিল একবার ভাবুন।
যাই হোক যে কথাটা বলছিলাম এর পর একজন পিতা তার সেই কন্যাকে উপযুক্ত সময়ে সুপাত্রে পাত্রস্থ করবে। এবার সেই কন্যার যাবতীয় দায়-দায়িত্ব বর্তে গেল তার স্বামীর উপর। তার স্বামীই তার ভরণ-পোষণ .ঔষধ-পানি যা কিছু লাগবে দিবে। এটা সেই স্বামীর ধর্ম , কর্তব্য। ব্যাপারটাকে সে মোটেই হালকা করে দেখতে পারেনা। দেখুন এ ব্যাপারে ইসলাম কী বলেছে।
আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘পুরুষগণ নারীদের প্রতি দায়িত্বশীল, যেহেতু আল্লাহ একের ওপর অন্যকে প্রাধান্য দিয়েছেন এবং তারা তাদের সম্পদ হতে ব্যয়ও করে।’ (সুরা: ৪ নিসা, আয়াত: ৩৪)। স্ত্রীর প্রতি স্বামীর প্রথম দায়িত্ব বা কর্তব্য হলো মহর পরিশোধ করা। বিয়েটা টাকার অভাবে যদি বাকিতে সারে তবুও পরে তা পরিশোধ করতে হবে। কোনো ছাড় নেই। কিস্তিতেও পরিশোধ করা যাবে। মহর পরিশোধ না করে মৃত্যু হলে তা ঋণ রূপে পরিশোধ করতে হবে।
বিয়ের পর স্বামীর প্রতি দায়িত্ব হলো স্ত্রীকে খোরপোশ ও বাসস্থান দেওয়া। এই তিন মৌলিক চাহিদার প্রথমটি হলো খাদ্য। স্বামীর সামর্থ্য অনুযায়ী স্ত্রীর উপযুক্ত প্রয়োজনমতো খাদ্য যথাসময়ে নিয়মিত স্ত্রীকে দিতে হবে বা ব্যবস্থা করে দিতে হবে। উল্লেখ্য, খাদ্য বলতে তাৎক্ষণিক খাবারের উপযোগী দ্রব্য বা প্রস্তুত করা খাবার। অর্থাৎ খাবার সরবরাহ করা যেহেতু স্বামীর দায়িত্বে; সুতরাং খাবার প্রস্তুত করা স্ত্রীর দায়িত্ব নয়। মৌলিক চাহিদা তিনটির দ্বিতীয়টি হলো পোশাক। স্বামী স্ত্রীকে স্বীয় সামর্থ্য অনুসারে স্ত্রীর প্রয়োজনমতো তাঁর যোগ্য পোশাক দেবেন। প্রয়োজনীয় পোশাক প্রদান করা যেহেতু স্বামীর দায়িত্ব; তাই সে পোশাক প্রস্তুত করার ব্যয়ও স্বামীর ওপরই বর্তাবে।

স্ত্রীর মৌলিক অধিকারের তৃতীয়টি হলো নিরাপদ বাসস্থান বা নিরাপদ আবাসন। অর্থাৎ, স্বামী স্ত্রীকে থাকার জন্য এমন একটি ঘর বা কক্ষ দেবেন, যে ঘর বা কক্ষে স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া (স্বামী ব্যতীত) কেউই প্রবেশ করতে পারবেন না। এমনকি স্বামীর মা-বাবা, ভাইবোনও না। স্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে প্রয়োজনে এই ঘরে বা কক্ষে তিনি তালাচাবিও ব্যবহার করতে পারেন। একটু চিন্তা করে দেখুন। একজন নারীকে ইসলাম কীভাবে সম্মানের সঙ্গে মর্যাদার সঙ্গে জীবন-যাপন করা গ্যারান্টি দিয়েছে – অধিকার দিয়েছে। মনে রাখবেন স্ত্রীর কোনো ব্যক্তিগত বা গোপনীয় বিষয়ে স্বামী ছাড়া কেউই নাক গলাতে পারবেন না। স্ত্রীর স্যুটকেট, ট্রাঙ্ক ও আলমারি স্বামী ছাড়া কেউ তল্লাশি করতে পারবেই না। (শরহে বেকায়া, কিতাবুন নিকাহ)।
তবে হ্যা স্ত্রীরা তার
স্বামীর সংসারে কাজকর্ম করার জন্য নফল ইবাদতের সওয়াব পাবেন। অসচ্ছল ও অভাবী স্বামীর সংসারে স্ত্রী কাজকর্ম করলে স্বামীর উপার্জনে সহায়তা এবং সন্তানদের প্রতি সহযোগিতা করা হবে বিরাট সোয়াবের কাজ।
ভেবে দেখুন তো কি মিষ্টি সম্পর্কের বাঁধনে নারীদের আল্লাহ একের পর এক বেঁধে দিয়েছেন।
এর পর সেই স্ত্রীর যখন বয়োবৃদ্ধ হয়ে পড়বেন তখন তার দায়-দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার সন্তানদের উপর।
দেখুন পিতার-মাতা সম্পর্কে ইসলাম কী বলেছে-‘আল্লাহ তাআলা বলেন, وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا ۖ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا “তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, কোন কিছুর সাথে তার শরিক করোনা এবং পিতা-মাতার সাথে উত্তম ব্যবহার কর” (সূরা নিসা ৩৬ আয়াত)।
মায়ের যে কী মর্যাদা তা আমরা খুব কমই অনুভব করতে পারি। দেখুন মায়ের মর্যাদার সম্পর্কে হাদিসের বানী –বলা হয়েছেমায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত
أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَبْدِ الْحَكَمِ الْوَرَّاقُ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي مُحَمَّدُ بْنُ طَلْحَةَ وَهُوَ ابْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ طَلْحَةَ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ جَاهِمَةَ السَّلَمِيِّ، أَنَّ جَاهِمَةَ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَرَدْتُ أَنْ أَغْزُوَ وَقَدْ جِئْتُ أَسْتَشِيرُكَ، فَقَالَ: «هَلْ لَكَ مِنْ أُمٍّ؟» قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: «فَالْزَمْهَا، فَإِنَّ الْجَنَّةَ تَحْتَ رِجْلَيْهَا» মুআবিয়া ইব্‌ন জাহিমা সালামী (রাঃ)
আমার পিতা জাহিমা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমতে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! আমি যুদ্ধে যাওয়ার ইচ্ছা করেছি। এখন আপনার নিকট পরামর্শ জিজ্ঞাসা করতে এসেছি। তিনি বললেনঃ তোমার মা আছেন কি? সে বললোঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তাঁর খিদমতে লেগে থাক। কেননা, জান্নাত তাঁর দু’পায়ের নিচে।সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৩১০৪
হাদিসের মান: হাসান সহিহ।
তাহলে আজকে আল্লাহ তার দ্বীনের মাধ্যমে নারীদের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সমস্ত দায়িত্ব কোনো পুরুষকে দিয়েছেন্। সেখানে আজ আমরা কোন শিক্ষায় শিক্ষিত হলাম , বস্তুবাদীদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে আমরা আমাদের ঘরের কোমল মতি মা বোনদের কী কষ্টটাই না দিতে শুরু করেছি ভাবুন। তাদের নরম হাতের ছোঁয়া থেকে আমরা আমাদের সন্তানদের বঞ্চিত করে হলেও তাদের ঘরের বাইরে পাঠাচ্ছি ইনকামের জন্য। এতে করে আমরা আমাদের মা-বোনদের তথা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের যে কত বড় সর্বনাশ করছি তা ভাবতে গেলে মাথা ঘুরে যায়।
সুমি ও লিমা এক সাথে চলে গেল একটি সিএনজিতে করে ট্রেনিং সেন্টারে। এটা দেখে শয়তানের মুখ খুশিতে লাল হয়ে উঠল। কেননা অনেক পর্দানশীন ছিল এই সুমি। সেও আজ ইনকামের নেশায় বাড়ির বাইরে গেল। এদিকে পচুর দোকানের আড়াল থেকে পুরো ব্যাপারটা দেখে তুহিনেরও পান ভরা কালো মুখ লাল হয়ে উঠেছে…….

– এই সুজুক টাই তো খুজছিলাম তোমাকে ঘর থেকে বেড় করার।যাই হোক তাহলে তো আমার কাজ প্রায় আগাচ্ছে। এবার লিমা তোমাকে কে আটকাবে?? ওমা সাথে তো দেখি আরো একটা মেয়ে ও আছে। এতো বেশি হয়ে গেল।
হা হা হা।

– আচ্ছা ভাবি আমরা যে আসলাম কাউকে তো জানালাম না।
– আরে কাউকে জানালে কি আসতে দিত। তুমি কাউকে বলছ নাকি আবার?
– নাহ ভাবি কাউকেই বলি নাই।
– কিন্তু তাও তো কেমন যেন হলো না। আচ্ছা তুমি ভালোভাবে জেনে নিছো এটা আসলে সত্যি কিনা?
– আরে হ্যা আমার একজন ভালো বন্ধু আছে। আমি জানি সে কখনো আমার খারাপ চাইবে না।
– কিন্তু ভাবি
– কোনো কিন্তু না চলো।
আমি ওর কথা মত সেই জায়গায় গেলাম। গিয়ে দেখি তুহিন দড়িয়ে আছে।
– হে লিমা কেমন আছো?
– ভালো।
– এ কে?
– আমার ননদ।
তুহিন বলল ওহ্হ আচ্ছা যাগ ভালোই হইছে৷ চলো এখন নিয়ে যাই।

>>>

(চলবে)

(আসসালামু আলাইকুম। কেমন হইছে সবার মতামত আশা করছি৷ আর আজকের পার্ট সম্পূর্ণ টা আমি লিখিনি একজন পাঠক লিখেছেন আমি শুধু গল্পের সাথে মিলিয়ে দিছি। ধন্যবাদ তাকে। ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

আলো থেকে অন্ধকার পর্ব-০৬

0

#আলো_থেকে_অন্ধকার
Part:-06
Writer:- #Esrat_jahan_Esha

সংসারের প্রতি আমার মন উঠে গেল। আমার না আছে বাচ্চার প্রতি খেয়াল না আছে নিজের সংসারকে টিকিয়ে রাখার ইচ্ছে।
সারাদিন শুধু তুহিনের কথা মনে পড়ে। এখন আমার জায়েদ কেও সহ্য হয় না। তাই তার থেকে বিছানাই আলাদা করে নিয়েছি।

– লিমা লিমা কই তুমি লিমা
– কি হইছে এভাবে ডাকতাছেন কেন?
– এভাবে সব সময় ধমক দিয়ে কথা বল কেন? তোমার মাঝে এমন পরিবর্তন কেন হইছে?
– ওহ্হ তাই এখন আর আমাকে ভালো লাগে না। আমি খারাপ যেটা আপনার মা বলে? কি তাই নাকি?
– নাহ আমি এমন ভাবে কিছু বলিনি সরি।
– এইযে শুনেন আমি ঘরের কোনো কাজ করতে পারব না।
– মানে
– পারব না মানে পারব না।
– তাহলে কে করবে?
আমি মাথা ঠান্ডা করে বল্লাম শুনেন শ্বশুর শাশুড়ির সাথে অনেক অন্যায় করেছি। আমরা তার চেয়ে আবার আগের মত হয়ে যাই সবাই মিলে একসাথে থাকি।
– না লিমা থাক যারা আমার সংসার ভাংতে চায় তাদের সাথে যোগাযোগ রেখে লাভ নাই। আমরা তো এমনিতেই ভালো আছি।
– না থাক তাদের সাথে আরেকবার সব কিছু ঠিক করে নেই।
– আচ্ছা তুমি যা ভালো মনে কর।
– তুমি গিয়ে মায়ের পায়ে পড়বে। আর বলবে মা আমরা ভুল করছি আমাদের ক্ষমা করে দাও। মা আমরা আবার একসাথে থাকি। সবাই মিলে আবার একক পরিবার হয়ে যাই।
– আমি তাহলে যাচ্ছি।

তারপর আমি তুহিন কে ফোন দিলাম

– হ্যা তুমি যেভাবে বলছ আমি ঠিক সেইভাবেই করেছি। সবার সাথে আবার মিল করার কথা বলেছি। জায়েদ বলছে আজকেই সব ঠিক করে নিবে।
– আচ্ছা এখন তো তোমার কোনো সমস্যা নাই।
– মানে।
– মানে তুমি বুঝ না। এই যে এখন তোমার কোনো কাজ করা লাগবে না ছেলে নিয়াও কোনো টেনশন নাই৷ এখন তুমি স্বাধীন ইচ্ছে মত যেখানে খুশি যেতে পারবে।
– ওহ্হ ঠিকি তো তোমার মাথায় অনেক বুদ্ধি।
– আচ্ছা শোনো সবার সাথে ভালো ব্যবহার করবে। এমন ভাব নিবে তুমি খুব ভালো মেয়ে।
– কেন আমি কি খারাপ?
– আরে না তা বলিনি।
– শোন ২-৩ দিন পর আমার সাথে দেখা করবে।
– আচ্ছা আচ্ছা করব খুশি তো এবার।
– হুমম অনেক খুশি।
– আচ্ছা এখন রাখি।
– ওকে ডিয়ার
_________

– মা প্লিজ আমাদের ক্ষমা করে দাও আমরা ভুল করছি। আমরা আবার একসাথে থাকি মা আমাদের ক্ষমা কর।
– দেখ খোকা যা হইছে হইছে কারো ঘরে আমরা আগুন লাগাতে যাব না।
– মা দেখ ভুল করেছি ক্ষমা কর।
– কেন এখন ক্ষমা চাচ্ছ কেন? ব্যবসায় লস হইছে হাজার হাজার টাকা ধার দেনা করে এখন আবার আসছ আদিক্ষেতা দেখাতে? শোন জায়েদ আমি তোর বাবা কখনো কারো কাছে হাত পাতিনি। দরকার হয় না খেয়ে থেকেছি কিন্তু তাও ধার দেনা এত্ত করি নাই।

গায়ে খেটে পরিশ্রম করে রক্ত পানি করে ব্যবসাকে এত দূর দার করিয়েছি। ভেবেছিলাম ২ ছেলেকে নিয়ে আস্তে আস্তে ব্যবসাটাকে এগিয়ে নিয়ে যাব। কিন্তু তুমি সেটা করলে না বউয়ের কথা মত নিজের সবকিছু ভাগ করে নিয়ে চলে গেছ। একজন মা কখনো সন্তানের খারাপ চায় না।

– বাবা দেখ লিমার কোনো দোষ নেই সব দোষ আমার। যা করার আমি করেছি। আর যা বলতে চাও আমাকে বল।

– হুমম তা তো বুঝি কার দোষ আর কার দোষ না। (বাবা)
– ঐ মেয়ে কি দিয়ে যে আমার ছেলেটাকে এইভাবে নিজের কাছে বস করে রেখেছে। আল্লাহ ভালো জানে৷ (মা)

আমি দেখলাম সবাই খুব খেপা তাই আর জায়েদ এর আশায় না থেকে নিজেই গিয়ে শ্বশুর শাশুড়ির পায়ে ধরে পড়লাম।
– মা আমি ভুল করেছি আমাকে ক্ষমা করুন আমি আর কখনো এমন ভুল করব না। আমাকে ক্ষমা করে দিন।
শ্বশুর শাশুড়ির কোনো সারা শব্দ নেই তারা পাথরের মত দাড়িয়ে আছে। তারপর পাশ থেকে সুমিকে জরিয়ে ধরে বলি। প্লিজ সুমি আমাকে ক্ষমা কর আমিতো তোমার ভাবি। আমি অনেক ভুল করছি তোমরা ক্ষমা কর না প্লিজ।

পাশ থেকে সাকিল এসে বল্লো তা এখানে আবার কি নতুন নাটক শুরু হইছে? একটা দিন কি শান্তিতে থাকতে পারব না। বুঝলাম না আমরা তো আর কারো সংসারে গিয়ে হস্তক্ষেপ করি না তাও কেন আমাদের সাথে ঝগড়া করে? ঘরে অশান্তির সৃষ্টি করে।

জায়েদ কে গিয়ে বল্লাম ছোট ভাইকে বুঝাও।
– সাকিল আমি আর তোর ভাবি অনেক অন্যায় করেছি। প্লিজ ক্ষমা করে দে। আমি তোকে ঐ দিন মেরেছি তাই না রে ভাই আমাকে ক্ষমা কর।

সাকিল হা হয়ে তাকিয়ে আছে।
– এই কি সেই ভাই যে ২ দিন আগেও আমাকে দেখলে বলত গায়ে আগুন জ্বলে। আমাকে নাকি ভাই পরিচয় দিতে লজ্জা করে। কত কথা আজ সেই ভাইয়ের আবার কি হল।

কেউ আমাদের ক্ষমা করতে রাজি না। আমি আলিফ কে সামনে নিয়ে বল্লাম তোমরা আলিফের মূখের দিকে তাকিয়ে আমাদের ক্ষমা কর।
পরে সবাই আমাদের ক্ষমা করে। আমরা একসাথে সবাই মিলে আবার আগের মত হয়ে যাই।

৫-৬ দিন চলে গেল কেউ তেমন কথা বলে না। তাই আমি সুমির কাছে গেলাম গিয়ে সুমি আমার উপর রেগে আছ। তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দাও।
– নাহ ভাবি আমি রেগে নেই। এমনি
– আচ্ছা চল আজকে আমরা সবাই লুডু খেলব কি বল?
– অনিচ্ছা সত্যেও সুমি বল্লো আচ্ছা চলো ভাবি।
– আচ্ছা ভাইয়া কে ডেকে আন আমি সাকিল কে ডেকে আনি।
-আচ্ছা।
___

– এই যে চলেন আমরা আজকে লুডু খেলব।
– কাদের সাথে?
– সুমি সাকিল আপনি আমি।
– আমি ওদের সাথে খেলব না।
– কেন?
– শোন তোমার জন্য আমি শুধু এক হয়েছি না হলে কখনো আমি এক হতাম না। সব গুলো খারাপ আমার সংসার ভাংতে চায় তুমি কেন ওদের সাথে মিলতে গেলে? বুঝিনা (একটু রাগ নিয়ে)
-আরে গাধা তুই যদি এখন সবার সাথে না মেশ তাহলে খাবি কি? ব্যবসা তো অর্ধেক শেষ করছ কয়দিন পর ফকির হয়ে যাবি। তারপর আমার কি হবে? (মনেমনে) আরে বাদ দেন যা হওয়ার হইছে।
– নাহ আমি যাব না।
– আমি যেতে বলছি আর যেন একটা কথাও না বাড়ে।( চোখ গরম দিয়ে)
– চলো।

-সাকিল এদিকে আয়।
– কোথায়?
– ওরে এখন বল্লে তো ও আসবে না। তার চেয়ে টেনে নিয়ে যাই ( মনে মনে) আরে চল তো।
– কই নিয়ে যাচ্ছিস আমায়। আপু ছেড়ে দে তুই একটা পত্নি শাঁকচুন্নি ছাড় আমাকে।

সুমি টানতে টানতে মায়ের রুমে নিয়ে আসে। মা সবার হাসি মুখ দেখে খুশি। সে আলিফ কে নিয়ে খেলা করছে। আর বলছে কতদিন পর আমাদের ঘরে আবার সুখ ফিরে এল তাই না দাদু নাই

সাকিল আমাদের দেখে মুখ কালো করে বলে।
– আপু এখানে কেন আনলি?
– আরে সবাই মিলে লুডু খেলব।
-কি?
– ওমন করছিস কেন।
– তা ভাইয়া তুমি কি কুরআন হাদিস সব ভুলে গেছ?
– কেন কি বলতে চাস তুই?
– ভাইয়া তুমি যান না? লুডু খেলা হারাম।
জায়েদ একটু ভুরু কুচকে তাকায় বলে আসলেই আমার মনে নেই। তুই একটু খুলে বল তো।
– লুডু খেলা দাবা খেলা এগুলো হারাম।

দাবা, লুডু ও ক্যারাম (অথবা ক্যারোম) আমাদের সমাজে প্রচলিত তিনটি খেলার নাম। তিনটিই গুটি দিয়ে খেলা হয়। পাশা খেলা এগুলোর সমগোত্রীয় খেলা। এসকল খেলাগুলোর উৎপত্তি ভারতীয় উপমহাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ায়। এ সকল খেলাগুলো সম্পূর্ণ হারাম। চাই তা জুয়ার দ্বারা হোক কিংবা জুয়া ছাড়া এমনিই হোক না কেন। সর্বাবস্থায় হারাম। হাদীসে কঠোরভাবে এ খেলাগুলো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ এসেছে। যেমন,
حَدَّثَنِي عَنْ مَالِكٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ مَيْسَرَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أبِي هِنْدٍ, عَنْ أبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : مَنْ لَعِبَ بِالنَّرْدِ فَقَدْ عَصَى اللَّهَ وَرَسُولَهُ

অর্থাৎ আবূ মূসা আশআরী (রা.) হতে বর্ণিত, “যে ব্যক্তি পাশা বা দাবা খেললো, সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্য হলো।”
[মুয়াত্তা মালিক, হা. ৭৬৯; সুনান আবূ দাউদ, হা. ৪৯৩৮]

وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِكٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ : أَنَّهُ كَانَ إِذَا وَجَدَ أَحَداً مِنْ أَهْلِهِ يَلْعَبُ بِالنَّرْدِ ضَرَبَهُ وَكَسَرَهَا
অর্থাৎ “আব্দল্লাহ ইবনে উমর (রা.) যদি তাঁর পরিবারের কাউকে দাবা বা পাশা খেলা দেখতেন, তাহলে তাকে মারতেন এবং দাবা ভেঙে ফেলতেন।”

[মুয়াত্তা মালিক; আওজাযুল মাসালেক, শায়খুল হাদীস যাকারিয়া কন্ধলভী, ১৭/৫৩]

সহীহ মুসলিমের হাদীসে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

“যে ব্যক্তি পাশা বা দাবা খেললো সে যেন তার হাত শুকরের মাংস ও রক্তে ডুবালো।”
عن أبيه أن النبي صلى الله عليه وسلم قال من لعب بالنردشير فكأنما صبغ يده في لحم خنزير ودمه
[সহীহ মুসলিম, হা. ২২৬০; সুনানে আবূ দাউদ, হা. ৪৯৩৯; সুনানে ইবনে মাজাহ, হা. ৩৭৬৩; সুনানুল কুবরা, নাসায়ী; তালখীসুল হাবীর, খ. ৪, পৃ. ৬৩]

শায়খুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন,

“ইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল (রহ.) বলেন, “দাবা বা পাশা খেলোয়ারকে সালাম দিবে না, কেননা সে প্রকাশ্যে জঘন্য পাপে লিপ্ত।”
[মজমউল ফাতাওয়া, ৩২/২৪৫]

*দাবা-লুডু-ক্যারাম একই খেলা*

ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)’র ছাত্র ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান (রহ.) বলেন,

قَالَ مُحَمَّدٌ: لا خَيْرَ بِاللَّعِبِ كُلِّهَا مِنَ النَّرْدِ، وَالشِّطْرَنْجِ، وَغَيْرِ ذَلِكَ

অর্থাৎ “পাশা, শতরঞ্জ (দাবা) ও এরকম অন্যান্য খেলা খেলে কোনো কল্যাণ নেই ।”

[মুয়াত্তা মুহাম্মাদ, হা. ৯০৫ এর আলোচনায়, প্র. মাকতাবাতুল ইলমিয়া]

সুতরাং এটি পরিষ্কার যে, দাবা-লুডু-ক্যারাম সব একই খেলা। এগুলো সব হারাম। আলী (রা.) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন, “দাবা অনারবদের জুয়া খেলা।” এর দ্বারা দাবাসহ গুটি দিয়ে খেলা অন্যান্য অনারবীয় খেলাগুলো অর্থাৎ লুডু, ক্যারামও হারাম প্রমাণিত হচ্ছে। কেননা এগুলো অনারবীয় এবং এগুলো গুটি দিয়ে খেলা হয়।

ফুকাহায়ে কেরামগণ বলেছেন, পাশা বা দাবার ন্যায় গুটি দিয়ে খেলা অন্যান্য খেলাগুলোও হারাম।

[আল মুগনী, ১৩/১৫৪, ১৫৫; আল ফুরূ’ ৬/৫৭৩; আল ইনসাফ, ১২/৫২, ৫৩]

সুতরাং পাশা, দাবা, লুডু ও ক্যারাম এসকল হারাম খেলা থেকে আমরা নিজেরা ত বিরত থাকবোই, অন্যদেরও বিরত রাখবো

এদের যাই করি তাই নিষেধ এর জন্যই এদের আমার ভালো লাগে না উফফ( মনে মন)

– ওহ্হ হে এটা তো আমি জানি। ইদানীং কেন জেন এগুলো সব ভুলে যাই।

শ্বাশুড়ি মা একটু সন্দেহের চোখে তাকাল। যে তার ছেলে আসলেই সব কিছু ভুলে যাচ্ছে আগের মত নামাজ রোজা এসবের প্রতি কেমন যেন উদাসীন।

আমি তারাতারি করে বল্লাম তাহলে কি আমরা কিছু খেলব না???
সুমি বলে হুম আমরা খাতা কলমে খেলি।
– ভাবি চলো আমরা চোর পুলিশ খেলি।
– আচ্ছা চলো।
– যা তো সাকিল গিয়ে খাতা কলম নিয়ে আয়।
– আপু তুই সব সময় আমাকে বল কেন তুই খারাপ খারাপ খারাপ। পত্নি শাঁকচুন্নি।
– হো তোর গালি দেওয়া হইছে তাহলে এখন যা।
– যাই যাই।
সবাই মিলে অনেক মজা করলাম।

১৫ দিন এর মত আমরা খুব সুখেই ছিলাম। তারপর আবার অশান্তি শুরু হল।
তুহিন ফোন দিয়ে বল্লো কি লিমা,,,,,,,,,,,,,,

চলবে,,,,,,,,,,

( আসসালামু আলাইকুম। কেমন হইছে জানাবেন। ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।দোয়া করবেন সবাই)

আলো থেকে অন্ধকার পর্ব-০৫

0

#আলো_থেকে_অন্ধকার
Part:-05
Writer :- #Esrat_jahan_Esha

– লিমা তুমি কার সাথে কথা বল?
– মা,,,,ম,,,, মা আপনি?
– কেন সুমি আশায় যেমন আগে অসুবিধা হত তেমন কি আমার আশায় তোমার অসুবিধা হল?
– না মানে?
– মানে কি এর জন্যই কি তুমি আমার মেয়েকে ঘরে আসতে দিতে না। তোমার ঘরে যেন যায় তাই জায়েদ কে দিয়ে বকা দিছ।
ছি লিমা লঘিমা ছি। আমি ভাবছিলাম হয়ত সুমি মিথ্যা বলছে এখন তো দেখি এটাই সত্যি।
– আপনি কি দেখছেন হুমম। কার সাথে কথা বলছি আমি?
– আমি স্পষ্ট দেখলাম তুমি কথা বলছ।আর আমি কিছু কথা শুনেছি।
– ওহ্হ শুনেও গেছেন। তা ভালো যেহুতু জেনেই গেছেন আর বলছেন আমি ভালো না। তাহলে চলে যান এ বাড়ি থেকে।
– কি বল্লা তুমি?
– হুমম কেন কানে কম শুনেন নাকি?
– আমি জায়েদ এর সাথে বলব।
– আচ্ছা বলেন।
জায়েদ ঘরে আসার সাথে সাথে আমি কান্না করে দিলাম।
– কি হইছে কাঁদছ কেন?
– তা শুনে কি করবেন?
– কি বল এসব।
– আমার সংসারে আগুন লাগাতে চায়।
– কি বল এসব।
– আপনার মা আমাকে বলে আমি নাকি কোনো কাজ করি না। সারাদিন আমাকে বকাঝকা করে। আমার জন্য নাকি সে শান্তি পায় না। বলছে তোমার স্বামীকে বল সে যেন আলাদা হয়। আমি অনেক বুঝাইছি যে মা আলাদা হব কেন? আমি বেশি অন্যায় করছি।আমাকে ক্ষমা করুন।
কিন্তু সে আমাকে বলে দেখ তোমার নামে ছেলের কাছে বিচার দিব। হয় তোমরা থাকবে না হয় আমরা থাকব। তারপর আমাকে একটা চর মারে আর বলে আমি তোমার হাড়ি আলাদা করে দিব।
– কি মা এগুলা বলছে?
– শোন তুৃমি আমার অপমানে যদি কিছু না বল তাহলে দেখ আমি চলে যাব।
– আচ্ছা আমি দেখছি।

তখন উনাকে আমি বস করে রাখি তাই উনি আমার কথাই বিশ্বাস করে। আর কাউকে সহ্য করত না। আমার কথা মত উনি সব করত।
★★★

আমার থেকে কোনো মেয়ে এভাবে চলে যেতে পারে নি লিমা তুমি আমার কাছে আসবেই। একদিনের জন্য হলেও আমি তোমাকে আমার কাছে আনব। তোমাকে কখনো সুখে থাকতে দিব না।
তোমাকে সুখে থাকতে ভুতে কিলায় লিমা। কেনো আমার সাথে যোগাযোগ করলে? নিজেকে শেষ করার জন্য? এতদিন একদিনের জন্য তোমাকে আমার কাছে আসতে বল্লাম তুমি আসলে না।
তুমি তোমার ছেলে স্বামী নিয়ে সুখে থাকতে চাও। আর আমার সাথেও যোগাযোগ রাখবে বন্ধুর মত।
বন্ধু????? হা হা হা( শয়তানি হাসি দিয়ে)

লিমা তুমি তোমার স্বামীকে বস কর। তোমার টাকা দিয়ে আমি আমি তোমাকে বস করব। সব কিছু কেরে নিব তোমার সব কিছু।

– বাবা আপনি আমাকে এমন একটা তাবিজ দেন যাতে লিমার স্বামী লিমার সব কথা শুনে। আর ওর শ্বশুর বাড়ির সবাইকে যেন অপছন্দ করে।
আর লিমা যেন আমার বসে থাকে লিমাকে আমি যা বলব ও যেন তাই করে।
– আচ্ছা,,, এই নে তোর তাবিজ। একটা লিমার হাতে দিতে বলবি। আর অন্যটা লিমার স্বামীর।
– কিন্তু বাবা
– কিন্তু কি?
– বাবা লিমা বলছে ওর স্বামী নাকি কোনো তাবিজ দিতে দেয় না। তাবিজ দেওয়া নাকি শির্ক। তাই অন্যভাবে দিতে বলছে। ওর স্বামী কখনোই তাবিজ দিবে না।
– আচ্ছা তাহলে ঐ তাবিজটা ওর স্বামী যে বালিসে ঘুমায় সেই বালিসে মধ্যে ভরে রাখতে বলবি। আর একটা তাবিজ দিচ্ছি প্রতিদিন সরবতের সাথে এটা একবার ভিজাতে বলবি।

তুহিন লিমা আর ওর স্বামী দুজনকেই বস করার জন্য তাবিজ দেয়।
★★★

– তুমি তাদের বলবে হাড়ি আলাদা হবে। আর বলবে তুমি এখন থেকে তাদের মাসিক টাকা দিবা আর কোনো বাজার দিবা না।
– আচ্ছা।
– আচ্ছা না এখনি যাও।
জায়েদ গিয়ে মায়ের ঘরে দাড়ায়।তুমি যা চাইছিলে তাই হবে। কাল থেকে হাড়ি আলাদা হবে
আর আমি মাসে মাসে তোমাদের টাকা দিব। কোনো বাজার দিতে পারব না।
– এগুলো কি বলিস বড় খোকা?
– যা বলছে শুনতে পেয়েছেন নিশ্চয়ই (লিমা)
-তুমি আমার ছেলেকে দিয়ে এগুলো বলাচ্ছ? তোমার আমরা কি ক্ষতি করছি?
– হইছে হইছে মা তুমি লিমাকে কিছু বলবা না। লিমা যা বলে তাই ঠিক। আর কখনো লিমার সাথে খারাপ ব্যবহার করবে না। তাহলে একদম বাড়ি থেকে বেড় করে দিব।
– ভাইয়া মায়ের সাথে এ কেমন আচরন কর? (সাকিল)
– এহহ মা বাবার জন্য একদম দরদ উৎলে উঠছে যখন কামাই করে খাওয়াবি তারপর বলিস।
– শোন ভাইয়া বাবা এখনো যা রোজকার করে তাতে মনে হয় না তোর কামাই বাবা এখন প্রযন্ত খেয়েছে। আর বাবা শুনলে তোকেই বেড় করে দিব।
-কি এতত বড় সাহস?
জায়েদ সাকিলের গালে সজোরে একটা চর মারে।

তারপর আমি উনাকে নিয়ে চলে গেলাম আর বল্লাম আজকের পর আমার কথার উপরে কেউ কথা বলার চেষ্টা করবেন না।

এদিকে তুহিনের জন্য আমার মন অন্য রকম হয়ে যায় মনে হয় ও আমার সব। ও যা বলবে আমি তাই করতে পারি মরতে বল্লে এখানেই মরতে পারি।

– লিমা জান আমাকে কয়টা টাকা দিত পার?
– টাকা কেন দেব?
– দিবে কিনা বল?
– দিব কত টাকা লাগবে বিশ হাজার।
– কিভাবে আনব এত টাকা?
– তোমার স্বামীকে বল
– কেন বল্লেই কি দিবে?
– বলবে না দিলে একটু ধমক দিবে।
– আচ্ছা।
______

-শোন আমার কিছু টাকা লাগবে
– কত টাকা?
– ২০হাজার।
– এখন টাকা দিতে পারব না। এখন নতুন পন্য কিনব।
– তুই টাকা দিবি কিনা বল?

জায়েদ যেন ভয়ে কুকরে যায়।
– আচ্ছা কাল দিয়ে দিব।

এইতো কতত ভালো আমি তোমাকে সরবত বানিয়ে দেই।

তারপর তুহিন কে টাকা পাঠিয়ে দেই।

★★★

ওহ্হ টাকা কত ভাবে টাকা এই টাকা দিয়ে আমি ১ মাস আয়েস করে খেতে পারব।
তুহিন টাকা দিয়ে প্রতিদিন নেশায় আসক্ত হয়। ঘরে শুরু করে মদের আড্ডা।
খারাপের চরম পর্যায়ে চলে যায়।
★★★
তুহিনের চাহিদা বাড়তেই থাকে। তার উপর সংসারের অশান্তি প্রতিদিন আমি শুধু সবার সাথে ঝগড়া করতাম। আর তুহিনের সাথে কথা বলতাম ও যেমন বলত আমিও তেমন করতাম।
এভাবে তুহিন কে ৩ লক্ষ টাকা আস্তে আস্তে দিলাম।

আমার স্বামী কিছুই বলে না। যা বলি তাই শুনে এমন কি বাতরুমে গেলেও আমাকে বলে যেত।
,,,
সব আমার হুকুমে হত। আমার কাজ টাজ করতে আর ভালো লাগে না সংসারের প্রতি আমার মন উঠে গেল তারপর,,,,,,,,,,

চলবে

আলো থেকে অন্ধকার পর্ব-০৪

0

#আলো_থেকে_অন্ধকার
Part:-04
writer:-#Esrat_jahan_Esha

সুমি এই সুমি কই তুই?
– জ্বি ভাইয়া আমি তো মায়ের ঘরে আছি।
– আচ্ছা আমি আসছি৷
জায়েদ ঘরে গিয়ে দেখল আলিফকে ( রামিম নাম টা নাকি ভালো না তাই অনেকই নাম চেন্জ করতে বলছে তাই পরিবর্তন করে আলিফ দিলাম) নিয়ে সুমি খেলা করছে। পাশে মাও বসে আছে।

– সুমি তোর সাথে আমার কথা ছিল। কিন্তু তুই রাগ করবি না। বোঝার চেষ্টা করবি।
– জ্বি ভাইয়া বল তোমার কথায় আমি কি কখনো রাগ করছি। আমি জানি তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসো।
– তুই তোর ভাবি কে কি বলেছিস?
– ভাইয়া আমি তো,,,,,,
আমিও মায়ের রুমে গিয়ে দাড়ালাম। আমাকে দেখে আমার মূখের দিকে তাকিয়ে আছে। জায়েদ আমাকে দেখে আবার সুমি কে জিজ্ঞেস করল।
– কিরে কিছু বলছিস না কেন? তুই তোর ভাবিকে নাকি বলছ কার সাথে প্রেম করে তার জন্য নাকি আলিফের খেয়াল রাখে না। fb imo এগুলো নাকি চালাতে মানা করছ? সে নাকি ঘরের কোনো কাজ করে না?

সুমি ওর ভাইয়ার অবাক দৃষ্টিতে মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
– ভাইয়া এগুলো আমি কখন বল্লাম?

আমার মনে ভয় হতে লাগল সুমি যদি ওর ভাইকে কিছু বলে তাহলে। সাথে সাথে বল্লাম। থাক ছোট মানুষ কি বলতে কি বলেছে। বাদ দেন ও খুব ভয় পেয়ে গেছে। আর আমার ননদ কে এইভাবে দেখতে ভালো লাগে না।
– দেখ তোর ভাবি তোকে কত ভালোবাসে তাও তুই তোর ভাবিকে ঐসব কথা কেন বল্লি??
শোন বড়দের সাথে কখনো এভাবে কথা বলতে হয় না। তুই না আমার বোন আমি আশা করিনা তুই এতো খারাপ ভাবে একজন মানুষকে বলতে পারস তাও তোর নিজের ভাবি। যে তোকে কতই না ভালোবাসে।

সুমির শুধু চোখ দিয়ে পানি পড়ছে আর ওর ভাইয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু বলতে গিয়েও যেন চুপ হয়ে গেছে।
– যা ভাবির কাছে গিয়ে ক্ষমা চাও।
– ভাইয়া,,,
– আমি কি বলছি?
সুমি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। আমার মনে হয় ওর চোখ দিয়ে আমাকে এটাই বুঝাতে চাইছে ভাবি তুমি এটা কিভাবে পারলে? তোমাকে তো খুব ভালোবাসি। আর এগুলো তো কিছুই তোমাকে বল্লাম না। যদি ক্ষমা চাওয়ার হয় তাহলে তো তোমার চাওয়ার কথা।

সুমি চোখে তখন স্পষ্ট আমার জন্য একরাশ ঘৃণা দেখতে পেয়েছি চোখ নামিয়ে বল্লো।

– দুঃখীত তোমার মোবাইল ধরার জন্য। আর কখনো তোমার মোবাইল ধরব না। যা বলছি তাতে যদি তুমি কষ্ট পাও আমাকে মাফ করে দিবা।

জায়েদ ওর কথার ধরন শুনে চমকে উঠে মোবাইল ধরার জন্য?

আমি তারাতারি সুমি কে জরিয়ে ধরি আর বলি আমি কিছু মনে করিনি। আর তুমি মোবাইল কেন ধরবে না হুমম। তুমি যখন তখন আমার ফোন ধরবে।
তারপর কানের কাছে মূখ নিয়ে বল্লাম কখনো অন্যের ব্যপারে নাক গলাবে না।

তারপর সবাই মিলে কতক্ষণ কথা বলি। সুমিকে খেয়াল করলাম মুখ কালো করে সবার মূখের দিকে তাকিয়ে আছে।

আমরা আলিফ কে নিয়ে চলে যাই।

★★★
সুমি তুই কি সত্যি তোর ভাবিকে এগুলো বলছিস?
– মা বিশ্বাস কর এইরকম কোনো কথায় হয় নি। আর মা আমি দোষী না। যদি কেউ দোষী হয় তাহলে ভাবি দোষী।
– কি হইছিল?
– মা আমি ভাবির ঘরে গিয়েছিলাম ভাবির মোবাইলে ছবি তোলার জন্য। কিন্তু ভাবির ফোনে একটা মেসেজ আসল জান পরে কখন অনলাইনে আসবে?
– আমি sms টা দেখে ভিতরে গিয়ে দেখি সে আমার ভাই না। অন্য কোনো ছেলের সাথে নানা রকম কথা। তার মধ্যে এমন একটা sms ছিল দেখ তুমি আমার কাছে ফিরে এসো কবে আসবে বল? আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি তোমাকে অনেক সূখে রাখব।

সাথে সাথে ভাবি আমার থেকে মোবাইল টেনে নিল। আর বল্লো তুমি আমার মোবাইল কেন ধরেছ? ভাবি আমি ছবি তুলতে এসছি কিন্তু ভাবি ছেলেটা কে যার সাথে তুমি কথা বল। আমার ভাইয়ের সংসার নষ্ট কর না।
তারপর ভাবি আমাকে অনেক বকাঝকা করছে। আর ভাবি বলছে আমার বিয়ে হয় না কেন। আমি নাকি ভাইয়ার টাকা সব খেয়ে ফেলি।

– মা বিশ্বাস কর আমি ঐ sms গুলো দেখিছি তার জন্য ভাবি আমার সাথে এমন করল।
– যাই হোক বাদ দে হয়ত কোনো ফ্রেন্ড মন খারাপ করিস না। তোর ভাইয়াকে যা বুঝানো হয়েছে তাই সে বুঝছে। হয়ত একদিন বুঝতে পারবে৷

সুমি ওর মাকে ধরে কান্না শুরু করে।
★★★
ওহ্হ যাক সুমিকে উচিৎ শিক্ষা দেওয়া গেল। আর কখনো আমার মোবাইলে হাত দিবে না।
– কি হলো মন খারাপ করে বসে আছ কেন?
– সুমি আমার আদরের বোন কখনো ওর সাথে এমন ভাবে কথা বলিনি।
– এহহ গা একদম জ্বলে যায়(মনে মনে) আচ্ছা শোন মন খারাপ কর না। যা হবার তা হয়েছে আর ও রাগ করে নেই। ও ওর ভুল বুঝতে পেরেছে।
– হুমম।
– আচ্ছা আপনি খেয়ে আসুন আমি আলিফ কে ঘুম পারাই নেই।
-কেন তুমি খাবে না?
– নাহ আমার আজ খেতে ভালো লাগছে না। আপনি খেয়ে আসুন।
– তুমি না খেয়ে থাকবে তা হবে না।
– তুমি আলিফ কে ঘুম পারাও আমি তোমার খাবার নিয়ে আসছি। আজকে আমি তোমাকে খাইয়ে দিব।
– আচ্ছা ( মুচকি হাসে)

জায়েদ খেতে যাওয়ার পর।
আমি তুহিন কে sms করলাম
– তুহিন আজকে আমার ননদি তোমার sms গুলো পড়েছে। অনেক কষ্টে আমার স্বামীকে ম্যানেজ করছি।
– ওহ্হ। তা কোনো সমস্যা হয় নাই তো?
– নাহ কোনো সমস্যা হয় নি। তবে উনি যদি কখনো আমাকে ভুল বুঝে তারপর মোবাইল অফ করে দেয়।
– শোন তুমি তোমার স্বামীকে বস করে নাও।
– বস করব মানে?
– আমি তোমাকে কিছু তাবিজ এনে দিব যাতে সে তোমার কথায় উঠবে আর বসবে।
– কি বল এইসব এটা কিভাবে সম্ভব?
– তা তোমার ভাবতে হবে না। আমি দেখছি ওকে। তবে আমাকে কিছু টাকা দিতে হবে এর জন্য। এখন আমার কাছে টাকা পয়সা নেই।
– কত টাকা লাগবে?
– ১০,০০০ মত দাও।
– এত টাকা কই পাবো?
– আরে শোন তোমার সুখের জন্য বলছি। খারাপ চাইনা তোমার। তোমার স্বামীকে বস করলে তোমার কথায় উঠবে বসবে। তোমার কথা সব বিশ্বাস করবে। তারপর তোমার শ্বশুর শাশুড়ির ননদ তাদের। কথা বিশ্বাস তো দূরে থাক কথায় ভালোভাবে শুনবে না। সব তোমার কথা তেই হবে।
– আচ্ছা তুমি কর। যত টাকা লাগে দিব। পরে কতা হবে।
– ওকে।
★★★
লিমা তুই এত বড় জঘন্য কাজ করতে পারলি কিভাবে?
– দেখ মিম তখন আমার মাথায় কাজ করেনি। আমি কি করব বল। আমি শয়তানের ধোঁকায় পরে করেছি।
– শয়তানের ধোকা? আরে ঐ তাবিজ গুলো ছিল কুফ্ফারি কালাম। যাকে আমরা ব্ল্যাক মাজিক/ কালোজাদু বলি।
তুই জানিস এটা হচ্ছে আল্লাহর সাথে শিরক করা। আর আল্লাহ শিরক কারীদের কখনো ক্ষমা করেন না।
শিরক হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার মানা, আল্লাহর অস্তিত্ব ও গুণরাজিকে কাউকে শরীক করে নেয়া। প্রাচীনকাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ বিভিন্নভাবে খোদার খোদায়ীত্বে শরীক বানিয়েছে। মানুষ কখনও একাধিক খোদা বানিয়েছে। কখনও খোদাকে বিভিন্নভাবে বিভক্ত করেছে। আবার কখনও বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি ও বস্তুকে খোদা বানিয়েছে। কখনও নিজেরাই মূর্তি তৈরি করে তার পূঁজা করেছে। আবার কখনও কখনও শক্তিশালী মানুষকে খোদার মর্যাদা দিয়েছে।

শিরক সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন- ‘আল্লাহর সঙ্গে শরীক করো না। নিশ্চিত জেনে রেখো শিরক হচ্ছে অতি বড় জুলুম।’ (লুকমান ১৩)

‘নিশ্চয় জেনো, আল্লাহর সঙ্গে শরীক বানানোর যে পাপ তা তিনি ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্য যে কোন পাপ তিনি যাকে ইচ্ছা মাফ করে দেবেন। বস্তুত যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে শরীক করে, সে তো উদ্ভাবন করে নিয়েছে এক গুরুতর মিথ্যা।’ (নিসা ৪৮)

‘আল্লাহ তো একমাত্র ইলাহ। সন্তানাদি থেকে তিনি সম্পূর্ণ পবিত্র। আসমান ও যমিনে যা কিছু আছে সবই তো তাঁর।’(নিসা ১৭১)

‘যে আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকেও ডাকে। তার সমর্থনে তার হাতে কোন দলিল প্রমাণ নেই। তার হিসাব-নিকাশ হবে আল্লাহর নিকট। এ ধরনের কাফেররা কিছুতেই কল্যাণ ও সফলতা লাভ করতে পারে না।’ (মুমিনুন ১১৭)

‘লোকেরা তাঁর কতিপয় বান্দাকে তাঁর অংশ মনে করে নিয়েছে। প্রকৃত কথা এই যে, মানুষ সুস্পষ্টরূপে অকৃতজ্ঞ।’ (যুখরুফ ১৫)

‘তিনি তো আসমান ও যমিনের উদ্ভাবক। কি করে তাঁর সন্তান হতে পারে অথচ তার তো জীবন সঙ্গিনিই কেউ নেই? তিনি সব জিনিস সৃষ্টি করেছেন।’ (আনআম ১০১)

‘তোমরা কেবলমাত্র আল্লাহরই দাসত্ব ও ইবাদত করো। আর অন্য কোন কিছুকেই তাঁর সঙ্গে শরীক করো না।’ (নিসা ৩৬)

‘অতএব যে ব্যক্তি তার রবের সঙ্গে সাক্ষাত লাভের আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে সে যেন নিষ্ঠার সঙ্গে সৎকর্ম সম্পাদন করতে থাকে আর তার রবের দাসত্ব, ইবাদ-বন্দেগিতে যেন অপর কাউকেও শরীক না করে।’ (কাহাফ ১১০)

শিরক সম্পর্কে হাদীস : হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন নবী করীম (সা.) কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ করবে যে, সে তাঁর সঙ্গে শিরক করে না, সে অবশ্যই বেহেশতে প্রবেশ করবে। আর যে তাঁর সঙ্গে শিরক করা অবস্থায় সাক্ষাৎ করবে, সে জাহান্নামে যাবে।’ (মুসলিম)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করীম (সা.) বলেছেন, কবীরা গোনাহ হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া, কাউকে হত্যা করা ও মিথ্যা শপথ করা। (বুখারী)

হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক পাপ হতে বিরত থাকবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে সাতটি পাপ কি কি? তিনি বললেন, এগুলো হল- আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক করা, যাদু করা, শরীয়তের অনুমোদন ব্যতিরেকে কাউকে হত্যা করা, সুদ খাওয়া, এতিমের মাল আত্মসাৎ করা, জিহাদের ময়দান হতে পলায়ন করা এবং অচেতন পবিত্র ঈমানদার মহিলাদের বিরুদ্ধে ব্যভিচারের মিথ্যা অভিযোগ আনা। (বুখারী-মুসলিম)

– তুই এগুলো কিভাবে জানলি?
– সেটা যখন আমার ঘটনা তোকে বলব তখন তোকে বলব কিভাবে জানি।
তবে তুই যা করছ এটাও ঠিক না। কি হইছিল তোর যে এই রকম জঘন্য কাজ করতে পারলি?
– তুই এভাবে বলিস না। আমি এত কিছু বুঝতে পারিনি রে।
আমি ভুল করছি সুমির সাথে ঐ রকম করার পর থেকেই ঘরে একটার পর একটা অশান্তি লাগে আর সব কিছুর কারন ছিল ঐ তুহিন্না। জানোয়ার আমার জীবনটা নষ্ট করে দিছে নষ্ট করে দিছে আমার সোনার সংসার।

সেদিন যখন তুহিনের সাথে ফোনে কথা বলি তুখন আমার শ্বাশুড়ি সব শুনে ফেলে।
– লিমা তুমি কার সাথে কথা বল????

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,

( আসসালামু আলাইকুম কেমন হইছে জানাবেন। ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। বানান গুলো একটু বুঝে পড়ে নিবেন প্লিজ)

আলো থেকে অন্ধকার পর্ব-২+৩

0

#আলো_থেকে_অন্ধকার
Part:-02+03
Writer:- Esrat jahan Esha

সাকিলঃ- আপনি?????
লিমাঃ- হুমম আমি। কেমন আছো?
সাকিলঃ- কি পাপের জন্য আল্লাহ আপনার মত একজন মহিলার সাথে আবার দেখা করাল?

লিমা মাথা নিচু করে চোখের জলে একাকার হয়ে গেছে। যে ছেলেটা সারাদিন পিছনে ঘুর ঘুর করত আর বলত ভাবি তুমি আমার শুধু ভাবি না তুমি আমার বড় বোন। ভাবি তুমি অনেক ভালো সুমি আপু পচা কিছু হলেই আমাকে শুধু মারে। ভাবি তুমি আমাকে সুমি আপুর থেকে বেশি আদর করবা।
আর সেই সাকিল আজ আমাকে এমন কথা বলল।
বলবেই বা না কেন আমি তো এটাই পাওয়ার যোগ্য।

-আচ্ছা এটা কি আমার ছেলে?
-নাহ।
– তাহলে কে?
-আমার সন্তান।
– তোমার তো এখনো বিয়ের বয়স হয় নাই।
– জন্ম দিলে যেমন মা হওয়া যায় না। তেমন বিয়ে না করলেও সন্তানের বাবা হওয়া যায়।
-তার মানে এটাই আমার রামিম?
– পথ ছাড়ুন। আর ঐ মূখে আমার ভাতিজার নাম নিবেন না।
– কি বলছ এসব। হুমম আমি ভুল করেছি কিন্তু আমি আমার শাস্তিও পাচ্ছি।
– দেখুন আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাই না। সুতরাং পথ ছাড়ুন।
– সাকিল দেখ আমার একটা অনুরোধ শুধু রাখ। একটু খানি আমার সন্তান কে কোলে দাও প্লিজ। তাহলেই আমি চলে যাব।
– কখনোই না। আমার বাচ্চা কে আমি কোনো ডাইনির কোলে দিতে পারব না।

সাকিল চোখের পলকে বাসে উঠে উধাও হয়ে গেল।

আমি চুপচাপ ওখান থেকে চলে আসি। ঐ যে সামনের গলি ঐখানে একটা ঘরে আমি ভারা থাকি।
জিবনে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছে। কত ভালো ছিল আমার জিবন।

আমি হারালাম আমার সংসার হারালাম বাবা মা। বাবা মা তারও ত্যাগ করে দিয়েছে। আচ্ছা আমার ভুলের কি কোনো ক্ষমা হত না।

মিমঃ-সব ভুলের ক্ষমা হয় না। ভুলের ক্ষমা ততক্ষণ পর্যন্ত পাওয়া যায় যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের জিবন একটা পেন্সিল মত থাকে। ভুল হলে সাথে সাথে মুছে ফেলি। কিন্তু যখন কলম এর মত জিবন শুরু হয় তখন আর কিছুই মোছা যায় না। ফুল স্টপ টা পর্যন্ত স্পষ্ট খাতায় দেখা যায়। ( মিম লিমার বর্তমান সাথী,, তারও জীবনের একটা গল্প আছে যা ছিল পরিস্থিতির শিকার)

লিমাঃ- জানিস মিম আমার স্বামী অনেক ভালোছিল। সে আমাকে অনেক ভালোবাসত অনেক কেয়ার করত। আমার ছেলে স্বামী আমার শ্বশুর বাড়ির লোক সবাই অনেক ভালো ছিল।

মিমঃ- আচ্ছা আজকে তোর সম্পর্কে বল কিভাবে কি হল? এত সুন্দর সংসার ছেড়ে তুই কিভাবে এখানে আসলি?

লিমা তাহলে শোন।,,,,,,,,,,,

আমার সংসার খুব সূখের ছিল। নিজেকে অনেক লাকি ভাবতাম আমার ছেলের যখন ১ বছর তখন আমার স্বামী কে বল্লাম আমার অনেক সখ ছেলের অনেক বড় করে জন্মদিন করব।

– লিমা এটা কি বল? জন্মদিন পালন করব মানে কি? এটা মুসলমান এর মধ্যে আছে?
– কেন এখানে কি সমস্যা? জন্মদিন করলে কি মহাভারত অসুদ্ধ হবে একটু শুনি তো।
– জন্মদিন দিন পালন করা আামাদের ধর্মে নাই।এটা বির্ধর্মীদের কালচার। এটা আমাদের মুসলমানদের জন্য জায়েজ নয়। আচ্ছা শোন রাসুল (সঃ) কি বলে শোন

জন্মদিন পালন করা কি হারাম?
=======================
উত্তরঃ শুধু জন্মদিন নয় কোন ম্যারিজ ডে, মৃত্যুদিবস ইত্যাদি যা-ই হোক না কেন, কোন দিবস-ই পালন করা জায়েজ নয়।

প্রথম কারনঃ বিজাতির অনুকরণ
===========
এই ধরণের যত প্রকার দিবস রয়েছে সেগুলোর কোনটাই মুসলিমদের সংস্কৃতি নয়।
যদি এগুলো মুসলিমদের সংস্কৃতি হত তবে এগুলো সাহাবাদের যুগ থেকেই পালিত হয়ে আসতো। তাই যেহেতু এগুলো মুসলিমদের সংস্কৃতি নয় তাহলে বুঝাই যাচ্ছে যে এগুলো কাফের-মুশরিক বিজাতীয়দের সংস্কৃতি থেকে এসেছে।
আর এ প্রসঙ্গে রাসূল ﷺ বলেছেন,
‘যে ব্যক্তি যে জাতির অনুকরণ করবে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই একজন বলে গণ্য হবে’
( আবূ দাঊদ হা/৪০৩১) ।
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস রাঃ থেকে বর্ণিত রাসূল সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি মুশরিকদের দেশে বাড়ী তৈরি করল তাদের উৎসব দিবস পালন করল এবং এ অবস্থায় মারা গেল তবে তার হাশর তাদের সাথেই হবে। (সূনানে বাইহাকীঃ ২৩৪)
নবী মুহাম্মাদ (ﷺ) বলেন, “যে ব্যক্তি বিজাতির তরীকা অনুযায়ী আমল করে, সে আমাদের কেউ নয়।”(ত্বাবারানী, সিলসিলাহ সহীহাহ ২১৯৪নং)
“আমাদের তরীকা ওদের (মুশরিকদের) তরীকা থেকে ভিন্ন।”(বাইহাকী ৫/১২৫, সিলসিলাহ সহীহাহ ২১৯৪)
সাওবান (রা:) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আমি সবচেয়ে যাদের বেশী ভয় করি তারা হচ্ছে নেতা ও এক শ্রেনীর আলেম সমাজ। অচিরেই আমার উম্মতের কিছু লোক মূর্তিপূজা করবে। আর অতি শীঘ্রই আমার উম্মতের কিছু লোক বিজাতিদের সাথে মিশে যাবে।” [ইবনে মাজাহঃ ৩৯৫২। হাদ সহি]
আবূ সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত। নাবী (স.) বলেছেন, “অবশ্য অবশ্যই তোমরা তোমাদের আগের লোকদের নীতি-পদ্ধতিকে বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে অনুকরণ করবে। এমনকি তারা যদি গুইসাপের গর্তে ঢুকে, তাহলে তোমরাও তাদের অনুকরণ করবে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসূল (স.)! এরা কি ইয়াহুদী ও নাসারা? তিনি (স.) বললেন, আর কারা?” –[সহীহুল বুখারী ৭৩২]
দ্বিতীয় কারনঃ মুসলিমদের জন্য দিবস শুধু ২ টি
===========
ইসলামে দুটি দিবস ব্যতীত অন্য তৃতীয় কোন দিবস পালন করা তো এমনেতেই নিষেধ।
আনাস (রা) বলেন, “রাসুল (সা) মদীনায় আগমন করে দেখলেন যে, মদীনাবাসীরা দুটি ঈদ (আনন্দের দিন) পালন করছে ৷ তা দেখে রাসূল (সা)বললেন, জাহীলিয়াতের যুগে তোমাদের দুটি দিন ছিল যাতে তোমরা খেলাধূলা, আনন্দ-ফুর্তি করতে এখন ঐ দিনগুলির পরিবর্তে আল্লাহ্ তোমাদেরকে দুটি উত্তম দিন প্রদান করেছেন, ঈদুল ফিৎর ও ঈদুল আযহার দিন। (আবূ দাউদ: ১০০৪, নাসাই: ১৫৫৫ হাদীস সহীহ)
এই হাদিসে আল্লাহ্‌র রাসুল (সাঃ) বলেছেন ঐ দুটি দিনের পরিবর্তে আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে দুটি উত্তম দিন প্রদান করেছেন। যেহেতু আল্লাহ্‌র রাসুল (সাঃ) অন্য মানব রচিত গুলো পরিবর্তন করে আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে দুটি উত্তম দিন প্রদান করেছেন তাই অন্য যে কোন দিবস পালন করা এমনেতেই বাতিল হয়ে যায়।
তাই কোন মুসলিমদের জন্য অন্য কোন প্রকার দিবস পালন করা বৈধ নয়, হোক সেটা জন্মদিন, শোক দিবস, মাতৃভাষা দিবস, বিজয় দিবস, নববর্ষ ইত্যাদি যা-ই হোক না কেন, তা পালন করা যাবে না।
=========================
এরপরেও কি আমরা সতর্ক হবো না??
অতএব মুসলিমরা যদি জান্নাতের আশা করে এবং জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচতে চায় তবে তারা আল্লাহ্‌ এবং তাঁর রাসুলের দিকে ফিরে আসুক।

– তা না হয় বুঝলাম সব কিছুতেই তোমার লজিক আছেই।
– শোন আমাদের জন্য ইসলাম পূর্ণ জিবন বিধান। আমরা কেন মুসলিম হয়ে অন্য ধর্মের চাল চলন গ্রহন করব। আমরা চাইলে আমার ধর্মীয় ভাবে আমাদের জিবন সুন্দর ভাবে সাজাতে পারব।
– হুমম বুঝলাম। তাও ছেলের মঙ্গল কামনায় কিছু করতে পারি না???
– হুমম পারিতো,, এতিম খানায় দান করতে পারি। কিছু গরিব লোক ডেকে তাদের ভালো মন্দ খাওয়াতে পারি। নামাজ পড়ে আমার সন্তানের জন্য দোয়া করতে পারি সেই মহান রবের দরবারে।
– ওহ্হ তাহলে তাই করেন।
– আচ্ছা ঠিক আছে। আমি দেখছি।
– আচ্ছা আমার একটা আবদার আছে রাখবেন? প্লিজ না করবেন না প্লিজ প্লিজ।
– আচ্ছা বল শুনি। চেষ্টা করব
– ছেলেকে একটা টাচ মোবাইল কিনে দিবেন?
– এই পিচ্চি ছেলের জন্য মোবাইল? হা হা হা,,,,,, নিজের জন্য লাগবে সেটা বল্লেই তো হয় আমি কি না করতাম।
– আচ্ছা তাহলে দিবেন?
– আচ্ছা দিব ইনশাআল্লাহ। খুশিতো এবার?
– অনেক অনেক খুশি।
– তুমি খুশি থাকলেই আমি খুশি।

তারপর সে আমাকে একটা মোবাইল গিফট করল।
আমিতো অনেক খুশি। খুশিতে তাকে জরিয়ে ধরে একটা কিস করে দেই।
– এই হাসি আর এই খুশি আমি সারাজীবন দেখতে চাই।

আল্লাহ আমাদের ছেলে সন্তান দিছে খুশি হয়ে কয়েক জন গরিব লোক দাওয়াত করে সমার্থ অনুযায়ী তাদের আপ্যায়ন করি।

রামিমের বাবা এতিমখানায় ও কিছু টাকা দান করে।

-অনেক দিন তো হল এভাবে নিরামিশ মোবাইল ভালো লাগে না।
তো মাবাইল যেহুতু দিছে তাই তাকে বল্লাম এভাবে শুধু মোবাইল দিয়ে কি করব। আপনি আমাকে ফেইজবুক ইমো এগুলো খুলে দেন।
তারপর সে খুলে দিল।

তারপর একদিন হটাৎ তুহিনের কথা মনে হল তখন মনে মনে বল্লাম তুহিনের নম্বর টা imo তে এডড করে দেখি।
সেভ করার সাথে সাথে তুহিনের একাউন্ট চলে আসে।

আর তখন থেকে আমার মনে অশান্তি শুরু হতে লাগল। কিছুই ভালো লাগছে না কি করব না করব। একটা sms দিয়ে দেখব কেমন আছে?
না থাক দিব না।

তারপর ডাটা অফ করে মোবাইল রেখে চলে গেলাম।সারাদিন রামিম কে নিয়ে ব্যস্ত থাকলাম। মনের অশান্তি যেন থামছেই না। উফফ কেন যে নম্বরটা imo তে সেভ করলাম।

তারপর মনের সাথে যুদ্ধ করে আর পেরে উঠি নি।তারপর আমি নিজেই sms দিলাম।

– কেমন আছো?
১ ঘন্টা পর রিপ্লাই আসে।

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,

( আসসালামু আলাইকুম ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর ভুলগুলো ধরিয়ে দিবেন। বানান গুলো অনেক সংশোধন করার চেষ্টা করছি কিন্তু ভুল থেকেই যায়। তাই কষ্ট করে বুঝে নিবেন)

#আলো_থেকে_অন্ধকার
Part:-03
Writer:- Esrat jahan Esha

১ ঘন্টা পর রিপ্লাই আসে,,,
– কে আপনি?
– আমি লিমা।
– লিমা তুমি?
– তুমি এত দিনে আমার কথা একবার ও মনে করলে না। জান আমি তোমাকে কত ভালোবাসতাম।
– আচ্ছা এগুলো বাদ দেও যা হবার তা তো হয়েই গেছে। তাইনা
– হুমম। তোমাকে আর কখনো পাবো না?
– সেটা তো আর সম্ভব না। আমার একটা ছেলে আছে।
– ওহ্হ।
– তুমি এতদিন জেলে ছিলা কেন?
– একথা তোমাকে কে বলছে?
– আমার বাবা। তুমি কি ভাবছ আমি কি তোমার কোনো খবর রাখি না।
– হুমম। ছিলাম আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়ে ছিল। বিশ্বাস করো আমি নির্দোষ। আমি কিছু করি নি।তোমার কসম।
– আমার কসম মানে?? আল্লাহ ব্যতিত কারো নামে কসম কাটা শির্ক।
– ওহ্হ আচ্ছা আল্লাহর কসম।

লিমা লিমা ও লিমা কই তুমি দেখো কত বড় বড় মাছ আনছি।

– আচ্ছা আমার স্বামী আমাকে ডাকছে। বায়।
– আচ্ছা বায় পড়ে আবার আসবে কিন্তু তোমার সাথে জরুরি কথা আছে।
– আচ্ছা দেখি।

ডাটা অফ করে ওনার ডাকে সারা দিলাম।
– কি হইছে এত ডাকেন কেন? হুমম। সব সময় খালি আমাকে ডাকতে হবে।
– আরে রাগ করো কেন? তোমার পছন্দের মাছ আনছি। তুমি না বোয়াল মাছ খেতে ভালোবাসো।
– ওহ্হ হ্যা ভালোবাসি। (মুচকি হাসি দিয়ে)
– আর কি বল্লে তোমাকে সারাদিন ডাকব না তো কাকে ডাকব হুমম। নাকি সতীন চাও???
– ঐ কি বল্লেন।
– কিছুনা।
– আপনি সতীন আনবেন?
– তাহলে তো তোমাকে আর বেশি ডাকব না।
– আপনার মুখে আর একদিন যদি সতীন এর কথা শুনি একদম আমি মরে যাব হুমম।
– আচ্ছা ঠিক আছে।
– ঠিক আছে মানে কি?
– তুমি আমার সব। বুঝেছ তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি। তোমার আগে পড়ে কেউ থাকবে না অনেক ভালোবাসি।
– সত্যি??
– হুমম সত্যি, ভবিষ্যতে আল্লাহ যদি বাচিয়ে রাখে তাহলে আমরা বুড়া বুড়ি একি রকম ভালোবাসায় পারি দিব শেষ সময় পযন্ত।
আমাদের ২ জনের শুরুর পৃষ্ঠাতেও ভালোবাসা শেষেও পৃষ্ঠায় ও ভালোবাসা।

আচ্ছা রাতে তো মাছ কোটা হবে না। এখন ফ্রিজে রেখে এসো। আমি রুমে যাই।
– কেন এখন আর দোকানে যাবেন না?
– নাহ আজকে রামিম আর তোমাকে সময় দিব।
– জিহ্বায় কামর দিয়ে আল্লাহ উনি ঘরে গিয়ে যদি আমার মোবাইলটা চেক করে তাহলে। ( মনে মনে)
– কি হলো কি ভাবছ?
– আপনি রেখে আসেন আমি রুমে গেলাম। তারপর ওনার কপালে একটা কিস দিয়ে দৌরে ঘরে আসি। আমি জানি ওনাকে আমি ভালোবাসলে উনি আমার জন্য সব করেন।

সে হাসি মুখে ফ্রিজে মাছ রেখে আসে।
আমি তারাতারি ওর কথা গুলো ডিলেট করে দেই৷ আর sms দিয়ে রাখি তুহিন আমি sms না দিলে তুমি আমাকে sms করবা না।

সব sms ডিলেট করে নিশ্চিত হই। যাক বাচা গেল।
উনি ঘরে এসে সব সময় আমার মোবাইল চেক করত। আমি বুঝতাম। কিন্তু উনি বুঝতে দিত না। এমনি সন্দেহ করে না। তবে ভয় করতেন যদি দূর্ঘটনা হয়ে যায়।

রামিম ঘুম থেকে উঠলে জাবেদ ওর সাথে খেলা শুরু করে। আমি শুধু তাকিয়ে দেখতাম বাবা ছেলের সম্পর্ক কত মধুর। রামিম কে সে খুব ভালোবাসত।

কিন্তু আমার মন অশান্ত হয়ে আছে। কি থেকে কি হয়ে গেলো বার বার শুধু তুহিনের কথাই মনে হয়।
তার পর মনে মনে জাবেদ সাহেব কে গালি দিতে লাগলাম আজকেই আপনার তারাতারি বাড়িতে আশা লাগল। আগে।তো ১০ টার আগে আসতেন না।। আজ একদম ৭ টার সময় ঘরে।

– এই তোমাকে এত চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন? কিছু হয়েছে?
– কো,,,,,,, কই না তো
– একি তুমি লাফিয়ে উঠলে কেন?
– উফফ কই না তো। আপনি একদম বেশি ভাবেন।
– তোমার তো কিছু হইছেই। নাহ কিছু হয় নাই। এ লোক তো বেড় করেই ছাড়বে আমি এমন কেন করছি কথা ঘুরাতে হবে।

আচ্ছা একটা কথা জানার ছিল।

– হুমম কি কথা বল?
– আজকে আমি যখন খোপা বাধতে গেলাম সুমি আমাকে দেখে বলে ভাবি তুমি খোপা এত উচু করে বাধছ কেন?
– কেন কি হইছে?
– তুমি জানো না নবীজি এই ভাবে উচু করে বাধতে নিষেদ করছেন৷ তারপর আর বাধিনাই। কিন্তু আমি এই বিষয়টা সম্পর্কে ক্লিয়ার হতে চাই।
– ওহ আচ্ছা তাহলে শোনো,,,,,,,

মেয়েদের জন্য মাথায় চুলের খোপা বাধা জায়েয। কিন্তু মাথার উপর উটের কুজের মত উঁচু করে বাধা বৈধ নয়। কিন্তু পেছনে ঘাড়ের কাছে ফেলে রাখতে কোন সমস্যা নেই-যাতে উঁচু দেখাবে না।

আবু হুরায়রা রা. ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:-

صنفان من أهل النار لم أرهما تيجان بأيديهن سياط يضربون بها الناس يعني ظلماً ونساء كاسيات عاريات مائلات مميلات رؤوسهن كأسمنة البخت المائلة لا يدخلن الجنة ولا يجدن ريحها، وإن ريحها ليوجد من مسيرة كذا وكذا

“জাহান্নাম বাসী দুটি দল রয়েছে- যাদেরকে আমি এখনো দেখি নি। একদল এমন লোক যাদের হাতে গরুর লেজের মত লাঠি থাকবে যা দিয়ে তারা লোকদেরকে প্রহার করবে। আর অন্য দল এমন নারী যারা পোশাক পরেও উলঙ্গ থাকে। তারা অন্যদের তাদের প্রতি আকৃষ্ট করবে নিজেরাও অন্যদের প্রতি ঝুঁকবে। তাদের মস্তক উটের পিঠের কুজের মত হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এমনকি জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না অথচ এর ঘ্রাণ এত এত দূর থেকেও পাওয়া যায়।” [মুসলিম : ২১২৮]

হাদিসের ভাষা হল: “উটের পিঠের কুজের মত”। মাথার উপর চুল বাঁধলে বা ঝুটি থাকলেই তখন উটের পিঠের কুজের মত দেখা যাবে; অন্যথায় নয়।
আল্লাহু আলাম।

বুঝতে পেড়েছ,,,?
– হুমম বুঝতে পেড়েছি।
– কি বুঝেছ?
– সব সময় নিচু করে চুল বাধব। যাতে মাথার চেয়ে খোপা উচু না দেখায়।
– হুমম।
___★___
এভাবে ৫ মাসের মত কেটে গেল। তুহিনের সাথে ও মাঝে মাঝে কথা হত। আমি সব কিছু ডিলেট করে রাখতাম যাতে তার কখনো আমার প্রতি সন্দেহ না হয়। সে আমাকে অনেক ভালোবাসত আর বিশ্বাস করত।

তবে একদিন আমার ননদ সুমি ওর সাথে যে কথা বলি ও তা দেখে ফেলেছে। তারপর ও আমাকে বলছে
-ভাবি এই ছেলেটা কে?
আমি দাঁতে দাত চেপে বলি তুমি কেন আমার ফোনে হাত দিছ?
– কেন ভাবি তোমার আমার ভাই ছাড়া পার্সোনাল কেউ আছে?

উফফ তারাহুরোতে এই sms গুলো ডিলেট করতে মনে ছিল না ( মনে মনে)

– এসব কোন ধরনের কথা সুমি? তুমি আমার নামে অপবাদ দিতে চাও?
-না ভাবি আমি তো শুধু জানতে চাইলাম এই ছেলেটা কে? তোমাকে বাবু জান এগুলো বলে ডাকছে?

– সে কইফত আমি তোমাকে দিব না।
– বেড় হও আমার ঘর থেকে। বয়স তো কম হলো না এখোনো বাড়ি থেকে বিদায় হও না কেন? সংসারে আগুন লাগাতে চাও?
সুমি কান্না করতে করতে বেড়িয়ে যায়।

আমি মনে মনে অনেক ক্ষিপ্ত হই আর আমার মাথায় কোনো কাজ করে না। সুমি যদি কিছু ওর ভাইকে বলে দেয়। সেই ভয়ে আমি উনি আসার সাথে সাথেই
কান্না করে দেই, ,

– কি হইছে তোমার কাঁদছ কেন?
– আপনাকে বল্লে হয়ত আপনি বিশ্বাস করবেন না।
– কি হইছে বল?
– আমি আর imo fb কিছু চালাব না। যার জন্য আমাকে বাজে কথা শুনতে হবে তা আমি কখনোই চালাব না।
– উফফ আসল কথা বল। কে কি বলেছে এমনিতেই আজকে খুব মাথা বেথা করছে আরো তুমি যদি কান্না কর ভালো লাগে বল??
– আমি বল্লে তো আপনি বিশ্বাস করবেন না।
– বিশ্বাস করব। আমি জানি তুমি মিথ্যা বলবে না।
– আজকে সুমি আমার রুমে আসে তারপর ছেলেটা পাশে কান্না করছিল । ও যখন কান্না শুরু করে সাথে সাথে সুৃমি আসে আর আমাকে যা না তাই বলে।
বলে বাচ্চা কান্না করে তুমি চোখে দেখ না। তুমি কি দেখ মোবাইলে এত। ঘরের কাজ তো কিছুই কর না বাচ্চাটাকেও তো সামলাতে পার না।

কি কাউকে জুটিয়ে নিয়ছ নাকি হুমম। বাচ্চা আগে না মোবাইল আগে তারপর আমি বলি দেখ সুমি আমাকে এভাবে বাজে কথা বল না তুমি আসার সাথে সাথেই বলতে গেলে ও কেঁদে উঠে।

কিন্তু ও আমার কথা না শুনে বলে আমি জানি তুমি fb imo তে কারো সাথে কথা বল। তাই তো সংসারের কোনো খেয়াল নেই। বলে আমাকে ধাক্কা মেরে বিছানায় ফেলে দেয় আর রামিম কে রুমে নিয়ে যায়।

আমি সত্যি এমন মেয়ে না। এভাবে যদি শুধু শুধু আমার নামে অপবাদ দেয় তাহলে কেমন লাগে আরো বলছে আপনার কাছে নাকি আমার নামে নালিশ করবে।

– কি বল এসব সুমি এগুলো বলতে পারে?
– জানতাম বিশ্বাস করবেন না। আমিই তো মিথ্যুক। আমার অপমানে এবাড়ির কারো কিছু না।

– আচ্ছা আমি দেখছি তুমি কেদোনা।থামো আমি গিয়ে জিজ্ঞেস করে আসি। ও আর কখনো তোমার সাথে এমন ব্যবহার কখনো করবে না। ক্ষমা চাইবে তোমার কাছে। এখন থামো বলছি।

-(মনে মনে খুব খুশি হয়ে যাই ) থাক এমনি বকা দিয়েন কিন্তু বেশি কিছু বলার দরকার নেই। ও তো ছোট আমি তেমন কিছু মনে করিনি।
– আচ্ছা। তবে ওরে একটু তো বকা দিতেই হবে না হয় আবার কখন না কখন তোমাকে উল্টা পাল্টা বলে।
আমি যাই ওকে জিজ্ঞেস করে আসি।
,,,,,,সুমি সুমি এই সুমি,,,

চলবে,,,,,,,,,,,,,,

( আসসালামু আলাইকুম কেমন হইছে জানাবেন। ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। কিছু বানান ভুলে হলে বুঝে পড়ে নিবেন প্লিজ)

আলো থেকে অন্ধকার পর্ব-০১

0

#অালো_থেকে_অন্ধকার
Part:-01
writer:-Esrat jahan Esha

আজ যখন শহরের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন ৫ বছরের একটি শিশু কলে নিয়ে দাড়িয়ে আছে আমার দেবর। সরি দেবর বল্লে ভুল হবে। সে আমার প্রাক্তন দেবর।

জিবনে তখনি ভুল করেছি যখন আমি ২ বছরের বাচ্চা সহ আমার স্বামীকে ছেড়ে আমার বয়ফ্রেন্ড এর হাত ধরে রাতের আঁধারে পালিয়ে আসি। আর সেই রাতের অন্ধকার মৃত্যুর আগে পরে আমার জন্য অন্ধকার হয়ে থাকবে।

আমার মত ভুল আর কেউ যেন না করে। আমি সব সময় দোয়া রাখি আমার সকল মা বোনের জন্য।

আমি লিমা, ১৮ বছর বয়সে আমার বিয়ে হয় একজন ব্যবসাহীক এর সাথে। এই বিয়েতে আমি মোটেও রাজি ছিলাম না।
তবুও পরিবারের চাপে পড়ে বিয়েটা করে নিতে বাধ্য হই।

আমার ইচ্ছে ছিল আমি যাকে ভালোবাসি তাকে বিয়ে করার। তাকে নিয়ে আমি অনেক স্বপ্ন দেখতাম। ভবিস্যৎ জিবন নিয়ে অনেক প্ল্যান করেছিলাম। কিন্তু এমন কারো সাথে আমার বিয়ে হল তাকে স্বামী হিসাবে মানতে আমার প্রথম প্রথম কষ্ট হত।

আস্তে আস্তে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করি। সে আমাকে অনেক ভালোবাসত। আমি যতই তাকে অবহেলা কটু কথা বলতাম সব সে সহ্য করত। সে খুব সরল মনের ছিল।

আমি মোটেও নামাজ পড়তে চাইতাম না। কিন্তু সে আমাকে জোর করে পড়াত। আমাকে তিনি নতুন ভাবে আরবি শিখাতে শুরু করে। ছোট বেলাই কুরআন খতম দিয়েছি কিন্তু না পড়তে পড়তে ভুলে গিয়েছি।

সে আমাকে এতটাই ভালোবাসত যে সব কিছু মেনে নিত। কিন্তু আমি তাও কখনো তাকে বুঝিনি।
তবে নামাজের দিকে আমাকে মাফ করতেন না

বিবাহের প্রথম রাতে জাবেদ সাহেব বলেছিলেন। আজকে থেকে তুমি আমার অর্ধাঙ্গিনী। আর আমি আমার দ্বায়িত্ব,, পালন করব।
আর আল্লাহর জন্য তোমাকে ভালোবাসি। তুমি যাই যা করো না কেন আমি কিছু বলব না। কিন্তু ধর্মীয় নীতির বাইরে তুমি যাওয়ার চেষ্টা করবে না সব মেনে নিব কিন্তু নামাজ রোজা না করলে তুমি আমার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হবে।

সেদিন তার উপর অনেক রাগ ছিল আমার কিন্তু আমি তাকে বুঝতে দেই নি। মাথা নাড়িয়ে শুধু বল্লাম আচ্ছা।

তাকে বলার ইচ্ছে ছিল যে দেখুন আমি একজন কে ভালোবাসি। আমাকে তার কাছে যেতে দেন। কিন্তু বলিনি কারন তুহিনের সাথে আমার একটু মনোমালিন্য হয়। কিন্তু ওরে মন থেকে ভুলতে পারিনি।

মনে মনে ভাবলাম থাক যা হইছে মেনে নেই। বিয়ে তো হয়ে গেছে। এখন ভেবে আর লাভ কি।

আস্তে আস্তে সব মেনে নেই। সূখেই দিন কাটতে থাকে। তবে আমার মনে একটা অশান্তির বন্যা বয়ে যেত। বার বার তুহিনের কথা মনে হত। আর মন খারাপ হয়ে যেত। তাও বুকে পাথর চেপে নিজেকে স্বান্তনা দিতে থাকি। কই একটা বার তো খোজ নিল না। হয়ত সে ভুলে গেছে এমনিতে তো একটু তারকাটা টাইপ ছিল।

জাবেদঃ- লিমা লিমা আমার বিবি কোথায় তুমি।

লিমাঃ- উফফ এই লোকটা সারাদিন শুধু ডাকা ডাকি করে। কি বলবে এখন আবার।

গিয়ে দেখে জাবের লিমার জন্য একটি বোরকা নিয়ে এসেছে।

জাবেদঃ-এই নাও তোমার জন্য বোরকা এনেছি।

লিমাঃ- আমার এগুলা পড়লে গরম লাগে।

জাবেদঃ- ঠিক হয়ে যাবে। প্রথম প্রথম একটু কষ্ট হবে।

লিমাঃ- নাহ পড়ব না।

জাবেদের চেয়েহারায় রাগ স্পষ্ট ফুটে ওঠে।
শোনো লিমা আমি তোমাকে আগেই বলেছি ধর্মীয় বিষয় নিয়ে আমার সাথে তুমি কোনোরকম কথা বাড়াবে না।
আর শোনো তুমি আমার কাছে অমুল্য সম্পদ। আর আমি আমার সম্পদকে সব সময় হেফাজতে রাখতে চাই।
আর আল্লাহ কুরআনে পর্দার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

یٰۤاَیُّہَا النَّبِیُّ قُلۡ لِّاَزۡوَاجِکَ وَبَنٰتِکَ وَنِسَآءِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ یُدۡنِیۡنَ عَلَیۡہِنَّ مِنۡ جَلَابِیۡبِہِنَّ ؕ ذٰلِکَ اَدۡنٰۤی اَنۡ یُّعۡرَفۡنَ فَلَا یُؤۡذَیۡنَ ؕ وَکَانَ اللّٰہُ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا

হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।
শানে নুজুলঃ
তৎকালীন আরব সমাজে বাড়ির ভেতরে মল-মূত্র ত্যাগের বিশেষ ব্যবস্থা না থাকায় সম্ভান্ত পরিবারের নারীদেরকেও ভোর অন্ধকারে মল-মূত্র ত্যাগের জন্য পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে যেতে হত । একদা হযরত ছওদাহ (রাঃ) ও এরূপ মলমূত্র ত্যাগের উদ্দেশ্যে জনপদের বাইরে গমনকালে হযরত ওমর (রাঃ) তাঁকে তাঁর দৈহিক গঠনের পরিচয় জানতে পেরে তাঁকে ওই সময়ে ঘরের বাইরে বের হওয়ায় তিরস্কার করলেন । হযরত ছওদাহ (রাঃ) ফিরে গেলেন এবং হুযূর (ছঃ)-এর নিকট সমস্ত বৃত্তান্ত খুলে বললেন, তখন এ আয়াত কয়টি নাযিল হয় ।
—আল আহ্‌যাব – ৫৯

লিমাঃ- আচ্ছা ঠিক আছে পড়ব। কিন্তু সব সময় কি পর্দা করতে হবে?
জাবদঃ- হুমম তবে কয়েক জন বাদে।

লিমাঃ- তারা কারা?

জাবেদঃ- আল্লাহ তায়ালা বলেন___________

وَقُلۡ لِّلۡمُؤۡمِنٰتِ یَغۡضُضۡنَ مِنۡ اَبۡصَارِہِنَّ وَیَحۡفَظۡنَ فُرُوۡجَہُنَّ وَلَا یُبۡدِیۡنَ زِیۡنَتَہُنَّ اِلَّا مَا ظَہَرَ مِنۡہَا وَلۡیَضۡرِبۡنَ بِخُمُرِہِنَّ عَلٰی جُیُوۡبِہِنَّ ۪ وَلَا یُبۡدِیۡنَ زِیۡنَتَہُنَّ اِلَّا لِبُعُوۡلَتِہِنَّ اَوۡ اٰبَآئِہِنَّ اَوۡ اٰبَآءِ بُعُوۡلَتِہِنَّ اَوۡ اَبۡنَآئِہِنَّ اَوۡ اَبۡنَآءِ بُعُوۡلَتِہِنَّ اَوۡ اِخۡوَانِہِنَّ اَوۡ بَنِیۡۤ اِخۡوَانِہِنَّ اَوۡ بَنِیۡۤ اَخَوٰتِہِنَّ اَوۡ نِسَآئِہِنَّ اَوۡ مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُہُنَّ اَوِ التّٰبِعِیۡنَ غَیۡرِ اُولِی الۡاِرۡبَۃِ مِنَ الرِّجَالِ اَوِ الطِّفۡلِ الَّذِیۡنَ لَمۡ یَظۡہَرُوۡا عَلٰی عَوۡرٰتِ النِّسَآءِ ۪ وَلَا یَضۡرِبۡنَ بِاَرۡجُلِہِنَّ لِیُعۡلَمَ مَا یُخۡفِیۡنَ مِنۡ زِیۡنَتِہِنَّ ؕ وَتُوۡبُوۡۤا اِلَی اللّٰہِ جَمِیۡعًا اَیُّہَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।

—আন নূর – ৩১

লিমাঃ- তবে আমি তো এত দিন সবার সাথে চলাফেরা করছি। তো তার কি হবে?

জাবেদঃ- আল্লাহ ক্ষমাশীল। আল্লাহ পূর্ববের জন্য তাওবা করতে বলছেন।

লিমাঃ- ওহ্হ আচ্ছা

জাবেদঃ- এইতো আমার প্রিয় বিবি। (জাবেদ খুশি হয় অনেক)

লিমাঃ- এহহ আমাকে এরকম বোরকা পড়িয়ে একদম খুশি। ডং যত্তসব ( মনে মনে)

আচ্ছা খাবার দিচ্ছি খেয়ে যান।

জাবেদঃ- হুমম চলো।

ধর্মীয় দিকের কোনো কিছু অমান্য করলে কেমন যেন রাগি হয়ে যেত। তাই আমি সব কিছু মেনে নেই। আর বাবা মা ওনাকে অনেক ভালোবাসে তারা তাদের জামাইয়ের কথা না শুনলে উল্টো আমাকে বকে।

একবার বাবা কে বলছিলাম,,,, বাবা তোমার জামাই এমন কেন?

বাবাঃ- কেমন আমি জানি। তুমি কেমন তাও জানি। এত দিন যা করছ করছ কিছুই বলিনি। আমাকে বেশি বলতে বাধ্য কর না।

লিমাঃ- কি করছি?

বাবাঃ- ভালোই যদি হতে তাহলে তুহিন এর মত একটা তারকাটা ৪২০ ছেলের সাথে হারাম সম্পর্কে জারাতে না। যে ছেলেটা মদ গাজা,,,, চুল সাদা বান্দরের মত কালার করা। ওমন ছেলে তুমি কিভাবে পছন্দ করলে। দেখলেও তো ইচ্ছে করে যত ক্ষন শ্বাস নেয় ততক্ষণ পিটাই। কোনো আদব কায়দা আছে? বিয়ে করে ২ দিন পর ফেলে যেতে বিবেকে বাধত না। বিবেক বলতে কিছু আছে।

লিমাঃ- হইছে বাবা তুমি ওরে নিয়ে আর একটা কথাও বলবে না।

বাবাঃ- কি বলব না। ভালো হলে কি এখন জেলে থাকত?

লিমাঃ- তুহিন জেলে?

বাবাঃ- হুমম। তোমার যেদিন বিয়ে ঐদিন রাতে গাজা নিয়ে ওদের দলের সাথেই ঝগরা হয়। তারপর একজন কে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
এখন ৬ মাসের জেল হয়ে গেছে।

লিমাঃ- এই জন্যই ওর কোনো খোজ নাই (মনেমনে)।
লিমা ভাবে তাহলে তো সত্যি খারাপ। ও কিছু না বলে বাবার কাছ থেকে চলে যায়।

তারপর চিন্তা করে থাক যেমন আছি তেমন থাকি কিছুই বলব না। উনিও তো আমাকে ভালোবাসে সহজ সরল ও আছে দেখি আস্তে আস্তে কজ্বা করতে পারি কিনা।
সব কিছু মানত যদি কোনো বিষয় নিয়া ভুল ভাল বুঝ দিতাম তাও মেনে নিত।

এভাবে কাটতে থাকে লিমা আর জাবেদের জিবীন

সব কিছুই ঠিক ছিল। ৬ মাস পর আমি কন্সিভ করি। কিন্তু বাচ্চা নেওয়ার মত ইচ্ছে আমার ছিল না। তাও আমার স্বামি আমাকে অনেক বুঝায়,,,
সে আমাকে অনুরোধ করে। দেখ তুমি এই ছোট ভ্রুন টাকে নষ্ট করো না। ওরে পৃথিবীর আলো দেখতে দাও। আচ্ছা আজকে থেকে তোমার কোনো কাজ করা লাগবে না। সব কাজ আমি করব তাও তুমি এই বাচ্চা নষ্ট করবে না। বাচ্চা ভুমিষ্ট হওয়ার পর আমি ওরে লালন পালন করব।
আর এ অনেক বড় পাপ তুমি এই পাপ করো না।
আর আমি চাই আমার সন্তান কে।
লিমাঃ- তো খুশি ভাবল সারাদিন শুয়ে বসে খাওয়া যাবে৷ এমনিতেও কোনো কাজ করি না।
লিমাঃ- আচ্ছা। ঠিক আছে।
জাবেদ লিমার পুরু যত্ন নেয়।

জাবেদের বোন সুমি সারাক্ষণ আমার পাশে ঘুর ঘুর করে। আর পেটের উপর দোয়া দুরুদ পড়ে ফু দেয়৷

সুমিঃ- ভাবি ভাবি তুমি জানো না আমার কি খুশি লাগছে। ভাবি তোমার টেনশন নাই বাচ্চা আমি বড় করে দিব। ভাবি ওহ্হ আমি ফুপু হতে যাচ্ছি আমার ভেবেই ভালো লাগছে কয়েক মাস পরই আমাকে ফুপু ফুপু বলে ডাকবে।

লিমাঃ- হ রে ননদি এই বাচ্চা তো তোমাদেরেই।

সুমিঃ- জান ভাবি মা তোমার বাচ্চার জন্য টাকা জমাচ্ছে। নাতিকে উপহার দিবে। আর বাবা তো বলতে গেলে প্রতিদিন দিন গুনে কবে ঘরটা আলো হবে।

লিমা শুনে খুব খুশি হয়। আচ্ছা সুমি আমার জন্য একটু আচার আনতে পার?

সুমিঃ- পারব না কেন? এখুনি আনছি তুমি বস।

এই পরিবারের প্রত্যকটা লোক আমাকে ভালোবাসত। কিন্তু আমি উপরে উপরে ভালো বাসলেও হয়ত মনের দিক দিয়ে মানতে পারতাম না।
ভালোবাসলে হয়ত ছেড়ে যেতাম না।
দেখতে দেখতে সময় ঘনিয়ে এল। আল্লাহর রহমতে নরমাল ভাবে সন্তান ভমিষ্ট হল। আমার ছেলে হয়েছে। নাম রাখা হলো রামিম।

★★★

পিছনে একটা গাড়ি হর্ন বাজাচ্ছে এই আপা একটু সরেন তো। রাস্তায় এভাবে কেউ দাড়ায়?

লিমা কারেন্ট সর্ট এর মত লাফিয়ে উঠে। আচ্ছা আমি একটু গিয়ে আমার বাচ্চা কে দেখে আসব? আমার কোলে কি আমার বাবা টা একটু আসবে? ঐ টাই কি আমার ছেলে। আমার মন বলছে এটাই রামিম। আচ্ছা রামিম এর বাবা কেমন আছে? নাকি আরেকটা বিয়ে করছে?

লিমা আস্তে আস্তে সামনে গিয়ে। ওর প্রাক্তন দেবর সাকিল কে ছোট করে ডাক দিল।

লিমাঃ- সাকিল।
সাকিলঃ- পিছনে তাকিয়ে আচমকা লাফিয়ে উঠে আপনি???????

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

তোর মায়ায় পর্ব-০৫ এবং শেষ পর্ব

0

#তোর_মায়ায়❤
#Last_Part
#Ariyana_Nur

মাশিয়া অবাক দৃষ্টিতে সামনের মানুষটির দিকে তাকিয়ে রইল।সামনের মানুষটি জিদানের অপর পাশে বসে বলল….

—আপনি কেমন মশাই বলুন তো???হবু শালিকাকে দেখলে কেউ এভাবে ভয় পায় বলুন???

জিদান আমতা আমতা করে কিছু বলবে তার আগেই আফিফা বলল….

—ভয় না পাওয়ার কোন কারন রেখেছিস।যেই ভয় দেখিয়েছিলি সেই ভয় এখনো মনে ঝেকে বসে আছে।আফিফার কথা শেষ হতেই সামনের মানুষটি উচ্চ স্বরে হাসতে লাগলো।তাকে হাসতে দেখে আফিফাও সাথে হাসতে লাগলে।আর এদিকে জিদান আর মাশিয়া ওদের কথা কিছু না বুঝে অবাক হয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে রইল।

(আফিফা আগেই জানতো জিদান ওকে পছন্দ করে।মাঝে মাঝে ওদের ভার্সিটি এর সামনেও এসে ঘুরঘুর করতো।একদিন জিদান কে দেখে ওর ফ্রেন্ডরা মজা করে জিদানের সামনে এসে দাড়ায়।আর ইচ্ছে মত থ্রেড দেয়।আর বলে যদি কখনো ওদের সামনে পরে তাহলে সেদিন ওর তেরোটা বাজিয়ে ছাড়বে।জিদান সেদিন এর পর কখনো ওদের মুখোমুখি হয়নি।)

মেয়েটি এতোক্ষনে মাশিয়াকে খেয়াল করলো।সে মাশিয়াকে চিনতে পেরে লাফ দিয়ে উঠে মাশিয়ার সামনে গিয়ে বলল…

—সরি আপু এতোক্ষন আপনাকে খেয়াল করিনি।কেমন আছেন আপনি???

মাশিয়া অবাক হয়ে সামনের মেয়েটিকে বলল…..
—তুমি আমাকে চেনো???

—কি বলছেন আপু আমি আপনাকে চিনবো না।এক মিনিট এক মিনিট….
আপনিকি আমাকে চিনতে পারেননি????

মাশিয়া মাথা নাড়িয়ে না বুঝালো।

মেয়েটি হতাস হয়ে বলল….
—আরে…আপু আমি আশু।তারপর আশু সব বললে মাশিয়া অবাক হয়ে বলল….

—তুমিই আশু…..
আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না।কিন্তু সেদিন তো যে ছিলো সে কা….
কথাটা বলতে গিয়ে মাশিয়া থেমে গেলো।আশু মাশিয়ার কথা বুঝতে পেরে বলল….

—সব আপু মেকআপ এর কামাল।সেদিন তো ইচ্ছে করেই ঐ কালো মেকআপ করেছি সাথে কালিও মেখেছিলাম।যাতে কেউ বুঝতে না পারে।আর সাথে ঐ বড় মোটা ফ্রেমের চশমাতে তো মুখ অর্ধেক ডাকা ছিলো।তাই কেউ চিনতেও পারেনি।দেখলে তুমিও আমাকে চিনতে পারোনি।

আশুর কোন কথাই মাশিয়ায় মাথায় ঢুকছে না।সে তো পলকহীন আশুর দিকে তাকিয়ে আছে।আর খুটিয়ে খুটিয়ে তাকে দেখছে।

__________________________

ছাদের এক কোনে দাড়িয়ে আছে আশু আর নিলাভ।কারো মুখেই কোন কথা নেই।নিলাভের চোখে মুখে রয়েছে এক রাস খুশির ঝিলিক।আর আশুর চেহারা দেখে যে কেউ বলতে পারবে সে হাই লেভেলের রেগে আছে।নিরবরা ভেঙ্গে আশু রাগি গলায় বলল…..
—মিঃ চৌধুরী এসবের মানে কি???

নিলাভ আশুর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বলল….
—মিসেস চৌধুরী আপনি কিসের কথা বলছেন আমি বুঝতে পারছি না।

আশু মিসেস চৌধুরী কথাটা শুনে আরো রেগে গিয়ে বলল….
—ডোন্ট কল মি মিসেস চৌধুরী।

—কুল কুল এতো হাইপার হচ্ছো কেনো???

—হাইপার কি আর সাধে হচ্ছি আপনি কেনো আমাকে বিয়ে করলেন???তাও আবার আমাকে না জানিয়ে???সেদিন তো বড় বড় কথা বলছিলেন তাকে ছাড়া অন‍্য কাউকে আপনার বিয়ে করা সম্ভব না।তাকে ছাড়া আপনি নিস্ব ইত‍্যাদি ইত‍্যাদি।তাহলে আজ কেন তাকে রেখে আমাকে বিয়ে করলেন???(চেচিয়ে)

নিলাভ কানে হাত দিয়ে বলল….

—দেখো আমার কানে কোন সম‍্যসা নেই।আস্তে কথা বললেও আমি শুনতে পাই।তাই জোরে কথা বলার কোন দরকার নেই। জোরে কথা বললে তোমারি পরে গলা বেথ‍্যা করবে তখন আবার আমার দোষ দিতে পারবে না।

নিলাভের কথা শুনে আশুর রাগ সপ্তম আকাশে উঠে গেলো।
—ঐ মিয়া ফাজলামি পাইছেন।আমি আপনারে একটা কইতাছি আর আপনি আমারে আরেকটা উওর দিতাছেন।

—একটা জিনিস আজ লক্ষ করলাম।তোমাকে রাগলে না আরো বেশি কিউট লাগে।সেটা কি জানো???

—আপনারে…..
আপনারে আমি দেইখা নিমু….

—পরে দেখবে কেনো এখনি দেখো।আর পরে দেখলেও দেখতে পারবে।কেননা আমি তো পাসোনালি তোমার হয়ে গেছি।

—আমাকে বিয়ে করার শখ আপনাকে হারে হারে টের পাওয়াবো কথাটা মনে রাখবেন।
কথাটা বলেই আশু ছাদ থেকে বড় বড় পা ফেলে চলে গেলো।আর নিলাভ ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হাসতে লাগলো।

আস্তে আস্তে আর মাথা ঘামাতে হবে না।আমিই সব কিছু ক্রিয়ার করে দিচ্ছি।

সেদিন মাশিয়া আশুকে রেস্টুরেন্টে দেখে বাসায় গিয়ে নিলাভ কে জানালেই খুশিতে তার চোখ-মুখ জ্বলজ্বল করতে থাকে।কেননা আশুই সেই মেয়ে যাকে নিলাভ পাগলের মত খুজছে।নিলাভ দেরি না করে ৭দিনের মধ‍্যেই সব খোজ খবর নিয়ে আশুর বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়।এদিকে আশুর কোন পছন্দ না থাকায় তারাও রাজি হয়ে যায়।কিন্তু শর্ত হল এখন শুধু রেজিস্ট্রার মেরেজ করে রাখবে।কিছুদিন পর আশুর ফাইনাল পরিক্ষা শেষ হলেই তারা ধুমধাম করে উঠিয়ে দিবে।আশুও বাবা,মার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যায়।কিন্তু বিয়ের দিন নিলাভ কে দেখে বেচারী বড়সড় একটা শর্কড খায়।

___________________________

দেখতে দেখতে ১মাস কেটে গেলো।নিলাভ নানান ভাবে আশুকে ওর কথা জানাতে চেয়েছে।কিন্তু সে ত‍্যেড়ামি করে নিলাভের সাথে কথাই বলে না।সব সময় উল্টাপাল্টা কথা বলে।আশুর এমন ব‍্যবহারে নিলাভ মন খারাপ করেও নিজেকে সামলিয়ে নেয়।আশু এদিকে নিজে নিজেই ভুল ভেবে নিলাভ কে দোষারোপ দিচ্ছে।সে তাকে ঠকাচ্ছে।

কলিং বেলের শব্দ পেয়ে আশু দরজা খুলে দেখে মাশিয়া দাড়িয়ে আছে।মাশিয়াকে দেখে আশু তাকে জরিয়ে ধরে বলল….
—কেমন আছো আপু???

—আরে এখনো আপু বলবে???আমি যে তোমার একমাত্র ননদ তা কি ভুলে গেলে তুমি???

—আরে বাদ দাও তুমি ঐ সব কথা।তুমি আফিফার বর জিদান জিজুর ফ্রেন্ড সেই হিসেবে তুমি আমার আপু।আমার আর কোন সম্পর্ক লাগবে না।

মাশিয়া আশুর দিকে তাকিয়ে দেখে ওর মুখটা ছোট হয়ে গেছে।মাশিয়া ওর হাত ধরে বলল….
—তোমার রুমে চল।তোমার সাথে কথা আছে।

আশুকে আর কিছু বলতে না দিয়ে মাশিয়া ওকে নিয়ে ওর রুমে চলে গেলো।

পাশাপাশি বসে আছে আশু আর মাশিয়া।মাশিয়ার কাছে সব শুনে আশু মাথা নিচু করে আছে।মাশিয়া একটু থেমে আবার বলল….
—ভালো থেকো আসছি।আর পারলে আমার ভাইটাকে মেনে নিয়ো।

মাশিয়া চলে যেতেই আশুর চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পরতে লাগলো।একটা মানুষ ওর জন‍্য এতো পাগলামি করেছে আর ও জানেই না।আর সে ঐ মানুষটাকেই এতোদিন ইচ্ছে করে ও আরো কষ্ট দিয়েছে।আশু অনেকক্ষন কান্না করে কিছু একটা ভেবে ফ্রেস হতে চলে গেলো।

(সেদিন নিলাভ গ্রামের থেকে আসার পর পুরো পাগলের মত হয়ে গিয়েছিলো।সাথে তার পাগলামো তো ছিলোই।দিন রাত আশুকে ওলিতে গলিতে খুজেছে।কেননা বাচ্চাটি বলেছিলো ও শহর থেকে এসেছে।আশুর কথা ভেবে ভেবে কত যে নিরঘুম রাত কাটিয়ে তার ঠিক নেই।)

_______________________

খোলা আকাশের নিচে নিলাভের কাধে মাথা রেখে বসে আছে আশু।কারো মুখেই কোন কথা নেই।সেদিন আশু নিলাভর উপর থেকে সকল অভিযোগ উঠিয়ে ওকে মেনে নিয়েছে।কিছুক্ষন পর আশু বলল….

—আচ্ছা আপনি এমন পাগলামো কেনো করেছিলেন আর এখনো আমার একটু কিছু হলেই পাগলামো শুরু করে দেন???আমি আপুর থেকে শুনেছি আপনি অনেক রাগি,গম্ভীর টাইপ লোক ছিলেন???আপনার দ্বারা কিন্তু এমন ব‍্যবহার আশা করা যায় না।

নিলাভ আশুর হাত ধরে বলল….
—#তোর_মায়ায়❤ তোর মায়ায় আটকে আমি এমন করেছি আর করছি।

আশু আর কিছু না বলে চুপ করে করে দূরের আকাশের দিকে চেয়ে রইল।সে তো চেয়েছিলোই এমন একজনকে যে তাকে পাগলের মত চাইবে।আজ সে সার্থক।আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেছে।সেও চায় এই পাগল মানুষটার সাথে বাকি জীবন পারি দিতে।এভাবেই চলতে থাকুক তাদের জীবন।

~~~~~~~~সমাপ্ত~~~~~~~~

(ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন‍্যবাদ)