Tuesday, July 8, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1495



রং বদল পর্ব-০৭

0

#রং_বদল
#IH_Iman_Haque
#পর্ব_০৭

বুঝলাম পিরিয়ড এর সময় পেট ব‍্যথা হয়,তাহলে বিয়ের আগে আমার পিরিয়ড হওয়ার সময় এতো প‍েট ব‍্যথা হতো না কেনো।

এখন কেনো যে হচ্ছে আমি তো ওটাই বুঝতেছি।আচ্ছা তুমি এখনো খাবার গুলো খাও নি,মা দেখলে তো রাগ করবে।

পেট ব‍্যথায় জীবন যায় যায় অবস্হা আর ওনি আসছে খাবার খাওয়ার কথা।

আচ্ছা দাড়াও আমি ঔষদ আনতেছি,একটু হলে পেট ব‍্যথা কমবে।

আমি এখন দাড়াতে পারবো না,।

তোমাকে দাড়াতে হবে না, তুমি চূপটি করে বসে থাকো।

ওকে তুমি একটু তাড়াতাড়ি এসো,কারন তুমি পাশে থাকলে কষ্ট টা কম হবে।

এই যাবো আর আসবো তুমি একটু ওয়েট করো।

ওকে।

আমি রুম থেকে দৌড়িয়ে বাহিরে আসলাম ঔষধ আনার জন‍্য।ঔষধ অন‍্য রুম আছে।আমি রুমটাতে গিয়ে ঔষধ টা নিয়ে আবার জান্নাতুন এর কাছে আসলাম।এসে বলতেছি,

এই নেও ঔষধ টা খেয়ে নাও আরাম পাবে।

আমি আমার স্বামী হাত থেকে ঔষধটা নিয়ে পানি দিয়ে খেয়ে নিলাম।ঔষধ খাইতে আমাকে সাহায্য করলো ওনি।

এখন দেখবে ঠিক পেট ব‍্যথা ভালো হয়ে যাবে।আচ্ছা শুনো না, তোমার পেটটা একটু দেখাও তো,কই ব‍্যথা করতেছে।

কি হয় আল্লাহ্ ভালো জানে?তোমাকে পেট কেনো দেখাবো,অসভ‍্যর মতো কথা বলতেছো কেনো তুমি।

আরে দেখাওতো আমি একটু ওখানে আদর করে দেই তাহলে দেখবে ভালো হয়ে যাবে,।

দরকার নাই আমার পেটে আদর করে দেওয়ার, আমার লজ্জা করে না বুঝি।এমনিতে সুরসুরী বেশি আমার যদিতুমি ওখানে আদর করতে যাও আমাকে আর খুজেই পাবে না।

আরে একটু আদর করে দেই সত‍্যি ব‍্যথা কমে যাবে।শুনেছিলাম ভালোবাসার মানুষদের হাতের সোয়ায় নাকি দুঃখ-কষ্ট সব ভূলা যায়,তোমার কষ্ট আমার সর্য‍্য হচ্ছে না,সেই জন‍্য তো বলতেছি পেটটা দেখাও কোথায় ব‍্যথা করতেছে,আমি আমার হাত দিয়ে একটু আদর করে দেই।

লুচ্চা ছেলে তুমি।

ধূর এগুলো স্বামী কে বলে নাকি।

কেউ না বললে আমি বলি,এভাবে চলবে।

বউ তুমি রাগ করো কেনো।আচ্ছা যাও তোমাকে পেট দেখাতে হবে না।

হুম।

সকাল থেকে তুমি কিছু খাও নি,সে জন‍্যও তোমার বেশি করে পেট ব‍্যথা হতে পারে তাই তুমি না হয় প্লেটের খাবারগুলো খেয়ে নেও।

আমি একাই এতো খাবার খেতে পারবো না।এমনিতে মুখে কিছুদিতেই ইচ্ছাই করতেছে না।কোন কিছু খাওয়ার ইচ্ছায় করতেছে না।পিরিয়ড হলে আমার মুখে স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়,প্রিয় ভাবার গুলো খেতে ইচ্ছা করে না।

ইচ্ছা না করলেও খেতে হবে জোড় করে,তাহলেই তো শরীর সুস্হ থাকবে।আর মা তো বললোই পিরিয়ডের সময় প্রতিটা মেয়েকে বেশি বেশি পুষ্টি কর খাবার খেতে।

ঠিক আছে কিন্তু অল্প খাবো আবার নিজ হাতে খাবো না,তোমাকে খাইয়ে দিতে হবে তাহলে খাবো।

এটা আগে বলবে না,নিজ হাতে খেয়েদিতাম।

এখন বলছি তাহলে এখন খাওয়ায় দেন।

আচ্ছা আমি তোমাকে খাওয়ায় দিবো,কিন্তু আমাকে কে খাওয়ায় দিবে শুনি।

কেনো আমি দিবো খাওয়ায় তোমাকে আর , তুমি দিবে খাওয়ায় আমাকে।

ওকে।তারপর দুইজন দুইজনাকে খাওয়ায় দিচ্ছি আর খাচ্ছি।

জান্নাতুন তুমি কি জানো স্বামী-স্ত্রী একী প্লেটে খাবার খেলে কি হয়?

কি হয় গো, আমি তো জানি না?

স্বামী-স্ত্রী যদি একী প্লেটে খাবার খায় তাহলে সংসারে সুখ-শান্তী বৃদ্ধ পায়,স্বামী-স্ত্রীর মিল মহব্বদ বেড়ে যায়।

যদি এমন হয় তাহলে তো,আমি প্রতিদিন তোমার সাথে একী প্লেটে খাবার খাবো।

ধূর পাগলী সবার সামনে কি আর একটা প্লেটে দুই জনে খাওয়া যায়?

কেনো যাবে না।

কেনো এটার মানে আমার কাছে নাই,বউ আমার।

আচ্ছা শুনো না,তুমি যখন আমাকে বউ বলে ডাকো না আমার খুবেই ভালো লাগে।তুমি আমাকে সবসময় বউ বলে ডাকিও প্লিজ।

ঠিক আছে বউ বলে ডাকবো কিন্তু,

কিন্তু কি?

মানে মা-বাবার সামনে কি বউ বলে ডাকবো তোমাকে?

তুমি তো দেখতেছি পাগল একটা, গুরুজনদের সামনে এমন করে ডাকে নাকি,আমরা যখন দুইজনে একা থাকবো তখন শুধু আমাকে বউ বলে ডাকবে।

বউ এর জন‍্য স্বামী সবসময় পাগল হয়ে থাকে বুঝলে তাই আমি পাগল হলে তুমিও পাগলী।কারন আমরা দুইজনে একে ঘাটের নৌকা।

ঠিক আছে স্বামী পাগল হলে আমিও পাগলী এবার হয়েছে।

হুম।আর শুনো তোমার মা-বাবা এসেছে আমাদের নিতে।

কি মা-বাবা কখন আসলো,আগে তুমি আমাকে বলো নি কেনো?

তুমি এতো ব‍্যস্হ হচ্ছো কেনো ওনারা নিচে মা-বাবার সাথে গল্প করতেছে।আমি যখন ঔষধ আনতে নিচে যাই তখন তোমার মা-বাবাকে আমার মা-বাবার সাথে গল্প করতে দেখি।আমাকে দেখতে পেয়ে ওনারা ওনাদের কাছে ডাকে,

আসসালামুআলাইকুম আংকেল-আন্টি,আপনারা কেমন আছে?

আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো বাবা কিন্তু একটা জিনিস তো খুবেই ভূল করে ফেলেছো (আংকেল বলতেছে )

আংকেলের এমন কথা শুনে একদমেসভয় পেয়ে গেলাম।

তো বাবা জান্নাতুন কই (আন্টি বলতেছে,অবস‍্য ওনাদের পাশে আমার মা-বাবাও বসে আছে )

আন্টি জান্নাতুন রুমে রেস্ট করতেছে।

কেনো বাবা ওর শরীর খারাপ নাকি।

আন্টির এই রকম কথা শুনে ভয় পেয়ে গেলাম মা কি তাহলে ওনাদের সব বলেছে নাকি জান্নাতুন হাল্কা অসুস্হ?

কি হলো বাবা বলো?

মানে আন্টি জান্নাতুন এমনিতে সুয়ে আছে।

ও।

জাগ বাবা মা তাহলে কিছু ওনাদের বলে নি।আল্লাহ্ বাঁচাইছে।
আংকেল আপনি কি যেনো বললেন আমি ভূল করেছি?

হুম তোমার ভূল হচ্ছে,আচ্ছা তুমি এটা আগে বলো আমাদের পাশে যারা বসে আছে তারা তোমার কে?

কেনো আংকেল আমার মা-বাবা।

আমরা তোমার কে তাহলে?

জান্নাতুন এর মা-বাবা হলে তো আমারো মা-বাবা।কি ভূলটাই না করেছি আংকেল আন্টি বলে?

আসলে,

হয়েছে বুঝতে পেরেছি ভূল করে ফেলছো পরবর্তীতে যদি এমন ভূল আর না হয়।ওনারা যেমন তোমার মা-বাবা তেমনি আমরাও তোমার মা-বাবা।

ওকে।তাহলে আপনারা কথা বলুন আমি জান্নাতুন এর কাছে যাচ্ছি।

এই ঈমান শুন বাবা।

হুম মা বলো,

এনারা এসেছে কেনো কিছু জানিস,

না তো মা,

ওনারা এসেছে তোদের দুইজনকে ওনাদের বাসায় নিয়ে যেথে।

ওকে যাবো সমস‍্যা কই।ওনারা আগে খাওয়া-দাওয়া করুক তারপর না হয় যাওয়া যাবে।

ওনাদের খাওয়া-দাওয়া আমরা করাচ্ছি তুই এক কাজ কর রুমে গিয়ে তোরা দুই জনে রেডি হয়ে নিচে নেমে আয়।

ঠিক আছে মা।তারপর আমি সোজা উপরে জান্নাতুন এর কাছে চলে আসলাম।তারপর তো তুমি আর পাঠক বন্ধুরা জানেই তারপর কি হয়েছিলো?

তাহলে এখন কি আমরা রেডি হবো?

যদি বাবার বাসাতে যেথে না চাও,তাহলে রেডি হওয়ার দরকার নাই।

কোন মেয়ে চায় না তার বাবার বাসায় যেথে,আমিও যাবো।

চলবে।

রং বদল পর্ব-০৬

0

#রং_বদল
#IH_Iman_Haque
#পর্ব_০৬

আমি বুঝতে পারতেছি এশা কি বলতেছে?ও আমার পিরিয়ড এর বেপারে বলতেছে।হঠাৎ করে এমন প্রশ্ন করায় আমি লজ্জা পাইলাম।(দুই ভাই-বোনের লজ্জা শরম কিছুই নাই দেখতেছি )

কি বেপার ভাবি তুমি লজ্জা পাচ্ছো কেনো?তুমিও একজন মেয়ে, আমিও একজন মেয়ে তাই এখানে শরম পাওয়ার কিছু নাই।আর তোমার পাশে যে ছেলেটা আছে ওটা তোমার স্বামী,তার স্ত্রী তুমি তোমার সব বিষয়ে জানার অধিকার আছে।

এশার এমন কথা শুনে আমি একবার আমার স্বামী র এর দিকে আর একবার এশার দিকে তাকাচ্ছি।

জান্নাতুন এভাবে তাকানো দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম।

কি বেপার ভাবি তুমি ভাইয়াকে আর আমাকে এভাবে কি দেখতেছো?

কিছু না।আরে এশা তুমি দরজার পাশে দাড়িয়ে আছো কেনো রুমের ভিতরে আসো বিছানায় বসো।(কথা ঘুরানোর জন‍্য এশাকে এই কথা বললাম।এশাকে এই বিষয়ে বলতে আমার লজ্জা করতেছে।যতো ও আমার মতো একজন নারী হোক )

ঠিক বলছো তো ভাবি,আমি এতোক্ষন ধরে এখানে দাড়িয়ে আছি পা দুটো লেগে গেলো কেনো যে রুমের ভিতরে ঢুকলাম না।

তাহলে এখনে রুমে এসে বসে পড়ো,তারপর না হয় গল্প
করা যাবে।

ভাবির কথা শুনে রুমের ভিতরে গিয়ে সোজা বিছানায় গিয়ে বসলাম ।আমি বিছানায় বসার পরে একটু পরে ভাবিও দাড়িয়ে না থেকে আমার পাশে এসে বসলেন বিছানায়।

আমি এখানে থেকে কি করবো,আমি বাহিরে গেলাম তোমরা ভাবি ননোন গল্প করো?

ভাইয়া তোকে কি কেউ এখানে জোড় করে রেখেছে?

না তো,

তাহলে এখনো রুম থেকে বাহির হস নাই কেনো,আমরা ভাবি ননোন কি গল্প করি সেটা তুই কি শুনতে চাস?

না মানে, আমিও একটু শুনতাম (মজা করে বললাম কারন এমনিতে আমি এখানে থাকবো না।এশাটা রুমে আসাটাও টাইম পাইলো না।)

তোকে শুনতে হবে না ভাইয়া, তুই এখন রুম থেকে বাহিরে যা।

যাচ্ছি যাচ্ছি তোদের গল্প শুনার এই ঈমানের ইচ্ছা নাই।

ডাইলোক তো ভালো শিখেছিস,যা ভাগ এখান থেকে।

আমি গেলাম তুমি খাবারগুলো খেয়ে নিও।রুম থেকে বাহির হওয়ার সময় জান্নাতুনকে চোখ টিপা দিয়ে চলে আসলাম।

কি ভাবি একদিনে এতো ভালোবাসা,আমি থাকতেও তোমারে ভাইয়া প্রেম-ভালোবাসা দেখাচ্ছে চোখ টিপা মেরে?

মাথা নিচ করে,চূপ করে বসে আছি।কারন কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।

ভাবি তুমি কি আবারো লজ্জা পাচ্ছো, আমার কথায়?

এশা তুমি এটা কি বলো, লজ্জা পাবো কেনো?

তাহলে আমার কথা শুনে মাথা নিচ করলে কেনো ভাবি?বুঝি বুঝি সবেই বুঝি ভাবি,না বুঝার দিন শেষ।

এশা তুমি যখন সবেই বুঝো তাহলে তোমার একটা ব‍্যবস্হা করতে হয়।

কিসের ব‍্যবস্হা ভাবি।

তোমার বিয়ের কথা মা-বাবাকে বলতে হবে,তুমি বড় হয়ে গেছো।

ভাবি আমি এখন বিয়ে করবো না কারন,আমার পড়ালেখা শেষ হয় নি।আর ঘরে নতুন ভাবি আসতে না আসতে আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে চাচ্ছো ।

তাড়িয়ে দিবো কেনো,মেয়ে হয়ে যখন জন্ম হয়েছো তখন পরে ঘরে যাইতে হবে আজ না কাল।

তবুও ভাবি আমি এখন বিয়ে করবো না।তোমার এটা বাচ্ছা না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে করবো না।

তবুও একটু কথা বলি মা-বাবার সাথে ,কি বলো এশা?

আমি গেলাম ভাবি তোমার এখানে আর থাকবো না কারন তুমি যে শুরু করে দিয়েছো,আর কিছুক্ষন থাকে তুমি অঘটন ঘটিয়ে ফেলবে।(এই বলে দৌড়িয়ে রুম থেকে বাহিরে চলে আসলাম )

এই এশা শুনো কই যাও, যেও না।ধূর চলেই গেলো পাগলী মেয়ে কোথাকার।একটু মজা করলাম তাতে ভয় পেয়ে গেছে।হঠাৎ করে টেবিলের উপরে একটা প্লেট দেখতে পেলাম।প্লেটা দেখে ওনার কথা মনে পড়লো খাবারগুলো আমাকে খাইতে বলেছে।আমি বিছানা থেকে উঠে এক পা সামনে বাড়িয়ে দিবো তাতে পেট ব‍্যথা শুরু হয়ে কেনো।এমন প‍েট ব‍্যথা কখনো হয় নি।প‍েট ব‍্যথার কারনে জীবন যায় যায় অবস্হা।একটা মেয়ের পিরিয়ড টাইমে কতো কষ্ট হয় একমাত্র আল্লাহ্ ভালো জানে।অনেক কষ্টে টেবিলের সামনে গিয়ে একটা চেয়ারে বসে পড়লাম।দুহাত দিয়ে পেট টা খামচিয়ে ধরে আছি,অনেক প‍েট ব‍্যথা করতেছে।আল্লাহ্ তুমি কোন যন্ত্রনায় ফেললা,শইতে পাড়ি না।টেবিলের উপরে মাথাটা দিয়ে পেট খামচিয়ে ধরে আছি।

জান্নাতুন তোমার কি হয়েছে,এমন করতেছো কেনো?খারাপ লাগতেছে মাকে ডাকবো।

হঠাৎ করে এভাবে আমাকে বলতেছে।টেবিলের উপর থেকে মাথাটা ঘুরে দেখি আমার স্বামী বলতেছে এভাবে আমাকে।

কি হয়েছে তোমার বলো আমাকে,কান্না করতেছো কেনো?(জান্নাতুন এর পাশে গিয়ে আমার দুই হাত দিয়ে চোখে পানি মুছে দিয়ে বলতেছি।)

আমার না খুবেই প‍েট ব‍্যথা করতেছে,খুবেই কষ্ট হচ্ছে মনে হচ্ছে মরে যাবো।আমি এতো যন্ত্রনা সহ‍্য করতে পারতেছি না।পেট ব‍্যথার যন্ত্রণায় কখন যে চোখ দিয়ে পানি পড়েছে বুঝতে পাড়ি নি।

ধুর পাগলী এভাবে কেউ বলে নাকি।পিরিয়ডের সময় পেট ব‍্যথা হয় সবারে।

বুঝলাম পিরিয়ড এর সময় পেট ব‍্যথা হয়,তাহলে বিয়ের আগে আমার পিরিয়ড হওয়ার সময় এতো প‍েট ব‍্যথা হতো না।

আমি দুঃখীত গল্পটা বড় করে দিতে না পাড়াই।গল্পটা আমি অনেক কষ্টে লিখলাম ১০ঃ১৫,থেকে ১১ঃ৫ মিনিট পযর্ন্ত লিখলাম।আরো লিখতে চাইলাম কিন্তু দুচোখ ঘুমে বন্ধ হয়ে আসতেছে। ইনসাআল্লাহ্ কালকে থেকে ঠিক টাইমে গল্প পাবেন।

চলবে

রং বদল পর্ব-০৫

0

#রং_বদল
#IH_Iman_Haque
#পর্ব_০৫

এই যে মহারানি ঘুম থেকে উঠে পড়ুন এবার,অনেক বেলা হয়েছে গেছে।মানুষ শুনলে কি বলবে,নতুন বউ অনেক বেলা করে ঘুম থেকে উঠে?

হঠাৎ করে কারো ডাকার শব্দ শুনে ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো।চোখদুটৌ খুলে দেখি ওনি দাড়িয়ে আছেন বিছানার একটু দূরে।হঠাৎ করে ঘুম ভাঙ্গার কারনে মাথা ঝিম ধরে আসতেছে,মাথায় কোন কিছু কাজ করতেছিলো না, ওনার দিকে শুধু শুয়ে থেকে ফেল ফেল করে তাকিয়ে আছি।

কি হলো শুয়ে আছো কেনো উঠতে হবে না,আর আমার দিকে এমন ভাবে কি দেখতেছো, আমাকে চিনো না নাকি ?

আপনাকে চিনবো না কেনো আপনি হচ্ছেন আমার স্বামী তাই আপনাকে না, চেনার প্রশ্নই আশে না।(যেকোন লোকের হঠাৎ করে ঘুম ভেঙ্গে গেলে বা জাগিয়ে দিলে মাথা প্রথমে কাজ কম করে সেই জন‍্য চূপ করে থাকে)

তাহলে আমার দিকে ওমন ভাবে তাকিয়ে আছো কেনো।

এমনি আচ্ছা কয়টা বাজতেছে ঘড়িতে।

এই তো মাত্র ৮ঃ০০ টা বাজতেছে।

আপনি ৮ঃ০০ কে কেবল বলতেছেন আল্লাহ্ এতো বেলা ধরে ঘুমিয়েছিলাম মানুষ শুনলে কি বলবে?আপনি আমাকে আগে জাগিয়ে দেন নি কেনো।আমার মা আমাকে বারবার করে বলেছিলো যে বিয়ের পরে স্বামীর বাড়িতে যাইলে সকাল সকাল উঠে শাশুড়ি মাকে সাহায্য করতে কিন্তু আমি তো কতো বেলা করে ঘুম থেকে উঠেছি।আপনা না ডাকলে আমি তো উঠতেই পারতাম না।আপনি সামনে থেকে সরুন আমি বাথরুমে ফ্রেস হতে যাবো।ফ্রেস হয়ে এসে নিচে শাশুড়ি কাজে সাহায্য করতে হবে।

তোমাকে এতো অস্তির হতে হবে না,তুমি শান্ত হও এবং ধীরে ধীরে বাথরুমে ফ্রেস হও।তুমি কি কাজে সাহায্য করবে,এতোক্ষন প্রায় মা বাসার কাজ সব করে ফেলেছে।

তবুও শাশুড়ির কাছে যেথে হবে।

মা তোমাকে নিচে যেথে মানা করেছে তাই ওখানে যাওয়ার কোন প্রয়োজন নাই তাই ধীর গতীতে তুমি বাথরুমে গিয়ে ফ্রেস হতে পারো।আর তুমি এখন অসুস্হ তাই বেশি চাপ নেওয়ার দরকার নাই।

তাহলে কি আমি শাশুড়ি মার কাছে যাবো না?আচ্ছা শাশুড়ি মা জানলো কেমন করে আমি অসুস্থ বুঝলাম না (প্রশ্ন করে বসলাম আমার স্বামী কে )

কেনো আমি বলেছি তোমার পিরিয়ড এর বেপারে সেই জন‍্য তো আমাকে দিয়ে এতো গুলো খাবার মা পাঠিয়েছে।এখন তুমি বাথরুম গিয়ে ফ্রেস হয়ে এসে খাবারগুলো খেয়ে নেও।মা বলেছে এই সময় তোমার বেশি বেশি করে পুষ্টিকর খাবার খেতে।(খাবারের প্লেটটা দেখিয়ে বলতেছি)

স্বামী একটা পেয়েছি, বউ এর পিরিয়ড এর বেপারো নিজের মাকে বলে।আল্লাহ্ এই কোন ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে আমার,যার নেই কোন লজ্জা-সরম।(এগুলো ভাবতেছি আর চূপ করে বিছানায় বসে আছি )

কি হলো বসে আছো কেনো ফ্রেস হতে যাও খাবার গুলো খেতে হবে তো নাকি?

আমি মানলাম আমি অসুস্থ, সেই জন‍্য এতো গুলো খাবার,আমি জীবনেও এতো গুলো খাবার খাই নি।

খাওনি তো কি হয়েছে এখন খাবে?

আমি মরে গেলেও এতো গুলো খাবার খেতে পারবো না।

আচ্ছা দেখা যাবে খেতে পারো কি না,আগে ফ্রেস হয়ে আসো।

তারপর আমি বিছানা থেকে নিচে মেনে দেখি টেবিলের উপর যেখানে প‍্যাডটা ওনি রেখেছিলেন ওখানেই পড়ে আছে।হুট করে রুমের ভীতরে কেউ আসলে প্রথমে ওই প‍্যাডটাই চোখ পড়বে,এই মানুষটাকে নিয়ে আর পাড়ি না। এখন আমার প‍্যাডটা প্রয়োজন পড়বে তাই প‍্যাডটা টেবিলের উপর থেকে হাতে নিয়ে নিলাম।তারপর একটা কালো শাড়ি ব‍্যাগ থেকে বাহির করে হাতে নিলাম,এই শাড়িটা আমার মা আমাকে কিনে দিয়েছিলো বিয়ে আগে শশুর বাড়িতে পড়ার জন‍্য তাই শাড়ি পড়ার যাবতিও জিনিস গুলো ব‍্যাগ থেকে নিয়ে সোজা বাথরুমে চলে আসলাম।বাথরুমে এসে প্রথমে গোসল করলাম কারন যে টাইম চলতেছে আমার এই টাইমে পরিষ্কার থাকাটা খুবেই জরুরী।প্রায় 20 মিনিট ধরে গোসল করার পরে প্রয়োজনী জিনিস গুলো পড়ে তারপর শাড়ি পড়ে বাথরুম থেকে তেওয়ালা দিয়ে চূল ঝাড়তে ঝাড়তে বাহির হচ্ছি।

মাসআল্লাহ্ আমার বউকে এমন অবস্হায় তো অনেক সুন্দর লাগতেছে।কালো শাড়ি পড়া,ভেজা চোখে,মাতাল করা শরীরে ঘ্রান,লম্বা চূলে টপ টপ করে পানি পড়তেছে আহ কতো সুন্দর বউ আমার।এই কথা বলে জান্নাতুনকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলাম।জরিয়ে ধরে ভেজা চূলে মুখ ডুবিয়ে দিলাম নিজেকে কোন মতেই আটকাতে পারতেছিলাম।

এই কি করছো তুমি এই ভর দুপুরে।

কি করতেছি মানে বউকে জরিয়ে ধরেছি?

আরে ছাড়েন তো কেউ দেখে ফেলবে তো দরজা খোলা আছে।

কেউ আসবে না,চূপ করে থাকো তো এভাবে তোমাকে একটু জরিয়ে ধরে থাকি।(এই কথা বলে আন্নাতুন এর ঘাড়ে একটা চুমু দিয়ে দিলাম )

কি করতেছেন আমার সুরসুরী লাগতেছে তো?

কি বলো তোমার রোমান্টিক মুডেও সুরসুরী লাগতেছে,আমার তো এভাবে অনেক ভালো লাগতেছে?

ভালো তো তোমাকে লাগবেই লুচু ছেলে কোথাকার আমার সুরসুরী লাগতেছে আর ওনি আছে রোমান্টিক মুডে।

বউ তুমি এটা কই তে পালা।নিজের বউকে জরিয়ে ধরলে বুঝি স্বামী লুচু হয়।

হয় না তো,কিন্তু আমি বলবো আপনি একটা লুচু ছেলে।এখন আপনি আমাকে জরিয়ে ধরা থেকে ছেড়ে দেন।

ছারবো না, কি করবা?

কিছুই করতে পারবো না,কারন পুরুষের শক্তির কাছে নারীর শক্তি কোন পাত্তায় নেই।তাই আপনার সাথে কখনো শক্তির দিক দিয়ে পারবো না।

এই তো ভালো বুঝেছো,এখন চূপ করে দাড়িয়ে থাকো।

প্লিজ ছেড়ে দিন না,ভেজা চূলের পানি দিয়ে প্রায় শাড়িটা ভিজেই গিয়েছে চূলগুলো ঝাড়ি তার পর যতো ইচ্ছা জরিয়ে ধরিও।

পরে মানে যখন তখন কি এই রকম রোমান্টিক মুড আসবে নাকি?

ঠিক আছে যা ইচ্ছা তাই করো সমস‍্যা নাই।

আমি কিছু দেখি নাই।

এই কথা শুনে আমরা দুইজনে রুমের দরজায় দেখি এশা দুই হাত চোখে দিয়ে দাড়িয়ে আছে।এশাকে দেখে সাথে সাথে আমি জান্নাতুনকে ছেড়ে দিলাম।ছেড়ে দিয়ে অনেকটা দূরে গিয়ে দাড়ালাম,

এশা তুই জানিস না,কারো রুমে প্রবেশ করতে হলে অনুমতি নিতে হয়।কে কি অবস্হায় থাকে?

তোকে কেউ জ্ঞান দিতে বলেছে আমি ভাবির সাথে দেখা করতে এসেছি।

ভাবির সাথে দেখা করতে আসছিস ভালো কথা কিন্তু রুমে আসার আগে একটু নক করে ঢুকবি না।

ভাইয়া/ভাবির রুমে আসতে কোন অনুমতি লাগে নাকি, তাই না ভাবি।

হুম।(আমি শুধু হুম বলে নীরব দর্শোক এর মতো দুইজনে কথা শুনতেছি।হঠাৎ করে এশা রুমে এসে খুবেই লজ্জায় পড়ে গিয়েছিলাম। )

এশা তুই কি কিছু দেখেছিস রুমে এসে?

ফ্রিতে সিনেমা দেখছি তোর কোন সমস‍্যা।

না (এই কথা বলে জান্নাতুন এর দিকে তাকিয়ে দেখি ও আমার দিকে রাগি দৃষ্টি নিয়ে দেখতেছে।এমন অবস্হা দেখে আমার ভয় লেগে গেলো।)

আচ্ছা ভাবি তোমার শরীরের কি অবস্হা?

এশার কথা শুনে বুঝতে পারলাম এশা কোন বিষয়ে কথা বলতেছে।

#চলবে,,,?

রং বদল পর্ব-০৪

0

#রং_বদল
#IH_Iman_Haque
#পর্ব_০৪

হঠাৎ করে ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো,চারপাশে শুধু আজানের ধ্বনি।চারপাশে আজান এর শব্দ শুনে মনে হয় ঘুমটা ভেঙ্গে গেছে।বিছানা থেকে উঠতেই পাশে জান্নাতুন এর মুখটা চোখে ভেসে আসলো।জান্নাতুন এর মুখটা চোখে সামনে ভেষে আসায় মনে হচ্ছে ওর মায়াবি মুখ খানি আমাকে তার কাছে টানতেছে।কি যেনো এক মায়ায় ঠিক জান্নাতুন এর মুখের সামনে আমার মুখটা চলে গেলো?বেশি দূরত্ব নয় আমার মুখ আর জান্নাতুন এর মুখ অল্প ফাঁকা।জান্নাতুন এর মুখে এত মায়া আছে তা কালকে লক্ষ্যই করি নি,ঘুমান্ত অবস্হা এতো সুন্দর লাগতেছে আপনাদের বলে বুঝাতে পারবো না।শুনেছিলাম,

একটা মেয়ের বিয়ের আগে আল্লাহ্ নাকি তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে দেয়,এই জন‍্য বিয়ের রাতে বউকে এতো সুন্দর লাগে।আল্লাহ্ কতো সুন্দর কূদরত দিয়েছেন বিয়ে রাতে একটা মেয়ের উপরে।আল্লাহ্ বাসর রাতে মেয়েদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে দিয়েছে কারন তার স্বামী অন‍্য বউকে দেখে এটা না বলতে পারে আমার বউ সুন্দর না।আল্লাহ্ কতো নীলাখেলা,মানুষের বড় বুঝা বড় দায়।

এই জন‍্য মনে হয় জান্নাতুন এর উপরে আমার এতো মায়া কাজ করতেছে।ইচ্ছা করতেছে এখনে একটা লিপ কিচ করে ফেলি।কিন্তু এটা করা বউ এর ইচ্ছার বিরুদ্ধে হবে।যদি জেগে থাকতো তাহলে না হয় কিচ করা যেতো কিন্তু হাদিসে আছে বউ এর ইচ্ছা বিরুদ্ধে স্পর্শ করাও হারাম।ভাই আপনার বউ হয় দেখে যখন তখন স্পর্শ করবেন এটা কিন্তু নয়।আপনি যেটা করতে চাচ্ছেন সেটাতে বউ এর ইচ্ছা থাকতে হবে।আপনি যদি বলেন ও তো আমার বউ বিবাহ বন্ধন এ আবদ্ধ হয়েছি।বিয়ের পরে বউ হচ্ছে হালাল জিনিস তাই যা ইচ্ছা করতে পারি কিন্তু ভাই জোড় করে ধর্ষন হয়,বউ এর থেকে জোড় করে কিছু করতে চাইলে ওটাও ধর্ষন বলা যাবে।জোড় করলে বউ এর সাথে সব কিছু করতে পারবেন কিন্তু বউ এর মনে একটা ক্ষোপ থেকে যাবে।

তবুও মনটাকে মানাতে পারতেছিলাম না,তাই নিজেকে কোন মতে আটকিয়ে শুধু কপালে একটা চুমু দিয়ে সোজা বাথরুমে চলে গেলাম ওজু করার জন‍্য।জান্নাতুনকে ডাকলাম না কারন ওর শরীর পাক নেই তাই ওর নামাজ পড়তে পারবে না।বাথরুম থেকে ওজু করে পান্জাবি আর টুপি নিয়ে রুম থেকে বাহির হয়ে মসজিদে দিকে যাচ্ছি।কতো সুন্দর একটা আবহওয়া,মনকে শীতল করে দিচ্ছে চারপাশে শুম সাম নিরবতা মাঝে মাঝে কিছু পাখি শব্দ করে উঠেতেছে।কিছুক্ষন পরে মসজিদে চলে আসলাম।বাসা থেকে মসজিদটা বেশি দূরে না তাই বেশি টাইম লাগে নি।মসজিদে ঢুকে প্রথমে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ে নিলাম।একটু পরে মসজিদের ইমাম দুইরাকাত ফরজ নামাজ পড়াতে শুরু করলেন।ইমামের পিছনে দুই রাকাত নামাজ পড়ে আবারো বাসার দিকে রওনা দিলাম।বাসায় যাইতে প্রায় তিন মিনিট লাগলো।বাসার ভিতরে ঢুকে দেখি মা টেবিলে নাস্তা গোছাচ্ছেন।

কিরে বাবা নামাজ পড়ে আসলি!

হুম মা।

বউ মা ঘুম থেকে উঠে নি।আর মন ভালো আছে বাবা।

মা আমি যখন নামাজ পড়তে যাই তখন তো তোমার বউমা ঘুমাচ্ছিলো।আর মন ভালো আছে মা।এমনিতে তুমি জানো নামাজ পড়লে মন খারাপ থাকলেও ভালো হয়ে যায়,মনে শান্তি পাওয়া যায়।আমি তো এখনে নামাজ পড়ে আসলাম তাই মন খারাপ থাকা প্রশ্নেই আশে না।
(মনে শান্তি পান না,শুধু অস্তির লাগে কিছু ভালো লাগে না,তাহলে ভাই /বোন সালাত আদাই করুন ইনসাআল্লাহ্ চেলেন্জ করে বলবো তাহলে দেখবেন আল্লাহ্ আপনার মনকে এবং সব কিছুতে শান্তি এনে দিবে।বিশ্বাস না হলে একবার সালাত আদাই করে দেখেন।)

তুই যখন নামাজ পড়তে যাস তখন বউমাকে ডেকে দিতে পারিস নি,বউমাও নামাজ পড়তো।

মা তুমি মনে হয় জানো না যে,তোমার বউ মার কালকে পিরিয়ড হয়েছে তাই আর ফজরে জেগে দেই নি।

আগে বলবি না আমাকে আচ্ছা তুই এখানে দাড়া আমি কিছূ তোকে এনে দিচ্ছি।

ওকে।আমি বসে নাস্তা করি তুমি যতোক্ষন না আসো।

ওকে বাবা।

তারপর মা কই যেনো গেলো আমি জানি না।মা যাওয়ার পরে আমি চেয়ারে বসে নাস্তা খেতে শুরু করলাম।প্রায় দশ মিনিস পরে মা একটা প্লেট করে বেশ কিছু খাবার নিয়ে আসলেন।

ঈমান বাবা এগুলো বউমাকে গিয়ে খাওয়া।

এতো গুলো খাবার মা,

বেশি বুঝিস কেনো এই সময়ে বউমার এগুলো খাওয়ার দরকার।না হলে অসুস্হ হয়ে পড়বে।

ও তাই সেই জন‍্য তুমি এশাকে মাঝে মাঝে এতো খাবার খেতে দাও।

হুম।আর শুন তুই তো এখন সবেই বুঝিস বড় হয়েছিস তাই তোকে বলি বাবা,
একটা মেয়ের পিরিয়ডের সময় অনেক রক্তক্ষয় এবং পানি বাহির হয়ে যায়।এই সময় প্রতিটা মেয়ের বেশি করে পানি পান দরকার কারন পানির শুন্নতার কারনে মাথা ব‍্যথা,হাত-পা ব‍্যথা,বমি বমি ভাব হয়ে থাকে তাই পানি বেশি করে খাওয়া দরকার।আবার পিরিয়ডের সময় একটা মেয়ের শরীর অনেক দূর্বল হয়ে যায়,তাই এই সময়ে বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়া দরকার প্রতিটা মেয়েদের যেমন,মাছ-মাংস,দুধ,ডিম ইত‍্যাদি। এক কথায় পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে ।আর একটা বিষয় হচ্ছে এই সময়ে প্রতিটা মেয়ের তার নিজ শরীরের প্রতি যত্নশীল হতে হবে।

এগুলো কি গিয়ে তোমার বউমাকে বলবো?(আগে বলে রাখি আমার মা একজন ডাক্তার তাই কেউ আবার প্রশ্ন করিয়েন না যে ছেলেকে মা এগুলো বলতেছে সম্ভব না।আপনারা হয়তো এটা জানেন ডাক্তারদের শরম বলতে কিছু থাকে না,তারা সব কিছু সবার মাঝে বা সামনে বলতে পারে।)

তোকে কিছুই বলতে হবে না, শুধু এটা বলবি মা তোমাকে এগুলো খেতে বলেছে আর পানি বেশি বেশি করে খেতে ।

ঠিক যা বললে তাই বলবো,প্লেট টা এখন আমাকে দাও।

এই নে।

তারপর মা আমাকে খাবারের প্লেটটা দিলেন।তারপর আমি ওনা থেকে হাটা শুরু করলাম রুমে যাওয়ার জন‍্য হঠাৎ এশার কথা মনে হলো আমার মহারানি বোন কি এখনো ঘুম থেকে উঠে নিই নাকি?(ছোট বোনদের বড় ভাইয়েরা অনেক আদর করে থাকে,তেমনি আমিও ব‍্যতিক্রম নয় আমিও আমার বোনকে অনেক ভালোবাসি।একটা বিষয় কি জানে,আমি যদি কোথাও যাই সেখান থেকে বাসায় আসলে প্রথমে ছোট বোনের খোজ করবো কারন অনেক ভালোবাসি তো তাই। প্রতিটা ঘরে ঘরে একটা করে রাজকন্যা বোন থাকা দরকার,তানা হলে বোন এর মর্ম কখনো বুঝতে পারা যাবে না। )

মা এশা কই?

তোকে নিয়ে আর পারি না,বোন পাগল ছেলে আমার।তোর বোন রুমে আছে হারিয়ে যাই নি,তাই এখন বোন এর খবর না করে বউ এর খবর কর যা।বোনে বিয়ে দিলে কি করবি আজ হোক কালতো পরের ঘরে যাবেই,
?

বোনকে বিয়েই দিবো না।

ধূর পাগল ছেলে পৃথিবীতে যখন আল্লাহ্ পাঠিয়েছে তখনে বিবাহ ফরজ করে দিয়েছে তাই বিয়ে তো দিতেই হবে।

পরে দেখা যাবে,না হলে বোনের জামাইকে ঘরজামাই করে রেখে দিবো তবুও বোনকে দূরে যেথে দিবো না।

আচ্ছা যা বলিস তাই করিস,এখন তোর বউ এর কাছে যা।ওর পাশে থাকা তোর জরুরি বুঝলী।সব মেয়ে তার দুঃখের সময় এটা চায় সেটা হচ্ছে তার সবচেয়ে আপন জন তার পাশে থাকুক,একটা মেয়ের সবচেয়ে আপন মানুষ হচ্ছে তার স্বামী বুঝলী।তাড়াতাড়ি বউমার কাছে যা।

ওকে মা।তারপর আমি মার ওখান থেকে রুমে চলে আসলাম।রুমে এসে দেখি বউ আমার কি সুখের ঘুম পারতেছে যা আপনাদের বলে বুঝাতে পারবো না।ছোট বাচ্চাদের মতো করে ঘুমাচ্ছে।আমি না হেসে পারলাম না।পাগলী বউ পাইছি একটা।

আমি গল্পের মাঝে কিছু কিছু বিষয় তুলে ধরি সেটা আপনাদের ভালো জন‍্য,যদি এগুলো তুলে ধরতে আপনাদের মনে কষ্ট লাগে বা মনে করেন ছেলেটা খুবেই খারাপ তাহলে আর গল্পের মাঝে এগুলো আর তুলে ধরবো না।

(আসসালামুআলাইকুম সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বেন। আল্লাহ্ যেনো আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার তউফিক দান করুক,আমিন )

#চলবে,,,?

রং বদল পর্ব-০৩

0

#রং_বদল
#IH_Iman_Haque
#পর্ব_০৩

আচ্ছা তুমি কি বিয়ের আগে কারো সঙ্গে প্রেম করেছো?

আমি প্রেম করি নি কখনো,সবসময় পড়াশুনা নিয়ে ব‍্যস্হ ছিলাম?তবে একটা ছেলেকে ক্লাস ১০ এ থাকতে প্রথম দেখায় ক্রাস খেয়েছিলাম।কিন্তু কখনো তাকে বলার সাহস হয় নি তাই বলাও হয় নাই।যাকে বলে এক তর্ফ‍া প্রেম।

ও তাই এখনো ভালোবাসো নাকি ওই তোমার ক্রাসকে।

যার সাথে কোন সম্পর্ক তৈরি হয় নি ,তাকে মনে রেখে কি লাভ?আমাদের ইসলাম ধর্মে বিয়ের আগে প্রেম- ভালোবাসা করা হারাম।এটা ভেবেই আমি কারো সাথে প্রেম-ভালোবাসায় জড়ায় নি।আমি চাইতাম আমার বিয়ের পরে স্বামীর সাথে প্রেম করবো,সেই জন‍্য কারো সাথে প্রেম করি নি।আচ্ছা আপনি আমাকে ভালোবাসবেন না,স্ত্রীর অধিকার দিবে না।

তোমাকে যখন বিয়ে করছি তখন তোমাকে আঁকড়ে ধরে তো বাঁচতে হবে।ভালো না বেসে কই যাবো,বউ তো একটাই।
ইসলাম ধর্মে যে বলা হয়েছে বিয়ের আগে প্রেম-ভালোবাসা করা হারাম এটা কতো জনে মানে,অন‍্যের কথা কি বলবো তোমাকে,আমি তো প্রেম-ভালোবাসায় জড়িয়েছিলাম।আমিও হারাম কাজ করেছি?

আগে কি করছেন,সেটা আমি শুনতে চাই না,আমি চাই আপনি আগের সব কিছু ভূলে গিয়ে আমাকে আপন করে মেনে নেন।আর আল্লাহ্ বান্দার এমন কোন পাপ নাই যে ক্ষমা করেন না।ক্ষমা চাইতে হলে আগে তোমাকে ওয়াদা করতে হবে,এমন ভাবে ওয়াদা করতে হবে যেনো পরে আর ওই ধরনের পাপ কাজ না হয়,তাহলে আল্লাহ্ নীর্চিত বান্দার যতো বড় পাপ হোক না কেনো ক্ষমা করবে।

আর যেনো এমন হারাম কাজ না হয় আল্লাহ্ সেই তওফিক দান করুক।তুমি এখন আমার স্ত্রী তাই তোমাকে ভালো বাসা আমার কর্তব‍্য।আগে কি করছি সেটা ছিলো আমার অতীত,এখন তুমি আমার বর্তমান-ভবিষ্যৎ। বাকি জীবনটা তোমাকে নিয়ে বাঁচতে চাই।

আমার না, তোমাকে প্রথম দেখায় ভালো লেগে গেছিলো।কিন্তু বলার সাহস হয় নাই,কথায় আছে না মেয়েদের বুক ফাঁটে তো মুখ ফাঁটে না।তেমনি হয়েছে আমার কিন্তু এখন না বলে কোন উপাই পাচ্ছিলাম না।আচ্ছা আমাকে তোমার ভালো লাগে নিই।

তোমাকে ভালো না লাগলে,বিয়ে করতাম কি বলো?তোমাকেও আমার অনেক ভালো লেগেছে।আর একটা বিষয় লক্ষ‍্য করেছি সেটা হচ্ছে,তোমার মাঝে আমার প্রাক্তনকে খুজে পাই।তোমার কথার ধরন,তোমার বড় বড় চূল,বড় বড় চোখ এদমে প্রথম দেখায় তোমাকে আমার প্রাক্তন মনে করেছিলাম।হুবাহুফ তোমার সাথে মিল আছে আমার প্রাক্তনের।

যদি তোমার প্রাক্তন এর মতো আমাকে দেখতে লাগে, তাহলে প্রাক্তনকে যেমন এখনো ভালো বাসো তেমনি আমাকে ভালো বাসবে,প্রাক্তনকে ভূলে গিয়ে ।
আচ্ছা বলো তো আমার কি দেখে তোমার আমাকে পছন্দ হয়েছে?

তোমার বড় বড় চূলগুলো আমার খুবেই পছন্দ হয়েছে।একটা নারীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয় একমাত্র চূলের জন‍্য,এক কথাই মেয়েদের সৌন্দর্যের মূল উৎস হচ্ছে চূল।চূল না থাকলে মেয়ের কোন চিন্ন থাকবে না।

তাহলে আপনারো চূল দেখে আমাকে পছন্দ হয়েছে।

আমি সব সময় চাইতাম আমার বউ এর অনেক লম্বা চূল হবে আর ইচ্ছাও ছিলো যে মেয়ের লম্বা চূল থাকবে তাকে বিয়ে করবো।কাউকে পছন্দ করতে হলে একটা কারনে যথেষ্ট।পছন্দ করার জন‍্য হাজারো কারন লাগে না।

আচ্ছা একটা প্রশ্ন করি,

হুম করো,

যদি কখনো তোমার প্রাক্তন ফিরে আসে তাহলে কি আমাকে ছেড়ে দিবে নাকি?

প্রাক্তন ফিরে আশা মোটেও সম্ভব না, কারন কবেই ঈমান নামে একটা ছেলে তার জীবনে ছিলো সেটা ভূলেই গেছে।আর প্রাক্তন কখনো ফিরে আসে না,যদিও ফিরে আসে তাহলে ঠিক বুঝে নিবে,সে একদিন স্বার্থের জন‍্য তোমাকে ছেড়ে গেয়েছিলো আবারো ফিরে এসেছে তোমার কাছে স্বার্থের জন‍্য ।প্রাক্তন ফিরে আসলেও কখনো মেনে নিবো না,মনে মনে ভালো বাসলেও বাহিরে প্রকাশ করার মাধ‍্যম থাকবে না,তখন থাকবে দুইজনার পথ আলাদা আলাদা।দুইটি পথ কখনো এক হয় না,তাই প্রাক্তনকে মেনে নেওয়ার প্রশ্নই আশে না।

তাহলে তো আমার স্বামী কখনো ছেড়ে যাবে না আমাকে।

ছেড়ে যাওয়ার জন‍্য এই বন্ধন নয় রে পাগলী।বিয়ের বন্ধন হচ্ছে আল্লাহ্ হাতে লেখা একটা সম্পর্ক যা দুইজন মানুষ সারা জীবন পাশে থাকার প্রেরণা বুঝলে,তাই হাত ছাড়ার জন‍্য বিয়ে করি না।
আচ্ছা শুনো না,প্রায় তো রাত ১:৩০ বেজে গেলো এখন ঘুমাই না বউ।

আপনি এতো ঘুম ঘুম করেন কেনো,জীবনে ঘুমার অনেক দিন পাবেন তাই আজকের এই রাতটা না ঘুমিয়ে জেগে থেকে পার করে দেই।একটাই তো রাত,হাজার রাত জেগে থাকতে বলি নি।আমার সাথে কি কথা বলতে ভালো লাগতেছে না তোমার?

বউ এর সাথে কথা বলতে কার না ভালো লাগে।যদি আরো নতুন বউ হয়,তাহলে তো কোন কথায় নাই।কিন্তু অবুঝ দুটো আঁখি মানতেছে না।সালা বোকা চোখ পাশে সুন্দরী বউ থাকতেও চোখে ঘুম আসে।

তুমি তো দেখতেছি ভালোই গুছিয়ে কথা বলতে পারো।অনেক সুন্দর লাগতেছে তোমার কথাগুলো।

আমি জানি না,কতোটা গুছিয়ে কথা বলতে পারি।আচ্ছা তুমি কি জানো স্বামী-স্ত্রী পাশে বসে গল্প করা সুন্নত?আমাদের নবি(সাঃ) অবশর টাইমে ওনার স্ত্রীদের সাথে আলাপ আলোচনা করতেন।আবার স্ত্রী কপালে চুমু দেওয়াও সুন্নত।দেখছো আল্লাহ্ কতো সুন্দর একটা সম্পর্ক তৈরি করে দিয়েছে যা করে শুধু শোয়াব আর শোয়াব।

স্ত্রীদের কপালে চুমু দেওয়া যদি সুন্নত হয়ে থাকে তাহলে আপনি আমাকে এখনো চুমু দেন নাই কেনো।

একদিনে তো আর সব কিছু হয় না ধীরে ধীরে সব হবে।

তাও অবস‍্য ঠিক।আর একটা প্রশ্ন,

প্রথম থেকেই তো প্রশ্ন করতেই আছো এখন তো প্রশ্ন করা বাদ দিয়ে ঘুমাও,

আর একটা প্রশ্ন করবো তারপর ঘুমাবো,

ওকে বলো,

আমরা কয়টা সন্তান নিবো,

বিয়ের একদিন না যেথে সন্তানের স্বপ্ন দেখতেছো তুমি আবার এখনো বাসর করতেই পারি নি তাতে।

বাসর হই নি তো কি হয়েছে সন্তানের স্বপ্ন দেখতে পারবো না?বিয়ে যখন হয়েছে বাসর করা যাবে,আগে আমি সুস্হ হই।এই অবস্হায় তো আর বাসর করা যাবে না।

স্বপ্ন দেখা ভালো কিন্তু,

কোন কিন্তু নয় এখন বলেন কয়টা সন্তান নিবো আমরা।

একটা সংসারে দুইটা বাচ্চা হলে সুখে সংসার হয়।তাই আমরাও না হয় দুইটা বাচ্চা নিবো।

আচ্ছা তুমি এতো ভালো কেনো বলো তো।

আমি ভালো এটা তো কখনো কেউ বলে নিই।

কেউ বলে নি তো কি হয়েছে,আমি বলতেছি তোমার বউ?

বউ যখন বলেছে তখন বিশ্বাস করা যায় আমি ভালো।

হুম,তাহলে আমরা দুইটা বাচ্চা নিবো।একটা মেয়ে আর একটা ছেলে।আচ্ছা যদি প্রথমে আমাদের ছেলে হয় তখন,

হুম আল্লাহ্ যেটা দিবে ওটাই নিবো ছেলে/মেয়ে হোক। এখন আর কোন কথা না,অনেক রাত হয়েছে ঘুমাও।

হুম এখন ঘুমানোর প্রয়োজন অনেক গল্প করেছি আমার ঘুম পেয়েছে।

আচ্ছা আমি তোমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমাই,

জরিয়ে ধরবেন কিন্তু আমার শরীর যে, নাপাক আছে যদি তুমি আমাকে জরিয়ে ধরো তাহলে তো তোমারো শরীর নাপাক হবে।

কে বলেছে রে পাগলী তোমাকে জরিয়ে ধরলে আমারো শরীর নাপাক হবে।

কেনো আমি শুনেছি,

তুমি অন‍্যদের শুনা কথা শুনে ভয় পাচ্ছো তাহলে শুনো,আমাদের নবী (সাঃ) তার স্ত্রীর পিরিয়ড হওয়ার পরেও , সেই স্ত্রীর উচূর উপরে মাথা দিয়ে শুয়ে কোরআন শরীফ পাঠ করেছিলেন তখন তো নবী(সাঃ) এর শরীর নাপাক হতো না,তাই অন‍্যদের কথা শুনে কোনকিছু করা যাবে না,নিজেকে সেটা যাচাই-বাচাই করে দেখতে হবে কথাটা ঠিক না ভূল।

যদি তোমার কথা ঠিক হয়ে থাকে তাহলে আমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমাতে পারো কোন সমস‍্যা নাই।

হুম।(তারপর আমি জান্নাতুনকে জরীয়ে ধরে ঘুমানোর চেষ্টা করতেছি )

এখনো অনেক পরিবার আছে যে বাড়ির বউ এর পিরিয়ড হলে কোন কিছু করতে দেওয়া হয় না।তারা এটা জানে বা মানে একটা মেয়ের পিরিয়ড হলে,সেই মেয়ে যেটা স্পর্শ করবে সেই নাপাক হবে কিন্তু আমাদের এটা ভূল ধারনা।আমরা চলি সমাজের কিছু ভূল রীতি-নীতির প্রচারে।একটা মেয়ের পিরিয়ড হলে সর্বপ্রথম আমাদের সবার কাজ হলো তাকে সাপোর্ট দেওয়া তাকে শান্তনা দেওয়া,তা না করে আরো তাদের আমরা ভয় দেখাই।এটা হবে,ওটা হবে বলে ভয় দেখাই।

(আসসালামুআলাইকুম সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বেন। আল্লাহ্ যেনো আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার তউফিক দান করুক।)

#চলবে,,,?

রং বদল পর্ব-০২

0

#রং_বদল
#IH_Iman_Haque
#পর্ব_০২

ধূর কি এক জেদি লোক, যেটা ভাবে ওটাই করে,আমার কথা একটুও শুনলো না?ধূর ভালো লাগে না,যাই বাথরুমে ফ্রেস হয়ে আসি এগুলো বিরক্তকর জিনিস কেনো যে, এতো ভারি ভারি জিনিস বিয়েতে বউকে পড়ানো হয়।
বাথরুম থেকে ফ্রেস হয়ে রুমে এসে আরো অবাক হলাম কারন ওনি বিছানায় বসে আছে আর ওনার হাতে একটা পেকেট।হয়তো ওনি প‍্যাড নিয়ে এসেছেন।

আপনি এতো তাড়াতাড়ি আসলেন!

হুম কেনো,তাড়াতাড়ি আসছি দেখে কোন সমস‍্যা নাকি।আর এই নেও তোমার প‍্যাড।

আপনি কি তাহলে সত‍্যি সত‍্যি আপনার বোনের থেকে প‍্যাড নিয়ে আসলেন?

হুম,কেনো সন্দেহ হচ্ছে নাকি।তোমাকে তো বললাম সব খুলে তাও অবিশ্বাস করতেছো।আবার বলেও গেলাম আমি এশার থেকে প‍্যাড আনতে যাচ্ছি।ওর কাছ থেকে তো আনলাম।

আচ্ছা মানলাম আপনার লজ্জা-শরম কিছুই নাই কিন্তু আমার তো আছে নাকি,সকালে আমি কেমন করে এশার সামনে যাবো।কিভাবে কথা বলবো,আপনার জন‍্য আমি,

আমার জন‍্য কি?তোমার ভালোর জন‍্যই তো করলাম এখন দোষ দিচ্ছো আমাকে।এশার সাথে কথা বলবে কিভাবে মানে,এখন যেভাবে আমার সাথে কথা বলতেছো, সেভাবে এশার সাথেও কথা বলবে।

আপনার সাথে আমি কথায় পারবো না।এখন সরেন আমি বিছানায় ঘুমাবো।

বিছানায় তুমি কি একাই ঘুমাবে নাকি, আমিও তো ঘুমাবো?আর এটা কি করবো আমি এখন?

আপনি না সরলে আমি কিভাবে বিছানায় উঠবো।বিছানায় আপনিও ঘুমাবেন আমিও ঘুমাবো এবার হয়েছে।

হুম বুঝতে পারছি।আচ্ছা বলো না, এটা কি করবো?(প‍্যাড এর কাগজটা দেখায় বলতেছি)

আপনি ওটা টেবিলের উপরে রাখেন,হাতে ধরে না রেখে।

এই নেও টেবিলের উপরে রেখে দিলাম।এবার ঘুমানো জাগ।

হুম কিন্তু,

আবার কিন্তু কি?

বিছানাটা চেন্জ করতে হতো না (বিছানা চেন্জ করার কথা বলে আমি মাথা নিচ করে আছি )

আচ্ছা আমি তো তোমার স্বামী তাই না।

হুম আপনি তো আমার স্বামী।

তাহলে আমার সামনে এতো লজ্জা পাও কেনো।স্বামী হচ্ছে কি জানো,ভালো একটা বন্ধুর মতো,যাকে মন খুলে সুখ-দুঃখের কথা শেয়ার করা যায়।যেমন ধরো তোমার স্কুল-কলেজ লাইফের বন্ধুদের জীবনের সব কিছু শেয়ার করো,তেমনি একটা মেয়ে বিয়ের পরে স্বামী কেউ সেভাবে বন্ধু ভেবে সব কিছু শেয়ার করলে সম্পর্ক আরো গভীর হয়।সেই জন‍্য বলি কি, আগে একজন বন্ধু হিসাবে দেখো, তারপর না হয় স্বামী মানিও সমস‍্যা নাই?

ঠিক আছে আপনাকে তাহলে বন্ধু হিসাবে দেখবো।

তাহলে আজ থেকে আমরা বন্ধু।

হুম বন্ধু।তাহলে আপনি আমার সাথে হাত মিলান।কারন বন্ধুত্ব শুরু করতে হলে হাত মিলাতে হয়।

তাহলে হাতটা মিলাইতে দেড়ি কেনো (তারপর জান্নাতুন এর সাথে হাত মিলালাম )

আচ্ছা নতুন বিছানা কি আছে রুমে?

দেখতে হবে,থাকলেও থাকতে পারে।

তাহলে আপনি একটু খুজেন কারন এই বিছানার চাদরে ঘুমানো যাবে না।

ঠিক আছে।(তারপর আমি আলমারিতে বিছানার চাদর খুচতেছি।শেষে একটা বিছানার চাদর খুজে পাইলাম )

এই নেও বিছানার চাদর।

ওকে দেন আমি বিছাই দিচ্ছি ।(আমি ওনার থেকে বিছানার চাদরটা নিয়ে বিছানার উপরে বিছায় দিলাম আগেরটা চেন্জ করে )

তাহলে এখন ঘুমাতে কোন সমস‍্যা নাই।

হুম।তারপর আমরা দুইজনে লাইট ওফ করে বিছানায় শুয়ে পড়লাম।প্রায় ২০ মিনিট হলে গেলো কিন্তু দুচোখে ঘুম কিছুতেই আসতেছে না।ওনি আমার পাশে শুয়ে আছেন।অন্ধকারের জন‍্য বুঝতেই পারতেছি না,ওনি ঘুমিয়েছেন নাকি জেগে আছেন।বিয়েটা করেছি ভালো হয়েছেন কারন এতো ভালো একটা স্বামী পাবো সেটা কখনো কল্পনাও করতে পারি নি।আল্লাহ্ কাছে শুকরিয়া আদাই করি এতো ভালো স্বামী দেওয়ার জন‍্য।বাসর রাত নিয়ে হাজারো মানুষের হাজারো স্বপ্ন থাকে, তেমনি আমার স্বপ্ন ছিলো একটা আদর্শ স্বামী জীবনে পাওয়া।আমি সেটা পেয়ে গেছি। সব মেয়ে চাই তার স্বামী তাকে সবসময় কেয়ার করুক,ভালোবাসুক এই রকম স্বামী পেয়েছি আমি আলহামদুলিল্লাহ্।,কিছুতেই চোখে ঘুম ধরতেছে না,কি করি,কি করি হ‍্যা ওনাকে ডেকে তুলে গল্প করতে হবে তাহলে আজকে রাত পার হয়ে যাবে।
এই যে শুনছেন,এদিকে একটু ঘুরেন না।

কি হয়েছে এতো রাতে ডাকতেছো কেনো?

এতো রাত মানে এই তো ঘুমালাম আর আপনি বলতেছেন এতো রাত।এই শুনেন না,আমার না ঘুম ধরতেছে না।

তোমার ঘুম ধরতেছে না তো আমি কি করবো,ঘুমাও না এমনিতে সারাদিন অনেক কাজ করেছি তাই ডিস্টাব করো না তো ঘুমাও।

আপনি না বললেন,আপনি আমার বন্ধু তাহলে আমরা কষ্ট হচ্ছে আর আপনি ঘুমাচ্ছেন।এই তাহলে বন্ধু আমার।

আচ্ছা বলো আমাকে কোথায় কি লেখা আছে বন্ধুকে আপনি করে বলতে?বন্ধু যদি বন্ধুকে আপনি বলতে পারে তাহলে আমি কেনো বন্ধুর কষ্টে ঘুমাতে পারবো না।

বন্ধু হয়েছি তো কি হয়েছে, আপনি তো আমার বড় আবার স্বামী ও তাই আপনি করে বলতেছি?

আমাকে যদি আর একবার আপনি করে বলো তাহলে,এই যে আমি ঘুমালাম আর কথা বলবো না তোমার সাথে।

এই রকম করিয়েন না প্লিজ,আচ্ছা বলেন আমি আপনাকে কি বলে ডাকবো?

তুমি বলো যে,স্কুল-কলেজ লাইফের বন্ধুদের কি বলে ডাকতে?

কেনো নাম ধরে ডাকতাম আর তুই করে বলতাম।

তেমনি তুমি আমাকে তুই করে বা নাম ধরে ডাকতে পারো।

আমি আপনাকে তুই করে ডাকতে পারবো না,কারন বাহিরের মানুষ শুনলে কি বলবে?

বাহিরের মানুষ শুনবে কেমন করে,যদি আমরা বাহিরে যাই তাহলে তুমি আমাকে তুমি করে বলবে আর কেউ না থাকলে তুই।

ঠিক আছে তাহলে তুই করেই বলবো আপনাকে।

আবারো আপনি,

ছরি,ছরি ভূল করে মুখ দিয়ে বাহির হয়ে গেছে।আচ্ছা আপনি তো আমার বন্ধু তাই না,তাহলে একটা প্রশ্ন করি?

হুম কেনো বিশ্বাস হয় না, আমি তো তোমার বন্ধুই তাই যেকোন প্রশ্ন করতে পারো,

তাহলে তুই কি কখনো প্রেম করেছিস আমাদের বিয়ের আগে?

সত‍্য বলবো না মিথ‍্যা,

মিথ‍্যা কেনো বলবি,

সত‍্য বলতে ক্লাস ৯-১০ এই দুই বছর একটা হিন্দু মেয়ের সাথে প্রেম করেছিলাম।

কি তুই দেশে কোন মেয়ে পাস নাই,শেষে হিন্দু মেয়ের সাথে?

আরে ক্লাস ৯-১০ হচ্ছে একটা ছেলে-মেয়ের ভালোলাগার বয়স।তেমনি তখনো আমার ভালোলাগার বয়স ছিলো, একটা হিন্দু মেয়েকে ভালো লেগেছিলো তারপর শুরু হয় ভালোবাসার কাহিনী।আর এটা তো সবাই জানে,প্রেম-ভালোবাসা কখনো জাতি -পাতি মানে না।

এখনো মেয়েটার সাথে কথা বলিস।

না, বিয়ে হয়ে গেছে আর একটা বাচ্চাও হয়েছে তাই কথা হয় না ।আর প্রতিটা মেয়ে সংসার জীবনে পা রাখলে অতীতে কি হয়েছে তা সহজে ভূলে যায়।শুধু ছেলেরাই বুকে ভালোবাসা চেপে রেখে দেয়।

এখনো কি তুই ওকে ভালোবাসি,মনে পড়ে তার কথা?

মনে পড়বে না,প্রথম ভালোবাসা ছিলো আমার আর প্রথম ভালোবাসা কখনো ভূলা যায় না।পৃথিবীর কোন মানুষ বলতে পারবেনা তার প্রাক্তনকে ভূলতে পেরেছে।প্রক্তন কি যে যাদু করে তাদের কখনো ভূলা যায় না।

আরে তুই কান্না করতেছিস কেনো।

প্রাক্তনের কথা মনে পড়লে আমার কান্না চলে আসে।

অন‍্যসময় কান্না করিস ভালো কথা কিন্তু বাসর রাতে বউ এর সামনে তুই প্রাক্তনের কথা ভেবে কান্না করতেছি।

এখন যে আমার পাশে আছে, সে আমার বউ না একজন ভালো বন্ধু তারপর বউ।

ওরে আমার সোনা রে,আয় একটু কাছে আয় তোকে জড়াই ধরি।

হয়েছে তোকে জড়াই ধরতে হবে না।

ঠিক আছে এখন চোখে পানি মুচে ফেল,স্বামী কাঁদলে বউ এর বুঝি কষ্ট হয় না।

এই নে চোখের পানি মুচে ফেললাম।

মনে কর আমি এখন তোর বন্ধুর না,আপনার বউ আমি যদি আপনার প্রাক্তনের কথা বলতাম তাহলে কি আপনি আপনার প্রাক্তনের কথা বলতেন। ( বউ এর কেরেক্টর চলতেছে তাই আপনি।আবার কেউ ভাবিয়েন না,তুই থেকে আপনিতে গেলো কেমন করে )

অবস‍্যই বলতাম কারন একটা স্ত্রী তার স্বামীর অতীত বিষয়ে সব কিছু জানার অধিকার আছে কারন ,স্ত্রী যদি তার স্বামীর অতীতের খারাপ বিষয়গুলো কারো থেকে জানতে পারে তাহলে আমি নিচ্চিত যে, হয় স্ত্রী স্বামীর উপরে সন্দেহ করবে, না হলে সংসারে অশান্তী শুরু করে দিবে তাই আমি বলি কি প্রতিটি ছেলে তার স্ত্রীকে তার অতীতের বিষয়ে জানো দরকার।যখন আপনার অতীত বিষয়ে জানাবেন আপনার স্ত্রীকে তখন হয় তো একটু মন খরাপ হতে পারে কিন্তু পরে ঠিকে মেনে নিবে।

#চলবে,,,?

রং বদল পর্ব-০১

0

#রং_বদল
#IH_Iman_Haque
#সূচনা_পর্ব

প্রথম মাসে পিরিয়ড মিচ হওয়ার পরে,দ্বিতীয় মাসে জান্নাতুন এর বিয়ে হয়ে যায়।বাসর রাতে পিরিয়ড হবে জান্নাতুন এটা ভাবতে পারে নিই কখনো। পিরিয়ডের রক্তের দাগ অল্প অল্প বিছানার চাদরে ভরেছে কিছু কিছু জায়গায় ।আমি এটা ভেবেই পাচ্ছি না , আজকে তো আমার পিরিয়ড হওয়ার ডেট ছিলো না,কিন্তু কেমন করে ডেট মিচ হলো বুঝতে পারতেছি।এটা আমার প্রায় হয় প্রথম মাসে পিরিয়ড মিচ হয়ে থাকে।এটা কখনো মাকে খুলে বলতে পারি নি লজ্জায়?মানুষের থেকে শুনেছিলাম যে,একটা মেয়ের শারীরিক কোন সমস‍্যা থাকলে নাকি মাসে মাসে পিরিয়ড হয় না,এক দুইমাস পরেও হয়ে থাকে।এই বিষয় নিয়ে কখনো পরিবারে কারো কাছে শেয়ার করি নি। এখানে নতুন জায়গায় এসেছি,নতুন পরিবেশে বেশ লজ্জায় পড়ে গেলাম ।কাউকে ডেকে বলতেও লজ্জা পাচ্ছি,কি বলবো আমার পিরিয়ড হয়েছে, আমাকে একটা প‍্যাড দেন?নিজের মাকে কখনো বলতে পারি নি আর এখানে নতুন জায়গায় নতুন মানুষ।এদিকে আবার ভয়ও হচ্ছে আমার স্বামী দেখলে কি ভাববে?এই রকম পরিস্থিতিতে আমি কখনো পড়িনি ।এদিকে পড়নের লাল শাড়ি টাও একটু একটু ভিজে গেছে।কি করবো ভেবে পাচ্ছি না?

ও আপনাদের পরিচয়টা দিয়ে দেই এর ফাঁকে আমার স্বামী আসার আগে,আমি হচ্ছি নূরে জান্নাতুন।বাবা-মার একমাত্র মেয়ে আমি।আজকে পরিবারে পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে আমার।ছেলে নাকি ভালো সেইজন‍্য বাবা-মা জোড় করে বিয়ে দিয়ে দিলো আর আমার স্বামীর নাম ঈমান হক।বর্তমানে নাকি ওনার বাবার ব‍্যবসা সামলায় শুধু এতোটুকু যানি তাছাড়া ওনার সম্পর্কে আর বেশি কিছু জানি না?ধীরে ধীরে সব পরিচয় পেয়ে যাবেন গল্পের মাধ‍্যমে।আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে দেখতেছি দরজা খুলে কেউ আসতেছে।দরজা খুলার শব্দ শুনে বুকটা ধক করে উঠলো,মনে হয় ওনি চলে এসেছেন।দরজা খুলে কে আসতেছে তা দেখে,ভয়ে আর লজ্জা মাথা উঠে দেখতে পারতেছি না, কে রুমে আসতেছে।একটু পরে কে যেনো আমাকে সালাম দিচ্ছে,

আসসালামু-আলাইকুম।

ওলাইকুমসালাম (আমি গলার আওয়াজ শুনে বুঝতে পারছি এটা আমার স্বামী ঈমান।ওনার কথা শুনে ভয়ে আমি আরো জড় হয়ে চূপটি করে বসে আছি। )

কি বেপার জান্নাতুন তুমি আমাকে দেখে ভয় পাচ্ছো কেনো বুঝতেছি না?শুনেছিলাম বাসর রাতে নাকি স্ত্রী তার স্বামীর পা ধরে সালাম করে কিন্তু তুমি আমার পা ধরে কি সালাম করবে তার চেয়ে আমাকে দেখে ভয় পাচ্ছো কারন টা কি?

চূপ করে আছি কারন বাসর রাতে স্বামীর পা ধরে স্ত্রী সালাম করে এটা হচ্ছে সমাজের রিতি-নিতী।কিন্তু আমি তো লজ্জায় বিছানা থেকে নামতেই পারতেছি না,আমি এখান থেকে উঠলেই ওনি বুঝতে পারবে আমার কি হয়েছে তখন আমি আরো লজ্জায় মরে যাবো তাই ওনি কি বলে বলুক কিন্তু আমি বিছানা থেকে উঠে ওনাকে সালাম করবো না কখনো।

তুমি তো দেখতেছি একটা বেয়াদব মেয়ে আমি এতোক্ষন ধরে একায় কথা বলতেছি আর ওনি চূপ করে বিছায় বসে আছে।আচ্ছা সালাম করো নাই এটা কোন সমস‍্যা নেই,কারন তুমি ছোট মানুষ তাই ভূল হতেই পারে।এখন ভালো মেয়ের মতো বিছানা থেকে নেমে আসো তারপর দুইজনে মিলে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বো তারপর আমাদের সংসার জীবন শুরু করবো।

এবার তো আরো ঝামেলায় পড়ে গেলাম,এই অবস্হায় তো কখনো নামাজ পড়া যাবে না।নবি (সা:) বলেছেন মেয়েদের পিরিয়ডের সময় ইবাদত করতে নিষেদ করেছে।তাহলে আমি কিভাবে এই অবস্হায় ওনা সাথে নামাজ পড়ি।

আচ্ছা তোমার হয়েছেটা কি আমাকে একটু খুলে বলবে?নাকি আমাকে স্বামী হিসাবে মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।এই রকম হলে আমাকে বলতে পারো কোন সমস‍্যা নাই (এই কথা বলে জান্নাতুন এর পাশে বিছানায় গিয়ে বসলাম )

আপনি আমার কাছে আসবেন না।

এটা আবার কেমন কথা।কেনো তোমার কাছে যাবো না,তুমি আমার স্ত্রী আমি তোমার স্বামী!তোমার কাছে যাওয়া আমরা সম্পন্ন অধিকার আছে।

আমি জানি আপনার আমার উপরে সম্পন্ন অধিকার আছে কিন্তু আমার কাছে প্লিজ আসবেন না আপনি?

আরে সমস‍্যাটা কি আমাকে একটু বলবে আমার কিন্তু মাথায় রাগ উঠে যাচ্ছে?হঠাৎ করে বিছানায় কিছু দাগ দেখতে পেলাম।এগুলো আবার কিসের দাগ,দেখে তো মনে হচ্ছে রক্তের দাগ।রক্ত আসলো কই থেকে।এই জান্নাতুন বিছানায় রক্ত আসলো কই থেকে!

এতোক্ষন ধরে যে ভয়টা পেয়েছিলাম সেটাই হলো এখন কি বলবো ওনাকে?

আচ্ছা তুমি আবার হাত কাঠছো নাকি দেখি তোমার হাতদুটো।অনেক মেয়ে আছে বাসর রাতে স্বামী কে বলে আপনাকে মেনে নিতে পারবো না,আমার bfআছে যদি জোড় করে স্ত্রীর অধিকার নিতে চান তাহলে আমি এই চাকু দিয়ে হাত কেটে ফেলবো এমন ডাইলোক হাজারো মেয়ে দেয়, তেমন কি তোমারো কাহিনী নাকি?
দেখি তোমার হাত দুটো,

তারপর ওনি আমার হাত দুটো নিয়ে খুটি খুটি দেখতেছে কোথাও হাত কেটেছি নাকি।হাত না কাটলে কেমনে ওনি পাবেন।

কই দুই হাত তো ভালো করেই দেখলাম কোথাও কাটার চিহ্ন দেখতে পেলাম না।তুমি সত‍্যি করে বলো তো এই রক্তগুলো কই থেকে আসলো?

এবার বলা ছাড়া কোন উপাই পাচ্ছি না।তাই বলেই দিলাম যে আমার পিরিয়ড হয়েছে।

এই সাধারন বিষয় টা বলতেও এতো লজ্জা।বিশ্বের সব মানুষ এই বিষয়ে একটু হলেও ধারোনা আছেই।আমাকে প্রথমে বললেও তো হতো, তাহলে এতো কথা শুনতে হতো না।শরমের জিনিস হলে তো শরম লাগবে নাকি।

নিজের মাকে কখনো ভালোভাবে বলতে পারি নাই আর আপনার সাথে কিছুদিনের সম্পর্ক তৈরি হলো তাহলে কেমন করে আপনাকে বলবো আমার বাসর রাতে পিরিয়ড হয়েছে।

তাহলে বিছানায় এগুলো তোমার পিরিয়ডের রক্তের দাগ।

বুঝতেই যখন পারছেন তখন বার বার লজ্জায় ফেলতেছেন কেনো।যদি ছেলেদের পিরিয়ড আল্লাহ্ দিতো তাহলে ঠিকে বুঝতো মেয়েদের পিরিয়ড হলে কতো কষ্ট হয় বুঝলেন।

আমি কি তোমাকে বলেছি পিরিয়ড হলে মেয়েদের কষ্ট হয় না, হ‍্যা?আমি আমার বোনকে দেখেছি পিরিয়ড হলে কেমন কষ্ট হয়।

আপনার বোনের পিরিয়ড হলে কি আপনাকে বলে?আপনার লজ্জা করে না।

হুম এটা তো আমার পরিবারের সবাই জানে।আর তুমি লজ্জার কথা বলতেছো এটা আমার ভিতরে নাই বললেই চলে।ছোট থেকে ভাই বোন এক সাথে বড় হয়েছি একদম দেখলে বলবে আমরা দুইজনে বন্ধু কিন্তু আমরা ভাই বোন কেউ সহজে বুঝতে পারবে না।আমরা সব সময় বন্ধুর মতো ফ্রি,আমরা দুই জনে দুইজনার কষ্টের বিষয় গুলো শেয়ার করি,সেই ক্ষেত্রে আমি ওর সব বিষয়ে জানি এবং ও আমার।আর একটা হাস‍্যকর কাহিনী হচ্ছে ওর পিরিয়েডের প‍্যাড আমি কিনে এনে দেই।

প্রতিটা মেয়েদের পিরিয়ডের বেপারে পরিবারের লোকজনের জানা দরকার।কারন কখন কোন সমস‍্যা হয় সেটা একটা পরিবারে সদস‍্যই দেখবে।তোমার মতো হাজারো মেয়ে লজ্জায় মাকেউ বলতে পারে না পিরিয়ডের বেপারে কিন্তু ইসলাম বলে এখানে লজ্জার কিছুই নেই,তোমার পিরিয়ডের বেপারে তোমার পরিবার জানুক।

আপনি তো দেখতেছি মেয়েদের বেপারে অনেক কিছু জানেন।আর কতো কি জানেন মেয়েদের বেপারে একমাত্র আল্লাহ্ আর আপনি ভালো জানেন।

এগুলো বাদ দেও এটা বলো তোমার কি প‍্যাড লাগবে?

এতো রাতে আপনি প‍্যাড কই পাবেন।এখন তো প্রায় এগারো টা বাজতেছে দোকানো খোলা পাবেন না,তাই আপনাকে কোথাও যেথে হবে না এতো রাতে।আজকে রাতটা কোন মতে পার করতে পারবো সমস‍্যা নাই কালকে এনে দিলেই হবে।

দোকানে যেথে হবে না,দেখি এশার কাছে যাই ওর কাছে থাকতে পারে কারন ওকে একবারে বেশি করে প‍্যাড এনে দেই তো।(এশা আমার ছোট বোনের নাম)

এতো রাতে এশার কাছে যাবেন।যদি বলে কি করবেন আপনি?

কেনো তোমার কথা বলবো!

আপনি কি লজ্জা শরমের মাথা খেয়েছেন নাকি, হ‍্যা?মুখে কিছুই আটকে না।

লজ্জার বিষয় না,দেখে লজ্জা পাচ্ছি না।এখন তুমি বাথরুমে গিয়ে এই ভারি শাড়ি,গহনা ইত‍্যাদি যা বিরক্ত লাগে সব খুলে এসো আমি এশার থেকে প‍্যাড আনতেছি।

আপনাকে কোথাও যেথে হবে না,আপনি এখানে বসে থাকুন আমি ফ্রেস হয়ে আসতেছি।

তুমি ফ্রেস হয়ে এসে অপেক্ষা করো এই যাবো আর আসবো।

ধূর কি এক জেদি লোক যেটা বলে ওটাই করে,আমার কথা একটুও শুনলো না?ধূর ভালো লাগে না,যাই বাথরুম ফ্রেস হয়ে আসি এগুলো বিরক্তকর জিনিস কেনো যে এতো ভারি ভারি জিনিস বিয়ের বউকে পড়ানো হয়।

#চলবে,,,,,?

আমি শুধুই তোমার পর্ব-১০ এবং শেষ পর্ব

0

গল্পের নামঃ- #আমি_শুধুই_তোমার❤️
Writer:-আইদা ইসলাম কনিকা
পর্বঃ-১০+শেষ

মানুষের জীবনে সুখ দুঃখ দুনটাই আসে একটার পরই আরো একটার আশা করা যায়। ফারিদাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে, আজ ইভান একজন বড় মাপের ডক্টর হওয়ার পরও সে আজ দূর্বল, ইভান সেই কখন থেকে মিরার দিকে লাল চোখে, তাকিয়ে আছে। ফারিদার মা-বাবা ফারিনও আসছে। ফারিন অনেক কান্না করছিল তাই অংশ তাকে নিয়ে বাইরে চলে যায়। ফারিদার মা আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে কান্না করছে। মিরা ভাবে এটাই সময় ইভানের কাছে ভালো সাজার। মিরা ইভানের কাছে গিয়ে কিছু বলতে যাবে। ইভান উঠে দাড়িয়ে দেয় এক চড় বাসিয়ে মিরা ছিটকে গিয়ে নিচে পরে। চড়টা এতটাই জোড়ে ছিল যে মিরার ঠোঁট কেটে যায়। ইভান গিয়ে মিরা চুলের মুঠি ধরে আবার দাড় কারায় ইভানের মা এগিয়ে আসলে ইভান এমন ভাবে তাকায় যে সে আর কিছু বলতে পারেনা। সবাই বুঝতে পারছে মিরা এমন কিছু করেছে যার কারণে তার এমন অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছে। মিরা অনেক কষ্টে বলে
—কি করছ কি ইভান ভাইয়া? ইভান এবার আরেক হাত দিয়ে মিরার গলা টিপে ধরে আর বলে

—-তোকে আজ মেরেই ফেলবো। আমি নিজে দেখেছি তুই ফারিদাকে ধাক্কা দিয়েছিস। জানে মেরে ফেলবো যদি আমরা ফারিদার কিছু হয় কসম খোদার ।মিরার তো হাত পা দিয়ে কাপঁ উঠে গেছে ইভান কি করে জানলো। মিরা বলে

—-চমার কষ্ট হচ্ছে, আর ফারিদা পরে যাচ্ছিল আমি ওকে। আর কিছু বলতে যাবে ইভান আরো জোড়ে গলা চেপে ধরলো। তখনই ফারিদার বাবা আর ইভানের বাবা এসে ইভান কে ছাড়ায়। কিন্তু লাভ হয়না। ইভান আবার গিয়ে পর পর ৩টা চড় বসিয়ে দেয়। আর বলে

—-তোকে আমি জেলে দিব। কেনো করলি এমনটা? মিরা বলে

—-কারণ আমি তোমাকে ভালোবাসি। সাথে সাথে আরেকটা চড় পরলো তার গালে। সামনে তাকিয়ে দেখে মিরার মা। মিরার মা বলে

—- আমি সব শুনেছি, তোকে নিজের মেয়ে বলতে ঘৃণা করছে। ইভান বাবা। ইভান হাত দিয়ে থামিয়ে বলে

—-কাজ হবে না, ওকে জেলের ভাত খেতেই হবে। মরি যেই না দৌড় দেয় পালানোর জন্য, পিছন পিছন ইভানও,ইভান সামনে তাকিয়ে দেখে অংশ আর ফারিন আসছে। ইভান বলে

—-মিরাকে ধর। ফারিনকে যখন মিরা ক্রস করতে যাবে তখনই ফারিন মিরার খুলা চুলগুলো নিজের হাতে পেচিয়ে ফেলে। আর টান মেরে নিচে ফেলে দেয়। অংশ তো হা হয়ে তাকিয়ে আছে। ইভান এসে আরেকটা থাপ্পড় মারে মিরার গালে। মিরার গালগুলো লাল টোটকে হয়েগেছে। তারপর ইভান বলে

—-তোকে আমি বলে ছিলাম চিরকুটটা নিয়ে ফারিদাকে দিতে। আর আমি চিরকুটে লিখেছিলাম, ভালোবাসি বলিনা কিন্তু তোমায় বাসি,সেটা পরে ফারিদা ছাঁদে কেনো যাবে। আর তাছাড়া আমি নিজ চোখে দেখেছি তোকে তুই আমার ফারিদাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলেদিয়েছিস। তখনই একটা ডক্টর এসে বলে।

—-ডক্টর ইভান কি করছেন কি এটা বাসা না, হসপি,,,, আর কিছু বলতে যাবে ইভান তার দিকে তার রক্ত চোখে তাকিয়ে বলে
—–এটা আমাকে শিখাতে হবে না। আর হসপিটালটা আমার বাবার নামে সো, চুপচাপ নিজের কাজে যান,আর অংশ তুই পুলিশকে কল কর। অংশ কল করে দেয় ফারিন গিয়ে মিরার চুলগুলো ইচ্ছে মতো টানে।আর বকে। কিছু সময় এর মধ্যেই মিরার কুকর্তি প্রকাশ পেয়ে যায়। ইভানের আন্টি হাজার বললেও ইভান শুনেনি। বাধ্য করেছে মিরাকে জেলে যেতে। ইভান আর পারে না বুক ফেটে কান্না আসছে। ছেলেদের নাকি কাদঁতে নেই। কিন্তু ইভান যে নিজের কান্নাটা আটকাতে পারছে না। সে দেওয়ালের সাথে মাথা ঠেকিয়ে জোড়ে জোড়ে কেঁদে দিল। ছেলের এমন অবস্থা দেখে ইভানের বাবা গিয়ে জড়িয়ে ধরে ইভানকে শান্তনা দিতে থাকে। তখনই একটা ডক্টর বেরিয়ে আসে।ইভান দৌড়ে গিয়ে ডক্টরকে বলে

—-আমার আমার ফারিদা কেমন আছে? ডক্টর বললো

—-আমরা আমাদের বেস্টটা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আর বাকিটা আল্লাহ জানে। ইভাম ডক্টরের কাঁধের কাছে হাতটা নিয়ে বলে

—-ফারিদার কিছু হলে,সবাইকে হসপিটাল থেকে বের করে জেন্ত কবর দিব। চুপচাপ ভিতরে যান। ডক্টরটা ভয়ে ভিতরে চলে যায়। ইভানের বাবা বলে

—-ইভান পাগলামী না করে আল্লাহর কাছে ফারিদার জন্য দোওয়া কর। ইভান কিছু না বলে চুপচাপ বেড়িয়ে গেলো হসপিটাল থেকে। ছেলেটা তার সহজে রাগে না রাগলে কি করে নিজেও জানে না। ইভানের বাবার টেনশন হচ্ছে এখন।ইভান হসপিটালের পাশের মসজিদ টায় ওযু করে নামাজ পড়তে লাগে। রাত ১টার দিকে ফারিদাকে আইসিইউ তে দেওয়া হয়। ৩৬ ঘন্টাার আগে কিছু বলা যাবে না। ইভান রাত ২ টার দিকে হসপিটালে আসে দেখে ফারিদারমুকে অক্সিজেন মাস্ক, হাতে কেরোলা মাথায় হাতে,পায়ে বেন্ডেজ। ইভানের কলিজা আতকে উঠে। আল্লাহর রহমতে আর সবার দোওয়ায় ৩৬ ঘন্টার আগেই ফারিদার সেন্স ফিরে আসে। নার্স গিয়ে ডক্টরকে বলে যে ফারিদার সেন্স আসছে সেই কথা শুনে সবাই একসাথে জড়ো হয় কেবিনের সামনে। অনেক বলার পর ডক্টর রাজি হয় তাও একজন যেতে পারবে ফারিদার সাথে দেখা করতে। ইভান সবার দিকে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে বলে

—-আম,, আমি যাই? সবাই ইভানকে যেতে বলে। ইভান কেবিনে যায় ধীরে পায়ে। দেখে ফারিদা চোখ বুঁজে আছে। পারিদার কারো উপস্থিত টের পেয়ে চোখ খুলে দেখে ইভান। সে তো ভেবেছিল এই সুন্দর মুখটা আর তার দেখা হবে না। ইভানকে দেখেই ফারিদা কান্না করে দেয়। অনেক কষ্টে নিজের একটা হাত উঁচু করে ইভানকে কাছে ডাকে। ইভান গিয়ে ফারিদাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয় আর বলে

—-আমার কিছু চাই না তোমাকে চাই,ভালোবাসি তোমাকে। ইচ্ছে ছিলো বিয়ের পর বউ এর সাথে প্রেম করবো, কিন্তু কে জানতো এমনটা হবে, আমাকে ক্ষমা করে দাও ফারিদা। আর তোমার অপরাধী নিজের শাস্তি পেয়েছে। ফারিদা অনেক কষ্টে বললো

—-আমিও ভালোবাসি খুব। ইভান একটা ভালোবাসার পরশ একে দেয় ফারিদার কপালে।

সময়ের সাথে সাথে ফারিদাও অনেক সুস্থ হয়ে উঠেছে। ৬ মাস হয়েগিয়েছে। আর এই ৬ মাসে ফারিদার গোসল থেকে শুরু করে খাওয়া দাওয়ার সব খেয়াল রেখেছে ইভান। সকালে ব্রেকফাস্ট করিয়ে যেতে দুপুরে ভিডিও কলে দেখতো ফারিদা খাচ্ছে কিনা। আর ফারিদার গোসল করা হলে সেটা সে সকালে করিয়ে দিয়ে যেতো। কিছু দিন পর ইভানের সেবার কারণে ফারিদা এখন হাটতে পারে। ফারিন আর অংশের মধ্যে বেশ ভাব হয়েগেছে। ফারিন অংশকে অংশ বলে ডাকে। কিন্তু অংশ ফারিনের চেয়ে ৭ বছরের বড়। আজ ফারিদাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে ইভান। আকাশী কালারের একটা শাড়ি পরে চুলগুলো খুলে দিলো ফারিদা। চোখে কাজল আর ইভান পরেছে আকাশী কালারের পাঞ্জাবি আর সাদা কালের পাজামা। ইভান আর ফারিদা আসছে শহরের কোলাহল থেকে বেড়িয়ে গ্রামের দিকে একটা ঝিলের পাড়ে ইভান গাড়িটা পার্ক করে ফারিদার হাত ধরে হাটতে লাগলো। ফারিদা বলে

—-ভালোবাসেন আমায়? ইভান দুষ্টামি করে বলে

—-না আমি অন্য কাউকে ভালবাসি। ফারিদা সেটা শুনে বলে

—-হুতুম পেঁচা, বেটা খচ্চর নিরামিষ। যা আমার সাথে কথা বলবিনা তুই। আমিও বলবনা বলে পিছন দিকে হাটা দিলো আর ইভান দৌড়ে গিয়ে ফারিদার সামনে দাড়িয়ে পড়ে আর বলে

—-পাগলীটা আমার। আমি তোমাকেই ভালোবাসি তোমাকেই বাসবো #আমি_শুধুই_তোমার আর তুমি শুধুই আমার। ফারিদা মুচকি হাসি দিয়ে বলে

—-আমার কিউট হুতুম পেঁচা টা। লাভ ইউ। ইভান বলে

—-এক মিনিট। ঝিলের পাড়ে ছিলো অনেক বড় বড় ঘাস ইভান সেই ঘাস গুলো দিয়ে একটা রিং এর মতো বানায় আর ফারিদার সামনে হাটু গেড়ে বসে বলে

—-চাই না তোমাকে হারাতে,পারবোনা তোমাকে হারাতে। ভালোবেসে রাখবো কাছে। বলতে পারি খুব ভালোবাসি, আমাকে কি একটু ভালোবাসা যায় না নাকি? ফারিদা বলে

—-হ্যা, যায় আমিও বাসি। কিন্তু আমি বড্ড অভিমানি, পারবেন তো অভিমান ভাঙাতে? ইভান মুচকি হাসি দেয় আর বলে

—ঢের পারবো। ভালোবাসি। ফারিদাও বলে

—-ভালোবাসি। চলেন পালিয়ে বিয়ে করে বাসায় সবাইকে চমকে দেই কি বলেন। ইভান দাত কেলিয়ে বলে

—-মন্দ না আমার অনেক দিনের শক ছিলো।

——সমাপ্ত —–

আমি শুধুই তোমার পর্ব-০৯

0

গল্পের নামঃ- #আমি_শুধুই_তোমার❤️
Writer:-আইদা ইসলাম কনিকা
পর্বঃ০৯

ফারিদার সেদিকে খেয়াল নেই সে তার মতো টিকিট করছে, আর ইভান দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে তার বউটাকে আজ কত সুন্দর লাগছে, পুরাই ফিদা ইভান আজ। ইভান ধীরে পায়ে ফারিদার কাছে গিয়ে দাঁড়ায় আয়নায় ইভানকে দেখে ফারিদা চমকে যায় কখন এলো সে, যাই হোক এখন ফারিদা এখন ফোনটা রেখে দিলো আর ইভানের পাশ কাটিয়ে যেতে নিলে ইভান নিজের ডান হাতটা আয়নার মধ্যে রেখে ফারিদার যাওয়া আটকায়। ফারিদা বা দিকে যেতে চাইলেও সেম কাজটাই করে ইভান। ফারিদার তো অবস্থা খারাপ এসি চলছে তাও ঘামছে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে আছে কপালে।ইভান তা দেখে সে বাঁকা হাসি দিয়ে বলে

—-ঘামছো কেন?গরম লাগছে বুঝি? ফারিদার মুখে আলতো করে ফু দিয়ে, ফারিদার কাটা চুলগুলো ফারিদার মুখে এসে পরে। ফারিদা অন্য দিকে তাকিয়ে বলে

—-হাতির মতো যদি কেউ সামনে দাঁড়িয়ে থাকে তাহলে তো গরম লাগবেই তাই না? ইভান অবাক হয়ে যায়, ইভান মনে মনে বলছে বলে কি,আল্লাহ্ এতো রাগ কিভাবে কি করবে। ফারিদা ইভানের হাতের নিচ দিয়ে বের হয়ে যায় আর বলে

—-আমি ঘুমাবো, বলেই ওয়াশরুম চলে যায় আর ফ্রেশ হয়ে আসে দেখে ইভানও চেন্জ করে নিয়েছে। ফারিদা এসির পাওয়ারটা লো করে ব্লাইনকেট টা নিয়ে সোফায় চলে যায় আর সাথে একটা বালিশ নেয়। ইভান তা দেখে বিছান ছেড়ে এসে দাড়ালো ফারিদার সামনে ফারিদা ভ্রু-উচুঁ করে ইশারায় বলে কি হয়েছে? ইভান ফারিদাকে কিছু না বলে কোলে তুলে নিল। ফারিদা বলে

—-এই এই কি করছেন,ছাড়ুন, ছাড়ুন বলছি। ইভান কিছু না বলে ফারিদাকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে নিজে, ফারিদাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরে আর বলে

—-নড়াচড়া করলে খবর আছে আমি ঘুমাবো। ফারিদা নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বললো

—–ঘুমান আমাকেও ঘুমাতে দিন। ইভান বলে

—-ঘুমাও,বারণ করছে কে? ফারিদা বলে

—-কমপক্ষে একটা বালিশতো আনতে দিবেন। ইভান বলে

—-হ্যা আমি তোমাকে ছাড়ি তারপর আবার যাও সোফায় আমি আবার তোমায় কোলে করে নিয়ে আসি। লাগবেনা বালিশ আমার হাতে ঘুমাও।

ফারিদাও কিছু বলেনা মুখে বিরক্তের ভাব নিয়ে শুয়ে পরে ইভান তা দেখে মুচকি হাসি দিয়ে সেও ঘুমিয়ে পরে। সকাল মিষ্টি রোদের আলো চোখে পরতেই ঘুম ভাঙলো ফারিদার, কিন্তু ঘুম ভেঙে যাবার পর যা দেখে তা দেখে অবাক হয়ে গেলো,সম্পূর্ণ রুম বেলুন দিয়ে সাজানো, তারপর বড় করে লেখা সরি, আর সামনে ইভান কান ধরে দাড়িয়ে আছে, ইভানের পরনে ওয়াইট কালারের টিশার্ট আর গ্রে কালাররে টাউজার, চুলগুলো এলেমেলো দেখে মনে হচ্ছে একটা বাচ্চা যে গ্লাস ভেঙে ফেলছে আর ভয়ে আম্মু সামনে কান ধরে দাড়িয়ে সরি বলছে। ফারিদা সেটা দেখে মুচকি হাসি দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়, ইভান বলে

—-যাই হোক একটু তো হাসলো।

ইভান নিচে গিয়ে সবাইকে বললো কার কি কাজ,বাসার সবাই জানে ইভান ফারিদাকে মানানোর চেষ্টা করছে, সাথে আছে ফারিদার মা বাবা আর ফারিন ও হেল্প করছে ইভানকে । কিন্তু এইসব দেখে একজন রাগে ফুলছে সে আর কেউ না মিরা, কারণ তার এতো দিনের প্ল্যান ইভানকে নিজের করে পাওয়ার আশায় আজ জল ঢেলে দিল ইভান নিজেই। তারপর খাবার টেবিল ফারিদা যখন নাশতা করতে বসে। ইভান আসে খাবার হাতে পরনে তার সার্ভেন্ট এর পোশাক। তার হাতের পেলেট টা রাখে ফারিদার সামনে, ফারিদা দেখে ২টা টোস্ট একটায় সেড ফেস আরেকটায় সরি লেখা। তার একটু পর আসে ইরিন, হাতে তার কফি মগ।মুখে মিষ্টি হাসি সেটা রাখে ফারিদার সামনে ফারিদা ভালোকরে খেয়াল করে দেখে কফি মগেও সেড ইমোজি। ফারিদার তো ইচ্ছে করছে ইভান কে জড়িয়ে ধরতে কিন্তু সবার সামনে যে সেটা সম্ভব না।
তাই সে চুপচাপ খেতে লাগলো। খাওয়ার পর উঠে ফারিদা যখন সামনে ঘুরতে যাবে দেখে আস্ত একটা মিকি-মাউস সেটা ভিতরে অংশ, মিকি মাউস টা একটা টেডিবিয়ার নিজের পিছন থেকে এনে ফারিদার হাতে দেয় সেখানেও লেখা সরি। ফারিদা টেডিবিয়ারটা নিয়ে ওপরের দিকে ওঠতে গেলো দেখে ইভান আর ইভানের মা ঝগড়া করছে। একসময় ইভানের মা অন্য দিকে মুখ ফিরে নিয়ে চলে যেতে নিলে ইভানের বাবা তার সামনে গিয়ে এক কান ধরে সরি বলে আর তাকে জড়িয়ে ধরে। ফারিদা সেটা দেখে মুচকি হাসি দিয়ে ওপরে উঠছে তখনই সামনে দাঁড়িয়ে দেখে ইভান এক কান ধরে সরি বলছে। কিন্তু ফারিদা ভেংচি কেটে চলে গেলো। ইভানের চাচি আসে সাথে ইভানের চাচাও ইভানের চাচি রাগ করে বলছে বাড়ি চলে যাবে আর ইভানের চাচা বলছে

—–বউ গো তুমি রাগ কইরা বাপের বাড়ি যাইয়ো না,যাইয়ো না। বউগো তুমি রাগ কইরা বাপের বাড়ি যাইয়ো না। ফারিদা আর নিজের হাসি চেপে রাখতে পারলো না হুহুহু করে হেসে দিল। ইভানের চাচা চাচি নিচে চলে গেলো। ফারিদা নিজের রুমে যায় গিয়ে দেখে একটা নিল চিরকুট। সেখানে লেখা

—- সরি প্লিজ আমার লক্ষ্মী বউটা। ফারিদা সেটা দেখে, মুচকি হাসলো। তার আর সকালে যাওয়া হলোনা নিজের ইচ্ছেতেই যায়নি। কিন্তু সারিদিনে ইভানকে সে কোথাও দেখেনি, আর বাসার সবাইও তেমন কথা বলেনি। প্রতিদিনের মতো ফারিদা খাওয়ার পর ঘুমায়, যখন ওঠে দেখে সন্ধ্যা ৭ টা বাজে তাড়াতাড়ি ওঠে, দেখে ইভান এখনো ফিরেনি, রুমের লাইট ওফ তাই সে ওন করলো আর দেখে সামনে একটা পারপাল কালারের গাউন অনেক সুন্দর কারুকাজ হুয়াইট আর গোল্ডেন ইস্টোনের, আর তার পাশেই মেচিং করা জুয়েলারি। সাথে একগুচ্ছ লালা গোলাপ আর একটা চিরকুট তাতে লিখা। জলদি পড়ে তৈরি হয়ে ছাঁদে চলে আসো। ফারিদা সেটা পরে নেয় আর হালকা সাজে ইভানের পছন্দ আছে বলতে হয়। ফারিদা সেটা পরে বেড়হয় দেখে বাসা সম্পূর্ণ অন্ধকার। ফারিদা ছাঁদের দিকে যাচ্ছে। অংশ ইভানকে কল দিয়ে বলে

—-ভাইয়া ভাবি ছাঁদের দিকে কেনো যাচ্ছে? ইভান বলে

—-জানিনা তো, আমিতো মিরাকে বলেছিলাম চিরকুটটা আর ড্রেসটা রুমে রেখে আসতে। মিরাকেও তো দেখছি না তুই অপেক্ষা কর আমি আসছি। ফারিদা ছাঁদে চলে যায়। অংশ এসেছিলো ফারিদাকে নিয়ে যেতে নিচে কিন্তু সে দেখে ফারিদা হাতে গোলাপ আর চিরকুটটা নিয়ে যাচ্ছে ছাঁদের দিকে তাই সে ইভানকে কল দেয়। ফারিদা ছাঁদে গিয়ে দেখে ছাদেঁ ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছেয়ে আছে ফারিদার কেনো জানি খুব ভয় করছে। ফারিদা কাঁপা কাঁপা গলায় বলে

—-ইভান কোথায় আপনি। কোনো আওয়াজ না পাওয়াতে সে এগিয়ে যায় সামনে যেতেই দেখে একটা ছায়া। ফারিদা ভাবে হয়তো ইরিন তাই সে তার কাছে যায়। ফারিদা বলে

—ইরিন। আর কিছু বলতে যাবে ছায়াটা ফারিদাকে টান দিয়ে ছাদের রেলিঙের দিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় আর তাল সামলাতে না পেরে ফারিদাও রেলিঙের দিকে ঝুঁকে যায়। আর মিরা বলে

—-ইভান আমার শুধুই আমার বুঝলি, আর তুই থাকতে আমি ইভানকে পাবোনা তাইতোকে মরতে হবে, ফারিদা। ফারিদা ঘুরতে যাবে তখনই মিরা ফারিদাকে আরেকটা ধাক্কা দেয় আর ফারিদা আরো নিচের দিকে ঝুঁকে যায়। ফারিদা বলে

—-দেখো ভালো হচ্ছে না, ইভান জানতে পারলে। মিরা বলে

—-ইভানের নাম তুই তোর মুখে নিবি না ইভান শুধুই আমার বুঝলি তুই। বলেই মিরা ফারিদাকে অনেক জোরে ধাক্কা দেয় আর সাথে সাথে ছাঁদের লাইট ওন হয়ে যায়। ফারিদা। ইভান বলে চিৎকার করে। আর তখনই ফারিদা বলে দৌড়ে আসে ইভান কিন্তু লাভ হয়নে। কয়েক সেকেন্ড এর মধ্যেই সব যেনো শেষ হয়ে যায় ফারিদা নিচে পরে যায় মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে মাথা থেকেও। ইভান নিজের মধ্যে নেই পাগলের মতো দৌড়ে নিচে নামছে। ফারিদা আর ইভানের চিৎকার শুনে সবাই একসাথে ওপরে চলে আসে আর দেখে ইভান পাগলের মতো নিচে নামছে। সবাই ইভানকে কিছু বললেও সে কিছু বলে না বাগানে আর সবাই ইভানকে ফলো করে যায় দেখে ফারিদার রক্তাক্ত দেহ পড়েআছে। ইভান দৌড়ে গিয়ে ফারিদাকে কোলে তুলে নিলো। বাসার সাবই অবাক ফারিদাকে এই অবস্থায় দেখে। ইাভান পাগলের মতো ডাকছে

—-এই এই এই ফারিদা, এই ওঠো বলছি, ভালো হচ্ছে না কিন্তু, এই মেয়ে। অংশ এসে বলে

—-ভাইয়া ভাবিকে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। সবার কথা শুনে ইভান ফারিদাকে কোলে তুলে নিলো অংশ গাড়ি বের করে ফারিদাকে হসপিটালে নিয়ে। এলো আর ঐদিকে মিরা বাঁকা হাসছে আর মিথ্যা চোখের পানি ফেলছে।

চলবে….

আমি শুধুই তোমার পর্ব-০৮

0

গল্পের নামঃ- #আমি_শুধুই_তোমার❤️
Writer:- আইদা ইসলাম কনিকা
পর্বঃ০৮

সবে কলেজ শেষ করে আদিলা, নাহীদা আর ফারিদা বের হয়েছে আর সাথে সাথে ঝড়ের গতিতে ইভান ফারিদার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। ফারিদা এমন কাহিনীতে অবাক, আদিলা আর নাহীদা পিছন পিছন আসছে। ইভান পিছনে ঘুরে বলে

—-শালিকারা দুলাভাই আর বান্ধবীকে একা ছেড়ে দাও। আদিলা আর নাহীদা ইভানের কথা শুনে আর আসে না। ফারিদা ইভানকে কিছু না বলে নিজের হাত ছাড়াতে ব্যস্ত। ইভান ফারিদকে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দেয়, ফারিদা গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে ইভান দেয় এক রাম ধমক

—-এক পা বের করলে ঠ্যা ভেঙে বাসায় বসিয়ে রাখবো। ইভানের ধমক শুনে ফারিদার বেচারা মুরগী ছানা হয়েগেছে। তাই সে কিছু না বলে মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে অন্য দিকে। ইভান তা দেখে ক্রাশ খেলে। মুচকি হাসি দিয়ে বসলো ড্রাইভিং সিটে। দেখে ফারিদা সিটবেল্ট লাগায়নি। ইভান সেটা লাগিয়ে দিতে গেলে ফারিদা হাতটা ধরে ফেলে, আর নিজে লাগাতে গেলে ইভান বলে

—-বেশি বেশি হচ্ছে না? ফারিদা তাও চুপ। ইভান ফারিদার দুই বাহু চেপে ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলে

—-এই মেয়ে তুমি কথা বলতে পারো না নাকি?আগে তো কতো কথা বলতে,১ সপ্তাহে চুপসে গেলে? ফারিদা বিরক্ত হয়ে অন্য দিকে তাকায়। ইভান বলে

—-তোমার কি আমাকে ভয় করে না? ফারিদা আড় চোখে ইভানের দিকে তাকিয়ে বলে

—-আপনার ফালতুকথা হলে,আমি বাসায় যাই? ইভান বলে

—-হ্যা যাবা শুশুড় বাড়ি, ১ সপ্তাহে হইছে আমি আর পারবো না, আই এম সরি প্লিজ বাসায় চলে আসো। আমার যে তোমাকে ছাড়া ভালো লাগেনা। তোমার সেই পাগলামি গুলো খুব মিস করি প্লিজ ফারিদা। ফারিদা মনে মনে বলে

—–এইবার লাইনে আসছো তুমি, হুতুম পেঁচা তাও তো বলেনা আই লাভ ইউ 😒😒 যাই হোক তাকে বুঝতে দেওয়া যাবে না আমার রাগ ভ্যানিলা আইসক্রিম এর মতো গলে গেছে।ফারিদা রাগী ভাব নিয়ে বলে

—–কেনো মিরা কোথায়? চলে গেছে নিশ্চয়ই? ইভান রাগে কারের জানালয় পান্ঞ্চ মারে তারপর ফারিদার বাহু চেপে ধরে বলে

—–এই মেয়ে শুনো,মিরা আমার খালাতো বোন আর সে মেন্টালি সিক, আর ওকে আমি খালাতো বোনই মানি বুঝতে পারছো?আর ওর কথা কেনো আসছে এখানে? ফারিদা এবার রেগে গিয়ে ইভানের শার্টের কলার ধরে নিজের কাছে নিয়ে এসে বলে

—-চড় টাও তো তার জন্যই মারা তাই না? ইভান অনুতপ্ত চোখে তাকিয়ে বলে

—–সরি মাফ করে দাও। ফারিদা ভেংচি কেটে শার্টের কলার ছেরে অন্য দিকে তাকায়। ইভান মুচকি হাসি দিয়ে তার মুখটা তার দিকে ঘুরিয়ে বলে

—–লক্ষ্মী সোনা চাদঁরে কোনা,রাগ করেনা। ফারিদা বলে

—–আল্লাদে একবারে আট খানা। ইভান বলে

—-না বাবু ১০০খানা একটু হাসো প্লিজ। ফারিদা কিছু বলেনা। ইভান বলে

—-রাগ কর আর যাই কর তোমার আমার সাথেই থাকতে হবে। কালকে ইরিন এর জন্মদিন,বাড়িরে অনেক মেহমান আসবে আর তুমি বাড়ির বড় বউ হওয়াতে থাকতে হবে,মা বাবা তোমাকে বাসায় নিয়ে যেতে বলছে। ফারিদা বলে

—-বাড়ির বউ তো আমি একাই এর মানে অংশ বিয়ে করে নিয়েছে,আর আমাকে বললো পর্যন্ত না। ইভান কপালে হাত দিয়ে বলে

—-তোমাকে বুঝা আর এভারেস্ট পাহাড় চড়া সেম। ফারিদা বলে

—-জীবনে প্রথম শুনলাম যাওয়ার দরকার যাবো। কাল যাবো পরশু চলে আসবো। ইভান মনে মনে বলে আসোতো তুমি দেখি কে তোমাকে যেতে দেয়। তারপর ইভান ফারিদাকে তাদের বাসায় দিয়ে আসে। আর তার মা-বাবার কাছে ফারিদার গায়ে হাত তুলার জন্য ক্ষমাও চায়, তারাও সবটা মেনে নেয়।আর বলে কালকে সে ফারিদাকে নিতে আসবে,তারাও আপত্তি করেনা।

তারপরের দিন ফারিদা ওয়াইট কালারের একটা সিল্কের শাড়ি পরে চুলগুলো মাঝখানে সিঁথি কেটে খোঁপা করে খোঁপায় বেলীফুলের গাজরা লাগায় আর সামনে তার কাটা চুলগুলো রেখে দেয়। চোখে কাজল, আইলাইনার আর ঠোঁটে রেড কালারের লিপস্টিক। কানে বড় ওয়াইট ইস্টনের ঝুমকা। একহাতে গোল্ডেন কালারের চুড়ি আরেক হাতে ঘড়ি, আর গলায় পড়ে নেয় সুন্দর দেখে একটা লকেট সহ চেন। (কেমেন লাগছে ফারিদাকে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না)
ফারিন আসে ফারিদাকে ঢাকতে

—-আপু ভাইয়া,,,,, আর কিছু বলতে পারলো না সে তাকিয়ে আছে ফারিদার দিকে। অনেক সুন্দর লাগছে। ফারিদা বলে

—-ভাইয়া কি? ফারিন বলে

—-আজ শেষ। ফারিদা বলে

—-কেনো কি শেষ আচ্ছা বাদ দে ,এই আমাকে কেমন লাগছে বললি না তো? ফারিন বলে

—-মরন লাগছিস মন চাচ্ছে কাফান পরিয়ে দাফন করে ফেলি!!! ফারিদা অবাক হয়ে বলে

—-কি বাজে বকছিস? ফারিন বলে

—-হাইড্রারাবাদি স্টাইলে তারিফ করলাম। ইভান ভাইয়া আসছে তোকে নিতে। ফারিদা আর ফারিন নিচে নামছে,ইভানের চোখ উপরে যেতেই বেচারা হার্ট এ্যাটাক খায়, নিজের হাতটা বুকে নিয়ে বলে

—-বুক চিন চিন করছে হায়, মন তোমায় কাছে চায়,বুক চিন চিন করছে হায় মন তোমায় কাছে চায়। ফারিদা ইভানের সামনে এসে বলে

—- চলেন যাওয়া যাক। ইভান তো তাকিয়ে আছে, ফারিদা বলছে

—-চলেন। ইভানের হুশ আসতেই বলে

— আম্মু বাবাই, ফারিন ভালো থাকো আবার দেখা হবে। ফারিদা তার আম্মুকে বলে

—-আম্মু বাবা আসি। ফারিদার আম্মু এসে ফারিদার চোখের নিচে কাজল থেকে একটু হাতে লাগিয়ে ফারিদার কানের পিঠে লাগিয়ে দিয়ে বলে

—নজর না লাগুক। ফারিদা মুচকি হাসি দিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে বিদায় দিয়ে গাড়িতে বসে। এতখন ভালোভাবে ইভানের দিকে তাকায়নি, ইভানকে দেখে ফারিদা তো ফিদা। ব্লাক ব্লেজার,হুয়াইট শার্ট, ব্লাক পেন্ট, হাতে ব্রেন্ডর গড়ি, ব্লাক সু। চুলগুলো স্পাইক করা সেই লাগছে। ইভান গাড়ি চালাচ্ছে আর বার বার ফারিদাকে দেখছে। ফারিদা সেটা দেখে আনইজি লাগছে। তাই সে বাইরের দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। ইভান গান ধরে

—-এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো তুমি বলতো? ফারিদা বলে

—-অনেক কিছু হতো। আপনার গাড়ির গ্যাস/প্রেটোল শেষ হয়ে যেতো, ইরিনের বার্থডে ও শেষ হয়ে যেতো।ইভান মনে মনে বলে

—-নিরামিষ একটা।এতো সুন্দর মুডটার মুন্ডি চটকে মুন্ডির সষ্ঠি করে দিলো। ফারিদা আবার বলে

—আর সামনে একটা ফোনের দোকান আছে গাড়িটা থামিয়েন। ইভান বলে

— কেনো? ফারিদা বিরক্ত হয়ে বলে

—-ফেশন করতে আজব!!! অবশ্যই ফোন কিনতে যাবো ইরিনের জন্য। ইভান বলে

—-দরকার নেই, কিছু মাস আগেই একটা কিনে দিয়েছি। ফারিদা বলে

—-আপনার কাছে জানতে চেয়েছি। গাড়ি থামাতে বলসি গাড়ি থামাবেন ব্যস কথা শেষ। ইভান কারটা থামায় তারপর ফারিদা একটা ফোন কিনে ইরিনের জন্য। তারপর আবার চললো তারা তাদের মতো। বাসায় ঢুকার সাথে সাথে সবাই ফারিদাকে ঝেকে ধরে মিরাও আসে আর বলে

—-কেমন আছো? ফারিদা মুআকি হাসি দিয়ে বলে

—-এইতো আলহামদুলিল্লাহ আপনি? মিরাও বলে

—-ভালো। ইরিন দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে ফারিদাকে আর ফারিদার হাত ধরে ঘুরতে ঘুরতে বলে

—–ভাবি ভাবি, তোমাকে সেই কিউট লাগছে। পুরাই জোস। তারপর ইরিনকে ফারিদা তার জন্য গিফ্টটা দিলো,সবাই ফারিদাকে নিয়ে ব্যস্ত মনে হচ্ছে অনেক বছর পরে আসছে। ইভান বেচারতো মন খারাপ করে দাড়িয়ে আছে অংশ ইভানের কানের কাছে এসে বলে

—–বুকটা ফাইটা যায় বুকটা ফাইটা যায়। ইভান অংশের পিটে হালকা একটা চাপড় দিয়ে বলে

—-তোর বড় ভাইয় লাগি, শয়তান। ভালো হইয়া যা। অংশ বলে

—-আমি ভালো হুমু না। কেক কাটার আগে হঠাৎই লাইট বন্ধ হয়ে যায়। তারপর ব্লু লাইটের আলোয় দেখা যায় অংশ আর ইভানের হাতে গিটার এর মানে দুই ভাই গান গাইবে। অংশ গিটারে টুংটাং সুর তুলতে লাগলো আর ইভান গাইতে লাগো,আর পিছনে ভেসে ওঠছে ইরিন,ইভান,অংশের কিউট কিউট ছবি।

——
o behna meri tu nanni si tere anese gol cehek outha…

Tu peyrisi ek guria hain fowl

mehek khusbo ki tarah

অংশ গান ধরলো

oh behna meri muskan teri

Sath rangose bhi pearai hain

Fekana pare kabvi rang tera

Tu sabki lad dulali hain…. ইভান

tere khusiya ban main jiba tera ansu sab main piba itnisi hain dilki arzo…

Tu hasti jab main khil jaba

Tu rondi main rehbala itnisi hain dilki arzo

Ohoho ohhhooh ohohow

o behna meri tu hasti rahe

Teri akh ghadi bhar naam na ho

Tu jaan meri arman mera

Teri lad dulali kam na hoo… ইভানের পর অংশ গাইতে লাগলো

o behna meri tu mera janha

Tujhe dekhe bina mujhe cain kaha ইভান আর অংশ একসাথে গাইতে লাগলো

Ek dor jo bandhi hae rab ne

Asi bandhan kahi or kaha…. গান শেষ হওয়ার সাথে সাথে ইরিন দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে ইভান আর অংশকে বাড়ির একমাত্র মেয়ে হওয়াতে ভালোবাসাটা অনেক। সবার চোখের কোনে পানি ভাই বোনদের ভালোবাসা দেখে। তারপর কেক জাটা হলো রাতে খাওয়া হলো। ইরিন নিজের গিফ্ট আনবক্সিং করলো, রাতের বেলা সবাই সবার রুমে। ইভান এখনো নিচে আর ফারিদা টিক টিক করছে

—–উফফফফ আমি কি যে জোস আয়নার সামনে দাড়াই মারি জোস জোস পোজ। তখনই ইভান রুমে আসে দেখে ফারিদা টিক টিক করছে, কিন্তু ফারিদা এখনো তার হুতুম পেঁচাকে দেখে নাই,সে ব্যাস্ত টিকটক করতে।

চলবে

ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে