Sunday, June 29, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1470



ভালোবাসায় তুমি আমি পর্ব-০২

0

#ভালোবাসায়_তুমি_আমি (পর্বঃ২)
#লেখিকাঃ রাদিয়াহ রাফা রুহি

নীলাআআআ দাঁড়াও (ইমরান খান নীলার বাবা খানিকটা চেঁচিয়ে)

নীলা তার বাবার ডাকে পিছনে তাকায়ে কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারছে কি বলবে তাকে মি.খান—-(হ্যাঁ নীলা তার বাবাকে মি.খান বলেন বাকিটা গল্প পরে বুঝতে পারবেন )

-তারপর বললেন তুমি নাকি তোমার মায়ের গায়ে উঠিয়েছো!!!

-তোমার জন্য কি করে নি তোমার মা আর তার প্রতিদান তুমি এই দিলেতোমার মা’য়ের গায়ে তুলে।তোমার নিজের মায়ের জায়গায় না বসাতেই পারো কিন্তু সম্মানটা তো করতেই পারো। -ছোট থেকে কি করেনি তোমার জন্য তোমার মা।

নীলাঃ মাথা নিচু করেই তার বাবাকে বলে আমি তো মিসেস খানের গায়ে হাত উঠাই নি!ছোট থেকেই দেখে তো দেখে আসছি ওই মহিলা যেটা বলছে তাই শুনে এবং বিশ্বাস করে আসছেন।,,,, আদোও কি কখনো সত্য মিথ্যা যাচাই করেছিলেন।–করেননি –কারণ আপনার কাছে সেই সময় কোথায়। –আপনি তো টাকা পয়সা -‘বিজনেস নিয়েই ডুবে থাকেন । —না ভালো ব্যাক্তিত্বের অধিকারি হতে পেরেছেন না ভালো বাবা–।

মি.খানঃনীলাআআআআ!
তোমার সাহস হয় কি করে আমার মুখের উপর কথা বলার।

-তোমার সাহস দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।,,,, আর একবার আমার সাথে বা তোমার মার সাথে ফারদার কোনো বেয়াদবি করছো তো।
তোমাকে এই বাসা থেকে বের করে দিবো।
তোমার এতো অধঃপতন হয়েছে যে তুমি আমার মুখের উপর কথা বলো। এতো দিন তোমার মায়ের থেকে শুনেছি আজ তো নিজেই দেখে নিলাম —-

মি.খানের চেচামেচিতে এতক্ষণে বাড়ির সবাই উঠে এসেছে ড্রুইং রুমে মিসেস খান –দাদি–মুন্নি-জিনীয়া বাদে বাকি সবাই ড্রইংরুমে চলে এসেছে (কারণ জিনীয়া ঘুমিয়েই আছে)

নীলা তার বাবার কথায় একটু ও অবাক হয়নি কারন এইটা নতুন কিছু না,,, সে জানে প্রায় তার নামে রিশিকা খান মি. খানের কাছে মিথ্যা কথা আর মিথ্যা নাটক করে তার বাবার মনে আমার নামে বিষ ঢালে আর সে ভালো সেজে থাকে।।।।

রিশিকাঃ নেকা সুরে বলে থাক ইমরান ও এখনো ছোট আছে ও না বোঝে ওমন করছে। আমার জন্য ওকে আর বকো না প্লিজ। আমি তো মা সন্তানের ভুল গুলা কি মনে রাখে বলো।আমি ওকে ক্ষমা করে দিয়েছি।

নীলার দিকে বাঁকা হেসে
তারপর মিসেস শাহানা খান ( নীলার দাদি)ইমরান তুই সকাল সকাল কি শুরু করেছিস হ্যাঁ নীলা কলেজে যাচ্ছিলো অকে যেতে দে –নীলা তুই যা।
মুন্নি দাদির কথা শুনে বললো হ্যাঁ আপু তুমি যাও তো–

তো নীলা আর কোনো কথা না বলে কলেজের জন্য রওনা দিলো।

– মুন্নি তার বাবার কাছে গিয়ে আদুরে গলায় বলে অহহো ডেড! তোমার তো আমার দিকে নজরি নেই।–তোমার যে ছোট্ট একটা প্রিন্সেস আছে। সেটা কি তোমার মনে নেই তুমি আমাকে ভুলেই গেছো।(মুন্নি এইবার ক্লাস টেন খুবই মেধাবি স্টুডেন্ট সে)

মি.খানঃকি যে বলো মামুনি আমি কি তোমাকে ভুলতে পারি তুমিই তো আমার সবকিছু প্রিন্সেস —

মুন্নি গদোগদো হয়ে হেসে তার বাবাকে জড়িয়ে ধরলো —
———————————————————






শহরটাকে উপেক্ষা করে চৌধুরী কর্পরেশন আকাশ ছোয়া বাড়িটা দাড়িয়ে ছিলো সর্টলেক সেক্টর বি-এর বুকে।

এমন একটা জায়গায় যেখানে বাড়ির ভাড়াও আকাশ ছোয়া। —-পর পর দুটো সারিতে সুন্দর ভাবে দাঁড়িয়ে আছে কর্মচারিরা বসের আসার অপেক্ষায়।

—কর্মচারিরা ধৈর্য ধরে বসের আসার অপেক্ষা করছিল।

–একটা বিলাস বহুল নজর কারা গাড়ি এসে পার্কিং করলো। আকাশ ছোয়া বাড়িটার সামনে।

—প্রথমেই যেটা চোখে পরলো কালো স্যুট -প্যান্ট পরা সরু সরু দুটো পা মনে হলো যেন মাটিতে পরার সাথে সাথেই পা দুটো আসলে সবার মনে জায়গা করে নিলো।

–তারপর যেই লোক টার মুখের ফিচার গুলো দেখা গেলো–উপস্থিত লোকে জনের প্রায় হুস খোয়ানোর পালা।

—-এক জোড়া ধারালো ভ্রু তার মুখের বৈশিষ্ট্য যেন আরোও ফুটিয়ে তুলেছে!

—তার একিরকম ধারালো দুই চোখের দৃষ্টি আর ঠোঁটের ওপরের হালকা বাকা হাসিটাও নজর কারার মতো।
তিনি কি আদোও হাসছিলেন নাকি হাসছিল না –যেখানেই তার দৃষ্টি পরছিল সেখানে উপস্থিত সবাই তাকে দেখে মাথা নিচু করে নিচ্ছিলো -।

—গুড মর্নিং মিস্টার চৌধুরী!! — দুসাড়ি কর্মচারি একযোগে তাকে শুভেচ্ছা জানালো। —তার একটা হাত পকেটে গোজা। -ছোট ছোট কুচকুচে কালো চুল সু্র্যের আলোই চিকচিক করছে।

—সবার নজরের মধ্যে দিয়ে মিস্টার চৌধুরী তার দৃষ্টি সজা রেখে সিরি দিয়ে ধীরে ধীরে উপরে উঠা শুরু করলেন–।

চারপাশের পরিবেশ খুব সুন্দর আর মনোমুগ্ধকর ছিলো! সবকিছু নিয়ম মাফিকই চলছিলো!

–এমন সময় বাবা বলে একটা কমল কন্ঠে শুনে পিছনে ফিরে তাকালেন মিস্টার শুভ্র চৌধুরী।

—একটা নরম কচি সুরের আওয়াজ চারপাশের নিরবতা ভেঙে দিলো!!

–পরের মুহুর্তেই কোত্থেকে একটা সুন্দর বাচ্চা বেরিয়ে এলো ভিরের পিছন থেকে।
সবার সামনে দিয়ে এলো মেলো টলমল পায়ে দৌড়ে আসছে।
–ছোট্ট মেয়েটি মনে হয় সবে মাত্র তিন বচ্ছরের– কেউ কোনো রকম রিয়াক্ট করার সু্যোগ পাওয়ার আগেই শিশুটি দৌড়ে এসে মিস্টার চৌধুরীর সামনে দাড়ালো।
—বাবাআ!–বাবাআ! বাবাআ! এই বলে মেয়েটি মিস্টার চৌধুরীকে পা জাপ্টে জড়িয়ে ধরলো —

উপস্থিত প্রত্যেকের কানে এই রিনরিনে আওয়াজ টা যেন অভিসাপের মতো বেজে উঠলো!

আর অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।—আর বলতে লাগলো বাবা মানে মেয়ে কোত্থেকে আসলো।।

এটা তো ওয়েল নুন ফেক্ট…….। যেখানে মিস্টার চৌধুরীর কোনো দিন কোনো নারীর সঙ্গের প্রতি কোনো আসক্তিই ছিলো না।

তাহলে হঠাৎ তিনি একটা সন্তানের বাবা হলেন কিভাবে আর তার থেকেও বড়ো কথা শিশুটি তাকে বাবা বলে সম্বোধন করছে কেনো?

—সবাই অবাক হয়ে তাকিয়েই রইলো বাচ্চা মেয়েটার দিকে —

উফফহু ছাড়ো —মিস্টার চৌধুরী দাতে দাত চেপে বরফ ঠান্ডা গলায় বললেন।

একি সাথে নিচে বাচ্চাটার দিকে তার নজর পড়ে বাচ্চাটা তার পা জড়িয়ে ধরে আছে।।
মিস্টার চৌধুরীর বিরক্তি স্পষ্টই বুঝা যাচ্ছিলো।

– তিনি কখনো কোন নারীর গায়ে হাত অব্দিই দেইনি।। সেখানে একটি সন্তানের জন্ম দেওয়া তো এবস্যুলুটলি ইম্পসিবল।
তার চার পাশের সবাই তার দিকে তাকিয়ে ছিল।
আর বাচ্চাটাকে অবলোকন করছিলো। আর তারাতারি বাচ্চা টাকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য এগিয়ে গেলো কিছু রক্ষীরা।
কিন্তু বাচ্চাটার দিকে এগিয়ে যেতেই কিছু একটা দেখতে পেয়েই এক অপরুপ ভাবে তাকিয়ে রইলো।।
মিস্টার চৌধুরী এই বাচ্চাটা আর কিছু
বলতে পারলো না।।
বাচ্চাটি কেদে উঠে! –সে যেন বুঝতে পেরেছিলো সে অবান্ছিত তাকে লোকগুলো ধরে নিতে এসেছে।
বাচ্চাটির বড় বড় চোখ থেকে অঝোর ধারায় পানি পরছিলো।
ঠিক তার পরেই বাচ্চাটা ওপর দিকে তাকাতেই তার নরম কচি ছোট্ট মুখ টা সবার নজরে পরলো।
কি মায়াবি চাহনি বাচ্চাটার যে কেউ এই বাচ্চা টাকে দেখলে গলে যাবে।
—মুখটার ফিচার গুলো কি মিল মিস্টার চৌধুরীর সাথে দেখার মতো!
বাট বাচ্চাটার এই ভয়ের কারণ টা কিন্তু দেহরক্ষীদের ছিল বলে মনে হচ্ছে না
—তার ভয়ের কারণ ছিল একটা কাগজের টুকরো ।

রক্ষিরা লক্ষ্য করলেন বাচ্চাটার গায়ের সাথে একটা ডিএনএ রিপোর্ট ঝুলছে ।
তারা মিস্টার চৌধুরীকে বললেন বাচ্চার গায়ে একটা ডিএনএ আছে!!! —-

চলবে—-

ভালবাসায় তুমি আমি পর্ব-০১

0

#লেখিকাঃ রাদিয়াহ রাফা রুহি
#গল্পঃভালবাসায়_তুমি_আমি_পর্ব_১

খান পেলেসে প্রায়ই একটা মেয়ের কান্না আর চিৎকারের আওয়াজ পাওয়া যায় কাউকে নির্মম ভাবে মারলে এরকম কান্নায় ভরা অসহায়ত্ব চিৎকার আর মুমূর্ষু আর্তনাথের ভরা কষ্টকর অত্যাচার হয় —,,,,যেমন টা আজকেও হয়েছে আজ তার ব্যাতিক্রম কিছু হয়নি একটু এদিক থেকে ওদিক হলেই অত্যাচার শুরু হয়ে যায়,,,, নীলা হাটুতে মুখ গুজে কান্না করছে ফুপিয়ে ফুপিয়ে অনেক কষ্ট আর ব্যাথায় সে শরীর টা নারাতে পারছে না আর একটু আগের কথা ভেবেই শিউরে ওঠে,,,,
ফ্লাসব্যাক—–
,,,,, নীলা সবে মাত্র কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছে একটু ভয়ে ভয়েই ঘরে ঢুকছিল কারন সে জানে যে তার কপালে অনেক দূর্ভোগ আছে তাই সে চুপিচুপি ঘরে ঢুকছিল আর তখনি তার ওপর আচমকা হামলা হয়—যেনো সে নীলার আসার অপেক্ষা করছিল আর মারার জন্য তৈরি হয়েই ছিলেন — তার সৎ মা রিশিকা ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই নীলার চুলের মুঠি টেনে ধরে মারতে থাকে — নীলা চিৎকার উঠে —অনেক জোরে থাপ্পর মারাই নীলার ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হয়ে গেছে — তারপর মেঝেতে ফেলে ঘার চেপে ধরে বলতে থাকে —
তোকে তো বারন করেছিলাম যে কাজ করে কলেজ যেতে পারলে কলেজ যাবি না হলে যাবি না — কেন গিয়েছিলি হ্যাঁ কাজ না করে —তকে তো বলেছি ঘরের কাজ গুলো করে যেতে তানা হলে তোর পড়াশোনা বন্ধ তোর কি সহজ কথা মাথায় যায় না —-নীলা শুধু চাপা আর্তনাথ করছে কথা বলতে পারছে না সে তার মুখ টা এমন ভাবে চেপে ধরে আছে যে কথায় বের হচ্ছে না তার —–মারতে মারতে ক্লান্ত হয়ে নীলাকে ধাক্কা দিয়ে পা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে গটগট করে চলে যায় —-দরজার আড়াল থেকে নীলার দাদি সবটা দেখেন কিন্তু কিচ্ছুটি বলতে পারেন না শুধু মুখে আঁচল চেপে কান্না করেন—- রিশিকা যেতেই দাদি এসে আমাকে তুলে ধরে ঘরে দিয়ে যায় আর মুখ পুরি পরে পরে মার খা আর কি করবি এটাই তো তোর কপাল—দাদি কাদতে কাদতে বাইরে চলে গেলো উনিই বা কি করবেন বয়স্ক মানুষ—

–বর্তমান

আমি এই বাড়ির অবৈধ সন্তান– ছোট বেলা থেকেই এই কথাটা বহু বার শুনেছে নীলা (নীলাঞ্জনা খান- সবাই তাকে নীলা বলেই ডাকে) সে এতোবার কথাটা শুনেছে যে আগে খারাপ লাগলেও তার এখন আর খারাপ লাগে না। তার নামের সাথে টাইটেল টা কেনো জেনো ব্যবহার করতে অসহ্য লাগে নীলার তাই সবাই তার নাম জিজ্ঞেস করলে শুধু নীলাঞ্জনা বলে।নীলাঞ্জনা খান বলে পরিচয় দিলেই তখনি তার নোংরা বাবার কথা মনে পরে —সে শুনেছে তার দাদি মানে তার বাবার মা শাহানা খান — এই যে তার বাবা ইমরান খান তার মা রুপার সাথে জোর করে শারিরীক সম্পর্কে গিয়েছিল আর তারপরেই আমি আমার মায়ের গর্ভে আসি,, এই কথা টা মা বাবাকে জানানোর পর বাবা আমাকে শিকার করলেও মা কে বিয়ে করতে চাননি।কারণ আমার মা ছিল একজন গরিব স্কুল মাস্টারের মেয়ে। প্রথমেই বলে দেই বাবা মা কে বিয়ে করবে না কিন্তু আমার দায়িত্ব নিবে।আমার জন্মের সময় মা মারা যায়। তারপর বাবা আমাকে তার কাছে রেখে মানুষ করে বিয়েও করে আমার সৎ মা আমাকে মানুষ করে তবে সেটা শুধু মাত্র বাবাকে দেখানোর জন্যই,,, এসব ভাবছে নীলাঞ্জনা বাড়ির চিলেকোঠার ঘরে বসে বসে,, সে সেখানেই থাকে এই বাড়িতে তাকে একমাত্র তার দাদি আর তার সৎ বোন মুনিয়া মুন্নি তাকে ভালোবাসে আর বাকিদের দু চোখের বিষ সে ,,, বাকিদের মানে মন্নির বড়ো বোন(জীনিয়া) তার মা -বাবাসহ—এমন সময় নীলাঞ্জনাকে ডাকতে ডাকতে ঘরে ঢুকে তার সৎ মা রিশিকা চৌধুরী আর বলে,,
,
রিশিকা খানঃ সারাদিন ঘরে থাকবি নাকি নবাব নন্দিনির মতো ঘরের কাজ গুলো কে করবে শুনি,,নীলাঞ্জনা এতো টুকুও টনক নারালো না সে একি ভাবে বসে রইলো তার আজকে একটুও কাজ করতে মন চাইছে না— এতো মার তার ওপর সকাল থেকে।না খেয়ে থাকায় তার এতো টুকু শক্তিও নেই– আজ সে অনেক ক্লান্ত ।এসব ভাবছে নীলাঞ্জনা মনে মনে।
নীলাঞ্জনা কে চুপ করে থাকতে দেখে
রিশিকা খানঃ বললেন,,,
কিরে কথা কানে যাচ্ছে না– কাজ গুলো কি তোর মরা মা এসে করবে—আমি বেরবো তুই জানিস না — যাহ গিয়ে খাবার তৈরি কর
নীলাঞ্জনাঃ এই কথা গুলো নতুন না সব সময়ই সে এই ধরনের কথা শুনে অভ্যস্ত– আমার শরীর টা ভালো না –একটু আগেই তো কিভাবে মারলেন এখন এসেছেন কাজ করার জন্য ডাকতে —আমি খুব ক্লান্ত–কাশতে কাশতে আস্তে করে গোঙাতে গোঙাত বলে উঠে –বাড়িতে তো একটা সার্ভেন্ট রাখতে পারেন এতো টাকা মরার পর সাথে নিয়ে যাবেন নাকি–আজকে না হয় নিজেই খাবার টা বানিয়ে খেয়ে যান আমি পারবো না এক দমে সে সব কথা বলে ফেলে—

এদিকে রিশিকা তো রাগে গজগজ করছে

রিশিকা খানঃ তোর এতো বড় সাহস যে তুই আমার মুখের উপর কথা বলিস আজকে তোর একদিন কি আমার একদিন এই বলে রিশকা নীলাকে মারতে যায় তখনি নীলা উঠে রিশিকার হাত মুচড়ে ধরে পিছনে দিকে—-

রিশিকা আহ করে চিৎকার করে উঠে–আর অবাক হয়ে যায় যে মেয়েটা তার হাতে একটু আগেও মার খেয়ে পরে ছিল সে কি না এখন আমার গায়ে হাত তুলেছে —যে কিনা একটু আগেও উঠে দাড়াতে পারছিল না আমাকে দেখে ভয়ে শিউরে থাকতো হঠাৎ এতো শক্তি পেলো কোথা থেকে —

নীলাঃ খবর দার আর কোনো সময় যদি গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টাও করেন তো কোন দিন তো আপনার সব কু-কর্মের কথা বলে দিব আপনার হাসবেন্ড কে — তো সাবধানে আমার গায়ে হাত দেওয়ার সাহস দেখাবেন তো আমার মুখ খুলে যাবে –অনেক সহ্য করেছি আপনার অত্যাচার আর না নীলা কাদতে কাদতে বলতে থাকে
রিশিকা খানঃ কি বলবি তুই হ্যা তোর কথা কেউই বিশ্বাস করবে না — কারন তোর কাছে আমার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই —এই রিশিকা খান আমি –আমি যে এতো কাচা খেলয়ার না সেটা তো তুই জানিস —আমি যা বলবো তাই শুনবে তোর বাপ বুঝেছিস। ছাড় বলছি আমার হাত —আজ তোর বাপ আসুক দেখ তোর কি হাল করি–
নীলাঃ চুপ করে যায়–সত্যিই তো তার কাছে কোনো প্রমাণ নেই — তাই নীলা রিশিকার হাত ছেড়ে দেই—
রিশিকা হাত কচলাতে কচলাতে সেখান থেকে চলে যায় নীলার দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে থেকে–
নীলা সেখানেই ধপ করে বসে পরে আর ভাবতে থাকে আমি কি এই নরক থেকে কোনোদিন মুক্তি পাবো না আল্লাহ —-বলেই কাদতে থাকে—কাদতে কাদতে কখন যে ঘুমিয়ে পরে সে বুঝতে পারে না——


– ফজরের আজানের শব্দে ঘুম ভাঙলো নীলার ,,,সারা শরীর ব্যথায় নারাতে পারছি না — মাথাটা ঝিমঝিম করছে– তবুও সে অনেক কষ্টে উঠে ফ্রেশ হয়ে নামাজের অজু করে এসে নামাজ পড়ে নেই—- সে জানে যতো কিছুই হক না কেন তাকেই সব কাজ করতে হবে —তাছাড়া আজ তার কলেজে ইম্পর্ট্যান্ট ক্লাস আছে তাকে যেতেই হবে তাই সে সময় নষ্ট না করে নিচে গিয়ে বাড়ির সব কাজ করে সবার জন্য ব্রেকফাস্ট তৈরি করে নেই — সে নিজের ঘরে গিয়ে তৈরি হতে চলে গেলো বাথ-রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে সাধারণ একটা থ্রি- পিচ পরে বের চুল গুলো বেনুনি করে এক পাশে রেখে ব্যাগ নিয়ে নিচে নেমে হালকা কিছু খেয়ে বেরোতে যাবে তখনি কারো ডাকে সে পিছনে তাকায়—-

চলবে কি —-

নীরবে ভালোবাসা পর্ব-১৩ এবং শেষ পর্ব

0

গল্প:#নীরবে_ভালোবাসা
লেখিকা:#সুরভী_আক্তার
#পর্ব:১৩(শেষ)

ঘরে এসে রুমের দরজা আটকে দিলাম। ফোন চেক করতেই মুখে হাসি ফুটল। কারণ সৈকত দুইবার ফোন দিয়েছিল। তখন সাধারণত আমি টিভির ঘরে ছিলাম।

ওরে ফোন দেওয়ার পর ও ফোন ধরল না।আমি হতাশ হলাম।জানি সে ব্যাস্ত হয়ত পরে ফোন দিবে।
আমি বরং ফোন নিয়েই থাকি।

লাবণ্য হাতে একটা বই নিয়ে বিছানায় হেলান দিয়ে বসলো আর ফোনটা পাশে রাখল ‌।তারপর আবার চেক করল রিং মোডে আছে কি না!

সৈকত তবুও ফোন দিল না।কাল কি সুন্দর ছিল দিনটা।রাগ ভাঙালো আমার,ভালোবাসলো আমাকে।
আর আজ?

আজান হচ্ছে চারিদিকে। লাবণ্য উঠে নামাজ শেষ করল।তারপর খাওয়া-দাওয়া।

তারপর গিয়ে আবারো শুয়ে পড়ল। ঘুমিয়ে সময় কাটানোর চেয়ে আর সহজ উপায় দুইটা নেই।

কালকের মত ভুল আজ করবে না সে।ঐ বাড়িতে থাকলেও ওড়নায় সেফটিপিন মেরে রাখতো আর শাড়ি পরলে তো সেফটিপিন কনফার্ম। কিন্তু কালকে সৈকতের সাথে ঝগড়া করতে করতেই সে সেফটিপিন লাগানোর কথা ভুলে গেছে।আর সৈকতও ওর রাগ ভাঙানোর জন্য কি একটা পায়তারা বের করেছিল!

তাই আজ সে সেফটিপিন লাগিয়ে ভালোমতন শুয়ে পড়ল।

___________
সময়টা তখন বিকাল ৪টা নাগাদ। অনেক সময় ঘড়ি না দেখেও শুধু মাত্র আকাশ দেখেই সময় বুঝা যায়। অবশ্য আগের মানুষ তো এভাবেই সময় নির্ধারণ করত।

সৈকত এসেছেই দেরিতে। গোসল আর খাওয়া দাওয়া করে একদম রুমে এসেছে সে।
লাবণ্যর কাজিন গুলো অবশ্য ছাড়ত না কিন্তু ও ক্লান্ত বলায় ছেড়ে দিয়েছে।
ঘুষ হিসেবে বিকালে তারা ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সৈকতও মেনে নিয়েছে।

রুমে এসেই তার চোখ পড়ল লাবণ্যর ওপর।কি সুন্দর বিছানায় শুয়ে আছে। কিন্তু চুলগুলো মুখের সামনে আসায় ঠিকমতো সাইড থেকে বোঝা যাচ্ছে না চেহারা।

সৈকত দরজাটা শব্দ ছাড়া ভালোমত লাগিয়ে দিয়ে বিছানার দিকে এগোচ্ছে।
সে চায় না আগের মত ডিস্টার্ব করুক কেউ!

হাত দুটো একসাথে দিয়ে গুটিসুটি মেরে ঘুমোচ্ছে লাবণ্য। সৈকত তার দুইপাশে হাত রেখে তার দিকে ঝুকলো। কিন্তু তার কোন নড়াচড়া নেই।
বেশ গভীর ঘুম তাহলে!
তা দেখে বাঁকা হাসলো সৈকত।তারপর তার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে থাকলো সে।
মিনিট দুয়েক পরেই চোখ সরিয়ে লাবণ্যর চোখের দিকে তাকালো।
যদিও চোখ বন্ধ আছে তবুও জানালায় টাঙানো পর্দার ফাঁক দিয়ে আসা আলোকরশ্মি চোখে মুখে ছড়িয়ে দিয়েছে সোনালী আলোর স্নিগ্ধতা।

মন চাইছে kiss দিয়েই ফেলি কিন্তু সাহস হচ্ছে না!

এভাবেই দুই চার বার চোখ আর ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ সৈকত kiss করেই ফেলল।

তাও আবার একদম deeply।

____________
গায়ের ওপর ভারী কিছু অনুভব হতেই ঘুমের মধ্যে বিরক্ত লাগতে শুরু করলো। এদিকে গরমের সাথে দমও বন্ধ হয়ে আসছে।
চোখ খুলতেই দেখি সৈকত আমার উপর!
আমি কি স্বপ্ন দেখছি?
না!তা কেন হবে?

আমি কিছুক্ষণ বোকার মত থাকলাম কিন্তু পরক্ষণেই তাকে সরানোর চেষ্টা করতে লাগলাম।
যেহেতু সৈকত সম্পুর্ণ ভর আমার উপর দিয়ে দিয়েছিল আর নিজের জ্ঞানের মধ্যে ছিল না তাই তাকে সরাতে বিশেষ কোন কষ্ট করতে হলো না।

ওকে সরিয়েই আমি জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলাম কিন্তু সৈকত শুধু একবার বড় করে শ্বাস নিল।

আমি রাগি চোখে তার দিকে তাকিয়ে দেখলাম সে আরামে একহাতে ভর দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

তাতে আমার রাগ আরো বেড়ে গেল।আমি তার দিকে এগিয়ে গিয়ে তার টি-শার্টের কলার ধরে তার উপর উঠে বসে বললাম”আমার ঘুমের সুযোগ নিচ্ছেন? চেহারা দেখে তো বোঝা যায় না আপনার হাড়ে হাড়ে এত শয়তানি!”

আমার কথা শুনে সৈকত আমাকেই তার নিচে এনে আমার উপর সব ভর ছেড়ে দিল।

“সরেন! আপনার ভর তো আমার কাছে হাতির মত,মেরে ফেলবেন নাকি?”

আমার কথা শুনে সৈকত একদম আমার নাকের কাছে তার মুখ এনে বলল”ঘুমের সুযোগ তো নেই নি জানেমান! আসলে তোমার কাজিন গুলো মানে আমার শালিকারা ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তো আমি ভাবলাম যে তোমাকেও নিয়ে যাই,না মানে না নিয়ে গেলে তো তুমি আবার অভিমান করবা,তাইনা?”

ওর প্রত্যেকটা কথা বলার সময় ওর ঠোট আমার নাক স্পর্শ করেছে।
ও সবসময় জেনে বুঝেই এরকম কোন কাজ করে যাতে আমি ওর কথার পিঠে কোন জবাব না দিতে পারি‌।

“তার সাথে kiss এর সম্পর্ক কি?”

“তোমাকে ঘুম থেকে ডাকছিলাম কিন্তু তুমি উঠছিলেই না তাই দিয়েছি,আর দেখো টেকনিক কাজও করে গেল”

“এ..বার অন..অন্তত সরেন”

সাথে সাথেই সৈকত সরে গেল।

“যান আপনি রেডি হন আর আমিও হচ্ছি”

__________
নদীর ধারের মৃদু বাতাসে সৈকতের সামনের ছোট চুলগুলো মাঝেমাঝে উড়ছে।
আবার মাঝেমাঝে হাত দিয়েও চুলগুলো সরিয়ে দিচ্ছে।
ওর দৃষ্টি নদীর দিকে আর আমার তার দিকে।

তার পরনে আমার দেওয়া সেই পাঞ্জাবি আর ঘড়ি। সেই সাথে পরেছে কালো ট্রাউজার।
আর আমার গায়ে নীল শাড়ি।আম্মু একদিন দিয়েছিল বিয়ের আগে।
তার সাথে মিলিয়েই পরেছি।

কাজিন গুলো নেই। ওদের বাঁদরামির জন্য আমি ভয়ে ছিলাম যে নতুন কিছু যাতে করে না বসে।

অবশ্য তারাও বুঝেছে আমাদের privacy দরকার তাই ওরাও আমাদের একা ছেড়ে দিয়েছে।
ওরা রাস্তার বীপরীতে আছে। সন্ধ্যায় একসাথে এক জায়গায় উপস্থিত হয়ে বাড়ি ফিরব।

“কিছু খাবে?”

“হুম?”(আনমনে উত্তর দিলাম আমি)

“এই!”

“ক..কি?”

“কই হারায় গেলা?”

“কোথাও না!(আপনার মাঝে)। কিছু বলবেন?”

“বলছি কিছু খাবে?”

“না এখন ইচ্ছা করছে না”

“আচ্ছা এখানেই থাকো আমি আসছি”

“কোথায়?”

“আরে সারপ্রাইজ!”

“কিন্তু!”

“আরে wait না!”

কিছুক্ষণ পর সৈকত আসলো তবে খালি হাতে।তবে কি জন্য গিয়েছিল?

কোথায় গিয়েছিলেন?

এত প্রশ্ন কেন করো তুমি বললাম না সারপ্রাইজ?
সময় হলেই জানতে পারবে।এখন চলো সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে

বলেই সৈকত আমার হাত ধরে সামনে এগোলো।পুরাটা রাস্তায় হাত ধরে রাখল সে। এমনকি আমার কাজিন দের সামনেও ছাড়লো না।
ওদের তো রীতিমত খোঁচাখুঁচি শুরু হয়ে গেছে।তা দেখে সৈকত আমাকে তার একদম পাশে নিয়ে আমাকে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরেই সামনে এগোতে লাগলো আর ওদের উদ্দেশ্য বলল”তোমরা তাড়াতাড়ি খালামুণি হও এটা কি তোমরা চাও না?আরে এভাবে খোচালে তো তোমার বোন আমার কাছেই আসবে না,কি বলো?”

এটা শুনে মনে হলো আমি মাটির নিচে চলে যাই।ওরা একথার উত্তর দিল না কিন্তু না তাকিয়েও বুঝলাম ওরা মুচকি মুচকি হাসছে।সৈকতও হাসছে কিন্তু হাসছি না আমি।

কিছুক্ষণ মাথা নিচু করেই সামনে এগিয়ে গেলাম তারপর সামনে তাকালাম। সন্ধ্যায় আবহাওয়া টা ঠান্ডা থাকে।পরিবেশও সুন্দর।

আশেপাশে তাকাতে গিয়ে সৈকতের সাথে চোখাচোখি হলো।কেউ চোখ সরালাম না।
সৈকতের চোখের দৃষ্টি দেখে মনে হচ্ছে সে অনেক কিছুই বলতে চায় আমাকে তবে একান্তই ব্যক্তিগত।

ওভাবেই হাঁটতে হাঁটতেই হঠাৎ সৈকত আমাকে তার দিকে টান দিতেই তার বুকে গিয়ে পড়লাম। হঠাৎ এমন হওয়ার কোন কারণ খুঁজে পেলাম না।মাথা তুলে সৈকতের দিকে তাকাতে গেলেই দেখি সেও আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। আমি ইশারায় জিজ্ঞেস করলাম কি হলো। তখন সে বললো”দেখে চলতে পারো না?ইট ছিল! পড়ে গেলে কোলে করে নিয়ে যেতে হত, সামনে দেখে হাটো।”

বলেই হাত ধরে সামনের দিকে এগোলো সে।

__________
বাসায় এসে আমরা সবাই অল্প খাওয়া দাওয়া করে যে যার রুমে চলে আসলাম। সৈকত আসেনি।
সে আবারো বাইরে গেছে।

সে ফিরল আধা ঘন্টা পর।এসেই আমার চোখ বেঁধে দিল তারপর রুমেই বসিয়ে রাখলো।তারপর কিছুক্ষণ পর বলল চোখের বাঁধন খুলতে।আমি বাঁধন খুলেই দেখলাম সে হাঁটু গেড়ে বসে আছে আমার সামনে তারপর সে তার পিছন থেকে একটা গোলাপ বের করে আমার সামনে ধরল আর বলল”আমাদের বিয়েটা আকস্মিক হয়ে যায়। অজানা অচেনা দুইটা মানুষ যাদের একটা সামান্য বন্ধুত্ব পুর্ণ সম্পর্কেও হয়নি তাদের বিয়ে।
আমাদের একে অপরকে জানার জন্য সময় দরকার ছিল যেটা তোমার জন্য আমরা পেয়েছিলাম। সেই সময়টাতে আমি তোমাকে পছন্দ করতে শুরু করি তাই যখন হঠাৎ তোমার বন্ধুর সাথে দেখেছিলাম আমি ভুল বুঝেছিলাম কিন্তু আমি তোমাকে বিশ্বাস করি।সেটা তোমাকে হারানোর ভয় ছিল তাই সেইরকম একটা রুড বিহেভ করে গেছি কিন্তু তুমি চাইলে রাগারাগি করতে পারতে কিন্তু সহজেই বুঝিয়ে দিয়েছ সেটা আমার ভুল ছিল আর সম্পর্কে বিশ্বাস খুব জরুরি।তাই এরকম ভুল আর করতে চাই না কিন্তু যদি কোনদিন এরকম করি তাহলে বুঝবে সেটা আমার মুখের কথা মনের নয় যদি আমার শর্তে রাজি হও তাহলে এই গোলাপ গ্রহণ করো।”

এতক্ষণ আমি মন দিয়ে ওর সব কথা শুনলাম,প্রতিটা কথায় আছে আশার আলো আর অনুশুচনা।তাই আমি বিনা বাক্য তার হাত থেকে গোলাপ নিলাম।

গোলাপ নিতেই এবার সে তার পিছন থেকে একটা রিং বের করল।তারপর সেটা সামনে ধরে বলল”যখন কথা দিয়েই ফেলেছ সারাজীবন পাশে থাকার তাহলে তুমি আমার কাছে বন্দী জানেমান!
জানিনা কখন! কিন্তু পবিত্র সম্পর্কে হয়ত আল্লাহই ভালোবাসা সৃষ্টি করে দেন so বেশি কিছু বলতে চাই না সোজা কথায় বলতে #নীরবে_ভালোবাসা দিয়ে গেছি তোমাকে আর আবারো জানতে চাই will you be mine forever?
রাজি থাকলে এই আংটিটা নাও”

ওর এইসব কথা শুনে অজান্তেই মনে প্রচুর ভালোলাগা সৃষ্টি হচ্ছে তাহলে কি আমিও তাকে…. ভালোবাসি?

আমি কখন যে হাত বাড়িয়ে দিয়েছি টেরই পাইনি। এবার সৈকত হাসিমুখে সযত্নে আংটিটা পরিয়ে দিল আমাকে।

তারপর উঠেই প্রথমেই হাঁটুতে হাত রাখল।ইশশ! এতক্ষণ বেচারা আমার জন্য বসে ছিল?
আমি সাথে সাথেই ওকে ধরিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিলাম।তারপর ওর দিকে তাকালাম।ও কিছুক্ষণ ওর হাত পা গুলো সোজা করে আমার দিকে এগিয়ে এসে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রইল তারপর আরো কাছে এসে জড়িয়ে ধরল।তারপর বলল”আমার একটা আবদার রাখবে?”

ওর কথায় আমি কিছু না বুঝেই হুম বলে দিলাম।

প্রমিস?

আচ্ছা প্রমিস! এবার বলেন

সৈকত আমার সাথে আরেকটু মিশে তার নাক আমার গলায় ঘষে কানের কাছে মুখ এনে বলল”আমি তোমার সন্তানের বাবা হতে চাই,May I?”

ওর কথা শুনে আমি পুরা সকড হয়ে গেলাম।আমি ভাবিই নিই ও ওর কথার জালে আমাকে ফাঁসিয়ে আমার কাছ থেকে এরকম কিছু চাইবে।

ও আমাকে ছেড়ে আমার দিকে তাকাতেই আমি মাথা নিচু করে ফেললাম।

সৈকত আমার গালে হাত রেখেই বলল”তুমি চাও না?”

“আ..আমি?”

“ওকে ওকে বলতে হবে না,just একবার আমাকে জড়িয়ে ধরো”

ওর বলতে দেরী কিন্তু আমার ধরতে না।তাও আবার হালকা ভাবে না একদম ওর গায়ের সাথে মিশে গেছি।তা দেখে সৈকত হাসলো তাতে আমার আরো লজ্জা লাগলো তবুও আমি তাকে ছাড়লাম না।

সে হেসে আমার কানের পাশের চুলগুলো সরিয়ে আমার পিঠে আলতো হাত রাখলো। পিঠের কিছুটা অংশ উন্মুক্ত থাকায় আমি কেঁপে উঠলাম।

“এবার ছাড়ো”

আমি তবুও ছাড়লাম না আর কিছু বললামও না।

“তুমি যদি না ছাড়ো তাহলে আমি আমার নেক্সট গিফট কিভাবে দিব?”

আমি ওকে ছেড়ে ওর দিকে প্রশ্নসূচক নয়নে তাকিয়ে রইলাম”আরো কিছু আছে?”

“Wait”

বলেই সৈকত টেবিলের ওপর থেকে একটা প্যাকেট দিল আর চোখের ইশারায় খুলতে বললো

প্যকেট খুলে দেখলাম একটা মেরুন রঙের শাড়ি আর কালো কানের দুল।সেটা থেকে চোখ সরিয়ে সৈকতের দিকে তাকাতেই ও বললো”কেমন?”

“অনেক সুন্দর! আমার অনেক পছন্দ হয়েছে”

“আরে তোমার জন্য না তো!”

আমি ভ্রু কুঁচকে তার দিকে তাকিয়ে বললাম”তো কার জন্য আমার সতিনের জন্য?”

এটা শুনে সৈকত হেসে দিয়ে বলল”আমার বাবুর আম্মুর জন্য”

এটা শুনে আমিও বললাম”হায় আল্লাহ! আমার সতিনও আছে আর তার বাচ্চাও!”

এটা শুনে সৈকত টাস্কি খেল আর বুঝলো তার মত আমিও মজা করেছি তাই বললো,”না গো! আমার future baby যার আম্মু আমার present lovely wife”

এটা শুনে আমার মুখে মুচকি হাঁসি চলে আসলো।

তারপর সৈকত আমার কাছে এসে কোমর জড়িয়ে ধরে বলল”মানে আমার উচিৎ ছিল তোমাকে প্রথমে গিফট দেওয়া বাট দিতে পারি নি সেটা আমার ব্যার্থতা বাট এখন দিয়ে দিলাম”

আমি তার কাছে গিয়ে তার গলা জড়িয়ে বললাম”তাহলে শাড়িটা কি বাবুর আম্মু বাবুর সাথেই পরবে নাকি বাবু ছাড়াও পড়তে পারবে?”

“যাকে দিয়েছি তার মন হলেই পড়তে পারবে”
বলেই আমার নাকের সাথে নাক লাগিয়ে চোখ বন্ধ করল। আজ নিজেকে পরিপুর্ণ লাগছে,কিছুদিন পর হয়ত আবারো…

_________
২বছর পর…

সৈকত আর ফারিন একে অপরকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে আর আমি জেগে জেগে তাদের দেখছি। এখন নিজেকে বেশি পরিপূর্ণ লাগছে।আমি সৈকতের নামের সাথে মিলিয়ে নাম রাখতে চেয়েছিলাম কিন্তু সৈকত আমার নাম(ফারিহা)এর সাথে মিলিয়ে রেখে দিয়েছে।

আমি সৈকতের গালে হাত রাখতেই সে হালকা নড়ে চোখ খুলল তারপর উঠে বসে চোখ মুছতে মুছতে বলল”কি খবর বাবুর আম্মু?”

“বাবুকে পেয়ে আমাকে ভুলে গেছেন?”

“না জানেমান”

“That’s good”

সৈকত হাসলো তারপর বললো”তারপর?”

“Kiss me”

সৈকত আমার দিকে এগিয়ে কিস করতে নিতেই ফারিন উঠে গেল। তখন সৈকত ওকে কোলে নিয়ে নিল।

“তুই কিরে? আমার ভালোবাসা তো সব তুই ই নিয়ে নিলি”

“দেখ বাবু, তোমার আম্মু তোমাকে হিংসা করে, ছিঃ ছিঃ”

“Because I love you”

এই কথা শুনে সৈকত আমার গলায় একহাত রেখে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিল।কে জানে ছোট্ট ফারিনের কি হলো সে এবার চুপটি করে আমাদের দুজনকে দেখতে লাগল আর হঠাৎই হেসে উঠলো।ওর হাসি শুনে আমরা একে অপরকে ছেড়ে হেসে দিলাম।তারপর ফারিনকে কোলে নিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলাম আর সৈকত এগিয়ে এসে আমাদের একসাথে জড়িয়ে ধরল।

*****🥀সমাপ্ত🌷*****

নীরবে ভালোবাসা পর্ব-১২

0

গল্প:#নীরবে_ভালোবাসা
লেখিকা:#সুরভী_আক্তার
#পর্ব:১২

রুমে গিয়ে ফোন নিয়ে শুয়ে পড়ে সে। একটুখানি দেখা হয়নি আবার সৈকত চলে আসছে।
সৈকত আসতেই লাবণ্য ফোনটা রেখে দেয়। ফোন দেখে একটু হাসলেও সামনের জন কিযে মনে করে!

তাছাড়াও সৈকত সেই যে এসেছে তখন থেকেই লাবণ্য যেখানেই থাকুন সেও যদি সেখানে থাকে তাহলে শুধু সংয়ের মতন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওকে দেখছে।ব্যাপারটা আজব লাগবে না কারো কাছে?

ঘুমানোর চেষ্টা করলেও ঘুম আসছেনা।নিরবতা ভেঙ্গে লাবণ্যই বলে”সমস্যা কি?সংয়ের মতন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি দেখছেন?অস্বস্তি হচ্ছে আমার ভাল্লাগছে না!”

সৈকত বিছানায় এসে চিত হয়ে শুয়ে বলে”ফাইনালি!কথা তো বলসো”

“ঢং”

বলেই অন্যদিকে ঘুরে যায় লাবণ্য। সৈকত দেখে দরজা লক আছে কিনা।তারপর লাবণ্যর কাছে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে যায়।

লাবণ্য চমকে উঠে। কয়েক সেকেন্ড নিরবতার পর ছাড়ানোর চেষ্টা করলে সে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। লাবণ্য মুচকি হেসে ঘুমিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

______________
ঘুম থেকে উঠে ঘটে আরেক বিপত্তি। সৈকত ওকে এমনভাবে ধরে আছে যেন সে বালিশ।
তবুও তাকে ছাড়িয়ে উঠে সে।উঠে ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে সৈকত মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। লাবণ্য এগিয়ে গিয়ে তার পাশে বসে বলে”কি হয়েছে?”

“ঘুমিয়ে ছিলাম তাই!”

তারপর লাবণ্যর উপর নজর যেতেই ও থেমে যায়। লাবণ্য ওর দিকেই তাকিয়ে ছিল।তার নজর অনুসরণ করে সে নিজের বুকের দিকে তাকাতেই ও উল্টো ঘুরে যায়। সৈকতও হুসে আসে তারপর শয়তানি হাসি দিয়ে বলে”এট্রেক্ট করতে চাইছ?”

লাবণ্য উঠতে নিলেই ও ওর হাত চেপে আবার বসিয়ে দেয় তারপর ওপর হাত তার সামনে এনে বলে”এটা খুজছো?”

লাবণ্য তাকিয়ে দেখে তার ওড়না। লাবণ্য নিতে গেলেই সে হাতটা সরিয়ে নেয়।

এটা নিতে গেলে আমার শর্ত মানতে হবে

কেমন শর্ত?

I wanna kiss you!

লাবণ্য যেন ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। সৈকত জীবনেও এমন আবেগী কথা বলে নি।

দরকার নেই!রা,, রাখুন আপনার কাছেই আমার লাগবে না!

তোমার না লাগলেও আমার লাগবে! নাহলে হাত ছাড়বো না

লাবণ্য এক ঝলক সৈকতের দিকে তাকায়।তার দৃষ্টি নেশাতুর। লাবণ্য এক হাত সৈকতের চোখের ওপর নিয়ে যায় আর আরেক হাত ওর গালে রেখে ধীরে ধীরে তার ঠোঁটজোড়া এগিয়ে দেয়।

লাবণ্য উঠতে গেলে আবারো হাতে টান অনুভব করে।
তখনই দরজায় ঠক ঠক আওয়াজ হয়।এতে লাবণ্য স্বস্তি পেলেও সৈকতের মন খারাপ হয়ে যায়।
লাবণ্যর ও ভাল লাগছিল মূহূর্তটা কিন্তু সে নার্ভাস!

ও নিজের ওড়না সৈকতের থেকে নিয়ে দরজা খুলে দেয়। মাগরিবের নামাজ শেষ করে সবাই নানান কথা বার্তা বলে। এভাবেই কেটে যায় অনেকটা সময় তারপর এশা হয়ে যায়।গল্পে গল্পে কখন যে সময় কেটে যায় কেও টেরও পায় না।
রাতে লাবণ্য খায় না। কারণ ও নাকি আসার পর থেকেই অনেক খেয়েছে।এখন খেলে নাকি গ্যাসট্রিক প্রবলেম হবে।
সৈকত খাওয়া দাওয়া করে এসে দরজা লক করে দেয়। লাবণ্য চোখ বন্ধ করে শুয়ে ছিল। দরজা রকের শব্দে চোখ খুলে। তারপর সৈকতকে বলে”দরজা লক করলেন কেন?”

“স্বামী স্ত্রীর প্রাইভেসির জন্য”বলেই লাইট অফ করে দেয়। বাইরের থেকে হালকা আলোতে এখনো দুজন দুজনকে এখনো দেখতে পারছে। হোক তা অস্পষ্ট!

একথা শুনে লাবণ্যর চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়।তাহলে বিকালের কথা ভুলে নি?

“তখন তো খুব দাত কেলাচ্ছিলা, এখন কি করবা?”

লাবণ্য শুয়ে ছিল ওকে দেখে উঠতে নিলেই সৈকত ওকে শুইয়ে দিয়ে ওর ওপর উঠে যায় আর তার ঠোঁট জোড়াস্পর্শ করে।
ধীরে ধীরে নেমে আসে তার গলায়

________
সকালে দেরিতে ঘুম ভেঙ্গেছে আমার। সৈকত পাশে ছিল না।ও সকালেই চলে গেছে অফিসে কিংবা কিছুক্ষণ আগে।
আমি সাধারণত সকালেই উঠি।আজ দেরি হয়ে গেল।
সৈকত আসবে সেই সন্ধ্যায় বা আসবে না।পরে আমাকে নিতে আসবে।জানা নেই।
উঠে গোসল করে চুল শুকিয়ে নিলাম।দেরি করে ঘুম থেকে উঠার জন্য এখন মাথা ব্যথা করছে।ভেজা চুলে থাকলে সেটা আমার জন্য ভয়ংকর রূপ ধারণ করবে।

আম্মুর কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম সৈকত কখন গেছে তখন আম্মু বলল বেশীক্ষণ নাকি হয় নি।
ইস! আরেকটা আগে উঠতে হতো তাহলেই দেখা হতো। আম্মু আরো জানালো আজকে নাকি আমার বাঁদর কাজিন গুলো আসবে।ঢং! ওদের জন্য আমার প্রেম তেজপাতা হয়ে যাবে।ক্ষণেক্ষণে আমার রুমের পাশ দিয়ে পায়চারি করবে আর আমার প্রেমের মূহূর্তে চলে এসে বলবে”ওহ সরি সরি”আদেক্ষিতা!

এক ঘন্টা পরেই সবাই চলে আসল। আমি তখন টিভি অন করে বসে ছিলাম।
এসেই সবাই জোঁকেরমতো আকড়ে ধরল আমায়।আমি বললাম”আরে যা তো তোদের এই গায়ের গন্ধে মরে যাব তো আমি!”

তখন সবাই ফোঁস ফোঁস করতে করতে চলে গেল। যেহেতু দুপুর হয়ে গেছে তাই সবাই গোসল শেষ করে সোফায় বসলাম। আম্মু তখন সবাইকে নাস্তা দিল।
নাস্তা দিয়ে আম্মু চলে যেতেই ওরা আমাকে প্রশ্ন করা শুরু করল।ওরা যেন এই অপেক্ষাতেই ছিল।

প্রথমেই শুরু করল”সৈকত ভাইয়া কেমন? তোর সাথে কি করেছে?হেনতেন যা বলার মত না।আমি তখন বললাম”ছিঃ ছিঃ তোদের লজ্জা নেই? নিজের বিয়ে হবে তখন দেখে নিস”

ওরা তাও ছাড়ল না জেদ ধরে বসল। তখন আমি জোরে আম্মু বলে ডাক দিলাম। সাথে সাথেই ওরা চুপ হয়ে গেল।শত হোক বড় মানুষের সামনে কি এগুলো বলা যায়?

আমি আম্মুকে বললাম”দেখ তো আম্মু!মাথা ব্যথা করছে বলছি তাও ছাড়ছে না ওরা আমায়”

আম্মু সাথে সাথেই বিশ্বাস করে ফেলল। কারণ আমার অল্প গোলমালেই এরকম হয়।আর ওরা তখন থেকে এসেছে তখন থেকেই ক্যাচর ক্যাচর করছে।

আম্মু আমাকে ঘরে যেতে বলল আর ওদেরও নিষেধ করল যাতে আমায় বিরক্ত না করে।
যেতে যেতে একবার পিছন ফিরে দেখলাম ওরা কটমট চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ওরা হয়তো ভাবেনি আমি এরকম করে ওদের ফাঁসিয়ে দিব।

চলবে….

নীরবে ভালোবাসা পর্ব-১১

0

গল্প:#নীরবে_ভালোবাসা
লেখিকা:#সুরভী_আক্তার
#পর্ব:১১

সকালে,
সৈকত ঘুম থেকে উঠে দেখল অনেক লেট হয়ে গেছে আর পাশে লাবণ্য নেই।ও কি একা চলে গেছে?মাথা ঘামালো না সৈকত।
ফ্রেশ হয়ে তার জিনিস গুলো বের করতে গেলেই একটা চিরকুট পেলো সে। কৌতূহল বশত হাতে উঠিয়ে দেখল একটা কাগজ দুই ভাঁজ করা আছে আর উপরে লিখা আছে”প্লিজ পড়বেন”

সৈকত বুঝলো এটা লাবণ্যর কাজ।কাল ঠিক মত তার কথা শুনিনি আমি তাই ও লিখেছে।কি লিখবে? কৈফিয়ত?পড়েই দেখি নতুন কি কাহিনী।

“সৈকত,”
“আমি জানি আপনি রাগ করে রাতের সকল কথা বলেছেন কিন্তু একটাবার আমার কথা শুনে দেখতেন। আমাকে বোঝার চেষ্টা করতেন বিশ্বাস করতেন!
আমাদের বাসায় যখন রিফা আপু আপনার সাথে ওমন করেছিল আমিও তো আপনাকে ট্রাস্ট করেছিলাম।সেটা ছিল বিয়ের দ্বিতীয় দিন কিন্তু দেখুন, বিয়ের এক আধ মাস পরও আমার প্রতি আপনার বিশ্বাস টুকু আমি অর্জন করতে পারলাম না।আফসোস! আপনার নিকট আমি সেই চরিত্রহীনই থেকে গেলাম।
সে যাই হোক, কালকে আপনি বলেছিলেন না আমি ছেলেদের জিনিস কিনেছি কিন্তু আপনাকে মিথ্যা বললাম।সেটা ঠিক। কিন্তু কিনেছি আপনার জন্যই আর মিথ্যা বলেছিলাম যাতে আপনাকে আজ সারপ্রাইজ দিতে পারি। কিন্তু আপনি ভাববেন আজই কেন?আজ কি বিশেষ কিছু?

তাহলে বলব বিশেষ কিছুই না।আজ আমার লাস্ট এক্সাম আর আপনি বলেছিলেন আমাকে আজ বাসায় ঘুরাতে নিয়ে যাবেন তাই জন্য কেনা।
আর যে ছেলের কথা আপনি বলেছিলেন সে সত্যিই আমার ভাইয়ের মত। আমাকে নিজের বোনের মতই ভাবে।ওর চোখে আমি কখনো কামনা দেখিনি আমার জন্য। শুধু আমার জন্য নয় অন্য মেয়েদের জন্যও।আমি ছেলেদের জিনিস কখনো তেমন কিনিনি।কিনবই বা কিভাবে আমার তো কোন ভাই নেই নাহলে আম্মু যখনই তার জন্য কিনত আমি দেখতাম।
আপনি কাল আমাকে নিতে আসেন নি বলে আমি বাসায় না গিয়ে কিনেছিলাম সেসব।যা কিনেছি তা আপনার জন্যই। বিশ্বাস না হলে মাকে বলে দেখুন।তিনি আমার দেরি করে আসার কারণ জানেন।যদি আপনার রাগ কমে থাকে তাহলে আলমারির মধ্যে যে গোলাপি ব্যাগ আছে সেটা চেক কইরেন।
আপনার যদি আমার ওপর বিন্দুমাত্র বিশ্বাস থাকত তাহলে আমার পিছন পিছন মার্কেট এসেও আমাকে অন্য কারো সাথে দেখে আবার ফিরে যেতেন না। আমাকে সেখানেই জিজ্ঞেস করতেন।
আর সেখানে সিনক্রিয়েট না করতে চাইলে বাসায় এসেও কিন্তু আমাকে জিজ্ঞেস করা যেত।
আজ যদি এসব না বলতাম তাহলে হয়তো ডিভোর্স নিতেও টাইম নিতেন না তাইনা?
কারণ আপনিতো আমায় বিশ্বাসই করেন না।বিশ্বাস করতে শিখুন সৈকত। বিশ্বাস সকল সম্পর্কের মূল।
অবশেষে এটাই বলব এখন আমার মনে হয় আপনি জেদের বশেই হয়ত বিয়ে করেছেন আমায়।”

সৈকত অনুতপ্ত হলো। লাবণ্য তার ব্যাপারে এরকম ধারণা রাখে?
অবশ্য রাখবেনাই বা কেন?আমি তো কখনো তাকে বিশ্বাসই করলাম না!সম্পর্ক টার মূল তো সেই অবিশ্বাস!কাল মিটিং ক্যানসেল হওয়ার পরও যদি একটা বার ওকে ফোন করে নিতাম!
ওকে অন্য একটা ছেলের সাথে দেখে আমার মাথা ঠিক ছিল না। কিন্তু আমি এটা কবে ভুলে গেলাম যে, রাগের মাথায় নেওয়া সিদ্ধান্তে সবসময় পস্তাতে হয়।কাল কি রুড ব্যবহারই না করলাম তার সাথে।সে যদি আজ বুঝিয়ে না বলত?
আমি তার চেয়ে বড় হয়েও এত immature হই কেমনে?
ওহ মেয়েরা তো আবার দ্রুত mature হয়।

তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে ডাইনিংয়ে আসল সৈকত। সৈকতের মা সৈকতকে বকতে বকতে ওকে নাস্তা দিল। কারণ সে দেরি করে ফেলেছে আর তার কারণে লাবণ্য একা একা গেছে।
সৈকত এখনো নিজের doubt clear করতে পারছে না (কি অসভ্য ছেলে ভাবা যায়? এতকিছুর পরও নিজের বৌকে বিশ্বাস করে না!শালা অসভ্য 😒)

“মা?কাল লাবণ্য কখন ফিরেছিল?”

“ভার্সিটি ছুটি হওয়ার ঘন্টাখানেক বাদে”আনমনে জবাব দিলেন তিনি

“ও আমার জন্য গিফট নিয়ে আসছিল?”

এবার সৈকতের মায়ের হুস আসলে তিনি বলে উঠেন”হ্যাঁরে?কি এনেছিল?বলল তোর জন্য কিসব এনেছে তোকে সারপ্রাইজ দিবে আজ।
তা দেখেছিস?কি দিয়েছে?”

“হুম! নীল পাঞ্জাবির সাথে কালো ঘড়ি”গম্ভির কন্ঠে উত্তর দেয় সৈকত

“বাহ চয়েস আছে তো!নীল পরলে তো তোকে খুব সুন্দর লাগে। কিন্তু আজ মেয়েটার শেষ পরিক্ষা আর তুই আজ দেরি করে উঠলি?বাদ দে।ওকে বাসায় থেকে ঘুরিয়ে আনিস আর মেয়েটার প্রতি বিশ্বাস রাখিস।আমরা যা সহজেই পেয়ে যাই তার মূল্য বুঝতে পারিনা।”

পরিক্ষা শেষে বাসায় চলে আসে লাবণ্য।সে জানে সৈকত কেমন।ঘাড়ত্যরা ছেলে একটা!

প্রথমদিনই তো বলেছিলাম, বিয়ে না করলে করিসনা কিন্তু না!ব্যাটা বলে কি? “আপনার কথা শুনলে আজ এমনটা হত না লাবণ্য! আমার জন্য আপনার জীবনটা এমন হয়ে গেল তাই আমি আপনাকে বিয়ে করব বাট I need time!”

এ্যহ! আসছে আমার টাইম!
কে মানা করেছিল আমার কথা শুনতে?আর তুই কি মেয়ে যে তোর টাইম লাগবে?সালা অসভ্য আমাকে একটুও বিশ্বাস করে না,হুহ😤

এসব গালিগালাজ করতে করতে বাসায় পৌঁছে যায় লাবণ্য।

রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়েই দেখে সৈকত একদম তার দেওয়া জামা কাপড় পরে রেডি। লাবণ্য টাস্কি খায় কিন্তু গলেনা।এত তাড়াতাড়ি গললে চলবে না।কম রুড ব্যবহার করে নি সে আমার সাথে।

আলমারির কাছে এসে জামা কাপড় পছন্দ করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে সে।আজ সৈকত তাকে নিয়ে যাক আর না যাক সে যাবেই।

এইদিকে লাবণ্যর ইগনোরেন্স সৈকতের ইগোতে লাগে।

বাট ইগনোর করাটাও স্বাভাবিক আমার ফায়ার হওয়া চলবে না নাহলে এখন টেম্পুরারি বাপের বাড়ি যাওয়ার জায়গায় সে সারাজীবনের জন্য চলে যাবে তখন আমি বৌ হারা হয়ে যাব আর এই অল্প বয়সেই বৌ হারা হলে আমার কোন প্রেস্টিজ থাকবে?

সবাই বলবে আমি বৌকে‌ ৬ মাসও ঠিকমত রাখতে পারলাম না।

সৈকতের ভাবনার মাঝে লাবণ্য রেডি ও হয়ে গেছে।ব্যাগ আগে থেকেই গোছানো ছিল। লাবণ্যর হিজাব পিনগুলো নিচে পড়ে যাওয়ায় সৈকতের ভাবনার অবসান ঘটে।

লাবণ্য সব পিন উঠিয়ে তার হিজাব ঠিক করে বেঁধে নেয়।
তারপর ব্যাগে হাত দিতে গেলেই সেটা সৈকত নিয়ে নেয়।
তবুও লাবণ্য কিছু বলে না। সৈকত তখন বলে”চলো বউ”
লাবণ্য তবুও কোন উত্তর দেয় না। আগে হেঁটে চলে যায়। সৈকত উদাসীন মনে হেঁটে যায়। গাড়িতেও কোন কথা বলেনি দুজন। বলতে গেলে লাবণ্য বলে নি সৈকত কিছু জিজ্ঞেস করলেও না।
আবার এখানে কোন সিনেমার সিনের মত‌ লাবণ্য সিট বেল্ট বাঁধতে পারেনি আর সৈকত বেঁধে দিয়েছে এমনও না। কারণ সিট বেল্ট বাঁধা তেমনও কঠিন কাজ না।

বাড়ি পৌঁছে লাবণ্য শুধু বলেছে ব্যাগটা ভিতরে আনুন।

সৈকতও ভালো ছেলের মত লাবণ্যর ব্যাগটা নিয়ে আসে।ভালো হয়েছে ঝগড়া হওয়ার আগেই ব্যাগ গোছানো হয়েছিল নয়তো লাবণ্য সৈকতের একটা কাপড়ও নিতো না।

ঘরে যেয়েও বেচারার কোন শান্তি নেই। লাবণ্যর আম্মু ওদের নাস্তা দিতে চাইলে লাবণ্য নাকি বলেছে আমাদের ক্ষিদে নেই আর সৈকতকে দিতে চাইলেও সেম কথায় বলেছে।

দুপুরের খাবার লাবণ্যর আগেই শেষ হয়ে গেছে। মানে ও সবার আগে খেয়ে উঠেছে।ও খাওয়ায় একটু ফাস্ট।

চলবে…

নীরবে ভালোবাসা পর্ব-১০

0

গল্প:#নীরবে_ভালোবাসা
লেখিকা:#সুরভী_আক্তার
#পর্ব:১০

কয়েকদিন আগে যখন আমরা ভার্সিটির জন্য বের হচ্ছিলাম তখন কোথায় থেকে জেন চাচা এসে হাজির হয়। শাশুড়ি মা উনার জন্য নাস্তা নিতে কিচেনে যান আর চাচা সৈকতের দিকে তাকিয়ে বলেন”ভালই তো বৌকে পড়াচ্ছো আর কাজ করছে একলা আমার মেয়েটা তা সত্য টা কি বলে দিতে‌ হবে?”

“চাইলে বলতেই পারেন।এখন আমার বিয়ে হয়ে গেছে আর আপনি ওর চাচা হওয়ার আগে আমি ওর স্বামী। ওর সব দায়িত্ব এখন আমার, আপনার না।আর ও আমার স্ত্রী, ওকে আমি কি করব কি করব না সেটা আমাদেরই বুঝতে দিন।আর কাজের কথা বলতে গেলে আমাদের বাসায় জমিলা খালা আর উনার স্বামিকে যা বলা হয় তাই করে।তাই মানহা ভাবির সমস্যা হওয়ার কথা নয়”
এই বলে সৈকত আমার হাতটা ধরে নিয়ে চলে এল বাইরে।আমি শুধু আমাদের হাতের দিকেই তাকিয়ে ছিলাম।আলাদাই ভালোলাগা ছিল সেই আবদ্ধ হাতের মুঠোয় তার স্পর্শে।

সবসময় সৈকতই আমাকে ভার্সিটি দেওয়া নেওয়া করেছে।কখনো উনি না আসতে পারলে আমি একাই চলে আসতাম। উনার কখনো কখনো লেট হতো বলেই আমাকে প্রতিদিন ভার্সিটি রেখে আসার সময় জিজ্ঞেস করতেন আমার কাছে টাকা আছে কিনা।যদি না থাকতো তাহলে একেবারেই ৫০০-৬০০ দিয়ে দিত। কখনো যদি কাজে লাগে।আর উনিও যদি কোনদিন জিজ্ঞেস করতে ভুলে যান? তাই।

আজও ঠিক তেমনই হলো।আমার পরিক্ষার পর আমি ওর জন্য অপেক্ষা করছিলাম তখনই সৈকত জানালো তার আজ আসার টাইম হবে না।তো আমি যেন চলে আসি।আমি ভাবলাম এ আর এমন কি? কিন্তু আবার ভাবলাম আজ যেহেতু উনি আসছেন না তাই আমি আমার বহুদিনের ইচ্ছা পুরন করব। আমার ইচ্ছা ছিল আমার স্বামি যেই হোক সে যেন ভালো হয় আর আমাকে ভালোবাসতে জানে।তার মধ্যে তো সৈকত ভালো আছেই।ভাগ্যে থাকলে তার ভালোবাসাও পাব।আমি আমার লাইফের প্রথম কোন ছেলেকে গিফট দিতে যাচ্ছি। সারপ্রাইজ গিফট কিন্তু ছেলেদের পছন্দ অপছন্দ আমার ঠিকমত জানা নেই। যেহেতু কখনো কিনি নাই।তাই একটা ক্লাসমেট কে নিয়ে মার্কেট‌ যাচ্ছি।ও আমার প্রচুর হেল্প করেছে।স্টাডি থেকে শুরু করে।আর আমাকে বোনের থেকে কম চোখে দেখেনি কখনো।ওর কোন ভাইবোন নেই তাই আমাকেই বোনের চোখে দেখে প্লাস কখনো আমরা তুই তুকারি ছাড়া কথাই বলি নাই।সে যাই হোক। পাশের একটা মার্কেট থেকে আমি সৈকতের জন্য একটা পাঞ্জাবি নিলাম। আমার অনেক পছন্দের একটা জিনিস আই মিন সব ছেলেদের পাঞ্জাবিতে জোস লাগে!
ঘড়িও নিতে চাইছিলাম কিন্তু সেরকম একটা পছন্দই হলো না! আবার ভাবলাম ঘড়ি ছাড়া মানায় নাকি?তাই অন্য একটা দোকানে গেলাম।মার্কেটে সব দোকান পাশাপাশি তাই সেরকম কোন অসুবিধা হলো না।
ব্ল্যাক কালার ঘড়ি।রাতের বেলা লাইটের আলো পড়লে ঝলমল করবে। নীল পাঞ্জাবির সাথেও মানাবে।যদিও কালো রং প্রত্যেক রঙের সাথে মানানসই এমনকি তার বিপরীত রং সাদার সাথেও!

বাসায় ফিরে আসতে আসতে লেট হলো খানিকটা।মা জিজ্ঞেস করলেন দেরি করলাম কেন আমি বললাম আপনার ছেলের জন্য উপহার নিতে গেছিলাম

মা হাসলেন।আমি বললাম এটা কালকে দিব উনাকে তাই খাবার টেবিলেও যেন কিছু না বলে উনাকে।
সৈকতের আসতে লেট হচ্ছে।আজ কি মিটিং বেশিই লম্বা?
সৈকত বলেছিলেন পরিক্ষা শেষ হলেই আমাকে বাসায় নিয়ে যাবেন।আর কাল আমার লাস্ট এক্সাম।তাই গিফট আইটেম গুলোও কালকেই দিব।
আমি সৈকতেকে ফোন দিলাম বাট ধরল না। দুই তিনবার কল দেওয়ার পর ফোনটাই অফ করে দিল।আমি অবাক হলাম।আমি কি কিছু ভুল করেছি? সব চিন্তা কে মাথা থেকে সরিয়ে পড়তে বসলাম। সৈকত আসল তার একঘন্টা পরে। আমাকে পড়তে দেখে কিছু বলল না কিন্তু তার মন মেজাজ যে বিগড়ে আছে তা বুঝতে আমার প্রবলেম হলো না।তাই কিছু বললাম না।ডিনারের সময় ডিনার করে সৈকতই আগে রুমে ফিরল আর শাশুড়ি মা আমার থেকে জানলেন কি কি কিনলাম তাই ওগুলো বলতে গিয়ে একটু দেরি হলো।এখন গিয়ে শুয়ে পড়ব কারণ আরেকটু পড়া আছে যা সকালে করতে হবে এবং সকালেই আমি খানিক পড়া করি কারণ রাত্রে সব একসাথে পড়তে গিয়ে গুলিয়ে ফেলি।

রুমে গিয়ে দেখলাম সৈকত চোখ বন্ধ করে বুকে হাত ভাজ করে শুয়ে আছে।আমি জানি সে এখনো ঘুমায়নি।আমি লাইট টা অফ করে তার পাশে শুইতেই সে বামদিকে ফিরে গেল।আজব তো!কি হয়েছে এমন?এত রাগ,মান অভিমান কেন?আমি কি করসি?

আমি তার ওপর হাত দিতেই সে আমার হাতটা সরিয়ে ফেলল।আমি এবার রেগে গিয়ে বললাম”কি এমন হয়েছে? বললেন নিতে আসতে পারবেন না, ফাইন! ফোন ধরলেন না আমার সাথে ঠিকমত কথা বললেন না এমনকি তাকালেনও না আবার এখন আমাকে ইগনোর করতেসেন? প্রবলেম টা কি?”

“আমি তোমাকে নিতে যাইনি বলেই আরেকটা ছেলের সাথে তুমি রিক্সায় ঘুরছো রাইট?”শান্ত কন্ঠে এসব বলেই আমার দিকে ঘুরল সৈকত।আমি বুঝলাম না।ও কি আরফির (আমার ক্লাসমেট)কথা বলছে? কিন্তু সে তো আমাকে নিতে যায়নি নাকি গিয়েছিল?

“কি হলো বলো”বলল সৈকত

“আসলে সে আমার ভাইয়ের মত।তার কি জানি মেয়েদের জিনিস লাগত তাই আমাকে সাথে করে নিয়ে গেছিল চয়েস করে দিতে”
নিজের প্রয়োজনটাকেই আরফির নামে চালিয়ে দিলাম আর গিফট এর কথাটা লুকিয়ে গেলাম কারণ আমি কাল ওকে সারপ্রাইজ দিবো মানে কালকেই দিব।

“ওহ রিয়েলি? দেন ছেলেদের জিনিস কিনছিলা কেন?”হালকা জোরে বলল সৈকত

আমি হালকা ভয়ে বললাম”আপনি ছিলেন ওখানে?”

“কেন প্রবলেম করেছি?”

আমি কিছু বলতে গেলেই সৈকত হাত দিয়ে থামিয়ে দিয়ে বলে”এনাফ! অনেক শুনেছি এন্ড আর কোন কৈফিয়ত চাচ্ছি না আমি তোমার থেকে।যদি আর কিছু বলো দেন তোমার পড়াশোনা অফ করতে আমার একটু টাইমও লাগবে না”বলেই সৈকত আবার আমার পাশ ফিরে শুয়ে গেল। আমার মন খারাপ হলো। শেষে কিনা ভুল বুঝলো? আমাদের সম্পর্কটাই শুরু এই ভুল বুঝাবুঝি দিয়ে। সৈকত কি আমাকে কখনো বুঝবে?ওকি কখনো আমাকে বিশ্বাস করবে?

চলবে….

(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

নীরবে ভালোবাসা পর্ব-০৯

0

গল্প:#নীরবে_ভালোবাসা
লেখিকা:#সুরভী_আক্তার
#পর্ব:০৯

আজ আমি সকাল থেকেই খুশি। বাসায় যেতে হবে তো!
বাসায় মেহমানও কম থাকবে কারণ বিয়ে আর বৌভাত শেষ হয়ে গেছে। আম্মুর সাথে অনেক কথা বলব।

“এই তুমি রেডি?”

“হুম, কখন থেকে বসে আছি আপনারই তো হয় নি”

“ওমা,৬ টার সময় থেকে বসে থাকলে তো অনেকক্ষণ মনে হবেই তাই না?”

“আচ্ছা আচ্ছা এবার চলেন!”
______________
বাসায় যাওয়ার পর দেখি আমার ফুপি আর তার মেয়ে এখনো আমাদের বাসায় আছে।
যাই করি না কেন ফুপির চোখে কখনো ভালো হতে পারি নি।সবসময় তার মেয়ের সাথে আমার compare করতে থাকে যদিও তার মধ্য বিশেষ কোন গুণ নেই।
ফুপি এখানে থাকে না। তার শশুর বাড়ি আমাদের দাদু বাড়ীর দিকে।উনি আমার আব্বু আর চাচারো বড়। মানে উনি সবার বড় কিন্তু ওনার মেয়ে রিফা ওনার বিয়ের আটবছর পর হয়।রিফা আপু মানহা আপুর বয়সেরই তবুও তার বিয়ে হয় নি। অবশ্য এই নিয়ে আমার কোন মাথাব্যাথাও নেই।

আব্বু আজ অফিসে গেছে ওনার সাথে একদম সন্ধ্যায় দেখা হবে।তাই সৈকতকে আমার রুমে বসিয়ে ওকে ফ্রেশ হতে বলে আমি আম্মুর কাছে মানে রান্নাঘরে গিয়েছিলাম।
আম্মু রান্না বসিয়ে আমার সাথে এটা ওটা আলোচনা করছিল। এরই মধ্যে ফুপি এসে হাজির হয় আর তার কুটনামি শুরু করে দেয়। প্রথমেই আম্মুকে উদ্দেশ্য করে বলে,

“কিরে? মেয়ের বিয়ে তো দিচ্ছিলে না স্বাধীনতাও দিচ্ছিলে একটামাত্র মেয়ে নাকি!তো এমন কি হলো যে হঠাৎ বিয়ে দিয়ে দিলে?কোন আঘটন ঘটিয়েছে নাকি মেয়ে?”

এই কথা শুনে আমার প্রচুর রাগ হলো। আম্মু যে কিভাবে তার মেয়ের বদনাম শুনে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে কে জানে? আমার তখনি বলতে মন চাচ্ছিল”নিজের মেয়ের তো বিয়ে দিচ্ছেন না আমরা কিছু বলেছি?”
কিন্তু বলতে পারলাম না কারণ উনি বয়সে অনেক বড় আর আম্মু উনার সাথে লাগতে নিষেধ করেছেন।

আমি অসহায় হয়ে আম্মুর দিকে তাকালাম। আম্মু আমার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে আমার হাতে এক বাটি ফল ধরিয়ে দিয়ে বলল রুমে যেতে আমিও বেরিয়ে এলাম।আর আম্মু ফুপিকে বলল”আপনার মেয়ের ও তো বয়স হয়েছে,কই আপনার মেয়ের তো বিয়ে দিলেন না?”

“শুনো! আমার মেয়েকে নিয়ে তোমার ওত ভাবতে হবে না!”

“আপনার মেয়েকে নিয়ে ভাবার মত সময় আমার নেই! কিন্তু আমার মেয়ের বিষয়ে নাক গলানোর অধিকার আপনার নেই! আপনার কি মনে হয়? কোন অঘটন ঘটালে আপনার ভাই ওকে ছেড়ে দিত?”

ফুপি মুখ বাঁকিয়ে চলে গেলেন।

রুমে এসে আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।ফলের বাটিটা জোরে টেবিলের ওপর রেখে আমি রিফা‌ আপুকে জোর করে ঘর থেকে বের করলাম।
সে যেন লজ্জায় আমার দিকে তাকাতে পারছে না। আমি জোরে জোরে ফুপিকে ডাকলাম। ফুপি এসেই আমার দিকে চেয়ে বলতে লাগল”এরকম ষাঁড়ের মত চেচাচ্ছিস কেন? আর আমার মেয়েকে এভাবে ধরে রেখেছিস কেন?”

“তা তোমার মেয়েকেই নিজ মুখে বলতে বলো!”

“কি হয়েছে!কিরে রিফা বল?”জিজ্ঞাসা করল আম্মু

“ও কি বলবে আম্মু?আমি বলছি! ও আমাদের রুমে কি করছিল?”

“তো? এখন কি ও তোর ঘরেও যেতে পারবে না?”বলল‌ ফুপি

“পারবে! কিন্তু আপনি মনে হয় ভু‌লে যাচ্ছেন এখন আমি বিবাহিত আর রুমে সৈকত ছিল আর ও… ওকেই জিজ্ঞেস করুন।” বলেই আমি রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিলাম।আর বিছানায় বসলাম।রিফা সৈকতের সাথে জোর করে কিস করছিল।ওর হয়ত লজ্জা নেই কিন্তু আমার তো আছে?আম্মু না থাকলে আমি ফুপির মুখের উপরেই বলে দিতাম।তাতে যদি ওনার ভিতর একটু লজ্জা আসত!

আমি সৈকতের দিকে চেয়ে দেখলাম সে এখনো সেভাবেই দাঁড়িয়ে আছে।রিফাকে সৈকতের থেকে আলাদা করার পর থেকে সে ওভাবেই দাড়িয়ে আছে Trauma-র মধ্যে আছে বেচারা।

আমি গিয়ে ওর পাশে দাঁড়িয়ে ওর একটা হাত ধরলাম।ও আমার দিকে তাকিয়ে আবার মাথা নিচু করে ফেলল। আমি ওকে বিছানার পাশে এসে বসতে বললাম তারপর ওর হাঁটুর বরাবর নিচে পা ভাঁজ করে বসলাম।সে আমার দিকে তাকালো।আমি বললাম”সৈকত? দোষটা তো আপনার ছিল না তাই না? তাহলে এভাবে মাথা নিচু করে রেখেছেন কেন?”

সৈকত আমার দিকে তাকিয়ে বলল”তুমি কিভাবে জানলে দোষটা ওর ছিল?”

“কারণ ওকে আমি খুব ভালো করে চিনি! ফুপি ওকে সবার সাথে যতই তুলনা করুক,ওর চরিত্র কারো সাথে তুলনা করার মতই না!”

“এত বিশ্বাস?”

“বিয়ে করেছি আপনাকে! অর্ধাঙ্গিনী আমি আপনার তাহলে আপনাকে বিশ্বাস করব না তো কাকে করব?”

“তোমার জায়গায় অন্য কেউ হলে maybe আজ আমার ইজ্জত চরিত্র সব শেষ হয়ে যেত!”

“ওর কথা বাদ দিন!আপনি এই ফল খান আর আমি বাইরের সিনেমা দেখে আসি!”

আমি বাইরে এসেই ফুপিকে খুঁজতে লাগলাম। চলে গেছে নাকি?
আম্মুর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম”আম্মু এই ফুপি কোথায়?”

“যেই সিনেমা তার মেয়ে করেছে তারপর কি সেই মুখ তোর সামনে দেখাতে পারত? আসছিল তোর নামে কলঙ্ক দিতে!”

“ঠিক বলছ আম্মু!”

ঘরে এসে আয়েশ করে পড়ার টেবিলে বসলাম। চারিদিকে হাত বুলালাম। আমার বই!

“কি হলো?”

“এ্যাঁ?”

“বাইরে কি হলো?”

“চলে গেছে!আমি থাকতে ঐ ফুপিকে আর বাসায় আসতে দিব না!”

“By the way, তোমার আব্বু কখন আসবে?”

“সন্ধ্যায়, কেন?”

“একটা important কথা ছিল তাই”

“আমার নামে বিচার দিবেন নাকি?”

“Absolute right!”এই বলে সৈকত শয়তানি হাসি দিয়ে চলে গেল আর শান্তিতে ফোন use করতে লাগলো।

আমি ভাবতে লাগলাম যে আমি আবার কি করলাম?

সন্ধ্যায় আব্বু আসলে সৈকতের সাথে ডাইনিংয়ে বসে কিসব আলোচনা করছিল আমি ঘরে ছিলাম। মূলত সৈকত আর আব্বুই বলেছে আমার সেখানে নাকি কোন কাজ নেই আর আসলেই! ওদের কথার মাঝে আমার কাজ কি?

তাই ঘরে ছিলাম। একটু পর সৈকত এসে বিছানায় বসল।আমি ওর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম

“কি কথা হলো এত?”

“তাড়াতাড়ি পড়ার প্রিপারেশন নাও”

আমি না বুঝে বললাম”প্রিপারেশন? কিসের পড়ার?”

সৈকত আমার দিকে তাকিয়ে আবার চোখ বন্ধ করে বলল “তোমার না ২ মাস পর পরিক্ষা?”

“হ্যাঁ,ওয়েট ওয়েট আপনি আব্বুর সাথে আমার ভার্সিটি তে পড়ার ব্যাপারে বলছিলেন?”

“হ্যাঁ”

আমি খুশি হয়ে গেলাম কিন্তু পরমূহূর্তে সৈকতের দিকে তাকিয়ে বললাম”চাচা?”

“কি করবে তোমার চাচা?”

“কিন্তু সত্যটা?”

“বিয়ে হয়ে গেছে আমাদের আর কি বলে ব্ল্যাকমেইল করবেন? তুমি নিজের পড়াশোনা টা ঠিক করে করো আগে”

“আচ্ছা”

“যাও পড়ো আর রাত ১০ টার আগে উঠবানা”

“এহ! আসছে নিজের বাড়িতেই নয়টায় উঠতাম আর ১০টা?”

“যাও”

“যাচ্ছি! কিন্তু আপনার বাবা মা মেনে নিবেন?”

“না মানার কি আছে?জব তো আর করছ না নিজেকে যোগ্য করে রাখছ।যেকোন সময় যাতে কারো ওপর নির্ভরশীল হয়তে না হয় আর বলব আমি ভার্সিটি দিয়ে নিয়ে আসব।”

“এখানে?”

“আরে এতদূর আমি রোজ রোজ আসব নাকি? আমাদের বাসার পাশে।”

“ওহ!”

দুই দিন পর আমরা বাসায় ফিরে গেলাম।সৈকত তার কিছুদিন পরই যা যা কাগজ পত্র লাগে তা ভার্সিটি থেকে উঠায় নিসে আর এখানে পাশের একটা ভার্সিটি তে ভর্তি হয়ছি।সব কাজ punctually করতে হয় যদিও এমন না যে আগে টাইমের ব্যাপারটায় আমি সচেতন ছিলাম না কিন্তু তখন এক আধটু দেরি করলেও কোন প্রবলেম হতো না বাট সৈকত যেহেতু দায়িত্ব নিয়েছে আমার তাই আমাকেও সব কিছু করতে ওর সহায়তা করতে হবে।ওর প্রবলেমই আমার প্রবলেম।
তারপর মাসখানেক চলে গেল।১০-১২ দিন পর আমার পরিক্ষা শুরু তাই পড়াশোনার প্রতি আরো হার্ড হয়েছি। বলতে গেলে সৈকত হতে বাধ্য করেছে।আর এই মাসখানেকের মধ্যে যা বুঝলাম তা হলো সৈকতকে যে আমি সোনার খনি সোনার টুকরা ছেলে মনে করেছিলাম সেটা সম্পুর্ণ ভুল।বহুত জ্বালিয়েছে আমাকে।
উনাকে কখনো বাথরুমে লক করে দিলে বলত”সারাদিন বের হব না কিন্তু!ভেবে নাও”

আর আমাকে বন্ধ করলে আমি ভয়েই শেষ হয়ে যেতাম। মাঝে মাঝে উনার ডায়ালগ উনাকেই দিলে বলত”থাকো,যত ইচ্ছা।আমি তো এমনিতেও অফিস যাচ্ছি” আরো বহুত কিছু।

চলবে….

(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

নীরবে ভালোবাসা পর্ব-০৮

0

গল্প:#নীরবে_ভালোবাসা
লেখিকা:#সুরভী_আক্তার
#পর্ব:০৮

এক গাড়িতে ড্রাইভার চাচা আমি আর সৈকত বসলাম।এখনো ফুপানোর সাউন্ড আসতেসে।
না জানি! সৈকতের কতটা বিরক্ত লাগছে?

বারবার আমি হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখের পানি মুছছিলাম। বারবার চোখে হাত লাগার কারণে এখন চোখও হালকা জ্বলছে।তাই চুপচাপ বসলাম। তখন সৈকত আমার দিকে একটা রুমাল এগিয়ে দিল আর এক হাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরল।আমি যেন সাহস খুঁজে পেলাম।আমি তার দিকে তাকালে সে মৃদু হাসলো।
আমি আবার সামনের দিকে তাকিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললাম”আমার কান্নায় অনেক বিরক্ত লেগেছে না আপনার?”

সৈকত বললো”এমন কেন মনে হলো তোমার?”

“কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করলে যে কারোরই তো বিরক্তি লাগবে তাই না?”

“আমার তো লাগছে না”

“জানেন সৈকত?আমি আমার ফ্যামিলিকে ছাড়া দূরে কখনো কোথাও যায় নি।এই যে চাচার বাড়ি আসতাম সেটাও কেন জানেন? কারণ বাসাটা কাছে ছিল।
যদি অন্যকোথাও যাওয়ার ইচ্ছা হত তাহলে আব্বু আম্মু আর আমি যেতাম। আমাকে কখনো ওরা একা ছাড়েনি আর এইজন্যই আমার স্কুল ট্রিপ এও যাওয়া হয় নি কখনো।যদি ঘুরতে যেতে চাইতাম তাহলে আব্বু ঘুরাতো।সবাই বলে বিয়ের পরে মেয়েরা পর হয়ে যায় তাহলে আমিও কি সেই আদর থেকে বঞ্ছিত হবো?”

সৈকত এবার কোন উত্তর দিল না।আমি আশাও করি নি কারণ এসব মেয়েলি জিনিস ছেলেরা চাইলেও কখনো বুঝতে পারবে না।

সৈকতের বাসায় আসার পর মানহা আপুই আমাকে সবকিছুর থেকে এভোয়েড করে একদম রুমে নিয়ে আসলো আর বললো”এভাবে একটা reason এর জন্য তোর হঠাৎ বিয়ে হবে ভাবি নি, কিন্তু আমি খুশি যে দুইবোন এখন একসাথেই থাকব আর চিন্তার কিছু নেই কারণ তোর বিয়েও একটা ভালো ছেলের সাথে হয়েছে।ফ্রেশ হয়ে নে।”
এই বলে আপু চলে গেল।ফ্রেশ তো হওয়া দরকার বাট শুধু চেহারা না পুরো বডি। কারণ অনেক গরম লাগছে। গোসল করা লাগবে।
গোসল করার পর দেখলাম টি-টেবিলে খাবার রাখা দুই প্লেটে। একটু পর মানহা আপু পানি দিয়ে গেল আর বললো সারাদিনের খাওয়ার হিসেব তো কেউ নেইনি তাই এখন পুরাটা খেতে হবে।

আরেকটু পর সৈকত আসলো। অনেক ঝামেলা করার পর, ওর ফ্রেন্ড আর কাজিন দের সাথে।ওর চেহারা দেখেই বোঝা যায় বেচারাকে ওরা কত খুঁচিয়েছে।
আমি ওকে বললাম ফ্রেশ হতে।সেও একদম বিয়ের গেটআপ ছেড়ে নরমাল ড্রেস পরে বের হলো।
তারপর আমার সামনে এসে বসে জিজ্ঞেস করল”গোসল করেছ?”

“হ্যাঁ, অনেক গরম লাগছিল তাই”

“আমিও,সেম”

“হেয়ার ড্রায়ার আছে?”

“হ্যাঁ”

“কোথায়?আমি তো দেখলাম না!”

সৈকত উঠে আলমারি থেকে হেয়ার ড্রায়ার টা বের করে দিল।আর বললো,”আসছোই তো আজকে ফার্স্ট!জানবা কিভাবে কোথায় কি আছে?”

আসলেই তো!এটা তো আমার বাসা না।

আমি উঠে দাঁড়িয়ে হেয়ার ড্রায়ার টা নিয়ে সৈকতকে বললাম”সবই তো বুঝলাম কিন্তু হেয়ার ড্রায়ার টা আলমারিতে রাখার সাইন্স টা বুঝলাম না।”

“আচ্ছা,আমি বুঝাই। হেয়ার ড্রায়ার মূলত আমার তাড়াতাড়ি যেকোন কাজে যাওয়ার সময় চুল শুকাতে কাজে লাগত এই যেমন ধরো, বিকালে ক্রিকেট খেলে এসে প্রচুর গরম লাগত তখন আম্মু গোসল করতে নিষেধ করত তখন লুকিয়ে গোসল করে চুল শুকিয়ে বেরিয়ে যেতাম আর এতে আম্মু টেরও পেত না কিংবা এই যে এখন অফিসে যাওয়ার আগে যদি টাইম কম থাকে তখন এরকম করি বাট বেশীরভাগ এটা কাজে লাগে না and বাইরে থাকলে তো এইটাই ধুলা পড়বে তাই।”

সৈকতের এত বড় explanation এ আমার চুল শুকাও হয়ে গেছে।আমি ওকে হেয়ার ড্রায়ার টা ফেরত দিয়ে বললাম”এখন বাইরেই রাখেন! আমার কাজে লাগবে!”

“সো? এখন কি করবা?”

“কি করার ইচ্ছা আছে?🤨”

সৈকত আমার আরেকটা কাছে এসে বললো”যা সবাই করে তাই😌”

“ওহ তাই? তাহলে চলেন ঘুমাই”এই‌ বলেই আমি শুয়ে পড়লাম।

“হুহ!”
______________
সারাদিনের ক্লান্তিতে আজও আমি আর সৈকত ঘুমিয়ে পড়লাম।আজ সবার সাথে শুধু পরিচিত হয়েছি। আমার আর সৈকতের মিলেমিশে থাকাকে কেউ কেউ ভাল বলছেন আবার কেউ কেউ শাশুড়ি মাকে যেয়ে বলছেন এটা লাভ ম্যারেজ ছিল কিনা?
তখন শাশুড়ি মা বলেছেন আমাদের বিয়ে কয়েকমাস আগেই ঠিক হয়েছিল তাই ভাবটা আছে আমাদের মধ্যে।
সত্যিই তাই!
যদি চাচার বলার সাথে সাথে আব্বুও মেনে যেত তাহলে বিয়েটা কয়েকদিনের মধ্যেই হয়ে যেত। তখন হয়তো আমি বা সৈকত কেওই এটা মানতে পারত না।

কাল আমাদের বাসায় যাওয়া হবে আহ! আম্মুকে দেখতে পাব।

চলবে….

(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

নীরবে ভালোবাসা পর্ব-০৭

0

গল্প:#নীরবে_ভালোবাসা
লেখিকা:#সুরভী_আক্তার
#পর্ব:০৭

একটামাত্র মেয়ের বিয়েতে কিছুই বাদ রাখবেন না আব্বু।
সব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিয়ে ফিনিশ করা হবে। লাইক: গায়ে হলুদ,মেহেদী ইত্যাদি ইত্যাদি।আব্বুকে আমি বলেছি এত কিছু করার দরকার নেই জাস্ট গায়ে হলুদ এন্ড বিয়ে দিয়ে সবটা ফিনিশ করতে।

এরই মাঝে কেটে গেছে কয়েকমাস। আপুর কাছ থেকে সৈকতের নাম্বার নিয়েছিলাম।তার সাথে কথা বলে তাকে একটু Easy ফিল করানোর জন্য। তাকে এটা বুঝানোর জন্য যে দোষটা কারোরই ছিল না।
সে আমার সাথে এখন অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছে। আমিও তার সম্পর্কে অনেকটা জেনেছি।এখনো আমি ভার্সিটি যাই। আব্বু জাস্ট সৈকতের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছে। আব্বুর ওত তাড়া নেই আমার বিয়ে নিয়ে।তাই পড়াশোনা না করে এখন নিজেকে ঘরবন্দি রেখে কি করব? বিয়ে হওয়া অব্দি পড়ি!
এরই মাঝে আমার পরিক্ষাও হয়েগেছে একবার।

আব্বুও এই কয়েক মাসে সৈকতকে চিনার চেষ্টা করেছেন।কয়েকবার বাসায় দাওয়াতও দিয়েছেন আবার নিজে থেকে দেখাও করতে পাঠিয়েছেন আমাকে। Just to know, সৈকত কেমন? আর কেমন ছেলের হাতে তিনি মেয়ে তুলে দিচ্ছেন?
এখন আব্বু সৈকতের উপর অনেকটাই বিশ্বাস করেন। আব্বুর এও বিশ্বাস সৈকতকে একটু ভালো করে বুঝালে সে নাকি আমায় পড়ার পারমিশনও দিতে পারে।

বিয়ে ঠিক হয়েছে শুনে অনেক আত্ময়ই এসেছিল।দুরাত্মীয়
তারা।আমি চিনি না তাদের। Even দেখছি ও ফার্স্ট, maybe?

Finally আব্বু জানিয়েছে দুই দিন পর গায়ে হলুদ হবে।এটা তার সিদ্ধান্ত। তিনি এখন জানতে চাচ্ছেন সৈকতের পরিবারের এই বিষয়ে কি মত?
সৈকতের family জানিয়েছে তারা নাকি মেয়ের বাড়ির মতকেই প্রাধান্য দিবে তার কারণ মেয়ে বাড়ি থেকে পুরা মেয়ে দিয়ে দিচ্ছে আর তাদের সামান্য আবদার টুকু মেনে নেয়া হবে না?
সেই থেকে সব আয়োজন শুরু হয়েছে আর এখন finishing touch দেওয়া হবে। কারণ কাল গায়ে হলুদ।

আজ সকাল থেকেই সবাই ব্যাস্ত। I mean বিয়ে মানেই ব্যস্ততা কিন্তু আজ একটু বেশিই ব্যাস্ত সবাই।কেউ মেহমান দেখছে কেউ নাস্তা দেখছে আরো কত কি!

যখন থেকে সৈকতের ছবি আমার খালাতো আর মামাতো বোনদের দেখিয়েছি তখন থেকে ওরা শুরু হয়ে গেছে। পারেনা যে সৈকতকে এখনি বিয়ে করে ফেলে।তার প্রশংশায় পঞ্চমুখ হয়ে আছে সবাই।কেউ কেউ বলছে সামলে রাখিস তোর এত সুন্দর জামাই!

ওদের কথা শুনে আমার ওদেরই ঝাড়তে মন চাচ্ছে 😒। বলছে সামলে রাখিস!আর নিজেই নজর দিয়ে গিলে খাচ্ছে ‌যত্তসব!

এখন তো আরো সামলে রাখব শাকচুন্নীরা! তোদের হাতে আমি আমার জামাই পড়তে দিব না।
আমার খালাতো বোনকে বললাম মানহা আপুকে ডেকে দিতে কারণ তার কাছেই আমার ফোন আছে।
ফোন নিয়ে সৈকতকে মেসেজ দিলাম”রেডি হয়েছেন?”

একটু অপেক্ষা করার পর রিপ্লাই এলো”সরি,রেডি হচ্ছিলাম।ফ্রেন্ডদের কাছে ফোন ছিল।”

“আপনার ছবি দিবেন একটা?”

বলেছিলাম একটা বাট কয়েকটা দিয়েছে। একটাই ও একাই আর অন্যন্যগুলোতে ওর ফ্রেন্ডদের সাথে।
ওদের দেখে আমার মনে একটা দুষ্টু বুদ্ধি আসলো।আমি আমার সব বোনেদের ডেকে তাদের কাছে ফোনটা দিয়ে বললাম”দেখ কোনটাকে পছন্দ হয়! সব কয়টা আমার দেবর।দরকার হলে তুলে এনে বিয়ে দিয়ে দিব”
ওরা তো সেই হুড়োহুড়ি লাগিয়ে ফেলল। একটু পর আমায় ফোন দিয়ে বলল”ওরা যখন ওদের এভাবে ছবি তুলে দিয়েছে তাহলে আমরাও দেই কি বল?”

আমি ভাবলাম আইডিয়াটা মন্দ না।মানহা আপুকে দিয়ে কয়েকটা ছবি ক্লিক করিয়ে সেন্ড করে দিলাম আর নিচে লেখলাম”আমার দেবরদের জন্য একেকটা গিফট!চুস করে নিতে বলেন!”

রিপ্লাই আসলো”কিন্তু তুমি তো আমার!”

আমি মেসেজটা পড়ে মুচকি হেসে রিপ্লাই দিলাম”আমাকে ইমুজি দিয়ে ঢেকে দেন”

ওমা! এবার দেখি মেসেজে লাভ রিয়েক্ট।তাও ভালো!

সব কিছু শেষ করে একদম ক্লান্ত হয়ে গেছি। আব্বুর মনে হয় আর আত্মীয় ছিল না!
প্রত্যেকজন হলুদ ছুঁয়ে দিয়েছে।আর বসে থাকতে থাকতে আজ আমার কোমর শেষ!
আজ সৈকতের সাথে কথা বলা হলো না কারন আমি ঘুমিয়ে পড়েছি। ওকে বাই জনগণ!🥱
বিয়ের দিন দেখা হচ্ছে!

__________
সকালে দেরি করে উঠেছিলাম।বেশী দেরি হয় নি তবুও ঘর থেকে বেরিয়ে যে এত ভিড় দেখব আমি ভাবিও নি।

নিজের বাসায় নিজেরই চলাচলের জায়গা নেই। মেলার মত ভীড় হয়ে আছে।কেউ হারিয়ে গেলে খুঁজেই পাওয়া যাবে না!

আম্মু আমাকে তাড়াহুড়োই নাস্তা দিয়ে আবার চলে গেল।এত কেয়ার আম্মু ছাড়া কি কেউ আমাকে করবে?
ভাবতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল!
আমি আবার সহজে কেঁদে ফেলার মত মেয়ে।কেউ কিছু বললেই আমি কান্নাই শেষ হয়ে যাই।
বিদায়ের সময় যে কি হবে, আল্লাহই ভালো জানেন!

আমার কজিনরা আজ আমাকে ওত জ্বালায় নি কারণ ওরা ওদের বাবুদের নিয়ে ব্যস্ত।আরে সন্তান না,প্রেমিক!
আমার আর সৈকতের মাঝে এতদিন কথা বলে বন্ধুত্ব পর্যন্ত হয়েছে কিনা সন্দেহ আর কালকে ছবি দেখেই নাকি উনাদের প্রেম হয়ে গেছে 🙂

আম্মু আমার কাছে আজ এক বারও আসে নি। সেই যে সকালে নাস্তা দিয়েছিল সেটাই। আমিও চাচ্ছি না আর মায়া বাড়াতে।
আজও আমাকে জাস্ট হালকা মেকআপ দেওয়া হবে তাই কোন মেকআপ আর্টিস্টকে ডাকা হয় নি।

আমার সব বোনেরা তবুও তাদের ময়দার বস্তা এনেছে।যেটা আর যারটা আমার ড্রেস আর লুকের সাথে ম্যাচ করবে সেটাই আমি দিব।

সৈকতকে আমার আগে থেকেই ভাল্লাগে।সেটা আপনারা সবাই জানেন 😌।তাই আমার বোনেদের বলেছিলাম যাতে তার একটা ফটো তার অগোচরে তুলে আমাকে দেখায় আর তার জন্যও আমি আমার প্রফেশনাল বোনকে পাঠিয়েছি যে টেরাব্যকা না করে সোজা করে ছবি তুলে দিবে।
আহা!ছবিটা কি সুন্দর আসছে। সৈকত তার বন্ধুদের সাথে হেসে কথা বলছে আর সে সাইডে ঘুরে আছে।
তখনই আমার ফোনে একটা মেসেজ আসলো।মেসেজটা সৈকতের”একা একা আমার ফটো দেখছ?নট ফেয়ার! এজন্যে দেখ আমিও তোমার ফটো দেখছি”
আর আমার একটা ফটো পাঠালো যেটাতে আমি ফোনের দিকে তাকিয়ে হাসছিলাম। মানে এটা রিসেন্ট তোলা যখন আমি সৈকতের ছবি দেখছিলাম‌।
এটা আমার শাকচুন্নী বোনেদের কাজ। এক্সট্রা টাকা পাওয়ার লোভে আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো?

কবুল বলার সময় মুখ দিয়ে যেন কথা বের হচ্ছিল না। তবুও বলে দিলাম।
বিদায়ের সময় আম্মু আর দূরে থাকতে পারলো না আমাকে জড়িয়ে ধরেই কেঁদে দিলেন।
আব্বু সৈকতের হাতটা ধরে বললেন”আমার মেয়েকে আমি সব শিখিয়েছি আশা করি সে তোমাদের অপছন্দের হবে না কিন্তু সব বাবার মত আমারও যে বুকটা ফেটে যাচ্ছে! আমার মেয়েকে আগলে রেখো বাবা!”

চলবে…..

(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

নীরবে ভালোবাসা পর্ব-০৬

0

গল্প:#নীরবে_ভালোবাসা
লেখিকা:#সুরভী_আক্তার
#পর্ব:০৬

সৈকতের সাথে আমার বিয়ে দেওয়ার খুবই সুন্দর প্লান সাজিয়েছেন চাচা।কে জানি? চাচীকেও এভাবে বিয়ে করেছেন কিনা!

আজ চাচা আব্বুকে বাসায় থাকতে বলেছে। কারণ বলেনি শুধু বলেছে গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে আর বলেছে যেন আমিও থাকি।

২০ মিনিট পর চাচা আমাদের বাসায় পৌঁছালেন।এসেই এমনি দু চার কথা বললেন।আমি ঘরে বসে অপেক্ষা করছিলাম কখন আমার ডাক পড়ে আর কখন যেয়ে চাচার শিখানো বুলি বলি।
____________
“মেহরাব(আব্বুর নাম) তোর মনে হয় না লাবণ্যর বিয়ের বয়স হয়ে গেছে?”

“কি বলছেন ভাইজান?একটাই তো মেয়ে আমার! পড়ালেখা টা অন্তত শেষ করুক তখন নাহয় এগুলো চিন্তা করা যাবে!”

“বিয়ের পর কি মানুষ পড়াশোনা করে না?যদি ওর শশুর বাড়ির লোকজন চায় তাহলে করাবে!”

“যদি চায়?আমার এত টাকা-পয়সা থাকতে আমার মেয়ে অন্যর বাড়ি যেয়ে পড়াশোনা করবে?আর যদি অনুমতি দিয়েও দেয় তাহলে প্রত্যেকদিন পড়াশোনার জন্য কথা শোনাবে। আমার মেয়ের কষ্ট আমরা কিভাবে মানবো?”

“আচ্ছা! তোর যদি এতই সমস্যা থাকে তাহলে লাবণ্য কেই জিজ্ঞেস করে নে তার কি মত? তখন সে যদি রাজি হয় তাহলে তো তোর আর সমস্যা থাকবেনা তাই না?
ডাক দে লাবণ্যকে।”

আব্বুর ডাক আসতেই নিজেকে একটু স্বাভাবিক করে নিলাম।চাচা কি কি বলতে বলেছিল সব মনে করে নিলাম তারপর ঠিকঠাক ওড়না গায়ে দিয়ে বাইরে এলাম।
আব্বু আমাকে তার রুমে যেতে বললেন।চাচা ডাইনিংয়েই আছে। এখানে আব্বু আমাকে প্রাইভেট জিনিস জিনিস জিজ্ঞেস করতে ডেকেছেন I guess!

“লাবণ্য?”

“হ্যাঁ আব্বু”

“তুই কি এখন বিয়ে করতে চাস?”

“এ্যাঁ?এটা কেমন প্রশ্ন আব্বু?”

“তোর কি কোন মনের মানুষ আছে?”

আমি আব্বুর দিকে সরু চোখে তাকিয়ে বললাম “তুমি কি আমাকে এটাই শিখিয়েছ?”

আব্বু বললেন “তাহলে কি বিয়ে করবে?”

আমি বললাম “তোমাদের মতই আমার মত”

“নাহ!আমি আমার মত তোমার উপর চাপাতে চাচ্ছি না তুমি নিজ থেকে বলো”

আমি একটু ভাবার এক্টিং করে বললাম “আমার বিয়েতে কোন সমস্যা নেই আব্বু! তুমি চাইলে দিতে পারো আর না চাইলে নাই”

“আর যদি পড়াশোনা অফ হয়ে যায় তাহলে?”

“কি হবে আব্বু এত পড়ে? প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ তো সোসাইটি মেয়েদের কেউ দিবে না”

আব্বু উঠে চলে গেলেন।চাচা কে নিজের মত জানাবে এখন।কি মত হবে কে জানি?

এদিকে,চাচা ঠিক করেই রেখেছেন আজ আমার বিয়ে দেওয়ার জন্য আব্বুকে মানাবেই আর যদি না মানে তখন সত্যটা বলে দিবেন। কোন বাবাই চাইবে না তার মেয়ে অনর্থ ঘটিয়ে মানুষের সামনে তাদের আর নিজেকে লজ্জিত করুক।

আব্বু রাজি হয়েছেন কিন্তু তার একটা শর্ত আছে আর তা হচ্ছে হাজারের মধ্যে ভালো ছেলে তার লাগবে আর চাচা বলেছেন এই দায়িত্ব তিনি পালন করবেন আর কালকের মধ্যেই এরকম ছেলে আনবেন।

যদিও সৈকতের ফ্যামিলি আমাকে দেখেছে আগেই কিন্তু ফর্মালিটি মানতে সবাইকে একটু নাটক চালিয়ে যেতে হবে।

আজও আমার ভার্সিটি যাওয়া হলো না।না জানি আর কখনো যাওয়া হয় কিনা!

আম্মু আমাকে একটা আনকমন কালারের শাড়ি দিল রেডি হওয়ার জন্য।আনকমন কালার এইজন্য বলছি কারন এই কালার আমি চিনি না এটাকে মিক্সড কালারও বলা যায়।এত জামা কাপড় থাকতে শাড়িই কেন পরা লাগবে বুঝি না। কারণ টা এইটা না যে আমি শাড়ি পড়তে পারি না কিন্তু নিয়মটা আমার কাছে অদ্ভুত মনে হয়।

শাড়ি পরা হয়ে গেলে মানহা আপু আমায় হালকা সাজিয়ে দিল। সাজিয়ে দিল বলতে চুলটা জাস্ট বেঁধে দিল স্টাইল করে আর চুড়ি পড়লাম। I think এটাকে সাজ বলাও অপমান।

সৈকতরা আসার পরে আমায় নিয়ে যাওয়া হলো।ওরা অনেক প্রশংশা করল আমার। গুনাগুণ জানতে চাইল আর কয়েকটা সিম্পল প্রশ্ন। মানে usually যেগুলো question ask করে সেগুলাই।তারপর আবার সৈকতের সাথে কথা বলতে পাঠানো হলো আমার রুমে।আমি নিয়ে গেলাম ওকে।
পাঞ্জাবিতে ওকে আরো সুন্দর লাগছে।Chocholate boy ও বলা যায়।

আমি ওর সামনে দাঁড়িয়ে ওকে জিজ্ঞেস করলাম
“So? কেমন লাগছে আমাকে?”

সৈকত আমার দিকে এমন ভাবে তাকালো জেনো আমি কিছু ভুল বলেছি।তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল
“লাবণ্য আমাদের লাভ ম্যারেজ হচ্ছে না যে ফ্যামিলি মেনে গেছে তো আমরা খুশি হয়ে গেছি সেখানে আপনি?”

আমি হতাশ ভঙ্গিতে সৈকতের দিকে তাকিয়ে বললাম “আমি সম্পর্ক টা কিছুটা হলেও সহজ করতে চাচ্ছি সৈকত!আপনি কি চাচ্ছেননা সেটা হোক?আপনি কি আমাকে নিয়ে এতই উদাসীন?আপনার কি কোন মনের মানুষ আছে?আমি কি আপনাদের মধ্যে তৃতীয় ব্যাক্তি?আপনি যদি চান তাহলে এখনি না করতে পারেন। সময় আছে এখনো।
আপনার সাথে বিয়ে না হলেও আমার বিয়ে অন্যকারো সাথে ঠিক হবে।যদি ভাবেন আপনার ফ্যামিলি আপনার উপর রাগ করবে এই বিয়েতে না করলে আর এই কারণে যদি আপনি রাজি হন তাহলে বলছি এসব ধারণা বাদ দিন! আপনি পরিবারের ছোট ছেলে!রাগ করে থাকলে কেউ দুইদিন করবে কেউ চারদিন করবে কিন্তু তারপর মাফ করে দিবে।যদি আমি সত্যিটা বলি তাহলে আমার পড়ালেখা এমনিতেও বন্ধ হয়ে যাবে তাই বলছি এরকম বিয়ে করে কি লাভ? যেখানে মনের মিল ই থাকবে না? সময় আছে সৈকত,ভেবে নিন।”

এই বলে আমি চলে আসতে নিলেই সৈকত আমার হাত টা ধরে বললো”don’t mind but নিজেকে মানিয়ে নিতে আমি time নিচ্ছি। আপনার সাথে যদি আমার ফ্যামিলি থেকে বিয়ে ঠিক করত then আমার problem ছিল না বাট সবাই এইটা বিশ্বাস করছে যে আমরা প্রেম করে ধরা পড়েছি তাই বিয়েটা করছি যেটা কাল থেকে আমার মনে বসে আছে।একটা মিথ্যা অপবাদ! ঠিক কতটা hurt করে now I understand! না জেনে আপনাকে আমি যেমন বলেছিলাম তেমনি আমার উপর পড়ল। ”

আমার আর সৈকতের দুঃখ একজায়গায়। তার মানে সৈকতের ভালোবাসা পাওয়ার একটা chance আছে। আমি কি তা পাবো?

চলবে…

(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)