Monday, July 14, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1386



অন্তর্দহন প্রণয় পর্ব-০৩

0

#অন্তর্দহন_প্রণয়
#লিখনীতে_সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি
৩।
বৃষ্টি মুখরিত বর্ষার রাত। রিমঝিম শব্দ করে বাহিরে প্রবল বেগে বৃষ্টি পড়চ্ছে। বৃষ্টির শব্দে কিছুই যেন কর্ণপাত হচ্ছে না রুফাইদার। শুধু নিজের হৃৎস্পন্দনের ডিপডিপ আওয়াজ কানে আসছে। শরীরের প্রতিটা ধমনীর, শিরা-উপশিরায় রক্ত দ্রুত চলাচল টুকু সে উপলব্ধি করতে পারছে।যেন সমস্ত রক্তনালি কাঁপিয়ে, ঝনঝনিয়ে চলছে রক্তপ্রবাহ। প্রচন্ড উত্তেজনায় নিশ্বাসের তাল দ্রুত। মনে হচ্ছে, হৃদপিণ্ড বুঝি এখনি লাফিয়ে বের হয়ে যাবে। সমস্ত দেহ উত্তাপ ছাড়াছে। রুফাইদা শুকনো ঢুক গিললো। হাতরে হাতরে অন্ধকার ঘরটির দরজা খুঁজার বৃথা চেষ্টা করলো।চলতে চলতে বন্ধ দরজার কাছে এসে পড়লো রুফাইদা। এর পরের কাজ টুকু তার জন্য খুব একটা সহজ নয়? ঠোঁট কামড়ে ধরলো সে। অন্ধকার ভয়ের যেন আরেক নাম। সময় বিলম্ব না করে দরজা ধাক্কা দিলো এবার। কিন্তু হায় দরজা লাগানো। রুফাইদা এবার চিৎকার করে দরজায় বাড়ি দিতে লাগলো,

“খোলো! দরজাটা খোলো, কে আছো? আমাকে যেতে দাও! আমাকে যেতে দাও, আমার..আমার বাবা-মা আমার জন্য চিন্তা করছে। যেতে দাও আমায়! ছেঁড়ে দাও।দয়া করো আমার উপর.. প্লিজ ।”

পালটা কোনো শব্দই যেন এলো না বাহির থেকে ফিরে। রুফাইদা কাঁদতে লাগলো। ঠিক সেই মুহূর্তেই দরজা খুলে গেল খট করে। এক ফালি আলো খেলে গেলো ঘরটিতে। রুফাইদা পিছিয়ে গেলো দুই পা। এক পা দু পা করে প্রবেশ করলো রুমটিতে কয়েক জোড়া পা।সাথে সাথেই জ্বলে উঠলো তীব্র আলো। রুফাইদা ভীত, রিক্তশুন্য মুখে তাকিয়ে রইলো বিশাল দেহী দানব আকৃতির লোক গুলো দিক। চওড়া উদম বুক, মুখে বিশ্রী হাসি। গায়ে শুধু আছে তাদের প্যান্ট যা নাভির নিচ পর্যন্ত।হাতে ধারালো অস্ত্র,চাবুক, ধোঁয়া উঠা এক বোতল। রুফাইদা ভয়ে বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে দেখছে অর্ধ উলঙ্গ এই লোকগুলোর দিকে। তারা এগিয়ে এলো, রুফাইদা পিছাতে লাগলো। কান্নামাখা কাতরস্বর কাঁপছে। অবাধ্য শিশুর মতো তোতলাতে লাগলো,

“প্লি…জ আ…মা…কে ছেঁ…ড়ে দি…ন!”

লোক গুলো শুনলো না। তাদের মাঝে কেও এক এক ঝাটকায় ফেলে দিলো বিছানায় রুফাইদাকে। কেউ টেনে নিলো বস্ত্র করে দিলো নগ্ন, কেউ বেঁধে ফেললো হাত। শুরু করে দিলো নির্যাতন। রুফাইদা গগনবিদারী চিৎকার করতে লাগলো,

“বাবা! আমাকে বাঁচাও! বাঁচাও। বাবা..!”

ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলো সাইফ বুকে মাঝে তীব্র ব্যথা শুরু হয়েছে। এ কেমন সপ্ন দেখলেন তিনি? তার মেয়েকে কতটা নির্যাতনের স্বীকার হতে হলো? সাইফে এভাবে উঠতে দেখে নাজমার ঘুম ছুটে গেলো। সাইফের শ্বাস টানতে কষ্ট হচ্ছে। বুকে হাত দিয়ে চেঁপে আছেন। চোখ দুটি উল্টে যাচ্ছে । তিনি আতঙ্ক চিৎকার করে ডেকলেন,,

“জয়নব…! তোর বাবা কেমন জানি করছে!”

জয়নব সজাগ ছিলো৷ মায়ের চিৎকারে ছুটে এলো রুম থেকে। ততখনে যেন বেশিই দেড়ি হয়ে গেলো। সাইফের প্রাণ পাখি উড়াল দিলো। নিথর দেহ ঢলে পড়ে রইলো নাজমার বুকে। নাজমাও নিস্তেজ হয়ে গেলেন। জয়নব “বাবা” বলে ডাকতে লাগলো সাড়া নেই। মাকে ডাকতে লাগলো তারো হুঁশ নেই। অতল সাগরে তলিয়ে যেতে লাগলো জয়নব। বাবার পিতৃ ছায়া মাথার উপর থেকে সরে গেলো জয়নবের। নাজমাও জীবন্ত লাশ হয়ে গেলেন। বাবা-মা ছাড়া কিশোরী জয়নব লড়াই করতে লাগলো আবারো এই নিষ্ঠুর পৃথিবীর সাথে।

—————-

মেডিকেল কলেজের গেইটে দাঁড়িয়ে আছে জয়নব। চারপাশে সবুজ ঘেরা গাছ পালার সাথে দাঁড়িয়ে আছে দাম্ভিকতা নিয়ে শির উচু করে বড় বড় ভবন।ঠিক যেই মেডিকেল কলেজে তার বোন পড়তো? সেই মেডিকেলেই পড়তে এসেছে সে। বছর খানিক কেঁটে গেছে। জয়নবের পৃথিবী এখন বিছানায় শয্যাশায়ী তার মা নাজমা ছাড়া কেউ নেই। কিশোরী জয়নব শক্ত এবার, বোনের মতো সেও মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। কাকতালীয় ভাবে বোনের রুমটিতে সীট পেয়েছে। সে চাইছিলো-ও তাই। বোনের বিছনায় বসে অনুভব করতে পাড়ছে তার বোনকে। এই যেন গালে স্পর্শ করে বলছে,

“তোর লড়াইয়ে আমি সাথে আছি জান!”

জয়নব ছোখ বুঁজে হাসলো। তার বড়পু সব সময় “জান” নামটি সম্বোধন করতে। মাঝে মাঝে আদরে আপ্লুত হয়ে প্রশ্ন করতো,

“বড়পু তুমি আমাকে কেন জান ডাকো?”

রুফাইদা হাসতো। শুভ্রমুখে হৃদয়স্পর্শকর হাসি। একে বারে বুকে গিয়ে লাগতো সেই হাসি। জয়নব ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকতো। রুফাইদা চোখে মুখে সব সময় থাকতো জ্ঞানী জ্ঞানী ভাব। স্বল্প ভাষী মেয়েটি মিষ্টি কন্ঠে বলত,

“তুই আমার প্রতিছবি, জান। দু টো মানুষ হলেও আমাদের দুজনের মাঝে আছে অনেক মিল। আর ছোট বেলায় তোর জন্যই আমার প্রাণ বেঁচে ছিলো। তাই তুই আমার জান!”

জয়নব হাসতো। বোনকে জড়িয়ে ধরতো খুশিতে গদগদ হয়ে। কিন্তু? আজ তার বোনটি নেই। সপ্তপর্ণ শ্বাস গিলে ফেললো জয়নব।

বছর খানিক আগের ঘটনা মেডিকেল পড়ার ইচ্ছে ছিলো না জয়নবের। কিন্তু সব পাল্টে গেলো। বোনের হোস্টেল থেকে আসা ব্যাগপত্রর মাঝে পাওয়া এক টুকরো কাগজ বদলে দিলো জয়নবের মতামত। সেই কাগজের টুকরোটা ছিল একটি চিঠির টুকরো। যেখানে লিখা ছিলো গোটা গোটা অক্ষরে,

” তারা ভালো না। তারা হাসপাতালে অনৈতিক কাজ করছে। তাদের শাস্তি পেতেই হবে। সবার মুখোশ উন্মোচন করে ছাড়বো। তাদের মাঝে ডাঃ…..”

এরপর আর কিছুই লেখা নেই। এটুকু পড়েই জয়নবের কিশোরী মাথায় খেলে গেলো। বোনের মরার পিছনে হয়তো তারাই দায়ী???

———

ডং ডং করে ঘরির ঘন্টা বাজতে লাগলো। সকালের মিষ্টি হাওয়া পুলকিত করলো চারিদিক। আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে পড়লো জয়নব। রেডি হয়ে চলতে লাগলো নতুন জীবনের সূচনায়..। ডাক্তারদের সাদা এপ্রোন গায়ে জড়িয়ে বেড়িয়ে গেলো কলেজের উদ্দেশ্যে।

কলেজ গেট ক্রশ করতেই পিছন থেকে ভেসে এলো এক কর্ককর্কশ কন্ঠ। জয়নব পিছনে ঘুরে আগুন্তকে দেখতে চাইলো। কিন্তু দেখা যাচ্ছে না। লোকটিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে সব স্টাফ মাথা নত করে। লোকটি ধমকাচ্ছে তাদের। কৌতূহল জাগল কিশোরী জয়নবের। পায়ের বুড়ো আঙুলে উপর ভর দিয়ে উঁচু হয় বৃধা চেষ্টা করলো লোকটিকে দেখতে। কিন্তু ব্যর্থ। মুখ দিয়ে বিরক্তি “চ” শব্দ করে সে স্থান ত্যাগ করতে চাইলো। ঠিক সেই মুহুর্তে ভেসে উঠলো
আগন্তুকের মুখখানি। হা হয়ে গেলো জয়নব। এ কি মানুষ? না অপূর্ব কোনো সুন্দর জ্বিন??

“ও ভাবে গিলো না উনা। উনি ওল রেডি ম্যারেড। যদিও তার ওয়াইফকে কেউ দেখননি”

পাশ থেকে ভেসে এলো মেয়েলী কন্ঠো। ভ্রু কুটি কুচকে তাকালো জয়নব। মোটোশোটা গোলগাল একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে তার সামনে। মুখে যেন এক রাশ মায়া মায়া ভাব। মেয়েটির কথা ধরতে না পেরে জয়নব গলা ছাড়লো।

“এক্সকিউজ মি। ”

মেয়েটি এবার হেসে দিলো। হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল,

“হাই আমি কুয়াশা। নিউ স্টুডেন্ট। ”

জয়নব-ও হাত বাড়িয়ে দিলো।

“আমি জয়নব। নিউ স্টুডেন্ট! ”

কুয়াশার মুখ চকচক করে উঠলো। হুট করে ঝাপটে ধরে ফেললো জয়নবকে।জয়নব বেকুব বনে গেলো।
কুয়াশা খুশি খুশি কন্ঠে বলল,

“আমরা আজ থেকে বন্ধু!”

জয়নব মাথা নাড়লো,

“হে হে আমরা বন্ধু আমাকে ছাড়ো!”

কুয়াশা ছেড়ে দিলো।এবার জয়নব কিছু একটা ভেবে বলল,

” তোমরা কথা বুঝতে পারি নি আমি। তখন কি বললে?”

কুয়াশা ফিক করে হেসে দিলো।বলল,

“তুমিও স্যারের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছো তাই না! ”

জয়নব থতমত খেয়ে গেলো। বলল,

“তুমি যা ভাবছো তা না!”

মেয়েটি হাওয়ায় মাছি তাড়ানোর মতো হাত নাড়িয়ে বলল,

“জানি জানি সব জানি। কলেজের সবাই তাদের দুজনের উপর ক্রাশাহীত।”

“তাদের মানে?”

“তাদের মানে তারা দু জনের উপর। আদর স্যার আর অভিনব স্যারের উপর। এই মাত্র যাকে দেখেছো উনি অভিনব স্যার। আদর স্যার আরো সুন্দর।”

জয়নব দাঁড়িয়ে গেলো। এমন সুন্দর মানুষ কি এ পৃথিবীতে হয় নাকি বুঝতে পাড়লো না সে। কিন্তু স্বচোখে ডাঃ আদরকে দেখার জন্য কিশোরী জয়নবের মনে আকুলতা সৃষ্টি হয়। কিন্তু কেন?

ওরা নানান কথার মাঝে ডুবে গেলো। কুয়াশা মেটা মিশুক খুব জয়নবের এমন এক বন্ধু হয়ে ভালোই লাগলো। তারা কথা বলতে বলতে ক্লাসের দিকে অগ্রসর হলো। বড় হল ঘরটি “শ” খানেক স্টুডেন্ট । মাঝামাঝি এক সারিতে বসলো তারা। তখনি কিছু কিছু স্টুডেন্টের কথোপকথন কানে ভেসে এলো তাদের। ফিসফিস করে বলছে,

“জানিস আবার লাশ পাওয়া গেছে।আমাদের কলেজের সিনিয়র এক ভাইয়ার। ছেলেটির চোখ, কলিজা, গুর্দা, ফুসফুস, কিডনি কিছুই নেই। বুক ফেঁড়েছে। শরীরে মারে চিন্হ। অনেক টর্চার করেছো হয়তো। তার উপর এসিড দিয়ে মুখ ঝলসে দিয়েছে। লাশ এনেছে মর্গে। আমার তো দেখেই ভয়ে গা গুলিয়ে গেছে। কি মর্মান্তিক দেখতে ইশশ।”

সহপাঠীদের কথা শিউরে উঠলো জয়নব। শরীরের রোমশ দাঁড়িয়ে গেলো তার। রুফাইদার ঝলসে যাওয়া মুখ ভেসে উঠলো তার চোখে। ছল ছল করে উঠলো নয়নজোড়া। আচ্ছা এরাই সে খুনি না তো? যারা তার বোনকে মেরেছে??? তাহলে কি তার ধারণা ঠিক? এই হাসপাতাল ঘিরেই রয়েছে যত রহস্য??

চলবে,

অন্তর্দহন প্রণয় পর্ব-০২

0

#অন্তর্দহন_প্রণয়
#লিখনীতে_সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি
২।
“মিস রুফাইদাকে গন ধর্ষন করা হয়েছে! সারা শরীর জুড়ে টর্চারের আঘাত। স্পর্শকাতর জায়গা আর মুখ থেঁতলে দিয়েছে। এসিড মেরে মুখ ঝলসে গেছে, যার ফলে চেহারা বুঝা যাচ্ছে না । আর শরীরের জায়গা জায়গা থেকে মাংস তুলে নেয়া হয়েছে।”

বাড়ি ভর্তি করে উত্তেজনার ভাব। চারিদিকে পুলিশ আর মিডিয়ার লোক। শুধু থমথমে পরিবেশে সাইফ, নাজমা, জয়নব স্তব্ধ। আকাশে ঘন মেঘ গুড় গুড় করছে। সূর্যের দাম্ভিকতা দংশন করে দাপিয়ে আসছে অন্ধকার ।একঝলক বিদ্যুৎ নীলাভো আলো এসে পড়লো ঘর জুড়ে। নিঃশব্দ কিশোরী জয়নবের কর্ণপাত হচ্ছে পুলিশের কথাটি বাজ পড়ার মতো। ঘরের প্রতিটি মানুষের আদরের রুফাইদার মর্মান্তিক মৃত্যু কথা শুনে জ্ঞান হারিয়েছে নাজমা। সাইফ ভেঙ্গে পড়েছে। হু হু করে বাড়ছে বিপদ৷ বাহিরের বৃষ্টির বেগ আরো বাড়লো। গগনবিদারী চিৎকার করে বাজ পড়লো আবার। অন্ধকার ঘরটিতে দেখা মিলছে ক্ষনিকের নিয়ন আলো। সেই সামান্য আলোতে দেখা গেলো বিছানার উপর পা গুটিয়ে বসে থাকা কৃষ্ণাভ অথচ পেলব মসৃণ মুখ। ঘন কালো চুল এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে পিঠ জুড়ে। সামান্য উঁচু কঁপালের ঠিক নিচে ঘন ভ্রু যুগল আর এক জোড়া ঝকঝকে চোখ দিয়ে পড়ছে নেত্রনীর। সুচালো ঠোঁট জোড়া কাঁপছে। বিছনার উপর পরে থাকা এলো মেলো কিছু রক্তাক্ত কাপড়, ভাঙ্গা ঘড়ি, গলার লকেট আর একটি কানের দুল, এগুলে দেখেই ফুপিয়ে উঠছে জয়নব। বোনের মরার খবর কিশোরী জয়নবের ছোট মনটা কাতর। তার উপর ধর্ষণের খবর বাতাসের মতো ছড়িয়ে পড়েছে আত্মীয় স্বজন আর পাড়াপড়শিদের মাঝে। কেউ সান্ত্বনার বানী শোনাচ্ছে তো কেউ টিটকারি দিয়ে বলছে,

“মেয়ে হোস্টেল থাকতো একা। হয়তো কোথাও ফষ্টিনষ্টি করেছে ছেলেদের সাথে। তাই ছেলেরা খেয়ে দিয়েছে একদম। এদের সাথে এমন হওয়াই সাজে বৈকি। ”

কথা গুলো শক্তভাবে হজম করলেও দু চারটে কথার প্রতিবাদ করেও লাভ হয়নি বিশেষ। উল্টো নাজমার অবস্থা নাজুক। মেয়ের শোকে শরীর ছেড়ে দিয়েছে বিছানায়। দিন যেতে লাগলো পরিস্থিতি অনুকূল নেই। ভেঙ্গে চুড়ে যাচ্ছে সব। এভাবেই কেঁটে গেলো ১৫ টা দিন। এখনো বোনের থেঁতলে আর এসিড পোড়া মুখটি মনে পড়লেই কামড় দেয় বুকে। এদিকে পুলিশ থেকেও কোনো তথ্য পাচ্ছে না তারা। সাইফ পুলিশ স্টেশন ঘুরে ঘুরে ব্যর্থ কোনো তথ্য নেই! কারা করলো? কি দোষ ছিলো তার ছোট পরির? কেন তারা সাথেই এমন হলো?? সাইফ স্পষ্ট দেখতে পেলো তার ছোট পরি খিল খিল করে হেসে দৌড়ে আসচ্ছে কাছে। মুখে বাবার তার খোট বুলিতে বলছে, “আমার বাবা, আমার বাবা!”। সাইফ তার বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করলেন।

বরাবরের মতো আজও হতাশ হয়ে ফিরলেন সাইফ। বুকের ভিতর আর জোড় নেই। ঘামন্ত, ক্লান্ত, শ্রান্ত শরীর হেলিয়ে দিলো সোফায়। রান্না ঘর থেকে এক গ্লাস পানি নিয়ে দৌড়ে এলো জয়নব। বাবার বেহাল দেখে আতঙ্ক ভাবে বলে উঠলো,

” কি হয়েছে বাবা? এমন করছো কেন? ”

সাইফ হাঁপাচ্ছে। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। সাদা পাঞ্জাবিতে সুদর্শন এই বাধ্যর্কের মুখ শুকিয়ে ফ্যাকাসে হয়ে হাসফাস করছেন। এ কদিনে যেনো বয়স টা দিগুন বেড়েছে। ভয় হচ্ছে, তার কিছু হয়ে গেলে ছোট মেয়েটির কি হবে? সাইফ ছলছল নয়নে তাকালেন। বার কয়েক অস্থির কন্ঠে প্রশ্নে করতে থাকে জয়নব। অথচ সাইফ কি বলবেন? তার উত্তর খুঁজে পেলেন না। ছোট থেকে তার ছোট পরি বাবাকে বলতো,”আমার সুপারম্যান “অথচ আজ এই সুপারম্যান ব্যর্থ। নিজের মেয়েকে ন্যায় দিতে পারলো না? কেমন পিতা সে? ঢুকরে উঠলেন তিনি। জয়নবের মুখ অজানা এক ভয় সাদা হয়ে গেছে। ঠোঁট দুটি এক অব্যক্ত ভয়ে অল্প অল্প কাঁপছে।

“বাবা বলো না? কি হয়েছে?তুমি এমন করছো কেন??

কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে সাইফের সুন্দর মুখখানা টকটকে লাল হয়ে গেছে। ভাঙ্গা ভাঙ্গা বুলিতে কথা পড়লেন তিনি,

“আমি ব্যর্থ বাপ!.. মা। আমার মেয়ের জন্য কিছুই করতে পাড়লাম না। সব শেষ!”

বাবার চোখের পানিতে জয়নবের চোখের নেত্রধারা পড়তে লাগলো। বাবা বুকে মাথা রেখে বলল,

“না বাবা,, তুমি সুপার বাবা। তুমি আমাদের গর্ব বাবা!”

সাইফের বুক চিঁড়ে দীর্ঘ শ্বাস বেড়িয়ে এলো। মেয়েকে বুকে টেনে শূন্য দৃষ্টিতে চেয়ে বলল,

“আমি আমার ছোট পরিকে ন্যায় দিতে পাড়লাম না মা, পাড়লাম না।”

ছোট জয়নব কিছুই বুঝলো না। ছল ছল চোখে বারা দিকে তাকিয়ে রইলো। বিচলিত হয়ে বলল,

“কি বলছো বাবা?”

সাইফ মাথা নাড়লেন,

“তোর বোনের কেইস ক্লোজড করে দিয়েছে থানায়!”

মুহূর্তেই গর্জে উঠলো জয়নব,,

“কিন্তু, তারা তো খুনি পায়নি এখনো? কে আপুকে এ কাজ করেছে? কেন করছে, কিছু না জানিয়ে কিভাবে ক্লোজড করে দেয়!”

সাইফ নিশ্চুপ রইলেন। তার মনে হচ্ছে তার ছোট পরি কাঁদচ্ছেন আর বলছে,

“বাবা! তারা আমাকে অনেক অত্যচার করেছে বাবা।তাদের তুমি শাস্তি দাও নিজ হাতে দাও!”

——-

দুপরের কড়া রোদ। বাতাসের লেশ মাত্র নেই। গরমে চিটচিটে হচ্ছে শরীর। মাথার উপর ফ্যানটি গটগট শব্দে করেও গরম যেন দূর করতে পারছে না।এদিকে মেজাজ তুঙ্গে জয়নবের। তার উপর ভ্যাপসা গরমের মাঝে কনস্টেবলের ঘেন ঘেন। জয়নব এবার ধমকে উঠলো,

“আপনারা কেন আমার বোনে কেইস বন্ধ করলেন?বলেন? খুনি তো ধরা পড়ে নি তাহলে?”

কনস্টেবল ভাবলেশহীন। টেবিলের ড্রয়ার থেকে পানের বক্স বের করে পান মুখে দিতে দিতে বললেন,

“এই কেইসের কোনো ভিত্তি নাই। তাই বন্ধ করা হইছে। এর বেশি কিছু কবার পামু না। বাহিরে বসেন গিয়ে বড় স্যার আইলে তাহরে জিগাইবেন। যান যান উঠেন বাহিরে যান!”

আগত বাহিরে বেড়িয়ে আসতে হলো জয়নবের। বাহিরে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে ডাক পড়লো তার। ভিতরে গিয়ে অতি বিনয়ের সাথে প্রশ্ন করতেই বড় স্যার বললেন,

” আমাদের হাতে কিছু নেই। উপর থেকে পেশার এসেছে বিধায় বন্ধ করতে হয়েছে। তবে তুমি চাইলে আমি কেইসটা রিওপেন করতে পারি। কিন্তু..!

মুহূর্তেই সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে ঠোঁটে ফুটেলো হাসি। আরেকটু ঝুকে এসে কন্ঠে উৎকণ্ঠা নিয়ে বলল,

“কিন্তু কি স্যার!”

“আমার কিছু চাই!”

জয়নব খুশি খুশি কন্ঠে বলল,

“টাকা চিন্তা করবেন না স্যার। যত টাকা লাগে আমি দিবো। তবু একবার ওই নির্লজ্জ, বেহায়াকে শাস্তি দিন!”

স্যার হালকা কেশে উঠলেন। জয়নবের হাতের উপর হাত রেখে হালকা চাপ দিলেন। কামুকতা নজরে তাকিয়ে ফিসফিস করে বললেন,

“আজ রাতটা তোমার আমাকে দাও অাদরে-সোহাগে ভরিয়ে দিবো। আই প্রোমিস রাতে খুশি করতে পারলেই কেইস রিওপেন করে দিবো!”

ঘৃনায় গা গুলিয়ে এলো জয়নবের এক ঝাটকায় হাত সরিয়ে ডান গাল বরাবর চর লাগালো জয়নব। বড় স্যার হতভম্ব। কি থেকে কি হলো বুঝতে পারছে না। জয়নব এবার গলা ছাড়লো। রাগে গা কাঁপছে। চেঁচিয়ে বলল,

“জনগণ তোদের বিশ্বাস করে তোদের কাছে আসে। আর তোরা এসব বলিস ছিঃ। মানবতা বলতে কিছু নেই তোদের? তোদের উপর থুতু দেই। ”

বড় স্যারের নামটি এবার দেখে নিলো জয়নব। াবার বলল,

“মিঃ রাসেল আপনার নাম রাস্কেল হওয়া উচিত ছিলো। যতসব! আমি আমার কেশ রিওপেন করাবো, দরকার পড়রে কোটে যাবো।”

অফিসার রাসেল ভরকে গেলেন। কিশোরী মেয়ের এত তেজ হজম হলো না। এক ঝটকা মেরে ফেলে দিলো টেবিলে। স্পর্শকাতর জায়গায় চেপে ধরতেই চেঁচিয়ে উঠলো জয়নব। রাসেল এবার দাঁতে দাঁত চেপে হিসহিস করে বলল,

” নে ডাক কোন বাপেরে ডাকবি।”

বলেই এগিয়ে নিলো ঠোঁট জোড়া। জয়নব যথাসাধ্য চেষ্টা করে এক লাথী লাগালো রাসেলের গোপনাঙ্গে কুকিয়ে উঠে ছিটকে পড়লো রাসেল। জয়নব সেই সুযোগে পালিয়ে বের হলো। থানা থেকে এক প্রকার দৌড়ে বেড়িয়ে গেলো। ছোট কিশোরী নেত্রধারা বইতে লাগলো। এতটুকু বয়সের এই বিচ্ছিরি অনুভূতি দাগ কেটে গেলো মনে ভয়ানক। সমাজের এই তুচ্ছতাচ্ছিল্য ধংস করতে দিতে ইচ্ছে হলো। পৃথিবীতে কি দেহটাই সব?

বসায় এসে সোজা ওয়াশরুমে ঠুকে গেলো জয়নব। রাসেলের বিচ্ছিরি স্পর্শ করা জায়গা গুলো সাবান দিয়ে ঢলতে লাগলো জয়নব। পাগলের মতো কাঁদতে লাগলো হাউ মাউ করে। শরীরে এই অদৃশ্য দাগ গুলো কেন যাচ্ছে না? কেনো? সে মুছে দিতে চায়। আয়নায় নিজের প্রতিছবি দিকে তাকিয়ে নিজেকে দেখলো বিধ্বস্ত অবস্থায়। পরক্ষণেই মনে পড়ে গেলো বোনের সুন্দর মুখটি, আচ্ছা তার বোনের ও তো এমনি লেগেছিলো এমন পরিস্থিতিতে? সেতো পালাতে চেয়েছে? গলাকাটা মুরগির ধাপ্রি ছিলো। বাচার জন্য কতই না চেষ্টা করেছিলো? কত কষ্টই না পেয়েছে কুলাঙ্গারদের কাছ থেকে? জয়নব এবার স্থীর হয়ে গেলো। মনে মনে ঠিক করলো,তার বোনের খুনিকে সে শাস্তি দিয়েই ছাড়বে।

চলবে,

অন্তর্দহন প্রণয় পর্ব-০১

0

#অন্তর্দহন_প্রণয়
পর্ব-০১
#লিখনীতে_সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি

“ভাইয়া কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে?আমাকে ছাড়ুন ভাইয়া প্লীজ ছাড়ুন! প্লীজ ছেড়ে দিন! দয়া করুন আমার উপর!”

বলতেই উনি সাদা রুমাল মুখের সামনে চেপে ধরলো। ধস্তাধস্তির এক পর্যায় মেয়েটি জ্ঞান হারালো । জ্ঞান ফিরলো যখন নিজেকে আবিষ্কার করলো হাত পা অবস্থায় চেয়ারে বাধা সে। আর তার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে কিছু পরিচিত মুখ।এক আকাশ বিস্ময় নিয়ে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলো৷সারা শরীরে বয়ে গেলো ভয়ের স্রোত। কাঁপন ধরলো গায়ে।

“আপনারা? প্লীজ আমাকে ছেঁড়ে দিন। দয়া করুন!আমি কাউকে কিছু বলবো না। ”

কান্না জড়িত করুন কন্ঠে বলে উঠলো মেয়েটি। বিশেষ লাভ হলো না এতে। উল্টো পলক ফেলার আগেই, লোকটি তার কাছে এসে পড়লো। মেয়েটি ভয়ে চোখ বুঝে ফেললো। কানে ভেসে আসলো লোকটির বিকৃতি কথা। আতঙ্ক নিয়ে তাকিয়ে রইলো মেয়েটি।

—“আমার দাদু মানুষের কলিজা ভুনা খুব পছন্দ করতেন!”

লোকটির কথায় সিটিয়ে গেলো মেয়েটি।কিছুটা পিছনে হেলে ভয় ভয় চোখে তাকালো লোকটির দিক। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো,

—“কি স…ব বলছেন? ”

লোকটি মৃদু হাসলো। চাপানো শক্ত চোয়াল তবুও স্টাইল করা দাঁড়ি আড়ালে মুখখানায় রয়ে গেল গম্ভীর, রাশ ভরা। লোকটি মেয়েটির কঁপাল থেকে গাল পর্যন্ত স্পর্শ করলো। লোকটি শ্বাস নিশ্বাস আছড়ে পড়লো মেয়েটির চোখে, মুখে, গালে।শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা মেয়েটির। মেয়েটির কঁপালের ছোট চুল গুলো কানের পিছনে গুঁজে দিলো লোকটি। ফিসফিস করে বলল,

—-“কিন্তু আমার মানুষের মাংস খেতে পছন্দ। লবন, ঝাল দিয়ে খেতে দারুন স্বাদ। জানো পৃথিবীতে মানুষের মাংসের স্বাদ সবচেয়ে বেশি!”

চোখ বড় বড় করে তাকালো মেয়েটি। তীব্র সুদর্শন এই যুবকটির বিকৃতি কথা বার্তা হজম হলো না। গা গুলিয়ে এলো মেয়েটির। মুখ ভর্তি করে বমি চলে আসচ্ছে। বহু কষ্টে ঠেলে দিচ্ছে ভিতরে। ভয়ে আধমরা মেয়েটি লোকটিকে অস্পষ্ট ভাঙ্গা স্বরে বলল,

“এ..স..ব কি.. ব…লছেন স্যার!”

লোকটি হো হো করে হেসে উঠলো। হাসির গুঞ্জনে কেঁপে উঠলো ঘরের ইট। কেঁপে উঠলো মেয়েটি। এই মুহুর্তে তার পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে।কিন্তু লোকটি তাকে বেঁধে রেখেছে। কি করবে সে? লোকটির কুৎসিত কথা বার্তায় নেতিয়ে পরছে ।

” তোমার মতো সুন্দরী, নরম তুলতুলে মসৃন শরীর আর নাদুসনুদুস শরীরের মাংস আরো সুস্বাদু হবে নিশ্চয়ই? আম সো এক্সাইটেড তোমার শরীরের মাংস খেতে!”

শেষের কথাটি ধীরে ধীরে হিসহিস করে বলল লোকটি। ফ্যাকাসে হয়ে গেলো মেয়েটির মুখ। কঁপালে দেখা গেলো বিন্দু ঘাম।মুখ ভর্তি আতঙ্ক নিয়ে আর্তনাদ করে উঠলো মেয়েটি,,

“না…! প্লীজ আমাকে ছেঁড়ে দিন স্যার। আমাকে যেতে দিন। আমি কাউকে কিচ্ছু বলবো না। দয়া করুন স্যার!”

লোকটি মৃদু হাসলো। মেয়েটির মুখে উপর ঝুকে এক হাতে মেয়েটির গাল টিপে অন্য হাতে নিজের পেটে হাত বুলিয়ে বলল,

“যাবে তো সুন্দরী …খুব শীগ্রই তুমি.. তবে,কিন্তু আমার পেটে!”

পিলে চমকে উঠলো মেয়েটির। ডর ভয় হুরহুর করে বাড়লো। হুহু করে কেঁদে উঠলো।

“আমি আপনার পায়ে পড়ি। আমাকে মারবেন না। ছেঁড়ে দিন। আমি..আমি কথা দিচ্ছি আমি চলে যাবো, দূরে..দূরে কোথাও চলে যাবো। আমাকে ছেড়ে দিন।আমি মরতে চাই না। আমাকে বাঁচতে দিন।”

মেয়েটির কথার মাঝেই লোকটি ইঞ্জেকশন পুশ করলো।মেয়েটি ঢলে পড়লো আবার।আর লোকটি শক্ত চোয়ালে ভেসে উঠলো রহস্যময় হাসি।

“ডক্টর? এখন রুফাইদাকে কি করবেন?”

অস্বস্তি নিয়ে কয়েকহাত দূরে দাঁড়িয়ে থাকা গোল গাল চেহারার রোগাসোগা মেয়েটির দিকে তাকালো লোকটি। পরনে ফিনফিনে ক্রীম রঙ্গা জামা।মুখ ভর্তি প্রশ্নের রেশ। লোকটি এগিয়ে এলো। ঠোঁটে কোনে বাঁকা হাসি ঝুলিয়ে রুফাইদার দিকে তাকালো। মেয়েটিকে দেখে যেন মনে হচ্ছে ছোট বাচ্চা ঘুমিয়ে আছে। লোকটি হাসি বহাল রেখে সামনের মেয়েটির উদ্দেশ্যে বলল,,

“বাকি সবার সাথে যা করি?”

যুবতী নিঃশব্দে ঢুক গিললো। চোখ টিপে দুষ্ট হাসি হেসে বলল,

“বিছানার সঙ্গী বানাবেন? ইউ রেপড হার?”

লোকটি রহস্যময় হাসি বহাল রেখে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। মেয়েটিও স্থীর চেয়ে রইলো। মনের কোনে কোথাও তার খুব খারাপ লাগছে। নিজের বান্ধবীকে নরপিশাচের হাতে তুলে দিয়েছে সে। মনে মনে অনুতপ্ত হলেও। ঠোঁটে হাসি ফুটলো। পথের কাঁটা তো দূর হচ্ছে? বাকি সব চুলোও যাক।মরে যাক। অথবা… ধর্ষিত হোক..।

———–

নিস্তরঙ্গ নৈঃশ্বদে চাদর গায়ে মুড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে নগরী। ঘুম নেই শুধু এই জননীর। আজ তিন দিন যাবত সেই মায়ের হৃদয়ের টুকরো হারিয়ে গেছে। কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মেডিকেল কলেজ পড়াশোনো করতো তার মেয়ে রুফাইদা। রূপে গুনে ছিলো পঞ্চম মুখী। ছুটি বাসায় আসবে বলে কন্ঠে আমেদ নিয়ে ফোন দিয়ে ছিলো নাজমা তালুকদারকে। আর আজ তিন দিন চললো, মেয়ের ফোন বন্ধ, হোস্টেলে খবর নিয়ে জানতে পাড়লো, হোস্টেলেও নেই। এবার যেন বুক কেঁপে উঠছিলো নাজমার। ২৪ ঘন্টা পার হতেই মেয়ে নিখোঁজ রিপোর্ট করে এসেছেন তারা। আচ্ছা তার ছোট রুফাইদা ঠিক আছে তো? মেয়েটি খাওয়াদাওয়া করেছে তো? মুখে আঁচলের আড়ালে ঢুকরে উঠলেন তিনি।সেই মুহূর্তে নিঃশব্দে পাশে এসে দাঁড়ালো এক মাঝ বয়সি লোক। গায়ে ঢিলেঢালা পাঞ্জাবি । শরীরে বার্ধকের লক্ষ্মণ। চশমার আড়ালে চোখের জল লুকিয়ে হাত রাখলেন নাজমার কাঁধে। এক পলক তাকিয়ে নাজমা হাউমাউ করে কেঁদে মুখ লুকালেন তার বুকে।

” সাইফ! আমার মেয়ে কই বলো? ওকে এনে দাও। আমি সইতে পাড়ছি না আর। আমার মন বলছে আমার মেয়ে কষ্টে আছে। ওকে খুঁজে আনো…খুঁজে আনো ওকে…!”

সাইফ তালুকদার স্ত্রীকে বাহু ডোরে বন্ধ করে নিলেন। কান্না জড়িত কন্ঠে বললেন,,

“কেঁদে না নাজমা। আল্লাহ উপর ভরসা করো। ঠিক দেখবে আমাদের মেয়ে চলে আসবে।”

নাজমা অবুঝের মতো কান্না করতেই লাগলেন। আজ সাইফ তালুকদার কাছে কোনো শান্তনা বানী নেই। অসহায় সে।

দরজার আড়াল থেকে মা-বাবার এই কান্না বুকে গিয়ে লাগচ্ছে জয়নবের। ছোট কিশোরী মন ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। বোনকে হারিয়ে আজ দুঃখে বুক ভাসিয়ে কেঁদে যাচ্ছে। কই তার বোন। কই তার খেলার সাথী???কই তার পড়ার সাথী?? কই তার ঝগড়ার সাথী। কাঁজলা দিদি কবিতার মতো সেকি আড়ালে চলে গেলো! কিন্তু কেন?

——–

কিছু, কিছু রাত কারো কারো জন্য অত্যন্ত অভিজাত। আবার কিছু কিছু রাত কারো জন্য বন্য প্রকৃতির। সেখানে অারো আধাঁরি খেলা হয়ে থাকে। কিছু গোপন খেলা, বিপদজনক খেলা।কিছুটা প্রকাশ্য, কিছুটা অপ্রকাশ্য।সেখানে প্রমিকের অাদরের মতো রোমান্টিসিজম নেই। আছে শুধু আদিম রিংরিসার মতো অন্তর্দহন প্রণয় দগ্ধ হওয়া দাউ দাউ অগ্নি শিখা। সেখানে শব্দ আছে কারো বাঁচা জন্য আর্তনাদ আছে।এই রাত, এই অগ্নিশিখায় চুড়ান্ত দহনে পুড়িয়ে মারে।

ঠিক তেমনি কিছু আর্তনাদ,, “আমাকে বাঁচাও, আমি বাঁচতে চাই, ছেড়ে দাও আমায়!” বিশাল ব্যয়বহুল এই কামড়া থেকে ভেসে আসচ্ছে। নরম বিছানার উপর শুঁয়ে আছে শুভ্র এক পরি। হাত-পা দুটি খাটের হাতলে বাঁধা। প্রাণপণ চেষ্টা করছে বাঁচার। ঠিক সেই মুহূর্তেই দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করলো কেও। তার দিকে তাকাতেই চোখ দুটি বড় বড় হয়ে গেলো রুফাইদার। সামনের এই দুর্দান্ত সুদর্শন যুবকটি দৈত, নর পিশাচের ন্যায়। পড়নে কালো প্যান্ট , উদম বুক। ডান পাশের একটি ট্যাটু। বাম হাতে চাবুক। ধীরে ধীরে এগিয়ে আসচ্ছে সে রুফাইদার দিকে। রুফাইদা লোকটি এ রূপ দেখে শিরা-উপশিরায় নিস্তেজ হতে লাগলো। ঘরের মোলায়েম আলোয় মানুষ রূপী দানবটির পিশে ফেলতে চাইছে তাকে। প্রতিটি স্পর্শ ঘা বসাচ্ছে গায়ে। রুফাইদার আর্তনাদ কেঁপে উঠছে জগৎ।

“আমাকে ছেঁড়ে দিন। আমার এত বড় সর্বনাশ করবেন না। আমাকে ছেঁড়ে দিন!”

কিন্তু শেষ রক্ষে আর হলো না।নিশ্চুপ হলো চারিদিক, হরণ হলো সতীত্ব,মরন হলো মনের, নিথর হলো দেহোখানী। দেহের মাঝে লেগে গেলো ধর্ষিতার দাগ।

——–

রাতের বৃষ্টির পর সকালের রোদের রূপ উড়নচণ্ডী যেন। খা খা মাঠ ঘাট রাগে তপ্ত করছে । রোদের তেজে ঘরের মাঝে ভ্যাপসা গরম আর গুমাটে ভাবে হাপিয়ে উঠে ছিলো জয়নব। তিন রাত ঠিক ঠাক না ঘুমিয়ে, না খেয়ে বেহাল বাবা-মার জন্য চট করে ছোট কিশোরী সকালের নাস্তা করে ফেললো। টেবিল সাজিয়ে বাবা-মাকে জোর জবরদস্তি খাবারে নলা মুখে তুলে দিতেই খটখট শব্দ করে উঠলো দরজায়। বিরক্ত হয়ে জয়নব দরজা খুলতেই মুখখানা সাদা হয়ে গেলো।মুখ গগনবিদারী এক আর্তনাদের বেড়িয়ে এলো,

“ব..ড়..পু”

চলবে,

অন্তর্দহন প্রণয় সিজন-০২ গল্পটি পড়তে লেখার উপর ক্লিক করুন।

তোমাকে চাই পর্ব-১৩ এবং শেষ পর্ব

0

#তোমাকে_চাই (#শেষ)
#মারিয়া_তুন_রিয়া
#পর্ব_১৩
এই দৃশ্য দেখে আমরা সবাই কেদে দিয়েছি।
এমন সময় আমার সামনে একটা গাড়ি রসে থামলো। গাড়িটা দেখেই আমি বুঝতে পারলাম এটা আয়ানের গাড়ি । আয়ান একটা মাক্স পরে গাড়ি থেকে নামলো। নেমে আমার পাশে এসে দারিয়ে বলে উঠলো…………
আয়ানঃ কি হয়েছে এখানে।
মারিয়াঃ পবিত্র ভালোবাসার মিলোন হইছে।
আয়ানঃ মানে।
তারপর আমি আয়ানকে সব খলে বললাম। আমার কথা শুনে আয়ান মুচকি হেসে বলে উঠলো………….
আয়ানঃ ছেলেটা পুরাই সাইকো।
মারিয়াঃ তোমার থেকে কম।
আয়ানঃ আই নো।
মারিয়াঃ আই উইস আমাকে জদি কেউ এভাবে বলতো।
আয়ানঃ তুমি বললে আমি এখনি রোডের মাঝখানে গিয়ে মাক্স খুলে যোরে চিৎকার করে বলতে পারি।
মারিয়াঃ এখন জদি তুমি একপাও বারাইছো তোমার পা ভেঙে মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে দিবো।
আয়ানঃ ডাকাত বউ। 🥺🥺(বির বির করে)
মারিয়াঃ কিছু বললা।
আয়ানঃ কোই নাতো। আমি কি কিছু বলতে পারি।
মারিয়াঃ😒😒
আয়ানঃ এভাবে তাকানোর কিছু হয় নি।





দেখতে দেখতে আরও ৫ বছর কেটে গেলো।
সবাই এখন নিজেদের মতো আছে। আমি আর আয়ান ৪ বছর সিঙ্গাপুর চলে এসেছি।
রিক আর তিশা বিয়ের পর লন্ডন চলে গেছে। রুহি আর রাফি কানাডা চলে গেছে
ভাইয়া আর আপু বিডিতে আছে। সবাই যার যার মতো সুখে আছে।
।।
আজ আমরা (মারিয়া, আয়ান,ও তাদের ময়ে আসফিয়া জাহান নিল) বিডিতে ফিরছি। ওনেক দিন পর বিডিতে যাব। তাই সবাই অনেক হ্যাপি।আমি এগুলো ভাবছি তখনি নিল এসে বলে উঠলো…………………
নিলঃ মাম্মা দেকতো আমাকে কেমন লাকতে।
আমি নিলের কথা শুনে পিছনে ঘুরতে ও কে কোলে নিয়ে বলে উঠলাম………………………
মারিয়াঃ আমার মামনি টাকে তো সব সময় ভালো লাগে।
আয়ানঃ আর আমাকে কেমন লাগছে। (আমাদের দিকে আসতে আসতে)
মারিয়াঃ লাগছে মোটামুটি।
আয়ানঃ শুধু মোটামুটি। (আমার দিকে এগতে এগতে)
মারিয়াঃ নিল আছে কিন্তু।
আয়ানঃ ওটা সমস্যা না। (নিলকে আমার কোল থেকে নামিয়ে)
মারিয়াঃ মানে।
আয়ানঃ দারাও বলছি।
বলেই আয়ান নিলকে বললো বাবা একটু পিছনে ঘুরে চোখ বন্ধ করে 100 কাউন্টিং করো।
নিলঃ ওকে পাপা।
বলেই নিল পিছনে ঘুরে কাউন্টিং করা শুরু করলো।
আর এদিকে আয়ান আমার কাছে এসে আমার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।
নিলের কাউন্টিং শেষ হওয়ার কিছুক্ষন আগে আমাকে ছেরে দিলো।
আয়ান ছেরে দিতেই আমি বলে উঠলাম………..
মারিয়াঃ যেমন বাপ তার তেমন মেয়ে। দুইটাই জালায়।
আয়ানঃ😉😉




বাংলাদেশে…………
আমাদের ফ্লাইট ল্যান্ড করেছে ৫ মিনিট আগে। আমরা সব ফরমালিটি পুরন করে বাহিরে যেতেই আমি অবাক। কারণ আমার সামনে রিক,তিশা ও ওদের মেয়ে রিধি সাথে রাফি,রুহি ওদের ছেলে ইসান দারিয়ে। রুহি আর তিশা আমাকে দেখে দৌড়ে আমার কাছে এসে আমাকে যাপটে জরিয়ে ধরে কেদে দিলো। আমিও ওদের সাথে তাল মিলিয়ে কান্না করছি। ওদের পিছন পিছন ভাইয়া আপু ওদের ছেলে আকাশ রিক রাফি সবাই আসলো। আমি ওদের ছেরে বাকি সবার কাছে গিয়ে সবার সাথে কুশল বিনিময় করলাম। তারপর আমরা ওখান থেকে বেরিয়ে গারিতে উঠে নিজেদের গন্তব্য চলে গেলাম।
……………#The_End……………….

তোমাকে চাই পর্ব-১২

0

#তোমাকে_চাই (#রিক+#তিশা_স্পেশাল)
#মারিয়া_তুন_রিয়া
#পর্ব_১২
দেখতে দেখতে একমাস কেটে গেলো। এখন মারিয়া আর আয়ানের মধ্যে সব ঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু মাঝখানে একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। আর তা হলো মারিয়ার মা বাবা একটা কার এক্সিডেনটে মারা গেছেন। এছারা তাদের মধ্যে এখন সব ঠিক।


একমাস পর…………
আমরা সবাই মিলে ক্যান্টিনে বসে আড্ডা দিচ্ছি। এমন সময় একটা সিনিয়ার ভাইয়া আসলো। সিনিয়ার ভাইয়াটিকে দেখে তিশা বলে উঠলো…………..
তিশাঃ কিছু বলবেন ভাইয়া।
রবি (সিনিয়ার ভাইয়া)ঃ হুম।
তিশাঃ জী বলুন।
রবিঃ একটু এদিকে উঠে আসো।
তিশাঃ আমি।
রবিঃ হুম।
ভাইয়াটার কথা মতো রবি উঠে ভাইয়ার সামনে দারালো। তিশা ভাইয়ার সামনে দারতেই ভাইয়াটা তিশার সামনে হাটু মুরে বসে একটা রিং ধরলো। আর বলে উঠলো…………
রবিঃ তিশা I Love You.
ভাইয়াটার কথা শুনে আমরা সবাই উঠে দারালাম। ভাইয়াটা আবার বলে উঠলো…………
রবিঃ প্লিজ তিশা আমাকে রিজেক্ট করোনা। অনেক আশা নিয়ে এসেছি। প্লিজ।
ভাইয়াটার কথা শুনে আমি একবার ভাইয়াটার দিকে তো একবার রিকের দিকে তাকাচ্ছি। রিককে দেখে আমার ভয় হতে শুরু করলো। কারণ ও সহজে রেগে যায়না কিন্তু যখন রাগে তখন সব শেষ করে দেয়।
ভাইয়াটা আবার বলে উঠলো………….
রবিঃ কিহলো তিশা কিছু বলো।
তিশা কিছু বলতে যাবে তার আগে রিক ওর সামনে গিয়ে বলে উঠলো………………
রিকঃ ও আপনাকে রিজেক্ট করছে।
রবিঃ তুমি বলার কে।
রিকঃ আমি সব। (দাতে দাত চেপে)
রবিঃ আমি ওর মুখ থেকে শুনতে চাই।
রিকঃ ও কিছু বলবেনা সো আউট।
রবিঃ হে লিসেন তুমি কিন্তু বেশি বারাবাড়ি করছো।
রিকঃ আউট।
রিকের কথা শুনে এবার ভাইয়াটা ওর কলার চেপে ধরলো। তারপর বলতে শুরু করলো…………
রবিঃ তোর সাহোস কি করে হয় আমাকে যেতে বলার তুই জানিস আমি কে। জানিস আমার কতো বড়ো বড়ো লোকদের সাথে ওঠা বসা।
রিকঃ ওটা যানার আমার প্রয়োজন নেই। কলারটা ছারুন।
রবিঃ না ছারবোনা কি করবি।
রিকঃ কলারটা ছারুন (চিৎকার করে)
বলেই রিক হাতে হ্যাচকা টান দিলো। আর আমরা সবাই এখানে হ্যাবলাকান্ত হয়েদারিয়ে আছি।
সামনে তাকিয়ে দেখি ভাইয়াটা রিকে মারতে যাবে তার আগে রিক হাত ধরে ফেললো। তখনি উপস্থিত হলো প্রন্সিপাল সার। এসে বলে উঠলো………..
ডাঃ রায়হানঃ এখানে কি হচ্ছে।
রিকঃ সার এই ছেলেটা ওকে (তিশাকে) প্রপজ করছিলো। আমি না করাতে আমার কলার ধরেছে।
ডাঃ রায়হানঃ ও করছে তাতে তোমার কী। তুমি জানো পাওয়ার কতো। এখনি তোমাকে এখানে মেরে চলে যেতে পারে।
রিকঃ তার মানে প্রপোজ করলে কোন সমস্যা নে। তাই তো। ওকে ফাইন।
বলেই রিক তিশার সামনে হাটু গেরে বসে সামনে হাত বারিয়ে বলতে শুরু করলো………..
রিকঃ দেখ তিশা তুই আমাকে এতোদিন কিভাবে দেখেছিস আমি জানিনা। বর জানতেও চাই না। কিন্তু আমি ১ম দেখাতেই তোকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম। তোকে আমার প্রতি বিভিন্ন ভাবে দুরবল করার চেষ্টা করছি। বাট আমি তাতে কতোটুকু সফল হইছি আমি যানিন। তিশা seriously I love you. Do you love me……….
রিক আর কিছু বলতে যাবে তার আগে ভাইয়াটা এসে রিকের কলার ধরে তার সামনে দার করিয়ে গালে একটা চর মারলো। আমরা এটা দেখে ভয়ে থমকে দারালাম। কেউ বুঝতে পারছিনা কি হবে। রিক নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে। রিক তার ফোন বের করে কাওকে কল করে আসতে বললো।

কিছুখন পর ১০-১১ জন শাদাকালো পোসাক পরা লোক এসে রিকের পিছনে দারালে। তারপর রিক বলতে শুরু করলো………..
রিকঃ তুই জানিস আমি কে?
রবিঃ তোকে জানার মতো কি আছে।
রিকঃ রিক জোহান আমি। জোহান ইন্ডাস্ট্রির নাম তো শুনেছি। সেটার ওনার আমি। আর তুই আমার গায়ে হাত তুলেছিস। তুই কি ভাবছিস আমি তোকে এমনি এমনি ছেরে দিবো। (বাকা হেসে)
রিকের কথা শুনে রবি ভাইয়া আর প্রন্সিপাল সারের মুখ দেখার মতো। দেখেই মনে হচ্ছে অনেক ভয়ে আছে তারা। রিক র্গাডদের কিযানো বললো। সাথে সাথে র্গাডরা রবি ভাইয়াকে তুলে নিশে গেলো। রিক প্রন্সিপাল সারের সামনে গিয়ে বলে উঠলো…………..
রিকঃ কাওকে কম ভাবতে নেই সার। এবার ছেরে দিয়েছি তাই বলে পরের বার ছারবো তা কিন্তু মটেও ভাববেন না।
রিকের কথা শুনে সার তারা তারি ওখান থেকে চলে গেলো। তারপর রিক আবার তিশার সামনে এসে বলে উঠলো……………..
রিকঃ তিশা এনসার টা দে।
তিশাঃ দেখ আমি তোকে এতো দিন বন্ধু হিসেবে দেখে আসছি।
রিকঃ দেখ এরকম বলিসনা। আমি তোকে খুব ভালোবাসি। তুই যা বলবি আমি তাই করবো।
তিশাঃ সত্যি আমি যা বলবো তুই তাই করবি।
রিকঃ হুম।
তিশাঃ মরতে পারবি।
রিকঃ পারবো।
তিশাঃ মরে যা।
রিকঃ তিশা। (কান্না ভেজা কন্ঠে)
তিশাঃ তুই তো বললি মরতে পারবি তো মরেযা।
রিকঃ ওকে চল।
বলেই রিক তিশার হাত ধরে গেটের বাহিরে নিয়ে গেলো। আমরা সবাি জাষ্ট স্তব্ধ। আমরা ভাবতেও পারিনা তিশা এমন কিছু বলবে।
রিক গেটের বাহিরে এসে তিশার হাত ধরে বলে উঠলো…………..
রিকঃ আমি যতখন পযন্ত না তোর চোখে আমার জন্য ভালোবাসা দেখতাছি ততক্ষণ আমি সরবোনা। এতে যদি আমি একদম শেষও হয়ে যাই শেষ হয়ে যাবো। (হাত ছেরে)
আমি তিশার দিকে তাকিয়ে দেখি ও মুগ্ধ নয়নে রিকের দিকে তাকিয়ে আছে। ও একটা দির্ঘ স্বাস নিয়ে চোখ বন্ধ করে বলে উঠলো……………..
তিশাঃ আমি জানি তুই আমাকে অনেক ভালোবাসিস। আমি তো তোর সাথে এমনি মজা করছিলাম। আমিও তোকে অনেক ভালোবাসি। I really Love You.
বলেই চোখ খুলে তাকালো। চোখ খুলে সামনে তাকাতেই দেখলো রিক রোডের মাঝে দারিয়ে আছে। এটা দেখে তিশা বলে উঠলো……………….
তিশাঃ রিক তুই কি করছিস এগুলো।
রিকঃ তুই যেটা বলেছিস তাই করছি।
তিশাঃ আমি তো বললাম আমি মজা করছিলাম।
রিকঃ তুই আমার ভালোবাসা নিয়ে কথা বলেছিস তার প্রমাণ তো দিতেই হবে।
মারিয়াঃ রিক পাগলামি কেনো করছিস। তিশা তো বললো ও মজা করছে।
রিকঃ আমি মজা টজা কিছু জানিনা। আমি শুধু আমার ভালোবাসার প্রমাণ দিবো এটাই জানি।
রাফিঃ রিক পাগলামি করিস না।
রিকঃ আমি পাগলামি করছি না।
রুহিঃ রিক দেখ ট্রাক আসছে।
রিকঃ তো। আমি যতখন পযন্ত না তিশার চোখে আমার জন্য ভালোবাসা দেখতাছি ততক্ষণে আমি সরবোনা।
তিশাঃ দেখ রিক ট্রাক আসছে সরে আয় প্লিজ।
রিকঃ না।
ট্রাকটা যখন রিকের কাছে চলে আসে তখন তিশা চিৎকার করে বলে উঠে…………
তিশাঃ I Love You রিক। প্লিজ চলে আয়।
বলেই তিশা কাদতে কাদতে নিচে বসে পরে।
আমরাও স্তব্ধ হয়ে গেছি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কি হয়ে গেলো এটা।
।।
কিছুক্ষন পর………………
রিকঃ উফ…….। আর একটু দেরি করলে আমার কি যে হতো আমি নিজেও জানিনা।
রিকের কথা শুনে আমরা সবাই ওর দিকে তাকালাম। তাকিয়ে দেখি ও সুস্থ অবস্থায় দারিয়ে আছে।ওকে এভাবে দখে সবাই কান্না করে দিয়েছি। তারপর সবাই একসাথে বলে উঠলাম…………
সবাই একসাথেঃ রিক
আমাদের কথা শুনে তিশা উপরের দিকে তাকালো। ওকে দেখে তিশা উঠে দারালো। উঠে দারিয়ে সোজা রিকের গালে একটা চর মারলো। চর মেরে ওকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো। ওদের এই দৃশ্য দেখে আমরা সবাই কেদে দিয়েছি।










#চলবে………..

তোমাকে চাই পর্ব-১১

0

#তোমাকে_চাই
#মারিয়া_তুন_রিয়া
#পর্ব_১১
ডক্টর এর কথা শুনে আমার কেমন যেন সব অন্ধকার অন্ধকার লাগছে। তাও নিযেকে যথা সম্ভব শক্ত রেখেছি। আয়ানের ডেটবডি না দেখা পযন্ত আমার বিশ্বাস হবে না। কিছুক্ষন পর ভাইয়া বলে উঠলো…………….
আরিয়ানঃ বনু চল তোকে বাসায় দিয়ে আসি। তারপর আমরা আয়ানের শেষ কাজ শেষ করবো।
মারিয়াঃ না আমি আয়ানের ডেটবডি না দেখা পযন্ত কোথাও যাবোনা।
আরিয়ানঃ দেখ পাগলামি করিস না। তোকে যেতে হবে। এখানে থেকে তুই কি করবি।
মারিয়াঃ বললাম তো আমি যাবোনা। ও আমাকে প্রমিশ করেছিলো আমাকে ছেরে যাবেনা। ও ওর প্রমিশ রাখবে আমি যানি।
রিকঃ জানু চল তোর এখানে কাজ নেই।
মারিয়াঃ বললাম না আমি যাবোনা। তোরা আমাকে যোর কেন করছিস বলতো।
রাফিঃ দেখ জানু বেশি কথা বারাস না চল বলছি।
এভাবে আমাদের তর্ক আরো বারতে থাকলো। তার কিছুক্ষন পর একজন ওয়াডবয় একটা লাশ নিয়ে আই সি ইউ থেকে বেরিয়ে আসলো। আমার লাশটাকে দেখে কেনো জানি আয়ান মনে হচ্ছে না। আমি লাশটার সামনে গিয়ে কাপা কাপা হাতে ওপরে থাকা কাপড়টা সরিয়ে দিতে যাবো টিক তখনি রিক আমার হাত ধরলো। আমি ওর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলাম……….
মারিয়াঃ কি হয়েছে হাত ধরলি কেন।
রিকঃ চল বাসায় চল
মারিয়াঃ আমি লাশ না দেখে যাবোনা (দাতে দাত চেপে)
রিকঃ দেখে কি করবি। ও তো মারাই গেছে। ওকে দেখে আর কান্না কাটি করে লাভ কি।
আমি রিকের কাছথেকে আমার হাতটা একঝটকায় সরিয়ে নিয়ে লাশের উপরে থাকা কাপড় সরিয়ে দিলাম। লাশ সরাতেই দেখি এটা আয়ান না। অন্য কেউ। আমি লাশটাকে দেখে সোজা ভাইয়ার কাছে গিয়ে বলে উঠলাম…………
মারিয়াঃ ভাইয়া আয়ান কোথায়।
আরিয়ানঃ ও কো কোথায় ম মানে। ও আর নেই।
মারিয়াঃ নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড কে নিয়ে এসব বলতে তোমার মুখে বাধছে না।
আরিয়ানঃ যেটা সত্যি সটা বলতে মুখে কেন বাধবে।
আমি ভাইয়ার পায়ের কাছে বসে ভাইয়ার পা জরিয়ে ধরে কাদতে কাদতে বলে উঠলাম………..
মারিয়াঃ প্লিজ ভাইয়া বলো আয়ান কোথায়। আমি ওকে ছারা বচবো না। প্লিজ বলোনা ও কোথায়।
আরিয়ানঃ আরে কি করছিস পা ছার। ও আর নে মারিয়া। ও আর নেই।
মারিয়াঃ আমি মানিনা।
রিকঃ দেখ জানু এবার কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে।
মারিয়াঃ কোনটা বেশি হচ্ছে আর কোনটা কম সেটা আমি বুঝি। আর আমার কসম তোমাদেরকে। প্লিজ বলো (কাদতে কাদতে)
আরিয়ানঃ মারিয়া ওর স সত্যি এ্যাকসিডেন্ট হয়েছে। ও এখনো আই সি ইউ তে আছে। ও বলেছিলো ও যদি বেচে যায় তাহলে বলতে মারা গেছে। ও সুস্থ হয়ে আমেরিকা চলে যাবে। তুই চিন্তা করিস না তোর লাইফ থেকে ও চলে যাবে।
মারিয়াঃ ও এখন কতো নাম্বার কেবিনে আছে।
আরিয়ানঃ ৩০২
ভাইয়ার বলা শেষ হতেই আমি ওখান থেকে চলে আসলাম।


৩০২ নাম্বার কেবিনে…………..
মারিয়া কেবিনে গিয়ে দেখে আয়ান নিশতব্দ হয়ে শুয়ে আছে। মারিয়া ওর পাশে গিয়ে একটা চেয়ারে বসলো। তারপর আয়ানের হাত ধরে বলতে শুরু করলো……….

মারিয়াঃ এটা কি করলে তুমি আয়ান। আমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য নিজের এতো বড় ক্ষতি করলে। যখন আমি তোমাকে চেয়েছি তখন আমি পাইনি, যখন তুমি আমাকে চেয়েছো তখন তুমি পাওনি, আর আজ যখন আবার আমি তোমাকে চেয়েছি আবার তুমি আমাকে ছেরে চলে গেলে। কত কষ্ট দিবে তুমি আমায়। আর কতো।
বলতে বলতেই মারিয়ার চোখ থেকে দুই ফোটা পানি গরিয়ে পরল আয়ানের হাতে।
।।
হাতে পানির ফোটা পেয়ে পিট পিট করে চোখ খুললো আয়ান। সামনে তাকাতেই দেখলো মারিয়া ওর হাত ধরে কাদছে। প্রথমে অবাক হলেও পরক্ষনে মারিয়ার উদ্দেশ্য বলে উঠলো আয়ান………..
আয়ানঃ ত তুমি এ এখানে ক কি করছো।
মারিয়াঃ কেন আমি থাকতে পারিনা। (চোখর পানি মুছে)
আয়ানঃপ্লিজ চলে যাও।
মারিয়াঃ ওই একই ভুল আবার রিপিট করছো।
আয়ানঃ মানে?
মারিয়াঃ তুমি পাগল। আমি বলেছি আমার জীবনে আর তোমাকে ফিরাবোনা দেখে এভাবে নিজের এ্যাকসিডেন্ট করিয়ে দিলে। আমাকে তো কষ্ট না দিয়ে তোমার সান্তি হয় না। আমি ওই কথা গুলো মজা করে বলেছিলাম। আমি চেয়েছিলাম ২ দিন পর ঠিক ওই জায়গায় আমি তোমাকে প্রপজ করবো। কিন্তু তুমি নিজের এই অবস্থা করে বসে আছ। আবার বলেছো তোমার মারা জাওয়ার খবর যেন আমাকে দেওয়া হয়।
আয়ানঃ তুমি মজা করেছিলে।
মারিয়াঃ হুম।
আয়ানঃ আই এম সরি মারিয়া। আর কখনো তোমাকে এভাবে কষ্ট দিবোনা। আমি যদি তোমাকে নাপেতাম না আমেরিকার গিয়ে নিজেকে শেষ করে ফেলতাম।
মারিয়াঃ এখনো তো আধ মরা হয়ে আছো। আর কখনো যদি এমন কিছু করেছো তো তোমাকে খুন করে আমি নিজে মরবো। দেখে নিও 😡😡।
আমার কথা শুনে আয়ান শুধু একটা মুচকি হাসি দিলো।
কিছুক্ষন পর রুমে ভাইয়ারা আসলো।
রিক এসে আয়ানের পাশে দারিয়ে বলে উঠলো………..
রিকঃ আই এম সরি আয়ান। আমরা জানুকে আটকাতে পারিনি। জানিস আমরা ডেটবডিও দেখিয়েছিলাম কিন্তু ও বিশ্বাস না করে কাপর সরিয়ে দেয়। আর আমাদের কসম দিয়ে দেয় তাই তো বলতে বাধ্য হই।
আয়ানঃ থাক আর লাগবেনা।
মারিয়াঃ ওয়েট ওয়েট রিক রাফি তোরা আয়ানকে তুই করে কেন বলছিস।
রাফিঃ তো বন্ধুকে তুই বলবো না তো কি তুমি বলবো।
মারিয়াঃ তোরা বন্ধু হলি কবে। 😒😒
রিকঃ হেহে সম্পার বোভাতের ২ দিন পর থেকে আমরা চার জন তো বন্ধু হয়ে গেছি। 🙃🙃(ক্যাবলা মার্কা হাসি দিয়ে)
মারিয়াঃ শালা বাটপারের দল।
তিশাঃ ছি ছি এসব বলতে নেই।
মারিয়াঃ এই তুই চুপ কর। বাই দা ওয়ে তোরা দুইজন ও কি ওদের দলের।
রুহিঃ না না আমরা তো তোর দলের।
ফারিয়াঃ হ্যা আমিও আছি কিন্তু।
মারিয়াঃ এবার হলো ইকুয়াল।
ফারিয়াঃ রাইট।
মারিয়াঃ এবার সবাই বাহিরে চলো। আয়ানকে রেষ্ট নিতে দাও।
সবাই একসাথেঃ হুম।
তারপর সবাই এক এক করে বাহিরে চলে গেলাম।










#চলবে………

তোমাকে চাই পর্ব-১০

0

#তোমাকে_চাই
#মারিয়_তুন_রিয়া
#পর্ব_১০
গাড়ি চলছে তার আপন গতিতে কারও মুখে কোনো কথা নেই। হটাৎ আয়ান গাড়ি ব্রেক করলো। তারপর বলে উঠলো………
আয়ানঃ নামো।
মারিয়াঃ তুমি আমাকে এখানে আনতে চেয়েছিলে।
আয়ানঃ না।
মারিয়াঃ তাহলে।
আয়ানঃ আগে নামো তারপর বলছি।
তারপর আমি আয়নের কথা মতো নেমে পরলাম। এরপর আয়ান গাড়িটা নিয়ে একটা গাছের পিছনে চলে গেলো। ওখানথেকে এসে আমার চোখে একটা কালো কাপড় বাঁধতে শুরু করলো। এটা দেখে আমি বলে উঠলাম
মারিয়াঃ আরে কাপড় কেন বাধছ।
আয়ানঃ হুশশশশ একটা কথা না।
মারিয়াঃ কিন্তু………
আয়ানঃ বললাম তো একটা কথা না।
আয়ান কাপড়টা বেধে আমাকে কলে তুলে নিলো। এতে আমি বেশ অবাক হলেও কিছু বললাম না।
।।
কিছুক্ষন পর………..
কিছুক্ষন পর আয়ান আমাকে নিচে নামিয়ে দিলো। নামিয়ে দিয়েই আমার চোখটা খুলে দিলো। প্রথমে ঝাপসা দেখলেও এখন সবটা পরষ্কার। চারিদিকে তাকিয়ে আমি মুগ্ধ।
কারণ….
চারিদিকে শুধু কালো গোলাপের গাছ। সাথে মন শীতল করা ঠান্ডা বাতাস পাখির কিচির মিচির শব্দ। সব মিলিয়ে just Wow । আমি যেখানে দারিয়ে আছি তার চতুর দিকে কালো গলাপের পাপরি ছিটানো। কিছুক্ষন পরে আয়ান আমার সামনে হাটু গেরে বসলো। তারপর বলতে শুরু করলো…………

আয়ানঃ যানি তোমাকে ওনেক কষ্ট দিয়েছি। গত ৩ বছর আমাদের মধ্যে কেউ ভালো থাকেনি। হয়তো তুমি আমার চেয়েও বেশি কষ্ট পেয়েছো কারণ তোমার কছের মানুষ তোমাকে ভুল বুঝেছে। কিন্তু এই তিন বছর যে আমার ওপর কি ঘটেছে আমিই যানি। হ্যা এটা ঠিক এই কষ্ট জন্য দাই আমি। এটার জন্য আমি তোমাকে কতো ইগনোর করেছি। কিন্তু যানো তা আমার লাইফে কতো বড়ো ভুল ছিলো সেটা আমি এখন রিয়েলাইজ করছি। মারিয়া (আমার হাত ধরে) আমাকে কি একটা বার ক্ষমা করা যায় না। শুধু একটা বার আমাকে ক্ষমা করো দেখ। আমি আর কখনো তোমাকে ছেরে যাবোনা। কখনো আর একই ভুল রিপিট করব না। প্লিজ একটা বার আমাকে কাছে টেনে নাও প্লিজ।

মারিয়াঃ আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম। তোমাকে আমি কাছেও টেনে নিব। তোমাকে আমি নিজে প্রপজ করবো কিন্তু আজকে না ২ দিন পর ঠিক এই জায়গায়। কিন্তু আজকের জন্য সরি। (মনে মনে)
আয়ানঃ কি হলো মারিয়া কিছু বলো।
মারিয়াঃ তোমাকে আমি ক্ষমা করে দিলাম। কি……..
আয়ানঃ সত্যি (উঠে দারিয়ে)
মারিয়াঃ কিন্তু আমার জীবনে আর তুমি ফিরবে না।
আয়ানঃ মানে।
মারিয়াঃ তুমি সেদিন বলেছিলে মনে আছে। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। হ্যা এটা সত্যি কিন্তু আমার ভালোবাসার চেয়ে ইগো টা একটু বেশি। % হিসেবে ধরতে গেলে 100% এর মধ্যে 70% ইগো আর 30% ভালোবাসা। ( ডাহা মিথ্যা কথা কতাটা উল্টা হবে।— লেখিকা) তাই আমি তোমাকে আমার জীবনে ফিরিয়ে আনব না। সরি।

এটা বলে আমি চলে আসলাম আয়ান আমাকে অনেকবার ডেকেছে কিন্তু আমি শুনিনি। আমার দেখার খুব ইচ্ছে আয়ানের এখন কি অবস্থা। কিন্তু দেখতে তো আর পারবো না তাই চলে আসলাম।




রাত ৮ টা………..
আমি বসে বসে প্লানিং করছি। কিভাবে প্রপজ করবো। কালকে আগে রাফি, রিক,রুহি, তিশা এদের সাথে কথা বলে সব ঠিকঠাক করতে হবে। আমি যখন এগুলো চিন্তা ভাবনা করতেছি তখন হতবম্ভ হয়ে ঘরে ঢুকলো আপু। আমি আপুর এই অবস্তা দেখে বলে উঠলাম…………..
মারিয়াঃ এগুলো কি আপু। তোর নিজের উপর কোন নজর নেই। এভাবে দৌড়াচ্ছিস কেন। যদি পরে যাস তাহলে কি হবে বুঝতে পারছিস।
ফারিয়াঃ মা মারিয়া আ আা আয়ান।
মারিয়াঃ কি হয়েছে আয়ানের।
ফারিয়াঃ আ আ আয়ান…….
বলতে বলতেই কেদে উঠলো আপু। আপুর এ অবস্থা দেখে আমি ঘাবড়ে গেলাম। কাপা কাপা গলায় বলে উঠলাম………..
মারিয়াঃ ব বলনা। ক কি হয়েছে।
ফারিয়াঃ আ আয়ানের এ্য এ্যা এ্যাকসিডেন্ট হ হয়েছে। ও সিটি হসপিটাল এ আই সি ইউ তে আছে।
আপুর কথা শুনা মাত্র আমার দুনিয়া থমকে দাঁড়ালো। আমি কি করবো কিছু বুঝতে পারছি না। সব কিছু অন্ধকার অন্ধকার লাগছে। আমি আর কিছু না বলে সোজা হসপিটালে চলে গেলাম।




…………..কাজ হয়েছে………
…………হুম……….
………….কোথায় ও………
………….চোলে গেছে………..
………….গুড…………
.
.
.
.
হসপিটালে………
আমি হসপিটালে এসে সোজা আই সি ইউ এর সামনে যাই। গিয়ে দেখি রিক, তিশা, রাফি, রুহি আর ভাইয়া দারিয়ে আছে। আমি সোজা ভাইয়ার সামনে গিয়ে বললাম………
মারিয়াঃ ভ ভাইয়া আয়ানের ক কি হয়েছে।
আরিয়ানঃ ওর খুব ক্রটিকেল অবস্থা। ডাক্তার বলেছে 99% চান্স ওর না থাকার। আমি কিছু বুঝতে পারছি না। আমার সব কিছু কেমন যেন লাগছে।
ভাইয়ার কথা বলা শেষ হতেই আই সি ইউ এর সামনে থাকা লাল লাইট টা অপ হয়ে গলো। কিছুক্ষন পর ডাক্তার আর র্নাস বেরিয়ে আসলো। আমি ডাক্তারের কাছে গিয়ে বলে উঠলাম……………
মারিয়াঃ ডক্টর আয়ানের ক কি অবস্থা।
ডাক্তারঃ আপনি কে।
মারিয়াঃ আ আমি ও ওর ওয়াইফ।
ডাক্তারঃ সরি মিসেস খান। সি ইজ নো মোর।
এটা বলে ডক্টর চলে গেলো।
ডক্টর এর কথা শুনে আমার কেমন যেন সব অন্ধকার অন্ধকার লাগছে। তাও নিযেকে যথা সম্ভব শক্ত রেখেছি। আয়ানের ডেটবডি না দেখা পযন্ত আমার বিশ্বাস হবে না।










#চলবে………….

তোমাকে চাই পর্ব-০৯

0

#তোমাকে_চাই
#মারিয়া_তুন_রিয়া
#পর্ব_৯
আয়ানঃ বাট আই হ্যাব এ কানডিশন।
মারিয়াঃ ক কী। (কিছুটা ভয় পেয়ে)
আয়ানঃ ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি তোমাকে আমায় ক্ষমা করতে বলবো না।
মারিয়াঃ তাহলে কি শর্ত?
আয়ানঃ দারাও বলছি….
বলেই আয়ান কাওকে একটা ফোন করলো
।।
কিছুখন পর……..
কিছুখন পর রুমে একটা মাক্সপরা লোক ডুকলো। লোকটি ডুকে আয়ানের হাতে একটা প্যাকেট দিয়ে চলে গেলো। আয়ান প্যাকেটটা নিয়ে আমার সামনে এসে বলে উঠলো……………
আয়ানঃ আমি তোমাকে শর্ত হিসেবে আমাকে ক্ষমা করে দিতে বলতে পারতাম কিন্তু আমি তা বলিনি কারণ আমি যানি তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছো, তুমি আমাকে এখনো আগের মতো ভালোবাস না তার চেয়ে ডাবল ভালোবাস। কিন্তু তোমার ইগো সেটা তোমাকে স্বিকার করতে দিচ্ছে না।ধরো (আমার সামনে ওই প্যাকেটটা দিয়ে)
মারিয়াঃ কি করবো এটা।
আয়ানঃ এটার ভিতর কিছু জিনিস আছে। সেগুলো পরে আমার সাথে একটা জায়গায় যেতে হবে।
মারিয়াঃ আমি যদি বলি আমি যাবোনা তাহলে?
আয়ানঃ তুমি যেতে বাদ্ধ। বিকজ দিস ইজ মাই কানডিশন।
মারিয়াঃ কবে যেতে হবে।
আয়ানঃ ৫দিন পর।
আমি আর কিছু বললাম না। সোজা অফিস থেকে বেরিয়ে এলাম। বেরিয়ে একটা ট্যাক্সি নিয়ে মেডিকেলের উদ্দেশ্য বেরিয়ে পরলাম।
আমি ট্যাক্সিতে বসে বসে আয়ানের কথা গুলো ভাবছি। অবশ্য ধরতে গেলে ওর কথা গুলো সত্যি। আমি ওকে আগের থেকে বেসি ভালোবেসে ফেলেছি। আমিও এখন চাই ওর কাছে ফিরে যেতে চিৎকার করে বলতে যে আমি ওকে ভালোবাসি।
আমি এসব ভাবছি। ভাবতে ভাবতে কখন যে মেডিকেলে চলে এসেছি খেয়ালি করিনি। আমি গাড়ি থেকে নেমে সোজা মেডিকেলের ভিতর ঢুকে গেলাম। গিয়ে আবার কাজে লেগে পরলাম।
।।
আমাদের কাজ শেষ হয় সন্ধা ৭ টার দিকে। কাজ শেষ করে যে যার যার মতো বড়ি ফিরে আসি।
।।
বাড়িতে………
আমি বারিতে এসে ফ্রেস হয়ে কিছু খেয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দেই। তখনি মনে পরে আয়ানের দেওয়া প্যাকেটের কাথা। তাই আমি উঠে আলনারি থেকে প্যাকেটটা নিয়ে বিছানায় বসলাম।
প্যাকেটটা খুলে দেখি তাতে একটা সুন্দর ল্যাহেংগা রাখা। কালো কালারের একটা গর্জিয়াছ ল্যাহেংগা। খুব সুন্দর কাজ করা তাতে। তার সাথে কালো ব্রেসলেট আর একটা কালো পাথরের নেকলেস। সাথে একটা চিঠি। আমি চিঠিটা হাতে নিয়ে পরতে শুরু করলাম।
চিঠিটা তে লেখা ছিলো।
যানি তুমি এই কালো ল্যাহেংগা দেখে অবাক হচ্ছো। যে আমি তোমাকে ক্যানো এগুলো দিলাম। এগুলোর সব এ্যানসার তুমি ৫ দিন পরে পেয়ে যাবা।
চিঠিতে আরও লেখা ছিলো……….
কালো টিপ
অগোছালো চুল
মিষ্টি হাসির আরালে
চোখের কালো ভাজে লুকিয়ে থাকা
হাজারো না বলা কথা

সত্যি তুমি
সব মিলিয়ে পরিপূর্ণ ❤❤




৫ দিন পর………..
এই ৫ দিন আমার খুব ভালো কেটেছে। আয়ান ওর কথা রেখেছে। ওর ইর্ম্পটান মিটিং রেখে নবীন বরণে এসেছিলো। এখন কথা রাখার পালা আমার। এখন বিকাল ৪টা। আমি আয়ানের দেওয়া ল্যাহেংগা ব্রেসলেট আর নেকলেস পরে রেডি হচ্ছি। আমি রেডি হয়ে পিছনে ঘুরে দেখি আপু দারিয়ে আছে।
আপু আমাকে দেখে বলে উঠলো……….
ফারিয়াঃ কিরে তুই এভাবে রেডি হয়ে কোথায় যাচ্ছিস। দেখে তো মনে হচ্ছে বিয়ে টিয়েতে। কিন্তু তোর তো এরকম ল্যাহেংগা নে। তাহলে কোথায় পেলি। আর এতোদিন তো তুই শপিং এও যাস নি তাহলে? 🤨🤨
মারিয়াঃ আরে এতোগুলো একসাথে বললে কিভাবে বলবো। তোর ১ম উত্তর হলো আমি কোনো বিয়েতে যাচ্ছিনা।
২য় আমি কথায় যাচ্ছি আমি নিজেও জানিনা।
৩য় এই ল্যাহেংগা আমাকে আয়ান দিয়েছে।
আর তোর মনে এখন প্রশ্ন যাকতে পারে আমি কেনো আয়ানের দেওয়া জিনিস পরেছি। আর সেটার উত্তর হলো আমাদের মদ্ধ একটা ডিল হয়েছিল। যেখানে বলা হইছে আয়ান যদি নবিন বরণে আসে তাহলে ও যা বলবে আমি তাই করবো।
তাই ওর কথা মতো আমি রেডি হয়ে ওর সাথে যাচ্ছি। কিন্তু কোথায় তা জানিনা। এখন সব ক্লিয়ার।
ফারিয়াঃ হুম।
মারিয়াঃ তাহলে আমি যাই।
ফারিয়াঃ আচ্ছা যা। সাবধানে যাবি।
মারিয়াঃহুম।
বলেই আমি বেরিয়ে আসলাম। বাড়ির বাহিরে আসতেই দেখি আয়ান গাড়ি নিয়ে দারিয়ে আছে। আমি ওকে দেকে হা করে তাকিয়ে আছি। কারণ ও একটা ব্লাক কালার
প্যান্ট, হোয়াইট কালার হাফ হাতা টি-শার্টে।
ব্লাক সানগ্লাস। চুল গুলো জেল দিয়ে সেট করা। পুরাই ক্রাস। আমি ওকে খুটিয়ে খুটেয়ে দেখছি এমন সময় আয়ান আমার কাছে এসে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিস ফিস করে বলে উঠলো………..
আয়ানঃ হায়য়য়য়য়য়য় ম্যা মারজাওয়া।
ওর কথা শুনে আমি হজকচিয়ে উঠলাম। আমি বলে উঠলাম……..
মারিয়াঃ এখানে দারিয়ে থাকবা না যাবা।
আয়ানঃ যাওয়ার এতো তারা 😉😉।
মারিয়াঃ গেলে চলো না গেলে আমি ভিতরে গেলাম।
আয়ানঃ নানা যাবো চলো।তারপর আমি আর আয়ান গিয়ে গারিতে বসলাম।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
#চলবে……….

তোমাকে চাই পর্ব-০৮

0

#তোমাকে_চাই
#মারিয়া_তুন_রিয়া
#পার্ব_৮
কলেজ গেটে আসতে ই 1st year এর একটা মেয়ে এসে বললো প্রিনসিপাল সার নাকি আমাকে ডেকেছে। প্রথমে অবাক হয়েছি। কারন প্রিনসিপাল সার আমাকে কখনো ডাকেনি। তো আমি কি এমন ভুল করলাম যে তিনি আমাদের ডাকলো। তাই ভয়ে ভয়ে প্রিনসিপাল সার এর রুমের দিকে এগোলাম। প্রিনসিপান সার এর রুমের সামনে গিয়ে বলে উঠলাম………..
মারিয়াঃ মে আই কাম ইন সার।
সারঃ ইয়েস কাম।
সারের বলা শেষ হতই আমি ভতরে প্রবেশ করি। ভতরে প্রবেশ করতেই দেখি, রুহি, রিক, রাফি, তিশা সাবাই আছে। তা দেখে অনেকটা অ বাক হই। আর ভাবছি কি এমন কাজ আছে যার জন্য প্রিনসিপাল সার আমাদের সবাইকে ডাকলো। আমার ভাবনার ছেদ পরে সার এর ডাকে। তিনি আামাদের উদ্দেশ্য বলে উঠলেন……………
সারঃ তো 5 star গ্রুপ কেমন আছো তোমরা।
সবাই একসাথেঃ জী আলহামদুলিল্লাহ সার আপনি।
সারঃ হুম আমিও আলহামদুলিল্লাহ। তো তোমাদের যে জন্য ডেকেছি তা হলো তোমরা তো জানো প্রতিবছর আমাদের এই মেডিকেল কলেজে নিবন বরন অনুষ্ঠান হয়।
মারিয়াঃ জী সার।
সারঃ এবার তো একটু লেট হয়ে গেছে। তাই আমরা চাই এবারের অনুষ্ঠানের আয়োজন তোমরা করো। বা……..
রিকঃ এতো খুব ভালো খবর সার। আমরা অবশ্যই করবো (খুসি হয়ে) ।
সারঃ বাট একটা প্রবলেম।
তিশাঃ কি সার।
সারঃ এ পুরো আয়োজন তোমাদের কালকের মদ্ধ শেষ করতে হবে।
মারিয়াঃ সার এতো তারাতারি।
সারঃ হুম কেনো পারবে না।
রাফিঃ জী সার ক্যানো পারবোনা।
সারঃ হুম আমি জানতাম তমরা পারবে। ও হ্যা এবারের স্পেসাল গেস্ট কিন্তু আয়ান খান আর আরিয়ান শেখ সাথে তার ওয়াইফ ফারিয়া শেখ।
রিকঃ ওকে সার নো প্রবলেম। আমরা ইনভাইট করে নিব।
সারঃ আর একটা কথা তোমাদের সাথে পুরো কলেজ থেকে তোমরা যাদের যাদের নিতে চাও নিয়ে নিও। এন্ড তোমাদের কাজে হেল্প করার জন্য ডা.রিফাত এন্ড ডা. রাজ থাকছে।
রুহিঃ ওকে সার। আমরা কমপিলিট করে নিব।
আমরা প্রিনসিপাল সার এর সাথে কথা বলে ক্যানটিনে গিয়ে বসলাম। ক্যানটিনে বসেই আমি বলতে শুরু করলাম…………..
মারিয়াঃ তোরা কেনো বললি পারবি।
রাফিঃ সার আমাদের উপর এতো ভরসার চোখে তাকিয়ে ছিলো যে নাই করতে পরলাম না।
মারিয়াঃ তুরা না পারলে আমাকে বলতি আমি করে দিতাম। এখন এতো কম সময়ে কি করে হবে সব কাজ। (মাথায় হাত দিয়ে)
রুহিঃ চিন্তা করিসনস আমরা সবাই একসাথে আছিনা। সব করতে পারবো। দরকার পরলে রাতে বাসায় যাবোনা।
তিশাঃ ঠিকিতো একরাত বাসায় নাগেলে কি এমন হবে।
রিকঃ ওর চিন্তা এটা না। ওর চিন্তা অন্য কিছু তে।
মারিয়াঃ মানে।
রিকঃ মানে তোর চিন্তা তুই কিভাবে আয়ানকে ইনভাইট করবি। তাই তো।
মারিয়াঃ তোরা যখন বুঝতেন পরছিস তাহলে কেন সারকে হ্যা বললি। এখন আপু আর ভাইয়াকে নাহয় আমি ম্যানেজ করে নিয়ে আসবো। কিন্তু ওকে কিভাবে? তোরা কেউ গিয়ে ইনভাইট করতে পারবি।
রাফিঃ তুই জানিস আমরা কেউ গেলে কোনো লাভ হবেনা। তারপরেও বলবি।
মারিয়াঃ কি করবো বল। ওর সমনে আমি যেতে পারিনা। নাজানি আম্মু আব্বু আমার বিয়ের কথা শুনলে কি ভাববে।
তিশাঃ আরে কিছু হবেনা। এতো চিন্তা করিস না। সব ঠিক থাকবে।
রুহিঃ হ্যা সব কিছু ঠিক হয়ে জাবে। আমরা আছিতো তোর পাসে।
রিকঃ হুম।
রাফিঃ হইছে অনেক ইমোসনাল হওয়া। এখন কাজ ও করতে হবে। উঠ তারাতারি।
এটা বলই রাফি আনাদের সবাইকে নিয়ে গেলো।




আমরা প্রথমে সব স্টুডেন্টদের নিয়ে নিলাম। যারা যারা আমাদের সাথে কাজ করবে আর রাত জাগতে পারবে। এরপর আমি আর তিশা গেলাম ডা.রিফাত এর কেবিনে। আর রাফি আর রুহি গেলো ডা.রাজ এর কেবিনে। আর রিক ভাইয়া আর আপুকে বলতে গেছে। আমি কেনিনের সামনে গিয়ে বলে উঠলাম…………….
মারিয়াঃ উই আই কাম ইন সার।
রিফাতঃ ইয়েস কাম।
মারিয়াঃ সার নবিন বর…………
রিফাতঃ আমি জানি ডা.রায়হান আমাকে বলেছে। তো কি করতে হবে বলো।
মারিয়াঃসার প্রথমে তো আপনাকে আজকে এখানেই থাকতে হবে। আর আমাদের কাজ ঠিকমতে হচ্ছে কি না তা দেখতে হবে।
রিফাতঃ ওকে। আমি আমার কাজ শেষ করেই আসছি।
মারিয়াঃ ওকে সার তাহলে আমরা এখন যাই।
রিফাতঃ হুম যাও।
সার এর কথা শেষ হতেই আমি আর তিশা বেরিয়ে এলাম।
তারপর আমরা আবার একসাতে গয়ে বিভিন্নরকম কাজে লেগে পরলাম।




দেখতে দেখতে রাত হয়ে গেছে। এখন প্রায় রাত ৩টা বাজে। সবাই যে যার মতো রেস্ট নিচ্ছি। আমি এখনো ভাবছি কি ভাবে ওকে ইনভাইট করব। তখনি পেছন থেকে হাত কাখলো কেউ। প্রথমে ঘাবরে গেলেও পরক্ষণেই রিককে দেখে নিজেকে সামলিয়ে নিই। ও এসে আমার পাসে বসে বলে উঠলো………….
রিকঃ কিরে এখনো ওই ইনভিটিশন নিয়ে ভাবছিস।
মারিয়াঃ হুম।
রিকঃ আমি বুঝতে পারছি না তুই এতো চিন্তা করিস কেনো। আয়ান কি তোকে খেয়ে ফেলবে নাকি। আজাইরা টেনসন নিতাছস।
মারিয়াঃ ভাই টেনসন আপনা আপনি এসে পরে।
রিকঃ তুই কি নি টেনসন করতাছস এটাতো বলবি।
মারিয়াঃ ও যদি না আসে তো।
ডাহা মিছা কথা।(লেখিকা)
রিকঃ তুই ও না। আর আমি কি না কি ভাবলাম।
তারপর আমরা আরও কিছুখন কথা বললাম। তারপর সকাল পযন্ত রেস্ট নিলাম।
।।
সকালে…………..
সকালে উঠে নাস্তা করে যার যার কাজে লেগে পরলাম। আমি কাজ করছি এমন সময় রাফি বলে উঠলো………….
রাফিঃ কিরে তুই আয়ানের অফিসে যাবিনা।
রাফির কথা শুনে আমার একটু খটকা লাগলো। কারন রাফি কখনো আয়ানের নাম ধরে ডাকেনি। কাল রাতেও রিক আয়ানের নাম ধরে ডাকছিলে। ব্যাপার কি। আমার ভাবনার ছেদ ঘটলো রাফির কথায়।
রাফিঃ কিরে কই হারিয়ে গেলি।
মারিয়াঃ না এমনি।
রাফিঃ তো যা লেট হয়ে যাচ্ছে তো নাকি।
মারিয়াঃ হুম।




আমি এখন আয়ানের অফিসের সামনে দারিয়ে আছি। একবার অফিসটার দিকে তাকিয়ে দির্ঘশ্বাস নিলাম। একদিন এই এ অফিসে দারিয়ে বলেছিলাম কখনো পা রাখবনা এই অফিসে কিন্তু ভাগ্যর কি খেলা আবার আসতে হলো। আমি এ অফিসটার দিকে আর একবার চোখ বুলিয়ে অফিসের ভিতরে ঢুকলাম। যেহেতু আয়ানের কেবিনে এর আগেও গিয়েছি তাই ওর কেবিনটা চিনি। তাই সোজা ওর কেবিনে চলে গেলাম।
।।
কেবিনের ভিতর………….
আয়ান আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো………..
আয়ানঃ কি ব্যাপার তুমি এখানে।
মারিয়াঃ হুম। আসলে আমাদের মেডিকেলে নবীন বরণের আয়োজন করা হয়েছে। তাই ডা.রায়হান বলেছে তোমাকে চিপগেষ্ট ইনভাইট করতে। তাই আর কি।
আয়ানঃ ও! আমি যাবো। তোমি বোলছ আর আমি যাবোনা তা কি করে হয়।
মারিয়াঃ Thank you so much.
এটা বলে যেই আমি আসতে নিবো তখনি আয়ান আবার বলে উঠলো………..
আয়ানঃ বাট আই হ্যাব এ কানডিশন।
মারিয়াঃ ক কী। (কিছুটা ভয় পেয়ে)










#চলবে………..
আমি মাত্র ১০ মিনিটে লিখছি। তাই বনান ভুল হবার আশংকা আছে

তোমাকে চাই পর্ব-০৭

0

#তোমাকে_চাই।
#মারিয়া_তুন_রিয়া
#পর্ব_৭
এমন সময় রুমে ঢুকলো কেউ রুমে ঢুকে রিকের সামনে একটা চেয়ার নিয়ে বসলো সে। বসে তাদের মাথার ওপর যে বাল্প টা আছে সেটা জালিয়ে দিলো। জালিয়ে দিতেই রিক সামনে থাকা লোকটিকে দেখে বলে উঠলো…………..
রিকঃ O.M.G! আমিতো ভাবতেই পারছি না দা মাফিয়া কিং আয়ান খান আমাকে কিডনাপ করেছে।
আয়ানঃ এই তোমার আমাকে দেখে ভয় করছে না।
রিকঃ না। আমার তো আরও নিজের উপর প্রাউড ফিল হচ্ছে।
আয়ানঃ আমি যদি তোমাকে এখন মেরে দেয় তাহলে।
রিকঃ সেটা তুমি করবেন না তা আমার ভালো করে যানা।
আয়ানঃ মানে?
রিকঃ মানে এই যে তুমি যদি আমাকে মারতেন তাহলে এতখনে তোমার বর্ডিগাডরা আমার একটু হলেও খাতির করতো। কিন্তু তা কিছুই করেনি। আর তুমি বিনা কারনে কাউকে মারোনা না।
আয়ানঃ ইনটেলিজেন্ট।
রিকঃ আই নো। 😉😉
আয়ানঃ 😒😒
রিকঃ এভাবে তাকানোর কিছু হয় নি।
আয়ানঃ তো আমরা এখন আসল কথায় আসি।
রিকঃ অবশ্যই।
আয়ানঃ মারিয়ার সাথে তোমার কি সম্পর্ক।
রিকঃ জানু! ওতো আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড। আমার জান। দুইমাত্র কলিজার টুকরা বোন।
আয়ানঃ তা তুমি ওকে জানু কেনো বলছো।
রিকঃ তা জানু বলবো না তো কি বলবো।
আয়ানঃ মানে?
রিকঃ আরে ওর আরেক নাম তো জানোভি। তাই আমি আর রাফি ওকে জানু বলি।
আয়ানঃ ওহ (হতাস হয়ে)। এটা আমি কি করলাম।
রিকঃ এনি প্রবলেম।
আয়ানঃ নো। গার্ডদের বলছি তোমাকে তোমার বারিতে পৌঁছে দিতে।
রিকঃ না তার কোন দরকার নেই। আমি আমার গার্ডদের আসতে বলছি।
আয়ানঃ তোমার গার্ড মানে।
রিকঃ আমি R.R কম্পানির মালিক দিহান রয়জাদ এর একমাত্র ছেলে। রিক রয়জাদ।
আয়ানঃ ও তুমি দিহান আঙ্কেল এর ছেলে।
রিকঃ জী আপনি আমার আব্বুকে চিনেন।
আয়ানঃ আজব! চিনবনা কেনো। আমরা একসাথে ওনেক বিজনেস ডিল করেছি। ওনি আমার পুরোনো ক্লাইন্ট।
রিকঃ ও আচ্ছা।
আয়ানঃ তহলে চলো বাহির পযন্ত একসাথে যাই। তারপর তুমি তোমার রাস্তায় আমি আমার রাস্তায়।
রিকঃ কিভাবে বহিরে যাবো।
আয়ানঃ কিভাবে মানে হটে যাবা।
রিকঃ হেটেয় তো কিন্তু কিভাবে। আমার তো হাত পা বাধ।
আয়ানঃ ও! ওয়েট এখনি খুলে দিচ্ছি।
।।
হাত পা খোলার পর…………….
আয়ানঃ রিক আমাকে একটা হেল্প করতে পারবা।
রিকঃ হুম বলো।
আয়ানঃ তুমি কি আমার আর মারিয়ার বেপারে কিছু জানো। মারিয়া কি আমাদের ব্যাপারে তোমাকে কিংবা তোমাদের ফ্রেন্ড সারকেল কে কিছু বলছে।
রিকঃ হুম। কালকে তোমার আর জানুর বিয়ে হওয়ার পরেই জানু আমাদের সব বলছে।
আয়ানঃ তাহলে তুমি আমাকে একটু হ্লেপ করতে পারবা মারয়াকে আবার আবার আমার কাছে নিয়ে আসার।
রিকঃ ডোনাল্ড ওয়ারি ব্রো। আই ওয়েল ট্রাই মাই বেষ্ট।
আয়ানঃ Thank You.
তারপর আয়ান আর রিক যে যার গন্তব্যে পোছে গেলো।




Mujko yea tu mil jabe……..
Ab dil se dil mil jabe……….
Keu hea yea itna fasla……….
Lamhe tu fir na ane inko tuna dejane…………
Tu mujpe kudko de luta……..
Kavi sase mye varu ……….
Kavi tere sang chalu……….
Meri jisme jamiya teri kusbu moslu………….
Dilne badal kar raihu darkane meri sun…………..
Tujko me karlu hasil lagehe yehi tum……….
Dilne ba……
ফারিয়াঃ কি ব্যাপার আমার বোন দেখি গান গাচ্ছে।
মারিয়াঃ ঐ আর কি। (হাত থেকে গিটার নামিয়ে)
ফারিয়াঃ সূর্য আজকে কোন দিকে উঠলো।
মারিয়াঃ সূর্য উঠে ওনেকখন আগে অস্তও চলেগেছে।
ফারিয়াঃ তাও ঠিক।বাট তোর মুখটা এরকম লাগছে কেনো। কেমন শুকনা শুকনা হয়েগেছে।
মারিয়াঃ কই না তো এমনি।
ফারিয়াঃ বল কি হয়েছে।
মারিয়াঃআয়ান এসেছিল পার্টিতে।
ফারিয়াঃ কি বলছিস। ও কেমো এসেছিলো।
মারিয়াঃ রিদম ভাইয়া ইনভাইট করেছিলো।
ফারিয়াঃ কিছু করেছো তোর সাথে।
মারিয়াঃ ন না।
ফারিয়াঃ তাহলে আর সমস্যা কি। ঘুমিয়ে পর। গুড নাইট।
মারিয়াঃ গুড নাইট।




এদিকে অন্ধকার রুমে বসে আছে আয়ন। পুরো পাগল পাগল অবস্থা হয়ে আছে তার। চুল গুলো উসকো খুসকো চোখ লাল হয়ে আছে মুখে মলিনতা হাতে অনেক গুলো খত স্থান, এক হাতে মদের বোতল শার্টএ রক্তের দাগ, যাকে বলে একেবারে যইচ্ছা তাই অবস্থা। এমন সময় ঘরে ঢুকলো আরিয়ান।
আরিয়ামঃ এগুলো কি করছিস আয়ান।
আয়ানঃ কৈ কি করছি।
আরিয়ানঃ তাহলে তোর এ অবস্তা কেনো।
আয়ানঃ এসব আমার মায়াপাখিকে কষ্ট দেওয়ার ফল।
আরিয়ানঃ মানে।
আয়ানঃ জানিস আজকে আমি আবার অর্ধেক কথা শুনে আমার মায়া পাখিকে কষ্ট দিয়ে ফেললাম।
আরিয়ানঃ হ্যা এটা ঠিক যে কাজটা তুই ঠিক করিসনি। বাট তোকে স্ট্রং হতে হবে। ছোট খাটো বিষয়ে নিজের খতি করলে কি করে হবে। নিজের ওপর ভরসা রাখ দেখবি সব ঠিক হয় যাবে।
আয়ানঃ মারিয়া আমাকে আর ভালোবাসেনা তাইনা।
আরিয়ানঃ কো বলেছে তোকে ভালোবাসেনা। ও এখনো তোকে ওনেক ভালোবাসে। কিন্তু একটু অভিমান করে আছে। যা তোকেই ভাংয়াতে হবে।
আয়ানঃ হুম আমি ওর অভিমান ভাংয়াবো। যত যাই হয়ে যাক ওকে নিয়ে কাছে নিয়ে আসবই।
আরিয়ানঃ That’s like a good boy। চল তোকে ড্রেসিং করিয়ে দেই।
আয়ানঃ হুম।
তারপর আরিয়ান আয়ানকে ড্রেসিং করিয়ে দিলো।




দেখতে দেখতে কেটেগেলো পাচদিন। এই পাঁচদিন ও আয়ান মারয়ার সাথে বিভিন্ন ভাবে দেখা + কথা বলেছে।
।।
আজকে আমি তারাতারি কলেজে আসছি। কারণ কি জেনো ইমর্পটেন কথা আছে। কলেজ গেটে আসতে ই টকটা 1st year এর একটা মেয়ে এসে বললো প্রিনসিপাল সার নাকি আমাকে ডেকেছে। প্রথমে অবাক হয়েছি। কারন প্রিনসিপাল সার আমাকে কখনো ডাকেনি। তো আমি কি এমন ভুল করলাম যে তিনি আমাদের ডাকলো। তাই ভয়ে ভয়ে প্রিনসিপাল সার এর রুমের দিকে এগোলাম।










#চলবে……….