বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1157



হারিয়ে যাওয়া অনুভূতি পাঠ-২

0

হারিয়ে যাওয়া অনুভূতি পাঠ-২

#আরিশা অনু

“””কোনো রকম চোখের জল টা আটকে রুহিকে বললাম তোমার বাবা আছে মা। এখন লক্ষি মেয়ের মত পড়ায় মন দাও তো সোনা মা আমার।

“””রুহি কোনো কথা বললো না আর চুপচাপ পড়ায় মন দিল।এই চার বছরে মেয়েটা চার হাজার বার ওর বাবার কথা জিঙ্গেস করেছে আমায়।আমি প্রতিবার ই এক উওর দিয়েছি ওকে…!!

“””আগে রিতিমত জেরা করতো বাবা কেনো আমাদের সাথে থাকেন?।বাবা আমায় আদর কেনো করেনা? আরো কত শত অভিযোগ বাবাকে নিয়ে তার…!

“””একদিন তো বাবার কাছে যাবো বলে এমন বায়না ধরেছিল যে খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল মেয়েটা।অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে খাইয়ে ছিলাম মেয়েটাকে।

“””বাবা বাবা বলে কাঁদতে কাঁদতে মেয়েটা আমার ঘুমিয়ে পড়েছিল সেদিন।আমি ও সেদিন অনেক কেঁদেছিলাম রাতের আধারে।কাঁদা ছাড়া আর কোনো রাস্তা ছিলনা আমার কাছে সেদিন…!!!

“””আম্মু আম্মু এইটা বুঝতে পাইনা(রুহি)

“””রুহির ডাকে ভাবনার জগৎ ছেড়ে বের হলাম আমি।তারপর বললাম আমার সোনামা কোনটা বুঝতে পারেনা দেখিতো?

“””এইযে এই অংকটা বুঝিনা।(রুহি)

“””তারপর ওকে অংক টা বুঝিয়ে দিয়ে বললাম মামনি তুমি অংক কর আমি দেখে আসি তোমার নানু মনি কি করছে…!!!

“””ঠিক আছে যাও (রুহি)

“””আমি রুহিকে ড্রয়িং এ রেখে এগলাম কিচেনের দিকে।

“””আম্মু কি কর?

“””এইতো মা রান্না করি। তুই রুহিকে রেখে উঠে আসলি কেন কফি করে দেব এক কাপ।(আম্মু)

“””না আম্মু লাগবে না তোমায় একটু হেল্প করি আমি।( অনন্যা)

“””আমার কোনো হেল্প লাগবে না কই দেখি আমার দিকে তাকা তো মুখটা এমন শুকনো কেন লাগছে।কি হয়েছে সোনা বল আমায়।(আম্মু)

“”” রুহি আজ আবার ওর বাবার কথা জিজ্ঞেস করছিল,আমি কিছু বলতে পারিনি আম্মু।(অনন্যা)

“””মন খারাপ করিস না সোনা মা। তুই মন খারাপ করলে রুহিকে কে সামলাবে বল তো।(আম্মু)

“””আমি খুব ক্লান্ত আম্মু আর কত দিন মেয়েটাকে এভাবে মিথ্যা বলবো আমি।

“””আম্মুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বললো অনন্যা।

“””তারপর নিজেকে শান্ত করে নিজের রুমের দিকে এগলো অনন্যা।

“””রুমে এসে আমার আর রুহির সব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুলো হাতের কাছে গুছিয়ে রাখলাম যাতে সকালে রেডি হতে সুবিধা হয়।

“””একটু পরে আম্মু খাবার খেতে ডাকলো তাই রুহিকে নিয়ে খেতে গেলাম।

“””আমার খাওয়ার কোনো ইচ্ছা নাই কিন্ত আমি না খেলে রুহি ও খেতে চাইনা তাই বাধ্য হয়ে অল্প একটু খেয়ে নিলাম।

“””তারপর খাওয়া শেষে সব কিছু গুছিয়ে আম্মু কে মেডিসিন দিয়ে রুমে আসলাম…!!

“””রুমে এসে দেখি রুহি এখনো ঘুমায় নি।

“””আম্মু তুমি এখনো ঘুমাও নি কেনো?

“””তোমায় ছাড়া আমার একদম ঘুম আসেনা আম্মু এটা জানোনা তুমি গাল ফুলিয়ে জবাব দিল রুহি।

“””ওরে আমার সোনা মা টা আসো তোমায় ঘুম পাড়িয়ে দি।

“””তারপর রুহিকে বুকে জড়িয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিলাম। কিন্ত আমার চোখে কিছুতেই ঘুম ধরা দিচ্ছে না।তাই উঠে কিচেনে যেয়ে এককাপ কফি করে এনে বারান্দায় রাখা রকিং চেয়ার টাই এসে বসলাম।

“””কফি খেতে খেতে অতীতের চিন্তায় ডুব দিলাম…..!!!
.
.
.
.
“””রোহান একদম দুষ্টামি করবানা যাও টেবিলে যেয়ে বসো আমি এখনি খাবার দিচ্ছি।(অনন্যা)

“””না না না আমি এখানেই থাকবো তোমার সাথে তারপর একসাথে টেবিলে যাব।তারপর তুমি নিজে হাতে খাইয়ে দেবে আমায়।(রোহান)

“””এবার কিন্তু পাগলামি করছো তুমি।এভাবে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে রাখলে আমি কাজ করবো কি করে প্লিজ একটু বোঝার চেষ্টা করো।(অনন্যা)

“””আমি কিচ্ছু বুঝি না আর বুঝতে ও চাইনা। আমি এভাবে তোমায় জড়িয়ে ধরে থাকবো ব্যাস আর কোনো কথা হবেনা না।(রোহান)

“””উফ্ তোমার সাথে কথা বলাই বেকার।দেখি সর তো আমি এগুলো টেবিলে রাখবো এখন।

“””তারপর খাবার গুলো টেবিলে এনে মহারাজা কে খেতে দিলাম।

“””কি হল বসে আছো কেনো খাও (অনন্যা)

“””কি কথা ছিল বিয়ের আগে প্রতিদিন সকালে আর রাতে তুমি নিজে হাতে খাইয়ে দিবা আমায় ভুলে গেছো?

“””অবশ্য তুমি ভুলে গেলেও আমার তাতে কিছু যায় আসে না। আমি তো আছিই মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য সো বাহানা অফ করে চুপচাপ খাইয়ে দাও আমায় (রোহান)

“””তোমাকে তো কিছু বলাই বেকার নাও হা কর বাচ্চা ছেলে একটা (অনন্যা)

“””উহু তো বলতে বলে কে তোমায়। আর শুনো আমি বাচ্চা না বাচ্চার বাবা হব খুব তাড়াতাড়ি।(রোহান)

“””রোহানের কথায় খানিকটা লজ্জা পেয়ে গেলাম এই লোকটার মুখে কিচ্ছু বাধেনা (অনন্যা)

“””হয়ছে অনু সোনা(রোহান অনন্যা কে আদর করে অনু ডাকে) তোমার আর লজ্জায় লাল টমেটো হওয়া লাগবে না (রোহান)

“””ফাজিল একটা যাও এখন।অফিসে পৌঁছে ফোন দিবা আমায়।(অনন্যা)

“””হুম দিব তার আগে আমার আদর টা কে দিবে শুনি…?(রোহান)

“””একদম দুষ্টামি করবানা যাও বলছি (অনন্যা)

“””এহ্ বললেই হলো তারপর অনুকে কাছে টেনে ওর নাকে নাক ঘসে দিয়ে কপালে আলতো করে একটা চুমু দিলাম।

“””পাগলি টা লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে তাই মুখটা উপরে তুলে বললাম…

“””থাক আর লজ্জা পেতে হবেনা সোনা বউ।আমি আসি এখন খেয়াল রাখবা নিজের কেমন।আমি অফিসে যেয়ে ফোন দেব তোমায়।(রোহান)

“””আমি জলভরা চোখে ওর দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়লাম । রোহার অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেল। আর আমি ভাবতে থাকলাম এত সুখ সইবে তো আমার কপালে….?
.
.
.
Continue…..

হারিয়ে যাওয়া অনুভূতি পাঠ-১

0

হারিয়ে যাওয়া অনুভূতি পাঠ-১
আরিশা অনু
“””আমি অনন্যা। আজকের দিনটা অনেক বেশি স্পেশাল আমার কাছে। কারন এতদিন পর খুঁজে খুঁজে একটা মনের মত বাড়ি পেয়েছি…!

“””বাড়িটা তিনতলা।তিন তলায় বাড়ি ওয়ালা থাকে। আর নিচের তলায় অন্য ভাড়াটিয়া থাকে। আমরা দুইতলায় থাকবো।আমরা বলছি কারন আমার সাথে আম্মু আর আমার মেয়ে রুহি ও থাকবে।

“””বিশেষ করে রুহির পছন্দে এই বাড়ি টা ভাড়া নেওয়া। কারন ওর কোনো আবদার আমি ফেলতে পারিনা।আমার বেঁচে থাকার অক্সিজেন টাই তো রুহি……!!

“””বাড়িটা বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে বানানো হয়েছে তা দেখলেই বোঝা যাচ্ছে।আমার রুমের সাথে একটা খোলা বারান্দা আছে। আর ডাইনিং টা ও বেশ বড় এতে অবশ্য রুহির খেলতে সুবিধা হবে….!!!

“””আজ সকালে এবাড়িতে এসে উঠেছি আমরা।তাই সকাল থেকেই সবকিছু গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। কারন কাল আবার আমার অফিসের প্রথম দিন আর আমার কলিজার স্কুলের প্রথম দিন তাই এত তাড়াহুড়া করে সব কিছু গোছগাছ করা।

“””সবকিছু রেডি করতে করতে দুপুর গড়িয়ে গেল। এর মধ্যে বাড়ি ওয়ালা আন্টি এসে আমাদের দুপুরের খাবার দিয়ে গেছেন।অত্যন্ত ভালো মানুষ তিনি।তার কথার মাঝে কোনো অহোমিকা খুজে পাইনি আমি।অনেক নরম মনের মানুষ দেখেই বোঝা যায়…!!

“””ফ্রেস হয়ে আম্মু, আমি আর রুহি খেয়ে নিলাম।এই তিনজন মানুষের সংসার আমার।খাওয়া শেষে ক্লান্ত লাগছিল খুব তাই রুহিকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে নিজে ও একটু ঘুমালাম। আর আম্মু পাশের রুমে আছে। আম্মু ও হয়তো এত খনে ঘুমিয়ে পড়েছে…!

“””ঘুম ভাঙলো সন্ধার একটু আগে তাই উঠে ফ্রেস হয়ে বাজারের ব্যাগটা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম কারন রাতে ও তো কিছু খেতে হবে।

“””বাজার নিয়ে বাসায় আসলাম সন্ধার পর।আম্মু ব্যাগটা নিয়ে রান্না চড়াতে গেল আর আমি ফ্রেস হয়ে আমার সোনা টা কে পড়াতে বসলাম।

“””পড়ানোর একফাঁকে রুহি আমায় একটা ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞাস করলো আম্মু এই বাবু টার পাশে দাড়ানো লোকটা কে…??

“””এটা বাবুটার বাবা সোনা..!!

“””আমার বাবা কোথায় আম্মু..? আমার সব ফ্রেন্ড দের বাবা আছে আমার বাবা কোথায়…?

“””বুঝতে পারছি না রুহির কথার কি উওর দেব চোখটা অলরেডি ঝাঁপসা হয়ে উঠেছে….;;
.
.
.
.
Continue ….

মায়াবতী বউ ৭ম শেষ পার্ট

0

মায়াবতী বউ ৭ম শেষ পার্ট

লেখকঃপিচ্চি পোলা
আমি তখন কি করবো ভেবে পাইনা।
হঠাৎ মনে হলো তোর মাকে জানাই
ব্যাপারটা। আসার সময় তোদের বাড়ির
নাম্বার নিয়ে এসেছিলাম।
কল দিয়ে তোর মাকে বলতেই তোর মা কেঁদে
ফেললো তোর কথা ভেবে।
এটাও জানালো তাদের নাকি আগামিকাল
আসার কথা তোর সুমিকে দেখতে।
তখন তোর মা আর আমি বুদ্ধি খাটিয়ে এই নাটক
সাজানোর সিদ্ধান্ত নিলাম।
তিনি বললেন তুমি যে কোন উপায়ে ওর কাছে
ঠাই নিবে ওর ঘরে।
আমরা গিয়ে তোমায় সুমি হিসেবে ডাকবো।
আর আমাকে অবাক করে দিয়ে মা ডাকবে
তুমি। তারপর বাকিটা আমরা ম্যানেজ করবো।
আর বাকি কাহিনী তো তুই জানিসই।
আমার এই অভিনয়ে যদি কষ্ট পেয়ে থাকিস বা
খারাপ ভাবিস তাহলে আমায় ক্ষমা করে দিস।
কালকে বাবা এখানে আসবে। তাহলে তার
সাথে আমি চলে যাবো আর কখনো তোকে
জ্বালাতে আসবো না।
কথাগুলো একটানে বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে
ডুকরে ডুকরে ফুপিয়ে কাঁদতে থাকে মিতা
নামের পাগলিটা।
ওর কথাগুলো শুনতে শুনতে চোখের কোনে
কখন যে জল এসে গেছে নিজেই জানিনা।
ওকে আরেকটু বুকের সাথে জড়িয়ে নিয়েছি।
ঠিক একেবারে কলিজার ভিতরে।
আমাকে আর ছেড়ে যাবিনা তো পাগলি?(আমি)
তুই আমাকে ছেড়ে না দিয়ে এভাবে বুকের
মাঝে জড়িয়ে রাখলে কোথাও আর যাবোনা
রে।
পারবি না আমায় সারাজীবন এভাবে রাখতে?
খুব পারবো রে পাগলি। এই মিতা শোন।
কি বলবি বল
সবাই কি জানে এই অভিনয়ের কথা?
না সবাই না। জানে শুধু তোর মা, বোন, বাবা
আর আমার বাবা।
তোর বাবাও জানে?
হুম বাবা কালকে আসবে এখানে। আর তোর
বাবা আসবে ২ দিন পর।
এখন তুই চাইলে শুক্রবারে আমাদের বিয়ের
আয়োজন করবে তারা।
আমি চাইলে মানে? কি বলতে চাস?
তুই তো সুমিকে ভালোবাসিস তাই বললাম।
সেটা আমার খুব বড় ভুল ছিলো রে। এটা ভেবে
যদি কষ্ট পাস তো চলে যাবো তোদের
থেকে
অনেকদূরে না ফেরার দেশে।
চুপ হারামী। এসব আর বলবি না। অনেক কষ্ট
দিয়েছিস আমায়। এবার আমায় ভালোবেসে
পাগল করে দে।
তোর ভালোবাসায় আমি পাগল হয়ে যেতে
চাই রে পাগল।
এই বলে মিতা
আমায় অজস্র চুমোয় ভরিয়ে দিচ্ছে।
আমিও পাল্টা আক্রমন করছি ওকে।
এই ছাড় আমায়। এর বেশি কিছু করতে যাবিনা
হুম।
কেনো রে? তুই তো আমার বউ।
হুম বউ। তবে নকল বউ হা হা হা।
এই পাগল আমায় আজ চিনলি কি করে।
তোর কান্না দেখে। ছোটকাল থেকে তুই
এভাবেই কাঁদতি। আর এখনো…
মনে আছে মিতা? তোকে ছোটবেলায় ধাক্কা
দিয়েছিলাম আর তুই পড়ে গিয়েছিলি। পড়ে
গিয়ে তোর পিঠে কেটে গিয়েছিলো।
আজ যখন তোর কান্না দেখে সন্দেহ হলো।
যে
তুই মিতা হতে পারিস। তখনি আমি তোর
ব্লাউজ খুলে পিঠ দেখলাম।
হুম যখন তুই ব্লাউজে হাত দিলি তখনি বুঝলাম
ধরা খাইছি এবার।
তুই আমাকে আগেই বলতে পারতি। নাটক না
করলেও হতো।
যদি শুক্রবার পর্যন্ত এভাবে থাকতে পারতাম
তবে বাসর রাতে তোকে সারপ্রাইজ দিতে
চেয়েছিলাম নিজেকে। তা আর হলো না।
আয় আমার মিষ্টি বউ। তোকে পাগল করে
দেই।
যাহ দুষ্টু। আর দুইটা দিন সবুর কর সব পাবি।
তাই বলে তোকে ছুতে পারবো না?
পারবি তবে এমন পাগল করিস না যেনো
আমরা কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলি।
এতো অপেক্ষা, এতো কষ্ট সইলাম দুজন আর
দুইটা দিনের অপেক্ষা করতে পারবো না তা হয়?
এর মধ্যে আমাদের ভালোবাসা নিষিদ্ধ করতে
চাইনা।
আমায় বুকের মধ্যে জড়িয়ে নিয়ে ঘুমা এখন।
ওকে আয় পাগলি।
ও আমার বুকের সাথে মিশে ঘুমিয়ে গেছে।
আমি ওর মুখটা দেখছি এক নজড়ে।
আমি ওকে একটুর জন্য ভুলে গেলেও ও ঠিকই
আমায় মনের মধ্যে রেখেছে।
ওকে আরেকটু চেপে ধরে দুচোখের
দুফোটা
অশ্রু ফেলে মনে মনে ভাবতেছি।
এভাবেই সারাজীবন তোকে বুকে জড়িয়ে
রাখবো রে আমার পাগলি বউ।

সমাপ্ত………….

মায়াবতী বউ ৬ষ্ঠ পার্ট

0

মায়াবতী বউ ৬ষ্ঠ পার্ট

লেখকঃপিচ্চি পোলা
একটু শান্ত হয়ে ওকে আমার দিকে ঘুরিয়ে
বসিয়ে বললাম।আমাকে পরিচয় দেস নাই
কেনো মিতা? (মায়ার আসল নাম মিতা)
কি করে পরিচয় দিতাম বল? ৭ বছর পর যখন
তোর কাছে পৌছলাম তখন তুই অন্য কারো হয়ে
গিয়েছিলি। (মিতা)
এই ৭ বছর কোথায় ছিলি? তোকে কতো
খুঁজেছি কোথাও পাইনি। (আমি)
মিতা বললো সেদিনকার কথা মনে নাই তোর?
বাবা গ্রামের সব জমি বিক্রি করে শহরে চলে
যাচ্ছিলো আমাদের নিয়ে। তখন আমার যাওয়া
দেখে তুই কাঁদছিলি আর আমিও কাঁদছিলাম।
এর কয়েকদিন পর শহর থেকে গ্রামে আসতে
চাইলেও বাবা নিয়ে আসলো না।
আমি রাগ করে সিড়ি দিয়ে দৌড়ে নামতে
গিয়ে পড়ে যাই। আমাকে হাসপাতালে নেয়া
হয়। আমি সুস্থ হলেও আগের সবকিছু ভুলে যাই।
এই ৭ বছর পর আজ থেকে কয়েকমাস আগে আমি
হঠাৎ করে সবকিছু মনে করতে পারি।
তখন মনে পড়ে তোর কথা। বাবাকে সব খুলে
বললাম যে তোকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো
না। সেই ছোট থেকেই তুই আর আমি একসাথে
খেলেছি, পড়েছি।
তখন বাবা বললো ঠিক আছে তোকে নিয়ে
যাবো গ্রামে।
গ্রামে এসে সোজা তোদের বাড়িতে আসি।
তোর মা আমাকে দেখে কেঁদে ফেলে।
বলে
তোমার জন্য আমার খোকা অনেক অপেক্ষা
করেছিলো মা।
তখন আমাকে সব খুলে বলে তোর মা। তুই আংকেলের
অফিস দেখতে শহরে এসে পড়াশোনা করিস
আর আংকেলের অফিস দেখাশোনা করিস।
কিছুদিন আগে নাকি একটা মেয়ে তোর
জীবনে আসে এটাও বলেছিলো তোর মা।
আমি বিশ্বাস করিনি। তোর ঠিকানা নিয়ে
শহরে আসলাম।
তোরা যেখানে থাকতি ঐ এলাকার পাশেই
আমার ফুফুর বাসা।
সেখানে থেকে তোকে ফলো করলাম। হা
সত্যিই তুই একটা মেয়ের সাথে জড়িয়ে
গেছিস।
বাবা এই কথা শুনে আমায় নিয়ে যেতে চাইলো
ওখান থেকে। বললো তোকে ভালো সুন্দর
একটা রাজপুত্রের সাথে বিয়ে দেবো।
আমি কেঁদে বুক ভাসালাম আর বললাম আবির
ছাড়া কাউকে আমি কল্পনাও করবো না
জীবনে।
আমি বাবার কথায় চলে যাইনি। তোর ঐ সুমির
সাথে পরিচিত হয়ে বান্ধবী বানালাম।
তুই ওর সাথে আমায় দেখেও চিনতে পারিস নি।
পারার কথাও না। এই ৭ বছরে আমি অনেক
পাল্টে ফেলেছি চেহারা। আর তখন তো
কিশোর বয়স ছিলো আর এখন যৌবনকাল।
তখন আমায় চিনতে পারিস নি বলে খুব কষ্ট
হতো। আমি পরিচয় দেইনি সুমি তোর জীবনে
এসেছিলো বলেই।
আমি চাইনি তোদের মাঝে দেয়াল হয়ে
দাড়াই আমি।
আমি ফুফুর বাসা থেকে ও তোর থেকে দূরে
যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।
কিন্তু ঐ কয়দিনে সুমির সাথে থেকে আর
তোদের দুজনকে ফলো করে একটা বিষয়
আমাকে কৌতুহলী করে তুললো।
তুই ওকে ভালোবাসলেও তোদের চলাফেরায়
আমার কেমন জানি মনে হলো। ও তোর সাথে
টাইমপাস করছে না তো?
তখন আমি আরো বেশি মিশতে লাগলাম সুমির
সাথে।
একসময় সুমিকে বলেই ফেললাম ছেলেটা তো
তোমায় খুব ভালোবাসে। তা তোমরা বিয়ে
করবে কবে?
কথাটা শুনে ও একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।
বললো ও একটা বড় ভুল করেছে।
কৌতুহলী হয়ে বললাম কি ভুল?
ও বললো আবিরকে কোনদিন বিয়ে করতে
পারবো না আমি। কারন আমার বিয়ে ঠিক হয়ে
আছে বাবার বন্ধুর ছেলের সাথে। আর আমরা
চুটিয়ে প্রেম ও করি। তাইতো আবিরকে আমি
আমার শরীর স্পর্শ করতে দেইনি বা ওকে স্পর্শ
করিনি।
এইটুকু বলে মিতা আমার দিকে চেয়ে বললো।
বিশ্বাস কর আবির সুমির এই কথা শুনে আমি
প্রচন্ড কষ্ট পেলাম তোর কথা ভেবে।
শেষমেশ তুই একটা ভুল মেয়ের প্রেমে
পড়েছিলি এই ভেবে।
যাই হোক তখন ওকে বললাম তাহলে আবির
নামের ছেলেটার জীবন নিয়ে খেলছো
কেনো? ও তো তোমায় সত্যিই ভালোবাসে।
ও বললো হা। খুব সহজ সরল ছেলে আবির। আমি
একটু টাইমপাস করার জন্য ওর পিছে লাগি।
ভালোবাসর প্রস্তাব দেই। কিন্তু ও রাজি হয়নি
প্রথম।
বলেছিলো গ্রামের কোন এক মেয়েকে ও
ভালোবাসে। সে কোথাও হারিয়ে গেছে। ওর
বিশ্বাস সে একদিন ফিরে আসবে।
কিন্তু আমি কেনো জানি ওর প্রতি বেশি
দুর্বল হয়ে গেলাম। ওর মুখে ভালোবাসার কথা
শুনেই ছাড়বো ভাবলাম।
অনেকদিন ওর পিছে ঘুরেও ওর সাড়া না পেয়ে
বললাম তুমি আমায় না ভালোবাসলে আমি
আত্মহত্যা করবো।
এই কথা শুনে ও আমার সাথে সময় দিতে
থাকলো। কারন ও খুব সহজ সরল ছেলে।
আমি এই সরলতার সুযোগ নিয়ে বড় একটা ভুলের
ফাঁদে পা দিয়েছি। না পারছি সত্যটা বলতে,
না পারছি ওর সাথে চলতে।
এই বলে সুমি আমার হাতটা ধরলো। আমায়
একটা বুদ্ধি দাও মায়া। আমি কি করে ওর
থেকে দূরে যাবো?
আমি তখন সুমিকে বললাম খুব বড় ভুল করেছো।
তবে এখনো সময় আছে এই ভুল শোধরানোর।
তুমি
ওর সাথে আর দেখা করোনা। একটা চিঠি
দিয়ে জানিয়ে দাও তোমার বিয়ে হয়ে
গেছে। বলবে তোমাদের ভালোবাসার কথা
তোমার বাবাকে বলার পরও রাজি হয়নি
তিনি।
সুমি বললো ও কি মানবে? ওর যদি কিছু হয় বা
কোন পাগলামি করে?
আমি বললাম যাওতো তুমি তোমার কাজ করো।
আমি দেখবো এদিকটা। আর তুমি যদি এটা না
করে আরো জড়াও ওর সাথে তবে ওর সহজ সরল
জীবনটা নষ্টের মুখে চলে যাবে। তারচেয়ে
এখনই এই সিদ্ধান্ত নাও।
ও আমাকে ধন্যবাদ দিয়ে চলে যায় আর তোকে
চিঠি পাঠায়।

চলবে…………………..

মায়াবতী বউ ৫ম পার্ট

0

মায়াবতী বউ ৫ম পার্ট

পিচ্চি পোলা
#মায়াকে নিয়ে আমার ঘরে (গ্রামের ঘর) গেছে
সবাই।
পাড়া পড়শী সকলেই আমার বউ দেখার জন্য ভিড়
করেছে বাড়ীতে।
এই গ্রামে বড় হয়েছি, পড়েছি, খেলেছি, সবার
সাথে মিশেছি এই গ্রামেই।
সুতরাং যেই শুনতেছে যে আমি শহর থেকে
প্রেম করে বিয়ে করে এনেছি সেই
আসতেছে বাড়ীতে বউ দেখতে।
বিরক্ত মনে হলেও অনেকদিন পর সবাইকে
দেখে ভালোই লাগতেছে।
আমি একটা লুঙ্গি নিয়ে গোসল সেরে নিলাম।
ততক্ষনে সন্ধা হয়ে গেছে। ঘরে এসে দেখি
মায়া ভাবিদের সাথে পুরাই মেতে গেছে।
আসলে গ্রামের বউ/ঝিদের সাথে মিশলে অতি
তাড়াতাড়ি ঘনিষ্ট হয়ে যায় সবাই।
মায়াকে দেখে মনে হচ্ছে এ বাড়ির সবাই ওর
কতো পরিচিত।
ওরা সোফায় বসে আছে। আমি খাটে উঠলাম। বাহ কি
সুন্দর করে বাসর সাজিয়ে রেখেছে আমার
ঘরে। সাথে ঘরটাও সাজিয়েছে নতুন রুপে।
কি দেবর মশাই কেমন হয়েছে বাসর সাজানো।(ভাবিরা)
দারুন তা কে সাজিয়েছে মেমসাহেবরা? (আমি)
আমরা সাজিয়েছি তোমার আর তোমার ঐ মিষ্টি
বউটার জন্য।
ভালো করছেন। শুয়ে একটু আরাম করে নেই।
আহহা আগে আমাদের বাসর সাজানোর মূল্য দাও
তারপর আরাম কইরো সাহেব।
আবার মূল্য কিসের হুম?
এতো কষ্ট করে সাজিয়েছি টাকা খরচ করে আর
উনি বলছেন মূল্য কিসের? ওই আয় (অন্য ভাবিদের
উদ্দেশ্য করে) আমরা শুয়ে থাকবো বাসরে। এই
বলে আমায় ঠেলে উঠিয়ে দিতেছে।
আরে আমায় সরিয়ে দেন কেন? আসেন
আপনাদের নিয়েই বাসর করবো।
এই কথা বলার সাথে সাথে সবাই হো হো করে
হেসে উঠেছে।
২ ভাবি আমার ২ কান ধরে বলতেছে আজ তোমার
সব শখ মিটিয়ে দেবো।
উহ লাগছে ছাড়েন তো ভাবিজানরা।
আগে আমাদের বিদায় করো।
ওহ ছাড়েন দিতাছি। ৫০০ টাকা বের করে ভাবির হাতে
দিয়ে বললাম যান সবাই মিলে মিষ্টি কিনে খান গা।
রাগ করলেন না তো ভাবিরা? আসলে বাসরের মূল্য
কেউ দিতে পারে না। এটা শুধু মিষ্টমুখ করার জন্য
দিলাম।
আরে নাহ খুশি আমরা। এই বলে বড় ভাবিটা গালে
একটা চুমু দিয়ে দৌড়ে পালালো হাসতে হাসতে।
খারাপ কিছু না, এই চুমুটা আসলে ছোট থেকেই
দেয় ঐ ভাবিটা। কোলেপিঠে মানুষ করেছে এই
ভাবি মায়ের সাথে।
সবাই বাইরে চলে গেলো।
মায়ার দিকে তাকালাম। মিষ্টি করে হাসছে।
হাসলে ওকে সত্যি পরীর মতো লাগে।
মা আর কাকি আসলো ঘরে।
বাবা বৌমাকে নিয়ে খেতে আসো আমাদের
ঘরে। (কাকি)
এই বলে মায়ার কাছে গিয়ে থুটনিটা ধরে মাথা উচু
করে দেখছে আর বলছে কি মিষ্টি বৌমা এনেছো
চাচামিয়া। (কাকি)
চলো খেয়ে এসে কথা হবে (মা)
খেতে গেলাম কাকিদের ঘরে।
২/৪ দিন আর আমার মাকে রান্না করতে দেবে না
কাকি আর ভাবিরা। এই কয়দিন তাদের ওখানে খেতে
হবে।
খেতে বসে লক্ষ করলাম মায়া খুব খুশি এখানে
এসে।
হবেই তো ভরা বাড়ীর মানুষের আন্তরিকতা,
ভালোবাসা, আমোদ আড্ডা শহরের যে কাউকে
মুগ্ধ করবে।
রাত প্রায় ৯ টা বাজে। এই ৯ টাই গ্রামে অনেক রাত।
আমি অনেকদিন পর গ্রামে এসে বন্ধুদের পাল্লায়
পড়ে কিছু খেয়ে ফেললাম মদ জাতীয়।
এর আগে গ্রামে এসব খাইনি। এখন যেহেতু
শহরে খেয়েছি সুমির দেয়া আঘাত ভোলার জন্য
তাই আর না করিনি ওদের।
ওরা আমায় বাড়ি অব্দি পৌছে দিলো নেশায় মাতালের
মতো হয়েছি বলে।
দরজা খুলতেই দেখি এখনো ভাবি ও কাজিনরা গল্প
করছে মায়ার সাথে।
আমি ঢুকতেই সবাই বের হয়ে গেলো। ভাবি
কানের কাছে মুখ এনে বললো বাসর উদ্বোধন
করো দেবর সাহেব।
আমি গিয়ে শুয়ে পড়লাম ধড়াম করে খাটে।
মাথাটা ঘুরছে খুব। নেশাটা খুব বেশি হয়ে গেছে।
মায়া দরজা আটকে খাটে উঠলো।
এই খাটটা সিঙ্গেল খাটের মতো। যদিও স্বামী
স্ত্রীর জন্য যথেষ্ট।
আমার গা ঘেসে শুয়েছে ও। আমি চোখ বুঝে
আছি।
কপালে হাতের স্পর্শ পেয়ে চোখ খুললাম।
কিছু খেয়েছেন মনে হয়? এসব খান কেনো?
এই বলে কাঁদছে মেয়েটা।
কি হলো কাঁদছেন কেনো? আমার কিছু হয়নি
তো। মাথাটা শুধু ঘুরছে।
বললেই হলো। আপনার শরীর তো
কাঁপতেছে।
ওকে কাঁদবেননা।সরি আর কখনো খাবোনা।
হুম ওকে (চোখ মুছতে মুছতে)
মাকে ডেকে আনি থাকেন। এই বলে মায়া খাট
থেকে নামতে যাবে ওমনি খপ করে হাত ধরে টান
দিয়ে বললাম মাথা খারাপ হইছে আপনার?
এমন মাতাল অবস্থায় মা দেখলে উপায় আছে?
আমার হাতের হেচকা টানে ও আমার বুকের উপর
এসে পড়েছে খেয়াল করিনি।
ওর ঠোট দুটো আমার ঠোটের সামনে।
নেশার ঘোরে ওকে আমি বুকের সাথে ঝাপটে
ধরেছি।
ওর চোখের পানি পুরোটুক মুছেনি।
এমনেই ও পরীর মতো। চোখে পানি জমায়
আরো মায়াবতী রাজকুমারীর মতো লাগছে
ওকে।
নেশার ঘোরে সব ভুলে আমি ওকে নিজের
সাথে মিশিয়ে নিছি। ভুলে গেছি আমরা দুজন মিথ্যা
স্বামী স্ত্রী।
হঠাৎ ও এক ঝটকায় আমার উপর থেকে উঠে
গেছে।হাপাচ্ছে মেয়েটা।
চোখবেয়ে আবার পানি পড়ছে।
সরি নেশার ঘোরে মাতাল হয়ে দিক হারিয়ে এমন
করছি। ক্ষমা করে দিন প্লিজ।
আচ্ছা ঠিক আছে আপনি ঘুমান। (কান্নাকন্ঠে মায়া)
এই আপনি কে বলেন তো? আপনার এই কান্না
আমায় কিছু মনে করিয়ে দেয়।(আমি)
কি মনে হয় আপনার? এই কান্না কার হতে পারে
মনে করেন? এই বলে মায়া আরো জোড়ে
ডুকড়ে ডুকড়ে কাঁদছে।
হা আমার ধারনা ঠিক হবে হয়তো। আমি ওর শাড়ির
আচলটা টান দিয়ে সরালাম। ব্লাউজের বোতামে হাত
দিতেই হাত ধরে ফেললো মায়া।
আমি হাত সরিয়ে জোর করে খুলে ফেললাম ওর
ব্লাউজ (খারাপ কিছু ভাববেন না)
ওর পিছনে গিয়ে হুকটা খুলে দেখেই আমি পেছন
থেকে ওকে জড়িয়ে ধরলাম।
হাউমাউ করে কেঁদে উঠলাম আমি আর মায়া
দুজনেই একসাথে।
চলবে…………

মায়াবতী বউ ৪র্থ পার্ট

0

মায়াবতী বউ ৪র্থ পার্ট

পিচ্চি পোলা
আমি শিউরে উঠলাম। সত্যি বলতে আমি
কখনো যুবতি মেয়ের স্পর্শ অনুভব করিনি।
ভাবছেন হয়তো আমি তো প্রেম করেছিলাম।
হা করেছিলাম তবে কখনো ওকে ছুয়ে দেখিনি।
এটা নাকি ওর পছন্দ না অবশ্য আমার ও না।
একটু চোখ ঘুরিয়ে খেয়াল করলাম ওর ব্যাগটা
ভালোভাবে নিতে গিয়ে আমার হাতের উপর
হাত রেখেছে। পরে খেয়াল করে হাত সরিয়ে
নিলো মায়া।
বাস তার আপন গতিতে এগিয়ে চলছে। আমি
তাকিয়ে দেখছি বাইরের আশেপাশের
দৃশ্যগুলো।
আসলে গাড়িতে উঠলে প্রায় সবার চোখে
ঘুমের
ভাব চলে আসে তবে আমি এর ব্যতিক্রম।
সবাই ঘুমায় আর আমি জানালা দিয়ে দেখি
বাইরের দৃশ্যগুলো।
প্রায় ৪/৫ ঘন্টা লাগবে কড্ডায় পৌছাতে।
ওখান
থেকে নেমে সোজা আবার তামাইয়ের
বেলকুচি বাস ধরবো।
গাড়িটা হঠাৎ থেমে গেলো। তাকিয়ে দেখি
পুলিশ লাইসেন্স চেক করার জন্য গাড়ি
থামিয়েছে অনেকগুলো।
আমাদের গাড়িটা সিরিয়ালে পড়েছে।
হঠাৎ জানালার কাছে কেউ বলছে স্যার
বাদাম নিবেন?
পাশে তাকালাম দেখি মায়া আমার কাধে
মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেছে।
পাশের সিটে লক্ষ করলাম মা আর বোন ও
ঘুমিয়েছে।
২০ টাকার বাদাম দেন।
বাদাম হাতে নিয়ে রেখে দিলাম। যখন
সামনে
কোথাও ওদের ঘুম ভাংগে তখন খাবো সবাই
মিলে।
গাড়ি হঠাৎ একটা ঝাকুনি খেয়ে মায়া
আমার উপর
সেটে গেলো। মাথাটা আমার কাধেই ছিলো
এখন
একটা হাত আমার অন্য কাধে দিলো যাতে
ঝাকিতে পড়ে না যায়।
ও অবশ্য ঘুমের মধ্যেই এমন করছে বুঝলাম।
কারন
পাশের সিটের মা আর বোনকে দেখেলাম
তাদের ও একি অবস্থা।
বোনটাও মার উপর হেলান দিয়ে একটা হাত
মার
কাধে দিয়ে আছে। আর মা জানালার সাথে
হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে।
মায়ার চুলগুলো বারবার আমার মুখের সামনে
উড়ে আসছে।
ওর চুল থেকে মিষ্টি একটা ঘ্রান আসছে। ভালোই লাগছে
ঘ্রানটা।
চুলগুলো হালকাভাবে ধরে ওর গাড়ে পেচিয়ে
দিলাম।
মুখটার দিকে একটু তাকালাম। মানুষ এতো
সুন্দর
হতে পারে ওকে না দেখলে বুঝতাম না।
অবশ্য ওর গায়ের রং খুব বেশি ফর্সা না তবে
চেহারায় আছে মায়াবী ভাব আর সুন্দর গঠন।
যেনো কবিদের আকা কল্পনার পরি।
ওর শরীরটা আমার শরীরে লেপ্টে রয়েছে।
মেয়ে
মানুষের শরীর যখন একটা পুরুষের শরীরে
স্পর্শ করে
তখন তার কি অবস্থা হয় তা শুধু আমার মতো
এমন
পাল্লায় পড়েছে বা বিয়ে, প্রেম করেছে
এমন পুরুষরাই জানে।
তবুও নিজেকে কন্ট্রোল করে রেখেছি কারন
এসব আমার কল্পনায় থাকেনা।
তাছাড়া মেয়েটির চোখেও খারাপ কোন
উদ্দেশ্য
এখন পর্যন্ত লক্ষ করিনি। আর ওর রহস্য না
জানা
পর্যন্ত ওকে কিছু বলতেও পারছি না।
মেয়েটি আমাকে বিশ্বাস করেই এমন একটা
কঠিন
চরিত্রে অভিনয় করছে। জানিনা এই
অভিনয়ের কি
কারন? কি রহস্য লুকিয়ে আছে ওর মাঝে।
এভাবে ৩ ঘন্টা পার হয়ে গেছে। গাড়িটা
টাঙ্গাইল এলেঙ্গায় থামিয়েছে।
৩০ মিনিট সময় দিয়েছে এর মধ্যে যার যা
খাওয়া বা যা করার করে আসবে।
সবাই গাড়ি থেকে নামছে হইহুল্লা করে।
এরমধ্যে টের পেলাম মায়া মাথাটা কাধে থেকে
তুলে
লজ্জা রাঙা চোখে চেয়ে আছে আর শাড়ীর
আচল ঠিক করছে।
পরিস্থিতি হালকা করতে বললাম মা আর
রুমাকে ডাক দেন। নেমে হোটেলে গিয়ে হালকা
কিছু খেয়ে আসি।
মায়া আমার দিকে এগিয়ে এসে কানের
কাছে মুখ
নিয়ে বললো এখন থেকে তুমি করে বলবেন।
নইলে অভিনয়টা ফাঁস হয়ে যাবে।
এই বলে মুচকি হেসে ও মাকে ডাকলো।
বাস থেকে নেমে সবাই মিলে
হোটেলে ঢুকে খেয়ে নিলাম।
ওদের বাসে বসিয়ে আমি একটু বাইরে গিয়ে
আড়ালে একটা দোকানে বসে সিগারেট
ধরালাম।
তখনি আবার বাসের হর্ন বেজে উঠলো। তারাতারি
২/৩ টা টান মেরে সিগারেট ফেলে দিয়ে দৌড়ে
বাসে উঠলাম।
কই গিয়েছিলে? (চুপেচুপে মায়া)
সিগারেট খেতে।
এখানে বাদাম দেখছি তুমি এনেছো? (এবার
স্বাভাাবিক জোরেই বললো)
হুম মা আর রুমাকে কিছু বাদাম দিয়ে আসো।
না বৌমা আমি বাদাম টাদাম খাবো না।
রুমাকে
দাও।
মায়া রুমাকে বাদাম দিয়ে আবার বসে
পড়েছে
পাশে। কয়েকটা বাদাম আমার সামনে
এগিয়ে
দিছে।নাও তুমিও খাও কয়েকটা।
কি আর করার বউয়ের দেয়া বাদাম না করি
কি
করে? দাও কয়েকটা খাই।
চোখ ঘুরিয়ে খেয়াল করলাম মায়া মুচকি
মুচকি
হাসছে আর আড়চোখে আমায় দেখছে।
গাড়িটা এখন যমুনা সেতুর উপর। এই সেতুর উপর
যখন
গাড়ি ওঠে তখন বড্ড বেশি ভালো লাগে।
এই জানো তোমাদের এই ইকোপার্কে বাবার
সাথে একবার এসেছিলাম। (মায়া)
ব্রিজের পরেই যমুনা ইকো পার্ক। ওটা
দেখিয়ে বলতেছে মায়া।
হুম ভালোই পার্কটা। একসময় তোমায় নিয়ে
ঘুরতে
আসবো নে কি বলো?। (আমি)
ধুর ভালো না ছাই। জংগল শুধু ভিতরে।
পার্কের
কোন কিছুই নাই এর মধ্যে। আছে শুধু….
শুধু কি?
ও পাশের সিটে চোখ বুলিয়ে দেখলো মা আর
রুমা আবার ঘুমিয়েছে।
এই পার্কে শুধু ডিজিটাল প্রেম চলে।
(কানের কাছে মুখ এনে বললো মায়া)
বলেই মাথাটা নিচু করে নিয়েছে লজ্জায়।
হুম এই পার্ক নামে পার্ক। শুধু তরুন তরুনীদের
প্রেমবাগান হিসেবে চলে এই পার্ক (আমি)
আবার ওর দিকে তাকালাম। আড়চোখে
কখনো
কখনো দেখছে আমায়।
বাসটা কড্ডায় থামিয়ে দিয়েছে। নেমে
পড়লাম সবাই।
বাসে যাবে নাকি সিএনজিতে যাবে মা?
সিএনজি ডাক বাবা। আর বাসে চড়বো না
মাথাটা ঘুরছে। (মা)
একটা সিএনজি ডেকে উঠতে বললাম ওদের।
প্রায় আধঘন্টার মধ্যে সিএনজি নামিয়ে
দিলো তামাই বাজারে।
ওখান থেকে অটোতে উঠে বাড়ি পৌছলাম।
মায়ার দিকে তাকালাম। গাড়ি থেকে
নেমেই ও অবাক।
আমার কাকিরা ও কাজিনরা প্রায় ১০/১২ জন
এসে ওকে ঘিরে ধরেছে।
এর মধ্যে ২ জন ভাবি (চাচাতো বড় ভাইয়ের
বউ)
এসে বলতেছে সরো তো তোমরা। আমাদের
দেবরের সুন্দরী বউটাকে আগে ঘরে নিয়ে
যাই।
তারপর তোমরা ভালো করে দেইখোনে।
চলবে……………………….

মায়াবতী বউ ৩য় পার্ট

0

মায়াবতী বউ ৩য় পার্ট

লেখকঃপিচ্চি পোলা
আমার বুকের মধ্যে ধুকধুকানি শুরু হয়ে গেছে
অলরেডি।
মেয়েটা দরজা আটকে খাটের দিকে আসছে।
আমি শোয়া থেকে উঠে বসে পড়লাম।
একটা চাদর থাকলে দেন আমি নিচে
বিছানা করে শুই। (মায়া)
আচ্ছা আপনি এরকম করলেন কেনো? এসব
অভিনয় করে কয়দিন থাকবো? আর এতে
আপনার লাভ বা উদ্দেশ্য কি? (আমি)
সময় হলে জানাবো কেনো আপনার বউ হয়ে
অভিনয় করছি। জানি এতে আপনার খুব সমস্যা
হচ্ছে বা হবে।
তবু এইটুকু ম্যানেজ করেন প্লিজ। সময় হলে সব
বলবো আর চলে যাবো অনেক দূরে।
এসব বলে মেয়েটি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে
খাটে বসে পড়লো।
আমি কিছু বুঝতে না পেরে বললাম
ঠিক আছে।কিন্তু আপনি নিচে শুবেন এটা
কেমন দেখায়? তারচেয়ে আপনি উপড়ে শোন
আমি নিচে শুই।
মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে বলে আপনার
উপর আমার বিশ্বাস আছে বলেই আপনার ঘরে
ঠাই নিয়েছি।
খাটটা তো ছোটো নয়। আপনি ঐ প্রান্তে
শোন আমি এই প্রান্তে শুই।
খারাপ কিছু মনে করেন না। আমি আপনার
সম্পর্কে খুব ভালো ভাবে জানি তাই বিশ্বাস
আছে আর আমার উপরও বিশ্বাস রাখতে
পারেন।
ঠিক আছে। এই বলে আমি খাটের ঐ প্রান্তে
শুয়ে কোলবালিশটা মাঝখানে রেখে
দিলাম।
মেয়েটিও এইপাশে শুয়ে পড়লো তবে
একটা চাদর গায়ের উপর দিয়ে।
শীত তেমন পড়েনি হালকা। তবে বৃষ্টি হচ্ছে
এজন্য একটু শীত লাগছে।
এভাবে চুপ করে শুয়ে আছি। ঘুম আসছে না।
মেয়েটি কি ঘুমিয়েছে? পাশ ফিরে কি
দেখবো?
নাহ খারাপ ভাববে যদি জেগে থাকে।
এসব টেনশন বাদ দিয়ে সুমির কথা ভাবতে
লাগলাম। মানুষ কতো বেঈমান হতে পারে
তার জ্বলন্ত উদাহরণ আমার প্রেমিকা সুমি।
যদি আমার নাই হতে পারবি তো
ভালোবাসলি কেনো? কেনো জীবনে আসলি,
এই জীবনটা নিয়ে খেললি?
মনের অজান্তে দুচোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে
পড়ছে আমার।
আপনার কষ্ট হচ্ছে তাইনা? (মায়ার কথায়
চমকে গেলাম)
আরে না। (চোখের পানি মুছতে মুছতে)
মিথ্যা বলেন কেন? সুমির কথা মনে হচ্ছে
তাইনা?
ফিরে তাকালাম মেয়েটির দিকে। বারবার
অবাক হচ্ছি।আমি সুমির কথা ভেবে কষ্ট
পাচ্ছি ও জানে কি করে?
তার চেয়ে অবাক হলাম পাশ ফিরে ওর দিকে
মুখ করে শুয়ে।
একটু মাথা উচু করে দেখি মেয়েটার চোখেও
পানি গড়িয়ে পড়ছে। আমার দিকে চেয়ে
কথা বলছে আর কাঁদছে।
আমি বললাম হা সুমির কথা মনে হয়েই আমি
কষ্ট পাচ্ছি। কিন্তু আপনি জানলেন কি করে
আর আপনিও কাঁদছেন কোন কারনে?
কিছুক্ষন নিরব থেকে মায়া বললো সব বলবো
একসময়। এখন সব কষ্ট ঝেড়ে ফেলে ঘুমান
প্লিজ। (বোঝা গেলো চেখের পানি মুছছে
আর কথাগুলো বলছে)
ওকে ঘুমাই। আপনিও ঘুমান গুড নাইট।
এরপর কখন ঘুমিয়ে গেছি নিজেও জানিনা।
ফজরের আজানের আগে হঠাৎ ঘুম ভেংগে যায়
কারো হাতের ধাক্কায়।
তাকিয়ে দেখি মায়া ডাকছে আমায়।
কি হয়েছে কোন সমস্যা? (আমি)
না মানে যদি কিছু মনে না করেন তো
একটা রিকুয়েস্ট করবো?
হুম করেন।
অভিনয় যখন করছিই একটু গোসলের
অভিনয়টাও করতে হবে। খারাপ কিছু ভাববেন
না। যেহেতু আপনার মা আর বোন এখানে।
তারপরো আপনার ইচ্ছা।
ওকে আপনি আগে গোসল করে আসেন। পরে
আমি করবো হুম।
একটু বাইরে দাড়ান আমার ভয় করে। গোসল
করা পর্যন্ত বাইরে থাকবেন।
ওকে এই বলে উঠে দরজা খুলে বাথরুমের
কাছে গেলাম। ও ঢুকে পড়লো ওর জামাকাপড়
নিয়ে আর আমি পাহাড়ায়।
মনে মনে হাসছি।কষ্টের পৃথিবীতে আবার
একটি মেয়ে সাথী হলো তাও আবার অভিনয়
করতে হা হা হা।
গোসল করে এসে শুয়ে পড়ছি আবার।
২ ঘন্টা পর বেলা উঠে গেছে।
ছোটবোন এসে বলছে।ভাইয়া ওঠো না বেলা
হয়েছে।
একটু বাজারে যেতে হবে তোমায়। (বোন)
আমি উঠে দেখি ঘরটা একেবারে গোছানো।
টেবিল থেকে থালাবাসন বাইরে নিয়ে
যাচ্ছে মায়া। আমায় উঠতে দেখে বলছে
ওঠেন সাহেব। কিছু ময় মশলা আর হাবিজাবি
আনতে হবে তারপর রান্না করবো।
ফ্রিজে মাংস থাকলেও রান্না করার প্রায়
মশলা নেই। এই বলে একটা চার্ট হাতে দিলো
মায়া।
কি কি আনতে হবে এই চার্ট। কি সুন্দর
হাতের লেখা মেয়েটার চার্টে চোখ বুলিয়ে
দেখলাম।
উঠে মুখটা ধুয়ে বেরুবো তখন মা আমার কাছে
এলো। একটু মুচকি হাসি দিয়ে বললো একটা
লক্ষি মেয়েকে ঘরে এনেছিস খোকা।
সকাল থেকে সব কাজ একাই করে যাচ্ছে।
আমাদের কিছু করতেই দেয় না। মেয়েটাকে
কখনো কষ্ট দিসনা বাবা। ওর ভিতর অনেক
মায়া, ভালোবাসা আছে আমি বুঝে গেছি।
মার মাথায় হাত বুলিয়ে মুচকি হেসে চলে
গেলাম বাজারে।
সব কেনার পর একটা শাড়ি
কিনলাম মায়ার জন্য।
রান্না করে খাওয়া দাওয়া হলে মা বললো
রেডি হ তোরা দুপুরের আগেই রওনা দেবো।
মায়াকে বললো রেডি হয়ে নাও বৌমা।
মায়া রুমে গেলো। পিছে আমিও গেলাম।
ওর জন্যআনা শাড়িটা দিলাম ওর হাতে।
এটা পড়ে নিন
এটা আবার আনতে গেলেন কেনো?
বউয়ের অভিনয়ে এটা লাগবে।
আমার কথায় যেনো ও লজ্জা পেলো।
শাড়ীটা নিয়ে পাশের রুমে গেলো ও।
দুপুরের আগেই সবাই গিয়ে কড্ডার
(সিরাজগঞ্জ) বাসে উঠলাম।
মা আর বোন একসিটে বসলো আমি
আর ও একসিটে।
এই প্রথম ওর হাত আমার হাতের উপর পড়লো।
চলবে………….

মায়াবতী বউ ২য় পার্ট

0

মায়াবতী বউ ২য় পার্ট

পিচ্চি পোলা
একটুপর আমিও রুমে ঢুকলাম। দেখি
মেয়েটা আমার খাটে বসে আছে।
এখনো মুখটা ঢেকে রাখছে।
আপনি পাশের রুমে যান একটু
নিচু কন্ঠে বললাম।
আপনি কেমন মানুষ গো। একটা মেয়েকে
ঠাই দিলেন অথচ খেতে বলবেন না?(মেয়েটি)
ভ্রু কুচকে তাকালাম মেয়েটার দিকে।
কি ঝামেলায় পড়লাম।
কোথাকার কোন মেয়ে এসে ঘরে উঠেছে।
তার উপর আবার মা, বোন আসবে একটুপর।
কি বলবো এই মেয়ের কথা, কি ভাববে
মা?
ফ্রিজ থেকে একটা বিরিয়ানির প্যাকেট
বের করে প্লেট ভরে দিলাম টেবিলে।
টেবিলে গিয়ে খেয়ে নেন আর খাওয়ার
পর সোজা ঐ রুমে গিয়ে শুয়ে
পড়ুন।
ভোরে উঠেই চলে যাবেন দয়া করে।
ওকে? (আমি)
ওকে এবার আপনি একটু বাইরে বা অন্য
রুমে যান আমি খেয়ে নেবো। (মেয়েটা)
কি আর করার আপদ যখন ঘরে এনেছি তখন
সামলেই নিতে হবে।
দরজা ঠেলে বাইরে যেতেই দেখি ঝড়
থেমে গেছে তবে বৃষ্টি পড়ছে টুপটুপ করে।
বারান্দায় বসতে যাবো হঠাৎ দেখি গেট
দিয়ে মা আর ছোটবোন আসছে। দুজনই
বৃষ্টিতে ভিজে গেছে।
আমাকে দেখেই মা বললেন কি বৃষ্টি রে
বাবা। ভিজেই আসতে হলো।
এই বলেই মা আর বোন আমার রুমে ঢুকে
পড়লো।
আমি মাথা চুলকাচ্ছি আর ভাবছি কি হবে
এখন? মেয়েটার ব্যাপার কিভাবে
ম্যানেজ করবো?
কিছু না বুঝে তাড়াতাড়ি রুমে ঢুকলাম।
দেখি মা ঐ মেয়েটার মাথায় হাত
বুলিয়ে বলছে কি সুন্দর মেয়ের সাথে
প্রেম করেছে আমার পাগল ছেলেটা দেখ
রুমা। (রুমা আমার ছোটবোন)
এই প্রথম মেয়েটার মুখ দেখলাম আমি।
দেখে পুরাই অবাক হয়ে গেলাম। এ কি
দেখছি আমি।
এ তো সুমির বান্ধবী মায়া।
মায়া আমার দিকে চেয়ে হাসছে।
তার চেয়ে অবাক হলাম মায়া মাকে বলছে
আপনি কেমন আছেন মা?
মা আর ছোটবোন অবাক হয়ে তাকালো
আমার দিকে।
কি রে আমাদের না জানিয়েই বিয়ে
করেছিস সুমি কে? (মা)
মাকে ফোনেই
সুমির নাম বলেছিলাম তাই মায়াকেই
সুমি মনে করে সুমি বলতেছে।
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই মায়া
বললো কিছু মনে কইরেন না মা। আসলে
আমারবাবা আমাকে জোর করে বিয়ে
দিতে চাইছিলো অন্য জায়গায়। তাই
আমরা গতকালকেই বিয়ে করেছি কাজি
অফিসে গিয়ে। হুট করে এমন বিয়ের জন্য
আমরা দুজন আপনাদের জানাতে পারিনি
এসব। সরি মা প্লিজ কিছু মনে করেন না।
তা না হয় বুঝলাম। কিন্তু আজকেও তো
বলতে পারতো আবির।
ওর বাবা শুনলে কি বলবে আল্লাহ জানে।
আসলে আমরা আপনাদের এ ব্যাপারটা
সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য বলিনি আজ
তাইনা গো? (আমার দিকে চেয়ে চোখটিপ
মেরে মায়া)
আমি অপ্রস্তুত ছিলাম। শুধু মাথা নেড়ে
বললাম হুম।
মা তোমরা বাথরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে
আসো তো। ভেজা শরীরে কতোক্ষন
থাকবে? ঠান্ডা লেগে যাবে যাও।
মা মুচকি হেসে বললো আচ্ছা বাবা ফ্রেস
হয়ে আসি পরে কথা হবে।
মা বোন রুম থেকে বের হবার পরই মায়ার
কাছেএগিয়ে গেলাম আমি।
কি হচ্ছে এসব? এমন নাটক করতে গেলেন
কেনো? কি জন্য বলেন।
সব বলবো সময় হলে। এই বলে একটা মুচকি
হাসি দিয়ে টেবিল থেকে উঠে এসে
আমার গালে একটা টোকা মেরে সোফায়
গিয়ে বসলো মায়া।
আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি আর
ভাবছি কি হয়ে গেলো।
খাটে গিয়ে বসতেই ছোটবোন রুমে ঢুকলো।
ভাইয়া ঐ রুমটা ওমন অগোছালো কেনো?
বাবা চিটাগাং যাওয়ার পর বুঝি আর ঐ
রুমের যত্ন নেয়া হয় নাই?
হা রে। বাবা যাবার পর ঐ রুমে যাওয়াই
হয়না যত্ন নিবে কে?
কেনো রে খোকা? রহিমা (কাজের বুয়া)
কোথায়? ওকে তো দেখছিনা। (মা রুমে
ঢুকতে ঢুকতে বললো)
একদিনের ছুটি দিয়েছি বাড়িতে ঘুরে
আসার জন্য। আজকে আসার কথা থাকলেও
ফোন করে বলেছে আসবে না আজ।
ও আচ্ছা। রুমা যা তো মা রুমটা পরিস্কার
কর একটু। (মা)
ঠিক তখনই মায়া বলে ওঠে আপনারা আগে
খেয়ে নেন তো। টেবিলে খাবার বেড়ে
রেখেছি। আমি যাচ্ছি ঐ রুম পরিষ্কার
করতে। এই বলে ঐ রুমে চলে যায় মায়া।
তাকিয়ে দেখি ফ্রিজ থেকে সব বের
করে আমাদের তিনজনের জন্য খাবার
রেডি করেছে।
খেতে বসে মা বলতেছে দারুন একটা
মেয়েকে বিয়ে করেছিস খোকা। কি
লক্ষি মেয়েটা।
আমি কিছুই বলতে পারছি না। মাথাটা
এলোমেলো হয়ে গেছে আমার।
ভাবিটা কিন্তু দারুন সুন্দর ভাইয়া (রুমা)
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই মায়া
রুমে ঢুকে বললো মা আমি কিন্তু গ্রামে
যাবো আপনাদের সাথে।
অবশ্যই যাবে মা। গ্রামে ধুমধাম করে
আয়োজন করে বিয়ের অনুষ্ঠান করবো আমার
ছেলে আর বৌমার।
কিন্তু আবিরের অফিস দেখতে হবে যে।
ওর বাবা তো চিটাগাং রয়েছে। (মা)
তো কি হইছে। ভাবিকে নিয়ে যাবো আর
বাবা আসলে ভাইয়া আর বাবা যাবে
তারপর বিয়ে হবে। (রুমা)
আরে ও তো অফিসের কাজ সব
ম্যানেজারের দায়িত্বে দিয়ে বাবার
কাছ থেকে ১ সপ্তাহের ছুটি নিয়েছে।(মায়া)
আমি অবাক দৃষ্টিতে তাকালাম মায়ার
দিকে। এ খবর ও জানলো কি করে? সত্যিই
তো আমি গ্রামে যাবার জন্য বাবাকে
ফোন করে অফিসের সব কাজ
ম্যানেজারের কাছে হস্তান্তর করে
এসেছি পরশুদিন।
কিন্তু এই মেয়েটা এতো কিছু জানে কি
করে? আর কেনোই বা এমন আমার বউ
সেজে অভিনয় করছে?
কি হলো সাহেব? আরেকটু দেবো
বিরিয়ানি?
মায়ার কথায় চমকে গেলাম।এই মেয়ে তো
সত্যিকারের বউয়ের মতো কথাবার্তা
বলছে।
না নেবো না। মা আর রুমাকে দাও।
খাওয়ার পর শুয়ে পড়ছি বিছানায়। বৃষ্টি
না থাকলে হয়তো একটু রাস্তায় বা
দোকান থেকে ঘুরে আসতাম।
একটা সিগারেট ধরাতে ইচ্ছা করছে। তা
মা আবার কখন ঢুকে যায় ঘরে এই ভয়ে
ধরাচ্ছি না।
টিভিটা অন করে দেখতে চাইলাম কিন্তু
টিভিতেও মন বসছে না।
রাতের কথা ভাবছি। ঐ মেয়েটা বউ
হিসেবে এখন আবার আমার ঘরে শুতে না
এলেই হয়।
মায়াকে নিয়ে মা আর বোন বাবার রুমে
গল্প করছে। জানিনা ঐ মেয়েটা মার
কাছে কি না কি বলতেছে।
টেনশন বেড়েই চলছে… নাহ একটা
সিগারেট ধরাই।
যেই না সিগারেটে ধরাবো এমন সময় কারো
আসার শব্দ পেলাম রুমে। তড়িঘড়ি করে
সিগারেট লুকালাম।
বৌমাকে নিয়ে আগামীকালই আমরা
গ্রামে যাবো কি বলিস আবির? (মা)
এখানে ২/১ দিন থাকো তারপর না হয়
যাবো।
না খোকা। তোর বাবাকে ফোনে সব
বলেছি। সে কয়েকদিনের মধ্যে ফিরবে।
বাবাকে কি বলেছো মা? (ভয়ে গলা
কাঠ)
কি বলবো আবার। তোর আর বৌমার কথা,
আর বলেছি বৌমাকে নিয়ে কালকেই
গ্রামে যাচ্ছি। তুমি ফিরলে সরাসরি
গ্রামে যাবে তারপর ধুমধাম করে ওদের
বিয়ের আয়োজন করবো।
বলো কি মা! কিছু বলে নাই বাবা?
হুম তা তো বলছেই। ভীষন রাগ করে বললো
আমাকে জানালে কি এমন ক্ষতি হতো?
আমি কি ওদের মেনে নিতাম না?
আমি বললাম দেখো আমাদের একটাই
ছেলে সে যখন ভুল করেই ফেলেছে
আমাদেরই সামলে নিতে হবে।
তাছাড়া মেয়েটাকে ওর বাবা জোড় করে
অন্য যায়গায় বিয়ে দিতে চাইছিলো আর
তাইতো ওরা তাড়াতাড়ি এই
সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরো অনেকভাবে বুঝানোর পর বলেছে
আচ্ছা বৌমাকে গ্রামে নিয়ে যাও। আমি
২/১ দিনের মধ্যেই আসছি।
ওহ মা তুমি সত্যিই আমার লক্ষি মা। এই
বলে মাকে জড়িয়ে ধরলাম।
হয়েছে ছাড়। বৌমাকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
এই ঝড় বৃষ্টির মধ্যে বাইরে না গিয়ে শুয়ে
পর।
আমার সারাদিন গাড়িতে থেকে মাথা
ঘুরছে আমরাও শুয়ে পড়বো।
রুমা আর মায়াকে বুয়ার রুমে গিয়ে শুতে
বলো। ওখানে ওরা গল্পসল্প করুক। (আমি)
না না তা শুবে কেনো? রুমা আমার
কাছেই শুবে।
আর বৌমা তোর কাছেই থাক পাগল
ছেলে আমার।
এই বলে মা বের হয়ে গেলো।(মা আমার
কাছে বন্ধুর মতো তাই এমন ফ্রি।)
আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো।এই
নাটকে মায়ার সাথে আমিও অভিনেতা
হয়ে গেলাম। জানিনা কপালে কি আছে।
শুয়ে আছি হঠাৎ দরজা ঠেলে মায়া
ঢুকলো।
চলবে………………

মায়াবতী বউ ১ম পর্ব

0

মায়াবতী বউ ১ম পর্ব

পিচ্চি পোলা
মাথাটা ব্যথা করছে খুবই। বিছানায় শুয়ে
সিগারেট টানছি।
খুব টেনশন হচ্ছে। মা আজ বিকেলেই আসবে
সুমিকে দেখতে। (আমার প্রেমিকা সুমি)
মা জানে সুমি আজ এখানে এসেছে। মা
ওকে দেখেনি কোনদিন। দেখবেই বা কি
করে?
মা তো আর এখানে থাকে না। গ্রাম
থেকে শহরে আসতে তার মনই চায়না।
কতোবার সুমি এখানে এসেছে কিন্তু মা
তো এখানে থাকেনা তাই দেখেনি।
আজ সুমির এখানে আসার কথা ছিলো। মা
ওকে দেখার জন্যই আসতেছে।
কিন্তু মা তো জানেনা গতরাতেই সুমির
বিয়ে হয়ে গেছে।
হ্যা মার জন্যই ওকে আজ এখানে আসার জন্য
রাজি করিয়েছিলাম। আজ আসার কথাও
দিয়েছিলো।
কিন্তু ২ দিন আগে হঠাৎ করে ওর বিয়ে
ঠিক হয়ে যায়। ও ওর বাবাকে বলেছিলো
আমার কথা বাট ওর বাবা রাজি হয়নি। সে
নাকি তার
বন্ধুর ছেলেকেই পছন্দ করেছিলো মেয়ের
জন্য। তার সাথেই গতকাল সুমির বিয়ে
হয়ে গেছে।
গতকালকের দিনটা আমি মদ খেয়ে
পড়েছিলাম বিছানায়। কাজের বুয়াকে তার আগের দিনই বিদায়
করে দিছি। আমার এই কষ্টকে ভুলতে আমি
নেশার মধ্যে আছি। আর এজন্য চাইনি কেউ
এই কষ্ট আর নেশা করার মুহুর্ত দেখুক।
গতকাল সারারাত বিছানায় পড়ে ছিলাম।
আজ দুপুরের আগে উঠে ফ্রেস হয়ে ফ্রিজ
থেকে খাবার বের করে খেয়েছি।
সন্ধা হয়ে গেছে মা এখনও আসছে না।
ছোটবোনকে ফোন দিলাম কই রে তোরা?
আমরা জ্যামে পড়েছিলাম ভাইয়া। আরো
৪ ঘন্টা লাগবে গাড়ি পৌছাতে।
আমি বিছানা থেকে উঠে হাতমুখ ধুয়ে
বের হলাম। নেশার ঘোর কাটেনি।
শরীরটা কাপছে এখনো। কিন্তু ক্ষুধায় পেট
চো চো করছে তাই বাজারে যাচ্ছি কিছু
খেয়ে ও নিয়ে আসার জন্য।
বুয়াকে আজকে আসতে বললেও তিনি ফোন
করে জানিয়েছেন আজ নয় কাল আসবেন।
মা-বোন জার্নি করে আসবে। তাদের
দিয়ে তখন রান্না করানোটা ঠিক হবেনা।
তাই কিছু খাবার কিনে আনি রাতটা
চালানোর জন্য।
বাইরে অন্ধকার। আকাশে চাঁদ তারা নেই।
পায়ে হেটেই যাচ্ছি অল্প রাস্তা দেখে।
১০ মিনিটের রাস্তা হেটে কিছু খাবার
কিনে ফিরতেছি। হঠাৎ পেছনে কারো
হাটার শব্দ পেলাম। দেখি একটা
মেয়ে ওড়নায় মুখ ঢেকে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি আবার হাটতে লাগলাম। কিন্তু লক্ষ
করলাম মেয়েটি আবার আমার পিছে
হাটছে।
আমি আবার থেমে গিয়ে ফিরে
তাকালাম। মেয়েটি ওড়নায় মুখ ঢেকে
নিচের দিকে মাথা দিয়ে দাঁড়িয়ে
আছে।
সন্দেহ হলো আমার। এই গলিতে সাধারনত
খারাপ মেয়েরাই পিছু নেয়। যারা
দেহব্যবসা করে বেড়ায়।
এসব মেয়ে কাছে ভিড়লে আমার বড্ড
বেশি মেজাজ খারাপ হয়। তবে মেয়েটি
মুখ ঢেকে আছে বলে একটু রহস্যজনক
লাগছে।
এখানকার খারাপ পতিতাগুলোকে কখনো
মাথায় কাপড় দিতে বা মুখ ঢেকে রাখতে
দেখিনি। আর ওরা আমার পিছুও নেয়না
কোনদিন কারন এসবের মধ্যে আমি থাকি
না।
যাই হোক এগিয়ে গেলাম মেয়েটির
দিকে।
কি হয়েছে আপনার? আমার পিছু নিয়েছেন
কেন?
মেয়টি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।
কি হলো কথা বলছেন না যে? ঠিক আছে
না বললেন তবে আমার পিছে না এসে অন্য
জায়গায় যান। এসব খারাপ কাজ আমি
করিনা।
এই বলে হাটতেছি। কিন্তু মনে হলো
মেয়েটি তবু আমার পিছে হাটছে।
কি ব্যাপার? কানে শোনেন না, কথা
বলতে পারেন না?
আমাকে একটা রাতের জন্য ঠাই দিবেন
আপনার বাসায়? খুব ভোরেই চলে যাবো।
মুখ ঢেকেই মেয়েটি বললো
না সরি। আমি একা থাকি বাসায়। কোন
মেয়েকে ঠাই দেয়া ঠিক হবে না। অন্য
কোথাও যান।
এই বলে দ্রুত হেটে গেট খু্লে বাড়িতে
এলাম।
খাবারগুলো ফ্রিজে রেখে বিছানায় গা
এলিয়ে দিলাম। ফোনটা হাতে নিয়ে
আবার ছোটবোনকে কল দিলাম…কোথায়
আছিস এখন?
যমুনা সেতুর কাছাকাছি আছি। আর
ঘন্টাখানেক লাগবে।
ফোনটা রেখে আরেকটা সিগারেট
ধরিয়েছি। হঠাৎ বিকট একটা শব্দ হলো।
জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম।
আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে খুব।বাতাস বইছে
প্রচন্ড বেগে। ঝড় শুরু হবে কিছুক্ষনের
মধ্যেই।
জানালাগুলো আটকে দিলাম। বারান্দায়
কিছু জামাকাপড় শুকাতে দিছি সেগুলো
আনতে বাইরে এলাম।
বাইরে এসে চোখ গেলো গেটে।হালকা
আলো যায় বারান্দা থেকে গেটে। সেই
আলোতে দেখি কেউ দাড়িয়ে আছে
গেটে হেলান দিয়ে।
একটু এগিয়ে গেলাম গেটের দিকে।
একি সেই মেয়েটা বাড়িতে ঢুকে গেটের
ওখানে দাঁড়িয়ে আছে।
ঠিক তখনি প্রচন্ডবেগে ঝড়বৃষ্টি শুরু হলো।
মেয়েটি তখনো গেটেই দাঁড়িয়ে
বারান্দার দিকে চেয়ে আছে।
মায়া হলো আমার। বারান্দার গেটটা
খুলে ডাকলাম মেয়েটিকে।এখানে এসে
দাঁড়ান নইলে ভিজে যাবেন।
বলার সাথে সাথে দৌড়ে আসলো
মেয়েটি।
আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছি না।
মেয়েটি সরাসরি আমার রুমে ঢুকে গেলো।
চলবে……………………..

আমার বুড়ো অন্তিম পর্ব 

0

আমার বুড়ো অন্তিম পর্ব

লেখিকা সুরিয়া মিম

!
যাই হোক বাবা তোমাকে আর জ্বালাবো না,
.
হা হা হা,

কি হয়েছে বুড়ো?
কিছু বলবে?
….
হ্যা একটা কথা আমি কিছুদিন হলো জানতে পেরেছি,
….
কিন্তু কিছু তেই তোমাকে সাহস জুটিয়ে বলতে পারছিনা,

আমি বুঝতে পারছিনা বিষয় টা তুমি,
কিভাবে নিবে?

কি বলবে তাড়াতাড়ি বলো এভাবে নাটকের মতো সাসপেন্স ক্রিয়েট করো নাতো প্লিজ আমার ভয় করছে,
…..
তাহলে শোনো,
ইমান হসপিটালে,
…..
তো আমি কি করবো?
……
তুমি মানো আর না মানো এটা তো সত্যি যে ও তোমার স্বামী তোমার সন্তানের বাবা,
.
so what should I do?
.
মিশশশ ওর ব্রেন টিউমার ধরা পরেছে এবং ও লাস্ট স্টেজে আছে,
….
বুড়োর কথা শুনে আমার চোখেরজল চলে আসে,
….
কারন আমি চেয়েছিলাম যে খান সাহেব শাস্তি পাক,
তবে এভাবে পাক তা কখনওই চাইনি,
….
কেন চাইবো আমি ওনার সাথে সংসার করেছি,
ওনার সন্তানের মা হয়েছি,
ভালোবাসা মানে টা প্রথমে উনি আমাকে শিখিয়েছেন,
….
তাই কখনওই মৃত্যু কামনা আমি করতে পারবোনা,

যদি ও সে আমাকে কষ্ট দিয়েছে তবু ও আমি তো নিষ্ঠুর নই,

কি হলো কি ভাবছ সোনা?
হসপিটালে যাবে?
…..
মা তোমার না হসপিটালে গিয়ে আঙ্কল কে দেখে আসা উচিত,
কারন,
আঙ্কল বোকামো না করলে তো তোমাকে আমি আমার মা করে পেতাম না তাই না?

তাই বলছি চলো না মা,
একটি বার গিয়ে দেখে আসো,
….
মেয়ে ও তার বাবার কথা শুনে রেডি হয়ে ওদের সাথে হসপিটালে যাই,
…..
হসপিটালে ঢুকতেই ছোটো ছেলেটা আমাকে জড়িয়ে ধরে,
হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করে,
….
ইশান বাবা কাঁদেনা,
দেখি চোখেরজল মুছো,

এখানে মিসেস খান কে?
….
হ্যা ডক্টর বলুন?
….
আসলে আপনার হ্যাজবেন্ট আপনাকে দেখতে চেয়েছিলেন,

এখন উনি ঘুমিয়ে আছেন তবে তাকে একবার দেখে আসতে পারেন,
…..
চলো আমি তোমাকে ইমানের ক্যাভিনে নিয়ে যাচ্ছি,
….
বুড়ো তোমার কষ্ট হয় না তোমার বৌ কে তার প্রথম স্বামীর কাছে নিয়ে যাচ্ছ?

নিয়ে যাচ্ছি দিয়ে তো আসছিনা,
তাছাড়া আমি চাই না ও যে কটা দিন বাঁচুক মনে কষ্ট নিয়ে বাঁচুক,
..
তাই ও যদি তোমাকে চোখের দেখা দেখে স্বস্তি পায় পাক,
আমার কোনো অভিযোগ নেই,

কারন ওর জন্যে আমার ভালোবাসার মানুষ টিকে খুজে পেয়েছি,
….
চলো ভেতরে চলো,
..
ক্যাভিনের ভেতরে ঢুকে দেখি উনি,
ঘুমিয়ে আছেন এবং ওনার মুখ টা ফ্যাকাসে হয়ে আছে,
….
একটু ছুয়ে দেখবে ওকে?

বুড়ো তোমার মাথাটা কি গেছে?

না গো না,
.
তারপর বুড়ো আমার হাত টা তুলে ওনার গালে ছুয়ে দেয়,
আর আমার গালে চুমু খেয়ে হাসতে হাসতে বেড়িয়ে যায়,
….
হঠাৎ উনি আমার ওনার গালে চেপে ধরে বলেন,
.
মিশু তুমি এসেছ?
আমি না খারাপ কাজ করেছি আমাকে ক্ষমা করে দাও,
আমি তো তোমার ঘৃণা নিয়ে কবরে যেতে পারবোনা,

আমার কাছে একটু আসবে?
.
ওনার কাছে আসতেই উনি ওনার বা হাত আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলেন,
….
আমি তোমার সংসারে কোনো অশান্তি চাই না
আমি মরে যাওয়ার আগে তোমাকে প্রতিদিন চোখের দেখা দেখতে পাওয়ার অনুমতি চাই,
….
তোমার কাছে ক্ষমা চাই,
আমি কখনওই তোমার কাছে স্বামীর অধিকার দাবি করবোনা,
….
দেখুন আমার ওপরে কোনো অভিযোগ নেই,
আমি আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছি
আমি এখন আসি ,

আমি ক্যাভিনের বাহিরে এসে দেখি আমার বুড়ো টা চেয়ারে বসে ভিডিও গেম খেলছে,
..
আমাকে দেখে মিষ্টি হাসি দিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে,

কি হলো মাএ পাঁচ মিনিটের মধ্যে চলে এলে হুমমম?
….
হ্যা তো?

ডক্টর কিছু বলেন?
…..
হ্যা মিস্টার খানের মেন্টাল কন্ডিশন যা দেখলাম,
তাতে ওনাকে কোনো স্ট্রেস দেওয়া যাবেনা,
যত সম্ভব ওনাকে হাসি খুশি রাখতে হবে,
….
যেকোনো মেন্টাল প্রেশার ব্রেনের জন্যে বিপদজনক হতে পারে,
..
আই হোপ আমি কি মিন করছি সেটা আপনারা বুঝতে পারছেন,

তাই বলছি বি কেয়ার ফুল,
….
ওকে,

একটা কথা বলবো বুড়ি?

হ্যা বলো?
….
ইমান কে আমাদের বাড়িতে নিয়ে যাবে?
আমরা সবাই মিলে ওর দেখা শোনা করবো,

দেখো ও অল্প কয়দিনের মেহমান নিজের কর্মের নিজেই পস্তাচ্ছে,
…..
ও হয়তো নিষ্ঠুর আমরা তো নই তাই না?
….
বুড়ো তুমি কি আমার মনে ঢুকে দেখেছিলে আমি কি চাই?
….
হ্যা আমি তো জানি তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসো,
ইমান কে বাসো তবে আমার থেকে কম,

তোমার কষ্ট হবে তো?

হবে না বুড়ি,
মানবিকতা বলতে ও একটা জিনিসআছে,
….
তাছাড়া তোমার আদর ভালোবাসা পওয়ার অধিকার শুধু আমার একার না ইমানের ও আছে,
তোমার বাচ্চাদের বাবাতো,
তোমার স্বামী তো বলো?
….
তোমার মাথা টা না গেছে বুড়ো,

হুমম, আই লাভ ইউ বুড়ি,

যাহহহ দুষ্টু মি করে,
.
তারপর আমি বাসায় ফিরে যাই,

সন্ধায় আমার বুড়ো খান সাহেব কে নিয়ে হাজির হয়,
…..
তারপর ওনাকে ধরে আমাদের পাশের রুমে শুইয়ে দেয়,
…..
বিদেশি ডক্টর এসে ওনার প্রপার চেকাপ করেছিলেন,

চেকাপ করে জানায় ওনার হাতে বেশি সময় নেই,
….
মাএ দু মাসের মেহমান উনি,
তাই আমি চাই না উনি মনে কষ্ট নিয়ে চলে যাক,
….
আর তাই আমি আমার সবটা দিয়ে ওনার সেবাযত্ন করি,
আমার বুড়ো টাও আমাকে সাহায্য,
….
একদিন দুপুরে উনি হঠাৎ করে আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলেন,

তোমাকে আমি এতো কষ্ট দিয়েছি,
তবু ও তুমি আমাকে কেন ভালোবাসো,

ডক্টর বলেছে আপনাকে স্ট্রেস না নিতে আপনি কাঁদবেন না প্লিজ,

আমাকে একটু জড়িয়ে ধরবে?

ওনার কথা শুনে তাকিয়ে দেখি,
আমার বুড়ো টা ওনা র পেছনে দাঁড়িয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরতে ইশারা করছে,

তাই আমি ওনাকে জড়িয়ে ধরি,

তখন বুড়ো টা মিষ্টি হাসি দিয়ে দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে,

তারপর আমি ওনাকে শুয়ে দিয়ে বুড়োর সাথে রুমে চলে যাই,

তখন বুড়ো টা আমাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আর আমি বুড়োর কপালে আলতো করে চুমু একে দেই,
…..
রাতে আমি একা একা ছাদে দাঁড়িয়ে চাঁদ দেখছিলাম,

তখন দুপাশ থেকে দুজন এসে আমার হাত চেপে ধরে,

ডায়ে বায়ে তাকিয়ে দেখি,
আমার বুড়ো দুটো আমার হাত চেপে ধরে চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে,
আজকে আমার নিজেকে সবচেয়ে সুখী বলে মনে হচ্ছে হুমমমম,
…..
কারন আজকে আমার স্বামী দের সাথে এক সাথে দাঁড়িয়ে রমজানের চাঁদ দেখছি,
…..
কালকে থেকে রহমতের দিন শুরু,
সবাই দোয়া করবেন আমি যেন আমার বাচ্চাকাচ্চা ও বুড়ো দুটো কে নিয়ে সুখেস্বচ্ছন্দে পারি,

.
…..
সমাপ্ত

আমার বুড়ো part : 15

0

আমার বুড়ো part : 15

লেখিকা সুরিয়া মিম

!
আমাকে ক্ষমা করবেনা?

তোমার বাহুডোরে আমি আমার জায়গায় অন্যকাও কে মেনে নিতে পারছিনা,

তুমি তো আমার সন্তানেরর জন্ম দাত্রী মা,
ওদের মতো তুমি ও আমার ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে?
….
কি হয়েছে বুড়ো?
কেন তুমি অন্যের বাসায় উঁকিঝুঁকি মারো?
….
ওওওওও হো প্রথম বৌ বুঝি চোখে হাড়াচ্ছ?
হাড়িয়ে লাভ নেই বুড়ো,
কারন সে অন্য কাও কে নিয়ে হাড়িয়ে গেছে,
…..
প্লিজ ইশা চুপপ করো তুমি,
..
কেনো করবো চুপপ?
থাইল্যান্ড থেকে আসার পর এই একমাসে তুমি আমাকে ছু্ঁয়ে ও দেখনি,
….
কেন গো প্রথম বৌ কে কাছে না পেয়ে সন্ন্যাস গ্রহণ করেছ?

তাহলে তো ভালোই কারন আমি তোমার কে নিয়ে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে গেছি বুড়ো,
….
তুমি কি পেলে চুপপ করবে ইশা?
….
অনেস্টলি তোমার প্রপার্টি অর্ধেক পেলে আমি সাড়া জীবনের জন্যে চুপ করে যাবো,
….
Are you crazy?

No baby actually,
তোমাকে তো আমি তোমার প্রপার্টির জন্যে বিয়ে করেছি,
না হলে কোন মেয়ে তোমার মতো বুড়ো কে বিয়ে করে ফিজিক্যালি ইনভলব হতে চায়,
তুমিই বলো?
….
তাহলে তুমি?

হ্যা আমি তোমাকে ভালোবাসার মিথ্যে নাটক করেছিলাম,
সে যাই হোক,
তুমি এতো লালসাযুক্ত,
যে আমার শরীরের লোভে পরে নিজের সন্তানের মাকে অসম্মান করেছ,
….
মিথ্যে বলবো না আল্লাহ পাপ দিবে,
কারন,
.
ওই মহিলা চল্লিশ বছর তোমার সাথে সংসার করেছে নিজের সব টা দিয়ে,
.
তারপর ও তোমার মন পেলো না,
এখন যখন সে নিজে একটু ভালো থাকার চেষ্টা করছে,
ওমনি তুমি তার জন্যে মরিয়া হয়ে যাচ্ছ,
….
আর হবে নাই বা কেন?
তোমার দূরবলতা তোমার সন্তানের মা আমি নই,
…..
আর একটা সত্যি কথা বলি,
….
কি?
…..
বুড়ো শুধু তুমি না তোমার মতো আরো অনেক বুড়োর সাথে আমি শুয়েছি,
তাই তো তোমার সাথে শুতে খারাপ লাগেনি আমার,
….
ইশার থেকে এসব শুনে “থ” হয়ে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন খান সাহেব,
..
কিন্তু ইশা সেদিকে কর্ণ পাত না করে লকার থেকে তিন কোটি টাকা নিয়ে,
ডিভোর্স পেপারে সাইন করে সেটা বুড়োর হাতে ধরিয়ে নিজের ট্রলি ব্যাগ নিয়ে চলে যায়,
……
তারপর খান সাহেব রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন,

মাঝরাতে হঠাৎ করে রাতে আমার বুড়ো আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,

তখন ওর বুকে হাত দিয়ে দেখি,
জ্বর বেড়ে গেছে ওর তার ওপরে ঠান্ডা ও পরেছে,
শীত করছে বলে বুড়ো আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে,

তাই বুড়োর গায়ে পাতলা কম্বল টেনে দিয়ে,
মেয়ে কে দেখতে ওর রুমে চলে যাই,
সেখানে গিয়ে দেখি,
…..
মেয়ে আমার গুটিসুটি মেরে ওর কোলবালিশ টাকে খামচে ধরে চোখ বুঝে শুয়ে আছে,

ঠিক যা বুঝেছিলাম তাই,
মেয়ে আমরা ভয়ে দুচোখর পাতা এক করতে পারেনি,
….
কি হয়েছে মা?

মা তুমি??
জানো আমি?
…..
একটু ও ঘুমোতে পারিনি তাই তো?

মা আমি তোমার কাছে ঘুমবো,

তাহলে চলো বাবার কাছে চলো,
….
মা বাবা ঠিক আছে?
….
একটু জ্বর বেড়েছে মা,
….
ওওও চলো বাবার কাছে চলো আবার যদি তোমাকে খোজে?
..
হ্যা মা চলো তোমার বাবাকে জলপট্টি দিয়ে দিবো,
….
মেয়ে কে নিয়ে ওর বাবার পাশে শুইয়ে ঘুম পারিয়ে ওর বাবাকে জলপট্টি দিয়ে দেই,
.
বুড়ো টাকে জলপট্টি দিতে দিতে আমি ওর বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরি,
….
পরেরদিন ভোরের আলোতে চোখ মেলে চেয়ে দেখি,

বুড়ো টা আমাকে কোলে নিয়ে ছাদে যাচ্ছে,
…..
আশ্চর্য কালকে জ্বরের ঘোড়ে যে আমাকে জড়িয়ে দরে ঠকঠকিয়ে কাঁপছিল,
সে এখন আমাকে কোলে নিয়ে ছাদে হওয়া খেতে যাচ্ছে?
….
How funny?
….
How funny? না বুড়ি
How romantic?
হা হা হা,
….
বুড়ো তোমার না জ্বর?
…..
ছিল এখন আর নেই,
তোমার মতো বৌ যার ঘরে আছে,
তার আবার কোনো রোগবালাই আছে নাকি হুমমম?
….
তা নয় বুঝলাম কিন্তু আমার মেয়ে কোই বুড়ো?
……
তোমার জামাই বাবাজীর সাথে প্রেম করতে গেছে,

বুড়ো তুমি ফাজলামো করো কেন?

কারন তোমার মেয়ে এখনো ঘুমচ্ছে,
….
ওহহহ তাই বুঝি তুমি সুযোগের সৎ ব্যবহার করছ বুড়ো?

ইয়েস বুড়ি,
তোমাকে না আজকে অনেক বিউটিফুল লাগছে,

ইসসস আমার বাবা কতো রোমান্টিক,

আমি তো সেদিন বুঝে গেছিলাম যেদিন মা কে প্রথম আমাদের কাছে নিয়ে এসেছিলাম,

আর তুমি প্রথম দেখা তেই মায়ের প্রেমে পরে হাবুডুবু খাচ্ছিলে বাবা,

হা হা হা,

যাই হোক এখন আর তোমাকে জ্বালাবোনা বাবা,
….
হা হা হা,
চলবে,,,,,,

আমার বুড়ো part : 14

0

আমার বুড়ো part : 14

লেখিকা সুরিয়া মিম

!
আগে বাসায় চলো প্রেম আমি তোমাকে করাচ্ছি বুড়ো,
…..
হা হা হা,

হাসো কেন?
…..
কারন আজকে থেকে বাসা পুরো ফাকা,
তো তোমাকে আমার কাছ থেকে কে বাঁচাবে বুড়ি?

বুড়ো একটু বেশি হয়ে যাচ্ছেনা?

হলে সমস্যা কি?
তোমার মেয়ে তো নেই তাই না?

ফাজিল.
…..
ফাজিল বলে লাভ নেই বুড়ি,

আসো আমার কাছে আসো,

সাধে কি মেয়ে আমার এতো ফাজিল হয়েছে?
….
মেয়ের কথা বাদ দাও আমার কাছে আসো,
….
বুড়ো ফাজলামো করো নাতো,
ফাজলামোর ও একটা সীমা আছে হুমম?
….
কি হলো বুড়ি টিভি ছেড়ে বসেছে কেন?

নিউজ দেখবো তাই,
….
নিউজ দেখে কি করবে তোমার বুড়ো টাকে দেখো,
….
কি হলো ভয় পাচ্ছ কেন?

দেখো না খবরে কি বলছে?
ঘূর্ণিঝড় ফনী না মনির কারনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ও সহ অন্যান্য জায়গায় ছয় নম্বর বিপথ সংকেত দেখিয়েছে ফনীর আঘাত হানার সম্ভাবনা ও রয়েছে ,

আমাদের মেয়ে টাও তো কক্সবাজারে যাচ্ছে এখন যদি কিছু হয়ে যায়,

তুমি কাঁদছ কেন কিছু হবে না,
….
দেখো আমার কিছু চাই না আমার মেয়ে টাকে তুমি আমার কোলে ফিরিয়ে দাও,
….
তখনি হঠাৎ করে কলিং বেল বাজার শব্দ হয়,
….
শব্দ শুনে ছুটে গিয়ে দরজা খুলে দেখি,
….
মেয়ে আমার কাকভেজা ভিজে ট্রলি ব্যাগ ধরে দাঁড়িয়ে আছে,
….
মেয়ে আমাকে দেখেই শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,

মনে হলো যেন ভয় পেয়ে আছে,

কি হলো মা কি হয়েছে?
…..
মা তুমি জানো আমাদের গাড়ি থেকে অনেক টা দূরেই এক আঙ্কল বজ্রাঘাতে মরে গেছেন,
….
বজ্রপাত টা আমাদের চোখের সামনে হয়েছে মা,
…..
মা ওই আঙ্কল টার জায়গায় আমরা ও হতে পারতাম বলো?

না সোনা চলো ভেতরে চলো,
….
তারপর আমি ওকে ওর রুমে নিয়ে যাই,
.
ও ফ্রেশ হয়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে,

বুঝেছি মেয়ে আমার অনেক ভয় পেয়েছে তাই এভাবে কান্নাকাটি করছে,
….
তখন ওর বাবা ও আমি ওকে অনেক বুঝিয়ে ঘুম পারিয়ে দেই,
…..
রাতে আমি ওদের জন্যে খাবার বানিয়ে মেয়ে কে খাইয়ে ওর বাবার রুমে গিয়ে দেখি,
…..
আমার বুড়ো টা বিছানায় পরে পরে ঘুমচ্ছে,

বুড়োর কাছে গিয়ে ওর মাথায় হাত দিয়ে দেখি জ্বরে গা পুরো যাচ্ছে ওর,
…..
আল্লাহ এই ঝড়বৃষ্টির রাতে এখন আমি ডক্টর পাবো কোই?
….
মেয়ে টা ওদিকে ভয় পেয়ে আছে,
কি যে করি কিছু মাথায় আসছেনা আমার,
….
তখনি বুড়ো টা আমাকে শক্ত করে ধরে বলে,
…..
বুড়ো টার কথা এতক্ষণে মনে পরলো বুড়ি?
কি গো বুড়ি কাঁদছে কেন?

তোমার দেখি জ্বর হয়েছে বুড়ো,
….
হয়েছে তো হয়েছে তা বলে তুমি কাঁদবে?
….
বুড়ো তুমি চুপ করো তো আমি তোমাকে খাইয়ে দিচ্ছি,

তারপর আমি বুড়ো টাকে খাইয়ে খাইয়ে দেই,
….
বুড়োর খাওয়া শেষ হলে মেয়ে আমাকে ঔষধ দিয়ে বলে,
….
বাবা ঔষধ টা খেয়ে নাও ভালো লাগবে তোমার,
আর ডক্টর আঙ্কল ও আসছে ফোন করেছি আমি,
…..
এই ঝড়বৃষ্টির রাতে আবার তাকে ডাকতে গেলি কেন মা?
….
এমন করে বলছিস যেন আমি মঙ্গল গ্রহে থাকি?

নারে সায়ান এতো ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে তাই বলছিলাম আরকি,
।।।।
এখন আমি এসেছি তাই বলে লাভ নেই বুঝলি,
….
দেখি কি রোগ হয়েছে ওর?

কি হলো?
কি বুঝলেন সায়ান ভাইয়া?

কিছুনা ভাবি নরমাল জ্বর হয়েছে ওর,
নরমাল নাপা খেলে ঠিক হয়ে যাবে,
….
ওওওও মেয়ের চেকআপ করে কি দেখলেন?
..
মেয়ে তো সুস্থ আছে,
তবে,

কি?
….
তবে সব রোগ কি ভাই তোর আর মেয়ের?
আমার ভাবির কি কোনো ব্যামো নেই?

আমার ব্যামো হলে আপনি জানতে পারবেন ভাইয়া,
চলুন এখন খেতে চলুন,
…..
হ্যা ভাবি চলেন,,
.
উফফফ,
ভাবি আপনার হাতের রান্না এতো মজাদার,
আমি তো আমার বৌ কে প্রায়ই বলি,
মিশশশ ভাবির কাছ থেকে তার মতো রান্না শিখে আসো,
…..
তাই বুঝি রিয়া আমাকে কুকিং ক্লাস নিতে বলেছে?
..
হ্যা ভাবি,
হা হা হা হা,
…..
আচ্ছা ভাবি আমি এখন আসি,
….
জ্বি ভাইয়া সাবধানে যাইয়েন,
….
হ্যা অবশ্যই,
…..
মা শোনো?

হ্যা মা বলো,
….
তুমি বাবার কাছে গিয়ে ঘুমো,
রাতে যদি বাবার জ্বর বেড়ে যায় তখন?

আচ্ছা বাবা যাচ্ছি,
রাতে আবার ভয় করবে নাতো হুমম?
..
না মা করবে না তুমি বাবার কাছে যাও,

বুড়োর কাছে গিয়ে ওর গায়ে কাঁথা টেনে দিয়ে ওর ঠান্ডা লেগে যাওয়ার কারনে,
..
ওর বুকে গরম তেল মালিশ করে দেই,
হাতে তেল মালিশ করে পায়ে হাত দিতেই বুড়ো টা আমাকে বলে,
..
বুড়ি তোমার জায়গা তো আমার বুকে তাহলে ওখানে কি করছ?
আসো আমার বুকে আসো,
…..
বুড়ো এভাবে পাগলামো করো না তো,
….
পাগলামো করছি না বলছি আমার কাছে আসো,

এসেছি এখন বলো,
….
আমাকে জড়িয়ে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরো তো,

ধরেছি,
….
উফফফ এখন খুব ভালো লাগছে আমরা,

হয়েছে বুঝেছি আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি,
তুমি একটু ঘুমোবার চেষ্টা করো,
….
আচ্ছা ঠিক আছে বুড়ি,
….
মিশু খুব ভালোবাসো তুমি রুহান কে তাই না?
….
তাই ওকে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পারিয়ে দিচ্ছ মিশু,
……
আমি তোমাকে অন্যকারো সাথে মেনে নিতে পারছিনা মিশু,
…..
তোমাকে অন্য কারো সাথে দেখলে আমার খুব কষ্ট হয় মিশু,
….
তুমি কি আমার কাছে কখনওই ফিরে আসবেনা,
….
আমাকে ক্ষমা করবে না?
চলবে…

আমার বুড়ো part : 13

0

আমার বুড়ো part : 13

লেখিকা সুরিয়া মিম

!
হ্যা গো খুব হা হা হা,
…..
চলো রুমে চলো,

কেন?

মেয়ে আমাকে ছাদে দেখলে হুলুস্থুল কান্ড বেধে যাবে হুমমম,

মেয়ে আমাদের দেখছে ছাদে আসতে,
….
বুড়ো তুমি অফিসে যাবেনা?
….
নাহহহ আজকে বাসা থেকেই সমস্ত অফিসিয়াল কাজ থেকে পরিচালনা করবো বুড়ি,
…..
বাই দ্যা ওয়ে পায়েল টাকি পছন্দ হয়েছে বুড়ি?
……
হ্যা বুড়ো,
তবে আমি এই বয়সে এসে পায়েল পরে ধেইধেই করে নাচবো হুমমম?

হ্যা নাচবে আমাকে নেচে দেখাবে,
সেদিন তো মেয়ে কে কতগুলো নাচের স্টেপ দেখিয়ে দিচ্ছিলে,
আমি বুঝি দেখিনি তাই না,
…..
বুড়ো তুমি লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছিলে হুমমম?
….
হ্যা সামনাসামনি দেখার থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে বেশি ভালো লাগে তুমি জানো বুড়ি,
…..
তা বুড়ো তুমি লুকিয়ে লুকিয়ে কি দেখলে?

প্রথমে তো তোমাকে নাচতে দেখেছিলাম পরে তোমার কোমর দেখে হা করে ছিলাম বুড়ি,
….
এখন মুখটা বন্ধ করে নাও নাহলে মাছি ঢুকে যাবে বুড়ো,
….
বুড়ি আই লাভ ইউ,
. ..
ইসসস,
এভাবে জড়িয়ে ধরেছ কেন বুড়ো,

খুব ইচ্ছে করছে তাই বুড়ি,
….
জড়িয়ে ধরো আর যাই করো আমার যদি ছোটো ভাই বোন হয় তোমার তাহলে খবর আছে বাবা,
….
এভাবে ঝগড়া করেনা মা,
মন খারাপ কেন মা?
..
আমি টুরে কক্সবাজার যাচ্ছি কয়দিনের জন্যে তোমাকে তো তখন আর কাছে পাবো না
তাই মা,

এতো মনখারাপ করে না মা,
মাএ কয়দিনের ব্যাপার তো এতো চিন্তা করেনা সোনা,
…..
নতুন সংসারে স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে আছো সেটা তো দেখতেই পাচ্ছি,
….
কিন্তু এই সংসার টাও তোমার সংসার এখানে ও তো একটা বুড়ো আছে,
তার কথা কি একটু ও মনে পরেনা তোমার?
….
এই বুড়ো টার সাথে তো চল্লিশ টা বছর সংসার করেছ তুমি,
সে সময়ে কাটানো সুখের মুহূর্ত গুলো ভুলে গেছ তুমি?

কিছু ভুলিনি আমি সবি মনে আছে আমার,
…..
তবে এখন আর মনে রেখে কোনো লাভ নেই খান সাহেব,
….
কারন আপনি আমাকে আমার ভালোবাসা কে মনে রাখেননি,
….
এই বয়সে এসে আপনি আমাকে আপনাকে ঘৃণা করার সুযোগ করে দিয়েছেন,
আর এখন আমি আমার সব টা দিয়ে আপনাকে ঘৃণা করি,
…..
মানুষ তো সুযোগর সৎ ব্যবহার করে,
তাহলে আমি কেন করবো না?
….
yes of course করছি এবং করবো,
যেভাবে আপনি আমাকে চল্লিশ বছর ধরে ব্যবহার করে সুযোগের সৎ ব্যবহার করেছেন,
….
আমি ও করবো,
….
কি হলো বুড়ি?

কিছুনা চলো ব্রেকফাস্ট করতে চলো,
….
হুমমমম ইয়ামি, মা তোমার হাতের রান্না এতো ইয়ামি,
মন চাইছে তোমাকে ও সাথে করে কক্সবাজার নিয়ে যাই,
….
তুমি যাচ্ছ যাও আমার বুড়ি কে নিয়ে যাওয়া যাবেনা হুমমম,

হ্যা আমি তো জানি আমি আমার মা কে নিয়ে গেলে তোমার আবার রোমান্স করতে অসুবিধে হবে তাই আমি নিয়ে ও যাবো না,
হা হা হা,
….
ফাজিল মেয়ে,

তুমি ফাজিল তোমার চৌদ্দ গুষ্টি ফাজিল বাবা,

হি হি হি,
….
রুহানি,
….
তোমরা থামবে না আমি এখান থেকে চলে যাবো?
….
না মা তুমি কোথাও যাবেনা,
তাহলে চলো মা টুরের জন্যে প্যাকিং করতে হবে তো,

মা প্যাকিং অলমোস্ট ডান,
কিন্তু আমি তোমাকে ছাড়া তিনদিন ওখানে থাকবো কি করে সেটাই তো ভেবে পাচ্ছিনা হুমম,
….
এমন করে না মা মাএ তিনদিনের ব্যাপার তো,
চলো রেডি হতে চলো…
…..
মিশশশ হ্যা?
…..
মেয়ে রেডি হয়ে গেছে?
….
না হচ্ছে কেন?
….
আমরা এসে পরেছি তাই,

বাবারা তোরা বয় আমি তোদের জন্যে নুডুলুস বানিয়ে নিয়ে আসি,
….
ইয়েপপপ তাহলে তো ভালোই আন্টি তুমি তাড়াতাড়ি যাও,

মা নুডুলুস প্যাক করে দিয়ো প্লিজ আমরা নুডুলস দিয়ে লাঞ্চের কাজ টা করে নিবো,

তুমি নুডুলসের গপ্প করছ আর তেমার মা তোমাদের জন্যে বিরিয়ানি রান্না করে প্যাকিং করে রেখেছে,
….
ওহহহহহ আন্টি তুমি অনেক সুইট,
….
সুইট তো হবেই আমার মা বলে কথা,

তোমরা সাবধানে যেও বাবারা,
ফুল স্পিডে গাড়ি চালাবেনা কেমন?
….
হ্যা মা মনে থাকবে,
..
রুহানি সেই এিশ মিনিট ধরে আন্টি কে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছিস,

তুই কি টুরে আজকে যেতে চাও না নাকি?

হ্যা চাই,
….
তাহলে আন্টির আচলের তলা থেকে বেড়িয়ে আয়,
..
মা ,

এমন করলে হয়?
দেখ সবাই তোমার দিকে তাকিয়ে আছে,
..
লাভ ইউ মা,
….
সাবধানে সোনা,

হ্যা মা,

মেয়ে টা চলে গেল বাসা পুরো খালি হয়ে গেল,
….
নাহহহ গেছে ভালোই হলো এখন আমি আমার বুড়ির সাথে প্রেম করতে পারবো,

বুড়ো তুমি আমার সাথে প্রেম করবে?

হ্যা করবো,
..
আগে বাসায় চলো প্রেম আমি তোমাকে করাচ্ছি বুড়ো,
….
হা হা হা

চলবে

আমার বুড়ো part : 12

0

আমার বুড়ো part : 12

লেখিকা সুরিয়া মিম

!
আমি আমার বৌ কে দেখিনি অনেকক্ষণ ওকে দেখে আসি,

জানিনা কোনো নারীর তার স্বামীর ভাগ দিতে কেমন লাগে?

তবে জীবনের এই মুহূর্তে এসে বৌয়ের ভাগ দিতে আমার পরান টা কেপেঁ কেপেঁ উঠছে,
….
এই যে ইমান কি ভাবছ তুমি?
…..
আমার ছোটো ছেলেটার কথা ভাবছি?
..
কেন ইশান আবার কি করেছে?
….
ছোটো ছেলেটা বড়ই মায়ের ন্যাওটা জানো,
এই এতো বড় হয়েছে তবু ও মা ছড়া কিছু বোঝে না,
….
দিনে দশবার ফোন দিয়ে মায়ের সাথে কথা বলবে,
সেই ছেলে ছয়মাস মায়ের সাথে কথা না বলতে পেরে আমার সাথে ও কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে,
….
ছেলে তো এই ছয় মাসে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা জানেনা,
জানলে ও আমার দিকে ফিরে ও তাকাবেনা,
….
ছেলে আমার ভালোর ভালো খারাপের জম,
এখন আমার ভয় ও যদি এখানে ফিরে ওর মায়ের কাছে চলে যায় তাহলে,

ইশানের তো এখনো বিয়ে শাদী হয়নি না,
…..
না,

বুড়ো তুমি আমাকে বিয়ে করে ও তোমার বৌ কে ভুলতে পারনি তাই না?
….
চল্লিশ বছরের সংসারে এতো এতো অভ্যাস মানুষ বদলে গেলে ও অভ্যাস বদলায় না,
তাই আমার ওকে ভোলা ও সম্ভব না,
….
মা রাত হয়ে গেছে গেস্ট রাও চলে গেছে তুমি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও,
….
আমি বাবা কে ডেকে দিচ্ছি,
..
ওকে মা,
….
শাওয়ার নিয়ে রুম এসে দেখি,
….
আমার বুড়ো শাওয়ার নিয়ে এসে ভিজে চুল মুছতে টাওয়াল খুজে বেড়াচ্ছ,
….
বেখেয়ালে উনি আমার সাড়ির আচল তুলে মাথা মুছতে শুরু করে,
….
মাথা মোছা শেষ হলে,
আমার সাড়ির আচল টা ছেড়ে দিলে ভালো হয়,

ইয়ে মানে আমি না বুঝতে পারিনি সরি,

হঠাৎ করে উনি আমার কাছে এক পা এক পা করে এগিয়ে আসতে থাকেন,

হুট করে আমার কাছে এসে মাথায় ঘোমটা দিয়ে বলে,
….
তোমার হৃদয় টা তো এতো বড়ো,
সেখানে কি আমার বেশি না একটু জায়গা হবে না নাকি?
….
না হবে না বুড়ো,

দেখো বুড়ি কিপটেমো করোনা,
শুধু একটু জায়গা চাইছি,
স্বামীর অধিকার তো চাই নি,
…..
তখন খেয়াল করে দেখি মেয়ে আমার দরজায় দাঁড়িয়ে ওর মুখ চেপে হাসছে,
….
বুড়ো তোমাকে আমি এমনি এমনি বিয়ে করিনি,
….
তাহলে কেন করেছ?
….
তোমার পয়সা প্রপার্টি ব্যাংক ব্যালেন্সের জন্যে,

তখন উনি হাসতে হাসতে আমাকে বলেন,

তাহলে কালকেই আমার সমস্ত স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি তোমার নামে লিখে দিবো,
বিনিময় তোমার আমাকে ভালোবাসতে হবে,

ভালোবাসার জন্যে ঘুষ দিতে হবেনা এমনি তেই পেয়ে যাবেন,
…..
বাবা তুমি না আস্তে একট…..
….
কি?
….
কিছুনা,
..
আজকে আমার মা কে তোমাকে দিয়ে গোলাম,
সামলে রেখো প্লিজ,

হ্যা অবশ্যই,
….
মেয়ে যেতেই উনি দরজা লাগিয়ে আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আর আমি ওনার মাথায় হাত বুলিয়ে দেই,
….
তারপর উনি ঘুমতেই আমি ওনার গায়ে কাঁথা টেনে দিয়ে ওনার পাশে শুয়ে পরি,
…..
কিছুদিন ধরে লক্ষ করছি মেয়ে আমাকে কিছুতেই ছাদে যেতে দিচ্ছে না,
….
আজকে ওর বাবার সাথে ছাদে হাটতে যেতেই আমি পাশের ফ্লাটে খেয়াল করে দেখি,

খান সাহেব সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন,

হঠাৎ বুড়ো টা আমাকে কোলে তুলে,
সোফায় বসিয়ে পকেট থেকে পায়েল বেড় করে পরিয়ে দেয়,
….
আমি হাসবো না কাঁদবো বুঝতেই পারছিনা,
….
হঠাৎ মাথায় ঘোমটা টেনে দিয়ে বলে,
….
যদি বৌ সাজো গো আরো সুন্দর লাগবে গো,

বুড়ো বয়সে ভীমরতি হয়েছে তোমার?

হ্যা খুব গো হা হা হা,

চলবে

আমার বুড়ো part : 11 

0

আমার বুড়ো part : 11
লেখিকা সুরিয়া মিম

!
যাও যাও গিয়ে দেখে আসো, আমার মা বাবা কে এক সাথে কত সুন্দর লাগছে,
হা হা হা,
….
মা মা দেখো আমি তোমাদের রিসেপশনের চিপপপ গেস্ট কে ধরে নিয়ে এসেছি হুমমম,
….
আচ্ছা এখন চুপ করে বসো,
. …
মেয়ে আমার পাশে বসতেই সামনে তাকিয়ে দেখি,
……
উনি ধির পায়ে আমার কাছে একটু একটু করে এগিয়ে আসছেন?
…..
আমার কাছে এসে কাঁপা কাঁপা হাতে তার আনা উপহার টা আমার সামনে বেড়িয়ে দেয়,
……
আমি ও মিষ্টি হাসি দিয়ে তার হাত থেকে উপহার নিয়ে তাকে বলি,
.
থ্যাংকইউ মিস্টার খান,
.
ওওওওয়েল,
.
কি হলো তোতলাচ্ছেন কেন?

কিছুনা ওয়েলকা ,
….
নিজের বিয়ে করা বৌয়ের বৌ ভাতে তাকে ডায়মন্ড নেকলেস উপহার দিয়ে উল্টোদিকে ফিরে কেঁদে ফেলেন খান সাহেব,

তবু ও নিজেকে সামলে নিয়ে অনুষ্ঠানের বাহিরে চলে যায়,

তারপর ইয়াদ গিয়ে খান সাহেব কে ধরে এনে বলেন,

বাবা তুমি খাবে না?
সবাই তোমাকে খেতে ডাকে,
..
খিদে নেই আমার তোমরা গিয়ে খাও,
….
কেন খাবে না?
তুমি যেদিন বিয়ে করেছিলে আমার মা কে দিয়ে কোরমা পোলাও বিরিয়ানি রান্না করিয়ে ছিলে,
আমাদের মা তো বুঝতে ও পারেনি যে তার জন্যে কি অপেক্ষা করছে?
….
আমার মাকে দিয়ে রান্না করিয়েছ নতুন বৌ এনে আমার মা কে তাড়িয়ে তারি হাতের রান্নাকরা খাবার কবজি ডুবিয়ে খেয়েছ,
..
তারপর রাতে কি করেছ সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়,

তবে আজকে যখন তুমি এসেই পরেছ আমার মায়ের বৌ ভাতের খাবার তোমাকে খেতেই হবে,
না খেয়ে তুমি এখান থেকে একচুল ও লড়তে পারবেনা,
….
কি হয়েছে ইমান আঙ্কল চলো খেতে চলো বাবা তোমাকে খুঁজছে?
….
না মা,

কি মা?
কে মা?
কেউ না চলো খেতে চলো,

দেখো বাবা আঙ্কল কে ধরে এনেছি,

ভালো হয়েছে মা,
তোমার আঙ্কল কে আমাদের সামনে বসিয়ে দাও,

খান সাহেব সামনে বসে তার মিশুর দিকে তাকা তেই দেখে,

মিশু রুহান কে নিজের হাতে খাইয়ে দিচ্ছে,
…..
বুক টা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে তার,
তবু ও মূর্তিমান হয়ে বসে আছে সে,

আরে খান সাহেব?
দেখো না বুড়ো তোমার বন্ধু কিছু খাচ্ছেনা,

কিরে ভাই কি হয়েছে তোর?

কোই কিছুনা তো?

শোনো ও মনে হয় ওর ভাবীর হাতে খেতে চাইছে,
তুমি ওকে খাইয়ে দাও না প্লিজ,
….
বলছ দিবো?

হ্যা দাও,

তোমার খারাপ লাগবেনা?
….
একদিনি তো তেমার হাতে খাবে সারাজীবন তো খাবে না,

কথা টা খান সাহেবের হৃদয়ে আঘাত করে,
সাথে সাথে দুএক ফোটা জল তার চোখ থেকে গড়িয়ে পরে,
..
তখনি আমি গিয়ে বুড়োর মুখ টা চেপে ধরে ওর মুখে গ্রাস পুরে দেই,
….
হঠাৎ আমার কি যেন হয়ে যায়?
নিজেকে সামলাতে না পেরে মিশির হাত টা আমার গালে চেপে ধরি,
….
কারন আজকের পর থেকে হয়তো আমি ওকে আর আমার করে পাবো না,
…..
আজকে তো তোমার হাতে আমার শেষ খাওয়া মিশু,
আর কখনো তোমার হাতে খাওয়া হবেনা আমার,

আমি জানি তুমি তোমার ঘৃণা থেকে এমন টা করছ তোমার ছোয়া পেয়ে সেটা অনুভব করছি মিশু,

চল্লিশ বছর তো তোমাকে ভালোবেসে তোমাকে নিয়ে থেকেছি আমি তোমাকে আমার থেকে বেশি করে কে চেনে মিশু,

তোমার চার ছেলেময়ে যদি আমাকে আটকে না দিতো আমি তোমাকে যে ভাবে তুলে এনে বিয়ে করেছি সে ভাবে তুলে নিয়ে যেতাম,
…..
ইমান তোকে দেখে আমার করুনা হয়রে ভাই,

চল্লিশ বছর সংসার করে কেউ এমন কান্ড বাধায়? এখনো তো তুই ওকে ভালোবাসিস,
আমার বুড়ি টাও বাসে সবাই কে ভালো,
কিন্তু,
তোরা কেউ ওর ভালোবাসার সম্মান করলি না,
..
ওহে বুড়ো কি ভাবছ তুমি?
….
কিছুনা মিশু?

খান সাহেব আমি আপনাকে বলিনি আমার স্বামী কে বলেছি,
….
ভাবছি আজকে তোমাকে কত সুন্দর লাগছে লাল সাড়ি গোল্ডেন পাইর গা ভর্তি গহনা অনেক সুন্দর,
.
দেখি,
….
আরে তুমি তোমার সাড়ির আচল দিয়ে আমার মুখ মুছে দিচ্ছি কেন?.
….
নিজে লুকিয়ে লুকিয়ে মুছো আর আমি মুছে দিলে দোষ?
…..
ভাবতে পারিনি মিশু আমার চল্লিশ বছরের ভালোবাসা মাএ কয়দিনের ভালোবাসার কাছে হেরে যাবে,
..
তুমি তো আগে আমার জন্যে সাজতে,
আজকে তুমি রুহানের জন্যে সেজেছ আর ও তোমাকে ভালোবাস বে এটা আমি কি করে মেনে নিবো হুমমম,
….
আচ্ছা বুড়ো আমি রুমে মেয়ের কাছে যাচ্ছি তুমি গেস্টের সামলে নিও প্লিজ,
….
ওকে মেয়ের মা,
…..
এতো ভালোবাসা তোদের মধ্যে?

হ্যা কেন?

তোর বৌয়ের ঠান্ডার সমস্যা তুই জানিস?
রাতে তোর বৌ সাড়ি ছাড়া মানে খুলে বুকে জড়িয়ে ঘুমোয়,
….
তোর কাছে বোধ হয় তোর বৌ ও ভাবে ঘুমোত,
আমার বৌ আমার কাছে কিছু না পরে ঘুমোয়,
….
মানে এই বয়সে তোরা ফিজিক্যালি ইনভলব?

বুড়ো বয়সে মেয়ের বয়সী মেয়ে কে বিয়ে করে শুতে পারো,

আর আমি আমার বিয়ে করা বৌ কে
নিয়ে শুলে দোষ,
…..
শোন ভাই তোর এই ব্যাক ডেটেট চিন্তা ভাবনা তোর কাছে রাখ,

আমি আমার বৌ কে দেখিনি অনেকক্ষণ ওকে দেখে আসি,
চলবে

আমাড় বুড়োpart : 10

0

আমাড় বুড়োpart : 10

লেখিকা সুরিয়া মিম

!
বলির পাঠা যেন কোথাকার হি হি হি,
..
কি হলো আম্মু যাও?
যাকে দেখে প্রেমে পরবো তাকে গিয়ে নিয়ে আসো,
. …
আঙ্কল আপনার প্রেমে পরার এতো শখ?

প্রেমিক পুরুষ কিনা,
তাই তো প্রেমে পরি,
….
তাহলে আমি গিয়ে আমার মাকে নিয়ে আসি কেমন?

হ্যা আম্মু যাও,
..
মা মা মা?

কি হয়েছে মা?
….
ওই লুচ্চাটা নাকি প্রেমিক পুরুষ আর ও তোমার প্রেমে পড়তে চায়,
হি হি হি,
….
হা হা হা,
….
মা লেট’স গো,
……
হ্যা সোনা মা চলো,
….
এক্সকিউজ মি লেডিজ অ্যান্ড জেন্টলম্যান মিট মাই ওয়ার্ল্ড, মাই ওয়াইফ মিশকা রুহান চৌধুরি,
……
চিরো চেনা নাম টা শুনে খান সাহেবের বুক টা কিছুক্ষণের জন্যে কেঁপে ওঠে,
সাথে সাথে নজর তুলে সিরি দিকে তাকা তেই থমকে যায় তিনি,
…..
সে যেন তার চোখ দুটো কে বিশ্বাস করতে পারছেনা,
তার ওপরে চোখ দুটো তার জলে টলটল করছে,
….
এসব কি দেখছি আমি?
….
আমার মিশু এখন অন্য কারো?
মিশু তুমি তো আমার সন্তানের মা,
মানছি আমি তোমাকে অনেক বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলেছি,
…..
তাই বলে তুমি তোমার মনে আমার জায়গা টা অন্য কাও কে দিয়ে দিলে,
….
তার আগে তোমার এই বুড়ো টার কথা একটু ও মনে পরেনি তাই না?
…..
তোমার সন্তানের বাবা আমি,
তোমার কি একটু ও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের কাটানো সুখের মুহূর্তের কথা মনে পরেনি?
…..
কিরে ভাই?
ভাবি ভাবি করে আমার মাথা খাচ্ছিলি এখন ভাবি কে দেখে পছন্দ হয়নি নাকি?
….
কি হলো আঙ্কল তুমি নাকি প্রেমিক পুরুষ?
আমার মায়ের নাকি প্রেমে পরবে?
…..
প্রেমে তো আমি চল্লিশ বছর আগে পরেছি,
…..
ও.এম.জি তাই আঙ্কল,

ওহহহ মা ইনি হলেন বাবার বেষ্ট ফ্রেন্ড ইমান খান,

আসসালামু ওয়ালাইকুম মিষ্টার খান,
আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কেন বসুন?
.
বসবো পরে আগে রুহানের সাথে কিছু কথা আছে আমার,

তখনি হঠাৎ আমার ছোটো ছেলে ইয়াদ ওনাকে টেনে নিয়ে যায়,
….
তুমি আমাকে নিয়ে চলে আসলে কেন?

আব্বু তুমি যদি ভুলে ও তোমার মুখ খুলো আমার মা মাকে নিয়ে কিছু বলো,
তাহলে আমাদের থেকে খারাপ কিছু হবেনা বলে দিলাম আমরা,

শুধু মাএ তোমার জন্যে আমরা মায়ের কথা বিশ্বাস না করে, মা কে যা নয় তা বলে অপমান করেছি,
..
মা তো আমাদের তার কষ্ট টা আমরা বোঝার চেষ্টা করিনি,
তুমি ও করনি,
….
এখন মা যদি রুহান আঙ্কলের সাথে খুশি থাকে থাকবে আমরা কেউ তার খুশি তে কুনজর দিবো না তুমি ও দিবে না,
….
তুমি যদি মায়ের কোনো ভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করো আমরা ভুলে যাবো তুমি আমাদের বাবা,

মেয়ের বয়সী মেয়ে কে বিয়ে করে ঘরে তোলার আগে তুমি বুঝি তোমার মেয়ে কে ভুলে গেছিলে তাই না,
বাবা তুমি তো মা কে ভালোবাসতে তাহলে জঘন্য একটা কাজ করলে কি করে?
তোমার জামাই ও আমাকে এগুলো নিয়ে কথা শোনায় তুমি জানো?
..
তোমার জন্যে আমাদের মা কে আমরা মা বলে ডাকার অধিকার হাড়িয়ে ফলেছি,
….
ওই রুহান আঙ্কলের মেয়ে টা আমাদের মা কে মা মা করতে করতে পাগল করে দেয়,
আমাদের মা আমরা মা ডাকলে ও মা সেটা কানে তোলে না,
এমন ভাব করে যেন আমাদের কখনো দেখে নি,

আমাদের কি এটা প্রাপ্য ছিল তুমি বলো?
পাপ করেছ তুমি সাফার করছি আমরা,
….
ছেলেমেয়ের প্রশ্নের উওর দিতে না পেরে নিঃশব্দে চোখেরজল জল ফেলতে থাকে খান সাহেব,
….
কি হলো ছেলেমেয়ে তোকে অনুষ্ঠান থেকে ধরে এখানে নিয়ে এলো কেন?
..
অনুষ্ঠান তো চলছে,
….
হ্যা আঙ্কল আপনি ওনা কে নিয়ে জান আমরা আসছি,

ইমান তুমি এতক্ষণ কোথায় ছিলে চলো আমরা যে গিফট টা এনেছি সেটা দিতে হবে না হুমম?

আমি পারবোনা তুমি গিয়ে দিয়ে আসো,
….
কেনরে বুড়া?
….
তুমি এ কেমন ভাষা ব্যবহার করছ?
. …
ভাষা জ্ঞান আমাকে শেখাতে আসিস না বুড়ো,
সবাই সবার স্বামী কে নিয়ে যাচ্ছে,
তুই ও আমাকে নিয়ে যাবি,
….
ইসসস,
ইমান আঙ্কল ও আন্টির প্রেম দেখে লজ্জা করছে আমার,
হা হা হা
..
আরে আঙ্কল আন্টি আপনারা এখানে ওখানে সবাই আপনাদের খুজে বেড়াচ্ছে আফটার অল আজকে রিশেপসনের চিপ গেস্ট আপনারা তো তাই,
….
হ্যা আম্মু যাচ্ছি,
..
যাও না যাও আমার মা বাবা কে একসাথে কত সুন্দর লাগছে দেখে আসো গিয়ে,
…..
হি হি হি,

চলবে

আমার বুড়ো part : 9

0

আমার বুড়ো part : 9

লেখিকা সুরিয়া মিম

!
বাবা মেয়ের মান অভিমানের মধ্যে আমি পিংপং বলে হয়ে গড়াগড়ি খাচ্ছি,
হা হা হা,
…..
পরেরদিন সকালে মেয়ে আমার আচলের তলে মুখ গুজে আমাকে জড়িয়ে শুয়ে ছিল,
….
বুড়ো টা তখন মেয়েকে মজা করে বলে,
. .
মা তুমি মায়ের আচলের তলায় কি করছ হুমমম?

কি করবো?
আমি তো ময়ের দুধের শিশু দুধ খাচ্ছি তাই,
তোমার কোনো সমস্যা?

মেয়ের কথা শুনে বুড়ো জব্দ হয়ে যায়,
আর চুপটি করে মেয়ের পেছনে গিয়ে শুয়ে পরে,
….
কিছুক্ষণ পরে খেয়াল করে দেখি,
বুড়ো টা বারংবার এদিকে আড়চোখে দেখছে,

কতক্ষণ দেখা দেখির পর মেয়ের মাথায় হাত রেখে বলে,
….
এতো রাগে না মা,
বাবার ওপরে এতো রেগে থাকলে চলে বলো?
…..
তাহলো তুমি বলো ওই অসভ্য টাকে ইনভাইট করেছ কেন বাবা?
…..
আমার ভুল হয়ে গেছে মা,
….
আমার মা কে যদি নিয়ে যায়,
….
কেউ নিয়ে যাবেনা মা,
আমি তো আমার মেয়ের কাছে থাকবো,

ইসসস এতো কাঁদেনা মা,

বাবা খুব খারাপ একটা কাজ করেছে,
আমি বাবার সাথে কথা বলবো না,
….
পাগলী আমার সাহস তো তুমি ও তোমার বাবা,
এখন তোমরা যদি ভয় পেয়ে পিছু হেটে যাও,
তাহলে আমি আগাবো কি করে?
….
ওকে ঠিক আছে মা আমি তোমাকে সাপোর্ট করবো,
….
তবে ওই বুড়ো যদি কোনো প্রকার অসভ্যতামি তোমার সাথে করে,
আমি কিন্তু চড়িয়ে চড়িয়ে বোএিশ টা দাঁত খুলে ফেলবো ওর,

আচ্ছা সোনা ঠিক আছে,
..
রাতে যখন মেয়ে কে ঘুম পারিয়ে আমি ছাদে গিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম,

তখন বুড়ো টা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে,
……
জানো আমার না খুব ভয় করছে,
….
কেন গো?

যদি তোমাকে হাড়িয়ে ফেলি?
….
বুড়ো আমি তোমাকে আমার মেয়ে কে ছেড়ে আমি কোথাও যাবো না বুঝলে?
এখন চলো শুতে চলো,

তারপর আমি আমার বুড়ো ও মেয়ে কে নিয়ে শুয়ে পরি,
……
আজ সেই দিন যে দিন আমি ওই বাজে লোক টার মুখোমুখি হবো,
….
সকাল থেকে মেয়ে আমাকে সাজিয়ে দিচ্ছে,
বুড়ো টা সুযোগ পেলে আমাকে এসে চোখ বুলিয়ে যাচ্ছে,
…..
হঠাৎ করে বাহিরে গেট খেলার শব্দ হয়,
তাহলে এসে গেছে তাড়া?

কিরে ভাই শুনেছি ভাবি অনেক অনেক কিউট,

হ্যা আমি যা চেয়েছি তার থেকে বেশি পেয়েছি,
….
তাহলে আর দুঃখ্য কিসের ভাবি কে ডাক আমি একটু দেখি?
..
বাবা মা রেডি হয়ে গেছে আমি মাকে নিয়ে আসি?
…..
না মা এখনো সব গেস্ট আসেনি সবাই আসুক তারপর মাকে ডেকো,
….
ওকে বাবা,
……
তুমি কেমন আছো আম্মু?
……
অসভ্য বেটা আমাকে বলে আম্মু ওদিকে আমার বয়সী মেয়ে কে বিয়ে করে ফষ্টিনষ্টি করছে লজ্জা ও করেনা লুচ্চা যেন কোথাকার,

কি হলো আম্মু?

ভালো আছি আঙ্কল,
ইনি বোধ হয় আমার আন্টি তাই না?
….
আন্টি কেমন আছেন আপনি?

হোয়াট তোমার আমাকে আন্টি বলে মনে হয়?
….
আশ্চর্য আপনি ইমান আঙ্কলের ওয়াইফ তাহলে তো আমার আন্টি তাই না?
..
আন্টি কে আন্টি বলবো না তো বলবো কি?
….
দেখো ইমান ও আমাকে আন্টি বলে ডাকে?

ও যেটা ঠিক সেটাই তো বলছে তোমায় আর কি বলবে?

ইমান তুমি আমাকে এভাবে বলতে পারো না,
তোমাকে তোমার মতো বুড়ো কে বিয়ে করে লাইফ টাই হেল হয়ে গিয়েছে আমার,

তুমি আমার চাহিদা গুলো বোঝো না,
আমি বাইকে ঘুরতে চাইলে তুমি এক্সিডেন্ট করে মরার ভয়ে আমাকে গাড়ি তে করে ঘুরা ও,
….
এতো যখন মরার ভয় তাহলে আমার মতো ইয়াং হট অ্যান্ড বিউটিফুল মেয়েকে বিয়ে করেছ কেন?
….
আমি বিকিনি পরতে চাইলে তুমি আমাকে সাড়ি ধরিয়ে দেও এসবের মানে কি হুমম?

তোমার মতে বুড়ো কে বিয়ে করেছি বলে আমার কোনো স্বাধীনতা নেই নাকি?
…..
বাবা দেখছ অসভ্য টা ওর বৌয়ের সাথে ঝগড়া করছে?

করছে করুক তুমি গিয়ে কাটা ঘায়ে নুনেরছিটে দিয়ে আসো কেমন?

ইয়েস বাবা,
..
ইসসস আঙ্কল আন্টি আপনারা আমার কথায় রাগ করে ঝগড়া করছেন কেন?
. …
তোমার কথায় রাগ করিনি মা যাও গিয়ে ভাবি কে নিয়ে আসো,

হ্যা যাচ্ছি আপনার জম কে নিয়ে আসতে,

কিছু কি বললে আম্মু?
….
না আঙ্কল আসলে ভাবছি আমার মা কে দেখে প্রেমে পরে যান?
….
পরলে তো পরলাম কি আর করার হা হা হা,
….
বলির পাঠা যেন কোথাকার হি হি হি,

চলবে

আমার বুড়ো part : 8

0

আমার বুড়ো part : 8

লেখিকা সুরিয়া মিম

!
ইসসস,
আমার বুড়ি টা লজ্জা পেয়েছে হা হা হা,
…..
বুড়ো টার নজর এতো এতো খারাপ কেন হুম?
….
আমি জানি বুড়ি তুমি এখন কি ভাবছ ?
….
কিন্তু কি করি বলতো?
তোমার বুড়ো চায় না কেউ তোমাকে খারাপ নজরে দেখুক,
….
তবে তুমি তোমার বুড়োর নজরে সেদিনি পরে গেছিলে যেদিন তোমার মেয়ে তোমাকে তার বাবার কাছে নিয়ে এসেছিল,
….
তুমি জানো প্রথমবার তোমার কথা শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম আমি,
….
আমি সেদিন থেকে তোমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে কাজ করতে দেখতাম,
কারন আমার তোমাকে দেখতে অনেক ভালো লাগতো,
…..
কোনো খারাপ নজরে নয় শুধু আমার মেয়ের জন্যে খাবার বানাতে ব্যস্ত কর্মরত মা টাকে রান্নাঘরে রান্না করতে দেখতাম,
….
বাবা তুমি এখানে কি করছ?
..
কিছুনা মা,
….
হুহহহহ আমি যেন কিছু বুঝিনা?
তুমি আমার মা কে দেখতে এসেছ?

এতো যখন বোঝো তাহলে মা কে হেলফ করনি কেন?
….
এই আপনার কি কোনো কাজ নেই আমার মেয়ে টার পেছনে লাগো ছাড়া?
….
তুমি আমাকে বলছ আমি এই ফাজিল টার পেছনে লাগি?
….
কে কার পেছনে লাগে সেতো তুমি ভালো করেই জানো তাহলে আমাকে কথা বকছ কেন?

শোনো আমাকে বকা না দিয়ে ,
তোমার মেয়ে কে শাসন করো,
বেশি বাঁদরামো শিখেছে হুমম,
….
তারপর উনি রাগে হনহন করতে করতে নিচে চলে যায়,

মা দেখো না তোমার বুড়ো টা রেগে গেছে,
..
ফাজিল মেয়ে,
….
হা হা হা,
….
ও তুমি যাই বলো না কেন?
আমি জানি তুমি বাবা কে আদর করে বুড়ো বলে ডাকো হা হা হা,
..
হ্যা ডাকি তো?
….
মা একটা সত্যি কথা বলবে?

কি মা?

আমার ভালোবাসায় ভাগ বসাতে আমার ছোটোছোটো ভাই বোন আসছে নাকি হুমমম?
…..
কালকে রাতে বাবা তোমাকে অনেক অাদর করেছে তাই না?
তাই বাবা এতো খুশি,
বলনা মা বাবা তোমাকে কিভাবে আদর করেছে?
….
হায় আল্লাহ এই মেয়ে নিয়ে আমি যাবো কোই,
…..
তোমার যেতে হবে না মা আমি যাচ্ছি,
তুমি তোমার বুড়ো কে গিয়ে সামলা ও,
হা হা হা,
….
তারপর আমি নিজের হাতে ডায়নিং সাজিয়ে সবার জন্যে খাবার সার্ফ করে সবাই কে খেতে ডাকি,
….
বুড়ো টা খেতে বসতে দেখি,
….
মুখ টা রেগে গিয়ে গোল আলুর মতো ফুলিয়ে রেখেছে,

ওনার মতো হাসি খুশি মানুষ কে এভাবে গোমড়া মুখো হয়ে থাকা মানায় না,
কি করি কি করি?
আইডিয়া,
….
বুড়ো তুমি বসো তোমার এখন হচ্ছে,
…..
এই যে আপনি নিজের হাতে খেতে চান বললেই তো পারেন,
আমি আপনাকে খাইয়ে দিচ্ছি,
….
আমার কথা শুনে বুড়ো হা হয়ে যায়,
..
তারপর আমি বুড়োর মুখে এক গ্রাস পুরে,

আর ওমনি সবাই হা হা করে হেসে দেয়,

ইসসস আমার রাগ ভাঙাতে বুড়ি টা আমাকে খাইয়ে দিল.
……
তাহলে তো সেকেন্ড সেকেন্ড রাগ করে থাকতে হবে যাতে আমার বৌ টা আমাকে খাইয়ে দেয়,
…..
কি হলো বাবা?
ভালোবাসায় ভাগ বসিয়ে খুব ভালো লাগছে তোমার তাই না?
….
না মা তুই এভাবে রেগে যাচ্ছিস কেন?
তোর মা তো আমাকে তোমাকে দুজন কে খাইয়ে দিচ্ছে,
….
মা তুই রাগ করিস কেন?
তোর মা তো তোর বাবার বিবাহিতা স্ত্রী তাই না?
তাই তোর কথায় কথায় রাগ করা উচিত না,
….
আমি জানি সায়ান চাচু
আই এম জাস্ট জোকিং,
হা হা হা,

আচ্ছা বাবা কালকে রিসেপশনের কি প্লান,
…..
মা রিসেপশন কালকে হবে না,

আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড তো আমাদের বিয়েতে ছিলো না,
ওর বৌ কে নিয়ে থাইল্যান্ডে হানিমুনে গেছে,
ও এখন আমাদের রিসেপশনে থাকতে চায়,
তাই রিসেপশন টা দুদিন পরে হবে,
…..
বাট বাবা?

না মা তোমার বাবা একদম ঠিক বলেছেন,
….
আমি ও চাই মিস্টার ইমান খান তার ফ্যামিলি সহ এখানে প্রেজেন্ট থাকুক,
…..
বাবা তুমি এই অসভ্য লোক টাকে কেন ইনভাইট করেছ?
তুমি জানো না উনি কত খারাপ একটা কাজ করেছে?
….
রুহানি ঠিক বলছে ভাই,

সায়ান মেয়ের তালে তাল দিশ না,
….
বাবা তুমি মাকে কষ্ট দিতে এসব করছ,
আমার মা কে আমার থেকে কেড়ে নিতে চাও তুমি?
..
আমি জানি মা তুই কি ভাবছিস?
তোর মা আমার স্ত্রী কে কেউ আমাদের থেকে কেড়ে নিতে পারবেনা,
……
তবে এখন একটা মুখোমুখি সংঘর্ষ হওয়া জরুরি,
সেটা হয়ে গেলে কেউ তোর মায়ের ওপরে অধিকার ফলাতে আসবেনা,
…..
তোর মা নিজে থেকে না বললেও এই সংঘর্ষের জন্যে তৈরি হয়ে বসে আছেন,
….
আমার বুড়োর মাথায় কি ঘুরছে কে যানে?

তবে আমার ওদের মুখোমুখি হতে হবে,
নাহলে আমার মেয়ে টা অস্থির হয়ে যাবে,
….
হঠাৎ করে মেয়ে টা আমাকে শক্ত করে জাড়িয়ে ধরে,
…..
খেয়াল করে দেখি আমার মেয়ের চোখ দুুটো জলে টলটল করছে,

এভাবে কাঁদেনা মা,
..
বুড়ো তোমার মেয়ে কাঁদছে দেখ,
….
ভাবছি রাতে মেয়ে কে আমাদের মাঝে নিয়ে শুবো,
….
বাবা তুমি খুব খারাপ ,
….
তখন উনি উঠে এসে মেয়ের কপালে চুমু খেয়ে বলে,
….
আমি খারাপ না ভালো বাবা মা,
….
মায়ের জন্যে কি গিফট এনেছে তুমি?
….
দেখো তোমার মায়ের এই সাতনরি হাড় টা পছন্দ হবে হুম?
….
জানিনা?
….
রাগ করে না মা,

চুপপপ একদম কথা বলবেনা তুমি,
..
তারপর মেয়ে আমাকে রুমে নিয়ে গিয়ে আমাকে জড়িয়ে শুয়ে থাকে,
….
ওমনি বুড়ো টা এসে আমাকে আমাকে ধরে টানাটানি শুরু করে দেয়,
…..
এক পাশে বুড়ো আরেক পাশে মেয়ে,
দুজন আমার দু হাত ধরে টানাটানি করছে,

বাবা মেয়ের মান অভিমানের মধ্যে আমি পিংপং বল হয়ে গড়াগড়ি খাচ্ছি,
..
হা হা হা,

চলবে

আমার বুড়ো part : 7

0

আমার বুড়ো part : 7

লেখিকা সুরিয়া মিম

!
সত্যি মেয়ে আমার ভাবলো কি করে যে আমি ওর মা কে?
…..
হা হা হা,
..
আমি এতো টাও খারাপ নই যে নিজের সুখের জন্যে আমার বৌ টাকে জ্বালিয়ে মারবো,
….
ভরা যৌবনে কোনো মেয়ে কে দেখে ফিলিংস জাগেনি,
আর এই বুড়ো কালে বৌ টাকে জ্বালিয়ে নিজের পুরুষত্ব দেখিয়ে কি পাবো আমি,
আমাকে দেখে কি মেয়ের পাগল বলে মনে হয়?

কি হলো চুপপপ করপ আছেন কেন?
….
কিছুনা,
..
আমার ওর্নামেন্টস গুলো খুলে দিবেন প্লিজ?
..
হ্যা কেননা,
…..
তারপর উনি আমার ওর্নামেন্টস গুলো খুলে দেয়,
…..
একটা কথা বলি?

হ্যা বলুন.

আমি জানি বিয়ের সাড়ি টা খুবি ভারি তবুও বলছি এটা তুমি পরে থাকো না প্লিজ তোমাকে এটায় অনেক সুন্দর লাগছে,
…..
ভাভাগো ভাবা বুড়ো টা বলে কি?
.
কি ভাবছ তুমি?

কিছুনা, আপনি যখন বলছেন আমি অবশ্যই এ সাড়ি টা পরে থাকবো,
….
আচ্ছা তোরা তো সেই কখন থেকে আড়ি পেতে বসে আছিস, তা কিছু শুনেছিস কি?
…..
হ্যা ওই কি যেন গুজুরগুজুর করছিল?
এখন বোধ হয় শুয়ে পরেছে,

রুহানি রেডি “হ” কেন?

ভালোবাসায় ভাগ বসাতে নতুন কেউ আসছে,
….
শয়তান কত গুলো চুপ কর,
….
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি উনি আমার পাশে নেই,
….
তখনি খেয়াল করে দেখি,
মেরুন কালারের একটা সাড়ি ও কিছু গয়না ও তার সাথে একটা চিরকুট সেন্টার টেবিলের ওপরে রাখা,
…..
তাই তখনি বিছানা ছেড়ে চিরকুট টা খুলে দেখি সেখানে লেখা,
…..
বুড়ি তোমাকে এই ও গহনা গুলোয় মানাবে,
তাই তুমি এগুলো পরলে আমার অনেক ভালো লাগবে,

কেন যেন বুড়োর কথা টা ফেলতে পারলাম না,
তাই শাওয়ার নিয়ে এসে ওনার দেওয়া সাড়ি গহনা গুলো পরে হালকা সাজুগুজু করি,

তখন ওনার বন্ধু বৌয়েরা এসে আমাকে নিচে নিয়ে যায়,

সিরি দিয়ে নিচে নামার সময়ে দেখি,
…..
বুড়ো টা ওর হাতে বেলি ফুলের মালা নিয়ে আমাকে দেখে মৃদু মৃদু হাসছে,

আর ওনার বন্ধু গুলো ওনাকে কিসের জন্যে যেন ঠেলাঠেলি করছে,

হয়তো বেলি ফুলের মালা টা পরিয়ে দিতে বলছে,
তখনি মেয়ে এসে বলে,
….
মা তোমার খোপা টা না খালিখালি লাগছে,
….
বাবা তোমার হাতের বেলি ফুলের মালা টা মাকে পরিয়ে দাও না প্লিজ,
….
কি হলো দাঁড়িয়ে আছেন কেন দিন?
…..
ভাই ভাবির অনুমতি পেয়ে গেছিস এখন গিয়ে পরা,

তারপর উনি আমাকে ওনার আনা বেলি ফুলের মালা পরিয়ে দেয়,
….
তখন ওনার বন্ধু ওনাকে ফিসফিস করে বলে,
….
কিরে ভাই কাল রাতে কতদূর আগালি?
….
অনেক দূর রে ভাই,
….
ভাবি তোকে বাধা টাধা দেয় নাই,

কেনরে বাধা দিবে কেন?
ও আমার বিয়ে করা বৌ, আমার মেয়ের মা আমার অধিকার আছে ওকে ভালোবাসার,

বাহহহহ তুই তো আমাদের থেকে ও এক কাঠি ওপরে যাও,

আরে আমার স্টাইল আলাদা,
….
ইসসসস,
আমার এই বুড়ো টাতো খুবি ফাজিল,

কালকে আমরা দুজন দুইদিকে ফিরে মরার মতো পরেপরে ঘুমোচ্ছিলাম,
আর উনি বলে কিনা এই বুড়া বয়সে ওসব করছিলাম?

ব্যাটা মিথ্যুক জানি কোথাকার,
….
আন্টি আন্টি,

হ্যা বাবা,
….
দেখ আমরা জানি হরেক রকমের রান্নাবাড়া হয়েছে,
তবে আমরা তোমার হাতের তৈরি করা খাবার খেতে চাই,
…..
তুমি আমাদের এই অন্যায় আবদার টা পুরন করবে প্লিজ?
….
হ্যা বাবা অবশ্যই,
আমার বাবারা আমার কাছে খেতে চেয়েছে আর আমি ওদের রান্না করে খাওয়াবো না সেটা কি হয়?

তোমার আঙ্কলের জন্যে রুইমাছের মাথা দিয়ে একটা স্পেশাল রেসিপি করবো,
তো তোমরা কি খাবে?
আমাকে রেসিপি বলে দাও আমি বানিয়ে দিবো,
….
হ্যা বাবা তোমার আন্টি কে রেসিপি বলে দাও,
….
ওকে আঙ্কল,
….
আর হ্যা শোনো আমি বাজারে যাচ্ছি,
…..
মা শোনো তুমি না একটা খাদক কে বিয়ে করেছ,
….
এনার যে কত খাইখাই রোগ সে “ক” দিন বাদেই হাড়েহাড়ে টের পাবে তুমি,
..
আর কিছুদিন পরেই তুমি তার খাইখাই রোগ দেখে পালিয়ে বাঁচতে চাইবে,
..
তাই বলছি যাওয়ার আগে আমাকে সাথে করে নিয়ে যেও প্লিজ,
আমি তোমাকে ছেড়ে এক মুহূর্ত এখানে থাকবো না হুমমম?
…..
হা হা হা,
….
বাবার নামে মায়ের কানে বিষ ঢলছ?
…..
না গো না তোমার নামে মধু ঢালছি,
….
হা হা হা,
….
ফাজিল মেয়ে,
….
হুহুহুহুহুহু,
….
তারপর আমি কিচেনে গিয়ে সাড়ির আচল কোমরে গুজে,
…..
রান্নাবাড়া শুরু করে দেই,
বাসার স্টাফরা আমাকে হেলফ করতে চাইলে আমি তাদের আজকের জন্যে ছুটি দিয়ে দেই,
….
একা হাতে সমস্ত রান্নাবাড়া সেরে শাওয়ার নিয়ে এসে পেছনে ফিরে দেখি,
….
বুড়ো টা হাতে শরবতের গ্লাস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,
….
আরে আপনি কখন এলেন,
….
সেতো অনেকক্ষণ তবে তুমি সবাই কে ছুটি দিয়ে দিয়েছ কেন?
….
শুধু আজকের দিন টা দিয়েছি এতে ব্যতিব্যস্ত হওয়ার কিছু হয়নি,

একা একা তোমার কষ্ট হয় নি?

না কেন?
….
সেই তো কখন থেকে দেখছি একাএকা দৌড়ঝাঁপ করছ তাই,
….
আমার বুড়ো টাও না অতিরিক্ত সেন্টিমেন্টাল,
….
আমার বুড়ি টা শুধু মনে মনে বলে কেন?
সামনাসামনি কিছু বলতে পারেনা না কি?
….
বলছি কি এই শরবত টা খেয়ে নেও ভালো লাগবে তোমার,
….
আপনি খেয়েছেন রুহান চৌধুরি সাহেব?

না,
…..
তাহলে আপনি অর্ধেক টুকু খান বাকি টুকু আমি খেয়ে নিবো,
…..
আচ্ছা,
….
তখনি খেয়াল করে দেখি,
বুড়ো টা মৃদু মৃদু হাসছে,
…..
কি হলো কিছু বলবেন?
…..
বলি কি কোমরে গুজে রাখা সাড়ির আচল টা ছেড়ে দাও,
….
কোমরের তিল টা দেখা যাচ্ছে,
….
সাথেসাথে লজ্জা পেয়ে উল্টো দিকে ফিরে আচল টা ছেড়ে দেই,
……
হায় আল্লাহ বুড়ো বয়সে আর কি কি দেখতে হবে আমায়?

আর তখনি বেসিনের আয়নায় তাকিয়ে দেখি,
….
উনি নিচের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসছেন,

ইসসস,
আমার বুড়ি টা লজ্জা পেয়েছে,
হা হা হা,
চলবে

আমার বুড়ো part : 6

0

আমার বুড়ো part : 6

লেখিকা সুরিয়া মিম

!
আরে দেখবো ওই তো বিয়ে করছি বলি কথা,
আমার বুড়ি বৌ হি হি হি,
……
আঙ্কল তুমি ওভাবে কাকে দেখছ?
….
কাকে আবার?
তোমাদের আন্টি কে?
..
কেমন লাগছে আমাদের আন্টি কে?
….
অনেক সুন্দর,
….
ভাই কন্ট্রোল কন্ট্রোল কন্ট্রোল,
….
কি তোরা বাচ্চা পোলাপানের সামনে কন্ট্রোল কন্ট্রোল কন্ট্রোল করছিস?
….
ভাই তোর যে অবস্থা দেখছি,
তাতে ভাবির কপালে,
…..
চুপ একদম চুপ তোদের মতো লুচ্চা না আমি,
….
আমরা তো লুচ্চা তাই তো তোর বৌ কে দেখে আবারো বিয়ে করতে মন চাইছে আমাদের,
….
দাড়া তোরা দাড়া ভাবিদের ডেকে তোদের আবারো শশুড় বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করছি আমি,
….
আরে ভাই কি যে কও না তুই?
এক বৌয়ের জ্বালায় অতিষ্ঠ আবার আরেক বৌ?
তাও আবার বুড়ো কালে মাফ চাই ভাই মাফ করে দে,
…..
হা হা হা,
…..
কিন্তু আমাদের ইমান সাহেব কি কাজ করল?

ক্যান কি করছে ও?
….
রুহান তুই জানো না প্রথম বৌ টাকে তাড়িয়ে দিয়ে মেয়ের বয়সী মেয়ে কে বিয়ে করে নিয়ে আসছে,
ছেলেমেয়ে তো মায়ের জন্যে পাগল হয়ে হন্য হয়ে মা কে খুজে বেড়াচ্ছে,

কি বলো তোরা?
আমি তো শুনেছি ওর প্রথম বৌ অনেক সুন্দরি ও গুনোবতী ফোনে যখনি কথা হতো বৌয়ের প্রশংসা করতে করতে মুখে ফ্যানা উঠে যেত ওর,
….
আর বলিস না ভাই বুড়ো কালে ভীমরতি,

বাবা তোমার বৈঠক করা হয়ে গেছে?
তাহলে চলো প্লিজ,

হ্যা মা চলো,
….
তারপর আমাদের গায়ে হলুদের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে যায়,
সবাই গায়ে হলুদ লাগিয়ে দেওয়ার পরে,
মেয়ে গিয়ে ওর বাবা কে ধরে এনে বলে,
….
বাবা সবাই তো লাগিয়ে দিলো,
তুমি ও মায়ের গায়ে হলুদ লাগিয়ে দাও না প্লিজ প্লিজ প্লিজ,

হ্যা মা দিচ্ছি,

তারপর বুড়ো আমার দু গালে হলুদ লাগিয়ে দেয়,
তখনি আমাদের চোখাচোখি হয়ে যায়,
আর আমি অনুভব করে দেখি,
..
যে বুড়োর চোখে ও স্পর্শে সামান্য তম নোংরামো নেই,
মুখে শুধু হাসি হাসি ভাব,
…..
হঠাৎ করে দুজনে হেসে ফেলি আমরা,
তখন মেয়ে ওনাকে টেনে নিয়ে যায়,
তারপর সবাই আমাকে গোসল করিয়ে রুমে নিয়ে যায়,
…..
আর লাঞ্চ করিয়ে আমাকে তিন ঘন্টা ধরে বৌ সাজায়,
জানিনা আমার মেয়েটা আমাকে বিউটিশিয়ান দিয়ে
তিন ঘন্টা ধরে কোন গাছে পেত্নী সাজিয়েছে,
….
এখন তো ভয় করছে আমার বুড়ো আবার আমাকে দেখে অক্কা না পায় হা হা হা,
…..
আমাকে সাজানোর পর আমি নিজেকে একবার ও আয়নায় চোখ বুলিয়ে দেখিনি,
কেন জানিনা খুবি লজ্জ করছে আমার,
….
হয় তো বুড়ি বয়সে বিয়ে করছি বলে এমন টা হচ্ছে,
হা হা হা,

কিছুক্ষণ পরে আমার ডাক পরে যায়,
মেয়ে ও তার বন্ধুরা এসে আমাকে ধরাধরি করে নিচে নিয়ে যায় ,
….
নিচে গিয়ে দেখি বুড়ো রয়েল ব্লু কালারের শেরওয়ানি মাথায় টোপর ও হালকা পাক ধরা চুলে আমাকে দেখে মৃদু মৃদু হাসছে,

হাসবেই তো মেয়ে আমাকে তিন ঘন্টা ধরে শ্যাওড়া গাছের পেত্নী সাজিয়েছে হাসবেনা বুড়ো কেন সবাই হাসবে,
….
অনেক ধুমধাম করে আমাদের বিয়ে হয়ে যায় পরে বাচ্চারা মিলে ফোটো শেসন শুরু করে দেয়,
রাতে মিষ্টি মুখ করিয়ে মেয়ে ও তার বান্ধবিরা আমাকে বাসরে বসিয়ে দেয়,

ইসসস এখন কি হবে?
বুড়ো টা এসে কি স্বামীর অধুকার চাইবে?

তখনি খট করে দররজা খোলার শব্দ হয়,
সাথে সাথে বুড়ো টা হাসতে হাসতে আমাকে এসে বলে,
….
জানো তোমার মেয়ে কে রুমে ঢোকার আগে পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘুস দিতে হয়েছে,
আসলে মেয়ে টা এতো ফাজিল হয়েছে না কি বলবো তোমায় না মানে আপনাকে

মানে ভুল করে বলে ফেলেছি,
……
আপনি আমাকে তুমি করে বলতে পারেন,
…..
আরে আরে কি করছ তুমি?

কেন সালাম?
. ….
তা বলে পায়ে হাত দিতে হবে?
..
না মানে,

দেখো সেকেলে রিচুয়ালস, আয় রেয়ালি ডোন্ট কেয়ার,
আমি শুধু জানি তুমি আমার আর আমাদের মেয়ে টা হলো আমাদের,
…..
বুড়ো কথা শুনে চোখেরজল চলে আমার,

আমার বুড়ি টাকি কাঁদছে?
কি হলো তুমি কাঁদছ?

কোন নাতো?
……
তাহলে চোখ দুটো টলটল করছে কেন?

এমনি,
..
তাহলে চলো নামাজ টা পরে নেই,
..
হ্যা চলুন,
….
তারপর আমরা একসাথে ওযু করে সালাত আদায় করতে বসি,
সালাত আদায় শেষে উনি আমাকে বলেন,
…..
আজকে তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে বুড়ি ,
….
কি হলো কি ভাবছেন?
….
আজকে অনেক কষ্ট হয়েছে তোমার,
তাই বলছি রেস্ট নাও,
….
মেয়ে কে একটু ডেকে দিবেন?
ওর্নামেন্টস গুলো খুলে দিয়ে যাক,
….
তুমি কি পাগল হয়েছ কেন?
….
কেন?

তোমার মেয়ে দরজায় আড়ি পেতে বসে আছে,
….
তার বাবা মা কি করছে সেটা বোঝার জন্যে,

বুড়োর কথা শেষ হতে না হতেই আমরা দু জন দুদিকে ফিরে নিঃশব্দে হাসতে শুরু করি,
….
সত্যি মেয়ে আমার ফাজিল,
নাহলে ও ভাবল কি করে যে আমি ওর মা কে?

হা হা হা
চলবে,,,,,,