আমার বুড়ো part : 7

0
2418

আমার বুড়ো part : 7

লেখিকা সুরিয়া মিম

!
সত্যি মেয়ে আমার ভাবলো কি করে যে আমি ওর মা কে?
…..
হা হা হা,
..
আমি এতো টাও খারাপ নই যে নিজের সুখের জন্যে আমার বৌ টাকে জ্বালিয়ে মারবো,
….
ভরা যৌবনে কোনো মেয়ে কে দেখে ফিলিংস জাগেনি,
আর এই বুড়ো কালে বৌ টাকে জ্বালিয়ে নিজের পুরুষত্ব দেখিয়ে কি পাবো আমি,
আমাকে দেখে কি মেয়ের পাগল বলে মনে হয়?

কি হলো চুপপপ করপ আছেন কেন?
….
কিছুনা,
..
আমার ওর্নামেন্টস গুলো খুলে দিবেন প্লিজ?
..
হ্যা কেননা,
…..
তারপর উনি আমার ওর্নামেন্টস গুলো খুলে দেয়,
…..
একটা কথা বলি?

হ্যা বলুন.

আমি জানি বিয়ের সাড়ি টা খুবি ভারি তবুও বলছি এটা তুমি পরে থাকো না প্লিজ তোমাকে এটায় অনেক সুন্দর লাগছে,
…..
ভাভাগো ভাবা বুড়ো টা বলে কি?
.
কি ভাবছ তুমি?

কিছুনা, আপনি যখন বলছেন আমি অবশ্যই এ সাড়ি টা পরে থাকবো,
….
আচ্ছা তোরা তো সেই কখন থেকে আড়ি পেতে বসে আছিস, তা কিছু শুনেছিস কি?
…..
হ্যা ওই কি যেন গুজুরগুজুর করছিল?
এখন বোধ হয় শুয়ে পরেছে,

রুহানি রেডি “হ” কেন?

ভালোবাসায় ভাগ বসাতে নতুন কেউ আসছে,
….
শয়তান কত গুলো চুপ কর,
….
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি উনি আমার পাশে নেই,
….
তখনি খেয়াল করে দেখি,
মেরুন কালারের একটা সাড়ি ও কিছু গয়না ও তার সাথে একটা চিরকুট সেন্টার টেবিলের ওপরে রাখা,
…..
তাই তখনি বিছানা ছেড়ে চিরকুট টা খুলে দেখি সেখানে লেখা,
…..
বুড়ি তোমাকে এই ও গহনা গুলোয় মানাবে,
তাই তুমি এগুলো পরলে আমার অনেক ভালো লাগবে,

কেন যেন বুড়োর কথা টা ফেলতে পারলাম না,
তাই শাওয়ার নিয়ে এসে ওনার দেওয়া সাড়ি গহনা গুলো পরে হালকা সাজুগুজু করি,

তখন ওনার বন্ধু বৌয়েরা এসে আমাকে নিচে নিয়ে যায়,

সিরি দিয়ে নিচে নামার সময়ে দেখি,
…..
বুড়ো টা ওর হাতে বেলি ফুলের মালা নিয়ে আমাকে দেখে মৃদু মৃদু হাসছে,

আর ওনার বন্ধু গুলো ওনাকে কিসের জন্যে যেন ঠেলাঠেলি করছে,

হয়তো বেলি ফুলের মালা টা পরিয়ে দিতে বলছে,
তখনি মেয়ে এসে বলে,
….
মা তোমার খোপা টা না খালিখালি লাগছে,
….
বাবা তোমার হাতের বেলি ফুলের মালা টা মাকে পরিয়ে দাও না প্লিজ,
….
কি হলো দাঁড়িয়ে আছেন কেন দিন?
…..
ভাই ভাবির অনুমতি পেয়ে গেছিস এখন গিয়ে পরা,

তারপর উনি আমাকে ওনার আনা বেলি ফুলের মালা পরিয়ে দেয়,
….
তখন ওনার বন্ধু ওনাকে ফিসফিস করে বলে,
….
কিরে ভাই কাল রাতে কতদূর আগালি?
….
অনেক দূর রে ভাই,
….
ভাবি তোকে বাধা টাধা দেয় নাই,

কেনরে বাধা দিবে কেন?
ও আমার বিয়ে করা বৌ, আমার মেয়ের মা আমার অধিকার আছে ওকে ভালোবাসার,

বাহহহহ তুই তো আমাদের থেকে ও এক কাঠি ওপরে যাও,

আরে আমার স্টাইল আলাদা,
….
ইসসসস,
আমার এই বুড়ো টাতো খুবি ফাজিল,

কালকে আমরা দুজন দুইদিকে ফিরে মরার মতো পরেপরে ঘুমোচ্ছিলাম,
আর উনি বলে কিনা এই বুড়া বয়সে ওসব করছিলাম?

ব্যাটা মিথ্যুক জানি কোথাকার,
….
আন্টি আন্টি,

হ্যা বাবা,
….
দেখ আমরা জানি হরেক রকমের রান্নাবাড়া হয়েছে,
তবে আমরা তোমার হাতের তৈরি করা খাবার খেতে চাই,
…..
তুমি আমাদের এই অন্যায় আবদার টা পুরন করবে প্লিজ?
….
হ্যা বাবা অবশ্যই,
আমার বাবারা আমার কাছে খেতে চেয়েছে আর আমি ওদের রান্না করে খাওয়াবো না সেটা কি হয়?

তোমার আঙ্কলের জন্যে রুইমাছের মাথা দিয়ে একটা স্পেশাল রেসিপি করবো,
তো তোমরা কি খাবে?
আমাকে রেসিপি বলে দাও আমি বানিয়ে দিবো,
….
হ্যা বাবা তোমার আন্টি কে রেসিপি বলে দাও,
….
ওকে আঙ্কল,
….
আর হ্যা শোনো আমি বাজারে যাচ্ছি,
…..
মা শোনো তুমি না একটা খাদক কে বিয়ে করেছ,
….
এনার যে কত খাইখাই রোগ সে “ক” দিন বাদেই হাড়েহাড়ে টের পাবে তুমি,
..
আর কিছুদিন পরেই তুমি তার খাইখাই রোগ দেখে পালিয়ে বাঁচতে চাইবে,
..
তাই বলছি যাওয়ার আগে আমাকে সাথে করে নিয়ে যেও প্লিজ,
আমি তোমাকে ছেড়ে এক মুহূর্ত এখানে থাকবো না হুমমম?
…..
হা হা হা,
….
বাবার নামে মায়ের কানে বিষ ঢলছ?
…..
না গো না তোমার নামে মধু ঢালছি,
….
হা হা হা,
….
ফাজিল মেয়ে,
….
হুহুহুহুহুহু,
….
তারপর আমি কিচেনে গিয়ে সাড়ির আচল কোমরে গুজে,
…..
রান্নাবাড়া শুরু করে দেই,
বাসার স্টাফরা আমাকে হেলফ করতে চাইলে আমি তাদের আজকের জন্যে ছুটি দিয়ে দেই,
….
একা হাতে সমস্ত রান্নাবাড়া সেরে শাওয়ার নিয়ে এসে পেছনে ফিরে দেখি,
….
বুড়ো টা হাতে শরবতের গ্লাস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,
….
আরে আপনি কখন এলেন,
….
সেতো অনেকক্ষণ তবে তুমি সবাই কে ছুটি দিয়ে দিয়েছ কেন?
….
শুধু আজকের দিন টা দিয়েছি এতে ব্যতিব্যস্ত হওয়ার কিছু হয়নি,

একা একা তোমার কষ্ট হয় নি?

না কেন?
….
সেই তো কখন থেকে দেখছি একাএকা দৌড়ঝাঁপ করছ তাই,
….
আমার বুড়ো টাও না অতিরিক্ত সেন্টিমেন্টাল,
….
আমার বুড়ি টা শুধু মনে মনে বলে কেন?
সামনাসামনি কিছু বলতে পারেনা না কি?
….
বলছি কি এই শরবত টা খেয়ে নেও ভালো লাগবে তোমার,
….
আপনি খেয়েছেন রুহান চৌধুরি সাহেব?

না,
…..
তাহলে আপনি অর্ধেক টুকু খান বাকি টুকু আমি খেয়ে নিবো,
…..
আচ্ছা,
….
তখনি খেয়াল করে দেখি,
বুড়ো টা মৃদু মৃদু হাসছে,
…..
কি হলো কিছু বলবেন?
…..
বলি কি কোমরে গুজে রাখা সাড়ির আচল টা ছেড়ে দাও,
….
কোমরের তিল টা দেখা যাচ্ছে,
….
সাথেসাথে লজ্জা পেয়ে উল্টো দিকে ফিরে আচল টা ছেড়ে দেই,
……
হায় আল্লাহ বুড়ো বয়সে আর কি কি দেখতে হবে আমায়?

আর তখনি বেসিনের আয়নায় তাকিয়ে দেখি,
….
উনি নিচের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসছেন,

ইসসস,
আমার বুড়ি টা লজ্জা পেয়েছে,
হা হা হা,
চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে