মন গহীনের শব্দ পর্ব-১১

0
253

মন গহীনের শব্দ
| ১১ |
আমার মস্তিষ্ক তুমুল গতিতে চিন্তা করতে শুরু করল। কী এমন করেছে সুলেখা আন্টি যার জন্য আমি তার উপরে রেগে যেতে পারি। আমি প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকালাম সুলেখা আন্টির দিকে।

সে বলতে শুরু করল, “আজ থেকে তের বছর আগের কথা, আমি এবাড়িতে বউ হয়ে আসার দুই বছর হয়েছে তখন। এরকম একটা দিনে তোমার মায়ের সাথে দেখা হয়েছিল আমার। তখন তুমি ক্লাস ওয়ানে পড়ো। আমার খুব ন্যাওটা ছিলে তুমি তখন। তুমি যেখানে যাবে আমাকেও সেখানেই থাকতে হবে। এমনকি তুমি স্কুলে গেলেও আমার অপেক্ষা করতে হতো তোমার ক্লাসরুমের বাইরেই। সেদিনও আমি ক্লাসরুমের বাইরে তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। ঠিক তখনই তিনি এসে আমার সামনে দাঁড়ালেন। আমি তাকে চিনতে পারলাম না, তিনি নিজেই সেধে পরিচয় দিলেন। সবকিছুই আমাকে খুলে বললেন তিনি। ভুল মানুষের প্ররোচনায় পরে তিনি বাড়ি ছেড়েছিলেন। কিন্তু নিজের ভুল বুঝতে পেরে তিনি আবার বাড়ি ফিরতে চান। আমার বুকটা ধ্বক করে উঠল সেদিন তার কথা শুনে। তিনি আমাকে অনুরোধ করলেন, তার স্বামী, সংসার এবং সন্তান তাকে ফিরিয়ে দিতে। আমার ভয় হলো প্রচন্ড। তোমার বাবা যদি জানতে পারেন তাহলে নিশ্চিত আমাকে ছেড়ে তাকেই বেছে নেবেন। তোমার মাও আমাদের স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের টানাপোড়েনের কথা জানতে পারলে তোমার বাবার কাছে ফিরে যাবেন। সবটা ভেবেই ভয়ে আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে এলো। কিছুতেই মানতে পারলাম না যে আমার সব অধিকার ছেড়ে দিতে হবে। ভালোবাসাহীন সংসার এবং তোমাকে আঁকড়ে ধরে আমি নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি তখন কেবল। সেদিন ভেবেচিন্তেই আমি খুব বড় একটা অন্যায় করলাম। নিজের সংসার বাঁচাতে স্বার্থপর হয়ে উঠলাম। একের পর এক মিথ্যে বলে গেলাম। বললাম তোমার বাবা তাকে ঘৃণা করেন। আমাকে নিয়েই এখন সে ভালো আছে। তাকে স্পষ্ট জানালাম, যে সংসার ছেড়ে স্বেচ্ছায় সে চলে গিয়েছিল, পুনরায় সেখানে ফেরার কোনো অধিকার নেই তার। সেদিন নিজের নড়বড়ে অবস্থান ধরে রাখতে সবচেয়ে বড় মিথ্যেটাও বললাম আমি। বললাম, আমি সন্তানসম্ভবা। আমার সামনে বসে তোমার মা শুধু কেঁদেই গেলেন। আমি বুঝতে পারলাম, ক্ষনিকের মোহে পড়ে যে ভুল তিনি করেছিলেন সেটা শুধরে নিতে চাইছেন। কিন্তু ক্রমাগত কথার আঘাতে আমি তাকে একপ্রকার অপমান করেই তাড়িয়ে দিলাম। হঠকারিতায় কাজটা করে ফেললেও পরে অনুশোচনায় দগ্ধ হয়েছি আমি প্রতিনিয়ত। যতবার তোমার কিংবা তোমার বাবার চেহারার দিকে তাকাতাম, মনে হতো আমি মস্ত বড় অন্যায় করেছি। আমার জন্যই তুমি আরেকবার হারালে তোমার মাকে। মনে হতো তার সংসারে অনধিকার চর্চা করছি আমি। তোমার দাদি যখনই আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করতেন, তখনই মনে হতো এই সংসারে আমি আসলে কিছুই না। অনেকবার এই কথাগুলো তোমাকে কিংবা তোমার বাবাকে বলতে চেয়েছি, কিন্তু পারিনি। যদি তোমরা আমাকে দোষারোপ করো সেই ভয়ে গুটিয়ে নিয়েছি নিজেকে। তোমার বাবাকে হয়তো কখনোই বলতে পারব না কথাগুকো। কিন্তু তোমাকে অন্তত জানিয়ে গেলাম এসব। এখন নিজের অপরাধবোদ হয়তো কিছুটা হলেও কমবে।”
সুলেখা আন্টি কথা শেষ করে চলে গেলেন। আমি ব্যাগ হাতড়ে মোবাইল নাম্বার লেখা সেই টুকরো কাগজটা বের করলাম। এবার মনেহয় সত্যিই মায়ের সাথে দেখা করা উচিৎ।

পরেরদিন কাঙ্ক্ষিত স্থানে যখন পৌঁছলাম তখন প্রায় মধ্যদুপর। ভার্সিটি থেকে সোজা এখানে চলে এসেছি। রাহেলা আন্টিও আছেন সাথে। সামনে প্রকান্ড জমিদারি স্টাইলের বাড়িটির দিকে তাকালাম আমি। রাহেলা আন্টি বললেন, “এটা তোমার মায়ের বাপের বাড়ি মানে তোমার নানাবাড়ি।”
আমি কোনো কথা বললাম না। আজ কথা যা বলার শুধু একজনের সাথেই বলব। বাড়ির ভিতরে ঢুকে অবাক হয়ে গেলাম আমি। মনে হলো যেন পুরোনো কোনো রাজপ্রাসাদে ঢুকে পড়েছি।

অন্দরমহলের মহিলারা খুব আগ্রহ নিয়েই দেখছে আমাকে। পাশে কানাঘুষাও শুনতে পাচ্ছি।
“চাঁদের মতো সুন্দর এই মেয়েটা আমাদের রেবেকার?”
“কালো মেয়ের গর্ভে এরকম পরীর মত মেয়ে। এই মেয়ে রেখে রেবেকা কীভাবে…”
সবার সব কথা উপেক্ষা করে আমি রাহেলা খালার সাথে নির্দিষ্ট একটি রুমের দিকে এগিয়ে গেলাম। প্রথমেই চোখ গেল বিছানার দিকে। ক্লান্ত বিষন্ন একটা মুখ দেখতে পেলাম আমি। চোখাচোখি হলো আমাদের। বুকের ভেতরটা হুহু করে উঠল আমার। ইচ্ছে করল একছুটে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরতে। কিন্তু আমি সেটা করলাম না। একেবারে নিস্পৃহ আর নিরুত্তাপ হয়ে গিয়ে অপজিটের সোফায় বসলাম আমি। তিনি কথা বলে উঠলেন, “তুলন, তুই এসেছিস মা। এত দূরে কেন? আমার কাছে আয়।”
আমি শক্ত গলায় জবাব দিলাম, “আপনার মনে হয় কোথাও একটা ভুল হচ্ছে। আপনি যার নাম ধরে ডাকছেন, আমি সে নই। আমার নাম সুজাতা।”
তিনি শব্দ করে কাঁদলেন। নিজেকে কঠিন খোলসে আবদ্ধ করে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে গেলাম আমি। তিনি বললেন, “এসবই আমার প্রাপ্য ছিল আসলে। পাপ তো আর কম করিনি জীবনে। তোকে তোর বাবাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। তোর দাদি নিজের মেয়ের মত ভালোবাসতো আমাকে। ওই বৃদ্ধা মানুষটাকেও ধোঁকা দিয়েছি। এখন প্রত্যেকটা মুহুর্তে তার মাশুল দিয়ে যাচ্ছি।”
আমি বললাম, “এখন এসব কথা বলা অর্থহীন। তবুও শুধু একটা কথাই জানতে চাই আপনার কাছে। আমাদের সাথে কেন এমন করলেন?”

“লোভে পড়ে করে ফেলেছি। তোর বাবা যখন থেকে নিজের ব্যাবসা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেল, ঠিক তখন থেকেই শুরু হলো সমস্যাটা। আমাকে সময় খুব কম দিত। কয়েক জায়গা থেজে বেশ বড় অঙ্কের একটা লোন নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিল। সেগুলো সময়মতো ফেরত দেওয়ার তাড়াও ছিল। প্রচুর প্রেসারে থাকত তোর বাবা। ছোটোখাটো ব্যাপার নিয়েও ঝগড়া লেগে যেত। একসময় নিজের গায়ের রং নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগতে শুরু করলাম। মনে হতো, আমাকে বুঝি এখন আর আগের মত ভালোবাসে না সে। কত বোকা ছিলাম তখন! একবারও বোঝার চেষ্টা করলাম না, আমাদের ভালো রাখার জন্যই আসলে মানুষটা দিনরাত খেটে যাচ্ছে। তুই হওয়ার পরে আমি আরো খিটখিটে মেজাজের হয়ে গেলাম। তোর বাবা ততদিনে সব আর্থিক ব্যাপারগুলো সামলে নিয়েছে। আগের মতই আমাকে সময় দেওয়ার চেষ্টা করে, ভালোবাসে। কিন্তু ততদিনে তৃতীয় একজন আমাদের সম্পর্কের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। তোর বাবার খুব কাছের বন্ধু হওয়ার সুবাদেই আমাদের বাড়িতে তার অবাধ যাতায়ত ছিল। আমার একাকীত্বের দিনগুলোতে সে আমাকে সঙ্গ দিতে শুরু করল। আমার সামান্য অসুস্থতার কথা শুনলেও পাগল হয়ে যেত। আমিও আস্তে আস্তে দুর্বল হতে থাকলাম তার প্রতি। একসময় মনে হলো, আমি তোর বাবার চেয়ে তার সাথেই বেশি ভালো থাকব। তখনও বুঝিনি এসবই মিথ্যে মোহমায়া। একদিন ও বলল, বাড়ি থেকে পালিয়ে আসতে। আমিও তাই করলাম। সমস্ত গয়নাগাটি আর বেশ বড় অঙ্কের নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেলাম ওর সাথে। শহর থেকে কিছুটা দূরের একটা হোটেলে উঠলাম। ঠিক মধ্যরাতে দরজায় নক করল কেউ। খুলে দেখলাম তোর বাবা দাঁড়িয়ে আছে। তার জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়তো আর ফিরেও তাকাত না আমার দিকে। কিন্তু অন্য একজন পুরুষের সাথে একরুমে দেখা সত্বেও সে আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। অন্তত তোর জন্য হলেও ফিরে যেতে বলেছিল আমাকে। কিন্তু আমি স্পষ্ট করে জানিয়েছিলাম, আর কখনও তার কাছে ফিরব না। সেদিন আমার সামনে দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেলল তোর বাবা। কিন্তু তার কান্না আর আকুতি আমার কাছে ছিল একেবারেই অর্থহীন। অথচ এখন আমি হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করতে পারি তার সেই কান্নাভেজা মুখটা। তিনদিন বাদেই ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছিলাম তাকে। লেটার পাঠানোর পরেরদিন বিয়ে করে নিলাম আমার। আমার নতুন সংসার টিকেছিল মাত্র সাতদিন। তারপর আমাকে ধোঁকা দিয়ে লোকটা আমার সমস্ত টাকা আর গয়না নিয়ে পালিয়ে গেল। একা একটা মেয়ে কোথায় যাবো বুঝতেই পারছিলান না। বাবা মা অনেক আগেই ত্যাগ করেছিল আমাকে। তোর বাবার কাছে যাওয়ার মতো মুখও ছিল না৷ অনেক ভেবে আমার বাপের বাড়িতেই গেলাম শেষে। আমি ওবাড়ি থেকে চলে আসার পর রাহেলাও চলে এসে আমার বাবার বাড়িতে গিয়ে উঠেছিল। ও কিভাবে বাবা মাকে ম্যানেজ করল জানি না। তারা কেউ আমার সাথে কথা বলল না ঠিকই তবে আশ্রয় দিল আমাকে। ভাবীরা ক্রমাগত কটু কথা শোনাতেন এরকম জঘন্য একটা কাজ করেছি বলে। আমার নিজেরও তখন বিশ্বাস হতো না, এই কাজটা আমি সত্যিই করেছি। শুধু একটা না, একের পর এক ভুল করেছি আমি৷ স্বামী সংসার ছেড়ে যিনার মত জঘন্যতম পাপ করেছি। ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েই মনে করেছিলাম তালাক হয়ে গেছে। তারপরেরদিনই বিয়ে করলাম। অথচ তাতে তোর বাবা সই পর্যন্ত করেনি। মানে ডিভোর্স হয়নি, এমনকি ইদ্দত পালন করাও হয়নি আমার। মানে পরের বিয়েটার কোনো ধর্মীয় ভিত্তিই ছিল না। এগুলো সবই পরে জানতে পেরেছি আমি। অনেকবার ফিরতে চেয়েছি তোদের কাছে। কিন্তু আমি তো নিজের হাতেই ফেরার সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছি। আমি জানি, তুই আমাকে প্রচন্ড ঘেন্না করিস। আজকের এই কথাগুলো শোনার পর থেকে হয়তো আরও বেশি ঘেন্না করবি। তবুও বলছি, যদি সম্ভব হয়ে আমাকে ক্ষমা করে দিস, মা।”
আমি চুপচাপ বাকরুদ্ধ হয়ে শুনছিলাম তার কথা। বাবা সব জানত, মা কোথায় কার সাথে আছে। তবুও এই বিশ্বাসঘাতক মহিলাটির জন্য বছরের পর বছর বাবা সুলেখা আন্টির সাথে অন্যায় করে গেছে। তিনি আমার কাছে এগিয়ে এলেন। মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন, “আমি তো এ ঘরের বাইরে পা রাখি না এখন আর। নিজেকে এই ছোট্ট কক্ষটাতেই বন্দি করে রাখি। বাইরের পরিবেশ আজকাল অসহ্য লাগে। আচ্ছা তুলন, তোর বাবাকে একদিন নিয়ে আসবি আমার কাছে? অনেকদিন হয় তাকে দেখি না।”

“না। আমি চাই না বাবার সাথে আপনার দেখা হোক। আমাদের যখন প্রয়োজন ছিল, তখন যেহেতু আপনাকে পাইনি তাই আমাদের সুখের দিনেও আপনাকে আমাদের আর প্রয়োজন নেই। শুধু একটাই অনুরোধ করব আপনাকে। দয়া করে আর কখনও আমার বা আমার পরিবারের কারও সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করবেন না প্লীজ।”
“আচ্ছা, আর কখনও করব না যোগাযোগ।”
“আপনার যা বলার ছিল, বলা শেষ নিশ্চই। এখন আমি আসছি তাহলে।”

“সেকি, এখনও তো আমি তোকে ভালো করে দেখতেই পারলাম না। একবার আমার কাছে আয়। তোর কপালে একটা চুমু দিয়ে দেই।”

আমি এগিয়ে গেলাম তার কাছে। দুহাতের আজলায় আমার দুগাল ধরে তিনি চুমু দিলেন কপালের ঠিক মাঝ বরাবর। আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম। মাতাল করা চেনা পরিচিত একটা মা মা ঘ্রাণ এসে লাগল নাকে। আশ্চর্য, এত বছরে তো মায়ের গায়ের ঘ্রান আমার ভুলে যাওয়ার কথা, তবুও এত পরিচিত কেন লাগছে?

তিনি বললেন, “ছোটবেলায় তোর কপালে চুমু দিলে তুইও আমাকে পালটা চুমু দিতি। আজ দিবি না?”
কোনো কথা না বলে আমিও ঠিক একইভাবে চুমু দিলাম তাকে।আমার চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল তার হাতের পিঠে। তিনি আবেগমাখা কণ্ঠে বললেন, “একবার মা বলে ডাকবি?”
আমি উত্তর দিলাম, “মাফ করবেন, আমার শুধু একজনই মা ছাড়া।তাকে ছাড়া অন্য কাউকে মা বলে ডাকা সম্ভব নয় আমার পক্ষে।”

মুখে না বললেও মা বলে ডাকার আকন্ঠ তৃষ্ণায় ছটফট করছি আমি মনে মনে। তবু কেন যে না বলে দিলাম? হবে হয়তো ঘৃণা অথবা অভিমানে। হঠাৎই নিজেকে খুব দুর্ভাগা মনে হলো আমার। দুজন মা থাকা সত্বেও কাউকে মা বলে ডাকতে পারছি না। তিনি বললেন, “আচ্ছা, মা বলে ডাকতে হবে না। আমার সাথে আর কিছুক্ষন থেকে যা। আজ আমি নিজে হাতে তোকে একটু খাইয়ে দেই।”

“আসলে আমি ভার্সিটির পর সোজা এখানে চলে এসেছি। মায়ের কাছে না বলে সচরাচর আমি এভাবে বাইরে থাকি না। আমাকে যেতে হবে। নইলে মা চিন্তা করবে আমার জন্য।”

“বুঝেছি, আমার হাতে খেতেও চাইছিস না। আচ্ছা আর বেশিক্ষন তোকে থাকতে হবে না। অন্তত কিছুটা সময় তোকে দেখি। আজ চলে গেলে আর তো কখনও আসবি না আমার কাছে। এটাই তো শেষ দেখা। আর পাঁচটা মিনিট থেকে যা আমার কাছে।”

আমি গুনে গুনে পাঁচ মিনিট বসে উঠে দাঁড়ালাম। দরজার কাছে গিয়ে আরেকবার পিছনে ফিরে তাকালাম। সত্যিই আজকের পর আর আমি তাকে দেখতে আসব না। শেষবারের মত দেখে নিলাম নিজের জন্মদাত্রীকে। আহা! আমার মা। আমাকে দশমাস দশদিন গর্ভে ধারন করেছেন যিনি, আমার সেই মা ছলছল নয়নে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। আমি মনেমনে বললাম, “তোমাকে খুব ভালোবাসি, মা।”

খুব সুন্দর একটা সাজানো গোছানো সংসার হতে পারত আমাদের। অথচ কোথা থেকে কী হয়ে গেল। ও বাড়ি থেকে বেড়িয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েই হেঁচকি তুলে কেঁদে উঠলাম আমি।
(চলবে ইনশাআল্লাহ)

#আমাতুল্লাহ_স্বর্ণা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে