প্রেম প্রেম পায়রা পর্ব-০৪

0
310

#প্রেম_প্রেম_পায়রা
#পর্ব_৪
#গোলাপী_আক্তার_সোনালী

শহরে আজ আরো একটা অজ্ঞাত লা*শের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। প্রথমে স্থানীয়রাই দেখেছে লা*শটা পরে পুলিশে খবর দেয়ার পর তারাই উদ্ধার করেছে।এটাও মার্ডার কেস।পর পর তিন তিনটা খুন।পুলিশ প্রশাসন এবার বেশ চাপের মুখে।এবার পুরো শহর যেন আতঙ্কে থমকে গেছে।
লা*শের পাশে একটা কাগজে লেখা ছিলো বেইমানের ক্ষমা নেই।এটা অবশ্যই ছাপানো লেখা।কাজেই হাতের লেখা দিয়ে খুনি অব্দি পৌঁছানো একেবারেই অসম্ভব।সকালে এমন খবর দেখে ছোয়ার মনটা ফুরফুরে হয়ে গেছে।

“আমি বুঝতে পারছি না সাব্বির তোমরা এখনো কেন খুনিকে ধরতে পারলে না? তোমার মতো একজন অভিজ্ঞ অফিসারের কাছ থেকে এমন কিছু আশা করা যায় না।কি যবাব দিবে সবাইকে? এতোগুলো খুন আমি প্রেসের সামনে কি বলবো?

” স্যার আমরা তো চেষ্টা করছি। কিন্তু।

“আমি আর কিছু শুনতে চাই না।খুনের সংখ্যা যেন তিন থেকে চারে যেন না যায় এটা দেখার দায়িত্ব তোমার।পুরো শহর এখন আতঙ্কিত। এবার তো পদত্যাগ করে বাড়িতে গিয়ে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকতে হবে।যত দ্রুত সম্ভব এই কেসটা শেষ করো।এট এনি কস্ট।

” ইয়েস স্যার।

ছোয়া সকালের খাবার খাচ্ছিলো এমন সময় লুবনা বেগম পাশে এসে বসলো।
মায়ের দিকে একবার তাকিয়ে আবারও খাওয়া মনযোগী হলো ছোয়া।

“কিছু বলবে?

” আমার কোন কথাটা শুনিস তুই?

“বলই না কি বলবে মা।

” বলছি এই কাজটা ছেড়ে দে না মা।আমরা তো ভালো আছি বল।

“হঠাৎ এই কথা কেন বলছো?

” চারপাশে যা হচ্ছে আমার তোকে নিয়ে খুব ভয় হয় ছোয়া তোর বাবার মতো না হয় শেষে। তুই তো আমার একটা কথাও শুনিস না।শহরে একের পর এক খুন হয়েই যাচ্ছে।আমার আর ভালো লাগছে না এসব।

“মা আবার শুরু করলে? আমার কিচ্ছু হবে না।তাছাড়া বাবাকে আমি যে কথা দিয়েছি সেটা এখনো পুরন হয়নি।তুমি অযথা এসব নিয়ে ভেবোনা তো।

ছোয়া বলে গেলো ঠিকই কিন্তু লুবনা বেগমের দুশ্চিন্তা একটুও কমলো না।আজকাল নিজের মেয়েকে তিনি বুঝে উঠতে পারে না।কেমন একটা গা ছাড়া ভাব।

“বলছিলাম সব তো হলো আব্বা এবার বিয়েটাও করে ফেলো।আমার তো বয়স হয়েছে।তোমরা দুই ভাই-বোন সারাদিন বাসায় থাকো না আমি একা একা কেমন বোরিং লাগে।অথচ এই বয়সে নাতি নাতনি নিয়ে আমার খেলা করার কথা।সেটা কি তুমি চাও না?

” ঠিক বলেছো মা আমার ও তো ফুপি হতে ইচ্ছে করে নাকি।

“সকাল সকাল কি শুরু করলেন আম্মা।যাই হোক খুব তারাতাড়ি আপনার ইচ্ছে পুরন করবো।

” সত্যি বলছো ভাইয়া!

“এতো অবাক হবার কি আছে? তোকেও বিদায় করার ব্যবস্থা করছি একবার তোর পরিক্ষা শেষ হোক।

” হুহ তোমার সেই ইচ্ছা কোনোদিন পুরন হবে না।আমি তোমার ঘারে বসে বসেই জীবন পার করবো।

“নুর থাম এবার।নুহাশকে কিছু বলবি বললি তখন আমাকেও তো বললি না।

” ও হ্যাঁ। আগামী বুধবার আমাদের ভার্সিটি ডিপার্টমেন্ট থেকে সবাই রাঙামাটি যাবে আমিও যেতে চাই ভাইয়া।

“অনেক দূরে।তোকে আমি একা একা যেতে দিবো না।
তাই তোর যাওয়া হচ্ছে না।

” তুমি কিন্তু আমাকে বলেছিলে আমি যেখানে যেতে চাই যেতে দিবে ভাইয়া প্লিজ। আর আমি তো একা যাচ্ছি না।সাথে আমার বন্ধুরাও যাবে। মা ভাইয়াকে বলো না।

“আমি কি বলবো তাছাড়া এটা তো সত্যি এতো দূরে একা একা কি কতে যেতে দেই।

” তুমি অন্তত ভাইয়ার মতো বলো না মা।

“আচ্ছা ঠিক আছে তবে আমার একটা শর্ত আছে।দুজন গার্ড যাবে।ওরা আলাদা যাবে কিন্তু একা যাওয়া যাবে না।এখন আমার চারপাশে বিরোধী দলের লোকজন সুযোগ খুজছে।আমি চাই না তোর বা আম্মার কোনো বিপদ হোক।

” ঠিক আছে তাই হবে তবে ওরা কিন্তু দূরে দূরে থাকবে।

“বেশ।

_

“ম্যাম আপনি যেটা বলেছিলেন সেটাই সত্যি। আমি এমন কিছু পেয়েছি যেটা হয়তো আপনি যা খুজছেন তাই হবে।

” কি বলছো। কিন্তু কি করে পেলে?

“কেন ছবির ভেতরে ছবি।

” মানে?

“মানে হচ্ছে আপনাদের ফ্যামিলি ফটোর পিছনে আরো একটা ছবি আছে।কোনো একটা পেইন্টিং এর ছবি।সেখানেই উত্তর টা আছে।

” মানে তুমি বলতে চাইছো ছবিটাই ক্লু।কিন্তু ছবি কি করে ক্লু হতে পারে?

“এক্সাক্টলি ম্যাম ছবি তো ক্লু নয় কিন্তু ছবির নিচের দিকে কিছু কোড আছে।সম্ভবত যিনি পেইন্টার এটা তার বিশেষ কোনো কোড যা তিনি তার পেইন্টিং এর সব ছবিতে ব্যাবহার করে থাকেন।আর আংকেল খুব চালাকির সাথে সেটাকেই কাজে লাগিয়েছেন।

” বাহঃ তুমি তো কামাল করে দিয়েছো মিলি।আমি আসছি।তোমার কথা যদি সত্যি হয় তাহলে।

“তাহলে?

” আমার অনেক হেল্প হবে।

“ছোয়া তোর খাবার খেয়ে যা কখন থেকে নিয়ে বসে আছি।

” আমি এখন খেতে পারবো না মা। আমার জরুরী একটা কাজ আছে এখনই যেতে হবে আমায়।

“আরে শোন আমাদের সিলিন্ডার শেষ হয়ে গেছে। যা চলে গেলো? কখন আসবে কে জানে।

ছোয়া এতটাই এক্সাইটেড যে মায়ের শেষের কথাটা শুনতে পেলো না।সে এখন একটা কথাই ভাবছে অবশেষে শিকদার নামের হদিস পাওয়া যাবে।

“স্যার মেডাম কোথাও যাচ্ছে কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে খুব তারাহুরোর মধ্যে আছে।

” যেভাবেই হোক খুব সাবধানে আমার দেয়া ঠিকানায় নিয়ে এসো।আমি আর কোনো রিস্ক নিতে চাই না।

“কাজ হয়ে যাবে স্যার।

” বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান,
এইবার ছোয়া পাখি নুহাশ তোমার বধিবে পরান।

ছোয়া একটা ট্যাক্সি খুজছে।এখান থেকে বনানী অনেকটাই দূরে তাই ট্যাক্সিই উপযুক্ত হবে বলে মনে হলো।বেশি খুজতে হলো না পেয়েও গেলো।
অল্পটা পথ যেতেই ট্যাক্সি অন্য রাস্তায় মোড় নিলো।এটা দেখে ছোয়া জিগ্যেস করলো-
” একি আপনি এই রাস্তা দিয়ে কোথায় যাচ্ছেন এটা তো বনানীর রাস্তা নয়?

হুট করেই ছোয়ার মুখে কিছু স্প্রে করলো ড্রাইভার সিটে বসে থাকা লোকটা। তারপর নুহাশের দেয়া ঠিকানায় নিয়ে গেলো ছোয়াকে।

জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে একটা অন্য ঘরে আবিষ্কার করলো ছোয়া। মিলাতে চাইলো তার সাথে কি হয়েছে।তার যতটা মনে পরলো সে একটা ট্যাক্সিতে উঠেছিল বনানী যাবে বলে কিন্ত তার ড্রাইভার কিছু একটা স্প্রে করার পর আর কিছু মনে নেই।কিন্তু তাকে এখানে কেন আনা হয়েছে আর কেই বা আনলো।আচ্ছা বাবার রেখে যাওয়া সেই বক্স এর কথা কেউ জেনে যায়নি তো?
না না সেটা কি হরে সম্ভব। যেখানে আমিই এতো দিন এটার কথা জানতাম না সেখানে অন্য কেউ কি করে।তাহলে এসবের মানে কি? এখন এসব ভাবলে হবে না আমাকে এখান থেকে আগে বেরুতে হবে।

“কেউ আছেন। শুনতে পাচ্ছেন আমার কথা?

নাহ কেউ কোনো সারা দিচ্ছে না।এবার ছোয়া দরজা ধাক্কাতে লাগলো তাতেও বিশেষ কোনো লাভ হলো না।
না কেউ নেই।

” এবার আমি কি করবো।মিলি হয়তো আমার জন্য অপেক্ষা করছে।একটা কল করি।কিন্তু আমার ফোন কোথায়?

খট করেই দরজা খোলার আওয়াজ হলো।নুহাশ দাঁড়িয়ে আছে।মুহুর্তেই ছোয়ার মুখ লাল হয়ে গেলো রাগে।আগেই ভাবা উচিৎ ছিলো এই লোকটার কথা।
এই লোককে সহজ ভাবে নেয়া ঠিক হয়নি ছোয়ার।কিন্তু এখন কি করে এখান থেকে বের হবে সেটা আগে নিশ্চিত হতে হবে।

“আপনি।এসব আপনিই করেছেন তাই না?

” হুম। আমিই করেছি।

“এসবের মানে কি? দেখুন এসব যদি আপনার ফাজলামো হয়ে থাকে তাহলে খুব খারাপ হবে।আমার ফোন দিন।ফোন কোথায় আমার?

” ফোন তো এখন দেয়া যাবে না।ততক্ষণ যতক্ষণ তুমি আমার কথায় রাজি না হচ্ছো।

“আপনার কি মনে হচ্ছে আপনি বললেন আর আমি নাচতে নাচতে আপনাকে বিয়ের জন্য রাজি হয়ে গেলাম তাই তো?
তাহলে আপনি ভুল ভাবছে আপনার এই ইচ্ছা আমি পুরন হতে দেবো না।

” কনফিডেন্স থাকা ভালো।তুমি জানো তোমার বাড়ির সিলিন্ডার শেষ হয়ে গেছে? আমার লোক অলরেডি সেখানে পৌঁছে গেছে।আমার একটা কথায় বোমম।আর সেটা যদি নাও হয় তোমাদের টিভি সেখানেও। বিশ্বাস হচ্ছে না? এই দেখো।

তারপর নুহাশ কাউকে ভিডিও কল করলো এবং সে সবকিছু ঘুরিয়ে দেখালো ছোয়াকে।পাশেই লুবনা বেগম দাঁড়িয়ে আছে।তার ধারণা ওদেরকে ছোয়াই পাঠিয়েছে।

“এসব দেখিয়ে ভয় দেখাতে চাইছেন আমায়? আমাকে ব্ল্যাক মেইল করছেন।আপনি জানেন আপনাকে আমি এর জন্য কি করতে পারি?

” জানি। কিন্তু আপনি জানেন না আমি কি করতে পারি।
আরো একটা জিনিস দেখাই আপনাকে।আপনার কি যেন একটা বন্ধু আছে না রোহিত।আমি যতদূর জানি সে এখন বাইকে করে কোথাও যাচ্ছে আমার লোক সেখানেও আছে আমার একটা কথায় উড়িয়ে দিতে সময় লাগবে না।
তারপর একটা ভিডিও যেটা দেখে ছোয়ার মাথায় রক্ত উঠে গেলো।

“এটা মিথ্যে এটা আমি নই।এটা আমি হতে পারি না।আপনি এগুলো!

” হুম যেটা ভেবেছেন তাই।এডিট করেছি।আর এটা যে সত্যি না সেটা আমি আর আপনি জানি কিন্তু বাকিরা।

এবার রাগে দুঃখে ছোয়া নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলো না।এলোপাতাড়ি চর মারলো নুহাশের গালে।যার ফলে নুহাশ ও এবার রেগে গেলো।হ্যাচকা টানে ছোয়াকে নিজের কাছে নিয়ে এলো।কোনো কথা না বলেই ছোয়ার ঠোঁট নিজের ঠোঁট দ্বারা আটকে নিলো।এতে ছোয়া যেমন হতভম্ব তেমন নিস্তেজ। কস্মিনকালেও ভাবেনি ছোয়া যে নুহাশ এমন কিছু করবে।

কিছু সময় যাওয়ার পর নুহাশ ছেড়ে দিলো ছোয়াকে।রাগ কিছুটা কমেছে।

“এটা প্রথম আর এটাই শেষ দ্বিতীয় বার এমন কিছু করার সাহস যেন না হয় তা না হলে দেখবে নুহাশ কি জিনিস।১০ মিনিট সময় দিচ্ছি হয় আমার কথায় রাজি হয়ে বাড়িতে ফিরবে এবং আজই আমাদের বিয়ে হবে আর নয়তো বাকিটা জীবন এখানেই কাটিয়ে দিবে। সেই সাথে তোমার বাড়িও উড়ে যাবে আর তোমার মা-ও।বলেই রুম ত্যাগ করলো নুহাশ।

ছোয়া ধপ করে মেঝেতে বসে গেলো।সে ভয় পাচ্ছে না নুহাশকে।কিন্তু মা ছাড়া তার আর কেউ নেই।অনেক কষ্টে মা কে মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচিয়েছে এখন যদি আবার এমন কিছু হয় ছোয়া নিজেকে কখনোই ক্ষমা করতে পারবে না।রোহিতের ও তো কোনো দোষ নেই।কি করবে ছোয়া সব মেনে নিবে?

ছোয়াকে বউ করে নুহাশ মায়ের সামনে বসে আছে।নাহার বেগম একবার ছোয়াকে দেখছে একবার নুহাশকে।

“আম্মা আপনার কি ছেলের বউ পছন্দ হয়নি?

” হয়েছে কিন্তু তুমি আমাকে এটা বলো যে রাত ১ টা বাজে কোন ছেলে কাউকে না জানিয়ে এভাবে বউ নিয়ে ঘরে আসে?

“কেন আপনার ছেলে।আপনি তো ছেলের বউ চাইছিলেন।

” হ্যাঁ কিন্তু এভাবে?
অনেক রাত হয়েছে মেয়েটাকে নিয়ে ঘরে যাও। আমি খাবার পাঠাচ্ছি।

নাহার বেগম কথা শেষ করে চলে গেলেন।নুর এখনো জানেই না তার ভাই বিয়ে করেছে।অনেক রাত হওয়ায় ঘুমিয়েছে বলে আর জাগায়নি নাহার বেগম।

“চলো।
ছোয়ার কথার অপেক্ষা না করেই হাত ধরে নিয়ে গেলো নুহাশ।ছোয়া পারছে না কিছু বলতে আর না পারছে এসব সহ্য করতে।

কিছু সময় বাদে নাহার বেগম দুই প্লেট খাবার দিয়ে গেলো।বেশি রাত হওয়ায় তিনি খাওয়ার তারা দিয়ে চলে গেলেন।

” খেয়ে নাও অনেক রাত হয়েছে।

“আমার খিদে নেই।তাছাড়া আপনার বাড়ির খাবার আমি স্পর্শ করতে চাই না।

” আমার স্পর্শ নিতে পারো আর খাবার খেতে পারবে না?
ঠিক আছে খেতে হবে না।চলো শুয়ে পরবে।

“শুয়ে পরবো মানে আপনার সাথে এক বিছানায় এক ঘরে অসম্ভব।

” আমাকে রাগিও না ছোয়া।খেতে চাও না জোর করছি না। আমাকে জোর করতে বাধ্য করো না।

“কি করবেন আপনি মারবেন? আপনাকে দিয়ে সব সম্ভব।

” ইশ কি বলো বউ মারবো কেন।আদর করবো।আর বিশ্বাস করো এমন আদর করবো সারাজীবন মনে থাকবে তোমার।

” ন্যাকামি বন্ধ করুন।আপনার সাথে এক ঘরে আমি কিছুতেই থাকবো না।

“ঠিক আছে থাকবে না যখন তখন আমি আর কি বলবো।তবে ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না।তুমি এক কাজ করো ব্যালকনিতে ঘুমোতে পারো।তোমার যায়গা হয়ে যাবে।সারা রাত মশার সাথে গল্প করে কাটিয়ে দিতে পারবে।আর এটাই তোমার শাস্তি।

নুহাশের কথায় ছোয়ার রাগ হলেও প্রকাশ করলো না। এই অসভ্য বরবর লোকের সাথে থাকার চেয়ে এই ব্যালকনিতে থাকাই ভালো।তাই দেরি না করে ছোয়া সেখানে গিয়েই শুয়ে পরলো।

ছোয়ার কান্ডে নুহাশ মুচকি হাসলো।এই মেয়ে যে খুব জেদি সেটাও বুঝে গেলো।তবে নুহাশের কথায় সত্যি সত্যিই যে সেখানে গিয়েই শোবে এটা নুহাশের ধারনা ছিলো না।ভেবেছিলো এটা নিয়ে ছোয়া নুহাশের সাথে তুমুল ঝামেলা করবে।

প্রায় ১ ঘন্টা হতে চললো ছোয়া বাইরে।মশার সাথে রীতিমত যুদ্ধ করছে।থাই গ্লাসে নুহাশ সবটাই লক্ষ্য করছিলো।

” এতো জেদ মশার কামর খাবে তবুও ঘরে আসবে না।

“এই মশাগুলো ওই লোকটার মতই কার বারান্দা দেখতে হবেনা? নিজে যেমন অসভ্য মশাগুলো ও তাই।

” মশার সাথে কথা শেষ হলে ঘরে চলো।

“………..।

” আমি কিছু বলেছি ছোয়া।

“বলেছি তো আপনার সাথে আমি থাকবো না।

” কেন আমি কি তোমায় খেয়ে ফেলবো।আমাকে বাঘ মনে হয়?

“আপনি তার থেকেও জঘন্য। এভাবে জ্বালাচ্ছেন কেন আপনি।যা চেয়েছেন তা তো পেয়েছেন তাহলে এখন একটু আমাকে আমার মতো থাকতে দিন না প্লিজ।

” বিবাহিত হয়েও বউ ছাড়া থাকা সম্ভব নয়। তুমি মশার সাথে বাসর করতে পারো কিন্তু আমি তোমার মতো পাগল হইনি।বাই দ্যা ওয়ে, আমি কিন্তু এখনো সবকিছু পাইনি।না মানে হিসেব মতে এখন আমাদের বাসর করার কথা কিন্তু দেখো তুমি আমাকে ফেলে রেখে এখানে এসে শুয়ে আছো এটা কি ঠিক বলো।
তুমি কি যাবে নাকি আমি জোর করবো এবার? আমি জোর করলে কিন্তু বিষয় টা তোমার ভালো লাগবে না।

“……।

” বুঝেছি এভাবে হবে না।
বলেই নুহাশ ছোয়াকে কোলে তুলে নিলো।

“আরে এবার কিন্তু খুব খারাপ হচ্ছে মিঃ নুহাশ।আমি কিন্তু চিৎকার করবো।

“করো আমার রুম সাউন্ড প্রুভ কোনো লাভ নেই।

ইতমধ্যে ছোয়াকে খাটে এনে ছুরে মারে নুহাশ।একটু বেশি জোরেই ফেলেছে যার ফলে ছোয়া কোমড়ে বেশ ব্যাথা পেলো।চোখ দিয়ে পানি পরছে টপ টপ করে।

” এবার ঠিক হয়েছে।বলেছিলাম কথা শুনতে। কিন্তু না এডভোকেট বলে কথা ভাঙবে কিন্তু মচকাবে না।
ঘুরে শুয়ে পর মলম লাগিয়ে দিচ্ছি।

“জুতো মেরে গুরু দান করতে এসেছেন লাগবে না আপনার মালিশ।

” এই মেয়ে এক কথা তোমাকে বার বার কেন বলতে হবে।

তারপর নুহাশ ছোয়াকে ঘুরিয়ে শুইয়ে মলম লাগিয়ে দিলো।ছোয়া চুপচাপ আছে।যেন তার মধ্যে কোনো অনুভূতি নেই।

“দেখো কেউ আমার কথার অবাধ্য হলে আমি সেটা নিতে পারি না।তাই এর পর থেকে আমার কথার অবাধ্য হবে না।তোমাকে বিয়ে করার যথেষ্ট কারন আছে।আর আমি তো সাধু পুরুষ নই যে বউকে আদর যত্ন করবো না।শুধু একটু সময় দিচ্ছে নিজেকে মানিয়ে নাও।

ছোয়া ভাবছে অন্য কথা।কি এমন কারন থাকতে পারে যে নুহাশ এতো মেয়ে ছেড়ে তাকেই বিয়ে করার জন্য এতো কিছু করলো? যেখানে প্রায় প্রতিটি মেয়ের স্বপ্নের পুরুষ নুহাশ চৌধুরী সেখানে কিনা তার মতো একটা মেয়েকে বিয়ে করলো।নাহ আর ভাবতে পারছে না ছোয়া।সারাদিনের ক্লান্তি আর কান্নার ফলে দুচোখে ঘুম নেমে এলো।

নুহাশ খেয়াল করে দেখলো ছোয়া ঘুমিয়ে গেছে।
” আজ ছাড় পেয়েছো ছোয়া রানী কাল থেকে আর পাবে না।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে