তোমাকে আমার প্রয়োজন পর্ব-১৯

0
1845

#তোমাকে আমার প্রয়োজন??
#মেঘ পরী??

??পর্ব-১৯??
.
?
.

খাটের এক কোণে তিথি গুটিসুটি মেরে চুপচাপ বসে আছে।আর তার ঠিক পাশেই নিলয় তার দিকে রক্ত লাল তাকিয়ে আছে।তিথি এখন নিজের উপরই প্রচন্ড পরিমানে বিরক্ত,,কেন সে নিলয়ের ফোনটা রিসিভ করলো না,,যদি সে তার ফোনটা রিসিভ করতো তাহলে আজ তাকে এই পরিস্থিতিতে পরতে হতো না।বেশ খানিকক্ষন নিরবতা পালনের পর,,নিলয় শান্ত কন্ঠে বলে উঠল-;

-:কোথায় ছিলে আজ সারাদিন।

নিলয়ের এমন কন্ঠ শুনে তিথির কলিজা কেঁপে উঠলো,,কারণ এত শান্তভাবে কথা নিলয় তখনই বলে যখন সে ভয়ঙ্কর রেগে থাকে।তিথি কি বলবে কিছু ভেবে পাচ্ছেনা এই মূহুর্তে,,উফফফফ এই বুদ্ধি গুলো না প্রয়োজনের সময়‌ই জানালা দিয়ে পালায়।

তিথিকে চুপ থাকতে দেখে নিলয় আবার বলে উঠলো-;

-:কি হলো শুনতে পাওনা??কিছু জিজ্ঞাসা করছি,,,উত্তর দিচ্ছ না কেন,,,কোথায় ছিলে আজ সারাদিন??(দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো নিলয়)

-:বা…বাসায়।(কিছুটা কেঁপে)

-:ও আজ সারাদিন তাহলে তুমি বাসায় ছিলে,,কি তাইতো।

নিলয়ের কথা শুনে তিথি উপর নিচে মাথা দোলালো যার অর্থ হলো হ্যাঁ সে আজ সারাদিন বাড়িতেই ছিল।

-:বাহহ খুব ভালো কথা।আচ্ছা তোমার ফোনটা একটু দাও তো।

ব্যাস এইবার তিথির পরান যায় যায় অবস্থা,,,কারন নিলয়ের হাতে ফোন দেওয়া মানেই আজ তার বাঁচার চান্স,,, পুরো ০%।তিথির বারবার চুপ করা দেখে নিলয় ধমক দিয়ে উঠল-;

-:কি হল শুনতে পাচ্ছ না,,,কি বলছি আমি?? কোথায় তোমার ফোন??

নিলয়ের এমন ধমকে তিথি কেঁপে উঠলো,, তারপর মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে বললো-;

-:আ..আসলে ফো..ফোনটা কো..থা…কথায় রেখে..রেখছি,,,আমার না ঠি…ঠিক মন..মনে পড়ছে না।

-:বাহ সারাদিন বাসায় আছো অথচ তোমার ফোন তুমি কোথায় রেখেছো তা তুমি জানোই না,,আমাকে কি ক্লাস টু তে পড়া বাচ্চা ছেলে মনে হয় তোমার।(দাঁতে দাঁত চেপে বললো)

-:আ..আসলে..

-:চুপ চুপ একদম চুপ!!!চুপচাপ ফোনটা আমাকে দাও।আর একটাও বাড়তি কথা শুনতে চাই না তোমার কাছ থেকে।আর মিথ্যা কথা বলার চেষ্টা করলে তোমার অবস্থা কি হবে তা তুমি নিজেও জানো না।(ধমক দিয়ে উঠল নিলয়)

নিলয়ের এমন কথায়,,তিথি প্রচুর ভয় পেয়ে গেল,,তাই আর সময় নষ্ট না করে,,বালিশের নিচ থেকে ফোনটা নিয়ে নিলয়ের হাতে দিয়ে দিল।নীলয় তিথির কাছ থেকে ফোনটা নিয়ে,,,একবার চেক করে,,,খাটের ওপর ছুড়ে মারল।তারপর তিথির হাত টেনে,,,নিজের সাথে মিশিয়ে নিল,,তারপর বলতে লাগলো-;

-:কতবার ফোন করেছি আমি,,হ্যাঁ কতবার।।একবারও কি ধরার প্রয়োজন বোধ করো নি।জানো কতটা টেনশনে ছিলাম আমি,,ফোন না ধরায়,,,সে খবর কি তুমি রাখো।

নিলয়ের এমন কথায়,,,তিথির মনে আবারও অভিমানের কালো মেঘ ছেয়ে গেল,,,নিলয় কাছ থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে,,নিলয় দিকে তাকিয়ে অভিমানী কণ্ঠে বলতে লাগলো-;

-:কেন ফোন ধরবো আপনার আমি,,,ধরবো না তো,,, কোনদিনও ধরবো না।আপনি কি আমাকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করেছিলেন যে আজ আপনি আমাদের বাসায় আসবেন।তাহলে আমি কেন কথা বলব আপনার সাথে।এই আপনি আমাকে ভালোবাসেন,,,কোনো কথা নেই আপনার সাথে।

এই বলে তিথি অন্যদিকে নিজের মুখ ফিরিয়ে নিল,,,এমন অভিমান পূর্ণ কথা নিজের প্রিয়সির মুখে শুনে,,,নিলয় বুঝতে পারল যে তার বাচ্চাটা তার উপর প্রচন্ড অভিমান করেছে।।তাই নিজের রাগকে সাইডে রেখে,,,,নিজের অভিমানীর অভিমান ভাঙাতে লেগে পরলো নিলয়।

তিথির হাত ধরে টেনে নিজের কোলে বসিয়ে,,,তিথির গালে নিজের দুই হাতে রেখে বলতে লাগলো-;

-:ও তাহলে আমার বাচ্চাটার রাগ হয়েছে আমার উপর??কি তাইত??

-:হ্যাঁ হয়েছে তো খুব খুব খুব রাগ হয়েছে।। আপনার সাথে আর কোন কথা নেই,,আজ থেকে আড়ি আপনার সাথে আমার।

এই বলে তিথি নিজের কোড়া আঙ্গুল দিয়ে নিলয়ের কোড়া আঙুল ছুইয়ে দিল।তিথির এমন বাচ্চামো দেখে,,,নিলয় হেসে ফেললো,,তারপর বলে উঠলো-;

-:তাই বুঝি আমার বাচ্চাটার রাগ হয়েছে আমার উপরে।সরি বাচ্চা আমি ভেবেছিলাম তোমাকে সারপ্রাইজ দিবো,,,কিন্তু বুঝতে পারিনি যে তুমি কষ্ট পাবে আমার সারপ্রাইজে।যদি বুঝতাম তাহলে কখনোই তোমাকে এমন সারপ্রাইজ দিতাম না।

নিলয়ের কথা শুনেও তিথি কোন কথা বলল না চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে,,তিথিকে এমন চুপ করে বসে থাকতে দেখে,,,নিলয় আবারো বলে উঠলো-;

-:সরি তো আর ওমন ভুল কক্ষনো হবেনা,,,এই তোমাকে প্রমিস করলাম।এবার তো ক্ষমা করে দাও,,,আর রাগ করে থেকো না প্লিজ।এবার কি কান ধরে মুরগি হতে হবে আমাকে।যদি তুমি বলো,,তাহলে আমি সেটাও করতে রাজি,,, কিন্তু প্লিজ আমার উপর রাগ করে থেকো না।।

নিলয়ের ওমন কিউট মার্কা ফেইস রিঅ্যাকশন দেখে তিথি ফিক করে হেঁসে ফেললো।নিজের প্রিয়সিকে হাসতে দেখে নিলয় মনে মনে কিছুটা স্বস্তি পেল।তারপর তিথিকে শক্ত করে নিজের বাহুর মধ্যে আবদ্ধ করে,,, বলতে লাগলো-;

-:তাহলে আমার পাখিটার অভিমান কমেছে,,,কি তাইতো???

-: হুম।

এই বলে নিলয়ের বুকে মাথা রাখলো।।বেশ কিছুক্ষন সময় পর তিথি বলে উঠলো-;

-:আচ্ছা ভাইয়া যদি আমাদের সম্পর্কটা না মানে,,,তখন কি করবেন আপনি??

নীলয় এতক্ষন চোখ বুঝে নিজের প্রিয়সির স্পর্শ অনুভব করছিল।কিন্তু তিথির কথায় নিজের অজান্তেই নিলয়ের মনে ছাৎ করে উঠলো।সত্যিই তো এতক্ষণ তো সে ভাবেই নি এই বিষয়টা।যদি সেই প্রেম বিরোধী নেতা তাদের সম্পর্কটা না মেনে নেয় তাহলে,,,তাহলে কি করবে সে??সে তো মরেই যাবে এই বাচ্চাটাকে ছাড়া।।পৃথিবীতে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য যে তাকে এই বাচ্চাটাকে প্রয়োজন,,, খুব বেশিই যে প্রয়োজন তাকে।।

নিলয় কে এমন চিন্তা করতে দেখে,,,তিথির প্রচন্ড হাসি পাচ্ছিল,,,তবুও নিজের হাসিটাকে চেপে রেখে বলে উঠলো-;

-:এইযে কিছু বলছি তো আমি,,,শুনতে পাচ্ছেন না আমার কথা??

-:হুম।(অন্যমনস্ক ভাবে)

-:বলছি যে ভাইয়া আমাদের সম্পর্কটা যদি না মেনে নেয় তাহলে কি হবে।

নিলয় কিছু বলতে হবে তার আগেই,,,তিথি বলে উঠলো-;

-:আমি বাপু আগে থেকে বলে রাখছি ভাইয়া যা সিদ্ধান্ত নেবে,,,সেই সিদ্ধান্তটাকেই আমি মাথা পেতে নিব।কারন আমি আমার ভাইয়াকে খুব ভালোবাসি।আমার ভাই যদি আপনাকে না মেনে নেয়,,,তাহলে আমিও আপনাকে মেনে নিতে পারবো না।আর আমার ভাই যার সাথে আমার বিয়ে দেবে,,,আমি তার সাথেই বিয়ে করব,,,বুঝতে পেরেছেন,,,,দরকার পরলে আপনি না হয় অন্য জনকে দেখে নিন।।

তিথির এমন কথা শুনে মুহূর্তেই নিলয় রেগে গেল,,,নিজের এক হাত দিয়ে তিথির গালটা শক্ত করে চেপে,,,বলে উঠলো-;

-:বেশি কথা বলতে শিখে গেছিস তুই তাই নারে।। তুই আর তোর ভাই আমাকে কি পেয়েছিস হ্যাঁ বল কি পেয়েছিস???

-:আহহহ লাগছে ছাড়ুন আমায়।(ব্যথায় কুঁকড়ে উঠল)

-:লাগুক লাগার জন্য‌ই ধরা।এই বলনা রে আমার ভালোবাসাটা কে তোরা কি ভেবেছিস,,,খেলনা।।আর অন্য কাউকে দেখে নেব মানে,,,আমি কি চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছি যে তোর ভাইয়ের আমাকে ভালো লাগলো না বলে তুই আমাকে ছেড়ে দিবি আর আমিও ঢং ঢং করে অন্য কোনো অফিসে ইন্টারভিউ দিতে চলে যাবো।তোর ওই লো মেন্টালিটির ভাই যদি এসব ভেবে থাকে তাহলে ভুল ভেবেছে সে।আর তুই যদি বেশি নটাংকি করেছিস,,তাহলে তোকে আর তোর ভাইকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখবো।আর দরকার পরল তোকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করবো,,বুঝতে পেরেছিস তুই।।

এই বলে তিথিকে ছেড়ে দিলো নিলয়।প্রচন্ড জোড়ে গালটা চেপে ধরায়,,অনেক ব্যথা পেয়েছে তিথি,,,নিলয়ের দিকে ছল ছল চোখে তাকিয়ে বলে উঠলো-;

-:পচা বাজে লোক একটা শুধু আমাকে বকে,,কষ্ট দেয়।আপনি একটা পাষান লোক আপনার সাথে আর আমার কোন কথা নেই,,,,বেরিয়ে যান আমাদের বাড়ি থেকে।আর আমার ভাই এতটাও বাজে না,,, বুঝেছেন আপনি।আপনি সবাইকে আপনার মতন ভাবেন,,,আমি আপনাকে বলবো ভেবেছিলাম যে ভাই আর বাড়ির লোক সবাই এই বিয়েতে রাজি হয়েছে কিন্তু আর আপনাকে কিছু বলবোনা,,,আমি কালকে সকালেই ভাইয়াকে বলে দেবো করতে চাই না আপনাকে আমি বিয়ে।।। আপনার মত পচা লোকের সাথে বিয়ে করবো না আমি কিছুতেই।।

তিথির কথায় নিলয় মনে মনে প্রচুর লজ্জিত হল নিজের ব্যবহারের।তিথির দুই হাত নিজের দুই হাতের মধ্যে রেখে,,বলে উঠলো-;

-:ও পাখি সরি,,আমি বুঝতে পারিনি যে তুমি আমার সাথে মজা করছিলে।।আসলে আমার খুব রাগ হয়েছিল,,,তোমার ওই সব কথা শুনে তাই আমি একটু বেশি রিয়াক্ট করে ফেলেছি।।

তিথি নিজের হাত সরাতে সরাতে বলে উঠলো-;

-:ছারুন বলছি আমার হাত,, আপনার সাথে আর কোন কথা নেই আমার।আপনি একটা অত্যন্ত অসভ্য বাজে লোক।

নিলয় তিথিকে নিজের সাথে শক্ত করে জরিয়ে ধরে বলে উঠল-;

-:ও আমার তিথু পাখি সরি সরি সরি,,, আমি আর কোনদিনও তোমার ভাইয়ার সম্পর্কে কোন বাজে কথা বলব না,,,এবারের মত ক্ষমা করে দাও আমায়।তুমি তো জানো বলো আমি রেগে গেলে,,,আমার মাথা ঠিক থাকেনা।এই পাখি ক্ষমা করে দাও না।পাখি তুমি রেগে গেলে যে তোমার নাক ফুলে বেলুন হয়ে যায়,,তা তো আগে জানতাম আমি।

নিলয়ের কথা শুনে তিথি সঙ্গে সঙ্গে নিলয় এর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে,,,নাকে হাত দিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো,,,তারপর বলতে লাগলো-;

-:কই আমি তো কিছু বুঝতে পারছিনা।???

তিথির এমন রিয়াকশন নিলয় হেসে ফেললো,,,তারপর বললো-;

-:তুমি দেখতে পাবা না,,,এসো আমার কাছে আমি তোমাকে দেখিয়ে দিচ্ছি।

নিলয়ের কথা শুনে তিথি টুকুর টুকুর চোখে নীলয়ের দিকে তাকালো,,নিলয় আর কিছু না বলে তিথির হাত ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল,, তারপরে বলল-;

-:বললাম না আমার কাছে আসতে,,আমি দেখিয়ে দিচ্ছি।

এই বলে তিথির চুল নিজের এক হাত ঢুকিয়ে দিয়ে নিজের একদম কাছে নিয়ে এলো আর অপর হাতেতিথির কোমর পেঁচিয়ে ধরল,,,এতে তিথি কিছুটা কেঁপে উঠলো,,,তারপর কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠলো-;

-:কি করছেন ছা..ছাড়ুন আমায়।

-:শিইইই চুপ একদম চুপ বললাম না আমি দেখিয়ে দিচ্ছি।

-:দ…দরকার নেই।আপনাকে কিছু দেখাতে হবে না,,ছা..ছাড়ুন।

-:তা বললে কি করে হয় পাখী।

কথা বলতে বলতে নিলয় তিথির অনেক টা কাছে চলে এসেছে,,,তিথি নিলয়ের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতেই নিলয় আরও গভীর ভাবে তিথি কে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল,,,তারপর তিথি কে আর কিছু বলতে না দিয়ে তিথির কোমল গোলাপি ঠোঁটগুলোকে নিজের ঠোঁট দিয়ে চেপে ধরল,,,তারপর পরম আবেশে শুষে নিতে থাকলো,,,তিথি ঠোঁট গুলো কে তিথি প্রথমে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলেও,,,পরে সেও তাল মিলাতে লাগলো নিলয় এর সাথে।

প্রায় ১০মিনিট পর তিথি কে ছেড়ে,,,তিথির কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকিয়ে স্লো ভয়েসে বলতে লাগল-;

-:পাখিইইইই।।

নিলয়ের এমন ডাকে তিথি কিছুটা কেঁপে উঠলো,,,তারপর আস্তে করে নিজের চোখ খুললো।। এতক্ষণ সে চোখ বুজে ছিল,,,নীলয়ের দিকে তাকাতেই,,,নিলয় বলে উঠলো-;

-:আজ আপাতত এইটুকুই থাক,,,বাকিটা আমাদের বিয়ের পর হবে।

এই বলে তিথির কপালে একটা ভালোবাসার পরশে এঁকে দিল।নিলয়ের এমন কথায় তিথি লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো।আরো কিছুক্ষন তিথির সাথে গল্প করে নিলয় নিজের বাসায় চলে গেল।
.
.
?
.
.
নিলয় এবং রিয়াদ হোসেন সোফায় বসে আছে আর তার ঠিক পাশের সোফায় আবির এবং নজরুল সাহেব বসে আছেন।তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলছিল,,,ঠিক সেই সময় তিথি চায়ের ট্রে নিয়ে তাদের সামনে এসে দাড়ালো।তিথির দিকে তাকাতেই নিলয়ের মুখ অটোমেটিকলি হা হয়ে গেল,,অসম্ভব সুন্দর দেখতে লাগছে আজ তার পরী টাকে,,,শাড়িতে আরো যেন বড় বড় লাগছে আজ তার বাচ্চাটাকে।অরেঞ্জ কালারের সিম্পল কাজ করা একটা শাড়ি পরেছে তিথি,,,হাত ভর্তি অরেঞ্জ কালারের কাচের চুড়ি,,, চোখ ভর্তি গারো কাজল আর ঠোঁটে মিষ্টি কালারের লিপস্টিক।ব্যাস এই টুকু সাজেই তার পাখিকে,,,জান্নাতের পরীর মত লাগছে আজ।চুলগুলো খোলা রেখেছে,,তা পিঠ পর্যন্ত ছাড়িয়ে গিয়েছে।চোখ ফেরানো যাচ্ছে না তার উপর থেকে।

রিয়াদ হোসেন তিথীকে দেখে তার পাশে এনে বসালেন তারপরে তিথির মাথায় হাত বুলিয়ে,,,নজরুল সাহেব কে উদ্দেশ্য করে ,বলতে লাগলেন-;

-: আমি আর দেরী করতে চাই না,,,খুব তাড়াতাড়ি আমি আমার এই মেয়েকে আমাদের ঘরে নিয়ে যেতে চাই।

-:হ্যাঁ সে ঠিক আছে আমাদের তাতে কোন আপত্তি নেই।(নজরুল সহেব)

-:তাহলে আমি পরের মাসেই তিথি মামনিকে নিলয়ের বউ করে নিয়ে যেতে চায়,,, আপনাদের কোন আপত্তি নেই তো।

-: না তেমন কোনো আপত্তি নেই কিন্তু তিথির বেস্ট ফ্রেন্ড নিশি কিছুদিন আগেই এক্সিডেন্ট করেছে,,,এখন খুব একটা চলাফেরা করতে পারে না।আর তিথি ও বলছিল তাকে ছাড়া সে বিয়ে করবে না।আসলে আমরাও তাই চাই,,,যতই হোক নিশি আমাদের মেয়েরই মতন।আর তাছাড়াও তিথি আমাদের বাড়ির একমাত্র মেয়ে সুতরাং একটু টাইম দিল ভালো হতো,,, আমি ওর বিয়েটা ধুমধাম করে করতে চাই।(নজরুল সাহেব)

-:ও সেটা তো খুব খারাপ সংবাদ যতই হোক বেস্ট ফ্রেন্ড বলে কথা।কিন্তু এটাও ঠিক যে তিথি মামনি কে আমরা খুব তাড়াতাড়ি নিজের বাড়িতে নিজে যেতে চায়।তাই..

রিয়াদ হোসেনকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে নিলয় বলে উঠলো-;

-: আমাদের কোন প্রবলেম নেই নিশি পুরোপুরি সুস্থ হলেই,,, আমাদের বিয়ে হবে।।

-: আচ্ছা নিলয় বলছে যখন তাই নয় হবে।।কিন্তু আমি চাই পরের মাসে অন্তত এদের অকদ টা করিয়ে রাখতে,,,কি বলেন এতে তো কোন আপত্তি নেই।।

-: না না এতে আমাদের কোন আপত্তি নেই।

-:ব্যাশ তাহলে ঠিক হয়ে গেল সামনের মাসেই তিথি এবং নিলয়ের অকদ।

-: যদি কিছু মনে না করতেন নিলয়ের সাথে আমার কিছু জরুরী কথা ছিল।

আবির বলে উঠলো। আবিরের এমন কথায় নিলয় মনে মনে ভাবলো-;

-: কি জ্বালাতন এই শালা বাবু দেখছি আমার পিছন কিছুতেই ছাড়বে না।আবার কি বলবে আমাকে জানে???

-: হ্যাঁ অবশ্যই বলতে পারো,,,যাও নিলয় আবিরের সাথে।(রিয়াদ হোসেন)

-:জি মামা।।
দেখা শোনায় গেলে পাত্র এবং পাত্রীকে আলাদা কথা বলতে পাঠায়,,এটা শুনেছি।কিন্তু এটা কোনদিনও শুনিনি যে পাত্রকে পাত্রীর ভাইয়ের সাথে কথা বলার জন্য আলাদা করে পাঠানো হয়।(মনে মনে)

তারপর নিলয় এবং আবির বাড়ির ছাদে চলে গেল……
.
.
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]
?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে