তুমি নামক সপ্তর্ষি মন্ডলের প্রেমে পর্ব – ১৬

0
1203

#তুমি নামক সপ্তর্ষি মন্ডলের প্রেমে💖
#মিফতা তিমু
#পর্ব-১৬

মির্জা আঙ্কেলের কথা শুনে ডক্টর ফারহান মাথা নত করলেন আর ডক্টর সাহেবও অজানা কারণে মাথা নামিয়ে রাখলেন।আমি বললাম,
আফরীন: তাহলে ডক্টর মির্জা আপনাকে কি আপনার কেবিন দেখিয়ে দিবো?
ফাহিম: হুম…
মির্জা আঙ্কেলের গম্ভীর গলা শুনে উনার দিকে ভ্রু কুচকে তাকালাম।আমি ভালো করেই বুঝতে পারছি উনার গলা শুনে যে আমার মুখোমুখি হওয়াটা উনার মনঃপুত হয়নি অবশ্য আমি এটাই এক্সপেক্ট করেছিলাম কারণ উনিও ডাক্তার সাহেবের মতই একই ধাঁচের মানুষ।উপর দিয়ে শক্ত দেখান কিন্তু ভিতর দিয়ে নরম। যাই হোক আমি মির্জা আংকেলের কথা শুনে সুনয়না কে ইসারা করলাম আর সুনয়না মির্জা আঙ্কেল কে ‘ আসুন ডক্টর মির্জা ‘ বলে এগিয়ে গেলো সামনের দিকে। মির্জা আঙ্কেলও সুনয়না কে অনুসরণ করলেন।

‘ কিছু মনে করোনা মামা থুড়ি ডক্টর মির্জার কথায়।উনি ওরকমই প্রফেশনাল মাইন্ডেড।কাজের সময় কাজের বাইরে একটা কথাও পছন্দ করেন না। ‘ বললেন ডক্টর ফারহান।

‘ ইটস ওকে।ডাক্তারি করতে করতে মানুষ হাফ পাগল হয়েই যায় আর সেটা আমিও এক্সপেরিয়েন্স করেছি। ‘ ডাক্তার সাহেব কে ইঙ্গিত করে কথাগুলো বললাম যেগুলো উনি বুঝলেও ডক্টর ফারহান বুঝলেন না।ডক্টর ফারহান অবাক হয়ে বললেন,
ফারহান: ডাক্তারি করতে করতে মানুষ পাগল হয়ে যায়?আগে তো কোনওদিন শুনিনি,এই প্রথম শুনলাম। তারমানে আমরা সবাই পাগল ইনক্লুডিং ইউ।তোমার বরও কি ডক্টর?
আফরীন: বলা চলে।হুম ডক্টর তো তাই তো এত কিছু জানি।
ফারহান: কে সে?আমি কি চিনি তাকে?
আফরিন: অবশ্যই চিনেন কিন্তু এখন বলব না।যেদিন মনে হবে বলা দরকার সেদিন বলবো।

আফরিন এর তাহরীমকে ওর হাসব্যান্ড হিসেবে ফারহানের কাছে পরিচয় না করিয়ে দেওয়ায় তাহরীম রেগে গেলো।ওর মুখ লাল হয়ে গেল আর চোয়ালটাও শক্ত করে আফরিন এঁর দিকে তাকিয়ে রইলো। ও যত চাইছে নিজেকে কন্ট্রোল করতে ততই জড়িয়ে যাচ্ছে আফরিন এর মায়ায়।আফরীন সে এক মায়াজাল, যার সঙ্গে একবার জড়িয়ে গেলে সেই জাল ভেঙে বের হওয়া সম্ভব নয়।আফরীন সবাই কে তার মায়াজালে আটকে রাখার ক্ষমতা জানে,এতটাই বিষাক্ত সেই জাল।

আমি ডাক্তার সাহেবের দিকে আড়চোখে তাকালাম।উনার এই রাগী মুখখানা আমায় অনেক আনন্দ দিচ্ছে।আজকাল উনাকে কথায় কথায় না রাগালে আমার পেটের ভাত যেন হজমি হয় না।উনি রেগে গেলে যখন উনার ফর্সা মুখ লাল হয়ে আসে তখন ইচ্ছা করে উনাকে টুপ করে চুমু খেয়ে বসতে।এই যে এখন যেমন উনার লাল নাক আর মুখ দেখে কিস করতে ইচ্ছা করছে।নিজের মাথায় উল্টাপাল্টা চিন্তা আসতেই ডাক্তার সাহেবের উপর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিলাম।

ফারহান: ওকে ফাইন দেন তোমার যখন মনে হবে বলা দরকার তখনই বলো। যাই হোক যেটা বলছিলাম।আজকের জন্য তোমার ওয়ার্কিং আওয়ার শেষ তাই তুমি বাড়ি চলে যাও।এখন বাড়ি না গেলে দেরিতে গেলে বিপদ হবে।দরকার পরে আমি আমার গাড়ি ডেকে দিচ্ছি।

ফারহানের কথা শুনে তাহরীম হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে।ওরই সামনে দিয়ে ফারহান আফরিন কে লিফট অফার করছে।
আফরীন: নো প্রব্লেম ডক্টর ফারহান আই কেন ম্যানেজ।আপনাকে আমাকে নিয়ে এত ব্যস্ত হতে হবে না।আমি একাই যেতে পারবো।
ফারহান: আর ইউ শিওর?
আফরীন: ইয়াহ আই অ্যাম সিওর।
ফারহান: নাহ আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। তাহরীম ভাই একটু আফরিন কে ওর বাড়ি নামিয়ে দিবি।বুঝতেই তো পারছিস আঁধার ঘনিয়ে আসছে।এই সময় ওর একা ফিরাটা সেফ না।প্লিজ নামিয়ে দে না।

ফারহানের কথায় তাহরীমের রাগ উঠে যায়।এখন নিজের বউকেই ড্রপ করার জন্য অন্যের কথা শুনতে হবে।মনে হচ্ছে এই পৃথিবীতে একমাত্র ওরই এত ফাটা কপাল। তাহরীম দাতে দাত চেপে মেকি হেসে বলে,
তাহরীম: ওহ ইয়াহ সিওর।আসুন মিসেস আফরিন..
আমি ডাক্তার সাহেবের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে মাথা নেড়ে ডক্টর ফারহান কে গুড বায় জানালাম।ডাক্তার সাহেব আমাকে ডক্টর ফারহানের সঙ্গে কথা বলতে দেখে ধুপধাপ করে এগিয়ে গেলেন।সেটা দেখে আমিও এগিয়ে গেলাম।যাওয়ার সময় চোখ পড়লো হসপিটালের পাশে থাকা বেঞ্চের উপর।সেই বিড়ালটা তো এখনও ওখানেই বসে আছে।আমি ডাক্তার সাহেবের পিছু যাওয়া বন্ধ করে ওই বিড়ালের দিকে এগিয়ে গেলাম।বিড়ালের কাছে গিয়ে বিড়ালটাকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করতে লাগলাম।

তাহরীম রাগে গজগজ করতে করতে গাড়ির দিকে এগিয়ে আসছিল কিন্তু তখনই ওর মনে হলো যে আফরিন এর কোনো সাড়া শব্দ নেই। তাহরীম সাথে সাথে পিছন ফিরে তাকালো। একি আফরিন তো নেই এখানে।আফরীন কে না পেয়ে আশেপাশে চোখ দিলো তাহরীম।হঠাৎ ওর চোখ পড়ল হসপিটালের পাশে থাকা বেঞ্চের উপর।আফরীন বসে আছে একটা বিড়াল নিয়ে। তাহরীম চোখ মুখ শক্ত করে এগিয়ে গেলো। উদ্দেশ্য আজ একটা কড়া ধমক দিবেই।

‘ হেই ইডিয়ট…তোমার সাহস কি করে হলো…’ বিড়ালটাকে দেখে কথা বলতে বলতেই চুপ করে গেল তাহরীম।

ডাক্তার সাহেবের গলার আওয়াজ পেয়ে আমি ডাক্তার সাহেবের দিকে তাকিয়ে বললাম,
আফরীন: দেখুন না ডাক্তার সাহেব বিড়ালটা কি সুন্দর।আজ না আমি ওকে রাস্তায় পেয়েছিলাম তারপর বাড়ি ঢোকার আগে এটাকে এখানে রেখে গিয়েছিলাম কিন্তু এসে দেখি এটা এখনও এখানেই আছে।আমি ভাবছি ওকে আমাদের বাড়ী নিয়ে যাই।আমি না ওর একটা নাম রেখেছি। I think he is a men cat so his name is sushi…

আমার কথা শুনে ডাক্তার সাহেব আমার দিকে তাকালেন তারপর আলতো ভাবে মাথা নেড়ে সায় দিলেন।আমি সাথে সাথে সুশি কে রেখে উঠে গিয়ে ডাক্তার সাহেব কে জড়িয়ে ধরলাম আর বলতে লাগলাম ‘ ডাক্তার সাহেব আপনি না অনেক ভালো।আমার সব কথা শুনেন।থ্যাংক ইউ সুশি কে রাখতে দেওয়া জন্য। ‘

এইদিকে হুট করে আফরিনের জড়িয়ে ধরাতে তাহরীমের শরীরে মনে হলো কারেন্ট লাগলো। ও মোটেই আশা করেনি যে আফরিন ওকে হুট করে এভাবে জড়িয়ে ধরবে।আমি ডাক্তার সাহেব কে ছেরে দিয়ে সুশির দিকে এগিয়ে গিয়ে সুশি কে কোলে তুলে নিলাম তারপর ডাক্তার সাহেব কে বললাম চলুন…

ডাক্তার সাহেব কিছু না বলেই এগিয়ে গেলেন গাড়ির দিকে। আমিও সুশি কে নিয়ে উনার পিছন পিছন হাটা দিলাম।ডাক্তার সাহেব ড্রাইভিং সিটে উঠে বসলে আমিও উনার পাশে বসে সিট বেল্ট বেধে নিলাম।ডাক্তার সাহেব তারপর গাড়ি স্টার্ট দিলেন।

বাড়ি পৌঁছতে পৌঁছতে রাত আটটা বেজে গেছে।দরজায় নক করতেই নিহা এসে দরজা খুললো আর আমার হাতে সুশি কে দেখে ওর চোখ দুটো বিস্ময়ে গোলগোল হতে গেলো।আমি ওকে এরকম করতে দেখে অবাক হয়ে সুশির দিকে তাকালাম তারপর বললাম,
আফরীন: কি হয়েছে ননদীনি?এভাবে রসগোল্লার মত চোখ করে তুমি আমার সুশির দিকে তাকিয়ে আছো কেন?
নিহা: ভাবী তুমি তাহরীম ভাইয়ের সামনে দিয়ে একটা জলজ্যান্ত বিড়াল নিয়ে এলে আর ভাই এখনও তোমায় আস্ত রাখলো?আমি কি চোখে সর্ষে ফুল দেখছি?

আমি অবাক হয়ে আমার পাশে তাকালাম কিন্তু একি ডাক্তার সাহেব তো নেই।আমি সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ডাক্তার সাহেব উনার ঘরে ঢুকে গেছেন।আমি বললাম,
আফরীন: কেন উনি কি বিড়াল পছন্দ করেন না?
নিহা:বিড়াল কেন ভাই কোনো পেটসই পছন্দ করে না।একবার একটা খরগোশ এনেছিলাম আর সেটা কে ভাই বাইরে ছেরে দিয়েছিল কজ ওর এসব পছন্দ না।তবে মনে হচ্ছে এখন থেকে তোমার বদৌলতে ভাইয়ের অন্য রূপ দেখবো।
আমি কিছু বললাম না বিনিময়ে।ভিতর থেকে মা বললো,
মা: ওর নিহা মেয়েটা কে ভিতরে আসতে দে।কখন থেকে বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।আফরীন ভিতরে আয় তারপর ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নিয়ে খেতে আয়।

আমি মায়ের কথা শুনে আলতো করে মাথা নেড়ে ঘরে ঢুকলাম।আমি ঘরে ঢুকতে ঢুকতেই নিহা আবারও বললো,
নিহা: নতুন ভাবী বিড়ালটার নাম কি রেখেছ?
মা: আঃ নিহা ওকে রেস্ট নিতে…
আফরীন: থাক মা বলতে দাও।আমি ওর নাম সুশি রেখেছি নিহা।সুন্দর না নামটা?
নিহা: অনেক সুন্দর নাম নতুন ভাবী।তুমি একটু তোমার সুশি কে আমার হাতে দাও না?
আমি নিহার কথা শুনে মুচকি হেসে ওর দিকে তাকিয়ে সুশি কে এগিয়ে দিতে নিলাম কিন্তু সুশি ওর তীক্ষ্ণ গলায় মিয়াও বলে আবার আমার কাছে গুটিয়ে গেলো। সুশি কে এমন করতে দেখে নিহা আলতো হেসে বললো,
নিহা: নতুন ভাবী তুমি দেখি একদিনের মধ্যেই সুশি কে তোমার চামচা বানিয়ে ফেলে।এখন এই সুশি তোমার আর ভাইয়ের প্রেমের মধ্যে বাঁধা না দিলেই হয়।

নিহার কথা শুনে আমি মাথা নামিয়ে ফেললাম লজ্জায়।মা এদিকে নিহাকে এসব বলতে শুনে ‘ তবে রে এত পাকা পাকা কথা।বিয়ে না হতেই এই অবস্থা।তুই তো আকাশ কে জ্বালিয়ে খাবি। দাড়া তোকে মজা দেখাচ্ছি ‘ বলে নিহার পিছনে ছুটলেন। নিহা মায়ের কাছ থেকে বাঁচার জন্য প্রাণপণে ছুটছে।আমি আর ওদের মাঝে পড়লাম না।আমি সুশি কে নিয়ে সোজা উপরে চলে এলাম।সুশি কে নামিয়ে দিয়ে আলমারি থেকে জামাকাপড় নিয়ে বাথরুমে চলে গেলাম গোসল করতে।

কিছুক্ষণ বাদে মাথায় টাওয়েল পেঁচিয়ে বেড়িয়ে এলাম।বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখলাম সুশি বারান্দায় গিয়ে বসে আছে।আমি বারান্দায় টাওয়েল টা মেলে দিয়ে সুশি কে কোলে তুলে নিচে নিয়ে এলাম। রান্নাঘরের দিকে গিয়ে সুশি কে রান্নাঘরে নামিয়ে দিয়ে ফ্রিজ থেকে দুধ নামিয়ে হালকা গরম করে একটা বাটিতে নিলাম।তারপর বাটি আর সুশি কে নিয়ে বসার ঘরে এলাম।সোফায় বসে আমার পায়ের কাছে বাটি নামিয়ে দিয়ে শিষ বাজিয়ে সুশি কে ইসারা করলাম খেতে।

সুশি আমায় ইসারা করতে দেখে আপনেই গিয়ে দুধ খেতে শুরু করলো।ভাবছি কাল শুক্রবার আমিও বাড়ি থাকবো তাই সকাল বেলা বেরিয়ে গিয়ে সুশির জন্য specialized শাম্পু আর ক্যাট ফুড নিয়ে আসবো।আপাতত ও এখন এসবই খাক। সুশির খাওয়া শেষে আমি বাটিটা ধুয়ে রেখে এসে সুশি কে কোলে নিয়ে বসলাম সোফায়।তারপর হাত বাড়িয়ে রিমোটটা নিয়ে টিভি ছেরে দিলাম।

টিভিতে সব মান্দাতার আমলের হিন্দি নাটক হচ্ছে।আজকাল এসব আর ভালো লাগেনা।অন্য কিছু দেখতে হবে।তারপর টিভি কে ওয়াইফাইয়ের সঙ্গে কানেক্ট করে দিয়ে একটা নতুন চাইনিজ ড্রামা ছেরে দিলাম।একসময় এসব অনেক দেখতাম কিন্তু এখন কাজের চাপে এসব দেখাই হয়না।আজ অনেকদিন পর আবার দেখছি।

আমি আর সুষি দুজনেই যখন টিভি দেখতে ব্যস্ত তখনই সদর দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলেন বাবা আর তাহসান ভাই।উনারা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে বলতেই যাচ্ছিলেন আর আমিও টিভি দেখতে ব্যস্ত ছিলাম কিন্তু হঠাৎ তাহসান ভাইয়ের চোখ আমার দিকে পড়লো আর সাথে সাথে বিস্ময় প্রকাশ করে বলে উঠলেন,
তাহসান: ও মাই গড আফরিন তুমি বিড়াল এনেছ? তাহরীম জানে? ও কিন্তু জানলে পুরো বাড়ি মাথায় তুলে ফেলবে।

আমি ভাইয়ার কথা শুনে চমকে উঠে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।টিভি দেখায় ব্যস্ত ছিলাম বলে হুট করে মাঝে কথা বলায় ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।আমি কোনমতে নিজেকে সামলে বললাম,
আফরিন: ডাক্তার সাহেব কে বলেই তো এনেছি। উনিই বলেছেন আনলে সমস্যা নেই।
আমার কথা শুনে তাহসান ভাই যেন আকাশ থেকে পড়লেন।উনি বিস্ময়ে সুরে বললেন,
তাহসান: আর ইউ সিরিয়াস আফরিন? মানে তাহরীম রাজি হয়েছে?
আমি আলতো ভাবে মাথা নাড়লাম।তাহসান ভাই দিক বেদিক হারা হয়ে ভাবীর কাছে ছুটলেন আর বাবা কোনোকিছু মুখে না বললেও উনি যথেষ্ট অবাক হয়েছেন তবুও মুচকি হেসে চলে গেলেন।আমি শুধু সবার ব্যবহারে অবাক হচ্ছি।ওরা যেভাবে বলছে ডাক্তার সাহেব তো সেরকম ব্যবহার করেন নী।নাকি অন্য কোনো কারণ আছে এর পিছনে? কে জানে বাবা উনার মনে যে কি চলে সেটাই বুঝতে পারিনা।উনাকে নিয়ে এত ভেবে কাজ নেই।এখন টিভি দেখায় মনযোগ দেই।

টিভি দেখতে দেখতেই আমার মনে পড়লো ডাক্তার সাহেব তো আমার সঙ্গেই বাড়ি এসেছিলেন তাহলে উনি কোথায়?উনাকে তো ঘরেও দেখলাম না।তাহলে হয়তো স্টাডি রুমে।একবার কি দেখবো উনাকে?

আফরিন: সুশি ডাক্তার সাহেব কে কি দেখে আসবো?
বিনিময়ে সুশি মিয়াও মিয়াও বলে সম্মতি দিলো।আমি টিভি বন্ধ করে সুশি কে কোলে তুলে সিড়ি দিয়ে উঠতে লাগলাম।সিড়ি দিয়ে উঠে একদম শেষের ঘরটাতে চলে গেলাম।ওই ঘরটাই ডাক্তার সাহেবের স্টাডি রুম।এর পাশের রুমটাই আমাদের বেডরুম।আমি স্টাডি রুমের কাছে গিয়ে দেখলাম স্টাডি রুমের আলো জ্বলছে।আমি আর সুশি দরজার ফাঁক দিয়ে উকি দিলাম।দেখলাম স্টাডি রুমে কেউ নেই।আমি ভাবলাম হয়তো স্টাডি রূমে অন্য দিকে আছেন।আমি পা টিপে টিপে স্টাডি রুমে ঢুকলাম সুশি কে নিয়ে।

কিন্তু এখানে তো ডাক্তার সাহেব নেই।পুরো ঘর তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম কিন্তু ডাক্তার সাহেবের কোনো হদিস নেই।কয়েক মিনিটের তফাতে পুরো বাড়ি থেকেই দেখি উধাও হয়ে গেছেন।এখন উনাকে কোথায় খুঁজব।হঠাৎ আমার চোখে একটা পোর্ট্রেট পড়ে গেলো যেটা রুমের এক কোনায় ছিল।আমি গিয়ে সুশি কে নিয়ে এক হাতে পোর্ট্রেট টা তুললাম। পোর্ট্রেট দেখে আমি ভালো করেই বুঝতে পারছি যে পোর্ট্রেট এর মেয়েটা আমি কারণ এখানে আমার মুখ স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।আমি একটা নৌকায় বসে কতগুলো দিয়া জ্বালাতে ব্যস্ত।ছবিটা দেখে যত তাড়াতাড়ি ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠল ঠিক তত তাড়াতাড়িই ঠোঁটের হাসি মিলিয়ে গেলো।এই ছবিটা কি করে আঁকলেন ডাক্তার সাহেব?এভাবে তো কোনোদিন ছবি তুলেছি বলে মনে হয় না।হঠাৎ কানে ডাক্তার সাহেবের গলা ভেসে এলো।

‘ এখানে কেন এসেছ? ‘

~ চলবে ইনশাল্লাহ্

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে