তুমি নামক সপ্তর্ষি মন্ডলের প্রেমে পর্ব – ১৫

0
1260

#তুমি নামক সপ্তর্ষি মন্ডলের প্রেমে💖
#মিফতা তিমু
#পর্ব-১৫

ক্রিং ক্রিং ক্রিং…মোবাইলের শব্দে জিন্সের পকেট থেকে ফোন টা বের করলাম।ফোন রিসিভ করে কানে দিতেই ও পাশ থেকে ফারাহ বললো,
ফারাহ: আফরীন…তুই কোথায়?
আফরীন:এই তো আমি ডক্টর ফারহানের সঙ্গে কাজে আছি।কেন এনি প্রবলেম?
ফারাহ: তুই তাড়াতাড়ি হসপিটালের সামনে থাকা ক্লিনিকে আয়।অনেক বড় কেলেঙ্কারি হয়ে গেছে।
আফরিন: কি হয়েছে সেটা তো বল।
ফারাহ: সবকিছু ফোন এ বলা গেলে কি তোকে আসতে বলতাম।তুই শুধু তাড়াতাড়ি আয়।আমরা সবাইও সেখানে আছি।
আফরীন: আচ্ছা ঠিকাছে আমি আসছি বলেই কলটা কেটে দিলাম।

ফোন পকেটে রেখে দেখলাম ডক্টর ফারহান আর ডাক্তার সাহেব আমার দিকে উৎসুক চোখে তাকিয়ে আছেন।ডক্টর ফারহান বললেন,
ফারহান: এনি প্রবলেম আফরিন ?
আফরীন: ( ফারাহ্ যখন ফোন করে বলেছে তখন নিশ্চই জরুরি কিছু যেটা সামনে দিয়ে বলা যেতনা তাই কথাগুলো এখনই কাউকে জানানো যাবে না। ) আসলে স্যার ফারাহ ফোন করে বললো এখন তো আমাদের ক্লাস ওভার হয়ে গেছে তাই ও বলেছে একটু ওর সঙ্গে দেখা করতে।জরুরি নোটস দেওয়ার আছে।ওগুলো নিয়ে আসতে বলেছে ওর কাছ থেকে।আমার শুধু দশ মিনিট লাগবে।তাছাড়া ডক্টর মির্জার আসতে তো এখনও আধা ঘণ্টার মতো বাকি আছে। ততক্ষণে আমি চলেও আসবো। প্লিজ স্যার যেতে দিন, দশ মিনিটেরই তো ব্যাপার।আমি জাস্ট আসবো আর যাবো।

আমার কথা শুনে ডক্টর ফারহান কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলেন এইদিকে ডাক্তার সাহেব আমায় সন্দিহান দৃষ্টিতে দেখছেন। অতঃপর ডক্টর ফারহান বললেন,
ফারহান: ওকে বাট অনলি ফিফটিন মিনিটস।এর থেকে এক মিনিটও বেশি না।
আফরীন: থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ স্যার।আপনি অনেক ভালো।আমি দশ মিনিটের মধ্যে আসছি বলেই আমি দৌড় দিলাম এক্সিট গেটের দিকে।

এইদিকে আফরিনের যাওয়ার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে তাহরীম। আফরিনের হঠাৎ এভাবে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়া ওকে অনেকটা ভাবাচ্ছে ।আফরীন কিসের জন্য গেলো যার জন্য ডক্টর ফারহান ওকে অনুমতি দেওয়াতে এত খুশি হলো।আর ওর নিজের বর থাকতে ও অন্য কাউকে কেন ভালো বলবে?

হাতে রিপোর্ট নিয়ে বড় বড় চোখে তাকিয়ে আছি রিপোর্টের দিকে আমি। রিপোর্টে স্পষ্ট লিখা আফরা মা হতে চলেছে । আফরা ইজ থ্রি মান্থ প্রেগনেন্ট। সিরিয়াসলী…. আই ক্যান্ট বিলিভ মাই আইস।

‘ সিরিয়াসলী এসব কবে হলো? আর্যাল আফরা তোরা কিকরে পারলি এমন করতে? একবারও তোদের এটা মনে হলো না যে একবার যদি এটা জানাজানি হয়ে যায় তখন তোদের মা বাবা আর তোদের সম্মানটা কোথায় থাকবে?কি করে পারলি আংকেল আন্টির সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিতে?কি করে পারলি বিয়ে ছাড়া এসব করতে? ‘ রাগান্বিত গলায় বললাম আমি।

আফরিন এর চিৎকারে আর্যাল, আফরা, ফারাহ, ফারহাজ, ইরহান সবাই ভয় পেয়ে গেছে। ওকে এভাবে রাগতে কোনোদিনই দেখেনি ওরা।ওদের যেদিন ঝগড়া হয়েছিল সেদিনও একদম কুল ছিল আফরিন।কিন্তু আজ এমন ভাবে রেগে গেছে যে ওকে কোনোকিছু বোঝানও মুশকিল।

‘ কি হলো কি ? উত্তর দিস না কেন তোরা? একবারও নিজের বাবা মার মুখটা ভেসে উঠলো না এসব করার আগে? একবারও বাবা মার কথা ভাবলি না?তোদের কাছে তোদের ভালোবাসাই সব?এই পৃথিবীতে কি আর কেউ প্রেম করেনি কোনদিনও? ফারাহ ফারহাজকেই দেখ… ওরা একজন আরেকজনকে কত ভালবাসে তবুও কোনোদিন এসব করার কথা ভাবেনি।ওদের ঝগড়ার মধ্যেই ওদের ভালোবাসা ফুটে উঠে।আর তোরা বিয়ে ছাড়াই এসব করলি মিনিমাম কাউকে জানিয়ে তো বিয়েটা করে নিতে পারতি। ‘ আবারও শক্ত গলায় বললাম কথাগুলো।

‘ আমাদের বিয়ে হয়েছে…কবুল বলে শরীয়ত মোতাবেক আর আইনি ভাবে বিয়ে হয়েছে আমাদের। ‘ কাপতে কাপতে বললো আফরা।

আফরীন: সো হোয়াট?এই বিয়ের কোনো মূল্য আছে?না তোর বাবা মা জানে আর না আর্যালের বাবা মা জানে।তাহলে এটা কিসের বিয়ে?এই বিয়ের কোনো মূল্য নেই ইসলামের চোখে কিংবা সমাজের চোখে।
আর্যাল:আমরা তো এতকিছু ভেবে বিয়ে করিনি।এখন কি করবো?
আফরীন: কি করবি মানে?বিয়ে করেছিস তুই, বউ তোর,বাচ্চা তোর সেখানে আমার কি করার আছে?না মানে আমি কি করতে পারি?কিছু করার মতো অবশিষ্ট কিছু কি রেখেছিস?তোদের বিয়ে নাহলে আঙ্কেল অ্যান্টি কে মানানোর দায়িত্ব আমি নিতাম।
ফারাহ: আইডিয়া…
আফরীন: কি আইডিয়া….
ফারাহ: একটা কাজ করা যায়।আফরা যে প্রেগন্যান্ট আর ওদের যে বিয়ে হয়েছে সেটা কাউকে জানাবো না।তুই আর দুলাভাই মানে তাহরীম স্যার গিয়ে ওদের দুজনের বাবা মায়ের সঙ্গে কথা বলে নাহয় ওদের বাবা মাকে মানিয়ে নে।
আফরিন: হোয়াট! আর ইউ সিরিয়াস।ডাক্তার সাহেব যাবেন আর্যাল আর আফরার সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে? ইম্পসিবল….
আফরা: প্লিজ আফরিন আমার হেল্প কর।প্লিজ তুই স্যার কে যে করেই হোক মানা।আমাদের এখন বিয়ে নাহলে অনেক বড় সমস্যা হয়ে যাবে আফরিন।প্লিজ কিছু একটা কর।

আফরার এরকম অসহায় মুখ দেখে আমার খুব খারাপ লাগছে।মুখ ফিরিয়ে আর্যালের দিকে তাকালাম। বেচারা খবরটা পেয়ে নিজেই শকড ।ওদের দেখে খারাপ লাগছে। ওরা একে অপরকে ভালবাসে অথচ ওদের এই সম্পর্ক কেউই মেনে নিচ্ছে না।ওদের বাবা মার মধ্যে অজানা এক কারণে শত্রুতা যার প্রভাব আজ ওদের সম্পর্কে পড়ছে।দুজন চেয়েও এক হতে পারছে না। আমাকেই কিছু একটা করতে হবে।

‘ ঠিকাছে আমি ডাক্তার সাহেবের সঙ্গে কথা বলে উনাকে মানানোর চেষ্টা করবো।আমি দেখছি কি করা যায়। ‘ লম্বা এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম আমি।
আমার কথা শুনে আফরা আনন্দে কেঁদে দিল।আমি ওকে আগলে নিয়ে বললাম,
আফরীন: যাক তবে এবার তোর মুখে হাসি ফুটলো। বাই দ্যা ওয়ে জুনিয়র আর্যালের আম্মু আপনি কাদলে কিন্তু তার প্রভাব আপনার বাচ্চার উপর পড়বে তাই এখন কোনো কান্নাকাটি নেই।আপনি এভাবে কাদলে তো আমার এখান থেকে যাওয়া ইম্পসিবল হয়ে দাঁড়াবে।

আমার কথা শুনে আফরা নিজের কান্না বন্ধ করার চেষ্টা করলো।আমি বললাম,
আফরীন: তাহলে তোরা এখন বাড়ি যা। আর্যাল তুই আফরা কে বাড়ি নামিয়ে দিবি।আমার হসপিটালে কাজ আছে তাই আমায় যেতে হবে।আমি এলাম।

আমার কথা শুনে আর্যাল নিঃশব্দে মাথা নাড়ল। বেচারার অবস্থা দেখে আমার মায়াও লাগছে আবার হাসিও পাচ্ছে। এখনও শক টা সামলে উঠতে পারছে না। আমি আর কিছু না বলেই বেরিয়ে এলাম।রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি কখন রাস্তা ফাঁকা হবে আর রাস্তা টা পার হবো। হঠাৎ চোখে পড়লো একটা বিড়াল রাস্তার মাঝে।অন্যদিকে অন্য পাশ দিয়ে দ্রুত গতিতে একটা বাস এগিয়ে আসতেছে। বিড়াল টা কে চোখে পড়তেই আমার মানসপটে কিছু ছেড়া স্মৃতি ভেসে উঠলো। বিড়ালটা কে দেখে অজান্তেই দৌড়ে গেলাম তাকে বাঁচাতে।সাথে সাথে কোলে তুলে নিলাম তাকে। পরম আবেশে তার গায়ে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম।

এইদিকে রাস্তার মাঝে আমায় বিড়াল নিয়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখে রাস্তার চারপাশের মানুষ আমায় বারবার সরে যেতে বলছে।আমার কানে ওদের গলার আওয়াজ আসতেই আমি সামনের দিকে তাকালাম।আমার দিকে দ্রুত গতিতে বাস এগিয়ে আসছে।বাস দেখে ভয়ে আমার হাত পা জমে গেছে,আমি এক পাও নড়তে পারছিনা।আমি সাথে সাথে চোখটা বন্ধ করে নিলাম ভয়ে।

‘ এই মেয়ে কোনো সেন্স নেই নাকি?এভাবে একটা বিড়াল কে বাঁচানোর জন্য কি কেউ নিজের জীবন রিস্ক নেয়? ‘

একটা অপরিচিত লোকের গম্ভীর গলা শুনে আস্তে আস্তে চোখ খুললাম।চোখ খুলেই নিজেকে রাস্তার ধারে আবিষ্কার করলাম।আমার কোলে থাকা সেই বিড়াল টি এখনো এখনো আমার এপ্রণের বুকে লুকিয়ে আছে আর মিয়াও মিয়াও করছে।আমি চোখ উঠিয়ে লোকটার দিকে তাকালাম।লোকটার বয়স সর্বোচ্চ ৫০+ হবে আর পরণে ফরমাল শার্ট আর প্যান্ট সেই সাথে হোয়াইট এপ্রন। মাথার চুলগুলো বয়সের প্রভাবে এখনো তেমন কমেনি কিন্তু কানের কাছে কিছু কিছু চুলে পাক ধরে সাদা হয়ে গেছে।

আমি লোকটা কে দেখে অবাক হয়ে বললাম,
আফরীন: আপনি কে?
লোকটা: আমি কে সেটা তোমার জানতে হবে না।আগে বলো বিড়াল টা কে বাঁচাতে এভাবে কেন রাস্তার মাঝে ছুটে গেলে।আমি না বাঁচালে তো আজ অনেক বড় কেলেঙ্কারি হয়ে যেত।
উনার কথা শুনে বিড়ালটার গাঁয়ে হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম,
আফরীন: আল্লাহ যেমন আমাদের সৃষ্টি করেছেন তেমনি ওদেরও সৃষ্টি করেছেন।আমি যেহেতু দেখেছি যে ও বিপদে আছে সেহেতু আমার উচিত ওকে বাঁচানো। বিড়ালটা প্রাণী হলেও নির্বোধ আর নির্জীব নয়।ওকে যে আমি বাঁচিয়েছি তার জন্য আমার সওয়াব হবে আর আমাকে যে আপনি বাঁচিয়েছেন তাই আপনার সওয়াব হবে।

আমার কথা শুনে লোকটা চুপ করে গেলেন তারপর বললেন,
লোকটা: ঠিকাছে ঠিকাছে আর বলতে হবে না।এই ভুল আর নেক্সট টাইম যেন নাহয়।সবসময় বাঁচানোর জন্য কেউ নাও থাকতে পারে।আমি তো আর সুপার ম্যান না যে সবসময় বাঁচিয়ে ফেলবো।
আফরীন: নো প্রব্লেম একবার যখন দেখা হয়েছে তখন আল্লাহ নসিবে রাখলে আবারও দেখা হবে আপনার সঙ্গে।আর আমি দোয়া করি যেন আমায় প্রত্যেকবার বিপদ থেকে আপনিই বাঁচান।
লোকটা: বিপদে বাঁচানো তো বাবার কাজ।কিন্তু আমার তো তোমার সঙ্গে কোনো সম্পর্কই নেই।
আফরীন: না থাকলে নেই।আপনি আমার বাবা না হন কিন্তু বাবার মতো তো।একবার যখন বিপদে আল্লাহর উসীলা হিসেবে আমায় বাঁচিয়েছেন তখন নাহয় আবার বাঁচাবেন আংকেল।

আঙ্কেল আমার কথা শুনে আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকালেন একেবারে ডাক্তার সাহেবের মত।হঠাৎ উনার মাঝে আমি ডাক্তার সাহেবের প্রতিচ্ছবি দেখতে পেলাম।চোখের সামনে ডাক্তার সাহেবের মুখ ভেসে উঠলো।আঙ্কেল আমার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বললেন,
আংকেল: তুমি কি সবাইকেই বাবা বানিয়ে ফেলো ?
আফরীন: আস্তাগফিরুল্লাহ আঙ্কেল এসব কি বলেন।সবাই কে কেন বানাতে যাবো?আপনি তো আমার বাবার বয়সী তাই আপনাকে বানালাম।আচ্ছা আঙ্কেল আমাকে বাঁচানোর জন্য ধন্যবাদ।আমি বরং এখন আসি।আবার কপালে আপনার সঙ্গে দেখা লিখা থাকলে আবার দেখা হবে বলেই আমি বিড়ালটা নিয়ে দৌড় দিলাম।

এইদিকে ফাহিম মির্জা মেয়েটার যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে।মেয়েটা একেবারে চঞ্চল আর প্রচন্ড বকবক করে।মেয়েটা তাকে এমন একজনের কথা মনে করায় যার কথা সে ভাবতেও চায়না তবুও অবচেতন মনে বারবার তার কথা ভাবে। এত বছর হয়ে গেল তবুও ভুলতে পারলো না মানুষটা কে। শত চেষ্টা করেও মানুষটা কে ভুলতে পারলো না।মেয়েটা ওকে সেই মানুষটার কথা মনে করায়। আল্লাহর কাছে দোয়া করে যেন এই মেয়ের সঙ্গে দ্বিতীয়বার আর দেখা নাহয়।

আমি বিড়ালটা কে বাইরে রেখে হসপিটালে ঢুকে গেলাম কারণ হসপিটালে বিড়াল এলাউ না।হসপিটালে ঢুকতেই দেখলাম এন্ট্রান্স গেটের কাছে ডাক্তার সাহেব আর ডক্টর ফারহান দাড়িয়ে আছেন।আমি দৌড়ে গেলাম উনাদের কাছে।আমায় হুট করে দেখে চমকে গেলেন ডাক্তার সাহেব আর ডক্টর ফারহান বললেন,
ফারহান: কি মিসেস আফরিন কাজ শেষ? নোটস নিয়েছেন?
আমি হাপাতে হাপাতে বললাম,
আফরীন: হ্যাঁ স্যার শেষ। আসার সময় অনেক বড় কাহিনী হয়ে গেছে।একটা বিড়াল রাস্তার মাঝে ছিল তাকেই বাঁচাতে গিয়ে এত সময় লাগলো।
ফারহান: ও আচ্ছা।ভালো তো।আপনি দেখি ভালই সওয়াব কামাই করছেন।
আফরীন: বলা চলে…

‘ কিন্তু আপনার হাতে তো কোনো নোটস নেই মিসেস আফরীন। ‘ বললেন ডাক্তার সাহেব।

ডাক্তার সাহেবের কথা শুনে সকলেই আমার দিকে ছোট ছোট চোখে তাকিয়ে আছি।এইদিকে আমি ভয়ে ক্রমশ শুকনো ঢোক গিলছি।ডাক্তার সাহেব কি তবে ধরে ফেলেছেন?

‘ কি যে বলেন না স্যার।আজকাল তো প্রযুক্তির যুগ।আমি হাতে আনতে যাবো কেন?আমি ফটোকপির দোকানে দিয়ে এসেছি যাতে ওরা যেন ফটোকপি করে বাইন্ডিং করে দেয়। ‘ কোনরকমে বললাম কথাগুলো।

আমার কথা শুনে এবার আর ডাক্তার সাহেব কিছু বললেন না।ডক্টর ফারহান বললেন,
ফারহান: সো সবাই নিজেদের নিজেদের পজিশন নিয়ে নাও।ডক্টর মির্জা এন্টার করতেই উনাকে আমরা ফুলের বুকে দিয়ে ওয়েলকাম করবো।আর সুনয়না তুমি ডক্টর মির্জা কে তার কেবিন দেখিয়ে দিবে।ওকে?
সুনয়না: জি স্যার।

ফারহান:১…২….৩… ওয়েলকাম টু আওয়ার BSMM ডক্টর ফাহিম মির্জা বলেই ডক্টর ফারহান সামনের দিকে উনার হাতে থাকা বুকেটা এগিয়ে দিলাম।নতুন ডক্টর কে দেখার জন্য সামনে তাকাতেই আমার চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেলো। একি উনি তো সেই আঙ্কেল যিনি আমাকে বাঁচিয়েছিলেন।

বুকে নিতে গিয়েই ফাহিমের চোখ পড়ল সামনে দাড়িয়ে থাকা মেয়েটার দিকে।এটা তো ওই রাস্তার মেয়েটাই। তারমানে মেয়েটা এখানেই পড়ে আর এখন থেকে রোজ দেখা হবে তার সঙ্গে।মেয়েটা কে দ্বিতীয়বার যাতে দেখতে নাহয় সেই দোয়া করেছিল কিন্তু এখন রোজ দেখতে হবে ভেবেই ফাহিম মির্জার ভ্রু বিরক্তিতে কুচকে এলো।

ডক্টর মির্জা কে ওভাবেই বুকে নিয়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ছোটো ছোট চোখে আফরিন আর ডক্টর মির্জার দিকে তাকালো ফারহান এবং তাহরীম।ওদের একটা প্রশ্ন দুজনে এভাবে একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে কেন? তারা কি একে অপরকে চেনে?

‘ কি হলো মামা? তুমি কি আফরিন কে চিনো? ‘ বললো ফারহান।

ভাগ্নের মুখে মামা ডাক শুনে তার দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো ফাহিম মির্জা অতঃপর গম্ভীর গলায় বললো,
ফাহিম: আমি যতটুকু জানি আপনিও একজন এফিশিয়েন্ট ডক্টর মিস্টার ইমতিয়াজ। সো একজন ডক্টরের মতই প্রফেশনালি ব্যবহার করুন। প্রফেশনাল রিলেশন আর পার্সোনাল রিলেশন মিক্স আপ করলে কিন্তু কিছুই এ্যাচিভ করতে পারবেন না।

আমি ডক্টর মির্জা আর ডক্টর ফারহানের কথা শুনে তাদের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছি।এরা তাহলে মামা ভাগ্নে।তবে মির্জা আংকেলের পার্সোনালিটি নিয়ে প্রশংসা করতে হবে।অনেক স্ট্রং পার্সোনালিটি উনার।

~ চলবে ইনশাল্লাহ্

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে