তুই শুধু আমার পর্ব-২৭

0
1602

#তুই শুধু আমার
#Writer_মারিয়া
#Part : 27

আশা আর আমান আজ কলাতলী বিচ আর ইনানি বিচ ঘুরতে যাবে। প্রথমে কলাতলি বিচ তারপর ইনানি বিচ যাবে ওরা। আমান রেডি হয়ে আশার দিকে তাকাতেই যেনো আমান আর চোখ সরাতে পারে নাহ। আশা একটা মিষ্টি কালারের লং ড্রেস পরেছে সাথে সাদা সালোয়ার + ওড়না, চোখে হালকা কাজল, ছাড়া চুল, কানে সাদা ঝুমকা, এক হাতে একটা ডিজাইনিং ঘড়ি, সব মিলিয়ে অনেক মায়াবী লাগছে আশাকে। আমান এগিয়ে এসে আশাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আয়নায় আশার দিকে তাকায়। আশাও আয়ানায় আমানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দেয়। আশা আয়নায় আমানের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” এভাবে তাকিয়ে থাকলে কি হবে? যাবা নাহ?”

–” হুম! বাট তুই তোহ যেতে দিচ্ছিস নাহ।”

–” আমি? মানে?”
কথাটা বলেই আমানের দিকে ঘুরে তাকায় আশা। আমান আশার কোমরে হাত দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বলে ওঠে,
–” তুই এতো সুন্দর করে সেজেছিস, এখন আমার বাইরে নাহ, তোকে আদর করতে ইচ্ছা করছে।”

আমানের কথা শুনে আশা লজ্জা পেয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে। আমান আশার থুতনি ধরে মুখ উচু করে বলে ওঠে,
–” এতো লজ্জা পাস নাহ। এতে আরও বেশি সুন্দর লাগে।”

আমান কথাটাহ বলে আশার কপালে একটা চুমু দিয়ে বলে ওঠে,
–” চল!”

–” হুম!”
আমান আর আশা হোটেল থেকে বেরিয়ে কলাতলী বিচের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। শুধু আমান আর আশা নাহ আরও একজন যাচ্ছে ওদের ফলো ফলো করতে করতে।

★★★
সেহের নিজের রুমে একটা টেডি কোলে নিয়ে বসে আছে। তখনই আহিয়া চৌধুরী ভেতরে আসেন। সেহের ভাবনায় এতোটাই মগ্ন যে, আহিয়া চৌধুরী তার রুমে এসেছে সে খেয়ালই করে নি। আহিয়া চৌধুরী সেহেরের মাথায় হাত রাখতেই সেহেরের ধ্যান ভাঙে, পাশে তাকিয়ে দেখে আহিয়া চৌধুরী। আহিয়া চৌধুরী সেহেরের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে ওঠে,
–” কি হয়েছে মা? এমোন চুপচাপ বসে আছিস কেনো?”

–” কিছু হয় নি আম্মু।”

–” কিছু তোহ হয়েছে। মায়ের কাছে লুকাবি?”

–” আম্মু! আরসাল ভাইয়া।”

–” আরসাল কিছু বলেছে?”

–” নাহ! আসলে আম্মু আমি নিজেকে নিয়ে ভাবছি।”

–” কি ভাবছিস তুই?”

–” আম্মু, আরসাল ভাইয়া নাহয় আমাকে ভালোবাসতো। আমি তোহ কখনো এইসব ভাবিও নি। কিন্তু আম্মু বিশ্বাস করো, এখন আরসাল ভাইয়ার পাশে আমি কাউকে সহ্য করতে পারি নাহ। এমনকি নেহাকে দেখলেও আমার রাগ উঠে যায়। আমি কাউকে সহ্য করতে পারি নাহ। কেনো হচ্ছে এমন আম্মু। বলো, কেনো হচ্ছে এমোন?”

–” সত্যি টাহ জানতে চাস?”

–” হুম! আমি সত্যি টাহ জানতে চাই আম্মু। প্লিজ তোমার জানা থাকলে আমাকে বলো।”

–” আরসালের পাশে তুই কাউকে সহ্য করতে পারিস নাহ, কারন তুই নিজের অজান্তেই আরসালকে ভালোবেসেছিস।”

–” কিহ? কি বলছো তুমি এইসব? আমি কখনো আরসাল ভাইয়া কে নিয়ে এইসব ভাবি নি।”

–” আচ্ছা, আমি কিছু কথা বলি, দেখ তোহ কোনো মিল পাস কি নাহ?”

–” হুম।”

–” সেহের, আমরা যাকে ভালোবাসি তাকে আমরা কারো সাথে সহ্য করতে পারি নাহ। কারন আমাদের কাছে এমোনই মনে হয়, সে একান্তই আমার। তার পাশে অন্য কাউকে দেখলে খুব রাগ হয়। সে যখন আশেপাশে থাকে মনের ভেতর অন্যরকম এক অনুভুতি কাজ করে। সে যখন আমাদের চোখের সামনে থাকে, নাহ চাওয়া সত্বেও তার দিকে বার বার চোখ চলে যায়। সে কাছে আসলে এমন মনে হয় যেনো দম টায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সে কাছে আসলে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে। সে যখন ছুয়ে দেয় তখন পৃথিবীর সব শান্তি সেখানে উপস্থিত হয়। তার এতোটুকু কষ্ট দেখলেও নিজের ভেতর সেইটা অনুভব হয়। সে যখন চোখের সামনে থাকে নাহ তখন তাকে মিস করা। ভালো বাহ খারাপ যাই হোক নাহ কেনো তাকে নিয়ে সবসময় ভাবা। আর সব থেকে বড় কথা কি জানিস চোখ বন্ধ করলেই তার মুখটাহ ভেসে উঠে। এইটায় ভালোবাসা। এইবার তুই ভেবে দেখ তুই আরসালকে ভালোবাসিস কি নাহ? ভালোবাসা কিন্তু মনের কথা শোনে বিবেকের নাহ। তাই মন দিয়ে ভাব, বিবেক দিয়ে নাহ। আমি যাই, তোর জন্য জুস পাঠিয়ে দিচ্ছি।”
কথাগুলো বলেই আহিয়া চৌধুরী চলে যায়। সেহের উঠে বারান্দায় গিয়ে দাড়িয়ে মনে মনে ভাবতে থাকে,
–” আম্মু এইসব কি বলে গেলো? তাহলে কি আমি আরসাল ভাইয়া কে ভালোবাসি। কিন্তু কিভাবে সম্ভব?”

কথাগুলো মনে করেই সেহের চোখ বন্ধ করতেই ভেসে উঠে আরসালের ঘুমন্ত কিউট ফেস, আরসালের রাগী ফেস, চমকে চোখ খুলে ফেলে সেহের। সেহের জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে। সেহের মনে মনে ভাবতে থাকে,
–” তাহলে কি সত্যিই আমি আরসাল ভাইয়া কে ভালোবাসি? নিজের অজান্তেই ভালোবাসলাম তোমাকে। যাকে ভয় পেতাম, তাকেই ভালোবাসলাম। এখন সেই আমাকে ঘৃনা করে, আবার ভালোও বাসে। এ কিসের মাঝে এসে পড়লাম আমি? কি হবে এই ভালোবাসার পরিনতি। ভাইয়াকে আমি কিভাবে বলবো, যে আমি তাকে নিজের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলছি।”

★★★
আমান আর আশা কলাতলী বিচে চলে আসছে। এখানে ওরা সমুদ্রের পানিতে গোসল করবে বলে আরও এক সেট ড্রেস নিয়ে আসছে। আশা এসেই পানিতে নেমে লাফালাফি করছে। আর আমান দুর থেকে দাড়িয়ে দাড়িয়ে আশার সেই বাচ্চামো দেখছে। আমান এগিয়ে আসতেই পানি ছুড়ে মারে আশা। আমানও পানি ছুড়ে আশার দিকে। দুইজনে দুইজনের দিকে পানি ছুড়ে আনন্দ করছে।
কিন্তু সেই অচেনা মানুষটি কোনো ভাবেই ব্যাপার টাহ মেনে নিতে পারছে নাহ। রাগী চোখে তাকিয়ে আছে আমান আর আশার দিকে।
কিছুক্ষণ পর আমান আর আশা গিয়ে নিজেদের পোশাক পাল্টে আসে। সেখানে লান্চ করে ইনানি বিচের দিকে যাবে বলে, কয়েক ঘন্টার জন্য ঠিক করা হোটেল ছেড়ে বেরিয়ে আসতেই আশা বলে ওঠে,
–” আমান! আমি আমার ঘড়ি টাহ হোটেল রুমে ফেলে এসেছি।”

–” আচ্ছা, সমস্যা নাই আমি কিনে দিবো চল।”

–” নাহ ঐটাহ আমার খুব পছন্দের। প্লিজ।”

–” আচ্ছা, তুই এখানে থাক আমি গিয়ে নিয়ে আসি।”

–” ওকে।”
আশা ওখানে দাড়িয়ে আছে আর চারিদিকে তাকিয়ে দেখছে। হঠাৎ আশার মনে হতে থাকে কেউ তার দিকে তাকিয়ে আছে। আশেপাশে তাকিয়ে সেরকম কাউকে নাহ দেখে আশা তার মনের ভুল ভাবে। কিন্তু নাহ, আসলেই তাকে একজন খুব গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন করছে। মন দিয়ে দেখছে আশাকে। কিছু সময় পর আমান ঘড়ি টাহ নিয়ে আসলে আশা আর আমান ইনানী বিচের দিকে যাত্রা শুরু করে। আর তাদের পিছন পিছন সেই অচেনা লোকটিও যায়।

★★★
বিকাল হয়ে গেছে। সূর্য একদিকে হেলে পড়েছে। আর সেহের সেই রুফটপে দাড়িয়ে সেই রোদের দিকে মুখ করে দাড়িয়ে আছে। রোদ এসে সেহেরের শরীরে পড়ছে।
আরসালের রুমে ভালো লাগছিলো নাহ তাই রুফটপে আসে আর এসেই সেহেরকে দেখতে পাই। আরসাল সেহেরের পিছনে এসে দাড়িয়ে বলে ওঠে,
–” সেহের।”

কারো আওয়াজে সেহের পিছনে ফিরে দেখে আরসাল দাড়িয়ে আছে। আরসাল সেহেরের দিকে তাকিয়ে দেখে রোদে মুখ একদম লাল হয়ে গেছে। আরসাল সেহেরের দিকে একটু এগিয়ে এসে বলে ওঠে,
–” তুই এইভাবে রোদের দিকে মুখ করে দাড়িয়ে আছিস কেনো? নিজের দিকে তাকিয়ে দেখেছিস কি অবস্থা হয়েছে। ঘেমে, লাল হয়ে। Are you mad, Seher?”

সেহের কিছু নাহ বলেই আরসালকে জড়িয়ে ধরে। আরসাল অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আরসাল সফট কন্ঠে বলে ওঠে,
–” সেহের কি হয়েছে?”

সেহের আরসালের কানের কাছে মুখ নিয়ে আস্তে আস্তে বলে ওঠে,
–” আমি তোমাকে ভালোবাসি।”

আরসালের যেনো বিশ্বাসই হচ্ছে নাহ। আরসালের মনে হচ্ছে সে স্বপ্ন দেখছে। সেহের তাকে ভালোবাসার কথা বলছে, এইটা যেনো আরসাল কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে নাহ। সেহের আরসালের মুখের সামনে মুখ নিয়ে, আরসালের চোখের দিকে তাকিয়ে ছল ছল চোখে বলে ওঠে,
–” আমি তোমাকে ভালোবাসি। এখন তুমি কি আমাকে ফিরিয়ে দিবে? আমার ভালোবাসা আমাকে ফিরিয়ে দিবে?”

আরসাল এখনো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সেহেরের দিকে, এখনো যেনো কিছুই মাথায় ঢুকছে নাহ আরসালের। আরসালকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে সেহের আবারও বলে ওঠে,
–” কি হলো? কিছু বলছো নাহ কেনো? ফিরিয়ে দিবে আমাকে, আমার ভালোবাসাকে?”

আরসাল কিছু নাহ বলেই সেহেরকে জড়িয়ে ধরে, ধরা গলায় বলে ওঠে,
–” সেহের আমি কোনো স্বপ্ন দেখছি নাহ তোহ। যদি স্বপ্ন হয়ে থাকে তাহলে আমি চাই নাহ এই স্বপ্ন ভেঙে যাক। এই কথাটাহ, শুধুমাত্র এই কথাটা তোর মুখ থেকে শুনবো জন্য ব্যাকুল হয়ে থেকেছি আমি।”

–” কিন্তু তুমি তোহ আমাকে ঘৃনা করো?”
আরসাল সেহেরের মুখ ধরে সেহেরের কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকিয়ে বলে ওঠে,
–” রেগে ছিলাম। জিদ ছিলো, তুই তোহ জানিস এইসময় গুলোতে আমি কি বলি কি করি নিজেও জানি নাহ। আরও রাগ হতো তুই আমার ভালোবাসা বুঝতি নাহ, ঐ রাহুলের সাথে দেখেও রাগ হতো। তাই আরও বেশি বলতাম। কিন্তু তোর মুখে ভালোবাসি কথাটা শুনতেই সব রাগ কেমন যেনো মিলিয়ে গেছে।”

সেহের আরসালকে আবার জড়িয়ে ধরে বলে ওঠে,
–” আমাকে প্রপোজ করবা নাহ।”

–” কিন্তু আমার কাছে তোহ এখন তোকে প্রপোজ করার মতো কিছুই নাই।”

–” আমার কিছু লাগবে নাহ। আমার শুধু তুমি হলেই চলবে। তাই তুমি এইভাবেই করো।”

–” আমি জানি আমার জানের কিছু লাগবে নাহ। তাও আমি আমার মতো করে প্রপোজ করতে চাই। আজ সন্ধ্যায় রেডি থাকবি। তোর আরসাল তোকে নিজের ভালোবাসার গল্প শোনাবে।”
কথাটাহ বলেই আরসাল আবার সেহেরকে জড়িয়ে ধরে। কিন্তু কেউ একজন তাদের এইসব দেখে রাগে আগুন হয়ে গেছে৷ সে আর কেউ নাহ, সে হলো নেহা। নেহা আরসালকে রুফটপের দিকে আসতে দেখে পিছন পিছন আসছিলো। আসতেই সেহের আর আরসালকে দেখে লুকিয়ে লুকিয়ে সব কিছু দেখতে থাকে। কিন্তু এখন যেনো আর সহ্য হচ্ছে নাহ। চোখ দিয়েই যেনো শেষ করে দিচ্ছে সেহেরকে। নেহা আর সহ্য করতে নাহ পেরে নিজের রুমে চলে আসে, আর মনে মনে বলে ওঠে,
–” শেষ করে দিবো সেহের। আমি যদি আরসাল কে নাহ পাই তাহলে তোমাদের ভালোবাসা তছনছ করে দিবো। আরসালই আমার লাইফে প্রথম কেউ, যাকে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসেছি। এতো সহজে তোহ আরসালকে আমি হারাতে দিবো নাহ। প্রয়োজন হলে, তোমাকে দুনিয়া থেকে হারিয়ে দিবো সেহের। এতোদিন চুপচাপ ছিলাম। কিন্তু আজ যাহ হলো, ভয়ংকর পরিনতি হবে তোমার সেহের। আজ সন্ধ্যায় ভালোবাসার প্রদিপ জ্বালাবা, ঐ আগুনেই তোমাকে জ্বালিয়ে দিবো সেহের, পুড়িয়ে দিবো তোমাদের ভালোবাসা।”

★★★
আশা আর আমান ইনানী বিচে চলে এসেছে। এই বিচ টাহ অনেক শান্ত। এখানে সাধারণত এতো ঢেউ থাকে নাহ, কিন্তু এখান থেকে সূর্যাস্ত দেখতে দারুণ লাগে। আশা আর আমান সমুদ্রের পাশে দাড়িয়ে আছে। আশেপাশে অনেক মানুষ এই সূর্যাস্ত দেখার জন্য উৎসাহ নিয়ে দাড়িয়ে আছে। কিছু সময়ের মাঝে সূর্যাস্ত যাবে। দৃশ্যটাহ দেখলে এমোনই মনে হবে, যে সূর্য তার রক্তিম লাল আভা নিয়ে তলিয়ে যাচ্ছে সমুদ্রের অতল তলে। সূর্যের লাল আভা এসে সবার মুখে পড়ছে। আশা খুব খুশি মুখে সূর্যাস্ত দেখছে, আর আমান তাকিয়ে আছে আশার মুখের দিকে। আশার মুখে রক্তিম আভা পড়তেই সৌন্দর্য যেন আরও হাজর গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। আর আমান আশার সেই সৌন্দর্য ভরা লাল আভায় ভরা মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।

#Part : বোনাস✌️

সেহের রেডি হচ্ছে। সেহের আজ খুব সুন্দর করে সেজেছে। একদম আরসালের স্বপ্নের পরীর মতো। সেহের আজ একটা পার্পেল কালারের গাউন পরছে, চুলগুলো ছেড়ে দেওয়া, চোখে মোটা করে কাজল দেওয়া, ঠোঁটে পার্পেল লিপস্টিক, কানে পার্পেল কালারের ঝুমকা, হাতে একটা পার্পেল কালারের ব্রেসলেট, গলায় একটা লকেট, সব মিলিয়ে সেহেরকে খুব গর্জিয়াস দেখাচ্ছে। সেহের রেডি হয়ে আয়নার সামনে দাড়িয়ে আরসালের কথা ভাবছে আর মুচকি মুচকি হাসছে। মায়া চৌধুরী সেহেরের রুমে এসে দেখেন সেহের আয়নার সামনে দাড়িয়ে মুচকি হাসছে। মায়া চৌধুরী বলে ওঠে,
–” মাশাআল্লাহ, আমার বাচ্চা টাকে তোহ পরির মতো লাগছে। তাহ কোথায় যাওয়া হচ্ছে এরকম ভাবে, এই সন্ধ্যায়, হুম?”

–” বড় আম্মু।”

–” আজ তোহ বড় আম্মুর পারমিশন নিতে আসিস নিহ? নাকি মেইন মানুষ টাই নিয়ে যাচ্ছে?”

–” এরকম কিছুই নাহ। এমনি বাহিরে যাচ্ছি। তোমার ছেলেকে ভয় পাই নাকি? যে তার পারমিশন ছাড়া কোথাও যেতে পারবো নাহ।”

–” ওহ, আচ্ছা।”
সেহের খেয়াল করে মায়া চৌধুরী মুচকি হাসি দিচ্ছে। হঠাৎ সেহেরের ফোনে একটা ম্যাসেজের শব্দ হওয়ায়, ফোন ওপেন করে দেখে আরসালের ম্যাসেজ। আরসাল লিখেছে, ” বাসার সামনে একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে, ঐ গাড়িতে বোস, ড্রাইভার নিয়ে আসবে তোকে, তাড়াতাড়ি।” আরসালের ম্যাসেজ দেখে সেহের মায়া চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” আমি গেলাম।”

–” হুম! সাবধানে।”
সেহের বেরিয়ে আসতেই দেখে বাসার সামনে একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। সেহের এগিয়ে যেতেই ড্রাইভার গাড়ির দরজা খুলে দিলে, সেহের গাড়িতে উঠে বসে। কিন্তু সেহের একা নয়, নেহাও সেহেরকে ফলো ফলো করতে করতে যাচ্ছে।
গাড়িটাহ একটা জায়গা থামতেই সেহের তাকিয়ে দেখে তাদের বাগান বাড়ি। সেহের গাড়ি থেকে নেমে সমানে তাকাতেই দেখে কেউ একজন হেটে আসছে, কিন্তু মুখ টাহ পরিষ্কার বোঝা নাহ গেলেও সেহের বুঝে যায় মানুষ টি তার ভালোবাসা আরসাল। আরসাল সামনের দিকে একটু এগিয়ে আসতেই রোড লাইটের আলোতে সেহেরকে দেখে থমকে দাড়িয়ে যায়। সেহেরকে যেনো পরির মতো দেখাচ্ছে, মনে হচ্ছে এখনই সেহেরের পাখনা গজিয়ে সেহের উড়ে যাবে। কিন্তু আরসাল তোহ এই পরিকে উড়ে যেতে দিবে নাহ, আটকে রাখবে নিজের কাছে। আরসাল এইসব ভেবে একটু মুচকি হাসি দিয়ে সেহেরের দিকে এগিয়ে আসে। আরসাল আর একটু এগিয়ে আসতেই, রোড লাইটের আলো আরসালের উপর পড়তেই সেহের আরসালকে দেখতে পাই৷ আজ আরসালকে দেখে যেকোনো মেয়ে ঘায়েল হয়ে যাবে। আরসাল আজ একটা হোয়াইট শার্ট পরেছে যার উপরের দুইটা বাটন খোলা, ব্রাউন কালারের ব্লেজার, ব্লাক ডেনিম প্যান্ট, বাম কানে একটা ব্লাক টপ, হাতে ব্লাক ব্রান্ডেড ওয়াচ, চুল গুলো সবসময়ের মতো সিল্কি এন্ড কপালে দু একটা পড়ে আছে, পায়ে ব্লাক শু, আর ঠোঁটে সেই ঘায়েল করা হাসি। সেহের আরসালের দিকে তাকিয়ে আছে, আরসাল ও সেহেরের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।
সেহের মুচকি হাসি দিয়ে বলে ওঠে,
–” কি যাবা নাহ?”

–” হুম! চল।”
আরসাল সেহেরকে গার্ডেনে নিয়ে আসে। সেহের চারিদিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায়। চারপাশে অনেক সুন্দর করে সাজানো। গার্ডেনে একটা রাউন্ড টেবিল রাখা, যেইটা সাদা টেবিল ম্যাট দেওয়া হয়েছে, টেবিলের উপর একটা চকলেট ফেলেভারের কেক রাখা এবং তিনটাহ বড় মোমবাতি রাখা, দুইটা চেয়ারও রাখা আছে, গার্ডেন কে ছোটো ছোটো কালারিং লাইট, সাদা লাভ বেলুন, সাদা কাপড় আর সাদা মোমবাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে, একটা পাশে স্পিকারে সফট মিউজিকও বাজছে, একদম রোমান্টিক পরিবেশ যাকে বলা হয়। হঠাৎ আরসাল সেহের সামনে এক হাটু ভাজ করে বসে বলে ওঠে,
–” সেহের, আমি লাভ পোয়েট্রি পারি নাহ। আমি খুব একটা গুছিয়েও কথা বলতে পারি নাহ। তাই, আমি আমার মতো করে বলছি। সেহের আমার প্রথম কথা, #তুই_শুধু_আমার। সেহের আমি তোকে নিয়ে বাচতে চাই, আমার ভাবনা গুলো তোকে ঘিরেই রাখতে চাই৷ সেহের আমি আমার আশি বছর বয়সেও তোর হাতের এক কাপ চা খেতে চাই। আমি জানি নাহ, আমি কিভাবে তোকে বোঝাবো, যে আমি তোকে কতটাহ চাই। ভালোবাসতে চাই তোকে। I love you Seher. আমি তোকে ভালোবাসি। আমি দিনের শুরুতে আবার দিন শেষেও তোকে একটা কথায় বলতে চাই, #তুই_শুধু_আমার।”
কথা গুলো বলেই আরসাল সেহেরের দিকে এক হাত বাড়িয়ে দেয়। সেহেরের চোখ ছল ছল করছে। কিভাবে একটা মানুষ, এতো টাহ ভালোবাসতে পারে কাউকে। সেহেরের নিজেকে অনেক ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে, যে তাকে কেউ এতোটাহ ভালোবাসে৷ আরসাল সেহেরের দিকে তাকিয়ে আছে। সেহের তার হাত বাড়িয়ে আরসালের হাতের পর রেখে ছল ছল চোখে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” #আমি_শুধু_তোমার।”

আরসাল মুচকি হেসে সেহেরের হাতে একটা আংটি পরিয়ে দিয়ে, দাড়িয়ে সেহেরকে জড়িয়ে ধরে।
নেহা একটা গাছের পাশে দাড়িয়ে এইসব দেখছিলো এতসময় ধরে। আরসাল সেহেরকে জড়িয়ে ধরতেই হাত দিয়ে গাছে চেপে ধরে রাগে তে।
আরসাল সেহেরকে নিয়ে টেবিলের সামনে দাড়িয়ে বলে ওঠে,
–” তোর ফেবারিট! চকলেট ফেলেভার। নেহ কাট।”

আরসাল সেহের একসাথে কেক কাটে। সেহের কেকের একটা পিস আরসালের মুখে তুলে দেয়। আরসালও খাইয়ে দেয় সেহেরকে। আরসাল হঠাৎ সেহেরকে বলে ওঠে,
–” তুই এখানে ওয়েট কর। আমি আসছি।”

–” কই যাও?”

–” তোকে ছেড়ে কোথাও নাহ।”
বলেই আরসাল চলে যায়। আর সেহের চারপাশে দেখতে লাগে। নেহা সেহেরের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে ওঠে,
–” এতো ভালোবাসা তোমার কপালে সইবে নাহ সেহের। তোমাদের এই ভালোবাসা, তোমার জন্য কাল হয়ে দাড়াবে।”

কিছু সময়ের মাঝেই আরসাল হাতে একটা ট্রে এনে টেবিলের উপর রাখে। সেহের ট্রের উপর তাকিয়ে দেখে চাউমিন, সুপ, অনথন, আর লাচ্চি আছে। আরসাল সেহেরের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” ডিনার রেডি।”

–” হুম!”
আরসাল আর সেহের ডিনার করতে বসে। আরসাল সেহের কে নিজে খাইয়ে দিচ্ছে। আর নেহা অগ্নিদৃষ্টিতে সেইদিকে তাকিয়ে আছে।

★★★

সূর্যাস্ত শেষ হলেই আমান আর আশা চলে আসে লং বিচ হোটেলে। ডিনার কমপ্লিট করে এসেছে বাইরে থেকে। আশা বারান্দায় দাড়িয়ে রাতের সমুদ্রের বাতাস উপভোগ করছে। বাতাসে আশার শাড়ি, চুল উড়ছে। পাশের বারান্দা থেকে অচেনা লোকটি তাকিয়ে আছে আশার দিকে। আশা লোকটিকে দেখতে পারছে নাহ, কারন লোকটির বারান্দা পুরা অন্ধকার এবং নিজেও ব্লাক ড্রেস পরা। তাছাড়া আশা সমুদ্রের বাতাস উপভোগ করতে থাকায় পাশে এতো টাহ খেয়াল করছে নাহ। অতিরিক্ত বাতাসে আশার কাপড় ওড়ার জন্য পেটের দিক থেকে কাপর সরে গেছে। আর সেই অচেনা লোকটির নজর সেইদিকেই আটকে আছে। কিন্তু হঠাৎই অচেনা লোকটার চোখ রাগে লাল হয়ে যায়। কারন, আমান আশার পেটে হাত দিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। আশা আমানের ছোয়া পেতেই চোখ বন্ধ করে ফেলে। আমান আশার কাধের উপর থেকে চুল সরিয়ে দিয়ে হালকা কামড় দিতেই আশা কেঁপে উঠে। আশা আমানের দিকে ঘুরে দাড়াতেই, বাতাসে আশার চুলগুলো সামনে এসে পড়ছে। আমান আশার চুলগুলো কানের পিছনে গুজে দিয়ে, আশার কপালে একটা চুমু দিয়ে, কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে বলে ওঠে,
–” তোকে আজ খুব সুন্দর লাগছে দেখতে।”

আশা মুচকি হাসি দেয়, আমানের কথা শুনে। আমান আবার বলে ওঠে,
–” আশা!”

–” হুম।”

–” আমি কি আজ তোকে নিজের করে পেতে পারি? নাকি তুই এখনো প্রস্তুত নাহ? তোর সময় লাগলে আমাকে সরাসরি বলতে পারিস। উফ! কি বলছি আমি এইসব? আসলে আমি কথাটা বলতে চাই নি। বাট কি থেকে কি বললাম বুঝতে পারছি নাহ। আচ্ছা, তুই শুয়ে পড় আমি একটু বাইরে থেকে আসছি। জাস্ট ফাইভ মিনিট।”
আমান কথাটা বলে চলে যেতে নিলেই, আশা আমানের হাত ধরে টেনে নিয়ে আমানের ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়। আমান প্রথমে অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেও, আশার সাথে তাল মিলিয়ে নেয়। কিন্তু এই দৃশ্যটাহ অচেনা লোকটি দেখতেই হাতে থাকা কাচের গ্লাসটা চেপে ধরে। যার জন্য হাত কেটে রক্ত পড়তে শুরু করে। কিছুক্ষণ পর আমান আশার ঠোঁটের স্পর্শ ত্যাগ করে আশাকে কোলে তুলে নিয়ে, রুমে এসে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে রুমের লাইট অফ করে লাল আভার ড্রিম লাইট জ্বালিয়ে দেয়। আমান আশার উপর থেকে আঁচল সরিয়ে দিয়ে, আশার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর আশার ঠোঁট থেকে সরে এসে আশার গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয় আমান। আশা জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে। আস্তে আস্তে তাদের মাঝের আবরন সরে যেতে থাকে। আমান আশাকে নিয়ে ভালোবাসার এক রাজ্যে পাড়ি দেয় যেখানে শুধু ওরা দুজন।
এইদিকে অচেনা লোকটি রুমের সবকিছু ভেঙে তছনছ করে ফেলে। আর রাগী গলায় বলে ওঠে,
–” এতোদিন তোকে কিছু বলি নাই আমান। কিন্তু আজ যাহ করছিস এর জন্য তোকে পস্তাতে হবে। তোমাকেও পস্তাতে হবে আশা। অনেক বড় দাম দিতে হবে তোমাদের। তোমাদের এই ভালোবাসার সংসার আমি কালকেই শেষ করে দিবো।”

★★★
আরসাল আর সেহেরের ডিনার কমপ্লিট। হঠাৎ আরসাল দাড়িয়ে সেহেরকে টেনে নিয়ে স্পিকারে মিউজিক অন করে, সেহেরকে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। সেহের অবাক হয়ে আরসালের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” কি করছো?”

–” ডান্স।”
কথাটাহ বলেই আরসাল সেহেরকে নিয়ে নাচতে থাকে। আরসাল আর সেহের একে অপরের চোখের দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে।
নেহা এইাব আর সহ্য করতে পারছে নাহ। নেহা মনে মনে বলতে থাকে,
–” তোমার লাইফের কাল শুরু হবে সেহের। তোমাদের ভালোবাসায় দেওয়াল তোলার সময় চলে এসেছে। কিন্তু তার একটা সূচনা তোহ তোমাদের দিয়েই যাবো আজ।”

কথা গুলো ভেবে পাশেই তাকিয়ে দেখে চিকন চিকন লম্বা মোমবাতি দিয়ে সাজানো আছে। আবার পাশেই সাদা কাপড় দিয়ে সাজানো রয়েছে। নেহা একটা মোমবাতি হাত দিয়ে ফেলে দিতে চাইলে দেখে, মোমবাতি গুলো শক্ত করে লাগানো আছে, নিশ্চয় মোমবাতি গুলো কিছু দিয়ে আটকিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে পড়ে নাহ যায়। মোমবাতি গুলো অনেক চিকন হওয়ায় নেহা মোমবাতি টাহ ভেঙে কাপড়ের উপর ফেলে দিতেই কাপড়ে আগুন ধরে যায়। নেহা একটা শয়তানি হাসি দিয়ে ওখান থেকে চলে আসে।
সেহেরের আরসালের সাথে নাচতে নাচতে হঠাৎ আগুন লেগে যাওয়া কাপড়ের দিকে চোখ যেতেই কম্পিত কন্ঠে বলে ওঠে,
–” ভাইয়া আগুন।”

সেহেরের কথা শুনে আরসাল পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে সাজিয়ে রাখা সাদা কাপড়ে আগুন ধরে গেছে। আরসাল দ্রুত আগুনের কাছে এসে হাত দিয়ে আগুন নিভাতে গেলে সেহের এসে আরসালের হাত ধরে বলে ওঠে,
–” কি করছো? তোমার হাত পুড়ে যাবে তোহ।”

সেহেরের হঠাৎ চোখ যায় গার্ডেনের গাছে পানি দেওয়ার জন্য পাইপের দিকে। সেহের আরসালের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” ভাইয়া পানির পাইপ।”

আরসাল সেহেরের কথা শুনে পাশে তাকিয়ে পানির পাইপ দেখে পানি দিতে থাকে আগুনের উপর। আগুন নিভে যায়। আরসাল মনে মনে ভাবতে থাকে,
–” এখানে, আগুন লাগলো কিভাবে?”

হঠাং আরসালের চোখ যায় ভাঙা মোমবাতির দিকে। ভাঙা মোমবাতির দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবতে থাকে,
–” ক্যান্ডেল ভাঙা, হাউ পসিবল? কে এসেছিলো এখানে? কে আমার আর সেহেরের মাঝে বাঁধা হয়ে দাড়াতে চাচ্ছে?”

সেহের এগিয়ে এসে বলে ওঠে,
–” ভাইয়া! এই ক্যান্ডেল ভাঙা কেনো?”

–” হুম! সাজানোর সময় ভেঙে গেছে?”

–” আচ্ছা! কিন্তু আগুন লাগলো কিভাবে?”

–” এক্সিডেন্ট। আচ্ছা, তোকে এসব নিয়ে চিন্তা করতে হবে নাহ। অনেক রাত হয়ে গেছে বাসায় যেতে হবে।”

–” হুম! আমার পার্স নিয়ে আসি।”

–” হুম!”
সেহের পার্স আনতে চলে গেলে আরসাল চারপাশে আর একবার তাকিয়ে চলে যেতে নিলেই হঠাৎ কিছু একটা চোখে বাঁধে, যার উপর লাইটের আলো পড়ে চকচক করতেছে। আরসাল এগিয়ে গিয়ে জিনিসটাহ হাতে নিতেই দেখে একটা নুপুর। আরসাল ভ্রু কুচকে নুপুরের দিকে তাকিয়ে থাকে। সেহের পার্স নিয়ে এসে পেছন থেকে বলে ওঠে,
–” ভাইয়া চলো।”

আরসাল তাড়াতাড়ি নুপুর টাহ প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে নিয়ে, সেহেরের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” সেহের আজ তুই নুপুর পরিস নি?”

–” নাহ তোহ! কেনো?”

–” নাহ, ভালো লাগে। তাই বললাম।”

–” আচ্ছা, নেক্সট ডে পরবো।”

–” হুম! চল।”

–” হুম।”
আরসাল আর একবার চারিদিকে তাকিয়ে সেহের কে নিয়ে বাগান বাড়ি থেকে বেরিয়ে চৌধুরী ম্যানশনের দিকে রওনা দেয়।

চলবে…………..🌹

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে