আড়ালে ভালোবাসি পর্ব-১৫

0
1108

#আড়ালে ভালোবাসি
#পর্ব:15
#লেখনিতে:রিদিকা আফরোজ রোজা

সন্ধ্যায় ব্যালকনিতে বসে আছে আইরা আর আরহাম। আরহাম আইরা কে উদ্দেশ্যে করে বলে আরসাল তোকে আজ থেকে আট বছর আগে থেকেই ভালোবাসে। আইরা বলে কি! এসব কি বলছো ভাইয়া। আরহাম বলে ঠিক বলছি ছোট থেকে আরসাল তোর জন্য পাগল ছিলো যখন ওর বয়স 14 তখন তোর জন্ম হয় আর তোকে প্রথম কুলে তুলে আরসাল। তুই দেখতে অনেক সুন্দর ছিলি আর আরসাল এর তোকে খুব পছন্দ ছিলো তোকে কারো কাছে দিতো না শুধু খাওয়ানোর সময় আর ঘুমানোর সময় তুই মায়ের কাছে থাকতি আর আরসাল তোর পাশে বসে থাকতে। আমি আর আরসাল মিলে তোকে নিয়ে অনেক ঘুরতাম। আরসাল এর 14 বছর এর ছোট হলেও তুই ছিলি ওর খেলার সাথী। তুই যখন আস্তে আস্তে বড়ো হোস আর তোর দুষ্টুমি বারতে থাকে তুই কাউকে ভয় পেতি না আরসাল চারা । কারন একদিন তুই পানি তে নামার জন্য অনেক বাইনা ধরেছিলি তখন তোর বয়স আট সেই দিন তুই কারো কথা শুনতে চাস নি আরসাল এর ধমক এ নিজের মত পাল্টিয়ে ছিলি সেই দিন রাতে বাবা আরসাল এর হাত ধরে বলে তোকে মানুষ করার দায়িত্ব আরসাল। আরসাল বাবার কথা রাখতে তোর সাথে কঠোর হয় ভয় দেখায় মারে রাগ দেখায় যাতে তুই ভয় পাস আর সব কথা শুনিস এতো কিছুর পর ও আরসাল তোকে খুব ভালোবাসতো তবে আড়ালে। একদিন তোকে মেরেছিল বলে নিজের হাত কেঁটে আসে ও। তখনি আইরার মনে করতে তাকে ওর তখন আট বছর একটা গ্লাস ভেঙ্গে ছিলো আইরা রাগে সেই দিন আইরা কে স্কেল দিয়ে মারে আরসাল এরপর বাসা থেকে বের হয়ে যাই। সন্ধ্যা বেলায় আসে হাতে ব্যান্ডেজ বাসাই সবাই যানতে চাইলে বলে কেঁটে গেছে। আইরা বলে তার মানে আমাকে মেরেছিলো বলে আরসাল নিজের হাত কেঁটে ছিলো? আরহাম বলে হুম। এরপর থেকে আর তোর উপর আরসাল হাত তুলে নি আর তুই সেই দিন এর পর থেকে আরো বেশি ভয় পাস আরসাল কে। আরসাল এর শাসন আর আদর এর মাজে দিন দিন তুই বড়ো হতে থাকিস আর তোর প্রতি আরসাল এর ভালোবাসা বারতে থাকে। আরসাল প্রথমে ভেবেছিলো ওর বয়স কম ছিলো বলে হয়তো তোর প্রতি ছোট বেলায় আবেগ ছিলো কিন্তু যখন আরসাল এর 28 বছর তোর 14 তখন আরসাল রিয়েলাইজ করে সত্যি তুই ওর ভালোবাসা কেনো আবেগ না। আট বছর ধরে গোপনে ভালোবেসে গেছে আগলে রেখেছে। তবে আরসাল এর সাথে থাকলে তুই ভয়ে ভয়ে থাকতি। আরসাল কে আমি বলেছিলাম তুই ছোট এখন বাসার সবাই কে বলে দিতে তোকে ভালোবাসে ও বিয়ে করবে। কিন্তু ও অপেক্ষায় ছিলো তুই কবে বড়ো হবি।

এই দিখে তোর জন্মদিন 14 তম সেই দিন আগমন ঘটে আবির এর। আবির ও প্রথম দেখায় তোকে ভালোবেসে পেলে। আবির আরসাল এর মতো রাগি ছিলো না মিশুকে ছিলো আর তুই তার সাথে মিশে যাস। আবির এর সাথে তোকে দেখে প্রথমে আরসাল খুশি হতো কারন তুই হাঁসি খুশি আছিস। তবে দিন যাচ্ছে তুই আবির এর জন্য পাগল হতে শুরু করলি আগে আরসাল কে চারা কিছু বুজতি না কিন্তু আবির তিন মাসে তোর ভালো বন্ধু হয়ে যাই। এরপর কেটে যাই আরো দিন তোর বয়স তখন 15 আর আবির এর সাথে তখন তুই রিলেশন এ ছিলি। আরসাল তখন আমাকে বলেছিলো যে তোকে কালকের মাজে বিয়ে করবে তুই রাজি না হলে জোর করে করবে। তোর মনে আছে আবির তোকে প্রপোজ করে ছিলো সেই সময় আরসাল তোর জন্য তোর পছন্দের আইসক্রিম আর হলুদ গোলাপ নিয়ে গেছিলো মনের কথা বলতে আর তখনি গিয়ে দেখে তার আদরের ছোট ভাই তোকে ভালোবাসার জন্য অফার দিচ্ছে তুই ও রাজি হয়ে যাস। সেই দিন আরসাল নিজের আট বছর এর ভালোবাসা মাটি চাপা দিয়ে তোর আর আবির এর মাজ কান থেকে সরে গেছে কারন আরসাল সব সময় চাইতো তুই খুশি তাক এই টুকু বলে থামে আবির । আইরার চোখ জলে ভরে গেছে। আবির আবার বলে তোর মনে আছে তোকে প্রপোজ করার পরের দিন সকাল বেলা আরসাল লন্ডন এ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। আইরার তখন মনে পরে আরসাল লন্ডন এ যাওয়ার জন্য তারা দিচ্ছিলো তবে বাসার কেউ বুজতে পারেনি আইরার থেকে দূরে থাকার জন্য যাচ্ছে। আইরা এবার আবির কে উদ্দেশ্যে করে বলে আরসাল তো স্টাডি কমপ্লিট করতে গেছিলো।আরহাম বলে না ও তোর থেকে দুরে থাকার জন্য গেছিলো তোকে ভুলে থাকতে তবে বিশেষ লাভ হলো না ভুলতে পারলো না তোকে। তুই যানিস আরসাল খুব রাগি ছিলো কখনো ভেঙ্গে পরতো না কিন্তু সেই ছেলে প্রথম কেঁদে ছিলো যেই তুই তার আদরের ছোট ভাই কে জরিয়ে ধরে বলেছিলি ভালোবাসিস। এরপর কেটে যাই তিন বছর আরসাল ভুলতে পারে নি তোকে। যেই দিন শুনলো তোর বিয়ে ঠিক হয়েছে সাত দিন পর আবির এর সাথে বিয়ে সেই দিন আবার কেঁদে ছিলো আমার কাছে ফোন দিয়ে কিন্তু শান্তনা দেওয়ার কোনো ভাষা ছিলো না বলেই আবির একটু থেমে চোখের জল মুছে। আর আইরা তার ভাই এর খুলে শুয়ে চোখের পানি ফেলছে আর হেচকি তুলে কাঁদছে।

অরহাম আবার বলে উঠে সেই দিন আরসাল কে আবির অনেক রিকোয়েস্ট করে দেশে আসতে না হলে বিয়ে করবে না আরসাল কি করবে যতো হোক আবির কে তো সে নিজের থেকে ও বেশি ভালোবাসে তাই তোর হলুদ এর দিন আরসাল দেশে আসে। তুই যখন হলুদ সাজে বসে হাঁস ছিলি নিজের ভালোবাসাকে পাবি বলে তেমনি আরসাল কেঁদে ছিলো ভালোবাসা হারাবে বলে। বিশ্বাস কর সেই দিন ও বলেছি তোকে বলতে ভালোবাসার কথা বিয়ে হয়নি এখন ও। আরসাল না করে তোর আর আবির এর খুশির জন্য। আর কি বলে ছিলো যানিস যদি তুই আরসাল এর কপালে থাকিস তাহলে ঠিক তার হবি। পরের দিন তোর বিয়ে আরসাল কাজের বাহানা দিয়ে বেরিয়ে যাই আমি ও ওর সাথে যাই তখন ও আমাকে জরিয়ে ধরে ছোখের জল পেলেছে আফসোস আমি কিছু করতে পারি নি আমার প্রান প্রিয় বন্ধুর জন্য। হঠাৎ যখন বাসা থেকে ফোন আসে আবির বিয়ে টা ভেঙ্গে দিয়েছে আর আরসাল কে বিয়ে করতে হবে তোকে তখন আরসাল কি পরিমান খুশি হয়ে ছিলো বলে বুজাতে পারবো না তোকে তবে ওর খারাপ ও লেগে ছিলো তোর অপমান আর চোখের জল এর জন্য। সেই দিন আরসাল আমাকে জরিয়ে ধরে বলেছিলো আমার আইরা আমার হলো অবশেষে বলেই বিয়ে বাড়িতে আসে তবে কাউকে বুজতে দেই নি ও হেপি গম্ভীর ভাবে ছিলো। এখন তোর পশ্ন হয়তো এটা হতে পারে আরসাল কেনো তোর সাথে রাগা রাগি করে আর শাসন করে । কারন আরসাল চাই তুই ওকে আগের মতো ভয় পাস আর পড়া শুনা করিস ওর কথা মতো কাজ করছিস। তবে এতো কিছুর মাঝে ও তোকে খুব ভালোবাসে কখনো বলেনি তোর ভালোর জন্য # আড়ালে ভালোবেসে গেছে। আচ্ছা আইরু তুই আরসাল এর রাগ আর জেদ টাই দেখলি তোর প্রতি কেয়ার গুলো দেখলি না। ভালোবাসি মুখে বলতে হয় না আইরা। আর তুই কালকে সামান্য বিষয় নিয়ে রেগে চলে আসলি থাকে ছেরে যেই ছেলেটা তোকে নিজের জীবন এর থেকে বেশি ভালোবাসে। কালকে আরসাল এর ঝগরা হয় থানাতে আর সেই জন্য রেগে বেরিয়ে আসে আর বাসাই এসে দেখে তুই ডাইরি ধরেছিস বেস ওর রাগ উঠে গেলো আর তোকে কিছু কথা শুনিয়ে দিলো আর তুই সেই গুলো শুনে ওকে ছেরে চলে এলি একবার ও ওকে বলতে সুযোগ দিলি না।

আইরা উঠে আরহাম কে জরিয়ে ধরে বলে সরি ভাইয়া আমি বুজতে পারিনি। আর কেনো এতো দিন এই গুলো বলো নি আমাকে। আমি আরসাল এর কাছে যাবো এখনি ভাইয়া। আরহাম বলে সাত টা বাজে আইরু এখন না। আইরা জেদ ধরে বলে এখনি মানে এখনি বলেই দৌরে গাড়িতে উঠে চলে যাই খান বাড়ির উদ্দেশ্যে।
চলমান……..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে