অপূর্ণ অভিলাষ পর্ব-১৪

0
1184

গল্পঃ #অপূর্ণ_অভিলাষ (১৪ তম পর্ব)
লেখাঃ #তাজরীন_খন্দকার

আর এটাও জানে সে জিতলেই আমি আমি খুশি! তবে এতে নিশ্চয়ই অবাক হয়েছে আমি কি করে দুটো বাবুকে আলাদা করে চিনলাম!

ইয়াজ আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকাতে ভাবী আমার দিকে অন্য রকম একটা দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। সেটা বুঝে ইয়াজ ধরা না খাওয়ার জন্য তারাতাড়ি চোখ অন্যদিকে সরালো।
কিছু একটা ভেবে ইয়াজ তাড়ার স্বরে বললো,
___ওদের কানে আজান পৌঁছানো হয়েছে?

বাবা পাশ থেকে বললো,
___হ্যাঁ তুমি বাইরে চলে যাওয়ার পরে এটা মনে হতেই আমরা দুই বিয়াই এই কাজটা করেছি আলহামদুলিল্লাহ!

ইয়াজ হেসে বললো,
___আলহামদুলিল্লাহ!

সারাদিনের চিন্তা, ক্লান্তি, দৌড়াদৌড়িতে সবার অবস্থা খারাপ। ইয়াজ ভাবীর দিকে হাত বাড়িয়ে বললো,
___দুলাভাইয়ের কাছে একজনকে দাও, আর আমি একজনকে নিচ্ছি। তারপর সবাইকে খাওয়ানোর দায়িত্বটা ইথিলা নাও।

ভাবী ঠোঁটে হাসি জড়িয়ে উনার কোলে থাকা বাবুটার দিকে তাকিয়ে বললো,
___বড়মা সবাইকে খেতে দেই? তুমি একটু বাবার কাছে যাও!

ইয়াজ ভাবীর দিকে তাকিয়ে হাতটা বাড়িয়ে দিলো আর অদ্ভুতভাবে হাসলো। হাসিটা অদ্ভুত কারণ ওর চোখে জমা আছে কাতরতা আবার ঠোঁটে খুশির প্রবণতা। এদিকে ওদের দুজনের দিকে এখন একসাথে তাকালেই আমার বুকের ভেতর কম্পন উঠে, মনে হয় এখানে কেমন যেন শূন্যতা, আর অপূর্ণতার বিরাজ হতে যাচ্ছে! আবার আমার সন্তানের জন্য ভাবীর হাসিগুলো দেখলে বিশাল মুগ্ধতা আমাকে সব ভুলিয়ে দেয়।
আমার ভাইও ভাবীর খুশিতে ভীষণ খুশি!
তারপর মনে হয় আজীবন আমরা আমরাই তো থাকবো!

রাতে ইয়াজ বাদে পুরুষ যারা ছিল সবাই চলে গেলো। পরেরদিন ভাইয়া অফিস শেষ করে আসবে আর দুই বাবা সকালেই আসবে৷
এদিকে আমি সেদিন সারাদিন শুয়েই কাটালাম। ওদের দুইজনের পুরো যত্ন ভাবী আর ইয়াজ করছে। আর আমার শাশুড়ি মা আর আমার মা পান খেয়ে গল্পগুজব করে সন্ধ্যা রাতেই ঘুমে অতল।
ইয়াজ আর ভাবী সারারাত আমার কি লাগে, বাবুদের কি লাগে সেদিকেই নজরদারি করছিলেন। ইয়াজ একটু হেলান দিয়ে কিছুক্ষণ বসলেও ভাবী সেটাও করেননি, ওদেরকে একটু কান্না করার সুযোগও দেন না। ডক্টরের পরামর্শে তাদের খাবারউপযোগী গুড়ো দুধ নেওয়া হয়েছে। এমনিতে ডক্টররা এটা খুব সহজে বলেন না, কিন্তু এইখানে এটা বাধ্য হয়েই নিতে হবে, প্রথমত আল্লাহর দেওয়া প্রকৃতিপ্রদত্ত খাবার ব্যবস্থা গ্রহিত হতে আরো সময় নিবে, তারউপর দুইজন। চাহিদা বেশি!
পরবর্তীতে দরকার হবে বলে, তাই প্রথম থেকে খিদেয় কষ্ট না করিয়ে ডক্টর তাদের কৃত্রিমখাবার অল্প অল্প করে খাওয়ানো শুরু করে দিতে বলেছে।

এগুলো সব ভাবী একা সামলাচ্ছে । আমার সারারাতে যতবার ঘুম ভেঙেছে বারবার শুধু দেখছিলাম ভাবী তাদেরকে কতো পরম মমতা দিয়ে যত্ন করছেন!
ইয়াজও তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে আর আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসে!

তিনদিন পরেই ডক্টর বললো আমরা এখন বাসায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত! সিজারের পরেরদিন থেকে আমি ওদেরকে অল্প অল্প করে কোলে নেওয়ার চেষ্টা করলেও বেশিক্ষণ রাখতে পারিনি। একটু একটু হাঁটাচলাও পারি এখন। ইয়াজও দেখলো আমার কন্ডিশন অনেকটাই ভালো তাই সে ডক্টরের কথা অনুযায়ী বাসায় নিয়ে আসলো।

বাসায় যাওয়ার পরে সবার তাড়া নাম ঠিক করা নিয়ে। এদিকে আমার শ্বশুরবাবা-মা আর আমার বাবা-মা বলে দিয়েছে বাচ্চাদের বাবা- মা আর তাদের বড়মা মিলে তাদের নাম ঠিক করুক।
কিন্তু আমি এই দায়িত্ব ইয়াজ আর ভাবীর উপর ছেড়ে দিয়েছি।

পরেরদিন ইয়াজ আর ইথিলা ভাবী বসেছে নাম ঠিক করার জন্য। দুজন অনেক্ষণ বসে শেষ পর্যন্ত দুইজন দুইজনের নাম নিয়ে আসলো। ভাবী এসেই একজনকে কোলে নিয়ে বললো,
___ওদের এমন দুইটা নাম রাখা হবে, যার একজনের সাথে বিন্দিয়ার প্রথম শব্দের মিল থাকবে, আরেকজনের সাথে ইয়াজের। তবে এদুটোতে আমি এবং আমার হাসবেন্ডও আছে! কারণ ইয়াজ আর ইথিলা এক অক্ষরে, বাদল আর বিন্দিয়া এক অক্ষরে! এছাড়াও দুটো নামের শেষভাগেও থাকবে ওদের বাবার নামের সাথে মিল।

আমি উৎসুক হয়ে বললাম,
___কি কি হতে পারে সেটা!?

ইয়াজ আগে আগেই বললো,
___ সে দুটো নাম হলো, বিরাজ আর ইরাজ। সুন্দর না?

আমি কিছু ভেবে বললাম,
___বিরাজ বিন্দিয়ার সাথে ঠিক আছে, কিন্তু ইরাজ তো ইয়াজের সাথে বেশি মিল, এমন না হয়ে যায় বাবাকে ডাকলে ছেলে জবাব দেয়!

ভাবী আর ইয়াজ দুজনেই হেসে উঠলো। ইয়াজ বললো,
___আমার নাম তো আর ইয়াজ না, ইমতিয়াজ। সেটা থেকে ইয়াজ আসছে। পুরো নাম ডাকতে মানুষের নাকি কষ্ট হয়। তবে তুমি বললে ইমতিয়াজ থেকে আনা ইয়াজ বাদ দিয়ে দিবো এরপর যে দুটো অক্ষর আছে সেটা ডাকতে বলবো।

আমি নামটা খেয়াল করে বললাম,
___ তার মানে মতি? ইমতিয়াজ থেকে ইয়াজ বাদ দিল তো মতি থাকে। অঅঅ আপনি ইয়াজ বাদ দিয়ে সবাইকে মতি ডাকতে বলবেন?

বলেই আমি চোখ বন্ধ হাসতে শুরু করে দিলাম। ভাবী আমার চেয়েও বেশি হাসছে। মধ্যখানে ইয়াজ চুপ করে ভেবাচেকা খেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তবে হাসানোর জন্য ইচ্ছে করে বলেছে সেটা আমরা দুজনেই জানি। তবুও হাসতে ভালো লাগছে!

আমাদের হাসি শেষ হওয়ার পরে ইয়াজ বললো,
___ হাসি শেষ হলে আমার কথা শুনো। নাম এটাই চূড়ান্ত। ওদের আকিকার সাথে নাম রেখে ফেলা হবে। কি বলো তুমি?

আমি মাথা নেড়ে বললাম,
___সবাই যা ভালো মনে করে। তবে কার নাম ইরাজ হবে আর কার নাম বিরাজ হবে সেটা নির্ধারণ করো। তারপর না চিনলে দেখা যাবে নাম অদলবদল হয়ে গেছে।

ভাবী ঘুমিয়ে থাকা দুজন থেকে একজনকে প্রথম চুমু খেয়ে বললেন,
___সে বিরাজ, আর ও ইরাজ! তুমি তো মা, মনে রেখো কাকে বিরাজ বলেছি এখন।

তারপর ভাবী ইয়াজের দিকে তাকিয়ে বললো,
___তুমিও মনে রেখো কিন্তু।

ইয়াজ থতমত করতে লাগলো। তারপর হ্যাঁ সম্মতি দিলো। কিন্তু ইয়াজের দিকে তাকিয়ে আমি বুঝেছি সে ওদের দুজনকে উলটপালট করলেই কার নাম কি বলেছিলো ভুলে যাবে।
তবে ভাবীর মনে থাকবে। কারণ এই যাবৎ উনি ওদের মধ্যে কার গালে কয়টা শিরা আছে সেটাও গননা করে ফেলেছেন। এতটাই কাছেকাছে থাকেন। রাতেও ভাবী এখন আমার সাথে থাকে, ইয়াজ ওদের খাওয়ানোর ব্যপারে কিছু বুঝেনা! শুধু একপাশের বিছানায় শুয়ে থাকে, কিছু করতে বললে সাথে সাথে করে। এইইই যা!

দুইদিন পরে ইরাজ বিরাজের আকিকা হলো। অনেক মানুষকেই নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। আমি কারো সামনে ছিলাম না। ইয়াজও ভীষণ ব্যস্ত। এদিকে বাদল ভাই আর ইথিলা ভাবীর কোলে যারাই বাচ্চা দেখতে আসছে সবাই বলে উঠে, আরে আপনাদের বাচ্চা!ওরা তো পুরো আপনাদের দুজনের চেহেরায় হবে। আবার যারা আমাকে দেখেছে তারা বলে, আরেনা ওরা ওদের বাবা ইয়াজের মতো হয়েছে, আর তাদের মা তো ইথিলার স্বামীর বোন। তাই দুই পরিবারের সাথেই ভীষণ মিল আছে বাচ্চা দুটোর। সেদিনের পরে এসব বিষয় রটনা হয়ে গিয়েছিলো, সবাই এটা শুনে অবাক হতো আর দেখতে আসতো।
অনেকে বলে ফেলতো, জমজ হয়েছে সমস্যা নাই, একটা বাচ্চা ইথিলা নিলে সে তার মা এটা বিশ্বাস করাতে কঠিন হবেনা।
কেন জানি এসব শুনে আমার বুকে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করতাম। আর আমার ভয়টা আরো বেশি তীব্রতর হতো। যদিও ইয়াজ এখনো বাচ্চা দেওয়ার কথা তুলেনি, তাও আমার ভাবতেই ভয়ে গলা শুকিয়ে আসতো।


বাচ্চাদের একমাস যখন পূর্ণ হলো, তারা একটু একটু হাসতে শুরু করেছে।
এখন আমিও ওদের যত্ন করতে পারি। খাওয়াই,গোসল করাই। তবে একজনকে ভাবী করাবে। দুজনকে একসাথে দেয়না। ভাইয়া বাড়ি যাওয়ার কথা উচ্চারণই করতে পারে না, ভাবী কান্না জুড়ে বসে। বলে ইরাজ বিরাজকে ছাড়া উনি এক মূহুর্ত থাকতে পারবেন না। এদিকে ইয়াজ এক বাচ্চা নেওয়ার কথাও বলতে পারেনা, কারণ সে জানে তাহলে সে নিজেও অপূর্ণতায় রূপান্তর হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে ওদের গালে চুমু না দিয়ে ইয়াজ ফ্রেশ হতেও যায়না। ওদের হাসি না দেখে অফিসে যেতে পারে না। দুজনের একজন ঘুমিয়ে থাকলে বসে অপেক্ষা করে কখন উঠবে অন্যজন উঠবে আর ওর কথার সাথে দাঁত ছাড়া কোমল হাসি হাসবে! আর সেটা দেখে সে তৃপ্ত হয়ে নিজের কাজে যাবে! এমন করতে গিয়ে ওর প্রায়ই দেরি হয়, তার জন্য সমস্যার সম্মুখীনও হয়, তাও সে অপেক্ষা করে।

দেখতে দেখতে দুইমাস হয়ে গেলো। আমার বাবার শরীরটা অল্প খারাপ। ভাইয়া ভাবীকে চলে যেতে তাড়া করছে। কিন্তু ভাবী কোনো কথা শুনেনা। উনি একদিনও ওদের ছাড়া কল্পনা করতে পারেননা। ওরা এখন কথা বললে আ আ ও ও বলে, অস্পষ্ট বুলি বলে। ভাবী সারাক্ষণ এগুলো শুনতে কাতর হয়ে থাকেন। ওরা ঘুমিয়ে গেলে চুপ করে পাশে শুয়ে থাকেন আর ওদের দিকে তাকিয়ে থাকেন। একদিকে আমি থাকি অন্যদিকে ভাবী আর মধ্যে ওরা দুজন। রাতের বেলা একজনকে উনার সাথে নিয়ে যান, আরেকজনকে আমার কাছে দিয়ে যান।
ভাবীর সতেজ নিঃশ্বাস নিতেও ওদের প্রয়োজন! নইলে যেন সেটাও পারেন না।

দিন যাওয়ার সাথে সাথে ওদের চেহেরা স্পষ্ট হচ্ছে, বাবা আর বড়মার মতো চেহেরা আবার ফর্সা গায়ের রঙ, আর কান্না করলে একদম লাল! কিছু একটা করতে না পারলে এখনি ওরা রাগ দেখায়, আর রাগলে মনে হয় তাদের বাবার হুবহু কপি। ভাবী বলে ওরা দুজনেই ওদের বাবার রাগ পেয়ে বসেছে, বড়মার মতো একজনও শান্ত হয়নি।

কিন্তু ইয়াজ এটা নিয়ে বেশি খুশি, সে বলে রাগ হলেই ভালো! এমনকি গলা ছেড়ে সবাইকে বলে বেড়ায় আমার ছেলে আমার মতো হবে, রাগী,তেজী,প্রতিবাদী আর ভালো মানুষ।
মাঝে মাঝে কেউ ওর এসব কথায় হেসে বলে তোর মাইরের দাগ এই এলাকার অর্ধেক ছেলেদের পিঠে আছে, তোর দুই ছেলে একসাথে বড় হলে আর অর্ধেক না সবার পিঠে দাগ বসাবে। ইয়াজ এতে রাগ করেনা উল্টো হাসতে হাসতে কাত হয়ে যায়।

ওদের তিনমাস হওয়ার পর পরেই আমার বাবার শরীরের অবস্থা আবার খারাপ হলো। ভাবী ওদেরকে রেখে যাবেনা বায়না ধরেছে। তারপর আমরা সবাই-ই একসাথে গেলাম। যাওয়ার পরে ভাইয়া ভাবীকে অনুরোধ করতে লাগলো থাকতে! কিন্তু ভাবী মানেনা। আমার আম্মাও বলে থাক সে যখন বাবুদের ছাড়া থাকতে পারছেনা তাহলে থাকুক ওদের সাথে, আমি সব ম্যনেজ করে নিবো। কিন্তু ইয়াজ বুঝতে পারলো আসলে ভাবী আমার মা-বাবার সাথে থাকাটা এখন দরকার।
তবে এটাও বুঝতে পারছে উনি ইরাজ বিরাজকে ছাড়া পাগল হয়ে যাবেন।

সেদিনই ইয়াজ ভীষণ ভীত চেহেরায় ইরাজকে কোলে নিয়ে আমার কাছে আসলো। পাশেই ভাবী বিরাজকে নিয়ে খেলা করছে।
এসে আমাকে বললো,
___বিন্দিয়া মনে আছে ওরা পৃথিবীতে আসার একদিন আগে আমি তোমার কাছে একটা জিনিস চেয়েছিলাম? আমার জন্য তুমি চোখ বন্ধ রাজী হয়েছিলে। কিন্তু এরপর আমি ওদের বাবা সেটা মনে করার সাহসই পাইনি। আমার মনে হয় আমিই এক মূহুর্ত ওদের দুজনকে একসাথে না দেখে থাকতে পারবোনা। আর তুমি তো ওদের মা!
কিন্তু দেখো, আমার বোন ওদের ছাড়া নিজের কথা এখন ভাবতেই পারেনা। আমি দুদিকের এই কঠিন সিদ্ধান্তে ভীষণ ভয়নক অবস্থায় আছি। কিছু বলার সাহস ধারণ করতে পারছিনা।

আমি ইরাজের দিকে তাকিয়ে কেঁদে ফেললাম। ওর কোল থেকে ইরাজকে নিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
___ না না এ কথা বলবেন না। আমি ওদের একজনকে ছাড়াও পাগল হয়ে যাবো!

ভাবী পাশ থেকে এবার আমাদের দিকে খেয়াল করে বললেন,
___বিন্দিয়া পাগল হয়ে যাবে বলছে কেন? কি হয়েছে? (এতক্ষণ বাবুর সাথে খেলায় মনোযোগ দিয়ে এদিকে খেয়াল করেন নি)

ইয়াজ এবার উনার একটু কাছে গিয়ে আস্তে আস্তে বললো,
___ইথিলা আমি জানি তুমি চাইলেই কোনো অনাথ সন্তানকে এনে লালনপালন করতে পারো। কিন্তু ইরাজ বিরাজের মায়া কমাতে পারবেনা। তুমি তাদেরকে আমাদের মতোই ভালোবাসো। ওদের ছাড়া তুমি ভালো থাকবেনা। আমি বিন্দিয়াকে বলেছিলাম সে যেন তোমাকে আমাদের দুই সন্তান থেকে এক সন্তানকে দিয়ে দেয়!

ইথিলা ভাবী বিরাজকে কোলে তুলে কান্না করে দিলেন। বিরাজের চোখেমুখে চুমু খেলেন আর ওর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,
___ না ইয়াজ, তুমি এটা বলোনা। এতে বিন্দিয়া মরে যাবে! আর আমিও এতটা নির্দয় হতে পারবোনা। আমি এই কয়মাস মাতৃত্বের টান কি জিনিস জেনেছি, মা কখনোই তার সন্তান দিতে পারবেনা! মা কেন তুমি বাবাও সেটা পারবেনা। বলো তুমি একজনকে ছেড়ে ভালো থাকতে পারবে?

আমি ওদের মধ্যে এসে কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম,
___ভাবী তুমি তাহলে কি করে ওদের ছাড়া থাকতে পারবে?

ভাবী কান্নার মধ্যেও মুচকি হাসির চেষ্টা করে বললো,
___যে এমনি অপূর্ণ তার এসব অভিলাষ করার কি মানে বলো?

চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে