Friday, August 15, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2450



হঠাৎ_পাওয়া_পর্ব_৩

0

হঠাৎ_পাওয়া
পর্ব_৩
Written by Avantika Anh
বাড়ি ফিরার আগ অব্দি অর্নব আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছিলো কিন্তু অভি ভাইয়া আর বাকীরা পাশে ছিলো বলে পারে নি ।
.
.
গাড়িতে সবাই আসার সময়ের মতো বসলাম ।
রাজ- ওই তোর কি কিছু হইছে ?
আমি- না তো
রাজ- সত্যি বল
অভি- আরে কিছু হয় নি (কথা ঘুড়াতে)
রাজ- বাহ আমাগো থেইকা বেশি ওরে চিন্তাছোস দেখতাছি ।
আমি- ভাইয়া আমার একটা নিউ বান্ধবী হইছে নাম নিলা নাম সুন্দর না নামটা (রাজ ভাইয়ার গফ নিলা)
রাজ- না না আমার বইন তো খুব ভালো ও কখনোই এসব করবে না
আমি- হুমম থেংকু ভাইয়া
.
.
কিছু সময় পর……
আমি- ভাইয়া বিয়া কর না বিয়া খাইতে মন চাইতাছে ।
রাজ- এই না আপুর বিয়া খাইলি আবার কেমনে
আমি- এবার তোর টা খামু চাকরিও তো করস বিয়াটাও কর
রাজ- না এখনি করুম না তুই কর
আমি- হুহ না
রাজ- হেহে মামা রে কমু তোর বিয়া করার ইচ্ছা হইছে
আমি- মাইরালামু
রাজ- কাইট্টালামু
অভি- তোমরা এতো ঝগড়া করো কেনো ?
রাজ- এই মোটিই ঝগড়াটে
আমি- আমি মোটি তুই‌ মোটা হাতি
রাজ- এ্যা হইছে অভি তুই বল তো আনহা মোটা কি না ?
অভি- ইয়ে আনহা তো পাতলা
আমি- থেংকু অভি ভাইয়া লাভ ইউ ফর দিস
অভি- কিইইইইই
আমি- কি বেশি না আমি সবাই কেই বলি
রাজ- হেহে অভির মনে মনে লাড্ডু ফুটছিলো মনে হয়
আমি- কি কস সত্যি অভি ভাইয়া ?
অভি- না না
.
.
এভাবে আড্ডা চলতে থাকলো ।
.
বাড়ি ফিরে নিজের উপরই রাগ উঠছিলো “আমি এক সময় এমন একজনকে ভালোবেসেছি যে এরকম মানসিকতার” । এই সব ভাবছিলাম
.
সকালে কলেজের জন্য বের হচ্ছিলাম । বাইরে দেখি অর্নব দাড়ায় রাগ উঠে গেলো । তাই আবার বাড়ির ভিতরে ঢুকলাম । তারপর পিছনের গেট দিয়ে বের হয়ে গেলাম ।
.
আমি ভাবছি, ” এর কি ভিমরতি ধরলো? “
.
“এখন উল্টা রাস্তা দিয়া যাওয়া লাগবো । এতো ঘুরা রাস্তা।”
.
.
আমি যাচ্ছি । রাস্তা টা একটু ফাঁকা । দেখি সামনে অনেক গুলো কুকুর । আমি ভয়ে শেষ ।
.
দাড়ায় আছি কুকুর গুলো যাওয়ার অপেক্ষা করছি । হঠাৎ কে জানি পিছন থেকে ডাক দিলো । পিছনে তাকিয়ে দেখি অভি ভাইয়া ।
.
অভি- তুমি এখানে যে ?
আমি- কলেজ যাচ্ছি
অভি- কোন কলেজ
আমি- …………… কলেজ
অভি- এই রাস্তা দিয়ে তো বেশি দূর অন্য রাস্তা দিয়ে যেতে ।
আমি- ওই রাস্তায় অর্নব ছিলো । ওই হালার কি যে হইছে খালি এখন আমার পিছনে লাগছে । এই ওই পোলার জন্য আমাকে এতো ঘুরে ঘুরে যেতে হচ্ছে । তার উপর এই বান্দর মার্কা কুকুর গুলো সরে না ।
অভি- হাহা এটা তো খুব প্যারা মূলক ব্যাপার ।
আমি- আপনি কই যাচ্ছেন?
অভি- অফিস
আমি- ও জ্বলদি পালান । আমি অপেক্ষা করি এই বান্দর গুলো থুক্কু কুকুর গুলো যাওয়ার ।
অভি- আমি হেল্প করতে পারি ?
আমি- আপনার দেরি হবে থাক‌
অভি- না অফিস শুরু হতে দেরি আছে । আমি রোজ ৩০ মিনিট আগে যাই ।
আমি- উকে চলেন
.
অভি ভাইয়া হেল্প করলো । কলেজে….
মিমি রে গেটেই পাইলাম ।
.
মিমি- ছেলেটা কে রে ? হ্যান্ডসাম তো
আমি- রাজ ভাইয়ার ফ্রেন্ড
মিমি- দোস্ত তোর সাথে সেই মানাবে ।
আমি- যা ভাগ তুই ই নে
মিমি- আমার বফ টা না থাকলে আমিই নিতাম । তোর তো নাই তুই নে ।
আমি- প্রেম ভালোবাসা ভালো না
মিমি- হুহ ওই অর্নব হালাটা কই থেইকা যে আইছিলো । ওর জন্য আমার রোমান্টিক দোস্ত টা আনরোমান্টিক হয়ে গেছে ।
আমি- কে কইছে আমি আনরোমান্টিক ? আমি অনেক রোমান্টিক বাট সব শুধু আমার বরের জন্য
মিমি- বাহ বাহ কিয়া বাত
আমি- দোস্ত
মিমি- কি
আমি- অর্নব আবার পিছে পড়ছে । জান্নাত হেরে ছেকা দিছে এই জন্য বিয়ে বাড়িতে…………(সব বললাম)
মিমি- কই ওই পোলা ওরে তো মাইরা ফালাম
আমি- হ মার
মিমি- ওই হারামি আমি জেলে যামু তো
আমি- মোর লাইগা এইটুকু পারবি না?
মিমি- কালামেইল
আমি- হ চল ক্লাসে দেরি হচ্ছে ।
মিমি- চল
.
ক্লাসে…..
রুম ফাঁকা
আমি- আজ কি ছুটি ছিলো ?
মিমি- মনে তো পড়ছে না । মনে হয় ছিলো নইলে এতো ফাঁকা কেনো ?
আমি- চল বাড়ি যাই
মিমি- চল
.
হঠাৎ উপর থেকে ফুল পড়তে শুরু হলো ।
আমি- দোস্ত পালা
মিমি- কেন মজাই তো লাগছে
আমি- তুই থাক আমি পালাই ।
.
দরজার দিকে যেতেই সিনিয়র একটা ভাইয়া ।
.
আমি- ভাইয়া সাইড দেন আমি যাই ।
ভাইয়া- দাড়াও আনহা
আমি- কেনো আমাদের আজ মনে হয় ছুটি নাহয় কেউ একজন তার ক্রাশ কে প্রপোজ করবো ।দেখেন না এসব
ভাইয়া- এসব তোমার জন্য
আমি- এ্যা
ভাইয়া- আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি । সেই কলেজের প্রথম থেকে
আমি- সরি ভাইয়া
ভাইয়া- কি কমতি আমার মাঝে ?
আমি- আমি প্রেম ভালোবাসায় বিশ্বাস করি না ।
ভাইয়া- আমি বিয়ে করবো শুধু রাজি হও
আমি- না সম্ভব না সরি ।
.
বলে সেদিনের জন্য চলে গেলাম বাড়ি ।
.
পরেরদিন…..
অর্নব আজ আর দাড়িয়ে নেই । তাই ঠিক মতো কলেজে গেলাম । ওই ভাইয়াটাও আর বিরক্ত করে নি ।
.
দিন পার হতে লাগলো । আমার এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হলো । তারপর শুরু হলো এডমিশনের কষ্ট । এই কয়েকদিন অর্নব অনেকবার কথা বলার চেষ্টা করছে কিন্তু আমি এড়িয়ে গেছি ।
.
ভার্সিটি তে এক্সাম হলো । একটা ভালো ভার্সিটিতেই চান্স হলো ।
.
কিছুদিন পর শুরু হলো আরেক প্যারা । আম্মু , আব্বুসহ পরিবারের সবার ই বিয়ের ভুত ধরলো । তারা বিয়ে করবে না তাদের ভুত ধরছে আমার বিয়া দেওয়ার ।
.
আজ নাকি পাত্র পক্ষ দেখতে আসবে । আজ একটা এটা পছন্দ না হলে কাল আরেকটা আসবে নাকি । আজব ব্যাপার
.
পাত্র টা আর কেউ না অভি ভাইয়া ।
আমাদের একান্তে পাঠানো হলো ।
আমি- আপনি ??????
অভি- ইয়ে মানে
আমি- আমি শকড
অভি- তোমাকে বলছিলাম তোমাকে ভালো লাগে । তারপর তোমার সাথে এই ক’দিন অনেক কথাই হলো । তাই মনে হলো তুমিই পার্ফেক্ট
আমি- কিন্তু আমি কখনো এভাবে তো ভাবি নি ।
অভি- একজন নাহয় একজনকে তো বিয়ে করবাই তা আমি হলে দোষ কি ?
আমি- তা ঠিক
অভি- তোমার টাইম লাগলে ভাবতে পারো । চিন্তা করো না অনেক ভালোবাসবো ।
.
.
আমি কিছু বললাম না । আম্মু আব্বুর নাকি পাত্র খুব ভালো লেগেছে । রাজ ভাইয়ার ফ্রেন্ড তাই তারা বেশি রাজি । আমিও না করলাম না তাই । বিয়ে ঠিক হয়ে গেলো ।
.
পরে শুনলাম পরেরদিন যেই পাত্র টি আসার কথা ছিলো সে নাকি অর্নব । রাতে অর্নবের মেসেজ পেলাম ।
অর্নব- তুমি কেনো এমন করলে?
আমি- কোনো জবাব দিলাম না ।
.
রাতে অভি ফোন দিলো…
আমি- হুম অভি ভাইয়া বলেন
অভি- এখন তো ভাইয়া বলা ছেড়ে দাও বিয়েও তো ফিক্স
আমি- হোক আগে তারপর
অভি- বান্দর একটা তুমি
আমি- হিহি আপনি তাইলে বান্দরের হবু বর
অভি- হুম তো
আমি- আমি ঘুমাম কাল ভার্সিটি আছে ।
অভি- কাল আমার সাথে যেও কয়টায় যাবা
আমি- ৮:৩০ এ বের হবো
অভি- ওকে
.
.
সকালে…..
অভি গাড়ি নিয়ে এসেছে ।
.
.
অভি- উঠো
আমি- না
অভি- কেনো
আমি- হেটে যাবো । হাটা স্বাস্থের জন্য ভালো ।
অভি- চলো আমিও হাটি ।
আমি- ওকে ।
.
.
আমি আর অভি হাটছিলাম ।
.
দুজনেই চুপচাপ । কিন্তু এই নিস্তব্ধতা ভাঙলো । কারণ সামনে অর্নব দাড়িয়ে ছিলো ।
.
চলবে……

হঠাৎ_পাওয়া_পর্ব_2

0

হঠাৎ_পাওয়া
পর্ব___2
Written by Avantika Anh
রাতে বাড়িতে বসে ভাবছি অর্নবের কথা । “ও কি সত্যি বদলে গেছে ? নাকি শুধুই তার লাভের জন্য আবার আমাকে প্রপোজ করছে । না আমি আবার ওই ভুল করতে চাই না ” ঘুমিয়ে পড়লাম । সকালে সবাই হইচই আজ কাজিনের শ্বশুরবাড়িতে আমাদের দাওয়াত ।
.
.
আমি যেতে চাচ্ছিলাম না কারণ ওখানে গেলে অর্নবের সাথে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে আর আমি তা চাই না । তবুও সবার জোড়ে রেডি হলাম । কি ড্রেশ পড়বো তা জিজ্ঞেস করতে রিয়ার (আরেকটা কাজিন) রুমে গেলাম ।
.
কিন্তু সেখানে রিয়া ছিলো না । তাই ভাবলাম পাশে রাজ ভাইয়ার রুম তার কাছেই সাজেশন নেই সাদা গাউন টা পড়বো নাকি ছাঁই রঙ্গের গাউন ।
.
না দেখেই বলতে বলতে ঢুকলাম “রাজ ভাই বল তো কোনটা পড়বো?”
.
কিন্তু ভিতরে ঢুকে দেখলাম রাজ ভাইয়া নাই বরং অভি ভাইয়া আছে ।
আমি- সরি আমি ভাবলাম রাজ ভাইয়া ভিতরে আছে ।
অভি- না ব্যাপার না
.
আমি চলে আসছিলাম পিছনে অভি ভাইয়া ডাক দিলো ।
অভি- আনহা
আমি- জ্বী
অভি- ছাঁই কালার টাই বেটার আছে
আমি- থেংকু আমারও এটাই মনে হয়েছিলো ।
অভি- আচ্ছা
.
.
রেডি হলাম । সব কাজিন রা যাচ্ছি সাথে অভি ভাইয়াকেও রাজ ভাইয়া নিয়ে যাচ্ছে ।
.
আমরা মোট ৭ জন কাজিন যাচ্ছি । সবার জায়গা আটলো না কারে তাই আমি , রাজ ভাইয়া আর অভি ভাইয়া , সাথে আরেক আপু আমরা অন্য গাড়িতে উঠলাম ।
আমি- আমি সামনের সিটে বসবো কারণ এটার গ্লাস আমি খুলে রাখবো কিছুটা ।
রাজ- আচ্ছা বস কিন্তু ড্রাইভ কে করবে ? ড্রাইভার আংকেল তো ছুটিতে ।
আমি- তুই কর
রাজ- এ্যা সবসময় আমাকে করতে হবে কেনো ?
আমি- আমি কি পারি যে আমি চালাবো নাকি আয়শা আপু পারে বাকী তো তুই । তুই তো ড্রাইভ পারিসও তাই তুই চালা ।
রাজ- কেনো অভিও তো যাচ্ছে ও চালাক
অভি- আচ্ছা আমি চালাবো
আমি- ওই অভি ভাইয়া কেন তুই চালা ।
অভি- না ব্যাপার না আমিই চালাই
আমি- ইচ্ছা ।
.
গাড়িতে…..
সবাই গল্প করছি
.
রাজ- এই তিন্নি আপু এতো দূরে বিয়ে করলো কেন ? রাস্তাই শেষ হয় না
আয়শা- চল গানের কলি খেলি
রাজ- চল চল
আমি- গাড়িতে গানের কলি ???
আয়শা- হুম মজা হবে রাজ শুরু কর স দিয়ে গান কর
.
রাজ- ওই টিম হোক তাহলে
আমি- টিম ওকে আমি আর আয়শা আপু । তুই আর অভি ভাইয়া
রাজ- আমরা ছেলেরা একা ?
আমি- হু
রাজ- না আমি আর আয়শা আপু । তুই আর অভি হ টিম
আমি- ওকে আমরা হারিয়েই ছাড়বো তোমাগো তাই না অভি ভাইয়া।
অভি- হুম
.
আমি- রাজ ভাইয়া র দিয়া ক তুই
রাজ- র দাড়া ।
“রিমঝিম ধারাতে চায় মন হারাতে”
আমি- ওই ওই ভুল গাচ্ছিস ওটার সামনে স আছে অন্য গা
আয়শা- আমি বলছি
“রংধনু রং স্বপ্ন আঁকে…..”
এবার তোরা গা প দিয়া ।
আমি- “পেয়ার মাংগা হে তুমহিছে হি মুঝে পেয়ার কারো….”
.
এভাবে গেম চলতে থাকলো….
লাস্ট গানের বেলায় ।
আমরা ওদের ক্ষ দিয়া গাইতে বললাম কিন্তু ওরা পারলো না ওইবার অভি ভাইয়া একটা গান বললো তাতে আমরা জিতে গেলাম ।
.
আমি- থেংকু অভি ভাইয়া আমরা জিতছি
অভি- তুমি ভালো গান পারো
আমি- আরে না
অভি- রেলি
আমি- হাহা
ওই রাজ ভাইয়া আইসক্রিম খাওয়া এবার সবাই কে
রাজ- কেনো ?
আমি- হেরে গেছিস তাই
রাজ- ইইইই আমার পকেট খালি করা
আমি- হ
.
তারপর গাড়ি পার্ক করা হলো আর আমরা আইসক্রিম খেলাম ।
.
অভি- আনহা তুমি বিড়াল
আমি- কেমনে
অভি- মুখের উপরেও আইসক্রিম লাগিয়ে রাখছো
আমি- ইইই কই
অভি- ওখানে
.
আমি মুছে ফেললাম ।
আমি- থেংকু ।
.
ওখানে পৌঁছালাম কিছু সময় পর । যার চেহারা দেখার ইচ্ছে ছিলো না সে-ই চোখে পড়লো । অর্নব ওখানেই ছিলো । আমার পাশ দিয়ে যাওয়ার ভান করে বললো “তোমারি অপেক্ষা করছিলাম”
.
.
খাওয়ার টেবিলে….
.
আমার পায়ে কে জানি গুতা দিচ্ছে আমি নিচের দিকে তাকাতে দেখি অর্নব । আমার অস্বস্তি লাগতেছিলো ।
.
আমি- অর্নব ভাইয়া আপনার পা টা সরিয়ে নিন
অর্নব- সরি ভুলে আপনার পায়ের সাথে লাগছে ।
আমি- একটু সাবধান থাকিয়েন আমার ড্রেসে দাগ লাগতে পারে (যেনো কেউ খারাপ কিছু না ভাবে)
.
খাওয়া শেষে রাজ ভাইয়া আর আয়শা আপু আমাকে জিজ্ঞেস করলো “সিরিয়াসলি কিছু হইছে নাকি?”
আমি- না কিছু না
রাজ- সিওর বেশি জ্বালাইলে বল সোজা করে দিবো
আমি- না কিছু না
.
.
পরে আমি কি করতে বাইরে গেলাম ।
অর্নব- এভাবে করলে কেনো ?
আমি- আপনি আমাকে টাচ করছেন কেনো?
অর্নব- কেনো প্রব্লেম কই আমি তো তোমাকে বারবার বলছি রাজি হও না কেনো ?
আমি- দেখুন আমি আগেও টাচ করা পছন্দ করতাম না তাই আপনার হাত অব্দি ধরি নাই এখন আরো করি না ।
অর্নব- এই জন্য রাগ হয় । এই যুগের হয়ে তোমার মাঝে এতো গ্রাম্য স্বভাব এমনি ছেড়ে গেছিলাম ।
আমি- আমি কি আপনাকে ফিরিয়ে নিছি ? আমি এমনি আর এ নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না
অর্নব- দুররর ইয়ার বুঝার চেষ্টা করো কাধে হাত দিয়ে
.
আমি জোড় করে সরিয়ে নিলাম ।
আমি- hey you listen don’t you dare to touch me i don’t like these kind of behaviour
অর্নব- প্লিজ
আমি- এসব টাচ আপনার জান্নাতের ভালো লাগতে পারে আমার না ওকে দূরে থাকুন আমার থেকে
.
আর কোনো কথা না শুনেই চলে আসলাম….
.
পিছনে দেখি অভি ভাইয়া দাড়িয়ে ।
.
অভি- আনহা
আমি- জ্বী
অভি- তোমার এক্স বিএফ কি এই অর্নব ?
আমি- হুম আপনি কিভাবে জানলেন ?
অভি- রাজ বলছিলো তুমি একজন কে ভালোবেসেছিলে সে নাকি তোমাকে ছেড়ে গেছে । তার উপর অর্নব এর ব্যবহার এতেই বুঝলাম ।
আমি- আমার না ওকে দেখলে ঘৃণা হয় । ওর প্রতি কোনো ফিলিং নাই আর তারপরেও ও কেমন ব্যবহার করছে ভিলেন ভিলেন টাইপ আমার একদম ভালো লাগছে না ।
অভি- হুম তোমাদের কথায় বুঝলাম । আমি কি ওকে থ্রেট দিবো ?
আমি- না থাক ওর মতো মানুষের সাথে কথা না বলাই ভালো
অভি- আচ্ছা এক কাজ করো তুমি যতক্ষন এখানে আছো একা থেকো না তাহলেই হবে
আমি- আচ্ছা
অভি- তা ম্যাডাম আপনি কি করছিলেন এখানে ?
আমি- ওইটাকে দেখছিলাম (হাত দিয়ে দেখিয়ে)
অভি- বিড়াল ?
আমি- হুম
অভি- বিড়াল ভালোবাসো ?
আমি- হুম বিল্লি ভালো লাগে
অভি- বাহ
.
.
চলবে…….

হঠাৎ_পাওয়া পর্ব_১

1

হঠাৎ_পাওয়া
পর্ব_১
Written by Avantika Anh
.
মা- তুই রেডি হস নি কেনো?
আমি- যাওয়ার ইচ্ছে করছে না
মা- কোনো কথা না তৈরি হয়ে নে
আমি- আচ্ছা
.
আশেপাশে সবাই আনন্দে মেতে কেনোই থাকবে না বিয়ে বাড়ি বলে কথা । আজ আমার এক কাজিনের বিয়ে । আসতেই হবে বলে আসা । আমি বাড়ির বাইরে খুব একটা আসা হয় না । বিয়ে বাড়ি বলে আম্মু কিছু টা জোড় করেই সাজিয়ে দিলো । নীল শাড়ি পড়েছি । এক সময় এই সব সাজা গোজা , শাড়ি পড়া টা অনেক শখের ছিলো । অর্নবের সাথে রিলেশনে থাকাকালে কতোই না স্বপ্ন বুনতাম । তার পছন্দমতো সাজা সব টাই ছিলো প্রতিদিনের কাজ । সে সব ভেঙ্গে যেদিন অন্য একজনের হাত ধরে গেলো সেদিন আমি কাঁদি নি । যারা জানতো রিলেশনের কথা তারা কিছুটা অবাক হয়েছিলো হবে নাই বা কেনো যে মেয়ে একটু তেই কেঁদে ফেলে সে কাঁদছে না কেনো । সেদিন অর্নবের সামনে খুব কেঁদেছিলাম কিন্তু আমার চোখের পানির চেয়ে তার কাছে একটা স্মার্ট এবং সুন্দর মেয়েকে ভালোবাসা বড় ছিলো ।
.
সেদিন বড্ড অবাক হয়েছিলাম যে অর্নব বলতো “আমার চোখের পানি তার সহ্য হয় না । সে কীভাবে এসব বললো” তারপর থেকে রোজা রাতে কাঁদতাম । এখন অনেকটাই নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছি ।
.
একা দাড়িয়ে ছিলাম । বিয়ে বাড়িতে কেউ একা ছাড়ে না । সব কাজিন দের সাথে দাড়িয়ে আমিও গল্পে যোগ দিলাম । কিছু সময় পর গল্পের মাঝে একজনের সমাগম হলো । ছেলেটি আর কেউ নয় অর্নব । বরের কাজিন সে । আমি দেখে অবাক হই নি কিন্তু অর্নব ঠিকই অবাক হয়েছে । কারণ টা হলো ও কখনো ভাবেই নি আমার সাথে ওর দেখা হবে । আমি মেঘলাকে (ফুপাতো বোন) নিয়ে অন্য দিকে গেলাম । কোন এক কারণে মেঘলা অন্য দিকে গেলো । দেখলাম অর্নব আমার দিকেই আসছে । আমি অন্য দিকে যেতে লাগলাম ।
অর্নব- আনহা (ডাক দিলো)
আমি- জ্বী বলুন
অর্নব- আপনি করে বলছো যে
আমি- অপরিচিত দের আপনি বলাটাই শ্রেয় তাই না
অর্নব- আমি অপরিচিত?
আমি- ও না সরি ভুলে গেছিলাম আপনি তো বরের ভাই তাই না
অর্নব- এখনো রেগে ?
আমি- রাগবো কেনো ?
অর্নব- আসলে আমি ভুল করেছিলাম
আমি- আমার না কাজ আছে পরে কথা হবে
অর্নব- পালাচ্ছো ?
আমি- যা ই ভাবেন আপনার ব্যাপার
অর্নব- বদলে গিয়েছো
আমি- যেমন?
অর্নব- আগের থেকে সুন্দর কিন্তু বাচ্চার মতো স্বভাব টা আর নেই ।
আমি- মানুষ কে বদলাতে হয় । নাহলে তার থেকে ভালো কাউকে পেলে তার প্রিয় মানুষ গুলো তাকে ছেড়ে চলে যায় ।
অর্নব- সরি
আমি- সরির কিছু নেই বাই ।
.
চলে আসলাম । জানি কথা বাড়ালে আবার এক মায়ায় জড়াবো কিন্তু আর কোনো মিথ্যে সম্পর্কে জড়াতে চাই না । এক সময় যাকে সবটা দিয়ে ভালোবাসলাম সে-ই যখন ধোঁকা দিলো আর মায়া চাই না ।
.
একা বসে ছিলাম । ভালো লাগছিলো না তাই গেম খেলছিলাম । কে জানি পাশে এসে বসলো । তাকালাম না ।
.
পাশের লোকটি- মানুষ এখন মজা করছে আর আপনি বসে আছেন আর গেম খেলছেন ।
.
আমি তাকিয়ে দেখি ওটা আর কেউ না অর্নব ।
আমি- ভাই আপনার কি হয়েছে ?
অর্নব- আমি তোমার ভাই কবে হলাম ?
আমি- যেদিন জান্নাতের হয়েছিলেন সেদিন । তা বিয়ে হলো আপনাদের ?
অর্নব- জান্নাত একটা শিল্পপতির ছেলেকে বিয়ে করে ফেলেছে ।
আমি- ও খুব ভালো । জান্নাতও আপনার মতোই । এখন আমাকে গেম খেলতে দেন
অর্নব- আনহা আমাকে কি আরেকটা সুযোগ দেওয়া যায় না ?
আমি- নিশ্চুপ
অর্নব- কিছু বলো
আমি- শুনুন আমি এসবে আর জড়াতে চাই না
অর্নব- আচ্ছা
.
.
আমি উঠে আসলাম….
রাজ ভাইয়া- কি রে ছেলে পছন্দ নাকি?
আমি- আরে না
রাজ ভাইয়া- হুম দেখি দেখি
আমি- বেশি বকলে তোমার গফ রে কমু তুমি বিয়াতে ২ টা মাইয়ার লগে টাংকি মারছো ।
রাজ ভাইয়া- হারামি আইচ্ছা কমু না । বইন শুন তোরে না
আমি- কি
রাজ ভাইয়া- আমার এক বন্ধু পছন্দ করছে ওইটা কথা বলবি?
আমি- দুরর না একদম না আমি এসবে একদম ইন্টারেস্ট না
রাজ ভাইয়া- হুহ সব না তোর বিয়া যার লগে হইবো বেচারা সারা জীবন না না শুনবো
আমি- তোরে কইছে আমি অনেক রোমান্টিক
রাজ ভাইয়া- ওমা গো তাই নাকি তাইলে কথা বল ওর লগে
আমি- ভাবির নাম্বার ০১৭…………. এটা না
রাজ ভাইয়া- না না কথা বলা লাগবে না যা বইন তুই যা
আমি- আইচ্ছা
.
.
আমি গেলাম বউ এর কাছে । রাজ ভাইয়া তার বন্ধুর কাছে গেলো ।
অভি- কি রে রাজি হলো ?
রাজ- না
অভি- হালা কোনো কাজের ই না তুই ।
রাজ- দুর হ তাও তো আমি যাইয়া কইলাম । ওয় আমার বোন তাও তোর কথা শুইনা ওরে কইলাম ওয় রাজি হয় না । শুন তোর ব্যাপার তুই দেখ ।
অভি- ওকে বস আমিই দেখবো । সব ঠিক ঠাকলে জ্বলদি তুই আমার শালা হবি
রাজ- আগে পটা আমার বোন রে
অভি- যাস্ট ওয়েট এন ওয়াচ ।
রাজ- তোর প্রতিদ্বন্দীও আছে ওই যে ওই ছেলেটা নাম অর্নব ।
অভি- ব্যাপার না আমি দেখে নিবো । তুই যাস্ট একটা কাজ কর কোনো মতে ওরে একা করে দে
রাজ- ওকে বস ।
.
.
কিছু সময় পর রাজ ভাইয়া আসলো আর কি একটা আনতে বললো চাচির কাছে থেকে । আমি গেলাম ।
.
গিয়ে দেখি ওখানে কেউ নাই ।
আমি ফিরে আসছিলাম ।
অভি- আনহা
আমি- জ্বী
অভি- আসলে কিভাবে বলবো ভাবছি
আমি- আমার উত্তর না
অভি- বাট কেনো ?
আমি- এসব ভাল্লাগে না আর আমি এমনে এখনো ছোট
অভি- হায় রে পিচ্চি
আমি- হুম । নাইস টু মিট ইউ ভাইয়া আমি এইবার ভাগলাম ।
.
তাড়াতাড়ি পালাইলাম । ওইহানে যাইয়া রাজ ভাইয়ারে কইলাম ।
আমি- ভাবি রে আজ কি বলি দেখিস । কই পাঠাইছিলি ।
রাজ- সরি
আমি- হুহ
রাজ- বইন বলিস না
আমি- হুহ
রাজ- ও বইন
আমি- আচ্ছা আচ্ছা ।
.
কিছু সময় পর অর্নব জিজ্ঞেস করলো “কই গেছিলা?”
আমি- যেখানেই যাই আপনাকে কি বলে যেতে হবে ?
অর্নব- না মানে ।
.
কিছু না বলে চলে আসলাম । অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেলো আমি বাড়ি ফিরবো এমন সময় কে জানি হাত ধরলো ।
.
সে আর কেউ না অর্নব।
আমি- হাত ছাড়ুন প্রব্লেম কি আপনার ?
অর্নব- আনহা আমি তোমাকে আবার আমার লাইফে ফিরে চাই
আমি- আমি চাই না
অর্নব- একটা সুযোগ দেও প্লিজ
আমি- না মানে না
.
কই থেকে অভি ভাইয়া আসলো ।
.
অভি- আনহা কোনো প্রব্লেম নাকি ?
আমি- না
অর্নব- আনহা একবার ভাবো
আমি- না না না
অর্নব- কিন্তু
অভি- ওই ব্যাটা জ্বালাস কেনো ওরে
অর্নব- আপনি বলার কে
অভি- ওর ভাই এর বন্ধু
অর্নব- তো
আমি- চুপ কোনো কথা না আমি গেলাম আর আমার উত্তর না ই আর না জ্বালালে হ্যাপি হবো । অভি ভাইয়া আপনিও চলুন
অভি- ওকে
.
কিছু না বলে চলে আসলাম….
.
(কাল্পনিক গল্প)
চলবে….

ঝগড়াটে_ভালোবাসা _৭_এবং_শেষ_পর্ব

0

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_৭_এবং_শেষ_পর্ব
Written by Avantika Anh
.
পড়ায় মন বসছে না তবুও পড়তেছি…
শুভ এসে আমার পাশে বসলো, ওর দিকে একবার তাকিয়ে আবার পড়ায় মন দিলাম। শুভ আমার আরো কাছে চলে আসছে…
আমি- এই তোর সমস্যা কি হে? পড়তে না বসলে ঘ্যানঘ্যান করিস আবার এখন পড়তে বসার পরেও শান্তি মতো পড়তে দিচ্ছিস না।
শুভ- হিহিহি…
আমি- ওই কুত্তা একদম হাসবি না, তোর জন্য আমার জীবনটা শেষ হয়ে গেল। কত ইচ্ছা ছিল একটা রোমান্টিক জামাই পামু, আর পাইছি তোর মত একটা খাটাশ জামাই..এ্যাএএএ..(আবেগে কান্না আসতেছে)
শুভ- আমার ও তো একই অবস্থা,কত ইচ্ছা ছিল একটা পরীর মত বউ পামু। কিন্তু আমার কপালে কি জুটলো? তোমার মত একটা পেত্নি ছি ছি ছি.. কি বাজে কপাল আমার।
আমি- হিহিহি, তুই পাবি পরীর মত বউ? আরে তোরে তো এলাকার সবচেয়ে বুড়ি ফকিন্নি টা ও বিয়ে করতে আসবে নাহ..
শুভ- ওই মাইয়া, কথা না বলে পড়তে বসো নয়তো আম্মুর কাছে বিচার দিবো বলে দিলাম।
আমি- যা ভাগ তো এখান থেকে, নয়তো আম্মুর কাছে আমি বিচার দিমু। বলবো তুই আমাকে পড়তে দিচ্ছিস না।
শুভ- এহহহ.. পড় আমি গেলাম।
.
শুভ চলে গেল। আমার ও পড়তে একটু ও ভালো লাগছে না,ঘুম পাচ্ছে খুব। দরজা আটকে দিয়ে শুয়ে পড়লাম ,নয়তো শয়তান টা এসে আবার জালাবে।

উফফফ, রাতে ঘুম টা খুব ভালো হলো কিন্তু চোখ খুলতে মন চাইতেছে না ইচ্ছে করতেছে আরেকটু ঘুমাই। কিন্তু এতো ঠান্ডা লাগতেছে কিনু? হায় হায় আমার বিছানা সহ শরীর ভিজা কিনু? উঠে দেখলাম শুভ ওর মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি- এই তুই আমাকে পানি দিয়ে ভিজালি কেন?
শুভ- এহহহ, আমি ভিজাই নি। হয়তো তুমি বিছানায় হিসু করে দিয়েছো… ছি ছি ছিইইই,, আম্মুউউ তোমার বউমা..(বলে চিৎকার শুরু করে দিল শুভ)
আমি- এই তুই থামবি? বল আমার গায়ে পানি দিলি কেন?
শুভ- কেন আবার? জামাই ঘুম থেকে উঠে গেলে বউদের আর ঘুমাতে নেই তাই পানি দিলাম।
আমি- হুররর,কিসের জামাই আর বউ? এই তুই আমার রুমে কিভাবে আসলি? আমিতো দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়েছি যেন তুই না আসতে পারিস।
শুভ- হেহেহে,রাতেই এসেছিলাম জানালা দিয়ে। আর তোমার সাথে ও একই বিছানায় ছিলাম।
আমি- এ্যাএএএ…
শুভ- এ্যা না হ্যা, যাও গোসল করে নাও।
আমি- আল্লাগো আমার সব শেষ হয়ে গেল গো… আম্মুউউউ
.
মামনি- কি হয়েছে রে আনহা?
আমি- না মামনি কিছুনা।

গোসল করতে চলে আসলাম, শুভ শয়তান টা তো অর্ধেক গোসল খাটেই পানি দিয়ে করিয়ে দিলো। এর প্রতিশোধ আমিও নিমু…
.
নাস্তা করে রুমে এসে বসে আছি, শুভ ও রুমে আসলো…
শুভ- রেডি হয়ে নাও।
আমি- কেন রেডি হমু, আমারে বাড়ি পাঠাই দিবি নাকি?
শুভ- না,এখন ঘুরতে যামু দুজনে।
আমি- উহু, না আমি যামু না।
শুভ- পাচ মিনিট টাইম দিলাম রেডি হতে, নয়তো কিস করমু কিন্তু…
আমি- যা ভাগ তো এখান থেকে।
.
রেডি হয়ে গেলাম অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই, ঘুরতে যেতে যে আমার ও ভালো লাগে..।

সারাদিন অনেক ঘুরলাম,খুব ভালো ও লাগছে কিন্তু এই শুভ শয়তান টা আমার দিকে বারবার তাকিয়ে থাকে। নিজেরে কেমন জানি ভূতনি মনে হইতেছে নয়তো এভাবে কেউ তাকায় থাকে?
আমি- এই তুই ওই দিকে তাকা,আমার দিকে একদম তাকাবি না।
শুভ- তোমার মত পেত্নির দিকে আমি তাকাবো? হাসালি হা হাহা..
আমি- কিইইই.. থাকুম না আর তোদের বাড়িতে,আজই আমাদের বাড়ি চলে যাবো।
শুভ- হুম আজই তোমাকে তোমাদের বাড়ি দিয়ে আসার জন্যই ঘুরতে আসছি,এখন সোজা তোমাদের বাড়ী যাবো বঝলে?
আমি- এ্যাএএ.. না আমি যামু না।
শুভ- সামনে তোমার পরীক্ষা তাই এখন মন দিয়ে পড়তে হবে বুঝলে? তাই এখনি তোমাকে যেতে হবে।
আমি- হুহ, কিন্তু আমার বই?
শুভ- সেগুলো আমিই দিয়ে যাবো।
.
বাড়ি চলে আসলাম, শুভ নিজেই আমাকে নিয়ে এসেছে….
আমি- বাড়ি আসার সময় তো আমার সামনেই আসতি না আর আজ বাসায় দিয়ে যাচ্ছিস?
শুভ- হিহি, বউ বলে কথা।
আমি- হইছে, যা ভাগ তো…

পরেরদিন শুভ আমার বইগুলো ও দিয়ে গেল। আমিও মন দিয়ে পড়ছি কারন এক্সামের আর বেশিদিন নেই। শুভ ও আমাদের বাড়িতে আসে না, আমার পড়ায় সমস্যা হবে তাই হয়তো। না আসুক তাতে আমার কি হুহ… কিন্তু আমি যে ওই ভুত টাকে মিস করতেছি, ধুররর মিস করতাম কেন? শুভ আবার কেডা?

পড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কিভাবে যে দিনগুলো কেটে গেল নিজেও বুঝতে পারিনি। কাল থেকে এক্সাম শুরু,সবার থেকে দোয়া চেয়ে নিলাম।
পরীক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হতেই দেখলাম শুভ বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমিও কিছু না বলে দাঁড়িয়ে আছি….
শুভ- কি উঠবে না নাকি?
আমি- হুম।
আজ দুজন এর কেউ ই কথা বলছি না,আমার মাথায় এক্সামের টেনশন কাজ করছে কিন্তু শুভ কথা বলছে না কেন? হুররর কি জানি? বললে বলুক না বললে নাই,আমার কি!
মিমি- কি রে আনহা, ছেলেটা কে রে? খুব হ্যান্ডসাম তো.. তোর বফ নাকি?
আমি- ধুররর, আমার খালাতো ভাই।
মিমি- খুব ভালো লাগছে রে, আমাকে ওর সাথে প্রেম করাই দে না।
আমি- হুসসস, একদম চুপ। আমার জামাই ও, বিয়ে হয়ে গেছে আমাদের।
তারপর আর সায়মা কিছু বলেনি।
.
ঠিক এভাবেই কেটে যাচ্ছে আমার পরীক্ষার দিনগুলো। শুভ ও আমাকে সবকিছুতেই হেল্প করছে। এভাবে এক এক করে সব পরীক্ষা ই শেষ হয়ে গেল।
পরীক্ষা শেষ এ আবার শুভদের বাসায় চলে আসলাম। রুমে বসে আছি,কিছু ভালো লাগছে না। শুভ আমার রুমে আসলো….
শুভ- আসো কোথাও গিয়ে ঘুরে আসি।
আমি- না আমি তোর সাথে যামু না।
শুভ- পাচ মিনিট টাইম দিলাম,নয়তো…
আমি- হইছে হইছে থাম এবার,রেডি হচ্ছি..(শুভকে থামিয়ে বললাম)
.
অনেক্ষন ধরে আমি পার্কে একা বসে আছি, সাথে শুভ ও এসেছে কিন্তু একটা মেয়ের সাথে কি যেন বলেই যাচ্ছে। খুব রাগ হচ্ছে আমার, মন চাইতেছে শুভ টারে আমি কাচাই চিবাইয়া খাই।
– মেয়েটা কে?(শুভ আসতেই আমি বললাম)
শুভ- আমার বান্ধবী, অনেক দিন পর দেখা।
আমি- ওহহহ..(চুপ করে বসে রইলাম)
শুভ- কি মন খারাপ?
আমি- নাহহহ…
শুভ- আসলে আমি না ওই মেয়েটার সাথে আগে প্রেম করতাম।
আমি- কিইইইই?
শুভ- আরে মিছা কথা,তোমাকে রাগানোর জন্যই বলছি। আসলে এতক্ষন ইচ্ছা করেই আমি কথা বলছিলাম ওর সাথে।
আমি- যা তুই তোর ওই মেয়ের কাছেই যা। এখানে কি হুহ…
শুভ- এখানে ঘুরতে আসছি কেন জানো?
আমি- হুম, ওই মেয়ের সাথে কথা বলার জন্য…
শুভ- না, কাল আমি বিদেশ চলে যাচ্ছি।
.
শুভর কথা শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল, বাইরে চলে যাবে ও। আর কিছু না বলে দুজন বাড়িতে চলে আসলাম।

শুভ ও বিদেশ চলে গেল। এখন আমি শুভদের বাসাতেই থাকি মামনির সাথে। সব কাজে প্রায় হেল্প করি মামনি কে…
.
শুভ বিদেশ গেছে কয়েকমাস হয়ে গেল, মাঝেমধ্যে কথা হয় ওর সাথে। আমার পরীক্ষার রেজাল্ট দিলো, খুব ভালো ই মার্কস পেয়েছি শুভর হেল্প করার জন্য। শুভ আমার রেজাল্ট শুনে খুবই খুশি হয়।

শুভ বিদেশ গেছে প্রায় অনেকদিন ই হয়ে যাচ্ছে। বছর পূর্ণ হতে আর বেশি দেরী নেই।
ছাদে বসে আছি, তখনি শুভর কল….
আমি- কি রে কেমন আছিস?
শুভ- ভালো,তুমি কেমন আছো?
আমি- ভালো, কি করিস? (নিজে থেকেই প্রশ্ন করে যাচ্ছি)
শুভ- আমার যে বিয়ে ঠিক হয়েছিল ওই হবু বউ এর সাথে কথা বলছিলাম এতক্ষন, তুমি কি করো?
আমি- আমি জাহান্নামে নাচতেছি,তুমি ফোন রাখ। থাক তোর ওই মেয়েকে নিয়ে….
বলেই কল কেটে ফোন অফ করে দিলাম। ঘরে বউ রেখে অন্য মেয়ের সাথে কথা বলা! কত সাহস ওর….
কয়েকদিন ধরে কথা হচ্ছে না শুভর সাথে। হবে কি করে আমার ফোন তো অফ করে রাখছি, না আর কথা কমু না ওর সাথে। কিন্তু যত ভাবছি ওর সাথে কথা বলবো না কেন জানি ততই মিস করতেছি ওকে। হিহি হয়তো ভালোবেসে ফেলেছি ওই ভূতটাকে।
.
মন খারাপ তাই রুমে বসে আছি তখন মামনি ও রুমে আসলো….
মামনি- আনহা,পরশু শুভ দেশে ফিরবে।
আমি- সত্যিইইই? (খুশিতে লাফিয়ে উঠলাম)
মামনি- খুব খুশি হলে বুঝি?
আমি- নাহ, তোমার ছেলে আসবে তাতে আমার কি হুহ…
মামনি- তাই নাকি
আমি- হুম আমাকে তো ভুলেই গেছে । ওখানে সুন্দর সুন্দর মেয়ে দের দেখে । আমার কথা মনে পড়ে নাকি ওই বান্দরের ?
শুভ- তাই নাকি
আমি- হুম তাই তাই {এ্যা ছেলের ভয়েস মামনির ভয়েস বদলে গেলো কেমনে । বাবাও (শুভর বাবা) তো বাড়িতে নাই । তাইলে কি শুভ }
.
পিছনে ঘুরে দেখি শুভ ই….
.
শুভ- তা মা তোমার বউমা দেখছি আজকাল রাগী হয়ে গেছে ।
মামনি- হুম হবে না কেনো ? বউমা কার ?
শুভ- এতোদিন পর আসলাম কই একটু পানি দিবে তোমার বউমা তো হা করে আছে ।
মামনি- আনহা ওই আনহা
.
(আমি শকড । কারণ এতোদিন পর আসছে আর দিন দিন হ্যান্ডসামও হইছে )
আমি- হুম বলো
মামনি- ওকে খাবার দে
আমি- ওকে
.
রাতে খাবার টেবিলে….
শুভ- বউ একটু খাওয়ায় দেও
আমি- এ্যা
মামনি- হুমম দে খাওয়ায়
শুভ- এইতো আম্মুও বলছে দে
.
কি আর করার খাওয়ায় দিচ্ছিলাম । হঠাৎ কামড় দিলো ।
আমি- আম্মুউউউউউ
মামনি- কি হইছে ?
আমি- কামড় দিছে এই হালা
মামনি- শুভ এটা কি
শুভ- সরি ওর হাতে সব এতো ভালো লাগে ভুলে দিয়ে ফেলছি
আমি- ওই তোমার শরীর ঠিক আছে ? এইরাম করছো কেন ?
শুভ- হেহে সব ঠিক
.
খাওয়া শেষে….
রুমে ফ্রেশ হয়ে রেডি হচ্ছিলাম ঘুমানোর জন্য । শুভ ফ্রেশ হয়ে এসেই জড়িয়ে ধরলো আমাকে পিছন থেকে ।
আমি- আম্মুউউউউউ ( ভয় পেয়ে চিল্লাতে ধরছি )
.
কিন্তু শুভ হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরলো ।
কিছু সময় পর মুখ ছেড়ে দিলো ।
.
আমি- এটা কি করিস ?
.
শুভ আঙ্গুল দিয়ে চুপ হতে বললো । আমি চুপ করে গেলাম । শুভ তাকিয়ে আছে ।
আমি- ওই তোমার কি হইছে এমন করছো কেনো ?
শুভ- আই লাভ ইউ
আমি- এ্যা
শুভ- ওই আর ঢং করবি না ।
আমি- আমি কি করলাম ?
শুভ- আমাকে ভালোবাসিস তো বলিস না কেনো‌?
আমি- কে কইলো তোমর মতো বান্দর কে আমি ভালোবাসবো ?
শুভ- বাসিস তো
আমি- প্রমাণ কই ?
শুভ- মেঘ বালক কে বলছিস তুমি
আমি- তুমি কেমনে জানলা ?
শুভ- ওইটা তো আমি
আমি- চিটার
.
বলেই ওরে কিল ঘুষি মারা শুরু করলাম । শুভ ওই থাম নইলে তোরে আমি কিস করুম উঠেই ।
আমি ছেড়ে দিলাম ।
শুভ- তুই এটাকে এতো ভয় পাস কেনো ?
আমি- জানি না বাট এমনেই
শুভ- দ্বারা তোমার ভয় ই আজ আমি দুর করবো
আমি- কেমনে
.
আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই শুভ আমাকে কিস করে বসলো । তারপর
.
আমি- ভ্যা ভ্যা ভ্যা
শুভ- কাঁদিস কেন ?
আমি- তুমি কি করলা এটা কেনো কেনো কেনো ?
শুভ- আমি করুম না তো কে করবে
আমি- তা ঠিক কিন্তু
শুভ- চুপ
আমি- কি হইলো
শুভ- আর লুকালুকি না । শুনো সেই ছোট বেলা থেকে তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু তুমি সিরিয়াস নেও না । এতোটা ভালোবাসি জানো না তুমি । তোমাকেই বউ মেনে গেছি আমি চিরকাল ।
আমি- তো এতো মেয়ের সাথে টাংকি মারো কেনো ?
শুভ- তোমাকে জ্বালাতে
আমি- বিয়ে তো করতে লাফাচ্ছিলা অন্য মেয়ে কে
শুভ- বিয়েটা নাটক ছিলো । আসল বউ তুমি ই ছিলা । আসলে কোনো বউ ই ছিলো না । সব শুধু তোমার সামনে নাটক ছিলো । সবাই জানতো । তোমাকে প্রথমে বললে মানতে না তাই এতোকিছু ।
আমি- এ্যা
শুভ- হুম
আমি- তা বুঝলাম কিন্তু আমার সাথে খারাপ ব্যবহার কেনো‌?
শুভ- একটু রেগে ছিলাম আর একটু নাটক ছিলো ওটা ।
আমি- কিন্তু আমি কি করছি যে রাগ ?
শুভ- তুমি যখন চলে যাও আমার খুব কষ্ট হয় সে বার অনেক কষ্ট হইছিলো তাই রাগ ।
আমি- মেঘ বালিকা কে ?
শুভ- আমার সবকিছুতে শুধু তুমি আই এম সিরিয়াস আই লাভ ইউ
আমি- আমিও তোমাকে অনেক ভালোবাসি ।
শুভ- তো বলো না কেন ?
আমি- সাহস ছিলো না
শুভ- বান্দরনি
আমি- তুমিও বান্দর
শুভ- আহা বান্দর ফ্যামিলি
আমি- হুম
শুভ- তা মিনি বান্দর আরো আনা যাক
আমি- ইইই লুইচ্চা
শুভ- হেহে
.
.
.
…………সমাপ্ত…………..
কাল্পনিক গল্প

ঝগড়াটে_ভালোবাসা _পর্ব_৬

0

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_পর্ব_৬
Written by Avantika Anh
কিছু সময় পর মামনি এসে আমাকে হলুদ মাখাতে লাগলো ।
.
আমি- আমাকে দিচ্ছো কেনো ? তোমসর ছেলেকেই দেও
মামনি- আরে তোকে না মাখালে হয় ?
আমি- কেনো আমার মাখলে কি ? বিয়ে কি আমার হচ্ছে নাকি তোমার খাটাস ছেলের হচ্ছে ওকেই মাখাও ।
মামনি- হাহা আগে তোকে তো মাখাই
.‌
.
মামনি আমাকে হলুদ মাখিয়ে দিলো ।
.
আমি- এতো হলুদ কেনো ? আমাকে কি হলদি হলদি বানাবা ?
মামনি- হুম
.
.
মামনি চলে গেলো ।
.
আমি কিছু সময় পর হলুদ ধুয়ে ফেললাম ।
.
তারপর ছাদে গিয়ে বসলাম । চুপচাপ বসে ছিলাম মন খারাপ লাগছিলো তাই ।
.
হঠাৎ কে যেনো আমার চোখ বেঁধে কি জানি নাকের কাছে ধরলো । তারপর আর কিছু মনে নাই । যখন চোখ খুললো প্রায় রাত । আমার হাতে পায়ে আর মুখে হলুদ লাগানো কিন্তু কীভাবে কিছুই বুঝলাম না । কিন্তু আমি এইখানে কেমনে ? আমি শকড্ হয়ে আছি । এ্যা বাড়িতে ভুত আইলো কই থেইকা ?
.
ভয়ে দৌড় দিলাম বাইরে শুভ ভাইয়া ছিলো ।
আমি- ভাই বাড়িতে ভুত আছে
শুভ- জানি তো ভুত আছে ।
আমি- তোরেও কিছু করছে ?
শুভ- তোর থেকে বড় ভুত আর কে ? বান্দরের মতো তো দেখতে আরো হলুদ মাখে পেত্নি সাজছিস ?
আমি- না আমি না
শুভ- চুপ যা এখান থেকে আমি ফোনে কথা বলবো ।
আমি- আচ্ছা
.
.
চলে আসলাম । কিছুদিন ধরে শুভ ভাইয়ার ব্যবহার আমাকে এতো পরিমাণ কষ্ট দিচ্ছে যা আমি কান্না ছাড়া আর কোনোভাবে প্রকাশ করতে পারছি না ।
.
ফেসবুকে……
মেঘ বালক- কি ম্যাডাম কি খবর ?
আমি- ভালো আপনার?
মেঘ বালক- হুম ভালো মন খারাপ নাকি?
আমি- হুম
মেঘ বালক- কেনো৤?
আমি- আছে কোনো কারণ
মেঘ বালক- ম্যাডাম যা দেখা যায় তা সবসময় সত্যি না মনে রাখবেন‌।
আমি- আচ্ছা গুড নাইট
মেঘ বালক- ওকে
কালকের দিন হয়তো আপনার লাইফে ধামাকা আনবে দোয়া করি ।
আমি- ওকে বাই
মেঘ বালক- বাই
.
পরেরদিন সকাল থেকে হইচই বিয়ে বাড়ি বলে কথা ।
.
মামনি- আনহা রেডি হ
আমি- আমি এখনি কেনো?
মামনি- হইতে বলছি হ আর শুন পার্লারে যা
আমি- এ্যা ওখানে আমার কি কাজ ?
মামনি- যা বলছি কর আর শুন সেখান থেকে সোজা এই ঠিকানায় আসবি সবাই ওখানে যাবো সোজা আর এই লেহেঙ্গা টা পড়িস ( নীল রঙ্গের একটা লেহেঙ্গা )
আমি- এতো কাজ কেনো এইটায় ?
মামনি- পড়তে বলছি পড় এতো কথা কেনো ? শুন পার্লারওয়ালি কে বলা আছে বুঝলি ?
আমি- আচ্ছা আচ্ছা বুঝছি ।
.
.
পার্লারে….
সাজানো শেষে….
নিজেকে দেখে বলি এ কেমন সাজ ? আমি তো বউ না এতো কিনু ?
আমি- আপু আপনি একটু বেশিই সাজিয়ে ফেলছেন আমি তো বউ না
পার্লারওয়ালি- আজকাল এটাই ভালো । আমাকে এইভাবেই সাজাতে বলা হয়েছে ।
আমি- আচ্ছা
.
.
রেডি হয়ে ওই জায়গায় গেলাম । গিয়ে দেখি সবাই কেনো যেনো নিরব ।
আমি মামনির কাছে গেলাম ।

.
আমি- মামনি কি হইছে এখানে সব ?
মামনি- বউ পালাইছে
আমি- এ্যা কেনো ? কখন?
মামনি- জানি না এখন যে কি হবে আমাদের সম্মান । কে বিয়া করবে ?
.
খালু- আনহা তোর কাছে একটা জিনিস চাবো ?
আমি- বলো খালু
খালু- তুই শুভ কে বিয়ে করে ফেল ।
আমি- কিইইইই ?
খালু- আজ অব্দি কিছু চাই নাই । এটা কর মা ।
.
না ভেবেই রাজি হয়ে গেলাম । কারণ তারা‌ আমার জন্য অনেক করেছে । শুভ ভাইয়াও কিছু বললো না । বিয়েটা হয়ে গেলো । সবাই খুশি । কিন্তু আমি চুপচাপ ।
.
.
বাসরে….
শুভ এলো….
আমিও নিশ্চুপ শুভও ।
শুভ- তোর এক্সাম কবে রে ?
আমি- ২ মাস পরে ।
শুভ- আজ তো ধকল গেলো কাল থেইকা পড়া শুরু বুঝলি ।
আমি- হুম
শুভ- বউ পা টিপো তো
আমি- কি ?
শুভ- হ পা টিপ
আমি- দুর হ
শুভ- হেহে কই যামু বিয়া তো হইয়া গেলো
আমি- তো কি
শুভ- হুর যা ঘুমা
আমি- হ গুড নাইট
শুভ- হ ভাগ‌
.
সকালে….
শুভ- ওই উঠো
আমি- কে রে ?
শুভ- ওই হারামি উঠে পড় নতুন বউ তুই মনে নাই ।
আমি- কে বউ কার বউ? ( ঘুমেই )
শুভ- আমার বউ
আমি- ও
.
মাথায় ঢুকলো কথাটা আর ঢুকতেই….
আমি- কয়টা বাজে ?
শুভ- বেশি না ভোর ৫ টা
আমি- ও নামায পড়ুম ওয়েট
শুভ- আমিও পড়বো ।
.
.
নামায শেষে….
আমি কাপড় নিয়া বাথরুমে যাচ্ছি ।
শুভ- কি হলো কই যাও ?
আমি- গোসলে
শুভ- ও
আমি- বিয়ে কইরা বাঁশ সকাল সকাল গোসল ।
শুভ- হেহে বুঝো ঠেলা
আমি- হাসবি না হাসলে পিডাম
শুভ- পিডাইলে পাপ হইবো পাপ মুই না তোর বর
আমি- হুরররর
শুভ- যা যা গোসল কর
.
গোসল শেষে গেলাম রান্না করতে…..
.
মামনি এসে….
মামনি- এ আমি কি দেখি ?
আমি- কি ?
মামনি- তুই রান্না করতেছিস ?
আমি- হুম বউ হইছি রান্না লাগবে না বুঝি
মামনি- তুই এমন সংসারি হয়ে যাবি জানলে আগেই বিয়া দিতাম ।
আ‌মি- কি যে কও
.
দুপুরে…
আমি রুমে বসে গেম খেলছিলাম । কে জানি আইসা ফোন কেড়ে নিলো ।
আমি- কে ?
শুভ- সামনে পরীক্ষা আর গেম খেলা ।
আমি- ফোন দে
শুভ- যা পড়তে বসো
আমি- বসবো না কি করবি?
শুভ- মামনি কে বলে দিবো
আমি- আমিও কমু যে তুই আমারে মারছোস
শুভ- মিছাবাদী আচ্ছা আরেকটা উপায় আছে
আমি- কিতা ?
শুভ- এক থেকে দশ গুণবো এর মাঝে যদি পড়তে না যাও আমি তোমাকে কিস করবো ।
আমি- ( কি কইলো এইটা ) যাচ্ছি
.
.
জ্বলদি পড়তে বসলাম ।
শুভ হাসতে লাগলো ।
.
শুভ- ভালো করে পড়ো
আমি- আচ্ছা
.
চলবে…..

ঝগড়াটে_ভালোবাসা _পর্ব_৫

0

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_পর্ব_৫
Written by Avantika Anh
.
রাতের শুভ ভাইয়ার ব্যবহারে খুব খারাপ লাগছিলো, খুব কান্না ও পাচ্ছে। শুভ ভাইয়া কেন আমার সাথে এরকম।করছে তা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি তা নিজেও বুঝতে পারিনি।
.
সকালে ঘুম থেকে উঠে ছাদে গিয়ে দেখি শুভ কার সাথে যেন কথা বলছে….
আমি- কি রে বিয়ের আগে বউ এর সাথে এতো কথা কিসের?হুহ
শুভ-আমি আমার ফ্রেন্ড এর সাথে কথা বলছি,আর আমি আমার বউয়ের সাথে কথা বললে তোর কি হে?
আমি- এ্যা এ্যা.. (কান্না শুরু করলাম)
শুভ- ওই তো পেন-পেনানি বন্ধ কর তো, ভাল্লাগে না এসব।
আমি- ধুররর…
বলেই চলে আসলাম ছাদ থেকে, জানিনা কেন শুভ এরকম করছে আমার সাথে।
.
ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে আসলাম। দেখি শুভ ভাইয়া নাস্তার টেবিলে বসে নেই…
মামনি- কি রে আনহা খাচ্ছিস না কেন?
আমি- হুম খাবো, আচ্ছা মামনি শুভ ভাইয়া কোথায়?
মামনি- ও তো নাস্তা করে চলে গেছে।
মামনির এই কথায় আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল, শুভ ভাইয়া তো আমাকে ফেলে কখনো নাস্তা করেনি! তাহলে এখন এমন করছে কেন?কি খাইলাম আর না খাইলাম কিছুই মনে নেই,উঠে চলে আসলাম নাস্তার টেবিল থেকে।

“কি রে ভাইয়া এতো সেজেগুজে কোথায় যাবি? “
শুভ ভাইয়ার রুমে গিয়ে দেখি ও কোথাও যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে তখন বললাম।
শুভ- যেখানেই যাই তোর সমস্যা কি হে?
আমি- বলবি না?
শুভ- না বলবো না, ভাগ তো এখান থেকে।
আমি- মামনিইইই?
শুভ- আমি শপিং করতে যাচ্ছি, কিছু দরকারি জিনিস কিনতে হবে।
আমি- এতক্ষন বলিসনি কেন? আমিও যাবো রে, ফুচকা ও খাবো..হিহিহি।
শুভ- না, আমি নিতে পারবো না। পারলে তুই একা যা, যা তো এখান থেকে।
শুভর এরকম কথা শুনে খুব খারাপ লাগছে, কেন যে এরকম করছে আমার সাথে? আগে তো এরকম করতো না! আমি কিছু না বলে চুপচাপ বসে রইলাম।
মামনি- কি রে আনহা আমাকে ডাকছিলি কেন?(আমার ডাক
শুনে এসেছে হয়তো)
আমি- মামনি দেখো না, শুভ ভাইয়া শপিং করতে যাচ্ছে কিন্তু আমাকে নিয়ে যাচ্ছে না।
শুভ- আম্মু আমি ওকে নিয়ে যেতে পারবো না আগে থেকেই বলে দিলাম।
আমি- ভ্যাএএএ…(একটু কান্নার ভান করলাম)
মামনি- আনহা কে তুই তো নিয়েই যাবি, তোর ঘার ও নিয়ে যাবে।
মামনির কথা শুনে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো শুভ। আমি জানি মামনির কথা কখনো অমান্য করে না ও।
.
দুজনই রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হলাম..
আমি- কি রে বাইক নিচ্ছিস না কেন?
শুভ- আমার মন চাইছে তাই। তোর কোন সমস্যা?
আমি- হুহ সমস্যা কতদিন ধরে তোর বাইকে চড়ি না, বাইক টা ও নে না প্লিজ..
.
আমি আর শুভ যাচ্ছি বাইকে করে শপিং করার উদ্দেশ্যে। দুজনই চুপ করে আছি,কারোর মুখে কোন কথা নেই। কিছুক্ষন যাওয়ার পর দেখলাম রাস্তার।পাশে একটা ফুচকার দোকান। শুভ থামবে না তাই ওকে কাতুকুতু দিলাম।
শুভ- এই কাতুকুতু দিলে কি বাইক চালানো যায়?
আমি- না চালাতে পারলে একপাশে থামা।
শুভ- না, অনেক কাজ আছে থামানো যাবে না।
শুভ বাইক থামাবে না তাই কাতুকুতু দেয়া আরো বাড়িয়ে।দিলাম।
শুভ- তোর সমস্যা কি হে?(এবার বাইক থামালো)
আমি- দেখছিস না? ফুচকার দোকান।
শুভ- আমি খাবো না,তুই খা যা।
আমি- তোরে খাইতে বলছে কে? আয় তো আমার সাথে।
একপ্রকার জোর করে নিয়ে গেলাম ফুচকার দোকানে।
আমি- মামা দুই প্লেট ফুচকা দেন তো। (দোকানদার কে বললাম)
শুভ- দুই প্লেট কেন? বললাম না আমি খাবো না।
আমি- তুই খাবি সাথে তোর বউ ও খাবে। ( হায় হায় কি বললাম?)
শুভ রাগি লোক নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ততক্ষনে ফুচকা রেডি।
.
আমি ফুচকা খেয়ে প্রায় প্লেট শেষ করে ফেলছি কিন্তু শুভ খাচ্ছে না।
আমি- কি রে খাচ্ছিস না কেন? বউ এর কথা ভাবছিস নাকি?
শুভ- তুই চুপ করবি?
আমি- দে তোরে হেল্প করে দেই।
শুভর প্লেট থেকে আরো অর্ধেক খেয়ে নিলাম হিহি।
.
ফুচকা খাওয়া শেষ করে আবার যাওয়া শুরু করলাম মার্কেটের উদ্দেশ্যে।চলে আসলাম।
আমি- ভাইয়া এই পাঞ্জাবী টা দেখ তো, তোকে অনেক মানাবে। জামাই জামাই লাগবে হিহি…
শুভ- তুই একদম চুপ থাকবি, যা কেনার আমার পছন্দ মতোই কিনবো।
আমি- আচ্ছা (খারাপ লাগলো একটু,চুপ করে রইলাম)

শুভ- এই যে ভাই ওই শাড়ী টা দেন তো। (দোকানদার কে উদ্দেশ্য করে বললো)
দোকানদার- নিন ভাই, এই শাড়ীটা টা ভাবিকে খুব মানাবে কিন্তু।
শুভ- দেখতো শাড়ীটা কেমন হবে আমার বউয়ের জন্য।
আমি- হ্যা ভালোই হবে।

আরো কিছু কেনাকাটা শেষ করে সব শেষ এ আমার পছন্দ করা পাঞ্জাবী টাই নিল শুভ। আমি কিছু বললাম না।
– আরে আনহা, হঠাত শপিং এ যে?
দেখলাম ওইদিনের সজিব নামের ছেলেটি।
আমি- হ্যা, সামনে আমাদের এ্যানেভার্সারি তো তাই শপিং করতে আসছিলাম আরকি! তাইনা গো শুভ।
শুভ আমার কথা শুনে কিছু বললো না,একটু রাগী ভাব নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।
সজিব- কংগ্রাচুলেশনস, আজ তাহলে আসি।
আমি- ওকে।
.
দুজন বাইকে করে বাসায় ফিরছি। আমি বা শুভ ভাইয়া কেউ কিছু বলছি না। জানিনা শুভ ভাইয়ার কি হয়েছে! যে শুভ ভাইয়া আমার পিছনে দিনরাত লেগে থাকতো আর এখন অথচ আমি ওর পিছনে লেগে আছি, কোন পাত্তাই দিচ্ছে না আমাকে।
হঠাত বৃষ্টি শুরু হলো, খুব ভালো লাগছে বৃষ্টির মধ্যে বাইকে চড়তে। কিন্তু অল্প কিছুক্ষনের মধ্যে বাইক টা থামালো একটা দোকানের কাছে।
আমি- কি রে থামলি কেন? বৃষ্টিতে ভিজতে ভালো লাগছিলো তো।
শুভ- না, বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর আসবে। আর পরে আম্মু বকা দিবে আমাকে।
আমি শুভর কোন কথা না শুনে দাঁড়িয়ে রইলাম, ভিজলাম কিছুক্ষন। কিন্তু শুভ আমাকে টেনে একটা দোকানের পাশে নিয়ে দাড় করালো।
আমি- আরেকটু ভিজি না রে শুভ ভাইয়া।
শুভ- না বললাম তো।
আমিও চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম দোকানের পাশে, এমনভাবে দাঁড়িয়ে রইছি যেন শুভ কে আমি চিনিই না। খেয়াল করলাম একটা ছেলে তাকিয়ে আছে আমার দিকে, খুব অস্বস্তি লাগছে এখন আমার। শুভ ও হয়তো কিছুটা বুঝতে পারছে ব্যাপারটা।
শুভ- এই ছেলে তোমার সমস্যা কি?(ছেলেটিকে বললো)
ছেলেটি- কই? আমার কোন সমস্যা নেই তো।
শুভ- তাহলে ওর দিকে তাকিয়ে আছো কেন?(আমাকে দেখিয়ে)
ছেলেটি- ভালো লাগে তাই তাকিয়ে আছি, তোর সমস্যা কি? নায়ক হইতে আইছোস?
শুভ ভাইয়া রাগের মাথায় ছেলেটির নাক বরাবর একটা ঘুষি দিলো, রক্ত বের হচ্ছে ছেলেটির নাক দিয়ে।
শুভ- চল, বাসায় যাই।
আমি- না বৃষ্টি হচ্ছে তো, জ্বর আসবে।
শুভ- আসুক, আয় বলছি।
দুজন আবারো চলছি বাড়ী যাওয়ার উদ্দেশ্যে তাও বৃষ্টির মধ্যেই। খুব ভালো লাগছে। কি জানি রাতে জ্বর ও আসতে পারে, যেভাবে ভিজা শুরু করেছি বলা তো যায় না।
আমি- আচ্ছা ভাইয়া ওকে মারলা কেন?
শুভ- এমনি, তোর কোন সমস্যা?
আমি- নাহ।
.
বাসায় চলে আসলাম। আসতেই মামনি আমাদের দিকে এগিয়ে আসলো।
মামনি- কি রে তোরা এভাবে বৃষ্টিতে ভিজে আসলি কেন? কোন জায়গায় দাড়ালেই পারতি।
আমি- মামনি আমিও বলেছিলাম দাড়াতে কিন্তু শুভ ভাইয়া দাঁড়ায় নি।
শুভ- না আম্মু দাড়িয়েছিলাম। কিন্তু ও ইচ্ছা করে ভিজেছে।
– হা হা হাচ্চুউউউউ…(আমি)
মামনি- দেখলি ঠান্ডা লেগে গেছে এখনি, যা চেঞ্জ করে নে।
.
চেঞ্জ করে রুমে চলে আসলাম,ঠান্ডা লেগে গেছে একটু বেশিইই..
রাতে অনেক মজা করছে শুভ ও তার বন্ধুরা, না আমি যাবো না। শুভ তো এখন আমাকে সহ্যই করতে পারেনা। আমি রুমে এসে শুয়ে পড়লাম, ঘুমাবো এখন।
.
সকালে সবার হৈ-হুল্লোরের আওয়াজ শুনেই ঘুম ভাঙলো আমার। দেখি সবাই হলুদ মাখিয়ে দিচ্ছে শুভ কে। আমার ও খুব ইচ্ছে হলো শুভ কে হলুদ মাখিয়ে দিতে। কাছে গেলাম,মাখিয়ে ও দিলাম।
শুভ- এই তোরে কে কইছে আমার মুখে হলুদ দিতে? (একপ্রকার রাগ দেখিয়ে রাগ দেখিয়ে খুব জোরে বললো,সবাই তাকিয়ে আছে অবাক হয়ে)
আমি- কেন কি হয়েছে? একটু হলুদ মাখালাম তাতে কি হলো?
শুভ- না, তুই মাখাবি না। যা রুমে যা।
শুভ ভাইয়ার এরকম আচরন দেখে দৌড়ে রুমে চলে আসলাম।
কেন জানি অনেক কান্না আসছে আমার তবুও তা প্রকাশ করছি না।
আচ্ছা শুভ ভাইয়া আমার সাথে এমন করছে কেন? আমি কি ওর সাথে কোন খারাপ বিহেভ করেছিলাম? না করিনি তো!
বুঝতে পারতেছিনা কেন এমন করছে। শুভ ভাইয়ার এরকম বিহেভ এর কথা ভেবে অনেক খারাপ লাগছে আমার,কান্না ও পাচ্ছে হয়তো।

.
চলবে…..

ঝগড়াটে_ভালোবাসা _পর্ব_৪

0

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_পর্ব_৪
Written by Avantika Anh
রাতে এফ বি তে….
মেঘ বালক অনলাইন দেখলাম । আমার মেসেজের রিপ্লাই ও দিয়েছে ।
মেঘ বালক- মনে হলো আপনাকে হুতুম পেঁচা লাগছে ।
আমি- বললেই হলো
মেঘ বালক- বললে যদি সব কিছু হতো তাহলে তো হতোই ।
আমি- মানে ??? বুঝি নি ।
মেঘ বালক- পিচ্চি মানুষ তো বুঝবেন ই না
আমি- ইইইই কে কইছে আমি পিচ্চি?
মেঘ বালক- তা কি বুড়ি ?
আমি- না আমি পেত্নি ।
মেঘ বালক- আচ্ছা মিস পেত্নি ।
আমি- দুরররর
.
অফলাইন হলাম আমি । রাত হয়েছে তাই ঘুমিয়ে পড়লাম । সকালে দেখি আমার গায়ে পানি ঢালতেছে শুভ ভাইয়া কিন্তু কেমনে সম্ভব আমি তো দরজা লাগাইছিলাম । এমা আমার হাত বাঁধা । পা দিয়া ভাইয়ারে লাথ মারলাম ।
.
শুভ- হেহে কাল কি করছিলি মনে নাই ?
আমি- তাই বলে তুই এমনে ?
শুভ- হ
আমি- কিন্তু ভিতরে ঢুকলি কেমনে ?
শুভ- জানালা দিয়ে
আমি- এরপর থেকে অফ রাখবো ।
শুভ- আমি তবুও ঢুকবো ।
আমি- কেমনে সম্ভব ?
শুভ- সব সম্ভব
আমি- দুররর হাত খুল
শুভ- আরও এক বালতি ঢালুম তারপর ।
আমি- কিইইই দ্বারা মামনি কে ডাকমু ।
মাম….
.
( মুখে হাত দিয়া আটকায় দিলো শুভ ভাইয়া )
শুভ- ডাকিস না রে সরি
আমি- খুল
শুভ- দ্বারা
.
যেই খুললো পাশে থাকা এক বালতি পানি শুভ ভাইয়ার গায়ে আমি ঢালে দিলাম ।
শুভ- হারামি
আমি- ইটস আনহা নট হারামি
শুভ- কুত্তি
আমি- আমি মানুষ
শুভ- তুই তো মানুষ ই না তুই পেত্নি
আমি- কইলেই হইলো
শুভ- হ
.
আমি- হুরর হালা আমার এখন ঠান্ডা লাগবে
শুভ- মাঝে মাঝে ঠান্ডা লাগা ভালো ।
আমি- দুর হ
শুভ- ১০ টায় যাবি বিদায় অনুষ্ঠানে
আমি- হু
.
তারপর রেডি হয়ে শুভ ভাইয়ার সাথে গেলাম ।
.
এক কাউকে চিনি না দুই‌ সব কেমনে জানি তাকায় আছে ।
.
আমি- ওই আমাকে কি ভুতনি লাগছে ?
শুভ- হ
আমি- সিরিয়াস
শুভ- হ সত্যি ভুতনি লাগছে
আমি- এই জন্য আমি শাড়ি পড়ি না ।
শুভ- হেহে ভালোই লাগছে
আমি- মিছা কথা বলতেছিস
শুভ- সত্য বললেও‌ দোষ । হ তুই পেত্নি
আমি- ও তাইলে সিওর যে ভালাই লাগতাছে থেংকু
শুভ- কেউ আমারে মাইরালা
আমি- দ্বারা চাকু আনি
শুভ- চাকু দিয়া কি করবি ?
আমি- কেনো তোরে মাইরালাম ।
শুভ- কুত্তি
আমি- হিহি
শুভ- আয় সেল্ফি তুলি
আমি- না
শুভ- আমি তো তুলুম ই ।
আমি- হুরররর
.
.
কিছু সময় পর শুভ ভাইয়া তার বন্ধুদের সাথে কথা বলতে গেলো আমি একা বসে ছিলাম । কিছু সময় পর একটা ছেলে কই থেকে এসে পাশে বসলো ।
ছেলেটি- হাই আমি সজিব তুমি?
আমি- নাম জেনে কি করবেন ?
সজিব- Cool attitude . I like this .
আমি- ও
সজিব- তুমি খুব কিউট
আমি- থেংকু
সজিব- কিসে জানি পড় ?
আমি- টেবিলে
সজিব- তুমি অনেক ফানি
আমি- ওওওও
সজিব- এই তোমার নাম্বার টা দেও না‌
আমি- আমার ফোন নাই
সজিব- এড্রেস?
আমি- এই মাটিই আমার ঠিকানা
সজিব- এই বলো না
আমি- নাম আনহা এইচএসসি দিবো সামনে আর কিছু?
সজিব- ওয়াও নাম্বার টাও দেও না ।
.
.
(রাগ উঠে গেলো । যেই জবাব দিতে যাবো শুভ ভাইয়া এলো )
.
শুভ- কে এই ছেলে ?
সজিব- আমি সজিব তুমি কে ?
আমি- আমার বর সে ।
শুভ- এ্যা
আমি- জানু কই গেছিলা তুমি ?
সজিব- নাইস কাপল (সজিব কেটে পড়লো)
.
.
শুভ- কি রে কি কইলি এইটা?
আমি- আরে‌‌ ওই পোলা চিপকু ছিলো । বাঁচার জন্য মিথ্যে বললাম ।
শুভ- হাহা ব্রিলিয়ান্ট বউ আমার ?
আমি- কে তোর বউ ?
শুভ- কেনো তুই ।
আমি- আমার ঘাট হয়েছে । কেন যে তোরেই কইলাম । এখন মজা নিচ্ছিস
শুভ- কেনো বউ?
আমি- ওই আমি কিন্তু চলে যাবো ।
শুভ- হুর মজাও নেওয়া যায় না ।
আমি- হিহি
.
.
.
বিদায় শেষে বাড়ি ফিরলাম…
তার ২ দিন পর আমি বাড়ি চলে এলাম । ছুটি শেষ তাই । যাওয়ার আগে সবার মন খারাপ ছিলো কিন্তু শুভ ভাইয়া কেনো জানি সামনে আসে নি সেদিন । প্রতিবা‌রই এমন হয় । আমি ফিরার সময় শুভ ভাইয়া আর সামনে আসে না ।
.
.
আমি আবার সেই আগের মতো ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। ১ মাস পরে খবর পেলাম শুভ ভাইয়ার বিয়ে । হঠাৎ বিয়ের কারণ কি জিজ্ঞেস করতে মামনি বললো ভাইয়ার বিদেশ যাওয়ার আগেই নাকি বিয়ে দেওয়া দরকার ।
.
গিয়েই…
আমি- কি রে বিয়ে করতেছিস যে ?
শুভ- তোর কোনো সমস্যা ?
আমি- না সরি
শুভ- যা এখান থেকে
আমি- আচ্ছা
.
হঠাৎ শুভ ভাইয়ার এমন ব্যবহারের কারণ কি বুঝলাম না । সেদিন রাতে আবার কথা বলতে গেলাম ।
আমি- তুই দিনদিন ভুত হচ্ছিস ।
শুভ- হইলে হবো তোর লাগে নাকি ?
আমি- না মানে
শুভ- কি মানে মানে কিছু বলার থাকলে বল নইলে যা । জ্বালাবি না একদম ।
আমি- আচ্ছা সরি ।
.
এই কথা গুলো শুনে চলে এলাম । শুভ ভাইয়া কোনোদিন আমার সাথে এমন ব্যবহার করে নি । কেনো যে হঠাৎ এমন হলো ।কেঁদে ফেললাম কিন্তু নিশ্চুপ ভাবে ।
.
চলবে….

ঝগড়াটে_ভালোবাসা _পর্ব_৩

0

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_পর্ব_৩
Written by Avantika Anh
আমি- হারামি কি করলি এগুলো ?
শুভ- ভালোই তো লাগতেছে ।
আমি- হ হুতুম পেঁচার মতো ।
শুভ- ওমা তুই হুতুম পেঁচা বাহ ভালো নাম তো ।
আমি- হুর হালা ।
শুভ- হলুদ মাখছিস বিয়াটাও কইরালা ।
আমি- হুররর
শুভ- আমি ঘুমামু দুরর হ তুই পেত্নি ।
আমি- তুই রাক্ষস আর তোর বউ পেত্নি
শুভ- হেহে তুই ই বউ
আমি- তোর বউ হইতে আমার বয়েই গেছে ।
শুভ- হেহে আমিও তোর মতো খরগোশ কে বিয়া করুম না ।
আমি- শয়তানননননন
শুভ- যা তো ঘুম পাইছে ।
আমি- কাল দেইখা নিম ।
শুভ- হ দেখিস । এতো কষ্ট কইরা চেহারার যত্ন নেই । একটু দেখিস ।
আমি- তুই দিন দিন বান্দর হয়ে যাচ্ছিস মামনি কে বলা লাগবে ।
শুভ- তুইও দিন দিন বান্দর হয়ে যাচ্ছিস ।
আমি- তোর সাথে কথা বলাই ভুল । গুড নাইট
শুভ- হ যা ।
.
.
রাতে একটু এফবি এ ঢুকে স্ট্যাটাস দিলাম ।
.
“বিয়ে বাড়িতে হলুদে হলুদ হয়ে গেছি”
.
রাতে ঘুমিয়ে গেলাম । সকালে তাড়াতাড়ি নিজে থেকেই উঠলাম আজ শুভ ভাইয়ার উপর শোধ তুলবো । যেই ভাবা সেই কাজ । এক বালতি পানি নিলাম । শুভ ভাইয়া আরাম কইরা ঘুমাচ্ছিলো আর আমি দিছি ঢালে ।
শুভ- আনহা তোরে আমি খাইছি আজ
আমি- হিহি
.
বইলা দৌড় । শুভ ভাইয়া পিছু পিছু আইতেছিলো । পানিতে ভিজা ছিলো তাই পড়ে গেছে । আমি ভালো ভেবে উঠাতে হাত বাড়ালাম । কিন্তু ভাইয়া আমাকে টান দিয়া ফেলায় দিলো । ( কি ভাবছেন রোমান্টিক সিন । আরে না অন্য সাইডে পড়ছি । এতো রোমান্টিক কিনু আপনেরা )
.
আমি- আল্লাহ গো । ফেললি কেন ?
শুভ- তুই আমাকে ভিজাইছোস কেন ?
আমি- এতোদিন আমাকে কতো জ্বালাইছোস ?
শুভ- তোরে আমি কাল সকালে দেইখা নিমু আনহা ।
আমি- হেহে ওকে দেখিস । আমিও দিন দিন সুন্দর হচ্ছি দেখ ভালো কইরা দেখ ।
শুভ- আমার ডায়লগ আমারে
আমি- হ
.
এমন সময় মামনি এসে পড়লো ।
মামনি- কি রে তোরা মাটিতে পড়ে আছিস কেনো ?
আমি- শুভ ভাইয়া আমাকে ফেলায় দিছে
শুভ- না মা এই আনহা টাই তো… ( কথা পূর্ণ করতে দিলো না মা )
মামনি- তুই ই কিছু করছিস মনে হয় । আমার আনহা মা কতো ভালো ।
শুভ- যাক বাবা মা একটা সত্যি কথা বলো আমি ই তোমাদের ছেলে তো ?
মামনি- না তুই তো মানুষের ছেলে । আনহা আমার মেয়ে ।
শুভ- হায় রে এই বয়সে এটা শুনতে হইলো ।
আমি- হিহি ওই রাস্তার ছেলে কাজ কাম নাই আমার কাপড় একটু ধুয়ে দে
শুভ- আনহার বাচ্চি দ্বারা রে
.
এটা শুনার সাথে সাথে আমি দৌড় । পিছনে শুভ ভাইয়াও দৌড় ।
মামনি এদিকে হাসছে আর ভাবছে “এরা দুইটা যে কবে ভালো হবে আর কবে আমি আপুর ইচ্ছে টা পূরণ করবো কে জানে ?”
.
.
ফ্রেশ হয়ে নাস্তার টেবিলে……
.
শুভ- ওই হালি খাচ্ছিস নাকি না ।‌ এতো কম কে খায় ।
আমি- কেনো আমি খাই ।
শুভ- এই জন্যই তো এতো পড়ে যাস
আমি- কইলেই হইলো ।
খালু- তোরা দুইটা কবে ঠিক হবি ?
আমি- খালু দেখো সব দোষ ওর ।
খালু- হুম রে মা । শুভ আনহা কে কিছু বলবি না । ও যা করছে করুক ।
আমি- থেংকু খালু আই লাভ ইউ ।
খালু- আই লাভ ইউ টু মা । তোর পড়ার খবর কি ?
আমি- এই তো সামনে এইচ এস সি পরীক্ষা । ( মা এর মৃত্যুতে আমি একটু পড়ায় পিছিয়ে পড়ি)
খালু- শুভ তোর পড়া কেমন ?
শুভ- এইতো এটাই লাস্ট ইয়ার তারপর ভাবছি বিদেশ যাবো ।
খালু- এখন তো ভাবছি তোর বিয়ে দিয়ে দিবো ।
শুভ- যাও তো কি বলি এসব ।
আমি- হুম খালু দিয়ে দাও । দিন দিন বুড়া হয়ে যাচ্ছে শুভ ভাইয়া ।
শুভ- ওই চুপ কর নইলে তোরেই বিয়া করুম
আমি- এহ আইছে ।
মামনি- কথা টা কিন্তু খারাপ না ।
আমি- ইইইইইই আমি বিয়া করুম না ।
.
বলে চলে আসলাম । খাওয়া শেষ তাই । আজ কোনো অনুষ্ঠানে যেতে হবে না কারণ আজ মোহর আর শুভ ভাইয়ার কোনো কাজ নাই ।
.
রুমে এসে ফেসবুকে ঢুকলাম ।
.
কমেন্টে দেখলাম মেঘ বালক আইডির ছেলেটা কমেন্টে আমাকে হুতুম পেঁচা বলছে । তার ইন বক্সে গিয়ে বললাম “আপনি হুতুম পেঁচা দুররর হন”
.
.
কিছু সময় পর একটা গল্প দিয়ে চলে আসলাম । গোসল শেষে আয়নায় তাকাতেই দেখলাম আমার মুখ আর হাত হলুদ হয়ে আছে । ওতোটা খারাপ লাগছে না কিন্তু আমার নিজেকে নিজের কাছে কেমন ভুতনি ভুতনি লাগছে । এমন সময় শুভ ভাইয়া আসলো ।
শুভ- পেত্নি তুই যতোই নিজেকে দেখ খরগোশ ই থাকবি ।
আমি- তুই নিজে যে বান্দর
শুভ- তুই বান্দরনি
আমি- তুই গরু
শুভ- তুই গাভী
আমি- তুই চিকা
শুভ- তুই চিকি
আমি- চিকি কি ?
শুভ- আমি কি জানি ? ওটার লেডিস ভার্শন কি আমি জানি না তাই চিকি বললাম ।
আমি- হায় রে
শুভ- হেহে
আমি- ওই শুন না
শুভ- বল কি চাস ?
আমি- তুই কেমনে বুঝলি আমি কিছু চাই
শুভ- তোকে আমি চিনি
আমি- ফুচকা খেতে ইচ্ছে করছে খাওয়া না‌
শুভ- যা রেডি হ । তুই ও কি মনে রাখবি কোন মহাপুরুষ আমি ।
আমি- হ তুই তো লুঙ্গি পুরুষ‌
শুভ- ওই আমি লুঙ্গি পড়ি না
আমি- হিহি মিথ্যুক খালু তোকে পড়াইছিলো জোড় করায় রাতে ।
শুভ- তুই কেমনে জানলি ?
আমি- আমিই পাঠাইছিলাম খালু রে আর তোর একটা পিক ও তুলছি ওমনে ।
শুভ- হারামি
আমি- হেহে
শুভ- ফুচকা কে খাওয়ায় দেখ ।
আমি- নিজেই আনতে পারুম ।
শুভ- যা যা
.
আমি রাস্তায় বের হয়ে কিছু দুর হাটতেই শুভ ভাইয়া চলে আসলো ।
আমি- আসবি না বলে ?
শুভ- ভাবলাম আমার হবু বউ হারায় গেলে কারে বিয়া করুম ?
আমি- ওই কে তোর বউ?
শুভ- কে আর তুই ।
আমি- ওই আমি তোর বউ না
শুভ- হেহে তুই ই আমার বউ ।
আমি- যা ভাগ দুর হ ।
শুভ- না গো জানু ।
আমি- ওই তুই ঠিক আছিস নাকি পাগল হইলি
শুভ- ঠিক ই আছি
.
ওই‌ আগা জ্বলদি বাড়ি ফিরবো তোরে খাওয়ায় আমি বাইরে যামু একটু পর ।
.
দোকানে….
খাওয়া শেষে শুভ ভাইয়ার প্লেটের দুইটা ফুচকা তুইলা নিছি ।
শুভ- হারামি আমার ফুচকা দে
আমি- দিমু না এই দেখ খাইয়া নিলাম ।
শুভ- হুরর শয়তান
আমি- হিহি
.
বাড়ি ফিরে এলাম ।
.
চলবে…….
.

ঝগড়াটে_ভালোবাসা _পর্ব_২

0

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_পর্ব_২
Written by Avantika Anh
বাড়িতে এলাম….
শুভ- আনহা
আমি- হুম বল
শুভ- কোথাও না বলে যাস না ।
আমি- হিহি কেনো ?
শুভ- বাচ্চামি বিহেভ বন্ধ কর
আমি- তুই আমাকে এভাবে বলতে পারলি
শুভ- হুম পারলাম
আমি- আই হেট ইউ
শুভ- হাহা
.
চলে এলাম…..
বিকেল বেলা ছাদে বসে ছিলাম । কে যেন আইলো তাকায় দেখি শুভ ভাইয়া কিছু বললাম না ।
শুভ- কি রে মোটি ছাদে কি করিস ?
আমি- আমি মোটি কেমনে আমি অনলি ৪৫ কেজি মোটু তো তুই ৬০ কেজির আটার বস্তা ।
শুভ- মার খাবি
আমি- হিহি আমিও মারতে পারি
শুভ- কাতুকুতু দিমু
আমি- খামচায় দিম
.
.
শুভ ভাইয়া যেই কাতুকুতু দিতে আসবে আমি খামচায় দিলাম ।
শুভ- পেত্নিইইইই
.
আমি পালায় আসলাম ।
শুভ ভাইয়া পিছু পিছু আসলো।
শুভ- হারামি
আমি- হিহি
শুভ- তুই বাড়ি গেলেই বাঁড়ি গেলেই বাঁড়ি গেলেই বাঁচি
আমি- খুব জ্বালাই কি তোমাদের ? (কথা টা শুনে মন খারাপ হলো)
শুভ- হায় আল্লাহ এই টা কার পাল্লায় পড়লাম । সরি মাইন্ড করিস কেনো ? আমি ওভাবে বলছি
আমি- হিহি বাদ দে । গফ এর লগে কবে দেখা করাবি ?
শুভ- আমার আর গফ
আমি- মিছাবাদী সেদিন ডায়রি এ মেঘ পরির কথা পড়লাম । কে এইটা রে?
শুভ- হারামি চোর আমার ডায়রি পড়িস
আমি- হিহি
শুভ- তোকে তো আমি খাইছি আজ
আমি- ওই মামনি কে বলে দিবো
শুভ- এই একটা পাইছিস হারামি দেখে নিবো আমিও ।
আমি- হিহি পারবি না
.
শুভ ভাইয়া চলে গেলো ।‌
বিকেলে বোর লাগছিলো তাই ফেসবুকে ঢুকলাম । কমেন্ট চেক করছিলাম । একটা আইডি আজব কমেন্ট করছে ।
(কেমন আছো গো ভুলে গেলা কীভাবে আমাকে ?)আমি রিপ্লাই দিলাম
-“কে আপনি?”
-“চিনলে না”
-“মানে?”
-“ইনবক্সে দেখো বলছি”
-“আমি ইনবক্সে বেশি যাই না”
-“আসো ইম্পরটেন্ট কথা”
.
কি ভেবে ইনবক্সে গেলাম ।
-বলুন কি বলবেন ?(আমি)
-হেহে(মেঘ বালক)
-আজব হাসির কি?(আমি)
-আল্লাহ রে এতো খাটাস কিনু লেখিকা ম্যাম(মেঘ বালক)
-না কি বলবেন বলেন(আমি)
-কিছু না আপনি সেই কিউট(মেঘ বালক)
-কই দেখলেন?(আমি)
-মনের চোখে(মেঘ বালক)
-হাহা ওকে বাই(আমি)
.
অফলাইন চলে আসলাম । রাত হয়েছিলো কিন্তু আমার খেতে ইচ্ছে করছিলো না । তাই যাই নাই ।
কিছু সময় পর শুভ ভাইয়া এলো ।
শুভ- কি রে মটু খাইতে আসলি না যে?
আমি- খেতে ইচ্ছে করছে না
শুভ- হুর খা তো
আমি- না ভাল্লাগছে না
শুভ- তুই খাবি তো ঘাড় খাবে
.
শুভ ভাইয়া আমাকে থুসায় থুসায় খাওয়ায় দিলো ।
শুভ- শুন কাল আমরা ফ্রেন্ডরা পিকনিকে যাবো তুই গেলে যাইস ।
আমি- আচ্ছা
.
.
পরের দিন আমার জ্বর আসলো । জ্বরের কারণে সকাল সকাল উঠতেও পারলাম না ।
.
কিছু সময় পর শুভ ভাইয়া এলো । কয়েকবার ডাক দিলো কিন্তু আমি না উঠায় হাত ধরে টানতে লাগলো । হাত টা গরম লাগলো । চেক করে দেখলো গায়ে জ্বর ।
শুভ- ওই আনহা জ্বর কবে হলো?
আমি- কই জ্বর ?
শুভ- হারামি কই জ্বর দ্বারা আম্মু কে বলি ।
.
সেদিন আর শুভ ভাইয়াও কোথাও গেলো না আমি গেলাম না বলে । ২ দিন পর জ্বর ভালো হলো । এ দু দিন শুভ ভাইয়া আমার খেয়াল রাখলো ভালোই ।
.
.
জ্বর ভালো হওয়ার পর….
শুভ- ওই আমার পা টিপ ।
আমি- কেনো ?
শুভ- তোর এতো সেবা করলাম তাই ।
আমি- আমি বলছিলাম ?
শুভ- যা ভাগ আর কখনো তোর যত্ন নিবো না এই শেষ ।
আমি- হিহি শুন না ভাবির লগে পরিচয় করাবি কবে ?
শুভ- সময় হোক । আমার ফ্রেন্ডের বোনের বিয়ে লাগছে কাল থেকে সব অনুষ্ঠান শুরু তোকেও যাইতে বলছে রেডি থাকবি ।
আমি- আমি গিয়ে কি করবো ?
শুভ- বসে থাকিস তবুও যাবি
আমি- কি পইড়া যামু ?
শুভ- শাড়ি
আমি- কিইইইইইই
শুভ- হ
আমি- আ‌মি শাড়ি পড়ি নাকি?
শুভ- পড়িস না তো কি পড়লে কি হবে?
আমি- না
শুভ- তুই পড়বি প্লিজজজজজজজ রে
আমি- ওকে
.
পরের দিন…..
হলুদের অনুষ্ঠান ছিলো । এক আমি শাড়ি পড়ি নাই বেশি । ২ মাথায় কাগজের ফুলের কি জানি মামনি পড়িয়ে দিছে ওটা পড়ে আমার আজব লাগছিলো ।
.
বের হলাম রেডি হয়ে….
শুভ- আনহু
আমি- কি ?
শুভ- তুই এতো সুন্দর হইলি কবে থেইকা?
আমি- জন্ম থেইকা হিহি
শুভ- আইসে পেত্নি
আমি- আমাকে আজব লাগছে তাই না ?
শুভ- ভালোই লাগছে খালি একটাই সমস্যা
আমি- কি ?
.
.
শুভ ভাইয়া আমার চুল গুলো খুলে দিলো ।
আমি- কি রে চুল খুললি কেন ?
শুভ- এমনে ভালো লাগছে
আমি- হুর চল জ্বলদি তাইলে জ্বলদি ফিরবো
শুভ- যাইতে না যাইতেই ফিরার কথা । হায় আল্লাহ
আমি- শুন যাচ্ছি ঠিক আসার সময় কিটক্যাট দিবি কিন্তু
শুভ- হারামি ব্লাকমেইল
আমি- হ
.
বাইকে করেই যাচ্ছিলাম । অনুষ্ঠানে ঢুকতেই কিছু মানুষ বললো “দেখ কাপল টাকে মানাইছে তাই না”
আমি- ভাইয়া
শুভ- বল
আমি- দেখ আমাদের কাপল ভাবছে
শুভ- হাহা আমরা তো কাপলই
আমি- মজা ছাড়
শুভ- বাদ দে মানুষ কে ভাবতে দে
আমি- আচ্ছা ।
.
.
অনুষ্ঠান শুরু হলো হলুদ মাখামাখি হচ্ছিলো । শুভ ভাইয়া আর তার বন্ধুরা সবাই হলুদ মেখে ভুত হয়ে গেলো । শুভ ভাইয়া আমার কাছে আসতেই…..
আমি- হ শুভ ভাইয়া তুমি তো ভুত হয়ে গেছো । বিয়েটা করে ফেলো তুমিও
শুভ- খুব হাসি পাচ্ছে তাই না দ্বারা রে শয়তান ।
.
.
শুভ ভাইয়া হলুদ হাতে আমার দিকে আগাতে লাগলো ।
আমি- ওই বেশি হবে দিস না এসব
শুভ- আমি তো দিবোই
আমি- ওই না
.
আমি‌ এক পা করে পিছুতে লাগলাম আর শুভ ভাইয়া আমার দিকে এক পা করে এগুতে লাগলো । শেষ পর্যন্ত আমার মুখে হলুদ মাখিয়েই দিলো ।
আমি- কি করলি এইটা ?
শুভ- এখন তুই ও ভুত
আমি- শয়তান
.
বলেই আমি শুভ ভাইয়াকে আরো হলুদ মাখিয়ে দিলাম ।
.
শুভ- তবে রে
.
এভাবে হলুদ অনুষ্ঠান শেষ হলো আর আমরা বাড়ি ফিরলাম ।
.
.
চলবে……..

ঝগড়াটে_ভালোবাসা _পর্ব_১

0

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_পর্ব_১
Written by Avantika Anh
শুভ : শুন আমি তোকে বিয়ে করবো ।
আমি : আমি তোকে বিয়েই করবো না ।
শুভ : আমি তোকেই আমার বউ বানায় আমার পা টিপাবো তোকে দিয়ে ।
আমি : আমি বিয়ে করবো না
শুভ : করবি না ?
আমি : না
.
শুভ আমার হাতে কামড় বসিয়ে দিলো আর আমি কাঁদতে কাঁদতে চলে আসলাম বাইরের ঘরে ।
.
আমি : খালামনিইইইই
খালা : কি ?
আমি : শুভ ভাইয়া আমাকে কামড়াইছে ।
খালা : কেনো রে শুভ? (শুভ এর কান ধরে)
আমি : আমি বলছি আমি ওকে বিয়ে করবো না তাই ।
.
আমার কথা শুনে সবাই হো হো করে হাসা শুরু করে দিলো ।
খালা : কি রে এতো টুকু বয়সে বিয়ের প্লান । আগে বড় হ
শুভ : কিন্তু আমি আনহা কেই বিয়ে করবো
আমি : আমি করবো না
.
বলে ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিলাম । এই কথা টি হয়েছিলো ১৫ বছর আগে । আমার বয়স ছিলো ৫ বছর আর শুভ ভাইয়ার ৮ বছর ।
.
সেই সময় টা হয়তো মজা ভেবেই সবাই উড়িয়ে দিয়েছিলো নাকি সত্যি জানা ছিলো না । সেই বছর রোড এক্সিডেন্টে আমার মা মারা যায় । বছর দুই এক পর যা হবার সৎ মা আসে । খারাপ ব্যবহার করে নি কিন্তু ওতো ভালো ব্যবহারও তার কাছে পাই নি । আম্মুরা দুই বোন ছিলো । তারপর খালু হয়ে যায় আব্বুর মতো আর খালামনি আম্মু । তাদের ভালোবাসায় কমতি পেতাম না । কিন্তু আব্বুর প্রতি এক ঘৃণা জন্ম নিলো । খুব বেশি একটা কথা হতো না ।
.
আমি আজ মামনির (খালা) বাড়ি গেলাম ।
.
আমি : আমি এসে গেছি ।
মামনি : বস বস
আমি : খালু কই?
মামনি : তোর জন্য দই আনতে গেছে ।
আমি : কি দরকার ?
মামনি : চুপ থাক তো । পড়া কেমন হচ্ছে ?
আমি : ভালোই বাট একটু প্রব্লেম হচ্ছে প্রাইভেট পড়বো মে বি ।
মামনি : শুভ আছে না ও ই পড়াবে ।
আমি : কিন্তু‌
মামনি : কোনো কিন্তু না রাতে আমি ওকে বলে দিবো ।
পরের দিন….
ঘুমাচ্ছিলাম । আমার উপর পানি ফেললো ।
চোখ খুলে দেখি শুভ ভাইয়া ।
আমি : শয়তান , ইঁদুর , বিলাই এটা কি করলি?
শুভ : আর কতো ঘুমাবি মটু হচ্ছিস তো ।
আমি : বললেই হলো
শুভ : হ এতো মোটা হইলে তো তোর বর তোরে তুলতেই পারবে না
আমি : তুই নিজের বউ এর কথা ভাব ভাগ এখান থেকে ।
শুভ : উঠে পড় আজ থেকে আমার কাছে পড়বি । পড়া না পারলে পিডানি খাবি ।
আমি : পিটা খালি তোরে আমি ছাড়ুম না
শুভ : ওলে ওলে যা রেডি হ
আমি : রেডি হয়ে কই যাবো ?
শুভ : বিয়ে করতে
আমি : কি
শুভ : সকাল সকাল মানুষ কই যায় ? কলেজ , স্কুল , ভার্সিটি বা অফিস ।
আমি : আমার কলেজ তো অফ আছে ।
শুভ : আমার ভার্সিটি তো খোলা । চল ঘুরতে যাবি ।
আমি : তোর সাথে যাবোই না রাক্ষস
শুভ : যাবি তুই তোর ঘাড় যাবে । এখনি রেডি হ নইলে কাতুকুতু
আমি : না
শুভ : দাড়া রে ।
আমি : না
.
বইলা দৌড় । শুভ ভাইয়ার ভরসা নাই কখন যে কি কইরা ফেলে ।
.
রেডি হয়ে…
আমি আসতে আসতে নামতেছি । পিছন থেইকা
শুভ : বাছাধন আমার হাত থেকে তোমাকে কেউ বাঁচাইতে পারবে না ।
.
.
হঠাৎ পিছন থেকে এমন কথা শুইনা আমি পড়ে যেতে ধরলাম । কিন্তু কে জানি হাত টা ধরে ফেললো ।
.
শুভ ভাইয়া হাত ধরেছিলো । টেনে তুললো ।
শুভ : বাহ আজকাল তো পড়তে পড়তে চলিস
আমি : তোর জন্য তো
শুভ : মটু হচ্ছিস যে তাই
আমি : হুহ হই নি
শুভ : হচ্ছিস । খাওয়া কমা ।
আমি : মামনি দেখো তো আমাকে মটু বলছে
মামনি : ওই শুভ মার খাবি
শুভ : না আমি ভার্সিটি যাবো আনহা কে নিয়ে
মামনি : হুম যা ঘুরিয়ে আন ।
শুভ : হুম ।
.
কোনো উপায় নাই যেতেই হবে । খাবার টেবিলে ।
শুভ : বসে আছিস কাজ করিস না কেন ? যা আমার জন্য পানি আন ।
আমি : তোকে আমি দেখে নিবো । ( আস্তে বললাম কেউ শুনলো না )
.

পানি আনলাম কিন্তু লবণ দিয়ে ।
.
শুভ পানি খেয়ে কাশি দিতে লাগলো
মামনি : কি হইলো
শুভ : না কিছু না ( একটু লুক দিয়া আমার দিকে তাকাইলো । কারণ সে জানে এটা আমার ছাড়া আর কারো কাজ না )
মামনি : খা
.
খাওয়া শেষে আমি আর শুভ ভাইয়া বের হলাম ।
শুভ : চল বাইকে যাই ।
আমি : না অটো নে
শুভ : আরে ন্যাকামি করিস কেন ? তোর বফ দেখবে না ।
আমি : বফ নাই আমার
শুভ : জানি তো (আস্তে )
আমি : কি
শুভ : চুপচাপ চল
আমি : হুহ
.
চুপচাপ বসলাম । একটু হলেও ওরে আমি ভয় পাই তাই বসলাম ।
.
ভার্সিটি তে….
সবাই এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেনো আমি এলিয়েন । কিছু মানুষ তো আমাদের কাপল ভাবতেছে ।
.
কিছু মানুষ আসলো ।
একজন : কি রে ভাবি নাকি ?
শুভ : আরে না খালাতো বোন
একজন : তো ভাবি হতে কতক্ষণ ?
.
আমি রেগে শুভ ভাইয়ার দিকে তাকালাম । সে বুঝতে পেরে ।
শুভ : ওই মজা করিস না ডাইনি টা রেগে যাবে ।
এক আপু : আরে রাগবে কেনো ? আপি তুমি মাইন্ড করো না এরা এমনি ফাজিল ।
আমি : না ব্যাপার না ।
শুভ : দোস্ত চল আজ নদীর পাড়ে যাই ।
একজন : কিন্তু ক্লাস ?
শুভ : আরে ছাড় তো একদিন না করলে কিছুই হবে না ।‌ আনহাকে নিয়ে আজ প্রথম ভার্সিটি আসলাম । ও তো আসতেই চায় না । না ঘুরিয়ে আমি ছাড়বো না ।
সবাই : আচ্ছা চল ।
.
সেখানে সবাই গল্পে ব্যস্ত ছিলো । আমার একটু একা একা মনে হলো । পাশে একটু দূরে একটি ফুল গাছ দেখতে পেলাম । ভাবলাম নিয়ে আসি এরা গল্প করুক । যেই ভাবা সেই কাজ ।
.
আমি যেয়ে ফুল পাড়ানোর চেষ্টা করলাম । কিন্তু আমার হাতের নাগালের একটু দূরে হওয়ায় পারছিলাম না । হঠাৎ পড়ে যেতে ধরলাম কিন্তু কে জানি ধরে ফেললো ।
.
শুভ : না বলে এলি কেনো ? এখনি পড়লে কি হতো তোর । এতো কেয়ারলেস কেনো তুই ।
আমি : সরি
শুভ : কি সরি ফুল ছিঁড়তেও তো পারিস না পিচ্চি মেয়ে ।
.
শুভ ভাইয়া ফুল টা ছিড়ে দিলো আমাকে ।
আমি ফুল পেয়ে হাসি দিয়ে….
আমি : থেংকু রে
শুভ : পিচ্চি মেয়ে
আমি : না আমি পিচ্চি না
শুভ : তা কি বুড়ি ?
আমি : না আমি বুড়িও না
শুভ : আগে সিওর হ তুই কি ?
আমি : হুহ
.
.
হঠাৎ পিছন থেকে শুভ ভাইয়ার এক ফ্রেন্ড এলো ।
সে : কি রে আমাদের ছেড়ে এখানে কি করো তোমরা ?
শুভ : ফুল ছিঁড়ি
সে : তাই নাকি
শুভ : হুম চল তো
সে : কথা ঘুরানো হচ্ছে
শুভ : মার খাবি ?
সে : না
.
আমরা সেদিন ঘুরে বাড়ি ফিরছিলাম ।
আমি : বাইক থামা
.
বাইক থামিয়ে…..
.
শুভ : কি হলো ?
আমি : আইসক্রিম কিনে দে না
শুভ :‌ কুত্তি আইসক্রিমের জন্য বাইক থামাইলি
আমি : হুম দে না
শুভ : যা ভাগ দিবো না
আমি : দে না
শুভ : না
আমি : আচ্ছা
.
মন খারাপ করে চুপ হয়ে গেলাম । কিন্তু শুভ ভাইয়া গিয়ে আইসক্রিম আনলো ।
শুভ : যা নে তুই ও কি মনে রাখবি কোন দয়ালু আমি
আমি : থেংকু হিহি
শুভ : ওই দুইটায় কেন মুখ দিলি
আমি : ও দুইটা আমার না ?
শুভ : হালি আমি খাবো না ?
আমি : ও নে এটা খা
শুভ : মুখ লাগায় কইতাছিস এটা খা
আমি : হিহি তাইলে আমিই খাইলাম দুইটাই ।
শুভ : না দে আমি খাবো
আমি : এমা তুই আমার এটো খাইলি ।
শুভ : ব্যাপার না
.
চলবে……..