Tuesday, June 17, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2450



টেম্পরারি_বিয়ে _পর্ব_৩

0

টেম্পরারি_বিয়ে
_পর্ব_৩
Written by Avantika Anha
রাতে বৃষ্টি হচ্ছিলো । আমার আবার বৃষ্টি অনেক ভালো লাগে । তাই আর আটকাতে পারলাম না ।
আমি ভিজার জন্য দৌড় দিলাম ।
.
আবির : কই যাচ্ছেন ?
আমি : বৃষ্টি ভিজতে টাটা
আবির : রাতে ভিজিয়েন না ঠান্ডা লাগবে ।
আমি : আমি তো ভিজবোই
.
বলেই দৌড়…..
৪৫ মিনিট পর…..
আবির ভাবছে ” উনি এখনো এলো না কেনো ? এতো ভিজলে তো নির্ঘাত জ্বর আসবে । যাবো কি একটু দেখে আসি । “
.
আবির গিয়ে দেখলো আমি এখনো ভিজতেছি ।‌
আবির : এই মেয়ে আপনি এখনো ভিজছেন ?
আমি : কই কিছুক্ষণ মাত্র
আবির : এ্যা কিছুক্ষণ না এক ঘন্টা
আমি : ও মাত্র । আমি আরও ২ ঘন্টা ভিজবো ।
আবির : আপনি চলুন আমার সাথে
আমি : আমি তো যাবো না যাবো না যাবো না রে আমি যাবো না যাবো না যাবো না রে‌।
আবির : যেতেই হবে
আমি : পারলে নিয়ে যায়ে দেখান ।
আবির : আমাকে আন্ডারেস্টিমেট কইরেন না
আমি : এ্যা আইসে
.
আবির কথা না বাড়িয়ে আনহার কাছে গেলো ।
আমি : আপনিও ভিজবেন চলেন একসাথে ভিজি ।
আবির : আমি ভিজতে না আপনাকে নিয়ে যেতে এসেছি ।
.
এই বলে আবির আমাকে কে কোলে নিয়ে রুমের দিকে এগুতে লাগলো ।‌আমি লাফালাফি লাগালাম ।
আবির : লাফালাফি করে লাভ নাই আমি আপনাকে আর ভিজতে দিবো না ।
.
রুমে এসে আবির নামিয়ে দিলো আমাকে ।
আমি : আপনি একটা রাক্ষস ।
আবির : ওয়াও গুড
আমি : আমি ভিজবো
.
বলে আবার যেতে লাগলাম । এবার আবির হাত ধরে ফেললো ।
আমি : আম্মু আমি যাবো ।
আবির : এখানে আম্মু নেই আর আপনি যাবেন না ।
গিয়ে কাপড় বদলে নিন ।
আমি : আচ্ছা
.
আমি বাথরুমে ঢুকলাম । আসল প্লান তো এটা না । আমি তো ভিজবোই ।
.
আবির নিজের কাপড় বদলানোর জন্য কাপড় বের করতে লাগলো ।
.
এই ফাঁকে আমি দরজা খুলে আবার দৌড় দিছি ভিজতে ।
.
আবির : এ্যা এই মেয়ে এতো ফাজিল । আবার ধরে আনতে হবে এখন ।
.
আবির আবার আসলো ।
আবির : আপনি তো বেশ ফাজিল । একবার ধরে নিয়ে গেলাম । আবার চলে এলেন ।
আমি : এই আপনি আর আমার কাছে আসবেন না ।
আবির : আপনাকে তো আমি নিয়ে যাবোই ।
.
আমি : এই কাছে আসবেন না ।
.
আমি পিছাতে লাগলাম । আবির আমার দিকে এগুতে লাগলো ।
আমি পা পিছলে পড়ে গেলাম ।
আমি : আহ আম্মু গো
আবির : ভালো হইছে
আমি : সব আপনার জন্য
আবির : হাহা কোমর ভাঙ্গে গেছে নাকি ?
আমি : আম্মু আমার কোমর ভাঙ্গে গেছে ।
আবির : এবার চলুন
আমি : ওই‌ আমার পা মোচকে গেছে ।
আবির : ভালো হইছে
আমি : হুর
.
আবির : চলুন আমি নিয়ে যাচ্ছি ।
.
.
বলে কোলে করে নিয়ে গেলো ।
.
রুমে আবির আমাকে কাপড় দিলো চেন্জ করতে । সে বাথরুমে গেলো ।
.
আমি কাপড় টা বদলে ফেললাম ।
.
আবির এলো ….
আমি : আম্মু গো আমার পা গো । উহু কি ব্যাথা রে
আবির : হায় কপাল আপনাকে জোড় করতে কে বললো । আমার কথা শুনলে কি হতো ?
আমি : উহু পরে বইকেন । আমারে কাঁদতে দেন ।
আবির : এই মেয়েটা ওহো
আমি : আম্মু ব্যাথা ব্যাথা ব্যাথা
আবির : দেখি পা টা
আমি : না ব্যাথা
আবির : দেখি
আমি : উহু দেখেন
আবির : (দেখলাম মোচকে গেছে । হাত দিতেই )
আমি : আম্মু সরান ব্যাথা আম্মুর কাছে যাবো ( আমি চিৎকার দিতে শুরু করলাম )
আবির : একদম চুপ কোনো কথা না ।
আমি : ( গালি শুনে চুপ করে গেলাম । আমার উপর কেউ চিৎকার করলে আমি কেঁদে ফেলি তাই চুপ করে গেলেও চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো )
আবির : এতোটুকুতে কাঁদার কি
.
(আমি চুপ)
.
আবির : কি হলো কথা বলেন
আমি : আপনি চুপ করতে বলেছেন
আবির : আচ্ছা বাট কাঁদছেন কেন ?
আমি : আমার উপর কেউ‌জোড়ে চিৎকার করলে কেঁদে দেই তাই ।
আবির : হুম আপনি যে ডেইলি সোপের নায়িকা তাই‌এতো কাঁদেন
আমি : একদম না
আবির : এবার ওদিকে ঘুরেন‌
.
আমি ঘুরলাম । আবির কি জানি করলো পায়ে ।
আমি : আম্মুউউউউউ ( বলেই আবিরের হাত খামচে দিলাম )
আবির : ওহো
আমি : সরি
আবির : ইটস ওকে
.
কিছু সময় পর আবির কাজ করছিলো । আমি যেয়ে বললাম ” হাত টা দিন “
আবির : কেনো
আমি : দেন তো ( বলেই হাত টা টেনে ওষুধ লাগিয়ে দিলাম )
আবির : ওতো বেশি কাটে নি
আমি : যেটুকুই হোক কেটেছে তো । তাও আমার জন্য
আবির : ব্যাপার না । নিহাও এমন করতো ।
আমি : হুম । মন খারাপ ।
আবির : না
আমি : বললেই হলো । আপনার মুখ দেখলেই বুঝা যায় বুঝলেন ।
আবির : বাহ আপনি বুঝি জ্যোতিষী
আমি : হুর মজা নেন
আবির : আরে না
আমি : ঘুমান গিয়ে আমার ঘুম পাচ্ছে
আবির : হুম ঘুমান আমার কাজ আছে ।
আমি : ওকে গুড নাইট
.
আমি ঘুমিয়ে গেলাম । আবির কাজ শেষ করলো । তারপর আমার দিকে তাকালো আর হেসে দিলো ।
আবির : এই মেয়েটা এতোটা ফাজিল যা ভাবার বাইরে হাহা ।
.
বলে আবির ঘুমিয়ে পড়লো ।
.
চলবে…….

টেম্পরারি_বিয়ে _পর্ব_২

0

টেম্পরারি_বিয়ে
_পর্ব_২
Written by Avantika Anha
কিছু সময় পর আমি , আরোহি আর আবির বের হলাম । কারে বসে ছিলাম । আমি আর আরোহি পাশাপাশি বসেছিলাম । আবির ড্রাইভ করছিলো । দুই মেয়ে আমরা মানে আমাদের গল্প তো চলবেই । আরোহি আর আমি গল্প করছিলাম ।
.
আবির : হায় কপাল এতো কথা মানুষ কেমনে বলে‌
আমি : মুখ দিয়ে
আরোহি : হুম ঠিক ভাবি মুখ দিয়া ।
আবির : কম কথা বলো তোমরা ।
আমি : বেশিই বলবো হিহি
আরোহি : বলবো বলবো আমরা কথা বলবো ।
আবির : আমি যে কেনো আসছি ।
আরোহি : আমাদের ব্যাগ ক্যারি করতে
আবির : আরোহি বেশি কথা বলবি না একদম বিয়ে দিয়ে দিবো ।
আমি : ডোন্ট ওয়ারি আরোহি বিয়ে ভাঙ্গে দিবো
আরোহি : থেংকু ভাবি‌
আবির : দুই মেয়ে একসাথে হইলেই হইলো ।
আমরা একসাথে : হিহি
.
শপিং মলে
আমি কালার চুজ করতে পারছিলাম না ।
আরোহি দেখে বললো : ভাইয়া তুই চুজ কর
ভাইয়া : আমি কেনো ?
আরোহি : বাহ রে তোর বউ তুই চুজ করবি না । জ্বলদি চুজ কর ।
ভাইয়া : আচ্ছা এই নীল টা নে ।
আরোহি : বাহ জানিস ভাবিরও প্রিয় কালার নীল ।
আমি : আরোহি তুমি কিছু নেও
আরোহি : আমার সব আছে
আমি : নেও প্লিজ
আবির : নিয়ে নে পরে আর চান্স পাবি না‌
আরোহি : ওকে আমি তিনটা নিবো
আমি : তিনটা কেনো ৫ টা নাও বিল তো আর আমরা দিবো না হিহি
আবির : (দুইটাই এক গোয়ালের গরু আমার পকেট আজ ফাঁকা) হুর নে যা ইচ্ছা নে
.
শপিং শেষে আমরা গেলাম ফুচকা খেতে ।
আবিরের মন খারাপ হয়ে গেলো । সে ভাবতে লাগলো নিহার সাথেও তো আমি এভাবেই আসতাম ।
আমি দেখলাম উনার মন খারাপ তাই মন ভালো করার চেষ্টা করলাম ।
আমি : আরোহি তোমার ভাই মনে হয় না ফুচকা খেতে পারে
আরোহি : হুম ভাবি ঠিক বলছো ।
আবির : মোটেও না
আমি : বললেই হলো
আবির : আমি ফুচকা খেতে পারি
আমি : তাহলে প্রতিযোগিতা হোক আপনার আর আমার আর আরোহির ।
আরোহি : হুম হোক হোক ।
আবির : ( খাইছে রে আমি তো ওতো ফুচকা খাইতাম না ) হুম হোক
.
ফুচকা খাওয়া শুরু হলো । আমি জিতলাম তারপর আরোহি ।‌
.
আবির হেরে গেলো ।
আবির : যাই হোক আমি হারছি তো কি দেখ আমার এখনো কতো গুলো বাকী । তোমরা দেখো আর আমি খাই ।
আরোহি : ভাবি এখন কি হবে আমার তো এখনো খেতে ইচ্ছে করছে ।
আমি : এটা আর এমন কি উঠায় নাও
আরোহি : বুঝছি ভাবি আইডিয়া সেই
আবির : কি আইডিয়া ? কি উঠাবে ?
আমি আর আরোহি আবিরের প্লেট থেকে ফুচকা খেয়ে নিলাম ।
.
আবির হা করে ছিলো ।
এটা দেখে আমি আর আরোহি হেসেই দিলাম ।
.
আরোহি এমন সময় ওর কোন বান্ধবী কে দেখে চলে গেলো ।
আমি আর আবির বাড়ি ফিরছিলাম ।
আবির : আপনি তো খুব ফাজিল
আমি : এখন জানলেন ?
আবির : হুম
আমি : মি. আবির
আবির : বলুন
আমি : ফুচকার দোকানে কি নিহা কে মিস করছিলেন ?
আবির : আপনি জানলেন কীভাবে ?
আমি : হাহা মনে হলো ।
আবির : ওওওও
আমি : গ্লাস এর বাইরে দেখছিলাম ।
.
এমন সময়….
আমি : গাড়ি থামান
আবির : কেনো?
আমি : আরে থামান
আবির : কি হয়েছে ?
আমি : থামান তারপর বলছি
আবির : এই যে থামালাম
.
আমি দৌড়ে গেলাম । আসলে আইস্ক্রিম দেখছি আর কি আমি ঠিক থাকি নাকি ।
.
যেয়েই দুটো আইস্ক্রিম নিলাম । মি. আবির বিল টা পে করেন ।
আবির : ( ভাবছে কি আর করার করতেই হবে । বাট এই মেয়ে বাচ্চা নাকি । এতো বাচ্চামি স্বভাব )
আচ্ছা
.
বিল পে করে ।
আমি কারে বসে আইস্ক্রিম খাচ্ছিলাম ।
আবির : ওহো আপনি কি বাচ্চা
আমি : বড় হলাম কবে ( আইস্ক্রিম খেতে খেতে )
আবির : খান খান
আমি : এমা গো
আবির : কি
আমি : আপনি খাবেন না এই নিন একটা আপনার জন্যও কিনছি
আবির : আমি এসব বাচ্চাদের জিনিস খাই না ।
আমি : তাই তো আপনি বুড়া
আবির : কিইইইই
আমি : খেলে কি হয় ( বলেই জোড় করে মুখে ঢুকায় দিলাম )
আবির : এসব কি আপনি পাগল নাকি ?
আমি : না আমি পাগল কেনো হবো
আবির : তো ?
আমি : আমি তো পাগলি । জানেন না আমি মেয়ে ।
আবির : হায় কপাল ।
.
.
বাড়ি ফিরলাম……..
মা : কি রে শপিং হলো তোদের
আবির : হুম মা ।
আমি : আপনার জন্য এই শাড়ি টা এনেছিলাম ।
মা : আপনি বলছিস কেন রে মা । আমি তো তোর মা এখন । আম্মু বলবি ।
আমি : মামনি বলি ?
মা : যা ইচ্ছে বল মা । দেখি শাড়িটি
আমি : এই যে
মা : বাহ দারুণ তো ।
ধন্যবাদ যা ফ্রেশ হয়ে নে । কাল আবির আর তুই তোর বাপের বাড়ি যাবি । ঘুরে আসবি ।
আমি : সত্যি ?
মা : হুম
.
রুমে….
আবির : শুনুন কথা ছিলো ।
আমি : জ্বী বলতে থাকেন টেম্পরারি হাসবেন্ড
আবির : মানে ?
আমি : এটা টেম্পরারি বিয়ে মানে আপনি টেম্পরারি হাসবেন্ড
আবির : ওহ
শুনুন ধন্যবাদ আমি মায়ের জন্য শাড়ি কিনতে ভুলে গেছিলাম ।
আমি : ব্যাপার না উনি আমারো মা
আবির : টেম্পরারি
আমি : হুম হুম টেম্পরারি
.
আমি : আমি ফ্রেশ হবো টাটা ।
আবির : আমি যাবো
আমি : আমি আগে
আবির : না আমি
আমি : আরে মামনি তুমি
.
আবির যেই পিছনে ঘুরলো আমি দৌড় টু বাথরুম ।
আবির পিছনে দেখে কেউ নাই ।
আবির : কই কেউ তো নাই ।
এ্যা আমাকে বোকা বানায় গেলো ।
.
ফ্রেশ হয়ে এসে
আমি : হিহি বোকা বানাইছি
আবির : হুহ
আমি : চলেন ডিনারে
আবির : জ্বী
.
ডিনারে…
আমি একটু কম খাই ।
মা : এতো কম কেনো ? আরেকটু নে
আমি : আমার এটাই যথেষ্ঠ আমি এটুকুই খাই ।
আবির : এই জন্য তো হাড্ডি ওয়ালি
আমি : মোটেও না
আবির : মিস হাড্ডি বাহ দারুণ নাম তো
আমি : আপনি যে মি. বুড়া
আবির : মোটেও আমি বুড়া না
আমি : তো আমিও মিস হাড্ডি না
আবির : আপনি মিস হাড্ডি
আমি : না না না আপনি বুড়া
আবির : না
মা : এই তোরা থামবি । দুটোই বাচ্চা
আমি : মামনি উনিই প্রথম আমাকে বললো
মা : আবির এমন আর বলবি না আমার মেয়ে কে
আবির : ও তোমার মেয়ে হলে আমি কি ?
মা : তুই জামাই
আরোহি : হাহা দুলাভাই ।
আবির : সব মেয়েই এক দুর আমার পক্ষে কেউ নাই ।
মা : তোর ছেলে হলে ও তোর পক্ষে হবে যা
আবির : হুর
.
খাওয়া শেষে রাত্রে
আমি : ইয়ো ইয়ো কি মজা কাল যাবো বাড়ি
আবির : ঘুমায় পড়ুন কাল উঠতে হবে ।
আমি : আমার না খুশি হলে‌ ঘুম পায় দেরিতে
আবির : তো আপনি জেগে থাকুন আমি ঘুমালাম ।
আমি : না না তখন ভুত আসলে আমার কি হবে ?
আবির : ওহো এতো ভয় ?
আমি : আমি মরলে কি হপ্পে ?
আবির : জনসংখ্যা কমবে
আমি : হুহ‌
আবির : আমি ঘুমালাম
.
আমি : না না না
এই বলে মি. আবির কে জ্বালাতে লাগলাম যেন তিনি না ঘুমান ।
আবির : ইসসস নিজে ঘুমাবে না আমাকেও ঘুমাতে দিবে না
আমি : হুম
আবির : তা জেগে কি করবো
আমি : চলেন মুভি দেখি
আবির : আচ্ছা
.
মুভি টা একটু ইমোশোনাল‌
.
আবির : ( কে জানি কাঁদছে । পাশে তাকায় দেখি আনহা কাঁদছে । মেয়েটাকে কাঁদলে একদম মানায় না । ফাজলামি করলেই ভালো লাগে )
কাঁদছেন কেন ?
আমি : ওদের কতো কষ্ট হচ্ছে ( বলেই আবার কেঁদে দিলাম )
আবির : এটা তো সত্যি না
আমি : তবুও
আবির : হুম আপনি তো কাঁদবেনই কাঁদুরি
আমি : না না না
আবির : হ্যা হ্যা হ্যা
আমি : কথা‌ বলাই বেকার
আবির : মুভি টা কন্টিনিউ করি
আমি : হুম
.
দেখতে দেখতে আমি ঘুমিয়ে পড়ছি‌।
.
.
আবির তাকায় দেখে আমি ঘুমায় পড়ছি । (ভাবছে মেয়েটা বড় আজব । কষ্টে নাকি সুখে বুঝাই যায় না । নিশ্চুপ পরি লাগতেছে ঘুমিয়ে তাকে । নাহ মায়ায় জড়ানো যাবে না । আমি তো অন্যের মায়ায় আবদ্ধ )
.
আবির শোফায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো
.
পরেরদিন সকালে
আমি : মি. আবির ও মি. আবির উঠুন উঠুন ।
আবির : কে রে এতো সকালে
আমি : নামায পড়বেন না
আবির : আমি নামায পড়ি না ঘুমালাম
আমি : না পড়তেই হবে
.
আবির জবাব দিলো না ।
আমি : পড়বেন না তাইতো
.
বলেই বাথরুম থেকে পানি এনে ঢেলে দিলাম ।
.
আবির : উঠে বলে কি হলো এসব
আমি : গোসল হিহি
আবির : এটা কেনো
আমি : নামায পড়েন নইলে গোবর এনে ঢেলে দিবো ।
আবির : ( ভাবছে এই মেয়ের ভরসা নাই । তাই উঠে নামায পড়তে গেলো )
.
(আমি ভাবছি জানি এই বিয়ের মানে নাই । কিন্তু কিছু পারি আর না পারি আপনাকে ভালো করেই যাবো)
.
বিকেলে….
আমি আর আবির বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হলাম
.
বাড়ি গিয়ে আম্মু আর সবাই হ্যাপি । আম্মু হ্যাপি আমাকে দেখে । বাকীরা হ্যাপি টাকাওয়ালা জামাই দেখে বুঝতে পারলাম ।
.
মা একা ডেকে বললো ” তুই খুশি আছিস ?”
আমি : হবো না কেনো ? টাকাওয়ালা জামাই দিছো
মা : এভাবে বলছিস কেনো ? সবাই জোড় করলো তাই তো
আমি : বাদ দাও
মা : জামাই বড় ভালো
আমি : হুম
.
.
সব আত্মীয় রা চলে গেলো । আম্মু জামাই আদর করতে লাগলো ।
.
আবির পা উঠায় বসে আছে
আমি : আম্মু আমিও এসেছি একটু তাকাও
আম্মু : জামাই প্রথম এসেছে তুই তো আছিসই
আমি : হায় আল্লাহ মেরি মা না রাহি
আম্মু : চুপ কর তো
আমি : দুর আম্মু মিমি আসে নাই ?
আম্মু : আসবে একটু পর
আমি : ইয়াহু তোমরা যাই হও আমার বেস্টু আমারি থাকবে ।
.
কিছু সময় পর মিমি আসলো ।
হায় কপাল হেইডাও দুলাভাই দুলাভাই ।
আমি : আমি আর থাকবো না এই বাড়িতে গেলাম আমি ।
.
বের হয়ে যাচ্ছিলাম । কেউ আটকায় না কেনো ?
আমি : আমি কিন্তু সত্যি যাচ্ছি
মিমি : টাটা
আমি : গেলাম আমি
মিমি : যা
আমি : আমার বাড়ি আমি কেন যাবো দুররর‌ আমি গেলাম আমার রুমে
.
আমি চলে গেলাম….
.
আবির : আনহা মনে হয় রাগ করলো.
আম্মু : না বাবা ও এমনি একটু বাচ্চার মতো
আবির : হুম দুই দিনে বুঝে গেছি
আম্মু : বাবা ও না চাপা স্বভাবের একটু । একটুতেই কেঁদে ফেলে ওর খেয়াল রেখো ।
আবির : জ্বী (মনে মনে বললো এটা যে হবে না । এটা টেম্পরারি বিয়ে )
.
সবাই চলে গেলো ।
আবির আমার রুমে গিয়ে দেখে আমি কিটক্যাট খাচ্ছি ।
আবির কিছু না বলে বসে পড়লো বেডে
.
আমি কিটক্যাট খেয়ে যাচ্ছি
আবির : এতো খাচ্ছেন কেনো ?
আমি : আমার প্রিয় আর আমি রাগ করছি তাই
আবির : দাঁত সব যাবে
আমি : না যাবে না পমি গেলাম ব্রাশ করতে টাটা ।
.
বলেই বাথরুমে দৌড় ।
আবির আমাকে এভাবে দৌড়াতে দেখে হেসেই ফেললো ।
আবির ভাবছে পাগলি মেয়ে এটা ফুল ।
.
চলবে……

টেম্পরারি_বিয়ে _পর্ব__১

0

টেম্পরারি_বিয়ে
_পর্ব__১
Written by Avantika Anha
.
.
বিয়ে নিয়ে হয়তো সবার ইচ্ছে থাকে । স্বপ্ন থাকে । আমারো ছিলো । আজ আমার বিয়ে কিন্তু আমি খুশি কি দুঃখী বুঝছি না । খুশি কি এই জন্য হবো যে বাবার অপারেশনের টাকা টা জোগাড় হয়ে গেলো । নাকি এই জন্য যে আজ আমার বিয়ে‌ । শুধু বিয়ে বললে ভুল #টেম্পরারি_বিয়ে ।‌ অনেকের মনে প্রশ্ন হচ্ছে নিশ্চই কি এই টেম্পরারি বিয়ে । আসলে বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লো । আমার টাকার প্রয়োজন অপারেশনের জন্য । কিন্তু আমি জব করি না কেবল ইন্টার পরীক্ষা দিলাম । এতেই এতো বড় প্রব্লেমে পড়ে যাই । ফুপিরা ভালো পাত্র পেয়ে বিয়ে দিতে উঠে পড়ে লেগে যায় ।‌
.
.
যেদিন আমাকে দেখতে আসে সেদিনই একান্তে মি. আবির জানিয়ে দেন যে তিনি বিয়ে করতে ইচ্ছুক নয় । তিনি অন্য কাউকে ভালোবাসতেন কিন্তু সে তাকে ধোকা দিয়ে অন্যের কাছে চলে যায় । আজও নাকি তিনি তাকেই ভালোবাসেন । সব শুনে হাসি মুখে বলি আচ্ছা ।
.
তিনি বলেন আমার বাবার অপারেশন টা তিনিই করার খরচ দিবেন । এটাই যথেষ্ঠ ছিলো । তাই নিজের স্বপ্নগুলো ভেঙ্গে দিলাম ।
.
তার বন্ধুরা তাকে জোড় করে বাসর ঘরে ঢুকিয়ে দিলেন । আমি কিছু না বলে সালাম করে বললাম , “টেম্পরারি হলেও নিয়ম অনুযায়ী সালাম টা করে নিলাম । জানি শীগ্রই এই বিয়ে ভেঙ্গে যাবে । আপনি কি নামায পড়বেন আমার সাথে ?”
.
আবির : যে বিয়ের মানে নেই তাতে এতো নিয়ম মানারও প্রয়োজন নাই ।‌ আমি ফ্রেশ হয়ে ঘুমাবো আপনি শোফায় শুয়ে পড়িয়েন আর আপনার যা ইচ্ছা করুন । আমাকে বলার প্রয়োজন নেই ।
আমি : জ্বী আপনি ফ্রেশ হয়ে নিন তারপর নাহয় আমি যাবো ।
আবির : আপনাকে বলতে হবে না‌।
আমি : আচ্ছা
.
আমি বিয়ের গহনা খুলতে লাগলাম । আবির ফ্রেশ হয়ে আসার পর আমি ফ্রেশ হলাম এবং ওযু করে নিলাম । আবির ঘুমিয়ে পড়েছে । আমি নামায পড়ে নিলাম ।
.
তারপর আমিও শুয়ে পড়লাম ।
.
আমার জায়গা পরিবর্তন‌ করলে সহজে ঘুম হয় না । তাই কিছুক্ষণ এপাশ ওপাশ করলাম । ঘুম আসতেছিলো না তবুও । তাই বেলকনিতে গিয়ে দাড়ালাম । বেলকনির ওই নিস্তব্ধ পরিবেশ আর আমার বর্তমান অবস্থার কথা ভেবে চোখে পানি চলে এলো ।
.
আবিরের ঘুম ভেঙ্গে গেলো কারো কান্নার শব্দে । তাকিয়ে দেখে আনহা রুমে নেই । আবির খুঁজতে লাগলো আনহা কে । দেখলো বেলকনিতে দাড়িয়ে ।
.
আমি কাঁদছিলাম । হঠাৎ কেউ আমার পিছনে এসে দাড়ানোতে সামান্য চমকে উঠলাম । ভুত ভেবে ভয়ে বলে উঠলাম “আম্মু ভুততততততত”
আবির : এ্যা কই ভুত ?
আমি : ( চোখ খুলে দেখি আবির ) ও আপনি
আবির : আপনি এতো রাতে‌ বেলকনিতে কাঁদছেন কেনো ?
আমি : শখ লাগছে তাই ।
আবির : মানে‌
আমি : কিছু না । আপনি এমনে ভুতের মতো দাড়ায় ছিলেন কেনো ?
আবির : আপনি রুমে ছিলেন না তাই দেখতে এলাম ।
আমি : ও । একটা প্রশ্ন আছে ?
আবির : বলতে পারেন । ( আবির ভাবছে বিয়ের ব্যাপারে কিছু নাকি )
আমি : এখানে কি ভুত আছে ?
আবির : মানে ( এ কেমন প্রশ্ন )
আমি : আরে ভুত ভুত যে হাউ মাউ করে
আবির : হুম আছেই তো আপনি নিজেই তো একটা ভুত ।
আমি : কোন দিক দিয়া ।
আবির : ভুত না হলে কেউ‌ এতো রাতে বেলকনিতে আসে ?
আমি : ঘুম আসতেছিলো না
আবির : গুড জব
আমি : আর আমি ভুত না আপনি নিজেই রাক্ষস
আবির : হুহ বললেই হলো । নিজে তো পেত্নির মতো ।
আমি : আপনি যে রাক্ষস
আবির : এই মেয়ে আমি রাক্ষস না ।
আমি : তো আমিও ভুত না ।
আবির : আল্লাহ গো এই মেয়ে এতো কথা বলে কেন ?
আমি : ইচ্ছা হইছে ।
আবির : হইছে বাদ দেন । এতো বেশি কথা বলা ভালো না । তা আপনি টেম্পরারি বিয়ে তে রাজি হলেন কেনো ? আপনি তো ভালো কাউকে পেতে পারতেন ।
আমি : ভাগ্যে হয়তো এটাই ছিলো আর আপনি জানেন ই আমার বাবা অসুস্থ ।
আবির : শুধুমাত্র এ জন্য নিজের সব ইচ্ছা ত্যাগ করলেন ?
আমি : জানি না । হয়তো সবাই বোঝা মনে করে তাই হয়তো ।
আবির : ও ( হয়তো মেয়েটার খুব কষ্ট )
আমি : আচ্ছা আপনার ভালোবাসার মানুষটির নাম কি ?
আবির : নিহা
আমি : অনেক ভালোবাসেন তাই না ?
আবির : এখনো ওর অপেক্ষায় ।
আমি : ওহ
আবির : জ্বী শুয়ে পড়ুন ।
আমি : শুনুন
আবির : বলুন ।
আমি : বন্ধু হতে তো পারি তাই না আমরা ?
আবির : নাহ
আমি : কেনো
আবির : কোনো মায়ায় জড়াতে চাই না
আমি : আচ্ছা । একটা কথা বলি ?
আবির : হুম বলুন
আমি : আমি বিছানায় ঘুমাবো আপনি শোফায় যান
আবির : মানে ? কেনো ?
আমি : কোলবালিশ আর বিছানা ছাড়া ঘুম আসে না ।
আবির : ওহ আচ্ছা ( আবিরেরও আসে না । কিন্তু ও কিছু বললো না )
.
আমি : তাইলে গুড নাইট আমার ঘুম পাইছে ।
.
বলে বেডে গিয়ে শুয়ে পড়লাম ।
.
আবির কিছু না বলে শুয়ে পড়লো ।
.
সকালে আনহা উঠে গোসল করে নিলো । রেডি হচ্ছিলাম । এমা খাইছে রে আমি যে শাড়ি পড়তে পাড়ি না ভুলেই গেছি ।
.
আবিরের ঘুম ভেঙ্গে গেলো । দেখলো আনহার ব্যর্থ চেষ্টা । আনহার ব্যর্থ চেষ্টা দেখে হেসেই ফেললো আবির ।
.
আমি : হাসার কি আছে ?
আবির : আপনি শাড়ি পড়তে পারেন না । হাহা ।
আমি : আম্মু পড়তে দেয় নি আমার কি দোষ ।
আবির : হাহা ভালোই তা পড়ছেন কেনো ?
আমি : পড়া বাধ্যতা
আবির : ও ।
আমি : আপনার ফোন টা দেন তো ।
আবির : মানে ?
আমি : ফোন দেন ।
আবির : আপনাকে কেনো দিবো ?
আমি : আপনার ফোন চেক করবো না আমি নেটে দেখবো শাড়ি পড়া ।
আবির : এই নিন । ( আইডিয়া আছে ভালোই )
আমি : (ফোনে নিহার পিক ও দেখে ফেললাম । এখনো আগলে রেখেছেন । যাই হোক আমার কি)
.
শাড়ি পড়ে ফেললাম ।
.
আবির আনহার দিকে তাকিয়ে আছে । দারুণ লাগছে শাড়িতে । আমার সাথে চোখ পড়তেই আবির চোখ সরিয়ে নিলো ।
.
হঠাৎ দরজায় ঠক ঠক আওয়াজ পেলাম ।
আমি : কে ?
আরোহি : আমি ভাবি ।
( আরোহি আবিরের বোন )
দরজা খুলো ।
.
আমি : দাড়াও
.
ওই আপনি জ্বলদি বিছানায় যান ।
আবির : কেন
আমি : আরোহি দেখলে জেনে যাবে যে আমাদের মাঝে কিছু একটা ভুল
আবির : এই রে ঠিক তো ।
.
আবির জ্বলদি সব উঠায় বিছানায় গেলো ।
.
আরোহি : আরে ভাইয়া ভাবি পরে রোমান্স করিস দরজা খুল ।
.
আমি দরজা খুললাম….
আরোহি : কি রে ভাই এতো ঘুম কেনো ?
আবির : তোর কি । এখানে কেন আসছিস?
আরোহি : বাহ বাহ এখনো রোমান্স‌ বাকী নাকি ?
আবির : তুই যাবি না মার খাবি ?
আরোহি : হুহ যা তোর সাথে কথা নাই । আমি ভাবির কাছে এসেছি ।
আমি : বলো ননোদিনী
আরোহি : ভাবি আই লাভ ইউ
আমি : আই লাভ ইউ টু
আবির : যা ভাগ নিজের ভাইয়ের তো খোঁজ নাই ।
আরোহি : নিবোও না । টাকা দে তো ।
আবির : হুহ টাকার বেলায় আমি । যা দিবো না ।
আরোহি : দে ভাবির জন্য শপিং করতে যাবো
আবির : কেনো ?
আরোহি : আম্মু বলেছে
আমি : আমার কিছু লাগবে না
আরোহি : আরে ভাবি লাগবে
আবির : আচ্ছা নে
আরোহি : ওকে রেডি থাক একটু পর শপিং এ যাবো
আবির : আমি কেন ?
আরোহি : তোকে তো যেতেই হবে
আবির : আমি যাবো না ।
আরোহি : আম্মু কে বলবো নাকি
আবির : না থাক আমি যাবো ( আবির তার মা কে একটু ভয় পায় )
.
চলবে…..

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _শেষ_পর্ব

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি
_শেষ_পর্ব
Written by Avantika Anha
আমি ভাবছি “মি. নাহিদ কি পাগল হয়ে গেছে নাকি এমনে করে কেনো । আমাকে ভালোবাসে নাকি ? না না এটা হবে কেনো। কি যে হচ্ছে”
ফুপি : আনহা এক বিয়ে আছে আত্মীয়ের চল তুই আর এদের ও নিয়ে চল ।
আমি : ওকে
ফুপি : শাড়ি পড়ে চল ।
আমি : আমি শাড়ি কই পাবো ?
ফুপি : আমার তো আছে ওই গুলোর একটা পড়ে নিস । শাম্মিকেও একটা দিস ।
আমি : ওকে
.
আমি‌ আর শাম্মি শাড়ি পড়ে নিলাম । আমি নীল শাড়ি পড়লাম আর শাম্মিও নীলই পড়লো । আমি নীল চুড়ি , সাথে কাজল দিলাম আর সেই সাথে চুল ছেড়ে দিলাম , ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক ( লেখিকার সাজা টা খুব ভালো লাগে তাই নিজেকে কল্পনায় এভাবে সাজালাম )
শাম্মি : বাহ ম্যাডাম সেই তো লাগতেছে । সব ছেলে তো আজ বউ ছেড়ে আপনাকে দেখবে ।
আমি : যা ভাগ
আগে তুই দেখ জিজু কয়বার উস্টা খায় ।
শাম্মি : আচ্ছা চল ।
আমি : হুম চল
.
নিচে নেমে আসলাম । আমাকে দেখে নাহিদ থ ।
( এতো সুন্দর লাগছে আমার এলোকেশি কে )
.
ফুপি : বাহ দুজন কেই সুন্দর লাগতেছে ।
.
বিয়ে বাড়িতে……
আমি আর শাম্মি গল্প করতেছিলাম । এমন সময় এক ছেলে আসলো ।
ছেলেটি : হাই আমি রাজ
আমি : ও নাইস নেম ।
রাজ : আপনার নাম ?
আমি : জেনে লাভ ?
রাজ : বলেন না
আমি : পেত্নি
রাজ : হাহা সুন্দর নাম
আমি : হিহি আমি জানি । আমার নাম আনহা । সরি মজা করতেছিলাম ।৤
রাজ : হাহা ভালোই পারেন আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে ।
আমি : থেংকু ।
.
.
নাহিদ দেখলো এক ছেলে আনহার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে তাই নাহিদ জাহিদ কে নিয়ে সেখানে‌ গেলো ।
.
নাহিদ : কি হচ্ছে ?
রাজ : কে আপনি ?
নাহিদ : ফ্রেন্ড
রাজ : ওওওওওও
আমি : শাম্মি চল‌।
.
আমি আর শাম্মি চলে আসলাম ।
.
রাজ : আচ্ছা আমিও যাই
নাহিদ : না দাড়ান । শুনুন ও আমার গফ একটু রাগ করছে তাই কথা বলছে না । আপনি আবার নজর দিয়েন না ব্রো ( আন্দাজি কইলাম )
রাজ : ও আচ্ছা আচ্ছা
নাহিদ : হুমম
.
নাহিদ ভাবছে “না ওকে অন্য কারো হতে দেওয়া যাবে না ।
.
.
আমি একা একা হাঁটে বেড়াচ্ছিলাম এমন সময় আবির যেন কই থেকে উঠে আসলো । হিহি মানে চলে আসলো ।
আবির : তুই এখানে কি করছিস ?
আমি : বিয়ে ফুপি আনলো আমাকে ।
আবির : ও বর আমার বন্ধু
আমি : সেই তো কাপল টাকে মানিয়েছে
আবির : দোস্ত কার দেখতে হবে তো ।
আমি : যা ভাগ তুই তো বান্দর
আবির : ইনসাল্ট করো না গো মনে কষ্ট লাগে ।
আমি : হায় কপাল তুই এমনে কেমনে হইলি ?
আবির : তোমার প্রেমে গো সিনোরিতা
আমি : ফিল্মি পোকা ।
আবির : বাই দা রাস্তা তুই এখানে হঠাৎ আসলি যে ?
আমি : কেন আসতে পারবো না ?
আবির : না তা না কিছু কি হইছে ?
আমি : না কিছু না
আবির : মিথ্যে বলে লাভ কি ?
আমি : আসলে ……. ( সব বললাম )
আবির : ভুল হতে পারে দোস্ত ।‌ আমার মনে হয় ছেলেটা তোকে ভালোবেসে ফেলছে ।
আমি : না আমি বাসি না আর
আবির : যাই হোক তোর ভাবি পছন্দ হইছে পটায় দে
আমি : হায় রে এটা কয় নাম্বার ?
আবির : ৫৩ নাম্বার পছন্দ মনে হয়
আমি : ৬৭ নাম্বার হালা
আবির : যাই বল প্রথম ভালো লাগা তো তুই । তুই রাজি হয়ে যা আর হইবো না পছন্দ ।
আমি : ভাগ লুইচ্চা
.
.
নাহিদ আসলো….
নাহিদ : আনহা তোমার সাথে কথা ছিল কিছু ।
আমি : আমার নাই ।
নাহিদ : প্লিজ ইটস ইমপরটেন্ট
আমি : আবির যা তো
আবির : ওকে বউ ( মজা করে )
আমি : ( হালা নির্ঘাত মজা নিলো ) ভাগ হালা লুইচ্চা
নাহিদ : সরি আবার এতোদিন ধরে বলছি প্লিজ বুঝো
আমি : সেদিন কতোটা কষ্ট আমি পেয়েছিলাম জানেন ?
নাহিদ : মাফ করো একটু রাগ বেশি আমার ।
আমি : হুম
নাহিদ : আমি তোমাকে ভালোবাসি
আমি : জান্নাত কই গেলো ?
দুইদিনে ওর প্রতি ভালোবাসা শেষ
নাহিদ : ওটা ভুল ছিল । আমি যাকে খুঁজছিলাম তা ও না তুমি । জাহিদ আর শাম্মি দুজনই জানে ।
আমি : প্রমাণ কি ( রেগে আন্দাজি বললাম )
নাহিদ : দেখতে চাও ?
আমি : হুম
নাহিদ : ওয়েট এন ওয়াচ
আমি : হুহ
.
.
আমি আন্দাজি আউল ফাউল বকতেছিলাম । হায় রে ওয় সত্যি সত্যি কিছু করলে কি হবে । বেশিই রাগ ঝাড়ে ফেলছি ।
.
নাহিদ রেগে রাস্তা দিয়ে পুকুরের ওদিক যাচ্ছিলো । ঝাপ দিয়ে আনহা কে দেখাবে তাই ।
আমিও নাহিদের পিছনে দৌড় ।
আর কি যে হলো মনে নাই আমি চোখ খুলে দেখি হসপিতালে ।
.
( ওই টাইমে একটা কার এর সামনে পড়ে গেছিলাম । কার ব্রেক ঠিক ই মারা হইছিলো কিন্তু একটু ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেছিলাম । এতে একটু মাথায় আঘাত পাই । নাহিদ আমাকে হসপিতালে নিয়ে যায় কিন্তু ও নিজেকে দোষী মনে করে ফেলে ।‌)
সেদিনের পর নাহিদ আমার সামনে আর আসে না ।
.
আমি যতোবার ওকে ডাকি ও চলে যায় ।
.
বারবার আমার থেকে লুকিয়ে চলে
.
প্রায় ৩ মাস পর….
আজ নাহিদ কে ধরেই ফেললাম ।
আমি : ওই এমন করো কেন আমার সাথে ?
নাহিদ : কি করি ?
আমি : বারবার লুকিয়ে চলো ।
নাহিদ : না
আমি : ভালোবাসি গো তোমাকে
নাহিদ : সরি আমার গফ আছে
আমি : ওহ ওকে
নাহিদ : হুম বাই
.
.
আমি জানি ওয় মিথ্যা বলছে । মিথ্যা বললে ও মাথা নিচু করে থাকে । আমি তো আর ছাড়ার পাত্রি বা ।
.
ওদের বাড়ি গেলাম । আন্টি অনেক ভালো । আমাকে আগে থেকেই চিনে ।
আমি : আন্টি আমি নাহিদ কে ভালোবাসি । ও নিজেও আমাকে ভালোবাসে কিন্তু এর মাঝে এই এই এই‌ হইছে ( সব বললাম )
এবার কি করবো বলো ?
আন্টি : পাগলি মেয়ে আমি তো আগে থেকেই জানি জাহিদ বলছিলো ।
আমি : সত্যি
আন্টি : হুম
আমি : আইডিয়া দেন
আন্টি : …….. এটা কর ( কি আইডিয়া সামনে শুনুন )
.
.
নাহিদ আসলো….
আমি : নাহিদ অনেক হইছে এবার আর তোমার রাগ না
নাহিদ : আমি যাই আমার কাজ আছে
আমি : ওয়েট
.
ক্লোরোফোম দিয়ে দিলাম । কিডন্যাপ করাই আইডিয়া‌ ছিল ।
.
নাহিদের জ্ঞান ফিরলো । আন্টি কসম টসম দিয়ে বিয়ে করায় দিলো আমাদের ।
.
বাসরে….
নাহিদ কে জোড় করে রুমে পাঠানো হলো ।
নাহিদ এমন ভাব করছে কিছুই হয় নি আর আমাকে দেখতেই পাচ্ছে না । গান গাচ্ছে । আমি তো থ ।
.
এবার সবচেয়ে আজব ওয় শুয়ে পড়লো ।
না আর না ।
.
আমি : ওই‌ উঠ
নাহিদ : কে রে ওও বউ তুমি
আমি : আম্মু গো কিচ্ছে ।
নাহিদ : বউ ও বউ কি হইছে
আমি : তুমি এমন বিহেভ করছো কেন ?
নাহিদ : কেন বউ
আমি : তোমার তো রাগ হওয়ার কথা
নাহিদ : কেনো রাগ করবো কেন আমার প্লানেই তো সব হলো ।
আমি : মানে
নাহিদ : মানে শাম্মি আমাকে এই আইডিয়া দিছিলো । তাই তোমাকে ইগনোর করলাম আর আম্মুকেও বলছিলাম । তাই তো এতো কিছু হইলো । বাই দা ওয়ে ক্লোরোফোম এর সেন্ট টা সেই ফগ ফগ ।
আমি : শাম্মি রে আমি খাইছি ।
আগে তোমারে
.
বলেই কিল ঘুষি ।
.

.
#শেষ
পুরোটাই কাল্পনিক ।

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _পর্ব_৫

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি

_পর্ব_৫
Written by Avantika Anha
নাহিদ অনুতপ্ত ভাবতে থাকে নিজেকে । তাই সে শাম্মি আর জাহিদকে নিয়ে আমার ফুপির বাড়ি আসতেছে আমাকে নিয়ে যেতে ।
.
.
এদিকে আমি মন খারাপ করে ফুপির বাড়িতে বসে ছিলাম ।
.
ফুপি : আনহা যায়ে দেখ তো গেটে কে ?
আমি : ওকে ।
.
গেট খুলে দেখি শাম্মি , জাহিদ আর নাহিদ শাম্মি কে দেখেই জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলাম ।
আমি : ইনি কেনো এসেছে ? ( নাহিদের কথা জিজ্ঞেস করছিলাম )
শাম্মি : ও জানতে পারছে জান্নাতের সত্য টা ।
আমি : তো আমি কি করবো যেই মানুষ না জেনেই রিয়েক্ট করে আমি তার সাথে কোনো কথা বলবো না ।
নাহিদ : আই এম সরি আনহা । সত্যি না জেনে তোমাকে থাপ্পর মেরে দিছি ।
.
.
আমি কোনো কথা না বলে ভিতরে চলে আসলাম ।
ফুপি : কে আসছে ?
আমি : শাম্মি , একটা ফ্রেন্ড আর একটা টিকটিকি ( নাহিদ কে টিকটিকি বললাম )
নাহিদ ভাবছে “ভুল আমার ছিল । আমি রাগ ভাঙ্গিয়েই ছাড়বো”
আমি ভাবছি “কোনোদিন মাফ করবো না”
ফুপি : তোমরা যখন এসেছো কিছুদিন থাকো । ঘুরে বেড়াও ।
শাম্মি : জ্বী জ্বী ফুপি ।
.
রাতে খেতে বসলাম…..
শাম্মি আমার পাশে কিন্তু আমার সোজা নাহিদ বসলো ।
আমি তাকায় দেখি শাম্মি আর জাহিদ একে অপরের দিকে তাকায় আছে । আই মিন আখিওসে গোলি মারে টাইপ ।
.
চোখ ফেরাতে দেখি নাহিদ আমার দিকে তাকায় কান ধরে মাফ চাচ্ছে ।‌
আমি অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিছি ।
.
.
নাহিদের পা কিছুটা আমার দিকে এগিয়ে ছিলো । চরম রাগে নাহিদের পায়ে লাথি দিলাম ।
নাহিদ : উহ্
ফুপি : কি হলো ।
নাহিদ : না কিছু না
আমি : আবার মুখ বাঁকা করে নিলাম ।

.
.
রাতে আমি আর শাম্মি এক রুমে ছিলাম ।
শাম্মি : মাফ করে দে নাহিদ কে ।
আমি : না না না কোনোদিন না ।
শাম্মি : উফ
আমি : আমি কিন্তু তোর সাথেও কথা বলবো না যদি আরেকবার জোড় করিস ।
শাম্মি : আচ্ছা ঘুমা কাল ঘুরতে যাবো ।
আমি : ওকে
.
.
সকালে উঠে…..
আমি আর সাফানা খেলতেছিলাম ( ফুপির মেয়ে ৩ বছর বয়স )
আমি : ওই বুড়ি কিটক্যাট খাবি ?
সাফা : হুম পিউ আপু খাবো দেও ( আমাকে পিউ আপু বলে )
আমি : দিবো না
সাফা : দাও
আমি : আমি তো দিবো না
.
আমার আর সাফার মারামারি শুরু ।
.
এমন সময় কে যেন বললো : তোমাকে আমি কিটক্যাট দিবো সাফা ।
.
আমি তাকিয়ে দেখি নাহিদ ।
সাফা : সত্যি ভাইয়া
নাহিদ : হুম এদিক এসো ।
আমি : ওই যাবি না ওইটা একটা টিকটিকি
সাফা : হিহি টিকটিকি ভাইয়া
নাহিদ : সাফা আসো এদিক তোমাকে খেলনাও দিবো ।
আমি : সাফা খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু এদিক আয় ।
সাফা : যে কিটক্যাট দিবে তার কাছে যাবো ।
আমি : এই দেখ আমার হাতেই আছে
.
নাহিদের কাছে ছিলো না ।
তাই সাফা আমার কাছেই এলো ।
আর আমি নাহিদের দিকে তাকায় যুদ্ধ বিজয়ের মতো হাসি দিলাম ।
.
নাহিদ : যাই হোক ইনার মায়াবী হাসি হারায় নি ।
আমি : সাফা চল ।
.
.
আমি আর‌ সাফা চলে গেলাম ।
কিছু সময় পর আমরা ঘুরতে বের হলাম
.
আমি : শাম্মি বেবি আইসক্রিম খাবি
শাম্মি : হ
আমি : দ্বারা
.
চারটা নিয়ে আসলাম ।
শাম্মি : নাহিদের জন্য আনছিস ?

আমি : যাই হোক নজর লাগে যদি তাই আনছি ।
নাহিদ : মিথ্যেও বলতে পারে না । ( মনে মনে )
আমি : হুহ
.
আমরা ঘুরছিলাম । এমন সময় কে জানি আমার চোখ ঢেকে ধরলো ।
আমি : ওই কে রে
জবাব দিলো : গেস কর তো কে ?
আমি : আবির ?
আবির : হুম কেমনে বুঝলি ( হাত ছড়িয়ে )
আমি : ছোট বেলার ফ্রেন্ড সহজে ভুলা যায় নাকি ?
আবির : ওমা আপনি তো দেখছি ভালোই বড় হইছেন
আমি : হবো না পিচ্চি থাকবো নাকি
আবির : হাহা আয় আমার ফ্রেন্ড দের সাথে পরিচয় করাই । সবাই ওদিক আড্ডা দিচ্ছে । আর এই তিনজন কারা ?
আমি : এটা শাম্মি , এটা জাহিদ , এটা জাহিদের ভাই
আবির : ওয়াও যমজ সেই তো ।
.
আমি : হুম
.
ওদিক গেলাম ।
আবির আমাকে সবার সাথে পরিচয় করালো ।
.
.
আবির : এটা আনহা আমার ছোট বেলার ফ্রেন্ড যদিও আমার চেয়ে ৩ বছর ছোট । জানিস আনহা সেই গান পারে ?
সবাই : তাহলে শুনাতে বল তো
আবির : হুম অবশ্যই শুনাবে
আমি : না না এখন না
আবির : শোনাতেই হবে
.
সবার রিকোয়েস্টে গাওয়া স্টার্ট করলাম ।
.
“পৃথিবীর যতো সুখ যতো ভালোবাসা
সবই যে তোমায় দিবো
একটাই আশা ।
তুমি ভুলে যেও না আমাকে
আমি ভালোবাসি তোমাকে ।
.
দুয়ারে দাড়িয়ে বিরহ বাড়িয়ে
সুখেতে জড়াবো আমি ।
সেই সুখেরই ভেলায় ভেসে স্বপ্ন সাজায়
এক পলকে পৌঁছে যাবো
রূপকথারই দেশে ।
তুমি ভুলে যেও না আমাকে
আমি ভালোবাসি তোমাকে । ”
.
সবাই তালি দিল ।
আবির : সেই দোস্ত
আমি : থেংকু
.
.
নাহিদ শকড্ এটা তো‌ এলোকেশির গলা ।
তাহলে কি আনহাই । হায় আল্লাহ আমি এতো বড় ভুল করলাম ।
.
.
শাম্মি : কি হলো ভাইয়া ?
নাহিদ : শাম্মি আমার একটা কথা বলো তো ?
শাম্মি : কি
নাহিদ : জান্নাত কি গান পারতো ?
শাম্মি : না জান্নাত গান পারতো না যতদূর জানি ।‌
নাহিদ : আনহার বাসার আশে পাশে কি আর কেউ গান পারে ?
শাম্মি : না ওই পারায় গান শুধু আনহা পারে । কারণ আনহাই শুধু গানকে ভালোবাসে ।
নাহিদ : ও মাই গড এতো বড় মিস্টেক
শাম্মি : মানে ?
নাহিদ সব বললো….
শাম্মি : ভাইয়া অনেক বড় ভুল করে ফেলছেন । আনহা অনেক জেদি । ও সহজে রাগ করে না কিন্তু একবার বেশি করলে আর ভাঙ্গে না ।
নাহিদ : না আমি ওর রাগ ভেঙ্গেই ছাড়বো ।
.
সব শেষে বাড়ি ফিরলাম ।
.
নাহিদ ভাবছে “কেনো জানি এখন আনহার সব ব্যবহার বেশ ভালো লাগছে । হয়তো আমার খোঁজা এলোকেশি টি আনহা এটা জানার কারণেই এমন হচ্ছে”
.
রাতে টিভি দেখছিলাম….
নাহিদ : আনহা আমাকে প্লিজ মাফ করে দাও ।
আমি : মাফ করা এতোই সোজা
নাহিদ : প্লিজ
আমি : না
.
বলেই চলে আসতেছিলাম ।
.
মেঝেতে পানি পড়ে ছিল দেখি নি আর পড়ে গেলাম ।
আমি : আম্মু গো ।
.
.
নাহিদ দেখলো আনহা পড়ে গেছে ।
নাহিদ : হাহা আমাকে মাফ করো নি তাই শাস্তি দিলো আল্লাহ
আমি : হুর
.
উঠতে গেলাম কিন্তু পায়ে ব্যাথা উঠলো ।
আমি : আম্মু
নাহিদ : দ্বারাও‌ আমি দেখি
.
বলেই কোলে তুলে নিল ।
আমি : নামাও আমাকে‌ ।‌
নাহিদ : ওকে
বলেই নামিয়ে দিলো ।
আমি চলতে পারছিলাম না । তাই শাম্মি কে ডাকলাম ।
.
.
শাম্মি : কি রে নিচে পড়ে আছিস কেনো‌?
আমি : পা মচকে গেছে ঘরে নিয়ে‌ চল ।
.
শাম্মির হাত ধরে ঘরে গেলাম ।
.
.
.
রুমে নাহিদ এলো কিছু সময় পর ।
নাহিদ : শাম্মি ওকে এই স্প্রে টা লাগায় দাও
আমি : না আমি কোনো স্প্রে লাগাবো না
শাম্মি : ওই লাগা নইলে মারবো
আমি : হুরররর
.
পরেরদিন ভালো হয়ে গেলাম ব্যাথা ভাগছে ।
.
আমি ফুপি কে নাস্তা বানাতে হেল্প করছিলাম ।
এমন সময় নাহিদ আসলো ।
.
নাহিদ : ফুপি একটু পানি দেন তো ।
ফুপি : আনহা পানি দে তো ওকে ।
আমি : হুর কিছু বললাম না কিন্তু লুকিয়ে পানির মধ্যে লবণ দিয়ে দিলাম‌।
.
নাহিদ পানি খেতেই : লবণ লবণ করে কেন নিশ্চই আনহা করছে এরকম ( মনে‌ মনে )
.
নাহিদ আনহার দিকে তাকালো ।
দেখে আমি মুচকি মুচকি হাসতেছি ।
.
নাহিদ কিছু না বলেই চলে গেলো ।
.
কিছু সময় পর….
আমি আর সাফা আবার খেলতেছিলাম এমন সময় আবার আমার হাত লেগে কি জানি ভাঙ্গে গেল ।
আমি : হায় রে কি যে ভাঙ্গে ফেললাম
.
তাকায় দেখি আমি আবার নাহিদের চশমা ভাঙ্গে ফেলছি ।
.
নাহিদ : হাহা আমার চশমাগুলোর সাথে মনে হয় তোমার শত্রুতা আছে বারবার তোমার হাতেই ভাঙ্গে ।
আমি : হুহ ভালো সরি
নাহিদ : হাহা বাদ দাও
সাফা নাও কিটক্যাট
সাফা : থেংকু
নাহিদ : এটা তোমার আপু কেও দেয় ( নাহিদ ভাবছে জানি এটা মানা করতে পারবা না । শাম্মি বলছে কিটক্যাট তোমার অনেক প্রিয় )
আমি : ( আমি ভাবছি হুর আমি এইটা না করি কেমনে । যাই হোক কিটক্যাট কে না বলুম না )
.
আমি কিটক্যাট নিয়ে দৌড় ।
.
নাহিদ হাসছে আর বলছে : মিস এলোকেশি তুমি তো আমারই
.
চলবে……

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _পর্ব_৪

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি
_পর্ব_৪
Written by Avantika Anha
নাহিদ ঢাকায় গেলো আর ভাবতে লাগলো কে এই মেয়ে আনহা নাকি তার পাশের বাড়ির মেয়েটা ।
.
নাহিদ এসব ভাবতে ভাবতে সময় পার করতে লাগলো ।
.
এদিকে শাম্মি আর জাহিদের প্রেম গভীর হতে লাগলো ।
.
১ মাস পর….
কোনো এক ছুটিতে আবার নাহিদের ফিরে আসা ।
.
নাহিদ আবার ওই পাড়ার ওদিক যায় । এবার নাহিদ খুঁজে পায় একজনকে কিন্তু সেই মানুষটা যে ভুল মানুষ সে বুঝতে পারে না ।
.
সেদিন জান্নাত দের বাড়িতে আনহা গিয়েছিলো কোনো এক কাজে । জান্নাতের বন্ধুরা ছিলো । তারা রিকোয়েস্ট করেছিলো আনহার গান শুনতে তাই আনহা গান গেয়েছিল । সেই সময়ই নাহিদ এসেছিলো ।
পরে সে জানালা দিয়ে জান্নাত কে দেখতে পায় আর ভাবে এটাই হয়তো তার এলোকেশী ।
.
.
দিন যেতে থাকে আর নাহিদ জান্নাতের সাথে বন্ধুত্ব করে ফেলে । জান্নাত মেয়েটা ওতোটা ভালো না । কিছুটা পাগল টাইপ । সাইকো ও বলা যায় । কিন্তু অন্য সময় ভালো থাকে ।
.
পরের দিন….
কলেজে
আমি আর শাম্মি বসে আছি । এমন সময় জাহিদ আসলো ।
আমি : কি রে রোমিও লেট কেন জানিস না তোর জুলিয়েট অপেক্ষা করছে
জাহিদ : না রে ঢংগি জানতাম না
আমি : দোস্ত একটা কাম কইরা দে না
জাহিদ : পারুম না
আমি : শাম্মি তোর বফ রে বল কইরা দিতে
জাহিদ : আইছে মেডাম নিজে কর
আমি : কিটক্যাট আইনা দে না শেষ হইয়া গেছে
জাহিদ : পারুম না
আমি : শাম্মি দেখ
শাম্মি : ওই আনহা যা বলছে করো নইলে ব্রেক আপ
আমি : হিহি থেংকু দোস্ত
জাহিদ : দুই বান্ধবী আম্রে শেষ কইরা দিবে আল্লাহ তুইলা নাও
আমি : আগে কিটক্যাট আইনা দে ।
.
.
জাহিদ কিটক্যাট আনতে গেল । এমন সময় নাহিদ আসলো জাহিদ কে কি জানি দিতে । আমি সেই টাইমে নাহিদ কে দেখলাম আর জাহিদ ভেবে টানতে টানতে শাম্মির কাছে নিয়ে আসলাম ।
.
আমি : হারামি আমার কিটক্যাট কই?
নাহিদ : মানে ?
শাম্মি : ওই তুমি না ওর কিটক্যাট আনতে গেলা কই কিটক্যাট ?
আমি : দ্বারা দেখাচ্ছি মজা ।
.
কিল ঘুসি মারতে লাগলাম নাহিদের গায়ে । আমি ভেবেছিলাম ওটা জাহিদ ।
এমন সময় জাহিদ আসলো আর বললো : কি রে কাকে মারিস ?
আমি : জাহিদ রে
জাহিদ : আমি তো এখানে
আমি : মানে ?
.
তাকায় দেখি ওটা জাহিদ
আমি ভুউউউউউউউত বইলা অজ্ঞান ।
.
জাহিদ : ওই নাহিদ তুই এখানে কেন ?
নাহিদ : তোকে এটা দিতে আসছিলাম আর এই মেয়ে আমাকে মারতে লাগলো ।
শাম্মি : এটা কে ?
জাহিদ : আমার যমজ ভাই নাহিদ তোমার ভাসুর হবে সালাম দাও
শাম্মি : আসসালামুয়ালাইকুম ভাইয়া
নাহিদ : ওয়ালাইকুমআসসালাম
.
কিন্তু এই মেয়ে তো ভয়ে অজ্ঞান কি করবি ?
জাহিদ : তোর জন্য হইছে তুই দেখ
নাহিদ : ওকে উঠা
জাহিদ : আমার হাত ব্যাথা শাম্মি আসো আমি গাড়ি বের করি ।
নাহিদ : ওই ওই জাহিদ
.
হুর আমাকেই কোলে উঠাতে হবে ।
নাহিদ আমাকে কোলে তুলে নিলো ।
নাহিদ : বাহ পাতলু মেয়েরো ওজন আছে ভালোই ।
.
.
উঠাতে গিয়ে আমার চুল খুলে গেলো । নাহিদ দেখলো লম্বা চুল মেয়েটার একদম আমার এলোকেশির মতো । কিন্তু ও কেনো জানি চুল কেটে ফেলছে ।‌ ওকে বলবো চুল আর জেনো না কাটে । কিন্তু মেয়েটা বড্ড মায়াবি ।
.
এসব ভাবতে ভাবতে গাড়িতে নিলো আমাকে ।
বাড়িতে আনলো । তারপর আমার মুখে পানির ছিটা দিলো ।
আমার জ্ঞান ফিরলো ।
আমি : আমার কি হইছে ।
.
মনে পড়লো সব পাশে তাকায় দেখি জাহিদ আর নাহিদ । ভয়ে চিল্লায় উঠলাম ।
আমি : আম্মু ভুত
জাহিদ : আর জ্ঞান হারাইস না । এটা ভুত না আমার যমজ ভাই ।
আমি : কি?
শাম্মি : হুম
আমি : তো আগে বলিস নাই কেনো ?
এতোদিন ধরে আমি আন্দাজি ভয় পাইতাম ।
শাম্মি : হুম
.
.
সেদিন বিকেলে…..
আমি , শাম্মি , নাহিদ আর জাহিদ গেলাম বেড়াতে ।
আমি : ওই‌ জাহিদ যা তো কিছু কিনে আন ।
জাহিদ : ওকে নাহিদ চল ।
নাহিদ : হুম চল
আমি : না শাম্মি কে নিয়ে যা
জাহিদ : ওকে
নাহিদ : কেন আমিই তো যাইতে পারবো তোমরা থাকো
আমি : না না ওই‌ তোরা যা আমার নাহিদের সাথে জরুরী কথা আছে ।
নাহিদ : ও বলো
.
জাহিদ আর শাম্মি গেলো ।
.
নাহিদ : বলো কি বলবে ?
আমি : ওই গাধা নাকি আপনি ?
নাহিদ : কেনো ?
আমি : ওরা সময় কাটাবে একটু । তাই আমি ওদের পাঠালাম‌ আর আপনি সাথে যাচ্ছিলেন ।
নাহিদ : ও সরি আমি না বুঝি নি
.
বলেই হাসে দিলো ।
আমি : কিউট হাসি, মায়াবি চোখ সেই তো ( আস্তে বললাম )
নাহিদ : কিছু বললেন
আমি : না ও কিছু না ।
নাহিদ : হেহে তা কি করতে ভালোবাসেন
আমি : কিটক্যাট খাইতে , গান গাইতে আর বকবক করতে আপনি ?
নাহিদ : গান গাইতে একটু ।
আমি : তাহলে তো শুনাতেই হবে ।
নাহিদ : ওকে পরে
আমি : না না এখন নইলে কিন্তু কথা কমু না
নাহিদ : ওকে‌
.
“আমি তোমাকে আরও কাছে থেকে
তুমি আমাকে আরও কাছে থেকে ।
যদি জানতে চাও তবে ভালোবাসা দাও
ভালোবাসা নাও । ভালোবাসা দাও
ভালোবাসা নাও । “
.
আমি : বাহ সেই তো
নাহিদ : আপনাকেও গান গাইতে হবে তাহলে ।
.
এমন সময় জান্নাত এলো ।
জান্নাত : আরে নাহিদ তুমি
আর আনহা তুমিও আছো দেখছি ।
আমি : হুম তুমি একে চিনো ?
জান্নাত : হুম
.
নাহিদ , আমি আর জান্নাত অনেক সময় ধরে গল্প করলাম ।
.
জান্নাত আসলে নাহিদ কে পছন্দ করে । নাহিদও তাই চায় কারণ নাহিদ জানে তার এলোকেশি জান্নাত ।
.
দিন যেতে লাগলো আমি আর নাহিদ ভালো বন্ধু হলাম ।
আমি ওর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়লাম । কিন্তু নাহিদের অজানা সে তো জানে তার ভালোবাসার মানুষটি জান্নাত ।
আমার ডায়রির পাতা ভরতে থাকলো নাহিদের নামে ।
.
একদিন আমার ব্যাগ নাহিদ কে ধরতে দিছিলাম ফুল ছিঁড়ার সময় ।
এমন সময় নাহিদের হাত থেকে ব্যাগ টা পড়ে গেলো আর ডায়রি টা বেড়িয়ে এলো ।
.
নাহিদ কিছু পৃষ্ঠা পড়ে ফেললো ।
.
আমি ফুল পাড়িয়ে যেয়ে দেখি ও আমার ডায়রির পাতা পড়ছে ।
.
আমি জ্বলদি টেনে নিলাম ।
নাহিদ : আনহা তুমি যা চাও তা কোনোদিন হবে না ।
আমি : না মানে
নাহিদ : আমি জান্নাত কে ভালোবাসি
আমি অনেক পরিমাণ কষ্ট পেলাম কিন্তু কিছু বললাম না
শুধুই বললাম : ওহ
বলেই চলে আসতেছিলাম কিন্তু উষ্টা খেয়ে পড়ে যেতে লাগলাম আর নাহিদ ধরে ফেললো কিন্তু পমি তারাতারি চলে গেলাম ।
.
সেই‌ সময় জান্নাতও এটা দেখে ফেললো । আগেই বলেছিলাম তার মাঝে কিছু সাইকো টাইপ ভাব আছে । সে নাহিদকে একদম হারাতে চাইলো না । সে প্লান করলো যেন নাহিদ আমাকে একদম ঘৃণা করুক ।
.
.
পরের দিন জান্নাত কি একটা কারণে‌ আমাকে তার বাড়ি যেতে বললো । তার রুমে ধুকেই দেখি রুম অন্ধকার ।
আমি : জান্নাত কই তুমি
জান্নাত চাকু নিয়ে : তুমি আমার নাহিদ থেকে দূরে চলে যাও
আমি : আমি তো ওর কাছে যাই নি আপু
জান্নাত : মিথ্যা বলছো আমি দেখছি কাল তুমি ওর কাছে যাচ্ছিলা ।
আমি : ভুল ভাবছো তুমি ।
জান্নাত : না ভুল না
.
তোমাকে আমি থাকতে দিবো না । না না না ।
আমার দিকে এগুতেই আমি চাকুটা কেড়ে নিলাম কিন্তু এমন সময় নাহিদ এসে আমাকে চর মারলো ।
.
.
নাহিদ : নির্লজ্জ , সাইকো মেয়ে । তুমি এতো বাজে । কেনো মারতে আসছো ওকে কি করছে ও । আমি কোনোদিন তোমাকে ক্ষমা করবো না ।
.
জান্নাতের যে এটা প্লান ছিলো আমি বুঝলামও না ।
.
আমি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে এলাম । আমার জীবনের কোনো বিষয়ই শাম্মির কাছে লুকাই নি ।
সাথে সাথে কাঁদতে কাঁদতে শাম্মি কে ফোন দিলাম ।
.
শাম্মিকে সবটুকু জানালাম ।
শাম্মি : একটু দ্বারা আমি আসতেছি জাহিদকে নিয়ে এখনি তুই কাঁদিস না
আমি : জ্বলদি আয় দোস্ত খুব কষ্ট হচ্ছে ।
.
জান্নাত এতেও থেমে থাকে নি । আমি বাড়ি ফিরার কিছু সময় পর নাহিদ আমার মা কে বলে আমি নাকি পাগল ইত্যাদি । জান্নাত সায় দেয় এতে ।
.
জান্নাত যে একটু সাইকো ধরনের আমরা সবাই জানতাম এমনকি জান্নাতের পরিবারও । কিন্তু এমন পরিস্থিতি ছিলো আম্মুও আমাকে ভুল বুঝলো । সেখানে আব্বুও ছিল ।
.
.
সেদিন আব্বু আম্মু লজ্জিত বোধ করেছিলো কিছুটা ।
পরে তারা আমাকে খুব বকলো ।
শেষে মা বললো : কেনো যে তোকে জন্ম দিলাম ?
মরে গেলেই ভালো হতো ।
.
আমি সামান্য জেদ নিয়ে চলি । তাই তারাতারি রুমে গিয়ে রুম বন্ধ করে নিলাম ।
.
ওদিকে জান্নাত : তুমি আমাকে কখনো ছেড়ে যেও না
নাহিদ : যাবো না
জান্নাত : চলো না আমরা বিয়ে করে ফেলি তাহলে কেউ আর আমাদের আটকাতে পারবে না । নাহলে ওই আনহা আমাকে মেরেই ফেলবে
নাহিদ : আচ্ছা চলো
.
নাহিদ জান্নাতকে ভরসা করে ফেলছিলো ।
.
এমন সময় শাম্মি আর জাহিদ আসলো ।
নাহিদ : তোমরা আসছো । জানো কি ওই আনহা কতোটা বাজে ।
শাম্মি : দাড়ান ওর ব্যাপারে কিছু বলার কোনো অধিকার নাই আপনার
নাহিদ : মানে
জাহিদ : তুই যা দেখছিস কীভাবে বুঝলি যে ওটাই সত্য
নাহিদ : তুই জান্নাত কে জিজ্ঞেস কর
.
জান্নাত কিছুটা ভয়ে : হ্যা হ্যা আনহা আমাকে মারতে চাইছে ।
শাম্মি : কেনো মারতে চাইছে ?
জান্নাত : কারণ নাহিদ আর আমি একে অপরকে ভালোবাসি
শাম্মি : তাই
জান্নাত : হুম
শাম্মি : আচ্ছা জান্নাত তোমার কি জানি একটা রোগ‌ আছে না ?
জান্নাত : না মানে
শাম্মি : অনেক হয়েছে আর মিথ্যে না নাহিদ ভাইয়া শুনুন আনহা কিছুই করে নি । আপনি যা দেখছেন তাই বিশ্বাস করছেন । দ্বারান এক মিনিট
.
শাম্মি জান্নাতের মা কে ফোন করে জানালো ।
জান্নাতের মা ভালো করেই জানে জান্নাতের সব সমস্যা ।
.
সে নাহিদ কে সরি বললো আর জান্নাতের সমস্যা সম্পর্কে জানালো ।
সব শেষে জান্নাতও স্বীকার করে নিলো ।
.
নাহিদ : ছি তোমাকে কতো ভালোবাসলাম আর তুমি এতোটা মিথ্যুক ।
.
শাম্মি : জাহিদ চলো আনহার কাছে ও অনেক ইমোশোনাল । কিছু করেও ফেলতে পারে ।
.
ওরা তিনজন আমার বাড়িতে এলো ।
নাহিদ আমার আম্মু ও‌ আব্বুর কাছে ক্ষমা চাইলো ।
.
তারাও ক্ষমা করে দিলো ।
.
সবাই আমাকে ডাকতে লাগলো কিন্তু আমি সেই সময়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছি ।
.
সব সময়ের আমার আপন ছিল ফুপি তাই ফুপিকে ফোন করে সব বললাম । ফুপিও তার কাছে ডাকলো ।
রুমে একটা চিঠি ছাড়ছিলাম,
“আচ্ছা যা দেখা যায় তাই কেনো বিশ্বাস করে সবাই । আমি তো কিছুই করি নি । তবুও সবার চোখে খারাপ হলাম । আমাকে খুঁজবে না কেউ চলে গেলাম ।‌”
.
চিঠিটি পড়ে সবাই কাঁদতে লাগলো । কিন্তু সেই সময় ফুপি জানালো আম্মু আব্বু কে সব ।
তারা একটু স্বস্তি ফিরে পেলো ।
.
সবাই নিজের বাড়ি চলে গেলো । কারণ শাম্মি জানে আমি ফিরে‌ আসবো ।
.
নাহিদ নিজেকে অনুতপ্ত ভাবা শুরু করলো ।
.
চলবে……

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _পর্ব_৩

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি
_পর্ব_৩
Written by Avantika Anha
রাতে…….
আমি শাম্মি কে ফোন দিলাম ।
শাম্মি : বল
আমি : জাহিদ সেই গান করে তাই না । আমার সেই ভাল্লাগছে
শাম্মি : হুম কিন্তু
আমি : কি?
শাম্মি : কিছুনা ( আসলে শাম্মি জাহিদ কে পছন্দ করে )
আমি : কিছু লুকাচ্ছিস ?
শাম্মি : না কি লুকাবো
আমি : জাহিদ কে পছন্দ করিস তাই না ( আসলে আমি আগেই বুঝছি )
শাম্মি : না এমন কিছু না
আমি : আমার কাছে লুকাবা সোনা আমি তোকে সবচেয়ে বেশি চিনি ।
শাম্মি : হুম পছন্দ করি
আমি : আমি তো জানি ( হাসে হাসে )
শাম্মি : কেমনে
আমি : আমি তোকে বুঝি বুঝলি
শাম্মি : হুম দোস্ত এখন পটায় দে না
আমি : ভরসা রাখ
শাম্মি : ওকে
আমি : বেব্বি
শাম্মি : বল
আমি : আইসক্রিম খামু খাওয়া না
শাম্মি : ওকে
আমি : দুলাভাইরে ডাকতাছি দ্বারা
.
আমি ফোন টা রেখে জাহিদ রে ফোন দিলাম
আমি : ওই জাহিদ্দা
জাহিদ : কি রে কিটক্যাট ( আমি বেশি কিটক্যাট খাই । তাই অনেকে আমাকে কিটক্যাট বলে ডাকে )
আমি : চল আইসক্রিম খামু
জাহিদ : খাওয়াবি ?
আমি : শাম্মি খাওয়াবে
জাহিদ : শাম্মি আসতেছে ?
আমি : হ
জাহিদ : আইতাছি
.
.
দোকানে……
আমি : জাহিদ কি শুনতাছি এইসব
জাহিদ : কিই ?
আমি : তুই শাম্মি কে নাকি ভালোবাসিস ( একটু সিরিয়াস ভাবে )
জাহিদ : কি বলিস ( কিছুটা ভয় পেয়ে কারণ ও সত্যিই শাম্মি কে পছন্দ করে
শাম্মি : ওই আনহু থাম
আমি : না আমাকে বলতে দে
জাহিদ : না মানে
আমি : না মানে কি বাসলে বল
জাহিদ : ম-ম-মানে আ-আ-আ-আসলে হুম
আমি : আমি তো জানি হিহি
জাহিদ : মজা করছিলি ?
আমি : হ কজ আমি দেখছি তুই আড় চোখে শাম্মির দিকে তাকায় থাকিস আর শাম্মিও তোর দিকে তাকায় থাকে। তাই আজ অন্ধকারে ঢিল মারলাম আর লাগে গেলো । এখন ট্রিট দে তোরা
.
শাম্মি আর জাহিদ একসাথে আমার মাথায় মারলো আর বললো হারামিইইইইই ।
.
আমি : মারিস কেন ?
শাম্মি : এমন করলি কেন ?
আমি : এটা না করলে কোনোদিন কেউ কাউকে বলতে পারতি ?
জাহিদ : ও ঠিকই করছে
শাম্মি : হুম
.
ওরা দুজন একে অপরের দিকে তাকায় আছে ।
আমি : হ্যালো লাভ বার্ডস আমিও আছি । হুর আমি পালাই তোরা থাক ।
.
তারা : হুম ( না বুঝেই )
আমি : হায় কপাল আর থাকুম ই না
.
আমি দোকানদার আঙ্কেল এর কাছ থেইকা দুই বক্স আইসক্রিম আর‌ একটা কোন আইসক্রিম নিলাম আর বললাম বিল ওরা পে করবে ।
.
বলেই পালাইছি হিহি । পরে আমার কপালে মার আছে । তার আগে আইসক্রিম ।
.
আলসক্রিম খেতে খেতে যাচ্ছিলাম ।
এমন সময় জাহিদের ভুত কে আবার দেখলাম আর ভয়ে : তুই এখানে কেমনে
(আসলে ওটা নাহিদ ছিল । একটা কাজে বের হইছিল)
নাহিদ : হায় রে এই মেয়ে আবার ( আস্তে বললো )
আমি : ভুউউউউউউউউউউউত
নাহিদ : মানে
আমি : ভুত আমি আপনার কি ক্ষতি করছি ?
বারবার আমাকে দেখা দেন কিনু । ছোট মানুষ ভয় পাই না বুঝি । আপনাকে একটা কিটক্যাট দিমু তবুও আর আইসেন না আমার সামনে ।
নাহিদ : এ্যা ( এই মেয়ে আমাকে ভুত বলে কেন ? হায় কপাল )
আমি : এই নেন কিটক্যাট আর আমি ভাগলাম
.
দিছি দৌড় ।
.
তারপরে বাড়িতে…..
আম্মু : কই গেছিলি ?
আমি : আইসক্রিম কিনতে
আম্মু : ওহ
আমি : প্রেয়সি কই
আম্মু : রুমে
আমি : ওই বক্স টা রাখো আমি আর প্রেয়সি এই বক্স টা খামু
আম্মু : বেশি খাইস না রাতে ঠান্ডা লাগবে
আমি : কিচ্ছু হইবো না
.
আইসক্রিম খাওয়া শেষে ছাদে গেলাম ।
গিটার হাতে ।
গান গাচ্ছিলাম । এমন সময় নাহিদ আমার বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিল । আবার শুনতে পায় এলোকেশির গাওয়া গান ।
স্তব্ধ হয়ে যায় সে । চুপ করে শুনতে থাকে । হঠাৎ গান বন্ধ হয়ে যায় ।
.
.
আসলে আম্মু ডেকেছিল সেই সময়। তাই আমি চলে যাই । কিন্তু নাহিদের হুস ফেরে গান থামতেই । সে খুঁজতে থাকে কিন্তু কারো চিহ্ন পায় না । কারণ আমি তো চলে এসেছিলাম ।
.
নাহিদ নিজেকে বলে : হুর বোকা আগে কে গাচ্ছে দেখতি তারপর ওর গানে ডুব দিতি । গাধা । কিন্তু একটা জিনিস সিওর ও আশেপাশেই থাকে ।
.
নাহিদ চলে যায় ।
.
.
এদিকে নাহিদের বাড়িতে…..
জাহিদ : ভাই তোর ভাবি পাইছি
নাহিদ : ওয়াও খুব ভালো তো
জাহিদ : হ থেংকস টু কিটক্যাট থুক্কু আনহা ।
নাহিদ : ওই গুন্ডি মেয়েটা বাপরে
জাহিদ : কি বলিস
নাহিদ : হ আর বলিস না ( বললো কি কি হইছে )
জাহিদ : হাহা সেই তো ।
মজার কাহিনী জানিস । শাম্মি আর আমার ভালোবাসাও ধাক্কার মাধ্যমে শুরু । তোরও ভাগ্যে মনে হয় আনহা । শাম্মির বেস্টু
নাহিদ : আরে না । আমি আরেকজন কে ভালোবাসি ।
জাহিদ : ওমা কেমনে আমার ভাইও আবার প্রেম করে ।
নাহিদ : হুম এলোকেশি সে । তার গাওয়া গান মুগ্ধ করে
জাহিদ : আনহাও সুন্দর যদিও ওরে চুল ছাড়া অবস্থায় দেখি নি তাই বলতে পারছি না ওর চুল কেমন । কিন্তু ও সেই গান গায় । শুনবি দ্বারা ।
নাহিদ : আচ্ছা শুনা
.
জাহিদ গান অন করবে । এমন সময় তাদের মা ডাক দিলো ।
.
গান টা শোনা হলো না । সেই সাথে নাহিদও জানতে পারলো না যে যেই এলোকেশির স্বপ্নে সে মশগুল সে আর কেউ নয় আনহা ।
.
পরেরদিন….
প্রচন্দ বৃষ্টি হচ্ছিল । জাহিদ বের হয়েছিল কি জানি করতে । এমন সময় দেখলো একটি মেয়ে ছাতার আড়ালে কিন্তু চেহারা পুরোটা দেখলো না । মেয়েটি তার ছাতাটি এক বৃদ্ধা কে দিয়ে দিলো । মেয়েটা অপর প্রান্তে ঘুরে ছিলো । তাই দেখতে পেল না ।
.
কিছু সময় পর দেখলো মেয়েটি আনহা ।
ভাবলো…. ফাজিল মেয়েটা ওতোটাও খারাপ না ।
নাহিদ চলে গেলো । মনের মাঝে নিয়ে গেলো ওই এলোকেশির স্মৃতি ।
.
এরপর থেকে নাহিদ এলোকেশি কে খুঁজতে লাগলো । খোঁজ নিল কিন্তু ওই জায়গায় ২ টা মেয়ে থাকতো প্রায় সমবয়সী । নাহিদ বুঝলো তার এলোকেশি ওই দুটো মেয়ের মাঝে একজন কিন্তু কে ?
পরে জানলো ওই দুটো মেয়ের একজন আনহা আরেকজন জান্নাত নামের এক মেয়ে ।
.
কিন্তু এলোকেশি কে এটাই ছিলো নাহিদের কাছে প্রশ্ন ।
.
.
.
কিন্তু নাহিদের কাছে ওতো সময় ছিল না । তার ভার্সিটি শুরু হওয়ার সময় কাছে আসলো । তাই তাকে ঢাকা ফিরে যেতে হলো । কিন্তু সে মনে গেঁথে নিয়ে গেলো এলোকেশির স্বপ্ন ।
.
চলবে………

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _পর্ব_২

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি
_পর্ব_২
Written by Avantika Anha
নাহিদ আনহার দিকে তাকিয়ে আছে । কেন যে সে নিজেও জানে না । কেন জানি মায়ার জালে সে তাকিয়ে আছে ।
.
হঠাৎ কে জানি ধাক্কা দিলো নাহিদ কে ।
নাহিদ : ও জাহিদ তুই
জাহিদ : কি দেখিস ভাবি পছন্দ হলো নাকি
নাহিদ : হুম
জাহিদ : কিইইইইই ?
নাহিদ : না কি বলিস আমি কেনো পছন্দ করবো চল চল ওদিক যাই
জাহিদ : (ভাবছে ডাল মে কুচ কালা হ্যা )
আচ্ছা চল ।
.
ঘুরা শেষে রাতে…..
নাহিদ চোখ বন্ধ করে মেয়ে টার কথা ভাবছে ” কি মায়া আছে তার মাঝে বারবার কেন ভাবছি তার কথা । তবে কি আমি ওর মায়ায় জড়াচ্ছি । নাহ এটা কেন হবে ? না এটা হতে পারে না (কেন হতে পারে না পরে জানবেন )
.
তারপরের দিন
খাবার টেবিলে……
জাহিদ : তুই আজ আমার কলেজে চল বন্ধুদের সাথে পরিচয় করাবো তোর ।
নাহিদ : আচ্ছা
.
.
কলেজে……
আমি আর শাম্মি আজও গল্প করতে করতে আসতেছিলো
এখন সাবধানেই চলি আমি । হিহি বারবার ভাঙ্গুম নাকি মানুষের জিনিস ।
.
শাম্মি : তুই দ্বারা আমি একটু রিয়ার সাথে কথা বলে আসতেছি ।
.
আমি : যা
.
শাম্মি গেলো আর আমি ওর অপেক্ষা করছিলাম । সামনে দেখলাম ফুলের গাছে ফুল ফুটছে একটু উপরে কিন্তু ভালো লাগছে । খুব নিতে ইচ্ছে করছিল ।
ভাবলাম পারবো ছিঁড়তে ।‌ যেই ভাবা সেই কাজ । ভাগ্যিস সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যাস্ত আর এদিকে ওতো আসে না ।
.
.
নাহিদ দেখলো একটা মেয়ে ফুল ছিঁড়ার চেষ্টা করছে ।
নাহিদ ওদিকে গিয়ে…
নাহিদ : এই যে মিস কি করেন
.
(আমি হঠাৎ ডাক সামলাতে না পেয়ে পড়ে গেলাম । পড়লাম তো পড়লাম কার উপর জানি পড়লাম । কারো উপর পড়ছি তো পড়ছি দেখলাম কি জানি ভাঙ্গে ফেলছি )
আমি দেখলাম ওই যে ভুত ছেলেটা ।
আমি : আপনি
নাহিদ : ( হায় আল্লাহ আবার চশমা ভাঙ্গে ফেলছে এই মেয়ে )
জ্বী
আমি : আবার সরি এইবার আমার দোষ নাই আপনার দোষ । আপনি ডাক দিলেন কেনো দেখলেন তো পড়ে গেলাম । আপনারো ক্ষতি হলো আমারো । ফুলটাও পেলাম না দুরর থাকেন আপনি আমি হাত ধুয়ে নিবো বাই
.
আমি চলে যাওয়ার পর….
.
নাহিদ : বাহ রে আমি কি করলাম খালি তো জিজ্ঞেস করতে গেছিলাম । থাক যাই হোক চশমা আবার ভাঙ্গে গেছে ভাগ্যিস চোখে বেশি প্রব্লেম নাই । নইলে চশমা ছাড়া দেখতেই পাইতাম না হাহা ।
.
আমি হাত ধুতে যাচ্ছি দেখি শাম্মি , রিয়া আর একটা ছেলে ।
আমি ওদিক গিয়ে দেখি ওই ছেলে ।
আমি শকড : আপনি না ওখানে ছিলেন এখানে কেমনে ?
জাহিদ : কি বলেন আমি তো এখানেই আছি
আমি : কেমনে সম্ভব ?
শাম্মি : হুম রে ও তো এখানেই আছে গল্প করছে আমাদের সাথে
আমি : কিন্তু
শাম্মি : কিন্তু তিন্তু না নে পরিচিতো হ ইনি আমাদের ১ বছর সিনিয়র কিন্তু রিয়ার ফ্রেন্ড সেই অনুপাতে আমাদেরও ফ্রেন্ড
আমি : ওকে
.
আমাদের মধ্যে ফ্রেন্ডশিপ হলো। অনেক গল্পও করলাম । কিন্তু আমি একটা জিনিস নিয়ে ভাবছি । জাহিদ যদি‌ ওখানেই ছিলো তাইলে কি ওইটা ওর ভুত ছিল ।
আল্লাহ গো কি হইতাছে আমার সাথে ।
.
অপরদিকে নাহিদ ভাবছে এলোকেশির কথা , ” নাহিদ কিছুদিন আগে মাঠে এক মেয়েকে দেখে ভিড়ের মাঝে সে শুধুই মেয়েটার চুল দেখতে পেয়েছিলো । সেই সাথে মেয়েটার কাজল কালো চোখ শাড়ি পড়া ছিল মেয়েটা । মুখ না দেখার কারণ মেয়েটা আড়ালে ছিলো আর গান গাচ্ছিলো । ভয়েসও শুনেছিলো নাহিদ কিন্তু খুঁজে পায় নি পড়ে । তারপর থেকে নাহিদের ভাবনায় সেই এলোকেশির স্বপ্ন ।
.
পরেরদিন….
ছুটির দিন হওয়ায় গিটার হাতে নিয়ে মাঠে যাচ্ছিলাম সকাল ৫:৩০ এ । এই সময় মানুষ কম থাকে তাই মাঠে গিয়ে গান করি আমি । আজ সবাই আসবে শাম্মি আর অন্যান্য বন্ধুরা ।
.
.
সবাই আসার পর…
সবাই গান করছিলো সাথে আমিও এমন সময় জাহিদ বললো তোমরা থাকো আমার একটা কাজ আছে ।
.
.
আমরা বললাম ওকে
কিছুক্ষণ পর নাহিদ গেলো । ও রোজ ই যায় সেখানে সকালে হাঁটার অভ্যাস ।
আমি দেখলাম নাহিদ কে । কিন্তু আমি তাকে জাহিদ ই ভাবলাম । কারণ আমি তো জানি না যে জাহিদের যমজ ভাই আছে ।
.
আমি : কি রে কাজ হলো
নাহিদ : আমাকে বলছেন ?
আমি : এখানে কি ভুত আছে ?
অবশ্য হতেও পারে মাঝে মাঝে তো আমি তোর ভুত কে দেখি হিহি
নাহিদ : কি বলছেন?
আমি : চল এবার তোর গান করার পালা
নাহিদ : মানে
আমি : ওই তোরা দেখ জাহিদ গান করতে চায় না
নাহিদ : ( এরা আমাকে জাহিদ ভাবছে কিন্তু আমি তো নাহিদ । এদের বলতে হবে)
শুনুন
আমরা কেউ শুনলাম না ।
.
বাধ্য হয়েই নাহিদ গান করলো কিন্তু ও সেই গানটাই গাইলো যা এলোকেশির মুখে শুনেছিলো ।
.
“তুমি আমার ঘুম তবু তোমায় নিয়ে ভাবতে পারি না ।
তুমি আমার সুখ তবু তোমাত নিয়ে ঘর বাঁধি না”
.
.
আমি : বাহ তুই আমার প্রিয় গানটা গাইছিস থেংক ইউ
নাহিদ : ওয়েলকাম কিন্তু
আমি : কোনো কিন্তু না আচ্ছা চল সবাই বাড়ি যাই আমি যাবো এখন ।
.
সবাই চলে গেলো । কেউ শুনলো না নাহিদ যে বলতে চাইলো যে সে জাহিদ না ।
.
চলবে……..

চশমাওয়ালা_ছেলেটি _পর্ব_১

0

চশমাওয়ালা_ছেলেটি
_পর্ব_১
Written by Avantika Anha
.
আমি আনহা আর আমার বেস্টুর নাম শাম্মি । আজ আমাদের দুজনের ই কলেজ লাইফের প্রথম দিন । আমার ব্যাখ্যা দিতে গেলে শেষ হইবো না আমি হলাম ফাজিলের নাতনি । এতো ফাজলামি করি যে শেষ ই হয় না আর শাম্মি শান্ত আবার ফাজিলও । শাম্মি আর আমার পছন্দ প্রায় একই । মাঝে মাঝে বলি দুজনই একই রকম পোলা কে বিয়া করুম । কিন্তু তা তো হয় না । যাই হোক এখনো আসছে না কেন । ওই মাইয়া নির্ঘাত ঘুম থেকে লেট উঠছে । আজ অব্দি যতোবার বলছি আসতে আমার বাড়ি ওয় লেট ই হইছে ।
.
.
আসলো মহারানি……
.
.
আমি : কি আজও দেরি জানু তোমার ( আমরা একে অপরকে জানুই বলি )
শাম্মি : ইয়ে মানে আর কি
আমি : নিশ্চই ঘুমাচ্ছিলি
শাম্মি : কেমনে বুঝলি ?
আমি : তোরে আমি চিনি
শাম্মি : হিহি চল
আমি : হারামি চল
.
.
রিকশায়….
.

আমি : জানু
শাম্মি : কও
আমি : আমার না পছন্দের তালিকায় আরেকটা জিনিস আসছে
শাম্মি : কি আইছে
আমি : চশমাওয়ালা ছেলে
শাম্মি : ওটা আমারো পছন্দ
আমি : হিহি আমি তো জানতাম তোমার আর আমার পছন্দ এক
শাম্মি : হ
.
.
এতক্ষণে তো শুনলেন আমাদের কথা । শাম্মি শান্ত আর আমি চঞ্চল । হিহি আমরা পুরোই বিপরীত ।
.
কলেজে…..
.
.
আমি তো ফাজলামি করতে করতে আর গল্প করতে করতে শাম্মির সাথে যাচ্ছিলাম ।
এমন সময় আমার হাত লেগে কার জানি কি পড়ে গেল এবং তা আবার আমার পায়ের নিচে পড়ে ভেঙ্গেও গেল ।
.
.
আমি ভয়ে পাশে তাকালাম এক ছেলের চশমা ভেঙ্গে ফেলছি ।
আমি : ইইইই সরিইইইইইইই সরিইইইইই আমি ইচ্ছে করে ভাঙ্গি নি সরিইইই সরিইইইই (কান ধরে সরি বলছিলাম )
ছেলেটি : ইটস ওকে ( ছেলেটার নাম হলো নাহিদ । শান্ত স্বভাবের একজন ছেলে । কিন্তু সিরিয়াসও বটে । আবার একটু রাগি বাট সবসময় না । )
আমি : প্লিজ প্লিজ সরি
ছেলে : বাদ দেন ব্যাপার না ভুল হতেই পারে
সামান্য হাসি দিয়ে ( হাসির‌ কারণ মেয়েটা কান ধরছে ঠিক বাচ্চাদের মতো ব্যবহার এটা দেখে নাহিদ না হেসে পারলো না )
আমি : সিওর‌ তো‌
নাহিদ : হুম
.
সামনে থেকে শাম্মি এসে বললো : কি রে কি হইছে
আমি : ওই যে হাত লেগে এক ছেলের চশমা ভাঙ্গে গেছে ।
শাম্মি : দেখে চলিস না কেন
আমি : ভুল হয়ে গেছে তো সরি বললাম তো
শাম্মি : কে ওই‌ ছেলে
.
আমি দেখিয়ে দিতে যাবো তখন দেখি ছেলেটা চলে গেছে ।‌
.
কলেজ এর ক্লাশ শেষে বাড়ি যাচ্ছিলাম ।
এমন সময় শাম্মি এক ছেলের সাথে ধাক্কা খেলো আর দুজনেই পড়ে গেল ।৤
.
.
আমি দুজন কে উঠতে সাহায্য করলাম । ছেলেটার দিকে তাকিয়ে দেখি ওই ছেলেটা কিন্তু এর চোখে চশমা আছে । কিন্তু কেমনে আমার হাত লেগে তো ভাঙ্গে গেছিল মে বি চশমা । আমি ভাবলাম মে বি এক্সট্রা ছিলো । কিন্তু আরেকটা ব্যাপার এই ছেলেটার চোখ গুলো একটু আলাদা লাগছে । সকালে বড্ড মায়াবি লাগছিল । এসব ভাবছিলাম কিন্তু পরেই ভাবলাম আমার কি ।
.
আমি : আপনি ????
ছেলেটি : মানে
আমি : সকালে যে দেখা হলো আমাদের ।
ছেলেটি : কি বলছেন আমি তো প্রথম আপনাকে দেখলাম
আমি : না আমার হাত লেগে যে আপনার
চশমা ভাঙ্গে গেল যে
ছেলেটি : কখন
আমি : এইতো সকালে
ছেলেটি : আপনার মনে হয় ভুল হচ্ছে আমার চশমা তো ঠিক আছে
আমি : আম্মু কি হচ্ছে সকালে কি ভুত ছিলো নাকি
.
কি একটা ভেবে ছেলেটা চলে গেল ।
.
আনহা ভাবলো ওর ই হয়তো ভুল । বাড়ি চলে গেলো সে‌।
.
বাড়িতে বাহিদ বসে আছে । এমন সময় কে যেন তার কাধে হাত দিলো হঠাৎ ।
.
নাহিদ চমকে উঠলো ।
ছেলেটি বললো : কখন আসছিস‌?
নাহিদ : সকালে‌
ছেলেটি : জানাস নি কেনো ?
নাহিদ : ভাবলাম সারপ্রাইজ দিবো তাই তোর কলেজও গেছিলাম কিন্তু তোকে পাই নি । বরং আমার চশমা ভাঙ্গে গেছে ।
.
চশমা ভাঙ্গার কথা শুনে ছেলেটি বললো : একটা মেয়ের হাত লেগে ভাঙ্গে গেছে নাকি‌?
নাহিদ : হুম
ছেলেটি : তার মানে তোর কথাই বলছিলো
নাহিদ : কে ?
ছেলেটি : যার হাত লেগে তোর চশমার মৃত্যু হইছে
নাহিদ : কি বললো ওই মেয়ে
ছেলেটি : বাহ খোঁজ নিচ্ছিস ব্যাপার কি
নাহিদ : হুর না কোনো ব্যাপার না
ছেলেটি : হাহা বাদ দে চল খেতে বসি
নাহিদ : হুম চল
.
ছেলেটি হলো জাহিদ আর নাহিদের পরিচয় তো দিলাম ই । এরা যমজ ভাই । ছোট থেকেই একসাথে থাকতো । কিন্তু এখন তারা আলাদা থাকে । এর মানে এই না যে তারা কোনো বিপদে দূরে থাকে । নাহিদের ব্রেইন অনেক ভালো । তাই সে ঢাকায় থাকে । বুয়েটে চান্স পেয়ে সে চলে যায় ।
জাহিদ এবার এইচএসসি দিবে ।
.
কি ভাবছেন ? এরা একই ক্লাশে কেনো না ? এসএসসি দেওয়ার আগে জাহিদ এর পা ভেঙ্গে যায় তাতে সে এক বছর পিছিয়ে পড়ে । তার ব্রেইনও ভালো ।
.
বিকালে….
জাহিদ : চল ঘুরতে যাই
নাহিদ : আচ্ছা
.
পার্কে….
জাহিদ : তুই দাড়া আমি কোক কিনে আনতেছি
নাহিদ : ওকে
.
নাহিদ হাটছিল…
হঠাৎ লক্ষ করলো এক মেয়ে পিচ্চিদের সাথে খেলছে…
নাহিদ ভাবলো এ তো সেই মেয়ে যার সাথে ধাক্কা খাইছিলাম । হাহা এর চেহারায় অদ্ভুদ মায়া আছে তাই তো ভোলা যায় না ।
.
খেলতে খেলতে নাহিদ আর আমার ধাক্কা লাগলো ।
আমি : আম্মু আবার কার কি ভেঙ্গে ফেললাম
ও না ভাগ্যিস কিছু ভাঙ্গে নি ।
আপনিইইইই ?
নাহিদ : জ্বী
আমি : আমি আপনারই চশমা ভাঙ্গে ফেলছিলাম মনে করে দেখেন ?
তখন তো চলে গিয়েছিলেন
নাহিদ : হুম আমারই ভেঙ্গে ফেলছিলে
আমি : তো কলেজ ছুটির পর অস্বীকার করলেন কেন ?
নাহিদ : কখন
আমি : কলেজ শেষে
নাহিদ : না‌
আমি : হয় আমার মাথা নষ্ট নাহয় আপনার আল্লাহ গো ।
.
এমন সময় পিচ্চি গুলো আমাকে টেনে নিয়ে গেল । কিন্তু আমি কনফিউজ হয়ে গেলাম ।
.
চলবে……..

Angry_Husband _পর্ব_৫_last_part

0

Angry_Husband
_পর্ব_৫
#last_part
Written by Avantika Anha
রাতে শুতে যাবো…..
আমি : আপনার প্রব্লেম টা কি
জিহাদ : কই নাই তো
আমি : তো এখানে কেন আপনি ভাই
জিহাদ : ওই ভাই বলবে না একদম
আমি : হুরররর
জিহাদ : হুহ
আমি : আমি নিচে ঘুমালাম । আপনি উপরে ঘুমান ।
জিহাদ : বললেই হলো
আমি : আমি তো ঘুমাবোই
জিহাদ : আচ্ছা দেখি
.
আমি ঘুমোতে যাবো এমন সময় আমাকে কোলে তুলে নিল ।
আমি : নামান আমাকে
জিহাদ : নামাবো না
আমি : উহু নামান
জিহাদ : না গো
.
বিছানায় শুইয়ে দিতে আমি উঠতে লাগলাম ।
ওমনি জিহাদ : ওই থামো
আমি : উহু
.
ও আমাকে তার বুকে জড়িয়ে শুয়ে পড়লো ।
.
.
আমার রাগ উঠতাছে যখন আমি বারবার ওর কাছে গেছি বারবার আমাকে আঘাত করছে আর এখন আসছে ।
.
পরেরদিন……
সকালে…….
আমি : ফুপি আমি বাড়ি যাবো
ফুপি : আমার কাছে লুকাস কেনো
আমি : কি ?
ফুপি : জামাই এর সাথে ঝগড়া হইছে তাই না । এসব হয় ই এতো রাগ করিস না ।
আমি : হুম ( ভাবছি জানলে আর বলতেন না )
.
বিকেলে…….
একটা পিচ্চিকে কোলে নিয়েছিলাম এক ভাবির সাথে গল্প করছিলাম ভাবির বেবি ছিল পিচ্চিটা ।
.
এমন সময় জিহাদ এলো
জিহাদ : তোমাকে খুঁজছিলাম
আমি : কি করতে
ভাবি : বাপ রে জামাই এর দেখছি আনহা কে ছাড়া চলে না
আমি : হুররর ভাবি কি বলো যে
ভাবি : ঠিক ই তো
আমি : বাদ দাও তো
ভাবি চলো তোমাদের বাড়ি যাবো । আমি নীলের ( পিচ্চির নাম নীল । আমিই শখ করে ডাকি ) সাথে খেলবো ( আমার পিচ্চি খুব পছন্দ )
.
ভাবি : আচ্ছা তুই আর বড় হলি না । বিয়ে হয়ে গেলো তবুও বাচ্চা
আমি : এ্যা কি কও
ভাবি : হাহা
আমি : আমাকে তুমি নিয়ে যেতে চাও না
ভাবি : কে বললো
আমি : আজ আমি পর হয়ে গেলাম তোমার
ভাবি : আরেহ না
আমি : হিহি জানি তো মজা করলাম একটু
ভাবি : দুররর
.
এতক্ষণ জিহাদ চুপ ছিল । এখন বলে উঠলো….
জিহাদ : আমিও যাবো
আমি : কি
জিহাদ : হুম
ভাবি : আরে চলেন চলেন
আমি : দুররর না
ভাবি : এই কি বলিস
আমি : উহু
.
জিহাদও আসলো…..
আমি পিচ্চির সাথেই খেলছিলাম । জিহাদ কে ভাবির সাথে গল্প করতে লাগায় দিছি ।
.
কিছু সময় পর
.
জিহাদ : আনহা চলো বাড়ি যাই
আমি : ইইইইইই না যাবো না
জিহাদ : চলো
আমি : না
.
এমন সময় মেসেজ এলো
ওই রাক্ষস টাই দিছে
জিহাদ : চলো নইলে এখান থেকে কোলে করে নিয়ে যাবো
.
আমি রাগি চোখে তাকালাম
.
ও হাসছিলো মুচকি মুচকি
.
আমি ভাবলাম নাহ ওর ভরসা নাই
.
বাড়ি এলাম
আমি : কি সমস্যা আপনার‌ এভাবে আনলেন কেন আমাকে ।
জিহাদ : ওখানে তোমার সাথে কথা হচ্ছিল না তাই
আমি : হুহ যখন ভালোভাবে বলতাম তখন অনেক কষ্ট দিয়েছেন ।
জিহাদ : তাই তো ঠিক করতে চাই
আমি : লাগবে না
.
রাতে……
বৃষ্টি হচ্ছিল……
আমি রুমে গিয়ে দেখি রুম টা সাজালো
আমি গিয়ে অবাক ভালোই হইছে
.
আমি : কে করলো এসব
জিহাদ : তোমার #Angry_Husband ছাড়া আর কে হবে
আমি : হুহ ভালো
জিহাদ প্রপোজ করলো
” জানি অনেক কষ্ট দিছি । কি করবো বলো আমি যে অমনি । তোমার ভালোবাসার মুল্য কখনো দেই নাই । আমি যে তখন ভাবতাম সবাই খারাপ । কিন্তু তোমার ভালোবাসা তোমার বাচ্চা টাইপ ব্যবহার সব আমাকে তোমার ভালোবাসায় পড়তে বাধ্য করেছে । আমি বাঁচবো না তোমাকে ছাড়া । প্লিজ ক্ষমা করে দাও ।
ভালোবাসি তোমাকে রে । হবে কি তুমি আমার বাবুর আম্মু । ”
আমি : হুররর বাই আমি বাইরে যাবো সরুন
জিহাদ : অনেক হইছে ওই তুই বুঝিস না ভালোবাসি তোকে । তুই আমার বুঝলি ।
আমি : এমা ধমকান কেন
জিহাদ : ওই আপনি বলিস কেন তুমি বল
আমি : আপনি তুই বলেন কেন
জিহাদ : আচ্ছা আর বলবো না
আমি : ওকে
জিহাদ : মাফ করলা ?
আমি : না
জিহাদ : কি করলে মাফ করবে
আমি : আমার সাথে বৃষ্টি ভিজলে
জিহাদ : হায় রে আবার ঠান্ডা লাগবে
আমি : লাগলে লাগুক না ভিজলে মাফ করুম না
জিহাদ : আচ্ছা
.
অতঃপর দুজনে ভিজলাম ।৤
পরেরদিন ভিজার ফল……
আমি : হাচ্চি….
জিহাদ : হাচ্চি…
আমি : হাচ্চি
.
দু জনের ই‌ঠান্ডা লেগে গেল….
.
তারপর থেকে শুরু হলো নতুন এক হাচ্চি ওয়ালা ভালোবাসার গল্প । হিহিহি
.
………………..কাল্পনিক…গল্প…………………..
( হয়তো ছোট হয়েছে আর ওতো ভালো হয় নি । সময় স্বল্পতার জন্য ছোট করলাম । পরবর্তী গল্পের জন্য সাথেই থাকবেন )