Sunday, August 17, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2402



পুরোনো_ভালোবাসা   পার্ট: ১২

0

পুরোনো_ভালোবাসা

পার্ট: ১২

#Rabeya Sultana Nipa

__আনিকা আর নিশু ডাক্তার দেখিয়ে বসে আছে রিপটের জন্য।ডাক্তার অনেক গুলি টেস্ট দিয়েছে। টেস্ট গুলো করে রিপটের জন্য অপেক্ষা করছে।

নিশু -যদি রিপটে খারাপ কিছু হয় তাহলে কি হবে বলো তো।আমি নিজের জন্য কিছু ভাবছিনা।ভাবছি অনিকের কথা।
__ভাবী তোমার ফোন ভাজতেছে। আনিকা কথায় নিশু বললো।
দেখছো বলতে না বলতেই তোমার ভাইয়ার ফোন চলে আসছে। ও অফিসে আছে ঠিকি কিন্তু মন পড়ে আছে এখানে।

নিশু-হুম বলো?

অনিক – রিপট পেয়েছো?

নিশু -এখনো পাই নাই। পেলে তোমাকে ফোন দিবো।তুমি চিন্তা করছো কেন? আমার কিচ্ছু হবে না।

অনিক -ঠিক আছে আমি চিন্তা করবোনা। পাশের বাড়ির রিনা ভাবীর হাসবেন্ডকে বলবো তোমার জন্য চিন্তা করতে।এইভার খুশিতো?

নিশু -অনিক তুমিও না।পাগল একটা।এখন রাখি বাসায় গিয়ে তোমাকে ফোন দিবো।

__একজন লোক এসে বলে গেলো রিপট এসে গেছে। আপনারা একজন গিয়ে নিয়ে আসুন।

আনিকা-ভাবী তুমি বসো আমি নিয়ে আসছি।
কথাটা বলেই আনিকা রিপট আনতে গেলো।

__একটু পর আনিকা ফিরে এসে নিশুকে জড়িয়ে ধরে বললো congratulations ভাবী।
নিশু অবাক হয়ে বললো কি হয়েছে? তুমি এইরকম করছো কেন?
আনিকা- ভাবী জানো আমি না ফুফু হতে যাচ্ছি।

নিশু -আনিকার কথা শুনে নিশু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। কি বলবে বুজতে পারছেনা

আনিকা -ভাবী তুমি খুশি হও নাই?

নিশু-আমি খুশি হয়েছি কিনা তা পরের কথা,তোমার ভাইয়া যদি রাগ করে? তোমার ভাইয়া বলেছিল তার পড়ালেখা শেষ করে বেবি নিবে।

আনিকা -ভাবী তুমি তো pregnant হয়েছো ৩ মাস চলতেছে।তুমি একটুও বুজতে পারো নাই?

নিশু-হ্যা কয়দিন থেকে শরীর টা ভালো লাগছিলোনা।কিন্তু বুজতে পারি নাই। আনিকা! তোমাকে একটা কথা বলবো রাখবে?

আনিকা -বলো কি কথা?
নিশু- বাসার কাউকে এখন কিছু বলো না।তোমার ভাইয়াকেও না।
আনিকা-কি বলো এইরকম একটা খুশির খবর কাউকে বলবো না, কিন্তু কেন?
নিশু-৬ দিন পর অনিকের জন্মদিন। সবাইকে সেই দিন সারপ্রাইজ দিবো।প্লিজ তুমি আগে থেকে কিছু বলো না।

আনিকা-ঠিক আছে। তোমার কথায় রাখলাম।

__নিশু বাসায় আসার আগেই অনিক বাসায় এসে বসে আছে।নিশু হাসি দিয়ে বললো আরে তুমি এতো তাড়াতাড়ি চলে আসছো।

অনিক -হুম চলে আসছি।তোমার রিপটে কি আসছে?

নিশু-এইজন্য তুমি অফিস থেকে চলে আসছো?
এতো পাগলামি কেন করো।

অনিক-তোমাকে আমি এই গুলো কিছু জিজ্ঞাস করিনি।যা করেছি তার আনসার দাও?

নিশু-আমি একদম সুস্থ আছি।ডাক্তার বলেছে দুইদিন পর এমনি ঠিক হয়ে যাবে।

অনিক -ঠিক আছে। তোমার কথা মানলাম।

কথাটা বলেই নিশুকে জড়িয়ে ধরেছে। এমন সময় আনিকা বলে উঠলো।

আনিকা -ভাইয়া ভুলে যাসনা আমি এইখানে আছি।এইটা তোদের বেড রুম না।

নিশু -(রাগ হয়ে অনিককে ধাক্কা দিয়ে)সব কিছুতেই তোমার বাড়াবাড়ি। পাগল কথাকার।বলেই রুমে চলে গেলো।

অনিক -আনিকা তুইও না!দাড়া তোকে দেখাচ্ছি মজা।বলে আনিকার পিছন পিছন ছুটলো।

__ রেহানা বেগম এসে ভাইবোনে দুষ্টামি দেখে বললো এখনো কি তোরা ছোটো আছিস? এইরকম করছিস কেন তোরা? অনিক তুই এইদিকে আয় তোর সাথে কথা আছে।

অনিক-হুম বলো কি কথা?

রেহানা বেগম -কালতো ছেলের বাড়ির লোক আসবে ওরা বলচ্ছে একসাথে engaged করে ফেলতে।তোর বাবাও রাজি হয়ে গেছে।

অনিক-মা! তোমরা যা ভালোমনে করো।
নিশু এসে বললো মা! আমি একটা কথা বলি?

রেহানা বেগম -হ্যা বলো?

নিশু-আনিকাকে একবার জিজ্ঞাস করলে ভালো হতোনা। ও এই বিয়েতে রাজি কি না?

রেহানা বেগম-তুমি চুপ করো (ধমক দিয়ে)।আমার মেয়ে আমরা যেটা বলবো সেটাই শুনবে।

__নিশুকে মন খারাপ করে চলে যেতে দেখে অনিকও পিছন পিছন গেলো।

অনিক -নিশু! বার বার এক কথা কেন বলছো?শুধু শুধু এখন মায়ের বকা খেতে গেলে।আমি চাই না তুমি আর এই ব্যাপারে কিছু বলো।

নিশু-ঠিক আছে এখন খেতে চলো রাত অনেক হয়েছে।
তবে তোমাকে একটা কথা আমি বলতে পারি। আমার মনে হয় আনিকা এই বিয়েতে রাজি হবে না।
(কথাটা বলেই নিশু রান্নাঘরে চলে গেলো।)

__সবাই এক বসে খাওয়া খাচ্ছে।কিন্তু অনিকের মন হলো নিশু আর আনিকার দিকে।

অনিক -আনিকা! কাল তোকে ছেলেপক্ষ এসে দেখে engaged করে যাবে।এতে কি তোর কোনো আপত্তি আছে?

আনিকা -আপত্তি থাকবে কেন।তোরা যা করবি আমার ভালোর জন্যই করবি।আমার কোনো আপত্তি নাই।

__অনিক নিশুর দিকে তাকিয়ে বললো।আমার খাওয়া হয়ে গেছে আমি রুমে যাচ্ছি।একে একে সবাই চলে গেলো।আনিকা আর নিশু বসে আছে।

নিশু-এখন তো তোমার ভাইয়াকে বলতে পারতে।তুমি এই বিয়ে করতে পারবেনা।

আনিকা-ভাবী তুমি চিন্তা করোনা।বিয়েতো দূরের কথা engaged ও হবেনা।

নিশু-আমিতো কিছুই বুজতেছিনা তোমার কথা।

আনিকা -এখন কিছু বুজা লাগবেনা।তুমি রুমে যাও,ভাইয়া অপেক্ষা করছে।এমনিতেই এখন ভালোভাবে চলতে হবে।আর সবসময় আমার ভাইয়াকে নিয়ে ভালো থাকবে।যে আসছে তারও খেয়াল রাখবে।আর দাঁড়িয়ে থেকোনা রুমে যাও।

নিশু -আনিকা তুমি যেই ভাবে কথা বলছো মনে হচ্ছে আজকেই কথাও চলে যাবে।

আনিকা -আরে নাহ এমনি বললাম।

__নিশুও আর কথা না বাড়িয়ে রুমে চলে আসলো।
অনিক খাটের একপাশে বসে বসে ল্যাপটপ এ কাজ করছে।নিশুকে আসতে দেখে,

অনিক – এই তোমার আসার সময় হলো?

নিশু -তাড়াতাড়িই তো এলাম।দিন দিন তুমি কেমন যেন অবুজের মতো কথা বলছো।সরো কাল অনেক কাজ আছে সকাল সকাল উঠতে হবে,আমি এখন ঘুমাবো।বলেই নিশু শুয়ে পড়লো।

অনিক- তুমি ঘুমাবে মানে?আমি মানছি কাল অনেক কাজ।তাই বলে তুমি এখন ঘুমাবে?

নিশু-না! তোমাকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবো।তুমি যা চাচ্ছো তা কিছুই হবে না।তুমিও আর একটা কথা না বলে এখন ঘুমাও।

চলবে,,,,,

পুরোনো_ভালোবাসা   পার্ট:১১

0

পুরোনো_ভালোবাসা

পার্ট:১১

#Rabeya Sultana Nipa

_নিশু আর অনিকের সংসার ভালোই চলছে। কিন্তু অনিকের মা এখনো নিশুকে মেনে নেয়নি। ওদের বিয়ের ৮ মাস চলছে। অনিক পড়ালেখার পাশাপাশি ছোটো একটা জব করে।নিশুর তাতে কোনো আপসোস নাই কারন অনিক নিশুকে তার নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে।

__ভাবী! ভাবী! কই তুমি? কথা গুলো আনিকা নিশুকে ডাকতে ডাকতে রান্না ঘরে এলো।তুমি আবার রান্না করতে আসছো? মা আসলে তোমাকে বকা দিবেতো।

নিশু – আমি জানি মা আসলে আমাকে বকা দিবে।কিন্তু মা এখন বাসায় নাই।তাই আমি রান্না ঘরে আসছি।।

আনিকা – ভাবী! মা কোথায় গেছে?

নিশু-আমাকে তো আর বলে যায়নি।কিন্তু তোমার ভাইয়া কাল রাতে বলেছে মা তোমার জন্য ছেলে দেখতে যাবে।হয়তো সেইখানে গেছে।

আনিকা – আমি তোমাকে একটা কথা বলবো কিন্তু তুমি কাউওকে বলতে পারবেনা।

নিশু -কি এমন কথা যা আমি কাউকে বলতে পারবোনা। আর এই বাড়িতে আমি কাকেই বা বলবো তোমার ভাইয়া ছাড়া।

আনিকা – ভাইয়াকেও বলো না প্লিজ।আসলে আমি একজনকে ভালোবাসি।

__নিশু আনিকার কথা শুনে হাসি দেয়ে বললো কে সে লোক?

আনিকা – রাফি!

নিশু – অনিকের বন্ধু রাফি ভাইয়া! হা হা হা তুমি রাফি ভাইয়া কে ভালোবাসো?

আনিকা – তুমি আসছো কেন ভাবী? আমি কি হাসার মতো কিছু বলছি?

নিশু – না এমনি।রাফি ভাইয়া হলে খারাপ হবে না।
এখন দেখো সবাই রাজি হয় কিনা।

আনিকা -রাজি না হলে আমার কিছু যায় আসে না।আমরা পালিয়ে বিয়ে করবো।আমি কি তোমার মতো নাকি সব কিছুতেই ভয় পাবো?রাফি ওর মা বাবাকে বলেছে ওরা রাজি। ওদের ছেলের ভালোর জন্য সব করবে।আর আমার মাকে দেখো সারাক্ষন তোমার পিছনে লেগে থাকে।

নিশু – আনিকা মাকে এই ভাবে বলতে নাই।মা সবার ভালো চায়। হয়তো ওনার জায়গা ওনি ঠিক করছেন।
তোমার ভাইয়া এখনো পড়ালেখা শেষ করে নাই। তার উপর আমিও চলে আসলাম।এতে মার রাগ হতেই পারে।মারা কখনওই সন্তানদের খারাপ চায় না।

আনিকা -বুজলাম চলে আসছো। কিন্তু এখন তাও মেনে নিতে পারে।যেই ভাবে সারাদিন ভাইয়াকে বলে তোমাকে বাড়ির থেকে বাহির করে দিতে তোমার খারাপ লাগে না।

__নিশু -না আমার খারাপ লাগেনা।কারণ অনিকের ভালোবাসার কাছে এইগুলো কিছুই না।অনিক যদি আমার পাশে থাকে সারাজীবন আমি এইগুলো সইতে পারবো।

_পিছনদিক থেকে অনিক বলে উঠলো দুজন মিলে কি এতো কথা বলছিস?

আনিকা -তুই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা শুনছিলি?

অনিক -আরে না আমিতো এইমাত্র আসলাম।নিশু রুমে আসো তোমার সাথে কথা আছে।

আনিকা – যাও যাও তোমার ভালোবাসার ডাক পড়েছে এখন তো আর এই ননদের কথা মনেই থাকবে না।

নিশু -আচ্ছা আমি কথাটা শুনেই চলে আসছি।
না হলে অনিক রাগ করবে।

_নিশু রুমে যাওয়া সাথে সাথে অনিক দরজাটা আটকে দিলো।

নিশু – দরজা আটকালে কেন?

অনিক -(নিশু কে পিছন ধিক জড়িয়ে ধরে) বউয়ে সাথে কথা বলতে গেলে দরজা আটকাতে হয় তুমি জানোনা?

নিশু – না জানিনা।এখন ছাড়োতো কেন ডাকছো সেটা বলো।

অনিক -তুমি আসলেই একটা আনরোমান্টিক।ভাবলাম খুসির সংবাদটা দেওয়ার আগে আমার জানটাকে একটু আদর করি তা না উল্টা জাড়ি দিচ্ছো।

নিশু – এতো পাগলামি না করে কথাটা আগে বলো।

অনিক -আমার থেকে তোমার কথায় বড় হয়ে গেলো? তাহলে শুনো আনিকার বিয়ে।আমি আর মা ছেলে পক্ষকে কথা দিয়ে আসছি।আনিকার বিয়ে ওখানেই দিবো। আমাদের সব কিছু পছন্দ হয়েছে।আর ছেলেও দেখতে শুনতে ভালো।

__নিশু অনিকের দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিয়ে অনিককে জড়িয়ে ধরে বলো একটা কথা বলি?

অনিক -ছাড়ো আমাকে! তোমার তো আবার এইসব ভালো লাগেনা।

নিশু -রাগ করো কেন? শুনোনা কথাটা আরেক বার ভাবলে হতো না?

অনিক – কোন কথা নিয়ে ভাববো,বুজিয়ে বলো?

নিশু -আনিকার বিয়ের কথা নিয়ে।ওকে একবার জিজ্ঞাস করেলে ভালো হতো না?সারাজীবন যার সাথে কাটাবে তাকে তো ওর ভালো লাগতে হবে তাই না?

অনিক -ও কি তোমাকে কিছু বলছে নাকি ওর পছন্দের ব্যাপারে?

নিশু -কই না তো। এমনি বললাম।
(তোমাকে মিথ্যা বলার জন্য আমাকে মাপ করে দিও কথাটা মনে মনে বলতে নিশু চোখে পানি চলে আসলো।এই প্রথম সেই অনিকের কাছে মিথ্যা বলেছে।) তুমি বসো আমি তোমার জন্য চা নিয়ে আসছি বলেই নিশু বাহিরে চলে গেলো।

__রেহানা বেগম বাহিরে থেকে এসেছে দেখে নিশু কাছে গিয়ে বললো মা! আপনাকে চা দিবো?রেহানা বেগম কিছু বলতে যাবে এমন সময় অনিককে রুম থেকে বের হতে দেখে কিছু না বলে হাসি দিয়ে বললো আনো।

__নিশু নিছু না বলে রান্নাঘরে গিয়ে বিড়বিড় করছে যার মুখে তিতো ছাড়া মিষ্ট কথা বের হয় না সেটা একদিনেই পাল্টে গেলো কি করে।

__এইদিকে রেহানা বেগম মনে মনে ভাবতেছে মেয়েটা সত্যি অনেক ভালো। এতো কিছু বললাম সব কিছু মুখ বুঝে সহ্য করে নিয়েছে।আজ থেকে ওকে আর কিছু বলবো না।

নিশু-মা! আপনার চা।

রেহানা বেগম-হুম, নিশু তুমি কি রান্না করেছো? আর আজ থেকে তুমিই রান্না করবে।

__অনিক অবাক হয়ে তার মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে।মা! ঠিক আছোতো।আরে নিশু কান্না করছো কেন? দেখছো মা তোমাকে ভালোবেসে ফেলছে।

রেহানা বেগম -হ্যা আমি ঠিক আছি।(নিশুর দিকে তাকিয়ে)পাগলি মেয়ে তুমি কান্না করছো কেন?মা তো ভুল করতেই পারে তাই না?

__কথা গুলো বলেই নিশুকে জড়িয়ে ধরল রেহানা বেগম।আনিকা এসে বললো ভাইয়া দেখছিস! মা এখন আমাদের দুজন কে ভুলেই গেছে।অনিক হেসে বললো তোকে আদর করে এখন আর লাভ কি তুই কয়েক দিন পরে তো আরেক জনের ঘরে চলে যাবি।তাদের কে বলে দিবো তোকে বেশি করে আদর করতে।
আনিকা কিছু না বলেই তার রুমে চলে গেলো।

রেহানা বেগম -বেচারি লজ্জা পাইছে মনে হয়।আর শুন দুইদিন পর ছেলেরা ওকে দেখতে আসবে।সব কিছু যেন ঠিকঠাক ভাবে হয়।

অনিক -মা! তুমি চিন্তা করোনাতো। সবকিছু ঠিকভাবেই হবে।

__নিশু কিছু না বলেই আনিকার রুমে গিয়ে দেখে আনিকা কান্ন করছে।
নিশু-আনিকা তুমি কান্না করছো কেনো? এখন তো তুমি সবাইকে বলতে পারতে।এখনি সবাইকে বলে দাও। দুইদিন পর তোমাকে দেখতে আসছে। পরে আর বললেও কেউ মেনে নিবে না।

আনিকা -রাফি কে আগে বলে দেখি ও কি বলে। তারপর না হয় বলবো।

নিশু – তুমি যা ভালো মনে করো।
বলেই নিশু তার রুমে চলে আসলো।আসতে না আসতে মাথাটা কেমন ঘুরছে।আজ কয়েক দিন থেকেই মাথা ঘুরছে।অনিককেও বলতে পারছিনা।কিছু বললেই ওর চিন্তার শেষ থাকবেনা।কথা গুলো ভাবতে ভাবতেই নিশু শুয়ে পড়লো।

একটু পর অনিক এসে দেখে নিশু শুয়ে আছে।
অনিক-নিশু কি হয়েছে তোমার অসময় শুয়ে আছো?

নিশু -এমনি।ভালো লাগছে না তাই।

অনিক-তোমার মুখ দেখে তো তা মনে হচ্ছে না।সত্যি করে বলো কি হইছে তোমার।আজকে কথায় তুমি আনন্দে থাকবে তা তুমি মন খারাপ করে শুয়ে আছো।
প্লিজ নিশু বলোনা কি হইছে?

নিশু -আসলে আমার মাথাটা কয়েক দিন থেকেই ঘুরছে।কিছু ভালো লাগছে না।

অনিক-আমাকে এতো দিন বলো নাই কেন?ঠিক আছে কাল আনিকাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাবে।আমিই তোমার সাথে যেতাম।আজকেও অফিসে যাই নাই।কাল যাতেই হবে।তুমি আনিকাকে নিয়ে যেতে পারবেতো?

নিশু -পারবো। তুমি চিন্তা করো না তো।
অনিক-আজব! আমি চিন্তা করবো নাতো কে করবে শুনি?তোমার কিছু হলে আমি মরেই যাবো।আর ডাক্তার কাছে গেলে কি বলে আমাকে ফোন করে সব জানাবে।

নিশু-কি পাগল একটা। বাসায় আসলেইতো জানতে পারবে।আবার ফোন করা লাগবে?

অনিক-আমি এতো অপেক্ষা করতে পারবোনা।

চলবে,,,,,,,,,

পুরোনো_ভালোবাসা   পার্ট: ১০

0

পুরোনো_ভালোবাসা

পার্ট: ১০

#Rabeya Sultana Nipa

__রেহানা বেগম মনে মনে ভাবতেছে এরা সবাই কথায় গেলো আমাকে কিছু না বলে।আজকে সবাই আসুক তারপর এদের ১২ টা বাজাবো।যেমন বাবা তেমন তার ছেলে মেয়েরা। আমি যে তাদের মা এই কথা তাদের মনেই থাকে না।সব কিছু তাদের বাবা সাথেই শেয়ার করবে।কথা গুলো ভাবতে ভাবতেই কলিংবেলের শব্দ শুনে দরজার দিকে এগুলো।
দরজা খুলে দেখে আনিকা আর তার বাবা দাঁড়িয়ে আছে।
রেহানা বেগম -কথায় গিয়েছিলে তোমরা? তোমার ছেলে কথায় এখনো বাড়ী এলোনা রাত তো কম হলো না।তোমরা কোথায় গিয়েছিলে রাত করে বাড়ি ফিরলে?
অনিকের বাবা-সব কথা তুমি বলবে, নাকি আমকেও কিছু বলতে দিবে?কোথায় আর যাবো তোমার গুনোধর ছেলেকে উদ্ধার করতে গিয়েছিলাম।
রেহানা বেগম-কোনো কিছু হলেই আমার ছেলে।আমার ছেলে কি করেছে শুনি?
__পিছন থেকে অনিক মা বলে ডাক দিলো।রেহানা বেগম তাকিয়ে দেখে অনিক আর সাথে একটা মেয়ে।
নিশু এগিয়ে এসে রেহানা বেগম কে সালাম করলো।
আরে ও আমাকে সালাম করছে কেন? আর এই মেয়েটা কে?
তখন আনিকা বলে উঠলো, মা! ও হচ্ছে নিশিতা। তোমার ছেলের বউ।আর আমার ভাবী।
রেহানা বেগম চোখ বড় বড় করে মেয়ের দিকে তাকিয়ে বললো। কার বিয়ে, কিসের বিয়ে,আমি এই বিয়ে মানি না।এখুনি এই মেয়েকে এই বাড়ী থেকে বের করে দাও।
__নিশু চুপ করে শুধু কান্না করেই যাচ্ছে।কিছু বলছেনা।
অনিক-নিশু চুপ করো কান্নাকাটি করোনা প্লিজ। সব ঠিক হয়ে যাবে।
__রেহানা বেগম চিৎকার দিয়ে বললো কিসের সব ঠিক হয়ে যাবে? কিছুই ঠিক হবে না। তুই এখুনি এই মেয়েকে এই বাড়ি থেকে বের করে দে।
__অনিকের বাবা রেহানা বেগমকে চুপ থাকতে বলে, আনিকাকে বললো নিশুকে অনিকের রুমে দিয়ে আসতে।অনিক আর রেহানা বেগম কে বললো তোমারা আমার রুমে আসো।
__অনিক তার মাকে বুজানোর চেষ্টা করছে। রেহানা বেগম কান্না করেই যাচ্ছে আর একিকথা বার বার বলছে ওই মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করেদে।না হলে আমি এই বাড়িতে থাকবোনা।

অনিকের বাবা-রেহানা! তুমি একটু চুপ করো। নিশুর বাবাকে আমি কথা দিয়ে আসছি ওনার মেয়ের কোনো কষ্ট এইখানে হবে না।ছেলে যখন বিয়ে করেই ফেলেছে শুধু শুধু লোক হাসানোর দরকার কি।মেয়েও দেখতে শুনতে ভালো।মেয়ের ফ্যামিলিও অনেক ভালো দেখেই বুজা যাচ্ছে।অনিক! এইবার তুই রুমে যা মেয়েটা উপর আজ অনেক ঝড় গেছে।
অনিক- ঠিক আছে বাবা।মা! প্লিজ তুমি আর কান্না করোনা।এই বলে অনিক তাদের রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে গেলো।গিয়ে দেখে আনিকা নিশুর সাথে কথা বলছে।কিন্তু নিশু চুপহয়ে বসে আছে দরজার দিকে তাকিয়ে। হয়তো অনিকের আসার জন্য অপেক্ষা করছে।
আনিকা -ভাইয়া! তুই এসে গেছিস। মাকে বুজাতে পেরেছিস তো?
অনিক- মা কি আর এতো সহজে বুজবে।দেখা যাক কাল কি হয়।
আনিকা-আচ্ছা তাহলে এখন আমি আসি। তোরাও ঘুমিয়ে পড়।
__আনিকা চলে গেলো তার রুমে।অনিক তার রুমের দরজাটা আটকিয়ে নিশুর পাশে এসে বসলো।অনিক জানে নিশু নিশু মনে মনে অনেক কষ্ট পাচ্ছে।কষ্ট এখন হবেই সব কিছু ছেড়ে আমার কাছে চলে এসেছে।

অনিক – আমি জানি তুমি কি ভাবছো? কেন আমি তোমাকে এই ভাবে আজই বিয়ে করলাম।

__নিশু কিছু না বলেই অনিককে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে।অনিককে কি আনসার দিবে সে।

অনিক – প্লিজ নিশু এই ভাবে কেদোনা। সব ঠিক হয়ে যাবে।
নিশু- আমিও চাই সব কিছু ঠিক হয়ে যাক।

_সকাল বেলা নিশু উঠে রান্নাঘরে দিকে গেলো।সেইখানে গিয়ে দেখে রেহানা বেগম নাস্তা বানাচ্ছে।

নিশু -মা! আমি আপনাকে হেল্প করি?আমাকে দিন আমি চা টা করে ফেলি।

রেহানা বেগম – এই মেয়ে তোমাকে আমার রান্নাঘরে কে আসতে বলেছে।আসতে না আসতেই আমার সংসার নিজের হাতে নিতে চাইছো।চালাকি তো ভালোই শিখেছো।তবে এইটা শিখোনি? বেকার ছেলেরকে বিয়ে করতে নাই।আমি একটা জিনিস বুজলাম না। এতো দিন দেখে এসেছি মেয়েরা টাকা ওয়ালা ছেলেকে ছাড়া বিয়ে করে না।আর তুমি বিয়ে করেছো যে নিজের খরচ চালায় তার বাপের টাকায়।

__অনিক আর আনিকা দৌড়ে এসে দেখে নিশু কিছু বলছে না শুধু কান্না করে যাচ্ছে।
অনিক – মা! তুমি এইভাবে চিৎকার চেঁচামিচি করছো কেনো।নিশু কি করেছে।
রেহানা বেগম – আজ আমার এই দিন দেখার বাকী ছিল? বউয়ে জন্য এখন আমাকে বকাঝকা করছিস?
আনিকা -মা! ভাইয়া কখন তোমায় বকলো।ভাইয়া তো শুধু কি হয়েছে তা জানতে চাইছে এইখানে তুমি দোষের কি দেখলে??
রেহানা বেগম -তুই যে আমার মেয়ে আমার ভাবতেই অবাক লাগছে।যেমন ভাই তেমনি তার বোন।

অনিক -নিশু তুমি রুমে যাও শুধু শুধু এইখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন?
__নিশু কিছু না বলে রুমে গিয়ে বসে বসে কান্না করছে।অনিক নিশুর জন্য রুমে নাস্তা নিয়ে এসে বললো তুমি এখনো কান্না করছো?
এইভাবে সারাক্ষণ কান্না করলে তো তুমি অসুস্থ হয়ে যাবে।এই নাও নাস্তাটা খেয়ে নাও।
নিশু -তুমি কি কোথাও যাচ্ছো?
অনিক – দেখি একটা চাকরির ব্যবস্থা হয় কিনা।এইভাবে তো আর বসে থাকা যায় না।কিছু না করলে মা তোমাকে প্রতিটা পদে পদে কথা শুনাবে।
নিশু – অনিক! বাহিরে চাকরি পাবে বলে মনে হয় না। আমার আব্বুকে একবার বলে দেখবো?
অনিক -না নিশু! এমনেতেই ওনার কাছে ছোটো। আমি চাইনা তোমার বাবার কাছে আর ছোটো হতে।

নিশু – ঠিক আছে তোমার যা ভালো মনে হয়।তবে যেখানে যাও তাড়াতাড়ি ফেরে এসো।

অনিক – আসতে তো হবেই আমার বউকে ঘরে রেখে আমি বাহিরেকি আর থাকতে পারি?

চলবে,,,,,,,,,

পুরোনো_ভালোবাসা   পার্ট:৯

0

পুরোনো_ভালোবাসা

পার্ট:৯

#Rabeya Sultana Nipa

_নিশুকে আসতে দেখে অনিক হাঁসি দিয়ে নিশুকে বললো আমি জানতাম তুমি আসবে।আমি জানি আমার নিশু কখনওই আমার কথা ফেলতে পারবে না।
তোমাকে যা যা আনতে বলেছিলাম এনেছো?
নিশু-অনিক! আমরা ভুল কিছু করছিনা তো?বিয়েটা পরে করলে হতো না।কাউকে না জানিয়ে আমরা ঠিক করছি না।তুমি পাগলামি করোনা। আমি তোমাকে ছেড়ে কথাও যাবনা।
অনিক-তুমি কি বিয়ে করবে না? না করলে হয়তো আমি তোমাকে আর কখনো ফিরে পাবোনা।প্লিজ নিশু তুমি আর না করো না।
নিশু-ঠিক আছে চলো।বিয়ে করে কিন্তু আমার বাসায় আগে যাবো।তুমি আমার বাবাকে কি করে রাজি করাবে সেটা তোমার ব্যাপার।
অনিক-ঠিক আছে।আগে বিয়েটা হক। আমি সব কিছু ঠিক করে নিবো।চলো আমি সব কিছু রেডি করে রেখেছি। আমার ফ্রেন্ডরা কাজী অফিসে বসে আছে।তুমি গেলেই বিয়েটা হবে।
_নিশু আর অনিকের বিয়ে পড়াতে পড়াতে দুপুর হয়ে গেলো।এই দিকে নিশুদের বাসায় সব গেস্ট চলে এসেছে।ইয়াসমিন বেগম নিশুর বাবাকে ডেকে বললো তোমার মেয়েতো এখনো এলো না।সকালে ওকে যেতে দেওয়া তোমার একদম ঠিক হয়নি।ছেলের বাড়ির সবাই মেয়েকে খুঁজছে এখন তোমার বন্ধুকে বুজিয়ে বলো ওর কলেজ এখনো ছুটি হয় নাই।আমি একটা কিছু বুজলাম না যার সাথে নিশুর engaged সেই এলো না কেনো?নিশুর বাবা ইয়াসমিন বেগমকে বুজিয়ে বললেন ছেলের কাজ পড়ে গেছে তাই আসতে পারে নাই।বিকেলের আগেই চলে আসবে।
_নিশু অনিককে নিয়ে বাসার পথে পা বাড়ালো।সে জানে না আজ তার বাবা মা তার উপর কেমন আচরণ করবে।বাবা মা কি আমার বিয়েটা মেনে নিবে।ছোটোবেলা থেকেই বাবা আমার কোনো কিছুতেই না করে নাই। হয়তো আজও করবে না।অনিক তো আর খারাপ ছেলে না। বাবাকে সব বুজিয়ে বললে হয়তো মেনে নিবে এই সব ভাবতে ভাবতে নিশু বাসায় চলে আসলো।
__নিশু বাসায় এসে এতো গেস্ট দেখে অবাক চোখে তাকিয়ে সব দেখছে।ইয়াসমিন বেগম নিশুকে দেখে বললো এই তোর আসার সময় হল কখন থেকে সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছে।অনিক দেখে নিশুর মা বললো তোর কলেজের ফ্রেন্ড নাকি?
নিশু- মা! ও হচ্ছে,,,,,,,,,
এমন সময় নিশুর বাবা এসে অনিক আর নিশুকে এক সাথে দেখে স্তব্ধ হয়ে গেলেন।আজই এই ছেলেকে সাথে নিয়ে আসতে হলো? কথা গুলো মনে মনে ভাবছে।গেস্টরা সবাই অনিক আর নিশুর দিকে তাকিয়ে আছে।সবার এমন তাকানো দেখে অনিকের দিকে তাকিয়ে বললো তুমি আমার সাথে এসো তোমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিই।ইয়াসমিন তুমি নিশুকে নিয়ে রেডি করো।
নিশুর বাবা অনিককে সাবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো নিশুর ভালো ফ্রেন্ড বলে।
_ইয়াসমিন বেগম নিশুকে নিয়ে গেলেন তার রুমে।খাটের উপর শাড়ী গহনা দেখে নিশু অবাক হয়ে তার মাকে বললো।মা!এই গুলো কে এনেছে?আর বাড়ীতে এতো লোক কেন?
ইয়াসমিন বেগম-ছেলের বাড়ী থেকে এনেছে।ওরা তোর বাবার বন্ধু আর তার পরিবার।ওনার ছেলের সাথেই তোর engaged এখন চল।এমনিতে অনেক দেরি হয়ে গেছে।ভাগ্যে ভালো ছেলে বাড়িতে আসার আগেই তুই এসে গেছিস।
নিশু-মা! কই তোমরা তো আমাকে আগে কিছু বলো নাই।আর আমি এই বিয়ে করতে পারবো না।
ইয়াসমিন বেগম -পারবিনা মানে?তোর বাবা তোর উপর কত ভরসা করে সব ঠিক করেছে আর এখন তুই কি বলছিস?আর তোর বাবার চাওয়া পাওয়া কোনো দাম না তোর কাছে?
নিশু-মা! একজন স্বামী থাকতে আরেক জনকে বিয়ে করা যায়?
ইয়াসমিন বেগম -পাগলের মতো কি বলছিস এইগুলো?আমাকে একটু বুজিয়ে বলতো।
নিশু-একটু আগে যে আমার সাথে এসেছে সে অনিক।আমার কোনো ফ্রেন্ড নয়।আজ সকালে ও আর আমি বিয়ে করেছি।
__ইয়াসমিন বেগম মেয়ের মুখে এই রকম কথা শুনে বিশ্বাস করতে পারছেনা। চুপ করে খাটে বসে পড়লেন।
নিশু তার মায়ের পায়ের নিচে বসে তার মাকে জড়িয়ে কান্না করছে মা! আমি জানি তুমি অনেক কষ্ট পাইছো। আমাকে ক্ষমা করে দাও। নিশুর বাবা অনিক কে একটা রুমে বসিয়ে নিশুর মায়ের কাছে এলো নিশুর হয়েছে কিনা দেখার জন্য।মা মেয়ের এমন অবস্থা দেখে নিশুর মাকে বললো কি হয়েছে তোমাদের? নিশুকে এখনো রেডি করাও নাই কেন?
ইয়াসমিন বেগম নিশুর বাবার দিকে তাকিয়ে বললো ওদেরকে চলে যেতে বলো। আমার মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে।
নিশুর বাবার বুজতে আর বাকি রইলোনা।নিশুকে জড়িয়ে ধরে নিশুর বাবা বললো এই তুই কি করলি মা? আমি কি তোর খারাপ চাই বল?ছোটোবেলা থেকে তুই যেই ভাবে বলছিস সেই ভাবেই তোকে সব কিছু দেয়েছি।আজ তুই এই ভাবে তার প্রতিদান দিলি।নিশু কিছু বলছেনা শুধু কান্না করেই যাচ্ছে।
কথা গুলো বলেই নিশুর বাবা রুম থেকে বাহিরে গেল।নিশুর বাবা তার বন্ধুর কাছে গিয়ে বসে হাত ধরে বললো আমাকে তুই ক্ষমা করে দে।আমার মেয়েটা এমন কাজ করবে আমি সত্যি কিছু জানতাম না।নিশুর বাবার বন্ধু খালেক সাহেব বললেন আমি এখান থেকে সব শুনেছি।আসলে আমরা একটা বড় ভুল করতে যাচ্ছিলাম।ওরতো পচন্দের একটা ব্যাপার আছে।আমারা সেটা না জেনে বিয়েটা ঠিক করা উচিত হয় নাই।তুই সব কিছু মেনে নে।তাহলে আজ আমরা আসি।
__ সবাই চলে যাওয়ার পরে অনিক এসে নিশুর বাবাকে বললো আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।আমি চাই না নিশু আমাকে ছেড়ে অন্য কারো হয়ে যাক।আমি আপনাকে বলছি নিশুকে কখনো অযত্ন করবোনা।
__নিশুর বাবা-তোমার ফ্যামিলিকে ডাকো। আমি তাদের সাথে কথা বলতে চাই।আমার মেয়েকে তো আমি এমনি এমনি তোমার অনিশ্চিত জীবনের কাছে ছেড়ে দিতে পারিনা।
অনিক-ঠিক আছে আমি তাদেরকে আসতে বলছি।
__অনিক আনিকাকে ফোন দিয়ে সব বললো। আনিকা সব শুনে কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো আমি মাকে সব বলছি।কিন্তু আমি জানিনা তোর কপালে কি আছে।তবে ভাইয়া! আমি কিন্তু অনেক খুশি।
__আনিকা তার বাবার কাছে গিয়ে অনিক আর নিশুর ব্যাপারে সব বললো। অনিকের বাবা কি বলবে বুজতে পারছেনা।অনেকক্ষণ পরে আনিকাকে বললো তোর মাকে এখন কিছু বলিসনা।আগে চল ওইখানে গিয়ে দেখি কি হয়।
_অনিকের বাবা আর আনিকা নিশুদের বাসায় এসে কলিং বেল চাপলো। কলিং বেল বাজার সাথে সাথেই নিশুর বাবা দরজা খুলে দিয়ে তাদের ভেতরে এসে বসতে বললো।

চলবে,,,,,,,,,

পুরোনো_ভালোবাসা   পার্ট: ৮

0

পুরোনো_ভালোবাসা

পার্ট: ৮

#Rabeya Sultana Nipa

 

__নিশিতা মামার আজ গায়ে হলুদ। দুই দিন হয়ে গেল সে এই বাড়ীতে আসছে।ব্যস্ত থাকার কারনে অনিকের সাথে তেমন ফোনে কথা হয় না।তাই নিশিতা মন খারাপ হয়ে বসে আছে।ইয়াসমিন বেগম মেয়ের এই ভাবে বসে থাকতে দেখে বলল! কিরে এইভাবে মনমরা হয়ে বসে আছিস কেন? সবাই রেডি হয়ে গেছে তুই কখন রেডি হবি?
__মা আমার ভালো লাগছে না,তুমি যাও আমি পরে আসবো।
__নিশিতার বাবা ঘরে ঢুকে মা আর মেয়ের কথা শুনে বলল তোর কি কোনো কারণে মন খারাপ?

নিশিতা-না বাবা আমি ঠিক আছি।আচ্ছা আমি রেডি হয়ে আসছি।
যাওয়ার সময় নিশু ভুলে ফোনটা রেখে চলে গেলো। নিশুর বাবা আর মা দুজনেই বসে কথা বলছে।এমন সময় নিশুর ফোন বেজে উঠলো।নিশু বাবা তার মাকে বললো ফোনটা আমাকে দাও আমি কথা বলি।নিশুর বাবা ফোন রিসিভ করার সাথে সাথে অনিক বলা শুরু করলো। তোমার সমস্যা কি নিশু? তোমাকে কতো বার বলছি তোমার সাথে কথা না বলে আমি থাকতে পারিনা। যাওয়ার সময় এতো করে বললাম ফোন ঠিক মতো দিও।আর তুমি কি করলে ফোনটাই অফ করে রাখো।
__নিশুর বাবা কথা গুলো শুনে নিশুর মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
এইদিকে অনিককে থামিয়ে নিশুর বাবা বললো। আমি নিশুর বাবা বলছি।আমি তোমার সাথে এখন এই ব্যাপারে কোনো কথা বলতে চাই না।আমি তোমার সাথে দেখা করতে চাই দুইদিন পর। আমি এখন ব্যস্ত আছি পরে দেখা করে কথা বলবো।
ফোন রেখে নিশুর বাবা নিশুর মাকে বললো তোমার মেয়ের যে রিলেশন আছে কই কখনো তো আমাকে
বলো নাই।
ইয়াসমিন বেগম -কি আবোল তাবোল কথা বলছো। আমি এইসব ব্যাপারে কিছুই জানিনা।
__তুমি কেমন মা যে নিজের মেয়ে এতো বড় একটা কাজ করেছে তুমি জানোনা।ঠিক আছে এইসব ব্যাপারে নিশুকে কিছু বলার দরকার নাই।মেয়েকে একটু চোখে চোখে রাখো।
এমন সময় নিশু এসে বললো, বাবা আমাকে কেমন লাগছে।
নিশুর বাবা নিশুকে জড়িয়ে ধরে বললো আমার মেয়েকে একদম পরীর মতো লাগছে।পরী টা যে কখন বড় হয়ে গেলো আমি বুজতেই পারি নাই।
ইয়াসমিন তুমি বলোতো পরী সাথে এখন পরীর মনের মতো একটা বর জোগাড় করতে হবে তাই না?
ইয়াসমিন বেগম-হুম, তুমি একদম ঠিক বলেছো। এখন চলো সবাই আমাদের জন্য বসে আছে।
_অনিক নিশুর বাবার বলা কথা গুলো বার বার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। পড়াতে মন বসতে চাইছে না।কাল তো পরিক্ষা শেষ। মা বাবাকে নিশুর কথা বলবো।যদি তারাও রাজি না হয়।যদি নিশুর বাবা ও আমাকে না করে দেয়।নিশুকে আমি আমার থেকেও বেশী ভালোবাসি এইটা ওনাকে বুজাতে হবে।
__ভাইয়া! ভাইয়া! কিরে তোকে মা খেতে ডাকছে তুই শুনছিস না? অনিক কে চুপ থাকতে দেখে আনিকা বললো, তোর কি নিশুর সাথে ঝগড়া হইছে?অনিক আনিকার দিকে তাকিয়ে বললো আমি নিশুকে ছাড়া থাকতে পারবোনা। ওর বাবার সাথে আজ আমার কথা হইছে,ওনি বলেছে দুইদিন পর ওনার সাথে দেখা করতে।
আনিকা -তাহলে তুই চিন্তা করছিস কেনো?
অনিক-ওনি যদি বলে আমি নিশুকে ছেড়ে দিতে।তখন আমি কি করবো?
আনিকা-তুই ওনাকে বুজিয়ে বলবি।ওনি যদি রাজি না হয় তারপর না হয় একটা কিছু ভাবিস।এখন চল দেরি হলে এখন মায়ের বকা খাবি।

_আজ নিশুর মামার বিয়ে শেষ হলো। সবাই বউ নিয়ে একটু আগে বাসায় এসেছে। সবাই কতো খুশি।যেই যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। নিশুও অনেক খুশি তার নতুন মামী এসেছে।এর মাঝেই তার মামা নিশুকে নিয়ে নতুন মামীর সামনে এসে বসলো।মীম! (নতুন মামী)দেখো ও আমার একমাত্র ভাগ্নি।ও আমাদের সবার ভালোবাসার মনি। আজ থেকে তুমিও ওকে আমাদের মতো করে ভালোবাসবে।নিশুও নতুন মামীর সাথে ভালোই ভাব করে নিলো।দুইজন এখন ভালো ফ্রেন্ড।
__নিশুরা আজ বাড়ী চলে এসেছে। কিন্তু ছোটোমামী কে ছেড়ে আসতে মন চাইছে না।কিন্তু অনিককেও দেখার জন্য মন পাগল হয়ে আছে।অনিক কে একটা ফোন করে দেখি অনিক কোথায় আছে।বিয়ের ঝামেলার কারনে এই কয় দিন কথায় হয় নাই।জানি ও রাগ করে আছে।দেখা না হওয়া র্পযন্ত হয়তো রাগ থামবেনা।অনিককে অনেক বার ফোন দেওয়ার পরও অনিক ফোন রিসিভ করেলো না।কাল দেখা করে সবকিছু বুজিয়ে বললে অনিকে ওর রাগ কমে যাবে।এইকথা ভেবে নিশু তার মাকে রান্নার কাজে হেল্প করছে।
_নিশুর বাবা অনিককে ফোন করে একটা রেস্টুরেন্টে সন্ধ্যায় আসতে বললো।অনিক কথা মতো সেখানে চলে গেলো।দুইজন চুপচাপ বসে কফি খাচ্ছে কেউ কিছু বলছে না।অনিক মাথা নিচু করে বসে আছে আর ভাবছে কি দিয়ে শুরু করবে কথা।
নিশুর বাবাই আগে নিরবতা ভেঙ্গে বললো নিশু আমার একমাত্র মেয়ে নিশ্চয়ই তুমি জানো?
অনিক —আমি জানি।
নিশুর বাবা-কি করো তুমি?
অনিক-আমি মেডিকেলে পড়ি।
নিশুর বাবা-হুম!আসলে তোমাকে এইখানে ডেকে এনেছি কিছু কথা বলবো বলে।তুমি নিশুকে ভুলে যাও।আমি ওর বিয়ে ঠীক করে করে রেখছি আমার বন্ধুর ছেলের সাথে।আমি ওদের কথা দিয়ে ফেলেছি।আমি তোমার ব্যাপারে সব খবর নিয়েছি।তুমি অনেক ভালো ছেলে। জীবনে আরো অনেক মেয়ে পাবে। কিন্তু নিশুকে ভুলে যাও।
অনিক-আংকেল আমি নিশুকে ছাড়া বাঁচতে পারবোনা।নিশুও আমাকে ভালোবাসে।আমি ওর জন্য সব করতে পারবো কিন্তু ওকে ছাড়তে পারবোনা।
নিশুর বাবা-ঠীক আছে তুমি যা ইচ্ছা করো। কিন্তু একটা কথা মনে রেখো আমি নিশুকে আমার বন্ধুর ছেলের সাথেই বিয়ে দিবো। আমি কথার খেলাপ কখনওই করতে পারবোনা।
__অনিক কথা না বাড়িয়ে উঠে চলে আসলো।বাসায় এসে নিশুকে ফোন দিলো।
নিশু-আমি জানি তুমি আমার উপর রাগ করে থাকতেই পারোনা। অনিক তুমি কথা বলছো না কেন?
অনিক-নিশু! তুমি কি আমায় সত্যি ভালোবাসো?
নিশু-অনিক! তুমি আমায় বিশ্বাস করো না?ভালোবাসি বলেই তো তুমি যা বলো আমি সব সহজই মেনে নেই।
অনিক-তাহলে আজকেও আমার একটা কথা রাখো।
নিশু! চলো না আমরা কাল বিয়ে করে ফেলি।
__অনিকের কথা শুনে নিশু অবাক হয়ে বললো। তুমি ঠিক আছো? অনিক! হঠাৎ করে বিয়ে আমি কিছু বুজতেছি না।তোমার কি হয়েছে আমাকে বলবে?
অনিক-নিশু! আমি তোমাকে হারাতে চাই না।আমি কিছুই বুজতে চাই না কাল আমরা বিয়ে করছি এইটাই আমার শেষ কথা।যদি তুমি না আসো হয়তো আমাকে সারা জীবনের জন্য হারাবে।
নিশু-অনিক! অনিক!আমার কথাটা শুনো।ধুত ফোন রেখে দিলো!
কি হলো আজ এমন পাগলামো কেন করছে কিছুইতো বুজতে পারছি না।
_ইয়াসমিন! তোমার মেয়ে কি ঘুম থেকে উঠেছে?
নিশুর বাবা কথাটা বলতে বলতে পেপার পড়ছে।
আমাদের বাসায় যে আজ গেস্ট আসছে নিশুকে বলেছো?
ইয়াসমিন বেগম -না এখনো কিছু বলি নাই।
__নিশু রুম থেকে আসতে আসতে বললো মা তুমি কাকে কি বলো নাই?
নিশুর বাবা-তুই কি কোথাও যাচ্ছিস?
নিশু-হুম।কলেজে যাচ্ছি।
নিশুর বাবা-আজকে কোথাও যাওয়ার দকার নাই।আজকে বাসায় গেস্ট আসছে। তোমার মায়ের সাথে থাকো।
নিশু-বাবা, আমি তাড়াতাড়ি চলে আসবো।প্লিজ বাবা যাই।তুমি না করোনা।
নিশুর বাবা-ঠীক আছে। তাহলে তাড়াতাড়ি চলে এসো।
_নিশু তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে মনে মনে বললো, আমাকে ক্ষমা করে দিও বাবা তোমাকে মিথ্যা বলার জন্য।
__নিশুর বাবা ইয়াসমিন বেগমকে বললো দেখো তোমার মেয়ে এখনো ছোটোই আছে।
নিশু আর কিছু না বলে বাহিরে চলে গেলো।
ইয়াসমিন বেগম -মেয়েটাকে না জানিয়ে কাজটা কি তুমি ঠিক করছো।যদি দেখে তুমি তাকে না জানিয়ে তার engaged এর জন্য এতো আয়োজন করছো তখন একটা কিছু করে ফেলে তখন কি করবা?গেস্টের সামনে তখন কি আমাদের মানসম্মান থাকবে?
নিশুর বাবা-আমি ওকে আসলে সব বুজিয়ে বলবো।তুমি চিন্তা করোনা।

চলবে,,,,,,,,

পুরোনো_ভালোবাসা   পার্ট: ৭

0

পুরোনো_ভালোবাসা

পার্ট: ৭

#Rabeya Sultana Nipa

_ক্লাস শেষ করেই নিশিতা বাড়ি ফিরলো। মা! মা! কই তুমি? চিৎকার করে করে কি বাড়ি টা মাথায় তুলবি নাকি? বলতে বলতে নিশিতার মা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলো।কি হয়েছে তোর আজ তোকে এতো খুশি দেখাচ্ছে কেন?
__মা! তুমি যে কিভাবে সব বুজে যাও আমি নিজেও বুজতে পারিনা। হুম তোমার মেয়ে সত্যি আজ অনেক খুশি।অনেক দিন যে জিনিসটা মনে মনে চাইতাম তা আজ পেয়ে গেছি।
__মেয়ের কথা শুনে ইয়াসমিন বেগম আস্তে আস্তে মেয়ের দিকে এগিয়ে এসে জরিয়ে ধরলো।আমি তোকে অনেক বিশ্বাস করি।তুই আমাদের একটা মাএ মেয়ে। তোর খুশির জন্য আমারা সব করতে পারি।তুই এমন কিছু করিসনা যাতে আমরা কষ্ট পাই। ছোটোবেলা থেকে তুই যা চেয়েছিস তাই দিয়েছি। তুই যা করতে বলসোস তাই করতে দিয়েছি।তোর অন্যায় আবদার গুলো আমি সহজে মেনে নিয়েছি।কারণ বড় হলে তুই ঠিক হয়ে যাবি এই কথা ভেবে।
__মা! আমি জানি তুমি কি বলতে চাইছো।আমি এমন কিছু করবোনা যাতে তোমরা কষ্ট পাও।যদি কিছু করি তাহলে আমার এই মাটাকে জানিয়ে করবো।আর কোনো কথা নয় আমার খুব ক্ষুধা লাগছে খেতে দাও।আমি ফ্রেস হয়ে আসছি।
_মেয়ের কথা শুনে ইয়াসমিন বেগমের মনটা চিন্তা মুক্তো হলো।মনে মনে ভাবলো নিশুর বাবা আজ আসলে নিশুর ব্যাপারে কথা বলবো।কি এমন কাজ করে আমাদের সময় দিতে পারেনা।সে দিন বলেছিলো ওর কোন ফ্রেন্ডের ছেলের সাথে নিশুর বিয়ের কথা।আজ আসলে বলবো মেয়ের বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে ছেলের বাবার সাথে।
_আচ্ছা অনিক তুমি আমায় এতো ভালোবাসো কেন বলোতো? আমি যাই বলি না কেন তুমি এতো সহজে মেনে নাও কেন?
ভালোবাসি বলেই তো মেনে নিই। নিশু তুমি জানোনা তুমি আমার জীবনে কি।তোমার জন্য আমার এই জীবন দিয়ে দিতে পারি।(দুজনেই ফোনে কথা গুলো বলছে)
_এইভাবে তাদের ৬ মাস কেটে গেলো একে অপরকে একদিনও না দেখে থাকতে পারেনা।প্রতি দিন তাদের ফোনেও কথা হয়।
__নিশু! নিশু! তুই কথায় তাড়াতাড়ি এইদিকে আয়।
মা! তুমি এইভাবে ডাকছো কেন, কি হয়েছে?
__কি হয়নি বল? তোর ছোটো মামার বিয়ে ঠিক হয়েছে।তাও আবার দুইদিন পর বিয়ে।এতো মেয়ে দেখালাম তার পছন্দই হয় না। শেষমেশ একটা হলো।তাড়াতাড়ি সবকিছু গুছিয়ে নে বিকালে আমাদের যেতে হবে।তোর মামা বলেছে আমরা না গেলে বিয়েই করবে না।
__নিশু মনে মনে ভাবতে লাগলো আমি গেলে অনকে সাথে কথা হবে কি করে, দেখা হবে কিরে।অনিক কে না দেখে থাকবো কি করে।না গেলেও উপায় নাই।
মা! আমি একটু বাহিরে থেকে আসছি।আধাঘণ্টায় চলে আসবো।
__এই বলেই নিশু বাহিরে চলে গেলো।অনিককে ফোন দিয়েছে আসার জন্য। নিশু অপেক্ষা করছে অনিকের জন্য।
অনিক এসেই নিশুর হাত ধরে বললো কি হয়েছে তোমার?হঠাৎ এইভাবে আসতে বললে।আমি এখন যখন আসতে পারবোনা এই কয়দিন আমার পরিক্ষা চলতেছে।পরিক্ষা শেষ হলে তুমি যখন বলবে তখন দেখা করবো।
_অনিকের কথা শুনে নিশু মুখ মেঘের মতো কালো হয়ে গেলো।তারপর অনিকের দিকে তাকিয়ে বললো আমার কয়েক দিন তোমার সাথে দেখা হবে না। তাই এখন দেখা করার জন্য ডেকেছি।
__সরি লক্ষি আমাকে মাপ করে দাও আসলে আমি তো জানিনা তাই এমন করে কথা বলে পেললাম।তো আমার লক্ষি কেন দেখা করতে পারবে না আমি জানতে পারি ?
__মামার বিয়ে আমি ওইখানে যাচ্ছি তাই কয়েক দিন দেখা করতে পারবোনা।কিন্তু আমি তোমাকে না দেখে থাকবো কি করে?
__মন খারাপ করো না কয়দিনের তো ব্যাপার।তারপর তো আমরা আবার এক হয়ে যাবো।ওখানে গিয়ে কিন্তু ফোন করবে না হলে তো বুঝো কি করবো।
__আচ্ছা তাহলে আমি আসি।অনিকের বুকে মাথা রেখে নিশু অনেকক্ষণ দাঁড়িয়েছিল মনে হচ্ছে কয় দিন তো নয় কয়েক যুগ অনিককে দেখবে না।আচ্ছা অনিকেরও কি তাই মনে হচ্ছে।
__নিশু কি ভাবছো এতো?তোমার না যেতে হবে।গিয়ে কিন্তু ফোন দিবে।না হলে আমি পাগল হয়ে যাবো।
__হুম, বলে নিশু বাড়ির দিকে পা বাড়ালো।
__মেয়েটা যে কি করে না করে আল্লাই ভালো জানে এতো করে বললাম তাড়াতাড়ি সব গুছিয়ে নিতে তা নাকে কথায় গিয়ে আড্ডা দিচ্ছে কথা গুলো বলতে বলতে নিশিতার মা সব কিছু নিজেই গুছিয়ে নিচ্ছে।
__সবাই মিলে নিশিতার মামার বাড়ি পৌছালো।
তাদের দেখে সবাই অনেক খুশি।নিশিতার চার মামা তিন জনেই বিয়ে করেছে সবার ঘরের ছেলে মেয়ে গুলো নিশিতা কে দেখে অনেক খুশি।নিশিতা তাদের সবার বড়।নিশিতার মা তাদের একটাই বোন।নিশিতাও তাদের একমাত্র ভাগ্নি তাই সবার আদরের নিশিতা।
ছোটোমামা-নিশু তুই এসে গেছিস আমি কিন্তু তোর অপেক্ষায় ছিলাম।তুই ছাড়া বিয়ে বলে মনেই হবে না।
সবাই কত খুশি কিন্তু নিশিতা মন পড়ে আছে সেই অনিকের মাঝে।
__বড়মামী-নিশু যাও ফ্রেস হয়ে আসো কত কাজ বাকি আছে তোমার মামাতো তোমাকে ছাড়া কোনো কাজই করবে না।
নিশু মাথা নাড়িয়ে রুমে চলে গেলো ফ্রেস হতে।
ফ্রেস হয়ে এসে ভাবলো অনিককে একটা ফোন দিই না হলে ও চিন্তা করবে।
__নিশু অনিকের সাথে কথা বলা শেষ করেই রুম থেকে বাহিরে যাওয়ার সময় তার মামাতো বোন নিরা তার হাত ধরে বললো আপু তুমি কার সাথে কথা বলছিলে?
নিশু নিরার গালে কিস করে বললো আমার এক ফ্রেন্ডের সাথে।আপু নাকি অন্য কিছু? নিশু নিরার কথা শুনে অবাক। কারণ নিরার এখন ৬ বছর এখুনি সে এতো কিছু বুজে। পাকামি করা হচ্ছে আমার সাথে।
__মেজো মামী এসে নিশুকে জড়িয়ে ধরে বললো কতো দিন পর তোকে দেখলাম।কেমন আছিস তুই।তখন রান্না ঘরে ছিলাম তাই তোর সাথে কথা বলতে পারি নাই।
নিশু-আমি তো ভালো আছি।কিন্তু জানো নিরার কি পাকা পাকা কথা বলে।
নিরা-আপু আমি কিন্তু এখন বলে দিবো তুমি যে তখন কি করছিলা।
দাঁড়া তোকে দেখাচ্ছি মজা! বলেই নিশু আর নিরা দুজনেই দৌঁড়াচ্ছে।

চলবে,,,,,,

পুরোনো_ভালোবাসা   পার্ট: ৬

0

পুরোনো_ভালোবাসা

পার্ট: ৬

#Rabeya Sultana Nipa

__নিশু বাসায় এসে নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে।তা দেখে ইয়াসমিন বেগম দৌড়ে এসে দরজা ধাক্কানো শুরু করলো।
নিশু কি হয়েছে তোর দরজা খোল।নিশু! নিশু!
শিহাব এসে দেখে ইয়াসমিন বেগম দরজা ধাক্কাচ্ছে।
শিহাব-কি হয়েছে মা আপনি দরজা ধাক্কাচ্ছেন কেন?
ইয়াসমিন বেগম -দেখনা শিহাব নিশু বাহিরে থেকে এসেই দরজাটা বন্ধ করে দিলো। বাহিরে কি হয়েছে শিহাব?তোমাদের কি ঝগড়া হয়েছে?
শিহাব-না মা! আসলে আমার এক ফ্রেন্ডের সেথে অনেক দিন পর দেখা হয়েছে।ওর সাথে দেখা হওয়ার পর থেকেই নিশু এই রকম করছে।
ইয়াসমিন বেগম -তোমার কোন ফ্রেন্ড? নাম কি ওর?
শিহাব-ওর নাম অনিক।খুব ভালো ফ্রেন্ড আমার।অনেক দিন ওর সাথে কোনো যোগাযোগ হয় নাই।আজ হঠাৎ রেস্টুরেন্টে দেখা হয়েছে।
__অনিকের নামটা শুনেই ইয়াসমিন বেগম কি বলবে শিহাবকে বুজতে পারছেনা।
শিহাব! ওকে ডিস্টার্ব করনা ওর যখন মন ভালো হবে দেখবে নিজেই দরজাটা খুলে দিবে।তুমি আবিরকে আমার কাছে দাও।তুমি ফ্রেস হয়ে আসো।
আবির-বাবাই! আম্মুর কি হয়েছে। আম্মু কি তোমার সাথে রাগ করেছে?
শিহাব-না বাবা তোমার আম্মুর শরীর ভালো নেই তাই দরজা বন্ধ করে রেখেছে।দেখবে একটু পর তোমায় এসে আদর করে দিবে।
_মা! আমি একটু বাহিরে যাচ্ছি আবিরের দিকে খেয়াল রাখবেন বলে শিহাব বাহিরে চলে গেলো।
__নিশু সব শুনছে শিহাবের বলা কথা গুলো। হয়তো শিহাব কিছুটা বুজতে পেরেছে, নিশু কষ্ট পাবে বলে কিছু বলতে চাইছেনা।শিহাব তাকে পাগলের মতো ভালোবাসে।নিশু কষ্ট পাবে এমন কোনো কাজ শিহাব করে না। নিশুও শিহাবকে ভালোবেসে পেলেছে তাই নতুন করে সে শিহাবকে হারাতে চায় না।এইসব কথা ভাবতে ভাবতেই নিশু পুরোনো দিন গুলোর কথা মনে পড়ে গেলো।যেই দিন গুলো নিশুর অভিশাপ বলেই মনে হয়।কথা গুলো মনে পড়তেই চোখের পানি গুলো আর ধরে রাখতে পারছে না নিশু।
__কিরে অনিক দুই মাস ধরে দেখছি তুই একি সময় এসে এখানে বসে চা খাস। কাউকে পাহারা দেস নাকি? ব্যাপার কি ভাই নাকি প্রেমে পড়ছোস? অনিকের ফ্রেন্ড রাফি কথা গুলো বলছে আর হাসছে।
__অনিক অনেকক্ষণ রাফির দিকে তাকিয়ে থেকে বললো আমার একটা হেল্প করবি?
রাফি-বল তোর কি হেল্প লাগবে।তোর জন্য সব কিছু করতে রাজি।
__রাফির কথা শুনে অনিক নিশুর ব্যাপারে সব বললো।
রাফি-সব বুজলাম কিন্তু তুই মেয়েটাকে কেন বলিসনা তুই তাকে ভালোবাসিস।
অনিক-ওর সামনে গেলেই আমি সব গুলিয়ে পেলি। তাই সাহস করে বলতে পারিনা।
রাফি -ঠিক আছে।তুই শুধু দেখ আমি কি করি।কথাটা বলেই রাফি ওঠে গেলো।
__কলেজ শেষ করেই নিশু বাড়ি ফিরছিল এমন সময় কে জেন পিছন থেকে ডাকদিলো
__নিশু! এই নিশু! দাড়াও! তোমার সাথে আমার একটু কথা ছিলো।
নিশু-যাহ,,,, ,, বাবা এই লোকটা আমার নাম জানলো কিভাবে?
রাফি-আমি জানি তুমি কি ভাবছো। আমি তোমার নাম জানলাম কি করে তাইতো? জানবো না কেন বলোতো? আমার ফ্রেন্ড অনিক তোমার প্রেমে দেওয়ানা হয়ে গেছে।কিন্তু তোমাকে বলার সাহস পায়না।যদি তুমি চাও তাহলে ও তোমার সামনে এসে কিছু কথা বলতে চায়।

__রাফির কথা গুলো শুনে নিশু তো অবাক।এইতো মেঘ না চাইতে বৃষ্টি। ওকে দেখার পর এই দুই মাস শুধু ওকে ভেবেই সময় কেটেছে। আজ ও নিজেই কাছে আসতে চায়।( মনে মনে, নিশু হ্যাঁ বলে দে)

এমন সময় পিছন থেকে অনিক বললো আমি জানি নিশিতা তুমিও আমাকে ভালোবাসো।
__ পারবেন সারা জীবনের জন্য আমাকে ভালোবাসতেন? নাকি মাঝ পথে রেখে চলে যাবেন?
যদি সারা জীবনের জন্য হাত ধরতে পারেন তাহলে আমার সামনে আসবেন।কথা গুলো ভেবে দেখবেন। আজ আমি আসি।
__কথা গুলো বলেই নিশু চলে গেলো। অনিক আর রাফি দুজনে হাটছে।অনিক নিশুর কথা গুলো ভাবছে।
রাফি-কিরে এতো কি ভাবছিস? তবে মেয়েটা ঠিকে বলছে। কি বলিস তুই?
অনিক-হুম ঠিক বলছে।আচ্ছা আমি বাসায় যাই পরে দেখা হবে।

__নিশু অনিকের কথা গুলো ভাবছে। অনিক কি সব কিছু মেনে নিয়ে তার সামনে আসবে।নাকি আর কখনওই তাদের দেখা হবে না।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে নিশু ঘুমিয়ে পড়লো।

__আনিকা! আনিকা! তুই কি ঘুমিয়ে গেছিস?
কথাটা বলতে বলতে অনিক আনিকার রুমে এলো।
আনিকা-না এখনো ঘুমাই নাই। কিন্তু কেনরে ভাইয়া?
অনিক-আচ্ছা! তোর কাছে নিশিতাকে কেমন লাগে? আনিকা-আমি জানি ভাইয়া তুই নিশিতাকে ভালোবাসিস।আর আজকে তুই তাকে প্রপোজ করেছিস তাই নারে?
__ভাইবোন মিলে কোন মেয়ের কথা বলছিস আমাকে শুনানো যাবে? কথা গুলো বলতে বলতে অনিকের মা রেহানা বেগম রুমে ডুকলেন।
অনিক-না মা! তেমন কিছু না।।
আনিকা-ভাইয়া! তুই মিথ্যা বলছিস কেন?
মা জানো! ভাইয়া আমার ফ্রেন্ড নিশিতাকে ভালোভাসে।
__কথাটা শুনেই রেহানা বেগম অনিকের মাথা হাত রেখে বললো তোদের বাবা অনেক কষ্টকরে তোদের মানুষ করেছে।তুই ভালো করে পড়ালেখাটা কর আমি ভালো মেয়ে দেখে তোর বিয়ে দিবো।অনিক কথাটা শুনে উঠে চলে গেলো তার রুমে।

আনিকা-মা! তুমি ভাইয়াকে এইসব কথা না বললেও পারতে।নিশিতা অনেক ভালো মেয়ে।তুমি বাবার সাথে কথা বলে দেখো হয়তো বাবাও রাজি হবে।

__কলেজে যাওয়া জন্য নিশু রিকশার জন্য অপেক্ষা করছে।এমন সময় একটা রিকশা তার সামনে এসে দাঁড়ালো। তাকিয়ে দেখে অনিক রিকশায় বসে আছে।

অনিক-আমার সাথে আসো কলেজে নামিয়ে দিবো।না আসলে তোমার কলেজের দেরী হয়ে যাবে।
__নিশুও ভাবছে একটা রিকশাও পাচ্ছি না।এমনিতে আজ অনেক দেরী হয়ে গেছে।তাই কিছু না বলে অনিকের পাশে বসলো।দুজনেই চুপচাপ বসে আছে। কিছু দূর যাওয়ার পরে অনিক নিশুর হাতটা ধরলো।নিশু-আরে কি করছেন আপনি?
অনিক-তুমিই তো কাল বললে যদি তোমায় সারাজীবনের জন্য ভালোবাসি তাহলে হাত ধরতে।তাই আমি ভেবে দেখেছি আমি তোমাকে মাঝ পথে না সারাজীবনেও ছাড়তে পারবোনা।
__নিশু কথাটা শুনে অনিকের দিকে তাকিয়ে আছে।অনকির কাঁধে মাথা রেখে বললো তুমি সারাজীবন আমাকে এইভাবে ভালোবাসবেতো?

__তোমার না কলেজের দেরী হয়ে যাচ্ছে?নিজেতো ইমোশনাল হয়ে যাচ্ছো আমাকেও ইমোশনাল বানিয়ে ফেলছো।একদম পড়ায় ফাঁকিবাজি চলবেনা।

নিশু-এই ছেলে এখনো প্রেম শুরুই করলাম না এর মাঝেই বকাবকি শুরু হয়ে গেছে।কি ছেলেরে বাবা।
অনিক-বেশি ভালোবাসি তোমায় তাই।

চলবে,,,,,,,,,

পুরোনো_ভালোবাসা   পার্ট: ৫

0

পুরোনো_ভালোবাসা

পার্ট: ৫

#Rabeya Sultana Nipa

 

_ইয়াসমিন বেগম ঘুম থেকে উঠেই নাস্তা বানিয়ে পেললেন।মেয়েটা মনটা যেন ভালো থাকে।না হলে বাইরে যেতে রাজি হবে না।
ইয়াসমিন বেগম কাজের মেয়ে শিমুকে ডেকে বলল,তোর আপু আর ভাইয়াকে ডেকে নিয়ে আয়।

শিহাব – ডাকা লাগবেনা আমারা এসে গেছি।মা আবির খেয়েছে?
মা- হুম,

__সবাই এক সাথে বসে নাস্তা করলো।নাস্তা শেষ করে শিবাব নিশিতা আর আবিরকে নিয়ে বেরিয়ে গেল।
শিহাব নিশিতার হাত ধরে একটা পার্কে বসে আছে,আর আবির খেলছে।

নিশিতা – এইটা তোমার ঘুরার জায়গা। আমি তো মনে করছি তুমি অন্য কথাও ঘুরতে যাবা।
শিহাব-কেন? এখানে তোমার ভালো লাগেনি?আচ্ছা অন্য কথাও যাই।

__এই ভাবেই বিভিন্ন জাগায় ঘুরতে ঘুরতে ৩ টা বেজে গেল। তারপর খাওয়ার জন্য একটা রেস্টুরেন্টে এসে বসলো।

শিহাব -নিশু কি খাবে বলো?আবির বাবাই তুমি কি খাবে?
নিশিতা-একটা কিছু অর্ডার করো। সকাল থেকে অনেক কিছুই খাওয়া হয়েছে।বেশী কিছু অর্ডার করার দরকার নাই।
শিহাব-আচ্ছা ঠিক আছে।

_শিহাব খাবার অর্ডার দিয়ে বসে বসে আবিরে সাথে কথা বলছে। নিশু বাবা ছেলের দুষ্টামি গুলো তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে।
হঠাৎ শিহাবের পাশের টেবিলে নজর পড়লো। দেখে দুইজন লোক বসে কফি খাচ্ছে। কেমন যেন চেনা চেনা লাগছে।

__নিশু আমি একটু আসছি বলেই আবিরকে কোলে নিয়ে পাশের টেবিলে গেল।যাকে চিনা চিনা লাগছিলো তার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললো একটু শুনবেন?
লোকটা শিহাবের দিকে তাকিয়ে বললো।আরে শিহাব তুই এইখানে?

শিহাব – অনিক তুই,,,,অনেক দিন পর তোর সাথে দেখা হলো। কেমন আছিস বল।
অনিক-এইতো ভালো।বিয়ে করছিস নাকি,বাচ্চাটা কার?বউ কে নিয়ে ঘুরতে আসছিস নাকি
শিহাব-হুম, আমার বাচ্চা।চল আমার বউয়ে সাথে দেখা করবি।
__শিহাব অনিকে সাথে নিয়ে নিশুর সামনে এসে দাঁড়ালো। তখন নিশু অন্য দিকে তাকিয়ে বসে আছে।

__নিশু দেখো কাকে নিয়ে আসছি! আমার ফ্রেন্ড অনিক।অনেক দিন ওর সাথে যোগাযোগ ছিলনা। আজ এখানে দেখা হয়েছে। তাই তোমার সাথে দেখা করতে নিয়ে এলাম। এক দমে কথা গুলো বলে ফেললো শিহাব।
নিশু অনিকের দিকে তাকিয়ে আছে।অনিকও একিভাবে নিশুর দিকে তাকিয়ে আছে।দুইজনকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে শিহাব বললো, কি হলো তোমরা একজন আরেকজনকে আগে থেকে চিনো নাকি?

__তখন অনিক বললো তোর বউ তো অনেক সুন্দর। ভাগ্যে করে এমন বউ পাওয়া যায়।তোদের দুইজনকে মানিয়েছে ভালো।তো ভাবী কেমন আছেন?
_নিশু অনিককে কিছু না বলে শিহাবের দিকে তাকিয়ে বললো আমি বাইরে যাচ্ছি তুমি আবিরকে নিয়ে আসো।বলেই নিশু চলে যেতে লাগলো।

__শিহাব পিছন থেকে অনেক বার ডাকলো নিশু ফিরে তাকালো না।
অনিক নিশুর যাওয়া দেখে শিহাব কে বললো তোর বউয়ের মনে হয় আমি এখানে আসায় ভালো লাগে নাই।
শিহাব -আরে না ওর হয়তো শরীর খারাপ লাগছিল তাই হয়তো বাড়ী যাবে।আর এই নে আমার নাম্বার, একদিন বাসায় আয় দুইজনে মিলে আড্ডা দিবো।
__শিহাব কথা গুলো বলছিলো আর অনিক বার বার
আবিরের দিকে তাকাচ্ছিলো। কেন জানি ওর দিকে তাকালেই মন ভালো লাগে।
শিহাব-অনিক তাহলে এখন আসি।নিশু বাইরে অপেক্ষা করছে।

চলবে, ,,,,,,

পুরোনো_ভালোবাসা   পার্ট: ৪

0

পুরোনো_ভালোবাসা

পার্ট: ৪

Rabeya Sultana Nipa

 

__নিশু -তুমি এতো দেরি করলে কেন তাই।তুমি জানো না আবির তোমায় না দেখেতে পেলে কান্না করে।

শিহাব-আমার বউটার মন কাঁধে না?কথাটা বলেই নিশু কে কোলে তুলে নিলো।

নিশু-সন্ধার সময় কি করছো এই সব?আবির এসে পড়বে। ছাড়ো আমাকে।

বারান্দা থেকে নিশুকে কোলে নিয়ে এসে খাটে শোয়ালো।নিশুকে শুইয়ে নিশুর বুকের উপরে শুয়ে পড়লো শিহাব।নিশু জানে শিহাবের কাছ থেকে এখন ছাড়া পাওয়া সহজ নয়।তাই সে নিজেও শিহাব কে জড়িয়ে ধরলো।সেও শিহাবের মাঝে হারাতে চায়।শিহাব নিশুর ঠোট গুলোকে নিজের ঠোটের সাথে এক করে নিলো।

আবির-নানু দেখো বাবাই আমার জন্য কতো খেলনা,চোকলেট এনেছে। বাবাই আমাকে কতো ভালোবাসে।

ইয়াসমিন বেগম -হুম, তোমার বাবা আর আম্মু দুজনেই তোমাকে ভালোবাসে। যাও এইবার পড়তে বসো না হলে তোমার আম্মু এসে বকা দিবে।

তখনি শিহাব রুম থেকে বের হতে হতে বললো,কে বকবে আমার ছেলেকে। আমি আছিনা আমিও তাকে বকে দেবো।
আবির -বাবা তুমি আজকে দেরি করলে কেন?তুমি তো এতো দেরি করোনা।জানো বাবা! আম্মুর না শপিং করে আসার পর থেকে মন খারাপ ছিলো।আম্মু অনেক কান্নাও করেছে।

_শিহাব ইয়াসমিন বেগমের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো নিশুর কি হয়েছে মা?
ইয়াসমিন বেগম কি বলবে বুজতে পারছে না।তারপর বললো আমি জানি না।

তখন নিশু এসে বললো কি হলো তোমরা কি আজ রাতে না খেয়ে থাকবে নাকি?
ইয়াসমিন বেগম বললো সবাই আসো আমি খাবার আনছি।
আবির তোমার তাড়াতাড়ি ঘুমাতে হবে বেশি রাত জাগলে শরীর খারাপ করবে।আসো তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও।শিহাব তুমিও আসো।

__শিহাব কিছু না বলে খেতে বসলো।খেতে খতে শিহাব বললো
শিহাব-নিশু! আবির কে নিয়ে আমরা কোথাও ঘুরে আসি।
নিশু-কাল তোমার অফিস আছে না?

শিহাব-অফিসে একদিন না গেলে কিছু হবেনা।আমার ছেলে আর বউয়ের জন্য এইটা তো কিছুই না।আপনি বলেন মা করতে পারি না?

মা-হে অবশ্যই পারো।দেখ নিশু তুই আর না করিস না।

__নিশিতা মনে মনে ভাবছে অন্য কথা।কাল যদি অনিকের সাথে আবার দেখা হয়। আবিরকে নিয়ে তার প্রশ্ন জাগতে পারে।কারন আবিরে বয়স ৪ বছর ৬ মাস।আর শিহাবে সাথে নিশুর বিয়ে হয়েছে ৩ বছর।অনিক যদি বুজে যায় আবির শিহাবের ছেলে নয়।

শিহাব-কি ভাবছো এতো?এতোহ্মন তো অনেক তাড়া দিচ্ছিলে।
নিশু-কই কিছুনা তো।আচ্ছা মা! মামা চলে গেলো কেন?

__ইয়াসমিন বেগম বুজে গেছে তার মেয়ে কথা কাটাতে চাইছে।তারপর বললো সৈকতের জরুরী কাজ পড়ে গেছে।বলেছে আবার আসবে।

__শিহাব খাওয়া শেষ করে রুমা চলে আসলো। লাইট টা বন্ধ করে শুয়ে পড়লো। কিছুক্ষণ পর নিশিতা রুমে এসে লাইট অন করলো।শিহাবকে শুয়ে থাকতে দেখে নিশিতা বললো তোমার কি শরীর খারাপ?

__আবির কই বলতে বলতে শিহাব উঠে বসলো।
নিশিতা-আবির বায়না ধরেছে ওর নানুর সাথে ঘুমাবে?

শিহাব-ঠিক আছে।কাল মনে থাকে যেন আমারা ঘুরতে যাচ্ছি বলে আবারো শুয়ে পড়লো।

__নিশিতাও দেরী না করে শিহাবকে শক্তকরে জড়িয়ে ধরে তার বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো।আস্তে আস্তে দুজনি ভালোবাসায় ডুব দিতে লাগলো।

চলবে,,,,,

(গল্প পড়ে ভালো লাগলে লাইক দিতে পারেন,ভালো কমেন্ট করতে পারেন।

পুরোনো_ভালোবাসা   পার্ট: ৩

0

পুরোনো_ভালোবাসা

পার্ট: ৩

#Rabeya Sultana Nipa

নিশিতা কি বলবে বুজতে পারছে না।নিশিতা নিজেও তো খেয়াল করিনি অনিক যে আসছিল। দোষটা তো তারো আছে।
অনিক-কি হোলো কি ভাবছেন? মিস নিশিতা!
নিশিতা-আমি কিছু ভাবছি না,ওকে বাই বলে নিশিতা ওই খান থেকে চলে আসল।
আনিকা-ভাইয়া তুই ওই ভাবে কি দেখস নিশিতাকে?
অনিক-তুই তো ওর কথা কখনো বলিসনি। তোর যে তো সুন্দরী একটা ফ্রেন্ড আছে।
আনিকা-কেন ভাইয়া তুই কি ক্রাশ খাইলি নাকি ওর উপর?
অনিক-তুই কি যে বলিস না, চল বাড়ী চল।
দুইজনে কথা বলতে বলতে বাড়ী পথে পা বাড়ালো।
অনিক মনে মনে নিশিতা কথায় ভাবতেছে।অনিকের নিশিতা কে প্রথম দেখায় ভালো লেগেছিল। নিশিতাকে কি ভালোলাগার কথা সরাসরি বলবে। নাকি আনিকাকে বলতে বলবে।অনিক কথা গুলো ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়ছে ঠিক তার মনে নাই।
কিরে তুই নাস্তা না করে কলেজে যাবি নাকি?তুই কি এখনো বড় হবি না? আর কত জ্বালাবি আমাকে?কথা গুলো বলতে বলতে ইয়াসমিন বেগম নিশিতার রুমে আসলেন।মেয়ের সাজগোজ দেখে বললেন কিরে তুই কি কলেজে যাচ্ছিস নাকি পার্টিতে?
নিশিতা -মা,,,,কলেজে যাওয়ার সময় যদি একটু সেজেগুজে না যাই তুমি বলো তোমার মেয়ের দিকে কেও তাকাবে?

মা-এই শুন আমার মেয়ে যথেষ্ট সুন্দরী যে কেউ তার প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে যাবে। মেয়ে বলে বলছি না।
আমি- হা হা হা দেখতে হবে না মেয়েটা কার!!
তখনি নিশিতার বাবা আতিকুর রহমান এসে বললো মা,মেয়ে আমাকে রেখে কি কথা হচ্ছে?
নিশিতার বাবা আতিকুর সাহেব ব্যবসা করেন। ব্যবসার কাজে ওনাকে বেশী দেশের বাইরে কাটাতে হয়।
মা-তোমার মেয়ে না খেয়ে কলেজে চলে যাচ্ছে, তাই খাওয়ার জন্য ডাকতে আসলাম।
বাবা-নিশু আম্মুটার আজ কি হয়েছে মন খারাপ?
আমি – আব্বু আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে। সময় পেলে কলেজের ক্যান্টিনে খেয়ে নিবো।আব্বু এইবার আমি আসি।
কথাটা বলেই বেরিয়ে পড়লো নিশিতা।নিশিতা মনে মনে ভাবতে লাগলো আচ্ছা অনিক আজ কলেজে আসবে আনিকা কে নিতে।আজ কি সে আমার সাথে কথা বলবে।
চাচা এক কাপ চা দিন তো। কথাটা বলে কলেজের পাশে রহিম চাচার দোকানের সামনে অনিক নিশিতার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো। নিশিতাকে একটা বার দেখার জন্য

_কিরে তুই এখানে এখনো বসে আছিস?
মায়ের কথা শুনে কল্পনার জগত থেকে ফিরলো নিশিতা।

__চল খাবি না? সকালেও কিছু খাস নাই।এইবার ফ্রেস হয়ে খেতে আয়। তোর মামা তোর জন্য অপেক্ষা করে বসে আছে।
নিশিতা -আসছি তুমি যাও।
মা- হুম, তাড়াতাড়ি আয়।
ইয়াসমিন বেগম এবং সৈকত খাবার টেবিলে নিশিতার জন্য বসে আছে দেখে নিশিতা বলে উঠলো তোমরা এখনো খাওনি?
সৈকত-তোকে রেখে কিভাবে খাই।আয় বস।
নিশিতার মুখের দিকে তাকিয়ে নিশিতার মা বললো তোর কি কিছু হয়েছে?
নিশিতা কি বলবে বুজতে পারছে না।নিজেকে সামলিয়ে বললো , মা আমার ছেলেটা খেয়েছে?
নিশিতার মা খেতে খেতে বললো আসার পরতো ওকে একবারও কোলে নিলি না।আমি খাইয়ে ওকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছি।তুইও খেয়েনে।
সৈকত-নিশিতা! অনিক কি আর কখনো ফিরে আসবেনা?ওর যে একটা ছেলে আছে তাও হয়তো জানেনা।

মা-আর ফিরে আসার দরকার নাই।যে চলে গেছে তাকে ভুলে থাকাটাই ভালো। যে এখন পাশে আছে তাকেঘিরে ভালো থাকুক।
নিশিতা-আমার খাওয়া শেষ আমি আবিরকে দেখে আসি।
আবির কত সুন্দর করে ঘুমিয়ে আছে। পুরো অনিকের
মত হয়েছে।নিশিতা ছেলের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে ভাবতেছে তোর বাবা ফিরে এসেছে আবির।ও যদি জানতে পারে তুই তার ছেলে হয়তো আমার কাছ থেকে তকে কেড়ে নিবে।কথাটা ভাবতেই ছেলেকে বুকে জড়িয়ে চোখ বেয়ে বেয়ে পানি পড়ছে।
রুমে এসে মেয়ের এমন কাণ্ড দেখে ইয়াসমিন বেগম বললেন আমার মনে হয় তুই কিছু লুকাচ্ছিস।নিশিতা! কি এমন হল আজ তুই কিছু বলতে পারছিস না।
নিশিতা-মা!অনিকের সাথে দেখা হল আজ।
মেয়ের মুখে কথা টা শুনে ইয়াসমিন বেগমের মনে হলো তার মাথায় আকাশ ভেংগে পড়ছে।মেয়েকে কি বলবে ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না।মেয়েটা সব কিছু ভুলে নতুন করে শুরু করেছে। মেয়েকে কিছু না বলে রুম থেকে চলে গেলেন ইয়াসমিন বেগম। ডাইনিং রুমে গিয়ে দেখে সৈকত বসে কফি খাচ্ছে। সৈকতের পাশে গিয়ে বসে পড়লো ইয়াসমিন বেগম।
সৈকত-আপা!তোর কাজের মেয়েটা খুব ভালো কফি বানাতে পারে।খাওয়ার পরে কফি না হলে আমার ভালো লাগেনা, বলতে বলতে ইয়াসমিন বেগমের দিকে তাকালো।আপা! কি হয়েছে এইভাবে কি ভাবছিস?
__আজ নাকি নিশিতার অনিকের সাথে দেখা হয়েছে।
সৈকত-মা,,,নে,,,,,,?

মা-হুম নিশিতা বলছে।এখন যদি নিশুর জীবনে অনিক ফিরে আসতে চায় তাহলে শিহাবের কি হবে?শিহাব সেই দিন নিশুর সব কিছু মেনে নিয়ে নিশুকে বিয়ে করেছিলো।আবিরকে নিজের থেকে বেশী ভালবাসে শিহাব।শিহাব নিশু আর আবিরকে ছাড়া থাকতে পারবেনা। তুই একটা কিছু কর সৈকত।

_নিশু বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশের চাঁদ দেখছে। এমন সময় কেউ পিছনদিক থেকে জড়িয়ে ধরলো নিশুকে।নিশুর একটুও চমকালো না কারন সে জানে শিহাবেই তাকে জড়িয়ে ধরেছে।
নিশু -কখন এলে?

__নিশুর কাঁধে শিহাব মুখটা গুজিয়ে বললো
শিহাব-আমার বউটার মন খারাপ।নাকি আমার উপর তার রাগ হয়েছে?
চলবে,,,,,