Sunday, August 17, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2401



একবৃষ্টিরদিনে ৫ তথা শেষ পর্ব

0

একবৃষ্টিরদিনে
৫ তথা শেষ পর্ব

Rabeya Sultana Nipa

_আয়ান তানিশার জন্য অনেক গুলো শাড়ি নিলো।আয়ানতো জানে না তার কি পছন্দ তাই অনেক কিনাকাটা করলো যেটা তার পছন্দ হয়।কিনাকাটা শেষে করে আয়ান টাকা টা দিতে যাবে এমন সময় দেখে সেই মেয়েটা। যার দেখা পাওয়ার আশায় আয়ান ৩ বছর অপেক্ষা করেছে। হঠাৎ মেয়েটাও আয়ানের দিকে তাকাতেই ভয়ের চাপ মুখে ফুটে উঠলো।

আয়ান মনে মনে ভাবতেছে মেয়েটা আমার দিকে এই ভাবে তাকিয়ে আছে কেন? কথাটা ভাবতে ভাবতে মেয়েটার দিকে এগিয়ে আসছে।
এমন সময় মেয়েটির সাথে থাকা ফ্রেন্ড গুলো বললো কিরে এই ছেলেতো তোর,,,,,,,, মেয়েটি ইশারায় তাদের চুপ থাকতে বললো।ছেলেটাকে যেন কিছু না বলে।তারাও সবাই চুপ হয়ে গেলো।

আয়ান যতো এগিয়ে আসছে মেয়েটার হার্টবিট তোতো বাড়ছে। আরান মেয়েটির সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললো আমি আপনার সাথে একটু কথা বলতে পারি।কথাটা বলার সাথে সাথেই মেয়েটা মুচকি একটা হাঁসি দিয়ে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বুজালো।মেয়েটার ফ্রেন্ড গুলো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।

আয়ান-আসলে কথা গুলো কিভাবে শুরু করবো বুজতেছি না।আপনাকে আমি ৩ বছর আগে #একবৃষ্টিরদিনে দেখেছিলাম।এই ৩ বছর আমি আপনাকে অনেক খুঁজেছি, কিন্তু পাইনি।জানেন আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসতাম।আমি এমন এক জনকে ভালোবেসে ছিলাম যার নামটা পর্যন্ত আমি জানতাম না।আমাকে নিয়ে আমার সব ফ্রেন্ডরা হাসঁতো,ঠাট্টা করতো।আমি এক মাস আগে বাবা মায়ে চাপে পড়ে বিয়ে করেছি সেও আপনার কথা শুনে আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করতো। আপনার জন্য আমি আমার বউয়ের মুখটা পর্যন্ত দেখিনি।আজ যখন সব কিছু ভুলে আমার বউয়ে কাছে যাচ্ছিলাম সেই আপনি আবার আমার সামনে এসে পড়লেন।তবে আমি আপনাকে আর ভালোবাসি না।এখন আমি আমার ওই লক্ষ্মী বউটাকেই ভালোবাসি।কথা গুলো একদমে বলে ফেললো আয়ান।

মেয়েটা কথা গুলো শুনে চোখে পানি টলমল করছে কিন্তু কান্না করতে চাচ্ছেনা।কান্না করলেই আয়ান হয়তো সব বুজে যাবে।তাই অন্য দিক ফেরে চোখ গুলো মুছে আয়ানের দিকে আবার তাকালো।

আয়ান -আচ্ছা আপনার নামটা একটু বলবেন? আমি আমার পাগলিটাকে আজ গিয়ে বলবো আপনার সাথে আমার দেখা হয়েছে। আপনার নামটাও ওকে বলবো।

মেয়েটা ইশারায় আয়ানকে একটা কলম দিতে বললো।

আয়ান -আপনি কথা বলতে পারেননা? আপনি তখন থেকে ইশারায় সব বুজিয়ে দিচ্ছেন।

মেয়েটা মাথা নাড়িয়ে না বললো।তারপর আয়ান সরি বলে তার কলমটা মেয়েটাকে দিলো। কলম নিয়ে মেয়েটা তার হাতে নাম লিখলো। কিন্তু আয়ান মেয়েটার নাম দেখে অবাক হয়ে বললো আপনার নাম তানিশা?

মেয়েটা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললো।

আয়ান -জানেন! আমার পাগলিটার নামও তানিশা।আজ তাহলে আসি আমার পাগলি রাগ করে বাপের বাড়ি চলে গেছে এখন ওকে আনতে যাবো।আপনার সাথে আমার হয়তো আর কখনওই দেখা হবেনা ভালো থাকবেন।

আয়ান চলে যাওয়ার পরে তানিশার সব ফ্রেন্ডরা বললো তুই কথা বলতে পারিসনা?
এতো অভিনয় করলি কিভাবে? তোর হাজবেন্ড আর তোকেই চিনতে পারলো না ভেবে আমরা তো অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আয়ানের মুখে সব কথা শুনে বুজলাম তোদের মধ্যে সমস্যা কি।

তানিশা -সব যখন বুজেছিস তাহলে আর বলছিস কেন?
তানিশা খুশিতে কি করবে বুজতে পারছিলো না।হঠাৎ মনে হলো আয়ান তাদের বাসায় যাচ্ছে।তাড়াতাড়ি আয়ানকে ফোন দিলো।

আয়ান -কিছু বলবেন?

তানিশা -হ্যাঁ! আপনি কোথায়?

আয়ান -আমি বাহিরে আছি। কেন?

তানিশা -আমি তো আপনাদের বাড়িতে যাচ্ছি।

আয়ান -মানে? আপনি এখন আসার দরকার নাই।

তানিশা -আমি আপনার কোনো কথা শুনতে চাইনা। আমি এখন আপনার বাড়ি যাবো।

আয়ান -আচ্ছা ঠিক আছে আসেন। কিন্তু এখন না।আপনি সন্ধ্যার পরে আসেন।

তানিশা -ঠিক আছে মেনে নিলাম।

আয়ান তখন তানিশাদের বাড়িতে না গিয়ে নিজেদের বাড়ি গেলো।

রিয়া -কিরে ফিরাতে পারলি?

তানিশা -হুম পারছি।কিন্তু আমাকে সন্ধ্যার পরে যেতে বলেছে।

_বাহিরে থেকে আসার পর থেকে সব কাজ আয়ান নিজে হাতে করছে বাড়িটাকে সুন্দর করে সাজিয়েছে।আয়ানের মা ছেলে কাণ্ড দেখে দেখে হাসঁছে।তানিশাকে ফোন দিয়ে আয়ানের মা সব বললো।তানিশা কখন সন্ধ্যা হবে সেই অপেক্ষায় বসে আছে।আয়ান তানিশাকে সে আজ নতুন করে বরণ করে নিবে তার জীবনে।
সন্ধ্যার পরে আয়ানের বাবা, মা গিয়ে তানিশাকে নিয়ে এলো। বাড়ি এসে তানিশাতো অবাক হয়ে সব কিছু দেখছে।আয়ান নিজের হাতে এই সব কিছু সাজিয়েছে তার জন্য।তানিশা তার রুমে ঢুকতে যাবে এমন সময় পিছন থেকে মিতু এসে বললো

মিতু -ভাবী তুমি কোথায় যাচ্ছো?

তানিশা -কেন? আমার রুমে।

মিতু -এইভাবে তো তোমাকে যেতে দেওয়া যাবে না। তোমাকে বউ সাজিয়ে তারপর ভাইয়ার কাছে দিয়ে আসবো।

মিতুর কথা শুনে তানিশা লজ্জা পেয়ে পাগল নাকি।আমি বউ সাজতে পারবো না।

মিতু -আমাদের কি দোষ বলো ভাইয়াই তো বললো তোমাকে বউ সাজাতে।
তানিশা আয়ানের কথা শুনে আর না বলতে পারলো না।।

__তানিশা বউ সেজে আয়ানের জন্য বসে অপেক্ষা করছে। তানিশা দরজা খোলার শব্দ পেয়ে তাড়াতাড়ি ঘোমটা দিয়ে বসে পড়লো। আয়ান এসে দেখে তানিশা ঘোমটা দিয়ে বসে আছে।

আয়ান -আমি তোমাকে বউ সাজতে বলেছি ঘোমটা দিয়ে বসে থাকতে বলেনি।

তানিশা -,,,,,,

আয়ান -চুপ হয়ে আছো কেন? আমি জানি আমার উপর তোমার রাগ এখনো কমেনি।আমি তোমায় সত্যি বলছি আমি এখন তোমাকেই ভালোবাসি।তোমাকে ছাড়া আমার চারদিক অন্ধকার লাগে।তোমাকে ছাড়া আমি কিছুই ভাবতে পারিনা।

তানিশা-,,,,,,,

আয়ান -আচ্ছা তুমি কি চুপ করেই থাকবে? ঠিক আছে তুমি চুপ করেই থাকো, আমি আমার কাজ করছি আয়ান কথাটা বলতে বলতে তানিশার ঘোমটা টা উঠিয়ে ভূত দেখার মতো এক চিৎকার দিলো।আ,,,আ,,,রে তোতলিয়ে আপনি এইখানে কি করছেন? আমার বউ কই?

তানিশা -একদম চুপ! কতো কিছুর পর আপনি থেকে তুমিতে নামালাম এখন আবার আপনি?তুমি পাইছোটা কি।?

আয়ান -আপনি কথা বলতে পারে? কিন্তু সকালে তো দেখলাম কথা বলতে পারেন না।

তানিশ-ন্যাকা ,,, নিজের বউকে যে চিনেনা সে আবার কথা বলতে আসছে।অনেক হয়েছে,
(তানিশা গলাটা নামিয়ে) প্লিজ আয়ান আজকে আর উল্টাপাল্টা কিছু করোনা।এইবার তো আমাকে মেনে নাও।

আয়ান তানিশার কথা শুনে তানিশাকে জড়িয়ে ধরে I am really sorry.
এতো দিন যদি আমার পাগলিটার দিকে একবার তাকাতাম তাহলে এতো কিছু আর হতো না।

তানিশা -হুম সব ঠিক আছে এইবার ছাড়ো।ওই মেয়েটার কাছে যাও।ভালোবাসো তো তাকেই।

আয়ান -ভালোবাসি তো এখনো তার কাছেই আছি।আর সারা জীবন তাকে ভালোবাসবো
আয়ানের কথা শুনে তানিশা হেসেঁই আয়ানের বুকে মুখ লুকালো।নতুন এক ভালোবাসার অধ্যায় শুরু হলো।

(গল্পতো শেষ আপনারা এখনো কি দেখছেন?)

সমাপ্ত

একবৃষ্টিরদিনে  পার্ট: ৪

0

একবৃষ্টিরদিনে

পার্ট: ৪

#Rabeya Sultana Nipa

_ সকাল বেলায় আয়ানের চোখে সূর্য্যের আলো পড়াতেই আয়ানের ঘুম ভেঙ্গে গেলো।রাতের কথা মনে পড়তেই তাড়াতাড়ি রুমে গিয়ে দেখে তানিশা নেই।তানিশাকে না দেখতে পেয়ে আয়ান ফ্রেশ হতে চলে গেলো।
__এইদিকে তানিশাকে রান্নাঘরে দেখে আয়ানের মা অবাক হয়ে বললো

আয়ানের মা -তানিশা! রান্নাঘরে আসতে কে বললো তোমাকে? যাও রুমে যাও।

তানিশা -মা কিচ্ছু হবেনা। আমি শুধু চা বানাবো সবার জন্য।আর আপনাকে হেল্প করবো।

আয়ানের মা -তানিশার কথা শুনে আবেগময় হয়ে জানো আমি কখনোই ভাবিননি এতো লক্ষ্মী একটা বউ পাবো।আমার ছেলেটা একটু রাগী কিন্তু ওর মন অনেক ভালো। শুনো এখন তোমাকে আর কোনো কাজ করতে হবে না। এই ধরো আয়ানের জন্য চা নিয়ে যাও।

তানিশা -ঠিক আছে আমি চা দিয়েই আসছি।

আয়ান ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে ঘোমটা দিয়ে তানিশা চা হাতে দাঁড়িয়ে আছে।

আয়ান -আরে আপনি কে এই রুমে কি করছেন? আমাকে না বলে এই রুমে ঢুকেছেন কেন?

তানিশা -চুপ করুন তো। নিজে কাল বিয়ে করেছে আজ বলছে আমি কে? নেকামি দেখে আর বাঁচিনা। এখন থেকে এই ঘরে আমার সমান অধিকার।

আয়ান -চিনবো কি করে যে ঘোমটা দিয়ে এসেছেন। আমার কাছে ঘোমটা দিয়ে আসার কি আছে?

তানিশা -আপনার তো আমার মুখ দেখতে ভয় পান।যদি প্রেমে পড়ে যান।

আয়ান -তানিশার কথা শুনে হেঁসে বললো আমি যারতার প্রেমে পড়িনা।আর আপানার মুখ দেখলে কি সবাই প্রেমে পড়ে যায়?তাহলে ঘোমটা দিয়েই থাকুন।কারণ বলাতো যায় না কে কখন আপনার প্রেমে পড়ে যায়।আর আমার প্রেমের দরকার হবে না। জীবনে একজনের প্রেমে পড়ে সবকিছু শেষ হয়ে গেলো।

তানিশা -আর কারো প্রেমে পড়ার দরকার নাই।আমার প্রেমে পড়লেই হবে।এই নিন চা,খেয়ে নাস্তা করতে আসুন।আর হ্যাঁ বাজে অভ্যাস গুলো ছেড়ে দিবেন।

আয়ান -আমি আবার কি করলাম?

তানিশা -কাল থেকে খালিপেটে চা খাওয়া যাবে না আমি বলে দিলাম।

আয়ান -আমি আপনার কথা কেন শুনবো?

তানিশা -শুনতে হবে কারণ আমি আপানার বউ। কথাটা বলেই তানিশা রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।

__আজ ১ মাস হয়ে গেলো তানিশা কে এই বাড়ির সবাই অনেক ভালোবেসে ফেলেছে শুধু আয়ান ছাড়া, আয়ান তানিশাকে ভালোবাসে কিনা সে জানে না কিন্তু তানিশাকে তার ভালোলাগে।
তানিশা সব কথায় আয়ান মেনে চলার চেষ্টা করে।আয়ান মনে মনে ভাবছে তানিশাকে সে মেনে নিবে।কিন্তু কিভাবে তানিশাকে বলবে সে ভেবে পাচ্ছিলোনা।কারণ এখনো তানিশার মুখ দেখেনি।

কথা গুলো ভাবতে ভাবতে অভ্র এসে বললো অফিসে এসে কি বউরে কথা ভাবছিস।ভাব ভাব? এতো সুন্দরী বউ রেখে কি আর অফিসে মন বসে।

আয়ান -বউরে কথা ভাবছি এইটা ঠিক বলছিস।কিন্তু সুন্দর না কালো তা তো আমি জানি না।

অভ্র -আচ্ছা তুই এইরকম কেন বলতো।আমি যদি হতাম পুরোনো সব কিছু ভুলে নতুন করে শুরু করতাম।

আয়ান -ভাবছি আমিও তাই করবো।তানিশাকে তার স্বামীর অধিকার দিবো।
তবে আজ না কাল ওর জন্য কিছু gift কিনে তারপর বলবো।

অভ্র -তুই যা ভালো মনে করিস।

__আয়ান বাড়ি ফিরে এসে দেখে তানিশা রুমে নেই। অন্য কোনো রুমে আছে ভেবে আয়ান ফ্রেশ হতে গেলো।ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে তানিশা এখনো রুমে আসেনি।আয়ান তার মাকে ডাকতে ডাকতে ড্রইং রুমে এসে দেখা তার মা বসে ফোনে যেন কার সাথে কথা বলছে।

আয়ান -মা! তোমাকে এতো করে ডাকছি শুনো নাই।

আয়ানের মা -শুনবো কি করে আমি তো তানিশার সাথে ফোনে কথা বলছিলাম।

আয়ান -তানিশার সাথে মানে? ও কোথায় গেছে?

আয়ানের মা -বিয়ের পরতো ও তেমন বাপের বাড়িতে যাই নাই।এখন ওর বাবা অসুস্থ তাই তানিশাকে পাঠালাম ওই বাড়িতে কয়েক দিন থেকে আসতে।

আয়ান -ও তো আমাকে একবার জন্যও বললো না।

আয়ানের মা -আমি মানা করেছি তোকে না বলার জন্য।তুই তো মেয়েটাকে সহ্যই করিস না।( হঠাৎ আয়ানের মা জোরে একটা হাঁসি দিয়ে) আ,,য়া,,,ন,,, তোর কি তানিশার জন্য মন খারাপ হচ্ছে।তার মানে আমার ছেলে তানিশাকে ভালোবেসে পেলেছে।

আয়ান -মা তুমিও না,আমি এমনিতেই বলছিলাম আর তুমি কত কিছু ভেবে নিলে।বলেই আয়ান রুমে চলে গেলো।

আয়ানকে চলে যেতে দেখে ফোনটা আবার কানে নিয়ে আমি তোকে বললাম না আমার ছেলে তোকে ভালোবেসে ফেলেছে।এইবার তো সব শুনলি।আমাদের প্লানটা মনে হয় কাজে লেগেছে।

তানিশা -মা! আমার খুব ভয় হচ্ছে আয়ান যদি জানতে পারে আমরা এইসব করেছি দুইজন মিলে তাহলে ভাবতে পারছেন কি হবে?

আয়ানের মা -তুই চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে।আর শুন তুই আয়ান কে একবারের জন্য ফোন দিবিনা।না হলে ও তোকে মিস করবে না।

তানিশা -আচ্ছা ঠিক আছে।

_আয়ান রুমে এসে খুব একা লাগছিলো নিজেকে।আর এতো দিনের কথা গুলো ভাবছে।তানিশাকে সে যতই দূরে রাখার চেষ্টা করতো তোতোই সে কাছে কাছেই থাকতো।আয়ানের অনেক খেয়াল রাখতো।কিন্তু আয়ানের সামনে বেশি ঘোমটা দিয়েই থাকতো আয়ান কে রাগানো জন্য।যতোই খারাপ ব্যবহার করতাম সব কিছু হাঁসি মুখে মেনে নিতো।কেন, ওর জন্য এতো খারাপ লাগছে?যাওয়ার পর থেকে আমাকে একটা ফোন ও দিলোনা।ঠিক আছে আমিও দিবো না।কাল ওদের বাড়িতে গিয়ে ওকে সারপ্রাইজ দিবো।কথা গুলো ভাবতে ভাবতেই আয়ান ঘুমিয়ে পড়লো।

সকাল বেলা আয়ান তার মায়ের ডাকে ঘুম থেকে উঠলো।
আয়ানের মা -কিরে আজকে অফিসে যাবিনা?

আয়ান -না! ভালোলাগছে না,অভ্রকে বলে দিয়েছি ও সব সামলে নিবে।
সকালের নাস্তা করে আয়ান বাহিরে চলে গেলো।

এইদিকে তানিশাকে দেখতে তার ফ্রেন্ডরা এসেছে। বিয়ের পর থেকে ওদের সাথে দেখা হয়নি তানিশার।তাই আজ সবাই মিলে তানিশাদের বাসায় আড্ডা দিচ্ছে

রিয়া -(তানিশা ফ্রেন্ড) এই সবাই চলনা আজ আমারা সাবাই শপিং করতে যাই।

তানিশা প্রথমে রাজি হয়নি তারপর সবার জোরাজোরিতে রাজি হলো।

আয়ান তানিশাদের বাড়িতে যাবে তাই তানিশার জন্য শপিং করতে গেলো। অভ্রকে ফোন দিয়েছে শপিংএ তার সাথে যাওয়ার জন্য।কিন্তু অভ্র কজের জন্য আসতে পারে নাই। তাই সে একাই চলে গেলো শপিং করতে।

চলবে,,,,,,

একবৃষ্টিরদিনে  পার্ট: ৩

0

একবৃষ্টিরদিনে

পার্ট: ৩

#Rabeya Sultana Nipa

দেখতে দেখতে দিন গুলো কখন ফেরিয়ে গেলো আয়ান টেরি পেলোনা।আজ আয়ানের বিয়ে।সবাই কাজ নিয়ে ব্যস্ত। আয়ান আর অভ্র বসে কথা বলছে।একটু পর সবাই মেয়েদের বাড়িতে বের হবে।

অভ্র -আয়ান! তুই কি তানিশা কে দেখিসনি?

আয়ান -নারে! আমি যখনি ভাবি তানিসার সাথে দেখা করবো বা কথা বলবো তখনি আমার সেই মেয়েটার কথা মনে পড়ে যায়।

অভ্র -আয়ান তুই আসলেই একটা পাগল।বৃষ্টির মধ্য কি না কি দেখেছি আজও সেটা নিয়ে বসে আছিস।এর মধ্য ৩ বছর কেটে গেলো।যদি তোর কপালে লিখা থাকতো তাহলে এই ৩ বছরে একবার হলেও দেখা হতো।দেখ আমি তানিশাকে দেখেছি সত্যি অনেক ভালো মেয়ে।হয়তো তোর সেই মেয়েটার থেকেও ভালো এবং সুন্দরী হবে।

এমন সময় আয়ানের বাবা এসে বললো কিরে তোরা এইখানে বসে আড্ডা দিচ্ছিস? তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে সবাই একটু পরেই বের হবো।

__এইদিকে তানিশাকে নিয়ে তার দুই কাজিন রিতা আর মিলি পার্লারে গেলো তানিশাকে বউ সাজাতে।তানিশার মনের আনন্দের সীমা নেই।আয়ানের মতো একজনকে স্বামী হিসেবে জীবনে পাবে।

__আয়ানরা তানিশাদের বাড়িতে চলে এসেছে।একটু পর বিয়ে পড়ানো শুরু করেছে।আয়ানের কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে।তানিশাকে সে কখনোই ভালোবাসতে পারবো না।

অভ্র – এই আয়ান! তুই কি ভাবছিস বলতো? বিয়ে পড়ানো হয়ে গেছে,এখন ভেবে কোনো লাভ নাই,তুই শুধু এখন তানিশাকে নিয়ে ভাব।মেয়েটা সত্যি অনেক ভালো। তুই তানিশার দিকে একবার তাকিয়ে দেখ। মেয়েটাকে দেখলে হয়তো তুই সব ভুলে যাবি।

আয়ান -প্লিজ অভ্র একটু চুপ কর।তানিশাকে দেখার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।শুধু বাবা মায়ের কথা রাখতে চেয়েছি।এইছাড়া আর কিছু না।

সব কিছু শেষ করে আয়ানদের এখন বাড়ি ফেরার ফালা। তানিশা আর তানিশাদের সবাই কান্নাকাটি করছে এতে আয়ানের কোনো মাথা ব্যাথা নেই।সবার কাছে থেকে বিধায় নিয়ে আয়ান আগে গিয়ে গাড়ীতে বসে আছে।তানিশা গাড়ীতে উঠার পরে গাড়ী চলতে শুরু করেছে।কিন্তু তানিশার এখনো কান্না থামে নাই।কিছু দূর যাওয়ার পরেই আয়ান বললো

আয়ান – আচ্ছা এইবার তো কান্নাটা থামান।আমরা কিন্তু আমাদের বাড়ির কাছাকাছি চলে এসেছি।এতো কান্নার কি আছে বলেন তো? বাড়ির জন্য এতো বেশি মায়া হলে আর বিয়েটা করলেন কেন?

তানিশা অবাক হয়ে গেলো আয়ানে মুখে এমন কথা শুনে।কান্না থামিয়ে চুপকরে বসে আছে।
বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থেকে নেমে গেলো আয়ান। সে এমন ভাব দেখাচ্ছে মনে হচ্ছে তার দায়িত্ব এইখানেই শেষ।বিয়ে তার বাবা মা করিয়েছে এখন দায়িত্ব তাদেরি। আয়ানে মা তানিশাকে বরণ করে ঘরে নিয়ে ড্রইং রুমে বসিয়েছে।সবাই তানিশার সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছে একটু পরে আয়ানের মা এসে আয়ানের কাজিনদের বললো

আয়ানের মা -রাত অনেক হয়েছে,তানিশাকে আয়ানের রুমে নিয়ে যা।আর আয়ান কোথায় গেলো ওই বাড়ি থেকে আসার পর থেকে একবার ও দেখলামনা।

অভ্র সিঁড়ি থেকে নামতে নামতে আয়ানের মাকে বললো

অভ্র -আন্টি আয়ান ছাদে আছে।এতোক্ষণ আমিও ছিলাম।আন্টি আজ তাহলে আসি।

আয়ানের মা-ঠিক আছে অভ্র কাল আবার চলে এসো।

আয়ানের মা আস্তে আস্তে ছাদে গেলো। গিয়ে দেখে আয়ান আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে মনে হয় তাঁরা গুনছে।

আয়ানের মা -কিরে বাবা তাঁরা গুনছিস?আকাশের তাঁরা দেখে লাভ কি?তাঁরা এখন তোর ঘরেই আছে।

আয়ান তার মায়ের কথা শুনে চমকে উঠলো

আয়ান -মা! তুমি কখন এলে?

আয়ানের মা -তুই কি আমাদের উপর রাগ করে আছিস? আমি জানি তুই এই বিয়েতে রাজি না।কিন্তু তুই জানিস তানিশা অনেক ভালো মেয়ে, অনেক লক্ষ্মী একটা মেয়ে।তুই এক বার মেয়েটা কে ভালোবেসে দেখ দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে।আমি জানি তুই তানিশাকে এখনো দেখিস নি।ওই মেয়েটার দিকে একবার তাকালে তুই দেখবি পুরোনো সব ভুলে যাবি।

আয়ান – মা! এই সব বাদ দাও।আমার কিছু ভালো লাগছে না।আর তুমি এখনো জেগে আছো কেন? যাও ঘুমিয়ে পড়ো। রাত জাগলে তোমার শরীর খারাপ করবে।

আয়ানের মা -আয়ান মেয়েটা হয়তো তোর জন্য বসে আছে।সবাই হয়তো ঘুমিয়ে আছে।মেয়েটা একা একা ভয় পাবে।তুই রুমে যা।

আয়ান -মা তুমি যাও আমি আসছি।

আয়ানে মা আর কিছু না বলে ছাদ থেকে নিছে নেমে এলো।

__তানিশা আয়ানের জন্য অপেক্ষা করছে।আর ভাবছে এই কেমন ছেলেরে বাবা কেউ বউ কে ঘরে রেখে এইভাবে বাহিরে থাকে।আচ্ছা আয়ানের কি কারো সাথে রিলেশন আছে? না হলে আমাকে এইভাবে এড়িয়ে যায় কেন?

আয়ান রুমে এসে দেখে তানিশা এখনো বসে আছে।

আয়ান -(অন্য দিকে তাকিয়ে)আপনি এখনো ঘুমাননি?আমার জন্য অপেক্ষা করে আছেন কেন? আর শুনুন আপনাকে একটা কথা জানিয়ে দিই। আমার জন্য কোনো কিছুতেই অপেক্ষা করবেননা।

তানিশা -আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞাস করবো সত্যি সত্যি বলবেন?

আয়ান -বলেন! আপনাকে একটা কথা জানিয়ে দিই আজ। আমি মিথ্যা বলিনা আর কেউ বললেও পছন্দ করিনা।

তানিশা -(মনে মনে ওম্মম্মম,,,, , আমি মিথ্যা বলি না।লাট সাহেব ওনি।)আসলে আপনি কি কোনো মেয়ের সাথে রিলেশন আছে?

আয়ান -না! আমার সাথে কোনো মেয়ের রিলেশন নাই।

তানিশা -তাহলে আপনি আমার সাথে এই রকম করছেন কেন?

আয়ান -আমি তোমার সাথে এই রকম করতে চাইনি।তোমাকে বিয়ে করতেও চাইনি।আসলে আমি একজন কে ভালোবাসি

তানিশা -নেকা,,,,তাহলে আগে মিথ্যা কথা বললেন কেন? মুখ ভেঙিয়ে অম্মম্মম্মম,,,আমি মিথ্যা বলি না।।

আয়ান -তানিশার কথা শুনে একটু হেসে,, ভালোবাসলেই কি রিলেশন হয়।আসলে ওই মেয়ে সাথে আমার এক বার দেখা হয়েছিলো #একবৃষ্টিরদিনে।তাও আবার ৩ বছর আগে। এরপর আমি আর ওই মেয়েকে এখনো দেখিনি। জানেন সেই দিন থেকে আমি আজও ওই মেয়েকে ভালোবাসি।

তানিশা – ওওওওওও তোহ ওই মেয়ের নাম কি?

আয়ান -জানি না! বললাম না একবার তাকে দেখেছি কিন্তু কথা হয়নি।

তানিশা -হা হা হা হা,, ,,,,,, পাগল দেখেছি আপনার মতো দেখিনি।যাক ভালোই হয়েছে।

আয়ান – আপনি হাঁসছেন?আর ভালো হয়েছে মানে?

তানিশা -(মনে মনে ওই মেয়ের ভূত কিভাবে নামাতে হবে আমার জানা আছে)না কিছুনা।তোহ ঘুমাবেন না? আর আপনি তো আমার সাথেও ঘুমাবেন না। কারণ যদি আমার মুখ দেখতে হয়।আর চিন্তা করবেন না,আপনি যতো দিন না চাইবেন আমি আমার র্মযদা কখনোই চাইবোনা।

আয়ান -সমস্যা নেই আপনি ঘুমিয়ে পড়ুন।ভয় পাবেন না আমি এখানেই আছি।
কথাটা বলেই আয়ান বারান্দায় এসে একটা সোপায় বসেছে।মেয়েটা সত্যি অনেক ভালো মেয়েটা কথায় একটা মায়া আছে। ধুর আমি এইসব ভাবছি কেন?
ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে পড়লো আয়ান।

চলবে,,,,,,,,

একবৃষ্টিরদিনে  পার্ট: ২

0

একবৃষ্টিরদিনে

পার্ট: ২

#Rabeya Sultana Nipa

 

__সাবাই কতো খুশি এই বিয়ে নিয়ে,বাড়িতে অনেক গেস্ট চলে এসেছে।কিন্তু আয়ানের মনে একটুও খুশী না।আয়ান মনে মনে ভাবছে এই তানিশা মেয়েটার তো কোনো দোষ নাই।শুধু শুধু তাকে কষ্ট দিয়ে লাভ কি।তাকে সব বলে দেওয়াটাই ভালো হবে।

আয়ানের মা -কিরে! তুই বসে বসে কি ভাবছিস? আজ তোর engaged।মনে করে ছিলাম বড় করে একটা পার্টি দেবো তা আর হলোনা।তাড়াতাড়ি রেডি হয়েনে সবাই এসে গেছে।

আয়ান -মা! আমি ওইখানে যেতে পারবোনা। আমার জরুরী কাজ আছে।তুমি আর বাবা আজকে একটু সামলিয়ে নাও।

আয়ানের মা -এইসব তুই কি বলছিস? তোকে ছাড়া engaged করলে লোকে কি বলবে?

আয়ান -মা! লোকের কাছে আমার কিছু যায় আসে না।আর তুমি বাবাকেও বুজিয়ে বলো।শুধু আজকের দিনটার জন্য

কথা গুলো বলেই আয়ান বাহিরে চলে গেলো।এইদিকে তানিশা আজ সুন্দর করে সেজেছে।আয়ানের সাথে আজ যেই করেই হক কথা বলতেই হবে।ওই ছেলে ভেবেছে কি? ওই দিন আমার দিকে একবারো তাকালো না,আচ্ছা ওই ছেলের কি রিলেশন আছে নাকি অন্য কারো সাথে? আজ আসলে ভালো করে জিজ্ঞাস করে নিতে হবে।

_সবাই এসেছে পার্টিতে।শুধু আয়ান আসে নাই।সবাই যার যার মতো আনন্দ করতে লাগলো। আয়ানের সব কাজিনরা এসেছে।তানিসাকে দেখে আয়ানের এক কাজিন বলে উঠলো সবাই কে, কি রে গাধাটা যে এতো সুন্দরী বউ পাবে আমি তো ভাবতে পারতেছিনা কথাটা শুনে সবাই হেসে দিলেও তানিসা মন খারপ করে বসে আছে।

তানিশার বাবা তার মাকে বলতে শুনাছে আয়ান আজকে আসবে না।কোনো একটা কাজে আটকা পড়ে গেছে।তাই তানিসা ভাবছে আজকের দিনের থেকে তার কাজটাই হয়ে গেলে? সত্যিইতো গাধা না হলে এইরকম কাজ কেউ করতে পারে?

সন্ধ্যায় engaged এর সব কাজ শেষ করে আয়ানদের সবাই বাসায় এসেছে।আসার সময় বিয়ে দিন তারিখ পাকা করে এসেছে।
একটু পর আয়ানও বাসায় এসে দেখে সবাই ড্রইং রুমে তার বিয়ে নিয়ে কথা বলছে।আয়ানের কাজিনরা সবাই বিয়েতে কি করবে না করবে সবাই বসে প্লান করতেছে।
আয়ান এই সব দেখে কিছু না বলে তার রুমে চলে যাচ্ছে দেখে তার কাজিন রিয়া বললো,আয়ান ভাইয়া তুমি চোরের মতো পালিয়ে যাচ্ছো কেন?তোমার বিয়ে নিয়ে আমরা সবাই কতো প্লান করতেছি আর তুমি পালিয়ে যাচ্ছো?

আয়ান – কই আমি পালিয়ে যাচ্ছি? আমি তো রুমে যাচ্ছিলাম!

মিতু -(আয়ানের মামাতো বোন) আচ্ছা ভাইয়া তোর বউযে এতো সুন্দরী আগে কেন বললিনা।জানিস আমি যদি ছেলে হতাম তোর বউকে নিয়ে পালিয়ে যেতাম।

আয়ান -তোরা চুপ করবি? তোদের যা ইচ্ছা তাই কর।কিন্তু আমাকে জালাতে আসবি না বলে দিলাম।
কথাটা বলেই আয়ান তার রুমে চলে গেলো।

মিতু -(আয়ানের মাকে) ফুফি তোমার ছেলেকি এই বিয়ে রাজি নয়? আমরা সবাই কতো খুশি আর সে রাগ দেখিয়ে চলে গেলো?

আয়ানের মা-ওই পাগলের কথা বাদ দে বিয়ে হলে এমনি ঠিক হয়ে যাবে।

__আয়ান ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে তার ফোন বাজছে! ফোনের নাম্বার টা ও তার চিনা নয় ভাবতে ভাবতে ফোনটা কেটে গেলো। ফোন আবার বেজে উঠলো সেই আগের নাম্বার থেকেই।আয়ান ফোনটা রিসিভ করা মাএই

তানিশা -এইযে মিঃ আয়ান নিজেকে কি ভাবেন বলুন তো? আপনি কোন রাজ্যের রাজা আপনি? আপনি একটা ঘন্টা সময় দিতে পারেননা।?

আয়ান-আরে আপনি কে বলছেন? আর আমি নিজেকে কিছুই মনে করিনা একজন সাধারণ মানুষ ছাড়া।

তানিশা -যাকে বিয়ে করবেন তাকেই চিনেন না।আর চিনবেন কি করে?একটা বার তো আমার দিকে তাকালেনও না।

আয়ান -ওহ সরি। আসলে আমি অনেক ভিজি ছিলাম তা আসতে পারিনি। কিন্তু আপনি নাম্বার কোথায় পেলেন?

তানিশা -আপনার এক কাজিন দিয়ে গেছে।যাওয়ার সময় বলেছে গাধাটাকে ঠিক করতে।

আয়ান -কিহ আমি গাধা? আচ্ছা ওদেরতো আজ খবর আছে।কিন্তু তানিশা আপনার সাথে আমার কিছু কথা ছিল।

তানিশা-হ্যা বলুন!

আয়ান -আসলে আমি আপনাকে,,,,,,,,,,(কথাটা না বলতেই আয়ানের মা এসে বললো কিরে তুই এখনো ঘুমাসনি?)আচ্ছা আমি তোমার সাথে পরে কথা বলছি।বলে ফোন টা রেখে দিলো।

আয়ানের মা -বিয়ের দিনটা তারিখ তো পেলে দিলাম।তোর বাবাকে বলে ছিলাম তোকে একবার জিজ্ঞাস করার জন্য।তোর বাবা বললো দরকার নেই।

আয়ান -তোহ বিয়ে কতো তারিখে পেললে?

আয়ানের মা – সামনের শুক্রবার আর ৬ দিন পর।জানিস আয়ান আমার আর তোর বাবার মেয়েটাকে অনেক পছন্দ হয়েছে।আমার মনে হচ্ছে ও আমারই মেয়ে।কতো ভাগ্যে করে এমন মেয়ে পাওয়া যায়।কথা গুলো বলে আয়ানের মা চলে গেলো

__আয়ান মনে মনে ভাবছে,তানিশাকে আর কিছু বলবেনা।তার বাবা মা কতো খুশি। জীবনেতো কিছুই করতে পারলাম না। বিয়েটা করে না হয় বাবা মাকে খুশি করলাম।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে আয়ান কখন ঘুমিয়ে পড়লো তার মনে নেই।

চলবে,,,,,,,,,

একবৃষ্টিরদিনে  পার্ট: ১

0

একবৃষ্টিরদিনে

পার্ট: ১

#Rabeya Sultana Nipa

_সকাল থেকে খুব বৃষ্টি পড়ছে।এখন বিকাল ৫ টা। এখন বৃষ্টি একটু কমেছে। অফিস শেষ করেই আয়ান বাহিরে বেরিয়ে গেলো বাসায় যাওয়ার জন্য।একটু যাওয়ার পরেই আবার বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো।বৃষ্টি দেখে একটা বাসার নিছে দাঁড়িয়ে আছে আয়ান।একটু পরে একটা মেয়ে এসে পাশে দাঁড়িয়েছে। আয়ান অবাক হয়ে শুধু মেয়েটাকেই দেখছে।কারণ এতো মেয়ে দেখেছে কিন্তু সুন্দর মেয়ে সে আগে কখনো দেখেছে বলে মনে হয়না।আচ্ছা আমার সামনে কি পরি দাঁড়িয়ে আছে নাকি এই বৃষ্টির মাঝে?
কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি থামতেই মেয়েটা চলে গেলে।কিন্তু আয়ানের মনে এক অনুভুতি কাজ করছিলো এক ভালোলাগার।
আয়ানও বাড়িতে আসলো কিন্তু মন পড়ে রইলো সেই মেয়েটার উপর।

এতোক্ষনতো আমার ভালোকরে পরিচয়টা দেওয়া হলোনা।আমি আয়ান। পড়ালেখা শেষ করে বেসরকারি একটা জব করতেছি।আমি বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। বাবা বিজনেসম্যান। বাবা সবসময় চায় আমি বাবার বিজনেস সামলাই।কিন্তু আমার ইচ্ছে আমি নিজে কিছু করতে চাই।যাই হক এইবার কাজের কথায় আসি।

পরেরদিন অফিসে গিয়ে আয়ান তার ফ্রেন্ড অভ্রকে সব বলললো মেয়েটার ব্যাপারে।

অভ্র -এমন একটা মেয়েকে তোর ভালোলেগেছে যাকে চিনিস না জানিস না।
আচ্ছা নামটাও তো জানিস না।তাহলে খুঁজবি কি করে?

আয়ান -যদি কপালে থাকে তাহলে দেখা হতেই পারে।

__আয়ানের সেই মেয়েটির দেখার পাবার আশায় দিন যায় মাস যায়।কিন্তু সেই মেয়েটাকে আর দেখা পাওয়া যায় না।।
আয়ানের ভালোলাগা থেকে যে কখন ভালোবাসায় পরিণত পেল আয়ান বুজতেই পারেনাই।
এইভাবে ৩ টা বছর কেটে গেলো কিন্তু আয়ান মেয়েটিকে এখনো ভুলতে পারেনাই।

__বাড়িতে আয়ানের বিয়ের জন্য চাপ দিতেছে।আয়ান কি করবে বুজতে পারছেনা।এতো দিনতো তার বাবা,মাকে অনেক অপেক্ষা করিয়েছে।কিন্তু এইভার তারা কিছুতেই মানছেনা।

আরানের বাবা -আয়ান তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছো?(আয়ানের রুমে এসে)

আয়ান -না বাবা! তুমি কি কিছু বলবে?

আয়ানের বাবা -হ্যা কাল আমরা মেয়ে দেখতে যাচ্ছি,তুমিও আমাদের সাথে যাবে।

আয়ান -বাবা! আরো কয়টা দিন গেল হতো না?

আয়ানের বাবা -তোমাকে আর কোনো সময় দেওয়া হবে না।অনেক দিয়েছি।তোর মা বাসায় একা একা থাকতে হয়,তার কথাটাও তো ভাবতে হয়।

আয়ান- ঠিক আছে বাবা।তোমরা যা ভালোমনে করো তাই করো।

আয়ানের বাবা ছেলের কথায় খুশি হয়ে পরেরদিন মেয়ে দেখতে সবাই মিলে গেলেন।সাথে আয়ানও।মেয়ে কে যখন সামনে আনা হলো আয়ান একটি বারের জন্য মেয়েকে দেখলোনা।আয়ান তখনো মনে মনে সেই মেয়েটির কথায় ভাবছিলো।যাকে সেই আজও ভালোবাসে।

আয়ানের মা- (মেয়ের দিকে তাকিয়ে)মা! তোমার নাম কি?

তানিশা -আমার নাম তানিশা।

আয়ানের মা -আয়ান তুই কিছু জিজ্ঞাস করবিনা।

আয়ান তখনো তানিসাকে না দেখে, না! মা আমার কিছু বলার নাই।তোমরা যা ভালো মনে করো।

__তানিশা তখন আয়ানের দিকে তাকাতেই আয়ানকে তানিশার ভালোলেগে গেলো।

চলবে,,,,,,,,

পুরোনো_ভালোবাসা  ১৭ শেষ পার্ট

1

পুরোনো_ভালোবাসা
১৭ শেষ পার্ট

Rabeya Sultana Nipa

_আজ দুইদিন হয়ে গেলো শিহাব খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দয়েছে।এখন আর আগের মতো কারো সাথে কথা বলে না।কলেজেও যায় না।সারাক্ষণ আবিরকে নিয়ে বসে থাকে।আবিরেই যেন তার জীবনের সব।নিশুর এইসব দেখে আর সহ্য হচ্ছেনা।

নিশু -মা আমি বাহিরে থেকে আসছি,দেখো শিহাব কে কিছু খাওয়াতে পারোকিনা।

ইয়াসমিন বেগম -তাড়াতাড়ি ফিরে আসিস। আর শুন সেই দিন ডাক্তার দেখিয়ে তো রিপট গুলো আনিস নাই আজ আসার সময় নিয়ে আসিস।

__ ঠিক আছে বলে নিশু বাসা থেকে বেরিয়ে এলো।আজ অনিকের বাসায় গিয়ে অনিকের সাথে আমার কথা বলতেই হবে।এইভাবে চললে শিহাব অসুস্থ হয়ে যাবে।
অনিকের বাসার কলিং বেল বাজিয়ে নিশু দাঁড়িয়ে আছে দরজা খোলার অপেক্ষায়।একটু পর অনিকের মা এসে দরজা খুলে নিশুকে দেখে সবাইকে ডাকতে শুরু করলো।

রেহানা বেগম -এই মেয়ে তুমি এই বাসায় কেন আসছো?

নিশু -আমি আপনার বাসায় থাকতে আসি নাই।আপনার ছেলে কোথায় ওকে ডাকুন। আমি ওর সাথে কথা বলেই চলে যাবো।

অনিক -ডাকতে হবে না।আমি নিজেই এসে গেছি।আমি জানতাম তুমি আমার বাসায় আসবে।কারণ পাগলের ঘরতো করা যায় না।

নিশু -অনিক! আজ আমি তোমার সাথে কোনো কথা বাড়াতে চাই না।তুমি একদিন হলেও আমাকে ভালোবেসে ছিলে।আজ আমি সেই অধিকার নিয়ে বলছি তুমি আবিরকে শিহাবকে দিয়ে দাও।ও আবির কে না পেলে হয়তো পাগল হয়ে যাবে।তুমি যাই করতে বলবে আমি রাজি আছি।তুমি সেই দিন নোটিশ দিয়ে আসার পর থেকে শিহাব কেমন জানি হয়ে গেছে।

অনিক- অনিক চিৎকার দিয়ে জোরে হাসি দিয়ে বললো,মা দেখেছো স্বামীর জন্য কতো চিন্তা।নিশু”সেই দিন তোমার এই চিন্তা গুলো কই ছিলো?আর আজ শিহাবের জন্য আমার কাছে এসেছো।অনেক ভালোবাসো শিহাবকে তাইনা?ঠিক আছে তোমার কাছে আমার কিছু পাওয়ার নাই।শিহাব কে বলো আবিরকে আমি দিয়ে দিলাম তোমাদের।

নিশু -আমি জানতাম তুমি আমার কথা ফেলতে পারবে না।আর তোমাকে thanks বলেও ছোটো করবো না।তবে তুমি অনেক ভালো থাকো।নতুন করে জীবন শুরু করো।আমি আসছি!বলে নিশু দরজার সামনে চলে আসলো।
অনিক –নিশু!! প্লিজ দাড়াও”

অনিকের কথা শুনে নিশু দাঁড়িয়ে গেল।

নিশু – কিছু বলবে?

অনিক কিছু না বলেই নিশুকে জড়িয়ে ধরলো।নিশু স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কি বলবে বুজতে পারছেনা।একটু পর নিশুকে ছেড়ে দিয়ে

অনিক -সরি”এইবার তুমি যাও।

নিশুও আর কথা না বাড়িয়ে চলে গেলো।আসার সময় ডাক্তার কাছ থেকে রিপট গুলো নিয়ে বাসায় আসলো।
__শিহাব! শিহাব! এখন থেকে আবির আমাদের কাছেই থাকবে।অনিক নিজে বলেছে।কথাটা শুনেই নিশুর হাত ধরে
শিহাব -তুমি সত্যি বলছো?

নিশু -হ্যা আমি সত্যি বলছি।তুমি আর চুপ হয়ে থাকবে না।এখন চলো খেয়ে নিবে। এই কয়দিন না খেয়ে নিজেকে কি বানিয়েছো, একবার আয়নায় দেখেছো।

শিহাব -ওহ যাচ্ছি।কিন্তু তোমার হাতে এইটা কি?

নিশু- এইটা ডাক্তারের রিপট।এখন চলো।

শিহাব -আচ্ছা এইটা আগে দেখি তারপর যাবো কথাটা বলে নিশুর হাত থেকে রিপট টা নিয়ে দেখে নিশুর দিকে তাকিয়ে আছে।
নিশু -এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন? কি হয়েছে?

শিহাব -(গম্ভীর হয়ে)এই রিপট আগে তুমি দেখেছো?

নিশু -না এখনো দেখি নাই।এইমাত্র এইটা আনলাম।

শিহাব – (নিশুকে জড়িয়ে ধরে)নিশু আমি আবার বাবা হতে যাচ্ছি?
__নিশু লজ্জা পেয়ে কিছু না বলে রুমথেকে চলে গেলো। শিহাবও রুমথেকে বের হয়ে ইয়াসমিন বেগম কে বললো মা জানেন? আমাদের ঘরে নতুন অথিতী আসছে।আর তাতেই নিশু লজ্জা পাচ্ছে।এইটা কি ঠিক বলেন তো।
ইয়াসমিন বেগম -নিশু!! শিহাব কি সত্যি বলছে? তাহলে তো ভালোই হলো আবিরের খেলার সাথী আসতেছে।
এমিন সময় শিহাবের ফোন বেজে উঠলো।ফোন টা অনিক করেছে।তাই ইয়াসমিন বেগমকে ইশারায় চুপ থাকতে বললো শিহাব।

অনিক -কেমন আছিস?

শিহাব -ভালোই,ফোন করেছিস কেন?

অনিক -আমি দেশের বাহিরে চলে যাচ্ছি,তাই ভাবছি তোর সাথে দেখা করবো। যদি তুই চাস।

শিহাব – ঠিক আছে!! কাল সকালেই দেখা করবো বলে ফোনটা রেখে দিলো।
সকাল বেলা শিহাব উঠেই রেডি হচ্ছে।
নিশু -এতো সকাল যাওয়ার কি আছে নাস্তাটা করে যেতে পারতে।

শিহাব – সমস্যা নাই বাহিরে খেয়ে নিবো।আবিরের দিকে খেয়াল রেখো।আর নিজেরও খেয়াল রেখো।

__শিহাব অনিকের সাথে দেখা করেই অনিককে জড়িয়ে ধরলো।অনিক তোর ঋণ আমি কখনওই শোধ করতে পারবোনা।
অনিক -আরে কি করছিস।আমি বুজেছি আবির তোদের কাছেই ভালো থাকবে।শুন আমি এখন চলে যাচ্ছি তোর সাথে এটাই আমার শেষ দেখা।

শিহাব – চল তোকে এয়ারপোর্ট পৌঁছে দিয়ে আসি।কথা বলতে বলতে দুজনেই গাড়িতে উঠলো।অনেকটা পথ যাওয়ার পরে গাড়িটা একটা ট্রাকের সাথে ধাক্কা লেগে এক্সিডেন্ট হয়ে যায়।

__নিশু! ফোন বাজছে তোর।ফোনটা গিয়ে ধর। নিশুর মা কথাটা বলতে বলতে নিশুর রুমে এগিয়ে আসছে।
নিশু শিহাবের নাম্বার দেখে ফোনটা রিসিভ করে

নিশু -শিহাব একটু আগেই তো বাসা থেকে গেলে।এখন বার ফোন করেছো?

__ম্যাডাম আপনি এই ফোনের মালিকের কি হন আমরা জানি না।আমি hostile থেকে বলছি।এইখানে দুইজন লোক এক্সিডেন্ট করেছে।দুজনের কাগজ পএ দেখে বুজা যাচ্ছে একজন অনিক আর একজন শিহাব।

নিশু – নিজেকে সামলে নিয়ে আপনি কি বলছেন এই সব।দুইজনে ঠিক আছেতো?

__দুজনের একজন মারা গেছে।কিন্তু কোন জন তা আমরা বলতে পারছিনা।
নিশু কথা টা শুনেই জ্ঞান হারিয়ে পেললো।

( ২০ বছর পর)
আজ আবির পড়ালেখা শেষ করে ডাক্তার হয়ে দেশে আসছে।সেই সাথে দুই দিন পর অয়নির বিয়ে।তাই বাড়িটা সুন্দর করে সাজিয়েছে।ওহ আপনাদের তো বলাই হয় নাই।অয়নি হচ্ছে নিশুর মেয়ে।বাসা থেকে আবিরকে তার নানা আনতে গেছে এয়ারপোর্টে।তার বাবাও যেতো। কাজের জন্য যেতে পারে নাই।

ইয়াসমিন বেগম -নিশু কই তুই নিছে গাড়ির শব্দ শুনা যাচ্ছে হয়তো আবির এসে গেছে।

আবির দৌড়ে মা! মা! বলে নিশুর কাছে এসে জড়িয়ে ধরলো।
আবির -মা! বাবা কই?আমাকে আনতেও গেলো না আর এখন দেখাও পাচ্ছিনা।

নিশু -তুই এতো বছর পর দেশে আসছিস।তাই তোর বাবার ঘুম নাই সব কাজ নিজের হাতে করছে।কি যেন নষ্ট হয়ে গেছে এখন ছাদে গেছে ঠিক করার জন্য

আবির -ঠিক আছে আমিও যাই।কথাটা বলেই আবির ছাদে চলে গেলো।
এই যে মিস্টার শিহাব আপনার ছেলে যে দেশে ফেরেছে সেই কথা কি ভুলে গেলেন?

(সেই দিন এক্সিডেন্টের পরে শিহাবই বেঁচে ছিল আর অনিক পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছিলো)
শিহাব -(আবিরকে বুকে জড়িয়ে)আমার ছেলে আসছে আমি কি ভুলতে পারি? এইদিক টাও তো সামলাতে হয়।
কথা বলতে বলতে দুজনেই ছাদ থেকে নেমে এলো

অয়নি -বাহ এখন ছেলেকে পেয়ে বাবা আমার কথা ভুলেই গেলো।

আবির -বাবা! দেখেছো আমি আসতে না আসতেই আমার পিছনে পড়ে গেলো। ওকে সমস্যা নাই দুইদিন পর এমনেতেই বিদায় হবি।
আবিরের কথা শুনে সবাই হাসতে শুরু করল।।।

( সমাপ্ত। )

ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন।

পুরোনো_ভালবাসা   পার্ট: ১৬

0

পুরোনো_ভালবাসা

পার্ট: ১৬

#Rabeya Sultana Nipa

 

__শিহাব -নিশু! এই কথা গুলো তোমার মনে আছে? বলোনা নিশু মনে আছে?

নিশু-শিহাব আমার সব মনে আছে।কিন্তু তোমার আজ কি হয়েছে? এই রকম করছো কেন?

শিহাব -সেই দিন আমি আর আমার ফ্রেন্ড পুরো রাত hospital ই ছিলাম।জানো যখন আবিরকে সিস্টার নিয়ে আসলো তখন আমাকে সিস্টার বাবা ভেবে আমার কোলে দিয়েছিলো।আমি তখন আবিরকে কোলে নিয়ে মনের ভেতর কিযে ভালো লাগা কাজ করছিলো সেই দিন কাউকে বুজাতে পারিনাই।তারপর থেকে তোমাদের বাসায় আসা যাওয়া,আস্তে আস্তে তোমাকেও ভালোবেসে ফেললাম। তোমাকে আর আবিরকে এক নজর দেখার জন্য বার বার ছুটে যেতাম তোমাদের বাসায়।একটা সময় আসলো আবির আমাকেই বাবা ডাকতে শুরু করলো।তখন আমি ভাবলাম সত্যি সত্যি যদি আমি আবিরের বাবা হই!তাহলে তোমাদের আর হারানোর ভয় থাকবে না।আমার মা কে পাঠালাম তোমাদের বাসায়। তুমি তো বিয়ের কথা শুনেই রেগে আগুন হয়ে গেলে।হয়তো তোমার বাবার আর মায়ের কারনেই বিয়েটা করতে রাজি হয়েছিলে।বিয়ের পর আমাকে তোমার অসহ্য লাগতো।আস্তে আস্তে সেটা জয় করে নিলাম আমার ভালোবাসা দিয়ে।আজ যখন সব কিছু ঠিক ভাবে চলছে তখন আমি আমার সব কিছু হারিয়ে যেতে দিতে পারি না।তোমাকে পেতে আমার অনেক কষ্ট করতে হয়েছে।

নিশু-আমি জানি শিহাব তুমি কথা গুলো কেন বলছো।তুমি আমার আর অনিকের ব্যাপারটা জেনে গেছো।বিশ্বাস করো আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি। অনিকের প্রতি আমার কোনো পিছুটান নাই।তুমিই আবিরের বাবা আর সারাজীবন আবিরের বাবাই থাকবে।
কথা গুলো বলেই শিহাবের বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো নিশু।জানো শিহাব তোমার বুকে মাথা রাখলে মনে হয় আমি সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা আছি
পৃথিবীর সব শান্তি বুকেই আছে।

শিহাব -কথা গুলো বলে কি আমাকে বুজাচ্ছো।নাকি শান্তনা দিচ্ছো?তবে একটা কথা মনে রেখো অনিকের সাথে আমার সম্পর্কটা শেষ হয়ে যাবে।আর সেটা কালকে শেষ করবো।

নিশু -তুমি যা ইচ্ছা করো। কিন্তু আমি সারাজীবন তোমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে চাই।শিহাব কে আর কোনো কথা সুযোগ না দিয়ে শিহাবের ঠোটে ঠোট ঢুবালো নিশু।

_শিহাব উঠো তোমার কলেজের দেরি হয়ে যাচ্ছে।প্রতিদিন লেট করে কলেজে যাও।একটা দিনতো একটু তাড়াতাড়ি যেতে পারো।এতো দেরিতে যাও ক্লাস কারাও কখন?উঠোনা শিহাব!!

শিহাব -জান “”আরেকটু ঘুমাতে দাওনা প্লিজ।

নিশু-আর একটু না উঠো বলছি।ঠিক আছে উঠতে হবেনা,আমি পানি আনতে যাচ্ছি।

শিহাব -এই না! না! এইতো উঠে গেছি।আচ্ছা আরেকটু ঘুমাতে দিলে কি হতো?

নিশু -একটা দিনতো তাড়াতাড়ি কলেজে যেতে পারো।আচ্ছা এতো দেরিতে গেলে ক্লাস করাও কখন?

শিহাব -ঘরে সুন্দরি বউ রেখে কলেজে যেতে একটুও ইচ্ছে করে তুমিই বলো?

নিশু -তোমার অনেক গুলো মেয়ে স্টুডেন্ট তো আমার থেকেও বেশি সুন্দরী।তাদের দেখলেইতো পারো।

শিহাব-আমার বুউয়ের থেকে আর কেউ সুন্দরী হতেই পারেনা।আমার চোখে আমার বউই পৃথিবীর সেরা সুন্দরী। বলেই নিশুকে জড়িয়ে ধরলো

নিশু -কি করছো বলোতো?ছাড়ো! টেবিলে নাস্তা দিয়েছি ফ্রেশ হয়ে খেয়ে কলেজে যাও।

শিহাব-ঠিক আছে,কি আর করার,মহারাণী কথাতো আমায় মানতেই হবে বলে শিহাব ওয়াশরুমে গেল।
নিশুও আবিরকে উঠিয়ে নাস্তা করার জন্য নিয়ে গেছে।শিহাব ফ্রেশ হয়ে এসে নাস্তা করে কলেজে চলে গেলো।
কলেজে যাওয়ার পথে অনিককে ফোন দিলো।

শিহাব-অনিক আজকে একটু দেখা করতে পারবি?
জরুরী কিছু কথা ছিলো।প্লিজ না করিস না।

অনিক -না করবো কেন? আমিও ভাবছিলাম তোকে ফোন দিবো দেখা করার জন্য।আমার তোর সাথে অনেক কথা বলার আছে।

শিহাব-ঠিক আছে। দুপুরে রেস্টুরেন্টে আয়।ওইখানেই কথা হবে।

__শিহাব ২ টা ক্লাস করিয়ে রেস্টুরেন্টে চলে গেলো।অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর অনিক এলো।দুইজনেই চুপ করে বসে আছে।কি বলে শুরু করবে শিহাব বুজতে পারছেনা।তারপর অনিক নিরাবতা ভেঙ্গে বললো

অনিক-তোর নাকি কিছু কথা ছিলো এখন বল,চুপ করে আছিস কেন?

শিহাব-আসলে কিভাবে কথা গুলো শুরু করবো বুজতে পারছিনা।অনিক! তোর আর নিশুর ব্যাপারটা আমি জেনেছি কাল রাতে।আমি তোকে বলতে চাই,তুই নিশুকে ভুলে যা।আমার কাছথেকে নিশু আর আবিরকে কেড়ে নিস না।দেখ আমি যতটুকো জানি তোর ফ্যামিলিতে নিশুকে মেনে নেয়নি বা নিবেও না।নিশুকে আজ এই জায়গা আনতে আমার অনেক কষ্ট করতে হইছে।তুই বিয়ে করে আবার নতুন করে জীবন শুরু কর।কেউ তোকে বাধা দিতে যাবেনা।তোর কাছে শুধু আমার একটাই রিকুয়েস্ট আমার ছেলেকে আমার কাছেই থাকতিদে।

অনিক- এতোক্ষন অনেক কথা বলেছিস, এইবার আমিও একটু বলি! আবির তোর ছেলে মানে কি?আবির আমার ছেলে,শুধু আমার ছেলে।আর নিশু! ওই মেয়েকে কাল রাত থেকেই ভালোবাসি না।ওকে আমি শুধু ঘৃণা করি।এখন আমি শুধু আমার ছেলেটাকে চাই।ওকে নিয়ে আমি দেশের বাহিরে চলে যাবো।তোরা ভালো থাক এতে আমার কিছু যায় আসে না।আর আমার মনে হয়না নিশু কখনো ভালো থাকতে পারবে।ও তোর সাথে সংসার করে ঠিক কিন্তু মন পড়ে আছে আমার কাছে।ও আমার সাথে কাটানো একটা রাতও মন থেকে মুছতে পারবেনা।কারণ সারাজীবন ও আমাকেই ভালোবাসবে।আমার শরীরে ওর দেওয়া নোখের দাগ এখনো আছে। এই গুলো আমাদের ভালোবাসার সাক্ষী হয়ে থেকে গেছে।

__শিহাব কথা গুলো আর সহ্য করতে না পেরে অনিকের গালে একটা থাপ্পড় লাগিয়ে দিলো।

শিহাব-যথেষ্ট বলেছিস তুই।ওর নামে আর একটা কথাও শুনতে চাইনা আমি তোর মুখ থেকে।তোর আমার লড়াই আজ থেকে শুরু হয়ে গেছে।তবে সেটা আমার বউকে নিয়ে নয়।সেটা আমার আবিরকে নিয়ে।
কথাটা বলেই শিহাব রেস্টুরেন্ট থেকে বাহিরে চলে গেলো।

_নিশুর মন ভালোলাছেনা।শিহাব কে অনেক বার ফোন দিয়েছে কিন্তু শিহাবের ফোন বন্ধ।
কথাটা ভাবতে ভাবতেই কলিং বেল বেজে উঠলো।নিশু দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দেখে শিহাব।

নিশু-তোমার ফোন অফ কেন? কতো বার ফোন কেরেছি।

শিহাব কিছু না বলে সোজা রুমে গিয়ে দরজা আটকিয়ে দিলো।নিশু দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বললো

নিশু-শিহাব তোমার কি হয়েছে? কোনো কিছু নিয়ে কি তোমার মন খারাপ?শিহাব আমাকে বলবেনা তোমার কি হয়েছে?নিশু কান্না করছে আর কথা গুলো বলছে।

একটু পর শিহাব দরজা খুলে নিশু কান্না করছে দেখে

শিহাব-আরে তুমি কান্না করছো কেন?আমি ফ্রেশ হচ্ছিলাম তাই দরজা খুলতে দেরি হলো।আবির কই ওকে দেখছি না কেন?

নিশু -বাবা আসছে তুমি যাওয়া পরে,একটু আগে আবিরকে নিয়ে বাহিরে গেছে।আমি খাবার দিতেছি তুমি খেতে আসো।

শিহাব খাচ্ছে নিশু পাশে বসে আছে।শিহাব নিশুর দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে বললো,এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন?

নিশু -তোমাকে দেখছি।তোমার মতো মানুষকে স্বামী হিসাবে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।

শিহাব-same too you..and I love you jan।বলেই শিহাব নিশুর হাত ধরে বললো।জীবনে যতো ঝড় আসুক না কেন আমরা একসাথেই থাকতে চাই।

_আজ Friday শিহাবকে বার বার ডাকার পরেও এখনো ঘুম থেকে উঠে নাই।আবির ও শিহাবের সাথে ঘুমাচ্ছে।বাবা ছেলে দুইজনেই এক সাথে উঠবে।ইয়াসমিন বেগম আর নিশু নাস্তা বানাচ্ছে। এমন সময় কলিং বেল বেজে উঠলো।নিশুর বাবা উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিলো।দরজা খুলে অবাক হয়ে বললো তুমি”””””

অনিক- হ্যা আমি।শিহাব কে একটু ডেকেদিন ওর সাথে আমার কথা আছে।

নিশু শিহাবকে ডাকতে গেলো,,,,,,,,

নিশুর বাবা-তোমার সাহস কি করে হয় আমার বাসায় আসার?আর শিহাবের কাছে তোমার কি কাজ?

অনিক -আমার ছেলেকে ফেরত চাই।আর কিছুই না।

এমন সময় শিহাব এসে বললো তোর সাথেই আমার এই ব্যাপারে কালকেই কথা হয়ে গেছে আজ নতুন করে কিছু বলার নাই।

অনিক-শুন! এখন আমি কথা বলবো না আর তুইও না।এখন যা করবে কোর্ট বলবে। এই নে নোটিশ! তোর সাথে আমার কোর্টেই দেখা হচ্ছে।

__কথাটা শুনে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে অনিকের দিকে।শিহাব জানে সেই কোর্টে গেলে আবিরকে আর পাবেনা।
অনিক চলে যাওয়ার পরে নিশুর বাবা বললো এতো কিছু হয়ে গেলো আমাকে কেউ জানানোর প্রয়োজন মনে করলে না?
শিহাব স্তব্ধ হয়ে বসে রইলো
সত্যি কি আবিরকে আর পাবেনা।

চলেবে,,,,,,,,,,,,

পুরোনো_ভালোবাসা   পার্ট: ১৫

0

পুরোনো_ভালোবাসা

পার্ট: ১৫

#Rabeya Sultana Nipa

 

__নিশু! নিশু! কোথায় তুমি?শিহাবের ডাকে নিশু সাড়া না দিয়ে চা নিয়ে সামনে এসে দাঁড়িয়ে আছে।

নিশু -বউকি কোথাও পালিয়ে যাচ্ছে?চা আনতে সময়তো লাগে তাইনা?

শিহাব -ওহ সরি।আসলে অনিক ফোন করেছে ও নাকি সন্ধ্যায় আসবে।তাই তোমাকে ডাকছি,তোমার আবার রান্না করতে হবে না।
নিশু -অঅ অঅ অনিক কেন আসবে?(একটু তোতলিয়ে)

শিহাব -তোমার আবার কি হলো? তোতলাচ্ছো কেন?আমি বাহিরে যাচ্ছি আমার আসতে হয়তো দেরি ও হতে পারে, তুমি ভালোভাবে কথা বলবে।

কথাটা বলেই শিহাব চা টা খেয়ে বেরিয়ে গেল।নিশু কি করবে বুজতে পারছে না।অনিক এখানে আসতে চাইছে কেন? ও কি আবিরের ব্যাপারে কিছু বুজে পেলেছে?ওহ কিছু ভালো লাগছেনা।শিহাবটাও না কি? ও কি বুজে এই রকম করে নাকি না বুজেই করে আল্লাই ভালো জানে।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে নিশু রান্নাঘরে গেলো।যখন আসবেই ওর পছন্দ মত কিছু রান্না করি।

ইয়াসমিন বেগম নিশুকে রান্না করতে দেখে বললো
কেউ আসবে নাকি নিশু?

নিশু -মা! অনিক আসবে একটু আগে শিহাব বলে গেলো তাই রান্না করছি।কিন্তু তুমি রেডি হয়ে কোথায় যাচ্ছো?

ইয়াসমিন বেগম -তোর মামা ফোন করেছে তোর নানু নাকি অসুস্থ তাই ভাবলাম দেখে আসি।কিন্তু অনিক কেন আসবে এইখানে?

নিশু-কি বলবো মা? শিহাবটাও না,কিছু বুজতে চায় না।তুমি চিন্তা কোরো না আমি সামলিয়ে নিবো।তুমি যাও।বেশী অসুস্থ হলে ফোন দিও,আমি আর শিহাব গিয়ে দেখে আসবো।

ইয়াসমিন বেগম -আচ্ছা ঠিক আছে।আমি তাহলে আসি।কথা গুলো বলতে বলতে ইয়াসমিন বেগম চলে গেলো।

__আবির বসে বসে খেলছে।আর নিশু খেলনা গুলো গুছিয়ে রাখছে।

নিশু -আবির! চলো এখন পড়তে বসবে।তোমার বাবাই এসে যদি দেখে তুমি পড়তে বসো নাই,পরে আর কোনো খেলনা কিনে দিবেনা।চলো আবির এখন আর কোনো খেলা নয়।আবিরকে কোলে নিয়ে দাঁড়াতেই কলিং বেল বেজে উঠলো।

নিশু -ওহ এখন আবার কে এলো?তুমি এখানে বসো আমি দেখছি।

আবির -মা! বাবাই আসছে।আমি দরজা খুলবো।বলেই কোল থেকে নেমে গেলো।

নিশু -আচ্ছা বাবা,তুমি দরজাটা খুলো।আমি ওই রুম থেকে আসছি।

_মা! মা!দেখ আমার জন্য কি এনেছে? কথা বলতে আবির নিশুর কাছে এলো।
নিশু তাকিয়ে দেখে অনেক গুলো খেলনা,চকলেট, আরো অনেক কিছু।

নিশু-তোমার বাবার তো কোনো কাজ নাই,তোমাকে আদর দিয়ে দিয়ে মাথায় তুলতেছে।আজকে ওর একদিন কি আমার একদিন।
কই তোমার বাবাই কই? শিহাব!! শিহাব! তুমি এতো কিছু কেন***-। কিছুক্ষণ অনিকের দিকে তাকিয়ে একি আপনি? সরি আমি ভাবছিলাম শিহাব।কিন্তু আপনি ওর জন্য এতো কিছু কেন এনেছেন?

অনিক -ওর জন্য আনবোনা তো কার জন্য আনবো?এতো তোমার সমস্যা কথায়?দেখচ্ছি অনেক ভালোই আছো?

নিশু -ভালোতো আছি।কিন্তু ওর জন্য আপনি কেন আনবেন? ওর বাবাই ওর জন্য অনেক খেলনা আনে।আপনার এইগুলো না আনলে খুশী হতাম।

__এমন সময় শিহাব বাহিরে থেকে এসে দেখে দরজা খোলা,অনিক বসে আছে আর নিশু দাঁড়িয়ে কথা বলছে।শিহাব ভিতরে না গিয়ে দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে দুজনের কথা শুনছে।

অনিক-সত্যি কি শিহাব আবিরে বাবা?

নিশু-(নিশু অবাক হয়ে)আপনি কি বলতে চাইছেন? আর হ্যা শিহাবই আবিরের বাবা।

অনিক-তোমার আর শিহাবের বিয়ের ৩ বছর চলে,কিন্তু আবিরের ৫ বছর কিভাবে?নিশু! আমি জেনে গেছি আবির আমার ছেলে।

_কথাটা শুনেই শিহাবের মনে হলো কেউ তাকে ধাক্কা দিয়ে পেলে দিয়েছে।মনে মনে ভাবছে এই হতেই পারেনা। আবির আমার ছেলে।আমি ওর বাবা,আমি ওর সব।

নাশু -না! (চিৎকার দিয়ে)শিহাব আবিরের বাবা।আপনি কি চান বলেনতো? আপনি কেন আমার জীবনে ফিরে এসেছেন? আমি তো সব কিছু ছেড়ে চলেই এসেছি।আপনার পরিবার এখন অনেক ভালো আছে।এর চেয়ে ভালো আপনি বিয়ে করে নতুন করে জীবন শুরু করেন।আমদেরকে শান্তিতে থাকতে দেন।

অনিক-আমি এখন কিছুই চাই না।শুধু আমার ছেলেকে চাই।তুমি আর শিহাব ভালো থাকো,কিন্তু আমার ছেলেকে আমাকে দিয়ে দাও।আমি ওকে নিয়ে দেশের বাহিরে চলে যাবো।

নিশু -আপনি পাগল হয়ে গেছেন।আমি মা হয়ে ওকে রেখে থাকতে পারবো? শিবাব ওকে ছাড়া মরেই যাবে।প্লিজ আপনি চলে যান,আর কখনো আসবেননা।

__শিহাব কিছু না বলে ভিতরে এসে বললো,আরে অনিক তুই কখন এলি?কেমন আছিস বল?শিহাব এমন ভাবে কথা বলছে মনে হচ্ছে ও কিছু শুনেই নাই।

নিশু -শিহাব! আগে ফ্রেশ হয়ে নাও। পরে দুজনে একসাথে বসে গল্প করো।

আবির দৌড়ে এসে শিহাবের কোলে উঠে গেলো।

আবির -বাবাই তুমি এসে গেছো।দেখো আংকেল আমার জন্য কতো খেলনা এনেছে।

শিহাব -তাই!আংকেলকে thanks বলছো।কথাটা বলেই আবিরকে আদর করলো শিহাব।

অনিক -আমাকে thanks বলার দরকার নাই।এইগুলো ওরেই প্রাপ্য।জানিস শিহাব আমাদের জীবনে এমন অনেক জিনিস আছে যা নিজের তুবুও নিজের বলে দাবি করতে পারিনা।নিজের জিনিস গুলো নিয়ে নিজেরা সুখী থাকতে পারেনা।কিন্তু অন্যরা ঠিকি সুখি হয়।
__নিশু কথা ঘুরানোর জন্য শিহাব তুমি এখনো দাঁড়িয়ে থাকবে? যাও ফ্রেশ হয়ে আসো।

শিহাব -(বুজতে পেরে) ওকে জান।অনিক তুই একটু বস এখুনি আসছি।

শিহাব চলে যাওয়ার পরে নিশু অনিকের দিকে তাকিয়ে বললো আপনাকে বললাম না উল্টাপাল্টা কোনো কথা বলবেন না।শিহাব অনেক সহজ সরল।এমন কিছু করবেন না যাতে শিহাব কষ্ট পায়।

অনিক -কিছু আমি বলতে চাই না। আমি শুধু আমার ছেলেকে ফেরত চাই।তুমি বলো আমার সামনে আমার ছেলে অন্য কাউকে বাবা বলে ডাকছে এইটা আমি কিভাবে সহ্য করবো?

নিশু -আমি কিছু বুজতে চাইনা,আমি শুধু বুজি শিহাবই ওর বাবা।শিহাবই ওর সব।

শিহাব ফ্রেশ হয়ে এসে বললো নিশু ক্ষুদা লাগছে।আমাদের খেতে দাও।
নিশু টেবিলে একে একে সব খাবার এনে রাখলো।অনিক খাবার গুলো দেখে অবাক হয়ে নিশুর দিকে তাকিয়ে আছে।

শিহাব -আরে আমার বউয়ে দিকে এইভাবে কি দেখছিস,তোর নজর লেগে যাবে।

অনিক-নজর লাগার জন্য দেখছি না।আমি ভাবছি তোর বউ কিভাবে জানলো আমার প্রিয় খাবার এইগুলো।

শিহাব -এতোকথা না ভেবেই খাবার শুরু কর।আমার বউরে হাতের রান্না খেয়ে দেখ সারা জীবন মনে থাকবে।নিশু অনেক ভালো রান্না করে।

অনিক আর কিছু না বলে চুপচাপ খেয়ে নিলো।মনে মনে ভাবতেছে রান্নার দরকার হবে না এমনেতেই সারা জীবন ভুলতে পারবোনা।আর আমার ছেলেকেতো নয়।যেই করেই হক আমি আমার ছেলেকে আমার কাছে নিয়ে যাবো।

শিহাব -এতো কি ভাবছিস তুই বলতো?

অনিক-কিছুনা,আজ তাহলে আসি।তোর সাথে এখন আমার বার বার দেখা হবে।

নিশু কিছু না বলেই আবিরকে নিয়ে রুমে চলে আসলো।শিহাব অনিককে বিদায় দিয়ে রুমে এসে দেখে নিশু আবিরকে ঘুমা পাড়াচ্ছে।কিছু না বলে নিশুর পাশে এসে বসলো।একনাগাড়ে আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে শিহাব। যেন চোখের পলক ফিরাতে মন চাইছেনা।আবিরকে একটু আদর করতে ইচ্ছে করছে।শিহাব আবিরে কাছে গিয়ে কপালে একটা চুমো দিয়ে দিলো।

নিশু -শিহাব কি করছো তুমি? আবির জেগে যাবেতো।

শিহাব -কি করবো বলো? মনে হচ্ছে কেউ আমার কাছ থেকে আমার ছেলেটাকে আলাদা করার চেষ্টা করছে।নিশু “” আমি তো আবিরকে ছাড়া থাকতে পারবোনা,আমি আমার থেকেও তোমাদের বেশী ভালোবাসি।
নিশু!তোমার মনে আছে? যেই দিন আমি তোমাকে প্রথম দেখে ছিলাম,তখন তুমি pregnant ছিলে।ডেলিভারি করানোর জন্য hospital গিয়েছিলে।তখন ব্লাডের জন্য তোমার বাবা পাগলের মতো হয়েগেছিলো কোথাও ব্লাড পাওয়া যাচ্ছিলোনা শুনে।সেইদিন আমিও আমার এক ফ্রেন্ড সহ এসেছিলাম তার মাকে দেখার জন্য।তার পর তোমার বাবাকে পাগলের মতো করতে দেখে আমি জিজ্ঞাস করলাম কি হয়েছে ওনার।তারপর ওনি সব খুলে বললেন,ভাগ্যে ভালো যে আমার সেই ফ্রেন্ড তোমাকে ব্লাড দিয়ে বাঁচিয়ে ছিলো।

চলবে,,,,,,,,,

পুরোন_ভালবাসা   পার্ট: ১৪

0

পুরোন_ভালবাসা

পার্ট: ১৪

#Rabeya Sultana Nipa

_দরজা ধাক্কানো শব্দ শুনে নিশু ভাবনা থেকে বেরিয়ে এলো।তাড়াতাড়ি ওঠে দরজা খুলে দিলো।
শিহাব দাঁড়িয়ে আছে নিশুর দিকে তাকিয়ে।

শিহাব -ভাবনা চিন্তা সব শেষ হলো?দুপুরের পরথেকে অনেক ভাবা হয়েছে, আর ভাবতে হবে না।।এখন খাবে চলো,রাত অনেক হয়েছে।

নিশু -শিহাব! তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবে নাতো?
শিহাব -আবির আর তুমিই আমার জীবনের সব।তোমাদের ছাড়া আমি কোথায় যাবো বলোতো?
অনেক কথা হয়েছে,দুপুর থেকে কিছুই খাওনি,এখন অনেক রাত হয়েছে, তুমি বসো আমি খাবারটা নিয়ে আসি।
__বলেই শিহাব রুম থেকে বাহিরে গেলো খাবার আনতে।নিশু শিহাবের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলছে।কিভাবে সব কিছু এতো সহজে মেনে নেয় শিহাব!আমি কেন পারিনা,আমাকে কেনো পুরোনো স্মৃতি গুলো কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে!
শিহাব খাবার নিয়ে রুমে এসে নিশুর পাশে বসলো,
নিশু -আবির কি ঘুমিয়ে গেছে?
শিহাব -হ্যা,আবির কে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে মায়ের কাছে রেখে আসছি।এখন আর কোনো কথা নয়,চুপ করে বসো আমি তোমাকে খাইয়ে দি!

নিশু -তুমি এই রকম কেন, বলোতো? সব কিছু বুজেও না বুজার ভাণ করে থাকো।

শিহাব -আমি ঠিকই আছি।আমি চাই না পুরোনো কোনো স্মৃতি এসে আমাদের জীবনটা তসনস হয়ে যাক।আমি চাই তুমি আর আবির সব সময় ভালো থাকো।একটা কথা সব সময় মনে রাখবে, নিজের জীবনটা নিজের মনের মতোন করে গড়ে তুলবে।তাহলেই তুমি সফল।

নিশু-অনেক জ্ঞান দিয়েছো।কলেজে স্টুডেন্টদের জ্ঞান দিতে দিতে এখন বউকেও জ্ঞান দেওয়া শুরু হয়েছে গেছে।আমার জন্যতো খাবার আনলে নিজে খেয়েছো?
শিহাব-না,আমি পরে খাবো তুমি আগে খাও।
নিশু -একদম চুপ! (ধমক দিয়ে)আমি জানি পরে তুমি খাবেনা,এখন একসাথেই খাবো।না হলে আমি খাবো না।
শিহাব -ঠিক আছে।আর রাগ দেখাতে হবেনা।এইবার তো খাও।
_দুজনেই খাওয়া শেষ করে শুয়ে পড়লো,নিশু ভাবছে অনিকের কথা কি শিহাব কে বলবে।না থাক এতে শিহাবের কষ্ট হবে,পরে না হয় বলবো।
এমন সময় শিহাবে ফোনটা বেজে উঠলো।

নিশু -কে ফোন করেছে, এতো রাতে?
শিহাব -নাম্বারটা চিনি না,কথা বলে দেখি।

__শিহাব ফোনটা রিসিভ করার সাথে সাথে ফোনে ওপাশ থেকে অনিক বললো।
অনিক -এতো রাতে ফোন করে কি ডিস্টার্ব করলাম নাকি শিহাব?
শিহাব -আরে অনিক তুই!আসলে বুজতে পারিনি।
কেমন আছিস বল?
__অনিকের কথা শুনে নিশু উঠে বসে পড়লো।শিহাব চোখে ইশারা দিলো শোয়ার জন্য।
অনিক -এইতো ভালো।তুইতো ভালোই আছিস তাইনা?
তোর ছেলেটা কেমন আছে বলতো?ওকে দেখেই কেন যেন মায়ায় পড়ে গেলাম।
শিহাব-হ্যা ভালোই আছে। কিন্তু তুই দেশে ফিরলি কবে?
অনিক – ৪/৫ দিন হইছে,তোর বউ কেমন আছে? নিশ্চয় ঘুমিয়ে পড়েছে?
শিহাব -ভালোই আছে।এখনো ঘুমায় নাই।আজকে ওর সাথে তো তোর কথাই হয় নাই।এক কাজ কর,বাসায় আয়।
অনিক -হ্যা ভাবছিলাম তোর ছেলেটাকে দেখতে যাবো।আচ্ছা আসলে তোকে ফোন দিবো,তাহলে এখন রাখি,ভালো থাকিস।
শিহাব -আচ্ছা ঠিক আছে।বলে ফোনটা রেখে দিলো।
__অনিক শুয়ে শুয়ে ভাবতে থাকলো।আমি যতটুকো জানি নিশুর বিয়ে হয়েছে ৩ বছর,আবিরকে দেখে তো ৪/৫ বছর মনে হয়।কিন্তু কিভাবে?আবির তাহলে শিহাবের ছেলে নয়।আমাকে জানতে হবে আবির কার ছেলে।আচ্ছা নিশু আমার কাছ থেকে যাওয়ার কয়েক দিন আগে থেকে অসুস্থ ছিলো।আনিকার সাথে ডাক্তারের কাছে পাঠালাম।তখন কি সেই pregnant ছিলো? ওহঃ আমার এই রকম লাগছে কেন? আচ্ছা নিশু সেই দিনের রিপট গুলোতে কি ছিলো?আনিকা যাওয়ার পর থেকে এখনো ওর সাথে যোগাযোগ করি।নাই।আমার মনে হয় আনিকাই বলতে পারবে।সেই দিন রিপটে কি ছিলো।আনিকার বাসায় কাল একবার যাবো? সেইদিনের ব্যাপারে জানতে হলে আনিকার বাসায় যেতেই হবে।অনিক মনে হাজারটা প্রশ্ন নিয়ে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লো খেয়াল নেই।
সকাল বেলা রেহানা বেগমের ডাকে ঘুম ভেঙে গেলো।
রেহানা বেগম -ঘুমাইয়া ঘুমাইয়া ৫ বছর পার করলি আর কতো ঘুমাবি, উঠ নাস্তা করেনে।আর শুন তোর বাবা তোর জন্য একটা মেয়ে দেখেছে।অনেক ভালো ঘরের মেয়ে,দেখতেই সুন্দর। এইবার তো বিয়েটা করে ফেল।
অনিক -মা! নিশুও তো ভালো ঘরের মেয়ে ছিলো,দেখতেও সুন্দর ছিলো।কিন্তু তোমাদের ভালো লাগে নাই,এখন কি করে ভাবলে আমি তোমাদের পছন্দ করা মেয়ে বিয়ে করবো? আর কতবার বলবো আমি বিয়ে করবোনা।আর ওই রুমে কোনো মেয়ের থাকার অধিকার নাই।যেই রুমে আমার নিশুর ছোঁয়া আছে সেই রুমে কাউকে থাকতে দিবোনা।কথা গুলো বলেই অনিক ফ্রেস হতে গেলো।
__রেহানা বেগম ছেলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ভাবলো,ও কি এইরকমভাবেই থেকে যাবে
সত্যি তো নিশু যাওয়ার পরে রুমে তালা দিয়ে রাখছে আজও খুলতে দেয়নি।
বাহিরে যাওয়ার সময়ও চাবিটা নিয়ে গেছে।
অনিকের বাবা পেপার পড়তে পড়তে রেহানা বেগমের কাছে গিয়ে বসলো।
অনিকের বাবা-এখন আর ভাবে লাভ কি? তোমার জন্যই আজ আমি সব হারিয়েছি।ছেলেটা তো এতোদিন বাহিরে ছিলো,এখন এসেও না আসার মতো। মেয়েটাও যে গেলো আর এই বাড়িতে ফিরে আসে নাই।
রেহানা বেগম-আমি তো ওদের ভালোই চেয়েছিলাম।

__অনিক রেডি হয়ে আনিকার বাড়িতে যাবে বলে বাহির হচ্ছে।পিছন থেকে রেহানা বেগম বললো
তুই কি কোথাও যাচ্ছিস?
অনিক-হ্যা,নিজের ভুল গুলো শুধরাইতে যাচ্ছি।বলেই অনিক চলে গেলো।
_আনিকা দরজা খুলেই অনিককে দেখেই অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
অনিক -কিরে দরজায় এইভাবে দাঁড়করিয়ে রাখবি,ভেতরে যেতে দিবিনা।
আনিকা অনিককে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে
ভাইয়া এতো দিন পর তোর আমার কথা মনে হলো? আমার জন্য তোর জীবনটাও শেষে হয়ে গেল।
অনিক-এখন এই গুলো বাদ।সবাই কোথায় আজ তোদের সাথে থাকবো বলে চলে আসলাম।
__অনিক সবার সাথে খাওয়া দাওয়া শেষ করে আনিকাকে বললো তোর সাথে আমার একটু কথা ছিলো।
আনিকা -হ্যা। বলনা কি কথা?
অনিক -তুই যে দিন নিশুকে নিয়ে ডাক্তার কাছে গেছিস সেই দিন ডাক্তার নিশুকে কি বলে ছিলো?
আনিকা -মানে? তুই এই কথা এখন বলছিস। তুই জানিস না? সেই দিন ডাক্তার বলে ছিলো ভাবী pregnant। ভাবী আমাকে বলেছিলো আমি যেন বাসায় এসে না বলি,তোর জন্মদিনে সবাইকে সারপ্রাইজ দিবে বলে আমাকে বলতে দেয়নি।তারপর আমিও চলে এলাম,শুনলাম মা নাকি সেইদিন রাতেই নিশুকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে।আচ্ছা ভাইয়া ভাবীর এখন কি অবস্থা তুই কি কিছু জানিস? তোর ছেলে বেবি হইছে নাকি মেয়ে?
__আনিকা কথা গুলো বলছে ঠিকে কিন্তু অনিকের মন আবিরে কথায় বার বার ভাবছে,তাহলে আবির আমার ছেলে!….

চলবে,,,,,,

পুরোনো_ভালবাসা   পার্ট:১৩

0

পুরোনো_ভালবাসা

পার্ট:১৩

#Rabeya Sultana Nipa

 

__সকাল বেলা রেহানা বেগমের চিৎকার চেঁচামেচিতে অনিক আর নিশু দৌড়ে এলো।
অনিক -মা! কি হয়েছে এইভাবে চেঁচামেচি করছো কেন?
রেহানা বেগম -তুই আমার ছেলে হয়ে এই কথা বলতে পারলি।চেঁচামেচি কি আমি সাধে করছি।তোর বোন ঘরে নাই।সকাল থেকে পুরো বাড়ী খুঁজেছি ও কথাও নাই।একটু পর আমাদের সবার গেস্ট চলে আসবে। তখন সবার কাছে কি বলবো।

অনিক -মা! তুমি চিন্তা করোনা হয়তো ওর কোনো বন্ধুকে আনতে গেছে।

রেহানা বেগম-আমি ওর সব ফ্রেন্ডকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাস করেছি।কারো বাসায় যায়নি।

__নিশুর আর বুজার বাকী রইলো না।আনিকা হয়তো রাফির ভাইয়া সাথে পালিয়ে গেছে।রাতে আনিকা তাহলে এই জন্যই কথা গুলো বলেছে।এখন আমি কিভাবে সাবাইকে বলবো আনিকা রাফি ভাইয়ার সাথে গেছে।
অনিক নিশুর দিকে তাকিয়ে বললো এইদিকে আসো তোমার সাথে কথা আছে।

নিশুর হাত ধরে টানতে টানতে রুমে নিয়ে এলো।
নিশু-অনিক তুমি এইরকম করছো কেন? আমি কি করলাম?
অনিক -সত্যি করে বলো আনিকা কোথায়?আমার মনে হয় তুমি সব কিছু জানো।নিশু প্লিজ আমাকে তুমি কিছু জানলে বলো।আমি সব সামলিয়ে নিব।

নিশু – অনিক! আমি জানি আনিকা কার সাথে গেছে।আমি তোমাদের আগেই বুজাতে চেয়েছিলাম তোমরা আমার কথা শুনো নাই।

অনিক -নিশু তুমি জানতে?
নিশু -আমি জানতাম ও একজন কে ভালোবাসে কিন্তু পালিয়ে যাবে তাতো জানতাম না।
অনিক -ছেলেটার নাম কি?
নিশু -,,,,,

অনিক -নিশু চুপ করে থেকো না।এখন চুপ হয়ে থাকার সময় নয়।প্লিজ নিশু বলো কে সেই ছেলে? মা যদি জানতে পারে তুমি সব জানো তাহলে তুমি বুজতে পারছো আমাদের কি হবে?তোমার কোনো আইডিয়া আছে?

নিশু-বিশ্বাস করো আমি জানতাম না সে পালিয়ে যাবে।নিশু কান্না করতে করতে কথা গুলো বলতে শুরু করলো।ও তো তোমাকে রাতে বলেছে ওর কোনো আপত্তি নাই।আমি ভাবলাম হয়তো সব ঠিক হয়ে গেছে।
এমন সময় রেহানা বেগম এসে বললো তার মানে তুমি জানো আমার মেয়ে কোথায় গেছে?

অনিক -মা! তুমি ভুল বুজতেছো নিশু কি করে জানবে আনিকা কোথায় গেছে।আনিকা কি ওর কাছে বলে গেছে নাকি।

রেহানা বেগম -আমার ভাবিতেও অবাক লাগে তোর বউ এতো বড় একটা অন্যায় করেছে।আর তুই তোর বউয়ের পক্ষনিয়ে কথা বলছিস।বোনের থেকে বউই তোর কাছে সব।তোর বউয়ের জন্য আজকে আমাদের মানসম্মান কিছু থাকবে?

নিশু -মা! আমি আপনাকে কিছু বলতে চাই,,,,,(কথাটা বলতে বলতে নিশু অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল।)

__অনিক তাড়াতাড়ি করে নিশুকে ধরে খাটে নিয়ে শোয়ালো।অনিক মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো মা! আমরা এইসব নিয়ে পরে কথা বলবো। তুমি নিশুর পাশে বসো আমি পানি ডাক্তার কে ফোন দিচ্ছি।আর আমি ছেলে পক্ষকেও মানা করে দিচ্ছি আজকে না আসার জন্য।
রেহানা বেগম -এই মেয়ে আর কি কি নাটক করবে আল্লাই ভালো জানে।

__ডাক্তার এসে নিশুকে দেখে গেছে। সেই সকালে জ্ঞান হারিয়েছে, এখন তো রাত কম হলোনা।
অনিক -মা! ডাক্তার কে আরেকবার ফোন দিবো?
রেহানা বেগম -তোর মনে নাই ডাক্তার কি বলেছে,জ্ঞান ফেরতে দেরি হতে পারে।আমাকে তুই একটা কথা বলতো ও কি নিয়ে এতো চিন্তা করে?
রাত ১২ টায় নিশুর জ্ঞান ফিরলো।সবাই বসে আছে।অনিক তার পাশেই বসে আছে।নিশু অনিকের হাত ধরে উঠে বসলো।
নিশু-মা! আনিকা বাড়ি ফিরেছে?

অনিক -নিশু তুমি এখন এইগুলো বাধ দাও।তোমার শরীর এখন ভালো নাই।
রেহানা বেগম -আমি শুনতে চাই আমার মেয়ে কথায়।অনেক নাটক হইছে সকাল থেকে।এখন বলো আনিকা কথায়।

নিশু-আনিকা রাফি ভাইয়ার সাথে গেছে।ওরা একে উপরকে ভালোবাসে।আমি আনিকাকে বলেছিলাম আপনাদেরকে বলার জন্য।আনিকা আমাকেও নিষেধ করেছে আপনাদেরকে কিছু না বলার।

রেহানা বেগম-তুমি তো আমাদেরকে বলবেইনা কারণ তুমি এটাই চেয়েছিলে।আমার মেয়ে এই বাড়ি থেকে চলে যাক,তাহলে তোমার সুবিধা হবে। আমি এইটা কোনো দিন হতে দিবনা। অনিক! আমার মেয়ে যেই বাড়িতে থাকতে পারবেনা সেই বাড়িতে এই মেয়েও থাকতে পারবেনা।

অনিক-মা!! তুমি পাগল হয়ে গেছো এতে নিশুর কি দোষ? আর আমি কখনওই নিশুকে ছাড়তে পারবোনা।
বাবা তুমি মাকে বুজাও না।মা তুমি ঠাণ্ডা মাথায় একবার ভেবে দেখো এতে নিশুর কোনো দোষ নেই।
অনেকের বাবা -আমি কি বলবো বল।তোর মাকে আমি বুজাতে পারবোনা।

রেহানা বেগম -আমাকে কেউ বুজানো লাগবেনা।আজ যদি এই মেয়ে এই বাড়ি থেকে চিরজীবনের জন্য বিদায় না হয়। তাহলে মরা মুখ দেখবি।

অনিক -মা! নিশু এতো রাতে কোথায় যাবে?তুমি আমার মা,আর নিশু আমার স্ত্রী। আমি কাউকেই ছাড়তে পারবোনা।

রেহানা বেগম -আমি যা বলছি এটাই আমার শেষ কথা।
আমি এই মেয়ে যতক্ষণ এইবাড়িতে থাকেবে আমি এক গ্লাস পানিও খাবোনা।

নিশু -(কান্না করতে করতে)আপনি না খেয়ে থাকা লাগবেনা।আমি এখনি আমার বাবাকে ফোন দিচ্ছি আমাকে এসে নিয়ে যেতে।আজ থেকে আপনার ছেলে আপনারই রইলো।আমি কখনওই আমার অধিকার চাইতে আসবো না।অনেক তো চেষ্টা করলাম আপনার মেয়ে হয়ে থাকবো।আসলে কি জানেন? সাবার কপালে সব কিছু শয় না।

অনিক-নিশু তুমি এইসব কি বলছো? আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবোনা।আমার কথা না হয় বাদেই দিলাম তুমি কি ভাবে থাকবে?ঠিক আছে তোমাকে একা যেতে হবে না আমিও তোমার সাথে যাবো।যেখানে তোমার জায়গা হবেনা সেখানে আমিও থাকতে পারবোনা।

নিশু-আমি চাইনা তোমাদের মা ছেলের সম্পর্ক নষ্ট হক।
আমার জন্য তুমি অনেক কষ্টসহ্য করেছে এতোদিন।কথা গুলো বলেই নিশু তার বাবাকে ফোন দিয়েছে আসার জন্য।

__নিশুর ফোন পেয়ে নিশুর বাবা মা দুজনেই এসেছে।
নিশুর বাবা-আমার মেয়ে কি করেছে, অনিক?

অনিক -বাবা আপনি নিশুকে বুজান।আমার মায়ের এখন মাথা ঠিক নাই কি বলতে কি বলেছে এর জন্য ও বাড়ি ছেড়ে চলেযেতে চাইছে।
নিশুর বাবা-আমি তোমার মায়ের সাথে কথা বলতে চাই।

রেহানা বেগম -আমি আপনার সাথে কনো কথা বলতে চাই না।এসেছে এইবার মেয়েকে নিয়ে বিদায় হন।
নিশু-বাবা! আমি রেডি, আর কনো কথা বলার দরকার নাই।চলো!
অনিক -(নিশুকে জড়িয়ে)নিশু প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না।আমি মরেই যাবো।
নিশু-(অনিককে ছাড়িয়ে)তুমি ভালো থেকো,নিজের জীবনটা সুন্দর করে সাজিয়ে নিও,মায়ের খেয়াল রেখো,আমার সাথে আর যোগাযোগ করোনা।
__তোমাকে আর খুশির সংবাদটা জানাতে পারলাম না।আমি জানি কথাটা জানলে কিছুতেই আমাকে যেতে দিবে না,কিন্তু আমি তো চাইনা রোজরোজ আমাকে নিয়ে অশান্তি হক।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে নিশু তার বাবার হাত ধরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো।
এইদিকে অনিক কান্না জন্য নিশুকে ডাকতেও পারছেনা।নিশু তো যায়নি মনে হচ্ছে ওর সব কিছু শেষ হয়ে গেছে।অনিক তার মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো মা! এইবার তুমি খুশি হয়েছোতো?
রেহানা বেগম কিছু না বলে রুমে চলে গেলো।
_ সকাল বেলা অনিক আলমারি থেকে সব জামাকাপড় নিতে গিয়ে অনিক নিশুর রিপটা পেলো।রিপটা খুলতে যাবে এমন সময় ভাবলো এইটা দেখে আর লাভকি।সেইতো আমাকে ছেড়ে চলে গেছে।ও যখন আমার কথা একবারের জন্য ভাবলো না আমি ভেবে লাভকি।রিপটা আলমারিতে রেখেই জামাকাপড় গুলো নিয়ে ব্যাগে গুছাচ্ছে।
রেহানা বেগম ব্যাগ গুছানো দেখে বললো তুই কোথায় যাচ্ছিস?
অনিক-এই বাসায় থাকলে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে।এই কয়েক দিন আমার এক ফ্রেন্ডের বাসায় থাকবো।তারপর বাহিরে চলে যাবো।
রেহান বেগম-তোর যা ভালো লাগে কর।নিজের জীবনটা নতুন করে শুরু কর।যাওয়ার আগে একবার আনিকাকে গিয়ে দেখে আসবি?
অনিক-যার জন্য আমি নিশুকে হারালাম তাকে আমি দেখতে যেতে পারবোনা। আমি আজ থেকে মনে করি আমার কোনো বোন নাই,আমি একাই।বলে অনিক চলে গেল।

চলবে,,,,,,,