Sunday, August 17, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2400



অজানা_অনুভূতি পার্ট: ১০

0

অজানা_অনুভূতি
পার্ট: ১০

#Rabeya Sultana Nipa

 

নীরার ঘটনার পর থেকে প্রাপ্তিকে প্রতিদিন কলেজে যেতে দেয় না।শুধু পরীক্ষা গুলো দিতে দেওয়া হয়।প্রাপ্তি বাসায় নিজেকে খুব একা একাই লাগে।নিজাফাও পড়া লেখা নিয়ে ব্যাস্ত থাকতে হয়।প্রাপ্তি বই পড়তে খুব ভালোবাসে বেশীর ভাগ সময় বই পড়েই কেটে যায় তার।
প্রাপ্তি! প্রাপ্তি! মেজো কাকার ডাকে ভাবনার জগত থেকে ফিরে এলো প্রাপ্তি।শব্দ টা মনে হলো ড্রইং রুম থেকেই আসছে।কাকার কাছে ড্রইং রুমে যেতেই বসো এই খানে।
প্রাপ্তিও কিছু না বলে বসে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।

মেজো কাকা -কি হলো নিচের দিকে না তাকিয়ে আমার দিকে তাকাও।

প্রাপ্তি বাধ্য মেয়ের মতো কাকাইয়ের দিকে তাকালো।

মেজো কাকা -তোমার কি মন খারাপ?

প্রাপ্তি -না।কেন ডেকেছো?

মেজো কাকা-ভাইয়া তো আজ আসতেছে।তুমি আনতে যাবেনা?

প্রাপ্তি -কাকাই আব্বু নতুন করে দেশে আসছে না।আব্বু যখনি আসে তুমি নয়তো ছোটো কাকাই যাও। আজ কেন আমি যাবো?

মেজো কাকা-তুই সাথে গেলে ভাইয়ার হয়তো ভালো লাগতো।

(প্রাপ্তি মনে মনে বলতে লাগলো, কেন নিতে চাইছো আমি কি বুজি না।আমাকে চোখে চোখে রাখার জন্য কতো যে কি বলবা আল্লাই ভালো জানে।)
প্রাপ্তির দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে কিরে কি ভাবছিস?

প্রাপ্তি -কিছুই ভাবছি না।আমার ভালো লাগছে না।আমি যাবোনা তোমরাই যাও।।

মেজো কাকা-ঠিক আছে।বাসা থেকে বের হওয়ার দরকার নাই।সাবধানে থাকিস।নীরার মতো এমন কিছু করিস না যাতে সাবার মনে কষ্ট হয়।তবে তোর প্রতি সবার সেই বিশ্বাস আছে তুই এমন কিছু করবি না যাতে এই পরিবারের সবার কষ্ট হয়।আচ্ছ এখন তাহলে আসি।

প্রাপ্তির মা,নীরার মা দাঁড়িয়ে এতোক্ষন কথা গুলো শুনছিলো।নীরাও পাশের রুম থেকে শুনছিলো।কথা গুলো শুনে নীরার একটু ও কষ্ট লাগেনাই।কষ্ট লেগেছে কথায় কথায় নীরার কথা বলে প্রাপ্তিকে বুজানো।
প্রাপ্তি এখনো সেই জাগায় বসে আছে আর ভাবছে সবাই তার প্রতি এতো বিশ্বাস এতো ভরসা। সেই এক নিমেষে ভাঙবে কি করে?
আয়ানের কথা সবাইকে বলবেই বা কি করে? একবার কাকাই মরতে মরতে বেঁচে গেলো।এখন আবার একটা ধাক্কা সামলাতে পারবেনা।কি করবো আমি?

প্রাপ্তির মা মেয়েকে চুপ থাকতে দেখে,
কিরে কিভাবছিস?
প্রাপ্তি,,,,
(এইবার জোরে ডাক দিয়ে)এই প্রাপ্তি কি চিন্তা করছিস তুই এতো মন দিয়ে?

প্রাপ্তি -(চমকে উঠে) এতো চেঁচাচ্ছ কেনো?কি বলবে আস্তে বলতে পারো না?

প্রাপ্তির মা -(অবাক হয়ে)কি হয়েছে তোর এইভাবে কথা বলছিস কেন?

প্রাপ্তি -কিছু হয়নি বলে উঠে রুমে চলে গেলো।

কি করবে সে, এই লোক গুলোকে আবার ঠকানো হচ্ছে।আর সে লোকটাই আমি। কিন্তু আমি তো আয়ানকেও ছাড়তে পারবো না।আমি ছেলেটাকে এতোটাই ভালোবাসি ওকে ছেড়ে যাবো কি করে।কাকে বলবো আয়ানের কথা গুলো।যাকেই বলিনা কেন কেউই আমার কথা শুনবে না।আর আমি বলবোই বা কি করে।কতো বিশ্বাস করে এই মানুষ গুলো আমাকে।প্রাপ্তি কথা গুলো ভাবছে আর কান্না করছে।একটু পর নীরা এসে প্রাপ্তির সামনে বসে প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে
নীরা -কান্না করছিস? কষ্ট লাগছে তাইনা?এইবার ভাবে দেখ আমার কতোটা কষ্ট সেই দিন হয়ে ছিলো যেই দিন আব্বু আমায় ৭ দিনের সময় দিয়ে ছিলো।প্রাপ্তি কান্না করে কোনো লাভ নাই। এরা কেউ বুজবেনা।এরা কেউ বুজবেনা তোর এই কান্নার মাঝে কতোটা কষ্ট লুকিয়ে আছে।

প্রাপ্তি -বাধ দে। কষ্ট হবে কেন আমার। আমি ঠিকি আছি।

নীরা -কার কাছথেকে আড়াল করছিস, আমার কাছথেকে?তুই ভালো করেই জানিস তুই কিছু আমাকে বলা লাগেনা আমি বুজি আমার এই বোনটার কি হয় না হয়।আচ্ছা তোকে কিছু বলতে হবে না।এখন চল বাহিরে থেকে ঘুরে আসি।

প্রাপ্তি-আমি যেতে পারবোনা। কাকাই যাওয়ার সময় বলে গেছে আমি যেন কোথাও না যাই।এখন এসে যদি শুনে আমি বাহিরে গেছি তাহলে রেগে যাবে তোর উপর।বলবে তুই আমাকে নিয়ে গেছিস।

নীরা -হুম ঠিক বলেছিস। আচ্ছা প্রাপ্তি! ফারহান কে তোর কেমন লাগে?

প্রাপ্তি -হঠাৎ এইকথা?

নীরা -আমি বলতে চাইছি ফারহান বর হিসেবে কেমন হবে?

প্রাপ্তি -নীরা কি থেকে কি বলছিস নিজে জানিস।ও বিয়ে করার পর ওর বউকে গিয়ে জিজ্ঞাস করিস আপনার বরটা কেমন?আমাকে কেন জিজ্ঞাস করছিস?

নীরা -ঠিক আছে বিয়ের পর না হয় জিজ্ঞাস করবো।একটা কথা বলবো?

প্রাপ্তি -কি বল?

নীরা-কয়েক টা ছবি ছাড়া তুই তো আয়ানকে দেখিস নি তাই না?

প্রাপ্তি -তাতে কি হয়েছে? ভালোবাসা তাতে কমে যায়না।বরং দূরথেকে ভালোবাসা গাঢ় হয়,পবিত্র থাকে।এখন এইগুলো বাধ দিয়ে কি বলতে চাইছিস সেটা বল?

নীরা -না কিছু না এমনি বললাম আরকি।

নীরা কিছু বলতে গিয়েও বললোনা।প্রাপ্তি মন খারাপ হবে ভেবে।
সন্ধ্যায় প্রাপ্তি বাবা বাসায় এসে পৌঁছে গেছে। সবাই অনেক খুশী।

প্রাপ্তির বাবা-এইবার অনেক দিন পরে সবাইকে দেখলান।সবাই অনেক বড় হয়ে গেছে।

মেজো কাকী -ভাইয়া! ১ বছরে কেউ অনেক বড় হয়ে যায় না।

প্রাপ্তির বাবা -কি বলছো হয়নি।এক মেয়ের বিয়ে দেওয়া হয়েছে আরেক মেয়ের বিয়ে দিবো। কিন্তু নীরা কোথায় সবাই এইখানে আছে নীরা নেই কেন?

প্রাপ্তি-আব্বু নীরা মনে হয় লজ্জা পাচ্ছে তাই আসছেনা।

নীরা আসতে আসতে প্রাপ্তি আমি একটু লজ্জা পাচ্ছিনা।আমি বড় আব্বু সামনে আসবো লজ্জা পাওয়ার কি আছে।মৃদুল এসেও সালাম করলো।

প্রাপ্তির বাবা -আজ আমার সত্যি অনেক ভালোলাগছে।সবাইকে একসাথে দেখে।তবে একজন নাই এইখানে।

সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে কথাটা শুনে।প্রাপ্তির মেজো কাকা বললো আমি বুজতে পেরেছি কি বলতে চাইছে।
ইমারান! ফারহান কে ফোন দাও কাল সকালে যেন চলে আসে।

প্রাপ্তি -কাকাই ও আমাদের ফ্যামিলির একজন হলো কিভাবে? আমরা সবাইতো এইখানেই আছি।

মেজো কাকা-এখনো পুরোপুরি ভাবে হয়নি।তবে কিছু দিনের মধ্য হবে।ভাইয়া তুই ফ্রেশ হয়ে আয় আজ অনেক দিন পর সবাই এক সাথে আড্ডা দিবো।
সেজো বউ! নাস্তা রেডি করো ভাইয়াও ফ্রেশ হয়ে আসুক।

প্রাপ্তি নীরা কাছে গিয়ে, কিছুই বুজলাম না আমি ফারহান আমাদের ফ্যামিলির একজন হলো কিভাবে বলতো?

চলবে,,,,,,,,

অজানা_অনুভূতি পার্ট: ৯

0

অজানা_অনুভূতি

পার্ট: ৯

#Rabeya Sultana Nipa

 

সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই প্রাপ্তি ফারহানের রুমে গিয়ে দেখে ফারহান নাই।
ফারহান কে না দেখে প্রাপ্তি ভাবতে লাগলো ও কি আমায় না বলেই চলে গেলো।

ফারহানের রুম থেকে বের হয়ে
সেজো কাকী! সেজো কাকী! কোথায় তুমি?

সেজো কাকী -(রান্না ঘর থেকে দৌঁড়ে এসে)
কি হয়েছে তোর এইভাবে ডাকছিস কেন?

প্রাপ্তি -ফারহান কোথায় কাকী? ও কি চলে গেছে?

সেজো কাকী -হ্যা ভোরে চলে গেছে।তুই ঘুমাচ্ছিলি তাই তোকে ডাকেনি।ব্যাপার কি প্রাপ্তি? মিস করছিস নাকি?

প্রাপ্তি -কাকী তুমিও না। আমি ওকে মিস করতে যাবো কেন?জানো ফারহান নাকি একটা মেয়েকে ভালোবাসে তাই জানতে আসলাম মেয়েটা কে? তুমি জানো কিছু?

সেজো কাকী -জানিতো এইটা তো সবাই জানে মেয়েটা কে।

প্রাপ্তি -কিহ,,,সবাই জানে আর আমি জানিনা।ঠিক আছে আমি আর জানতে চাইনা।ও আমার সাথে সব শেয়ার করে আর তার জিবনের important জিনিসটাই আমার কাছে শেয়ার করলো না।আজ থেকে ওর সাথে আমার কোনো কথা নাই।থাকুক সে তার মতো করে।এতো দিন আমি ভাবেছিলাম ফারহান যা কিছু হক আমার কাছে আগে বলে। এখন দেখি তার উল্টো।

বাসায় এতো বড় একটা মাছি আছে এতো দিন জানতাম নাতো।প্রাপ্তি তার মেজো কাকার কথা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।

সেজো কাকী -ভাইয়া! মাছি কোথায় দেখলেন?

মেজো কাকা -সেজো বউ! তুমিও না যাও চা নিয়ে আসো।আর শুনো প্রাপ্তি যেই ভাবে ঘন ঘন করছিলো তাই বলছিলাম।

সেজো কাকী হাসতে হাসতে চলে গেলো।

প্রাপ্তি -কাকাই আমি মাছির মতো ঘন ঘন করি?তুমি আমাকে মাছি বলতে পারলে?

মেজো কাকা -এই যাহ্‌ তোকে মাছি বললাম কখন?আমি মাছি বলছি যে ঘন ঘন করে তাকে।আমাদের প্রাপ্তি কখনোই ঘন ঘন করেনা।

একে একে সবাই এসে নাস্তা খেতে বসেছে।
প্রাপ্তিকে তার মা সকাল সকাল দেখে

প্রাপ্তির মা -ব্যাপার কি?সূর্য আজ কোণ দিকে উঠলো?

নীরা -বড় মা কি হয়েছে? এই কথা কেন বলছো?

প্রাপ্তির মা-প্রাপ্তিকে আজ না ডাকতেই ডাইনিং টেবিলে তাই।

সেজো কাকী -ভাবী! ফারহানকে খুঁজতে এসেছিলো।তাই সকাল সকাল না ডাকতেই এইখানে।

মেজো কাকা -আচ্ছা সবাই শুনো।কাল বড় ভাইয়া আসছে।আমাকে রাতে ফোন দিয়ে বলেছে। তাই আমি তোমাদের জানাতে পারিনি।নীরাদের তো আজকে যাওয়ার কথা।কিন্তু আজ আর যাওয়া হবে না।

প্রাপ্তি -আব্বু আসছে। কই আমাকে তো কিছু বলে নাই।

মেজো কাকা -কাল রাতে ঠিক করেছে তাই হয়তো তোদের জানাতে পারেনি।

প্রাপ্তি -মা! তুমিও জানো না?ও এখন তো সবাই অনেক কিছু জানে শুধু আমি ছাড়া।

প্রাপ্তির মা-আমি সত্যিই জানিনা।জানলে আমি সবাই আগেই বলতাম।হতো তোর আব্বু তোদের সারপ্রাইজ দিতে চাইছে তাই বলেনি।

মৃদুল -(নীরার বাবার দিকে তাকিয়ে)কিন্তু বাবা আমাদের তো আজকে যেতে হবে।মা সকাল বেলাও ফোন করেছে আজকে যেন চলে যাই।

মেজো কাকা-চিন্তা করোনা আমি তোমার মাকে ফোন দিয়ে বলে দিবো।

প্রাপ্তি মন খারাপ করে উঠে চলে গেলো।
রুমে গিয়ে আয়ান কে ফোন দিলো। আয়ানের ফোনে রিং হচ্ছে। কিন্তু আয়ান্নম? রিসিভ করছেনা।কাল রাতে সকালে ফোন দিবে বলে আর কথা বলেনি।তাই হয়তো রাগ করেছে ভেবে প্রাপ্তি আবার ফোন দিলো।এইবার আয়ান ফোন ধরেই

আয়ান -নিজেকে কি মনে করো তুমি?ফোন দিচ্ছো কেন আমাকে? তোমার ফারহান আছে না তার সাথে কথা বলো।

প্রাপ্তি -আয়ান তুমি কি বলছো এইসব? ফারহান সাথে কথা বলবো মানে?

আয়ান -কাল রাতে আমার সাথে তুমি কথা না বলে ফারহান কে সময় দিচ্ছো। তাহলে আমি কি বলবো বলো?

প্রাপ্তি-তুমি আর ফারহান কি এক।ও আমার ফ্রেন্ড। আর তোমাকে আমি ভালোবাসি। তুমিতো আমার সব বলো।
আর ওর সামনে তো তোমার সাথে কথা বলতে পারতামও না।তাই কাল রাতে ফোন রেখে দিয়েছি।

আয়ান -আচ্ছা ঠিক আছে।তুমি ভালো করে জানো তোমার সাথে কথা না বলে থাকতে পারিনা।তুমি আমায় ছেড়ে কখনো যেও না প্লিজ। তোমাকে অনেক ভালোবাসি অনেক।যা আমি তোমাকে বলে বুজাতে পারবোনা।প্রাপ্তি আমায় ছেড়ে কখনো যাবে না তো?

প্রাপ্তি-,,,,,

আয়ান-আমি জানি তুমি আমার কথা গুলো শুনছো।প্রাপ্তি বিশ্বাস করো আমি সারাটা দিন শুধু তোমার কথা ভাবি। তুমি আমার প্রতিটা নিশ্বাসের সাথে মিশে আছো।কি হলো প্রাপ্তি কথা বলছো না কেন?ওওও,,, আমার প্রেত্নি কথা বলতে পারে না।এইটা তো আমার মনে নেই।

প্রাপ্তি -কিহ,,, আমি প্রেত্নি? ঠিক আছে তাহলে তুমি জীন।

আয়ান -এতোক্ষন তো কিছুই বলছিলেনা তাই কথা বলানোর জন্য বলেছিলাম।তুমি তো আমার পরী,প্রেত্নি হতে যাবে কেন?

প্রাপ্তি-আমি তো তোমার কথা গুলো শুনছিলাম।কিন্তু তুমি প্রেত্নি যখন বলেছো এখন আর প্রেত্নির সাথে কথা বলতে হবে না।

আয়ান -তাহলে তো আমি মরেই যাবো। তুমি তো আমার পরী। এই পরীটার সাথে কথা না বললে আয়ানের কোনো অস্তিত্ব নেই।কারণ আয়ান পরীটার কয়েকটা ছবি।হাসির শব্দ,কথা গুলো শুনেই পরীকে ভালোবেসে পেলেছে।

প্রাপ্তি -জানিতো,জানো আয়ান কাল নাকি আব্বু দেশে আসছে।

আয়ান -তাহলে তো ভালোই।

প্রাপ্তি -ভালো মানে? তুমি জানো আব্বু আসলে আমি তোমার সাথে কথা বলতে পারবো নাকি?নীরার বিয়ের আগে মেজো কাকাইকে বলতে শুনেছি আব্বু আসলে নাকি আমার বিয়ের ব্যাপারে কথা বলবে।

আয়ান -ধুর পাগলী, বিয়ের কথা বললে কি বিয়ে হয়ে যায় নাকি।এর মধ্য কিছু একটা হয়ে যাবে।

প্রাপ্তি -তুমি যা ভালো মনে করো।

চলবে,,,,,,

অজানা_অনুভূতি পার্ট: ৮

0

অজানা_অনুভূতি

পার্ট: ৮

#Rabeya Sultana Nipa

 

সবাই নীরার শশুর বাড়ী থেকে চলে এসেছে।সাথে নীরাও এসেছে।সন্ধ্যায় সবাই চা খাচ্ছে আর আড্ডা দিচ্ছে।কিন্তু নীরার মন ফারহানের দিকে।কিভাবে সম্ভব ফারহানের সাথে প্রাপ্তির বিয়ে।প্রাপ্তি শুনলে কখনোই মেনে নিবেনা।প্রাপ্তি আয়ান নামের ওই ছেলেটাকেই ভালোবাসে। আর ফারহান! সে প্রাপ্তিকে নিয়েই আছে।
এইদিকে প্রাপ্তি নীরার বিয়ের এই কয়টা দিন আয়ানের সাথে তেমন কথা বলতে পারিনি।তাই প্রাপ্তি আড্ডায় মন না দিয়ে উঠে গিয়ে আয়ানকে ফোন করলো।

আয়ান -কেমন আছো? নীরার বিয়ে ঠিকঠাক মতো সব কিছু শেষ হয়েছে?

প্রাপ্তি – আমি তো ভেবেছিলাম তোমার সাথে কথা বলতে পারিনি বলে তুমি রাগ করেছো।

আয়ান -রাগ করবো কেন? তবে তোমায় অনেক মিস করছি।যাইহোক নীরা কেমন আছে?

প্রাপ্তি -হ্যা ভালোই আছে।ও এখন আমাদের বাসায়।
কথাটা বলা শেষ করতেই ফারহান এসে বললো কার সাথে কথা বলছো প্রাপ্তি?

প্রাপ্তি -আয়ানের সাথে।

ফারহান -আয়ানের সাথে মানে? কে এই আয়ান?

প্রাপ্তি -কথা শেষ করি তারপর তোমাকে বলবো।

ফারহান -আমি সকালেই চলে যাবো আর তুমি এখন অন্য কারো সাথে কথা বলবে?

ফারহান মনে মনে ভাবছে আমি চাই না তুমি অন্য কারো সাথে কথা বলো।কারণ প্রাপ্তিকে শুধু ফারহানই ভালোবাসবে।

প্রাপ্তি -আয়ান” তোমার সাথে সকালে কথা বলবো।
আয়ান কিছু বলার আগেই প্রাপ্তি ফোন কেটে দিলো।

প্রাপ্তি ফোন কেটে দিলো দেখে আয়ান ভাবছে আমার থেকে ফারহান বড় হয়ে গেলো।না আমি এইসব কি ভাবছি।

ফারহান -প্রাপ্তি! তুমি কি কিছু বুজতে চাও না নাকি বুজেও না বুজার ভাণ করো।

প্রাপ্তি -কি বলছো? আমি সত্যিই কিছু বুজতেছিনা।

ফারহান প্রাপ্তির দিকে অনেকক্ষন তাকিয়ে কথা কাটানোর জন্য বললো।
এক কাফ কফি দিবে?

প্রাপ্তি -এই কথা! ঠিক আছে তুমি বসো আমি নিয়ে আসছি।

প্রাপ্তি ফোন টা রেখে কফি আনতে চলে গেলো।ফারহান প্রাপ্তি যাওয়ার পরেই প্রাপ্তির ফোন থেকে আয়ানের নাম্বার টা নিয়ে বসে আছে।

কিছুক্ষণ পর প্রাপ্তি এসে,

প্রাপ্তি- এই নাও কফি।

ফারহান -তুমি আমার জন্য কফি বানিয়েছো?ভাবতেই অবাক লাগছে তোমার হাতের কফি খাবো।

প্রাপ্তি -এতো অবাক হওয়ার কিছু নেই আমি বানাইনি।সেজো কাকী বানিয়ে দিয়েছে।

ফারহান -তুমি ও কাকীর থেকে শিখে নাও কাজে লাগতে পারে।যেন সারাজীবন তোমার হাতের বানানো কফি খেতে পারি।

প্রাপ্তি -আমি কেন সারাজীবন তোমার জন্য কফি বানাতে যাবো? তুমি কখন কি বলো আমি কিছুই বুজিনা।

তুই কিছুই বুজবিনা কারণ তোকে কেউ কখনো বুজতে দেয়নি। আস্তে আস্তে সব বুজে যাবি চিন্তা করিছ না। কথা গুলো শুনেই প্রাপ্তি পিছনে তাকিয়ে দেখে নীরা।

প্রাপ্তি -তুই! এখনো ঘুমাস নাই।আমি ভেবে ছিলাম তুই আর মৃদুল ঘুমে তাই আর তোকে ডাকিনি।আয় বস এইখানে,

নীরা এসে বসতেই ফারহান নীরার কানের কাছে গিয়ে
ফারহান -আরেকটু পরে আসলে কি এমন ক্ষতি হতো তোমার?আর কেউ নতুন বর কে একা রেখে বোন কে ডিস্টার্ব করতে আসে।উল্টো আমরা তোমায় গিয়ে ডিস্টার্ব করবো তা না। তুমি নিজেই চলে আসছো আমাদের ডিস্টার্ব করতে।

নীরা -আপনি কি মনে করেছে আমি কিছু জানিনা।সকালে আমি সব শুনেছি।বড় মা আমায় সব বলেছে।এখন যদি আমি প্রাপ্তিকে সব বলেদি এখন তো কফি এনে দিয়েছে।এইটা শুনলে বিষ এনে দিবে।

প্রাপ্তি ফারহান আর নীরার কথা দেখে

প্রাপ্তি -তোরা কি এতো ফিসফিস করছিস।

নীরা -প্রাপ্তি জানিস ফারহান ভাইয়া একটা মেয়েকে ভালোবাসে কিন্তু ভয়ে বলতে পারছেনা।এইগুলোই বলছিলাম আরকি।

ফারহান -এইভাবে বাঁশটা না দিলে হতো না?
এখন ও যদি সত্যি ভাবে আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি তখন? আমার এতোদিনের সব কিছুতে তুমি এক মিনিটে পানি ঢেলে দিলে।এইটা কিন্তু ঠিক করোনি

নীরা -আরে আমি তো ফান করছি।আপনি এতো সিরিয়াস ভাবে নিচ্ছেন কেন?

প্রাপ্তি-ওই তোদের ফিসফিস বন্ধ কর।(ফারহানের দিকে তাকিয়ে)তুমি কাউ কে ভালোবাসো আর আমাকেই বলো নাই।

ফারহান -প্রাপ্তি! সত্যি আমি অন্য কোনো মেয়েকেই ভালোবাসি না।তবে হ্যা আমি একজনকে ভালোবাসি। ও সবার থেকে আলাদা।কিন্তু আমি যতোই ওর কাছে যেতে চাই মনে হয় ও আমার থেকে ততো দূরে চলে যায়।তাই ভাবছি এই বছরি তাকে আমার কাছে নিয়ে আসবো।না হলে পাখী উড়ে যাবে।কথা গুলো একদমে বলে ফারহান চলে গেলো।

প্রাপ্তি -এইটা কি হলো।একটু আগেতো ভালোই ছিলো।নীরা! তুই কি কিছু বলেছিস? না হলে এইভাবে চলে গেলো কেন?

নীরা -মৃদুল একা আছে আমি যাই।অনেক রাত হয়েছে তুই ঘুমিয়ে পড়।আর হ্যা আয়ানের সাথে কথা হয়েছে?কেমন আছে ও?

প্রাপ্তি -ভালোই আছে।

নীরা -আচ্ছা ঠিক আছে ঘুমা।

নীরার চলে গেলো।কিন্তু প্রাপ্তি ফারহানের কথা গুলো ভাবছে।নীরা নিশ্চয় কিছু বলেছে।না হলে ফারহান কখনো এইরকম রাগ দেখিয়ে চলে যেতো না।আচ্ছা ফারহান কোন মেয়েকে এতো ভালোবাসে যে সবার থেকে আলাদা।

চলবে,,,,,,,,

অজানা_অনুভূতি পার্ট:৭

0

অজানা_অনুভূতি

পার্ট:৭

#Rabeya Sultana Nipa

 

আজ নীরার বিয়ে। সেই মৃদুলের সাথেই। অনেক ঝড়ঝাপটা ফিরিয়ে আজ তাদের বিয়ে।মেয়ের জেদের কাছে তার বাবাকে হারতেই হলো।কারণ নীরা সবাইকে বলেছে এই বিয়ে না হলে পালিয়ে যাবে নয়তো মরে যাবে।৭ দিন সময় দেওয়ার পর ও যখন মেয়ের মুখে মৃদুলকে ভুলতে না পারার কথা তখন বিয়ে ছাড়াতো আর কোনো উপায় নেই।
এইদিকে প্রাপ্তি ২ দিন ধরে কারো সাথে তেমন কথা বলছে না।ভালো করে খাচ্ছেও না।মনে হচ্ছে নীরাকে সে সারাজীবনের জন্য হারিয়ে ফেলছে।নীরা আর সে বসে বসে কান্না করছে। সবাই বুজানোর চেষ্টা করছে তাদেরকে। নীরাকে বিদায় দিয়ে সবার মন খারাপ।প্রাপ্তি দরজা আটকিয়ে বসে আছে।নিজেকে নিজেই বুজানোর চেষ্টা করছে।তাকেও একদিন এই বাড়ী ছেড়ে যেতে হবে।কথা গুলো ভাবতে ভাবতেই কখন প্রাপ্তি ঘুমিয়ে পড়লো তার মনে নাই।

নীরার বাবা চুপ করে বসে আছে ড্রইংরুমে। এমন ভাবে বসে আছে মনে হচ্ছে দুনিয়ার সব চিন্তা তার মাথার উপর।প্রাপ্তি মা এসে বললো

প্রাপ্তির মা -কি এতো চিন্তা করছেন? ভাইয়া!

নীরার বাবা -নীরা বিয়েটা শেষমেশ হয়েই গেলো।ভেবে ছিলাম আগে প্রাপ্তি বিয়ে দিবো তারপর নীরাকে।কিন্তু নীরা এমন কাজ করবে আমি ভাবতেই পারি নাই।

প্রাপ্তির মা -এইসব নিয়ে একদম চিন্তা করার দরকার নাই।প্রাপ্তির বিয়ে তো ঠিক করাই আছে শুধু ওর বাবা আসুক বিয়েটা সবাই মিলে তারিখ টা ঠিক করলেই হবে।

নীরার বাবা -তা ঠিক বলছেন।আচ্ছা নীরার বিয়েতে ফারহানের ফ্যামিলি আসেনাই কেন?এতো করে বলেছি ফারহানকে,বললো কি যেন কাজ পড়ে গেছে তাই আসতে পারবেনা।

প্রাপ্তির মা -হ্যা আমিও বলেছিলাম ওর মাকে, বলেছে প্রাপ্তির বাবা এলে নাকি একসাথে আসবে।এখন ফারহানের কাজ আছে তাই আসতে পারবেনা।

নীরার বাবা -প্রাপ্তির কি অবস্থা? এইভাবে থাকলে তো শরীর খারাপ করবে।

প্রাপ্তির মা -ঘুমিয়েছে মনে হয়।একটু আগে ডেকেছি উঠে নাই।২ দিন থেকে তো ঘুমায়নি তাই হয়তো তাড়াতাড়ি ঘুমিয়েছে।

পরেরদিন নীরার শশুর বাড়ীতে সবাই যাবার জন্য রেডি হচ্ছে।প্রাপ্তিও রেডি হয়ে নিচে নেমে এসে দেখে ফারহান দাঁড়িয়ে তার
সেজো কাকার সাথে কথা বলছে।প্রাপ্তি ফারহান কে দেখেই দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলো।ফারহান অবাক হয়ে সেজো কাকার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কি করবে সে বুজতে পারছেনা।সবাই ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে।অনেকক্ষণ পর ফারহান নিজেকে ছাড়িয়ে

ফারহান -কি হয়েছে প্রাপ্তি তোমার?এইভাবে জড়িয়ে ধরলে কেন?

প্রাপ্তি কি বলবে বুজতে পারছেনা।সত্যি তো সেই ফারহানকে এইভাবে জড়িয়ে ধরাটা ঠিক হয়নি।

প্রাপ্তি চুপ করে আছে দেখে প্রাপ্তির ছোটা কাকা ইমরান বললো আসলে ফারহান নীরা কাল চলে যাওয়ার পর থেকে আমার মনে হচ্ছে প্রাপ্তি কেমন যেন হয়ে গেছে।তুই আর নীরাই তো ওর ভালো ফ্রেন্ড। কাল আবার তুই নীরার বিয়েতেও আসলিনা।হয়তো ও ভেবেছে তুই ওকে ভালোবুজিস।

প্রাপ্তি -কাকা তুমি চুপ করো।আসলে ফারহান তুমি কিছু মনে করো না।নীরার কথা ভাবতে ভাবতে হয়তো আমি নিজেই পাগল হয়েগেছি।তোহ,,, তুমি কখন এলে?

ফারহান -(মনে মনে,,, আমি তো চাই সারাজীবন তুমি আমায় এইভাবেই জড়িয়ে ধরবে)একটু আগেই।সবাই এতো করে বলছে তাই না এসে পারলামনা।নীরাতো বলেছে আজ আমাকে ওই বাড়ীতে না দেখলে নাকি আমার খবর আছে।তাই চলে আসলাম।তবে আমাকে কাল আবার চলে যেতে হবে।

এমন সময় প্রাপ্তির মেজো কাকা বাহিরে থেকে এসে বললো গাড়ী এসে গেছে সবাই চলো।

ফারহান -প্রাপ্তি! আমি গাড়ী নিয়ে আসছি তুমি আমার সাথে চলো।

সেজো কাকী -(ফারহানের কানে কানে এসে বললো)ফারহান! তুমি কি ভেবেছো আমরা কিছুই বুজিনা।

ফারহান -কাকী আমি জানি আপনারা সবাই বুজেন।কিন্তু যাকে বুজাতে চাচ্ছি সেই তো বুজেনা।কাকী জানেন আমার জীবনে প্রাপ্তির মতো মেয়ে কমে দেখেছি।অন্য সবার থেকে কেন যেন তাকে আলাদা লাগে।তার দিকে তাকালেই মনে হচ্ছে এক অদ্ভুত মায়া কাজ করে।মনে হয়ে সারাজীবন ওকেই ভালোবেসে কাটিয়ে দিতে পারবো।

প্রাপ্তি -ফারহান! চলো দেরি হয়ে যাচ্ছেতো।আর কাকীর সাথে এতো ফিসফিস করার কি আছে।এখন চলো বাসায় এসে না হয় ফিসফিস করবা।

ফারহান প্রাপ্তির কথা শুনে হাসি দিয়ে বললো আমি ফিসফিস করছিনা।জাস্ট কাকীকে বুজাচ্ছি আমি কি রকম মেয়েকে ভালোবাসি।
প্রাপ্তি আর কিছু না বলে গাড়ীতে গিয়ে বসে আছে।ফারহানও ফাঁসে গিয়ে বসেছে।

ফারহান -রাগ করেছো?

প্রাপ্তি -রাগ করবো কেন?আর তোমার সাথে তো রাগ করার প্রশ্নই আসে না।রাগ আমি তার সাথেই করি যাকে আমি ভালোবাসি।

প্রাপ্তির কথা শুনে ফারহান মন খারাপ করে বসে আছে।

প্রাপ্তি -তোমার আবার কি হলো? কথা বলছোনা কেন?

ফারহান প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে তুমি সত্যি অদ্ভুত একটা মেয়ে।কখন কি করো নিজেও জানো না।
দুজনেই কথা বলতে বলতে নীরার বাড়ীতে চলে এসেছে।

প্রাপ্তিতো গাড়ী থেকে নেমেই নীরাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো।তাদেরকে দেখে মনে হচ্ছে কতো বছর পর দেখা।সবাই তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। সবার এইভাবে তাকানো দেখে ফারহান তাদের কাছে এসে বললো এইভার তো ছাড়ো। নীরা! এখানে শুধু প্রাপ্তি আসে নাই সবাই এসেছে।কিন্তু তোমাদের দেখে মনে হচ্ছে এই পৃথিবীতে তোমরাই আছো।আর আমরা সবাই এলিয়েন।
ফারহানের কথা শুনে

প্রাপ্তি -আবার শুরু করছো?

নীরা -তোরা এখানে ঝগড়া করার কনো দরকার নাই।ভাইয়া চলেন আপনাকে মৃদুলের সাথে পরিচয় করিয়েদি।
এইদিকে সবাই সবার সাথে পরিচয় করানো হচ্ছে।নীরার শাশুড়ি ফারহান কে দেখে প্রাপ্তির মাকে বললো

নীরার শাশুড়ি -বেয়ান! এই ছেলেটা আপনাদের কি হয়? এতোদিন আপনাদের আর আমাদের মধ্য এতো কিছু হলো ওকে তো দেখলাম না।

প্রাপ্তির মা-ওর সাথে আমার মেয়ের প্রাপ্তির বিয়ে ঠিক করেছি।আমাদের বড় জামাই।প্রাপ্তির বাবা আসলেই বিয়েটা হবে।

পাশে থেকে নীরা কথাটা শুনে অবেক হয়ে তার বড় মাকে দেখছে।নীরা বড় মায়ের কাছে এসে বললো
নীরা -বড় মা এইদিকে আসো তোমার সাথে আমার কথা আছে।

প্রাপ্তির মা -আচ্ছা চল।

একটু ধুরে গিয়ে

নীরা -প্রাপ্তির বিয়ে কথা বলছিলে তখন।আমি যা শুনেছি তা কি সত্যি?

প্রাপ্তির মা -হ্যা।এইটা তো সবাই জানে শুধু তোরা ছোটোরা ছাড়া।

নীরা -বড় মা! প্রাপ্তি কি এই বিয়ে মেনে নিবে?সে তো,,,,,,,,,

প্রাপ্তির মা -সে তো কি নীরা?

নীরা কিছু বলার আগেই নীরাকে তার শাশুড়ি ডেকে নিয়ে গেলো নতুন গেস্ট আসছে তার সাথে দেখা করানোর জন্য।

চলবে,,,,,,,,,

অজানা_অনুভূতি পার্ট: ৬

0

অজানা_অনুভূতি

পার্ট: ৬

#Rabeya Sultana Nipa

 

নীরার বাবা বাড়ীতে এসে চুপচাপ শুয়ে আছে।নীরার মা এসে শুয়ে থাকতে দেখে

নীরার মা -হঠাৎ অসময় শুয়ে আছো?কিছু হয়েছে?

নীরার বাবা -কিছু হয়নি।নীরা কোথায়?

নীরার মা -ও তো বাহিরে গেছে।একটু আগে বাসায় চলে এসেছে।ডাকবো?

নীরার বাবা -না এইখানে ডাকার দরকার নাই।সবাইকে ড্রইং রুমে আসতে বলো সাবার সাথে কথা আছে।
নীরার মা উঠে গিয়ে সবাইকে ডেকে আনলো।

সবাই ড্রইং রুমে চুপচাপ বসে আছে।সবার মুখে চিন্তার ছাপ কি এমন হলো সবাইকে এইভাবে ডেকে আনলো।

প্রাপ্তির মা -ভাইয়া কিছু কি হয়েছে।সবাইকে ডাকলেন।

প্রাপ্তি নীরাকে চোখে ইশারা দিয়ে জিজ্ঞাস করলো কি হয়েছে।নীরা মাথা নাড়িয়ে বললো সেও কিছু জানেনা।

নীরার বাবা -(নীরার দিকে তাকিয়ে)নীরা তুমি আজ কোথায় গিয়েছিলে?

নীরা -আব্বু আমি তো,,,,, শপিং এ গিয়েছিলাম।প্রাপ্তিকে বলেছি আমার সাথে যেতে ও যায়নি তাই আমি একা গিয়েছি।

নীরার বাবা -প্রাপ্তি তুমি যাও নাই কেন?আর ও কেনো গেছে তুমি জানো?

প্রাপ্তি -(প্রাপ্তি কি বলবে বুজতে পারছে না)আমি জানিনা। কাকাই আমার মাথা ব্যাথা ছিলো তাই যায়নি।

নীরার বাবা -(সবার দিকে তাকিয়ে)এই দুজনের মধ্যে কেউ একজন মিথ্যা বলছে তোমরা কি জানো?

সাবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে প্রাপ্তি আর নীরার দিকে।নীরাও কথাটা শুনে ভয় পেয়ে গেলো। বাবা কি কিছু জেনে গেছে।নীরার মাথা কাজ করছেনা। বাবা হয়তো সব জেনে গেছে। না হলে এইভাবে সবার সামনে ডেকে আনতো না।

প্রাপ্তির মা -কি হয়েছে আমি কিছুই বুজতে পারছি না।আপনি সব খুলে বলুনতো।

নীরার বাবা -আমি কিছু বলবো না। আজ শুধু নীরা কথা বলবে।নীরা বলো? কে ওই ছেলে?
নীরা চুপ করে নিছের দিকে তাকিয়ে আছে।কি থেকে কি বলবে বুজতে পারছেনা।

নীরার বাবা -নীরা চুপ করে থেকোনা বলো?
নাকি তুমি বলতে চাও না?

নীরা -আ,,,ব্বু আ,,,,,মি ওকে চি,,,,,,নি।

নীরার বাবা -তোতলাচ্ছো কেনো? শুধুই চিনো?নাকি কোনো সম্পর্ক আছে ওই ছেলের সাথে?

নীরা -,,,,,,,,,

নীরার বাবা -তার মানে নীরবতা সম্মতির লক্ষণ।

প্রাপ্তির মা -নীরা তোমার বাবা যা বলছে তা কি সত্যি? তুমি বড় মাকে বলো আমি কিছু বলবো না।তুমি আমার কাছে সব খুলে বলো।

নীরা -,,,,,,,,

নীরার বাবা -ভাবী ও কিছুই বলবে না।কারণ তারা এখন আমাদের থেকে বড় হয়ে গেছে।
আমরা বুজতে পারি নাই।
(নীরার দিকে তাকিয়ে) ৭ দিন তোমাকে সময় দিলাম।তুমি ভেবে বলবে তুমি কি করতে চাও।তুমি কি সত্যি ওই ছেলে কে বিয়ে করবে নাকি অন্য ছেলে দেখবো?যাও রুমে যাও। ভেবে দেখো।

নীরা আর কিছু না বলে তার রুমে চলে গেলো।
নীরার বাবা-আমি সবাইকে বলছি নীরাকে বুজাও।প্রাপ্তি! আমার মনে হয় তুমি অনেক কিছুই জানো।তবুও তোমাকে বলছি ওকে ভালো করে বুজাও।

প্রাপ্তির মা -ভাইয়া ছেলে ভালো হলে না হয় বিয়ের ব্যাপারটা ভেবে দেখো।মেয়ে তো বড় হয়েছে, আজ না হয় কাল তো বিয়ে দিতেই হবে।

নীরার বাবা -ভাবী আমি ছেলেটাকে চিনি।ছেলেটা মোটামুটি ভালো।তবে এখনো বেকার। এখন তুমি বলো বেকার ছেলের কাছে মেয়ে বিয়েদি কি করে?আরেক টা কথা বাড়ির বড় মেয়ে রেখে মেজো মেয়ে বিয়ে দিলে মানুষে কি বলবে?

প্রাপ্তির মা -তা ঠিক বলছো। আচ্ছা ৭ দিন তো সময় দিয়েছো এর ভিতরে যদি ঠিক হয় আরকি।

নীরার বাবা -ঠিক না হলে বিয়ে এইছাড়া আর কিছু ভাবা যাবে না।

নীরার মা -ভাবা যাবে না কেন? আমার মেয়ে ওতোটা খারাপ কাজ করেনি।

নীরার বাবা -তোমাকে এইখানে কে কথা বলতে বলেছে? একটা মেয়ে সামলাতে পারো না।আর কি পারো তুমি আমাকে একটু বলবে?
নীরার মা কিছু না বলে উঠেই চলে গেলো।
সত্যিই কিছুই বলার নাই। যে মেয়েকে এতো বিশ্বাস করতো সেই মেয়ে এমন কাজ করবে এইটা তো ভাবাই যায় না।

নীরা একা একা বসে কান্নাকাটি করছে।প্রাপ্তি এসে বুজানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না।

প্রাপ্তি -তুই কি এইভাবে কান্না করে যাবি?কিছু বলবি না?

নীরা -নীরা কান্না থামিয়ে প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে বললো আচ্ছা আয়ানের সাথে তো তোর ২ মাসের সম্পর্ক। পারবি ওই ছেলেটাকে ভুলে যেতে?

প্রাপ্তি কিছু না বলে নীরার দিকে তাকিয়ে আছে কি বলবে সে? কিছুই বলতে পারবে না সে। চুপ করে থাকা ছাড়া।

নীরা -জানি এখন চুপ করেই থাকবি।আর আমার ১ বছরের রিলেশন আমি কিভাবে ভুলি বল?

প্রাপ্তি -আমি তো তোকে ভুলতে বলি নাই।
একটা কাজ কর মৃদুলকে একটা ফোন দিয়ে বল ওর বাসা থেকে লোক পাঠাতে। বিয়ের ব্যাপারে কথা বলার জন্য।

নীরা -মৃদুল এখনো কিছুই করে না।আব্বু কখনোই রাজি হবে না।আর তুই বাড়ির বড় মেয়ে সবাই কি বলবে।তোকে রেখে আমাকে বিয়ে দিলে।

প্রাপ্তি -হা হা হা নীরার কথা শুনে প্রাপ্তি হাসতেই থাকলো।তুই এই জন্য বিয়ে করবি না?

নীরা -এইখানে হাসার কি হলো বুজলাম না।আচ্ছা ঠিক আছে আমি মৃদুলকে সব বলছি।

আচ্ছা কথা বল আমি ওই দিকে দেখে আসছি কি হচ্ছে।

সবাই যে যার মতো চুপচাপ কাজ করছে।
প্রাপ্তি সেজো কাকীর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললো।

প্রাপ্তি -সেজো কাকী! আজ রাতে কি রান্না করছো?

সেজো কাকী -তুই রান্না ঘরে কি করছিস সেটা বল? মেজো ভাইয়া এসে দেখলে আমাকেই বকা দিবে।তুই তাড়াতাড়ি তোর রুমে যা।তোর কিছু লাগলে আমি দিপাকে (কাজের মেয়ে) পাঠিয়ে দিচ্ছি।এইবার তো যা।

প্রাপ্তি -ওহহহ আমার কিচ্ছু লাগবে না।শুনোনা! কাকা আর কিছু বলছে পরে?

এমন সময় প্রাপ্তির মায়ের ডাক শুনে দৌড়ে প্রাপ্তি রান্নাঘর থেকে চলে গেলো তার মায়ের রুমে।
প্রাপ্তি -আম্মু আমায় ডেকেছো?

প্রাপ্তির মা-বস এইখানে।(অনেকক্ষণ প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে)তুই সত্যি কিছুই জানিস না।আমি জানি আমার মেয়ে আমার কাছে কখনো মিথ্যা কথা বলেনা।আর আমি চাই আজও সেটা প্রমান হক।

প্রাপ্তি -আ,,,,, ম্মু আমি বেশি কিছু জানি না।
শুধু এইটাই জানি ওই ছেলেটা কে নীরা ভালোবাসে।তবে আম্মু জানো ছেলেটা অনেক ভালো।তুমি কাকাই কে বলে ওদের বিয়ে দিয়ে দাও না।কাকাই তোমার কথা শুনবে।

প্রাপ্তির মা-আমি এইটা বলতে পারবো না।কারণ মেয়েটা ওর। ওর মেয়ের ভালো খারাপ ওই ভালো জানে।এইখানে আমি কিছু বলতে পারবো না।আর তুমিও প্রাপ্তির মতো এমন কিছু করোনা সবার মনে কষ্ট যায়।

প্রাপ্তি কথা না বাড়িয়ে তার মায়ের সামনে থেকে উঠে গেলো।প্রাপ্তি মনে মনে ভাবছে সেও তো একি কাজ করছে আয়ান কে ভালোবেসে।কি হয়েছে সে আয়ান কে দেখে নাই।তাতে তো ভালোবাসা কমে যায়নি।শুধু কিছু সময়ের জন্য দেখা ভালোবাসা হয়না। ধুর থেকেও ভালোবাসা যায়।কই তাতে তো কিছু কম পড়ে যায়নি।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে রুমে এসে দেখে আয়ান ফোন করেছে।ফোনটা রিসিভ করতেই ওই পাশ থেকে
কই ছিলে তুমি?তোমার সাথে কথা বলে আমি থাকতে পারি না তুমি জানো না?

প্রাপ্তি -আয়ান দুপুরেও তো কথা বললাম।তুমি এমন ভাব করছো মনে হয় ১ বছর পর কথা বলছি।

আয়ান -তার চেয়ে বেশি হয়ে গেছে।তুমি আমার সাথে প্রতি ঘন্টায় কথা বলবে।তুমি জানো? তোমার সাথে কথা না বললে আমি যেন কি হারিয়ে ফেলেছি।but তোমাকে তো বুজাইতে পারবোনা।

প্রাপ্তি-জানি আমি।আর শুনানো লাগবে না।আজ কি হয়েছে জানো?

আয়ান -না বললে জানবো কি করে?

প্রাপ্তি -সেই দিন তোমায় বলেছিলাম না।নীরা আর মৃদুলের কথা।আজ বাসায় সবাই জেনে গেছে।

আয়ান -তারপর? সবাই কি বলছে এখন?

প্রাপ্তি – কাকাই নীরাকে ৭ দিনের সময় দিয়েছে।নীরা কি করতে চায় ভাবে নিতে।

চলবে,,,,,,

অজানা_অনুভূতি পার্ট: ৫

0

অজানা_অনুভূতি

পার্ট: ৫

#Rabeya Sultana Nipa

 

নীরার কথা শুনে প্রাপ্তি অবাক হয়ে বললো
তুই প্রেম কিরছিস আর আমি জানি না
দেখছিস তুই কখনোই আমায় আপন ভাবতে পারিস না।আমি যাই হোক না কেন সবকিছু তোকেই বলি।আর তুই আমাকে কিছুই বললি না?

নীরা -আমি তোকে সত্যিই বলতে চেয়েছিলাম।কিন্তু মৃদুল আমায় বলতে নিষেধ করেছে।ও বলেছে ওই তোকে বলবে।

প্রাপ্তি -মৃদুল ছেলেটা কে? কিভাবে যোগাযোগ হয়েছে তোদের?

নীরা -১ বছর হয়ে গেছে।ওর সাথে তেমন কথা হয়না।কলেজে গেলে শুধু দেখা করি।আমাদের ক্লাসের আরশি আছে না ওর ভাই।

প্রাপ্তি -(অবাক হয়ে)১ বছর হয়ে গেলো আর আমি কিছুই জানিনা।ভালোই তো।আরশির ভাইকে দেখলি কেমনে?

নীরা -ওর বোনের সাথে দেখা করতে এসেছিল সেইদিন ও আমাকে আরশির সাথে দেখেছে।তার পর একটু একটু করে এগিয়েছে সব কিছু।

প্রাপ্তি -ঠিক আছে চিন্তা করসিনা আমি আছি তোর সাথে।এখন কাউকে কিছু বলার দরকার নাই।পড়াটা শেষ কর।তারপর সবাইকে সবকিছু বলা যাবে।

প্রাপ্তি, নীরা কই তোরা বড় মায়ের ডাকে দুজনেই দৌঁড়ে ড্রইং রুমে আসলো।

মেজো কাকী -কিরে নাস্তা করবিনা।তাড়াতাড়ি নাস্তা করে কলেজে যাও।

আজ দুজনেই কোনো কথা না বলে নাস্তা করতে বসেছে।

সেজো কাকা-ভাইয়া তুমি কি আজ কোনো কিছু মিস করছো?
(প্রাপ্তি আর নীরাকে চোখ দিয়ে ইশারায় দেখিয়ে)

মেজো কাকা -হ্যা ঠিকি বলছিস।কিন্তু দুইটা বকবক মানুষ হঠাৎ এই ভাবে চুপ হয়ে গেলো কেন?

তারপরেও প্রাপ্তি আর নীরাকে কিছু না বলেতে দেখে

সেজো কাকা -কি হয়েছে তোদের? এইভাবে চুপচাপ হয়ে গেলি কেনো?কেউ কিছু বলেছে? না কিছু লাগবে?

প্রাপ্তি -কেউ কিছু বলেনি আর কিছু লাগবেও না।

সেজো কাকা -তাহলে ঠিক আছে।আর কিছু হলে বলতে পারিস।

প্রাপ্তি আর নীরা কিছু না বলে কলেজে চলে গেলো।

নীরা -প্রাপ্তি চল আজকে তোকে মৃদুলের সাথে দেখা করিয়েদি।

প্রাপ্তি -না আজ না,, অন্য একদিন।এখন এমন কিছু করিস না কেউ দেখে বাসায় গিয়ে বলে।একটু সাবধানে চলার চেষ্টা কর।আচ্ছা তোর ওই মৃদুল কি করে?

নীরা -ও এখনো কিছু করে না। তবে চাকরী জন্য চেষ্টা করতেছে।বলেছে চাকরী ফেলে বাসায় আমাদের কথা জানাবে।

প্রাপ্তি -ওও ভালো।

কলেজ শেষ করেই দুজনে বাসায় এসে দেখে ফারহান। সাথে তার ছোটো কাকাও এসেছে।

প্রাপ্তি -কাকাই তুমি আসলে কখন? তুমি তো মিলির বিয়েতেও আসলেনা।

ছোটো কাকা- একটু আগেই এসেছি।আচ্ছা তোরা আগে ফ্রেশ হয়েনে তারপর আজ সবাই মিলে আড্ডা দিবো।

প্রাপ্তি -(ছোটো কাকার কানের কাছে গিয়ে)এই ছাগলের ৩ নাম্বার বাচ্চাটাকে কেনো নিয়ে এসেছো?

ফারহান -আমি ছাগলের ৩ নাম্বার বাচ্চা!প্রাপ্তি! তুমি কিন্তু এই ভাবে বলতে পারো না।আমি আসতেই চাইনি ইমরান (ছোটো কাকা)আমায় জোর করে নিয়ে এসেছে।

প্রাপ্তি -কই আমি তো কিছু বলিনি। তুমি এইগুলো শুনলে কি করে?

ফারহান -তোমার চুপেচুপে বলতে হবেনা যে মাইক তোমার গলায় মানুষ এমনিতেই শুনবে।

প্রাপ্তি -মা দেখেছো? বলেছিনা এই শুধু এইখানে আসে আমার পিছু লাগার জন্য।ধুরঃ বলেই প্রাপ্তি তার রুমে চলে গেলো।

সবাই প্রাপ্তির কান্ড দেখে সবাই হাসলেও ফারহানের মুখে কোনো হাসি নাই।

প্রাপ্তির মা -(হাসতে হাসতে)বাবা ফারহান কিছু মনে করোনা। আমার মেয়েটা একটু পাগল ধরনের।এমনিতে অনেক ভালো।

ফারহান -না আন্টি আমি কিছু মনে করেনি।বরং আমার ওর সবকিছুই ভালোলাগে।আমি ঢাকায় গেলে ওর এইসব পাগলামি খুব মিস করি।

ফারহানের কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে ফারহানের দিকে তাকিয়ে আছে।

সেজো কাকী -ফারহা,,,,,ন!ব্যাপার কি?

ফারহান -কোনো ব্যাপার নাই।
কথাটা বলেই চলে গেলো।

১ মাস পর

প্রাপ্তি আর আয়ান এখন একজন আরেকজন কে ছাড়া থাকতেই পারে না।প্রাপ্তি এই ১ মাস একটা রাতেও ঠিক করে ঘুমায়নি।প্রতিটি রাত আয়ানের সাথে কথা বলে কাটিয়েছ। আয়ান আর প্রাপ্তির সম্পর্ক এখন শুধু বিশ্বাসের উপরেই টিকে আছে।কারন তারা একজন আরেকজনের ছবি ছাড়া সরাসরি এখনো কেউ কাউকে দেখিনি।তারা একে উপরকে না দেখেও নিজেদের সুখ দুঃখ গুলোকে ভাগ করে নেয়।ঘন্টার পর ঘন্টা শুধু দুজন দুজনের কথাই ভাবে।যতো দিন যায় তাদের ভালোভাসাও তোতো গাঢ় হয়।এই ভাবে চলতে থাকে তাদের দিন গুলো।প্রাপ্তি মাঝে মাঝে দেখা করতে চাইলেও আয়ান বলে আমি এখনো কিছু করি না।তোমার ফ্যামিলির সামনে আমি এইভাবে কখনোই দাঁড়াতে পারবোনা।আগে কিছু করি তারপর।আমি তোমাকে তোমার ফ্যামেলির কাছে ছোটো হতে দিতে পারি না।আরানে কথা শুনে প্রাপ্তি আয়ানের উপর ভালোবাসা আরো দিগুণ বেড়ে গেলো।

প্রাপ্তি -জানো আয়ান আমি কখনো ভাবিনি তোমার মতো কাউকে আমার জীবনে পাবো।

আয়ান -প্রাপ্তি আমি চাই না আমার ভালোবাসার কোনো অমর্যদা হক।জানো আমি তোমাকেই প্রথম ভালোবেসেছি।তাও আবার না দেখে।আমার আশেপাশে অনেক মেয়ে আছে কিন্তু তাদের প্রতি আমার কোনো ভালোলাগায় কাজ করে না।

প্রাপ্তি আয়ানের বলা কথা গুলো চুপ করে শুনছে।প্রাপ্তি ভাবছে তুমিও আমার প্রথম ভালোবাসা।তোমাকে আমার মনে হয় তুমি আমার সারাজীবনের আপন কেউ।

প্রাপ্তি! প্রাপ্তি! নীরা ডাকে প্রাপ্তি ফোন রেখে নীরার রুমে এলো।

প্রাপ্তি -কিরে ডাকছিস কেন?

নীরা -আমি বাহিরে যাচ্ছি যাবি?

প্রাপ্তি -এই বিকেলে তুই এখন কোথায় যাবি? আর তোকে একা যেতে দিবে?

নীরা -তোর ওই সব নিয়ে ভাবেতে হবে। মাকে বলেছি আমার কিছু কিনাকাটা আছে। যাবো আর আসবো।তুই গেলো আরো ভালো হতো চলনা।

প্রাপ্তি -একটা কথা বলি।আমার মনে হয় তুই মৃদুলের সাথে দেখা করতে যাচ্ছিস।

নীরা -হুম, তুই কি করে বুজলি?

প্রাপ্তি -তোর সাজ দেখেই বুজেছি। নীরা আজ তুই না গেলে হয় না। আমার মন জানি কেমন করছে।

নীরা -তুই এই কথা বলছিস(হাসি দিয়ে)কিচ্ছু হবেনা দেখা করেই চলে আসবো।আমি তাহলে যাই তুই আয়ান ভাইয়ার সাথে কথা বল।তোর তো এইছাড়া কোনো কাজ নেই।

নীরা কথা গুলো বাহিরে চলে গেলো।

নীরা আর মৃদুল রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলছে।এমন সময় তার বাবা ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় নীরা কে দেখে ফেলে। কপাল খারাপ থাকলে যা হয় আরকি।নীরার বাবা সেখানে নীরাকে কিছু না বলে বাড়ী চলে আসে।।

চলবে,,,,,,,

অজানা_অনুভূতি পার্ট: ৪

0

অজানা_অনুভূতি

পার্ট: ৪

#Rabeya Sultana Nipa

 

মিলির শ্বশুর বাড়ি থেকে সবাই চলে এসেছে। মিলিকে সাজিয়ে বসে রেখেছে।বিয়ে পড়ানো শেষ করে সবাই বরের কাছে গেলো নীরা,প্রাপ্তি,নাজিফা, মিলির আরো অনেক কাজিনরা সহ মিলির বরকে খেপানোর চেষ্টা করছে।ফারহান সবার এইগুলো দেখে প্রাপ্তিকে হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

প্রাপ্তি -ফারহান, কি করছো এইসব।সবাই দেখছেতো।

ফারহান -,,,,,,

প্রাপ্তি -প্লিজ ফারহান কি হয়েছে বলবে তো।এই রকম ভাবে হাত টেনে আনতেছো কেনো?
ফারহান কিছু না বলে তার মায়ের কাছে নিয়ে বসালো।

ফারহান -আন্টি প্রাপ্তিকে আপনার সাথে রাখেন।যখন তখন যা ইচ্ছা তাই করে।

প্রাপ্তির মা – কি হয়েছে?আমাকে বলো।

ফারহান -ও সবার সাথে গিয়ে মিলির বরকে জ্বালানোর চেষ্টা করছে।আর ওদের এইসব ফাজলামো ছেলেরা বসে বসে দেখছে।

প্রাপ্তি -আমি তো ইচ্ছা করে যাইনি ওরা সবাই আমাকে জোর করে নিয়ে গেছিলো।
এই জন্য তুমি আমাকে গরু মতো টানতে টানতে নিয়ে এলে?

ফারহান -হুম ঠিকি বুজেছো।

প্রাপ্তি ফারহানকে কিছু না বলে চুপ করে নিছের দিকে তাকিয়ে বসে আছে।ফারহান ও আর কিছু না বলে চলে গেছে।

সন্ধ্যায় মিলিকে বিদায় দিয়ে প্রাপ্তিরাও বাসায় চলে এসেছে। ওর ফুফি আসতে দিচ্ছিলোনা কিন্তু কিছু করার নাই।সবারই কাজ আছে।ওই বাড়ি থেকে এসে সবাই ফ্রেশ হয়ে যেই যার মতো করে কাজ করছে।
ওইখান থেকে আসার পর প্রাপ্তি ফারহানের সাথে একটা কথাও বলিনি।ফারহান বার বার সরি বলেছে তবুও প্রাপ্তি কথা বলেনি।

নীর, নীর তুমি কি ঘুমাচ্ছো।ফারহান নীরকে ডাকতে ডাকতেই নীরের রুমে এসে বসলো।

নীর -ভাইয়া কিছু বলবে?

ফারহান -তোমার বোন তো আমার উপর এখনো রেগে আছে কি করবো বলতো। কাল আমি ঢাকা চলে যাবো। আম্মু ফোন করেছে তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্য। কিন্তু প্রাপ্তি এইভাবে থাকলে আমি কিছুতেই যেতে পারবোনা।

নীর -কিছু হবে না।সব ঠিক হয়ে যাবে।প্রাপ্তির মন ভালো হলে ও নিজেই কথা বলবে।আপনার চিন্তা করতে হবে না।

এই দিকে প্রাপ্তি ফোন নিয়ে বসে আছে আয়ানের অপেক্ষায়।কখন সে তার সাথে কথা বলবে।প্রাপ্তি মনে মনে ভাবছে আমি এই ছেটার জন্য কেন অপেক্ষা করছি।আমি কি ওকে ভালোবেসে ফেলেছি। না আমি ওকে কেন ভালোবাসবো যাকে আমি চিনি না জানি না।কিন্তু আমার মন কেন জানি তার কথায় ভাবে।
এইভাবে প্রতি রাতে প্রাপ্তি আর আয়ানের কথা চলতে থাকে। তারা একে উপরকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে।কিন্তু এখনো কেউ কাউকে বলতে পারেনাই।
আয়ান ভাবছে আজকে প্রাপ্তিকে বলবে তার মনের কথা।
আয়ানের ভাবার মাঝেই প্রাপ্তির এসএমএস।
প্রাপ্তি -কি করো তুমি? আজ সারাদিন কই ছিলা?

আয়ান -তোমার কথায় ভাবছিলাম।কি করো তুমি?

প্রাপ্তি -কিছু না।কি ভাবছো তুমি আমার কথা?

আয়ান -বললে যদি তুমি রাগ করো? তাই সাহস হচ্ছে না।

প্রাপ্তি -কেন রাগ করবো? যা বলবে বলে ফেলো।

আয়ান -না মানে,,,,, তোমার নাম্বারটা দিতে পারবে?ফোনেই বলবো সব। যদি না দিতে চাও আমি কিছু মনে করবো না।

প্রাপ্তি -ঠিক আছে,, তবে সবসময় ফোন দিও না। যখন ফোন করবে আগে আমাকে এসএমএস এ জানাবে।০১৭………….।তবে আজ কথা বলতে পারবো না।।কাল কথা বলবো।

আয়ান -thanks প্রাপ্তি।আমি ভাবতেই পারি নাই তুমি আমাকে নাম্বার দিবে।ঠিক আছে তুমি বললেই আমি ফোন দিবো এর আগে না।

এইভাবে দুজনে পুরো রাত কথা বলতে থাকে।

পরেরদিন আয়ান ভাবছে প্রাপ্তির সাথে কখন কথা বলবে।মাঝে মাঝে প্রাপ্তির কথায় বুজা যায় প্রাপ্তি বড় ঘরের মেয়ে।বড়লোকের মেয়েরা দুইদিন কথা বলে ছেলেদের মন নিয়ে খেলা করে আবার সব কিছু ভুলেও যায়।কিন্তু প্রাপ্তি সাথে কথা বলে যতোটুকো বুজেছি প্রাপ্তি ওই মেয়েদের মতো না।
কথা গুলো ভাবতে ভাবতেই প্রাপ্তির এসএমএস।

তুমি কই ফোন দিবেনা?

আয়ান সাথে সাথেই ফোন দিয়েছে।

প্রাপ্তি -আসসালামু আলাইকুম!

আয়ান -ওয়ালাইকুম সালাম।
এখনকার মেয়েরাও তাহলে সালাম দেয়।

প্রাপ্তি -তোমার কথাটা ভুল। মুসলমান হিসেবে সবারই সালাম দেওয়া উচিত। যাই হোক কেমন আছো?

আয়ান -ভালো।তুমি?

প্রাপ্তি -ভালো।এতোক্ষন কি করছিলে?

আয়ান -একটা অজানা মানুষের কথা ভাবছিলাম।যার কথায় সারাক্ষণ মাথায় ঘুরতে থাকে।আচ্ছা তারও কি আমার মতো হয়?

প্রাপ্তি -একটু চুপ থেকে,হতেও তো পারে।কিন্তু সব কথা তো আর মুখ ফুটে বলা যায় না।

আয়ান -এতো দিন তোমার সাথে কথা বলে বুজেছি তুমি অনেক বড় লোকের মেয়ে।তাই ভাবলাম তুমি কি আর আমার কথা ভাববে।

প্রাপ্তি-আমি কখনো তোমায় বলছি? আমি বড়লোকের মেয়ে?

আয়ান -বলা লাগবে কেন বুজেনিতে হয়।এইভাবে পুরো রাত তাদের কথা চলতে থাকে।
কথা বলতে বলতে কখন ভোর হয়ে গেলো দুজনে টেরি পেলো না।

আয়ান -প্রাপ্তি তুমি এখন একটু ঘুমাও না হলে আজ আর কলেজে যেতে পারবে না।

প্রাপ্তি -ঠিক আছে।তুমিও ভালো থেকো।

ফোন রেখে ঘুম মাএ চোখে এসেছে এমন সময় প্রাপ্তির মা এসে ডাকাডাকি শুরু করলো।

প্রাপ্তির মা-প্রাপ্তি! প্রাপ্তি! নামাজ পড়বিনা।উঠে গিয়ে নামাজ পড়েনে।
আমি যেন দ্বিতীয় বার ডাকতে না হয়।

মায়ের কথা শুনে প্রাপ্তি উঠে নামাজ পড়তে গেলো।
নামাজ পড়া শেষ করে বারান্দায় গিয়ে বসলো।মনে মনে ভাবলো এখন ঘুমালে আজকেও আর কলেজে যাওয়া হবে না।

একটু পর নীরা এসে বললো কিরে কাল সারারাত ঘুমাসনি তাই না?

প্রাপ্তি -তুই কি করে জানলি?

নীরা -আমি তো জানতাম না। কিন্তু একটু আগে জানলাম।

প্রাপ্তি -মানে? কে বললো তোকে?

নীরা -ফারহান ভাইয়া একটু আগে বড় মার ফোনে ফোন করেছিলো আমি কথা বলছি তার সাথে তোর ফোন নাকি সারারাত busy ছিলো।ও তোকে অনেক বার ফোন করে ছিলো। সেও ঘুমায়নি কাল রাতে।

প্রাপ্তি -ও কি পাগল নাকি? আমি যার সাথেই কথা বলি ওর সমস্যা টা কি?

নীরা -আমি কি করে জানবো।যাই হোক সারারাত কার সাথে কথা বলেছিস?

প্রাপ্তি -আয়ানের সাথে। জানিস পুরো রাত আমি ওর সাথেই কথা বলেছি।কিযে ভালোলেগেছে তোকে বুজাতে পারবো না।

নীরা -যার সাথে এসএমএস করিস ওই ছেলেটা না?

প্রাপ্তি -হ্যা।আমি ওকে ভালোবেসে ফেলেছি। কিন্তু বলতে পারছি না।কি করি বলতো?

নীরা -কি করবি!,,,,,,সবাইকে বলে পারমিশন নিয়ে আয়।না হলে এই প্রেমে তুই একদিন ডুবেই মরবি।

প্রাপ্তি -তুই এইসব কি বলছিস? আমি তো কিছুই বুজতেছি না।

নীরা -তুই ভালো করেই জানিস এই ফ্যামিলির লোক গুলো কি রকম।তুই কি ভাবছিস এরা সব মেনে নিবে? কখনোই মেনে নিবে না বলে নীরার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়তে শুরু করলো।

প্রাপ্তি -কি আজিব ব্যাপার! তুই কাঁদছিস কেনো? নাকি তুইও কি কাউকে ভালোবাসিস?সত্যি করে বলতো কি ব্যাপার।
নীরা মুখ দিয়ে কিছু না বলে শুধু মাথা নাড়িয়ে হ্যা বুজালো।

চলবে,,,,,,

(ভুলত্রুটি হলে ক্ষমা করে দিবেন।কারন মানুষ মাএই ভুল করে।)

অজানা_অনুভূতি। পার্ট: ৩

0

অজানা_অনুভূতি।

পার্ট: ৩

#Rabeya Sultana Nipa

 

মিলি কে নিয়ে নীরা আর মিলির কাজিন পার্লারে নিয়ে গেছে সাজাতে।মিলি প্রাপ্তিকে জোর করেছে যাওয়ার জন্য সে যাইনি। প্রাপ্তির পার্লারে সাজতে ভালোলাগে না। তাই সে নিজেই সাজবে বলে ঠিক করেছে।
প্রাপ্তিকে একা বসে থাকতে দেখে প্রাপ্তির মা এসে বললো

প্রাপ্তির মা-কিরে তুই ওদের সাথে যাসনি কেন? সবাই মিলে গিয়ে এক সাথে সেজে আসতি।এখন তুই একা একা বসে আছিস।

প্রাপ্তি -মা তুমি তো জানোই আমার এইসব ভালোলাগে না।
কথা না বলতেই ফারহান এসে বললো
তোমার তো এইসব তো ভালোলাগবে না কারণ তুমি ৬০ দশকের বুড়ি।বুড়িরা কখনো পার্লারে যায়না।

প্রাপ্তি -আচ্ছা তোমার কি আর খেয়েদেয়ে কাজ নাই? শুধু আমার পিছনে পড়ে থাকো কেনো?

প্রাপ্তির মা -তুই ওর সাথে এইভাবে কথা বলছিস কেন? ফারহান কতো ভালো ছেলে।ও সবসময় তোর ভালোটাই চায়।

ফারহান -আন্টি এক কাজ করেন আপনি ওকে আপনার হাতে সাজিয়ে দিন।বুড়ি মানুষতো সাজতে পারবে না।

প্রাপ্তি -মা দেখেছো? বেশী ভালো হবে না কিন্তু।

প্রাপ্তির মা -তোদের যা ইচ্ছা কর আমি যাই আমার অনেক কাজ আছে।একটু পর আবার মিলিও চলে আসবে।তুই যা রেডি হয়ে নে।
কথা গুলো বলতে বলতে প্রাপ্তির মা চলে গেলো।

ফারহান -কিরে বুড়ি এবার যা গিয়ে ভালো করে সাজ।না হলে বুড়ির দিকে কেউ তাকাবে না।

প্রাপ্তি -দাঁড়া আজকে তোমাকে দেখচ্ছি বলে ফারহানের পিছন পিছন দৌঁড়াতে শুরু করলো।সবাই তাদের কান্ড দেখে হাসছে।প্রাপ্তির মেজো কাকা এসে দেখে প্রাপ্তি ফারহানকে মারার জন্য চেষ্টা করছে।

মেজো কাকা -প্রাপ্তি! তোদের আবার কি হলো?

পাপ্তি -কাকাই ফারহান আমাকে বুড়ি বলে ডাকে।আমি বুড়ি নাকি,ও আমায় বুড়ি বলে ডাকবে।

মেজো কাকা -ফারহান! আর কখনো প্রাপ্তিকে বুড়ি বলে ডাকবে না।বলেই হেঁসে দিলেন তিনি।

প্রাপ্তি আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে আসলো।

নীরা, মিলি সবাই এসে গেছে। নীরা ও মিলির সাথে অনেক সুন্দর করে সেজেছে।
কিন্তু প্রাপ্তি রুম থেকে এখনো বের হয়নি।নীরা এসে তার বড় মাকে জিজ্ঞাস করলো প্রাপ্তি কোথায়?

বড় মা -একটু আগেও তো ফারহানের সাথে ঝগড়া করছলো।দেখ কোথায় আছে।

নীরা প্রাপ্তির রুমে গিয়ে দরজা খোলার আগেই প্রাপ্তি বেরিয়ে আসলো।

প্রাপ্তি -নীরা আমাকে কেমন লাগছে?

নীরা কিছু বলার আগেই পিছন থেকে ফারহান এসে বললো

ফারহান -প্রাপ্তি তোমাকে সত্যি আজ অনেক সুন্দর লাগছে।আমি তো চোখ ফেরাতে পারছি না।

প্রাপ্তি -আমি তোমাকে জিজ্ঞাস করছি?

নীরা -আবার শুরু করে দিলি?ফারহান ভাইয়া আজকের দিনও এই রকম করবেন?
প্রাপ্তি! চল সবাই বসে অপেক্ষা করছে।

নীরা আর প্রাপ্তি চলে গেলো। ফারহান প্রাপ্তির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবছে।সত্যি আজ তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে। সবার থেকে আমার কাছে আজ তুমি আলাদা একটা মানুষ। আমি তোমায় এতো ভালোবাসি কিন্তু তুমি একবারের জন্য বুজার চেষ্টা করোনা।

হলুদের অনুষ্ঠান শেষ করে সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছে।সারা দিনের ক্লান্তিতে প্রাপ্তি সবার সাথে আড্ডা না দিয়ে শুয়ে পড়লো।
হঠাৎ আয়ানের কথা মাথায় আসতেই
ফোনের কথা মনে হলো। ফোন হাতে নিয়ে দেখে অনেক গুলো এসএমএস আয়ানের
আয়ান -আপনি কোথায় হারিয়ে গেলেন?
কি করেন?
সকালে আমি কিন্তু আগে এসএমএস দিছি।
আপনি কি রাগ করছেন?
আরো অনেক কিছু।
প্রাপ্তি এসএমএস গুলো দেখে কি বলবে বুজতে পারছে।আসলেই তো সারা দিন একটা এসএমএস ও দেওয়া হয়নি।
তারপর প্রাপ্তি সরি লিখে পাঠালো।
এসএমএস যাওয়ার সাথে সাথে আয়ান বললো

আয়ান – সরি কেন?

প্রাপ্তি -আপনি ঘুমান নাই?

আয়ান -কোনো এক মানুষের অপেক্ষায় বসে আছি।কিন্তু তার আমার কথা হয়তো মনেই নাই কেউ এক জন্য তার অপেক্ষায় বসে আছে।

প্রাপ্তি -তাই? কে এই মানুষ? যার জন্য আপনি এতো রাতেও অপেক্ষা করে বসে আছেন?

আয়ান -যদি বলি আপনি?

প্রাপ্তি -আপনি কাউকে না দেখেই তার জন্য অপেক্ষা করছেন? এইটা তো ঠিক না।

আয়ান -কে বললো আমি আপনাকে দেখিনি। আমার মনে হয় আপনি আমার অনেক চিনা।

প্রাপ্তি -তাই নাকি? আচ্ছা পরে কথা বলবো।অনেক রাত হয়েছে আপনি ঘুমান।আর সকালের এসএমএস এর জন্য thanks আমার মনে হয় কাল সারারাত জেগে ছিলেন।যাই কাল কথা হয়তো বেশী হবে না।তাই আগেই বলে দিলাম।

আয়ান -আচ্ছা ঠিক আছে।আপনি যখনি আসবেন আমাকে সরণ করবেন।

দুজনেই কথা শেষ করে ঘুমিয়ে পড়লো।

সকাল বেলা ফারহানের ডাকে প্রাপ্তির ঘুম ভাঙলো।

ফারহান -শুভ সকাল প্রাপ্তি!

ফারহান কে কফি হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে

প্রাপ্তি -তুমি! শুভ সকাল।হঠাৎ কফি ” কার জন্য নিয়ে আসছো?

ফারহান -আমার ভালোবাসার জন্য।

প্রাপ্তি -সারাক্ষণ আমাকে জ্বালাতে তোমার ভালো লাগে।

ফারহান-তোমাকে জ্বালাবো না তো কাকে জালাবো? অভ্যাস করো হয়তো সারাজীবন সইতে হতে পারে।

প্রাপ্তি -আমি কেন তোমার জ্বালা সইতে যাবো।

ফারহান -কিছু না,গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিছে আসো।সবাই বসে আছে।

নীরা এসে ফারহান কে দেখে ভাইয়া আপনি এইখানে? আব্বু আপনাকে খুঁজছে। তাড়াতাড়ি গিয়ে দেখা করেন।প্রাপ্তির পিছনে পড়ে থাকলে হবে না।

চলবে,,,,,

অজানা_অনুভূতি পার্ট: ২

0

অজানা_অনুভূতি

পার্ট: ২

#Rabeya Sultana Nipa

 

ফুফুর বাড়ী আসতে না আসতেই সবার ভালোবাসায় ভালোই লাগলো।মিলির সাথে অনেক দিনে দেখা পৃথিবীর সব কথা যেন আজ শেষ করতে পারবোনা।ফুফি আমাকে আর নীরাকে একটা রুমে নিয়ে আসলেন।

ফুফি-দুজনে এই রুমেই থাকবে।পাশের রুমটা মিলির।
আর তোমরা ফ্রেশ হয়ে নাও।ফুফি মিলির কাছে নাস্তা পাঠিয়ে দিচ্ছি।৩ জনে মিলে জমিয়ে আড্ডা দাও।

প্রাপ্তি -ফুফি তুমি আমাদের এতো ভালোবাসো কেন? তোমার আমাদের জন্য কিচ্ছু করতে হবে না।আমরা সব নিজেরাই করে নিবো।

ফুফি -হুম আমি জানি আমার মেয়েরাও আমায় কতো ভালোবাসে।ঠিক আছে ফুফি আসি।তোরা কথা বল।

নীরা -আসতে না আসতেই ফুফিও তোর হয়ে গেলো।(হা হা হা। হাঁসি দিয়ে)কি করে যে তুই সবাইকে পটিয়ে পেলিস আল্লাই ভালো জানে।

প্রাপ্তি নীরা কথা শুনে ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাঁসি দিলো।

নীরা -আমার দিকে তাকানো লাগবে না তোর ফোন বাজতেছে।

প্রাপ্তি ফোন টা হাতে নিয়ে দেখে ফারহান ফোন দিয়েছে।

প্রাপ্তি -কি ব্যাপার এখন কেন ফোন দিয়েছো?কাল তোমাকে বলেছিনা আমি ফুফির বাড়িতে আসবো।বেশী ফোন না দিতে।

ফারহান -তোমার সাথে কথা না বলে আমি থাকতে পারি না।তাই ফোন দিলাম।

প্রাপ্তি -ওওওওওওও আচ্ছা! আমি তোমার লাভার নাকি ফ্রেন্ড? কিন্তু আমি তো জানি আমরা শুধুই ফ্রেন্ড।

ফারহান -হ্যা তুমি তো আমার ফ্রেন্ড।তো?

প্রাপ্তি -তাহলে এতো বার ফোন দেওয়ার কি আছে(ধমক দিয়ে)আর আমাকে এই কয়দিন বেশী ফোন দিবেনা। আমি ফুফির বাড়িতে আসছি বিয়েতে attend করার জন্য।তোমার সাথে ফোনে কথা বলের জন্য নয়।

ফারহান -তুমি কেন বুঝো না।তোমার সাথে কথা না বলে আমি থাকতে পারিনা।

প্রাপ্তি -দেখো! আমি তোমার সাথে প্রেম করি না। তাহলে কথা না বলে থাকতে পারবেনা কেন?

নীরা -আমার কাছে ফোনটা দে।তুই ফ্রেশ হয়ে আয় আমি দেখছি।

প্রাপ্তি নীরার হাতে ফোনটা দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।
নীরা -ভাইয়া! আপনি কি বলেন তো? এখন কি কথা বলার সময়?

ফারহান -কি করবো বলো তোমার আপুর সাথে কথা না বললে ভালো লাগেনা।

নীরা -ব্যাপার কি? ভালোবেসে পেলেছেন নাকি।

ফারহান -না এমনি, আসলে ওরে রাগাতে আমার খুব ভালোলাগে।ঠিক আছে ছোটো আপু এখন তাহলে রাখি।

নীরা – আমি ছোটো আপু? ঠিক আছে পরে বুজবেন বলে নীরা ফোনটা রেখে দিলো।

ফারহান প্রাপ্তির কথায় ভাবছে আচ্ছা এই মেয়ে কি কখনোই বুজবে না আমি কি চাই।আমি যে ভালোবাসি এই কথাও তো আমি তাকে কি করে বলবো সব সময় যে রাগ দেখায়।

মিলি, নীরা আরা প্রাপ্তি বসে আড্ডা দিচ্ছে।মিলি তার বরের ছবি দেখাচ্ছে তাদেরকে।

নীরা -হুম তোর বরকে তোর সাথে মানাবে ভালো।কথা হয় তোর সাথে?

মিলি -হ্যা,,

প্রাপ্তি তাদের কথা শুনছে আর আয়ান নামের ছেলেটা সাথে এসএমএস করছে।
প্রাপ্তি আয়ানে কথা গুলো আসতে আসতে ভালো লাগতে থাকে।

আয়ান -আচ্ছা আপনি কি এখন আড্ডা দিচ্ছেন?

প্রাপ্তি -হুম।আপনি যে ভাবে কথা বলছেন মনে হয় আপনি আমায় দেখছেন।

আয়ান -দেখছি তো।
প্রাপ্তি -কিভাবে?
আয়ান -আপনি বুজবেন না।আর কি করেন?
প্রাপ্তি -আপুর বিয়ে তে আসছি।

আয়ান -ও আচ্ছা এখন কি ঘুমিয়ে যাবেন?

প্রাপ্তি -হ্যা, কেনো?

আয়ান -একটা কথা বলবো?

প্রাপ্তি -হুম,বলেন?

আয়ান -কাল সকালে কে আগে এসএমএস দিতে পারে আপনি না আমি।

প্রাপ্তি -আচ্ছা ঠিক আছে।দেখা যাক কে আগে এসএমএস দিতে পারে।
তারা দুজনে আরো অনেক কথ বললো।
আয়ান -ওকে গুড নাইট।

প্রাপ্তিও গুড নাইট বলে শুয়ে পড়লো।প্রাপ্তির কিছুতেই ঘুম আসছে না।মাথায় শুধু আয়ানের বলা কথা গুলো ঘুরপাক খাচ্ছে।আয়ানে প্রতি প্রাপ্তির ভালোলাগা শুরু হলো।এই দিকে আয়ানও সকাল হওয়ার অপেক্ষায় বসে আছে।আয়ানের প্রাপ্তির কথা গুলো ভালোলাগে।হয়তো অজানা এক অনুভূতি কাজ করছে তাদের মাঝে।

ভোর ৫ টায় প্রাপ্তি ফোন নিয়ে ভাবছে এসএমএস দিবে নাকি দিবেনা।আয়ান কি ভাববে? সারারাত আমি ওর জন্য অপেক্ষা করে বসে আছি।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে আয়ান ই এসএমএস দিয়ে দিলো।

আয়ান -এখনো ঘুমাচ্ছেন? আপনার সকাল হবে কখন?

প্রাপ্তি এসএমএস টা দেখে মন অনেক ভালো হয়ে গেলো সেই এসএমএস এর রিপ্লাই না দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।

সকাল বেলায় ফুফির ডাকে প্রাপ্তির ঘুম ভাঙলো।
প্রাপ্তি -ফুফি! নীরা আর মিলি কই? ওরা ফ্রেশ হয়ে ছাদে গেছে।তুইও ফ্রেশ হয়ে আয়।আমি ওদের ডেকে দিচ্ছি।এক সাথে নাস্তা করবি।
প্রাপ্তি আর কিছু না বলে ফ্রেশ হতে গেলো।

এইদিকে সবাই কাজ নিয়ে ব্যাস্ত। মিলিদের বাড়িটা অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছে।মিলি এই বাড়ির একমাত্র মেয়ে। সবাই তার বিয়েতে অনেক খুশি।প্রাপ্তিদের ফ্যামিলির সবাই চলে এসেছে। আজ মিলির গায়ে হলুদ।সবাই যে যার মতো কাজ করছে।
প্রাপ্তি ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে ফারহান খাটে বসে বসে তার ফোন টিপতেছে।

প্রাপ্তি -ফারহান! তুমি কখন এলে।কার সাথে এখানে এসেছো? ঢাকা থেকে কখন এলে?

ফারহান -এতো প্রশ্ন করলে আনসার দিবো কিভাবে? তোমাদের ফ্যামিলির সবাই এসেছে। সবাই বাহিরে আছে।তোমার আম্মু আর কাকা ফোন দিয়েছিলো যেই ভাবে হোক আমাকে আসতে হবে।তাই চলে আসলাম।
তবে এসেতো দেখি ভালোই করলাম।না হলে তো জানতেই পারতাম না।

প্রাপ্তি -কেন কি হয়েছে? কি জানতে পারতেনা?

ফারহান -সারারাত কারো সাথে এসএমএস করা। আর আমি ফোন দিলেই তোমার বিরক্তি লাগে তাই না?

প্রাপ্তি -তুমি আমার ফোন ধরেছো কেন? জানো না কাউকে না বলে কারো জিনিশে হাত দিতে নেই।

ফারহান -তোমার কিছু ধরতে আমাকে বলা লাগবে?এক দিনে অনেক কিছু শিখে গেছো।

প্রাপ্তি -তুমি এখন আমার সামনে থেকে যাও।তুমি আমার শুধুই ফ্রেন্ড আর কিছু না।তাই তোমার কাছে আমি কোনো কিছুর বলার প্রয়োজন মনে করি না।

ফারহান কথা না বাড়িয়ে বাহিরে চলে গেলো।

চলবে,,,,,,,,

অজানা_অনুভূতি  পার্ট: ১

0

অজানা_অনুভূতি
পার্ট: ১

#Rabeya Sultana Nipa

প্রাপ্তি! প্রাপ্তি! ও প্রাপ্তি! উঠনা দেখ কয়টা বাজে কলেজে যাবিনা?

মা! আরেকটু ঘুমাই না।

জানিস কয়টা বাজে?কখন রেডি হবি আর কলেজে যাবি?

(ঘুম ঘুম চোখে)কয়টা বাজে মা?

সাড়ে আট টা বেজে গেছে।

কথাটা বলার সাথে সাথে প্রাপ্তি বললো এর আগে তুমি কোথায় ছিলে বলোতো।এখন আমার লেট হয়ে যাবে।

তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আয় সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছে।

আপনাদের তো আমার পরিচয় দেওয়া হলো না ফ্রেশ হতে হতে পরিচয়টা শেরে পেলি।
আমি তাসপিয়া জান্নাত প্রাপ্তি।এইবার ইন্টার ১ ফাস্ট ইয়ার। আমার একটা ছোটো ভাই আছে।বাবা বেশির ভাগ সময় দেশের বাহিরে থাকে। আমাদের এখনো জয়েন্ট ফ্যামিলি। আমার কাকা ৪ জন আমার বাবা সহ ৫ জন।আমার বাবা সবার বড়।আমার মেজো কাকার দুইটা মেয়ে আমার সমবয়সী। নীরা আর নাজিফা।সব কাকার ঘরেই ছেলে মেয়ে আছে। তবে এখনো ছোটো।নীরা,নাজিফা আমি সব সময় একসাথেই থাকতাম।যেহেতু আমি ফ্যামিলির বড় মেয়ে তাই সবার ভালোবাসাটা বেশী আমি পাই।
বাকী গুলো পরে বলবো আগে খেয়ে নি সবাই আমার জন্য অপেক্ষা করছে।

এসে দেখি সবাই চুপ হয়ে বসে আছে।

মেজো কাকা -প্রাপ্তি এতো দেরি হলো কেন? তুমি জানোনা বাড়ির নিয়ম অনুযায়ী সবাই সকাল বেলা একসাথে বসে নাস্তা করে।কাল থেকে যেন আর লেট না হয়।তাড়াতাড়ি বসে খেয়ে নাও আজ আমি ৩ বোন কে একসাথেই পৌঁছে দিবো।

আমি -কাকাই নাজিফা তো স্কুলে যাবে।আমাদের সাথে গেলে ওর দেরি হয়ে যাবে না।

সেজো কাকা -ভাইয়া! তুমি নীরা আর প্রাপ্তি কে দিয়ে আসো।আমি নাজিফাকে নিয়ে যাবো।এখনকার দিনকাল তো ভালো না।কোন সময় কোন বিপদ ঘটে।অনেকের নজর এই ৩ জনের উপর পড়ে আছে।

আমি-তোমরা এমন ভাব দেখাচ্চো মনে হয় পৃথিবীতে আমরাই শুধু মেয়ে হয়ে জন্মেছি।

মা -তুমি একদম কোনো কথা বলবে না।বড়রা যাই বলে তাই শুনতে হয়।

মায়ের কথা শুনে কিছু বললাম না।আমি আর নীরা চুপচাপ কলেজে চলে গেলাম।

আমি -আচ্ছা নীরা আমাদের এই ফ্যামিলির লোক গুলো এই রকম কেন? সব কিছুতেই দোষ ধরে।ভালো লাগেনা আমার।ইচ্ছা করে অনেক দূরে চলে যাই।

নীরা -হয়তো আমাদের ভালোর জন্যই করে।তোকে তো সব দিক থেকে সবাই ছাড় দেয় আমার তো তাও না।

আমি-হুম ঠিক বলছিস।

কলেজ শেষ করে বাড়ি ফিরে দেখি কার যেন বিয়ের কথা নিয়ে আলাপ করছে।

নীরা -বড় মা (আমার মা)কার বিয়ের কথা হচ্ছে এইখানে?

মা- তোর বড় ফুফির মেয়ের বিয়ে। কাল ছেলেরা এসে দেখে গেছে। এখন ছেলের মা চায়৭/৮ দিনের ভিতরে বিয়েটা হয়ে যাক।

আমি -তার মানে আমরা সবাই যাচ্ছি বিয়েতে?

সেজো মা-হ্যাঁ আমরা সবাই যাচ্ছি।না হলে তোর ফুফু রাগ করবে।আর তোদের ৩ বোন তো ২ দিন আগে যেতে বলেছে।মিলি (ফুফির মেয়ে)একটু আগেও ফোন করেছিলো।

মা -আগে যা ফ্রেশ হয়ে আয়,যাবার ব্যাপারে পরে কথা বললেও চলবে।।

আমি আর নীরা কথা না বাড়িয়ে চলে আসলাম রুমে।
প্রাপ্তি! প্রাপ্তি! সন্ধ্যায় সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছে এমন সময় মেজো কাকা বাহিরে থেকে এসে আমাকে ডাকতে শুরু করলো।

আমি দৌঁড়ে গিয়ে বললাম কাকাই কি হয়েছে?

মেজো কাকা-তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।

আমি -কি সারপ্রাইজ কাকাই।

মেজো কাকাই -সেই দিন তোর ফোন নাকি নষ্ট হয়ে গেছে তাই তোর জন্য নতুন ফোন।

আমি -সত্যি!thankyou.বলে নীরার দিকে তকালাম।
নীরা মন খারাপ করে তার রুমে চলে গেলো দেখে আমিও পিছন পিছন গেলাম।

আমি -তুই মন খারাপ করেছিস তাই না?

নীরা -আরে নাহ! কে বললো তোকে আমি মন খারাপ করেছি?

আমি -তোর মুখ দেখেই বুজা যাচ্ছে।সমস্যা নাই তুই আর আমি একি ফোন ইউজ করবো।আমার তো ফোন বেশী লাগেনা।

নীরা আর কিছু বললো না।প্রাপ্তির ফ্যামিলির সবাই অনেক ভালো।কারো মনে হিংসে নাই।সবাই একজন আরেকজনকে অনেক ভালোবাসে।মনে হয় সবাই একি সুতায় বাধায়।

প্রাপ্তি নতুন ফোনে আবার সব কিছু চালু করলো। ফেসবুক থেকে শুরু করে সব কিছু।ফেসবুকে তার তেমন কোনো ফ্রেন্ড নাই। কারো সাথে এসএমএস ও করে না।শুধু একজনের সাথে এসএমএস করে।সে হলো ফারহান।অনেক ভালো একটা ফ্রেন্ড।
প্রাপ্তি সবসময় তারকাছে সবকিছুই শেয়ার করে।ফারহান প্রাপ্তির ৫ বছেরর সিনিয়র। ফারহান ঢাকা কলেজে পড়ে।প্রাপ্তির ছোটো কাকার জের ধরেই প্রাপ্তি সাথে ফারহানের সম্পর্ক। ফারহান তার ছোটো কাকার সাথেই পড়ালেখা করে।মাঝে মাঝে তাদের বাসায়ও আসে।প্রাপ্তিদের সবাই ফারহানকে নিজের ছেলের মতই ভালোবাসে।

প্রাপ্তির মা এসে দেখে প্রাপ্তি এখনো ফোন নিয়ে বসে আছে।কারো সাথে কথা বলছে।

প্রাপ্তির মা -কিরে তুই এখনো ঘুমাসনি?কার সাথে কথা বছিস? অনেক রাত হয়েছে ফোন নিয়ে বসে আছিস। কাল কলেজে যাবিনা?

প্রাপ্তি -ফারহানের সাথে।ওর সাথে কথা শেষ করেই ঘুমাচ্ছি।তুমিও যাও ঘুমিয়ে পড়ো।
প্রাপ্তির মা মেয়েকে আর কিছু না বলে রুম থেকে চলে গেলো।
প্রাপ্তিও ফারহানের সাথে কিছুক্ষণ ফোনে কথা বলে ঘুমিয়ে পড়লো।

পরেরদিন সকালে নীরা কলেজে যায়ইনি দেখে প্রাপ্তিও যায়ইনি।

মেজো মা -কিরে কলেজে যাসনি কেন তোরা?

নীরা -মা একদিন না গেলে কিচ্ছু হবে না।

মেজো মা -কি হয়েছে তোর? নাজিফা আর তুই আজ আবার ঝগড়া করেছিস তাই না? তোদের কে নিয়ে আর পারি না।তোরা দুই বোন এই রকম কেন বলতো?

নীরা -মা তুমি কি চুপ করবে? আমি আর প্রাপ্তি একসাথে বিকেলে ফুফির বাসায় যাবো বলেছি।নাজিফাকে বলেছি কাল তোমাদের সাথে আসতে।না সেই আমাদের সাথেই যাবে। আমাদের সাথে ওর কি বলতো?

মেজো মা -ওহঃ এই নিয়ে ঝগড়া করেছিস।আমাকে বললেই তো হতো।ঠিক আছে ও আমাদের সাথেই যাবে।

নীরা আর কিছু না বলে প্রাপ্তিকে বললো সব কিছু গুছিয়েনে আমরা বিকালেই যাব।মিলির সাথে আজ কতো দিন দেখা হয়না বল?কিরে প্রাপ্তি! তুই চুপ করে আছিস কেন? আমি তোকে কিছু বলছি! প্রাপ্তি! চিৎকার দিয়ে

প্রাপ্তি -কি হয়েছে চেঁচাচ্ছিস কেন?

নীরা -আমি যে তোকে এতো কথা বললাম তুই শুনছ নাই? ও তুই তো ফোন নিয়ে busy।

প্রাপ্তি -আর বলিস না,হঠাৎ একজনে মেসেঞ্জারে এসএমএস দিলো। ওই লোকটা সাথে এসএমএস দিতে গিয়ে তোর কথা শুনা হয়নি।এইবার বল?

নীরা -কে এই লোক? তুই তো কারো সাথে এসএমএস করিস না। তাহলে কি এমন এসএমএস দিলো তোকে তুইও রিপ্লাই দিলি।

প্রাপ্তি -জানি না কেন জানি আনসার দিয়েছি।নাম আয়ান মাহমুদ।আর জানিস এমন ভাবে কথা গুলো বলে আমাকে মনে হয় তার কতো চিনা।বাদ দে এখন চল সব কিছু গুছিয়েনি।দেরি হলে মা আর মেজো মা বকাবকি করবে।

নীরা -হুম চল,আর ওই ছেলের সাথে কথা বলা বেশী দরকার নাই।

চলবে,,,,,,,,