Tuesday, June 17, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2389



Contract_marriage★ part- 6

0

Contract_marriage★
part- 6

writer-Jubaida Sobti
নিলা নিজেকে সামলিয়ে নিলো।
আবির : নিলা আমি জানি তোমার জন্য এটা মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে।নিলা আমি তোমাকে ঠকাতে পারবো না তাই বলে দিলাম।
নিলা : জি!
আবির : নিলা আমি তোমাকে ভালোবাসিনা ঠিক কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমি তোমাকে ঘৃনা করি।
নিলা : জি!
আবির : নিলা তোমার থেকে একটা কাজ করতে হবে আমার জন্য…. কি পারবা?
নিলা : জি! বলেন!
আবির : নিলা তুমিই তোমার পরিবারকে বলবে যে তুমি এই বিয়ে করবে না।
নিলা : 


আবির : কি নিলা পারবানা!
নিলা : জি! আপনি চিন্তা করবেন না। আমি বলে দেব মামা মামিকে।
আবির : থেংক গড! নিলা তুমি জানো না আমি কতোটা রিলেক্স ফিল করছি। আচ্ছা তুমি কি যেন বলবে! কই বলোনা কি বলবা।
নিলা : না না কই কিছুনা। আমি কিছু বলবো না।
আবির : শিয়র?
নিলা : জি! শিয়র।
আবির : আচ্ছা তাহলে আজ আসি।
(আবির চলে গেল)
নিলা তার রুমে গিয়ে বসে আছে সে ভাবছে এই কথা সে মামা মামিকে কি করে বলবে। তারমাঝে কাল এংগেজডমেন্ট।সবাই কতো খুশি কিভাবে তাদের খুশি এক পলকে ছিড়ে নেবে।এসব ভাবতে ভাবতে নিলা কখন যে ঘুমিয়ে পড়ে সে জানে না।
আজ আবির আর নিলার এংগেজমেন্ট
আবিরের পরিবারে অনেক আয়োজন চলছে। সন্ধায় নিলাদের বাসায় যাবে সবাই।
নিলার পরিবারের ও অনেক আয়োজন। চারদিক রান্নার খুশবো। নানাধরনের নাস্তা বানানো হচ্ছে। ঘর সাজানো হচ্ছে। নিলা মামীর কাছে অনেকবার যায় বলার জন্য কিন্তু সাহস করে বলতে পারছে না। কিন্তু নিলার আজ বলতেই হবে। নাহলে আবির নিলাকে কি মনে করবে।
নিলা : মামি তোমাকে কিছু কথা বলার ছিলো।
মামী : হে বল কি বলবি।
নিলা : মামী…… (নিলা কেঁদে ফেলে)
মামী : কি হয়েছে নিলা বল আমাকে। আবিরের সাথে ঝগড়া হয়েছে নাকি?
নিলা: না মামী।
মামী : তাহলে বলনা কি হয়েছে তুই কাঁদছিস কেন?
নিলা : মামী আমি বিয়েটা করতে পারবো না।
মামী : কি বলছিস কি নিলা। কতো কষ্ট করে তোর বিয়েটা ঠিক হয়েছে তুই কি জানিস না ? তোর মামা কতো কষ্ট করেছে তোর একটা ভালো ঘরে বিয়ে হবে বলে। তারমাঝে আজ এংগেজমেন্টের দিন তুই এসব বলছিস। দেখ নিলা আবির আর তোর মাঝে কি হয়েছে আমি জানিনা। আরে বিয়ের আগে তো এমন ছোটখাটো ঝগড়া হয়ে থাকে। যা রেডি হয়েনে। কিছুক্ষন পরে আবার আবিররা চলে আসবে। তখন বলবে বউ এখনো রেডি হয়নি।
নিলা ও আর কিছু বলেনি চুপচাপ রেডি হয়ে বউ সেজে বসে আছে কিন্তু নিলার মন অনেক খারাপ। এ কয়েকদিনে নিলা আবিরকে অনেক ভালবেসে ফেলেছে।
শ্রেয়া : নিলা আপু আমার হ্যান্ডসাম দুলাভাই চলে এসেছে। তোমাকে ড্রইং রুমে নিয়ে যেতে বলেছে। চলো।
নিলাকে দেখে আবির যেন চোখ সরাতে পারছে না। অপরুপ সুন্দর লাগছে আজ নিলাকে।
দাদি : কি আবির কেমন লাগছে নিলাকে?
আবির : জি! দাদি সুন্দর।?
নিলাকে আবিরের পাশে বসানো হয়েছে।
(আবির নিলার কানে কানে উইস্পার করে…).
আবির : নিলা! তুমি তোমার পরিবারকে বলেছো তো?
নিলা : মামিকে বলেছি কিন্তু মামি বিশ্বাস করছে না যে আমি এই বিয়েতে না করছি।
আবির : নিলা তুমিতো বলেছো যে তুমি বলবা। তাহলে?
নিলা : বলেছিতো বলবো সময় দেন আমাকে। বলতে তো সময় লাগে।
আবির : কুল ডাউন বেবি! আচ্ছা তুমি বলিও সময় করে।কিন্তু হে মিথ্যা এংগেজমেন্ট তো করছি। মিথ্যা বিয়ে কিন্তু করতে পারবো না।
এংগেজমেন্ট শেষ আবিররা বিদায় নিয়ে বাসায় চলে গেছে।
সকালে নিলার মামি ভাবী নিলার মামাতো বোন মমিতা নিলার মামা বিয়ের জন্য কেনাকাটা করতে গিয়েছে। নানী পাশের বাড়ীতে গল্প করতে গিয়েছে। নানা আর নিলার মামাতো ভাই কাজে বেরিয়েছে।
নিলা বাসায় একা।
মমিতার হাজবেন্ড নিলার দুলাভাই নিলাকে অনেক কু নজরে দেখে। নিলা বাসায় একা আছে জেনে সে বাসায় চলে আসে।
এসে দেখে নিলা তার রুমে কাপড় ভাজ করছে। নিলা ও তার দুলাভাইকে দেখে অনেক ভয় পেয়ে গেল।
দুলাভাই এসে নিলার খাটে বসে।
দুলাভাই : কি হলো শালিকা আমাকে দেখে গাভ্রিয়ে গেলে কেন।
নিলা : না মানে বাসায়তো আপু নেই তাই।
দুলাভাই : আপুর জন্য আসিনি —–আমিতো এসেছি…….. এই বলে সে নিলার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো।
নিলা চলে যেতে চেয়ে ও যেতে পারেনি নিলাকে তার দুলাভাই টেনে খাটের উপর শুইয়ে ফেলেছে।
নিলা অনেক চেষ্টা করছে ছুটে আসার চিৎকার করছে।
হঠাৎ তার দুলাভাইকে পেছন থেকে টেনে কে যেন দিল এক ঘুসি।?
কে দিল? ঘুসি??
চলবে…..?

Contract_Marriage part :5

0

Contract_Marriage part :5

writer-Jubaida Sobti

আবির : কি দাদি 
 এতো তারাতারি কেন?
দাদি : চমকে গেছিস তাইতো। আমি আর তোর বাবা মিলে ডিজিসন নিয়েছি। শোন নিলার পরিবারকে বলেছি যে কাল এংগেজডমেন্ট এর শপিং করতে যাব। তারা ও আসবে তুই ও চল।
আবির : না দাদি আমার একটু কাজ আছে।
আবিরের মা : নিলা ও আসবে আবির ?
আবির : মা তুমি ও শুরু করেছো।
মা : হা-হা-হা আচ্ছা আচ্ছা নাসতা করেনে।
আবির তারার সাথে দেখা করতে গেল।হাতে একগুচ্ছ ফুল নিয়ে।
তারা : কেমন আছো আবির?
(আবির তারার হাতে ফুলগুলি দিয়ে)
আবির : কেমন থাকবো আর তারা তোমার তো কোনো খবরি নেই।
তারা : আসলে আবির অনেক ব্যস্ত আছি।পড়াশোনা নিয়ে। বাবার সপ্ন। বাবার আমি ছাড়া আর কে আছে বলো।
আবির : আচ্ছা তোমার বাবা আমাকে একদমি দেখতে পারেনা কেন বলো তো। 
তারা : হা-হা-হা বাবার সামনে তো কতোবার কতোকিছুতে ধরা পড়েছ তাই আরকি।
আবির : আসলেই ভাল কিছু যখন করি তখন তোমার বাবাটা সামনে পরে না।? যখনি কারো সাথে মারামারি কিংবা বাইক স্টান্ট করি তখনি তোমার বাবাটা সামনে পরে। ?
তারা : আচ্ছা কি যেন বলবে আমায়।
আবির : তারা ইয়ে মানে………
তারা : কি?…….
আবির : তারা… আই লাভ ইউ ্্্?
(তারা একটু লজ্জা পেয়ে গেল)
আবির : তারা আমি আসলে তোমাকে অনেক ভালবাসি। কিন্তু তোমাকে বলার সাহসটা পায়নি।
তারা : তো আজ হঠাৎ সাহস কই পেলে??
আবির : আরে জানোনা যে বাসায় আমার বিয়ে ঠিক করে রেখেছে নিলা নামের একটি মেয়ের সাথে।কিন্তু তুমি চিন্তা কোরো না আমি সব ম্যানেজ করে নিব।শুধু তোমার আন্সারটা চায়।তারপর আমরা বিয়ে করে নিব।
তারা : আবির কিন্তু আমিতো এসব বিয়ে টিয়ে নিয়ে ভাবিনি। আমি পড়াশোনা শেষ করে ডাক্তার হবো।
আবির : প্লিজ তারা এভাবে বলোনা।
তারা : আচ্ছা ঠিক আছে একবছর অপেক্ষা করো তুমি তারপর আমি জানাবো একবছর পরে তোমাকে বিয়ে করতে পারবো নাকি পারবো না।
আবির : কি…… এক বছর অপেক্ষা করবো তারমাঝে তুমি আমাকে জানাবে যে বিয়ে করবে কি করবে না। তারা এটা একটু বেশী হয়ে যাচ্ছে না?
তারা : উফফ আবির দেখো তুমি যদি পারো তাহলে এক বছর অপেক্ষা করো আর না হলে ঐ নিলাকেই বিয়ে করে ফেলো।
আবির : আচ্ছা ঠিক আছে আমি অপেক্ষা করবো তারা। তারা আই রিয়েলি লাভ ইউ।
তারা : হুমমম। আচ্ছা তাহলে এখন যায়।
আবির : ওকে বাই।
তারা : বাই।
আবির বাসায় আসে। তার ভাবিকে সব বলে।
আবির : ভাবি এবার তো বিয়ে কেন্সেল করাতে পারবা।
ভাবি : না আমি তারাকে একবার দেখতে চায় ওর সাথে কথা বলতে চায়।
আবির : ভাবি এসব কিন্তু ভাল হচ্ছে না। আমি এক্ষুনি হিটলারকে গিয়ে সব বলছি।
ভাবি : ঠিকাছে তুই গিয়ে বল বাবা আমি নিলাকে বিয়ে করবো না আমি তারাকে ভালবাসি।
আবির : ভাবি ডিয়ার তুমিতো হিটলারকে চেনো ও আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেবে।?
ভাবি : তো বের হয়ে যাবি ব্যাস।?
আবির : ভাবি আমি তারাকে বিয়ে করবো ও কে কই রাখবো।?
ভাবি : তাহলে আমার কন্ডিশন মানতে হবে।
আবির : আচ্ছা ঠিকাছে ঠিকাছে।
আবির তারাকে ফোন দিলো।
তারা : হে আবির বলো
আবির : তারা তোমার সাথে ভাবি দেখা করতে চাচ্ছেন।
তারা : কিন্তু আবির আমারতো সময় নেই।
আবির : তারা প্লিজ আমার দিক চেয়ে হলেও।
তারা : আচ্ছা ঠিকাছে। কখন?
আবির : কালকে আমার বাসায় কেউ থাকবে না। ভাবি অসুস্থ মানে ভাবি ডিয়ার প্রেগন্যান্ট তাই ভাবি বাসায় থাকবে তুমি ভাবির সাথে বাসায় দেখা করতে পারবে।
তারা :আচ্ছা ওকে বাই।
আবির : বাই।
ভাবি : কি আসছে তো।
আবির : আসছে মানে তারা এমন না যে আমার কথা রাখবে না।
পরদিন আবিরের পরিবারের সবাই এংগেজডমেন্ট এর শপিং করতে গিয়েছে। আবিরকে ও সবাই জোর করে নিয়ে গিয়েছে। আবির যেতে চাইনি তারা আসবে বলে। তা বাধ্য হয়ে যেতে হয়েছে।
তারা আবিরের বাসায় আসে ভাবির সাথে কথা বলে।
তারার কথা শুনেতো ভাবি পুরায় অবাক।
এই মেয়ে কি বলে সে নাকি আবিরকে নিয়ে তেমন কিছুই ভাবতে পারছেনা। একবছর পরে ভেবে বলবে। যাই হোক ভাবি এখন আবিরের অপেক্ষায় আছে।
আবিররা বাসায় আসে। আবির বাসায় এসে ভাবির থেকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো
আবির: ভাবি তারাকে কেমন লাগলো?
ভাবি : একদম ভাল লাগেনি। আবির তুই জানিস ও বলেছে একবছর পরে ও ভেবে বলবে তোকে বিয়ে করতে পারবে কি পারবে না।
আবির : জানি!
ভাবি : কি! তুই জেনে ও।
আবির : কি করবো ভাবি আমি তারাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করতে পারবো না।
ভাবি :ঠিকাছে যা ইচ্ছা তাই কর।
আবির : তার মানে তুমি বাবাকে কিছু বলবা না।?
ভাবি : না বলছি না।?
আবির : ঠিকাছে আমি নিলাকে গিয়ে সব বলে দিচ্ছি। সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
ভাবি : আবির তুই পাগল হয়ে গেছিস নাকি। তুই নিলাকে বলবি। তুই জানিস ও এসব শুনলে কি কষ্ট পাবে।
আবির : এটাই একটা রাস্তা।
(আবির তার রুমে চলে গেল)
এইদিকে নিলার বোন ভাবিরা নিলাকে জালিয়ে ছাড়ছে আবিরকে আই লাভ ইউ বলার জন্য। নিলার মামাতো বোন শ্রেয়া নিলাকে জোড় করে আবিরকে কল দিয়ে আসতে বলতে বলে বাড়ির পেছনে।
আবিরের ও কি আর করার। আবির গাড়ি বের করে নিলার বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা হয়।হঠাৎ আবিরের মনে পড়লো এই সুযোগে নিলাকে ও তারার কথা বলে দেওয়া যাক।
আবির নিলার বাসার পেছনে গেল।নিলা ও এসেছে গোলাপী রং এর একটি জামা পড়েছে নিলা। যেন আকাশ থেকে পরী নেমে এসেছে।
নিলা : জি আসলে এতো রাতে আপনাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য সরি।
আবির : না না সমস্যা নেই। নিলা আমার ও তোমাকে কিছু বলার ছিলো।
নিলা : ? ও আচ্ছা তাই। তো বলে ফেলেন কি বলবেন।
আবির : না তুমি আগে বলো।
(আবির ভাবছে মেয়েটার মনটা এখনি ভেঙে যাবে। তবে কি করার বলতে তো হবেই)
নিলা : না সমস্যা নেই আপনি বলুন।
আবির : নিলা আসলে কথা হচ্ছে যে…….. আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারবোনা।
আমি তারা নামে একটি মেয়েকে ভালোবাসি।
(নিলার মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পড়লো)
চলবে…….

 

Contract_Marriage part :4

0

Contract_Marriage part :4

writer-Jubaida Sobti

আবির : চলো ডাকছে।
নিলা : আপনি কি যেন বলবেন বলেছেন।
আবির : না তেমন কিছুনা
নিচে আসে আবির এবং নিলা।
আবিররা খাবার খেয়ে কিছু্ক্ষন বসে বিয়ে ফাইনাল করে রওনা দিলো।
বাসায় এসে আবির বড় ভাবির পিছু পিছু দিলো দৌড়।
ভাবি : কি হলো আবির?
আবির : ভাবি আমি নিলাকে ভালবাসিনা?

ভাবি : কি বলিস এসব।?
আবির : ভাবি আমি তারাকে ভালবাসি। তোমাদের ভুল হয়েছে।
ভাবি :? কিন্তু আবির নিলা খুব ভালো মেয়ে ও এই ঘরের বউ হিসেবে পারফেক্ট।
আবির : ভাবি আমি এটা বলছি না যে নিলা খারাপ। নিলা খুব ভাল ভাবি কিন্তু আমিতো তারাকে ভালবাসি।
ভাবি : তারাটা আবার কে??
আবির : ভাবি তুমি বিয়েটা কেন্সেল করো আমি তোমাকে সব বলবো।
ভাবি :এখন বল ?
আবির : আসলে ভাবি আমি তারাকে এখনো বলিনি যে আমি তারাকে ভালবাসি?
ভাবি : তারাকে এখনো বলিসনি তুই এটা ও জানোসনা যে তারা তুকে ভালবাসে কি না।?
আবির : ভাবি যাই হোক তুমি বিয়েটা কেন্সেল করো।
ভাবি : না যতদিন তুই তারা থেকে জবাব আনবিনা ততোদিন বিয়েটা কেন্সেল হবে না।?
আবির : ঠিকাছে তুমি বলবে না তাহলে আমি বলছি।?
আবির তার বাবার রুমে যাচ্ছিল ভাবিও তার পিছু পিছু দৌড়ে যাচ্ছিলো
ভাবি : দেখ আবির এমন করিসনা সবাই কতো খুশি হয়েছে বিয়েটা নিয়ে।বাবা তো তোর জন্য নতুন গোল্ড শো রুম খুলার প্লান সহ করে ফেলেছে। সবাই কতো খুশি হয়েছে এমন করিস না আবির।
আবির তার বাবার রুমে গিয়ে পৌছালো।
বাবা: আরে আবির তুই আয় আয় ভেতরে আয়।?
চলবে….?
part- 5
আবির তার বাবার রুমে ঢুকলো।
বাবা: তোকে আমি কতো বকেছি। আজ তো দেখছি তুই আমার পছন্দের মতো কাজ করেছিস। দেখ আবির নিলাকে কিন্তু আমার খুব ভাল লেগেছে।খুব ভাল মেয়ে দেখতে ও পরির মতো। তবে তুই এসেছিস ভালই করলি। তোকে কিছু দেওয়ার ছিল।
আবিরের বাবা আবিরের হাতে নতুন গোল্ড শো-রুমের পেপার-পত্র তুলে দিয়েছে।
আবির : বাবা এসব কি?
বাবা : আজ থেকে তোকে আর অকর্মা ডাকবো না। এই হলো তোকে অকর্মা না ডাকার সার্টিফিকেট। তোর যেদিন ইচ্ছা সেদিন থেকে তুই অফিসে জইন করবি।
আবির চেয়ে ও বাবাকে আর কিছু বলতে পারেনি। ভাবির দিকে এক পলক চেয়ে আবির আবিরের রুমে চলে আসে।
আবিরের মাথায় কিছু আসছে না সে কি করবে।যে বাবা আবিরকে সবসময় বকতো সে বাবা কিনা আজ এসব।
কিছুই আসছে না তার মাথায় কি করবে। ভাবছে তারার সাথে একটু দেখা করলে ভাল হয়। কিন্তু কিভাবে দেখা করবে তারার বাবা আবিরকে একদমি দেখতে পারেনা। আবির তারাকে ফোন দিল।কিছুক্ষন কথা বলবে বলে।
আবির : হ্যালো তারা।
তারা : হ্যালো বলো আবির।
আবির : তারা আমি তোমার সাথে একটু দেখা করতে চায়।
তারা : কিন্তু সামনে আমার মেডিকেল এক্সাম আবির এখন দেখা করা সম্ভব নয়।
আবির: তারা দেখ আমার তোমাকে কিছু বলার আছে। প্লিজ তারা শুধু ১০মিনিট এর জন্য। প্লিজ না করোনা।
তারা : আচ্ছা ঠিক আছে। কাল সকাল ১১ টায় আমি লাইব্রেরিতে আসবো ঐখানে চলে এসো।
আবির : থেনক্স তারা।
আবির সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে একেবারে তারার সাথে দেখা করতে যাবে বলে রেডি হয়ে নিচে নাস্তা খেতে বসে।
দাদি: আবির তুই জানিস পরশু তোর আর নিলার এংগেজডমেন্ট।

Contract_marriage part- 3

0

Contract_marriage
part- 3

writer-Jubaida Sobti
আবির তৈরী হয়ে নিচে গেল। সবাই মিলে রওনা দিল।
আবিরদের গাড়ি বাইরে গেট দিয়ে ঢুকতেই শ্রেয়া সবাইকে চিৎকার করে জানিয়ে দিলো। চলে এসেছে আমার হনেওয়ালা জিজু ??
নিলার মামা বাইরে বেরিয়ে আবিরদের ভেতরে ঢুকালো।সবাই বসে আছে কথা বলছে।আবির ভাবছে মামাকে একটু চেনা চেনা লাগছে কিন্তু কোথায় যেন দেখেছে ঠিক মনে পড়ছে না। যাই হোক তারাকে কখন দেখবে আবিরের অপেক্ষার শেষ নেই। ?
আবির দাদিকে কানে কানে বললো দাদি তারা কই আসছেনা কেন?
দাদি আবিরের কানে কানে ও তো তুই আদর করে তারা ও ডাকিস ?
আবির : আদর করে মানে কি যে বলো না দাদি আর কতো অভিনয় করবা।?
দাদি : আমাদের হবু বউ কই দেখছি না যে?
মামা : জি আমি ডাকছি।
মামা শ্রেয়াকে বললো নিলাকে নিয়ে আসতে।
শ্রেয়া নিলাকে নিয়ে এসেছে।
আবির নিলাকে দেখে চমকে গেল ?
আবিরের বড় ভাবি আবিরের কানে কানে উইস্পার করে বলছে
ভাবি : কি আবির নিলাকে কেমন লেগেছে।?
আবির : নিলা?
ভাবি : হুম নিলা তবে এমন ভাব করছিস যেনো নামটা প্রথমবার শুনেছিস ?
আবির : ভাবি ডিয়ার তোমাকে কে বলেছে আমি মেয়েটাকে পছন্দ করি??
ভাবি : মেয়েটা মানে? ?
আবির : মানে ইয়ে ? নিলা আরকি।
ভাবি : বলতে হয় আমরা সব দেখেছি।?
দাদি : আবির কি বেপার কিছু বল।
আবির : কি বলবো দাদি।?
দাদি : আচ্ছা আমাদের সামনে লজ্জা পাচ্ছিস।
মামা : সমাস্যা নেই নিলা আবিরকে নিয়ে ছাদে যাও।
ভাবি : (আবিরের কানে কানে) যা যা আবির যা বলার বলে আয় ?
আবির :??
ছাদে নিয়ে গেল নিলা আবিরকে
কি বলবে কিছু খুজে পাচ্ছেনা আবির মেয়েটাকে তো এমনিতেয় কিছু বলা যায় না। অম্নিতেয় কেঁদে ফেলে। কি করে বলি এই বিয়ে সম্ভব নয়।
নিলা : আপনি কি ঠিক আছেন?
আবির : হে আমি ঠিক আছি। ইয়ে মানে তোমার নামতো নিলা তাই না।
নিলা : জি।
আবির : খুব সুন্দর নাম।
নিলা :?
আবির : তুমিও খুব সুন্দর ? আসলে বলতে চাচ্ছিলাম যে তুমি কি এই বিয়েতে রাজি আছো?
নিলা : আসলে আমার কিছু বলার ছিল আপনাকে।
আবির : ? মনে হয় রাজি নেই ?বলো বলো বলে ফেলো সমস্যা নেই তারপর আমি বলবো।
নিলা : জি আসলে আপনি হয়তো জানেননা এর আগে আমি ২৩ বার রিজেক্ট হয়েছি। আমার বাবা মা নেই মামার কাছেই বড় হয়েছি। তাই মামা মামির খুশি আমার খুশি। আপনি জানেন আপনার দাদি যখন আপনার প্রস্তাব নিয়ে বাসায় আসে ঐদিন মামা মামি খুব খুশি হয়। ওদের সপ্ন আমার মা বাবা নেই তাই আমার একটি ভাল ঘরে বিয়ে হোক। তবে আমি আপনার কাছ থেকে কিছু লুকাচ্ছিনা। যদি আপনার এই বিয়েতে কোনো আপত্তি থাকে তাহলে আমাকে বলে দিন।
আবির : কিন্তু তুমি তো সুন্দর। কোনো দিকে কম নও তবে রিজেক্ট কেন হয়েছো ২৩ বার।
নিলা : বাবা মা নেই এলাকার মানুষ নানা ভাবে কথা ছড়ায়। তার মাঝে মামার অতটুকু সামথ্য নেই। তবে মামা আমাকে খুশি রাখার যথেষ্ট চেষ্টা করে।
আবির : (মনে মনে) এই মেয়ে ২৩ বার রিজেক্ট হয়েছে এখন আমিও যদি বলি না তাহলে ২৪ বার।? মেয়েটার তো ছেলেদের উপর থেকে বিশ্বাস উঠে যাবে। কি করে বলি?
হঠাৎ শ্রেয়া এসে আপু তোমাদের ডাকছে।

contract_marriage Part- 2

0
contract_marriage
Part- 2
writer-Jubaida Sobti
আবির নিলাকে সরি বলে। নিলা কিছু না বলে ওয়াস রুমে কাপড় ওয়াস করার জন্য চলে যায়। 
আবির ও চলে যাচ্ছিলো। হঠাৎ আবির আবার ভাবতে লাগলো ইসস মেয়েটার কাপড়টাই বরবাদ করে দিয়েছি।সরি বললাম ইটস ওকেটা ও বললো না। বেশি রাগ করেছে নাকি। ওয়াস রুমে গিয়ে একবার দেখে আসি।
তারপর আবির ওয়াস রুমের ঐদিকে গেল এবং নিলা ও আবিরকে দেখতে পেল। আবির নিলার চোখে পানি দেখতে পায় আবির নিলাকে গিয়ে বলে.. দেখো আমি কিন্তু ইচ্ছা করে করিনি সরি।
নিলা : ইটস ওকে।
আবির : তাহলে কাঁদছো কেন?
নিলা : কে বলেছে আমি কাদছি।?
আবির: তোমার চোখ বলেছে।
নিলা তারাতারি চোখ মুছে চলে যাচ্ছিল।
আবির : শুনো
নিলা ফিরে তাকালো
আবির তাকে একটি টিসু দিয়ে বলে এটা নিয়ে যাও কাজে লাগবে। (আবির মুচকি হাসি দিয়ে)নিলা ও চলে আসে।
নিলাকে যে বর পক্ষ দেখতে আসে বরের মা নিলাকে আর আবিরকে একসাথে কথা বলতে দেখে ফেলে।
এবং নিলার মামাকে বলে আপনারা যে বললেন মেয়ের কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই তাহলে নিলা এতক্ষন দাঁড়িয়ে ঐ ছেলেটির সাথে কি কথা বলছিল?
মামা : নিলা এসব কি শুনছি?
নিলা : না মামা ঐ ছেলেটিকে তো আমি চিনিনা। এই প্রথম দেখছি।
মামা বর পক্ষের মা কে বললো দেখেন নিলাকে আমি যতটুকু চিনি নিলা এমন না।নিলা যা বলছে তাই সত্য হবে।
বর পক্ষ বললো আচ্ছা আমরা বাসায় গিয়ে জানাবো আপনাদের।
নিলারা ও বাসায় ফিরে আসে।
মামি : নিলা শোন কি দরকার ছিল ছেলেটির সাথে কথা বলার।
নিলা: মামি আমি ইচ্ছা করে কথা বলিনি।ওকে তো আমি চিনিও না।ও আমাকে সরি বলতে এসেছিলো।
বর পক্ষের ফোন আসে মেয়ে রিজেক্ট।
অন্যদিকে আবির এর বাবা আবির এর উপর অনেক রাগে আছে। আবির মেয়ে রিজেক্ট করে দিয়েছে আবার।এবার ও আবিরের ভাবি আর দাদি আবিরকে বাচিয়ে নিয়েছে।
পরদিন সকালে আবির তার দাদিকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যায় দাদির চেকাপ এর জন্য। নিলাও যায় তার মামি আর শ্রেয়াকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে।
আবির আর নিলার আবার ও দেখা হয়ে গেল।
আবির : Hey what’s up?
নিলা : জি আপনি ? আপনি এইখানে কি করছেন।
আবির : এইখানে মানুষ কি করতে আসে?
নিলা : ও বুঝলাম তবে কি হয়েছে আপনার
আবির : ক্যানসার ?
নিলা : ??
আবির : hey! i m just kidding dear ?
নিলা আবিরকে কিছু না বলেই চলে গেল।
আবির : আরে একটা বাই তো বলে যাও।?
আবিরকে নিলার সাথে কথা বলার সময় আবিরের দাদি দেখে।
দাদি : যাক তুই তাহলে নিজের জন্য বউ নিজেই ঠিক করে রেখেছিস। তা আমাদের বললেই বা কি হতো।?
আবির : আরে দাদি না আমিতো ওর নাম সহ জানিনা।
দাদি : তবে মেয়ে কিন্তু আমার অনেক পছন্দ হয়েছে।
আবির : উফফ দাদি চিনিনা জানিনা অম্নি বউ বানিয়ে দিলে।?
দাদি : হয়েছে হয়েছে আমার সাথে আর ডং করতে হবে না।?
চলবে…..?
part- 3
বাসায় এসে দাদি আবিরের বড় ভাবীকে সব বলে ভাবি ও খুশি হয়ে যায়।
ভাবি : দাদি তবে আবির আমাকে যে কিছু বলেনি ?
দাদি : আরে ও মনে হয় আমাদের সারপ্রাইজ দিতে চাচ্ছে।তবে ও সারপ্রাইজ দেওয়ার আগে আমরাই ওকে
সারপ্রাইজ দিয়ে দিবো।
ভাবি : কি সারপ্রাইজ দাদি?
দাদি : মেয়েটা আজ হাসপাতালে এসেছিল যেভাবে হোক ঐখান থেকে হলেও মেয়েটির ঠিকানা বের করে আমরা মেয়েটির বাসায় প্রস্তাব দিব।
ভাবি : ওকে দাদি let’s start ?
দাদি আবিরের বাবা ও পরিবারের সবাইকে নিয়ে আবিরের বিয়ের কথা তোলে
আবিরের বাবা : দেখো মা এটা কোনো আবিরের প্লান নয়তো? কারণ ওকে আমি হারে হারে চিনি। কোনো কাজটাই ছেলেটা ঠিকভাবে করেনা।
দাদি : আরে ধুর তুই সব সময় আমার নাতিটার দোষ দিস কেন বলতো। তুর ছেলে কিন্তু পরির মতো বউ ঠিক করে রেখেছে। ? আমারতো অপেক্ষাই হচ্ছেনা।
পরদিন আবির এর বড় ভাবি নিলার ঠিকানা নিয়ে আসলো।
আবিরের দাদি দেরি করেনি নিলার বাসায় গিয়ে সব ঠিকটাক করে আসে।এবং বলে আমাদের ছেলে আবির নিলাকে খুব পছন্দ করে তাই আমরা কিছু চায়না শুধু মেয়ে চায়।নিলার পরিবার ও খুব খুশি এতবড় ঘর থেকে নিলার জন্য প্রস্তাব আসবে কেউ ভাবতে ও পারেনি।তাও আবার পরিবারের মানুষ গুলা ও কতো ভাল।নিলার ও কোনো আপত্তি নেই আবিরের জন্য আবির দেখতে সুন্দর স্মার্ট দাদির থেকে যতটুকু শুনছে আবির দুষ্টামি বেশি করে?
যাই হোক দাদি কথা পাক্কা করে কাল আবির ও তার পরিবারকে নিয়ে আসবে বলে বিদায় নিল।
পরদিন সকালে দাদি ভাবিকে বলে আবিরকে রেডি হতে বলার জন্য।
ঐদিকে আবির তারাকে ফোন করে বলে দেখা করার জন্য কিন্তু তারা বলেছে সে তার মামার বাড়ি যাচ্ছে। যদি পারে তাহলে আসবে। আসুক আর না আসুখ আবির তো তারার জন্য অপেক্ষা করবেই।তারা বলে কথা।?
ভাবি : আবির তুকে দাদি রেডি হতে বলেছে।?
আবির : রেডি হব কেন??
ভাবি : বউ দেখতে যাবি বলে।
আবির : ভাবি ডিয়ার আমিতো বলেছি এসব বিয়ে টিয়ে আমি এখন করছিনা।?
ভাবি : লুকিয়ে লুকিয়ে বউ ঠিক করছিস আবার বলিস বিয়ে টিয়ে তোর দারা হবে না।?
আবির : ভাবি ডিয়ার কি বলছো তুমি আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।?
ভাবি : দেখ আবির এবার তোকে এমন মেয়ে দেখাবো তুই কখনো রিজেক্ট করতে পারবিনা।মেয়ের মামা ও রাজি হয়ে গেছে।
এই বলে ভাবি চলে যাচ্ছে
আবির : আরে ভাবি ডিয়ার শুনো কই যাও?
আবির ভাবতে লাগলো লুকিয়ে লুকিয়ে আমি আবার কবে বউ ঠিক করলাম
তবে এবার যাকে দেখাবে তাকে আমি চাইলেও রিজেক্ট করতে পারবোনা। মেয়ের মামাও রাজি হয়ে গেছে ?
আবির :????? এবার বুঝলাম তারা ও তো মামার বাড়ি যাচ্ছে। আর আমি চাইলেও মেয়ে এবার রিজেক্ট করতে পারবো না।
তার মানে ভাবি মনে হয় জেনে গিয়েছে আমি তারাকে ভালবাসি। উফফ জানবেই না বা কেন আমার ভাবি ডিয়ার বলে কথা। তারাও তো আমাকে কিছু বলেনি এই বেপারে 
আচ্ছা বুজলাম সবাই মিলে আমাকে সারপ্রাইজ দিচ্ছে।
ওও তাহলে আমিও কি অভিনয় করতে জানি না বুঝি ?
চলবে…?

Contract_Marriage part :1

0

Contract_Marriage part :1
writer-Jubaida Sobti

(নিলার পরিচয়)
গায়ের রঙ ধবধবে সাদা ‘লম্বা কালো চুল। উচ্চতা ৫”৩
আর ওজন ৫৪ কেজি।নিলার চোখ গুলো তার মায়ের মতো মায়াবী ‘বাদামি চোখের মণি। একাদশ শ্রেণী পাস করে এখন বিয়ে দেওয়ার জন্য পাত্র খুজছে।
ছোট বেলায় নিলার জন্মের সময় তার মায়ের ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়াতে তার মা মারা যায়। নিলার বয়স যখন ৭ বছর তখন তার বাবা হার্ট হয়ে মারা যায়।
মা-বাবাহীন নিলাকে তার মামা নিজে মামার বাড়িতে নিয়ে চলে যায়।নিলার মামা তার মামির বাবার বাড়িতেই থাকত তার পরিবার ও নিলাকে নিয়ে। নিলার মামার পরিবারে ছিল তার মামি তার দুটো মামাতো বোন ‘(মমিতা-শ্রেয়া) একটি মামাতো ভাই(মাসুদ) ও তার স্ত্রী। এবং নানা-নানি।
নিলা তার মামার আপন মেয়ে নয় বোনের মেয়ে বলে নানি নিলাকে তেমন ভালবাসে না। মমিতা নিলার ৫ বছরের বড় তার হাজবেন্ড বেকার বলে তাকে নিয়ে তার বাবার বাড়ী থাকতে হয়।মমিতার হাজবেন্ড নিলার দুলাভাই এর নজরটা তেমন নিলার ভাল লাগতো না। কেমন যেন তার চোখের চাওনিটা। আর শ্রেয়া নিলার ২ বছরের ছোট। দশম শ্রেণীর ছাত্রী। নিলা শ্রেয়াকে নিজের ছোট বোনের মতো করে ভালবাসত।?তেমনি শ্রেয়া ও নিলাকে খুব ভালবাসত।
(আবিরের পরিচয়)
উচ্চতা ৫”১০ ‘গায়ের রঙ ফর্সা। মাস্টার্স শেষ করেছে এক বছর আগে। বাবার ব্যবসায়ে হাত না বাড়িয়ে বন্ধুদের সাথে ঘুরে বেড়ানো তার কাজ।অনেক মেয়েরা আবিরের জন্য পাগল কিন্তু আবিরের এসব মেয়েদের গণার সময় নেই।
আবির শুধু একজনকেই চাই তার নাম হল (তারা)।
কিন্তু তারা আবিরকে শুধু একজন ভাল বন্দু মনে করে।
তারার বাবার সপ্ন তারা পড়ালিখা করে ডাক্তার হবে।সে তার বাবার সপ্ন পুরনে ব্যস্ত।
(হক) পরিবারের সব চেয়ে ছোট ছেলে আবির হক। বাবা গোল্ড ব্যবসায়ি। আবিররা তিন ভাই আবির সবচেয়ে ছোট। কেউকে ভয় না পেলে ও আবির তার বাবাকে ভীষণ ভয় পায়।তার বাবার কঠোর শাসন এর কারনে আবির তার বাবার নাম দিয়েছে (হিটলার)। অবশ্য তার দেওয়া নামটি তার বাবা আবিরের মা ও দাদিমা থেকে শুনেছে তাও আবিরকে কিছু বলেনা।আর মনে মনে হাসে।আবিরের বাবা চায় যে তার বাকি দুই ছেলের মতো আবির ও জিম্মাদার মানুষ হোক।
আবিরকে পরিবারের সবাই খুব ভালবাসে তার চালচলন গুলো ছিল চঞ্চল প্রকৃিতির। আবিরের বড় ভাবি আবিরকে একটু বেশি ভালবাসে এবং আবির ও।আবির তার বড় ভাবিকে আদর করে (ভাবি ডিয়ার) বলে ডাকে।?
আবিরকে বিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক মেয়ে দেখিয়েছে তার বাবা কিন্তু সবসময় আবির কোনো না কোনো অজুহাত দেখিয়ে কনের পক্ষকে রিজেক্ট করে দিত। যার কারনে আবিরের বাবা আবিরের উপর অনেক নারাজ।?
আজ সোমবার সকাল ‘আবির ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে রুমে এসেছে।এসে দেখে তার ভাবি ডিয়ার তার জন্য নাস্তা নিয়ে এসেছে।
আবির: আরে ভাবি ডিয়ার গুডডডড মর্নিং।?
ভাবি ডিয়ার: হুম নাস্তা রেখে যাচ্ছি। খেয়ে রেডি হয়েনে। আজ বাবা বলেছে রেস্টুরেন্ট এ তোকে মেয়ে দেখাতে নিয়ে যাবে।?
আবির : আরে ভাবি এই হিটলার এর বুঝি আমার জন্য মেয়ে দেখা ছাড়া আর কাজ নেই।?
ভাবি ডিয়ার : আবির দেখ সবসময় তুই নানা অজুহাত দেখিয়ে বিয়ে ভেংগে দিস। মেয়ের পক্ষের কোনো খারাপ দিক না পেয়ে ও বাবার থেকে তোর কারণে মিথ্যা কথা বলতে হয়।?
আবির : কিন্তু ভাবি,,,,?
ভাবি ডিয়ার : কোনো কিন্তু নয়।?
অন্যদিকে নিলাকে রেডি করছে আজ বর পক্ষকে দেখাতে নিয়ে যাবে। নিলার জন্য এটা খুশির কিছু নয়। এভাবে তাকে ২৩ বার দেখানো হয়েছে ২৩বার তাকে রিজেক্ট করেছে। নিলা মনে মনে ভাবছে এবার ও তেমন হবে আরকি।নিলা সেই দিন গুলির কথা মনে পরে গেল। সমাজে এখনো এমন মানুষগুলি বেচে আছে। যারা মেয়েদের মন দেখে না তার সুন্দর্য দেখে আর সারাদিন খেটে কাজ করতে পারবে কিনা তা দেখে।যৌতুকে কি কি দিতে পারবে তা দেখে।যদি তাদের পরিমান মতো না মিলে তাহলে মেয়ে রিজেক্ট।?
নানি : এই জন্মে আর এই নিলার বিয়ে হবেনা মনে হয়।
না জানি আর কতদিন মেয়েটাকে নিয়ে আমাদের টাকা পয়সা খরচ করতে হবে।?
শ্রেয়া : উফফ নানি তুমি চুপ করবে। দেখবে নিলা আপুর জন্য রাজকুমার ঠিক চলে আসবে।?
নিলাকে যে রেস্টুরেন্ট এ নিয়ে গেল মেয়ে দেখানোর জন্য আবিরকে ও সেই রেস্টুরেন্ট এ নিয়ে গেল।
আবিরকে মেয়ে দেখালো মেয়ে সুন্দর কিন্তু আবির বিয়ে করবেনা। সে কিন্তু তার গার্লফ্রেন্ড তারার জন্য মেয়ে রিজেক্ট করছে না। আবিরের এখন বিয়ে করার ইচ্ছে নেই সে তো তারাকে এখনো বলেওনি যে সে তারাকে ভালবাসে।কিভাবে বলবে তারা সবসময় পড়ালিখা নিয়ে ব্যস্ত।
অন্যদিকে নিলাকে বরপক্ষ দেখেছে পছন্দ করেছে কিন্তু মেয়ের মা-বাবা নেই।তাই একটু কনফিউজড ছেলের পক্ষ।মেয়ের কোনো বয়ফ্রেন্ড আছে নাকি।
আবিরের পরিবারের ও আবিরের জন্য দেখা মেয়েটি পছন্দ হয়েছে মেয়েদেখা শেষ বাসায় গিয়ে ফোন করে মতামত জানিয়ে দিবে বলে বাসায় ফিরার জন্য প্রস্তুত।
এমন সময় আবির হেটে যাওয়ার সময় হাতের সাথে বাড়ি খেয়ে পাশের টেবিলে বসে থাকা নিলা মেয়েটির গায়ে জুসের গ্লাসটা? পড়ে যায়। নিলা ভয় পেয়ে যে না চিৎকার করে উঠলো সবাই আবির আর নিলার দিকে তাকিয়ে আছে? আবির ও ভয় পেয়ে গেল।?
চলবে….?

একটি প্লাস্টিকের ফুলের গল্প

0

নাভিদ দক্ষিণের বড় বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভোর হওয়া দেখছিলো। নিকশ কালো আধার রাত কীভাবে যেন ধীরে ধীরে রাঙা প্রভাতে রূপ নেয়। কখনোই তার ভোর এভাবে দেখা হয়নি। এতোটা মন খারাপ নিয়ে তো সে কোনোদিন থাকেনি। গত দুরাত ধরে তার ঘুম হচ্ছেনা। বিছানায় এপাশ ওপাশ করেই কেটে যায়। আজ নিজের উপরই বিরক্ত হয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে এসে বারান্দায় দাঁড়িয়েছে। যদি একটু ভালো লাগে!
মাথাটা পুরো ঝিম ধরে আছে। চোখের কোণায় পানি জমে শুকিয়ে গেছে। বুদ্ধি হবার পর এই প্রথম সে কেঁদেছে।
মা বলেন – ছেলেদের কাঁদতে নেই। কষ্টগুলো আর চেপে রাখতে পারছিলো না সে।
পুরোনো ঘটনাগুলো বারবার তাকে ভাবাচ্ছে।একসময়ের মধুর স্মৃতি গুলো এখন বিষের মতো লাগছে। ইউনিভার্সিটির ভর্তি যুদ্ধে তার ঠাই হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইচ্ছে ছিলো বুয়েট কিন্তু হলো না। সাব্জেক্ট টাও তার মনমতো ছিলোনা। হলে সিট পাওয়ার আগ পর্যন্ত দূর সম্পর্কের এক ফুফুর বাসায় ঠাই হলো। দোতলার ছাদের নোংরা এক ঘরে তার ঠাই হলো। পরিবার থেকে দূরে, অপছন্দের সাবজেক্টে পড়া, মফস্বল থেকে উঠে আসা মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তানের কেমন কাটে ইউনিভার্সিটির প্রথম দিন গুলো তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। ফুফুর বাসায় ফুফুর ব্যবহার সহনীয় হলেও অন্যদের ব্যবহার তেমন ভালো ছিলোনা। এমন ভাবে কথা বলতো যেন সে ঐ বাড়ির চাকর।
কষ্ট গুলো দূর করার জন্য সারাদিন পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করতো কিন্তু কতক্ষণ আর পড়া যায়! ফেসবুকে এক মেয়ের সাথে তার বেশ চ্যাটিং হয়। মেয়েটা তার থেকে বয়সে বড়। তার সাথে চ্যাটিং করতে তার ভালো লাগে। এভাবে চ্যাটিং করার মাত্রাও বাড়তে লাগলো। একসময় তার মনে হলো মেয়েটাকে সে ভালোবাসে। কিন্তু মেয়েটা তাকে মেনে নিবে?
ভেবেছিলো চেপে যাবো ব্যাপারটা কিন্তু চেপে যেতে না পেরে একদিন বলেই বসলো
– রিন্তি, আমার মনে হয় তোমাকে আমি ভালোবাসি।
রিন্তি হেসে উত্তর দিলো
– জুনিয়র সাহেব, আমারো তাই মনে হয়। আমিও তোমাকে ভালোবাসি।
সম্পর্কের শুরুটা অসাধারণ ছিলো নাভিদের কাছে। হঠাৎ তার ভেতরের গ্লানি, কষ্ট গুলো মুছে যেতে লাগলো।
সম্পর্কের বয়স যখন ৭ মাস তখন হলে শিফট হলো নাভিদ।
বেশ ভালোই চলছিলো, ইউনিভার্সিটির ক্লাস, পড়াশোনা, ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা, রিন্তির সাথে আদুরে, খুনসুটি তে দিন কাটিয়ে দেয়া।
রিন্তি প্রায়শই বলতো আচ্ছা একটু সময় করে দেখা করা যায়না?
নাভিদ হাসতে হাসতে বলতো
– তোমার সাথে দেখা করতে হলে একটু না প্রচুর সময় লাগবে। তুমি থাকো চট্টগ্রামে আর আমি ঢাকায়।
– প্রচুর সময় লাগবে লাগুক না। তোমাকে তো প্রতি সপ্তাহে আসতে বলছিনা।
– দেখা না করাই ভালো। দেখা করলে অনেক কিছু মাথায় আসবে। ঠিক হবেনা।
ফার্স্ট ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা সামনে। পড়াশোনার বেশ চাপ। লাইব্রেরিতেই কাটে দিনের সিংহভাগ সময়।
গত পরশুদিন নাভিদ আর তার বন্ধু নেহাল লাইব্রেরিতে বসে নোট করছিলো। নেহাল বিরক্ত হয়ে বললো
– ধুর আর ভালো লাগেনা। তুই নোট কর।আমি একটু ফেসবুকে ঢুকি।
– তোর সারাদিন খালি ফেসবুক আর ফেসবুক।
– নিজে তো ঠিকই ফেসবুকে চুটিয়ে প্রেম করছো আর আমি একটু চ্যাটিং করলেই দোষ। তাও আবার বড় আপুর সাথে।
– হয়েছে চুপ থাক।
– জানিস সিয়াম টাও তোর মতো। বড় আপুর সাথে তারও চলে। দুদিন আগেই দেখা করতে চট্টগ্রাম পাড়ি জমিয়েছে। সব কিছু একেবারে কমপ্লিট করে এসেছে। তুই কবে করবি?
– আমি একেবারে বিয়ের পর। বিয়ের আগে ঠিক না।
– সাধু সাধু। আমাদের সাথেও তো তোমার রিন্তির পরিচয় করালে না।
– করাবো করাবো।
নেহাল একটু ঠাট্টার স্বরে বললো
– তোর পোস্টে সিয়ামের প্রেয়সীর কমেন্ট ক্যান রে?
নাভিদ অবাক হয়ে বললো
– কই দেখি তো?
নাভিদ হেসে বললো
– দোস্ত এতো আমার রিন্তি।
নেহাল বললো
– সিয়ামের প্রেমিকা দোস্ত। আমি ১০০% শিওর। গতকালও আমার সামনে এই আইডি দিয়ে সেক্স চ্যাট করেছে। এমনকি ভিডিও কলে এসেছিলো। আমার মিথ্যা বলে কী লাভ? কিন্তু ওর নাম যে রিন্তি তা তো জানতাম না।
নাভিদের তখন মনে হচ্ছিলো নেহাল মিথ্যা বলছে। লাইব্রেরি থেকে বের হয়ে নাভিদ বললো
– দোস্ত, সিয়ামকে এখন এখানে ডেকে আনতে পারবি?
– দাঁড়া।
নেহাল ফোন করে সিয়ামকে ডেকে আনলো। নাভিদ ফোনের গ্যালারি থেকে রিন্তির ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলো
– আপনি চিনেন একে?
সিয়াম হেসে বললো
– হ্যাঁ, আমার তিনি।
নাভিদ মনে মনে আশা করছিলো না বোধক উত্তরের৷ নাভিদের হাত পা কাঁপছিলো। কী করবে ভেবে না পেয়ে রিন্তিকে ফোন দিলো। রিন্তি ফোন রিসিভ করে বললো
– কী ব্যাপার? আজকে এই সময়ে ফোন?
– তুমি সিয়ামকে চিনো?
– কোন সিয়াম?
– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। চিনো কিনা বলো?
– না আমি চিনি না।
নাভিদ ফোন সিয়ামের হাতে দিয়ে বললো
– কথা বলুন।
সিয়াম ফোন ধরে বললো
– নাম্মি, তুমি আমাকে চিনো না?
তারপরের কথা নাভিদ মনে কর‍তে চায়না। নাভিদের সাথে সম্পর্ক ১০ মাসের আর সিয়ামের সাথে ৬ মাসের।
দুদিন যাবত রিন্তি তার কোনো ফোন রিসিভ করছেনা। ফেসবুকে ব্লক দিয়ে রেখেছে। নেহালের কাছ থেকে জানালো রিন্তি নাকি সিয়ামকে চুজ করেছে।
সিয়ামের কাছে বলেছে
– তোকে সে ভালো ফ্রেন্ড ছাড়া কিছুই ভাবেনা।
নেহাল রাগত স্বরে বললো
– তোর কি ওই মেয়েকে ঘৃণা লাগছেনা? যে নাকি অন্য কারো সাথে বেডে পর্যন্ত গেছে। প্রায় প্রতিদিনই সেক্স চ্যাট করে তারে তুই এখনো চাস। কীভাবে?

আমি চেয়েছিলাম সে আমার লালসা থেকে দূরে থাক। তাকে আমি পবিত্র রাখি। আমাদের সম্পর্কটা ভালো থাকুক। আজে বাজে ব্যাপার গুলো না আসুক। আর সে কিনা……..
নাভিদের মনে হলো তার মা পিছনে দাঁড়িয়ে আছে হয়তোবা। পেছন ঘুরে মাকে দেখে বললো
– এইসময়?
রাজিয়া আহমেদ বললেন
– পরীক্ষা এক সপ্তাহ বাকি। এইসময় বাসায় আসলি? শরীর খারাপ নাকি অন্যকিছু?
– তোমাদের কথা খুব মনে পড়ছিলো। তাই আর কী।
– তোর ড্রয়ারে ঘুমের ঔষধ পেলাম। তিন পাতায় মোট ৩০ টার মতো ট্যাবলেট আছে। বাবা তুই কিছু করতে চাচ্ছিস?
রাজিয়া আহমেদ ডুকরে কেঁদে উঠলেন আর বলতে লাগলেন
– বাপ তুই ছাড়া আমাদের আর কেউই নাই। তোর বিকল্পও নাই। আমরা কীভাবে কী করবো? এই দুইদিনে তোর এরকম অবস্থা দেখে তোর বাবাও অসুস্থ হয়ে গেছেন। বাপজান তুই খারাপ কিছু করিস না।
নাভিদ মাকে জড়িয়ে ধরে দৃঢ় কণ্ঠে বললো
– না, মা। আমি খারাপ কিছুই করবো না।
একটি প্লাস্টিকের ফুলের জন্য নিজের মা বাবাকে কষ্ট দেয়ার কোনো কারণ নেই। নেই কোনো কারণ!

© Maria Kabir

মা… ?

0

রাতুল খেয়াল করলো তার স্ত্রী অনেকক্ষণ যাবত দরজার খুলে বাতাবি লেবু গাছটার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর পর তার শরীর কেঁপে উঠছে। রাতুল মনে মনে নিজেকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল – আজ সকালেই বেচারীর মা মারা গেছে। হয়তোবা মার কথা খুব মনে পড়ছে। কাঁদুক না কাঁদলে কষ্টটা কমবেনা। হঠাৎ তার স্ত্রী দরজা আটকে দিয়ে রাতুলের পাশে বিছানার পাশে বসে বললো
– আমি যদি কোথাও চলে যাই তাহলে তোমার খুব খারাপ লাগবে?
স্ত্রীর এরকম প্রশ্নে কিছুটা হকচকিয়ে গেলো রাতুল। উত্তরে কী বলবে ভেবে পাচ্ছিলো না। দুই বছরের সংসারে আজ অবদি কোনোরকমে কোনো ঝগড়া তাদের মাঝে লাগেনি। মনোমালিন্য আরো যত প্রকার সংসারী ঝামেলা আছে কিছুই না। তাহলে কী কারণে এরকম বলছে? হয়তোবা মায়ের মৃত্যু টা সহ্য করতে পারছেনা। তাই এরকম বলছে।
রাতুল স্ত্রীকে বলল
– নীতু, এখন একটু ঘুমাও তো। সকালে এসব নিয়ে আলোচনা করা যাবে।
নীতু বলল
– না, এখনই আলোচনা করতে হবে।
– আচ্ছা কী বলতে চাও বলো।
– আমি চলে গেলে তোমার খারাপ লাগবেনা?
– হ্যাঁ লাগবে।
– কারণ?
– তুমি আমার স্ত্রী। তোমাকে ভালোবাসি তোমাকে ছাড়া আমার কষ্ট তো হবেই।
নীতু আর কথা না বাড়িয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো। রাতুল বললো
– লাইট টা তো অফ করবা?
কোনো প্রতিউত্তর না পেয়ে নিজেই লাইট অফ করে ঘুমিয়ে পড়লো।
আজ সকালে নীতুর মা মারা যান। শ্বশুর বাড়ি থেকে স্বামী সহ আসেন বাবার বাড়িতে। আত্মীয় স্বজনে পুরো বাড়ি ভরা কিন্তু এই মা জীবিত থাকতে কেউ ভুলেও বাড়িতে পা দেয়নি। তার মা তালাকপ্রাপ্ত ছিলেন। নীতুর যখন ১২ বছর তখন তার বাবা, মাকে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তার মা নাকি চরিত্রহীনা! পাশের বাসার আব্দুলের সাথে নাকি তার মায়ের মাখামাখি সম্পর্ক। নীতু জানে তার মা ওরকম না। তার বাবা মাকে তালাক দেয়ার ক’দিন পরেই আবার বিয়ে করে আনেন।
তখন থেকেই নীতু আর তার মা নানাবাড়িতে থাকতে শুরু করেন। আত্মীয়রা তার মাকে একঘরে করে দিলেও তার নানা নানী তাকে ছাড়তে পারেননি।
এরকম অনেক কথাই ভাবতে ভাবতে নীতু ঘুমিয়ে পড়লো।
রাতুলের ঘুম ভাঙলো নীতুর দূর সম্পর্কের এক মামার ডাকে।
– নীতু রে খুঁইজা পাওয়া যাইতেছে না।
রাতুল লাফিয়ে উঠে বললো
– দেখুন আশেপাশেই আছে।
– তা তো কখনই দেখা হইছে। নাই কুথাও নাই। মায়ের মতো মেয়াডাও আধ পাগলা হইছে। ওর মাও এই বয়সে হুটহাট করে উধাও হইয়া যাইতো। তারপর একা একাই আসতো। সাধে সাধে কি ঘর সংসার গেছে নাকি।
রাগে গজগজ করতে করতে ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। এই একজনই নীতু আর তার মাকে খুব ভালো জানতো। উনিই তো রাতুল আর নীতুর বিয়ে দিয়েছে।
রাতুলের মনে পড়লো গতকাল রাতেই নীতু তাকে চলে যাওয়ার কথা বলেছে।সত্যি কি চলে গেলো নাকি? কই যাইতে পারে?
বিছানা ছেড়ে উঠে কোনোরকমে জামা কাপড় ঠিক করে বের হয়ে পড়লো।
বিকালের দিকে নীতুকে নিয়ে তার মামা ফিরে আসলো। নীতুর সারা শরীরে মাটি লেগে আছে। চোখ ফুলে আছে। ক্লান্তির মলিন ছাপ তার দেহে।
রাতের বেলা রাতুলকে, মামা ডেকে নিয়ে বললেন
– ওকে ওর মায়ের কবরের পাশে শুয়ে থাকতে দেখছি। কারণ জিজ্ঞেস করতেই বলল ” তার মা একা থাকতে ভয় পাইতেছে। তাই সে এখন থেকে ওখানেই থাকবে ”
তুমি একটা কাজ করো বাজান ওরে নিয়ে তোমার বাসায় চলে যাও। এই বাড়িতে আর থাকোন লাগবেনা।

রাতুল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো ঠিক ১২ টা বাজে। নীতু আজও দরজা খুলে বাতাবি লেবু গাছটার দিকে তাকিয়ে আছে।
নীতু গতকাল রাতে ঘুমাতে যাবে তখন মনে হলো তার মা তাকে ডাকছে। প্রথমে সে নিজেকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল
– না, ওসব কিছুনা।
ধীরে ধীরে মায়ের ডাকের শব্দটা বৃদ্ধি পাচ্ছিলো। তখন রাতুল ঘরে ছিলো না। দরজার ওপাশে উঠোন থেকে শব্দটা আসছিলো। সাহস করে দরজা খুলে দেখে তার মা বাতাবি লেবু গাছটার ধারে দাঁড়িয়ে আছে। সেই রোগাটে ক্লান্ত চেহারা। যেই কাপড় টা পড়ে মারা গেছিলো সেটাই পড়ে আছে। ছলছল চোখে তার দিকে তাকিয়ে বললো
– নীতু।
নীতু বললো
– বলো মা।
– আমার একা খুব ভয় লাগছে রে। তোরা আমারে কোন অন্ধকারে রেখে এসেছিস রে। আমার খুব ভয় লাগছে রে। আমার সাথে তুই যাবি? এই মা তোর জন্য দ্বিতীয় বিয়ে করিনি। এই মাকে একা থাকতে দিবি?
কথাগুলো বলে নীতুর মা আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে কাঁদতে শুরু করলেন।
নীতুও কাঁদতে শুরু করলো। আজও তার মা এসে বাতাবি লেবু গাছটার ধারে এসে দাঁড়িয়ে আছেন। সেই একই কথা বারবার বলছেন।
সত্যিই তো তার মা তার জন্য কতো কষ্টই না সহ্য করেছেন। কিন্তু সে তো কিছুই বিনিময়ে দিতে পারেনি। মা মাত্র এটুকু চেয়েছে তাও যদি সে না দিতে পারে তাহলে সে কেমন সন্তান হলো?
নীতু ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলো
– মা তোমার জন্য কী করতে পারি আমি?
তার মা বললেন
– তুই আতালে রাখা বিষ টা সবার আড়ালে খেয়ে নিবি। তাতেই হবে।
– মা তাতে তো আমি মইরা যাবো। তোমার কবরের পাশে শুয়ে থাকলেই তো হবে।
– না না সবাই তোরে আবার ফেরত নিয়ে আসবে। আর বিষ খাইলে কেউই পারবেনা।
রাতুল স্ত্রীর নিজের সাথে নিজের কথা বলতে দেখে ভাবলো
– কালই হুজুরের বাড়ি তাকে নিয়ে যেতে হবে। তা না পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যাবে বেশি।

লায়েক ভোর বেলা গরু নিয়ে মাঠে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে নীতুদের বাসার আতাল সামনে পড়ে। দূর থেকে লায়েক দেখলো কেউ একজন আতালের পাশেই পড়ে আছে। প্রায় দৌঁড়ে কাছে গিয়ে দেখলো নীতু পড়ে আছে।
মুখ দিয়ে সাদা ফ্যানা বের হয়ে আছে। মুখ নীল হয়ে গেছে।
রাতে যখন রাতুল গভীর ঘুমে তলিয়ে যায় তখন নীতু ঘর থেকে বের হয়ে আতালে রাখা বিষ খেয়ে নেয়। তার মা পাশে দাঁড়িয়ে তাকে বলে
– এইতো আমার সন্তান।
নীতু আবছা আবছা শুনতে পায় তার মা বিকট স্বরে হাসছে। সেই হাসিতে পুরো দুনিয়া কেঁপে কেঁপে উঠছে!

© Maria Kabir

মধ্যবিত্ত ছেলেদের ভালোবাসা

2

Middle Class ছেলেদের কাছে আত্নসম্মান টাই সবচেয়ে বড়। ♥
এদের আপনি দামী গিফট দিবেন এরা খুশি হবে না এদের জাস্ট একটা বই পছন্দের কিছু খাবার বা টুকটাক ছোট খাটো ভালো লাগার কিছু গিফট করবেন দেখবেন সে গিফট টা এর কত খুশিমনে গ্রহন করে।
Middle Class ফ্যামিলির ছেলেরা Girlfriend এর Family Status/ Credit Card / Car দেখে না। এরা নিজের Bill নিজে Pay করার Mentality নিয়েই বড় হয়।♥

Girlfreind এর সাথে ঘুরতে যাওয়ার টাকা নেই? সে পাগলের মতো বন্ধুদের কাছে যাবে আর কিছু টাকা চাইবে, টাকা না পেলে কোনো একটা বাহানা দিয়ে বলবে অন্য একদিন দেখা করবো,আজকে নয়। ব্যাপারটা দেখেছেন কোনদিন নিজের চোখে?
দেখলে Must be সেটা কোন High Class ছেলে না, সেটা কিন্তু সেই Middle Class ছেলেটাই।?

বন্ধুরা কলেজ / ভার্সিটি ছুটির পরে সবাই মিলে রেস্টুরেন্টে যাবে খেতে, কিন্তু বাসায় কাজ আছে বলা ছেলেটাকে দেখেছেন কখনো ? সে জানে বাসায় মা রান্না করে বসে আছে তার জন্য। সে সেই রেস্টুরেন্টের বিল টা পকেটেই রেখে দেয়।

সবার বন্ধুদের মাঝেই একটা কিপটা ছেলে থাকে।
সবাই তাকে পচাই, ছেলেটাকে চিনেন? সে সেই Middle Class ছেলেটা, যে দশ টাকা খরচ করার আগে ভাবে আমার বাবা ১০ মিনিট কাজ এই দশ টাকা আমাকে দিয়েছে।?

Please Don’t Blame Him,Respect Him.♥

পছন্দের কোনো জিনিশ কিনতে গিয়েও সেই Middle Class ছেলেটাই কিন্তু ভাববে, ” নিজের সখটাকেই বড় করে দেখলে চলবে না। আমি তো ওকে ভালোবাসি, আমাকে এখন থেকেই টাকা জমানোর অভ্যাস করতে হবে, সামনে কতো বড় FUTURE আমাদের।♥

জি হ্যা, সেই Middle Class ছেলেটাই চাইবে নিজের ক্যারিয়ার টা আপনার সাথে কাটাতে,সে নিজের পছন্দের জিনিসটা দোকানের বাইরে দারিয়ে দেখে Wallet এর দিকে তাকিয়ে আপনার কথা চিন্তা করবে,তারপর সে সেখান থেকে যত দ্রুত সম্ভব চলে আসবে। সে হয়তো আপনার সব ইচ্ছা পূরন করতে পারবে না, কিন্তু নিজের বেতনের সব টাই আপনার জন্য খরচ করতে একবার ও ভাববে না। ?

সেটাও সে কিন্তু জমিয়ে জমিয়ে আপনার পিছনেই খরচ করে ফেলবে আপনার একটু পছন্দের জিনিষ টা কিনে দিতে।
আর দিনশেষে আমরা ভুলে যাই সব কিছু, Middle Class ছেলেটা হয়ে যায়
~তুমি এতো ক্ষ্যাত কেন?
~তুমি এতো কিপটা কেন?
~ তুমি নতুন জামা কিনো না কেন?
~তোমাকে নিয়ে কোথাও যেতে আমার লজ্জা লাগে ?
~তুমি Middle Class কেন?
~তুমি স্মার্ট না কেন?
~তুমি সুন্দর না কেন?
~তোমার চোখ মুখ সব কিছু পারফেক্ট কাটা কাটা না কেন?
~আমার বান্ধবিদের জামাইদের দেখছো কি সুন্দর?
~তোমার চুল এমন ক্ষ্যাত কেন?
~চুলেকালার করা না কেন?
~তুমি Rich Watch পড়ো না কেন??

মোট কথা এখন তোমার আমার লেভেল আলাদা আমি তোমার থেকে better কাওকে সব সময় ডিজার্ভ করি।
তুমি জাস্ট একটা পেইন।

খুব অবাক লাগে না??

এর পরের গল্প টা সবার জানা।
মেয়েটা তাকে ছেড়ে দিয়ে নতুন করে কাউকে নিয়ে বাচঁতে শিখে যায়, কিন্তু এক সময় বাবা মার পছন্দের বি সি এস ক্যাডার ডাক্তার ছেলেটাকে বিয়ে করে ফেলে।?
নিজের সংসারে মন দিবে আর মাঝে মাঝে আফসোস করবে কেন ছেলেটার জীবন নিয়ে খেল্লাম, আজ কোটিপতি জামাইয়ের ১ লাখ টাকাই হয়তো আমার হাতে দিবে, কিন্তু সেই ছেলেটা ২০ হাজার টাকার সবটাই আমার হাতে তুলে দিতো।?
আর সেই ছেলেটা?
তার কথাও সবাই জানে, সে এখনও হয়তো সবটা গুছিয়ে নিতে পারেনাই, হয়তো লেখা পড়াটা আগের মতো মন দিয়ে করতে পারেনা, হাজার মানুষের ভিড়ে তোমাকে খুজে, জন্মদিনে সবার মাঝে তোমার মুখ থেকে Happy Birthday শুনতে চায়।?

আর সেই মেয়ের জামাইও দেখবেন কয় জায়গায় কি করে আসবে।
একটা Middle Class ছেলে তা কোন দিন করবে না।
এই শ্রেনীর ছেলেরা সব দিবে কিন্তু ভালোবাসার ভাগ কাওকেই দিবে না।

যে যেমন তেমনই পাবে দিন শেষে।
Middle class honest একটা ছেলেকে বিয়ে করার সৌভাগ্য সবার হয় না। ♥

লেখকঃ তুষার আহমেদ

গল্পটি ভালো লাগলে লাইক-কমেন্ট-শেয়ার করে সবাইকে পড়ার সুযোগ করে দিন

মাতৃত্ব ৩ তথা শেষ পর্ব

0

মাতৃত্ব

৩ তথা শেষ পর্ব

#Rabeya Sultana Nipa

_আয়ান -না করে আর উপায় কি।তোদের কে তো সব আগেই বলেছি।

রিমন-তুই কপাল করে একটা বউ পেয়েছিসরে,, ।

আয়ান – ঠিক বলছিস তাই নিজের স্বামীকে অন্যজনের হাতে তুলে দেয়।তোরা বস আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।

প্রাপ্তি নাস্তা নিয়ে এসে আয়ানকে না দেখে বললো।
আয়ান ফ্রেশ হতে গেছে?
ও আসলে নাস্তা খাইয়ে রেডি করে দিবেন।
আয়ান ফ্রেশ হয়ে এসে তুমি কই যাচ্ছো? আমাকে নাস্তা খাইয়ে তারপর যাবে।
প্রাপ্তি একটু লজ্জা পেয়ে, মাথা ঠিক আছে তোমার?

নিহাদ-আরে ভাবী সমস্যা নেই খাইয়ে দেন।কার এমন কপাল, বিয়ের দিন বউয়ের হাতে খায়। লজ্জা পাওয়ার কোনো কারন নাই আমরাই তো।কথাটা বলেই নিহাদ আর রিমন হেঁসে উঠলো।

প্রাপ্তি কিছু না বলে রুম থেকে চলে গেলো।

রিমন -প্রাপ্তি মনে হয় কষ্ট পাইছে।এই কথা বলা তোর উচিত হয়নি।

আয়ান -কষ্ট দেবার জন্যই তো বলছি।কেমন লাগে একটু দেখুক।অনেক উদার মনে করে নিজেকে।তার উদারতা ছুটাতে হবেনা?

নিহাদ-প্রাপ্তি কি তোর সাথে আজ যাবে মেয়েদের বাড়িতে।

আয়ান-যাবেনা মানে? ও এতো কিছু করেছে এইটুকু আর বাকী থাকবে কেন?
প্রাপ্তি !প্রাপ্তি ! এইখানে আসো তো।আয়ানের ডাকে দৌড়ে এলো প্রাপ্তি।
প্রাপ্তি -ডাকছো কেন? তুমি এখনো রেডি হওনি তাড়াতাড়ি করো।

আয়ান -তুমিও তো এখনো রেডি হওনি।

প্রাপ্তি -আমি রেডি হবো কেন? আমি যেতে পারবোনা, লোকে কি বলবে?

আয়ান -এতো কিছু করার পরও যখন লোকে কিছু বলে নাই তাহলে এখন কিছু বললে আমি আছি।আর আমি আমার ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে যাচ্ছি কার কি বলার আছে?

প্রাপ্তি -আচ্ছা তুমি রেডি হও আমি দেখছি।
কথাটা বলেই রুম থেকে আসার সময় আছমা বেগম বললেন
আয়ান যখন তোমাকে ছাড়া যাবে না তখন রেডি হয়ে নাও।

প্রাপ্তি -(দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে)ঠিক আছে।আপনিও যখন বলছেন তাহলে আমি যাবো।দেখেছেন মা? আমার কপাল টা অনেক ভালো, নিজের স্বামীর বরযাত্রী হয়ে যাচ্ছি।আর কিছু না বলে প্রাপ্তি কান্না করতে করতে তার মায়ের কাছে গেলো।

প্রাপ্তির মা-আমার মেয়ে যে এতো উদার আমরা জানতামই না।আজ আমরা গর্ববোধ করি তোর মতো একটা মেয়ে আমরা জন্ম দিয়েছি।

প্রাপ্তি -মা! অন্তত তুমি আর কিছু বলো না।আমার ভাগ্যেই আয়ান নেই।যদি থাকতো ১৪ বছর পরে ওকে হারাতে হতো না।
আচ্ছা আমি রেডি হয়েনি।আমি যাওয়ার পর সব কিছু গুছিয়ে নিও।আমরা কাল সকালেই চলে যাবো।
প্রাপ্তি রেডি হচ্ছে এইদিকে মাথাটাও কেমন ঝিমঝিম করছে।হয়তো কাল থেকে কিছু খাওয়া হয়নাই তাই। আমি খেয়েছি কিনা আয়ান একবারও জিজ্ঞাস করলোনা।বিয়ে করবে না বলে বলে সবকিছু তার ঠিকি চলছে। শরীরটাও কেমন জানি ভালো লাগছেনা। কিন্তু কিছু করার নেই আমাকে যেতেই হবে আয়ানের সাথে।না হলে সে যাবেনা।

আয়ান ও রেডি হয়ে বেরিয়ে আসলো।
প্রাপ্তি কই তুমি এখনো হয়নি?

প্রাপ্তি -(মায়ের রুম থেকে বেরিয়ে এসে) হ্যাঁ, চলো।

সবাই যখন বাসা থেকে বেরিয়ে গাড়ীতে উঠতে যাবে তখনি প্রাপ্তি মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার আগেই আয়ান প্রাপ্তি ধরে পেলে।
প্রাপ্তি কি হয়েছে?প্রাপ্তি !প্রাপ্তি !আয়ানের ডাকে প্রাপ্তির কোনো সাড়া নেই।

নিহাদ, রিমন ওকে হসপিটাল নিতে হবে।

আছমা বেগম-ওর মা বাবাই ওকে হসপিটালে নিতে পারবে।তুই এখন বিয়েবাড়িতে যাবি।

আয়ান -মা! আজ আর চুপ হয়ে থাকতে পারছি না।আমি তোমার কথায় বিয়ে করতে রাজি হয়নি।শুধু প্রাপ্তি বলাতে আজ আমি এই পর্যন্ত এসেছি।আর প্রাপ্তি যতক্ষন না সুস্থ হচ্ছে এই বিয়েটা আমি কিছুতেই করবোনা।
আছমা বেগমকে কথা গুলো বলেই প্রাপ্তিকে গাড়ীতে উঠিয়ে আয়ান নিহাদ,রিমন, প্রাপ্তির বাবা,মা সবাই হসপিটালে চলে গেলো।
প্রাপ্তির বাবা যাওয়ার সময় আছমা বেগম কে বলেছেন ওনার মেয়ের কিছু হলে কাউকেই ছেড়ে কথা বলবে না।

ডাক্তার প্রাপ্তিকে খুব ভালো করে দেখলেন।
অনেক গুলো টেস্ট করাতে দিলেন।
ডাক্তার রিপোর্ট গুলো দেখে,
ডাক্তার -ওনার বাড়ীর লোক কে আছেন?

আয়ান -জ্বী আমি আছি।

ডাক্তার -কি হন আপনি?

আয়ান – ওর হ্যাজবেন্ড।

ডাক্তার-আপনি কি রকম হ্যাজবেন্ড।আমার মনে হয় আপনার ওয়াইফ কিছুদিন থেকে খাওয়া ধাওয়া ঠিকমতো করছে না।আর অনেক চিন্তিত থাকেন।আর এইসময় যদি এইভাবে চলতে থাকে মায়ের তো ক্ষতি হবেই সেই সাথে বাচ্চারও ক্ষতি হবে।

আয়ান -বাচ্চা!!! (অবাক হয়ে)ডাক্তার আপনি কি বলছেন? আমি কিছুই বুজতেছিনা।প্লিজ আমাকে একটু বুজিয়ে বলুন।

ডাক্তার -আপনার ওয়াইফ প্রেগন্যান্ট। কেন, আপনি জানেননা?

আয়ান খুশিতে ডাক্তারকে জড়িয়ে ধরে thanks, thanks

ডাক্তার অবাক হয়ে আরে আপনি করছেন কি?

আয়ান -আমি আপনাকে বলে বুজাতে পারবো না আজ আমি কতোটা খুশি।

ডাক্তারে রুম থেকে বেরিয়ে আয়ান নিহাদ আর রিমন কে জড়িয়ে ধরলো।
রিমন -কিরে ডাক্তার কি বলেছে? প্রাপ্তির কি অবস্থা?

প্রাপ্তির মা -কি হয়েছে বাবা তুমি এতো খুশি কেন?

আয়ান -মা! কি হয়নি সেটা বলুন।আপনি তো নানি হচ্ছেন।
সবাই অবাক হয়ে আয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু অবাকের মাঝেও আনন্দের সীমা নেই।

প্রাপ্তির জ্ঞান ফিরেই দেখ সবাই তার পাশে বসে আছে।চারদিক তাকিয়ে বুজতে পারলো সে হসপিটালে আছে।
কি ব্যাপার তুমি এইখানে বসে আছো।তোমার না বিয়ে করতে যাবার কথা।

আয়ান-হ্যাঁ,ঠিকি বলেছো তবে আমি আর করছিনা।কিছুদিন পর আমাদের ছেলেমেয়েকে বিয়ে দিবো।

প্রাপ্তি – আমাদের ছেলেমেয়ে মানে? কি বলতে চাইছো?

প্রাপ্তির মা সব কিছু খুলে বললো প্রাপ্তিকে।
প্রাপ্তি মা হবে এইকথা শুনার পর থেকেই শুধু কান্না করছে আর কিছুই বলছেনা।

আয়ান-এইভাবে কান্নাকাটি করছো কেন?এমন একটা খুশির খবর শুনে কান্নাকাটি করছো?

প্রাপ্তি -আয়ান! মা কে সব বলেছো?মা শুনে কি বলেছে?
আয়ান -আমি খবরটা শুনার পর এতো এক্সাইটেড ছিলাম মাকে জানানোর কথা ভুলেই গেছি।
আচ্ছা ঠিকাছে মাকে ফোন দিয়ে এখনি বলছি।

আছমা বেগম-(দরজায় দাঁড়িয়ে)আমাকে আর ফোন দিতে হবে না।আমি নিজেই এসেছি।নিহাদ ফোন করে আমাকে সব বলেছে।এখন যতো কিছুই হয়ে যাকনা কেন কথা একটাই, বিয়ে আজকে হবেই।

আয়ান -(অবাক হয়ে)মানে? কি বলছো এইসব।আর মা যেই মেয়েকে বিয়ে করার কথা ছিলো তারা ফোন দিয়েছে ওই মেয়ে তার প্রেমিকের সাথে পালিয়েছে।কেউ জেনে শুনে তোমার ছেলেকে বিয়ে করতে আসবেনা।

আছমা বেগম -তা ঠিক বউ পাগলকে কে আর বিয়ে করতে আসবে। তারপরেও বিয়ে হবে।আর যার সাথে হবে সে হলো প্রাপ্তি।

প্রাপ্তি -আবার বিয়ে? মা! বিয়েটা যখন ঠিক করেছেনই এই বলদটার সাথে?যেই বউয়ের কথায় বিয়ে করতে চলে যায়।

আয়ান -এই ঠিক হচ্ছেনা কিন্তু।আমি নিজের ইচ্ছায় যায়নি।তুমি বলেছো তাই।(প্রাপ্তির মায়ের দিকে তাকয়ে)মা আপনি বলেন আমি কি নিজের ইচ্ছায় বিয়ের কথা বলছি?

প্রাপ্তি -আমি বলেছি বলে বিয়ে করতে চলে যাবে? না! না!আমি মানবোনা,,,,,
এই ঝগড়া চলছে চলবে।যেই ঝগড়ার মাঝে ভালোবাসা আছে সেই ঝগড়া সারাজীবন চললেও অসুবিধে নেই।সবার ভালোবাসা এইভাবেই বেঁচে থাকুক সবার জীবনে।

সমাপ্ত