Tuesday, June 17, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2388



Contract_marriage★   part: 16

0
 Contract_marriage★
 part: 16
writer-Jubaida Sobti
নিলা: দাদী চলে গিয়েছে এবার ছাড়ুন।
আবির হাত সরিয়ে নিলো….
এভাবে কেটে যায় ৫ মাস..আবির আর নিলার মাঝে খুঁটিনাটি ঝগড়া খুঁটিনাটি ভালোবাসা..মাঝে মাঝে বন্ধুত্বপরায়ন আচরণ আবার এর মাঝে শত্রুর মতো আচরণ চলতে থাকে।
.সৌরভের সাথে নিলাকে কথা বলতে দেখলে আবিরের অসহ্য লাগে…
আবার তারার জন্য ভালোবাসা তারার সাথে প্রতিদিন দেখা করা প্রতিদিন ভালোবাসার কথা বলা।
..৬ মাস পূরণ হতে আর মাত্র ২৫ দিন বাকি।
পরের দিন…..সকালে নাস্তা করে আবির অফিসে যাচ্ছিলো….হঠাৎ আবিরকে সৌরভ ফোন দিয়ে দেখা করতে বলে…
আবিরের অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যেতে হলো…খুব জরুরি কথা নাকি।
আবির : কি হয়েছে বল। বেশিক্ষন সময় নেই।
সৌরভ : (একটু হেসে) যা বলার জন্য তুকে ঢেকেছি শুনার জন্য তুই হয়তো মোটে ও প্রস্তুত নয়।
আবির : যা বলবি সরাসরি বল। এতো অভিনয় করার কি আছে। প্রস্তুত তো আমি সবসময় থাকি।
সৌরভ : তাহলে শোন… দেখ আমার আর নিলার মাঝে কিছু নেই। নিলাতো আমাকে শিখিয়ে দিয়েছে তোর সাথে অভিনয় করার জন্য…তাই আমি এসব অভিনয় করছি।
আবির : (শুনে পুরাই অবাক।আবির নিলাকে ভালোবাসেনা ঠিক কিন্তু নিলাকে কখনো ঘৃণা করেনা।নিলাকেতো আবির তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করেছে তাকে সাহায্য করার জন্য। কিন্তু নিলা আবির আর তারার ভালোবাসার মাঝে এভাবে কাটা বেধে দাঁড়াবে আবির তা এক্সপেক্ট করেনি।)
সৌরভ : কি বিশাস হচ্ছে না। তাহলে নিলা থেকেই জিজ্ঞেস কর।…নিলা চেয়েছিলো যে….আমার সাথে নিলাকে দেখলে তোর যাতে jealous ফিল হয়। এবং তুই নিলাকে চিরদিনের জন্য আপন করে নিস। এবং তারাকে ভুলে যাস।
আবির আর এক মূহুর্তের জন্য ঐ জায়গায় দাঁড়ায়নি।
(খুব রাগ কাজ করছে এখন আবিরের শরীরে আবির কখনো ভাবেনি নিলা এতোটা নিচে নামবে)
সোজা গাড়িতে উঠে ফুল স্পিডে গাড়ী চালিয়ে নিলার কাছে যায়।
বাড়িতে এসে দেখে নিলা ড্রইং রুমে বসে দাদী ভাবীদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে।
আবির : নিলা একটু রুমে এসো তো…
ভাবী : (দুষ্টামির ভঙ্গীতে) হঠাৎ রুমে কি জন্যে আমরা একটু শুনি।?
নিলা আবিরের চেহেরা দেখে বুঝতে পারে আবির কিছু একটা বলতে চাচ্ছে নিলাকে।
নিলা: চলেন।
নিলাও আবিরের পিছু পিছু রুমে গেলো।
আবির নিলাকে রুমে ঢুকানোর পরে দরজা বন্ধ করে দেই।
(নিলা অনেক গাভ্রিয়ে যায়। আবির নিলাকে রাগান্বিত চোখে দেখে)
আবির : নিজেকে কি মনে করো হে…তুমি অনেক চালাক তাই না। আসলে তোমার মতো মেয়েরায় পারে এমন কাজ করতে।
নিলা: ( রেগে গিয়ে) শুনেন উল্টাপাল্টা কথা বলবেন না। কি করেছি সেটা তো বলেন।
আবির : (একটু রাগান্বিত হেসে) কি করেছো না কি করোনি সেটা বলো…
(আবির নিলার দিকে এগিয়ে এসে) তোমার ঐ কূমতলোব প্লানের কথা সৌরভ
আমাকে সব বলে দিয়েছে।কিন্তু নিলা যতো চেষ্টা করবে করো কোনো লাভ নেই। তোমাকেতো আমি আমার ভালো ফ্রেন্ড বানিয়ে ছিলাম কিন্তু তুমি?
নিলা : (নিলা পুরাই অবাক সৌরভ এমন কেনো করেছে।) দেখেন আমি সৌরভকে নিষেধ করেছিলাম।
আবির: হে নিষেধ করেছিলে। কিন্তু তবু ও আমায় বলে দিয়েছে। কারন ও তোমার মতো মেয়েকে ভালো করে বুঝে নিয়েছে। Shameless girl.
নিলার আর কিছু বলার ছিলো না। চোখ দিয়ে শুধু নোনা জল গড়িয়ে পড়ছে।
আবির : ওয়াও! নিলা আর কতো অভিনয় করবা। এসব চোখের পানি গুলো কিভাবে নিয়ে আসো এতো তাড়াতাড়ি।
নিলা চোখ মুচে আবিরের দিকে তাকালো।
আবির: (রেগে রেগে) তোমার ঐ পাঁচ লক্ষ টাকা আমি কালকের মধ্যেই দিয়ে দিবো। তারপর চিরদিনের জন্য তুমি আমার জীবন থেকে খালাস।
নিলা: (কেঁদে কেঁদে) আপনার পাঁচ লক্ষ টাকা আপনি আপনার কাছেই রাখুন। এসব টাকার প্রতি আমার কোনো লোভ নেই। আমিতো দাদীকে প্রমিস করেছিলাম তাই আপনাকে টাকা ইনকাম করার জন্য ফোর্স করেছিলাম। আমার যদি টাকার এতোই লোভ থাকতো তাহলে আমি শুধু পাচঁ লক্ষ টাকায় চেতাম না। আর আপনি হয়তো ভুলে গিয়েছেন আমি টাকা চেয়েছি আপনার হাতের ইনকাম করা টাকা।যদি টাকার লোভ থাকতো তাহলে আমি আপনার বাবার টাকা নিয়েই চলে যেতাম।
হে আমি মেনে নিচ্ছি আমার এটা অনেক বড় ভুল হয়েছে সৌরভের সাথে প্লানটা করে।
আসলে আমি এখন বুঝতে পারছি ভালোবাসা জোড় করে হয়না। ভালোবাসা মন থেকে হতে হয়। যেমন আপনার আর তারার ভালোবাসা। আমি এই বিয়েটা করেছি নিজের জন্য নয় যাতে আপনার আর আমার পরিবার অপমানিত না হয়।
আবির : আমার পরিবারের জন্য এতো দায়িত্ব কেনো তোমার কারন তুমি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছো নিলা তুমি কন্ট্রাক্ট এর রুলস ভঙ্গ করেছো
নিলা : ঠিকাছে আর কিছু ভঙ্গ করতে হবে না।
দোয়া করবো যাতে আপনাদের জীবনটা খুব রঙিন হোক।
আমি আজ রাতেই চলে যাবো আর কখনো আসবো না আপনার আর তারার মাঝে।
আপনি আমাকে এতোটুকু সাহায্য করেছেন আপনার এই ঋণ কখনো শোধ করতে পারবো না আমি।
আবির : (অবাক হয়ে) কিন্তু এখনো তো ২৫ দিন বাকী আছে।
নিলা: ২৫দিন পরে গেলে যেমনটা হবে আজ গেলেও তেমন হবে।আবির একদিন না একদিনতো বলতেই হবে পরিবারকে।
আবির কিছু বলেনি নিলাকে… চুপ করে আছে। নিলা আলমারি থেকে কাপড় নিয়ে তার বেগ গুছিয়ে নিচ্ছে।
আবির রুম থেকে বেরিয়ে তার বাবাকে বলতে যায় কিন্তু বলার সাহস পাচ্ছে না।
আবির চলে যাওয়ার পরে নিলা সৌরভকে ফোন দেই।
নিলা : এমনটা কেনো করলেন?
সৌরভ : নিলা আসলে আমি তোমাকে ভালোবাসি। তাই এসব করতে বাধ্য হয়েছি। নিলা দেখো আবিরতো তোমাকে ভালোবাসে না। আমি তোমাকে…….
নিলা ফোনটা কেটে দেই।আর কিছু শুনতে ইচ্ছে হচ্ছে না নিলার।
তারার ফোন আসে।আবির তারার সাথে দেখা করতে গেলো।অনেক্ষন হলো দুজন চুপচাপ বসে আছে আবির ও কেমন মন মরা হয়ে বসে আছে।
তারা : কি হয়েছে আবির তুমি কি আমায় ইগনোর করছো….কখন থেকে বসে আছি কিছুই বলছো না।
আবির: আরে না তেমন কিছু না। এমনি ভালো লাগছে না তাই।
তারা : ভালো লাগছে না মানে! কেনো কি হয়েছে?
আবির: তারা জানো আজ রাতে নিলা চলে যাবে।
তারা : (খুশী হয়ে) ওয়াও আবির। ২৫দিন আগেই।কেমনি বের করছো আবির এতো তাড়াতাড়ি ঐ পেত্নীটাকে।
আবির : (একটু রেগে) তারা! এটা ভালো হচ্ছে না কিন্তু।
নিলা ততোটা ও খারাপ না।আর ও মোটেও পেত্নীর মতো না।ও কিন্তু দেখতে তোমার চেয়ে সুন্দর।
তারা : ( চুপ করে আবিরের দিকে রাগান্বিত চোখে চেয়ে আছে)
আবির : (আবির ও বুঝতে পারেনি সে তারাকে কি বলতে কি বলে ফেলেছে। আবির তারার হাত ধরে.)… তারা! আসলে আমি ওটা বুঝায় নি। তুমি ও অনেক সুন্দর।তুমি সুন্দর না হলে ও আমার জন্য পৃথীবির সবচেয়ে সুন্দরী।
তারা: (তারা বুঝতে পারে নিলার প্রতি আবিরের মায়া জমে গিয়েছে।সাভাবিক এটাতো হওয়ার ছিলো। একটা ছেলে আর একটা মেয়ে ৫ মাস একসাথে ছিলো তাও আবার বিয়ে করা জামাই বউ।নিলা আবার তারার চেয়েও সুন্দর।
কিন্তু তারা ও আবিরকে ভালোবাসে এখন তারাও আবিরকে ছাড়তে পারবে না।তারা বুঝেও না বুঝার মতো..)
আবির! আমি কিছু মনে করিনি। আমি জানি তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসো তাই না?
আবির: (অন্যমনা কি যেন ভাবছে)
তারা: (চিৎকার করে) আবির!
আবির: হে বলো!
তারা: আবির কি ভাবছো তুমি? আমি কথা বলে যাচ্ছি আর তুমি কি ভেবেই যাচ্ছো। বুঝেছি ঐ নিলা তোমার উপর যাদু করে দিয়েছে তাই না।
আবির: কি বলছো তারা পাগল নাকি তুমি। আচ্ছা বাদ দাও। বলো কি খাবা?
তারা : (কেঁদে কেঁদে) কিছু খাবো না আমি তুমিই খাও।
আবির : এই দেখো পাগলি আবার কাদে ও। আচ্ছা বাবা সরি! এই নাও কান ধরলাম খুশি?
তারা : (একটু হেসে) হে খুশি।
তারা বাসায় গেলো….
তারার বাবা তারাকে জিজ্ঞেস করে আবিরের পরিবারের সাথে কথা বলবে নাকি।
তারা : বাবা আমার তোমাকে কিছু বলার ছিলো আবিরের বেপারে।
বাবা : হে বল।
তারা তার বাবাকে আবিরের নিলার আর তারার কথা সব খুলে বললো।
বাবা: তারা তুইতো educated মেয়ে তুই এই ভুল কিভাবে করবি।তুই আমাকে আগে বলিসনি কেন? আবির বিবাহিত।
তারা: বাবা আমিতো বলেছি ও বিয়ে করেছে ঠিক। কিন্তু ও আমাকে ভালোবাসে। নিলাকে ও সাহায্য করেছে.বিয়ে করে.. নিলাকে ডিবোর্স দিয়ে দিবে তার পরিবারকে তাদের মাঝে মনমালিন্য হয়েছে বলে… বাবা আবির অনেক ভালো ছেলে।
বাবা : দেখ তারা কোনো বাবা চাইনা তার মেয়ে অসুখী হোক। আমি তোর ভালোর জন্য বলছি।
আর আমি একজন বাবা হিসেবে বুঝতে পারছি একটা মেয়ের সংসার ভেংগে গেলে তারা পিতামাতার কতটা কষ্ট লাগে।
তারা তুই বল নিলা আবিরের সাথে সংসার করেছে তাও আবার ৫ মাস পুরোপুরি। এতোদিনের একটা সম্পর্ক ভেংগে দিয়ে ঐ স্থান তুই পূরন করতে পারবি। আবির যদি নিলার সাথে ৫ মাস সংসার করে তাকে ছেড়ে দিতে পারে তাহলে তুকে অন্য মেয়ের জন্য ছাড়তে পারবে না তার গ্যারেন্টি কি?
তারা : (কিছুক্ষন ভেবে) ঠিক বলেছো বাবা.. আজ আমি আবিরের সাথে দেখা করে ও বুঝতে পেরেছি আবিরের নিলার প্রতি অনেকটা মায়া বেরে গিয়েছে।আবির আগে এমন ছিলো..না.
বাবা: এটাতো হওয়ারি কথা।কারন তারা নিলা আর আবিরের বিয়ে হয়েছে তারাদুজন এখন এক বন্ধনে।তোর আর আবিরের ভালোবাসার শক্তির চেয়ে একজন সামীর জন্য তার স্ত্রীর ভালোবাসার শক্তি যথেষ্ট ।
তোর মা মারা যাওয়ার পর থেকে তুকে আমি তোর বাবা ও বন্ধুর মতো আচরণ করেছি কেনো জানিস তারা…. যাতে একজন মাকে তার মেয়ে যা যা বলতে পারে তা তুই আমাকে বলতে পারিস।তারা তোর জীবনের ডিসিশন নিতে আমি বাধা দিবো না। কিন্তু যদি আমার মতামত জানতে চাস তাহলে আমি বলবো তাদের সংসারটা ভেংগে দিস না। তোর এখনো বিয়ে হয়নি তুই হয়তো বর পাবি। আর আবিরতো ছেলে ও বউ পাওয়া বেপার না। কিন্তু ঐ মেয়েটা….
তারা রুমে গিয়ে অনেক্ষন কান্না করে।
আবিরকে ফোন করে।
তারা: আবির আমি তোমাকে বিয়ে করবো না।
আবির : পাগল হয়ে গিয়েছো?
তারা: আমি পাগল হয়নি। পাগল তুমি হয়েছো…তুমি কি মনে করেছো তোমার ঘরে বউ থাকা সত্ত্বেও একজন বিবাহিত ছেলেকে আমি বিয়ে করবো?
আবির: তারা তুমি এসব কি বলছো…তুমিতো সব জানো কি হয়েছে না হয়েছে।
তারা : হে আমি এটা ও জানি একটা রুমে দুজন বিবাহিত ছেলে মেয়ে একসাথে থাকলে কি কি হয়।তুমি কি বলতে চাচ্ছো তুমি নিলাকে ছুয়ে ও দেখো নি।আবির আমি বাচ্ছা না সব বুঝি।
আবির : কুকুরে কামড় দিয়েছে নাকি তোমাকে পাগলা কুকুরের মতো করছো কেনো….তোমাকে আমি কতোবার বলেছি যে… আমার আর নিলার মাঝে কিছু নেই।
কিছু হয় ও নি হবে ও না।
তারা : (কাদো কাদো ভাবে) তুমি আমাকে পাগলা কুকুরের সাথে তুলনা করেছো আবির….
আসলে আমারি ভুল হয়েছে…কেনো যে আমি ও তোমাকে ভালোবাসতে গিয়েছিলাম। এই কথাটা শোনার বাকি ছিলো…আমার।
আবির : তারা তুমি আমাকে ভুল বুঝছো।
তারা : আর কিছু বুঝার বাকি নেই আবির আমাকে ফোন দিবানা। আজ থেকে তোমার আর আমার মাঝে কোনো সম্পর্ক নেই।
আবির ও রেগে ফোনটা কেটে দিলো।
আবির : মাথায় কিছু আসছে না। কি হচ্ছে আমার সাথে।
বন্ধু: এই দিনের অপেক্ষায় ছিলাম।তুকে সহজভাবে বললেতো তুই বুঝবি না।
তারা তোর জন্য তোর পরিবারের জন্য মোটে ও পারফেক্ট না। যেটা পারফেক্ট সেটা ঘরেই আছে…
আবির দীর্ঘ শাঃস ফেলে বন্ধুদের থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে যায়।
সন্ধ্যা হলো আবির বাসায় আসে।
নিলা : ভালো করেছেন আজ তাড়াতাড়ি এসেছেন নাহলে আপনার সাথে দেখা না করেই চলে যেতে হতো।
ভালো থাকবেন চলে যাচ্ছি। আর…হে আপনার কাপড় গুলো ভাজ করে রেখেছি। এখন থেকে পুরো আলমারি আপনার। আর ঝগড়া করতে হবে না।
আবির: (মনমরা মুচকি হেসে) বাপরে ঐদিন মনে আছে তুমি আমার সাথে কি ঝগড়া… আমার একটা টি শার্ট তোমার ভাগে চলে এসেছিলো…
নিলা : হিহিহি(হেসে হেসে) হে মনে আছে…আর আমি আপনাকে ওটার শাস্তি ও দিয়েছিলাম।
আবির: (হেসে হেসে) ঐদিন আমার খাটে শুয়ার পালা ছিলো… কিন্তু আমার সোফায় শুতে হয়েছিলো।
নিলা: আপনার পরিবারকে তারার কথা বলেছেন?
আবির: না!
নিলা : কবে বলবেন? আমিতো চলে যাচ্ছি এখন…
আবির : এখন মানে! তুমিতো রাতে যাবা বলেছিলে।
নিলা: রাত হতে আর কতোক্ষন?
আবির: নিলা!
নিলা: হে বলেন।
আবির: (নরম গলায়) নিলা! তুমি যদি চাও বাকি ২৫দিন গুলো শেষ করে যেতে পারো।
নিলা: কি দরকার চলে যাওয়াই ভালো।
আবির: (রেগে গিয়ে) শুনো আমাদের মাঝে কন্ট্রাক্ট হয়েছে ৬ মাস পরেই তুমি যেতে পারবা। আর আমি আমার পরিবারকে এখন বলতে পারবো না।
নিলা: ঠিকাছে তাহলে আমিই বলছি।
নিলা বলতে যাচ্ছিলো আবির নিলাকে হাত ধরে টেনে ধরে ফেলে।
আবির : তাহলে কন্ট্রাক্ট করেছিলে কেন?…
নিলা : পুরো জীবনের জন্য করিনি ৬ মাসের জন্য করেছিলাম।
আবির : নিলা! তারা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে।
নিলা : (অবাক হয়ে) কেন কি হয়েছে?
আবির : (কেঁদে কেঁদে) ও আমাকে ভুল বুঝছে। মনে করছে আমার আর তোমার মাঝে গভীর সম্পর্ক।
নিলা: আমাকে ফোন দিন আমি বুঝিয়ে বলছি।
আবির : না নিলা! থাক যে যেতে চাই তাকে চলে যেতে দেওয়া ভালো…
আমার প্রতি অর বিশাস নেই তাহলে ওকে আটকিয়ে কি লাভ।
আসলে দোষ আমার আমি ওকে ধোকা দিয়েছি আমি বলেছিলাম আমি অর জন্য এক বছর অপেক্ষা করবো…কিন্তু আমিতো কথা রাখিনি।বিয়ে করে ফেলেছি। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর ঐ ছেলেকে বিয়ে করতে এমন সন্দেহ হওয়াটা সাভাবিক। অর চলে যাওয়াটা ও ঠিক।
নিলা: আমার জন্য হয়েছে না আবির এসব।আমি যদি আপনাকে বিয়ে করতে না বলতাম তাহলে আজ এতোকিছু হতো না।
আবির : তোমার উপর নিওনা দোষ।তোমার উপর ও আমি কতো অবিচার করেছি।
এভাবে কি কোনো বিয়ে হয়। কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ নাকি…. একটা বাচ্ছা ও হাসবে আমাদের এই বিয়ের কথা শুনলে। তুমি বুঝবে না নিলা এসব তুমিতো কখনো কাউকে ভালোবাসোনি।
নিলা : (অনেক কষ্ট চেপে রেখে) ঠিক বলেছেন আমিতো কাউকে ভালোবাসিনি কিভাবে বুঝবো এসব..
.বাবা এসে গেছে নিশ্চয় আমার চলে যাওয়ার ও সময় হয়ে গেছে বেশী রাত হয়ে গেলে আবার যেতে সমস্যা হয়ে যাবে।
নিলা রুম থেকে চলে যাচ্ছিলো..
আবির : নিলা!
নিলা : হুম…
আবির : নিলা… তুমি এভাবে চলে গেলে মামা মামি কি বলবে…. তাদের কি জবাব দিবে?… একটা কাজ করো বাকি জীবনটা এইখানেই এভাবে সোফা আর খাট শেয়ার করে থেকে যাও। তোমার মামা মামি ও আর বুঝতে পারবে না। আমার পরিবার ও।
 আবিরের চেহেরায় তখন কেমন জানি একটা মায়া কাজ করছে নিলার ইচ্ছে করছে দৌড়ে গিয়ে আবিরকে ঝরিয়ে ধরে কাঁদতে। কিন্তু আবির যদি সোফা আর খাট শেয়ার করে থাকার কথা না বলে একবার এটা বলতো নিলা তুমি চিরদিনের জন্য আমার বউ হয়ে আমার সাথে থেকে যাও তাহলে নিলা এক মুহুর্তের জন্য ও ভাবতো না।)
নিলা : মামা মামীকে আমি বুঝিয়ে দিবো।ধন্যবাদ ওটা বলার জন্য কিন্তু আমার আপনার সাহায্য আর লাগবেনা।
আবিরের চেহেরায় নিলা বুঝতে পারছে আবির নিলাকে অনেক কিছু বলতে চাচ্ছে কিন্তু আবির বলছে না।
আবির : রেগে গিয়ে.. দাঁড়াও নিলা কন্ট্রাক্ট যখন সাইন করেছো….তাহলে সেটা পুরণ করেই যাবা।
নিলা : এক কথা বার বার বলতে ভালো লাগে না।
এই বলে নিলা চলে যাচ্ছে।
চলবে…

contract_marriage★  part: 15

0

contract_marriage★
part: 15

writer-Jubaida Sobti
নিলা আর সৌরভ কথা বলছে।আবির তাদের পাশে গিয়ে।
আবির : Excuse me!
এই বলে নিলাকে টেনে একপাশ নিয়ে আসে আবির।
নিলা : কি হয়েছে?
আবির : (কনফিউজড হয়ে) কি কথা বলছো ওর সাথে….?
নিলা : বলছি আরকি অনেক কিছু।তা আপনাকে বলতে হবে নাকি??
আবির : বলতে হবে মানে…..শোনো নিলা তুমি যতদিন আমার সাথে আছো ততোদিন তুমি আমার responsibility…
নিলা : হে হে…..তারপর!…..
আবির : তারপর মানে……
নিলা : তারপর মানে..?.. তারপর মানে এটা বলছেন না কেনো যে…..আপনি jealous হচ্ছেন।
আবির : what the f…….?
নিলা : ইডিয়ট….?(নিলা চলে যাচ্ছে)
আবির : (রেগে গিয়ে…নিলাকে আবার হাতে ধরে টেনে আনে।) কি কথা বলছি দেখছো না। আমার কথা শেষ হয়নি।
নিলা : আমার আপনার কথা শোনার কোনো interest নেই।?
আবির : ওহ i got it….এখন তো সৌরভের কথা interest লাগছে তাই না?
দাঁড়াও ঐ সৌরভের বাচ্চা সৌরভ কে আজ আমি……?(আবির দৌড়ে যাচ্ছিলো….)
নিলা : আবির! (আবিরের হাত ধরে ফেলে নিলা) সমস্যা কি আপনার আমি কি আপনার বউ? যে আমাকে অন্য ছেলের সাথে কথা বলতে দেখলে আপনি প্রতিবাদ করবেন। আপনি হয়তো ভুলে গেছেন আবির। ৬মাস পরে আমাদের ডিভোর্স হয়ে যাবে। আর আমিতো আপনাকে তারার সাথে দেখলে এমন করিনা…. তবে আপনি কেন এমন করছেন?
আবির 

 কিছুক্ষণ পরে একটু ভেবে নরম কন্ঠে) নিলা! আসলে…. আমার কিছু আসে যায় না।অবশ্য তোমার ও ভবিষ্যৎ আছে তোমার যদি ওকেই ভালো লাগে তাহলে তুমি তোমার ভবিষ্যৎ গড়তে পারো ওর সাথে।?
এই বলে আবির চলে গেলো।
নিলা: (দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে কিছুটা ফিলিংস তো আছে আমার জন্য) হাদারাম কোথাকার শিকার করে না তবু ও।?
আবির সৌরভকে এক পাশে একা দেখে সৌরভের কাছে গেছে।
সৌরভ : কেমন চলছে তারার সাথে….?
আবির : মনে হয় সব জানিস।
সৌরভ : জানবো না কেনো…. যে ছেলের জন্য ক্লাসে এতো মেয়ে পাগল ছিলো…..এইরকম একটা হ্যান্ডসাম ছেলের বউ থাকা সত্ত্বেও গার্লফ্রেন্ড থাকবেনা এটা কি মেনে নেওয়া যায়।
আবির : নিলার সাথে এতো ভাব কিসের তোর…?
সৌরভ : নিলা! she is awesome….?
আবির : (রেগে গিয়ে) নিলা কেমন সেটা জানতে চাইনি আমি… বলেছি নিলার সাথে এতো ভাব নিচ্ছিস কেনো….?
সৌরভ : আরে আরে…. রেগে যাচ্ছিস কেনো? আমি জানি নিলা তোর কাজিন সিস্টার….. কাজিন সিস্টার মানে তোর ভোনের মতো…. তাই হয়তো তোর…?
আবির :সৌরভ তুই ভালো করে জেনেছিস নিলা আমার কে..!.
সৌরভ : হ্যাঁ …হ্যাঁ নিলা তোর কন্ট্রাক্ট করা বউ….৬ মাস পরে তোদের ডিভোর্স হয়ে যাবে… তারার ডাক্তারি পরা শেষ হলে তুই আর তারা বিয়ে করে নিবি।
আবির : (কিছু বলছে না চুপ করে রাগান্বিত চোখে সৌরভকে চেয়ে আছে)।
সৌরভ : নিলার উপর অধিকার খাটাতে আসিস না… নিলাকে তো ডিভোর্স দিয়ে দিবি। তারপর নিলার ভবিষ্যৎ আছে তাই ভবিষ্যৎ এ নিলার দায়বদ্ধ আমি নিতে চায়।
আবির কিছু না বলে সোজা রুমে চলে গেলো।
আর রুমে এদিক ওদিক হাটছে খুব জোরে জোরে শ্বাঃস ফেলছে।
আবির : (মনে মনে) ঠিকি তো বলেছে নিলা। তার ও ভবিষ্যৎ আছে। হয়তো সৌরভকে নিলার ভালো লেগেছে। তবে আমার কি…. আমি কেনো টেনশন করছি। আমিতো তারাকে ভালোবাসি তারা আমার সব।
রাতে সবাইকে বিদায় দিয়ে আবির নিলা দুজন ঘুমাতে আসে।
কেউ কারো সাথে কথা বলেনি। যে যার বিছানায় শুয়ে পড়ে।
হঠাৎ নিলার ফোন বেজে উঠে।
নিলা উঠে দেখে সৌরভ।
নিলা : (আবিরকে শুনিয়ে শুনিয়ে.!..)? হে সৌরভ বলো….?
আবির : তুমি সৌরভকে তোমার নাম্বার ও দিয়েছ??
নিলা : (আঙুল দিয়ে ইশারা করে আবিরকে চুপ করতে বলে)
আবির : (মনে মনে ভাবছে) আমাকে আপনি করে বলে আর একদিনে সৌরভকে তুমি…..?
নিলা রুম থেকে বেরিয়ে বারান্দায় গেলো ফোনে কথা বলতে বলতে।
নিলা : সৌরভ দেখো এটাকি ঠিক হচ্ছে।?
সৌরভ : একদম ঠিক হচ্ছে। তুমি আবিরকে যদি তোমার করে নিতে চাও তাহলে এটাই একটা রাস্তা।?
নিলা : কিন্তু অনিতো তারাকে ভালোবাসে।
আমি ওনাকে ভালোবাসি কিন্তু অনি আমাকে ভালোবাসে না।
সৌরভ : সেটা ও বেরিয়ে আসবে। আচ্ছা তুমি দেখেছো আজ আমার সাথে কথা বলার সময় আবির কিভাবে জলছিলো।
নিলা : হা_হা_হা…. হ্যাঁ দেখেছি। তবে হ্যাঁ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার এই সাহায্য গুলো কখনো শোধ করতে পারবোনা।
সৌরভ : বন্ধু বলেছো না আমাকে। তাহলে এখানে ঋণ শোধের কথা বলছো কেন।
আচ্ছা শোনো আবির আবার এসে শুনে যাবে। এখন গিয়ে ঘুমিয়ে পরো।
নিলা : ওকে বাই।?
সৌরভ নিলাকে পছন্দ করেছিল কিন্তু যখন নিলার সাথে কথা বলে তারপর সে বুঝতে পেরেছে আবির যদিও নিলাকে ডিভোর্স দিয়ে দেই তাহলে নিলা এরপর আর কাউকে বিয়ে করবে না। সে আবিরকে ছাড়া আর কাউকে ভালোবাসবে না। তাই সৌরভ ও নিলাকে বলেছে….
সৌরভ : তবে নিলা তুমি যদি আবিরকে চিরদিনের জন্য পেতে চাও আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি। অবশ্য গ্যারেন্টি দিয়ে বলতে পারবো না তবে হে ট্রাই করে দেখতে পারো।
নিলা ও সৌরভের কথা না রেখে পারেনি।কারন নিলা যে আবিরকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে।
পরদিন সকালে…..
আবির বসে আছে…
আবিরকে তারা ফোন দিলো আবির তারার সাথে দেখা করতে গেলো।
তারা আবিরের জন্য খুব সুন্দর করে ডেট সাজালো। আবির ভাবতে ও পারছে না সে তারা থেকে এতো সুন্দর সারপ্রাইজ পাবে।
তারা : আবির…. তুমি হয়তো অবাক হয়ে গেছো। আমি এমন কিভাবে হলাম আসলে আবির আমি বুঝতে পারিনি তোমার ভালোবাসাটাকে অবহেলা করেছি। আর তুমি আমাকে ভালোবেসেই গিয়েছো।
আবির : তারা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি….
তারা : মুচকি হেসে… আচ্ছা তোমার জন্য তোমার বাবা মা যে বিয়েটা ঠিক করেছিল ওটা কি করেছো।রিজেক্ট করে দিয়েছো তো….
আবির :  মনে মনে তারা আমাকে সত্যি ভালোবাসে তার কাছ থেকে লুকানোটা ঠিক হবে না।) তারা আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই।
আমি জানিনা এটা শোনার পরে তোমার রিয়েক্ট কেমন হবে। তবে জানাটা তোমার অধিকার আছে।
তারা : কি কথা?
আবির : তারা আমি নিলাকে বিয়ে করে ফেলেছি।?
তারা : (এমন কথা শুনবে আবির থেকে এক্সপেক্ট করেনি…তারার মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পরেছে।) আবির… তুমি একটা বছর অপেক্ষা করতে পারোনি আরো বলছো তুমি আমাকে ভালোবাসো….কোন চেহেরা নিয়ে তুমি আমার সামনে এসেছ?
আবির : নিলা আমার পুরা কথাটা তো শোনো!!
তারা : আরো কিছু বলার বাকি আছে তোমার…
আবির : (তারাকে আবির আর নিলার সব কথা খুলে বললো আবির)….
তারা : তোমরা একরুমে থাকো আর তুমি বলছো আমি এটা মেনে নিবো তোমাদের মাঝে এখনো কিছু হয়নি।
আবির : তারা তোমার আমার প্রতি বিশ্বাস নেই?
তারা : আছে তবে….
আবির : তবে কি….
তারা : আচ্ছা ঠিকাছে।তুমি তাড়াতাড়ি ওকে ডিভোর্স দিয়ে দাও।আমি কিন্তু বাবার সাথে ও কথা বলে ফেলেছি।
আবির : বাহ! তারা তুমি তো আমার চেয়ে স্পিড বেশি হয়ে গেছো।
তারা : (একটু লজ্জা পেয়ে।) আবির আমি এসব কিছু মেনে নেওয়ার কারন কি জানো আমি সত্যি তোমার প্রেমে পরে গেছি।
আবির : আই রিয়েলি লাভ ইউ তারা
তারা : আই লাভ ইউ টু…. (একটু হেসে)
তারা আর আবির একসাথে লাঞ্চ করেছে।
আবির দুপুরে বাসায় আসে।
নিলা : আপনাকে খাবার দিবো?
আবির : খেয়ে এসেছি….. ও হে তারার সাথে….
নিলা : নাক ফুলিয়ে রুমে চলে গেলো।
কিছুক্ষন পরে আবির ও এলো রুমে।
আবির: সব ঠিকটাক হয়ে গেছে। তারা ও বিয়েতে রাজি। শুধু একমাত্র তোমার কারনে আমি কিছু করতে পারছি না।
নিলা : তো করেন আপনাকে কি আমি ধরে রেখেছি নাকি…
আবির : এতো সহজে কি কি তুমি আমাকে ছাড়ছো…. তুমি আমাকে তোমার চাকর বানিয়ে রেখেছো।
হঠাৎ নিলা এসে আবিরকে জড়িয়ে ধরলো….
নিলা হয়েছে এতো রাগ করতে হয়…আপনি আমাকে অনেক ভালোবাসেন আমি জানি।রাগ করে বলছেন এসব আমি বুঝতে পেরেছি।
আবির কিন্তু কিছুই বুঝে উঠতে পারেনি।হঠাৎ এসে নিলা এভাবে ঝরিয়ে ধরলো…তার মাঝে এসব কি বলছে ও আমি ওকে ভালোবাসি।
নিলা:( খুব আস্তে আস্তে কন্ঠে) আপনার কিছু খেয়াল আছে দাদী সব শুনছে। দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে।
আবির ও আর বেশী কিছু না ভেবে নিলাকে জরিয়ে ধরলো….(আগে বাচা দরকার আবার দাদী জানলে মহামুশকিল)
নিলাও হেসে ওঠে আবির ও হেসে ওঠে।দুজন দুজনকে ঝরিয়ে ধরে। মুখের কোনে মুচকি হাসি ফুটে।
দাদী ও তাদের দেখেছে ঝগড়া করতে কিন্তু দাদী বেশী কিছু শুনেনি। জামাই বউ এর মধ্যে তো এরকম টুকটাক ঝগড়া হয়ে থাকে। দাদী তাদের ঝরিয়ে ধরে রাখতে দেখে মনে মনে তাদের জন্য দোয়া করে চলে গেলো।
চলবে….

Contract_marriage★  part: 14

0

Contract_marriage★
part: 14

writer-Jubaida Sobti
আবিরের কথা শুনে সবাই হেসে উঠে।
মা : যা এবার ঘুমাতে যা।
রাতে হঠাৎ আবিরের ফোন বেজে উঠলো। নিলা ও আবিরের ঘুম ভেংগে গেলো।
আবির : (ঘুম চোখে) হ্যালো….
তারা : হ্যালো আবির আমি তারা।
আবির লাফিয়ে ঘুম থেকে উঠে গেলো।
আবির : তারা! তুমি?…. তারা….. তুমি কেমন একটা খবর ও নাওনি। কেমন আছো তুমি?
তারা : হে ভালো আছি।তুমি কেমন আছো?
আবির : (অনেক খুশিতে) এতোদিন খারাপ ছিলাম তবে এখন তোমার কন্ঠ শুনে ভালো হয়ে গেছি।
তারা : আবির তোমাকে কিছু বলার ছিলো
আবির : হে বলো!
তারা : ফোনে নয় সামনাসামনি।
আবির : ঠিকাছে কাল তাহলে দেখা হচ্ছে।
তারা : কাল নয় এখন।
আবির : এখন এতোরাতে।
তারা : কেনো আমার জন্য এইটুকুটা ও করতে পারবা না?
আবির : না না আমি তা বলেছি নাকি? এক্ষুনি আসছি আমি।
তারা :ওকে।
নিলা : (মনে মনে যখনি আবিরের সাথে খুশী হয়ে থাকতে চায়। আবিরের আমার প্রতি মায়া বাড়ে তখনি এই তারার বাচ্চা তারা কাবাব মে হাড্ডি হয়ে বসে)?
আবির : নিলা!
নিলা : বুঝেছি আপনি এখন বের হবেন আর আমার থেকে মেইন ডোর অফফ করতে হবে তাই তো?
আবির : হাউ ব্রিলিয়ান্ট নিলা তুমি। আমার সব কিছু এতো তাড়াতাড়ি বুঝে যাও তুমি।
আবির বেরিয়ে পরলো। নিলা দরজা বন্ধ করে রুমে এসে পরে। ভালো লাগছে না নিলার ঘুম ও আর আসছে না। আবির ও নেই।
প্রায় আধ ঘন্টা পরে নিলার মোবাইল বেজে উঠে।
নিলা : হ্যালো!
আবির : নিলা! এক্ষুনি ২ হাজার টাকা নিয়ে পুলিশ স্টেশনে চলে এসো।
নিলা : (অবাক হয়ে) পুলিশ স্টেশন কিন্তু কেনো আপনি কোথায়? পুলিশ স্টেশন কেনো? আপনি কোথায়?
আবির : নিলা! এতো প্রশ্ন না করে টাকা নিয়ে তাড়াতাড়ি আসো না প্লিজ।
নিলা : কিন্তু এতো রাতে গাড়ী কই পাবো?
আবির :উফফ ড্রয়ারে আছে গাড়ীর চাবি।
নিলা : কিন্তু আবির আমিতো ড্রাইভিং পারিনা।
আবির : (একটু রেগে) যেভাবে পারো ঐভাবে আসো।
নিলা তাড়াতাড়ি বের হয়। কোথাও কোনো গাড়ির আনাগোনা নেই। বাসায় কেউকে ও বলতে পারছে না।
অনেক দূর হেটে গিয়ে একটা রিকশা পায়। ভয় ও লাগছে একা একা এতো রাতে। এদিকে আবার আবিরের টেনশন।
নিলা গিয়ে আবিরকে পুলিশ স্টেশন দেখে। আবির ও নিলাকে দেখে খুশি হয়ে যায়।
নিলা : আপনি এইখানে কেনো?
আবির : আর একটু দেরিতে আসতে। আমাকে চালান দিয়ে দেওয়ার পরে আসলে ভালো হতো না।
আবির পুলিশকে টাকা দিয়ে নিলাকে নিয়ে বেরিয়ে পরে।
আবির : শালা পুলিশ ঘুষ খাওয়া ছাড়া তার পেটের ভাত হজম হয় না।
নিলা : কি চুরি করতে ধরা পরেছেন।
আবির : (রেগে গিয়ে) নিলা! তুমি কিন্তু বেশি করছো।
নিলা : নিলাও রাগ দেখিয়ে) তাহলে পুলিশ কেন ধরলো আপনাকে?
আবির : আরে আমিতো গিয়েছিলাম তারার সাথে দেখা করতে। তারাদের বাড়ীর সামনে থেকে তারার সাথে ইশারায় কথা বলতে দেখে ফেলে গার্ড পুলিশ। মনে করেছে ইপ্টিজিং করছি।
নিলা : হি-হি-হি
আবির : তোমার হাসি পাচ্ছে না?
নিলা : তো আপনার তারা আপনাকে বাচানোর জন্য আসেনি কেন?
আবির : (একটু ভেবে) আসলে তারা ও পুলিশ দেখে ভয়ে ভেতরে ঢুকে পড়েছে।
নিলা : ও ও….. তো আপনি পুলিশকে বলেন নি আপনি কার ছেলে?
আবির : আরে বলেছি তো শালা বিশ্বাস করছে না। বললো বাবাকে ফোন দিতে।
কিন্তু বাবাকে কেমনি ফোন দিবো। হিটলার আরো পুলিশকে বলবে আমাকে রিমান্ডে দেওয়ার জন্য। তারপর……
নিলা : (চোখে ইশারা করে) তারপর কি?
আবির : তারপর বলেছি…..আচ্ছা আমার বউকে একটা ফোন দিতে দেন।……(একটু নরম শুরে) কি করার নিলা বাচার জন্য বলেছি আরকি।?
নিলা : ( মনে মনে হেসে) ইটস অকে।?
আবির আর নিলা বাসায় এসে পৌছায়।
আস্তে আস্তে করে দুজন রুমে ঢুকে।রুমে ঢুকার পরে।
আবির : বড় বাচা বাচলাম আজ।
নিলা : হ্যাঁ তবে এতো রাতে দেখা করতে যাওয়ার কি দরকার ছিলো….
আবির : বেশী কথা বলবানা। তুমি জানো না আমাকে কে যেতে বলেছে তারা বলেছে তারা।
নিলা : (রেগে গিয়ে) আচ্ছা?? আজ আমি না থাকলে কি করতেন? কাকে ফোন করতেন।
আবির : (একটু ভেবে) আমার খুব ঘুম পাচ্ছে ঘুমাতে দাওতো।
এই বলে আবির মুখের উপর চাদর দিয়ে শুয়ে পরে।
আবার চাদর সরিয়ে
আবির : আর তুমি ড্রাইভিং শিখোনি কেনো? সবাই কি বলবে আবিরের বউ ড্রাইভিং পারে না ছিঃ। শোনো কাল থেকে ড্রাইভিং শিখে নিবে। আমার ভাবিরা সবাই ড্রাইভিং জানে।তোমার ও জানতে হবে।
নিলা : কেনো জানতে হবে।
আবির : দরকার আছে আমার জন্য আমি প্রব্লেমে পড়লে তখন এরকম যেতে হবে তো।
নিলা খাট থেকে একটা বালিশ নিয়ে আবিরের মুখের উপর মেরে দেই।
আবির: (হেসে হেসে ওপাশ ফিরে শুয়ে পড়ে)…..
পরদিন সকালে….
আজ আবিরের জন্মদিন।??
সন্ধায় আবিরের বন্ধু বান্ধবীরা সবাই এসেছে আবিরকে সারপ্রাইজ দিতে।
আবির তার বন্ধুদের নিলাকে পরিচয় করিয়ে দেই এবং বলে নিলা আবিরের কাজিন।
কিন্তু অনেক বন্ধুরা খবর পায় যে আবিরের বিয়ে হয়েছে। কিন্তু আবির কাউকে জানায়নি।
নিলাকে কাজিন হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিলে ও কোনো ফ্রেন্ডস তা জিজ্ঞেস করেনি আবির মিথ্যা কেনো বলেছে।
আবিরের একজন বন্ধু সৌরভের নিলাকে খুব পছন্দ হয়েছে। এবং সৌরভ নিলা আর আবিরের কন্ট্রাক্ট এর বেপারে ও সব শুনেছে আবিরের বেস্ট ফ্রেন্ড এর কাছ থেকে।
তাই সৌরভ অপেক্ষায় আছে কখন নিলাকে তার মনের কথা বলতে পারবে।
সৌরভ নিলার সাথে অনেক ভাব করে নিয়েছে অনেক গল্পগুজব হচ্ছে তাদের মাঝে। আবির সেটা খেয়াল করেছে নিলাও অনেক হাসিখুশিতে সৌরভের সাথে কথা বলছে। কিন্তু আবিরের তা সহ্য হচ্ছে না কেনো তা আবির নিজে ও বুঝে উঠতে পারছে না।
চলবে…….?

 

Contract_marriage★  part : 13

0

Contract_marriage★
part : 13

writer-Jubaida Sobti
নিলা : হুম।
আবির : হুম কি?
নিলা : কিছুনা।
আবির : কিছুনা মানে কিছুতো একটা বলো।
নিলা : হ্যাঁ বলছি তাহলে কান খুলে শুনেন।
আজ ৩ দিন চলে গেলো ৬ মাসের থেকে। আপনি তো ৫ লক্ষ টাকার এক টাকা ও ইনকাম করেননি।
আবির : (রেগে গিয়ে) i can’t blv this..নিলা তোমাকে আমি কি মনে করতাম।
তোমার মায়াবী চেহেরা দেখে তোমার মায়াবী চোখের জল দেখে…..তুমি যাতে ভেংগে না পরো….তোমার মামা-মামী যাতে কষ্ট না পায় তাই আমি তোমাকে বিয়ে করে তোমাকে সাহায্য করেছি। একবার ও ভাবিনি আমার তারা যখন জানতে পারবে তখন সে আমাকে কি মনে করবে।
নিলা : বিয়ে করে আমাকে সাহায্য করেছেন? বিয়েটা কি আপনার জন্য পুতুল খেলা? আমি বউ সাজলাম আর আপনি জামাই সাজলেন।
আবির : নিলা আমার কি মনে হচ্ছে জানো….তুমি আমাকে নিজের হাজবেন্ড মনে করছো… কারন ঐ দিন এই বিয়ের প্লান মাথায় তোমার এসেছিলো….
নিলা : (চুপ করে থাকলো চোখের জল গড়িয়ে পড়ছে)
আবির : তোমার এইসব ড্রামা চোখের জল গুলো একটু বন্ধ করবে।
নিলা : (চোখ মুছে) এখন কি ভেবেছেন আমার ৫ লক্ষ টাকা কিভাবে দিবেন।
আবির : তোমার ৫ লক্ষ টাকা আমি তোমাকে ৬ মাসের আগেই দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। যাতে ৬ মাস আগেই আমি তোমাকে আমার লাইফ থেকে বের করতে পারি।
এই বলে আবির রুম থেকে বেরিয়ে চলে গেলো।
রাতে আবির বাসায় আসে কিন্তু নিলার সাথে কোনো কথা বলে না। অন্যদিন অনেক দুষ্টুমি করতো।
নিলা : ( মনে মনে ভাবছে হয়তো টাকার কথা গুলো বলাতে। কিন্তু কি করার আবিরকে তার জীবন সুন্দর করানোর জন্য এটাই একটা রাস্তা নিলার।)
সকাল হলো টুকটাক আওয়াজে নিলার ঘুম ভেংগে গেলো।
চোখ খুলে দেখে আবির নিলার আগে ঘুম থেকে উঠেছে তাও আবার সকাল সকাল এতো হ্যান্ডসাম হয়ে কই যাচ্ছে।
নিলা: কই যাচ্ছেন আপনি?
আবির : (মুখ ভংগি করে) অফিস যাচ্ছি তোমার ঐ ৫ লক্ষ টাকা তোমার কাছে ছুরে মারতে।
নিলা : (খুশি চেপে রেখে) দেখিয়েন আবার বাবার টাকা চুরি করিয়েন না।?
আবির : এই এই…. কি বলতে চাও তুমি হে…. আমাকে দেখে কি তোমার চোর মনে হয়।?
নিলা : মনে হবে না কেনো…. আপনি কি কোনো দিকে কম।?
আবির : (নিলার দিকে এগিয়ে আসে…..)
নিলা : (উঠে দৌড় দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।)?
আবিরকে অফিসে যেতে দেখে আবিরের পরিবাররা খুব খুশি হয়। আবিরের বাবাতো যেনো সপ্ন দেখছে।?
আবিরের বাবা ও নিজেকে ধন্য মনে করছে আবিরের জন্য নিলার মতো একটি বউ পেয়ে।
নিলা ও খুব খুশি আবির এখন অফিস যায়। কেউ আর বলে না আবির বেকার বাবার কামাই খায়।
এভাবে কয়েক সপ্তাহ কেটে যায়।একদিন রাতে সবাই খাবারদাবার খেয়ে ঘুমাতে যায়।আবির আর নিলা ও তার রুমে যায়।
আবির : নিলা!
নিলা: কিছু বলবেন।?
আবির : না আসলে তোমাকে ধন্যবাদ দেওয়ার ছিলো….?
নিলা : কিন্তু কেনো??
আবির : তুমি যদি আমার কাছ থেকে টাকা না চেতে তাহলে আজ হয়তো আমি বেকার থাকতাম। ধন্যবাদ তাই।?
নিলা : ও…..
আবির : কেউ ধন্যবাদ দিলে তার জবাব দিতে হয় জানো না।?
নিলা : আপনি কথায় কথায় ঝগড়া করেন কেন হে?..!?
আবির : আর তুমি! (আঙুল দিয়ে দেখিয়ে) এতোটুকু হাইটের একটা মেয়ে কথায়… কথায় আমাকে ধমক দাও কেন??
নিলা : হাইট ছোট হলে মানুষটাকে লুজার মনে করবেন না।
আমাদের পাশের বাড়ীর একটা আন্টি আছে ওনার হাইট আমার চেয়েও অনেক ছোট কিন্তু আংকেলটা আপনার চেয়ে ও আরো লম্বা। আর আংকেল আন্টিটার সব কথা শুনে।?
আবির : হা হা হা( নিলার কথা শুনে আর না হেসে পারলো না।)
নিলা : আপনার আমাকে জোকার মনে হয়। হাসছেন কেন।?
আবির : (হাহাহা) তুমি জোকারের থেকে কম নাকি।??
নিলা আবিরের কথা শুনে আবিরকে দৌড়াতে শুরু করলো।
আবির হেসে হেসে দৌড়ে দৌড়ে নিলাকে আরো গরম করে দিচ্ছে।
আবির : হায় হায়!!! আল্লাহ শেষ পর্যন্ত আমার কপালে এই জোকার বউটা মিলিয়ে দিলো……??
নিলা দাঁড়িয়ে গেলো আবিরের কথা শুনে।
আবির : কি হলো,,, শক্তি শেষ। আর দৌড়াতে পারছো না?
নিলা : ৬ মাসের বউ।?
আবির ও হাসি বন্ধ করে দেয় নিলার কথা শুনে।
আবির : আচ্ছা আমাদের যখন ৬ মাস একসাথে থাকতে হবে তবে আমরা তো ফ্রেন্ডস হয়ে থাকতে পারি।? ৬ মাস পর তো
দুজন দুদিকে।
নিলা : (মনে মনে…. আবিরের কাছে কথা গুলো বলা কতো সহজ।)
আবির : ঐ নিলা!! কোথায় হারিয়ে গেলে… কি ভাবছো??
নিলা : না কিছুনা!!! হে শিয়র…. ফ্রেন্ডস ওকে।
আবির : ওকে এখন থেকে আর ঝগড়া নয় যে কটা দিন একসাথে আছি। বন্ধু হয়ে থাকবো।
নিলা : তবে আমার একটা কন্ডিশন আছে।
আবির : কি কন্ডিশন আবার।
নিলা: আমাকে বন্ধু বানিয়ে আমার টাকা না দেওয়ার প্লান করলে চলবে না কিন্তু।??
আবির : হে….রে বাবা তোমার টাকা তোমাকে দিয়েই ছাড়বো।
নিলা: (হাসি দিয়ে) গুড বয়।?
আবির : চলো ছাদে যায়।
নিলা : এতো রাতে আপনি কি পাগল।?
আবির : আরে আমি আছিতো ভয় কিসের। এখনিতো আমাকে বন্ধু বললে আর এখনি বন্ধুর কথা রাখছো না।??
নিলা: কিন্তু আমার ভুত অনেক ভয় করে।অন্ধকারে ভুত থাকতে পারে।?
আবির : (হেসে হেসে) আরে পাগলী একটা চলোতো।?
নিলা : আপনি কি এভাবে রাতে ছাদে উঠেন।?
আবির : হ্যাঁ উঠি মাঝে মাঝে বন্ধুদের নিয়ে ও আড্ডা দিতে উঠি স্মোক করতে উঠি।?
নিলা : আবির আপনি স্মোক করেন 


আবির : ইয়ে…মানে…টেনশনে থাকলে আরকি।?
নিলা : ছিঃ……….!…. ছিঃ…!
আবির : ঐ ছিঃ বলার কি আছে হ্যাঁ ? দাঁড়াও আমি একটা নিয়ে আসি তুমি সহ খেয়ে দেখো কি মজা।?
নিলা : ছিঃ…. কি বাজে আপনি। আপনার কি মনে হচ্ছে আমি স্মোক করবো।?
আবির : (হঠাৎ আবিরের মাথায় একটা বুদ্ধি এলো নিলা বলেছিলো তার ভুতকে অনেক ভয় লাগে তাই আবির পেছন থেকে হাত বাড়িয়ে নিলার চুল গুলো আলতো করে টান দেয়)?
নিলা অমনি চিৎকার দিয়ে উঠে। আর আবির হাসতে হাসতে মাটিতে বসে পড়ে।???
নিলা : (রেগে গিয়ে) আবির! ?
আবির : (হাহাহা) আল্লাহরে তুমি এতো ভয় পাও ডারপোক কোথাকার।??
নিলা : (আবিরকে নিলা দৌড়াতে শুরু করলো।)
আবির : আরে! কি করছো…. পড়ে যাবো তো।নিলা প্লিজ আস্তে পড়ে যাবা….
নিলা: (দাঁড়িয়ে গেলো) বাই চলে যাচ্ছি আমি। (এই বলে নিলা চলে যাচ্ছে)
আবির : নিলা! সরি সরি। আরে আমিতো দুষ্টুমি করলাম।
নিলা আর আবির দুজনে শিরি দিয়ে নামার সময়।
দেখে আবিরের বাবা মা দুজন শিরি দিয়ে উঠছে।
আবির : মা তুমি কোথায় যাচ্ছো??
মা : আবির ছাদে কে ছিলো? তোরা??
আবির : হ্যাঁ মা! আমি আর নিলা।?
বাবা : আরে আমরা তো দৌড়ানোর আওয়াজ শুনে ভয় পেয়ে গিয়াছিলাম। কোনো চোর এসেছে মনে করে।?
আবির : আরে না বাবা! আমরা ছিলাম।?
মা : আবির তুই কি পাগল। নিলাকে ছাদে নিয়ে গেলি কেনো এতো রাতে??
আবির : কেনো কি হয়েছে।??
মা : আরে ওর যদি কোনো খারাপ বাতাস লাগতো। এই সময়টাতো একদম ঠিক ছিলো না।
আবির : বাহ! মা…. একবার ও এটা বললে না যে তোর ও যদি খারাপ বাতাস লাগতো।?
মা : আরে! পাগল নিলা এখনো নতুন বউ। তার জন্য বলছি। নতুন বউদের ক্ষেত্রে এসব আরো বেশি হয়।☺
আবির : তাহলে তো আমি নতুন জামাই?
চলবে—☺

contract_marriage★  part: 12

0

contract_marriage★
part: 12

writer-Jubaida Sobti
আবির : এসব কি মানে? কি হয়েছে??
নিলা : আপনি খালি গায়ে কেনো??
আবির : তাতে কি হয়েছে আমি কি মেয়ে নাকি??
নিলা : কি বললেন??
আবির : সরি সরি!!! আমি ওটা মিন করিনি।?
নিলা : ঠিকাছে ঠিকাছে!!!
আবির : নিলা! কাল আমি যা করেছি আসলে সরি! আমি এর আগে কখনো খায়নি এসব। কাল বন্ধুরা মিলে জোড় করে এসব করেছে।?
নিলা : জোড় করে খায়িছে? আবির এসব ছোট বাচ্চার মতো কথা আমার সাথে বলবেন না। আপনি জানেন কাল রাতে আপনার পরিবার কতটা অপমান বোধ করেছে মেহেমানদের সামনে।
আবির : সরি!! নিলা।
নিলা : হুম!!
আবির : নিলা!!
নিলা : কিছু বলবেন?
আবির : নিলা কাল রাতে………. মানে কাল রাতে…..আমি তোমার সাথে খারাপ কিছু করিনিতো…..মানে ফার্স্ট টাইম….?
নিলা : না… কিছু করেননি।
আবির : থেংক গড। আচ্ছা চলো নাস্তা করতে।?
নিলা : ওয়েট মি. আবির।
আবির নিলার দিকে তাকালো,,,
নিলা : কন্ট্রাক্ট পেপারে সাইন করবেননা?
আবির : হুম দেখাও।
নিলা আবিরকে কন্ট্রাক্ট পেপার হাতে দিলো। আবির কন্ট্রাক্ট পেপার পরলো।
আবির : এসব কি নিলা!
নিলা : কি?
আবির : (রেগে গিয়ে) এইখানে লিখা আছে ৬ মাসের মধ্যে তোমাকে ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে আমার থেকে। তারপর তুমি আমাকে ডিভোর্স দিবে।
নিলা : হে! ৬মাসের মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা ইনকাম করে দিবেন আমাকে তারপর আমি আপনার ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দিবো। বাকি শর্ত গুলো আপনি যা বলেছিলেন তাই।
আবির : আসলে আমি তোমার ভোলভাল চেহেরার পেছনের রাজটা দেখতে পায় নি। তুমি টাকার জন্য এতোসব করার কি দরকার ছিলো আমাকে প্রথমেই বলে দিতে ৫ লক্ষ টাকা তখনি দিয়ে দিতাম।
নিলা : নো মিঃ আবির হক। আমার আপনার বাবার টাকার দরকার নেই। আমাকে আপনার নিজের ইনকাম করা ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তাও আবার ৬ মাসের মধ্যে।
আবির : তুমিকি পাগল হয়ে গেছো। ৬মাসের মধ্যে এটা কেমনি সম্ভব। আমি কি এর আগে কখনো টাকা ইনকাম করেছি নাকি?
নিলা : এসব জানা আমার বিষয় না। আমার শুধু ৫ লক্ষ টাকা চায়।
আবির : I can’t blv it… নিলা। তুমি টাকার লোভে…
নিলা : টেবিলে নাস্তা রাখা আছে খেয়ে নিবেন।
এই বলে নিলা রুম থেকে বেরিয়ে চলে গেলো।
নিলা 

 মনে মনে) সরি! আবির আমার কিছু করার ছিলো না। দাদীকে প্রমিস করেছি আমি। একজন বউ হিসেবে আমি আপনাকে বদলাতে পারবো এটা আপনার পরিবারের বিশাস আমার উপর। তাই বাধ্য হয়ে আমার এসব করতে হচ্ছে।?
আবির নাস্তা না করে বেরিয়ে চলে গেলো। সারাদিনে একবার ও বাসায় আসেনি।
রাতে নিলা তার রুমে শাড়ি ঠিক করছে। হঠাৎ আবির রুমে ঢুকে পরলো।
আবির নিলাকে দেখে তাড়াতাড়ি পেছনে ফিরে গেলো।
নিলা : (তাড়াতাড়ি শাড়ী ঠিক করে) এসব কি আপনি ভেতরে ঢুকেছেন কেনো??
আবির : নিলা তুমি হয়তো ভুলে গেছো এটা আমার রুম।?
নিলা : হে তা তো কি হয়েছে। তাই বলে এভাবে ঢুকে পড়বেন নাকি??
আবির : (নিলার দিকে ফিরে।) কেনো দরজা বন্ধ করে কাপড় ঠিক করতে হয় আপনি জানেন না?
নিলা : হে তা জানবো না কেনো… কিন্তু রুমের ভেতরে আসার আগে দরজা বারি দিয়ে আসতে হয় তা আপনি জানেন না??
আবির : শোনো তোমাকে দেখার আমার কোনো শখ নেই বুঝেছো ..?
নিলা : হে তা আমি ভালো করেই দেখতে পাচ্ছি।?
আবির : (রেগে গিয়ে) মানে? কি বলতে চাচ্ছো তুমি? ?
নিলা : মানে হচ্ছে রুমে ঢুকার আগে নক করে ঢুকবেন। এখন থেকে এই রুমটা আমার ও তাই এই রুমে কখন কি করতে হবে না হবে এটার ডিসিশন নেওয়ার অধিকার আমার ও আছে।?
আবির নিলার দিকে এগিয়ে এসে নিলার কোমড়ে হাতদিয়ে নিলাকে শক্ত করে ধরলো। (একটু হেসে)
আবির : ও আচ্ছা অধিকার খাটাচ্ছো।
আবিরের মুখ নিলার কানের দিকে আনলে নিলা অনেক ভয় পেয়ে যায়।
নিলা : কি করছেন আপনি ছাড়ুন আমাকে।?
(আবির নিলাকে আরো শক্ত করে ধরে।কানে কানে উইস্পার করে বলছে)
আবির : এটা ও তো আমার অধিকার।?
আবির হাত দিয়ে নিলার পেছনের চুল গুলো সরিয়ে এক পাশে আনলো।
নিলা : দেখেন আপনি যা করছেন একদম ঠিক করছেননা।?
আবির : আ…হা আমার বউ তার অধিকার খাটাচ্ছে। তাই আমিও আমার বউ এর থেকে আমার অধিকার নিচ্ছি। এটা ও তো আমার অধিকার তাই না নিলা??
নিলা : দেখেন আমি কিন্তু এখন চিৎকার করবো।
আবির : হে করো…. সবাই এসে দেখুক আমরা কি করছি। ইনফেক্ট আমিই ডাকছি সবাইকে। Excuse me..everyone…
নিলা তাড়াতাড়ি আবির মুখ তার হাত দিয়ে চেপে ধরলো
নিলা : আরে কি করছেনটা কি আপনি পাগল নাকি??
আবির : (মুচকি হেসে) আমার অধিকার…??
নিলা আবির কে ধাক্কা দিয়ে আবিরের কাছ থেকে সরে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
আবির : আরে…. নিলা কই যাও আমার অধিকারটাতো দিয়ে যাও।?
নিলা পেছন ফিরে আবার এসে রুমের দরজাটা খুব জোড়ে বন্ধ করে চলে যায়।
আবির হাসতে থাকে।
রাতের খাবার দিলো। নিলা আর বড় ভাবী সবাইকে খাবার বেরে দিচ্ছে।
আবির : নিলা! আমাকে একটু ঝোল দাওতো।?
নিলা আবিরকে ঝোল দিতে আসলে আবির নিলাকে আস্তে আস্তে
আবির : নিলা তুমি কিন্তু আমার অধিকার আমাকে দিচ্ছো না।??
দাদী : চুপি চুপি কি বলিস আমাদের ও তো শোনতে দে।?
নিলা : দাদী আবির বলছে তাকে নাকি বেশী করে ঝোল দিতে। তাই দিচ্ছি।?
এই বলে নিলা আবিরের প্লেটে পুরা বাটিতে যা আছে সব ঢেলে দিলো।
আবির : ?নিলা এতোগুলো কেমনি খাবো পাগল নাকি তুমি? মাথা ঠিকাছে নাকি অধিকার খাটাতে খাটাতে সেটা ও গেছে।?
নিলা : আমার মাথা ঠিকাছে। আপনার মাথা ঠিক নেই। তাই তো আপনি………..?
আবির : হে…. হে….. বলো বলো… তাইতো আমি কি…..
দাদী দেখেছ তুমি কি দাদার সাথে এমন করতে?
দাদী : তোর দাদাকে তো আমি ধমকে যা বলতাম তাই করতো।??
আবির : আসলে তোমরা নারী জাতিরা এমনি। নরম শরম পুরুষদের উপর নির্যাতন করো।?
নিলা : আ….হা…রে…. আপনি নরম শরম পুরুষ 
আবির : হে কিন্তু তুমি একটু বেশি নরম আরকি।
(আবির নিলাকে আস্তে আস্তে) তবে অধিকারটা দিলে কিন্তু আরো ভালো জানতাম। ?
নিলা : দাদী খাবারের সময় কথা বলা নিষেধ।
দাদী : আরে হে তা তো ভুলেই গেলাম।এই আবির চুপচাপ খেয়েনে নিলাকে আর বিরক্ত করিস না এমনিতে মেয়েটা সারাদিন তোর জন্য টেনশন করতে করতে শেষ বাড়ীতে তো আসার নাম নেই তোর ঘরে বউ আছে সেটা মনে রাখিস না মনে হয়।
আবির নিলার দিকে এক পলক চেয়ে আবার খাবার শুরু করলো।
সবাই খেয়ে নেওয়ার পর ঘুমাতে গেলো।
নিলাও গেলো দেখে আবির বসে বসে গান করছে।
আবির নিলাকে দেখে গান বন্ধ করে দেয়।
নিলা গিয়ে খাট থেকে গায়ের চাদর আর বালিশ নিয়ে খাটে শুয়ে পরছে।
আবির : দাঁড়াও ওটা আমার বালিশ।
নিলা : কিন্তু আপনারটা তো আপনার কাছেই আছে।
আবির উঠে নিলার থেকে বালিশটা আর গায়ের চাদরটা নিয়ে খাটে গিয়ে শুয়ে পরলো।
আবির : আমি আসলে দুটো বালিশ ছাড়া শুতে পারিনা তাই। আজ বেশী ঠাণ্ডা লাগছে তাই চাদর ও দুটো দিতে হবে।
নিলা চুপচাপ গিয়ে সোফায় শুয়ে পড়লো।
আবির নিলাকে দেখিয়ে দেখিয়ে এ.সি আরো বাড়িয়ে দেয়।
নিলার কিছু করার নেই।নিলার খুব খারাপ লাগছে আবিরের কাণ্ড গুলো। কারন নিলা ঠান্ডা বেশি সৌজ্য করতে পারে না।
সকাল হলো আবিরের ঘুম ভাংলো।
আবির ঘুম থেকে উঠে দেখে নিলা হাত-পা গুটিয়ে সোফায় শুয়ে আছে।
আবির ওয়াস রুম থেকে ফ্রেস হয়ে আসে।
আবির : (মনে মনে) এই মেয়ে আজ এতোক্ষন কেনো ঘুমাচ্ছে। অন্যদিনতো এতোক্ষণে উঠে পরে। যাক বাবা আমার কি।
আবির নিচে নাস্তা???? খেতে গেলো।
ভাবী : আবির নিলা কই??
আবির : আছে ঘুমাচ্ছে।
ভাবী : আজ এতোক্ষন।?
আবির : হে তাতে আমার কি।
ভাবী : কি বললি তোর কি মানে? ও তোর কি??
আবির : ভাবী নাস্তা দিবা ? ক্ষিদা পেয়েছেতো।?
দাদী : কোনো নাস্তা পাবি না।
যা গিয়ে বউকে সহ নিয়ে আয়। তারপর একসাথে বসে নাস্তা কর। আরে তোরা তো এই যুগের ছেলেমেয়ে তোদের কি শিখিয়ে দিতে হয় নাকি?
আবির : কিন্তু দাদী ও তো ঘুমাচ্ছে।
দাদী : ঘুমাচ্ছে !! মানে নিলাতো এতোক্ষন ঘুমায় না। যা গিয়ে দেখ কোনো অসুস্থ লাগছে নাকি?
আবির উঠে গিয়ে তার রুমে গেলো।
আবির : নিলা! নিলা!! ঐ নিলা!…
আবির নিলার শরীরে হাত দিতেই দেখে নিলার শরীর অনেক গরম। কপালে হাত দিতেই আবির বুঝে নেয় কাল রাতে এ.সি তে নিলা চাদর ছাড়া ছিলো। তারমাঝে আবির এ.সি ফুল বাড়িয়ে দেই।
আবির  মনে মনে) আরে এর তো প্রচুর জর। কিন্তু আমিতো তা চায়নি। আমি চায়নি নিলা কষ্ট পাক। আমিতো মজা করছিলাম। আমি নিলাকে ভালোবাসিনা এর মানে এই না যে আমি তাকে ঘৃনা করি। নিলা যতোদিন আমার কাছে আছে ততোদিন সে আমার responsibility.
আবির নিলাকে কোলে তুলে নিয়ে খাটে শুয়ে দেয়। গায়ে চাদর দিয়ে দেয়।
আবির : নিলা সরি। আমি জানতাম না এমন হবে।?
নিলা : (চুপ করে আছে) চোখ খোলার শক্তি ও তার নেই।
আবির দৌড়ে গিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে ড্রইং রুমে গিয়ে……
আবির: ভাবী ’’দাদী নিলার খুব জর উঠেছে। সে চোখ সহ খুলতে পারছে না।
ভাবী দাদী তাড়াতাড়ি আবিরের রুমে গেলো।আবির ও গেলো
দাদী : আরে সত্যিতো নিলার তো খুব জর।
আরে আবির যা ডাক্তারকে ফোন কর।মেয়েটার শরীরতো ভালো না।
আবির : হে দাদী আমি করছি।
ডাক্তার এসে নিলাকে দেখে ঔষধপত্র দিয়ে চলে গেলো।
নিলার এই অবস্থা দেখে আবিরের খুব খারাপ লাগছে।
আবির এক মূহুর্তের জন্য ও নিলার পাশ থেকে সরেনি।
আবির নিলার পাশে বসে আছে।
দুপুর হয়ে গেলো।
ভাবী : আবির তুইতো সকালে ও কিছু খেতে পারিসনি। যা কিছু খেয়ে নে। নিলার পাশে আমি আছি।
আবির : না ভাবী আমি ঠিকাছি আমার ক্ষিদা নেই।
নিলা : (চোখ খুলে) আপনি খেয়ে আসেন। আমি ঠিকাছি।
আবির : (খুশী হয়ে) ভাবী ডিয়ার নিলা উঠেছে তুমি যাওনা নিলার জন্য খাবার নিয়ে এসো।
ভাবী নিলার জন্য খাবার নিয়ে আসলো।
আবির নিলাকে ধরে উঠে বসালো।
নিলা নিজে খেতে চাইলে আবির তাকে নিজ হাতে খেতে দেইনা।
আবির : নিজেকে সামলানোর শক্তি নেই আবার নিজের হাতে খাবার ও খেতে চাচ্ছে।
ভাবী : দেখেছ নিলা!! আমার দেবর হচ্ছে এক পিচ। বউ এর কতো সেবা করছে। তারমানে বুঝতে পারছো তোমাকে কতো ভালোবাসে।?
আবির আর নিলা চুপ করে আছে।আবির নিলার দিকে তাকিয়ে আছে।
নিলা : (ধীরেধীরে) হে ভাবী। আমার কারনেতো অনি এ.সি ছেড়ে বেশী ঠান্ডায় ঘুমাতে পারেনা।
আমার বেশী ঠান্ডা লাগে তাই ওনার গায়ের চাদরটা সহ আমাকে দিয়ে দেই।
ভাবী : ওহ তাই নাকি!! এতো ভালোবাসা কই রাখবা নিলা!?
আবির নিলার দিকে চেয়ে আছে আবির কিছু বলেনি। কারন আবির জানে আসলেই আবিরের দোষ।
ভাবী : আচ্ছা নিলা তুমি খেয়ে নাও আমি যায়। আবিরতো আছে তোমার পাশে কিছু লাগলে আবির বলিস আমাকে।আর শোন খাওয়ানোর পরে ঔষধটা ও খাইয়ে দিস নিলাকে।
আবির : জি! ভাবী।
ভাবী চলে গেলো আবির নিলাকে খাইয়ে দিচ্ছে।
নিলা : হয়েছে আর খাবো না।
আবির : নিলা প্লিজ খেয়ে নাও। না খেলে ঔষধ কিভাবে খাবা।
নিলা : আমি ঠিকাছি ঔষধের দরকার নেই আমার।
আবির : নিলা আমি জানি তুমি আমার উপর রেগে আছো। তা অবশ্য তোমার রাগ করাটা সঠিক। কারন কাল রাতে আমি যা করেছি একদম ঠিক করিনি।
তবে নিলা আমি ইচ্ছা করে করিনি বিশ্বাস করো। আমি কখনো চায়নি তোমার এই অবস্থা হোক।?
চলবে….☺

contract_marriage★ part-11

0

contract_marriage★
part-11

writer-Jubaida Sobti
আবির : ওহ তবে আমাকে কে সাজাবে।?
ভাবী : চুপ! শয়তান কোথাকার।?
নিলাকে ভাবী শাড়ী পরিয়ে সাজিয়ে ড্রইং রুমে নিয়ে গেলো সবাই একসাথে নাস্তা?? করলো।
নিলার সাথে ভাবী দাদি আবিরের মামাতো খালাতো বোনরা সবাই গল্প করছে।অনেক হাসাহাসি চলছে।
দাদী : হয়েছে হয়েছে অনেক গল্প করেছিস এবার আমার নাতি বউটাকে একটু বিশ্রাম করতে দে। যা সবাই।
সবাই চলে গেল। কিন্তু দাদী নিলার কাছে আবার আসলো।
নিলা : আরে দাদী আসো!
দাদী : নিলা তোকে কিছু বলার ছিলো আমার।
নিলা : হে দাদী বলো।
দাদী : নিলা তুইতো জানিস আবির কেমন। বিয়ে হয়েছে ঠিক কিন্তু তার ছেলেপনা গুলো এখনো যায়নি।ভবিষ্যৎ নিয়ে তার কোনো চিন্তা ভাবনা নেই।নিলা তবে তুই আমাকে একটা ওয়াদা কর।
নিলা : কি নিয়ে দাদী?
দাদী : তুই আবিরকে একজন জিম্মাদার মানুষ বানাবি। তার ভবিষ্যৎ ঠিক রাখার জন্য যা করার তুই সেটা ওকে করাবি।
( কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না। সে দাদীকে কিভাবে বলবে এই ওয়াদা সে পুরণ করতে পারবে না। সে তো আবিরের জিবনে শুধু খানিক সময়ের জন্য।)
নিলা : কিন্তু দাদী কিভাবে?
দাদী : এতোসব আমি জানিনা। তুই আমার কসম খেয়ে বল। তুই পারবি?
নিলা : (নিলার কিছু করার ছিলনা) হে দাদী আমি তোমার কসম করে বলছি আমি আবিরকে একজন জিম্মাদার মানুষ বানাবো।
দাদী : (চোখের জল ফেলে) হে তুই পারবি। তোর ভালবাসা দিয়ে পারবি।
দাদী চলে গেলো। নিলার মাথায় কিছু আসছে না সে তো দাদীকে প্রমিস করে দিয়েছে কিন্তু কিভাবে পূরণ করবে।
আবির রুমে এসেছে।
নিলা : কোথায় ছিলেন?
আবির : বন্ধুদের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম।
নিলা : তারার সাথে কথা হয়েছে?
আবির : কি বলবো তারাকে হে? তারা আমি বিয়ে করে ফেলেছি এটা বলবো?
নিলা : না তা বলবেন কেন।
আবির : সরি!
নিলা : সরি কেনো?
আবির : আসলে কি বলবো মাথায় কিছুই আসছে না। তারাকে মিথ্যা বলতে ও ভালো লাগছে না। আমিতো ওকে ভালবাসি ভালবাসার মানুষকে মিথ্যা কেমনি বলি।
নিলা : হুম আপনি কালকে যে কন্ট্রাক্ট ফাইল এনেছেন ওটা একটু দিবেন প্লিজ।
আবির : কেনো?
নিলা : দেখবো আরকি কাল রাতে ভালো করে পড়তে পারিনি তাই।
আবির উঠে আলমারি থেকে নিলাকে ফাইলটা দিলো।
নিলা আবিরের থেকে ফাইলটা নিয়ে টেবিল থেকে একগ্লাস পানি নিয়ে ফাইলের উপর ঢেলে দিলো। ফাইল পুরাটা ভিজে গেলো আর কোনো কাজের রইলো না।
আবির : (খুব রেগে গিয়ে) করছোটা কি?
নিলা : যা দেখেছেন তাই করছি।
আবির : এসবের মানে।
নিলা : এসবের মানে হলো কন্ট্রাক্ট পেপারে আপনার যেরকম শর্ত আছে ঐরকম কিছু শর্ত আমার ও থাকবে।তারপর ঐ কন্ট্রাক্ট পেপারে আপনার সাইন থাকবে আমার সাইন ও থাকবে।
আবির : কিরকম শর্ত তোমার?
নিলা : সেটা আমি পেপার আনার পর জানিয়ে দিবো।
আবির : তোমার এসব একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না নিলা?
নিলা : যা আপনি মনে করেন।
এই বলে নিলা রুম থেকে চলে গেলো।
নিলাদের বাসা থেকে তার কাজিনরা এসেছে নিলাকে দেখতে। নিলাতো অনেক খুশি পরিবারের মানুষ পেয়ে।
(শ্রেয়া নিলার কানে কানে আপু তোমার রুমটা কতো বড় কতো সুন্দর। তুমি আর আবির ভাইয়া দৌড়াদৌড়ি খেলতে পারবা)?
নিলা 

 মুচকি হেসে) তোর ও হবে একদিন এমন রুম।?
শ্রেয়া : হে কিন্তু আমার বর ও আবির ভাইয়ার মতো হ্যান্ডসাম হবে।?
নিলা:( একটু হেসে) হে রে পাগলি তাও হবে।?
সবাইকে রাতে খাবার দেওয়া হলো।
শ্রেয়া : নিলা আপু! আবির ভাইয়া কই গেলো? আমরা তো কখন এলাম আর ভাইয়ার দেখা পেলামনা এখনো।
আজ ডিনার ভাইয়ার সাথে করবো।
দাদী : হে তা করবিনা কেনো। তোরা তো ওর শালী। নিলা! আবিরকে ফোন দে তাড়াতাড়ি আসতে বল।
নিলা : জি! দাদি।
(নিলা আবিরকে ফোন দিচ্ছে কিন্তু আবির ফোন ধরছে না কেটে দিচ্ছে।নিলা কি করবে কিছু বুঝতে পারছে না)
(আবির তার বন্ধুদের সব খুলে বলার পর বন্ধুরা তার টেনশন কমানোর জন্য তাকে জোর করে ড্রিংকস খাইয়ে দে।কিন্তু আবির এর আগে কখনো এসব খাওয়াতো দূরের কথা ছুঁয়ে ও দেখেনি।)
হঠাৎ নিলার কানে বাহির থেকে আবিরের গাড়ির আওয়াজ আসে। সে তাড়াতাড়ি গিয়ে দরজা খুলে দেখে আবির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।আবিরের চোখ গুলো লাল হয়ে আছে। নিলা গাভ্রিয়ে গেলো অনেক।
নিলা : কি হয়েছে আপনার?
আবির নিলার গায়ের উপর পরে যায়। নিলা অনেক কষ্টে আবিরকে ধরে।
আবির সোজা হয়ে দাড়াতে পারছে না।
আবিরকে দেখে তার পরিবারের সবাই অনেক অবাক হয়ে গেছে।তবে বিশ্বাস করতে পারছে না আবির ড্রিংকস করেছে আবিরতো কখনো ড্রিংকস করে না তবে আজ কেনো করলো।
আবিরকে তার মেজো ভাই ধরে রুমে দিয়ে আসে।
দাদী : (লজ্জাজনক মুখে মেহমানদের) আসলে আবির এমন না। আজ মনে হয় বন্ধুদের সাথে পরে খেয়েছে।
শ্রেয়া : দাদী! it’s a common matter… এখনকার যুগে এটা কোনো ব্যাপারি না।
সবাই রাতের ডিনার করে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমাতে গেলো।
নিলা তার রুমে গেলো। দেখছে আবির তার শার্ট খোলার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না।
নিলা গিয়ে আবিরকে শার্ট খুলে দিলো। আবিরকে পা তুলে খাটে শুয়ে দিলো। নিয়ম অনুযায়ী আজ নিলার পালা ছিলো খাটে শুয়ার।
নিলা : আপনি কিছু খাননি। আপনাকে খাবার দিবো?
আবির : (নেশাগ্রত ভাবে)আমি ড্রিংকস করেছি।
নিলা : কেনো করেছেন।
আবির : তোমার কারনে।শুধু তোমার কারনে।
নিলা উঠে চলে যাচ্ছিলো। ঠিক সেই সময় আবির নিলার হাতধরে টান দিলো আর নিলা আবিরের গায়ের উপর পরে গেলো।
আবির নিলার মুখ থেকে আলতো করে চুলগুলো সরিয়ে।
আবির : আই লাভ ইউ!
নিলা আবিরের মুখে এই কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়েছে। ঐ মূহুর্তটা লাগছে তার সর্গের মতো।
নিলা ও আবিরের কপাল থেকে তার চুল গুলো আলতো করে সরিয়ে দিলো।
আবির : সব চেয়ে বেশী ভালবাসি তোমাকে। আই লাভ ইউ সো মাচ””! তারা !
নিলার মনটা তখন লাগলো কে যেন এসে একটা লাঠি দিয়ে বাড়ী মেরে চলে গেলো।
নিলা তার কোমোর থেকে আবিরের হাতটি সরিয়ে ছুটে আসতে চেয়ে ও আসতে পারলো না।
আবির নিলাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখে।
(নিলা মনে মনে) অনি তো আমাকে তারা ভাবছে। তারা ভেবে এসব করছে। নেশা করে এসে রাতে রাতে সপ্ন দেখছে যতসব ডিসগাস্টিং।
নিলা একদৃষ্টিতে আবিরকে চেয়ে আছে। আবির ঘুমিয়ে আছে। ভালোবাসার মানুষটিকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে এতো সুন্দর লাগে এতো ভালো লাগে তা নিলা আগে জানতো না।
নিলা ও আবিরের বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে।
সকাল হলো।? আবিরের আগে ঘুম ভাংলো। আবিরের মাথা প্রচন্ড ব্যাথা করছে।
তারমাঝে আবির নিলাকে তার বুকে দেখে আরো অবাক হয়ে গেলো। মাথায় কিছু আসছে না নিলা তার বুকে কেনো।
আবিরের গায়ে কাপড় নেই কেন? এ.সি তো চলছে তবে……কাপড় কেনো খুললো।?
আবিরের দুশ্চিন্তা আরো বেড়ে গেলো।
আবিরের নড়াচড়াতে নিলার ঘুম ভেংগে গেলো।
নিলা উঠে দাঁড়িয়ে গেলো।
আবির উঠে বসে।
দুজন দুজনের দিকে তাকাচ্ছে কিন্তু কেউ কিছু বলছে না।
নিলা ওয়াস রুমে চলে যায় ফ্রেস হওয়ার জ্ন্য। ফ্রেস হয়ে এসে দেখে আবির এখনো বসে আছে।
নিলা : ফ্রেস হয়ে আসুন।
আবির : (মনে মনে ?এই মেয়ে এতো নরমাল ভাব করছে কেনো) উফফ কিছু বুঝছি না কি হচ্ছে।?
আবির ওয়াস রুম থেকে বের হয়ে দেখে নিলা বিছানা ঠিক করছে।
আবির দৌড়ে গিয়ে নিলার হাত ধরে টেনে তার দিকে ফিরিয়ে।
নিলা : ছিঃ….!….. এসব কি?(চোখে হাত দিয়ে)?
চলবে——-?

Contract_marriage★ part- 10 

0

Contract_marriage★
part- 10 

writer-Jubaida Sobti


এইভাবে কেটে গেলো বাকি দিনগুলো।
আজ নিলা আর আবিরের বিয়ে।
আবিরকে তার বেষ্ট ফ্রেন্ড দুজন মিলে রেডি করছে।
আবির : ভেবেছি বিয়েটা তারার সাথে করবো কিন্তু কোথা তেকে এই নিলা উঠে এলো।?
বন্ধু : আহারে নিজেই বিয়ে করছিস আবার নিজেই আফসোস করছিস।?
আবির : আরে কি করবো তোরা বল। নিলা বেচারি। চেহেরা দেখলে কষ্ট হয় ওর। মেয়েটির ও কি দোষ যার সাথে বিয়ে ঠিক করে সেইই রিজেক্ট করে দেই। তবে আমি ওকে সাহায্য করছি। ওকে কি আমি সারাজীবন আমার বউ করে রাখবো নাকি। আমিতো তারাকে বিয়ে করবো উফফফ তারাকে অনেক মিস করছি।
বন্ধু : হে হে আর মিস করতে হবে না তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে।
বর যাত্রী বের হলো। সবাই বিয়েতে অনেক আনন্দ করে।কিন্তু নিলার মন অনেক খারাপ।
নিলা আর আবিরের বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হলো।
নিলাকে আবিরের বেডরুমে বসিয়ে রাখানো হয়েছে। ফুলের সমাহারে ভরা বিছানা। চারদিক ক্যান্ডেল লাইট আর ফুল দিয়ে সাজানো। এ.সি চলছে। ঠাণ্ডা ঠান্ডা বোধ হচ্ছে নিলার। পা গুলো গুটিয়ে নিয়ে বসে আছে নিলা।
হঠাৎ দরজা খোলার শব্দ হলো।
আবির এসেছে রুমে।
আবির : আরে নিলা কি হলো!!
নিলা : জি!
আবির : নিলা! তুমিতো এমন ভাবে বসে আছো যেন আমাদের ফুলসজ্জা হচ্ছে।
নিলা বিছানা ছেড়ে উঠে দাড়ালো।
আবির : নিলা! তোমাকে একটা জিনিস দেখাবো।
নিলা : কি জিনিস।
আবির একটি ফাইল নিলার হাতে দিল এবং বললো
আবির : নিলা এটা আমাদের কন্ট্রাক্ট পেপার। এইখানে লিখা আছে ৬ মাস পর্যন্ত তুমি এইখানে থাকতে পারবা। এরপর তুমি আমার জীবন থেকে চিরদিন এর জন্য চলে যাবে।
নিলার শরীরের লোম শিরশির করে উঠলো। একজন মেয়ের কাছে বিয়ের দিন রাতে তার বরের কাছ থেকে পাওয়া কন্ট্রাক্ট পেপার। যাতে লিখা আছে ৬ মাস পরে তাদের ডিভোর্স হয়ে যাবে।
নিলা : কি করতে হবে এটা।
আবির : সিগ্নেচার করবে।
নিলা : কিন্তু আবির এসবের কি দরকার ছিলো। আমিতো বলেছি আমি চলে যাবো।
আবির : যদি ৬ মাস পরে তুমি দাবী করো যেতে না চাও।
নিলার চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো।?
আবির : নিলা কিছু কাগজপত্র আরো আছে সেখানে ও তোমার সিগ্নেচার লাগবে।
নিলা : কি লিখা আছে তাতে?
আবির : নিলা তুমি আমার বউ ঠিক কিন্তু কখনো আমার বউ এর অধিকার পাবা না।
আমার উপর কোনো অধিকার দেখাতে আসবে না।
আমাকে কখনো ভালবাসার চেষ্টা করবে না আমিও তোমাকে ভালোবাসবো না।
আমাদের বিয়েটা শুধু একটা কন্ট্রাক্ট হিসেবে।কন্ট্রাক্ট শেষ হতেই তুমি কোনো দাবী ছাড়া এইখান থেকে চলে যাবে।
নিলা : (কান্না কন্ট্রোল করে) কোথায় কোথায় সই করতে হবে?
আবির : এইতো এইদিকে একটা। এই পেইজ এ একটা।
সব মেয়েরি এইদিনের সপ্ন থাকে। নিলা কখনো ভাবেনি নিলার বিয়ে এমনভাবে হবে।
সই করা শেষ। আবির ফাইলটি নিয়ে আলমারিতে রেখে দিলো।
আবির : আচ্ছা আমরা তো এক খাটে থাকতে পারবো না। এক কাজ করি একদিন আমি খাটে থাকবো আর একদিন তুমি খাটে থাকবা।
যে দিন আমি খাটে থাকবো ঐ দিন তুমি সোফায় থাকবে আর যেদিন তুমি খাটে থাকবে ঐ দিন আমি সোফায় থাকবো।
নিলা : জি!
আবির : এক কাজ করো আজ তুমি খাটে থাকো।
নিলা : না সমস্যা নেই আপনি থাকেন।
আবির : নো ওয়ে। আজ তুমি।
নিলা : বলছি তো আমি থাকি। আপনি খাটে শুয়ে পরুন।
আবির : আচ্ছা ঠিকাছে।
এই বলে আবির নিলার জন্য বালিশ আর গায়ের চাদর নিয়ে সোফায় দিয়ে দেই।
আবির : গুড নাইট নিলা! ঘুমিয়ে পরো।
নিলা : গুড নাইট।
আবির খাটে শুয়ে পরে।
নিলা তার গয়নাগাটি খুলছে ভাবতে ভাবতে আর চোখের জল ফেলতে ফেলতে। আর আবিরের দিকে তাকায় কিছুক্ষণ পর পর আয়না দিয়ে।
আবির ঘুমিয়ে পড়েছে।আবিরের চেহারা থেকে তার চোখ সরাতে পারছে না নিলা। আর ভাবছে যাকে ভালবেসেছে তাকেই বিয়ে করেছে নিলা কিন্তু। এই বিয়ে খানিককালের জন্য।
সকাল হলো হঠাৎ দরজা বাড়ি দিচ্ছিলো আবিরের ভাবী। আবিরের ঘুম ভেংগে গেলো। উঠে দেখে ১০:৩০
(আবির মনে মনে ভাবছে আরে নিলাতো সোফায়। এখন দরজা কেমনি খুলি।)
(আবির নিলার কাছে গিয়ে)
আবির : নিলা! নিলা! নিলাাাা!!!!!
নিলা : উফফ কি হলো এতো সকাল সকাল ডাকছেন কেন (ঘুম চোখে)
আবির : নিলা সকাল সকাল নয় ১০:৩০
নিলা : উফফ আর একটু ঘুমাতে দিন এমনিতে একটু আগে ঘুমিয়েছি। (ঘুম চোখে)
ভাবী : আবির দরজা খোল। অনেকতো ঘুমিয়েছিস। এবার উঠ।
আবির : ঐ নিলাাাা!!!!!! উঠো প্লিজ ভাবী এসেছে ডাকার জন্য।
এই মেয়ে কি নেশার ঘুম ঘুমিয়েছে নাকি। কী করি ভাবী তো দেখে ফেলবে এখন দরজা খুললে। (আবির মনে মনে)
আবির নীলাকে কোলে তুলে নিলো এবং খাটে শুয়ে দিচ্ছে।
নিলা : আরে আরে! করছেনটা কি! পরে যাবো তো।
আবির : চুপ!! ভাবী আছে দরজার পাশে।
আবির গিয়ে দরজা খুললো।
ভাবী : আবির ঘুম হয়েছে?
আবির : জি ভাবী।
ভাবী : তাহলে এবার রুম থেকে বের হো।
আবির : কেন?
ভাবী : তোর বউকে সাজাবো বলে।

চলবে…… ?

 

Contract_marriage★  part- 9

0

Contract_marriage★
part- 9

writer-Jubaida Sobti
নিলা : কি লুকাবো। কিছুইতো না।
আবির : নিলা আমার ব্যাপারে তুমি সব জানো। তোমার ব্যাপারে ও আমি সব জানি তবে আমায় মিথ্যা বলার কি দরকার। বলো আমাকে কি হয়েছে?
নিলা :(কেঁদে কেঁদে) কাল যখন আপনার পরিবারের ফোন আসবে। তখন মামা মামীর সপ্ন ব্যর্থ হয়ে যাবে। তারা আমাকে ছোট থেকে লালনপালন করে বড় করেছে। মমিতা আপুর সংসারটা ও তেমন ভালো চলছে না। শশুরবাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়ী উঠে এসেছে। শ্রেয়ার পড়া লিখার খরচ এসব মিলিয়ে মামা আর ভাইয়ার উপর অনেক প্রেশার যায়। তার মধ্যে এতো কষ্টের মাঝে বার বার আমার কারণে ওদের ও কষ্ট পেতে হচ্ছে। আর আমি চায় না এসব ভবিষ্যৎ এ ও হোক।তাই আমি ডিসিশন নিয়েছি এর চেয়ে ভালো তাদের থেকে দূরে সরে গিয়ে তাদের জিবনের বোঝা কমিয়ে দি।
আবির : কিন্তু নিলা তোমার কি মনে হয় মামা তোমাকে বোঝা মনে করে?
নিলা : কখনো না! মামা আমাকে নিজের মেয়ের মতোই ভাবে। কিন্তু আমার নিজেকে নিজেই তাদের কাছে ছোট মনে হচ্ছে। আপনাকে তো বলেছি আমার বিয়ে কতোবার ভেঙেছে। সবার কতো আশা ছিলো এই বিয়ে নিয়ে।
আবির : সব আমার কারনে তাই না নিলা।দেখিও নিলা তুমি আমার চেয়ে ভালো বর পাবা।
নিলা : (চুপ করে কেঁদে? চলছে)
আবির : নিলা আমি তারাকে ভালোবাসি তাই তোমাকে বিয়ে করছি না।
নিলা : তো কে বলেছে আমাকে ভালোবাসতে।আমাকে ভালোবাসতে হবে না আবির। (কেঁদে কেঁদে) ?
আবির : মানে! কি বোঝাতে চাচ্ছো??
নিলা : (কেঁদে কেঁদে) আবির আপনি আমাকে বিয়ে করেন। আমার জন্য নয় আমার মামা মামীর দিক চেয়ে হলে ও। আপনি আমাকে যেদিন বলবেন ঐদিনি আমি আপনার জীবন থেকে চলে যাবো।
আবির : কিন্তু!!! এটা সম্ভব হবে নাকি?
নিলা : এক সপ্তাহ ‘ একমাস ‘ দুই মাস যে দিন বলবেন ঐদিনি চলে যাবো। আমি আপনাকে প্রমিস করছি আবির।
আবির : হুম!! তবে তারা ও বলেছে এক বছর পরে সে ভেবে বলবে। তারা ঢাকায় গিয়েছে মেডিকেল পড়ার জন্য।
কিন্তু হে!! নিলা আমি তোমার উপর ভরসা করে এই বিয়েতে রাজি হতে পারি তবে আমাকে প্রমিস করো আমি যেদিন বলবো ঐদিনি তুমি আমার জীবন থেকে চলে যাবা। কারণ নিলা আমি তারার জায়গা আর কাউকে দিতে পারবো না। আমার জীবনে শুধু তারা আর কেউ নয়।
নিলা : আমি আজ এই মুহুর্তকে সাক্ষী রেখে ওয়াদা করছি আপনি যেদিন বলবেন ঐদিনই আমি আপনার জীবন থেকে চলে যাবো।?
আবির : ঠিকাছে নিলা তাহলে এখন বাসায় যাও।
নিলা : আপনি কই যাবেন?
আবির : কই আর যাবো ঐ হিটলারের কাছে। চলো তোমাকে আগে পৌছেদি।
নিলা : আমি যেতে পারবো!
আবির : আচ্ছা তখন দেখেছিতো কতোদূর যেতে পারো।
আমি বারবার গিয়ে ঐসব বলতে পারবো না যে আমার চাচা আর্মি ” মামা পুলিশ ” দাদা মেজিস্ট্রেড। হা! করে দেখছো কী চলো এবার।
নিলা : চলেন।
নিলা নিলার বাসায় এসে গেছে ড্রইং রুমে গিয়ে চিঠিটা নিয়ে তাড়াতাড়ি ছিড়ে ফেলে দিয়েছে।
আবির ও তার বাসায় এসেছে।
দাদি : আরে আবির তুই আমি জানতাম তুই আসবি। দেখ আবির তুই নিলার চেয়ে ভালো মেয়ে আর পাবি না সে তোর জন্য একদম পারফেক্ট।
আবির : জি! দাদি আসলে আমি বুঝতে পারিনি। এখন বুঝতে পেরেছি।
বাবা : মা ওর থেকে জিজ্ঞেস করো এটা কোনো ওর নতুন প্লান নয়তো।?
দাদি : চুপ করবি তুই!! আবির তার নিজের ভুল নিজে শিকার করেছে। যা এখন বিয়ের যা যা লাগবে তৈরী কর।
আবির আবিরের রুমে চলে গেলো।
চিন্তা করছে কি হচ্ছে তার সাথে।
নিলা ও তার রুমে বসে ভাবছে। আর কান্না করছে।
চলবে….?

contract_marriage★  part- 8

0
contract_marriage★
part- 8
writer-Jubaida Sobti
নিলা : জি!! আমি ঠিকাছি।
আবির : ঠিকাছো মানে? কি নিয়ে টেনশন করছো কোনো আমি যা বলেছি তা নিয়ে নয়তো??
নিলা : না তা নিয়ে নয়।
আবির : আচ্ছা তোমার মামা মামিকে বলেছো?
নিলা : না বলতে পারিনি।?
দাদি : নিলা!! খেয়াল রাখিস হ্যাঁ। আমরা তাহলে আজ আসি। আর শোন কোনো টেনশন করবি না। সব ঠিকঠাকই হবে। তবে হ্যাঁ আবির তোকে কোনো টেনশন দেই নাকি?
নিলা : না দাদি!
দাদি : দিলে কিন্তু আমাকে বলবি।
চল আবির।
(এই বলে দাদি আর আবির চলে যায়)।
নিলা সুস্থ হয়ে উঠে ধীরেধীরে। তবে এর মাঝে অনেক চেষ্টা করেছে নিলা মামা মামীকে বলার জন্য।
কিন্তু নিলা ব্যর্থ হয়।
আবির আর নিলার বিয়ের কার্ড চলে এসেছে।
আবির এর এসব অসহ্য লাগছে।
আবির নিলাকে ফোন দিলো।
আবির : নিলা তুমি বলেছো?
নিলা : দেখেন আমি মামা মামিকে কিছু বলতে পারবো না। আপনার যদি এতো দরকার হয়ে থাকে তাহলে আপনি নিজেই বলেন আপনার পরিবারকে।
আবির : তার মানে তুমি বলতে চাচ্ছো যে তুমি কিছু করতে পারবা না তাই তো?
নিলা : জি!!! তাই।
আবির : ঠিকাছে তাহলে আমিই বলছি বাবাকে।
এই বলে আবির ফোন কেটে দিলো।
আবির তার বাবা এবং পরিবারের সবাইকে ঢাকে।
আবির : বাবা আমি নিলাকে বিয়ে করতে পারবো না।
বাবা : কেন?
আবির : বাবা আমি তারা কে ভালবাসি আর আমি ওকেই বিয়ে করবো।
বাবা : আবির তুই কি বলছিস তুই জানিস?
আবির : হ্যাঁ বাবা আমি জানি। আর এটাই আমার ফাইনাল ডিসিশন।
বাবা : ঠিকাছে তাহলে আমার ফাইনাল ডিসিশন ও শোনে নে। যদি এই বাড়ীতে থাকতে চাস তাহলে নিলাকে বিয়ে করতে হবে আর যদি না চাস তাহলে বাড়ী থেকে বেরিয়ে যা।
দাদি : কি বলছিস কি তোরা।পাগল হয়ে গেছিস নাকি তোরা।
বাবা : মা তুমি জানো না!!! ওর এসব আবদার গুলো রেখে রেখে আমি ওকে মাথায় তুলে ফেলেছি।
আবির : ঠিকাছে আমি বেরিয়ে যাচ্ছি।চিন্তা করো না।
বাবা : দাড়া ” বেরিয়ে যাচ্ছিস ভালো কথা। তবে এই বাড়ীর কিছু সাথে নিয়ে যেতে পারবি না।
আবির : মানে!
বাবা : তোর বাইকের চাবি ” কারের চাবি ” ক্রেডিট কার্ড সব রেখে যা।
আবির সব টেবিলের উপর রেখে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল।
দাদি : (কেঁদে কেঁদে) কয়েক সাপ্তাহ পরে ছেলেটার বিয়ে আর তাকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে তুই কেমন বাপ?
বাবা : মা তুমি ঐসব বুঝবা না। কয়দিন ওকে বাসা থেকে দূরে থাকতে দাও তারপর বুঝবে ও।
আবির তার বন্ধুদের কল দিয়ে সব বলে কোনো বন্ধুর সাহায্য না পেয়ে সে পার্কের একটি চেয়ারে বসে আছে।
নিলা বুঝতে পারে যে আবির হয়তো এতোক্ষনে তার পরিবারকে বলে দিয়েছে।নিলা বুঝতে পারে সকালে আবিরের পরিবার ফোন দিয়ে বিয়ে কেন্সেল করে দিবে। নিলা তার এই মুখ মামা মামিকে কি করে দেখাবে। মামা মামীর কষ্টের চেহারাটা সে কি করে দেখবে।
তাই নিলাও ডিসিশন নিয়েছে সে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যাবে।
নিলা একটি চিঠি লিখে ড্রইং রুমের টেবিলে রেখে সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে।
নিলা হাটতে হাটতে পার্কের পাশে চলে আসে।
নিলাকে আবির দেখে ফেলে।
আবির: নিলা তুমি এতো রাতে এইখানে কি করছো 

নিলা : জি! আমি নাইট ওয়াকিং এ বেরিয়েছি।তাই।
আবির : তুমিকি আমাকে বোকা পেয়েছো?
নিলা : তবে আপনি কী করছেন এইখানে?
আবির : বাবা বের করে দিয়েছে নিলা আমাকে।
নিলা : ওহ!
আবির : বাদ দাও!! আসো তোমাকে বাসায় পৌছে দি।
নিলা : আরে না সমস্যা নেই আমি যেতে পারবো আপনি চিন্তা করবেন না।
আবির : সত্য বলছো তো??
নিলা : হ্যাঁ মিথ্যা কেন বলবো। বাই।?
এইবলে নিলা চলে গেল একা। কিন্তু আবির ও নিলার পিছু পিছু গেল। নিলা না দেখার মতো।
কিছু দূর হেটে যাওয়ার পর নিলাকে কিছু বাজে ছেলে ইপ্টিজিং করতে লাগলো। তবে নিলা অনেক ভয় পেয়ে গেল।
সে পিছন ফিরে দৌড়াতে গিয়ে দাক্ষা খেয়ে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে গেল।চোখ খুলে নিলা দেখে আর কেউ নয় সেটা আবির।
আবিরকে দেখে নিলার বুকে সাহস আসলো। নিলা আবিরের হাতটা শক্ত করে ধরে রাখে।
আবির : আরে ডার্লিং এতো রাগ করতে হয়। হয়েছে তো। এবার ক্ষমা করে দাও।
আমার চাচা আর্মি যে টা তাকে কল দিয়েছি সে আসছে আমাদের পিক আপ করতে। আজ ওনার বাসায় থাকতে বলেছে।
নিলা আবিরের কথা গুলো শুনে হাসবে কি কাঁদবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না।?
আবির নিলাকে নিয়ে ঐ জায়গা থেকে অন্য একটি জায়গায় নিয়ে বসালো।
আবির : নিলা সত্য করে বলোতো তুমি এতো রাতে এইখানে কি করছো? নিলা আমার থেকে লুকিয়ে কি লাভ?
চলবে…..

 

contract_marriage★  part- 7

0

contract_marriage★
part- 7

writer-Jubaida Sobti
হঠাৎ নিলার দুলাভাইকে পেছন থেকে টেনে আবির দিল একটা ঘুসি।
নিলার দুলাভাই আবিরকে দেখে ভয় পেয়ে গেল। নিলা ও আবিরকে দেখে অবাক।
আবির : শালা বিয়াদবি তো অনেক বড় করে ফেলেছিস।
তবে মেইন ডোর অফ করে বিয়াদবি করলে আজ তুই হয়তো আমার থেকে বেচে যেতি।
আবির আর নিলার দুলাভাই দুজনে মারামারি শুরু করে দেয়। নিলা আবিরকে ছুটিয়ে আনার চেষ্টা করছে তাও পারছে না। আবির অনেক রেগে গেছে।
শেষে অনেক জোড়াজোড়ি করে নিলা আবিরকে সরিয়ে আনে।
নিলা আবিরকে অন্য রুমে নিয়ে চলে যায়।
আবির : নিলা তুমি কিন্তু একদম ঠিক করছো না। ও বিয়াদবির সীমানা পাড় করে ফেলেছে।
নিলা : আপনি শান্ত হোন প্লিজ। আমি জানি অনি যা করেছে ঠিক করেনি। কিন্তু আমি আমার বোনের সংসার না ভাঙার জন্যই কাউকে কিছু বলিনি।
আবির : (রেগে গিয়ে) সংসার এইরকম একটা অমানুষের সাথে।
নিলা : আমি চায়না আমার কারনে কারো ক্ষতি হোক।
আবির : ওহ ফাইন!! তুমি চাওনা তোমার কারনে কারো ক্ষতি হোক। তবে কারোর কারনে তোমার ক্ষতি হোক। Disgusting নিলা আমারতো ইচ্ছা হচ্ছে ওই শালাকে এক্ষুনি গুলি করে মারি।?
নিলা : আরে কই যাচ্ছেন দাড়ান আপনি শান্তু হোন। প্লিজ।
আবির : নিলা তুমি জানো যদি আজ আমি এই সময় তোমাদের বাসায় না আসতাম তোমার কি হতো!!
নিলা : জি!! থেংক ইউ এসবের জন্য।
আবির : নিলা এভাবে জীবন যায় না। আজ হয়তো আমি এসেছি। কাল? কালতো আমি থাকবো না।
নিলা : তবে আজ আপনি ওনাকে যা ধোলায় দিয়েছেন না….আমার মনে হয়না অনি আর কখনো আমার উপর নজর দিবে হি-হি!!
আবির : হাসি আসছে না তোমার? আমারতো আফসোস হচ্ছে ওকে আরো ধোলায় করতে পারিনি বলে। তবে তুমি ওকে অনি অনি করছো কেন। তুই করে বলবা ওকে তুই…. বুজেছো ?
নিলা : হি-হি-হি ওকে বুজেছি।
আবির : না না শোনো ওর সাথে তোমার কোনো কথা বলার প্রয়োজোন নেই।
নিলা : আচ্ছা ঠিকাছে। তবে আপনি কেন এসেছেন?
আবির : ও হে নিলা!!!! তুমি বলেছো মামা মামিকে।
নিলা : জি! না আমি এখনো বলিনি।
আবির : কবে বলবে নিলা। দেরি হয়ে যাচ্ছে তো। বাবা বিয়ের কার্ড এর অর্ডার সহ করে দিয়েছে।
নিলা : আচ্ছা আমি বলবো আজ।
আবির : ওকে নিলা বলবা কিন্তু আজ। বাই!!! ও হে সাবধানে থাকবা।
নিলা : জি!!
আবির চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পরে নিলার পরিবাররা চলে আসে।
নিলার মামাতো বোন মমিতাকে নিলার দুলাভাই উল্টাপাল্টা অনেক বুঝিয়ে দিয়েছে নিলা আর আবিরের ব্যপারে।
মমিতা : নিলা! তোর আবির নিজেকে কি মনে করে বড়লোকের ছেলে বলে যা ইচ্ছা তাই করবে।
তুই ও তো কিছু করলিনা। ও হে আমিতো ভুলে গেছি তোর এখন বড় ঘরে বিয়ে হচ্ছে গাড়ি করে আসবি গাড়ি করে যাবি। হক পরিবারের হবু বউ বলে কথা।
নিলা : আপু তুমি যা ভাবছো তা কিছুই না।
মমিতা : চোরের আবার বড় গলা। তোর দুলাভাইকে কি তোর লম্পট মনে হয়। পৃথিবীতে মেয়ে আর খুজে পাইনি যে না তোর সাথে বেহায়াপনা করতে গিয়েছিল।
নিলা : আপু তুমি ভুল বুঝছো আমাদের।
মমিতা : হয়েছে ভুল শুধ্রাতে আসতে হবে না আর।
দুলাভাই : আরে হয়েছে মমিতা! ছোট মানুষ তাই হয়তো না বুঝে করেছে।
মমিতা : ঐ আবির মেরে আপনাকে নাক দিয়ে রক্ত নিয়ে এসেছে আপনি বলছেন না বুঝে করেছে। এগুলো সব নিলার চাল।বাবা বাড়ীতে খাল কেটে কুমির এনেছে।
নিলা তার রুমে চলে গিয়েছে কারন নিলা জানে হাজার বললে ও নিলার কথা বিশ্বাস করবে না মমিতা।
নিলার মাথায় ঘুরছে কিভাবে বলবে মামা মামিকে এই বিয়ে কেন্সেল করতে।
এসব টেনশন করতে করতে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। খুব জর নিলার।মাথা তুলে বসতে ও পারছে না।
আবির আর দাদি এসেছে নিলাকে দেখতে।
দাদি নিলার মাথায় কিছুক্ষন হাত বুলিয়ে ড্রইং রুমে চলে যায় নিলার মামির সাথে।
আবিরকে নিলার পাশে বসিয়ে।
আবির : নিলা ডাক্তার বলেছেন তুমি নাকি খুব টেনশন করছো? কি হয়েছে তোমার। তুমি জানো তোমার প্রেশার কতো বেড়েছে। এই বয়সে কারো প্রেশার থাকে নাকি?
চলবে……