Sunday, June 29, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2382



Love At 1St Sight Season 3 Part – 15

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 15

writer-Jubaida Sobti

মাথা থেকে রক্ত ঝড়ছে রাহুলের, ব্যথা অনুভব হচ্ছে, চারদিক সব কেমন যেন ঘুরঘুর করছে, চোখটাও অন্ধকার হয়ে ঝাপসা হয়ে আসছে …কিন্তু যেকরেই হোক স্নেহাকে হসপিটাল পৌছাতে হবে, অনেক কষ্টে নিজেকে কন্ট্রোল করে ড্রাইভ করে…গাড়ী হসপিটাল পর্যন্ত পৌছালো!

রাহুল গাড়ী থেকে নেমে এসে…স্নেহাকে কোলে তুলে হসপিটালের ভেতরে নিয়ে গেলো, তাদের রক্তাক্ত অবস্থা দেখে কয়েকজন নার্স এবং ওয়ার্ড বয় পেশেন্ট সি্ট নিয়ে এগিয়ে এলো! স্নেহাকে রাহুল কোল থেকে শুয়ে দিলো! তারা স্নেহাকে নিয়ে চলে যাচ্ছে…পেশেন্ট নেম জিজ্ঞেস করাই রাহুল শুধু স্নেহা বলে জবাব দিতে পারলো, রাহুল ও যাওয়ার জন্য পা বাড়ালে, হঠাৎ চোখ বন্ধ করে মাথায় হাত দিয়ে নিস্থব্দ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে…চোখ খুলতেই দেখে… তার আশেপাশের সব ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে, সাথে সাথে কেউ একজন এসে রাহুলকে ধরে ফেলে,

নার্স : আপনার মাথা থেকে প্রচুর ব্লিডিং হচ্ছে! আপনি ঐদিকটা গিয়ে বসুন আমি ব্যান্ডেজ নিয়ে আসছি!

রাহুল : No no! I am Ok! [ আংগুল দিয়ে সামনের দিক দেখিয়ে ] স্নেহা! স্নেহাকে…

নার্স : হ্যা! ওনাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে থার্ড ফ্লোরে!

রাহুল : থেংক্স! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো ]

নার্স : এক্সকিউজমি! আপনার ব্লিডিং…

রাহুল কোনো জবাব না দিয়ে থার্ড ফ্লোরে এসে পৌছায়! আশেপাশে কয়েকজন মানুষজন ও আছে, রাহুল তাদের দিক একবার চেয়ে এবং একটি চেয়ারে গিয়ে বসে!

আধ ঘন্টা পর, একজন ডক্টর আর একজন নার্স বেড়িয়ে আসে,

রাহুল : [ উঠে এগিয়ে গিয়ে ] ডক্টর! স্নেহা..এখন

ডক্টর : Yeah! She is safe now! But, পা এবং মাথায় এফেক্ট হয়েছে..তাই অনেক ব্লিডিং ও হয়েছে…আমি ব্লাড দিয়ে দিতে বললাম! দু-ঘন্টার মধ্যে সেন্স চলে আসবে… আরে আপনার মাথা থেকেওতো ব্লিডিং হচ্ছে! সি্স্টার ওনাকে ব্যান্ডেজ করে দাও! দাঁড়িয়ে আছো কেনো?..

রাহুল : I am fine doctor!

ডক্টর : You are not fine, I am a doctor! you know! [ একটু হেসে রাহুলের কাধে হাত দিয়ে ] don’t worry! she is alright now!

রাহুল : থেংক্স ডক্টর!

ডক্টর : My pleasure! [ বলেই চলে গেলো ]

নার্স এসে রাহুলকে মাথায় ব্যান্ডেজ করে দেই! এবং একটা টেবলেট আর পানি এগিয়ে দেই!

রাহুল : [ এগিয়ে নিয়ে ] আ..স্নেহা! আমি এখন মিট করতে পারি?..স্নেহার সাথে?..

নার্স : Sure!

রাহুল তাড়াতাড়ি পানি খেয়ে উঠে কেবিনরুমে এগিয়ে যায়!

স্নেহা নিষ্পাপ হয়ে শুয়ে আছে…হাতে, পায়ে,মাথায় ব্যান্ডেজ করা স্নেহার!
স্নেহাকে দেখতেই রাহুলের চোখ ভিজে এলো! নিজেকে কন্ট্রোলে এনে স্নেহার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো! স্নেহা কথা বলছেনা রাহুলকে দেখে! স্নেহার চোখ বন্ধ! এমন অবস্থাতে স্নেহাকে দেখে সইতে না পেরে রাহুল তাড়াতাড়ি রুম থেকে বেড়িয়ে যায়!

চোখ মুছে সিটে্ গিয়ে বসে,

নিজের উপর ও রাগ উঠছে রাহুলের!কেনো যে অতঃ স্পীডে গাড়ী চালাতে গেলো! নাহয় আজ স্নেহার এমন হতোনা!

ভাবতে ভাবতে সময় পেড়িয়ে গেলো! ঘড়িতে টাইমিং দেখলে দেখে,দু-ঘন্টা পেড়িয়ে গেছে, রাহুল তাড়াতাড়ি উঠে রুমে ঢুকলে দেখে, স্নেহা তার হাত থেকে স্লাইন খুলে ফেলেছে..এবং সি্ট থেকে উঠে দাড়ানোর চেষ্টা করছে…কিন্তু পারছে না..

রাহুল : [ তাড়াহুড়ো করে স্নেহার কাছে গিয়ে ] স্নেহা! কি করছো?..এসব কেনো খুললে [ বলেই রাহুল আবার স্নেহার হাতের কেনলে স্লাইন লাগিয়ে দিলো! ]

[ স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : স্নেহা! শুয়ে থাকো! তোমার এখন রেষ্ট দরকার! [ বলেই রাহুল স্নেহার কাধে ধরে শুয়ে দিচ্ছিলো ]

[ স্নেহা তার কাধ থেকে রাহুলের হাত সরিয়ে দিলো…রাহুল অবাক হয়ে চেয়ে আছে! ]

স্নেহা : থেংক্স রাহুল! ফর এব্রিথিং!

রাহুল : [ স্নেহার পাশে বসে ] স্নেহা! I am really sorry! [ কাদো কন্ঠে ] তোমাকে পাচ্ছিলামনা বলেই রাগে গাড়ী কন্ট্রোলে রাখতে পারিনি!

স্নেহা : আমার এখন বাসায় যাওয়া দরকার! অনেক লেইট হয়ে গেছে!

রাহুল : বাসায়! এখন এই অবস্থায় কেমনি?…

স্নেহা কিছু না বলেই আবার হাতের কেনল থেকে স্লাইন ছুটিয়ে নিয়ে নেয়!

রাহুল : [ রেগে ] আরে পাগল নাকি?..করছোটা কি?… [ বলেই আবার লাগিয়ে দিতে চাইলে, স্নেহা হাত সরিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায়… রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে দেখে স্নেহার চোখ থেকে পানি পড়ছে! ]

রাহুল : স্নেহা! প্লিজ এইদিকে তাকাও! [ স্নেহার হাতের উপর হাত রেখে ] স্নেহা Talk to me!

[ স্নেহা হাত সরিয়ে নিয়ে…নিচে দাড়ানোর চেষ্টা করছে ]

রাহুল : কি করছো স্নেহা তুমি দাঁড়াতে পারবেনা! পায়ে ব্যান্ডেজ করা!

স্নেহা : [ কেঁদে উঠে ] রাহুল! আমি বাসায় যাবো!

রাহুল : কিন্তু স্নেহা..

স্নেহা : প্লিজ! রাহুল!

রাহুল : [ অন্যপাশ ফিরে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] ওকে! তুমি বসো! আমি ডিসচার্জ নিয়ে আসছি!

[ রাহুল উঠে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে, স্নেহা চেয়ে থাকে… কিছুক্ষণ পর একটি নার্স ভেতরে এগিয়ে আসে ]

নার্স : [ অবাক হয়ে ] আরে কি সমস্যা?..আপনি এগুলো খুললেন কেনো?…[ বলেই লাগিয়ে দিচ্ছে ]

স্নেহা : [ হাত সরিয়ে ] আমি এখন বাসায় চলে যাবো তাই!

নার্স : কিন্তু আপনি এখনো পুরোপুরি ঠিক হননি! এখন তো ডিসচার্জ দিবেনা! [ বলেই কেনলে স্লাইন লাগিয়ে দিলো এবং স্নেহাকে জোর করে শুয়ে দেই ] এখন আপনার বেডরেষ্ট দরকার আপনি শুয়ে থাকুন!

[ ঔষধ রেডি করতে করতে ]

আর আপনার হ্যাজবেন্ড কোথায় গেছে?…

স্নেহা : উনি আমার..আ আমার হ্যাজবেন্ড না!

নার্স : তাহলে?..

[ স্নেহা অন্যপাশ ফিরে চুপ হয়ে থাকে ]

[ দরজা খুলে রাহুল এগিয়ে আসলো, স্নেহা উঠে বসে একটানে সব আবার খুলে ফেলে ]

নার্স : আরে কি করছেন আপনি?..[ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আপনি একটু ওনার পাশে পাশে থাকুন উনি সব খুলে ফেলছে! [ বলেই স্নেহাকে আবার লাগিয়ে দিচ্ছে,]

[ স্নেহা রেগে জোড়ে হাত সরিয়ে নিতে হঠাৎ হাতে লাগানো কেনল ছুটে সাথে সাথে রক্ত ছিটকে উঠে হাত থেকে ]

রাহুল : [ দৌড়ে এগিয়ে এসে চেঁচিয়ে ] Careful স্নেহা!

স্নেহা : [ কেঁদে ] আমি বাসায় যাবো বললাম না রাহুল, বারবার এসব লাগিয়ে দিচ্ছে কেনো আমাকে!

রাহুল : [ নার্স কে ইশারা করলে নার্স সরে যায়, স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে ] ওকে রিলেক্স স্নেহা! আমি ডক্টরকে বলে এসেছি! এখন বাসায় যাবা…

[ নার্স রাহুলকে কটোন এগিয়ে দিলে রাহুল তা নিয়ে স্নেহার হাতের ব্লাড ওয়াস করে দেই.. [ নার্স বেড়িয়ে যায় ] স্নেহা চেয়ে থাকে রাহুলের দিক… হঠাৎ রাহুলের কাছ থেকে হাত ছুটিয়ে নিয়ে নেয় স্নেহা! ]

স্নেহা : আমার লেইট হচ্ছে!

[ বলেই আবার দাড়ানোর চেষ্টা করছে রাহুল কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে উঠে দাঁড়িয়ে স্নেহাকে কোলে তুলে নেয়! ]

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] আরেহ! কোলে কেনো নিলেন..

রাহুল : চেষ্টা তো অনেক করেছো…হাটতে পারছো না তাই তুলে নিলাম!

স্নেহা : ওদের বলেন ট্রলি দিতে,

রাহুল স্নেহার কথায় কোনো জবাব না দিয়ে স্নেহাকে নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে পড়ে, [ আশেপাশের সবাই তাকিয়ে আছে ]

স্নেহা : আরে আপনি! পাগল নাকি..সবাই দেখছে তো!

রাহুল : ডক্টর বলেছে তোমাকে বেশী কথা না বলতে…মাথায় এফেক্ট হবে!

স্নেহা : [ রাগান্বিত ভাবে ]আগে নামান আমাকে!

রাহুল : [ থেমে গিয়ে ] নামালে দাঁড়াতে পারবাতো?.. [ স্নেহা চুপ হয়ে তাকিয়ে থাকে ] কি হলো?..

স্নেহা : ঐদিকেই রেখে আসতেন! তাহলে আমি…

রাহুল : আহা রেখে আসিনি অর্ধেক চলেও এসেছি এখন বলেও কি ফাইদা আছে?.. [ বলেই হাটতে লাগলো ]

স্নেহা : ফাইদা আছে মানে?..সব সময় আপনার যা ইচ্ছে তাই করবেন নাকি?.. আপনি আমাকে উঠালেন কেনো? আমি কি বলেছি আপনাকে আমাকে কোলে নিতে?..

[ রাহুল কোনো জবাব না দিয়ে হাটতেই লাগলো, স্নেহা আশেপাশে আড়চোখে তাকিয়ে দেখে…অনেকেই চেয়ে আছে..তা দেখে স্নেহার অনেক লজ্জা লাগছিলো…তাই সে রাহুলের কাধের দিক মাথা নামিয়ে ঘুটিয়েশুটিয়ে এক হয়ে থাকে ]

গাড়ীর সামনে এসে,

রাহুল : চাবি নাও

স্নেহা : [ অবাক হয়ে তাকিয়ে ] কিহ?..

রাহুল : গাড়ীর দরজা খুলতে হবে পকেট থেকে চাবি বের করো!

স্নেহা রাহুলের জ্যাকেটের পকেটে হাত দিয়ে চাবি বের করে নিয়ে রাহুলের দিক তাকালো!

রাহুল : ওপেন করো!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আমি?..

রাহুল : আমার দু-হাত বন্ধী! আপনাকে কোলে নিয়ে রেখেছি! যদি দয়া করে ডোরটা ওপেন করতেন আরকি!

স্নেহা : [ রাগান্বিত ভাবে ] আমি কি বলেছি কোলে নিতে?..আপনি নিলেন কেনো?..আপনিই খুলুন [ বলেই অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রাহুল : দেখো স্নেহা জেদ করো না! ডোর ওপেন করো!

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে অন্যপাশ ফিরেই আছে ]

রাহুল : স্নেহার দিক কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ] ওকেহ! এক্সকিউজমি [ বলেই রাস্তায় হেটে যাওয়া একজন লোককে ডাক দেই ]

লোকটি : হ্যা! বলুন..

রাহুল : I need a help please! ডোরটা একটু ওপেন করে দিন!

লোকটি : Sure!

[ স্নেহা রাহুলের দিক আড়চোখে চেয়ে লোকটির হাতে চাবি দিয়ে দেই… রাহুল লোকটিকে থেংক্স দিয়ে স্নেহাকে গাড়ীর ভেতরে বসিয়ে দিয়ে… সেও গিয়ে বসলো… গাড়ী চলতে লাগলো দুজনই চুপচাপ!…স্নেহা জানালার দিক এক ধ্যানে চেয়ে আছে রাহুল কিছুক্ষণ পর পর স্নেহার দিক তাকাচ্ছে…হঠাৎ দেখে স্নেহার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে ]

রাহুল : স্নেহা! তোমার…[স্নেহা চোখ মুছে নিলো ] তোমার কি বেশী কষ্ট হচ্ছে?..
[স্নেহা কোনো জবাব দিলো না ]

রাহুল : [ মনে মনে ভাবতে লাগলো ] স্নেহা আমার সাথে এমন বিহেভ করছে কেনো! আমি তো ইচ্ছে করে করিনি! অবশ্য করারই কথা! আমি ওকে প্রোটেক্ট করতে পারিনি উলটা!

[ ভাবতে ভাবতেই বাসায় এসে পৌছালো!]

রাহুল : [ নেমে স্নেহারদিক এসে দরজা খুলে দাঁড়িয়ে ] নেমে এসো!

[ স্নেহা অবাক হয়ে রাগান্বিত ভাবে তাকিয়ে থাকে, ]

রাহুল : [ কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে..] আমি কি কোলে নিবো?..

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] Why did you come to my life ?.. why did I even meet you?

[ রাহুল চোখ রাংগিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে আছে…

স্নেহা নাক ফুলিয়ে রাগান্বিতভাবে অন্যপাশ ফিরে যায়…. রাহুল স্নেহার হাত কাধে তুলে কোলে নিতে চাইলে স্নেহা…ছুটাছুটি করতে থাকে..রাহুল তাও জোড় করে কোলে নিয়ে নিলো স্নেহাকে ]

স্নেহা : [ চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে! রাহুলের দিক তাকিয়ে ] You’re the biggest mistake of my life rahul! I wish I had never meet you

রাহুল : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] But, I will still love you sneha! [ বলেই হাটা শুরু করে…স্নেহা চেয়ে থাকে রাহুলের দিক ]

বাসায় বেল দিতেই মার্জান এসে দরজা খুললো,

মার্জান : [ অবাক হয়ে চেঁচিয়ে ] স্নেহা! রাহুল! আরে কি হয়েছে তোমাদের?..

রাহুল কিছু না বলে স্নেহাকে নিয়ে ভেতরে এগিয়ে গিয়ে খাটে শুয়ে দিলো

মার্জান, জারিফা, শায়লা এগিয়ে এসে সবাই একই প্রশ্ন করতে লাগলো রাহুল থেকে!

স্নেহা : কিছু হয়নি! জাষ্ট ছোট-খাটো এক্সিডেন্ট হয়েছে!

রাহুল : [ মার্জানের দিক তাকিয়ে ] ওর বেডরেষ্ট দরকার… [ পকেট থেকে কিছু ঔষধ এর প্যাকেট এগিয়ে দিয়ে ] এগুলো ওকে খাইয়ে দিয়ো!

জারিফা : আমরা তো ভেবেছিলাম তোমরা এনজয় করছো! কিন্তু কি হয়ে গেলো দেখো তো!

রাহুল : আমি আসি! [ বলেই স্নেহার দিক একবার তাকায় কিন্তু স্নেহা রাহুলের দিক তাকালো না… রাহুল চলে যায় ]

বাড়ী গিয়ে রুমে ঢুকে খাটে বসে পড়ে রাহুল! বারবার স্নেহার কথাগুলো কানে বাজছে! মাথায় হাত দিয়ে নিস্থব্দ হয়ে বসে রইলো….

উঠে আবার এদিকওদিক ছুটাছুটি করে হাটছে…

আবার, ভাবতে লাগলো কি করছে এখন ও কি অবস্থায় আছে!… ফ্রিজ খুলে..বেয়ার নিয়ে খেতে লাগলো

বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে স্নেহার সাথে কাটানো মোমেন্ট গুলো ভাবতে লাগলো.. চোখ লাল হয়ে পানিতে ভেসে যাচ্ছে রাহুলের,

স্নেহা রাহুলের সাথে এমন বিহেভ কেনো করছে?…

পরদিন! ভোর হলো,

সবাই নাশতা করে স্নেহাকে ঔষধ খাইয়ে স্নেহার পাশে বসে আছে!

স্নেহা : আরে মার্জান বললাম তো আমি একা থাকতে পারবো! তোরা ভার্সেটি যা!

মার্জান : স্নেহা! মাই ডিয়ার! তুই যদি আরেকবার আমাদের ভার্সেটি যাওয়ার কথা বলিস না! তোর মাথায় বাড়ি দিয়ে আমি আরো ফাটিয়ে দিবো!

হঠাৎ, দরজায় বেল বেজে উঠলো!

জারিফা : [ গিয়ে দরজা খুলে ] আরে রাহুল! [চোখ মেরে ] ওহো! টেনশন হচ্ছিলো অনেক স্নেহার জন্য তাই না! আরে আসুন আসুন! [ জারিফা রাহুলকে নিয়ে ভেতরে আসে ] স্নেহা দেখ কে এসেছে!

[ স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে থাকে ]

মার্জান : গুড মর্নিং রাহুল!

রাহুল : গুড মর্নিং!

শায়লা : হাই রাহুল! গুড মর্নিং!

রাহুল : গুড মর্নিং [ স্নেহার দিক তাকালে দেখে স্নেহা মাথা নিচু করে অন্যপাশ ফিরে আছে ]

সবাই তাদের দুজনের দিক অবাক হয়ে তাকালো,

মার্জান, জারিফা আর শায়লাকে ইশারা করলো যাতে অন্য রুমে চলে আসে…তিনজনই বেড়িয়ে গেলো!

রাহুল : [ স্নেহার পাশে গিয়ে বসে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আমি রাতভর ঘুমোইনি স্নেহা!

[ স্নেহা রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখে রাহুলের চোখ নাক লাল হয়ে আছে,

রাহুল ও স্নেহার দিক ফিরে তাকালে, স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রাহুল : What happen sneha?..তুমি আমার সাথে কথা বলছোনা কেনো?..

[স্নেহা চুপ হয়ে আছে,]

রাহুল : এইদিকে তাকাও স্নেহা! [ বলেই হাত দিয়ে স্নেহার মুখ তারদিক ফিরিয়ে নিলো…স্নেহার চোখে পানি টলমল করছে ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে] কাদছো কেনো স্নেহা ?..

স্নেহা : চলে যান রাহুল!

রাহুল : এতো easy তোমার জন্য স্নেহা?..

স্নেহা : [ চোখ চেপে পানি ফেলে ] ব্যাস! রাহুল বললাম না চলে যান! প্লিজ!

রাহুল : [ রেগে অন্যপাশ ফিরে ] নেহার জন্য করছো এসব তাই না!

স্নেহা : আমি কারো জন্য কিছু করছিনা…[ চেচিয়ে] প্লিজ রাহুল! Go!

রাহুল : গতকাল রাতে তোমাকে কিছু বলেছিলাম মনে আছে?..

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আমার কিছু মনে নেই!

রাহুল : [ রাগান্বিতভাবে উঠে দাঁড়িয়ে টেবিল থেকে পানির গ্লাসটা জোড়ে মাটিতে ছুড়ে মারলো, স্নেহা ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি ফিরে তাকালো! ] ইয়াহ! I see তোমার কিছু মনে নেই! তাহলে কাঁদছো কেনো স্নেহা?

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি অন্যদিক ফিরে যায় ]

রাহুল : চেহেরা লুকিয়ে কান্না লুকানো যায় না স্নেহা!

চলবে….

♥Love At 1st Sight♥ Season 3 Part – 14

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 14

writer-Jubaida Sobti

দুজন দুদিক তাকিয়ে ব্লাশিং হতে লাগলো.. কথা বলছে না ঠিকই কিন্তু মনটা ছটফট করছে দুজনের,

হঠাৎ, গাড়ী থামিয়ে,

রাহুল : তুমি একটু বসো আমি আসছি! [ বলেই রাহুল বেড়িয়ে পড়ে, এবং কিছুক্ষণ পর একটা বড় গিফট বক্স হাতে নিয়ে এগিয়ে আসে ]

স্নেহাও কিছু জিজ্ঞেস করলো না…গাড়ী চলতে লাগলো,

হঠাৎ গাড়ী, একটি বাড়ীর সামনে এসে দাঁড়ালো,

স্নেহা অবাক হয়ে চেয়ে আছে রাহুলের দিক! রাহুল বুঝতে পারছে স্নেহার মনে হাজারো প্রশ্ন জাগছে!

রাহুল : [ গিফট বক্সটি হাতে নিয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এসে দরজা খুলে দেই স্নেহা নেমে আসে ] কি হলো?..চেহেরা এমন বানিয়ে রেখেছো কেনো?…

স্নেহা : নাহ কিছুনা!

রাহুল স্নেহার হাত ধরে বাড়ীর ভেতরে নিয়ে যায়…

বেল দিতেই! একজন মহিলা এসে দরজা খুলে,

মহিলা : আসসালামু-আলাইকুম রাহুল ভাইয়া!

রাহুল চোখ দিয়ে ইশারা করে কারো কথা জিজ্ঞেস করলো মহিলাটির কাছ থেকে! মহিলাটি ভেতরের রুমের দিক ইশারা করে চলে যায়!

রাহুল স্নেহার হাত ধরে নিয়ে ভেতরে এগিয়ে যায়! এবং দেখে একজন মহিলা পেছন ফিরে খাটে বসে আছে!

রাহুল গিফট বক্সটি টেবিলের উপর রেখে…পেছন থেকে মহিলাটিকে গিয়ে ঝড়িয়ে ধরে,

রাহুল : হ্যাপি বার্থডে মা!

[ স্নেহা অবাক হয়ে চেয়ে থাকার পর এখন বুঝতে পারলো তার মানে ইনি রাহুলের মা! ]

রাহুল উইশ করার পরেও তার মা..কোনো জবাব দিলো না…মুখ গোমড়া করে বসেই আছে!

রাহুল : সরি! মা…রাতে ড্রাংক ছিলাম তাই আসতে পারিনি! আচ্ছা এই নাও কান ধরলাম!

[ রাহুলের মা তাও কোনো জবাব দিলো না ]

রাহুল : ওকেই! আমি কিন্তু তোমার জন্য দারুণ একটা সারপ্রাইজ এনেছি! সেটা দেখলে তোমার সব রাগ চলে যাবে!

[ রাহুলের মা মুখ ফিরিয়ে নিলে, রাহুল তাকে জোড় করে দাড় করিয়ে স্নেহার দিক ফিরিয়ে দেই ]

রাহুল : আচ্ছা ঠিকাছে সারপ্রাইজ দেখবানা তো ঠিকাছে [ বলেই তার মা কে…আবার বসিয়ে দেই…কিন্তু তিনি আবার উঠে দাঁড়িয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে আসে, ]

স্নেহা পা ধরে সালাম করতে গেলে তিনি স্নেহার হাত ধরে ফেলে, স্নেহার সামনে চলে আসা চুল গুলো কানের কোণে গুজে দিয়ে একপলকে চেয়ে আছে স্নেহার দিক!

মা : তুমি স্নেহা তাই না?…[ বলতেই চোখে জল টলমল করছে ]

স্নেহা মাথা নাড়িয়ে হুম বললো! সাথে অবাক ও হলো যে ইনি তার নাম কি করে জানে!

মা : মাশাল্লাহ!

রাহুল : [ এগিয়ে এসে ] স্নেহা! ইনি আমার মা!

মা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] বেষ্ট সারপ্রাইজ! রাহুল [ বলতেই চোখ দিয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে ]

রাহুল : [ চোখ মুছে দিয়ে ] ওহো! মা আবার কাদছো কেনো?..

মা : আরে দাঁড়িয়ে আছো কেনো স্নেহা ?..বসো! বসো! [ বলেই স্নেহাকে টেনে খাটে বসালো ]

[ রাহুল গিফট বক্সটি এগিয়ে এনে খুলে তা থেকে একটি কেক বের করে সামনে রাখলো.. এবং তার মায়ের হাতে একটি প্লাষ্টিক নাইফ এগিয়ে দিলো…রাহুলের মা স্নেহার হাতটি ও এগিয়ে নিয়ে এক সাথে কেক কাটলো! ]

কেক কেটে সবার আগে স্নেহার মুখে তুলে দিলো… স্নেহা অবাক হয়ে চেয়ে আছে,

মা : আরে কি হলো নাও!

স্নেহা : [ অল্প একটু খেয়ে কেক হাতে নিয়ে আবার রাহুলের মাকে খাইয়ে দিলো! ] হ্যাপি বার্থ ডে! [ বলেতেই রাহুলের মা স্নেহাকে ঝড়িয়ে ধরলো ]

রাহুল : আরে মা! আমাকে খাওয়াবে না!?

মা : [ একটু হেসে হাতের কেক গুলো রাহুলের মুখে লাগিয়ে দেই ]

রাহুল : আরে! মা কি করছোটা কি!

[ রাহুল আর তার মায়ের বাচ্চামি দেখে স্নেহা হাসতে থাকে ]

মা : আচ্ছা তোদের খিদে লেগেছে বোধ হয়?..তাই না..?

রাহুল : হ্যা! তা তো অনেক লেগেছে…

মা : স্নেহা! তুমি রাহুলের সাথে বসো! আমি খাবার দিচ্ছি ওকে!

[ স্নেহা মাথা নাড়ালো,মা চলে গেলো ]

রাহুল : [ এগিয়ে এসে স্নেহার পাশে বসে ] জানো স্নেহা! মায়ের বার্থডে শুধু আমি আর মা মিলে সেলেব্রেট করি! তোমাকে আজ এইখানে কেনো এনেছি জানো?..

স্নেহা : কেনো?..

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে দাঁড়িয়ে যায় এবং চেঁচিয়ে বলতে থাকে ] আমি আমার লাইফের স্পেশাল দিন গুলো স্পেশাল মানুষদের সাথে সেলেব্রেট করি! [ বলেই স্নেহার দিক তাকিয়ে থাকে,]

স্নেহা : [ লজ্জা পেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে টেবিলের দিক এগিয়ে যায় এবং একটি ফোটো ফ্রেম হাতে নিয়ে দেখতে থাকে ]

রাহুল : [ স্নেহার পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে ] ছোট বেলার ফোটো!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] এটা আপনি তাই না?…

রাহুল : ইয়েস্!

স্নেহা : হুম! কিউট!

রাহুল : [ স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে ] আর এখন! [ with tedi smile ]

স্নেহা : [ রাহুলের মুখে লেগে থাকা ক্রিম গুলো আংগুল দিয়ে রাহুলের নাকের মধ্যে লাগিয়ে দেই ] এখন Beard Man!

[ বলেই হেসে সরে যাচ্ছিলো, রাহুল স্নেহার হাত ধরে টেনে আবার ঐ জায়গায় দাড় করায়! ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] আরে!

[ রাহুল তার মুখটা স্নেহার মুখের সাথে ঘষে দিয়ে তেডি স্মাইল দিতে থাকে ]

স্নেহা : আআহ! [ বলেই হাত দিয়ে মুখ ঘষতে থাকে ]

রাহুল : Beard Man তাই না?..

স্নেহা : [ হেসে ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে যায় ]

[ হঠাৎ রুমে কেউ আসার শব্দ পেলে স্নেহা তাড়াতাড়ি সরে দাঁড়িয়ে যায়… এবং দেখে ঐ মহিলাটি খাবার রেডি হয়েছে তা বলেই চলে যাচ্ছে, ]

রাহুল : এসো স্নেহা!

স্নেহা : ইনি কে?…

রাহুল : মায়ের সাথেই থাকে,বাসায় কাজ করে দেই!

স্নেহা : ওহ!

রাহুল : So! যাওয়া যাক!

স্নেহা : হ্যা!

[ স্নেহা রাহুলের পিছন পিছন ড্রইং রুমে গেলো…. এবং গিয়ে দেখে টেবিলে নানারকম খাবার সাজানো ]

রাহুলের মা : এসো এসো! এইদিকে বসো স্নেহা! [ স্নেহা গিয়ে বসলো, রাহুল স্নেহার অপোসি্টেই বসলো ]

স্নেহা রাহুলের দিক চেয়ে আছে রাহুল যতোটুকু না খাচ্ছে তার চেয়ে বেশিই অপচয় করছে! স্নেহা একটু হেসে খাওয়া শুরু করলো!

রাহুলের মা : কেমন হয়েছে স্নেহা খাবার?..

স্নেহা : জি! অনেক ভালো! আপনি রেঁধেছেন?..

রাহুলের মা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম!

রাহুল : মা! জানো স্নেহা ও অনেক ভালো রান্না জানে!

মা : তাই নাকি?..

স্নেহা : জি! না..মানে অল্প একটু পারি! তবে এমন ভালো না!

রাহুল : ঐ মিথ্যে কেনো বলছো! ঐ দিন জারিফা আমাকে বলেছে!

স্নেহা : ওহ! ও..তো এমনিতেই একটু বাড়িয়ে বলে!

রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে থাকে, স্নেহা লজ্জা পেয়ে পানির গ্লাস এগিয়ে নিয়ে খেতে লাগলো,

রাহুলের মা : আরে স্নেহা! এতো অল্প কি খেয়েছো! [ বলেই আরো দিতে লাগলো ]

স্নেহা : না না…আমার পেট ভরে গেছে!

রাহুল : আরে কি ভরে গেছে?.. [ বলেই রাহুল সব প্লেট থেকে নিয়ে নিয়ে স্নেহার প্লেটে ঢালতে লাগলো,]

স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আর মনে মনে ভাবতে লাগলো আরে বাপরে কোনো ঐদিনের মতো সব খাইয়ে ছাড়বে নাকি!

রাহুল : কি হলো স্নেহা খাও! [ with tedi smile ]

স্নেহা খুব অসহায় চোখে রাহুলের দিক তাকালো!

হঠাৎ, রাহুল আর তার মা হেসে উঠে! স্নেহা অবাক হয়ে যায়!

মা : [ রাহুলের কান ধরে ] শয়তান! ওকে এতো ডিষ্টার্ব করছিস কেনো?..

রাহুল : আহ! মা ওকে সরি সরি!

[ স্নেহা হেসে উঠে ]

মা : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তোমরা রেষ্ট করো! অনেক টায়ার্ড হয়ে আছো নিশ্চয়!

স্নেহা হাত ধুয়ে নিয়ে উঠে দাঁড়ায়! রাহুল ও দাঁড়িয়ে গিয়ে স্নেহার হাত ধরে নিয়ে একটি রুমে গেলো!

স্নেহা : এটা আপনার রুম! রাইট?..

রাহুল : [ হেসে ] কেমনি বুঝলে?..

স্নেহা : [ গিটারের দিক আংগুল দেখিয়ে ] এটা দেখে!

রাহুল : ইন্টেলিজেন্ট! [ বলেই স্নেহার হাত ধরে নিয়ে সোফায় বসে পড়লো.. এবং রিমোট প্রেস্ করে টিভি অন করে ]

স্নেহা রাহুল থেকে একটু সরে বসে… তা দেখে রাহুল একটু হাসে,

রাহুল : আচ্ছা কি দেখবা স্নেহা?..

স্নেহা : আপনি যা দেখেন!

রাহুল : শিয়র তো ?..

স্নেহা : হ্যা! শিয়র!

রাহুল : ওকেই! তাহলে হরোর মুভি দেখি কি বলো ভয় পাও নাকি?..

স্নেহা : হ..হর হরোর মুভি! কই নাতো ভয় কেনো পাবো!

রাহুল : তাহলে ডান! [ বলেই একটা হরোর মুভি চালু করে দিলো ]

স্নেহা : [ মনে মনে ] কি আজিব মানুষ! ভয় বলতে কিছু নেই নাকি! হরোর মুভি দেখছে! কন্ট্রোল স্নেহা কন্ট্রোল! সবই তো অভিনয়! তাই না…So কন্ট্রোল! এতো বড় হয়ে ভয় পায় বললে মানসম্মান সব ধুলোই মিশে যাবে!

কিছুক্ষণ পর রাহুল খেয়াল করলো, স্নেহা ধীরে ধীরে রাহুলের এতোটা কাছে চলে এসেছে স্নেহা নিজেও জানে না…

রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়েই আছে…এবং স্নেহার সাথে কাটানো মোমেন্ট গুলো মনে করছে আর ব্লাশিং হচ্ছে!

হঠাৎ, স্নেহা রাহুলের হাত শক্ত করে চেপে ধরে!

রাহুল : ইউ ওকে স্নেহা!

স্নেহা : [ তাড়াতাড়ি হাত সরিয়ে ] ইয়েস্ ইয়েস্ আই এম ওকে! আমি ভয় পায় নাকি! আমি ভয় পায় না…

রাহুল : গ্রেট! [ বলেই টিভির ভলিউম আরো বাড়াতে লাগলো ]

স্নেহা ভয়ে চোখ বন্ধ করে কানে হাত চেপে আছে! রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার ভীতু চেহেরার দিক চেয়ে আছে! এবং ধীরে ধীরে স্নেহার মাথা তার বুকের কাছে টেনে নেই! স্নেহা ও বাধা দিলো না…রাহুলের বুকে মাথা রেখে চুপটি করে আছে!

সন্ধ্যে ৬ টা,

স্নেহা চোখ খুলে তাড়াতাড়ি মাথা তুলে বসে, এবং দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে,

স্নেহা : আ..আপনি?..মানে আমি?..এইখানে এইভাবে…ঘুমিয়েছি?..

রাহুল : ইয়েস্!

স্নেহা : সরি! আসলে আমি!

রাহুল : [ স্নেহার মুখে আংগুল দিয়ে কিছু বলতে দেই না ] শিসস! আমি কিছু বলেছি?..

স্নেহা : [ একটু সরে বসে ] জি! আপ..আপনার মা…

রাহুল : মা এসেছিলো! তুমি ঘুম ছিলে তাই! ডিষ্টার্ব করেনি!

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] কিহহ! আপনার মা এসে… উফফ! মানে আমাকে এইভাবে দেখেছে?..আপনি আমাকে ডেকে দিলে পারতেন! ডাকেননি কেনো?…

রাহুল : ঘুমের মধ্যে পুরো স্লিপিং বিউটি লাগছিলে! কিভাবে ডাকি বলোতো?…

স্নেহা : আপনি চেয়েছিলেন?..

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে ] ঐদিকে ওয়াসরুম আছে! একটু ফ্রেশ হয়ে আসো ভালো লাগবে! [ বলেই রাহুল রুম থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছে ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে ] আপনি কোথায় যাচ্ছেন?..

রাহুল : কোথাও না এইদিকেই আছি!

স্নেহা : না মানে.. আপনি এইদিকে দাঁড়ান! আমি ২মিনিটে মুখ ধুয়ে আসছি!

রাহুল : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] কেউ একজন বলেছিলো! সে হরোর মুভি ভয় পায় নাকি? [ বলেই হেসে উঠে ]

[ স্নেহা মাথা নিচু করে ফেলে ]

রাহুল : [ স্নেহাকে টেনে তুলে ] ভয় পাওয়ার কিছু নেই! আমি এইখানেই আছি! তুমি যাও!

স্নেহা মনে মনে ব্লাশিং হয়ে মুখ ধুয়ে এলো!

রাহুল : চলেন মেম!

স্নেহা : জি! আমি এখন বাসায় যাবো! অনেক লেইট হয়ে গেছে!

রাহুল : হুম! [ বলেই স্নেহার হাত ধরে নিয়ে ড্রইং রুমে এগিয়ে আসে ]

মা : আরে স্নেহা! ঘুম কেমন হলো?..

স্নেহা লজ্জা পাচ্ছিলো তাও মাথা নাড়িয়ে ভালো বললো!

মা : তোমরা বসো আমি নাশতা দিচ্ছি!

স্নেহা : না না…দুপুরে এতোগুলো খেয়েছি! আমার পেট এখনো ভর্তি! অন্য একদিন করবো!

রাহুলের মা : আরে কি বলছো কি?..

স্নেহা : আসলে আমার ফ্রেন্ডসরা টেনশন করবে! আমি প্রমিস্ করছি অন্য একদিন খাবো! প্লিজ!

মা : আচ্ছা ঠিকাছে!

রাহুল : [ মাকে ঝড়িয়ে ] ওকে মা আসি!

মা : ওকে! বাই! স্নেহা আবার এসো কিন্তু!

স্নেহা : জি! [ বলেই রাহুলের পিছে পিছে বেড়িয়ে গেলো ]

[ রাহুল গাড়ীর দরজা খুলে দিলে স্নেহা গিয়ে বসে… ]

শীতের সন্ধ্যা, অন্ধকার নেমে এসেছে চারদিক কুয়াশায় ভরা…জানালা দিয়ে হালকা ঠান্ডা মৃদু বাতাস বইছে!
হঠাৎ রাহুল জানালার গ্লাস গুলো তুলে দেই! স্নেহা অবাক হয়ে তাকায়,

রাহুল : বাতাস গুলো ভালো না স্নেহা! কুল ফেভার হতে পারে!

স্নেহা একটু হেসে আবার ফিরে গেলো,

হঠাৎ, গাড়ী অটোমেটিক্যালি থেমে যায়, রাহুল বার বার স্টার্ট দিতে থাকে,

স্নেহা : কি হয়েছে?..

রাহুল : কিছুনা! জাষ্ট স্টার্ট হচ্ছে না! [ বলেই আবার স্টার্ট দিলো এবং সাথে সাথে স্টার্ট হয়ে যায় ]

কিছুক্ষণ পর,

স্নেহা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আরে রাহুল দেখেন! ঐ যে বরফওয়ালা আইসক্রীম

রাহুল : ইয়াক!

স্নেহা : আরে ইয়াক! মানে?..

রাহুল : ময়লা পানি দিয়ে বানায় এগুলো! খেলে পেট ব্যথা হবে! আর এখন উইন্টার সিজন আইসক্রিম খেলে সি্ক হয়ে যাবা!

স্নেহা : আরে নানা হবে না! [ রাহুল তাকালে স্নেহা মুখ গোমড়া করে ] ওকে! [বলেই জানালার দিক ফিরে গেলো ]

[ হঠাৎ দেখে রাহুল গাড়ী পেছনে ব্যাক দিয়ে আইসক্রিম ভ্যানের দিক এগিয়ে নিয়ে সাইড করে রাখলো]

[ রাহুল গাড়ী থেকে নেমে স্নেহাকে ও হাত ধরে নামালো স্নেহা রাহুল থেকে হাত ছুটিয়ে নেই! এবং রাহুল তাকালে,]

স্নেহা : আমি হাটতে জানি! বাচ্চা না!

রাহুল : ওহ ইয়াহ! আই সি্ [ বলেই স্নেহার হাতটা আবার শক্ত করে ধরে নেই ]

স্নেহা : আরে! বললাম তো!

রাহুল : Shut-up স্নেহা! আসল কথাটাই বলোনা যে আমি তোমার হাত ধরে আছি তা দেখে আশেপাশের সবাই কি বলবে তাই তো!

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে অন্যদিক ফিরে গেলো, Rahul give a tedi smile ]

রাহুল : [ স্নেহাকে টেনে আইসক্রিম ভ্যানের সামনে এনে ] কোন ফ্লেভারটা খাবা?…

[ স্নেহা হা করে চেয়েই আছে ]

রাহুল : [ হাত দিয়ে স্নেহার মুখ বন্ধ করে দিয়ে ] কিছু জিজ্ঞেস করছি স্নেহা! [ with tedi smile ]

স্নেহা : [ একটু লজ্জা পেয়ে ] উমম!.. ম্যাঙ্গো!

রাহুল : ওকেই! মামা দুইটা আইসক্রিম দাও ম্যাঙ্গো ফ্লেভারের!

স্নেহা : আ..আপনার ও কি ম্যাঙ্গো ফ্লেভার পছন্দ?..

রাহুল : উমম! ফিক্সড কোনো ফ্লেভার পছন্দ নেই! তবে তুমি ম্যাঙ্গো বলেছো তাই আমি ও বললাম!

[ স্নেহা একটু ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে গেলো ]

আইসক্রিম দিলে স্নেহা এক্সাইটেড হয়ে তাড়াতাড়ি নিয়ে খেতে লাগলো,

রাহুল হাতে নিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে রইলো, স্নেহা কিভাবে খাচ্ছে! বরফের রসগুলো দু-ঠোটে শক্ত করে চুষে নিচ্ছে! ঠোট গুলো লালছে হয়ে যাচ্ছে,

হঠাৎ,

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আরে আপনারটা তো গলে যাচ্ছে!

রাহুল : ওহ! [ বলেই খেতে নিলো অমনি আইসক্রিম ভেংগে মাটিতে পড়ে গেলো ]

স্নেহা : [ হাসতে হাসতে ] আরে! ঐভাবে না! এইভাবে [ বলেই আবার চুষে দেখালো স্নেহা! তারপর তার নিজের আইসক্রিমটি রাহুলের মুখের কাছে এনে দেই, ]

রাহুল : এপাশ না ওপাশ থেকে খাওয়াও! [ with tedi smile ]

স্নেহা : মানে?…

রাহুল স্নেহার হাত ধরে আরো কাছে এনে যেপাশ থেকে স্নেহা চুষে নিলো ওপাশ থেকে সেও চুষে নেই! স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে আর রাহুল তেডি স্মাইল দিতে লাগলো! স্নেহা কিছুনা বলে আইসক্রিমের গ্লাসটা ভ্যানের উপর রেখে গাড়ীর দিক এগিয়ে যাচ্ছে,

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] আরে স্নেহা ফিনিশ করো!

স্নেহা : [ ফিরে তাকিয়ে ] আহ! গলা ব্যাথা করছে!

রাহুল ও আর কিছু না বলে আইসক্রিমের টাকা দিয়ে গাড়ীর দিক এগিয়ে আসলো, দুজন চুপচাপ গাড়ীতে বসে পড়লো! কেউ কারো সাথে কথা বলছে না! গাড়ী চলছে!

হঠাৎ অর্ধেকে গিয়ে গাড়ী আবার অটোমেটিক্যালি থেমে যায়! রাহুল বার বার স্টার্ট দিতে লাগলো!

স্নেহা : কি হলো?..

রাহুল : মনে হয়! ঠান্ডায় ইঞ্জিন বসে যাচ্ছে! একটু ওয়েট করো! আমি দেখছি! [ রাহুল নেমে চেক করে আবার ভেতরে এসে বসলো এবং স্টার্ট দিতেই সাথে সাথে স্টার্ট হয়ে যায়! ]

ওভার ব্রিজ ক্রস করে কিছুদূর যাওয়ার পর,

রাহুল : [ গাড়ী থামিয়ে ] Oh shit! Damn it!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আবার কি হলো?

রাহুল : টায়ার পাম্পচার!

স্নেহা : এখন কি হবে?…

রাহুল জানালার গ্লাস খুলে আশেপাশে দেখছে…চারদিক নিরিবিলি কোনো দোকানপাট ও নেই!

রাহুল : এমন জায়গায় এসে পাম্পচার হলো আশেপাশে কোনো ম্যাকানিকের দোকান ও পাওয়া যাবে না!

স্নেহা : তাহলে?…

রাহুল : তাহলে আর কি?..আমাকেই ম্যাকানিক হতে হবে!

স্নেহা : ওহ!

রাহুল : এক্সট্রা টায়ার আছে আমি চেঞ্জ করে নিচ্ছি তুমি গাড়ীতেই বসো! [ দরজা খুলে বেড়িয়ে ] শুনো?

স্নেহা : হুম?..

রাহুল : গাড়ী থেকে বের হবা না বুঝলে! আমি ঐদিকটাই আছি!

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] ওকে!

[ রাহুল দরজা বন্ধ করে দিয়ে গাড়ীর ব্যাকবক্স থেকে আরেকটি টায়ার নিয়ে..পাম্পচার হয়ে যাওয়া টায়ারটি বদলাতে লাগলো ]

স্নেহা ভেতরে বসে আছে একা,হঠাৎ সে রাহুল কি করছে দেখার তার সি্ট থেকে উঠে পার হয়ে ড্রাইভিং সি্টে গিয়ে বসলো, এবং জানালার গ্লাসে উকি দিয়ে দেখতে লাগলো, রাহুল বসে অনেক ধ্যান দিয়ে টায়ার চেঞ্জ করছে!

স্নেহা রাহুলকে দেখে ব্লাশিং হতে লাগলো, এবং কিছুক্ষণ আগে আইসক্রিম ভ্যানের সামনে হয়ে যাওয়া মোমেন্টটা মনে পরতেই নিজে নিজে হেসে উঠে, একটু আওয়াজ হয়ে উঠলে স্নেহা তাড়াতাড়ি তার সি্টে গিয়ে বসে পড়ে, অনেক্ষণ পেড়িয়ে গেলো, রাহুল এখনো টায়ার চেঞ্জ করছে, গাড়ীর গ্লাস নামিয়ে মাথা বের করে তাকিয়ে দেখলো! চারদিক কুয়াশায় ভরে আছে…আশেপাশে কেউ নেই! মাঝে মাঝে একটা-দুটা গাড়ী শা -শা করে চলে যাচ্ছে! শীতের ঠান্ডা বাতাস বইছে! স্নেহা গাড়ীর দরজা খুলে নেমে পড়ে! রাহুলের দিক এগিয়ে যেতে হঠাৎ পেছন থেকে কারোর ধাক্ষা লাগলো,

স্নেহা ও সরি বললো লোকটি ও সরি বললো, রাহুল স্নেহার শব্দ শুনে উঠে দাঁড়ালো!

স্নেহা : [ মনে মনে ] এতোক্ষণ কাউকে দেখা যায় নি ইনি আবার কোথায় থেকে এলো, [ ভাবতে ভাবতে রাহুলের দিক এগিয়ে গেলো ]

রাহুল : কি করেছে লোকটা?..

স্নেহা : না নাহ! কিছু করেনি!

রাহুল : শিয়র?..

স্নেহা : হ্যা!

রাহুল : আচ্ছা তুমি বেড়িয়ে এলে কেনো? তোমাকে না নামতে নিষেধ করেছি!

[ স্নেহা হাসতে লাগলো ]

রাহুল : হাসছো কেনো?..

স্নেহা : [ হাসি চেপে ] আপনার মুখে আর কপালে কালি লেগে আছে [ বলেই আবার মুখ লুকিয়ে হাসতে লাগলো, ]

রাহুল : ওহ তাই অনেক হাসি পাচ্ছে না?.. [ বলেই স্নেহার ওড়নার আচল দিয়ে কপাল আর মুখের কালি গুলো মুছে নিলো ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরে!

রাহুল : এবার হাসো! [ বলেই আবার টায়ার চেঞ্জ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে ]

স্নেহা : আর কতোক্ষণ লাগবে?…

রাহুল : [ টায়ার লাগাতে লাগাতে ] বেশিক্ষণ না! আচ্ছা শুনো তুমি গিয়ে ভেতরে বসে পড়ো বাইরে অনেক ঠান্ডা!

স্নেহা : হুম [ বলেই চলে গেলো ]

[ রাহুল টায়ার ঠিক করতে লাগলো হঠাৎ যে টায়ারটি পাম্পচার হলো সেটি ভালো করে লক্ষ্য করে দেখে টায়ারটি কিছু দিয়ে ফুটো করে দেওয়া হয়েছে! মনেমনে, ভাবতে লাগলো সে তো গাড়ী নিয়ে এর মধ্যে দূরে কোথাও লং ড্রাইভে যায়নি তবে এটা ফুটো হলো কিভাবে! হয়তো উঁচুনিচু কোনো জায়গায় হয়েছে তা নিয়ে আর ধ্যান দিলো না…এবং মনে মনে এখন ঘটে যাওয়া স্নেহার ওড়না দিয়ে মুখ মুছে ফেলা মোমেন্টি মনে করে ব্লাশিং হতে লাগলো,

৫মিনিট পড়ে রাহুল উঠে দাঁড়ালো, এবং চেঁচিয়ে বলতে লাগলো অল ডান স্নেহা! বলেই সি্টের দিক তাকিয়ে দেখে সি্ট খালি! রাহুল আশেপাশে একবার তাকিয়ে আবার গাড়ীর দরজা খুলে চেক করলো স্নেহা! বলে…ব্যাগ আর মোবাইলটা পড়ে আছে কিন্তু স্নেহা গাড়ীতে নেই!

রাহুল শকড হয়ে গেলো! আজিব ব্যাপার স্নেহা কই গেলো?..

মুহূর্তেই তার মনে পড়ে গেলো তখন স্নেহা বেড়িয়ে আসায় তাকে আবার ভেতরে গিয়ে বসতে বলেছিলো! কিন্তু স্নেহা যে ভেতরে বসলো গাড়ীর দরজা বন্ধ বা খোলার কোনো শব্দই তো কানে আসলো না!

রাহুল দৌড়ে আশেপাশে স্নেহা বলে বলে চেঁচিয়ে উঠলো! চারদিক নিস্থব্দ কোনো মানুষ ও নেই যে জিজ্ঞেস করবে,হঠাৎ হঠাৎ একটা দু-টা গাড়ী চলে যাচ্ছে!

রাহুল আবার গাড়ীর দিক এগিয়ে আসে..মাথা চুলকাতে লাগলো, কি করবে কোথায় খুজবে স্নেহাকে! ভাবতে লাগলো, না বলে কই চলে গেলো স্নেহা! এসব মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে রাহুলের!

হঠাৎ,

রাহুল : [ মনে মনে ] স্নেহা গাড়ী থেকে নামার সময় কাউকে সরি বলছিলো! কোনো লোকটি… Oh shit! damn it!

রাহুল আবার দৌড়ে গিয়ে আশেপাশে চেক করতে লাগলো… কেউ আছে কিনা! রাগে চোখ গুলো লাল হয়ে যাচ্ছে রাহুলের! আর না পেরে এসে গাড়ীতে একটা লাত্তি মাড়লো!

রাহুল : [ আবার মনে মনে ] নেহা আজ আমার থেকে গাড়ী নিয়ে গিয়েছিলো! কোনো এসব নেহার প্লান তো নয়?..এই মেয়ের উপর কোনো বিশাস নেই! [ বলেই পকেট থেকে ফোন বের করে নেহাকে কল দিলো কিন্তু নেহা ফোন রিসিভই করছে না!… রাহুল এইবার হান্ড্রেট পার্সেন্ট শিয়র হয়ে গেলো সবকিছুতেই নেহারই হাত..তাড়াতাড়ি গাড়ী স্টার্ট দিয়ে রাহুল সোজা নেহার বাসায় গিয়ে উঠে ]

বেল দিতেই একজন মহিলা দরজা খুলে,

রাহুল : নেহা কোথায়?..

মহিলা : নেহা ম্যাডাম রুফ টপে আছে!

[ রাহুল কিছু না বলে দৌড়ে ভেতরে গিয়ে রুফ টপে উঠে ]

নেহা : [রাহুলকে দেখে দাঁড়িয়ে ] আরে রাহুল!

রাহুল : [ নেহার হাত চেপে ধরে ] কোনো ড্রামা করবি না চুপ চাপ! বল স্নেহা কোথায়!

নেহা : স্নে..স্নেহা! কোথায়…

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে চেঁচিয়ে ] I say no drama!?

নেহা : বাট রাহুল! আমি সত্যি জানিনা..

রাহুল রেগে ছাদে পড়ে থাকা টেবিল আর চেয়ার দুটো দুদিক দিয়ে লাত্তি মারে! এবং নেহার দিক আবার ফুফিয়ে আসে, নেহা ভয় পেয়ে যায়

রাহুল : Listen! লাস্ট বার বলছি স্নেহা কোথায় বল?…নাহলে আমি ভুলে যাবো তুই একজন মেয়ে এবং হাত তুলতে বাধ্য হবো!

নেহা : [ রাহুলের হাত ঝাড়ি দিয়ে সরিয়ে ] ঐ দুদিনের আসা গাইয়া মেয়ের জন্য তুই আমাকে এতোবড় কথা বলতে পারলি?..

রাহুল : দেখ নেহা! আমি আর ওয়ার্নিং দিবো না…Where is sneha?…

নেহা : I don’t know!

রাহুল : [ রাগান্বিতভাবে নেহার দিক এগিয়ে গিয়ে ] Again…

নেহা : হ্যা! হ্যা! আমিই ওকে কিডন্যাপ করিয়েছি! আমি করিয়েছি সব…[ রাহুলের কলার ধরে কাছে টেনে কাদো কন্ঠ ] বিকজ আই লাভ ইউ রাহুল!

রাহুল : [ নেহাকে ধাক্ষা দিয়ে সরিয়ে ] ইউ! ইডিয়ট! [ বলেই রাগে নিজের চুল নিজে টানতে লাগলো… আবার নেহার দিক ফুফিয়ে এগিয়ে আসে ] Listen! স্নেহা এখন কোথায়?

[নেহা চুপ করে আছে ]

রাহুল : [ নেহার হাত জোড়ে চেপে ধরে চেঁচিয়ে ] Damn it! I say where is sneha?

নেহা : ও চেঁচাচ্ছিলো বলে ওয়ার্নিং দিয়ে ঐদিকের একটা নিরিবিলি জায়গায় ফেলে দিয়ে চলে এসেছি!

রাহুল : [ শকড হয়ে ] What?..are you mad ওকে একা?.. [ রাহুলের ইচ্ছে হচ্ছিলো নেহার গলা চেপে ধরতে কিন্তু তারহাতে নেহার গলা চাপার সময় নেই ]

তৎক্ষণাৎ রাহুল দৌড়ে বেড়িয়ে পড়ে,রাস্তার চারদিক খুজতে লাগলো রাহুল স্নেহাকে! ভাবতে লাগলো… একা কি অবস্থায় আছে এই অন্ধকার রাতে! নেহার উপর রাগ উঠতে লাগলো আর এইদিকে গাড়ীর স্পীড বাড়তে লাগলো,

খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ, গাড়ীর সামনে কেউ একজনকে দেখতেই রাহুল ব্রেক নিতে চাইলো… কিন্তু গাড়ীর স্পিড এতো বেশী ছিলো যে রাহুল কন্ট্রোল করতে পারলো না…পাশ কেটে নিতেই গাড়ীর সাথে বাড়ি খেয়ে পড়ে যায়, রাহুলের গাড়ী… হাইওয়ে থেকে সরে গাছের সাথে গিয়ে টপকালো! মাথায় প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হলো রাহুলের… তাও গাড়ী থেকে নেমে দাঁড়ালো! হঠাৎ চোখ থেকে বেয়ে পানি ঝড়লো!

দৌড়ে গিয়ে রক্তাক্ত স্নেহাকে ঝরিয়ে ধরলো!

রাহুল : [ কাদো কণ্ঠে ] স্নেহা! আই এম সরি! স্নেহা! আমি কন্ট্রোল করতে পারিনি! হে..এই স্নেহা প্লিজ ডোন্ট ক্লোজ ইউর আইস্ প্লিজ! [ বলতেই রাহুলের চোখ থেকে ঝড়ঝড় করে পানি ছুটছে ]

স্নেহা তার রক্তাক্ত হাতে রাহুলের কপাল ছুয়ে দেখলো! রাহুলের কপালের দিক থেকে রক্ত ঝড়ছে!

স্নেহার মাথা হাতে তুলে নিতেই রাহুল খেয়াল করলো পেছনের চুল গুলো রক্তে ভিজে গেছে! রাহুল স্নেহার মুখ কাছে টেনে কপালে একটা চুমু খেলো!

রাহুল : স্নেহা! আই লাভ ইউ!

স্নেহার দুচোখ থেকে দু-দিক গড়িয়ে পানি পড়লো! এবং সাথে সাথে স্নেহা তার চোখ বন্ধ করে ফেললো!

রাহুল : [ কান্নাসূরে ] হেই স্নেহা! চোখ বন্ধ করছো কেনো?.. কিছু হবে না তোমার ডোন্ট ওয়ারি! [ বলেই স্নেহাকে কোলে তুলে নিলো এবং গাড়ীতে নিয়ে বসালো… রাহুলের মাথা প্রচণ্ডভাবে ভার হয়ে আছে… ড্রাইভ করার মতো শক্তিটাও হারিয়ে যাচ্ছে… কিন্তু স্নেহাকে হসপিটাল নিয়ে যেতে হবে সেটা মনে করে নিজেকে শক্ত করে নিলো এবং ড্রাইভ করতে লাগলো ]

চলবে…

♥Love At 1St Sight♥ Season 3 Part – 13

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 13

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা : হাসছেন কেনো?…

রাহুল : তোমার কথা শুনে! [ with tedi smile ]

[ স্নেহা আর কিছু না বলে রাহুল থেকে ছুটে এসে ব্যাগ কাধে তুলে নিলো…রাহুল ও পিছে পিছে এগিয়ে এসে মার্জানের পাশের চেয়ারে বসলো ]

মার্জান : আরে ডান্স শেষ?…

স্নেহা : বলেছিলামনা আমার মাথা পেইন করছে! তাই… [ বলেই ব্যাগ থেকে পানির বোতোল বের করে পানি খাচ্ছে ]

রাহুল চেয়ে আছে স্নেহার ঠোটের দিক…স্নেহার ঠোট দুটো এখনো বোতোলের মুখে স্পর্শ করে আছে! [ মনে মনে ভাবছে রাহুল ] যদি বোতোল এর জায়গায় সে হতো, ভাবতেই ব্লাশিং হয়ে যায়!

শায়লা : বাই দ্যা ওয়ে! কিনা লাগছিলো দুজনকে একসাথে! পুরোই শাহরুখ আর কাজলের জুটি!

[ শায়লার কথা শুনে স্নেহার নাকে মুখে পানি উঠে যায় এবং কাশতে থাকে…]

রাহুল : [ তাড়াতাড়ি দাঁড়িয়ে ] Careful damn it!

মার্জান : [ স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে ] ঠিকাছিস?…

স্নেহা : [ কাশতে কাশতে ] হুম!

রাহুল : আচ্ছা! শায়লা কি যেনো বলছিলে?…[with tedi smile ]

[ স্নেহা অবাক চোখে রাহুলের দিক তাকায় আর শায়লা, মার্জান, আসিফ, শ্রেয়া সবাই হেসে উঠে ]

মার্জান : মনে হয় স্নেহার! জুটিটা পছন্দ হয়নি! কারণ স্নেহা সালমান খানের ফ্যান! তাই না স্নেহা?…

স্নেহা চোখ রাংগিয়ে মার্জানের দিক তাকায়!

রাহুল : ওহ! তাই নাকি?..সালমান খান…?..কি যেনো ফ্লিমটার নাম ওহ হ্যা! “তেরে নাম” আই জাষ্ট লাভ ইট!

শায়লা : আচ্ছা?..তাহলে ঐ ফ্লিমের গানটাই শুনিয়ে দেন না…

আসিফ : [ রাহুলের কাছে গিটারটা ছুড়ে মেরে ] শুরু হয়ে যা বস্!

রাহুল : [ ক্যাচ নিয়ে! স্নেহার দিক তাকিয়ে ] ওকেই!

[ শায়লা স্নেহাকে টেনে পাশের সি্টে বসিয়ে দিলো.. স্নেহা একবার রাহুলের দিক তাকিয়ে আবার চশমা ঠিক করে অন্যদিক ফিরে গেলো ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক চেয়ে ?গিটার বাজাতে লাগলো ]

♪♪ মারকে্ বিনা ওয়াদা আপনা তোরে্ঙ্গে ♪♪
♪♪ এক দুজে্কা সা্থ কাভি্ না্ ছোড়েঙ্গে ♪♪
♪♪ আপনা তো সা্ধি ও জানমো্কা নাতা্ হে্ ♪♪
♪♪ জানেসে্ জানে্কো কন্ জুধা্কা্র পাতা্ হে্ ♪♪

তে্রে সি্বা তে্~~রে সি্বা~~

♪♪ তে্রে সি্বা ইস্ দা্ড়িয়াকা্ ~~

নেহি্ কোয়ি্ কিনা্রা সা্নাম ~~ও ওও নে্হি্ কো্য়ি্ কিনা্রা সা্না্ম~~

তে্~রে না্ম, হা্মনে্ কি্য়াহে ~~জিবা্ন আপনা সা্রা সা্নাম ~~ হো ও ও জিবা্ন আপনা সা্রা সা্নাম ~~

[ সবাই তালি দিয়ে উঠে…রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে আছে হঠাৎ স্নেহা উঠে দৌড়ে হল থেকে বেড়িয়ে যায়,]

শ্রেয়া : আই থিংক সং লিরিক্স গুলো কাউকে ডেডিকেট করা হয়েছে…এম আই রাইট রাহুল?.. [ বলেই চোখ টিপ মাড়লো ]

[ রাহুল গিটারটা শ্রেয়ার হাতে ধরিয়ে দিয়ে উঠে সে ও বেড়িয়ে গেলো, গিয়ে দেখে স্নেহা বারান্দার রিলিং এর দিকই দাঁড়িয়ে আছে…. রাহুল ধীরে ধীরে স্নেহার পেছনে গিয়ে দাঁড়ালো… কাধের দিক মুখ এনে দেখে স্নেহা চোখ বন্ধ করে বুক চেপে ধরে দাঁড়িয়ে আছে…চুল গুলো শীতের ঠান্ডা বাতাসে উড়ছে…গাল গুলো গোলাপী গোলাপী, তার মানে স্নেহা ব্লাশিং হচ্ছে, [ Rahul give a tedi smile? ] মনে মনে, ভাবতে লাগলো আশেপাশে বাগান দেখা না গিয়ে যদি সমুদ্রের পানি আর পানি থাকতো, পুরোই টাইটানিক ফ্লিমের পোজ হয়ে যেতো!

রাহুল : কত মিটার বেগে চলছে?…

স্নেহা শকড হয়ে তাড়াতাড়ি পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তার পিছন দাঁড়িয়ে আছে!

রাহুল : আহা! শকড হওয়ার কি আছে?…বললাম হার্টবিট কতোমিটার বেগে চলছে!

স্নেহা : আ..নাহ! মানে.. .. আসলে!

রাহুল : তোতলাতে হবে না! [ বলেই স্নেহাকে আবার আগের মতো করে ফিরিয়ে দাড়করিয়ে দেই রাহুল, এবং হাত দুটো দুদিক তুলে ধরে টাইটানিক পোজে দাঁড়িয়ে থাকে ]

স্নেহা : আরে আরে! কি করছেন কি?..[ বলেই স্নেহা সরে যেতে চাচ্ছে… রাহুল তাও স্নেহাকে জোর করে ধরে আছে ] দেখেন আশেপাশের কেউ দেখে ফেলবে! ছাড়ুন!

রাহুল : Shut-up স্নেহা দেখছো না টাইটানিক পোজ দিচ্ছি! ওয়াহ! কি বাতাস…দেখেছো?…বাতাস ও আজ রোমান্টিক হয়ে গেছে!

স্নেহা : দেখেন পাগলামি করিয়েননা ছাড়েন প্লিজ!

রাহুল : তুমি তো আমার বুকের মধ্যে পড়ে আছো আরেকটু লম্বা হলে ভালো হতো [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] মানে কিসিং সি্নটা করতে সুবিধা হতো আরকি!

স্নেহা : [ রাহুল এর দিক তাকালে রাহুল চোখ টিপ মাড়লো ] ছিঃ রাহুল! [ বলেই রাহুলকে ধাক্ষা দিয়ে সরে যায় ]

রাহুল : [ হাসতে হাসতে ] রিলেক্স! আই জাষ্ট কিডিং স্নেহা!

স্নেহা আর কিছু না বলে দৌড়ে চলে যাচ্ছিলো, রাহুল স্নেহার হাত ধরে টেনে গার্ডেনের দিক নিয়ে চলে গেলো!
__________________________

এইদিকে,

শায়লা : ইয়ার মার্জান! মিউজিক তো কখন বন্ধ হয়ে গেছে! আর এই দুজনের ডান্স এখনো শেষ হয়নি!

মার্জান : আমার তো মনে হচ্ছে না এরা ডান্স করছে! দুজন দুজনের চোখে যেভাবে তাকিয়ে আছে…নিশ্চয় চোখাচোখি কথা বলছে!

শায়লা : তুই কিছু বুঝতে পারছিস?…

মার্জান : বুঝার আর কি বাকি আছে?..চোখের সামনেই তো সব ঘটছে! [ বলেই দাঁড়িয়ে যায় ] এনিওয়ে চল আমরা ক্লাসে যায়!

শায়লা : ওকে! চল…

মার্জান : [ দরজার দিক গিয়ে দাঁড়িয়ে একটু চেচিয়ে ] জারিফা! মাই ডিয়ার! আপনার ডান্স যখন শেষ হবে! তাহলে দয়া করে আমাদের ক্লাসে এসে খুজে নিবেন! [ বলেই হেসে বেড়িয়ে যায় ]

জারিফা : [ ফিসফিসিয়ে ] দেখেন সবাই বেড়িয়ে যাচ্ছে! So বাই!

রিদোয়ান : [ আরো শক্ত করে ধরে ] So what! এখন শুধু তুমি আর আমি! [ বলেই চোখ টিপ মাড়লো ]

শ্রেয়া আর আসিফ ও হেসে বেড়িয়ে যায়,

__________________________

গার্ডেনে, রাহুল স্নেহাকে একটি গাছের নিচে এনে থামায়!

স্নেহা : [ হাপাতে হাপাতে ] পাগল নাকি আপনি! আমার ফ্রেন্ডসরা আমাকে ক্লাসে খুঁজবে!

রাহুল : তোমাকে টেনে আনতে আনতে হাপিয়ে উঠলাম! এতো ছুটাছুটি করো কেনো তুমি বলো তো?..

স্নেহা : সবাই দেখছিলো তাই!

রাহুল : সবাই সবাই উফফ! সবাই দেখুকনা তাতে তোমার কি?…

স্নেহা : আরে আমার কি মানে! সবাই কি ভাববে বলুনতো?…এইভাবে কেউ টেনে আনে?..কথা নেই বার্তা নেই হুট করেই ড্রাগন এর মতো এন্ট্রি করে টেনে নিয়ে চলে আসেন!

রাহুল : [ এগিয়ে আসলে স্নেহা পিছিয়ে যায়, পেছনে গাছ থাকায় বেশি পেছাতে পারে না, স্নেহা দাঁড়িয়ে পড়ে, রাহুল স্নেহার কাধের পাশে গাছের উপর একহাত দিয়ে দাঁড়ায় ] তারপর?..

স্নেহা : [ মাথা নিচু করে ] তারপর মানুষ নানারকম কথা ছড়াবে,

রাহুল : তারপর?.. [ with tedi smile ]

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] আমার ফ্রেন্ডসরা আমাকে খুঁজছে এতোক্ষণে!

রাহুল : তারপর?..

স্নেহা : আপনার ফ্রেন্ডসদের ও তো বলে আসেননি তারাও হয়তো আপনাকে খুজছে!

রাহুল : তারপর?..

স্নেহা : দূরে সরে দাড়ান! আশেপাশে কেউ দেখলে! অলরেডি অনেকে দেখছে রাহুল!

রাহুল : তারপর?..

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে হেসে ] তারপর ঘোড়ার ডিম!

[ রাহুল ও হেসে দেই স্নেহার কথা শুনে ]

রাহুল : [ স্নেহা থেকে একটু সরে দাঁড়িয়ে শার্ট থেকে সানগ্লাসটা ছুটিয়ে পড়ে নিলো, পকেটে হাত দিয়ে ] Listen! আশেপাশে কে কি ভাবছে! কে কি দেখছে আই ডোন্ট কেয়ার! আই এম রাহুল ইটস্ ইনাফ! [ বলেই চোখ টিপ মাড়লো with tedi smile? ]

স্নেহা কিছু না বলে চশমা ঠিক করে অন্যদিক ফিরে গেলো কিছুক্ষণ পর কোণা চোখে তাকিয়ে দেখে এখনো ঐ ষ্টাইলে তেডি স্মাইল দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে! তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে ফেললো!স্নেহা!

হঠাৎ পাশ থেকে রাহুল! বলে কেউ আওয়াজ দেই! দুজনেই ফিরে তাকাই!

নেহা : [ এগিয়ে এসে ] সরি! রাহুল ফর ডিষ্টার্বিং ইউ!

রাহুল : What?..

স্নেহা চলে যাচ্ছিলো, রাহুল স্নেহার হাত ধরে আটকিয়ে রাখে,

নেহা : এক্সুলি! আমার গাড়ীর ইঞ্জিনটানা ঠান্ডায় বসে গেছে!

রাহুল : তো?..

নেহা : আমার খুব আর্জেন্ট একটা কাজে যেতে হচ্ছে! সো্….তোর কার্ কিইস্ টা যদি একটু দিস! আমি আধ ঘন্টার মধ্যেই রিটার্ন করে দিবো!

[ রাহুল একটা জোড়ে শাস ফেলে পকেট থেকে গাড়ীর চাবিটা বের করে নেহাকে দিয়ে দিলো ]

নেহা : থেংক্স! [ বলেই রাহুল স্নেহার ধরে রাখা হাতের দিক একটু তাকিয়ে চলে গেলো ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তুমি কোথায় যাচ্ছিলে বলো তো?. এতোবার কারো পেছনে দৌড়ায়নি! যা তোমার পেছনে দৌড়াতে হচ্ছে!

স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে ব্যাগ থেকে পানির বোতোলটা বের করে এগিয়ে দিলো!

রাহুল : থেংকস্ [ with tedi smile ]
[ পানি মুখে দিতে যাবে তখনি রাহুলের মাথায় আবারো দুষ্টু বুদ্ধি জাগলো ] আচ্ছা স্নেহা তুমিও তো হাপিয়ে পড়েছিলে, নাও আগে তুমি খাও…

স্নেহা : না না! আমি ঠিকাছি!

রাহুল : আরে নাও তো আগে তুমি খাও [ বলেই স্নেহার হাতে বোতোলটা ধরিয়ে দিলো, স্নেহা অবাক হয়ে চেয়ে আছে ] আরে খাওনা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : মুখ লাগিয়ে খাবে কিন্তু! আরে হা করে কি দেখছো শুরু করো!

স্নেহা বাধ্য মেয়ের মতো অল্প একটু পানি খেয়ে নিলো! এবং রাহুলের দিক তাকাতেই সাথে সাথে রাহুল স্নেহার হাত থেকে বোতোল কেড়ে নিয়ে গডগড করে পানি খেতে লাগলো!

রাহুল : [ খাওয়া শেষে ] ওয়াহ! স্নেহা পানি এত্তো মজা আগে জানতাম না তো!

স্নেহা ব্লাশিং হয়ে একটু হেসে কিছু না বলে চলে যাচ্ছিলো!

রাহুল : [ পেছন থেকে চেঁচিয়ে ] স্নেহা!

[ স্নেহা থেমে গেলো ] আরেকটা সারপ্রাইজ বাকি আছে বলেছিলাম মনে আছে তো?…[ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না ] যাওয়ার সময় পার্কিং এর দিক ওয়েট করবো! মনে থাকে যেনো!

[ স্নেহা কিছু না বলেই চলে গেলো রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে দাঁড়িয়ে স্নেহার চলে যাওয়া চেয়ে থাকে,]

__________________________

এইদিকে, স্নেহাকে ক্লাসে না পাওয়ায় মার্জান আর শায়লা খুঁজতে লাগলো!

শায়লা : রাহুল ও তো পেছন পেছন বেড়িয়ে ছিলো নিশ্চয় ওর সাথেই কোথাও আছে! তুই এত্তো টেনশন নিচ্ছিস কেনো!

মার্জান : আমরা শিয়র তো আর না যে, স্নেহা রাহুলের সাথেই আছে! একবার বিপদ গেছে মেয়েটার উপর! তাই আগে শিয়র হয়েনি যে ও রাহুলের সাথে আছে.. তারপর টেনশন কমবে! [ বলেই হাটতে হাটতে কারো সাথে ধাক্ষা লাগে রাগান্বিতভাবে পাশ ফিরে তাকিয়ে, ] আরে কি ব্যাপার বলেন তো?..আপনি কি চোখ গুলো হাতে নিয়ে হাটেন নাকি?..

আসিফ : [ একটু হেসে ] ওকে! মানলাম আমি চোখ গুলো হাতে নিয়ে হাটি! কিন্ত মেম আপনার চোখ গুলো কোথায় ছিলো বলেন তো?…

মার্জান : [ চোখ রাংগিয়ে ] কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ সরি! বলে দাফা হয়ে যান! এইখান থেকে! অলরেডি আগের একটা সরি জমা হয়ে আছে! আপনার!

আসিফ : [ হেসে ] ওহো! So তুমি আমার সরি কাউন্ট করছো?…ওয়াও! গ্রেট!

মার্জান : আপনি কথাকে পেঁচাচ্ছেন কেনো বলেন তো?…

আসিফ : লুক! ধাক্ষা কিন্তু আমি ইচ্ছে করে দেইনি! এন্ড আমি একাও খায়নি! সো্ বরং তুমিই আগে সরি! বলো তারপর আমি বলছি!

মার্জান : হোয়াট হোয়াট হোয়াট ?..কি বললেন আমি?..আমি আপনাকে সরি! বলবো?.. আপনাকে তো আমি [ বলেই রেগে এগিয়ে যাচ্ছিলো ]

শায়লা : [ মার্জানকে আটকিয়ে ] আরে মার্জান কি করছিস পাগল নাকি!

মার্জান : তুই ছাড় আমাকে!

শায়লা : আরে ঐ দেখ স্নেহা আসছে!

মার্জান নাক ফুলিয়ে আসিফ এর দিক তাকায় আসিফ হেসে চেয়ে আছে…মার্জান একটা ঘুষি দেখিয়ে হনহনিয়ে চলে গেলো স্নেহার দিক! শায়লাও পেছন পেছন দৌড়ে গেলো!

স্নেহা : আরে তোরা ক্লাস থেকে আসছিস?..

শায়লা : হ্যা! ওখানেই গিয়েছিলাম তোকে না পেয়ে খুঁজতে বের হলাম!

মার্জান : চল ক্লাসে! [ বলেই হাটতে লাগলো ]

স্নেহা মার্জানের দিক একবার তাকিয়ে শায়লা থেকে চোখের ইশারায় জিজ্ঞেস করতে লাগলো কি হলো?..

শায়লা : [ হেসে ] ইয়ার! স্নেহা! কি বলবো… মার্জান না এখন কি ফাইট করতে ছিলো! ঐ রাহুলের ফ্রেন্ড আসিফের সাথে [ বলেই হাসতে লাগলো ]

মার্জান : তুই হাসছিস?..ওকে তো আমি সরি বলিয়েই ছাড়বো!

হঠাৎ পেছন থেকে জারিফা এসে ঝাপিয়ে তিনোজনকে ঝরিয়ে ধরে,

মার্জান : মহারাণীর ডান্স এতোক্ষণে শেষ হয়েছে! ওহ সরি সরি ডান্স বললে ভুল হবে আই মিন রোমেন্স!

জারিফা : [ মার্জানের পাশে এসে হাত ঝড়িয়ে ] ইয়ার! আমি তো কখন থেকেই চলে আসার ট্রাই করছিলাম কিন্তু…

শায়লা : হুম হুম! কিন্তু তারপর বলনা…

[ জারিফা লজ্জা পেয়ে শায়লার মাথায় একটা বাড়ি দিলো, বাকিরা হেসে উঠে ]

After 3hours,

ক্লাস করে সবাই একসাথেই কথা বলতে বলতে বের হচ্ছিলো! হঠাৎ নেহা এসে তাদের সামনে দাঁড়ায়!

মার্জান : [ হেসে ] আরে! আপনি হঠাৎ হল থেকে অর্ধেকে উঠে চলে গিয়েছিলেন কেনো বলেন তো?…জানেন রাহুল না আজ স্নেহার জন্য ” তেরে নাম ” মুভির গানটা করেছিলো…

নেহা : তাই?..

মার্জান : হ্যা তাই!

জারিফা : আরে! কি যেনো পোড়া পোড়া স্মেল আসছে!

মার্জান : [ একটু হেসে ] হ্যা আমার ও তাই লাগছে! মিস্ নেহা! আপনার ও কি তাই লাগছে?…[ বলেই চোখ টিপ মারে ] আসলে আমার মনে হয় কেউ একজন জলছে!

নেহা : আমার আফসোস হচ্ছে তোমাদের জন্য!

জারিফা : আহারে তাই নাকি?.. কি কারণে একটু শুনি!

নেহা : জাষ্ট ওয়েট এন্ড সি্! অল দ্যা বেষ্ট! স্নেহা! [ বলেই চলে যায় ]

মার্জান : [ হেসে ] জলতে জলতে এর মাথার তারটাও জলে গেছে বোধহয় [ শায়লা আর জারিফা হেসে উঠে ]

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে] চল সবাই! প্লিজ…

[ সবাই আর কিছু না বলে বাসে্ গিয়ে উঠে পড়লো… বাস্ চলছে! হঠাৎ অর্ধেকে গিয়ে বাস্ এমন জোড়ে ব্রেক ধরে প্যাসেঞ্জার সবই ড্রাইভারকে বকা দিয়ে উঠে ]

ড্রাইভার : আরে আমার কি দোষ কন?.. সামনে এসে এইভাবে গাড়ী থামাইলে আমি কি করমু?..

মার্জান : [ মাথা উঠিয়ে তাকিয়ে দেখে কেউ একজন বাসে্র সামনে গাড়ী থামিয়েছে! ] আরে ড্রাইভার আংকেল আপনি বাস্ থামালেন কেনো?..চালিয়ে দেন ওর গাড়ীর উপর! তারপর ওর হিরোগিরি বের হবে! [ বলতেই দেখে গাড়ী থেকে রাহুল নামছে… মার্জান জিহ্বায় কামড় দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] ওহ! সরি!

স্নেহা : সরি?..কিন্তু কেনো?..

মার্জান : কিছুক্ষণ পড়েই বুঝবি কেনো.. [ বলেই অন্যদিক ফিরে যায় ]

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] আরে রাহুল! ওটা আপনি ছিলেন?…

[ স্নেহা শকড হয়ে তাকিয়ে দেখে রাহুল এগিয়ে আসছে! ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তোমাকে বলেছিলাম পার্কিং এর দিক ওয়েট করবো! মনে থাকে যেনো!

মার্জান : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ফিসফিসিয়ে ] ওমা তাই নাকি!

[ স্নেহা মার্জানের দিক একবার তাকিয়ে আবার জানালার দিক ফিরে যায় ]

রাহুল : স্নেহা Come with me!

মার্জান : [ আবার ও ফিসফিসিয়ে ] হুম হুম! যাও…[ স্নেহা চোখ রাংগিয়ে তাকালে ] ওকে ওকে! কুল!

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে ] স্নেহা I say come with me!

স্নেহা : দেখেন আমি এখন বাসায় যাচ্ছি! সবসময় এসব ভালো লাগেনা! আপনি গিয়ে আপনার গাড়ীটা সরান পেছনে জ্যাম লেগে যাচ্ছে!

ড্রাইভার : [ চেঁচিয়ে ] আরে ভাই কি আশ্চর্য এইভাবে গাড়ী দাড় করাই রাখমু নাকি!

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে ড্রাইভারের দিক চেয়ে ] চুপচাপ দাড় করিয়ে রাখ নাহলে বাস্ তোর মাথার উপরই ভাঙবো!

[বলেই স্নেহার দিক চেয়ে স্নেহার হাত ধরে তুলে টেনে আনে ]

স্নেহা : [ হাত ছুটিয়ে ] আরে কি আজিব!

জারিফা : [ উঠে এসে রাহুলের কানের দিক ফিসফিসিয়ে ] জিজু! এক ওয়েতে না গেলে অন্য ওয়ে ইউজ করুননা…[ বলেই রাহুলকে চোখ টিপ মাড়লো, স্নেহা তাকালে আবার গিয়ে হুরহুরিয়ে সি্টে বসে পড়লো ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] আসবানা তাই তো?..

স্নেহা : নাহ আসবো না! বেটার হবে আপনি চলে যান! [ বলেই সিটে বসতে চলে যাচ্ছিলো অমনিই রাহুল স্নেহার হাত টেনে ধরে কাছে এগিয়ে কোলে তুলে নিলো! ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] আরে! কি করছেন?…পাগল নাকি নিচে নামান প্লিজ!

জারিফা : [ সি্টি বাজিয়ে ] আরে ওয়াহ! [ এক্সাইটেড হয়ে বাকিদের দিক চেয়ে ] আরে হা করে দেখছেন কি সবাই তালি বাজান না…[ বাসে্র সবাই জারিফার কথা শুনে তালি দিতে লাগলো ]

[ এইদিকে স্নেহা নামার জন্য হাজারো চেষ্টা করছে…কিন্তু রাহুল তাকে আরো শক্ত করে চেপে ধরে নিয়ে বাস্ থেকে নেমে যায়… ]

স্নেহা : প্লিজ! নামান আমাকে সবাই দেখছে!

রাহুল : আগেই বলেছিলাম! অনেকরকম ওয়ে আছে গাড়ীতে উঠানোর!

স্নেহা : তাই বলে আপনি! উফফ! মানুষ দেখছে রাহুল! প্লিজ নামান…আমি হেটেই গাড়ীতে উঠছি! প্রমিস্ [ স্নেহার জোড়াজোড়িতে রাহুল স্নেহাকে নামিয়ে দিলো ]

স্নেহা রাগান্বিতভাবে রাহুলের দিক একবার চেয়ে বাসে্র দিক একবার চেয়ে হনহনিয়ে গিয়ে গাড়ীতে উঠে বসলো! রাহুল ও গিয়ে গাড়ীতে উঠে জোড়ে দরজা বন্ধ করে, স্নেহা ভয়ে কেপে উঠে,

[ রাহুল কিছু না বলে গাড়ী চালাতেই লাগলো ]

কিছুক্ষণ পর,

রাহুল : সবসময় মুডটা অন করেই গাড়ীতে উঠাতে চাই…কিন্তু তোমার এসব জেদ এর কারণে সব বিগ্রে যায়!

স্নেহা : আচ্ছা আমি জেদ দেখিয়েছি নাকি আপনি?..

রাহুল : আমার জেদ উঠিয়েছো তুমি..কয়বার বলছিলাম নেমে আসতে..? একতো পার্কিং এর দিক ওয়েট করিয়ে রেখেছিলে! তারউপর নামতে বলছি নামছোই না!

[ স্নেহা মুখ ভেঙিয়ে জানালার দিক ফিরে যায় ]

রাহুল : হ্যা হ্যা! এসবই তো করতে পারবে!

[ স্নেহা হেসে জানালার দিক তাকিয়ে থাকে,কোণা চোখে আবার রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখে শার্ট থেকে সানগ্লাসটা ছুটিয়ে পড়ে নিচ্ছে, মনে মনে ভাবছে কি আজিব মানুষ এমন শীত পড়ছে যে কুয়াশায় গাড়ীর গ্লাস ভিজে যাচ্ছে আর ইনি কিনা সানগ্লাস, স্নেহার হাসি পাওয়ায় আবার ফিরে যায়! ]

কিছুক্ষণ পর,

স্নেহা : কোথায় যাচ্ছি?..

রাহুল : আগেই বলেছি সারপ্রাইজ!

স্নেহা : হ্যা তা তো জানি কিন্তু কি সারপ্রাইজ সেটা তো বলেন!

রাহুল : আচ্ছা তোমার মাথায় কি বুদ্ধিশুদ্ধি কিছু আছে?..[ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো] বললে কি এটা সারপ্রাইজ থাকে?..

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] এক্সুলি! আই ডোন্ট লাইক সারপ্রাইজ! তাই আসতে চাইছিলামনা!

রাহুল : হোয়াট?..সবাই সারপ্রাইজ এর জন্য পাগল আর তুমি বলছো ইউ ডোন্ট লাইক সারপ্রাইজ?..কিন্তু কেনো?..

স্নেহা : কারণ সারপ্রাইজ! আমার জন্য একপ্রকার এলার্জির মতো চুলকাতে থাকে! মানে সারপ্রাইজটা কি হতে পারে ওটার উত্তেজনায় আমার টেনশন হয়…মানে কি না কি… এমন চিন্তা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায়!

রাহুল : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] ওহ মাই গড! ইন্ট্রেস্টিং!

স্নেহা আর কিছু না বলে একটু হেসে,জানালার দিক ফিরে যায়,

রাহুল : So sweet! [ with tedi smile ]

[ স্নেহা কনফিউজড হয়ে ফিরে তাকায় ]

রাহুল : স্মাইল?

স্নেহা : So unique!

রাহুল : [ হেসে ] What?

স্নেহা : তেডি স্মাইল!

[ Rahul give a tedi smile again ? ]

চলবে…..

♥Love At 1St Sight♥ Season 3 Part – 12

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 12

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা কারো কথার জবাব না দিয়ে ডিরেক্ট খাটে গিয়ে বসলো,

জারিফা : [ স্নেহার পাশে বসে ] হুম! কেউ একজন যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিলো এখন থেকে আমি রাহুলের কাছ থেকে দূরে দূরে থাকবো! কিন্তু এখন দেখছি উলটা রাহুলের সাথে ডেট করে এসেছে!

স্নেহা : আমার ওর সাথে ডেট করার শখ নেই বুঝলি! আমিতো…..

মার্জান : হ্যা! তাতো আমরা নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছি!

স্নেহা : আরে আমার কি দোষ! তোরা তো জানিস ও সব কিছুতে জেদ করে বসে, গাড়ীতে উঠছিলামনা বলে এত্তো লম্বা জ্যাম লাগিয়ে দিয়েছিলো… তাই বাধ্য হয়ে উঠেছিলাম!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে স্নেহার কাধে হাত রেখে ] তারপর তারপর [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকায় ] আরে বলনা বলনা!

[ স্নেহা সব খুলে বললো তাদের ]

জারিফা : হায়ে মেরি জান!
[ বলেই স্নেহাকে দাড় করিয়ে কোমোড়ে হাত দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ডান্স করাতে লাগলো ]

স্নেহা : আরে জারিফা! কি করছিস পড়ে যাবো তো!

জারিফা : [ স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড করে ] এইভাবে ধরেছিলো রাহুল তাই না?..?

স্নেহা : সর তো! [ বলেই স্নেহা ব্লাশিং হয়ে খাটে বসে পড়লো ]

শায়লা : ইয়ার! স্নেহা! এতো ব্লাশিং হলে রাহুল স্ট্রবেরী মনে করে খেয়েই ফেলবে ?

স্নেহা : ছিঃ তোরা কিসব আজে বাজে বকছিস! [ বলেই স্নেহা আলমারি থেকে কাপড় বের করতে এগিয়ে যায় ]

মার্জান : [ মন খারাপ করে ] ইয়ার! আমার তো কতো ইচ্ছে ছিলো মার্মিড দেখার…

শায়লা : আরে মার্জান! তুই আপসে্ট হচ্ছিস কেনো?… তুই ও কারো হয়ে যা..তারপর ও তোকে মার্মিড হাউজ ঘুরিয়ে আনবে!

মার্জান : [ মুখ ভেংগিয়ে ] আমার এসবে ইন্ট্রেষ্ট নেই! ওকে…

জারিফা : হ্যা হ্যা! যখন দিলে ঘন্টা বাজবে না..তখন ইন্ট্রেষ্ট চলে আসবে

[ সবাই হেসে উঠে ]

মার্জান : [ জারিফাকে একটা বালিশ ছুড়ে মেরে স্নেহার কাছে গিয়ে হাত ধরে এগিয়ে আনে ]

So.. আওর প্রিন্সেস মার্মিড! আপনাকে কিনা লাগছে..আজ!
[ দুহাতে স্নেহার গাল টেনে দিয়ে ] আমি ছেলে হলে তো এতোক্ষণে তোকে নিয়ে পালিয়ে যেতাম! [ স্নেহা ব্লাশিং ] আচ্ছা যা! এইবার ফ্রেশ হয়ে আয়! নয়তো সবার নজরে তুই অসুস্থ হয়ে পড়বি!

স্নেহা মাথা নাড়িয়ে কানের নিচ থেকে রাহুলের লাগিয়ে দেওয়া কালি গুলো ছুয়ে দেখলো! এবং আবার ব্লাশিং হতে লাগলো…

স্নেহা ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে এসে টেবিল থেকে চশমাটা পড়ে নিলো, গায়ে শাল মুড়িয়ে বইটা হাতে নিয়ে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়! চারদিক অন্ধকার রাস্তার লাল লাম্প গুলো জলছে…সাথে কুয়াশায় ভরা! শীতের মলিন হাওয়া স্নেহার গা ছুয়ে যাচ্ছে…

এমন কুয়াশা ভরা রাতেই রাহুলের সাথে প্রথম দেখা ষ্টেশনে…সেই মোমেন্টে স্নেহা রাহুলের সাথে ধাক্ষা খেয়ে পড়ে যাচ্ছিলো! আর রাহুল তাকে ধরে ফেলেছিলো.. ভাবতেই স্নেহা ব্লাশিং! এইভাবে ধীরে ধীরে রাহুলের সাথে কাটানো প্রতিটি মোমেন্ট মনে পড়ছে স্নেহার…হঠাৎ কাধে কেউ হাত রাখলো,
ফিরে তাকাতেই দেখে মার্জান,

মার্জান : [ আকশের দিক তাকিয়ে ] খোলা আকাশ, মলিন হাওয়া..ঠান্ডা ঠান্ডা মোমেন্ট! কি ব্যাপার কাউকে ভাবা হচ্ছে বুঝি?

স্নেহা : আরে নাহ!

মার্জান : দেখ মিথ্যা বলবিনা বুঝলি! এসব লাভ-সাভে আমার ইন্ট্রেষ্ট নেই ঠিকই তবে…এই ব্যাপারে ভালোই বুঝি!

স্নেহা : [ আকাশের দিক তাকিয়ে ] জানিনা কি হচ্ছে! কেনো এমন লাগছে..তবে ওকে ভাবতে একটা অদ্ভুত ভালো লাগছে! [ মার্জানের দিক তাকিয়ে ] জানিস! এমনতো আমার আগে কখনো হয়নি!

মার্জান : হ্যা! হ্যা! হয়নি কারণ আগে কারো প্রেমে পড়িসনি আর এখন পড়েছিস তাই!

স্নেহা : তুই ও না..[ বলেই অন্যদিক ফিরে যায় ]

মার্জান : হুহ! মুখ থেকে লুকিয়ে রাখা যায়…চোখ থেকে না…বুঝেছিস!

না চাইতেও বারবার ওর কাছে ছুটে যাওয়া..ওয়াসরুমের বাহানা দিয়ে ওর সাথে মিট করতে যাওয়া..এগুলো কিসের লক্ষণ?.. হুম? [ একটু হেসে ] রাহুল এর ব্যাপারে আমি তোকে যা যা বলেছিলাম সবই সত্য ছিলো স্নেহা! ইনফেক্ট পুরো ভার্সেটির মেয়েরাই তাকে নিয়ে মরে এবং সে ও মেয়েগুলোকে নাচিয়ে ছাড়ে,

কিন্তু আমি ভাবতেই পারছিনা রাহুলের মতো কোনো ছেলে একজন সিম্পল মেয়েকে নিয়ে এতো সিরিয়াস হবে!

[ স্নেহা অবাক হয়ে মার্জানের দিক তাকালো ]

মার্জান : আজ তোর চোখে যা দেখা যাচ্ছে ঐদিন রাহুলের চোখে ও তাই দেখেছিলাম…[ স্নেহার কানের কাছে এসে ] যখন তোকে খুজে পাওয়া যাচ্ছিলো না.. [ বলেই হেসে দেই ] কিনা চেহেরা হয়েছিলো রাহুলের… গাড়ী নিয়ে এদিকওদিক ছুটাছুটি করে খুজছিলো! আমরা চেক করার পরেও ঐ জায়গা গুলো আবার নিজে গিয়ে চেক করেছিলো!

তখনি বুঝলাম রাহুল! বি সিরিয়াস ফর স্নেহা! ওয়াও!

আরে এভাবে হা করে চেয়ে আছিস কেনো?..মেরি জান! তুইই তো সেই লাকি গার্ল! যে রাহুলকে তোর পেছন ঘুরাচ্ছিস! আর বাকিরা তো ওর পেছন পেছন ঘুরেও চান্স পাচ্ছে না..[ বলেই চোখ টিপ মাড়লো? ]

অবশ্যই রাহুল আর তোর মাঝে কিছু হোক আর না হোক! কিন্তু কাল ভার্সেটিতে ঐ জ্যালাসি্র উপর রেভেঞ্জ নিয়েই ছাড়বো!

স্নেহা : মানে কি?..কি করবি বলতো!

মার্জান : ওহো মর্নিং এ আর্লি উঠতে হবে! আর আমার না অনেক ঘুম পাচ্ছে চল ঘুমিয়ে পড়ি! [ বলেই রুমের দিক চলে গেলো ]

স্নেহা : [ পেছন পেছন গিয়ে ] দেখ মার্জান! এমন কিছুই করিস না..ওকে তো দেখতেই আমার ভয় লাগে! আর তোরা কিনা রেভেঞ্জ নিতে বসে আছিস!

মার্জান : [ খাটে শুয়ে নাকে মুখে কম্বল দিয়ে ] গুড! নাইট স্নেহা!

[ স্নেহা ও আর কিছু না বলে শুয়ে পড়ে! ]

_________________________

এইদিকে,

রাহুল তার রুমে বসে হতাশ হয়ে ড্রিংকস্ করছে! সাথে তার ফ্রেন্ডসরা ও আছে..

আসিফ : সুযোগ তো ছিলো! বলেই আসতে পারতি!

রিদোয়ান : [ হাসতে হাসতে ] ইয়ার! রাহুল…অবাক লাগছে..তুই স্নেহার সামনে নার্ভাস হচ্ছিলি…[ বলেই আবার হেসে উঠে ] চিরস্ রাহুল চিরস্!

আসিফ : কতো মেয়েকেই তো পটিয়েছিলি রাহুল! ডোন্ট ওয়ারি ব্যাপার না! হয়ে যাবে…

রিদোয়ান : মেয়েরা মরছে রাহুলের উপর আর রাহুল মরছে স্নেহার উপর!

আসিফ : ওভার খাচ্ছিস! রিদোয়ান..ড্রাইভ করতে হবে কিন্তু! ভুলিস না…

রিদোয়ান : ওহ! কামঅন সেলেব্রেট ইয়ার! সেলেব্রেট! বিকজ! রাহুল…ইউ নো! রাহুল…নার্ভাস্ হচ্ছিলো আই কান্ট বিলিভ দিস্ [ বলেই আবার হেসে উঠলো ]

রাহুল : আচ্ছা! অনেক তো বকছিস! কল লিষ্টে মেয়েদের নাম্বারের ও অভাব নেই! So তুই কেনো সামান্য জারিফার নাম্বার নিতে পারলিনা!

রিদোয়ান : [ কিছুক্ষণ ভেবে ] ক্যারেক্ট! বস্ ক্যারেক্ট কেনো পারলাম না?..

আসিফ : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] আমি বলছি কেনো পারলি না!

এতোদিন তোরা যা করেছিস সবই এঞ্জয়মেন্ট ছিলো! আর এখন যাকে নিয়ে ভাবছিস…তাকে নিয়ে অন্যদের চেয়ে আলাদা আই মিন! স্পেশাল ফিল করছিস!

ফর এক্সেম্পল ওর কথা ভাবতেই ব্লাশিং…ওর কথা ভাবতেই মুখের মধ্যে হাসির ছোয়া! একটা অন্যরকম ভালো লাগা…

রিদোয়ান : [ হেসে ] বস্ তোকে দিয়ে পোয়েট্রিক বুকস্ লিখা উচিৎ!

আসিফ তার হাতের গ্লাসে থাকা ড্রিংক্স গুলো রিদোয়ানের মুখে মেরে দেই!

রিদোয়ান : [ হাসতে হাসতে ] ইয়ার! এতোকিছু জানিস আজও একটা প্রেম করলিনা…

আসিফ গ্লাসে আবারো ড্রিংকস্ ঢালতে লাগলো রিদোয়ানকে মারার জন্য! ততোক্ষণে,

রিদোয়ান : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] গুড নাইট রাহুল! গুড নাইট আসিফ [ বলেই হেসে দৌড় দেই ]

আসিফ : [ রাহুলের পাশে বসে ] অপেক্ষা লাভ এর জন্য ভালো দোস্ত!

রাহুল : [ সোফায় হেলান দিয়ে শুয়ে ] ইয়ার স্নেহা! কি সুন্দর তাই না…

আসিফ : [ একটু হেসে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] ইয়াহ!

রাহুল : ওর চোখ, ওর গাল, ওর ঠোট, ওর হাসি, ওর চুল, সবই এতো সুন্দর কেনো… [ কিটকিটিয়ে একটু হেসে ] আর ও রাগলে যখন লাল হয়ে যায় না… [ বলেই চোখ বন্ধ করে ফেললো ]

আসিফ একটু হেসে রাহুলের হাত থেকে গ্লাসটা নিয়ে টেবিলে রেখে দেই! এবং রাহুলের পা, গুলো সোফায় তুলে দিয়ে..দরজা লাগিয়ে দিয়ে সে বেড়িয়ে যায়!

পরদিন ভার্সেটিতে,

স্নেহা এবং তার ফ্রেন্ডসরা কথা বলতে বলতেই ঢুকছে,

মার্জান : কি ব্যাপার বলতো, আজ পার্কিং এর দিক রাহুলের গ্যাংকে দেখা যাচ্ছে না,

স্নেহা : [ বুঝতে পেরে ] গাইস্ আজ ফার্ষ্ট ক্লাস ম্যাথ So.. Assignment জমা দিতে হবে ভুলে গিয়েছিস?..

শায়লা : আরে হ্যা!

মার্জান : হুম! ভুলিনি মনে আছে!

[ সবাই ক্লাস করছে, ম্যাথ ক্লাস শেষে মার্জান জানালা দিয়ে এদিক ওদিক ঘুরঘুর করছে, ]

জারিফা : কিরে কি দেখছিস?…

মার্জান : আরে ঐ কুটনিটাকে খুজছি! মিস্ নেহা! আচ্ছা আজ ওরা কই গেলো বলতো?…

জারিফা : সবাই হল রুমেই হবে! ঐখানেই তো আড্ডা ওদের!

মার্জান : তাহলে চল! ঐখানেই যায়!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ওকে!

মার্জান আর জারিফা উঠে দাঁড়িয়ে যায়!

শায়লা : আরে তোরা কোথায় যাচ্ছিস?..

মার্জান : আ.আসলে ক্লাস করতে বোরিং লাগছে চলনা একটু ঘুরেটুরে আসি! চল স্নেহা! [ বলেই স্নেহার হাত ধরে দাড় করিয়ে নিলো ]

স্নেহা : নাহ! মার্জান! আ..আসলে আমার না মাথা পেইন করছে! আমি এইখানেই ঠিকাছি! তোরা যা ঘুরে আয়!

মার্জান : আরে! সবাই যাচ্ছি তুই একা ক্লাস করবি?.. চলতো [ বলেই স্নেহাকে সহ টেনে নিয়ে যায় ]
__________________________

তিন তলায় উঠে, হলরুমের সামনে,

মার্জান : স্নেহা! এমন কেনো করছিস চলনা প্লিজ!

স্নেহা : দেখ! এসব মোটেও ভালো হচ্ছে না! আমি জানি তোরা এইখানে কেনো এসেছিস!

জারিফা : স্নেহা! মেরি জান…ও ঐদিন আমাদের ইন্সাল্ট করে গিয়েছে..[ ইমোশনাল হয়ে ] তোর কি আমাদের জন্য একটু ও মায়া হচ্ছে না!

স্নেহা : আরে তা না…কিন্তু..

মার্জান স্নেহাকে ধাক্ষিয়ে হল রুমের ভেতর ঢুকিয়ে দেই! সাথে তারাও ঢুকে!

সবাই তাদের দেখে অবাক হয়ে চেয়ে আছে!

রাহুল স্নেহাকে দেখে দাঁড়িয়ে যায়!

স্নেহা আবার পেছন ফিরে চলে যাচ্ছিলো..মার্জান স্নেহার হাত শক্ত করে ধরে রাখে!

জারিফা : ইয়ার! শিকার আমাদের সামনেই আছে দেখ কিভাবে নাক ফুলিয়ে চেয়ে আছে…

মার্জান : আমার তো ইচ্ছে হচ্ছে ওর নাকটাই গেলে দেই!

জারিফা : [ চেঁচিয়ে হাত নাড়িয়ে ] হাই! রাহুল!

রাহুল : হেইই! কাম গাইস্!

সবাই এগিয়ে যায়, স্নেহা এগুতে না চাইলেও মার্জান তাকে জোড় করে টেনে আনে,

শ্রেয়া : হেইই! গাইস্

রিদোয়ান : হাই! এব্রিওয়ান হোয়াটস্ আপ!

জারিফা মুখ ভেংগিয়ে অন্যদিক ফিরে যায়! তা দেখে রাহুল এবং রিদোয়ান দুজনেই হেসে উঠে,

মার্জান : ওয়েল! আ..আস.. আসলে এইদিকটা যাচ্ছিলাম.. তাই ভেবেছি একটু এইখানেও ঘুরে যায়!

শ্রেয়া : ওহো গাইস্! এমনিতেই বোর হচ্ছিলাম..ভালোই করেছো এসে!

নেহা : তবে! পারমিশন ছাড়া সিনিয়র এড়িয়া আসা…This is not fair!

মার্জান : [ চোখ রাংগিয়ে নেহার দিক তাকিয়ে ] আমরা জানি যে এটা একটা ভার্সেটি ক্যাম্পাস! কোনো পলিটিকাল ক্যাম্পাস না..যে এক দলের অর্ডার ছাড়া অন্য দলের এড়িয়াই যাওয়া যাবে না!

রাহুল : [ একটু তালি দিয়ে ] গ্রেট আন্স্যার!

[ নেহা রেগে রাহুলের দিক তাকিয়ে থাকে ]

মার্জান : থেংক ইউ! [ নেহার দিক তাকিয়ে ] রা..হুল!

রিদোয়ান : [ সবাইকে চেয়ার এগিয়ে দিয়ে ] সি্ট গাইস্

[ সবাই চেয়ার এগিয়ে নিয়ে বসলো, কিন্তু স্নেহা দাঁড়িয়ে আছে ]

মার্জান : [ ফিসফিসিয়ে ] কি হলো স্নেহা বস না! [ বলেই স্নেহাকে টেনে বসিয়ে দেই ]

রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে বসে আছে! স্নেহা তা খেয়াল করে বার বার চশমা ঠিক করতে লাগলো!

আসিফ : So গাইস্! আপনারা কি খাবেন! কি অর্ডার করতে পারি আপনাদের জন্য!

জারিফা : নো,নো থেংকস্! আমরা কিছুই খাবো না!

শায়লা : [ মার্জানের কানে ] এই নেহা! স্নেহার দিক কিভাবে তাকিয়ে আছে দেখ! যেনো এক্ষুণি গিলে খেয়ে ফেলবে!

মার্জান : [ রাগান্বিত ভাবে ] ওকে তো আমি! [ বলেই দাঁড়িয়ে যায় ]

শায়লা : [ টেনে বসিয়ে ] আরে কি করছিস কি?..প্লান অনুযায়ী.. করতে হবে!

মার্জান : আ..বলছিলাম যে..বোরিং যখন লাগছে চলেন কোনো গেইম খেলি!

নেহা : নট! ইন্ট্রেষ্ট!

মার্জান : ওকে! So উইদাউট ইউ! [ বলেই নরমালি একটু হাসে, বাকিরাও মুখ লুকিয়ে হাসতে থাকে, আর এইদিকে স্নেহা ঘাবড়াতে ঘাবড়াতে শেষ হয়ে যাচ্ছে! ]

রাহুল : স্নেহা! ইউ ওকে?..

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা!

স্নেহা : [ ভয়ে পেয়ে মার্জানের দিক তাকিয়ে ] হ্যা ?..

মার্জান : রাহুল কিছু জিজ্ঞেস করছে?..

স্নেহা : [ বুঝতে পারলো মার্জান নেহাকে শোনানোর জন্যই চেঁচিয়ে উঠলো, রাহুলের দিক তাকিয়ে চশমা ঠিক করে ] হ্যা! আমি..ঠিকাছি!

মার্জান : [ নেহার দিক চেঁচিয়ে ] রাহুল!

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] ইয়েস্!

মার্জান : স্নেহা! বলছে ও ঠিকাছে! টেনশন করতে হবে না!

[ শায়লা মুখ চেপে হাসতে থাকে, মার্জান চিমটি দিলে হাসি চেপে রাখতে বাধ্য হয় ]
__________________________

আসিফ : [ রাহুলের কানে ফিসফিসিয়ে ] দোস্ত! আমার মনে হচ্ছে এরা মাথার মধ্যে কিছু পাকিয়ে এসেছে! নাহলে এমনিতে আমাদের দেখলে ১০হাত দূরে দূরে থাকে, আজ ডিরেক্ট হলে ঢুকে এসেছে,

রাহুল আসিফের দিক তাকালে,

আসিফ : না মানে বলছিলাম যে.. মানে ওদের ভাবসাব দেখে বলছিলাম!

রাহুল আবারো তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে থাকে! স্নেহা নিচের দিক চেয়ে আছে!

শায়লা : আমার না ঐদিন আপনাদের ডান্স কম্পিটিশনটা দেখার অনেক ইচ্ছে ছিলো! [ ইমোশনাল হয়ে ] কিন্তু ভাগ্য খারাপ সব বিগ্রে গেছে!

মার্জান : আরে তো কি হয়েছে! কম্পিটিশন ঐদিন হয়নি! আজ হবে!
[ সবাই অবাক হয়ে মার্জানের দিক তাকালে ] না মানে বলছিলাম যে! একটা ছোট খাটো কাপল ডান্স হয়ে যাক নরমালি!

শ্রেয়া : নট বেড আইডিয়া!

রিদোয়ান : ইয়েস্ গ্রেট আইডিয়া!

________________________

জারিফা : [ মার্জানের কানে ] তোর কাপল ডান্সের আইডিয়াতে আমাকে ফাঁসাতে গেলি কেনো?..

মার্জান : কেনো কি হয়েছে?..

জারিফা : আরে ঐ রিদোয়ান! আবারো ওর সাথে ডান্স করতে হবে!

মার্জান : আরে ধুর কিছুই হবে না! এমনিতেকি ওর সাথে কম চান্স নিয়েছিলি নাকি..[ চোখ মেরে ?]

জারিফা : হুহ! আমিতো ওর থেকে রেভেঞ্জ নিচ্ছি!

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] কিসের?..

জারিফা : কিসের আবার! র্যাগিং এর!

মার্জান : আরে ওয়াহ!
__________________________

শ্রেয়া : আরে রাহুল ডান্স স্টার্ট করনা!..

ইয়ার! আসিফ মিউজিকটা অন কর! একটু ডান্স দেখি! ওদের…

[ আসিফ উঠে মিউজিক অন করলো!]

মার্জান : [ স্নেহার কানে ] স্নেহা! ঐদিনের মতো জমিয়ে ডান্স দিবি যাতে নেহা দেখে…জলতে জলতে পুরে ছাই হয়ে যায়!

জারিফা : দেখ দেখ! অলরেডি জলে যাচ্ছে নেহা!

হঠাৎ! দেখে রাহুল উঠে আসছে, সবাই ভাবলো রাহুল স্নেহার দিক হাত বাড়াবে, কিন্তু রাহুল জারিফার দিক হাত বাড়ালো!

জারিফা অবাক হয়ে একবার স্নেহার দিক তাকাচ্ছে একবার রাহুলের দিক!

রাহুল : কাম! জারিফা! [ with tedi smile ]

জারিফা রাহুলের হাতে হাত দিয়ে উঠে দাঁড়ালো… রাহুল জারিফাকে নিয়ে..স্লোমোশন ডান্স করতে লাগলো!

জারিফা : [ ফিসফিসিয়ে ] সবাই তাদের প্লানের কাজে লাগাতে আমাকেই পাই! জিজাজি!
[ রাহুল হেসে দেই ] আপনি আবার স্নেহাকে জ্যালাস্ করাচ্ছেন কেনো বলেনতো?..

রাহুল : আরে আমি কখন থেকে তাকিয়ে আছি! আমার দিক নিজ থেকে একবার ও তাকালো না..এটা কোনো মানে হয়! ও কি একটু ও বুঝে না!

জারিফা : বুঝ বুঝে তাকিয়ে দেখেন কিভাবে চেয়ে আছে!

রাহুল : [ কোণা চোখে স্নেহার দিক একবার তাকিয়ে আবার তেডি স্মাইল দিয়ে ] এটাই তো চেয়েছিলাম!
__________________________

মার্জান : [ স্নেহার কানে ] এটা কি হলো?..আমি ভেবেছি রাহুল তোকেই পার্টনার করবে! ধুর সব প্লান বরবাদ!

হঠাৎ, রিদোয়ান জারিফার দিকে তাকালে চোখে চোখ পড়ে, জারিফা নাক ফুলিয়ে মুখ ভেংগিয়ে রাহুলের হাত আরো শক্ত করে ধরে অন্যদিক ফিরে ডান্স করতে থাকে!

রিদোয়ান ও মুখ ভেংগিয়ে উঠে স্নেহার দিক গিয়ে হাত বাড়িয়ে দেই!

রিদোয়ান : Can I dance with you sneha?..

রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে আছে! তা দেখে স্নেহা ও নাক ফুলিয়ে রিদোয়ানের হাতের উপর হাত রেখে উঠে যায়, রাহুল হাসতে থাকে,

জারিফা : ওহ ও জিজু…এখন তো পুরো বুঝতে পারছেন যে স্নেহা ও..হুম হুম?তাই না?

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে! ঐদিকেও কেউ একজন জলছে বোধ হয়! [ বলেই চোখ টিপ মারে ?]

[ জারিফা রাহুলকে জোড়ে একটি চিমটি দিলে রাহুল আআহ বলেই হাসতে থাকে ]
_________________________

শায়লা : [ মার্জানের কানে ] ইয়ার মার্জান এসেছিলাম নেহাকে জ্যালাস করাবো বলে, কিন্তু এইখানে দেখছি এক একজন একজনকে জ্যালাস করানোর পিছে লেগে আছে!

মার্জান : [ অবাক হয়ে তাদের দিক তাকিয়ে থেকে ] হ্যা! আমরা নেহাকে! রাহুল স্নেহাকে, জারিফা রিদোয়ানকে, স্নেহা রাহুলকে, রিদোয়ান জারিফাকে,

শায়লা : [ হেসে ] টু মাচ্ ফানি!তুই তো রেল এর বগি বানিয়ে দিলি সবাইকে! হাহা!
__________________________

স্নেহা রিদোয়ানের হাতে হাত রেখে তাল মিলিয়ে নাচছে! অন্যদিকে জারিফা আর রাহুল!

হঠাৎ, রাহুল রিদোয়ানের সাথে আই কন্টাক্ট করে ইশারা করলো…এবং রাহুল জারিফাকে ঘুরিয়ে দিয়ে রিদোয়ানের কাছে পাটিয়ে দিলো… রিদোয়ান স্নেহাকে ঘুরিয়ে দিয়ে রাহুলের কাছে পাটিয়ে দিলো!
__________________________

শায়লা : [ তালি দিয়ে ] ইয়ার! মার্জান এক্সচেঞ্জ হয়ে গিয়েছে!

মার্জান : [ এক্সাইটেড হয়ে নেহার দিক তাকিয়ে একটা জোড়ে সি্টি বাজালো ]

নেহা : [ নাক ফুলিয়ে উঠে এগিয়ে আসে ] Listen! তোমরা যা করছো তার জন্য আজই পচতাবে মাইন্ড ইট [ বলেই রেগে হনহনিয়ে বেড়িয়ে যায় ]

মার্জান আর শায়লা হাসতে থাকে,
________________________

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] আরে এটা তো চিটিং!

রাহুল : [ স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড করে ] মানে জলে পুরে যাবে! তাও মেয়েদের মুখ থেকে কিছু বের হবে না…

স্নেহা : মানে?..

রাহুল : মানে হচ্ছে তুমি জলছিলে!

স্নেহা : মোটেও না! আমি কেনো জলবো?..

রাহুল : কারণ তুমি ভেবেছিলে আমি তোমাকেই পার্টনার করবো!

স্নেহা : So what! ডান্স করতে পার্টনার ফ্যাক্ট না! ডান্স জানাটাই ফ্যাক্ট!

রাহুল : আই থিংক পার্টনার ফ্যাক্ট! বিকজ..স্ট্রং পার্টনার না হলে…কার উপর ডিপেন্ড হয়ে থাকবে! [ with tedi smile ]

স্নেহা : আমি ডান্সের কথা বলছি!

[ রাহুল হোহহো করে হেসে অন্যদিক ফিরে যায় ]

চলবে….

Love At 1st Sight Season 3 Part – 11

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 11

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : [ মাথা নিচু করে ] হুম!

রাহুল : আসমান থেকে চাঁদ এনে যদি তোমার পাশে বসিয়ে দেওয়া হয় না, চাঁদ ও লজ্জা পেয়ে সরে যাবে,

এইবার বলো এই সৌন্দর্যের তারিফ করে কি আমি শেষ করতে পারবো….?

স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকায়,

রাহুল : [ স্নেহার চশমাটা খুলে নেই! ] আচ্ছা এতো সুন্দর চোখ গুলো.. এই চশমা দিয়ে ঢেকে রাখো কেনো বলো তো?

স্নেহা : আমার Headache বেশী… মানে রাত জেগে পড়ি তাই ডক্টর সাজেষ্ট করেছে!

রাহুল : হুম! বাট ডক্টর থেকে বেটার সাজেষ্ট আমার কাছে আছে,

স্নেহা : কিরকম?..

রাহুল : ওটা হবে নেক্সট সারপ্রাইজ, আগে আজকেরটা দেখে নাও.. [ বলেই রাহুল দাঁড়িয়ে যায় ] তুমি ফাইভ মিনিটস্ অপেক্ষা করো আমি এক্ষুণি আসছি…

স্নেহা : আরে আরে আরে….আপনি কোথায় যাচ্ছেন?…

রাহুল : তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাচ্ছিনা!

[ স্নেহা রাহুলের কথায় লজ্জা পেয়ে অন্যদিক ফিরে যায় ]

রাহুল : একটা ফোনকল করবো! জাষ্ট ফাইভ মিনিটস্ এর আগেও চলে আসতে পারি! [ with tedi smile ]

রাহুল বেড়িয়ে যায় স্নেহা ব্লাশিং হতে থাকে…উঠে দাঁড়িয়ে কাধ থেকে ব্যাগটা টেবিলে রাখে…চারদিক তাকিয়ে শালটাও খুলে টেবিলে রাখলো! তিন মিনিটের মধ্যেই রাহুল আবার ফিরে আসে…স্নেহা কিছু বলার আগেই রাহুল হাত ধরে নিয়ে বেড়িয়ে যায়,

স্নেহা : আবার কই নিচ্ছেন বলেন তো?

রাহুল : আগে চলো তারপর না হয় দেখবা…

স্নেহা ও আর কিছু বললো না…রাহুলের সাথে সাথেই চলছে…পেছানো-পাছানো কতোরকমের শিড়ি দিয়ে হেটে…একটা ফ্লোরে এসে থামে…যার চারদিক শুধু ব্লু আর স্কাই কালার কম্বিনেশনের লাইটিং.. মিডলে কতোবড় একটি পুল…এবং পুলের মধ্যেই সাতার কাটছে বিভিন্ন রঙের মার্মিড…

স্নেহা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] এটাই মার্মিড হাউজ তাই না?..

রাহুল : ইয়েস্ কাম!

[ বলেই স্নেহার হাত ধরে পুলের কাছে এসে দাঁড়ায়… তাদের দেখে গ্রীন কালারের একটি মার্মিড এগিয়ে আসে…]

রাহুল : [ মার্মিডের সাথে হ্যান্ডশেক করে ] হেইই!

মার্মিড : হ্যালো! ওয়েলকাম টু আওর মার্মিড হাউজ!

[ রাহুল স্নেহার দিক তাকালে স্নেহা ও এক্সাইটেড হয়ে সে ও হাত বাড়িয়ে দেই হ্যান্ডশেক করার জন্য… স্নেহার সাথে হ্যান্ডশেক করে মার্মিডটি আবার সাতার কাটতে চলে যায় ]

স্নেহা : জানেন আমার তো বিশাসই হচ্ছে না…আমি কোনো জলপরীর হাতের ছোয়া পেয়েছি!

রাহুল : [ হেসে ] কামঅন স্নেহা! তুমি দেখছি একদমই বোকা!

স্নেহা : কেনো?..কি হয়েছে?..

রাহুল : [ একটু হেসে ] রিয়েলিটিতে কোনো মার্মিড আছে কিনা.. আমি জানিনা, তবে শুনেছি অনেক যুগ আগে জলপরীরা নদী,সমুদ্রে বাস করতো! আর এগুলো রিয়েল না…জাষ্ট মার্মিডের মতো সেজে তারা এন্টারটেইন করছে…

স্নেহা : তো কি হয়েছে?..লাগছেই তো পুরো জলপরী! বিটউইন ঐদিকটা দেখেন…ঐজলপরীটা..ওর চুল গুলো কি লম্বা..ওয়াও

রাহুল : কাছ থেকে দেখবে?…

স্নেহা কিছু বললো না কিন্তু রাহুলের দিক তাকালো তবে স্নেহার চেহেরায় যে খুশিটি ভাসছে তা দেখে রাহুল জবাব পেয়ে গেছে, রাহুল হাত উঠিয়ে লম্বাচুল ওয়ালা মার্মিডটিকে হাত নাড়ালো, এবং মার্মিডটি তাদের দিক এগিয়ে আসে…

মার্মিড : হ্যালো!

রাহুল : [ স্নেহার দিক দেখিয়ে ] শি সে্ই ইউ লুক প্রিট্টি!

মার্মিড : অউ! থেংক ইউ সো্ মাচ্! ইউ লুক প্রিট্টি টু!

স্নেহা খুশি হয়ে হ্যান্ডশেক করলো,

মার্মিড : নাইস্ টু মিট্ ইউ!

রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে আছে…স্নেহার এক্সাইটমেন্ট দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিতে থাকে,কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরির…পর,

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে! স্নেহা! তুমি ও মার্মিড সাজলে কেমন হয়?..

স্নেহা : [ হেসে ] আমি?..আমাকে জলপরী না ভুতনী পরীর মতোই লাগবে..

রাহুল : বললেই হলো তাই না ?… [ স্নেহার হাত ধরে ] চলো একবার ট্রাই করি!

স্নেহা : মানে?..

রাহুল : আরে চলো তো! [ বলেই স্নেহার হাত ধরে হাটা শুরু করলো ]

স্নেহা : দেখেন রাহুল! আপনার মাথা ঠিকাছে ?..আমি ওসব ড্রেস পরবো?..

রাহুল : আরে আমি কি তোমাকে ড্রেস পড়ে পুলে নামতে বলছি নাকি?…জাষ্ট আমি দেখবো…

স্নেহা : আ..আপ… আপনি?

রাহুল স্নেহাকে কোনো জবাব না দিয়ে হাত ধরে শিরি দিয়ে উপরে উঠে, ম্যালেসা্র মতোই আরেকজন ফরেনার মহিলা লুহেভার হাতে স্নেহাকে তুলে দিলো!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরে?..

রাহুল : ভয় পেয়ো না স্নেহা! ও তোমাকে কিছুই করবে না…

স্নেহা : কিন্তু আপনি কোথায় যাচ্ছেন?…

রাহুল : আমি ঐ রুমটাতেই আছি! তুমি বললে সাথে আসতে পারি [ বলেই চোখ টিপ মাড়লো ]

স্নেহা : [ মহিলাটির থেকে হাত ছুটিয়ে রাহুলের পাশে এগিয়ে আসে ] দেখেন আমার অনেক ভয় করছে…আপনি কি করছেন আমার মাথায় কিছুই আসছে না…ভালো এটাই হবে আমরা এখন এইখান থেকে বেড়িয়ে পড়ি প্লিজ!

রাহুল : [ দুহাত দিয়ে স্নেহার মুখ উঠিয়ে ] রিলেক্স স্নেহা ভয় পাওয়ার কিচ্ছু নেই আমি আছিতো!

[ স্নেহা তাও মুখ গোমড়া করে মাথা নিচু করে ফেললো ]

রাহুল : [ স্নেহার দু-হাত ধরে ] মার্মিড তোমার অনেক পছন্দ রাইট ?..

স্নেহা : [ মাথা নাড়ালো ] হুম!

রাহুল : জাষ্ট একটা মার্মিড ড্রেসই ট্রাই করবা…

[ স্নেহা চুপ হয়ে মাথা নিচু করে আছে ]

রাহুল : প্লিজ!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে ভেবে ] ওকে!

রাহুল : [ পিছিয়ে গিয়ে ] আই এম ওয়েটিং! [ with tedi smile ]

স্নেহা কিছু না বলে মহিলাটির সাথে চলে গেলো!

রাহুল রুমটাই গিয়ে ওয়েট করতে লাগলো,হঠাৎ দেখে স্নেহার মোবাইলটা বাজছে! হাতে নিয়ে দেখে মার্জান, রাহুল ফোন রিসি্ভ করতেই,

মার্জান : ইয়ার স্নেহা!..কোথায় তুই?..

রাহুল : স্নেহা! আমার সাথেই আছে!

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] আপনার সাথে মানে?…আরে আপনি কে?..স্নেহা কোথায়?..

রাহুল : [ একটু হেসে ] হোহো কিডন্যাপার!

মার্জান : [ শকড হয়ে ] কিডন্যাপার?..মানে কি?.. আরে স্নেহা কোথায়…?..

জারিফা : [ দৌড়ে উঠে মার্জানের কাছে এসে ] আরে মার্জান কে কিডন্যাপ হয়েছে?..

রাহুল : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] রিলেক্স রিলেক্স!

মার্জান : রিলেক্স মানে?..আপনি হাসছেন…

রাহুল : Listen আই এম রাহুল!

মার্জান : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] ওহ! রাহুল! [ বলেই আবার শকড হয়ে গেলো ]

রাহুল : [ হাসতে হাসতে ] এত্তো সিরিয়াস্ কেনো তোমরা বলোতো!

মার্জান : ফার্ষ্ট টাইম তাই! বাই দ্যা ওয়ে! স্নেহা আপনার সাথেই? ওর ফোন আপনার কাছে কিভাবে?..

জারিফা : [ মার্জান থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে ] হেইইইই রাহুল! স্নেহা আপনার সাথেই!

রাহুল : ইয়াহ!

জারিফা : ওহ ও! ডান্স ক্লাসের নাম দিয়ে ডেটিং করতে গিয়েছে তাই না…

রাহুল : [ হেসে ] জারিফা!

জারিফা : হ্যা হ্যা! বলুন বলুন..

রাহুল : স্নেহার আসতে একটু লেইট হবে! So…

জারিফা : So আমরা একদমই চিন্তা করবো না তাই তো!

রাহুল : [ হেসে ] ব্রিলিয়ান্ট!

জারিফা : ইয়েস্ মেরি জিজাজি? অল দ্যা বেষ্ট!

রাহুল : [ হেসে ] ওকেই থেংক ইউ! মেরি আধি ঘারওয়ালি!

জারিফা হাসতে হাসতে ফোন রাখে,

মার্জান : কি হলো কি বললো?..

জারিফা : স্নেহা! রাহুলের সাথেই আছে..আসতে একটু লেইট হবে So নো্ চিন্তা!

মার্জান : এই স্নেহা কি ফার্ষ্ট হয়ে গেলো! দেখলি!

যাওয়ার সময় আমাদের জ্ঞান দিয়ে গেছে রাহুল থেকে দূরে দূরে থাকবে! আর উল্টা আজই…

শায়লা : এমন ওতো! হতে পারে! ঐদিনের মতো রাহুল আবারো স্নেহাকে জোড় করে তার সাথে নিয়ে গেছে…

মার্জান : [ খাটে বসে ] হ্যা! তাও হতে পারে!

জারিফা : আরে এতো টেনশন নিচ্ছিস কেনো! ও আসবেই তো ঘরে তাই না!

এইদিকে,

স্নেহাকে সাজানো শেষ… স্নেহার গায়ের পরনে আছে একটি প্রিন্সেস মার্মিড স্কার্ট সাথে একটি শর্ট টপস্ কিন্তু স্নেহা এইভাবে রাহুলের সামনে আসতে uncomfortable ফিল করছে…

লুহেভা : হেই স্নেহা! কাম..ডিয়ার! রাহুল ওয়েটিং

স্নেহা : দেখেন আমি ওড়না ছাড়া ওর সামনে কিভাবে সম্ভব?..

লুহেভা : ইটস্ আ মার্মিড ড্রেস! উইদআউট ওড়না! ওখেই!

স্নেহা : [ মনে মনে ] ইনি আর ওড়নার মানে কি বুঝবে! নিজেই ওড়না ছাড়া.. হাপ ড্রেস পড়ে ঘুরছে! ইয়া আল্লাহ! তার মানে এইভাবেই যেতে হবে! এই রাহুলটাও না…সব কিছুতে জেদ করে বসে! [ কিছুক্ষণ ভেবে ] হ্যা! এটাই বেষ্ট আইডিয়া [ বলেই চুল গুলো দু-ভাগ করে সামনে এনে দেই ]

রাহুল স্নেহার চশমাটা হাতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে…হঠাৎ দরজা ওপেন হওয়ার শব্দ! ফিরে তাকাতেই রাহুল শকড হয়ে ধীরে ধীরে দাঁড়িয়ে যায়…দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু দরজার সামনে…এক অপরুপ পরী দাঁড়িয়ে আছে…চোখের পাতা ফেলতে চাইছে না রাহুল! চেয়ে আছে স্নেহার দিক!…যেনো সত্যিই কোনো পরী তার সামনে দাড়িয়ে আছে… গোলাপী রঙের টপস্ টা গায়ের সাথে মিশেই গেছে…পেটের দিকটা খালি দেখেই এক হাত কোমোড় পর্যন্ত জড়িয়ে রেখেছে! আরেক হাত কাধে রেখে..এদিক ওদিক ঠিক করছে!

রাহুল : [ ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে ] ড্রিংকস করে নেশা করতে হবে না…স্নেহা তোমাকে দেখেই নেশা হয়ে যাবে!

স্নেহা কোনো জবাব দিলো না নিচের দিকই তাকিয়ে আছে!

রাহুল : [ ধীরে ধীরে স্নেহার কোমোড় থেকে তার হাতটি সরিয়ে নিলো!] Easy থাকো! Uncomfortable ফিল করতে হবে না!

স্নেহা : [ তাড়াহুড়ো করে ] হয়েছে দেখা! এবার চেঞ্জ করে আসি! [ বলেই স্নেহা চলে যাচ্ছিলো…হুট করে রাহুল স্নেহার কোমোড়ে হাত দিয়ে তাকে কাছে টেনে নেই ]

রাহুল : যতোই দেখবো স্নেহা! চোখে ছানি পড়ে যাবে, তাও ইচ্ছে মিটবে না [ স্নেহা চোখ নামিয়ে ফেললো ] আচ্ছা তুমি এতো লজ্জা পাচ্ছো কেনো?.. বিটউইন আই লাইক ইট!

[ স্নেহা ব্লাশিং ]

রাহুল তার পকেট থেকে একটা রিমোট বের করে বাটন প্রেস্ করলো!… এবং সাথে সাথে একটা সফটেড ♪♪ টোন বাজতে লাগলো!

স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো,

রাহুল তার কপালটা স্নেহার কপালের সাথে লাগালো দুজন দুজনের দিক তাকিয়ে রইলো! স্নেহার একহাত তার হাতের মুঠোই শক্ত করে ধরলো! আরেকহাতে স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড করে ধরলো…[ গা শিউরে উঠলে সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেলে স্নেহা! বুকটাও জোরে জোরে কাঁপতে শুরু করলো ]

রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে একটু তেডি স্মাইল দেই! এবং ধীরে ধীরে নাচাতে লাগলো… স্নেহাকে!

ডান্স করতে করতে, হঠাৎ…রাহুল স্নেহাকে তার বুকের অনেকটা কাছে নিয়ে এলো… স্নেহার মাথা রাহুলের..বুকের উপর…অন্যরকম একটা ভালো লাগছে রাহুলের…নিস্তব্ধ চারদিক…শুধু সফটেড মিউজিকের সাউন্ড ভাজছে….আর স্নেহার কানে ভাজছে…রাহুলের হার্টের ধুপধুপ করা..প্রতিটি শব্দ…

হঠাৎ, চোখ খুলে চমকে উঠে স্নেহা রাহুল থেকে তাড়াতাড়ি সরে দাঁড়ালো…

রাহুল : ইউ ওকে?…

স্নেহা কিছু না বলে স্কার্ট হাতে তুলে দৌড়ে বেড়িয়ে যাচ্ছিলো….

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে ] স্নেহা! আমার তোমাকে কিছু বলার ছিলো!

স্নেহা জোড়ে জোড়ে শাস ফেলতে লাগলো….

রাহুল : [ স্নেহাকে তার দিক ফেরালো ] স্নেহা!

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকালো ] আমার দেরী হচ্ছে…তাড়াতাড়ি বলেন!

রাহুল : আ..আমি! স্নেহা!

স্নেহা : হ্যা!

রাহুল : মানে! আমি…

স্নেহা : কি হয়েছে আপনি?..

রাহুল : [ কপাল থেকে ঘাম মুছতে লাগলো আর মনে মনে ভাবতে লাগলো ] আজিব ব্যাপার! উইন্টার সিজন তার উপর এ.সি চলছে…আর আমি ঘামছি কেনো?…

স্নেহা : আপনি?…মানে আপনি ঠিকাছেন?..

রাহুল : ইয়া..ইয়াহ! আই এম ফাইন!

[ কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো… স্নেহার দিক তাকিয়ে দেখে সে ও চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে ]

রাহুল : খুব ঠান্ডা তাই না!

স্নেহা একটু অবাক হলো তাও মাথা নাড়িয়ে বললো হুম!

রাহুল : আসলে…আমি..আ..বলছিলাম যে…
[ মনে মনে] আরে রাহুল Damn it! কি হয়েছে তোর?..তুই নার্ভাস্ হচ্ছিস কেনো?..সিম্পলই তো!

স্নেহা : বলেন!

রাহুল : আচ্ছা তুমি কোথায় যাচ্ছিলে?..

স্নেহা : ড্রেসটা চেঞ্জ করতে!

রাহুল : না করোনা!

স্নেহা : মানে?..

রাহুল : মানে হচ্ছে এটাই পড়ে যাবা!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] পাগল হয়েছেন নাকি আপনি?..আমি এটা পড়ে এইভাবে…[ বলেই বেড়িয়ে যাচ্ছিলো ]

রাহুল : ওয়েট স্নেহা!

[ বলেই টেবিল থেকে স্নেহার শালটা নিয়ে স্নেহার গায়ে মুড়িয়ে দিলো! ]

রাহুল : [ স্নেহার ব্যাগটা হাতে এগিয়ে দিয়ে ] চলো!

[ স্নেহা ব্যাগটা হাতে নিয়ে কিছু বলতে যাবে তখনি রাহুল স্নেহার হাত ধরে নিয়ে হাটা শুরু করে ]

স্নেহা : আরে! এতো দামি ড্রেস এইভাবেই নিয়ে চলে যাবো নাকি?.. আপনার মাথা ঠিকাছে?..

রাহুল : চুপচাপ হাটতে থাকো!

স্নেহা : কিন্তু!

রাহুল : এটা তোমার জন্যই বুকিং দেওয়া হয়েছিলো!

স্নেহা : [ শকড হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] কিহ! এতো দামি ড্রেস আপনি আমার জন্য কেনো বুকিং দিলেন?..এমনিতেই এইখানে ঢুকতে কতো টাকা চলে গেলো…তার উপর এই ড্রেস!

রাহুল : [ থেমে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তোমাকে টাকার চিন্তা করতে বলেছি আমি?..দেখো এমনিতে মাথাটা খারাপ হয়ে আছে…এসব নিয়ে আর কথা বাড়িও না…

[ স্নেহা চুপ হয়ে অন্যদিক ফিরে গেলো.. রাহুল আবারো স্নেহার হাত ধরে হাটা শুরু করলো…দুজন দুজনকে আর কিছুই বললো না চুপচাপ গাড়িতে উঠে বসলো…. ]

প্রায় কিছুক্ষণ পর স্নেহা খেয়াল করলো… রাহুলের মুখটা কেমন গোমড়া করেই গাড়ী চালাচ্ছে…তার উপর তখন বললো..মাথা খারাপ…স্নেহা মনে মনে ভাবতে লাগলো কোনো সে উল্টা পাল্টা কিছু বললো নাকি…

স্নেহা : আ..আপনি ঠিকাছেন?..মানে আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে কোনো কারণে রেগে আছেন!

রাহুল : [ বিড়বিড় করে ] রেগে তো নিজের উপর আছি! যেটা বলতে আসলাম সেটাই বলতে পারলাম না…

স্নেহা : কিছু বললেন?..

রাহুল : নাহ! কিছু না…আ..স্নেহা তোমার ফ্রেন্ডস ফোন করেছিলো! আমি ধরেছিলাম!

স্নেহা : আচ্ছা?..কি বলেছেন আপনি?..

রাহুল : কিছুনা! জাষ্ট বললাম চিন্তা না করতে তুমি আমার সাথেই আছো!

স্নেহা : [ মনে মনে ] তারমানে হান্ড্রেট পার্সেন্ট সবাই মিলে আমাকে ধরার জন্য বসে আছে… [ ড্রেসের দিক তাকিয়ে ] তার উপর এই ড্রেস!

বাড়ী এসে পৌছালো…রাহুল আগে নেমে এসে স্নেহার দরজা খুলে দিলো! স্নেহা নেমে এলো…রাস্তার ল্যাম্পের আলোয় স্নেহাকে ড্রেসটাই আরো জলমলে লাগছে! রাহুলের কাছে…

রাহুল স্নেহার চোখ থেকে তার হাতে কিছু কাজল লাগিয়ে নিলো…

স্নেহা : আরে কি করছেন!

রাহুল : [ স্নেহার কানের নিচে কালি লাগিয়ে দিয়ে ] ছোট বেলায়! যখন ফ্রেশ হয়ে মায়ের কাছে আসতাম…মা তখন চোখ থেকে কাজল নিয়ে আর নয়তো ছোট একটা বক্স থেকে কালি নিয়ে কানের নিচে লাগিয়ে দিতো! এতে নাকি কারো নজর পরে না…Obviously আমি এসবে বিশাস করি না তাও রিস্ক নিতে নেই তাই না… [ বলেই পকেটে হাত দিয়ে তেডি স্মাইল দিতে লাগলো ]

স্নেহা কিছু বললো না একটু হাসলো..কিন্তু মনে মনে ব্লাশিং হতে লাগলো,

রাহুল : ওকে! Sooo বাই!

স্নেহা : বাই! গুড নাইট!

রাহুল : গুড নাইট!

[ স্নেহা চলে গেলো.. রাহুল ও গাড়ী নিয়ে বেড়িয়ে পড়লো ]

দু-বার বেল বাজাতেই…মার্জান এসে দরজা খুললো!

স্নেহা কিছু না বলে শালটা ঠিক করতে লাগলো.. মার্জানের দিক তাকাতেই দেখে চোখ গুলো হাসের ডিমের মতো করে হা করে রেখেছে…

পেছন থেকে,

শায়লা : [ এগিয়ে এসে ] আরে মার্জান কে এসে…. [ বলতেই সে ও হা হয়ে আছে ]

স্নেহা : আরে কি হলো..? আমাকে ভেতরে আসতে দিবিনা..?এইভাবে হা করে চেয়ে আছিস কেনো?…

স্নেহার কন্ঠ শুনে জারিফা ও দৌড়ে এগিয়ে আসে…

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] হাইইইই স্নেহা মেরি জান! [ বলেই সেও অবাক হয়ে যায় ]

মার্জান : তোওবা মেরি জান!আমি কি সপ্ন দেখছি নাকি সত্যিই কোনো পরী এসেছে…কেউ আমাকে চিমটি কাট!

জারিফা মার্জানকে জোড়ে একটা চিমটি দিলো,

মার্জান : আআহ! [ জারিফার গায়ে একটি চড় মেরে ] আরে! ইডিয়ট এত্তো জোড়ে দিতে বলেছি?…

শায়লা : স্নেহা! মানে…এটা স্নেহা শিউর তো?…

স্নেহা কিছু না বলে দরজার ধার থেকে তাদের সরিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ে,

জারিফা : [ পেছন পেছনে এগিয়ে গিয়ে ] ইয়ার! স্নেহা মেরি জান! ড্রেসটা রাহুল গিফট করেছে তাই না?…তুকে তো পুরাই লিটল মার্মিডের মতো লাগছে!

চলবে…

Love At 1st Sight Season 3 Part – 10

0

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 10

writer-Jubaida Sobti

জারিফা : দেখেন আমি তো সরি বলছি! আপনি এতো রিয়েক্ট করছেন কেনো? সত্যি ঐদিন আমার ফ্রেন্ড স্নেহা [ বলেই পাশ ফিরে তাকালো ] আরে স্নেহা কই গেলো?

রিদোয়ান : হলের দিক গিয়েছে!

জারিফা : ও..ওহ! তাহলে আমিও যায় কেমন! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো ]

রিদোয়ান জারিফাকে টেনে আলাদা একটা নিরিবিলি সাইটে গিয়ে দাড় করালো!

জারিফা : [ অবাক হয়ে ] আপনি এইখানে কেনো আনলেন?…

রিদোয়ান : তোমার সাথে রোমান্স করবো বলে!

[ জারিফা নিজের মুখ নিজে চেপে ধরে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে ]

রিদোয়ান : কি হলো অবাক হচ্ছো কেনো?..দেখো দোষ যখন করেছো পানিশমেন্ট তো পেতেই হবে! [ জারিফার মুখ থেকে হাত নামিয়ে দেই এবং তার অনেকটা কাছে এগিয়ে আসে ]

জারিফা : আরে কি করছেনটা কি [ বলেই রিদোয়ানকে ধাক্ষা দিয়ে দৌড়াতে থাকে ]

এইদিকে,

স্নেহার ছুটে আসার হাজারো চেষ্টার বৃথা দেখে…রাহুল ধীরে ধীরে স্নেহার হাত ছেড়ে দিলো, অমনিই স্নেহা তার দু-হাত দিয়ে রাহুলকে ধাক্ষিয়ে সরিয়ে দেই,

রাগান্বিতভাবে রাহুলের দিক তাকিয়ে স্নেহা তার মুখ মুছে হাপাতে লাগলো,ব্যাগ কাধে নিয়ে দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো,

হঠাৎ সজোড়ে ধাক্ষা খেয়ে থেমে যায়,

জারিফা : আহ! স্নেহা দৌড়াচ্ছিস কেনো?…

স্নেহা : আ..আমি আসলে…তুত..তুই কেনো দৌড়াচ্ছিস!

জারিফা : আ..আমি… তুত তুকে খুজছিলাম!

স্নেহা : ওহ! চল তাড়াতাড়ি, [ বলেই জারিফাকে টেনে নিয়ে নেমে যায় ]

রাহুল হল থেকে বেড়িয়ে আসলে দেখে রিদোয়ান খুব টেনশন ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,

রাহুল : [ গিয়ে কাধে হাত রাখলো ] Alright দোস্ত?

রিদোয়ান : ইয়ার! এই জারিফা নিজেকে কি মনে করে?…আমাকে বারবার এভোইড করছে!

রাহুল : জারিফা?..ইউ মিন স্নেহার ফ্রেন্ড জারিফা?…

রিদোয়ান : [ হাটতে হাটতে ] আরে হ্যা!

রাহুল : ওহ! I see র্যাগিং নিতে গিয়ে ফিদা হয়ে গেলি?…

রিদোয়ান : [ হেসে ] don’t know ইয়ার! একটা আলাদা এট্রেকশন কাজ করে! কেমন জানি…

রাহুল : She is a good girl!

রিদোয়ান : How do you know?…

রাহুল : স্নেহার ফ্রেন্ড! ওকে A to z সব খবর জানি!

রিদোয়ান : [ রাহুলের কোমড় ঝড়িয়ে ] ইয়ার! নাম্বারটা নিয়ে দে না….

রাহুল : আরে কি করছিস! ছাড়..

রিদোয়ান : আরে তুই কেমন দোস্ত রাহুল!

রাহুল : আরে মেয়েদের নাম্বার নিতে তো আমার চেয়ে তুই বেশি এক্সপার্ট! আর তুই উলটা আমার থেকে…

রিদোয়ান : আরে এক্সপার্টটা এখন কাজ করছে না কেনো জানি!

রাহুল : [ চেঁচিয়ে হেসে ] ওকে ওকে!

রিদোয়ান : [ খুশিতে রাহুলের কাধের উপর ঝাপিয়ে উঠে ] থেংক্স দোস্ত!

ক্লাস শেষে সবাই কথা বলতে বলতে বেড়িয়ে যাচ্ছে,

শায়লা : স্নেহা! তোর চশমা কোথায়?…

স্নেহা : [ চোখে হাত দিয়ে দেখে চশমা নেই মনে মনে বলতে থাকে ] আরে! আমিতো চশমাটা ওর কাছেই ফেলে এসেছি!

মার্জান : মনে হয় এইবার ও রাহুলের কাছে চশমা জমা দিয়ে এসেছে!

[ সবাই হেসে উঠে ]

শায়লা : পার্কিং এর দিক দেখ রাহুল তাকিয়ে আছে!

জারিফা : স্নেহা দেখনা! তোর দিকই তাকিয়ে আছে! [ জারিফা রাহুলকে হাত নাড়ালো হঠাৎ পাশে রিদোয়ানকে দেখে লজ্জা পেয়ে হাত নামিয়ে ফেলে ]

স্নেহা : হয়েছে অনেক?..এইবার চল

[ বলেই হাটা শুরু করলো… হঠাৎ কিছুদূর এগিয়ে যেতে না যেতেই রাহুলের গাড়ী তাদের ক্রস্ করে সামনে এসে থামে…সবাই অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে যায় ]

রাহুল জানালা খুলে..স্নেহার চশমাটা এগিয়ে দিলো,

শায়লা : [ স্নেহার কানে ] হুম! এখন ক্লিয়ার হলো চশমা কোথায় ছিলো!

জারিফা : [ স্নেহার আরেক কানে ] ইয়ার! স্নেহা..কি এন্ট্রি ছিলো দোস্ত!

স্নেহা চোখ রাংগিয়ে রাহুলের দিক চেয়ে দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে হাতে চশমাটা এগিয়ে ধরে আছে,

মার্জান : স্নেহা! মাই ডিয়ার চশমাটা নিয়ে নে…আর কিছুক্ষণ হলে হাত ভেঙে পড়ে যাবে,

জারিফা : আরে স্নেহা যাহ না… [ স্নেহাকে ধাক্ষা দিয়ে সামনে এগিয়ে দেই ]

স্নেহা টান দিয়ে চশমাটা নিয়ে নেই! রাহুল একটু হেসে…গাড়ী নিয়ে চলে যায়,

মার্জান : [ এসে চশমাটা স্নেহাকে পড়িয়ে কাধে হাত দিয়ে হাটা শুরু করে ] স্নেহা! মেরি জান আমার না একটা শায়েরি মনে পড়ে গেলো!

“হামনে্ মানা্ কি্ তাগা্ ফুল্ নেহি্ কারোগি্ লেকে্ইন”
“খাগ্ হোযা্ইয়েংগে হাম্ তুমকো্ খাবার হোনে্ তাক্”

[ বাকিরা হেসে উটে ]

জারিফা : ওয়াহ ওয়ায়াহ!

স্নেহা : আরে তোরা এতো সিরিয়াসলি নিচ্ছিস কেনো?…আমি জাষ্ট ওকে ওর জ্যাকেট রিটার্ন করতে গিয়েছিলাম…[ বলেই স্নেহা লজ্জা পেয়ে দৌড়ে হাটা শুরু করে ]

হঠাৎ,

পেছন থেকে ডাক আসে, এক্সকিউজমি!
সবাই ফিরে তাকায়,

নেহা : হ্যালো! চাম্বুস আন্টি!

সবাই অবাক হয়ে একে অপরের দিক তাকাতে লাগলো,

নেহা : হ্যা হ্যা! তোমাকেই বলছি! এক্সুলি তোমার নামটা না আমার মনে থাকেনা! কিন্তু আমি যেটা দিয়েছি ওটাও Not bed! তোমার ক্যারেকটার এর সাথেও মিল আছে!

মার্জান : [ রেগে এগিয়ে গিয়ে ] ও হ্যালো! কাকে চাম্বুস আন্টি ডাকছেন?.. হুম?..

নেহা : Cool! যাকে ডেকেছি সে বুঝে নিয়েছে! [ বলেই স্নেহার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো ] So মিস্ চাম্বুস..আপনি না কেয়ারফুল হয়ে যান! রাহুলের পিছে এমন অনেকেই ভাগছে কিন্তু No chance আর তোমার সাথে তো রাহুলের প্রশ্নই আসে না আই মিন্ আপ-ডাউন ডিফারেন্স!

[ স্নেহা ভয়ে চশমা ঠিক করতে থাকে ]

মার্জান : [ হেসে ] আচ্ছা! আপ-ডাউন ডিফারেন্স…? So ইউ মিস্ জ্যালাসি্ এতোক্ষণ আমাদের ফলো করছিলে?..

নেহা : Mind your language! আমি তোমার সিনিয়র! ভুলে যেও না!

মার্জান : হুহ! So what? সিনিয়র হয়েছেন বলেই কি গিলে খাবেন নাকি?..আর আমার ফ্রেন্ড এর সাথে কার ম্যাচ হবে..কার সাথে ডিফারেন্স হবে তা আমরাই ভালো বুঝবো! ভালোই হবে যদি আপনি নিজের চরকাই নিজে তেল দেন!

নেহা : লুক! ইটস্ মাই ওয়ার্নিং! রাহুল থেকে দূরেই থাকো… নাহলে এইবার যা হাল করবো না…মুখ তুলেও তাকাতে পারবা না…

মার্জান : আরে যান যান যা করার করেন! উই আর ওয়েটিং!

স্নেহা : [ মার্জানের হাত ধরে ] চল মার্জান!

জারিফা : বাই দ্যা ওয়ে! স্নেহার এখন আর কেউ কিছু করতে পারবে না..কারন [ নেহার দিক চেঁচিয়ে ] রাহুল! বলেছে…

মার্জান : [ জারিফার সাথে তাল মিলিয়ে ] ক্যারেক্ট! এমনই তো বলেছিলো! না নাহ আরো অনেক বলেছে কি যেন জারিফা!?

[ শায়লা হাসতে থাকে তাদের কান্ড দেখে আর স্নেহা ঘাবড়াতে থাকে ]

জারিফা : বলেছে! যেই স্নেহার দিক আংগুল তুলে তাকাবে…তার আংগুল ভেঙে দেবে!

মার্জান : হ্যা! সাথে এটাও বলেছে যে শুধু আংগুল না আংগুলের সাথে বোনাস্ ও দেবে [ নেহার চোখের দিক ইশারা করে ] মানে চোখ গেলে নিয়ে নেবে!

জারিফা : আচ্ছা ঐদিন রাহুল স্নেহাকে কি যেন গান শুনিয়েছিলো?…

মার্জান : হ্যা! ঐ যে কাহো্ না্ পেয়ার্ হে্!

জারিফা : হ্যা তুমসে্ পেয়ার হে! ইয়ার! রাহুল কি রোমান্টিক তাই না!

[ নেহা রেগে ফুফিয়ে মুখ ভেংগিয়ে চলে যায় ]

জারিফা আর মার্জান হাসতে হাসতে হাই ফাইভ করে ঝড়িয়ে ধরে,

মার্জান : আসছে বরং ওয়ার্নিং দিতে! নিজেকে কি ভাবে বলতো! এসব ওয়েষ্টার্ণ ড্রেস পরে..যে কেউই মডেল হতে পারবে!

জারিফা : আমাদের স্নেহাকেতো ওয়েষ্টার্ণ ড্রেসে আরো ফাটাফাটি লাগবে!

শায়লা : তোরা যখন! ঐগুলো বলছিস! আমার না ওর এক্সপ্রেশন দেখে..পেট ফেটে হাসি আসছিলো! বাই দ্যা ওয়ে! রাহুল ওসব তোদের কবে বললো বলতো..?আংগুল ফেলে দেবো চোখ গেলে নেবো!

মার্জান : আরে ধুর ওসব তো ঐ মিস্ জ্যালাসি্কে জ্যালাস্ করানোর জন্য বললাম!

[ সবাই হেসে উঠে হঠাৎ মার্জান স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা আপসে্ট হয়ে হাটছে ]

মার্জান : আরে স্নেহা! তুই আপসে্ট হয়ে আছিস কেনো?…[ স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে ] তুই ওকে ভয় পাচ্ছিস?…আরে রাহুল তোকে কেয়ার করে ওকে পাত্তা দেই না বলেই ও তোর উপর জ্যালাস্

স্নেহা : আমার মনে হয়! ও রাহুলকে…

জারিফা : ও রাহুলকে কি?..হুম?..দেখ স্নেহা ও হয়তো রাহুলের পিছে পাগল! কিন্তু রাহুলতো তোর পিছে তাই না?..[ বলেই চোখ টিপ মারে ]

স্নেহা : হয়েছে অনেক তোরাও না! এবার বাড়ী চল!

জারিফা : [ হেসে ] আরে স্নেহা লজ্জা পাচ্ছিস কেনো…

বিকেলে,

স্নেহা তৈরী হচ্ছে ডান্স ক্লাসের জন্য!

জারিফা : আচ্ছা গাইস্ আজ দেখেছিস! মার্জান না রাহুলের অনেক তারিফ করেছে!?

মার্জান : তোর মানুষের পেছনে লেগে না থাকলে হয়না?…

জারিফা : আরে রিলেক্স! আমি তো বাজিয়ে দেখছি!

মার্জান : বাজাতে তো আমার ওর মাথায় ইচ্ছে করছে!

জারিফা : কার?..

মার্জান : মিস্ জ্যালাসি্র আর কি..

ঐ ইডিয়ট নিজেকে কি মনে করে বলতো! ওর কথায় না আমার মাথার রক ট্যারা করে দিয়েছে কাল ভার্সেটি গিয়েনি একবার তারপর দেখিস কি করি!

স্নেহা : গাইস্ এতো সিরিয়াস্ হয়ে যাচ্ছিস কেনো তোরা?..ওদের গ্যাংগ দেখিসনি কি ভয়ানক ওরা সিনিয়র অনেক কিছুই করতে পারে! আমাদের উচিৎ ওদের থেকে দূরে দূরে থাকা…

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] আরে আরে! আমি কি ওদের গ্যাংগ কে ভয় পায় নাকি?..

স্নেহা : দেখ আমি এখন থেকে রাহুলের কাছ থেকে দূরে দূরে থাকবো! তারপর দেখবি নেহা ও ঠান্ডা হয়ে যাবে!

মার্জান : [ স্নেহাকে টেনে তারপাশে বসিয়ে ] দূরে দূরে থাকবি মানে?..এখন থেকে তুই রাহুলের আরো কাছে কাছে থাকবি! [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] আমি দেখবো ঐ নেহার কান্ড! আমি দেখতে চাই ওর এক্সপ্রেশন!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ইয়েস্ আমার তো অপেক্ষায় হচ্ছে না..কাল কখন ভার্সেটি যাবো!

স্নেহা : [ দাঁড়িয়ে ] সব পাগল হয়ে গিয়েছিস নাকি?..তোদের সাথে থাকলে আমিও পাগল হয়ে যাবো আমি যাচ্ছি ডোর অফ করে দিস!

মার্জান : জি! টিচার! যাহা আপনার আদেশ… [ স্নেহা হেসে মার্জানের গাল টেনে দিয়ে বেড়িয়ে যায় ]

স্নেহা : [ মনে মনে ভাবতে ভাবতে হাটতে লাগলো ] ঠিকই তো আমার আর রাহুলের মধ্যে অনেক ডিফারেন্স! কোথায় আমি আর কোথায় রাহুল! নেহা তো অনেক সুন্দর ষ্টাইলিশ! কিন্তু রাহুল ওকে এভোইড করে কেনো?..[ কিছুক্ষণ ভেবে ] মার্জান বলেছিলো ও সবসময় মেয়ে নিয়েই থাকে, কোনো আমাকে ও ইউজ করছে না তো?..আর আজ ভার্সেটিতে যা করলো ছিঃ এভাবে বিনা পার্মিশনে কেউ করে নাকি?..

হঠাৎ শা…করে পাশ কেটে একটা গাড়ী স্নেহার সামনে এসে দাঁড়ায়! আর স্নেহা ঘাবড়ে উঠে…গায়ের লোম সব খাড়া হয়ে গেছে স্নেহার! [ মনে মনে রেগে গাড়ী ওয়ালাকে বকছে এভাবে কেউ গাড়ী থামায় নাকি?..হার্টের রোগী থাকলে এতোক্ষণে ষ্ট্রোক করে ফেলতো ]

ধীরে ধীরে গাড়ীর গ্লাস নামছে…এবং দেখে ব্লাক জ্যাকেট ব্লাক সানগ্লাস কিছু চুল খাড়া করিয়ে রেখেছে..সেই পুরোনো তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে,

স্নেহা : আপনি?..এভাবে কেউ গাড়ী থামাই নাকি?..

রাহুল : গাড়ীতে উঠো!

স্নেহা : কেনো উঠবো?…

রাহুল : আগেই বলেছি কথা রিপিট করতে আমার ভালো লাগে না!

পেছন থেকে কিছু গাড়ী ওয়ালারা চেঁচিয়ে উঠে,

– আরে ভাই গাড়ী সরান! রাস্তার মাঝে কেউ এভাবে গাড়ী থামাই নাকি?…

– ও হিরো! প্যাসে্ঞ্জার গালি দিতাসে্ তাড়াতাড়ি সাইড করেন আমাদের ও তো যাওয়া লাগবো!

স্নেহা : দেখেন আপনার জলহস্তীটা এইখান থেকে সরান! রাস্তা জ্যাম হয়ে যাচ্ছে দেখছেন না?…

রাহুল : গাড়ীতে উঠো!

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] কি আজিব এমন কেনো আপনি?..সব আপনার ইচ্ছেতেই হবে নাকি?..দেখেন আমার ক্লাসের লেইট হয়ে যাচ্ছে…আমি যাচ্ছি! [ বলেই স্নেহা হাটা শুরু করে রাহুল রাগান্বিত ভাবে তাকিয়ে থাকে ]

হঠাৎ কানের কাছে জোড়ে গাড়ির হর্ণ বেজে উঠে… স্নেহা শুনে তাও হাটছে…কিন্তু হর্ণ বাজা বন্ধই হচ্ছেনা…তার উপর আশেপাশে গাড়ী ওয়ালাদের চেঁচামেচি! স্নেহা পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে…রাহুল এখনো তার গাড়ী ঐভাবে দাঁড়িয়ে করে রেখেছে! আর ও পাসে ইয়া বড় লম্বা জ্যাম লেগে যাচ্ছে!

স্নেহা : [ আবার রাহুলের দিক এগিয়ে আসলে রাহুল হর্ণ বাজানো বন্ধ করে ] কি হচ্চে এইভাবে হর্ণ বাজাচ্ছেন কেনো…জোড়ে হর্ণ বাজানো শব্দ দূষণে পরিণত করে, আপনি পড়েন নি?..

রাহুল চোখ দিয়ে স্নেহাকে গাড়ীর সিটে্র দিক ইশারা করে বসার জন্য!

স্নেহা আবারো কিছু বলতে যাবে…তখনি রাহুল আবার হর্ণ বাজানো শুরু করে আর না পেরে বিরক্ত হয়ে স্নেহা গাড়ীর দরজা খুলে বসে পড়ে, রাহুল গাড়ী টান দেই!?

গাড়ী চলছে…কারো কোনো সাড়া শব্দ নেই!

হঠাৎ,কিছুক্ষণ পরে,

স্নেহা : আরে আপনি এইদিকে কোথায় যাচ্ছেন?…

রাহুল কিছু না বলে সোজা তাকিয়ে গাড়ী চালাতেই আছে…মুখের মধ্যে কি যেন চিবাচ্ছে!

স্নেহা : দেখেন! আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি! আমার ক্লাসে যেতে হবে দেরী হলে…বাচ্চারা এসে ফেরত যাবে!

রাহুল স্নেহাকে একটা চুইংগামের প্যাকেট এগিয়ে দেই খেতে…

স্নেহা : [ নাক ফুলিয়ে চুইংগাম হাতে নিয়ে জানালা দিয়ে ফেলে দেই ]

[ রাহুল হেসে দেই ]

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আজিব মানুষ তো আপনি?..হাসছেন কেনো?..কোনো জবাবই দিচ্ছেন না…

[ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ]

গাড়ী থামান প্লিজ! আমি নামবো! [ রাহুল কিছু জবাব দিলো না ]

স্নেহা : আরে কি হলো?..কিছু বলছেন না কেনো?..

[ রাহুল সুইচ্ টিপ দিয়ে গান ছেড়ে দিলো ] রানবির কাপুরের বেশারাম মুভির একটা গান বেজে উঠলো,

♪♪ দিল্ কা্ জো্ হাল হে্
বো্ তুজে্ কেসে্ বায়া্ কারে্
কেহেনে্ তুঝে্ ইয়া্ দিল্ মেরাপে্ বলো্ না্ কিয়া্ কারে্.. ~~~~

♪♪ দিল্ জো্ তুমহারা্ হে্ কেসা্ বেচা্রা হে্ মানে্ না্ বেশা্রাম্ বিল্কুল্ খাট্টা্ রাহে্

তু্ কারে্ দিল্ বেকা্রার♪

কিউ~~ কারু্ মে্ তুঝ্ছে পিয়া্র ♪♪

সাথে রাহুল ও গুনগুনিয়ে গাইতে লাগলো,

হুট করে টিপ দিয়ে স্নেহা গানটা বন্ধ করে দেই!

রাহুল স্নেহার দিক একবার তাকিয়ে দেখে রেগে মেয়েটা লাল হয়ে গেছে…তবে রাহুলের অনেক মজা লাগছিলো তাই আবার তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ী চালাতে লাগলো…

স্নেহা : [ কোণা চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে মনে মনে ] মানুষ যেমন তেডি হাসিটাও তেমন তেডি…

হঠাৎ গাড়ী একটা সুন্দর গেইট দিয়ে ঢুকলো! চারদিক বাগান মাঝে সরু একটা নিরবিলি রাস্তা…স্নেহা মাথা বের করে সাইনবোর্ড পড়ে দেখে… মার্মিড হাউজ!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] ওয়াও মার্মিড হাউজ,..কি সুন্দর জায়গা.. ছোট বেলায় শুনেছিলাম এইখানে জলপরীরা থাকতো,
জানেন আমি এইখানে অনেকবার আসার ট্রাই করেছি..কিন্তু যতোবারই এসেছি দূর থেকেই দেখে চলে গিয়েছিলাম…..[ সবকথা একশাসে বলে ফেলে… রাহুলের দিক তাকালে ]

রাহুল : দূর থেকে দেখে কেনো চলে গিয়েছিলে?…

স্নেহা : আরে! এইখানে ঢুকতে যতোটাকা লাগে…ঐ টাকায় আমার ফ্যামিলি ৩/৪মাস চলে যেতে পারবে!

রাহুল গাড়ী থামিয়ে একটু হেসে… নেমে স্নেহাকে ও গাড়ী থেকে নামায়,

স্নেহা : কিন্তু আপনি আমাকে এইখানে কেনো আনলেন?…

রাহুল স্নেহার হাত ধরে ভেতরে ঢুকে গেলো, সিকিউরিটি গুলো রাহুলকে হ্যালো জানালো সাথে স্নেহাকে ও জানালো…

ভেতরে ঢুকে স্নেহা যা দেখতে পেলো…সবার ড্রেস এর তুলনায় স্নেহার ড্রেস কিছুই না…বাকিরা পড়ে আছে ওয়েষ্টার্ণ, আর স্নেহার পড়নে আছে একটা হোয়াইট লং স্কার্ট ব্লু লংহ্যান্ড টি-শার্ট, আর গায়ে পেছানো ব্লু-ব্লাক কম্বিনেশন এর একটা শাল!, কাধে হ্যান্ড বেগ!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে বুঝতে পারলো স্নেহা বাকিদের দেখে uncomfortable ফিল করছে..] স্নেহা! এতো uncomfortable ফিল করছো কেনো ? রিলেক্স থাকো…

স্নেহা : সবাই আমার দিক কিভাবে তাকিয়ে আছে দেখেন..প্লিজ চলেন এইখান থেকে…[ বলেই রাহুল থেকে হাত ছুটানোর চেষ্টা করছে ]

রাহুল : Shut-up স্নেহা এতো টানাটানি করছো কেনো…. রিলেক্স হয়ে হাটো!

[ রাহুল স্নেহাকে নিয়ে লিফটে ঢুকলো এবং ১৪ নম্বর বাটনে টিপ দিলো তা দেখে ]

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] কোথায় যাচ্ছি আমরা?…

রাহুল : [ স্নেহাকে টেনে তার আরো পাশাপাশি দাড় করালো ] গিয়েই দেখো!

স্নেহা : দেখেন আমার না আপনার কোনো মতলব ঠিক লাগছে না…[ বলেই গ্রাউন্ড বাটনে টিপ দিতে গেলো…রাহুল স্নেহাকে আবার টেনে তার কাছে চেপে ধরে রাখে…স্নেহা ছুটাছুটির চেষ্টা করেও বৃথা ]

লিফট ১৪নং ফ্লোরে এসে পৌছালো…রাহুল স্নেহার হাত ধরে লিফট থেকে বেড়িয়ে আসে, একপাশ থেকে আওয়াজ আসে,

– মিষ্টার রাহুল!

রাহুল : হেই ম্যালিসা্ হাউ আর ইউ?..

ম্যালিসা্ : অলরাইট! হাউ এবাউট ইউ?..

রাহুল : ওয়েল! অহ! শি ইজ স্নেহা! [ বলেই স্নেহাকে পাশে টেনে নিলো ]

ম্যালিসা্ : হ্যালো স্নেহা!

স্নেহা : হাহ..হাই!

ম্যালিসা্ : ওকেই গাইস্ নাইস্ টু মিট ইউ এন্ড এনজয় ইউর ডে! [ বলেই রাহুলের হাতে একটি কার্ড এগিয়ে দেই ]

রাহুল : [ কার্ড হাতে নিয়ে ] কাম স্নেহা!

স্নেহা : [ রাহুলকে ফিসফিসিয়ে ] ইনি কে?

রাহুল : [ চোখ মেরে ] আমার এক্স!

স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] আপনার এক্স…? আপনি ফরেনার এর সাথেও প্রেম করেছিলেন?..

রাহুল : কেনো ওরা কি মানুষ না?..

স্নেহা : না তা হবে না কেনো?..কিন্তু মনে হচ্ছে আপনি ওনার অনেক ছোট হবেন!

রাহুল : ছোট বড়ই কি আছে লাভ ইজ লাভ! এটার কোনো এক্সপ্লেশন নেই!

স্নেহা : আপনি মজা করছেন তাই না?..

রাহুল : [ হেসে ] নো আই এম সিরিয়াস স্নেহা!

স্নেহা : কারণ আমি এইখানে সেইম চেহেরার অনেকগুলো ম্যালেসা্কে দেখছি!

[ এইবার রাহুল নিজেই কিটকিটিয়ে হেসে উঠে এবং কার্ডটা একটা মেশিনে প্রেস্ করলো সাথে সাথে একটা দরজা খুলে গেলো.. স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে..]

রাহুল স্নেহার হাত ধরে ভেতরে ঢুকতেই দরজা আপনা আপনি বন্ধ হয়ে গেলো…

স্নেহা চারপাশ চোখ ঘুরিয়ে অবাক হয়ে দেখছে…যেন লাগছে ও কোনো আউট কান্ট্রিতে আছে! চারদিক ফ্লাওয়ার আর ক্যান্ডেলাইট দিয়ে সাজানো…

স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো,

রাহুল : শকড হওয়ার কিছু নেই!

স্নেহা : [ চোখে মুখে এক্সাইটমেন্ট নিয়ে ] নাইস্ আচ্ছা! আপনি আমাকে এইখানে কেনো আনলেন?..

রাহুল : সি্ট ফার্ষ্ট [ বলেই একটা চেয়ার স্নেহাকে বসার জন্য এগিয়ে দিলো… স্নেহা কথা না বাড়িয়ে বসে গেলো.. রাহুল ও স্নেহার পাশে একটা চেয়ার টেনে বসে গেলো.. তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে রইলো স্নেহার দিক ]

স্নেহা : [ নিচের দিক তাকিয়ে ] এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?..

রাহুল : তুমি তাকিয়ে থাকার মতোই তাই!

স্নেহা : আ..আপনি বলেছিলেন আমার চোখ চাইনিজদের মতো, নাক বোচা, তাহলে তাকিয়ে থাকার মতো কই হলো?..

[ রাহুল হেসে অন্যদিক ফিরে গেলো ]

স্নেহা : হাসছেন কেনো?..আপনি আমাকে বোকা পেলেন নাকি?

রাহুল : বোকা তো ভেবেছিলাম কিন্তু আজ কিস্ করার সময় তুমি যে কামড়টা দিয়েছিলে এরপর বুঝে গিয়েছি…তুমি বোকা না আমিই বোকা!

[ স্নেহা লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলে ]

রাহুল ধীরে ধীরে স্নেহার হাতটা তার হাতের মুঠোই বন্ধি করে নিলো…

স্নেহার বুকটা ধুপ ধুপ করছে…এই স্পর্শে স্নেহার গা শিউরে উঠে,

চলবে….

 Love At 1st Sight  Season 3 Part – 9

0

 

 Love At 1st Sight 
~~~Season 3~~~

Part – 9

Writter : Jubaida Sobti

রাহুল চলে যাওয়ার পর…জ্যাকেট টা..পরে নিলো স্নেহা!

আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখছে! অনেকটাই ঢিল হয়েছে..তবে শীত মানানোর জন্য চলবে! চলেই যাচ্ছিলো হঠাৎ আবার থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে!

স্নেহা : [ মনে মনে ] ও তো চলেই গেছে…তবে এমন কেনো লাগছে…যে ও আমার পাশেই আছে!

হঠাৎ স্নেহা জ্যাকেটের দিক খেয়াল করলো… এবং ধীরে ধীরে কলারের দিকটা মুখের কাছে এনে জ্যাকেটের স্মেল নিতে লাগলো! [ বুকটা ধুপ করে উঠলো স্নেহার ] এবার বুঝতে পারলো কেনো এমন লাগছিলো যে রাহুল তার পাশেই আছে, তাড়াতাড়ি জ্যাকেটের পজিশন ঠিক করে পড়ে নিলো! কিছুক্ষণ Silent হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো…[ with blushing ]

নিচে নেমে এসে দেখে…রাহুল গাড়ীতেই বসে আছে…স্নেহা ও গিয়ে কিছু না বলে গাড়ীতে উঠে পড়ে…অলরেডি নামতে দেরী করে ফেলেছে…

রাহুল ও আর কিছু না বলে সোজা তাকিয়ে গাড়ী চালাচ্ছে…স্নেহা একটু অবাক হলো আজ শুধু গাড়ীই চালাচ্ছে একবার ও ফিরে তাকাচ্ছে না…

কিছুক্ষণ পর,

স্নেহা : আপনি এখনো বলেননি..আমাকে আপনার বাসায় কেনো এনেছেন?

রাহুল : No No…স্নেহা! তুমি ড্রাইভিং রুলস্ জানো না?.. আগে ড্রাইভিং তারপর কথা! ড্রাইভিং করার সময় এদিকওদিক তাকাতে নেই!

স্নেহার হাসি চলে আসাতে জানালার পাশফিরে হাসতে লাগলো… রাহুল ও সামনে তাকিয়ে তেডি স্মাইল দিতে লাগলো…

রাহুল : নাইস্ [ স্নেহা ফিরে তাকালে ] স্মাইল!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ] Black Sunglass not save for drive!

রাহুল : You know স্নেহা! তোমার না…ডান্সার না হয়ে…টিচার হওয়া উচিৎ ছিলো…কথায় কথায় এডভাইস্ দিতে পারো… মানে মাথার মধ্যে সে্ট করা থাকে এগুলো তাই না…

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে থেকে ] কিন্তু দেখতে ভালো লাগছে..

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] What?…

স্নেহা : না নাহ!..বলছিলাম যে সানগ্লাসটা দেখতে ভালো… আপনার… মানে সানগ্লাস দেখতে..

রাহুল : রিলেক্স! [ with tedi smile ] feeling better?..

স্নেহা : হুম হুম! [ বলেই পাশ ফিরে যায়,আর মনে মনে ভাবতে থাকে..] রিলেক্স স্নেহা রিলেক্স…কি বলতে কি বলে ফেলছিস…

রাহুল স্নেহার বিহেভিয়ার দেখে তেডি স্মাইল দিতে থাকে…

বাড়ী এসে পৌছালো…স্নেহা গাড়ী থেকে নামলে,

বারান্দা থেকে জারিফা খুশিতে স্নেহা বলে চেঁচিয়ে উঠে…

রাহুল : [ নেমে এলো গাড়ী থেকে…] Listen! আজ ভার্সেটি আসার প্রয়োজন নেই! বুঝলে?..[ স্নেহার কাছে এসে কপালে হাত দিয়ে ] ফেভার তো নেই..হুম! চাইলে আসতে পারো.. [ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে গেলো ]

জারিফা, মার্জান,শায়লা: [ দৌড়ে এগিয়ে এসে স্নেহাকে জড়িয়ে ধরে ]

জারিফা : স্নেহা…মেরি জান! কোথায় গিয়েছিলি?..

মার্জান : কার সাথে গিয়েছিলি স্নেহা?..আমরা পাগলের মতো খুজছিলাম তোকে…

শায়লা : সারারাত টেনশন হচ্ছিলো…স্নেহা বলনা কোথায় গিয়েছিলি কার সাথে গিয়েছিলি?..

স্নেহা রাহুলের দিক কোণা চোখে তাকালে দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের কান্ড দেখছে! স্নেহা তাকাতেই রাহুল চোখ টিপ মারে!

স্নেহা : [ তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে ] আরে সবাই একসাথে..এইভাবে জিজ্ঞেস করলে কেমনি বলবো…

রাহুল : আমি বলছি! [ এগিয়ে এসে পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়ায় ] আসলে! ব্যাপারটা এমন ছিলো…কেউ একজন বেহুশ হয়ে গিয়েছিলো…এবং স্নেহা তাকে বাচাতে গিয়ে নিজেই বেহুশ হয়ে যায়,

[ স্নেহা নাক ফুলিয়ে রাহুলের দিক তাকায় ]

মার্জান : What?..কিন্তু কে বেহুশ হয়েছিলো?..[ স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে ] আর তুই?..স্নেহা তুই কোথায় ছিলি?..

শায়লা : আরে মার্জান সব প্রশ্ন রাস্তায় করবি নাকি?..আগে ভেতরে চল রিলেক্স হয়ে বয়..তারপর সব Discuss করিস! চল চল!

জারিফা : [ রাহুলের হাত টেনে ধরে ] আরে হিরো! আপনি কোথায় যাচ্ছেন বলেন তো?.. [ রাহুল অবাক হয়ে তাকায় ] আরে…অবাক হওয়ার কি আছে…এতো কষ্ট করে আমাদের ফ্রেন্ডসকে খুজে দিয়েছেন এক কাপ কফি তো অন্তত খেয়ে যেতে হবে!

রাহুল : ওহ! No Thank you so much! নেক্সট টাইম ওকে!

মার্জান : [ এগিয়ে এসে ] Thank you! তো আমাদের আপনাকে বলা উচিৎ আসলে! Thank you! বললেও কম হবে,

রাহুল : দ্যাটস্ ওকে!

জারিফা : [ রাহুলকে টেনে ] দ্যাটস্ ওকে! বললে চলবে না…কফি তো আমাদের সাথে খেতেই হবে!

রাহুল : Listen!

মার্জান : থাক বাদ দে! জারিফা! আমরা গরীব মানুষ! আমাদের ঘরের কফি কি উনি খাবে নাকি?…

রাহুল : Okay Okay fine! I am coming!

জারিফা : That’s my boy! [ বলেই রাহুলকে টেনে ভেতরে নিয়ে চলে গেলো ]

বাকিরা হাসতে থাকে,

সবাই কফি সামনে রেখে টেবিলে বসে আছে! স্নেহা মাথা মুছতে মুছতে ওয়াসরুম থেকে বের হলো…হঠাৎ চোখ গেলো রাহুলের দিক…রাহুল হা করেই দেখে আছে স্নেহার দিক…স্নেহা তাড়াতাড়ি ভেতর রুমে চলে গেলো…

রাহুল : [ মনে মনে হেসে ] আমার কাছ থেকে ভাগছে..কিন্তু আমার সামনেই এসে পরে…কখনো Without শাড়ী, আবার কখনো Without ওড়না..How funny!

চুল ঠিক করে,ওড়না গায়ে দিয়ে…স্নেহা ও এসে টেবিলে বসলো…

জারিফা : [ রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে থাকায় ] ছানি পড়ে যাবে, [ সবাই অবাক হয়ে জারিফার দিক তাকালে ] আহ! I mean কফিতে!

শায়লা : স্নেহা! এবার বল গতকাল কই ছিলি কি হয়েছে!

মার্জান : হ্যা স্নেহা! বলনা…আমার তো টেনশনে জান চলে যাচ্ছে!

জারিফা : What?..জান চলে যাচ্ছে?..কিন্তু তুই তো এখনো বেচে আছিস!

মার্জান : দেখ জারিফা! তুই চুপ থাক কিছুক্ষণ..আমার হাতে কিন্তু এখন গরম কফি আছে!

জারিফা : না প্লিজ! গরম মাড়িস না…ঠান্ডা করে মাড়িস!

রাহুল : Listen guys! তোমরা কফি মারামারি করতে গিয়ে আমার গায়ে মেরে দিওনা…আমি মিডলে আছি!

[ সবাই হেসে উঠে ]

জারিফা : আরে আপনাকে কিভাবে মারবো.. আপনি তো স্নেহাকে খুজে এনে আমাদের হেল্প করেছেন… বাই দ্যা ওয়ে… [ গলা ঝেড়ে ] মিষ্টার রাহুল! ইথনা মেহনত কিস্কিলিয়ে?…হুম হুম?…

রাহুল : স্নেহা!

[ সবাই অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো! স্নেহা কফি মুখে কাশতে লাগলো ]

রাহুল : পানি! পানির গ্লাসটা দাও স্নেহা!

স্নেহা রাহুলের দিক কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে কাপা হাতে পানির গ্লাসটা রাহুলের দিক এগিয়ে দিচ্ছে, সবাই স্নেহার হাতের দিক তাকিয়ে আছে…স্নেহার হাত কাঁপছে চারদিক পানি ছিটে পড়ছে…রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার হাত থেকে পানির গ্লাস এগিয়ে নিতে হাতের স্পর্শ লাগলো.. স্নেহার হাত আরো কেপে উঠলো…

রাহুল : You Ok স্নেহা?.. [ with tedi smile ]

[ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুল : I think পানি গুলো তোমার খাওয়া উচিৎ! দেখো হাত কাঁপছে তোমার!

স্নেহা কিছু না বলে উঠে রুমে চলে যায়, মার্জান ও স্নেহার পিছু পিছু এগিয়ে গেলো…

মার্জান : স্নেহা! তুই ঠিকাছিস?..

স্নেহা : হ্যা! ঠিকাছি!

মার্জান : [ স্নেহার কাধে হাত রেখে! ] বাই দ্যা ওয়ে! স্নেহা..মাই ডিয়ার…কি চলছে বলতো?…

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] মানে?..

মার্জান : তুই আর রাহুলের মধ্যে!

স্নেহা : কি আজিব কথা বার্তা বলছিস?…

এইদিকে,

জারিফা : I am confused!

রাহুল : [ কফি খেতে খেতে ] Why?..

জারিফা : আপনি…আমার প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলেন নাকি?..সত্যি সত্যি পানিই খুজেছিলেন!

রাহুল : Confused হওয়ার কি আছে?..ভেবে দেখো!

জারিফা : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে চেঁচিয়ে উঠে ] Oh my god! that means আপ..আপনি আমার প্রশ্নের..

শায়লা : আমিতো তখনি ধরেছিলাম এটা ওটারই জবাব ছিলো!

রাহুল : [ শায়লার দিক আংগুল দেখিয়ে ] ইয়াহ! You are very intelligent!

শায়লা : Yes! I m..

জারিফা : এই এতো খুশি হওয়ার কি আছে?..আমিও তাই ভেবেছিলাম কিন্তু একটু তাও কনফিউজড ছিলাম আরকি!

[ স্নেহা আর মার্জান এগিয়ে আসে ]

শায়লা : স্নেহা! কি হয়েছে তুই ঠিকাছিস?…

স্নেহা : [ রাহুলের দিক একবার তাকিয়ে আবার শায়লার দিক তাকিয়ে ফেলে ] হ্যা! আমি ঠিকাছি!

জারিফা : দেখে তো মনে হচ্ছে না ঠিকাছিস!
[ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আপনি জানেন..স্নেহা অনেক ভালো রান্না পারে! আমরা তো ওকে সবসময় বলি…ওর হ্যাসবেন্ড অনেক লাকি হবে! আর ওর রান্না খেয়ে সবসময় উমম! উমম! করবে..

রাহুল : রিয়েলি!

জারিফা : [ মাথা নাড়িয়ে ] ইয়েস্

মার্জান : [ হেসে ] আর তোর রান্না খেয়ে…

জারিফা : দেখ ইনসাল্ট করবি না বলেদিলাম..

মার্জান : ওকেই!

রাহুল : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] Okay guys! see you later! [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] Bye! [ with tedi smile ]

জারিফা : Bye!

মার্জান : [ স্নেহার কানের কাছে এসে ] Bye বলবি না স্নেহা?..[ স্নেহা অবাক হয়ে মার্জানের দিক তাকায় ] আরে অবাক হওয়ার কি আছে…সবই তো বোঝা যাচ্ছে..

[ স্নেহা কিছু না বলে আবারো ভেতর রুমে চলে যায় ]

মার্জান হাসতে থাকে, [ রাহুল চলে যায় ]

স্নেহা…খাটে বসে আছে…মনটা কেমন যেনো ছটফট করছে…কি হচ্ছে তার সাথে সে কিছুই বুঝছে না…হঠাৎ চোখ গেলো রাহুলের জ্যাকেটের উপর….

ধীরেধীরে জ্যাকেটটা হাতে নিয়ে আবারো স্মেল নিতে লাগলো.. আর ব্লাশিং হতে লাগলো…

হঠাৎ রুমে..মার্জান, জারিফা এবং শায়লার এন্ট্রি…

স্নেহা তাড়াতাড়ি জ্যাকেট টা…হাত থেকে রেখে দেই…কিন্তু বাকিরা তা ঠিকই notice করলো…

মার্জান : [ স্নেহাকে শুনিয়ে ] জারিফা..মাই ডিয়ার এই রাহুলকে না আমরা যতোটা খারাপ ভেবেছিলাম আসলে ততোটাও খারাপ না..তাই না..

জারিফা : Absolutely Right!

শায়লা : আসলেই…

মার্জান : কিন্তু তাও কি?..চ্যাছড়া তো চ্যাছড়াই থাকবে…গার্লস্ পার্টি.. লেইট নাইট পার্টি…ব্যাচেলার পার্টি,

স্নেহা : কিন্তু ওসব তো..ওর ক্যারেক্টারে পড়ছে না…

মার্জান : আচ্ছা তাই?..কিন্তু আমিতো বেশীরভাগই ওকে মেয়েদের সাথেই ঘুরতে দেখি!

জারিফা : আরে মেয়েগুলোই ওর পেছন ঘুরতে থাকে… ও মেয়েদের পেছন ঘুরবে ইম্পসিবল তাই না স্নেহা!

মার্জান : বাইরে এই অবস্থা! না জানি বাসায় কি কি করে…

স্নেহা : আরে না! বাসায় তো ও একাই থাকে…

মার্জান : কেনো?..ওর মা, বাবা,ফ্যামিলি?..

স্নেহা : [ ইমোশনাল হয়ে ] ওর মা-বাবা একসাথে থাকে না…বেচারা ছোট থেকেই একা একা কাটিয়েছে…বাহির থেকে দেখতে যেমন..আসলেই ও তেমনটা না…

সবাই এক একজনের দিক একজন তাকিয়ে একসাথে এগিয়ে এসে স্নেহার পাশে বসে,

মার্জান : [ ইমোশনাল হয়ে ] So sad! বেচারা!..কতো আফসোস হচ্ছে তাই না স্নেহা!

এবার স্নেহা লক্ষ্য করলো সবাই ইচ্ছে করেই তার মজা নিচ্ছে,

শায়লা : আরে হ্যা! আমরা তো ওকে কি না কি ভেবে বসেছিলাম…ওর তো দুঃখ্য ভরা Past আছে!

মার্জান : কিন্তু স্নেহা! I have one question! [ স্নেহার কানের কাছে এসে ] তুই এতোসব কি করে জানলি?…

স্নেহা : [ ঘাবড়ে গিয়ে ] আ…আমি…ও..[তোতলাতে লাগলো ]

জারিফা : আরে আরে! রাখ তোদের Past…আমিতো present দেখছি, [ জ্যাকেটটা হাতে নিয়ে ] স্নেহা..স্মেলতো অনেক নিয়েছিস…এবার বল পার্ফিউমটা কোন ব্রান্ডের ছিলো!

স্নেহা লজ্জা পেয়ে উঠে চলে যাচ্ছিলো…

জারিফা : [ স্নেহার হাত ধরে কাছে টেনে নেই ] এখন বল…গতকাল রাত কি কি হয়েছে রাহুলের সাথে হুম হুম?..

স্নেহা : [ জারিফাকে ধাক্ষিয়ে ] ছিঃ জারিফা! কিসব বকছিস! তেমন কিছুই না…

মার্জান : আচ্ছা! তাহলে ভাগছিস কেনো?…রাহুলের ব্যাপারে আমাদের চেয়ে ও বেশি জানিস এখন…কখন হয়েছে এতোসব কথা?..হুম হুম?.

স্নেহা : আরে ওসব তো ও আমাকে ঐদিন বলেছিলো যেদিন আমি আবার ডান্স ক্লাস জয়েন করেছিলাম…

সবাই অবাক হয়ে তাকালে,

স্নেহা : হ্যা! ডান্স ক্লাস শেষে বাড়ী ফিরছিলাম…তখনি দেখি ও গাড়ি নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে,

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] Then then then…

স্নেহা : তারপর ও ব্লাকমেইল করে আমাকে ওর গাড়ীতে উঠতে বাধ্য করে,

শায়লা : ব্লাকমেইল?.. কিরকম ব্লাকমেইল?..

স্নেহা : বলেছে যদি না উঠি… তাহলে অনেক রকম Way আছে গাড়ীতে উঠানোর…

জারিফা : মানে কিছুটা এমনটাই যদি স্নেহা না উঠতো…তাহলে রাহুল স্নেহাকে.. সবার সামনে কোলে তুলে জোড় করেই গাড়ীতে বসাতো…[ এক্সাইটেড হয়ে ] ওয়াও ইয়ার কি রোমান্টিক… তারপর বলনা..

স্নেহা : তারপর ওর বাড়ী নিয়ে গেলো..

শায়লা : রিয়েলি??

স্নেহা : হ্যা! কতো বড় বাড়ী ছিলো…আমি ভেবেছিলাম…কোনো…ফাইভ স্টার হোটেল হবে…তারপর ওর দাদীর সাথে দেখা করালো…অনেক ভালোছিলো ওর দাদী… তারপর ওর রুমে নিয়ে গেলো.. পরে বললো…ও ঐরুমে থাকে না…পাশের গেষ্ট হাউজে আলাদা থাকে..

শায়লা : আরে কিন্তু কেনো?..

স্নেহা : ওর মা চলে যাওয়ার পর থেকে..ওর বাবার সাথে কথা বলে না…

জারিফা : আচ্ছা তারপর বলনা?..

স্নেহা : তারপর ওর মায়ের পূরোনো গিটার দেখালো…তখন ও আপসে্ট ছিলো…তাই বললাম বাজিয়ে দেখাতে,

জারিফা : আরে ওয়াহ! বাজালো নাকি?..

স্নেহা : হুম!

মার্জান : স্নেহা! মাই ডিয়ার! তুই আমাকে শুধু এটা বল ও তোকে কোন গানটা গাইয়ে শুনিয়েছিলো…

স্নেহা : কা..কাক..কাহো না পেয়ার হে্

জারিফা : [ লাফিয়ে উঠে ] ওয়াহ..স্নেহা ওয়াহ…ও তো তোকে গানদিয়ে ডেডিকেট করে বুঝিয়ে দিয়েছে…ইয়ার স্নেহা…একটু ভেবে দেখ কতো মেয়েই তো ওর আগেপিছে ঘুরে…কিন্তু ও তোকেই কেনো

মার্জান : এমন ও তো হতে পারে…যে ও সব মেয়েকেই সেইম গানটাই শোনায়..

জারিফা : দেখ তুই একটু বেশিই বুঝিস.. সব মেয়েকে কেনো সেইম গান শোনাতে যাবে?..আচ্ছা মানলাম সব মেয়েকে সেইম গান শোনায়…তাহলে গতকাল যখন স্নেহাকে খুজে পাচ্ছিলাম না…তখন অনেক ছেলেই তো ছিলো..কিন্তু তুই গিয়ে রাহুল থেকেই কেনো হেল্প চেয়েছিলি বল বল…?

মার্জান : হ্যা কারণ…ও স্নেহার ডান্স পার্টনার ছিলো…

জারিফা : আচ্ছা?..ওকে সেটাও মানলাম এবার বল…যখন আমরা স্নেহাকে ছাড়া বাড়ী ফিরছিলাম..তখন কার উপর ভরসা করে বাড়ী চলে এসেছিলি?…

[ Everyone silent ]

জারিফা : [ হেসে ] You know মার্জান তুই জানতি রাহুল স্নেহাকে খুজে আনবেই.. কারণ আলাদা একটা কানেকশন আছে…বস্ ?

মার্জান : তোর বাকোয়াস্ শোনার না আমার টাইম নেই! [ স্নেহার দিক ফিরে ]
স্নেহা! তুই বল…গতকাল কি হয়েছে তোর সাথে কোথায় ছিলি…

[স্নেহা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে গতকালের সব ঘটনা খুলে বলে,]

মার্জান : [ রাগান্বিত ভাবে ] কিহ! কে করেছে এসব?..আর…তুই চিৎকার করতে পারিসনি?…

শায়লা : আরে ও বলছে না..ওর মুখে টেপ লাগিয়ে দিয়েছিলো…

জারিফা : কিন্তু স্নেহা! ওরা তোর সাথে উলটা পালটা কিছু করেনি তো…আই মিন্ তুই বুঝতে পারছিস আমি কি বোঝাতে চাচ্ছি?..

স্নেহা : নাহ! তেমন কিছুই করেনি..শুধু বেধে রেখে চলে গিয়েছিলো…আর চেঁচাচ্ছিলাম দেখে শাড়ী টান দেই…

শায়লা : স্নেহা তুই ওখান থেকে ফিরে এলি কি করে?…

স্নেহা : আমার অবস্থা এতোটাই খারাপ হয়েগিয়েছিলো যে ভালো করে চোখ খুলেও তাকাতে পারছিলাম না…কে ছিলো তারা..কেনো আমাকে বেধে রাখা হয়েছিলো আমি কিছুই বুঝতে পারছিলামনা…

মার্জান : তারপর?..

স্নেহা : তারপর দেখি হঠাৎ রাহুল আসে…আমি রাহুলকে দেখে…[ ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ]

[ বাকিরা স্নেহাকে ঝড়িয়ে ধরে ]

জারিফা : Don’t cry মেরি জান!

মার্জান : কে করেছে একবার জানতে পারতাম! একবার ঐ বদমাইশগুলো আমার হাতে লাগুক!

পরদিন ভার্সেটিতে,

ক্লাস চলছে…স্নেহা এদিকওদিক তাকাচ্ছিলো জানালার বাহিরে…

জারিফা : [ ফিসফিস করে ] স্নেহা! মেরি জান! কি হয়েছে বলতো ছটফট করছিস কেনো?…

স্নেহা : নাহ! আসলে একটু গরম লাগছে তাই!

জারিফা : ইয়ার স্নেহা! এতো হট হয়ে গিয়েছিস কবে থেকে?..[ হেসে] উইন্টার সিজনে ও গরম লাগছে…

স্নেহা : Stop it জারিফা! আচ্ছা শোন..তু…তুত তুই…রা..রার রাহুলকে দেখেছিস আজ?..[ বলেই অন্যদিক ফিরে গেলো ]

জারিফা : [ স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে ] হুম হুম…এখন বুঝছি কিজন্য হট লাগছে…?

স্নেহা : না না…আসলে…

জারিফা : হুম?..আসলে?..

স্নেহা : আসলে..ওর জ্যাকেট টা… রিটার্ন করার ছিলো…

জারিফা : ওকে..I understand!

স্নেহা : তুই উলটা পালটা কেনো ভাবছিস! আমি ভেবেছি তুই হেল্প করবি…

জারিফা : ওকে মেরি জান! আমি কবে বললাম হেল্প করবো না… [ স্নেহার হাত ধরে ] চল!

মার্জান : আরে কোথায় যাচ্ছিস জারিফা!

জারিফা : আ..আমার একটু ওয়াসরুমে যেতে হবে!

মার্জান : কিন্তু ক্লাস শেষ করে যা…

জারিফা : ইয়ার! ইমার্জেন্সি!

মার্জান : ওকে ওকে!

[ জারিফা স্নেহাকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো চারদিক খুজে দেখলো ক্যান্টিন, লাইব্রেরী, ক্লাস, কিন্তু রাহুল কোথাও নেই ]

জারিফা : আমার মনে হয়, রাহুল আজ ভার্সেটি আসেনি! আসলে তো আমরা ঢুকার সময় ওকে দেখতাম তাই না..ও তো পার্কিং এর দিকই থাকে,

স্নেহা : কিন্তু আমি ওর গাড়ী দেখেছিলাম!

জারিফা : আচ্ছা?..?

স্নেহা : না মানে হঠাৎ চোখ পড়লো!

জারিফা : তার মানে রাহুল এসেছে! [ কিছুক্ষণ চিন্তা করে ] আরে হ্যা…চল আমরা হলরুমে গিয়ে দেখি! I am sure ও ঐখানেই থাকবে, [ বলেই স্নেহার হাত ধরে নিয়ে চলে গেলো ]

শিরি দিয়ে উঠতেই কারো সাথে ধাক্ষা লাগে…এবং জারিফার ব্যাগ কাধ থেকে পড়ে যায়,

জারিফা : [ শকড হয়ে ] আরে বাপরে!?

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি জারিফার ব্যাগ তুলে তার কাধে পড়িয়ে দিলো ]

স্নেহা : জারিফা! তুই ঠিকাছিস?..

রিদোয়ান : হেই ইউ! আমি তোমাকেই খুজছিলাম!

জারিফা : [ মুখে হাত দিয়ে ] জারিফা আব তো তু গায়া!

স্নেহা : [ জারিফার মুখ থেকে হাত নামিয়ে দিয়ে ] জারিফা! মুখে হাত দিয়ে বললে কেমনি বুঝবো?..

রিদোয়ান : তোমার ঐদিন পার্টিতে আমার সাথে ডান্স করার কথা ছিলো রাইট?..

জারিফা : [ মাথা নাড়ালো ] হ্যা! আসলে..আসলে…

রিদোয়ান : What’s wrong with you?..কি আসলে আসলে! আমার কি ইন্সাল্ট হয়েছিলো জানো?…

হঠাৎ কানের কাছে গিটারের শব্দ ভেসে এলো,

স্নেহা দৌড়ে হলরুমের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো,

রাহুল স্নেহাকে দেখে একটা তেডি স্মাইল দেই! এবং গিটার বাজানো বন্ধ করে হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে যায়!

রাহুলের ফ্রেন্ডসরা দরজার দিক ফিরে তাকায় স্নেহাকে দেখে তারাও বুঝতে পারে…রাহুলের দাঁড়িয়ে যাওয়ার কারণ!

শ্রেয়া : [ স্নেহার দিক দৌড়ে গিয়ে…টেনে ভেতরে ঢুকাই ] স্নেহা! Thank god তুমি ঠিকাছো! জানো ঐদিন কতো টেনশন হয়েছিলো তোমার জন্য!

আসিফ : [ এগিয়ে এসে ] Between আমাদের চেয়েও অন্যকেউ একটু বেশিই টেনশন করেছিলো!

স্নেহা রাহুলের দিক একবার চেয়ে আবার চোখ নামিয়ে ফেলে,

শ্রেয়া : Guys! Come on! বুঝতে হবে তো! [ রাহুলের দিক চোখ মেরে ]

রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে অন্যদিক ফিরে যায়,

স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,এক এক করে রাহুলের ফ্রেন্ডস সবাই বেড়িয়ে যাচ্ছে,

শ্রেয়া : [ নেহা এখনো বসে আছে দেখে ] Come on! নেহা! তোকে আবার আলাদা করে বলতে হবে নাকি?…চল!

নেহা : [ নাক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে যায় রাহুলের দিক একবার তাকিয়ে হনহনিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে আবার স্নেহার দিক দাঁড়িয়ে গিয়ে ] নাইস্ চশমা [ একটু হেসে বেড়িয়ে যায় ]

স্নেহা চশমা ঠিক করে রাহুলের দিক তাকায়…দেখে রাহুল পকেটে হাত দিয়ে তেডি স্মাইল দিতে দিতেই এগিয়ে আসছে…

রাহুল : [ স্নেহার কাছে এসে ] আমি জানতাম তুমি আসবা!

স্নেহা : জি! আপনার! [ ব্যাগ থেকে জ্যাকেট বের করে ] এই জ্যাকেট টা…

রাহুল : [ স্নেহার অনেকটা কাছে আসলে স্নেহা পিছিয়ে গিয়ে টেবিলের সাথে বাড়ি খেয়ে দাঁড়িয়ে যায় ] স্নেহা! You can’t lie to me! জ্যাকেটের বাহানা দেওয়া বন্ধ করো!

স্নেহা : আ..আপনি প্লিজ সরে দাঁড়ান কেউ এসে দেখলে..উলটা পালটা…

রাহুল : [ হাত দিয়ে স্নেহার মাথা তুলে ] So what?..[ With tedi smile ] Miss করছিলে আমায়?..

স্নেহা : না নাতো…আমি সত্যিই আপনার জ্যাকেট…

রাহুল : কিন্তু জ্যাকেট তো… তোমার বাসায় গিয়েছিলাম তখনো দিতে পারতে…

স্নেহা : হ্যা! আসলে…[ চশমা ঠিক করতে থাকে…]

রাহুল : ওকে রিলেক্স! স্নেহা![ with tedi smile ]

স্নেহা : দেখেন আমি জাষ্ট আপনার জ্যাকেটটাই দিতে এসেছি…[ রাহুল স্নেহার চশমাটা খুলে নিলো, ] আরে, চশমা..কেনো…

রাহুল : আমার না তোমার চোখটা দেখার ইচ্ছে…

স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখের উপর হাত দিয়ে দিলো,

রাহুল হেসে স্নেহার চোখ থেকে হাত নামিয়ে নিলো, স্নেহা হাত ছুটিয়ে নিতে চাইলে রাহুল স্নেহার দুনো -হাত দু দিকে ধরে রেখে স্নেহার একদম কাছে এসে দাঁড়ায়…

স্নেহা : আরে, কি করছেনটা কি! ছাড়েন প্লিজ! আমার ফ্রেন্ডস অপেক্ষা করছে..বাহিরে, আমার যেতে হবে…

রাহুল : তো আমি কবে যেতে নিষেধ করেছি [ with tedi smile ]

[ স্নেহা হাতের দিক তাকিয়ে দেখে রাহুল স্নেহার হাত আরো শক্ত করে ধরে আছে…স্নেহা ছুটানোর জন্য টানাটানি করলেও..ছুটিয়ে আনতে পারছে না…রাহুল স্নেহার চোখের দিক তাকিয়ে আছে আর স্নেহার কান্ড দেখে হাসছে ]

রাহুল : এইটুকুতেই হাপিয়ে উঠলে, But No chance… যদি ছুটিয়ে যেতে পারো তাহলে যাও…[ With tedi smile ]

স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো,

[ রাহুল চোখ টিপ মারলে স্নেহা চোখ নামিয়ে ফেলে ]

কিছুক্ষণ পর,

স্নেহা : হয়েছে দেখা?..

রাহুল : মন ভরছে না..

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরে পাগল নাকি?..দেখেন কেউ এসে দেখলে…[ রাহুল হুট করে স্নেহার কপালে একটু চুমু খেলো ]

স্নেহা শকড হয়ে হয়ে যায় কোণা চোখে রাহুলের দিক তাকালে দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে…স্নেহা লজ্জায় রাহুলের চোখে চোখ রাখতে পারছে না…হাত দুটো ও রাহুল চেপে ধরে আছে..চোখের উপর হাত দিতে পারছে না…আর না পেরে চোখ কুচকে বন্ধ করে ফেলে…

রাহুল হেসে,

এই চান্সে স্নেহার ঠোটে চুমু খেয়ে বসলো,

স্নেহা চোখ বড় করে মূর্তি হয়ে গেলো… ছুটার চেষ্টা করলেও রেহাই নেই…রাহুল স্নেহার হাতের মুঠোই হাত রেখে আরো শক্ত করে চেপে ধরে…

চলবে…

Love At 1st Sight ♥ Season 3 Part – 8

0

 Love At 1st Sight 
~~~Season 3~~~

Part – 8

writer-Jubaida Sobti

স্নেহাকে চারদিক খুজে রাহুল হাপিয়ে উঠলো,

আসিফ : রাহুল! টেনশন নিস না! এইখানে কোথাও হবে!

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] টেনশন নিবো না মানে?…স্নেহাকে পাওয়া যাচ্ছে না…আমি টেনশন নিবো না?..

আসিফ : ওকে! ওকে রিলেক্স!

রাহুল : Damn it! কোথায় চলে গেলো না বলে!

শ্রেয়া আর নেহা এগিয়ে আসে তাড়াহুড়ো করে,

শ্রেয়া : আরে রাহুল এইখানে দাঁড়িয়ে আছিস এখনো?

তোর নাম Announced করা হচ্ছে! আর স্নেহা কোথায়?..

আসিফ : তাকেই তো খুজছি!

শ্রেয়া : এখনো খুজছিস?

নেহা : [ রাহুলের কাছে গিয়ে ] বাট্! রাহুল সময়তো পেড়িয়ে যাচ্ছে! [ রাহুলের কাধে হাত রেখে ] তুই যদি চাস আমি পার্টনার হতে পারি!

রাহুল : [ নেহার হাত ঝাড়ি দিয়ে ফেলে ] No need your help!
শ্রেয়া ডান্স ক্যান্সেল কর!

নেহা : বাট! রাহুল!..

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] I say dance cancel!

[ বলেই রাহুল হেটে গাড়ীতে উঠে চলে যায়! ]

প্রোগ্রাম শেষ! রাত প্রায় গভীর, রাহুল গাড়ী নিয়ে ফিরে এসে দেখে…স্নেহার ফ্রেন্ডসরা রাহুলের ফ্রেন্ডসরা সবাই এখনো বসে আছে!

রাহুলের গাড়ী দেখে মার্জান দৌড়ে এগিয়ে আসে!

মার্জান : স্নেহা?

রাহুলের মন খারাপ দেখে…মার্জান বুঝতে পারলো… স্নেহাকে এখনো পাওয়া যায়নি!

সবাই এগিয়ে আসে,

রাহুল : [ স্নেহার ফ্রেন্ডসদের দিক এগিয়ে গিয়ে ] Don’t worry! আমি স্নেহাকে খুজে বের করবো…তোমরা এক কাজ করো বাড়ী যাও! রাত অনেক হয়েছে! আসিফ ওদের ড্রপ! করে দে!

মার্জান : বাড়ী যাবো! স্নেহাকে ছাড়া! পাগল নাকি?..

আসিফ : Guys! try to understand! এখানে আর বেশিক্ষণ থাকা যাবে না!

রাহুল : দেখো ভরসা রাখো আমার উপর! কথা দিচ্ছি আমি!

শায়লা : চল মার্জান! ও যখন বলছে…

জারিফা : [ মার্জানের কানে ] চল আমরা বাড়ী গিয়ে চেক করি! এটাও তো হতে পারে,হয়তো ও বাড়ী চলে গেছে!

মার্জান : [ কেঁদে ] জানিনা কোথায় গেছে কোন অবস্থায় আছে…

আসিফ : Come guys!

[ আসিফ স্নেহার ফ্রেন্ডসদের বাড়ী পৌছে দিয়ে আবার ভার্সেটি এসে দেখে রাহুল দাঁড়িয়ে ভার্সেটির দিক এক ধেয়ানে চেয়ে আছে ]

আসিফ : [ রাহুলের দিক এগিয়ে এসে ] সবাইকে বাড়ী পাঠিয়ে দিয়ে নিজেই একা দাঁড়িয়ে আছিস! [ রাহুলকে নাড়িয়ে দিয়ে ] হেই! রাহুল! কি দেখছিস এভাবে?

রাহুল : [ রেগে ] তুই এখানে কি করছিস! তুই ও বাড়ী যা! রাত অনেক হয়েছে!

আসিফ : Cool Bro! Cool!

রাহুল : [ ভার্সেটির দিক তাকিয়ে ] কেনো যেন মনে হচ্ছে! স্নেহা এইখানে কোথাও আছে…

আসিফ : অনেক তো খুজলাম এইখানে!

রাহুল : একবার ক্লাসগুলো চেক করা উচিৎ!

আসিফ : ইয়ার! রাহুল অবাক লাগছে তুই কোনো মেয়ের জন্য এতো উইক হয়ে পড়েছিস! কয়েকদিনে এতোটা! [ রাহুল রাগান্বিত ভাবে তাকালে ] আরে ক্লাস সবগুলো বন্ধ ছিলো! আর ও ঐখানে একা গিয়ে কি করবে বলতো!

[ রাহুল কিছু না বলে দৌড়ে ভার্সেটির দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ায় ]

আসিফ : [ এগিয়ে এসে ] Locked!
আর সিকিউরিটি ও এতোরাতে ঢুকতে দেবে না!

সিকিউরিটি : [ এগিয়ে এসে ] কি হচ্ছে এতোরাতে! প্রোগ্রাম এখনো শেষ হয়নি?

রাহুল ফিরে তাকালে,

সিকিউরিটি : সরি! আসলে খেয়াল করিনি ভাইয়া!

রাহুল চিন্তিতো হয়ে দরজার দিক তাকিয়েই রইলো!

আসিফ : [ রাহুলের কাধে হাত দিয়ে ] চল রাহুল!

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] যাবো?.. কই যাবো?..বল? আরে! ৮ ঘন্টা হয়ে গেছে! এখনো এটা জানিনা স্নেহা কোথায় আছে!

আসিফ : ওকে! রিলেক্স I understand কিন্তু রাহুল!

রাহুল : [ আসিফকে ধাক্ষিয়ে ধাক্ষিয়ে ] যাহ তুই যাহ! আমার কারো হেল্প লাগবে না…যাহ!

আসিফ : [ রেগে রাহুলকে ধাক্ষিয়ে ] Stop it! রাহুল নিজের দিক তাকিয়ে দেখ একবার! ঘেমে ভিজে আছিস! কখন থেকেই স্নেহা স্নেহা করেই যাচ্ছিস!

রাহুল : [ জোড়ে শাস ফেলে ] ব্যাস! বললাম না…চেক করবো! [ সিফিউরিটির দিক ফিরে ] চাবি!

সিকিউরিটি : আমাদের কাছে পার্মিশন নেই! এভাবে তো চাবি দেওয়া যাবে না!

রাহুল : [ তাড়াহুড়ো করে পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করে ধরিয়ে দিলো সিকিউরিটির হাতে ] চাবি চাবি?..

সিকিউরিটি রাহুলের পাগলামো দেখে তাড়াতাড়ি চাবি দিয়ে দিলো!

রাহুল তাড়াহুড়ো করে দরজা খুলে সব ক্লাসে ঢুকে ঢুকে দেখছে!

আসিফ ও তার সাথে খোজা শুরু করে দিলো!

হঠাৎ আসিফ একটা ক্লাসে ঢুকে আবার তাড়াহুড়ো করে বেড়িয়ে যায়!

রাহুল : What happen? …[ চেঁচিয়ে ] আরে কি হলো?…

আসিফ : তুই ঢুক!

রাহুল তাড়াহুড়ো করে ঢুকে নিস্থব্দ হয়ে থেমে যায়! স্নেহাকে দেখে চোখে মুখে হাসির ঝলক ফুটছে রাহুলের!

রাহুল : [ দৌড়ে এগিয়ে গিয়ে ] স্নেহা! তুমি এখানে! কোথায় কোথায় খুজেছি! আমার মন বলছিলোই তুমি এখানে কোথাও হবে! [ স্নেহার ঘাম মুছে দিয়ে ] ঠিকাছো তুমি?…

স্নেহা : [ মাথা নাড়ালো ]

হঠাৎ, রাহুল খেয়াল করলো স্নেহার হাত, মুখ বাধা..হাতের নীল চুরি গুলো ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে ছিটে আছে! গায়ের পরনের নীল শাড়ীটি প্রায় খুলে গেছে!

রাহুল তাড়াতাড়ি স্নেহার মুখ থেকে টেপ খুলে দিলো! স্নেহা শাস নিতে লাগলো জোড়ে জোড়ে!

স্নেহা : [ চোখ বটে আসছে…] রা..হুল!

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] হ্যা! বলো…[ স্নেহার মাথা ঢলে পড়ে গেলো রাহুলের বুকে…জোড়ে জোড়ে শাস ফেলতে লাগলো… শুধু কিছু বলার চেষ্টা করছে…কিন্তু শক্তি দিয়ে কিছুই বলতে পারছে না ]

রাহুল : [ ধীরে ধীরে স্নেহার বাধা হাত গুলো খুলে দিলো ] স্নেহা! কিভাবে হয়েছে এসব! কে করেছে?…[ চেঁচিয়ে ] আরে বলছো না কেনো?…

স্নেহার চোখ বন্ধ হয়ে এলো,

রাহুল : [ স্নেহার মাথা তুলে নিলো তার বুক থেকে ] হেই স্নেহা!

আরে কি হলো স্নেহা কথা বলছো না কেনো?.. Ok Ok I m sorry! Ok এবার কথা বলো! [ রাগান্বিত ভাবে চেঁচিয়ে ] Say something Sneha! কিছুতো বলো!

বুঝতে পারলো রাহুল স্নেহা সেন্সলেস্ হয়ে গেছে..

[ শাড়ী ভালো করে পেঁচিয়ে দিয়ে কোলে তুলে নিলো স্নেহাকে, স্নেহার চেহেরার দিক তাকিয়ে আছে রাহুল!

মনে পড়ছে স্নেহার সাথে প্রথম দিনের দেখা, স্নেহা পড়ে যাচ্ছিলো রাহুল ধরে ফেলেছিলো, লাইব্রেরীতে স্নেহার চোখ থেকে চশমা খুলে নিয়ে চলে এসেছিলো, র্যাগিং এর সময় স্নেহার হাত থেকে সিগারেট কেড়ে নিয়ে ফেলে দিয়েছিলো, ডান্স করবে না বলাতে স্নেহার হাত চেপে ধরেছিলো, ]

স্নেহাকে নিয়ে রাহুল বেড়িয়ে আসলো,

আসিফ : অনেক ট্রাই করলাম এতোরাতে কোনো ডক্টরই পাওয়া যাচ্ছে না!

রাহুল কিছু না বলে স্নেহাকে নিয়ে গাড়ীর পেছনের সি্টে শুয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো!

আসিফ : আরে হ্যা! শ্রেয়া..ইয়েস্ শ্রেয়াকে কল দিয়ে বলি আসতে,ও তো ডাক্তারি পড়ছে! হয়তো ও কিছু..

রাহুল : এতো রাতে শ্রেয়ার একা আসাটা ঠিক হবে না!

আসিফ : [ কিছুক্ষণ ভেবে ] হ্যা তাও ঠিক.. আচ্ছা শোন! স্নেহা কিছু বলেছে?..কে করেছে?..কি হয়েছে?

রাহুল : [ জানালার গ্লাস দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] She is out of sense! [ রাগান্বিত ভাবে ] তবে যেই এই কাজ করেছে…তাকে আমি ছাড়ছিনা!

Anyway এইদিকে যে শর্টকার্ট রাস্তাটা আছে ওদিকে একটা হস্পিটাল পড়ে! ওখানে ম্যানেজ করে নেবো! ডক্টর..

আসিফ : হ্যা এটা ঠিক আইডিয়া! ওদিক দিয়ে স্নেহার বাসাও কাছে হবে! কিন্তু রাস্তাটা খুব একটা ভালো না…

রাহুল : Don’t worry! [ বলেই গাড়ীতে উঠে পড়ে ]

আসিফ : [ জানালা দিয়ে এগিয়ে এসে ] হেই রাহুল! আমিও যায়! তুই একা কেমনি?..

রাহুল : It’s ok! অলরেডি আন্টি টেনশন করছে তোর জন্য! যাহ এবার বাড়ী যা!

আসিফ : ওকে! টেক কেয়ার! আর শোন! স্নেহাকে পৌছে দেওয়ার পরে ফোন দিস কিন্ত!

[ রাহুল মাথা নাড়িয়ে চলে যায় ]

কিছুদূর আসারপর দেখে সামনের দিক পুলিশের গাড়ী! রাহুল তাড়াতাড়ি গাড়ী থামিয়ে ফেলে! পকেটে হাত দিয়ে দেখে টাকা আছে নাকি…তারপরই মনে পড়ে সে তো মানিব্যাগটাই সিকিউরিটির হাতে দিয়ে দিয়েছিলো! পকেট থেকে ফোনটা বের করে আসিফকে কল দিতে যাবে…ঐসময় দেখে Bettery Low এবং ফোনটা বন্ধ যায়!

রাহুল : What shit! damn it! এখনি বন্ধ হওয়ার ছিলো! [ বলেই ফোনটা পাশের সি্টে ছুড়ে মারে ]

রাহুল : [ পেছন ফিরে স্নেহার দিক একবার তাকালো, আর ভাবতে লাগলো মনে মনে ] এইভাবে স্নেহাকে নিয়ে সামনে যাওয়া Possible না! পুলিশ ধান্ধার জন্য গাড়ী চেক করবে হান্ড্রেড পার্সেন্ট!… আর উলটা পালটা ভেবে বসে থাকবে!

কি করা যায়! বাবাকে কল! No No…Never! আমার ওনার হেল্প চাইনা! [ বলেই গাড়ী বেক দিলো, এবং ঘুড়িয়ে রাহুল স্নেহাকে তার গেষ্ট হাউসে্ নিয়ে আসে, কোলে তুলে গাড়ী থেকে বের করে…নিজের খাটে শুয়ে দিলো স্নেহাকে… কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না রাহুল! কপালে পড়ে থাকা চুল গুলো সরিয়ে দেই নিজ হাতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ধীরে ধীরে স্নেহার কপালে একটি চুমু খেলো!…

রাহুল : [ স্নেহার কানের কাছে এসে ] don’t worry sneha! যে করেছে এসব [ দাত খিলখিলিয়ে ] ওকে আমি… ?

[ ধীরে ধীরে স্নেহার হাতের ভেতর হাত রাখে… হঠাৎ খেয়াল করলো.. স্নেহার শরীর গরম হয়ে এসেছে রাহুল বুঝতে পারলো স্নেহার জর উঠছে!… কম্বলটা গায়ের উপর টেনে দিয়ে রাহুল গিয়ে সোফায় বসে.. দূর থেকেই চেয়ে আছে স্নেহার দিক…স্নেহার ঘুমন্ত চেহেরা..বার বার প্রেমে পড়ে যাওয়ার মতো! ]

এভাবেই সময় ঘনিয়ে গেলো কবে যে চোখটা লেগে এলো ঠেরই পেলো না রাহুল!

হঠাৎ কাচ ভাংগার শব্দে চমকে উঠে চোখ খুললো রাহুল! উঠে দেখে স্নেহা টেবিল ধরে উঠে দাড়াতে যাচ্ছিলো..নিশ্চয়, তাই হাতের সাথে বাড়ী খেয়ে গ্লাস ভেংগে ফেলেছে!

রাহুল : [ তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে গিয়ে ] স্নেহা! You Ok?.. হাত দেখি.. [ হাত টেনে নিয়ে দেখে ব্লিডিং হচ্ছে! ] Shit! আমাকে ডাক দিতে! নিজে নিজে উঠার কি দরকার ছিলো?…[ বলেই পাশের রুম থেকে ফার্ষ্ট এইডস বক্স আনতে চলে যায়… স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে… কিছুক্ষণ পর এগিয়ে এসে স্নেহাকে খাটে বসিয়ে হাতে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছে রাহুল! ]

স্নেহা : আপনি?… ও..ওরা

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] No question! Ok?..
[ স্নেহার কপালে হাত দিয়ে দেখে জর আছে কিনা ] এখনো আছে সামান্য!

[ স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে রাহুলের দিক ]

রাহুল : তুমি বসো আমি খাবার আনছি!

[ রাহুল উঠে চলে যায়… স্নেহা ভাবতে লাগলো কাল রাত তার সাথে যা হয়েছে…মনে পড়তেই চোখ বেয়ে পানি পড়ছে.. কি হচ্ছে এসব! আর সে রাহুলের বাসায় কিভাবে এলো ?… চোখ মুছে রুমের আশেপাশে তাকিয়ে দেখছে চারদিক! জানালা দিয়ে আলো ফুটে আসছে…নিশ্চয় সকাল হতে যাচ্ছে…

জানালার দিক এগিয়ে যাওয়ার জন্য উঠে দাড়ালো! পা বাড়াতেই হঠাৎ টান খেয়ে শাড়ীটা খুলে যায়! সামনের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল আসছে…স্নেহার এই অবস্থা দেখে রাহুল তাড়াতাড়ি পেছনে মুড়ে যায়…আর স্নেহা নার্ভাস্ হয়ে তাড়াহুড়ো করে শাড়ীটা তুলে মুড়িয়ে পেঁচিয়ে পড়ে নেই!

স্নেহা : জি!?এখন! আসতে পারবেন!

রাহুল স্নেহার দিক ফিরে তাকিয়ে তেডি স্মাইল দিতে থাকে! স্নেহা অন্যদিক ফিরে যায়! রাহুল এগিয়ে এসে নাশতার ট্রলিটা একপাশে রাখলো!

স্নেহা : হা..হাসছেন কেনো?..আ..আপনি?

[ রাহুল কিছু না বলে তাকিয়ে রইলো স্নেহার দিক ]

স্নেহা : আমি ফার্ষ্ট টাইম শাড়ী পড়েছি! তাত.. তাই এমন হচ্ছে!

রাহুল : [ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ] ওকে! I understand এমন Mistake হয়ে থাকে! [ বিড় বিড় করে ] ভাগ্যিস আমার সামনেই হয়েছে অন্য কারো সামনে হয়নি!

স্নেহা : কিছু বললেন?..

রাহুল : No..Nothing! ওকে..বসো নাশতা করে নাও…[ বলেই রাহুল স্নেহার জন্য পাউরুটিতে বাটার লাগাতে লাগলো ]

হঠাৎ কিছুক্ষণ পর তাকিয়ে দেখে স্নেহা এখনো চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে!

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হ্যা!?.. [ বলেই চোখের পানি মুছে ফিরে তাকালো ]

[ রাহুল বুঝতে পারলো স্নেহা কাঁদছে, স্নেহার হাত টান দিয়ে তার কাছে এনে বসালো…স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক! ]

রাহুল : কাঁদছো কেনো?…[ স্নেহা অন্যদিক ফিরে যায় ] স্নেহা এদিকে তাকাও…

স্নেহা : [ কেঁদে ] কেনো তাকাবো?..

রাহুল : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ]গতকাল এক সেকেন্ডের জন্য এমন মনে হয়েছিলো! যে আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি!

কোথায় কোথায় খুঁজেছিলাম তোমাকে!

স্নেহা রাহুলের দিক তাকালো…রাহুল তাকাতেই আবার অন্যদিক ফিরে যায়!

[ রাহুল জুসের গ্লাসটা হাতে নিয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে দিলো ]

স্নেহা : আমার খিদে নেই!

রাহুল : ওহ! কামঅন স্নেহা কাল রাত থেকে আমি নিজেই কিছু খায়নি! আমি জানি খিদে কেমন পেয়েছে! So take it!

[ স্নেহা জুসের গ্লাস এগিয়ে নিয়ে এক চুমুক খেলো রাহুল তাকিয়ে আছে ]

পুরোটা ফিনিশ করবা!

[স্নেহা কিছু বলতে যাবে তখনি,]

রাহুল : হো! পুরোটা কেমনি?… এটাই বলতে চেয়েছিলে রাইট! [ স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে ফেলে..

কিছুক্ষণ পর তাকিয়ে দেখে…হাত দুটো একসাথে মুচড়া-মুচড়ি করছে..যেন এক্ষুণি কারো ঘাড় চেপে ধরবে… স্নেহা ভয়ে তাড়াতাড়ি একশাসে সব জুস খেয়ে ফেলে,

গ্লাসটা টেবিলের উপর রাখতেই রাহুল স্নেহার দিক তাকায় আর স্নেহা ঘাবড়ে উঠে ]

রাহুল : What happen?…

স্নেহা : কিক..কি..কিছুনা!

রাহুল : Listen স্নেহা! গতকাল কি কি হয়েছে তোমার সাথে কে কি করেছে…সব ডিটেল বলো!

[ স্নেহা আবারো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ]

রাহুল : হা করে কি দেখছো?..আমার সব ডিটেল চাই!

স্নেহা : [ ভয়ে ভয়ে ] ডিটেল নিয়ে কি করবেন?..

রাহুল : [ রেগে কিছু বলতে যাচ্ছিলো আবার কন্ট্রোল হয়ে যায় ] আদর করবো ওদের একটা একটা করে চকলেট দিবো!

দুজনেই চুপ হয়ে থাকে…এরকিছুক্ষণ পর,

রাহুল : স্নেহা! তুমি আমাকে কিছু না বললে! নেক্সট টাইম তোমার উপর এমন এট্যাক আবার ও হতে পারে!

[ স্নেহা ফুফিয়ে কেঁদে উঠে… ]

রাহুল : স্নেহা! Ok Ok! don’t cry! কিছু বলতে হবে না রিলেক্স!

স্নেহা : [ কাদো কাদো ভাবে ] আ..আমি গার্ডেনের দিকই ছিলাম! গাছের নিচে! তারপর একজন ছেলে এসে আমাকে বলে…কেউ একজন ঐদিকটা বেহুশ হয়ে গেছে..তাই একটু হেল্প করতে, তাই আমি ওর সাথে ঐ দিকটা গেলাম হঠাৎ আমার মুখের মধ্যে কি যেন এসে পড়ে,

রাহুল : তারপর তুমি নিজেই বেহুশ হয়ে গেলে!

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম!

রাহুল : ওয়াও গ্রেট.. Then!

স্নেহা : তারপর কিছু মনে নেই! পরে যখন চোখ খুলি! অন্ধকার ক্লাসটাই দেখি!.. চিৎকার করতে লাগলাম.. হঠাৎ, দরজা খুলে দুটি ছেলে এগিয়ে আসে..আরেকজন.. আমার কাছে এসে..

[ বলেই আবার ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] চুপ কেনো বলো?..তারপর? [ স্নেহার সামনে এসে হাটু গেড়ে বসে ] স্নেহা কি করেছে ছেলেটা?..

স্নেহা : আমার!..?

রাহুল : তোমার?..

স্নেহা : আমার শাড়ী টান দেই! এবং আমার দিক তাকিয়ে হাসতে থাকে! [ বলেই কেঁদে উঠে…]

রাহুল : [ রেগে হাত মুঠি বাধতে থাকে ] চেনো ছেলেগুলোকে?..

স্নেহা : নাহ!

রাহুল : দেখলে চিনবা?..

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে] হুম!

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে উঠে দাঁড়িয়ে স্নেহার দিক ফিরে চেঁচিয়ে ] Listen নেক্সট টাইম থেকে অপরিচিত কারো সাথে কোথাও যাবা না.. ওকে?..

স্নেহা : [ ভয়ে ঘাবড়ে গিয়ে মাথা নাড়ালো ] হুম!

রাহুল : চেনে না জানো না..হুট করেই হেল্প করতে চলে গেলা! [ চেঁচিয়ে ] যদি উলটা পালটা কিছু হয়ে যেতো?.. [ স্নেহা ভয়ে নিচের দিক তাকিয়ে কেঁদে উঠে.. রাহুল কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে স্নেহার সামনে এসে আবার হাটু গেড়ে বসে চোখের পানি মুছে দিলো!

রাহুল : তোমার ফ্রেন্ডসরা রাত থেকেই অনেক টেনশন করছে! Listen Don’t cry ওকে?..আর আমার সামনে তো মোটেও না!

[ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] পাশে ওয়াশরুম আছে ফ্রেশ হয়ে এসে… এইখানে যা যা নাশতা আছে সব ফিনিশ করবা… আমি ফ্রেশ হয়ে এসে যাতে দেখি সব ক্লিয়ার! তারপর বাড়ী যেতে পারবা!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে তাকিয়ে ] স..সব?..

রাহুল : কথা রিপিট করতে আমার মোটেও পছন্দ না! তাও বলছি! সব.. [ চেঁচিয়ে ] শুনেছো?..

স্নেহা : [ ভয় পেয়ে ] হ্যা!

[ রাহুল চলে গিয়ে দূর থেকে আবার ফিরে তাকিয়ে দেখে…স্নেহা পাউরুটি গুলো সব এক টানে ছিড়ে ছিড়ে আবার প্লেটে ছুড়ে মাড়ছে

রাহুল একটু হেসে, (মনে মনে)… বেচারা পাউরুটি! আমার রাগগুলো তার উপরই উঠছে! তেডি স্মাইল দিয়ে চলে যায় ]

কিছুক্ষণ পর রাহুল… ফ্রেশ হয়ে তৈরী হয়ে ফুল গেটাপে রুমে আসে, এবং চারদিক একবার তাকিয়ে.. আবার অবাক হয়ে স্নেহার দিক তাকায়!

[ স্নেহা রাহুলকে দেখে শাড়ী ঠিক করে দাঁড়িয়ে পড়ে ]

রাহুল : খাবার তুমি খেয়েছো নাকি, পুরো রুমকে খাইয়েছো?…

স্নেহা : আ..আমি এইভাবেই খায়! খা…খাওয়ার সময় চারদিক পড়ে যায়!

রাহুল : হ্যা! তা তো আমি দেখছি! বাই দ্যা ওয়ে তুমি রাগলে অনেক…

স্নেহা মাথা নিচু করে অন্যদিক ফিরে যায়!

রাহুল : [ কাছে এসে স্নেহার হাতে একটা জ্যাকেট এগিয়ে দেই! ] এটা পড়ে নিচে এসো! আমি গাড়ীতে ওয়েট করছি!

[বলেই চলে যাচ্ছিলো ]

স্নেহা : এটা?..কিন্তু এটা আমি কেনো..

রাহুল : [ ফিরে তাকিয়ে ] বাইরে অনেক ঠান্ডা! তোমার শরীরে ফেভার আছে এখনো!

[ সানগ্লাসটা চোখে লাগিয়ে চলে যায়… স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে… [ মনে মনে ] ও কিভাবে বুঝলো আমার ঠান্ডা লাগছে..[ হেসে ] আজিব এখনো তো সূর্যই উঠলো না উলটা কুয়াশায় ভরা… আর ইনি সানগ্লাস..

ভাবতে ভাবতে কখন যে ঠোটের কোণে হাসি ফুটছে স্নেহা নিজেও জানে না…]

চলবে….

♥ Love At 1st Sight ♥ Season 3 Part – 7

0

 Love At 1st Sight 
~~~Season 3~~~

Part – 7

writer-Jubaida Sobti

রাহুল চলে যাওয়ার পর স্নেহার শকড ভাঙলো…

স্নেহা চোখের চশমা ঠিক করতে করতে…ভাবতে লাগলো… এটা কি হলো…রাহুল এমন কেনো করলো?…

নিচে নেমে এলে…দেখে গাড়ী আগে থেকে স্টার্ট দিয়ে ভেতরে বসে আছে, স্নেহা ও চুপচাপ গাড়ীতে উঠে বসে,

প্রায় কিছুক্ষণ পর,

রাহুল : স্নেহা! এভাবে কোণা চোখে তাকালে চোখ ট্যারা হয়ে যাবে!

স্নেহা কিছু বলতে যাবে, কিন্তু বললো না.. চুপ হয়ে আবার অন্যদিক ফিরে যায়,

রাহুল : [ হেসে ] কিছু বলবা স্নেহা!?

স্নেহা : আ..আপ আপনি…মোটেও ঠিক করেননি…

রাহুল : আমি আবার কি করলাম?

স্নেহা : এই যে! আসার আগে যা করলেন!

রাহুল : আসার আগে তো অনেক কিছুই করলাম! কিসের কথা বলছো!

স্নেহা : আ.. আপনি!? [ বিরক্ত হয়ে আবার চুপ হয়ে যায় ]

রাহুল হাসতে থাকে,
অবশেষে বাড়ীর সামনে এসে গাড়ী থামলো… স্নেহা তাড়াহুড়ো করে নামতে গেলে, রাহুল স্নেহার হাত ধরে ফেলে,

স্নেহা অবাক হয়ে তাকায়,

রাহুল : ওয়েট ওয়েট! One second! [ রাহুল গাড়ী থেকে নেমে স্নেহার দিক এসে দরজা খুলে ] এবার নামো.. ?

স্নেহা : [ নেমে ] থেংক ইউ!

রাহুল আশেপাশে তাকিয়ে হঠাৎ করে স্নেহার আরেক গালে আরেকটি চুমু দিয়ে দেই!

স্নেহা অবাক হয়ে তাড়াতাড়ি রাহুলের দিক তাকালো,

রাহুল : শুনেছি এক গালে দেওয়া নাকি ভালো না…?

স্নেহা : আ…?

[ রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ীতে উঠে বসলো, স্নেহা হা করে চেয়ে আছে রাহুলের কান্ড,…..

অর্ধেক চালিয়ে যাওয়ার পর গাড়ী আবার পেছনে ব্যাক আসছে…]

রাহুল : [ স্নেহার সামনে এসে থামিয়ে ] কাল আসছো তো?..[ তেডি স্মাইল দিয়ে ] ও হ্যা আসতে তো হবেই..? Ok bye see you tomorrow! [ বলেই টান দিয়ে চলে যায় ]

স্নেহা হাসছে, আশেপাশে তাকিয়ে আবার হাসি বন্ধ করে দেই,

[ উপরে উঠে বেল দিতেই জারিফা দরজা খুলে ]

জারিফা : স্নেহা মেরি জান! তুমি এতো লেইট করলে কেনো…

স্নেহা : আ..আমি ঐ যে.. রাস্তায়..অনেক জ্যাম ছিলো! [ বলেই স্নেহা ভেতরে ঢুকে যায় ]

রাতে ডিনার শেষে, স্নেহা প্লেট গোছাচ্ছে…

মার্জান : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

মার্জান : কিছু হয়েছে?..

স্নেহা : মানে?..

মার্জান : এই যে তুই কিছুক্ষণ পর পরই নিজে নিজে হাসছিস!

জারিফা : স্নেহা তোকে দেখে না আমার অরিজিৎ সিং এর একটা গান মনে পড়ে গেলো,

♪♪ মুস্কুরানে কি ওজাহ তুম হো ওও…

শায়লা : [ কিচেন থেকে চেঁচিয়ে ] এত্তো বেসূরা সংগীত কে গাইছে বলতো..

[ মার্জান আর স্নেহা হেসে উঠে ]

জারিফা : [ রেগে ] মোটেও বেসূরা না..ওকে! Disgusting [ চেঁচিয়ে ] আমার ভালো কিছু দেখলে মানুষের জলে… কি বুঝলে মিস্ শায়লা..হুহ!?

[ স্নেহা চলে যাচ্ছে জারিফা স্নেহার হাত ধরে আটকিয়ে ]

জারিফা : আবার তুই কোথায় যাচ্ছিস!

স্নেহা : কোথায় আবার যাবো রুমে! যাচ্চি..

[ জারিফা চোখ রাংগিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে থাকে ]

স্নেহা : আরে এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?…

জারিফা : [ স্নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে ] এখন সত্যি সত্যি বলে দে…চুপিচুপি কেনো হাসছিলি?…

স্নেহা : [ হেসে ] তোর মাথায় সত্যিই ভুত ঢুকেছে…

[ বলেই স্নেহা বেডরুমে চলে যায়… খাটে বসে বড় বড় শাস নিতে থাকে ]

স্নেহা : [ মনে মনে ] কি হয়েছে আমার..আমি ওর কথা ভেবে হাসছি কেনো…?..কেনো ওর কথা ভাবতেই অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করছে… [ বুক চেপে ধরে ] Cool স্নেহা Cool…

পরদিন দুপুরবেলা,

জারিফা পায়ে নেইলপলিশ লাগাচ্ছে, শায়লা অলরেডি সেজে মার্জানকে সাজিয়ে দিচ্ছে… স্নেহা বই হাতে দেওয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে সবার কান্ড দেখছে,

জারিফা : ইয়ার স্নেহা! কবে থেকে দাঁড়িয়ে আছিস… রেডি হবি কবে?..

স্নেহা : গার্লস্ আমি পার্টিতে যাচ্ছি না!

জারিফা : হা-হা! মজা করছিস! এটা মজা করার সময়?..

মার্জান : [ উঠে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়ে ] স্নেহা! আমার মাথা খারাপ করবি না বলে দিলাম..চুপচাপ গিয়ে রেডি হয়ে নে!

জারিফা : স্নেহা! তোর মনে নেই?..তুই Competition এ রাহুলের সাথে পার্ট নিয়েছিস… So যেতেই হবে!

স্নেহা : এটাই তো প্রবলেম!

মার্জান : আরে স্নেহা তুই ভয় পাচ্ছিস কেনো?…ঐদিন তো কি সুন্দর করেই নাচলি… আজও ঠিক তেমনভাবে নাচবি! আর রাহুল তো আছেই! So don’t worry

সবাই অবাক হয়ে মার্জানের দিক তাকালে

মার্জান : মানে বলছিলাম যে দুজনেই ভালো ডান্স পারিস! So চিন্তার কি আছে!

জারিফা : ইয়ার! মার্জান তুই রাহুলের তারিফ করলে ডিরেক্ট করতে পারিস না..এতো ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে করিস কেনো বলতো?…

মার্জান : তুই চুপ কর! স্নেহা! শোন..যাহ গিয়ে রেডি হয়ে নে!

স্নেহা : ঐদিন কয়েকজন ছিলো..?আজ এতোগুলো মানুষের সামনে…

মার্জান, জারিফা, শায়লা, তিনজনই স্নেহারদিক এগিয়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরে,

স্নেহা : তোরা আবার ইমোশনাল ব্লাকমেইল করছিস কিন্তু!

মার্জান : ইয়ার! স্নেহা তুই না গেলে আমরা ও যাবো না!

জারিফা : স্নেহা! মেরি জান! আমি কত্ত মেহনত করে নেইলপলিশ লাগিয়েছি! সব বেকার যাবে যদি পার্টিতে না যায়!

শায়লা : আর আমার মেকআপ!

[ এইদিকে ভার্সেটিতে কনসার্ট চলছে সবার আসা যাওয়া শুরু! ]

আসিফ : আরে রাহুল! কি ব্যাপার কখন থেকে এইখানে দাঁড়িয়ে আছিস! ভেতরে চল!

রাহুল : সময়তো হয়ে গেছে এতোক্ষণে এসে যাওয়ার কথা তাই না?…

আসিফ : ওহ আচ্ছা! স্নেহা?

[ রাহুল ব্লাশিং ]

হঠাৎ পেছন থেকে… রাহুল বলে কেউ ডাক দিলো… ফিরে তাকালে দেখে নেহা!

নেহা : [ এগিয়ে এসে ] হেই গাইস্ এইখানে কি করছিস! ওয়াও রাহুল ইউ লুকিং সো্ হ্যান্ডস্যাম?

রাহুল : থেংক ইউ! ইউ লুকিং প্রিট্টি!

আসিফ : [ রাহুলের কানে কানে ] তুই সামলা আমি যায়!

রাহুল : আরে আসিফ দাড়া!

নেহা : [ রাহুলের কলার ধরে কাছে টেনে ] কামঅন রাহুল! তুই কোথায় যাচ্ছিস!

রাহুল : কি করছিস কি নেহা?..সবাই দেখছে!

নেহা : দেখুক! I have noooo প্রবলেম!

রাহুল ছুটে যেতে চাইলে ও নেহা রাহুলকে শক্ত করে ধরে আছে,

নেহা : আরেকটা চান্স দে রাহুল! আমি জানি আমার ভুল হয়েছে! কারণ আমি তখন বুঝতে পারিনি আসলে! আই লাভ ইউ রাহুল!

রাহুল : [ রেগে নেহাকে ধাক্ষা দিয়ে সরিয়ে ] বাট্ আই ডোন্ট লাভ ইউ!
[ বলেই রাহুল চলে যায় ]

ক্লাসে গিয়ে লাথি দিয়ে ব্যাঞ্চ সরিয়ে এন্ট্রি নেই! [ রাহুলের বাকি ফ্রেন্ডসরা বসে আড্ডা দিচ্ছিলো ]

শ্রেয়া : আরে! মিষ্টার রকষ্টার? কি হয়েছে তোর এভাবে ক্ষেপে আছিস কেনো?…

রাহুল : [ রিলেক্স হয়ে ] কিছুনা বাদ দে!

রিদোয়ান : [ রাহুলকে একটা বেয়ার এগিয়ে দিয়ে ] এটা খা বস্ সব টেনশন খালাস্ ?

রাহুল : ইয়াহ! থেংক ইউ! [ বলেই রাহুল নিয়ে নিলো ]

শ্রেয়া : বাই দ্যা ওয়ে! গাইস্ আমাকে কেমন লাগছে বলতো?…

রিদোয়ান : নট্ বেড!

রাহুল : নাইস্

শ্রেয়া : [ রেগে গিয়ে ] জাষ্ট এগুলোই! ওহ নো্.. সকাল থেকে ফেইস্প্যাক, ফেশিয়াল, হেয়ার স্প্রিং, পেডিকিউর-মেনিকিউর, Etc Etc এত্তো কষ্ট করেছি জাষ্ট নাইস্ আর নট্ বেড লাগার জন্য! Get lost! [ বলেই শ্রেয়া হনহনিয়ে বেড়িয়ে যায় ]

[ বাকিরা হাসতে থাকে ]

সন্ধ্যা হয়ে গেলো,

রাহুল পার্কিং এর দিক হাটছে আর মনে মনে ভাবছে..কি আজিব স্নেহা এখনো আসছে না কেনো… হঠাৎ দেখে…দুজন জুনিয়র ছেলে মিলে লাইট ঠিক করছে,

রাহুল : আরে রাফি! কি হয়েছে?..কি করছিস?..

রাফি : ভাই! বলোনা আর সেই ২০ মিনিট ধরে এন্ট্রি লাইটটা জালানোর চেষ্টা করছি…

রাহুল : [ কিছুক্ষণ ভেবে ] বাদ দে তো!

রাফি : এটা না জললে…রাস্তা অন্ধকার দেখাচ্ছে, আর স্যার যদি জানতে পারে! লেকচার শুরু করে দিবে! ভাই!

রাহুল : [ চলে যাচ্ছিলো আবার পেছন মুড়ে তাদের দিক এগিয়ে যায় ] দে! আমি একবার ট্রাই করি!

রাফি : আরে না না! ভাই তুমি এসব করবা কেনো…

রাহুল : দ্যাটস্ ওকে! ডোন্ট ওয়ারি! ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার পড়ছি! ট্রাই তো করতে দে! [ বলেই রাহুল ট্রাই করতে লাগলো ]

কিছুক্ষণ পর…রাহুল লাইট চেপে রাস্তার দিক মুড়িয়ে দিলো…

রাহুল : রাফি!

রাফি : জি ভাইয়া!

রাহুল : এইবার সুইচ্ অন কর!

রাফি : ওকে [ বলেই সুইচ্ অন করলো আর সাথে সাথেই লাইট জলে উঠে ]

সামনের দিক তাকাতেই রাহুল দেখে কেউ একজন লাইটের পাওয়ারে মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো,

রাফি : ভাইয়া! আমার মনে হচ্ছে রেজুলেশনটা একটু বেশী হয়েছে…

রাহুল ধীরেধীরে লাইটের রেজুলেশন কমিয়ে দিলো…. এবং হা করে সামনের দিক তাকিয়ে থাকে…

নীল রঙের শাড়ী, হাত ভরা চুরি, কাজলে ভরা চোখ…গোলাপী রঙের ঠোট…সবমিলিয়ে একদম পরীর মতোই লাগছে স্নেহা!

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] আরে স্নেহা! দাঁড়িয়ে আছিস কেনো আয়!

স্নেহা : [ এগিয়ে গিয়ে ] আরে ঐ লাইটটার রেজুলেশন এতো বাড়তি ছিলো যে চোখে কিছু দেখছিলামই না…তারমধ্যে তোরা চশমাটা ও পড়তে দিলিনা…

জারিফা : ইয়ার! সামনে দেখ ? কি সুন্দর লাগছে চারদিক!

[ বলেই জারিফা সামনের দিক চলে গেলো ]

স্নেহা : মার্জান! আমার না Uncomfortable ফিল হচ্ছে শাড়ীতে! মনে হচ্ছে এক্ষুণি খুলে যাবে!

শায়লা : আরে স্নেহা তুই প্রথম পড়েছিস তাই এমন লাগছে! কিছুই হবে না..তুই রিলেক্স হয়ে হাট!

মার্জান : ইয়াহ! আমিও যখন ফার্ষ্ট টাইম পড়েছিলাম…তখন সেইম ফিল হয়েছিলো… এখন আর হয়না…জোড়ে জোড়ে হাটলে ও [ বলেই মার্জান হেটে দেখাচ্ছিলো…হঠাৎ কারো সাথে ধাক্ষা লাগে ]

আসিফ : আসছে আরেকজন মডেলিং করতে…

মার্জান : [ রেগে কপাল কুঁচকে ] কি আশ্চর্য ধাক্ষা লেগেছে কোথায় সরি বলবেন তা না…উলটা! [ কনফিউজড হয়ে ] এক মিনিট কোথায় দেখেছি মনে হচ্ছে আপনাকে!

আসিফ : [ হেসে ] আমার ও তেমনটাই মনে হচ্ছে [ বলেই আসিফ চলে যায় ]

মার্জান : আরে আরে! এক্সকিউজ মি!

শায়লা : [ মার্জানকে ধরে ] কোথায় যাচ্ছিস মার্জান!

মার্জান : কোথায় যাচ্ছিস মানে! ধাক্ষা লেগেছে ও আমাকে সরি বললো না কেনো?..

শায়লা : আরে বাদ দে! এটা রাহুলেরই ফ্রেন্ড… ঐ যে র্যাগিং এর দিন… মনে নেই!

মার্জান : [ কিছুক্ষণ ভেবে ] আচ্ছা আচ্ছা! এইবার মনে পড়লো…এইবার! তাহলে তো ওকে সরি বলিয়েই ছাড়বো! Just wait and see! হুহ!

শায়লা : আরে স্নেহা! ও আবার কই গেলো?…

মার্জান : কই গেলো মানে?.. এইদিকেই তো ছিলো…এতক্ষণ!

শায়লা : নিশ্চয় জারিফার দিক এগিয়ে গেছে চল ঐদিকটা দেখি!

মার্জান : ঠিকাছে চল!

অন্ধকার একটি ক্লাসে,

স্নেহা উমমম! উমম! করে কথা বলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে,

রাহুল : আগে প্রমিস্ করো চেঁচাবা না! তারপরই মুখ থেকে হাত সরাবো

স্নেহা : [ মাথা নাড়ালো ]

রাহুল ধীরে ধীরে স্নেহার মুখ থেকে হাত সরালো…
স্নেহা বড় বড় নিশাস নিচ্ছে আর রাহুলের দিক তাকিয়ে আছে…রাহুলও এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক!

স্নেহা : কি..কিক কি…সমস্যা আপনার… এভাবে মুখ চেপে কাউকে টেনে আনে? আমি তো পুপ.. পুরো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম! আর আমার ফ্রেন্ডসরা যদি ঠের পেতো?.. আর এভাবে আনার মানে কি?…ওরা নিশ্চয় এতোক্ষণে টেনশন করছে…

রাহুল : রিলেক্স স্নেহা! বক বক করেই যাচ্ছো…

স্নেহা : আ..আপনি এইখানে কেনো আনলেন.. প্রো..প্রোগ্রাম তো গার্ডেনের দিক হচ্ছে!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে থেকে মনে মনে ] গার্ডেনে প্রোগ্রাম হচ্ছে, এইখানে রোমান্স হবে!

স্নেহা : কি হলো কিছু বলছেন না যে…! আচ্ছা আমি এখন যায়! প্লিজ! আমার ফ্রেন্ডসরা!

রাহুল : শিসস! [ বলেই স্নেহার মুখে আংগুল দিয়ে দেই ]

[ Sneha’s heart beating fast ]

[ রাহুল স্নেহার ঠোটে আংগুল দিয়ে স্লাইড করতে লাগলো…স্নেহা চলে যাচ্ছিলো…রাহুল আবার স্নেহাকে টেনে দেওয়ালে লাগিয়ে দাড় করাই! ] রাহুল ধীরে ধীরে দু-হাত দিয়ে…স্নেহার দুগালে হাত রাখলো…এবং সে স্নেহার এতোটাই কাছে চলে আসে….
স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ বন্ধ করে ফেলে…

রাহুল ও চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে স্নেহার ঠোট স্পর্শ করতে চাইলে…

স্নেহা : না! প্লিজ!….?

রাহুল : [ থেমে গিয়ে চোখ খুলতেই দেখে স্নেহা বটেমটে এক হয়ে আছে ] Shit! [মনে মনে ] Control রাহুল Control

রাহুল একটু পিছিয়ে দাড়ালে,
স্নেহা রাহুলের দিক একটু তাকিয়ে হুট করেই দৌড় দিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়!

রাহুল ও মাথা চুলকাতে চুলকাতে ব্লাশিং হয়ে বেড়িয়ে যায়

পেছন থেকে,

নেহা : ওয়াও! ঐ দিকে প্রোগ্রাম! আর এইদিকে রোমান্স!

রাহুল : ইয়াহ! It’s none of your business! [ বলেই রাহুল চলে গেলো ]

নেহা নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে থাকে,

মার্জান : [ স্নেহাকে ধরে ] স্নেহা কই গিয়েছিলি?…

স্নেহা হাপাতে থাকে!

শায়লা : ইউ ওকে স্নেহা!?

স্নেহা : ইয়াহ!

জারিফা : [ দৌড়ে এসে ] হেইইই স্নেহা চল চল চল [ বলেই টেনে নিয়ে চলে গেলো ]

স্নেহা : জারিফা কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস?.

জারিফা : আরে চলনা…

শ্রেয়া : এসেছো তোমরা?… আজ কিন্তু জমিয়ে ডান্স দিবে..ওকে!

জারিফা : Of course!

শ্রেয়া : আচ্ছা গাইস্ তোমরা এইদিকটা থেকো… আমি বাকিদের ও খুজে আনছি! নাম Announced করার আগেই সবার এইদিকটা থাকতে হবে! [ শ্রেয়া চলে গেলো ]

স্নেহা : [ মনে মনে] এমন কেনো লাগছে! ওর ফেইস টু ফেইস হতেই ভয় করছে…আর ডান্স কেমনি… বুকটা এখনি ধুপধুপ করছে! নিশ্চয় আশেপাশেই আছে!

জারিফা : স্নেহা! কি ভাবছিস?…

স্নেহা : না নাহ! কিছু না! বলছিলাম যে ওরা আসতে আসতে চল ঐদিকটা ঘুরে আসি!

জারিফা : আরে দাড়া! ওরা এক্ষুণি চলে আসবে!

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] এক্ষুনি?

জারিফা : কেনো কি হয়েছে?..

স্নেহা : না নাহ! আমি না একটু ওয়াসরুম থেকে আসি!

জারিফা : ওহ ও! ওয়াসরুমের বাহানা দিয়ে আবার রাহুলের সাথে দেখা করতে যাচ্ছিস নাকি?..

স্নেহা : জারিফা! তুই ও না?..

জারিফা : [ হেসে ] ওকে ওকে! যা..

[ স্নেহা একটি নিরিবিলি জায়গায় এসে রিলেক্স হয়ে দাঁড়ায়! ]

দূর থেকে মার্জান আর শায়লা স্নেহাকে দেখে,

মার্জান : শায়লা দেখতো! এটা স্নেহা না?…

শায়লা : হ্যা তাই তো!

মার্জান : কিন্তু ও ওখানে একা কি করছে! ওনা জারিফার সাথে গিয়েছিলো

শায়লা : চল দেখি!

মার্জান : আরে ও তো চলেই যাচ্ছে..কিন্তু ওটা কার সাথে যাচ্ছে?…

[ দুজনে এগিয়ে আসতে আসতে দেখে স্নেহা চলে গেছে ]

মার্জান : আবার কোথায় চলে গেলো!

শায়লা : আরে দেখ জারিফা! নিশ্চয় ঐদিকটা হবে!

[ মার্জান আর শায়লা ঐদিকটা গেলো এবং দেখে যারা ডান্স করবে তারা সবাই একত্রে জমাট বেধে আছে সাথে রাহুল ও আছে কিন্ত স্নেহাকে দেখা যাচ্ছে না..]

জারিফা : আরে তোরা?..

মার্জান : জারিফা স্নেহা কোথায়?..

জারিফা : স্নেহা! ওহ হ্যা ও ওয়াসরুমে গেছে…

মার্জান : কিহ! ওয়াসরুম?..একা?..

জারিফা : হ্যা! কেনো কি হয়েছে?…

শায়লা : জারিফা! প্রোগাম গার্ডেনে হচ্ছে…তাই ভার্সেটির দিকটা পুরোই খালি! তুই ওকে একা যেতে দিলি কেনো..

জারিফা : [ টেনশনে পড়ে ] আরে হ্যা তাই তো আমিতো ভাবিই নি!চল গিয়ে দেখি

[ ওয়াসরুমে চেক করে ভার্সেটির আশেপাশের দিকটা চেক করে ও স্নেহাকে পেলো না.. কয়েকজন বসে মোবাইল টিপছিলো…তাদের থেকে ও জিজ্ঞেস করা হলো নীল রঙ এর শাড়ী পড়া…কেউ এইখানে এসেছিলো কিনা..তারা বললো আধ-ঘন্টা ধরে বসে আছে…তারা ছাড়া এইখানে আর কেউই আসেনি!…প্রোগ্রামের দিকও চেক করে দেখলো…চারপাশ চারদিক দেখে ও স্নেহাকে কোথাও পাওয়া গেলো না ]

মার্জান : চল ঐ দিকটা আরেকটু দেখে আসি!

শায়লা : ইয়ার! ঐদিকটা এই পর্যন্ত ৫/৬বার দেখে ফেলেছি!

মার্জান : কিন্তু আমি দেখেছিলাম ও ঐ দিক থেকেই কারো সাথে চলে যাচ্ছিলো!

জারিফা : কে ছিলো সেটা?..

মার্জান : আরে চেহেরা দেখলে কি আমি কনফিউজড হতাম নাকি?..ব্যাক সাইড দেখেছি…

After one hour!

রাহুল চারদিক তাকিয়ে তাকিয়ে হাটছে…হঠাৎ কারো সাথে ধাক্ষা লাগে,

শ্রেয়া : আরে রাহুল কোথায় তাকিয়ে হাটছিস?..

রাহুল : হেই শ্রেয়া! তুই স্নেহাকে দেখেছিস!

শ্রেয়া : হ্যা দেখেছিলাম! কিন্তু লেইট হচ্চে!

রাহুল : কোথায় গেলো কখন থেকে দেখছিনা… আচ্ছা ঠিকাছে তুই যা…আমি আসছি!

[ বলেই রাহুল আবার চারদিক খুজতে লাগলো হঠাৎ দেখে স্নেহার ফ্রেন্ডসরা একটি গাছতলার চৌকাটে বসে আছে সবাই আছে কিন্তু স্নেহা নেই!… রাহুল এগিয়ে যাচ্ছিলো তাদের দিক হঠাৎ,

নূরা মেম : আরে রাহুল! What are you doing here?…

রাহুল : জি আসলে!

নূরা মেম : Listen রাহুল! নেক্সট পার্ফমেন্স কিন্ত ডান্সের So আমি চাই না নাম বার বার Announced করা হোক!

রাহুল : এক্ষুণি আসছি মেম! জাষ্ট ফাইভ মিনিটস্

এইদিকে,

শায়লা : মার্জান দেখ রাহুল! নূরা মেম এর সাথে কথা বলছে!

জারিফা : বেচারা রাহুল! নেক্সট পার্ফমেন্স ডান্সের…আর আমরা তো এখনো ওর ডান্স পার্টনারকেই খুজে পাচ্ছিনা!

মার্জান : এক মিনিট গাইস্ দেখ রাহুল এইখানে!

জারিফা : হ্যা তা তো আমরা দেখছিই!

মার্জান : আরে ডিপলি ভেবে দেখ! তখন স্নেহাকে আমি কারো সাথে যেতে দেখেছি…আমি ভেবেছিলাম রাহুলের সাথে পার্ফমেন্স করবে তাই হয়তো ওর সাথে গিয়েছে…

জারিফা : কিন্তু রাহুল তো স্টেজ এর ঐদিকটাই ছিলো!

মার্জান : তাহলে ভেবে দেখ যদি স্নেহা রাহুলের সাথে ও না যায় তাহলে কার সাথে গিয়েছে তখন?..

শায়লা : দেখ মার্জান আমার না খুব টেনশন হচ্ছেরে!

[ মার্জান উঠে গিয়ে রাহুলের দিক এগিয়ে আসে…রাহুল একটু অবাক হয়, এবং তাকে খুব চিন্তিতো দেখাতে মনে মনে ভাবছে নিশ্চয় কিছু বলতে এসেছে ]

রাহুল : মেম! just give me 5mins!

নূরা মেম : ওকে! then hurry up! [ মেম চলে যায় ]

রাহুল : [ মার্জানের দিক এগিয়ে গিয়ে,] ইউ ওকে?..

মার্জান : [ চোখে জল টলমল করছে ] জি! আসলে!

রাহুল : Hey! why are you crying! any problem?…

মার্জান : [ কেঁদে কেঁদে ] আসলে স্নেহাকে অনেক্ষণ ধরে খুজে বেড়াচ্ছি! পুরো ভার্সেটি ছান মারলাম চারদিক বার বার দেখলাম কোথাও পাচ্ছি না…

রাহুল : [ শকড হয়ে ] What! স্নেহাকে খুজে পাচ্ছো না মানে?..

মার্জান : লাষ্ট ঐদিকটা যেতে দেখেছিলাম! কারো সাথে আমি ভেবেছি হয়তো আপনার সাথেই যাচ্ছে! কিন্তু [ বলেই কাঁদতে লাগলো আবার ]

রাহুল : ওকে ওকে ইউ রিলেক্স! ডোন্ট ক্রাই! আমি দেখছি! [ কিছুক্ষণ ভেবে তাড়াহুড়ো করে দৌড়ে চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ আবার এসে, ] আচ্ছা স্নেহা তার ফোন সাথে নিয়েছে?..

মার্জান : নাহ! ফোন আমার ব্যাগে তাই কন্টাক্ট করতে পারছি না!

রাহুল : Shit! ওকে! আমি দেখছি!

চলবে…

♥ Love At 1st Sight ♥ Season 3 Part – 6

0

 Love At 1st Sight 
~~~Season 3~~~

Part – 6

writer-Jubaida Sobti

মুচকি হেসে ব্লাশিং হতে হতে…ড্রাইভিং করছে রাহুল! বাড়ী পৌছে রুমে ডুকতেই…

রাহুল : [ এক্সাইটেড হয়ে ] Oh my god! দাদীইইইইই [ ঝড়িয়ে ধরে দাদীর কপালে চুমু খেলো ]

দাদী : হয়েছে হয়েছে আর ভালোবাসা দেখাতে হবে না!

রাহুল : But দাদী I am surprised তুমি হঠাৎ!

দাদী : এসেছি আরকি! তুই কি আমার খবর নিচ্ছিস! তুইতো আছিস তোর মডেল গার্লফ্রেন্ড গুলোকে নিয়ে!

রাহুল : Freedom দাদী! Freedom ?

দাদী : আচ্ছা! Freedom বেশী দিয়ে দিয়েই তো তোকে মাথায় তুলেছি! আর না… এইবার একটা বিয়ে করে টুকটুকি একটা বউ ঘরে নিয়ে আয়! ঘরে শুধু আমি একাই…. একটা নাতিবউ থাকলে কত গল্পসল্প করতাম..

রাহুল : [ পানি খেতে খেতে ] তাই..?

দাদী : পার্মানেন্ট ওকে! ডেটিং এর জন্য না…[ চারদিক তাকিয়ে ] ইশ! পুরো ঘরটা…আড্ডাখানা বানিয়ে রেখেছিস!

রাহুল : আরে! দাদী বিয়ে করবো আমি তুমি এতো টেনশন নিচ্ছো কেনো…

দাদী : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] যাতে তোর বাবা মায়ের মতো না হয়! আমি চায় না…ওদের মতো তোর জীবনটাও..নষ্ট হক!

[ রাহুল নিস্থব্দ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে…হাত থেকে পানির গ্লাসটি রেখে…দেই ]

দাদী : গুড নাইট!

রাহুল : গুড নাইট দাদী [ দাদী চলে গেলো ]

[ রাহুল ধীরেধীরে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো….অন্ধকার আকাশের দিক তাকাতেই সব মনে পড়ছে তার সেই দিন গুলোর কথা কেনো এমন হলো তার সাথে…তার ও কি ইচ্ছে হয় না সবার মতো বাবা মায়ের সাথে থাকতে? আজ বাবা – মা থেকে ও না থাকার মতোই! ]

এইদিকে,

[ স্নেহা কফি হাতে জানালার ধারে বসে আছে… ভেবে যাচ্ছে আজ রাহুলের সাথে কাটিয়ে যাওয়া প্রতিটা মোমেন্ট… তার হাতে ছুয়ে যাওয়া প্রতিটা মূহুর্ত…ব্লাশিং হতে লাগলো স্নেহা ]

হঠাৎ,

জারিফা : [ স্নেহার পাশে এসে বসে,] রাহুলকে ভাবা হচ্ছে বুঝি?…..

স্নেহা : [ চমকে উঠে ] ক..কই নাতো..

জারিফা : আরে আরে! গাইস্ দেখ স্নেহা লাল হয়ে গেছে…নিশ্চয় রাহুলকে ভাবছিলি তাই না স্নেহা!

শায়লা : [ এগিয়ে এসে ] দেখি দেখি!…হ্যা তাই তো!

স্নেহা : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] দেখ মোটেও ভালো হচ্ছে না…আমি কেনো ওকে ভাবতে যাবো…

মার্জান : তাতো আমরা সবাই দেখছি! কখন থেকে জানালার পাশে বসে বসে ব্লাশিং হচ্ছিলি…

স্নেহা : তুই ও?..আরে আমি এমনিতেই একটু বাতাস উপভোগ করছিলাম..আর কিছুই না…

শায়লা : হয়েছে হয়েছে…আমরা সব বুঝি..?

জারিফা : [ স্নেহার কাছে এসে ] কাউ কে না বললে আমাকে বলিস কেমন?…আমিইই কাউউ কেইই বল.. বো..না..

স্নেহা : [ রেগে ] জারিফা!

জারিফা : [ তাড়াতাড়ি সরে গিয়ে ] ওকে ওকেই!

পরদিন সকালে,

মার্জান ঘুম থেকে উঠেই দেখে…স্নেহা আগে থেকে উঠে…জানালার দিক বসে আছে… এবং সে গিয়ে বাকিদের টেনে টেনে তুলে দেই!

মার্জান : স্নেহা!… মেরি জান! তুই এতো সকাল সকাল কিভাবে উঠিস…

স্নেহা : [ একটু হেসে ] গুড মর্নিং!

মার্জান : সকাল সকাল কি ভাবছিস বলতো…

স্নেহা : ডান্স ক্লাস থেকে ফোন এসেছে…ওরা আবার জয়েন করতে বলছে…

মার্জান : তুই কি ভেবেছিস!

স্নেহা : কিছুনা জাষ্ট চিন্তা করছি রাশুর পড়ার জন্য কিছু টাকা পাঠানো উচিৎ… বাবা একা…ঘর সামলাবে নাকি রাশুর পড়ার খরচ…

মার্জান : তাহলে ভাবার কি আছে..আবার জয়েন কর…ভালোই তো হবে!

স্নেহা মাথা নাড়ালো…

জারিফা : ইয়ার! স্নেহা…যদি আমিও ডান্স পারতাম না তোর মতো..

শায়লা : হ্যা! তুই পুরা দুনিয়া বদলে দিতি..তাই না… [ বাকিরা হেসে উঠে ]

জারিফা : ইয়ার! শায়লা তুই পুরো রাত আমাকে ইন্সাল্ট করে গিয়েছিস সকাল সকাল আবার শুরু করলি?…

শায়লা : [ হেসে ] গাইস্ এটা ইন্সাল্ট হলো…? আরে এটা তোর তারিফ… করা হয়েছে..

জারিফা : [ রেগে ] হি-হি No need Your তারিফ! ওকে..আজ ভার্সেটি অফ ডে..দোহাই লাগে আমাকে আরেকটু ঘুমোতে দে! [ বলেই পাশ ফিরে কম্বল মুড়িয়ে ঘুমোতে থাকে ]

মার্জান : আচ্ছা?..[ বলেই হুট করে জারিফার গায়ের উপর ঝাপিয়ে পড়ে ] পুরো রাত বক বক করে…আমাদের ঘুমোতে না দিয়ে…এখন তুই ঘুমাবি?..

জারিফা : আরে আরে!

মার্জান : [ জারিফাকে টেনে টেনে ] ইম্পসিবল উঠ! উঠ বলছি…

জারিফা : আরে বাবা দাড়া..উঠছিতো..

[ স্নেহা দূর থেকে তাদের কান্ড দেখে হাসতে থাকে,]

জারিফা : [ খাট থেকে উঠে ] হে আল্লাহ! দোয়া করি! তোদের মতো দোস্ত যাতে..শত্রু কে ও না দেই!

শায়লা : [ হেসে ] জারিফা! ওয়াসরুম ঐ দিকে…?

জারিফা : [ রেগে ] আমি এই বাসায় নতুন না..ওকে?.. ওয়াসরুম কোথায় আমি জানি?…

[ সবাই হাসতে থাকে ]

জারিফা : মানে হচ্ছে..আমি ঘুমাচ্ছি কেনো তাই সবার গা জলছে হুহ! [ বক বক করতে করতে ওয়াসরুমে চলে যায় ]

বিকেলে,

স্নেহা ডান্স ক্লাস থেকে বেড়িয়ে শিরি দিয়ে নেমে রাস্তার দিক এগুচ্ছে….হঠাৎ ফোন বেজে উঠে,

স্নেহা : হ্যা বল মার্জান!

মার্জান : ইয়ার! স্নেহা তুই কোথায়?..

স্নেহা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] এইতো ক্লাস থেকেই বেড়িয়েছি, সব গার্ডিয়েনরা আমাকে ছাড়ছেই না…আর বাচ্চারা তো..

মার্জান : হ্যা! বল?.. [ Sneha silent ]
আরে স্নেহা চুপ হয়ে আছিস কেনো?..

স্নেহা : মা..মা..মার্জান! আমি তোকে পরে ফোন দিচ্ছি!

মার্জান : আচ্ছা..

স্নেহা কান থেকে ফোন সরিয়ে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে…

প্রায় কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার পর,

স্নেহা : এইভাবে পথের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন কেনো?..স সরুন..আ..আমি যাবো…

রাহুল : ওয়াও! স্নেহা…কিনা ডান্স করলে..

স্নেহা : আ..আপনি?..আপনি আমাকে ফলো করছেন!

রাহুল : আমি ফলো করছি না…অন্যরা করছে…আমি জাষ্ট ইনফর্ম পেয়েছি!? তাই সোজা চলে এলাম…

স্নেহা কিছু না বলে পাশ কেটে চলে যাচ্ছিলো… রাহুল আবার ও স্নেহার সামনে এসে দাঁড়ায়,

রাহুল : নো নো..মিস্ স্নেহা আমি যেতে বলিনি…

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] কি করছেনটা কি?…আশেপাশের সবাই কোণা চোখে দেখছে…

রাহুল : কারা মেয়েরা?..ওরা হয়তো Jealous হচ্ছে!?

স্নেহা : মেয়েরা না! শুধু…?
লোকজন সবাই দেখছে…

রাহুল : [ হেসে ] ওউ! ইউ মিন আংকেল আন্টি সবাই! ওহ! ওরাও হয়তো Jealous হচ্ছে, তাদের মেয়ের জন্য কেনো এমন একটা ছেলে পাইনি…

স্নেহা : কিহহ!

রাহুল : আহ! থাক বাদ দাও! ওসব তুমি বুঝবা না… [ স্নেহার হাত ধরে] চলো!

স্নেহা : [ থেমে গিয়ে ] আরে আরে! কোথায় নিচ্ছেন?..

রাহুল : তোমার শশুর বাড়ী! [ বলেই আবার টেনে নিয়ে যাচ্ছে ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ঝাড়ি দিয়ে ফেলে ] পাগল নাকি আপনি?..কি এসব আবোলতাবোল বকছেন?..

রাহুল : No স্নেহা! I m not mad! I m serious ?

স্নেহা : দেখেন প্লিজ..সন্ধ্যা নেমে এসেছে..আমার বাড়ী যেতে হবে,…

রাহুল : বাড়ীই তো যাচ্ছি!

[স্নেহা অবাক হয়ে তাকায় ]

রাহুল : আই মিন! তোমাকে ড্রপ করে দিবো…

স্নেহা : ইটস্ ওকে! বাট আমি যেতে পারবো…

রাহুল : [ রেগে স্নেহার কাছে আসে স্নেহা পিছিয়ে যায় ] তোমাকে নরম হয়ে কথা বললে কানে ঢুকে না?..চুপচাপ গাড়ীতে বসো..

[ স্নেহা ভয়ে চশমা ঠিক করতে থাকে ]

রাহুল : দেখো স্নেহা! আরো অনেক পদ্ধতি আছে তোমাকে গাড়ীতে বসানোর.. আমি চাই না সবার সামনে ঐ পদ্ধতি গুলো ইউস্ করি!

স্নেহা : কিন্তু!?

রাহুল : [ স্নেহার মুখে আংগুল বসিয়ে ] Not one more word!

স্নেহা আর কিছু না বলে..হনহনিয়ে গিয়ে গাড়ীর দরজা খোলার জন্য টানাটানি করছে,

রাহুল : [ একটু হেসে এগিয়ে এসে দরজা খুলে দেই ] স্নেহা! খাওয়া দাওয়া করোতো?..সামান্য দরজা খুলতে কতো শক্তি ব্যয় করে ফেললে…

স্নেহা : দেখেন আমি আপনার মতো জিম! করে বডি বানায়নি! তাই একটু লেইট হয়েছে… [ বলেই স্নেহা গাড়ীতে বসে পড়ে ]

রাহুল : [ ওপাশ গিয়ে ড্রাইভিং সি্টে বসে ] কামঅন! এতো বছর গাড়ী চালিয়ে আজ জানতে পারলাম গাড়ীর দরজা খুলতে হলে আগে জিম করে বডি বানাতে হয়!

[ স্নেহা রাহুলের কথা শুনে জানালার পাশ ফিরে একটু হেসে দেই ]

রাহুল : [ গাড়ী চালাতে চালাতে ] লুকিয়ে হাসতে হবে না…আমার সামনেও হাসতে পারবে…

[ স্নেহা হাসি বন্ধ করে সোজা সামনের দিক তাকিয়ে থাকে ]

প্রায় কিছুক্ষণ পর,

স্নেহা বার বার চুল ঠিক করছে, নয়তো ওড়না ঠিক করছে..নয়তো গায়ে মুড়ানো শাল ঠিক করছে…

রাহুল হুট করে গাড়ীর এ.সি্ ছেড়ে দেই..এবং গাড়ীর সব গ্লাস্ বন্ধ হয়ে যায়!

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] শী..শীতে আপনি এ.সি ছাড়লেন কেনো?..

রাহুল : তুমি Uncomfortable ফিল করছো…তাই ভাবলাম তোমার গরম লাগছে!

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] জি! না..আমি তো বাতাসে অলরেডি বরফ হয়ে যাচ্ছি!

রাহুল : ওহ সরি! সরি! [ বলেই এ.সি্ বন্ধ করে দেই ]

স্নেহা : আসলে! আ..আপনি বার বার তাকাচ্ছেন… তাই Uncomfortable ফিল হচ্ছিলো…

রাহুল : [ চেঁচিয়ে হেসে উঠে ] রিয়েলি?..স্নেহা এটা কোনো reason হলো?..

[ স্নেহা চশমা ঠিক করে বিড়বিড় করে অন্যদিক ফিরে যায়, কিছুক্ষণ পর কোণা চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখতেই চোখাচোখি হয়ে যায় স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে ফেলে, রাহুল হাসতে থাকে..]

স্নেহা : আপনি…

রাহুল : [স্নেহার দিক তাকিয়ে ] হ্যা বলো…

স্নেহা : হ্যা আমি বলছি..আপনি সামনে তাকান প্লিজ! আমার ভয় করছে…

রাহুল : [ জোড়ে হেসে সামনের দিক তাকিয়ে ] কেনো ভয় করছে?..

স্নেহা : আপনি ড্রাইভিং রুলস্ ফলো করেন না?..এই যে কতো বড় বড় গাড়ী আপনি বার বার এমন গাড়ীকে হাইস্পীডে ওভারটেক করেই যাচ্ছেন!

রাহুল : So what! এরা কখন আমাকে সা্ইড্ দিবে ঐ আশায় বসে থাকবো..? মিস্ স্নেহা রাহুল পিছিয়ে থাকতে পছন্দ করে না..Always আগে..

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ পরে কোণা চোখে তাকিয়ে ] ড্রাইভারদের সবসময় Straight থাকতে হয়,

রাহুল : হুম! জানি!

স্নেহা : তাহলে আপনি! বার বার এইদিকে তাকাচ্ছেন কেনো?..এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে তো!

রাহুল : এই কথাটা বলার জন্য এতোক্ষণ আমাকে ড্রাইভিং রুলস্ শেখাচ্ছিলে..রাইট্

স্নেহা : [ অবাক হয়ে চেঁচিয়ে ] আরে আরে! আমার বাসাতো লেফট দিকে আপনি রাইট্ কেনো নিলেন?..

রাহুল : Because you know what! রাহুল Always রাইটে্ থাকে!

স্নেহা : দেখেন সবসময় ফান্ করবেননা…

রাহুল : I m serious! ফান্ করছিনা!

স্নেহা : [ রেগে ] তাহলে কোথায় নিচ্ছেন শুনি?..

রাহুল : গাড়ীতে উঠার আগেইতো বলেছিলাম…

স্নেহা : এখন এটা ফান্ না?..

রাহুল : কেমনি?..

স্নেহা : এই যে! গাড়ীতে উঠার আগে আপনি বললেন আমার শশুড় বাড়ী! আমারতো বিয়েই হয়নি..শশুড়বাড়ী কেমনি হবে..

রাহুল : হাহাহা..তুমি চাইলে হবে আরকি..

স্নেহা : [ বিরক্ত হয়ে ] উফফ! [ রাহুল হাসতে থাকে ]

স্নেহার ফোন বেজে উঠলো,

রাহুল : কে ফোন দিচ্ছে বারবার?…

স্নেহা : কেউ না!

[ হুট করেই রাহুল স্নেহার ফোনটা কেড়ে নিয়ে নেই এবং সুইচ অফ করে দেয়..]

স্নেহা : আরে বন্ধ করলেন কেনো…আমার ফ্রেন্ডসরা টেনশন করবে! মোবাইল দিন

রাহুল কিছু না বলে তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ী চালিয়েই যাচ্ছে…

স্নেহা বিরক্তি হয়ে কি করার সে ও চুপচাপ বসে রইলো,

কিছুক্ষণ পর…স্নেহা অবাক হলো একটি বড় গেইট দিয়ে গাড়ীটি ঢুকছে…গ্লাস নামিয়ে স্নেহা মাথা বের করে দেখতে লাগলো আর অবাক হতে লাগলো…

[রাহুল নেমে স্নেহার দিক এসে দরজা খুললো… স্নেহা ও অবাক হয়ে নেমে যায়…]

স্নেহা : এ..এটা কার বাড়ী?…কোথায় নিয়ে এলেন?…

রাহুল : [ হেসে ] আসার আগে বলেছিলাম…মনে নেই?

স্নেহা : আবার ও..?..?

[ চারদিক তাকিয়ে দেখে স্নেহা…বাড়ীর সামনে কতবড় গার্ডেন…বসার জন্য চেয়ার-টেবিল ও আছে…বাড়ীর পাশেই লাইটিং করা আরেকটি ছোট্ট বাড়ী.. (মনে মনে) ওয়াও নিশ্চয় গেষ্ট হাউস্ই হবে… ]

কত বড় বাড়ী…কোথায় ওরা কোথায় আমরা…এটা কেমনি আমার…

[ রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে একটু হেসে স্নেহার হাত ধরে টেনে ভেতরের দিক নিয়ে যায় ]

স্নেহা : আরে কোথায় নিচ্ছেন?..সেটাতো বলেন প্লিজ!

রাহুল স্নেহাকে ভেতরে নিয়ে গেলে…স্নেহা আরো অবাক হয়ে যায়……

স্নেহা : [ অবাক হয়ে চারদিক তাকিয়ে ] বলেননা…এটা কার বাড়ী?.. কোথায় এসেছি?..

[ হঠাৎ দেখে একটি বয়স্ক মহিলা এগিয়ে আসছে…]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] স্নেহা!

স্নেহা : হুম?..

রাহুল : আমার দাদী… [ দাদী এগিয়ে এসে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] হ্যা! আ..আ আপনার দা…দাদী?..

রাহুল : দাদী! ও স্নেহা!

দাদী : [ এগিয়ে এসে ] মাশাল্লাহ!

স্নেহা : অহ! সরি সরি! [ তাড়াতাড়ি গিয়ে পা ধরে সালাম করে ]

দাদী : থাক থাক! এসো ভেতরে এসো!

স্নেহা : না নাহ! আমি…আসলে [ ধীরেধীরে পিছিয়ে রাহুলের পাশে গিয়ে ফিসফিস করে ] আপনি আপনার বাসায় কেনো এনেছেন?..

রাহুল : দাদী! স্নেহা বলছে! ও অনেক টায়ার্ড একটু চা-কফি,ঠান্ডা…

দাদী : হ্যা! হ্যা! আমি এক্ষুণি পাঠাচ্ছি তোরা ভেতরে বয়!

[ দাদী তাড়াতাড়ি চলে গেলো ]

স্নেহা : আপনি! মিথ্যে কেনো বললেন আপনার দাদীকে?..

রাহুল : তো সত্যিটা বলবো…? দাদী স্নেহা বলছে আমি ওকে আমার বাসায় কেনো এনেছি! ওকে ফাইন বলছি দাদীইইইই

স্নেহা : তাড়াতাড়ি রাহুলের মুখে হাত দিয়ে ] না না..

[ রাহুল ব্লাশিং ] স্নেহা তাড়াতাড়ি হাত নামিয়ে ফেলে,

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] এসো [ স্নেহা রাহুলের পিছে পিছে যায়… হঠাৎ রাহুল স্নেহার হাত ধরে টেনে একটি রুমে নিয়ে যায় ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] এটা কার রুম…?

রাহুল : একসময় আমার ছিলো..এখন আর নেই! তবে মাঝে মাঝে আসি!

স্নেহা : আবারো মজা! বললেই তো হলো এটা আপনার রুম! [বলেই স্নেহা চারদিক ঘুরে ঘুরে দেখছে আর রাহুল স্নেহার দিক দেখছে ?]

হঠাৎ স্নেহা দেখে একটি গ্লাসের ভেতরে একটি গিটার খুব সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে…গ্লাসের উপরে লিখা আছে Don’t touch it!

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] একটু হেসে, Don’t touch it! নিশ্চয় এটা অনেক দামী গিটার?…

রাহুল : [ এগিয়ে এসে ] মায়ের ছিলো গিটারটা… মা গিটারিস্ট ছিলো…খুব ভালো গিটার বাজাতো!

স্নেহা : এখন?..

রাহুল : [ গিটারের দিক তাকিয়ে ] জানিনা!

স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালে,

রাহুল : বাবা আর মা একসাথে থাকে না… মা বাড়ী ছেড়ে চলে গেছে..অনেক বছর হচ্ছে,

স্নেহা : ওহ! সরি!

রাহুল : তাদের লাভ ম্যারেজই ছিলো!

যখন আমি ক্লাস 6 এ পড়ি…বাবা.. মা কে সবসময় সন্দেহ করতো… ভাবতো মায়ের কারো সাথে Affair চলছে! এই সন্দেহে প্রতিদিন রাতে ড্রিংক্স করে এসে মা কে মারধর করতো প্রতিদিনের এসব সজ্য করতে না পেরে..মা একদিন বাড়ী ছেড়ে চলে যায়!

কিন্তু!…স্নেহা আমার কি দোষ ছিলো?…আমার কথা একটু ও ভাবলো না…

তাই রাগ করে বাবার সাথে ঐ দিনের পর থেকে আর কথা বলি না…এই বাড়ীতে ও থাকি না…পাশের গেষ্টহাউসে্ থাকি! এখানে আসি মাঝে মাঝে দাদীকে দেখতে!

স্নেহা : আপনার মা?..কো কোথায় থাকে এখন?..

রাহুল : তিনি আছেন… তার বাবার দেওয়া নতুন বাড়ীতে…একাই থাকে, মাঝে মাঝে যায় দেখা করতে!

হঠাৎ, রাহুল গিটারটা বের করে হাতে নেই!

স্নেহা বুঝতে পারলো রাহুল তার মা কে খুব মিস্ করছে!

স্নেহা : বাজাবেন?

রাহুল : [ অবাক হয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] গিটার?..

স্নেহা : শুনলাম আপনি অনেক ভালো গিটার বাজান! এবং গান ও করেন!

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে ] ওকেই! [চেয়ারের দিক এগিয়ে গিয়ে ] সি্ট

[ স্নেহা চেয়ারে বসে…রাহুল অপোসি্ট চেয়ারে বসে ]

রাহুল : কি গান শুনবা?..

স্নেহা : যেটা আপনার ভালো লাগে,

রাহুল : ওকে!

?গিটার বাজাতে লাগলো স্নেহা তাকিয়ে আছে, ]

♪♪♪দো্ প্রেমি, দো্ পাগাল,

কিয়া কারতেহে বলো! ♪♪♪♪

স্নেহা : মানে?..

রাহুল : [ হেসে ] কামঅন স্নেহা সং লিরিক্স ছিলো এটা!

স্নেহা : ওহ সরি! সরি! ওকে Again!

রাহুল : ওকে,

♪♪♪ দো প্রেমি, দো পা~গাল

♪♪ কিয়া কারতেহে বলো ♪♪

♪♪মুঝসে কিউ♪♪ পুঁ~ছিতিহো

আপনে দিলকো তা টোলো~~

♪♪ মালুমে হে্

হামকো্ তুমহে্~~ কিস্ বাতে্কা

ইন্তে~~জার হে্

কাহো্ না পিয়ার্ হে্~
কাহো্ না পিয়ার্ হে্ ~~ হা্ তুমসে্
পিয়ার্ হে্ ~~কাহো্ না পিয়ার্ হে্

♪♪♪♪ ও দিল্ মেরা্
হার্ বার্ ইয়ে্ ~~~সুন্নেকো্ বেকা্রার্ হে্

কাহো্ না পিয়ার্ হে্ কাহো্ না পিয়ার্ হে্

হঠাৎ স্নেহা দাঁড়িয়ে যায়,

রাহুল : [ গিটার বাজানো বন্ধ করে ] what happen?..

স্নেহা : আরো তো অনেক গানই ছিলো..এটা গাওয়ার কি দরকার ছিলো…

রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে থাকে স্নেহার দিক, কিছু বলতে যাবে তখনই কেউ এসে দরজা টুকা দিয়ে বলে… তাদের নিচে ডাকছে দাদী,

রাহুল গিটার রেখে দিয়ে স্নেহাকে ইশারা করলো নিচে আসতে…

দুজনে নিচে নামলো…

দাদী : আরে আয় আয়! বস এইখানে…[ স্নেহা গিয়ে দাদীর পাশে বসে ] তো স্নেহা…কি খাবে বলো?… রাতে ও কিন্তু খেয়ে যেতে হবে!

স্নেহা : না নাহ! আমার ফ্রেন্ডসরা আমার জন্য ওয়েট করছে…অলরেডি অনেক লেইট হয়ে গেছে!

দাদী : ঠিকাছে তাহলে অন্যদিন সময় করে এসো.. যাতে অনেক্ষণ বসতে পারো…আর এখন তো নাশতা করেই যেতে হবে,

হঠাৎ..বাহির থেকে গাড়ীর হর্ণের শব্দ ভেসে এলো… দাদী রাহুলের দিক তাকালো, এবং বুঝতে পারলো রাহুল ও বুঝে গেছে তার বাবা এসেছে…এবার রাহুল আর এক সেকেন্ড ও এই বাড়ীতে থাকবে না সোজা গেষ্ট হাউসে্ চলে যাবে,

[ রাহুল স্নেহার হাত ধরে টেনে তুলে চলো স্নেহা! বলেই তাকে নিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে ]

এইদিকে,

দাদী : [ চেচিয়ে ] আরে রাহুল! অন্তত নাশতা তো কর!

[ রাহুল স্নেহাকে টেনে নিয়ে বেড়িয়ে গেষ্ট হাউসে্ উঠে পড়ে ]

স্নেহা : [ হেসে হেসে ] আরে রাহুল! এতো তাড়াহুড়ো করছেন কেনো পড়ে যাবো তো..

রাহুল : [ হাটতে হাটতে ] Shut-up স্নেহা why are you laughing?..

স্নেহা : হাসি তো আসবেই..আপনার কান্ড দেখে কথা নেই বার্তা নেই সবসময় হুট করেই হাত টেনে বেড়িয়ে যান, কোথায় নিয়ে যান সেটাও বলেন না

রাহুল : [ স্নেহাকে রুমে নিয়ে হাত ছেড়ে দিয়ে রিলেক্স হয়ে দাড়ায় ] তুমি বুঝবা না স্নেহা! আমার ওনার চেহেরায় দেখতে ইচ্ছে হয়না….

স্নেহা : [ হেসে হেসে ] কিন্তু রাহুল কার?..সেটাতো বলেন…

রাহুল : [ ব্লাশিং হয়ে স্নেহার দিকে তাকায়,] কি বললে?.. আবার বলো তো?..

স্নেহা : কি?…

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] আমার নাম!

স্নেহা : [ জিহ্বায় কামড় দিয়ে লজ্জা পেয়ে যায় ]

রাহুল ধীরে ধীরে কাছে এসে স্নেহার কপালে পড়ে থাকা সামনের চুল গুলো সরিয়ে দেই!

[ Sneha’s heart beating fast ? ]

স্নেহা পেছাতে লাগলে রাহুল স্নেহার কোমোড়ে ধরে কাছে টেনে নেই!…

হঠাৎ হুট করেই স্নেহার গালে একটি কিস্ দেই!

স্নেহা ভ্রু কপালে তুলে…চোখ বড় করে শকড হয়ে যায়…যেন মাথার উপর বাজ পড়েছে..?

[ রাহুল কোমোড় থেকে হাত সরিয়ে নেই..এবং তেডি স্মাইল দিতে থাকে, স্নেহা শকড হয়ে দাড়িয়েই আছে ]

রাহুল : শকিং শেষ হলে নিচে এসেপড়ো আমি গাড়িতে ওয়েট করছি!?

চলবে…