Wednesday, August 20, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 2382



Love At 1St Sight Season 3 Part – 27

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 27

writer-Jubaida Sobti

After 5 mins,

রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার ঠোটের স্পর্শ ত্যাগ করে,চোখ খুলে তাকালো স্নেহার দিক….

লালচে হয়ে আছে স্নেহা, বাতাসে কিছু চুল বারবার মুখের সামনে এসে বাড়ি খেয়ে যাচ্ছে, লজ্জায় চোখটা এখনো বন্ধ করে রেখেছে,জোড়ে জোড়ে শাস ফেলছে…

[ রাহুল ধীরেধীরে দু-কদম পিছিয়ে গিয়ে দাঁড়ালো ]

রাহুল : যদি প্রতিদিন রাতের ডিনার এটাই হয়! তাহলে সারাদিনই উপাস থাকতে রাজি আমি!

[ চুপ করে আছে স্নেহা চোখটা এখনো বন্ধ, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে….ক্যান্ডেল লাইটের হলদে আলো স্নেহার গায়ে নিবু নিবু করে ভেসে যাচ্ছে, সব মিলিয়ে স্নেহার দিক তাকাতেই অপরুপ লাগছে স্নেহাকে ]

রাহুল : এতোটাই ব্লাশিং হইয়ো না স্নেহা! স্ট্রোভেরি ভেবে কখন যে কামড়াতে শুরু করি ঠেরই পাবা না…

[ একটু মুচকি হেসে ধীরেধীরে চোখ খুললো স্নেহা… রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল পকেটে হাত রেখে তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে, চোখেচোখ রাখতে না পেরে হুট করেই দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে পড়লো স্নেহা, রাহুল ও ব্লাশিং হয়ে হেসে মাথা চুলকাতে লাগলো ]

[ স্নেহা ড্রইং রুমে গিয়ে সোফার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বুকটা এখনো ধুপধুপ করে স্নেহার,

কিছুক্ষণপর খেয়াল করলো কানের ধারে ফু দিয়ে কেউ চুল গুলো সরিয়ে দিচ্ছে…স্নেহা শিউরে উঠে কোণা চোখে তাকিয়ে দেখে রাহুলই পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, স্নেহা রাহুলের দিক না তাকিয়ে ব্লাশিং হয়ে মাথা নিচু করে রাখে ]

রাহুল : আমি খাবার অর্ডার করেছি,কিছুক্ষণ পরই চলে আসবে!

স্নেহা : রাহুল! আমার এখন..যাওয়া উচিৎ!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] আর ডিনার?..

স্নেহা : খাবো না! খিখ…খিধে নেই!

রাহুল : কেনো? কিস্ করে পেট ভরে গেছে নাকি ?…[ With tedi smile ]

[ স্নেহা লজ্জায় সরে যাচ্ছিলো ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে ] আমি ভেবেছি খালি আমার পেট ভরেছে….

স্নেহা : এ..এমন কিক..কিছুই না…

রাহুল : [ স্নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে ] তাহলে কেমন!

স্নেহা : তেত…তেমন কিছুই না যেমন টা আপনি ভাব..ভাবছেন!

রাহুল : অহ! রিয়েলি

[ বলেই স্নেহাকে সোফার সাথে হেলান দিয়ে দাড় করালো, স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক, ]

রাহুল : খিধে নেই তাহলে খিধে কিভাবে মিটেছে স্নেহা?…

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে হেসে ] হাটেন রাহুল! প্লিজ

[ বলেই রাহুলকে ধাক্ষিয়ে সরিয়ে দিয়ে টেবিল থেকে ব্যাগটা কাধে তুলে নিলো ]

রাহুল : আরে স্নেহা! ডিনার অর্ডার করেছি খেয়েতো যাও….

স্নেহা : বললাম তো খিধে নেই!

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে চেঁচিয়ে ] অহ! ইয়াহ আই গট ইট! খিধে কই গেছে….

[ স্নেহা রাহুলের দিক ফিরে তাকিয়ে দেখে রাহুল তার মজা উড়িয়ে হাসছে ]

স্নেহা : বাই! [ বলেই এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলতে লাগলো ]

রাহুল : আরে একা কই যাচ্ছো?..

স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে ] একাইতো এসেছি! আর আমি বাচ্চা না এখনো… একা চলতে পারি! সো্ বাইই

[ বলেই স্নেহা দরজাটা ধুম করে লাগিয়ে দিয়ে বেড়িয়ে আসে আর মুচকি মুচকি হাসতে থাকে…কিছুদূর হেটে যেতেই দেখে রাহুল এসে স্নেহার হাত ধরে টেনে গাড়ীর দিক এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ]

স্নেহা : আরে! বললাম তো আমি একা যেতে পারি!

রাহুল : ইয়া! i know! [ বলেই গাড়ীর দরজা খুলে ইশারা করলো ভেতরে বসতে ]

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে রাহুল থেকে পাশ কেটে চলে যাচ্ছে ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে চেঁচিয়ে ] কামঅন স্নেহা বাচ্চাদের মতো জেদ করছো কিন্তু!

স্নেহা : [ ফিরে তাকিয়ে পেছন হয়ে হাটতে হাটতে ] কিন্তু আমি গাড়ীতে উঠবো না!

রাহুল : But why?…

স্নেহা : আরে ভুলে গেছেন?..আপনিই তো বলেছিলেন…যদি গাড়ীতে না উঠি তাহলে আপনার কাছে উঠানোর অনেক ওয়ে আছে…সো্ ডু ইট! [ বলেই হেসে সামনে ফিরে ব্যাগটা নাড়িয়ে নাড়িয়ে হাটতে লাগলো ]

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে মনে মনে ] ওহ! এখন বুঝছি!

[ বলেই দৌড়ে এগিয়ে গিয়ে স্নেহার হাত ধরে টেনে তার দিক ফেরালো ]

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] মুখে বললেই তো হতো কোলে চড়বা! [ with tedi smile ]

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে চলে যাচ্ছিলো রাহুল টেনে নিয়ে হুট করেই কোলে তুলে নিলো, স্নেহা কিছু না বলে তাকিয়ে থেকে ধীরেধীরে রাহুলের কাধের দিক হাত রেখে জড়িয়ে জ্যাকেটটা শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে, রাহুল ও কিছু না বলে তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ীর দিক এগিয়ে এসে স্নেহাকে সিটে্ বসিয়ে দিলো এবং সে গিয়ে ড্রাইভিং সি্টে বসে ড্রাইভ করতে লাগলো… ]

কিছুদূর আসার পর,

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : এইদিকে সামনে রেষ্টুরেন্ট আছে ডিনার করে নাও! [ With tedi smile ]

[ স্নেহা চোখ রাংগিয়ে রাহুলের দিক তাকালে ]

রাহুল : [ হেসে ] ওহো! তোমার তো আবার পেট ভরে গেছে!

– আচ্ছা স্নেহা! তুমি তো বললা না কিভাবে ভরলো?..

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] রাহুল!

রাহুল : [ হাসতে হাসতে ] ওক্কে ওকে! সরি! [ বলেই আবার হাসতে লাগলো ]

স্নেহা : আপনি! হাসছেন কেনো?..

রাহুল : এমনিতেই!

স্নেহা : হোহ! এমনিতে তো পাগলরাই হাসে! আপনি পাগল নাকি?…

রাহুল : পাগল তো তুমি আমাকে করেই দিয়েছো আজ!

[ স্নেহা লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি জানালার পাশ ফিরে যায় ]

হঠাৎ, চোখে পড়লো… সামনে সেই বরফওয়ালা কুলফি আইসক্রিম এর গাড়ীটি! তা দেখে রাহুল স্নেহার দিক তাকালো…স্নেহা ও রাহুলের দিক তাকালো কিন্তু কিছু বললো না!

রাহুল : স্নেহা! সামনে একটা আইসক্রিম পার্লার আছে চলো ওখান থেকে আইসক্রিম খাই!

স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে ] বাট রাহুল আমি এটাই খাবো!

রাহুল : [ হেসে ] I knew that!

স্নেহা : [ এক্সাইটেড হয়ে হেসে ] থেংক ইউ!

রাহুল : বাট উইন্টারে আমি তোমাকে আইসক্রিম খাইয়ে ভুল করছি!

স্নেহা : আরে উইন্টারে আইসক্রিম খাওয়ার মজাটাই আলাদা!

রাহুল হেসে গাড়ী একপাশ সাইড করে রেখে স্নেহাকে নিয়ে নেমে আইসক্রিম ভ্যান এর সামনে এগিয়ে এলো,

রাহুল : [ স্নেহার দিক ফিরে ] ম্যাঙ্গো ফ্লেভার তো তাই না?..

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম!

[ রাহুল দু-টো ম্যাঙ্গো ফ্লেভারের আইসক্রিমই অর্ডার করলো এবং আইসক্রিম দিতেই একটা স্নেহাকে এবং একটা সে নিলো,…চেয়ে আছে রাহুল আবারো স্নেহার বরফ চুষে আইসক্রিম খাওয়া…কিছুক্ষণ পর রাহুল ইচ্ছে করেই তার আইসক্রিমটা হাত থেকে ছেড়ে দিলো ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরে?..

রাহুল : আ..আমার কি দোষ পড়ে গেছে!

স্নেহা : [ বুঝতে পেরে ] আচ্ছা তাই?..কিন্তু আমি শেয়ার করছি না…

রাহুল : কামঅন স্নেহা! তুমি অতোটাও সেল্ফিস হতে পারো না!

স্নেহা : I know রাহুল! আপনি ইচ্ছে করেই ফেলেছেন!

রাহুল : বুঝতেই যখন পেরেছো তাহলে…

স্নেহা : তাহলে?..

রাহুল : তাহলে এটা আমাকে দাও [ বলেই স্নেহা থেকে আইসক্রিমটা কেড়ে নিয়ে নেই ]

স্নেহা : রাহুল! সব আইসক্রিমই তো সেইম টেষ্ট! আপনি আমার মুখেরটা নিয়ে কাড়াকাড়ি করছেন কেনো?…

রাহুল : হ্যা সব গুলোর সেইম টেষ্ট তাই খাচ্ছি না…আর এটাই তোমার ঠোটের ছোয়ায় স্পাশাল টেষ্ট হয়ে গেছে তাই আমি এটাই খাবো!

– [ চেঁচিয়ে ] মামা ওনাকে আরেকটা আইসক্রিম দেন!

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] না.. নাহ আর লাগবে না…

রাহুল : আরে…

স্নেহা : মানে…আ..আমি ও এটা থেকে শেয়ার করে…নিবো [ বলেই ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে যায় ]

[ Rahul give a tedi smile ]

[ রাহুল অল্প একটু খেয়ে আইসক্রিমটা স্নেহাকে দিলো… এবং স্নেহা ও অল্প একটু খেয়ে আবার রাহুলকে নিজ হাতে খাইয়ে দিলো, দুজনেই এভাবে শেয়ার করে আইসক্রিম টা খেয়ে নিলো, স্নেহা মনে মনে হাসছে রাহুলের কান্ডে…রাহুল আইসক্রিম খাবে তা না…বরং স্নেহার মুখে দেওয়া আইসক্রিমটাই খাবে এটা তার আসল বায়না ]

[ অতঃপর রাহুল স্নেহাকে বাড়ী পৌছে দিয়ে চলে গেলো… ]

[ বাসায় এসে বেল দিতেই জারিফা দরজা খুললো, স্নেহা ভেতরে ঢুকলো ]

জারিফা : [ স্নেহার পিছে পিছে এগিয়ে গিয়ে ] স্নেহা! মেরি জান…তোর ঠোট লাল কেনো…কি করেছে রাহুল হুম হুম [ বলেই স্নেহাকে ধাক্ষাতে লাগলো ]

স্নেহা : Shut-up জারিফা! আইসক্রিম খেয়েছি তাই লাল হয়েছে!

জারিফা : ওহ! আমিতো ভেবেছি রাহুল করে দিয়েছে…

[ জারিফার কথা শুনে মার্জান ও হাসতে লাগলো, স্নেহা রিলেক্স হয়ে খাটে গিয়ে বসলো ]

মার্জান : [ স্নেহার পাশে এসে ] আচ্ছা স্নেহা তোর ডান্স ক্লাসেরটা কি হলো?..

স্নেহা : ওভারটাইম করবো কাল থেকে!

মার্জান : মানে?..

স্নেহা : [ মার্জানের দিক ফিরে ] স্যালারি ৪ হাজার…আর যদি ওভারটাইম করি তাহলে ৮হাজার!

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] আর বাসায় কবে আসবি?..

স্নেহা : রাত দশটা সাড়ে দশটা তো হবেই!

মার্জান : আর যাবি কবে?..

স্নেহা : ভার্সেটি থেকে সোজা চলে যাবো!

মার্জান : এমনিতেই তো ধুবলি! এসব ওভারটাইম ডান্স শেখাতে শেখাতে আরো ধুবলি হয়ে যাবি স্নেহা!

জারিফা : [ স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে ] ইয়ার! মেরি জান…তুই সারাদিন এসবে থাকবি নাকি?…

স্নেহা : বাট জারিফা আমার করতে হবে! বাবার লোনের এখনো ১৫লাখ টাকা বাকি আছে! ১মাসের মধ্যে টাকা জমা না দিতে পারলে বাড়ীটা ও চলে যাবে!

– [ মুখ গোমড়া করে ] আমার তো মাথায় আসছে না কিভাবে ১মাসের মধ্যে এতোটাকা জমা করবো!

মার্জান : ডোন্ট বি সে্ড ডিয়ার [ স্নেহাকে জড়িয়ে ] কিছু না কিছু হাল তো বেড়িয়ে আসবে!

স্নেহা : আচ্ছা! আমার না তোদের কিছু দেখানোর ছিলো…

মার্জান : [ মাথা তুলে ] কিহ!

[ স্নেহা তার হাত উপর করে ধরে হাতের রিংটি দেখালো ]

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] রাহুল পড়িয়েছে?..[ স্নেহা মাথা নাড়ালে ] ওয়াও… স্নেহা! [ বলেই জড়িয়ে ধরলো ]

মার্জান : আরে আমি দেখছিনা তো [ বলেই স্নেহার হাত এগিয়ে নিয়ে দেখে ] নাইস্! স্নেহা তোর হাতে তো দারুণ মানিয়েছে! আচ্ছা শোন আর কি কি করেছিস? [ বলেই চোখ টিপ মাড়লো ]

স্নেহা : ডিনার রান্না করেছিলাম ওর জন্য!

জারিফা : আচ্ছা…তাই? তো বল খেয়ে কি বললো?…

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] লবণ এর জায়গায় সব চিনিই দিয়ে দিলাম!

মার্জান : [ মুখে হাত দিয়ে ] হোয়াট!

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে ] বাট ও তাও মজা হয়েছে বলে খাচ্ছিলো!

জারিফা : ওহো! খাবে না বুঝি! বিকজ রাহুলের স্নেহা বানিয়েছে বলে কথা! হুম হুম…

[ স্নেহা ব্লাশিং ]

মার্জান : বাট স্নেহা! তুই এতো বড় ভুল কিভাবে করলি! তুই তো রান্না ভালোই পারিস!

স্নেহা : আসলে আমরা তো আনপ্যাকড লবণ কিনে খায়, আর আমাদের লবণ গুলো ও দেখতে প্রায় চিনির মতো, তাই লবণ ভেবে চিনিই ঢেলে দিয়েছি!

[ মার্জান আর জারিফা হাসতে থাকে স্নেহার কথা শুনে ]

মার্জান : [ হেসে হেসে ] স্নেহা! তোর মাথায় রাখা উচিৎ ছিলো রাহুল তো আর আমাদের মতো খোলা লবণ খাবে না… ব্রান্ডেড সল্ট খাবে তাই না…[ বলেই আবার কিটকিটিয়ে হাসতে থাকে ]

স্নেহা : ব্যাস! এবার তোরা এটা নিয়ে ও মজা শুরু করে দিস না! [ বলেই উঠে দাঁড়িয়ে যেতে চাই ]

জারিফা : [ হাত টেনে আবার বসিয়ে দিয়ে ] আচ্ছা স্নেহা! খাবার কে তো তুই মার্ডার করে দিলি… সো্ ডিনার করলি কি দিয়ে?…

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে হুট করেই উঠে চলে যায় ]

জারিফা : আরে স্নেহা! কিছুতো বল…[ চেঁচিয়ে ] কোনো অনাথসনাথ কিছু খাওয়াই দিলি নাতো?…

[ স্নেহা ওয়াসরুমে ঢুকতেই ছিলো জারিফার কথা শুনে আবার ব্লাশিং হয়ে হেসে দেই,]
________________________________

পরদিন ভার্সেটিতে, সবাই কথা বলে বলে ঢুকছিলো…হঠাৎ রিদোয়ান সামনে এসে দাঁড়ায়!

রিদোয়ান : হ্যালো গাইস্!

[ মার্জান আর স্নেহা জারিফার দিক তাকালো দেখে সে রিদোয়ানকে দেখে মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেছে ]

মার্জান : হ্যা..হ্যালো রিদোয়ান গুড মর্নিং!

রিদোয়ান : [ হেসে ] গুড মর্নিং!

– গুড মর্নিং স্নেহা!

স্নেহা : গুড মর্নিং!

জারিফা : লেটস্ গো গাইস্ আমাদের ক্লাসে লেইট হচ্ছে [ বলেই এগুতে চাইলো ]

রিদোয়ান : [ জারিফার হাত ধরে ] সকালে, ২৫টা কল ৫৬টা মেসেজ করেছি আমি!

জারিফা : [ নাক ফুলিয়ে ] আচ্ছা তাই? কই আমিতো দেখিনি ?..

রিদোয়ান : দেখোনি মানে?..জারিফা তুমি আমার সাথে কথা বলছো না কেনো?…

জারিফা : [ আড়চোখে তাকিয়ে ] আপনার সাথে কথা বলাটা জরুরী মনে করছি না তাই! [ বলেই হাত ছুটিয়ে চলে যাচ্ছিলো, রিদোয়ান জারিফাকে টেনে গার্ডেনের দিক নিয়ে চলে গেলো ]

মার্জান : [ হেসে ] এই নটাংকির কান্ড দেখলি?…ভার্সেটি আসার আগে ওর মেসেজ গুলো ব্লাশিং হয়ে হয়ে পড়ছিলো আর এখন ওর সামনে কি না নাটক করছে!

[ স্নেহা ও হেসে দিলো ]

মার্জান : বাই দ্যা ওয়ে আজ রাহুলকে দেখছি না!

স্নেহা : হয়তো এখনো আসেনি! আচ্ছা চল ক্লাসে [ বলেই হাটা শুরু করলো, ]

মার্জান : চল পার্কিং এ দেখি [ বলেই স্নেহাকে টেনে নিয়ে পার্কিং এর দিক চলে গেলো ]

স্নেহা : আরে মার্জান! আসলে তো মিট করতোই!

মার্জান : [ স্নেহার হাত জড়িয়ে নিয়ে হাটতে হাটতে ] আসলে না আমার আজ ক্লাস করতে মন চাইছে না…তাই হাটছি!

স্নেহা : [ হেসে ] আচ্ছা তো এটাই রিজন!

হঠাৎ দেখে,পার্ক করা একটি গাড়ী থেকে নেহা বেড়িয়ে আসছে! স্নেহা নেহাকে দেখে চোখ সরিয়ে ফেললো তাড়াতাড়ি!

মার্জান : [ দাত কিলিয়ে স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] আহারে! এই পেত্নীটার চেহেরা দেখতে হবে জানলে এইদিকে আসতামই না!

নেহা : [ তাদের সামনে এগিয়ে এসে দাঁড়িয়ে ] হেই স্নেহা! এইখানে কি করছো?..ওউ! ইয়াহ! আই আন্ডারস্ট্যান্ড কাউকে খুজছো বোধ হয়!

মার্জান : যাকেই খুজছে ইটস্ নান অফ ইয়র বিজনেস ওকে?…

নেহা : [ একটু হেসে ] অন্যের কথায় নাক গলাতে তোমাদের বলতে হয়না! [ মুখ ভেংগিয়ে ] হুহ! অন্যের জিনিষ চুরি করা ও তোমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] এম আই রাইট স্নেহা?..

স্নেহা : [ মার্জানকে টেনে ] ক্লাসে চল মার্জান!

নেহা : হ্যা হ্যা! যাও…এমনিতেই তো চুরি করে নেওয়া ছাড়া এই রুপে কেউ মরবে না!

মার্জান নাক ফুলিয়ে স্নেহা থেকে হাত ছুটিয়ে এপাশ ওপাশ ফিরে তাকিয়ে দেখে দুটো গাড়ী বাদেই আসিফ তার গাড়ীর পাশে দাঁড়িয়ে আছে এবং একটা পিচ্ছি ছেলে তার গাড়ীর উপর লেগে যাওয়া কিছু ময়লা হয়তো তা পরিষ্কার করে দিচ্ছে

পাশে ছোট একটি বালতি এবং তাতে কিছু নোংরা পানি ও আছে…নিশ্চয় গাড়ী পরিষ্কার করে রেখে গেছে!

দৌড়ে গিয়ে বালতিটা হাতে নিয়ে এগিয়ে এলো…

আসিফ : [ চেঁচিয়ে ] হেইই! কই নিচ্ছো এটা?…[ বলেই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে ]

মার্জান সাতপাঁচ না ভেবেই নেহার গায়ে ছুড়ে মারলো নোংরা পানি গুলো!

[ স্নেহা শকড হয়ে মুখে হাত দিয়ে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো ]

মার্জান : [ হাত থেকে বালতি ছুড়ে ফেলে ] এখন দেখি তোর এই রুপে কজন মরে?…

নেহা : [ রাগান্বিত ভাবে চেঁচিয়ে ] ইউ! ব্লাডি… স্টুপিড…বাস্টার্ড [ বলতেই আসিফ দৌড়ে এগিয়ে আসে ]

আসিফ : হেই, হেই,স্টপ স্টপ! গাইস্!

[ আশেপাশে সবাই ভীর জমিয়ে তাকিয়ে আছে ]

নেহা : [ মার্জানের দিক আংগুল তুলে ] Listen! যা করেছো অনেক বড় ভুল করেছো…পঁচতাতে হবে কিন্তু তোমার!

– এর চেয়ে বড় ইন্সাল্ট হবা তুমি মাইন্ড ইট!

মার্জান : [ হেসে ] আরে যা যা…তোর ধমোকে কে ভয় পায়! আগে নিজের দিক একবার তাকিয়ে দেখ কি হাল হয়েছে!

আসিফ : শিসস! মার্জান স্টপ! [ মার্জান মুখ ভেংগিয়ে হাতে হাত বটে অন্যদিক ফিরে যায় ]

নেহা : [ আশেপাশে একবার তাকিয়ে ] কি হচ্ছে?..সিনেমা চলছে এইখানে…সবাই এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?..

স্নেহা : [ মার্জানের কানে ফিসফিসিয়ে ] কি দরকার ছিলো মার্জান এসব করার?..

মার্জান : তুই চুপ কর!

[ আশেপাশের সবাই মুখ লুকিয়ে একটু একটু হেসে সরে যায়, তা দেখে নেহা হনহনিয়ে চলে যাচ্ছে, হঠাৎ দেখে সামনের দিক থেকে রাহুল আসছে বাইক করে, নেহা নাক ফুলিয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে থাকে

রাহুল : [ বাইক থামিয়ে সানগ্লাসটা খুলে অবাক হয়ে সবার দিক একবার তাকিয়ে আবার নেহার দিক তাকিয়ে হেসে ] হেইই নেহা! কিভাবে হলো এই হাল!

[ নেহা কোনো জবাব না দিয়ে নাকফুলিয়ে ফুফাতে লাগলো ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে ইউ লুকিং [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] ফরগেট ইট!

[ বলেই সানগ্লাসটা আবার চোখে লাগিয়ে বাইকটা পার্কিং এ পার্ক করে রাখলো, নেহা চলে গেলো ]

রাহুল : [ হেসে হেসে আসিফের দিক এগিয়ে এসে ] কেমনি হলো দোস্ত?..

[ আসিফ হেসে চোখ দিয়ে ইশারা করে মার্জানের দিক দেখিয়ে দিলো ]

চলবে….

Love At 1St Sight Season 3 Part – 26

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 26

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা ও ব্লাশিং হয়ে জড়িয়ে ধরলো রাহুলকে,দুজনে চোখ বন্ধ করে রাখলো…অন্যরকম অজানা এক ভালো লাগা কাজ করছে…যা পৃথিবীর সকল ভালো লাগাকে হার মানাবে,

কিছুক্ষণ পর,

রাহুল : হেই!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : ফাইনালি তুমি এখন আমার হয়ে গেছো!

স্নেহা : উমম! কই?.. নাতো!

রাহুল : Shut-up স্নেহা!

স্নেহা : [ হেসে ] হ্যা! আপনার তো হয়েছি কিন্তু এখনো ফাইনালি হয়নি!

রাহুল : আচ্ছা? তো ফাইনালি কবে হবা?..

স্নেহা : [ রাহুলকে আরো শক্ত করে চেপে ধরে ] যখন আমাদের বিয়ে হবে! তখন আমি ফাইনালি আপনার হবো!

রাহুল : [ দু-হাত দিয়ে স্নেহার মাথা তুলে তার দিক ফিরিয়ে নিয়ে ] তাহলে চলো..বিয়ে করে ফেলি..

[ স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : আমি তোমাকে ফাইনালি আমার করে নিতে চাই!

[ স্নেহা হেসে রাহুলের বুকে আবার মাথা রাখলো ]

রাহুল : স্নেহা যখনি তোমাকে বুকে জড়িয়েনি এমনই মনে হয়…যেনো পৃথিবীতে আর কিছু পাওয়ার বাকি নেই! সব পেয়েগেছি!

স্নেহা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে মাথা তুলে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আর আমি যখনি আপনার বুকে মাথা রাখি এমনই মনে হয় যেনো এর চেয়ে শান্তির স্থান আর কোথাও পাবো না…সব শান্তিই এইখানে!

রাহুল : [ স্নেহার কপাল টেনে নিয়ে একটি চুমু খেয়ে ] আই লাভ ইউ স্নেহা!

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে রাহুলকে আবার জড়িয়ে ধরে, রাহুল ও হেসে জড়িয়ে ধরে রাখে ]
________________________________

এইদিকে,

জারিফা আর মার্জান বই হাতে দু-জন খাটে বসে আছে,

মার্জান : ইয়ার! জারিফা এখন তো অন্তত ফোনটা ধর,

জারিফা : তুই চুপচাপ পড় আর আমাকে ও পড়তে দে!

মার্জান : [ মুখ ভেংগিয়ে জোড়ে একটি শাস ফেলে জানালার সাথে হেলান দিয়ে বসে ] বাহ! কি ওয়েদার…ঠান্ডা ঠান্ডা বাতাস, আমার তো ইচ্ছে হয় যেনো সারাজীবনই শীতকাল থেকে যাক, আরে হ্যা! এই স্নেহা কই গেলো বলতো?.. একটু পর ৯টা বাজবে আর ও এখনো বাসায় আসেনি!

জারিফা : রাহুলের সাথেই আছে!

মার্জান : কথা হয়েছে তোর সাথে?..

জারিফা : মেসেজ করেছে!

– ইয়ার! একতো রাহুল গতকাল রাতে এতোকিছু হয়ে যাওয়ার পরে ও সকাল সকাল আবার ভার্সেটি এসে স্নেহার সাথে মিট করে গেছে…এখন আবার স্নেহার সাথে…মানে স্নেহা স্নেহা

– স্নেহা ছাড়া ও কিছু বুঝেই না…[ নাকফুলিয়ে ] আর এইদিকে ওকে দেখ… না ভার্সেটি এসেছিলো… না সকালে আমাকে ফোন দিয়ে একটা গুড মর্নিং বলেছে! জনাব দুপুর, ১২টায় আমাকে ফোন দিয়ে বলে গুড মর্নিং! [ বলেই মুখ ফুলিয়ে বই বন্ধ করে অন্যপাশ ফিরে বসে থাকে ]

মার্জান : [ হেসে ] আরে ওর ঘুম যখনি ভেংগেছে, তখন গুড মর্নিং বলেছে আরকি! আর ও তো বললোই ঘুমাতে ঘুমাতে সকাল ৬টা বেজে গেছিলো,

জারিফা : আরে! ওরা তিনজন মিলেই তো ঐ দারোয়ানটাকে ধোলায় করছিলো! নিশ্চয় রাহুলের ও ঘুমাতে লেইট হয়েছিলো তাও তো রাহুল স্নেহার জন্য ভার্সেটি চলে এসেছে!

মার্জান : [ বই বন্ধ করে জারিফার পাশ এসে বসে ] ইয়ার! সবার মাঝে ভালোবাসার ফিল আছে,কিন্তু সবার ফিলিংসটা সেইম না! এক এক জন এক এক তরিকায় সেটা প্রকাশ করে থাকে, রাহুল রাহুলের মতো করে তার ভালোবাসা প্রকাশ করে, আর রিদোয়ান রিদোয়ানের মতো,

– আর ও বেচারা কখন থেকেই তো তোকে সরি বলে যাচ্ছে, তুই তোর জেদ নিয়ে বসে আছিস!

জারিফা : ব্যাস! একবারে ওর শিক্ষা হয়ে যাক,এরপর থেকে ওর মনে থাকবে,

মার্জান : [ হেসে ] গুড মর্নিং মিস্ করেছে বেচারা! তাই এতোবড় শাস্তি, এরপর তো একটাও মিস্ করে নাই! গুড নুন, গুড আফটারনুন, গুড ইভিনিং এখন খালি গুড নাইটটা বলা বাকি আছে, [ বলেই কিটকিটিয়ে হাসতে থাকে ]
________________________________

এইদিকে,

স্নেহা : রাহুল! ডিনার ঠান্ডা হচ্ছে,

রাহুল : উমম! ব্যাস আর কিছুক্ষণ জরিয়ে ধরে রাখি!

স্নেহা : [ হেসে ] ব্যাস, ব্যাস আর কিছুক্ষণ কতোবারই তো বলেছেন!

[ বলেই রাহুল থেকে ছুটে দাঁড়ায় এবং একটু হেসে রাহুলকে টেনে চেয়ারে বসিয়ে দেই, রাহুল ও হেসে স্নেহার হাত ধরে টেনে পাশের চেয়ারটিতে বসিয়ে দেই! স্নেহা প্লেটে খাবার বাড়ছে আর রাহুল মুখে হাত দিয়ে এক পলকে স্নেহার দিক তাকিয়ে আছে,]

স্নেহা : আর তাকিয়ে না থেকে নিন! এবার শুরু করুন!

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] ওকে! [ বলেই চামচ এগিয়ে নিয়ে প্লেটে রাখলো ]

স্নেহা চেয়ে আছে রাহুল তার ব্যান্ডেজ করা আংগুলটি বাদে বাকি আংগুল গুলোদিয়ে চামচটা সুবিধা করে ধরে খাবার মুখে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে…

একটু হেসে চামচটা কেড়ে নিলো স্নেহা!
রাহুল অবাক হয়ে তাকালো স্নেহার দিক!

স্নেহা : আ…যয..যদি চান আমি খাওয়াতে পারি! [ বলেই অন্যদিক ফিরে গেলো ]

[ Rahul give a tedi smile ]

স্নেহা : [ কোণা চোখে তাকিয়ে দেখে রাহুল হাসছে ] আব..বলছি যে যদি আপনি চান, তাহলে,

রাহুল : [ স্নেহার কাছে মুখ এনে ] উইদাউট স্পুন, যদি আপনি আপনার হাত দিয়ে খাওয়ান তাহলে খেতে পারি [ With tedi smile ]

স্নেহা ব্লাশিং হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে একটু হেসে বন প্লেটে হাতটা ধুয়ে নিলো,

রাহুল তাকিয়েই আছে স্নেহার চেহেরার দিক! স্নেহা রাহুলের প্লেটটা কাছে টেনে হাতে খাবার নিয়ে রাহুলের মুখে তুলে দিলো!

[ রাহুল খাবার মুখে নিয়ে বুকে হাত দিয়ে চোখ বড় করে করে চিবাতে লাগলো ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] কিক..কি হয়েছে?..ঠিকাছেন আপনি?..[ পানির গ্লাস এগিয়ে দিয়ে ] পাপ…পানি খান!

রাহুল : [ পানির গ্লাসটা নিয়ে টেবিলে রেখে দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] স্নেহা! তোমার হাতে যাদু আছে মানতে হবে! কি না রান্না করেছো তোমারতো মাষ্টার সেফ এ জয়েন করা উচিৎ!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আপনার রিয়েক্ট দেখে তো আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম.. আমার মনে হয়েছিলো আপনার গলায় খাবার আটকে গেছে! [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আর আপনি যতোটাই রিয়েক্ট করছেন ততোটাই মজা হয়নি তা আমি ভালো করেই জানি!

রাহুল : রিয়েলি স্নেহা! আমি মিথ্যে বলছিনা…এক তো তোমার হাতের রান্না করা খাবার… তারউপর..তোমার সেই যাদুকরী হাতে খাইয়ে দিচ্ছো! ওয়াহ! সব মিলিয়ে একদম জমে ক্ষীর!

– বাই দ্যা ওয়ে তোমাকে অলরাউন্ডার বলে নোবেল দেওয়া উচিৎ! সব দিকে ব্রিলিয়ান্ট তুমি, স্টাডি, ডান্স, সিংগিং, কুকিং সবই ফাটাফাটি!

স্নেহা : একটু বেশী হয়ে যাচ্ছে না?..

রাহুল : আচ্ছা আমার ক্ষিদে বেড়ে গেছে তাড়াতাড়ি খাওয়াও… [ স্নেহা আবার খাইয়ে দিলো ]

রাহুল : ওয়াহ! স্নেহা সুপ্পার!

– আচ্ছা শুনো… এগুলো সবই কিন্তু আমি খাবো! [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালে ] মানে যদি পেট ভরে যায়, সারারাত মিলে যখনি খিদে লাগবে একটু একটু করে খেয়ে নেবো! তাও সব আমিই খাবো!

– এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?..তুমি রান্না করেছো বলে কথা!

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে মনে মনে ] আসলেই কি খাবার এত্তো মজা হয়েছে?..আমি এর আগে রান্না করেছি,কই কখনো তো রাহুলের মতো করে কেউ তারিফ করেনি!

রাহুল : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] আরে কি হলো খাওয়াবে না?..বললাম তো খিদে পেয়ে গেছে আমার অনেক!

স্নেহা : হুম খাওয়াচ্ছি..এ..এক সেকেন্ড [ বলেই স্নেহা টেষ্ট করার জন্য তার মুখে খাবার দিতেই ছিলো! হুট করেই রাহুল স্নেহার হাত থামিয়ে ফেলে, স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো রাহুলের দিক! ]

রাহুল : আরে কি করছো স্নেহা বললাম তো সব খাবার আমি খাবো…তুমি না একদম বেশি…আমার ক্ষিদে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছো [ বলেই স্নেহা থেকে প্লেটটা কেড়ে নিয়ে চামচ দিয়ে…খাওয়া শুরু করলো ]

রাহুল : স্নেহা! খাবারের স্মেলটা ও কিন্তু ওয়াও!

স্নেহা রাহুলের দিক হা করে তাকিয়ে আছে, এর আগে কখনো রাহুলকে এভাবে খেতে দেখেনি! স্নেহার মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে রাহুলের কান্ড গুলো আসলেই কি এতোটা মজা হয়েছে খাবার…ইনফ্যাক্ট রাহুল স্নেহাকে ও একটু খেতে দিচ্ছে না!…

কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে স্নেহা রাহুলের কাছ থেকে খাবারের প্লেটটা টেনে নিয়ে নিলো…

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] আরে?.. [ বলেই প্লেটটা কেড়ে নিতে চাইলো সাথে সাথে স্নেহা প্লেটটা ওপাশ সরিয়ে ফেলে ]

স্নেহা : কি এমন মজা হয়েছে আমি ও একটু ট্রাই করি!

রাহুল : তোমার ট্রাই করতে হবে না তুমি নিজের রান্না অনেক খেয়েছো! এবার আমায় খেতে দাও!

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে প্লেট থেকে খাবার নিয়ে মুখে তুলে নিলো,
এবং না চিবিয়ে স্নেহা অতোটুকুতেই মূর্তির মতো হয়ে গেলো, তা দেখে রাহুল তাড়াতাড়ি অন্যপাশ ফিরে যায়,…কিছুক্ষণ পর স্নেহা মুখে হাত দিয়ে কেশে উঠে… রাহুল তাড়াতাড়ি পানির গ্লাসটা নিয়ে স্নেহার মুখের সামনে এগিয়ে দিলো.. স্নেহা পানি খেয়ে অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে রইলো.. ]

রাহুল : [ ধীরেধীরে স্নেহার হাত থেকে প্লেটটা এগিয়ে নিয়ে কোণা চোখে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] খাইয়ে দিবে বলে খাওয়াচ্ছো না…আমি নিজে খাচ্ছিলাম..তাও টেনে নিয়ে ফেলছো! [ বলেই আবার চামচ দিয়ে খাবার মুখে দিতেই স্নেহা রাহুলের হাত ধরে থামিয়ে ফেলে ]

স্নেহা : কি জঘন্য খাবার! মিষ্টির জন্য মুখেই দেওয়া যাচ্ছে না! আর আপনি এসব কিভাবে খাচ্ছেন!

[ রাহুল কোনো জবাব না দিয়ে আবারো খেতে চাইলে স্নেহা টান দিয়ে হাত থেকে চামচটা কেড়ে নিয়ে ফেলে ]

রাহুল : আরে স্নেহা!

স্নেহা : স্টপ রাহুল! এসব খেলে ফুড পয়েজন হবে!
আর আপনার ওভারএক্টিং দেখে আমার এমনই মনে হয়েছিলো,

– যে খাবারে কিছু একটা হয়েছে!

রাহুল : [ স্নেহার চেয়ারটা একদম কাছে টেনে নিয়ে স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে সোজা করে ] খাবার যেমনটাই হবে হোক আমার জন্য তো এটা পৃথিবীর বড় বড় সেফ এর ডিশকে ও হার মানাবে! [ বলেই তেডি স্মাইল দিতে থাকে ]

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] কি গাধার কাজ করেছি আমি! চিনি আর লবণ এর পার্থক্যটাই ভুলে গেছি! এমনটা কেনো হয়েছে বুঝতে পারছিনা..

রাহুল : রিলেক্স স্নেহা! দ্যাটস্ ওকে নো প্রবলেম,আপসে্ট হচ্ছো কেনো?..

স্নেহা : আর আপনি কিভাবে খাচ্ছিলেন এসব ছিঃ!

রাহুল : ও হ্যা! খাওয়া কিন্তু এখনো শেষ হয়নি আমার…

[ বলেই আবার স্নেহা থেকে চামচটা কেড়ে নিতে চাইলে স্নেহা হাত পেছনে দিয়ে চামচটা লুকিয়ে ফেলে ]

স্নেহা : [ রাহুলের গালে হাত বুলিয়ে ] এতো ভালোবাসেন রাহুল?..

রাহুল : এনি ডাউট?.. [ With tedi smile ]

[ স্নেহার চোখে জল এসে জমে গেছে, মুখে হাসি ফুটছে সাথে ব্লাশিং হচ্ছে ]

রাহুল : হাগ করো!

[ স্নেহা হেসে রাহুলকে জড়িয়ে ধরলো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : জানো! আজ প্রথম, মা আর দাদী ছাড়া অন্য কেউ খাইয়ে দিয়েছে!

[ স্নেহা রাহুলকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুমমম!

রাহুল : তোমাকে একটা জিনিষ দেওয়ার ছিলো!

স্নেহা : [ রাহুল থেকে ছুটে এসে ] কিহ?…

রাহুল : এক সেকেন্ড! [ বলেই পকেট থেকে একটি বক্স বের করে হাতে নিলো ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] এটাই কি?…

রাহুল : [ বক্সটা খুলে একটি রিং বের করে হাতে ধরলো ] তোমার হাতটা দাও!

স্নেহা : রার…রাহুল! এটা…

রাহুল স্নেহার হাতটা এগিয়ে নিয়ে স্নেহার আংগুলে রিংটি পড়িয়ে দিলো!

[ স্নেহার চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়লো ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] হেই! হোয়াই আর ইউ ক্রায়িং?..[ বলেই স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দিলো ]

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] রাহুল!

রাহুল : শিসসস! ওক্কে..ওকে

[ বলেই ধীরেধীরে মুখ এগিয়ে নিয়ে স্নেহার গালে একটি চুমু দিলো ]

রাহুল : [ স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] ফিলিং বেটার?..

[ স্নেহা হেসে মাথা নাড়ালো ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে স্নেহা! আমার তো অনেক খিধে পেয়েছে!

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে খাবারের দিক তাকালো,আবার রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আচ্ছা?..আ… আমি আবার কিছু বানিয়ে দি? আই প্রমিস্ এবার সব দেখেশুনে করবো!

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে মাথা নাড়িয়ে ] উম!হুম! এতে টাইম লেগে যাবে…আমার এক্ষুণি চাই! [ বলেই স্নেহার ঠোটের দিক তাকিয়ে থাকে ]

[ স্নেহা বুঝতে পেরে চুপ হয়ে নিচের দিক তাকিয়ে ফেলে, রাহুল ধীরেধীরে মুখ কাছে আনতেই স্নেহা উঠে যেতে চায় কিন্তু রাহুল স্নেহার হাত চেপে ধরে রাখে…রাহুল চোখ বন্ধ করে মুখ যতো কাছে এগুচ্ছে আর স্নেহার হার্টবিট ততো বাড়তে চলছে… স্নেহা ও চোখ বন্ধ করে গুটিশুটি হয়ে যায়! ]

রাহুল : [ স্নেহার নাকের সাথে নাক লাগিয়ে ] যদি করি!

– তাহলে রাগ করবা?…

স্নেহা : [ জোড়ে জোড়ে শাস ফেলে ] নাহ!

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] তোমার কেমন ফিল হয়?..

স্নেহা : যেয…যেমনকি…হাহ..হারিয়ে গেছি…

[ রাহুল স্নেহার ঠোটের সাথে ঠোট লাগাতেই স্নেহা মাথা পিছিয়ে নেয় ]

রাহুল : কামঅন স্নেহা!

– এর আগেও তো দু-বার করেছো…

– এতো ভয় পাচ্ছো কেনো!

স্নেহা : [ কাপা গলায় ] দুদ..দুবার ককবে…এ..একবার করেছি!

রাহুল : ভার্সেটিতে…

স্নেহা : জোজ…জোড় করে কক….করেছেন!

রাহুল : [ চোখ খুলে হেসে চেঁচিয়ে ] হোয়াট?..

স্নেহা ও চমকে উঠে চোখ খুলে তাড়াতাড়ি সোজা হয়ে রাহুল থেকে সরে বসে,

রাহুল : [ হেসে ] বাই দ্যা ওয়ে স্নেহা পারমিশন নিয়ে করায় মজা কোথায় যেটা জোড় করে করেই পাওয়া যায়!

স্নেহা পানি ঢেলে হাত ধুয়ে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে, এবং ওড়না ঠিক করে মাথা নিচু করে অন্যপাশ ফিরে আছে…

কিছুক্ষণ পর রাহুলের দিক তাকাতেই হার্টবিট আবার দ্রুত চলতে লাগলো…

রাহুল উঠে দাঁড়ালো… তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার একদম কাছে এসে দাঁড়ায়…

স্নেহা পা পিছিয়ে দিয়ে সরে দাঁড়ালো… রাহুল আবারো পা বাড়িয়ে কাছে এসে দাঁড়ায়…

স্নেহা পিছিয়ে গেলো… রাহুল এগিয়ে এলো… স্নেহা পেছাচ্ছে রাহুল এগুচ্ছে…

হুট করেই জানালার পাশের দেওয়ালের সাথে ধাক্ষা খেয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো স্নেহা! আড়চোখে পেছনের দিক তাকিয়ে দেখে আর পেছানোর জায়গা নেই!

বাতাস বেয়ে আসছে জানালা দিয়ে…পরদা গুলো ও বার বার উড়ে এসে গা ছুয়ে যাচ্ছে….

চোখ তুলে রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল স্নেহার এতোটাই কাছে এসে দাড়িয়েছে যে রাহুলের ছুড়ে দেওয়া প্রতিটা নিশাসই স্নেহার মুখে এসে পড়ছে…

রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে একহাত দেওয়ালে রেখে আরেক হাতে স্নেহার সামনের চুল গুলো কানে গুজে দিলো…

স্নেহা শিউরে উঠছে…

রাহুল স্নেহার কাছে মাথা এনে গাল দিয়ে স্নেহার গালে দাড়ি গুলো ঘষে দিলো… স্নেহা কেপে উঠছে বারবার, নাক দিয়ে মুখে স্লাইড করতেই স্নেহা ভোর কুচকে চোখ বন্ধ করে ফেললো….

ধীরেধীরে রাহুল মাথা নুয়ে…তার ঠোট দিয়ে স্নেহার পুরো ঠোট দখল করে নিলো…

সাথে সাথে স্নেহা রাহুলের…জ্যাকেটটা খামছে ধরলো….রাহুল স্নেহার পেটের দিক টি-শার্টের নিচে হাত দিয়ে স্লাইড করে কোমোড়ে জড়িয়ে ধরলো…

পা দিয়ে স্নেহার পায়ে স্লাইড করতেই স্নেহা শিউরে উঠে তার পা আলগে করে দাঁড়ায়…

চলবে….

Love At 1St Sight Season 3 Part – 25

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 25

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা : জি! আপনি?…

[ দারোয়ান কোনো জবাব না দিয়ে একটু হেসে তাকিয়ে থাকে স্নেহার দিক ]

তার হাসিতে কেমন যেন ভয় লেগে উঠলো স্নেহার! সাতপাঁচ না ভেবে দরজাটা লাগাতেই যাবে..তখনি দারোয়ান হাত দিয়ে চেপে দরজাটা খুলে রাখার চেষ্টা!
স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো তার দিকে…মনের ভয়ে দরজাটা জোড় করে লাগিয়ে দিবে…সেই শক্তিটুকু ও মরে গেছে…

স্নেহা : দেখ..দেখেন…আপনার কিছু দরকার হলে…সস..সকালে আসিয়েন…

দারোয়ান : দরকার তো আমার এখনই…আমার লগে ও কিছু দরকারি সময় কাটাইতে সমস্যা কি?.. [ রাগান্বিত ভাবে ] এক একটা চড় এর বদলা নিমু….এমন হাল করমু…[ বলেই ধাক্ষা দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে পা বাড়াতে লাগলো ]

স্নেহা : [ পিছিয়ে গিয়ে ] দেখ…দেখেন আংকেল… প্লিজ! [ বলতেই শকড হয়ে চুপ হয়ে গেলো, তা দেখে দারোয়ান পিছে মুড়ে তাকালো ]

[ রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ]

রাহুল : [ হাত দিয়ে ইশারা করে ] হাইই!

– আরে স্নেহা?.. ওকে এক গ্লাস পানি দাও…বোধ হয় পিপাসা পেয়েছে..বারবার ঢোগ গিলছে…বেচারা!

[ স্নেহার আত্মায় পানি এলো রাহুলকে দেখে…]

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে দারোয়ানের কাছে এসে দাঁড়ালো, দারোয়ানের গালে হাত বুলিয়ে ] আমি..জানতাম তুই আবার ও আসবি…ঐ যে কথায় আছে না…কুকুরের লেজ বারো বছর সোজা করে ধরে রাখলেও নাকি যে বাকা ঐ বাকায় থেকে যায়, তুই ও ঠিক তেমনটাই…[ দু-বার তালি দিয়ে ] বাট তোর সাহসের তারিফ করতে হবে [ বলেই দারোয়ানের কলার ধরতে চাইলে সে রাহুলের হাত ঝাড়ি দিয়ে সরিয়ে হুট করে দৌড় দেই ]

[ স্নেহা মূর্তির মতো হয়ে তাকিয়ে আছে, রাহুল একটু হেসে পকেট থেকে সেলফোনটা বের করে আসিফকে ফোন দিলো ]

আসিফ : হ্যা! বল রাহুল!

রাহুল : গেইট দিয়ে এখন একটা কুকুর ভাগতে ভাগতে বের হবে, তোর কাজ হচ্ছে ওকে ধরা, ওহ হে…কুকুরটা দেখতে কালো বাট আমি আসার আগে ওটা দেখতে লাল হয়ে যাওয়া চাই!

আসিফ : [ হেসে ] আচ্ছা! বুঝেছি!

[ রাহুল ফোন পকেটে ঢুকিয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এলো ]

রাহুল : কিছুক্ষণ আগে নিচে এতোকিছু হয়ে যাওয়ার পরে ও বোকার মতো ওকে দেখে দরজা খুলে দিলে তাই না!
– আর আমি জানতাম তুমি এই বোকামিটা করবা! [ জোড়ে একটা শাস ফেলে ] স্নেহা কমোনসেন্স বলতে কিছু থাকা দরকার! [ রাগান্বিত ভাবে ] কি দরকার ছিলো দরজা খোলার?..তোমরা দুজন মেয়ে একা একটা ঘরে…একতো ওর সেন্সই নেই! তারউপর তোমার বোকামি!

আমি নাআসলে এখন কি কি হতে পারতো ভেবে দেখেছো! [ বলতেই স্নেহা মুখ চেপে ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ]

রাহুল : [ রাগ কন্ট্রোল করে জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আব..আবার কাদছো কেনো?…

[ স্নেহা নিচের দিক তাকিয়ে কেঁদেই চলছে ]

রাহুল : [ স্নেহার কোমড়ে হাত দিয়ে কাছে টেনে নিয়ে ] ডোন্ট ক্রাই!

[ বলতেই স্নেহা আরো ফুফিয়ে কেঁদে উঠে, রাহুল একটু হেসে স্নেহার মুখ থেকে হাত সরিয়ে মাথা তুলে তার দিক ফিরিয়ে নিয়ে দেখে…স্নেহার চোখ নাক মুখ সব লাল হয়ে আছে…চোখের পানিতে পুরো মুখ ভিজে যাচ্ছে ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] হেইই! হোয়াট আর ইউ ডুয়িং?..এইভাবে কাঁদছো কেনো?…[ স্নেহার চোখের পানি মুছে দিয়ে ] ওকে ওকে… I m sorry! I m sorry!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আম..আমি ভেবে..ছিলাম উনি এমন না! [ বলেই আবার কাঁদতে লাগলো ]

রাহুল : ওকে ওকেইই! রিলেক্স! আর কাঁদতে হবে না! Between তোমার সেলফোনকে একটা থেংক্স দেওয়া দরকার [ বলেই পকেট থেকে স্নেহার সেলফোনটা বের করে দিলো ] গাড়ীতে রয়েগিয়েছিলো! এটা দিতেই আসছিলাম! তখনি…দেখি! [ জোড়ে একটা শাস ফেলে ] কিন্তু স্নেহা তখন যদি তুমি আমাকে না আটকাতে না…তাহলে ওকে ঐদিকেই শিক্ষা দিয়ে দিতাম!
________________________________

এইদিকে, জারিফা এবং রিদোয়ান গাড়ী থেকে নামতেই অবাক হয়ে যায়,

জারিফা : [ আসিফের দিক দৌড়ে এসে ] আরে আরে…ওনাকে মাড়ছেন কেনো!

রিদোয়ান : What happen আসিফ?…

আসিফ : ইয়ার! I don’t know! what happen! রাহুল বলেছে ওকে লাল বানাতে তাই বানাচ্ছি!

জারিফা : হোয়াট?.. লাল বানাতে?..কিক…কিন্তু কি করেছে ওটাতো বলেন?.. [ দারোয়ানের দিক তাকিয়ে ] এই যে হ্যালো আপনি! কি করেছেন বলেন তো?..

দারোয়ান : কিক…কিছুনা…কিছুই করিনি! খোদার কসম!

রিদোয়ান : [ দারোয়ানের কলার ধরে ] কিছু না করলে তোকে এমনি এমনি লাল বানাতে বললো কেনো?..হ্যা?
ইয়ার আসিফ অনেকদিন ধরে কাউকে কেলিনি… ভাবছি আমিও একটু প্রাক্টিস্ করি! [ বলেই সে ও দারোয়ানকে থাপড়াতে লাগলো ]

জারিফা : আরে কি..করছেন আপনারা?.. রিদোয়ান স্টপ ইট!

রিদোয়ান : আরে দাঁড়াওনা…একটু!

জারিফা : উফফ!

[ বলেই দৌড়ে ঢুকে শিরি দিয়ে উপরে উঠলো, এবং উঠে ঘরে ঢুকতেই দেখে রাহুল আর স্নেহা জড়িয়ে ধরে আছে, জারিফাকে দেখে দু-জন ছুটে দাড়ালো! ]

জারিফা : [ হাপিয়ে উঠে ] আ…রাহুল! আপনি ওনাকে মারতে বললেন নাকি?…কিক..কি করেছে উনি?..

রাহুল : আগে বলো ওকে কেমন মেরেছে?..

জারিফা : আই কান্ট এক্সপ্লেইন! একটু পর ওনাকে হসপিটাল নিয়ে যেতে হবে আমার এমনই মনে হচ্ছে!

রাহুল : হোয়াট? একটু পর?…আমিতো ভেবেছি ওকে এতোক্ষণে লাশ বানিয়ে দিয়েছে! [ চেঁচিয়ে ] ওকে গাইস্ Now বাই! গুড নাইট কাল দেখা হচ্ছে! [ স্নেহার মাথা এগিয়ে নিয়ে কপালে একটি চুমু দিয়ে রাহুল তাড়াহুড়ো করে বেড়িয়ে আবার স্নেহার দিক ফিরে তাকায় ] Listen! ডোর অফ করো! আর Unknown person দেখলে ডোর ওপেন করবা না! [ বলেই দরজা লাগিয়ে চলে যায় ]

জারিফা : [ অবাক হয়ে ] আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা… [ বলেই স্নেহার দিক তাকাতেই শকড হয়ে যায় ] আরে স্নেহা?…তোর শরীর ঠিকাছে তো?..এভাবে হয়ে আছিস কেনো?..[ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] স্নেহা! কি হয়েছে?…

[ স্নেহা কাদো কাদো ভাবে জারিফাকে সব খুলে বললো ]

জারিফা : [ মুখে হাত দিয়ে শকড হয়ে ] ইয়া আল্লাহ! আমার তো গায়ের লোম সব দাঁড়িয়ে গেছে তোর কথা শুনে! আমি আরো ওদের মারতে বারণ করছিলাম! [ রেগে নাক ফুলিয়ে ] ওকে তো লাল আমি বানাবো [ বলেই হনহনিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছিলো ]

স্নেহা : [ তাড়াতাড়ি জারিফার হাত ধরে পথ আটিকিয়ে ] আরে জারিফা! পাগল নাকি কোথায় যাচ্ছিস?…রিলেক্স! ওরা করছে না…যা করার!

জারিফা : রাব্বিশ একটা…দেখতে তো অনেক ভালোই মনে হতো!

স্নেহা : [ জারিফাকে টেনে নিয়ে ] আচ্ছা তুই চল ভেতরে আয়!

[ ভেতরে গিয়ে দুজনেই খাটে বসলো ]

জারিফা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আচ্ছা তোর মোবাইলটা দেতো! আমার ব্যালেন্স শেষ তাই! [ স্নেহা ফোন এগিয়ে দিলে জারিফা রিদোয়ানকে কল করে, ]

রিদোয়ান : হ্যালো!

জারিফা : শুনেন! ওকে মেরেছেন?..

রিদোয়ান : [ হাসতে হাসতে ] হ্যা!

জারিফা : হাসছেন কেনো?..

রিদোয়ান : ওর মার খাওয়া দেখে!

জারিফা : [ রাগান্বিত ভাবে ] আমার তরফ থেকে আরো দুটো এক্সট্রা দেন! কুকুরটাকে!

রিদোয়ান : তাই নাকি?..তখন যে চেঁচাচ্ছিলে স্টপ ইট! রিদোয়ান!

জারিফা : আরে আমি তখন জানতাম নাকি!

রিদোয়ান : [ একটু হেসে ] মিস্ আপনি এমনভাবে চলে গেলেন আমাকে একটা বাই বললেন নাকি গুড নাইট বললেন?..

জারিফা : আরে হ্যা! তাই তো! ওকে…সরি!

রিদোয়ান : নো নো! সরি বললে এখন আর চলবে না!

জারিফা : আচ্ছা?..তাহলে?..

রিদোয়ান : ঐটা বলো!

জারিফা : [ একটু ভেবে ] কিক..কিন্তু ওটাতো বলেছিলাম!

রিদোয়ান : ওকে বাই!

জারিফা : আচ্ছা আচ্ছা! বলছি…[ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আ..আই লাভ ইউ!

রিদোয়ান : এতোক্ষণ চিন্তা করতে হয়?..[ একটু হেসে ] ওকে আই লাভ ইউ টু!

জারিফা : [ জিহ্বায় কামড় দিয়ে একটু ব্লাশিং হয়ে ] বাই! গুডনাইট!

রিদোয়ান : গুড নাইট!

জারিফা : [ টেবিলে ফোন রেখে ] উফফ! অনেক টায়ার্ড লাগছে আমি ফ্রেশ হয়ে আসি! [ বলেই উঠে দাঁড়ালো,হঠাৎ মার্জানের দিক চোখ পড়তেই ] আরে! এতো কি আরামে ঘুম! কোনো চিন্তা ধান্ধা নেই!

[ স্নেহা একটু হেসে জারিফাকে মার্জানের কান্ড সব খুলে বললো ]

জারিফা : [ হাসতে হাসতে খাটে শুয়ে পড়ে ] ইয়ার! i can’t stop my laughing!… কাল সকালে উঠতে দে ওকে…দেখ কি করি!
________________________________

পরদিন,ভোর হলো! মার্জান মুখ থেকে কম্বল সরিয়ে চোখ খুললো ধীরেধীরে, হাত দিয়ে মাথা চেপে উঠে বসলো…পাশফিরে তাকাতেই দেখে…

জারিফা আর স্নেহা কফির মগ হাতে নিয়ে বসে বসে তারদিক তাকিয়ে হাসছে,

মার্জান : [ বিরক্তি হয়ে মাথা জোড়ে চেপে ] ইয়ার! আমার মাথাটা এভাবে ভারী হয়ে আছে কেনো?…

জারিফা : [ মার্জানের পাশে এসে বসে ] এইভাবে ড্রিংক্স করলেতো মাথা ধরবেই!

মার্জান : হো..হোয়াট…? হোয়াট ডু ইউ মিন?..ড্রি..ড্রিংক্স করেছি মানে?…

জারিফা : কাল আমরা পার্টি থেকে চলে যাওয়ার পরে কি কি করেছিস মনে কর!

মার্জান : [ কিছুক্ষণ ভেবে কনফিউজড হয়ে চেঁচিয়ে ] ইয়ার! ট্রাষ্ট মি! কিছুই মনে আসছে না আমার!

জারিফা : [ মুখে হাত দিয়ে ] ইয়া আল্লাহ! তাইইইই?.. তাহলে না জানি কি কি করেছিস!

মার্জান : Shut-up জারিফা! [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] স্নেহা! তুত…তুই কিছু জানিস?..

জারিফা : আরেহ ওতো রাহুলের সাথে বেড়িয়েছিলো! তুই কি কি করেছিস আসিফের সাথে তা ও কিভাবে জানবে! [ মার্জান শকড হয়ে চোখ বড় করে জারিফার দিক তাকিয়ে থাকে ]

মার্জান : আস..আসিফ…এইখানে আবার ওর কথা কিভাবে এলো?..

জারিফা : আরেহ! বুদ্ধু ওই তো তোকে এইখানে পৌছে দিয়েছিলো!

মার্জান : [ কাদো কন্ঠে ] ওহ! নো! কাল আমি শরবত ভেবে শেম্পিং খেয়ে ফেলেছিলাম!

জারিফা : ওহ মনে পড়ে গেছে! ধুর..আচ্ছা! আব..বাকি গুলা?..

মার্জান : তারপর?…

জারিফা : [ কনফিউজড হয়ে ] হ্যা তারপর বল?…

মার্জান : তারপর তারপর [ চেঁচিয়ে ] আরে মনে আসছে না তো!

স্নেহা : [ এগিয়ে এসে ] তারপর আমি বলছি… [ বলতেই জারিফা উঠে দাঁড়িয়ে স্নেহার মুখ চেপে ধরে ]

জারিফা : [ স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] Shut-up স্নেহা! আল্লাহর ওয়াস্তে কিছুক্ষণ মুখ বন্ধ রাখ! [ মার্জানের দিক তাকিয়ে ] হিহি তারপর ও বলছে ও কিছু জানেনা…ইয়ার মার্জান কাল কোনো কিছু অনাথসনাথ হয়নি তো?..আমার তো অনেক ভয় করছে! আচ্ছা ভয় পেয়ে লাভ কি…আমরা খালামুণি হবো এটা তো খুশিরই খবর তাই না স্নেহা?..

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] খাখ…খাখ..খালামুণি?…

জারিফা : [ স্নেহাকে চোখ মেরে ] আরে হ্যা!

মার্জান : [ জারিফাকে টেনে খাটে শুয়ে মুখের উপর বালিশ চেপে ] খালামুণি হওয়ার শখ তোর তাই না! বানাচ্ছি তোকে খালামুণি!

জারিফা : [ বালিশ সরানোর চেষ্টা করতে করতে ] ইয়ার! মেরি জান…মরে যাবো তো আমি!

মার্জান : মর তুই! তোর মতো ফ্রেন্ড মরে যাওয়ায় ভালো! শয়তান, রাব্বিশ,ইডিয়ট, দুনিয়ায় যতো জন্তু জানোয়ার আছে সবই ও…আই হেট হিম! আর তুই ওর সাথে আমার এতোকিছু ভেবে ফেলেছিস…

[ জারিফা ধাক্ষিয়ে মার্জানকে সরিয়ে উঠে বসে জোড়ে জোড়ে শাস ফেলতে থাকে ]

স্নেহা : ইউ ওকে জারিফা?..

জারিফা : ইয়া..ইয়াহ! আই এম অলরাইট! [ মার্জানের দিক তাকিয়ে ] আচ্ছা মার্জান! ও যদি জন্তু জানোয়ার সব হয়! হুম?..তাহলে তোর বাচ্চাটা কোন জন্তু হবে! [ কনফিউজড হয়ে ] বিড়াল, বানর, নাকি…হাতি…আর নাকি [ বলেই মার্জানের দিক তাকাতেই আরে বাপরে বলেই উঠে দৌড় দেই…আর মার্জান ও তাকে দৌড়ে তাড়িয়ে ছাড়লো! ]

[ স্নেহা তাদের কান্ড দেখে হাসতে হাসতে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায় আবার মনে পড়লো সে তো তার মাকে কথা দিয়েছিলো আজ টাকা পাঠাবে! হঠাৎ, ফোনটা বেজে উঠলো… রুমে ঢুকে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করতেই স্নেহা ব্লাশিং! ]

রাহুল : [ ঘুম কন্ঠে ] রাহুল! নামতো সুনাহি হোগা!

স্নেহা : সকাল সকাল শাহ-রুখ খানের ডায়লগ!

রাহুল : ওহ! সরি ভুলে গেলাম তুমি তো আবার সালমান খানের ফ্যান! উমম! সালমানেরটাই বলি.. “প্রেম নামহে মেরা প্রেমমম ”

[ স্নেহা হেসে উঠে, রাহুল ও ব্লাশিং হয়ে হাসে ]

রাহুল : গুডড মর্নিং!

স্নেহা : গুড মর্নিং! ব্রেকফাস্ট কমপ্লিট ?..

রাহুল : ওহো এখনো… কম্বলের ভেতর লেপ্টে আছি…ব্রেকফাস্ট কই করলাম!তুমি করেছো?…

স্নেহা : হুম করেছি!

রাহুল : আচ্ছা চলো স্নেহা! একটা মর্নিং কিস্ দাওনা! সকালটা যেনো…

স্নেহা : উঠে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করেনিন! ভার্সেটিতে দেখা হচ্ছে এখন রাখি!

রাহুল : তোমরা মেয়েরা না, কথা ঘুরাতে Always ফার্ষ্ট প্রাইজটাই পাবা!

স্নেহা : [ মুখ চেপে হেসে ] ওকে বাই!

রাহুল : ওওওকে!

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে ফোনটা কেটে রাখতেই ছিলো টেবিলে..কিন্তু আবার হাতে নিয়ে মনে মনে ভাবতে লাগলো ওর নাম্বারটা কি নামে সে্ভ করা যায়! ] উমম! হ্যা! এটাই বেষ্ট হবে [ বলেই মিষ্টার তেডি স্মাইল দিয়ে রাহুলের নাম্বারটা সে্ভ করে রেডি হতে চলে গেলো ]
________________________________

ভার্সেটিতে,

মার্জান : [ নাকফুলিয়ে জারিফার দিক তাকিয়ে ] আরেকবার তুই ঐ শয়তানটার নাম আমার সামনে নিলে না…তোকে আমি…

জারিফা : আচ্ছা ওয়েট ওয়েট…ও তোকে কি এমন করেছে ওর উপর এভাবে ক্ষেপে আছিস কেনো বলতো! গতকাল তো পারলে ও তোকে হেল্প করেছে…তোর আরো উচিৎ ওকে গিয়ে থেংক্স বলা!

মার্জান : উফফফ! পেইন লাগছে এসব বাদ দে! চল ভেতরে,

[ স্নেহা পার্কিং এর দিক তাকাচ্ছিলো রাহুলের গাড়ী দেখা যাচ্ছে না! তার মানে রাহুল এখনো আসেনি ভাবতে ভাবতেই এগুচ্ছিলো হঠাৎ কারো পায়ের সাথে বেজে উপুড় হয়ে স্নেহা পড়ে যেতেই ছিলো,কিন্তু পড়লো না…কেউ পেটের দিক হাত দিয়ে ধরে আটকে ফেললো, স্নেহা ফিরে তাকালো..এবং অবাক হলো…কেউ কি তাকে পা দিয়ে ইচ্ছে করে ফেলেছে নাকি…সে ব্যালেন্স হারিয়ে পড়তে ছিলো…]

সামির : কেয়ারফুল স্নেহা!

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে দাঁড়ালো ]

মার্জান : স্নেহা ঠিকাছিস?..

স্নেহা : হুম! [ সামিরের দিক তাকিয়ে ] থেংক্স!

সামির : [ হেসে ] No No, স্নেহা! my pleasure!

মার্জান : [ জারিফার কানে ফিসফিসিয়ে ] এটা আবার কে?..স্নেহাকে নাম ধরে ডাকলো আই মিন স্নেহাকে চিনে কিভাবে!

জারিফা : [ ফিসফিসিয়ে ] Don’t know ইয়ার! কোথাও দেখেছি মনে হচ্ছে বাট মনে পড়ছে না!

মার্জান : ওকে চল স্নেহা! [ বলেই এগুচ্ছিলো ]

সামির : ওয়েট ওয়েট! আব..স্নেহা! তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো..ঐদিন তাড়াহুড়ো করে চলে গিয়েছিলে তাই বলতে পারিনি!

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে ] কি?..

সামির : [ ব্লাশিং হয়ে ] তোমার গাওয়া সংটা খুব দারুণ ছিলো! কি না ভয়েস্ ছিলো বলে বোঝাতে পারবো না!

স্নেহা : আপ..আপনি কিভাবে?..শুশ..শুনলেন…

সামির : স্পিকার দিয়ে গাইছিলে! সাউন্ড শিরি পর্যন্ত আসছিলো!

স্নেহা : ওহ!

সামির : [ হাত বাড়িয়ে ] আব..ফ্রেন্ডস?..

[ স্নেহার ইচ্ছে হচ্ছিলো না তাও হাতটা বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করলো ]

হঠাৎ, পাশ থেকে স্নেহা বলে আওয়াজ আসলো! সবাই একসাথে ফিরে তাকিয়ে দেখে রাহুল দাঁড়িয়ে আছে,চোখ থেকে সানগ্লাসটা খুলে শার্টে লাগিয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এসে হাত বাড়ালো, স্নেহা তাড়াতাড়ি সামির থেকে হাত ছুটিয়ে নেয়! ধীরেধীরে রাহুলের বাড়িয়ে দেওয়া হাতের উপর হাত রাখলো, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহাকে কাছে এনে দাড় করালো! এবং সামনে চলে আসা স্নেহার চুল গুলো কানে গুজে দিলো, সামির তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক…তা দেখে রাহুল শার্ট থেকে সানগ্লাসটা ছুটিয়ে আবার পড়ে স্নেহার হাত ধরে এগিয়ে নিয়ে চলে যায়,

ভার্সেটির বারান্দায়,

রাহুল : Listen স্নেহা! এই সামিরের সাথে কথা বলার দরকার নেই! বুঝছো!

স্নেহা : কেনো কি হয়েছে?..

রাহুল : উফফ! বললাম ব্যাস follow করবা Enough!

স্নেহা : [ হেসে ] আচ্ছা ঠিকাছে!

রাহুল : ওকে তাহলে তুমি এখন ক্লাসে যাও! আর বাসায় যাওয়ার আগে আমার সাথে মিট করবা! আমি পার্কিং এর দিকই থাকবো!

স্নেহা : ওকে!

রাহুল : বাই! [ With tedi smile ]

[ স্নেহা ক্লাসে চলে এলো, একঘণ্টা পেড়িয়ে গেছে… হঠাৎ স্নেহার মনে পড়লো তার তো টাকা জমা দেওয়ার কথা ছিলো ]

স্নেহা : [ মার্জানের কানে ফিসফিসিয়ে ] আরে আমি তো মামাকে টাকা দেইনি!

মার্জান : কিসের টাকা?..

স্নেহা : ঐ যে বাসে্ বলেছিলাম না!

মার্জান : ওহ আচ্ছা! তো এখন যাবি?..

স্নেহা : হ্যা! যেতে তো হবে আমি মা কে কথা দিয়েছি! আজই দিবো!

মার্জান : আচ্ছা! আমি যাবো সাথে?..

স্নেহা : না নাহ! সমস্যা নেই আমি পারবো!

জারিফা : রাহুলকে সাথে নিয়ে যা! [ বলেই চোখ টিপ মারলো ]

স্নেহা : জারিফা রাহুলকে এসব জানানো যাবে না..বাসে্ই তো বলেছি তোদেরকে! [ বলেই দাঁড়িয়ে যায় ]

মার্জান : আচ্ছা ঠিকাছে তাড়াতাড়ি আসিস!

[ স্নেহা বেড়িয়ে গেলো, ]
________________________________

ভার্সেটি ছুটির পর,

রাহুল : [ পার্কিং এর দিক থেকে মার্জানের দিক এগিয়ে এসে ] স্নেহা! কোথায়?..

[ মার্জান চুপ হয়ে রইলো কি বলবে মাথায় আসছে না ]

জারিফা : আ…স্নেহা! ও তো ওয়াসরুমে!

রাহুল : ওহ!

মার্জান : [ জারিফাকে চিমটি দিয়ে ] ও ওয়াসরুমে না! [ দাত কিলিয়ে ] আমাদের বলে গিয়েছে না! [ রাহুলের দিক ফিরে ].. এক্সুলি স্নেহা! ভার্সেটি নেই!

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে ] কোথায় গেছে ?…

মার্জান : কোথায়?.. হ্যা কোথায় গেছে যেনো [ চেঁচিয়ে ] ও হ্যা! হ্যা! মনে পড়েছে…ও না ডান্স ক্লাসে গেছে!

রাহুল : হোয়াট?..

মার্জান : মানে… ও ছেড়ে দিয়েছিলো…কিন্তু আবার জয়েন করছে..কারণ ডান্স প্রেকটিস্ থাকার জন্য! আর সাথে এক্সারসাইজ ও হয়ে যাবে তাই না!

[ বানিয়ে বানিয়ে বলতে বলতে হাপিয়ে উঠলো মার্জান, রাহুলের কেনো যেন ডাউট হচ্ছিলো তাদের কথায় তাও আর কিছু বললো না ওকে বলেই চলে গেলো ]

মার্জান : [ বুকে হাত দিয়ে জোড়ে একটি শাস ফেলে ] বাপরে! রাহুলের চোখে তাকিয়ে মিথ্যা বলছিলাম…এমন লাগছিলো গলায় মাছে কাটা আটকে গেছে! [ জারিফাকে চিমটিয়ে ] আর তুই গাধী একটা ওয়াসরুমে কেনো বললি?..

জারিফা : আআউ! আরে মাথায় কিছু আসছিলো না!

মার্জান : অন্য কিছু বানিয়ে বলতে পারতি! এটা কোনো বাহানা হলো..? পরে যখন ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে ও দেখতো স্নেহা বেরুচ্ছে না ওয়াসরুম থেকে তখন…?

জারিফা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] তখন ওয়াসরুম তো ভাংচুর করতো সাথে আমাদের মাথা ও ফাটাতো মিথ্যা বলার অপরাধে,
________________________________

এইদিকে, রাহুল স্নেহাকে বারবার ফোন দিচ্ছে আর স্নেহা বারবার কাটতে চলছে,

রাহুল : Damn it! ফোন কেনো কাটছে বারবার!

শ্রেয়া : আরে হয়তো কোনো কাজে বিজি্ আছে তাই!

রাহুল আর কোনো জবাব না দিয়ে সোজা গাড়ী নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে,ডান্স ক্লাসের বিল্ডিং এর নিচে দাঁড়িয়ে স্নেহাকে আবার ফোন দিতেই স্নেহা রিসি্ভ করলো,

রাহুল : কোথায় তুমি?.. এতোবার ফোন দিচ্ছি রিসি্বই করছো না!

স্নেহা : এক্সুলি রাহুল আপনি যখন ফোন দিচ্ছিলেন তখন মামা সামনে ছিলো তাই রিসি্ভ করতে পারিনি!

রাহুল : মামা?…কিন্তু তোমার ফ্রেন্ডসরা বললো তুমি ডান্স ক্লাসে…ইনফ্যাক্ট আমি এখন ওখানের নিচেই দাঁড়িয়ে আছি!

স্নেহা : [ জিহ্বায় কামড় দিয়ে ] আ..আসলে আমি ডান্স ক্লাসেই ছিলাম…ওখানে সিনিয়র ডান্সার যেটা আছে না ওনাকে আমরা মামা বলি তাই!

রাহুল : আচ্ছা ঠিকাছে নিচে নামো! একসাথে লাঞ্চ করবো!

স্নেহা : কিক…কিন্তু রাহুল! আমিতো বাসায় এসে গেছি!

রাহুল : হোয়াট?..

স্নেহা : সরি! রাহুল… আমি জানতাম না আপনি আসবেন!

রাহুল : ওকে! নো প্রবলেম! [ বলতেই ফোনটা কেটে গেলো ]

স্নেহা : আরে! এই ব্যাটারি লো হওয়ার আর সময় ছিলো না! উফফ [ মনে মনে ] একদিকে তো রাহুলকে মিথ্যে বলতে কি মসিবত! আর এইদিকে ফোনটাও,

– আর দেরী করা যাবে না এক্ষুণি বাসায় পৌছাতে হবে, [ বলেই স্নেহা টেক্সি ঠিক করে নিয়ে বাসায় এসে পৌছালো ]
________________________________

এইদিকে রাহুল, স্নেহাকে ফোন দিয়ে ট্রাই করতে করতে সুইচ অফ আসাতে রেগে মোবাইলটা অন্যসি্টে ছুড়ে মেরে বাড়ী এসে পৌছালো,
________________________________

স্নেহা রুমে ঢুকতেই,

মার্জান : এতো লেইট করলি কেনো!

স্নেহা : মামী ছাড়ছিলোই না…বলছে কতোদিন পড়ে এসেছিস! আরেকটু বয় আরেকটু বয় এভাবে টাইম চলে গেছে! আচ্ছা আমাকে তোর ফোনটা একটু দে!

মার্জান ফোন দিলে স্নেহা এগিয়ে নিয়ে রাহুলকে কল দিচ্ছিলো কিন্তু রাহুল রিসি্ভই করছে না!
________________________________

সন্ধ্যায় স্নেহা! ডান্স ক্লাস শেষ করে রাস্তার ধারে এসে দাঁড়ালো, কটা বাজছে তা দেখার জন্য বেগ থেকে ফোন বের করলো এবং দেখে মোবাইলটা বন্ধ হয়ে আছে, [ মনে মনে ] আরে চার্জ করে মোবাইলটা অন ও করা হয়নি! [ বলেই অন করলো ] হঠাৎ কিছুক্ষণ পর ফোনটা বেজে উঠলো,

স্নেহা : [ ফোন রিসি্ভ করে ] হ্যা! মার্জান বল!

মার্জান : কি বলেছে?..সব ঠিকটাক তো?

স্নেহা : হুম! কিন্তু এতোদিন Continue না করাতে ওরা নতুন টিচার নিয়ে ফেলেছে!

মার্জান : তাহলে?..

স্নেহা : বলেছে চাইলে আবার জয়েন করতে পারবো! কিন্তু নতুন করে এপোয়েটমেন্ট জমা দিতে হবে…ঐটাই ফিলাপ করে জমা দিয়ে আসছি!

মার্জান : থেংক গড!

স্নেহা : আচ্ছা আমি বাসায় এসে কথা বলছি এখন রাখি!

মার্জান : ওকে

স্নেহা : [ ফোন কেটে বেগে রাখতেই ছিলো হঠাৎ মনে পড়লো রাহুলকে একটা ফোন দিয়ে দেখি! আবার মনে মনে ] না থাক ফোন না…মিষ্টার তেডি স্মাইল নিশ্চয় রাগ করে আছে,বাসায় গিয়ে সারপ্রাইজ দি!

[ বলেই স্নেহা এক্সাইটেড হয়ে টেক্সি ঠিক করে রাহুলের বাসায় এসে পৌছালো! ]

দু-তিনবার বেল বাজতেই রাহুল এসে দরজা খুললো,

রাহুল : তুমি?…

স্নেহা : ইয়েস্! [ বলেই রাহুলকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত তাকিয়ে হেসে ] আপনি বাচ্চা ছেলের প্যান্ট পড়ে আছেন কেনো!

রাহুল : ইটস্ নট বাচ্চা ছেলের প্যান্ট! ওকে! এটাকে থ্রি কোয়াটার প্যান্ট বলে,

আর হ্যা! কে আপনি?..আমি আপনাকে চিনি?..

স্নেহা : [ নাক ফুলিয়ে ] আচ্ছা?.. ওকে!

[ বলেই মোড় ফিরে চলে যাচ্ছিলো,রাহুল হেসে স্নেহার হাত ধরে টেনে ভেতরে ঢুকিয়ে নেয়! ]

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] আরে!

রাহুল : কই যাও!

স্নেহা : আপনি তো আমাকে চিনেন না তাই না?…সো্ থেকে কি লাভ?…

রাহুল : [ হেসে হেসে দরজা লাগিয়ে স্নেহাকে কাছে টেনে নেয় ] মজা করছিলাম! Between i am surprised তোমাকে দেখে!

স্নেহা : কেনো সারপ্রাইজড কেনো?..আমি কি আসতে পারিনা?..

রাহুল : [ স্নেহাকে কোলে তুলে নিয়ে ড্রইং রুমের দিক এগুতে এগুতে ] আরে তা হবে কেনো ?.. একবার আমাকে বলতে আমি নয়তো পিক করে নিতাম! তুমি একা এসেছো তাই বলছি!

স্নেহা : আচ্ছা তাই?….ফোন রিসি্ভ করছিলেন?…কতোবার ফোন দিয়েছিলাম!

রাহুল : [ স্নেহাকে সোফায় বসিয়ে ] এক্সকিউজ মি! আমি তোমাকে কতোবার ফোন করেছি জানো?..তোমার ফোন সুইচ অফ আসছিলো বার বার,

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আচ্ছা! আমার ফোনের ব্যাটারি লো ছিলো তাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো আর আমি তো মার্জানের ফোন থেকে ফোন দিচ্ছিলাম বারবার আপনি রিসি্ভই করছেন না!

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে ] আচ্ছা ওটা তুমি ছিলে?…আমি Unknown দেখে রিসি্ভ করিনি!

স্নেহা : [ রাহুলের গাল টেনে দিয়ে ] অনেকসময় unknown নাম্বার ও রিসি্ভ করতে হয় মিষ্টার! যদি কেউ কখনো বিপদের পড়ে ফোন দেই!

রাহুল : ইয়াহ ইউ আর রাইট! [ বলে অন্যদিক ফিরে গিয়ে ] কিন্তু তখন আমার মাথা খারাপ ছিলো! একতো তোমাকে বলেছি দেখা করতে করোনি! আমি লাঞ্চ এর জন্য কতো কিছু বুকিং দিয়ে আ্যরেঞ্জ করে রেখেছিলাম ওটাও ক্যান্সেল…তার উপর না বলে হুট করে মোবাইল বন্ধ হয়ে যাওয়া!

স্নেহা : সরি রাহুল! আমি…আসলে বিকেলে ও ফোন করতে ছিলাম..ইশ! তখন যে কেনো করলাম না! ডান্স ক্লাসে যাওয়ার তাড়াহুড়োতে সব ওলটপালট হয়ে গেছে!

রাহুল : তুমি তো ডান্সক্লাসে সকালে গিয়েছিলে তাই না?..

স্নেহা : হ্যা! আ..আসলে দু-বার করেছি আজ! কারণ.. কাক..কারণ [ বলেই স্নেহা কনফিউজড হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে আছে মাথায় কিছু আসছিলো না কি বলবে! ]

রাহুল : ওকে! আই গট ইট!

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি অন্যদিক ফিরে যায় ]

রাহুল : স্নেহা! তুমি আমার থেকে কিছু লুকাচ্ছো রাইট?..

স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে ] সকালে গিয়েছিলাম..আজ কারণ আমাদের সিনিয়র টিচার এর বার্থডে ছিলো তাই! সত্যি!

রাহুল : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম! [ বলেই অন্যদিক ফিরে মাথা নিচু করে রাখে ]

স্নেহা : [ সোফার দিক রাহুলের কাপড় পড়ে থাকা দেখে ] রাহুল!

রাহুল : হুম?..

স্নেহা : আপনার কাপড়-চোপোড়গুলো এভাবে ফেলে রেখেছেন কেনো?..

রাহুল : অহ! ওগুলো servant রেখে গেছে! আয়রন করে!

স্নেহা : আপনি কোথাও যাচ্ছিলেন?..

রাহুল : হ্যা! তোমার ফোন সুইচ অফ দেখে ভেবেছি দেবদাস হয়ে বারে গিয়ে ড্রিংক্স খাবো!

স্নেহা : সিরিয়াসলি! রাহুল আই এম নট কিডিং!

রাহুল : হ্যা! যাচ্ছিলাম…একটা ফ্রেন্ড এর এংগেজমেন্ট প্লাস ওর বেবির বার্থডে!

স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] এটা কেমন কথা! বেবি হয়ে গেছে বেবির বার্থডে কিন্তু আবার এংগেজমেন্ট! আই মিন বিয়ের আগে বেবি!

রাহুল : কেনো বিয়ের আগে বেবি হওয়া যায় না?..

স্নেহা : [ হেসে হেসে ] হোয়াট? বিয়ের আগে বেবি কিভাবে হবে রাহুল!

রাহুল : [ স্নেহার কাছে এসে ] আচ্ছা?..দেখাবো নাকি কিভাবে হবে!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চিন্তাকরে রাহুলকে ধাক্ষিয়ে সরিয়ে দিয়ে ] ছিঃ রাহুল!

রাহুল : [ হেসে হেসে ] You know স্নেহা! সবাইতো আর তোমার মতো ইন্নোসেন্ট না! তোমার মতো সে্ইম মাইন্ডের না!

স্নেহা : আচ্ছা! তাহলে আপনি বসে আছেন কেনো…আমি আসি! আপনি যান, [ বলেই উঠে দাঁড়ালো ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে ] ক্যান্সেল!

স্নেহা : মানে?..

রাহুল : মানে আমি প্রোগ্রামে যাচ্ছি না এইখানেই আছি! আর তুমি ও এইখান থেকে কোথাও যাচ্ছো না আমার সাথেই থাকছো!

স্নেহা : কিন্তু রাহুল! এটা…

রাহুল : [ স্নেহার মুখে আংগুল দিয়ে ] স্টপ!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আচ্ছা তাহলে ড্রেস গুলো পড়েন!

রাহুল : হোয়াট?..

স্নেহা : মনে আছে আমাকে জোড় করে মার্মিড ড্রেস্ পড়িয়েছিলেন!

রাহুল : তাই রেভেঞ্জ নিচ্ছো?..

স্নেহা : [ হেসে ] আরে না! এমনিতেই আমি দেখবো!

রাহুল : [ একটু হেসে ] ওকেই! [ বলে ড্রেস পড়ার জন্য হাতে নিচ্ছিলো ]

স্নেহা : এইখানে পড়বেন?…

রাহুল : হ্যা!

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] হোয়াট…?

রাহুল : কেনো তোমার সামনে পড়লে কি তোমার কুচ কুচ হবে নাকি ?..[ with tedi smile ]

স্নেহা : [ ঢোগ গিলে ] এটা ড্রইং রুম! চেঞ্জিং রুম না!

রাহুল : হ্যা! কিন্তু এখন তো তুমি আমি ছাড়া আর কেউ নেই!

স্নেহা অবাক হয়ে হা করে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক!

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এসে হাত দিয়ে স্নেহার মুখ বন্ধ করে দিয়ে ] রিলেক্স স্নেহা! [ বলেই হেসে বেড রুমে চলে গেলো ]

[ স্নেহা মনে মনে ব্লাশিং হয়ে হাসতে লাগলো, এবং হেটে হেটে আশেপাশে ঘুরঘুর করে তাকাচ্ছিলো, চারদিক খালি গিটার আর গিটারে ভরা! টেবিলের উপর হাত রাখতেই দেখে রাহুলের সানগ্লাস, সাথে সাথে স্নেহার মনে পড়লো প্রথম যেদিন লাইব্রেরীতে রাহুল স্নেহাকে সানগ্লাস পড়িয়ে দিয়ে চলে গিয়েছিলো, ]

কিছুক্ষণ পর, দেখে রাহুল হোয়াইট ডেনিম শার্ট, ব্লাক ডেনিম জিন্স, এবং ব্লাক লেদার জ্যাকেটটা পড়তে পড়তে বেডরুম থেকে বেড়িয়ে তার দিকই আসছে…

রাহুল : [ স্নেহার কাছে এসে দাঁড়িয়ে ] সো স্নেহা! এবার রিভিউ দাও! কেমন লাগছে?…[ With tedi smile ]

স্নেহা : [ হেসে সানগ্লাসটা রাহুলকে পড়িয়ে দিয়ে ] এতোটাই হেন্ডস্যাম লাগছে যে রিভিউ দিলে কম পড়ে যাবে!

রাহুল : আচ্ছা! তো এখন কি বাসার মধ্যে সানগ্লাসটা ও পড়ে থাকতে হবে?..

স্নেহা : হোহ! আপনার জন্য নতুন কি?..আপনি রাতের আধারে সানগ্লাস পড়ে থাকতে পারলে, ঘরের ভেতর পড়ে থাকতে প্রবলেম কি?.. [ বলেই হাসতে লাগলো ]

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে ] তাই?..অনেক হাসি পাচ্ছে তাই না?…আমার ফিক্সড করা সব আ্যরেঞ্জমেন্ট আজ বিগ্রে দিয়েছো…তুমি জানো আমি আজকে কতো কি ভেবেরেখেছিলাম

স্নেহা : আরে..! [ রাহুল থেকে সানগ্লাসটা খুলে নিয়ে ] আচ্ছা লাঞ্চ ক্যান্সেল হয়েছে তো কি হয়েছে?.. ডিনার একসাথে করি! আমি আপনার জন্য ডিনার রান্না করছি! তারপর দুপুরে যে লাঞ্চ আ্যরেঞ্জমেন্টটা ক্যান্সেল হয়ে গেছিলো ওটা পূরোণ হয়ে যাবে!

রাহুল : রিয়েলি?…

স্নেহা : হুম!

রাহুল : ওকে!

[ স্নেহা কিচে্নে এসে কুকিং এর জন্য সব ঠিকটাক করে নিলো, আর রাহুল কুকিং টেবলের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে, কাটিং বোর্ড এগিয়ে নিয়ে স্নেহা ভেজিটেবল কাটা শুরু করলো…হঠাৎ স্নেহা খেয়াল করলো রাহুল তার পা দিয়ে স্নেহার পায়ের দিক স্কার্ট উঠিয়ে স্লাইড করছে… স্নেহার গা শিউরে উঠলো.. তাও ভেজিটেবল কাটাতে ধ্যান দিয়ে রাখলো…এবার রাহুল হাত এগিয়ে এনে আংগুল দিয়ে স্নেহার কোমোড় থেকে…হাত পর্যন্ত স্লাইড করতে লাগলো, স্নেহার বুকটা ধুপ ধুপ করছে সাথে কাটার স্পিডও বেড়ে গেলো… তা দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিতে লাগলো ]

স্নেহা ধীরেধীরে রাহুলের দিক তাকালে,

রাহুল : [ তাড়াতাড়ি হাত সরিয়ে তেডি স্মাইল দিয়ে ] আমি কিন্তু ডিস্টার্ব করছিনা! ওকে!

[ স্নেহা একটু হেসে আবারো ভেজিটেবল কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, কিছুক্ষণপর রাহুল স্নেহার পেছনে দাঁড়িয়ে ধীরেধীরে স্নেহার কাধ থেকে স্লাইড করে হাত পর্যন্ত এগুচ্ছিলো স্নেহা জোড়ে জোড়ে শাস ফেলছে, ভেজিটেবল কাটা বন্ধ করে দিলো ]

রাহুল : [ তা দেখে তেডি স্মাইল দিয়ে তাড়াতাড়ি পাশ থেকে পানির গ্লাস এগিয়ে নিয়ে ] আমি পানি নিচ্ছিলাম! [ বলেই পানি খেতে লাগলো ]

স্নেহা : [ নিচের দিক তাকিয়ে ] আপনি এমন করলে আমার ভেজিটেবল গুলো কাটা সুন্দর হচ্ছে না দেখেন একটা বড় একটা ছোট!

রাহুল : [ স্নেহার পেছন থেকে দু-হাত দিয়ে স্নেহার টি-শার্ট হালকা উঠিয়ে হাত দিয়ে কোমোড়ে স্লাইড করে জড়িয়ে নিলো, এবং কানে কানে ফিসফিসিয়ে ] আমিতো ভেজিটেবল গুলোকে কিছুই করছিনা…জাষ্ট তোমাকেই টাচ্ করছিলাম…

স্নেহা : [ চোখ বন্ধ করে কেপে উঠে ] কিক…কিন্তু রাহুল! আপনি টাচ্ করলে কেক..কেমন যেনো….

রাহুল : [ চোখ বন্ধ করে স্নেহার কাধের স্মেল নিয়ে ] বলো কেমন ফিল হচ্ছিলো…

[ স্নেহা চোখ খুলে তাড়াতাড়ি রাহুলকে ছুটিয়ে সরে দাড়ালো, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে আবারো কুকিং টেবিলে হেলান দিয়ে দাঁড়ালো ]

স্নেহা : আপ..আপনি এগুলো কাটবেন এখন…এটাই আপনার কাজ…খালি হাত থাকলে আপনার হাত চুলকায়! সো্ এগুলো এখন আমাকে কেটে দিবেন..আমি রাইস্ ভয়েল করছি ওকে!

রাহুল : ওকেই! [ বলেই কাটতে শুরু করলো ]

[ স্নেহা মনে মনে হেসে রাইস্ কুকারে ঢালছিলো,কোণা চোখে তাকিয়ে দেখে রাহুল কাটছে আর কিছুক্ষণ পর পর তার দিক চেয়ে যাচ্ছে…স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হেসে সরে যাচ্ছিলো, হঠাৎ রাহুলের চেঁচিয়ে উঠার শব্দ শুনে তাড়াতাড়ি ফিরে তাকালো ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত টেনে নিয়ে চেঁচিয়ে ] আরে! রাহুল দেখে কাটবেন না?..ভেজিটেবল কাটছেন নাকি নিজের আংগুল কাটছেন! [ রেগে নাকফুলিয়ে ] অবশ্যই হওয়ারি কথা!

– কাটছেন এইদিকে আর তাকাচ্ছিলেন আমার দিকে!

রাহুল : আআউ! স্নেহা! ব্লিডিং হচ্ছে তো চেচাচ্ছো কেনো!

স্নেহা : এর আগে কখনো ভেজিটেবল কেটেছিলেন?..

রাহুল : আমি আ্যপল ফ্রিজ থেকে নিয়ে দাত দিয়ে কেটে খাই…নাইফ ইউজ করিনা তেমন! লাগলে সার্ভেন্ট কেটে দেই! তাই, আই মিন ফার্ষ্ট টাইম তো!

স্নেহা : আপনি আমাকে বলবেন না..আপনি এসব আগে কখনো করেননি!

রাহুল : ওহো দ্যাটস্ ওকে স্নেহা সামান্য একটুই তো!

স্নেহা : ফার্ষ্ট এইড বক্স কোথায়?…

রাহুল : [ আঙুল চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে ] বে..বেড রুমে! টেবিলের ড্রয়ারে আছে!

[ স্নেহা তাড়াহুড়ো করে দৌড়ে যাচ্ছিলো হঠাৎ, ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা! [ স্নেহা ফিরে তাকালে ] তুমি রাগছিলে না তখন তোমাকে অনেক কিউট লাগছিলো!

[ স্নেহা নাকফুলিয়ে একটু হেসে আবার ফার্ষ্ট এইড বক্স আনতে চলে গেলো ]
________________________________

স্নেহা : [ ড্রইং রুমে বসে রাহুলের আংগুলে ব্যান্ডেজ করে দিয়ে ] এইখানে বসে থাকবেন কিচেনে আসবেন না!

রাহুল : আরে! তুমি কিচেনে আমি এইখানে এটা কেমন কথা!

স্নেহা : এমনই হবে! এইখানে বসে থাকুন! রান্না হলে আমি নিজেই এসে বলবো! [ বলেই স্নেহা কিচেনে চলে গেলো ]

আধঘন্টা পর,

স্নেহা ড্রইং রুমে এসে দেখে রাহুল নেই! ধীরেধীরে এগিয়ে বেডরুমে ঢুকতেই দেখে রাহুল ক্যান্ডেল লাইট! আর ফ্লাওয়ার দিয়ে পুরো রুম সাজিয়ে ভরে রেখেছে! মিডলে ছোট্ট একটি টেবিল! এর দুটি চেয়ার ও রেখেছে!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] হেইই! কাম!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আপনি এসব কিভাবে…

রাহুল : [ স্নেহাকে টেনে এনে চেয়ারে বসিয়ে ] Listen! তুমি আমার থেকে একটা কথা লুকিয়েছিলে!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] কিক…কি কথা?…

রাহুল : তুমি গান গাইতে পারো গিটার বাজাতে পারো… আর আমাকে বলোনি কেনো?..

স্নেহা : আমি এসব কিছুই পারিনা!

রাহুল : আচ্ছা ঐ দিন যে গানটা গেয়েছিলে আমি শুনিনি মনে করেছো?..

স্নেহা : [ অন্যপাশ ফিরে গিয়ে ] ওটাতো এম…এমনিতে!

রাহুল : এমনিতে তাই না?..তাহলে আমাকে ও এমনিতেই আরেকটা শুনিয়ে দাও!

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] কি বলছেন আপনি আমি সত্যিই পারিনা!…

রাহুল : Lie!

স্নেহা : আ.. আসলে আমিতো ইউটিউবে…আপনার সিংগিং চ্যানেলে গানটা শুনেছিলাম! আর আপনার গিটার বাজানোটা দেখছিলাম বারবার! তাই…[ বলেই অন্যদিক ফিরে গেলো ]

রাহুল : [ কিছুক্ষণ চুপ হয়ে থেকে ] স্নেহা! You are so brilliant and you have a nice golden voice! just speechless!

– আচ্ছা যা হবে হোক! এবার আমাকে আরেকটা গান শুনিয়ে দাও!

স্নেহা : ট্রাষ্ট মি রাহুল! আমি…এসব…

রাহুল : ওকে আমি আগে গাইবো…then তুমি ফলো করে গাইবা! চলবে?

স্নেহা : রাহুল আমি এসব…

রাহুল : Not one more word just say! yes or not ?..

[ স্নেহা কোনো জবাব না দেওয়ায় রাহুল মন খারাপ করে অন্যপাশ ফিরে বসে থাকে, একটু পর দেখে স্নেহা গিটার হাতে নিয়ে চেয়ার রাহুলের পাশে এগিয়ে এনে বসলো ]

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : হুম!

স্নেহা : ওকে ডান!

[ রাহুল কিছু বললো না ]

স্নেহা : [ মন খারাপ করে ] আচ্ছা আপনি আগে গাইবেন তারপর আমি ও গাইবো!

– প্লিজ!

রাহুল : [ স্নেহার ফেইস রিয়েকশন দেখে একটু হেসে গিটারটা হাতে নিলো! ] স্মাইল করো!

[ স্নেহা হেসে রাহুলের হাত জড়িয়ে নেই ]

রাহুল : ওকে তাহলে! ফার্ষ্ট আমি তারপর তুমি!

স্নেহা : ওকে!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ?♪♪ গিটার বাজানো শুরু করলো ]

♪♪ আল্লাহ মুঝে দা্রদে্ কা্ কাবি্ল বানা্ দি্য়া ♪♪

♪♪ থুফান্ কো্ হি্ কাশথি্ কা্ সা্হিল্ বানা্ দি্য়া ♪♪
♪♪ বেচে্নিয়া্ সা্মেত্কে সা্রে জাহা্ কি্ ♪♪
♪♪ যাব্ কুচ্ না বান্ সা্কা তো্ মে্রা দি্ল বানা্ দি্য়া ♪♪

♪♪ ও সা্থি্ তে্রে বিনা্ রাহি্ কো্ রাহ্ দিখা্ না্ ♪♪

♪♪ ও সা্থি তে্রে বিনা্ হা সা্হিল্ ধুয়া্ ধুয়া্ ♪♪

[ স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ একটু হেসে স্নেহার মুখ বন্ধ করে দিয়ে ] Now your trun!

স্নেহা : আপনি এই গানটাও দিয়েছিলেন আপনার সিংগিং চ্যানেলে! রাইট!

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] রাইট! আচ্ছা তুমি আমার আনপ্লাগড করা সব সং শুনেছো!

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে মাথা নিচু করে ] হুম! শুনেছি ইনফ্যাক্ট সময় পেলেই শুনি! প্রথম যেদিন জানতে পেরেছিলাম আপনি আনপ্লাগড সিংগার তখন থেকেই!

রাহুল : ওয়াও! তাহলে আমি ধন্য!

স্নেহা : মানে?..

রাহুল : মানে কিছুনা! এবার চুপচাপ ট্রান পুরা করো,

[ বলেই রাহুল গিটার বাজাতে লাগলো,এবং চোখ দিয়ে ইশারা করলো গাইতে ]

স্নেহা : [ একটু ব্লাশিং হয়ে ]

♪♪ আল্লাহ মুঝে দা্রদে্ কা্ কাবি্ল বানা্ দি্য়া ♪♪
♪♪ থুফান্ কো্ হি্ কাশথি্ কা্ সা্হিল্ বানা্ দি্য়া ♪♪
♪♪ বেচে্নিয়া্ সা্মেত্কে সা্রে জাহা্ কি্ ♪♪
♪♪ যাব্ কুচ্ না বান্ সা্কা তো্ মে্রা দি্ল বানা্ দি্য়া ♪♪

♪♪ ও সা্থি্ তে্রে বিনা্ রাহি্ কো্ রাহ্ দিখা্ না্ ♪♪

♪♪ ও সা্থি তে্রে বিনা্ হা সা্হিল্ ধুয়া্ ধুয়া্ ♪♪

[ রাহুল গিটার হাতে নিয়ে তেডি স্মাইল দিয়ে এক পলকে চেয়ে আছে স্নেহার দিক ]

স্নেহা : কি হলো!

রাহুল : ভেবেছিলাম তুমি এক লাইন বলেই স্টপ হয়ে যাবা!

স্নেহা : বললামই তো আমি আপনার…আনপ্লাগড করা সব গানই শুনতে শুনতে… মুখস্থ করে ফেলেছি!

রাহুল : ব্রিলিয়ান্ট! [ with tedi smile ]

স্নেহা : আরে! কুকিং! [ বলেই স্নেহা তাড়াহুড়ো করে রুম থেকে বেড়িয়ে যায় ]

[ রাহুল ব্লাশিং হয়ে বসে থাকে,আর মুচকি মুচকি হাসছে একটু পর দেখে স্নেহা ট্রলি করে ডিনার নিয়ে আনলো ]

স্নেহা : [ ট্রলি থেকে দুটো প্লেট টেবিলে রেখে ] আমার রান্না তেমন ভালো না আগেই বলে দিচ্ছি!

রাহুল : [ স্নেহার দিক একধ্যানে চেয়ে ] এই হাতে poison দিলে না! ওটাও পৃথীবির সব ডিশকে হার মানাবে…..

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] হোয়াট?..

রাহুল : কিছুনা! [ with tedi smile ]

[ বলেই উঠে দাঁড়িয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এলো, স্নেহার কাধ থেকে চুল গুলো সরিয়ে বিলিয়ে দিলো,স্নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে ধীরেধীরে হাত দিয়ে স্নেহার ঠোটে স্লাইড করতে লাগলো ]

স্নেহা : [ চোখ বন্ধ করে ফেলে ] রার..রাহুল! ডিনার…

রাহুল : কিন্তু আমার অন্যকিছু খেতে মন চাইছে! [ বলেই মুখটা স্নেহার ঠোটের দিক বাড়ালো ]

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] রার…রাহুল!

রাহুল : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] রিলেক্স!

[ স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে রাহুলের দিক, রাহুল একটু হেসে স্নেহাকে বুকে টেনে জড়িয়ে ধরে ]

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 24

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 24

writer-Jubaida Sobti

কানে শ্রোতের আওয়াজ ভেসে আসছে,
ঠান্ডা বাতাসে স্নেহা মুড়িয়ে যাচ্ছে রাহুলের বুকে,

রাহুল স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে জড়িয়ে নিলো… স্নেহা চোখ বন্ধ করে খামছে ধরে আছে রাহুলের জ্যাকেট,রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার ঠোটের স্পর্শ ত্যাগ করলো… মাথার উপর ঝাপিয়ে দেওয়া স্নেহার ওড়নাটি সরিয়ে স্নেহাকে গায়ে মুড়িয়ে দিলো,এবং আস্তে আস্তে আংগুল দিয়ে স্নেহার মুখে স্লাইড করে চুলগুলি সরিয়ে দেই,

স্নেহা ধীরেধীরে চোখ খুলে রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে থাকিয়ে আছে ,স্নেহা লজ্জা পেয়ে একটু হেসে রাহুল থেকে ছুটে…দৌড়ে ভেতরে চলে যাচ্ছিলো…সাথে সাথে রাহুল পেছন থেকে স্নেহার হাত ধরে আটকিয়ে ফেলে, স্নেহা জোড়ে জোড়ে শাস ফেলছে…

রাহুল : নিঝুম,নির্ঘুম, রাতের ঐ কালো ছায়া,

– [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা!

[ স্নেহা অবাক হয়ে ফিরে তাকালে ]

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] আপনার ঠোটের ছোয়াতে ভালো লাগা এ কি মায়া, [ স্নেহা ব্লাশিং ]

রাহুল : [ স্নেহার কাছে এসে,] নিবুনিবু বাতাসে, ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা আভাসে, কুয়াশায় ভরা আকাশে,

[ স্নেহা একটু মুচকি হেসে দেই রাহুলের কান্ড দেখে ]

রাহুল : চাঁদনী বসে আছে তার সূর্যের আশায়, আর স্নেহা ডুবে আছে তার রাহুলের ভালোবাসায় [ বলেই মুখটা কাছে এনে স্নেহার নাকের সাথে নাকটা লাগিয়ে দেই ]

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হেসে দেই ]

রাহুল : [ হেসে ] ওকে… ভেতরে চলো এইখানে ঠান্ডা, [ বলেই স্নেহাকে নিয়ে ভেতরের দিক এগুচ্ছে ] এত্তো কেয়ারলেস্ কেনো স্নেহা তুমি?..একটা সুয়েটার পড়ে আসতে পারতে,

স্নেহা : [ থেমে গিয়ে ] রাহুল! আমার না একটা কল করা দরকার!

রাহুল : কাকে?..

স্নেহা : ওদের..আ..আই মিন…

রাহুল : [ হেসে ] অও! Understand! আচ্ছা চলো ভেতরে গিয়েই করো!

স্নেহা : ওকেই!

দুজনেই ভেতরে গিয়ে লিভিং সোফায় বসে, স্নেহা মোবাইল বের করে জারিফাকে কল দিলো,

জারিফা : [ ফোন রিসি্ভ করে ] ওহো! স্নেহা.. মেরি জান! আমাদের কথা মনে আছে বুঝি?..

স্নেহা : [ ফিসফিসিয়ে ] Shut-up জারিফা! আচ্ছা শোন! তোরা আছিস নাকি বাসায় চলে এসেছিস?..

জারিফা : আ..এক..এক্সুলি [ মুখে হাত দিয়ে ফিসফিসিয়ে ] আমি না রিদোয়ানের সাথে বাইরে এসেছি!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] ওহ! আচ্ছা, ওকে তাহলে,

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] আচ্ছা শোন!

স্নেহা : হ্যা! বল..

জারিফা : একটু রাহুলকে দে!

স্নেহা : [ হেসে রাহুলকে ফোন এগিয়ে দিয়ে ] জারিফা!

রাহুল : [ হেসে,স্নেহা থেকে ফোন এগিয়ে নিয়ে লাউডস্পিকারে দিয়ে স্নেহার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে, ] ইয়েস্ মেরি আধি ঘারওয়ালি!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ওহো! জিজাজি, কি সুইট সুইট ভয়েস্ আসছে…

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে থেকে ] এক্সুলি! আমি না একটু আগেই সুইট খেয়েছি তাই সুইট ভয়েস আসছে!

[ স্নেহা লজ্জায় ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে যায় ]

জারিফা : [ মুখে হাত দিয়ে ফিসফিসিয়ে ] বাই দ্যা ওয়ে! জিজু.. আমি না সব ডিটেলে নিবো… কিন্তু!

রাহুল : হোহ-হো [ বলে চেঁচিয়ে হেসে উঠে ]

[ স্নেহা হুট করেই রাহুল থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে কেটে দেই ]

রাহুল : আরে স্নেহা! [ বলেই স্নেহার কোল থেকে মাথা তুলে বসে ] ও ডিটেল চাইছিলো! কেটে দিলে কেনো! [ চোখ মেরে ]

স্নেহা : [ আড় চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] যেমন আপনি তেমন ও! একফুটা ও লাজলজ্জা নেই আপনাদের!

রাহুল : [ স্নেহার পেছনে সোফার উপর হাত রেখে স্নেহার গায়ের সাথে লেগে বসে ] সো্ লজ্জা কিভাবে পাই?… [ বলেই স্নেহার কাধের দিক মুখ এনে স্নেহার চুলের স্মেল নিতে লাগলো ]

স্নেহা : [ হেসে মাথা সরিয়ে ] রাহুল! আমার আরেকটা ফোন করা বাকি আছে!

রাহুল : ওকে ওকেই!….[ বলেই সোজা হয়ে বসে ]

[ স্নেহা একটু হেসে মার্জানের মোবাইলের কল দেই! ]
________________________________

এইদিকে,
মার্জানের ফোনে রিং বেজে উঠায়!

মার্জান : [ হালকা হালকা চোখ খুলে আসিফের দিক তাকিয়ে ] হো..হোয়াটে..মিউজিক… হ্যা?..[ চেঁচিয়ে ] ডিস্…ডিস্গাষ্টিং মিউজিক…

আসিফ : [ হেসে ] তোমার ফোনেই বাজছে! ফোন ধরো!

মার্জান ফোন হাতে নিতে গেলে হঠাৎ হাত থেকে পিছলে ফোন নিচে পড়ে যায়, এদিক ওদিক খুঁজতে লাগলো সে!

আসিফ : ওয়েট! [ বলেই লাইট জালিয়ে দিয়ে ] এইবার নাও…

[ মার্জান ফোনটা দেখে ও আর নিচ্ছে না.. ]

আসিফ : আরে কি হলো! ফোন বাজছে তো…উঠাও..

মার্জান : No…[ চেঁচিয়ে ] আপনি আমার কক..কথা শুনেছেন?..আম..আমি ..কেনো শুনবো?.. [চেঁচিয়ে ] শুশ..শুনবো না…[ বলেই সি্টে হেলান দিয়ে ঢলে পড়ে ]

[ আসিফ বিরক্তি হয়ে জোড়ে একটি শাস ফেলে আবার ড্রাইভ করতে থাকে ]
________________________________

এইদিকে, স্নেহাকে চিন্তিতো দেখে,

রাহুল : হেই! কি হয়েছে?..

স্নেহা : [ সে্ড এক্সপ্রেশন নিয়ে ] মাম..মার্জান…কতোবার ফোন দিচ্ছি…রিসি্ভই করছে না!

রাহুল : [ হেসে ] রিলেক্স স্নেহা! আরে এটার জন্য এভাবে চেহেরা বানিয়ে আছো কেনো…হয়তো কোনো কারণে বিজি্ আছে তাই রিসি্ভ করতে পারছে না..

স্নেহা : কিক…কিন্তু রাহুল ও যতোই বিজি্ হোক এক রিং পড়তেই ফোন রিসি্ভ করে ফেলে!

রাহুল : ওকে ওয়েট!…আমি দেখছি! [ বলেই রাহুল পকেট থেকে ফোন বের করে আসিফকে কল দেই ]

আসিফ : [ ফোন রিসি্ভ করে ] হ্যা! রাহুল বল?…

রাহুল : আসিফ! মার্জান তোর আশেপাশে আছে?..

আসিফ : আশেপাশে না…আমার গাড়ীতেই আছে!

রাহুল : তোর গাড়ীতে?..আচ্ছা ড্রপ করে দিচ্ছিস?.. [ স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো ]

আসিফ : [ ফিসফিসিয়ে ] ইয়ার! She fully drunk!

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] হোয়াট?..

স্নেহা : কি হয়েছে রাহুল?..

আসিফ : আই থিংক ফার্ষ্ট টাইম খেয়েছে!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] স্নেহা! মার্জান কি আগে কখনো ড্রিংক করেনি?…

স্নেহা : হোয়াট রাহুল পাগল নাকি?..এসব খাওয়া তো দূরের কথা ছুয়ে দেখেনি কখনো!

রাহুল : আচ্ছা ওকে তুই একটু খেয়াল রাখ…আমরা আসছি!

আসিফ : ওকে! [ বলেই ফোন রাখে ]

স্নেহা : কি হয়েছে রাহুল?..

রাহুল : তেমন কিছুইনা! মার্জান ড্রিংক করেছে…ডোন্ট ওয়ারি! আসিফ ওকে বাড়ী পৌছে দিচ্ছে…

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] ড্রিংক করেছে?.. মার্জান?…

রাহুল : [ হেসে ] রিলেক্স স্নেহা!

স্নেহা : কিক..কিন্ত ও তো এসব খাইনা…[ বলেই উঠে দাঁড়িয়ে গিয়ে ] আচ্ছা রাহুল চলেন আমরা তাড়াতাড়ি যায়…

রাহুল : [ দাঁড়িয়ে স্নেহার হাত ধরে ] হ্যা আমরা যাচ্ছি স্নেহা! কিন্তু…তুমি রিলেক্স থাকো!

– ওকে?..

[ স্নেহা মাথা নাড়ালো ]

রাহুল : আচ্ছা তুমি বসো..আমি এক্ষুণি আসছি…

[ বলেই স্নেহাকে সোফায় বসিয়ে দিয়ে রাহুল বেড়িয়ে ড্রাইবারকে শিপ ঘুড়িয়ে নিতে বললো… ]

একঘন্টা পরেই শিপ পাড়ে এসে পৌছায়,

রাহুল স্নেহাকে নিয়ে শিপ থেকে নেমে হেসে হেসে গাড়ীতে উঠে,

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ী স্টার্ট দিতে দিতে ] স্নেহা!

স্নেহা : [ আড়চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] স্টপ!…আর হাসবেন না…বলেদিলাম…

রাহুল : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] স্নেহা!সামান্য শিপ থেকে নামতে এভাবে ভয় পেতে আমি তোমাকেই দেখেছি ফার্ষ্ট! [ বলেই আবার হাসতে থাকে ]

স্নেহা : ভয় পাবো না?..মাঝে যে পানি দেখা যাচ্ছিলো! যদি পিছলে পড়ে যায়!

রাহুল : কেনো পড়বে! হাত তো আমিই ধরেছিলাম! [ বলেই স্নেহার দিক তাকালো ]

[ স্নেহা আর কোনো জবাব না দিয়ে একটু ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে গেলো, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ী ড্রাইভ করতে শুরু করে দিলো, ]

কিছুক্ষণ পর,

স্নেহা : আপনাকে বারবার বলেছি এইদিকে তাকিয়ে ড্রাইভ করবেন না! সামনের দিক ফোকাস্ রাখুন! [ রাহুল হেসে উঠে ]

স্নেহা : [ ইমোশনাল হয়ে ] আর এমনিতেই আমাদের তাড়াতাড়ি যাওয়া দরকার! নাজানি মার্জান কি হালে আছে,

রাহুল : এক্সকিউজ মি! আমার ফ্রেন্ড এমন না! ওকে ?..

স্নেহা : [ একটা জোড়ে শাস ফেলে ] স্টপ ইট! রাহুল আমি ওটা মিন করিনি…

রাহুল : [ হেসে..উঠে ] ওকে ওকে আই জাষ্ট কিডিং,

– আচ্ছা! তোমার তাড়াতাড়ি পৌছানো চাই রাইট! সো্ লেটস্ গো [ বলেই রাহুল গাড়ীর স্পিড বাড়িয়ে আরো জোড়ে চালাতে লাগলো ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] কিক..কি করছেন আপনি?..এতো ফার্ষ্ট ড্রাইভিং করছেন কেনো রাহুল?..

রাহুল : [ হেসে, মিউজিক ছেড়ে দিয়ে ] গান শুনো চোখ বন্ধ করে!আশেপাশে তাকিওনা…

স্নেহা : [ রেগে,মিউজিক বন্ধ করে দিয়ে ] আপনি আসলেই একটা! [ বলেই চুপ হয়ে যায় ]

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] বলো?..আমি আসলে একটা?.. ইডিয়ট?.. রাব্বিশ? ইউজলেস?… [ কিটকিটিয়ে হেসে সোজা তাকিয়ে ] স্নেহা! You know আমি যেটায় হই,যেমনি হই…তোমারিতো!

স্নেহা : [ মনে মনে ব্লাশিং হয়ে জানালার দিক ফিরে গিয়ে ] আমার ভয় করছে!

[ রাহুল একটু হেসে ড্রাইভ কিছুটা স্লো করে দিয়ে চালিয়ে এসে পৌছালো,এবং স্নেহার বাসার গেইটের সামনে আসতেই আসিফের গাড়ী চোখে পড়লো,]

রাহুল : এটা তো আসিফের গাড়ীই মনে হচ্ছে!

[ বলেই রাহুল তার গাড়ী এগিয়ে নিয়ে আসিফের গাড়ীর পেছনে পার্ক করে রাখে, স্নেহা তাড়াহুড়ো করে নেমে দৌড়ে এগিয়ে যায়, রাহুল নামতেই দেখে আসিফ ও গাড়ী থেকে নেমে তার দিক এগিয়ে আসছে ]

রাহুল : হেইই!

আসিফ : [ কপালে হাত দিয়ে ] কি মসি্বতরে বাবা!

রাহুল : [ হেসে পকেটে হাত দিয়ে ] কি হয়েছে?..

আসিফ : বললাম নামো তোমার বাসায় এসে পড়েছি! আর ও বলে,খালি পায়ে নামবে না, আমি বললাম তাহলে জুতা পড়ে নামো, [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আবার বলে জুতা পড়লে নাকি পা চুলকাচ্ছে! তারপর আমি আবার বললাম তাহলে খালি পায়েই নামো! তারপর ও কি বললো জানিস?..

রাহুল : [ হেসে ] হো..হোয়াট?…

আসিফ : কেনো আপনি আমার জুতা চুরি করে নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য?..

রাহুল : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] সো্ ফানি ইয়ার!

[ বলেই আসিফকে নিয়ে মার্জানের দিক এগিয়ে আসে এবং দেখে মার্জান পা বটে গুটিসুটি হয়ে সিটের উপর বসে আছে ]

স্নেহা : আরে মার্জান কি হলো বাসায় যাবি না?..

মার্জান : ইয়েস্ বাব…বাসায় যাবো! আচ্ছা আমার বাসা…কোথায়?…

স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে মার্জানকে হাত ধরে টেনে বের করতে চাইলে মার্জান তার মাথা স্নেহার কাধে ঢলে দেই! স্নেহা বুঝতে পারলো..মার্জান উঠে দাড়ানোর শক্তিটাও হারিয়ে ফেলেছে, জোড়ে একটি শাস ফেলে হঠাৎ,পাশফিরে তাকাতেই দেখে আসিফ এবং রাহুল হেসে হেসে কান্ড দেখছে,

স্নেহা সে্ড হয়ে রাহুলের দিক তাকালে রাহুল হেসে এগিয়ে আসে এবং স্নেহাকে সরে যেতে বলে, স্নেহা রাহুলের কথা মতো সরে দাঁড়ায়, রাহুল মার্জানের পাশে এসে হাটু ভেংগে আধ বসা হয়ে বসে,

রাহুল : [ হাত তুলে ইশারা করে ] হেইই বেবি!

মার্জান : [ রাহুলের দিক ফিরে ] হাইইই! [ বলেই আবার সি্টে মাথা ঢলে দেই ]

রাহুল : ঘুম পাচ্ছে?..

মার্জান : হুমম! [ বলেই চোখ বন্ধ করে ফেলে ]

[ রাহুল হেসে উঠে দাঁড়িয়ে আসিফকে চোখ দিয়ে ইশারা করলো যাতে মার্জানকে কোলে তুলে নেয়!]

আসিফ : [ চেঁচিয়ে ] আর ইউ মেড?..আমার মাথা অলরেডি চলে গেছে ওর ডোন্ট টাচ্ মি,ডোন্ট টাচ্ মি বলে বলে চেঁচানোতে!

স্নেহা : [ রাহুলের দিক এগিয়ে এসে ফিসফিসিয়ে ] অনেক তো বডি দেখাচ্ছিলেন! আব…আই মিন..আপনিই তুলে নেন না!

রাহুল : আরে ওকে তুলে নিতে আমার কোনো প্রবলেম নেই! [ মার্জানের দিক চোখ দিয়ে ইশারা করে ফিসফিসিয়ে ] ও ফ্রি আছে, [ আসিফের দিক ইশারা করে ] ওই ও ফ্রি আছে..সো্ [ বলেই স্নেহাকে চোখ টিপ মারলো ]

স্নেহা : [ হেসে রাহুলের মাথায় বাড়ি দিয়ে ] আর ইউ ক্রেজি রাহুল?..

রাহুল : ইয়েস্! আচ্ছা তুমি ওর দিক খেয়াল রাখো আমি আসছি! [ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে আসিফের দিক এগিয়ে যায় ]

আসিফ : দেখ রাহুল তুই যদি আবার ও সে্ইম কথাটা বলতে আসিস না…তাহলে আম সরি! যা!

রাহুল : [ আসিফের কাধে হাত দিয়ে জড়িয়ে ] আরে দোস্ত বোঝার চেষ্টা কর! এভাবে এতো রাতে মেয়েটাকে একা রেখে তো আর চলে যেতে পারবো না…আর আমার চেয়েওতো এসব ব্যাপারে তোর ইমোশনাল বেশী…

আসিফ : আচ্ছা?..এখন তুই আমাকে ইমোশনাল ব্লাকমেইল করা বন্ধ কর!

রাহুল : আরে ব্লাকমেইল করবো কেনো? সিচুয়েশন বুঝাচ্ছি তোকে! [ বলেই আসিফকে ধাক্ষিয়ে গাড়ীর দিক পাঠিয়ে দেই ]

[ আসিফ একটা জোড়ে শাস ফেলে রাহুলের দিক তাকায়, আবার নাক ফুলিয়ে মার্জানকে কোলে নেওয়ার জন্য হাত বাড়ালো, ]

মার্জান : হেইইই ইউ! আই টোল্ড ইউ না! ডোন্ট টাচ্ মি!

[ আসিফ রাগান্বিতভাবে রাহুলের দিক তাকালো, রাহুলের হাসি আসাতে সে তাড়াতাড়ি অন্যদিক ফিরে যায়, ]

স্নেহা : [ আসিফের দিক এগিয়ে এসে ] আ…আপনি! জোড় করে তুলে নিন! আব..আই থিংক শি ইজ আউট অফ সেন্স তাই এমন… [ বলেই মুখ গোমড়া করে ফেলে স্নেহা, তা দেখে আসিফ মার্জানকে জোড় করেই কোলে তুলে নিলো ]

রাহুল : ওয়াও! [ with tedi smile ]

আসিফ : [ নাক ফুলিয়ে ] ওয়েট আমি আসি! [ বলেই এগিয়ে ভেতরে চলে গেলো ]

স্নেহা দৌড়ে আগে গিয়েই দরজা খুলে দিলো, আসিফ রুমে ঢুকে মার্জানকে খাটে শুয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছিলো!

হঠাৎ,

স্নেহা : থেংক্স!

আসিফ : [ হেসে ] দ্যাটস্ ওকে! নো প্রবলেম! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ আবার থেমে গিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] আ…এক কাজ করো,ওকে লেবুর শরবত, অর তেঁতুলের শরবত বানিয়ে খাইয়ে দাও নাহলে অর্ধেক ঘুম থেকে উঠে আবার বমি করতে থাকবে….

[ স্নেহা মাথা নাড়ালো ]

আসিফ : গুড নাইট!

স্নেহা : গুড নাইট,

[ চলে গেলো আসিফ, স্নেহা মার্জানকে বালিশ ঠিক করে শুয়ে দিয়ে গায়ে কম্বল টেনে দিয়ে, দরজা বন্ধ করতে গেলো হঠাৎ মনে পড়লো সে তো রাহুলকে বাই ও বলেনি! আর রাহুলের ফোন নাম্বারটাও নেই যে ফোন করে গুড নাইট বলবে, তাড়াতাড়ি দরজা খুলে আবার শিরি দিয়ে নিচে নেমে আসতেই দেখে রাহুল গেইট দিয়ে ঢুকছে.. স্নেহা হেসে দৌড়ে রাহুলের দিক এগিয়ে গিয়ে জোড়ে জোড়ে শাস ফেলে হাপাতে থাকে, ]

রাহুল : [ স্নেহার কান্ড দেখে হেসে,] এত্তো মেহনত গুড নাইট বলার জন্যে?..

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হেসে উঠে রাহুলের কথা শুনে ]

রাহুল : [ হাত দিয়ে স্নেহার মাথা কাছে টেনে কপালে একটি চুমু খেয়ে ] গুড নাইট!

স্নেহা : গুড নাইট! [ With blushing ]

[ রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চলে যাচ্ছে, স্নেহা ও ব্লাশিং হয়ে পাশ ফিরে দু-তিন কদম এগুতেই হঠাৎ আবার থেমে গিয়ে পেছন ফিরে তাকায়, সাথে সাথে রাহুল ও ফিরে তাকালো…]

স্নেহা : [ দৌড়ে রাহুলের দিক এগিয়ে এসে ] এক..এক্সুলি..

রাহুল : নাম্বার [ with tedi smile ]

[ স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : 01827****** এটাইতো তোমার নাম্বার তাই না?…

স্নেহা : [ শকড হয়ে মাথা নাড়িয়ে ] হ্যা..এট…এটাই! আপনি কিক…কি করে?…

রাহুল : শকড হওয়ার কিছু নেই! You know আই লাভ ইউ স্নেহা! [ With tedi smile ]

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে ] ওকে বায়!

রাহুল : বায়! [ বলেই গেইট দিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে ]

[ স্নেহা ও হেসে ভেতরের দিক চলে যাচ্ছিলো,হঠাৎ কানে ভেসে এলো কেউ বলছে..পুরো বিল্ডিংটাই বাজারের মেয়ের আড্ডাখানা বানিয়ে রেখেছে! স্নেহা তাড়াতাড়ি ফিরে তাকালে দেখে দাড়োয়ান ঐদিকটাই কোনায় চেয়ারে বসে আছে, ]

দারোয়ান : কি দেখছেন?..১২টায় বিল্ডিং এর গেইট বন্ধ করে দেওয়া হয়! নিয়মটা জানেন না?.. এতো রাতে কই গেলেন টাকা কামাইতে নাকি?…

স্নেহার চোখের পানি টলমল করছে রাগে,

দারোয়ান : এমন টাকা কামানো এই বিল্ডিং এ চলবে না! অন্যদিক বাসা খুজো! বুঝলা… [ বলতেই হঠাৎ দারোয়ান চেয়ার থেকে দাঁড়িয়ে ঢোগ গিলতে থাকে, তা দেখে স্নেহা পাশ ফিরে গেইটের দিক তাকাতেই থমকে যায়, ]

স্নেহা : রার..রাহুল!

রাহুল চোখ রাংগিয়ে দারোয়ানের দিক তাকিয়ে আছে, এবার স্নেহা বুঝতে পারলো তার মানে রাহুল সব শুনতে পেয়েছে…তাই রাগান্বিত লাগছে,
স্নেহা দারোয়ানের দিক একবার রাহুলের দিক একবার তাকিয়ে যাচ্ছে..কি করবে কিছুই মাথায় আসছে…নাজানি রাহুল কি করে বসে!

হঠাৎ, স্নেহা খেয়াল করলো রাহুল দারোয়ানের দিক এগিয়ে যাওয়ার জন্যই পা বাড়াচ্ছে,

স্নেহা : [ তাড়াতাড়ি দৌড়ে গিয়ে রাহুলের হাত ধরে ] আব..রার রাহুল! কাল ভার্সেটিতে দেখা হচ্ছে..তাহলে ওকে..গুগ..গুড নাইট!

[ রাহুল কোনো জবাব না দিয়ে স্নেহার হাত ধরে টেনে নিয়ে দারোয়ানের দিক এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ালো ]

দারোয়ান : সালাম! স্যার! [ বলেই ঢোগ গিলতে লাগলো ]

রাহুল : দেখে তো মনে হচ্ছে ওর সমান তোর ও ছেলেমেয়ে আছে!

দারোয়ান : জিজ! জি স্যার! দুই মাইয়া একটা ছোড়া!

রাহুল : [ নাকফুলিয়ে রেগে জোড়ে দারোয়ানের গালে একটা চড় মেরে ] তাহলে তোর মেয়েরা ও লেইট লাইটে কোনো ছেলের সাথে বাসায় ঢুকলে ওকে ও বাজারের মেয়ে বলবি?..

[ স্নেহা শকড হয়ে মুখে হাত দিয়ে দেই! ]

দারোয়ান : [ গালে হাত দিয়ে ডলতে ডলতে ] না স্যার! ভুল হইয়া গেসে্

রাহুল : [ দারোয়ানের কলার ধরে কাছে টেনে আরেক গালে চড় দিয়ে ] কেনো?..বল?.. ভুল কেনো হবে?..ও বাজারের মেয়ে হতে পারলে তোর মেয়ে হতে পারবে না কেনো?..

[ বলেই আবার মারতে লাগলো ]

স্নেহা : [ ঘাবড়ে গিয়ে তাড়াতাড়ি রাহুলের হাত ধরে আটকিয়ে ] রাহুল! নো্

[ বলেই রাহুলের জ্যাকেট ধরে টেনে সরিয়ে আনলো ]

স্নেহা : ওকে রাহুল! রিলেক্স…ভুল হয়ে গেছে ওনার..

রাহুল : [ নাকফুলিয়ে দারোয়ানের দিক তাকিয়ে ] Listen আগেও একবার ওয়ার্নিং দিয়েছিলাম! আর এটা লাষ্ট ওয়ার্নিং!

দারোয়ান : ভুল হয়সে্ স্যার আর হবে না!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] বাসায় যাও!

স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম! কিক..কিন্তু আপনি আবার প্লিজ! এসব..

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] ওকে! করবো না প্রমিস্!

– বাসায় যাও!

দারোয়ান : [ স্নেহার দিক এগিয়ে এসে ] আসেন মেডাম আমি দিয়া আসি…

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] হেইই! স্টপ ওকে! ওভার একটিং করবি না আমার সামনে [ দাত কিলিয়ে ] ইডিয়ট! দেখলেই ইচ্ছে করছে আরো কয়েকটা দি…[ বলেই আবার মারতে এগিয়ে যেতে চাইলে স্নেহা রাহলের জ্যাকেট টেনে ধরে রাখে ]

স্নেহা : ডোন্ট ডো দিস্ রাহুল! প্রমিস্ করেছেন আমাকে!

রাহুল আর কিছু না বলে ফুফিয়ে জোড়ে জোড়ে শাস ফেলতে লাগলো, স্নেহা তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক

হঠাৎ, রাহুল, স্নেহার হাত ধরে টেনে উপরে নিয়ে গিয়ে দরজা খুলে স্নেহাকে ঘরের ভেতরে ঢুকিয়ে দেই, স্নেহা রাহুলের দিক ফিরে তাকিয়ে দেখে রাহুলের চোখেমুখে এখনো রাগ ভেসে আছে!

স্নেহা : [ রাহুলের হাতের উপর হাত রেখে একটু হেসে ] এইভাবে রেগে আছেন কেনো!

রাহুল : [ ফুফিয়ে অন্যপাশ ফিরে গিয়ে ] রেগে নেই! আচ্ছা ডোর অফ করে ভেতরে যাও! ঘুমিয়ে পড়ো! রাত অনেক হয়েছে! [ স্নেহার কাধে হাত রেখে ] বাই! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো ]

স্নেহা : রাহুল! [ বলেই রাহুলের হাত ধরে রাখে, রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে কাছে এসে দাঁড়ালো ]

[ স্নেহা রাহুলের জ্যাকেটের শোল্ডারের দিক ঝেড়ে দিয়ে ঠিক করে টেনে ধরে রাহুলের একদম কাছে এসে দাঁড়ায় ]

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে নিচের দিক তাকিয়ে থেকে ] সস..সত্যি রাহুল এভাবে গেলে আমার রার..রাতে ঘুম আসবে না…

[ রাহুল রাগ কন্ট্রোল করে..একটু হেসে দু-হাত দিয়ে স্নেহার মাথা তুলে কপালে একটি চুমু দেই! সাথে সাথেই স্নেহার চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়লো,]

রাহুল : [ স্নেহার চোখের পানি মুছে দিয়ে দু-চোখের উপর চুমু খেয়ে ] এবার?.. আসবেতো ঘুম?..

স্নেহা : [ হেসে মাথা নাড়ালো ] নাহ!

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে ] তাহলে?..

[ স্নেহা তেডি স্মাইল দিয়ে আংগুল দিয়ে ইশারা করলো ]

রাহুল : অও! [ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহাকে জড়িয়ে ধরে ] Now ওকে?..

স্নেহা : ইয়েস্ [ মাথা তুলে ] আচ্ছা ঠিকাছে এবার! যান…নাহলে কাল ভার্সেটিতে লেইট হয়ে যাবেন!

রাহুল : ওকে ওকে! বাই

স্নেহা : বাই [ রাহুল চলে গেলো ]

[ স্নেহা ডোর অফ করে রুমে গিয়ে খাটে বসে রাহুলের সাথে কাটানো মোমেন্ট গুলো মনে করছে আর ব্লাশিং হচ্ছে,]

[ হঠাৎ, প্রায় কিছুক্ষণ পর দরজায় বেল বেজে উঠলো ]

স্নেহা : [ মনে মনে ] এতো রাতে আবার কে হতে পারে?..আই থিংক জারিফাই হবে,

[ বলেই এক্সাইটেড হয়ে উঠে গিয়ে দরজা খোলার জন্য দূরবীন দিয়ে তাকাতেই স্নেহা শকড হয়ে যায়, ভয়ে বুকটা কেপে উঠলো স্নেহার, ]

স্নেহা : [ মনে মনে ] দারোয়ান ?. উনি আবার কেনো এলো?.. মার্জানকে ডাকবো… কিন্তু ওর তো সেন্সই নেই! রার…রাহুল…উফফ! রাহুলের নাম্বারই তো নেই!
জারিফা ও এখনো আসলো না…

[ এসব ভাবতেই বেলটা আবার বেজে উঠলো, স্নেহা ঘাবড়ে উঠে ] জাজ…জারিফাকে ফোন দিবো.. না…নাহ ওকে ডিষ্টার্ব করা ঠিক হবে না… থাক স্নেহা! পজিটিভ ভাব..হয়তো উনি কোনো কাজে এসেছে… [ বলেই স্নেহা ঠিকটাক হয়ে ধীরেধীরে দরজাটা খুললো ]

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 23

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 23

writer-Jubaida Sobti

 

স্নেহা ধীরেধীরে মাথা ফিরিয়ে রাহুলের দিক তাকালো, রাহুল সাথে সাথে স্নেহাকে চোখ টিপ মারলো! স্নেহা লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি আবার অন্যপাশ ফিরে যায়,

রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার কাধে স্লাইড করে সব চুল একপাশ করে রাখলো, স্নেহা শিউরে উঠলো, হার্টবিট দ্রুত বাড়তে লাগলো স্নেহার,

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] ভয় পাচ্ছো স্নেহা! [ with tedi smile ]

[স্নেহা কোনো জবাব দিলোনা শুধু জোড়ে জোড়ে শাস ফেলছে ]

রাহুল : স্নেহা তোমার নাক!

[ স্নেহা অবাক হয়ে নাকে হাত দিলো,]

রাহুল : লাল হয়ে আছে! [ With tedi smile ]

[ স্নেহা লজ্জায় ব্লাশিং হয়ে মাথা নিচু করে একটু হেসে দেই, রাহুল ও হেসে পেছন থেকে স্নেহাকে শক্ত করে চেপে জড়িয়ে ধরে, আশেপাশে কিছুই দেখা যাচ্ছে না কুয়াশায়…শীতল ঠান্ডা বাতাস বইছে…দুজনেই সেই বাতাস উপভোগ করছে..]

রাহুল : [ স্নেহার কাধে মাথা রেখে ] ঠান্ডা লাগছে তাই তো ?…

স্নেহা : না..নাহ তো!

রাহুল : ওহ! রিয়েলি?..[ স্নেহাকে ছেড়ে দিয়ে ] এবার?..

[ স্নেহা হেসে উঠে, ]

রাহুল : [ আবার স্নেহাকে জড়িয়ে ] আচ্ছা তোমরা মেয়েরা এমন কেনো?..

স্নেহা : কেমন?..

রাহুল : অনেক কথায়, মনের মধ্যে জমিয়ে রাখো! যেমন এখন তোমার ঠান্ডা লাগছিলো..তাও মুখ ফুটে বলছিলেনা যে আমার ঠান্ডা লাগছে…

স্নেহা : কক..কই?… ঠা..ঠান্ডা লাগছিলো নাতো!

[ রাহুল স্নেহাকে একটানে তারদিক ফিরিয়ে নেয়, স্নেহা ঘাবড়ে উঠে রাহুলের দিক তাকিয়ে থাকে, ]

রাহুল : [ স্নেহার কপালের সাথে তার কপাল লাগিয়ে ] ইউ কান্ট লাই টু মি! স্নেহা! আই কেন্ ফিল ইউ!

[ স্নেহা রাহুলের চোখের দিক তাকিয়ে আছে, রাহুল স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড করে একদম কাছে টেনে নেই!…স্নেহা রাহুলের জ্যাকেট শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে ফেলেছে, স্নেহার চুলগুলো উড়ে এসে দুজনের মুখ ঝাঁপিয়ে দিচ্ছে বারবার…রাহুল ধীরে ধীরে স্নেহার নাকের সাথে নাক লাগিয়ে হাত দিয়ে স্নেহার পিঠে স্লাইড করতে লাগলো… স্নেহা তার চোখ বন্ধ করে ফেলেছে…রাহুল ও চোখ বন্ধ করে ধীরেধীরে স্নেহার ঠোটের দিক মুখ এগুতে নিলে,]

হঠাৎ,

স্নেহা : রার…রাহুল No!…

[ বলতেই রাহুল থেমে যায়, চোখ খুলে দেখে স্নেহা তার চোখ এবং ভোর কুঁচকে গুটিসুটি হয়ে আছে,…রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার কোমোড় থেকে তার হাত সরিয়ে নেয়! স্নেহা চোখ খুলে তাকালো রাহুলের দিক, রাহুল ও চুপ করে চেয়ে আছে স্নেহার দিক… ]

হঠাৎ,রাহুল কিটকিটিয়ে হেসে উঠে,

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] হা..হাস…হাসছেন কেনো?..

রাহুল : [ হেসে হেসে ] Oh my godness! স্নেহা! your expression was so cute!

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া হয়ে মাথা নিচু করে ] এক্সুলি… রাহুল!…

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] ওকে রিলেক্স স্নেহা! It’s not a pressure!

[ Sneha blushing ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে স্নেহা! তোমার মুখটা অনেক শুকিয়ে আছে দেখেই মনে হচ্ছে দুদিন ধরে..কিছুই মুখে ও দাওনি! এম আই রাইট?…

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে দু-হাত দিয়ে রাহুলের মুখ ধরে কাদো কন্ঠে ] এমন লেগেছিলো যেনো!

রাহুল : আমি ও কিছু খায়নি! তাই তো?

[ বলতেই স্নেহার চোখে পানি টলমল করছিলো,রাহুল ও তার কপাল স্নেহার কপালে লাগিয়ে জোড়ে একটি শাস ফেলে,স্নেহার চোখের দিক তাকালো,]

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা! উই কুড্ হেয়ার ইচ্ আদার্, ফিল ইচ্ আদা্র কে্ন ইভেন…..

স্নেহা : [ একটু হেসে ] টক্ উইথ ইচ্ আদা্র! [ বলতেই রাহুল ও মুচকি হেসে স্নেহাকে জড়িয়ে ধরে,স্নেহা ও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখে রাহুলকে! ]

রাহুল : আচ্ছা চলো এখন ডিনার করবে!

[ বলেই রাহুল স্নেহাকে ছুটিয়ে হুট করে কোলে তুলে নিলো ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] আরে রাহুল কি করছেন? কেউ…

রাহুল : ডোন্ট ওয়ারি এইখানে তুমি, আমি ছাড়া আর কেউই দেখছে না!

[ বলেই হেটে শীপের ভেতরের রুমে এগিয়ে যায়, আর স্নেহা ব্লাশিং হয়ে রাহুলের দিক চেয়ে থাকে,

ভেতরে গিয়ে দেখে টেবিলে অলরেডি ডিনার সাজিয়ে রেডি করা আছে, রাহুল স্নেহাকে নামিয়ে একটা চেয়ার এগিয়ে দিয়ে স্নেহাকে বসিয়ে Opposite চেয়ারে সে ও বসে পড়ে,]

স্নেহা : [ চারদিক একবার চোখবুলিয়ে আবার রাহুলের দিক তাকিয়ে ] এসব ড্রাইভ করতে করতে ৫ মিনিটের জন্য মোবাইল টিপছিলেন তখনি করেছেন তাই না?..

রাহুল : ইয়েস্ [ বলেই স্নেহাকে চোখ টিপ মেরে প্লেট এগিয়ে দিলো, হঠাৎ চেঁচিয়ে ] ওহ! শিট্, ফ্রন!

– স্নেহা!

স্নেহা : হুম?..

রাহুল : তোমার ফ্রনে এলার্জি তাই না?..

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] How do you know?..

[ রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তার চেয়ারটি স্নেহার কাছে এগিয়ে এনে পাশে বসে স্নেহার দিক তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ, এবং স্নেহার সামনের চুল গুলো কানে গুজে দিয়ে ধীরেধীরে মুখে স্লাইড করতে লাগলো, স্নেহার হার্টবিট আবারো দ্রুতগতিতে চলতে লাগলো রাহুলের ছোয়াতে, চোখ নামিয়ে নিচের দিক তাকিয়ে রইলো স্নেহা,]

রাহুল : তোমার হোয়াইট স্কিনের মাঝে যে রেডনেস্-টা ভেসে উঠে…ওটা দেখে বুঝেছি!

[ স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালে, রাহুল কিটকিটিয়ে হেসে উঠে,]

রাহুল : ওকে ওকে!রিলেক্স এভাবে তাকাচ্ছো কেনো! আসলে মায়ের বার্থডেতে ঐদিন যখন তোমার সাথে লাঞ্চ করছিলাম…তখন তুমি ফ্রন রাইস্ থেকে চিংড়ি এভোয়ড করে খাচ্ছিলে,জাষ্ট ঐটা থেকে আইডিয়া করলাম!

স্নেহা : এতোকিছু খেয়াল করেছেন?…

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] ওহো! স্নেহা আমিতো তোমার সবকিছুই খেয়াল করি [ বলেই নটি মাইন্ডে স্নেহাকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত বারবার দেখতে লাগলো ]

স্নেহা : [ হেসে রাহুলের মাথায় একটি বারি দিয়ে ] ছিঃ রাহুল! স্টপ ইট!

রাহুল : আচ্ছা তুমি একমিনিট বসো আমি এক্ষুণি আসছি!

স্নেহা : কিন্তু কোথায় যাচ্ছেন?…

রাহুল : তোমার জন্য অন্য ডিশ আনতে!

স্নেহা : ইটস্ ওকে! রাহুল ডোন্ট ওয়ারি আমি ম্যানেজ করে নেবো!

রাহুল : নো! ওয়ে… [ বলেই উঠে বেড়িয়ে যায় ]

[ স্নেহা আর কিছু না বলে মনে মনে হেসে মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চারদিক তাকিয়ে দেখতে লাগলো, আশেপাশে জানালা দিয়ে কিছুই দেখা যাচ্ছে না..শিপ চলছে, চারদিক শুধু পানি আর পানি… ]

হঠাৎ, কিছুক্ষণ পর রাহুল এগিয়ে এসে টেবিলে একটি সুপের বাটি রাখলো,

রাহুল : স্নেহা! তোমার আবার চিকেনে এলার্জি নেই তো?..

স্নেহা : [ হেসে ] হাউ ফানি! রাহুল..চিকেনে এলার্জি থাকে নাকি?..

রাহুল : থেংক গড! [ বলেই চেয়ারে বসলো ]

স্নেহা : হ্যা! তবে চিকেনে ও একটা প্রবলেম আছে!

রাহুল : হুম! তা কি?..

স্নেহা : চিকেন ফ্যাট! তাই আমার ওয়াইট বাড়তে পারে!

রাহুল : হোহ হো! [ বলেই স্নেহার সামনে হাত তুলে বডি দেখিয়ে ] ডোন্ট ওয়ারি বেবি! কোলে চড়তে পারবে!

[ স্নেহা হাসতে থাকে রাহুলের কান্ড দেখে ]
________________________________
এইদিকে..আসিফ ড্রাইভ করতে লাগলো, আর মার্জান মাতাল অবস্থায় উলটা পালটা বক বক করে যাচ্ছে,

মার্জান : আমি আপনাকে….বল…বলেছি?..

আসিফ : ভালো করে দাঁড়াতে পারছো না আবার বলছো বাড়ী একা যাবা!

মার্জান : Lis…Listen! আপনার! তিতকরলার মতো কক…কথা গুলো না! আমার…সাস…সামনে বলবেন না! [ চেঁচিয়ে ] আই হেটটট তিতকরলা! ইয়াককক! [ বলেই আসিফের গায়ের দিক মুখ এনে বমি করার ট্রাই করতে লাগলো ]

আসিফ : [ তাড়াতাড়ি গাড়ী থামিয়ে চেঁচিয়ে ] হেই হেই! Listen.. কি করছো ওয়েট!

[ মার্জান আসিফের দিক তাকিয়ে কিটকিটিয়ে হেসে উঠে ]

আসিফ : থেংক গড! আমি ভেবেছি সত্যি সত্যি! [ বলেই একটি জোড়ে শাস ফেললো ]

মার্জান : উমম! আপনি ভাবলেন কেনো?.. হুম?.. আপনাকে ভা..ভাবতে?..[ চেঁচিয়ে ] বলেছি?.. আরে এভাবে ডায়নেসোর এর মতো হা কক..করে তাকিয়ে আছেন কেনো?..হুম?.. [ চেঁচিয়ে ] কামঅন! ড্রাইভিং ফাষ্ট!… [ বলেই আসিফের গাল টেনে ধরে বুমমম! উমম বুমমম! করে চেঁচাতে লাগলো ]

আসিফ : [ মার্জানের হাত সরিয়ে দিয়ে ] আর ইউ ক্রেজি?…হোয়াট আর ইউ ডোয়িং?..আমার ফেস্ দেখতে কি গাড়ীর গিয়ার মনে হচ্ছে তোমার ?…

মার্জান : [ কাদো কন্ঠে ] তাহলে আম…আমাকে ড্রাইভ করতে দেন!

আসিফ : ওহ ইয়াহ! দুনিয়া-দারি তো এখনো কিছুই দেখা হয়নি আমার, দুধের দাত পড়েছে কিনা ও এখনো সন্দেহ আছে…আর মহারাণী বলছে ড্রাংক অবস্থায় তাকে ড্রাইভিং করতে দিতে! এই যে মেম শুনুন! চুপচাপ সামনে তাকিয়ে বসে থাকুন, আর আমাকে সস্থি হয়ে একটু ড্রাইভ করতে দিন!

[ বলেই আসিফ গাড়ী স্টার্ট দিয়ে চালানো শুরু করলো, কিছুক্ষণ পর কোণা চোখে মার্জানের দিক তাকালে দেখে মার্জান তাকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে..যদি এখন ও কোনো ছোট প্রানী হতো গপ করেই গিলে খেয়ে ফেলতো! ]

মার্জান : [ সিটে্ পা তুলে বসে আসিফের দিক তাকিয়ে চেঁচিয়ে ] আইই! এইভাবে তাকাচ্ছেন কেনো?..হুমম?..[ আসিফের মাথায় হাত দিয়ে গুলি বানিয়ে ধরে ] আই উইল কিল ইউ! [ চিৎকার করে ] ডিস!

আসিফ : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] সো্ ফানি!

মার্জান : Why are you laughing?.. হ্যা?..[ চেঁচিয়ে ] Come on tell me!

[ চোখ বটে ] tell me…. tell me…

[ বলতেই মাথা ঢলে সি্টে শুয়ে পড়ে,]

আসিফ : [ তাকিয়ে একটু মুচকি হেসে ] Mad girl! [ বলেই আবার সোজা তাকিয়ে ফেললো ]
________________________________
এইদিকে, রাহুল ডিনার করে মুখে হাত দিয়ে স্নেহার দিক এক পলকে চেয়ে আছে,

স্নেহা : আচ্ছা! কি হয়েছে বলুনতো কখন থেকেই তাকিয়ে আছেন!

রাহুল : [ ব্লাশিং হয়ে একটু হেসে দেই! ] আচ্ছা তুমি ডিনার করেছো এগুলো হয়েছে?..এসবে মশার পেট ও ভরবে না! [ বলেই স্নেহাকে আরো সুপ ঢেলে দিতে লাগলো ]

স্নেহা : আচ্ছা! এমনভাবে বলছেন যেনো নিজে কি খেয়ে তরিয়ে ফেলেছেন!

রাহুল : এক্সকিউজ মি! আমি কিন্তু তোমার চেয়ে ও বেশী খেয়েছি!

স্নেহা : হ্যা! তা আমি ভালো করেই দেখেছি…খেয়েছিলেন নাকি আমার দিকে চেয়েছিলেন!

রাহুল : [ স্নেহার একদম কাছে মুখ এনে স্নেহার চেয়ারের কাধে হাত রাখলো ] তো কি করবো বলো?..তুমি সুন্দরই এমন না তাকিয়ে থেকে পারছিলামই না!

স্নেহা : [ একটু ব্লাশিং হয়ে হেসে রাহুলের নাক টেনে দিয়ে ] আমাকে তাকিয়ে থাকলে কি পেট ভরে যাবে মিষ্টার?..

রাহুল : পেট ভরতে হবে না, পেট অলরেডি ভরা ছিলো, [ ব্লাশিং হয়ে ] Now! মন ভরলেই চলবে, [ with tedi smile ]

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] হ্যা! পেট ভরা ছিলো…আমি দেখেছি কিভাবে ভরা হয়েছে!

[ রাহুল ভোর কুচকে কনফিউজড হয়ে স্নেহার দিক চেয়ে রইলো ]

স্নেহা : রাহুল! এভাবে ড্রিংক করলে লিভারের ক্ষতি হবে!

[ রাহুল মাথা নিচু করে স্নেহার চেয়ারের কাধ থেকে হাত সরিয়ে সোজা হয়ে বসে ]

রাহুল : স্নেহা! যখন আমি একা হয়ে গিয়েছিলাম…

– বাবা-মা কেউই ছিলো না আমার পাশে, একটা অনাথ বাচ্চার মতোই বড় হয়েছিলাম!

You know! কিছুর অভাব ছিলোনা আমার কাছে…বড় বাড়ী, গাড়ী, গিটারহাউজ, রেসিং কার, [ একটু হেসে ] স্পাইডার ম্যানের সুইটার!
সব জিনিষই ছিলো আমার কাছে! [ স্নেহার দিক ফিরে ] কিন্তু স্নেহা! আমি যাদের সাথে চেয়েছিলাম, তারাই ছিলোনা!
স্কুলে সবাই পেরেন্টস্ ডে সেলেব্রেট করতো তাদের পেরেন্টসদের সাথে,

আর আমি…[ বলেই হেসে উঠে ] দূর থেকে দাঁড়িয়ে তাদের এঞ্জয়মেন্ট দেখতাম! সজ্য করতে না পেরে গাড়ীতে উঠে গিয়ে ড্রাইভারকে বকাঝকা করতাম! কেনো এনেছো আজ স্কুল? তোমার মনে নেই আজ পেরেন্টস্ ডে!আমার তো পেরেন্টস্ নেই আমাকে কি এইখানে লুডু খেলতে এনেছো?.. [ একটা জোড়ে শাস ফেলে ] দাদী অনেক বুঝাতো আমাকে, রাহুল এভাবে বলেনা পেরেন্টসদের ব্যাপারে এইসেই কতো কিছু! দাদী সবসময় আমার পাশে থাকার চেষ্টা করেছে, কিন্তু জানো স্নেহা! তাও কোনো একদিকে নিজেকে খুব একা একা মনে হতো!

অনেক ট্রাই করেছি দু-জনকে এক করতে, But, their attitude! killed me [ বলেই হেসে উঠে ] মায়ের কাছে যায় হাসি মুখে, কিন্তু এটা বলার সাহস হয়না! চলে এসো মা আবার, আমাদের সাথেই থাকো!

স্নেহা! যেইদিন থেকেই এসব পেইন আর সজ্য হচ্ছিলো না…তখন থেকে এটা বেচে নিয়েছি!

i swear স্নেহা আমি Addicted না! বাট, যখনি পেইন লাগে…সজ্য হয় না..তখনি এটাকে পার্টনার করেনি!

স্নেহা : [ রাহুলের হাত কাছে টেনে জড়িয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে কাধে মাথা রেখে ] এখন তো আর একা নয়! হুম?…

[ রাহুল মুচকি হেসে স্নেহার হাত মুঠি বেধে শক্ত করে তার হাতে ধরে স্নেহার দিক তাকিয়ে মাথা নাড়ালো! ]

স্নেহা : আজ থেকে আর খেতে হবে না!ওকে?…আর যখনি এসব সামনে থাকবে…আপনি আমার কথা মনে করবেন দেখবেন! আপনার খেতে ইচ্ছেই করবে না!

রাহুল : [ স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে স্নেহাকে বুকে টেনে নেয় ] স্নেহা! আমাকে প্রমিস করো! কখনো ছেড়ে যাবা না!

স্নেহা : [ রাহুলকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ] যাবো না! প্রমিস্ [ বলেই চোখ বন্ধ করে রাখে ]

হঠাৎ, স্নেহার ফোন বেজে উঠলো, স্নেহা মাথা তুলে ফোন হাতে নিয়ে রাহুলের দিক তাকালো,

রাহুল চোখ দিয়ে ইশারা করে জিজ্ঞেস করলো কে?..

স্নেহা : মা! [ বলেই ফোন রিসি্ভ করলো ] হ্যা! মা বলো!

মা : কেমন আছিস স্নেহা?..

স্নেহা : ভালো! তোমরা কেমন আছো?..রাশু এক্সাম দিচ্ছেতো?

মা : ভালোই আছি! হ্যা দিচ্ছে! [ বলেই চুপ করে রইলো ]

[ স্নেহা রাহুলের দিক তাকিয়ে আংগুল দিয়ে ইশারা করে দু-মিনিট সময় দিতে বললো ]

রাহুল : ইয়াহ! শিয়র..

স্নেহা : [ হেটে অন্যপাশ গিয়ে দাঁড়িয়ে ] কি হয়েছে মা?..সব ঠিকাছে তো?..

মা : [ কাদো কন্ঠে ] জমিটা বিক্রি করে দিয়েছি!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে চেঁচিয়ে ] কিন্তু মা কেনো?…

রাহুল স্নেহার চেঁচিয়ে উঠা দেখে অবাক হয়ে স্নেহার দিক তাকালো তা দেখে স্নেহা গোমড়া মুখে একটু হেসে অন্যপাশ ফিরে যায়,

মা : পাঁচবছর আগে যে লোন নিয়েছিলো না তোর বাবা! ওটার টাকা শোধ করা বাকি ছিলো…তাই আর রাস্তা খুজে পাচ্ছিলাম না! [ ফুফিয়ে কেদে ] এখন তো কোনো চাকরী ও নেই!

স্নেহা : কাঁদছো কেনো মা?..যাক! বিক্রি করে প্রবলেমই তো Solve করা হয়েছে! এখন আর টেনশন করো না!

মা : জমি বিক্রি করে ও পুরো টাকা মেলানো যায়নি স্নেহা! ওদের থেকে কাগজ এসেছে! একমাসের মধ্যে যদি পুরো টাকা শোধ করা না হয়, তাহলে বাড়ীটা ও নিলামে চলে যাবে!

[ স্নেহা কানে ফোন ধরে শকড হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ]

মা : স্নেহা! তুত…তুই পারলে তোর টিউশন থেকে রাশুর জন্য কিছু টা..টাকা পাঠাস! [ বলেই কেঁদে উঠে ]

স্নেহা : মা! আ..আমিতো টিট..টিউশন ছেড়ে দিয়েছি!

মা : [ ঢোক গিলে ] ছেড়ে দিয়েছিস! ওহ!

স্নেহা : কিক…কিন্তু মা! তুমি টেনশন করো না,আমি আবার জয়েন করে নেবো! আ..আমি টাকা পাঠাবো! আচ্ছা…বাবা কেমন আছে!

মা : টেনশনে অসুখ বাড়ছে আর কমছে এভাবেই!

স্নেহা : ঔষধ?..

মা : [ কাদো কন্ঠে ] যেটুকু টাকা ছিলো, রাশুর ফিস্ ভরে দিয়েছে!

[ স্নেহার চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে, কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না..]

স্নেহা : [ কান্না কন্ট্রোল করে ] টে..টেনশন করো না…আম..আমার ভার্সেটি ফিসে্র টাকাগুলো রয়ে গেছে..

ওগুলো কাল পাঠিয়ে দিবো!

মা : কিক…কিন্তু তুই?…

স্নেহা : বাবার চেয়ে ও ভার্সেটিতে পড়া ইম্পরট্যান্ট না মা! আর তুমিও চিন্তা করো না, আমি আরো কয়েকটা টিউশন বাড়িয়ে যা পারি পাঠানোর চেষ্ঠা করবো!

[ স্নেহার মা কোনো জবাব না দিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে উঠে, ]

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] দেখো মা বললাম তো কেদো না! নয়তো আমি ও কাঁদতে শুরু করবো এখন!

মা : [ কাদো কন্ঠে ] পাগলী একটা! ঠিকাছে আমি কাঁদছি না! তোর ও কাঁদতে হবে না!

স্নেহা : মা! তুমিই তো বলেছিলে কাঁদলে সব ঠিক করা যায় না মনে সাহস রাখতে হয়! [ চোখ মুছে হেসে ] সো্ গুড গার্লের মতো হেসে দাও! নাহলে আমি যেদিন আসবো না ঐদিন এমনভাবে শুরশুরি দিবো হাসি থামাতেই পারবে না!

মা : [ একটু হেসে উঠে ] খেয়েছিস?..

স্নেহা : হ্যা! তোমরা?..

মা : খেয়েছি! আর শোন রাতে একা কোথাও বের হবি না! তোর ফ্রেন্ডসরা কেমন আছে?

স্নেহা : হ্যা! মা সবাই ভালো!

মা : আচ্ছা তাহলে ঘুমিয়ে পড়! কাল ক্লাস আছে?..

স্নেহা : হ্যা! আছে!

মা : সাবধানে যাস! রাস্তাঘাট দেখে শুনে পাড় হবি!

স্নেহা : আচ্ছা মা! ঠিকাছে!

মা : আচ্ছা!

স্নেহা : গুড নাইট!

[ ফোন রেখে স্নেহা ভালো করে চোখ মুছে, মুখে হাসি ফুটিয়ে রাহুলের দিক এগিয়ে এসে বসলো, রাহুল অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক ]

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] সরি! ওয়েট করানোর জন্য! এক্সুলি মা ফোন করেছিলো, তাই….

রাহুল : এমনভাবে একটিং করছো স্নেহা! যেনো আমি তোমার ফেইস্ পড়তে জানিনা!

[ স্নেহা অবাক চোখে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : তোমার হাসিটা আমাকে দেখানোর জন্যই ছিলো! তোমার ফেইস বলছে কিছুতো একটা হয়েছে!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] কক..কই নাতো! কিছুই হয়নি…জাষ্ট!

রাহুল : [ স্নেহার হাত কাছে টেনে নিয়ে ] স্নেহা! You know আই লাভ ইউ সো্ মাচ্! আমাকে বলতে প্রবলেম কি?…

স্নেহা : সত্যি রাহুল কিছুই হয়নি! [ বলেই অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রাহুল : [ স্নেহার গালে রয়ে যাওয়া পানির ফোটাটি আংগুল দিয়ে নিয়ে ছিটকে মারে, ] আগেও বলেছি স্নেহা! ইউ কান্ট লাই টু মি!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে আবার রাহুলের দিক ফিরে হেসে ]
আচ্ছা রাহুল! আমার না ঠান্ডা লাগছে অনেক!

রাহুল : বলো!

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আসলে..বাবার শরীরটা তেমন ভালো না..আর উনিও কিনা ঠিক মতো ঔষধ নেই না! তাই আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছে! মা এটাই বলছিলো! [ রাহুল স্নেহাকে তার দিক ফেরালে দেখে স্নেহার চোখে পানি টলমল করছে ]

স্নেহা : আই মিসিং দেম! রাহুল!

[ বলতেই চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়লো, রাহুল স্নেহার চোখের পানি মুছে দিয়ে বুকে টেনে কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে রাখলো,]

স্নেহা : [ মাথা তুলে ] ডোন্ট ওয়ারি! আই এম ওকে রাহুল!

রাহুল : শিয়র!

স্নেহা : হুম! [ বলেই হেসে মাথা নাড়ালো, রাহুল ও একটু সস্থি হয়ে হেসে স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে আবার জড়িয়ে ধরলো ]

হঠাৎ,

রাহুল : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে ] হেই!

স্নেহা : হুম?..

রাহুল : চলো ডান্স করি!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে মাথা তুলে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] ডান্স?..

রাহুল : ইয়েস্

[ বলেই হুট করে উঠে এগিয়ে গিয়ে মোবাইলের সাথে কানেক্ট করে মিউজিক ছেড়ে দিলো, আর স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো রাহুলের কান্ড, রাহুল স্নেহার দিক এগিয়ে এসে হাত বাড়িয়ে স্নেহাকে টেনে দাড় করিয়ে কাছে টেনে নিলো…]

স্নেহা : সিস্ সি্রিয়াসলি রাহুল ডান্স?..

[ রাহুল কোনো জবাব না দিয়ে তার নাক স্নেহার নাকের সাথে লাগিয়ে স্নেহাকে অন্যপাশ ফিরিয়ে দিলো এবং ধীরেধীরে স্নেহার মুখের সাথে মুখ লাগিয়ে দাড়ি দিয়ে ঘষে দিলো,স্নেহা শিউরে উঠে একটু মুচকি হাসে,]

রাহুল : [ স্নেহার কানের দিক মাথা এনে ফু দিয়ে চুল সরিয়ে ] Now ওকে?..[ with tedi smile ]

[ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না রাহুল এর জ্যাকেটটা শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে রইলো… রাহুল স্লাইড করে স্নেহার একহাত তার হাতে মুঠি বেধে ধরে…আরে হাতে স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড করে ধরে, ধুলিয়ে ডান্স করাতে লাগলো স্নেহাকে, কিছুক্ষণ পর রাহুল…তার হাত স্নেহার কোমোড় থেকে স্লাইড করে পিঠের দিক এগিয়ে নিয়ে সব চুল এক পাশে এনে রাখলো,

স্নেহার হার্টবিট বাড়তে লাগলো…তবে ভালোই লাগছে তার রাহুলের ছোয়াতে…ধীরেধীরে স্নেহা তার মাথা রাহুলের কাধে নুয়ে রাখলো…রাহুল চোখ বন্ধ করে স্নেহার খালি কাধে স্মেল নিয়ে একটি চুমু বসিয়ে দিলো..স্নেহা কেপে উঠে চোখ বন্ধ করে রাহুলের জ্যাকেটটা আরো শক্ত করে চেপে ধরলো…

রাহুল স্নেহার হাত জ্যাকেট থেকে ছুটিয়ে নিয়ে হাতে স্লাইড করতেই স্নেহা তাড়াতাড়ি পেছন ফিরে গিয়ে জোড়ে জোড়ে শাস ফেলতে লাগলো…রাহুল পেছন থেকে এগিয়ে গিয়ে স্নেহার হাত ধরতেই স্নেহা হুট করে দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে শিপের কিনারায় গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো…স্নেহা চোখ বন্ধ করে তার বুকে হাত দিয়ে চেপে ধরে আছে ওড়না আর চুলগুলো বাতাসে বিলিয়ে দিচ্ছে..

রাহুল : [ ধীরেধীরে স্নেহার পাশে এগিয়ে এসে রিলিং ধরে পানির দিক তাকিয়ে ] আম সরি! স্নেহা…

স্নেহা : [ চোখ খুলে শক্ত করে শিপের রিলিং ধরে ] আপনি বলেছিলেন আমাদের টাইটানিক পোজটা কমপ্লিট করা হয়নি!

রাহুল : হ্যা! হয়নি!

স্নেহা : আপনি হয়তো শুনতে পাননি আমি বলছি আমাদের টাইটানিক পোজটা কমপ্লিট করা হয়নি!

রাহুল : ইয়া! You say টাইটানিক [ বলেই শকড হয়ে স্নেহার দিক তাকালো ] অওও! [ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে থাকে ]

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে, রাহুল ও ব্লাশিং হয়ে অন্যপাশ ফিরে যায়, ]

কিছুক্ষণ পর, স্নেহার বুকটা ধুপ করে উঠলো…শরীরের লোম গুলো শিউরে উঠছে….কারো ছোয়ায়, রাহুল পেছন থেকে স্নেহার কোমোড়ে হাত দিয়ে স্লাইড করে দাঁড়ালো, এবং স্নেহার কাধের দিক মাথা এনে [ কানে কানে ] ইউ শিয়র স্নেহা?…

স্নেহা মাথা ঘুড়িয়ে রাহুলের দিক তাকালো…রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহাকে…

স্নেহা রাহুলের বুকে মাথা ঢলে দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো, রাহুল একটু হেসে ধীরেধীরে স্নেহার মুখের কাছে মুখ এনে…স্নেহার ঠোটে তার ঠোট মিশিয়ে দিলো,…পানি বয়ে চলছে…ঠান্ডা বাতাস গা ছুয়ে যাচ্ছে…রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার উড়ন্ত ওড়নাটা তাদের মুখের উপর ঝাঁপিয়ে দিলো…

সময়টা এমনই লাগছিলো তাদের যেন,হার্টবিটের সাথে সাথে শিপটা ও দ্রুতগতিতে চলতে শুরু করে দিয়েছে..

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 22

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 22

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : [ চোখ বন্ধ করে স্নেহার পিঠে স্লাইড করতে করতে ] স্নেহা! আমাকে ছেড়ে যাবানাতো?..

স্নেহা : [ ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ] নাহ! কখনো না!

[ রাহুল একটু হেসে স্নেহাকে ছুটিয়ে এনে মুখের দুপাশে হাত রেখে আংগুল দিয়ে গাল বেয়ে পড়া পানি গুলো মুছে দেই ]

রাহুল : ওকে! রিলেক্স! আর কাঁদতে হবে না কাজল গুলো লেপ্টে যাচ্ছে…[ বলেই চোখের নিচের পানি গুলো ও মুছে দিতে লাগলো ]

স্নেহা : [ আবারো কেঁদে উঠে ] I m…[কাদো কন্ঠে ] I m sorry রাহুল!

রাহুল : শিসসস! [ বলেই বাতাসে চলে আসা স্নেহার মুখের উপর চুল গুলো নিয়ে নিয়ে কানে গুজে দিচ্ছে, ]

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] I hurt you রাহুল!

রাহুল : [ স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে ] I won’t be able to live without you স্নেহা!

[ স্নেহা কাঁদছে আর হাসছে, রাহুল আবারো স্নেহাকে টেনে ঝড়িয়ে ধরে… স্নেহা চোখ বন্ধ করে রাহুলের জ্যাকেট শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে আছে…আর চোখের পানিতে তার জ্যাকেট ভিজিয়ে দিচ্ছে….]

রাহুল : [ স্নেহার কানের দিক ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা! Don’t cry! now rahul is your না?..এখন তো তোমারই!

[ স্নেহা হেসে চোখ খুলতেই গেইটের দিক নজর পড়ে….স্নেহা ধীরেধীরে রাহুল থেকে তার হাত সরিয়ে ছুটে আসতে চাইলে রাহুল তাকে আরো শক্ত করে ধরে রাখে… স্নেহা আবারো ছুটে আসার চেষ্টা! ]

রাহুল : What স্নেহা?…

স্নেহা : সি্..সি্ক…সি্কিউরিটি!

রাহুল : [ একটু হেসে ] Whatever!

[ বলেই স্নেহাকে আরো শক্ত করে ঝড়িয়ে পিটে স্লাইড করতে লাগলো… ]

স্নেহা : No রাহুল! প্লিজ..ছাড়েন…

রাহুল হেসে স্নেহাকে ছেড়ে তার দুহাত স্নেহার কাধে রেখে দাঁড়ালো…

রাহুল : রিলেক্স স্নেহা! এতো নার্ভাস্ হচ্ছো কেনো?..

স্নেহা : ওর…ওরা..হয়তো দেখছে…

[ রাহুল হেসে উঠে.. স্নেহার কান্ড দেখে, হঠাৎ…পাশথেকে ” ওয়াও ” বলে চিৎকারের শব্দ ভেসে আসে…স্নেহা এবং রাহুল দুজনেই ফিরে তাকিয়ে দেখে…জারিফা, মার্জান, রিদোয়ান, শ্রেয়া, আসিফ…সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে… ]

রিদোয়ান : আমরাতো টেনশন করছিলাম রাহুল…তুই যেভাবে দৌড়ে চলে এলি…

শ্রেয়া : আরে ওয়াহ! আজ শুধু নিউ নিউ কাপল ক্রেট হচ্ছে..

মার্জান : ইয়াহ! ইউ আর রাইট…আমাদের তো আজ কাপল ডে হিসাবে সেলেব্রেট করা উচিৎ… [ বলেই হেসে উঠে…স্নেহা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে রাখে…আর রাহুল ব্লাশিং হয়ে স্নেহাকে কাছে ঝড়িয়ে রাখে…]

আসিফ : কিন্তু এটা ঠিকনা রাহুল…আমরা আসতে লেইট করে ফেলেছি…কিছুই তো দেখলাম না..

জারিফা : [ লাফিয়ে চেঁচিয়ে উঠে ] ইয়াহ ইয়াহ! হি ইস্ রাইট… Once more রাহুল প্লিজ!

শ্রেয়া : ইয়েস্ রাহুল প্লিজ! প্লিজ!

[ রাহুল একটা তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক তাকালো, স্নেহা লজ্জায় ব্লাশিং হয়ে অন্যপাশ ফিরে যায়… ধীরেধীরে রাহুল স্নেহার একহাত তার হাতে নিয়ে…এক পা বটে মাটিতে বসে…স্নেহার দিক তাকিয়ে থাকে….স্নেহা ও অবাক হয়ে চেয়ে থাকে রাহুলের দিক…দু-জন চোখাচোখি হয়ে আছে….]

রাহুল : হাইওয়ের মোরে বরফ ওয়ালা আইস্ক্রিম খাওয়ার জন্য তোমার পার্টনার হতে চাই স্নেহা! [ With tedi smile ]

[ সবাই একসাথে হেসে উঠে…আর স্নেহার চোখে পানি টলমল করছে আইস্ক্রিম খাওয়ার মোমেন্টি মনে পড়াতে… ]

রাহুল : মার্মিড হাউস্ ঘুরে দেখার সময় তোমার হাত ধরে রাখার পার্টনার হতে চায়, স্নেহা!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] অউউ! হাউ কিউট!

রাহুল : গাড়ী ফার্ষ্ট ড্রাইভ করার সময়…ধীরে চালাতে বলার জন্য তোমাকে পাশে চাই! স্নেহা!

[ সব মোমেন্টগুলো চোখের সামনে ভাসছে স্নেহার, সাথে চোখ থেকে টপ টপ করে পানি ছুটে পড়ছে… সে জানেনা কেনো পড়ছে…তবে এটা জানে…এসব দূঃখ্যের কান্না নয়…সুখেরই কান্না! ]

রাহুল : ব্লাক সানগ্লাস পড়ে ড্রাইভিং করার সময় রুলস্ মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য তোমাকে পাশে চাই স্নেহা!

[ স্নেহা হেসে উঠে ]

রাহুল : স্নেহা! আই এম সরি! আই কাম লিটল লেইট ইন ইয়র লাইফ! [ কাদো কন্ঠে ] বাট আই হেড টু কাম না?..

[ জোড়ে একটা শাস ফেলে ] আই ওয়ান্ট টু স্পেন্ড এভ্রি মোমেন্ট অফ মাই লাইফ উইদ ইউ!

– স্নেহা! আই লাভ ইউ! ডো ইউ লাভ মি?..

[ স্নেহা হাত দিয়ে মুখ চেপে কান্না কন্ট্রোল করে মাথা নাড়ালো… রাহুল একটা তেডি স্মাইল দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে তাড়াতাড়ি স্নেহাকে ঝড়িয়ে ধরলো..]

[ বাকিরা তালি দিয়ে এক্সাইটেড হয়ে চেঁচিয়ে উঠলো…. ]

জারিফা : [ রিদোয়ানের দিক ফিসফিসিয়ে ] আপনার ও আমাদের মোমেন্ট মনে করিয়ে প্রপোজ করা উচিৎ ছিলো!

রিদোয়ান : এক্সকিউজ মি! আমি আগেই বলেছি..আমি লাভিং পোয়েট্রি পারিনা!

জারিফা : তাই! বুদ্ধু একটা..খেতে তো জানেন তাই না!

রিদোয়ান : হ্যা ওটা! মিস্ যাবে কেনো?..[ বলেই হেসে উঠে ]

জারিফা : Shut-up! [ বলেই চেঁচিয়ে উঠে ] আরে গাইস্ এমন মোমেন্টে… একটা সেল্ফি তো হওয়া জরুরি তাই না…[ বলেই মোবাইলের ক্যামেরা অন করে রাহুল আর স্নেহার দিক ছুটে এলো ]

শ্রেয়া : আরে আরে আমরা ও কেনো বাদ যাবো লেটস্ গো গাইস্ [ বলতেই সবাই একসাথে রাহুল আর স্নেহার দিক এসে…একত্র হলো ]

রাহুল : এ..এক এক সেকেন্ড… [ সবাই অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো, রাহুল স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে চোখের পানি গুলো ভালো করে মুছে দিলো ]

[ সবাই একত্রে হেসে উঠে, ]

জারিফা : অউউ! স্নেহা তুই এতো কেয়ারলেস্ কেনো?..আচ্ছা আচ্ছা কই বাত্ নেই! আবতো হামারি জিজাজি হে! হে না?..[ বলেই রাহুলকে চোখ টিপ মাড়লো ]

শ্রেয়া : বাই দ্যা! ওয়ে স্নেহা ইউ আর সো্ লাকি ইয়ার! তুমি এতো কেয়ারিং বয়ফ্রেন্ড পেয়েছো! [ স্নেহাকে ঝড়িয়ে ] কনগ্রেটস্ কনগ্রেটস্!

[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে আবার লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেলে ]

রিদোয়ান : আসলে রাহুল তুই ও কিন্তু অনেক লাকি! because তোরটা..আ আই মিন..স্নেহা অনেক সিম্পলি, সিধাসাধা…

জারিফা : [ নাকফুলিয়ে রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে ] ওহো! মিষ্টার প্রপোজ করেছো এখনো এক ঘন্টা ও হয়নি! মাইন্ড ইট! সো্ ব্রেকাপ করতে ও আমার এক ঘন্টা লাগবে না! [ বলতেই সবাই হেসে উঠে ]

রিদোয়ান : [ রাহুলের কাধে হাত রেখে ইমোশনাল হয়ে ] দেখলি?.. দেখলি তো?…

রাহুল : [ হেসে হেসে রিদোয়ানের পেটে একটি ঘুষি দিয়ে ] আবে ইয়ার! শালী কার দেখতে হবে তো [ বলেই চোখ টিপ মারলো ]

রিদোয়ান : [ অবাক হয়ে মুখে হাত দিয়ে ] আচ্ছা আচ্ছা…তাইতো বলি যখন তখন ট্রেড মারে কেনো তোর মতো!

[ জারিফা নাক ফুলিয়ে চুল ঠিক করে পার্ট মারতে থাকে, তা দেখে বাকিরা আবার হেসে উঠে ]

জারিফা : আরে এতো হাসার দরকার নেই আমার সেল্ফি মিস্ হয়ে যাবে… [ বলেই মোবাইল তুলে ধরলো বাকিরাও পোজ দিয়ে দাঁড়ালো…]

মার্জান : [ জারিফার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে ] আরে আরে…নায়ি নাভেলি কাপল আলাদা আলাদা দাঁড়াবে নাকি…তুই যা আমি তুলছি

[ বলেই জারিফাকে রিদোয়ানের দিক ধাক্ষা দিলো, রিদোয়ান জারিফাকে কাছে টেনে নিয়ে ঝড়িয়ে পোজ ধরলো, আর রাহুল স্নেহাকে ঝড়িয়ে…শ্রেয়া আর আসিফ দুটো কাপলকে মিডলে রেখে দু-জন দু-দিকে দাঁড়ালো! মার্জান সেল্ফি তুলছে ]

শ্রেয়া : [ চেঁচিয়ে ] আরে আমি কই?..ফ্রেমে আমি আসছি না তো!

আসিফ : [ হেসে ] আসলে দেড়-ফুটের মানুষ যদি ১০ ফুটের কাজ করতে চাই এমনি হয়!

[ সবাই হেসে উঠে ]

মার্জান : [ রাগান্বিত ভাবে আসিফের দিক তাকিয়ে ] এক্সকিউজ মি! আই এম নট দেড় ফুট ওকে?..আমি ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি!

আসিফ : [ মার্জানের হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে চোখ মেরে ] পেছনে গিয়ে পোজ দাও..এর চেয়ে বেটার অপশন তোমার জন্য আর হতে পারে না…

মার্জান : [ ফুফিয়ে বিরবির করে ] এই ইডিয়ট নিজেকে কি মনে করে?..সবার সামনে আমাকে দেড় ফুট বলে ইন্সাল্ট করছে… হুহ! পরে দেখেনেবো মিষ্টার!

[ বলেই হনহনিয়ে রাহুলের পাশে এসে দাঁড়ায়, ]

রাহুল : আরে! Why are you angry?..

মার্জান : [ ইমোশনাল হয়ে ] আই এম নট দেড়ফুট রাহুল!

রাহুল : ওকে ওকে ডোন্ট বি সেড! হি জাষ্ট কিডিং [ বলেই একহাতে স্নেহাকে আরেকহাতে মার্জানকে ঝড়িয়ে নিয়ে পোজ দিয়ে দাঁড়ায়, ]

ছবি তোলার পর,
___________________________

জারিফা : [ স্নেহার দিক এগিয়ে এসে স্নেহাকে ঝড়িয়ে ধরলে রাহুল হেসে সরে রিদোয়ানদের দিক গিয়ে দাঁড়ায় ] স্নেহা! মেরি জান! এখন হ্যাপি তো?..

স্নেহা : অনেক!

[ হঠাৎ, মার্জান ও এসে তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে ]

মার্জান : আরে..আমাকে ফেলে হাগ করা হচ্ছে! দিস্ ইস্ নট ফেয়ার! ওকে?..

[ বলতেই তিনজন একসাথে হয়ে ঝড়িয়ে ধরলো ]

মার্জান : এখন আমাদের স্নেহার সব প্রবলেমই শেষ! we are so happy now! আরে হ্যা! স্নেহা! ওকে দেখলি তো কিভাবে তলে তলে কাজ সারিয়েছে?..

[ স্নেহা হেসে উঠে, জারিফা ও মার্জানের গায়ে একটি চড় মেরে হেসে উঠে ]

শ্রেয়া : ওকে! গাইস্ আমাদের এখন পার্টিতে বেক করা উচিৎ…[ এক্সাইটেড হয়ে ] আরে ডান্স বাকি আছে তো তাই না…. কাম কাম লেটস্ গো!

সবাই এগিয়ে যাচ্ছে আবার রুফ-টপে,

হঠাৎ, রাহুল এসে স্নেহাকে পেছন থেকে টান মেরে কাছে টেনে নেয়,

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] আরে রাহুল!

রাহুল : শিসসস! [ বলেই স্নেহাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে গাড়ী করে বেড়িয়ে যায় ]

শ্রেয়া : [ হেসে ] I knew that! এমন তো হওয়ারি ছিলো! [ বাকিরা হেসে উঠে ]

রিদোয়ান : [ জারিফার কাছে এসে ঘাড় চুলকিয়ে চুলকিয়ে ] ভাবছি আমি ও…

শ্রেয়া : হ্যা! হ্যা! তোরাও বাদ যাবি কেনো যা যা তোরা ও পালা..

রিদোয়ান : [ জারিফার হাত ধরে টেনে নিয়ে ] কাম! [ বলেই জারিফাকে নিয়ে চলে গেলো ]
_________________________________
মার্জান : [ হেসে শ্রেয়ার দিক তাকিয়ে ] আহারে! তাহলে আজ আমদের সিংগেলদেরই পার্টি সেলেব্রেট করতে হবে!

শ্রেয়া : [ হেসে মার্জানকে ঝড়িয়ে নিয়ে রুফ টপের দিক এগুতে এগুতে ] ইয়াহ! ডিয়ার! ইউ আর রাইট!

সবাই রুফ-টপে গিয়ে চেয়ারে বসলো… খোলা আকাশের নিচে ঠান্ডা ঠান্ডা বাতাস ভালোই লাগছিলো! হঠাৎ, মার্জানের পিপাসা পাওয়াতে সে উঠে গিয়ে একটি ভরা গ্লাস এগিয়ে নিয়ে খেতে লাগলো,

মার্জান : আরে! এই পানি গুলো এতো মিষ্টি কেনো?.. শরবত বুঝি?..[ বলেই পিপাসায় আরো গড়গড় করে খেতে লাগলো ]

শ্রেয়া : [ হেসে ] সো্ ফানি ইয়ার! শরবত হতে যাবে কেনো?..

মার্জান : তাহলে?…

শ্রেয়া : শেম্পিং!

[ মার্জান অতোটুকুতেই রোবোট হয়ে গেলো, তা দেখে বাকিরা হেসে উঠে ]

শ্রেয়া : what happen মার্জান?…ফার্ষ্ট টাইম নাকি?…

[ মার্জান চোখ গুলো বড় বড় করে রেখে মুখ চেপে ধরে দাঁড়িয়ে আছে ]

শ্রেয়া : [ উঠে মার্জানের দিক এগিয়ে এসে তাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] ইউ ওকে?..

মার্জান : [ চমকে উঠে ] ই..ইয়া..ইয়াহ! আই…আই এম ওকে! [ বলেই চেহেরাটা গোমড়া করে ফেললো ]
_________________________________
এইদিকে গাড়ীতে,

স্নেহা : আপনি এভাবে সবার মাঝে থেকে নিয়ে আনলেন কেনো?…ওরা কি ভাববে?..

রাহুল : কিছুই ভাববে না তুমি এতো টেনশন নিচ্ছো কেন?..

স্নেহা : আপনি, ড্রাইভ করছেন তার মধ্যে মোবাইল টিপছেন কেনো বলেনতো ?…এইদিকে দেন মোবাইল [ বলেই রাহুল থেকে মোবাইল টানাটানি করছে ]

রাহুল : ওয়েট স্নেহা! জাষ্ট ফাইভ মিনিটস্!

স্নেহা : [ একটি জোড়ে শাস ফেলে ঠিক হয়ে বসে ] আচ্ছা কোথায় যাচ্ছি?….

রাহুল : সারপ্রাইজ [ with tedi smile ]

স্নেহা : অমনিই?..হ্যা? অমনিই সারপ্রাইজ হয়ে গেলো?…

[ রাহুল হাসতে থাকে স্নেহার কথা শুনে ]

স্নেহা : মানে.. আপনিতো আমার সামনেই ছিলেন! সারপ্রাইজটা কিভাবে রেডি করেছেন শুনি?…

রাহুল : [ হেসে হেসে ] কামঅন স্নেহা! তোমাকে আগেও বলেছিলাম! বললে তো আর ওটা সারপ্রাইজ থাকে না!

স্নেহা : আমি ও আপনাকে আগে বলেছিলাম! আমি সারপ্রাইজ লাইক করিনা! ওটাতে আমার এলার্জি!

রাহুল : ওকে রিলেক্স! স্নেহা! [ বলেই গাড়ীর সা্নরুফটা নামিয়ে দিলো ]

[ স্নেহা অবাক হয়ে উপরের আকাশের দিক তাকিয়ে রইলো, বাতাসে চুল গুলো এলো মেলো হয়ে যাচ্ছে স্নেহার! ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] নাইস্! [ বলেই আবার তেডি স্মাইল দিয়ে সোজা তাকিয়ে ড্রাইভ করতে থাকে ]

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] জানেন রাহুল! আমার না অনেক ইচ্ছে ছিলো! এমন…উইদাউট সা্নরুফ গাড়ীতে চড়ার, ইনফেক্ট! ছোটবেলায় যখন স্কুলে যেতাম তখন এমন গাড়ী দেখলে না, হা করে তাকিয়ে থাকতাম! [ একটু মুচকি হেসে ] আর রাশু, আমার ছোট ভাই, টিভিতে এমন গাড়ী দেখলে বাবাকে বলতো বাবা আমার ও এমন গাড়ী চাই!

রাহুল : [ অবাক হয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তোমার ছোট ভাই আছে?..

স্নেহা : [ হেসে ] হ্যা!

রাহুল : আচ্ছা! তাহলে আই হেভ ওয়ান শালা! [ বলেই হেসে উঠে ] কিসে পড়ে?…

স্নেহা : ফাইভে পড়ে,

রাহুল : ওকে ওতো তোমার সাথে রেখেদিলে পারতে,

স্নেহা : আমাকে পার্মিশন দিয়েছে বাবা অনেক কষ্টে, ও সহ তো ইম্পসিবল!

রাহুল : আচ্ছা তোমার পেরেন্টসরা সবাই গ্রামে থাকে?..

স্নেহা : শহরেই ছিলো! বাবার অসুস্থতার কারণে এবসে্ন থাকায় চাকরীটা চলে গেছে! তাই গ্রামে চলে যেতে হয়েছে সবার…

রাহুল : [ হেসে ] আচ্ছা ঐ দিন স্টেশনে তোমার পেরেন্টসদেরই বিদায় দিতে গিয়েছিলে রাইট!

স্নেহা : [ একটু হেসে ব্লাশিং হয়ে নিচের দিক তাকিয়ে ] হুম!
_______________________________
এইদিকে,

মার্জান রুফ-টপের রিলিং ধরে দাঁড়িয়ে ঢুলতে থাকে,

আসিফ : [ পেছন থেকে এগিয়ে এসে ] Listen! ঐ দিকটা গিয়ে বসো, এইদিকে তোমার জন্য রিস্কি!

মার্জান : [ আসিফের দিক ফিরে মাতাল কন্ঠে ] কেনো?..হুম?..বলেন [ বলতেই ঢুলতে লাগলো ]

আসিফ : [ তাড়াতাড়ি ধরে ] এই কারণে!

মার্জান : [ চেঁচিয়ে মাতালি অবস্থায় ] হেইই! ইউউউ! ডোন্ট টাচ্ মি! ওকে..ডোন্ট টাচ্ মি! [ বলে আসিফের শার্টটা শক্ত করে ধরে রাখে যাতে পড়ে না যায় ]

আসিফ : কাম! [ বলেই মার্জানকে ধরে এগিয়ে এনে একটি চেয়ারে বসিয়ে দিলো ]

শ্রেয়া : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] আসিফফ! এইতো গেছে! পুরোই ড্রাংক!

[ বলতেই মার্জান আবার টেবিল থেকে গ্লাসটা এগিয়ে নিতে গেলো, আসিফ তাড়াতাড়ি গ্লাসটা এগিয়ে নিয়ে সরিয়ে রাখলো ]

মার্জান : এইই! সস..সরালে কেনো?..হুম! আমি বলেছি সর…সরাতে?…

আসিফ : অনেক খেয়েছো আর খেতে হবে না!

মার্জান : [ উঠে দাঁড়িয়ে আসিফের মুখের উপর আংগুল দিয়ে ] Shutttt-up! ওকে?..[ চেঁচিয়ে ] জাষ্ট Shut-uppp!

[ সবাই হেসে উঠে মার্জানের কান্ড দেখে ]
____________________­_____________
এইদিকে,

জারিফা আর রিদোয়ান,দুজনেই গাছতলায় চেয়ারের উপর বসে আছে…সামনে টেবিলের উপর গরম গরম কফি দেওয়া আছে…

জারিফা : ওয়াও… শীতের রাতে কফি খাওয়ার মজাটাই আলাদা!

[ রিদোয়ান একপলকে তাকিয়েই আছে জারিফার দিকে ]

জারিফা : [ রিদোয়ানের গালটেনে দিয়ে ] ও হ্যালো! আছেন? নাকি গেছেন?..

[ রিদোয়ান হেসে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

জারিফা : জানেন! গ্রামে যখন রাতে গাছতলা দিয়ে হেটে যেতাম! তখন কি ভয় পেতাম…এমন মনে হতো যেনো গাছ থেকে নেমে ভয়ংকর কিছু ঝাঁপিয়ে পড়বে…

রিদোয়ান : [ জারিফার হাত তার হাতে নিয়ে ] আর এখন? ভয় লাগছে না?..

জারিফা : [ রিদোয়ানের বুকে মাথা রেখে ] না! লাগছে না…

রিদোয়ান : উমম! তা কেনো?..

জারিফা : কারণ আপনি সাথে আছেন তাই! [ বলেই লজ্জা পেয়ে মুখে হাত দিয়ে দেই ]

রিদোয়ান : [ হেসে ] তারমানে তোমার আমার উপর ভরসা আছে!

জারিফা : [ রিদোয়ানকে চিমটি দিয়ে ] না থাকলে কি হ্যা! বলতাম?..

রিদোয়ান : আআউউ! ওকে ওকে! সো্ কখন থেকে হলো ভরসাটা?..

জারিফা : উমম! যেদিন ডান্স রিহর্সেল হচ্ছিলো তখন আমি ডান্স করতে করতে পরে যেতে ছিলাম আর আপনি ধরে ফেলেছিলেন!

[ রিদোয়ান একটু হেসে শক্ত করে ঝড়িয়ে নেই জারিফাকে ]
___________________________________
এইদিকে,

রাহুল একটি ব্রীজের ধারে গাড়ী থামালো! এবং গাড়ী থেকে নেমে স্নেহার দিক এসে দরজা খুলে স্নেহাকে ও নামিয়ে নিলো!

রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে ] Close your eyes! [ With tedi smile ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] চোখ বন্ধ করবো?..কিন্তু কেনো?..

রাহুল : ওহো স্নেহা! ভরসা আছে আমার উপর!

স্নেহা : হ্যা! রাহুল কিন্তু!

রাহুল : Not one more word!

স্নেহা : ওকে! [ বলেই চোখ বন্ধ করলো ]

[ রাহুল স্নেহার পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে স্নেহাকে ধরে চোখে হাত দিয়ে ব্রীজের উপর এগিয়ে নিয়ে গিয়ে দাড় করালো… এবং ধীরেধীরে স্নেহার চোখ থেকে হাত সরিয়ে নেই…স্নেহা ও চোখ খুললো ধীরে ধীরে..এবং সে দেখতে পায়.. পানির মাঝে একটি বিশাল বড় ঝর্ণা যা বিভিন্ন কালারের লাইটিং দিয়ে সাজানো হয়েছে,

স্নেহা : [ অবাক হয়ে উঠে… ] ওয়াও রাহুল! ইটস্ বিউটিফুল! জাষ্ট স্পিচলেস্!

রাহুল : ওকে! Listen এটাই এখন এক একটা ক্যাপিটাল উঠবে…আর আমি চোখ বন্ধ করে রাখবো.. সো্ তোমার কাজ হচ্ছে কি কি..উঠছে তা আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলবা! ডান?..

স্নেহা : [ একটু অবাক হয়ে আবার হেসে ] ওকে ডান!

রাহুল স্নেহার পেছনে দাঁড়িয়ে দু-হাতে ব্রীজের রিলিং ধরে স্নেহার কাধের দিক মাথা এনে তার চোখ বন্ধ করে কান পেতে রাখে…আর স্নেহা একপলকে ঝর্ণার দিক তাকিয়ে রইলো…

একটু পর রাহুলের কানে ভেসে আসলো..

স্নেহা : [ বলছে ] I

[ রাহুল ব্লাশিং ]

স্নেহা : ❤️?[ Love ]

[ Rahul give a tedi smile ]

স্নেহা : U

হঠাৎ,

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] বাট রাহুল! এটা কিন্তু চিটিং!

রাহুল : [ হেসে চোখ খুলে স্নেহার কোমোড়ে ঝড়িয়ে ] আই লাভ ইউ টু!

[ স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : তুমি নিজ থেকে কবে বলতে এটা আইডিয়া করতে গেলে..বোধহয় আমি বুড়া হয়ে দাত সহ পড়ে যেতো… তাই প্লানটা কাজে লাগিয়ে দিলাম! [ বলেই তেডি স্মাইল দিতে লাগলো ]

[ স্নেহা হেসে রাহুলের মাথায় একটা বারি দেই ]

হঠাৎ, খেয়াল করে ঝর্ণার ধার থেকে কয়েকজন রাহুলকে হাত নারাচ্ছে…এবং তাদের দেখে রাহুল ও হাত নাড়িয়ে থেংক ইউউউউ বলে চেঁচিয়ে উঠলো,

রাহুল : [ স্নেহার দিক ফিরে ] এইদিকে এসো!

স্নেহা : আবার কোথায়?..
____________________­_____________
এইদিকে,

মার্জান রাস্তায় ঢুলে ঢুলে হাটছে…

আসিফ : [ দৌড়ে এগিয়ে এসে ] হেইই! Listen এভাবে একা কোথায় যাচ্ছো?..

মার্জান : Whyyy?..আপ..আপনা..কে­নো বলবো…হুমমম?..[ বলতেই হঠাৎ চোখের উপর গাড়ীর ফ্লাশ পড়ে, আর আসিফ মার্জানকে রাস্তার মাঝ থেকে টেনে একপাশ এনে দাড়করায়, মার্জান ভয়ে আসিফের বুকে মাথা ঢলে আছে আর জোড়ে জোড়ে শাস ফেলছে..]

আসিফ : গাড়ীতে উঠো আমি পৌছে দিচ্ছি!

মার্জান : [ আসিফকে ধাক্ষে সরিয়ে দিয়ে ] নেভার! আপনার গাড়িতে..কখ..কক্ষোনোই­ না…
[ বলেই পায়ের জুতা গুলো ছুরে মেরে মেরে খুলে নিলো,এবং আবার কুড়িয়ে নিলো ]

আসিফ : দেখো তুমি ভালো করে দাঁড়াতেই পারছো না..হাটা তো দূরের কথা!

মার্জান : Noooo neeeed yourrrr helppp [ চেঁচিয়ে ] ok?..[ বলতেই পড়ে যাচ্ছিলো, আসিফ তাড়াতাড়ি আবার ধরে ফেলে… এবং মার্জানের চেহেরার দিক তাকিয়ে দেখে সে চোখ বন্ধ করে আছে…শীতে শরীরটা ঠান্ডা হয়ে কাপছে মেয়েটার..তা দেখে আসিফ মার্জানের হাত থেকে জুতা গুলো ছুটিয়ে তার আংগুল দিয়ে ধরে নিলো এবং হুট করেই মার্জানকে কোলে তুলে নিয়ে নেই! ]

মার্জান : [ চোখ বন্ধে মাতাল অবস্থায় ] আপনি আমাকে…আমাকে আপনি কোলে নিলেন কেনো?..হুম?….

[ আসিফ কোনো জবাব না দিয়ে তাকে গাড়ীর দিক এগিয়ে নিয়ে ভেতরে বসিয়ে দেই ]
_________________________________
এইদিকে, রাহুল স্নেহাকে শিপের মধ্যে উঠানোর চেষ্টা!

স্নেহা : রাহুল! আমার ভয় করছে প্লিজ আমি পারবো না!

রাহুল : রিলেক্স স্নেহা আমি আছিতো! [ বলেই রাহুল হাত বাড়ালো এবং স্নেহা রাহুলের হাতের উপর হাত রাখলো ] এবার ধীরেধীরে পা বাড়িয়ে দাও…[ স্নেহা রাহুলের কথা মতো ভয়ে ভয়ে পা বাড়ালে রাহুল একটু হেসে স্নেহাকে টান দেই..এবং স্নেহা রাহুলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে…রাহুল হাসতে থাকে ]

স্নেহা : আপনি হাসছেন?..আমারতো ভয়ে জান বেড়িয়ে যাচ্ছিলো পানি দেখে…

রাহুল : আমি আছিনা এতো ভয় পাওয়ার কি আছে..তোমাকে পড়তে দিতাম নাকি পানিতে হুম? [ বলেই ড্রাইভারকে শিপ স্টার্ট দিতে বললো ]

রাহুল স্নেহার হাত ধরে শিপের কিনারায় নিয়ে গিয়ে দাড় করালো.. স্নেহাকে সামনে রেখে রাহুল স্নেহার পেছনে দাড়ালো!

[ শিপ চলছে… চারদিক বাতাস বয়ে যাচ্ছে শা-শা করে…রাহুল ধীরেধীরে স্নেহার কোমোড়ে হাত দিয়ে স্লাইড করে পেটের দিক এনে শক্ত করে ঝড়িয়ে ধরে স্নেহার কাধে মাথা রেখে দাঁড়ালো…স্নেহা ও রাহুলের হাতের উপর হাত রেখে শক্ত করে ধরে চোখ বন্ধ করে জোড়ে একটি শাস ফেললো…রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে দেখে স্নেহা চোখ বন্ধ করে আছে স্নেহার চুল গুলো উড়ে উড়ে বারবার রাহুলের মুখের সাথে বাড়ি খাচ্ছে…তা অবশ্যই রাহুলের ভালোই লাগছিলো…]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : আমরা কিন্তু আবার টাইটানিক পোজে আছি! আ..আই মিন ঐবার পোজটা পুরো কমপ্লিট করা হয়নি! [with tedi smile ] So… [ বলতেই স্নেহা হুট করে চোখ খুলে ফেললো ]

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part – 21

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 21

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা চোখ খুলে খেয়াল করলো গাড়ীর দরজা অর্ধেক খুলেছে…

স্নেহা : [ ভয়ে মনে মনে ] রাহুল গাড়ী থেকে নামছে কেনো?…ও কি আমাকে দেখেছে নাকি?..
_________________________________

এইদিকে, রাহুল ব্লাশিং হয়ে গাড়ী থেকে নামতেই ছিলো হঠাৎ আবার মনে পড়ে গেলো সে তো স্নেহাকে কথা দিয়েছিলো যদি একবার reason বলে তাহলে আর ওর চেহেরা কখনো স্নেহাকে দেখাবে না…

রাগে ধুম করে জোড়ে গাড়ীর দরজাটা আবার লাগিয়ে দিলো,

[ স্নেহা বুকে হাত দিয়ে একটি বড় শাস ফেললো…]

আর রাহুল রাগ কন্ট্রোলের জন্য জোড়ে জোড়ে গাড়ী স্টার্ট দিতে লাগলো,

স্নেহা : [ কান চেপে ধরে ] ইশ! কি বাজে শব্দ!

[ একটু পর রাহুল গাড়ী টান দিয়ে চলে গেলো, তা দেখে স্নেহা ধীরেধীরে গাছের কিনারা থেকে বেড়িয়ে আসে…এবং চেয়ে আছে রাহুলের গাড়ীর দিক,চলে যাচ্ছে রাহুল…হ্যা চলে গেছে রাহুল!… মুখটা গোমড়া করে, ব্যাগটা কাধ থেকে নামিয়ে হাতে ঝুলিয়ে..নাড়িয়ে নাড়িয়ে হাটছে…আর ভাবছে, নেহা সত্যি বলছে নাকি রাহুল সত্যি বলছে…এইভাবে ভাবতে ভাবতে বাসায় এসে পৌছালো..]

স্নেহা : তোরা কবে এলি?..

মার্জান : আরে তুই? এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে?..

জারিফা : [ দৌড়ে এক্সাইটেড হয়ে এগিয়ে এসে ] হেইইই স্নেহা! বলেছিস?..

স্নেহা আপসে্ড হয়ে ভেতরে ঢুকে ব্যাগটা টেবিলের উপর ছুড়ে মেরে খাটে বসে পড়লো….

জারিফা : [ পাশে এসে বসে ] কি হলো স্নেহা! কিছু বলছিস না কেনো?..

স্নেহা : গিয়েছিলাম! কিন্তু!

জারিফা : [ বিরক্তি হয়ে ] আবার কিন্তু কি?..

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] সাহস হচ্ছিলো না আমার রাহুলের সামনে যেতে, মাথায় অনেক কিছু ঘুরছে…তুই এখন যা প্লিজ! আমায় একা থাকতে দে!

জারিফা : [ মার্জানের দিক তাকিয়ে ] ইয়া আল্লাহ! কি বলে এই মেয়ে…আমি আরো কি কি ভেবেফেলেছি!

– ধুর আবার সব মাটি!

স্নেহা : তুই আবার মন খারাপ করছিস কেনো তোর না আজ বার্থডে?..

জারিফা : মন ভালো থাকতে দিচ্ছিসই বা কই?..[ চেঁচিয়ে ] গিয়েছিলি ওকে বলতে বললি না কেনো?..

[ স্নেহা চুপ হয়ে থাকে! ]

মার্জান : আচ্ছা সমস্যা নেই! আজ আমরা সবাই তো রাহুলের বাসায়ই যাচ্ছি তাই না স্নেহা! [ চোখ মেরে ] …ওখানে সাহস করে বলে দিবি! ওকে?.

স্নেহা : আ..আম..আমি যাচ্ছিনা ওর বাসায়! [ বলেই অন্যপাশ ফিরে যায় ]

মার্জান : তাই?..আচ্ছা তাহলে ঠিকাছে!

স্নেহা : [ মনে মনে ] আরে! এ কি?..যাবো না বলেছি তাই আমাকে একটু জোড় ও করলো না… [ জারিফা আর মার্জানের দিক একবার চেয়ে নাক ফুলিয়ে উঠে অন্যরুম চলে যায় স্নেহা ]

জারিফা : আরে মার্জান এর হলোটা কি বলতো?.. রাহুল যখন নিজ থেকে ওকে আই লাভ ইউ বলেছে তখন ও রিপ্লাই করেনি! আবার রাহুলকে ছাড়া থাকতেও পারছে না! রাহুলকে কিছু বলতেও পারছে না…এখন আবার বলছে আজ পার্টিতে যাবে না…[ চেঁচিয়ে ] Why?..

মার্জান : [ হেসে হেসে খাটে বসে ] আরে Don’t worry! যাবে যাবে…স্নেহা রাহুল থেকে দূরে থাকতে পারবে না!

জারিফা : নাজানি কি হচ্ছে এসব! উফফ [ বলেই জোড়ে একটি শাস ফেলে ]
_________________________________
সন্ধায়,

জারিফা আর মার্জান রেডি হচ্ছে পার্টিতে যাওয়ার জন্য!

স্নেহা : [ ধীরেধীরে তাদের দিক এগিয়ে এসে ] কোথায় যাচ্ছিস তোরা?..

মার্জান : কয়বার জিজ্ঞেস করবি বলতো?..

স্নেহা : ওহ ওকেই! আব…আস আসলে..তোকে আজ সুন্দর লাগছে…

মার্জান : থেংক ইউউ!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আর আমাকে?..

স্নেহা : [ ইমোশনাল হয়ে ] তোকেও..লাগছে..সুস..সুন্দর অনেক!

মার্জান : [ কোণা চোখে তাকিয়ে ] ইউ ওকে স্নেহা!

স্নেহা : ইয়ে..ইয়েস! আই এম অলরাইট! [ বলেই মুখ গোমড়া করে বারান্দায় চলে গেলো ]

জারিফা আর মার্জান মুখ চেপে হেসে উঠে, এবং কিছুক্ষণ পর দেখে…

স্নেহা : [ আবার এগিয়ে এসে ] জারিফা! তুই আমাকে ছাড়া বার্থডে সেলেব্রেট করবি?…

জারিফা : আরে আমার গ্রিন কালার ইয়ার রিংটা দেখেছিস?…[ বলেই খুজতে লাগলো ]

স্নেহা : [ আড়চোখে তাকিয়ে ] তোর কানেই আছে!

জারিফা : অউউ! থেংক ইউ স্নেহা!

স্নেহা : আচ্ছা তোরা না গেলে কি হয়?..আমরা এইখানেই সেলেব্রেট করি!

মার্জান : আরে রাহুল এতো ভালোবেসে আমাদের জন্য পার্টি আরেঞ্জ করেছে! দেখ না গেলে খারাপ দেখায় না…?

জারিফা : আর তুকে তো বলেছে আসতে..তুই তো রেগে বললি আমি ওর বাসায় যাচ্ছিনা…

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] হ্যা! বলেছি..একবারই তো বলেছি…তাই বলে…

[ মার্জান আর জারিফা হেসে স্নেহার দিক এসে স্নেহাকে ঝড়িয়ে ধরে ]

জারিফা : [ স্নেহার কানে কানে ] ইউ মিসিং রাহুল…হ্যা না?..হুম? হুম?..[ বলেই চোখ টিপ মারে ]

[ স্নেহা মাথা নিচু করে আছে গাল বেয়ে চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়লো! ]

মার্জান : [ চোখ মুছে দিয়ে ] আচ্ছা হয়েছে অনেক..আর কাঁদতে হবে না! চল তাড়াতাড়ি রেডি হয়েনে…

স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে তাকিয়ে ] সত…সত্যি যাবো?..

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] আবার?..

স্নেহা : আচ্ছা ওকে! [ বলেই রেডি হতে চলে গেলো ]
_________________________________
রাহুলের বাসার গেইটের সামনে এসে,

মার্জান : দেখ স্নেহা! এতো ভাবছিস কেনো এসেই তো পড়েছিস…এখন আবার বলছিস যাবি না?..

স্নেহা : জানিনা! আমার কেমন যেন লাগছে ওর সামনে যেতে!

জারিফা রেগে আড়চোখে তাকিয়ে স্নেহার হাত ধরে টেনে ভেতরে…নিয়ে ঢুকে যায়,

স্নেহা : জারিফা কি করছিস আমার কথা শোন প্লিজ!

রিদোয়ান : হেইই গাইস্ কামঅন! [ জারিফার দিক তাকিয়ে ] থেংক্স ফর কামিং!

জারিফা : [ মনে মনে ব্লাশিং হয়ে ] আহ..বাকিদের দেখছিনা?..

রিদোয়ান : রুফটপে আছে! কাম!

[ সবাই মিলে রুফটপে এগিয়ে গেলো জারিফা স্নেহার হাত ধরে টেনে টেনে নিয়ে আসে স্নেহা অনেকটাই নার্ভাস্ ফিল করছে…]

মার্জান : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ওয়াও! ইয়ার ওয়ান্ডারফুল ডেকোরেট!

আসিফ : ডান বাই মি! [ বলেই চোখ টিপ মারলো…]

মার্জান : [ রাগান্বিতভাবে নাক ফুলিয়ে ] ইউ…? [ বলতেই আসিফ জারিফার দিক এগিয়ে এসে হ্যান্ডশেক করে ]

আসিফ : হ্যাপি বার্থডে ডিয়ার! হেভ আ গ্রেট ডে!

জারিফা : থেংক ইউ!

আসিফ : হ্যালো স্নেহা!

স্নেহা : [ একটু হেসে ]..হাই!

শ্রেয়া : [ এগিয়ে এসে জারিফাকে ঝড়িয়ে ] হ্যাপি বার্থডে মাই ডিয়ার! ওহো! ওয়াও ইউ লুকিং বিউটিফুল… [ বলেই রিদোয়ানের দিক তাকালো রিদোয়ান ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে গেলো ]

হঠাৎ, পেছন থেকে,

রাহুল : [ একটু স্লো ভয়েসে্ ] হাই গাইস্!

[ স্নেহার বুকটা কেপে উঠলো রাহুলের ভয়েস শুনে! স্নেহা ধীরেধীরে পেছন ফিরে তাকালো…রাহুল স্নেহাকে দেখে শকড হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো!… স্নেহা স্কাই কালারের একটি সালোয়ার কামিজ পড়েছে…চুল গুলো ছেড়ে রেখেছে…চশমা পড়েনি আজ..তাই কাজল কালো চোখ গুলো ও দেখা যাচ্ছে… মুখটা কেমন যেনো শুকিয়ে আছে…তাও দেখতে অপরুপ লাগছে স্নেহাকে…তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে ফেললো রাহুল! ]

জারিফা : [ রাহুলের দিক এগিয়ে গিয়ে ] হেইই! রাহুল!

রাহুল : [ জারিফাকে হাগ করে ] হ্যাপি বার্থডে… [ জারিফার কানে ফিসফিসিয়ে ] আধি ঘার ওয়ালি!

জারিফা : থেংক ইউউ! [ রাহুলের কানে ফিসফিসিয়ে ] জিজাজি!

[ রাহুল মনে মনে হেসে উঠে,]

রিদোয়ান : ওকে! কাম গাইস্ এঞ্জয় দ্যা পার্টি!

[ বলেই জারিফার দিক হাত বাড়ালো… জারিফা একটু লজ্জা পাচ্ছিলো তাও হাত দিয়ে দিলো, মার্জান দূর থেকে জারিফাকে চোখ টিপ মারলো,]
_________________________

মার্জান : [ স্নেহার হাত ধরে ] চল স্নেহা!

[ সামনে এগিয়ে যেতেই স্নেহা অবাক হয়ে যায়…এতো বড় কেক..মানে এতো সুন্দর কেক সে এর আগে কখনো দেখেনি! ]
হঠাৎ, পেছন ফিরতেই রাহুলের সাথে চোখাচোখি হয়ে পড়ে, মানে রাহুল স্নেহার দিক চেয়েই ছিলো! স্নেহা তাকাতেই রাহুল তাড়াতাড়ি অন্যপাশ ফিরে চলে যাচ্ছিলো…

আসিফ : [ রাহুলের হাত ধরে ] কোথায় যাচ্ছিস?..

রাহুল : কোথ..কোথাওনা…

হঠাৎ..জারিফা দৌড়ে এগিয়ে এসে রাহুল আর স্নেহা দুজনকে দু-হাতে ধরে কেক এর পাশে নিয়ে গিয়ে দাড় করালো…

জারিফা : কি হলো দুজন এভাবে হা করে তাকিয়ে আছো কেনো?…আরে আমি কেক কাটবো আর তোমরা পাশে না থাকলে হয়?…[ বলেই বাকীদের ইশারা করে কাছে এসে দাড়াতে বলে… ]

সবাই হেসে উঠে পাশে এসে দাঁড়ালো… স্নেহা অনেকটা নার্ভাস ফিল করছে…সে রাহুলের কাছাকাছিই আছে অথচ রাহুলকে কিছু বলতে পারছে না…

রাহুল : [ মনে মনে ] এইখানে দাঁড়ালে স্নেহা থেকে দূরে থাকা সম্ভব না…আই কান্ট কন্ট্রোল মাইসেল্ফ! [ বলেই রিদোয়ানকে জারিফার পাশে দাড়করিয়ে দিয়ে রাহুল সরে দাঁড়ায় ]

আর এইদিকে মার্জান আসিফের দিক এমনভাবে তাকিয়ে যাচ্ছে যেন তাকে চোখ দিয়েই গিলে খেয়ে ফেলবে…আর আসিফ তা দেখে শুধু হেসেই যাচ্ছে….
_________________________________
কেক কাটা শেষ হলো…সবাইকে খাইয়ে…জারিফা এক টুকরো হাতে নিয়ে রাহুলের দিক এগিয়ে গেলো!

জারিফা : [ কেক খাইয়ে দিয়ে ] থেংক্স রাহুল!

রাহুল : No need! থেংক্স ডিয়ার! it’s my pleasure!

হঠাৎ পেছন থেকে,

রিদোয়ান : আফসোস্ যদি আমাকে ও কেউ একটা থেংক্স দিতো আরকি!

[ রাহুল হেসে উঠে ]

জারিফা : [ রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে ] আপনাকে কেনো থেংক্স দিবো?..হুম?

রিদোয়ান : আরে আমি তোমাকে প্রমিস্ করে আনিয়েছি পার্টিতে!

জারিফা : এটার জন্য থেংক্স বলে আমি আমার সময় বরবাদ করতে চাইনা..[ বলেই মনে মনে হেসে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রিদোয়ান : [ জারিফার সামনে এসে ] ওকে সো্ মিস্ জারিফা! কি জন্যে থেংক্স দিলে আপনার সময় বরবাদ হবে না শুনি?..

জারিফা : দেখেন! রাহুল পার্টি আরেঞ্জ করেছে! হলোনা এটা সারপ্রাইজ গিফট?..

[ রাহুল হাসতে লাগলো তাদের কান্ড দেখে ]

রিদোয়ান : [ একটু ভেবে ] হ্যা হলো!

জারিফা : সো্ আপনিও ট্রাই করেন! থেংক্স পেয়ে যাবেন! [ বলেই জারিফা চলে যাচ্ছিলো ]

রিদোয়ান : [ জারিফার হাত ধরে ] সো্ তোমার সারপ্রাইজ গিফট চাই?…[ চোখ মেরে ]

জারিফা : [ হাত ছুটাতে ছুটাতে ] আরে! কিক..কি করছেন…

[ রিদোয়ান আর কোনো জবাব না দিয়ে জারিফাকে টেনে নিয়ে রুফটপের মাঝে এনে দাড় করালো…সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিক ]
_____________________________
স্নেহা এদিকওদিক তাকিয়ে খুঁজছে রাহুলকে… হঠাৎ দেখে রাহুল এক কোণায় দাঁড়িয়ে স্মোক করছে…আর জারিফা আর রিদোয়ানের কান্ড দেখে দেখে হাসছে…

স্নেহা : [ মনে মনে কাদো কন্ঠে ] চেহেরা দেখাবে না বলেছে তাই ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে…কি আজিব! [ বিরক্তি হয়ে ] নাকি ঐ নেহাকে ভাবছে কি জানি! ধুর! [ বলেই জারিফা আর রিদোয়ানের কান্ড দেখতে লাগলো ]

[ রিদোয়ান পকেট থেকে একটি ফিংগার রিং বের করে পায়ের হাটু ভেঙে মাটিতে আধবসা হয়ে বসে,

জারিফা শকড হয়ে তাকিয়ে আছে… মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পড়লো তার!… সপ্ন নাকি সত্যি কিছুই বুঝতে পারছে না…]

রিদোয়ান : [ রিংটি জারিফার দিক বাড়িয়ে দিয়ে মাথা নিচু করে ] জারিফা! i don’t know any loving poetry! তাই আমি আমার নিজ ভাষায় বলছি, জারিফা! তোমাকে দেখে আমার এমন কেনো ফিল হয় আমি জানিনা!..
জানিনা তোমার ও এমন ফিল হয় কিনা! তবে এটা জানি আমি তোমাকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি!

মার্জান : [ স্নেহার কানে ] দেখলি তো লুকিয়ে লুকিয়ে আমাদের না বলে প্রেম করেছে এই দুনোটা! [ স্নেহা একটু হেসে উঠে ]

রিদোয়ান : আই লাভ ইউ জারিফা! ডো ইউ লাভ মি?..

[ বলেই মাথা তুলে জারিফার দিক তাকালো, জারিফার চোখে পানি টলমল করছে…পলক নড়তেই পানি গড়িয়ে পড়বে…হ্যা পড়েই গেলো পানি..]

রিদোয়ান : [ মুখ গোমড়া করে ] ট্রাষ্ট মি জারিফা! ভালোবাসা কি ভালোবাসার ফিলিংস্ কেমন এটা আমি তোমার সাথে দেখা হওয়ার পরে বুঝতে পেরেছিলাম! আই রিয়েলি লাভ ইউ!

জারিফা : [ কাদো কন্ঠে ] যদি বলি…. না?….

রিদোয়ান : তাহলে ভাববো! একটা দূসপ্ন ছিলো!

[ জারিফা চোখ মুছে একটা হাসি দিয়ে, পাশফিরে তাকালো…]

শ্রেয়া : [ হেসে হেসে চেঁচিয়ে ] No জারিফা! No…রিজেক্ট রিজেক্ট! [ রিদোয়ান আর জারিফা দুজনেই হেসে উঠে ]

আসিফ : [ চেঁচিয়ে ] আরে জারিফা! ছেলের অভাব পড়লো নাকি…এতো ভাবছো কেনো?…মন যখন না বলছে…তাহলে না বলে দাও!

[ বাকিরা হেসে উঠে, জারিফা রাহুলের দিক তাকালো… রাহুল একটু হেসে হাত দিয়ে ইশারা করে অল দ্যা বেষ্ট জানালো….]

জারিফা ধীরেধীরে রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলো…

[ সবাই এক্সাইটেড হয়ে চেঁচিয়ে তালি দিয়ে উঠলো ]

[ খুশিতে স্নেহার চোখ বেয়ে কখন পানি গড়িয়ে পড়ছে..ঠেরই পাইনি! তাড়াতাড়ি চোখ মুছে আবার তালি দিতে লাগলো ]

[ রিদোয়ান জারিফাকে রিং পড়িয়ে ব্লাশিং হয়ে দাঁড়িয়ে যায়…জারিফা লজ্জায় লাল হয়ে হাতের রিংগের দিক তাকিয়ে আছে…ধীরেধীরে রিদোয়ান জারিফার কোমোড়ে হাত দিয়ে কাছে টেনে নিলে…জারিফা হেসে লজ্জায় রিদোয়ানের বুকের মাঝে মাথা লুকিয়ে রাখলো…রিদোয়ান ও হেসে শক্ত করে ঝড়িয়ে ধরলো জারিফাকে… ]
[সবাই আরো এক্সাইটেড হয়ে শিস বাজিয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো….]

[ স্নেহা একটু হেসে পাশফিরতেই দেখে রাহুল চলে যাচ্ছে…মুখটা গোমড়া করে ফেললো স্নেহা…]

শ্রেয়া : [ চেঁচিয়ে ] আরে রাহুল তুইই কোথায় যাচ্ছিস?..

রাহুল : [ নাকফুলিয়ে আড়চোখে শ্রেয়ার দিক তাকিয়ে ] জাষ্ট ঐদিকটাই….

শ্রেয়া : [ চোখ মেরে ] তাই!

জারিফা : জাষ্ট ঐদিকটাই মানে?..পার্টি এইখানে চলছে…আর আপনি ঐদিকটাই গিয়ে কি করবেন…

রাহুল : [ একটু হেসে টেবিল থেকে একটি শেম্পিং এর বোতোল নিয়ে জারিফা আর রিদোয়ানের দিক এগিয়ে তাদের মাঝে দাঁড়ালো ] ওকে গাইস্ আজকের পার্টি সেলেব্রেট হবে আমাদের নিউ কাপল এর জন্য! সো্ [ রিদোয়ানের পেটে ঘুষি মেরে ] Congratulations রিদ! [ জারিফাকে চোখ মেরে ] এন্ড জা~~রিফা [ বলতেই জারিফা লজ্জায় অন্যদিক ফিরে যায় ]

রাহুল গ্লাসে সবার জন্য শেম্পিং ঢেলে চিরস্ করে সেলেব্রেট করলো…

[ স্নেহা একপলকে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক…রাহুল ও তাকাতেই চোখে চোখ পড়লো…দুজনেই তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নেয়, ]

কিছুক্ষণ পর,

স্নেহা বাকিদের দিক তাকিয়ে দেখে সবাই গ্লাস করেই অল্প অল্প খাচ্ছে…আর রাহুল পুরো এক বোতোল হাতে নিয়েই অন্যপাশ চলে গিয়ে গডগড করে গিলে খাচ্ছে…

জারিফা স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা মুখ গোমড়া করে আছে…আর রাহুল ওপাশ গিয়ে একা দাঁড়িয়ে শেম্পিং খাচ্ছে…জারিফা রাহুলের দিক এগুতে গেলে

রিদোয়ান : [ জারিফার হাত ধরে ] কোথায় যাচ্ছো?..

জারিফা : এক সেকেন্ড আসছি!

[ বলেই রাহুলের দিক এগিয়ে গিয়ে রাহুলকে হাত ধরে টেনে সবার সামনে এনে দাড় করাই ]

জারিফা : শুধু Congratulation দিয়ে কাজ হবে না মিষ্টার! আমাদের আজ একটা ফাটাফাটি সং শোনাতে হবে! [ বলেই রাহুলকে চোখ টিপ মারলো ]

রাহুল : [ একটু হেসে ] সরি! জারিফা! বাট্ আমি…গান ছেড়ে দিয়েছি…

[ স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো,চোখে পানি টলমল করতে লাগলো স্নেহার…]

রিদোয়ান : ওহো! রাহুল এটা কোনো কথা হলো?..আমার স্পেশাল ডে…একটা স্পেশাল গানতো হওয়া জরুরি তাই না… [ চেঁচিয়ে ] কি বলো গাইস্?…

আসিফ : ইয়াহ! রাহুল He is right!

[ রাহুল কিছু না বলে চলে যাচ্ছিলো কারণ রাহুলের চোখ ভিজে আসছিলো,]

জারিফা : [ দৌড়ে রাহুলের সামনে এসে পথ আটকিয়ে ] আমি একটা ডায়লগ বলি ওকে…? দল ছেড়েছি! কাজ ভুলিনি বস্ [ বলেই রাহুলকে একটা চোখ টিপ মারলো ] তেমনি আপনি গান ছেড়েছেন, গান তো আর ভুলেননি! হুম? হুম?…

রাহুল : Shut-up জারিফা [ বলেই অন্যপাশ ফিরে গেলো ]

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] Never! and no excuse ok?..[ বলেই রাহুলকে আবার টেনে এনে দাড় করাই ]

শ্রেয়া : এ…এক সেকেন্ড আমি আনছি গিটার [ বলেই শ্রেয়া দৌড়ে রাহুলের রুমে গিয়ে গিটারটা নিয়ে এনে রাহুলকে ধরিয়ে দেই ]

রাহুল কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে গিটারটা টেবিলের উপর রেখে দিয়ে চলে যাচ্ছিলো, হঠাৎ আবার দাঁড়িয়ে গিয়ে কি মনে করে ফুফিয়ে এসে গিটারটা হাতে নিয়ে একটি চেয়ারে বসে পড়লো…চোখ পানিতে ভরে আছে….নাক মুখ লাল হয়ে আছে রাহুলের, বাজাতে লাগলো গিটার? সবাই এক্সাইটেড হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক!

[ মার্জান স্নেহাকে একটু ধাক্ষিয়ে চোখ টিপ মাড়লো…স্নেহা নিস্তব্ধ হয়ে মাথা নিচু করে আছে…রাহুলের বাজানো গিটারের Softed tone কানে ভেসে আসছে…কান পেতে রইলো স্নেহা…. ]

রাহুল : ♪♪ তু আতি্ হে সি্নে মে্
~~যাব্ যাব্ সা্সে্ ভারতিহু্
তে্রে্ দি্ল কি্ গালি্ওসে্
মে্ হার রোয্ গুজা্রতা্ হু্
হাওয়া কে্ যে্ইসে্ চালতা্ হে্ তু্
মে রে্ত যে্ইসে্ উডতা্ হু
কন্ তুঝে্ ইউ পিয়া্রে্ কারে্গা্
যে্ইসে্ মে্ কারতা্ হু

ওও্ ~~ওও্ ~~ওও্ ~~ও~~~ ওও্ হা~~~আআ~~আআ~~~আ

[ চোখ থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে…কিন্তু তাও মুখে হাসি নিয়ে গান করে যাচ্ছে রাহুল! সবাই কোণা চোখে একবার স্নেহার দিক আরেকবার রাহুলের দিক তাকাচ্ছিলো বারবার, স্নেহা তা বুঝতে পেরে চোখের জল আটকিয়ে এপাশ ওপাশ ফিরে ছটফট করতে লাগলো…]

রাহুল : ♪♪ তু জো্ মুঝে্ আ্ মি্লা্
সা্পনে্ হুয়ে্ সা্রপি্রে
♪♪ হাতো্মে্ আতি্ নেহি্
উডতে্হে্ লামহে্ মে্রে্
মেরি্ হাসি্ তুঝ্সে্ মেরি্ খুশি্ তুঝ্সে্
তুঝে্ খাবা্র কি্য়া বেকা্দা্র

জিস্ দিন্ তুঝ্কো্ না্ দে্খু
পাগা্ল পাগা্ল পি্রতি্ হু
কন্ তুজে্ ইউ্ পিয়া্রে্ কারে্গা্
যে্ইসে্ মে্ কারতা্ হু…

ওও্ ~~ওও্ ~~ওও্ ~~ও্~~ হা্~~~আ্ ~~~আআ্ ~~~আ্

[ গান শেষ করে হঠাৎ, গিটারের তারটা জোড়ে টান মারলো রাহুল…

স্নেহা ভয়ে কেপে উঠলো…সবাই শকড হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক… চোখটা লাল হয়ে জলসে যাচ্ছে… গড়িয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে রাহুলের ]

[ হঠাৎ, স্নেহা ফুফিয়ে কেঁদে চোখে মুছে দৌড়ে রুফটপ থেকে নেমে চলে যায়, বাকিরা অবাক হয়ে স্নেহার চলে যাওয়া চেয়ে রইলো…রাহুল মাথা নিচু করে হাত মুঠি বেধে বসে আছে…]
_________________________________

স্নেহা : [ নিচে নেমে ফুফিয়ে কেঁদে কেঁদে হাটছে আর মনে মনে ভাবছে ] আমি রাহুলকে কিছু বলতে পারছিনা কেনো? রাহুল আমাকে কতো ভালোবেসেছে..আর আমি কিনা বুদ্ধু একটা…ওকে বারবার ফিরিয়ে দিলাম…আবার ও ঐ নেহার কথা নিয়ে মাথার মধ্যে খিচুরি পাকাচ্ছিলাম…কিক কিন্ত আমার মন বলছিলো.. রাহুল আমাকে সব সত্যি বলেছে…এবং তাই প্রমান হলো…রাহুল গান ছেড়ে দিয়েছে…তারপরে ও গান গাইলো! [ চোখ বটে পানি ফেলে ] রাহুল জানে না আমি কেমন?.. হ্যা আমি না করে দিয়েছি… তাই বলে আমাকে আর চেহেরায় দেখাবেনা..? আমারদিক তাকাতেই চোখ সরিয়ে ফেলছে বারবার…কেনো? গিটারের তারটাও আমার উপর রেগে ছিড়েছে আমি জানি… যদি রাহুল…[ ফুফিয়ে কেঁদে ] আরেকবার.. আমার কাছে এসে বলতো…

হঠাৎ, পেছন থেকে কাদো কন্ঠে, স্নেহা বলে আওয়াজ এলো…

স্নেহার বুকটা ধুপ করে উঠলো, শকড হয়ে ফিরে তাকালো, চোখের পানি আটকানো আর যাচ্ছেই না স্নেহার… আর মনে মনে ভাবছে…রাহুল কি এখন ও মনে মনে যা বলছিলো তা শুনতে পেয়েছিলো?…

রাহুল : [ কাদো কন্ঠে ] আই কান্ট স্নেহা! কিন্তু ট্রাই করেছি! [ মাথা নিচু করে ] আম আমি… তোমার থেকে দূরে থাকার ট্রাই করেছিলাম স্নেহা কিন্তু…

স্নেহা : [ চোখ মুছে চেঁচিয়ে ] কেউ বলেছে ট্রাই করতে?

রাহুল : [ কাদো কাদো ভাবে ] তুমিই তো বলেছিলে আমি কারো ভালোবাসা ডিসার্ব করিনা…

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে কেঁদে ] হ্যা বলেছিলাম! কারণ তখন তো আমি ভেবেছিলাম আপনি নেহাকে… [ বলেই কেঁদে উঠে ]

[ রাহুল কিছুক্ষণ চুপ করে স্নেহার দিক তাকিয়ে একটু হেসে দেই, স্নেহাও চোখ মুছে হেসে উঠে ]

স্নেহা : [ কাঁদো কন্ঠে ] আপনাকে কাঁদলে একটু ও সুইট্ করে না…

রাহুল : [ অন্যপাশ ফিরে কান্না কন্ট্রোল করে আবার স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তাহলে কিসে সুইট্ করে বলে দাও!

স্নেহা : [ কাঁদছে আর হাসছে..] আপনার তেডি স্মাইল! [ বলতেই রাহুল হেসে উঠে, স্নেহা ও একসাথে হেসে উঠে,

হঠাৎ, আবার মুখ গোমড়া করে রাহুলের দিক চেয়ে থাকে…]

রাহুল : [ কিছুক্ষণ স্নেহার দিক তাকিয়ে থাকে যেন লাগছে স্নেহা তার চোখ দিয়েই রাহুলকে প্রশ্ন করছে! চোখ ভিজে আসতেই রাহুল বলে উঠে ] আ..আই.. আই লাভ ইউ স্নেহা!

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে চেয়ে আছে আর চোখ থেকে পানি ফেলছে, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায়… স্নেহা হেসে চোখ মুছে দৌড়ে এসে রাহুলকে ঝড়িয়ে ধরে… রাহুল ও স্নেহাকে ঝড়িয়ে ধরলো…]

রাহুল : [ একটা জোড়ে শাস ফেলে ] এতো হালকা করে ধরে নাকি কেউ? আরেকটু শক্ত করে ধরো না…

[ স্নেহা হেসে আরো শক্ত করে ঝড়িয়ে ধরলো রাহুলকে!

আবার ও রাহুলের জ্যাকেট থেকে সেই স্মেল ভেসে আসছে স্নেহার নাকে…মন ভরে যাচ্ছে স্নেহার এই স্মেলে ]

[ আর রাহুল মুখের উপর চলে আসা স্নেহার চুল এবং কাধের স্মেল নিচ্ছে…আর শাস ফেলছে, যেন লাগছে আবার কতোটা বছর পর এই স্মেলের রাস্তা খুজে পেয়েছে! ]

রাহুল : স্নেহা আমার মনে এমন লাগছিলো যেন তুমি আমাকে ডাকছিলে!

স্নেহা : [ ফুফিয়ে কেঁদে রাহুলকে আরো শক্ত করে চেপে ধরে ] হ্যা! ডেকেছিলাম!

[ রাহুল স্নেহার কানের দিক একটি চুমু খেয়ে আবার শক্ত করে ঝড়িয়ে ধরে স্নেহাকে, শীতল ঠান্ডা বাতাস বয়ে যাচ্ছে…স্নেহা আর রাহুল নির্বাধায় দুজন দুজনকে ঝড়িয়ে ধরে আছে ]

চলবে. …….

Love At 1St Sight Season 3 Part – 20

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 20

writer-Jubaida Sobti

 

স্নেহা…নিস্তব্ধ হয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশের দিক চেয়ে আছে…এখনো…

মার্জান : [ বারন্দায় এগিয়ে এসে ] স্নেহা! ডিনার রেডি! খেতে চল,

স্নেহা : খিধে নেই আমার তোরা খেয়েনে!

মার্জান : আরে! সেই সকালে খেয়ে বেড়িয়েছিস! আর তো কিছুই খাসনি! খিধে নেই মানে?…

স্নেহা : [ মার্জানের দিক তাকিয়ে ] সত্যি খিধে নেই! [ বলেই ভেতরে চলে যায় ]

মার্জান ও আর কিছুই বললো না, সে জারিফাকে নিয়ে খেয়ে…রুমে ঘুমাতে চলে আসে,এবং রুমে ঢুকতেই দেখে..স্নেহা ফ্রেশ হয়ে কাপড় চেঞ্জ করে জানালার পাশে বসে আছে…

জারিফা : [ মার্জানকে ফিসফিসিয়ে ] নাক-মুখটা দেখ এখনো লাল হয়ে আছে! মুখটাও শুকিয়ে আছে! সেই লাষ্ট সকালে খেয়ে বেড়িয়ে ছিলো!

মার্জান : এখন কি করতে পারি?…

হঠাৎ, স্নেহার চোখ পড়লো তাদের উপর!

স্নেহা : আরে তোরা?.. খেয়েছিস?..

জারিফা,মার্জান দুজনই মাথা নাড়ালো! হ্যা খেয়েছে!

স্নেহা : আর হ্যা! শায়লা কোথায়?..সেই কবে থেকে দেখছিনা!

মার্জান : আংকেলকে আবার হসপিটাল এডমিট করেছে…তাই সে আর্জেন্ট বাড়ী চলে গেছে…

স্নেহা : [ অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়ে ] আচ্ছা?..কখন গিয়েছে?…

মার্জান : ব্যাস! তুই আসার কিছুক্ষণ আগেই বেড়িয়ে ছিলো!

স্নেহা : অহ! i hope যেন আংকেল তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়!

জারিফা : [ এসে স্নেহার পাশে বসে, ইমোশনাল হয়ে ] স্নেহা! মেরি জান একটা কথা বলি!

স্নেহা : হ্যা! বল!

জারিফা : না থাক…বলে কোনো লাভ নেই [ বলেই মন খারাপ করে অন্যপাশ ফিরে যায় ]

স্নেহা : [ জারিফার কাধে হাত রেখে ] বল?…

জারিফা : তুই এইভাবে সে্ড হয়ে আছিস! তা দেখতে আমাদের মোটেও ভালো লাগছে না…. [ স্নেহার দিক ফিরে ] তুই তো গিয়েছিলি রাহুলের কাছে তাই না?..তাহলে বলিসনি কেনো?..

স্নেহার চোখে জল জমে আসছে…ঠোট কাঁপছে তার…কিভাবে বলবে সে,মাথা নিচু করে কিছুক্ষণ চুপ হয়ে রইলো,

স্নেহা : আমি যখনি গিয়েছিলাম ততোক্ষণে…ও চলে গিয়েছিলো…[ কাদো কণ্ঠে ] দোষ আমারই ছিলো জারিফা,আমি রাহুলকে ভুল বুঝেছি.. ও আমাকে ভালোবেসেছে আর আমি কিনা..[ বলেই ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো ]

মার্জান : [ স্নেহার পাশে এসে বসে ] আরে কাঁদছিস কেনো?..রাহুল কোথাও পালিয়ে তো আর যায়নি! [ স্নেহার চোখ মুছে দিয়ে ] কাল ভার্সেটি গেলে তখন ওকে সব বুঝিয়ে বলে দিস! যে তুই ও ওকে ভালোবাসিস!

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়ে ] ইয়েস্! কাল সব বলেদিবি…ঝড়-তুফান যায়…আসুক তোকে বলতেই হবে!

মার্জান : আচ্ছা! এবার গুড গার্লের মতো ডিনার করে ঘুমিয়ে পর!

[ স্নেহার চোখ থেকে আবার জল গড়িয়ে পড়ছে,]

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] আরে?.. আবার কাঁদছিস কেনো?..

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] ও নিশ্চয় কিছু খায়নি! আমি কিভাবে খাবো?… [ বলেই চোখ মুছে কম্বল টেনে নিয়ে ওপাশ ফিরে শুয়ে পড়লো ]

মার্জান আর জারিফা অবাক হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে…তারাও শুয়ে পড়ে,

ভোর হলো, সূর্যের আনাগোনা ও নেই, চারদিক কুয়াশায় ভরপুর… পাখীরা কিচিরমিচির ডাকছে…

স্নেহা গায়ে শাল মুড়িয়ে চোখে চশমা লাগিয়ে, চুলে খোপা করতে করতে বারান্দায় এসে দাঁড়ায়, পাখী গুলো কি নির্জনে গান করে যাচ্ছে..ভালোই লাগছে তা শুনতে…একদল শীতল বাতাস এসে গা ছুয়ে গেলো… চোখটা বন্ধ করে নিলো, শীতের সকালের আভাস মনে করে দিচ্ছে কারো কথা, চোখে ভেসে যাচ্ছে হাজারো সৃতি!…

হঠাৎ,টিট-টিট টিট-টিট করে ঘড়ির এলার্মটা বেজে উঠলো.. নিমিষেই চোখটা খুলে ফেললো স্নেহা! রুমের ভেতর এগিয়ে গিয়ে এলার্ম বন্ধ করলো,

[ জারিফা এলার্মের শব্দে কম্বল থেকে মাথা তুলে চোখ কচলে তাকাতেই শকড হয়ে গেলো,স্নেহা পাশে বসে তার দিক চেয়ে আছে ]

স্নেহা : [ একটু মুচকি হেসে জারিফার কপালে একটা চুমু দিয়ে ] হ্যাপি বার্থডে! জারিফা!

জারিফা : [ একটু হেসে উঠে বসে স্নেহাকে ঝড়িয়ে ধরে ] থেংক ইউউউউউ মেরি জাননন! [ বলেই মার্জানের দিক তাকায় ] ইয়ার! এক তো তুই সকাল সকাল উঠে আমায় উইস করছিস আর এইদিকে ও কি আরামের ঘুম ঘুমাচ্ছে…[ বলেই মার্জানের গায়ের কম্বলটা টান দিলো ] ইশ! কি ঘুম এখনো খবর নেই! [ ধীরে ধীরে চুল দিয়ে মার্জানের কানে শুরশুরি দিতে লাগলো ]

[ মার্জান কেপে উঠে চোখ খুললো, আর জারিফা তার সামনে গিয়ে দাত সব দেখিয়ে একটা হাসি দেই… ]

মার্জান : [ একটা জোড়ে শাস ফেলে ঘুম কন্ঠে ] I know that! অন্যের ভালো দেখাতো তোর সয় না…

জারিফা : [ হেসে হেসে ] Actually সবার না..কিন্তু তোরটা মোটেও সয় না.. [ নাক ফুলিয়ে ] আজ আমার কি?…

মার্জান : [ একটু চিন্তা করে জিহ্বায় কামড় খেয়ে উঠে বসে ] ওহো সরি! সরি! [ বলেই পাশের টেবিলের গ্লাসে পানি ঢেলে সাথে সাথে জারিফার মুখে পানি সব ছুড়ে মেরে ] হ্যাপি বার্থডে মাই ডিয়ার! জারিফা!

জারিফা : [ চেঁচিয়ে ] মার্জাননন!

মার্জান : [ তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়িয়ে ] সবাই কেক খাইয়ে উইশ করে! আমি পানি মেরে উইশ করলাম..You know জারিফা! মর্নিং ফ্রেশনেস্ এন্ড…

জারিফা : আচ্ছা?..[ বলেই লাফদিয়ে উঠে নেমে মার্জানকে দৌড়াতে শুরু করলো ]

স্নেহা বিছানা ঠিক করছে আর তাদের কান্ড দেখে হাসছে…হঠাৎ নিচ থেকে গাড়ীর হর্ণের শব্দ ভেসে এলো, স্নেহা একটু ব্লাশিং হয়ে তাড়াতাড়ি দৌড়ে বারান্দায় এগিয়ে গেলো, জারিফা আর মার্জান একটু অবাক হয়ে তারা ও পেছন পেছন এগিয়ে আসলো,

জারিফা : [ স্নেহার কাধে হাত রেখে ] What happen স্নেহা?..এভাবে দৌড়ে এলি কেনো?..

[ স্নেহার চোখে পানি টলমল করছে,কোনো জবাব দিলো না, জারিফার দিক একটু তাকিয়ে চোখ মুছে ভেতরে চলে গেলো ]

জারিফা : আরেহ স্নেহা!

মার্জান : ওয়েট জারিফা!

জারিফা : [ অবাক হয়ে ] এর আবার কি হলো?..

মার্জান : ও মনে করেছে রাহুল এসেছে…

জারিফা : [ একটু চিন্তা করে ] আচ্ছা! হ্যা তাই তো! [ ইমোশনাল হয়ে ] নাজানি স্নেহা আর রাহুলের প্রবলেম কবে Solve হবে, আমারতো খালি এখন অপেক্ষা কখন ভার্সেটি যাবো! [ বলেই ফ্রেশ হতে চলে গেলো ]

নাশতা করে সবাই ভার্সেটির উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লো, জারিফা আর মার্জান খেয়াল করলো, স্নেহার চেহেরাটা এখনো আপসে্ট হয়ে আছে…

গেইট দিয়ে ঢুকতেই স্নেহা সবার আগে পার্কিং এর দিক তাকালো, সবাই আছে কিন্তু রাহুল নেই!

জারিফা : রাহুলকে তো দেখছিনা…নিশ্চয় হলের মধ্যেই হবে!

হঠাৎ তাদের দেখে,

রিদোয়ান : [ এগিয়ে এসে ] হ্যালো গার্লস্! [ বলেই জারিফাকে চোখ টিপ মেরে হ্যান্ডশেকের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়ে ] হ্যাপি বার্থডে! মিস্ জারিফা!

জারিফা : [ হ্যান্ডশেক করে ] হুম! থেংক ইউ! [ বলেই হাত ছুটিয়ে আনার চেষ্টা করে কিন্তু রিদোয়ান তার হাত শক্ত করে ধরে রাখে, ]

জারিফা : [ একটানে হাত ছুটিয়ে ভাব নিয়ে হাতে হাত বটে ] আমরা রাহুলকে খুজছিলাম…আপনি দেখেছেন রাহুলকে?…

রিদোয়ান : [ একটু হেসে ] অউ রাহুল? রাহুলতো এখনো আসেনি! I think ও আসবে না!

জারিফা : [ অবাক হয়ে ] আচ্ছা?

[ বলেই স্নেহার দিক তাকালো, স্নেহা মন খারাপ করে অন্যদিক ফিরে গেলো ]

জারিফা : কিন্তু কেনো বলতে পারেন?…

রিদোয়ান : কেনো সেটাতো বলেনি! তবে মনে হচ্ছে কোনো কারণে আপসে্ট হয়ে আছে!

জারিফা : কেমন ফ্রেন্ডস আপনারা?..আপনার ফ্রেন্ড আপসে্ট আছে বুঝতে পারলেন কিন্তু কি কারণে সেটা জানেন না?..

রিদোয়ান : ইয়াহ! এক্সুলি আমার ওর সাথে এখনো মিট্ হয়নি! আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম কিন্তু ও বললো তেমন কিছুই না!

জারিফা : তেমন কিছু না বললেই হয়ে গেলো?..

রিদোয়ান : রিলেক্স! চেঁচাচ্ছো কেনো?..সন্ধায় তো মিট হচ্ছে ওখানেই জিজ্ঞেস করে নিবো!

– ও হ্যা! সন্ধায় আসছো তো?..

জারিফা : সন্ধায়…কি?..আম­ার তো কিছুই মনে নেই!

রিদোয়ান : আহা..প্রমিস করেছিলে! মাইন্ড ইট! [ স্নেহা আর মার্জানের দিক তাকিয়ে ] গার্লস্ তোমরা ও কিন্তু ইভিনিং এ মনে থাকে যেনো! [ বলেই রিদোয়ান হেসে হেসে চলে গেলো ]

মার্জান : [ জারিফাকে চিমটিয়ে ] আই! ইভনিং এ কি?.. কোথায় আসতে বলছে?…

জারিফা : আআহ! এইভাবে চিমটি দিচ্ছিস কেনো?

মার্জান : [ চোখ মেরে ] অউ! ডেটে নিয়ে যাচ্ছে বুঝি?..

জারিফা : আরে নাহ! পাগল নাকি?..

মার্জান : হ্যা! তাও ঠিক! ডেটে নিয়ে গেলে আমাদের ইনভাইট করতো নাকি! [ চিন্তা করতে করতে ] আচ্ছা! সো্ ইউর বার্থডে সেলেব্রেশন! রাইট!

জারিফা : আ..আই থিংক বাট নট শিয়র!

মার্জান : আচ্ছা তোর বার্থডে পার্টি তো রাহুল দেওয়ার কথা ছিলো তাই না?..উলটা হয়ে গেলো কেনো?..

জারিফা : রাহুলের বাসায়িতো পার্টি!

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] হোয়াট?..

জারিফা : হুম!

মার্জান : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] ইয়ার! রাহুল কতো ওয়েল পার্সন তাই না…জারিফাকে কথা দিয়েছে এবং কথাটা ভাংগেনি!

স্নেহা : [ আনমনা হয়ে ] রাইট! কথা দিয়েছে তাই কথা ভাংগেনি!

[ মার্জান আর জারিফা কনফিউজড হয়ে স্নেহার দিক তাকালো ]

[ স্নেহা কিছু না বলে গার্ডেনের দিক হেটে গিয়ে গাছ তলায় বসলো, মার্জান আর জারিফা ও পাশে গিয়ে বসলো,]

[ স্নেহার চোখে পানি টলমল করছে আর রাহুলের বলে যাওয়া কথাটি ভাবছে ]
____________________­_____________

রাহুল : একবার reason বলো স্নেহা এরপর আমার এই চেহেরা ও কখনো দেখাবো না তোমাকে…
____________________­_____________

ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো স্নেহা!

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] স্নেহা! ইউ ওকে?..

স্নেহা : [ চোখ মুছে দাঁড়িয়ে গিয়ে ] আমি আসছি!

মার্জান : কিন্তু কোথায় যাচ্ছিস?..

স্নেহা : রাহুলের কাছে [ বলেই পা বাড়িয়ে হাটা শুরু করে ]

[ মার্জান আর জারিফা মুচকি হেসে দূর থেকে চেয়ে আছে স্নেহার চলে যাওয়া ]
____________________­_____________

স্নেহা কাধে ব্যাগ ঠিক করে নিয়ে টেক্সি থেকে নামলো, এবং রাহুলের বাসার গেইটের সামনে দাঁড়ালো, বুকটা কাঁপছে তো কাঁপছে সাথে হাত, পা গুলো ও কাঁপছে,…

পা বাড়াতে যাবে ঠিক তখনি দেখে গেইট দিয়ে কেউ বেরুচ্ছে, সাথে সাথে স্নেহা শকড হয়ে থেমে যায়,

নেহা : [ স্নেহার দিক এগিয়ে এসে ] ওহো সারপ্রাইজ মি স্নেহা! তুমি?.. [ হঠাৎ নেহার ফোন বেজে উঠলো ] এক্সকিউজমি! [ ফোন রিসিভ করে ] ইয়েস! ড্রাইভার you can come now!

[ স্নেহা পাথর হয়ে গেছে…আর ভাবছে, নেহা রাহুলের বাসা থেকে?.. কি করে সম্ভব?….]

নেহা : [ স্নেহার মুখের সামনে হাত নাড়িয়ে ] ও হ্যালো স্নেহা! কোথায় হারিয়ে গেলে?…

স্নেহা : কিক..কিছুনা…!

নেহা : ভাবছো আমি এইখানে কি করে? রাইট?..

[ স্নেহা অবাকচোখে তাকালো ]

নেহা : এক্সুলি! তুমি ঐদিন রাহুলের প্রোপোজ এক্সেপ্ট করোনি! তাই রাহুল আপসে্ট ছিলো!..

ইনফেক্ট তুমি ভালোই করেছো…স্নেহা!

এখন রাহুল আর আমি আই মিন! [ একটু ব্লাশিং হয়ে ] আচ্ছা থাক ওসব তোমায় বলে কি হবে! ওকে বাই হুম! [ বলেই স্নেহাকে চোখ টিপ মারলো ]

[ নেহার গাড়ী চলে আসাতে নেহা গাড়ীতে উঠে চলে যায় ]

স্নেহা এখনো মূর্তির মতো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে…পানি গড়িয়ে পড়লো চোখ থেকে… [ মনে মনে ] তারমানে রাহুল কি আমায় মিথ্যে বলেছে?..নাহ তা কিভাবে সম্ভব?.. কিন্তু রাহুল সত্যি বললে নেহা রাহুলের…বাসায় কিভাবে সম্ভব!

হঠাৎ গেইট খোলার শব্দ,

স্নেহা তাড়াতাড়ি পাশের একটি বড় গাছের পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে…বুকটা ধুপধুপ করছে…আর এইদিকে চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে,

গাড়ির হর্ন ভেসে আসলো কানে, পাশ ফিরে তাকালে দেখে…রাহুলের গাড়ী বেরুচ্ছে…

গাড়ী স্নেহার দিক ক্রস্ করে যেতেই জানালা দিয়ে দেখা যাচ্ছে রাহুলকে, চোখে কালো সানগ্লাসটাও লাগিয়ে রেখেছে…

স্নেহার এমন লাগছে যেনো কতটা বছর পর রাহুলকে দেখছে! চোখে মুখে খুশির ঝলক ছুটছে স্নেহার…
গাছের ধার থেকে বেড়িয়ে চেয়ে আছে রাহুলের চলে যাওয়া…

হঠাৎ স্নেহা খেয়াল করলো রাহুলের গাড়ী কিছুটা এগিয়ে গিয়ে থেমে গেলো,
স্নেহা তাড়াতাড়ি আবার গাছের ওপাশ গিয়ে লুকে পড়ে,
____________________­_____________

এইদিকে,

রাহুল : [ গাড়ী থামিয়ে মনে মনে ] এমন কেনো মনে হচ্ছে যেনো স্নেহা আমার আশেপাশেই আছে! [ হঠাৎ সানগ্লাস খুলে লুকিং মিররে চোখ পড়তেই রাহুলের হার্টবিট দ্রুত চলতে থাকে ]

গাছের দিক স্নেহার স্কার্টের পার্ট উড়ছে…একটু পর পর স্নেহা মাথা বের করে উকি দিয়ে দিয়ে দেখছে,

রাহুল : [ চোখে পানি এসে জমে গেছে, মনেমনে একটু হেসে ] I knew that স্নেহা! তাই তো বলি এমন কেনো লাগছে! [ বলেই গাড়ী রেংকিং এ রেখে পেছনে ব্যাক দিলো ]

গাড়ী পেছনে যতো এগুচ্ছে স্নেহার হার্টবিট আরো দ্রুত দৌড়াচ্ছে,

গাছের দিক এসে গাড়ী থেমে গেলো…

স্নেহা চোখ বন্ধ করে বুক চেপে ধরে… আর মনে মনে ভাবছে কোনো রাহুল ওকে দেখে ফেলেনিতো!

একটু পর কানে আওয়াজ আসলো… এবং সাথে সাথে চোখ খুলে খেয়াল করলো…

চলবে……

Love At 1St Sight Season 3 Part – 19

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 19

writer-Jubaida Sobti

গান শেষ করতেই চোখ থেকে ঝরঝর করে পানি ছুটছে স্নেহার….ফুফিয়ে কেঁদে গিটারটা হাত থেকে নামিয়ে বুকে জড়িয়ে নিলো….

মার্জান, শায়লা, জারিফা স্নেহার কান্না দেখে তিনজনই ভেতরে এগিয়ে আসে…

মার্জান : [ স্নেহার কাধে হাত রেখে ] যখন দূরে থাকতে পারবিনা তাহলে ফিরিয়ে দিলি কেনো?…

স্নেহা : [ ফুফিয়ে কেঁদে উঠে…] ও চলে গেছে!

জারিফা : [ স্নেহার পাশে বসে ] এখনো সময় আছে স্নেহা! কিছুই বদলাইনি…

[ স্নেহা কেঁদেই চলছে ]

মার্জান : যাহ! স্নেহা গিয়ে বলেদে!

[ স্নেহা চোখ মুছে উঠে দাঁড়িয়ে গিটারটি চেয়ারের উপর রেখে…সোজা দৌড় দিলো… চোখ এইদিকে মুছছে তো এইদিকে আবার জলে ভিজিয়ে দিচ্ছে…দৌড়াতে দৌড়াতে চুল গুলো এলোমেমেলো হয়ে যাচ্ছে স্নেহার…এদিকওদিক তাকিয়ে ছুটছে,

স্নেহা : [ একটু হেসে মনে মনে ] “What have you done to me rahul! যখনি তোমার কাছে আসি “I always try to go far away from you…” but [ চোখ মুছে ] যখনি তোমার থেকে দূরে যায় ! I always feel to come near you! [ কেঁদে উঠে ] now! I don’t need anything else rahul! I don’t need anything!

_________________________________

এইদিকে,

রাহুল গাড়ীতে উঠে বসলো, ড্রাইভিং সি্টে বসেই ভাবছে স্নেহার সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো কি অদ্ভুত ছিলো এই কটাদিন!…

মনটা ছটফট করছে স্নেহার কাছে ছুটে যাবে বলে তারউপর আজ স্নেহার গান শুনেতো আবার নতুন করে প্রেমে পড়ে গেলো তার,
ইচ্ছে হচ্ছে দৌড়ে গিয়ে ঝড়িয়ে ধরবে একটু ,..কিন্তু তা কিভাবে সম্ভব সে তো স্নেহাকে কথা দিয়েছে..একবার reason বললে এরপর আর তার চেহেরা ও দেখাবে না স্নেহাকে!

রাহুল : [ একটু হেসে মনে মনে ] স্নেহা তুমি আমার পাশে থাকো অথবা দূরে, these distance! can never weaken our relationship! because, we could hear each other, feel each other, can even talk with each other, [ বলেই চোখটা বন্ধ করে একটা জোড়ে শাস নিলো ]
_________________________________

স্নেহা রাহুলকে খুঁজতে খুঁজতে দৌড়ে ভার্সেটি বারান্দা পেড়িয়ে শিরি দিয়ে নামতেই যাচ্ছিলো হঠাৎ, ব্যালেন্স হারিয়ে..পড়েই যেতে নিলো.. কিন্তু পড়লো না, নিমিষেই কেউ তাকে ধরে আটকিয়ে ফেলেছে,..

স্নেহা এক্সাইটেড হয়ে রাহুল বলে তাড়াতাড়ি ফিরে তাকালো…

সামির : হেইই স্নেহা! কেয়ারফুল! এতো তাড়াহুড়ো করে কোথায় যাচ্ছো…

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] আপনি?..

সামির : ইয়াহ ইটস্ মি! [ অবাক হয়ে ] আরে! What happen স্নেহা?..তোমার চোখে পানি কেনো?…

স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ মুছে সামির থেকে দূরে সরে দাঁড়ালো,

সামির : ইউ ওকে স্নেহা?…

স্নেহা : কিছুনা…কিক..কিছুনা…[ বলেই তাড়াহুড়ো করে দৌড় দিয়ে নেমে চলে গেলো ]

সামির : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা! আরে কি হয়েছে সেটা তো বলো?…

[ স্নেহা কেঁদে চোখ মুছতে মুছতে দৌড়ে রাহুলের ক্লাসের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো…ক্লাস চলছে স্নেহা জানালা দিয়ে এদিকওদিক তাকিয়ে খুঁজছে রাহুলকে…রাহুল ক্লাসে নেই দেখে…স্নেহা মন খারাপ করে চলে যাচ্ছিলো..]

হঠাৎ পেছন থেকে,

আসিফ : [ ক্লাস থেকে বেড়িয়ে এসে ] স্নেহা!

স্নেহা : [ তাড়াতাড়ি পেছন ফিরে আসিফের দিক এগিয়ে এসে ] আ..আপনি..রাহুলকে…

আসিফ : রাহুল কিছুক্ষণ আগেই বেড়িয়েছে….

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] চলে গেছে?..[ বলেই পেছাতে লাগলো ]

আসিফ : স্নেহা!

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে দৌড়ে পার্কিং এর দিক গেলো এবং সাথে সাথেই চোখে পড়লো… রাহুলের গাড়ি বেড়িয়ে যাচ্ছে গেইট দিয়ে ]

স্নেহা : [ চিৎকার করে ] রাহুল!…

– রাহুল ওয়েট!

[ বেড়িয়ে গেলো রাহুলের গাড়ী… স্নেহা চিৎকার করে করে দৌড়ে গিয়ে ও নাগাল পেলো না রাহুলকে…]

কান্নায় ভেঙে পড়ে স্নেহা!
হাটু ভেংগে মাটিতে বসে পড়লো…ফুফিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে চলছে,

হঠাৎ,আশেপাশের কয়েকজন তাকিয়ে আছে…দেখে স্নেহা চোখ মুছে…ধীরেধীরে উঠে দাঁড়ালো, সামনের দিক পা বাড়িয়ে সে ও বেড়িয়ে পড়ে ভার্সেটি থেকে,
_________________________________

এইদিকে,

জারিফা : কি করছেনটা কি হাত ছাড়েন প্লিজ!

রিদোয়ান : [ একটু হেসে ] ছেড়ে দেবো! আগে প্রমিস্ করো…আসবা কি আসবা না…

জারিফা : আপনি পাগল হয়েছেন?..প্রমিস্ কেনো করবো?…প্লিজ ছাড়ুন আমার স্নেহাকে খুঁজতে হবে!

রিদোয়ান : Don’t worry জারিফা! স্নেহা! রাহুলের সাথেই হবে! ওদের কিছুক্ষণ Time spend করতে দাও… [ জারিফাকে কাছে টেনে নিয়ে ] And now তুমি আমার question এর Answer দাও!
_________________________________

এইদিকে, নিচ তলায়, মার্জান স্নেহাকে খুঁজতে এসে…হঠাৎ আসিফকে দেখে দৌড়ে এগিয়ে যায়,

মার্জান : শুনেন শুনেন! আপনি স্নেহা আর রাহুলকে কোথাও দেখেছেন?…

আসিফ : [ মার্জানকে দেখে অবাক হয়ে ] হ্যা! দেখেছি!

মার্জান : কোথায়?..কোথায় গিয়েছে ওরা?…

আসিফ : তোমাকে কেনো বলবো?..

মার্জান : [ রাগান্বিত ভাবে ] আমি কি আপনার সাথে মজা করছি?…

আসিফ : Don’t know!

মার্জান : [ মুখের সামনে আঙুল তুলে ] Listen! I am serious! [ চেঁচিয়ে ] not kidding!

[ আসিফ মার্জানের একটু কাছে এগিয়ে এসে তার আঙুল দিয়ে মার্জানের আংগুলটি মুখের সামনে থেকে নামিয়ে দেই মার্জান পিছিয়ে যায় ]

আসিফ : ঠিকাছে বলছি এক শর্তে!

মার্জান : শর্তে?.. কিক কি শর্তে?…

আসিফ : ঐদিন ধাক্ষা লেগেছিলো…তুমি আমাকে সরি বলোনি…তাই আজ বলবে?..

মার্জান : [ রেগে চেঁচিয়ে ] What?…are you mad?..দেখেন…এমনিতে অনেক টেনশনে আছি! So.. কথা না বাড়িয়ে সোজাসোজি বলুন ওরা কোথায়?…

আসিফ : Excuse me! আমিতো কথা বাড়াচ্ছিনা…সরি বলো! আমিও বলছি!

[ মার্জান রেগে আসিফের গলার সামনে হাত দুটো নিয়ে মুচড়া মুচড়ি করছে…যেন পারছে না তাকে এক্ষুনি গলা চেপে মেরে ফেলতে…]

আসিফ : [ হেসে হেসে ] আরে বাপরে এভাবে তো কাপড় মোচড়াতে দেখেছি! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো ]

মার্জান : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে চোখ বন্ধ করে চেঁচিয়ে বলে উঠে ] ওকে! সরি!

আসিফ : [ থেমে গিয়ে পেছনে ফিরে এসে মার্জানের সামনে এসে দাঁড়ায় ] কিছু বলেছো?..

মার্জান : [ রাগান্বিতভাবে দাত কিলিয়ে ] I say sorry!

আসিফ : [ মুচকি হেসে ] হুম এখন শুনলাম!

মার্জান : চুপচাপ স্নেহা আর রাহুল কোথায় বলে আমার চোখের সামনে থেকে দাফা হয়ে যান!

আসিফ : [ কনফিউজড হয়ে ] ইয়াহ! আমি..রাহুলকে এদিকদিয়ে হেটে বেড়িয়ে যেতে দেখেছি….উমম [ চিন্তা করতে করতে ] স্নেহা! রাইট?..ওহ হ্যা স্নেহা ও এদিক দিয়ে কোথাও গিয়েছে হবে…

আচ্ছা! আমার লেইট হচ্ছে ওকে বাই হুম! [ বলেই চলে গেছে, মার্জান রাগান্বিত চোখে হা করেই চেয়ে আছে আসিফের চলে যাওয়া যেন তাকে চোখ দিয়েই গিলে খেয়ে ফেলবে! ]

হঠাৎ,

শায়লা : [ দৌড়ে এসে ] আরে মার্জান পেয়েছিস কাউকে?…

মার্জান : [ রাগান্বিত ভাবে ] এই Idiot নিজেকে নিজে কি ভাবে বলতো?…

শায়লা : [ কনফিউজড হয়ে ] Idiot কোন idiot?…

মার্জান : [ কাদো কন্ঠে ] ও আমাকে বোকা বানিয়ে সরি বলিয়ে গেছে…

শায়লা : you mean! ঐ ছেলেটা?..

মার্জান : [ রাগান্বিতভাবে নাকফুলিয়ে হাটতে হাটতে ] ওকে তো আমি এমন শাস্তি দিবো…আর কোনো শাস্তি পাওয়ার আগেই যেনো আমার শাস্তিটাই ওর মনে পড়ে! ইডিয়ট একটা! ইচ্ছে করছে…

শায়লা : ওকে রিলেক্স মার্জান!সামান্য সরিই তো!

মার্জান : সামান্য মানে?…[ রেগে ] তুত…তুই চুপ করে থাক আমার মাথা এমনিতে খারাপ হয়ে আছে!

শায়লা : [ একটু হেসে ] আচ্ছা বাবা! এইবার বল স্নেহার খবর পেয়েছিস?..

মার্জান : আরে ওর খবর নিতে গিয়েই তো শয়তানটা আমাকে বোকা বানিয়ে চলে গিয়েছে!

শায়লা : [ অবাক হয়ে ] আচ্ছা!
_________________________________

ভার্সেটি ছুটি, সবাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছে,

মার্জান,শায়লা,জারিফা, তিনজনই গার্ডেনের গাছতলায় বসে আছে,

জারিফা : রাহুল ও ভার্সেটি নেই! নিশ্চয় স্নেহা রাহুলের সাথেই কোথাও বেড়িয়েছে I am sure!

শায়লা : আরে! কিন্তু রাহুল আর স্নেহা তো.. I mean ওদের মাঝে যে প্রবলেমটা হয়েছে ওটা তো Solve হয়নি! ওরা দুজন একসাথে কি করে যাবে?…

জারিফা : আরে স্নেহা হল থেকে বেড়িয়েছিলো রাহুলের কাছেই যাবে বলে, [ চোখ মেরে ] So I think এতোক্ষণে ওদের প্রবলেম Solve হয়ে রোমেন্স সহ শুরু হয়ে গিয়েছে নিশ্চয়!

মার্জান : কিন্তু স্নেহা ফোন কেনো সুইচ অফ করে দিয়েছে?…

জারিফা : আরে রাহুল ও তো সুইচ অফ করে দিয়েছে.. তারমানে হচ্ছে ওরা দুজন চাচ্ছে না..যে এই টাইমে ওদের কেউ ডিস্টার্ব করুক!

মার্জান : এক সেকেন্ড! তুই কি করে জানলি যে রাহুল ও সুইচ অফ করে দিয়েছে?..

জারিফা : [ ঢোক গিলে ] আব..আ..মানে….

মার্জান : [ জারিফাকে চিমটি দিয়ে ] কি আব আব করছিস?..

জারিফা : আআও!

মার্জান : আরে বলনা কি করে জানলি!

জারিফা : ও…ওর ফ্রেন্ড রিদ..রিদোয়ান ফোন করেছিলো.. আমার সামনে তখন দেখেছি! [ বলেই অন্যপাশ ফিরে যায় ]

শায়লা : [ জারিফাকে একটু ধাক্ষিয়ে চোখ মেরে ] ওহো!..ওর ফ্রেন্ড আর তোর কি?…

জারিফা : সর তো! আমার কি হতে যাবে কেনো…আমি তো স্নেহাকে খুঁজতে গিয়েছিলাম হঠাৎ!

মার্জান : জারিফা! মাই ডিয়ার!…আমরা বাচ্চা না ওকে!

জারিফা : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] হ্যা! ঠিকাছে তোরা বাচ্চা না তোরা আমার দাদী আম্মা! এবার চল বাসায়…

শায়লা : কিন্তু স্নেহা!

জারিফা : আরে বললাম না স্নেহা..রাহুলের সাথেই হবে…আর ও ভার্সেটি ছুটির টাইমিং তো জানে…আসলে বাসায় ওই আসবে!

মার্জান : [ উঠে দাঁড়িয়ে ] ওকে চল তাহলে!
_________________________________

সন্ধ্যা নেমে এলো… স্নেহা ব্রীজের ধারে বসে আছে…সূর্য ডুবে যাচ্ছে…নদীর পানি বয়ে…চলছে আর স্নেহা এক ধ্যানে চেয়ে আছে…চোখ থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে…

ভেবে যাচ্ছে রাহুলের সাথে কাটানো মুহূর্ত গুলো!
_________________________________

এইদিকে,

মার্জান : সন্ধ্যা পেড়িয়ে যাচ্ছে…এখনো বাসায় আসেনি মেয়েটা! একবার মোবাইল অন করে অন্তত একটা..কলতো দিতে পারে তাইনা?..

জারিফা : [ মুখে হাত দিয়ে ব্লাশিং হয়ে ] উফফ! স্নেহা রাহুলকে আই লাভ ইউ টু! কিভাবে বলেছে যদি একটু দেখতে পারতাম না!

মার্জান : [ জারিফার মাথায় বারি দিয়ে ] তুই আছিস তোর বেকার চিন্তা নিয়ে!

শায়লা : [ পাশের রুম থেকে দৌড়ে এগিয়ে এসে ] গাইস্ আমার আর্জেন্ট বেরুতে হবে…[ বলেই আলমারি খুলে তার কাপড়চোপড় গোছাতে লাগলো ]

মার্জান, আর জারিফা অবাক হয়ে খাট থেকে নেমে দাড়ায়!

জারিফা : কোথায় যাচ্ছিস?..

মার্জান : আর্জেন্ট বেরুতে হবে মানে?..

শায়লা : বাবার অবস্থা খুব সিরিয়াস হসপিটাল এডমিট করেছে! তাই!

মার্জান : ওহ গড! এগেইন!

জারিফা : কিন্তু আংকেল তো সুস্থই ছিলো দু-দিন আগে তোর সাথে ভালো ভালোই কথা বলেছে..

শায়লা : Don’t know হঠাৎ করেই!

মার্জান : কিন্তু তুই একা যেতে পারবি?..আমরা কেউ যায় তোর সাথে…

শায়লা : Don’t worry আমি যেতে পারবো! তোরা এইখানেই থাক…স্নেহা যে কোনো মুহূর্তেই আসতে পারে…ও এসে কাউকে না দেখলে তখন টেনশনে পড়ে যাবে!

জারিফা : [ শায়লাকে ঝড়িয়ে কাদো কাদো ভাবে ] মেরি জান! তাড়াতাড়ি চলে আসিস প্লিজ! গতবার গিয়েছিলি..১মাসের আগে ফিরিসনি…

মার্জান : [ ও ঝড়িয়ে তাদের সাথে জয়েন করে ] ইয়েস্ মাই ডিয়ার! আর আমাদের জানাস খবরাখবর!

শায়লা : [ একটু হেসে ] ওকে ওকে!

জারিফা : বাই! সাবধানে যাস!

মার্জান : পৌছে ফোন দিস কিন্তু!

শায়লা : আচ্ছা ঠিকাছে! [ বলেই ব্যাগ গুছিয়ে সব ঠিকটাক করে দরজা বেধে চলে গেলো ]
_________________________________

মার্জান : [ শায়লাকে বিদায় দিয়ে রুমে এসে মোবাইল হাতে নিয়ে খাটে বসলো ] ইয়ার! জারিফা…রাত হয়ে গেছে….এখনো স্নেহার কোনো খবর পাইনি! আমার খুব টেনশন হচ্ছে!

জারিফা : আরে তুই! উফফ আবার টেনশন করছিস কেনো?..চলে আসবে ও…[ চোখ মেরে ] এখন হয়তো রাহুলের সাথে বিজি আছে… উম উম!

[ মার্জান আর কোনো জবাব না দিয়ে চুপচাপ বসে রইলো, ]

কিছুক্ষণ পর হঠাৎ,দরজায় বেল বেজে উঠলো,

জারিফা : এই নে! বেল বাজছে..স্নেহাই হবে! [ বলতেই দুজন একসাথে এগিয়ে গিয়ে দরজা খুললো ]

মার্জান : স্নেহা! [ বলেই এক্সাইটেড হয়ে ঝড়িয়ে ধরে ] ওহ গড! কি চিন্তা হচ্ছিলো তোর জন্য!

জারিফা : আরে আগে ওকে ভেতরে তো আসতে দে!

মার্জান : ওহ হ্যা! হ্যা! [ বলেই স্নেহার হাত ধরে ভেতরে ঢুকালো, ভেতরে ঢুকতেই স্নেহার কাধ থেকে ব্যাগটা ছুটে মাটিতে পড়ে গেলো ]

হঠাৎ, জারিফা আর মার্জান দুজনই একসাথে খেয়াল করলো,

স্নেহার নাক, চোখ, মুখ সবই লাল হয়ে আছে…তাদের সামনে যেনো এক সাদা মূর্তি দাড় করিয়ে রেখেছে!

মার্জান : [ শকড হয়ে ] স্নেহা! কি হয়েছে?…

জারিফা : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] You ok স্নেহা?…

স্নেহা চমকে উঠে তাদের দুজনের দিক একবার একবার তাকিয়ে কোনো জবাব না দিয়ে ভেতরের রুমে গিয়ে খাটে বসে পড়ে….
মার্জান আর জারিফা ও অবাক হয়ে পেছন পেছন এগিয়ে গিয়ে স্নেহার পাশে এসে বসে,

মার্জান : স্নেহা! দেখা হয়েছে রাহুলের সাথে?..

জারিফা : স্নেহা! কোথায় ছিলি এতোক্ষণ ?..বলেছিলি রাহুলকে?…

[ স্নেহা মূর্তির মতো হয়ে বসে আছে চোখে পানি এসে জমে গেছে পলক ফেলতেই গড়িয়ে পড়বে পানি! ]

মার্জান : আরে স্নেহা! কি হয়েছে কিছুতো বল?..এভাবে মূর্তির মতো হয়ে আছিস কেনো?…

স্নেহা : ও..চলে গেছে…মার্জান! [ বলেই কেঁদে উঠে ]

মার্জান : কে চলে গেছে? রাহুল?..

[ স্নেহা মাথা নাড়ালো ]

জারিফা : তার মানে রাহুলের সাথে তোর কথা হয়নি?..

[ স্নেহা মুখ বুজে কাঁদতে কাঁদতে মাথা নাড়ালো! ]

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] তাহলে এতোক্ষণ কোথায় ছিলি?..

স্নেহা : দূরে কোথাও…যেখানে কেউ ছিলো না… [ বলেই চোখ মুছে ধীরেধীরে উঠে দাঁড়িয়ে বারান্দার দিক চলে গেলো ]

জারিফা ও উঠে এগিয়ে যেতে চাইলে,

মার্জান : [ জারিফাকে হাত ধরে আটফিয়ে ফেলে ] থাক যাসনে! ওকে কিছুক্ষণ একা থাকতে দে!

স্নেহা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশের দিক তাকিয়ে আছে… কিছুই দেখা যাচ্ছে না…ঘুটঘুটে অন্ধকার আর চারদিক কুয়াশায় ভর্তি…রাহুলের কথা মনে পড়তেই চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে….
_________________________________

এইদিকে..রাহুল রুফ-টপের একটি চেয়ারে তার দাদীর কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে..দাদী মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে….

দাদী : জীবনে অনেক বাধা আসবে রাহুল! সব কিছু সাহসের সাথে লড়ে যেতে হবে! ভেংগে পড়লে সব শেষ!
আর তুই তো আমার স্ট্রং বয়!

রাহুল : [ কাদো কন্ঠে ] দাদী! আমিতো স্ট্রং বয়! কখনো ভেংগে পড়িনি! তাহলে স্নেহার সময় কেনো এমন হচ্ছে?…ওর থেকে দূর হয়ে এমন লাগছে যেন পুরো পৃথিবীটাই থেমে গেছে…সব অগোছালো লাগছে…এমন কেনো হচ্ছে?..

দাদী : [ একটু হেসে ] কারণ তুই স্নেহাকে মন থেকে ভালোবাসিস….
আর যাকে একবার মন থেকে ভালোবাসা হয় তাকে ভুলা সহজ না…

রাহুল : [ ফুফিয়ে কেঁদে ] দাদী! I can’t live without sneha!

দাদী : সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো হারে না রাহুল! স্নেহাও যদি তোকে ভালোবাসে তাহলে সে অবশ্যই তোর কাছে আসবে!….

যেমন তোর বাবা-মা কে দেখ! ওদের দেখে মনে হয় ওরা একজন আরেকজনকে ভালোবাসে? কতোবারই তো দুজনের কাছে ডিভোর্স পেপার পাঠানো হয়েছে…তোর মা বলে ওকে আগে সাইন করে দিতে বলো..আবার তোর বাবা বলে, না ওকে আগে সাইন করে দিতে বলো! [ একটু হেসে, ] এটাই হচ্ছে… ভালোবাসা!

স্নেহা অনেকটাই সরল! একদম তোর মায়ের মতো! ওকে নেহা যা বলেছে..তা বুঝে নিয়েছে..যদি ওর ভালোবাসা ও সত্যি হয়! তাহলে ও নেহাকে বিশাস করবে না…ওর ভালোবাসা কি বলে সেটাই বিশাস করবে!

[ রাহুলকে নাড়িয়ে দিয়ে ] হয়েছে এবার ভেতরে আয়…খাবার খেতে!

রাহুল : [ কাদো কন্ঠে ] আমার খিধে নেই দাদী! স্নেহা ও হয়তো কিছু খায়নি এতোক্ষণে!

দাদী : না খেয়ে থাকলে সব সমাধান হবে না রাহুল!…এতোক্ষণ কি বুঝিয়েছি?..হুম?…

রাহুল : [ মাথা তুলে উঠে বসে ] সত্যি দাদী! একদমি খিধে নেই! trust me!

দাদী : সব বুঝি আমি! খাবার রুমের টেবিলে রেখে যাবো… যখনি খিধে লাগবে খেয়েনিস! [ বলেই রাহুলের মাথা কাছে টেনে কপালে একটি চুমু খেলো ] গুড নাইট!

রাহুল : মাথা নাড়িয়ে! গুড নাইট [ দাদী চলে গেলো ]

রাহুল চেয়ারে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়ে,
আকাশের দিক চেয়ে আছে…আর মনে মনে ভাবছে…

জীবনটা কি অদ্ভুত যাঁদেরই আপন করে নিতে চাই! তারাই সবসময় তাকে একা করে দিয়ে চলে যায়,

একা তো আগেও ছিলাম…জীবনটা..একাত্তিতে এই রাতের আকাশের মতোই অন্ধকার ছিলো! হঠাৎ.. করেই এই অন্ধকার রাতের আকাশের বুকে..স্নেহা চাঁদনির আলোর মতো হয়ে এসে উকি দেই…তখন মুহূর্তটা এমন মনে হয়েছিলো…যেন চারদিক শুধু আলো আর আলো…

আর এখন স্নেহা চলে গেছে…চারদিক শুধু অন্ধকার আর অন্ধকারই মনে হচ্ছে…. [ একটু হেসে উঠে…বেয়ারের বোতোলটা হাতে এগিয়ে নিলো আর বলতে লাগলো ]

জীবনটা আসলেই বড় অদ্ভুত!

চলবে…

Love At 1St Sight Season 3 Part : 18

0

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part : 18

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আপনি?..[ With Shocking expression ] আর এইভাবে ধাক্ষা দিয়ে হাটছেন কেনো?…

রাহুল : You know sneha happiness! [ with tedi smile ?]

স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে ক্লাসের দিক জোড়ে জোড়ে হাটা শুরু করে দিলো…. রাহুল ও স্নেহার পিছু পিছু…

তা দেখে স্নেহার ফ্রেন্ডসরা হাসতে থাকে…তারাও পেছন পেছনই আসছিলো!

স্নেহা : [ হেটে হেটে ] আজিব আপনি আমার পেছন পেছন কেনো আসছেন?

রাহুল : ♪♪ জায়েগি্ তু যা্হা♪♪ ♪♪ আওংগা মে্ ওয়াহা♪♪

♪♪ মেরি্ বানে্গি তু ♪♪
♪♪ আনা তুজে্ ইয়া্হা ♪♪

তু~~কারে দি্ল বেকা্রার ♪♪

স্নেহা : [ চোখ রাংগিয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আরে পাগল নাকি?..এতো জোড়ে জোড়ে গান করছেন কেনো?..

রাহুল : আরে! গানটা ভালো হয়নি?..হেই গার্লস্ তোমরা বলোতো গানটা ভালো হয়নি?

মার্জান : সুপার! ?

জারিফা : সুপার সে্ উপার!

শায়লা : ফার্ষ্ট ক্লাস!

রাহুল : দেখেছো রিভিউ কেমন দিচ্ছে [ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে চোখ থেকে সানগ্লাসটা খুলে শার্টে লাগিয়ে নিলো, ]

স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে হাটতেই আছে,

শিরি দিয়ে দু-তলায় উঠে ক্লাসের দিক মোড়তেই হঠাৎ স্নেহা থেমে যায়,

রাহুল তা খেয়াল করে সামনের দিক তাকাতেই দেখে নেহা আসছে…,

রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়ে তার হাতটি শক্ত করে ধরলো!…স্নেহা বারবার হাত ছুটানোর জন্য ব্যস্ত!

মার্জান দূর থেকে নেহার দিক তাকিয়ে চোখ টিপ মারলো,নেহা নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিক!

স্নেহা : হাত ছাড়ুন প্লিজ! রাহুল…

রাহুল : Shut-up! [ বলেই রাহুল স্নেহাকে নিয়ে হাটা শুরু করলো ]

স্নেহা : কেনো এমন করছেন রাহুল আপনি…বললাম না হাত ছাড়তে!

রাহুল : what স্নেহা! এমন বিহেভ করছো কেনো সবাই তাকিয়ে আছে!

স্নেহা : ব্যাস! আপনি আমার হাত ছাড়ুন! [ বলেই স্নেহা রাহুল থেকে তার হাত ছুটিয়ে…দৌড়ে ক্লাসের দিক চলে যাচ্ছিলো ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা! ওয়েট…

[ স্নেহা দৌড়ে চলে যাচ্ছে ]

রাহুল : [ দু-কদম এগিয়ে গিয়ে আবার অর্ধেকে থেমে যায় এবং চেঁচিয়ে বলে উঠে] স্নেহা আই লাভ ইউ!

[ পা থমকে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো স্নেহা ]

চোখ বড় করে…শকড হয়ে তাকিয়ে আছে নেহা রাহুলের দিক,

আশেপাশের সবাই ও অবাক হয়ে চেয়ে আছে…

[ স্নেহা শকড হয়ে পেছন ফিরে তাকালো চোখের পানি টলমল করছে…স্নেহার!]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] আই লাভ ইউ স্নেহা! আই ওয়ান্ট টু এভ্রি মোমেন্ট অফ মাই লাইফ উইথ ইউ!
_________________________________

জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে মার্জানের কানে ] ইয়ার! আই কান্ট বিলিভ দিস্! সবার সামনে আই লাভ ইউ স্নেহা! ওয়াও!

মার্জান : ওহ নো নো! স্নেহা…

জারিফা : [ অবাক হয়ে ] কি হলো [ বলেই সামনের দিক তাকাতেই দেখে.. স্নেহা তার পা পেছনে বাড়াচ্ছে ] আরে আরে স্নেহা! প্লিজ নো!

হঠাৎ করেই স্নেহা দৌড় দিয়ে…চলে যায়,

সবাই নিরাশ হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে আছে,

নেহা : [ রাহুলের কাছে এগিয়ে এসে ] সো্ সেড্ রাহুল! আমি তো বিলিভ করতেই পারছিনা! তুই কখনো ভেবেছিলি তুকে কেউ রিজেক্ট করে চলে যাবে?…ওহ আই হেভ ওয়ান আইডিয়া রাহুল! এইখানে আরো অনেকেই আছে যারা তোর জন্য ফিদা, তাদের থেকেই কাউকে চুজ করেনে বেটার হবে!

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে রাগান্বিত ভাবে ] Listen! [ বলতেই আসিফ এসে রাহুলকে টেনে সরিয়ে ফেলে ]

আসিফ : চল রাহুল!

রাহুল : আরে তুই ছাড়! ওকে আমি…

আসিফ : স্টপ রাহুল! সবাই দেখছে এখন না! ওকে! [ বলেই রাহুলকে টেনে নিয়ে চলে গেলো ]

মার্জান, জারিফা, শায়লা মুড অফ করে দাঁড়িয়ে চেয়ে আছে,
_________________________________

শায়লা : কি ভেবেছি আর কি হয়েগেলো!

জারিফা : এই স্নেহাটাও না…কি হতো আই লাভ ইউ টু বললে?…

মার্জান : [ গম্ভীর হয়ে ] এতোটাও সহজ না, জারিফা যেটা আমরা ভাবছি!

শায়লা : মানে?..

মার্জান : আমার মনে হচ্ছে কেনো যেনো! স্নেহা আমাদের কাছ থেকে কিছু তো লুকাচ্ছে! I mean নেহার ওসব সামান্য কথায় রাহুলকে রিজেক্ট করা লজিক ছাড়া সাবজেক্ট এর মতো!

জারিফা : আচ্ছা? তাহলে কি হতে পারে?..

_________________________________

আসিফ : [ রাহুলকে একটি ক্লাসে এনে ] Don’t do this রাহুল…রাগ কন্ট্রোল কর!…এখন রাগ দেখালে চলবে না…তোর স্ট্রং হতে হবে…

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] আই কান্ট কন্ট্রোল!

আসিফ : দেখ রাহুল! এমন ওতো না যে…তুই স্নেহাকে ভালোবাসিস তাই বলে স্নেহাকে ও তোকে ভালোবাসতে হবে! হয়তো তুই ওর জন্য যে ফিলিংসটা রাখিস ও সেটা রাখেনা!

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] আচ্ছা?..তাহলে আমার সামনের ঐ লজ্জিত হাসি, ওকে ডান্স পার্টনার না করাতে জ্যালাস হওয়া, আমার গান শুনে ব্লাশিং হয়ে চলে যাওয়া… আর মেইনলি… যখন আমি ওকে আই লাভ ইউ বললাম.. তখন ওর চোখ বেয়ে পড়া পানি গুলো ?..বল?..ঐগুলো কি আমাকে রিজেক্ট করার খুশিতে?..নাকি আমি প্রপোজ করেছি বলে?..

আসিফ : ওকে রিলেক্স রাহুল!

রাহুল : [ মাথায় হাত দিয়ে ] স্নেহা এসব কেনো

[ বলেই রাগান্বিত ভাবে একটা বেঞ্চ লাত্তি দিয়ে সরিয়ে ক্লাস থেকে বেড়িয়ে যায়,]

_________________________________

এইদিকে,

স্নেহা লাইব্রেরী গিয়ে সেল্ফের ধারে দাঁড়িয়ে চোখের জলে ভাসিয়ে দিচ্ছে,

মনে পড়ছে তার,

রাহুল এসে লাইব্রেরীতে এই জায়গাটিতে দাড়িয়ে তার চশমা খুলে নিয়ে গিয়েছিল! ভাবতে ভাবতেই কান্নায় ভেঙে পড়ছে স্নেহা,

হঠাৎ, বুকটা ধুপ করে উঠলো!

লাইব্রেরীর দরজার দিক তাকাতেই দেখে..রাহুলের এন্ট্রি…অনেক মুড নিয়ে রেগে স্নেহার দিক এগিয়ে আসছে….স্নেহা ভয়ে গুটিমুটি হয়ে একধারে দাড়িয়ে আছে…..

রাহুল এসে স্নেহার হাত ধরে নিয়ে টেনে বেড়িয়ে যাচ্ছে…

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরে? কোথায় নিচ্ছেন?..ছাড়ুন প্লিজ সবাই দেখছে!

রাহুল কোনো জবাব না দিয়ে স্নেহাকে টেনে নিয়ে বেড়িয়ে যায়,

[ আশেপাশের সবাই হা করে চেয়ে থাকে তাদের দিক….]

রাহুল স্নেহাকে হল রুমে নিয়ে গিয়ে টেনে ছুড়ে মারে,

স্নেহা তার জলভরা অবাকচোখে চেয়ে আছে রাহুলকে! আর রাহুল তার লাল রাগান্বিত চোখে…স্নেহার দিক তাকিয়ে আছে…

চুপ করে রইলো দু-জন কেউই কিছু বলছে না!…স্নেহা মাথা নিচু করে বেড়িয়ে যাচ্ছিলো, রাহুল স্নেহার হাত ধরে ফেলে,

স্নেহা : আমার মনে হয় এখন এইখান থেকে যাওয়া দরকার,

রাহুল : [ স্নেহাকে টেনে তার সামনে এনে ] No way! এইখান থেকে ততোক্ষণ যাবো না যতোক্ষণ আমি আমার প্রশ্নের জবাব পাচ্ছি না, [ চেঁচিয়ে ] ততোক্ষণ যাবো না যতোক্ষণ আমি জানছিনা যে কি এমন কারণ যেটার কারণে তুমি আমার ভালোবাসা আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছো! [ স্নেহার কাছে এগিয়ে এসে ] ততোক্ষণ যাবো না স্নেহা যতোক্ষণ তুমি আমাকে সবকিছুর এক্সপ্লেইন করবে না….

[ স্নেহা চুপ হয়ে নিচের দিক তাকিয়ে থাকে…স্নেহার চুপ হয়ে থাকা দেখে রাহুলের রাগ আরো বাড়তে লাগলো ]

রাহুল : [ হাত দিয়ে স্নেহার মুখ তুলে ] স্নেহা! আমার কি জানার অধিকার নেই?…
[ স্নেহা চুপ করে কেঁদেই চলছে ]

[ রাহুল স্নেহার কোমোড়ে হাত দিয়ে তাকে কাছে টেনে নেই, সামনে চলে আসা চুল গুলো কানের কাছে গুজে দিয়ে ]

রাহুল : Talk to me sneha! [ বলতেই স্নেহা আরো ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো! ]

রাহুল স্নেহার কোমোড়ের দিক টি-শার্টটি হালকা একটু উঠিয়ে শক্ত করে..চেপে ধরলো…

স্নেহা কেপে উঠে…রাহুলের হাতের দিক জ্যাকেটটি শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে….

রাহুল : [ চোখ বন্ধ করে…স্নেহার কাধে মুখ লাগিয়ে ] কামঅন! স্নেহা Talk to me প্লিজ! একবার reason বলো..তারপর আমি আমার এই চেহেরাও তোমাকে কখনো দেখাবো না…[ রাহুলের চোখ ভিজে আসছে ] I don’t need anything else! sneha… I don’t need anything!

স্নেহা চোখ বন্ধ করে রাহুলকে ঝড়িয়ে পিটে হাত রাখলো…রাহুল স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড করে…আরো শক্ত করে…চেপে ঝড়িয়ে নেই!স্নেহার গা শিউরে উঠলে, পা ধীরে ধীরে আলগে করে দাড়ালো!

রাহুলের নিশাস স্নেহার কাধে এসে পড়ছে…রাহুল স্নেহার পিঠে স্লাইড করতে লাগলো,

হঠাৎ স্নেহা চোখ খুলে তাকালো…নেহার কথা গুলো কানে বাজতে লাগলো,
_________________________________

নেহা : তুমি জানো না রাহুল আর আমার রিলেশন ছিলো! [ চেঁচিয়ে ] Rahul loved me! sneha…

infact আমাদের মাঝে physical রিলেশন ও হয়েছিলো..[ কাদো কণ্ঠে ] ঐরাত… স্নেহা ঐরাতের কথা আমি কেমনি ভুলবো?… তুমি জানো এমন একটা রাত প্রতিটা মেয়ের মাঝে চুপকে থাকে…সারাজীবন…

কিহ স্নেহা বিলিভ হচ্ছেনা তাই তো?..তাহলে এই ছবি গুলো দেখো… এগুলো কি মিথ্যে বলছে?…

_________________________________

ভেবে উঠতেই হঠাৎ করে স্নেহা রাহুলকে ধাক্ষে সরিয়ে দিলো! চোখ বেয়ে পানি পড়ছে স্নেহার জোড়ে শাস ফেলছে,….

[ রাহুল অবাক চোখে স্নেহার দিক তাকায় ]

স্নেহা : [ কেঁদে চেঁচিয়ে ] আপনি এটা জানতে চাচ্ছেন না কেনো আমি এমন করছি?..তাহলে শুনুন মিষ্টার রাহুল…

আপনাকে কেউ ভালোবাসবে আপনি এটা ডিজার্বই করেন না…

ভালোবাসা তো আপনার জন্য খেলনার পুতুলের মতোই তাই না?..ইচ্ছে হলো তো ভালোবেসে ফেললাম আর শখ মিটে গেলো তো ছুড়ে ফেলেদিলাম ব্যাস!

রাহুল : Listen sneha…

স্নেহা : উফ! এখন প্লিজ! এটা বলিয়েননা যে আমি কি ব্যাপারে কথা বলছি আপনি কিছুই জানেন না…

রাহুল : স্নেহা! trust me I really don’t know! what do you mean!

[ স্নেহা জোড়ে একটি শাস ফেলে অন্যপাশ ফিরে যায়… রাহুল স্নেহার কাছে এগিয়ে আসতে চাইলে ]

স্নেহা : আপনার সাথে নেহার রিলেশন ছিলো?…

রাহুল দাঁড়িয়ে পড়ে,

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] কি হলো?..ছিলো না?..

রাহুল : তো এটাই ছিলো reason?..

স্নেহা : আপনিতো কখনো বলেননি?..ওহ কিভাবে বলবেন…তাই না! বললে তো অন্য মেয়েদের আপনার প্রতি ইন্ট্রেষ্ট চলে যাবে …

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে চোখ বটে অন্যপাশ ফিরে যায় ] স্নেহা! আমি এটাও বলিনি যে রিলেশন ছিলো না!

[ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক ফিরে ] নেহার সাথে আমার রিলেশন ছিলো! two months! আমি নেহাকে ভালোবাসতাম না স্নেহা! রিলেশনটা কেমন ছিলো আমি নিজেও বুঝি না…

স্নেহা : কেমন ছিলো বুঝেন না..? ওহ আমি বলছি! without love, physical relation! রাইট?…

রাহুল : [ রাগান্বিতভাবে ফুফিয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে আসে…স্নেহা ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি পিছিয়ে গিয়ে বেঞ্চের সাথে লেগে দাঁড়িয়ে যায় ] physical relation?.. are you mad?.. [ দাত কিলিয়ে ] স্নেহা নেহা আর আমার মাঝে তেমন কিছুই হয়নি! যেমনটা তুমি ভাবছো!

স্নেহা : [ চোখের পানি টলমল করছে ] আচ্ছা?..তাহলে নেহার মোবাইলের ফটো গুলো?.. ঐগুলো ও কি আমি ভাবছি?…

[ রাহুল জোড়ে একটি শাস ফেলে স্নেহা থেকে সরে দাঁড়ায় ]

স্নেহা : কি হলো জবাব নেই?…

রাহুল : আজ পর্যন্ত আমি যা করেছি..কখনো কাউকে ঐগুলোর এক্সপ্লেইন করিনি! [ চেঁচিয়ে ] ইনফেক্ট কেউ আমার এক্সপ্লেইন শোনার যোগ্য বলে আমি মনেও করতাম না!

আজ তোমাকে দিচ্ছি! [ রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে ] তাহলে শুনো স্নেহা!

আমি নেহাকে ভালোবাসতাম না…কখনো বাসিওনি আর কখনো বাসবো ও না!
[ অন্যপাশ ফিরে গিয়ে ] চুম্বকের মতোই চিপকায় থাকতো Always আমার সাথে! আমি ওর সাথে কথা বলতাম As a friend! কিন্তু ওর মনে অন্য কিছুই চলতো!

একদিন এক পার্টিতে ধুম করেই সবার সামনে প্রপোজ করে বসে…আমিও ডিরেক্ট রিপ্লাই দিলাম…but I don’t love you neha! পরদিন এসে আমার সামনে কান্নাকাটি… সে ইন্সাল্ট ফিল করেছে ব্লাহ ব্লাহ ব্লাহ! two month’s চান্স চাইলো আমার কাছ থেকে…two month’s এর মধ্যে যদি আমার ওর জন্য কোনো ফিলিংস্ আসে তাহলে..আমার Answer ইয়েস্ আর যদি না আসে…তাহলে permanently সে আমার লাইফ থেকে আউট!

নিজ ইচ্ছায় কখনো ওকে টাচ্ ও করিনি! ইনফেক্ট ওকে দেখে আমার কোনো ফিলস্ই আসতো না….

two month’s finished হওয়ার আর মাত্র তিনদিনই বাকি ছিলো!

ঐ রাতে, আমি ড্রাংক ছিলাম, বাসায় এসে শার্ট খুলে রাখতেই হঠাৎ দেখি নেহা এসেছে, she try to kissed me! কিন্তু আমি ওকে সরিয়ে খাটে শুয়ে পরি..মাথা ভার হয়ে ছিলো! ও ভেবেছে ও আমার ড্রাংকের ফাইদা উঠাবে…But no chance! আমি ওকে আমার গায়ের উপর থেকে ধাক্ষা দিয়ে সরিয়ে দেই..সেল্ফি নিতে লাগলো ও …আমার পাশে শুয়ে… আমার রাগ উঠাতে…হাত ধরে নিয়ে…ঘর থেকে বের করে দেই!

পরদিন, ভার্সেটি এলেই আমি ওকে sorry বলে two month’s এর দেওয়া কথাটি finished করে দেই! আমি বললাম Listen নেহা আমরা ফ্রেন্ডই ঠিকাছি! অন্যকিছু হওয়া আমাদের দারা পসিবল না! [ একটু হেসে উঠে ] হুহ! তারপর ও আমাকে ঐ ছবিগুলো দেখিয়ে ব্লাকমেইল করতে লাগলো…আমাদের মাঝে এই হয়েছে সেই হয়েছে…

আমি ও জবাব দিলাম…আমি ড্রাংক ছিলাম ঠিকই অতটাও সেন্সলেস্ ছিলাম না…

[ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে স্নেহার দিক তাকিয়ে ]

স্নেহা! তারপর ও যদি আমার চেয়ে তোমার নেহার কথাগুলোই বিশাস হয়! তাহলে! You can leave me! আমি একটু ও বাধা দেবো না….

[ স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে আছে… চোখে পানি এসে জমে রইলো … টুপ করেই গড়িয়ে পড়লো…পানি ]

রাহুল : [ ধীরে ধীরে স্নেহার কাছে এগিয়ে এসে স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দিয়ে ] বলেছিলাম না…একবার reason বলো এরপর থেকে আমি আমার চেহেরাই দেখাবো না … [ স্নেহার গালে স্লাইড করে ] স্নেহা তুমি বলেছিলে! রাহুল You are the biggest mistake of my life!

[ রাহুল ধীরে ধীরে পিছিয়ে গিয়ে একটু হেসে উঠে ] আর আমার লাইফের biggest mistake কি জানো?…

[ স্নেহা জলভরা চোখে তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুল : আমি তোমাকেই ভালোবেসেছি!
[ বলেই রাহুল হনহনিয়ে হলরুম থেকে বেড়িয়ে গেলো ]

স্নেহা শক্ত হয়ে মাটিতে বসে পড়লো…এমন লাগছে যেনো দুনিয়াটাই থেমে গেছে….চোখ থেকে ঝড়ঝড় করে পানি ছুটছে হাত-পা সব কাঁপতে লাগলো….

[ কানে বেজে উঠলো রাহুলের কথাটি,

– স্নেহা আমার লাইফের Biggest mistake কি জানো আমি তোমাকেই ভালোবেসছি ]

হঠাৎ, চিৎকার করে ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো…
কান্নার আওয়াজ চেপে রাখতে নিজের হাত নিজে কামড়ে ধরেছে….কি হচ্ছে তার সাথে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না..

চোখ তুলে এদিকওদিক তাকাতেই হঠাৎ, চোখে পড়লো… রাহুলের গিটারটি,

ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়িয়ে গিটারটির দিক এগিয়ে গেলো!হাতে ছুতেই চোখ বন্ধ করে ফেলে স্নেহা!

ফিল করতে লাগলো রাহুলকে,
__________________________

এইদিকে,

স্নেহার ফ্রেন্ডস রা তাকে খুঁজতে লাগলো হঠাৎ তিনতলায় উঠতেই দেখে রাহুল আসছে…চোখ-মুখ লাল হয়ে আছে রাহুলের…রাহুল হেটে চলে যাচ্ছে তারা চাইতেও রাহুলকে কিছু বললো না, বলার মতো কোনো ভাষায় নেই তাদের কাছে শুধু চেয়ে আছে…..

হল রুমের সামনে গিয়ে জারিফা ভেতরে ঢুকতে চাইলে মার্জান জারিফার হাত ধরে আটকে ফেলে…
তারা দূর থেকেই স্নেহাকে দেখে যাচ্ছে…
_________________________________

স্নেহা চোখ মুছে গিটার হাতে নিয়ে একটি চেয়ারে বসলো, সামনের স্পিকারটা সোজা করে নিলো ? হঠাৎ করেই একতার বাজিয়ে উঠলো গিটারের…

[ মার্জান, জারিফা,স্নেহা অবাক হয়ে দূর থেকে চেয়েই আছে ]

_________________________________

কানের ধারে গিটারের সাউন্ড ভেসে আসলো, রাহুল অবাক হয়ে থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে,…এখন আরো জোড়ে আসছে… সাউন্ড, বাজতেই চলছে গিটার…

________________________________

স্নেহা : ♪♪ তেরে ইশকেনে্ সা্থিয়া ? মেরা্ হালে কি্য়া কারদি্য়া♪♪ ♪♪ তেরে ইশকেনে্ সা্থিয়া ~~ মেরা্ হালে্ কিয়া্ কারদি্য়া ♪♪

[ রাহুল অবাক হয়ে ধীরে ধীরে পাশের ক্লাসে গিয়ে একটি বেঞ্চে বসে পড়লো হাত-পা কিছুই চলছে না সব থমকে গেলো স্নেহার গানের ভয়েস্ শুনে,….কিছু জুনিয়র ছেলে বসে আড্ডা দিচ্ছিলো রাহুলকে দেখে তারা বেড়িয়ে পড়ে..]

স্নেহা: ♪♪ ? নে্নোসে্ বেহে্তে্ ইশকো্কি্ ধা্রোমে্~~
হামনে্ তুঝ্কো্ দেখা চান্দে্ সি্থা্রোমে্

মে্রি হাকি্ আগ্নিমে্ পাল্ পাল্ তা্পথিহে্..
আবতো্ সা্সে্ তে্রি্ মালা ঝাপথি্ হে্

[ চোখ লাল হয়ে পানি জমে এসেছে রাহুলের ঢোক গিলে আবার কন্ট্রোল হয়ে নিলো ]

স্নেহা : ?♪♪ তে্রে লি্য়ে তে্~~রে লি্য়ে~~~

তে্রে লি্য়ে~~ ইস্ দুনি্য়াকা্ হা্র সি্থা্ম হে্ গাওয়া্রা সা্নাম ওও ও ও ..হা্র সি্থাম হে্ গাওয়া্রা সা্নাম

রাহুল : [ মনে মনে ] স্নেহা! গিটার, গান…How! [ অবাক হয়ে কান পেতে রইলো রাহুল ]

স্নেহা : ?♪♪ তে~~রে নাম হামনে্ কিয়া্হে জি্বান আপনা্ সা্রা সা্নাম ও ও জি্বান আপনা্ সা্রা সা্নাম…

পি্য়ারে্ বহো্দ~~কা্রতে্হে তু্মসে্~~ ইশকে্ হে্ তু হামা্রা সা্নাম ওও ও ও ইশকে্ হে্ তু হামা্রা সা্নাম

রাহুল : [ মনে মনে একটু হেসে ] I knew that sneha! I knew that!

চলবে….