Monday, August 4, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1963



নীলিমা – আবু ইউসুফ

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_2020
চিঠি নং 3
নীলিমা,
কি লিখব?শরতের আকাশে যেখানে মেঘের ভেলা ছুটাছুটি করার কথা, সেখানে ঘন কালো মেঘ। মনের অবস্তা কি আর ঠিক থাকে! অদৃশ্যে মনের কথাগুলো ছুরে দিচ্ছি! হয়তো তারা আপন ঠিকানাটা খুজেই পাবেনা। তবু আকাশ পানে লিখে দিচ্ছি পত্রখানা। তাতেই সুখ কোথায়!থেমে যেতে হচ্ছে বারবার। চলার পথটা যে আজ বড়ই সংকির্ন। সেখানে ঘন কোয়াশায় আচ্ছন্ন পথটার সমস্তই ফিকে। এই দেখ কি থেকে কি বলে ফেলছি। মূলকথা সবই সুতার শক্ত পেচের মত ঘুরে বেরাচ্ছে। দখলে নেওয়া কুটর থেকে বের হতেই চাচ্ছেনা। দেখ আমার সবটাই তোমার মত। তুমি যেমন নীল ছায়ায় আচ্ছন্ন,তেমনি আমার অনুভূতি গুলোও অবসন্ন,কুঠরিবদ্ধ। বলিকি তোমার নীলে আমাকেও টেনে নাও। আর লিখতে পারছিনা। কলম ধরা হাতখানা যেন খসে যাচ্ছে দেহ থেকে। এ সবই তুমি-সর্গে আরোহনের অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ। যাক এসব কথা।বলিকি তুমি ভালো থেকো।
ইতি,
“কবি”

প্রিয়তমেষু – Md Nazmul Hasan

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগীতা।
#চিঠি_০২

প্রিয়তমেষু,

অাশাকরি বেশ ভালোই অাছো। অামি শারীরিকভাবে বেশ ভালো থাকলেও মনের দিক থেকে অনেকটাই ভালো নেই। এতক্ষণে তুমি হয়তো অামার সাথে রেগে অভিমানে চুপ হয়ে অাছো। কিছুই বলতে পারছোনা।মাঝে মাঝে ভাবি এ সময়টা যদি চিঠির হতো তাহলে বেশ ভালো হতো। একটু অবসরে তোমাকে নিয়ে লিখতে বসার সময় হতো। তোমায় নিয়ে ভাবনা জগতের মধুর সময়টিতে পৌছানো যেতো। কিন্ত দেখো, যোগাযোগের এতো এতো ব্যাবস্থা থাকা সত্তেও তোমার সাথে নিয়ম করে সময় দিতে পারিনা, কথা বলতে পারিনা। তবু, অামি যেনো ঠিক নব্বইয়ের দশকে বসবাস করা কেউ। যে একটু অবসরে তোমার মতো সুদর্শন ও অনেক গুণের অধিকারী ষোড়শী তরুনীকে নিয়ে অানমনে অনেক স্বপ্ন অাঁকি। অনেক কিছুই ভাবতে থাকি। যেখানে কোন অন্ত বলে কিছু থাকেনা।তোমাকে চিঠি লিখার সময় পাই। এমন অনেক চিঠি লিখি, যেগুলো অদ্যাবধি তোমাকে দিতেও পারিনি। অাধুনিকতার যুগে অামার এ বিষয়টি হয়তো অনেকে নিছক পাগলামি মনে করতে পারে, এমনকি করেও। এমনকি তুমিও ঠিক তাই করো। অামার চিঠি তোমার কাছে নিছক পাগলামি মনে হয়। অামাকে চিঠি লিখতে বললে হাজারটা অজুহাত সামনে তুলে ধরো।

শুরুতেই বলেছি অাজ অামার মনটা বিশেষ ভালো নেই। কেমন যেনো শুণ্য শুণ্য লাগছে সবকিছু। অাজ যখন সকল কাজ শেষ করে বাসায় ফিরছিলাম, তখন খুব হতাশ হচ্ছিলাম নিজে নিজে। করোনা মহামারির কারনে অামাদের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে গেলো! পড়াশুনা থেকে যথেষ্ট ছিটকে গেলো মন। এদিকে বাবার বড়ো ছেলে হিশেবে যথেষ্ট বড়ো হয়েছি, এখনও বাবার থেকে পয়সাকড়ি নিয়ে চলতে হয়। কি করবো অাসলে? নিজের জীবনটাকে কিভাবে খুব দ্রুত একটা মোটামুটি স্থানে সচল করা যায়। গত চার বৎসর অামরা একটা প্রতিশ্রুতির মধ্যে অাবদ্ধ। অনেক কষ্ট করে তুমি কোন রকম উচ্চ মাধ্যমিক অবদি পড়তে পেরেছো। অার কতটুকুই পড়তে দিবে কে জানে! এবং ক’দিনই বা তোমার মা তোমাকে রেখে রাখবে অামার জন্য! এখনতো অষ্টম শ্রেণীর মেয়েদের ও বিয়ে হয়ে যায় শারীরিক সুন্দর অবকাঠামো গঠন হলেই।অার অামি তোমাকে চার চারটি বৎসর অপেক্ষা করিয়েছি। এখন যদি তোমাকে হারাতে হয় শুধু অামার কোন কাজ না থাকার কারনে,তাহলে কি করে অামি তা মেনে নিবো বলো! বড়ো রাস্তা পারাপার হচ্ছিলাম যখন, তখন এ কথাগুলো মনের হতাশা থেকে উত্তরণ হতে শুরু করে মনের হতাশা থেকে। তোমাকে কি করে পাবো তা নিয়ে হতাশা।এমন অবস্থায় হঠাৎ পকেটে হাত দিয়ে দেখি প্রিয় জিনিসটি নেই। কথাটি তোমাকে কি করে বলবো বুঝতে পারছিনা। তুমি শোনে কতটা কষ্ট পাবে সেটিও জানিনা।কিন্ত অামি যতবারই কথাটি ভাবছি, অামার চোখে অজান্তেই জল চলে অাসছে। এমনিতেই তোমার অামার প্রতি হাজারটা অভিযোগ। সময় দেইনা,কথা বলিনা রোজ।তার উপর এ কথা বললে তুমি অামাকে কতটা অযত্নশীল ভাববে তা অামার অজানা। অাশাকরি অামার পরবর্তী কথাগুলো শোনে অামাকে উল্টোপাল্টা কিছু ভাববেনা। গত চার বৎসরে যে বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে অামাকে ভালোবেসে এসেছো, সে বিশ্বাসটুকু অামার প্রতি এখনো রাখবে।কিছুদিন অাগে তুমি খুব যত্ন করে অামাকে একটা রুমাল বানিয়ে দিয়েছিলে।যেটি অামার অত্যন্ত পছন্দের এবং ভালোবাসার। রুমালটি এতোটা ভালো লেগেছিলো যে, এটি ব্যাবহার করার কোন ইচ্ছাই হচ্ছিলোনা। যদি নষ্ট হয়ে যায়! তাই অাজ ক’দিন যাবৎ ভাবছিলাম এটি অার ব্যাবহার করবোনা। বরং স্বযত্নে অাগলে রাখবো কোমল স্পর্শে ধুয়ে। কিন্ত দেখো! অাজ কাজের ফাঁকে হঠাৎ কোথায় পড়ে গেলো তা টেরই পেলামনা। অামার চোখ বেয়ে সাথে সাথে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিলো। তাছাড়া কিছুই চিন্তা করে বের করতে পারলামনা কোথায় পড়তে পারে, কত জায়গায় গেলাম! কোথায় খুঁজবো? রুমালটি যে অামার খুব দরকার।
তোমার দেওয়া প্রতিটা জিনিস ই অামার কাছে মূল্যাবান। কিন্ত এই রুমালটির মতো করে অন্য কিছু নিয়ে এতোটা অাবেগ,ভালোবাসা কাজ করেনি।রুমালের প্রতিটা সুতোর মাঝে তোমার যত্নেমাখা ছোঁয়া অাছে।কত সুন্দর কারুকার্য! অাহা! কে দেবে অার! কত কষ্ট করে বানিয়েছো। ঠিক এটার মতো করে কি অার হবে! হবেনা তো। কারন,সব জিনিস যে সবসময় চাইলেই করা যায়না। অামার এ খারাপ লাগা কবে পুরোপুরি নিঃশেষ হবে জানিনা। যে জিনিসটি মানুষের মনে দাগ কেটে দেয়,মানুষ সেটির কথা অাজন্ম ভুলতে পারেনা। অামিও ঠিক পারবোনা। যেমন করে তোমাকে রেখেছি একজীবনের পুরোটা জুড়ে। অামার প্রতি তুমি রাগ করোনা। অামি হেয়ালিপনা করে হারাইনি, বরং খুব যত্নে যেভাবে তোমার প্রতিটা জিনিস অাগলে রাখি, সেভাবেই রাখতে চেয়েছিলাম।পারলামনা।ক্ষমা করে দিও।

ইতিঃ-
তোমার অভ্র

সুপ্রিয় “শরতের শিশির” – মারইয়াম জামীলা (মাইশা জাফরীন)

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
[বাগধারার চিঠি] —চিঠি নং ০২
কলমে — মারইয়াম জামীলা (মাইশা জাফরীন)

সুপ্রিয় “শরতের শিশির”,
‌পর সমাচার এই যে, তোমার “অকাল কুষ্মাণ্ড” বন্ধু তোমার জীবন হতে “অগস্ত্য যাত্রার” আগে কিছু কথা বলবে “অনধিকার চর্চা” করে। আমাদের সম্পর্কটা কিন্তু আগে এমন “আদায় কাঁচকলায়” ছিল না। যেদিন থেকে “অকূল পাথারে” আমি নিমজ্জিত হলাম, “পিঠে ছুরি মেরে” প্রস্থান নিলে তুমি আমার কাছ থেকে। জানি তোমার কাছে “উড়োচিঠি” দিয়ে আমি “অরণ্যে রোদন” করছি। তবুও “উলুবনে মুক্তা ছড়িয়ে” দিয়ে আমি আমার “ব্যাঙের আধুলি” নিয়ে তোমাকে চিঠির “সাক্ষী গোপাল” বানিয়ে চলে যাব অনেক দূরে। “দুধের মাছি” উড়ে গেলে আমার কি যায় আসে বলো? কিন্তু যে “ভূতের বেগার” খেটেছি আমি, “ভিজে বেড়াল” বন্ধু তা কি করে শোধ করবে। তোমার অনুরোধে “ঢেঁকি গিলেছি” আমি বহুবার। “মন না মতি” “যক্ষের ধনের” মত আঁকড়ে ধরেছিল তোমার স্মৃতি, তার পিঠে “মিছরির ছুরি” বসাতে যখন তোমার সামান্যও “বুক কাঁপে” নি তখন “লেফাফা দুরস্ত” ছাড়া আর উপায় রইল কি আমার! তোমাকে পেয়ে “মণিকাঞ্চন যোগ” হয়েছে বলে যে “এলাহি কাণ্ড” আমি করেছি, “কড়ায় গণ্ডায়” সে মাশুল আমি গুনছি আজ। আমার “একাদশে বৃহস্পতি” এই যে আমি “বর্ণচোরার” আসল রূপটা চিনেছি। “কুলকাঠের আগুনে” জ্বলেও আজ স্বপ্নের “কেঁচে গণ্ডুস” করছি জীবনে। “গোবর গণেশ”কে গাছে তুলে মই কেড়েছিলে, মনে তুষের আগুন জ্বালিয়েছিলে, “কাছা ঢিলা” আমি তবুও আজ তোমাকে ভাবি। এর “আক্কেল সেলামি” আমায় না দিলে চলে! “কূপমণ্ডুক” মেয়েটার জীবনে যে “খন্ড প্রলয়” এসেছে তার “এসপার ওসপার” ও নিজেই করতে পারবে। “কপাল ফিরতে” হয়ত দেরী হতে পারে, কিন্তু তবুও “আকাশ কুসুম” স্বপ্ন হেমন্তে ফলবে দেখে নিও। “ছাপোষা” মানুষের জীবন নিয়ে “ছিনিমিনি খেলা” বুঝি এতই সহজ? “ঠোঁটকাটা” “আলালের ঘরের দুলাল” তুমি জেনে নিও, তোমায় যে “ঘোড়ারোগে” পেয়েছে তার ঔষধ ধরবে “তামার বিষে”। সেদিন তোমার “তালকানা” মুখ দেখে আমি হাসবো না, “দা-কুমড়া” সম্পর্কের শোধ আমি “ঝোঁপ বুঝে কোপ মেরে” তুলবো না। “ঠাট বজায় রেখে” আজও যেমন আছি, “চাঁদের হাটেও” তেমন থাকবো। কৌশলে কার্যোদ্ধার তোমার “বাঁ হাতের কাজ” হতে পারে, “ফপর দালালি” করে তুমি “পুকুরচুরি” করতে পারো, “ফোড়ন দিয়ে” “কাঁচা পয়সা” তোলার আনন্দ বোঝাতে পারো…। কিন্তু আমার তো “চোখের পর্দা” আছে। “বালির বাঁধ” দিয়ে আমি “তাসের ঘর” বানাই না। “দহরম মহরম” বন্ধুত্বে তোমায় আমি চেয়েছিলাম, কিন্তু আমার “আটকপালে”, “রাবণের চিতায়” ফেললে তুমি আমায়। “হাটে হাঁড়ি ভাঙবে” জেনেও কথার কথাটা বলি, “হাড় হাভাতে” লোকের “টনক নড়ে” তেমন লাভ না হলেও ওদের “কেতাদুরস্ত” বিবেক “ভিজে বেড়াল” নয়। আমি দোয়া করি “মগের মুল্লুকে” তুমি “ভুষন্ডির কাক” হয়ে থাকো, “মাছের মায়ের পুত্রশোকে” আমি কিছু “ডুমুরের ফুল” পেড়ে দিব তোমায়। কিন্তু জেনে রেখ, এই “জিলাপির প্যাঁচে” আর কোনো মেয়েকে আমি হোঁচট খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়তে দিব না। আমার আশায় “শত গুড়ে” বালি হোক, অন্য কারো “ঘর ভাঙতে” দেব না আমি তোমায়। “ঢাক ঢাক গুড় গুড়” করে তুমি বেশিদিন “অগাধ জলে সাঁতার” কাটতে পারবে না। আমার সাথে “অহিনকুল সম্বন্ধ” স্থাপন করে যে ভুল করেছ তুমি, “ঘাটের মড়া” হবার আগে টের পাবে তার “কত ধানে কত চাল”। “ধরাকে সরা জ্ঞান করা” তো স্বভাব তোমার, “গোড়ায় গলদ” আমারই ছিল তোমাকে বিশ্বাস করে “পঁচা শামুকে পা ফেলেছি” আমি। “ছেলের হাতের মোয়া” বলে “ছকড়া নকড়া” করবে তুমি আমার জীবন! এতই “গোবর গণেশ” ভেবেছ বুঝি আমায়? “আঙুল ফুলে কলাগাছ” হয়ে “ইতর বিশেষ” করছ ধনী গরিবের মাঝে। “আঠার মাসে” বছর পার করে ঠিকই একদিন আমাকে “আকাশে তুলবে” তুমি। “আষাঢ়ে গল্প” বলে আমি “উলুবনে মুক্তা ছড়াচ্ছি” না গো! “আদাজল খেয়ে লাগো” যতই, প্রথমবার “আক্কেল গুড়ুম” হয়েছি, মাথায় “আকাশ ভেঙে পড়েছে”, কিন্তু “এক মাঘেই শীত তাড়াবো” আমি দেখে নিও। “উড়ে এসে জুড়ে বসে” তোমার থালায় “কাঁঠালের আমসত্ত্ব” বানাতে কোন সুখে আমি লাগবো বলো? শুধু তোমার “এক ক্ষুরে মাথা মোড়ানো” স্বভাবে একটু “তেলে বেগুন ভাজবো”। “গায়ে ফুঁ দিয়ে বেড়াচ্ছো”, বেড়াও। “গোঁফ খেজুরে” হয়ে বসে থাক “আমড়া কাঠের ঢেঁকি”। এইসব “কেউকাটা” কথায় কান দিও না। শুধু “চোখের বালির” চিঠিটা সযত্নে রেখো। যেদিন আমার দিন ফিরবে আমি তোমার কাছে “উড়োচিঠিটা” ফেরত চাইব। তুমিই দেখে নিও, সেদিন আমি ভুলেও তোমার “বুকে বিষাদের ছোরা” ঢুকাবো না, তোমার মাথার “গোবরে পদ্ম” যদি ফোঁটে তো বুঝবে, আমায় “শাঁখের করাতে” কাটার প্রতিশোধ “সুদে আসলে” নেবার বদলে সেদিন তোমায় আমি “চাঁদের হাটে” ভ্রমণ করাবো। শোনো “গোকুলের ষাঁড়”, তখন যতই “উদোর পিণ্ডি” “ভুদোর ঘাড়ে চাপাও” না কেন “ঘটিরাম” ডেকেও “চোখ টানানো” বন্ধ হবে না। আমাকে “চামচিকের লাঠি” বলে “চুঁনোপুটি” ভাবতেই পারো, কিন্তু “পাঞ্জা ছক্কা” খেলে “চুলোয় যেও না” দেখো। শোনো “ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়” করা “ঠুঁটো জগন্নাথ”, “তুলা ধুনা” করে আমায় ছাড়লে কি হিবে, ঐ “ডাকের সুন্দরী” তোমার “পাকা ধানে মই দিয়ে” “ডামাডোল” বাজিয়ে ছাড়বে। “সাত সতের” “সখাত সলীলে” যেদিন পড়বে, হয়ত বোধের উদয় হলেও হতে পারে।

ইতি
তোমার “চোখের বালি”

_______________

প্রেরক- “চোখের বালি” | প্রাপক- “শরতের শিশির

প্রিয় নীল – Fahmida Akhi

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং -২

প্রিয় নীল,

এখন মধ্যরাত। টেবিল ল্যাম্পের ক্ষুদ্র আলোটুকু ছাড়া আমার চারপাশ এক সীমাহীন অন্ধকারে ছেয়ে আছে। মিউজিক প্লেয়ারে বাজছে তোমার প্রিয় সেই গান,

“শাওন রাতে যদি স্মরণে আসে মোরে
বাহিরে ঝড় বহে, নয়নে বারি ঝরে।
তুলিও স্মৃতি মম, নিশীথ স্বপন সম
আঁচলের গাঁথা মালা ফেলিও পথ পরে…।”

আজ অনেকদিন পর তোমাকে লিখতে বসেছি। কিন্তু কী লিখবো? এই ভাবনায় ক্ষণকাল নিশ্চুপ থাকার পর আমার ভেতরের নিঃসঙ্গতা হঠাৎ হাহাকার করে উঠে জানতে চাইলো, কেমন আছো তুমি? মন ভালো আছে তো তোমার? বড্ড জানতে ইচ্ছে করে। জানতে ইচ্ছে করে, রাত্রিবেলা নক্ষত্রখোচিত ঐ আকাশের দিকে তাকিয়ে এখনও কি আমার কথা ভাবো? এখনও কি আমার ছবি মনে মনে তোমার স্মৃতিপটে আঁকো? এখনও কি ইচ্ছে হলেই হুটহাট রাতের অন্ধকারে জোনাক পোকাদের খুঁজতে বেরিয়ে পড়ো? জানতে ইচ্ছে করে, তুমি কোথায় আছো? আর কতদূরে আছো? তোমাকে ছাড়া আমার শহরটা যে বড্ড ফাঁকা ফাঁকা লাগে।

নীল, কতদিন তোমাকে দেখিনা। কতদিন তোমার বুকে মাথা রেখে হৃদয়ের সব আকুলতা ব্যক্ত করিনা। বিচ্ছেদ নামক শব্দটা হয়তো আমাদের শারীরিক দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু মনের দূরত্ব? মনের দূরত্ব কি এতটুকুও বাড়াতে পেরেছে? জানি, তুমি দূরে আছো। বহুদূরে। কিন্তু দূরে থাকলেও তুমি যে এখনও আমার মনের মাঝেই রয়ে গেছো। নীল, এই যে আমাদের মাঝে বিচ্ছেদ নামক দেয়াল তৈরি হয়েছে। জানি, তাতে আমাদের দুজনের কারোরই হাত ছিল না। সমাজ, বাস্তবতার কাছে আমরা হেরে গেছি। আমাদের ভালোবাসা হেরে গেছে। কিন্তু মন, মন তো তা মানতে চায়না। মনের মাঝে ক্ষাণিক পরপর বিদ্রোহ শুরু হয়। তোমাকে কাছে পাওয়ার বিদ্রোহ। তোমার ভালোবাসা পাওয়ার বিদ্রোহ।

আমি জানি, এ জীবনে তোমাকে আমার নিজের করে পাওয়া হবেনা। তাতে আমার দুঃখ নেই। একেবারেই যে নেই তা কিন্তু নয়। যখন ভাবি, তোমার জীবনে নতুন কেউ আসবে। আর সে তোমার সমস্তটা জুড়ে থাকবে। তোমার প্রশস্ত বুকে মাথা রেখে রাত্রিযাপন করবে। তোমার মায়াময় মুখটা দেখেই তার সকাল হবে। তোমার ঘুমঘুম কণ্ঠের মাদকতায় তার হৃদয় ভেসে যাবে। তখন আমার ভেতরটা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। আমি নিজেকে সামলাতে পারিনা কিছুতেই। আমি ভাবতে পারিনা, তোমার মতো করে আমাকে আর কেউ ভালোবাসবেনা। আর কেউ আবদার করে বলবেনা, ‘আজ একটু শাড়ি পরে এসো তো। শাড়ি পরলে তোমাকে একদম বউ বউ লাগে। আর তখন তোমাকে খুব ভালোবাসতে ইচ্ছে করে।’ আমি ভাবতে পারিনা, তোমার মতো আমাকে নিয়ে আর কেউ পাগলামি করবেনা। আর কেউ তোমার মতো ভর সন্ধ্যাবেলায় বড় রাস্তার ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে আমার হাত ধরে গাইবেনা, “চল রাস্তায় সাজি ট্রাম লাইন, আর কবিতায় শুয়ে কাপ প্লেট…।”

নীল, তোমাকে ছাড়া আমি যে একা। ভীষণ একা। আমাকে ছেড়ে তুমি কি ভালো আছো? ভালো আছে তোমার শহরটা? আমি ভালো নেই নীল। আমার শহরটাও ভালো নেই।

আমি জানিনা নীল, পরজন্ম বলে কিছু আছে কিনা। যদি থেকে থাকে তাহলে বলবো, ‘এ জন্মে তোমায় নাই বা পেলাম। পরজন্মে আমার ঈশ্বরের কাছে আমি ঠিক তোমাকেই চেয়ে নিলাম।’

ইতি
তোমার অপরাজিতা

প্রিয় আপনি, আশা করি ভালো আছেন অন্য কারো বুকে?-মাসুদ রানা তাসিন

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং : ৪

প্রিয় আপনি,

আশা করি ভালো আছেন অন্য কারো বুকে? তার বুক কি আমার বুকের চেয়ে অবিরত। নাকি অবহেলার প্রাচীরে ঘেরা। আমি তো অবহেলা কে সঙ্গি পেয়েছি।

আজ কেনো জানি খুব কান্না পাচ্ছে! শূন্যতা না পূর্ণতা না নির্ভরতা নাকি নিঃসঙ্গতার জন্য, জানি না। শুধু বুঝছি অভিমান প্রচণ্ড কান্না হয়ে দু’চোখ ফেটে বেরুতে চাইছে। কেনো জানেন তা তো আপনার জন্যে ঐ যে তুমি থেকে আপনি সম্বোধন।

হয়তো বিধাতার অমোঘ আকর্ষণে এমন হয়েছে । না হলে কলেজের সেই সেরা জুটি আজ দুদিক দুই প্রান্তরে, তুমি থেকে আপনি তে।

আমি কিন্তু এখনো আপনার সাথে সেই কাটানো ভ্যাপসা স্মৃতির দূরবীণে চোখ রাখি। কেনো জানেন? কিছু স্মৃতি অমলিন রয়ে যায় চিরদিন। তাইতো দিনশেষে আপনার সেই স্মৃতিতে ডুব দেওয়া শ্রেয় মনে করি।

যার বুকের পাঁজরে লেগে থাকা ঘামের গন্ধ আমার ঘ্রাণশক্তির একমাত্র গন্তব্য ছিল। তবে কেনো এমন হলো অন্য কারো মুখ দেখে আপনার ভোরের আলো ফুটে?

যার এলোমেলো আকর্ষণে আমি-ই হারিয়ে যেতাম। আর এখন হারাই আমি ভালবাসতে বাসতে! ভ্যাপসা স্মৃতির দূরবীন নামক অমোঘ আকর্ষণে।

তোমাকে ভালবাসি প্রচণ্ড- এরচেয়ে কোনও সত্য আপাতত আর জানিনা!
ভালবাসি আপনায়! আমার জীবনের চেয়ে বেশি। হয়তো কাছে পাইনি কিন্তু ভালোবাসি আপনাকে। আপনি নাহয় থাকুন আমার স্মৃতির পাতায়। তবুও শেষে বলছি কিছু স্মৃতি অমলিন রয়ে যায় চিরদিন।

ইতি
আমি
মাসুদ রানা তাসিন

প্রিয় অর্ধাঙ্গিনী – Orshiya Shohid Anu

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
~চিঠিঃ- ০৭

প্রিয় অর্ধাঙ্গিনী,

কেমন আছো তুমি আমাদের কে ছেড়ে? তোমাকে প্রতিমুহূর্তে মিস করছি, আচ্ছা- অভিমানের পালা ভুলে আমাকে কি একটু মনে করার সময় তোমার হচ্ছে? নাকি আজো তোমার অভিমান তেমনটাই রয়ে গেছে?

মনেপড়ে তোমার কলেজ ক্যাম্পাসের সেই দিনগুলো? আমাদের সেই যে প্রথম দেখা হয়েছিল, সিনেম্যাটিক অভিজ্ঞতা ছিল একেবারেই। বন্ধুর সাথে ক্যাম্পাস ঘুরতে গিয়ে তোমার নয়নজোড়া তে আঁটকে গেলাম আমি, সেই যে আটকে গেলাম আজ অব্দি সেই মায়াবী বাঁধন থেকে নিজেকে এক মুহুর্তের জন্যও সরাতে পারিনি। আমার চোখে চোখ পড়তেই তুমি বুঝে নিলে আমি তোমাকে দেখছি, সেই যে লজ্জায় তোমার মাথা নিচু করে নেওয়ার দৃশ্যটি আজো আমি বন্দি করে রেখেছি আমার হৃদয়ের ক্যানভাসে। তারপরই শুরু হলো আমার নিয়মিত তোমাদের ক্যাম্পাসে যাওয়া, তোমার ব্যাপারে সব খোঁজ খবর ও জোগাড় করে ফেললাম কয়েক দিনের মাথায়।

রোজ প্রস্তুতি নিয়ে যেতাম তোমাকে নিজের মনের কথা বলার জন্য, তবে বলবো বলবো করে সেটা বরাবরের মতো না বলাই রয়ে যেত। তোমাকে দূর থেকে দেখলে সাহস নিয়ে বুক ফুলিয়ে দাড়াতাম, যত তুমি আমার নিকটে এগিয়ে আসতে, তত আমার সাহস একটু একটু করে কমতে থাকতো। আমার সামনে তুমি যখনই হুটহাট করে চলে আসতে, আমি যেন লজ্জাবতী গাছের পাতার মতো চুপসে যেতাম। কিছু বলার সাহস তো দুর, তোমার সমুখে দাড়ালেই হাটু কাঁপা শুরু হয়ে যেত।

তোমার ফ্রেন্ড সারকেলের এক কাছের বান্ধবীকে হাত করে জেনে নিলাম তোমার পছন্দের তালিকা। খুব অবাক হয়েছিলাম জানো- এতো মিষ্টি একটা মেয়ে তাও আবার কাঠগোলাপ পছন্দ করোনা এটা শুনে! হলুদ গোলাপ তোমার প্রিয় ফুলের তালিকায় সবার উপরে, এটা শোনার পর একটু হিমুর মতো ধারণা করার চেষ্টা করেছিলাম হয়তো তুমিও আমার মতো হুমায়ুন স্যার এর ভক্ত। কিন্তু না, আমার সে ধারণা একেবারেই সঠিক ছিলনা।

হুমায়ুন স্যার তোমার পছন্দের তালিকায় থাকলেও তুমি রবী ঠাকুরের একজন বিশাল ভক্ত শুনে কিছুটা অবাক হয়ে গেলাম। আরো অবাক হয়েছিলাম যখন জানলাম চোখের বালি উপন্যাসের বিহারীলাল কে তুমি স্বপ্নের নায়কের আসনে বসিয়ে রেখেছো। বেশ ভয় পেয়েছিলাম! আমি যে বিহারীলালের মতো ছিলাম না, তোমার থেকে না শুনবো এটা ভাবতেই শিউরে উঠছিলো আমার ভেতরটা। সকল ভয়ের মাঝেও কোথাও জানো একটু বেশিই ভালোলাগা কাজ করছিলো এটা ভেবে, যাকে আমি মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবেসে আসছি সেই মেয়েটা অন্য সকলের মতো না, তার পছন্দের তালিকা যতটা ইউনিক মেয়েটার ভালোবাসা না জানি তাহলে কতটা অন্যরকম হবে।

তারপরই শুরু হলো তোমার দৃষ্টি আকর্ষণের প্রচেষ্টা। তিন মাস একা লুকিয়ে লুকিয়ে দেখার পর, অবশেষে আমি তোমাকে একগুচ্ছ হলুদ গোলাপ সমেত প্রথম চিঠিটা পাঠিয়ে দিলাম। কি আসবে তোমার জবাব? আদৌ কি আমার ভালোবাসা পূর্ণতার মুখ দেখতে পাবে? এইসব নানা ধরনের চিন্তার ভীড়ে সন্ধ্যাবেলা ১০২° জ্বর এসে গেছিল আমার। পরদিন জ্বর গায়ে নিয়েই গেলাম তোমার ক্যাম্পাসে, হৃদয় সেদিন এতো দ্রুত বিট করছিলো ভাবতেও পারবেনা তুমি। অপেক্ষার প্রহর যেন শেষই হচ্ছিলো না আমার। একসময় তো ভেবেই নিলাম তোমাকে বুঝি আর নিজের করে পাওয়া হলোনা! কিন্তু না, আমার সকল চিন্তার জট কে মস্তিষ্ক থেকে বিদেয় করিয়ে তুমি এসে দাড়ালে আমার সমুখে।

বিশ্বাস করবে কিনা জানিনা- আমি যেন তখন কোন অজানাই পাড়ি দিয়েছিলাম তোমাকে নিয়ে, কয়েক সেকেন্ড এর ব্যাবধানে তোমার সাথে হারিয়ে গেছিলাম দূর অজানায়। হঠাৎ করেই তোমার ডাকে সম্বিত ফিরে পেলাম, আমার সকল ভয়ের অবসান ঘটিয়ে তুমি আমাকে তোমার মনের কথাগুলো বলে ফেললে এলেমেলো ভাবে। তোমার কথার ধরণেই বুঝেছিলাম আমার মতো তোমার জন্যও সে কাজ ছিল একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা।

এরপরই তো শুরু হলো আমাদের সেই দুষ্ট-মিষ্টি প্রেমের অলিখিত উপন্যাসের। রোজ ক্যাম্পাসে দেখা করা, নদীর পাড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা আমার কাঁধে মাথা রেখে, তোমার বলে চলা গল্প শুনে বিকেল কাটিয়ে দেওয়া, যেন হয়ে গেল নিত্য দিনের অভ্যাস। সময় যতটা গড়াতে থাকলো আমাদের ভালোবাসাও ততটাই গাঢ়ত্বে রুপ লাভ করছিলো। একটা সময় সেই দিনটিও আমাদের জীবনে এসে উঁকি দিলো, যেদিন আমি তোমার উপরে আমার অধিকার পেলাম, আকান্তই তুমি আমার হয়ে গেলে।

মিষ্টি সংসারের স্বপ্ন দেখতাম রোজ, সেরকমই গল্পের মতোই সেজে উঠলো তোমার আমার টোনাটুনির সংসার। খুনসুটি, ঝগড়া, কখনো মান অভিমানের পালায় রাতভর কেউ কারো সাথে কথা না বলা, আবার সকাল হলেই এক কাপ কফিতে দুজনের ভাগ বসানোর পাল্লাতে সকল কটাক্ষ ক্ষণের অবসান। সময়গুলো এতোটাই বিস্তৃত ভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলো যেন আমরা বুঝতেও পারছিলাম না। তারপরই সেই সুখের ক্ষণ উপস্থিত হলো, তোমার কোল আলো করে আমাদের অংশ আমাদের সোনাবাবুটা এই পৃথিবীর বুকে কান্নাধ্বনিতে মুখরিত করে তুললো সবকিছু ।

সবসময় চেষ্টা করতাম তোমাদের কে কিভাবে সুখী রাখতে পারি, তার জন্য কাজকে এতোটাই বেশি গ্রহণযোগ্যতা দিয়ে ফেলেছিলাম যে, আমি আমার সোনার সংসারকে ভুলতে বসেছিলাম প্রায়। এমন ও দিন চলে এলো আমি তোমাকে চোখের দেখাও দেখতে পেতাম না। হয়তো বা কাজের মধ্যে ডুবে থাকতাম নয়তো, কাজের চাপকে একটু বিরতি দিতে ঘুমের দেশে পাড়ি দিতাম।

এতোগুলো ব্যস্ততার মাঝে আমি বুঝতেই পারিনি কখন একটু একটু করে তুমি আমার থেকে দূরে সরে গিয়েছো। বুঝতে পারিনি যে মেয়েটার সব কাজে আমাকে লাগতো,সে মেয়েটা আমাকে ছাড়া সকল কাজ একা কিভাবে করবে! দেখতে পারিনি, যে মেয়েটার প্যারাসিটামল খেতে গিয়ে তিনবার বিষম লেগে যেত, সেই মেয়েটার ঔষধের কৌটোটা ভরে গেছে! বুঝতে পারিনি আমি ঐ কোমল হৃদয়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে, আর সে ক্ষত হয়তো আমারই অবহেলার ফলে হয়েছিল।

সারাজীবন আমাকে আগলে রাখবে কথা দেওয়া সেই তুমিই যে আমাকে এই সংসার নামের অথৈ সমুদ্রে একা ভাসিয়ে দিয়ে চলে যাবে তা যে আমি কল্পনার চোখেও দেখতে পায়নি! খুব রাগ হয় আজ নিজের উপর তোমার অভিমান ভাঙাতে পারিনি বলে, আমার উপর না হয় তোমার এতো অভিমান জমে আছে তাই কথা বলোনা, কিন্তু আমাদের পিচ্চিটা! ওর জন্যও তো তুমি অভিমান কে ছুটি দিতে পারো নাকি?

জানো তুমি, আজ আমি কাজের ব্যস্ততাকে ছুটি দিয়েছি, তোমার বিচ্চু ছেলেকে সামলাতেই আমার দিন পার হয়ে যায়। আর বাকি সময়টা তোমার সাথে এই যে খাতা কলমে বসে কথা বলে মনকে সান্ত্বনা দিতে থাকি। যতই অভিমান করে দুরে চলে যাওনা কেন মনকে তো আমার সাথেই জড়িয়ে রাখতে হবে নাকি? তোমার ও মনের উপর একমাত্র অধিকার শুধুই আমার, কারণ তুমি যে আমার অর্ধাঙ্গিনী!

ইতি
“তোমার অযোগ্য সঙ্গী”

প্রিয়তমা – saima Islam tamanna

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং-৬

প্রিয়তমা,

প্রিয়তমা,তোমাকে কখনো আমার মনের গুপ্ত কথাগুলো বলা হয় নি। আর বলাও হবে না। কিভাবে বলবো, বলতে পারো? তুমিতো এখন অন্য কারো অর্ধাঙ্গিনী। তুমিতো এখন অন্য কারোর প্রতিক্ষায় অভিমানী। অন্য কারোর জন্য রাগিণী। অন্য কারোর ভালোবাসায় সিক্ত এক নারী। অন্য কারোর সন্তানের জননী। তোমাকে কি এখন, প্রেমময় কথা বলা সাজে। যখন সাজতো তখন বলার সময় হয় নি। আর এখন সময়ের অভাব নেই। কিন্তু, বলা নিষেধ। তুমি কি জানো, সময় অসময়ে তুমি আমার ভাবনায় বিরাজ করো। সর্বদা আমার আত্মার সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে থাকো। সেই আষ্টেপৃষ্ঠে রাখা বাঁধনকে আমি খুলতে পারি না। তুমি কি জানো, তুমি হলে আমার রাতের আঁধারের একপ্রকার দীর্ঘশ্বাস। সেই দীর্ঘশ্বাস কে আমি কখনোই অবহেলা করতে পারি না। সেই দীর্ঘশ্বাস কে নিয়ে আঁকড়ে থাকি। অবেলায় এক ছায়াচিত্র নিয়ে। এই দীর্ঘশ্বাসগুলো আমার এই ডায়েরির ভাঁজেই চাপা পড়ে থাকবে।

ইতি
একগুচ্ছ দীর্ঘশ্বাসের দাবিদার।

ও বাবা

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং-৭

ও বাবা,
তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো না, কোথায় চলে গেছো তুমি আমাকে ছেড়ে?তোমাকে ছাড়া থাকতে আমার কষ্ট হয়না বুঝি?তুমি প্লিজ প্লিজ চলে এসো।আমি আর দুষ্টুমি করবো না,ঠিকমত পড়তে বসবো তোমার সব কথা শুনবো।
আর তোমার কাছে চকলেট এর বায়না করবো না। তুমি একবার এসে দেখো তোমার মেয়ে একদম লক্ষ্মী হয়ে গেছে।
জানো বাবা আমি এবার পরীক্ষায় ফার্স্ট হয়েছি,
মাম্মাম কত্ত কত্ত খুশী হয়েছে,আমাকে জড়িয়ে ধরে তো কেঁদেই ফেলেছে।
আর বলেছে তুমি থাকলেও ভীষণ খুশি হতে,তুমি চলে এসো না বাবা।
তোমাকে খুব মনে পড়ছে।
ও বাবা, আমি তো রোজ তোমায় চিঠি লিখি, তুমি বুঝি আমার কোনো চিঠিই পাও না?যদি পাও তবে কেনো আসো না?
জানো বাবা মাম্মামও তোমাকে খুব ভালোবাসে, তোমার জন্য কাঁদে,রোজ রাতে ঘুম ভাঙলে দেখি তোমার ছবির সাথে কথা বলছে আর কাঁদছে,আমি তো লুকিয়ে লুকিয়ে সব দেখি।
তুমি কি আমাদের কষ্ট একটুও বুঝো না?এবার কিন্তু তোমাকে আসতেই হবে হুহ্।
জানো বাবা কাল বাড়িওয়ালা কাকু এসে আমাদের খুব বকেছে,বলেছে দুদিনের মধ্যে যেনো আমরা সবকিছু নিয়ে বেরিয়ে যাই,
আচ্ছা তুমিই বলো বাবা আমরা কোথায় যাবো?
তুমি কোথায় আছো তাও জানিনা,নইলে তো আমি আর মাম্মাম ঠিক তোমার কাছে চলে যেতাম।
আমাদের আর কেউ বকতে পারতো না।
ও বাবা তুমি চলে এসো না গো,তেমাকে ছাড়া আমরা একদম ভালো নেই।
প্লিজ চলে এসো,এমদম দেরী করবে না কিন্তু।

ইতি
তোমার পুতুল মেয়ে।

প্রিয় প্রাক্তন

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং -৩
প্রিয় প্রাক্তন,
বর্ষার বাদল রাঙা দিনে টিনের চালের ঝুম শব্দের প্রগাঢ় উচ্চারণে আমার মনের গহীনে বিরহের গান বাজিয়ে তুমি আমার অস্তিত্বে মিশে রয়েছে। তোমায় নিয়ে সন্ধ্যের সোনালী সূর্যের রঙ্কিম বর্ণে তার অস্ত যাওয়া দেখতে চেয়েছি কিন্তু অবচেতন মন তখনও জানতো না সন্ধ্যের রক্তিম সূর্যাস্তের শেষে আসে ধূসর কালো অন্ধকার। সেই অন্ধকারে বিলীন হয়ে যাওয়া তুমি আমার আবছা আলোর ধারে আর এলে না।চলে গেলে এক ক্ষণিকের আলোর জ্বলকের কাছে। কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম আভায় তোমায় আমি খুঁজিনি, মাতিনি বসন্তের কোকিল কন্ঠে।শুধু বেঁচেছি তুমি বিনে রঙ বিহীন ধূসর বর্ণে নিজেকে গড়ে।তোমার জীবনে আমি হয়তো পেন্সিলে লেখা এক অপ্রয়োজনীয় উচ্ছিষ্ট পাতা।যা তুমি সহজেই ছিঁড়ে ফেলতে পারো অথবা মুছে ফেলতে পারো সংশয় কাটিয়ে।কিন্তু তুমি তো আমার জীবনে কলমে লেখা এক অনবদ্য কাব্য।তাই হয়তো আজও তুমি আমার জীবনে এক জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ডের মতো জ্বলছো।ঝুম ঝুম বর্ষায় তোমার হাতটি ধরে জীবনের অর্থ খুঁজতে চেয়েছি।কিন্তু তুমি হয়তো ভালোবাসার পরশে আমার হাতটি ধরোনি।তাই হয়তো জীবনের আসল মানে আমি আজও খুঁজে পাইনি।গ্রীষ্মের প্রগাঢ় উত্তাপে শুকিয়ে যাওয়া গাছের ফুলের ন্যায় আমিও ঝরে পড়েছি।বইয়ের পাতায় শুকিয়ে যাওয়া গোলাপের পাপড়ি ন্যায় তোমার সেই ফেলনা অনুভূতিগুলো বুকে নিয়ে নিজেকে পুড়াচ্ছি।সেদিন সিঁদুর রাঙা লালে নিজেকে সজ্জিত করে আমি তোমার দাঁড়ে যাই।দুয়ারে গিয়ে দেখি তুমি মুগ্ধ নয়নে চেয়ে আছো আমার পানে নয় কাঠগোলাপের ন্যায় এক শুভ্রতার পানে।দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কিছুই থাকে না আমার কাছে।দীর্ঘশ্বাস গুলোকে বড্ড আপন মনে হয় জানো।অকারণে তারা আমায় এক অদৃশ্য বাঁধনে জড়িয়ে রাখে।আর আমিও আমার একগুচ্ছ দীর্ঘশ্বাস বুকে নিয়ে প্রতীক্ষায় প্রহর গুনি।ভাবি, আমারও খুব যত্নে রাখা প্রাক্তন আছে।সে আমার চোখে খুব সুন্দর করে স্বপ্ন এঁকে দিতো।সাজিয়ে দিতো গোলাপের ন্যায়।তার ঝুলিতে ছিলো আমার জন্য লেখা অসংখ্য কাব্য।কিন্তু এখন তার ঝুলিতে আছে এমন সব কাব্য যা জানান দেয় আমায় সে এখন অন্যকারো।তবুও তারে আমি আজন্ম ভালোবেসে যেতে চাই।
প্রিয়,আর একবার আমায় কদম এনে দিবে।তোমায় নিয়ে একটিবার বৃষ্টিবিলাশ করারর সুযোগ দিবে।শুধু একটিবার…………………….।ভালোবাসি তোমায় বোধহয় একটু বেশিই ভালোবাসি।
ইতি,
তোমায় আজন্ম ভালোবাসা এক বালিকা

লেখা:মার্জিয়া সুলতানা নাবিহা ,অপ্রিয় কালোসমাজ,

0

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং:৩
লেখা:মার্জিয়া সুলতানা নাবিহা
অপ্রিয় কালোসমাজ,
আমি জিজ্ঞেস করবনা ভালো আছেন কিনা।কারন আমি জানি আপনারা মানুষদের কষ্ট দিয়ে ভালোই আছেন।জানেন আপনাদের নিয়মগুলো খুবই অদ্ভুত? আপনাদের নিয়ম হলো একটি সংসারে যদি মেয়ে হয় তাহলে তাকে লাঞ্ছনা দিয়ে দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়।আর যদি ছেলে হয় তাহলে তাকে অলিখিত ভাবে সমাজের গৌরব হিসেবে ঘোষণা করা হয়।এই সমাজে একজন মেয়ের পিতা গিয়ে যখন চায়ের দোকানে বসে একটুকরো সমাজের সাথে আলোচনা করে বাসায় আসে তখন তার মন বিক্ষিপ্ত হয়ে থাকে।কারন ঐ যে একটুকরো সমাজের সাথে আলোচনা করে বুঝতে পারে তার মেয়ে হয়েছে বলে কত বড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছে।এটা উপলব্ধি করার পর সে তার‌ই মেয়ের মাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন কারন একটাই তার মেয়ে হলো না কেনো।আর এই সব কথা শুনে মেয়েটি ব‌ইয়ে মুখ গুজে অশ্রু বিসর্জন দেয় আর প্রার্থনা করে “হে ঈশ্বর আমাকে তুমি কেনো ছেলে বানালে না কেনো?”আর অপরদিকে গালাগাল শুনে অশ্রুর বন্যা বয়ে যাওয়া চোখে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকেন এক অসহায় গর্ভধারিনী।যার এই ভুবনে কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।এই কালো মুখো সমাজে এই রকম কত মেয়ে সহ্য করছে নির্যাতন-নিপীড়ন‌।কবে শেষ হবে এই অত্যাচার?নাকি এই নিপীড়ন নিয়েই মৃত্যু বরণ করতে হবে?
ইতি,
এমনি নিপীড়িত একটি মেয়ে।