Sunday, July 13, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1840



Your Lover পার্ট – ৫+৬

0

#Your_Lover
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_৫+৬

সকাল ৬টা বাজে বাসে সবাই উপস্থিত আছে শুধু ইভা ছাড়া। সানভি, লামিসা বার বার ইভাকে কল করে যাচ্ছে কিন্তু কোনো খবর নেই। ফোনও রিসিভ করছে না। ৬:৩০টা বেজে গেছে। কেউ আর অপেক্ষা করতে রাজি না। বাস স্টার্ট দিয়েছে তখন ইভার আগমন। আয়ান বলে উঠে,
-যে সময় মতো কাজ করতে পারে না তারজন্য এক মিনিটও দাড়ানো যাবে না।
-হয়তো কোনো কারনে আসতে লেট হয়েছে, বাস থামান (সানভি)
-না বাস থামানো যাবে না (আয়ান)
-প্লিজ ভাইয়া এমন করবেন না বাস থামাতে বলেন (লামিসা)
-আমি যা বলছি তাই হবে নয়তো আমি তোমাদের সাথে যাবো না (আয়ান)
-দোস্ত আমার কথাটা একবার শোন (সানভি)
-তোর সব কথা কক্সবাজার গিয়ে শুনবো এখন না (আয়ান)

সবাই চুপ হয়ে গেছে। লামিসা, রাহি,ঈশিতা ওদের আনন্দ সব মাটি হয়ে গেছে, মন মরা হয়ে বসে আছে।
কালকে রাত ১২টা দিকে আয়ান ইভাকে কল করে ঘুম ভেঙ্গে দেয় তাই সকালে উঠতে লেট হয়। এদিকে ইভা রাস্তায় বসে কান্না করে এবং মনে মনে গালি দিতেছে,
“বজ্জাত লোক একটা রাতে আমার ঘুম ভেঙ্গে দিয়ে কক্সবাজার যাওয়া মাটি করে দিলো। যদি তোরে আমি সামনে পাই বুড়িগঙ্গা নদী নিয়ে রামছাগলের মতো গোসল করাবো। খাটাশ, গন্ডার, হাতি,ছাগল তোর সব নাম্বার ব্ল্যাকলিসটে দিবো। আমার নাম্বার চেঞ্জ করে ফেলবো তারপর দেখবো কেমন করে আমাকে কল দিস”

-বাস থামান (আয়ান)
-কেনো? কি হয়েছে?( ড্রাইভার)
-আরে আমার বাইকের চাবি খুঁজে পাচ্ছি না, বাস পিছনে ঘোরান (আয়ান)
-ঠিক আছে (ড্রাইভার )
আর কেউ কিছু না বুঝলেও সানভি ঠিক বুঝেছে কেনো বাস পিছনে যাচ্ছে।
-কি ইভাকে আনতে যাচ্ছিস
-তোকে এতো বেশি বুঝতে কে বলেছে হ্যাঁ
-আমি না বুঝলে কে বুঝবে। যাকে ভালোবাসিস তার সাথে এমন করলি কেনো?
-তুই খুব ভালো করে জানিস আমি টাইম মেইনটেইন করে চলি আর ও খুব লেজি। তাই ওকে শিক্ষা দিলাম যাতে টাইম মেইনটেইন করে চলে।
-আয়ান তোকে বোঝা খুব মুশকিল। বোনটাকে সামলে রাখিস।
-হাহাহাহা রাখবো।

ইভার ফ্রেন্ডের চোখে মুখে খুশির ঝিলিক বাস পিছনে যাচ্ছে এখন তো ইভা যেতে পারবে।
-ভাই বাস কি আরো পিছনে নিতে হবে ( ড্রাইভার)
-না এখানে রাখেন (আয়ান)
আয়ান, সানভি বাস থেকে নেমে চাবি খোঁজার অভিনয় করছে। লামিসা ও বাস থেকে নেমে আয়ানকে বলে,
-ভাইয়া এই দেখেন ইভা বসে কাঁদছে, ওকে আমাদের সাথে নিয়ে চলুন (লামিসা)
-চাবি খুঁজতে এসেছি বলে তোমার ফ্রেন্ড কে নিয়ে যাচ্ছি নয়তো আয়ান চৌধুরী এক বার যা বলে তাই করে। (আয়ান)
লামিসা আর সানভি ইভার কাছে গিয়ে বলে,
-এবার চল, কেঁদে কেঁদে বন্যা বানিয়ে ফেলছিস (সানভি)
-আপনার ফ্রেন্ড আগে যদি ওকে নিয়ে যেতো তাহলে এই বন্যা তৈরি হতো না (লামিসা)
-সত্যি আমি যেতে পারবো (ইভা)
-সত্যি নাকি মিথ্যা দেখতে চাইলে ঘুমিয়ে পর তারপর সমুদ্র নিয়ে ফেলে দিয়ে দেখাবো সত্যি নাকি মিথ্যা (সানভি)
-তুই আমার ভাই না চরম শত্রু (ইভা)
-ঝগড়া না করে চল ( লামিসা)
ইভা আর লামিসা একসাথে, সানভি আর আয়ান একসাথে বসেছে। আয়ান ব্ল্যাক কালার সানগ্লাস পরে আড় চোখে ইভাকে দেখছে। কেউ বুঝতে পারছে না আসলে আয়ান কাকে দেখছে৷
আয়ানের খুব ইচ্ছে করছে ইভার চুলগুলো আলতো ভাবে ছুঁতে, পিক তুলতে।
সকালে নাস্তা করার জন্য বাস একটা হোটেলে সামনে থামালো। সবাই নেমে যাচ্ছে কিন্তু ইভা কান্না করেছে বলে ঘুমে মগ্ন আছে “কান্নার পর ঘুম ভালো হয় ”
লামিসা খেয়ে ইভার জন্য খাবার নিয়ে আসবে তাই নেমে গেলো৷
বাস পুরো ফাঁকা এই সুযোগে আয়ানের ইচ্ছে পূরণ করলো । আয়ানের কাঁধে ইভার মাথা রেখে কয়েকটা পিক তুললো আর এলোমেলো চুলগুলো ঠিক করে দিয়ে নিজের সিটে এসে বসলো। সানভি আয়ানের জন্য খাবার নিয়ে এসে বললো,
-নে খেয়ে আমাকে উদ্ধার কর।
-খুব ক্ষিদে পয়েছে, ভালোই করেছিস খাবার এনে।
-তুই না গিয়ে আমার অনেক বড় উপকার করলি।
-আমি ক্ষুদার জ্বালায় মরি আর উনার উপকার হলো হায় আল্লাহ গো।
-হ্যাঁ তুই ছাড়া আমার কে আছে বল।
-কেন এখন তো লামিসা আছে।
-হুম কিন্তু একটা কথা রাইয়ানের উদ্দেশ্য আমার ভালো লাগছে না, তুই দেখেছিস?
– হুম খেয়াল করেছি আমাদের ভালো করে ওদের নজরে রাখতে হবে।
-হুম

লামিসা ইভাকে খাবার এনে দিয়েছে। বাসের মধ্যে গান বাজে যে যার মতো মজা করে৷
কক্সবাজার পৌঁছে হোটেলের রুম বুকিং করেছে তাতে ইভা, লামিসা, ঈশিতা, রাহি একটা রুমে থাকবে এটা আগে থেকে ঠিক করেছিলো। সবাই ফ্রেস হয়ে খেয়ে নিয়ে ঘুরতে বেড় হলো।
আয়ান ইভাকে চোখে চোখে রাখছে। কতোক্ষন রাখতে পারবে বুঝতেছে না। রাইয়ান ইভার পিছু নিয়েছে কিন্তু ইভা এভয়েড করে।
কিছুক্ষন পর ইভাকে একা পেয়ে হাত টান দিয়ে একেবারে আয়ানের বুকের সাথে মিশিয়ে বলে,
-তুমি এতো বোকা কেনো? সানভির সাথে আমাকে সব সময় দেখো তাও আমার চোখের ভাষা বুঝতে পারো না?
-কি করছেন, আমাকে ছাড়ুন। কেউ দেখে ফেলবে।
-কেউ দেখবে না।
-প্লিজ ছাড়ুন
-আগে বলো আমাকে বিয়ে করবে?
-চিনি না জানি না আপনাকে কেনো বিয়ে করতে যাবো হ্যাঁ?
-তাও ঠিক তুমি তো আমাকে চিনো না তবে চলো আমাকে চিনতে।
ইভাকে ছেড়ে দিয়ে দূরের একটা জায়গায় বসে আয়ান বললো,
-দেখো তো এই ফোন নাম্বারটা চিনো
-হুম চিনি
-কে?
-আমার লাভার
-তাহলে কল দেও
ইভা কল দিতে আয়ানের ফোন বেজে উঠে।
-তাহলে বুঝতে পেরেছো এতোদিন তোমার সাথে আমি কথা বলছি।

-তোমাকে হিজাব গিফট করা, রেস্টুরেন্টের বিল না দিতে দেওয়া, তোমাকে ফলো করা, সাত গোলাপ দেওয়া এতো সব যা হয়েছে সব আমি করেছি ইভা। তোমাকে সত্যি খুব ভালোবাসি।কিন্তু আমার সাথে প্রেম করতে বলবো না যদি তোমার মনে হয় আমি তোমাকে ভালোবাসতে পেরেছি তোমার মনে আমার জন্য জায়গা করতে পেরেছি তাহলে তুমি আমাকে ভালোবেসো।

-ইভা কিছু বলো?
-কি বলবো?
-ভালোবাসতে পারবে কি না?
-যদি বলি,
-কি
-রাতে সমুদ্রের পাড়ে আসবেন, আমি এখন যাই।
-আচ্ছা চলো তোমাকে দিয়ে আসি
-আমি ছোট বাচ্চা নাকি যে আমাকে দিয়ে আসতে হবে?
-হ্যাঁ। তোমার কান্ডকারখানা দেখে তো তাই মনে হয়।
-হুহ

রাইয়ান দূর থেকে ইভা আয়ানকে দেখছে। রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে। মনে মনে বলছে,” ইভা তোমাকে দেখে নিবো আমাকে এভয়েড করে আয়ানের সাথে সময় কাটানোর শখ মিটিয়ে দিবো। শুধু একবার তোমাকে একা পাই “।

বিকেলে ঘুরাঘুরি করে সন্ধ্যা বেলা সবাই আড্ডার আসরে বসেছে। আয়ান ফোনে গেম খেলছে আর ইভাকে দেখছে। ইভা মনে মনে বলছে ” কি নির্লজ্জ রে বাবা, মেয়েদের দিকে ডেপ ডেপ করে তাকিয়ে থাকে। এমন একটা ভাব করছে যেনো কিছু বুঝে না। একটু শান্তি মতো আড্ডাও দিতে পারছি না। গেম তো রুমে গিয়েও খেলতে পারে, এখানে বসে থাকার কি দরকার! ”
টুংটাং মেসেজের সাউন্ডে ইভা ফোন হাতে নেয় ” এভাবে আড় চোখে আমাকে দেখো না প্লিজ! আমি তোমার লুকোচুরি খেলার প্রেমে পরে যাচ্ছি ”
মেসেজ সিন করে রেখে দিলো। এর জবাব পরে দিবো হুহ।
আড্ডা শেষ সবাই যে যার মতো করে সমুদ্রের পাড়ে হাটতে বেড়িয়ে।
আয়ান সানভিকে বলে দিয়েছে ইভা যেনো ওর সাথে দেখা করতে যায়।
ইভা ওর কথা মতো দেখা করতে যায়।

চলবে,
#Your_Lover
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_৬

-রাতের বেলা অচেনা জায়গা একটা ছেলের সাথে সমুদ্রের পাড়ে হাঁটতে বের হয়েছো ভয় করে না?
– আপনি বাঘ না ভাল্লুক যে ভয় করবে? আর ভয় মানুষ তাকেই করে যাকে বিশ্বাস করতে পারে না।
-আমাকে কেনো বিশ্বাস করো?
-আপনার মধ্যে খারাপ কোনো কিছু দেখি নি।
-এখন দেখো নি পরে তো দেখতে পারো!
-তখন ভালো করার দায়িত্ব নিবো।
-যদি ভালো না হই?
-মেরে নাক ভোতা করে দিবো তাহলে অন্য মেয়ে আপনার দিকে তাকাবে না, আমার কথাই শুনতে হবে।
-তোমার সাহস তো কম না আয়ান চৌধুরীকে হুমকি দেও।
-শুধু হুমকি দিয়েছি কাজটা এখনো করি নি
-আচ্ছা শুনো তুমি একটু সাবধানে থেকো, একা একা কোথাও যাবে না।
-কেনো কি হয়েছে যে আমাকে সাবধানে থাকার কথা বলছেন?.
-অনেক কিছু আছে শুধু বলবো রাইয়ানের থেকে দূরে থেকো।
-উনি বড্ড খারাপ লোক। খুব বাজে ইঙ্গিত করে।
-ওর এসব বেশি দিন চলবে না, সময় বুঝে ও ওর কাজের ফল পেয়ে যাবে৷
-আপনি মারপিট করেন নাকি?
– না মাঝে মাঝে হাতের ব্যায়াম করি।
-সেটা আবার কেমন?
-কখনোও খারাপ কাজ করে দেখো তারপর দেখবে আমার ব্যায়াম কেমন.
-আপনি কেমন জানি অদ্ভুত?
-ভূত তো না
-রাতের বেলা ভূত নিয়ে কথা বলবেন না
-কেনো ভয় পাও নাকি?
-হুম অনেক
-ওই তোমার পায়ের উপর কাঁকড়া দেখো
-বাঁচাও বাঁচাও কে কোথায় আছো আমাকে বাঁচাও। কাঁকড়ায় আমাকে খেয়ে ফেললো।
ইভা চিল্লাপাল্লা করতে করতে আয়ানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো
-কি করছো তুমি? ছাড়ো আমাকে।
-না না আগে কাকড়ার হাত থেকে আমাকে বাঁচান।
-হাহাহাহাহাহাহ্ কাঁকড়া নেই চলে গেছে।
-সত্যি বলছেন?
-হুম, এবার ছাড়ো।
ইভা আয়ানকে ছেড়ে দিলো৷
-আমি এখন যাই,
পিছন থেকে আয়ান ইভার হাত টেনে বললো,
-এতো লজ্জা একটু আগে কোথায় ছিলো।
-না মানে ভয় পেয়েছিলাম তাই আর কি,,,
-আমি থাকতে তোমার কিছু হবে না, এবার আমার দিকে তাকাও।
-না আমার লজ্জা লাগে।
-তোমার লজ্জা রাঙা মুখটা দেখবো বলে তো তাকাতে বলছি৷
-নির্লজ্জ একটা।
আয়ান ইভার গালে দু হাত দিয়ে বলে,
-আমি সারাজীবন তোমার নির্লজ্জ হয়ে থাকতে চাই, রাখবে আমাকে?
– না
-কেনো? আমি কি খুব খারাপ?
-জানি না।
-প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিও না
-ফিরিয়ে তো দেই নি।
-তার মানে তুমি আমাকে চাও। আই লাভ উই এ লোট সোনা পাখি
-কি করছেন কি, পাগল হয়ে গেছেন।
-তোমার প্রেমে পাগল হয়ে গেছি
-ধুর কি যে বলেন।
-তুমি বলবে কোনো আপনি না।
-তা পরে দেখা যাবে।
-সবার সামনে আমার সাথে বেশি কথা বলতে আসবে না, কিছু দরকার হলে মেসেজ করবে বুঝছো আর তোমার ওয়াটসএ্যাপ আছে?
– না কেনো?
-এতো কেনো তোমার জানতে হবে না, তোমার ফোন দেও একাউন্ট খুলে দেই।
-হুম।
আয়ান ইভাকে ওয়াটস এ্যাপ একাউন্ট খুলে দেয়।
– চলো তোমাকে রুমে পৌঁছে দেই আর হ্যাঁ ফোনে লক দিয়ে রাখবে
-আচ্ছা।

ওরা রুমের কাছে আসতে রাইয়ানের সাথে দেখা,
-কি রে ইভার সাথে তো ভালোই টাংকি মারছিস (রাইয়ান)
-আরে না, পিচ্চি মেয়ে একা ওই দিকে ছিলো তাই রুমে এগিয়ে দিয়ে গেলাম (আয়ান)
-ইভা আমার সাথে হাঁটতে বের হবে? (রাইয়ান)
-না আমি রুমে গেলাম (ইভা)
-না চলো, আমাকে একটু টাইম দেও (বলে ইভার হাত টান দিলো)
-হাত ছাড়ুন (ইভা)
-না ছাড়বো না, আয়ান তুই একটু ওকে বল আমার সাথে যেতে (রাইয়ান)
-রাইয়ান ওর হাত ছেড়ে দে (আয়ান)
-না ছাড়বো না। ও আমাকে অনেক এভয়েড করেছে এর ফল দিবো (রাইয়ান)
ঠাসসসস্ (ইভা রাইয়ানের গালে চড় দিলো)
-এই থাপ্পড়টা তোকে অনেক আগে দেওয়া উচিৎ ছিলো, যেদিন তুই আমাকে কলেজ ছুটির পর ভিরের মধ্যে আমার কোমড়ে স্পর্শ করেছিলি কিন্তু সে দিন আমি বুঝতে পারি নি আসলে কে আমাকে স্পর্শ করেছে, এখন বুঝতে পেরেছি তুই ছাড়া আর কেউ করে নি। ছিঃ ছিঃ এতো খারাপ (ইভা)
-ইভা তুমি কাজটা ঠিক করলে না, এই রাইয়ানের সাথে তোমার সংসার করতে হবে মনে রেখো (রাইয়ান)

ওদের চেচামেচিতে সবাই এক জায়গায় হয়েছে। আয়ানের মাথায় রক্ত উঠে গেছে, চোখ রাগে লাল হয়ে গেছে। ইভাকে এতো নজরে রাখে তাও এতো খারাপ কাজ হয়ে গেছে বুঝতে পারে নি। সানভি আয়ানের হাত ধরে রাখে যাতে সবার সামনে কোনো সিনক্রিয়েট না হয়। সানভির ও খুব রাগ হচ্ছে তার বোনের সাথে এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে কিন্তু এখনই এর জবাব দেওয়ার সময় আসে নি।

-ইভা তুই রুমে যা আর সবাই এখান থেকে যাও (সানভি)
সবাই সানভির কথা মতো চলে গেলো।

-দোস্ত এসব কি হলো বল, আমার খুব খারাপ লাগতে আছে। এতো কিছু করেও আমি রাইয়ানের কাছ থেকে ইভাকে বাঁচাতে পারি নি (আয়ান)
-এখনও কিছু হয় নি, রাইয়ান যে কতো বড় ভুল করেছে তা বুঝতে পারবে (সানভি)
-রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে, সবার আনন্দ মাটি করতে চাই না নয়তো রাইয়ানকে দেখিয়ে দিতাম আয়ান কি করতে পারে (আয়ান)
-কলেজে সেদিন ইভাকে দেখে কয়টা ছেলে সিস বাজিয়েছে বলে তুই যে হারে মার মেরেছিলি সেটা জেনেও ও এমন কাজ করতে পারে ভাবতে পারি না (সানভি)
-শোন আমার সাথে ইভার রিলেশনের কথা কাউকে বলা যাবে না যা করতে হবে আমাদের কয়জনের মধ্যে সব কথা সীমাবদ্ধ রাখতে হবে (আয়ান)
-তুই কি বড় কোনো প্ল্যান করতে আছিস(সানভি)
-সময় হলে তোকে বলবো (আয়ান)

ইভা রুমে গিয়ে টপ টপ করে চোখের পানি ফেলতে আছে সবাই ওকে বোঝাচ্ছে যে আয়ান রাইয়ানকে শাস্তি দিবে তাও কান্না থামছে না।

-তুই এতো বলদ কেন? আয়ান ভাইয়া তোর পাশে আছে তাও এমন করলে কি চলে বল(ঈশিতা)
-এরকম খারাপ কাজ হতে থাকলে একটা সময় আয়ান আমাকে ভুল বুঝে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে (ইভা)
-পাগলী একটা, তুই জানিস আয়ান ভাইয়া তোকে কতো ভালোবাসে। (লামিসা)
-দু দিন আগে তোকে একটা,বার দেখার জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তোর বাসার সামনে দাড়িয়ে ছিলো (রাহি)
-আবার কয়েকটা ছেলেকে মেরেছেও (লামিসা)
-এতো যদি ভালোবাসে তাহলে রাইয়ানকে আজকে কেনো কিছু বললো না(ইভা)
-হয়তো কোনো কারন আছে, তবে তুই চিন্তা করিস না ওর কাজের ফল ও পেয়ে যাবে (রাহি)
-হ্যাঁ, তুই এবার তোর কান্না বন্ধ কর নয়তো তোকে মেরে সমুদ্রে ভাসিয়ে দিবো (ঈশিতা)
-তোরা সবাই আমার শত্রু (ইভা)
-একদম চুপ কর, এখন খেতে যাবো (লামিসা)

রাতের খাবার খেয়ে সবাই কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে ঘুমাতে গেলো। রাইয়ানের দেখা আর মেলে নি।

সকালে সবাই ঘুরতে বের হয়েছে। যে যার মতো পিক তুলছে, ফেসবুকে গিয়ে লাইভে এসেছে, ভিডিও কলে ব্যস্ত।আয়ান বসে বসে গেম খেলতে ব্যস্ত তবে ইভার কাছে আছে। কিছুক্ষন পর সানভি এসে বলে,
-তুই এখানে তাহলে ইভা কার সাথে কোথায় গেছে?
-মানে কি আমি তো ওকে ২মিনিট আগেও দেখছি।
-লামিসাকে জিজ্ঞাসা করলাম ও বললো এখানে ছিলো পিক তুলতে ছিলো।
-রাইয়ান কে কি কোথাও দেখছিস?
-না
-উফফফ্, অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে।
-আর সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না চল।।

লামিসা হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলে,
-ভাইয়া এই এই দেখেন
-কি দেখবো কি (আয়ান)
-লামিসা শান্ত হয়ে বলো কি হয়েছে (সানভি)
-ইভা সাঁতার জানে না ও পানিতে ডুবে যাচ্ছে (লামিসা)
-সানভি আমার সাথে আয় (আয়ান)

আয়ান, সানভি কেউ ভালো করে সাঁতার জানে না কিন্তু ইভার জন্য পানিতে দুজনে নেমে গেলো।
আয়ান ইভাকে বাঁচাতে গিয়ে আয়ান ডুবে যাচ্ছে। আশেপাশের লোকজন ওদের উদ্ধার করে পড়ে নিয়ে আসলো।
আয়ান, সানভি ঠিক আছে কিন্তু ইভা ঠিক নেই। ইভার চোখে মুখে আয়ান পানি ছিটাচ্ছে। হাতের তালু ও পায়ের তলা লামিসা, রাহি,, ঈশিতা মালিশ করছে।

চলবে,,,,,

Your Lover পার্ট- ৩+৪

0

#Your_Lover
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_৩+৪

“”ঠাসসসসস্ ঠাসসসস্””
-তোর লজ্জা করে না এই মুখ নিয়ে আমার সামনে আসতে? আর কতো ছেলেদের নিয়ে খেলবি।
-আয়ান তুমি এসব কি বলছো? তোমার মাথা ঠিক আছে।
তৃষা বললো,
-তোমার মতো খারাপ মেয়েকে আয়ান এখনও সহ্য করে মাথা ঠিক রেখে কথা বলছে।
-আমাদের মধ্যে তুমি একদম কথা বলতে আসবে না।
-তুই নষ্টামি করতে পারবি আর কেউ বললেই দোষ? তোর সাথে কিছু দিন একটু ভালো ভাবে কথা বলছি বলে ভেবে নিয়েছিস তোকে আমি ভালোবাসি?
-আরে আমাকে একটু বলবে আমি কি করছি? আর আমাকে ভালোবাসো না?
-এই আয়ান চৌধুরীর ভালোবাসা পাওয়া এতো সোজা না। নে দেখ তুই কি কি করেছিস।
আয়ান কিছু ছবি ইভার গায়ে ছুড়ে মেরে বলে,
-দেখ তুই কি করছো? এবার কি বলবি তুই এসব করিস নি?
ছবিগুলো দেখে ইভার চোখ ঝাপসা হয়ে গেছে। এসব দেখার আগে মরে গেলে ভালো হতো। ছবি গুলোতে দেখা যাচ্ছে অন্তরঙ্গ ভাবে রাইয়ানের সাথে জড়িয়ে আছে। কিন্তু এটা তো অসম্ভব। রাইয়ানকে বরাবর ইভা এভয়েড করে গেছে তাহলে এসব কি করে হলো। আর আয়ান সব কিছু জানা সত্বেও এসব বিশ্বাস করলো।
-কি হলো বল তোকে এসবের পরও বিশ্বাস করবো?
-আমি এসব করি নি।
-আমার চোখের সামনে থেকে সরে যা।

ইভার কিছু না বলে কাঁদতে কাঁদতে কলেজ বেরিয়ে যেতে লাগলো তখন লামিসা আর ঈশিতার সঙ্গে দেখা হলো,,
-কি রে তুই কই যাচ্ছিস? (লামিসা)
-বাসায় যাবো। (ইভা)
-তোর কি হয়েছে দোস্ত? তোর চোখ মুখের এমন অবস্থা কেনো? (লামিসা)
ইভা আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলো না। ওদের জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো।

-ইভু তোর কি হয়েছে খুলে বল? (ঈশিতা)

-রাস্তায় সবাই দেখছে, রেস্টুরেন্টে গিয়ে কথা বলি। (লামিসা)
কলেজের পাশে রেস্টুরেন্টে আছে সেখানে গিয়ে ওরা বসলো।।
একটা ছেলে এসে বললো,
-আফা কি খাইবেন কন?
-আজকে আমরা কিছু খাবো না। (লামিসা)
-ক্যান আফা?
-বাসা থেকে খেয়ে আসছি, ক্লাস এখন নাই তাই আসছি (ঈশিতা)
-ওহ্ আইচ্ছা।
ছেলেটা চলে যাওয়া পর ইভা আজকের সব ঘটনা ওদের খুলে বলে । খুব কান্না কাটি করছে।
-শান্ত হ। কিছু একটা রহস্য আছে তার জন্য আয়ান ভাইয়া তোর সাথে এমন করেছে (ঈশিতা)
-তাই বলে এসব কি করে বিশ্বাস করলো? (ইভা)
– প্যচ প্যচ কান্না না করে রাইয়ান কে ধরতে পারিস নি যে ও কেনো এমন করছে? (লামিসা)
-তুই নরম হয়ে থাকিস বলে সবাই তোকে পার পেয়ে বসে(ঈশিতা)
-দাড়া আমি সানভিকে কল করে দেখি ও এসবের কিছু জানে কি না?(লামিসা)
সানভি কলেজে ঢুকবে তখন লামিসা কল করায় কলেজে না গিয়ে রেস্টুরেন্টে আসে। লামিসা সব কিছু সানভিকে বলে৷ সানভিও বিশ্বাস করতে পরছে না যে আয়ান এমন করতে পারে। ইভা তো এখনও কেঁদে যাচ্ছে।
– লক্ষ্মী বনু তুই কাঁদিস না। সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে (সানভি)
-কি ঠিক হবে ভাইয়া?আমি সবার কাছে কতো খারাপ হয়ে গেছি( ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিলো আর কিছু বলতে পারলো না)
-তোমরা ওকে বাসায় নিয়ে যাও। আমি আয়ানের সাথে কথা বলে দেখছি(সানভি)

ঈশিতা, ইভা,লামিসা বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিলো।
আয়ান রাইয়ানের সাথে কথা বলছে তখন সানভি উপস্থিত হয়ে শুনে,
-এবার বিশ্বাস হলো তো? (রাইয়ান)
-হ্যাঁ (আয়ান)
-আয়ান তুই এসব কি বলছিস? তুই এই ফালতুটার কথা বিশ্বাস করে খুব বড় ভুল করবি (সানভি)
-তোর বোনকে বিশ্বাস করে ভুল করেছি ,(আয়ান)
-তোর বোন বলে ইভা ধোয়া তুলসীপাতা হবে তা ভাবিস না (রাইয়ান)
-মুখ সামলে কথা বল রাইয়ান (সানভি)
-যা বলছি ঠিক বলছি (রাইয়ান)
-এই তুই এখন থেকে যা তো (সানভি)
রাইয়ান বাকা হাসি দিয়ে চলে গেলো।

-দোস্ত তুই আমাকে ভুল বুঝিস না, আমি যা করছি সব মাথা ঠান্ডা রেখে বুঝেশুনে করেছি (আয়ান)
-কেনো কি এমন হয়েছে যার জন্য ইভার সাথে খারাপ আচরণ করলি (সানভি)
-তুই চল আমার সাথে (আয়ান)

ইভা বাসায় গিয়ে রুমের দরজা লক করে শুয়ে পরলো। চোখের পানি কোনো বাধা মানছে না। আয়ান কথা দিয়েছিলো যেকোনো পরিস্থিতিতে ইভার পাশে থাকবে, ভুল বুজবে না তাহলে আজ কেনো এমন করলো? এতো দিন কি সব কিছু ভালোবাসার অভিনয় ছিলো?

ইভার ফোনে আননোন নাম্বার থেকে একটা মেসেজ আসে “” আয়ান তোমাকে ভালোবাসে না। ওর মিথ্যা ভালোবাসার জালে তোমাকে ফাঁসিয়েছে। তুমি চাইলে তোমাকে আমি অাপন করে নিবো “”

“”কোনো একটা রহস্য আছে তাই না””?????

চলবে,,,

#Your_Lover
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_৪

মেসেজটি দেখে ইভা ফোন অফ করে অজস্র কান্নায় ভেঙ্গে পরলো। খুব মনে পরছে আয়ানের সাথে প্রথম দেখা হওয়া।
কলেজের প্রথম দিন নবীন বরন অনুষ্ঠানে অনেক বেশি এক্সাইটেডের জন্য ঘুম থেকে উঠতে লেট হলো। তাড়াহুড়ো করে কলেজে উদ্দেশ্য বেরিয়ে পরে আর পরোনের সাজ ছিলো পিংক কালারের থ্রি-পিস, হালকা লিপস্টিক, কানে ঝুমকো। কলেজে গিয়ে দেখে সবাই বসে পরেছে। লামিসা, ঈশিতা, রাহি ওদের খুঁজতে আছে কিন্তু ওরা যে কোথায় বসে আছে এতো লোকের মাঝে তা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। একটা মেয়ে এসে বললো,
-ফাস্ট ইয়ার নাকি?
-হুম
-এটা তোমার জন্য (একটা গোলাপ ফুল দিলো)
-আমার জন্য কেনো?
-বড় আপু হিসাবে এটা আমি তোমাকে দিতেই পারি।
-ধন্যবাদ আপু।
-আপু সামনে সিট খালি আছে ওখানে গিয়ে বসো।
-না আপু। আমি আমার ফ্রেন্ডের সাথে বসবো।
-এখানে আর কোনো জায়গা ফাঁকা নেই তো কোথায় বসবো বলো?
-তাও ঠিক চলুন কোথায় বসার জায়গা আছে।

স্টেজের সামনের সিটে ইভাকে বসার জায়গা দিলো। ওর ফ্রেন্ডা ওর পিছনের সিটে বসে আছে। পাশের কাউকে চিনে না বলে খুব আনইজি ফিল করতেছে। তাও কিছু করার নেই বসতে হবে।

স্যারদের লেকচার দেওয়া শেষ তারপর সিনিয়ররা একে একে লেকচার দিচ্ছে তার মধ্যে আয়ান ছিলো। ইভা তো হা করে তাকিয়ে আছে, যেমন সুন্দর দেখতে তেমন সুন্দর কথা বলার স্টাইল। পাশে বসে থাকা মেয়েরা বলছে, দেখ দেখ ছেলেটা কি সুন্দর তাই না! স্যারদের লেকচার শুনতে খুব বিরক্ত লাগছিলো কিন্তু এই ছেলেটার লেকচার অনেক ভালো লেগেছে। আরও অনেক কথা বলেছে৷
ভাষন পর্ব শেষ হওয়ার পর সবাইকে একটা রজনীগন্ধা আর গোলাপের স্টিক দিচ্ছে কিন্তু ইভাকে রজনীগন্ধার সাথে সাতটা গোলাপ দিচ্ছে।
-একি আপু আমাকে এতোগুলা গোলাপ দিলে?
-ভালোবেসে দিলাম আর হ্যাঁ কলেজে কখনও কোনো সমস্যা পরলে আমাকে ডেকো।
-কিন্তু আপু,,,,
-কোনো কিন্তু না। তোমার নাম কি তা জানা হলো না?
-ইভা, তোমার নাম কি?
-নওশিন।
-আমার ফোন নাম্বার টা নেও ০১৭********
-ওকে।

ইভা কিছুক্ষন ফ্রেন্ডের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসায় রওনা করবে তখন সানভি এসে বলে,
-কি রে কলেজে প্রথম দিন এসে প্রোপজ পেলি?
-না রে, একটা আপু দিয়েছে।
-তুই যে বলদী তা কি এখনও সে বুঝে নাই?
-কে বুঝবে? আর আমাকে তোর বলদী মনে হলো কেনো?
-তুই আমার বলদী কেন হবি, তুই তো আয়,,,,,,,
-কিহ্?
-কিছু না চল তোকে বাড়িতে দিয়ে আসি?
-সব সময় খালি আজেবাজে কথা।
-কথা কম বলে বাইকের উপর উঠ।
-না আমি তোর সাথে যাবো না।
-উঠবি নাকি ফুপিকে কল করে বলবো, তুই ছেলেদের সাথে ডেটিং করতেছো।
-যা বল
-ওকে বোনটি তোর কথা আমি না শুনে পারি নাকি, পরে কেলানি খেলে আমার দোষ না।
-হয়ছে, তোকে ফোন করতে হবে না এবার চল।

সানভি ইভাকে বাসায় পৌছে দিলো। কলেজে প্রথম দিনে যা হয়েছে তা সব ইভার আম্মু আর ছোট বোনকে বলে নিজের রুমে গেছে তখন ফোনটা বেজে উঠে। আননোন নাম্বার তাই প্রথম বার রিসিভ করলো না দ্বিতীয় বার রিসিভ করতে ওপার থেকে পরুষ কন্ঠে বলে,
-আসসালামু আলাইকুম
-ওয়ালাইকুম সালাম। কে আপনি?
-ভালোবাসার সাত গোলাপ।
-কিহ্
-কিছু না, আসল কথা বলি তুমি কালকে থেকে কলেজে হিজাব পরে যাবে।
-আজব তো?কে আপনি?
-ইউর লাভার
-মানে কি?
-এতো কিছুর মানে তোমাকে বুঝতে হবে না। যা বলছি তা করলে হবে
-আপনার কথা শুনতে আমার বয়ে গেছে।
-আমার কথা না শুনলে খুব খারাপ হবে।
-কি খারাপ হবে আমিও দেখে নিবো বলে ইভা কল কেটে দিলো।
ধুর এসব কিছু ফালতু ছেলেদের জন্য সব ছেলেদের বদনাম হয়। সানভি ভাইয়া, সীফাত ভাইয়া এরা কতো ভালো এদের বদনাম কেউ কোনো দিন করতে পারবে না আর এইসব ধ্যাত ব্ল্যাকলিসটে নাম্বারটা রেখে দেই।

আয়ান ইভার বাসার রাস্তার মোড়ে গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে সানভির জন্য কিন্তু ওর দেখা নাই। কিছুক্ষণ পর এসে,
-সরি দোস্ত তোকে ওয়েট করানোর জন্য, একটা কাজে গিয়ে ছিলাম
-লামিসাদের বাসা কোথায় সেটা দেখতে গিয়েছিলি আর কি কাজ থাকবে?
-এই জন্যই তুই আমার বেষ্ট দোস্ত, তোকে কিছু বলে দিতে হয় না সব বুঝে যাস।
-হ্যাঁ, শালা
-আমি তোর শালা হলাম কবে থেকে?
-আজকে থেকে।তোর এতো কিউটের বস্তা বোন আছে আগে বলিস নি কেনো তাহলে কোন জন্মে শালা হয়ে যেতি।
-তুই ইভার প্রেমে পরেছিস নাকি?
-শুধু প্রেম না ভালোবেসে ফেলেছি।
-তা বুঝলাম কিন্তু ওরে বাসায় পৌঁছে দিতে বললি কেনো?
-তুই তো জানিস রাইয়ান কেমন ছেলে আর ওর সাথে ছেলেগুলো ওদের খারাপ ইঙ্গিত করেছে। রাস্তাঘাটে কি করে বসে তাই তোকে বাসায় পৌঁছে দিতে বলছি,,,,
-কিন্তু তুই কতোদিন এভাবে দেখে রাখবি।
-যতো দিন আয়ান চৌধুরী বেঁচে আছে ততোদিন ইভাকে বৌ হিসেবে আর লামিসাকে বোন হিসেবে দেখে রাখবো। আর তুই তো আছিস আমার কলিজার দোস্ত।
-ওল্লে বাবা লে, যে আয়ান মেয়ের দিকে তাকাতো না কোনো মেয়েকে পাত্তা দিতো না আর সে এখন প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে
-তোকে শালা বানানোর ইচ্ছে ছিলো তা পূরন হলো।

ওরা দুজনে কথা বলে যে যার বাসায় চলে যায়।

রাত১০টা দিকে আয়ান ইভাকে কল দিলো বাট নাম্বার ব্ল্যাকলিসট। অন্য নাম্বার দিয়ে কল করে,
-কি গো সোনা পাখি তুমি আমার নাম্বার ব্ল্যাকলিসটে রেখেছো কেনো?
-ব্ল্যাকলিসটি নাম্বার রাখে কেনো তাও জানেন না?
-জানি তো তাই অন্য নাম্বার দিয়ে কল করেছি কিন্তু তুমি জানোনা যে আমার শত শত নাম্বার আছে তাই এটা ব্ল্যাকলিসটে রেখো না।
-আপনার কি খেয়েদেয়ে কোনো কাজ নেই আমার পিছে কেনো পরে আছেন?
-আমি তোমার সামনে বা পিছে পরে নেই শুধু তোমার প্রেমে পরেছি।
-অসহ্য।
আরও অনেক কথা বলে ঘুমিয়ে পরে। সকালে কলেজে রওয়া করে তখন ইভা গাড়ির লুকিং গ্লাসে দেখে পিছে একটা বাইক ফলো করে, হেলমেট পরে থাকায় মুখ দেখতে পায় না।

কলেজে ঢুকতে একটা পিচ্চি ছেলে এসে বলে,
-আপু এটা তোমার জন্য।
-এটি কি আর কে দিয়েছে?
-ওই যে ভাইয়াটা দিয়েছে
আসেপাশে কোনো ভাইয়কে দেখতে পেলাম না।
-কই এখনে কেউ নেই
-একটু আগেই ছিলো।
পিচ্চিটা প্যাকের দিয়ে দৌড় দিলো আর কিছু জিজ্ঞাসা করতে পারলাম৷
দুটো ক্লাস করে রেস্টুরেন্টে খেতে গেলো। চাওমিন আর কোকাকোলা ওর্ডার করলো। সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছে তখন ইভার চোখ গেলো পেপার দিয়ে মুখ ঢেকে রাখা,চোখে সানগ্লাস পরে আছে একটা ছেলের দিকে। অনেক টা সময় ধরে এভাবে তাকিয়ে আছে। খাওয়া শেষ করে বিল দিতে গিয়ে,
-ম্যাডাম আপনার টাকা দেতে হবে না। এই রেস্টুরেন্টের মালিক আপনার থেকে টাকা নিতে বারন করেছে?
-মালিক কে? আর কেনো বা আমার থেকে টাকা নিবে না?
-এসবের কিছু আমি জানি না।
-আপনি কাজ করেন আর আপনি জানেন না এটা কেমন কথা? আর আমি একা টাকা দিচ্ছি না আমরা চার জন মিলে দিচ্ছি।
-আপনারা চার জন দিবেন নাকি দশ জন দিবেন তা আমার জানান দরকার নেই৷ টাকা রাখতে পারবো না শুধু এতোটুকু জানি।
টাকা নিয়ে চলে এসছি। আমারা সাথে কে এসব করছে কিছু বুঝতে পারছি না ধুর ভাল্লাগে না।
বাসায় গিয়ে প্যাকেটা খুলে দেখে দশটা হিজাব সাথে অনেক পিন, বরুজ রয়েছে। হিজাবে সবগুলো কালার সুন্দর। তার চয়েজ আছে বলতে হবে। গতো কাল যে কল করেছিলো সে এস করেছে জানি তাকে একটা দেই,
-হ্যালো সুইটহার্ট, আমি জানতাম আমাকে কল দিবে
-আপনি কি করে জানলেন?
-ম্যাজিক। বলো তোমার হিজাবগুলো চয়েজ হয়েছে
-হ্যাঁ আপনারা চয়েজ অনেক সুন্দর।
-কালকে থেকে হিজাব পরে কলেজে যাবে।
-আমার সামনে এসে যদি এসব বলতে পারেন তাহলে আপনার কথা শুনবো।
-সময় মতো সামনে আসবো।
-আপনি কেনো এমন করেন?কি চাই?
-চাওয়াটা পরে বুঝে নিবো। এখন রাখছি।

যাহ্ বাবা কোনো কথাই তো বলতে পারলাম না। মানুষটা কেমন জানি অদ্ভুত।
এভাবে কিছুদিন কেটে যায়। প্রতিদিন দু তিন বার ইভাকে আয়ান কল করে। ইভা খেয়াল করে মাঝে মাঝে আয়ান ওর আশেপাশে থাকে কিন্তু খারাপ কোনো উদ্দেশ্য দেখে না বলে কিছু বলতে পারে না।

কলেজে থেকে সিনিয়র -জুনিয়ররা মিলে কক্সবাজার ট্যুরে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। যারা যাবে তাদের নাম লিস্টে করেছে। ইভার নাম লিস্টে দেখে আয়ান মুচকি হাসি দিয়ে সানভিকে বলে,,,,
-এবার ইভাকে ভালোবাসার কথা জানানোর সময় এসেছে আর কোনো লুকোচুরি না।

চলবে,,,,

Your Lover পার্ট-১+২

0

#Your_Lover
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_১+২

ঘুমের মধ্যে বুজতে পারছি আমার কপালে কেউ চুমু দিচ্ছে।চোখের উপর আলো পরছে। চোখ মেলে ভূত দেখার মতো অবস্থা হলো,

-আমি আয়ান, কুল বেবি। চিৎকার দিয়ে আমার বারোটা বাজিয়ে দিয়ো না
– তু-তু-তুমি, এতো রাতে আমার বেডরুমে কি করছো?কি ভাবে আসছো?
-সে অনেক কষ্ট করে আসছি।
-কেনো? কেউ যদি দেখে ফেলে তাহলে কি হবে?
-কেউ দেখবে না। সব ব্যাবস্থা করে এসেছি।
-তুমি এক্ষুনি বের হও
-হ্যাঁ বের হবো তবে, তোমাকে নিয়ে যাবো।
-আমি কোথাও যাবো না।
-যাবে না মানে কি, তোমাকে যেতেই হবে।
-কেউ যদি দেখে,,,,,,
-চুপ!!!!!! আমার সাথে এসো।

বেলকনিতে মই দিয়ে রেখেছে নিচে নামতে সুবিধা হলো সাথে ওর ৩টা ফ্রেন্ড ছিলো। বাইকে ওঠার সাথে সাথে ফুল স্পিড বাইক স্টার্ট দিলো মনে হলো হাওয়ায় ভাসছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই একটা বাড়ির সামনে আসলাম। কিছুটা ভয় নিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম,
-এটা কার বাড়ি? আর আমাকে এখানে কেনো নিয়ে আসছো?
-ভূতের বাড়ি। তোমাকে রেখে যাবো
-প্লিজ না না না। আমি এখানে থাকবো না
– থাকবো না বললেই তো হবে না।
-আমি চিৎকার করবো কিন্তু
-করো। তোমার চিৎকার কেউ শুনবে না

আমাকে কিছু একটা করতে হবে। যে ভাবে হোক এখান থেকে বের হবো। তবে কি করবো বুঝতে পারছি না। হ্যাঁ দৌড় দিয়ে পালিয়ে যাবো। রেডি ওয়ান, টু,থ্রি দৌড়। কি হলো আমি দৌড় দিতে পারছি না কেনো?
-কি পালিয়ে যাবে, তা হবে না। আমি জানতাম তুমি পালিয়ে যেতে চাইবে তাই বাইক থেকে নেমে তোমার হাত ধরে রাখছি। তুমি খেয়াল করো নি।
-কুত্তা, গন্ডার, বান্দর তোরে ভূতে ধরবে। তোর ঘাড় মটকাবে (মনে মনে বলতে আছি)
-আমার ঘাড় মটকাবে না।
-জোড়ে তো বলি নাই তাহলে শুনলে কিভাবে? (এই যাহ্ আমি মনে মনে এগুলো বলছি তা শিকার করে ফেললাম ধুর ভূতের ভয় সব বুদ্ধি শেষ)
-ভূতের সাথে প্রতিদিন দেখা করি তাই জানি কিভাবে মানুষের মনের কথা জানা যায় বুঝলে ম্যাডাম।
-আচ্ছা ভূতটা কি ছেলে নাকি মেয়ে?
-গেলে দেখতে পাবে। আর একটা কথাও বলবে না।

কথা বলতে বলতে বাড়ির ভিতরে ঢুকলাম। চারদিকটা অন্ধকার আমার খুব ভয় লাগছে। আল্লাহ আমাকে বাঁচাও।
-লাইট অন করো, আমার খুব ভয় লাগছে।

-কি হলো কথা বলো না কেনো?

-আয়ান আয়য়য়য়ান আয়য়য়য়ান। কোথায় তুমি? প্লিজ আমার কাছে আসো।

-এই ভূতের বাড়িতে যদি আমি মরে যাই সত্যি তোর ঘাড় মটকাবো। ঔ আয়ানের বাচ্চা আমার সামনে আয়। তোর ভালো হবে না। একা একা কথা বলতে বলতে মনে হলো আমাকে কেউ জড়িয়ে ধরলো। আমাকে ভূতে ধরে ফেললো,
-প্লিজ আমাকে ছেড়ে দেন।

লাইট অন হলো। আমি আয়ানকে জড়িয়ে ধরে আছি,

-হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন ডে মাই সুইটহার্ট।

আয়ানে ফ্রেন্ড নিলয় বলে উঠলো,
-আমরা যে এখানে সেটা ভুলে যাস না।
-এবার ওদের একা ছেড়ে দে,চল আমরা বাড়ির বাগানে গিয়ে বসি। (সানভি)
নিলয়, রাফসান, সানভি চলে গেলো।

-ভয় দেখানোর জন্য সরি।
-আমাকে এতোক্ষণ ভয় দেখিয়ে এখন আসছো। নি কুছি করি তোর ভ্যালেন্টাইন।
-তোমার হাতে ফোন ছিলো, ফ্ল্যাস লাইট অন করতো পারো নি। আমি এতোকিছু করলাম তুমি উপভোগ করবে বলে তা না মাথা মোটার মতো চিল্লাপাল্লা করছে।
-আমি কি জানি তুমি এতো এতো সুন্দর সারপ্রাইজ দিবে।
চারদিকে গোলাপ ফুল আর ফুল সাথে একটা কেকও আছে।
-কোথায় শুনছো সারপ্রাইজ জানিয়ে দেয়।
-তাই বলে আমাকে ভয় দেখাবে?
-মাঝে মাঝে ভয় দেখানো ভালো নয়তো বুঝবো কিভাবে আমাকে হারানোর ভয় তুমি পাও কি না।
-তুমি আমার জন্য আছো, সারা জীবন এভাবে থাকবে। আর হারানোর ভয় কেনো পাবো, বিশ্বাস আছে তো।
-পাকা বুড়ি হয়ে গেছো। কে বলবে একটু আগে বাচ্চাদের মতো করছো।
-ইসসস্ কি লজ্জা।
-ওরে আমার লজ্জাবতী বউ।
-হুম
আয়ান ইভার হাতের একটা ডায়মন্ডের রিং পরিয়ে দিলো।
-শুনো এই রিংটা কখনও হাত থেকে খুলবে না, আমাকে যদি ভোলার চেষ্টাও করো তাহলে এটা তোমাকে ভুলতে দিবে না সব সময় আমাকে মনে করিয়ে দিবে।
-এতো দামি গিফট আমি নিতে পারবো না, যদি হারিয়ে যায়।
– হারিয়ে গেলে যাবে শুধু তুমি হারিয়ে না গেলে হবে।
– কিন্তু আমি তোমাকে আজকের দিনে কোনো গিফট দিতে পারলাম না।
-আমার এতো সুন্দর গাল তোমার কাছে আছে আর তুমি বলো গিফট দিতে পারলে না। উম্মাহ্ দিয়ে দেও গিফট হয়ে যাবে।
-না অন্য কিছু দিবো
-আরো বেশি কিছু আগে বলবে তো আমি রেডি আছি।
-নির্লজ্জ, অসভ্য।
-শুধু তোমার কাছে, আমার গিফট আমাকে দিয়ে দেও।
-উম্মাহ্
-আর একটা হবে নাকি
-মোটেও না।
-কিপটে
-বিয়ের পর কিপ্টেমি করবো না।
-চলো বিয়ে করে ফেলি।
-বিয়ে করার সময় আসে নি।
-তাও ঠিক ।
-আচ্ছা এটা কি সত্যি কোনো ভূতের বাড়ি?
-আরে না পাগলী, এটা আমাদের বাড়ি তবে এখানে কেউ থাকে না।
-ওহ্ আমি সত্যি ভাবছি আমাকে ভূতের কাছে রেখে যাবে।
-হাহাহাহা, তোমার ভাবনা সত্যি করলে কেমন হয়?
-খুব খারাপ, আমি কেঁদে দিবো কিন্তু
-আচ্ছা মজা করছি।
-আমাকে বাসায় পৌঁছে দেও।
-এতো তাড়াহুড়ো কিসের? কেক কাটা হয় নি, বিরিয়ানি খাওয়া হয় নি। এসব খাওয়া কমপ্লিট করো তারপর বাসায় দিয়ে আসবো।
-আমার ক্ষুধা নেই , তুমি খাও
-আমি তো খাবোই । আর তোমাকেও খেতে হবে।
-হুহ
-আমাকে খাইয়ে দেও।
-হুম,

আমি আয়ানকে খাইয়ে দিয়েছি আর আয়ান আমাকে খাইয়ে দিয়েছে। আয়ানকে যত দেখি তত মুগ্ধ হয়ে যাই মানুষটা কি করে এতো ভালোবাসতে পারে। কিন্তু মাঝে মাঝে একদম ভিলেনের মতো করে।
-কি ম্যাডাম কোথায় হারিয়ে গেলে?
-তোমার ভালোবাসার জগতে।
-সেটা আবার কোথায়?
আয়ানকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকের হৃৎস্পন্দন শুনে বললাম,
-তোমার এখানে,
-তাই বুঝি।
-হুম তাই, সারা জীবন আমাকে আগলে রেখো।
-যদি না রাখি?
-না রেখে যাবে কই হ্যাঁ। আমি একটা ভূতের বাড়ি খুঁজে সেখানে গিয়ে ভূতের সাথে কথা বলে ভূত হয়ে তোমার ঘাড় মাটকাবো হুহ।
-হাহাহা, তোমার ভূত হতে হবে না। তুমি আমার রানী হয়ে থাকবে।
-হ্যাঁ
-এখন চলো বাড়ি যাওয়া যাক
-হুম

চলবে,

#Your_Lover
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_২

আয়ান আমাকে আমার বাড়ি সামনে নামিয়ে দিয়ে বললো,
-ভালোবাসি সোনা পাখিটা
-আমিও
-আজকে কলেজে যাবে না কিন্তু
-কেনো যাবো না?আমরা ফ্রেন্ডরা কতো প্ল্যান করছি আজকের দিনটা নিয়ে।
-আমি তোমাকে সারপ্রাইজ দিলাম তাতে কি মন ভরে নি?
-হুম অনেক ভালো লেগেছে, অনেক খুশি আমি।
-যতোটুকু খুশি হয়ছো ততোটাই নিয়ে সন্তেষ্টো থাকো। আমি যদি শুনি তুমি আজকের দিনে বাসা থেকে বের হয়েছো তাহলে তোমার ঠ্যাং ভেঙ্গে গুড়ো করে ভর্তা করবো।
-এমন করো না প্লিজ।
-আর একটা কথা বললে যা বলছি তাই করবো।এটা রাখো (হাতে একটা চিরকুট দিলো) বাসায় যাও গিয়ে ঘুমাও।
-হুম।

হাতি,গন্ডার, রাক্ষস, কুমির একটু সময় লাভার থাকে বাকি সময় ভিলেন থাকে। আমার জীবনটা তেজপাতা বানিয়ে দিলো।

-আর বিড়বিড় না করে আস্তে আস্তে উপরে উঠে৷
-হুহ (মনে মনে কথা বলে ও শান্তি নাই মনের কথা গুলো ও শুনতে পায় যে কিভাবে আল্লাহ্ জানে)

ইভা বাসায় এসে চিরকুট টা পড়া শুরু করলো,

“” আমাদের ভ্যালেনটাইন ডে আর পাঁচ জনের মতো করে সেলিব্রেট করি নি স্পেশাল করছি কারন তুমি আমার কাছে স্পেশাল তাই আমি চাই না তুমি আজকের দিনে অন্য মেয়েদের মতো বাসা দিয়ে বার হও। তোমাকে আমি কতোটা ভালোবাসি তা বলে বোঝাতে পারবো না। রাগ করো না সোনা পাখিটা “”

-পাগল একটা।
চিরকুটটা পড়ে ইভার মুখে হাসি ফুটলো।ফ্রেন্ডের সাথে সময় কাটাতে পারবে না বলে আর আয়ানের প্রতি কোনো রাগ থাকলো না।

ঘুমিয়ে গেলো আর আয়ান বন্ধুদের সাথে মিট করে বাসায় গিয়ে ঘুমালো।

এবার আয়ানের পরিচয় দেই,,,,
শহরের বড় বিজনেস ম্যান আয়মান চৌধুরী ও হাউজ ওয়াইফ সামিহা বেগমের একমাএ ছেলে আয়ান চৌধুরী আর একমাত্র মেয়ে আয়েশা চৌধুরী।
আয়ান অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে আর আয়েশা ক্লাস টেন পড়ুয়া ছাএী। দুই ভাই বোনের সম্পর্ক টম&জেরির মতো।

আর ইভার পরিচয়,
বিজনেস ম্যান সাইফুল চৌধুরী ও হাউজ ওয়াইফ নাজমিন বেগমের বড় মেয়ে ইভা চৌধুরী আর ছোট মেয়ে রাইসা চৌধুরী ।
ইভা ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে পড়ে আর রাইসা অষ্টম শ্রেনীতে পড়ে। দুই বোনের সম্পর্ক খুব ভালো।

দুপুর ২টা বাজে ইভার ঘুম ভাংগে। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে তার ফ্রেন্ডারা অনেক বার কল দিয়েছে। ইভার বরাবর অবভ্যাস ফোন সাইলেন্ট করে রাখা। এই বদঅভ্যাসের জন্য আয়ান অনেক বকাঝকা করেছে তাও কোনো লাভ হয় না সেই সাইলেন্ট করেই রাখে। ইভার বেষ্ট ফ্রেন্ড লামিসাকে কল দিলো,
-আসসালামু আলাইকুম।
-ওয়ালাইকুম সালাম। অবশেষে আপনার ঘুম ভাঙলো?
-তুই কি করে জানলি আমি ঘুমাই ছিলাম।
– রাতের বেলা ভ্যালেনটাইন ডে সেলিব্রেট করলে দিনের বেলা ঘুমায় থাকার ই কথা।
-সানভি ভাইয়ার সাথে আজকে কোথাও ঘুরতে যাস নি?
-এখন কথা ঘুরানো হচ্ছে। তুই আমরা বেষ্টু না।
-আরে বেষ্টু পাখি রাগ করিস না। তুই তো সব জানিস কালকে কি কি হয়েছে।
-হুহ,
-রাগ করসি না।
– হ্যাঁ তোর উপর আমি রাগ করে থাকতে পারি নাকি।
-এই জন্যই তো তুই আমার বেষ্টুনী।
-শোন, সানভির সাথে আমারও দেখা হয়েছে আরও,,,,,
-তুই বিকেলে আমার বাসায় আসিস। অনেক গল্প করা বাকি আছে।
-আচ্ছা আসবো৷ এখন রাখছি।
-হুম।

ইভার মামাতো ভাই সানভি। আর সানভির সাথে লামিসার রিলেশন আছে। আয়ানের বেষ্ট ফ্রেন্ড সানভির জন্য রাতের ঘটনা ভালো ভাবে সম্পূর্ণ করতে পারছে।

এবার আয়ানকে কল দিয়ে দেখি কি করে। রিং হচ্ছে কিন্তু রিসিভ করতেছে না। তিন বার কল দেওয়ার পর রিসিভ করলো,
-এতো সকালে কেনো কল দিছো?
-দুপুর ২টা কি সকাল নাকি? এখন উঠো
-পরে উঠবো।
-উঠবা নাকি আমি ফ্রেন্ডের সাথে ঘুরতে যাবো?
-এটা কোন ধরনের ব্ল্যাকমেইল ইভা?
-ভালোবাসার ব্ল্যাকমেইল
-একটু শান্তিতে ঘুমাতেও পারি না।
-না পারবে না
-শুনো সন্ধ্যা বেলা একটা পার্টি আছে তোমার সাথে রাতে কথা বলবো। টাইম দিতে পারবো না তা আগে বলে দিচ্ছি পরে আবার রাগ ফুলিয়ে বসে থেকো না।
-আমাকে পার্টিতে নিয়ে যাবে?
-ঐ সব জায়গা তোমার জন্য না।
-কেনো কতো মেয়ে তো যাবে আমি গেলে দোষ কি?
-অনেক দোষ আছে।
-তুমি ঐসব মেয়েদের সাথে ঢলাঢলি করবে তাতে,,,,,,
-একদম বাজে কথা বলবে না। প্রয়োজন আছে বলে পার্টিতে যাবো।
-হ্যাঁ আমি কিছু বললেই তো গায়ে ফোঁসকা পরে।
-কলিজায় লাগে, এতো দিনেও আমাকে চিনতে পারো নি৷
-আমার খারাপ লাগে তেমন কোথাও যেতে পারি না তাই
-পার্টিতে যাওয়া এতো শখ তো একদিন নিয়ে যাবো।
-হয়ছে আমাকে নিয়ে যেতে হবে না। যাও ফ্রেস হয়ে খেয়ে নেও।
-হুম তুমিও।
-রাখছি,
– না শুনো
-বলো?
-রাগ করো না। আমি যা করি তোমার ভালোর জন্য করি, সব খারাপ জায়গা থেকে তোমাকে আগলে রাখতে চাই। ভালোবাসি ইভু পাখি।
-পাগল একটা।
-ইওর লাভার।
– ভালোবাসি।

সামিহা বেগম আয়ানকে ডাকতে এসে তার ছেলে কাউকে পাগলের মতো ভালোবাসে তা বুঝতে পারলো। রুমে না ঢুকে চলে গেলেন ।

বিকেলে ড্রয়িং রুমে বসে নাজমিন বেগম টিভি দেখতে আছে তখন লামিসার আগমন,
-আসসালামু আলাইকুম আন্টি।
-ওয়ালাইকুম সালাম৷ এতো দিন পর মনে হলো আন্টির কথা।
-আপনিও তো আমাকে ভুলে গেছেন
-আমি কয়েক দিন আগেও তোদের বাসায় গেছিলাম তখন তুই বাসায় ছিলি না।
-ওই আর কি।
লামিসার গলাশুনে ইভা ড্রয়িং রুমে এসে বললো
-কি রে কখন এলি।
-এই মাএ।
-চল ছাদে যাই।
নাজমিন বেগম বলে উঠলো,
“” বুদ্ধি শুদ্ধি সব গেছে নাকি, মেয়েটা কতো দিন পর আমাদের বাড়ি এসেছে কিছু না খেতে দিয়ে ছাদে যাওয়ার কথা কিভাবে বলিস, তুই বস মা আমি আসছি”””
-আম্মু সবসময় আমাকে বকবে না।
-বকা খাওয়া কাজ করিস বলে তো,,,,
-তুমি যাও কিছু নিয়ে আসো।

লামিসা আর ইভা গল্প করা শুরু করে দিলো,
-তুই কখন সানভি ভাইয়ার সাথে দেখা করছো?
-তোরা দেখা করার পর, সানভি গেছিলো গিফট দিয়ে চলে আসছে। বলছে পরশুদিন আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে ওর কি জানো কাজ আছে তাই আমাকে সময় দিতে পারবে না৷
– ওদের হঠাৎ করে কি যে এতো কাজ পড়েছে আল্লাহই জানে।

কফি আর আলুর পকোড়া নিয়ে ছাদে দু’জনে গল্প করতে থাকে। সন্ধ্যার পর লামিসা ওদের বাসায় চলে যায়।

আয়ান বন্ধুদের সাথে পার্টিতে গেছে।

রাতে আয়ান আর ইভা একে অপরের সাথে কথা বলে ঘুমিয়ে পরলো। সকালে ইভা কলেজে গিয়ে দেখলো,,,

তৃষা আয়ানের গাঁ ঘেষে দাড়িয়ে হেসে হেসে কথা বলছে । রাগি লুকে এগিয়ে যেতে আয়ান ইভার গালে

-ঠাসসসসসস্

চলবে,,,,,,

নিষিদ্ধ প্রেম শেষ পর্ব

1

? নিষিদ্ধ প্রেম ?

শেষ পর্ব

# writer : Shifa Afrien Mim

পিয়াস – সাবধানে কাজ করবা তো নাকি,,বসো এদিকে বলেই মুনিয়াকে একটা চেয়ারে বসিয়ে দেয়,,,, পিয়াস মুনিয়ার হাতে অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দেয়,,,

মুনিয়া – হইছে তো,,,, বেশি লাগেনি,, তোমার কফি বোধহয় ঠান্ডা হয়ে গেলো,,,

পিয়াস – হোক,,,, দেখেশুনে কাজ করতে পারো না আজিব,,,, কতটা জায়গা পুরে গেছে,,,

মুনিয়া – নেক্সট টাইম দেখে শুনেই করবো হয়েছে,,,,

পিয়াস – হুম ( মুনিয়ার নাক টেনে)

মুনিয়া পিয়াসের রুম থেকে চলে আসে,,,

রাতে সবাই একসাথে খেতে বসেছে,,, হটাৎ পিয়াসের মা মুনিয়ার বাবাকে বলে,,, ভাই,,, যদি কিছু মনে না করেন তো একটা কথা বলতে চাইছিলাম,,

মুনিয়ার বাবা – হ্যা বলো,,,

পিয়াসের মা – বলছিলাম যে মুনিয়াকে যদি একেবারে আমার মেয়ে বানিয়ে ফেলতে পারতাম,,,

মুনিয়ার মা – মানে ( বেশ চমকে)

পিয়াসের মা – তোমরা যদি রাজি থাকো তো,, মুনিয়াকে আমার পিয়াসের বৌ করে নিতাম,,,

মুনিয়ার বাবা – আরে এতে রাজি হওয়ার কি আছে,,, এটা তো অনেক ভালো একটা খবর,,, তুমি ভাবলে কি করে আমি রাজি হবো না,,, পিয়াসের মতো ছেলে হাতছাড়া করা মোটেই ঠিক হবে না,,,

পিয়াসের মা – আমরা তো সামনের সপ্তাহে চলে যাবো,,, এর আগেই যদি ওদের বিয়ে টা সেরে ফেলা যেতো,,,

মুনিয়ার মা – সে কি,,,,, বিয়ে বলে কথা এমন হুটহাট করে করা যায়,,, তুমি বরং আরও কয়েকটা দিন থাকো,,,

পিয়াসের মা – জানি ,,, কিন্তু যেতে যে হবেই,,,, আমরা বরং পরে এক সময় বড় করে পার্টি দিয়ে দেব,,, কি বলো ভাই ( মুনিয়ার বাবাকে,,)

মুনিয়ার বাবা – হ্যা,,, তা ঠিক,,

পিয়াসের মা – তাহলে পরশু দিন ঠিক করি,,, তোমার কোনো আপত্তি নেই তো,,,?

পিয়াসের মা – আচ্ছা ঠিকাছে,,,

পরদিন সকালে,,,

মুনিয়া আর পিয়াসকে ডাকে সবাই,,, মুনিয়া বেচারি তো ভয়ে প্রায় শেষ,,, তার মা বাবা কি যেনে গেলো তাদের ব্যাপার টা,,,,

মুনিয়ার বাবা – মুনিয়া,,, আমরা পিয়াসের সাথে তোর বিয়ে ঠিক করে ফেলেছি,,, তোর কোনো আপত্তি আছে?

মুনিয়া কি বলবে ভাষা হারিয়ে ফেলেছে,,, ভাবতেও পারছে না,,,,

মুনিয়ার মা – হয়েছে মা,, আর লজ্জা পেতে হবে না আমি জানি তোর আপত্তি থাকবে না,,,

মুনিয়ার বাবা – কালকে দিন ঠিক করেছি,,, আসলে পিয়াসরা চলে যাবে সামনের সপ্তাহে,,,

মুনিয়া মাথা তুলে পিয়াসের দিকে তাকাতেই পিয়াস চোখ মারে,,, মুনিয়া আরও লজ্জা পেয়ে যায়,,,,

পরের দিন,,, পিয়াস আর মুনিয়ার বিয়েটা ঠিকঠাক ভাবেই সম্পন্ন হয়ে যায়,,, রাতে মুনিয়া বৌ সেজে অনেক খন বসে আছে,,, হটাৎ পিয়াস রুমে আসে,, পিয়াসের উপস্থিতি বুঝতে পেরেই মুনিয়া যেনো বরফ হয়ে যাচ্ছে,,,

মুনিয়া ধীরে ধীরে উঠে পিয়াসের সামনে যায়,,, পিয়াসের পা ছুয়ে সালাম করতে নিলেই পিয়াস মুনিয়াকে আটকিয়ে ফেলে,,,,

পিয়াস – আজকাল এই সব কেউ মানে,,,?

মুনিয়া – আমি মানি,,, ( মাথা নিচু করে)

পিয়াস – জ্বিনা আপনাকেও মানতে হবে না,, তাছাড়া আপনার জায়গা আমার পায়ে না,, এইখানে,,,
বলেই মুনিয়াকে পিয়াস নিজের বুকে মিশিয়ে নেয়,,,,

পিয়াস- মুনি,,,

মুনিয়া – হ্যা,,

পিয়াস – রেডি তো,,, ( মুচকি হেসে)

মুনিয়া কিছু না বলে পিয়াসের কাছ থেকে চলে যেতে নিলেই পিয়াস মুনিয়াকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানার দিকে যেতে থাকে,,,,

পিয়াস – আজ তো তোমাকে আর ছাড়ছি না,,,,

❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤

সমাপ্ত

নিষিদ্ধ প্রেম part – 7 +8

0

? নিষিদ্ধ প্রেম ?

part – 7 +8

# writer : Shifa Afrien Mim

পিয়াস মুচকি হেসে দুহাতে মুনিয়ার মুখটা ধরে উঁচু করে বলে,,,,

পিয়াস – মুনি,,,, অনেক ভালোবাসি,,,

মুনিয়া পিয়াসের হাতে ব্যান্ডেজ করে দিয়ে বলে,,,

মুনিয়া – হয়েছে এবার যাও নিজের রুমে গিয়ে ঘুমাউ,,,,,

পিয়াস – উহুম,,,,, আমি আজ তোর সাথে এই রুমেই থাকবো,,,, (শয়তানি হাসি দিয়ে)

মুনিয়া – মা মা মানে,,,,, ( তোতলিয়ে)

পিয়াস – মানে হলো আজ আমি তোর সাথে ঘুমাবো ( মুনিয়ার বিছানায় বসতে বসতে)

মুনিয়া – ভাইয়া প্লিজ অশান্তি করো না,,,, ( অসহায় ভাবে)

পিয়াস – তাহলে আমার উত্তর টা দিয়ে দে,,, আমিও শান্তি তুইও শান্তি ( শান্ত গলায়)

মুনিয়া – কিশের উত্তর,,,?

পিয়াস – ঐ যে বললাম ভালোবাসি,,,,

মুনিয়া – তুমি বোঝতে পারতেছ না কেনো ভাইয়া,,,, আমাদের এই সম্পর্কটা কেউ মেনে নেবে না,,,,,

পিয়াস – এইসব আমার উপর ছেড়ে দে,,, এই সব নিয়ে তোর না ভাবলেও চলবে,,,,

মুনিয়া – ( মাথা নিচু করে চুপ করে আছে)

পিয়াস – মুনি,,,,, চুপ থাকা কিন্তু সম্মতির লক্ষণ,,,

মুনিয়া মুচকি মুচকি হাসছে,,,,, পিয়াস মুনিয়ার মুখে হাসি দেখেই যেনো রাজ্য জয় করার আনন্দ পেয়েছে,,,,,

পিয়াস – মুনি,,,, আমি উত্তর পেয়ে গেছে,,,,, এ রুম থেকে যেতে পারি যদি আরেকটা শর্ত মানিস,,,,

মুনিয়া – আবার কি,,,? (অবাক হয়ে)

পিয়াস – কাছে আয়,,,,,

মুনিয়া ঠায় দাঁড়িয়ে আছে নড়ছে না,,,,

পিয়াস – মুনি,,, আমি তোকে কিছু বলছি,,,, (ধমক দিয়ে)

মুনিয়া ভয় পেয়ে ধীরে ধীরে পিয়াসের কাছে আসতেই পিয়াস মুনিয়ার কোমড়ে হাত রাখে,,,,, মুনিয়া চোখ বন্ধ করে ফেলে,,,,

পিয়াস মুনিয়ার কোমড়ে ধরে একটানে নিজের সাথে মিশায়,,,,,

পিয়াস উঠে মুনিয়ার কপালে হালকা করে কিস করে,,,, মুনিয়া স্থির হয়ে যায়,,,, ঠোঁটজোরা অনবরত কাঁপছে মুনিয়ার,,,,,

পিয়াস নেশা ভরা চোখে মুনিয়ার ঠোঁটের দিক তাকিয়ে আছে,,,, পিয়াস মুনিয়ার ঠোঁটের কাছে মুখ নিয়েই মুনিয়ার ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়,,,,,,

মুনিয়া পিয়াসের টিশার্ট খামচে ধরে কিছুক্ষণ পর পিয়াস মুনিয়াকে ছেড়ে দেয়,,,,,

পিয়াস – কি,,,, আমার ভালোবাসায় ধরা দিলি তো,,,, (মুনিয়ার কানে ফিসফিসিয়ে বলে)

মুনিয়া – তাছাড়া আর উপায় নেই তো,,,, (মুচকি হেসে)

পিয়াস – হুম,,,

মুনিয়া – এবার তো যাও,,,, কেউ দেখলে সমস্যা হবে তো,,,,,

পিয়াস – যাচ্ছি তো,,,, তুমিও ঘুমিয়ে পড়ো,,,

পিয়াসের মুখে এই প্রথম তুমি ডাকটা শুনে মুনিয়ার কেনো জানি অনেক লজ্জা লাগছে,,,,, মুনিয়া মাথা নিচু করে বলে,,,,

মুনিয়া – তুমি আমাকে তুমি করে বলো না,,,,

পিয়াস – কেনো,,,? ( ভ্রু কুঁচকে)

মুনিয়া – না মানে এমনি,,,,

পিয়াস – মুনি বল,,,

মুনিয়া – আমার তুমি ডাকতা শুনতে কেমন জানি লাগে,,,,

পিয়াস – সেটাই তো,,, কেমন লাগে বলো না,,,,

মুনিয়া – ভাইয়া প্লিজ যাও তো,,,,

মুনিয়ার মুখে আবারও ভাইয়া ডাকটা শুনে পিয়াসের মাথায় আগুন ধরে যায়,,,,,,

পিয়াস হুট করে মুনিয়াকে পেছন ঘুরিয়ে মুনিয়ার ঘাড় থেকে চুল গুলো সরিয়ে অনেক জোরে একটা কামড় বসিয়ে দেয়,,,,,

মুনিয়া তো এতো বড় শকড খেয়েছে বেচারি চিৎকার ও দিতে ভুলে গেছে,,,,

চলবে

? নিষিদ্ধ প্রেম ?

part – 8

# writer : Shifa Afrien Mim

পিয়াস মুনিয়ার ঘাড়ের চুল গুলো সরিয়ে জোরে কামড় বসিয়ে দেয়,,,,,,

মুনিয়া বেচারি এতো বড় শকড খেয়েছে যে চিৎকার দিতেও ভুলে গেছে,,,, মুনিয়া ছিটকে পিয়াসের কাছ থেকে সরে আসে,,,

মুনিয়া – মা গো,,,, কি হলো রাক্ষসের মতো কাজ করো কেনো,,,?

পিয়াস – ভাইয়া ডাকবি না ওকে,,,,

মুনিয়া – ওকে যাও এখন,,,,, ( বিরক্তি ভাব নিয়ে)

পিয়াস মুনিয়ার কাছে এসে কানেকানে বলে,,,,,

পিয়াস – কামড় টায় ঔষধ লাগিয়ে নিস দাগ পরে যাবে,,,, বলেই চোখ মারে,,,,, মুনিয়া অগ্নিমূর্তি ভাব নিয়ে পিয়াসের দিকে তাকাতেই পিয়াস চলে যায়,,,,,,,

মুনিয়া ও ঘুমিয়ে পড়ে,,,,,

সকালে,,,

মুনিয়ার মা – মুনিয়া,,,, উঠ তারাতারি,,,,, বেলা ১০ টা পর্যন্ত পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিস,,,,

মুনিয়া চোখ ডলতে ডলতে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে যায়,,,,,

পিয়াসের মা – কিরে,,, তোর শরীর ঠিক আছে তো,,,? এতো বেলা পর্যন্ত ঘুমাচ্ছিলি কেনো,,,?

মুনিয়া – এমনি ফুপি,,,, আমি ঠিক আছি,,,,

পিয়াসের মা – আচ্ছা ঠিকাছে তুই নাস্তা করে পিয়াসের কফি করে দিস,,,

মুনিয়া – আচ্ছা,,,

মুনিয়া নাস্তা শেষ করে পিয়াসের জন্য কফি বানাতে যায়,,,,, মুনিয়ার চোখ থেকে যেনো ঘুম সরতেই চাইছে না,,,,,
কফি বানাতে গিয়ে বেশ খানিকটা গরম পানি মুনিয়ার হাতে পড়ে যায়,,,, মুনিয়া আস্তে করে চিৎকার দিয়ে উঠে,,,,,

মুনিয়া -ওহহহ মাগো,,,,,, কি হলো আজ চোখ থেকে ঘুম সরছেই না,,, ঠিক মতো কাজও করতে পারছি না,,,, এখনই মা চিৎকার শুনে এসে যদি দেখে গরম পানি হাতে লাগছে তাহলে ত সারা বাড়ি মাথায় তুলবে,,,,

মুনিয়া কফি টা নিয়ে তারাতারি রান্না ঘর থেকে বের হয়ে যায়,,,,,

পিয়াসের রুমের সামনে দাড়িয়ে দরজায় নক করতেই ভেতর থেকে আওয়াজ আসে,,,,,

পিয়াস – আসো,,,,

মুনিয়া পিয়াসের মুখ থেকে আবার তুমি শব্দটা শুনতেই চমকে উঠে,,,,কেমন একটা অনুভব হচ্ছে তুমি শব্দটায়,,,,,
মুনিয়া কফিটা নিয়ে পিয়াসের রুমে ডুকে কফিটা টেবিলে রেখে চলে আসতে নিলেই পিয়াস ডাক দেয়,,,,,

পিয়াস – কি হইছে মুনি,,,,,? আমার উপর রাগ করে আছো,,,,? কিছু না বলেই চলে যাচ্ছো যে,,,?

মুনিয়া – ( এই খাটাস তুমি করেই বলবে,,,,,, এতোবার বলছি তুমি করে না বলতে তাও শুনছেই না,,,, হুহহহহ,,,, মনে মনে)

পিয়াস – কি হলো,,,, কী বিরবির করছো,,,?

মুনিয়া – না মানে,,, কিছু না,,,,,

পিয়াস – তো কিছু না বলেই চলে যাচ্ছিলে কেনো,,,?

মুনিয়া – কী বলবো,,,,? ( মাথা নিচু করে)

পিয়াস – কেনো,,,? ভালোবাসার কথা,,,, (মুচকি হেসে)

মুনিয়া চোখ বড়বড় করে পিয়াসের দিকে তাকায়,,,,,,,,

মুনিয়া – পারবো না হুহহ,,,মুখ ভেংচি কেটে,,,,বলেই চলে আসতে নিলে পিয়াস মুনিয়ার হাত ধরে টান দিয়ে নিজের কাছে আনতেই মুনিয়া শব্দ করে উঠে,,,,

মুনিয়া – আহহহ,,,, ( মুনিয়ার যে হাতে গরম পানি পড়েছিলো পিয়াস না দেখেই ঐ হাত ধরে টান মারে)

পিয়াস – কী হলো মুনি,,,,,, চিৎকার করলে কেনো,,, বলেই মুনিয়ার হাতটা ঘুরিয়ে দেখতে থাকে,,,,
হটাৎ পিয়াসের নজরে পরে পোড়া জায়গা টা লাল হয়ে আছে ফর্সা হাতে যেনো আরও স্পষ্ট হয়ে আছে,,,,

পিয়াসের রাগ উঠে যায়,,,,

পিয়াস – এটা কী করে হলো মুনি,,,,?

মুনিয়া – গরম পানি পরে গেছিলো,,,,,

পিয়াস – সাবধানে কাজ করবা তো নাকি,,,,,, বসো এদিকে,,,,,,, বলেই মুনিয়াকে একটা চেয়ার টেনে বসিয়ে দেয়,,,,,
যারা আমার গল্পের গ্রুপে এখনো জয়েন করেননি,,,,,, জয়েন করে নিন ? শিফা আফরিন – গল্পগুচ্ছ গ্রুপে

চলবে

নিষিদ্ধ প্রেম part- 5 +6

0

? নিষিদ্ধ প্রেম ?
part- 5 +6
# writer : Shifa Afrien Mim

মুনিয়া ড্রয়িং রুম থেকে পানি এনে নিজের রুমে ঢুকতেই কেউ মুনিয়ার মুখ চেপে ধরে দরজা টা লাগিয়ে দেয়,,,,

মুনিয়া মুচরামুচরি করছে হাত ছাড়াতে কিন্তু পারছেনা,,,

পিয়াস – মুচরামুচরি করছিস কেনো,,,? (গম্ভীর কন্ঠে)

পিয়াসের কন্ঠ শুনেই মুনিয়া পিয়াসের দিকে তাকায়,,,

মুনিয়া – ভাইয়া তু তুত তুমি,,, ( তোতলাতে তোতলাতে),,,,

পিয়াস – হ্যা,,, আমি,, ( কিছুটা রেগে)

মুনিয়া – ভাইয়া আমার হাতটা ছাড়ো,,,

পিয়াস মুনিয়ার হাতটা আরও চেপে ধরে বলতে শুরু করে,,,,

পিয়াস – তুই বান্ধবির বাসায় গিয়েছিলি তাই না? ,,,, নাকি তোর বফের সাথে ডেটিং এ গিয়েছিলি,,,,? এই জন্যই সকালে না খেয়ে বেরিয়ে গেছিস,,,,? এত্তো তাড়া দেখিয়েছিস,,,,,? ( রাগে চিৎকার করে বলতে শুরু করে)

মুনিয়া – ছি ভাইয়া,,, এই সব বলতে তোমার মুখে বাধে না,,,

পিয়াস – বাঁধবে কেনো,,? যখন ছেলের সাথে ঢলাঢলি করছিলি তখন তোর ছি ছি কোথায় ছিলো,,, ( রাগে কটমট করে)

মুনিয়া – বেশ করেছি,,, ১০০ বার করবো,,, তাতে তোমার কি,,, আমার লাইফ আমার মতোই চলবো,,,, ডেটিং এ গিয়েছি বেশ করেছি,,,, আরও যাবো,,,, হাজার বার যাবো ( রেগে)

পিয়াস নিজের রাগ কে কনট্রোল করতে কষ্ট হচ্ছে তাও শান্ত গলায় বলে,,,

পিয়াস – মুনি,,, জাস্ট স্টপ,,,,

মুনিয়া – কেনো,,? চুপ করবো কেনো,,,? তুমি যখন বলছিলে ভেবে বলছিলে তো,,,? তাহলে এখন আমি কেনো থামবো,,,?

পিয়াস মুনিয়াকে কষে একটা থাপ্পড় মারে,,, মুনিয়া ছিটকে পরে যায়,,,,

পিয়াস – কি ভেবেছিস নিজেকে,,,? কি জন্য কষ্ট দিচ্ছিস আমায়,,,,? বলছি না ভালোবাসি,, তাও কেনো মানতে পারছিস না,,,,? আমি কি এতোই খারাপ,,,? আমাকে কি ভালোবাসা যায় না,,,,? ( কিছুটা শান্ত গলায়)

মুনিয়া – তুমি শুধু খারাপ নও,,, তুমি জঘন্য,,, তোমাকে ভালোবাসা অসম্ভব,,, আমি তোমাকে ভালোবাসি না আর বাসবো ও না,, মাইন্ড ইট৷,,,, ( রেগে)
?
( মুনিয়া আজ প্রিয়া আর প্রিয়ার বফ আয়াতের সাথে দেখা করতে গেছিলো,,,, প্রিয়া আর আয়াতের মাঝে ব্রেকাপ অনেক দিন ধরে মুনিয়া জানতে পেরে ওরা দুজন কেই ডাকে,,,, তারপর মুনিয়া আয়াত কে বুঝিয়ে সব ঠিক ঠিক করে দেয়,,,,

আর পিয়াস এইসব দেখে ভেবে নেয় এটা হইতো মুনিয়ার বফ,,,,,, পিয়াস না জেনে মুনিয়াকে এইসব বলায় মুনিয়ার রাগ টা আরও বেরে যায়,,,,)

মুনিয়া – আবারও বলছি ভাইয়া,,, আমি তোমাকে কোনো দিন ভালো বাসি নি,,,, এখনও বাসি না,,, আর কোনো দিন বাসবো ও না,,,,

পিয়াস রেগে মুনিয়ার দিকে যেতে যেতে বলে,,,,

পিয়াস – ভালোবাসিস না,,, ওকে আমি খারাপ হতে চাইনি মুনি,,, তুই বাধ্য করেছিস,,, বলেই মুনিয়ার উড়না টা একটানে সড়িয়ে ফেলে,,,,

মুনিয়া – ভাইয়া কি করছো,,,? সরো বলছি,,, আমি মামুনি কে ডা……..

আর কিছু বলার আগেই পিয়াস উড়না টা দিয়ে মুনিয়ার মুখটা শক্ত করে বেধে দেয়,,,,,, মুনিয়া দুহাতে উড়না টা খুলার চেষ্টা করতে নিলেই পিয়াস মুনিয়ার দু’হাত পিয়াসের দু’হাত দিয়ে আটকে ফেলে,,,,

পিয়াস – কি চাস তুই,,,? আমি খারাপ কিছু করতে,,,? কেনো আমাকে বুঝতে পারিস না মুনি,,, অনেক ভালোবাসি তোকে,,,,

বলেই পিয়াস মুনিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে মুনিয়ার চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পরছে,,,,

চলবে

? নিষিদ্ধ প্রেম ?

part – 6

# writer : Shifa Afrien Mim

পিয়াস মুনিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে,,, মুনিয়ার চোখ দিয়ে অঝরে পানি পড়ছে,,,, মুনিয়ার চোখের পানি দেখেই পিয়াসের ভেতর টা কেমন মোচড় দিয়ে উঠে,,,,,,

পিয়াস মুনিয়ার উপর থেকে খাটে বসে মুনিয়ার মুখের বাধন টা খুলে দেয়,,,, মুনিয়া কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি তুলে ফেলেছে,,,

পিয়াস – মুনি,,, কান্না থামা,,,, সরি মুনি রাগের মাথায় কি না কি করে ফেলেছি,,,,

মুনিয়া কেঁদেই যাচ্ছে,,,

পিয়াস মুনিয়াকে টেনে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়,,,,, এই প্রথম মুনিয়া কোনো অস্থিরতা ফিল করছে না,,,,,, মুনিয়া ও পিয়াস কে আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছে,,,,

পিয়াসের কেনো জানি মুনিয়ার কান্না টা ভালো লাগছে,,,, কই কিছুক্ষণ আগেও তো মুনিয়ার কান্না টা সহ্য করতে পারছিলো না,,,,, তবে এখন কেনো ভালো লাগছে পিয়াসের,,,,,, হইতো মুনিয়া পিয়াসের বুকে মাথা দিয়ে কাঁদছে বলেই এতো টা ভালো লাগছে,,,,,

পিয়াস – মুনি,,, আমাকে ভালোবাসতে সমস্যা কোথায় বল প্লিজ,,,,, আমি আর তোর ইগনোর সহ্য করতে পারছি না মুনি প্লিজ বল কিশের জন্য তুই আমায় ইগনোর করছিস মুনি,,,,,

মুনিয়া – ভাইয়া তুমি কেনো বুঝতে পারছো না,,,, তোমার আর আমার ভালোবাসা কেউ মেনে নেবে না কেননা আমরা দু’জন ভাই বোন,,,,

পিয়াস – তো,,? আপন ভাই বোন তো নাহ,,,,,

মুনিয়া – তবুও আমি পারবো না ভাইয়া,,,,, আমি চাই না আমাদের জন্য আমাদের পরিবারের কোনো সমস্যা হোক,,,,

পিয়াস – ওহ বুঝেছি,,,, তোর তো বফ আছেই,,, ভুলেই গিয়েছিলাম আমি,,,, ( মুনিয়াকে ছেরে দিয়ে)

মুনিয়া – ভাইয়া তুমি না বোঝে এই সব বলছো,,,, সকালে যার সাথে দেখছো ও আমার বান্ধবির বফ,,,,,আমি তো আজ পর্যন্ত কারো সাথে রিলেশনই করিনাই,,,,

পিয়াস – তাহলে আমাকে ভালোবাসতে প্রোবলেম কই,,,? আমি কি দেখতে খারাপ,,,,?

মুনিয়া – তা না,,,, তুমি সত্যিই অনেক ভালো,,, তোমাকে অপছন্দ করার কিছু নেই,,, যে কোনো মেয়েই তোমাকে দেখলে প্রেমে পড়বে,,,

পিয়াস – না রে,,, যেকোনো মেয়ের পড়তে হবেনা,,, তুই পড়,,, তাহলেই হবে,,,,,

মুনিয়া – না ভাইয়া তা হই না,,,

পিয়াস – ভাইয়া মাই ফুট,,,,, তুই মেনে নিবি কিনা আমায় বল,,,,? নয়তো খারাপ কিছু হয়ে যাবে বলে দিলাম,,,,

মুনিয়া – ভাইয়া প্লিজ শান্ত হও,,,

পিয়াস কোনো পাত্তা না দিয়ে খপ করে মুনিয়ার টেবিল থেকে পানির গ্লাস টা নিয়ে ভেঙে একটা কাঁচের টুকরো নিয়ে বলে,,,,,

পিয়াস – ব্যাস মুনি,,,, অনেক হয়েছে,,,, তুই আজ আমায় মেনে নিবি নয়তো আমি নিজের ক্ষতি করে দেবো,,,,

মুনিয়া – ভাইয়া প্লিজ পাগলামো করো না,,, কাঁচের টুকরো টা ফেলে দাও প্লিজ,,, লেগে যাবে হাতে,,,,

পিয়াস – তুই মানবি কি না বল,,,,?

মুনিয়া – আমি পারবো না ভাইয়া,,,, আমার পক্ষে সম্ভব না,,,,

পিয়াস – ওকে তাহলে তোর জেদ নিয়েই থাক তুই বলেই কাঁচের টুকরো টা হাতে জোরে লাগিয়ে দেয়,,,, সাথে সাথে রক্তে হাতটা লাল হয়ে যায়,,,,,

মুনিয়া ভাইয়া,,,,,, বলেই দৌড় দিয়ে পিয়াসের কাছে যায়,,,,

মুনিয়া – ভাইয়া কি করেছো এটা,,,,,, কতটা কেটে গেছে,,,, বলেই পিয়াসের হাতটা ধরতে নিকেই পিয়াস এক ঝটকায় হাতটা সরিয়ে ফেলে,,,,,

পিয়াস – থাক না মুনি,,,, তোর দরদ দেখাতে হবেনা যা তুই,,,, বলেই রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নিলে মুনিয়া পিয়াসের হাত ধরে আটকায়,,,

মুনিয়া – ভাইয়া প্লিজ যেও না তোমার হাত দিয়ে রক্ত পড়ছে,,,, অনেকটা কেটে গেছে প্লিজ একটু বসো আমি ব্যান্ডেজ করে দিই,,,,,,

পিয়াস – বললাম তো লাগবে না,,,, যদি ভালো নাই বাসিস তবে এতো মায়া কেনো দেখাচ্ছিস হ্যা,,,,

মুনিয়া কিছু বলতে পারছে না শুধু পিয়াসের দুচোখের দিকে তাকিয়ে ভাবছে,,, সত্যিই তো আমার কেনো এত খারাপ লাগছে,,,,কিন্তু আমিও যে ভাইয়াকে ভালোবেসে ফেলেছি,,,, কিভাবে বোঝাবো,,,,,

পিয়াস আবার চলে যেতে নিলেই মুনিয়া পিয়াসকে ঘুরিয়ে রেগে বলে,,,,

মুনিয়া – ভালোবাসি,,, আমিও ভালোবাসি,,, এতটুকু ও বুঝতে পারোনি এত দিনে,,,, শুধু পরিবারের কথা ভেবে কোনো দিন বলতে পারিনি,,,, (বলেই চুপ করে যায়)

পিয়াস মুচকি হেসে মুনিয়ার দু গালে হাত রেখে মুনিয়ার মুখটা উঁচু করে ধরে,,,,,,

চলবে

নিষিদ্ধ প্রেম part- 3 +4

0

? নিষিদ্ধ প্রেম ?
part- 3 +4
# writer : Shifa Afrien Mim

মুনিয়া – আমার কিছু শুনার নেই বলেই দরজাটা খুলতে নিলেই পিয়াস খপ করে মুনিয়ার হাত টা ধরে ফেলে,,,

পিয়াস – মুনি শুন আমার কথাটা,,, ঐ সময়ের জন্য আমি সত্যি দুঃখিত,,, রাগ উঠে গেছিলো,,,

মুনিয়া – হইছে বলা এবার হাতটা ছাড়ো,,,

পিয়াস – আগে বল মাফ করেছিস কি না,,,( মুনিয়ার হাত টা আরও চেপে ধরে)

মুনিয়া – করেছি,,, হাতটা ছাড়ো ভাইয়া,,,

পিয়াস আবার ভাইয়া ডাকটা শুনতেই মুনিয়াকে টান মেরে ফ্লোরে ফেলে দেয়,,,, মুনিয়া টাল সামলাতে না পেরে খাটের কোনায় পরে গেলে কপাল অনেকটা কেটে যায়,, মুনিয়া হাত দিয়ে কপাল টা চেপে ধরে বসে পরে,,,,

পিয়াস দৌড়ে মুনিয়ার কাছে যায়,,,

পিয়াস – মুনি কি হলো,, দেখি বেশি লেগেছে,,,?

মুনিয়া – না ভাইয়া আমি আসি বলেই উঠে যেতে নিলে পিয়াস মুনিয়া কে কোলে তুলে নেয়,,,, মুনিয়া অবাক হয়ে আছে,,

মুনিয়া – ভাইয়া ছাড়ো আমায়,,,,

পিয়াস – আর একটা কথা বলেছিস তো সত্যি সত্যি ছেরে দেব,, যাতে পরে তোর কোমড় টা ভাঙ্গে,,,

মুনিয়া এ কথা শুনা মাত্রই পিয়াসের গলা জড়িয়ে ধরে,,

মুনিয়া – না না আর কিছু বলবো না,,,

পিয়াস মুচকি হেসে মুনিয়া কে খাটে শুইয়ে দেয়,, পিয়াস ফাস্ট এইড বক্স টা এনে দ্রুত মুনিয়ার কপালের রক্ত টা মুছে দিতে নিলেই,, মুনিয়া বেথায় কুঁকড়ে উঠে,,,,

পিয়াস – একটু কষ্ট কর মুনি,, দেখ কতটা কেটে ফেলেছিস,,,

মুনিয়া – আমি কয় কাটলাম তুমিই তো ধাক্কা মেরে ফেলে দিলে,,

পিয়াস কোনো জবাব না দিয়ে মুনিয়ার কপালের রক্ত টা মুছে ব্যান্ডেজ করে দেয়৷,,,

পিয়াস – এখানে শুয়ে থাক,, উঠবি না কিন্তু,,,

মুনিয়া – বলছি যে,,,,আমি বরং আমার রুমে গিয়ে শুই,,,

পিয়াস – ওকে চল,,

মুনিয়া – আমি একা যেতে পারবো ভাইয়া,,,

পিয়াস – আমি তো তোকে জিগ্যেস করিনি,,, ( রেগে)

মুনিয়া পিয়াসের রাগ দেখে চুপ মেরে যায়,,, পিয়াস মুনিয়াকে ধরে মুনিয়ার বিছানায় শুইয়ে দিয়ে আসে,,,,

পিয়াস – কিছুক্ষণ রেস্ট নে তুই,,,,

মুনিয়া – আচ্ছা,,,

পিয়াস মুনিয়ার রুম থেকে চলে আসে,,,

রাতে,,, মুনিয়ার মা মুনিয়াকে ডেকে নিয়ে যায়,,, খাবার টেবিলে মুনিয়া একবারও পিয়াসের দিকে তাকায় নি,,, পিয়াস কিছুটা রাগলেও মনে মনে অনেক অপমান বোধ করছে,,, তার জন্যই তো আজ মুনিয়া বেথা টা পেলো,,,

মুনিয়া খাবার খেয়ে নিজের রুমে চলে যায়,,,,

কিছুক্ষণ পর পিয়াস মুনিয়ার রুমে এসে দেখে মুনিয়া রুমে নেই,,, পিয়াস মুনিয়াকে ডাক দিতে নিলেই দেখে বেলকনিতে কেউ দাড়িয়ে আছে,,,

পিয়াস বেলকনিতে গিয়ে দেখে মুনিয়া দাড়িয়ে আছে,,, পিয়াস মুনিয়ার কাছে গিয়ে মুনিয়াকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলেই মুনিয়া চমকে উঠে,,,

মুনিয়া – কে কে,,

পিয়াস – আমি,, ভয় পাস না,,

মুনিয়া – অহ,,, কেনো এসেছো ভাইয়া,,,?

পিয়াস মুনিয়াকে ছেড়ে দিয়ে দাড়িয়ে বলে,,,

পিয়াস – ভাইয়া ভাইয়া ভাইয়া,, কত বার বলবো আর ভাইয়া ডাকবি নি,,, শুনতে পাস না আমার কথা,, (রেগে চিৎকার করে)

মুনিয়া কিছুটা ভয় পেলেও নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,,

মুনিয়া- সরি ভাইয়া আমি তোমাকে অন্য কিছু ডাকতে পারবো না,,,

পিয়াস এবার প্রচন্ড রেগে যায় পিয়াস রেগে মুনিয়াকে পিছনে ঘুড়িয়ে মুনিয়ার জামার চেইন টা একটানে খুলে ফেলে

চলবে
? নিষিদ্ধ প্রেম ?

part – 4

# writer : Shifa Afrien Mim

পিয়াস এবার প্রচন্ড রেগে যায়,, পিয়াস রেগে গিয়ে মুনিয়ার জামার চেইন টা একটানে খুলে ফেলে,,,, মুনিয়া ভয়ে সরে যেতে নিলেই পিয়াস বলতে শুরু করে,,,,

পিয়াস – তোর ভাইয়া ডাকার শখ মিটাবো,,,আজকের পর থেকে আর কোনো দিন ভাইয়া ডাকবি না,,,

মুনিয়া কাঁদতে থাকে,,, পিয়াস নিজের রাগটা কনট্রোল করে মুনিয়ার কাছে যায়,,,,

পিয়াস – সরি মুনি,,, রাগাস কেনো আমায়,, কত বার বারন করছি ভাইয়া ডাকিস না বুঝতে পারছিস না,,,?

মুনিয়া – বললাম তো আমার কিছু বুঝার দরকার নেই,,, ( শক্ত গলায়)

পিয়াস মুনিয়াকে পিছন ঘুরাতে নিলেই মুনিয়া সরে যায়,,,

পিয়াস – মুনি দাড়া,,, বলেই মুনিয়ার জামার চেইন টা লাগিয়ে দেয়,,,

পিয়াস মুনিয়ার কাছে এসে দুহাতে মুনিয়ার মুখটা ধরে বলে,,

পিয়াস – মুনি আমি তোকে ভালোবেসে ফেলেছি,, কত বার বুঝাতে চাচ্ছি তবুও তুই বুঝতে চাস না কেনো,,?

মুনিয়া – আমি তো তোমায় ভালোবাসি না পিয়াস ভাইয়া,,,

পিয়াস – তুই ভালো না বাসলেও আমি বাসি,,, তুই আমার ব্যাস,,, তুই না চাইলেও আমি তোকে চাই ই চাই,,, সেটা যদি জোর করে আদায় করতে হই তাহলে তাই করবো,,, ( রেগে চিৎকার করে)

পিয়াস মুনিয়ার রুম থেকে চলে আসে,,, মুনিয়া ধপ করে ফ্লোরে বলে কাঁদতে থাকে,,,,

পরের দিন সকালে,,,

মুনিয়া নাস্তা না করেই কলেজের উদ্দেশ্য বেরিয়ে পরে,,,, মুনিয়ার মা অনেক বার ডাকে কিন্তু মুনিয়া তাড়া আছে বলেই বেরিয়ে পরে,,,,

পিয়াস বুঝতে পারেনা কি এমন কাজ আছে যার জন্য মুনিয়া না খেয়ে চলে গেলো,, পিয়াস ও মুনিয়াকে ফলো করতে থাকে,,,,, হটাৎ মুনিয়াকে একটা পার্কের সামনে যেতে দেখেই পিয়াস ও আড়ালে দাড়ায়,,,,

মুনিয়া একটা ছেলের সাথে দাড়িয়ে কথা বলছে,,, তাদের সাথে একটা মেয়েও আছে,,, পিয়াস চেষ্টা করছে কিন্তু ওদের কোনো কথায় শুনতে পারছে না,,,,

কিছুক্ষন পর,,,, মুনিয়া আর মেয়েটা চলে আসে,,,, আর ছেলেটা ও চলে যায়,,,,

এদিকে রাগে পিয়াসের হাত মুষ্টিবদ্ধ করে রাখে মুখখানা লাল হয়ে গেছে,,, পিয়াস হনহন করে বাড়ি চলে যায়,,,,,

বাড়ি এসে দেখে মুনিয়া আসে নি,,,, পিয়াস মুনিয়াকে কয়েক বার ফোন দেয় মুনিয়া ফোন ধরে না,,,, পিয়াসের রাগটা দ্বিগুণ বেরে যায়,,,,

পিয়াস গিয়ে মুনিয়ার মাকে বলে,,,

পিয়াস – মামি মুনি আসে নি এখনো,,?

মুনিয়ার মা – না,,, ও তো ওর বান্ধবীর বাসায় গেছে,, ফিরতে সন্ধা হবে,,,, তোর কিছু লাগবে পিয়াস,,,? লাগলে আমায় বল,,,

পিয়াস – না মামি,,,, বলেই চলে আসে,,,

পিয়াস – ( বান্ধবীর বাড়ি গেছে তাই না,,, ও তো ওর বফেস সাথে দেখা করতে গেছে,, কি মনে করেছে ও আমি কিছুই জানবো না,,, মনে মনে)

এদিকে,, মুনিয়া প্রিয়ার (মুনিয়ার বান্ধবী) সাথে কথা বলতে বলতে কখন যে সন্ধা হয়ে গেছে খবরই নাই,,,,

মুনিয়া – প্রিয়া আমি আসি আজ,,,

প্রিয়া – ওকে সাবধানে যাস,,,

প্রিয়া সন্ধার দিকে বাসায় আসে,,, এসে ফ্রেশ হয়েই খেতে যায়,,,, এর মাঝে পিয়াস অনেক বার মুনিয়ার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে কিন্তু মুনিয়া পাত্তা দেয়নি,,,,

মুনিয়া খাওয়া শেষ করে নিজের রুমে এসে দরজা লাগিয়ে শুয়ে পরে,,,, তা দেখে পিয়াস আরও রেগে যায়,,,,

পিয়াস না ঘুমিয়ে নিজের ঘরে বসে থাকে,,,,

মাঝরাতে মুনিয়ার ঘুম ভাঙে,,, মুনিয়া পানি খেতে নিলেই দেখে গ্লাসে পানি নেই,,,,

মুনিয়া ড্রয়িং রুম থেকে পানি এনে নিজের রুমে আসতেই কেউ মুনিয়ার মুখ চেপে ধরে দরজা টা লক করে দেয়,,,,,

চলবে

নিষিদ্ধ প্রেম part – 2

0

? নিষিদ্ধ প্রেম ?

part – 2

# writer : Shifa Afrien Mim

আর কিছু বলতে না দিয়েই পিয়াস মুনিয়ার ঠোঁট দুটো নিজের দখলে নিয়ে নেয়,,,

মুনিয়া পিয়াস কে সরাতে চেষ্টা করছে কিন্তু পেরে উঠছে না,, মুনিয়ার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরছে,,,,

পিয়াসের সেদিকে কোনো খেয়ালই নেই সে মুনিয়ার ঠোঁট নিয়েই ব্যাস্ত,,

কিছুক্ষন পর মুনিয়া সহ্য করতে না পেরে পিয়াস কে জোরে ধাক্কা দেয়,,, পিয়াস কিছুটা দূরে সরে আসতেই মুনিয়া কাঁদতে কাঁদতে রুম থেকে বেরিয়ে আসে,,,

পিয়াস ঠায় দাঁড়িয়ে আছে আর ভাবছে,,
মুনিকে বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলিনি তো? মুনি কি আমাকে ভুল বুঝবে?
ভুল বুঝলে বুঝোক ওর সাহস হই কি করে বার বার ভাইয়া বলে ডাকার,,, ( মনে মনে)

এদিকে মুনিয়া তার মামুনির রুমে এসে বেলকনিতে দাড়িয়ে ভাবছে,,

কি চায় পিয়াস ভাই ওনি কি জানেন না এটা সম্ভব না তারপরও ওনি বার বার আমাকে দূর্বল করে দেয়,,, আমিও তো ওনাকে ভালোবেসে ফেলেছি কিন্তু এটা ত সম্ভব না আমাদের এই প্রেম যে নিষিদ্ধ,,, ভাবতে ভাবতে মুনিয়ার চোখের কোনায় পানি চলে আসে,,,

দুপুর পেরিয়ে সন্ধা হয়ে গেলো এ পর্যন্ত একবার ও মুনিয়া পিয়াসের সামনে যায়নি,,,, পিয়াস ভাবে মুনিয়া হইতো তার উপর অনেক রেগে আছে তাই আসছে না,,,

পিয়াস – নাহ,, মুনিকে সরি বলতে হবে,,

পিয়াস তার মাকে ডেকে বলে,,,,

পিয়াস – মা আমাকে এককাপ কফি করে দাও,,
পিয়াস জানে মুনিয়া অনেক ভালো কফি বানায়,,, আর বাসার সবার কফি মুনিয়া বানিয়ে দেয়,,,,

পিয়াসের মা মুনিয়াকে ডেকে বলে,,

পিয়াসের মা- মুনিয়া একটু শুন মা,,

মুনিয়া – হে ফুপি বলো,,

পিয়াসের মা – পিয়াস কে এককাপ কফি দিয়ে আয় না মা,,,

মুনিয়া – ফুপি আমি বানিয়ে আনছি তুমি ভাইয়াকে দিয়ে এসো,,
( এদিকে পিয়াস আড়ালে দাড়িয়ে দাড়িয়ে শুনছে,,)

পিয়াস – বাহহ আমার কাছে আসতেও তোর সমস্যা হই,, এতো বার বেরেছিস,, ( রাগে কটমট করে)

পিয়াসের মা – একি মুনিয়া তুই তো কোনো দিন এই ভাবে কথা বলিস নি,,, আর আজ তুই আমাকে বলছিস কফি নিয়ে যেতে,,, কি হয়েছে মা,, বল না আমায় ( চিন্তিত হয়ে)

মুনিয়া – কিছুনা ফুপি আমি নিয়ে যাচ্ছি,,

পিয়াস রুমে গিয়ে মুনিয়ার জন্য ওয়ে করতে থাকে,,,

একটু পরই মুনিয়া কফি হাতে পিয়াসের রুমে আসে,,

মুনিয়া – পিয়াস ভাইয়া তোমার কফিটা,,,

পিয়াস – টেবিলে রাখ,,,

মুনিয়া – টেবিলে কফিটা রেখেই চলে যেতে নেয়,,,

পিয়াস দ্রুত গিয়ে দরজা টা লক করে দেয়,,,,,

পিয়াস – মুনি দাড়া তোর সাথে কথা আছে,,,

মুনিয়া – আমার কোনো কথা নাই ভাইয়া পথ ছাড়ো,,,

পিয়াস – বললাম না কথা আছে,,, তোর না থাকলেও আমার কথা না শুনা অব্দি যেতে পারবি না,,, ( রেগে)

মুনিয়া – আমার কিছু শুনার নেই বলেই দরজা টা খুলতে নিলে পিয়াস খপ করে মুনিয়ার হাতটা শক্ত করে ধরে ফেলে,,,

চলবে

নিষিদ্ধ প্রেম part – 1

0

? নিষিদ্ধ প্রেম ?
part – 1
# writer – Shifa Afrien Mim

মুনিয়া শাওয়ার নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়েই দেখে পিয়াস মুনিয়ার বিছানায় শুয়ে আছে,,, মুনিয়া অনেকটা ভয় পেয়ে গেলো,,,

মুনিয়া – ভাইয়া তুমি এখানে,,,

পিয়াস – কেনো,, কোনো সমস্যা,,,? সমস্যা হলে বল আমি এ বাড়ি থেকে চলে যাবো ( চাপা কন্ঠে)

মুনিয়া – না না ভাইয়া এইসব কি বলছো,, সমস্যা হতে যাবে কেনো?

পিয়াস রেগে মুনিয়াকে দেয়ালে চেপে ধরে,, বলে,,

পিয়াস – তোকে কত বার বারন করেছি মুনি,, আমাকে ভাইয়া ডাকবি না,,, ( রাগে কটমট করে)

মুনিয়া – তাহলে কি বলে ডাকবো ভাইয়া,,,

পিয়াস আবার ভাইয়া ডাকটা শুনে চরম রেগে যায়,, পিয়াস মুনিয়ার ভেজা চুলগুলো শক্ত করে টেনে ধরে,, বলে,,

পিয়াস – আমার কি নাম নেই,,,? (দাঁতে দাঁত চেপে)

মুনিয়া – আহ,, ভাইয়া চুল ছাড়ো,, লাগছে আমার ( কান্নার সুরে)

পিয়াস – লাগুক,,, এর চেয়েও বেশি কষ্ট আমার লাগে যখন ভাইয়া বলে ডাকিস,,, ( শান্ত সুরে)

মুনিয়া – মানে,,, ( অবাক হয়ে)

পিয়াস – মানে কি বুঝিস না তুই,,, ( রেগে গিয়ে)

?

( মুনিয়া এবার অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্রী,, মুনিয়া পড়াশোনায় যেমন ভালো তেমনি দেখতেও মাশআল্লাহ,,,, আর পিয়াস মুনিয়ার বড় ফুপির ছেলে,, পিয়াসের পরিবার আমেরিকা থাকে পিয়াসও তার পরিবারের সাথেই থাকে,,,, মাসখানেক হলো পিয়াস আর ওর পরিবার দেশে এসেছে,,, এসেই মুনিয়াদের বাসায় একসাথে সবাই থাকে,,, পিয়াসের মা মুনিয়াকে নিজের মেয়ের চেয়ে বেশি ভালোবাসে,,, মুনিয়া ও পিয়াসের পরিবারকে ভালোবাসে,,, কিন্তু কয়েক দিন যাবৎ পিয়াস মুনিয়ার সাথে কেমন অদ্ভুত আচরণ করছে,,, মুনিয়া হইতো বুঝতে পারে কিন্তু সে চায় না তাদের মাঝে এমন কোনো সম্পর্ক হোক,,,,

মুনিয়া পিয়াস কে অতটাও অপছন্দ করে না,,, পিয়াস দেখতে যা কিউট যে কেউ পিয়াসের প্রেমে পড়ে যাবে,,,,) গল্পে আসি এবার ?

মুনিয়া – কি বুঝবো ভাইয়া,,, এতো বুঝার দরকার নেই আমার,,,

পিয়াস – আবার ভাইয়া,,,

মুনিয়া – কিছু লাগবে তোমার ভাইয়া,, হটাৎ আমার রুমে আসলে যে,,, কিছু লাগলে ডাকতে পারতে আমি দিয়ে আসতাম ( কথা কাটানোর জন্য)

পিয়াস – হুম লাগবে,,, ( মুনিয়ার কাছে গিয়ে)

মুনিয়া – ক ক কি,, লাগবে ব বলো আ আ আমি দিয়ে আসছি ( কাপা কন্ঠে) পিয়াস এতটা কাছে আসায় মুনিয়ার যেনো দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে,,,,

পিয়াস মুনিয়ার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে থাকে,,,

মুনিয়া বুঝতে পেরে পিয়াসের থেকে নিজেকে ছাড়াতে ছুটাছুটি শুরু করে,,,

পিয়াস দুহাতে মুনিয়ার কোমড় শক্ত করে ধরে দেয়ালের সাথে জোরে চেপে ধরে,,,

মুনিয়া পিয়াসের শক্তির কাছে হার মানে,,, মুনিয়া শান্ত হয়ে যায়,,,

মুনিয়া – ভাইয়া আমাকে ছাড়ো প্লিজ,,,

পিয়াস – কেনো খারাপ লাগে আমি তোর কাছে আসলে,,,,

মুনিয়া – ভাইয়া প্লিজ ছা,,,উমমমম,,

আর কিছু বলতে না দিয়েই পিয়াস মুনিয়ার ঠোঁট দুটো নিজের দখলে নিয়ে নেয়…..

চলবে

ধোঁকা part 15(Last)

0

#ধোঁকা
#Tanjina_Akter_Misti
#part 15(last)

– তুই কাজটা ঠিক করিস নি আমি তোকে বলেছিলাম ওই ঘরে না যেতে তুই শুনিস নি। তোকে বলেছিলাম যেদিন সব জানবি সেদিন এই বাড়িতে তোর জায়গা হবে না,, এখন তুই তো সব জেনেই গেলি আজই তোকে বাড়ি থেকে চলে যেতে হবে।( আদি)

– আদি কি বলছো এসব দেখো তুমি সবটা জানো না আমার কথা শুনো প্লিজ?( মেঘনা)

– আমি কিছু জানতে বা শুনতে চাইনা তুই যে এখন আমাকে মিথ্যা বুঝিয়ে বলবি তোর ভাইয়ের কোন দোষ নেই আমি সেটা কিছুতেই বিশ্বাস করবো না।( রেগে আদি)

– আমি কোন বানানি কথা বলবো পা আদি আমি তোমার ভুল টা ভাঙাবো আমার কথাটা তো শুনো( উঠতে গিয়ে )

– ( আদি মেঘনাকে টেনে উঠায়) কোন মিথ্যে কথা শুনতে চাই না তোর ভাইয়ের জন্য আজ আমার আদরে বোনটা নেই। তোর ভাই আমার বোনকে ঠকিয়েছে মিথ্যে আসসাস দিয়ে নষ্ট করে দিয়েছে যার জন্য সুসাইড করতে হয়েছে। যার গায়ে কোন দিন ফুলে টোকা ও লাগতে দেয় নাই তাকে কষ্ট দিয়েছে কোন দিন আমি তোদের ক্ষমা করবো না। আমার পুরো পরিবার শেষ হয়ে গেছে তোদের জন্য আমার মা ও চলে গেছে মেয়ের শোকে। এজন্যই তো তোকে পালিয়ে নিয়ে এসে বিয়ে করেছি। তোর পরিবারের সবাই আমাকে মেপে নেবে বলেছিল আমি তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করি যার জন্য মেনে নেয় না। আমার পরিবারের সব শেষ এখন তোর পরিবারের কেউ ভালো নেই কেউ না সবাই চিন্তা ত তোর বাবা হসপিটালে ভর্তি আছে।

আমি আর শুনতে পারছি না এতো কিছু করেছে আদি আর আমি কিছু বুঝতে পারলাম না। যেখানে আমার ভাইয়ের কোন দোষ ই নেই তার জন্য এতো কিছু মানছি অনুর সাথে খারাপ হয়েছে তাই বলে না জেনে আমাদের সাথে।

– আদি তুমি অনেক বড় ভুল করেছো যে দোষ আমার ভাই করেই নি তার জন্য তুমি এতো কিছু করলে তোমার সব কিছু জানা দরকার।

– তোর মিথ্যে কথায় ভুলবো না আমি কোন ভুল করিনি ডাইরি পরেই সব জানতে পেরেছি।

– তুমি

– তোর আর কোন কথা শুনতে চাই না। ডিবোস পেপার আর এক সপ্তাহ পর আসবো ভেবেছিলাম সেইদিন ই তোকে কিন্তু না আজই তোর চলে যেতে হবে।

– আদি আমার কথা শুনো তুমি ভুল করছো।

– আমি কোন ভুল করছি না চল।

বলেই আমাকে টেনে নিয়ে যেতে লাগল আমি বারবার আমার কথা শুনতে বলছি কিন্তু আদি কোন কর্থ শুনছে না আমাকে ভুল ভাঙানোর কোন সুযোগ ই দিচ্ছে না। নিজেকে এতো অসহায় লাগছে বলে বুঝাতে পারবো না। আমাদের চেচামেচি শব্দ বাবার কানে ও চলে গেছে ওই খান থেকেই ডেকে যাচ্ছে আমি বাবাকে ডাকছি সে আসলে হয়তো আদি ছারবে কিন্তু আদি আর কিছু না দরজার কাছে এনে আমার বের করে দিলো।

– আদি প্লিজ এমন করো না সন্ধ্যা হয়ে গেছে আমি এখন কোথায় যাবো বলো প্লিজ আমার কথা ভালো ভাবে শুনো তারপর ও যদি তোমার বিশ্বাস পা হয় কাল আমি নিজেই চলে র্যব কিন্তু আজকে না প্লিজ ( কান্না করতে করতে)

– নাহ কিছু শুনবো না চলে যা তুই যেখানে খুশি।

বলেই আদি দরজা আটকে দিলো।
কোথায় যাবো কি করবো কিছু বুঝে উঠছি না। ওইখানে ই বসে পরলাম চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে কেন আদি কেন তুমি আমার কথা শুনলেনা কেন যে দোষ আমরা করিই নি সেই জন্য শাস্তি পাচ্ছি একবার যদি আদি আমার কথা গুলো শুনতো ও ওর ভুল ভাঙতে পারতো।

কিছুক্ষণ বসে রইলাম এই ভেবে আদি হয়তো আসবে এই রাতে আমি কোথায় যাবো কি করবো ভেবে দশ মিনিটের মতো হয়ে গেলো তার কোন খবর নাই।

এদিকে আদির ও মেঘনা তারিয়ে ভালো লাগছে না সামনে যতই বলুক মন থেকে তো সেও ভালোবাসে কিন্তু বোনের জন্য তা মানে না। এখন মেঘনা কে নিয়ে টেনশন হচ্ছে আবার বোনের কথা ভেবে নিজেকে শক্ত করছে। রুমে বসে ভাবছি লো কথা গুলো।

বাবা এলো হঠাৎ আমাকে জিগ্গেস করলো কি হয়েছে প্রথম থেকে সব বললাম বাবাকে।

বাবা: ছি ছি তুই এমন একটা কাজ করবি আমি ভাবতে ও পারিনি। হুম যদি ও সেই ছেলেটার দোষ কিন্তু তাই বলে মেয়েটাকে কষ্ট দিয়ে তোর কি লাভ হলো। মেঘনার খি দোষ সেখানে একজনের জন্য অন্য জনের সাথে তুই এগুলো কি ভাবে করলি। তাহলে তোর আর ওর মধ্যে পার্থক্য কি রইল।

বাবাকে অনেক বকে চলে গেল। কথা গুলো আমার কানে বাজছে সত্যি কি আমি ভুল করেছি নাহ। আমি কেন ভুল করবো ওদের জন্য আজ আমার আদরে বোন নেই কিন্তু যতই বলি মেঘনা কে তো আমি ভালো বাসি এই সময় ও কোথায় যাবে।

মাথা নিচু করে কথা গুলো ভাবছিল আদি হঠাৎ ডাইরিটা চোখে পরলো। ডাইরিটা হাতে নিলাম এখানে থেকেই তো জেনেছিলাম। হঠাৎ কয়েকটা পেজ হাতে এসে পরল,, এগুলো তো পরা হয় নি আদি পেজ গুলো পরতে লাগল আর চমকে উঠল। ও কতো বড় ভুল করেছে এখন বুঝতে পারছে।

পাচঁ বছর পর

– মাম্মা মাম্মা আববু কোথায়( আরশি )

– আববু তো অফিসে?

– আজ তো আমার জম্মদিন দিন আববুকে অফিসে যেতে মানা করেছিলাম না। ( রেগে)

– জরুরি কাজে গেছে আম্মু তুমি যাও রুমে একটু পরই এসে যাবে।

আরশি রেগে চলে গেল। এতো ক্ষণ কথা বলছিল আরশি আর মেঘনা। আরশির চারবছর আদি আর মেঘনার মেয়ে আরশি।
আপনারা হয়তো ভাবছেন ওদের মিল হলো কিভাবে।

সেদিন আদি অনেক খুজে ও আর মেঘনা কে পায় না। নিজের ভুল বুজতে পারে আদি ভালো করে না জেনে সে কতো বড় অপরাধ করেছে। পরদিন মেঘনাদের বাড়ি যায় আর সেখানেই পায়। সবার কাছে ক্ষমা চায় নিজের ভুলের জন্য সবাই ক্ষমা করলে ও মেঘনা ফিরে ও তাকায় না। সবাই অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে ও মেঘনাকে রাজী করাতে পারে না এক মাস মেঘনা আর আদি কাছে আসে না আদি অনেক ক্ষমা চায় নিজের এমন ভুল আর কখনো করবে না বলে।
অবশেষে মেঘনা মেনে নেয় আদিকে সে জানতো আদি ফিরে আসবে মেঘনা তার করা ভুলে জন্য নিজের ভালোবাসর মানুষকে বেশি দিন ফিরিয়ে দিতে পারে না কারণে সে সত্যি ভালোবেসেছিলো আর এখন ও বাসে তাই ফিরে এসেছিল। কিন্তু এমনি না সবাই মিলে আবার বিয়ে দেওয়া হয়।

আদি ভয়ে ভয়ে রুমে ঢুকছে কারণে সে জানে তার মেয়ে এখন রেগে ফায়ার হয়ে আছে। দরজা কাছে গিয়ে উকিঁ দিয়ে দেখে রেগে বসে আছে আদি মেয়ের সামনে গিয়ে ই কানে হাত দিয়ে।

– সরি এই কানে ধরছি!

আদি কানে হাত দিয়ে আরশি একবার তাকিয়ে রাগী ভাবে অন্য দিকে ঘুরে গেল।

– কি হলো আমার আম্মুটা কি আমার সাথে কথা বলবে না।

– না

– সরি বললাম তো অনেক দরকার ছিলো নয়কি আমি যেতাম।

– তোমার কোন কথা শুনবো না আমি।

– আচ্ছা তাহলে আমি এই গিফট টা নিয়ে চলে যায়। কেউ তো আমাকে ভালোই বাসে না গিফট টা আর কাকে দেবো।

আদি চলে যেতে নিলে। আরশি দৌড়ে এসে গিফট চাইতে লাগে। আমি জানতাম গিফটের কথা বললেই এনার রাগ ভাঙবে।

আমাদের বাড়ি থেকে সবাই আসে। ভালো করেই কেটে যায় অনুষ্ঠানটা।

রাতে আরশি ঘুমিয়ে পরেছে। আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি হঠাৎ পেছনে কেউ জরিয়ে ধরলো। আমি জানি এটা কে আমি ওই ভাবেই রইলাম।

আদি: তুমি কি আমকে এখন ও মন থেকে ক্ষমা করতে পারো নাই মেঘনা।

মেঘনা: হঠাৎ এই কথা

আদি: জানিনা কেন জানি মনে হলো কথাটা সত্যি করে বলবে।

মেঘনা: ভালোবাসি তোমায় সেই আগের মতোই কিন্তু ওই মুহূর্তের কথা মনে পরলেই।

আদি: প্লিজ মনে করো না ওই সব।

আদি আমাকে ওর দিকে ঘুরিয়ে কপালে একটা চুমু দিলো।

সমাপ্ত❤❤

[ পুরো গল্প টা কেমন লাগল জানাবেন]