Monday, August 11, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1554



আমার ক্রাশ পর্ব-১৯

0

#আমার ক্রাশ
#পর্বঃ১৯
#Tanisha Sultana (Writer)

নিশি আর আদরের বিয়ে মিটে গেছে আজ পাঁচ দিন হলো। বিয়েতে তুলি আর সায়ানের একবার দেখা হয়ে ছিলো দুজন দুজনকে ইগনোর করেছে। তারপর থেকে আর দেখা হয় নি।
নিজের বিয়ে ভাইয়ের বিয়ে শশুড় বাড়ি সায়ানকে ইমপ্রেস এসবের চক্করে তুলি পড়ালেখার কথা ভুলেই গেছিলো। অনেক দিন কলেজে যাওয়া হয় না। আজ তুলি ঠিক করেছে কলেজে যাবে।

সকাল সকাল উঠে কলেজের জন্য তৈরি হয়।

“মা খেতে দাও কলেজে যাবো

তুলির মা রান্না করছিলো তুলির ডাকে খুন্তি হাতে করেই বেরিয়ে আসে সাথে নিশিও আসে। নিশি শাশুড়ী মানে তুলির মাকে রান্নায় সাহায্য করছিলো

” আজ হঠাৎ কলেগে যাবো?

“মা অনেক দিন যাওয়া হয় না তাই ভাবলাম আজ যাই। খেতে দাও তো না হলে না খেয়েই বেরিয়ে যাবো

ইদানীং তুলি একটু রাগী টাইপের হয়ে গেছে। হুটহাট রেগে যায়। যে তুলি আগে রাগ জিনিসটাকেই ঘৃণা করতো সেই এখন রাগী হয়ে গেছে। কথায় কথায় রেগে যায়।

” নিশি ওকে খাবার দাও

নিশি তারাহুরো করে তুলিকে খেতে দেয়। নিশি তুলিকে অনেক কিছু বলতে চায় কিন্তু বলার সাহস পায় না। যদি রাগে যায় তাহলে আবার আদর নিশিকে ঝাড়বে। তাই আর বলা হয় না।

তুলি এক মনে খেয়ে যাচ্ছে নিশি হাত কচলাচ্ছে

“বলছিলাম

তুলি খেতে খেতেই বলে

” তোমার ভাইকে নিয়ে কিছু বলার থাকলে আমি শুনবো না

নিশি চুপচাপ চলে যায়। তুলি একটু হাসে

“যে পাখি বুকের পাঁজরে থাকতে চায় না তাকে যেতে দেওয়াই ভালো”

সারারাত মদ আর সিগারেট খাওয়ার ফলে সায়ানের ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে যায়। জিসান দরজা ধাক্কাচ্ছে

“ব্রো উঠো বাবা ডাকছে

সায়ান চোখ কচলে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ১০ঃ৪৫ বাজে।

” আসছি

সায়ান তারাহুরো করে ফ্রেশ হয়।

সায়ানের বাবা মা জিসান বসে আছে গম্ভীর মুখে। সায়ান চুপচাপ ওদের পাশে দাঁড়ায়

“বাবা বলো

সায়ানের বাবা একবার সায়ানের দিকে তাকায়

” তুলি ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দিয়েছে। এবার তুলি দয়া করে সাইন করে আমাদের উদ্ধার করুন

সায়ানের বাবা সায়ানের হাতে ডিভোর্স পেপার দেয়। সেখানে স্পষ্ট করে তুলির সাইন দেওয়া

“আমি আজকে মনার বাড়িতে কথা বলেছি সামনে শুক্রবার তোমাদের বিয়ে ঠিক করেছি। এবার নিশ্চয় তুমি হ্যাপি হবে? আসলে কি জানো তুলির মতো এতো ভালো মেয়েকে তুমি ডিজার্ভ করো না। তুমি যেমন ফালতু তুমি তেমনই ফালতু মেয়েদের ডিজার্ভ করো।

সায়ানের বাবা রাগে গজগজ করতে করতে চলে যায়।

” আজ তুলিকে দেখতে ছেলের বাড়ি থেকে লোক আসবে। আর তুলি বিয়েতে রাজি

জিসান সায়ানের পিঠ চাপকে বলে

“এবার নিশ্চয় তুই ভালো থাকবি

সায়ান ডিভোর্স পেপারটা ছিঁড়ে কুটিকুটি করে ফেলে। তারপর চিৎকার করে বলে

” খুব ভালো থাকবো আমি প্রচুর ভালো থাকবো। দেবো না আমি ডিভোর্স দেখি তুলি কি করে?

সায়ানের চিৎকারে জিসান আর মা ঘাবড়ে যায়।
সায়ান বেরিয়ে যায়।

কলেজের পাশে পুকুর পারে বসে আছে তুলি। ভেবেছিলো কলেজে আসলে ভালো লাগবে কিন্তু ভালো লাগছে না। মনে শান্তি না থাকলে কোনো কিছুই ভালো লাগে না।

“#আমার ক্রাশ আর আমার নেই। এতোখনে সায়ানও পেপারে সাইন করে দিয়েছে। আলাদা হয়ে গেছি আমরা। এখন সায়ান মনাকে বিয়ে করবে ওরা ভালো থাকবে। আর আমি? আমি কি পারবো অন্য কারো সাথে ভালো থাকতে? কখনো কি সায়ানকে ভুলতে পারবো? পারবে না। আবার সায়ানকে হ্মমাও করতে পারবো না। আমার জীবনটা একটা গোলক ধাঁধায় আটকে গেছে। যেখান থেকে বেরোনোর উপায় নেই।

এসব ভেবে তুলির চোখ দিয়ে দুফোঁটা পানি গড়িয়ে পরে। তুলি মুছে না।

কেউ তুলির পাশে এসে বসে। তুলির খেয়াল নেই

” কংগ্রাচুলেশনস

সায়ানের কন্ঠ পেয়ে তুলি চমকে পাশে তাকায়। সায়ান বসে আছে এক গাল হাসি নিয়ে। সায়ানের দিকে তাকিয়ে তুলির বুকের ভেতরে মোচড় দিয়ে ওঠে।
এ কি হাল হয়েছে সায়ানের। পাঁচদিনে একদম শুকিয়ে গেছে। চুল গুলো উসকোখুসকো চোখ দুটো ক্লান্ত। মুখটা শুকিয়ে গেছে। সুন্দর ছেলেটা এখন একটা পাগলের মতো হয়ে গেছে। তুলি চোখ ফিরিয়ে নেয়। সায়ানের এই রুপ দেখার সাদ্ধ নেই তুলির।

“কি গো কিছু বলছো না

” আপনি এখানে

“এক্স ওয়াইফের নতুন জীবনের জন্য কনগ্রাচুলেট করতে এলাম। তা ছেলে কি করে

” যাই করুক তার জীবনে কোনো পিছুটান বা গার্লফ্রেন্ড নেই। আর আমাকে খুব রেসপেক্ট করে কুকুর মনে করে না

তুলির মুখে অন্য ছেলের গল্প শুনে সায়ানের বুকের বা পাশে ব্যাথা করে

“আপনি কবে মনাকে বিয়ে করছেন?

” আমার আবার এতো তারা নেই। আস্তে আস্তে করলেই হলো।

“ওহহহহ

” সাইন করেছেন

“তুমি করেছো আমি না করলে কেমন হয়

” ওহহহ

“হুমমম

দুইজনই চুপ

” তুলি

“হুম

“তুমি তো অন্য কারো হয়ে যাবো তো আমি কি তোমাকে ছুঁতে পারি? যদিও তুমি পারমিশন না দিলেও আমি তোমায় ছুঁবো তাও জানিয়ে রাখলাম

সায়ান আলতো করে তুলিকে জড়িয়ে ধরে। তুলি ছাড়িয়ে নেয়

” গাঁয়ে হাত দেওয়া আমি পছন্দ করি না

“ওহহহ আচ্ছা
এর শোধ তো আমি নেবোই। আমাকে এতো ঘুমাচ্ছ তো তোমাকে মজা দেখাবো। জাস্ট ওয়েট এন্ড সী
সায়ান বিরবির করে বলে।
তুলির ফোন বেজে ওঠে। ফোনের স্কিনে অচেনা নাম্বার। সায়ান ছেড়ে দেয়।

” দেখো তোমার উডবি মেবি ফোন দিয়েছে

“হতেও পারে

সায়ান তুলির হাত থেকে ফোন নিয়ে ফোন কেটে দেয়

” এটা কেনো করলেন?

“তাই তো কেনো করলাম? আমি নিজেও জানি না

” আমি বাসায় যাবো

“জানি তো

” বিয়েতে আসবেন কিন্তু

“অবশ্যই আমি না আসলে বিয়েটা হবে কি করে?

” মানে

“এক্স বউয়ের বিয়ে আর আমি আসবো না এটা হয় না কি? অবশ্যই আসবো

তুলি এক নজর সায়ানের দিকে তাকিয়ে হাঁটা শুরু করে

” তুলি

তুলি দাঁড়িয়ে পেছনে তাকায়

“বাসর ঘরে ঢোকার আগে একদম লিপস্টিক লাগাবে না।

” কেনো?

“তোমার উডবি চায় না তোমার লিপস্টিক নেওয়া ঠোঁট অন্য কেউ দেখুক

” আপনাকে বলছে

“হুমমম

” মিথ্যুক

তুলি চলে যায়। সায়ান মুচকি হাসে।

তুলি যেতে যেতে ভাবো

“আমি যে বিয়ে করবো বলেছি এটা সায়ান জানলো কি করে? নিশ্চয় নিশি বলেছে। বলুক আমার কি?

তুলি বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়। তখন তুলির বাপি আসে

” তুলি

“হুম বাপি

বাপি তুলির পাশে বসে।

” আর একবার ভেবে দেখো মামনি

“ভাবার কিছু নেই। আমি বিয়ে করবো তাও শুক্রবারেই। এবার তুমি কোথা থেকে ছেলে আনবে জানি না

” জেদ করে একবার কি হলো দেখলে তো

“হলে আবার এমন হবে তবুও আমি বিয়ে করবো। ভুলতে চায় আমি সায়ানকে। সায়ান ফাইডে বিয়ে করছে তো আমি ওর আগে বিয়ে করতে চায় ব্যাস

” ওকে
একটা ছেলেকে দেখেছি তোমার জন্য। কাল তার সাথে মিট করো

“আমার মিট করার প্রয়োজন নেই

” না চিনে না জেনে একটা ছেলের সাথে থাকবে কি করে

“তোমাকে ভাবতে হবে না

” যা করবে ভেবেচিন্তে করবে

বাপি তুলির মাথায় হাত বুলিয়ে চলে যায়। তুলি সায়ানের ছবি দেখে।

“এই মানুষ টা আমাকে ঠকিয়েছে ভাবা যায়

তুলি ছবিটা ছিঁড়ে ফেলে। তার জোরে একটা শ্বাস নেয়।

সায়ান সেলুনে যায় সুন্দর করে চুল দাঁড়ি কাটে। ভেবে রেখেছে কাল থেকে জিমে যাবে। সব আগের মতো হবে। তুলির শোকে আর দেবদাস হয়ে বসে থাকবে না।
” যে আমার তাকে আমার কাছ থেকে কেঁড়ে নেবে এমন সাদ্ধ পৃথিবীর কারো নেই”
সায়ান এটা ভেবে এখন চিল মুডে আছে। এই কয়দিন সিগারেট মদ খেয়ে মন খারাপ করে রুমে বসে থেকে চোখের পানি ফেলে সায়ান ভুল করেছে এটাই এখন সায়ানের মনে হচ্ছে।

হাসিখুশি মুড নিয়ে সায়ান বাসায় ঢুকে
সায়ানের মা তো অবাক

“সায়ান একা একা হাসছিস কেনো?

” তোমাকে নাতি নাতনি গিফট করবো তাই

“ভাই কে প্রেগন্যান্ট তুলি না মনা

জিসানের কথায় সায়ান প্রচুর রাগ হয়। জিসানের পিঠে কয়েকটা চড় থাপ্পড় মেরে বলে

” কিছুদিনের মধ্যে তুলি হবে

“হুম জানি তুলির বরটা না কি তুলির মতোই হট হট গ্রীষ্মকাল

” হুমমম😎

“ব্রো তুই দেখছোস না কি?

” আমাকে আমি দেখমু না

“বুঝলাম না

সায়ান জিসানের গাল টেনে বলে

” বাচ্চারা একটু কম বুঝে

সায়ান নাচতে নাচতে রুমে চলে যায়

“ঘটনা তো বুঝলাম না। হইলো কি হঠাৎ করে? তুলির কাছে তো জিজ্ঞেস করতে হয়।

চলবে

আমার ক্রাশ পর্ব-১৮

0

#আমার ক্রাশ
#পর্বঃ১৮
#Tanisha Sultana (Writer)

অনেক খন হলো জিসান আসছে না। তুলি জিসানকে ফোন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন হুরমুরিয়ে সায়ান গাড়িতে ওঠে। তুলি সায়ানকে দেখা মাএই নেমে যেতে নেয় সায়ান হাত ধরে

“গাড়ি থেকে নামলে তোমার কি হাল করবো তুমি নিজেও যানো না।

সায়ান হাত ছেড়ে দেয়। তুলি শান্ত ভাবে বসে। সায়ান মুচকি হেসে গাড়ি স্টার্ট দেয়।
তুলি গাড়ির কাঁচের দিকে তাকিয়ে আছে। কেনো জানি খুব কান্না পাচ্ছে। গালে এখনো ব্যথা করছে। কিন্তু সায়ানকে চোখের পানি দেখাতে চায় না তুলি। হতে পারে পাগল দুষ্টু কিন্তু নিলজ্জ আর ছোটলোক না। ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকাচ্ছে।

সায়ান তুলির হাতের ওপর হাত রাখে। তুলি সরিয়ে নেয়

” তুলি কেনো এমন করছো? আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি।

তুলি হো হো করে হেসে ওঠে। সায়ান ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। ভালোবাসি বলাতে এতো হাসির কি হলো সায়ান বুঝতে পারছে।

“হাসির কি হলো?🙄

তুলি হাসি থামিয়ে গম্ভীর হয়ে বলে

” ভালোবাসি শব্দটা বলতে টাকা লাগে না তাই যাকে তাকেই বলা যায় তাই না মিস্টার সায়ান মাহবুব। এই তো কদিন আগে মনাকে ভীষণ ভালোবাসু বলতেন এখন আবার তুলি। পবলেম কি আপনার? কয়টা লাগে আপনার? মানে তুলিকেও চায় আবার মনাকেও চায়। তাই না।

“তুলি মনাকে ভালোবাসতাম আর তোমাকে এখন ভালোবাসি

” তাহলে ফিউচারে নতুন কেউ আসলে তাকেও ভালোবাসবেন

“সব সময় উল্টো মানে বের করো কেন?

” ভালোবাসার মানেই বুঝেন না আপনি। আমি উল্টো মানে বের করছি না। আপনি তো একটা ছেড়ে আর একটার সাথে মানিয়ে নিতে পারেন ভালোবাসলে পারতেন না।

“আমি মনাকে সত্যি ভালোবাসতাম। কিন্তু তুমি আমার লাইফে আসার পর সব গন্ডগোল হয়ে গেলো। মনার জায়গাটা তুমি নিয়ে গেলে

” এখন আবার অন্য কেউ আসলে আমার জায়গাটা নিতে পারবে

“সত্যি ইডিয়েট তুমি

” হুম আমি ইডিয়েট কিন্তু আপনার মতো চার পাঁচটা মনের অধিকারী না

“আমার একটাই মন

” একটা মন হলে মনাকে আর আমাকে দিলেন কি করে?

সায়ান এবার কি বলবে বুঝতে পারছে না

“মন দিয়ে ভালোবাসার চেষ্টা করুন। ভালোবাসার মানে না বুঝুন তারপর ভালোবাসি বলে আমার সামনে আইসেন তার আগে না

সায়ান গাড়ি থামায়।

” আমি তোমাকে ভালোবাসি ব্যাস

“আমি বাসি কিন্তু আপনার কাছে ফিরবো না

” ফিরতে তোমাকে হবেই

“জোর খাটাবেন না

” অধিকার আছে

“ডিভোর্স দিলে তো আর থাকবে না

” আমাকে রাগীও না তুলি

“বাসায় পৌঁছে দিতে চাইলে দেন নয়ত আমি একাই যাচ্ছি

” এতো ত্যারা তো তুমি ছিলে না

সায়ান

সায়ান তুলি দুজনই বাইরে তাকিয়ে দেখে মনা দাঁড়িয়ে আছে। সায়ান গাড়ি থেকে নেমে মনার কাছে যায়। মনা হাউমাউ করে কেঁদে সায়ানকে জড়িয়ে ধরে। তুলি গাড়ি থেকে নেমে চলে একটা অটোতে উঠে।

এবার আর তুলি কান্না আটকাতে পারলো না। কেঁদেই দিলো

“আপনি কখনো বদলাবেন না সায়ান। এতো বাজে কেনো আপনি? যখনি ভাবি সব ঠিক করে নেবো তখনই আপনি মনার কাছে ছুটে যান। আই হেট ইউ সায়ান। আর কখনো ফিরবো না আপনার কাছে কখনো না।

ভাড়া মিটিয়ে তুলি বাড়ি যায়। আদর দরজা খুলে। যদিও তুলি চোখ মুখ মুছে একটু স্বাভাবিক হয়ে হাসার চেষ্টা করে বাড়িতে ঢুকে। যাতে কেউ কিছু বুঝতে না পারে। তারপরও আদর বুঝে যায়।

” বোন কি হয়েছে তোর?

আদরের প্রশ্নে তুলি হকচকিয়ে যায়। আমতা আমতা করে বলে

“কই কিছু না তো?

আদর হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে বলে

” তাহলে তোর গালে থাপ্পড়ের দাগ কেনো?

তুলি গালে হাত দিয়ে একটু হাসার চেষ্টা করে বলে

“কিছু না

” ভাইয়ের কাছ থেকে লুকাচ্ছিস

“সত্যি দাভাই তেমন কিছু না। সিরিয়াস কিছু হলে তো তোমাকে আমি বলতামই তাই না

” বিশ্বাস করবো আমি?

“চেঞ্জ করবো

” এখন তো ওই বাড়ি থেকে লোক আসবে তুই চেঞ্জ করবি কেন

“বোরিং লাগছে

তুলি রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।

” সরি দাভাই মিথ্যা বললাম। সত্যি বললে তোমার আর সায়ানের ঝগড়া হবে যেটা আমি চায় না।

তুলি চেঞ্জ করে বেলকনিতে বসে কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনছে।

“তুই তো বন্ধু মানুষ ভালা না”

বাড়ির সবাইকে ডাকতে না করেছে তুলি। বলেছে আমি এখন ঘুমাবো। আসলে তুলি সবার থেকে নিজেকে আড়াল করছে। তুলির মুড অফ দেখলে বাবা মা ভাই ওদের খারাপ লাগবে। তুলি চায় না ওর জন্য ওর ভাইয়ের বিয়ের কোনো হ্মতি হোক।

হঠাৎ কেউ তুলির কান থেকে হেডফোন টান দিয়ে নিয়ে যায়। তুলি হকচকিয়ে তার দিকে তাকায়। দেখে সায়ান। তুলি সায়ানকে দেখে অনেকটা অবাক হয়। কারণ দরজা বন্ধ ও এখানে আসলো কি করে? সায়ান হেডফোন গলায় পেচিয়ে বেডে বসতে বসতে বলে

“আমি এখানে কি করে এলাম এটাই ভাবছো?

তুলি মাথা নারায়। মানে হ্যাঁ

” তোমার জানালা দিয়ে ঢুকেছি

তুলি কিছু বলে না। আবার বেলকনিতে যেতে নেয় সায়ান হাত টান দিয়ে কোলে বসিয়ে দেয়।

“আমাকে না বলে চলে আসলে কেনো?

তুলি কোল থেকে নামার চেষ্টা করছে। সায়ান শক্ত করে জড়িয়ে ধরে

” ছুঁটে দেখাও

তুলি শান্ত হয়ে যায়।

“পারলে না তো

“…….

” আমি না ছাড়া পর্যন্ত তুমি আমার কাছ থেকে যেতে পারবে না। তাহলে চেষ্টা কেনো করছো?

“……..

” কথা বন্ধ হয়ে গেলো না কি?

“প্লিজ এমন করো না তুলি। আই নিড ইউ

তুলি আবার মোচড়ামুচড়ি শুরু করে। সায়ানকে চড় থাপ্পড় মারতে থাকে। নামার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছে।

” সাপের মতো করছো কেন?

সায়ান তুলির ঠোঁটে কিস করে। তুলি শান্ত হয়ে যায়। সাথে চোখ বড়বড় করে ফেলে

” এক মিনিট কিস করলাম। তোমার থেকে বেশি। অবশ্য আরও করতে পারতাম কিন্তু বউ তো রাগ করেছে তাই ছেড়ে দিলাম

তুলি উঠে বেলকনিতে চলে যায়। সায়ানের বেশ রাগ লাগছে। এতো এটিটিউট কিসের ওর। এতো করে সরি বলা হচ্ছে তারপরও মন গলছে না।

সায়ান গিয়ে তুলির পাশে বসে।

“কি করতে হবে বলো?

” আমি মুক্তি চায়। সাগরের পারে ঘড় বাঁধার স্বপ্ন আমার শেষ। এবার একটু শান্তি চায়

সায়ান তুলির চুল মুঠ করে ধরে

“এসেছিলি কেনো আমার জীবনে? এখন আবার এতো মেলোড্রামা করছিস কেন? তোর পেছনে ঘুরছি বলে বেশি উড়ছিস তাই না। হাত পা বেধে নিয়ে যাবো তোকে।

তুলির চুলে টান লাগছে ব্যাথা করছে। তবুও কিছু বলছে না। মনের ব্যাথার কাছে শরীরের ব্যাথা কিছুই না। তুলির চোখ থেকে পানি পরছে।

সায়ান চুল ছেড়ে দেয়। তুলিকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে

” আমাকে একটু একা থাকতে দিবেন প্লিজ

তুলি কান্না মাখা কন্ঠে বলে। সায়ান তুলিকে ছেড়ে হনহনিয়ে চলে যায়।

“আপনি কখনো আমার মন বুঝেনই নাই সায়ান। #আমার ক্রাশ কখনো আমাকে তার মনেই জায়গা দিতে পারলো না। আমি আপনার মোহ হয়ে গেছি যা কিছু দিন পরেই কেটে যাবে। কিন্তু আমি আপনার ভালোবাসা হতে চায় মোহ না। আপনার ভালোবাসা তো মনা। আমি অনেক দুরে চলে যাবো😭

সায়ান বাড়ি ফিরে ভাংচুর শুরু করে দিছে। দরজা বন্ধ করে ভাংচুর করছে। কিছুতেই রাগ কমছে না। তুলি ইগনোর করছে। কিন্তু কেনো? এতো কিসের জেদ ওর। ভুল করেছে হ্মমা চেয়েছে। ঝামেলা মিটে গেছে। এখন এসব কিছুর কি প্রয়োজন।

সায়ান এসব ভাবছে। অবশেষে মদ অর্ডার করে সায়ান। কখনো মদ খাই নি সায়ান তবে আর খাবে। কেনো না আজ খুব কষ্ট হচ্ছে।

” আমি খারাপ হলে তার জন্য দায়ী তুমি তুলি। তোমার জন্য সব হচ্ছে। সব তোমার জন্য হচ্ছে। থাকো তুমি তোমার এটিটিউট নিয়ে। আর ফেরাতে যাবো না তোমায়। ভালো থাকো। আমিও ভালো থাকবো।

চলবে

আমার ক্রাশ পর্ব-১৭

0

#আমার ক্রাশ
#পর্বঃ১৭
#Tanisha Sultana (Writer)

তুলি চিৎকার করে কিন্তু মুখ থেকে আওয়াজ বের হয় না কারণ সামনে থাকা মানুষটা শক্ত করে তুলির মুখ চেপে ধরেছে।

“উম উমমমমম

“কি উম উম করছো। আমাকে ইগনোর করার সাহস হয় কি করে? 😡

লোকটার কন্ঠ শুনে তুলি বুঝে যায় এটা সায়ান তাই নরাচরা বন্ধ করে। তুলি সায়ানের পায়ে জোরে লাথি মারে। সায়ান আহহ করে উঠে তুলির মুখ ছেড়ে দেয়। তুলি জোরে জোরে শ্বাস নিতে থাকে। সায়ানের রাগ বেরে যায়। তুলির দুই বাহু চেপে ধরে বলে

” এমন করছো কেনো তুমি? কদিন আগেও তো কতো জ্বালিয়েছো আর এখন এমন কেনো করছো?

তুলি সায়ানের থেকে দুরে গিয়ে দাঁড়ায়।

“ডোন্ট টাচ মি। মেয়ে দেখলেই গায়ে হাত দিতে ইচ্ছে হয় তাই না😡
কিছুটা চিৎকার করে বলে তুলি।

সায়ান ঘারড়ে যায় কারণ সায়ান আগে কখনো তুলি রাগী চেহারাটা দেখে নি।

” তুলি আর ইউ ওকে

তুলি রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নেয় সায়ান হাত ধরে। তুলি ঝাড়ি মেরে হাত ছাড়িয়ে নেয়।

” কতোবার বলতে হবে ছুঁবেন না আমায়। একটা থার্ড ক্লাস মেয়েকে ছুঁতে আপনার বাধছে না।

“আর কতোবার সরি বলতে হবে বলো আমায়? কতোবার আর কিভাবে সরি বললে মাফ করবে। বলবা প্লিজ? ভুল করেছি আমি লাস্ট চান্স চাইছি প্লিজ

” আমি ভালোই ভালোই বলছি আমাকে এখান থেকে যেতে দিন।

“দেবো না যেতে তোকে দেখি কি করিস তুই। ভুল করেছি সরি বলেছি ঝামেলা শেষ। এখন এরকম করার কি আছে?

” ড্রামাবাজ তো আমি তাই ড্রামা করছি। ড্রামা করে আপনাকে ইমপ্রেস করছি। আসলে কি বলেন তো আমি তো এসব করেই অভস্ত। খারাপ মেয়ে কি না। আপনার জীবন নষ্ট করে দিয়েছি। এবার আপনার ভাই অভিকে ধরেছি। এটা ভাবছেন আপনি আই এম শিওর।

তুলি আর কিছু বলার আগেই সায়ান ঠাস করে তুলির গালে একটা চর মেরে দেয়। থাপ্পড়টা বেশ জোরেই মারে। তুলি ছিটকে দুরে পরে যায়। গালে পাঁচটা আঙুল বসে যায়। নাক দিয়ে রক্ত পরছে।

তুলি উঠে দাঁড়ানোর শক্তি পাচ্ছে না। তুলির চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে।

তুলিকে থাপ্পড় মেরে সায়ান দেয়ালে কয়েকটা ঘুসি মারে। তারপর তুলির কাছে হাঁটু গেরে বসে নরম গলায় বলে

“সরি বউ। কেনো তুমি ওই কথা গুলো বললে? আমার ওসব সয্য হয় নি। কাল থেকে ইগনোর করছো। ফোনটাও তুলছো না। আমার ওপর দিয়ে কি যাচ্ছে তুমি বুঝতে পারো না। প্রতিটা সেকেন্ডে আমি তুলি নামক শূন্যটা অনুভব করেছি।

তুলির দুগালে আলতো করে হাত দেয়। চোখের পানি মুছে দেয়। যেখানে থাপ্পড় মেরেছে সেখানে হাত বুলায়। তুলি কিছু বলছে না।

” আর একটা সুযোগ দাও তুলি। আই প্রমিজ তোমাকে কখনো রাগাবো না। কাঁদাবো না। বকবো না। মাথায় করে রাখবো তোময়। মনার থেকে অনেক দুরে থেকেছি কিন্তু কখনো মনার শূন্যতা অনুভব করি নি। মনার কথা আমার কখনো মনেই পরে না। কিন্তু তোমাকে প্রতি সেকেন্ডে মিস করি আমি। আই নিড ইউ। প্লিজ হ্মমা করে দাও। তোমাকে ছাড়া আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। প্লিজ তুলি। তোমাকে আমি এতোগুলা বেবি দিবো। প্লিজ তুলি। আমি ভীষণ ভাবে তোমার বাচ্চামো গুলো মিস করি।

তুলি নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছুই বলছে না।

“এই তুলি কিছু বলো

তুলি চোখের পানি মুছে বলে

” আমি ফেলে দেওয়া জিনিস কুরিয়ে নেই না

“আমি অনেক কষ্টে রাগ কন্ট্রোল করছি। প্লিজ রাগ বারিয়ো না

” আমাকে এখান থেকে যেতে দিন

“আমি তোমার হাজবেন্ড

” খুব তারাতাড়ি ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দেবো তাও আমার সাইন সব। অলরেডি বাপি ব্যবস্থা করে ফেলেছে জাস্ট পেপারটা আসতে একটু ডময় লাগছে। এখন আপনার যতখুশি মনার সাথে প্রেম করে বা ফ্লাট করো আই ডোন্ট কেয়ার।

“আর তুমি?

” আমার যা ইচ্ছে আমি তাই করবো। বাংলাদেশে ছেলের অভাব না। নেহাৎ আপনার ওপর ক্রাশ খাইছিলাম তাই।

“তুলি তুমি

” আপনার মুখে আমি আমার নামটা শুনতে চায় না। আর আপনার সামনা সামনি থাকলে আমার গা গুলিয়ে আসে। দুটো থাপ্পড় মেরেছেন আমাকে।

“সরি

” এখন আমি যদি আপনার একটা হাত কেটে ফেলে সরি বলি। আপনার হাতটা কি আগের মতো হয়ে যাবে?

“নাহহ

” সরি বললে কি আমার মন থেকে আপনার করা অপমান অবহেলা গুলো মুছে যাবে সায়ান? যাবে না। পাগলা কুকুরের মতো আপনার পিছনে ঘুরেছি কতো শক বাহানা করে। কতোভাবে আপনার মনে জায়গা করার চেষ্টা করেছি। আপনি মনা মনা করে গেছেন। এখন একটু রিলাইজ করেন আমার কেমন লেগেছে। আমার কষ্টটা একটু ফিল করুন সায়ান মাহবুব।

তুলি বেরিয়ে যায়।

“আমার তুলিটা পাল্টে গেলো। ভীষণ ভাবে পাল্টে গেছে৷ এই তুলিকে আমি চিনি না।

এসব ভেবে সায়ানের চোখ থেকে দুফোটা পানি ঝড়ে।

তুলি চোখ মুছছে আর মনে মনে বলছে

” আপনি আবার আমাকে মারলেন সায়ান। এতো খারাপ আপনি। আই হেট ইউ।

“তুলি

জিসানের ডাকে তুলি জিসানের কাছে যায়। মুখে একটু হাসি টেনে বলে

” কি হয়েছে?

“তোকে এরকম লাগছে কেনো তুলি? তোর গালে তো থাপ্পড়ের দাগ। কে তোকে মেরেছে😡😡

” জেনে কি করবি? তাকে মারবি?

“হুমম মারবো

” তোর ভাই মেরেছে। যা মার

জিসান ঢোক গিলে

“তুই নিশ্চয় ভুল ভাল কিছু করেছিলি তাই মেরেছে

তুলি তাচ্ছিল্য হেসে বলে

” সেটাই তো। সব সময় তুলি কিছু না কিছু করে। তুলি বেশি কথা বলে। তুলি দুষ্টুমি করে৷ তুলি ড্রামা করে। তুলি নেকামি করে। বাচ্চামো করে সবার মন জয় করতে যায় তাই না।

“জিসান ওকে এতো বড় বড় কথা বলতে না কর।

সায়ান কন্ঠ শুনে জিসান চমকে ওঠে। তুলি যেভাবে ছিলো সেভাবেই আসে। তুলি হয়ত আগেই আন্দাজ করতে পেরেছিলো সায়ান আছে পেছনে।

” এই তুলি বেশি কথা বলিস না। (জিসান)

“জিসান ওকে বাড়ি দিয়ে আয়।

” চল তোকে দিয়ে আসি

“আমি একাই এসেছি যেতেও একাই পারবো। কারো হেল্পের প্রয়োজন নেই।

” তুলি তুমি

জিসান সায়ানকে থামিয়ে বলে

“ব্রো ওকে বকো না প্লিজ। আমি ওকে বুঝিয়ে দিয়ে আসবো। কি বলোতো সবাই তো ধমকে ভয় পায় না। তুলি তোমার কাছে কেমন জানি না। কিন্তু আমার কাছে তুলি ওয়ার্ডের বেস্ট পারসন। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। তুলির কষ্ট হলে আমারও কষ্ট হয়। তুমি তুলিকে মেরে ঠিক করো নি। আমি ভেবেছিলাম তুলিকে বুঝিয়ে বলবো এখানে ফিরে আসতে। তোমার জন্য না আমাদের জন্য। আসলে তুলির বাচ্চামো গুলো আমার বাবা মায়ের খুব ভালো লাগে। কিন্তু এখন তুলি এখানে আসতে চাইলেও আমি আসতে না করবো। চল তুলি

জিসান তুলির হাত ধরে হাঁটা শুরু করে।

” আবার আর একটা ভুল করে ফেললাম।

তুলি নিশিকে হলুদ লাগাচ্ছে আর অভি তুলির ছবি তুলছে। অভি তুলির হাসি মাখা অনেক ছবি তুলে দেয়। সায়ান পুরো সময় টা দুর থেকে তুলিকে দেখে। আর তুলির সামনে যায় না। সায়ান প্রথমে ভেবেছিলো তুলিকে আজ যেতে দেবে না। জোর করে হলেও নিজের কাছে রেখে দেবে। কিন্তু পরে মত পাল্টায়। বিয়ে টা মিটে গেলে তুলিকে আর যেতে দেবে না। রুমে বন্ধ করে রাখবে। তবুও যেতে দেবে না।

সায়ান এসব ভেবে মুচকি হাসে।
হলুদ লাগানো শেষে তুলি বাড়ি যাবে। অন্ধকার হয়ে গেছে। তুলি সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়েছে। জিসান তুলিকে পৌঁছে দিতে যাবে। তুলি গাড়িতে বসে।

“জিসান চল

” একটু বস আমি আসছি

“তারাতাড়ি আসবি

জিসান গাড়ি থেকে নেমে চলে যায়। তুলি একা একা বসে আছে।

চলবে

আমার ক্রাশ পর্ব-১৬

0

#আমার ক্রাশ
#পর্বঃ১৬
#Tanisha Sultana (Writer)

সায়ান তখন থেকে তুলিদের বাসায় কলিং বেল বাজাচ্ছে কেউ সারা দিচ্ছে না। সায়ানের টেনশনে মাথা ছিঁড়ে যাচ্ছে। এতো জোরে কলিং বেল চাপছে মনে হয় এখুনি ভেঙে যাবে। আদর দরজা খুলে দেয়

“এতোখন লাগলো দরজা খুলতে 😡

” তুই এখানে এইসময় কেনো?

“তুলি কোথায়? তুলির সাথে দেখা করবো

” তুলি তোর সাথে দেখা করবে না

“মানে কি?

” বিরক্ত করিস না। যা এখান থেকে

আদর মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দেয়।

“আজব! মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিলো। এখন তুলির সাথে কথা বলবো কি করে? এদের বলে লাভ নেই এরা ভীষণ হ্মেপে আছে আমার ওপর। অন্য কোনো রাস্তা খুঁজতে হবে।

সায়ান তখন থেকে তুলিদের বাসার সামনে বসে আছে৷ তুলির দেখা মিলছে না। কি আজব বেপার দুদিন আগেই মেয়েটাকে সয্য করতে পারতো না৷ কি করে তুলির হাত থেকে বাঁচবে সেটা ভাবতো আর আজ সেই তুলিকে এক নজর দেখার জন্য বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। কথায় বলে

” থাকলে কাছে কে আর বুঝে
হারিয়ে গেলে সবাই খুঁজে ”

সায়ানের বেপারটাও এমন হয়েছে।
সায়ান পায়চারি করছে।

“তুলি একবার বারান্দায় আসো প্লিজ। তোমাকে দেখার জন্য মনটা কেমন করছে প্লিজ তুলি। আমি আর কখনো তোমাকে কষ্ট দেবো না। মাথায় করে রাখবো। আল্লাহ সাহায্য করো

সায়ান মনে মনে বলছে।

তুলি ফ্লোরে মাথা রেখে খাটে পা রেখে চিপস খাচ্ছে আর টিভি দেখছে। তুলির এভাবে থাকতে ভালো লাগে। বিশেষ করে মন খারাপের সময়। আদর তুলির রুমে আসে

” বোন

“বলো

” সায়ান এসেছিলো

“তো

” তোর সাথে কথা বলতে চাইছিলো

“ওই ব্যাটা টার চেহারা আমি দেখতে চায় না৷ ও যদি এখানে আসে তাহলে আমি কাউকে কিছু না বলে দুরে কোথাও চলে যাবো আর কখনো খুঁজে পাবে না আমায়।

” ও কে তাড়িয়ে দিয়েছি

“ভেরি গুড। আদিহ্মেতা দেখাতে এসেছে। আমাকে থার্ড ক্লাস মেয়ে বলেছে আমি না কি ড্রামা করি। আরও অনেক কিছু বলেছে।😭

” ওকে তো আমি খুন করবো😡

“কিছু করতে হবে না। ওর সাথে আমি কোনোরকম সম্পর্ক রাখতে চায় না।

” আমিও নিশিকে বিয়ে করতে পারবো না। এখন না করবো

তুলি ঠাস করে সোজা হয়ে বসে

“দাভাই এটা করো না। নিশিপু খুব ভালো ওর কোনো দোষ নেই

” যার ভাই আমার বোনকে কষ্ট দিছে তাকে বিয়ে করবো ইম্পসিবল

তুলি আদরের হাত ধরে

“প্লিজ দাভাই আমার জন্য নিশিপুকে রিফিউজ করো না প্লিজ

“………

” এই বিয়ে টা না হলে আমি বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো

“আমি বিয়েটা করতে পারি যদি

” যদি

“তুই আগের মতো হাসিখুশি থাকিস

” তুলির আবার মন খারাপ আছে না কি? তুলি তো সব সময় হাসে। এখন তো ডান্স প্যাক্টিজ করতে হবে। কাল তো অনেক নাচবো

আদর মুচকি হেসে তুলিকে জড়িয়ে ধরে

“লাভ ইউ বোন

” লাভ ইউ টু দাভাই

দিন গড়িয়ে সন্ধা হয়ে এসেছে সায়ান এখনও ওখানেই দাঁড়িয়ে আছে। সায়ানের বাবা ফোন দেয়। সায়ান বাড়ি ফিরে যায়। সায়ান গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই তুলি বেলকনিতে আসে। আসলে বিকেলে বেলকনিতে হালকা রোদ থাকে তাই তুলি আসে নি। তুলির আবার রোদ একদম অপছন্দ।

এক কাপ কফি হাতে নিয়ে টুল টেনে বেলকনির রেলিংয় হাত দিয়ে বসে।

“ভালোবাসা বলতে এ জুগে কিছু নেই। মা বাবা ভাই বোন ছাড়া আর কেউ ই মন থেকে ভালোবাসে না। এই সায়ানকে এতো ভালোবাসলাম। কিন্তু ও কি করলো অপমান করলো গায়ে হাত তুললো।

এসব ভেবে তুলি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে সায়ানের ১৪৫ টা মিস কল। এতো এতো মেসেজ। তুলি তাচ্ছিল্য হাসে

” এই হলো কিছু মানুষের স্বভাব। তারা দু নৌকায় পা দিয়ে চলতে যায়। কখনো যদি টের পায় একটা নৌকা একটু সরে যাচ্ছে তাকে যেতে দেয় না আটকে রাখেন। কারণ তাদের দুটোই চায়। কিন্তু শেষে তারাই নিশ্ব হয়ে যায়।

এসব ভাবনার মাঝে আবারও ফোন বেজে ওঠে। তুলি ফোনটা বন্ধ করে দেয়।

“যখন মায়া বাড়িয়ে লাভ হয় না
তখন মায়া কাটাতে শিখতে হয় ”

“এতোদিন তুলির ভালোবাসা দেখেছো এবার ঘৃণা দেখবে সায়ান মাহবুব।

সায়ান নিজের রুমে অস্থির হয়ে পায়চারি করছে। তুলি ফোন বন্ধ করে দেওয়ায় আরও কষ্ট + রাগ হচ্ছে। দুই প্যাকেট সিগারেট শেষ করেছে।

” একবার তোমাকে হাতের কাছে পায় তুলি তারপর দেখাবো আমাকে ইগনোর করার পরিনাম। ভুল করেছি একটা সরি বলার সুযোগ তো দিতে হয়।

সায়ান নিজে নিজে এসব বলছে।

আজ আদর আর নিশির গায়ে হলুদ। সায়ান ওর মা বাবাকে পাঠিয়েছে তুলিকে ফিরিয়ে আনতে। তুলি শশুড় শাশুড়ীর মাঝ খানে বসে আছে।

” দেখ মা এক সাথে থাকতে গেলে এমন অনেক ছোটখাটো জিনিস নিয়ে ঝগড়া ঝামেলা হয়। তাই বলে তো সংসার ছেড়ে চলে আসা যায় না বল। ফিরে চল মামনি

তুলি শাশুড়ীর কথা শুনে উঠে দাঁড়ায়। তুলির মা বাবা আদরও এখানেই আছে।

“আপনার বলা শেষ হলে আপনারা এবার যেতে পারেন আন্টি। দাভাই স্পষ্ট বলে দিয়েছিলো আপনার মেয়েকে বিয়ে করবে না কিন্তু আমার কথায় রাজি হয়েছে। এখন আপনারা এসব কথা বাদ না দিলে আমি নিজে বিয়ে ভাঙতে বাধ্য হবো।

সায়ানের বাবা মা অবাক দৃষ্টিতে তুলির দিকে তাকায়। এটা তুলি তো? তুলি তো কখনো এভাবে কথা বলে না। তাহলে আজ কেনো এভাবে কথা বলছে?

” তুলি মা

তুলি হাত জোর করে বলে

“আপনারা আসতে পারেন।

তুলি রুমে চলে যায়। সায়ানের মা তুলির পেছনে যেতে নেয় তুলির বাবা আটকে দেয়

” আপনার ছেলেকে বিয়ে করে আমার তুলি অনেক অপমান সয্য করেছে। আপনার ছেলের হাতের থাপ্পড় ও খেয়েছে। এবার ওকে ওর মতো থাকতে দিন প্লিজ। আমি ডিভোর্সের ব্যবস্থা করছি। পেপার এলে তুলির সাইনসহ পাঠিয়ে দেবো। কেমন

সায়ানের বাবা মা চলে যায়। সায়ানকে সব বলে। হাতের কাছে থাকা কাঁচের গ্লাস টা ভেঙে ফেলে সায়ান

“খুব বার বেরেছে তুলির। বড় বড় কথা বলতে শিখে গেছে।

বিকেলে
হলুদ শাড়ি মাথায় ফুলের গাজরা লাল লিপস্টিক চোখে মোটা করে কাজল ভারি মেকাপ দিয়ে পারফেক্ট হয়ে সেজে বের হয় তুলি।

” বাপি কেমন লাগছে তোমার তুলিকে?

বাবা তুলির কানে কাজলের টিকা দিয়ে বলে

“পারফেক্ট

তুলি খুশি হয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে। তারপর বেরিয়ে পরে মেয়ের বাড়িতে আই মিন নিশিদের বাড়িতে নিশিকে হলুদ দিতে। তুলিসহ আরও অনেকগুলো মেয়ে। সায়ানদের বাড়ি তুলিদের বাড়ি থেকে খুব বেশি দুরে না। তাই পায়ে হেঁটেই যায়। অভি জিসান সহ আশেপাশে যত মানুষ আছে সবার নজর তুলির দিকে। অপূর্ব লাগছে তুলিকে।

তুলি অভি জিসানের সামনে যায়

” কেমন লাগছে 😎

“পরি। অনমনে বলে অভি।
আমার ক্রাশ

” তাহলে চলো প্রেম করি😁

“তোমার সাথে প্রেম করতে পারলে জীবন ধন্য

” কও কি

“সত্যি

” লাভ ইউ. এখন তুমি টু কও।

“লাভ ইউ টু
অভি আর তুলি দুজনই ফিক করে হেসে ওঠে। জিসান আসলে কি হচ্ছে বোঝার চেষ্টা করছে।

সায়ানদের বাড়ির সামনে বাগানে হলুদের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সায়ান বেলকনিতে ছিলো তাই তুলি আর অভির হাসাহাসি দেখতে পায়। সায়ানের মাথায় রক্ত চরে যায়। হনহনিয়ে রুমে থেকে বের হয়।

তুলি নিশির কাছে যাচ্ছিলো। কেউ তুলির হাত ধরে টেনে একটা অন্ধকার রুমে নিয়ে যায়। তুলি চিৎকার দেওয়ার মতোও সময় পায় না। কে নিয়ে গেলো সেটাও বুঝতে পারছে না। লোকটা দরজা বন্ধ করে দেয়। তুলির ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। দুই কানে হাত দিয়ে তুলি দেয় এক চিৎকার

চলবে

আমার ক্রাশ পর্ব-১৫

0

#আমার ক্রাশ
#পর্বঃ১৫
#Tanisha Sultana (Writer)

আপনার ডেয়ার হলো আপনি আমাকে কোলে নিয়ে পুরো বাড়ি ঘুরবেন

সায়ান বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়

“ইমপসিবল

তাহলে সবার সামনে আমাকে কিস করেন

কখনোই না

জিসান অভি নিশি ওরা তুলির দিকে তাকিয়ে আছে হা করে। এই মেয়েটা সত্যি অন্য রকম

তাহলে কি করতে চান?

কিছু না

ডেয়ার কমপ্লিট না করে এখান থেকে যেতে পারবেন না

কে আটকাবে আমায়

আপনি নিজেই

” কি করে?

“আপনি ডেয়ার কমপ্লিট না করলে ধরে নেবো আপনি আমাকে ভালোবাসেন। তাও আবার মারাক্তক

” ভালো একটা ডেয়ার দাও

“ভালোই তো দিলাম কিস ওর কোল। এখন আপনার সিদ্ধান্ত কোনটা করবেন

” তোমার ওজনের দিকে খেয়াল আছে

“হুম আছে তো মাএ 42 kg

” ধুর এখানে এসেও ফেসে গেলাম😡

সায়ান তুলিকে কোলে নিতে যায় তুলি থামিয়ে দেয়
“এক মিনিট

তুলি ক্যামেরা অন করে ফোনটা জিসানের কাছে দেয়
” দোস্ত সুন্দর করে ভিডিও কর

“এবার কোলে নেন

সায়ান তুলিকে কোলে নেয়। তুলি গলা জড়িয়ে ধরে।

” উফফফফ জামাইয়ের কোলে উঠছি ভাবা যায়। ফিলিং উরুউরু আর গান

“চুপ না করলে ঠাস করে ফেলে দেবো

” ওকে জানটুস চুপ করলাম😘😘😘

“ইডিয়েট

সায়ান তুলিকে নিয়ে পুরো বাড়িটা ঘুরে ক্লান্ত হয়ে যায়। তুলিকে ঠাস করে নামিয়ে সায়ান বসে পরে।

” ওই মাইয়া আমার নাতির কোলে চড়ে আমার নাতিরে অধমরা বানায় দিলি কেন? (সায়ানের দাদিমা বলে। বিয়ে উপলক্ষে এসেছে)

তুলি দাদিমার পাশে বসে বলে

“আর দাদিমা বইলেন না আপনার নাতিরে কতো কইলাম কোলে নিয়ে ঘুরতে হবে না। কিন্তু ওনার না কি প্রেম প্রেম পাইছে তাই কোলে করে প্রেমটা উপভোগ করলো😁

সায়ান ঃ😡😡😡😡😡😡

তুলিঃ😛

দাদিমাঃ খালি কোলে উঠে ঘুরলে হইবো না। খুশির খবর দিতে হবে

” দুঃখের কথা কি কমু। বিয়ের পরের দিন থেকে বলতেছি আমারে একটা বেবি দেন কিন্তু উনি দিচ্ছেন না। বেবি তো দুরের কথা একটা কিসও করে নাই 😭
ওই আমিই জোর করে মাঝেমধ্যে করি

তুলির কথা শুনে দাদিমা হা। সায়ানের দাঁতে দাঁত চেপে বলে

“তুলি রুমে চলো

” আমি যাবো না। দাদিমার সাথে গল্প করবো

“আমি রুমে যেতে বলছি😡

সায়ান তুলির হাত ধরে রুমে নিয়ে যায়। তারপর ধাপ করে দরজা বন্ধ করে দেয়।

” পাগল তুমি?

“হুম

” কেনো পরে আছো আমার পিছু? কি চাও তুমি? সুখ তো নিয়েই গেছো। এবার কি পরিবারের সামনে যাতে মুখ দেখাতে না পারি সেটা করবে? একটা বাচ্চাও তো বোঝে। আর তুমি। সব সীমা পার করে গেছো

“আপনি এভাবে কথা বলছেন আমার সাথে?

” ভালো ভাবে কথা বলছি। তোমার মতো একটা থার্ড ক্লাস মেয়ের সাথে আমি এর থেকে ভালো করে কথা বলতে পারবো না। বেয়াদব একটা। তুমি যদি সত্যি আমাকে ভালোবেসে থাকো তাহলে আমার জীবন থেকে চলে যাবে। আই জাস্ট হেট ইউ। বুঝতে পারো না তুমি? তোমার বাচ্চামি দেখে সবাই খুশি হলেও আমার বিরক্ত লাগে। বুঝছো।

সায়ানের কথায় তুলির চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরে। খুব কি ভুল কিছু করেছে তুলি? এর আগে তো এর থেকেও অনেক কথা বলেছে কই তখন তো সায়ান এমন রিয়াকশন করে নাই। তাহলে আজ?

“আপনি বকছেন আমাকে😭

” নাহহহ বকছি না। কিছু সত্যি কথা বলছি তোমায়। যা তোমার জানা দরকার। বুঝা দরকার। যদিও আমি শিওর না তোমাকে বোঝাতে পারবো কি না? তুমি আসলে যতটা ইনোসেন্ট সেজে থাকো তুমি কিন্তু অতোটা ইনোসেন্ট না। তোমার ভেতরটা সয়তানিতে ভরা। কেনো নাকে দরি দিয়ে ঘুমাচ্ছো আমায়? কি চাও তুমি? টাকা না কি অন্য কিছু

“সায়ান

” মিনিমাম একটুও যদি লজ্জা বা মানবিকতা থেকে থাকে তাহলে তোমার এই মুখটা আমাকে আর দেখাবে না।

তুলির আর সয্য হচ্ছে না। না দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না যেতে পারছে। শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছে

“এখন তো আবার ইমোশনাল ব্লাকমেইল করবে। এটা তুমি খুব ভালো পারো। তোমার তো নবেল পাওয়া দরকার। কতো ভালো মেলোড্রামা করতে পারো।

তুলির আর দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব হলো না। দৌড়ে বেরিয়ে যায়। অভি তুলিকে বেরিয়ে যেতে দেখে।

” তুলির কি হলো? এভাবে কাঁদছে কেনো? আর গেলোই বা কোথায়?

অভিও তুলির পেছনে যায়।

সায়ান ধপ করে খাটে বসে পরে। মনা একটু আগেই সায়ানকে ওই ছেলেটার সাথে কথা বলিয়েছে। ছেলেটা স্পষ্ট বলেছে তুলি ছেলেটাকে নাটক করতে বলেছে আর এর জন্য টাকাও দিয়েছে। এর জন্যই সায়ানের মাথা গরম হয়ে গেছে।

“ওকে এতো গুলো কথা শুনালাম। ধুর। কি যে হয়েছে আমার ওই মেয়েটা কষ্ট পেলে তার দ্বীগুন কষ্ট আমি পায়। কই মনা কষ্ট পেলে তো আমার কষ্ট হয় না। তাহলে তুলির বেলায় এমন হয় কেন?

সায়ান এসব ভাবছে।

তুলি দৌড়ে বাড়ি চলে আসে। কলিং বেল বাজানোর সাথে সাথে আদর দরজা খুলে দেয়।

” বোন কি হয়েছে তোর? কাঁদছিস কেনো?

তুলি এক দৌড়ে রুমে চলে যায়। দরজা বন্ধ করে দেয়। আদর তুলির পেছন পেছন যায় দরজা ধাক্কায় তুলিকে ডাকে

“দাভাই আমি একটু একা থাকতে চায়।

তুলি দরজা না খুলেই বলে। আদর জানে এখন তুলি কিচ্ছু বলবে না তাই ও চলে যায়।

সায়ান মনার সাথে কফিশপে বসে আছে।

” মনা আমি কিছু বলতে চায় তোমায়।

মনা সায়ানের হাত ধরে

“হুম বলো

সায়ান হাত ছাড়িয়ে নেয়

” মনা আমি তুলিকে ভালোবেসে ফেলেছি। তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারি কিন্তু তুলিকে ছাড়া আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। তোমার সাথে আমার এতোদিন যোগাযোগ ছিলো না আমার কিন্তু তোমার কথা মনেই পরে নাই। কিন্তু তুলির সাথে দুইঘন্টা ধরে কথা হয় না এর মধ্যেই আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছি পাগলীটাকে। পারবো না ওকে ছাড়া থাকতে। ভুল করলে হ্মমা করে দিও।

সায়ান মনাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে যায়। রুমে গিয়ে খাটের ওপর একটা চিরকুট দেখে

” আমাকে এমন করে বলতে পারলেন সায়ান? আমি এতো খারাপ না সায়ান। হয়ত আমার একটাই ভুল ছিলো সেটা আপনার ওপর ক্রাশ খাওয়া। ছোট বেলা থেকে আমি খুব জেদি। একবার যা চাই তাই আমার বাপি আমাকে এনে দেয়। আপনাকে পাওয়ার নেশাটা আমাকে ভীষণ ভাবে আসক্ত করে ফেলেছিলো তাই হয়ত এতোটা পাগলামি করে ফেলেছি। ভেবেছিলাম আপনার মন জয় করে ফেলবো। আমার ক্রাশ আমার হবে। কিন্তু আমি বুঝিনি আপনি আমাকে কখনোই ভালোবাসবেন না। সত্যি আর আমি আপনাকে আমার এই মুখটা দেখাবো না। আৃি জানি আপনি আমাকে ছাড়া থাকতে পারবেন না। পাগলের মতো খুঁজবেন আমায়। কিন্তু আপনার এটিটিউট দেখানোর দিন শেষ। ভালো থাকবেন। বোনের বিয়েতে ইনজয় করবেন।

চিরকুট টা পরে সায়ান ধপ করে বসে পড়ে।
“তুলি এটা লিখেছে। কিন্তু কেনো? কোথায় গেছে ও? তুলি ঠিক আছে তো? কিছু হয় নি তে ওর? আমাকে এখুনি যেতে হবে

সায়ান পাগলের মতো দৌড়ে বেরিয়ে যায়।

চলবে

আমার ক্রাশ পর্ব-১৪

0

#আমার ক্রাশ
#পর্বঃ১৪
#Tanisha Sultana (Writer)

তুলিকে অভির কোলে দেখে ধপ করে সায়ানের মাথায় আগুন জ্বলে ওঠে। অভি তুলিকে সায়ানের রুমে দিয়ে আসে। সায়ান ভালো মন্দ কিছুই বলে না।
তুলি বিছানায় গড়াগড়ি করছে সায়ান বসে বসে অফিসের ফাইল দেখছে। তুলির নরানরায় সায়ানের খুব রাগ হচ্ছে

“সাপের মতো এদিক সেদিন করছো কেনো?😡

” অতিরিক্ত খেয়ে ফেলছি এখন পেটের মধ্যে ফুসকা আর ঝালমুড়ি যুদ্ধ শুরু করছে😭

“এতো খাইতে বলছিলো কে?😡

” ফ্রি তে পেলে কে কম খায়? পেটে যায়গা থাকলে আমি আরও খাইতাম

“ভাগ্যিস পেটে যায়গা ছিলো না নাহলে ফুসকা বানানোর হাড়ি পাতিলও খেয়ে ফেলতা

” আপনার কি?

“আরও খাও

” ইস একটা ভুল করছি

“কি🤨

” যদি কতোগুলো ফুসকা নিয়ে আসতাম কতো ভালো হতো।

“পেটুক

” আপনার কি?

“কিছু না। বাই দ্যা ওয়ে তুমি অভির কোলে উঠছিলা কেন? আর ওর গলা জড়িয়ে ধরছিলা কেন?

” জ্বলে আগুন বুকেতে, দে আগুন নিভাইয়া দে

“এইটা আবার কি?🤔

” গান গাইলাম

“আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি

” অভির কোলে উঠতে ভালো লাগে তাই উঠছি।

“যার যার কোলে উঠতে ভালো লাগবো তার তার কোলে উঠবা

” অফকোর্স 😎

“ইডিয়েট

” কেনো আপনার জ্বলে না কি? বুকের বা পাশে চিনচিন ব্যাথা করছে?

“মাই ফুট

” না জ্বলাই ভালো। সুন্দরী বউ বিয়া করছেন বফ তো থাকবোই

“একটা বাঁদর বিয়ে করছি

” বিয়ে তো করছেন

“সেটাই কপাল

” এখন আফসোস করে লাভ নেই।।আমি পিছু ছাড়ছি না

“সেটাই
” ফুসকা গুলো যা ছিলো না পুরাই মাখন

“🤨

” বাইকে গেছিলাম তাও আবার অভিকে জড়িয়ে ধরে। উফ কি যে ফিলিংসটা হচ্ছিল না। আমার তো গান গাইতে মন চাইছিলো
“এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো তুমি বলোতো ”

“ওই পথ যদি শেষ না হতো তবে আমার ভালো হতো😁 বেঁচে যেতাম

” আপনার জন্যই পথ শেষ হয়ে গেছে 🥱

“ভালো হইছে

” উহহহহহহহহ

“কি হইছো

” পেটের মধ্যে কেমন কেমন করে😭

“একদম চুপ করে থাকবা। না হলে মুখে কস্টিপ লাগিয়ে দেবো

” ভাগ্যিস অসুস্থ। নাহলে কে কার মুখে কস্টিপ লাগায় আমিও দেখতাম।
“স্টুপিট

সায়ানের ফোন বেজে ওঠে।

” কে ফোন দিছে

“কমু কেন?

” আমার সোনা জামাই কও

“হুরর

সায়ান ফোন নিয়ে বেলকনিতে চলে যায়।
” হারামি জামাই। বেবি চাইলে বেবিও দেয় না আর আমারে খালি কষ্ট দেয়😭😭😭

বেলকনিতে গিয়ে সায়ান ফোন রিসিভ করে
“হেলো
” সায়ান কেমন আছো?
“মনা তুমি কেনো ফোন দিছো?
” ভালোবাসি তাই
সায়ান তাচ্ছিল্য হেসে বলে
“ভালোবাসো
” হুম বাসি। তুলির মতো নেকামি করি না বলে যে ভালোবাসি না এটা নয়। ওই মেয়েটা তোমার ব্রেনওয়াশ করেছে। তুমি ঠিক ভুল বুঝতে পারছোই না। সায়ান তুমি হয়ত ভুলে গেছো তুমি আমাকে প্রমিজ করেছিলো আমি ছাড়া অন্য কোনো মেয়েকে ছুঁবে না। আমি বলতে চাইছি বুঝতে পারছো নিশ্চয়। আর সায়ান মাহবুব কখনো কথার খেলাব করে না। এম আই রাইট
“…………

” কি হলো সায়ান চুপ কেনো? আমাদের এতো দিনের রিলেশন টা ভুলে গেলে ওই মেয়েটার পাল্লায় পরে।
“মনা আমি আজও তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু
” কিন্তু কি সায়ান? তুমি তুলির ফাঁদে পড়ে গেছো?
“নাহহহ। তোমার বফ দেখেছি
” সায়ান এটা তো তুলির প্লানও হতে পারে তাই না। একবার ভেবে দেখেছো সানি আসছে এই বেপারটা? তোমার ফোনে ফোন করা। আর তুলি জিসানের ওখানে পৌঁছে যাওয়া। তোমার কি মনে হচ্ছে না এসব কাকতালীয় নয়।

“সায়ান কিছু বলো

” আমি সব কিছু যাচাই করে দেখছো দেন ডিসিশন নেবো

“ওকে ডান। যে কোনো মুল্যে আমার তোমাকে চায় সায়ান কজ তুমি আমার ভালোবাসা

” মি টু

“বাই জান টেক কেয়ার

” সেম বাই

ফোন কেটে সায়ান তুলির কাছে যায়। তুলি সায়ানের চোখ দেখে ভয় পেয়ে যায়। লাল হয়ে আছে চোখ দুটো

“জামাই কি হয়েছে আপনার?

সায়ান তুলির দিকে ঝুকে

” সানি আসছে এই পোষ্ট কে করেছিলো

তুলি সায়ানকে ধাক্কা দিয়ে একটু দুরে সরায়

“ওহহহ এই বেপার। এই সামান্য বেপারে কেউ এতো কাছে চলে আসে? বাচ্চা মেয়ে আমি। আমি তো ভেবেছিলাম এই বুঝি কিস কিস করবেন। কিন্তু আপনি তো আপনিই কিস করবেন না। শুধু শুধু লোভ দেখিয়ে কি লাভ বলেন?

” আমি যা জিজ্ঞেস করছি সেটার এন্সার দাও

“চিল্লান কেন? যদি ভয় পেয়ে আমার পিত্তি গলে যায়। যদি আমি মরে যায়। বাচ্চাদের সাথে কি করে কথা বলতে হয় জানেন না। একটু মিষ্টি করে কথা বলতে পারেন না। ওগো হ্যাঁ গো এসব বলতে পারেন না।

” এগুলো কোথায় শিখলে

“সাবানা আলমগীরের মুভি থুক্কু সিনেমাতে দেখছি। সাবানা বলে ” ও গো তুমি যেয়ো না গো আমার বাচ্চাটার কি হবে” এটা ডাইলোক দিলাম।

😡😡😡😡😡😡

“ওমন করে তাকাবেন না প্লিজ। আমার কিস কিস পায়

” কিহহহহহহ

“হুমমম। আপনার ইচ্ছে হয় না

“তোমাকে খুন করতে ইচ্ছে হয় আমার😡

” আমি মরলে আপনি বিধবা হবেন

“তবুও বেঁচে যাবো ইডিয়েট একটা
সায়ান মাথায় হাত দিয়ে বসে। এই মেয়ের মুখ থেকে কথা বের করা চারটিখানি কথা না।

” ও জামাই কি হয়েছে?

“তোমার মাথা

” এমন করেন কেন? দশটা না পাঁচটা না একটা মাএ বউ। আর বউ হলো আদরের জিনিস আর আপনি খালি বকেন। ভাগ্যিস আমি খুব শান্ত শিষ্ট মেয়ে। সহজে রাগী না তাই বেঁচে গেছেন নাহলে

সায়ান তুলিকে বিছানো সাথে চেপে ধরে বলে

“নাহলে কি

” কককককি

“তুতলাও কেন? বলো?

” বাবা আপনি

বাবার কথা শুনেই সায়ান তুলিকে ছেড়ে পেছনে তাকায় দেখে কেউ নাই। তুলি হো হো করে হাসছে

“ইডিয়েট

সায়ান রুম থেকে চলে যায়।

” ওই ডাইনির বাচ্চা খালাম্মা আবার আমার জামাইয়ের পিছু নিছে। এরে এবার বুড়িগঙ্গায় চুবাুমু আমি হুমম। হাতের কাছে পায় তোরে। কতো ভাবছি সুখে সংসার করমু। কয়দিন পরে বেবি হবে। এসব ভাবনার মধ্যেই ভিলেন হাজির। ভাল্লাগে না ধুর
তুলি মনে মনে বলে।

কাল নিশির গায়ে হলুদ। অভি জিসান তুলি নিশি সায়ান ট্রুথ ডেয়ার খেলছে। সায়ানকে জোর করে বসানো হয়েছে।
“অভিদা কি নেবে? (তুলি)

” ট্রুথ (অভি)

“তোমার জীবনে স্পেশাল কেউ আছে? যার কথা তুমি কাউকে বলো নি বা বলতে পারছো না (তুলি)

” হুম আছে একটা অপরূপ সুন্দরী নারী। যাকে ভালোবাসা বারণ। যার সাথে আমার সম্পর্ক কখনো সম্ভব না। কিন্তু অবাধ্য মনটা তাকেই চায়। আমি ভীষণ ভালোবাসি আমার কথাকুমারীকে। ভীষণ। কিন্তু তুলি প্লিজ তুমি তার নাম জিজ্ঞেস করবে না আমি বলতে পারবো না।

“ওয়াও ব্রো এতো আবেগ রাখোস কই (জিসান)

” আবেগ না ভালোবাসা। আবেগ তো দুদিনের কিন্তু ভালোবাসা সারাজীবনের।

“ফাটিয়ে দিয়েছো অভি দা। সুপার😘😘😘😘😘। এবার সায়ান দা থুক্কু সায়ান জামাই।

” আমি এসবে নাই😡

“নাহহহ তোমাকে থাকতে হবে (জিসান)

” হুম ভাইয়া কিছু একটা নাও(নিশি)

“ডেয়ার😎

” জামাই আমার ডেয়ার নিছে। তারে তো আর ভালো কিছু দিতে পারি না তাই না। ভালো কিছু দিলে জামাইয়ের অসম্মান হইবো। আর তুলি কখনো ক্রাশকে অপমান করে না। তাই জামাইরে ঝাকানাকা একটা ডেয়ার দিমু😘

“তোমার ভাষণ বন্ধ করো তো😡

” ওকে আপনার ডেয়ার হলো

চলবে

আমার ক্রাশ পর্ব-১৩

0

#আমার ক্রাশ
#পর্বঃ১৩
#Tanisha Sultana (Writer)

তুলি ধপ করে খাটে বসে পরে। সায়ান তুলির কাছেই চলে আসে। খাটে বসে পরে। তুলির দিকে ঝুকে তুলির ওড়না ধরে টান দেয়৷

“ওড়না নিবেন বললেই আমি দিয়ে দেই।এতো টানাটানি করার কি আছে।

তুলি ওড়না দিয়ে দেয়। সায়ান ওড়না ফেলে দেয়।

” ও মা ফেলে দিলেন কেনো? জানেন এটা আমার বাপি কিনে দিছিলো।৷ তারপরও ওড়না টা জাস্ট আজকেই পরলাম আর আপনি এটা ফেলে দিলেন। একদম ঠিক করেন নি। এখুনি তুলে এনে দিন। না হলে আমি আপনার সব গুলো জামা পুরিয়ে দেবো নাহলে আমার নামও মিসেস তুলি চৌধুরী নয়😎

“থাপ্পড় চিনো

” ও মা চিনবো না কেন? কতো খাইছি থাপ্পড়। এইতো সেদিন আপনি থাপ্পড় মারলেন। এখনো গালটা ব্যাথা করে। তাছাড়াও কতো থাপ্পড় খাইছি মামনির হাতে তা গোনা নেই। আপনি বলছেন আমি থাপ্পড় চিনো না কি। থাপ্পড়ে থাপ্পড়ে জীবনটা বিয়ে পর্যন্ত চলে এলো।

“ও আল্লাহ বাঁচাও আমাকে

” ও বাবা আল্লাহ বাঁচাইবো কেন? কি হয়েছে আপনার? কথায় কথায় আমি বলি আল্লাহ হেলেপ করো। এখন আপনি বলছেন। আসলে হেলেপ শব্দটা আমি মিঠাইয়ের কাছ থেকে শিখেছি

“পাগলে ধরছে আমারে

” ভুতে ধরে শুনছি। এই ফাস্ট শুনলাম পাগলে ধরছে৷ যাই হোক আই নিড বেবি

“নাক টিপলে দুধ বের হয় এখন সে বলছে মা হবে। কি দিনকাল আসলো। একটা বাচ্চা আরেটা বাচ্চা চায়

” সতেরো বছর বয়স আমার হুম। আমার একটা প্রাইমারি স্কুলের ফ্রেন্ড দুই বাচ্চার মা হইছে আর আপনি বলছেন আমি বাচ্চা। আমার দাদিমার মা সতেরো বছর বয়সে আটটা বাচ্চার মা হইছিলো বুঝছেন। আশ্চর্য আমি বাচ্চা 😡😡😡

“তুলি তুমি মানুষ হইবা না তাই না

” আমাকে দেখে কি গরু ছাগল মনে হয়? আমার কি চারটা পা আছে। আমি কি ঘাস খাই? খাই না তো? তো আমি মানুষ তাও আবার পিওর ভালো মানুষ। আর আপনার বউ। তাও আবার একমাত্র বউ। হুম

সায়ান উঠে যেতে নেয়। তুলি হাত ধরে টান দেয়। সায়ান তুলির খুব কাছে চলে আসে।

“ও জামাই আমার সোনা জামাই। আমার টুনুমুনু। আমার ক্রাশ। দাও না

” দোকান থেকে দুটে ললিপপ এনে দেবোনি

তুলি সায়ানকে ধাক্কা মেরে দুরে সরিয়ে দেয়।

“ভাল্লাগে না। এখন আমি শশুড় কে বলবো

” কিহহহহ

“আপনার কাছ থেকে আমাকে বেবি আদায় করে দিতে।

” তুলি শুনো

“বেবি দিলে শুনবো

” একটা দত্তক এনে দেবো

“নাহ আমার পিওর বেবি চায়
” দিতেই তো যাচ্ছিলাম তুমি ভুলভাল কথা বলে মুড নষ্ট করে দিলে

“ফাইন আবার প্রথম থেকে শুরু করি।

তুলি আগের জায়গায় যায়

” এখন ওড়না টান দেন

“মুড নাই

” হনুমান

“ইডিয়েট

” খালাম্মার বফ

“একদম খালাম্মা বলবা না

” তো কি সতিন কমু না কি😡

“তোমার যোগ্যতা নাই

” খালাম্মার যোগ্যতা নাই আমার সতিন হওয়ার। আমারে দেখছেন কতো কিউট আমি। আমার পেছনে ছেলেদের লাইন পরে যায়। এইতো প্রপোজ ডে তে দুইশত বাইশটা প্রপোজ পাইছি

“পঁচা জিনিসেই মাছি ভনভন করে

” কি বললেন

“বললাম আজ কি বার

” ইডিয়েট

“বানান করতে পারো

” নাহহ আপনার কাছ থেকে শিখবো। যতসব
যাচ্ছি আমি। কথা কমু না আর

“বাঁচলাম।
হুরর

তুলি রুম থেকে বেরিয়ে কিচেনে যেতে নেয় তখন অভির সাথে ধাক্কা খেয়ে নিচে পরে যায়। তুলি ওপরে আর অভি নিচে পরেছে।

“আল্লাহ গো আমার কোমর ভেঙে গেলো

” তুলি তোমার না আমার কোমর ভেঙেছে।

এবার তুলির হুশ আসে। দ্রুত উঠে বসে

“ওহহহ সরি

অভিও উঠে বসে।

” ইটস ওকে

“খুব ব্যাথা পাইছো

” নাহহহ একটু খানি

“আসলে ভুলটা আমারই। আমিই আমার হাত পা কন্ট্রোল করতে পারি না। সব সময় খালি ছুটোছুটি করতে ইচ্ছে হয়। মনডায় চায় উড়ে বেড়ায়

অভি হাসে ঠোঁট চেপে। তারপর তুলির গালে আলতো করে হাত রেখে বলে

” তোমাকে ছুটোছুটি করতেই বেশি ভালো লাগে। চুপচাপ থাকা তুলির ক্যারেকটার না

“তুমিই খালি বুঝো আমাকে আর কেউ বুঝে না।

” হুমমম চলো আজ তোমাকে ফুসকা খাওয়াতে নিয়ে যাবো

“সত্যি

” হুমমম

তুলি অভির গাল টেনে বলে

“থ্যাংকু😘😘
” এটা কি?
“ভেংচি
” 🤔🤔🤔
“একদম কিস ভাবনা না
” ভাবি নি
“গুড দেবর

বিকেলে তুলি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সাজুগুজু করছে। সায়ান রুমে এসে তুলিকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে বলে

” কোথাও যাচ্ছে
তুলি লিপস্টিক লাগিয়ে 😘 কিসের মতো করে। সায়ান বেষম খায়।

“বেবি তুমি খালি বেষম খাও কেন?

” খালি কি বেষম খায় মাঝেমাঝে তো হার্ট অ্যাটাক ও খায়।

“তা তো খাইবাই

” হুমমম

“আমি একটু বেরোবো

” কোথায়

“কমু কেন

” না কইলা

“না থাক কই

” কও

“ফুসকা খেতে

” একা

“নাহহ

“তাহলে

” বফের লগে😎
বাই জামাই উম্মা😘😘😘😘
“বফ আবার কে
“একটা স্মার্ট হট ছেলে
” সেটা নাহ বুঝলাম বাট গাধার সাথে প্রেম করছে নিশ্চয় বলদ হবে
“হুরররর
” ধুরররর
“দিনদিন আপনি আমার মতো যাচ্ছেন
” না হয়ে আর উপায় আছে
“সেটাই

তুলি চলে যায়।
“ঘটনা কি পাগলটা কার সাথে যাচ্ছে? আমি কি যাবো পেছন পেছন। নাহ থাক। যা ইচ্ছে করুক আমার কি? যার সাথে ইচ্ছে যাক। আমি বরং এতোটুকু সময় রেস্ট নেই। সারাদিন কথা বলে বলে আমায় পাগল করে দেয়।
সায়ান একা একা বলে।

তুলির অনেক রিকোয়েস্ট এ অভি বাইক নিয়ে বের হয়। তুলির আবার বাইকে ঘুরতে দারুণ লাগে। অভি আর তুলি এক বাইকে আর জিসান অন্য বাইকে। তুলি অভির কাঁধে হাত রেখে বসে আছে। অভির খুব ভালো লাগছে। খুব করে একটা গান গাইতে ইচ্ছে হচ্ছে

” এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো তুমি বলোতো
যদি পৃথিবীটা স্বপ্নের দেশ হতো তবে ভালোই হতো

কিন্তু আফসোস এটা কখনো পসিবল না। এই পথটাও শেষ হয়ে যাবে আর পৃথিবীটাও স্বপ্নের দেশ হবে না।

এসব ভাবছে অভি

“এই এই বাইক থামাও

তুলির কথায় অভির ঘোর কাটে।

” কেনো?

“থামাও না

অভি বাইক থামায়। জিসানও থামে। তুলি এক দৌড়ে ঝালমুড়ির দোকানে চলে যায়।

” বুঝলি অভি আজ একটা চিজকে নিয়ে বের হইছি। হয় পকেট খালি করবে নয়ত মাথা খালি করবে। আল্লাহও আজ বাঁচাইবো না। হেলেপ থুক্কু হেল্প করবো না

অভি জিসানের কাঁধে হাত রাখে।

“এরকম সরল মেয়ে কটা হয় বলতো?

” তা ঠিক বলছোস।

“চল ওখানে না হলে আবার ঝালমুড়ি ওয়ালার বারোটা বাজিয়ে দেবে।

” ও মামা তাড়াতাড়ি বানান না। আমার আর তর সইছে না। কতোদিন ঝালমুড়ি খায় না। একটু একটু না বেশি করে লঙ্কা মানে মরিচ দেবেন। ঝাল খেতে আমার হেব্বি লাগে

ঝালমুড়ি বানিয়ে তুলিকে দেয়। তুলি খেয়েই যাচ্ছে। আসলে তুলির ঝাল জিনিস খুব পছন্দের। বিশেষ করে বেশি করে কাঁচা লঙ্কা দিয়ে ঝালমুড়ি আর ফুসকা। এসব হলে তুলির আর কিচ্ছু লাগে না। অভি হা করে তুলির দিকে তাকিয়ে আছে। জিসানও খাচ্ছে।

“একটা মেয়ে এতো সরল, পবিত্র হতে পারে সেটা তুলিকে না দেখলে জানতেই পারতাম না। সত্যি তুলির তুলোনা হয় না।।সবার থেকে আলাদা। হাসি খুশি। মিশুক। আই লাইক তুলি।

অভি বিরবির করে বলছে। তুলির খাওয়া শেষ।

” অভি বিল দাও

অভি বিল দেই। আবার বাইকে বসে এবার তুলি ফুসকা খাবে।
পঁয়তাল্লিশ টা ফুসকা খেয়ে তুলির অবস্থা বেসামাল। না বসতে পারছে না হাঁটতে। প্রায় একটা ঝামেলায় পরে যায়। অভি তুলিকে ধরে আছে।
“ধুর কেনো যে এতো খাইলাম এখন আমি বাড়ি যামু কেমনে?
তুলি বিরবির করে বলছে

চলবে

আমার ক্রাশ পর্ব-১২

0

#আমার ক্রাশ
#পর্বঃ১২
#Tanisha Sultana (Writer)

“সিট বেলটা বাধো

” কিহহহহ

“ছিট বেল

” আপনি বেধে দেন

“পারবো না

” তাহলে এভাবেই যাবো। গাড়িটা জোরে ব্রেক করলে আমার মাথা ফাটবে আপনার তো আর কিছু হবে না। মরলে আমি মরবো। আপনার কি? আপনি তো বেঁচে যাবেন তাই না

“এতো কথা বলো তুমি

সায়ান বিরক্তি নিয়ে তুলির সিট বেল বাঁধতে যায় তুলি সেই সুযোগে টুক করে গালে একটা কিস করে দেয়। সায়ান বড়বড় চোখ করে তুলির দিকে তাকায়। তারপর নিজের ছিটে গিয়ে বসে

” এটা কি হলো

“আপনি জানেন না

” নাহহ জানি না। এতো অসভ্য কেনো তুমি? মিনিমাম কমনসেন্স নেই

“নাহহ নেই। আর জামাইরে কিস করছি এতে অসভ্যতামির কি আছে?

” ইডিয়েট একটা

“আপনারই তো বউ

” সেটাই তো কপাল

“ঢং

সায়ান গাড়ি চালানো শুরু করে।

” আমি দুই মিনিটের বেশি চুপ করে থাকতে পারি না

“তো

” তো আমি কথা বলবোই। পাঁচ মিনিট চুপ করে ছিলাম। এখন কথা আমার পেটের মধ্যে গিজগিজ করছে।

“আল্লাহ

” এতো বিরক্ত হন কেনো বলেন তো? দেখছি তো মনা খালাম্মার সাথে কতো কথা বলতেন তো আমার কথা জাস্ট শুনলে কি হবে আপনার বলেন তো? বউ হই আপনার। গার্লফ্রেন্ড না। আর বউকে সব সময় খুশি রাখতে হয়। গিফট দিতে হয়। অবশ্য আমার এসব কিছু চায় না। আমার অন্য গিফট চায়

“কিহহহহ

” একটা কিউট গলুমলু ক্রাশ বেবি। ও থুক্কু একটা না এতোগুলা বেবি চায় আমার।

“টিকতে পারবা না

” অবশ্যই পারবো। আমার দাদিমার মায়ের কতো গুলা বেবি ছিলো জানেন? বাইশ টা। তো উনি এতো বেবি নিতে পারলে আমি জাস্ট এগারোটা নিতে পারবো না কেনো? আর দেখুন এখন কারো এতোগুলা বেবি নেই তো আমার এতো বেবি হলে আমি আর আপনি ফেমাস হয়ে যাবো। ইতিহাসের পাতায় আমাদের নাম লেখা থাকবে। এতো বেবি না নিলেও ইতিহাসের পাতায় আমার নামটা লেখা থাকবে কজ আমার যে বুদ্ধি নাম না লিখে যাবে কই৷

“আমি পাগল হয়ে যাবো

” পাগল হবেন ঠিক আছে। কিন্তু পাগল হয়ে সব সময় তুলি তুলি করবেন ভুলেও যদি মনা মনা করেছেন তো তো আপনার চুল ছিড়ে টাকলা বানিয়ে দেবো হু

সায়ান গাড়ি থামায়

“কি হলো? গাড়ি থামালেন কেনো? কোনো সমস্যা? নাকি এটুকুতেই হাঁপিয়ে গেছেন

সায়ান তুলির চুলের মুঠি ধরে কাছে এনে ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। তুলি মোটেও এটার জন্য তৈরি ছিলো না। চোখ বড়বড় করে ফেলে। পাঁচ সেকেন্ডের আগেই সায়ান সরে নিজের জায়গায় বসে ঠোঁট মুছে। তুলি ঠোঁটে হাত দিয়ে বলে

” এটা লিপ কিস ছিলো?

সায়ান ভ্রু কুচকে বলে

“সন্দেহ আছে

” অবশ্যই। এটাকে পাপ্পি বলে। আপনি কখনো হিন্দি মুভি দেখেন নাই? কিসটাও ঠিক করে করতে পারেন না। পাঁচ সেকেন্ড ও হতে দিলেন না ধুর

সায়ান এমনটা করেছিলো কারণ সায়ান ভেবেছিলো কিস করলে তুলি লজ্জায় আর কথা বলবে না। চুপ করে যাবে। কিন্তু তুলি তো তুলিই। ও চুপ করবে না।
সায়ান এবার নিজের চুল নিজে চানছে।

“আজ আমি আর আপনি ইমরান হাশমির একটা মুভি দেখবো

” কার?

“ইমরান হাশমির। দারুণ কিস করে।

সায়ান কানে হেডফোন দেয়।

শপিং মলে এসে তুলি একটার পরে একটা ড্রেস দেখে যাচ্ছে।
” আর কতোখন

সায়ান ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বিরক্তি নিয়ে বলে

“একটাও ড্রেস পছন্দ হচ্ছে না
তুলি অসহায় ফেস নিয়ে বলে। চুজ করে দেন না।

যদিও সায়ান কখনো মেয়েদের জিনিস পছন্দ করে নি। নিজের জামাকাপড় ও মা পছন্দ করে দেয়। কিন্তু এই মুহুর্তে সায়ানের মনে হচ্ছে যত তারাতাড়ি ড্রেস চুজ করবে ততো তারাতাড়ি এখান থেকে বের হতে পারবে। সায়ান চারটা ড্রেস চুজ করে দেয়। তুলি সেগুলো নেয়।

সায়ানের হাতে শপিং ব্যাগ তুলি সায়ানের হাত ধরে হাঁটছে। একটা ছেলের সাথে তুলির ধাক্কা লাগে।
” সরি মিছ
তুলি সায়ানের হাত ছেড়ে ছেলেটার সামনে যায়

“চোখ কি পকেটে রেখে ঘুরেন না কি? না কি মেয়ে দেখলেই ধাক্কা দিতে মন চায়।

” সরি বললাম তো

“কিসের সরি হ্যাঁ। কোনো সরি টরিনা ওকে

” তুলি চলো
সায়ান তুলির হাত ধরে বলে

“যাবো মানে? এই বেডাটা আপনার বউকে ধাক্কা মারলো আর আপনি চলে যেতে বলছেন? ওনাকে মারুন।

” মানে কি?

“ছিনেমায় দেখেন নাই হিরোরা কেমন ডিসুম ডিসুম করে পেটায় ভিলেনদের। দেখেন নাই

” এখানে ভিলেন কে? (লোকটা)

“ইহহহহহ যেনো জানেই না ভিলেন কে? আপনি ভিলেন। আর আমি হিরোইন ও হিরো

লোকটা হো হো করে হেসে ওঠে। তুলি কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়ায়। সায়ান মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

” ক্লোজ আপ দিয়ে ব্রাশ করেছেন কিন্তু দাঁত পরিষ্কার হয় নাই।
লোকটা হাসি বন্ধ করে। এবার তুলি হাসে

“স্মার্ট হতে চান তাই না?

সায়ান লোকটাকে সরি বলে তুলির হাত ধরে হাঁটা শুরু করে

” আরে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন এখনো তো ঝগড়া শেষ হয় নাই

সায়ান তুলিকে গাড়ির কাছে এনে ছেড়ে দেয়। তুলি হাত ডলতে থাকে

“উফফ হাত ভেঙে গেছে। তুলোর মতো হাত কেউ হাতির মতো করে ধরে।

” তুমি চুপ থাকতে পারো না

“নাহহ পারি না তো।

সায়ান সায়ানের রুমাল দিয়ে তুলির মুখ বেধে দেয়। তারপর তুলির শাড়ি দিয়েই তুলির হাত বেধে গাড়িতে বসিয়ে দেয়। তারপর গাড়ি চালিয়ে বাড়ি আসে।

অভি আর জিসান বসার ঘরে বসে গল্প করছিলো তখন দেখে তুলির হাত মুখ বেধে সায়ান তুলিকে কোলে করে আনছে।

” আরে ব্রো তুলির এই অবস্থা কেন?(জিসান)

“অতিরিক্ত কথা বলে

সায়ান তুলিকে রুমে এনে মুখ হাত খুলে দেয়। তুলি জোরে জোরে শ্বাস নেয়।

” এখন থেকে কথা বললে এই প্রদ্ধতিতে চুপ করাবো

“এটার থেকে কিস ভালো। তোমার মতো হট হট গ্রীষ্মকাল ছেলে হাত মুখ বেধে চুপ করাবে এটা কেমন দেখায়

” তুমি এতো ইডিয়েট কেনো?

“আমি তো জন্ম থেকেই ইডিয়েট

” সেটাই

“লাভ থুক্কু হেট ইউ

” মি টু

সায়াব মুচকি হেসে ওয়াশরুমে চলে যায়। তুলি শাশুড়ীর রুমে চলে যায়। শাশুড়ী কাপর ভাজ করতেছিলো

“শাশুড়ী

” এটা কি রকম ডাক😡

“সরি মা

” বস

তুলি বসে।
“কিছু বলবি

” বলছিলাম তোমার দাদি হতে মন চায় না?

“হুম চায় তো

” তাহলে তোমার ছেলেরে বোঝাও

“কি বোঝাবো

” এটাই তুলিকে একটু ভালোবাস। ওকে একটু হেল্প কর। যাতে ও মা হতে পারে

“আমি😱

” তো কি শশুড়কে বলবো না কি?

“নাহহহ

” তাহলে তুমি বুঝাবা

“আমি বোঝাচ্ছি

তুলি পেছনে তাকিয়ে দেখে সায়ান।

” আআআআপনি

তুলি তুতলিয়ে বলে।
“তোমার কি কি লাগবে শুনতে এলাম

” মা আমি আসছি

তুলি দৌড় দিতে যায় সায়ান ধরে ফেলে। রুমে চলো সব বোঝাবো

সায়ান তুলির হাত ধরে রুমে নিয়ে যায়।
“আল্লাহ হেলেপ করো। এবারের মতো বাঁচিয়ে দাও। আর কখনো ওনার পেছনে লাগবো না। আল্লাহ

সায়ান তুলিকে রুমে এনে দরজা বন্ধ করে দেয়। তুলি ভয়ে ঢোক খিলে। সায়ান হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে বলে

” তারপর বলো তোমার কি চায়

“কককই কিছু না তো

” ভয় পাচ্ছ কেনো বলো?

“আমার বেবি চায়
তুলি একটু সাহস করে বলে।

” ওকে দেবো বেবি। এবার বলো কিভাবে তোমাকে বেবি দেবো

“সত্যি তো কিভাবে উনি আমাকে বেবি দেবে
তুলি মনে মনে ভাবতে থাকে।
” জানি

“কোনো বেপার না আমি দেখাচ্ছি

সায়ান তুলির দিকে এগিয়ে যায় তুলি পিছিয়ে যাচ্ছে।

চলবে

আমার ক্রাশ পর্ব-১১

0

#আমার ক্রাশ
#পর্বঃ১১
#Tanisha Sultana (Writer)

“সিগারেট খাইলে কষ্ট কমে। কেউ চাইলে ট্রাই করতে পারে।
তুলি বলে। সায়ান আড়চোখে একবার তুলির দিকে তাকায়।
” কিন্তু দোস্ত তুই জানলি কেমনে?
“সামজ ভাইয়ের গান শুনে জানতে পারলাম। আমি তো আবার ওর ফ্যান। ও তো আমার ক্রাশ
” আর ব্রো
“উনি তো ক্রাশ নাম্বার টু
সায়ান হা করে তাকিয়ে আছে তুলির দিকে
” জিসান আমার আশেপাশের মানুষদের বলে দে আমার দিকে এভাবে যেনো না তাকায়।
“ইডিয়েট
সায়ান চোখ ফিরিয়ে নেয়
” জিসান আজ পার্টি দিমু
“কি পার্টি
” হবু সতিন তাড়ানোর পার্টি
সায়ান তুলির খুব কাছে গিয়ে বলে
“আর একটা কথা বললে গাড়ি থেকে ফেলে দেবো।
তুলি ঢোক গিলে চুপ হয়ে যায়

সায়ান বাড়িতে এসে নিজের রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।

“যাহ বাবা দরজা বন্ধ করে দিলো। তাতে আমার কি? আমি তো ব্রেকআপ করিয়েই ছাড়ছি। এবার ক্রাশের বেবির মা আমিই হবো৷ ঢিংকাচিকা ঢিংকাচিকা

তুলি নাচতে নাচতে রুমের কাছে যায়। দরজায় নক করে

” বলি রুম টা কি কারোর একার না কি? আমারও তো রুম। এভাবে ধিরিং করে দরজা বন্ধ করে দিলে হবে আমি যাবো কই? যতসব

সায়ান দরজা খুলে দেয়। তুলি ভেতরে যায়। সায়ান বিছানায় উপুড় হয়ে সুয়ে পড়ে।

“খাটটা কারোর একার না এখানে আমারও অধিকার আছে

সায়ান তুলির হাত ধরে তুলিকে খাটে ফেলে দেয় তারপর তুলির গাল চেপে ধরে বলে
” আর একটা কথাও বললে সব অধিকার পূরণ করে দেবো
দাঁতে দাঁত চেপে বলে সায়ান।
তুলি বুকে হাত দেয়
“দেখুন আমার বুকটা কেমন ধকধক করছে।
” কেনো?
“আপনার ছোঁয়ায় কারেন্ট আছে। সাধে কি আর এই গানটা বানাইছে না কি
” কোন গান
৷ তুমি ছুঁয়ে দিলে আমার কি যে হয়ে যায়

“ইডিয়েট
সায়ান তুলিকে ছেড়ে বেলকনিতে চলে যায়। তুলি হি হি করে হেসে ওঠে
“বাহহহ জামাই আমার সোজা হয়ে গেছে।

তুলি পেছন পেছন বেলকনিতে যায়। সায়ান সিঙ্গেল সোফায় বসে ছিলো
” সোফাটা কারো
তুলির কথা শেষ হওয়ার আগেই সায়ান তুলির হাত ধরে বসিয়ে দেয়
“হইছে
তুলি মুচকি হাসে
” আপনার পাশে বসেছি বলে ভাববেন না যে আমি আপনাকে মাপ করেছি। একদম না
“ভালো
” মাপ করতে পারি
“হুম
” যদি আপনি আমাকে
“চুম্মা দিবো না
” আপনি জানলেন কেমনে?
“গাঁধারা এর থেকে ভালো কিছু চাইতেই পারে না
” কিহহহহ
“এখন ঝগড়া করার মুড নাই। খুব কষ্টে আছি। পরে ঝগড়া করবোনি
” ওকে এখন আর জ্বালাবো না।
তুলি মনে মনে বলে।

আদর আর নিশির বিয়ের ডেট ঠিক হয়ে গেলে। এই বৃহস্পতিবার গায়ে হলুদ। হাতে আর চার দিন আছে।

জিসানের কাকাতো ভাই অভি আসে। কলিং বেল বাজায়। তুলি গিয়ে দরজা খুলে দেয়

” কাকে চায়
অভি হা করে তাকিয়ে আছে। তুলি মুখের সামনে তুরি বাজায়
“হেলো মিস্টার কে আপনি
অভি মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে
” আমি অভি সায়ানের কাকাতো ভাই
“ওহহহ ভেতরে আসুন
তুলি দরজার কাছ থেকে সরে দাঁড়ায়। অভি ভেতরে ঢুকে।
” আপনি হয়ত ভাবছেন বাড়ির সবাই কোথায় গেছে? সবাই আমাদের আই মিন নিশি আপুর শশুড় বাড়ি গেছে। সায়ান রুমে আছে। আপনি যান।

“বলছিলাম আপনি
” আমি তুলি।
“ওহহহ

অভি সায়ানের রুমে চলে যায়।
তুলি দুই কাফ কফি বানিয়ে নিয়ে যায় রুমে। দেখে সায়ান আর অভি গল্প করছে। তুলি কফি দেয় অভিকে আর এক কাপ সায়ানকে দিয়ে তুলিও বসে পরে।
” তাহলে অভিদা আপনি কিন্তু আমার দেবর লাগেন। আমি কিন্তু সায়ানের বউ তাই না জামাই
“তুলি৷ সায়ান চোখ গরম করে বলে

” সায়ান আমি আর তুলি কথা বলছি তুই চুপ থাক। (অভি)

“এই না হলো আমার দেবর। জিসান কিন্তু আমার বেষ্টফ্রেন্ড। তুমি থুক্কু আপনি চাইলেও আমার বেষ্টু হতে পারেন।

” ওকে

“তারপর গার্লফ্রেন্ডের কি অবস্থা

” গফ নাই

“কও কি

” হুমম

“গুড বয়। তারপর ক্রাশ কয়ডা

” একটা

“ওয়াও। নাম কি

” পরে বলবো

“ওকে

তুলি আর অভি গল্প করছে। সায়ানের বিরক্ত লাগছে। সায়ান বেলকনিতে চলে যায়। মনা ফোন দেয়

” হেলো কে?
“সায়ান আমার কথা শুনো
” আর কখনো ফোন দিবা না
“সায়ান
” কি কমতি ছিলো আমার
“তুমিও তো বিয়ে করেছো। তুলির সাথে এক রুমে থাকছো। তারপরও আমি তোমাকে ভুল বুঝি নি। তাহলে
সায়ান ফোন কেটে ফোন বন্ধ করে দেয়। একটা সিগারেট ধরাই। যদিও সায়ান তেমন সিগারেট খায় না তারপরও আজ খেতে মন চাচ্ছে। সকালে নিয়ে এসেছিলো সিগারেটের প্যাকেটটা।

এক প্যাকেট সিগারেট শেষ সায়ান রুমে এসে দেখে তুলি আর অভি এখনো গল্প করছে। গল্প করছে বলতে তুলি বলছে অভি শুনছে৷ তাও আবার গালে হাত দিয়ে।

” গল্প করা কি শেষ হইছে

সায়ানের কন্ঠে তুলি একটু থামে

“নাহহ শেষ হয় না। আরও অনেক কথা আছে।

” তাহলে বাইরে গিয়ে করো। আমি ঘুমাবো

“অভি চলো
” তুলি পরে গল্প করবো এখন না
“ওকে
অভি চলে যায়। সায়ান বিছানায় সুয়ে পরে
” আপনার গা থেকে গন্ধ আসছে
“হুম
” মদ খাবেন
“তুমি বের হলেই খাবো
” পুরো দেবদাস
“ভালোবাসতাম তো
” ভালো। খাও মদ খেয়ে মানুষ হও। বাই

তুলি চলে যায়। সায়ান ডাটা অন করে দেখে মনার হাজার টা মেসেজ। সরি বলেছে

” এতো ভালোবাসলাম ভরসা করলাম। তারপরও আমাকে ধকালে। এটা হওয়ারই ছিলো। ভালোবাসা বলতে পৃথিবীতে কিছু নেই। মা বাবা ভাই বোন ছাড়া কেউ ভালোবাসে না। এটা প্রমাণ হয়ে গেলো। আমরা খুব বকা মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতে যায়। তার প্রতিদান এমনি হয়। যদি পৃথিবী থেকে ভালোবাসা নামক শব্দটা উঠে যেতো কতই না ভালো হতো। কিন্তু এটা সম্ভব না।

সায়ান এসব ভাবছে। তখন সায়ানের মা আসে

“সায়ান

সায়ান মায়ের কোমর জড়িয়ে ধরে। মা মাথায় হাত বুলিয়ে বলে
” কি হয়েছে?
“কিছু না
” এমন দেখাচ্ছে কেনো?
“কি বলবে
” তুলিকে নিয়ে একটু শপিং এ যা
“আমি পারবো না
” কেনো?
“ভালো লাগছে না
” মেয়েটাকে আমি বড় মুখ করে বলেছি তুই নিয়ে যাবি এখন না করবো কি করে। তাছাড়া ও তোর বউ
“হুম
” প্লিজ বাবা যা
“ঠিক আছে। ওকে রেডি হতে বলো

মা সায়ানের কপালে চুমু দেয়।
তুলি একটা নীল শাড়ি পরে সায়ানের সাথে বের হবে বলে। তারপর আবার সায়ানের চড়ের কথা মনে পরে।
” মা মা
তুলি জোরে জোরে শাশুড়ীকে ডাকে।
“কি হয়েছে
” আমি যাবো না
“কেনো?
” ও আমারে মারছিলো
“সরি তো বলেছিলো
” ও তে হবে না
“তাহলে
” কি থাক তোমাকে বলবো না। ওকে বলো আমি যা করতে বলছি ও যেনো তা করে
“ঠিক আছে।

সায়ান ওয়াশরুম থেকে বের হয়।
” তুলি যা করতে বলছে কর
“ও কি করতে বলছে
” ও তোকে হ্মমা করে নি
“তো
” যা করলে ও হ্মমা করবো তাই কর। এটা আমার হুকুম।
তুলি শাশুড়ীকে জড়িয়ে ধরে বলে
“আমার সোনা মা। এবার তুমি যাও
শাশুড়ী চলে যায়। তুলি দরজা বন্ধ করে দেয়।

” এটা কি হলো
“শাশুড়ী কি বললো শুনেন নাই
” নাহহহ
“তাহলে আবার ডেকে আনছি
” শুনছি
“তাহলে চটপট করে ফেলুন
” কিহহহ
তুলি সায়ানের চুল টেনে দেয়
“তুই জানোস না কি😡
আমারে চর দেওয়ার সময় তো বললি না কি
সায়ান চুল ছাড়িয়ে নেয়
” সরি বলছি তো
“হবে না ওতে
” তাহলে কি লাগবে
“আবার😡😡
” হুম
“কি হুম
” চলো
“আগে
সায়ান তুলির গালে একটা পাপ্পি দিয়ে দেয়
” হেপি
“😡😡😡😡😡😡😡😡
তুলি গাল ফুলিয়ে হাটা ধরে। সায়ানও তুলির পেছন পেছন যায়।

চলবে

আমার ক্রাশ পর্ব-১০

0

#আমার ক্রাশ
#পর্বঃ১০
#Tanisha Sultana (Writer)

খুব সকালে মনার ফোনে সায়ানের ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম ঘুম কন্ঠে সায়ান বলে
“হুম জান বলো

” তুমি এখুনি আমার বাসায় চলে আসো

“কিন্তু কেনো?

” প্লিজ জান আসো

“মনা এখন কি করে যাবো

” আমি কিছু শুনতে চায় না

“কোনো কি পবলেম হইছে

” নাহহ

“তাহলে

” আসবা ব্যাছ

“ওকে আসতেছি

সায়ান উঠে ফ্রেশ হতে যায়। তুলি সোফায় ঘুমিয়েছিলো। মনার ফোনের শব্দে তুলিরও ঘুম ভাঙে যায়।
” ওহহহ তো এবার সায়ান মনার কাছে যাবে। গুডডড। যাও সোনা গার্লফ্রেন্ডের বাড়ি থেকে ঘুরে এসো। আর আমি তোমাকে উগান্ডা থেকে ঘুরিয়ে আনবো। কুকুরের লেজ সোফা হবে আর ইতিহাসের পাতায় আমার নাম লেখা থাকবে। উফফফ
কি আনন্দ আকাশে বাতাসে
তুলি সয়তানির হাসি দেয়।

সায়ান রেডি হয়ে বের হয়ে দেখে তুলি সোফায় পায়ের ওপর পা তুলে বসে আছে। সায়ান আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছে
“আমি এখন বেরবো

তুলি একটু নরেচরে বসে। সায়ান পার্স নিয়ে বেরিয়ে যেতে যেতে বলে
” আসছি
এ্যাঁ এ্যাঁ😭😭😭😭😭
তুলি কান্না শুরু করে দেয়। সায়ান থেমে যায়। তুলির দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলে

“সমস্যা কি?
তুলি কান্না থামায়
” আপনার ফোনটা একটু দেন
“কেনো?
” মায়ের সাথে কথা বলবো😭😭😭😭
“ধরো
” 😘😘😘
“এইতো কাঁদছিলে
” এখন হাসতেছি😄
“পারোও তুমি
” হুমমম😎

তুলি সায়ানের ফোনটা নিয়ে সায়ানের ফেসবুক পাসওয়ার্ড টা দেখে দিয়ে দেয়

“তুমি না মায়ের সাথে কথা বলবা

” কথা বলার জন্য আমার ফোন আছে যতসব
তুলি ভেংচি কেটে চলে যায়

“এই পাগলের মতিগতি কিছুই বুঝতে পারি না। কখন কি চলে এর মনে আল্লাহই জানে
সায়ানও চলে যায়।

তুলি সায়ানের আইডিটা নিজের ফোনে লগইন করে। তার একটা পোষ্ট দেয়।
“একটা এড্রেস” এখানে সানি লিওন আসছে আজ সকাল দশটায়। আর তাকে ওয়েলকাম করবো আমি সায়ান মাহবুব 😎😎😎😎

পোষ্ট টা করে তুলি আইডি ডিলিট করে দেয় তুলির ফোন থেকে

” কাজ হয়ে গেছে এবার আমিও যাই একটু মজা নিয়ে আসি🤣 জামাই তুমি আজ বুঝবা তুলি কি চিজ😎। তোমারে সানি লিওনের শহর ঘুরিয়ে দেখাইবো তোমার বউ

তুলি টপ জিন্স পড়ে। চুল গুলো উচু করে ঝুটি করে বাঁধে, ঠোঁটে কড়া লাল লিপস্টিক । জিসান আসে

“কি রে কই যাবি?

“সানি লিওনকে দেখতে

” কস কি😱

“হ যাবি না কি

” চল দেখে আসি সানি বেবিকে। কিন্তু কোথায় আসবো?

“মনা খালাম্মার বাড়িতে😁

” কস কি

“হ। এখন ক আমারে কেমন লাগতেছে

” সানাই মাহবুব 🥱

“হনুমান😡

” হাছা কইলাম

“কথা কবি না

তুলি আর জিসান বেরিয়ে পরে।

🌺
সায়ান মনা যে হোটেলে থাকে সেখানে যায়। পরিবেশটা কেমন কেমন লাগছে। মনা আবার সায়ানকে ইমপ্রেস করার জন্য আরও ছোট জামা পরেছে। সায়ান দুবার কলিং বেল বাজায় মনা দরজা খুলে
“হেলো জান

সায়ান একবার তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নেয়। সায়ান ভেতরে ঢুকে

“বাড়িতে কেউ নেই

” নাহহহ আমি আর তুমি আছি

“ওহহ

সায়ান সোফায় বসে। মনা সায়ানের গা ঘেসে বসে পরে

” আমাকে কেমন লাগছে

“তোমাকে তো সব সময় ই সুন্দর লাগে। তো এতো সকালে আসতে বললে

” তোমায় দেখতে ইচ্ছে করছিলো

সায়ানের ফোন বেজে ওঠে। সায়ান রিসিভ করে
“ভাই সানি লিওন কখন আসবে

” কিহহহহহ

“কখন আসবে। আমাকে একটু কথা বলিয়ে দিয়েন প্লিজ

সায়ান ফোন কেটে দেয়

” কি হয়েছে?

“কে যেনো ফোন করে বলছে সানি লিওন কখন আসবে

” কিহহহ

“মানুষ জন পাগল হইছে

আবার ফোন বেজে ওঠে। সায়ান রিসিভ করে সেম কথা। এভাবে ফোন বাজতেই থাকে। সায়ানের মাথাটা সেই লেভেলের গরম হয়ে গেছে। মনা রুম ডেট করার জন্য সায়ানকে ডেকছিলো। এখন নিজেই বিরক্ত হচ্ছে।

সায়ান ফোন ছুড়ে মারে। এবার মনার বাড়ির
কলিং বেল বাজে।

” এখন আবার কে এলো?

“দরজা খুলে তো দেখতে পারো কে এলো

” হুমমম যাচ্ছি
মনা বিরক্তি নিয়ে দরজা খুলে দেখে জিসান আর তুলি দাঁড়িয়ে আছে

“তোমরা এখানে?

” সায়ান মাহবুব আছে? ওনার সাথে দেখা করতে এসেছি আসলে সানি লিওন কে দেখার খুব শক আমার।

সায়ান এগিয়ে এসে বলে

“তুমি

তুলি এক দৌড়ে সায়ানের কাছে গিয়ে বলে

” সানি লিওন কোথায়? ওনার থেকে কতো টিপস নেওয়ার আছে আমার। আমার তো ইচ্ছে ওনার মতো হওয়ার। আপনার সাথে সানি আপুর এফেয়ার আছে আগে কইবেন না

সায়ান চুল টেনে নিজের রাগ কমানোর চেষ্টা করছে। নাহলে আবার তুলিকে চর মেরে দেবে। তুলি এবার মনার সামনে যায়

“ওহহহ মাই গড আপনি সানি বলতে আপনার প্রেমিকাকে বুঝিয়ে। তাহলে তো মেনশন করে দেওয়া উচিৎ ছিলো দেশী সানি লিওন। কোনো বেপার না এখনি এডিট করে মেনশন করে দেন। না পারলে আমি হেল্প করছি। তবে খালাম্মার মধ্যে একটা সানি সানি ভাব আছে।

” জাস্ট সাট আপ তুলি
সায়ান গর্জে উঠে বলে। মনা বিজয়ীর হাসি দেয়

“গলা নামিয়ে কথা বল ব্রো

” জিসান কুল ডাইন। উনি তো দুটো ওয়ার্ড ই পারে কোনো বেপার না। (মনাকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে করতে বলে) আর একটু ছোট জামা পাও নাই বোধহয়

“মানে

” তোমার ড্রেসটা আসাম। তোমাকে যা মানিয়েছে না জাস্ট ছোট সানি

সায়ান মাথায় হাত দিয়ে বলে
“সানি সানি বলে সবাই আমাকে পাগল করে দিলো। কে সানি আর কোথায় থাকে

তখন আবার আরেক সিন শুরু হয়।

” মনা জান আমি চলে এসেছি
জিসান সায়ান তুলি তিনজন দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে একটা ছেলে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে। তারপর দৌড়ে এসে মনাকে জড়িয়ে ধরে

“সো সরি বেবি তোমাকে না জানিয়ে চলে এলাম। খুব মিছ করছিলাম তো তাই চলে এলাম।

মনার মুখটা দেখার মতো। তুলি হো হো করে হেসে ওঠে। সায়ান বোঝার চেষ্টা করছে একচুয়েলি কি হচ্ছে

” ভাইয়া আপনি নিশ্চয় মনা খালাম্মা থুক্কু আপুর বফ

ছেলেটা একগাল হেসে বলে

“শুধু বফ না লাইফ পাটনার। আমার ভালোবাসা

সায়ানের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যায়।

” মনা তুমি

তুলি সায়ানকে থামিয়ে দেয়

“কংগ্রাচুলেশনস ভাইয়া এন্ড আপু। ভালো থাকবেন

তুলি সায়ানের হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়।

” আমাকে এখানে নিয়ে এলে কেনো😡

“খালাম্মাকে ভালোবাসলে তার সুখে বাধা হয়ে দাঁড়াবেন না। জিসান চল

তুলি আর জিসান গাড়িতে বসে।

” কেউ চাইলে আমাদের সাথে যেতে পারে
জিসান বলে
সায়ান গাড়িতে উঠে বসে। সব কিছু মিলিয়ে সায়ানের রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। জিসান ডাইভ করছে তুলি আর সায়ান পেছনে বসেছে

“জিসান একটা গান ধর তো

আমার গানের প্রতিটা সুরে তোমায় আমি খুঁজে যায়
তুমি ছাড়া শুন্য লাগে হৃদয়ের আঙিনায়
কার চোখে চোখ রেখে অভিমান বলে যাও
ভালোবাসি বলে আজ কার বুকেতে মাথা দাও

তোমায় কেনো পায় না খুঁজে আমার শহরটায়
কার শহরে আলো মাখো আধার দিয়ে আমায়

সায়ান জোরে গাড়ির কাঁচে ঘুরি মারে। জিসান তুলি ভয়ে চুপ হয়ে যায়

” আর একটা সাউন্ড হলে সব ভেঙে গুরিয়ে দেবো। মজা হচ্ছে খুব মজা হচ্ছে তাই না।

সায়ানের চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে। নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে না। তুলি জিসান চুপ হয়ে যায়।

“এতোটা রেগে গেলেন কেনো? মনাকে অন্য একটা ছেলের সাথে দেখে না কি মনা আপনাকে ঠকিয়েছে এটা ভেবে? মনা আপনাকে কোনোদিনও ভালোবাসে নি। এটা আমি আগেও বলেছিলাম। আমাদের কপালে যেটা লিখা থাকবো সেটা হবেই। আমি আপনার ওপর ক্রাশ খেয়েছিলাম। ভালো লাগতো আপনাকে। কিন্তু আপনাকে ছাড়া বাঁচবো না এরকম কোনো আসক্তি ছিলো না। আমি মনকে আগে থেকেি চিনতাম জানতাম ও ফ্রট। মনা আমাকে চেলেন্জ দিয়েছিলো আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না। তাই এতো জোর জবরদস্তি করে বিয়ে করেছি। জাস্ট হারবো না বলে। আমি কখনো হারতে শিখিনি।
বুঝলেন মামু
আমি কিন্তু আপনাকে লাইক করি আর এখন ভালোও বাসি। তাও আবার মারাক্তক।
তবে হ্যাঁ আপনি আমাকে চর মেরেছিলেন এটা নিয়ে চমি ভীষণ রেগে আছি।

তুলি গাল ফুলিয়ে বসে থাকে

চলবে