Sunday, August 3, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1545



না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-০৭

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#part_7

পার্লারের মেয়ে আসলো আমার মেকাপ করতে,,ওফ এই মেকাপ করতে করতে বিরক্ত হয়ে গেছি

আমাকে একটা বেবি পিন্ক কালারের গরজিয়াছ গার্ওন পরিয়েছে,মেচিং জুয়েলারি,,, সাথে মেকাপ।আজকের মেকাপটা কালকের থেকে একটু হালকা হয়েছে।আমাকে সাজিয়ে বাইরে নেয়ে গেল,,আদিবা দেখে,,,,,

আদিবাঃ ওয়াও ভাবি তোমাকে পুরা পুতুলের মতো লাগছে,,,ভাইয়া দেখে ফিদা হয়ে যাবে।

বর্ষাঃ মেকাপ আর ড্রেস টা সুন্দর বাট ওকে মানায় নাই।আমি আবার ফাও কমপ্লিমেন্ট দিতে পারি না ছরি ভাবি,,,,

আদিবাঃ যার চয়েছ যেমন আরকি।এনি ওয়ে ভাবি চলো,,সবাই কমিউনিটি সেন্টারে চলে গেছে শুধু আমারাই বাকি আছি,,,,।

সবাই মিলে গাড়িতে করে কমিউনিটি সেন্টারে যাচ্ছি।আমার মাথা তো রাগে পেটে যাচ্ছে মেয়েটির কথায়।নিজের চেহারা আয়নায় দেখেছে পুরো মেকাপ করে ভুত হয়ে গেছে,, নিজেকে তো একটু সুন্দর লাগছে মা আবার আমাকে বলে। ইচ্ছে করছে নাক ফাটিয়ে দিই।

গাড়ি কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে থামলো।সবাই নামছে,,আমি যেহতু নতুন বউ আর আমাকে তো কেউ নামাতে হবে নিজে নিজে নেমে গেলে ব্যাপারটা কেমন দেখায়।

আদিবাঃ ভাবি তুমি একটু ওয়েট করো তোমাকে নামানোর মানুষ আসচ্ছে।

আমি সামনে তাকাতে দেখলাম,,আদি আসছে,,ও আমার সাথে মেচিং করে জামা পরেছে,চুল গুলো স্পাক করা,,, পুরো জেন্টেলম্যানস এর মতো লাগছে।

সামনে এসে হাত বাড়িয়ে দিল,,,, আমি দেখলাম চারপাশে মানুষ আছে হাত না ধরে উপায় নেই,,,

আমি ওর হাত ধরে নামলাম,,,,ও আমার সাথে ভেতরে ডুকলো।সবাই শুধু আমাদের নিউ কাপলের দিকে তাকিয়ে আছে।,,,

কিছুক্ষণ পর আমার পরিবারের সবাই আসলো।তাদের দেখে নিজেকে আর আটকে রাখতে পারলাম না।জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিয়েছি।আমার বোনটা তো আমাকে দেখেই কেঁদে দিলো।আজ বুজতে পারছি যতোই ঝগরা মারপিট থাকুক না কেন,যতোই খারাপ সাজুক না কেন ভাই বোনের ভালোবাসা সব সময় অটুট থাকে।আমার বেস্টি ও আসছে,, ওকে জড়িয়ে ধরে,,,

আমিঃ কেমন আছিস জানু?

রিয়াঃ তোকে ছাড়া ভালো থাকতে পারি! অনেক মিস করতেছি,,তোকে ছাড়া কলেজ এ কেমন এ যাবো এ নিয়ে ডিপ্রেশনে ভুগছি।

আমিঃ কেন আমিতো বিয়ের পরেও পড়বো পাগলি

রিয়াঃ পড়বি ঠিকে আছে কিন্তু আমাদের কলেজে থাকবি কিভাবে তোর শশুর দের পরিবার তো সবাই শহরে থাকে তোকে যদি ওই খানে নিয়ে যায়।

আমিঃ নেহি,,,এ কাবি নেহি হোচাকতা,,,,, জানু তোরে ছাড়া নতুন কলেজে কেমনে থাকবো😞

রিয়াঃ ওইটা তো কথা,,, তুই আদি ভাইয়ার কথা বলিস

আমিঃ হুম😒

রিয়ারা সবাই কথা বলছে,,,, রিয়া অনেকক্ষণ থেকে ফলো করছে হাসিব ওর পিছু পিছু হাঁটছে আর ওর সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে কিন্তু সুযোগ পাচ্ছে না।কাল বিয়েতে ওকে জ্বালিয়ে মারছে,,

এদিকে আমি খেয়াল করেছি বর্ষা শুধু আদির দিকে তাকাচ্ছে আর আদি আমার সাথে থাকলে ওর মুখটা কেমন করে আমার দিকে তাকায়। এ মেয়ের হাবভাব ভালো ঠেকছে না।ডাল মে কুছ তো হে🤔।

এভাবে দিন কেটে গেল,,,আমার পরিবারের সবাই চলে গেল যাওয়ার সময়ও খুব কেঁদেছি,,, ইচ্ছে করছিল ওদের সাথে চলে যেতে,,,

রুমে শুয়ে আছি।আমার শাশুড়ী আর আদিবা রেস্ট নিতে বলল,,,

এদিকে আদি রুমে এসে দেখে ঋতু শুয়ে আছে,,দেখেই বুজা যাচ্ছে চোখ মুখে ক্লান্তির চাপ আর কান্না করার ফলে চোখ ফুলে গেছে,,ঘুমানো অবস্থায় ঋতুকে অনেক কিউট লাগছে।আদি ঋতুর পাশে বসে ঋতুকে অনেক মনোযোগ দিয়ে দেখছে,,,।মুখটা কেমন বাচ্চা বাচ্চা ভাব দেখলে কেউ বলবে আমার সাথে এতো ঝগড়া করে।।ওর মুখের সামনে ছোট ছোট চুল গুলো পড়ে আছে। আদি চুল গুলো কানে গুজে দিয়ে,,,কিছু একটা ভেবে ওঠে গেলো,,,,

আমি ঘুম থেকে ওঠে দেখলাম রাত হয়ে গেছে ,, ধুর আমি এতোক্ষণ ঘুমে ছিলাম,,ওঠে নিচে গিয়ে দেখি সবাই গল্প করছে।আমি ঘোমটাটা টেনে তাদের সামনে গেলাম,,,

শাশুড়ীঃ ঋতু তুমি এত তাড়াতাড়ি ওঠতে গেলে কেন। সারাদিন অনেক ঝাপড় গেছে আরেকটু রেস্ট নিতে।

আমিঃ না না আন্টি আমি অনেকক্ষণ রেস্ট নিয়েছি।

শাশুড়ীঃ ওমা এ কি কথা আন্টি কেন ডাকছো আমি ও তোমার মাই। তোমাকে তো আমি আমার মেয়ে ভেবে নিয়েছি তুমি বুজি আমাকে মা বলে মেনে নিতে পারোনি।( অভিমানী সুরে)

আমিঃ সেটা নয় আম্মু এমনি মুখে দিয়ে চলে আসছে,,

শাশুড়ীঃ এবার ঠিক আছে।যাও তুমি গিয়ে ওদের সাথে গল্প করো।

আমি আদির কাজিনদের সাথে বসে গল্প করছি।সহজে সবার সাথে মিশে গেছি।হঠাৎ বর্ষা আমার পাশে এসে বলল,,

বর্ষাঃ ভাবি তোমাকে একটা কোশ্চেন করবো?

আমিঃ হুম করো

বর্ষাঃ তোমার কি বয়ফ্রেন্ড ছিল? তুমি আমার সাথে ফ্রেন্ডলি সব শেয়ার করতে পারো।

আমি বুজলাম মেয়েটা আমার থেকে কথা বের করতে চাচ্ছে। আমি কি পাগল নাকি তোর মতো রিনা খানকে আমি আমার পারসোনাল কথা বলবো।

আমিঃ না নেই।

বর্ষাঃ তো,,,

ও কিছু বলার আগে আমি ওখান থেকে ওঠে চলে আসলাম, কি না কি আবার বলে ফেলে,তাই ওঠে কিচেনে গেলাম।আমার শাশুড়ী আর ননদ এ চা বানাচ্ছে সাথে ঝালপিঠা। এই ঠান্ডার মধ্যে ঝাল কিছুর খাওয়ার মজাই আলাদা।

আমিঃ আম্মু আমি একটু হেল্প করি না।

শাশুড়ী ঃ আরে না তোমার কিছুই করা লাগবে না তুমি নতুন বউ না,,,

আমিঃ আম্মু আপনি তো বলছেন আমি আপনার মেয়েই তাহলে মেয়ে একটু হেল্প করলে কি সমস্যা।

আদিবাঃ নাও মা তোমার কথার জালে তোমায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে 😆।

শাশুড়ীঃ হা হা তা তো দেখচি।আচ্ছা তুমি আমার সাথে এগুলো নিয়ে চলো সবাইকে দিতে হবে।

আমিঃ ওকে আম্মু।

আমি চা নিয়ে বসার রুমে গেলাম সবাই সোফায় বসে আছে,,,আমি গিয়ে প্রথমে আমার শশুরকে চা দিলাম।

শশুরঃ আমার নতুন মেয়েকে দিয়ে কে কাজ করাচ্ছে শুনি

আমিঃ আব্বু আমি কোন কাজ করি নাই,সব আপু আর আম্মু করছে আমি শুধু আনালাম মাত্র।

আদিঃ( সবার সাথে কি মিষ্টি মিষ্টি কথা আর আমার সাথে খারাপ হুহ)

আমি একে একে সবাইকে নাস্তা দিলাম,,,

হঠাৎ আদি বলে উঠলো,,,,

আদিঃ আব্বু আমাকে কালই অফিসে যেতে হবে অনেক কাজ জমে গেছে।

আব্বুঃ কি বলিস কাল তো ঋতুদের বাসায় যাওয়ার কথা।

আদিঃ আব্বু তুমি তো জানো কাজ ভালো না হলে আমাদের কোম্পানির লস হবে।সমস্যা নেই তো ঋতুরা যাবে আমি না গেলে হবে তো।

আম্মুঃ এটা কোন ধরনের কথা। তোর জন্যই তো আয়োজন হবে।কাল দিনটা একটু মেনেজ কর প্রয়োজন হলে কাল বিকেলে এসে তুই আর ঋতু রাতে রওনা দিবি।

আদিঃ কেন তোমারা যাবে না?

আম্মুঃ আরে সবে কাল বিয়ে গেল এখানে সব কিছু এখনও এলোমেলো সব ঠিকঠাক করে আমরা যাবো।

আদিঃ তাহলে ঋতু ও থাক।আমি একা সামলে নিবো।

আম্মুঃ আরে তুই অফিস থেকে এসে সব সামলাতে পারবি না ঋতু যাক।আমার থাকতে পারবো আমাদের নিয়ে চিন্তা করিস না।

আদিঃ ওকে তোমরা যা ভালো বুজো।

আমার রাগে গা জ্বলছে।এই কাদি টার সাথে আমাকে যেতে হবে।

চলবে,,

না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-০৬

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#part_6

অবশেষে দিশা না পেয়ে ভেঁ ভেঁ করে কান্না শুরু করে দিলাম।

আমার কান্নার শব্দ শুনে ওনি আমার পাশে এসে,,,

আদিঃ ঋতু তোমার কোন সমস্যা হয়েছে কাঁদতেছ কেন।

আমি ওকে পাশে দেখে

আমিঃ এই আপনি আমার পাশে কেন বসেছেন যান দূরে যান বলছি না হলে খারাপ হবে বলি দিলাম।

আদি আমার কথায় হা হয়ে গেছে।

আদিঃ আরে তুমি পাগল নাকি তুমি কাঁদতেছ বিধায় তো আমি আসছি।আর তোমার থেকে অনেকটা ডিস্টেন্স এ বসেছি। এমন বিহেব করতেছ যেন আমি তোমাকে টার্চ করেছি,,

আমিঃ করবেন না যে তার গেরান্টি কি,,,আপনাদের ছেলে মানুষদের আমার ছেনা আছে,,,,, একটু পাশে বসলেই সুযোগ খোঁজেন।

আদিঃ হেই ইউ তুৃমি কাকে কি বলছো।সব ছেলে এক না আর আদিব মাহমুদ কখনও কারো সুযোগ নে না সেটা যা বিষয়ের হোক না কেন।

আমিঃ আপনি এমন একটা ভাব করছেন যেন দুনিয়াতে আপনার মতো ছেলে হয় না।সুযোগ তো নিয়েছেন সুযোগ নিয়েই তো আমাকে বিয়ে করেছেন।

আদিঃ তোমাকে বিয়ে করতে বয়ে গেছে।আমি আমার ফ্যামেলির জন্য আমাকে বিয়েটা করে হয়েছে।আর তুমি যদি এমন ঝগরুটে জানতাম তাহলে তো কখনও বিয়ে করতাম না।

আমিঃ এই যে মিস্টার আদি না কাদি আপনার সাহস কি করে হয় আমাকে ঝগরুটে বলার।আপনি কি আমাকে বিয়ে করতেন না আমি নিজেই আপনাকে রিজেক্ট করতাম নেহাত আমার আম্মু আব্বুর জন্য করতে পারলাম না হুহ।আর ভুলে যাবেন না আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি সো আমার উপর কোন অধিকার খাটাবেন না।

আদি মনে মনে ভাবলো,,,

এটা কি সে মেয়ে যাকে প্রথম দেখায় ভালোবেসে পেলেছিলাম।এখন যা বুজতেছি ওতো একজন বোম্বা মরিচ।বাবা কথা না বাড়ানোই ভালো।

আদিঃ হুম জানি তো তোমার ভালোবাসার মানুষ আছে। আর আমি তোমার উপর কোন অধিকার খাটাবো না তবে একটা শর্ত আছে।

আমিঃ কি শর্ত?

আদিঃ আমাদের মধ্যে যাই থাকুক না কেন আমার পরিবারের সাথে তোমার ভালো বউ হিসেবে থাকতে হবে।তারা যেন না বুজে আমাদের মধ্যে কিছুই নাই।

আমিঃ আপনি যে ভাবে বলতেছেন ভালো বউ হিসেবে থাকতে আমি কি খারাপ নাকি যে ভালো হয়ে থাকতে হবে।আমি এমনিতেই ভালো😏।

আদিঃ হুম ভালো, কিন্তু বুঝো কম।না হলে একটা মানুষকে না জেনে না বুজে শুধু মাত্র তার কথার ছলে তাকে ভালোবাসতে না।

আমিঃ মানে কি বুজাতে চাইছেন?

আদিঃ কিছু না শুয়ে পড়ো। গুড নাইট।

বলে আদি বিছানার এক পাশে শুয়ে পড়লো,,,

আমিঃ এই,,,,,,,,,,,,,যে উঠুন বলছি,,,( জোরে)

আদিঃ কি হয়েছে আবার।

আমিঃ কি হয়নি বলুন।আপনাকে বলছি আমার থেকে দূরে থাকুন।কিন্তুু আপনি আমার পাশে কেন শুয়েছেন।

আদিঃ তো কোথায় শুবো।

আমিঃ আমি কেমনে জানি দরকার হলে সোফায় শুয়েন,,,,,

আদিঃ কি,,,,,,আদি সোফায় শুবে,,,নো ওয়ে,,।আমি পারবো না,,,,এখানে ঘুমালে কি হবে আমাদের মধ্যে অনেক ডিস্টেন্স আছে।

আমিঃ জ্বি না,, আমি আপনাকে এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না। যদি রাতে আমার কাছাকাছি চলে আসেন? সো রিক্স না নেওয়াই ভালো সোফায় থাকায় বেটার।

আদিঃ ধূর,, তুমি তোমার নেগেটিভ মাইন্ড নিয়ে বসে থাকো।

এটা বলে আদি বিড়বিড় করতে করতে সোফায় চলে গেল।ও কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে পড়লো আর নিজে নিজে বলল,,

বাসর তো ধূর খাট ও আমার কপালে জুটলো না।পোড়া কপাল আমার,আজ আদিব মাহমুদ নাকি সোফায় থাকছে হাহ।আদি আরো কি কি আছে তোর কপালে তা আল্লাহ না জানে।

সকালে আমার ঘুম ভাঙ্গলো।দেখলাম ওনি সোফায় শুয়ে আছে মনে হচ্ছে ভালো করে শুতে পারছে না গা থেকে কম্বলটা ও সরে গেছে।আমি গিয়ে কম্বলটা গায়ে তুলে দিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম।বের হয়ে একটা নীল শাড়ি পরেছি,আয়নায় তুল আচরাচ্ছি।

আদি চোখ খুলতে দেখলো তার সামনে একটা নীল পরী দাড়িয়ে আছে। ভেজা চুলগুলো কোমর পর্যন্ত ছাড়িয়ে গেছে।অাদি একটা ঘোরের মধ্যে চলে গেছে সে তার প্রেয়সীকে দেখতে ব্যাস্ত।

আমার চোখ সোফায় যেতে দেখলাম ওনি হা করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি কিছুটা লজ্জাবোধ করলাম,ওনি চোখ নামাচ্ছে ও না এবার অস্বস্তি লাগছে।

হঠাৎ দরজায় আওয়াজ হলো,,,, আমি ওনার কাছে গিয়ে বললাম খাটে চলে যেতে।

ঋতুর কথায় আমার ঘোর কাটলো।বুজতে পারলাম কেউ দরজায় নক করছে। তাড়াতাড়ি খাটে গিয়ে শুয়ে পরলাম,( আদি)

আমি গিয়ে দরজা খুলে দেখলাম আদিবা আর তার মেয়ে দাড়িয়ে আছে। আদিবার মেয়ের নাম তাহিয়া,, তিন বছর হবে আরকি,,

তাহিয়াঃ গুড মর্নিং সুন্দর মামুনি,,,,

আমি হেসে,,

আমিঃ গুড মর্নিং তাহিয়া মনি

আদিবাঃ ভাবি তুমি তো রেড়ি হয়ে গেছো,,, চলো আমার সাথে নিচে চলো,,,

আমি নিচে গিয়ে দেখলাম আমার শশুর আরো অনেকে বসে বসে গল্প করছে।আমি গিয়ে সালাম দিলাম।তারপর আমাকে আদিবা কিচেনে নিয়ে গেলো
সবাই সকালে নাস্তা রেডি করছে।আমি একটু হেল্প করতে গেলাম কিন্তু আমার শাশুড়ী মা করতে দিলো না।ওনি আমাকে মেয়ের মতো আদর করছে,,,,আমার ননদ,শশুর,শাশুড়ী সবাই ভালো।আমাকে নিয়ে একটা রুমে নিয়ে গেল,ওইখানে সব মেয়েরা।আদিদের কাজিন সব,,,,

ওরা সবাই বাসর রাত নিয়ে আমাকে নিয়ে মজা করছে,, আমার তো লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে।জানি বাসর এর কিছুই হয়নি তবুও ওদের কথায় লজ্জা লাগছে,,,

অনেকক্ষণ ধরে খেয়াল করছি আমার মামী শাশুড়ীর মেয়ে বর্ষা আমার সাথে কেমন অন্যরকম বিহেভ করছে।আমার মনে হচ্ছে আমাকে ছোট করে কথা বলার টাই করছে,,

সবাই নাস্তা করার জন্য টেবিলে আসছে,,,আদিও সিঁড়ি দিয়ে নামছে,,,একটা কালো শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে নামচে।পুরাই হিরোর মতো লাগছে কিন্তু আমার জন্য ভিলেন😒।

ও এসে টেবিলে বসলো।আমার শাশুড়ী ও আমাকে বসে যেতে বললো তাই আদির সামনাসামনি চেয়ার টা টানতেই বর্ষা এসে চেয়ারে বসে গেল।মাথাটা খারাপ হয়ে গেলো মেয়েটাকে আমি কি করেছি শুধু শুধু আমার পিছনে পড়ে গেছে।

আমি পাশের টেবিলে বসে নাস্তা করছি।বর্ষা মেয়েটা শুধু আদির দিকে তাকাচ্ছে,,,যেন গিলে খাবে আদিকে।ব্যাপারটা আমার অন্যরকম লাগলো। আমি তেমন পাত্তা না দিয়ে খাচ্ছি।আমার শশুর বলে উঠলো,,,

শশুরঃ আদি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও আমাদের আবার কমিউনিটি সেন্টারে যেতে হবে।

আমার মনে পড়লো আজ বৌ ভাত কমিউনিটি সেন্টার করবে আমার আম্মু আব্বুও পরিবারের আসবে ভেবেই খুশি লাগছে।

কিছুক্ষণ পর পার্লারের মেয়ে আসলো আবার মেকাপ করতে,,,,,খুবই বিরক্ত লাগছে,,,

চলবে,,

না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-০৫

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#part_5

ঋতুর চোখ সামনে যেতেই তার হাত পা কাঁপতে লাগলো। কি করে পারলো ও??

আরিয়ান আমার সামনে দাড়িয়ে আছে।ও বলেছে আমার বিয়েতে আসবে আমাকে বধূ সাজে দেখতে কিন্তু আমি কল্পনা ও করতে পারছি না আসলে ও এসেছে।ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। দেখে খুবই স্বাভাবিকই লাগছে।

কিন্তু আমি স্বাভাবিক থাকতে পারলাম না।ওকে দেখতেই আমার চোখ পানি থামছে না।আমি ওর দিকেই তাকাই আছি।সবাই আমাকে বলছে আদিকে মালা পরাই দিতে।আমার কানে কিছুই আসছে না। আমি শুধু আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি পেলছি।আমার ভেতরটা তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে। এটাই স্বাভাবিক কোন মেয়ের বিয়েতে যদি তার বয়ফ্রেন্ড তার সামনে থাকে তাহলে ওই মেয়েটাই জানবে তার ভিতরের খবর।আমি ওর দিকে তাকিয়ে চোখের পানি পেলছি।সবাই বলতেছে আদিকে মালা পরিয়ে দিতে কিন্ত ওদের কথা আমার কান অব্দি যাচ্ছে না। আমি সামনে আরিয়ানের দিকই তাকিয়ে আছি,,,

আদি ব্যাপারটা বুজেছে তাই সে আমাকে মালাটা পরিয়ে দেয় আর আমার হাত ধরে নিজেই পরে নে।সবাই অনেকটা অভাক হয়।

এবার আসে বিদায় এর পালা।আমিতো সেই তখন থেকেই কান্না শুরু হয়েগেছে।আব্বুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছি,আব্বু ও নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না কান্না শুরু করে দেয়।আব্বুকে ছাড়ছি ও না।এ মানুষগুলোর বুকে ঠাই পাওয়ার জন্য হাজারো ইচ্ছে বিসর্জন দিতে পারবো। আম্মু বোনকে ধরে কাদতেছি,আজকে আমার জগরাটে বোনটা ও কাঁদছে। আগে বলতো তুই চলে গেলে আমি খুশি হবো আর এখন ছাড়ছে ও না।এটাই মনে হয় ভাইবোনের সম্পর্ক। শত জাগরার পরেও বুকের ভিতর ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে।

আমি কান্না করতে করতে চারপাশ কেমন ঘোলাটে দেখি চোখের সামনে আরিয়ানের চেহারা বেশে ওঠলো।আর কিছু মনে নেই,আমি সেন্সলেস হয়ে যাই।

চোখ মেলতে একটা রুমে নিজেকে আবিষ্কার করি।আমার সামনে অনেকে বসে আছে।কিছু কিছু মানুষকে ছিনি।যেহেতু ওনারা আনার আব্বুর কাজিন তাই অনেকের মুখ ছেনা।

আমার ননদ এ শরবত দিলো।আমি খেতে চাই নি তবুও জোর করলো তাই না খেয়ে পারলাম না । ওর একটা ছোট মেয়ে আছে অনেক কিউট আমার কাছ থেকে সরচেই না।আমার ননদ ওর ভাই থেকে ছোট কিন্তু বয়সে আমার থেকে একটু বড়।

হঠাৎ ওখানের একটা মধ্য বয়সী মহিলা বলে ওঠলো,,,

মহিলাটিঃ আজ কাল বউ রা তেমন কান্না করে নাকি।তুমিতো কেদে ভাসিয়ে দিয়েছো।আমার জন্মেও এই রকম কান্না করতে কাউকে দেখিনি।নিশ্চয়ই কোন গন্ডোগোল আছে।নাকি অভিয়ন করছো?

ওনার কথা শুনে খারাপ লাগলো,,,

আদিবা(ননদ)ঃ মামী সবাই তোমার দেখা মতো বউ হবে এমনতো কথা নেই।আর কাদলে যে কোন গন্ডগোল থাকবে তার ও কোন মানে নেই।অভিনয় কারা করতে পারে সেটা তাদের মুখ সেখলেই বলতে পারে।সো এই ধরনের মাইন্ড বদলাও।

মহিলাঃ এখনতো বলবি তোদের বউ যে।অবশ্যই ওরা তো আর হাই সোসাইটির ফ্যামিলির মেয়ে না, আর আমার মেয়ের মতো ফ্যাশন ও জানে না।এরা কান্না ছাড়া কি পারবে হা হা।

আদিবাঃ আমরা তোমার মেয়ের মতো কোন মডেল আনি নাই যে ফ্যাশন দেখাবে আমাদের।আর তুমি কোন সোসাইটি থেকে আসছো তা আর নাই বললাম।

ওনি এবার চুপসে গেল।

আমি বুজলাম ওনি আমার মামী শাশুড়ী।

মহিলাটির সাহস কি করে হয় আমাকে অপমান করার😒।আমাকে ফ্যাশন শেখাচ্ছ,কলেজে আমাকে সবাই ফ্যাশন কুইন বলতো😏।যদি ও তেমন মেকাপ করতাম না কিন্তু অল্পতেই নিজেকে ফুটিয়ে তলতাম।আমি যদি বউ না হতাম তাহলে ওনার বোতা নাক থোঁতা করে দিতাম হুহ🥱।আমাকে তো ছিনে না বুজিয়ে দিতাম ঋতু নাজনীন কি না পারে।( মনেমনে)

ওনার কথায় রাগ আসলেও। আমার ননদ এর কথায় খুশী লাগলো।আসলে এমন ননদ পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার,,,

আমার শাশুড়ী এসে সবাইকে নিয়ে গেল আর আমাকে রেস্ট নিতে বলল।

আদিবা আমার পাশে এসে বলল,,,

আদিবাঃ ভাবি আপনি কিছু মনে করিয়েন না।ওনি ওই রকমই।একটা ছোট পরিবার থেকে এসে এখন আমার মামার টাকা নিয়ে অনেক অহংকার দেখায়।মানুষকে খোঁচা দিয়ে কথা বলাই অভ্যাস।নিজে কি ছিল ওটা ভাবে না।আপনি কিছু মনে করবেন না।

আমিঃ না না আমি কিছু মনে করি নাই।( ইচ্ছেতো করছিল নাক পাটাই দিতে।)।আর আপনি আমাকে তুমি করেই বলেন বয়সে আপনার থেকে ছোট।

আদিবা ছোট একটা হাসি দিয়ে,,,,

আদিবাঃ ওকে।আপনি রেস্ট নিন আমি আসি।

ও চলে গেল।আমারও খুব খারাপ লাগছে।তাই বিছানায় শরীর এলিয়ে দিতে ঘুম চলে আসলো।

রাত ১২ টা🌸🌸🌸🌸

মেয়েরা সবাই আমাকে অন্যরুমে নিয়ে গেল।রুমটা গোলাপ ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। খুব সুন্দর লাগছে। রুমটা দেখেই বুকটা ধুপ করে উঠলো

।মনে চলে আসলো আরিয়ানের কথা। ওর সাথে স্বপ্ন দেখা,ও আমাকে বলতো আমাদের বাসী ঘরটা শুধু গোলাপ ফুল দিয়ে সাজাবে।কারণ আমি গোলাপ ফুল পছন্দ করি।আজ তো ঠিকই গোলাপ ফুল দিয়ে সাজিয়েছে কিন্তু আমার তো ভালো লাগছে না।আজ যদি আরিয়ান থাকতো আদির জায়গা তাহলে এই রুমটা সবচেয়ে ভালো লাগতো।

সবাই আমাকে খাটে বসিয়ে রেখে চলে গেল।আরো কতো মজা করছে। আমার এখন লজ্জা পাওয়ার কথা কিন্ত আমার ভিষণ কষ্ট হচ্ছে।

বসে বসে আগের কাটানো দিন গুলোই ভাবছি।হঠাৎ মাথা আসলো আজকে তো বাসর রাত যদিও আমি মানি না তবুও তো এটাই সত্যি। ওনি যদি আমার উপর স্বামীর অধিকার খাটাতে চায়।এটা মনে আসতে একটু একটু শীত থাকায় ও আমার শরীর ঘেমে একাকার,,

আম্মুগো তুমি আমারে নিয়া যাও।না হলে ওই আদির বাচ্চা কাদি এ আমারে শেষ করে দিবে, আমি কি করে মুখ দেখাবো,ধুর বিয়ে তো হয়ে গেছে মুখ তো দেখাতে পারবো।কিন্তু আমি নিজেকে নিজে কেমনে মুখ দেখাবোআমার ভার্জিনি শেষ করতে দিবো না।কি করি এখন,,,,কিছুই তো মাথায় আসছে না,,,

সেফটিপিন হাতে নিয়ে,,,,

পেয়েছি ও যদি আমার কাছে আসে,,,,,ওর পেটে সেফটিপিন ডুকিয়ে দিবো।কিন্তু আমি এই চিকনা মেয়ে কি ওই বডি বিল্ডারের সাথে পারবো? না না আমাকে পারতে হবে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছুই করতে দিবো না।আমি শুধু আরিয়ানকে ভালোবাসি।

মনে সাহস রাখলাম আমাকে ধরার চেষ্টা করলেই একদম মেরে দিবো।কিন্তু সাহস যেন কোথা হাওয়া হয়ে যায়।ভয়ে আমার জান বের হয়ে যাচ্ছে তার উপর এতো ভারী মেকাপ।

এগুলো ভাবছি আর হাত কচলাচ্ছি। হঠাৎ দরজা খুলার আওয়াজ হতেই আমি তো শেষ। হাত পা কাঁপছে কিভাবে সেফটিপিন পেটে ডুকাবো সেফটিপিন তো কাঁপতেছে।আল্লাহ গো তুমি আমারে উঠাই নাও,না হয় গায়েব করে দাও😒।

অবশেষে দিশা না পেয়ে দিলাম ভেঁ ভেঁ করে কাঁদা,,,,,,,

চলবে,,

না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-০৪

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#Part_4

যত সময় ঘনিয়ে আসছে ততো আমার ভিতরটা শেষ হয়ে যাচ্ছে,,,,

এ কয়েকদিন আরিয়ান আর কল করে নাই।আদি মাঝে মধ্যে করতো কিন্ত আমার থেকে তেমন কোন রেসপন্স না পেয়ে কেমন আছো, কি করছো এগুলা বলে শেষ করে দিতো।

আজ আমার গায়ে হলুদ।বাবা কোন কিছুর কমতি রাখেনি বড় মেয়ের বিয়ে বলে কথা।কিন্ত কেউ মনের দিকটা দেখে।ভাবতেই অবাক লাগে যাদের এই হাসি ধরে রাখার জন্য নিজের সব শেষ করে দিয়েছি।তারা একটু আমার মনে ডুকতে চেষ্টা করে না।

আমাকে একটা হলুদ শাড়ি পারিয়েছে। মুখে ভারি মেকাপ,হলুদের গয়না,,,,সব মিলিয়ে ভুত সেজে বসে আছি।কাজিনরা সব সাজতে ব্যস্ত খুব একা লাগছে।একা থাকলে যেন কষ্টটা আরো বেড়ে যায়।

হঠাৎ পিছন থেকে কেউ জড়িয়ে ধরলো,,পিছু তাকিয়ে দেখি রিয়া।

রিয়া আমার চোখে পানি দেখে আমাকে সামনে এসে জড়িয়ে ধরলো,,,,,

রিয়াঃ প্লিজ এভাবে কান্না করিস না অসুস্থ হয়ে যাবি।আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে।আরিয়ান তোর কপালে নেই।

আমিঃ আমি পারছি না রে।কেন এতো কষ্ট ভালোবাসায়?

রিয়াঃ হয়তো আমি করি নাই তাই জানি না ভালোবাসায় কষ্ট কেন।তোকে শুধু এটাই বলতে পারি সব ঠিক হয়ে যাবে।এর থেকে কিছু বলার নেই আমার।কিন্তু তুই এভাবে কান্না করলে আমি চলে যাব।যার জন্য এসেছি সে যদি কাঁদে তাহলে থাকা যায় নাকি,,

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে,,,তুই নাস্তা করেছিস?

রিয়াঃ আরে খাওয়া দাওয়া নিয়ে সমস্যা নেই,এটা আমার নিজের বাড়িই মনে করি যখন ক্ষিদে লাগবে খেয়ে নিব।

আমিঃ তাই বললে হয় নাকি।যা এক্ষনি গিয়ে খেয়ে আস তার পর কথা বলা যাবে।

রিয়াঃ আচ্ছা বাবা যাচ্ছি।

রিয়া চলে গেল। যতই মনটা শক্ত রাখার চেষ্টা করি না কেন পারি না।আজকে আরিয়ানের কথা খুব মনে পড়ছে।আরিয়ানের সাথে বিয়ের স্বপ্ন দেখাটা শুধু মাত্র স্বপ্নই রয়ে গেছে।আচ্ছা ও ঠিক আছে তো?

সবাই নিয়ে গেল হলুদ অনুষ্ঠান শুরু করার জন্য।সবাই কতো খুশি কতো ছবি তুলছে আর আমি শুধু মুখে মিথ্যা হাসি টেনে সবার সাথে তাল মেলাচ্ছি। কিছুক্ষণ পর ছেলের পক্ষ থেকে কিছু মানুষ আসছে আমার হলুদ করার জন্য।

কাজিনরা ওনাদের মেহমানদারি করছে,,,

রিয়া ঋতুর সাথে ছবি তুলে নিজে নেমে আসতেছে হঠাৎ শাড়ি পায়ে পড়ে পরে যেতেই পিছন থেকে কেউ ধরে পেলল,,,

হাসিবঃ বেয়ান সাহেবা একটু দেখে শুনে হাঁটবেন তো।

রিয়া হাসিবের দিকে তাকিয়ে তাকে দেখলো একটা সুদর্শন যুবক তার সামনে দাড়িয়ে আছে।দেখতে মাশাল্লাহ ক্রাশ খাওয়ার মতো।।

রিয়াঃ ধন্যবাদ ধরার জন্য,,

হাসিবঃ ঠিক আছে,,,

রিয়া চলে যতেই,,

হাসিবঃ আপনার পরিচয়টা জানা হলো না।

রিয়াঃ আমি ঋতুর ফ্রেন্ড রিয়া সুলতানা,

হাসিবঃ আমি আদির বিষ্টু হাসিব চৌধুরি।

রিয়াঃ নাইস টু মিট ইউ।

হাসিবঃ সেইম।

রিয়া ওখান থেকে চলে গেলো,,,হাসিব ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,,কিউটি পুরা

এভাবে কেটে গেল হলুদ রাত।সকাল হতেই পার্লারের মেয়েরা আসলো সাজাতে।

মেরুন কালারের লেহেঙ্গা, ভারি ভারি অর্নামেন্টস,ভারি মেকাপে মনে হচ্ছে আমার ওজন পাঁচ কেজি বেড়ে গেছে।আমার লাইফে ও এতো সাজি নাই।আচ্ছা না সাজলে কি হয় না আজব।

আমার বোন এসে বললো,,,হায় আপু আমি তো তোর প্রেমে পড়ে গেলাম অনেক প্রিটি লাগছে🥰🥰।

আজকে কেন জানি বোনের উপর রাগ হলো না খুব কান্না আসছে।সারাদিন ওর সাথে জগরা করা খুব মিস করবো।ওকে জড়িয়ে ধরলাম,,,

প্রিতুঃ আপু কাঁদিস না মেকাপ নষ্ট হয়ে যাবে।তখন ভাইয়া ভুত ভেবে আর নিয়ে যাবে না।

আমি এবার রাগী লুকে তাকালাম।এ মেয়েটা সিরিয়াস মুডেও এগুলে বলে।

রিয়া আমার সামনে এসে,,

হয় যেন কারো নজর না লাগে।আজকে আমার জানুকে অনেক হট লাগছে😜। ভাইয়া না জ্বলে যায় দেখিস।

আমি এবার ওর দিকে রাগী মুডে তাকালাম।

ও চুপ হয়ে গেল। বাইরে থেকে সবাই বলে ঔঠলো বর এসেছে বর এসেছে।

সবাই চলে গেল,,,,আমার বুকটা ধপকরে উঠলো।আজকে আমি অন্যের হয়ে যাব বিশ্বাসই হচ্ছে না।আচ্ছা আমি এখন পালিয়ে গেলে কি খুব খারাপ হয়ে যাবে

ধুর আমি এগুলো কি ভাবছি।যাওয়ার হলে তো আরো আগেই চলে যেতাম,,আমার পরিবারের জন্য আমাকি বিয়ে করতেই হবে।

কাজী সাহেব আসলো,,,আমাকে রেজেষ্ট্রি পেপারে সাইন করতে বলেছে।কিন্তু আমার হাত চলতেছেও না।চোখ বন্ধ করে আম্মু আব্বুর কথা ভাবলাম।তারপর মুখ খিচে সাইন টা করে দিলাম।কাজী কবুল বলতে বলছে।আমাড মুখে যেন কেউ কস্টিব মেরে দিয়েছে কথাই বের হচ্ছে না।কাজী আবারও বললো,

রিয়া এসে আমার হাতটা শক্ত করে ধরে বলল,

কবুল বলল,,

আমি ও বলে দিলাম কবুল।

সবাই চলে গেল অজরে চেখের পানি যাচ্ছে। রিয়া আমার পাশে এসে বসে বলল,,,,

রিয়াঃ আমি তোকে একটা কথা বলবো। তুই আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে পারবি না,আমি এর থেকে বেশি বলতে পারবো না,,

আমি রিয়ার দিকে তাকিয়ে,,

আমিঃ কি??

রিয়াঃ আরিয়ান তোর জন্য সঠিক ছিলো না।ওর আসল রুপ খুব ভয়ংকর। তুই যদি পারিস আদি ভাইয়াকে মেনে নিয়ে সুখে থাকিস।

আমি কিছু বলতে যাবো,,ও আমাকে থামিয়ে বলে,,,

রিয়াঃকি,কেন বলছি এগুলো আমাকে জিজ্ঞেস করিস না আমি বলতে পারবো না প্লিজ।

সবাই আমাকে স্টেজে নিয়ে যাওয়া জন্য আসলো।রিয়ার সাথে আর কাথাও হলো না।সবাই আমাকে নিয়ে যাচ্ছে। আমি ভাবছি রিয়া এটা আমাকে কেন বললো, আরিয়ান কি খারাপ। না না আমার আরিয়ান খারাপ হতে পারে না।নিশ্চয় রিয়া ওকে বুল বুজিতেছে এছাড়া আর কিছুই না।আরিয়ান আমাকে অনেক ভালোবাসে।

আদি স্টেজে বসে আছে সেরোয়ানি পরে।চোখ সামনে যেতেই আদি হা হয়ে গেল।তার সামনে দিয়ে এক হুর পরি আসছে।আদির চায় সময় এখানে থেমে থাকুক আর সে তার প্রেয়সী কে দেখতে থাকুক ।

সবাই আদিকে বললো ঋতুকে স্টেজে তুলতে।আদি ও তার প্রেয়সীকে ওঠাতে হাত বাড়িয়ে দিলো।

ইচ্ছাতো করছে এখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাই।ঋতু সামনে তাকাতে দেখলো আদি বর সেজে তার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।ঋতু না চাইতে হাত বাড়িয়ে দিলো।উঠে সামনে গিয়ে দাড়ালো।

ঋতুর চোখ সামনে যেতেই ওর হাত পা কাঁপতে লাগলো।ও কিভাবে পারলো????

চলবে??

না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-০৩

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#part_3

আদির মোবাইল ধরতে,,,

আদিঃ কেমন আছো?
ওনার কথা শুনতেই গা জ্বলে উঠলো,,,,

আমিঃ যেমন থাকার কথা।।
আদিঃ হুম।তুৃমি কি রাগ আমার উপর বিয়ে ভেঙে দিই নাই যে ?

আমিঃ রাগ হওয়ায় কিছু যায় আসে না।যা বলার আমি ওইদিনই বলে দিয়েছি।

আদিঃ হুম তা ঠিক।বাট ওইদিন আমি অনেক ভাবছি যদি বিয়েটা ভেঙে দিই আমার ফ্যামেলি অনেক কষ্ট পাবে।ওনারা অনেক আশা নিয়ে তোমাদের সাথে আত্মীয়তা টা আরো গভীর করতে চাচ্ছে। আমি তাদের আশাটা শেষ করতে চাই না।তাছাড়া আমি বিয়ে ভাঙ্গলেও তুমি তো আর তোমার চাওয়া মানুষকে পাবে না।তাই ভেবেচিন্তে আর বিয়েটা ভাঙি নাই।

আমিঃ হুম ওটা আরকি।

আদিঃ তুমি কি কান্না করছো,গলাটা এমন লাগছে কেন?

আমিঃ কেন কান্না করবো।আমারতো কান্না করার কথা না।আর কিছু বলবেন আমার কাজ আছে?

আদিঃ না কিছু বলার নেই।বায় টেক কেয়ার।

আমিঃ হুম

মোবাইলটা কেটে দিয়ে শুয়ে পরলাম। সারাদিন কান্না করতে করতে মাথা ব্যাথা করছে।শুয়া মাত্র ঘুমে তলিয়ে গেলাম।

এদিকে আদি মনে মনে বলছে,,,,,
(যা কান্না করার করে নাও বিয়ের পর আর কান্না করার সুযোগ দিবো না,,প্রমিজ,,,, আমার স্বপ্নের প্রেয়সী)

(আরিয়ান আমার কাছে এসে বলতেছে ঋতু তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো না,,, তাই তুমি অন্য কেউর হওয়ার আগে আমি চলে যাচ্ছি অনেক দূরে,, এটা বলে আরিয়ান পিছিয়ে যাচ্ছে হঠাৎ একটা গাড়ি এসে ওকে ধাক্কা মারে,,রাস্তা পড়ে রয়েছে ওর নিথর দেহ,,আমি আরিয়ান বলে একটা চিৎকার দিলাম।)

আমার ঘুম ভেঙে গেল,,,,আমি এতোক্ষণ স্বপ্ন দেখছি।আমার পুরা শরীর ঘেমে গেছে।কি স্বপ্ন দেখলাম এটা।না এমন কিছুই হবে,,,বলে নিজেকে সান্ত্বনা দিচ্ছি। কিন্তু মনটা চটপট কেরেই যাচ্ছে,,,চোখে ঘুম নেই।সেদিনে কথা মনে ওঠলো

যেদিন আরিয়ান আমাকে প্রপোজ করেছে। ওর আর আমার মধ্যে খুব ভালো বন্ধুত্ব ছিল।ও যতোটা সহজসরল ভাবছি তার একটু ও না।অনেক সুন্দর করে কথা বলে আর সারদিন ফ্রেন্ডদের সাথে ঘুরাঘুরি নিয়ে থাকে।কিন্তু আমি ওর জন্য একটা আলাদা ফিলিংস কাজ করে,ওর ও কও করে।তখন ওর মেসেজ আসে, প্রাইভেট ছুটির সময় দাড়াতে বলছে। কাল আমাদের প্রাইভেটে লাস্ট দিন।কানণএক সাপ্তাহ পর এইচএসসি পরীক্ষা। তাই কাল বিদায়।কিন্ত আরিয়ান কেন দাঁড়াতে বলল,,,,,

পরেরদিন প্রাইভেটে গিয়ে সবার থেকে বিদায় নিয়ে ছুটির পর দাড়ালাম,,, কিছুক্ষণ পর আরিয়ান আমার সামনে এসে বললো,,

আরিয়ানঃ আজ তোকে কিছু কথা বলবো আগে প্রমিজ কর আমার কথার জন্য ফ্রেন্ডশিপ নষ্ট করবি না।

আমিঃ আরে পাগল ফ্রেন্ডশিপ কেন শেষ করবো তুই বল তো।

আরিয়ানঃ তোর সাথে ফ্রেন্ডশিপ করার পর থেকে আমার তোর জন্য এক আলাদা অনুভূতি হয়।তোর সাথে একদিন কথা না হলে আমার খুব কষ্ট হয়,তুই ক্লসে কোন ছেলের সাথে কথা বললে খুব রাগ হোক সেটা পড়ার ব্যাপারে বলিস।তোকে একদিন না দেখলে পুরা দিনটাই খারাপ হয়ে যায়।তোকে ছাড়া আমার চলেই না এন্ড আমি রিয়েলাইজ করছি তোকে আমি ভালোবেসে পেলেছি। প্লিজ আমাকে ছেড়ে যাস না।

আরিয়ান হাঁটু গেড়ে বসে পিছন থেকে গোলাপ ফুল বের করে বলে,,,,

I Love You Ritu….

আমার চোখে পানি চলে আসলো।যাকে এতোদিন চেয়েছি তাকে আজ পেলাম।আরিয়ানের জন্য আমার যে ফিলিংস ওর ও আমার জন্য একই ফিলিংস।।।আরিয়ান আমার থেকে কি শুনবে ওই ভয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ওর হাত থেকে ফুল নিয়ে,,
I love you too ariyan🥰🥰

আরিয়ান আমার কথা শুনে আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলো।

তারপর থেকে খুনসুটি নিয়ে আমাদের ভালোবাসা আগালো,

এগুলো ভাবতে ভাবতে রাত পার করে দিলাম,,,কিন্তু মনের ভিতর একটা ভয় রয়ে গেল,সকাল হতে রিয়াকে ( আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড) কল দিলাম।

রিয়াঃ কি রে জানু কেমন আছিস । আমাকে তো ভুলেই গেলি।

আমিঃ কেমন আছিস তো জানারই কথা।আর সময় পাই নাই কল দেওয়ার।কাল আরিয়ানের সাথে দেখা হয়েছে। ( ওকে সব বললাম আরিয়ানের সাথে ঘটে যাওয়া সব)

রিয়াঃ ওও।কি করবি ভাগ্যে যেটা ছিল ওটাতো খন্ডাতে পারবি না।

আমিঃ আমার না আরিয়ানের জন্য খুব ভয় করছে ও যদি কিছু করে বসে আর রাতে ওকে নিয়ে খারাপ স্বপ্ন ও দেখেছি আমার না খুব ভয় লাগছে।

রিয়াঃআরিয়ানকে নিয়ে তুই বেশি ভাবতেছিস তাই বাজে স্বপ্ন দেখছিস।তেমন কিছুই করার মতো ছেলে বলে মনে হয়না। এতো টেনশন করিস না।আচ্ছা আব্বু কল দিয়েছে তোকে পরে কল দিচ্ছি,,

আমিঃ ওকে,,বায়।

কল কেটে ভাবলাম,

রিয়া আমার ছোটবেলার সঙ্গী। রিয়া সব সময় সব সিচুয়েশনে আমার সাথে থাকে,কোন সমস্যা পড়লে আমাকে নিজের সব দিয়ে হেল্প করে।কিন্তু আরিয়ানের ব্যাপারে কিছু বললে ও এড়িয়ে যায়,,আমার মনে হয় ও আমাকে কিছু বলতে চায় কেন যেন বলতে পারছে না। কিন্তু আমি তেমন বিষয়টা পাত্তা দিইনি।এখন আমার সব থেকে খারাপ অবস্থা যাচ্ছে অন্যসময় হলে আমাকে সমাধান দিতো কিন্তু এখন আরিয়ানের কথা বলতেই আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছে। কি হচ্ছে আমার সাথে।নাকি আমি যেমন ভাবছি তেমন কিছুই না।ভাবতে পারছি না কিছু ওফ,,,,,

সময় কারো জন্য থেমে থাকে না।সময় চলছে আপন গতিতে,,,,যতো সময় ঘনিয়ে আসছে ততো আমার ভিতরটা শেষ হয়ে যাচ্ছে,,,,,,,

#চলবে,,,,,,

না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-১+২

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
লেখক:#Ritu_Jahan
সূচনা পর্ব

রেস্টুরেন্টে বসে অপেক্ষা করছি আমার হবু স্বামীর জন্য। অনেক ভয় লাগছে কেন হঠাৎ আমাকে ডেকেছে।

এগুলো ভাবতে ভাবতে চোখ গেল সামনেরা দিকে।ওনি একটা পিঙ্ক কালারের শার্ট পরে চুল গুলে স্পাক করে আসছেন।

আমার সামনের চেয়ার টেনে বসলেন ওনি।ভয়ে আমার শরীর কাঁপতেছে।অনেকক্ষণ নিরবতা ভেঙে ওনি বললেন,,

আদিঃ কেমন আছো?

ঋতুঃ ভালো।( কথা যেন ভেতর থেকে আসছেও না)

আদিঃ কিছু ওর্ডার করো

ঋতুঃ না আমার প্রাইভেট আছে কি বলবেন তারাতাড়ি বলেন। ( অনেকটা সাহস জুগিয়ে বললাম)

আদিঃ তা বললে হবে না হালকা কিছু খেয়ে হবে।

ওনি ওয়েটার কে ডেকে কপি আর স্যান্ডউইচ ওর্ডার করলো,,

আদিঃ তুমি কি বিয়েতে হ্যাপি না?

হঠাৎ এমন প্রশ্নে অনেকটা আঁতকে ওঠলাম।যেটা নিয়ে ভয় পেয়েছি ওটাই হলো এখন কি বলবো।আল্লাহ গো দড়ি পালাও আমি ওঠি যাই।আমার মুখ দিয়ে কথা আসছে না গো,,,

আসুন পরিচয় দেয়া যাক,,,,,

আমি ঋতু নাজনীন। অনার্স ২য় সেমিস্টারে পড়ি।দুই বোন।বাবা একটা জব করে।মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে বললে চলে।দেখতে আহামরি সুন্দর না হলে ও সবাই বলে আমার চেহারা নাকি মায়াবি,,, দুই বছর হলো রিলেশনশিপ এ আছি।বাকিটা পরে জানবেন,,,,

( আর যিনি আমার সামনে বসে আছে ওনি হলো আদিব মাহমুদ আদি।সিএনএফ কোম্পানি ওনার। দেখতে ফর্সা, চোখ গুলো বড় বড় চোখের মনি গুলো বাদামি,নকের উপর একটা তিল থাকায় চেহারার সৌন্দর্য বেড়ে গেছে। বাবা মার একটাই ছেলে। মেয়ে আছে একটা।সব মিলিয়ে ওনাদের টাকার অভাব নেই।আবার এনারা আমার বাবার দুঃসম্পর্কের কাজিন হয়।ওই দিক থেকে ছোট থেকে ওনাদের চিনি।কিন্তু এনারা শহরে থাকে)

গল্পে আসি,,,,,,,, 🌿

আদিঃ কি হলো বলছো না কেন।তোমার ভয় নেই আমাকে ফ্রী হয়ে বলতে পারো।তুমি কি বিয়েতে হ্যাপি না,,,
ঋতুঃ হঠাৎ এটা কেন জিজ্ঞেস করছেন?

আদিঃ তোমাকে যখন দেখতে গেছিলাম সবাই।তোমাকে দেখে মনে হলো তুমি খুশি না আর যখন আংটি পারাচ্ছি তখন তোমার চোখে পানি জমে ছিল।তাই শিউর হতে তোমায় দেখা করতে বললাম।আমি চাই না তোমার মনের বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়েটা হোক।তুৃমি কি বিয়েতে খুশি না?

ঋতুঃ না,,( মাথা নিচু করে বলল)

আদি ঋতুর দিকে তাকালো,,,

আদিঃ কারণটা জানতে পারি???

ঋতুঃ,,,,,,,,,,, (কিছুই বলছে না)

আদিঃ তোমার কি বয়ফ্রেন্ড আছে?

ঋতুঃ হ্যা।

আদিঃ তো তোমার ফ্যামিলিকে বলো

ঋতুঃ বলে লাভ হবে না।ও কোন জব করে না।আর ও আমার সমবয়সী তাই পরিবার কখনো মেনে নিবে না।

আদিঃ এটা রিলেশন করার আগে মনে ছিলো না

ঋতুঃ এগুলো ভাবলে তো কেউ কখনও কাউকে ভালোবাসতো না।ভালোবাসা তো আর এগুলো দেখে হয় না( কিছুটা রেগে)

(বেটার সাহস কি করে হয় আমাকে এগুলো বলার।মনে তো হয় না কখনও কাউকে ভালোবেসেছে কিনা।)

ঋতুর দমকে আদি কিছুটা চমকে গেল।এ মেয়ে আবার রাগ দেখাতেও জানে।দেখেতো মনে হয় ভাজা মাছটা উলটে খেতেও জানে না,,,

আদিঃ তো আমি কি করবো? বিয়ে টা ভেঙ্গে দিবো?

ঋতুঃ ওইটা আপনার বেপার। আমার যা সত্যি আমি বলছি।আর আপনি ভেঙ্গে দিলে ও আমি কখনও আমার ভালোবাসার মানুষটা কে পাবো না।( কান্না গলায়)

আদিঃ কেন?

ঋতুঃ আপনি বিয়ে না করলে ও বাবা বসে থাকবে।ওনার হাতে আরো পাত্র আছে।আমি বুজি না কেন আমাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য ওঠে পড়ে লেগেছে।

আদিঃ ও আচ্ছা।তুমি তো কিছু খেলে না।

ঋতুঃ খাওয়ার ইচ্ছে নেই।আমি আসি আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে,,,

আদিঃ ওকে।বায়,,

ওখান থেকে চলে এসে নদীর ধারে বসলাম।যখন মন খারাপ থাকে এখানে আসি।অনেক কান্না আসছে। কেন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েদের ভালোবাসা অপরাধ। কেন পরিবারের দিকে তাকিয়ে সব ইচ্ছে বিসর্জন দিতে হয়।কেউ এগুলোর উত্তর দিতে পারবে না।

কিছুক্ষণ বসে চলে আসলাম।বাড়িতে গিয়ে শুনবো হয়তো বিয়েটা ভেঙে গেছে।ভালোই হবে আমি ওনাকে ভালোবাসতে পারবো না শুধু শুধু আমাকে বিয়ে করে ওনার ক্ষতি হবে।ওনি আরো ভালো মেয়ে পাবে,,

এগুলো ভাবতে ভাবতে বড়ি গেলাম,,,,,

চলবে?

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#part_2

ভাবতে ভাবতে বাড়িতে আসলাম,,,,,,,,

বাড়িতে এসে দেখলাম সব ঠিকঠাক আছে।তাহলে কি ওনি বিয়েটা ভাঙ্গেনি।

আম্মুর কাছে শুনলাম,ওনার দাদু অসুস্থ তাই বিয়েটা নাকি আরো এগিয়ে দিয়েছে।

আমার কেন জানি খুব কষ্ট হচ্ছে ওনি কেন বিয়ে করছে আমাকে,আমার রিলেশন আছে ওইটা শুনেও আমাকে মেনে নিচ্ছে।কিন্তু আমি মানতে পারবো না।

এগুলো ভাবতে ভাবতে আরিয়ানের কথা মনে আসলো।ও কি আমাকে ভুল বুজবে?আমি কি করবো আমারতো কিছু করার নেই।
শুয়ে শুয়ে ভাবছি আরিয়ানের কথা।খুবতো ভালোই যাচ্ছিলো দিন গুলো। কিন্তু এগুলো কি স্বপ্ন ছিলো,,,।আমি তো স্বপ্নের মতো ওকে ভালোবাসি নাই,ওকেতো আমি মন থেকে ভালোবেসেছি,,,।লোকে বলে মন থেকে যা চায় তাই নাকি পায়।কিন্তু মধ্যবিত্তের জন্য কথাটা আলাদা।মধ্যবিত্তরা যা চায় সেটা বিসর্জন দিতে হয় এটাই পৃথিবী।

এগুলো ভাবতে ভাবতে অনলাইনে গেলাম।দেখলাম আরিয়ানের অনেক মেসেজ,দেখা করতে বলতেছে।ওটাই ঠিক হবে ওকে সামনে গিয়ে বুজাবো।

অনলাইন থেকে বেরিয়ে আবার ভাবতে লাগলাম।ওর সাথে প্রথম দেখা ছিলো কোচিং সেন্টারে,,,।ও আমাদের সাথে প্রাইভেট পরতো।সব সময় মাথা নিচু করে থাকতো কোন মেয়ের দিকে তাকাতো না।সবাই ওকে নিয়ে হাসতো।আমার কেমন যেন ভালো লাগতো।সারাদিন পড়া নিয়ে থাকতো।ও প্রাইভেটে আমাদের পরে আসায় অনেক নোট বাকি ছিলো তাই স্যার আমার থেকে নোট নিয়ে ওকে দিয়েছে,, পরেরদিন থেকে আমি জ্বরে ভুগছি,,, আমার এতো নোট টোটের কথা মনেই নেয়।আমি জ্বরের মধ্যে শুয়ে মোবাইল গুতাচ্ছি।হঠাৎ মেসেনজার এ মেসেজ আসলো,,,হায় কেমন আছেন,,

আমি দেখলাম আইডিটা আরিয়ানের,,,ও আমাকে আপনি আপনি ডাকছে কেন আজিব। আমি,,

আমিঃ মোটামুটি। তুমি?

আরিয়ানঃ জ্বি ভালো।আসলে আপনি অনেক দিন আসেন নাই তো আর আপনার নোট আমার কাছে তাই আপনার বান্ধবীর থেকে আপনার আইডির নামটা জেনে নিলাম।

আমিঃ ও আচ্ছা। আসলে জ্বর ছিল তাই যাওয়া হয়নি। নোট নিয়ে সমস্যা নেই যখন ইচ্ছা তখন দিতে পারবেন।

আরিয়ানঃওকে।তো এখন কেমন আছেন।

আমিঃ সেই কখন থেকে দেখছি আপনি আপনি বলছো।আমাকে কোন এঙ্গেল থেকে তোমার বড় লাগে।তুমি আমার সমবয়সী সো তুমি করে বলবা।( রেগে)

আরিয়ানঃ তুমি রেগে যাচ্ছো কেন।তোমার সাথে প্রথম কথা হলো তাই আপনি দিয়ে শুরু করলাম।মাইন্ড করো না প্লিজ।

(ওমা ও কতো ভীতু। আমি একটু রেগে বললাম ওমনি ভয়ে চুপসে গেলো।হা হা সো ফানি,,)

এ ভাবে আমাদের টুকিটাকি কথা হতো।আমাদের মধ্যে একটা ভালো বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। যতোটা হাবলা ভাবছি ততটা নয় অনেক কথা বলতে জানে,হাসাতে পারে,,,। এগুলো ভাবতে ভাবতে নিজে নিজে হাসছি,,,

প্রিতু( আমার বোন)ঃ কিরে নিজে নিজে হাসছিস যে দুলাভাইয়ের কথা মনে আসলো নাকি।

দুলাভাইয়ের নাম নিতে মাথায় খারাপ হয়ে গেল। রেগে,,

আমিঃ ছোট ছোটদের মতো থাক।বেশি কথা বলবি থাপ্পড় খাবি।

প্রিতুঃ যা বাবা আমি কি করলাম।আম্মু তোকে ভাত খেতে ডাকছে, সেটা বলতে আসছি দিখি তুই হাসতেছিস নিজে নিজে।

আমিঃ যা এখান থেকে আমি খাব না আমি।

ও রাগ করে চলে গেছে।আমি এইরকমই রাগ উঠলে কি বলি নিজেও জানি না।

শুতেই ঘুম চলে আসলো,,

সকাল বেলা রেডি হচ্ছি আরিয়ানের সাথে দেখা করতে,,,কোন মুখে ওর সামনে যাব বুজতেছি না,,

রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখি ও বসে আছে।মুখটা কেমন শুকিয়ে আছে। দেখেই ভিতরটা মুচড়ে ওঠলো।

তবুও নিজে শক্ত করে বসলাম।

আরিয়ানঃ congratulations.

আমিঃপ্লিজ আরিয়ান তুমি অন্তত আমাকে একটু বুজার চেষ্টা করো,,,,,

আরিয়ানঃবুজি বলেই আজো ঠিক হয়ে তোমার সামনে বসে আছি। তোমার কি মনে হয় আমি মানুষ না আমার কষ্ট হয় না,,

আমিঃ আরিয়ান কষ্ট তোমার থেকে আমি বেশি পাচ্ছি।না পারছি কাউকে বলতে না পারছি মেনে নিতে।

আরিয়ানঃ তাহলে এতো কষ্টের মানেই হয়না।চলো আমার বিয়ে করে ফেলি।একবার বিয়ে হয়ে গেলে আর কিছুই করতে পারবে না কেউ।

আমিঃ তুমি কি পাগল হয়ে গেছো । আমার বিয়ে দিন ঠিক হয়ে গেছে,আমার আব্বুর কাজিন হয় ওরা।আজ তোমার সাথে আমি চলে গেলে আমার আব্বুর উপর সবাই আঙ্গুল তুলে কথা বলবে, ওনাদের সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে যাবে।তার থেকে বড় কথা আব্বু এমনিতে অনেক অসুস্থ ওনার হার্ট এ প্রবলেম আছে।আমি কিছু করে পেললে আব্বুকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।আমার ভাই নে যে আমাদের পরিবারকে দেখবে।আমি পরিবারের বড় মেয়ে আমি যদি তাদের সম্মান নষ্ট করি তাহলে তারা শেষ হয়ে যাবে। আমি পারবো না আরিয়ান,আমি পারবো না,, আমাকে ক্ষমা করে দাও।

আরিয়ানঃ ঠিক আছে আমি ও তোমার বিরুদ্ধে যাবো না।জীবনে সুখী হও দোয়া রইলো।কিন্তু শুনে রাখো তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা একটুখানি ও কমবে না।( কান্না গলায়)

আমিঃআরিয়ান,,,, আমি ও তোমাকে ভুলতে পারবো না।কিছু ভালোবাসা কখনও পূর্ণতা পায় না,ধরে নাও আমাদের টাও। পারলো আবার নতুন করে জীবন শুরু করো।আসছি,,

আরিয়ানঃ তোমার বিয়ের দাওয়াত দিবে না।আমারা তো ভালোবাসার আগে ভালো বন্ধু ছিলাম।সেটা না হয় আজীবন থাকবে।

আমিঃ যদি বন্ধুর বিয়েতে আসতে ইচ্ছে হয় এসো।।

আরিয়ানঃ তোমাকে না বধূর সাজে দেখার অনেক ইচ্ছে ছিলো।নিজের বউয়ের অধিকারেতো দেখতে পারবো না।বন্ধুর চোখেই বধূ সাজ টা দেখে না হয় নিজের মনটা কে শান্ত করবো,,

আমি আর থাকতে পারলাম ওঠে দৌড়ে চলে আসলাম।আর কিছুক্ষণ থাকলে হয়তো নিজেকে আর শক্ত সাজার অভিনয় টা আর করতে পারতাম না,,

রুমে এসে দরজা বন্ধ করে কাঁদতে লাগলাম।কেন এমন হয় আমার সাথে।,,যাকে নিয়ে হাজার স্বপ্ন দেখেছি তার জায়গায় আজ অন্য কেউ কেন।হঠাৎ দরজায় আওয়াজ হলো,,
চোখের পানি মুছে মুখে মিথ্যা হাসি টেনে দরজা খুললাম।বোন দাড়িয়ে আছে,,,

প্রিতুঃ আপু আদি ভাইয়া কল দিয়েছে।তোর সাথে কথা বলবে।

ইচ্ছে করছে মোবাইলটা আছাড় দিয়।কিন্তু তাও পারবো না। ইচ্ছা না থাকার স্বত্তেও মোবাইলটা হাতে নিলাম,,,,,,

ওনার কথা শুনে গা জ্বলে উঠলো,,,,,,,

চলবে,,,,

শুধু তোমায় ঘিরে পর্ব-০৮ এবং শেষ পর্ব

0

#শুধু_তোমায়_ঘিরে💞
#Writer_Nondini_Nila
#Last_Part

চোখ খুলে নিজেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় একটা অন্ধকার রুমে পেলাম। এত শক্ত করে হাত বেঁধেছে যে প্রতিটা শিরায় শিরায় ব্যথা করছে। কিছু আমার মাথাই ঢুকছে আমাকে কে এখানে নিয়ে এলো?আস্তে আস্তে মনে পড়লো তখনকার কথা তাহলে সে আমাদের শত্রু ছিল।
কিন্তু বাসায় তো গার্ড এর অভাব নেই তাদের মাঝে আমাকে ধরে আনলো কিভাবে। এখন কি হবে আমি এখান থেকে মুক্ত হব কিভাবে?
আমি নিজের হাত নিজে ছড়ানোর চেষ্টা করছি কিন্তু পারছিনা শক্ত কিছু দিয়ে বেঁধে রেখেছে ছোটাতে গিয়ে আরও হাত জ্বলছে। আমি ছড়ানোর চেষ্টা বাদ দিলাম মুখের পটটি টা খোলার চেষ্টা করছি। তখন দরজা খুলে কেউ বের হল অন্ধকারে সেই কালো লোকটাকে দেখতে পেলাম।তার সাথে আর একটা লোক এসেছে ফর্সা করে তাদের তাকে আমি চমকে ওঠে কারণ সে দেখতে একদম মাহের এর মতো। সে আমার সামনে এসে বিচ্ছিরি রকমের হাসি দিয়ে বললো কি ব্যাপার ম্যাডামের দেখছি জ্ঞান ফিরেছে।
বলে আমার একদম কাছে এসে বলল,
বাহ মাহেরের পছন্দতো ভেরি নাইস। কি হট এমন মাল পেল কোথায়?তাইতো বলি যে কিনা মেয়েদের সহ্য করতে পারত না সে একটা মেয়ের প্রেমে পড়ে তাকে একদম বিয়ে করে ফেলল।
ছেলেটা বিশ্রী ভাবে কথা বলছে একদম সহ্য হচ্ছে না আমার কথা বলতে হুট করে আমার হাত স্পর্শ করল, আমি চমকে হাত সরানোর চেষ্টা করলাম।
মত মুখ করে লোটটার দিকে তাকিয়ে আছে। লোকটা স্পর্শ করতে গিয়েও করল না তারপরে বলল,
সো সুইট সো হট বেবি তোমাকে এক রাতের জন্য হলেও আমার চাই।
বলে আমার গাল টেনে ধরে অন্যদিকে চলে গিয়ে কাউকে ফোন দিলো বুঝতে পারলাম মাহের কে ফোন দিয়েছে।
ফোন দিয়ে বলে উঠলো,
মাহের তুই যদি তোর বউকে অক্ষত চাস তাহলে আমার পেনড্রাইভ আমার লোকজনের কাছে দিয়ে দে। না হলে তার বউয়ের এমন হাল করব তুই ওর দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে যাবি।
ওপাশ থেকে মাহির কি বললে আমি শুনতে পেলাম না তাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হলো। লোকটা আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
মাহের তোর সর্বনাশ করার অস্ত্র আমি পেয়ে গেছি এবার তো এমন হাল করবো আমি শুধু দেখতে থাক।
এদিকে মাহের আশার দিয়ে নিজের ফোনটা ভেঙে ফেলল আমি ওর শরীর কাঁপছে। চিৎকার করে বলতে লাগল কু* এত বড় সাহস ও আমার কলিজায় হাত দিয়েছে ওকে আমি টুকরো টুকরো করে কাটবো।
রুস্তম এগিয়ে এসে বলল স্যার এত হাইফাই হবেন না। মাথা ঠান্ডা করুন ম্যাডাম কিন্তু ওদের কাছে বন্দী আমাদের যা করতে হবে সাবধানে।
কিন্তু মাহের নিজেকে ঠান্ডা করতে পারছে না কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা ও লোক লাগিয়েছে যেখানে থাকতে পারে কিন্তু পারছে না।
চোখ বন্ধ করে নিজের পিয়সির মুখটা দেখতে পেল। কয়েকদিন ধরে ওর সাথে কথা বলছিল না আজকে সে দূরে দুই হাতে মাথা চেপে ধরে চিৎকার করে উঠল।
সারাটা রাত চলে গেলো ছোঁয়া চেষ্টা করো নিজেকে ছাড়াতে পারল না শুধু আল্লাহই ডাকছে আর বলছে মাহের আপনি তাড়াতাড়ি চলে আসেন আমাকে মুক্ত করুন।
মাহের সিদ্ধান্ত নেয় পেনড্রাইভ ফেরত দিবে।কিন্তু তখনই আর একটা কথা মাথায় আসার পর নিজের দলবল নিয়ে সেদিকেই অগ্রসর হতে থাকে। ওর ধারণাই ঠিক ছোয়ার খোঁজ পেয়ে যায়
নিহাল আরাম সে আরেক পাশে বসে ড্রিঙ্ক করছে।ওরা যে রুমে বসে ড্রিংস করছে তার পাশে রুমে ছোয়াকে বন্দি করেছে। ও তো নিশ্চিন্তে বসে আছে যে মাহি নিজের ভালোবাসার মানুষকে না পেয়ে পেনড্রাইভ দিতে রাজি হয়ে যাবে অবশ্যই ফেরত দিতে রাজি হয়ে যাবে আর তার পর ও নিজের কথা রাখবে না ওর ভালবাসার মানুষ কে ও ভোগ করে ছাড়বে।
মাতাল হচ্ছে আর এসব ভাবছে। তখনই আক্রমণ করে মাহেরা এইখানে মাহেরকে দেখেও ভড়কে চাইনিজ অথবা অবস্থায় দাঁড়িয়ে পড়ে।
তুই এখানে কিভাবে?
মাহের হেসে বলে তুই কি ভেবেছিস আমি তোর নিশানা খুঁজে পাবো না। তুই আমার কলিজায় হাত দিবি আর আমি তোকে ছেড়ে দেবো এত কাঁচা ভেবেছিস মাহের কে! মাহি নিজের জিনিস আগলে রাখতে জানে শত্রুদের বিনাশ করতে জানে।
নেশাতুর অবস্থায় নিহাল মাহেরের উপর আক্রমন করতে চাই কিন্তু ও তো দুর্বল হয়ে গেছে মাহের সাথে পেরে ওঠে না নেহালের লোককে মেরে আধমরা করে দেয় মাহের এর লোক
আর মাহের নিহাল কে মারতে মারতে মুখ দিয়ে রক্ত বের করে ফেলে। নিহাল আধমরা হয়ে নিচে পড়ে আছে মাহের ওর মুখ টেনে ধরে বলে,
কি বলছিলি তুই আমার ছোঁয়ায় কে স্পর্শ করবি। এই হাত দিয়ে তুই ওর গাল স্পর্শ করেছিস?
বলে মাহের আর হাতে মধ্যে বন্ধুক দিয়ে শুট করে। নিহাল আর্তনাদ করে ওঠে ব্যাথায়।
একদম মরমর অবস্থা করে নিহাল কে টেনে ধরে বলে,
কিরে পেনড্রাইভ নিবি না।
নিহাল আরেক হাতে মাহেরের পা চেপে ধরে বলে,
ভাই আমাকে প্রাণে মারতে পারবি না তুই তুইতো আমাকে খুব ভালবাসিস তাই না আমাকে ক্ষমা করে দে।
নিহালের কথা শুনে মাহের হা হা করে হেসে ওঠে চোখের কোনায় জল জমেছে তাও হাসছে।
হ্যাঁ খুব ভালোবাসি তো তাই তো এভাবে আমার পেছনে কলকাটি নেরেছিলি। যেদিন তুই আমাকে বাসার সবার সামনে নিজে মালতির আন্টির ছেলে কে খুন করে আমার নাম দিয়ে আমাকে বাসা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল সেইদিনই আমার মন থেকে তোর প্রতি ভালোবাসা শেষ হয়ে গিয়েছিল।
আমাকে ক্ষমা করে দে আমি ভুল করেছিলাম আমি বাসার সবার কাছে স্বীকার করে নেব তুই করিস নি আমি করেছিলাম।
ক্ষমা আমি তাকে করবা না কিন্তু তোকে আমি মারব না।আর বাসার সবার সামনে স্বীকার করলেই কি না করলেই কি আমার তাতে কিছুই যায় আসে না।আমার কেউ নেই অন্য কারো কাছে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার কিছু আছে আমি একা আমার কাউকে চাই না।
বলে মাহের ওঠে ভেতরে দৌড়ে গেল। ছোয়া নিজের হাত সরানোর চেষ্টা করছিল তখনই মাহির কে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে,
মাহের গিয়ে ওর মুখের বাধন খুলে দেয়। একেকে শরীরে সব বাঁধন খুলে দেয়।নিজেকে বাঁধন মুক্ত পেয়ে মাহের কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরি। ভয়ে আমার হাত পা কাপছে। মাহের ও আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। তারপর আমার সারা মুখে চুমু খেয়ে বলে,
তুমি ঠিক আছো তোমার কোন ক্ষতি হয়নি তো কথাও আঘাত পাওনি তো।
আমি মাথা নেড়ে বলি না আমার কিছু হয়নি।
মাহের স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আমাকে নিয়ে বেরিয়ে আসে।

মাহেরের থেকে জানতে পারি মাহেরের শত্রু মানে বিপক্ষে দল আমাকে কিডন্যাপ করেছিল মাহেরকে ট্যাপে ফেলার জন্য।
আমি বাসায় এসে সারাটা সময় মাহের কে জড়িয়ে ধরে বসে র‌ইলাম। ভয়ে এখনো আমার হাত-পা কাঁপছে বুকের ভেতর টিপটিপ করছে।
সুইটহার্ট এত ভয় পেয়ো না আমি আছি তো তোমাকে কিছু হবে না।
না আমি ছাড়বো না আমার খুব ভয় করছে আপনি আমার সাথে থাকুন।
আছে তো এই যে আমি তোমার সাথে আছি।
সারারাত মাহের কে ধরে রইলাম আমার খুব ভয় করছিল।
মাহের চিন্তিত হয়ে আমাকে বুকে নিয়ে বসেছিল। আমি ঘুমিয়ে পড়লে আমকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
দুদিন পর আমি ভয় কাটিয়ে উঠতে পারলাম।
মাহের এখন বাসার বাইরে বেশিক্ষণ থাকে না বাসায় থাকে বেশি সময়।আজকে মাহের এর থেকে যে নে আমি নিজে রান্না ঘরে গেলাম। মাহের পছন্দের খাবার রান্না করবো। খাবার টেবিলে মাহের খুব তৃপ্তি করে খেলো। আমি মুগ্ধ হয়ে ওর খাওয়া দেখলাম।যেটা দুদিন আগে করতে চেয়েছিলাম ওই ক্রাইসিস এর জন্য আমি পূরণ করতে পারিনি আজকে করলাম। আমি মাহেরের পছন্দমত শাড়ি পরে সাজগোজ করলাম।মাহের সন্ধ্যার আগে কোথায় গিয়েছিল সন্ধ্যার পরে বাসায় এসে আমাকে এত সাজগোজ অবস্থায় দেখে চমকে ওঠে আর হাঁ করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। মুগ্ধ হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে আছি।
সুইটহার্ট এত সাজগোজ করেছ কেনো আমাকে কি পাগল করতে চাইছ?এভাবে আমার সামনে আসলে যে আমার অনেক কিছু করে ফেলতে ইচ্ছে হয় আমি যে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনা। কিন্তু আমি তো তোমার অনুমতি ছাড়া কিছু করতে চাই না।
আমি এগিয়ে এসে মাহের কে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মাথা রাখলাম,,,
আমি তো চাই আপনি কিছু করুন। আমাকে ভালোবাসুন। আপনার ভালোবাসার রঙে নিজেকে রাঙাতে চায়।
সেই দিন আমাদের নতুন জীবন শুরু হয়। ভালোবাসার নতুন অধ্যায় তৈরি করি। আমাদের দুটি দেহ এক হয়।মাহের পাগলের মত ভালোবাসে ওর ভালোবাসায় নিজের সুখ খুঁজে পায়।
আমাদের ভালোবাসা ময় জীবন ভালো কাটছিল একমাস পর হঠাৎ সেই অচেনা লোকটা এসে উপস্থিত বাড়িতে সে আর কেউ না যে আমাকে কিডন্যাপ করেছিল। কিন্তু অদ্ভুত একা না সাথে একজন বয়স্ক লোক ও মহিলা তাদের আমি চিনি না। কিন্তু ওই লোকটাকে দেখে ভয়ে কাঁপতে লাগি। কিন্তু সে আমার কাছে এসে আমার ভয় ভাঙায় আর তা বলে তাতে আমার চোখ বড় বড় হয়ে যায়।ওই ছেলেটা মাহের এর ভাই আর সাথে ভদ্রলোক মাহের এর বাবা ও পাশের মহিলা মা।
আমি শুনে তাড়াতাড়ি মাথায় কাপড় ভালো করে দিয়ে তাদের সালাম করি।
ওই ছেলেটা মাহের এর ভাই আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি ওনি আমাকে কিডন্যাপ করেছিল ছেলেটা আলাদা করে কথা বলে ক্ষমা চাইলো আর দুই ভাইয়ের কথা সব বলল।আমি অবাক হয়ে সব শুনলাম।

আধা ঘন্টা পর মাহের এলো আর এসে তাদের দেখে ক্ষেপে গেল। চিৎকার চেঁচামেচি করতে লাগলো আমি চেষ্টা করেও থামাতে পারলাম না গার্ড ডেকে সবাইকে বাসা থেকে বের করলো তারপর মাথা হাত দিয়ে বিছানায় হেলান দিয়ে আছে।
আমি এসে মাহের এর পাশে বসে মাথায় হাত রাখলাম।মাহের আমার কোলের উপর মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে র‌ইলো আমি কপালে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম তারপর মাথা নিচু করে কপালে চুমু দিলাম।
আপনি তাদের ক্ষমা দিন।তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছে।
আমি পারবো না জোর করো না।
কিন্তু তারা তো আপনার আপন জন। তাদের থেকে এভাবে মুখ ফিরিয়ে নিয়েন না।যা হয়েছে ভুলে যান।
মাহের উঠে চলে গেল।
সারাদিন বাসায় এলো না রাতে এলো। আমি আর এসব কথা বললাম না শুনবে না। তাই আর বললাম না।খেতে ডাকলাম মাহেদ তাতেও কিছু বলে না চুপ করে শুয়ে আছে আমি কাছে হাত দিয়ে টাচ করে ডাকলাম।
আমি খাব না ডেকো না।
ব্যর্থ হয়ে খাবার রেখে এলাম আমি কিছু খাইনি মাহের এর জন্য ছিলাম ও খেলনা তাই আমি ও খেলাম না।
বিছানায় এসে শুয়ে পরলাম।মাহের কাত হয়ে শুয়ে আছে আমি নিজেই এগিয়ে ওর বুকে জায়গা করে নিলাম। আর বললাম,
আচ্ছা আপনার যা ইচ্ছা তাই করেন তবুও আমার সাথে এভাবে কথা না বলে থাইকেন না আমার খুব কষ্ট হয়।
মাহের আমাকে জরিয়ে করলো শক্ত করে ওর চোখ দিয়ে পানি পরছে যা আমি টের পাচ্ছি। ওর চোখের পানি আমার ঘারে পরছে।
আপনি কাঁদছেন?
মাহের বাচ্চাদের মত কাদছে আমি কা করবো বুঝতে পারছিনা।
মাহের নিজে থেকে বলল,
ছোঁয়া জানো আমার যখন তেরো বছর তখন বাসা থেকে তারিয়ে দেয় আমাকে কতো বুঝিয়ে ছিলাম আমি কিছু করিনি কিন্তু কেউ আমার কথা শুনেনি।সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।
আমি কোথায় যাব কি করবো বুঝতে পারছিলাম না তখন আমার দেখা হয় আব্বাস আলী খান মাফিয়া চক্রের লিভারের সাথে তিনি আমাকে নিজের কাছে নেন আর নিজের মতো তৈরি করে।উনি মারা যাবার পর থেকে আমি লিডার উনি খারাপ হলেও আমাকে আদর ভালোবাসা দিয়ে নিজের ছেলের মতো করে মানুষ করেছে। আর নিজের বাবা মা আমার খোঁজ ও নেয়নি আজ এসেছে ফিরিয়ে নিতে ক্ষমা চাইতে।
আমি আর সহ্য করতে পারছি না মাহের এর এতো কষ্ট আমি নিজেই মাহের এর ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে চুমু খেতে লাগলাম।যাতে এসব থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। প্রথমে মাহের রেসপন্স না করলেও কিছু ক্ষন পর থেকেই নিজেই আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ে।
আবার ভালোবাসায় মেতে উঠে। দিন চলতে থাকে আমি আর মাহেরকে ওর পরিবারের কথা বলিনি।ও কষ্ট পায়।
আমি ওকে কষ্ট দিতে চাইনা। কিছু দিন ধরেই আমার শরির টা ভালো না বমি বমি আসে। কিছু খেতে পারিনা। এই অবস্থা দেখে মাহের চিন্তা বসে গেছে আজকে আমাকে নিয়ে হসপিটালে এলো আর পরিক্ষা করে এলো রিপোর্ট কাল দেব।
পরদিন মাহের রিপোর্ট হাতে মিষ্টি নিয়ে এসেছে আর আমাকে এসেই জরিয়ে ধরে চিৎকার করে বলল,
সুইটহার্ট আমি বাবা হতে যাচ্ছি আমার যে কি খুশি লাগছে। আনন্দে আমি পাগল হয়ে যাব‌। আমার আর তোমার সন্তান আস্তে চলেছে যে আমাকে বাবা বলবে।
কথা বলতে বলতে নিচে বসে আমার কোমরে থেকে শাড়ি সরিয়ে চুমু খেল আমি চোখ বন্ধ করে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
খুশিতে আমার চোখেও জল চলে এসেছে।
সারাটা দিন মাহের বাবুকে নিয়ে তার জল্পনা কল্পনা বলতে লাগলো। এতো খুশি হবে আমি আশা করি নি মাহের এর আনন্দ দেখে আমি ও খুশি হয়।সেইদিন বিকেলে মাহের এর ভাই নিহাল বাবা মা নিয়ে আসে আমি মাহের এর হাত ধরে বলি।
প্লিজ মাহের ওদের ক্ষমা করে দিন চলুন আমরা ফিরে যায়। মাহের তাদের ক্ষমা করে দেন আমি বুঝতে পারছি আপনার অনেক কষ্ট হয়েছে।আমি ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছি বাবা মা না থাকার কষ্টটা আমি বুঝি। আপনি তো এতদিনে বুঝেছেন।তারা ভুল করেছি অন্যায় করেছে কিন্তু ক্ষমা তো চাইসে নিজের ভুলটা তো বুঝতে পেরেছে।তাহলে আমরা কি পারিনা তাদের একটু সুযোগ দিতে তাদের সাথে নিয়ে নতুন করে সব কিছু শুরু করতে। আমাদের সন্তান একটা সুন্দর পরিবারে জন্ম হোক তার বাবা-মা দাদা-দাদি সবাই আছে। সে যেন সবার ভালোবাসা পায়।তাদের বয়স হয়েছে এই বয়সে তাদের এত কষ্ট টা কি ঠিক হবে। যে কটা দিন বেঁচে আছে আমরা কি পারি না তাদের সুখে রাখতে।

মাহের নীরবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। অনেক ‌কিছু বললাম তারপর মাহের আমাকে রেখে বাইরে চলে এলো। আমি আল্লাহকে ডাকছি যেন মাহের রাজি হয়ে যায়।
বাইরে এসে আমার মুখে হাসি ফুটে উঠল। মাহের তার মাকে জরিয়ে ধরে কাদছে একে একে সবাই কে জরিয়ে ধরলো।
সবার চোখে জল আমার চোখেও জল চলে এলো।
সেদিন আমরা মাহেরের বাবা-মার সাথে মাহের বাড়িতে চলে আসি। শুরু হয় আনন্দের দিন মাহের মাফিয়া বস ছেড়ে দেয়। নিহাল তো ভালো হয়ে গেছে। এর মাঝে আর একটা জিনিস জানতে পারি ঐশী আর নিহাল প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। তো তাদের বিয়েটাও দ্রুত সেরে ফেলি। দুই বান্ধবী এক বাড়িতে বউ হয়ে এসেছি। আনন্দের সাথে কাটছে। আমার প্রেগনেন্ট এর পাঁচ মাস চলছে। মাহের তো আমাকে নরতেই দেয় না শুধু বসে বসে আমার সেবা-যত্ন করে চলেছে।
সবাই আমার খুব সেবা-যত্ন করছে। দেখতে দেখতে দশ মাস চলে গেল। যেদিন আমাকে ব্যথার জন্য আইসিসিতে ঢুকানো হলো মাহিরের মুখটা একদম শুকিয়ে একটুখানি হয়ে গেছিলো। আমিও ভয় পাচ্ছিলাম খুব এখান থেকে বের হতে পারব তো। কিন্তু আল্লাহ সহায় ছিল সমস্ত বিপদ কাটিয়ে আমি ও আমার মেয়ে খুব সুস্থ ছিলাম। মাহের তো আমার কাছে যে আমার সারা মুখে হাজারের বেশি চুমু দিলো। ভয়ে মানুষটার কি অবস্থা হয়েছে? এত ভালবাসে কেন লোক তো আমাকে কে জানে?
আমাদের মেয়েটা একদম মাহের মত হয়েছে দেখতে। মাহের তো তাকে চোখে হারায় আর তার নাম দিয়ে দিয়েছে।
মাহি।

সমাপ্ত।

আমার মাহের আর ছোঁয়ার জন্য দোয়া করবেন।ওরা যেন সারা জীবন এভাবে একসাথে থাকতে পারে ভালোবেসে। পুরো গল্পটা কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। ধন্যবাদ সবাই জন্য ভালোবাসা অবিরাম।

শুধু তোমায় ঘিরে পর্ব-০৭

0

#শুধু_তোমায়_ঘিরে💞
#Writer_Nondini_Nila
#Part_7

নিচে দৌড়ে নিচে নেমে এলাম বুকের ভেতরটা টিপটিপ করছে মাহের এর কিছু হয়নি তো। আমি নিচে আসতে আসতে মাহের ও ভেতরে ঢুকছে। সাদা শার্ট রক্তে ভিজে আছে আমি ছলছল ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি তার দিকে।
মাহের আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে হয়তো জাগানা আশা করে নি।
না আমি মাহের কাছে গিয়ে রক্তের দিকে তাকিয়ে বললাম,,
এসব কি আপনার কি হয়েছে?
উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
মাহের কিছু বলার আগে আমি এগিয়ে গিয়ে মাহের বুকে হাত রেখে বললাম আপনি আবার আঘাত পেয়েছেন।
মাহের আমাকে নিজের থেকে সরিয়ে বলে কি করছো আমাকে স্পর্শ করছ কেন?
আপনার আসতে এত সময় লাগে কেন কি হয়েছে আপনার?
ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বললাম।
মাহের বলল তুমি এখনো জেগে আছো কেন? যাও শুয়ে পড়ো। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
বলে মাহের নিজে রুমে চলে গেল।
আমি কিছু ক্ষন থ মেরে দাঁড়িয়ে রুমে আসলাম। মাহের কিছুক্ষণ পর গোসল শেষ করে বের হলো।আমি এগিয়ে এসে বললাম আপনার এই অবস্থা কেন বলেন?
মাহের আমার হাত ধরে তাতে চুমু খেলো আর বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
সুইটহার্ট খেতে দাও কিছু খুব খিদে পেয়েছে। সারাদিন কিছু খাওয়া হয়নি।
সারাদিন খাওয়া হয়নি শুনেই চমকে উঠলাম আর তাড়াতাড়ি নিচে গিয়ে খাবার নিয়ে এলাম।

মাহের উঠে বসে হা করলো আমি খাইয়ে দিতে লাগলাম।আর মাহের শরীরের দিকে তাকিয়ে আছি কোথায় ও আঘাত আছে কিনা।
এতো দেখার কিছু নাই। আজ আমি না ওদের আঘাত পাওয়ার দিন ছিলো।
আমি চমকে উঠলাম,,
মানে।
আমার কিছু হয়নি এতো টেনশন করো না।
আপনি কি করছেন আজ?
মার্ডার।
হোয়াট?
যারা আমাকে পেছন থেকে আঘাত করেছে তাদের আমি সামনে থেকে আঘাত করে চিরকালের জন্য পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছি।
কথাটা শুনে আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম,
আপনি আবার খুন করেছেন।
এখন ও মারিনি আধমরা করে ছেড়েছি। কালকে লাশ হয়ে যাবে।
আমি মাহেরের হাত শক্ত করে ধরলাম চেপে।
আপনি এমনটা করেন না প্লিজ। ওদের ছেড়ে দিন‌।
মাহের আমার কথা শুনে বিশ্মিত হয়ে তাকিয়ে বলল,,,
আমার ওই অবস্থার জন্য যারা দায়ী তুমি চাও না তারা শাস্তি পাক।
হ্যাঁ চাই আর আপনি আজকে তাদের যথেষ্ট শাস্তি দিয়েছে প্রাণে মারবে না প্লিজ। তাদের ও তো ফ্যামিলা আছে আমার যেমন আজ সারাদিন আপনার চিন্তা করতে হয়েছে তাদের পরিবার ও তো তাই করে তাইনা।
এতো ভাবলে হবে না ওরা আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে যেনে শুনে আমার শত্রুর কাছে আমাকে পাঠিয়ে ছিল ওদের তো আমি ছারবো না আর এসব তুমি বাদ দাও।
আমি কিছু বলতে গেলে মাহের আমাকে ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে চুপ করিয়ে দেয়।আর কিছু বলতে পারিনা‌।
খাওয়া শেষে খাবারের প্লেট রেখে এসে দেখি মাহের কাত হয়ে শুয়ে আছে আমি মাহের এর দিকে তাকিয়ে লাইট অফ করে বিছানায় এক কোনে শুয়ে পরি ভাবছি এতো তাড়াতাড়ি মাহের ঘুমিয়ে পড়লো।
আমি অবসা আলোতেই মাহের এর দিকে তাকিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল তখন মাহের হাত বাড়িয়ে আমাকে নিজের বুকের মাঝে চেপে ধরে বলল,,
ঘুমাও সুইটহার্ট।

দিন চলছে মাহের কেয়ার ভালোবাসা দিয়ে।মাঝে মাঝে দিন রাত বাসায় আসে না আমি চিন্তিত হয়ে থাকি আবার একেক সময় বাসায় থাকে।তো একদিন রাতে।মাহের একটা লাল শাড়ি নিয়ে আসে আর আমাকে দিয়ে বললে আজকে একটু সাজবে। আমি শাড়ি দিকে তাকিয়ে মাহের দিকে তাকিয়ে বলি,
কোথাও যাবেন?
তোমাকে আমার নিজের হাতে সাজাতে ইচ্ছে ছিল।আমাদের সম্পর্কটা এখনো তো নরমালি হয়নি তুমি হয়তো এখন আমাকে মানতে পারোনি কিন্তু আমি তোমার সাথে তেমন কিছু করবোনা তোমার মনের বিরুদ্ধে গিয়ে।শুধু একটু সাজবে আমি তোমাকে মন ভরে জোসনা আলোতে দেখব। আমার প্রিয়সি কে আমি একটু নিজের মন মত করে দেখতে চাই।
মাহেরের কথা আমি ফেলতে পারিনি।আর ফেলবো কেন মনে মনে এখন আমার মনেও মায়ের জন্য কিছুটা অনুভূতি তৈরি হয়েছে। আমিও তো এখন মাহের কে ‌ভালোবাস
তার ইচ্ছে তো আমি পূরণ করতেই পারি।সে আমার সঙ্গে তার ইচ্ছে পূরণ করা আমার দায়িত্ব।
শাড়িটা কোন রকম পড়ে আয়নার সামনে বসে ছিলাম। মায়ের নিজেই আমাকে সাজিয়ে দেয়। ঠোটে লিপিস্টিক কাজল হালকা ফেস পাউডার, দুই হাত ভর্তি রক্ত লাল রঙের কাঁচের চুড়ি। কানের ঝুমকা চুল খুলে দেয়। আমি চুপ করে শুধু মাহের এর কর্মকান্ড দেখছিলাম।কত যত্ন করে আমাকে সাজিয়ে দিচ্ছিল বারবার আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছিল। সাজানো শেষে
মাহের আমাকে নিয়ে বেলকনিতে গিয়ে বসে। মাহের নেশাতুক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে আছি আর শাড়ির আচল আঙ্গুলে পেছাচ্ছি।
ফট করে মাহের আমার হাত ছেড়ে রুমে দৌড়ে আসে। আমি বিস্ময়ে হতভম্ব হয়ে মাহের এর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। হঠাৎ কি হলো এভাবে দৌড়ে গেল কেন?
যেভাবে ছুটে গিয়েছিল সেই ভাবে আবার আমার সামনে এসে দাড়ালো,
আমি ভ্রু কুচকে মাহেরের দিকে তাকিয়ে আছি।
মাহের মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল,
ভুলে গেছিলাম বলে একটা ফুলের তোড়া এনে আমার মাথায় পরিয়ে দিল।
তারপর আমার পায়ের কাছে বসে পরলো। আমি চমকে পা পিছিয়ে নিলাম কি করছেন? পায়ের কাছে বসলাম কেন?
মাহের বল্ল,, পা সরাচ্ছো কেন?
বল আমার পা টেনে নিল আমি মাহের এর স্পর্শ পায়ে পেয়ে থরথর করে কাঁপতে লাগলাম।
মাহের আমার কাপাকাপি দেখে বলল,
এতো কাঁপছো কেন?
আপনি আমার পা পা ছারেন কি করছেন কি?
কিন্তু মাহের ছাড়লো না।কিছু একটা পড়ে দিতে লাগল জোছনার আলোতে দেখতে পেলাম নুপুর।
খুব যত্ন সহকারে পড়ি আমার পায়ে নুপুর পরিয়ে দিল। আমি স্তব্ধ হয়ে উনার নুপুর পরিয়ে দেওয়া দেখলাম।
এতো সুখে আমার চোখে জল চলে এলো। মানুষটা সত্যি আমাকে খুব ভালোবাসে।
উনি আমার পা ছেরে আমার পাসে বসে বলল, এবার পারফেক্ট।
আমি সেসব কিছুই শুনলাম না ওনাকে জড়িয়ে ধরে হুহু করে কেদে উঠলাম।
আমার কান্না দেখে উনি ভড়কে গেল। আর জিজ্ঞেস করতে লাগল কি হয়েছে কাঁদছো কেন?
আমি কান্না গলায় বললাম, আপনি আমাকে এত ভালবাসেন কেন? আমার এত সুখ দেখে মনে হচ্ছে এই সুখ বেশি দিনের জন্য নয়।
উনি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল আর বলল,
সুইট হার্ট প্লিজ কেদোনা। আর কে বলেছে বেশি দিনের জন্য নয় আমি যতদিন আছি ততদিন তুমি এর থেকেও বেশি সুখ পাবে ভালোবাসা পাবে। শুধু একবার আমাকে ভরসা করে আমার হাতে হাত রাখো। তুমি কি এতো ভালোবাসা দেবো যে তোমার কখনো কষ্ট ছিল মনেই পরবে না।
আমি ওনাকে ছেড়ে দিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলতে লাগলাম,
আপনাকে নিয়ে তোমার ভয় আপনি প্লিজ বন্ধ করে দিন মারামারি-কাটাকাটি ভালো লাগে না। আপনাকে হারানোর ভয় পাই।
আমার কথা শুনে উনার মুখে হাসি ফুটে উঠল,আমি রেখে ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম হাসছেন কেন আমি হাসির মত কি বলেছি?
সুইট হার্ট তুমি তো আমাকে ভালোবেসে ফেলেছো তাহলে মুখে স্বীকার করছ না কেন?
আপনি এখনো মজা করছে তোমার সাথে।
মজা কোথায় করলাম তুমি আমাকে ভালোবাসো না বল। বলবে কেন বল আর তোর মুখে স্বীকার করতে প্রবলেম।
হ্যাঁ প্রবলেম তো আপনি বুঝতে পারেন না সবকিছু কি মুখে বলতে হয় ভালো না বাসলে আপনার এখানে পড়ে থাকতাম।
আমার কথা শুনে ওনার চোখ ঝলমল করে উঠল। আচমকা আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো,
আমি জানি তো কিন্তু আমার যে তোমার মুখ থেকে শুনতে ইচ্ছে হয়। প্লিজ একবার মুখে বলো ভালোবাসি।
আমি বললাম না।উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে আমার গালে হাত দিয়ে বলল ভালোবাসো না।
আমার লজ্জায় মাথা কাটা ভালোবাসি এভাবে বলা যায় আমি লজ্জায় নিজের দিকে তাকিয়ে আছি।
হঠাৎ উনি পআমাকে ছেড়ে দিয়ে বলল আচ্ছা যাও তোমার আমাকে ভালবাসি বলতে হবে না।
উনার কন্ঠ গম্ভীরতা।
আমি দিকে তাকিয়ে আছে উনি চুপ করে বিছানায় শুয়ে পড়ল। সেদিন রাতেই ভাবেই মান-অভিমান কাটলো আমি অনেকবার ডাকলাম কিন্তু আমার সাথে কথা বললো‌ না‌এমনকি রাতে আমাকে জড়িয়ে ধরল না পরপর তিন দিন চলে গেল উনি আমার সাথে কথা বলে না আমার সমস্ত খেয়াল রাখে কিন্তু অনেক পরিবর্তন হলো আমার সাথে কথা বলে না রাতে আমাকে জড়িয়ে ধরে না কোথাও গেলে আমাকে চুমু দেয় এখন আমার কপালে চুমু দেয় না।
ওনার সাথে কথা বলতে না পেরে আমি খুবই কান্না করছি। কথা বলার চেষ্টা করলে ইগনোর করছে এসব আমি সহ্য করতে পারছিনা। চারদিনের দিন ঠিক করে ফেললাম আজকে উনাকে ভালোবাসি বলবো এই জন্যই তো আমার সাথে রাগ করে আছে।
আজকের শাড়ি ঠিক করলাম উনি যেহেতু শাড়ি পছন্দ করে আজকে রাতে শাড়ি পড়বো।
সন্ধ্যায় চলে আসবে বলেছে বিকেলে থেকে আমি খুশি মনে বসে আছি।আজকে ওনাকে আমি নিজেই করে নেব ওনার ভালোবাসায় নিজেকে রাঙাবো আমাদের স্বামী-স্ত্রী জীবন শুরু করবো উনাকে আর কষ্ট দেবো না।
সন্ধ্যা হওয়ার আগেই কলিংবেল বেজে উঠলো আজকে এতো তাড়াতাড়ি চলে এসেছে।খুব একটা কলিং বেল বাজায় না ওনার কাছে একটা চাবি আছে যা দিয়ে উনি ভেতরে ঢুকে পড়ে।কিন্তু আজকে বাজাচ্ছে কেন আমি এত শত কিছু ভাবলাম না উত্তেজিত হয়ে তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দিলাম। জীবনের চরম ভুল করলাম দরজা খুলে।
দরজা খুলতেই কেউ একজন আমার মুখে রুমাল চেপে ধরল আমি সামনে শুধু একজন লম্বা কালো করে লোক দেখতে পেলাম যে আমার মুখে রুমাল চেপে ধরেছে সাথে সাথে আমি জ্ঞান হারালাম আর কিছুই মনে নেয়।

#চলবে

শুধু তোমায় ঘিরে পর্ব-০৬

0

#শুধু_তোমায়_ঘিরে💞
#Writer_Nondini_Nila
#Part_6

আমি শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি মাহেয আমাকে ছেড়ে গাড়ি উঠতে বললো আমি না উঠলে জোর করে গাড়িতে উঠিয়ে নিজে বসে পরে। আর একটা নিরিবিলি জায়গায় এসে থামায়।
আমি ব্রু কুচকে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি গাড়ি থামতেই মাহের দিকে তাকালাম,
এসব কি হচ্ছে আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে এলেন? এই মাঝরাতে।
উনি আমার কথার উত্তর না দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে আমার দরজা খোলে আমাকে হাত ধরে বের করে আনল। আমি প্রশ্নোত্তর দৃষ্টিতে দিয়ে তাকিয়ে আছি উনার দিকে।
কিছুটা যেতেই ভিন্ন কালারের লাইট জ্বলে উঠলো। সাথে দেখতে পেলাম আমার ওপর গোলাপের পাপড়ি পড়ছে নিচেও গোলাপ দিয়ে রাস্তা বানানো। আমি তার উপর দিয়ে হাঁটছি। ভিষ্ময়ে আমি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি।
উনি আমার হাত ধরে গোলাপের রাস্তা পেরিয়ে নিয়ে এল তারপরে আমার চোখের সামনে লালবাতিতে লেখা উঠছে আই লাভ ইউ সুইট হার্ট।
মাহের আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। আমি তাকাতেই ফট করে আমার পায়ের কাছে বসে পড়ল।
আমি বিস্মিত হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছি।মায়ের আমার দিকে এক গুচ্ছ লাল গোলাপ বাড়িয়ে দিয়ে বলে উঠলো আই লাভ ইউ সুইট হার্ট। তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসি ব‌উ। তোমার সাথে সারাটা জীবন কাটাতে চাই।
আমি ছল ছল চোখে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। কিন্তু ফুল নেয়নি আমার উনার হিংস্র চেহারা মনে পড়ে যায়। উনি আমার হাত টেনে নিয়ে ফুল দিয়ে হাতের উল্টো পিঠে চুমু খায়। তারপর আচমকা আমার পা টেনে ধরা আমি চমকে উঠি।
কি করছেন কি?
উনি আমার দিকে তাকিয়ে চুপ থাকার ইশারা করে। আমার পায়ে নুপুর পরিয়ে দেয়।অনেক সুন্দর একটা দিন ছিল কিন্তু সেটা যদি ওর শাজান আহত একজন ভালো মানুষের সাথে হতো আমি অনেক খুশি হতাম।
ভাবনা থেকে বের হয়ে কাত হয়ে শুলাম। চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে আমি চোখ মুছে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম।
দেখতে দেখতে দু দিন কেটে গেল অদ্ভুত হলেও এই দুই দিন একবারের জন্য আমাকে ফোন করে নি উনি। আমি অবাক হচ্ছি এর আগেও উনি বিদেশে গিয়েছে সব সময় আমাকে কল করেছে
ওনাকে নিয়ে না ভাবতে না চাইলেও কেন যেন বারবার উনি আমার ভাবনা চলে আসছে।
নাচাইতে ওনাকে মিস করছি ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকছে ওনার ফোনের আশায়।
নিজের কাজে নিজেই বিরক্ত হচ্ছি। দু দিন পেরিয়ে চার দিন চলে গেল। মাহেরের কোন খোজ খবর নাই। আমি কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে বারান্দায় গালে হাত দিয়ে বসে ভাবছি। এমন তো উনি কখনো করে না।
ঐশী আমার পাশে এসে বসে পড়লো। আর আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,
তোর কি মন খারাপ ছোঁয়া?
আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম নাতো।

মিথ্যে বলছিস কেন তোর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে তুই দুলাভাইকে নিয়ে খুব চিন্তা করছিস? তাকে মিস করছিস তাই না।
কি বলছিস এসব? ওই লোকটাকে আমি কেন মিস করতে যাব? শুনি নাই এটা আমি আরো খুশি!
তাই সত্যি বলছিস। তুই খুশি তাহলে তোর মুখে চিন্তা কেন মলিন কেন?
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না।
তুই ও মনে মনে ভাইয়াকে ভালোবেসে ফেলেছিস কিন্তু মানতে চাইছিস না।
এমনটা না আমি,,,
আমাকে মিথ্যা বলে লাভ নেই।
ওকে আর বোঝাতে পারলাম না পরদিন ভার্সিটিতে যাবার সময় আমি নিজেই রুস্তম এর সাথে কথা বললাম। কেন জানিনা আমার মানের কথা খুব মনে পড়ছিল। উনার কেমন হয়েছে আমার সাথে কথা বলছে না। উনি ঠিক আছে তো।
রুস্তম এর থেকে যা শুনলাম তা শুনে আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেল।
মাহেরকে শুট করেছে ও অসুস্থ। ওইখানে যাওয়ার পর‌ই নাকি এসব হয়েছে। যার সাথে ডিল করার জন্য গিয়েছিল সেই নাকি বিপক্ষ দলের চক্রান্ত করে নিয়েছে কিন্তু মাহিরের দলের লোক মাহেরকে নিয়ে হসপিটালে ভর্তি হয়েছিল। আজকে ফিরে আসবে ওইখানে অনেক বড় বিপদ এই অবস্থা মাহেরকে নিয়ে এখানে থাকার রিক্স।
মাহের এর অবস্থা খারাপ ওকে ডক্টর সহ চিকিৎসা করাতে করাতে বাংলাদেশে আনা হবে।
রুস্তম কথা বলছিল আর কাদছিল। অজানতে আমার চোখ দিয়ে পানি বের হয়।
উদাস হয়ে কলেজে গেলাম কিন্তু মন টিকছে না শুধু মাহের কথা মনে পড়ছে। তাকে দেখতে ইচ্ছে করছে।
তার জন্য আমার বুকের ভেতর ব্যথা অনুভব করলাম। বাসায় এসে সারা বিকেল মনমরা হয়ে বসে রইলাম। না চাইতেও চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ল। তাকে আমি সহ্য করতে পারিনা কিন্তু চায় না তার কোন ক্ষতি হোক। শত হোক সে তো আমার স্বামী। আসার সময় রুস্তমের নাম্বার নিয়ে এসেছি।সন্ধ্যার পরে রুস্তম কল করে জানালো মাহির বাংলাদেশে এসেছে এখন ঢাকা হসপিটালে ভর্তি আছে।
সেই সময়ই ঐশীকে নিয়ে হসপিটালে চলে এলাম আমার আর তর সইছে না মানুষটাকে দেখার জন্য আমি ছটফট করছি।
কিন্তু হাসপাতালে এসে পড়লাম বেকাদায়। হসপিটাল ভর্তি মাহেরের লোক সবাই বন্ধুক হাতে হসপিটাল ঘেরাও করে আছে। এসব মাহেরের সুস্থতার জন্য।কারণ তার শত্রুর অভাব নেয়ার তার এই অবস্থা জানলে শত্রুরা তাকে আক্রমণ করার চেষ্টা করবে এজন্য এত প্রটেকশন। কিন্তু সেই প্রটেকশনের সাথে যে আমাকে ও কেউ ঢুকতে দিচ্ছে না। আমাকে আর ঐশী দরজার কাছে দাড় করিয়ে রেখেছে মাহিরের কেবিনের ধারের কাছে যেতে দিচ্ছে না। কালকে তো আমাদের চেনা যেতে কেন দেবে।
না পেরে রুস্তমকে কল করলাম। রুস্তম এসে পরিস্থিতি সামাল করলো আর আমাদের নিয়ে গেল। আমি ঐশীর এক হাত শক্ত করে ধরে যাচ্ছি। মাহেনের কেবিনে ভেতরে যেতে পারলাম না জানালার থেকেই তার শুকনো মুখটা দেখলাম,
মুখের দিকে তাকিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলাম মানুষটার কি অবস্থা হয়েছে। এভাবে একদম দেখতে পাচ্ছি না তাকে বুকটা ফেটে যাচ্ছে আমার।আমি হসপিটালে থাকতে চাইলাম রুস্তম থাকতে দিল না।
বিষন্ন মন নিয়ে বাসায় এলাম সারারাত আমার ঘুম হলো না শুধু মাহের এর জন্য মন কেমন করলো পরদিন সকালে আবার চলে গেলাম দেখতে।
আজকে মাহেরের কাছে যেতে পারলাম তার কাছে গিয়ে বসলাম। কাঁপা হাতে তার হাত স্পশ করলাম। তখন সে তাকালো আর আমার দিকে। এমন অবস্থায় ও মাহের ঠোঁটের কোনে হাসি এনে বলল,

সুইটহার্ট তুমি আমার জন্য। আমি ঠিক দেখছি তো।
আমি উনার কথা শুনে আর ও ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলাম উনি আমার হাত ধরে টেনে নিজের বুকের মাঝে চেপে ধরে বললো।
সবাই তার প্রিয়তমার কান্না দেখলে কষ্ট পায় কিন্তু সুইটহার্ট আমার তোমার কান্না দেখে আনন্দ হচ্ছে সুখ পাচ্ছি। তোমার চোখের জল আমার জন্য
প্যাড আমার জন্য কতটা আনন্দে তুমি ভাবতে পারবে না।তোমার মনের গহীনে যে আমার জন্য অফুরন্ত ভালবাসা আছে তার প্রমাণ এই চোখের জল।
এমন অবস্থায় উনি এসব ভাবছেন আমি ঝাপসা চোখে অনাদিকে স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি।
তিনদিন পর মাহেরকে হসপিটাল থেকে ওনার বাসায় আনা হলো। আমি ওনার সাথে ওনার বাসায় চলে এলাম।কারো বাধায় শুনলাম না অদ্ভুত মাহের আমাকে কোন বাধা দেয়নি শুধু আমার কর্মকান্ড দেখেছিল।আমি ভালোবাসি স্বীকার করিনি কিন্তু। আমার খুব চিন্তা হচ্ছে আমি চাইও না সেবা যত্ন করতে।
মাহের বিছানায় শুয়ে আছে। আমি উনার পাশে বসে আমাকে খাবার খাইয়ে দিতে লাগলাম।
খাওয়ার মাঝে হঠাৎ উনি বললেন,,
এইতো সেদিন তোমাকে খাইয়ে দেওয়ার জন্য ব্ল্যাকমেল করতে হলো। আর আজকে কি সুন্দর বউ স্বামীর সেবা যত্ন করে ভালোবেসে।সবকিছুই অসুস্থতার জন্য ইস আগে যদি জানতাম অসুস্থ হলে তুমি এত আদর যত্ন করবে তাহলে আরো আগেই আমি নিজে নিজেকে শুট করতাম।
উনার কথা শুনে আমি রেগে তাকালাম উনার দিকে।
আপনি আসলে একটা ফাউল লোক। এইসব কেউ বলে। নিজে নিজেকে শুট করতে মানে কি অন্যদের কষ্ট দিতে আপনার ভালো লাগে তাইনা?
অন্যদের না তোমার চোখে আমাকে হারানোর ভয় দেখলে আমার খুব ভাল লাগে।
আপনি খুব খারাপ জানেন আপনি?
হ্যাঁ জানি তো। আসনা যারা আমাকে গুলি করেছে না। ওদের উপর আমার প্রচুর রাগ হলো এখন ওদেরকে আমার ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছে করছে। কেন জানো আমাদের জন্য তুমি আমার এত কাছে।
কথাটা বলতে বলতে মাহের এগিয়ে এসে টপ করে আমার ঠোটে চুমু খেলো। আচমকা ঘটনায় আমি ফ্রিজ হয়ে গেলাম। মাহেরকে আর খাবার খাইয়ে দিতে পারলাম না আবার ওখানে ফেলেই দৌড়ে রুমের বাইরে চলে গেল বুকের ভেতরটা ধড়াস ধড়াস করছে বুকে হাত দিয়ে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। লোকটা কখন কি করে বসে আমাকে একদম লজ্জায় ফেলে দেয়।

রাতে ঘুমানোর সময় মাহেরকে বিছানায় ঠিক করে দিয়ে আমি নিচে শুতে গেলে মাহের এক ধমক দিয়ে আমাকে টেনে জড়িয়ে ধরে বিছানায় শুয়ে পড়ে।
আর ফিস ফিস করে কানে বলে ওঠে,
তুমি না চাইলে আমি তোমার সাথে কখনো জোর করব না শুধু তোমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাবো।
আমি আর কিছু বললাম না মাহেরের বুকে চুপটি করে ঘুমিয়ে পড়লাম।
পরদিন মাহেরের আগে আমার ঘুম ভাঙলো ঘুম থেকে উঠে মাহেরের নিষ্পাপ মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে আছি। ঘুমন্ত অবস্থায় কে নিষ্পাপ লাগে দেখতে। সকালে ব্রাউন কালারের ছোট ছোট চুল পড়ে আছে আমি হাত দিয়ে তার সরিয়ে দিলাম।ঠোঁটের দিকে চোখ যেতেই আমি চমকে গেলাম এত সুন্দর ঠোঁট আমি এত কাছ থেকে দেখতে পাচ্ছি। মাহের দেখতে অসম্ভব সুন্দর একদম নজরকাড়া তাকালে শুধু তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে।
মাহের এর সুস্থ হতে এক সপ্তাহ লাগলো আমি সমস্ত দিক থেকে মাহের কে যত্ন করেছি। ওর সমস্ত খেয়াল রেখেছি।
সুস্থ হয়ে মাহের সুট বুট পড়ে তৈরি হতে লাগল আমি রুমে এসে এসব দেখে জিজ্ঞেস করলাম,

আপনি কোথায় যাচ্ছেন এরকম পরিপাটি হয়ে?
মাহের আমার দিকে ঘুরে আমার কপালে চুমু খেয়ে বলল,
একটা ইম্পর্টেন্ট কাজে যাচ্ছি বউ।
মাহের এর মুখে ব‌উ শুনে হৃদয় স্পন্দন থেমে গেল। এটা সুখের অনুভুতি আমার সারা শরীর বয়ে গেল।
তুমি নিজের খেয়াল রেখো আমার আসতে লেট হবে বোধহয়।
কিন্তু আপনি আবার কোথায় যাচ্ছেন কেবল একটু সুস্থ হয়েছেন এখনই?
মাহের আমার গালে হাত দিয়ে বলল,
তুমি আমার জন্য চিন্তা করলে আমার ভাল লাগে কিন্তু বউ আজকে বলছি। তোমার চিন্তা করার দরকার নেই তোমার বরের কিচ্ছু হবে না। মায়ের হাতের বালা সেদিন আঘাত করতে পেরেছে বলে প্রতিদিন পারবে না। ডোন্ট ওয়ারী।
বলে আমার কপালে আবার চুমু খেয়ে চলে গেল গটগট পায়ে।আমি বারান্দায় এসে নিচে দাঁড়িয়ে দেখলাম মাহের এর সাথে পরপর তিনটা গাড়ি চলে গেল।
সারাদিন আমি মাহেরের চিন্তা করতে লাগলাম। ঐদিন অবস্থা কেউ সুস্থ হলেও তো এত বড় একটা ঝড় বয়ে গেল ওর উপর দিয়ে আবার কোথায় চলে গেল সারাদিন আমি দুশ্চিন্তায় কাটালাম দুপুরে একবার কথা হয়েছিল অবশ্য। আর কথা হয় নাই সন্ধ্যায় চলে আসবে বলেছিল সন্ধ্যার পর থেকে প্রহর গুনতে লাগলাম মাহের এর দেখা নেই দশটা বেজে গেল কাজের লোকের খাবার খেতে বলল আমি খেলাম না। মাহের আসল একদম খাব। 11 টা বেজে গেল আমি চিন্তায় রুমে পায়চারি করছি। আজকে আবার কোন বিপদ হলো না তো অজানা ভয় আমার বুকের ভেতর ছটফট করতে লাগলাম। বারবার আল্লাহ কে ডাকছি যেন মাহের সুস্থ থাকে।আমি নিজে অনুভব করলাম ইদানিং মাহের চিন্তা ছাড়া আমি কিছু ভাবতে পারছিনা। সব সময় তাকে হারানোর ভয়ে বিষন্ন হয়ে থাকছি তাহলে কি আমি মাহির কে ভালবেসে ফেলেছি। দেখতে দেখতে বারোটা বেজে গেল। আমি বিছানার কোনায় বসে বসে চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লাম। তিনটা জাগানা পেয়ে দেখি এখন ও মাহের আসে নি ধড়মড়িয়ে উঠে বসে আমার বুকের ভেতর কু ডাকছে আমি নিশ্চিত উনার কোনো বিপদ হয়েছে। ফোন নিয়ে বারবার নাকি ফোন করছি কিন্তু নাম্বার অফ
রুস্তম কে কল করলাম তার ফোন অফ।
আমি এবার ভয় কাঁদতে লাগলাম তখনই গাড়ির শব্দ পেয়ে ছুটে বেরিয়ে এলাম বারান্দায় এসে দেখলাম মাহের এসেছে তার শরীরে রক্ত দেখেই আমি ভয় পেয়ে গেলাম।

#চলবে

শুধু তোমায় ঘিরে পর্ব-০৫

0

#শুধু_তোমায়_ঘিরে💞
#Writer_Nondini_Nila
#Part_5

আমি ফ্যালফ্যাল করে বেক্কেল হয়ে মাহের ছেলেটার দিকে তাকিয়ে আছি।উনাকে আমি চিনি না জানি না কখনো দেখি এই ফাস্ট দেখলাম কিন্তু নাম টা বহু বার শুনেছি মাফিয়া উনি।সেই হঠাৎ আমার সামনে এসে আমাকে বিয়ের প্রপোজাল দিচ্ছে সাথে ভালোবাসি বলছে হচ্ছে কি এসব?
একটু আগেই গরগর করে নিজের নাম বলেছে।আমি হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
আপনি কি পাগল?
“আমার কথা শুনে মাহের বলল, হুম আমি পাগল হয়ে গেছি তোমার জন্য। চলো আমার সাথে।
“ইম্পসিবল সরুন যতসব ফালতু লোক।
বিরক্তে আমার কপাল কুঁচকে আসছে। উনি কতো ভয়ংকর শুনেছিলাম আর এখন তো দেখছি এর মাথায় প্রবলেম।
আমি পাস কাটিয়ে চলে আসতে গেলে মাহের আমার হাত ধরে নেয় আমি থমকে দাঁড়ালাম। আবার টাচ করছে রেগে পেছনে ঘুরে বললাম হাত ছারুন।
ছেলেটা হাত ছারছেনা হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।আমি রাগে গজগজ করছি মন চাইছে চর মেরে গাল লাল করে দেয় কিন্তু উনি তো তাহলে আমাকে মেরেই ফেলবে নিশ্চিত।

কি অসভ্যতামি হচ্ছে ছারুন হাত?
হাত ছুটানোর চেষ্টা করে বললাম।
মাহের বলল, নো সুইটহার্ট আমি তোমাকে ছাড়তে পারবো না। তুমি আমার দেখা প্রথম নারী যাকে প্রথম দেখেই আমি থমকে গেছি যার সুরের প্রমে পরেছি। যার দৃষ্টিতে আমি খুন হয়েছে। সারারাত তোমার বিরহে আমি ঘুমাতে পারি নি ছটফট করেছি। এমনটা কখনো হয়নি আমার সাথে এই প্রথম এমন অদ্ভুত অনুভূতির সাথে পরিচিত হয়েছি আমি। তোমাকে আমি ছারতে পারবো না।
আমি অবাক হয়ে মাহের এর দিকে তাকিয়ে আছি‌।
মাহের নিজের প্রেয়সীর দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে রেগে আছে তার প্রেয়সী রাগে নাক লাল হয়ে গেছে কি মিষ্টি লাগছে দেখতে পরনে সুতির ছেলোয়ার কামিজ দেখেই বুঝা যাচ্ছে কম দামী ড্রেস এটা।
সবুজ কালারের চুল পেছনে বেনি করে রেখেছে কিছু ছোট চুল কানের পেছনে গুঁজে রেখেছে। হাতে নীল রঙের চুরি কানে সাদা পাথরের ছোট দুল। চুরি কালকের ছিলো এই গুলোই জামার সাথে ম্যাচ করে নাই কিন্তু তবুও খুব সুন্দর লাগছে অন্য কালারেও ওর কি আর চুরি নেই?ম্যাচ করে পড়েননি কেনো তাহলে বেশি ভালো লাগতো।

মনের কথা মনে রেখে দিলো মাহের। কিছু বলতে যাবে তখন রুস্তম এসে কানে কানে বলল,
স্যার ম্যাম কে ছেড়ে দেন?
রুস্তমের কথা শুনে মাহের ভ্রু কুঁচকে তাকালো।
স্যার এভাবে তাকাচ্ছেন কেন আমি আপনার ভালোর জন্যই বলছি।
কি বলতে চাস সরাসরি বল?
স্যার এখন ছেড়ে দেন এইভাবে কেউ বিয়ের কথা বলে দুদিন যেতে দিন আস্তে আস্তে আপনি ম্যামকে এক দেখায় ভালোবেসেন ম্যাম তো ভালবাসেনি তাকে একটু সময় দিন।
নো রুস্তম আমি সময় দিতে পারবো না। তুমি তো জানো আমি যেটা চাই সেটা নিয়ে কখনওই টাইম স্প্রে করিনা।
কিন্তু এই ভাবে যদি এখন ম্যাম কে জোর করে ধরে নিয়ে যান তাহলে তারা গুন্ডামি করা হবে।যদি এইভাবে বিয়ে করেন তাহলে তো গুন্ডামি করে বিয়ে করা হবে।
হলে হবে।
কিন্তু ম্যাম তো এতে আপনাকে আরো ভুল বুঝবে।
মাহের কিছুক্ষণ কিছু একটা ভেবে ছোঁয়ার হাত ছেড়ে দিল। ছোঁয়া ছাড়া পেতে ছুটে পালালো কোনমতে। কোন পাগলের পাল্লায় পড়ে ছিলাম আল্লাহ জানে খুব জোর বেঁচে গেছি।
সেদিন থেকে আমার ডিস্টার্ব শুরু হলো। প্রতিদিন ভার্সিটি আশার সময় যাওয়ার ওই মাহের লোকটা আমাকে নিয়ে যায় দিয়ে যায়।আর প্রতিটা সময় আমার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে আর ভালোবাসা নিয়ে বড় বড় কাহিনী কবিতা শোনায়। তার এমন লাগছে তার আমাকে এতোটা মিস করেছে। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম তাকে বললেও সে শোনে না। একদিন আমাকে একটা ইয়া শপিং মলে নিয়ে এলো। আর নিজের পছন্দমত একশোরকম না ড্রেস কিনে দিলো শাড়ি 12 কালারের বারোটায় থ্রি পিস গ্রাউন।তারপর নিয়ে গেল কসমেটিক দোকানে সেখানে গিয়ে দোকানের যতরকম কসমেটিক আছে সব কিনে দিল। আসলে প্রথমে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল,
“সুইট হার্ট তোমার ইচ্ছামত কসমেটিক নিয়ে নাও।
আমি রাগে কটমট উনার দিকে তাকে বলেছিলাম,,
“আমি কসমেটিক ইউজ করি না আমার লাগবে না।
“তা বললে তো হবে না সেটা না তুমি আমার বউ হবে তোমার কসমেটিক তো লাগবেই আর মার্কেটের সেরা তাই লাগবে।
বলে নিজের ইচ্ছামত কিনেছে আমি রাগে কটমট করে তাকিয়ে ফুসফুস করতে করতে শুধু দেখেছি।
সবকিছু কিনে আমাকে ভাসায় দিয়ে গেল।
এতদিনে ঐশীকে সব বলে দিয়েছি ও সব জানে ওতো মাহেরের সাপোর্টার। ওর শুধু একটাই কথা মাহে্য তোকে লাইক করেছে ভালোবাসি বিয়ে করতে চাই প্লিজ রাজি হয়ে যা। আমি বলেছি ওমন গুন্ডা মাস্তান কে আমি কখনোই বিয়ে করব না।আর তাকিতাম ভালোবাসি না সে ভালোবাসলেই হলো নাকি কেমন জোর করে সবকিছুতে এমন পাগল কে আমি বিয়ে করতে পারবোনা।
আমাকে বোঝাতে না পেরে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ও
ঐশী।
ইনকোর্স পরীক্ষা নিয়ে একটা ইম্পরট্যান্ট চাপটার আমি যেটা পারি না।চিন্তায় আঙুল কামড়াচ্ছি ম্যাম কে বলেছে ম্যাম বলেছে এখন তার হাতে সময় নাই কি করব আমি তো প্রাইভেটে পড়ি না। তখন ম্যাম আমাকে সাজেস্ট করলো আমাদের ক্লাসের ফার্স্টবয় রবিনের সাথে কথা বলার জন্য। রবিন নাকি খুব ভালো পারে ওর থেকে আমি যেন চ্যাপ্টারটা বুঝিনেই।ছেলেমানুষ দেখে আমার একটা আনইজি ফিল হল কিন্তু তবুও নিজের স্বার্থে আমি রাজি হলাম।
আর রবিনের সাথে কথা বললাম ছেলেটা মোটামুটি ভালোই তাই ও আমাকে বলল ক্লাস শেষে আমাকে মাঠে একটা জাম গাছ আছে সেইটা নিচে থাকতে। ওখানে আমাকে পড়াবে সেদিনই আমার কাল হলো। আমরা পরছিলাম তখনই কোথা থেকে হতদন্ত হয়ে মাহের এসে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকাল রবিনের দিকে। সেইদিনই আমার জন্য ছিলো সবচেয়ে অভিশপ্ত দিন। রবিনের অবস্থা সেদিন আধমরা করে ছেড়েছে।সেদিনে মাহের আমাকে বিয়ে করে আমি বিয়ের জন্য রাজি হচ্ছিলাম না বলে ও বলে রবিনকে মেরে ফেলবে বলে যদি বিয়ে না করি। বাধ্য হই আমি রাজি হই।
মাহের আমাকে আর ওর একটা বাসায় নিয়ে আসে। তারপর বিয়ের জন্য লাল বেনারসি কসমেটিক সবকিছু আনে। আমি শুধু পাথর হয়ে বসেছিল। মাহের নিজে আমাকে সাজিয়ে গুছিয়ে দেয়। আমার চোখ দিয়ে শুধু গল গল করে পানি পড়ছিল। সেইদিনের থেকে মাহেরকে আমি ঘৃণা করি। এইটা ঠিক ও আমার সাথে ফিজিক্যালি আসেনি এখনো।
আমাকে সময় দিয়েছে আমি নিজে থেকে ওর কাছে নাই গেলে নাকি আমার সাথে সম্পর্ক তৈরী করবে না।কিন্তু ওরেই ভালো না ভাসলেও আর করা পাগলামি তে আমি শুধু রাগতাম এর বেশি কিছু। মনে মনে একটু হলেও অনুভূতি জন্মেছিল ঐদিন কার পর থেকে আমি ওকে শুধু ঘৃণা করি। পরেও জানতে পেরেছে রবিনের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। এজন্য হাজার বার ক্ষমা চেয়েছে কিন্তু আমি নরম হয়নি। সেদিন আমিও হিংস্র রূপ দেখেছি। কতটা নির্দয় এর মত মেরেছিল রবিনকে। এতটা পাষাণ কি করে হতে পারে মানুষ।
বিবাহের দুদিন পরে ও আমাকে আমার বাসা ভাড়া বাসায় রেখে যায়।তার কারণটা জানতে পেরেছি ওর শত্রুরা নাকিজেনে গেছো বিয়ে করেছে তাই সে এখন টুপ হিসেবে আমাকে ব্যবহার করতে চাই।
এজন্য ও আমাকে নিয়ে কোন রিক্স নিতে চায় না তাই আবার আমার জীবন আমাকে ফিরিয়ে দিয়ে গেছে। কিন্তু মাসে মাসে টাকা আর আমার জন্য ফলো করার জন্য রুস্তম কে রেখেছে আর নিচে লুকিয়ে আমার সাথে দেখা করে। এইতো কিছুদিন আগে ভালোবাসা দিবস গুলো,
আমি বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলাম হঠাত আমার ফোনটা বেজে ওঠে ফোন রিসিভ করে দেখি মাহির ফোন দিয়েছে।
ফোন কানে নিতেই মাহের স বলে,, তাড়াতাড়ি নিচে নামো, আমি নিচে আছি।
আমি অবাক হয়ে বললাম, মানে কি সব বলছেন এই মধ্যে রাতে আমি নিচে নামবো কেন?
আমি বলেছি তাই ।
আমি আসতে পারবো না সরি।
তারাতাড়ি আসো নাহলে কিন্তু আমি উপরে চলে আসবো।
বলেই ফোন কেটে দেয় আমি হতদম্ব হয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছি। তারপর তারাতাড়ি নিচে এলাম। দারোয়ান কে দেখলাম না তাই বাইরে এলাম। গাড়িতে হেলান দিয়ে মাহের দাড়িয়ে আছে তার চোখে-মুখে ক্লান্ত ভড়া আমি যেতেই ক্লান্ত চোখেই হাসি ফুটালো আর আমার কাছে এসে আমাকে জরিয়ে ধরলো।

#চলবে