Sunday, August 3, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1544



না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-১৭

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#Part_17

ঋতুর সেন্স আসতেই ও দেখলো ও হাসপাতালে ওর কপালে বেন্ডেজ করা,,,

ঋতুর আগের কথা মনে করতেই ওর চোখের সামনে গাড়িটির ব্লাস্ট এর ছবি আসছে,,,

আদির কথা মনে আসতেই কেদে দিলো,,আদির কিছু হলে আমি বাঁচবো না,,, আমি নতুন করে বাঁচতে শিখেছি আদির জন্য,, আদিকে ভালোবাসি কিনা জানি না কিন্ত আদি আমার অস্তিত্বে জড়িয়ে গেছে,,,যেটা ভালোবাসার থেকেও বেশি,,,,যেটা ছাড়া বাঁচা অসম্ভব,,,,, আদিকে হারাতে পারবো না।

ঋতু কাঁদছে চিৎকার করে,,, নার্সরা এসে ওকে থামানোর চেষ্টা করছে,,,,ঋতুর আওয়াজ শুনে ঋতুর আম্মু আব্বু আসলো,,

ঋতুর ওদের দেখে পাগলে মতো,,,চিৎকার করে,,

আমিঃ আম্মু আদি কোথায়,,,আমি ওর কাছে যাবো,,( কাঁদতে কাঁদতে)

আম্মুঃ ঋতু শান্ত হও আগে,,না হয় শরীর আরো খারাপ করবে,,,

আমিঃ,, আমি কিছু শুনতে চাই না,,আমাকে আদির কাছে নিয়ে চলো,,ও কোথায়,,,,,বলো,,,

আম্মুঃ আচ্ছা,, আগে শান্ত হও তারপর নিয়ে যাবো,,,

ঋতু কিছুটা শান্ত হওয়ার চেষ্টা করে,,,
আমিঃ আমি ঠিক আছি,,,আমাকে নিয়ে চলো,,,

আমার জেদে এ হার মেনে,,, আম্মুরা আমাকে ধরে ধরে একটা কেবিনের সামনে নিয়ে আসলে,,কেবনের সামনে,,,আমার শশুর, শাশুড়ী,, আদিবা দাড়িয়ে দাড়িয়ে কাঁদছে,,,,,ঋতু ওখানে গিয়ে ওর শাশুড়ীর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো,,,,, শাশুড়ী আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে,,

শাশুড়ীঃ আমার ছেলেটার কি হয়ে গেলো,,,ওর কিছু হলে আমি কি নিয়ে বাচবো,,( কাঁদতে কাঁদতে)

আমি নিজেকে সামলে,,,

আমিঃ ওর কিছুই হবে না,, সব ঠিক হয়ে যাবে,,আল্লাহর উপর ভরাসা রাখেন,,,,,,

ওই মুহুর্তে,, ডাক্তার বের হলেন,,,

শশুরঃ ডাক্তার আমার ছেলে এখন কেমন আছেন,,,

ডাক্তারঃ আমারা এখনো কিছু বলতে পারছি না,,,ওনি মনে হয় গাড়ি ব্লাস্ট হওয়ার সময়ই লাফ দেয়েছে,,যার কারণে পায়ের অনেক অংশ পুড়ে গেছে,,,আর খুব বাজে ভাবে পড়েছে,,তাই আঘাতটা ও অনেক বেশি পেয়েছে,,এখন সেন্স আসা পর্যন্ত আমরা কিছুই বলতে পারবো না,,,,তবে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করুন ওনি গাড়ি থেকে বের হতে পেরেছেন,,না হলে বাচতো না,,,

এটা শুনার পর আমার মাথা ঘুরছে,,চারপাশ অন্ধকার লাগছে,,,আর কিছুই মনে নেয়,,,,

চোখ মেলতেই সামনে আম্মুকে দেখলাম,,কাঁদছে,,,বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠলো,,আদির কিছু হলো না তো,,,

আমি চিন্তিত গলায়,,

আমিঃ আদি ঠিক আছেতো আম্মু,, কিছুক্ষণ আগে ডাক্তার বলছে সেন্স না আসলে কিছু বলতে পারবে না,,, সেন্স আসছে ওর,,

আম্মু কাঁদতে কাঁদতে,,
আম্মুঃ কিছুক্ষণ আগে না ডাক্তার এটা দুদিন আগে বলছিল,,

আমিঃ মানে,,

আম্মুঃ তোর শরীর দূর্বল আর আদির খবরে বড় শকড পেয়েছিস বিধায় তোর সেন্স আসছিলো না,, আমরাতো অনেক টেনশনে ছিলাম,,,আল্লাহ রহমত করেছে তোর উপর,,তাই দুদিন পর সেন্স আসলো,,

আমিঃ কি দুদিন,, তাহলে আদির কি অবস্থা,, ও ভালো আছে তো,,

আম্মুঃ কালকে ওর সেন্স আসছে, বাট ওর অবস্থা তেমন ভালো না,,,, এখনোও, ডাক্তাররা কাউকে যেতে দেয়নি।

আমি একটু ওঠার চেষ্টা করছি বাট শরীর অনেক খারাপ লাগছে,,,

আম্মুঃ তুই কি করছিস,,,, তুই এখনো পুরোপুরি সুস্থ হোস নি,, একটু রেস্ট নে,,,

আমি আর কথা বলতে পারছি না,,,,তাই আবার শুয়ে পড়লাম,,,,,,চোখটা লেগে যায়,,,,

ঘুম ভাঙ্গে আম্মুর আওয়াজে,,, আম্মুর আওয়াজে ভয় আসলো,,আদি ঠিক আছে তো,,

আমিঃ আম্মু আদি ঠিক আছে তো,

আম্মুঃ ও ঠিক আছে,,আগের থেকে,,কিছুক্ষণ আগের ওর সাথে সবাই দেখা করতে গেছে,ও নাকি তোকে দেখতে চাচ্ছে,,তুই ঘুমে ছিলি তাই ডাকিনি আগে,,,,

আদির আনাকে ডাকছে শুনে মনটা খুশি হয়ে গেলো,,,, ওকে দেখার জন্য মনটা চটপট করছিলো,,

আমিঃধুর তুমি আমাকে ডাকো নাই কেন,, এখন চলো আমি ওনাকে দেখবো,,

আম্মুঃতুই তো এখনো,,

ওনাকে কথা বলতে না দিয়ে,,

আমিঃ আম্মু আমি ঠিক আছি,,,,চলো তো,,

আমি ওনার কেবিনের সামনে যেতেই একজন নার্স এসে,,

নার্সঃআপনারা আর কেউ ভিতরে যেতে পারবেন না,,এমনিতেই সবাই ওনার সাথে কথা বলায় ওনি একদম দূর্বল হয়ে গেছে,, ওনাকে রেস্ট নিতে দিন,,

আমিঃ প্লিজ আমি একটু দেখেই চলে আসবো,, কোন কথা বলবো না,,শুধু একটি বার দেখা করবো,,

নার্সঃ ছরি আমি পারবো না,,কিছি হলে ওটার রিক্স কে নিবে,,পেসেন্টকে রেস্ট নিতে হবে,,

আমাদের কথা কাটাকাটি শুনে,,ডাক্তার এসে,,আমাকে বলল,,

ডাক্তারঃ আপনার নাম কি ঋতু,,,

আমিঃ জ্বি আমি ঋতু,,,আমি ওনাকে শুধু একটি বার দেখবো আর বেশি কিছু না,,

ডাক্তারঃ নার্স,, ওনাকে যেত দাও,,আদির সেন্স আসার পর থেকে ঋতু নাম ডেকে ডেকে অস্থির হচ্ছে,, ঋতুকে দেখলে একটু শান্ত হবে,,,,তবে শুধু আপনি যাবে,,,আর তেমন কথা বলবেন না,,,

আমিঃধন্যবাদ ডাক্তার,,, আমি ওনাকে কথা বলতে দিবো না,,,

ডাক্তার একটা মুচকি হেসে চলে গেল,,

আমি ভিতরে ডুকে আদির দিকে তাকাতে বুকটা কেঁপে ওঠলো,, হাতে,,পায়ে,,মাথায় বেন্ডেজ,, মুখটা শুকিয়ে গেছে,,,আমি ওনার পাশে বসলাম,,,চোখে পানি চলে আসলো,,আমি ওনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই ও চোখ মেলে পেললো,,আমাকে দেখে তৃপ্তির হাসি দিলো,,যেন আমারি অপেক্ষায় ছিলো,,,

আদি অস্পষ্ট ভাবে,,কিছু বলছে,,কিন্তু বুজতেছি না তাই ওনার মুখের সামনে গেলাম,,,

আদিঃ তু,,মি,,ঠিক,,আছো,,(কষ্ট করে বলল)

ঋতু আদির কথা শুনে অবাকের শেষ সীমানা চলে গেল,,,আজ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে এমন অবস্থায়ও সে আমি ঠিক আছি কিনা জিজ্ঞেস করছে,,এ কেমন ভালোবাসা,, আদো কি আমি এই পবিত্র ভালোবাসার যোগ্য?

আমি কেঁদে দিলাম,,
আমিঃ আমাকে চিন্তা করা লাগবে না আমি একদমই ঠিক আছি,,,আজ আমার জন্য এসব হলো আমি যদি ঘুরতে যেতে না বলতে না বলতাম তাহলে আজ এই দিন দেখতে হতো না,(,বলে কাঁদছি)

আদি হাতটা উঠানো চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না,,
আমি ওর হাত শক্ত করে ধরে,,

আমিঃ প্লিজ আপনি নড়াচড়া করবেন না,,,আপনার রেস্ট এর প্রয়োজন,,,,,। আপনি চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করুন আমি আপনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।

আদি চোখ বন্ধ করে আছে আর আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি,,ওর মুখে এখন তৃপ্তির ঘুম,,,

এভাবে কেটে যায় কয়েকটা দিন আদি আগের থেকে অনেকটা ভালো আছে,,, আমা এক মুহূর্তের জন্য ও ছেড়ে যাইনি,,,,কিন্তু এখন আদি জেদ ধরে বসে আছে, ও বাসায় চলে যাবে,,কিন্তু ডাক্তার বলেছে,, আরো দশ পনেরো দিন হাসপাতালে থাকতে,,কারণ ওর হাত পা এখনো প্লাস্টার করা আরো এক মাস লাগবে ভালো হতে,,কিন্তু আদির নাকি হাসপাতালে দম বন্ধ হয়ে আসছে,,আর আসবে নাই বা কেন একটা কেবনে আর কতো থাকা যায়,,,আদির জেদে হার মেনে আমার শশুর ডাক্তারকে অনেক বুজিয়েছে রাজি করিয়েছে,, ডাক্তার বলে দিয়েছে আদিকে আরো একমাস বেডরেস্ট এ থাকতে হবে,,যদি কোন ইনফেকশন হয় তাহলে ডাক্তারদের দায় নেই,,,,সব শর্ত মেনে,,শেষমেশ ওকে নিয়ে আসলাম,,আমাদের রুমে শুয়ে দিয়েছে,,,

আমার শাশুড়ী বলেছে অনেকদিন দিন পর হাসপাতাল থেকে এসেছে,,একটু পানি দিয়ে গা টা মুচে দিতে,,কারণ এখন গোসল করানো যাবেনা হাত পায়ের প্লাস্টারের কারণে,,,

আমার খুব নার্ভাস লাগতেছে,এই ফাস্ট আদিকে এতো ক্লোজভাবে স্পর্শ করতে হবে এতোদিন তো খাইয়ে দেওয়া আর ওনার পাশে বসে থাকা ছাড়া কিছু করিনি,,এখনতো ওনার অনেক ক্লোজ হতে হবে,,,শাশুড়ী কে কিছু বলতেও পারছি না,,কারণ স্রী তার স্বামীকে গা মুছে দিবে এটা অনেক স্বাভাবিক বিষয়,,কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন আমাদের মধ্যে ওই রকম সম্পর্ক নেই,,,বাট আমাকে আপনাদের সম্পর্কটা পরিপূর্ণ করে ঠিক করতে হবে,,,,

অনেকটা সাহস নিয়ে সামনে গেলাম,,ওনার দিকে তাকাতে নার্ভাসনেস বেড়ে গেলো,,,

চলবে,,,,

না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-১৬

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#Part_16

একটা নীল শাড়ি পরে,,, হালকা সাজলাম,,আমার সাজই হলো,, কাজল,আর হালকা লিপস্টিক,,

আজ খুব ভালো লাগছে,,অনেক দিন পর আজ একটু ঘুরবো,,,আজকাল আদির দুষ্টামি, কেয়ার সব খুব ভালোলাগে,,,,

আমিও চাই সুখী হতে,,সবার মতো সুন্দর ভাবে বাকি সময়টা কাটাতে,,,তার জন্য একটু না হয় স্বার্থপর হয়ে অতীত থেকে একপা এগিয়ে আসি,,,আর কার জন্যই বা অতীত আঁকড়ে ধরে থাকবো অতীতের মানুষটাতো ভুল,,,আদির মতো মানুষের ভালোবাসা কে বা হারাতে চায়,,যে ভালোবাসায় কোন মিথ্যা,, অভিনয় নেই আছে শুধু নিঃস্বার্থ ভালোবাসা,,,

এসব ভেবে,,, রেডি হচ্ছি,,,তখননি আদি কল করলো,,,

আদিঃ ঋতু রেডি হয়েছো?নিচে নামো

আমিঃ হুম হয়েছি,,আসছি,,

নিচে নামতেই আদি আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে এভাবে তাকিয়ে থাকায় খানিকটা অস্বস্তি হচ্ছে,,, আমি ওর সামনে এসে দাড়ালাম তবুও ওর কোন হেল দোল নেই,,

আমিঃ যাবেন নাকি এখানে দাড়িয়ে থাকবেন নাকি,,,,

আদি কিছুটা লজ্জা পেয়ে মাথায় নাড়িয়ে গাড়িতে বসলো,,আদি ড্রাইভ করছে আর ফাঁকে ফাঁকে আমার দিকে তাকাচ্ছে,,

আদিঃ আজকে তোমাকে নীলপরির মতো লাগছে,,,

আমি একটা মুচকি হেসে,,

আমিঃ মনে হচ্ছে একটু বেশিই বলে পেলছেন,,,

আদিঃ মোটেও বেশি বলছি না বরং কম বলছি,,

আমি কিছু না একটা হাসি দিয়ে বাইরের দিকে তাকালাম,,,হঠাৎ,,

আমিঃ এই,,,, এই গাড়ি থামান,,( জোরে)

আদি ঋতুর কথা শুনে জোরে ব্রেক কষে,,

আদিঃ কি হলো,, এনি প্রবলেম,,

আমি হাত দিয়ে দেখালাম পাশের ফুচকাওয়ালা কে,,
আদি ওইদিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে,,,

আদিঃ এই সামান্য ব্যাপারেরে জন্য এতো চিৎকার করার কি আছে,, নরমেলি বললেও আমি শুনবো তো,,আর এই শীতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খাওয়া লাগবে না,,বড় কোন ফুচকার দোকানে যাবো।।

আমি মুখ বাকা করে,,

আমিঃ রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খাওয়ার স্বাদই আলাদা,,,

বল,,গাড়ি থেকে নামলাম,,ওনি নামলো,,,

আমি ফুচকাওয়ালা কাকুর কাছে গিয়ে,,,

আমিঃকাকু দুই প্লেট ফুচকা দেনতো,,একটাতে ঝাল কম দিবেন।

কাকুঃআইচ্ছা তোমরা এ হানে বহো,,মুই এহনি বানাই দিতাছি,,

আদিঃআরে দুই,,প্লেট কেন,,আমি খাব না তোমার ওই ফুচকা,,,

আমিঃ আরে কিছু হবে না একদিন খেয়েই দেখেন,, ভালো লাগবে,,,

আদি আর কিছু বললো না,,

আদি আর ঋতু বসে অপেক্ষা করছে,,আদি দেখলো ঋতু ঠান্ডায় কাঁপছে,,,,,

আদিঃ এই ঠান্ডার মধ্যে তুমি শীতের কিছু পরো নাই কেন,,,এখন যে কাঁপতেছ!

ঋতু বোকা হাসি দিয়ে,,
আমিঃ ভুলে গেছি,,

আদি তার গায়ের ব্লেজারটা খুলে ঋতুর গায়ে দিয়ে বলল,,,

আদিঃ কোন দিন তুমি নিজেকে ভুলে যাও আল্লাহ জানে,,

ফুচকাওয়ালা কাকু ফুচকা দিলো বেশি ঝলটা আমি নিলাম,,ওকে কমটা দিলাম,,

আদি ঋতুর দিকে তাকিয়ে দেখছে,, ঋতু কি আনন্দ নিয়ে ফুচকা খাচ্ছে একটার পর একটা,, আর আদি এখনো একটাই মুখে,, নিয়ে বসে আছে,,

আদিঃ আমার প্লেট এ ঝাল কম তবুও ঝালে খেতে পারছি না আর তুমি এতো ঝাল কিভাবে খাচ্ছো,,

আমিঃ ( খাওয়ার জন্য বলতে কষ্ট হচ্ছে)আমি পারি,,অভ্যাস আছে,,,,

আদি দেখছে শুধু ঋতুর এই বাচ্চামো খাওয়া,,,,এই মেয়েটা বাড়িতে তেমন কিছুই খায় না আর এখন এমন ভাবে খাচ্ছে,,যেনো হাজারো দিনের ভুখী,,হা হা,,,আমি আস্তে আস্তে খাচ্ছি ঝালে পারছিও না,, আমি তিনটা খেতে না খেতে ঋতুর প্লেট শেষ,,আমি হা হয়ে আছি,,,

আমিঃ কাকু আরেক প্লেট ফুচকা দেন তো,,, ফুচকা গুলো অনেক মজা😋

এই মেয়ে বলে কি এমনিতে একপ্লেট খেয় পুরা মুখ লাল হয়ে গেছে এবার তো নির্ঘাত পেট খারাপ হবে,,

আদিঃ কাকু আর দেওয়া লাগবে না,,,আর ঋতু এই শীতে তোমার এতো বাইরের খাওয়ার খেলে পেট ব্যাথা করবে,,,

বলে কাকুকে টাকা দিয়ে ওকে টেনে নিয়ে চলে আসলাম,,,গাড়িতে মুখ ফুলিয়ে বসে আছে,,

আদিঃ কি হলো আবাড মুড অফ হয়ে আছে কেন?

আমিঃ আর এক প্লেট খেলে কি এমন ক্ষতি হতো?(মুখ ফুলিয়ে)

আদিঃ তুমি বুজতেছ না এখন আবহাওয়া ভালো না খাওয়ার একটু ব্যাতিক্রম হয়ে শরীর খারাপ করবে,,,তোমার জন্য অন্য একদিন বাসায় নিয়ে যাবো,,ওকে,

আমিঃওকে,,,,এখন কোথায় যাবো,,,

আদিঃ রেস্টুরেন্টে যাবো ডিনার করতে,,,

আমিঃ কি এতো তাড়াতাড়ি ডিনার করবে না এমনি কোথাও নিয়ে যান,,,,

আদিঃ ওকে,,,

গাড়ি এসে থামলো একটা নদীর পাড়ে,,,এখানে লাইটিং করা মনে হয় এখানে অনেকে ঘুরতে আসে,,,চারপাশে তেমন মানুষ নেই,,, কিন্তু আবার একদম নির্জন ও না,,

আমি আর আদি পাশাপাশি হাঁটছি,,,

আদি হঠাৎ করে বলল,,

আদিঃ তোমার এইভাবে হাঁটতে কেমন লাগছে,,

আমিঃ খুবই ভালো,,আপনি কি এখানে আগে কখনও আসছেন?

আদিঃ হুম,,অনেকবার,,ফ্রেন্ডদের সাথে,,আর কাজিনদের সাথে,,,

কাজিনের সাথে শুনে মনে আসলো বর্ষাকে,,

আমিঃ বর্ষা ও ছিল আপনাদের সাথে ( ভ্রু কুঁচকে)

আদিঃ ওফকোর্স ও, তো কাজিন না,,

আমিঃআচ্ছা একটা কথা বলবো,,,

আদিঃ হা বলো,,

আমিঃ আপনার আর বর্ষার মধ্যে কিছু ছিলো,,( ভয়ে বললাম)

আদিঃ কি,, বলছো এসব,,, আমি আগেই বলছি তুমি আমার প্রথম এবং শেষ ভালোবাসা,,, তোমার এমন কেন মনে হলো ওর আর আমার মাঝে কিছু ছিলো,,,

আমিঃ এমনিতেই,,ও কেমন আপনার সাথে চিপকে চিপকে থাকে আর আপনার দিকে তাকিয়ে থাকে,,,তাই,

আদি ভাব নিয়ে,,,

আদিঃ এরকম একটা হেন্ডসাম ছেলে সামনে থাকলে শুধু বর্ষা কেন সবাই তাকাবে আর ট্রাই মারার চেষ্টা করবে,,কিন্তু যার হাসবেন্ড তার খবর নাই বাকি মেয়েদের ঘুম নাই,,,,

(এই মানুষটা যখনই সুযোগ পাবে ফ্লট করা শুরু হয়ে যাবে,,যেন পৃথিবীতে ওনি একমাত্র সুন্দর ছেলে,,হুহ)

আমিঃ বাকি মেয়েদের ভালো চোখ নেই তাই আপনাকে দেখে,,আমার তো আর চোখ খারাপ না,,

আদি মুখভার করে,,

আদিঃ আমি জানতাম,, তুমি সবসময় আমাকে পঁচানোর জন্য রেডি থাকো,,,একদিন দেখবে তুমি নিজেই আমাকে বলবে আমি দেখতে হ্যান্ডসাম,,, হাহ

আমি হেসে,,,

আমিঃ হুহ,, কুছ বি,,( গালে বাকা করে)

আদিঃ দেইখো তখন আমার কাছে আসতে চাইবে হয়তো তখন আমিই থাকবো না,,

ওর শেষের কথা আমার বুকে এসে লাগলো,,,কেন জানি খুব ভয় করছে,,,হারানোর ভয়,,না আমি আর জীবনে কিছু হারাতে পারবো না,,প্রথম ভালোবাসা হারালাম কিন্তু আর না,, মনের ভিতর খুব ভয় লাগছে আর মনে কু ডাকছে,,,আমি আদির হাতটা শক্ত করে ধরলাম,,,

আদি হঠাৎ ঋতুর স্পর্শ পেয়ে অবাক হয়ে গেল,,এই প্রথম ঋতু তাকে স্পর্শ করেছে,,ব্যাপারটা কেমন হজম হচ্ছে না আদির,,,

আদিঃ তোমার কি ভয় করছে,,

আমিঃ কেন ভয় হবে আপনি আছেন না,,

আদিঃ তাহলে হঠাৎ হাত ধরেছো যে,,

আমিঃ কেন হাত ধরতে পারি না নাকি,,

আদিঃ পারবে,,কিন্তু তোমার ধরার কারণটা কি অন্যকিছু( প্লিজ ঋতু বল তুমি স্বামীর অধিকারে ধরছো),,,

ঋতু কথা কাটানোর জন্য বলে,,

আমিঃ ফ্রেন্ড হিসেবে তো ধরাই যায়,,

আদির মুখটা কালো হয়ে গেলে ও হয়তো অন্যকিছু শুনতে চেয়েছে,,,

তবুও নিজেকে সামলে হাঁটছে,,, অনেকক্ষণ হাঁটার পর,,

আদিঃ চলো,,এবার বেশিক্ষণ থাকলে ঠান্ডা লেগে যাবে,,,

আমিঃ ওকে চলেন,,,,

গাড়ি করে একটি বড় রেস্টুরেন্টে আসলাম,,আদি আমার জন্য সুপ ওর্ডার করলো,,

আমিঃ ছি আমি সুপ খাবো না,,

আদিঃ এমনিতে ফুচকা খেয়েছ,,তার উপর অনেকক্ষণ ঠান্ডার মধ্যে ছিলে,,,এখন গরম গরম সুপ খেলে ভালো লাগবে,, না হয় শরীর খারাপ করবে

আমিঃ আপনাকে এতো ভালো ভাবতে হবে না,,

আদিঃহয়তো একদিন ভালো ভাবার মানুষই পাবে না,,,

আজ আদির কথা গুলো কষ্ট হচ্ছে,, মনটা বারবার কেমন করছে,,

তাই কথা না বাড়িয়ে সুপটা ইচ্ছে না থাকার স্বর্তে ও খেয়ে নিলাম,,তার পর আদি আরো কিছু ওর্ডার করলো,,,আমি তো আর খেতেই পারছি না,,, তবুও আদির দমকে সব খেতে হচ্ছে,, আদি তো ঋতুর মুখ দেখে হাসছে,,এভাবে তাদের খুনসুটির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে রেস্টুরেন্টে,,

কিন্তু দূর থেকে একজনের গা জ্বলে যাচ্ছে তাদের এই খুনসুটি দেখে,,,তার চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে,,,,

আদি আর ঋতু ডিনার শেষ করে,, গাড়িতে উঠলো,,আদির কেমন যেন মনে হচ্ছে এখানে কেউ ছিলো,,,আদি তেমন পাত্তা না দিয়ে গাড়ি চালালো,,

গাড়ির নিছ থেকে আরিয়ান উঠে বাকা হাসি দিয়ে হাত ঝারলো,,,

আদি গাড়ি চালাচ্ছে হঠাৎ তার মনে হলো গাড়িকে সে কন্ট্রোল করতে পারছে না ফুল স্পিড এ চলছে,,,আমি ভয়ে,,

আমিঃ কি হয়েছে আপনি এতো জোরে চালাচ্ছেন কেন,,এক্সিডেন্ট করবে তো,,

আদিঃ মনে হচ্ছে গাড়ির ব্রেক ফেল করেছে,, থামাতে পারছি না,,

ঋতু ভয়ে আদিকে জড়িয়ে ধরে আছে,,

আদিঃ ঋতু ভয় পেয়ো না আমি থাকতে কিছু হবে না তোমার,,,,

আদি অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু গাড়ি থামছে না যেকোন মূহুর্তে এক্সিডেন্টে করবে,,,আদি আর কোন আশা না পেয়ে,,

আদিঃ ঋতু আমার দিকে তাকাও,,,,, ভয় পেয়েও না,, সাহস রাখো,,, আমাদের গাড়ি যেকোনো সময় ব্লাস্ট হতে পারে,,,এখন একটাই উপায়,,,তোমাকে এখান থেকে বের হতে হবে,

আদি দরজা খুলেছে,,কিন্তু ঋতু কিছুতে লাফ দিচ্ছে না,,

আমিঃ আদি আমি তোমাকে ছাড়া যাবো না দুজনে একসাথে বের হবো,,,

আদিঃ ঋতু প্লিজ বুজার চেষ্টা করো,, তোমাকে যেতেই হবে,,আমি চেষ্টা করবো বের হওয়ার,,,,, তার আগে তোমাকে বের হতে হবে,,,,

আদি ঋতুকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে,,,

আদিঃ ঋতু একটাবকথা মনে রেখো আমি না থাকলেও আমার ভালোবাসা সব সময় তোমার সাথে থাকবে,,I love you ritu,,

বলে খালি জায়গায়,,ঋতুকে ধাক্কা মারে,,,ঋতু রাস্তার ধারে পড়ে যায়,,তার কপাল কেটে রক্ত বের হচ্ছে,,ঋতু সামনে তাকিয়ে দেখে গাড়িটি গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে ব্লাস্ট হয়ে,,

,,ঋতু জোরে একটা চিৎকার দেয়,,ঋতুর আর কিছু মনে নেয়,,,,ওইখানে সেন্সলেস হয়ে যায়,,

( আদির ভালোবাসা কি পূর্ণতা পাবে না,,,এখানে শেষ হবে তাদের সম্পর্কটা?)

চলবে,,,,

[ ভুল হলে ক্ষমার চোখে দেখবেন 🙏]

না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-১৫ | বাংলা ধারাবাহিক গল্প

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#Part_15

আদির দিকে তাকাতে তাকাতে কখন যে ঘুম চলে আসলো টেরই পাইনি,,,,

সকালে ওঠে নাস্তা বানালাম,,,,আদি আগের মতোই আপনাকে ইগনোর করে চলে গেলো,,,, একটা কথা পর্যন্ত বলে নাই,,ওর বকবক করা,,, আমাকে কেয়ার করা খুবই মিস করছি,,,,তাহলে কি আমার মনে আদির জন্য ফিলিংস আাছ!

আসলেই কি মানুষের লাইফে দ্বিতীয়বার ভালোবাসা আসে,,,,হয়তো বা না হলে পৃথিবীতে সবাই সুখে থাকতো না,, কারণ প্রথম ভালোবাসা খুব কম মানুষের কপালেই জুটে,,, তাই বলে কি জীবন থেমে থাকে!,,, থাকে না কারো লাইফে হয়তো দ্বিতীয় ভালোবাসা জন্ম হয়,,, আর না হলে মায়ার সম্পর্ক তৈরি হয়,,কিন্তু সবাই সুখী হতে চায়,,,,আমার ক্ষেত্রে কোনটা,, মায়া নাকি ভালোবাসা? তা আমার জানা নেই,, কিন্তু প্রথম ভালোবাসার জায়গা দিতে পারবো না কাউকে,,,হোক না ভালোবাসার মানুষটা ভুল, খারাপ কিন্ত আমার ভালোবাসাতো সত্যি ছিল,,ওই জায়গাটা কাউকে কি দিতে পারবো?,,,

বেলকনিতে দাঁড়িয়ে এসব ভাবছি,,,,

আদিবা এসে আমার কাঁদে হাত রাখলো আমি খানিকটা চমকে গেলাম,,,আমি পেছনে তাকিয়ে দেখি আদিবা,,

আমিঃ আদিবা কিছু কি লাগবে?,,

আদিবাঃ না ভাবী,,,এমনি আসলাম,,তোমার কি মন খারাপ?

আমি স্বাভাবিক হয়ে,,

আমিঃ কই না মন খারাপ কেন হবে

আদিবাঃ আমার থেকে লুকানো লাগবে না,,, আজকে দুইদিন দেখছি ভাই ও মুড অফ হয়ে আছে,,ঝগড়া হয়েছে কোন,,,

আমি কিছু বলছি না,, কি বলবো আমাদের সম্পর্কটাই তো ঠিক নেই,,,

আদিবাঃ আচ্ছা বলা লাগবে না,,, বাট তুমি মন খারাপ করো না ভাইয়ের একটু অভিমান বেশি কিন্তু মন খুব ভালো,,, দেখবে আমার ঠিক হয়ে যাবে,,,

আমি একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললাম,,

আমিঃ আচ্ছা চলো,, কিচেনে যাই রান্না বসাতে হবে,,

আদিবাঃ ওকে,,চলো,,

এভাবে সময়টা চলে গেল,,,ওনি সন্ধ্যায় এসে,, কোন কথা না বলে সোজা ওয়াশরুম চলে গেলো,,,

ফ্রেশ হয়ে ডিনার করে আবার রুমে চলে গেলো,,,,এবার অনেক রাগ লাগছে,,,আমি না হয় ভুলভাল একটু বলছি তাই বলে এতো অভিমান করা লাগে,,ধুর,,

আমি কিচেনে সব গুছিয়ে রুমে এসে দেখি পনি ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছে,,মুখটা পেঁচার মতো করে রাখছে,,আজকে একটা না একটা কিছুই করে ছাড়বো,,,

আমি গিয়ে ওনার পাশে বসলাম,,,ওর কোন চেঞ্জই আসলো যেভাবে বসে আছে ওইভাবে আছে,,আমার ইচ্ছা করছে বালিশ দিয়ে মাথা পাটাই দিই,, ধুর বালিশ দিয়ে মাথা পাটবে নাকি,,,,কি করবে বুজতে পারছি না, আমি গলা ঝাড়ছি যাতে একটু তাকায়,,

আদি ল্যাপটপ এর দিকে তাকিয়ে বলল,,

আদিঃ কিছু বলবে,,,

ওনার এতো ভাব দেখে আমার গা জ্বলে যাচ্ছে,,, মাথা গরম করে,,,

আমিঃ এই যে মিস্টার এতো ভাব নেওয়ার কি হয়েছে,,,আমি না হয় ভুলে একটা কথা বলে পেলেছি তা বলে এতো ভাব নিয়ে বসে আছেন কেন?

ওর তবুও কোন রেসপন্স নাই যেভাবে ছিলো ওইভাবে ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে আছে,,,, রাগে জেদে না পেরে কেঁদে দিলাম।আমি এমনি বেশি রাগ উঠলে কিছু করতে না পারলে কেঁদে দিই,,,

আমি কেঁদে কেঁদে বেলকনিতে চলে গেলাম।ওনি নাকি আমাকে ভালোবাসে এইটাই ভালোবাসা,,

কিছুক্ষণ পর মনে হলো কেউ পাশে দাড়িয়ে আছে,, তাকিয়ে দেখি আদি,,আমি আবার সামনের দিকে তাকিয়ে চোখ মুছছি ,,,

আদিঃ,কাঁদা শেষ?,
আমি রেগে,,

আমিঃ আপনি এখান থেকে যান?না হলে,,,

আদিঃ না হলে কি মারবে?

আমিঃ দরকার হলে করবো,,

আদিঃ আমি তো জানি তোমাড নাকি রাগ উঠলে তোমার বোনকে কামড়ে দাও, তারপর চুলও টানো,আমাকেও তাই করবে?

আমি অবাকে হয়ে তাকিয়ে আছি,,,এখন প্রিতুর উপর রাগ হচ্ছে মেয়টা পেটের ভিতর কিছুই থাকে না,,আমি লজ্জায় কিছুই বলছি না,,নিচের দিকে তাকিয়ে আছি,,,

আদি হাত সামনের দিকে দিয়ে

আদিঃ নাও চিমটি দিতে পারো প্রবলেম নেই..(হেসে)

আমিঃ যান তো ঢং কইরেন না এতোক্ষণ তো ভাব নিয়ে ছিলেন এখন কেন আসছেন? থাকেন না ভাব নিয়ে,,,

আদিঃ কারণ আমি তোমার কান্না সহ্য করতে পারি না।আর তখন রাগ ছিলো তাই কথা বলিনি।

আমিঃ আমি মানছি আমার ভুল হয়েছে,,আমি এতোকিছু ভেবে বলিনি।

আদিঃ তোমার উপর রাগ করিনি,, রাগ হচ্ছে আমার উপর এতোদিনেও তোমার বিশ্বাস অর্জন করতে পারিনি,,,তোমার মনের সন্দেহ দূর করতে পারিনি,,

আমিঃ প্লিজ আমি আপনাকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করি,, বিশ্বাস যদি নাই করতাম তাহলে এখন আপনার পাশে দাড়িয়ে থাকতাম না।আসলে ওইদিন আমাকে ওইভাবে দেখে একটু বেশি রিয়েক্ট করে পেলেছি,, আসলে আমি আপনাকে নিয়ে কোন সন্দেহ করি না।প্লিজ আপনি ভুল বুজবেন না,,

আদিঃ ঠিক আছে,,, সমস্যা নেই।

আমিঃ তাহলে চলেন,, এখানে অনেক ঠান্ডা,,

আদিঃ তুৃমি যাও আমি আসছি,,

আমিঃ ওকে,,

আমি চলে আসলাম

আদি আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছে,,
( আমি ভেবেছিলাম তোমার মনে একটু হলেও জায়গা করতে পেরেছি,, আমার ইগনোরকে তুমি মিস করবে ভেবেছি,, কিন্তি আমি আজো পারলাম না তোমার মনে জায়গা করতে,,,আমাদের মাঝে এখনো অনেক দূরত্ব আছে,,,বাট যে করে হোক তোমার মনে জায়গা করবোই)

আদি বেলকনি থেকে এসে,, দেখলো ঋতু চুল আচরাচ্ছে,,

আদিঃ ঋতু তোমাকে একটা কথা বলবো?

ঋতুঃ হ্যা বলেন

আদিঃ আমাদের মাঝে এখনো অনেক জড়তা আছে,, আমার যেহেতু এখনো একসাথে আছি,,, আমারা ফ্রেন্ড হয়ে থাকি?

আমিঃ ওকে সমস্যা নেই,, বাট আমার সাথে ভাব নিয়ে থাকতে পারবে না?

আদি হেসে,,
আদিঃ ওকে,,,মায়াবতী।

আমিঃ মায়াবতী? কে সেটা

আদিঃ কেউই না ঘুমাও,,

দুজনে শুয়ে পড়লাম,,, আমি ঘুমের মধ্যে নিজেকে এক জায়গায় রাখার অনেক চেষ্টা করছি,,

সকালে উঠে দেখি আমার পা আদির গায়ে,ধুর ইচ্ছে করছে ঘুমানোর আগে আমার হাত পা বেধে ঘুমাতে হবে,,তাও ভাগ্যিস জড়িয়ে ধরি নি,,,

আমি ওটে নাস্তা বানিয়ে আদিকে ডাকতে আসলাম,,দেখও আদি শুধু একটা টাওয়াল পরে ওয়াশরুম থেকে বের হলো,,,আমও চিৎকার দিয়ে চোখ বন্ধ করে পেলি,,

আমিঃ ছি আপনি এইভাবে কেন বের হলেন?

আদিঃ তো কি হয়েছে?

আমিঃ আপনার কি শরমভরম কিছু নেই একটা মেয়ের সামনে এভাবে দাঁড়িয়ে আছেন,,

আদির মনে একটা দুষ্ট বুদ্ধি আসলো,,,,

আদি বাকা হেসে,,,ঋতুর দিকে এগোচ্ছে,,

ঋতু ভয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে। আদি ঋতুর অনেক কাছে চলে আসছে,,ঋতু ভয়ে চোখ বন্ধ করে পেলল,,

আদিঃ কেন তুমি কি কন্ট্রোল করতে পারছো না।

আমি বড় বড় চোখ করে তাকালাম,,

আমিঃ আমি কেন কন্টোল করতে পারবো না আজব?

আদি নিজের চুল গুলো একপাশ করে ভাব নিয়ে বলল,

আদিঃ এই যে তোমার সামনে একটা হট ছেলে টাওয়াল পড়ে দাড়িয়ে আছে,,,কন্ট্রোল না পারাটা স্বাভাবিক,, ( চোখ মেরে,,)

আমি এবার আদির দিকে তাকালাম,,,ওর ভেজা চুল গুলো সামনের দিকে পড়ে আছে,,বডি তো মাশাল্লাহ যেন জিম করা বডি অনেক কিউট লাগছে বাট নিজেকে সামলে,,,

আমিঃ হট না ছাই,, পুরাই বান্দর এর মতো লাগছে,,

বলে ধাক্কা দিয়ে চলে আসলাম,,

আদিঃ কি আমাকে বানরের মতো লাগছে,,( হাবলার মতো নিজের দিকে তাকিয়ে,,,

এভাবে কয়েক দিন চলে গেল তাদের দুষ্টামি আর খুনসুটি নিয়ে,,,, কিন্তু সম্পর্কটা আগের জায়গায় আছে,,,,

আদির আম্মু আব্বু কয়েকদিনের জন্য গ্রামের বাড়ি গিয়েছে ঋতু আবার হয়ে গেলো এতোদিন শাশুড়ীর সাথে গল্প করে দিন যেতো,,

সকালে ওনার চলে গেছে,,

বিকেলে বসে বসে বোর লাগছে,,,ইচ্ছে করছে একটু বের হতে,,।আসার পর থেকে এই বাড়ীর মধ্য সীমাবদ্ধ হয়ে আছি,,,

আদিকে কল দিলাম,,

রিং যেতেই আদি কল ধরে,,

আদিঃ আজ সূর্য কোথায় দিয়ে উঠলো,,,আজ নিজ থেকে কল দিলা,,

আমিঃ কল না দিয়ে পারলাম না,,বাড়িতে একটা মেয়ে একা আছে তার খবর কি রাখেন,,,একা থাকতে থাকতে বোর লাগছে,,আসার পর থেকে এই বাড়ি ছাড়া অন্যকিছুর ছায়াও দেখলাম না( জোরে বললাম)

আদিঃ আরে,,কুল কুল এতো হাইপার হচ্ছো কেন,, আচ্ছা তুমও রেডি হয়ে থাকো আমরা আজকে ডিনার বাইরে করবো,,

আমিঃ আসলে,, আমি কিন্তু ফুচকা খাবো,,বলে দিলাম,,অনেকদিন ফুচকা খাই নি,,

আদিঃ ওকে ওকে,,রেডি হয়ে থেকো,,

আদির আজকে অনেক খুশী লাগছে এই ফাস্ট ঋতুর সাথে ঘুরবে,,,

অন্যদিকে আরিয়ান সিগারেট টানছে আর রাগে জ্বলছে কি ভাবে ঋতুর ক্ষতি করবে।।ও তো বাড়ি থেকে বেরই হয়না।।।হঠাৎ কল আসলো,,

আরিয়ানঃ হে বল,,

লোকটাঃবস ঋতু আর আদি ঘুরবে বলে আদি অফিস থেকে বের হলো,,

আরিয়ানঃ কি,,,আমি এক্ষুনি আসছি,,,,,

আরিয়ান মোবাইল কেটে বলল,,
মিসেস ঋতু আমাকে অপমান করা না,,, আজকে তো তুই শেষ,,,

চলবে,,,

না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-১৪

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#Part_14

🌼🌼🌼
সকালে সামনের দিকে তাকাতেই দিলাম চিৎকার,,,

আমি আদিকে জড়িয়ে ধরে আছি,,,আমার চিৎকারে আদি ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠলো,,

আদিঃ কি হয়েছে ঋতু,,,চিৎকার করছো কেন,,,

আমিঃ আপনি আমার এতো কাছে কেন আসলেন,,,

আদি চারপাশে তাকিয়ে বলল,,

আদিঃ আমি আমার জায়গায় আছি,,,,তুমি তোমার দিকে তাকিয়ে দেখো তুমি আমার কাছে এসেছো আমি যায় নাই,,,

আমি আমার পাশে তাকিয়ে দেখি কোলবালিশ নিচে পড়ে আছে আমি কোলবালিশ এর জায়গায় চলে এলাম,,

আমি আদির দিকে সন্দেহ চোখে তাকিয়ে,,

আমিঃ বায় এনি চান্স আপনি কোলবালিশ আমার এখানে ফেলে আমাকে এখানে আনেন নাই তো।ভুল করেও আমার ঘুমের সুযোগ নিবেন না।( ভ্রু কুঁচকে)

বলে আদির দিকে তাকালাম,,, আদিকে দেখে বুকটা আঁতকে ওঠল,,, চোখ মুখ লাল করে পেলেছে,,আমার আত্মা বের হওয়ার উপক্রম হলো,,,,,,বাবাগো কেন যে বলতে গেলাম আজ তোর কপালে শনি দশা আছে,,,,

আদিঃ তুৃমি কি করে ভাবলে আমি তোমার ঘুমের এডভান্টেজ নিবো,,আমাকে তুমি এখনো বুঝতে পারো নাই,,,,আমারই দোষ আজো আমি তোমার বিশ্বাস অর্জন করতে পারলাম না।।আমাকে তোমার ঘুমের সুযোগ নেওয়া লাগবে না,,তোমার উপর আমার এমনিতেই অধিকার আছে,,,কিন্তু আমি জোর করে অধিকার চাই না,,যতদিন না তুমি আমাকে মেনে নিবে ততদিন তোমাকে ছোঁয়ার ও চেষ্টা করবো না,,,

আমিঃ আমি ওইভাবে মিন করি,ন,,

আমার কথা না শেষ হতেই ওনি ওঠে ওয়াশরুমে চলে গেলো

ধুর কেন যে বলতে গেলাম,,আমি জানি ঘুমের মধ্যে আমি এক জায়গায় থাকতে পারি না,,,তাই হয়তো ওনার কাছে চলে গেছি,, তবুও কেন যে সন্দেহ করতে গেলাম,,এখন ওনি যদি রাগ করেন,,,

আমি এসব ভেবে কিচেনে চলে গেলাম,,,

সবার জন্য নাস্তা রেডি করছি,,,আদিবা ও আসলো আমার হেল্প করতে,,,নাস্তা টেবিলে নিয়ে গেলাম দেখি আদি রেডি হয়ে আসলো মুখ কালো হয়ে আছে,,,,

সোজা টেবিলে বসে নাস্তা করে চলে গেল,,একটি বার উপরেও তাকালো না,,,প্রতিদিন আমি কিছু না বললে ও ওনি বকবক করতো আজ কোন কিছু না বলেই চলে গেলো,,,,কেন জানি মনটা খারাপ হয়ে গেল,,কারণটা আমার জানা নেই,,,তবুও নিজেকে সামলে,,সবার সাথে বসে নাস্তা করে নিলাম,

সারাদিন সবার সাথে খুব ভালো কেটেছে,,,তাহিয়া তো আমাকে ছাড়া কিছু বুঝে না,,এমনকি আদিবার কাছেও যায় না,,,,বিকেল বেলা তাহিয়াকে ঘুম বানিয়ে রুম ঘোচাচ্ছি,,,, আদির আলমারি খুলে ওর জিনিস ঠিক করছি এমন সময় একটা হাতে শক্ত কিছু লাগলো,,,ভালো করে দেখতে বুজালাম এটা ডায়েরি,,, ডায়েরি দেখেই আরিশা আপুর কথা মনে পড়লো,,,,

(আরিশা আপু বলেছে আদি নাকি আমাকে দুই বছর আগে থেকে ভালোবাসে,,,ডায়েরি পড়লে নাকি বুজবো)এই কথাটা আমার মাথায় ছিলো না,,,,,

আমি ডায়েরিটা নিয়ে বেলকনির দোলনায় বসলাম,,,

ডায়েরির প্রথম পৃষ্ঠায় তার কলেজ লাইফের কথা তার পড়া শুনা নিয়ে,,,,

তারপরের পৃষ্ঠা ওলটালাম,,,, লেখা আছে,,,,

আজকে আম্মুর জোরাজোরিতে ওনাদের দূরের কাজিনের মেয়ের বিয়েতে গিলাম,,,

ডায়েরিতে,,,🌼

(বিয়েতে এসে একটুও ভালো লাগছে না।কারণ তেমন কাউকে চিনি না,,,,হঠাৎ একটি মেয়েকে দেখেই আমার পৃথিবী থেমে গেছে,,,লাইফে কোন মেয়েকে আমার ভালো লাগে না,,আমি ওইভাবে তাকাতাম না,,,আজ কি জানি হলো,,ওই মেয়ের দিক থেকে চোখ ফেরাতে পারছি না,,,কোন মেকাপ ছাড়া কাউকে এতো কিউট লাগে আমার জানা ছিলো না,,,
পরে আদিবার কাছ থেকে জানলাম ওর নাম ঋতু,, নামটাও ওর মতো কিউট,, আস্তে আস্তে ওর কথাবার্তা, চলাফেরা দেখে আমি একদম মুগ্ধ হয়ে গেছি,,খুবই সাধারণ একটা মেয়ে,,,বিয়েতে কোন ছেলের সাথে ও কথা বলতে দেখিনি,,এমনকি আমার দিকেও তাকায়নি,,,, বাড়িতে এসে,, ঘুমাতে,, বসতে,,সব সময় ওর ছবি আমার চোখে ভাসে,, খুব মিস করি,,,আমি বুঝে গেছি আমি ঋতুকে ভালোবেসে পেলেছি,,যে আমি মেয়েদের দিকে তাকাইনি আজ একটা মেয়ে আমার ঘুম কেড়ে নিলো,,,,তারপর থেকে ওর ব্যাপারে সব খোঁজ নিই,,,,,অনেকদিন কলেজেও গিয়েছি ওকে দেখতে,,
এভাবে দিন কাটলো আমি দিনদিন ঋতুকে ভীষণ ভালোবেসে পেলেছি,,,, এভাবে ২ বছর কেটে গেলো ওকে লুকিয়ে লুকিয়ে ভালোবাসা,,, দূর থেকে লুকিয়ে দেখা,,কখনো সাহস হয়নি ওর সামনাসামনি হতে,,
পরে পরিবারকে জানালে সবাই রাজি হয়,,কারণ সবাই জানে ঋতু অনেক ভালো মেয়ে,,,তাই সবাই মিলে এনগেজড করে পেলে,,কিন্তু আমি ওকে আংটি পরানোর সময় দেখলাম ওর চোখের কোণে পানি,, এটা দেখে বুকটা কেঁপে ওঠলো,,, ঋতু কি বিয়েতে রাজি নেই,,মনের ভিতর হাজারো প্রশ্ন জমলো,,,তাই ওর সাথে আলাদা দেখা করি,,,আমি ওর সাথে কথা বলে জানলাম ওর বয়ফ্রেন্ড আছে,,,, এই কথাটা শুনার পর আমার ভিতরটা দুমড়ে ওঠল,,, মনে হলো কেউ আমার শরীর থেকে আত্মাটা বের করে পেলছে,,,,নিজেকে সামলে চলে আসলাম,,কিন্তু ওর ফ্রেন্ড থেকে শুনলাম ওর বয়ফ্রেন্ড ভালো না,,,,খোঁজ নিয়ে দেখলাম আসলেই ওই ছেলেটা ঋতুকে ইউজ করছে,,,তাই আর বিয়েটা ভাঙ্গলাম না,,,জানি না ও আমাকে কখনও মেনে নিবে কিনা,,, কিন্তু ও আমার চোখের সামনে আছে এটাই আমার কাছে অনেক,,ওকে দেখে বাকি জীবনটা পার করে দিবো,,,কখনও কখনও ইচ্ছে হয় ওর ঘুমন্ত চেহারাটা ছোঁয়ে দিই,,কিন্তু বিবেক এ বাধা দেয়— তবুও ভালোবেসে যাবো সারাজীবন)

ডায়েরিটা পড়ে আমার খুব অপরাধবোধ কাজ করছে,,একটা মানুষ নিস্বার্থ ভাবে ভালোবেসেই গেলো আর আমি তাকে তার প্রাপ্য অধিকারটুকু দিতে পারছি না,,উল্টো তাকে সন্দেহ করছি,,,আসলেই ওনি খুব ভালো একজন মানুষ,, আদির জায়গায় অন্যকেউ থাকলে এতোক্ষণে তার অধিকার আধায় করে নিতো,,,,

ভাবতে ভাবতে বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখি রাত হয়ে গেছে,,,ডায়েরি পড়তে পড়তে কখন যে রাত হয়ে গেছে টেরই পেলাম না,,, ডায়েরিটা আলমারিতে রেখে বাইরে এসে আম্মুর সাথে গল্প করছি,,,,

কলিংবেল বাজতেই,,,আমি গিয়ে খুললাম,,, আদি আমার দিকে এক পলক তাকিয়ে চলে গেল,,,এটা কি হলো প্রতিদিন দরজা খুলতেই ও আমার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিতো,,,কেন যেন ওনার ইগনোর সহ্য হলো না,,,,,,

রুমে গিয়ে দেখি ওনি নেই,,,হয়তো ওয়াশরুমে গেলো,,আমি এসে সবার জন্য ডিনার রেডি করে টেবিলে আনলাম,,আদি ফ্রেশ হয়ে এসে টেবিলে বসলো,,নিচের দিকে তাকিয়েই খাচ্ছে,,,

আব্বুঃ তোর কি কিছু হলো,,,আসার পর থেকে দেখছি কেমন চুপচাপ,,

আদিঃ কই না তো কিছু হয়নি,,এমনি একটু মাথা ব্যাথা করছে,,

আব্বুঃ ও অফিসের চাপতো,,, একটু রেস্ট নে ঠিক হয়ে যাবে,,,

আদিঃ হুম,,

আদি খেয়ে চলে গেলো,,,আমি সব গুছিয়ে আসতেই তাহিয়া বায়না ধরেছে আজকে আমার কাছে থাকবে,,
কিন্তু আদিবা অনেক বুঝাচ্ছে কিন্তু ছোট বাচ্চা যেটা জেদ ধরেছে ওইটাই,,,আদিবা না পেরে বকা দিচ্ছে,, আমি গিয়ে ওকে কোলে নিয়ে আদিবাকে বুঝিয়ে ওকে আমার রুমে নিয়ে এলাম,,

এসে শুইয়ে দিতে,,,

তাহিয়াঃ আমি মামু আর তোমাল সাথে থাকবো,,

আমিঃ ওয়েট তোমার মামুকে ডেকে আনি,, ততক্ষণে তুমি সুন্দর করে শুয়ে থাকো,,,একটুও নড়বেনা ওকে,,

তাহিয়াঃ ওকে,,

আমি উঠে ওনাকে খুজতেছি ওনি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে,,,

আমিঃ আপনি এই ঠান্ডার মধ্যে এখানে কি করছেন,,,তাহিয়া আপানাকে ছাড়া ঘুমাচ্ছে না চলুন তো,,

আদি এখনো সামনের দিকে তাকিয়ে,,,

আদিঃ তুমি আমার পারমিশন ছাড়া আমার ডায়েরিতে হাত কেন দিয়েছো,,

( আদি ফ্রেশ হওয়ার জন্য আলমারি খুলতেই দেখলো কাপড় সব গুছানো আর ডায়েরিটা আগের জায়গায় নেই এক পাশ করে রাখা,,আদির আর বুজতে দেরি হলো না ঋতু ডায়েরিটা ধরেছে,,)

আদির কথা শুনে ঋতু শুকনো ডোক গিললো,,,

ঋতুর থেকে কথা না পেয়ে আদি ভ্রু কুঁচকে বলল,,

আদিঃ তুমি কি ডায়েরিটা সব পড়েছো?

আমিঃ (আওয়াজ ছোট করে)হুম,,

আদি আবারও সামনের দিকে তাকিয়ে থাকলো,,,

ঋতু ভয়ে ভয়ে,,,

আমিঃ আপনি আমাকে অনেক আগে থেকে ভালোবাসেন এটা এতোদিন বলেন নাই কেন,,,

আদি একটা তুচ্ছ হাসি দিয়ে,,

আদিঃ যেখানে বিশ্বাসই অর্জন করতে পারলাম না সেখানে আবার ভালোবাসার কথা বলা বিলাসীতা,,,হাহ

বলে রুমে চলে গেল,,

আদির কথায় নিজের কাছে খুব খারাপ লাগলো,,,

আমিও রুমে চলে এলাম,,দেখি মামা ভাগ্নী কথা বলছে,,আমি গিয়ে তাহিয়ার পাশে শুয়ে পড়লাম,,,মাঝখানে তাহিয়া আর দুপাশে আমি আর আদি,,,

তাহিয়াঃ মামু একতা গল্প শুনাও না

আদিঃ ওকে শুনাবো,, কিন্তু গল্প শুনে তোমাকে ঘুমাতে হবে।

তাহিয়াঃ আচ্ছা

আদি গল্প বলেই যাচ্ছে কিন্তু তাহিয়ার ঘুমের কোন নামই নেই।ও শুধু তারপর তারপর করছে,,, এদিকে গল্প বলতে বলতে আদি নিজেরই ঘুম চলে আসছে,,তবুও ঘুম ঘুম কন্ঠে যা পারছে গল্প বলছে আসলে গল্প বলছে না বকছে😆।এদের কান্ড দেখে আমার খুব হাসি আসছে,,

এক পর্যায় তাদের দুজনেরই ঘুম আসলো,,আমি আদির দিকে তাকিয়ে আছি,,এতো কাছ থেকে কখনো ভালো করে দেখিনি,,,ঘুমান্ত চেহারায় পুরো বাচ্চা বাচ্চা লাগছে,,,চোখে ক্লান্তি চাপ,,সারাদিন কাজের চাপ আর এখন ভাগ্নীর চাপে পুরা ক্লান্ত হয়ে গেছে,,,

আদির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কখন যে ঘুম চলে আসছে টেরই পাই নি,,,,

চলবে,,,

( গঠনমূলক কমেন্ট করবেন প্লিজ🙂)
[ ভুলত্রুটি হলে ক্ষমার চোখে দেখবেন🙏]

না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-১৩

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#Part_13

দরজা খুলে দেখলাম,,,আদি,,
কিছু বলতে যাবো আমাকে টেনে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দৌড়ে আমার রুমে যাচ্ছে ওনার,,এই কান্ডে আমি হা হয়ে গেছি,,ভাবছি বকাঝকা করবো তার সুযোগই পেলাম না,,

আমিও ওনার পেছন পেছন দৌড়ে গেলাম,,,দেখি ওনি আমার আলমারি থেকে জিনিস সব বের করে পেলছে,,
বলা নেই কওয়া নেই আমার সব জিনিস কেন বের করে পেলছে,,তাও এত তাড়াহুড়ো করে আমার রাগ উঠে গেল,,
আমিঃ এই যে আপনি আমার পারমিশন ছাড়া আমার জিনিসে হাত দিয়েছেন কেন আর এগুলো বের করছেন কেন,, ফাইজলামি পাইছেন নাকি,,,

আদি জিনিস বের করতে করতে,,

আদিঃ আরে আম্মুরা আর আদিবারা আসতেছে,,,এতোক্ষণে চলেও আসছে হয়তো,,,আমাদের আলাদা দেখলে অনেক প্রবলেম হয়ে যাবে,,,

আমি ওনার কথা শুনে,,,

আমিঃএসব কি বলছেন ওনার আসলে আমাদের কল করতো না,,,

আদিঃ আরে বাবা ওনারা হঠাৎই আসছে,,,আমি অফিসে থেকে আম্মুকে কল করছি আম্মু বলছে ওনারা আসতে আর বিশ মিনিট লাগবে,,বাট তোমাকে কল করতে করতে তুমি ধরছো না তাই আমাকে আসতে হলো,,

আমিঃআমি,,,

আমাকে কথা বলতে না দিয়ে,,

আদিঃ তোমার পটপটানী বন্ধ করে এগুলো আমার রুমে নিয়ে যাও,,এমনিতে আসতে আসতে পনেরো মিনিট চলে গেল,,, আর পাঁচ মিনিট আছে আমাদের হাতে,,,

আমিও দৌড়ে কাজে নেমে পরলাম,,,আমি আর ওনি আমার সব জিনিস ওনার রুমে নিয়ে যাচ্ছি,আমি জিনিস রেখে আসতেই দুজনে মুখোমুখি হয়ে গেলাম,ব্যাস খেলাম একটা থাক্কা,,

আমিঃ বাবাগো আমার মাথা পেটে গেলো,,গো,,( আমি মথায় হাত বুলাতে বুলাতে)

ওনি আমার কথা পাত্তা না দিয়ে চলে গেলো,,

আমার রাগ আরো বেড়ে গেলো,,দাড়াও বুজাবো মজা,,,।দাড়িয়ে দাড়িয়ে ভাবছি,,

আদিঃদাঁড়িয়ে না থেকে কাজও তো করতে পারো এগুলো তোমার করার কথা এখন আমাকে করতে হচ্ছে,,,, কি কপাল আমার,,

বলে চলে গেলো,,,,আমিতো রাগে ফুঁসছি এতো অপমান আমাকে,,আমাকে কাজের খোঁটা দিচ্ছে, সারাদিন ঘরের সব কাজ করি যে ওগুলো কি চোখে পড়ে না,,,আমি তেড়ে গিয়ে,,,ওনার সামনে দাড়ালাম,,

আমিঃ এই আপনি আমাকে কাজের খোঁটা দিচ্ছেন হা,,আজ একটু করে আপনার দম শেষ হয়ে গেল,,সারাদিন যে বাড়ির সব সামলাতে হয় সে গুলো কি দেখেন না,,হাহ,,

আদিঃ আমি আবার কখন তোমাকে কাজের খোঁটা দিলাম😕।

আমি কোমরে হাত দিয়ে,,

আমিঃ হুম এখনতো সব ভুলে যাবেন,,,আমাকে অপমান করা না,,, ওকে,,অপমান যখন করেছেন আমি আর একটা জিনিস ও নিয়ে যাবো না,,সব আপনি করবেন,,,,

ও অসহায়ের মতো মুখ করে,,,

আদিঃ আমি তোমাকে অপমান করি নাই,,জাস্ট তোমাকে হেল্প করার কথা বুজাইছি,,তুমি ভুল বুজতেছ!

আমিঃ কি আমও ভুল বুজছি,,হুহ আমি ভুল বুজি নাই আপনি আমাকে অপমান করেছেন।

আদিঃ আচ্ছা তুমি একটা কথা বলোতো,,তুমিকি শুধু আমার সাথেই জগড়া করার জন্য জন্ম হয়েছ,,,সবার সাথে দেখি মিষ্টি মিষ্টি কথা বলো খালি আমি ছাড়া,,( মুখ ফুলিয়ে)

আমিঃ কি আমি ঝগরুটে,, আমি আপনার সাথে,,,

বলতেই কলিংবেল বেজে ওঠলো,,

দুজনে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে জিনিস নিয়ে দিলাম দৌড়। সব জিনিস এলোমেলো করেই আদির আলমারির মধ্যে একবার ডুকাচ্ছি,,

সব নিয়ে ওনি দরজা খুলতে যাবে,,

আমিঃ এই যে কি করছেন আপনার গায়ে এখনো অফিস থেকে আসা কাপড় রয়েছে ওনারা কি ভাববে,,

আদিঃএখন কি করবো,,,

আমিঃ কি আর করবেন আমি দারজা খুলছি আপনি ওয়াশরুমে যান ফ্রেশ হতে,,,

আমি গিয়ে দরজা খুললাম,,,

আমিঃ আসসালামু আলাইকুম,,

আম্মু আব্বুঃ ওয়ালাইকুম সালাম,,

ওনার ভিতরে ডুকে,,,

শাশুড়ীঃ ওমা বাড়িটা কি সুন্দর করে গুছানো,,, এতোক্ষণে শুধু আদি থাকলে বাড়ির দিকে তাকানো যেত না। প্রত্যেক বার আমি এসেই সব গুছাই,,,, তোমাকে আদির সাথে পাঠিয়ে দিয়ে ভালোই হলো,,,

আদিবাঃ হা মা না হলে আমাকেও এতোক্ষণে কাজে লেগে যেতে হতো😒।

আমি একটা হাবলামার্কা হাসি দিলাম,,মনে মনে ভাবছি,,( হুম শুধু মাত্র আদির রুম ছাড়া। এখন যদি ওই রুমে যায় সবাই বমি করে দিবে,,,কি তাড়াহুড়ো করে সব আদির রুমে কোন রকম নিয়ে গেলাম,,)

আমি গিয়ে ওনাদের জন্য শরবত, নাস্তা বানাচ্ছি,,,
বানিয়ে এনে দেখি আদি সবার সাথে গল্প করছে,,

আমি গিয়ে সবাইকে নাস্তা দিলাম,,

তারপর রাতের খাবার রেডি করছি আর সামনের রুমে ওনাদের কান্ড দেখছি,,

ওদের দেখলে খুব ভালো লাগে,,আদি ওর আম্মু আব্বুর সাথে একদম ফ্রী,, যেন সবাই সমবয়সী,,আর বোনের সাথে তো বাচ্চাদের মতো খুনসুটি লেগেই থাকে,,আমার খুব বোনের কথা মনে পড়লো,,আমরাও সারাদিন সাপে-নেওলের মতো ঝগড়া লেগেই থাকতো৷,,

আদিবা এসে আমাকে হেল্প করছে,,,

সবাই এক সাথে বসে ডিনার করলাম,,,, সবার সাথে খুব ভালো লাগছে,,,অলওয়েজ তো একা একা থেকে বোর হয়ে গেছি,,,,

সবাই ডিনার করে বসার রুমে বসলো,,,হঠাৎ আদিবা বললো,,

আদিবাঃ ভাইয়া তোর মনে আছে শীতের সময় আমরা বাগানে আগুন জ্বালিয়ে আড্ডা দিতাম,,,গান করতাম আরো কতো কি,,

আদিঃ হুম মনে থাকবে না কেন,,খুব ভালো লাগতো,,,

আদিবাঃ চল না ভাইয়া এখন আমারা আগুন জ্বালিয়ে আড্ডা দি?

আদিঃ পাগল নাকি এখন কাজিনরা কেউ আছে? আড্ডা জমবে না,,

আদিবাঃ কি হবে আমদের ফ্যামেলির সাথে দিবো,,আর তুই আর আমি থাকলে আর কেউ লাগে নাকি,,,,, ( চোখ টিপে)

আদিঃআম্মু আর আব্বু যাবে নাকি এই শীতের মধ্যে,,

আদিবা আম্মু আব্বুর দিকে তাকিয়ে,,

আদিবাঃ কি হবে চলো না,, অনেক দিন তোমাদের সাথে আড্ডা দি নাই,,আর কয়েকদিন পরতো চলেই যাবো,, তাহিয়ার স্কুল খুললে,,

আব্বুঃ আচ্ছা চল এমনিতে অনেক দিন তোদের সাথে সময় কাটানো হয় নাই,,,এখন না হয় একটু আড্ডা দি, কি বলো আদির আম্মু

আম্মুঃ তোমরা যেটা মনে করো,,,

আদিবা আর আদি মিলে বাগানে আগুন জ্বালালো,,,

আমরা সবাই বাগানে গোল করে বসলাম,,তাহিয়া আমার কোলে ঘুমাচ্ছে,, আসার পর থেকে তাহিয়া আমার কোল থেকে নামছেই না

,,,আমার শশুড় তাদের আগের দিনের গল্প করছে,,,,,, আমি মনোযোগ দিয়ে শুনছি,,খুব ভালো লাগছে,,আদি হঠাৎ হঠাৎ আমার দিকে তাকাচ্ছে,, ব্যাপার

আদিবাঃ আব্বু তোমার গল্প সারাজিবন শুনে শুনে বোর হয়ে গেছি নতুন কিছু করতে হবে,, গান শুরু করতো ভাই,,

আব্বুঃ আরে গান এগুলো কোন নতুন জিনিস নাকি,,আমাদের সময় গানে গেয়ে কতো প্রাইজ পেয়েছি,,,

আমিঃ আব্বু তাহলে একটা গান করেন তো ভালোই হবে,,,

আদি আর আদিবাঃ না,,,,,,,,,,আব্বু তুমি গান গেয়েও না তার থেকে ভালো তুমি গল্প বলো,,( চিৎকার করে)

আমিঃ কেন গান গেলে প্রবলেম কি,,,

আম্মুঃ তোমার শশুড় মশাই এখন গান গেলে এখানে মানুষ থাকবে না,, সব কাক চলে আসবে,,

আব্বুঃতুমিও,,

আমি এবার বুজালাম সবাই কেন না না করছে ওনার গানের গলা সুন্দর না,, আমিও মুচকি হেসে দিলাম,,

আদিবাঃ ভাইয়া তুই একটা শুরু কর,,

আদিঃ আরে না আমার আজ মুড নেই।

আম্মুঃ আরে গা না একটা তোর গানের গলা সুন্দর হয়।

আদিঃ না আম্মু,,,

আমিঃ সবাই এতো করে বলছে একটা গান গাইলে কি হবে,,

আদি ঋতুর মুখে শুনে খুব খুশী হলো,,যেন ঋতু কথার জন্য ওয়েট করছে,,,

আদিঃ ওকে সবাই বলছো যখন,,,, আদিবা গিটার টা আনতো,,

আদিবা উঠতে উঠতে বলল,,

আদিবাঃ আমাদের কথায় না ভাবি বলছে তাই বল,,হ হা

সবাই হেসে উঠলো,,,,

আমার খুব লজ্জা লাগলো আদিবার কথায়,সামনে তাকিয়ে দেখি আদি হাবলার মতো দাঁত বের করে হাসছে,,সরম এর ছিটেফোটা ও নেই,,,

আদিবা গিটার আনলো,,

আদি গিটার বাজাতে,,, ওর আব্বু

আব্বুঃ এই থাম,,,আগে থেকে বলে রাখি,, তোর ওই হিন্দি পিন্দি গান না গাইবি,,,বাংলা গান গাইবি,,,বুজচ্ছিস।

আদিঃ ওইটা হিন্দি পিন্দি গান না শুধু হিন্দি গান,,,

আব্বুঃ যেটাই হোক গাইবি না।

আদিঃ আচ্ছা,,,,
আদি আমার কানে এসে ফিসফিস করে বললো,,

আদিঃ আজকের গানটা শুধুই তোমার জন্য,,

আদি গিটার বাজিয়ে সুর তুললো,,

🎸🎸🎸🎸

বকুলের মালা শুকাবে,,,🎶
রেখে দেব তার সুরভী,,,🎶
দিন গিয়ে রাতে লুকাবে,,🎶
আমি মিনতি করে গেলাম,,,🎶

তুমি চোখের আড়াল হও,,,🎶
কাছে কিবা দূরে রও,,,🎶
মনে রেখো আমিও ছিলাম,,🎶

এই মন তোমাকে দিলাম,,🎶
এই মন প্রেম তোমাকে দিলাম,,,, 🎶

তুমি চোখের আড়াল হও,,,,, 🎶
কাছে কিবা দুরে রও,,,,🎶
মনে রেখো আমিও ছিলাম,,,🎶

এই মন তোমাকে দিলাম,,,, 🎶
এই প্রেম তোমাকে দিলাম,,,,🎶

আমি অবাক নয়নে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি,,,ওনি কেমনে জানে এটা আমার খুব ভালোলাগার একটি গান। এটি যতই পুরাতন হোক না কেন আমার জন্য কখনও পুরান হয় না।( আমার ও খুব ভালো লাগে– লেখিকা😊) সব সময় শুনতে ভালো লাগে,,
ওনার কন্ঠে গানটা আসলে খুব সুন্দর লাগছে,,,,

ভালোবেসে আমি বারে বার,,,🎶
তোমারিও মনে হারাবো,,, 🎶
এ জীবনে আমি যে তোমার,,,,, 🎶
মরণে ও তোমারি রবো,,,🎶
তুমি ভুলো না আমারই নাম,,,🎶

তুমি চোখেড আড়াল হও,,,🎶
কাছে কিবা দুরে রও,,🎶
মনে রেখো আমিও ছিলাম,,,🎶

এই মন তোমাকে দিলাম,,, 🎶
এই প্রেম তোমাকে দিলাম,,🎶

(অনেক দিন পর গানটা শুনলাম,,খুব ভালো লাগলো তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আশা করে ভালো লাগবে🙂)লেখিকা

গান শেষে,,,,

আব্বুঃ আহা অনেক দিন পর গানটা শুনলাম,,,ভালো গেয়েছিস,,যা আজ একটা ভালো গান গেলি তোর ওই হিন্দি গানের থেকে,,,,

আদিঃ thanks abbu,,,

আদিবাঃ আসলে ভাইয়া গানটা সেই হইছে,,,

আদিঃ কে গেয়েছে দেখতে হবে না,,

আদিবাঃ হুহ ওমনি ভাব নিয়ে পেলছে,

আম্মুঃ হয়েছে হয়েছে এবার ঘুমাতে চল তাহিয়ার ঠান্ডা লেগে যাবে,,,

সবাই চল আসলাম,,,

আমি রুমে এসে আলমারি থেকে সব বের করে ঘুছিয়ে রাখছি,,,আদি ওয়াশরুম থেকে এসে,,বালিশ নিয়ে সোফায় শুতে যাচ্ছে,,,,

এমনিতে শীত পড়ছে তার উপর ওনি যেই লম্বা সোফায় ঠিক মতো শুতে পারে না,,,আগে ও অনেক কষ্ট হতো,,,ওনি শুধু শুধু আমার জন্য কষ্ট কেন করবেন,,

আমিঃ আপনি বেডে গিয়ে শুয়েন আমি সোফায় থাকবো,,

আদিঃ আমাকে দেখে কি মনে হয় আমি বেডে শুয়ে তোমায় সোফায় থাকতে দিবো।তুমি আমাকে না মানতে পারো কিন্তু আমিতো তোমাকে স্ত্রী মানি,,,সো আমার রেসপন্সিবিলিটি তোমাকে সুখে রাখা,,,

আমি মাথা নিচু করে পেললাম,,,

আমিঃ তাহলে আপনিও বেডে থাকেন, আর খাট তো অনেক বড় দুজনের মাঝে অনেক ডিস্টেন্স থাকবে,,,মাঝখানে কোল বালিশ দিলে হবে,,

আদিঃ তুমি শিউর তো,,,

আমিঃ হুম,,

দুজনে দুপাশ হয়ে শুয়ে পড়লাম,,,মাঝে কোলবালিশ,,,

সকালে চোখ মেলতে আমি সামনের দিকে তাকিয়ে দিলাম একটা চিৎকার,,,,,,

চলবে,,,

না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-১২

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#Part_12

রিয়া আর আমি কফিশপে সামনাসামনি বসে আছি,,,,

নিরবতা ভেঙে রিয়া বলল,,,

রিয়াঃ কিরে এতো সিরিয়াস হয়ে আছিস?কিছু হয়েছে!

আমিঃ আচ্ছা তুই আমাকে সত্যি ফ্রেন্ড ভাবিস?

রিয়াঃ এসব কি বলছিস তুই আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড। ছোটবেলা থেকে তুই আমার চলার সাথী। আর তুই বলছিস আমি তোকে ফ্রেন্ড ভাবি কিনা!

আমি রিয়ার হাত ধরে,,,,

আমিঃ তাহলে আমাকে কথা দে আমি তোকে যেটা জিঙ্গেস করবো তুই সত্যিটা বলবি?

রিয়াঃ আমি তোকে কোন দিন মিথ্যা বলেছি?বল কি বলবি?

আমিঃ আমি জানি তোরা আরিয়ানের ব্যাপারে আমার থেকে কিছু লুকাচ্ছিস,,,আজ তোকে বলতেই হবে আরিয়ানের ব্যাপারে কি জানিস?

রিয়া কিছুটা আঁতকে ওঠে আরিয়ানের নাম শুনে,,

রিয়াঃ তুই এখন এসব কেন জিজ্ঞেস করছিস,, তোর বিয়ে হয়ে গেছে আরিয়ানের কথা ভুলে যা।

আমিঃ এখানে ভুলে যাওয়ার কথা হচ্ছে না।তোরা যে আরিয়ানের সম্পর্কে ভুল ভাবছিস ওইটা আমি মানতে পারবো না,কারণ আমি ওকে ভালোবাসি,, ভালোবাসা পেতে হবে এমন কোন কথা নেই,,কিন্তু ওর সম্পর্কে তোদের ভুল ধারণা ভাঙ্গতেই হবে।প্লিজ বল।

রিয়াঃ ঠিক আছে বলবো,,আগে বল সব শুনার পর নিজেকে শক্ত রাখবি,ভেঙে পড়বি না।

আমি তুচ্ছ হাসি দিয়ে

আমিঃ শক্ত তো আমি অনেক আগেই হয়ে গেছি,,, তুই বল সমস্যা নাই।

রিয়াঃ আরিয়ানের সম্পর্কে আমাদের কোন ভুল ধারণা নেই। ওর থেকে নোংরা মানুষ আর কোথাও নেই। ও শুধু সবার সামনে ভালো সাজার নাটক করে,,,ও আসলে অনেক ভয়ানক। ও তোকে কখনো সত্যিকারে ভালোবাসে নাই,,,তুই কখনও ছেলেদের সাথে কথা বলতি না, আর বলবি না এই বিষয় নিয়ে আরিয়ানের বন্ধুরা কথা বলছিল,,আরিয়ান বাজি ধরেছে তোর সাথে প্রেম করে দেখাবে,,, তাই ও তোর সাথে ফ্রেন্ডশিপ করে,,,,ওর অনেক মেয়ের সাথে রিলেশন আছে,, এমনকি আমার কাজিনকে ও ছাড়ে নাই।ও সবার সাথে প্রেমের অভিনয় করে,,,এসব জানার পর ওকে আমি থ্রেট দি যাতে তোর সাথে কথা না বলে,,,,ও আমার কাজিনের খারাপ খারাপ কিছু পিক দিয়ে বলে,,আমি যদি তোকে ওর সম্পর্কে সব বলে দিই তাহলে আমার কাজিনের সব পিক ভাইরাল করে দিবে,,,আমি কি করে পারতাম আমার কজিনের ক্ষতি হতে,,,,কিন্তু আমি সব সময় তোকে ইঙ্গিত দিতাম ওর ব্যাপারে,,,তুইতো ওর প্রেমে এতই অন্ধ হয়ে ছিলি যে আমার কোন কথাই বুজার চেষ্টা করিস নি।যখন শুনলাম তোর বিয়ে ঠিক হয়েছে আমি খুব খুশি হয়ছিলাম ওর হাত রক্ষা পাবি কিন্তু তুই গিয়ে আদি ভাইয়াকে সব বলে দিয়েছিস তোর ভালোবাসার কথা,,তখন বাধ্য হয়ে আদি ভাইয়াকে সব কল করে বলি যাতে বিয়েটা না ভাঙ্গে,,,,,,

রিয়ার কথা শুনে আমার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে,,,যার জন্য কেঁদে কেঁদে বুক ভাসিয়েছি,,,যাকে সত্যিকারে ভালোবেসেছি সে আমাকে ধোঁকা দিয়েছে। পারছি না সহ্য করতে মনে হচ্ছে বুকটা ক্ষত বিক্ষত করে হয়ে গেছে।যখন ভালোবাসার মানুষটাই ধোঁকা দেয় তখন পুরা পৃথিবীটা মিথ্যে মনে হয়,,,,

রিয়াঃ আম ছরি আমি আগে তোকে বলতে যেয়েও বলতে পারিনি কারণ আমার কাজিনের পিক ছিলো ওর কাছে।

আমিঃ তুই তোর জায়গায় ঠিক আছিস,,দোষ আমারই তোর কথাগুলো আমি আগে বুঝার উচিত ছিল ,কিন্তু আমি ওকে ছাড়বো না ও কি কলেজে আছে এখন?

রিয়াঃ হয়তো,,কিন্ত তুই কিছু করিস তাহলে ঝামেলা হবে,,

আমিঃ কিছুই হবে না,,,

বলে কলেজে চলে গেলাম,,,

কলেজে গিয়ে দেখি আরিয়ান হেসে হেসে আড্ডা দিচ্ছে।হায় এর জন্য কেদে কেদে শেষ হয়ে যাচ্ছি,,,, আমি গিয়ে ওর সামনে দাঁড়ালাম,,,

আরিয়ান আমাকে দেখে অনেকটা আঁতকে গেছে হয়তো আমাকে আশা করেনি এখানে,,,

আরিয়ানঃ ঋতু তুমি,,,,

বলতে গালে গালে দিলাম থাপ্পড়,,, তারপর শার্টের কলার ধরপ,,,

আমিঃ কুত্তার বাচ্ছা তুই আমার সাথে ভালোবাসার নাটক করেছিস,,মেয়েদের নিয়ে ছেলে খেলা কীা তোর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে না,,,,! বলে দিলাম আরো কয়েকটা থাপ্পড়,,

কলেজের সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে যেন বিনা টাকায় শুটিং চলছে,,

আরিয়ানঃ ঋতু ছাড় বলছি,,, ভালো হবে না বলছি,,,

কলারটা আরো জোরে টেরে,,

আমিঃ ভালো তো তোর হবে।তোর মতো একটা জঘন্য ছেলেকে আমি ভালোবেসেছি এটা ভাবতেও ঘৃণা লাগছে,,,,তোর মিথ্যে ভালোবাসায় আজ আমার সত্যি ভালোবাসা হেরে গেলো।দোষ আমার ছিলো তোর মতো ছেলেকে ভালোবেসেছি।কিন্তু কথায় আছে আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে,,,আমার ভাগ্য ভালো ছিলো তোর মতো লম্পটকে বিয়ে করিনি,,,

বলে কলার ছেড়ে ধাক্কা মারি যার ফলে ও মাটিতে পড়ে যায়,,,

আমিঃ তোর শাস্তি আমি না একদিন আল্লাহ দিবে,,,।

বলে চলে যেতেই আবার পিছন ফিরে,,,

আর তুই যদি রিয়ার কাজিনের সাথে কিছু করার চেষ্টা করিস তাহলে তোকে জেলে ভাত খাইয়ে ছাড়বো কথাটা মনে রাখিস,,,,

বলে চলে এলাম,,

আরিয়ান এখনো মাটিতে বসে আছে।কলেজের সবাই ওর দিকে তাকিয়ে আছে,,ও রাগে ফুঁসছে, চোখ থেকে যেন অগ্নিগিরি বের হবে,, হাতের শক্ত করে,,,

আরিয়ানঃ আজ সবার সামনে তুই আমাকে অপমান করেছিস,,অনেক বড় মিস্টেক করে ফেলেছো মিসেস ঋতু,,, এর ফল তোমাকে ভুগতে হবে,,,,আই সোয়ের তোর জীবনটা শেষ করে দিবো,,,

এদিকে ঋতু কাঁদতে কাঁদতে গাড়িতে ওঠে গেলো,,,রিয়ার সাথেও কথা বলেনি,,,,,

কি অপরাধ ছিল আমার জীবনে একটাই মানুষকে ভালোবেসেছি তাও ভুলা মানুষকে। কিন্তু আমার ভালোবাসায় তো মিথ্যে ছিল না,, অভিনয় ছিল না তবুও কেন ধোঁকা পেলাম,,,আজকে যেন আমার পৃথিবীটাও মিথ্যে মনে হচ্ছে,,,,, কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি এসে পৌঁছালাম,,, আসতে বিকেল হলো,,,,বাড়ি এসে দেখি আদি অফিস থেকে চলে এসেছে,,, আমি কিছু না বলে রুমে গিয়ে দরজা অফ করে দিলাম।

আদি কোন রিয়াকশন করলো না,কারণ আদিকে রিয়া ফোন করে সব বলেছে,,,,,,তাই আদিও চায় ঋতু কিছুক্ষণ একা থাকুক,কাঁদুক এটা যেন ওর শেষ কান্না হয়,,

আদি রাতে অনেকবার ডাকছে ঋতুকে কিন্তু ঋতুর কোন সাড়া পেল না।তাই আদি আর জোর করলো না,,

এদিকে ঋতু কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গেছে।সকালে ওঠে ঋতু মনে পরলো রাতে যে সে শুয়ে পড়লো সে তো কোন রান্নাও করে নাই।তাহলে আদি কি খেলো,,,,

রুম থেকে বেরিয়ে দেখলাম আদি কিচেনে নাস্তা বানাচ্ছে,একটু খারাপ লাগলো,,,

আদি ঋতুকে দেখলো, ঋতুর চোখ ফুলে গেছে,,,,

আদিঃ তুমি এতো তাড়াতাড়ি ওঠে গেলে যে,,

আমিঃ কই তাড়াতাড়ি,, আচ্ছা আপনি কাল রাতে কি খেয়েছেন,,,আসলে আমি,,

আদিঃ তোমাকে কিছু বলতে হবে না আমি সব জানি

আমি অবাক তাকিয়ে আছি ওর দিকে,,

আদিঃ একটা কথা বলি ঋতু যেটা চলে গেছে ওইটা অতীত।ওইদিন রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর আমাকে রিয়া কল বলেছে বিয়েটা না ভাঙ্গতে আরিয়ান ভালো না তারপর খোঁজ নিয়ে দেখি আসলে আরিয়ান ভালো ছেলে না যদি ভালোই হতো তোমার বিয়ের দিন পার্টি করতো না।এখন যাও ফ্রেশ হয়ে আসো চোখমুখের যে হাল করেছ পুরাই পেত্নী লাগছে,,,

আমি মুচকি হেসে চলে আসলাম,,,

এভাবে কয়েকটা দিন চলে গেল,,,এই কয়েকদিন অনেক কেয়ার করেছে,,কিন্তু রাত হলে কষ্টাটা বেড়ে যায়।কাউকে সত্যিকারে ভালোবাসলে তার পাওয়া আঘাত সহ্য করা যায় না।নিজেকে শূন্য মনে হয়।

আজকে কেন জানি মনটা একদমই ভালো লাগছে না।একাএকা আর কতো,,,আরিয়ান সেই সকালে যায় যে সন্ধ্যায় আসে,,বাকিটা সময় একাই কাটে,,,,হয়তো আমাদের সম্পর্কটা স্বাভাবিক না তবুও একটু কোথাও ঘুরাতে নিয়ে গেলে কি এমন হয়,,,মনটা একটু ভালো লাগতো,,আসার পর থেকে এই বাড়িটায় বন্দী হয়ে আছি,,

এগুলো ভাবছি হঠাৎ কলিংবেল বেজে ওঠলো,,, এখন যদি আদি হয় তাহলে কিছু কথা শুনাই দিবো,, হুহ,,

বলেই দরজা খুললাম,,

চলবে,,,,

( কেমন হলো বলবেন আমার পাঠিকারা,,,🙂)

[তাড়াতাড়ি টাইপের কারণে বানান ভুল হলে পারে ক্ষমা করে দিবেন🙏🙏🙏]

না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-১১

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#part_11

🌼🌼🌼🌼🌼

সবাই সামনে তাকিয়ে অবাক হয়েগেছ,,

ঋতু গিটার বাজাচ্ছে,,,
সবাই খুব অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,,,

ঋতু চোখ বন্ধ করে গাওয়া শুরু করলো,,,,
🎸🎸🎸🎸
🎵🎵🎵🎵

Dil ka dariya… 🎼
Beh hi gaya…🎼
Ishq ibbadat… 🎼
Bann hi gaya…🎼

আদি এতোক্ষণ বাইরে দাড়িয়ে ছিল,, হঠাৎ চেনা কন্ঠ কানে গেল আদির,,আদি দৌড়ে এসে দেখলো ঋতু গান গাচ্ছে,,, আদি অবাক হয়ে শুনছে,,
🎵🎵🎵🎵🎵

Khudko muje… 🎼
Tu saunp de…🎼
Meri Zarrurat…. 🎼
Tu bann gaya….🎼

Baat dil ki….🎼
Nazron ne ki…🎼
Sach keh raha….🎼
Teri kasam….🎼

Tere binn ab na…🎼
Lenge ik bhi dum…🎼
Tuje kitna…..🎼
Chahne lage hum…..🎼

Tere sath ho….🎼
Jayege khatam…🎼
Tuje kitna….. 🎼
chahne lage hum…… 🎼

🎸🎸🎸🎸🎸🎸
ঋতু চোখ বন্ধ করে আরিয়ানের সাথে প্রতিটি মুহূর্ত মনে করে গান গাচ্ছে। এই গানের সাথে তার কষ্টটা কমছে মনে হচ্ছে,, আদি বুজতেছে ঋতুর খুব কষ্ট হচ্ছে কিন্তু কি করবে সে ভুল মানুষকে ভালোবেসেছে,,,
ঋতু,,,

iss jagah aa gayi…🎼
Chahatein ab meri….. 🎼
Chhen loonga tumne…🎼
Saari duniy se hi…🎼

Tere ishq pe haan haq….🎼
Mera ho toh hai…🎼
Keh diye hai ye maine…… 🎼
Mere raab se bhi….🎼

jis raaste tu… 🎼
Na mile… 🎼
Uspe na ho…🎼
Mere kaddam….🎼

Tere binn ab na…🎼.
Lenge ik be dum……. 🎼
Tuje kitna….🎼
Chahne lage hum…..🎼

Tere sath ho..🎼..
Jayenge kasam…… 🎼
Tuje kina…..🎼
Chanhne lae hum….🎼

O,,,o,,,

গান শেষ করে চোখের কোণের পানি মুছে নিলো,,,

সবাই হাততালি দিলো,,বর্ষাতো রাগে ফুঁসছে,,,
ঋতু বর্ষার সামনে গিয়ে বলল

আমিঃ সবাইকে আমি কেমন, আমি কি পারি না পারি এগুলো বলা লাগে না আমি কাজ করে দেখাতে ভালোবাসি,,,,।আর কি যেন বললে আমি আদির যোগ্য না,,,আমি কারো যোগ্য হওয়ার জন্য জন্ম হইনি আমি নিজের জন্য নিজের যোগ্যতা অর্জন করি,,কাউকে দেখানোর জন্য না।আর একটা কি যেন বললে আমি গ্রামের মেয়ে তাই ফ্যাশন জানি না,শুধু মেকাপ করলে তাকে ফ্যাশন বলে না ,,,আমাদের বাসায় এসো ফ্যাশন কাকে বলে দেখিয়ে দিবো।সো সামনে থেকে আমাকে কিছু বলার আগে হাজার বার চিন্তা করবে,,,,,( আঙ্গুল তুলে)

সবাই অবাক হয়ে শুনছে,,,আরিশা আর হাসিব তো মনেমনে খুশী হয়েছে।আদি আগামাথা কিছু বুজতেছে না কারণ ও তখন ছিলো না

ঋতু কথা গুলো বলে ভাব নিয়ে আরিশা সহ অন্য পাশে চলে গেল।সবাই আবার যার যার মতো কথা বলছে,,,হাসিব আদিকে কিছুক্ষণ আগের কথা বললো,,আদিতো রেগে ফায়ার,,, আদি বর্ষা কাছে গিয়ে,,,,

আদিঃ তোর সাহস কি করে হলো ঋতুকে অপমান করার।তোর এই রুপ তো আমি আগে থেকে জানি আজ ঋতুকে ও দেখাই দিলি তুই আর ঋতুর মধ্যে কতো তফাত,,, নেহাত মামার জন্য তোকে অফিসে রেখেছি কিন্তু আজ যেটা করলি সেটার জন্য তোর ক্ষমা নেই,তুই আর অফিসে যাবি না,,,

বলে আদি চলে গেল।বর্ষা রাগে আর এক মুহূর্ত দাড়ালো না বাড়ি চলে গেলো,,,

এদিকে আরিশা আর ঋতু অনেক গল্প করছে।ঋতু জানলো আরিশার নাকি ২ বছর আগে থেকে বিয়ে ঠিক হয়ে আছে সামনের মাসপ বিয়ে।এভাবে দুজন কথা বলছে,হাসছে,,,,আর আদি দূর থেকে ঋতুর হাসি ভরা মুখ দেখছে,,,

সবাই এক সাথে ডিনার করে বিদায় নিচ্ছে। আরিশা ঋতুকে সবার থেকে আলাদায় এনে বলল,,,,

আরিশাঃ তোমাকে কিছু কথা বলবো কিছু মনে করবে না তো।।

আমিঃ কি মনে করবো আবার,আপনি বলেন,,,

আরিশাঃ আদি তোমাকে অনেক ভালোবাসে, এখন থেকে না আরো দুইবছর আগে থেকে,,,কতোটা ভালোবাসে বলে বুজাতে পারবো না,,, আদির একটা ডায়েরি আছে ওটা পড়লে বুজবে,,। আরেকটা কথা আরিয়ানকে পারলে ভুলে যেও,,ও ভালো ছেলে না।ও একটা,,,,

আর বলতে পারলো না আদি চলে আসলো,,
আদিঃ তোমাদের কথা এখনো শেষ হয়নি।লেট হয়ে যাচ্ছে চলো,,,।

আরিশাঃ ওকে চল,,,
আমার তো পা চলছে ও না আরিশা এটা কি বলল,,আরিয়ান ভালো ছেলে না! না আরিয়ান খারাপ হতেই পারে না। ও আমাকে খুব ভালোবাসে।

বাইরে গিয়ে আরিশা তার গাড়ি করে চলে গেল,,আমারও যাওয়ার জন্য গাড়ীতে উঠলাম,,,

আমার মাথায় আদির কথাও আসলো ও আমাকে ভালোবাসে তাও দু’বছর ধরে,,,,আদির থেকেও আরিয়ানে কথা আমার বেশি খটকা লাগছে।কি হচ্ছে আমার সাথে,,,, ( অন্যমনষ্ক হয়ে কথা গুলো ভাবছি)

আদিঃ ঋতু এনি প্রবলেম অনেকক্ষণ থেকে দেখছি তুমি অন্যমনষ্ক হয়ে আছো,,বর্ষার কথায় খারাপ লাগেছ? আসলে ও এমনই সবাইকে অপমান করার জন্য অলওয়েজ প্রস্তুত থাকে।

আমিঃ না ওর কথায় কি মনে করবো।যার যে অভ্যাস সে তো তেমনি করবে।এটা আপনার মামীর দোষ,আপনার মামী এ সঠিক শিক্ষা দিতে পারে নাই।

আদিঃ হুম আমার মামীও এই টাইপের কিন্তু আমার মামা অনেক ভালো,ভালো পেয়েই ওনার মাথার উপর ওঠে গেছে,,, আচ্ছা একটা কথা বলবো?

আমিঃ হুম বলেন?

আদিঃ তুমি অনেক ভালো গান গাও,বাট এতো ভালো কেমনে পারো,,

আমিঃ আমার গান ভালো লাগে আমার যখন মন খারাপ থাকে নিজে নিজে গান গাই। আর গিটার বাজানো শিখেছে ইউটিউব থেকে।

আদিঃ ও আচ্ছা।

আমিঃ আপনিও ভালো গান পারেন।

আদিঃ thanks.

আবার আমাদের মাঝে নিরবতা বিরাজ করছে,,,,,

বাড়ি এসে আমার রুমে শুয়ে আছি,ভাবছি আরিশা আপু আরিয়ানের কথা কেন বললো,,,হঠাৎ মনে আসলো আরিয়ানের কথা শুধু আরিশা আপু না আদি আর রিয়াও বলেছে।কিন্তু আমি তেমন পাত্তা দিইনি।আরিয়ানের ব্যাপারে আদি আর রিয়া কি এমন জানে যে ওর নামে খারাপ বলছে।আসলে কি আমার থেকে কিছু লুকিয়ে আছে? তাহলে সেটা কি।না আমাকে আরিয়ানের ব্যপারে সবার এরকম ভাবার কারণ জানতেই হবে।

কি করবো,, কিরবো,ভাবছি।।আমাকে সব জানতে হলে রিয়ার সাথে সামনাসামনি কথা বলতে হবে।রিয়াকে কল দিলাম,,

রিয়াঃ কিরে জানু বর পেয়েতো আমাকে ভুলে গেছিস,,

ঋতুঃ কাল কলেজ যাবো,,,।তোর সাথে কথা আছে

রিয়াঃ কি কথা। কিছু হয়েছে? ( চিন্তা সুরে)

ঋতুঃ না।এমনি তোর সাথে কথা আছে।কলেজের পাশে কফিশপে দেখা করবো।

রিয়াঃ ওকে।

কল কেটে ভাবছি,,কাল সব ক্লিয়ার হবে,,আমার আরিয়ান খারাপ হতে পারে না,,,আমি সবার ভুল ভেঙ্গে দিবো,,বলে ঘুমিয়ে পড়লাম,,,

সকালে নাস্তা বানিয়ে ওয়েট করছি আদির জন্য। তখনি আদি ফ্রেশ বের হলো,,

ঋতুঃ আজকে আমি কলেজে যাবো টিসি আনতে।

আদিঃ আজকে কেন আরো কয়েকদিন পরে যেও?

ঋতুঃ না আমি আজকে যেতে হবে,,আর রিয়াকে বলা হয়ে গেছে ও আমার জন্য ওয়েট করবে।

আদিঃ ওকে।আমি যাব তোমার সাথে?

আমিঃ ( এইরে ওকে যেতে দেওয়া যাবে না)না না আপনাকে যেতে হবে না।আমি যেতে পারবো আর রিয়া তো থাকবেই।

আদিঃ ( আমারও অফিসে অনেক কাজ তাই আর জোর করলাম না) ওকে তবে আমি ড্রাইভারকে বলে দিচ্ছি ও তোমাকে দিয়ে আসবে,,,।

আদি যাওয়ার পরে আমিও বেরিয়ে গেলাম,,,অনেক টেনশন হচ্ছে,,, কি হবে আজকে,,

কফিশপে আমি আর রিয়া সামনাসামনি বসে আছি,,,,

চলবে,,,,

( কাল ধামাকা হবে😋।ভুল হলে ক্ষমার চোখে দেখবেন🙏)

না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-১০

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#Part_10 (party special)

আদির জন্য ওয়েট করতেছি,,হঠাৎ মোবাইলে মেসেজ আসলো,,,

আদি মেসেজ দিয়েছে নিচে নামার জন্য,,, ও নাকি নিচে আছে,,,

আমি ঠিকঠাক হয়ে নিচে গেলাম,,,,আমার চোখ কিছুক্ষণের জন্য আটকে গেছে সামনে থাকা ব্যাক্তিটির উপর,,

আদি একটা কালো শার্ট পড়েছে,,,, হাতে একটা কালো ঘড়ি , চুল গুলে একপাশ করে উপরের দিকে স্পাক করেছে,,,কয়েকটা চুল সামনে দিকে পড়ে আছে,,,আদি গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে মোবাইল টিপছে,,,

আমি ওর সামনে গিয়ে,,,

আমিঃ চলুন,,

আদি আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,,

আদিঃ ( ঋতুর দিক থেকে চোখ ফিরানো যাচ্ছে,,,মনে হচ্ছে কালো শাড়ী ওর জন্যই বানানো হয়েছে।তেমন সাজে নাই তবুও কি মায়াবী লাগছে অনেক কষ্টে নিজেকে সামলিয়ে বললাম) চলো,,,

(গাড়ীতে ওঠে,, আমি ড্রাইভ করছি ঋতু আমার পাশেই,,,না চাইতেও ওর দিকে চোখ চলে যাচ্ছে)

আদি বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছে কিছুটা অস্বস্তি লাগছে এভাবে তাকানোও,,

আমিঃ সামনের দিকে তাকিয়ে ড্রাইভ করেন না হয়ে এক্সিডেন্টে হতে পারে।

(ঋতুর কথা লজ্জা লাগলো তাই ড্রাইভ এ মন দিলাম,,,)

আজকে কেন জানি আদির খুব খুশী লাগছে,,হয়তো তার প্রেয়সীকে এতো কাছে পাওয়ায়।স্বামীর অধিকার নাই বা পেলাম এভাবে পাশে পেলেই যথেষ্ট।

ঋতু বাইরের দিকে তাকিয়ে ভাবছে,,,, আজ দিনটা অন্যরকম হলেও পারতো তার মনের মানুষের সাথে। আমিকি কখনও আরিয়ানকে ভুলতে পারবো,,,হয়তো পারবো না আবার হয়তো পারবো,,,,জানি না ভাগ্য আমাকে কোথায় নিয়ে যায়,,

ভাবতে ভাবতে গাড়ি এসে থামলো একটা ক্লাবে,,,দেখে অনেক হাই সোসাইটির মনে হচ্ছে।
গাড়ি থেকে নেমেই আদি বলল,,,

আদিঃ ঋতু এখানে একটু হাসবেন্ড ওয়াইফ এর মতো অভিনয় করে থাকতে হবে আর আমার ফ্রেন্ড হয়তো দুষ্টামি করবে আমাদের নিয়ে প্লিজ কিছু মনে করো না,,,

আমিঃ এটা কোন ব্যাপার না আমার তো সারাজীবনই অভিনয় করে কাটাতে হবে,,,,

ঋতুর কথায় আদির খারাপ লাগলো,,,কিন্তু তা প্রকাশ না করে ভিতরে গেল,,,

ভেতরে যেতেই উপর থেকে গোলাপ ফুলের পাপড়ি পড়ছে আমাদের উপর,, সব লাইট আমাদের উপর,,,, আদি আমার হাত ধরেই নিয়ে যাচ্ছে,,,,,এটা আমার খারাপ লাগার কথা কিন্তু খারাপ লাগছে না এক অন্যরকম লাগছে,,,

( সবার নজর আমাদের দিকে,,অনেকে বলছে দুজনকে মানিয়েছে,,,,খুব নার্ভাস লাগছে)

আদি সবার সাথে আমাকে পরিচয় করাচ্ছে,,,,সামনে যেতেই বর্ষাকে দেখলাম।ওকে দেখেই মুখে বিরক্তিকর ভাব চলে আসলো,,,আদি আমার পাশেই ছিল,,,,

আমিঃ আপনি তো বলছেন এখানে আপনার ফ্রেন্ড আর অফিসের কলিগরা আসবে তাহলে বর্ষা আসলো কেন?

আদিঃ বর্ষাতো আমার অফিসে জব করে,,

আমিঃ ও তো এখনো পড়তেছে জব কেন করে,,

আদিঃ তা জানি না আমার আব্বুকে পাগল করে ফেলছিলো আমাদের অফিসে জব করার জন্য,, তাই আব্বু না করতে পারে নাই।

(ও জব করতে পাগল হয় নাই অফিসে আপনাকে দেখবে বলে জবের নাম বলেছ হুহ😏।কিন্তু আমি কেন চিন্তা করছি এ ব্যাপারে,,, আদিকে একটা না সব মেয়ে দেখুক আমার কি, আমার তো এসব কিছুতে যায় আসে না,,, তাহলে চিন্তা কেন করছি,,,)মনে মনে।

বর্ষাঃ চলো ভাবি তোমাকে আমার ফ্রেন্ডের সাথে পরিচয় করিয়ে দিই।

এই মেয়ের ভালো কথা আমার ঠিক হজম হচ্ছে না।তবুও গেলাম ওর সাথে,,,

বর্ষা তার বান্ধবীদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে,,,
বর্ষাঃ গাইজ এনি হচ্ছেন আমাদের কিউটি বয় আদির ওয়াইফ ঋতু, গ্রাম থেকে থাকে,,( টিটকারি করে)

এবার বুজলাম তার আসল রুপ,,, আসলে এই মেয়ে ভালোর যোগ্য ও না। আমাকে ছোট করার জন্য মেয়েটি এসব বলছে,,,,

বর্ষার ফ্রেন্ড একটা বলল,,
মেয়েটিঃ ভাবি কি মেকাপ করতে জানেন না।এতো নরমাল হয়ে কেউ পার্টিতে আসে নাকি।

বর্ষাঃআরে গ্রামের মেয়ে তো তাই এতো আমার মতো ফ্যাশন জানে নাকি হাহ।( ভাব নিয়ে)

আমিঃ আসলে আপু আমি সাজতে ভালো লাগে না।আল্লাহ যা দিয়েছে ওইটাতে হ্যাপি,,, এতো মেকআপ করে বিশ্বসুন্দরী হওয়ার ইচ্ছা নেই।এই নরমালই সবার থেকে বেটার লাগছে,,,

বলে চলে এলাম,,,,এদিকে বর্ষা ফুঁসছে কিভাবে ঋতুকে ছোট করবে,,,,

আদি আমাকে নিয়ে এসে একটা মেয়ের সাথে পরিচয় করাচ্ছে,,,

আদিঃ ঋতু ও হচ্ছে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড,,আরিশা,,,ছোট বেলা থেকে এক সঙ্গে বড় হয়েছি।
আরিশা আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিল,,,

আরিশাঃ হাই,আমি আরিশা মাহমুদা ,,

আমি ও হেন্ডশেক করে,,

আমিঃ আমি ঋতু নাজনীন,,

আদিঃ তোরা কথা বল আমি একটু আসছি,,,,

আদি চলে গেল,,,
আরিশাঃতো বিবাহিত জীবন দুজনের কেমন কাটছে😜

আমিঃ এইতো ভালো( মিথ্যা হাসি দিয়ে)

আরিশাঃঋতু জানো আমি আর আদি ছোট বেলার ফ্রেন্ড। ওর লাইফের সব আমাকে শেয়ার করে,,,এমনকি ছোট ছোট বিষয়ে ও আমাকে বলে৷,, ওর যখন কোন কারণে মন খারাপ বা খারাপ সময় থাকে তখন আমি ওর পাশে থাকি ,,,, সো ওর লাইফে সবচেয়ে বড় কথা আমাকে বলবে না? হ্যা আমি জানি তোমার আর আদির মধ্যে কিছুই নেয়,সব ফরমালিটি দেখানো হচ্ছে,, আমি যেহেতু সব জানি আমার সাথে ফরমালিটি দেখানো লাগবে না,,।

আমি কিছু বলছি না মাথা নিচু করে আছি।

আরিশাঃ তবে আদি ঠিকই বলেছে তুমি পরীর থেকে সুন্দর,,, খুব মিষ্টি লাগছে,,আচ্ছা চলো সবাই ওখানে গল্প করছে ওখানে যাই।

সবাই এক সাথে গল্প করছে,আমাকে আর আদিকে নিয়ে মজা করছে, হাসিব ও এসেছে যেহেতু আদির ফ্রেন্ড।

হঠাৎ হাসিব বলে ওঠলো,,,

হাসিবঃ ভাবি জানো ,,,আদি অনেক ভালো গান গায়।তো তুমি বলো না তোমার জন্য একটা গান করতে😜।

আমি কিছু বলছি না শুধু মুচকি হাসি দিলাম,,,

এবার সবাই ওকে জোর করছে গান গাইতে কিন্তু ও গাচ্ছে না।অনেক জোরে সে রাজি হলো। একজনে একটা গিটার দিলো আদি গিটারটা নিয়ে সবার সামনে গিয়ে একটা চেয়ারে বসলো,,,,,,

আদি এক নজর ঋতুর দিকে তাকিয়ে গিটার বাজানো শুরু করলো,,,

🎸🎸🎸🎸🎸
🎵🎵🎵

Yun na parda kar…🎶
ab to Aja mere samne…🎶
Tere hun mai…🎶
Meri har saansien…🎶
Tera naam Lein…🎶

Behki behki nigahien….🎶
Dhundhe tera raste…🎶
Ati hai to le jati….🎶
Meri har shikayetien….🎶

Lehron si behti hai vo…🎶
Chalti shaan se hai hatke….🎶
Kaatil ye rukh tera…🎶
Hai kattil har ada….🎶

ঋতুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে..🎵🎵🎵

Dewane hum nahi hote….🎶
Dewane raat ati hai…🎶
Mohabbat ki nahi jati..🎶
Mohabbat aazmati hai…🎶

Kisiki aakhon se..🎶
Kisiki baton se…🎶
Kisiki chahat se…🎶
Kisiki aadat se….🎶

Haye re dil ko satati hai…(2)🎶
Bohot zyada tadpati ha….(2)🎶

( বাকিটা নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন,,,🙄)

গান শেষে সবাই হাত তালি দিলো,,
হাসিবঃ ব্রো অনেক দারুণ হইছে,,তোর গানের গলার জবাব নেই,,,

সবাই আদিকে বাহবা দিচ্ছে,,,
আমি তো এতোক্ষণ মনোযোগ দিয়ে গান শুনছি আসলেই ওনার গানের গলার জবাব নেই,খুব সুন্দর করে গান গায়,,,

আদি দেখছে ঋতু তাকে কোন কমপ্লিমেন্ট দিচ্ছে না ও মন খারাপ করে বাইরে চলে গেল,,,,

সবাই গল্প করছে,,,,হটাৎ বর্ষা বলে উঠলো,,,

বর্ষাঃ তো এবার ভাবির মুখ থেকে গান শুনি।( এবার বুজো মজা তোমার মতো গাইয়া মেয়ে নাকি আবার গান পারে হাহা জব্দ করার সুযোগ পাইছি এবার কই যাবা আদি বউ হওয়ার খুব শখ এবার শখ বের করছি সবার সামনে যদি অপমান করে না করি আমার নাম ও বর্ষা না)

হাসিবঃ হুম আইডিয়াটা কিন্তু খারাপ না,,, ভাবি তোমার মুখে একটা গান শুনা যাক।,,,

আমিঃ ভাইয়া আমি গান গাইতে পারি না( আমি বুজতে পারছি সবার সামনে অপমান করার জন্য বর্ষা ইচ্ছা করে বলছে গান গাইতে।এ মেয়ে আমার পিছে কেন পড়ে আছে বুজি না)

রিফাতঃ কি বলো ভাবি আমাদের আদির ওয়াইফ সব কিছ পারে না ব্যাপারটা কেমন দেখায় না।

(তোদের আদি কি সেলিব্রিটি নাকি যে ওর বউকে সব পারতে হবে ডং দেখে বাঁচি না- মনেমনে)

বর্ষাঃ আরে রিফাত ভাই বুজেনই তো গ্রামের মেয়ে তো।গ্রামের মেয়েরা তো চুলা গুঁতানো ছাড়া কি বা পারে সে নাকও আবার গান গাইবে,,,হা হা এর থেকে ভালো আমরা রানু মন্ডলের গান শুনাই হা হা।আদির যোগ্যেই না।

উপস্থিতির সবাই হেসে উঠলো হাসিব আর আরিশা ছাড়া।

আরিশাঃ বর্ষা,,,, মানুষকে অপমান করার অভ্যাসটা এখনো তোমার যায় নি।একদিন তুমি নিজেই হাসির পাত্র হয়ে যাবে তখন কেমন লাগে দেখবে।

বর্ষাঃ অপমানের কি আছে যেটা সত্যি সেটা বলছি।😏

হাসিবঃ ( এতোক্ষণ আদিএখানে থাকলে বের হয়ে যেত তোর অপমান করা ভাবিকে।এই আদিটা ওনা কোথায় উধাও হয়ে গেছে)

বর্ষা আর আরিশার তর্কের মধ্যে হঠাৎ গিটারের সুর বেজে ওঠলো।

হাসিবঃ জানতাম গানের মধ্যে গিটার বাজে এখন দেখছি তর্কের মধ্যে ও গিটা বাজচ্ছে,,, বলে সামনে তাকালো,,,

সবাই সামনে তাকাতেই অবাক হয়,,,,,

চলবে,,

না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-০৯

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_jahan
#Part_9

আস্তে আস্তে ভয় বেড়ে যাচ্ছে,,,,

বসে বসে কাঁদছি এমন সময় কলিংবেল বেজে ওঠলো,,,

ইচ্ছা করে খুলছি না।অনেকক্ষণ ধরে কলিংবেল বাজাচ্ছে খুলছি না দেখে মনে হয় ডুবলিকেট চাবি দিয়ে দরজা খুলে পেলছে,,খুলে দেখলো আমি এককোণে জড়োসড়ো হয়ে বসে কাঁদছি।

ও দৌড়ে এগিয়ে এসে,,,,

আদিঃ কি হয়েছে ঋতু কাঁদছ কেন? ( অনেকটা গাবড়ে গিয়ে)

আমি কিছুই বলছি না,,,

আদিঃ প্লিজ চুপ করে থেকো না বলো কি হয়েছে?

আমি ওখান থেকে ওঠে চলে আসতেই ওনি হাত ধরে ফেললেন,,

আমি এবার চিৎকার করে,,,,,

আমিঃ হাত ছাড়ুন বলছি,,,,এখন কেন আসছেন অফিস থেকে ওখানেই থেকে যেতেন।এতো বড় বাড়িতে যে একটা মেয়ে একা আছে তা কি জানেন না একটু নূন্যতম সেন্স নেই যে তার ভয় লাগতে পারে।নাকি স্বামীর অধিকার পাচ্ছেন না যে ওই চিন্তা শক্তি হারিয়েছেন, নাকি ভালোই লাগছে না আমার কথা চিন্তা করতে।

আমার কথায় আদি হাতটা আলগা করে,,,

আদিঃ ঋতু,,,,,,,,( জোরে)

চিৎকার করবেন না আমি ভুল কিছু বলি নাই।আপনার যদি একটুও দায়িত্ববোধ থাকতো তাহলে একটা বার খোজ হলেও করতেন।

বলে রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিলাম,,,।

আদি দেওয়ালে সজোরে ঘুষি মারলো,আসলে ও কি পারলো দেরি করতে,,,

আদি নিচে বসে বসে ঋতু বলা কথা ভাবছে,, কথা গুলো যেন কাঁটার মতো বিঁধছে,,, আদি আবার ওঠে দাঁড়ালো যে করে হোক ঋতুর রাগ ভাঙ্গতে হবে। গাড়িতে দেখলো খাওয়ার টাইম হয়ে গেছে আদি খাবার নিয়ে ঋতুর রুমের দরজার সামনে দাড়িয়ে দরজায় টোকা দিয়ে,,,,

আদিঃ ঋতু আম সরি, কাজের অনেক চাপ ছিল।কাজ করে করতে আমার খেয়াল ছিলো না কয়টা বেজেছিল,, টাইম দেখা মাত্র তোমার কথা মনে আসলো আমি সব কাজ রেখে চলে আসছি,,তবুও আমার ভুল হয়েছে আমার কেন তোমার কথা মনে ছিল না,,,প্লিজ এইবারের মতো ক্ষমা করে দাও প্লিজ,,,

আমি কিছুই বলছি না,,,

প্লিজ ঋতু দরজা খুলো না বলছি তো আর এমন হবে না।অনেক রাত হয়েছে আমি তোমার জন্য খাবার এনেছি খেয়ে নাও,,,

আমিঃ আমি খাবো না আপনি যান এখান থেকে,,,,,

আদিঃ আমার উপর রাগ করে না খেয়ে থেকেও না প্লিজ

আমিঃ খাবো না বললাম না যান এখান থেকে,,

আদিঃ তুমি যতোক্ষণ না দরজা খুলবে আমি এখান থেকে এক পা ও নড়বো না,,,,

আমিঃ,,,,,,,,,

অনেকক্ষণ পর ঋতুর আওয়াজ না পেয়ে আদি আবারও বললো,,

আদিঃ আমার কিন্তু অনেক ক্ষিদে পেয়েছে কাজের চাপে দুপুরেও খাওয়া হয় নাই,,,প্লিজ দরজা খুলো তুমি না খেলে আমিও খাবো না,,,

(এবার কি রকম খারাপ লাগলো কাজের চাপে দুপুরেও খায়নি,,,,কিন্তু তাই বলে আমি একা যে ভুলে যাবে নাকি,,,থাক ক্ষমা তো চেয়েছে,,,)

গিয়ে দরজা খুললাম,,,,

আদিঃ ছরি,,,( কান ধরে)

ওনার ইনোসেন্ট মুখ দেখে হাসি পেল,,,কিন্তু হাসলে চলবে না,, মুখে গম্ভীর ভাব বিয়ে ওনার হাত থেকে খাওয়ারের প্লেট নিয়ে টেবিলে বসে খাওয়া শুরু করলাম

ওনি মুচকি হেসে আমার সামনের টেবিলে বসে খাওয়া শুরু করলো,,,

ও টেবিল থেকে পানির গ্লাসটা নিতেই আমার চোখ গেলো ওনার হাতে,,,,হাতটা পুরা লাল হয়ে আছে।যেন কেউ আঘাত করছে,,,,,

আমিঃ আপনার হাতে কি হয়েছ লাল হয়ে আছে কেন?

আদি কিছুনা বলে কিচেনে চলে গেল,,,মনে হলো কিছি লুকালো,,,আমি তেমন পাত্তা না দিয়ে চলে গেলাম,,,,মোবাইলে এলার্ম দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম,,,

সকাল বেলা এর্লামের ডাকে ঘুৃম ভাঙ্গলো,,,,ওঠে নাস্তা রেডি করলাম,,,আদি শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে আমাকে বললো,,

আদিঃ তোমার নতুন কলেজের এডমিশনের জন্য আগের কলেজের টিসি লাগবে কয়কদিন পর গিয়ে নিয়ে এসো,,,

আমিঃ না না আমি নতুন কলেজে এডমিশন নিবো না,,, আগের ওইটাতে থাকবো,,,,

আদিঃ পাগল নাকি ওখান থেকে কলেজ করা অনেক কষ্টকর তারপরএক্সাম আছে,,,সম্ভব না,,তোমাকে এখানেই এডমিশন নিতে হবে।।

আমি নেকা কান্না করে,,

আমিঃ আমার জীবনটাই তেনা তেনা হয়ে যাচ্ছে।আমি নিউ কলেজে কাউকে চিনবো না আমি রিয়াকে ছেড়ে থাকবো কেমন,,,

আদিঃ কেন তুমি তো অনেক ভালো ঝগড়া করতে পারো কলেজে ঝগড়া করে করে ফ্রেন্ডশিফ করে ফেলো।

আমিঃ কি,,,,, আমি ঝগরুটে ( কোমরে হাত দিয়ে)

আদিঃ তা কখন বললাম😬।এনি ওয়ে আমার লেট হয়ে যাচ্ছে,,,,, তাড়াতাড়ি নাস্তা দাও।

আমি বাঁকা চোখে তাকিয়ে ওনাকে নাস্তা দিলাম।ওনি খেয়ে চলে গেল,,,,

💐💐💐
এভাবে এক সাপ্তাহ চলে গেল,,,এখন আর রাতে দেরি করে আসে না, সন্ধার মধ্যে চল আসে,।প্রতিদিন আসতে কিছু না কিছু নিয়ে আসে,,এই এক সাপ্তাহে ওনাকে যা চিনলাম মানুষটা খারাপ না।আমাকে টার্চ করা তো দূর কখনও খারাপ চোখেও তাকায় নাই।কিন্তু আজো ভাবি আমার জীবনটা কতোটা বদলে গেছে,,,, আগে আমাদের বাসায় একা একদম থাকতাম আমার ভালো লাগতো না একা থাকা, , ,,, আর এখন সারদিন কাটে একাকিত্ব,,,, এই একাকিত্ব সময়টা আমাকে খুব কষ্ট দেয়।

রাতে ওনি আসতেই দরজা খুললাম,,ওনি ফ্রেশ হয়ে এসে,,,,

আদিঃ তোমাকে একটা কথা বলার ছিল।

আমিঃ হ্যা বলেন।

আদিঃ আসলে,,,,,,,আসলে আমাদের বিয়েটা গ্রামে হওয়ায় আমার ফ্রেন্ডরা আর অফিসের কলিগরা সবাই বিয়েতে যেতে পারেনি। এখন সবাই একটা পার্টি থ্রো করেছে আমাদের জন্য,, আমি অনেকবার মানা করেছি কিন্তু ওরা মানছে না।এখন তুমি যদি আমার সাথে যাও ভালো হবে,,আমি তোমাকে জোর করছিনা যদি চাও আরকি( অনেকটা ভয়ে আর সংকোচ হয়ে)

আমি ওনার মুখ দেখে,,,, হাসি পাচ্ছে কথাগুলো বলতেও তোতলাচ্ছে,,,, ওনি এতো আশা করে বলছে না করতে পারছি,,ওনার সম্মানের দিকে ভেবে,,,

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে,,,কখন যেতে হবে,,,।

আদি মুখে হাসি ফুটলো,, যেন এক রাজ্যকে জয় করেছে,,,

আদিঃ কাল সন্ধ্যার দিকে রেডি থেকো আমি অফিস থেকে এসে নিয়ে যাবো,,,

আমিঃ আচ্ছা

বলে চলে আসতেই ওনি,,,,

আদিঃ ঋতু,,,,,,

আমিঃ হুম

আদি একটা প্যাকেট এগিয়ে এনে,,

আদিঃ এখানে কিছু জিনিস আছে তোমার পছন্দ হলে কাল পরো।

আমি প্যাকেটা নিয়ে রুমে আসলাম,,,,পরে খুলে দেখলাম,,, একটা গর্জিয়াছ কালো শাড়ী ,,,, মেসিং জুয়েলারি সব মিলিয়ে খুব সুন্দর। ওনার চয়েয় আছে বলতে হবে,,।আমি জিনিসগুলো রেখে দিলাম

পরেরদিন বিকেলে কালো শাড়ী পড়ে, চুল গুলো সামনের দিকে হালকা ফুলয়ে পিছনে খোপা করে খোপার মধ্যে কালো কালারের গজরা লাগালাম।জুয়েলারি গুলো দিয়ে হালকা লিপস্টিক আর কাজল দিয়ে দিলাম আমার সাজ সম্পুর্ণ হলো।

আদির জন্য ওয়েট করছি,,,,হঠাৎ মোবাইলে মেসেজ আসলো,,,,,,

চলবে,,,

না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-০৮

0

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#Part_8

🌿🌿🌿
আমার রাগে গা জ্বলছে,আমাকে এই কাদিটার সাথে যেতে হবে।

রাতে সবাই ডিনার করে ঘুমাতে চলে গেছে।আমি রুমে এসে বসে আছি,,আসলে বসে আছি না ভাবছি কি করে আদির সাথে না যাওয়া যায়।

কিছুক্ষণ পর আদি আসলো,, এসেই সোফায় ল্যাপটব নিয়ে বসে গেছে,,,

আমি কথা কিভাবে শুরু করবো বুজতে পারছি না,,,
পরে ওনাকে,,,

আমিঃ এই যে এই যে শুনছেন,,

ওনি আমার দিকে তাকিয়ে,,,

আদিঃ আমার নাম এই যে এই যে না, আমার নাম আদি সো এই যে না বললে খুশী হবো।

আমি মুখ ভেংচি কেটে,,,

আমিঃ সে যাই হোক,, আমি আপনার সাথে যাবো না,,,হুহ

আদিঃ আমি কি যেতে বলছি নাকি আমি তো বারণই করলাম আম্মু তো যেতে বলছে।

আমিঃ আমি জানি না কিছু আমি যাব না ব্যাস।

আদিঃ তো আম্মুকে গিয়ে বলো আমাকে বলে লাভ কি।

আমিঃ আমি আম্মুকে বলতে পারবো না।

আদিঃ তা কেন পারবে শুধু তো আমার সাথেই জগরা করতে পারবে।

আমিঃ কি আমি ঝগড়া করি?

আদিঃ ( এইরে ওতো ক্ষেপেছে,,এবার আমাকে কাঁচা চিবিয়ে খাবে) আরে না তুৃমি কই ঝগড়া করো।আর তুমি যদি না যেতে চাও আম্মুকে বলো আমাকে না।

এই বলে আদি সোফায় শুয়ে পড়ে,,,

ধুর আমি আম্মুকে কিভাবে বলবো,,,ভাবতে ভাবতে শুয়ে পড়লাম
হঠাৎ আরিয়ানের কথা মনে পড়লো।সারাদিনে ঝামেলায় মনে আসেনি এখন একাকিত্ব আবার মনে করিয়ে দিল।খুব মিস করছি।আচ্ছা ও কি আমায় একটু ও মিস করছে না।।জীবনটা আসলেই অদ্ভুত কখন কি থেকে কি হয়ে যায় তা কেউ বুজতে পারে না।

সকাল বেলা ওঠে নাস্তা করে রেডি হয়ে আমাদের বাড়ি গেলাম সবাই।
দুপুরে খাওয়াদাওয়া করে বিকেলের দিকে চলে আসলাম।পরিবারের জন্য খারাপ লাগছে অনেক।একটু পর রওনা দিতে হবে দূর পথে।যেতে তো একটু ও ইচ্ছে করছে না। তবুও নিজের ইচ্ছেকে চাপা দিয়ে যেতে হচ্ছে।

গাড়ি চলছে তার আপন গতিতে।আমার পাশে আদি বসে আছে মোবাইল টিপছে কিন্তু মাঝে অনেকটা দূরত্ব।কি রকম ঘুমও আসতেছে।

আমি মোবাইল টিপছি হঠাৎ খেয়াল করলাম ঋতু ঘুমাচ্ছে।গড়ির ব্রেক এওর মাথাটা পড়ে যেতেই আমি ধরে ফেললাম,,,, আমার কাঁধেই ওর মাথা রাখলাম।

আদির ডাকে ঘুম ভাঙ্গে আমার।আমার মাথা ওর কাঁধে দেখে তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে বসলাম।ঘুমালে আমার হুশ থাকে না কি করি।

আদিঃ নামো আমরা চলে আসছি।

আমিঃ কি এতো তাড়াতাড়ি?

আদিঃ তাড়াতাড়ি আসি নাই তুমি তো সারাপথ ঘুমাই ছিলা বুজবা কেমনে কতক্ষণ লাগছে।

ওর কথায় কিছুটা লজ্জা পেলাম আসলেই আমি খুব ঘুম কাতরে।

দুজনে গাড়ি থেকে নামলাম।আমিতো বাড়ি দেখে হা হয়ে গেছি।গ্রামের বাড়িটা দেখতে অনেক সুন্দর এটা তো তার থেকে সুন্দর। রাতের আধারে তেমন বুজা নয় গেলে যেটুকু বুজলাম বাড়িটা অনেক সুন্দর।

আদিঃ কি হয়েছে দাড়িয়ে আছো কেন চলো,,

ভিতরে ডুকে তো আরো অবাক।অনেক সুন্দর করে ডেকোরেশন করছে বাড়ির ভেতরে রাজপ্রাসাদ মনে হচ্ছে।

আদি আমাকে রুমে নিয়ে আসলো,,,,

আদিঃ এটা তোমার রুম,,,আর এ নাও তোমার লাগেজ।

এটা বলে আদি ওর লাগেজ টা হাতে নিয়ে চলে যাচ্ছে এমন সময় বললাম।

আমিঃ আপনি কোথায় যাচ্ছেন?

আদিঃ সোফায় শুয়ে শুয়ে তো আর কোমর বাঁকা করতে পারবো না, এমনিতে ও এই তিনদিনে আমার পিঠে ব্যাথা হয়ে গেছে।এখন তো আমরা দুজন তাই কাপল সাজার অভিনয় করা লাগবে না।তাই ওই রুমেই থাকবো।

বলে ওনি চলে গেল,,

আমি কিছু বললাম না মাথা নিচু করে ফেললাম। ঠিকই তো বলেছেন আমার জন্য ওনি অনেক কষ্ট করেছেন।আমার জায়গায় অন্যকেউ থাকলে এতোক্ষণে ওনি স্বামীর সব অধিকার পেতো কিন্তু আমি দিতে পারবো না।

এদিকে আদি ভাবছে,,
যতোদিন না তুমি আমাকে আপন করে নিবে ততোদিন তোমার থেকে দূরে থাকবো,,,

ফ্রেশ হয়ে বের হলাম,,অনেক ক্ষিদে লাগছে তাই রুম থেকে বেরিয়ে দেখি আদি কিচেনে ফ্রিজ থেকে করছে,, কি যেন বের করছে?

আমিঃ কি করছেন?

আদিঃ রাতের রান্না করছি,,,

আমিঃ আপনি কেন রান্না করছেন।আমাকে ডাকলেন না কেন দেখি শুরুন আমি রান্না করতেছি।

আদিঃ কেন মেয়েরা রান্না করতে পারলে ছেলেরা কেন রান্না করতে পারবে না।লাগবে না তুমি গিয়ে টিবি দেখো আমি রান্না করছি।

আমিঃ আপনি রান্না করতে পারেন?

আদিঃ হুম। আগে তো আমি এখানে একা থাকতাম তো নিজে নিজে রান্না করতাম আর আম্মু থাকলে ও ফ্রাইডে তে আমি রান্নায় হেল্প করতাম। সো এখান থেকে যাও।

আমিঃ ওকে ঠিক আছে,, বাট কাল থেকে আমি রান্না করবো।

আদিঃ ওকে।

আমি গিয়ে টিবিতে কার্টুন দেখছি,, কিন্ত পেটে ইদুর দৌড়াচ্ছে,,

হঠাৎ আদি আমার সামনে ওনি কতো গুলা চিপস এনে বলে,,,
আদিঃ রান্না হতে হতে এগুলো খাও,,,

আমি খুশিতে লাফিয়ে ওঠে চিপস গুলো নিলাম।

আমিঃ আপনি কি ভাবে জানেন আমার এই চিপস গুলো ফেবারিট 😋।

আদি একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেল,,,

আমি উওর না পেয়ে বসে বসে চিপস খাচ্ছি আর কার্টুন দেখে হাসতেছি।

আদি রান্না করতে করতে হাসছে,,,,,, এখনও পৃথিবীতে এমন মেয়ে আছে এই বয়সে কার্টুন দেখে,,,, হা হা হা,,,আদি তুই একটা বচ্চা বিয়ে করেছিস।

রান্না হয়ে গেছে।আমি আর আদি খেতে বসলাম।।আমি ভাবছি ছেলেরা আবার ভালো রান্না করতে পারে নাকি কিন্তু আসলেই ওর রান্নাটা খুব খুব মজা হয়েছে।পেট ভরে খেয়ে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।মোবাইলে এলার্ম দিলাম যাতে তাড়াতাড়ি ওঠতে পারি।ওনার আবার সকালে অফিস আছে,,, আমার শাশুড়ী মা পাঠিয়েছে ওনাকে সময় মতো সব সামলে দিতে,যদি দেরিতে ওঠি তাহলে কেমনে হবে।

সকালে এলার্ম এর সাথে সাথে ওঠে পড়লাম।ওনার জন্য নাস্তা রেডি করলাম,,,ওনিও ফ্রেশ হয়ে আসলো নাস্তা করে তাড়াতাড়ি চলে গেল,, যাওয়ার সময় বলে গেলো কিছু লাগলে ওনাকে কল দিতে,,,,

সারাদিনই একা একা কেটেছে,,,আম্মুদের সাথে আর আমার শাশুড়ীদের সাথে কথা বলে রান্নাবান্না শেষ করে,,,ফ্রেশ হয়ে আসলাম দেখি আমার মোবাইলে আননোন নাম্বার থেকে কল আসছে,,,

আমিঃ আসসালামু আলাইকুম। কে বলছেন?

হাসিবঃ ওয়ালাইকুম সালাম ভাবী আমি হাসিব।

আমিঃ ও আচ্ছা ভাইয়া বলেন কেমন আছেন?

হাসিবঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো।আপনি

আমিঃ জ্বি ভালো

হাসিবঃ আপনার একটা হেল্প চাই

আমিঃ কি হেল্প?

হাসিবঃ রিয়ার নাম্বারটা দিতে পারবে প্লিজ।

আমিঃ কেন?

হাসিবঃ আপনার মতো কাপল হওয়ার জন্য🙈। কতোদিন আর সিঙ্গেল থাকবো হা হা।

আমি ও হেসে দিলাম

আমিঃ কিন্তু ওর পারমিশন ছাড়া নাম্বার দেয়া ঠিক হবে না।

হাসিবঃ কিছু হবে না।আমার উপর বিশ্বাস রাখতে পারেন।

অনেক জোরাজোরিতে নাম্বারটা দিলাম আর আমি হাসিব ভাইয়াকে এই কয়েকদিনে যা চিনলাম ওনি খুব মিশুক আর ভালো মানুষ সো সমস্যা হবে না তাই দিয়ে দিলাম।তারপর খেয়ে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিলাম।

এদিকে বিকেল পেরিয়ে রাত ৯ টা হতে চললো।এতো বড় বাড়ীতে একা খুব ভয় লাগছে।আমি এমনিতে ভীতু তার উপর এতো রাত ভয়ে হাত পা কাঁপছে। আর সকালে তাড়াহুড়োয় ওনার নাম্বারটা নেয়া হলো না।এখনতো আমার কান্না আসছে একটা মানুষ এতো কেয়ারলেস কিভাবে হতে পারে ঘরে যে একটা মেয়ে আছে সেটা ভুলে গেছে নাকি।আজকে আসুক বুজাবো মজা।

আস্তে আস্তে ভয়তো বেড়ে যাচ্ছে।,,,

চলবে?