Wednesday, June 25, 2025
বাড়ি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠা 1454



নেশালো সে পর্ব-১৯ এবং শেষ পর্ব

0

#নেশালো_সে💖
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম💖

১৯.(শেষ)

“হুট করেই আয়াফ আফিয়াকে ছেড়ে দেয়’!!এতে বেশ অবাক হয় আফিয়া’!!জিজ্ঞেসাসূচকভাবে তাকালো আফিয়া আয়াফের দিকে’!!আয়াফ আফিয়ার তাকানোর অর্থ বুঝতে পেরে তার পকেটে হাত রাখলো’!!তারপর পকেট থেকে বের করলো সেই ঝুমকা জোড়া’!!যার জন্যই আয়াফ আফিয়াকে খুঁজে পেয়েছে’!!আয়াফ আফিয়ার দিকে ঝুমকো দুটো বাড়িয়ে দিয়ে বললোঃ

——–“এই ঝুমকোর জন্য আজ তোমায় আমি খুঁজে পেলাম “মায়াবতী”!!তাই এই ঝুমকা ছাড়া আমাদের ভালোবাসার মুহূর্তটা পুরোপুরি সম্পন্ন হয় কি করে বলো…

“তারপর আয়াফ আলতো ভাবে ‘ঝুমকো’ জোড়ায় চুমু এঁকে দিয়ে পড়িয়ে দিলো আফিয়ার কানে’!!আফিয়া বলে উঠলঃ

———“ঝুমকা কোথায় পেয়েছিলে তুমি তা তো বললে না….

———“হুম বলবো তো অপেক্ষা কর অপেক্ষার ফল যে খুব মিষ্টি হয়’!!তার আগে আমায় এটা বলো সেদিন তুমি দৌড়াচ্ছিলে কেন?

“আফিয়া ভাবলো সেদিনে কথা’!!ভাবতেই হেঁসে দিল সে’!!তারপর বলে উঠল আফিয়াঃ

———“সেদিন ছিলো আমার জন্মদিন!আমাকে ভার্সিটিতে অনুষ্ঠান আছে এটা বলে আমার বন্ধুগুলো অনেক সেজেগুজে যেতে বলেছিল’!!আমিও তেমন কিছু না ভেবে জমিয়ে সেজে ছিলাম অবশ্য নিজে সেজেছি বললে ভুল হবে আপু সাজিয়ে দিয়েছিল’!!পড়ে ভার্সিটি গিয়ে জানলাম আমার জন্মদিন উপলক্ষে এমনটা করেছে’!!সবই ঠিক ছিল কিন্তু ওরা চাইছিল ভরা ভার্সিটিতে সামনে আমার এতসুন্দর মেকাপে আটা-ময়দা আর ডিম দিয়ে ভূত বানিয়ে দিবে’!!আমি তো সবশুনে মুখে ওড়না বেঁধে নিলাম যাতে মুখে ওগুলো না লাগে তারপর আর কি তুমুল বেগে দৌড়াতে ছিলাম ওদের কাছ থেকে ওরাও আসছিল পিছন পিছন ওহ এইবার মনে পরছে মাঝরাস্তায় একটা ছেলের সাথে ধাক্কা লাগে আমার তবে মুখ ঠিক দেখি নি তার ওহ তার মানে ওইটাই তুমি ছিলে’!!

“আয়াফ মাথা নাড়িয়ে হা বলে,, সবশুনে হাসতে হাসতে শেষ!!আয়াফের হাসি দেখে আফিয়া বললোঃ

———“তুমি হাসছো আর আমার অবস্থা কি হয়েছিল জানো দৌড়াতে দৌড়াতে পুরো পা ব্যাথা হয়ে গিয়েছিল, দু-দিন তো বাসা থেকেই বের হইনি কারন ওরা দেখলেই ওগুলো মারতো মুখে তবে দিনগুলো সুন্দর ছিল’!!এখন তুমি বলো ঝুমকা কোথায় পেলে?

———-“তুমি এখনো বুঝতে পারছো না,

“মাথা না সূচক নাড়ায় আফিয়া’!!আয়াফ আফিয়ার দু-গাল চেপে ধরে বললঃ

———-“ওরে আমার পাগলী বউ তোমার সাথে যখন ধাক্কা লেগেছিল তখনই তোমার কান থেকে পড়ে যায় ঝুমকাটা আর তখনই পাই আমি…

———“ওহ…

———“হুম তাহলে এখন চুমু দেও গালে না হলে বাড়ি নিয়ে যাবো না…

“আফিয়া হেঁসে বললোঃ

———“তোমায় নিয়ে যেতে হবে না আমি একাই যেতে পারি….

“আয়াফ একটু অভিমানী স্বরে বললোঃ

———-“তার মানে আমি তোমায় যেটা করতে বলেছি সেটা তুমি করবে না….

———-“তুমি কি পাগল হলে নাকি দেখো সন্ধ্যা হয়ে গেছে বাচ্চারাও সবাই চলে গেছে তাই বলছি বাড়ি চলো পড়ে দেবো নে…

———–“পড়ে কাজ হবে না এখন চাই মানে এখনই চাই….

———-“তুমি বাচ্চাদের মতো জেত করছো কেন?

———😒😒

“শেষমেশ আফিয়া কোনো উপায় না পেয়ে শুকনো করে আয়াফের গালে চুমু দিয়ে দিল’!!আয়াফ খুশি হয়ে আফিয়াকে কোলে তুলে নিয়ে বললোঃ

———“এখন তাহলে যাওয়া যাক মেরি জান….

“হাসলো আফিয়া’!!তারপর সেও খুশি হয়ে আয়াফের গলা জড়িয়ে ধরে বললোঃ

———“হুম চলো মেরি করলার জুস না থুক্কু কমলার জুস…😁

“হাসলো আয়াফ’!!তারপরও কিছু বললো না এই খুশির মুহূর্তটা নষ্ট করতে চায় না সে’!!কারন নামটা তেঁতো হলেও নাম দেওয়া মানুষটি যে খুবই মিষ্টি’!!আয়াফ আফিয়াকে কোলে করেই নিয়ে গিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দেয়’!!তারপর নিজেও গিয়ে বসে পরে গাড়িতে’!!তারপর মুক্ত আকাশের নিচে বসে গাড়ি চালাতে শুরু করে আয়াফ’!!এই মুহূর্তে আয়াফের কাছে সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত’!!যেখানে সকল অভিমান ভুলে নতুন করে জীবন শুরু করার আনন্দ মিশে আছে হৃদয়ে……

“আয়াফ আফিয়াকে নিরদিধায় তার বুকে জড়িয়ে ধরে ড্রাইভ করছে আর আফিয়াও চুপটি করে আছে একদম’!!কারন এই মুহুর্তে সেও আছে খুব খুশি’!!দু-দিন নির্ঘুমে কাটিয়েছে সে’!!তাই আয়াফের বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরে সে…….

__________________

“বেশকিছুক্ষন পর….

“আয়াফদের গাড়ি এসে থামলো আয়াফদের বাড়ির সামনে’!!আফিয়া তখনও গভীর ঘুমে মগ্ন ছিল’!!আয়াফ কিছুক্ষণ আফিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে ওকে ডাকলো’!!আচমকা ডাক পরতেই আফিয়া পুরো লাফ মেরে উঠে বসলো’!!আফিয়া উঠতেই আয়াফ বলে উঠলঃ

——–“ঘুম হয়ে গেলে এখন তাহলে যাওয়া যাক…

———“হুম…

“তারপর আফিয়া আর আয়াফ দুজন একসাথে চললো বাড়ির ভিতর’!!আফিয়ার একটু ভয় ভয় করছে না জানি শাশুড়ী মা কি কি বলে তাকে…

||

“বাড়িতে ঢুকতেই অবাক দুজন কারন বাড়িতে কিছু গেস্ট এসেছে’!!আয়াফের আম্মুর আফিয়াকে দেখে ওদের দিকে এগিয়ে গিয়ে বললো আয়াফকেঃ

———“তোদের এখন আসার সময় হলো এতক্ষণ কি করছিলি…

———-“আর বলো না আম্মু তোমার যে বউমা রাগ ভাঙাতেই তো এত সময় লেগে গেল…

“আয়াফের কথা শুনে আয়াফের আম্মু রেহেনা বেগম এগিয়ে গেলেন আফিয়ার কাছে’!!আফিয়া চুপচাপ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে’!!সে নিজেও জানে না এই মুহুর্তে সে কি বলবে’!!শাড়ির আঁচল আঙুলের সাথে প্যাঁচাচ্ছে সে’!!রেহেনা বেগম আফিয়ার সামনে দাঁড়িয়ে বললোঃ

——–“এত রাগ কেন তোর মানছি আয়াফ মাঝে মাঝে তোর সাথে ঝগড়া করে এর মানে এই নয় যে রাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে…

“আফিয়া রেহেনা বেগমকে জড়িয়ে ধরে বললঃ

———“সরি আম্মু ভুল হয়ে গেছে আর এমন ভুল হবে না কোনোদিন,, আমি আর কোনোদিন বেশি বুঝবো না….

“হাসলো রেহেনা বেগম’!!তারপর বললেন উনিঃ

———“ঠিক আছে এইবারের মতো মাফ করে দিলাম ফের যদি এমন করিস তো তোর একদিন কি আমার একদিন, এখন যা ফ্রেশ হয়ে নিজেও তৈরি হয়ে আরিশাকে তৈরি করে নিয়ে আয়…

“আফিয়া বেশ অবাক হয়ে বললোঃ

——–“কেন আম্মু আর এতো মানুষ কেন এসেছে….

———“ওনারা আরিশাকে দেখতে এসেছে….

“রেহেনা বেগমের কথা শুনে আয়াফ বলে উঠলঃ

———“এসব কি বলছো মা….

——–“ঠিকই বলছি হুট করেই তোর বাবা বললো ওনারা আসছে এখন যা আর কথা না বারিয়ে তাড়াতাড়ি আরিশাকে তৈরি করে নিয়ে আয়….

“তারপর আয়াফ গিয়ে বসে পরলো সোফায়’!!আর আফিয়া চলে গেল উপরে আরিশার রুমে’!!

||

“মনমরা হয়ে বসে আছে আরিশা বিছানায়! চোখ বেয়ে তার পরছে পানি’!!কারন সে বুঝে গেছে সে তার ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে ফেলতে চলেছে’!!ভাইয়ার মতো ওর জন্যও বাবা ছেলে ঠিক করে এনেছে’!!এখন ছেলে ওর পছন্দ হোক বা না হোক বাবা বিয়ে ঠিকই দিয়ে দিবে’!!কিন্তু আরিশা এই মুহুর্তে কিছু করতে পারছে না’!!এমন সময় পিছন থেকে আরিশার চোখ টিপে ধরে আফিয়া’!!আচমকা এমনটা হওয়াতে আরিশা পুরোই ঘাবড়ে যায়’!!আর আফিয়া অবাক হয় আরিশার চোখে পানি দেখে’!!আফিয়া অবাক হয়ে বললোঃ

———“তুমি কাঁদছো কেন ননদিনী….

“আফিয়ার এমন কথা শুনে আরিশার জড়িয়ে ধরে আফিয়াকে’!!তারপর বলে উঠল সেঃ

———“তুমি চলে এসেছো ভাবি তুমি জানো আমি তোমায় কতটা মিস করতে ছিলাম’!!

——–“সেটা না হয় বুঝলাম আগে বলো তুমি কাঁদছো কেন?

——–“আমি এই বিয়েটা করতে চাইছি না ভাবি আমি তো আয়ানকে ভালোবাসি….

“আরিশার কথা শুনে আফিয়া অবাক হয়ে বলেঃ

——–কি…😳

——–“হুম ভাবি আমি আর আয়ান একে অপরকে খুব ভালোবাসি কিন্তু মাঝখান থেকে বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে দিয়েছে’!!

“বলেই ঠুকরে কেঁদে উঠে আরিশা’!!এদিকে আরিশার কথা শুনে আফিয়া কি করবে বুঝতে পারছে না’!!
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
“মাঝখানে কাটলো অনেকগুলো দিন……..

“আজকে আরিশার বিয়ে পুরো বাড়ি খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে’!!বিয়ে উপলক্ষে সারা বাড়িতে মানুষের হই হুল্লোড় পড়ে গেছে’!!পার্লারের লোকজনও চলে এসেছে আরিশাকে সাজাতে’!!আরিশাও আজকে খুব খুশি’!!কারন সে তার ভালোবাসার মানুষকেই বিয়ে করতে পারছে’!!!আর এই কাজটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাএ আয়াফ আর আফিয়ার জন্য’!!সেদিন রাতে আরিশার কান্না দেখে আফিয়া ডাকে আয়াফকে’!!তারপর আয়াফকে সব খুলে বলে আফিয়া’!!আয়াফ তো বেশ অবাক হয় এসব শুনে’!!তারপর আয়াফ নিজে গিয়ে কথা বলে তার বাবার সাথে ওই মানুষদের সামনে যারা দেখতে এসেছিল আরিশাকে’!!সব শুনে আরিশার বাবা প্রথমে একটু রেগে গেলেও পরক্ষনেই আরিশাকে দেখতে আসা ছেলেটি বুঝিয়ে বলে তাকে’!!কারন জোর করে বিয়ে দেওয়াটা একদমই ভুল’!!যেখানে মেয়ে নিজে চাইছে না বিয়ে টা করতে’!!যার সারাজীবনের ভালো থাকার প্রশ্ন সেই যদি রাজি না তাকে তাহলে কি করে ভালো হবে তারা’!! পরিশেষে সবার জোরাজোরিতে রাজি হয়ে যায় আরিশার বাবা’!!আরিশা তো খুশি হয়ে জড়িয়ে ধরে তার বাবাকে’!!তারপর আনা হয় আয়ানকে আর ওর বাবা মাকে’!!আয়ানকে যেহেতু ওনারা আগেই থেকেই চেনে তারওপর ছেলেটাও খুব ভালো তাই খুব বেশি না ভেবেই ওদের বিয়ে ঠিক করা হয়’!!আয়ান আরিশা দুজনেই খুশি’!!তারা ভাবতেই পারে নি এত ইজিলি সবটা হয়ে যাবে’!!

!!

“আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে আফিয়া’!!কারন সে তৈরি হবে’!!এমন সময় রুমে এসে হাজির হয় আয়াফ’!!আফিয়ার হাতে একটা শাড়ি আর কিছু জুয়েলারি দিয়ে বলে সে এগুলো পড়ে চলে আসো’!!আফিয়াও আর কিছু না বলে খুশি মনে পরে নেয় শাড়িটা’!!একটা লাল রঙের জর্জেট শাড়ি পড়েছে আফিয়া,চুলগুলো খুলে দিয়েছে সে’!!গলায় ভাড়ি নেকলেস আর কানে একজোড়া সুন্দর ঝুমকা,চোখে কাজল আইলাইনারসহ ভাড়ি মেকাপ দিয়ে অসম্ভব সুন্দর ভাবে সেজেছে সে’!!আর অন্যদিকে আয়াফ আজকে একটা সুন্দর ব্লাক রঙের পাজামা-পাঞ্জাবি পড়েছে ,চুলগুলো বরাবরের মতোই খুব সুন্দর করে সাজানো হাতে ঘড়ি এই অল্প সাজেই অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাকে’!!

.

“আফিয়া সেজেগুজে পা বাড়ালো আরিশার রুমের দিকে’!!এমন সময় ঘটলো আরেকটা ঘটনা হর্ঠাৎই পা ছিলিপ কেটে পড়ে যেতে নেয় আফিয়া’!!ভয়ে দু’চোখ বন্ধ করে নেয় সে’!!হর্ঠাৎই মনে হয় তার সে পরে নি কেউ তাকে ধরে আছে খুব শক্ত করে আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালো আফিয়া’!!!চোখ খুলতেই দেখলো সে আয়াফ তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে’!!

||

“অন্যদিকে আয়াফ চলে গেছে তার সেই ঘোর লাগানো মুহূর্তের দিকে’!!আফিয়ার চোখ,চুল আর মায়াবী সাজ দেখেই ফিদা হয়ে গেছে আয়াফ’!!আফিয়াও আয়াফের চোখে হারিয়ে গেছে জানো অন্য কোথাও’!!আয়াফ আফিয়া দুজনেই দু-জনের দিকে তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে’!!এমন সময় সেখানে উপস্থিত হয় আদিবা-সায়ান’!!দুজনকে এইভেবে দেখে মুচকি হাসে তারা’!!আদিবা আয়াফের কানের কাছে গিয়ে বলেঃ

——-“এইভাবে তাকিয়ে থাকলে লোকে কি বলবে আয়াফ…

“সাথে সাথে আয়াফ আর আফিয়া বেরিয়ে আসে তাদের ঘোর লাগানো মুহূর্ত থেকে’!!আফিয়ার তো লজ্জায় পুরো লাল হয়ে গেছে’!!আয়াফ একদম কনফিডেন্স নিয়েই বলেঃ

———“কে কি বলবে আমার বউই তো তাই না…

“হাসলো সায়ান আর আদিবা’!!আফিয়া আদিবার সামনে গিয়ে বললোঃ

———“আপু তুমি এখানে….

“এমন সময় ওদের পিছন থেকে আফিয়ার আব্বু বলেঃ

———“ওদের আমি ডেকেছি,আয়াফ আমায় কাল সব বলেছে আদিবা কেন বিয়ের দিন পালিয়ে গিয়েছিল আমারই দোষ ছিল কোনো কিছু না বলেই মেয়েটার ওপর বিয়ের চাপ দিয়ে দেওয়া….

———-“তার মানে তুমি আপুদের মেনে নিয়েছো…

———-“হুম…

“আফিয়া খুশি হয়ে তার আব্বুকে জড়িয়ে ধরে বললোঃ

———“উফ!আব্বু আজকে আমি খুব খুশি,আমরা আবার আগের মতো করে সবাই একসাথে থাকবো….

———“হুম….(আফিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে)

“আজকে সবাই খুশি….

“এরই ভিতর চারিদিকে শোনা গেল জামাই এসেছে জামাই এসেছে! আফিয়া আর আদিবা দৌড়ে চলে গেল সেখানে….

.

“খুব সুন্দরভাবেই আয়ান আর আরিশার বিয়ে হয়ে গেল’!!কিছুক্ষণ আগেই আয়ান আর আরিশাকে বিদায় জানালো সবার কাছ থেকে..!

__________________________________________

______________________

“রাত_৯ঃ০০টা……

“বাসর ঘরে বসে আছে আরিশা’!!একরাশ ভয় আর ভালো লাগা নিয়ে’!!এমন সময় রুমের দরজা খুলে ঢুকলো আয়ান’!!আয়ান ঢুকতে আরিশা সালাম দিলো আয়ানকে’!!আয়ানও খুশি মনে আরিশার সালামের জবাব দিলো’!!আয়ান আরিশার পাশে বসে বলে উঠলঃ

———“তুমি তাহলে শাস্তি পাওয়ার জন্য প্রস্তুত তো…

“আয়ানের কথা শুনে আরিশা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলে উঠলঃ

———-“কিসের শাস্তি…😳

———-“এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে জানেমন সেদিন ছাঁদে বসে তুমি যে হাতে কামড় দিয়ে ছিলে তার শাস্তি…

“আয়ানের কথা শুনে শুকনো ঢোক গিললো আরিশা’!!তারপর বলে উঠল সেঃ

———“সেদিন আমি ইচ্ছে করে করেছি নাকি তুমি তো ঘুম থেকে উঠেছিলে না তাই তো..

——–“ওসব কিছু জানি না জানেমন কামড় যখন দিয়েছো শাস্তি তো তখন পেতেই হবে…

“আরিশা ভয়ে ভয়ে বললোঃ

——–“কি শাস্তি…

“আরিশার কথা শুনে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে আয়ান’!!হর্ঠাৎ আয়ানকে এগোতে আসতে দেখে আরিশাও ভয় পেয়ে পিছনে যেতে লাগলো’!!

“আয়ান অনেকটাই কাছে এসেছে আরিশার’!!আর আরিশাও পিছন যেতে যেতে লেগে গেছে বিছানার সাথে’!!আরিশা কিছু বলতে যাবে তার আগেই আয়ান আরিশার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট বসিয়ে দিল’!!ঘটনাচক্রে আরিশা পুরো ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল’!!

“বেশকিছুক্ষন পর আয়ান আরিশাকে ছেড়ে দেয়’!!তারপর ডুব দেয় ভালোবাসায়’!!

“আর এখান থেকেই শুরু হবে আয়ান আরিশার নতুন জীবন’!!🤗🤗🤗

__________________

“বিছানার উপর বসে আছে আয়াফ’!!অপেক্ষা কখন আরিশা রুমে আসবে’!!আর ওকে চমকে দিবে’!!কারন আয়াফ আজকে তাদের রুমটাকে খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে’!!একদম প্রথম দিনের বিয়ের রাতের মতো’!!এমন সময় দরজা খুলে হন হন করে রুমে ঢুকলো আফিয়া’!!আশেপাশে কোনোকিছুর দিকে বা তাকিয়ে আলমারি থেকে একটা সুন্দর ব্লাক রঙের শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পরলো সে’!!সারাদিনের ব্যস্ততায় প্রচন্ড গরম লাগছে তার’!!

“পাক্কা দেড় ঘন্টা শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে আসলো আফিয়া’!!টাওয়াল দিয়ে চুল মুছতে লাগলো সে’!!হর্ঠাৎই চোখ যায় তার তাদের বিছানার দিকে’!!এতে অবাক হয় সে’!!অবাক হয়ে আফিয়া বললোঃ

———“আমাদের রুমটা এত সুন্দর করে কেন সাজানো….

“বিনিময়ে আয়াফ কোনো কথা না বলেই এগিয়ে যেতে লাগলো আফিয়ার দিকে’!!আয়াফের কাজে আফিয়া ভয় পেয়ে পিছনে যেতে যেতে বলেঃ

——–“আরে তুমি এগোচ্ছো কেন আমি ভুল কিছু বলেছি নাকি…

“আয়াফ চুপ….

——–“দেখো তুমি কিন্তু এইভাবে এগোতে পারো না আমার দিকে…

——–“তাই নাকি…

———“আরে আমি কি এমন বললাম যে তুমি এইভাবে এগোচ্ছো…

——–“কি বলো নি তুমি সেই টা বলো…

——-“মানে…

——–“মানে বোঝাচ্ছি তোমায়…

“বলেই আয়াফ কোলে তুলে নেয় আফিয়াকে’!!আফিয়া ঘাবড়ে গিয়ে আয়াফের হাত ধরে বললঃ

——–“আমায় কোলে নিলে কেন?

——–“আজকে তোমায় খুব ভালোবাসবো মায়াবতী…

“আয়াফের কথা শুনে আফিয়া লজ্জায় লাল হয়ে যায়’!!আফিয়ার লাজুক লুক দেখে আয়াফ বললোঃ

———“লজ্জা পেলে তো তোমায় দারুন লাগে মায়াবতী….

“মুচকি হাসে আফিয়া…

“আর এখান থেকেই শুরু হয় আয়াফ আফিয়ার নতুন জীবন যেখানে আছে শুধু ভালোবাসা ভালোবাসা শুরুই ভালোবাসা…🤗🤗🤗

🤗💖💖 || সমাপ্ত ||💖💖🥀

🧡🧡🧡[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ’!!আমি জানি গল্পটা শেষ করে দিয়েছি বলে অনেকেই হয়তো মন খারাপ করবে’!!কিন্তু একটা জিনিস কি সবকিছুরই শুরু আছে যেমন তেমনি শেষও আছে’!!তোমরা সবাই জানো গল্প প্যাঁচানো ভালো লাগে না আমার তাই শেষ করে দিলাম’!!আশা করি সবার ভালো লেগেছে গল্পটা’!!কার কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে’!!তোমাদের সাথে আবার দেখা হবে নতুন গল্প নিয়ে ততদিন সবাই ভালো থাকো সুস্থ থাকো’!!]🧡🧡🧡

“আল্লাহ_হাফেজ….💖

#TanjiL_Mim♥️

নেশালো সে পর্ব-১৭+১৮

0

#নেশালো_সে💖
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম💖

১৭.

——-“আমি জানতাম তুমি আমায় ফোন করবে কিন্তু এত তাড়াতাড়ি সেটা বুঝতে পারি নি….

“একপ্রকার উওেজিত কন্ঠে কথাটা বললো আয়ান’!!কারন অপর পাশের “হ্যালো কেমন আছেন” শুনেই আয়ান বুঝতে পেরেছে অপর পাশে কে কথা বলছে’!!আয়ান আবারো বলে উঠল আরিশাকেঃ

———“তাহলে তোমার উওর কি হবে….

“এই মুহুর্তে আরিশার ইচ্ছে করছে নিজের মাথার চুল নিজেই ছিঁড়ে ফেলতে’!!কেন যে সে ফোন করতে গেল আয়ানকে’!!এখন কি বলবে সে’!!আরিশার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে আবারো আয়ান বলে উঠলঃ

———“এই ভাবে নীরবতায় কাটিয়ে দিবে নাকি…..

———“হুম….

“হাসলো আয়ান’!!তারপর সেও চুপ করে রইলো কতক্ষণ’!!দুজনেই চুপচাপ কারো মুখে কোনো কথা নেই’!!নীরবতার বাদ ভেঙে আরিশা বলে উঠলঃ

———-“এখন তাহলে রাখি পরে কথা হবে…

“বলেই তাড়াতাড়ি ফোন কেটে দেয় আরিশা’!!ভয়ে তার শরীর কাঁপছে’!!অন্যদিকে আয়ান আরিশার কান্ডে হাসলো’!!পরক্ষণেই ভেবে নিলো সে’!!

——–“এতটুকু তো পাক্কা তার মতো আরিশারও মনেও তার প্রতি কোনো অনুভূতি আছে’!!ভেবেই খুশি হয়ে যায় আয়ান….

||

“ভার্সিটির করিডোরে দাঁড়িয়ে আছে আফিয়া’!!আনমনে ভাবছে সে আয়ান কি এমন বলবে তাকে’!!এমন সময় পিছন থেকে আফিয়ার মাথায় চাটি মারে রুহি আর তিশা’!!আচমকা এমনটা হওয়াতে আফিয়া চমকে উঠলো পরক্ষণেই রুহি তিশাকে দেখে বলে উঠল সেঃ

———–“কি হয়েছে তোদের…..

———–“আরে রেগে যাচ্ছিস কেন মুড অফ তোর….(রুহি)

———-“না মুড অফ থাকবে কেন এমনি ভালো লাগছে না…

———-“ওহ,চল তাহলে আমাদের সাথে শপিংমলে…(তিশা)

———–“এখন…

———–“হুম চল ভালো লাগবে মুড ও ঠিক হয়ে যাবে তোর….(তিশা)

———-“কেন যাবি…

———-“আরে চল না তিশা কিছু কিনবে (রুহি)

“তিশা রুহির জোরাজোরিতে শেষমেশ রাজি হয় আফিয়া’!!তারপর তিনজন পা বাড়ালো শপিং মলের দিকে’!!

||

“একটা বড় শপিংমলের ভিতর ঢুকলো আফিয়া, রুহি আর তিশা’!!তারপর তিনজন মিলে একটা জামাকাপড় এর স্টলে ঢুকে এটা ওটা দেখতে লাগলো’!!হর্ঠাৎই স্টলের ভিতরে থাকা একটা আয়নায় একজনকে দেখে চোখ বড় বড় হয়ে যায় আফিয়ার’!!মুখ থেকে অটোমেটিক বেরিয়ে আসে তারঃ

——–“আপু এখানে….

“তারপর রুহি-তিশাকে ওখানেই রেখেই আফিয়া দৌড়ে যায় আদিবার কাছে’!!পিছন থেকে ওর কাঁধে হাত দিয়ে বলে আফিয়াঃ

——–“আপু কেমন আছো তুমি….

“চিরচেনা কন্ঠ শুনে আদিবা পিছন ঘুরে তাকিয়ে নিজের বোনকে দেখে বেশ অবাক হয় সে’!!কম হলেও আজ দু-মাস পর আফিয়াকে দেখছে আদিবা’!!আদিবা খুশি হয়ে নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে ওখানেই আফিয়াকে জড়িয়ে ধরে বলেঃ

———“বোন তুই কেমন আছিস? জানিস তোদের কথা খুব মনে পরতো আমার…

||

“অফিসে বসে কাজ করছে আয়াফ’!!কিছুতেই আজকে তার ভালো লাগছে না’!!অস্থিরতা কাজ করছে ভিষন’!!এমন কেন হচ্ছে বুঝতে পারছে না সে’!!বার বার মনে হচ্ছে সামনে কিছু একটা ভুল হতে চলেছে তার সাথে’!!একরাশ বিরক্ত নিয়ে ফাইলগুলো টেবিলের উপর রেখেই বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো আয়াফ’!!বুকের ভিতর এক অস্থিরতা কাজ করছে তার’!!কিছু একটা হারিয়ে ফেলার ভয় যেকে বসেছে মনে’!!আয়াফ তার টেবিলে থাকা পানির গ্লাসটা হাতে নিয়ে ঢকঢক করে পুরো পানিটা খেয়ে নিলো এক নিশ্বাসে’!!তারপর বলে উঠল সেঃ

———-“আমার এমন কেন লাগছে যে আমি আমার কাছের মানুষকে হারিয়ে ফেলতে চলেছি,,না না,এসব,কি ভাবছি আমি ধুর আফিয়ার চিন্তায় মনে হয় মাথাটা একদম গেছে’!!এসব ভেবে নিজেকে শান্ত করতে লাগলো আয়াফ…

________________

———”তুমি একদম কথা বলবে না আপু কি করে পারলে তুমি বিয়ের দিন এইভাবে পালিয়ে যেতে..রেস্টুরেন্টে বসে একপ্রকার ঝাঁজালো কন্ঠে কথাটা বললো আফিয়া’!!আর আফিয়ার কথা শুনে অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে রইলো আদিবা’!!সে জানে সে যেটা করেছে সেটা ভুল ছিল কিন্তু কি করতো সে’!!ভালোবাসার কাছে যে কঠিন ভুলগুলো মানুষ নিরদিধায় করে ফেলে’!!আদিবাকে এই ভাবে অপরাধীর মতো বসে থাকতে দেখে আফিয়া শান্ত গলায় বলে উঠলঃ

———-“এমন কেন করছে আপু,তুমি জানো তোমার জন্য কত মানুষ বাবা-মাকে কতকিছু বলেছে…

“আফিয়ার কথা শুনে বুকের ভিতর দক করে উঠলো আদিবার’!!কষ্ট হচ্ছে তার’!!আদিবা আফিয়ার হাত ধরে বললঃ

———-“বিশ্বাস কর বোন ওই মুহূর্তে ওটা করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না’!!তুই তো জানিস আমি বাবাকে কতোটা ভয় পাই,বাবার মুখের উপর কথা বলার সাহস আমার নেই’!!এমন একটা মুহূর্তে সবটা হয়ে গেল যে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না…..

———“কেন করলে আপু,তুমি জানো তোমার জন্য ওই করলার জুসের সাথে বাবা আমায় বিয়ে দিছে,অবশ্য করলার জুস এখন কমলার জুস হয়ে গেছে’!!আসলে ওনাকে শুরুতে যতটা তেঁতো ভেবেছিলাম আসলে উনি ততটা তেঁতো নয়’!!খুব ভালো…..

——–“আমি সবটা জানি…

“আদিবার কথা শুনে আফিয়া অবাক হয়ে বললোঃ

——–“মানে..

———“মানে তোর সাথে যে আয়াফের বিয়ে হয়েছে সেটা আমি জানি আয়াফ সব বলেছে আমায় তবে…

——–“কি তবে….

“এই মুহুর্তে আফিয়ার সেদিন রাতের আয়াফের বলা কথাগুলো মনে পড়ে গেল’!হুট করেই বলে উঠল সেঃ

————“আপু তোমায় নাকি আয়াফ পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে, কেন করেছে সাহায্য তোমায়।সবটা জানতে চাই আমি,আয়াফকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কিন্তু উনি কিছু বলে নি…

———–“সেসব তোর না জানলেও চলবে বোন,স্বামী সংসার নিয়ে সুখে থাক!

———-“কেন থাকবে আপু আমি সবটা জানতে চাই তুমি এখন বলবে, আমায় প্লিজ বলো, আপু কেন তোমায় পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল আয়াফ’!!প্লিজ বল আপু…

“এই মুহূর্তে আদিবার মনে হচ্ছে আফিয়ার সাথে দেখা না হলেই ভালো হতো’!!এখন কি বলবে আদিবা’!!আদিবার ভাবনার মাঝখানে আবারো বলে উঠল আফিয়াঃ

———–“কি হলো আপু কথা কেন বলছো না বলো প্লিজ….

“আফিয়ার জোরাজোরিতে আদিবা বললোঃ

———“ঠিক আছে আজকে আমি তোকে সব সত্যিটা বলবো তবে আমার একটা শর্ত আছে..

———-“কিসের শর্ত আপু…

———“সব শোনার পর তুই আবার ভেঙে পরবি না…

“এইবার আফিয়ার একটু ভয় হতে শুরু করল’!!তারপরও সেটা বাহিরে প্রকাশ না করে শক্ত কন্ঠে বললো সেঃ

———-“ঠিক আছে আপু তুমি বলো আমি শুনবো….

“আদিবা এক দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলতে লাগলোঃ

———“আমাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করার পিছনে দুটো কারন ছিল এক আমি একজনকে ভালোবাসতাম আর দুই নাম্বার হলো আয়াফ নিজেও বিয়েটা করতে চায় নি’!!কারন আয়াফ নিজেও একজনকে ভালোবাসতো….

“শেষের এক লাইন শুনে আফিয়ার বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠলো’!!আদিবা আবারো বললোঃ

———-“তুই তো জানিস আয়াফের সাথে বিয়েটা পারিবারিক ভাবেই ঠিক করা হয়ে ছিল আর আয়াফের বাবা আমাদের বাবার বন্ধু হওয়ায় অনেক আগেই ঠিক করে রেখেছিল আমাদের বিয়েটা’!!কিন্তু আমি ভালোবাসতাম সায়ানকে”!!তাই আমি চাই নি এই বিয়েটা করতে’!!বিয়ের ঠিক একদিন আগে আমি টেনশনে মরে যাচ্ছিলাম কি করবো না করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না’!!অনেক ভেবেচিন্তে ডিসিশন নিলাম৷ আয়াফকে সব সত্যিটা বলে দিবো’!!আমি ভেবে নিয়েছিলাম হয়তো ওকে সবটা বলে দিলে বিয়েটা বন্ধ করা যাবে’!!সেই ভেবে সেদিন রাতে আয়াফের সাথে লুকিয়ে দেখা করতে গিয়েছিলাম একটা রেস্টুরেন্টে’!!আমি যাওয়ার আগেই ও পৌঁছে গেছিলও সেদিন ওর চোখে মুখেও দুশ্চিন্তার ছাপ ছিল’!!একবুক সাহস নিয়ে আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই আয়াফ বলে উঠলঃ

——–“আমি এই বিয়েটা করতে চাইছি না আদিবা….

“বিশ্বাস করবি না আয়াফের মুখে এমন কথা শুনে কি রিয়েকশন দিবো আমি ভুলে গেছি’!!খুশি হয়ে আমিও বলে উঠল নিরদিধায়ঃ

———-“আমিও তো এটা বলার জন্যই তোমায় এখানে ডেকে ছিলাম আয়াফ’!!

———-“কি….

———–“হুম আসলে কি বলো তো আয়াফ আমি সায়ানকে ভালোবাসি আর তাঁকেই বিয়ে করতে চাই কিন্তু মাঝখান থেকে তোমার সাথে বিয়েটা ঠিক হয়ে গেছে এখন কি করবো কিছু বুঝতে পারছি না তাই ভাবলাম তোমায় সবটা বলে দিলে হয়তো এই বিয়েটা আটকানো যাবে,,তা তুমি কেন বিয়েটা করতে চাইছো না কোনো লাভ সাভ কেস নাকি….

“আয়াফ হাল্কা হেঁসে বললোঃ

———-“হুম আমারো সেইম কেস আমিও কাউকে ভালোবাসি’!!

———-“তাহলে তো হয়েই গেলো তুমি গিয়ে বলে দেও তোমার বাবাকে তুমি এই বিয়েটা করতে চাইছো না….

“আয়াফ একটু চিন্তিত কন্ঠে বললোঃ

———-“ওইটাই তো প্রবলেম বাবাকে কিছু বলার সাহস পাচ্ছি না তো এমন একটা মুহূর্ত কাল বাদে পরশু বিয়ে সব আত্মীয় স্বজনরাও চলে আসতে শুরু করেছে এখন যদি বলি এই বিয়ে টা করবো না কি হবে ভাবতে পারছো’!!তাই বিয়ে বন্ধ করা যাবে না অন্যকিছু করতে হবে…

———–“অন্যকিছু মানে….

———-“পালাতে হবে তোমায়…

———–“কি তোমার কি মাথা ঠিক আছে আয়াফ কিসব বলছো তুমি….

———–“এছাড়া আর কোনো উপায় নেই আদিবা’!!তুমি সায়ানকে ফোন করে বলে দিও তোমাদের থাকার ব্যবস্থা পালানোর ব্যবস্থা সব আমি করে দিবো….

———–“কিন্তু আয়াফ এটা করলে তো….

———-“কিচ্ছু হবে না….

“তারপর আয়াফের কথা মতোই আমি আর সায়ান পালিয়ে গিয়েছিলাম’!!সব ব্যবস্থা আয়াফই করে দিয়েছিল’!!এমন কি আমায় বাড়ি থেকে বের করতেও আয়াফ হেল্প করেছে’!!আর এই সবকিছুই আয়াফ হয়তো ওর ভালোবাসার মানুষকে পাওয়ার জন্য করেছিল কিন্তু ভুলবশত তোর সাথে বিয়েটা হয়ে যায় ওর….

“এতে ও খুব আপসেট হয়ে পড়ে’!!তোদের বিয়ের পরেরদিন রাতেই আয়াফের সাথে কথা হয় আমার’!!সবশুনে আমি তো অবাক শেষে কিনা তুই সেই করলার জুস কেই বিয়ে করলি’!!সেদিন আয়াফ খুব আপসেট ছিল আমায় বলে ছিল তোকে ডির্ভোস দিয়ে দিবে নাকি ‘!!তারপর আর কথা হয় নি আয়াফের সাথে’!!বুঝতেই পারছিস যার জন্য এতকিছু করলো তাকেই পেল না’!!

.

“এদিকে আরিশা আদিবার মুখে সব শোনার পর ভিতরে ভিতরে খুব কষ্ট হতে লাগলো’!!আয়াফ এত কিছু করেও তার ভালোবাসার মানুষকে পেল না’!!আমিও আর আয়াফের লাইফে বোঝা হয়ে থাকবো না’!!মুক্তি দিবো আয়াফকে’!!তারপর সে তার সেই ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে সুখে থাকুক’!!এসব ভাবছে আফিয়া’!!আফিয়ার ভাবনার মাঝখানে আদিবা বলে উঠলঃ

———-“কি ভাবছিস তুই….

———–“না কিছু না আজকে তাহলে উঠি আপু….

———-“আমার কথা তো শোন আগে আমার মনে….

———–“আর কি মনে হবে আপু ভালো থাকো তুমি আমি যাই….

“বলেই একপ্রকার দৌড়ে বেরিয়ে আসলো আফিয়া রেস্টুরেন্ট থেকে’!!কষ্ট হচ্ছে তার’!!সেও তো এক কয়েকদিনে আয়াফকে খুব ভালোবেসে ফেলেছিল’!!আর আয়াফ এতদিন যা করেছিল সব তাহলে কি তার নাটক ছিল ভেবে পায় না আফিয়া’!!চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পরছে’ তার’!!আফিয়া একটা রিকশা করে যেতে লাগলো’!!তার ফোনে বেশ কয়েকবার ফোন করছে রুহি আর তিশা’!!কারন আফিয়া ওদের কিছু না বলেই চলে এসেছিল আদিবার সাথে রেস্টুরেন্টে’!!আফিয়া তার ফোনটা হাতে নিয়ে ছোট্ট একটা মেসেজ দিয়ে বললোঃ

——–“আমি বাড়ি চলে এসেছি তোরা চিন্তা করিস না…..

“তারপর আরেকটা বড় টেক্সট করলো আফিয়া অন্য আরেকজনকে’!!তারপর বলে উঠল সেঃ

———-“ভালো থেকো আয়াফ তোমার ভালোবাসার মানুষের সাথে…

“ভেবেই চোখের পানি মুছে নিয়ে ফোনটা অফ করে দিলো সে’!!বুকের বাম পাশে চিনচিনে ব্যথা হচ্ছে আফিয়ার’!!এই জন্যই হয়তো বলে

“কাউকে খুব বেশি ভালোবাসতে নেই
হারিয়ে গেলে যে খুব কষ্ট হয়”!!🖤

__________________________________________

_______________________

“রাত_৯ঃ০০টা….

“আয়াফ তার অফিস সেরে বাসায় ফিরে আসলো’!!সারাদিনের অস্থিরও তায় ঠিকভাবে কাজ করতে না পারলেও সব ঠিকঠাকভাবেই শেষ করে এসেছে সে’!!এমন সময় আয়াফের আম্মু এসে বললোঃ

———-“আয়াফ বউমার সাথে কি তোমার কোনো ঝগড়া হয়েছে…..

“আয়াফ বেশ অবাক হলো তার মায়ের কথা শুনে’!!অবাক হয়ে বললো সেঃ

———-“কই না তে আম্মু কেন কি হয়েছে?

———-“আফিয়া বাপের বাড়ি চলে গেছে….

———-“মানে….

———-“মানেটা তো তুমি বলবে আয়াফ আফিয়া নাকি তাদের বাড়ি গিয়ে দরজা বন্ধ করে বসে আছে নিজের রুমে, কাউকে কিছু বলছে না শুধু বলছে নাকি সে একা থাকতে চায়…..
আফিয়ার বাবা ফোন করে জানালো আমাদের’!!আমি তোমায় এতটুকু বলতে চাই ওর সাথে ঝগড়া হয়ে থাকলে তাড়াতাড়ি মিটিয়ে ফেলো আয়াফ’!!

“বলেই আয়াফের মা চলে গেলেন’!!এদিকে আয়াফ যেন শকট হয়ে দাঁড়িয়ে পরলো’!!কিন্তু আফিয়া হর্ঠাৎ এমনটা কেন করলো’!!তাহলে কি সারাদিন এটারই ভয় পাচ্ছিল আয়াফ’!!এসব ভেবে নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালো আয়াফ’!!ফোনটা হাতে নিতেই দেখলো আফিয়ার কর অনেক বড় একটা মেসেজ’!!আয়াফ মন দিয়ে পুরো মেসেজটা পরলো’!!সব পড়ে অভিমানী স্বরে বললো সেঃ

———–“একটি বার আমায় জিজ্ঞেস তো করতে পারতে আফিয়া মেয়েটি কে ছিল তার আগেই এতকিছু ভেবে এতকিছু বলে দিলে তুমি’!!

___________

“মাঝখানে কাটলো দুদিন’!!
এই দুদিনে আয়াফও যোগাযোগ করে নি আফিয়ার সাথে আর আফিয়াও রুম থেকে বের হয় নি’!!সে ভেবেছিল হয়তো আয়াফ তাকে ফোন করে কিছু বলবে’!!কিন্তু না তার ধারণা ভুল হলো আয়াফ তাকে কিছু বললো না’!!তার মানে আয়াফ সত্যি সত্যি তার কাছ থেকে মুক্তি চায়’!!ঠিক আছে আমিও তোমায় মুক্তি দিয়ে দিবো’!!

“বিকেল ৫ঃ০০টা…..

“আফিয়া বসে আছে আয়াফের সাথো আসা সেই এতিমখানার একটা ইয়া বড় গাছের নিচে থাকা বেঞ্জের উপর’!!মনটা ভিষণ ভাবেই খারাপ তার’!!এতটাই খারাপ যে কাউকে কিছু না বলেই এখানে চলে এসেছে সে’!!এমন সময় তার পাশে এসে বসলো আয়াফ’!!আর বলতে লাগলো সেঃ……
!
!
!
!
#চলবে…………

#নেশালো_সে💖
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম💖

১৮.

“নিশ্চুপ বাতাসের আড়ালে গাছের নিচে থাকা একটা বেঞ্জের উপর বসে আছে আয়াফ আর আফিয়া’!!নীরবতার বাঁধ ভেঙে আয়াফ বলে উঠলঃ

———-“এখানে কি করছো তুমি….

“আচমকা চিরচেনা কারো কন্ঠ শুনতেই চমকে উঠলো আফিয়া’!!পাশ ফিরে আয়াফকে দেখে অবাক হয় সে’!!কারন আয়াফ বুঝলো কি করে সে এখানে আছে’!!

———-“এত কি ভাবছো বলো তো,খুব ভালো আছো তাই না আমায় ছাড়া…

———-“ভালো কেন থাকবো না শুনি,তুমি তো খুব ভালো আছো?

———-“হুম ভালো না থেকে যাবো কোথায় বলো’..

———-“আমাকে কষ্ট দিতে এসেছো বুঝি এখানে?

———-“তোমাকে কষ্ট দেওয়া সাধ্য আছে বুঝি আমার….

———-“মজা করছো আমার সাথে..

———-“তোমার কি মনে হচ্ছে আমি এই মুহুর্তে মজা করার মুডে আছি…

———-“না থাকারও বা কি আছে শুনি, আমার কাছ থেকে মুক্তি নিয়ে ভালোবাসার মানুষের সাথে থাকবে….

———-“হুম তা অবশ্য ঠিক বলেছো।

“আয়াফ খুব শান্ত ভাবেই কথাগুলো বলছে কিন্তু আফিয়ার কাছে কথাগুলো যেন ধারালো ছুরির মতো বুকে লাগছে’!!তারপরও নিজেকে যথাসম্ভব শান্ত রাখছে আফিয়া’!!আফিয়া চুপ হয়ে যাওয়াতে আয়াফ আবারো বলে উঠলঃ

———–“কি হলো চুপ হয়ে গেলে যে….

———–“না এমনি ভালো লাগছে না…..

————“কেন ভালো লাগছে না বলো তো, আমায় ছাড়া তো দিব্বি আনন্দে আছো মনে হয়…

———–“তুমি থাকতে পারলে আমি কেন পারবো না….

———–“সেটাও ঠিক….

———–“মেয়েটির নাম কি যাকে তুমি ভালোবাসো….

———–“হুম তোমায় সব বলবো তো তাই তো এসেছি এখানে….

“আফিয়া বেশ অবাক হয়ে বললোঃ

———-“মানে….

———–“একটা গল্প শুনবে…

“আফিয়া কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললোঃ

———-“তোমার এই মুহুর্তে গল্প বলতে ইচ্ছে করছে…

———-“হুম খুব শুনবে তুমি….

-যদি না বলি তাহলে কি চলে যাবে আয়াফ’!!কিন্তু এই মুহুর্তে আফিয়া চাচ্ছে না আয়াফ চলে যাক’!!গল্প শোনার কোনো ইচ্ছে না থাকলেও আফিয়া বলে উঠলঃ

———–“কি গল্প….

———–“আমার গল্প শুনবে তুমি….

———–“ঠিক আছে বলো…

“আয়াফ ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলে নিশ্চুপ পানে সামনে থাকা কিছু ছোট ছোট ফুল গাছের দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করলোঃ

“সময়টা আজ থেকে ঠিক ২ মাস ১৫ দিন আগের কথা…..

“সেদিন অফিসের একটা অনেক বড় ইমপোর্টেন্স মিটিং ছিল আমার’!!তারওপর আবার সেদিন খুব লেট করেই অফিস আসতে হয় আমার’!!ইচ্ছে করে হয়ে ছিল নাকি তার সাথে দেখা করার জন্যই হয়েছিল জানা হয়ে উঠে নি আজও’!!সে যাই হোক আসল কথা বলি এক অনেক লেট হয়ে গেছে আমার বাসা থেকে বের হতে তারওপর মাঝপথে হর্ঠাৎ গাড়ির তেল শেষ হয়ে যায়’!!বলে বুঝাতে পারবো না ওই মুহূর্তে কি পরিমান মাথা গরম ছিল আমার’!!রাগান্বিত মাথা নিয়েই গাড়ি থেকে বের হই আমি’!!জায়গাটা ছিল নীরবতায় ঘেরা’!!তো রেগেমেগেই মাস্ক পড়ে হাঁটতে ছিলাম আমি’!!উদ্দেশ্য ছিল একটা গাড়ি পাওয়ার’!! এমন সময় আচমকা ঝড়ও হাওয়ার মতো একটা মেয়ে আসতে ছিল আমার দিকে’!!মেয়েটি পরনে ছিল একটা লাল রঙের গর্জিয়াস গাউন,চুলগুলো ছিল তার কোমড় পর্যন্ত ছড়ানো,দু-হাত ভর্তি ছিল তার লাল কাঁচের চুরি,তবে তার মুখটা ছিল লাল ওড়না দিয়ে মুড়ানো শুধু মাএ তার চোখ ছাড়া মুখ দেখি নি আমি’!!কিন্তু সেই চোখ দুটোতেই ছিল অসম্ভব মায়ায় জড়ানো’!!তার দিকে তাকিয়ে রয়ে ছিলাম আমি অনেকক্ষণ’!!জীবনে প্রথমবার কোনো মেয়েকে দেখে চোখ আঁটকে যায় আমার’!!বলতে পারো তার সেই চোখে অসম্ভব নেশা লাগানোর মতো কিছু ছিল এক কথায় বলতে গেলে “নেশালো_সে”💖!!তার মায়াবী চোখ, ঘন কালো লম্বা চুল সাথে মনোমুগ্ধকর তো কিছু একটা ছিল তার ভিতর’!!হুট করেই মেয়েটা দৌড়ে এসে ধাক্কা খায় আমার সাথে’!!আমি তখনও নিজের ঘোর লাগানো মুহূর্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারি নি’!!মেয়েটি শুধু দুটো শব্দ উচ্চারণ করেছিল সেদিন’!!শব্দ দুটো ছিল “সরি সরি….!!তারপর একে একে তার পিছন পিছন অনেকগুলো ছেলেমেয়ে দৌড়াতে ছিল তবে কেন দৌড়াতে ছিল আজও জানা হয় নি আমার’!!তবে আমি জানি কিছুক্ষনের মধ্যেই সেই কারনটা জানতে পারবো আমি’!!সে হলো পরের কথা’!!সেদিনের সেই এক মুহূর্তে ঝলকানোর মতো সে আমার জীবনে চলে আসলো’!!সেদিন থেকেই কোনো ভাবেই মেয়েটাকে ভুলতে পারছিলাম না আমি’!!রাতে ঘুমাতে গেলেও মেয়েটার সেই চোখ দুটো খুব মনে পরতো আমার’!!এর ভিতর হুট করেই বাবা বলে উঠলঃ

———-“তোমার জন্য আমরা মেয়ে ঠিক করেছি গিয়ে দেখে এসো…

“সেই মুহূর্তে বিয়ে করার বিন্দু মাএ ইচ্ছে ছিল না আমার’!!কারন আমি তো সেই মেয়েটাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম’!!মেয়েটি সেদিনই শুধু দেখেছিলাম’!!তারপর অনেক খুঁজেও মেয়েটার হদিস মিললো না’!!অবশ্য মেয়েটি হয়তো সেদিনই কোনো কারনে ওড়না দিয়ে মুখ আঁটকে ছিল’!!পরে বহুবার তার সাথে দেখা হয়েছে আমার সাথে ঝগড়াও হয়েছে কিন্তু আমি তাকে চিনতে পারি নি’!!যাকে আড়াল থেকে ভালোবাসতাম তাকে সামনে থেকে একদমই সহ্য করতে পারতাম না আমি’!!আফিয়া আয়াফের কথার আগামাথা কিছু বুঝতে না পেরে বলে উঠলঃ

———“আমি কিন্তু কিছু বুঝতে পারছি না আয়াফ….

———“ধৈর্য ধরো সবটা বুঝে যাবে তোমারই তো গল্প…

“আফিয়া বেশ অবাক হয়ে বললোঃ

———-“মানে…

———-“বলছি তো শুনো আগে সবটা…

“হুম তারপর যা বলছিলাম’!!সেদিনের মেয়েটাকে আর খুঁজে পায় নি আমি’!!এর মাঝে একদিন গাড়ি করে যাচ্ছিলাম বাবার বলা সেই মেয়েটাকে দেখতে’!!একদিকে যাকে ভালোবাসলাম তাকে খুঁজে পাচ্ছি না তার উপর আবার বিয়ে সব মিলিয়ে সেদিন মেজাজটা ছিল গরম’!!ক্ষিপ্ত মেজাজ নিয়েই গাড়ি চালাচ্ছিলাম আমি’!!এমন সময় হুট করেই একটা মেয়ে এসে পরলো গাড়ির সামনে’!!মেজাজ গেল আরো গরম হয়ে’!!আমি গাড়ি থেকে নেমে চেঁচিয়ে বলে উঠলাম মেয়েটাকেঃ

———“ইউ ইস্টুপিট গার্স কোথাকার চোখ কোথায় থাকে তোমার এখনই তো গাড়ি নিচে পড়ে অবস্থা খারাপ হয়ে যেত…

———-“আই এম সরি ভাইয়া…

———“what সরি,এখনই কি বিপদে পরতাম আমি ইডিয়েট কোথাকার…

“অহেতুক মেয়েটা এটা ওটা বলার কারনে মেয়েটা রেগে যায়’!!তারপর সেও চেঁচিয়ে বলতে শুরু করলঃ

———“এই যে মিস্টার “করলার জুস” সেই কখন থেকে শুধু শুধু আপনার তেঁতো কথা গুলো শুনে যাচ্ছি আমি’!!আরে ইচ্ছে করে কি আপনার গাড়ির সামনে এসেছি আমি’!!ভুল বশত হয়েছে’!!সরি তো বললাম নাকি তার পরও ইস্টুপিট ইডিয়েট কতকিছু বললেন আপনি….

———“এই তুমি আমায় কি বললে করলার জুস…

———“হুম আপনি হলেন করলার জুসের মতো তেঁতো, আপনার সাথে যার বিয়ে হবে তার জীবনডা পুরা তেজপাতা হয়ে যাবে…

———-“কি বললে তুমি….

———-“কেন শুনতে পান নি আপনি…..

“এই নিয়ে মাঝরাস্তায় তুমুল বেগে ঝগড়া শুরু হয়ে যায় আমাদের’!!!আয়াফের কথার মাঝখানে আফিয়া বলে উঠলঃ

———-“সেদিন তোমারই দোষ ছিল মিস্টার করলার জুস আমার দোষ ছিল না!সরি বললাম তারপরও তো কতকিছু বললে তুমি….

————“আর তুমি কি বলছিলে মনে আছে আমার যার সাথে বিয়ে তার জীবন নাকি তেজপাতা হয়ে যাবে….

———–“ওটা তো রাগের মাথায় বলেছিলাম…

“হর্ঠাৎই আফিয়া তার কথা থামিয়ে দিয়ে বললোঃ

———-“ওয়েট ওয়েট আপনার গল্পের মাঝে আমি কোথা থেকে চলে আসলাম….

———-“পুরোটা শুনবে তারপর তো বুঝবে তুমি তো পুরোটা বলতেই দিচ্ছো না….

“এইবার আফিয়া অতি আগ্রহ নিয়ে বললোঃ

———“ঠিক আছে আর কথা বলবো না আমি বলো তুমি….

———-“হুম কোথায় জানি ছিলাম ঝগড়ায়’!!তো সেদিন ওই মেয়েটার সাথে ঝগড়া করতে করতে হর্ঠাৎই ফোন বেজে উঠল আমার’!!আর ফোনটা করেছিল যাকে দেখতে যাচ্ছি তার বাবা’!!তো তার ফোনটা আসতেই আমার মনে পড়ে গেল আমি কোথায় যেতে বাড়ি থেকে বের হয়ে ছিলাম’!!তারপর আর কথা না বারিয়ে চলে আসলাম বাবার বলা সেই মেয়েটাকে দেখতে’!!সেখানে গিয়ে আরো অবাক আমি’!!যে মেয়েটার সাথে কয়েক মুহূর্ত আগে ঝগড়া করে আসলাম তার বড় বোনকেই দেখতে এসেছিলাম আমি’!!অবশ্য দেখা করাটা তো জাস্ট শো ছিল বিয়ের কথা বার্তা তো আগেই হয়ে গেছে’!!আমি সেদিন আদিবার সাথে কোনোরকম কথা বলি নি শুধু ওকে দেখেই চলে এসেছিলাম’!!তারওপর তার বোন আফিয়া ওটা তো একটা শয়তান মেয়ে ছিল নানা ভাবে আমায় জ্বালাতো কখনো জুসের ভিতর লবন দিয়ে তো কখনো খাবরের ভিতর বেশি ঝাল দিয়ে’!!মেয়েটার এমন কান্ড একদমই সহ্য হতো না আমার’!!এক কথায় বলতে গেলে একদম অসয্যকর ছিল সে’!!আয়াফের কথার মাঝখানে আবারো আফিয়া কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলে উঠলঃ

———-“তুমি এমন ভাবে বলতে পারলে আয়াফ….

———-“তুমি আবারো কথার মাঝখানে কথা বলছো….

“আফিয়া তার ঠোঁটে কামড় দিয়ে বললোঃ

——–“সরি আর বলবো না…..

“আয়াফ এবারো কিছু বললো না আফিয়াকে’!!আবারো সে বলে উঠলঃ

———“তারপরের তা তো তুমি সবই জানো কিভাবে আমি আদিবাকে বিয়ের আসর সেরে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিলাম’!!আদিবা বাড়ি থেকে বের হতেও আমি সাহায্য করেছিলাম’!!তোমার মনে আছে বিয়ের দিন আমি একটু লেট করে এসেছিলাম আর আমার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছিল’!!আমি তখন আদিবাকে তোমাদের বাড়ি থেকে বের করেই ওখানে গিয়ে ছিলাম’!!কিন্তু ভাগ্যের কি জোর দেখ এতকিছু করেও বিয়ে আটকাতে পারলাম না’!!সেই যাকে সহ্য করতে পারতাম না তার সাথেই জোর করেই বিয়ে দিয়ে দিল বাবা’!!সেদিন বাবার উপর খুব রাগ হয়েছিল আমার’!!খুব অভিমান জমেছিল’!!কিন্তু আজ মনে হচ্ছে সেদিন বাবার কাজটাই সঠিক ছিল’!!ওই কথা আছে না আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে’!!আমারও সেদিন ভালো করেছিল খোদা’!!যাকে আড়ালে ভালোবাসতাম তার সাথেই বিয়ে হয়ে গেল’!!আয়াফের কথার মাঝখানে আফিয়া উওেজিত হয়ে বললোঃ

———-“তার মানে…

———“তুমি আবারো কথার মাঝখানে কথা বললে….

“আফিয়া কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে বললোঃ

———-সরি সরি…..

“আফিয়ার কথা শুনে এতক্ষণ শান্ত থাকলেও এখন আর থাকতে পারলো না আয়াফ রেগে গিয়ে চেঁচিয়ে বললো সেঃ

———”একদম সরি সরি বলবা না এই সরি সরি পুরো জীবনটা খেয়ে দিলো আমার’!!আসলে কি বলো তো তোমরা মেয়েরা সবসময় এক লাইন বেশি বুঝো আরে একটা কথা শুনছো তো সেটা জিজ্ঞেস করবে না তার আগেই এটা ওটা ভেবে এতকিছু বলে দিলে’!!হ্যাঁ তুমি যেন কি কি লিখে মেসেজ দিয়েছিলে আমায়……

“আমি আপনাকে মুক্তি দিয়ে দিবো আয়াফ’!!আজকে আপুর সাথে দেখা হয়েছিল শপিংমলে আমায় সব বলেছে কেন আপনি আপুকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিলেন’!!আমি চাই না আমি কারো জীবনে বোঝা হয়ে থাকতে’!!আর আমি এটাও চাই না তুমি আমার সাথে থেকে নিজেকে কষ্ট দেও’!!আমি চাই তুমি তোমার ভালোবাসার মানুষের সাথে সুখে থাকো’!!তাই ডির্ভোস পেপার পাঠিয়ে দিও আমি সাইন করে দিবো’!!তুমি নোভা আপির সাথে ভালো থেকো’!!

———“তোমার ওই লাস্ট কথাটার অর্থ বুঝতে পারলাম না আমি’!!তুমি কি করে বুঝলে আমি নোভাকে ভালোবাসি…

“আফিয়া একটু ঘাবড়ে গিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বললোঃ

———-“আ..স..লে আ..মি…

———-“একদম তুতলাবে না সহজ ভাবে বলো…

———“আপনি তো সেদিন রাতে বলেছিলেন নোভা আপি চলে যাওয়ায় আপনি তাকে মিস করতেন,তার ছোট ছোট আবদারের কথাগুলো নাকি আপনার খুব মনে পরতো তাই তো…

———-“তাই তুমি ভেবে নিলে আমি নোভাকে ভালোবাসি,আরে কাউকে মিস করার মানেই তাকে ভালোবাসা নয়’!!তোমায় কি করে বোঝায় আমি’!!আর কথা প্যাঁচাতে ভালো লাগছে না সোজা ভাবে বলছি আমি…

“আমি শুধু তোমায় ভালোবাসি’!!নেশালো_সে💖 আর সে মেয়েটাই যে তুমি আফিয়া’!! Unexpected হলেও এটাই সত্যি আমার প্রথম আর শেষ ভালোবাসা তুমি আছো তুমি ছিলে আর তুমি থাকবে’!!বুঝতে পেরেছো….

“সেদিন রাতে যখন তোমায় লাল রঙের ড্রেস পরানোর জন্য উতোলা হয়ে পড়েছিলাম আমি’!!সেদিনই জেনে গিয়েছিলাম’!!আমি যাকে এতো ভালোবাসি সেই তুমি’!!ভেবেছিলাম তোমায় সবটা বলবো কিন্তু সময় করে বলতে পারি নি’!!তাই তোমায় বলেছিলাম সেদিন আমি না আসা পর্যন্ত তুমি ঘুমাবে না’!!কিন্তু তুমি কি করলে আমার ঘুমটাই কেড়ে নিলে’!!এত বেশি বুঝলে কেন তুমি, তুমি জানো তোমার বেশি বোঝার জন্য দু-রাত ঘুম হয় নি আমার’!!সেদিন রাতে ইচ্ছে করছিল তোমার মাথার সব চুল ছিঁড়ে ফেলি’!!কিন্তু আমারও অভিমান হয় তোমার ওপর তাই ইচ্ছে করেই ফোন করি নি তোমায়’!!আর তুমি কি ভাবলে আমি অন্য মেয়েকে নিয়ে খুব সুখে আছি’!!আরে তোমার জন্য এতকিছু করলাম আর তুমিই কিনা এই ভাবে বেশি বুঝে ছেড়ে আসলে আমায়’!!এইরকম আরো বক বক করতে লাগলো আয়াফ’!!দু’দিনের যত জমালো রাগ ছিল সব এই মুহুর্তে আয়াফ ঝারছে আফিয়ার উপর’!!আর এদিকে আফিয়া নিজের বোকামির জন্য নিয়েই এখন লজ্জিত’!!হুট করেই আফিয়া আয়াফকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে’!!তারপর কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠল সেঃ

———“আমি সত্যি সরি,আমি সত্যি বুঝতে পারি নি এইরকম কিছু হতে পারে’!!আমি তো ভেবেছিলাম তুমি অন্য কাউকে ভালোবাসো’!!আমার সত্যি ভুল হয়ে গেছে তোমায় কিছু জিজ্ঞেস না করেই উল্টো পাল্টা ভাবা,, আর উল্টো পাল্টা ডিসিশন নেওয়া’!!আমি এই দু-দিনে সত্যি বুঝে গেছি তুমি ছাড়া আমি বড্ড অসহায়’!!এই কয়েকদিনে যে আমি তোমায় এওতো এওতো ভালোবেসে ফেলেছি’!!আই এম ছো সলি জামাই…🤧🤧

||

“আচমকা এমনটা হওয়াতে আয়াফ পুরো ভরকে গেল’!!পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিলো সে’!!সে জানতো আফিয়া এমন কিছুই বলবে তাই আফিয়া যখন বাড়ি থেকে বের হলো ওর পিছন পিছন সেও চলে এসেছে’!!কারন আফিয়া যখন বাড়ি থেকে বের হয় তখন আয়াফ ওদের বাসার নিচেই ছিল নিজের গাড়ির ভিতর!

.

“অন্যদিকে আফিয়া কেঁদে কেঁদে আয়াফের শার্ট ভিজিয়ে ফেলেছে’!!আয়াফ আফিয়াকে ছাড়িয়ে বললোঃ

———“ঠিক আছে ঠিক আছে আর কাঁদতে হবে না, কাঁদলে তোমায় একদম প্যাঁচার মতো লাগে….

———-“কি আমায় প্যাঁচার মতো লাগে থাকবো না আমি তোমার সাথে……

“বলেই যেই না উঠতে যাবে আফিয়া সাথে সাথে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললঃ

———-“আমায় ছেড়ে কোথায় যাবে মায়াবতী….

হাসলো আফিয়া…
!
!
!
!
#চলবে…………

🤍🤍🤍[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ!!
আর গল্প কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে!!]❤️❤️❤️

#TanjiL_Mim♥️

নেশালো সে পর্ব-১৫+১৬

0

#নেশালো_সে💖
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম💖

১৫.

“ব্যস্তহীন রাস্তায় হর্ঠাৎ আয়ান গাড়ি থামিয়ে দিল’!!এতে বেশ অবাক হয় আরিশা’!!অবাক হয়ে বললো সেঃ

———“গাড়ি থামিয়ে দিলেন কেন?

———“তোমায় এখানে রেখে চলে যাবো তাই….

———“কি..😳

———“তোমার মাথা….

“বলেই আয়ান নেমে গেল গাড়ি থেকে’!!আর আরিশা একরাশ বিরক্ত মাখা মুখ নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে দাঁড়ালো গাড়ির পাশে’!!জায়গাটা খুব সুন্দর একদম নীরবতায় ঘেরা’!!রাস্তার দুদিক ঘুরে রয়েছে সারি সারি সব গাছপালা,,গাছের পাতার মিষ্টি বাতাস এসে লাগছে আরিশার গায়ে’!!অসম্ভব ভালো লাগছে তার’!!এক মুহূর্তের জন্য হলেও সে ভাবলো বেশ হয়েছে আয়ান এখানে গাড়ি থামিয়ে দিয়েছে’!!কিন্তু আয়ান গেল কই?….

“কিছুক্ষন পর আয়ান এসে দাঁড়ালো গাড়ির সামনে তারপর আরিশাকে বললোঃ

———“চল….

———-“কোথায় গিয়েছিলেন?

———-“কেন মিস করছিলে বুঝি….

———-😒😒

———-“ওভাবে তাকানোর মতো কিছু বলি নি যাগ গে বাদ দেও চলো না হলে পড়ে দেরি হয়ে যাবে…..

“আরিশাও আর কথা বারিয়ে মুখ ফুলিয়ে বসলো গাড়ির ভিতর’!!আর আয়াফ সেও মুচকি হেঁসে বসলো গাড়িতে….

||

“ওয়াশরুম থেকে চুপি চুপি বেরিয়ে আসলো আফিয়া’!!আশেপাশে কোথাও আয়াফকে না দেখে সস্থির নিশ্বাস ফেললো সে’!!কারন ওয়াশরুমে গেছে ঠিকই কিন্তু জামা নিতে ভুলে গেছে সে’!!তাই ভেজালো অবস্থায় বাহিরে বের হলো’!!আলমারির কাছে দাঁড়িয়ে চুপিচুপি আলমারি খুলে একটা ড্রেস হাতে নিলো সে’!!তারপর আবারো বেক করলো’!!এমন সময় বেলকনি থেকে ফোনে কথা বলে বেরিয়ে আসলো আয়াফ’!!আফিয়া তো আয়াফকে দেখেই ভয়ে ঢোক গিললো’!!কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠল সেঃ

———“তু… তু… মি….

———“হুম আমি কেন অন্য কাউকে মনে করেছিলে বুঝি….

———“ইয়ে না অন্য কাউকে মনে করতে যাবো কেন?

“বলেই পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নেয় আফিয়া’!!এমন সময় আয়াফ ওর হাত চেপে ধরে বললোঃ

———“আমায় পাগল করে দিয়ে কোথায় যাচ্ছো তুমি?

“আয়াফের কথা শুনে আফিয়া চোখ বড় বড় করে বললোঃ

———“মানে…..

———“মানে বোঝাচ্ছি তোমায়….

“বলেই আয়াফ আফিয়ার হাত ধরে টেনে কাছে এনে নিয়ে আসে’!!এতে আফিয়া বেশ অবাক হয়’!!এদিকে আয়াফ আবারো সেই ঘোর লাগানো নেশালো মুডে চলে গেছে আফিয়ার ভেজালো চুল,চোখ মুখ দিয়ে এখনো পানি পরছে, ঠোঁটটাও অসম্ভব কাঁপছে আফিয়ার’!!এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আয়াফ আফিয়ার দিকে’!!হর্ঠাৎই আফিয়া বলে উঠলঃ

———“আমি জানি আয়াফ তুমি কিছু করবে না এইভাবে কতক্ষণ তাকিয়ে থেকে সরি বলে চলে যাবে তাই বলছি কি আমাকে যেতে দেও এমনিতেই ফ্লোর ভিজে যাচ্ছে এভাবে আরো কিছুক্ষন থাকলে পুরো রুমে পানিতে ভিজে যাবে’!!তারপর তুমি আবার বকবে, তাই বলছি যে…….তে….

“আর কিছু বলতে পারলো না আফিয়া’!!এর আগেই আয়াফ আফিয়ার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট বসিয়ে দিল’!!ঘটনাচক্রে আফিয়ার চোখ বড় বড় হয়ে গেছে’!!সে ভাবতেই পারে নি আয়াফ এমন কিছু করবে…..

“বেশকিছুক্ষন পর…..

“আয়াফ আফিয়াকে ছেড়ে দেয়’!!আফিয়া এখনও শকট মুডে আছে’!!আয়াফ তার ঠোঁটে হাত দিয়ে আফিয়ার কানের কাছে তার মুখ নিয়ে বললোঃ

———-“সরি….

“তারপর চলে গেল সে’!!এদিকে বেচারি আফিয়া নিজের ঠোঁটে হাত রেখেই চলে যায় ওয়াশরুমে….

________________

“কলিং বেল বাজতেই দরজা খুলে দেয় শাশুড়ী মা’!!সামনে আরিশা আর সাথে একটা ছেলেকে দেখে বেশ অবাক হয় সে’!!আয়ান আরিশার আম্মুকে দেখেই একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বললোঃ

———“আসসালামু আলাইকুম আন্টি,

———-“ওলাইকুম আসসালাম বাবা…

———-“আপনি নিশ্চয়ই আফিয়ার শাশুড়ী মা আর আরিশার আম্মু….

“আয়ানের কথা শুনে শাশুড়ী মাও হেঁসে মাথা নাড়ালেন’!আয়ান ওনার কথা শুনে ওনার হাত ধরে বললোঃ

———–“কেমন আছেন আন্টি আমি হলাম আয়ান আফিয়ার কাজিন….

“এতক্ষণ পর আরিশার আম্মু বুঝতে পারলো ছেলেটি কে?উনিও হেঁসে বললোঃ

———–“ওহ বুঝতে পেরেছি আসো ভিতরে বাহিরে দাঁড়িয়ে কেন?আর আরিশা তুইও বা কেমন ওকে ভিতরে না ঢুকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছিস….

———-“আমি কি বলবো তোমরা দুজনই তো(আরিশা)

———-“চুপ কর তুই,আসো বাবা তুমি…

“এই বলে আয়ানকে ভিতরে নিয়ে চলে গেলেন আরিশার আম্মু’!!অন্যদিকে আরিশা মুখ ফুলিয়ে চলে গেল ভিতরে’!!

….

“এমন সময় সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছিল আয়াফ’!!ওদেরকে দেখে ওদের দিকে এগিয়ে আসলো সে’!!ছেলেটিকে দেখে আয়াফের বুঝতে বাকি রইলো না এটাই তাহলে আফিয়ার কাজিন আয়ান’!!আয়ান আয়াফকে দেখে একটা হাসি দিয়ে ওর দিকে এগিয়ে এসে বললোঃ

———“হেই ব্রো তুমি নিশ্চয়ই আয়াফ, আফিয়ার বর…

“বিনিময়ে হাসলো আয়াফ’!!তারপর বললো সেঃ

———-“তুমি আয়ান আফিয়ার কাজিন…

“আয়ানের কথা শুনে আয়ান অবাক হয়ে বললোঃ

———–“তুমি আমায় চিনো….

———–“কিছু টা….

“তারপর সবাই মিলে একসাথে গল্প জুড়ে দিলো’!!আয়ান হলো একটা মিশুক টাইপের ছেলে’!!সহজেই সবার সাথে মিশে যেতে পারে সে’!!আয়ানের মতো ছেলে যে কেউ নিমিষেই ভালোবেসে ফেলবে…..

||

“রাত_৯ঃ০০টা……

“ডাইনিং টেবিলে বসে আছে সবাই’!!আয়ানও আছে সে যেতে চেয়েছিলো কিন্তু আয়াফের আম্মু যেতে দেয় নি’!শেষমেশ আয়ান থেকে গেল আজকের রাতের জন্য’!!কালকে সকালেই চলে যাবে সে’!!পুরো ডাইনিং টেবিলে আয়ান আর আফিয়ার হাসাহাসিতেই মেতে গেছে পুরো বাড়ি’!!সবাই বেশ ইনজয় করছে বিষয়টাতে আয়াফের আব্বুও’!!এমনই সবার খাবার মাঝখানে আয়ান বলে উঠলঃ

———-“তবে যাই বলুন আন্টি আপনাকে কিন্তু খুব সুন্দর দেখতে……

“বিনিময়ে হাসলো আয়াফের আম্মু’!!এমনই এটা ওটা নিয়ে কথা বলছে আয়ান’!!আর বাকি সবাই মজা নিচ্ছে কারন আয়ানের সব কথাগুলোই ছিল মজার’!!অন্যদিকে আরিশা চুপচাপ বসে আছে’!!ভালো লাগছে নাকি খারাপ লাগছে বুঝতে পারছে না সে’!!অবশেষে ডিনার সেরে যে যার রুমে চলে গেল’!!……

___________________________

“দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে পায়চারি করছে আফিয়া’!!ভিতরে যাবে কি যাবে না ভেবে পাচ্ছে না সে’!!দুপুরের সেই ঘটনার পর থেকেই আয়াফের সামনে যেতে লজ্জা লাগছে আফিয়ার’!!কি করবে না করবে ভেবে পাচ্ছে না আফিয়া’!!এমন সময় পিছন দিক থেকে আয়ান বলে উঠলঃ

——–“তুই এইভাবে রুমের ভিতর পায়চারি করছিস কেন?

“আচমকা এমনটা শোনাতে আফিয়া কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে বললোঃ

———“পায়চারি করতে যাবো কেন পা একটু ব্যাথা করছিল তাই আর কি….

———“মিথ্যা বলছিস কেন আয়াফের সাথে ঝগড়া করেছিস নাকি….

———“আরে না ঝগড়া করতে যাবো কেন?এই তো যাচ্ছি আমি রুমে বাই ভাইয়ু গুড নাইট…..

———“হুম গুড নাইট….

“এদিকে আফিয়া মনে মনে আল্লাহর নাম নিতে নিতে ভিতরে চলে গেল’!!এদিকে আফিয়া ভিতরে যেতেই আয়ানও চলে গেল তার রুমে…

.

“রুমে ঢুকে আস্তে দরজা আঁটকে দিল আফিয়া’!!তারপর ছোট্ট একটা শ্বাস ফেললো সে’!!কারন আয়াফ ঘুমিয়ে পরেছে’!!হুদাই এত ভয় পাচ্ছিল’!!তারপর আফিয়াও হাল্কা হেঁসে নিশ্চুপে আয়াফের পাশ দিয়ে ঘুমিয়ে পরল সে…….

__________________________________________

_______________________

“ছাঁদের উপর নিশ্চুপে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে আয়ান’!!ঘুম আসছে না তার’!!তাই চুপচাপ ছাঁদে দাঁড়িয়ে আছে আয়ান’!!এমন সময় সেখানে উপস্থিত হলো আরিশা’!!তারও সেইম কান্ডিশন ঘুম আসছে না’!!হর্ঠাই কি মনে করে ছাঁদের উদ্দেশ্যে আসলো সে’!!ভিতরে ঢুকে আয়ানকে দেখে বেশ অবাক হয় সে’!!অটোমেটিক তার মুখ থেকে বেরিয়ে আসলোঃ

——–“এখনো ঘুমান নি আপনি?

“আচমকা কোনো মেইলি কন্ঠ শুনে পিছন ঘুরে তাকালো আয়ান’!!আরিশাকে দেখে মুচকি হেঁসে বললো সেঃ

———“না ঘুম আসছে না তাই আর তুমি….

“আরিশা আয়ানের পাশে দাঁড়িয়ে বললোঃ

———“আমারও….

——–“ওহ….

——–“হুম…

———“তা আপনি কি করছেন এখানে…..

———“তেমন কিছু নয়…..

———–“আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে….

———-“হুম আছে(নীরবভাবে)

———“ওহ….

———-“এখন তুমি বলো তোমার বয়ফ্রেন্ড আছে?

“হাসলো আরিশা তারপর বললো সেঃ

———“না এখনো হয় নি তবে হয়ে যাবে,তা আপনার গার্লফ্রেন্ডকে কেমন দেখতে?

———-“একদম তোমার মতো….

“আয়ানের কথা শুনে আরিশা অবাক হয়ে উচ্চ স্বরে হেঁসে দিল’!!আরিশার হাসি দেখে মনে মনে বলে উঠল আয়ানঃ

———“এতো হেঁসো না আমি যে সত্যি সত্যি পাগল হয়ে যাবো!

“তাঁরপর দুজন পাশাপাশি বসে গল্প জুড়ে দিলো’!!হয়তো এই গল্পের মাঝেই শুরু হবে নতুন ভালোবাসার গল্পের সূচনা……
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…………

#নেশালো_সে💖
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম💖

১৬.

“ভোরের প্রভাতি আলোতে ঘুম ভাঙলো আরিশার’!!ঘুম ঘুম চোখে হর্ঠাৎই মনে হলো তার সে কাউকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে’!!চমকানোর মতো আচমকাই চোখ খুললো সে’!!পাশে আয়ানকে দেখে সে বুঝে ফেলেছে কাল রাতে তারা গল্প করতে করতেই এখানে ঘুমিয়ে পড়ে ছিল’!!আয়ানের কাঁধে মাথা দিয়েই ঘুমিয়ে ছিল আরিশা’!!আর আয়ানের মাথাটা ছিল ছাঁদের দেয়ালের সাথে হেলানো’!! মাথা তুলে অপলক ভাবে তাকালো আরিশা আয়ানের দিকে’!!এই মুহূর্তে আয়ানকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে আরিশার কাছে আয়ানের পড়নে একটা রেড কালারের টিশার্ট সাথে ব্লাক জিন্স চুলগুলো এলেমেলো ভাবে পড়ে আছে কপালে,ছাঁদের হালকা শীতলাতাপ বাতাসে তার চুলগুলো উরছে’!!পলকবিহীন তাকিয়ে আছে আরিশা আয়ানের দিকে’!!হর্ঠাৎই তার ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসলো আরিশা’!!নিজেই নিজেকে বকে দিয়ে বললোঃ

———-“তুই যে পাগল হয়েছিস তা কি বাড়ির মানুষ জানে আরিশা…

“বলেই নিজের মাথায় নিজেই একটা চাটি মারে’!!হর্ঠাৎই তার মনে হলো এখনি তার এখান থেকে যাওয়া উচিত কেউ দেখে ফেললে প্রবলেম হয়ে যাবে’!!কিন্তু আয়ানকে এইভাবে একা রেখে যাওয়াটাও ভালো লাগছে না আরিশার’!!কিছুক্ষণ ভেবে চিন্তে ডিসিশন নিলো আয়ানকে ডাকবে আরিশা’!!যেই ভাবা সেই কাজ’!!আলতো করে আয়ানের কপালে হাত রাখলো আরিশা’!!কপালে অবাধ্য চুলগুলো হাত দিয়ে সরিয়ে দিয়ে মুচকি হাসলো সে’!!আস্তে আয়ানের কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো সেঃ

———-“আয়ান…..

“দু-বার আয়ানের নাম ধরে ডাকতেই আয়ান হাল্কা নড়েচড়ে উঠলো’!!তারপর আরিশাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুম ঘুম কন্ঠে বলল সেঃ

———–“আর একটু ঘুমাই….

“এই মুহুর্তে আরিশা পড়ে গেছে মহা বিপদে’!!কি করবে বুঝতে পারছে না সে’!!এদিকে আকাশটাও বেশ পরিষ্কার হতে শুরু করেছে’!!যেকোনো মুহূর্তে কেউ চলে আসতে পারে এখানে’!!আরিশার বাবার আবার সকালে ছাঁদে আসার অভ্যাস আছে’!!ভাবতেই আরিশার ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে’!!আরিশা একটু উচ্চ স্বরেই বলে উঠলঃ

———-“আয়ান যেকোনো মুহূর্তে এখানে কেউ চলে আসতে পারে, আর আমাকে আর আপনাকে একসাথে দেখলে প্রবলেম হয়ে যাবে তো প্লিজ উঠুন রুমে গিয়ে ঘুমান….

“এভাবে আরো বেশ কয়েক বার ডাকার পরও আয়ানের কোনো হেলদোল দেখতে পেলো না আরিশা’!!শেষমেশ কোনো উপায় না পেয়ে আয়ানের হাতে কামড় বসিয়ে দেয় আরিশা’!!আচমকা হাতে ব্যাথা অনুভব হতেই চোখ খুলে তাকালো আয়ান’!!আয়ান উঠতেই আরিশা দু-কদম পিছনে চলো গিয়ে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো’!!যেন কি হলো কিছুই জানে না সে….

…..

“আয়ান লাফ মেরে বললোঃ

——–“হাতে মনে হলো কেউ কামড় দিলো…

———-“ওসব কামড়ের কথা পড়ে ভাববেন আগে রুমে যান আয়ান কেউ এইভাবে ছাঁদে দেখতে পেলে কেলেংকারী হয়ে যাবে…

“আয়ান নিজেও বিষয়টা বুঝতে পেরেছে তাই আর কথা বারালো না সে তারওপর ঘুমের রেশ এখনও কাটে নি তার’!!তাই সেও আর কিছু না বলে নেমে আসলো ছাঁদ থেকে গিয়ে নিজের রুমে ঘুমিয়ে পরলো’!!তারপরও মাথার ভিতর একটা প্রশ্ন রয়েই গেলো তারঃ

——–“হাতে কামড় কে দিলো….

.

“অন্যদিকে আয়ান রুমে যেতেই সস্থির নিশ্বাস ফেললো আরিশা’!!তারপর সেও আর কিছু না ভেবে চুপি চুপি তার রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরলো….

___________________________

সকাল_৯ঃ০০টা……

“সূর্যের ফুড়ফুড়ে আলোতে ঘুম ভাঙল আয়াফের’!!নিজের বুকে ভাড়ি কিছু অনুভব হওয়াতে চোখ খুলে তাকালো সে’!!আফিয়াকে নিজের বুকের উপর দেখে মুচকি হাসলো আয়াফ’!!তাকে জড়িয়ে ধরে বাচ্চাদের মতো ঘুমাচ্ছে আফিয়া’!!খুব সযত্নেই জড়িয়ে ধরে আছে আফিয়া আয়াফকে’!!আয়াফ তার হাত দিয়ে আফিয়ার চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বললোঃ

———“কালকের জন্য আমি সত্যি সরি আসলেই চাইনি এমনটা করতে কিন্তু কি করবো বলো তোমায় দেখলে সত্যি কেমন একটা হয়ে যাই আমি!একটা ঘোর লাগানো নেশালো অনুভতিতে আঁটকে যাই আমি’!!তাই আমি ভেবেছি মায়াবতী আর লুকোচুরি নয় আজকেই সব সত্যি বলবো তোমায় সেদিন কেন বিয়ের আসরে তোমার বোনকে পালিয়ে যেতে সাহায্য ছিলাম,কেন সেদিন রাতে তোমায় লাল ড্রেস পড়ানোর জন্য উতোলা হয়ে পড়েছিলাম আমি’!!সব বলবো আমি’!!ভেবে হাসলো আয়াফ’!!তারপর আফিয়ার কপালে ছোট্ট একটা চুমু দিয়ে বললো সেঃ

———“আজকে তোমায় সব বলে অনেক বড় সারপ্রাইজ দিবো আমি “মায়াবতী”!!শুধু একটু অপেক্ষা করো….

“বলেই আফিয়াকে ছাড়িয়ে উঠে পড়ে আয়াফ’!!তারপর চলে যায় সে ওয়াশরুমে…..

.

“অন্যদিকে আফিয়া ঘুমে এতটাই মগ্ন ছিল যে তার কান পর্যন্ত আয়াফের কথা গুলো পৌঁছালো না’!!পৌঁছালে হয়তো খুব খুশি হতো সে…..

||

“দুপুর_১২ঃ০০টা…..

“আয়ান চলে যাবে তাদের বাড়িতে’!!এই দুপুরবেলা কেউ যায় এটা বলে আটকাচ্ছে শাশুড়ী মা কিন্তু আয়ানের এই মুহুর্তে বাড়িতে যাওয়াটা জরুরি তার কিছু কাজ আছে’!!আসলে দোষটা তারই ছিল সকালে ঘুম থেকে উঠতেই দেরি হয়ে গেছে’!!তবে এর জন্য যে সে নিজেই দায়ী এটা বুঝে গেছে আয়ান’!!আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের চুল ঠিক করে বের হলো আয়ান’!!তার রুমের পাশের রুমটি ছিলো আরিশার’!!কিছু একটা ভেবে আয়ান সেই রুমের দিকে পা বাঁড়ায়’!!রুমটা ফাঁকা ছিল হয়তো আরিশা নিচে গেছে’!!আয়ান একটা ছোট্ট চিরকূট আর একটা ছোট্ট বক্স রাখলো আরিশার টেবিলের উপর’!!তারপর রুম থেকে বেরিয়ে গেল সে’!!নিচে নামতেই দেখলো আয়ান সবাই তার জন্য অপেক্ষা করছে শুধু আয়াফ বাদে’!!কারন আয়াফ চলে গেছে অফিসে’!!আফিয়া যেত ভার্সিটি কিন্তু যায় নি হয়তো তার জন্যই এইরকম নানা কিছু ভেবে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলো আয়ান’!!তারপর সবার কাছ থেকে বিদায় নিলো সে’!!তার পাশেই ছিল আরিশা’!!আয়ান দরজা পর্যন্ত আসতেই বললো শাশুড়ী মাকেঃ,

———“ভালো থাকবেন আন্টি,আর আমার বোনটার দিকেও খেয়াল রাখবেন জানি আপনারা খুব ভালোবাসেন আমার বোনটাকে….

“শাশুড়ী মা মুচকি হেঁসে বললোঃ

———“তুমি কোনো চিন্তা করো না বাবা আফিয়া খুব থাকবে এখানে….

———“আমি জানি আন্টি…

———-“তুমি কিন্তু আজকে থাকতে পারতে….

———-“একদমই সময় হবে না তা না হলে অবশ্যই থাকতাম আমি….

“আয়ান আফিয়ার কাছে গিয়ে বললোঃ

———-“ভালো থাকিস আর সবাইকে ভালো রাখিস কিন্তু….

———–“তুমি আজকে থাকতে পারতে ভাইয়া….

————“রাগ করিস না বোন আবার অন্যআরেক সময় বলেই বোনকে জড়িয়ে ধরে আয়ান!

“আয়ান এবার চলে যায় আরিশার সামনে তারপর মিষ্টি করে নরন গলায় বললো সেঃ

———-“ভালো থেকো আর এতদিন জ্বালানোর জন্য সরি (কানে হাত দিয়ে)….

“বিনিময়ে আরিশা কিছু বললো না’!!শুধু হাল্কা হাসলো’!!মনটা খারাপ লাগছে তার’!!কিন্তু কেন লাগছে বুঝতে পারছে না আরিশা’!!

“এইভাবে একে একে সবার কাছ থেকে বিদায় জানিয়ে চলে গেল আয়ান গাড়ি করে তার গন্তব্যে’!!আয়ান যেতেই একে একে সবাই বাড়ির ভিতরে ঢুকে গেল’!!আরিশা কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল আয়ানের যাওয়ার পানে’!!কিছুক্ষণে মধ্যেই আয়ানের গাড়ি রাস্তার মাঝে বিলীন হয়ে গেল’!!একটা ছোট্ট দীর্ঘশ্বাস ফেলে আরিশা চলে গেল ভিতরে’!!কিছুতেই ভালো লাগছে না তার’!!চুপচাপ নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে শুয়ে পরলো সে’!!কোথাও এক শূন্যতা কাজ করছে তার’!!নীরবে চোখ বন্ধ করে নিলো’!!অদ্ভুত চোখ বন্ধ করলেই আয়ানের মুখটা ভেসে আসছে সামনে’!!কিছুক্ষণ এভাবে কাটানোর পর একরাশ বিরক্ত নিয়ে উঠে বসলো বিছানার উপর আরিশা’!!মুখ থেকে অটোমেটিক বেরিয়ে আসলো তারঃ

———“এটা কেমন আয়ান আপনি চলে গিয়েও জ্বালাচ্ছেন আমায়’!!এটা ঠিক না….

“হর্ঠাৎই আরিশার চোখ গেল টেবিলের উপর রাখা একটা হলুদ রঙের খামে দিকে’!!পাশেই একটা ছোট্ট বক্স’!কৌতুহলে আরিশা চলে গেল তার টেবিলের কাছে খাম আর বক্সটা কাছে’!!তারপর হাতে নিয়ে খাম আর বক্সটা ঘুরিয়ে দেখতে লাগলো সে’!!খামের উপরে লেখা শুরু তোমার জন্য….

“আরিশা কোনোকিছু না ভেবেই খামের ভিতর থেকে একটা চিরকূট বের করলো’!!তারপর বিছানায় বসে মন দিয়ে পড়তে শুরু করল সে’!!প্রথমেই লেখা……

-“ডিয়ার আরিশা,

“সত্যি বলতে কি তোমাকে প্রথম যেদিন সিঁড়ির উপর দেখেছিলাম সেদিনেই এক অদ্ভুত ভাবে মায়ায় জড়িয়ে গেছি আমি’!!বলতে পারো “লাভ এট ফাস্ট সাইড”!!বুকের বাম পাশে কেমন একটা করে উঠলো সেদিন’!!তোমার মায়াবী চোখ দেখে এক অদ্ভুত আকৃষ্টতা অনুভব করি আমি’!!এমনটা আগে কোনোদিন হয় নি আমার’!!তারপর তোমাকে এটা ওটা নিয়ে জ্বালাতে ভিষণ ভালো লাগতো আমার’!!এর জন্য আবারো সরি বলছি আমি’!!কেনো জানি না তোমার সাথে সময় কাটাতে ভিষণ ভালো লাগে আমার’!!কাল রাতে কাটানো সময়টা এখনও আমার চোখের সামনে ভাসছে খুব’!!প্রতিটি মুহূর্তে আমি তোমায় অনুভব করি’!!হয়তো তোমায় আমি ভালোবেসে ফেলেছি’!!তবে আমি তোমার জোর করবো না আমায় ভালোবাসার জন্য’!!হয়তো আমার দিক থেকে যতটা তোমার জন্য ফিলিংস আছে তোমার দিক থেকে হয়তো নেই’!!তাই অবশেষে বলবো আমি_

“আমার প্রতি তোমার কোনো ফিলিংস থাকলে অথবা আমার শূন্যতা তোমায় কাঁদালে!অথবা যদি আমার মতো তোমারও আমার প্রতি ভালোবাসা থেকে থাকে তবে নিচে নাম্বারে ফোন করে জানিও… আর হা সকালে তোমার দেওয়া কামড়টা কিন্তু খুব জোরে ছিল নেক্সট টাইম যেদিন দেখা হবে সেদিন সব সুদে আসলে ফেরত দিবো কিন্তু…..

“ইতি তোমায় জ্বালানো সেই ছেলেটি….

“আয়ান”

“প্রথম কথাগুলো পড়ে আনমনে হাসলেও লাস্টের কথাটা শুনে আরিশার চোখ বড় বড় হয়ে গেল’!!মুখ দেখে বের করলো সেঃ

——–“আপনি সত্যি পাগল আয়ান….

“তারপর বক্সটা খুলে দেখলো একটা সুন্দর লকেট’!!মুচকি হাসলো আরিশা’!!আর ভাবলো সে ফোন কি করবে সে নাকি করবে না……

__________________________________________

_______________________

“মাঝখানে কাটলো দুদিন!

“এই দুদিনে আয়াফ এতটাই তার কাজে ব্যস্ত ছিল যে আফিয়াকে কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারলো না সে’!!রোজ রাতেই ভাবে আয়াফ আজকে বাসায় গিয়ে বলবে আফিয়াকে’!!কিন্তু এই দুদিন রাতে আয়াফ এতটাই ব্যস্ত ছিল যে রাতে আয়াফ বাসায় ফিরতে ফিরতে আফিয়া ঘুমিয়ে পরতো’!!একরাশ হতাশ ভাব নিয়ে ঘুমিয়ে পরতো আয়াফ’!!তবে আজকে ভেবেই নিয়েছে যত যাই হোক আজকে রাতে আফিয়াকে বলবেই সে’!!

“আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে এসব ভাবছিল আয়াফ’!!আর অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিল সে’!!এমন সময় টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে সোফায় বসলো আফিয়া’!!আজকে ভার্সিটি যাবে সে’!!আয়াফ আফিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে আসো’!!আর হ্যাঁ আজকে রাতে আমি না আসা পর্যন্ত তুমি ঘুমাবে না আমি তোমায় কিছু বলবো’!!আফিয়া সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললোঃ

——-“কি বলবে তুমি…..

——–“সেটা না হয় রাতেই বলি…

“বলেই বেরিয়ে আয়াফ রুম থেকে’!!তারপর আফিয়াও তৈরি হয়ে বেরিয়ে গেল নিচে’!!তারপর ব্রেকফাস্ট সেরে দু-জনেই একসাথে বেরিয়ে পরলো নিজেদের গন্তব্যে……

||

“নিজের রুমে পায়চারি করছে আরিশা’!!হাতে তার ফোন আর আয়ানের দেওয়া সেই চিঠিটা’!!বেশ দু-দিন যাবৎ সে ভাবছে আয়ানকে ফোন করবে’!!আবার ভাবছে না করবে না’!!এসব ভেবে তার মাথা প্রায় বিগড়ে যাচ্ছে’!!এই চক্করে তার ভার্সিটি যাওয়াও হচ্ছে না সামনেই তার অর্নাস ফাস্ট ইয়ারের পরিক্ষা’!!কিন্তু সে ওসব বাদ দিয়ে আয়ানকে কি বলবে কি বলবে না এটা ভেবে যাচ্ছে’!!একরাশ হতাশা আর ভয় নিয়ে আয়ানের নাম্বারটা লিখলো তার ফোনে’!!তারপর ফোন করলো আয়ানের নাম্বারে’!!প্রথম কলে ফোন তুললো না আয়ান’!!পরে আবারো কল করলো আরিশা’…

.

“অন্যদিকে নিজের রুমে বিছানা লেপ্টে গভীর ঘুমে মগ্ন আয়ান’!!এতটাই মগ্ন যে তার ফোন বাজছে তা তার কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না’!!বেশ কয়েকবার কল বাজার পর আয়ান বিরক্ত মাখা মুখ নিয়ে ফোনটা তুলে বললোঃ

——–“হ্যালো….

“ওপাশ থেকে আরিশা চুপ!আয়ানের ভয়েস শুনেই চুপ হয়ে গেছে সে কি বলবে এখন’!!এদিকে ফোন করে কথা না বলার জন্য আয়ান বেশ বিরক্ত হয়ে বললোঃ

——–“কথাই যখন বলবেন না তখন ফোন কেন করছেন….

“এইবারের কথায় আরিশা কাঁপা কাঁপা গলায় বললোঃ

———-“হ্যালো কেমন আছেন?

“অবাক হয় আয়ান….

____________

“আয়াফ আফিয়ার ভার্সিটির সামনে গাড়ি থামিয়ে দিল’!!আফিয়াও চুপচাপ গাড়ি থেকে বের হয়ে আয়াফকে বললোঃ

———“বাই….

“বিনিময়ে আয়াফ একটু উওেজিত হয়ে বললোঃ

———“রাতে ঘুমিয়ে পড়বে না কিন্তু….

“আফিয়া আয়াফের কথা শুনে বেশ অবাক হচ্ছে কি এমন কথা বলবে আয়াফ যে এত করে বলছে তাকে রাতে না ঘুমাতে’!!খুব বেশি না ভেবে আফিয়া মুচকি হেঁসে বললোঃ

———“ঠিক আছে….

“তারপর আফিয়া চলে গেল ভার্সিটির ভিতরে’!!আয়াফ কিছুক্ষণ আফিয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে মনে মনে বললোঃ

———“আজকে বলতে পারবো তো মায়াবতী,
হয়তো হ্যাঁ, হয়তো না!

“ভেবেই দীর্ঘ শ্বাস ফেললো আয়াফ’!!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…………

🤍🤍🤍[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ!!
আর গল্প কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে!!]🥰🥰🥰

নেশালো সে পর্ব-১৪

0

#নেশালো_সে💖
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম💖

১৪.

“রেস্টুরেন্টে বসে আছে আফিয়া আর ওর ঠিক উল্টো দিকে বসে আছে আশিক’!!কোনো এক জরুরি কথা বলবে আশিক আফিয়াকে তার জন্যই নিয়ে এসেছে আশিক আফিয়াকে রেস্টুরেন্টে’!!

“কয়েকঘন্টা আগে…..

“আফিয়া ভার্সিটি ঢুকতেই আশিক এসে হাজির’!!বেশ কয়েকদিন দেখে নি আফিয়া আশিককে কারন অনেক দিন আশিক আসে নি ভার্সিটিতে’!!আশিককে এই মুহুর্তে অনেকটাই অগোছালো লাগছে’!!চুলগুলো তেমন ঠিক নেই চোখের নিচে হাল্কা কালো দাগ পড়েছে হয়তো রাতে ঘুম হয় নি তার’!!এতে আফিয়া বেশ অবাক হয়’!!আফিয়া কিছু বলার আগেই আশিক বলে উঠলঃ

———-“ভার্সিটি শেষে আমার সাথে একটু রেস্টুরেন্টে যাবি তোর সাথে কিছু কথা ছিল’!!

“আশিক এমন ভাবে কথাটা বললো যে আফিয়াও আর বারন করতে পারে নি’!!মাথা নাড়িয়ে সেও হ্যা সমর্থন দেয়’!!তারপর আর কি ভার্সিটি শেষ করে আফিয়া আশিক দুজনেই চলে যায় ভার্সিটির কাছ থেকে কিছুটা দূরে এই রেস্টুরেন্টে’!!

“বর্তমানে……

“চুপচাপ বসে আছে দুজনই’!!কুটকুটে নীরবতা বিরাজ করছে দুজনের মাঝখানে’!!এমন সময় একজন ওয়েটার এসে দু-কাপ কফি দিয়ে গেল ওদের সামনে’!!আফিয়া তার কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে বলে উঠলঃ

———-“কতক্ষণ চুপ করে থাকবি এখন তো কিছু বল?

———-“হুম বলছি….

“আশিকের কথা শুনে আফিয়াও অতি আগ্রহের সঙ্গে তাকালো আশিকের দিকে’!!আশিক এক দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বললোঃ

———-“প্লিজ দোস্ত কথাগুলো শোনার পর আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করবি না…

“এবার আফিয়া পরে গেল বিপদে’!!এমন কি বলবে আশিক যে এমন করে বলছে’!!আফিয়ার ভাবনার মাঝখানে আশিক আবারো বলে উঠলঃ

———-“কি হলো কথা বলছিস না কেন?

———-“কি এমন বলবি তুই যে যা শোনার পর তোর সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিবো আমি….

———–“প্লিজ দোস্ত এত প্রশ্ন না করে বল প্লিজ…(মিনতির সূরে)

———-“আচ্ছা ঠিক আছে করবো না বন্ধ বল এখন….

———–“আমি কি তোর হাতটা ধরতে পারি প্লিজ….

“এইবারের কথা শুনে আফিয়া পড়ে গেল অসস্তিতে ‘!!কি বলবে বুঝতে পারছে না আফিয়া’!!এদিকে আশিকের এত মিনতির স্বরে কথাগুলো শুনেও কষ্ট লাগছে’!!আফিয়ার ভাবনার মাঝে আবারো আশিক বললোঃ

————“প্লিজ দোস্ত শুধু একবার ধরতে চাই আমি তোর হাত প্লিজ….

“আফিয়া অনেকক্ষণ ভেবে চিন্তে বলে উঠলঃ

———–“ঠিক আছে ধর!

“আশিক আফিয়ার কথা শুনে খুশি হয়ে ধরলো আফিয়ার হাত’!!আফিয়ার হাত খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ছোট্ট একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে উঠল আশিকঃ

———–“তোকে যেদিন প্রথম দেখেছিলাম আমি সেদিন থেকেই খুব ভালো লাগতে শুরু করে আমার’!!তারপর তোর সাথে বন্ধুত্ব করা,কথা বলা সবকিছুই ভালো লাগে আমার’!!তোর বাচ্চামো গুলো সবার সাথে এমনিতেই মিশে যাওয়ার অভ্যাসগুলো সবকিছুই আমার খুব ভালো লাগতো’!!তারপর জানি না তোর প্রতি এই ভালো লাগাগুলো কখন ভালোবাসায় রূপ নিলো’!!আমি তোকে ভালোবেসে ফেলেছি আফিয়া’!!কিন্তু যেদিন থেকে তোর মুখ থেকে শুনেছি বন্ধুত্বে ভালোবাসা পছন্দ করোস না তুই সেদিন থেকেই আমার ভয় হতে শুরু করে,যদি আমার একটা ছোট্ট ভুলের জন্য তোর সাথে কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়,,তাহলে তো আমার সত্যি সত্যি নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে!তোর সাথে কথা না বললে আমার ভালো লাগে না আর তুই যদি আমি তোকে ভালোবাসি শুনে কথা বলা বন্ধ করে দিস এই জন্যই বার বার তোকে প্রপোজ করার পরই আমি বলতাম সব নাটক ছিল!কিন্তু ওগুলোর কোনোটাই নাটক ছিল সব আমার অনুভূতির কিছু অংশ ছিল’!!সেদিন যখন তুই বললি তোর বিয়ে হয়ে গেছে বিশ্বাস কর মনে হলো কেউ আমার কলিজা ছিঁড়ে ফেলেছে’!!তারপর থেকেই একটু ভার্সিটি আসা বন্ধ করে দিলাম সবার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিলাম সব সময় একা একা রুমে বসে থাকতাম’!!বার বার মনে হতো তোকে কিছু না বলেই কি আমি মরে যাবো’!!তারপর ভাবলাম একবার তোকে সব সত্যি বলে দেই এতে আমার নিজেরও কিছু কষ্ট কমে যেত’!!প্লিজ দোস্ত এগুলো শোনার পর আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিস না’!!আমি কথা দিচ্ছি আজকে পর আর কোনোদিন তোর সামনে আমি ভালোবাসার কথা বলবো না’!!শুধু আজকে বলে দিলাম’!!দিন শেষে এতটুকু তো জানবো তুই জানিস আমি তোকে ভালোবাসতাম’!!আমি কখনোই তোর আর আয়াফের মাঝখানে আসবো এটা আমি তোকে কথা দিচ্ছি’!!তাই প্লিজ দোস্ত আমার উপর রেগে গিয়ে কথা বলা বন্ধ করিস না প্লিজ’!!আমি আবারো বলছি কোনোদিনও তোদের মাঝখানে যাবো না আমি’!!আমি শুধু তোকে জানাতে চেয়েছিলাম তাই জানিয়ে দিয়েছি’!!তোকে বলতে না পারার যন্ত্রণাটা যে কষ্ট দিচ্ছিলো দোস্ত’!!তাই বলেছি প্লিজ কথা বলা বন্ধ করবি,একদম আগের মতোই বন্ধু হয়ে থাকবি আমার!’

“পুরো একশ্বাসে কথাগুলো বলে থেমে যায় আশিক’!!এখনও আফিয়ার হাত ধরে আছে সে’!!

“অন্যদিকে আফিয়া একদম চুপ করে বসে আছে’!!যেন আশিক কি বললো সব মাথার উপর দিয়ে গেল তার’!!আফিয়া ভাবতেই পারে নি আশিকের করা নাটকগুলো সত্যি হয়ে যাবে’!!আফিয়ার এতটা চুপ থাকতে দেখে আশিক ঘাবড়ে গিয়ে বললোঃ

———-“তুই আমার উপর রাগ করে নেই তো!

———“আমি এখন বাড়ি যাবো আশিক!বাকি কথা কালকে বলবো….

“বিনিময়ে আশিকও অন্যকিছু বলার সুযোগ বা সাহস কোনোটাই পেল না’!!শুধু এতটুকুই বললো সেঃ

———-“ঠিক আছে!

_______________

“রেস্টুরেন্টের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে আফিয়া আর আশিক!উদ্দেশ্য হচ্ছে আফিয়াকে একটা রিকশা ঠিক করে দেওয়া’!!এমন সময় ওই রাস্তা দিয়ে নিজের কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিল আয়াফ’!!রেস্টুরেন্টের সামনে আফিয়াকে দেখে অবাক হয় সে’!!তারওপর আবার একটা ছেলে আছে সাথে’!!এমনিতেই রেগে ছিল আয়াফ আফিয়া উপর’!!এখনের দৃশ্য দেখে রাগ তার আকাশ সমতুল্য হয়ে গেছে’!!আয়াফ রেগে গিয়ে তার গাড়িটা নিয়ে দাঁড় করালো আফিয়া আর আশিকের সামনে…

.

“আচমকা আফিয়দের সামনে একটা গাড়ি এসে থামাতে দুজনেই ঘাবড়ে যায়’!!পরক্ষণেই গাড়ি দরজা খুলে আয়াফকে দেখে দুজনেই ঘাবড়ে যায়’!!আয়াফ চেঁচিয়ে বললোঃ

———-“গাড়িতে উঠো….

———-“আমি আমাদের বাড়িতে যাবো….

———-“বেশি কথা বলতে ভালো লাগছে না আমার গাড়িতে উঠো আগে তুমি….

———“কিন্তু আয়াফ….

———“আমি তোমাকে উঠতে বলছি(দমক দিয়ে)

“আয়াফের দমক শুনে পুরো কেঁপে উঠলাম আমি’!!তারপর আমিও আর কিছু না বলে ভয়ে চুপচাপ গাড়িতে উঠে বসলাম’!!আমি বসতেই আয়াফ দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাতে শুরু করল’!!ঝড়ের গতিতে গাড়ি চালাচ্ছে আয়াফ’!!আর আমি ভয়ে পুরো আধমরা হয়ে যাচ্ছি!!
.

“এদিকে ওরা যেতেই আশিক ছোট্ট একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেললো’!!

||

“হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে আয়াফ আফিয়াকে’!!আর বেচারি আফিয়া ভয়ে কিছু বলতেই পারছে না’!!এই মুহূর্তে পুরো রেগে আগুন হয়ে আছে’!!না জানি কি করে ফেলে আমায়…..

“সিঁড়ি বেয়ে টানতে টানতে উপরে নিয়ে গেল আফিয়াকে তারপর দরজা বন্ধ করে দিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে রেগে বলে উঠল আয়াফঃ

———-“তোমার সাহস কি করে হলো আমায় না বলে বাপের বাড়ি যাওয়ার,তারওপর আবার রাস্তায় অন্য ছেলের সাথে কি করছিলে তুমি,তুমি জানো কাল রাতটা কাটাতে আমার কতোটা কষ্ট হইছে, ইচ্ছে করছে একদম মেরে ফেলি তোমায় বলেই দেয়ালে স্ব-জোরে নিজের হাতে আঘাত করলো আয়াফ’!!আয়াফের এমন কাজে আফিয়া পুরো ভয়ে চুপসে গেছে’!!কি করবে বুঝতে পারছে না’!!আফিয়ার চুপ থাকাতে দেখে আরো রেগে যায় আয়াফ! দমকের স্বরে বলে উঠল সেঃ

———–“কি হলো কথা কানে যাচ্ছে না উওর দেও আমায়….

“আয়াফের দমক শুনে আফিয়া কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠলঃ

———–“বিশ্বাস কর আমি বুঝতে পারি নি শাশুড়ী মায়ের পারমিশনের পর তোমার পারমিশন লাগবে তবে আমি যাওয়ার সময় তোমায় ফোন করেছিলাম কিন্তু তোমার নাম্বার বন্ধ ছিলো তো তাই জানাতে পারি নি’!!সরি ভুল হয়ে গেছে আর এমন ভুল হবে না, এইবারের মতো সলি জামাই…..

“আফিয়ার কথা শুনে আয়াফ কি বলবে বুঝতে পারছে না’!!একটু ক্ষিপ্ত মেজাজে বলে উঠল সেঃ

———–“ওই ছেলেটা কে ছিলো….

———–“ও আমার বন্ধু আশিক হ্যা আমার একার নয় রুহি তিশারও বন্ধু একটু কফি খেতে গিয়েছিলাম অনেক রিকুয়েষ্ট করেছিলো তাই….

“বিনিময়ে আয়াফ কিছু বললো না চুপচাপ গিয়ে বসে পরলো বিছানায় তারপর জোরে জোরে শ্বাস ফেলতে লাগলো সে’!!নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সে’!!

!!

“এদিকে আমি এখনো ভয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি দেয়ালে ঘেঁষে’!!বাবা জামাইর এতো রাগ কোথা থেকে আসে বুঝি না বাপু,একটু তো না বলেই গিয়েছিলাম এতে এত রাগ করার কি আছে?এতই যখন কষ্ট হচ্ছিল তখন রাতে একটা ফোনও তো করতে পারতো!হুহ….

“কিছুক্ষণ পর…..

“আমি আস্তে আস্তে চলে গেলাম আয়াফের সামনে’!!তারপর ওর কোলে বসে দু’গাল চেপে ধরে বললামঃ

———“সরি জামাই, বিশ্বাস কর আমি বুঝতে পারি নি তোমার একরাতে এত কষ্ট হবে,প্লিজ এইবারের মতো মাফ করে দেও,আমি কথা দিচ্ছি আর কোনোদিন তোমায় না বলে কোথাও যাবো না…..

“এদিকে আয়াফ এখনও অভিমান করে উল্টোদিকে মুখ করে বসে আছে’!!

———“আরে সরি বললাম তো,এত রাগ করলে চলে নাকি…(নিজের দিকে ঘুরিয়ে)

———-“তুমি জানো কতটা কষ্ট পেয়েছি আমি….

———-“তার জন্য সরি বললাম তো…

“বলেই আয়াফের গালে একটা চুমু দিয়ে দিলো আফিয়া’!!এদিকে আয়াফ যেন শকট আফিয়া কি করলো সব যেন তার মাথার উপর দিয়ে গেল’!!আয়াফ এটা আশা করে নি’!!আয়াফ অবাক হয়ে বললোঃ

———–“এটা কি ছিল….

———–“কি ছিলো কিছুই ছিলো না….

“বলেই নাচতে নাচতে চলে যায় আফিয়া ওয়াশরুমে’!!আর আয়াফ গালে হাত দিয়ে মুচকি হাসলো’!!হর্ঠাৎই আফিয়া ওয়াশরুমের দরজা খুলে বলে উঠলঃ

———-“আমায় তো নিয়ে এসেছো এখন আরিশাকে কে আনবে….

———“মানে….

———-“আমাদের তো বিকেলে আসার কথা ছিল কিন্তু তুমি তো জোর করে নিয়ে এলে এখন আমি চলে এসেছি কিন্তু আরিশা তো রয়ে গেল,এখন ওকে কে আনবে….

———-“ওহ দেখছি….

———“দেখতে হবে না তোমার ফোনটা দেও তো…

“বলেই ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসলো আফিয়া’!!তারপর আয়াফের ফোনটা নিয়ে কল করলো আরিশাকে’!!প্রথম কলেই ধরে ফেললো আরিশা’!!ধরেই বলে উঠল সেঃ

———“হ্যালো….

———“হুম হ্যালো মিস ননদিনী….

———“ভাবি তুমি ভাইয়ার মোবাইল থেকে কল করছো…

———-“হুম আসলে….

———-“কোথায় তুমি বাসায় যাবে না….

———-“আসলে হইছে কি ননদিনী, তোমার ভাইয়া জোর করে ভার্সিটি থেকে তুলে নিয়ে এসেছে আমায় বাসায়…

“এদিকে আফিয়ার কথা শুনে আয়াফ আরিশার দুজনের চোখ বড় বড় হয়ে গেল’!!আয়াফ ভাবতে পারে নি আফিয়া সত্যি কথা বলে দিবে’!!আর আরিশা চমকে বলে উঠলঃ

———-“কি?

———-“হুম,তাই বলছিলাম কি তুমিও চলে আসো তবে হ্যা একা আসার দরকার নেই আয়ানকে সঙ্গে নিয়ে এসো….

———-“কেন ভাবি আমি একাই চলে যেতে পারবো…

———-“না একা আসার দরকার নেই দাঁড়াও তোমায় কিছু বলতে হবে না আমি আয়ানকে ফোন করে বলে দিচ্ছি…

“বলেই ফোন কাটলো আফিয়া’!!আর এপাশে আরিশা বেশ কয়েকবার বললোঃ

———“হ্যালো হ্যালো ভাবি আমার কথাটা তো শোনো,,এই না আমি যামু না আয়ানের সাথে কালকে থেকে জ্বালিয়ে মারছে আমায়…..

“এমন সময় পিছন থেকে আয়ান বলে উঠলঃ

———“কে জ্বালিয়ে মারছে তোমায় শুনি…

“আচমকা এমন কথা শুনে হকচকিয়ে উঠলো আরিশা’!!পিছনে আয়ানকে দেখে ঘাবড়ে যায় আরিশা’!!আরিশা কিছু বলার আগেই আয়ানের ফোনটা বেজে উঠল!সাথে সাথে হ্যালো বলে বললো সেঃ

———–“ঠিক আছে তুই কোনো চিন্তা করিস না আমি তোর ননদিনীকে ঠিক মতোই বাড়ি পৌঁছে দিবো!

“রহস্যময়ী হাসি দিয়ে’!!আয়ানের হাসি দেখে আরিশা কপাল কুঁচকে গেল’!!না জানি কি হবে এখন?

||

“আয়ানের সাথে কথা বলে এক সস্থির নিশ্বাস ফেললাম আমি’!!যাক বাবা এখন আর কোনো চিন্তা নেই’!!এদিকে আয়াফ নীরব দর্শকের মতো দাঁড়িয়ে থেকে বলে উঠলঃ

———“আয়ান কে…?

———-“আমার কাজিন,ওই নিয়ে আসবে আরিশাকে বলেই চলে যায় আফিয়া’!!আর আয়াফও বসে পড়ে বিছানায়…..

__________________________________________

_______________________

“পাক্কা দেড় ঘন্টা সেজেগুজে রুম থেকে বের হলো আরিশা’!!পড়নে তার জর্জেট সাদা রঙের চুড়িদার, চুলগুলো খোলা,হাতে চুরি ঠোঁটে লাল লিপস্টিক, চোখে কাজল দিয়ে অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাকে’!!আয়ান তো দেখেই ফিদা হয়ে গেছে’!!আয়ানকে এই হা হয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখে আরিশা আয়ানের সামনে গিয়ে বললোঃ

———“এইভাবে হা করে তাকিয়ে কি দেখছেন?

———“তোমাকে….

———“কি?

———“ইয়ে না মানে কিছু না চলো বলেই আম্মুর কাছ থেকে বিদায় জানিয়ে বের হয়ে যায় আয়ান…

“আয়ানের কাজ দেখে হাসলো আরিশা’!!তারপর আম্মুর কাছে গিয়ে বললো সেঃ

——–“আজকে তাহলে যাই আন্টি আবার আসবো কিন্তু আপনার হাতের রান্না কিন্তু আমি খুব মিস করবো বলেই জড়িয়ে ধরে আরিশা আফিয়ার মাকে….

“আফিয়ার আম্মুও খুশি হয়ে বললোঃ

———“আবার আসবে কিন্তু তখন আরো ভালো ভালো রান্না করে খাওয়া বো তোমায়….

“মুচকি হেঁসে বললো আরিশাঃ

———“ঠিক আছে আন্টি….

“তারপর আম্মুর কাছ থেকে বিদায় জানিয়ে চলে আসলো আরিশা’!!আরিশা আসতেই দেখলো আয়ান গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে’!!এমনটা নয় আরিশার ভালো লাগে নি আয়ানকে’!!তারও ভালো লেগেছে কিন্তু এখনই কিছু বলবে না সে’!!হাসলো আরিশা’!!আরিশাকে হাসতে দেখো আয়ান বলে উঠলঃ

——–“সারাদিন পাগলের মতো খালি হাসো কেন?

———“কি আমি পাগল আপনার বউ পাগল…

———-“হুম আমার বউই তো পাগল..

“বলেই আয়ান গাড়ির ভিতর বসে পড়ে!অন্যদিকে আয়ান কি বললো কিছুই বুঝলো না আরিশা’!!আরিশার ভাবনার মাঝে বলে উঠল আয়ানঃ

———“বলছি কি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাসায় যাওয়ার ইচ্ছে আছে নাকি….

———“না দাঁড়িয়ে যাবো কেন?

“তারপর আরিশাও বসে পরে গাড়ির ভিতর’!!আরিশা বসতেই আয়ান গাড়ি চালাতে শুরু করল’!!গাড়িও চলছে তার আপন গতিতে…….
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…………

🤍🤍🤍[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ!!
আর গল্প কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে!!]🥰🥰🥰

#TanjiL_Mim♥️

নেশালো সে পর্ব-১৩

0

#নেশালো_সে💖
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম💖

১৩.

“আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে আয়াফ আর আফিয়া’!!সূর্যের প্রবল তাপে কারোই কোনো হুস নেই’!!অবশ্য হুস থাকার কথাও না’!!কাল শেষ রাতে ঘুমিয়ে ছিল দুজন’!!প্রচন্ড গরম তারওপর আবার ক্যারেন্ট নেই সব মিলিয়ে যাচ্ছে তাই অবস্থা ছিল ওদের, জেনারেটর চালু করবে তাও করতে পারি নি কোনো এক সমস্যা কারনে’!!সারারাত বেলকনিতে বসেই কাটিয়ে দিয়েছে দুজন’!!তারপর শেষরাতের দিকে ক্যারেন্ট আসার পর ঘুম দিয়েছিল দুজন’!!আয়াফ তো প্রথম লজ্জায় তাকাতেই পারছিল না আফিয়ার দিকে’!!পরক্ষণেই ধীরে ধীরে নিজেকে সামলে নিলো সে’!!

.

“দরজায় লাগাতার শব্দ করে যাচ্ছে কেউ’!!কিন্তু রুমের ভিতর দুজন এমন ঘুমে মগ্ন যে কারো কানেই সে শব্দ এসে পৌঁছাচ্ছে না’!!দরজার বারি মারার আওয়াজ আরো বেরে গেল’!!ধীরে ধীরো আয়াফের ঘুম পাতলা হতে লাগলো’!!শেষমেশ চোখ মেলে তাকালো আয়াফ’!!ওদিকে দরজায় লাগাতার বারি মেরে চলেছে কেউ’!!আয়াফ একরাশ বিরক্ত মাখা মুখ নিয়ে বিছানা থেকে উঠতে যাবে তখনই মনে হলো তার কেউ তাকে জড়িয়ে ধরে আছে’!!পরক্ষণেই আফিয়া বুঝতে পেরে তাকালো আয়াফ, আফিয়ার দিকে’!!তারপর দ্রুত আফিয়াকে ছাড়িয়ে দরজা খুলতে ব্যস্ত হয়ে পরল সে’!!চোখ ডলতে ডলতে এগিয়ে গেল আয়াফ’!!দরজা খুলে আরিশাকে দেখে মেজাজ বিগড়ে গেল তার’!!তারপর একটু বিরক্ত মাখা নিয়ে বললোঃ

———-“কি হয়েছে তোর,এত ভোরে দরজা ভাঙছিস কেন?

“আরিশা বেশ অবাক হলো আয়াফের কথা শুনে’!!তারপর অবাক হয়ে বললো সেঃ

————“লাইক সিরিয়াসলি ভাইয়া এখন ভোর, সকাল ১০ঃ০০টা বাজে….

“আরিশার কথা শুনে আয়াফের চোখ রসগোল্লা হয়ে গেল’!!তারপর একটু জোরেই বললো সেঃ

———–“কি?

————“হুম!ওই দেখ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে….

“আরিশার কথা মতো ঘাড় বাঁকিয়ে তাকালো আয়াফ’!!ঘড়ির কাঁটায় ১০টা বেজে ১০ মিনিট!আয়াফ অবাক হয়ে বললোঃ

———–“এত বেলা হয়ে গেছে আর তুই আমায় এখন ডাকতে আসছিস….

————“এই নিয়ে তিনবার আসছি তোমরা তো দরজাই খুলছিলে না….

“এইবার আয়াফ কি উওর দিবে বুঝতে পারছে না’!!মাথা চুলকিয়ে বললো সেঃ

———–“ঠিক আছে, ঠিক আছে তুই যা আমরা আসছি…..

“আরিশাও আর কিছু না বলে গেল তার কাজে!

“আয়াফও আর কিছু না বলে আফিয়াকে দু-বার ডাক দিয়ে চলে গেল ওয়াশরুমে’!!

“ওয়াশরুম থেকে বেরিয়েও দেখলো আয়াফ আফিয়া এখনো ঘুমিয়ে আছে’!!কিন্তু এই মুহুর্তে উঠাবে কও উঠাবে না ভেবে পাচ্ছে না আয়াফ’!!আয়াফ চটজলদি তৈরি হয়ে নিলো তাকে অফিস যেতে হবে’!!আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছিল সে’!!এমন সময় আফিয়া নড়েচড়ে উঠলো’!!আয়াফ আফিয়াকে নড়তে দেখে ওর সামনে গিয়ে বসে বললোঃ

———“মায়াবতী আর কতো ঘুমাবে এখন তো উঠতে হবে ভার্সিটি যাবে না নাকি…..

———“আর একটু ঘুমাই না কি হবে তাতে…

“মুচকি হাসলো আয়াফ’!!তারপর বললো সেঃ

———-“অনেকটা বেলা হয়ে গেছে তো ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখো ১০ঃ৩০টা বেজে গেছে’!

“আয়াফের কথা শুনে হকচকিয়ে উঠলো আফিয়া’!!আর একটু জোরে আওয়াজ করে বললোঃ

———“কি..😳

———-“হুম!

“তারপর আয়াফ সরে আসে আফিয়ার কাছ থেকে’!!এদিকে আফিয়া এখনও যেন শকট এতটা বেলা হয়ে গেল’!!আজকে টাকলা স্যারের ক্লাস ছিল আমায় তো দেখতে পেলে খেয়েই ফেলবে!যাক ভালো হইছে আজকে আর ভার্সিটি যামু না’!!ভেবেই নেচে উঠলো মন আফিয়ার’!!বিশ্ব জয় করা এক হাসি দিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো সে’!!তারপর নাচতে নাচতে ওয়াশরুমে চলে গেল’!!অন্যদিকে আয়াফ আফিয়ার কান্ড দেখে কি বলবে বুঝতে পারছে না’!!

_____________

“ডাইনিং টেবিলে বসে ব্রেকফাস্ট করছে আয়াফ, আফিয়া,আরিশা আর শাশুড়ী মা, শশুর মশাই অনেক আগেই চলে গেছে অফিসে’!!আয়াফ আফিয়ার দিকে তাকিয়ে খেতে খেতে বলে উঠলঃ

——–“তুমি তো তৈরি হও নি এখনো আজকে কি ভার্সিটি যাবে না….

———–“না আজকে যাবো না এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে তারপর গেলে টাকলা স্যারে দেখলে প্রচুর বকবে তাই আজকে আর যাবো না!

“বিনিময়ে আয়াফও আর কিছু বললো না!চুপচাপ খাবার খেয়ে শাশুড়ী মাকে বিদায় জানিয়ে চলে গেল সে’!!

||

“রান্না ঘরে দাঁড়িয়ে আছি আমি আর আরিশা’!!আর সামনে শাশুড়ী মা কাজ করছে’!!আমি পিছন থেকে শাশুড়ী মাকে জড়িয়ে ধরে বললামঃ

———“মা আমি কিছু করি….

———“কি করবি তুই কিছু করার দরকার নেই….

———“মা….

——–“হুম বল….

———“একটা কথা বলি…..

———“হুম বল না…

———“বলছিলাম কি মা…..

———“এত হেয়ালি না করে বলে ফেল….

———“বলছিলাম কি মা আমি আর আরিশা একটু আমাদের বাড়ি যাবো,ভার্সিটিতে তো যাই নি আজকে আর তুমি কোনো কাজ করতে দিচ্ছো না আমায় আর আরিশাও যেহেতু বাসায় আছে তাই বলছিলাম কি আমি কি একটু যাবো আমাদের বাড়িতে অনেক দিন হলো মা বাবার সাথে দেখা হয় না(একটু মন খারাপ করে)

“শাশুড়ী মা অনেকক্ষণ ভেবে বলে উঠলেনঃ

———-“ঠিক আছে….

“আরিশাও খুশি হয়ে শাশুড়ী মাকে জড়িয়ে ধরে বললঃ

———–“থ্যাংকু মা উমম্মা….(গালে চুমু দিয়ে)

———–“হইছে হইছে কখন ফিরবি….

———–“মা আজকের দিনটা থেকে কালকে বিকালে চলে আসবো,তুমি একটু বাবাকে মানিয়ে নিও….

———-“আচ্ছা ঠিক আছে….

“ব্যস হয়ে গেছে আমি আর আরিশা খুশি হয়ে নাচতে নাচতে চলে গেলাম উপরে’!!তারপর দু’জনেই সুন্দর করে সেজেগুজে শাশুড়ী মায়ের কাজ থেকে বিদায় জানিয়ে চলে আসলাম গাড়ির কাছে’!!আমরা বসতেই ড্রাইভার গাড়ি চালাতে শুরু করল……

||

“কলিং বেল বাজতেই আম্মু এসে দরজা খুলে দিলো’!!আমায় আর আরিশাকে দেখে অবাক হলো সাথে খুশিও’!!আম্মুর রিয়েকশন দেখে বলে উঠলাম আমিঃ

———“সারপ্রাইজ কেমন দিলাম কেমন আছো আম্মু….

“আম্মু খুশি হয়ে আমায় জড়িয়ে ধরে বললোঃ

——–“খুব ভালো তোরা…..

———-“আমরাও ভালো আছি….

“আম্মু আরিশার দিকে তাকিয়ে বললোঃ

———“কেমন আছো আরিশা….

———“আলহামদুলিল্লাহ ভালো আন্টি আপনি….

———“আমিও ভালো আছি…

———“চল ভিতরে তোরা….

———–“হুম চল তাড়াতাড়ি খেতে দেও আম্মু কতদিন হলো তোমার হাতের রান্না খাই না….

———-“হুম যা তোরা উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়,,

———–“ওকে আম্মু….

“তারপর আমি চলে আসলাম উপরে’!!এদিকে আম্মু চলে গেল রান্না ঘরে’!!আরিশাও চললো আফিয়ার পিছন পিছন’!!সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছিল আরিশা’!!হর্ঠাৎই পা ছিলিপ কেটে পড়ে যেতে নেয় সে’!!সাথে সাথে ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো সে’!!এমন সময় পিছন থেকে তার কোমড় জড়িয়ে ধরল কেউ’!!ঘটনাটা হুট করে হয়ে যাওয়াতে আরিশা কিছুই বুঝতে পারে নি’!!আস্তে আস্তে চোখ খুললো আরিশা’!!সামনে একটা ছেলেকে দেখে ঘাবড়ে যায় সে’!!তাড়াতাড়ি নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে সামলে বলে উঠল আরিশাঃ

———–“সরি…..

“অন্যদিকে আয়ান মেয়েটির দিকে হা হয়ে তাকিয়ে আছে’!!যাকে বলে প্রথম দেখাই ভালোলাগা’!!অপলকভাবে তাকিয়ে আছে আয়ান আরিশার দিকে’!!টানা টানা চোখ,মায়াবী ফেস সবই ঘায়েল করে ফেলেছে আয়ানকে’!!

.

“আরিশা এইভাবে হা করে ছেলেটিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে হাতে তুরি বাজিয়ে বলে উঠল সেঃ

———-“এই যে মিস্টার কোন দেশে হারিয়ে গেলেন….

“এতক্ষণ পর আয়ান তার ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসলো’!!সামন্য ঘাবড়ে যাওয়া মুখ নিয়ে বলে উঠল সেঃ

———–“কোন দেশে হারাবো কোথাও হারাই নি…..

“এমন সময় সিঁড়ি উপরে দাঁড়িয়ে আফিয়া বলে উঠলঃ

———-“ওই যে মিস ননদিনী কোথায় হারিয়ে গেলেন আপনি….

“আরিশা উপরে উঠতে উঠতে বলে উঠলঃ

———-“কোথায় হারাবো কোথাও হারাই নি তো ভাবি….

“হর্ঠাৎই আরিশার পিছনে আয়ানকে দেখে অবাক হয়ে বলে উঠলাম আমিঃ

———–“আয়ান তুই কতদিন পর দেখলাম কেমন আছোস তুই?

———–“এই তো ভালো আছি তুই….

————“আমিও ভালো আছি….

————“ওই মেয়েটা কে রে…

———–“ওহ আরিশা মাই ননদিনী….

————“ওহ…

“ততক্ষণে আরিশা চলে গেছে রুমে ফ্রেশ হতে’!!তারপর আফিয়া আর আয়ান মিলে বসে পরলো সোফায়’!!আর জুরে দিলো হাজারো গল্পের মজলিস’!!আয়ান হলো আফিয়ার কাজিন!!এতদিন বিদেশ ছিল তাই বিয়েতে আসতে পারে নি’!!

__________________________________________

_______________________

“রাত_১০ঃ০০টা……..

“অফিস সেরে ক্লান্ত মাখা মুখ নিয়ে রুমে ঢুকলো আয়াফ’!!আজকে একটু বেশি ব্যস্ত ছিল সে যার কারনে বাসাও আসতে পারে নি দুপুরে’!!ক্লান্ত শরীর নিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিল’ আয়াফ’!!কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে রাখলো সে’!!বেশকিছুক্ষন কাটানোর পর আফিয়াকে না দেখতে পেয়ে বেশ অবাক হয় আয়াফ’!!এতক্ষণে তো আফিয়ার রুমে আসার কথা কিন্তু এলো না কেন?বিছানা সেরে উঠে বসলো আয়াফ’!!তারপর গোসল করতে চলে গেল ওয়াশরুমে সে’!!বেশকিছুক্ষন পর ফ্রেশ হয়ে এসে আফিয়াকে না দেখে এবারও বেশ অবাক হচ্ছে আয়াফ’!!আয়াফ চেঁচিয়ে আরিশার নাম ধরে ডাকতে লাগলো’!!আয়াফের চেঁচামেচি শুনে আয়াফের আম্মু চলে আসলো’!!আয়াফকে এইভাবে চেঁচাতে দেখে বলে উঠল সেঃ

———“কি হয়েছে আয়াফ এই ভাবে চেচাচ্ছিস কেন?

———-“না মানে তুমি এলে আরিশা কই….

———–“ওই আরিশা আর বউমা তো তাদের বাপের বাড়ি গেছে কালকে বিকেলে ফিরবে….

“আয়াফ বেশ অবাক হয়ে বললোঃ

———“ওহ…

———হুম,তোর কি কিছু লাগবে….

———-”না কিছু লাগবে না তুমি যাও কিছু লাগলে আমি বলবো নে…

———“ঠিক আছে….

“বলেই চলে যায় আয়াফের আম্মু!

“এদিকে আয়াফ ভিতরে ভিতরে রেগে গেছে আফিয়া চলে গেল অথচ তাকে বলে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করলো না’!!একরাশ অভিমান নিয়ে বসে পরলো আয়াফ বিছানায়……

||

“আর অন্যদিকে আফিয়া দিব্বি হেঁসে হেঁসে ডাইনিং টেবিলে বসে পার করে দিচ্ছে আজকের রাতটা’!!সে এতোটাই খুশিতে আছে যে আয়াফের কথা প্রায় ভুলেই গেছে সে…….

!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…………

🤍🤍🤍[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ!!
আর গল্প কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে!!]🥰🥰🥰

#TanjiL_Mim♥️

নেশালো সে পর্ব-১২

0

#নেশালো_সে💖
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম💖

১২.

“কলিংবেল বাজার আওয়াজে রান্নাঘর থেকে দৌড়ে চলে আসলেন আয়াফের আম্মু’!!দরজা খুলে আফিয়াদের দেখে চরম খুশি হয় উনি’!!খুশিতে বলে উঠলেন উনিঃ

———-“কেমন আছিস তোরা…

“আফিয়া মুচকি হেঁসে বললোঃ

———–“আমরা ভালো আছি আম্মু তোমরা কেমন আছো!’

————“আমরাও ভালো আছি,এখন তোরাও এসে পড়েছিস আরো ভালো থাকবো…..

“তারপর আয়াফ আফিয়া দুজনেই ভিতরে ঢুকে গেল’!!আয়াফ বাড়ির ভিতরে ঢুকেই সোজা নিজের রুমে প্রবেশ করলো’!!এরই ভিতর আরিশা এসে হাজির’!!তারপর তিনজন মিলে কিছুক্ষন গল্প করে করলো’!!তারপর আফিয়া চলে যায় ফ্রেশ হতে…..

“মাঝখানে কাটলো দুদিন…..

||

“রান্না ঘরে দাঁড়িয়ে আছি আমি’!!উদ্দেশ্য হচ্ছে রুটি আর আলুভাজি তৈরি করবো’!!এই মুহূর্তে বাসায় আমি ছাড়া কেউ নেই’!!শাশুড়ী মা আর আরিশা গেছে শপিং করতে’!!আমাকেও বলেছিল বাট আমি রাজি হই নি’!!শশুর মশাই আর আয়াফ দুজনেই অফিসে’!!বর্তমানে আমি আর একজন কাজের মেয়ে শিউলি ছাড়া কেউ নেই’!!শিউলি বর্তমানে উপরে কাজ করছে’!!আর বাড়িতে কেউ নেই তাই ইচ্ছে করলো সবার জন্য কিছু তৈরি করি’!!এমনিতে এই বাড়িতে তেমন কাজ করতে হয় না আমার’!!তাই ভাবলাম আজকে কিছু তৈরি করে সবাইকে জাস্ট চমকে দিবো’!!যেই ভাবা সেই কাজ’!!আটা ভিতর পানি দিয়ে আটা মাখছি আমি’!!এমন সময় কলিং বেল বেজে উঠল’!!এই সময় আবার কে আসলো’!!একরাশ হতাশ হয়েই আটা মাখানো হাত নিয়েই রান্নাঘর থেকে বের হলাম আমি’!!ওদিকে কলিংবেল বাজছে তো বাজছেই’!!

———-”আরে বাবা আসতে সময় লাগবে তো নাকি’!!
“বলেই দরজা খুলে ফেললাম আমি’!!সামনে আয়াফকে দেখে বেশ অবাক হয়ে বললামঃ

———“তুমি এই সময়….

———–“এমনি একটু ক্লান্ত লাগছে তাই চলে আসলাম

———-“ওহ তাহলে তুমি বসো আমি শরবত নিয়ে আসি!

———-“তার প্রয়োজন নেই আমি আগে গোসল করবো তারপর বাকি সব!

“আমিও হাল্কা হেঁসে বললামঃ

———-“ঠিক আছে!

“আয়াফও আর কিছু না বলে উপরে চলে গেল!আর আমি কিচেনের দিকে’!!আবারো মন লাগালাম রুটি দিকে’!!

______________________

“বেশকিছুক্ষন পর….

“আয়াফ ফ্রেশ হয়ে আসলো রান্নাঘরের দিকে’!!পড়নে তার ব্লাক ট্রাউজার আর সাদা টিশার্ট’!!চুলগুলো দিয়ে অল্প অল্প পানি পরছে সদ্য গোসল সেরেই এসেছে সে’!!রান্না ঘরে আসতেই আফিয়াকে দেখে চোখ আঁটকে যায় আয়াফের’!!এই প্রথমবার অন্যরকম লাগছে আফিয়াকে আয়াফের কাছে’!!আফিয়া তার শাড়ির আঁচল কোমড়ের গুজিয়ে রেখেছে’,চুলগুলো কাঁকড়া ব্যান্ট দিয়ে উঁচু করে খোঁপা করা,অল্প কিছু ছোট ছোট চুল আসছে সামনে যেগুলোকে বার বার আফিয়া তার হাত দিয়ে নাড়িয়ে পিছনে সরিয়ে দিচ্ছে’!!গ্যাসে রুটি বাজছে আফিয়া!কপালের পাশ পেয়ে বিন্দু বিন্দু ঘাম গড়িয়ে পরছে’!!এক কথায় বলতে গেলে একদম বউ বউ দেখাচ্ছে আফিয়াকে’!!আয়াফ অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে আফিয়ার দিকে’!!এই মেয়েটাকে যেভাবে দেখে সেভাবেই ভালো লাগে আয়াফের’!!যতবার দেখে যেন ততবারই নতুন ভাবে প্রেমে পড়ে যায় আয়াফ’!!মুচকি হাসলো আয়াফ’!!তারপর আস্তে আস্তে আফিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে ওর দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ওর সামনে থাকা চুলগুলোর দিকে একটা ফু দিয়ে সরিয়ে দিল’!!

.

“আচমকা এমনটা হওয়াতে আমি ভয় পেয়ে ঘাড় বাঁকাতেই দেখলাম আয়াফ’!!আমি কিছুটা ভড়কে গিয়ে বললামঃ

———“তুমি,,

———“হুম আমি তা কি করছো তুমি?

———-“কি করছি রুটি বানাচ্ছি….

———–“ওহ তুমি রান্না করতে জানো জানতাম না তো…

“আমি সামান্য রেগে বললামঃ

———-“কি বলতে চাইছো তুমি আমি রান্না করতে পারি না!

———-“না না সেটা কখন বললাম, আসলে এত দিনে তো কোনোদিনও রান্না করতে দেখিনি তোমায় তাই আর কি?

———–“সেটা অবশ্য ঠিক বলেছেন শাশুড়ী মা তো আমায় কিছু করতেই দেয় না,তাই আজকে মা আর আরিশা নেই বাসায় সেই সুযোগে…

আফিয়ার কথা শুনে আয়াফ অবাক হয়ে বললোঃ

———-“মা ওরা বাসায় নেই কোথায় গেছে…

———-“শপিং করতে গেছে আমাকেও বলেছিল আমি যাই নি,

———-“ওহ..

———-হিম!আলুভাজি আর রুটি তৈরি করছি আমি, সবাইকে খাইয়ে জাস্ট অবাক করে দিবো কেমন হবে বলো তো….

“আফিয়ার কথা শুনে আয়াফ উৎসাহের সাথে বললোঃ

———-“খুব ভালো হবে,

———-“হু হু…

“আফিয়া প্রচন্ড আনন্দমূলক উওেজনা নিয়ে কাজ করছে’!!আর আয়াফ পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওকে দেখছে’!!হর্ঠাৎই আয়াফের মাথায় একটা শয়তানি মার্কা বুদ্ধি আসলো’!!একটু না জ্বালালে ভালো লাগে নাকি’!!ভেবে হাল্কা হাসলো আয়াফ’!!

……

“রুটি বানানো প্রায় শেষ’!!আর আলুভাজি অনেক আগেই হয়েছে’!!ভাবতেই খুশি খুশি লাগছে আমার’!!এমন সময় হর্ঠাৎই মনে হলো কেউ গালে কিছু লাগিয়ে দিল’!!গালে হাত দিতেই অবাক আমি কারন কেউ আটা মাখিয়ে দিয়েছে মুখে’!!আমি অবাক হয়ে পিছনে ঘুরে তাকাতেই দেখলাম আয়াফ তার হাতে আটা মেখে দাঁড়িয়ে আছে’!!যাতে আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না কাজটা কে করলো’!!আমি একটু গম্ভীর আওয়াজে বললামঃ

———–“এটা কি হলো….

“আয়াফ হাল্কা হেঁসে বললোঃ

———-“তুমি বুঝতে পারো নি….

———–“ওহ এই ব্যাপার আচ্ছা ওয়েট আমিও একটু বুঝিয়ে দেই তাইলে….

“বলেই গ্যাসটা অফ করলাম আমি’!!তারপর আটার প্যাকেট থেকে অল্প আটা বাটিতে রেখে তার ভিতর অল্প পানি দিয়ে দু-হাত ভরে আটা নিয়ে নিলাম তারপর আয়াফের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বললামঃ

———–“তুমি কিছু বুঝিয়ে ছো এখন আমি কিছু বুঝাবো ছুনা…

“আয়াফ রীতিমতো ঘাবড়ে গেছে একটু আগে গোসল করেছে সে এখন আবার আটা লাগিয়ে দিলে তো নো নো আটা লাগানো যাবে না’!!

———-“দেখো তুমি কিন্তু এমনটা করতে পারো না….

———–“কেনো পারি না তুমি লাগিয়ে দিয়েছো আমার গালে এখন আমি লাগাবো তোমার গালে….

————“না এমনটা করো না আমি এইমাএ গোসল করেছি এখন ওগুলো লাগালে আবার গোসল করতে হবে….

————“গোসল করা লাগলে করবে বেবি নো প্রবলেম…..

“এদিকে আয়াফ রান্নাঘর টপকে দৌড়’!!আর আয়াফের পিছনে আফিয়াও দৌড়’!!পুরো বাড়ি জুরে দৌড়াদৌড়ি শুরু করল দুজন’!!এক পর্যায়ে আয়াফ দৌড়ে নিজের রুমে চলে যায় আফিয়াও তার পিছন পিছন যায়’!!রুমে ঢুকে দুজনেই হাঁপাচ্ছে!কারন অনেকটা সময় ধরে তাঁরা দৌড়াচ্ছে’!!আয়াফ হাঁপাতে হাঁপাতে বললোঃ

———-“আর দৌড়াইও না…..

———–“আমি দৌড়াচ্ছি না কি তুমি দৌড়াচ্ছো…..

———–“দৌড়াবো না তো কি করবো না দৌড়ালে তো তুমি আটা লাগিয়ে দিবে….

———–“তুমি তো লাগিয়েছো তার বেলা….

———–“আমি তো মজা করে লাগিয়ে দিয়েছি…

“আফিয়া কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে উঠলঃ

————“ওহ এই ব্যাপার ঠিক আছে যাও আর লাগাবো না…….

————“সত্যি তো….

———–“হুম সত্যি….

“তারপর আয়াফ ও আর কিছু না বলে চুপটি করে বিছানায় বসে পরল’!!প্রচুর কষ্ট হয়েছে তার দৌড়াতে’!!এমন সময় আফিয়া তার হাতের দিকে তাকিয়ে একটা শয়তানি মার্কা হাসি দিয়ে আয়াফের সামনে গিয়ে ওর দু-গালে আটা মাখিয়ে দিয়ে বললোঃ

———–”আমিও মজা করে লাগিয়ে দিসি জামাই..

”বলেই দৌড় আফিয়া’!!আর অন্যদিকে আয়াফ হাবলা কান্তের বসে রইল’!!যেন কি বললো সব মাথার উপর দিয়ে গেল’!!

__________________________________________

_______________________

“রাত_১০ঃ০০টা……

“সবাইকে খাবার খাইয়ে রুমে আসলো আফিয়া’!!প্রচন্ড খুশি লাগছে তার!!সবাই তার খাবার খেয়ে প্রশংসা করেছে’!!শাশুড়ী মা একটু রেগে গিয়েছিল রান্না করেছিল বলে’!!কিন্তু পরে পুরোটা মেনে নেয় সে’!!এ বাড়ির সবাই এই প্রথম আফিয়ার হাতে রান্না খেলো’!!ভালো লাগছে আফিয়ার’!!আফিয়া একটু ফ্রেশ হয়ে টিভিটা অন করলো’!!আয়াফ একটু বেরিয়েছে আর আফিয়ারও ঘুম আসছে না তাই বসে বসে টম এন্ড জেরি দেখছে’!!যেটা খুব ভালো লাগছে’!!কিন্তু খালি মুখে ঠিক টিভি জমছে না’!!সাথে পপকন থাকলে আরো ভালো লাগতো কিন্তু এতরাতে পপকন কোথায় পাবো এই ভেবে হাঁটা শুরু করলাম আমি’!!তারপর বাটিতে করে অল্প আমের আচার নিয়ে আসলাম আমি’!!তারপর আর কি আচার খেতে খেতে টিভি দেখছি আমি’!!অসম্ভব ভালো লাগছে এখন…..

||

“বেশকিছুক্ষন পর……

“রুমে ঢুকলো আয়াফ’!!আফিয়াকে এইভাবে এতরাতে কার্টুন দেখতে দেখে বেশ অবাক হলো সে’!!পরক্ষণেই হেঁসে আফিয়ার পাশে বসে বললোঃ

———-“কি করছো তুমি?

———–“আরে তুমি দেখতে পারছো না টম এন্ড জেরি দেখছি….

———–“তুমি বাচ্চাদের মতো এখনও কার্টুন দেখো…

———–“আমি বাচ্চা নই আমি বড় হয়ে গেছি শুধু টম এন্ড জেরি দেখতে ভালো লাগে তাই দেখি….. 😁

———-“ওহ…

———-“হুম,তারপর আয়াফও আফিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে কার্টুন দেখতে লাগলো!

“আরো কিছুক্ষন কাটানোর পর আয়াফ দেখলো আফিয়া ঘুমানোর প্রতি কোনো হেলদোল নেই’!!তাই সে নিজেই বলে উঠলঃ

———-“আর কতোক্ষন টিভি দেখবে তুমি….

———-“এই তো আর দু’মিনিট….

———-“এই নিয়ে পাঁচ বার দু’মিনিট দু’মিনিট বলেছো আর দু’মিনিটে কাজ হবে না এখনই ঘুমাতে যাবে তুমি,,ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখছো কয়টা বাজে?

———-“কয়টা বাজে….

———-“রাত_১ঃ০০টা বেজে গেছে’ আর তুমি এখনো বসে বসে কার্টুন দেখছো….

———-“প্লিজ প্লিজ আয়াফ আর দু’মিনিট দেখি….

———-“না আর কোনো দু’মিনিট নয় আবার কালকে…

“বলেই আয়াফ রিমোটটা হাতে নিয়ে টিভি বন্ধ করে দিলো সাথে সাথে আফিয়া দাঁড়িয়ে আয়াফের কাছ থেকেই রিমোটটা নিতে ব্যস্ত হয়ে পরলো’!!কিন্তু আয়াফ আফিয়ার থেকে এতোটাই লম্বা যে ওর হাত আয়াফের হাত পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না’!!আয়াফ বিষয়টা নিয়ে মজা করে বলে উঠলঃ

———“তুমি আমার কাছ থেকে কখনোই রিমোট নিতে পারবে না….

———-“তুমি আমার থেকে লম্বা হলে আমি কি করে নিবো রিমোট…

“আয়াফ হাল্কা হেঁসে বললোঃ

———“তুমিও লম্বা হও তবে…..

“আফিয়া বিষ্ময় মাখা মুখ নিয়ে বললোঃ

———-“আমি কি করে লম্বা হবো….

———“সেটা আমি কি জানি….

“আফিয়া কিছুক্ষন চুপ করে থেকে হর্ঠাৎই বলে উঠলঃ

————“হচ্ছি আমি লম্বা….

“আয়াফ বেশ অবাক হলো আফিয়ার কথা শুনে কারন সে সত্যি বুঝতে পারছে না আফিয়া কি করে লম্বা হবে’!!হর্ঠাৎই আয়াফ তার পায়ে ব্যাথা অনুভব করছে কারন আফিয়া আয়াফের পায়ের উপর পা রেখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে’!!আয়াফ পুরো বোকা বনে গেল আফিয়ার কাজে’!!এদিকে আফিয়া আয়াফের গলা জড়িয়ে ধরে অনেকটা উচু হয়ে বললোঃ

———“দেখছো লম্বা হয়ে গেছি এখন রিমোট দেও…

“হুট করেই আয়াফ আফিয়ার কোমড় জড়িয়ে ধরল’!!সাথে সাথে আফিয়া পুরো কেঁপে উঠল’!!এতক্ষণ পর আফিয়ার হুস ফিরলো সে এতক্ষণ কি করছিল’!!লজ্জায় কিছু বলতেও পারছে না আফিয়া’!!কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে নিবে আফিয়া তার আগেই আয়াফ আফিয়ার মুখে হাত দিয়ে বললোঃ

———-“হুস…..

“আফিয়াও আর কিছু বললো না চুপচাপ রইলো সে’!!এদিকে আয়াফ আবারো চলে গেল তার নেশালো আসক্তের দিকে’!!আফিয়ার চোখ,চুল,ঠোঁট সব আবারো তাকে ঘোর লাগানো মুহূর্তে নিয়ে গেছে’!!আফিয়ার হুট করো এতটা কাছে আসাটা একদমই এক্সপেক্ট করো নি আয়াফ’!!এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আয়াফ আফিয়ার ঠোঁটের দিকে’!!আয়াফ একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছিল আফিয়ার ঠোঁটের দিকে’!!দুজনেই এক ঘোর লাগানো মুহূর্তে চলে গেছে’!!এমন সময় কারেন্ট চলে যায়।

–ব্যস বাকিটা ইতিহাস…🥱

____________________

“পরের দিন সকালে…….

!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…………

🤍🤍🤍[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ!!
আর গল্প কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে!!]💖💖💖

#TanjiL_Mim♥️

নেশালো সে পর্ব-১১

0

#নেশালো_সে💖
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম💖

১১.

“অবাক চোখে তাকিয়ে আছে আয়াফ সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটার দিকে’!!এমনটা নয় আয়াফ মেয়েটাকে চিনে না’!!মেয়েটার নাম নোভা’!!মেয়েটিকে আয়াফ ওর ভার্সিটি লাইফে দেখেছিল’!!মেয়েটা ওর থেকে একবছরের পিছনে’!!আয়াফ অবাক ভাবে নোভার দিকে তাকিয়ে থাকাতে নোভা বলে উঠলঃ

———-“অবাক হয়েছেন ভাইয়া….

“আয়াফ নোভার দিকে তাকিয়ে থেকেই মাথা নাড়িয়ে বললোঃ

———-“হুম খুব!

“নোভা হাল্কা হেঁসে বললোঃ

———-“আমিও অবাক হয়েছি খুব, দূর থেকে দেখছিলাম আপনি দাঁড়িয়ে আছেন প্রথমে বিশ্বাস হয় নি আপনি তাই কাছে এসে দেখলাম আপনি কিনা!

———-ওহ,

———-হুম,তা কেমন আছেন ভাইয়া?…

———–“আলহামদুলিল্লাহ ভালো তুমি?’

———–“এই তো চলছে বেশ তা এখানে কি করছেন….

———–“তেমন কিছু নয় মুক্ত আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে বাতাসের মজা নিচ্ছি, তুমি এখানে….

———–“আমি তো এখানেই থাকি ভাইয়া ওই কিছুটা দূরে ফ্ল্যাটটা দেখছেন ওখানেই থাকি আমি….

———–“ওহ একা থাকো তুমি….

———–“না আমার পুরো পরিবার আমি এখানে চাকরি করি ভাইয়া….

———–“ওহ!বিয়ে করেছো নিশ্চয়ই….

“এদিকে নোভা ভাবছে অন্যকিছু…

———-“আজও কতোটা সুন্দর লাগছে ভাইয়া আপনাকে,এই ব্লাক শার্ট আর ব্লাক জিন্স এ,অসম্ভব দেখতে আপনি ভাইয়া,সেই ভার্সিটি লাইফ থেকে ভালোবাসি আপনাকে আমি কিন্তু আজও বলতে পারি নি,, হয়তো কোনোদিন আর বলাও হবে না!নোভার ভাবনার মাঝখানে আয়াফ আবারো বলে উঠলঃ

———–“কি হলো কথা বলছো না কেন?

———-“না কিছু না তো,তা আপনি কি বলছিলেন….

———–“বিয়ে করছো….

———–“না ভাইয়া…

“আয়াফ বেশ অবাক হলো নোভার কথায়!এমন সময় পিছন থেকে আফিয়া বলে উঠলঃ

———–“চল তাহলে যাওয়া যাক এখন….

“আয়াফ হাল্কা হেঁসে বললোঃ

———-“কথা বলা হয়ে গেছে…..

———-“হুম!

“নোভা মেয়েটাকে চিনতে না পেরে বললোঃ

———-“এ কে ভাইয়া….

“আয়াফ মুচকি হেঁসে আফিয়ার কাঁধে হাত দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বললোঃ

———–“ওহ তোমার ভাবি….

“নোভা বেশ অবাক হয়ে বললোঃ

———–“আপনি বিয়ে করেছেন ভাইয়া….

———–“হুম….

“আয়াফের কথা শুনে নোভার বুকের ভিতর দক করে উঠলো,এমনিতেই এই আয়াফ নামক মানুষটা তাকে সেই চার বছর যাবৎ জ্বালিয়ে মারছে’!!নোভা আবার চুপ হয়ে যাওয়াতে আয়াফ বলে উঠলঃ

———–“আবারো কি হলো তোমার…..

———–“না তেমন কিছু নয় তারপর আফিয়ার দিকে হাত বারিয়ে দিয়ে মুচকি হেঁসে বললো নোভাঃ

———–“আসসালামু আলাইকুম,আমি নোভা,একটা সময় আমি আর আয়াফ ভাইয়া একই ভার্সিটিতে পরতাম, উনি এক ক্লাস উপরে ছিলো আমার!’তখন থেকেই পরিচয় আমাদের…

“আফিয়াও মুচকি হেঁসে নোভার হাত জড়িয়ে ধরে বললোঃ

————“ওলাইকুম আসসালাম আপি’,আমি আফিয়া,আপনার সাথে পরিচয় হয়ে ভালো লাগলো..

“তারপর আর কোনো কথা না বারিয়ে নোভা আয়াফকে বলে উঠলঃ

———–“আজকে তাহলে যাই ভাইয়া, সময় পেলে আসবেন আমাদের বাসায় আফিয়াকে নিয়ে….

“আয়াফ হাল্কা হেঁসে বললোঃ

———–“ঠিক আছে!

“তারপর নোভার আর দু’মিনিট দাঁড়ালো না’!!চটজলদি চলে যায় সেখান থেকে!’এত বছর পর ভালোবাসার মানুষ দেখা হবে তাও তাঁর বউয়ের সাথে এটা একদমই কল্পনার বাহিরে ছিল নোভার,, এর চেয়ে তো না দেখা হওয়াই ভালো ছিল’!!

“কেউ একজন বলেছিল প্রথম ভালোবাসা কখনও ভোলা যায় না,,কথাটা আসলেই সত্য যেটা হারে হারে টের পেয়েছে নোভা!’🌸

||

“এদিকে নোভা আপুর এইভাবে পালিয়ে যাওয়াটা কেমন একটু লাগলো আমার’!!তার ছলছল করা চোখ দুটো কিছু বলছিল বলে মনে হলো!!এমন সময় আয়াফ বলে উঠলঃ

——–“কি হলো দাঁড়িয়ে থাকবে নাকি…..

——–“হ্যাঁ না না চলো….

“তারপর আয়াফের হাত ধরে হাঁটতে শুরু করলাম আমি’!!হর্ঠাৎই আয়াফকে বলে উঠলাম আমিঃ

———“আপিটা তোমাকে ভালোবাসতো তাই না….

“আফিয়ার কথা শুনে আয়াফ বেশ শকট হলো!’আর তারপর বলে উঠলঃ

———-“কোন আপি?

———“এই যে এইমাএ যার সাথে কথা বললাম…

———-“ওহ নোভা…

———-“হুম’!

———–“তুমি কি করে বুঝলে…..

———-“তার মানে ভালোবাসতো তোমাকে..

“আয়াফ একটু আফিয়াকে জ্বালানোর জন্য বলে উঠলঃ

———“হয়তো বাসতো জানা নেই আমার!ভার্সিটি বসে প্রায় কথা হতো,রোজ নতুন কাজ নিয়ে এসে কথা বলতো আমার সাথে,,কথার মাঝখানে তাকিয়ে থাকতো আবার মুচকি মুচকি হাসতো,আমার বন্ধুরা তো বলেই ছিলো ও ভালোবাসতো আমায়,আমিও ভেবেছিলাম, কিন্তু একদিন উধাও হয়ে গেল কেন হলো জানা ছিল না তারপর একটু খোঁজ নিয়ে জেনেছিলাম ওর বাবার বদলি হয়ে যায় অন্য জায়গায় তাই পুরো পরিবার নিয়ে চলে যায় ওর বাবা’!!কিন্তু কোথায় যায় সেটা জানতে পারি নি!’

———“ওহ,তুমিও কি ভালোবেসেছিলে….

“আয়াফ একটু ঠোঁট উল্টে বলে উঠলঃ

———-“সত্যি বলতে কি যখন ও চলে গিয়েছিল তখন খুব মিস করতাম ওকে,খুব মনে পরতো!ছোট ছোট আবদার গুলোকেও মিস করতাম তবে ভালোবাসতাম কিনা জানা নেই,,

———-“ওহ….

“এর বেশি আর কিছু বলে নি আফিয়া!সেদিন ওই পর্যন্ত ঘুরাঘুরি শেষ!ওখান থেকে গাড়ি করে হোটেলে চলে আসে ওরা!তারপর খাওয়া দাওয়া করে ঘুম!!সেদিন নোভাকে নিয়ে ওতোটা ভাবে নি আফিয়া!!তবে এতটুকু বুঝে গেছে আয়াফের মনে একটু হলেও নোভার জায়গা আছে….

__________________

“দেখতে দেখতে কেটে গেল সাত দিন’!!সাতদিনে প্রচুর মজা করেছে ওঁরা!’সারাদিন ঘুরাঘুরি সেলফি তোলাসহ নানা ধরনের খাবার খেয়েছে’!!আয়াফ যে কাজের জন্য এসেছিল সেখানেও খুব ভালো সাকসেস পেয়েছে ওঁরা’!!সেই উপলক্ষে অপর পার্টির লোকেরা একটা অফিসিয়ালি পার্টি থ্রো করেছে’!!সেই সুবাদে আয়াফের পাশাপাশি আফিয়াকেও ইনভাইট করেছে তাঁরা’!!আফিয়া প্রথমে রাজি না হলেও পরে আয়াফের জোরাজোরিতে রাজি হয় সে’!!সন্ধ্যা_৭ঃ০০টায় পার্টি শুরু!!আর পার্টির জন্য আজকে ঢাকা বেক করতে পারলো না তাঁরা!

…..

“আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে আফিয়া’!!আর একটা পাতলা রেড কালারের শাড়ি পরার করুন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সে’!!এমনটা নয় আফিয়া শাড়ি পরতে পারে না’!!তবে খুব একটা পারদর্শী নয়’!!আর পাতলা নেটের শাড়ি পড়তে প্রচুর কষ্ট হচ্ছে তার’!!নানাভাবে শাড়ি পড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে আফিয়া’!!বাট বরাবরই ব্যর্থ সে’!!যতবারই কুঁচি দিতে যাচ্ছে ততবারই তা খুলে যাচ্ছে’!!এমন সময় ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হলো আয়াফ’!!সামনে আফিয়ার অবস্থা দেখে বেশ অবাক সে’!!আয়াফ হেঁটে চলে গেল আফিয়ার সামনে তারপর বললোঃ

———-“এ কি অবস্থা করেছো নিজের চুল সব এলেমেলো হয়ে গেছে,আর এই শাড়ির বা এমন অবস্থা কেন?

———–“আমি এই শাড়ি পরতে পারছি না আয়াফ,প্রচুর পাতলা!

“আয়াফ কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল আফিয়ার দিকে’!!কারন শাড়িটা এতটাই পাতলা যে প্রায় শরীরের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে’!!আয়াফ তাড়াতাড়ি তার চোখ সরিয়ে ফেললো তারপর বললোঃ

———-“এই শাড়ি তোমায় পড়তে হবে না,

———–“তাহলে কি পড়ে যাবো আমি….

“আয়াফ কিছু না বলেই আলমারির কাছে’ চলে যায়’!!তারপর খুঁজে একটা গোল্ডেন কালারের গর্জিয়াছ জর্জেট গাউন বের করে’!!তারপর সেটা আফিয়ার দিকে’ এগিয়ে দিয়ে বললোঃ

———–“এটা পড়ে নেও….

“আফিয়া খুশি হয়ে যায় আয়াফের কাজে’!!কারন সেও চেয়েছিলো যাতে শাড়ি পড়া না লাগে’!!

“১০ মিনিট পর……

“ওয়াশরুম থেকে আফিয়া গাউন পরে বেরিয়ে আসে’!!ততক্ষনে আয়াফ তৈরি হয়ে গেছে’!!আয়াফ মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে’!!একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে আয়াফ’!!আফিয়া হাল্কা অবাক হয় আয়াফের কাজে’!!আয়াফ আফিয়ার অনেকটা কাছে চলে আসে’!!তারপর ওর দিকে ঝুঁকে বললোঃ

———”বেশি সেজো না প্লিজ আমি সত্যি পাগল হয়ে যাবো!

“আয়াফের কথা শুনে আফিয়ার চোখ রসগোল্লা’!!কারন এখন পর্যন্ত চুলও ঠিক করে নি সে আর আয়াফ বলে কিনা বেশি সেজো না’!!উওরে আফিয়া কিছু বললো না’!!আয়াফকে সরিয়ে সোজা চলে যায় আয়নার সামনে সে’!!তারপর চুলগুলো আঁচরিয়ে ভাবলো উঁচু করে খোঁপা করবে পরক্ষণেই আবার ভাবলো আয়াফ যদি কিছু বলে’!!আফিয়া তার চুলগুলো ধরে দাঁড়িয়ে আছে কি করবে বুঝতে পারছে না’!!খুলে দিবে বরাবরের মতো’!!বেঁধে রাখলে তো আয়াফ আবার টেনে খুলে ফেলবে’!!আফিয়ার এমন হাবভাব দেখে আয়াফ বুঝতে পেরেছে আফিয়ার মনে কি চলছে’!!আয়াফ হেঁটে সামনে চলে যায় আফিয়ার’!!তাঁরপর ওর হাত থেকে চিরুনি নিয়ে নিজেই সাজিয়ে দিতে শুরু করে’!!ঘটনাটা হর্ঠাৎ করে হয়ে যাওয়াতে আফিয়া পুরো ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল’!!পরক্ষণেই কি হচ্ছে বুঝতে পেরে মুচকি হাসলো’!!

||

“আয়াফ শুরুতেই সুন্দর করে চুলগুলোকে খুলে দিলো’!!মুখে অল্প মেকাপ,,চোখে হাল্কা কাজল আইলাইনার দিয়ে দিল,গলায় একটা ভাড়ি নেকলেস তার সাথে মেচিং করা কানেরদুল,ঠোঁটে হাল্কা লিপস্টিক,হাতে সুন্দর ব্যাচ….

“ব্যস আফিয়ার সাজ শেষ’!!অল্প সাজেই অসম্ভব সুন্দর লাগছে আফিয়াকে’!!আয়াফ তো চোখই সরাতে পারছে’!!হুট করেই আয়াফ আফিয়ার কোমড় ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো’!!সাথে সাথে আফিয়ার চোখ বড় বড় হয়ে গেল’!!এমনটা আশা করে নি আফিয়া’!!আয়াফ আফিয়াকে ধরে বললোঃ

———–“এত সুন্দর কেন তুমি বলে তো?বার বার আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবো না বলে দিলাম’!!তোমাতে যে নেশালো হয়ে গেছি,,আর এই নেশা কাটানো যে অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে “মায়াবতী”!!

“বলেই একটু একটু করে আয়াফ এগিয়ে যাচ্ছিল আফিয়ার ঠোঁটের দিকে’!!দুজনেই এক ঘোর লাগানো মুহূর্তে চলে যায়’!!!হর্ঠাৎ কি হলো আয়াফের হুট করে ছেড়ে দিলো আফিয়াকে’!!দুই কদম পিছিয়ে গেল সে’!!তারপর আফিয়াকে বলে উঠল সেঃ

————“সরি,,তাড়াতাড়ি নিচে চলে আসো আমি অপেক্ষা করছি….

“তারপর আর দু’মিনিট দাঁড়ালো না আয়াফ বেরিয়ে যায় রুম থেকে’!!আর অন্যদিকে আফিয়া এখনো হাবলার মতো দাঁড়িয়ে আছে যেন কি হলো সব মাথার উপর দিয়ে গেল’!!আফিয়ার মাথায় একটাই প্রশ্ন-

“আয়াফ থেমে গেল কেন?

||

“অন্যদিকে গাড়ি সামনে আসতেই স্ব-জোরে একটা লাথি মারলো আয়াফ’!!প্রচুর রাগ হচ্ছে তার’!!এমনটা করতে চায় নি আয়াফ’!!আয়াফ চায় না আফিয়াকে হার্ড করতে’!!সে চায় না এখনই ভুলভাল কিছু করতে আগে আফিয়াকে সব বলবে সে’!!কিন্তু বার বার এমন ভুল করে ফেলে আয়াফ’!!যদি তার কাজে আফিয়া রেগে যায় না তখন…..?

“আর ভাবতে পারছে না আয়াফ’!!আবারো সব এলেমেলো হয়ে যাচ্ছে তার’!!এই আফিয়া নামক নেশা তাকে সত্যি পাগল বানিয়ে দিয়ে দিচ্ছে’!!

__________________________________________

_______________________

“ঘড়ির কাঁটায় ৭ টা বেজে গেছে’!!আয়াফরাও পৌঁছে গেছে পার্টিতে’!!পুরো রাস্তায় আয়াফ একটাও কথা বলে নি আফিয়ার সাথে’!!নীরবতায় কাটিয়েছে দুজন’!! খুব সুন্দর ভাবেই সাজানো হয়েছে পার্টির আসর’!!পুরো লাইটিং সিস্টেম’!!আয়াফ আফিয়ার হাত ধরে একে একে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় আফিয়াকে’!!আফিয়াও হাসি খুশি সবার সাথে কথা বলে….

“এমন সময় একটা লোক আসে আয়াফের সামনে তারপর বলেঃ

———–“মিস্টার আয়াফ,আপনার মিসেস কে দেখতে কিন্তু খুব সুন্দর….

“আয়াফ হাল্কা হেঁসে বললোঃ

——–“থ্যাংক ইউ মিস্টার আহমেদ…..

“তারপর লোকটা আর কথা না বারিয়ে ড্রিংকস হাতে নিয়ে চলে যায়’!!আশেপাশে কিছু মেয়েরা তো আয়াফকে দেখে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে যেটা আফিয়ার চোখ এরায় নি’!!আর অন্য দিকে কিছু ছেলেরা আফিয়াকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে সেটা আয়াফের চোখ এরায় নি’!!আর দুজনেই এতে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে’!!দুজনেই জ্বেলাস😁

“বেশকিছুক্ষন পর……

“আয়াফ আর আফিয়া বেরিয়ে আসলো পার্টি থেকে’!!দুজনেই রেগে আছে দুজনের উপর’!!অল্প হাঁটতেই দুজনে একসাথে বলে উঠলঃ

———–“পার্টিতে ছেলেগুলো তোমায় চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছিল সেদিকে হুস আছে তোমার…

————“আর আপনাকে যে মেয়েগুলো তার বেলা…

“আয়াফ আফিয়া দুজনেই বুঝতে পেরেছে তাঁরা দুজনেই জ্বেলাস’!!পরক্ষণেই হেঁসে দিল দুজনে’!!

||

“সকালে দুজনেই তৈরি হয়ে চট্টগ্রাম শহরকে বিদায় জানিয়ে রওয়ানা হলো নিজেদের গন্তব্যে….
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…………

~ ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ!!🙃

#TanjiL_Mim♥️

নেশালো সে পর্ব-১০

0

#নেশালো_সে💖
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম💖

১০.

“আয়াফদের গাড়ি এসে থামলো চট্টগ্রামের একটা বিখ্যাত হোটেলের সামনে’!!তারপর আয়াফ আর আফিয়া দুজনেই গাড়ি থেকে নেমে চলে গেল হোটেলের ভিতরে’!!এর মধ্যেই হোটেলের ম্যানেজার এসে হাজির ওদের সামনে’!!ম্যানেজার আয়াফকে দেখে বলে উঠলঃ

———-“কেমন আছেন স্যার!

“আয়াফ মুচকি হেঁসে বললোঃ

———–“আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপনি….

————“এই তো চলছে স্যার,তা আপনাদের আসতে কোনো সমস্যা হয় নি তো স্যার….

————“একদমই না!

“ম্যানেজার আয়াফের পূর্ব পরিচিত’!!তাই তেমন কোনো প্রবলেম ছাড়াই ম্যানেজার আয়াফকে ওদের রুমটা দেখিয়ে দিলো’!!আয়াফও ম্যানেজারের কাছ থেকে চাবিটা নিয়ে বিদায় জানিয়ে হাঁটা ধরলো আফিয়াকে নিয়ে তাদের রুমের দিকে’!!অবশ্য ম্যানেজার আসতে চেয়েছিল ওদের সাথে!!কিন্তু আয়াফ বারন করেছে’!!তাই আর আসে নি’!!

“আয়াফ আর আফিয়া লিফটে উঠে পাঁচতলায় চলে গেল’!!কারন তাদের রুম পাঁচতলায়’!!পাঁচতলার তিন নাম্বার রুমে ঢুকেই আয়াফ বিছানায় তার গা এলিয়ে দিল’!!চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ তার’!!আর….

.

“অন্যদিকে আশেপাশে চারিদিকের রুমটাকে ঘুরে দেখছিলাম আমি’!!অসম্ভব সুন্দর একটা রুম’!!চারিপাশে অসম্ভব সুন্দর দেখতে সব ফার্নিচার’!!সাদা তুলতুলে নরম বিছানা’!!আমি হাঁটতে হাঁটতে একদম বেলকনির দিকে চলে গেলাম’!!পাঁচতলার বেলকনি থেকে নিচে তাকিয়ে আছি আমি’!!অসম্ভব সুন্দর একটা জায়গা’!!সারি সারি সব গাছপালা পেরিয়ে একটা বিশাল বড় সমুদ্র দেখা যাচ্ছে এখান থেকে’!!প্রকৃতি সত্যি খুব সুন্দর’!!

||

“বিকেল ৪ঃ০০টা…..

“আয়াফ তার কাজ সেরে হোটেলে চলেছে এসেছে এইমাএ’!!রুমে ঢুকেই দেখলো আফিয়া সাদা তুলতুলে নরম বিছানায় লেপ্টে ঘুমিয়ে আছে’!!চুলগুলো এলেমেলো ভাবে পড়ে আছে মুখে’!!চোখগুলোতে অসম্ভব মায়াবী লাগছে এই মুহুর্তে আয়াফের কাছে আফিয়াকে’!!আয়াফ তার ক্লান্ত মাখা মুখ নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে আফিয়ার দিকে’!!আয়াফ মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে আফিয়ার দিকে’!!ঘুমন্ত ফেসটা একদম মায়া ভরা লাগছে’!!আয়াফ কিছুক্ষণ আফিয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে ধরতে গিয়েও ধরলো না’!!তাড়াতাড়ি ওয়াশরুমে চলে গেল সে’!!এই মুহূর্তে চাইছে না সে আফিয়ার ঘুমটা নষ্ট হোক’!!আয়াফ মুচকি হেঁসে চলে যায়’!!

“বেশকিছুক্ষন পর…

“আয়াফ শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে আসল শুধু টাওয়াল পড়ে’!!চুলগুলো দিয়ে টপ টপ করে পানি পরছে তাঁর’!!আয়াফ চলে যায় আয়নার সামনে’!!এমন সময় নড়েচড়ে উঠলো আফিয়া’!!বামদিকে ঘুমিয়ে ছিল সে এখন ডানদিকে হলো’!!আফিয়া একটু নড়ে উঠতেই আয়াফের আবার চোখ আঁটকে গেল আফিয়ার দিকে’!!আবারো সেই মায়াবী চোখ আয়াফকে পাগল করে দিচ্ছে’!!আয়াফ আবারো এগিয়ে যেতে লাগলো আফিয়ার দিকে’!!তারপর পাশে বসে বলে উঠল আয়াফঃ

———–“দিনে দিনে আমি যে তোমার প্রতি আসক্ত হয়ে যাচ্ছি মায়াবতী,আমায় সত্যি সত্যি পাগল বানিয়ে দিয়েছো তুমি সেই প্রথম দিন থেকে,এতদিন দূরে থেকে জ্বালিয়েছো আর এখন কাছে থেকে জ্বালাচ্ছো…..

“বলেই আফিয়ার মুখে ফু দিয়ে সামনের চুলগুলো সরিয়ে দেয় আয়াফ!!হাল্কা ঝুঁকে পড়ে আয়াফ আফিয়ার দিকে’!!তারপর আবারো বলে উঠল সেঃ

———-“খুব তাড়াতাড়ি তোমায় আমি আমার মনের কথা বলে দিবো “মায়াবতী”!তোমার নেশালো চোখ,নেশালো ঠোঁট, আর নেশালো মাতাল করা সেই ঘন কালো চুল….

”বলেই আফিয়ার চুলের গন্ধ নিতে শুরু করলো আয়াফ’!!তারপর বললোঃ

———-“দিনে দিনে তোমায় মায়ায় পড়ে নেশালো হয়ে যাচ্ছি যে মায়াবতী,,আর এই নেশা কাটিয়ে নিজেকে কন্ট্রোল করা দিনে দিনপ দায় হয়ে দাড়াচ্ছে যে “মায়াবতী”….

”এই রকম নানা কথা বলছে আয়াফ আফিয়ার সাথে’!!আর আমাদের ঘুমন্ত আফিয়া এতটাই ঘুমে ব্যস্ত এসব কথা তার কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না!’

!!

“ঘুমের মধ্যে হর্ঠাৎই মনে হলো কারো নিশ্বাসের শব্দ বাজছে আমার কানে’!!কেউ অনেকক্ষণ যাবৎ কিছু একটা বলছে আমায়’!!কিন্তু ঘুম মামা এমন ভাবে আমাকে গ্রাস করেছে যে চোখ খুলতেই পারছি না’!!হর্ঠাৎই মনে হলো কেউ কপালে চুমু আঁকলো আমার’!!সাথে সাথে চোখ খুলে তাকালাম আমি’!!চোখ খুলতেই অবাক আমি কারন আমার সামনে কেউ নেই’!!তাহলে কি এতক্ষণ শুধু শুধুই ভুলভাল ভাবছিলাম’!!হর্ঠাৎই চোখ গেল আমার সামনে থাকা সোফার দিকে’!! আয়াফ বসে বসে বসে খাবার খাচ্ছে’!!তার মানে আয়াফ চলে এসে শাওয়ার নিয়ে নিলো অথচ আমি টেরই পেলাম না’!!আস্তে আস্তে শোয়া থেকে উঠে বসলাম আমি’!!এরই মধ্যে আয়াফ বলে উঠলঃ

———-“তাড়াতাড়ি তৈরি হও আমরা বের হবো!

———–“কোথায়…

“সাথে সাথে একপলক তাকালো আয়াফ আমার দিকে’!!সাথে সাথে বলে উঠলাম আমিঃ

————“ওহ!বুঝতে পেরেছি গেলেই দেখতে পাবো!

“অবাক হয়ে তাকালো আয়াফ’!!আসলেই এটাই বলার ছিল তার!বুঝলো কেমনে….

_________________

“ঘড়ির কাঁটায় প্রায় ৫ টা বেজে ৩০ মিনিট এমন একটা সময়ে আয়াফ আর আফিয়া বের হলো’!!ব্লাক শাড়ি পড়েছে আফিয়া সাথে চুলগুলো খোলা,চোখে কাজল সাথে মুঠো ভর্তি করা ব্লাক কাঁচের চুরি হাতে সব মিলিয়ে অসম্ভব সুন্দর লাগছে আফিয়াকে,আর আয়াফও ব্লাক শার্ট ব্লাক জিন্স, হাতে ব্লাক ঘড়ি আর চুলগুলো সুন্দর গুছিয়ে নিয়েছে সে’!!এক কথায় বলতে গেলে একদম পারফেক্ট কাপাল’!!দুজনেই দুজনের দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো’!!তারপর দুজনেই বেরিয়ে গেলো হোটেল থেকে’!!আয়াফ হোটেল থেকে বেরিয়েই বললোঃ

———-“তাহলে যাওয়া যাক!

“আমি অবাক হয়ে বললামঃ

———-“গাড়ি কই!

“আয়াফ মুচকি হেঁসে বললোঃ

———–“গাড়ি নয় হেঁটে যাবো!

“আমি আবারো বেশ অবাক হলাম আয়াফের কথায়’!!যে ছেলে গাড়ি ছাড়া দু-মিনিট চলে না সে বলছে নাকি হেঁটে যাবে’!!আশ্চর্য তো!আমার ভাবনার মাঝে আয়াফ বলে উঠলঃ

———–“কি হলো চলো(হাত বারিয়ে দিয়ে)

“আজকে আয়াফের কাজে একের পর এক অবাক হচ্ছি আমি’!!তবে বিষয়টা খারাপ না’!!আমিও আর কিছু না ভেবে মুচকি হেঁসে আমার হাত বারিয়ে দিলাম আয়াফের দিকে’!!তারপর হাঁটতে হাঁটতেই বেরিয়ে পরলাম আমরা কোনো এক অজানা গন্তব্যে…….

||

“বেশকিছুক্ষন হাঁটার পরই আমরা পৌঁছে গেলাম চট্টগ্রামের বিখ্যাত সমুদ্রের কাছে’!!নাম ”সাগরিকা সমুদ্র সৈকত”!!অসম্ভব সুন্দর দেখতে একটা জায়গা’!!আমার তো দেখেই চোখ আঁটকে গেছে’!!বালির ভিতর দিয়ে হেঁটে চলেছি আমরা’!!তবে পায়ে জুতো থাকায় খুব একটা ভালো লাগছে না হাঁটতে’!!হুট করেই জুতা খুলে হাতে নিয়ে নিলাম আমি’!! আমার এমন কাজে আয়াফ অবাক হয়ে বললোঃ

———–“এটা কি করলে জুতো খুলে হাতে নিলে কেন?

———-“এইভাবে হাঁটতে ভালো লাগছে তো!

———–“কিন্তু পায়ে যে ময়লায় ভরবে তার বেলা…

———–“সেটা তো জুতো পড়েও লাগছিল….

————“তাই বলে…

————“আরে কিউট জামাই, একটু বালি লাগলে কিছু হবে না(আয়াফের গালে একটু বালি লাগিয়ে দিয়ে)

“এদিকে আয়াফ মুখে কিছু লাগতেই হকচকিয়ে উঠলো’!!তারপর সে বলে উঠলঃ

———–“এটা কি করলে…..

———–“কিছু করি নি তো!

“বলেই আমি দৌড়!আর আমার পিছন পিছন আয়াফও!!সময়টা প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসার কারনে তেমন কেউ নেই বলতেই চলে’!!যারা আছে তাঁরাও আমাদের থেকে অনেক দূরে!!তাই আমরা কি করছি সেটা তেমন কেউ খেয়াল করবে না……

||

“এদিকে একপর্যায়ে দৌড়াতে দৌড়াতে আয়াফ ধরে ফেললো আফিয়ার হাত’!!আফিয়ার হাতের নাগাল পেতেই আয়াফ হাত ধরে দিলো টান সাথে সাথে আফিয়া এসে পরলো আয়াফের বুকের উপর’!!আয়াফ একটু ঝুঁকে বলে উঠল আফিয়াকেঃ

———“যা করেছো তার শাস্তি তো পেতেই হবে……

“আয়াফের কথা শুনে শুকনো ঢোক গিললো আফিয়া!না জানি আয়াফ কি করে তার সাথে’!!হাল্কা মিন মিন কন্ঠে বলে উঠলো আফিয়াঃ

———–“কি করবে তুমি….

———–“কি করবো!

“বলেই আয়াফ তার হাতে থাকা অল্প কিছু বালি লাগিয়ে দিল আফিয়াকে’!!আয়াফের কাজে আফিয়া পুরো ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল’!!এভাবেই খুনশুটিতে কাটলো সন্ধ্যার মুহুর্তটা ওদের’!!

…….

“ঘড়ির কাঁটায় ৬ঃ৩০টা বেজে গেছে’ অলরেডি!!চারিদিকে মাগরিবের আযানও দিয়ে দিয়েছে’!!সমুদ্রের দিকে মুখ করে তাকালেই দেখা যাবে এখন সেই সুন্দর সূর্য্যিমামা অস্ত যাওয়ার দৃশ্য’!!সূর্য পুরো লাল বর্ন ধারণ করে ফেলেছে’!!যার জন্য সমুদ্রের পানিও দূর থেকে লাল দেখাচ্ছে’!!অপলকভাবে তাকিয়ে আয়াফ আর আফিয়া সেই মনোরম দৃশ্যের দিকে’!!আফিয়া আয়াফের হাত ধরে বললোঃ

———–“চলো সমুদ্রে পা ভিজিয়ে আসি….

“আয়াফও কিছু বললো না!!বেশকিছুক্ষন সমুদ্রের পানিতে পা ভিজালো আফিয়া’!!ততক্ষণে সূর্য্যি মামাও চলে গেছে অন্যদেশের দিকে’!!আয়াফ আফিয়ার কান্ড দেখে মুচকি হাসছে কারন আফিয়া বাচ্চাদের মতো লাফালাফি করছে’!!অল্পকিছুক্ষন পর আয়াফ বলে উঠলঃ

———–“এখন তাহলে যাওয়া যাক!

“অনিচ্ছা থাকা সত্বেও বলে উঠল আফিয়াঃ

———-“চলো’!!

“কিন্তু কথা হলো আফিয়া তার পা ভিজিয়ে ফেলেছে তাই আবার যদি বালির ওপর দিয়ে হাঁটতে যায় তাহলে আর হাঁটার মতো অবস্থায় থাকবে না আফিয়ার’!!পায়ের ভিতর টিপকে লেগে যাবে বালি’!!আর যেটা মটেও চাচ্ছে না আফিয়া!!কিন্তু কি আর করার এই মুহুর্তে’!!আফিয়া কিছুটা মনমরা হয়ে পা বাড়াতে যাবে তার আগেই আয়াফ তাকে কোলে তুলে নিলো’!!ঘটনাটা আচমকা হয়ে যাওয়াতে কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে আফিয়া আয়াফের শার্টের হাতা খামচে ধরলো’!!হাসলো আয়াফ’!!তারপর আফিয়াকে আর একটু উঁচু করে ওর কানের কাছে নিজের মুখ নিয়ে বললোঃ

————“হাঁটতে চাইছো না সেটা বললেই তো হয়!

————“বলবো কেনো!আপনি বুঝে নিবেন (আয়াফের গলা জড়িয়ে ধরে)’!!

“আয়াফ অবাক হয় আফিয়ার কাজে পরক্ষণেই হেঁসে ফেলে আয়াফ’!!

__________________________________________

_______________________

“আয়াফ আফিয়াকে কোলে করে একটা ব্রিজের পর্যন্ত নিয়ে আসে যেটা চট্টগ্রামের “ঐতিহাসিক কালুরঘাট ব্রিজ” নামে পরিচিত!!খুব সুন্দর একটা ব্রিজ’!!রাতে আরো সুন্দর লাগছে’!!ব্রিজের নিচে সমুদ্রের পানি বয়ে চলেছে!!ব্রিজের বাম দিক দিয়ে হেঁটে চলেছে আয়াফ আর আফিয়া’!!রাত হওয়ার কারনে ব্রিজের ওপর দিয়ে জ্বলছে সারি সারি সব আলোকিত ল্যামপোস্ট!!যার মৃদু আলো একটু পর পর এসে পরছে আফিয়ার মুখে’!!তাদের পাশ দিয়ে ব্রিজের মাঝখান দিয়ে চলছে একের পর এক নানা রকমের গাড়ি’!!যা একবারও ওদের চোখ এড়াই নি’!!আফিয়ার তখন বেশ লজ্জা লাগছিল’!!আয়াফ তাকে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছে’!!অবশ্য সে বেশ কয়েকবার বলেছিল আয়াকে তাকে নামিয়ে দিতে’!!কিন্তু আয়াফ তা শুনতে নারাজ’!!এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল আফিয়ার’!!ফোনটা তুলে দেখলো তার মা ফোন করেছে’!!আফিয়া কিছু বলার আগেই আফিয়াকে নামিয়ে দেয়’!!আফিয়া আয়াফের কাছ মাএ দু’মিনিট দূরত্বে দাঁড়িয়ে ব্রিজে থাকা রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে কথা বলতে লাগলো’!!

“আর আয়াফও বেশ আরাম করে দাঁড়ানো’!!প্রকৃতির এই শীতল মেশানো ঠান্ডা বাতাসের মজা নিচ্ছে সে’!!এমন সময় আয়াফের কাঁধে হাত রাখলো একটা মেয়ে’!!আয়াফ কারো হাতের স্পর্শ পেতেই পিছন ঘুরে তাকিয়ে অবাক হয়ে বললোঃ

———-“তুমি…….
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…………

🤍🤍🤍[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ!!
আর গল্প কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে!!🥰]🥱🥱

#TanjiL_Mim♥️

নেশালো সে পর্ব-০৯

0

#নেশালো_সে💖
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম💖

০৯.

“বালিশ দিয়া উড়াধুরা মারছি আমি আয়াফকে’!!আর আয়াফ আমার এমন কাজে চোখ বড় বড় তাকিয়ে আছে আমার দিকে’!!কিছুক্ষণ আগেই রুমে আসলো আয়াফ’!!আয়াফ রুমে ঢোকার সাথে সাথে মারামারি শুরু..

“এদিকে আয়াফ অবাক হয়ে বলছেঃ

———–“আশ্চর্য তুমি এইভাবে মারছো কেন আমায়?’

———-“আজকে তোরে আমি মেরেই ফেলবো…

———-“তুমি আমায় তুই করে বলছো!😳

———-“বেশ করেছি বলেছি আরো বলবো তুই তুই, শয়তান কোথাকার বউ থাকতে অন্য মেয়েদের সাথে ডলাডলি করে😤

“এতক্ষণ পর আয়াফ বুঝতে পারলো আফিয়া এমন কেন করছে তার মানে আফিয়া জ্বেলাস ফিল করছে’!!আয়াফ মনে মনে অনেক খুশি হয়েছে কারন এসব ও ইচ্ছে করেই করছে’!!হুট করেই আয়াফ আফিয়ার হাত ধরে দিলো টান’!!সাথে সাথে আফিয়া এসে পরলো আয়াফের বুকে’!!

————“ছাড়ুন বলছি একদম ধরবেন না আমায়….

————“খুব কষ্ট হচ্ছে বুঝি আমি জুলির সাথে কথা বলছি বলে…

————“আমার কেনো কষ্ট হবে,আমার কোনো কষ্ট হচ্ছে না’!!

———–“তাই বুঝি!তাহলে আমায় মারছো কেন….

———–“ভালো লাগছে তাই মারছি আপনার তাতে কি?

“আয়াফ আফিয়ার কথা শুনে অবাক হয়ে বললোঃ

———-“আমার ডায়লগ আমাকেই শোনাচ্ছো….

———-“আপনি খুব পঁচা আয়াফ…🥺

“বলেই আয়াফের বুকে কিল ঘুসি মারতে মারতে নেকা কান্না করে দিলাম আমি’!!এদিকে আয়াফ ভাবতেই পারে নি আফিয়া এমন কিছু করবে’!!আয়াফ আফিয়াকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললঃ

———-“ভুল হয়ে গেছে বউ আর হবে না!

———-“তুমি জানো আমার কত কষ্ট হচ্ছিল….

———–“কি করে জানবো তুমি না বললে….

———-“তা জানবে কেন হুহ শয়তান কোথাকার?

———-“একটা সত্যি কথা বলবো?’

———–“কি(আয়াফের বুক থেকে মাথা সরিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বললো আফিয়া)

————“আসলে তোমায় জ্বালাতে না আমার হেব্বি লাগে তাই তো একটু বেশি কথা বলতাম জুলির সাথে!

————“কি তার মানে আমায় জ্বেলাস ফিল করার জন্য এত নাটক!আজকে তোমার একদিন আমার একদিন বলেই উড়াধুরা আবার মারামারি শুরু করে দিলাম…..

———–“আরে এখনও মারছো আমায়,ভুল হয়ে গেলো না সত্যি কথা বলছি বলে…

বিনিময়ে আফিয়া কিছু বললো না’!!উড়াধুরা খালি মারতেই ছিল’!!

“পুরো রাত এইভাবেই কেটে গেল ওদের’!!

____________________________

“সূর্যের প্রবল তাপে ঘুম ভাঙল আমার’!!নিজেকে আয়াফের বুকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে অতোটা অবাক হয় নি আমি’!!কাল শেষ রাতে আয়াফকে মারা বন্ধ করে ওকে জড়িয়ে ধরেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম আমি’!!হর্ঠাৎই মাথায় একটা প্রশ্ন আসলো আমারঃ

———-“হুট করে আয়াফ কি এমন দেখলো আমার মাঝে যে ভালোবেসে ফেলেছে’!!সেদিন “ঝুমকা” দেখানোর পরেই এমন বদল হলো আয়াফের’!!কি ছিল ওই ঝুমকার মাঝে’!!ধুম করে এমন একটা ভাবনা কেন আসলো মাথায় বুঝতে পারলাম না আমি’!!আজকেই জিজ্ঞেস করবো আমি আয়াফকে’!!কি ছিল ওই “ঝুমকায়”…….

||

“ব্রেকফাস্ট টেবিলে বসে আছি আমরা সবাই’!!এমন সময় আয়াফ খেতে খেতে বলে উঠলঃ

———“বাবা অফিসের কিছু কাজের জন্য আমাকে চট্টগ্রাম যেতে হবে একসপ্তাহের জন্য!’

“হুট করে আয়াফ এমন কিছু বলবে এটা একদমই কল্পনার বাহিরে ছিল আমার’!!কই কাল রাতে তো এমন কিছু বলে নি আমায় আয়াফ’!!শশুর মশাই আয়াফের কথা শুনে কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে উঠলঃ

———–“ঠিক আছে!

———–“হুম!

“বলে খাবার খেতে লাগলো আয়াফ’!তারপর নেমে আসলো টেবিলে কুটকুটে নীরবতা শুধু চামচের শব্দ ছাড়া তেমন কোনো আওয়াজ শোনা গেল না এখানে’!!কিছুক্ষন পর’!!আয়াফ তার বাকি খাবার শেষ করে উঠতে যাবে এমন সময় শশুর মশাই বলে উঠলেনঃ

———-“তুমি চাইলে আফিয়াকেও নিয়ে যেত পারো তোমার সঙ্গে…..

“আয়াফ যেন এতক্ষণ এই কথাটা শোনার জন্যই অপেক্ষায় ছিল’!!তাই খুশি হয়ে বলে উঠল সেঃ

———-“ঠিক আছে বাবা!

“সাথে সাথে সবাই হাসলো’!!”একটা জিনিস তো পাক্কা আমাদের আয়াফ বউ বলতে পাগল”!😁

———–“তা কবে যাচ্ছো তুমি?

———-“এই তো বাবা কালকে!

___________________

“বিকাল_৪ঃ০০টা……

“আয়াফ আর আফিয়া যাবে শপিং করতে!গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আয়াফ’!!পরনে তার ব্লাক জিন্স আর ব্লাক শার্ট,হাতে ব্রান্ডেড ব্লাক ওয়াচ,চুলগুলো বরাবরই খুব সুন্দর করে জেল দিয়ে সাজানো’ আর চোখে কালো সানগ্লাস’!!এককথায় বলতে গেলে অল্প সাজেই অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাকে’!!অন্যদিকে বাড়ির ভিতর থেকে বাহিরে আসছে আফিয়া পরনে তার ব্লাক গর্জিয়াস থ্রি-পিচ,, মুখে হাল্কা মেকাপ,চোখে কাজল,আইলাইনার, হাতে ব্যাচ আর চুলগুলো খুলে রেখেছে সে’!!চুল খোলার বিষয়টা আয়াফ তাকে বলেছিল তাই খোলা রেখেছে আয়াফ’!! এই মুহুর্তে দুজনই দুজনকে দেখে একদফা ক্রাশ খাইছে’!!দুজনেই পলক বিহীন তাকিয়ে আছে দুজনের দিকে’!!আয়াফ তাড়াতাড়ি তার চোখ নামিয়ে নিল আফিয়ার উপর থেকে’!!আর মনে মনে বললোঃ

———–“তোমার ওই মায়াবী চোখে যে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকার ক্ষমতা নেই আমার ”মায়াবতী”!

||

“আয়াফদের গাড়ি এসে থামলো একটা বড় শপিং মলের সামনে’!!আয়াফ আফিয়া দুজনেই গাড়ি থেকে নেমে গেল’!!তারপর একসাথে ঢুকলো শপিংমলের ভিতরে!!শপিংমলের ভিতর ঢুকতেই আফিয়ার বান্ধবী রুহি আর তিশা’ এসে হাজির’!!ওরাও শপিং করতে এসেছে’!!আফিশাকে ঢুকতে দেখেই চলে আসলো ওরা আফিয়াদের সামনে’!!এমন একটা কিছু হওয়ার জন্য মটেও প্রস্তত ছিল না আফিয়া’!!চোখ তার চড়ুইগাছ’!!মুখ থেকে অটোমেটিক বেরিয়ে আসলো তারঃ

———-“তোরা!

———–“হুম আমরা….(রুহি)

“এতটুকু আফিয়াকে টেনে এনে ওদের পাশে দাঁড় করালো তিশা’!!তারপর বললোঃ

——–“দোস্ত ছেলেটা কে?

———“তোদের দুলাভাই!আফিয়ার কাছ থেকে আয়াফের পরিচয় পেতেই’!!তিশা তার হাত আয়াফের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললোঃ

———“আসসালামু আলাইকুম দুলাভাই!

তিশার কথা শুনে আয়াফ মুচকি হেঁসে বললোঃ

———-“ওয়ালাইকুম আসসালাম….

———–“নিশ্চয়ই চিনতে পারছেন না অবশ্য চিনবেন কি করে আফিয়া তো কোনোদিন পরিচয় করিয়ে দেই নি আমাদের,,তাই আমরাই পরিচয় দিচ্ছি আমি হলাম তিশা আর ও রুহি!আর আমরা দুজনই আফিয়ার সেই ছোট বেলার বান্ধবী এককথায় বলতে গেলে আমরা বেস্টফ্রেন্ড!!তিশার কথা শুনে হালকা হেঁসে আয়াফ বললোঃ

———-“ওহ!

“এদিকে তিশা আফিয়ার কানে কানে বললোঃ

———-“দোস্ত তোর জামাইরে এত সুন্দর দেখতে জানতাম না তো!উফ ক্রাশ খাইছি দোস্ত….

“এমন সময় আরেকজন রুহি সেও এসে বললোঃ

———-“দোস্ত আমিও কিন্তু খাইছি’!!বলেই আবারো আয়াফের সাথে কথা বলতে চলে গেল রুহি আর তিশা’!!

“আয়াফও ওদের সাথে সুন্দর হেঁসে হেঁসে কথা বলতে লাগলো’!!এদিকে আফিয়া তো ভিতরে ভিতরে পুরো জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে!!না পারছে কিছু বলতে না পারছে সইতে’!!এক পর্যায়ে আফিয়া ওদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আয়াফের চোখ তার হাত দিয়ে চেপে ধরে বললোঃ

———–“এই চোখ বন্ধ!একদম নজর দিবি না এই চিকনী জামাই আমার….

“আফিয়ার এমন কাজে সবাই অবাক হয়ে হেঁসে দিল’!!তারপর বললোঃ

————“হুহ আমরাও নজর দিমু না যা তোর চিকনী জামাইরে….

————“হুহ,এখন তোরা যা আমি এখন শপিং করবো….

————“হুম ঠিক আছে ঠিক আছে আমারও চলে যাচ্ছি….

“বলেই রুহি তিশা আয়াফকে মিষ্টি করে বাই বলে চলে গেল’!!আয়াফ এতক্ষণ শুধু নীরব দর্শকের মতো আফিয়ার কাজের মজা নিচ্ছিল’!!রুহি, তিশা যেতেই আয়াফ বলে উঠলঃ

———–“যাই বলো তোমার বান্ধবীদের দেখতে খুব সুন্দর…..

আয়াফের কথা শুনে আফিয়া হাল্কা রেগে গিয়ে বললোঃ

———–“কি সুন্দর তাহলে যাও না আমার বান্ধবীদের কাছে আমার কাছে কি হুহ..😒

“আয়াফ হাল্কা হেঁসে বললোঃ

———–“আরে মজা করছিলাম তো….

“হাসলো দুজনেই!!

“তারপর দুজনই একসাথে শপিং করতে চলে গেল’!!একের পর এক দোকান ঘুরে শপিং করলো দুজন’!!শপিং শেষ করে দুজনেই বেরিয়ে গেল শপিংমল থেকে’!!

“রাস্তায়র এপারে দাঁড়িয়ে আছে আয়াফ আর আফিয়া আর তাদের উল্টো দিকে রয়েছে তাদের গাড়ি’!!আয়াফ সেদিকে পা বাড়াতে নিলেই আফিয়া তার হাত ধরে বসলো’!!আচমকা এমনটা হওয়াতে আয়াফ অবাক হয়ে তাকালো আফিয়ার দিকে’!!আয়াফ তাকাতেই আফিয়া বলে উঠলঃ

———-“চলো না ফুচকা খাই!

———–“কি এখন…

———-“হুম এখন নয় তো কখন ওই দেখুন ফুচকার দোকান(হাত দিয়ে দেখিয়ে)

“আয়াফ কিছুক্ষন ভেবে বললোঃ

———-“ঠিক আছে!আগে শপিংগুলো গাড়ির ভিতর রেখে আসি তারপর খাওয়াবো ঠিক আছে….

“আয়াফের কথা শুনে আফিয়া খুশি হয়ে আয়াফের একহাত জড়িয়ে ধরে বললঃ

———-“ঠিক আছে!

“তারপর দুজনেই একসাথে অগ্রসর হতে লাগলো গাড়ি দিকে’!!গাড়ির ভিতর ব্যাগগুলো রেখে আবারো উল্টোদিকে হাঁটা শুরু করলো আয়াফ আর আফিয়া’!!তারপর তাঁরা চলে গেল ফুচকার দোকানের সামনে’!!সুন্দর একটা লেকের পাশে দাঁড়ালো আয়াফ আর আফিয়া’!!তারপর আফিয়া ফুচকা খেলেও আয়াফ খেলো না’!!সন্ধ্যার দ্বীপ প্রহরী’!!সূর্য ডুবে যাচ্ছে প্রায়’!!পুরো আকাশটা লাল বর্ন ধারণ করেছে’!!সাথে শীতল মেশানো বাতাস’!!তার সাথে আছে আয়াফের মায়াবতী সত্যি খুব সুন্দর মোমেন্ট’!!হাসলো আয়াফ…….

__________________________________________

_______________________

“রাত_৮ঃ০০টা……..

“জামা কাপড় গুছাচ্ছি আমি’!!তারপর আমার থেকে কিছুটা দূরে সোফায় বসে মোবাইল গুতাচ্ছে আয়াফ’!! হুট করেই সকালে সেই ভাবনাটা মাথায় আসলো আমার’!!আমি জামাকাপড় গুলো বিছানার উপর রেখে আস্তে আস্তে এগিয়ে গেলাম আয়াফের কাছে’!!তারপর আয়াফের পাশে বসে বলে উঠলাম আমিঃ

———–“আমার কিছু বলার আছে তোমায়….

আয়াফ তার মোবাইলের দিকে তাকিয়েই বলে উঠলোঃ

————“হুম বলো…..

————“সত্যি কথা বলবে কিন্তু…..

এইবারের কথা শুনে আয়াফ আফিয়ার দিকে তাকিয়ে বললোঃ

————-“এমন ভাবে বলছো কেন,কি বলবে বলো তুমি আর মিথ্যে বলবো কেন?’

“আয়াফের কথা শুনে আফিয়া একটা ছোট্ট শ্বাস ফেলে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আয়াফের ফোনটা বেজে উঠল!’আয়াফ ফোনটা হাতে নিয়ে বললোঃ

———–“হ্যালো,

“আফিয়া কিছু বলতে গেলেও আয়াফ থামিয়ে দিয়ে বললো আফিয়াকেঃ

———-“জাস্ট দু’মিনিট আসছি আমি” বলেই রুম থেকে বেরিয়ে গেল আয়াফ’!!তারপর আফিয়াও আর কিছু না বলে তার কাজে ব্যস্ত হয়ে পরলো!

“সেদিন রাতে আয়াফের রুমে আসতে আসতে আফিয়া ঘুমিয়ে পরেছে’!!তাই আর জানা হলো না আয়াফের কি বলতে চাইছিল আফিয়া’!!

||

“সকালে খুব তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে গাড়ি করে বেরিয়ে পরলো আয়াফ আর আফিয়া চট্টগ্রাম যাওয়ার উদ্দেশ্যে’!!আফিয়া মনে মনে ভেবে রেখেছে চট্টগ্রাম গিয়েই বলবে আয়াফকে…..
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…………

~ ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ!!🖤🥀
আর গল্প কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে!!🥰🥀

#TanjiL_Mim♥️

নেশালো সে পর্ব-০৮

0

#নেশালো_সে💖
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম💖

০৮.

“দেয়ালের সাথে চেপে ধরে দাঁড়িয়ে আছে আয়াফ’!!আর ওনার এমন কাজে আমি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি’!!আচমকা এমন কিছুর জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না আমি’!!নিচ থেকে রুমে ঢুকতেই আয়াফ এমন কিছু করবে সেটা আমি ভাবতেই পারি নি’!!আমি তো ভেবেছিলাম আয়াফ এতক্ষনে গভীর ঘুমে মগ্ন হবে’!!চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলে উঠলাম আমি আয়াফকেঃ

———-“এটা কি হলো!আপনি ঘুমান নি এখনও….

———–“না ঘুমাই নি,তোমার সাথে ঝগড়া না করলে আমার ঘুম আসবে না তুমি জানো না!(রেগে)

———–“মানে?

———–“কেনো তুমি বুঝতে পারো নি!আমি কি ইংলিশে বলেছি যে তুমি বুঝতে পারো নি…

———–“হর্ঠাৎ কি হলো আপনার এতো রেগে আছেন কেন?

———-“আমার ভালো লেগেছে তাই রেগে আছি তোমার তাতে কি?

———-“আশ্চর্য!কি কারনে রেগে আছেন সেটা তো বলবেন,

———-“না তোমায় বলবো না….

———-“না বললে বুঝবো কিভাবে?

———-“কেনো বুঝো না, কবে বুঝতে পারবে তুমি…..

“বলেই স্ব-জোরে দেয়ালে ঘুসি মারলো আয়াফ’!!ওনার এমন কাজে আমি পুরো কেঁপে উঠলাম’!!তারপর কাঁপা কাঁপা গলায় বললামঃ

———“প্লিজ আয়াফ!এমন করছেন কেন?না বললে আমি বুঝবো কিভাবে….

“আয়াফ আফিয়ার কথা শুনে ওর দু-গাল আলতোভাবে চেপে ধরে বললঃ

———-“তুমি কি সত্যি বুঝতে পারছো না আমি কি বলতে চাচ্ছি…..(নীরবভাবে)

“আমি রীতিমতো অবাক হচ্ছি আয়াফের আচরনে’!!আয়াফ আবারো বলে উঠলঃ

———“তুমি জানো এখন আমার কি করতে ইচ্ছে করছে তোমায়….

“আয়াফের কথা শুনে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলে উঠলাম আমিঃ

———–“হুম কি…..

———–“আমি তোমায় কিস করতে চাই, তোমার ঠোঁট ছুয়ে দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলতে চাই আমি তোমায়…… বলেই থেমে গেল আয়াফ….

.

“এদিকে আমি আয়াফের দিকে হাবলা কান্তের মতো তাকিয়ে আছি যেন উনি কি বলছে সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে’!!আমায় চুপ থাকতে দেখে আয়াফ আবারো বলে উঠলঃ

———–“তুমি কেনো বুঝতে পারছো না “মায়াবতী”, আমি তোমায়…..যাও তোমায় কিছু বুঝতে হবে না!বলেই আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে আয়াফ’!!

“আয়াফ আফিয়াকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে বলে উঠলঃ

———–“কাল থেকে যদি রাতে দেরি করে রুমে আসো তাহলে তোমার খবর আছে বলে দিলাম’!!

“বলেই আফিয়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে আয়াফ’!!

||

“এদিকে আফিয়া এখনো শকট হয়ে আছে যেন আয়াফ কি বললো আর আয়াফ কি করছে সব তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে!!

___________________

“রাত_২ঃ০০টা……

“আয়াফ বাচ্চাদের মতো করে আফিয়াকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে’!!আর আফিয়া তার মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে’!!এমনটা নয় আফিয়া বুঝতে পারছে না আয়াফ কি বলতে চাইছে’!!আসলে আয়াফকে একটু জ্বালাতে আফিয়ারও বেশ লাগছে’!!প্রত্যেক বার আয়াফ শুরু তুমি কেনো বুঝো না আমি তোমায়…এতটুকু বলে থেমে যায়!কেন রে পুরো কথাটা বললে তোর পেস্টিচ চলে যাবে নাকি,না তোর মাথার চুল পড়ে যাবে ভেবে পায় না আফিয়া’!!তাই আফিয়া মনে মনে ঠিক করে রেখেছে যতক্ষণ না আয়াফ তাকে পুরো কথাটা বলবে ততক্ষণ আফিয়াও কিছু বলবে না!না বোঝার ভান নিয়ে থাকবে’!!ভেবেই হাল্কা হাসলো আফিয়া’!!এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমের দেশে পাড়ি জমালো নিজেও জানে না আফিয়া!

“রাতের জোৎসা ভরা আলোতে আলোকিত হয়ে গেছে রুম!’তার সাথে একটু একটু করে আলোকিত হচ্ছে দুটো মানুষের মন!

||

“আজকে আফিয়ার ভার্সিটিতে এক্সাম শুরু’!!তাই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়েছে আফিয়া’!!তাড়াতাড়ি গোসল সেরে একটা লাল রঙের চুড়িদার পড়েছে সে’!!চোখে কাজল টেনে, সাথে হাল্কা মেকাপ দিয়ে তৈরি সে’!!!চুলগুলো ভিঁজে থাকায় আপাতত খোলা রেখেছে’!!এক পায়ে পায়েল পড়েছে আফিয়া’!!তার ঝুনঝুন করা শব্দ কানে এসে বসছে আয়াফের’!!বিছানা লেপ্টে গভীর ঘুমে মগ্ন সে’!!আফিয়ার রুমের হাঁটার ফলে সোজা পায়েলের শব্দ এসে বাজছে আয়াফের কানে’!!একরাশ বিরক্ত নিয়ে চোখ খুললো আয়াফ’!!সাথে সাথে চোখ তার চড়ুই গাছ’!!অপলকভাবে তাকিয়ে আছে আয়াফ আফিয়ার দিকে’!!আফিয়াকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে এই মুহুর্তে’!!পলক বিহীন তাকিয়ে আছে আয়াফ আফিয়ার দিকে’!!

“আর অন্যদিকে আফিয়া বইয়ের পাতায় এতটাই মগ্ন যে তাকে কেউ গভীর ভাবে দেখছে তা সে বুঝতেই পারছে না’!!রুমের মধ্যে বই নিয়ে পায়চারি করছে আফিয়া’!!প্রচন্ড নার্ভাস সে’!!এই বিয়ের চক্করে তেমন পড়াশোনা করা হয় নি তার’!!তাই অনেকটাই দুশ্চিন্তার মধ্যে আছে আফিয়া’!!

“আয়াফ আফিয়ার বিষয়টা আন্দাজ করতে পেরে বলে উঠলঃ

———-“এত নার্ভাস হওয়ার কি আছে যা হবে ভালোই হবে দেখে নিও….

“আচমকা আয়াফের মুখে এমন কথা শুনে কিছুটা ভরকে গেলাম আমি’!!পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে বলে উঠলামঃ

———–“আসলে তেমন ভালো ভাবে পড়াশোনা করা হয় নি তো তাই একটু নার্ভাস লাগছে’!!

“আয়াফ মুচকি হেঁসে বললোঃ

———-“কিছু হবে না দেখে নিও….

“বলেই বিছানা ছেড়ে উঠে সোজা ওয়াশরুমে চলে যায় আয়াফ’!!

||

“সকাল_৯ঃ০০টা……

“ব্রেকফাস্ট শেষ করে আয়াফ আর আফিয়া দুজনেই বেরিয়ে গেল বাড়ি থেকে’!!আয়াফ আফিয়াকে ভার্সিটি নামিয়ে দিয়ে অফিস যাবে’!!আয়াফ আর আফিয়া বসতেই ড্রাইভার গাড়ি চালাতে শুরু করল’!কুটকুটে নীরবতায় বিরাজ করছে গাড়িতে’!!কারো মুখেই কোনো কথা নেই’!!শেষমেশ কেউ কিছু না বলেই পুরোটা রাস্তা পার করে দিল’!!ভার্সিটির সামনে আসতেই আফিয়া নামতে যাবে এমন সময় আয়াফ তার হাত টেনে ধরলো!!এতে বেশ অবাক আফিয়া’!!চোখের ইশারায় বললো আফিয়াঃ

———–“কি হয়েছে…..

“আয়াফ আফিয়ার চোখের ভাষা বুঝতে পেরে বলে উঠলঃ

———–“বলছি!

“বলছি” কথাটা কানে বাজতেই আফিয়া চুপটি বসে রইলো গাড়িতে’!!আচমকা আয়াফ তার হাত দিয়ে আফিয়ার কপাল স্পর্শ করল’!!এতে আফিয়া হাল্কা কেঁপে উঠল’!!আয়াফ তার হাতের আঙুল নামাতে নামাতে চোখ পর্যন্ত নিয়ে আসলো’!!তারপর আফিয়ার চোখে থাকা কাজল থেকে একটু কাজল তার হাতে লাগিয়ে নিল’!!আফিয়া রীতিমতো অবাক হচ্ছে আয়াফের কাজে’!!সে আসলে বুঝতেই পারছে না আয়াফ ঠিক কি করতে চাইছে!!চোখ বন্ধ করে আছে আফিয়া’!!আয়াফ আফিয়ার চোখে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষন’!!তারপর তার হাতে থাকা কাজল আফিয়ার কানের পিছনে লাগিয়ে দিলো’!!তারপর হাল্কা তার ঠোঁট আফিয়ার কানে স্পর্শ করে বলে উঠল আয়াফঃ

———-“কারো নজর না লাগে……

“চোখ বড় বড় হয়ে গেছে আফিয়ার সে ভাবতেই পারে নি আয়াফ এমন কিছু একটা করবে’!পরক্ষণেই মুচকি হেঁসে বললো আফিয়াঃ

————“এখন তাহলে আসি!

———–“হুম!আর হা শুনো আমি এসে নিজে যাবো তোমায় কোথাও যাবে না কিন্তু….

“আফিয়াও মুচকি হেঁসে বললোঃ

————“ঠিক আছে…..

“তারপর আয়াফও আর দাঁড়ালো না চললো তার কাজে আর আফিয়াও চললো তার গন্তব্যে……

_______________________

“এক্সাম শেষে আফিয়া দাঁড়িয়ে আছে ভার্সিটির করিডোরের সামনে’!!কাট -ফাটা রোদ্দুর থেকে বাঁচতেই এখানে দাঁড়িয়ে আছে’!!কিছুক্ষন আগেই আয়াফ ফোন করেছিল তাকে কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছে আয়াফ’!!!আফিয়া অপেক্ষা করছে আয়াফের’!!আফিয়ার বন্ধুরাও চলে গেছে অনেক আগেই’!!একদম কুটকুটে নীরবতায় বিরাজ করছে পুরো ভার্সিটি’!!দু-একজন দেখা গেলেও আবার কিছুক্ষনের মধ্যেই বিলিন হয়ে যাচ্ছে তারা’!!হর্ঠাৎই গাড়ির থামার শব্দে আফিয়া চমকে উঠলো’!!সাথে এটাও বুঝতে পেরেছে আয়াফ এসেছে’!!আফিয়াও মুচকি হেঁসে হাঁটা শুরু করল সেদিকে’!!

“গাড়ির কাছে আসতেই আফিয়া অবাক কারন ড্রাইভার নেই’!!আয়াফই ড্রাইভ করছে’!!আফিয়াকে কিছুটা অবাক হয়ে বললোঃ

———-“আপনি,ড্রাইভার কোথায়…..

———–“আসলে একটা জায়গায় যাওয়ার আছে তাই ড্রাইভার আনি নি!তুমি আসো তাড়াতাড়ি….

“বিনিময়ে আফিয়া শুধু বললোঃ

———–“ওহহ…..

“তারপর আফিয়াও বসে পরলো গাড়িতে!আফিয়া বসতেই আয়াফ বলে উঠলঃ

————“কেমন হয়েছে এক্সাম….

“আফিয়া হাল্কা হেঁসে বললোঃ

————“ভালো!আচ্ছা আমরা কোথায় যাচ্ছি…..

————“গেলেই দেখতে পাবে!

“তারপর আর কোনো কথা হয় নি দুজনের মাঝে!

||

“প্রায় ২ ঘন্টা পর আমাদের গাড়ি এসে থামলো এয়ারপোর্টের সামনে’!!আয়াফ গাড়ি থেকে নেমে বললোঃ

———–“তুমি বসো আমি একটু আসছি!

———–“কোথায় যাচ্ছেন আপনি!

———–“বললাম তো আসছি…..

———-“ঠিক আছে….

“তারপর আয়াফ চলে গেল এয়ারপোর্টের ভিতরে!আর আমি চুপচাপ বসে আছি গাড়িতে…..

“বেশকিছুক্ষন পর আয়াফ এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে আসলো’!!পাশে তার তিনজন মানুষ একটা মেয়ে আর দুটো ছেলে’!ওদের দেখেই আমি বুঝে গেছি এরা আয়াফের বন্ধু’!!আয়াফ ওদের তিনজনকে গাড়ির সামনে নিয়ে এসে বললোঃ

———-“মিট তোদের ভাবি….

“আমি হাল্কা হেঁসে বলে উঠলামঃ

———-“আসসালামু আলাইকুম আপু এন্ড ভাইয়ারা….

“ছেলে দুটো মিষ্টিভাবে কথা বললেও মেয়েটা বললো না’!!অবশ্য এতে আমার কিছু যায় আসে না’!!তারপর সবাই মিলে চললাম বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে’!!আয়াফ ড্রাইভ করছে আর তাদের বন্ধুেদর পরিচয় দিচ্ছেঃ

“একজনের নাম রিমন,আর আরেকজনের নাম আরমান আর মেয়েটার নাম জুলি’!!সবাই কিছুদিনের জন্য ঘুরতে গিয়েছিল বাহিরে’!!আয়াফকেও বলেছিল কিন্তু বিয়ের চক্করে পড়ে আর হলো না’!!সবাই হাসি খুশি ভাবে কথা বলছে আমার সাথে শুধু জুলি ছাড়া’!!দু-একবার হ্যাঁ হুম করলেই পরক্ষণেই চুপ হয়ে যাচ্ছে’!!ব্যাপারটা খুব একটা ভালো লাগছে না আমার’!!নিশ্চয়ই “ঢাল মে কুচ কালা হে”………

__________________________________________

_______________________

“বেশ কিছুক্ষণ পর আমরা এসে পৌছালাম বাড়িতে’!!আয়াফের বন্ধুরা রুমে ঢুকেই আম্মুকে জড়িয়ে ধরে বললঃ

———–“কেমন আছো আন্টি…..

“উনিও মুচকি হেঁসে বললেনঃ

———-“এই তো ভালো তোরা….

“তারপর সবাই মিলে একসাথে গল্প করতে শুরু করে দিল’!!আমি নীরব দর্শকের মতো শুধু দাঁড়িয়ে রইলাম’!!এমন সময় শাশুড়ী মা বলে উঠলেনঃ

———-“কি হলো আফিয়া তুই একা একা দাঁড়িয়ে আছিস কেন?

———-“তেমন কিছু নয় আম্মু তোমরা কথা বলছিলে তাই আর কি?আমি তাহলে রুমে গেলাম তোমরা গল্প কর….

“উনিও মুচকি হেঁসে বললোঃ

———–“ঠিক আছে….

“তারপর আমিও আর কিছু না বলে চলে গেলাম উপরে’!!সবচেয়ে অবাক করার বিষয় যেটা হলো আয়াফ একবারও আমার দিকে তাকালো না’!!জুলির সাথে হেঁসে হেঁসে দিব্বি কথা বলছে’!!রাগ হচ্ছে খুব’!!মুহূর্তেই মনে হলো আমি কি জ্বেলাস ফিল করছি!

||

“এভাবে কাটলো অল্প কিছুদিন’!!আয়াফ এখন প্রায় ইগনোর করছে আমায়’!!যেটা একদম সহ্য হচ্ছে না আমার’!!আগের মতো এখন আর ভার্সিটিতে দিয়ে আসে না’!!কারন উনি নাকি ওনার বন্ধুদের সাথে টাইম স্পেন করতে চায়’!!রাতেও খুব দেরি করে রুমে আসে!!সেটা একদমই সহ্য হয় না আমার’!!তারপরও ওই জুলির সাথে বেশি মেশামেশি করে’!!এসব ভাবতে ভাবতে রুমের মধ্যে পায়চারি করছি আমি’!!উদ্দেশ্য হলো আজকে একবার শুধু রুমে আসুক আয়াফ’!!বুঝিয়ে দিবো বউ থাকতে অন্য মেয়েদের সাথে মিশামিশি করলে তার পরিনতি কি হয়’!!সেদিন আমি দেরি রুমে আসায় অনেক কথা শুনিয়ে ছিল না আজকে আমিও দেখিয়ে দিবো এই আফিয়া কি জিনিস?

———-“তুমি শুধু একবার রুমে আসো চান্দু,আজকে তোমার একদিন কি আমার যে কয়দিন লাগে ‘হুহ’😤
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…………

[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ!!🤍
আর গল্প কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে!!আর “ঈদ মোবারক” গাইস!!সবাইকে “তানজিল মীম” এর পক্ষ থেকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের জন্য রইলো অনেক শুভেচ্ছা’ আর অভিনন্দন!]🥰🥰

#TanjiL_Mim♥️