!
অসভ্য তোর ভাইকে গিয়ে জিজ্ঞেস কর,
……
হা হা হা,
……
ইসসস,
আমার বুঝি লজ্জা করেনা?
বড় ভাই, চাচাতো না আমার নিজের ভাই কে এসব জিজ্ঞেস করলে কি ভাববে হুমম?.
….
তোর মাথা আমার মুন্ড,
!
হা হা হা,
…..
মোটে ও দাঁত কেলাবিনা বুঝলি?
…
হ্যা বুঝলাম,
তবে আমার ভাই তোকে খুব ভালোবাসে,
…
মাগো মা,
তোর জামাই বুঝি বাসে না?
……
বাসে তো খুব বাসে,
তবে একটা কথা বলি?
….
কি?
…..
আমার ভাই টাকে না ঘৃণা করা ছেড়ে দে,
…
তুই জানিস?
তুই ওকে ছেড়ে চলে আসার পর থেকে,
ও আমাকে ফোন করে পাগলের মতো করতো,
….
ফোন রিসিভ করে হ্যালো বলার আগে কেঁদে ফেলত ভাইয়া,
…
আমি জানি ভাইয়া যেটা করেছে সেটা ক্ষমার যোগ্য না,
….
তবু ও তুই ওকে ক্ষমা করে দিয়েছিস,
এখন ওকে আগের মতো ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দেনা প্লিজ?
…..
আমার ওনা কে কিছু দিয়ে ভরিয়ে দেওয়ার দরকার নেই,
…..
কারন তোর ভাই আমাকে ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দেয়,
…..
ইদানীং ওনার মধ্যে পুরনো অভ্যাস গুলো প্রকাশ পাচ্ছে,
আর আমি পাগল থেকে পাগলী হয়ে যাচ্ছি,
…..
কেন রে?
……
বিয়ের পরে তোর ভাইয়ের যে অভ্যাস গুলো ছিলো,
ও গুলো তো দিন কে দিন বাড়ছে বই কমছে না,
….
কমবে কি করে?
ও যে তোকে সত্যি করারের ভালোবাসে,
….
আর তাই তো আল্লাহ যার জিনিস তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে,
!
হয়েছে বুঝেছি এখন তাড়াতাড়ি রান্নাবান্না শেষ কর সন্ধে হয়ে এলো তো?
…
হয়ে গেছে তো,
….
কোই চোখে কি কম দেখ?
এখনো তো চিংড়ি মাছের মালাই কারি টা বাকি আছে?
….
মিশশশ মালাই কারি তুই রান্না করবি,
তোর হাতের মালাই কারি খেতে অনেক ভালোলাগে হুমম,
…
আচ্ছা বাবা ঠিক আছে,
..
রান্নাবাড়া শেষে আমি শাওয়ার নিতে রুমে চলে যাই,
শাওয়ার শেষে ডায়নিং এ গিয়ে দেখি,
………
সবাই কবজি ডুবিয়ে ভুড়ি ভোজ করছে,
…..
আমি যেতেই সবাই আমাকে জোর করে ওনার পাশে খেতে বসায়,
…..
আর আমি ও চুপটি
করে খেয়ে নেই,
তখন আঙ্কল আমার রান্নার প্রশংসা করে বলে,
…..
তোমার হাতে যাদু আছে মা,
তোমার হাতের রান্নায় যেন অমৃতের স্বাদ,
…
আশ্চর্য আব্বু তুমি শুধু ওর প্রশংসা করছ?
শুধু ও রান্না করেছে আমি কিছু করিনি?
..
হ্যা করেছ,
তুমি তো শুধু ঘটি বাটি নাড়াচাড়া করছ,
হা হা হা,
!
তোমরা সবাই পঁচা,
…..
হয়েছে বুঝেছি,
এখন একটু খেতে বয় প্লিজ,
…..
তারপর রিয়া খেতে বসে,
…
খাওয়াদাওয়া সেরে যে যার স্বামী ও বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে রুমে চলে যাই,
..
রুমে গিয়ে বাবুদের ঘুম পারিয়ে,
ওনার মাথায় হাত বোলাতে শুরু করি,
….
তারপর উনি আমার চুল নিয়ে দুষ্টুমি করতে শুরু করে,
….
দুষ্টুমি করতে করতে বলে,
…
তুমি কি এখানে এসে ভুলে গেছ?
তোমার একটা স্বামী
ও দুটো বাচ্চা আছে
..
না ভুলে যাইনি,
যাবো কি করে?
আপনি ভুলতে দিলে তবে তো?
….
তুমি কেন আমাকে আপনি করে বলো?
তুমি করে বলো না তুমি,
. . .
একটু কষ্ট করে আমাকে ভালোবাসার চেষ্টা করে দেখ,
….
দেখবে সব আগের মতো ঠিক হয়ে গেছে,
বলো তুমি করে বলো,
…
আমি বলছি তুমি শান্ত হয়ে বস প্লিজ,
এভাবে চাকু টা হাতে নিয়েছ কেন?
রাখো বলছি রাখো,
…
আগে বলো আমাকে আপনি করে বলবেনা তে?
.
না আমি বলবো না,
তুমি চাকু টা ফেলে দাও ভয় করছে আমার,
…..
না আমি ফেলবো না,
..
তোমার লেগে যাবে সোনা,
ব্যথা পাবে তো,
….
আমি ব্যথা পেলে পাবো তাতে তোমার কি?
…
আমার কি তাইতো?
আমার কিছুনা,
….
তুমি একটা স্বার্থপর,
তুমি শুধু তোমার কথা ভাবো,
….
তাই তো সবকিছু ঘেটে “ঘ” করে দাও,
….
তোমার যখন আমাদের প্রয়োজন নেই,
তখন আমাদের ও তোমার প্রয়োজন নেই ,
…
আমি কালকেই আমার বাচ্চাদের নিয়ে তোমার জীবন থেকে অনেক দূরে চলে যাবো,
….
তারপর থেকো তুমি তোমার এই পাগলামো নিয়ে,
….
আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই চাকু টা ফলে মুখ টা চেপে ধরে আমার,
!
আমি ছাড়ানোর চেষ্টা করতেই,
.. ..
আমার আচল দিয়ে আমার হাত দুটো বেধে দিয়ে,
…..
আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলে,
…..
হাত বেধে দিয়েছি কোথাও যেতে পারবেনা তুমি,
….
এখন দেখি তুমি পালিয়ে যাও কি করে?
…
হাত বেধেছ পা তো বাধনি,
পা দিয়ো হেটে হেটে যাবো,
…
যেতেই দিবো না,
…
এভাবে কিছুক্ষণ বেধে রাখার পর,
নিজেই আমার হাতের বাধন খুলে দিয়ে কপালে, দু গালে চুমু খেয়ে বলে,
. .
তুমি আমাকে ছুঁয়ে প্রমিছ করেছ,
..
তুমি কোথাও যেতে পারবেনা হুমমম,
..
বললেই হলো?
আপনি ঘুমলেই আমি পালিয়ে যাবো,
..
ঘুমবোই না,
….
এই মেলা ফ্যাচফ্যাচ করবেননা তো যতসব বিরক্তকর,
…
বেটা বদ কে ঝাড়ি মেরে বাচ্চাদের জড়িয়ে লাইট অফ করে শুয়ে পরি আমি,
…
হঠাৎ অনুভব করি উনি আমার হাতে পিঠে আলতো করে চুমু একে দিচ্ছেন…
…..
বেটা নাইজেরিয়ান এ্যানাকন্ডা,
…..
আমার রাগ ভাঙাতে ঘুষ হিসেবে চুমু প্রদান করছে,
….
হা হা হা
!
এ্যা এ্যা এ্যা,
……
এই সোনা তুমি কাঁদছ কেন?
…
এসব কি করছেন কি হুমম?
…
ওই একটু বেলি ফুলের মালা পরেছি আরকি?
…..
মালা পরালে চুমু দিলেন কেন?
……
গলায় দিয়েছি ঠোঁটে তো দেই নি তাই না?
!
মানে?
!
তুমি কি ভুলে গেছ?
যে তোমার ঠোঁটের খয়েরি কালারের লিপস্টিক আমাকে পাগল করে দেয়?
….
ইসসস,
আমি তো আজকে খয়েরি কালারের লিপস্টিক পরেছি,
…
এখন উনি আবারো আকাম করবেন নাকি হুমম?
……
“আপনি বাঁচলে বাপের মেয়ে”
লিপস্টিক টা মানে মানে মুছে ফেলি না হলে,
অস্তাগফিরুল্লাহ হয়ে যাবে,
….
তাই আমি টিসু বক্স থেকে টিসু নিতে যাই,
আর ওমনি উনি টিসু বক্স টা কেরে নিয়ে বলে,
…..
ইসসস,
আমার বৌ টাকে কত সুন্দর লাগে একদম রসগোল্লার মতো,
.. ….
পাগল,
!
হা হা হা
…….
তখন আবারো খেয়াল করে দেখি,
সেই আঙ্কল আন্টি আমাদের দেখে হাসছেন,
…..
হাসলে কি আর করার?
উনি যেসব কান্ড করছেন তাতে আমার ও হাসি পায়,
……
তখনি আবার গাড়ি চলতে শুরু করে,
আর আমরা রুহানের বাসায় পৌঁছে যাই,
….
কি হলো পৌঁছে গেছি তো?
গাড়ি তেঁ বসে থাকবে নাকি হুমম?
….
না মানে আমার বাচ্চা দুটো?
……
ওই,
……
কোই?
…..
মাম্মাম পাপাই,
…..
ওদের ডাক শুনে ওপরে তাকিয়ে দেখি,
…
ওরা দুজন রুহানের ছেলের সাথে বারান্দায় দাড়িয়ে দুষ্টুমি করছে,
!
তখন উনি আমার গালে টান দিয়ে বলেন,
…..
আমি কি জানিনা যে তুমি ওদের টেনশনে পুরো রাস্তায় চুপ করে বসে ছিলে?
….
শুধু কি মায়ের মন বাবারো তো মন আছে বলো?
….
আমি হয় তো ওদের পেটে ধরিনি,
তবে আমি ও বাবা তাই না?
….
কেন খুব হয়েছে বুঝি বাবা থেকে মা হওয়ার?
…
আমি চাইলে ও কি হতে পারবো বলো?
আল্লাহ তো আমাকে এতো ক্ষমতা দিয়ে
পাঠায়নি তাই না?
….
সত্যি,
…..
কি?
…
আপনি একটা পাগল,
!
তুমি পাগলের পাগলী,
হা হা হা,
!
যতসব,
…….
মাম্মা পাপাইের সাথে ঝগড়া করোনা প্লিজ,
তাড়াতাড়ি ভেতরে চলে আসো না সোনামণি,
…….
হ্যা বাবা আসছি এখনি আসছি,
…
ভেতরে যেতেই ভূত দেখার মতে চমকে যাই আমি,
..
কারন সেই ট্রাফিকজ্যামে আটকে থাকা আঙ্কল আন্টি হলে বসে কফি খাচ্ছে,
….
হঠাৎ করে সেই আন্টি এসে আমার কপালে চুমু খেয়ে বলে,
. ……. .
কেমন আছো মা?
….
আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি আন্টি আপনি আপনারা কেমন আছেন?
….
ভালো আছি মা,
!
তখন রিয়া আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে,
…
আম্মু এই আমার সতীন,
যার প্রেমে তোমার জামাই এখনো হাবুডুবু খায়,
….
রিয়া?
…
হ্যা সতীন এই আমার মা আর ওই আমার বাবা,
কিন্তু,
…….
কি?
……
তুই এতো সাজুগুজু করেছিস কেন?
আমার স্বামী তো তোকে দেখলে ইয়ে হয়ে যাইবে?
…
কিয়ে হয়ে যাইবে?
….
জানিনা রুমে আছে গিয়ে দেখা দিয়ে আয়,
……..
ওকে
…..
রুমে গিয়ে দেখি, রুহান চুলে জেল দিচ্ছে,
আমাকে দেখেই হেসে দিয়ে বলে,
……
সেই ছোটো বেলা থেকে আমি তোকে ভালোবাসি,
শুধু বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে কখনো নিজের মনের কথা খুলে বলতে পারিনি,
…..
তাই এখন তোকে বেহায়ার মতো বলছি,
…..
আই লাভ ইউ অলওয়েজ,
……
ব্যাটা বদ বাড়ি বৌ বাচ্চা আছে তোর,
….
তাতে কি?
আমি তো আর তোকে আমার সাথে প্রেম করতে বলছিনা?
শুধু আমার মনের কথা বলছি,
…
অসভ্য পোলা তের কপালে রাম প্যাঁদানি আছে দাড়া তুই,
….
কি?
…..
তোর কল্লা,
….
তারপর আমি ওকে ঝাড়ু নিয়ে বাড়িময় তাড়া করতে থাকি,
শেষমেশ আমার স্বামীর গিয়ে দাঁড়াতেই,
….
রিয়া আমার হাত থেকে ঝাড়ু টা কেড়ে নিয়ে রুহান কে ঝাঁটাপেটা করতে শুরু করে
……
রিয়া রুহানের কান্ড দেখে বাড়িময় পিচ্চি পাচ্চার হাসির রোল পরে যায়,
……
তারপর রিয়া আমাকে ওর রুমে চেঞ্জ করতে নিয়ে,
…..
চেঞ্জ করে রিয়ার সাথে কিচেনে গিয়ে রান্নাবাড়া করা শুরু করে দেই,
তখন রিয়া আমাকে বকা দিয়ে বলে,
….
তুই আমার গেস্ট তুই গিয়ে রেস্ট কর আমি সব সামলে নিবো,
…..
তুই তো বলিস আমি তোর সতীন,
তাহলে তোর এই সতীন কে কিছু করতে দে?
….
ওকে যা গিয়ে স্বামী সেবা কর,
….
কার সেবা করবো?
আমার স্বামীর না তোর স্বামীর?
….
তোর স্বামীর আমার স্বামীর সামনে না ভুলে ও যাসনে কারন সে তোকে লেগ পিস ভেবে খেয়ে ফেলবে,
হা হা হা,
…..
কি আমি লেগ পিস?
….
নাতো কি?
এ কয় বছরে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখেছিস?
যে তুই আগের থেকে কতটা লাবণ্যময়ী হয়ে গেছিস?
তোর সৌন্দর্য বাড়ছে বই কমছেনা বুঝলি?
…..
আমি চিন্তা করি আমার জিজু কি করে তোকে তোকে এতো ভালোবাসে
আমার স্বামী ও তোকে ভালোবাসে,
….
তোর স্বামী কে কি আমি বলছি?
আমাকে ভালোবাসো?
…
না,
……
তাহলে,
……..
তাই তো আমাকে না এতো এতো ভালোবাসে,
….
তোদের মধ্যে সবকিছু ঠিক আছে তো?
আমার জন্যে কোনো অশান্তি?
….
ধুরররর,
মিশ কি যে বলো না তুই?
হ্যা উনি তোকে পায়নি,
আর সেই সুখে আমাকে খুব ভালোবাসে,
…..
জানিস ও বলে কি?
…
কি বলে?
…
যেহেতু আমার ছেলে তোর মেয়ে কে পছন্দ করে,
তাই ওরা বড় হলেই,
তোর মেয়ে কে আমরা আমাদের বাড়ির বৌ করে আনবো,
…
আহারে গাছে কাঠাঁল আর গোফে তেল?
……
আমার দুধের শিশু,
এখনো গা থেকে দুধের গন্ধ পাই,
…..
আর তাকে এখনি বিয়ে পরানোর ব্যবস্থা করেছে তোরা?
…..
হ্যা করেছে তো?
…..
আর তখনি উনি আমার গালে আলতো করে চুমু একে দেয়,
….
আর রিয়া তখন মুচকি হাসি দিয়ে সুড়সুড় করে কিচেন থেকে কেটে পরে,
…
তখন উনি আমাকে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দেয়,
….
এসবের মানে কি হুমম?
নিজের বোনের শশুড় বাড়ি এসে ও আমার সাথে ছ্যাঁচড়ামো করছেন?
….
নাহহহ বৌ কে আদর করতে এসেছি,
!
পাজি যেন কোথাকার?
!
হা হা হা,
..
তারপর উনি পানি খাওয়ার নাম করে
আমাকে ওয়ালের সাথে চেপে ধরে ঠোঁটে ওপরে চুমু খেয়ে এত দৌড়ে চলে যায়,
….
পরে রিয়া এসে আমাকে হাসতে হাসতে বলে,
…..
ভাবি থুরি বেবি ভাই তোকে কি দিয়ে গেছে হুমম?
….
জানিনা,
…..
আমি তো জানি,
….
কি?
…
আমার সামনে কিস করলো,
আমি যাওয়ার পর কি করলে?
….
জানিনা,
..
একটা কথা বল তো?
…
কি?
…
তোর ঠোঁটের লিপস্টিক গেল কোই?
!
তোর ভাই না মানে কিছু না?
….
বুঝেছি,
…
কি?
…
আমার ভাইয়ের খুব খিদে লেগেছে,
তাই লিপস্টিক খেয়ে ফেলেছে তাই তো?
…
জানিনা,
…..
ইসসস,
ভাই কতো রাক্ষস হা হা হা,
…..
তুই রাক্ষসের বোন,
…..
হা হা হা,
বলনা বলনা আমার রাক্ষস ভাই টা আর কি কি করছে?
….
অসভ্য তোর ভাই কে গিয়ে জিজ্ঞাস কর,
………
হা হা হা,
– ভালোবাসতে যোগ্যতা লাগেনা, অদ্রি। কীভাবে যেন হয়ে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিজের মধ্যেই দানা বাঁধতে শুরু করে। আর যখন বুঝতে পারা যায় তখন নিজের সাথে যুদ্ধ বেঁধে যায়। সেই যুদ্ধে কোনো সময় মন জিতে যায় আবার কোনো সময় মস্তিষ্ক। অদ্রি, ভালোবাসতে যোগ্যতা লাগেনা। কিন্তু টিকিয়ে রাখতে যোগ্যতা লাগে।
– আমার সেই যোগ্যতা টুকুন নেই।
– আছে, একটু বেশিই আছে। এজন্যই তো ফিরে আসা।
– আমার বিশ্রী অতীত টাকে আপনি মেনে নিতে পারবেন?
– আরে আপনি বলছেন টা কী? আমার কাছে আপনার অতীত বলতে কিছুই নাই। আপনার বর্তমান, ভবিষ্যৎ টাই সব।
নিদ্রের বামহাতের কনুই থেকে কিছুটা নিচে চামড়া উঠে সাদা মাংস বের হয়ে আছে।শিউরে উঠে বললো
– আপনার হাতে কী হয়েছে? সাদা মাংস কীভাবে বের হয়ে আছে।
নিদ্র হাতের ওই অংশটা দেখে হেসে বললো
– তেমন কিছুই না।
– চামড়া উঠে গিয়ে সাদা অংশ বের হয়ে আছে, এটা তেমন কিছুই না?
অদ্রির রাগ মিশ্রিত কথায় নিদ্র হেসে বললো
– আচ্ছা অনেক কিছু ঠিকাছে?
– না ঠিক নেই।
– ঠিক আছে। ছুলে যাওয়ার পর আমি জার্মানি লতার রস লাগিয়ে ছিলাম।
– কীভাবে কাটলো?
– রাস্তায় বসে বসে বৃষ্টিতে ভিজছিলাম। একটা কথা বলি অদ্রি?
– হ্যাঁ বলুন।
– একটু জড়িয়ে ধরি?
– তবে সাবধান আমার হাতে যেন ব্যথা না লাগে আর আপনার হাতও সাবধান।
– শুধু সাবধান আর সাবধান….
শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নিদ্র বলতে শুরু করলো
– পাশ দিয়ে বাচ্চাদের দল যাচ্ছে। ওদের প্ল্যান ছিলো কদম ফুল পাড়ার। আমিও ওদের পিছুপিছু গেলাম। গিয়ে দেখি ৫-৬ টা মাঝারি ধরনের কদম গাছ। আর কদম গাছ ভরা ফুল। আপনি অদ্রি অবাক হতেন দেখলে। এমনিতেই তো কদম ফুল অসম্ভব সুন্দর। সবুজ পাতার মাঝে হলুদ সাদা ফুল। তার উপর ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। প্রত্যেকটা ফুলে পানির ফোটা লেগে আছে। আমি লোভ সামলাতে না পেরে বাচ্চাদের একজনকে বললাম মানে লিডার যে তাকে বললাম, ” আমাকে ফুল পেড়ে দিতে পারবে?
পুচকে লিডারটা কি বললো জানেন?
অদ্রি বললো
– না তো। কী বললো?
– বললো, ” দেওয়ন যায় তবে শর্ত আছে। আমি বললাম – কী শর্ত?
– পার পিচ ১০০ করে দিবেন।
কিন্তু তখন আমার কাছে কোনো টাকা নেই। কীভাবে দিবো? অনেক বার বললাম আগে ফুল দাও, আমি বাসা থেকে টাকা এনে দিবো। রাজিই হলো না।
অদ্রি বললো
– তারপর আপনি নিজেই ফুলগুলো পাড়ার জন্য গাছে উঠলেন। তাই তো?
– তাছাড়া উপায় কী?
– ফুলগুলো তো পরেও আনা যেত তাই না?
– যেত কিন্তু আমার মনে হয়েছিলো বৃষ্টি থাকা অবস্থায় ভেজা কদম ফুল দিয়ে আপনার দিনটা একটু অন্যরকম করতে চেয়েছিলাম।
– অন্যরকম করতে গিয়ে নিজের তো বারোটা বাজিয়ে এসেছেন। সেই খেয়াল আছে?
– আমি পুরুষ মানুষ ; এতো সহজে ঘায়েল হইনা।
– গাছের ডাল ভেঙে পড়ে গেলে কী হতো?
– আমি মোটেও অতোটা ভারী না। ফুলগুলো নিয়ে নামার পর খেয়াল করলাম যাচ্ছেতাই ভাবে ছুলে গেছে।
– জার্মানি লতা কীভাবে চিনলেন?
– গতবার রশীদ চাচা চিনিয়ে দিয়েছিলো।
– একটা কথা বলি রাগ করবেন না তো?
– হ্যাঁ, বলুন।
– লিলি আপনার অনুপস্থিতিতে আপনার রুমে গিয়েছিল। একটু ব্যাগপত্র চেক করে দেখবেন সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা।
– লিলি?
– হ্যাঁ, লিলি।
– ও এমন কেনো করবে?
– আজকাল কেমন যেন হয়ে গেছে। ভালো ব্যবহার তো দূরে থাক, ঝাড়ি ছাড়া কথা বলেনা।
– হতেও পারে। আমার সাথে এখনো তেমন কথা হয়নি।
– নিদ্র এখন ছাড়ুন। কেউ চলে আসলে বিপদে পাড়বো।
– চলুন বিয়ে করে ফেলি। তাহলে কেউ দেখে ফেললেও সমস্যায় পড়তে হবেনা।
– বিয়ে এতো সোজা বিষয় না।
– সোজাই তো। কবুল বললাম শেষ।
– পরিবারের সম্মতির প্রয়োজন হয়।
– আমার দাদী আর বাবা। দাদীকে বোঝানো সহজ আর বাবা একজন আধপাগলা মানুষ। সমস্যার কিছু দেখছিনা।
– নিদ্র আমি বিধবা মহিলা। সমাজ জানে আমার পরোকীয়ার কারণে আমার স্বামী সুইসাইড করেছে। আমি একজন সমাজ থেকে বিতাড়িত নারী। এখানে একটু ঠাই পাওয়ার জন্য রীতিমতো পালিয়ে আসা। আমি আপনাকে বোঝাতে পারবোনা নিদ্র।
– আমিই আগেই বলেছি আপনার অতীত নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই। আমার দাদী বা বাবা কেউই এতো কিছু জানবে না। যতটুকু জানানোর আমি জানাবো। আপনি চুপ থাকবেন। আমি বলেছিই তো আপনার বর্তমান আর ভবিষ্যৎ নিয়েই আমার মাথাব্যথা।
– আপনি এর আগে কোনো সম্পর্কে জড়িয়েছেন?
নিদ্র চেয়ারে বসে পড়ে বললো
– নাহ, প্রথম।
– তাহলে তো আপনি ভুল করছেন। প্রথম প্রেম সবসময় ভুল মানুষের সাথেই হয়।
– এ কদিন তো একবারও বললেন না। আজকে প্রথম প্রেম শুনেই বললেন। আর এই লজিকে তো তাহলে আপনিও পড়েন। আপনিও ভুল মানুষের সাথেই প্রেম করছেন।
– না, আপনার সাথে কথায় আমি পারবোনা।
– তো বিয়েটা কবে করছি আমরা?
– রশীদ চাচার মেয়ের বিয়েটা হোক তারপর?
– বেশি দেরি হয়ে যায়না?
– আপনি কি জানেন আপনি এখনো বেশ ছোটো?
– বেশি ছোটো কই? ২২ বছর বয়স আমার।
– আপনি আমার থেকে ২ বছরের ছোটো নিদ্র। বাচ্চা মানুষ আমার কাছে।
– সে যাইহোক, অল্পবয়সে বিয়ে করার মজাই আলাদা।
– চা খাবেন নাকি কফি?
– চা তো আমি খাই না।
– তাহলে কফি খাবেন?
– কফিও তো আমি খাইনা।
– গতবার তো দেখলাম দুটোই খান।
– অদ্রি চা, কফি কেউই খায় না ; পান করে।
– চা পান করবো। তবে আমি আর আপনি।
রিতা বুঝতে পারছেন না, অদ্রি কেনো ছেলেটাকে কোনো কিছুতে নিষেধ করছেনা। আর ছেলেটার প্রসঙ্গ তুললেই কেমন যেন নরম হয়ে যায় অদ্রি। অদ্রির মাঝে কিছু একটা পরিবর্তন আসছে।
আসমা জামানকে তার ভালো লাগছেনা। এসেই সবকিছুতে নজরদারি করছে। এটা করো, ওটা করো যেন নিজেরই বাড়ি। আবার নতুন বুদ্ধি বের করেছে, মাটির রান্নাঘর বানানোর। আর অদ্রিও বোকার মতো রাজি হয়ে গেলো। মাটির চুলায় এই বৃষ্টির দিনে রান্না করা খুব কষ্টের। আর যদি লাকড়ি ভেজা থাকে তাহলে তো কথাই নেই।
অদ্রিকে দেখে আসমা জামান প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। এই বাসার
মালিক একজন অল্পবয়সী মেয়ে হবে ভাবতেও পারেননি। মেয়েটার মধ্যে না আছে অহংকার না আছে নিজেকে বড় করে উপস্থাপন করার মানসিকতা নেই।
আসমা জামান মেয়েটার নাম শুনে কেমন চেনা চেনা লাগছিলো। কোথাও নামটা শুনেছে সে কিন্তু মনে পড়ছেনা। মেয়েটা নিজ হাতেই তাকে চা এনে খাওয়ালো। ডান হাতে ব্যথা থাকা সত্ত্বেও বাম হাত দিয়েই কাজটা করলো। আরেকটা ব্যাপার সে লক্ষ্য করেছে মেয়েটার মুচকি হাসিটা খুব সুন্দর। এমন সুন্দর হাসি অনেকদিন পর সে দেখলো।
নাজমুল সাহেব ছেলের প্রেমে পড়ার আভাস পেয়ে বেশ হেসেছিলেন। ছেলেটাও তার মতো প্রেমে পড়েছে। কেমন উদাসী উদাসী চেহারা হয়ে গেছে। আর নিচেই নামছেনা খুব একটা। সে খেয়াল করেছে। একটু চোখে চোখে রাখতে হবে। ছেলের প্রেমে পড়ার পর কী কী কাণ্ড ঘটিয়ে বসে সব জানতে হবে। অবশ্য এখন যা যা কাণ্ড ঘটাবে সবই মজার ব্যাপার হবে। মেয়েটাকে তার খারাপ লাগেনি। খুব সোজাসাপ্টা মেয়ে আর খুবই সাধারণ।
নিদ্রের চোখে এই সাধারণ বিষয়টাই অসাধারণ হয়ে ধরা পড়েছে বলেই প্রেমে পড়েছে। নিদ্র কি জানে তার লুকিয়ে রাখা প্রেম ওর বাবা জেনে ফেলেছে?
ওর হুশ আছে নাকি? প্রেমে পাগল প্রায় অবস্থা।
হাতে কেটে গেছে সেদিকে খেয়াল নেই। দু হাত ভরে কদম নিয়ে হাজির। আস্ত পাগল।
!
তারপর আমি নিজেই ছাদে গিয়ে হা হা হা করে হাসতে থাকি,
….
তখন আমার মেয়ে আমার গালে চুমু খেয়ে বলে,
…..
মাম্মাম তোমার কি লজ্জা করে?
!
কেন?
!
পাপাইের সামনে যে তোমার বিয়ের কথা বলেছি?
!
কোই না তো মা?
!
ওওওও,
!
পাপাই তোমার কি লজ্জা করে?
!
কেন বাবাই?
!
মাম্মামের সামনে তোমার বিয়ের কথা বললাম যে?
!
ধুরররর,
পুরুষ মানুষের আবার এতো লজ্জা করে নাকি হুমমম?
……
তাই তো তুমি আমার মাম্মাম কে কষ্ট দিয়েছ,
…
তুমি পঁচা পাপা,
….
ভালো হয়েছে মাম্মাম তোমাকে ছেড়ে চলে গেছে,
….
তুমি মাম্মাম কে কষ্ট দিলে,
আবারো চলে যাবে,
…..
ছেলের কথা শুনে ইমানের চোখে জল চলে আসে,
..
এবং পুরনো স্মৃতি গুলো ওর চোখের সামনে জলজল করে ওঠে,
…..
আর ও ছেলের সামনে বসে কাঁদতে না পেরে,
….
হনহন করতে করতে বাগানে মধ্যে চলে যায়,
!
পরে মিশকা ওদের খওয়াতে এসে বাচ্চাদের খাইয়ে আদর করে,
গান শোনাতে শোনাতে ঘুম পারিয়ে দেয়,
…..
তারপর ইমানের কথা মাথায় আসতেই দুশ্চিন্তা পরে যায়,
!
তখন বাসার দারওয়ান এসে বলে,
!
ম্যাম স্যর কে দেখেছি,
চাকু নিয়ে বাগানের মধ্যে যেতে,
…..
চাকুর কথা শুনে মিশ ভয় পেয়ে যায়,
..
আর তাড়াতাড়ি লাইট নিয়ে বাগানে ছুটে যায়,
….
সেখানে গিয়ে দেখে,
ইমান মাথায় হাত দিয়ে পুলের পাশে সোজা হয়ে শুয়ে আছে,
আর ওই চাকু টা কিছু দূরে পরে আছে,
…
তাই মিশ ভয় পেয়ে ছুটে গিয়ে ইমান কে খুব শক্ত করে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে,
……
ইমান ও নিজেকে সামলাতে না পেরে মিশের হা-পা গুটিয়ে গাছের সাথে বেধে চাকু টা দেখিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে,
…….
আমি বলছি আমি তোমাকে কোনো কষ্ট দিবো না,
…..
তবু ও আমাকে ছেড়ে চলে যেতে চাও?
…….
এবার চলে গলে আমি এটা দিয়ে সুইসাইড করবো,
….
আমি আপনাকে ছেড়ে কোথা ও যাবো না,
আপনার সাথেই থাকবো,
!
সত্যি?
!
হ্যা সত্যি,
!
তাহলে আমাকে ছুঁয়ে প্রমিছ করো ,
!
আপনি তো আমার হাত টা বেধে দিয়েছেন,
তো আমি প্রমিছ টা করবো কি করে?
..
আমি এখনি বাধন খুলে দিচ্ছি,
…..
তারপর উনি সাথে সাথে আমার হাত-পায়ের বাধন খুলে দেয়,
…..
আর আমি ওনা কে জড়িয়ে প্রমিছ করি যে,
“আপনাকে ছেড়ে আমি কোথাও যাবো না”
!
মানে থাকে যেন?
!
থাকবে,
…..
তারপর উনি আবারো বাচ্চাদের মতো আমাকে আঁকড়ে ধরে কান্না করতে থাকেন,
….
পরে আমি ওনা কে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাসায় নিয়ে আসি,
..
এবং আদর করে খাইয়ে ঘুম পারিয়ে দেই,
…..
ভোররাতে ঘুমঘুম চোখে চেয়ে দেখি,
…..
যে উনি আমার আমার গালে গলায় আলতো করে চুমু খাচ্ছেন,
…..
ও একা একা বিড়বিড় করে আমার হাত দিয়ে নিজের গালে গলায় ও বুকে ছুয়ে দিয়ে বলছেন,
..
কমকম আদর করো কেন?
বেশি বেশি আদর করো,
নাহলে আমি মরে যাবো,
কি গো চুপ করে আছো কেন?
কথা বলো?
!
ওনার সাইকোলজিক্যাল প্রবলেন এতো টা গুরুতর?
সেটা আমি আগে বুঝতে পারিনি,
!
আগে ভাবতাম উনি একাএকা বিড়বিড় করেন এখন দেখি,
….
আমার হাতের সাথে কথা বলেন,
যে কোনো মূল্যে,
আমার ওনা কে সুস্থ করে তুলতেই হবে,
!
তাই আমি তখনি বিছানা ছেড়ে শাওয়ার নিয়ে নামাজে যাই,
…..
নামাজ শেষে কিচেনে গিয়ে ব্রেকফাস্ট বানাই,
!
তারপর তাদের ঘুম থেকে তুলে ব্রাশ করিয়ে ব্রেকফাস্ট করিয়ে,
বই,খাতা,পেনসিল বক্স ও টিফিন রেডি করে ওদের তৈরি করে ওনার সাথে স্কুলে পাঠাই,
…..
ওদের স্কুলে দিয়ে এসে,
উনি ল্যাপটপে কিছু অফিসিয়াল কাজ করে,
!
আর আমি কিচেনে গিয়ে ইলিশ পোলাও ও ইলিশ ভাপা রান্নাকরি,
!
রান্না শেষে শাওয়ার নিতে বাথরুমে চলে যাই,
!
শাওয়ার নিয়ে বাহিরে এসে দেখি,
……
উনি কালো কালারের কমপ্লিট সুট পরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছে,
আমাকে দেখেই মেরুন কালারের সাড়ি দিয়ে বলে,
…….
সাড়ি টা পরে আমার সাথে চলো না,
একটু বাহিরে যেতাম?
!
আচ্ছা আমি এখনি সাড়ি টা পরে আসছি,
……
হয় তো উনি এক্সপেক্ট করেনি যে আমি ওনার সাথে যাবো,
তবে রেডি হয়ে আসার কথা বলতেই,
….
“তার মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে”
……
তারপর আমি ওনার সাথে গিয়ে গাড়িতে বসি,
তখন উনি আমাকে বলেন.
!
সবকিছু ঠিক আছে কি যেন মিসিং?
!
কি?
!
ওটার দেখা পেলে কিনে নিবো,
!
কি?
!
পরে বলছি,
!
আচ্ছা আমরা কোথায় যাচ্ছি?
!
রুহানের বাসায় যাচ্ছি,
!
ও আচ্ছা,
!
বাসা থেকে বেড়িয়ে কিছুদূর যেতেই ট্রাফিকজ্যামে ফেসে যাই আমরা,
…..
তখন উনি কি যেন দেখে?
……
কেনার জন্যে ব্যতিব্যস্ত হয়ে কোনো মতে গাড়ির দরজা খুলে রাস্তায় চলে যায়,
….
কি জানি কি কিনতে গেল?
!
তার কিছুক্ষণ পরে আমার পেছন থেকে বেলিফুলের গন্ধ আসতে শুরু করে,
…..
তাই খোপায় হাত দিতে যেতেই,
উনি আমার হাত টা আলতো করে চেপে ধরে বলেন,
…
একটু শান্ত হয়ে বসো না গো মালা টা পরিয়ে দেই,
!
আচ্ছা ঠিক আছে,
!
মালা টা পরিয়ে দিতেই আমার গলায় আলতো করে চুমু একে দেয়,
!
তখনি খেয়াল করে দেখি,
……
ট্রাফিকজ্যামে আটকে পরা এক আঙ্কল আন্টি আমার স্বামীর কান্ড দেখে মুচকি মুচকি হাসছে,
!
ইসসস,
কি লজ্জা?
…….
ওনার কি আক্কেলগুড়ুম হয়েছে,
…
যে রাস্তা ঘাটে বসে আকাম কুকাম করছে?
…..
এ্য এ্য এ্যা,
চলবে
!
তুমি তোমরা আমার কাছে আছো তাতেই আমি খুশি,
…..
আর কিছু চাইনা আমার,
!
তারপর উনি আমাকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পরে,
!
দুপুরে ঘুমঘুম চোখে চেয়ে দেখি যে,
…..
উনি আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছেন,
….
এবং আমার বাচ্চা দুটো ওনা কে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে,
……
আর আমি ওনা দের চাপে অমলেট হয়ে আছি,
হা হা হা,
……..
ভালোবাসার অভাবে মানুষ এতো টা বদলে যেতে পারে?
কখনো ভাবিনী,
……
তবে উনি তো শক্ত দেহ পাথর মনের অধিকারি ছিলেন,
……
এই শক্ত দেহ পাথর মন গলে জল হলো কি করে?
আল্লাহ তায়ালা জানেন,
!
তবে সে যাই হোক না কেন?
এখন আমার ওনা কে সুস্থ করে তুলতে হবে,
….
ওনা কে ওনার সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে,
…..
জানি উনি অন্যায় করেছেন,
তবু ও উনি অনুতপ্ত,
…..
তাই আমি আর ওনা কে কষ্টে রাখতে চাই না,
……
জানি আমি ওনা কে ঘৃণা করি,
…..
আর এই ঘৃণা কেই ওনার সুস্থতার ঔষধ করে তুলতে হবে আমায়,
!
কি ভাবছ মাম্মাম?
!
ভাবছি আমার পাখি দুটো স্কুল থেকে এসে আমাকে ডেকে তোলেনি কেন?
…….
কারন আমারদের মাম্মাম ঘুমিয়ে ছিল,
আর মাম্মাম কে ঘুমিয়ে পরির মতো লাগে তাই,
…..
আচ্ছা পাখিরা এখন একটু সরো আমাকে উঠতে হবে তো?
…
আমরা তো শরে যাবো পাপাই কে সরাবে কে?
!
পাপাই উঠে গেছে মা,
….
পাপাই তুমি কতো ভারী মাম্মামের কষ্ট হয় নি তুমি ওপরে উঠে ঘুমিয়ে ছিলে?
!
না মা আমরা দুজনে ঘুমিয়ে ছিলাম তো তাই কষ্ট হয় নি,
!
ও আচ্ছা,
মাম্মাম তুমি এতো চিকন কেন?
!
আল্লাহ আমাকে বানিয়েছে বাবা,
……
তুমি জানো আমাদের বন্ধুরা কি বলে?
!
কি বলে বাবা?
…….
তোমার মাম্মাম কতো সুন্দর,
তোমাদের কতো আদর করে করে,
আর আমাদের আম্মু শুধু মারে,
………..
হা হা হা,
!
অন্যের কষ্টে হাসতে নেই বাবা,
আল্লাহ রাগ হয় বুঝলে?
!
হ্যা মাম্মাম মনে থাকবে,
!
সোনা বাবা আমার,
!
মাম্মাম আমাদের গোসল করিয়ে দিবে না?
…..
হ্যা মা দিবো তো,
যাও তোমরা বাথরুমে যাও,
আমি এখনি তোমার জামাকাপড় টাওয়াল নিয়ে আসছি কেমন?
!
জ্বি মাম্মাম,
…..
ওরা বাথরুমে যেতেই আমি ওদের জামাকাপড় নিয়ে বাথরুমে যাই,
…..
সেখানে গিয়ে দেখি, তিনটে মিলে বাথরুমে বসে সাবানজল ছোড়াছুড়ি করছে,
….
আমাকে দেখেই তিনজন শান্ত হয়ে বাথটাবে গিয়ে বসে,
……
তারপর আমি ছেলে কে, ওনা কে গোসল করিয়ে বাহিরে পাঠিয়ে দেই,
….
পরে মেয়ে কে নিয়ে গোসল করে কোলে নিয়ে বেড় হই,
!
মাম্মাম কি আপির কি হয়েছে?
…..
বাবা আপির খুব ঘুম পেয়েছিল,
তাই কোলে নিতেই ঘুমিয়ে গেছে,
……
ও আমাদের সাথে লাঞ্চ করবে না?
!
না এখন ঘুমিয়েছে ঘুমোক,
…..
ডাকাডাকি করলে কেঁদে ফেলবে,
….
তাই ও উঠলে আমি ওকে খাইয়ে দিবো,
!
ও তাহলে ঠিক আছে,
…..
শুনুন?
!
হ্যা বলো?
!
ট্রলি তে “জনসন বেবি লোশন” আছে ওটা দিন তো প্লিজ,
!
হ্যা দিচ্ছি,
…..
এই নাও,
!
মাম্মাম আমরা কি বেবি?
যে তুমি এখন ও আমাক ও আপি কে বেবি লোশন,শ্যাম্পু, ক্রিম ও সবান দিয়ে গোসল করিয়ে দাও,
…..
হ্যা তোমরা তো বেবি মাম্মাম পাপাইয়ের বেবি,
……..
কিন্তু আমরা তো বড় হয়ে গেছি,
মাম্মামের দুদু খাই না পাপাই,
…….
তোমাকে কে বলেছে?
মায়ের দুধ না খেলে বেবিরা বড় হয়ে যায়?
. ….
বেবিরা বড় হয়ে গেলে ও মাম্মাম পাপাইের কাছে বেবি থাকে বুঝলে?
!
জ্বি পাপাই মনে থাকবে,
….
মাম্মাম পেটে হাতি দৌড়ায় খাইয়ে দিবে না?
!
হ্যা সোনা,
কিন্তু পেটের হাতি টা কত বড় বাবা ?
!
ইয়া বড়,
!
হা হা হা,
!
তারপর আমি ওদের খাইয়ে দেই,
……
খাইয়ে দাইয়ে ছেলে কে ঘুম পারিয়ে দেই,
….
ছেলে ঘুমোতেই পেছনে ফিরে দেখি,
……
উনি অফিসের জন্যে রেডি হচ্ছেন,
………
আশ্চর্য উনি রেডি হয়ে এখনি যাচ্ছেন কোই?
…..
কনফারেন্স তো বেলা চারটায়,
তাহলে উনি তিনটের সময়ে রেডি হয়ে যাচ্ছেন কোই ?
……
এসব ভাবতে ভাবতে খেয়াল করে দেখি,
….
উনি আমার গলায় নাক ডুবিয়ে ,
খুব শক্ত করে আমাকে জড়িয়ে ধরে বিছানায় শুয়ে আছেন ,
…..
প্রায় একঘণ্টা আমাকে ওভাবে জড়িয়ে শুয়ে থাকেন
…..
আর বেলা চারটে নাগাত কনফারেন্সে চলে যায়,
!
রাতে যখন পাখি দুটো কে A,B,C,D পরাচ্ছিলাম,
……
তখন আমার পাখি দুটো বলে,
…..
m এ mango না হয়ে মাম্মাম আর p এ pen না হয়ে পাপাই হলে বেশি ভালো হতো বলো মাম্মাম?
……..
হ্যা বাবাই,
……
পাপাই আই এম রাইট?
…..
অ্যাবসোলুটলি রাইট বাবা,
!
তখন মেয়েটা আমাদের বিয়ের ছবি নিয়ে ওর পাপা কে জিজ্ঞেস করে,
……
পাপাই?
…….
হ্যা মা?
…..
তোমাদের বিয়ের ছবি তে আমি ও ভাইয়া নেই কেন?
!
তখন উনি আমাকে দেখে,
মুচকি হাসি দিয়ে বলে,
…….
মা তখন তোমাদের হসপিটাল থেকে কিনে আনিনি তাই,
!
কেন আন নাই?
…….
তুমি পঁচা পাপাই„
….
আপু ঠিক বলেছে তুমি এক নম্বরের পঁচা পাপাই,
…….
আগে কিনে আনলে
আমরা তোমার ও মাম্মামের বিয়ে তে,
………আমি ও ভাইয়া “দিল ওয়ালে দুলহানিয়া লে যাইঙ্গে” গানে নাচানাচি করতে পারতাম,
!
মেয়েছেলের কথা শুনে,
………
আমরা দুজনে দু দিক ফিরে হাসতে শুরু করি,
!
মেয়ে টা এতে দুষ্টু হয়েছে কি করে?
……
আমার মিশ ও কি এমন দুষ্টু ছিলো?
হা হা হা
……
ইসসসস,
এই দুটো এতো দুষ্ট হয়েছে যা বলার মতো না,
……..
এই শেনো?
….
হ্যা বলুন?
….
তুমি কি এতো দুষ্টু ছিলে?
যে ওরা এতো
দুষ্টু হয়েছে?
!
নাহহহহ আমি এতো দুষ্টু ছিলাম না বুঝলেন?
!
হুমমমমম,
!
তারপর আমি নিজেই ছাদে গিয়ে,
হা হা হা করে হাসতে থাকি
চলবে..
!
পাগল যেন কোথাকার?
!
হা হা হা,
!
তারপর আমি চুপটি করে ঘুমিয়ে পরি
……
মাঝরাতে হঠাৎ করে আমার ঘুম ভেঙে যায় কারো কান্নাকাটির শব্দে,
…….
তাই আমি শোয়া থেকে উঠে বসার চেষ্টা করি,
…..
তখন ভালো করে খেয়াল করে দেখি,
……..
উনি আমার কোলের মধ্যে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কাঁদছেন,
…….
আর কি যেন বিড়বিড় করছেন?
….
হঠাৎ করে খুব জোড়ে বলে ওঠেন,
.. ….
তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারবেনা,
…..
আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারবোনা,
…
মিশ তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যেতে পারো না কিছুতেই না,
!
মাম্মাম পাপাই এমন করছে কেন?
!
জানিনা মা,
!
মাম্মাম আমরা ভয় পেলে তুমি যেমন আমাদের তোমার বুকে জড়িয়ে আদর করে করে দাও…
……..
পাপাই কেও সেভাবে আদর করে দাও না মাম্মাম,
তাহলে পাপাই ভালো হয়ে যাবে,
মাম্মাম,
….
তোমার এমন মনে হয় মা?
!
হ্যা মাম্মাম তুমি পাপাই কে আদর করে দাও না প্লিজ,
…..
হ্যা দিচ্ছি,
. …..
মেয়ের কথা শুনে ওনাকে ভালো করে শুইয়ে ওনার মাথায় হাত বুলিয়ে দেই,
….
আর উনি কিছুক্ষণের মধ্যে শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পরে,
….
তারপর ছেলের গায়ে কাঁথা টেনে দিয়ে,
মেয়ে কে আদর করে ঘুম পারিয়ে নিজে ও ঘুমিয়ে পরি,
.. …
পরেরদিন ভোরে উঠে দেখি,
….
আমার পাখি দুটো আমার কোলের মধ্যে ঘুমিয়ে আছে,
…..
আর উনি ফজরের সালাতে চোখেরজল ফেলছেন,
……
তাই আমি আস্তে করে বাবুদের শুইয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে নামাজ পরে ছাদে চলে যাই,
.. ….
কিছুক্ষণ পরে হঠাৎ কেউ আমাকে পেছন থেকে শক্ত করে জড়িয়ে,
……
সাথে সাথে পেছনে ফিরে দেখি উনি,
..
উনি আমার গালে চুমু দেওয়ার চেষ্টা করতেই,
আমি শরে যাই,
…..
তখন উনি আমার হাত আলতো করে চেপে ধরে বলে,
….
আমি জানি,
ক্ষমার পরে ও তোমার সব টা জুড়ে আমার জন্যে ঘৃণার বসবাস,
….
আমি তোমাকে জোড় করবোনা আমাকে ভালোবাসার জন্যে,
..
তুমি যেদিন আমাকে মন থেকে মেনে নিতে পারবে,
সেদিন আমি আমার সমস্ত সখ আল্লাদ তোমাকে এসে বলবো,
……..
কারন আমি বুঝে গেছি,
…..
জোড় করে শরীর পাওয়া গেলে ও মন পওয়া যায়না,
….
তাই তোমার মন যেদিন পাবো,সেদিন আমি তোমাকে পেয়ে যাবো,
…..
তারপর উনি চুপটি করে আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকে,
….
পরে চোখেরজল মুছতে মুছতে নিচে চলে যায়,
…….
উনি যেতেই ম্যারি এসে বলে,
!
ম্যাম সাইকোথেরাপিস্ট বলেছেন,
…
স্যরের ওপরে কোনো প্রসার ক্রিয়েট করা যাবেনা,
…..
স্যরের সাইকোলজিক্যাল প্রবলেমের অনেক ক্ষতিকর দিক আছে,
………
যার জন্যে ভবিষ্যতে স্যরের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যেতে পারে,
……
ম্যাম স্যরের এখন আপনার ভালোবাসার খুবি প্রয়োজন,
……
ডক্টর বলেছে ছয় বছরে স্যরর কারো ভালোবাসা গভীর ভাবে অনুভব করেনি,
…..
তাই এখন স্যরের এই অবস্থা,
আপনার একটু ভালোবাসা স্যর কে সুস্থ করতে যথেষ্ট,
…..
তাই আপনি ওনা কে আর নিজের থেকে দূরে সরিয়ে রাখবেননা প্লিজ,
….
জানি স্যরর আপনার সাথে অন্যায় করেছে,
….
কিন্তু পরে মানুষ টা নিজেই ভালোবাসার অভাবে ভেঙে পরেছেন,
…
জানি আপনি যে গুলো ফেস করেছেন,
সে গুলো ফেস করা সবার পক্ষে সম্ভব নয়,
তবু ও ম্যাম আপনাকে অনুরোধ করছি প্লিজ আপনি…….
……
!
ম্যারি ম্যারি ম্যারি একটা কথা বলো তো?
তোমাদের স্যর ব্রেকফাস্টে কি খেতে পছন্দ করেন?
…
ম্যাম আপনি যেটা স্যর কে করে খাওয়াতেন ওই টা,
!
ওমা তাই?
!
জ্বি ম্যাম,
!
ম্যারি তুমি তোমার সাইকোথেরাপিস্ট প্রফেশনে কত বছর ধরে আছো?
!
আপনি বুঝলেন কি করে?
!
ফেমাস সাইকোথেরাপিস্ট কে কেনা চেনে বলো?
!
গত ছয় বছর ধরে আপনার হ্যাজবেন্ডের চিকিৎসা করতে করতে আমি তার প্রেমে পরে গেছি,
….
কিন্তু সে যে আপনার প্রেমে পরেছে,
সেখানেই পরে আছে,
….
ওঠার কোনো নাম নিচ্ছে না,
…………
কারন তার বিশ্বাস ছিল যে আপনি তার কাছে ফিরে আসবেন,
….
এখন যখন এসেই পরেছেন তাকে ভালোবেসে সুস্থ করার দায়িত্ব আপনার,
…..
তাহলে আপনি কোথায় যাবেন?
!
কোথায় আবার অন্যকারো প্রেমে পরতে,
…..
আসলে আপনার স্বামী কে ইম্প্রেস করার চেষ্টা করে ছিলাম,
…
তখন ভেবে ছিলাম রাজা দখল করে রানী হয়ে থাকবো,
….
পরে বুঝলাম রাজা তার রানীর দখলেই আছে,
শুধু তার রানী টা তার কাছে নেই,
…..
আপনি জানেন আপনার স্বামী কোনো মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকায় না,
….
কারন তার তাকাতাকি সবি আপনাকে ঘিরে সীমাবদ্ধ,
…..
কারন সে আপনাকে ভালোবাসে,
…
আর তাই তো কাল রাতে উনি কোনো পাগলামো করেননি,
….
না হলে প্রতি রাতে উনি পাগলামো করেন আর আমাকে তাকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পারিয়ে রাখতে হয়,
….
যদি ও সবসময় সম্ভব হয় না,
কারন উনি রুমের দরজা লাগিয়ে ঘুমোতে যান,
!
তাই যেদিন দরজা খোলা থাকে ওদিন ইনজেকশন লাগিয়ে দেই,
!
জানেন আপনার স্বামীর প্রেমে পরে,
আমি আপনার মতো হয়ে নিজেকে প্রেজেন্ট করে ছিলাম,
…..
আপনাদের বেড রুমে বসে ছিলাম
তখন আপনার স্বামী আমাকে কি বলেছে?
!
বলেছিল,
“কয়লা ধুলে ময়লা যায় না”
….
“নিজের হিরে টাকে কাঁচ মনে করে ফেলে দিয়ে ছিলাম,
….
আর এখন সেই হিরে আমি আমার সবকিছু দিয়ে ও খুজে পাচ্ছিনা,
…. .
ভালোবাসা অতি পবিত্র একটা জিনিস এটা কে শারীরিক চাহিদার সাথে গুলিয়ে ফলবেন না,
….
ভালোবাসা ও চাহিদার মাঝে আকাশপাতালের তফাৎ,
…..
আফসোস আপনি ও আমার মতো ভুল করে শারীরিক চাহিদা কে ভালোবাসা মনে করে,
……
আমার বৌয়ের সাড়ি চুড়ি পরে বসে আছেন,
!
আফসোস মানুষ দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝেনা,
…..
আপনি ও তো বিবাহিত নিজের স্বামীর অগোচরে কেন ব্যভিচারিণী হতে চাইছেন?
!
আপনার স্বামীর এই প্রশ্ন শুনে বুঝে গেছিলাম সে বদলে গেছে,
আর সে শুধু আপনাকে ভালোবাসে,
!
ওদিনের পরে আমি ওনাকে আমার মুখ দেখাই নি,
শুধু ওনার সাইকোথেরাপি ও সমস্যা নিয়ে ফোনে কথা হয়,
!
আর আজ উনি আমাকে ইনভাইট করেছেন,
তোমার সাথে পরিচয় করাতে,
!
জানেন আমি আমার জীবনে নিজের ভুল বুঝতে পারা মানুষ খুবি কম দেখেছি হুমম,
!
ওই দিনের পরে আমি ও আমার স্বামীর কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়েছি,
সেও আমাকে আপন করে নিয়েছে,
!
তাই বলেছি ওনা কে আর পাগলামো করার সুযোগ দিও না,
……
পাগল হয়ে গেলে না তোমাকে চেপে ধরে ভালোবাসা আদায় করবে,
…..
যা করে করুক গিয়ে আমি কি ওনা কে ভয় পাই নাকি?
!
কি যে বলনা তুমি,
তাহলে কি করবে তুমি?
!
কি করবো?
ওনা কে এগরোল করে খাওয়াবো,
!
আচ্ছা মিশকা আমি এখন আসি,
!
কেন একটু থেকে যাও?
!
আরেকজন পেশেন্ট আছে তাকে দেখতে যাবো,
!
ম্যারি যেতেই আমি ওনার জন্যে এগরোল বানিয়ে রুমে নিয়ে যাই,
!
সেখানে গিয়ে দেখি,
…
উনি বেডে শুয়ে শুয়ে চোখেরজল জল মুছছেন,
!
আমি ওনার মাথার কাছে গিয়ে বসতেই উনি আমার দিকে তাকায়,
!
কি হলো?
!
খিদে লাগেনি তাই না?
আমি তো আপনার জন্যে এগরোল করে এনেছি,
!
তাই?
!
হ্যা উঠে বসুন আমি এখনি খাইয়ে দিচ্ছি,
!
তখন উনি মিষ্টি হাসি দিয়ে উঠে বসে আর আমি ওনাকে ও বাবুদের সাথে খাইয়ে দেই,
!
বাবুরা স্কুলে যেতেই আমি এসে শুয়ে পরি,
…..
কিছুক্ষণ পরে সে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুম মনে করে গালে চুমু খেয়ে বলে,
!
তুমি তোমরা আমার কাছে আছো আমি তাতেই খুশি,
……
আর কিছু চাইনা
!
ওনার বা হাত থেকে রক্ত গড়িয়ে পরছে,
!
আপনি কাঁদবেন না প্লিজ,
…..
দেখি আপনার হাত টা দেখি?
……
কে শোনে কার কথা?
……..উনি শুধু আমাকে জড়িয়ে বাচ্চাদের মতো কাঁদছেন,
……
আর একটা কথাই বলছেন,
………..
তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে না তো?
বলো না বলো আমাকে ছেড়ে চলে যাবেনা তো?
….
কি হয়েছে ওনার?
উনি এভাবে পাগল পাগল করছেন কেন?
কিছুই বুঝতে পারছিনা আমি?
….
ম্যাম স্যরের সাইকোলজিক্যাল প্রবলেম আছে,
….
স্যর এখন কাঁদছেন পরে হাইপার হয়ে নিজেকে আঘাত করে বসবেন,
!
মাম্মাম তুমি পাপাই কে ক্ষমা দাও না সোনামণি,
…..
দেখো পাপাই কেমন করছে?
!
তুতুতুতুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও না সোনা,
.
আমি ভালো হয়ে গেছি,
.
আমাকে গত পাঁচ বছরে কেউ ব্যবহার করেনি,
,
আমি এই পাঁপাপাচ বছর ধরে নিজেকে তোমার যোগ্যা করে তুলেছি,
.
তুমি আমার কাছে ফিরে এসে আমাকে আগের মতো ভালোবাসো না সোনা,
…..
বলো না বাসবে আমাকে আগের মতো ভালো?
….
আমার এই অন্ধকার জীবনে আলো হয়ে আসবে তুমি?
বলো না সোনা বলো না,
!
মাম্মাম বলো না তুমি বলো না,
… ….. …..
কেন তুমি চুপ করে আছে?
!
মাম্মাম পাখি বলে দাও না সোনা প্লিজ,
!
আমি সারাজীবন তোমার পায়ের কাছে পরে থাকবো,
….
তোমার মতো হয়ে থাকবো,
তুমি যা চাইবে তাই হবে,
!
আমি যা চাইবো তাই হবে?
তাহলে শুনুন,
………
আমি তো সেদিনি আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছিলাম,
যেদিন আমি আপনাকে ছেড়ে চলে এসেছিলাম,
….
কেন আপনাকে ছেড়ে চলে এসেছিলাম জানেন?
….
কারন আমার মনে হয়ে ছিল,
আমি আপনার সাথে আর এক মুহূর্ত ও কাটাতে পারবোনা তাই,
…
আপনি জানেন আমার ওখানে দমবন্ধ হয়ে আসছিল,
…
তাই আমি আমার বাচ্চাসহ পালিয়ে এখানে এসেছি,
!
এখন তোমার দমবন্ধ হয়ে আসবেনা,
পালিয়ে ও বাঁচতে হবে না,
…
আমরা সুস্থ ও সুন্দর ভাবে খোলা হাওয়ায় বসবাস করবো,
..
তুমি বলো তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে নাতো?
!
নাহহহ যাবো না?
!
সত্যি?
!
হ্যা,
!
আমাকে ছুঁইয়ে বলো?
!
সবার সামনে আপনি আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছেন,
….
আমার হাত টা নিজের গালে চেপে ধরে আছেন,
……
তবুও বাচ্চাদের মতো ছুঁইয়ে দিতে বলছেন?
!
হুমম দাও,
….
তারপর আমি ওনার মাথায় হাত বুলতে থাকি,
…
তখন আমার পাখি গুলো আমাদের জড়িয়ে ধরে বলে,
….
মাম্মাম হ্যাপি হ্যাপি ফ্যামিলি তাই না?
!
হ্যা বাবা তাই,
….
চলো পাপাই কে ধরে রুমে নিয়ে চলো,
.।.।.
চলো,
……..
কেউ আছো ফাস্টএইড বক্স থাকলে নিয়ে এসো প্লিজ,
!
হ্যা ম্যাম এখনি নিয়ে আসছি,
!
দেখি একটু শান্ত হয়ে বসুন আপনার কোর্ট ও শার্ট টা খুলে দেই,
…..
শার্ট কোর্ট টা খুলে দেওয়ার,
পরে ফাস্টএইড বক্স থেকে স্যাভলন নিয়ে ক্লিন করে দেখি,
…….
উনি ওনার হাত কেটে বড়বড় করে মিশকা লিখেছে,
!
তখনি আমার পাখি দুটো ওদের মুখ চেপে বলে,
!
মাম্মাম পাপাই কি তোমার বয় ফ্রেন্ড?
!
কেন?
!
তাহলে পাপাই তার হাত কেটে তোমার নাম “মিশকা” লিখেছে কেন?
!
আসলে তোমার মাম্মাম কে দেখতে ইচ্ছে করছিল তাই,
!
ওম্মা তাই বলে তোমার হাত কেটে আমার মাম্মাম কে দেখেছ?
!
হুমমম,
!
ব্যথা করে নাই?
!
না,
!
একটু ও না,
!
না মা,
!
তুমি জানো আমাদের পাশের বাসার ফিফা আপু ওর বয় ফ্রেন্ডের জন্যে হাত কেটে ছিল,
তাই তো ভাবছি তুমি ও মাম্মার বয় ফ্রেন্ড,
হা হা হা,
!
হা হা হা
!
ওরে হাসি,
হাসি আর ধরে না,
……….
আর এই যে আপনি সুস্থ হয়ে বসুন হাতে ঔষধ লাগিয়ে দিচ্ছি,
!
মাম্মাম তুমি স্কুল টিচারের মতো পাপাই কে বকছ কেন?
!
ওনা কে বকছি তোমাদের ধরে পেটাবো কেমন?
….
না বাবা থাক আমরা যাই,
…..
তারপর ওরা চলে যায়,
….
তখন উনি আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে,
…
তুমি আমাকে আবারো ছেড়ে চলে যাবে নাতো?
…
না যাবো না,
!
হঠাৎ করে আবারো আমাকে জড়িয়ে কাঁদতে শুরু করেন,
!
কি হলো কাঁদছেন কেন?
বললাম তো যাবো না,
!
জানো সেদিন তোমাকে কতক্ষণ ফলো করেছিলাম,
….
আমার মেয়েছেলে আমার চোখের সামনে একবছর ধরে ছিল,
..
আর আমি এমন অপদার্থ বাবা যে নিজের সন্তান কে চোখের সামনে দেখে আদর করে ও চিনতে পারিনি,
!
জানো ওদের গা থেকে আমি তোমার গন্ধ পেতাম,
…..
তবু ও ইগনোর করে চলে যেতাম,
!
হয়েছে বুঝেছি,
এখন চলেন প্লিজ,
!
কোথায়,
!
বারে তুমি জানেনা মাম্মাম তোমার জন্যে কেক বানিয়েছে এনেছে পাপাই,
!
তুমি?
!
হ্যা চলুন সবাই আপনার জন্যে ওয়েট করছে,
!
তারপর আমরা নিচে চলে যাই,
আর উনি আমার বানানো কেক কেটে বার্থডে সেলিব্রেট করে,
!
পরে আমার পাখি দুটো গানবাজনা শুনে নাচানাচি করে,
!
রাত দশটা নাগাত আমার পাখি দুটো চিকেন ফ্রাই খাওয়ার বায়না করে,
…..
তাই ওদের চিকেন ফ্রাই করে খাওয়াতে শুরু করি,
!
তখন কেউ আমার আচল ধরে টান দেয়,
…..
পেছনে ফিরে দেখি,
….
উনি ও ওদের মতো আমার হাসে খেতে হা করে দাঁড়িয়ে আছে,
!
তাই আমি ওনার মুখে লেগপিস টা পুরে দেই,
!
আর সাথে সাথে উনা আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করে,
!
পুরুষ মানুষ এতো কাদেঁ তা হয় তো চোখের সামনে না দেখলে বুঝতাম ,
!
আপনি আবারো কাঁদছেন কেন?
…..
দেখুন আমার বাচ্চা দুটো চুপ মেরো গেছে,
!
তাহলে বলো আমার না আমাদের বাচ্চা দুটো চুপ হয়ে গেছে,
!
ওই তো ওই আর কি?
!
মাম্মাম ঘুমু আসছে?
!
আসছে তো বাবা,
কিন্তু আমি তোমাদের কোনো ড্রেস নিয়ে আসিনি,
!
তুমি নিয়ে আসনি তো কি হয়েছে?
!
আমি তো কিনে রেখেছি ওদের ড্রেস তোমার সাড়ি,
!
তারপর উনি আলমারি থেকে ওদের ড্রেস ও আমাকে এটা নীল সাড়ি বের করে দেয়,
!
তখন আমি ওদের হাতপা মুছে নতুন ড্রেস পরিয়ে দেই,
!
পরে আমি গিয়ে শাওয়ার নিয়ে ওনার দেওয়া সাড়ি টা পরে আসি,
!
এসে দেখি ওরা ওনার পেটের ওপরে বসে দাড়ি নিয়ে দুষ্টুমি করছে,
……
আমাকে দেখেই হাসতে হাসতে ছেলে টা বলে,
!
মাম্মাম পাপাই এর দাড়ি গুলো K.G.F মুভির হিরোর মতো তাই না?
!
মনে তো হয়,
!
পাপা তুমি কি মুভির হিরো?
!
না আমি তোমার মাম্মামের…..
!
কি?
!
ওই তো তোমাদের হিরো,
!
শোনো মাম্মাম পাপাই অনেক দিন তোমার কাছে ঘুমোয় না,
…..
তাই আমি ভাইয়া ও পাপা আমাদের মধ্যে তুমি ঘুমবে কেমন?
!
সব গুলো শয়তান একটা ও ভালো না,
!
কি হলো মাম্মা?
!
কিছুনা,
শুয়ে পরো আমি ঘুম পারিয়ে দিচ্ছি,
!
তারপর আমি ওদের মাঝে গিয়ে শুয়ে পরি,
আর তখনি উনি আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে,
….
আর ছেলেমেয়ে দুটো কোলের মধ্যে ঢুকে পরে,
!
আজ অনেক দিন পরে উনি আমার এতো টা কাছে এলো,
….
ওনার গরম নিঃশ্বাস এসে আমার গায়ে পরছে,
এবং আমার শরীর টাকে ভয়ে কাঁপিয়ে তুলছে,
!
তাই আমি বাবু দের ঠিক করে শুইয়ে দিয়ে,
………
ওনার দিকে ফিরে ওনার ব্যথা হাত টা আমার কোমরের ওপর সরিয়ে দেই,
!
তুমি ঘুমো নি?
!
নাহহহ আপনার ব্যথা হাত টা ঠিক রাখুন না হলে আবারো ব্যথা লেগে রক্ত বের হবে,
!
আমি বলি কি আমি তোমাদের মাঝে ঘুমবো বাবুরা কাঁদলে উঠে যাবো,
….
মানে আমি একটু তোমার মুখোমুখি হয়ে শুতে চাই,
…..
আমি কিছু করবো না সত্যি বলছি,
!
আচ্ছা ঠিক আছে,
…..
তারপর উনি আমাদের মাঝে এসে শুয়ে পরে,
!
আর আমি ওনার জায়গায় এসে শুই,
!
ওনার মুখোমুখি হয়ে শুতেই উনি আমার পাখি দুটোর মতো কোলের মধ্যে ঢুকে পরে,
!
ব্যাটা এতো বদ আমার বাচ্চা দুটো কে এক মাইল দূরে সরিয়ে রেখে আমার কেলের মধ্যে এসে ঢুকে পরল,
!
পাগল যেন কোথাকার?
…
হা হা হা,
!
!
!
চলবে
!
থ্যাংকইউ,
!
ওয়েলকাম,
!
বাই দ্যা ওয়ে,
আপনার স্যরের পছন্দ অনেক ইউনিক ও আনকমন,
!
হ্যা ম্যাম স্যরের স্টাইল সবার থেকে আলাদা,
…..
আচ্ছা ম্যাম আপনি ঘুরে ঘুরে দেখুন আমি একটু কিচেন থেকে ঘুরে আসছি,
!
ওকে,
……
তারপর আমি একা একা পুরো বাড়ি ঘুরে দেখতে থাকি,
…..
সত্যি ওদের আঙ্কলের পছন্দ আছে বলতে হয়,
…..
খুবি ইউনিক আর অ্যান্টিক একজন মানুষ,
……
বাড়ি টাকে পুরো স্বর্গোদ্যান বানিয়ে রেখেছে,
….
অথচ এই স্বর্গে থাকার কেউ নেই ম্যাম,
!
তোমাদের স্যর একা একা থাকেন?
!
না ম্যাম,
বাড়ি দেখা শোনার জন্যে গোটা দশেক কাজের লোক নিয়ে থাকেন,
!
ওনার পরিবারে আর কেউ নেই?
!
না ম্যাম স্যরের মা-বাবা তাকে তেজ্যপুত্র করেছেন ছয় বছর আগে,
!
ও আচ্ছা,
!
মজার ব্যাপার কি জানেন ম্যাম?
!
কি?
!
এর আগে এই বাড়ি তে আপনি ছাড়া কোনো গেস্ট আসেনি,
শুধু স্যরের ম্যানেজার ও পুলিশ সুপার বন্ধু ছাড়া,
!
কেন?
!
আসলে স্যর নিজের জগতে থাকতে বেশি পছন্দ করেন তাই,
!
ও আচ্ছা,
!
ম্যাম আপনি ছাদে যাবেন?
!
হ্যা অবশ্যই বাহির থেকে দেখলাম,
ছাদ টা পুরো ফুলের বাগান,
!
আসলে আমাদের ম্যামের ফুল অনেক পছন্দ,
….
তাই তার পছন্দের ফুল দিয়ে বাগান টা সাজিয়েছে স্যর,
…..
এই আশায় যে একদিন ম্যাম ওনার কাছে ফিরে আসবে এবং তারা কাধে কাধ রেখে হাতে হাত ধরে ওখানে বসে গল্প করবে,
!
বাহহহহ,
তোমাদের স্যর তো খুবি রোমান্টিক,
!
ইয়েস ম্যাম,
ম্যামের গল্প করতেই স্যরের চেহারা বদলে যায়,
…..
স্যর খুব ভালোবাসে ম্যাম কে,
কিন্তু,
আজ পর্যন্ত সেই সৌভাগ্যবতীর সৌভাগ্যশালী মুখটা দেখা হয় নি আমাদের,
……
দোয়া রইল তোমাদের ইচ্ছে যেন তাড়াতাড়ি পূরণ হয়,
তোমাদের স্যর ও যেন তার ওয়াইফ কে ফিরে পায়,
!
আলহামদুলিল্লাহ্ ম্যাম,
…
আপনার দোয়া যেন কবুল হয় ম্যাম,
….
ম্যাম এই সিরি দিয়ে ছাদে যায়,
!
আমি চলে যেতে পারবো তুমি একটু বাবুদের দেখে রেখো প্লিজ,
!
ম্যাম বাবুদের দেখার জন্যে অন্য স্টাফেরা আছে,
…
স্যর বলে গেছেন আপনি আসলে আমি যেন আপনার সাথে সাথে থাকি,
!
ইটস ওকে,
আমি বাচ্চা নই নিজের কেয়ার করতে পারবো তুমি প্লিজ ওদের কাছট যাও,
!
ওকে ম্যাম,
একটা কথা বলি?
!
হ্যা অবশ্যই,
!
আপনার হাসি টা অনেক সুন্দর,
আপনার হাসির প্রেমে যে কেউ পরে যাবে,
…..
!
থ্যাংকইউ
!
ওয়েলকাম ম্যাম,
….
আমাদের স্যর ও ম্যামের হাসির প্রেমে পরেছিলেন,
!
হাউ কিউট,
!
হ্যা ম্যাম,
!
তারপর আমি ছাদে চলে যাই,
……
ছাদে গিয়ে ফুলের সুবাসে মন প্রাণ ভয়ে যায় আমার,
….
আমি এই বাগানের প্রেমে পরে গেছি,
….
মনে হয় যেন আমার ফেভারিট ফুলের মেলা বসেছে এখানে,
……
তখনি হঠাৎ করে গেট খোলার শব্দ হয়,
….
শব্দ শুনে বাগান থেকে বেড়িয়ে রেলিং ধরে তাকিয়ে দেখি,
….
বি.এম.ডব্লিউ থেকে বেড়িয়ে একটা লোক সাদা কমপ্লিট সুট পরিহিত গাল ভর্তি দাড়ি, কালো সানগ্লাস,
ও হাতে একটা ফাইল নিয়ে বাসার দিকে আসছেন,
…..
ইনি বোধ হয় ওদের সেই দাড়িওয়ালা আঙ্কল,
……….
বেটা তো সিরিয়াসলি হনুমান চোহারার এমন হাল করেছে যে,
…….
ওর কপাল ও গালের কিছু অংশ ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না,
….
তবে মনে হয় যেন আমি তাকে চিনি?
!
তখনি হঠাৎ করে উনি স্লিপ করে পরে যায়,
….
আর আমি নিজেকে সামলাতে না পেরে আচল দিয়ে মুখ টা ঢেকে হা হা করে হেসে দেই,
…..
উনি তখন শুয়ে পরা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ওপরে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বাসায় ঢুকে যায়,
!
বাসায় ঢুকেই ইমান বাবুদের বুকে জড়িয়ে আদর করতে থাকে,
…..
আর তখনি মিশকার গায়ের গন্ধ ওকে পাগল করে তেলো,
….
এবং ও বাচ্চাদের বুকে জড়িয়ে আদর করতে থাকে,
!
তুমি কেমন আছে আঙ্কল?
!
ভালো মা,
তোমাদের মাম্মাম আসেনি?
!
মাম্মাম এসেছে ছাদে আছে,
তুমি গিয়ে ডেকে আসো,
!
ওকে আমি যাচ্ছি,
!
ইসস,
আমার ওনার ওপরে এভাবে হাসা উচিত হয় নি,
…..
এখন আমি ওনার সামনে যাবো কি করে?
লজ্জা করছে তো,
!
আমি কি আসতে পারি?
!
হ্যা অবশ্যই,
উনি আমার সামনে এসে দাঁড়াতেই ওনা কে আমার চিরচেনা বলে মনে হয়,
!
হঠাৎ করে খেয়াল করে দেখি,
….
ওনার চোখ থেকে জলের ধারা বইছে,
…….
আমি ওনার কাছে এগিয়ে যেতেই,
…..
উনি দৌড়ে এসে আমাকে শক্ত করে ওনার বুকের সাথে জড়িয়ে,
ওয়ালের সাথে চেপে ধরে পাগলের মতো কাঁদতে শুরু করেন,
…..
প্রথমে বুঝতে না পারলে ও উনি আমার গলায় আলতো করে চুমু খেতেই বুঝে যাই,
……
যে এনি আর কেউ না যার থেকে আমি এতকাল পালিয়ে পালিয়ে বেঁচেছি সেই,
……..
কিন্তু এই পাঁচ বছরে উনি এতো টা বদলে গেল কি করে?
!
কি ছিল?
কি হয়ে গেল?
……
তখন খেয়াল করে দেখি,
…….
ওনার চোখেরজলে সাড়ি ব্লাউজ ভিজে গেছে আমার আমার
……….
আর উনি বাচ্চাদের মতো আমাকে আকড়ে ধরে আমার বুকে মুখ লুকিয়ে কাঁদছেন,
…
আর একটা কথা বলছেন,
…..
তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও না সোনা,
ক্ষমা করে আমার কাছে ফিরে আসো সারাজীবনের জন্যে ফিরে আসো,
!
কি করবো আমি?
না আমি কাঁদতে পারছি না কিছু করতে পারছি,
……
ওনা কে এ অবস্থায় দেখে,
আমি নিজেই দুশ্চিন্তায় পরে গেছি খুব,
!
তখনি পাখি দুটো এসে বলে,
!
পাপাই তুমি মাম্মাম কে সরি বলো,
……..
মাম্মাম তুমি পাপাই কে ক্ষমা করে দাও না সোনা পাখি,
!
তখন খেয়াল করে দেখি,
…..
ওনার বা-হাত থেকে রক্ত গড়িয়ে পরছে
চলবে..
!
মিশকা তোকে এতো চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন?
!
নাথিং,
!
আমাকে লুকিয়ে কোনো লাভ নেই রে,
……
তুই ইমানের কারনে ভয় পেয়ে আছিস?
!
রুহান তুই জানিস আজকে উনি আমাকে ফলো করছিল,
!
তুই ওকে দেখেছিস?
!
নাহহ শুধু অনুভব করেছি,
!
তা তেই এতকিছু?
….
কাছে পেলে কতকিছু হতো তাই না?
…
একদম বাজে কথা বলবি না কেমন?
!
ও আর আগের মতো নেই,
!
মানে?
!
অতীতের ইমান ও এখন কার ইমানেরর মধ্যে আকাশ পাতালের তফাত,
!
তোঁ আমি কি করবো?
…..
সেটা আমার দেখার বিষয় না বুঝলি,
!
তাহলে আমাকে চাহিয়া চাহিয়া দেখ,
!
রিয়া,
!
হ্যা বল,
!
তোর এই উটকো ঝামেলা টাকে নিয়ে যা প্লিজ,
!
কি গো তুমি আসবে?
না আমি এসে নিয়ে যাবো?
!
নিজের দুটো পা আছে নিজের পায়ে হেটে আসছি কেমন?
!
হুমম ওকে আর বিরক্ত করোনা কেমন?
!
সেটা তোমার থেকে আমি ভালো জানি,
!
মাম্মা আমরা স্কুলে যাবো না?
!
না বাবা,
!
কেন?
!
আমি দুদিন ফ্রি আছি,
তাই তোমাদের সাথে সময় কাটাতে চাই,,
!
ও আচ্ছা তাহলে তো অনেক ভালো,
…..
ইয়ে কি মজা?
!
দুষ্টু পাখি দুটো,
দুষ্টুমিতে ভরা মাথা,
!
হা হা হা,
!
দুদিন পর মিশকা ওদের স্কুকে ড্রপ করে বেকারি তে চলে যায়,
!
হঠাৎ করে টিফিন পিরিয়ডে ইমান এসে
ওদের টিফিনে ভাগ বসায়,
…..
তখন দুটো ওর কান টেনে ধরে বলে,
…….
খাবার চুড়া খাবার চুরি করা যাবেনা মাম্মাম তোমার জন্যে ও টিফিন করে পাড়িয়েছে,
!
ওমা তাই?
!
হুমমম,
!
তোমরা তোমাদের মাম্মাম কে কি বলেছ?
যে সে আমার জন্যে ও টিফিন করে পাঠিয়েছে?
!
মাম্মাম কে বলেছি দাড়িয়ালা আঙ্কল লোভা নম্বর ওয়ান শুধু আমাদের টিফিন খেয়ে ফেলে,
!
কি এভাবে আমার প্রেস্টিজ পাংচার করছ তোমার?
!
জ্বি জ্বি জ্বি,
!
দুষ্টু পাখি,
!
আঙ্কল হা করো আমরা তোমাকে খাইয়ে দেই কেমন?
!
হ্যা মা অবশ্যই,
…….
মিহাদ মিশান খাইয়ে দিচ্ছে আর ওর চোখ থেকে জলের ধারা বইছে,
…..
ইসসস,
ওরা এতো কিউট, না জানি আমার ছেলেমেয়ে দুটো কিউট?
!
আঙ্কল তুমি কাঁদছ কেন?
!
জানো মা আল্লাহ তোমাদের দোয়া কবুল করেছেন,
!
তাই?
!
হ্যা দুদিন আগে আমি তোমাদের আন্টি কে গাড়ি তে করে কোথাও একটা যেতে দেখেছি,
.।।…..
তোমরা জানো তোমাদের আন্টি এখানে আছে,
!
কোথায় দেখি না তো?
!
মানে এ শহরে আছে,
!
ও আচ্ছা,
তোমার বাড়িতে আমাদের নিয়ে যাবে আঙ্কল?
!
হ্যা চলো এখনি চলো,
…….
তারপর ইমান ওদের বাসায় নিয়ে যায়,
……
বাসায় গিয়ে ওরা বাসা টাকে ঘুরে ঘুরে দেখত থাকে,
…..
ঘুরতে ঘুরতে ওরা ইমানের বেড রুমে চলে যায়,
……
সাথে সাথে ওদের মাম্মামের ছবি ওয়ালে দেখে চমকে যায়,
……
তখন মিশান মিহাদ কে বলে,
…..
আপি মাম্মামের সাথে উনি কে?
ওই ছোটো বাবু তো আমরা,
….
কিন্তু ওই বড়লোক টা কে?
….
আরে বাবারা তোমরা এখানে?
আমি তো বাড়িময় তোমাদের খুঁজে বেড়াচ্ছি সোনারা
!
ও তাই?
!
জ্বি বাবাই?
!
আঙ্কল এই ছবি গুলো কাদের?
!
মা ছবি গুলো তোমার আন্টি ও আমার,
!
মানে উনি তোমার বৌ?
!
হ্যা বাবা,
!
তোমার বৌ টা অনেক সুন্দর,
!
আমি জানি,
হা হা হা,
!
আঙ্কল ছবিতে তোমাকে কিউট লাগে,
!
কেন?
!
দাড়িগোঁফ নাই তাই,
!
ওরে দুষ্টু,
হা হা হা,
!
আঙ্কল,
!
হ্যা বাবাই,
!
তোমার একটা পিকচার দিবে প্লিজ?
!
কেন?
!
বাসায় নিয়ে যাবো, তাই আরকি,
!
আচ্ছা বাবা এখনি দিচ্ছি,
!
দাড়িগোঁফ ছাড়া দিয়ো কেমন?
!
আচ্ছা মা ঠিক আছে,
হা হা হা,
…..
তারপর ইমান ওদের একটা ছবি দিয়ে দেয় আর ওরা সেটা নিয়ে বাসায় ফিরে যায়,
…….
রাতে মিশকা ঘুমতেই বিচ্ছু দুটো এ্যালবাম বেড় করে,
ইমানের ছবির সাথে ওই ছবি মিলিয়ে দেখতে শুরু করে,
!
কিছুক্ষণ মিলিয়ে ঝুলিয়ে দেখার পর দুজনে বলে ওঠে,
…..
মাম্মাম আর পাপাই,
!
মাম্মাম পাপাই একসাথে কেন থাকে না?
রুহান আঙ্কল রিয়া আন্টির মতো?
!
আমি জানিনা আপু?
!
আঙ্কলের কাছে জিজ্ঞেস করবো?
!
হ্যা চলে পাপাই কে ফোন করি,
!
রাত বারো টায় হঠাৎ করে ইমানের ফোন বেজে ওঠে,
…..
হন্তদন্ত হয়ে ফোন রিসিভ করে বলে,
….
কি হয়েছে মা তোমরা ঠিক আছো তো?
!
হ্যা আছি,
শোনো পাপাই মাম্মাম তোমার সাথে কেন থাকেনা?
!
মেয়ের কথা শুনে আবেগপ্রবণ হয়ে বলে,
…..
আমি তো খারাপ কাজ করে ছিলাম তাই আমার সাথে থাকে না,
……
থাকবে কেন?
তুমি তো পচাঁ,
বলে ফোন কেটে দেয় মিহাদ,
!
ফোন কেটে দেওয়ার সাথে সাথে ইমান ডুকরে ডুকরে কাঁদতে শুরু করে,
!
স্যারর আপনি কাঁদছেন কেন?
!
সকালে যে পিচ্চি দুটো কে নিয়ে এসেছিলাম,
….
ওরা ফোন করে আমাকে পাপাই বলে ডেকেছে,
মনে হলো আমার সন্তানেরা আমাকে পাপাই বলে ডেকেছে,
!
স্যরর আপনি কষ্ট পাইয়েন না ছোটো মানুষ হয় তে বুঝতে পারেনি,
….
আপনি যখন ম্যামের খোজ পেয়েছেন,
আশাকরি বাচ্চাদের ও খুজে পাবেন,
!
পরেরদিন ভোরের আলো মিশকার মুখে এসে পরতেই ওর ঘুম ভেঙে যায়,
…..
আর ঘুমঘুম চোখে চেয়ে দেখে যে,
….
বিচ্ছু দুটো ওর গালে গলায় ঠোঁটে কপালে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিচ্ছে,
!
তখন ও ওদের আদর করে জড়িয়ে ধরে বলে,
…
কি হলো পাখিরা?
!
মাম্মাম আজকে আঙ্কলেরে বার্থডে মনে আছে?
!
হ্যা বাবা কেক ও রেডি তবে তোমার আঙ্কলের নাম কি?
সেটা তে লেখা হয় নি?
!
তার নাম হচ্ছে ইমান,
!
ইমানন?
!
হ্যা গাল ভরা দাড়িয়ালা ইমান,
!
ও হ্যা এনার তো আবার গাল ভর্তি দাড়ি,
…
আর উনি কত স্মার্ট দাড়ির “দ” ও রাখবেনা নিজের গালে হা হা হা,
!
কি হলে মাম্মা?
!
কিছুনা বাবা,
যেতে হবে কখন?
!
রাতে?
আঙ্কল বলেছে রাতে যাবো কালকে আসবো,
!
ওকে পাখিরা,
!
সন্ধায় বার্থডে কেকে নাম লিখে,
শাওয়ার নিয়ে বেরতেই দেখি,
…..
আমার মেয়ে আমার জন্যে নীল সাড়ি চুড়ি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,
!
নীল সাড়ি চুড়ি পরিনা বছর ছয়েক ধরে তবে আজ পরবো আমার ছেলেমেয়ের মুখের দিকে চেয়ে,
!
তাই ওদের পছন্দ করা সাড়ি চুড়ি ওর্নামেন্টস পরে হালকা সাজুগুজু করে ওদের নিয়ে বেড়িয়ে পরি,
!
তারপর ওদের সেই আঙ্কলের বাসায় গিয়ে পৌঁছই,
!
তখন স্টাফরা এসে বলে,
!
ম্যাম স্যর মিটিং এ গেছেন একটু পরেই এসে পরবেন,
…..
আপনি ততক্ষণে বাড়ি টা ঘুরে ঘুরে দেখুুন,
আমরা বাবুদের দেখে দেখে রাখছি,
!
থ্যাংকইউ,
!
ওয়েলকাম,
!
তোমার আঙ্কলেরর দাড়ি কত বড়?
!
ইয়া বড়,
!
হা হা হা,
!
মাম্মাম তুমি হেসো না,
তুমি আমার ওই দাড়িয়ালা আঙ্কল কে দেখলে ভয় পাবে,
!
কেন মাম্মাম?
!
আঙ্কল বনজঙ্গলেরর মধ্যে থাকতে থাকতে বনমানুষ হয়ে গেছে,
হা হা হা,
!
ও তাই?
তুমি ভয় পাও না,আমি ভয় পাবো কেন?
!
আসলে আঙ্কল অনেক ফর্সা তার ওপরে এতো বড়বড় দাড়ি তাই ,
হু হু হু,
!
যাহহহহ, দুষ্টু একজন দাড়ি রেখেছে তাকে নিয়ে এতো গবেষণার কি আছে আল্লাহ মালুম?
!
আঙ্কলেরে দাড়ি খুবি সফট,
!
ফাজিল বেশি দুষ্টু করলে মাইর দিবো মাইর,
!
মাম্মা তুমি শুধু মুখেই বলো,
কিন্তু কখনো মাইর দাও না হুম?
!
দিবো কেন?
আমার টুনটুনি দুটো এতো সুন্দর,
…….
এখন আমার কোলে আসো বিকেলে ঘুমু না দিলে তো আবার রাতে পড়ালেখা করতে ইচ্ছে করে না তাই না?
!
হুমমম মাম্মাম,
……
তারপর ছেলের মতো মেয়ে কেও আদর করে ঘুম পারিয়ে দেই,
!
জানিনা আর কতদিন তোমাদের ছবি দেখে কাটিয়ে দিবো?
……..
আর সহ্যশক্তি নেই আমার তুমি জানো?
…….
মাঝেমাঝে মন চায় আমি সুইসাইড করে ফেলি,
…….
কিন্তু চেয়ে ও পারিনা,
……
কারন সুইসাইড করা তো মহাপাপ,
…..
সেই পাপা করার পরে যদি তোমরা আমার কাছে ফিরে আসো তখন?
……
তখন তো এখানে তোমাদের নিয়ে থাকা হবে না,
তোমাদের ভালোবাসা পাওয়াও হবে না,
……
মনের মধ্যে সুক্ষ্ম একটা আশা নিয়ে বেঁচে আছি,,
…. ..
আর সেটা হলো,
একদিন না একদিন তুমি অবশ্যই আমার কাছে ফিরে আসবে,
….
আর সেই দিন টা দেখার জন্যে অবশ্যই আমাকে বেঁচে থাকতে হবে হুম,
…..
আচ্ছা সোনা তোমার স্বাস্থ্য কি আগের মতো আছে?
……
না রসগোল্লা মতো রসে টুসটুস হয়ে গেছো?
…..
কতদিন এই দুচোখ ভরে তোমাকে দেখি না,
খুব দেখতে ইচ্ছে করছে তোমায়,
…….
পাপাই, মাম্মাম এখনো ঘুমিয়ে আছো?
!
রাত আট টা বাজে স্টাডি করতে হবে না সোনারা?
!
মাম্মা আজকে করবোনা স্টাডিজ,
!
কেন সোনারা?
!
আজকে হোম ওয়ার্ক দেয়নি তাই,
!
ফাঁকিবাজ,
!
না মাম্মাম সত্যি হুমমমমমম হুমমম,
!
আচ্ছা সোনা,
!
মাম্মাম কোলে,
!
আচ্ছা মা আসো,
!
মাম্মাম দুদু খাবো,
!
আচ্ছা বাবা আমি এখনি বানিয়ে দিচ্ছি চকলেট মিল্ক ওকে?
!
ইয়াম্মি ইয়াম্মি,
……
তারপর মেয়ে কে কোলে নিয়ে কিচেনে গিয়ে,
ওদের জন্যে চকলেট মিল্ক বানিয়ে দেই,
…..
চকলেট মিল্ক মুখে দিতেই দুটো মিলে চ্যাংড়ামি করে বলে,
!
উফফফ,
ইয়াম্মি মাম্মাম আরেকবার বানিয়ে দিবে প্লিজ?
!
ওদের বাহানা দেখে মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি,
…….
মুখ টা বাংলার পাঁচ হয়ে গেছে,
…..
ঠিক যেমন উনি আমার কাছে হেসে খেলে বাহানা করার পর নিজের মুখ টা লুকিয়ে ফেলতেন,
……
তখন ছেলে আমার আচল টেনে ধরে বলে,
…।…
কি হলো মাম্মাম দিবে না?
!
হ্যা বাবাই এখনি বানিয়ে দিচ্ছি,
!
আমার পাখি দুটো দুধ খেয়েই ঘুমিয়ে পরে,
!
পরেরদিন ভোরে পাখি দুটো কে চুমু খেয়ে আদর করে চুমু খেয়ে,
…….
তাজা তাজা শাকসবজি কিনতে বাজারে চলে যাই,
…. …….
শাকসবজি কিনে উল্টো দিকে ফিরতেই,
আমি হঠাৎ স্লিপ করে পরে যেতে শুরু করি,
…..
আর তখনি কেউ আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে,
!
আর ইউ ওকে?
…….
একে তো সেই চিরো চেনা স্পর্শ তার ওপরে পাগল করা গন্ধ,
!
আল্লাহ উনি এখানে কি করছেন?
!
আপনি ঠিক আছেন?
!
হুমমম,
!
কোথাও লাগেনি তো আপনার?
!
হুমমমমম,
!
চলুন আমি আপনাকে ডক্টরের কাছে নিয়ে যাই,
!
না সাহেব তার আর দরকার হবে না,
আমি ম্যাম কে নিয়ে যাচ্ছি,
!
ওকে,
!
মিশকা গিয়ে ওর গাড়ি তে বসতেই,
ইমান হঠাৎ করে ওকে লুকিং গ্লাসে দেখে ফেলে,
…….
তাই সাথে সাথে চিৎকার করে বলে,
মিশ মিশ স্টপ দ্যা কার,
!
রহিম ভাই তুমি তাড়াতাড়ি গাড়ি চালাও,
!
কি হয়েছে স্যরর,
!
ড্রাইভার তুমি তাড়াতাড়ি ড্রাইভ করো,
ওই সাদা গাড়ি টা তোমার ম্যাডামের,
…..
সাথে সাথে ইমানের গাড়ি মিশকার গাড়ি কে ফলো করতে শুরু করে,
!
রহিম ভাইয়া প্লিজ তুমি তাড়াতাড়ি গাড়ি চালাও,
!
রুহুল তুই কি তাড়াতাড়ি ড্রাইভ পারো না?
…..
দেখ তোর ম্যাম যদি আবারো হাড়িয়ে যায়,
তাহলে আমি শেষ হয়ে যাবো,
….
হাড়িয়ে গেলে সমস্যা কি?
স্যরর?
…..
ওহহহহ এটা তো আমি ভাবিনি,
……….
এটা তো নিশ্চিত যে তোমাদের ম্যাম এই শহরে আছে?
……
তাই তো বলছি স্যর,
….
তবু ও ফলো করো,
!
জ্বি স্যরর,
!
তুমি আমাকে ঠিকি চিনেছ সোনা,
………
আমি ধ্যারধ্যারে গোবিন্দ নাম্বার ওয়ান,
……
তাই তো তোমার গায়ের গন্ধে পাগল হয়ে ও মনের ভুল ভেবে ইগনোর করে যাচ্ছিলাম,
…..
ইসসসস,
আমি কতো বোকা,
আমি কি তোমাকে কখনওই আমার করো পাবো না?
!
ধুররর,
কি হয়েছে রুহুল?
!
একটুর জন্যে ম্যামের গাড়ি টা ফসকে গেল স্যররর,
!
কি?
কি করে?
……
স্যরর ভালো করে তাকিয়ে দেখেন,
সামনে কত গুলো সাদা গাড়ি,
…
এর মধ্যে ম্যামের গাড়ি কোনটা?
সেটাই তো আইডেন্টিফাই করা মুশকিল,
….
ওকে তাহলে বাসায় ফিরে চলো,
!
জ্বি স্যর,
!
মাম্মাম তুমি কাঁদছ কেন?
!
কোই কিছুনা তো এমনি বাবাই,
!
তুমি কাঁদবে না তাহলে আমাদের কষ্ট হবে মাম্মাম,
!
আচ্ছা আমি কাঁদবো না,
……
তবে উনি এখানে কেন এসেছেন?
..
উনি কি আমার বাচ্চা দুটো কে কেরে নিতে এসেছেন?
কি চাইছেন টাকি উনি?
!
আমি শুধু তোমাকে চাই,
.।. । .
আর তুমি যখন এখানে আছো, আমি তোমাকে আর পালিয়ে পালিয়ে বাঁচতে দিবো না,
….
খুব ছোটো একটা শহর,
আমি তোমাকে তাড়াতাড়ি খুজে বেড় করবো,
. .
তুমি আর আমার থেকে দূরেদূরে থাকতে পারবেনা কিছু তেই না,
!
স্যর আপনি ডেকেছেন?
!
হ্যা,
শোনো তোমার চেনাজানা যত লোক আছে সবাই কে আমার সাথে দেখা করতে বলবে,
!
জ্বি স্যরর,
!
আর হ্যা আমার পুলিশ সুপার বন্ধু আসছে,
তাই ভালোমন্দ রান্নাকরার ব্যবস্থা করো,
!
ওকে স্যর,
!
মিশকা তোকে এতো চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন?
!
নাথিং
!
আচ্ছা মা ঠিক আছে,
!
মাম্মাম একটা কথা বলবো?
!
হ্যা মা বলো,
!
মাম্মা তুমি জানো ওই এতো বড়বড় গাল ভর্তি দাড়ি,
…..
পুরো হনুমানের মতো দেখায়,
হা হা হা,
!
যাহহহ,
দুষ্টু দাড়ি রাখলে কেউ হনুমান হয় নাকি?
দাড়ি রাখা ভালো মা,
!
তাই বুঝি নানুভাই ইয়া বড়বড় দাড়ি রাখে?
!
হ্যা মা,
!
তুমি জানো আঙ্কল টা অনেক কিউট,
শুধু গাল ভর্তি দাড়ি,
!
ও তাই?
!
হুমমম,
আঙ্কল আমাদের খুব আদর করে চুমু দেয়,
……..
তাই আমি আর ভাইয়া ওনাকে দাড়ি কেটে আসতে বলেছি,
হা হা হা হা,
!
ওরে দুষ্টু তোমরা স্কুলে এইসব করতে যাও?
!
মাম্মাম লেখাপড়া করতে যাই,
!
দুষ্টু,
!
হা হা হা,
!
আচ্ছা মা এখন আমার কোলে আসো ঘুম পারিয়ে দেই,
!
মাম্মাম আমার শুয়ে শুয়ে ঘুম আসেনা,
!
আচ্ছা মা আগে কোলে তো আসো,
…….
তারপর মেয়ে কে কোলে নিয়ে বারান্দায় পাইচারি করতে থাকি,
……
হঠাৎ করে বাহিরে খেয়াল করে দেখি,
…..
একটা লোক অনেক ফর্সা সাদা পাঞ্জাবি, পাজামা, টুপ ও মুখ ভর্তি দাড়ি নিয়ে সামনের ফাস্টফুড শপ টায় বসে,
……
ইঁদুরের মতো কুটকুট চিকেন ফ্রাই খাচ্ছেন,
…..
আর যা খাচ্ছেন তার অর্ধেক টাই দাড়িতে জড়িয়ে যাচ্ছে,
….
কেন যেন তাকে দেখে কষ্ট হচ্ছে আমার?
…..
মনে হয় যেন কত কালের চেনা?
সত্যি কি আমি ওনা কে চিনি?
!
ইসসস,
ওদের স্কুলের মালিক টা কতো ভালো?
……
বৌ বাচ্চাদের ফিরে পাওয়ার জন্যে নামাজ রোজা করছে,
ইসলামী শরীয়ত মেনে জীবন যাপন করছে,
পাঁচবার হজ পালন করেছে,
…….
আর আমার স্বামী?
নির্ঘাত অন্য মেয়ে নিয়ে মেতে আছে,
আর তাদের নিয়ে ফষ্টিনষ্টি করছে,
……
হয় তো আমিই তার তার কথা ভেবে ভেবে চোখেজল ফেলছি,
আর সে অন্যকে নিয়ে মেতে আছে,
……
আমি জানিনা আমি কেন অতি সহজে কাও কে আমার জীবনে কাও কে প্রবেশ করাতে পারিনি,
……
তবে আপনি কি করে পারলেন আমার জায়গাটা অন্য কাও কে দিয়ে দিতে?
সেটা আমি আজও খুজে পাইনি,
!
….
আমি তোমাকে পাঁচ বছর ধরে হন্য হয়ে খুজে বেড়াচ্ছি,
…..
আমি জানিনা তুমি কোথায়?
তবে আমি যে কোনো মূল্যে তোমাকে খুজে পেতে যাই,
তোমাকে পেলে আমি আমার সমস্ত কিছু ফিরে যাবো,
…….
আমি জানি তুমি আমার কাছেই আছো?
কিন্তু কোথায় আছো সেটাই তো জানিনা?
…..
আমাদের টুনটুনি পাখি দুটে বোধ হয় বড় হয়ে গেছে তাই না?
…..
তুমি কি ওদের বাবা বলা শিখিয়েছ?
….
না এখনো আমার ওপরে ঘৃণা করে বসে আছো?
….
খুব ইচ্ছে হয় তোমাদের দুচোখ ভরে দেখতে,
তোমাকে সেই আগের আগের মতো ভালোবাসতে,
…..
কিন্তু তুমি যে কোথায় সেটাই তো জানিনা আমি,
!
মাম্মাম তুমি আপু কে নিয়ে এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন?
!
এমনি পাপাই তোমার আপু কে ঘুম পরাই,
!
আমাকে পরাবে না ঘুম?
!
হ্যা বাবা বিছানায় চলো,
!
তারপর আমি আমার ছেলেমেয়ে কে আদর করে ঘুম পারিয়ে দেই,
……
পরেরদিন সকালে ওদের খাইয়ে দাইয়ে রেডি করে স্কুলে দিয়ে আসি,
!
ক্লাস শেষে ওরা বেরতেই ইমান এসে বলে,
!
কেমন আছো আব্বু আম্মু তোমরা?
!
ভালো আছি আঙ্কল,
তুমি কেমন আছো?
!
ভালো নেই মা,
!
তুমি এখনো তোমার বৌ কে খুজে পাওনি?
!
না পাপাই,
!
আমরা বলছি দেখো তুমি ওদের তাড়াতাড়ি খুজে পাবে,
!
তাই যেন হয় তোমরা দোয়া করো আব্বু আম্মু,
!
হ্যা তাতো সবসময় করি,
তা আবার বলা লাগে নাকি?
!
ওরে পাকা বুড়ি,
পাকতে পাকতে এতো টা পেকেছে,
যে পাকা আমের মতো টুসটুস করছে,
!
হা হা হা,
!
তুমি পঁচা,
!
কেন?
!
দাড়ি কাটো নি কেন?
!
দাড়ি কাটলে পাপ হয়,
!
জানি মাম্মাম ও বলছে,
তবুও তোমাকে হনুমানের মতো লাগে,
হা হা হা,
!
কি পাজি আমাকে হনুমান বলা?
!
হনুমান কে তো হনুমান বলতে হয়,
!
ফাজিলের ফাজিল হচ্ছে তোমাদের দাড়া ও তোমরা,
……
তারপর ইমান ওদের পেছনে ছুটতে শুরু করে,
….
ছুটতে ছুটতে একপর্যায় ইমান ওদের কোলে তুলে আদর করতে শুরু করে,
!
হঠাৎ করে ইমান ওদের শরীর থেকে সেই চিরো চেনা গন্ধ পেতে শুরু করে,
…….
তাই ও ওদের আদর করে চুমু খেয়ে বলে,
….
তোমরা কোন ব্রান্ডের পারফিউম ইউজ করো সোনা,
!
মাম্মাম ব্রান্ডের পারফিউম,
হা হা হা,
!
এটা আবার কেমন পারফিউম?
!
আসলে স্কুলে আসার আগে মাম্মাম আমাদের অনেক আদর করে দেয়,
আর মাম্মামের গা থেকে অনেক সুন্দর ঘ্রাণ আসে,
তাই আমাদের গা দিয়ে মাম্মামের ঘ্রাণ আসছে,
!
বাচ্চাদের কথা শুনে ইমানের মিশকার কথা মনে পরে যায়,
…….
কারণ ওদের বিয়ের পরে ইমানের ব্যামো ছিলে অফিসে যাওয়ার একঘণ্টা আগে রেডি হয়ে মিশকাকে জড়িয়ে ওর শরীরের গন্ধ নেওয়া,
……
বিয়ের দশমাস ধরে এটাই ছিল ইমানের বদ অভ্যাস,
যার কারণে মিশকা ওকে মণ কে মণ বকা দিতো,
…….
পুরনো সেসব কথা মনে করতেই ইমানের চোখেজল চলে আসে,
!
কি হয়েছে আঙ্কল তুমি কাঁদছ কেন?
!
কোই কিছুনা তো এমনি বাবা,
….
কেন যে আমি ওদের কাছে ছুটে ছুটে যাই তা আমি নিজে ও জানিনা?
……
কেন যে মনে হয় ওরা আমার বহু কালের চেনা,
আত্নার সাথে জড়িয়ে আছে ওরা,
. …. .
আঙ্কল?
!
হ্যা আম্মু আব্বু বলো,
!
আমাদের সাথে টিফিন খাবে?
!
হ্যা খাবো মানে অবশ্যই খাবো,
……
তারপর তিনজনে মিলে টিফিন খেতে বসে,
………
ছেলেমেয়ের টিফিন বক্স থেকে এগরোল নিয়ে মুখে নিয়েই ইমানের চোখেজল চলে আসে,
….
কারন এই এগরোলের টেস্ট একদম মিশকার তৈরি এগরোলের মতো,
……
আর ও খাবারের লোভ সামলাতে না পেরে বাচ্চাদের টিফিন খেয়ে ফেলে,
….
তখন মিহাদ মিশান ওদের মুখ টা বাংলার পাঁচের মতো করে বলে,
……..
লোভা তুমি আমাদের টিফিন টা খেয়ে ফেললে?
এখন আমরা খাবো কি?
!
বাবা আমি তোমাদের এখানের সবচেয়ে ভালো ফাস্ট ফুডের শপে খাবার খাওয়াতে নিয়ে যাবো চলো,
!
না আমরা যাবো না,
!
কেন?
!
আমরা বাহিরের খাবার খেতে পারিনা আঙ্কেল,
!
কেন বাবা?
!
অসুস্থ লাগে,
পেটে ব্যথা করে,
!
ও আচ্ছা আমি সরি,
!
কেন তুমি সরি বলছ?
!
তোমাদের টিফিন খেয়ে ফেলেছি তাই,
!
থাক তোমার তো খিদে পেয়েছিল তাই খেয়েছে,
মাম্মাম বলে কেউ খাবার খেতে চাইলে তাকে খাবার খেতে দিতে হয়,
!
তোমাদের মাম্মাম তোমাদের নিতে আসবেনা পাপাই?
!
না বাসা থেকে গাড়ি আসবে,
মাম্মামের কাজ আছে তাই মাম্মাম আসবে না
!
ও আচ্ছা,
!
ওই দেখো আমাদের গাড়ি এসে গেছে,
আমরা এখন বাসায় চলে যাবো,
!
তখন ইমান ওদের আদর করে চুমু খেয়ে গাড়ি তে বসিয়ে দেয়,
…..
বাসায় ফিরে টুনটুনি দুটো শাওয়ার নিয়ে মায়ের আচল দিয়ে নিজের মাথা মুছতে মুছতে বলে,
….
মাম্মাম তুমি জানো ওই আঙ্কল টানা লোভা,
!
কে বাবা কি করেছে উনি?
!
আমাদের টিফিন খেয়ে ফেলেছে,
!
তাই?
হা হা হা
!
হ্যা মাম্মা কি লোভা বলো?
!
এমন বলেনা বাবা,
!
কালকে থেকে আমি তোমাদের আঙ্কলের জন্যে ও টিফিন বানিয়ে দিবো কেমন?
!
ওকে মাম্মাম,
!
আচ্ছা বাবা তোমাদের স্কুল ড্রেস কোই?.
!
আলনার ওপরে রাখা,
!
ছেলেমেয়ের ড্রেস হাতে নিতেই মিশকা সেই গন্ধ পেতে থাকে,
তাই ড্রেস দুটো কে নিজের সাথে জড়িয়ে রাখে,
!
মাম্মাম তুমি ড্রেস দুটো কে জড়িয়ে ধরেছ কেন?
!
আমার টুনটুনি পাখি দের ড্রেস তাই,
!
আই লাভ ইউ মাম্মাম,
!
আই লাভ ইউ টু পাখিরা,
!
হঠাৎ করে আমার ফোন বেজে ওঠে,
!
তখন মিহাদ আমার ফোন রিসিভ করে বলে,
!
আসসালামু ওয়ালাইকুম কেমন আছো আঙ্কল?
!
ওয়ালাইকুম সালাম ভালো আছি মা,
ভাইয়া কেমন আছে?
!
ভালো আছে,
কি করো তুমি?
!
এই তো বসে আছি মা,
তোমরা কি করো?
!
ভাইয়া মাম্মামের কোলে উঠছে আর আমি তোমার সাথে কথা বলছি,
!
তাহলে তুমি আমার কাছে আসো আমি তোমাকে কোলে নেই,
!
না আমি তোমার কোলে উঠবো না,
!
কেন?
!
তোমার গালে ইয়া বড়বড় দাড়ি,
!
এ্যা?
!
এ্যা না হ্যা,
!
হা হা হা,
!
কে হাসে মা?
!
আমার মাম্মাম,
তুমি মাম্মার সাথে কথা বলবে?.
!
না মা সামনাসামনি বসে কথা বলবো কেমন?
!
ওকে,
আমার কাছে বুদ্ধি আছে,
!
কি মা?
!
তোমার বার্থডে তে মাম্মাম কে নিয়ে আসবো?.
!
হ্যা মা অবশ্যই,
!
বাবু এদিকে আসো,
!
আচ্ছা আঙ্কল আমি রাখি,
!
কেন মা?
!
মাম্মাম আমাকে ঘুমু দিয়ে দিবে তাই,
!
তাহলে আমাকে দিয়ে দিবে কে?
!
মাম্মাম কে বলবো তোমাকে গান শোনাতে?
!
তোমার মাম্মাম গান গাইতে পারে?
!
হুমমমম খুব সুন্দর করে গায়,
!
আচ্ছা পরে একদিন শুনবো,
!
তাহলে রাখি,
!
আচ্ছা মা বাই
!
টাটা বাইবাই,
!
এতক্ষণ কি তোমার সেই দাড়ি ওয়ালা আঙ্কলের সাথে কথা বলছিলে হুমম?
!
হ্যা মাম্মাম,
!
তোমার আঙ্কলের দাড়ি কতো বড়?
!
ইয়া বড়,
!
হা হা হা
চলবে
!
ছিছিছি,
!
এতো বিশ্রী গন্ধ আমি আগে কখনো পাইনি,
!
তুমি রেগে গিয়ে আমাকে উল্টো পাল্টা বলছ,
!
আপনার মনে হয় আমি আপনার ওপরে রেগে আছি?
…….
শুনুন যাকে ঘৃণা করা হয় তাকে রাগ দেখানো হয় না গট ইট,
!
রাগ অভিমান সবি আমার ভালোবাসার মানুষ গুলির সাথে,
…..
আপনার সাথে আমার শুধু ঘৃণার সম্পর্ক,
……
আর কোন অধিকারে?
আপনি কোন সাহসে আমাকে জড়িয়ে আছেন?
……
অধিকারের কথা বলছ?
আমার অধিকার তোমার ওপরে সবচেয়ে বেশি,
!
তার জন্যেই তো অন্য মেয়েদের সাথে ফষ্টিনষ্টি করেন,
……
ও রাত করে বাসায় ফিরে আমাকে নিজের বৌ বলে দাবি করেন?
……
আপনার অধিকারের জোড় এতোই বেশি,
…..
যে আমার আপনাকে নিজের আশেপাশে এক মুহূর্ত ও সহ্য হয় না,
…….
আর আমি বুঝিনা আপনি কেন হঠাৎ করে অধিকার অধিকার করে আমার মাথা খাচ্ছেন?
……….
আমি বুঝি আপনার শরীরে চাহিদা হয়েছে,
তাই এভাবে ছটফট করছেন,
…..
কি হলো এভাবে কি দেখছেন?
……
দশমাস সংসার করেছি আমি আপনার সাথে,
…….তাই আপনার কখন কিসের চাহিদা হয়,
সেটা আমি ভালো করেই বুঝি,
……
চাহিদাজনিত কারণে আপনি এমন পাগলামো করছেন,
…………
এতো পাগলামো করার মানে কি?
…..
শুনুন আমি ক্লিয়ার করে বলছি,
….
আপনি যদি মনে করেন,
যে আমাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হলেই সবকিছু আগের মতো নরমাল হয়ে যাবে,
তাহলে ইউ আর অ্যাবসোলুটলি রং মিস্টার খান,
…….
আপনি আপনার অধিকারের জোড়ে আমার সাথে জোরাজুরি করতেই পারেন,
…..
তার মানে এই না যে
“বরফ গলে জল হয়ে যাবে ”
মিস্টার খান,
…..
আমি কখনওই আমার অপমান ভোলার পাত্রী নই,
….
আপনি যেটা আমার সাথে করেছেন সেটা কখনওই ভোলার নয় মিস্টার স্বামী,
……
আপনি বোধ হয় এখনো বুঝতে পারেননি,
….
যে আমি আপনা কে ঘৃণা করি,
আমার শরীর মনে আপনার জন্যে ঘৃণা ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট নেই,
….
সেটা আপনি যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন ততোই আপনার মঙ্গল মিস্টার খান,
!
আপনার মতো চরিত্রহীন লোকের চরিত্র শত চেষ্টা করলে ও স্বামী নামের ট্যাগ লাগিয়ে লুকিয়ে রাখা যায় না বুঝলেন?
…
আসল চেহারা টা কোনো না কোনো ভাবে বেড়িয়ে পরে যেটা এখন সবার সামনে বেড়িয়েছে মিস্টার খান,
…..
খুব আশা নিয়ে তোমার কাছে বসে আছি আমাকে এভাবে ফিরিয়ে দিয়ো না সোনা,
!
খুব আশা নিয়ে আমি ও আপনার সাথে সংসার করে ছিলাম,
আর সেই সাজানো সংসার আপনি নিজের হাতে ভেঙে ফেলেছেন মিস্টার খান,
……
তাই আর এই ভাঙাচোরা সংসারে সংসার করার মন নেই আমার,
……
মন থাকবেই বা কিসে?
আমার মন টাকে আপনি খেলনা বানিয়ে খেলেছেন,
…
পরে প্রয়োজনের খাতিরে অন্য আরেকজনের সাথে সহবাস করেছেন,
তাকে বিয়ের তকমা লাগিয়ে ঘরে এনেছেন,
…..
তবু ও আপনার চাহিদা মিটলো না,
…..
সেই আপনি আবারো বেহায়াপনা করতে বেহায়ার মতো আমার জীবনে এসে ঢুকে পরেছেন,
…..
এখনো আপনার উচিত শিক্ষা হয় নি তাই না?
………
আপনার কি মনে হয়?
……
আপনি এতো কিছুর পরে ও আমার কাছে ফিরে আসতে চাইবেন,
আমাকে ছুঁইয়ে কলুষিত করতে চাইবেন,
আর আমি সেটা হাসি মুখে মেনে নিবো?
……..
আপনার মতো ব্যভিচারী কে প্রশ্রয় দিলে আমি ব্যভিচারিণী হয়ে যাবো,
…
তাই সে আশা ভুলে ও মনে রাখবেন না কেমন?
!
তুমি আমাকে একটু বোঝার চেষ্টা করো,
!
আপনি আমাকে বোঝার চেষ্টা করুন,
আমি আপনাকে চাই না,
আপনার ছায়া টাও মারাতে চাই না,
. . .
এতো জোড় তুমি পাও কোথা থেকে?
!
আমার ঈদের চাঁদের মতো বাচ্চা দুটির মুখ দেখে,
……
আফসোস সেটা আপনি দেখতে পারবেননা,
!
কেন?
!
কারন আমি আপনাকে ছেড়ে চলে যাবো,
…..
!
দুদিন বিপদে পরে আপনার সাথে হেসে খেলে রয়েছি,
তার মানে এই না যে,
…..
আমি আমার অতীত কে ভুলে গেছি,
!
ভুলতে পারবেনা তাই না?
!
পারবো যেদিন আপনি আমাদের জীবন থেকে দূরে চলে যাবেন,
!
আমার কথা শুনে উনি ওনার চোখেরজল মুছতে মুছতে রুমে চলে যায়,
!
তার কিছুক্ষণ পরে মেয়ে কে নিয়ে পাইচারি করতে করতে ওনার রুমে গিয়ে দেখি,
.।.।
উনি তাহাজ্জুদের সালাতে চোখেরজল ফেলছেন,
!
কিন্তু আমার কোনো অনুভূতি কাজ করছেন তার জন্যে,
….
বরং আমার মন বলছে,
…….
এই সুযোগ তুই বাচ্চাদের নিয়ে পালিয়ে যা তুই,
নাহলে ওনার মায়ায় বাধা পরে যাবি তুই,
তখন আর চাইলে ও ছেড়ে যেতে পারবেনা,
!
তাই আমি আমার মনের কথা শুনে, ওই রাতে বাচ্চাদের নিয়ে বাসা থেকে বেড়িয়ে যাই,
!
দেখতে দেখতে কেটে যায় পাঁচটি বছর,
!
এখন আমার মিশান, মিহাদ নার্সারি তে পরে,
প্রায় প্রতিদিন বাসায় ফিরে ওদের স্কুলের মালিকের কথা বলে,
!
লোকটির বৌ নাকি ওনার নামাজ পরার সুযোগ নিয়ে পালিয়েছে,
…..
আর উনি নাকি এখনো ওনার বৌ কে পাগলের মতো খুজে বেরাচ্ছে,
……
নিজের বৌ কে কতটা ভালোবাসলে কেউ এমন টা করতে পারে খোদা তায়ালাই জানে,
!
তবে ওনাকে আমি কখনো দেখিনি,
…..
কিন্তু যখন বাবুদের কাছে ওনার গল্প শুনি,
তখন আমার কথা মনে পরে যায় কারন
……
আমি ও ওনার নামাজের সুযোগ নিয়ে পালিয়ে গেছিলাম,
……
আর ওই দিন রাতেই আব্বুর সাথে বরিশালে চলে এসেছিলাম,
!
তারপর অনার্স কমপ্লিট করে নিজের গহনার ব্যবসা টা প্রসারিত করে তুলি,
……
মাস্টার্স কমপ্লিটের সময়,
আব্বুর শখে বেকারি খুলি যেখানে আমার রেসিপি অনুসারে পিওর উপকরণ ব্যবহার করে কেক বিস্কুট ও অন্যান্য খাবার তৈরি করা হয়,
……….
আমার বেকারির কেকের জন্যে ফেমাস,
……..
এখনো লেখাপড়া চলছে,
!
আর এখন আমি আমার সন্তানদের নিয়ে হসে খেলে কাটিয়ে দেই,
!
কিন্তু ইদানীং ওদের কিন্ডারগার্টেন স্কুলের মালিকের গল্প শুনে নিজের কথা মনে পরে খুবি হাসি পেয়ে যায় আমার,
!
মাম্মাম তুমি আমাদের ছেড়ে হাসো কেন?
!
এমনি পাপাই,
!
মাম্মাম তুমি আমাদের কালকে স্কুলে নিয়ে যাবে?
!
হ্যা মা অবশ্যই,
!
আমি নিয়ে যাবো না?
!
না রুহান আঙ্কেল তোমার সাথে যাবো না,
!
কেন?
!
তোমার ছেলে আমার দিকে কেমনকেমন করে তাকিয়ে থাকে দেখতে খারাপ লাগে,
!
মা আসলে ও তোমাকে পছন্দ করে,
!
তুমি ও আমার মাম্মাম কে পছন্দ করো?
!
সে কালে করতাম এ কালে ও করি শুধু তোমার মাম্মাম আমাকে তার আট জন ভাইয়ের পর নয় নম্বর ভাই বানিয়ে রাখল,
…..
নাহলে লাল বেনারসি তে আমি ওকে আমার বৌ হিসেবে দেখতে চেয়েছিলাম,
!
তোর ওপরে অন্যায় করা হয়ে গেছে তাই না?
!
তুই আমার সাথে অন্যায় করনি,
তুই আসলে ওর থেকে কষ্ট পাওয়ার পর কোনো পুরুষ কে বিশ্বাস করতে পারোনি,
…..
আর আমি আমার বাবা-মায়ের মুখ চেয়ে অন্য কাও কে নিজের করে নিলাম,
…..
তবে আমি তোকে নিজের চোখের সামনে রাখতে পেরে ভালো আছি জানিস,
!
হয় তো তোকে নিজের করে পাওয়া হয়নি,
……….তবু ও আমি জানি তুই আমার,
…….
তোর মনে আমার জন্যে একটু হলে ও ভরসা বিরাজ করে,
আর সেটা নিয়ে বেঁচে আছি আমি,
!
রিয়া শুনলে হার্ট অ্যাটাক করবে,
!
আমি সবি জানি তাই তো ও বাড়ি ফিরলে বলি,
!
কি গো আমার সতীন কেমন আছে?
সে একটু ও ভালোবেসে তোমায়?
!
আর উওরে ও বলে,
কি গো চুপ করে আছো কেন?
তুমি বলবে না আমি বলবো?
!
নাহহ আমি বলছি,
ও আমাকে ভালোবাসলে আমি তো ওকেই নিয়ে পরে থাকতাম তোমাকে বিয়ে করতাম নাকি হুমম?
পেয়ার মোহাব্বত সব ওকেই করতাম,
!
শয়তান কত গুলি,
হা হা হা,
!
হা হা হা,
!
মাম্মাম তোমরা কি নিয়ে হাসাহাসি করছ?
!
কিছুনা বাবা,
!
পরেরদিন আমি ওদের স্কুলে নিয়ে যাই,
………..
ওরা ওদের ক্লাসে যেতেই সেই গন্ধ টা আমার নাকে ভেসে আসে,
…….
তাহলে কি উনি এখানে আছেন?
মন টা বড্ড অস্থির হয়ে যাচ্ছে,
কি যে করি কিছু ভেবে পাচ্ছিনা আমি?
!
তখনি খেয়াল করে দেখি,
……..
পাশের সেই ফুলেফলে ভরে থাকা বাগানবাড়ি থেকে একটা বি.এম.ডাব্লিউ বেড়িয়ে টাউনের দিকে যাচ্ছে,
……..
তখন পিয়ন এসে বলে,
……..
আপা ওটা কিন্ডারগার্ডেনের মালিকের বাসা,
!
তাই?
!
জ্বি আপা,
!
তার বাসায় কে কে থাকে?
!
স্যাররর একটাই থাকেন গোটা দশেক কাজের লোক নিয়ে,
বৌ বাচ্চা নেই আসলে নেই বললে ভুল হবে স্যরর কে ছেড়ে চলে গেছেন,
……..
স্যরর সারাদিন বৌ বাচ্চার ছবি দেখে দেয়,
জানিনা স্যরর কি করেছিল যে ওপরওয়ালা ওনাকে এভাবে শাস্তি দিচ্ছেন,
তবে মানুষ টা অনেক ভালো,
…..
গত চার বছর থেকে আমি স্যরের সাথে থাকছি কখনো ম্যাডামের ছবি দেখিনি,
…..
তবে স্যররর শুধু ম্যাডামের গল্প করেন,
কথা বোঝা যায় ওনার কোনো পাপাের শাস্তি দিতে ম্যাডাম ওনাকে ছেড়ে চলে গেছেন,
……
তবু ও সাহেব ওনা কে চোখে হাড়ায় কখনো স্যররর অন্যে মেয়ে কে নিয়ে আলোচনা করেননা বাসায় নিয়ে আসেননা,
……..
স্যরেররর সাথে সব জায়গায় আসা যাওয়া করি আমি কাজের প্রয়োজন ছাড়া একটা ও বেশি কথা বলে না,
……….
তবে ম্যামের চলে যাওয়টা উনি মেনে নিতে পারেননি,
……..
তাই ম্যামের চলে যাওয়ার পর উনি মানসিকভাবে আঘাত প্রাপ্ত হয়,
……
ওনার সাইকোলজিক্যাল প্রবলেম আছে,
মাঝেমধ্যে রাতে হঠাৎ করে চিৎকার দিয়ে দিয়ে কান্নাকাটি করেন,
……
রাগ উঠলি নিজেই নিজেকে আঘাত করে বসেন,
…….
গত সপ্তাহে ব্লেড দিয়ে নিজেই নিজের হাত কেটে বৌয়ের নাম লিখেছেন,
!
বৌ বাচ্চা কে ফিরে পাওয়ার জন্যে জন্যে এপর্যন্ত পাঁচ বার হজ করেছেন,
ইসলামী বিধান মেনে জীবন যাপন করছেন,
……
তবু ও আল্লাহ ওনার ইচ্ছে পুরোন করে না,
!
স্যারর কে দেখলে আমারি চোখে জল চলে আসে আপনাকে আর কি বলবো আফা,
!
পিয়নের সাথে গল্প করতে পরতে ছুটির ঘন্টা বেজে যায়,
তাই আমি আমার টুনটুনি পাখিদের নিয়ে বাসায় চলে যাই,
!
রাতে যখন ওদের আদর করে ঘুম পরাচ্ছিলাম,
…….
তখন মেয়ে আমার গালে চুমু খেয়ে বলে,
…..
মাম্মাম সোমবার স্কুলের মালিক আঙ্কেলের বার্থডে,
……
তাই তুমি আমাদের একটা কেকে বানিয়ে দিবে?
যেটা আঙ্কল তার বার্থডে তে কাটবে?
!
আচ্ছা মা ঠিক আছে,
!
কারন আমি তাকে মুরগি বানিয়েছি,
হা হা হা,
!
বলি কি শোনো?
…..
আল্লাহ তো বলেছে তাই না?
!
আল্লাহ আবার কি বলেছে?
!
আল্লাহ তো বলেছে,…..
…….যে যদি কেউ তার করা পাপের জন্যে মন থেকে অনুতপ্ত হয়ে থাকে,
তাহলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত,
……
ওমা তাই?
……আপনি আপনার মন থেকে অনুতপ্ত,
…..
হ্যা,
…..
কিন্তু আপনার চেহারা তো অন্যকথা বলছে মিস্টার খান?
…..
কি বলছে?
…..
বলছে আপনি আমার সাথে নোংরামো করতে চান,
……
তাইইইইইই আপনি চান না যে আমি অন্য কাও কে ভালোবাসি,
……
চাইবেন বাঁ কেন?
আপনার নোংরামোর মধ্যে আমার ভালোবাসার শেয়ারহোল্ডার এসে পরবে যে,
…………..
এই আপনার লজ্জা করেনা?
………
একটা মেয়ে কে ভোগ করার পর তাকে ছেড়ে…..
……..অন্যকাও কে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে ভোগ করতে চাইছেন?
…..
আমি তোমাকে ভোগ করতে চাইছি না,
…..
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভোগের সম্পর্ক আসছে কোথা থেকে?
!
ওমা গো তাই?
স্বামী স্ত্রী?
এ কথা টা আপনার আগে মনে ছিলনা তাই না?
…….
আমি জানি কোনোকিছুর বিনিময়,
আমি তোমাকে দেওয়া ক্ষত গুলো সারিয়ে তুলতে পারবোনা,
.।।।….
তবে ইন ফিউচার তোমার যাতে কোনো কষ্ট না হয় আমি সেদিকে খেয়াল রাখবো,
!
ইসসস,
এই ধ্যারধ্যারি গোবিন্দ মার্কা কথা বলবেন না কেমন?
…..
প্রথমত আমি আপনাকে বিশ্বাস করি না,
দ্বিতীয়ত আপনার সাথে জড়িয়ে থাকার সামান্যতম ইচ্ছে টুকু নেই আমার,
…..
আমি আমার জীবনে আপনার মতো ব্যাড হেডেক চাই না মিস্টার খান,
……
নিজের জীবন টাকে নতুন করে সাজাতে চাই,
………
ভেঙে যাওয়া স্বপ্ন কে জোড়া লাগাতে চাই,
তবে সেটা আপনার সাথে নয়,
নতুন কাও কে নিয়ে,
…….
তুমি এটা করতে পারো না কিছুতেই না,
…..
আমি তোমাকে অনেক সুখে রাখবো,
তোমাকে অনেক ভালোবাস বো,
!
আপনি যে কেমন সুখে রাখবেন সেটা দেখা হয়ে গেছে আমার,
…….
তাই আমি আর আপনার সুখে থাকতে চাই না,
ভালোবাসা তো দূরের কথা,
……
তবে আমি যখন ভেবেছি প্রেম করবো,
প্রেম তো আমি করবোই,
!
না বাজে কোনো কাজে তুমি জড়াবো না,
……
তাছাড়া বিবাহিত দু বাচ্চার মায়ের সাথে কে প্রেম করবে?
. …. .
যার শরীরে জ্বালা বেশি সে করবে আমার সাথে প্রেম মিস্টার খান,
….
কে করবে কেউ করবেনা তোমার সাথে প্রেম,
….
করবে করবে বিপদের সময়ে প্রকৃত বন্ধুই করবে আমার সাথে প্রেম,
!
মানে?
এই কি এই বলছ তুমি?
তুমি কি পাগল হয়ে গেছ?
!
নো মিস্টার খান আমি রুহানের কথা বলছি,
…..
ও তো আমার প্রিন্স চারমিং,
যে আমার বিপদেআপদে আমাকে আমার সাপোর্ট সিস্টেম হিসেবে সাপোর্ট দিয়েছে,
….
এখন ও যদি আমাকে বলে ও আমাকে ওর করে পেতে চায়,
……. তাহলে আমি নাচতে নাচতে ওর কাছে চলে যাবো,
….
কারন আপনার সাথে থাকার কোনো সখ নেই আমার,
……
শোনো রুহান আসুক আর তুহান আসুক আমি সবাই কে মেরে দিবো,
……
কারন আমি তোমাকে কারো সাথে শেয়ার করতে পারবোনা,
….
উম্মা কতকালে যে কি কি দেখবো?
আল্লাহ মালুম,
…..
আপনারা পুরুষেরা তো দেখি আজিব গ্রহের প্রাণী,
!
মানে,
!
বাবা মানে টাও বুঝিয়ে বলতে হবে?
তাহলে শুনুন,
…..
আপনি ঘরে বৌ রেখে পাঁচটা দশটা মেয়ের সাথে শুতে পারেন,
নষ্টামো করতে পারেন,
. …… .
আর ঘরের বৌ একটা প্রেম করতে চাইলেই দোষ?
……
প্রেম করতে চাইছি আপনার মতো কারো বিছানায় শুতে চাইনি,
!
আমি মানছি আমি খারাপ কাজ করেছি,
. …. .
তুমি আমাকে একটা সুযোগ দিয়ে দেখ?
. … .. .
আমি আপনাকে আমার বিশ্বাস ভালোবাসা ও ভরসা দিয়ে দেখেছিলাম,
….
আপনি সে গুলো কে যথার্থ সম্মান দিতে পারেননি,
…….
তাই আপনাকে সুযোগ দেওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা মিস্টার খান,
….
আজকে আমাদের বিবাহবার্ষিকী তুমি কেন এমন করে বলছ?
!
যেটা সত্যি সেটাই বলছি আমি,
….
গতবছর ও আমাদের বিবাহবার্ষিকী ছিলো,
আর আপনি আমাকে প্রথম বিবাহবার্ষিকীর বেষ্ট গিফট দিয়ে ছিলেন মিস্টার খান,
….
যেটা আমি না চাইলে ও মনে করতে বাধ্য,
…..
আমি বলি কি?
খাবার গুলো খেয়ে নাও,
দেখো তুমি না খেলে ওরা খাবে কি?
!
এই আপনি শুধু কথা ঘুরচ্ছেন কেন?
!
তুমি খাবার গুলো খেয়ে নাও,
……
আমার অতো খিদে নেই,
আপনি খান, আপনার পেটে তো রাক্ষস ঢুকছে,
!
তুমি কেন আমাকে আপনি করে বলো?
!
এই ধরেন খুশির ঠেলায় ভাল্লাগে তাই,
!
আমি তোমার স্বামী,
!
ধুর বাললললল,
এটাই তো সমস্যা আপনি আমার স্বামী,
!
এই তুমি এতে বাল সাল বলা শিখেছ কোথা থেকে?
….
এসব তোমাকে মানায় না সোনা,
…
উফফফ,
এই আপনাকে একটা সোজা কথা বলি কেমন?
!
কি?
!
আমি কারো ইউজ করা জিনিস,
ইউজ করতে পছন্দ করিনা বুঝলেন?
……
আর আপনাকে তো গত একবছর ধরে অন্য কেউ ইউজ করেছে,
সো আপনি ভাবলেন কি করে যে আমি,
অন্য কারো ইউজড জিনিস কে ঘসে মেজে আবারো ইউজ করবো?
……
আমার এই কথা বোধ হয় ওনার জায়গা মতো না মানে বুকে গিয়ে লেগেছ,
…..
তাই উনি চুপ মেরে বসে বসে কাঁদছেন,
…..
আশ্চর্য এতে কান্নার কি আছে?
!
“পুরুষেরা কাঁদেনা তাড়া শুধু কাঁদায়”
!
আর আপনি ও তো সেটাই করে বেড়ান,
তা হলে কান্নার কি আছে?
সেটাই বুঝলাম না আমি,
!
প্লিজ মরা কান্না কাঁদবেন না কেমন?
…..
যাই আমি গিয়ে আমার বেবি দের খাইয়ে আসি,
!
নাহলে ওরা ও এ্যা এ্যা এ্যা করে কান্না করে দিবো,
!
যাই বাবা যাই ,
আমার বাচ্চাদের কাছে যাই,
!
তারপর আমি আমার রুমে চলে যাই আর বেবিদের আদর করে খাইয়ে নিজের বুকে জড়িয়ে রাখি,
….
আমি কখনো চাইনা কারো সাথে বাজে প্যাঁচাল পারতে,
তবে আমার ধৈর্য্যের মাধ ভেঙে গেলেই আমি আবল-তাবল বকতে শুরু করি,
!
আর আমার ওনা কে দেখলেই মেজাজ টা খারাপ হয়ে যায়,
যতসব বিরক্তিকর,
!
তারপর আমার টুনটুনি পাখি দুটো কে আমার বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পরি,
!
ঘুমঘুম অবস্থায় সেই পাগল করা গন্ধ টা আমাকে জড়িয়ে ধরে,
!
সাথে সাথে ভালো করে চোখ মেলে চেয়ে দেখি,
…..
ওই বুইড়া বেটা আমাকে জড়িয়ে শুয়ে আছে,
!
উফফ
এই ড্রেনের গন্ধ টা আসছে কোথা থেকে?
…….
ছিছিছি
!
কি আমার গয়ের গন্ধ,
তোমার ড্রেনের গন্ধ বলে মনে হয়?
!
ওই ব্যাটা ওই কয়দিন গোসল করো না?
!
তোমার তো আমার গায়ের গন্ধ ভালো লাগে,
!
ওই আপনি কি ড্রেন থেকে উঠে আসছেন?
……
ছিছিছি
!
ভালোই হলো,
এখন থেকে নিজের খাবার নিজে বানিয়ে খাবেন,
!
শোনো না বলছি কি?
যে রান্নাবান্না তো আমি করছি,
তুমি গিয়ে ফ্রেশ হশে আসো,
!
এই শুনন আমাকে এতো আল্লাদ দেখাবেন না কেমন?
!
আশ্চর্য দশ টা না পাঁচ টা একটা মাএ বৌ আল্লাদ তো সব,
তাকেই দেখাবে তাই না?
!
তাহলে ইশা কে গিয়ে দেখান,
আমাকে এতো ঢং দেখাবেন না প্লিজ,
!
তুমি সক্কাল সক্কাল তেতো কথা না বলে,
মিষ্টির মতো মিষ্টি মিষ্ট কথা বলো সোনা প্লিজ প্লিজ প্লিজ,
!
যতসব নেকামো,
………
তারপর আমি আমার রুমে শাওয়ার নিতে চলে যাই,
………..
শাওয়ার শেষে বাহিরের বেড় হয়ে দেখি,
..।….।…..।…..
একটা নীল সাড়ি ও দু ডজন রেশমি চুড়ি আমার বেডের ওপরে রাখা,
…..
নির্ঘাত এটা ওই লুচ্চার কাজ,
…..
যতসব লুচ্চা,লুচ্চামির ও একটা সীমা থাকে,
আর এতো পুরোই সীমানাহীন,
……
তার ওপরে সখে বাঁচেনা,
যে আমি ওনার দেওয়া সাড়ি পরে সেজেগুজে ধৈইধৈই করে নাচবো,
..
আগে সখ ছিলো নাচার এখন আর নেই একটু ও নেই,
…..
তাই আমি আমার সাড়ি পরবো মিস্টার খান,
……..
তবে ইউ জাস্ট ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ মিস্টার খান,
…….
তাই আমি অনেক সময় নিয়ে সাজুগুজু করে নিচে চলে যাই,
…..
সেখানে শুনি উনি কাকে যেন বলছেন,
…….
আজকে তোর ভাবি অবশ্যই আমার দেওয়া সাড়ি পরে আসবে,
……….
কারন আজকে ও অনেক সময় নিয়ে সাজুগুজু করছে,
…….
আমি না ওকে দেখার জন্যে পাগল হয়ে যাচ্ছি,
……
আমার বিশ্বাস ও আবারো আমার জন্যে নীল সাড়ি চুড়ি পরে সুন্দর করে সাজুগুজু করে আসবে,
!
ইসসস,
সখে বাঁচে না,
তোমার বিশ্বাসের মাথায় পা,
আমার বিশ্বাস ভেঙে,
এখন এই সাড়ি নিয়ে বিশ্বাসের খুব মাতামাতি করছেন তাই না?
যতসব আতেল কনে কার,
!
হঠাৎ করে তখনি ওনার নজর আমার ওপরে এসে পরে,
…..
আর উনি হা করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে,
…..
কারন উনি এক্সপেক্ট করেনি,
যে আমি নীল কারের সাড়ি রেখে, খয়েরি কালারের সাড়ি পরে সাজুগুজু করে নিচে চলে আসবো,
……
খুব সখ না তোমার মন ভেঙে মন জোড়া লাগানোর?
…..
সেটা আর হবেনা মিস্টার খান,
…….
তাই আমি ওনার পাশ কাটিয়ে কিচেনে গিয়ে অম লেট বানিয়ে সোফায় বসে খেতে শুরু করি,
…….
উনি তখন আমার কাছে একটা বোল এগিয়ে দিয়ে বলে,
……..
এই নাও তোমার জন্যে থাই সুপ বানিয়েছি,
!
নো থ্যাংকস আপনি গেলেন ,
আমি এ ছাইপাঁশ গিলি না,
!
একটু খেয়ে দেখ না,
আমি অনেক ভালোবেসে বানিয়েছি তোমার জন্যে,
!
না বাবা থাক আমার আর দরকার নেই,
আপনার ওমন ভালোবাসার,
…..
অনেস্টলি আমি আপনার ভালোবাসা দেখতে দেখতে বিরক্ত হয় গেছি মিস্টার খান,
তাই আর দেখতে চাই না প্লিজ,
!
আমি আর কখনওই তোমার কষ্ট হয় এমন কিছু করবোনা প্রমিছ করেছি তোমায়,
!
ওমা তাই?
….
এর আগেও তো কতো কতো প্রমিছ করেছেন,
সেগুলো কি রেখেছেন?
……….
যে এখন আবার এই মিথ্যে প্রমিছ টা করছেন?
!
আমি কি করে তোমাকে বিশ্বাস করাবো?
তা আমি জানিনা এবে আমি সত্যি কথা বলছি,
!
বাবা এতো দেখি ,
“মেঘ না চাইতেই জল”
………
স্বয়ং সত্যবাদী যুদিষ্ঠীর আমার সামনে বসে আছে,
!
তুমি বিশ্বাস করো আমি অনেক ভালোবাসি তোমাকে,
……
তুমি আমাকে বাধ্য করোনা,
তোমার সাথে জোরজবরদস্তি করতে,
!
এতক্ষণে সত্যি কথাটা বললেন?
!
মানে?
!
এই যে আপনি আমার সাথে জোরজবরদস্তি করতে চান,
…..
আরে ভালো করে বললেই তো পারেন যে আপনি আমাকে ভোগ করতে চান,
……..
দেখুন আমি অসহায় অবলা নারী,
তার ওপরে জুটেছে ফাঁকা বাড়ি,
….
তাই আপনি যা মন চায় তা করতেই পারেন,
…..
এতে আবার ভদ্র হয়ে ভালোবাসার কথা বলার দরকার কি?
…….
যখন আপনি আমাকে আপনার লালসাকামনায় জড়াতে চান,
ভোগের পাত্রী বানাতে চান,
!
তুমি ভুল ভাবছ আমায়,
!
নাহহ,
যা যেটা ঠিক সেটাই ভাবছি আমি,
…..
আফটার অল এখানে কেউ তো নেই….. যে আমাকে আপনার থেকে প্রোটেক্ট করবে,
!
আমার দুধের শিশুরা ওদের মা ছাড়া কিছু বোঝেনা,
…..
তাই প্রোটেকশনের তো কোনো প্রশ্নই ওঠে না,
…..
তাই ভদ্র হয়ে না বলে,
আপনি যেটা করতে চান করে ফেলুন মিস্টার খান,
!
আমি কিছু করতে না,
আমি চাই তুমি আমাকে ক্ষমা করে আমার কাছে ফিরে আসো সোনা,
!
ওমা গো মা,
আপনি তো ভালোই কথা ঘুরতে পারেন?
!
তখনি উনি আমাকে সোফার সাথে চেপে ধরে বলেন,
!
আমি কোনো কথা ঘুরচ্ছি না,
……
আমি আমার পুরনো মিশকা কে ফিরে পেতে যাই,
…………..
সারা জীবনের জন্যে আমার আগের মিশকা কে আমার বাচ্চার মা কে আমার করে পেতে চাই,
…..
আমি চাইনা,
ভাবছি বড়লোক বিজনেসম্যান দেখে দু একটার সাথে প্রেম করবো,
!
এই কিসব বলছ তুমি?
তুমি কি পাগল হয়ে গেছ?.
!
বারে আপনি প্রেম করতে পারেন নষ্টামো করতে পারেন আমি করতে চাইলেই দোষ?
!
আমি খারাপ তুমি তো খারাপ না সোনা,
এসব বাজে কথা বলছ কেন হুমম?
!
“বারে নিজের বেলায় ফিটফাট ”
“আমার বেলায় বাপের বাপ?
!
তুমি এ কথা ভুলে ও মুখে আনবে না,
!
শুনুন আমি আপনার সাথে থাকতে মোটে ও ইচ্ছুক নই,
তাই নিজের মতো করে কাও কে খুজে নিতে চাই,
……..
তুমি মিথ্যে বলছ,
তুমি শুধু আমার ,
তুমি কখনওই পরপুরুষের কথা ভাবতে পারো না,
!
না ভাবলে বলছি কি করে?
হাওয়ায় হাওয়ায়,
.. ……
এই প্রথম উনি ‘থ’ মেরে আমাকে ওনার বুকে জড়িয়ে ধরল,
……
তবে আমার কোনো ফিলিংস আসছে না,
…..
বরং তার এই চেহারা দেখে,
……….
আমার খুশ হাসি পাচ্ছে,
…..
কারন,
আমি তাকে মুরগি বানিয়েছি,
হা হা হা
চলবে
!
কারন আমি তোমাকে ঘৃণা বই আর কিছু করিনা,
!
তারপর পরাণ দুটো কে শুইয়ে ওদের মাঝে শুয়ে পরি আমি,
!
পরেরদিন ভোর বেলা ঘুমঘুম চোখে চেয়ে দেখি,
……
যে উনি এখনো ফ্লোরে শুয়ে মটকা মেরে পরেপরে ঘুমোচ্ছে,
………….
দাড়াঁও ব্যাটা বিটকেল খুব ঘুম পেয়েছে তাই না?
……
ঘুম তোমাকে পরাচ্ছি ঘুমো তুমি,
…….
তারপর আমি তাড়াতাড়ি উঠে শাওয়ার নিয়ে নামাজ পরে,
এক বালতি পানি এনে সোজা ওনার গায়ে ছুড়ে মারি,
….
আর উনি সাথে সাথে শোয়া থেকে উঠে দাঁড়িয়ে,
…
চোখ পিটপিট করে মুচকি হাসি দিয়ে টাওয়াল টা দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে রুমের বাহিরে চলে যায়,
!
বেটা অসভ্য টার হলো টাকি?
…..
যে উনি কিছু না বলেন মুচকি হাসি দিয়ে এখান থেকে চলে গেল,
……… কি চলছে কি ওনার মাথায়?
… ….. ….
নিশ্চিত কোনো দুষ্টু বুদ্ধি তার মাথায় ঘর করেছে,
….
তাই সে আমাকে মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেল?
…..
তবে সে যাই করুক না কেন?
আমার জানা প্রয়োজন, যেসে কি করতে চাইছে?
!
তখনি আমার পরাণ দুটো কান্না করে ওঠে,
!
আর আমি ওদের কোলে নিয়ে আদর করে খাইয়ে শুইয়ে দিয়ে গায়ের জামা গুলো চেইঞ্জ করে দেই,
………..
পরে ময়না কে ওদের কাছে বসিয়ে রেখে,
আমি পাখি কে সাথে করে ব্রেকফাস্ট বানাতে কিচেনে চলে যাই,
!
ব্রেকফাস্ট বানানো হয়ে এলে দোতলায় তাকিয়ে দেখি,
……..
উনি রয়্যাল ব্লু কালারের কোর্ট, প্যান্ট, টাই , সাদা শার্ট ও টাইটান ব্রান্ডের রিস্ট ওয়াচ পরে এসেছেন,
……..
এতো ক্ষণে বুঝালাম ওনার মিস্তি হাসির কারণ,
…..
বাহহ উনি তো আমাকে ইম্প্রেস করতে আমার ফেভারিট কালারের কমপ্লিট সুট পরে এসেছেন,
…….
কিন্তু এখন আর আমি ইম্প্রেস হই না,
…….
কারন আপনি আমাকে, আমার ভালোবাসা কে অপমান করে অসম্মান করে দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছিলেন তাও আবার অন্য কাও কে নিজের করে পওয়ার জন্যে,
…….
ছিঃ সেই আপনি এখন আমার বিপদের সুযোগ নিয়ে,
আমার সাথে থাকার চেষ্টা করছেন?
…….
আপনি একটা বহুরূপী মানুষ,
হয়তো এই বিপদে না পরলে আপনার আসল চেহারা টাই কখনো দেখতে পেতাম না আমি,
……
কি ভাবছ?
কেমন লাগছে আমায়?
!
আপনাকে না মুখোস ধারি মানুষ বলে মনে হচ্ছে আমার,
যার আছে বহুরূপ এবং সেই রুপের কোনো ব্যাখ্যা হয় না,
আই মিন তুলনা হয় না,
!
তুমি কেন?
আমাকে অলওয়েজ কষ্ট দিয়ে কথা বলো?
!
আপনাকে তো দেখে মনে হচ্ছেনা,
যে আপনি আমার কথায় কোনো কষ্ট পেয়েছেন?
!
সবসময় কি কষ্ট টাকে প্রদর্শন করে বেড়াতে হবে?
!
আপনার কষ্ট প্রদর্শনের টাইম নেই আমার,
……..
আপনি আপনার চরকায় তেল দিলে ভালো হয় প্লিজ,
……
এভাবে অবাক হয়ে কি দেখছেন আপনি?
……
অফিসে তো যেতে হবে খেতে বসুন প্লিজ?
!
খিদে নেই আমার,
!
খেলে খাবেন না খেলে দরকার নেই,
পাখি?
!
জ্বি বৌ রানী?
!
আমার খাবার টা ঘরে নিয়ে এসো প্লিজ,
!
হ্যা আপনি যান আমি আসছি,
!
তুমি কেন এভাবে বদলে গেলে?
…
আগে তো তুমি আমি না খেলে পাগল হয়ে যেতে,
খাবার না খেলে নিজের হাতে খাইয়ে দিতে,
……..
অফিসে গিয়ে নিজের রান্নাকরা খাবার খাইয়ে দিতে,
…….
তুমি ভালো করেই জানো আমি বাহিরের খাবার খেতে পারিনা,
….
খেলেই অসুস্থ হয়ে পরি,
….
সেই তুমি আমার আমার মুখের ওপরে বলে দিলে,
“খেলে খাবেন না খেলে দরকার নেই ”
. . .
আমি মানছি সব আমার দোষ আমার অপকর্মের ফল,
তা বলে তুমি আমাকে তোমার থেকে এতো টা দূরে ঠেলে দিবে?
!
কি হলো কি এতো ভাবছেন ?
অফিসে যাওয়া কি ক্যান্সেল নাকি হুমম?
…….
দেখুন আপনাকে আমার খুবি বোরিং লাগে,
……
তাই এই মুখ টা আমাকে চব্বিশঘণ্টা দেখাবেন না প্লিজ,
!
আচ্ছা দেখাবো না,
তবে,
কালকের বিশেষ দিনের কথা মনে আছে তোমার?
!
কালকে কি বিশেষ দিন মিস্টার খান?
!
তুমি মজা করছ তাই না?
!
নাহহহহ কালকে কি কোন বিশেষ দিন কিছুই মনে নেই আমার?
বুঝলেন মিস্টার খান,
!
তাহলে সময় মতো আমি তোমাকে মনে করিয়ে দিবো কেমন?
!
না দরকার নেই,
!
তারপর উনি অফিসে চলে যায়,
!
রাতে বাসায় ফিরতেই ওনার চেহারা বদলে যায়,
কেমন যেন হাসি হাসি মুখ?
কি যেন বলতে চাইছে?
তবু ও বিষয় টা এড়িয়ে যাচ্ছেন,
……..
তার ওপরে হঠাৎ করে ময়না পাখি কে দুদিনের ছুটি দিয়ে দিয়েছে,
……
কি জানি?
কি চলছে কি ওনার মাথায় আল্লাহ মালুম,
!
ধুররররর,
বাবা ভাল্লাগেনা ,
আজকে এই লোক টার সাথে খেতে বসতে হবে আমার?
!
কিছুই ভালো লাগছে না আমার,
!
তাই আমি ওনার জন্যে খাবার সার্ফ করে রেখে আমার খাবার খেয়ে বাবুদের কাছে রুমে চলে যাই,
!
তারপর ওদের খাইয়ে দিয়ে মেয়ে কে ঘুম পারিয়ে ছেলে কে ঘুম পরাতে ওকে কোলে নিয়ে রুমের মধ্যে পাইচারি করতে থাকি,
!
হঠাৎ করে দরজার দিকে নজর যেতেই আমাদের চোখাচোখি হয়ে যায়,
………
তখন উনি আমাকে আবারো রহস্যময় মুচকি হাসি দিয়ে চল যায়,
!
ঠিক যেমন চোর চুড়ি করার আগে রেস সিগনাল দিয়ে যায় তেমন,
!
উফফফ,
আমার এই লোক টাকে অনেক অসহ্য লাগছে,
কি জানি কি আছে আমার কপালে?
!
তারপর আমি দরজা লাগিয়ে বেবি কে নিয়ে শুয়ে পরি,
!
কিন্তু কেন যেন খুব অসহ্য লাগছে আমার?
!
তাই আমি আমার পরাণের পরাণ দুটোর কপালে চুমু খেয়ে,
!
দরজা চাপিয়ে দিয়ে ছাদে চলে যাই,
!
কিছুক্ষণ ছাদে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার পর,
কারো উপস্থিতি টের পেয়ে পেছনে ফিরে দেখি,
!
উনি আমার সামনে কত গুলো গোলাপ ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে,
!
আমি ওনার পাশ কাটিয়ে যেতে শুরু করতেই উনি,
!
আমার হাত ধরে আমাকে খুব শক্ত করে ওনার বুকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে বলে,
!
হ্যাপি ম্যারেজ অ্যানিভার্সরি সোনা,
!
ওনার এ কথা শুনে আমার ওনার ওপরে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়,
।।।।।
কারন আমার নিজের ওপরে ঘৃণা আসছে খুব,
তাই আমি ওনা কে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দেই,
!
আজকে আমাদের বিয়ের দু বছর পূর্ণ হলো,
আর তুমি এমন করছ?
!
দেখুন আমি ইশা নই যে যখনতখন যারতার প্রয়োজনে নিজের শরীর কে বিলিয়ে দিবো,
!
সোজা কথায় আমি কোনো সস্তার জিনিস নই যাকে আপনি আপনার ইচ্ছে মতে ব্যবহার করবেন,
!
তুমি ভুল ভাবছ?
!
না আমি ভাবিনি এখন এই মুহূর্তে ইশার সত্যি টা না জানলে আপনি ওকে নিয়েই আপনার সংসার করতেন,
ওকেই ভালো বাসতেন,
…..
তাহলে আপনি আর আমাকে নিয়ে এতো টা নাটক করতেন না,
!
আমি?
!
কি আমি?
আমি আপনার সাথে থাকতে চাই না কিছু তেই না সেটা কি আপনি বোঝেন না?
!
আপনি আমাকে ছুঁইলে আমার ঘৃণা করে মিস্টার খান,
!
আমি কখনওই তোমাকে কষ্ট দিবো না,
!
যা দেওয়ার আপনি দিয়ে ফেলেছেন,
আর দেওয়ার কিছু নেই মিস্টার খান,
!
পারলে এখন আপনি আমাকে ডিভোর্স দিয়ে মুক্তি দিন আমি এতেই খুশি মিস্টার খান,
!
না আমি কখনওই তোমাকে ছেড়ে যাবো না,
কখনওই যাবো না,
একবার বোকামো করেছি আর না,
!
আপনার কুমিরের কান্না আমাকে দেখাবেন না প্লিজ,
!
তখন উনি আমাকে আবারো ওনার বাহুডোরে জড়িয়ে ধরে বলে,
!
আমরা সবকিছু নতুন করে শুরু করবো,
!
আমার আপনাকে ঘৃণা করে করে আপনি আপনার নোংরামো করা বন্ধ করুন প্লিজ,
!
আপনি আপনার ওই নোংরা হাত দিয়ে আমাকে ছোঁবেন না প্লিজ,
!
আমি তোমাকে ভালোবাসি, সবসময় ভালোবাসি,
কখনো তোমাকে ভুলতে পারিনি,
!
আমি নোংরা নই আমি তোমাকে ভালোবাসি,
!
আমি আপনাকে ভালোবাসি না আমি শুধু আমার বাচ্চা দুটোর সাথে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে বাচতেঁ চাই,
!
আমি তো তোমাদের নিয়ে বাচঁতে চাই সোনা,
!
তারপর আমি ওনাকে কোনো মতে ছাড়িয়ে আমার রুমে চলে যাই,
….
আর বাচ্চাদের জড়িয়ে ঘুমিয়ে পরি,
!
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কিচেনে গিয়ে দেখি,
……
উনি রান্নাবান্না করছেন,
……
তাতে আমার কি?
…….
ভালোই হলো,
এখন থেকে নিজের খাবার নিজে বানিয়ে খাবেন
চলবে
!
আর সবাই সাথে সাথে,
ওর পরে যাওয়া দেখে মুচকি মুচকি হেসে দেয়,
!
তারপর সবাই আরিয়ান কে ধরাধরি করে হসপিটালে নিয়ে যায়,
……
তখন ডক্টর আরিয়ানেরর চেকআপ করে বলেন,
……
পেশেন্ট ওপর থেকে নিচে পরে গিয়ে তার কপালে গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হয়েছেন,
….
বাট নাও হি ইজ অ্যাবসোলুটলি ফাইন,
……..
তবে তাকে প্রপার বেড রেস্টে রাখতে হবে,
…..
দু-মাস বেড রেস্টে থাকলেই সুস্থ হয়ে যাবেন,
!
ওকে ডক্টর,
!
তারপর ইমান আরিয়ান কে ওর বাসায় দিয়ে অফিসে চলে যায়,
…….
অফিস করে রাতে বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে কিচেনের দরজায় পা রাখতেই,
…
ইলিশ পোলাও এর গন্ধে পাগল হয়ে যায় ইমান,
…….
তাই আস্তে আস্তে মিশকার কাছে এগিয়ে যায়,
!
হঠাৎ মিশকার ঘাড়ে কারো গভীর নিঃশ্বাস এসে পরে,
….
নিঃশ্বাসের গভীরতা অনুমান করতে পরে পেছনে ফিরে বলে,
!
কি সমস্যা কি?
কি চান কি আপনি হুমম?
!
না মানে রান্না হবে কখন?
!
যখন হবে তখন দেখতেই পাবেন,
এখন আপনি আসতে পারেন,
!
ইয়া মানে বাবুরা কোথায়?
!
আমার বাবুরা ঘুমচ্ছে,
তাই ওদের বিরক্ত করবেননা কেমন?
!
জ্বি আচ্ছা,
ওকে ঠিক আছে,
!
ময়না,
!
জ্বি বৌ রানী?
!
রান্নাকরা হয়ে গেছে, ওনা কে খেতে দাও,
!
জ্বি বৌ রানী দিচ্ছি,
সাহেব আসেন,
!
হ্যা আসছি,
তোমরা যাও,
!
ইয়ে মানে বলছিলাম কি?
চলো না আমার সাথে বসে খাবে প্লিজ,
!
নো থ্যাংকস,
বাট আপনার সাথে বসে খাওয়া বা গল্পকরার কোনো টারি ইচ্ছে নেই আমার,
!
কেন?
!
সে ইচ্ছে অনেক আগেই ফুরিয়ে গেছে মিস্টার খান,
!
মিশকার কথা শুনে ইমানের চোখ দুটো লালচে বর্ণ ধারন করে,
!
কিন্তু মিশকা সেদিকে লক্ষ না করে ওর রুমে চলে যায়,
!
আর ইমান চুপটি করে খেতে বসে যায়,
!
খাওয়াদাওয়া শেষে ময়না পাখি কে বলে,
!
তোমাদের বৌ রানী খেয়েছে?
!
জ্বি সাহেব,
!
আচ্ছা আরিয়ান হঠাৎ করে পরলো কি করে?
!
তখন ওরা হাসতে হাতে বলে,
……
বৌ রানী না সিরি তে অল্প করে তেল ফেলে রাখতে বলেছিল,
……
আর তাতেই বজ্জাত টা আছাড় খেয়ে পরেছে,
হা হা হা,
!
ওদের কথা শুনে ইমান হাসতে হাসতে ওর রুমে চলে যায়,
আর ভাবে,
!
আগে তুমি আমাকে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে রাখতে,
………
সেই তুমি আমাকে এখন এক মুহূর্ত নিজের আশে পাশে সহ্য করতে পারেনা,
……
আমাকে দেখলেই তোমার চোখ দুটো ঘৃণায় জলজল করে ওঠে,
!
তুমি আমাকে ঘৃণা করো এখানে তোমার কোনো দোষ নেই,
……..
আমি তোমাকে আমাকে ঘৃণা করার রাস্তা করে দিয়েছি,
!
কিন্তু,
আমাদের বাচ্চা দুটো ও কি আমাকে এভাবে ঘৃণা করবে?
…….
না এটা হবে না,
ওরা এতো টা নির্দয় হবে না,
!
তারপর ইমান হাটতে হাটতে মিশকার রুমে চলে যায়,
……..
বেখেয়ালে রুমে ঢুকে পরতেই মিশকা ওকে ঝাড়ি মেরে বলে,
!
এই যে আপনার সমস্যা কি?
দেখছেন না ওদের খাওয়াচ্ছি?
কতো বার একটা কথা বলতে হবে
!
………যে যখন তখন এখানে চলে আসবেন না,
……..
!
না মানে আসলে ওদের দেখতে এসেছিলাম,
!
দেখা হয়ে গেছে?
এখন প্লিজ আসুন,
!
বলছি কি?
আচল টা ঠিক করে নাও দেখা যাচ্ছে,
!
তাতো যাবেই,
তাই তো আপনি এখানে এসেছেন,
বেবিরা তো বাহানা মাএ,
!
না বিশ্বাস করো আমি সত্যি?
!
কি সত্যি?
কি মিথ্যে আই রেলি ডোন্ট কেয়ার,
!
তাই আপনি এখন আসতে পারেন,
!
আর বিশ্বাস করা তাও আবার আপনাকে?
!
আপনাকে বিশ্বাস করা আর শোয়ালের কথায় নাচানাচি করা একি বিষয় মিস্টার খান,
!
তাছাড়া আপনার মতো ঠকবাজ কে বিশ্বাস করে একবার ঠকেছি,
…. …….
তাই বারবার ঠকার কোনো ইচ্ছে নেই আমার,
……
প্লিজ এখান থেকে চলে গিয়ে আমাকে বাধিত করুণ মিস্টার খান,
!
কিন্তু কে শোনে কার কথা?
……
শয়তান টা নিচে মাদুর বিছিয়ে শুয়ে পরে,
!
ব্যাটার গায়ে বোধ হয় গন্ডারের চামড়া,
কোনো কথাই তো গায়ে লাগেনা তার
!
আমি ওনাকে সহ্যকরতে পারিনা এটা বোধয় ওনার মাথায় ঢোকে না,
!
আজকে শুয়েছ তো কি হয়েছে?
!
কালকে তোমার কপালে শনি নাচে মিস্টার খান,
!
অসহ্য একটা,
মুখ দেখলেই মেজাজ টা বিগড়ে যায় আমার,
!
বিশ্রী, বাজে একটা যেন কোথাকার,
……..
ফ্লোরে শুয়ে নিজেকে মহান প্রামাণের চেষ্টা চলছে?
…..
চালিয়ে যাও চালিয়ে যাও যত পারো চালিয়ে যাও,
……
আমি আর তোমার ফাদেঁ পর ছিনা মিস্টার খান,
!
অনেক খেল খেলিয়েছ,
আর না স্বামী নামের জন্তু বলে আপনার কোনো অধিকার নেই আমার সুখস্বচ্ছন্দ কেরে নেওয়ার ,
!
কারন তোমাকে আমি ঘৃণা বই আর কিছু করিনা,
চলবে
!
আমার কথা শেষ হতে না হতেই উনি হনহন করতে করতে বেড়িয়ে যায়,
!
আর সাথে সাথে আমার ফিক করে হাসি পেয়ে যায়,
……….
তাই আমি হাসতে হাসতে আমার পরাণের পরাণ দুটো কে বুকে জড়িয়ে নেই,
……..
তারপর ওদের আদর করে ঘুম পারিয়ে,
ওনার আনা লাউ শাকের ভর্তা,ভাজি,ঝোল ইত্যাদি দিয়ে ভাত গুলো খেয়ে ফেলি,
এবং লম্বা একটা শাওয়ার নিয়ে হেয়ার ড্রাইয়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে,
…..
দুজনের মাঝে গিয়ে শুয়ে পরি,
!
ইদানীং আমার পরাণের পরাণ দুটো খুবি দুষ্টু হয়ে গেছে,
…..
এদিক ফিরে শুবে ও দিক ফিরে শুবে,
সবশেষে তাদের হাত পা সব আমার গায়ে তুলে দিবে,
আর পুরো কোলবালিশেরর মতো আমাকে জড়িয়ে থাকবে,
…
আর আমি যদি তাদের হাত পা সরাতে যাই,
,,,,,,,
মাগো মা আল্লাহর ওয়াস্তে এ্যা এ্যা এ্যা করে কান্না জুড়ে দিবে,
!
তখন আবার তাদের সামলাতে সামলাতে তেরো টা বেজে যাবে আমার,
!
তারপর আমার পরাণের পরাণদের গালের চুমু খেয়ে ওদের জড়িয়ে ঘুমিয়ে পরি আমি,
!
মাঝরাতে ঘুমঘুম চোখে চেয়ে দেখি,
!
উনি আমার কোলের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা পরাণের পরাণ দুটোর গালে আলতো করে চুমু একেঁ দিচ্ছে,
!
ঢং দেখলে গা জ্বলে যায় আমার,
আল্লাদে বাঁচোনা?
তাই না?
!
ঢং আর আল্লাদ দুটোই ছাড়াচ্ছি তোমায় দাও তুমি মিস্টার ইমান খান,
!
তাই আমি তাকে ধাক্কা মেরে তাকে বিছানা থেকে ফেলে দেই,
!
কি সমস্যা কি আপনার?
আপনি আমার দুধের শিশুর সাথে নোংরামো করছেন কেন?
!
আমি তো একটু আদর করেছি ,
!
লিসেন আমার বাচ্চার জন্যে আমি যথেষ্ট,
……
আপনার কোনো আদরের প্রয়োজন নেই তাদের,
!
তাই প্লিজ ওদের থেকে দূরদূরে থাকবেন কেমন?
!
তুমি?
!
কি তুমি?.
!
ভালোয় ভালোয় বলছি এখান থেকে চলে যান প্লিজ,
!
নাহলে কিন্তু আমি লঙ্কা কান্ড বাধিয়ে ফলবো বুঝলেন?
!
কি হলো চুপ করে আছেন কেন?
যান এখান থেকে চলে যান,
আমি আপনাকে জাস্ট আর নিতে পারছিনা বুঝলেন?
!
না সেটুকু বোঝার ক্ষমতা আল্লাহ আপনাকে দেয়নি?
!
আমি যাচ্ছি,
চলে যাচ্ছি এখান থেকে,
!
হ্যা যান যান তাড়াতাড়ি যান,
…………..
বিপদে পরে এখানে এসে উঠেছি,
সেই সুযোগ, সুযোগের সৎ ব্যাবহার করছেন তাই না?
!
চলে যাবো আমি এখান থেকে,
চাইনা আমার আপনার দেওয়া নিরাপত্তা গট ইট?
!
আপনি নিজেই তো আমার জন্যে ক্ষতিকর তো নিরাপত্তা দিবেন কার থেকে হুমমম,
!
আমি চলে যাচ্ছি,
আমি আসবো না তোমাদের কাছে,
……
আমি সরি,
আমার ভুল হয়ে গেছে,
!
তারপর উনি আমার রুম থেকে কাঁদতে কাঁদতে চলে যায়,
!
আর আমি দরজা লাগিয়ে ,
আবারো আমার পরাণের পরাণ দুটো কে বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পরি,
!
পরেরদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে শাওয়ার নিয়ে,
নামাজ পরে আমি কিচেনে চলে যাই,
!
তারপর বাসার সকলের জন্যে ব্রেকফাস্ট বানাই,
…..
আর নিজের জন্যে গ্লুকোজ বানিয়ে রুমে চলে যাই,
!
সেখানে গিয়ে দেখি,
উনি,
……..
আমার পরাণ দুটো কে কোলে জড়িয়ে ওদের সাথে দুষ্টুমি করছেন এবং হাসাহাসি করছেন,
!
কোন অধিকারে? আর কোন সাহসে? উনি বারবার আমাদের কাছে ছুটে ছুটে আসেন?
আর কেনই বা আসেন?
!
উনি ওনার কোনো অধিকার নেই?
না আমার ওপরে না আমার সন্তানের ওপরে,
!
তখনি কিছু একটা পরে যাওয়ার শব্দ হয়,
!
শব্দ শুনে উনি দরজার দিকে তাকিয়ে,
……
হঠাৎ করে আমাকে দেখে,
ভূত দেখার মতো চমকে যায়,
!
সাথে সাথে উনি আমাকে আমতা আমতা করে বলেন,
………
আসলে তুতততমি ছিলে না,
আর ওরা একা একা খেলছিল,
তাতাতাই আমি এখানে এসেছি ,
!
তা ভালোই হয়েছে,
এখন আপনি আসতে পারেন,
!
ইয়ে মানে একটা রিকোয়েস্ট করবো?
!
কি?
!
আমি কি এখানে থাকতে পারি?
!
না থাকার দরকার নেই?
!
প্লিজ একটু থাকি না প্লিজ?
!
সোজা কথা আপনার কানে যায়না?
তাই না?
!
একটু একটু প্লিজ?
!
এই আমি কি আপনার সামনেই আমার বাচ্চাদের খাওয়াবো হুমমম?
!
হ্যা না মানে প্রবলেম কোথায়?
!
প্রবলেম টা আপনি মিস্টার খান,
তাই প্লিজ আমার বাচ্চা দুটো কে রেখে চলে যান প্লিজ,
!
আমি একটু ওদের সাথে থাকি না প্লিজ,
!
এই আপনি দেখতে পাননা আমার বাচ্চা দুটো কাঁদছে?
খিদে পেয়েছে ওদের,
কি চান কি আপনি?
… . ।।।।
আমার বাচ্চা দুটো কে কি না খাইয়ে মারতে চান?
!
আমার কথা শুনে উনি ওদের বিছানায় শুইয়ে দিয়ে চলে যায়,
!
তারপর আমি ওদের দুধ খাইয়ে ছেলে কে ঘুম পারিয়ে,
মেয়ে কে নিয়ে পাইচারি করতে থাকি,
!
পাইচারি করতে করতে ওনার রুমের সামনে এসে দেখি,
…..
উনি সোফায় শুয়ে হাত-পা গুটিয়ে বাচ্চাদের মতো ডুকরে ডুকরে কাঁদছেন,
!
তবে তাতে আমার কি?
আমি যা হাড়িয়েছি তার তুলনায় আপনারর কষ্ট কিছুনা মিস্টার খান?
!
ভালোবাসতাম আমি আপনাকে,
সেই আপনি আমার ভালোবাসার অমর্যাদা করেছেন,
মিস্টার খান,
……..
আমার বিশ্বাস, ভরসা ভালোবাসা নিয়ে খেলেছিলেন আপনি,
. । . । . । .
আমি আপনাকে ক্ষমা করবো না কখনওই না,
!
তখনি হঠাৎ করে ময়নাপাখি ছুটে এসে বলে,
!
সাহেব আরিয়ান সাহেব কে এই মাএ তার গাড়ি নিয়ে বাসার গেট দিয়ে ঢুকতে দেখলাম,
…..
উনি তো এসে পরলো বলে,
এখন কি হবে?
!
কিছু হবে না তোমার বৌ রানী ও বাবুদের নিয়ে,
রুফ গার্ডেনে চলে যাও,
বাকি টা আমি সামলে নিবো,
!
তারপর ময়নাপাখি তাড়াতাড়ি আমাকে আমার বেবি সহ বাসার ছাদে নিয়ে যায়,
!
তারপর আরিয়ান যেন সন্দেহ না করে,
তাই ময়নাপাখি কে নিচে পাঠিয়ে দেই,
!
তখনি বাসার কলিং বেল বেজে ওঠে,
!
আর ময়না খুবি স্বাভাবিক ভাবে গিয়ে দরজা খুলে বলে,
!
আরে সাহেব আপনি?
!
হ্যা আমি তোমাদের সাহেব কোই?
!
সাহেব তো ঘুমে?
!
কি ও এতো ঘুমোয় ক্যান?
!
জানিনা সাহেব?
মনে হয় শরীর টা ভালা না ,
তাই মটকা মেরে মেরে পরে পরে ঘুমচ্ছে সাহেব,
!
তবে মেগো বৌ রানী থাকলে হের ঘুম এক্কেরে ছুটাইয়া দিতো,
!
ওমা তাই?
!
হ সাহেব, আমনে বাহিরে খাড়াইয়া আছেন কেন?
ভিতরে আহেন?
!
ভিতরে এসে কি করবো?
ডিরেক্ট তোমার স্যরেরর রুমে যাবো,
!
তাই আরিয়ান সাথে সাথে এক দৌড়ে ইমানের রুমে চলে যায়,
!
আর গিয়ে দেখে ড্রিংকের বোতল বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে ও,
!
তাহলে আমি ঠিক মিশকা এখানে নেই,
থাকলে ওর আর এ অবস্থা হতো না হুমম?
!
তবু ও বাসার অন্যরুম গুলো তে একবার চোখ বুলতে হবে,
!
তাই ও ইমান কে ডেকে তুলে অফিসের বাহানায় এ ঘর ও ঘর করে চোখ বুলতে থাকে,
!
কিন্তু,
কোথাও কোনো কিছু খুজে পায় না ও,
!
তখন ইমান ওকে কাঁদতে কাঁদতে বলে,
!
ভাই তোর ভাবি কে খুজে দেনা ভাই,
…….
ওকে না পেলে আমি শেষ হয়ে যাবো?
!
আমি এখনো আমার বাচ্চাদের মুখ দেখিনি জানিস?
!
তোর ভাবি কোথায়?
তুই ওকে খুজে এনে দে না ভাই?
…..
তাহলে আমি মিশকা কে বিয়ে করতে চেয়েছি,
এতো কান্ড ঘটিয়েছি তার ও কিছুই জানেনা?
!
তাহলে তো ভালোই,
দ্যাট মিনস আমার মিশকা এখানে নেই?
!
আমি কতো আশা নিয়ে এসেছিলাম,
সব আশায় জল ঢেলে দিলো ও?
!
মিশকা এখানে থাকলে ইমানের অবস্থা আরো ভালো হতো,
এভাবে দেবদাস হয়ে ঘুরত না ও হা হা হা,
!
শালা দেবদাস তো আমি তোকে বানাবো দাড়া তুই দাড়া,
!
তারপর কথা বলতে বলতে সিরির কাছে আসতেই,
হঠাৎ করে আরিয়ান স্লিপ করে দোতলা থেকে গড়াতে গড়াতে ফ্লোরে পরে যায়,
!
আর সবাই সাথে সাথে,
তাদের ওর পরে যাওয়া দেখে মুচকি মুচকি হেসে দেয়,
চলবে
!
আপনার ওই নোংরা হাত দিয়ে আমার বেবি কে ছোঁবেন না আন্ডারস্ট্যান্ড অর ইউওর বেটার আন্ডারস্ট্যান্ড,
!
বুঝতে পেরেছি,
!
তাহলে আপনি এখন আসতে পারেন,
কারন আপনার চেহারা দেখার ইচ্ছে আমার বা আমার বেবিদের কারো নেই বুঝলেন মিস্টার খান,
!
হুমমম,
!
তাহলে দরজা খোলা আছে আপনি এখন আসতে পারেন,
!
চলে যাবো বলছ?
!
নাতো কি?
……………..এখানে শং সেজে দাঁড়িয়ে থাকবেন?
!
আচ্ছা তাহলে আমি যাচ্ছি,
!
শুনুন,
!
হ্যা বলো?
!
আমাকে আমার বাসায় দিয়ে আসবেন কবে?
!
যতদিন না আরিয়ান কে আইনের আয়তায় আনা হচ্ছে ততদিন তোমাকে এখানে থাকতে হবে,
!
যতসব বিরক্তিকর,
আপনি এখন আসতে পারেন,
………
তারপর উনি ওখান থেকে চলে যায়,
……..
আর আমি আমার পরাণের পরাণ দুটো কে আদর করে দুধ খাইয়ে ঘুম পারিয়ে দেই,
…….
তার কিছুক্ষণ পরে হঠাৎ করে আমার পানির পিপাসা পেয়ে যায়,
…….
তাই আমি পানির জাগ নিয়ে দরজা খুলতে যাই,
………….দরজা খোলার জন্যে কয়েকবার টানাটানি করতেই দেখি,
……
বেটা শয়তান বাহিরে থেকে দরজা টা লাগিয়ে গেছে,
……..
ইসসসসস,
এখন আমি পানি খাবো কি করে?
….
মন চাইছে শয়তান টাকে ধরে ইচ্ছে মতো জুতো পেটা করি,
……………..
তখনি খট করে দরজা খোলার শব্দ হয়,
………সাথে সাথে পেছন ফিরে দেখি……..
…………………
উনি এক গ্লাস পানি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন…………
!
কি হলো আপনি এখানে?
!
তোমার জন্যে পানি নিয়ে এসেছি…………………………
শুধু পানি?
!
মানে?
!
পানি তে বিষ মিশিয়ে নিয়ে আসেননি আমাকে খাইয়ে আমি ও আমার বাচ্চা দুটো কে মারতে?
!
আমি কেন এমন করবো?
!
যে মানুষ ব্যভিচার করতে পারে,
সে মানুষ খুন ও করতে পারে মিস্টার খান,
!
তখনি খেয়াল করে দেখি,
ওনার চোখ দুটো ছলছল করছে………… …………
!
কিন্তু তাতে আমার কি?
!
উনি যেটা আমার সাথে করেছেন তার থেকে জঘন্য,
আর কিছু হতে পারে না,
!
কি হলে পানি টা খাও?
খাবে না?
!
নাহহহহ,
দুধের শিশু দুটো কে ফেলে আমি এখনি পড়োপাড়ে যেতে পারবোনা মিস্টার খান,
…………..তাই আপনি এটা নিয়ে জান….
!
তারপর উনি এখান থেকে চোখ মুছতে মুছতে চলে যায়……
……
!
তুমি কেন আমাকে এভাবে পরীক্ষা করছ আল্লাহ?
……
আমি তো কারো ক্ষতি করিনি,
….
তাহলে তুমি কেন আমার সবকিছু কেড়ে নিয়ে আমাকে এভাবে পরীক্ষা করছ আল্লাহ?
!
ও আমাকে কত ভালোবাসতো এখন ও আমাকে এক মুহূর্ত সহ্য করতে পারেনা,
!
আমি জানি ও আমার কাছে থাকতে চাইবে না,
!
তাই যে কয়দিন ওরা আমার কাছে থাকবে আমি ওদের অনেক যত্ন করবো,
!
যাতে ওরা আমাকে একটু হলে ও ক্ষমা করতে পারে,
!
তবে যাই হোক এভাবে বাসায় বসে থাকা যাবেনা,
!
তাহলে আরিয়ানের সন্ধেহ হয়ে যাবে,
আর ও মিশকার সন্ধান পেয়ে যাবে,
!
তাই তো ও ওর সন্দেহ দূর করতে আমার অফিসে ও বাসায় খোজ নিতে লোক পাঠিয়ে ছিল,
!
সাহেব আপনি আমাদের ডেকেছেন?
!
হ্যা আমি অফিসে যাবো তোমরা ওদের দেখে রেখ প্লিজ,
!
আমরা বৌ রানী ও বাচ্চাদের আগলে রাখবো আপনি চিন্তা কইরেন না সাহেব,
!
ওকে তাহলে আমি আসি,
!
জ্বি সাহেব,
!
মারুফ কোনো খবর পেলে?
!
না স্যরর,
আমি নিজেই ইমান স্যারেরর বাসায় ও অফিসে গিয়ে খোজ নিয়েছি স্যরর,
!
আমি জানি মিশকা কখনওই ইমানের কাছে যাবে না,
…….
তাহলে ও গেল টা কোই?
!
মারুফ শোনো আমার শশুড় বাড়ির সবার ওপরে নজর রাখো,
আর হ্যা তোমার ম্যামের বন্ধুদের ওপর ও নজর রেখো কেমন?
!
জ্বি স্যরর,
!
কিরে বোন কি এতো ভাবছিস?
!
ভাবছি আমার ভাবি কতো চালাক,
সৈই তোকে নাকানিচোবানি দিয়ে পালিয়ে গেল,
!
আমি ও তো ভাবছি ও কি করে কি করল?
!
ভাব ভাব যতে পারো ভাব,
ছেমড়া সাইকো জানি কোথাকার?
আমি একটা মেয়ে হয়ে,
আরেক টা মেয়ে কে কি করে কষ্ট পেতে দেখতাম?
!
তাই আমি ইমান ভাইয়া কে হেলফ করে,
ওর জিনিস ওকে ফিরিয়ে দিয়েছি,
এখন,
তুই খোজ আর খোজ ওক্কে ব্রো?
!
টাকাপয়সার লোভে আমার ভালোবাসার মানুষ টাকে মেরে বাবার বয়সী লোকের সাথে বিয়ে দিয়েছিস আমার,
আমি কিছুই ভুলিনি ভাইয়া,
!
লোক টা আমাকে অনেক ভালোবাসে,
কিন্তু,
সে আমাকে ছুঁইয়ে দিলে আমার নিজেকে ঘৃণা করে,
!
অনেক হয়েছে আর না,
…….
তোর পাপের গড়া পূর্ণ্য হয়েছে ভাইয়া,
!
তুই কখনওই জানতে পারবি না মিশকা এখান থেকে গায়েব হলো কি করে?
!
কি ভাবছ আরিয়ানা?
!
ভাবছি আমার ভাবি তোমাকে “নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছে ”
হা হা হা,
!
আমার সাথে মশকরা করো?
!
নাহহহহ জাস্ট বললাম আর কি?
!
মাম্মা তুমি কিছু খেয়ে নাও প্লিজ?
!
কি করে খাবো?
আমার মেয়ে টা বাচ্চা দুটোর দুদিন ধরে কোনো খোজ পাওয়া যাচ্ছেনা,
ওরা কোথায় আছে কি করছে?
আল্লাহ তায়ালা জানেন,
!
আমার বিশ্বাস আমার মেয়ে টা ঠিক আছে ওর কিছু হয়নি,
!
আমার তো মায়ের মন তাই না?
আমি নিজের মন কে কি করে বোঝাবো হুমম,
…………
দেখো আমাদের কিছু চাইনা শুধু আমার মেয়ে আর নাতিনাতনি দুটো কে ফেরত চাই,
!
তুমি কান্নাকাটি করোনা মাম্মা মিশকা ঠিক আছে ও নিশ্চই আমাদের কাছে ফিরে আসবে,
!
জানিনা আম্মু আব্বুর কি অবস্থা হচ্ছে?
খুব টেনশন হচ্ছে আমার,
!
আমি কি আসতে পারি?
!
হ্যা আসুন,
!
এই নাও ডিনার করে নাও?
আমি তোমার জন্যে লাউ শাকের ভর্তা, লাউশাকের ঝোল, লাউশাকের ভাজি রান্না করিয়েছি,
!
তো?
!
তুমি এ গুলো খাবে তাহলে তোমার ও বাবুদের শরীর ভালো থাকবে হুমম,
!
আমি খাবো না কি করবেন আপনি?
!
আমি জানি বেবি হওয়ার পর থেকে তুমি লাউ না মানে লাউশাক খাও,
!
তো তাতে আপনার কি?
!
কিছুনা তোমার শরীর ভালো থাকবে ভেবে,
!
শুনুন আমার চিন্তা করা ছেড়ে,
…..
নিজে গিয়ে শাকসবজির দোকান খুলে বসুন আপনার কাজে দিবে কেমন?
!
বিজনেসম্যান থেকে শাকসবজি ওয়ালা নট ব্যাড,
তবে আমি শাকসবজির দোকান দিবো,
!
যদি তুমি আমার রেগুলার কাস্টমার হও,
!
অসভ্য বেটা তোর কাস্টমার হওয়া তো দূরের কথা,
তোর মুখ টাও দেখার সখ নেই আমার,
যা ভাগ এখান থেকে,
!
তুমি আমার সাথে ভালো করে,
!
পারিনা কথা বলতে,
সো প্লিজ এখনি এখান থেকে বেড়িয়ে জান মিস্টার খান,
!
তোমার সাথে কথা ছিল?
!
ইউ নো হোয়াট?
ইউ আর জাস্ট অসহ্য,
জান এখান থেকে বেড়িয়ে যান,
!
আমার কথা শেষ হতে না হতেই উনি হনহন করতে করতে বেড়িয়ে যায়,
চলবে
!
আরিয়ানের কথা শুনে আমার ভাইয়েরা ওকে ঘাড় ধরে আমাদের বাসা থেকে বেড় করে দেয়,
!
রাতে যখন আমি বাবুদের ঘুম পরাচ্ছিলাম,
তখন মিয়াদ ভাইয়া এসে বলে,
!
রুহান কোই?
আপুনি ওকে তো অনেকদিন ধরে দেখি না,
!
একচুয়ালি ভাইয়া তোরা যেদিন রাতের ফ্লাইটে লন্ডন থেকে বাংলাদেশে ফিরছিলি,
ওইদিন রাতের ফ্লাইটে রুহান ও লন্ডন গেছে বিজনেস কনফারেন্সেরর জন্যে,
!
ছেলেটার এলেম আছে বল?
লেখাপড়া ব্যবসা বাণিজ্য সব একহাতে সামলায়,
!
হুম তাতো আছেই,
দেখতে হবে না ছোটো বেলার বেষ্ট ফ্রেন্ডটা কার,
!
আচ্ছা তোর মনে হয় না একটু ডিফ্রেন্ট অন্যসব ছেলেদের থেকে?
!
হ্যা তো?
!
জাস্ট বলছি আরকি?
!
দেখো ভাইয়া তোমাদের জাস্ট ওই জাস্ট পর্যন্ত রাখো নয় তো আমি খারাপ কিছু করে ফেলবো,
!
ধুররররর,
পাগলি রুহান অনেক কেয়ারিং,
তাই বলছিলাম আর কি?
!
এই ভাইয়া এই কি হয়েছে কি তোর হুমম?
!
এসে থেকে শুধু রুহান রুহান করছিস,
বাকি সবার মতো কি তোর মাথা টাও খেয়ে ফেলেছে ও?
!
না মানে,
!
দেখো ভাইয়া হি ইজ মাই বেস্ট ফ্রেন্ড এর থেকে বেশি কিছুনা গট ইট?
তাই তোমরা হাতি ঘোড়া ভেবো না কেমন?
!
নারে বাবা ভাবছি না,
জাস্ট বলছি আরকি,
!
জাস্ট বলা হয়ে গেছে এখন তুমি আসতে পারো,
বিকজ আমি এখন ঘুমবো মিয়াদ ভাইয়া,
!
আচ্ছা বাবা যাচ্ছি,
!
হ্যা যা ভাগ এখান থেকে,
জবে থেকে আসছে রুহান রুহান করে মাথা খেয়ে ফেলছে শয়তানি যেন কোথাকার?
!
তারপর আমি আমার পরাণের পরাণ দুটো কে বুকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরি,
!
পরেরদিন সকালে ইউনিভারসিটি যেতেই,
শয়তান রুহান টা আমার চুল টেনে ধরে বলে,
!
আমি তোকে কত মিছ করেছি লন্ডনে তুই সেটা জানিস?
!
ওমা তাই?
!
জ্বি,
!
আমি তো ভেবেছি দশবারো টা গালফ্রেন্ড নিয়ে চিললল করেছিস?
!
ডু ইউ থিংক আমি মেয়েদের সাথে টাইম পাছ করার মতো ছেলে?
!
নাহহহহ মনে করি না,
করতে ও চাই না?
!
এএএএএ, তুই এমন কেন?
!
জানিনা,
!
তা জানবি কি করে?
ছোটো বেলা থেকে আমাকে দেখছিস তবু ও আমাকে অন্য ছেলেদের মধ্যে গুলিয়ে ফেলছিস,
!
ও.এম.জি তাই নাকি গুডবয়?
আই এম সরি ফর দিছ গুডবয়,
!
তুই আবারো এমন করছিস?
!
শোন রুহান ওকে বলে লাভ নেই,
মেজাজ টা ভালো নেই ওর,
!
কেন?
!
আরে আরিয়ানের জন্যেরে ভাই তোকে বললাম না,
লুচ্চা টা বাড়ি বয়ে গিয়ে মিশকাকে তুলে আনার হুমকি দিয়ে এসেছে?
!
কুওার লেজ জীবনে সোজা হয় নারে ভাই ওটা ও সোজা হবে না,
!
আর মিশকাকে তো হুমকি দিয়ে আসারি কথা,
আফটার অল আমার মিশকা এতো মায়াবী বলে কথা,
আর তাই তো ইমান এখনো মিশকার কথা ছাড়তে পারেনি,
!
ওওওও হ্যালো,
ইউ জাস্ট শাট আপ আমি এখানে ওদের কথা শুনতে আসিনি ওকে?
!
আচ্ছা বাবা ঠিক আছে,
বাবুরা কেমন আছে?
!
আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছে,
!
ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া করে?
!
কেন রে আমার দুটো কি হাতিঘোড়া খায়?
তুই জানোস না কি খায় ওরা?
!
তুই এতো রেগে যাচ্ছিস কেন?
!
রাগ হচ্ছে তাই,
!
এতো রাগ কেন হচ্ছে তোর?
!
তোকে অনেকদিন পেটাই না তাই,
!
কি?
!
কি হ্যা,
তারপর আমি রুহান কে ধরে উওম-মাধ্যম দিতে শুরু করি,
!
পরে ও আমার পেছনে দৌড়ানি দিতে শুরু করে,
!
রুহানের দৌড়ানি থেকে বাচঁতে আমি ইউনিভারসিটির বাহিরে চলে যাই,
!
তখনি কতো গুলো লোক আমাকে জোড় করে তুলে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে ক্লোরোফোম শুকিয়ে বেহুশ করে দেয়,
!
হুশ ফিরতেই চোখ খুলো ভালো করে চেয়ে দেখি যে,
আমাকে বিয়ের সাজ পোশাক পরিয়ে একটা বেডে শুইয়ে রাখা হয়েছে,
!
তখনি ভালো করে সামনে তাকিয়ে দেখি,
!
আরিয়ান শেরওয়ানি ও মাথায় পাগড়ি পরে আমার সামনে বড়বেশে দাঁড়িয়ে আছে,
!
এসবের মানে কি?
!
ভালোকথায় মিষ্টি কথায় তুমি তো আমাকে বিয়ে করবেনা ভালোবাস বেনা,
তাই জোড় জোড় করেই নিতে হবে সব,
!
আর আমি যখন তোমাকে ভালোবেসেছি,
তোমার সাথে সংসার করার স্বপ্ন দেখেছি আমি তোমার সাথে সংসার করবো,
তুমি আমার সন্তানের মা হবে,
আমার সন্তানেরা তোমাকে মা বলে ডাকবে,
!
অসভ্য জংলি কুওা আমি তোকে ভয় পাই না,
!
তুমি ভয় পাবে সোনা,
কারন তোমার পরাণের পরাণ দুটো আমার কাছে বন্ধি,
!
মানে মানে টাকি,
!
মানে তোমাকে বোঝাচ্ছি বিউটিফুল,
!
তারপর ও ওর আই প্যাড টা বেডের ওপরে ছুড়ে মারে,
!
সাথে সাথে আমি আই প্যাড অন করে দেখি,
!
আমার পরাণ দুটো কে আরিয়ানের লোকেরা দোলনায় শুইয়ে রেখে পাহারা দিচ্ছে,
!
হোয়াট ইজ দিছ আরিয়ান?
!
মাই ট্রাম কার্ড বেবি,
ভালোবাসা চেয়েছি ভালোবেসে তো দিবে না তাই,
!
কেন?
কেন?
এমন করছ?
কি ক্ষতি করেছি আমি তোমার?
!
তুমি আমার কোনো ক্ষতি করনি,
আমি তোমাকে ভালোবেসেছি,
আজ ও বাসি সারাজীবন বাসবো তোমাকে তোমার সন্তান কে,
!
অনেক বার চেষ্টা করেছি সোজা আঙুলে ঘি ওঠাতে,
কিন্তু সোজায় যখন কাজ হলো না,
তাই আঙুল টা একটু বাকিয়ে নিয়েছি জান,
!
দেখো আমি তোমার দুধের শিশুদের কোনো ক্ষতি করতে চাই না,
আমি ওদের ভালোবাসি ওদের বাবা হতে চাই,
!
তুমি আমাকে ওদের বাবা হওয়ার সুযোগ করে দাও,
কি হলো দিবে?
কি হলো কাঁদছ কেন হুমমম,
!
আমমি রাজি,
আমার বাচ্চাদের কিছু হবে না তো?
!
না সোনাপাখি,
!
মারুফ?
!
জ্বি স্যরর,
!
যাও কাজি কে ডেকে আনো,
!
বাচ্চা দুটো কে কি করবো স্যরর?
!
কি করবো মানে?
ওরা আমার সন্তান আমি ও তোমাদের ম্যাম আসা না পর্যন্ত ওদের ভালো করে যত্ন নিবে তোমরা,
!
জ্বি স্যরর,,
!
তারপর হঠাৎ আরিয়ান ও মারুফ মাথা ঘুড়ে পরে যায়,
আর আমি ও সেন্সলেস হয়ে যাই,
!
সেন্স ফিরতেই পাশ ফিরে দেখি,
!
আমার বাচ্চা দুটো আমার কোলের মধ্যে ঘুমিয়ে আছে,
মিস্টার খান আমার পায়ের কাছে বসে আছে,
!
ওহহহ,
বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি?
এক আপদ ছেড়ে আসতে বা আসতে আরেক আপদ রেডি,
!
আপনার দুজনে মিলে আমাকে নিয়ে খেলছেন তাই না?
!
আব্বুর ফোন এসেছিল,
তারপরে বুঝেছি আরিয়ান তোমাকে ও হসপিটাল থেকে বাবুদের তুলে নিয়ে গেছে ,
!
ওওও হ্যালো?
আমার সাথে মোটে ও চালাকি নস কেমন?
!
তোমার সাথে চালাকি করে লাভ কি বলো?
চালাকি করলেই কি তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিবে?
আমি জানি আমার কোনো প্রয়োজন তোমার নেই,
!
তবু ও এখানে তোমাকে নিয়ে এসেছি,
কারন আরিয়ান হিংস্র কুকুরের মতো তোমাকে সাড়া শহরে খুজে বেড়াচ্ছে,
!
তো তাতে আমার কি?
আমাকে আমার বাসায় দিয়ে আসুন,
!
আসবো না কারন তুমি বেবিদের নিয়ে কোথাও নিরাপদ নও,
!
হে ইউ আপনার এতো আমাকে ও আমাদের নিয়ে ভাবতে হবে না কেমন?
!
হাত সরান হাত সরান বলছি ,
!
আপনার ওই নোংরা হাত দিয়ে আমার বেবিদের ছোঁবেন না আন্ডারস্ট্যান্ড অর ইউওর বেটার আন্ডারস্ট্যান্ড,
!
!
!
চলবে
তোকে আর আমার সাথে হাটতে হবে না, আমি চাই না তুই আমার সাথে আর এক পা হাটিস, মিথিলা সাম্মি কে পিছনে ফেলে হাটতে শুরু করলো
সাম্মি ঠায় দাঁড়িয়ে আছে ভাবছে হারিয়ে যাওয়া বন্ধুত্বের দুষ্টু মিষ্টি সময় গুলোর কথা,ভাবছে ইহানের কথা
ইহান কে আমি ভালোবাসি কিনা জানি না তবে আজ মিথিলা কে কথা টা বলতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো,কেনো এমন হচ্ছে বুঝিনা,বন্ধুর থেকে বেশি কিছু ওকে কখনো ভাবিনি,তবে বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর ওর জন্য অন্যরকম টান অনুভব করছি, হয়তো কবুল বলার কারনে এই অনুভূতির সৃষ্টি,মুখস্ত এই মন্ত্র টিতে কি এমন যাদু আছে?এই অনুভূতিরর নাম কি ভালোবাসা? জানা নেই আমার
সাম্মির ভাবনাত ছেদ পড়ে গাড়ির হর্ন শুনে পাশে তাকিয়ে দেখে ইহান গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
সাম্মি গাড়িতে উঠতে উঠতে বললো
– এমনি নিয়েছি, অনেক দিন পর দেখা হয়েছো তো তাই
ইহান- ওহ
সাম্মি- তোকে একটা কথা বলতে চাই আমি
ইহান- অনুমতি নিতে হবে না,যে কোন কথা অবলীলায় বলতে পারিস আমাকে
সাম্মি- তুই মানে তুই আমাকে,না মানে আমি তোকে….
ইহান- কি বলবি বল
সাম্মি – না থাক অন্যদিন বলবো
ইহান গাড়ি ড্রাইভ করছে সামনের দিকে মনোযোগ দিয়ে,আর ভাবছে সাম্মি কি বলতে চায় তাকে
মিথিলা আজ বাসায় এসেই না খেয়ে শুয়ে পড়ে, মনে তার নানা রকম ভাবনা, যদি সেদিন আমি ইহানের প্রপোজ একসেপ্ট করতাম তা হলে কি আজকের দিন গুলো অন্য রকম হতো? হয়তো হতো, অরুর জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে অরুকে দেখে আমি বুঝতে ফেরেছি অরু ইহান আর সাম্মির বিয়েটা মেনে নিতে পারেনি, কিন্তু কি করবো আমি,অরু কষ্ট পাবে ভেবে একদিন আমি ইহান কে ফিরিয়ে দিয়েছি,কিন্তু সাম্মির কারো কথা ভাবার সময় হয়নি ভালো ই করেছে মেয়েটা ওকি আমার মতো বোকা নাকি
মিথিলার মোবাইল টা বিকট শব্দ করে ভেজে উঠলো, মিথিলা বিরক্ত হলো এই নির্ঝরিনী টা কি বুঝিনা এই রকম রিংটোন কেউ মোবাইলে সেট করে প্রচুর বিরক্তি নিয়ে মোবাইল হাতে নিয়ে দেখলো একটা আননোন নাম্বার থেকে কল আসছে রাত একটা বাজে এই সময় কল রিসিভ করতে ইচ্ছে করলো না তাই মোবাইল টা সাইলেন্ট করে রেখে দিলো
শেষ রাতে মিথিলার চোখে ঘুম এসে ভর করেছে কিন্তু দূরে মসজিদ থেকে মুয়াজ্জিনের কন্ঠের আজানের ধ্বনি তে মিথিলা শুয়ে থাকতে পারলো না উঠে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে জায়নামাজ বিছিয়ে নামাযে দাঁড়িয়ে গেলো
নামায শেষে জায়নামাজ গুছিয়ে রাখতে রাখতে মোবাইলের দিকে নজর গেলো মোবাইলের আলো জ্বলছে নিভছে, মনে পড়লো রাতের কথা মোবাইল সাইলেন্ট করে রেখেছিলো,এখন ও এক ই নাম্বার থেকে কল এসেই চলছে
মিথিলা এবার কল রিসিভ করলো
– হ্যালো কে বলছেন?
অপাড় থেকে একটা অপরিচিত কন্ঠ বল্লো
– ম্যাম চৌ রাস্তার মোড়ে একটা গাড়ির এক্সিডেন্ট করেছে গাড়ির ড্যাশ বোর্ডে একটা মোবাইল পাই সেখানে আপনার নাম্বার ‘ মেরা জুলিয়েট ‘ নামে সেভ করা আমার মনে হয়েছে আপনি উনার আপন কেউ হবেন তাই কল করেছি
মিথিলার মধ্যে কোন ভাবান্তর দেখা গেলো না নিরুত্তাপ কন্ঠে বল্লো
– লোকটার নাম কি
– লোকটার স্মার্ট কার্ডে দেখলাম ইভান চৌধুরী , আমার মনে হয় লোক টা ড্রিংক করে গাড়ি ড্রাইভ করছিলো, ম্যাডাম উনি খুব ই আহত, আমরা উনাকে মেডিকেলে পাঠিয়েছি আপনি তাড়া তাড়ি আসুন
মিথিলা কিছু না বলে লাইন কেটে দিলো, চুপ করে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকার পর বিরক্ত হয়ে বল্লো
– এই লোক টা আমাকে শান্তিতে থাকতে দিবে না দেখছি, মরতে যেয়ে ও আমাকে বেধে রেখে গেলো উফফ
মিথিলা- এক জায়গায় যাবো, তুই তো সকালে রেওয়াজ করা নিয়ে বিজি থাকিস তাই আমিই বানিয়ে নিচ্ছি
নির্ঝরিণী – হুম একদিন গানের রেওয়াজ না করলে কিচ্ছু হতো না,বাই দ্যা য়ে,যাচ্ছো কোথায়
মিথিলা- মেডিকেলে
নির্ঝরিণী – এতো ভোরে মেডিকেলে কেনো যাবে কার কি হয়েছে
মিথিলা- ইভান এক্সিডেন্ট করেছে, তাই পুলিশ আমায় ফোন করে যেতে বলেছে
নির্ঝরিণী কপাল কুঁচকে বল্লো
– ইভান এক্সিডেন্ট করেছে পুলিশ তোমায় ফোন করেছে কেনো?উনার বাবা মা কে কেনো করেনি? আর পুলিশ ফোন করে বলেছে বলেই কি তোমাকে যেতে হবে? এমন তো কোন কথা নেই, তুমি পুলিশ কে কেনো বলোনি তুমি তার ওয়াইফ নও
মিথিলা- তুই এতো প্রশ্ন করছিস কেনো?নিজেদের পার্সোনাল কথা বাইরের লোক কে বলতে যাবো কেনো,তা ছাড়া আইনত এখন ও আমি তার স্ত্রী
নির্ঝরিণী অবাক চোখে দেখছে মিথিলা কে মানুষ এতো বোকা হয় কি করে
– সে তো নায়া ডাইনী টা ও তার স্ত্রী, তা হলে তাকে কেনো ফোন করেনি
মিথিলা- জানি না এতো কথা বলিস না তো
,তুই আমার জায়গাতে থাকলে ক করতি?
নির্ঝরিণী – আমি হলে কানে তুলো, স্যরি হেড ফোন দিয়ে মিনারের গান শুনতে শুনতে একটা ঘুম দিয়ে উঠতাম,
মিথিলা- সর তো সব জায়গায় তোর ফাজলামি
মিথিলা সকাল সাড়ে সাত টায় মিডিকেলে পৌছল কাউন্টারে গিয়ে বয় কে জিজ্ঞাস করলো
– এক্সকিউজমি ইভান চৌধুরী কতো নাম্বার রুমে আছে বলতে পারবেন
বয়- কোন ইভান……
মিথিলা- আজ ভোর রাতে এক্সিডেন্ট করা একজন রুগী কে এখানে আনা হয়েছে শুনলাম
বয়- ও আপনি তার বাড়ির লোক,আসলে উনার অবস্থা খুব একটা ভালো না তার উপর কোন গার্ডিয়ান নেই,বড় স্যার এখন ও ঘুম থেকে উঠেনি তাই তাকে বারান্দায় রাখা হয়েছে
মিথিলা- হোয়াট একটা লোক মরে যাচ্ছে আপনার তার চিকিৎসা না করে তাকে ফেলে রেখেছেন,আপনারা মানুষ? আপনাদের বড় স্যার কে ফোন করুন
বয়- স্যরি ম্যাম স্যার কে ঘুম থেকে জাগানো নিষেধ আছে
মিথিলা রেগে গিয়ে বল্লো মানে কি এই সবের একটা লোক মরে গেলে ও উনি ঘুম থেকে উঠবে না,আপনি জানেন উনি কে
বয়- স্যরি ম্যাম উনি যেই হোন না কেনো, আমাদের কিচ্ছু করার নেই
মিথিলা রেগে গিয়ে বল্লো, এই শহরের নাম করা ধনীব্যক্তির তালিকায় উনার বাবা আতাহার চৌধুরীর ছেলে ইভান চৌধুরী,ওকে আমি উনাকে নিয়ে যাচ্ছি এখান থেকে তবে আমাদের রুগীর যদি কিছু হয় তা হলে কি হয় বলা যায় না পারবেন তো সেই ধাক্কা সামলাতে
কাউন্টার বয় লোকটি বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বল্লো,
– স্যরি ম্যাম আপনি আগে বলবেন তো আমি এক্ষনি স্যার কে ফোন করছি
ডক্টর আসার পর ইভান কে ভি আই পি রুমে শিপ্ট করা হয় ডক্টর মিথিলা কে জানালো জরুরী ভাবে অপারেশন করতে হবে সে জন্য ও নেগেটিভ ব্লাড লাগবে,আমাদের ব্লাড ব্যাংকে এই গ্রুপে ব্লাড এই মুহুর্তে নেই,
মিথিলা চিন্তায় পড়ে গেলো কি করবে এখন সে মিথিলার ব্লাড গ্রুপ আর ইভানের ব্লাড গ্রুপ এক ই, কিন্তু ইভান কে ব্লাড দেয়ার মন মানুষীকতা মিথিলার এই মুহুর্ত নেই কয়েক জায়গায় খোজ নিয়ে যখন ব্লাড পেলো না তখন উপায়ন্ত না দেখে মিথিলা ব্লাড দেয়
অপারেশন থিয়েটারের সামনে দাঁড়িয়ে আছে মিথিলা ,, মিসেস আয়মন কে অনেক বার কল করেছে মিথিলা কিন্তু উনারা ফোন রিসভ করছে না
এই মুহুর্তে গিয়ে ও বলা সম্ভব হচ্ছে না
বেশ কয়েক ঘন্টা যাবার পর অপারেশন রুম থেকে ডক্টর বের হয়,ডক্টর মিথিলা কে বল্লো
– মিঃ চৌধুরী কন্ডিশন খুব একটা ভালো নয় উনাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে,
মিথিলা কথা টা শুনে মনের অজান্তেই আৎকে কে উঠে
– ডক্টর উনি ভালো হয়ে যাবেন তো
ডক্টর – সেটা আল্লাহর ইচ্ছে আমরা আমাদের মতো চেষ্টা করছি,আচ্ছা আপনি কে? সব কাজ আপনাকেই করতে দেখলাম, উনার বাবা মা কই,আপনি কি হন উনার
মিথিলা ডক্টরের কথা এড়িয়ে বল্লো
– উনার বাসায় খবর দিতে হবে আমি একটু আসছি এই বলে মিথিলা হসপিটাল থেকে বেরিয়ে যায়
প্রান প্রিয়ো কোকিলা প্রথম যেদিন তোমার কন্ঠে গান শুনি সেদিন ই আমি তোমার মাঝে ভিন্ন কিছু খুঁজে পেয়েছি মনে হয়েছে তুমি সেই ব্যাক্তি যার হাত ধরে যোজন যোজন পথ চলতে পারবো, যার হাসিতে আমি দিশেহারা হয়ে যাই,তুমি কি জানো তুমি হাসলে তোমার থুঁতনির দু পাশের টোল তোমার সুন্দর্য আর ও হাজার গুন বাড়িয়ে দেয়, হয়তো কখনো খেয়াল করোনি তোমার অলক্ষে তোমার দিকে ছেয়ে থাকি মুগ্ধ নয়নে
ভালোবাসি কি না বুঝতে পারিনি যতো দিন তুমি আমার সাথে ছিলে, তখন তোমার প্রতি আকর্ষন অনুভব করতাম কিন্তু সেটা যে ভালোবাসা বুঝতে সময় লেগেছিলো,যখন বুঝেছি তখন ই তোমায় জানাতে ছেয়েছি কিন্তু আমার বার্থডে ছিলো কিছু দিন পরে তাই ভাবলাম আমার জীবনের স্পেশাল দিনে স্পেশাল মানুষ টা কে মনের কথা জানাবো,এই ভেবে সেদিন আমি হোটেলে একটা রুম বুক করি আর সেটা কে নিজের মতো করে সাজাই কোন ফ্রেন্ডস দের ইনভাইট করিনি শুধু তোমার সাথে নিজের মতো করে সময় কাটাবো বলে,সেই তুমি আমায় ভুল বুঝে দূরে সরে গেলে, একটা চড় মেরেছো তুমি আমায় অবাক হয়েছিলাম,কিন্তু কিছু বলেনি বুঝিয়েছি মন কে এটা বার্থডে উপহার,জানো কতো মেয়ে আমার বার্থডে তে উইশ করেছিলো আমায়, কতো মেয়ে বার্থডে তে আমার সাথে সময় কাটাতে ছেয়ে ছিলো,আমি সব উপেক্ষা করেছি তোমার জন্য ভালোবাসি তোমায় নির্ঝু, তোমায় ভালোবেসে নির্ঝর শ্রাবনের বৃষ্টির মতো দু চোখ থেকে পানি ঝরেছে তাতে আমার মনে দুঃখ নেই প্রতিটি অশ্রু কনা জানান দিচ্ছিলো তোমার ভালোবাসা,
“বুঝে ও বুঝিনি কি করেছি ভুল কি করে দিবো সে মাশুল এসো না ফিরে তুমি থেকো না দূরে ও আমার অভিমানী ফুল”
তোমার ভালোবা
আয়াপ খান
সেদিনের মেয়েটার দেয়া চিঠি ছিলো আয়াপের এতো দিন না পড়লে ও আজ বাসায় কেউ নেই একা একা বোর হচ্ছিলো তাই চিঠি টা পড়লো নির্ঝরিণী, ইসস কি ভুল টা ই বুঝেছি তাকে ধেৎ আমার জন্য উনার বার্থডে টা ই নষ্ট হয়ে গেলো,উনি এতো ভালোবাসে আমায়,উফফ ভাবতে পারছি না,আয়ান টা যে কই গেলো এই খুশির কথা ওকে না বললে তো আমি মরেই যাবো আচ্ছা আমি যদি আয়াপ কে একটা কল করি উনি কি আমায় খুব বকবে,আচ্ছা করেই ফেলি ফোন
রিং হওয়ার সাথে সাথেই কল রিসিভ হলো
আয়াপের কন্ঠ স্বর শুনেই নির্ঝরিণীর হার্টবীট বেড়ে যায় উফফ কোন কথা বলতে পারছে না নির্ঝরিণী
আয়াপ- কথা বলছো না কেনো নির্ঝু এখন ও রাগ কমেনি তোমার, আচ্ছা ঠিক আছে,
আম. স্যরি, এবার থেকে যা করবো সব তোমায় বলেই করবো, এবার তো কথা বলো
নির্ঝরিণীর কথা মুখ দিয়ে আসছে না আবেগে কন্ঠ আটকে গেছে এ ভাবে অনেকটা সময় ধরে দুজন দুজনের শ্বাস প্রশ্বাসের শব্দ শুনেছে
আয়াপ- কথা বলবে না তুমি
নির্ঝরিণী – কি বলবো
আয়াপ- রেগে আছো?
নির্ঝরিণী – না
আবার দু পাশে নিরাবতা
মিথিলা বসে আছে মিসেস আয়মন আর আতাহার চৌধুরীর সামনে মিথিলার কাছে সব কথা শুনে মিসেস আয়মন বল্লো
– ওমন ছেলে বেছে থাক এটা আমরা চাই না তা ছাড়া সে অনেক আগেই আমাদের কাছে মরে গেছে
মিথিলা- এ ভাবে বলবেন না, ওর এই বিপদে আপনারা না থাকলে কে থাকবে তার পাশে
আতাহার চৌধুরী- কেনো যে মেয়ের জন্য আমাদের ত্যাগ করেছে সে কোথায়
মিথিলা এই কথার উত্তরে কিছু বলতে পারলো না কি বা বলবে ইভান তো অপরাধ করেছে খুব বড় ধরনের অপরাধ। এর ক্ষমা হয় না,নিরাশ হয়ে মিথিলা চৌধুরী বাড়ি থেকে ফিরে আসে হসপিটালে