মনোহরা পর্ব-২১

0
915

#মনোহরা
#পর্বঃ২১
#লেখিকাঃনির্মলা

ইশাঃ দুপুরে আসবে না
শান ইশার দিকে কিছুসময় তাকিয়ে থেকে নরম শুরে বলে উঠলো
শানঃ না আসলে কি খুব Miss করবে
ইশাঃ Miss করবো কি না জানি না তবে সারাদিন ভালো লাগবে না।এটার অর্থ যদি miss করা হয় তাহলে আপনাকে আমি miss করবো।
শান একটু মৃদু হেসে বলে উঠলো
শানঃ এর মানের তুমি কি জানো ইশা??

ইশা মাথা ঝাঁকিয়ে না সূচক মাথা নাড়ালো। শান সেটা দেখে ইশার মুখ তার দুই হাত দিয়ে ধরে আসতে করে নিজের কাছে এনে কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলল
শানঃ এর মানে তুমি আমাকে ভালোবাসো
বলেই শান ইশার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো। কিছুসময় পর ইশাকে ছেড়ে দিয়ে বলল
শানঃ আসছি ভালোভাবে থেকে দুপুরে আসতে পারবো না বাবা নেই আমাকে অফিস সামলাতে হবে।
শানের মুখ থেকে এমন কথা শুনে ইশার মনটা খারাপ হয়ে গেলো সেটা দেখে শান বলল
শানঃ please মন খারপ করো না ইশা।রাতে তাড়াতাড়ি চলে আসবে bye এখন অনেক দেড়ি হয়ে গেছে

বলে শান রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো ইশা এখনও থমকে দাড়িয়ে আছে।কারন আজ তার খুব ভালো লাগছে। শানের এত ভালোবাসা কেয়ারিং দেখে। শান যে তাকে খুব ভালোবাসে আর কি চাই তার ভাবতেই তার মুখে হাসি ফুটে উঠলো।

দুপুরের…………

আমি বসে বসে টিভি দেখছিলাম।ঠিক তখনই বাড়ির কলিং বেজে উঠলো আমি উঠে গিয়ে দরজায় খুলতেই দেখলাম মা আর অহনা দাড়িয়ে আছে। আমি দরজা থেকে সরে আসতেই মা আর অহনা ভেতরে ঢুকলো।ভেতরে ঢুকে অহনা আমাকে দেখে হাসি মুখে বলল
অহনাঃ কেমন আছো ভাবি
আমি গিয়ে অহনাকে জোরিয়ে ধরলাম আর বলাম
ইশাঃ এত সময় ভালোছিলাম না জানো তবে এখন তোমাদের দেখে ভালো আছি।
তখনই পাশ থেকে আমার শাশুড়ী মা বলে উঠলেন
শানের মাঃ সে কিরে ভালোছিলিস না কেনো

আমি অহনা আপুকে ছাড়িয়ে মাকে জোরিয়ে ধরে বললাম
ইশাঃ একা একা কার ভালো লাগে বলো।

মা আমাকে ছাড়িয়ে গালে হাত রেখে বলল
শানের মাঃ একা ছিলিস কেনো শান বাড়িতে নেই
ইশাঃ না উনি তো অফিসে
শানের মাঃ আজ অফিসে না গেলেই পাড়তো ছেলেটা কি যে করে না।
ইশাঃ না মা আসলে বাবা ও তো নেই। তাই উনার নাকি অফিসে যেতেই হবে তাই চলে গেলেন
শানের মাঃ ও আচ্ছা
ইশাঃ মা আপনারা fresh হয়ে নিন।আমি টেবিলে খাবার রেডি করছি
শানের মাঃ ঠিকাছে মা
অহনাঃ ভাবি fresh হয়ে এসে অনেক গল্প করবো কত দিন দুজন গল্প করি নি
আমি অহনার কথা শুনে হাসি মুখে বলাম
ইশাঃ হুম

দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমি আর অহনা তার রুমে বলে গল্প করছিলাম। হঠাৎ করেই আমার মনে পরে গেলো অহনা আর জিসানের সম্পর্কের কথা আমি একবার ভাবলাম অহনাকে জিজ্ঞেস করবো তাদের এই সম্পর্কের কথা। তারপর ভাবলাম না থাক জিজ্ঞেস করলে যদি কিছু মনে করে কারন এখন তো আর সে আমার আপু না ননদ। ননদকে এধরণের প্রশ্ন করা ঠিক হবে না তাই চুপ থাকলাম।আমি অহনা আপুর দিকে তাকিয়ে এসবই ভাবছিলাম ঠিক তখনই অহনা আমাকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বলল
অহনাঃ এই ভাবি কি হলো কথা বলছো না কেনো হঠাৎ চুপ হয়ে গেলে যে।
আমি হালকা চমকে তারপর আবার স্বাভাবিক হয়ে বললাম
ইশাঃ না আসলে তুমার কথা গুলো শুনছিলাম তুমি বল
অহনাঃ ও আচ্ছা তাহলে শোন
এরপর তারা দুজন আবার গল্পে মন দিলো

অফিসে…………..
রোহানঃ তাহলে sir কালকে এই মিটিং টা রাখি।
শানঃ না, কাল বাবা ফিরছে মিটিং টা পরশু দিন রাখো রোহান
রোহানঃ জি sir,,,

বলেই রোহান শানের কেবিনের থেকে বেড়িয়ে গেলো।সারাদিন কাজ করে শান প্রচুর ক্লান্ত, সারাদিনের কাজের মাঝেই ইশার কথা শানের মাথায় ঘুরছিলো।কিন্তু কথা বলতে পারিনি কারন ইশার কাছে তো আর ফোন নেই। তাই শান ঠিক করলো আজ বাড়ি যাবার পথে ইশার জন্য ফোন কিনে নিয়ে যাবে।শান চেয়ার ছেড়ে দাড়াতেই।তার সহকারী উর্মী তার কেবিনে ঢুকলো। শান তাকে দেখে ভ্রু কুচকে বলল
শানঃ মিস উর্মী আপনি কেবিনে আসার আগে অনুমতি নিলেন না কেনো??
উর্মী শানের মুখ থেকে এমন কথা শুনে কিছুই থতমত খেয়ে বলল
উর্মীঃ ইয়ে মানে sir sorry
শানঃ it’s ok next time থেকে যেনো এরকম ভুল আর না হয়
উর্মী মাথা নিচু করে বলল
উর্মীঃ জি sir
শানঃ মিস উর্মী শুনুন আমি এখন বাড়ি যাচ্ছি।আমার টেবিলে কতগুলো ফাইল আছে সেগুলো নিয়ে একবার দেখে নিন।
উর্মীঃ ok sir
বলেই শান তার কেবিন থেকে বেড়িয়ে গেলো।উর্মী শানের কেবিন থেকে ফাইলো গুলো নিয়ে চলে গেলো।

রাতে……..
খাবার টেবিলে সবাই এক সাথে খেতে বসলো।তখনই শানের মা শানকে উদ্দেশ্য করে বলল
শানের মাঃ শান
শান খাওয়া ছেড়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল
শানঃ জি মা
শানের মাঃ তোমার সাথে আমার কিছু কথা
শানঃ হ্যাঁ মা বল
শানের মাঃ এখন না খাবার শেষে আমার রুমে একবার এসো
শানঃ ঠিকাছে

খাবার শেষে যে যার রুমে গেলো শান আর ইশা রুমে দিকে যেতে গেলেই শান হঠাৎ দাড়িয়ে গিয়ে ইশাকে বলল
শানঃ তুমি রুমে যাও আমি আসছি মায়ের কাছ থেকে
ইশাঃ ঠিকাছে জান
শানঃকি বললে
ইশাঃ বলছি যে জান
শানঃ জান,,,,,এখন থেকে আপনি আপনি না বলে আমাকে আজ থেকে জান বলে ডাকবে (বাঁকা হাসি দিয়ে)
আমি এত সময় ধরে উনার কথার ধরন বুঝতে পারছি না তাই বলে উঠলাম
ইশাঃ কি বলছেন আপনি আমি আপনাকে জা…..
এবার বুঝতে পারলাম আমি উনি আমাকে কি বলতে বলেছেন তাই আর কথা না বাড়িয়ে উনাকে একটা মুখ ভেংচি দিয়ে রুমে চলে গেলাম।
এদিকে শান ইশাকে এভাবে চলে যেতে দেখে হসতে লাগলো। তারপর সোজা তার মায়ের রুমে গেলো। শান তার মায়ের রুমে গিয়ে দরজায় নাক করলো

আমি রুমে গিয়ে বিছানাটা ঠিক করছিলাম।বালিশ দুটো ঠিক করতে গিয়ে দেখলাম।উনার বালিশের নিচে একটা ফোন। আমি ফোনটা হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে লাগলাম এটা কার কারন উনার ফোনটা আমি চিনি কিন্তু এটা কার????

শানের মা বিছানায় শুয়ে ছিলো শান দরজা নক করাতেই শানের মা শানকে ভেতরে আসতে বলল। শান ভেতরে আসতেই শানের মা বিছানার থেকে নেমে শানের কাছে গিয়ে বলল
শানের মাঃ আয় বস
শানঃ না মা বসবো না তুমি বলো
শানের মাঃ আমি অহনার বিয়ে ঠিক করেছি।
হঠাৎ করে শান তার মায়ের মুখ থেকে এমন কথা শুনে অবাক হয়ে বলল
শানঃ কি বলছো মা তুমি ছুটকির বিয়ে ঠিক করেছো কোথায়
শানের মাঃ আমার বান্ধবী আছে না শীলা ওর বড় ছেলের সাথে।
শানঃ কিন্তু মা ছুটকি কি বিয়ে করতে চায়।
শানের মাঃ না ও কিছু জানে না আমি শুধু তোকে জানালাম।আর কাল তোর বাবা আসলে তাকে জানাবো।এখন তুই তোর মতামত বল
শানঃ আমি কি বলবো মা তুমি আছে ছুটকি জিজ্ঞেস করো
শানের মাঃ দেখ বাবা আমি কিন্তু কথা দিয়ে ফেলেছি। অয়ন খুবই ভালো ছেলে আর পেশায় একজন ডাক্তার।আর আমার বান্ধীকে তো তুই চিনিস কত ভালো । আমি অহনাকে নিয়ে ওবাড়িতে গেলাম তখন তোর আন্টির অহনাকে দেখে খুব পছন্দ হয়েছে। সে তো খুব তাড়াতাড়ি অহনাকে তাদের বাড়ির বউ করে নিয়ে যেতে চায়।
শান কিছু সময় নিরব থেকে বলল
শানঃ ঠিকাছে মা যেটা করলে ভালো হয় সেটা কর
শানের মা খুশি হয়ে বলল
শানের মাঃ তাহলে ওদের কাল আসতে বলি
শানঃ কাল তো বাবা আসছে, ঠিকাছে কাল বল আমিও অফিস থেকে তাড়াতাড়ি আসবো
শানের মাঃ ইশাকে তাহলে তুই বলে দিস কাল ইশা যেনো অহনাকে বলে।
শানঃ ঠিকাছে মা

বলেই শান তার মায়ের রুম ত্যাগ করলো।

এদিকে……
আমি উনার জন্য বসে আছি তখন মার কথায় তেমন একটা মনোযোগ দিনি তবে উনার আসতে এত দেড়ি হচ্ছে দেখে।মনের মধ্যে বিভিন্ন কৌতুহল ভর করছে। তার আগে এই ফোনটার কথা উনাকে জিজ্ঞেস করতে হবে। আমি রুমের মধ্যে পাইচারি করছিলাম আর বিড়বিড় করে এগুলো বলছিলাম।ঠিক তখনই রুমের দরজা খুলে উনি প্রবেশ করলেন। আমাকে এভাবে দেখে ভ্রু কুঁচকে বললেন
শানঃ কি হলো তুমি এভাবে রুমের মধ্যে হাঁটছো কেনো।
আমি দ্রুত পায়ে উনার কাছে গিয়ে মোবাইলটা উনার দিকে বাড়িয়ে বলল
ইশাঃ এটা কার ফোন দেখে তো মনে হচ্ছে না আপনার তাহলে কারন ফোন। আর এটা বলিশের নিচে কেনো ছিলো।সত্যি করে বলুন
(এক বারে এত গুলো কথা বলে ইশা দম ছাড়লো)

[[[লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]

চলবে…….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে