তুমি এসেছিলে বলে পর্ব-১৩+১৪+১৫

0
260

#তুমি_এসেছিলে_বলে
পর্ব : ১৩
#নাদিয়া_আক্তার_সিয়া

মেহতাব : তোদের তো কোনো কাজ নেই যে ছুটি নিয়ে প্রবলেম । সো ফিরে গিয়ে কি করবি আর কয়েকদিন থেকে যা আমি আর তোরা একসাথে লন্ডন এ ব্যাক করবো । ( সৌরভ এবং মেহতাব লন্ডনে বিজনেস হোল্ডারস আর তার বাকী সব বন্ধুরা ওই কোম্পানি তে উচ্চ পদে জব করে )

সৌরভ : ঠিকাছে আন্টি যেহুতু ভালো কইরা দেখেন নাই । তাই থাইকা গেলাম ।

সামির সৌরভের কথা শুনে কানে ফিসফিস করে বলে ,

সামির : সৌরভ যাচ্ছে না তার মিঠু পাখির টানে । প্রমান করা লাগবে না নিশ্চই সৌরভ ডার্লিং ।

এই কথা বলে সামির হেসে দেয় । সামিরের হাসি দেখে সবাই না জেনেই মজা করে হেসে দেয় । কিন্তু সৌরভ আর সামির তা দেখে ভড়কে যায় তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে আরো জোরে হেসে উড়িয়ে দেয় ।

অরিন বেগম বলে ওঠে ,

অরিন বেগম : হয়েছে অনেক হাসি ঠাট্টা । সবাই গিয়ে বেগ গুছাও কালকে ভোর ভোর বের হতে হবে ।

অরিন বেগমের কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে তার দিকে তাকায় আর মেহসান বলে উঠে ,

মেহসান : কেনো মা আমরা কি কোথাও যাচ্ছি ? ( কৌতূহলী হয়ে )

ওই সময় তার দাদী সেখানে উপস্থিত হয় আর বলে উঠে ,
মারজা বেগম : আসলে দাদুভাই আমরা সবাই তোমার দাদুবাড়ি যাচ্ছি । মেহতাব দাদুভাই আর তার বন্ধুরা তো চইলাই যাইব আর মিথিলা , শাম্মি , সিমরান আর সৌম ওগো পরিবারও চইলা গেছে ওরাও তো যাইবো গা । আবার কবে আসে না আসে তাই সবাই একলগে তোমার দাদুর পৈতিক ভিটায় যামু ঘুরতে । কি বলো দাদুভাই আর দিদুমনিরা ?

মারজা বেগমের কথা শুনে সবাই খুব খুশি হয় আর সম্মতি জানায় । তারপর সবাই নিজেদের রুমে গুছ- গাছ করতে চলে যায় । শুধু টিনা থেকে যায় সে মারজা বেগম কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে ,

টিনা : আমিও কি যাবো নানুমনি ?
টিনার কথায় মারজা বেগম বলে উঠে ,
মারজা বেগম : তোরে কি আলাদা কইরা নিমন্ত্রণ পাঠানো লাগবো ?
টিনা : থ্যাংক ইউ নানুমনি ইউ আর বেস্ট ।

( এই বলে মারজা বেগমকে জড়িয়ে ধরে )
মারজা বেগম : হইছে আর ঢঙ করোন লাগতো না গিয়া বেগ গুছাও আর তোমার ভাবী গো কিছু লাগে নাকি দেহো যাও ।

এই বলে মারজা বেগম চলে যায়। আর টিনা সয়তানি হাসি দিয়ে বলে উঠে ,

টিনা : এখন দেখবো না শুধু দেখাবো যে এই টিনা কি কি করতে পারে । ( এই বলে সে নিজের রুম এ চলে যায় )

সবাই নিজেদের ব্যাগ পত্র গুছিয়ে প্লান করছে ওখানে গিয়ে কি কি করবে । সবাই গোল বৈঠক করে বসেছে । সবাই উপস্থিত শুধু বড় রা ছাড়া ।

সৌরভ : শোনো ভাইয়েরা আর বোনেরা আমরা যাইতাছি মজা আনন্দ করতে তাই কিছু রুলস ফলো করতে হইবো : যেমন বলা যায় কেউ তার পারসোনাল ইসু সেখানে আনতে পারবা না। বিজনেস বা ফোন নিয়ে পরে থাকা এইসব চলবো না । ওখানে আমরা প্রকৃতি ইনজয় করবো। সো কেউ ফোন নিয়া যাইতে পারবা না। যদি জরুরী কল দেওয়ার থাকে তাইলে অরিন আন্টির কাছ থেকে ফোন নিয়া দিবা । সবাই একমত । ( এই বলে সৌরভ উপরে এক হাত জাগায় )

সবাই কিছুক্ষণ নিরবতা পালন করে । তারপর সবাই সৌরভের কথায় সহমত পোষন করে ।

রৌফ বলে উঠে ,

রৌফ : ভাই আবার এইটা কইস না যে হাগতে পারমু না বা বজ্র পদার্থ বাড়িতে রেখে আসুন। ( মজা করে )

রৌফের কথা শুনে সিয়াম হেসে বলে উঠে , “এখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা নিষেধ । তোর মুখ থেইকা যেই কথা বাইরাইতাছে তা বজ্র পদার্থের থেইকা কম না ”

সিয়ামের কথা শুনে সৌমিক সাবধান করে বলে ,

সৌম : মেঘ আর অহনা ভাবী আইতাছে তাদের সামনে অন্তত নিজেদের মান সম্মান রাখো ।

সৌমের কথা শুনে মেহতাব আর আহতাব সামনে তাকায়।

মেঘ আর অহনা সবার জন্য চা আর কফি নিয়ে এসেছে । সবাইকে দেওয়া শেষ করে তারা মিথিলার পাশে বসে পরে । মিথিলা তা দেখে বলে ওঠে ,

মিথিলা : আরে ভাবীরা এতো লজ্জার কি আছে নিজেদের হাসব্যেন্ড দের কাছে বসতে অনুমতি লাগে নাকি ।

মিথিলার কথায় অহনা আর মেঘ কিছুটা ভড়কে যায়। মেঘ মনে মনে বলে ” আমি আবার কখন লজ্জা পেলাম ”
শাম্মি : তাই নাকি ।
এই বলে শাম্মি তাদের দুজন কে নিয়ে মেহতাবের পাশে মেঘকে আর আহতাবের পাশে অহনাকে বসিয়ে দেয় আর মেঘকে পাশে বসাতে গিয়ে মজা করে কোলেই বসিয়ে দেয় । তা দেখে ঠাট্টা করে তৌফ বলে উঠে ,

রৌফ : মিথিলার এক কথায় মেঘ ভাবী আপডেট হয়ে সোজা কোলে । ( মুচকি হেসে )

তৌফের কথায় কেউ হাসি থামাতে না পেরে হেসে দেয় । অহনা , আহতাব আর মেহতাবও হেসে দেয়।এবার মেঘ ভীষণ লজ্জা পায় আর মেহতাবের কোল থেকে নেমে পাশে বসে পরে । মেঘকে লজ্জার হাত থেকে বাচাতে মেহতাব সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠে ,

মেহতাব : এতে লজ্জার কি আছে আমরা দুজন বিবাহিত ।

মেহতাবের কথা শুনে সবাই মুখ দিয়ে শিস বাজতে শুরু করে আর কেউ তো হাত তালি দেওয়া শুরু করে।

এতে মেঘ আগের থেকে তিনগুন বেশি লজ্জা পেয়ে যায় । মেঘ মেহতাবের দিকে তাকায় তার রিয়েকশন দেখতে মেহতাব কিছু হয় নি এমন ভাব নিয়ে ফোন এ বিজি হয়ে আছে। মেঘ আর কিছু বলে না। সবাই অনেক প্লান করে। তারপর যে যার রুম এ চলে যায়। মেঘ রুমে ঢুকতেই অনেক গুলো পেকেট দেখতে পায়। এগুলো কিসের পেকেট সে বুঝতে পারে না। তাই সে একটি পেকেট হাতে নিয়ে দেখার চেষ্টা করে এগুলো কি। তখনি সে দেখতে পায় এতে স্পষ্ট ভাবে তার নাম লেখা আছে । সে কৌতূহলবশত পেকেট টি খুলে দেখে । সেখানে একটি লাল রঙের শাড়ি। এমন করে মেঘ প্রতিটি পেকেট খুলে দেখে । প্রতিটি পেকেটে ভিন্ন ভিন্ন রঙের ১০ টি শাড়ি । সে বুঝতে পারে এগুলো মেহতাবের কাজ । সেই হয়ত তার জন্য কিনেছে । তাই সে মেহতাবকে খুজতে যাবার জন্য বেরতে যাবে তখনি কারো বুকের সাথে তার পিঠ ধাক্কা খায় । সে পেছনে তাকিয়ে দেখতে পায় মেহতাব দাড়িয়ে আছে । সে মেহতাবকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে ,

মেঘ : এগুলো কি ?

মেহতাব : তোমার চোখে প্রবলেম হলো নাকি দেখতে পারছো না ? ( ভ্রু কুচকে )

মেঘ : আপনি ভনিতা না করে আগে বলুন এগুলো এখানে কি করছে ? ( রাগ দেখিয়ে )

মেহতাব : আমি কি করে জানবো আমিও তো রীতিমতো অবাক। (অবাক হওয়ার ভান করে)

মেঘ : আপনাকে এতোগুলো শাড়ি কে কিনতে বলেছে । আমার এখনো কতোগুলো শাড়ি পরে রয়েছে । ওগুলো পরতে পরতে বছর পেরিয়ে যাবে।

মেহতাব : তো কি হয়েছে তাই বলে আমি নিজের ওয়াইফ কি কিছু দিতে পারব না । এরকম কথা কোন ইতিহাস এ লেখা আছে মাই ডেয়ার ওয়াইফ। ( মুচকি হেসে )
মেঘ : দিয়েছেন ঠিকাছে তাই বলে এতোগুলো শাড়ি ।

মেহতাব : আসলে আমি জানতাম না তোমার কোন রঙ ফেভারিট । সো বুঝতেই পারছো তাই দুই একটা বেশি এনেছি । যদি পছন্দ না হয় বলো তোমায় নিয়ে আবার শপিং মলে গিয়ে নিউ কালেকশন দেখিয়ে আনি । (সুন্দর হাসি দিয়ে)

মেঘ : হয়েছে আর লাগবে না । আপনি বসুন আমি কফি আনছি আর বাবা-মা এর ঘরে চা দিতে হবে ।

মেহতাব : ঠিকাছে । কিন্তু ছাদে এসো আমার কফি নিয়ে আর তোমার জন্যও এক কাপ এনো দুজনে একটু বসে আড্ডা দেওয়া যাবে । কোনো সমস্যা নেই তো ? ( মেঘের দিকে চোখ মেরে )

মেঘ : ঠিকাছে নিয়ে আসবো ।

এই বলে মেঘ নিচে চলে যায় । মেহতাব ফ্রেশ হতে ওয়াশরুম এ চলে যায় । ফ্রেশ হয়ে এসে সে ছাদে চলে যায় । তাদের বাড়ির আশেপাশে কোনো বিল্ডিং বা দালান নেই । তাদের বাড়ির আসে পাশে বিভিন্ন ফল, ফুলের গাছ আছে ফাকা মাঠ । আর কিছু দুরে অনেক সুন্দর একটি পার্ক আছে । তাদের বাড়ির ছাদ দেখে দূরদূরান্ত দেখা যায় । মেহতাব ছাদে গিয়ে ছাদের দোলনার উপর বসে পরে । কিছুক্ষণ পর কেউ তার চোখ হাত দিয়ে বন্ধ করে দেয় । সে ভাবে হয়ত মেঘ এসেছে তাই সে হাত টা চোখ থেকে সরিয়ে জড়িয়ে ধরতে যাবে । তখনি খেয়াল করে এটা মেঘ নয় বরং টিনা । টিনাকে দেখে মেহতাব বলে উঠে ,

মেহতাব : What are you doing here ? ( তুমি এখানে কি করছো )

টিনা : চিল এখানে আমি এমনি এসেছি । আসলে আগের দিনের জন্য আমি সরি বলতে এসেছি । প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দেও । আমি ভীষণ অনুতপ্ত ।

মেহতাব : Ok but this is your last chance . এরকম বিহেভ আরেকবার করলে তুমি তোমার লাস্ট চান্সও হারিয়ে ফেলবে। Now go from here .

টিনা : থাঙ্কস আমায় ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য বাই।

এই বলে টিনা সেখান থেকে চলে যায় । যাবার পথে মেঘের সাথে দেখা হয় । টিনা মেঘকে দেখে একটি হাসি দেখিয়ে চলে যায় । মেঘ তার দিকে বেশি গুরুত্ব না দিয়ে ছাদে চলে যায় । আজ ছাদ আলোয় পরিপূর্ণ আজ পূর্ণিমা । ছাদে উঠেই মেঘ মেহতাব কে স্পষ্ট দেখতে পায় সে কফির মগ নিয়ে একটা মগ মেহতাব এর দিকে এগিয়ে দিলো ।মেহতাব মগ টা নিয়ে মেঘকে ইশারায় বসতে বললো । তাই মেঘও দাড়িয়ে না থেকে মেহতাবের পাশে বসে পরলো । মেহতাব কফির মগ এ একটা চুমুক দিয়ে বলে উঠলো ,

মেহতাব : মেঘ তোমার তো পড়াশোনা শেষ তো কি হতে চাও বা সপ্ন কি ?

মেহতাবের কথায় মেঘ কিছুক্ষণ নীরব থেকে বলে উঠলো ,

মেঘ : এখনো কি আমি আমার সপ্ন পুরণ করতে পারব মানে চান্স আছে । ( এই কথাটা বলার সময় মেঘের চোখ খুশীতে জল জল করে উঠলো )

মেঘের কথায় মেহতাব চাঁদের আলো মিশ্রিত একটি হাসি দিয়ে বললো , “কেনো পারবে না অবশ্যই পারবে”।

মেহতাবের কথায় মেঘ যেনো চাঁদ হাতে পেয়ে গেলো । খুশিতে গদগদ হয়ে মেহতাব কে জড়িয়ে ধরলো আর বলে উঠলো , ” আই লাভ ইউ মেহতাব ”

#তুমি_এসেছিলে_বলে
পর্ব : ১৪
#নাদিয়া_আক্তার_সিয়া

মেঘের কথায় মেহতাব চাঁদের আলো মিশ্রিত একটি হাসি দিয়ে বললো , “কেনো পারবে না অবশ্যই পারবে”।

মেহতাবের কথায় মেঘ যেনো চাঁদ হাতে পেয়ে গেলো । খুশিতে গদগদ হয়ে মেহতাব কে জড়িয়ে ধরলো আর বললো , ” আই লাভ ইউ মেহতাব ”

এই কথা বলার পর মেঘ নিজেই থতমত খেয়ে গেলো । ইতস্ত বোধ করে বললো ,

মেঘ : আসলে মুখ ফসকে বের হয়ে গেছে । মা আমায় ডেকেছিলেন ডিনার সার্ভ করার জন্য আমি নিচে যাই আপনিও নিচে খেতে আসুন ।

এই বলে মেঘ মেহতাবকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সেখান থেকে চলে এলো । তারাহুড়া করতে গিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় হচোট খেয়ে পরতে পরতে বেচে গেলো । সৌরভ , সিয়াম , রৌফ আর সামির নিজেদের রুমে বসে কথা বলছিলো । মেঘকে এভাবে নামতে দেখে তৌফ বলে উঠলো,

রৌফ : মেঘের আবার কি হইলো?

সিয়াম : দেখার বিষয় নয় কি ?

সৌরভ : দেরি কিসের ?

এই বলে তিনজন ছাদের উদ্দেশ্যে দৌড় দিলো। তা দেখে সামির উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলো ,

সামির : আমার জন্য কেউ দ্বারা বুনো হাতির বংশধোর দেখবি তোগো একটারো বিয়া হইব না হইলেও আমি তোগো ডিভোর্স এর কেস লরমু ।

এই বলে সামিরও ছাদের উদ্দেশ্যে দৌড় দিলো।

ছাদে বসে মেঘকে এভাবে ঘাবড়াতে দেখে মেহতাব একটা মুচকি হাসি দিয়ে কফিতে একটা চুমুক দিলো । কফিতে চিনি দেওয়া নেই তবুও কফি টা মিষ্টি লাগছে । তা দেখে নিজের অজানতেই হেসে দিলো । সৌরভ মেহতাবের হাসি মুখ দেখে বলে উঠলো ,

সৌরভ : চাঁদও তোকে দেখে হেসে দেবে । তো আমার দোস্তোর হাসির কারন টা কি জানতে পারি?

সৌরভকে দেখে মেহতাব বললো ,

মেহতাব : তোদের জানানোর প্রয়োজন বোধ করছি না ।

এই বলে মেহতাব সৌরভের হাতে কফির মগ টা দিয়ে নিচে চলে এলো । তা দেখে সিয়াম মেহতাবকে উদ্দেশ্য করে বললো ” হাসিয়া গেলাম ফাসিয়া যামু এখন পাশ কাটিয়া ” । ( হেসে ) সৌরভ কফির মগে এক চুমু দিয়ে বলে উঠলো ,

সৌরভ : এতো তিতা কফি । মেহতাব এই কফিতে চুমুক দেওয়ার পর হাসির কারন টা কি ছিলো ? ( অবাক হয়ে )

রৌফ : তুই বাম হাত ডুকানো কবে ছাড়বি ?

সৌরভ : যেদিন তুই টয়লেট করার পর সাবান বা হেন্ডওয়াশ দিয়া হাত ধুবি । ( মজা করে )

সিয়াম : ছি রৌফ ওয়াক। তাই তো কই তোর সাথে ঘুমানোর সময় তোর হাতের থেইকা বজ্র পদার্থের গন্ধ আসে কই থেইকা ।

রৌফ : আরো শুকবি নে । ( এই বলে হাত টা সিয়ামের দিকে এগিয়ে দিলো )

সিয়াম তা দেখে দৌড় দিলো আর রৌফ তাকে ধাওয়া করতে শুরু করলো । তা দেখে সামির একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে দোলনায় বসে পরলো সৌরভের হাত থেকে কফি মগ টা নিয়ে বলে উঠলো ,

সামির : যার হাতে গন্ধ তার মুখ বন্ধ ।

এই বলে কফি মগে একটা চুমুক দিলো আর থু ফেলে বলে উঠলো ,

সামির : এই ব্ল্যাক কফির জাতও ব্ল্যাক আমার এতো সুন্দর সাদা মনটা কাদা করে দিলো । এতে তো কোনো মিষ্টাত্তর চিহ্নও নেই । আমায় ছেকা দেওয়া দ্বারা বেডা দেখবি এই কফিরও বিয়া হইব না ।

সামির এর পাগল পাগল কথা শুনে সৌরভ একটা শুকনো হাসি দিয়ে বললো ,

সৌরভ : দোস্ত তুই ঠিক আছিস ?

সামির : পা থেকে গলা ঠিক আছে মাথাটা গরম ফিল হইতাছে । ( দোলনায় হেলান দিয়ে )

সৌরভ : ওহ বুঝছি তোর খিদা লাগছে । তুই তো কোও খাইলে মাথা ঠান্ডা থাকে ।

সামির : আমারও মনে হয় ।

সৌরভ : চল নিচে যাই ডিনার সারতে ।

এই বলে দুজনে নিচে খেতে চলে গেলো ।

.

.

ভোর বেলায় সবাই রেডি হয়ে ড্রইং রুমে উপস্থিত হয়েছে ঘুরতে যাবে বলে । কেউ দুলছে তো কেউ সোফায় ঘুমাচ্ছে । তখনি অরিন বেগম আর মেহতাবের দাদী মারজা বেগম সেখানে উপস্থিত হোন । অরিন বেগম সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে ,

অরিন বেগম : তোরা সবাই এখানে বসে দুলছিস কেনো ?

সিমরান : এই ঠান্ডা ওয়েদার ঘুমনোর জন্য বেস্ট । I’m so sleepy .( মুখ দিয়ে হাই টেনে )

এই বলে হুল্লোড় গ্যাং এর সবাই সোফায় বসে পরলো ।

মারজা বেগম : আমারে দেখো বুড়া হইছে তবুও কেমন ফিট । তোমাগো জেনারেশন বোঝা মুস্কিল।

তখনি মেহতাব , মেঘ আর আহতাব , অহনা নিচে চলে আসে ।

অরিন বেগম : সবাই চলে এসেছে । শুধু মেহসান আর টিনা ছাড়া । ওরা কোথায় ?

শাম্মি : খালামনি মেহসানের কষ্টকাঠিন্য হয়েছে । মিথিলা ওকে রেডি করে আনবে বলেছে । আর টিনা মেকআপ করছে ।

অরিন বেগম : এই ছেলের কয়দিন আগে ডাইরিয়া। এখন আরেক ঝামেলা । ও যে সারাদিন কি করে জানি না বাবা ? আমি ওদের নিয়ে আসি ।

এই বলে অরিন বেগম মেহসান আর টিনার রুমের দিকে রওনা হয় । সিমরান শাম্মি কে বলে উঠে ,

সিমরান : এই আমাদের কথার প্রভাব মেহসানের উপর সত্তি সত্তি প্রভাব ফেলছে না তো ?

শাম্মি : হলেও হতে পারে ।

এই বলে শাম্মি হেসে দেয় । সিমরান শাম্মির মাথায় টোকা দেয় আর বলে উঠে ,

সিমরান : সৌরভ ভাইয়া ঠিকি বলে আস্ত একটা আসামি ।

শাম্মি : Yes , I am . ( ভাব নিয়ে )
অরিন বেগম তখন মেহসান , মিথিলা আর টিনাকে নিয়ে আসে । আর সবার উদ্দেশ্যে বলে ,

অরিন বেগম : চলো সবাই গাড়িতে গিয়ে ঘুমাবে এখন ওঠো ।

অরিন বেগমের কথা মতো সবাই যার যার সুটকেস নিয়ে বাড়ির বাইরে বের হয় । সৌরভ মিথিলার উদ্দেশ্যে ফিসফিস করে বলে ,

সৌরভ : জান পাখি তোমার সুটকেসটা আমি নেই আমাকে দেও ।

মিথিলা : সৌরভ কেউ শুনে ফেলবে ।

সৌরভ : শুনলে শুনুক কি হবে ?

তখনি শাম্মি বলে উঠে ,

শাম্মি : ভাইয়া তোমরা কি এতো কথা বলছো । গাড়িতে উঠো ।
এই বলে শাম্মি গাড়িতে উঠে পরে । আস্তে আস্তে সবাই গাড়িতে উঠে পরে । অরিন বেগম , মারজা বেগম , অহনা আর আহতাব এক গাড়িতে উঠে পরে । আর বাকী ছোটো সদস্যরা এক গাড়িতে এখন শুধু মেঘ , টিনা আর মেহতাব বাকী তাই তারা কি করবে । তখনি সৌরভ বলে উঠে ,

সৌরভ : এখানে কাপল এলাও না । তুই আর মেঘ বরং তোর জিপ এ করে আয় ।

মেহতাব : Ok . আমি আর মেঘ তাহলে জিপ এ করে আসছি ।

এই বলে মেঘ আর মেহতাব জিপে উঠে পরে। তখনি টিনা বলে উঠে ” আমিও বরং মেহতাবদের সাথে যাই “।

এই বলে জিপে উঠতে যাবে। তখনি সিমরান টিনার হাত ধরে বলে উঠে ,

সিমরান : এখানে সিঙ্গেল দের এলাও নেই তুমি বরং আমাদের গাড়িতে ওঠো ওখানে সিঙ্গেল এলাও আছে ।

সিমরানের কাজে মেহতাব সহ সবাই বেশ খুশী হয় । টিনা রাগ করে সৌরভদের গাড়িতে উঠে পরে । মেহতাব সিমরান কে উদ্দেশ্য করে বলে ,

মেহতাব : থ্যাংক ইউ মাই সিস ।

সিমরান : নোট মেনশন । ( ভাব নিয়ে )

তারপর সবাই গাড়িতে উঠে পরে । সবার গাড়ি আগে চলে যায় । মেহতাব জিপ আস্তে করে চালাতে থাকে । তা দেখে মেঘ বলে উঠে ,

মেঘ : গাড়ি এতো আস্তে চালালে আমাদের পৌছাতে দুই দিন লেগে যাবে ।

মেহতাব : তুমি চাইলে সারাজীবন এই গাড়িতেই কাটিয়ে দেবো । ( মুচকি হেসে )

মেঘ : আপনার থেকে এটা আশা করা বাকী ছিলো ।

মেঘের কথার প্রতিউত্তরে মেহতাব একটা হাসি দিয়ে গাড়িটা থামিয়ে দিলো ।

মেঘ : গাড়ি থামালেন কেনো ?

মেঘের কথার কোনো জবাব না দিয়ে মেঘ নিজের ব্লাক জ্যাকেট টা খুলে মেঘের হাতে দিয়ে বললো ,

মেহতাব : এটা পরে নেও গাড়ি জোরে চালালে ঠান্ডা লাগবে ।

মেঘ মেহতাবকে জ্যাকেট টা ফেরত দিয়ে বললো ,

মেঘ : আমার ঠান্ডা লাগবে না আপনি পরে নিন । আমার ঠান্ডা সয্য করার ক্ষমতা আছে ।
মেহতাব : As you wish .
এই বলে মেহতাব গাড়ি স্টার্ট দিলো আর স্পিড বাড়িয়ে দিলো । এর কারনে মেঘ এর খুব ঠান্ডা লাগা শুরু করলো । মেঘ মেহতাবের থেকে জ্যাকেটটা নিয়ে নিজে পরে নিলো আর বললো ,

মেঘ : আমি আমার কথা ফিরিয়ে নিলাম।

মেঘের কান্ড দেখে মেহতাব মুচকি একটি হাসি দিলো ।

চলবে……..

#তুমি_এসেছিলে_বলে
পর্ব : ১৫
#নাদিয়া_আক্তার_সিয়া

মেহতাব : As you wish .
এই বলে মেহতাব গাড়ি স্টার্ট দিলো আর স্পিড বাড়িয়ে দিলো । এর কারনে মেঘ এর খুব ঠান্ডা লাগা শুরু করলো । মেঘ মেহতাবের থেকে জ্যাকেটটা নিয়ে নিজে পরে নিলো আর বললো ,

মেঘ : আমি আমার কথা ফিরিয়ে নিলাম।

মেঘের কান্ড দেখে মেহতাব মুচকি একটি হাসি দিলো আর জিপ চালানো তে মনোযোগ দিলো। বেশ অনেকটা পথ চলার পর মেহতাব লুকিং মিরোরে মেঘের দিকে তাকালো । সে জিপের জানলার পাশে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে । মেহতাব গাড়িটা ব্রেক করে এক সাইডে পার্ক করলো । আর মেঘের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো । সে ঘুমে মগ্ন হয়ে আছে । একজোড়া চোখ যে এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে তার সেদিকে কোনো খেয়াল নেই । মেহতাব মেঘের মুখে পরে থাকা চুল গুলো পরম যত্নে সরিয়ে দিলো । তারপর মেঘের মাথা তার ঘাড়ে রেখে তার বাম হাত মেঘের কোমরে রেখে গাড়ি চালানো শুরু করলো ।

.

.

সৌরভদের গাড়িতে সবাই বেশ মজা করছিলো শুধু টিনা বাদে । তা গাড়ির সবাই লক্ষ্য করছিলো । তারা টিনাকে সয্য করতে না পারলেও তাদের মেহতাব আর মেঘের ভালোর জন্য টিনাকে বোঝানো উচিত । সবাই তাদের মেসেঞ্জার গ্রুপে এই নিয়ে আলোচনা করছিলো । সব শেষে মিথিলা কোনো কিছু না ভেবে টিনার উদ্দেশ্যে বলা শুরু করলো ,

মিথিলা : টিনা আমি জানি তুমি মেহতাব ভাইয়াকে ভীষণ ভালোবাসো । এটা ঠিক তোমার সাথে আমাদের অতো মেলা-মেশা নেই । কিন্তু তার মানে এই নয় তোমাকে আমরা অপছন্দ করি । দেখো মেহতাব ভাইয়া আর মেঘ ভাবী নতুন বিয়ে করেছে। তাদের মধ্যে অশান্তি হোক তা কেউ আমরা চাই না । তুমি মেহতাব ভাইয়া কে সত্বি ভালোবাসো সেটা আমরা কেউ অবিশ্বাস করি না ।তুমি যদি মেহতাব ভাইয়াকে সত্তিকারের এক বিন্দু ভালোবেসে থাকো তাহলে তুমি তাদের মধ্যে কোনো ঝামেলা ক্রিয়েট করবে না । আমি তোমাকে হুমকি দিচ্ছি না এটা আমার অনুরোধ । প্রকৃত ভালোবাসা এটাই যেই ভালবাসায় তুমি তোমার ভালোবাসার মানুষটাকে না পেলেও তার খুশিতে খুশী থাকবে । তার দুঃখে কষ্ট পাবে । তুমি হয়তো আরো ভালো কিছু ডিসার্ব করো । তুমিও একদিন তোমার মনের মতো মানুষ পাবে যে সবসময় তোমাকে ভালোবাসবে , তোমার পাশে থাকবে , তোমার অনুভুতি বোঝার চেষ্টা করবে , তোমার সুখ-দুঃখের সাথি হবে , নিজের সবটুকু দিয়ে তোমাকে আগলে রাখবে । আমি চাই তুমি তাঁকে খুব তাড়াতাড়ি পেয়ে যাও। আমরা সবাই তোমার পাশে আছি ।

মিথিলার এতোগুলো কথা শোনার পর সবাই তার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে । সৌরভ সামির কে একটা চিমটি কেটে বলে উঠলো ,

সৌরভ : আমি সপ্ন দেখছি না তো ।

সামির : আউউউউ। ভাই তুই আমারে মারবি নাকি । আমি এহনও কারো হাসির কারন হইতে পারি নাই । অন্তত কারো দুঃখের কারন হতে চাই। ( আফসোসের সুরে )

সিয়াম : ভাই আমি এইডা বুঝতাছি না । মিথিলারে কোনো রোম্যান্টিক শাকচুন্নি ধরলো নাকি ।

সৌরভ : মুখ শামলা সিয়াম নাইলে এতিমখানায় দিয়াম ।

সিয়াম : দোস্ত তোর বাজে কবিতার থেকে ঐ জায়গা হাজার গুন ভালো ।

মেহসান : ভাইয়েরা বোনেরা মিথু আপু কোনো রোমান্টিক রোগে আক্রান্ত হইছে ।

সিমরান : হুম তাই হবে হয়ত ।

শাম্মি : যাই হোক মিথিলা আপু আর রোম্যান্টিক অসম্ভব ।

সৌম : দেখ ওরে আমরা ছোটোবেলা থেকে দেখতাছি এই প্রথম ও কোনো ভাষণ দিলো তাও আবার ভালোবাসা নিয়া । সবাই হাত তালি দেও ।

এই বলে সবাই মিথিলার উদ্দেশ্যে হাত তালি দিলো টিনাও মিথিলা কে জড়িয়ে ধরলো । টিনা যেমনি হোক সে মেহতাবকে মন থেকে ভালোবেসেছে । সে এটা মানতে পারে নি মেহতাবকে সে নিজের করে পাবে না । সে কিছুক্ষণ আগেও মেঘ এর ক্ষতি চাইতো । কিন্তু মেঘ যদি মেহতাবের জীবনে নাও থাকতো তবুও মেহতাব তাঁকে ভালোবাসতো না । ভালোবাসা জোর করে আদায় করা যায় না ভালোবাসা অর্জন করতে হয় এটা টিনা বুঝে গেছে । সে আর মেহতাব আর মেঘের মাঝে কাটা হয়ে থাকবে না বরং তাদের এক করতে হেল্প করবে । এই ভেবে সে একটা প্রশান্তির হাসি দিলো আর বললো ” থ্যাংক ইউ মিথিলা আমি আমার বেস্ট দিবো মেহতাব আর মেঘকে এক করতে । আই প্রমিস ” । এই কথা শুনে সবাই টিনার উদ্দেশ্যে হাত তালি দিয়ে বলে উঠলো , ” তো হুল্লোড় গ্যাং এর নিউ মেম্বার টিনা খান ”

এই বলে সবাই হইচই আনন্দ ফুর্তি করতে করতে গন্তব্যস্থলের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলো ।

.

.

মারজা বেগমরা গন্তব্যস্থলে পৌছে সবার জন্য অপেক্ষা করছিলো । আস্তে আস্তে সৌরভ আর মেহতাবদের গাড়ি এসে উপস্থিত হলো । তখনি মেঘ এর ঘুম ভেঙে গেলো । সে নিজের মাথা কারো ঘাড়ে আর কোমরে কারো হাতের স্পর্শ পেতেই একঝোটকায় উঠে পরলো । সে কিছু না বলেই গাড়ি থেকে নামার চেষ্টা করতেই মেহতাবের হাত ঘড়ির সাথে তার শাড়ির আচল আটকে গেলো । সেটা দেখে মেঘ পিছনে মেহতাবের দিকে না তাকিয়েই ছারানোর চেষ্টা করতে লাগলো । তা দেখে মেহতাব মেঘকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো ,

মেহতাব : এতো লজ্জার কি আছে ? আমিতো শুধু তোমার কোমর টাচ করেছি তাও আবার শাড়ির উপর দিয়ে ।

এই কথা পিছন থেকে সৌরভদের গ্যাং রা শুনতে পেলো । তারা তড়িঘড়ি করে গাড়ির পিছন থেকে কি হচ্ছে তা বোঝার চেষ্টা করতে লাগলো । মেহতাব তাদের দেখতে পেয়ে বললো ,
মেহতাব : এখানে কোনো রোম্যান্টিক সিনের সুটিং হচ্ছে না । তোরা সামনে আয় ।

এই কথা শুনে সবাই না শোনার ভান করে মারজা বেগমের কাছে চলে গেলো । সৌরভ বলে উঠলো ,

সৌরভ : কি চোখ রে বাবা!

সিয়াম : ঠিক পুরো এনাকোন্ডার চোখ ।

শাম্মি : আমি শুনেছি সাপের নাকি চোখ থাকে না।

সিয়াম : আরে গাধা আমরা এনাকোন্ডার কথা বলছি সাপের না । ( ভাব নিয়ে )

শাম্মি : এনাকোন্ডাও সাপ । আর হ্যাঁ আমি গাধী হতে পারি কিন্তু গাধা না ।

এই কথা শুনে সৌরভ ঠাট্টা করে বলে উঠলো ,

সৌরভ : চলুন গাধীরানি কৃপা হবে আমার ।

শাম্মি : ঠিকাছে ভাইয়া আপনাকে ধন্য করে দিই ।

এই বলে সবাই একজোট হয়ে এক স্থানে জোড়ো হলো । মেহতাব আর মেঘ ও উপস্থিত হলো । মারজা বেগম সকল কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো ,

মারজা বেগম : এই হইলো তোমাগো দাদুর পৈতিক ভিটা ।

রৌফ : কি কোন দাদীজান এইডা দেখতাছি রিসর্ট ।

মারজা বেগম : হো । এই জায়গায় এহন রিসর্ট বানাইছে । তোমার দাদু এই জায়গা মেহতাব এর বাবা মানে আমার পোলার নামে কইরা দিছিলো ওয় এইডা আহতাব , মেহতাব আর মেহসানের নামে কইরা দিছে । আমার দাদু ভাইরা এইডা এতিম,অনাথ পোলাপান গো দিয়া দিছে । এই রিসর্ট থেইকা যেই টাকা আয় হয় । সব ওই বাচ্চাগুলারে দেওয়া হয় যাতে ওগো ভবিষ্যত সুন্দর হয় । আরেকটা কথা এই রিসর্টের ডিজাইন মেহতাব দাদুভাই করছে ।

সবাই এই কথা শুনে ভীষণ অবাক হয় তবে খুব খুশীও হয় । সিমরান বলে উঠে ,

সিমরান : দাদাভাই তোমরা টু গুড । এন্ড মেহতাব ভাইয়ার ডিজাইন জাস্ট ওয়াও আই এম ইম্প্রেস্ড ।

সবাই সিমরানের কথা শুনে মেহতাবের উদ্দেশ্যে হাত তালি দেয় । তা দেখে মেহতাব বলে উঠে ,

মেহতাব : ওকে হয়েছে অনেক কমপ্লিমেন্ট । Now let’s go .

মেহতাবের কথায় সবাই সম্মতি জানায় । আর ভিতরে ডুকে পড়ে । বিশাল বড় মেনশন এর মতো ডিজাইন । সবাই হা হয়ে দেখতে থাকে । টিনা সৌরভদের বলে উঠে ,
টিনা : So Wonderful . আমি তো আবার মেহতাবের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি ।

টিনার কথা শুনে সবাই রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে টিনার দিকে । তা দেখে টিনা মুচকি হেসে বলে উঠে ,

টিনা : আমি তো সাতার কাটতেই পারি না । হাবুডুবু খাবার প্রশ্নই ওঠে না ?

টিনার কথায় সবাই হেসে দেয় । অন্যদিকে মেঘ তো পুরো মুগ্ধ হয়ে গেছে । মেঘ মেহতাবকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠে ,

মেঘ : আপনি তো খুব গুনী মানুষ। আমি তো আমার চোখ সরাতেই পারছিনা এই অদ্ভুত সুন্দর কারুকার্য থেকে ।

মেহতাব : থাঙ্কস ফর ইউর কমপ্লিমেন্ট । বাট আরো খুশী হতাম যদি তুমি এই ডিজাইন কে না বলে আমাকে বলতে । ( মেঘের দিকে চোখ মেরে )

চলবে…….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে