তুমি আমার স্নিগ্ধ ফুল পর্ব-১৩+১৪

0
304

#তুমি_আমার_স্নিগ্ধ_ফুল
#নুসাইবা_ইসলাম_হুর
#পর্বঃ১৩

ফজরের আজানের শব্দে প্রীতির ঘুম ভাঙলো। কান্না করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলো টের পায় নি। ঘুম ভাঙতে কান্নাগুলো আবার উপচে পড়তে লাগলো। নিজেকে একটু সামলে উঠে যেয়ে ওজু করে নামাজে দাঁড়িয়ে গেলো। নামাজে শেষ করে কান্না করে করে আল্লাহর কাছে চাইলো যাতে ওর ভাই আর প্রিয় বন্ধু যেনো সুস্থ থাকে আবার ওদের মাঝে ফিরে আসে।

প্রীতি নামাজ শেষ করে ছাঁদে গেলো। সব কিছু কেমন এলোমেলো লাগছে। বাসার ভিতরে দম বন্ধ হয়ে আসছে তাই ছাঁদে গেলো। চারেদিকে এখনো ভোরের আলো ভালো করে ফোটে নি। শীতের সকাল তাই চারেদিকে কুয়াশায় আচ্ছন্ন। রেলিঙের সাথে হেলান দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে নীরবে অশ্রু ফলতে লাগলো।

এদিকে শাফিন ওদের বাসার ছাঁদে দোলনায় মাথা নিচু করে চুল খামছে ধরে বসে আছে। সারারাত এখানেই ছিলো। সব কিছু কেমন বিষাদে ছেয়ে গেছে। এতো চেষ্টার পর ও প্রাণ প্রিয় বন্ধুর খোঁজ মিললো না সাথে পিচ্চি বোনটার ও। কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে কি করলে ওদের খোঁজ পাবে।

শাফিন যখন এগুলো ভাবতে ব্যস্ত তখন কারো ফোপাঁনির শব্দ কানে ভেসে আসলো। শব্দ অনুসরণ করে সামনে তাকাতে দেখলো প্রীতি কান্না করছে।

শাফিন দ্রুত উঠে প্রীতিদের ছাঁদে চলে গেলো। পাশাপাশি বাড়ি হওয়াতে এক ছাঁদ থেকে আরেক ছাঁদে যাওয়া যায়। শাফিন প্রীতির কাছে এসে প্রীতির এমন বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে শাফিনের বুকের ভিতর ধক করে উঠলো। মেয়েটার দিকে তাকানো যাচ্ছে না দুটো দিন ধরে পাগলের মতো কান্না করেই যাচ্ছে।

শাফিন কোনো কথা না বলে প্রীতির সামনে যেয়ে আলতো করে চোখের পানি মুছে দিলো।
প্রীতি শাফিনের দিকে অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকি ভাঙা গলায় বললো ভাইয়াদের কোনো খোঁজ পাও নি?

এ কথায়র কোনো উওর দিতে পারলো না শাফিন চুপচাপ প্রীতির দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।

শাফিনকে কোনো কথা না বলতে দেখে প্রীতি বুঝে গেলো উত্তর। উত্তর বুঝতে ডুকরে কান্না করে উঠলো।

শাফিন আলতো করে প্রীতিকে বুকের মাঝে আগলে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। কিছুক্ষণ ওভাবে চুপ থেকে শাফিন ধীর গলায় বললো কান্না করো না। দেখো পারফিদের কিছু হবে না আল্লাহ সহায় আছেন। ওদের যেকোনো মূল্যে খুঁজে বের করবো। আর কান্না করো না, তুমি এভাবে ভেঙে পড়লে হবে বলো? নিজের কি হাল করেছো? পারফি আর ইয়ানা ফিরে এসে তোমার এই অবস্থা দেখলে ওরা কষ্ট পাবে না বলো? নিজেকে একটু সামলাও আর কান্না করবে না এ বলে প্রীতির চোখের পানি মুছে দিয়ে আবার বুকের মাঝে আগলে নিলো।

প্রীতি ওভাবে থেকে ফের ভাঙা গলায় বললো ভাইয়াদের এনে দেওনা আমার কাছে। ইয়ানা, ভাইয়াকে ছাড়া আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। ওদের কিছু হলে আমি বাঁচবো না। এনে দেওনা ওদের আমার কাছে।

শাফিন প্রীতির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো কিছু হবে না ওদের। প্রমিজ ওদের সুস্থ অবস্থায় তোমার কাছে এনে দিবো। আর কান্না করো না সব ঠিক হয়ে যাবে।

শাফিনের কথায় প্রীতি কিছুটা শান্ত হলো। ওভাবে নীরবে কিছুক্ষণ শাফিনের বাহুডোরে ছিলো।

ভোরের আলো চারেদিকে ভালো করে ফুটতে শাফিন প্রীতিকে নিজের থেকে ছাড়ি প্রীতি গালে হাত রেখে বললো এখন ভদ্র মেয়ের মতো নিচে যেয়ে কিছু খেয়ে ঘুৃম দিবে। দুদিন থেকে কিছু খাও নি এখন খেয়ে ঘুৃম দিবে। আমি তোমার কাছে ওদের দুজনকে এনে দিবো প্রমিজ। এবার চুপচাপ নিচে যাবে আর যা বলেছি তা সুন্দর ভাবে সব করবে কেমন?

প্রীতি উপর নিচে মাথা দুলিয়ে বুঝালো করবে। তা দেখে শাফিন বললো গুড এবার যাও এ বলে প্রীতিকে ছেড়ে দিলো।

প্রীতি শাফিনের দিকে একবার তাকিয়ে ধীর পায়ে নিচে নেমে গেলো।

শাফিন প্রীতির যাওয়ার পানে তাকিয়ে থেকে কিছুক্ষণ পর নিজেও নিচে নেমে গেলো এখন বের হতে হবে।
——————————————-
বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে একটা বেঞ্চের উপরে বসে আছে পারফি আর ইয়ানা। বাস আসতে আরো অনেকটা সময় বাকি তাই দুজন বসে রইলো।
কিছুক্ষণ পর দেখতে পেলো পাশে ছোট একটা দোকান খুলছে। পারফি সেখানে যেয়ে দু বোতল পানি আর শুঁকনো কিছু খাবার কিনে এনে ইয়ানার পাশে বসে সেগুলো ইয়ানার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো এর থেকে বেশি কিছু এখানে পাওয়া যাবে না। আপাতত কষ্ট করে এইটুকু দিয়ে ম্যানেজ করে নেও।

ইয়ানা মুচকি হেসে বললো এতেই হবে তারপর বোতল খুলে চোখমুখে পানি দিয়ে খেতে লাগলো। খাওয়ার মাঝে খেয়াল করলো পারফি ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। ইয়ানা চোখ তুলে তাকাতে দুজনের চোখাচোখি হয়ে গেলো। ইয়ানা বরাবরের মতো এবার ও পারলো না ওই নীলমনির দিকে তাকিয়ে থাকতে। তারাতাড়ি চোখ সরিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে আমতা আমতা করে বললো আপনিও চোখমুখ পানি দিয়ে একটু খেয়ে নিন ভালো লাগবে।

ইয়ানার কথায় পারফি ভাবলো আসলে চোখমুখে একটু পানি দেওয়া প্রয়োজন। প্রচন্ড মাথা ব্যথা করছে তাই পানি নিয়ে চোখে পানি দিতে হাতে জ্বলন অনুভব করলো। তাই হাতের দিকে তাকাতে খেয়াল হলো হাত কাঁটার দিকে। রক্ত জমাট বেঁধে আছে তা দেখে ভালো করে হাত ধুয়ে নিলো। আশপাশে চোখ বুলালো কোনো ফার্মেসি আছে কিনা কিন্তু কোনো ফার্মেসি চোখে পড়লো না।
পারফি চোখমুখে পানি দিয়ে সেই টঙ এর দোকানে ফের যেয়ে দু কাপ চা নিয়ে আসলো। প্রচন্ড মাথা ধরেছে চা খেলে একটু ভালো লাগতে পারে তাই যেয়ে চা নিয়ে আসলো।
চা নিয়ে এসে বেঞ্চ বসে এক কাপ চা ইয়ানার দিকে বাড়িয়ে দিলো।

এখন সত্যি চা টা খুব প্রয়োজন ছিলো তাই চা টা হাত বাড়িয়ে নিয়ে ছোট করে পারফিকে বললো ধন্যবাদ।

ধন্যবাদের বিনিময়ে পারফি মুচকি হাসি দিলো। ইয়ানার চোখ আটকালো সেই মুচকি হাসিতে। নিজের অজান্তেই পারফির মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো।

পারফি চাতে চুমুক দিয়ে ইয়ানার উদ্দেশ্যে বললো চা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে ।

পারফির কথায় ইয়ানার ঘোর কাটলো। এতো সময় এভাবে তাকিয়ে ছিলো ভাবতেই লজ্জায় পড়ে গেলো। নিজেকে মনে মনে বকতে লাগলো ওভাবে তাকিয়ে থাকার জন্য।

কিছুসময় পর সেখানে এসে বাস থামলো। পারফি ইয়ানাকে নিয়ে বাসে উঠে বসলো। এখান থেকে ঢাকা পৌঁছাতে আরে ৩,৪ ঘন্টা লাগবে। তাই সিটের সাথে শরীরে এলিয়ে দিয়ে চোখ বুঁজে রইলো পারফি।

ইয়ানাও দূর্বল শরীর সিটে এলিয়ে দিতে চোখে রাজ্যের ঘুম এসে ভর করলো। এক সময় ঘুমিয়ে পড়লো।
———————————
দীর্ঘ জার্নির পর অবশেষে ঢাকা পৌঁছাতে সক্ষম হলো পারফিরা। বাস থেকে নেমে পাশে একটা দোকানে যেয়ে দোকানদারের কাছ থেকে ফোন নিয়ে শাফিনকে ফোন লাগালো।

শাফিন অচেনা নাম্বার দেখে তারাতাড়ি ফোন রিসিভ করলো। ফোন রিসিভ করে ওপাশে থাকা মানুষটার ভয়েস শুনে জীবন ফিরে পেলো যেনো। বিচলিত হয়ে বলতে লাগলো পারফি ঠিক আছিস? কোথায় আছিস? দুদিন কোথায় ছিলি? ইয়ানা ঠিক আছে? কোথায় আছিস শুধু বল আমি এখনি গার্ডদের নিয়ে সেখানে পৌঁছে যাচ্ছি। সবাই কতটা টে….

আর কিছু বলার আগে পারফি বলে উঠলো রিলাক্স আমরা ঠিক আছি। ফোনে সব কিছু বলা সম্ভব না। আমি ঠিকানা দিচ্ছি এখানে এখনি চলে আয় তারপর সব বলছি। আর গার্ড আনা লাগবে না আমরা এখন বিপদমুক্ত আছি।

পারফি ঠিকানা দিতে শাফিন ছুটে চলে গেলো সেই ঠিকানায়। সেখানে পৌঁছে পারফি আর ইয়ানাকে দেখে জীবন ফিরে পেলো। ছুটে যেয়ে পারফিকে জড়িয়ে ধরে বললো সবাই কতটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম তুই জানিস? কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলি?এতো এতো খুজেও কোনো খোঁজ মিলে নি।

পারফি শাফিনের পিঠে চাপর মেরে বললো বলছি সব আগে বাসায় চল।

পারফির কথায় সম্মতি দিয়ে শাফিন পারফিকে ছেড়ে দাঁড়ালো। তারপর ইয়ানার দিকে চোখ পড়তে ইয়ানার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো ঠিক আছো তুমি?

ইয়ানা দূর্বল হেসে ছোট করে বললো ঠিক আছি ভাইয়া।

শাফিনের খুব খারাপ লাগলো কারণ দেখে বোঝা যাচ্ছে দুটো দিন শরীরের উপর দিয়ে অনেক ধকল গেছে। হাতে পায়ে কপালে ছোট ছোট ক্ষত গুলো বলে দিচ্ছে কি কি গিয়েছে ওদের উপর দিয়ে। শাফিন ওদের নিয়ে পাশে একটা ফার্মেসিতে চলে গেলো।

পারফি আর ইয়ানার ক্ষত স্থান গুলো পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ করিয়ে তারপর দুজনকে নিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো। কিছুক্ষণ এর ভিতরেই বাসায় পৌঁছে গেলো।

ড্রয়িংরুমের সবাই উপস্থিত ছিলো কারণ শাফিন ফোন করে বলে দিয়েছিলো ওদের খুঁজে পেয়েছে কিছুক্ষণের মাঝে বাসায় আসছে। বাসায় প্রবেশ করতে পিয়াসা বেগম পারফিকে ঝাপটে ধরে কান্না করে দিলো। সারা মুখে অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দিলো।

পারফি মাকে বুকে আগলে নিয়ে শান্ত করতে লাগলো। বুঝাতে লাগলো কিছু হয়নি ও ঠিক আছে। তখন দেখলো কিছুটা দূরে প্রীতি অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে তা দেখে পারফি প্রীতিকে কাছে ডেকে বোনকেও বুকে আগলে নিলো। এতক্ষণে সবাই যেনো জীবন ফিরে পেলো।

কিছুক্ষণ পর প্রীতি পারফির থেকে সরে যেয়ে ইয়ানাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো। ইয়ানার ক্ষত গুলোতে আলতো করে হাত বুলিয়ে দিয়ে ব্যথিত গলায় বললো খুব কষ্ট পেয়েছিস? সব আমার জন্য হয়েছে। আমি যদি ওদিন তোকে আমাদের বাসায় না আনতাম তাহলে এমন কিছু হতো না৷ আমার জন্য আজ কতোটা কষ্ট পেতে হলো তোকে বলতে বলতে কান্না করে দিলো।

ইয়ানা প্রীতিকে শান্ত করতে বললো আমি ঠিক আছি কান্না করিস না। এই দেখ একদম সুস্থ আছি একটুও কষ্ট হচ্ছে না। আর একটু কান্না করলে কিন্তু আমিও কান্না করে দিবো বলে দিলাম।

ইয়ানার কথায় প্রীতি কান্নার মাঝেও হেঁসে ফেললো। তারপর একে একে সবাই ওদের খোঁজ খবর নিলো।

এক পর্যায়ে পারফি প্রীতির উদ্দেশ্যে বললো প্রীতি ওকে নিয়ে তোর রুমে যেয়ে ফ্রেশ করিয়ে রেস্ট নিতে দে। অনেক ধকল গিয়েছে ওর উপর এখন রেস্ট নেওয়া প্রয়োজন।

প্রীতি সম্মতি দিয়ে ইয়ানাকে নিয়ে উপরে উঠে গেলো। শাহানা বেগম কিছু খাবার নিয়ে ওদের পিছু পিছু উপরে গেলো । কোনো এক অজানা কারনে ইয়ানার প্রতি গভীর টান অনুভব করলো। ইয়ানার এমন করুন অবস্থা দেখে তার মন ও কেঁদে উঠলো।

ইয়ানা ফ্রেশ হয়ে আসতে নিজ হাতে খাইয়ে দিলো। ইয়ানার চোখ চিকচিক করে উঠলো এতে। এই অচেনা মানুষগুলো ওর জন্য কতোটা ব্যাকুল হয়ে আছে। এখানে হয়তো ওর নিজের মা থাকলে ফিরেও তাকাতো না ভাবতে চোখ থেকে গড়িয়ে পড়লো একফোটা পানি।

ইয়ানাকে কান্না করতে দেখে শাহানা বেগম অস্থির হয়ে বললো কান্না করছো কেনো আম্মু? কোথায় কষ্ট হচ্ছে বলো আমাকে? ক্ষত গুলোতে খুব বেশি জ্বালাপোড়া করছে?

ইয়ানা কিছু না বলে শানাহা বেগমকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে বললো আমি ঠিক আছি আন্টি।

শাহানা বেগম মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো ইয়ানার। তারপর সবটুকু খাবার খাইয়ে দিয়ে একটু রেস্ট নিতে বললো। ইয়ানাও বাধ্য মেয়ের মতো চুপচাপ শুয়ে পড়লো। শাহানা বেগম কিছুক্ষণ মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে নিচে নেমে গেলো।

প্রীতি ইসহাক আহমেদকে ফোন করে জানিয়ে দিলো ইয়ানার কথা। ইয়ানা ঘুমিয়ে পড়েছে তাই ও নিচে নেমে গেলো।

সবাই উপস্থিত হতে কি কি ঘটেছে সবটা খুলে বলতে লাগলো সবাইকে পারফি। সবটা শুনে সবাই ব্যথিত হলো কতোটাই কষ্ট পেতে হয়েছে দুটো দিন দুজনকে।
এখন পারফির রেস্ট নেওয়া প্রয়োজন তাই আর কেউ কথা বাড়ালো না। কারা এমন করেছে তাদের পরে ধরা যাবে তাই কেউ কথা না বাড়িয়ে পারফিকে ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নিতে বললো।

পারফি উপরে উঠে নিজের রুমে যেতে নিয়েও কিছু একটা মনে করে প্রীতির রুমে গেলো।

#চলবে?

#তুমি_আমার_স্নিগ্ধ_ফুল
#নুসাইবা_ইসলাম_হুর
#পর্বঃ১৪

পারফি প্রীতির রুমে এসে আস্তে আস্তে এগিয়ে গেলো ইয়ানার কাছে। বিড়াল ছানার মতে গুটিশুটি হয়ে ঘুমিয়ে আছে। পারফি ইয়ানার পাশে বসে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো স্নিগ্ধ মুখ পানে। কপালের কাছে আসা চুলগুলো আলতো করে কানের পিছে গুঁজে দিয়ে আস্তে করে বললো যারা যারা আমার স্নিগ্ধ ফুলকে কষ্ট দিয়েছে তাদের কাউছে ছাড়বো না। হ্যা আমারি স্নিগ্ধ ফুল, একান্ত আমার ফুল। এই ফুলের গায়ে কারো টাচ কররার অধিকার নেই। যারা আমার ফুলকে কষ্ট দিয়েছে তাদের এর থেকে দ্বিগুন কষ্ট পেতে হবে। এ বলে আরো কিছুক্ষণ ইয়ানার স্নিগ্ধ মুখপানে তাকিয়ে থেকে নিজের রুমে চলে গেলো। ফ্রেশ হয়ে বেডে শরীর টা এলিয়ে দিলো। প্রচন্ড মাথা ব্যথা করছে এখন একটু রেস্টের প্রয়োজন।
——————
ইসহাক আহমেদ এসেছে অনেক সময় হলো। ইসহাক আহমেদ আসার পর থেকে ইয়ানা তাকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে।
ইসহাক আহমেদ ইয়ানাকে খুঁজে পাওয়ার খবর পেয়ে যেনো প্রাণ ফিরে পেয়েছিলো৷ অসুস্থ শরীর নিয়ে ছুটে এসেছেন মেয়েকে নিতে। আাসার পর থেকে ইয়ানা তাকে একপাশ থেকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে।

ইসহাক আহমেদ এবার সবার থেকে বিদায় নিয়ে ইয়ানাকে নিয়ে বের হতে যাবে তখন বাহিরে হট্টগোলের শব্দে সবাই বাহিরে আসলো। বাহিরে আসতে সবাই হতভম্ব হয়ে গেলো। মিডিয়ার লোকজন বাসার চারপাশে ঘেরাও করে ফেলেছে। গার্ডরা অনেক চেষ্টা করেও তাদের আটকাতে পারলো না। তাদের থামানোর জন্য পাভেল চৌধুরী বললো কি চাই আপনারা এখানে কেনো এসেছেন?

মিডিয়ার এক এক জনে এক এক কথা বলতে লাগলো। বললো শুনলম আবরার পারফি চৌধুরীকে খুঁজে পাওয়া গেছে। তারা ফিরে এসেছে আমরা আবার পারফিকে কিছু প্রশ্ন করতে চাই তাকে ডাকুন।

শাফিন এগিয়ে এসে বললো আপনারা কোনো ঝামেলা না করে চুপচাপ বেড়িয়ে যান আর নাহলে পুলিশ ডাকতে বাধ্য হবো আমরা।

কিন্তু এ কথা কি আর মিডিয়ার কানে যায়? তাদের একটা কথাই আবরার পারফির সাথে কথা বলবে। কথা না বলা পর্যন্ত তারা কোথাও যাবে না।

এদিকে বাহিরে চেচামেচি শব্দে পারফির ঘুম ভেঙে গেলো। এতো শব্দ কেনো হচ্ছে দেখার জন্য বেলকনিতে যেয়ে নিচে মিডিয়ার মানুষ দেখে দ্রুত নিচে নেমে গেলো।

পারফিকে দেখে এক এক জনে হামলে পড়তে লাগলো। গার্ডরা ঘেরাও দিয়ে তাদের আটকালো পারফির কাছে আসা থেকে।

পারফি শান্ত গলায় বললো আপনারা এখানে কেনো? কে পাঠিয়েছে আপনাদের? কি চান এখনে?

তখন একজন সাংবাদিক বলে উঠলো আপনি আর মিস ইয়ানা দুদিন মিসিং ছিলেন। কোথায় ছিলেন? কারা কিডন্যাপ করেছে আপনাদের?সেখান থেকে ফিরে আসলেন কিভাবে?

আরেকজন বলে উঠলো সত্যি কি আপনাদের কিডন্যাপ করা হয়েছে নাকি আপনাদের মধ্যে অন্য কোনো সম্পর্ক আছে যার জন্য দুজন এক সাথে সময় কাটানো জন্য অন্য কোথায় গিয়েছেন? কি সম্পর্ক আপনাদের মাঝে?

আরেকজন বললো দুদিন আপনারা এক সাথে ছিলেন? কোথায় ছিলেন? দুদিন পর আবার হঠাৎ এভবে ফিরে কেনো এসেছেন? আপনারা কি রিলেশনে আছেন? কবে থেকে আপনাদের সম্পর্ক? যে সম্পর্কের জোরে আপনারা বিয়ে না করেই আলাদা সময় কাটাচ্ছেন তাও দূরে কোথাও যেয়ে।

মিডিয়ার কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলো ইয়ানা। পুরো দুনিয়াটা ঘুরে উঠলো। মিডিয়ার মানুষ যে ওদের নিয়ে নেতিবাচক কথা বলছে তাতে মুহূর্তে মাঝে চরিত্রের দাগ কেটে আনলো। চোখ দিয়ে অঝোর ধারা পানি পড়তে লাগলো। এভাবে চরিত্রে কলঙ্কের দাগ লেগে যাবে কখনো কল্পনাও করে নি। এখন এ সমাজে এ চরিত্রের দাগ নিয়ে বেঁচে থাকবে কিভাবে? সমাজের মানুষ যে বাঁচতে দিবে না। কেউ সত্যিটা যাচাই করবে না সবাই যে খুবলে খাবে ভাবতে ইয়ানার শরীর শিউরে উঠলো। মাথা শূন্য লাগছে কি করবে কিছু বুঝতে পারলো না। পুরো দুনিয়াটা কেমন অন্ধকার হয়ে আসছে।

তখন আরেকজন বলে উঠলো আপনাদের ভিতর কোনো অবৈধ সম্পর্ক চলছে নাতো?

পারফি আর সহ্য করতে না পেরে লাস্ট কথাটা যে বলেছে তার নাক বরাবর ঘুষি মেরে দিলো। লোকটা ছিটকে দূরে পড়ে গেলো। এতক্ষণ হৈ-হুল্লোড় পরিবেশ টা মুহুর্তে শান্ত হয়ে গেলো।

পারফি এবার হুংকার দিয়ে বললো জাস্ট শাট আপ। কারো মুখ দিয়ে যদি আর একটা বাজে কথা বের হয় তাহলে তাকে এখানে জ্যন্ত পু/তে দিবো। বেড়িয়ে যান এই মুহূর্তে সবাই এখান থেকে আর নাহলে আমি কি করে বসবো আমি নিজেও জানিনা।

মিডিয়ার সবাই ভয় পেয়ে গেলো। কারো আর সাহস হলো না মুখ দিয়ে কোনো কথা বের করার। জানের মায়া সবারি আছে তাই সবাই চুপচাপ কেটে পড়লো সেখান থেকে।

মিডিয়ার মানুষ যেতে সবাই স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো কারো মুখে কোনো কথা নেই। পরিস্থিতি যে খারাপ দিকে যাচ্ছে তা বুঝতে আর কারো বাকি নেই।

পারফি ইসহাক আহমেদের কাছে যেয়ে মাথা নিচু করে বললো আঙ্কেল আমাদের ক্ষমা করবেন, না চাইতেও আমাদের ঝামেলার জীবনে আপনাদের জীবন জড়িয়ে গেলো। আপনি প্লিজ টেনশন করবেন না মিডিয়ার মুখ বন্ধ করার ব্যবস্থা করে ফেলবো। আপনার মেয়ের গায়ে কোনো কলঙ্কের দাগ লাগতে দিবো না এইটুকু ভরসা করতে পারেন।

ইসহাক আহমেদ ভাঙা গলায় পারফির দিকে তাকিয়ে বললো আমি তোমাদের বিশ্বাস করি বাবা। তোমরা যে পরিস্থিতি শিকার সেটা আমরা জানি কিন্তু এটা মিডিয়া বুঝবে না। তারা আমার মেয়েকে সুস্থ ভাবে বাঁচতে দিবে না বাবা। আমার মেয়েটা যে শেষ হয়ে যাবে বলতে বলতে তার চোখ ছলছল করে উঠলো।

পারফি তাকে অভয় দিয়ে বললো কিছু হবে না আমরা আছি পাশে। যারা যারা এই সরযন্ত্রের পিছে আছে তাদের সবাইকে এর উপর্যুক্ত শাস্তি পেতে হবে।

তারপর পারফি ইয়ানার কাছে এগিয়ে গিয়ে বললো বিড়াল ছানা ভেঙে পড়ো না সব ঠিক হয়ে যাবে। আর কেউ না জানুক তুমিতো জানো তুমি লয়াল। সব ঠিক করে দিবো প্রমিজ করছি তোমায়। ভেঙে না পড়ে মনে একটু সাহস যোগাও কারণ সামনের জীবনটা খুবি কঠিন হতে চলেছে। সব কঠিনতার মাঝে আমাদের সবাইকে তুমি পাশে পাবে তাই ভয় পেও না।

ইয়ানা কিছু বললো না শুধু ছলছল চোখে তাকিয়ে রইলো পারফির দিকে।

পারফি ফের শাফিনকে বললো ওদের সাবধানে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আয় এদিকটা আমি সামলাচ্ছি।

শাফিন সম্মতি দিয়ে ইয়ানা আর ইসহাক আহমেদ কে নিয়ে গেলো। তারা যেতে সবাই ধীর পায়ে এসে ড্রয়িংরুমে বসলো। পারফি চুল খামছে ধরে কিছুক্ষণ চোখ বুঁজে বসে রইলো।

তখন টিভিতে কিছু নিউজ ভেসে উঠলো তা দেখে প্রীতি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো ভাইয়া দে..দেখো।

প্রীতির কথায় সবাই টিভির দিকে তাকালো যেখানে এক এক জন সাংবাদিক এক এক কথা বলে যাচ্ছে। বলছে বিখ্যাত জার্নালিস্ট পাভেল চৌধুরীর একমাত্র ছেলে টপ বিজনেসম্যন আবরার পারফি চৌধুরীর সাথে ইসহাক আহমেদের মেয়ে মিস ইয়ানার অবৈধ সম্পর্ক আছে। সত্যি কথায় উঠাতে আবরার পারফি একজন সাংবাদিকের উপর অ্যাটাক করেছে। আবরার পারফি আর মিস ইয়ানা দুদিন নিখোঁজ ছিলো আর এই নিখোঁজের পিছে কারণ এখনো সঠিক ভাবে জানা যা নি। এমন আরো নানা ধরনের কথা বলতে লাগলো। যা দেখে পারফি দ্রুত বাসা থেকে বেড়িয়ে গেলো। পিছে পিছে পাভের চৌধুরী আর শরীফ শিকদার ও গেলো।
——————————————-
শাফিন ইয়ানাদের পৌঁছে দিয়ে চলে গেছে। ইয়ানারা বাসার ভিতর প্রবেশ করতেই ইতি বেগম চেচিয়ে বলে উঠলো ওকে বাসায় এনেছো কোন সাহসে তু্মি? মান সম্মান সব ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। আমি জানতাম ওই ছেলের সাথে ওর ফোস্টিনস্টি চলছে। সেদিন ওই ছেলেকে বাসায় এনেছিলো আর এখন কাউকে কিছু না বলে ওই ছেলের সাথে পালিয়ে গেছে৷ পালিয়ে গিয়ে মান সম্মান তো ডুবিয়েছিস তাহলে এখন আবার কোন সাহসে ফিরে এসেছিস। এই মুহূর্তে বেড়িয়ে যাবি বাসা থেকে।

ইসহাক আহমেদ ইতি ধমক দিয়ে বললো চুপ করবে তুমি? না জেনে না শুনে আন্দাজে কথা বলবা না তাহলে আমার চেয়ে বেশি খারাপ আর কেউ হবে না।

ইতি বেগম ও তেতে গিয়ে বললো ওর মতো চরিত্রহীন মেয়ের জায়গায় আমি এ বাসায় দিবো না। এই এখনি তুই বেড়িয়ে যাবি তোর মুখ ও দেখতে চাই না আমি।

ইসহাক আহমেদ আর সহ্য করতে না পেরে ইতি বেগমের গালে সজোরে চর বসিয়ে দিলো।

ইতি বেগম অবাক হয়ে তাকালো স্বামীর দিকে। এই প্রথম তিনি গায়ে হাত তুললো।

এদিকে ইয়ানা বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মায়ের মুখে এমন জঘন্য কথা শুনে নিঃশ্বাস ক্রমশ আঁটকে আসছে। নিজেকে সামলাতে চেয়েও সামলাতে ব্যর্থ হলো। চারপাশ অন্ধকার হয়ে আসলো। বেঁচে থাকার ইচ্ছেটা ক্রমশ হারিয়ে ফেলছে। আস্তে আস্তে সেই অন্ধকারে হারিয়ে গেলো ইয়ানা। এতো এতো আঘাত এই ছোট্ট শরীর এ আর নিতে পারলো না।

ইয়ানা জ্ঞান হারিয়ে নিচে পড়ে যেতে নিলে ইসহাক আহমেদ তারাতাড়ি ইয়ানাকে ধরে সোফায় শুইয়ে দিলো। বিচলিত হয়ে ইয়ানাকে ডাকতে লাগলো কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ইতি বেগমের দিকে তাকিয়ে হুংকার দিয়ে বললো আমার কলিজার কিছু হলে ছাড়বো না তোমাকে আমি। জানো তুমি ওর সাথে কি হয়েছিলো? মেয়েটা মরতে মরতে বেঁচে ফিরে এসেছে আর তুমি সত্যি যাচাই না করে মিডিয়ার কথায় নেচে যাচ্ছো। এতোটা নিষ্ঠুর কি করে মানুষ হতে পারে সেটা তোমাকে না দেখলে জানতাম না। জঘন্য একটা মা তুমি, আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিলো তোমাকে বিয়ে করা। ভালোবাসে বিয়ে করেছি কিন্তু বুঝি নি এমন নিষ্ঠুরতম একটা মানুষকে আমি ভালোবেসেছি ভাবতেই ঘৃণা হচ্ছে আমার। সহ্য হচ্ছে না আমার তোমাকে, আমার চোখের সামনে থেকে সরে যাও আর নাহলে আমি কি করবো আমি নিজেও জানিনা।

ইসহাক আহমেদের কথায় ইতি বেগম ছলছল চোখে তাকিয়ে রইলো তার দিকে। আর যাইহোক স্বামীকে তিনি অনেক ভালোবাসেন। আজ স্বামীর চোখে নিজের জন্য এতো এতো ঘৃণা দেখে তার ভিতরটা কেঁপে উঠলো। মস্তিষ্কে হানা দিলো আমি এতোটাই জঘন্য? যার জন্য নিজের ভালোবাসার মানুষের চোখে আজ ঘৃণা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পারছেন না। ভাবতে ভাবতে গড়িয়ে পড়লো চোখ থেকে অশ্রু।
তাকালো সোফার শুয়ে থাকা অবচেতন ইয়ানার দিকে। শরীর এ বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতর চিন্হ সাথে ব্যান্ডেজ ও করা কিছু কিছু জায়গায়। বুঝলো যে এই মেয়েটার সাথে খারাপ কিছু ঘটেছে আর যাইহোক তিনিতো ভালো করে জানে ইয়ানা কেমন মেয়ে। ফের তাকালো ইয়ানার দিকে কি নিষ্পাপ সেই মুখশ্রী। এই নিষ্পাপ ফুলটাকে আমি বছরের পর বছর কষ্ট দিয়ে এসেছি আর আজ তো সীমা অতিক্রম করে ফেলেছি। সত্যি খুব জঘন্য আমি আর নাহলে নিষ্পাপ মেয়েটার সাথে এতোটা অন্যায় করতে পারতাম না। নিজেকে আজ খুব অপরাধী লাগছে সেখানে আর দাঁড়িয়ে না থেকে ধীর পায়ে রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিলো।
———————————
সন্ধ্যা ৬ টা বাজে। চৌধুরী বাড়ির সবাই ড্রয়িংরুমে চুপচাপ বসে আছে। কারো মুখে কোনে কথা নেই। কিছুক্ষণ হলো পারফি,শাফিন,পাভেল আর শরিফ শিকদার এক সাথে বাসায় আসলো। আসার পর থেকে চুপচাপ বসে রইলো সবাই কেউ কোনো কথা বলছে না দেখে পিয়াসা বেগম বললো কি হয়েছে এভাবে চুপ হয়ে আছো কেনো তোমরা?

কিছুটা সময় নিয়ে পাভেল চৌধুরী বললো মিডিয়ার মুখ বন্ধ করে এসেছি। যেই যেই ভিডিও টিবিতে ছাড়া হয়েছে সব ডিলিট করা হয়েছে। এখন সমস্যা নেই কেউ আর এই ব্যাপার নিয়ে মিডিয়ায় কিছু বলবে না।

সব শুনে পিয়াসা বেগম বললো মিডিয়ার মুখ নাহয় বন্ধ করলে কিন্তু এই সমাজের মানুষের মুখ কিভাবে বন্ধ করবে? একবার ইয়ানার কথা ভেবে দেখেছো? ওই মেয়েটার কি হবে? এই সমাজ ওকে খুবলে খাবে সেটা কিভাবে আটকাবে? পারফি নাহয় ছেলে মানুষ তাই ওর দিকে কেউ আঙুল তুলবে না কিন্তু ওই নিষ্পাপ মেয়েটার কি হবে? আজ আমাদের জন্য ওই মেয়েটার জীবনটা এভাবে শেষ হয়ে যাবে?

পিয়াসার কথায় পাভেল চৌধুরী বলার মতো কিছু পেলো না। ক্ষমতার জোরে মিডিয়ার মুখ নাহয় বন্ধ করেছে কিন্তু এই সমাজের মানুষ এর মুখ বন্ধ করবে কিভাবে? এ যে অসম্ভব কাজ।

সবাই নীরব হয়ে ভাবতে লাগলো এখন কি করবে, কিভাবে এই সমাজ থেকে ওই নিষ্পাপ মেয়েটাকে রক্ষা করবে।

তখন নীরবতা ভেঙে পারফি বললো আমি একটা ডিসিশন নিয়েছি।

পারফির কথায় সবাই তাকালো পারফির দিকে।

#চলবে?

ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
হ্যাপি রিডিং….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে