ডিভোর্সের পরে পর্ব-২+৩

0
1209

#গল্পঃডিভোর্সের_পরে

#পর্বঃ২

#লেখকঃরিয়াজ।

আমি কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।একটি বয়স্ক ভুড়ি ওয়ালা লোক যার আগে একটি বিয়ে হয়েছে সেই লোকটিই কিনা আমার আগে একটি বিয়ে হয়েছে বলে আমাকে বিয়ে করবে না।কারণ সে চায় অবিবাহিত কচি সুন্দরী একটি মেয়ে।আর আমি জানি সে এমন একটি মেয়ে খুব সহজেই পেয়ে যাবে।কারণ তার জুলিতে আছে একটি সরকারি চাকুরী।

আমাদের এ দেশের সিস্টেম টাই আসলে উল্টো। আর উল্টো সিস্টেম টা কে বানিয়েছে?দেশের কোনো মন্ত্রী? রাষ্ট্রপ্রতি?প্রধানমন্ত্রী? অথবা দেশের বড় কোনো ব্যাবসায়ী? না দেশের সিস্টেম তারা কেউই পরিবর্তন করেননি।

বরং দেশের সিস্টেম পরিবর্তন করেছি আমরাই।আমরা সব সময় সব পরিস্থিতিতেই চুপ থাকি।
কোনো অন্যায়ের কোনো প্রতিবাদ আমরা করি না।
আচ্ছা যাই হোক এখন গল্পে আসি।খাদিজা আক্তার মিম।মানে গল্পের নায়িকা আবার বলতে শুরু করলেন।

আমার বিয়েটা সেদিন ভেঙে যায়।আর ভেঙে যাওয়াতে সবচাইতে বেশি কষ্ট কিন্তু পায় আমার ভাইয়ের বউ। সেদিন সারাদিন তার মন খারাপ ছিলো।তাছাড়া আমার বাবা, মা রাতে বাসায় আসার পর আমার ভাই।

সবাই সেদিন নিশ্চুপ ছিলো।আমি জানিনা সেদিন কেনো সবাই নিশ্চুপ ছিলো।এরপর আবার সেই আগের মতো চলতে শুরু হলো। সেদিন রাতে আমি শুয়ে আয়ানের কথা ভাবছিলাম। সেদিন কেনো জানি খুব বেশি আয়ানের কথা মনে পড়ছিলো।

আমি সেদিনের কথা ভাবতে লাগলাম।আয়ানের সাথে সম্পর্ক কিভাবে হয়েছিলো। বিয়ে কিভাবে হয়েছিলো সব কিছুই এখন বলবো আমি।এস এস সি পরিক্ষায় খুব ভালো রেজাল্ট করার পর আমি কলেজে ভর্তি হই।

আর যেদিন আমি কলেজে প্রথম দিন যাই সেদিন প্রথম দিনই আয়ানের সাথে আমার দেখা হয়।আমি কলেজে যাচ্ছিলাম যাওয়ার পথে কলেজের গেইট দিয়ে ডুকার সময় একটি ছেলের সাথে ধাক্কা লাগে।দোষ আমারই ছিলো কারণ কলেজে কোথায় কিভাবে হাঁটতে হয় আমি তা জানতাম না।

যেহেতু কলেজে আজকেই প্রথম।তো ধাক্কা লাগার পরে যেখানে আমার সরি বলার কথা সেখানে সেই ছেলেটাই আমাকে সরি বল্লো।আর সরি বলার পরে জিজ্ঞাসা করলো কি নতুন নাকি?আমি তখন বল্লাম হ্যাঁ ফাস্ট ইয়ার। তখন সে বল্লো ইন্টার ফাস্ট ইয়ার নাকি বি এ ফাস্ট ইয়ার? আমি বল্লাম জ্বি ভাইয়া আমি ইন্টার ফাস্ট ইয়ার।

তারপর সে বল্লো ওহহ আচ্ছা।আজকেই নতুন কলেজে?আমি বল্লাম হ্যাঁ। তারপর তিনি বললেন আচ্ছা ঠিক আছে যাও।আর হ্যাঁ দেখে শুনে চলাফেরা করিও। এরপর আমি সেখান থেকে চলে আসি।

যাইহোক সেদিন যদি ব্যাপার টা সেখানেই চুকে যেতো তাহলে আজ হয়তো আমাকে এই দিন দেখতে হতো না।সেদিন আমি কলেজ থেকে বের হওয়ার পর দেখি যার সাথে ধাক্কা খেয়েছি সে কলেজের গেইটের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে।

আমি হালকা করে আঁড় চোখে তারদিকে তাকিয়ে কলেজ থেকে বাসায় চলে আসতে থাকি।কিছুধুর আসার পর দেখলাম সেই ভাইও আমার পিছে পিছে আসছে।মানে কি বুঝলাম না।উনি কেনো আবার আমার পিছু নিলো।আজকেই কলেজে প্রথম দিন আর আজকেই এইসব ঘঠছে আমি একটু ভয়ই পেয়ে গেলাম।

হঠাৎ ছেলেটি আমার পিছু নিলো কেনো কিছুই বুঝলাম না।কিছুধুর যাওয়ার পর সে পিছন থেকে আমার পাশাপাশি চলে আসলো।এরপর আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে।প্রথমে আমি ইগনোর করলাম।পরে দেখি সে কি বলতে চায়।এরপর সে আমাকে আমার নাম জিজ্ঞাসা করছে।কোথায় থাকি ইত্যাদি।

আমি বল্লাম আমি আপনাকে চিনিনা জানিনা আপনি কেনো আমার কাছে এসব জানতে চাচ্ছেন?আচ্ছা আপনিই বলেন না আপনাকে অপরিচিত কেউ যদি আপনার পরিচয় জিজ্ঞাসা করে আপনি তাকে বলবেন আপনার পরিচয়? সে কোনো উত্তর দিলো না।

এর কিছুক্ষণ পর সে বল্লো আমি আপনাদের কলেজে বিএ ফাস্ট ইয়ারে পড়ি।আমার বাসা x জায়গায়। মানে আপনার বাসা থেকে আমার বাসা কতোধুর সেটাই জানতে চাচ্ছিলাম। তাছাড়া আর কিছুই না।তারপর আমি তাকে বললাম আচ্ছা আমার থেকে আপনার বাসার দূরত্ব জেনে কি করবেন শুনি?

সে উত্তর দিলো এই দরুন মাঝে মাঝে আপনার বাসার সামনে এসে চা খেলাম।আর সাথে আপনাকে দেখেও গেলাম।এতটুকুই। আমার কাছে তার কথা গুলো কেমন বিষের মতো লাগতেছিলো।তাই আমি তার কোনো কথার কোনো উত্তর না দিয়ে আমি একটি রিকশায় উঠে গেলাম।

যদিও আমার বাসায় হেঁটেই যাওয়া যায়।তারপরেও আমি সেই ছেলের জন্য রিকশায় উঠে পড়লাম।সেদিনের মতো আমি চলে আসলাম বাসায়।তবে আমি বাসায় আসলেও সেই ছেলের কথা আমার মাঁথা থেকে যাচ্ছিলো না।কারণ আমি ভালো করেই জানি একটি ছেলে যখন একটি মেয়েকে পটাতে চাইবে তখন সে নানান ধরনের নানান কাজই করতে পারে।

এসব ভাবছিলাম রাতে রুমের মধ্যে শুয়ে শুয়ে।আমি জানি সে এতো সহজে আমার পিছু ছাড়বে না।এরপর দিন কলেজে গেলাম সেদিনও দেখি সেই ছেলে কলেজের গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।

আমি দেখেও না দেখার ভান করে সেখান থেকে চলে আসলাম।আমার ছেলেদের সাথে কথা বলতে মোটেও ভালো লাগতো না।আমি কলেজে ডুকার পর সে আজ আর কিছু বলেনি।আবার ক্লাস শেষ করে যাওয়ার সময় দেখলাম সে কলেজের গেইটের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে।

আর এই ব্যাপার টা একদিন দুইদিন প্রতিদিনই এমন হতে লাগলো।সে প্রতিদিন কলেজে ডুকার সময় কলেজের গেইটে দাঁড়িয়ে থাকতো।আর কলেজ থেকে বাসায় যাওয়ার সময় কলেজের গেইটের বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতো।এভাবে দেখতে ১ মাস চলে যায়।আর এই ১ মাস আমার ছেলেটার প্রতি একটু ভালো লাগা কাজ করতে শুরু করে।

একদিন মেসেঞ্জারে মেসেজ রিকুয়েষ্ট চ্যাক করতে যেয়ে দেখি আরও ২০ দিন আগে আয়ান আহমেদ নামে একটি আইডি থেকে আমাকে একজন মেসেজ দিয়েছে।

ওহহ যেই ছেলেটা আমাকে ফলো করতো তার নাম ছিলো আয়ান।আমার এক বান্ধবীর কাছ থেকে আমি ছেলেটার নাম জেনেছিলাম।তো আমি সেই মেসেজ রিকুয়েষ্ট চ্যাক করতে যেয়ে অবাক হয়ে যাই।কেনোনা সেখানে অনেক গুলো মেসেজ ছিলো।

গত ২০ দিন ধরে সে প্রতিদিনই আমাকে কোনো না কোনো মেসেজ দিয়েছে। আমি সব গুলো মেসেজ পড়তে লাগলাম।প্রথম মেসেজ টায় সি লিখছিলো অনেক কষ্টে তোমার এক ফ্রেন্ড কে আমার এক মেয়ে বান্ধবী দিয়ে অনেক কষ্টে তোমার ফেসবুক আইডি টা নেই।তুমি তোমার নাম পরিচয় কিছুই বলোনি।

কিন্তু আমি তোমার নাম ঠিকানা সব কিছুই কালেক্ট করে নিয়েছি।তোমার নাম খাদিজা আক্তার মিম।তোমার বাসা Y জায়গায়। ইত্যাদি আরও অনেক কিছুই সে লিখেছে মেসেজে।তারপর আমি যেদিন যেই ড্রেস পড়ে যেতাম সেই ড্রেসের কালার আমাকে কেমন লাগছিলো ইত্যাদি সব বলছিলো।

শেষে একটি মেসেজ দেয়া তুমি কি আমার মেসেজ গুলো দেখছো না?নাকি দেখেও রিপ্লাই দিচ্ছো না?আমাকে রিপ্লাই না দেয়ার কারণ টা বলো?সবশেষে একটি মেসেজ ছিলো আমি সামনাসামনি কোনো মেয়ের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারিনা।

আমার প্রচুর লজ্জা লাগে।তাই ফেসবুকেই বললাম যেদিন আমার সে প্রথম তুমি ধাক্কা খেয়েছো সেদিন প্রথম দেখাতেই তোমাকে আমার ভালো লেগে যায়।এর আগে কোনো মেয়ের প্রতি আমার এতোটা ভালোলাগা কাজ করেনি।বিশ্বাস করো আমি তোমাকে অনেক অনেক বেশিই ভালোবেসে ফেলেছি।

আমি তোমার উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম।আমি শুরুতেই বলেছি ১ মাসের মাঁথায় আয়ানের প্রতি আমার কিছুটা ভালো লাগা কাজ করে।আর এই মেসেজ গুলো দেখে মোটামুটি আমি অনেক এক্সাইটেড।

এখন আমি কি রিপ্লাই দিবো খুঁজে পাচ্ছিলাম না।অনেক ভাবার পরে মনে হলো এতো সহজে হার মানলে হবে না।আর কিছুদিন অপেক্ষা করাই।আমি তাকে উত্তর দিলাম যেই ছেলে সামনাসামনি এসে ভালোবাসার কথা বলতে পারে না সে সারাজীবন আমাকে নিয়ে কিভাবে থাকবে?এই বলে তালে ব্লোক দিয়ে দিলাম।

চলবে??

#গল্পঃডিভোর্সের_পরে

#পর্বঃ৩

#লেখকঃরিয়াজ।

আপনাদের মনে প্রশ্ন রেখেই দ্বিতীয় পর্ব আমি শেষ করে দিয়েছি।আসলে তাকে ব্লোক দেয়ার কারণ হলো সে যাতে সাহস করে সামনাসামনি এসে আমার সাথে কথা বলে।ব্লোক দেয়াতে সে আর আমাকে মেসেঞ্জারে মেসেজ দিতে পারবে না।সেজন্য তাকে আমার সামনে এসে আমার সাথেই কথা বলতে হবে।আমার সাথে প্রথম যেদিন আয়ানের ধাক্কা লাগে ও শুধু তখনই আমার সাথে কথা বলছিলো।

এরপর আর কখনো কথা বলেনি।শুধু দেখেই যেতো।তাই আমি সেই সূযোগটা নিলাম যাতে সে আমার সাথে কথা বলতে আসে।যথারিতি পরদিন আমি প্রস্তুত হয়ে গেলাম।আমি জানি সে আজকে আমার সাথে কথা বলবেই।অনেক আশা নিয়েই আমি সেদিন কলেজে গেলাম।আর আমি ভেবে নিয়েছিলাম আজকে তাকে যেকোনো একটি উত্তর আমি দিবোই।

কলেজের গেইট দিয়ে ডুকার সময় আমি অনেক আশায় ছিলাম যে সে আজকে আমার সাথে নিজ থেকে এসে কথা বলবেই।কিন্তু কলেজের গেইট ডুকার সময় আমি আজকে কোথাও তাকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না।আশেপাশে ডানেবামে সব জায়গায় খুঁজলাম কিন্তু কোথাও খুঁজে পেলাম না।আজকে হঠাৎ কি হলো বুঝলাম না কিছু।

প্রতিদিনই তো সে এখানে দাঁড়িয়ে থাকতো। এতোদিন সে দাঁড়িয়ে ছিলো আর যেই আমি আজকে তার সাথে কথা বলার আগ্রহ নিয়ে আসলাম তার কোনো পাত্তা নেই।যাইহোক আমি সেখান থেকে ক্লাসে চলে আসি।কিন্তু আজকে আমি ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারতেছিলাম না।আজকে শুধু আমার আয়ানের কথা মনে পড়ছিলো।

আর আজকে কেনো জানি ওকে নিয়ে আমার একটু টেনশন ও হচ্ছিলো।যেই ছেলেটা প্রতিদিন আমার আগে এসে আমার জন্য আমাকে দেখার জন্য কলেজের গেইটে এসে দাঁড়িয়ে থাকতো।কিন্তু আমি আজকে এতো আশা নিয়ে তার সাথে কথা বলতে আসলাম।সে আজকে আর আসলো না।আবার এটাও ভাবতেছিলাম যে তার কোনো সমস্যা হলো নাকি?

এসব ভাবতে ভাবতেই ক্লাস শেষ হয়ে গেলো।ক্লাস শেষ করে ক্লাস থেকে বের হওয়ার সময় মনে মনে ভাবতেছিলাম হয়তো সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারেনি তাই আজকে সকালে আসেনি।এখন মনে হয় ঠিকই সে কলেজের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছি।

এইবারও অনেক আশা নিয়ে আমি কলেজ থেকে বের হলাম।কিন্তু আমার আশায় জল ডেলে সে এইবারো এইখানে নেই।মানে আমি বুঝলাম না।আজকে তার কি এমন হলো যে সে আজকে সকাল বেলাও আসলো না।এখনও তার কোনো খবর নেই।কিছুই বুঝলাম না।আমি আশেপাশে খুঁজে দেখলাম কিন্তু কোথাও তাকে পেলাম না।

বিষন্ন মনে আমি বাসায় চলে আসলাম। আজকে আমি রাস্তায় আসতে আসতে আশেপাশে তাকে খুঁজছিলাম কিন্তু সে কোথাও নেই।আজকে তার কি এমন হলো সে আজকে কলেজ শুরু হওয়ার সময় ও আসলো না।কলেজ শেষ করে আমি বাসায় চলে যাচ্ছি তাও তার কোনো খবর নেই।

যাইহোক এইসব কথা ভাবতে ভাবতেই আমি কখন যে বাসায় চলে আসলাম সেটা আমি নিজেও ভুলে গিয়েছি।বাসায় এসে আমি তার কথা ভুলতে পারছিলাম না।কাউকে ভালো লাগলে তার প্রতি এতো আবেগ এতো ফিলিংস থাকে সেটা আমি আগে বুঝিনি।

রাতে শুয়ে ভাবছিলাম আজকে সে আসেনি।কাল হয়তো ঠিকই সে আসবে।এভাবে রাত পার করে পরদিন আমি আবার আয়ানকে এক নজর দেখার জন্য তার সাথে কথা বলার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতে করতে গেলাম কলেজে।কিন্তু আজকেও আয়ান কলেজের গেইটে নেই।কিছুই বুঝলাম না।

পরপর দুইদিন মানুষটার কোনো খবর নেই।আমি যে আয়ানের খবর নিবো কারো কাছ থেকে এমন কোনো পরিচিত কেউ আমার ছিলো না।তাছাড়া আমি সব সময় আয়ানকে একাই দেখতাম।যদি কারো সাথে দেখতাম তাহলে সেই মানুষটির কাছে যেয়ে জিজ্ঞাসা করতে পারতাম আয়ান কোথায়।কিন্তু আমি সব সময় তাকে একাই দেখেছি।

এভাবে প্রায় ৭ দিন কেঁটে গেলো আয়ানের কোনো খবর নেই।একটা মানুষ যে টানা এক মাস ধরে আমি কলেজে যাওয়ার সময় তাকে কলেজের গেইটে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতাম।কলেজ থেকে বাসায় যাওয়ার সময় গেইটের বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতো।সেই মানুষটার এক সপ্তাহ ধরে কোনো খবর নাই।আজব ব্যাপার।

আজকে বাসায় যেয়ে আমি একটা সিধান্ত নিলাম।যে ওকে ব্লোক খুলে মেসেজ দিবো তার কি হয়েছে সেটা জানতে চাইবো।যদিও এতে আমার ভাব একটু কমে যাবে তাতে সমস্যা নেই।কারণ মানুষ টাকে তো এখন আমার ভালো লাগে।তাকে এই কয়দিন দেখতে না পেরে আমার অনেক খারাপ লাগছে।

রাতে খাওয়া দাওয়া কমপ্লিট করে ১০ টার দিকে আমি শুয়ে আছি।এরপর মেসেঞ্জারের ব্লোকলিস্ট ওপেন করে আমি আয়ান আহমেদ নামের আইডিটিকে আনব্লোক করলাম।আর আনব্লোক করার সাথে সাথেই তাকে মেসেজ দিলাম।আপনার কি হয়েছে আপনি কোথায়?গত এক সপ্তাহ ধরে আপনার কোনো খবর নেই।

মেসেজ দেয়ার ১ মিনিটের মাঁথায় মেসেজের রিপ্লাই আসলো।যাক আপনি তাহলে আমাকে মেসেজ দিলেন।কেমন আছেন আপনি? একটা সপ্তাহ ধরে আপনাকে না দেখে কতো কষ্টে যে দিন কাঁটাচ্ছি সেটা কেবল আমি ই জানি।

এরপর আমি বল্লাম ফাও পেঁচাল বাদ দিয়ে আগে বলেন যে আপনি এতোদিন কই ছিলেন?সে বল্লো বলছি বলছি সে অনেক লম্বা কাহিনি।
আপনি যখন আমাকে ব্লোক দিলেন তখন আমার প্রচুর রাগ উঠেছিলো।কিন্তু রাগ থামতেই আমার মনে হলো যে আমার কাছ থেকে কোনো পরিক্ষা নিতে চান।তাই আমার মেসেজের একটি রিপ্লাই দিয়ে আমাকে ব্লোক দিয়ে দিয়েছেন।

তারপর আমি ভাবলাম সে যেহেতু আমার পরিক্ষা নিতে চাচ্ছে তাকে আমি পরিক্ষা না নিতে দিয়ে উল্টো আমি তার পরিক্ষা নেই।আমি মেসেজ দিলাম কি বলেন কিভাবে আবার আমার পরিক্ষা নিলেন?

সে উত্তর দিলো ওয়েট ওয়েট সব বলছি একটু অপেক্ষা তো করবেন।এরপর সে আবার লিখলো আমি মনে মনে ভাবলাম আপনি যেহেতু আমাকে ব্লোক দিয়ে দিলেন আমি কাল থেকে আর আপনার সামনে যাবো না।আর যতোদিন পর্যন্ত আপনি আমার ব্লোক না খুলে আমাকে মেসেজ না দিবেন ততদিন পর্যন্ত আমি আপনার সামনে যাবো না।আপনি যদি যেদিন আমাকে ব্লোক খুলে মেসেজ দিবেন আমি সেদিন ভেবে নিবো আপনিও আমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছেন।

আমি একটা হাহাহা দিলাম।সে জিজ্ঞাসা করলো হাঁসছেন কেনো?আমি উত্তর দিলাম হাঁসি আসার মতো কথা বললেন সেজন্য হাঁসলাম।আমি আপনার মেসেজের রিপ্লাই দিয়েছি আমি আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি?এটাও বিশ্বাস করতে হবে?

সে রিপ্লাই দিলো হ্যাঁ অবশ্যই। কারণ আপনি তো আমাকে ব্লোক দিয়েছিলেন।আর আমাকে কোথাও না দেখতে পেয়েই কিন্তু আপনি ব্লোক খুলে আমাকে মেসেজ দিয়েছেন।আর আমাকে না দেখতে পেয়ে আপনার খারাপ লাগছিলো।একটি ছেলেকে একটি মেয়ে না দেখতে পেয়ে খারাপ লাগার একটাই কারণ।

আমি বল্লাম কি কারণ? সে রিপ্লাই কি কারণ আর মেয়েটি ছেলেটির প্রেমে পড়েছে স্বাভাবিক ব্যাপার। আমি আবার বল্লাম বাহ বাহ ভালোই তো কথা জানেন।তো মি.আমার আগে আর কয়টি মেয়েকে পটানো হয়েছে শুনি?আপনি তো মেয়ে পটানোতে খুব এক্সপার্ট। সে রিপ্লাই কি যে বলেন না?একটি ছেলে সেই মেয়েটিকেই তার মনের ভাব সম্পূর্ন রুপে প্রকাশ করে যাকে সে মন থেকে ভালোবাসে।

আমি আপনাকে প্রথম যেদিন দেখেছি সেদিনই আপনাকে মন থেকে ভালোবাসে ফেলেছি।বিশ্বাস করুন আপনাকে দেখে আমার যতটা ভালোলেগেছে আপনার প্রতি আমার যতোটা ফিলিংস কাজ করে অন্য কোনো মেয়ের প্রতি আমি আজ পর্যন্ত এমন হইনি।

বলতে গেলে আপনি আমার লাইফে প্রথম মেয়ে যাকে আমি এতোটা ভালোবেসেছি।সাতটি দিন আপনাকে না দেখে আমি প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু তবুও আপনার সামনে আসিনি।আমি বললাম আপনি বেশ রোমান্টিক ও আছেন।তো যাকে এতোটা ভালোবাসেন তাকে কি শুধু আপনি আপনি করেই বলে যাবেন নাকি তুমি করে বলবেন?আর আমি তো আপনার বয়েসে ছোটই। সে রিপ্লাই দিলো ইয়ে মানে…..

চলবে??

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে