আমার প্রথম সকাল পর্ব-১০

0
66

#আমার_প্রথম_সকাল (১০)
#ফাহমিদা_মুশাররাত
.
গতকাল থেকে জুনাইদ আমাকে একটিবারের জন্যও ফোন করেনি। এমনকি আমি করলেও সে তোলেনি। কারণটা গতকাল রাতে অস্পষ্ট থাকলেও এখন পুরোপুরি পরিষ্কার। এখান থেকে যাওয়ার পথে জুনাইদ রোড এক্সিডেন্ট করেছে। গতকাল থেকে হাসপাতালে জরুরী বিভাগে ভর্তি আছে, জ্ঞান ফেরেনি এখনো। সংবাদটি কর্ণকুহরের নিকট পৌঁছান মাত্র গোটা পৃথিবী আমার নিকট ঝাপসা হতে লাগল। শ্বাশুড়ি আমাকে উনার ছেলের থেকে আলাদা করতে চাইলেন এদিকে আল্লাহও বোধহয় উনার চাওয়াটা পূর্ণ করতে চললেন। হাত থেকে ফোনটা পড়ে যায় মেঝেতে। শব্দ শুনে মা ছুটে আসেন পাকের ঘর থেকে। আমাকে মেঝেতে বসে পড়তে দেখে তিনি বারংবার জিজ্ঞেস করতে থাকেন, ” কি হয়েছে সকাল? এভাবে বসে গেলি কেন? ”
” তোমার জামাই এক্সিডেন্ট করেছে। ” এতটুকু বলা মাত্র চোখের সামনে সবটা ঝাপসা হয়ে গেল। জ্ঞানহীন হয়ে ঢলে পড়লাম মায়ের কোলে। শুধু শুনতে পেলাম আমাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে মা কান্নায় ভেঙে পড়লেন।
.
যখন জ্ঞান ফিরল নিজেকে আবিষ্কার করলাম বিছানার উপর। ছোটবোন পাশে বসে হাত পাখার সাহায্যে বাতাস করছে। মা কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে কারোর সাথে ফোনে কথা বলছেন। কথার ধরন শুনে বুঝলাম সেটা শ্বাশুড়ির ফোন ছিল। মা বলছিলেন,
” বেয়ান কষ্ট করে হাসপাতালের নামটা বলেন। ”
শ্বাশুড়ি কান্নারত অবস্থায় হাসপাতালের নাম বলে বললেন, ” আসেন দেখে যান আমার লাশের মতো পড়ে থাকা ছেলেটারে। আপনার মেয়েটা আমার ছেলেটারে শেষ করেই ছাড়ল। আজ আমার কাছে থাকলে এমন কিছুই হইতো না।”
মা শান্ত স্বরে বিনয়ের সহিত বলল,” বেয়ান শান্ত হন। আল্লাহর কাছে দোয়া চান। এখন এসব বলবেন না দয়া করে। ”
শ্বাশুড়ি এরপর আর কিছু বললেন না। সেভাবেই ফোন রেখে দিল। এরপর মা’কে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম হাসপাতালের দিকে। ছোটবোনকে বাড়িতে রেখে গেলাম। মায়ের ফিরতে দেরি হলে পাশের বাড়ি থেকে ওর বান্ধবীকে নিয়ে যেন থাকে বলে গেলেন মা।

জুনাইদের ফোন পড়ে গিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে রাস্তাতে। বিপদ দেখে লোকজন ছুটে এসে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরিবারের কাউকে জানানো হয়নি। কল লিষ্টের প্রথমে আমার নাম্বার পেয়ে আমাকে ফোন করা হয় আগে। কিন্তু আমার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়ায় শ্বাশুড়ির নাম্বারে ফোন করা হয়। এতে করে জুনাইদের পরিবারের কানে ততক্ষণে খবর পৌছে যায়। জুনাইদের নাম্বার থেকে ফোন আসায় যখন পুনরায় ফোন করি তখন জুনাইদকে নিয়ে আসা একজনের কাছ থেকে জানতে পারি এসব কথা। শ্বশুর শ্বাশুড়ি হন্তদন্ত হয়ে ছুটে যান হাসপাতালের দিকে। জুনাইদকে কেবিনে শিফট করা হয়েছে। আজকের মধ্যে জ্ঞান ফেরার সম্ভাবনার কথা ডাক্তার বলে গেছেন। এদিকে শ্বাশুড়ি জুনাইদের পাশে কাউকে ঘেঁষতে দিচ্ছেন না। বসে রইলেন ছেলের শিহরে, কখন তার জ্ঞান ফেরে এ অপেক্ষায়। পুরো একটা দিন হাসপাতালে জুনাইদের সুস্থতর লক্ষ্যে পড়ে রইলাম। শ্বাশুড়ি নিজেও বাড়ি গেলেন না। আসার পর থেকেই দেখেছি শ্বশুর একা একা ছোটাছুটি করছেন। সঙ্গে জামিল থাকলে একটা কথা ছিল সেও নেই। আমি শিক্ষিত মেয়ে। মফস্বলের সরকারি কলেজ থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। তাই কমবেশি জ্ঞান আমিও রাখি। শ্বশুরকে অনুরোধ করলাম, ” আপনি গিয়ে বিশ্রাম করুন। আমি দেখছি। ”
শ্বশুর আমার নেকাবে আবৃত মুখের দিকে তাকালেন.।
” পারবা তুমি? ”
” চেষ্টা করতে ক্ষতি কি? ”
এরপর তিনি মৌনতা বজায় রাখলেন। পুরো একটা দিন হাসপাতালে কেটে গেল আমার। মাঝে শ্বশুর শ্বাশুড়িকে বাড়িতে যেতে বলেছিলাম। শ্বাশুড়ি আজ আর আমার কথায় দ্বিমত পোষণ করলেন না। মেনে নিয়ে বাড়ি চলে গেলেন। গতকাল আসার পর থেকে একটিবারের জন্যও তিনি আমায় উনার ছেলের ধারে কাছে ঘেঁষতে দেননি। যতক্ষণ ছিল ততক্ষণ তিনিই ছিলেন। ডাক্তারের নিষেধ সত্ত্বেও সরতে চাননি।

আশ্চর্যজনকভাবে পরদিন উনি উঠে যেতেই জুনাইদের জ্ঞান ফেরে। চোখ খুলতেই সে আমাকে দেখতে পায় আগে। হয়তো বলতে চায় আমি এখানে কি করছি?কিন্তু কণ্ঠস্বর অব্দি সে শক্তিটুকু মেলে না। থামিয়ে দিয়ে আমি বলে উঠলাম, ” আপনার কিছু হয়নি। একদম ঠিক আছেন আপনি। ”
জুনাইদ তাকিয়ে থাকে নিষ্পলক নয়নে। আমি বললাম,
” আমি চলে এসেছি আপনার কাছে। আপনার চিন্তা দূর করতে। একদম চিন্তা করবেন না। আমি আপনার প্রথম সকাল। ”
জুনাইদ পলক ফেলল৷ শ্বাশুড়ি ফিরে আসেন ইতিমধ্যে। আসা মাত্র তার কানে খবরখানা পৌঁছে গেছে। তিনি বাহির থেকে ছুটে এলেন। আমাকে জুনাইদের সাথে দেখে ধমকে উঠলেন, ” সর তো। দেখি আমাকে দেখতে দাও আমার ছেলেকে। ” বলে তিনি ফের কেঁদে দিলেন।
উনার কথা মতো সরে গিয়ে বললাম, ” মা হাসপাতালে এভাবে কাঁদতে ডাক্তার নিষেধ করেছে। নাহলে রোগীর সমস্যা হয়। ”
” বেশি বুঝো তুমি? মায়ের আবেগ তুমি কি বুঝবা? মা হইছো কখনো? ”
আজ আর চুপ করে থাকতে পারলাম না উনার মুখের ওপর বলে দিলাম, ” আল্লাহ চাইলে অবশ্যই আমি মা হলেও হতে পারি। শুধু দোয়া করেন আপনার ছেলে যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়। ” উনাকে কথাটা বলে একরাশ মনঃকষ্ট নিয়ে বেরিয়ে এলাম জুনাইদের কেবিন থেকে। বের হওয়ার সময় খেয়াল করলাম জুনাইদ করুণ চোখে তাকিয়ে আছে আমার গমন পথে। বাহিরে এসে দেখতে পেলাম শ্বশুর একা বসে আছেন। সকাল থেকে দৌড়াদৌড়ি করতে করতে ঘামে ভিজে একেবারে জুবুথুবু হয়ে আছেন। ছেলের চিন্তায় মুখটা শুকিয়ে পাংশুটে ধারণ করেছে এই অল্প সময়ের মাঝে। আমাকে দেখে তিনি বললেন, ” জ্ঞান কি ফিরেছে জুনাইদের? ”
” জ্বি! ফিরেছে। ”
উনার চেহারা দেখে সামান্য মায়া লাগল। শত হলেও তিনি জুনাইদের বাবা। এ বয়সে এসে নিজের শারীরিক অবস্থার কথা তোয়াক্কা না করে ছেলের জন্য তিনি একা একা দৌড়ঝাঁপ করছেন। জুনাইদের জায়গায় উনি থাকলেও হয়তো জুনাইদ এভাবে দৌড়াত। বললাম, ” আপনি তো গতকাল থেকে কম দৌড়ঝাপ করলেন না, ঠিক মতো খেয়েছেন দুপুরে? ”
” খেলাম আর কোথায়? ছেলেকে এভাবে পড়ে থাকতে দেখলে কোনো বাবা মা কি খেতে পারে? তোমার শ্বাশুড়িও খেতে পারে নাই। আমাকে বারবার বলতেছিল তাড়াতাড়ি চলেন। ছেলেটার কাছে যাই। সকাল বুঝে কিছু? ওর এতো কিছু খেয়াল থাকবে না। ”
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম, ” আপনার ছেলে আগের চেয়ে এখন অনেকটা ভালো আছে। গিয়ে দেখে আসুন। তারপর দু’জন মিলে খেয়ে নিন নাহলে আপনারাও অসুস্থ হয়ে যাবেন যে। ”
” তোমার মা কই? উনি খাবেন না? ”
” মা’কে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি। ছোটবোন আবার একা তো। ”
.

.
সপ্তাহখানেক চিকিৎসা চলার পর জুনাইদ খানিকটা সুস্থ হয়ে ওঠে। কথাবার্তা আগের মতো বলতে পারলেও শারীরিক অবস্থা এখনো নাজুক অবস্থা। হাঁটাহাঁটিতে বেশ কষ্ট হয়। গত কয়েকদিন জুনাইদকে ছেড়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। তাই কষ্ট করে হলেও হাসপাতালে রয়ে গেলাম। মাঝে বেশ কয়েকবার মায়ের বাড়ি গিয়েছি। শরীরেরও একটা বিশ্বামের দরকার আছে ভেবে জুনাইদ নিজে থেকেই আমায় পাঠিয়েছে। তবে রাতে জুনাইদের সাথেই থেকে গেছি। চাইলেই শ্বশুর বাড়িতে যাওয়া যেত। কিন্তু জুনাইদ ও বাড়ির মুখো হতে দেয়নি আমায়। শ্বাশুড়ি নিজেও মুখ ফুটে বলেননি একটিবারের জন্যেও। জুনাইদকে আজ এক সপ্তাহ পর রিলিজ দেওয়া হয়। আমি ভেবেছিলাম হয়তো আজও আমায় মায়ের কাছেই চলে যেতে হবে। চিন্তিত বোধ করলাম এই ভেবে যে, খালার বলে যাওয়া কথাগুলো যে সত্যি, মা নির্ঘাত বুঝে যাবেন। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে শ্বাশুড়ি বলে উঠলেন, ” সকাল তুমি কই যাও? ”
” কেন মা? যেখানে পাঠিয়ে দিছো সেখানেই তো যাবে। ” জুনাইদ জবাব দিল।
” তো তোরে দেখবে কে? স্বামী অসুস্থ এমন অবস্থা বুঝতে পেরে বাপের বাড়িতে যাও কোন আক্কেলে? এমনে আবার নিজেরে আমার ছেলের বউ দাবী করবা? ”
” ঠিকই তো ও এখানে থাকবে কোন আক্কেলে? ওকে তো আপনি নিজেই পাঠিয়ে দিয়েছেন বলেছেন আর যেন না নিয়ে আসি। এখন দরকার হতে আপনি নিজেই ওরে ডাকেন কিভাবে? এটা ঠিক না মা। এতদিন তো এই অধিকারবোধ থেকে ও কম কষ্ট করেনি। ”
জুনাইদকে এবার ধমকে উঠলেন শ্বাশুড়ি, ” তুই চুপ থাক। স্বামী অসুস্থ হইলে স্ত্রীদের স্বামীর সেবা করা কর্তব্য। ”
অগত্যা আমাকেও যেতে হলো যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছি সে বাড়িতেই। এ যাত্রায় আল্লাহ রহম করেছেন। মনে মনে মায়ের কথা ভেবে শুকরিয়া আদায় করলাম।

জুনাইদকে ডাক্তার বিশ্রামের জন্য অনেক লম্বা সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ঔষধ পত্র রোজকার নিয়ম মাফিক মতো চলছে। জামিল সোমাকে নিয়ে ব্যস্ত তার এতদিকে তাকানোর সময় নেই। এদিকে দুর্ঘটনার কারণে জুনাইদের চাকরিটা চলে গেছে। সংসারের ভার বহন করার দায়িত্ব গিয়ে পড়েছে জামিলের ওপর। জুনাইদ কর্মঠ হলেও বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা ভালো না। ব্যাংকে সামান্য কিছু জমানো টাকা আছে সেসব দিয়ে তার চিকিৎসার খরচ চলছে।
জুনাইদের অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে সবার আচরণ বদলে যেতে শুরু করেছে ধীরে ধীরে। শ্বশুর শ্বাশুড়ি দরকার ছাড়া তেমন একটা কথা বলছেন না আগের মতো। দিনে দুই একবার করে এসে দেখে যাওয়া অব্ধি সীমাবদ্ধ থাকছেন। খাওয়া দাওয়ার প্রতি জুনাইদের সখ আগে থেকেই কম। বর্তা, ডাল রাখতে হয় ওর প্রতিদিনকার খাবারে। জুনাইদ এতেই বেশ তৃপ্তি নিয়ে খায়। সোমাকে নিজের ঘরের বাহিরে এখন আর দেখা যায় না। শ্বাশুড়িকে দেখি ভালো রান্নাবান্না হলে আগে ওর পাতে তুলে দেন। একদিকে ও জামিলের বউ অন্যদিকে সোমা গর্ভবতী। রাজ কপাল যাকে বলে। এদিকে সোমাকে যতটা প্রাধান্য দেন শ্বাশুড়ি ততটা প্রাধান্য তিনি নিজের ছেলে অর্থ্যাৎ জুনাইদকেও দেন না। সবার খাওয়া শেষ হলে জুনাইদ আর নিজের জন্য খাবার নিয়ে নিজেদের ঘরে যাই। জুনাইদ বুঝতে পারে সবই। কিন্তু নিজের দুর্বলতার কারণে চুপচাপ সহ্য করে যায়।

জামিল আজ সন্ধ্যার দিকে অফিস থেকে ফিরে এসে শ্বশুর শ্বাশুড়িকে বললেন, ” মা আমি সোমাকে নিয়ে আলাদা থাকতে চাই। ”
শুনে শ্বশুর শ্বাশুড়ি একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে লাগলেন.। ” কেন? আলাদা কেন হতে হবে তোদের? ”
” এতো বড় সংসার আমার একার পক্ষে টানা সম্ভব নয়। ”
শ্বশুর কিয়ৎক্ষণ মৌনতা বজায় রাখলেন। শ্বাশুড়ি জামিলকে বোঝালেন। কিন্তু তার এক কথা। সে থাকবে না এক সাথে। এমন পরিবেশে নাকি সোমার সমস্যা হয়। সোমার সমস্যা মানে তার বাচ্চার সমস্যা। সবার জন্য খরচ করতে গেলে সে সোমাকে ভালোমন্দ এনে খাওয়াতে পারে না। শ্বাশুড়ি থেমে যেতে শ্বশুর বললেন, ” ঠিক আছে। তাহলে জুনাইদকে আর সকালকে আলাদা করে দেই। ওরা দু’জন দুজনের মতো থাক। জুনাইদের ইনকাম নাই এজন্য এখন ওরে তোর আর তোর মায়ের দরকার হবে না স্বাভাবিক। ”
জামিল বিরক্তি নিয়ে বলল, ” তারজন্য কি ভাইয়ার খরচ এখন আমারে চালানো লাগবে? ভাবীরে বলেন তার বাপের বাড়ি থেকে এনে দিতে। মানুষ নিজের জামাইর জন্য কত কিছুই করে। ভাবী বুঝে পারে না? ”

” তোর পড়াশোনা থেকে যাবতীয় খরচ একসময় তো ওই বহন করেছিল। ওকে অন্তত সুস্থ হতে দে তারপর নাহয়..” শ্বাশুড়ি কথাগুলো বলতেই জামিল কড়া গলায় বলল, ” সে বড় তাই সে করছে। বড়দের এসব একটু আধটু করাই লাগে। তারমানে এই না আমি নিজের ভবিষ্যত না ভেবে তার পেছনে সব খরচ করব। উনার তো আর বাচ্চাকাচ্চাও নাই ভবিষ্যতের চিন্তাও নাই। ”

আড়াল থেকে সব শুনলাম৷ শ্বশুর শ্বাশুড়ি জামিলের কথার ওপর এরপর আর কোনো কিছুই বললেন না। তাদের নিশ্চুপ থাকা প্রমাণ করে দিল, বেকার ছেলেরা সত্যিকার অর্থেই পরিবারের জন্য বোঝা স্বরূপ!

চলবে…..

[ ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন! ]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে