“শরীরে রিহানের একটা টি-শার্ট। সাথে আগের পড়া প্যান কার্ড সেলোয়ারটা শরীরে জড়ানো ছিল, টি-শার্টটাও পড়তো না যদি না রিহান জামাটা ছিড়ে ফেলতো, ফ্রেশ হয়ে সবে মাত্র ওয়াশ রুম থেকে বের হয়েছিল সামিরা, হঠাৎ রুমের বাহিরে রিহানের সাথে ভাইয়ের গলার আওয়াজ পেয়ে ছুটে রুমের বাহিরে এসে দাঁড়ালো”।
~~ “যেখানে থাকার কথা সেখানেই আছে, দায়’ছাড়া ভাব নিয়ে” ‘রিহান’
— you বলেই যেই রিহানের কালার টা চেপে ধরবে,
তখন চোখ যায় কিছুদূর দাঁড়িয়ে থাকা সামিরার দিকে, শাহারিয়া রিহানকে ছেড়ে ছুটে যায় বোনের নিকট, গিয়ে সামিরা কে জড়িয়ে ধরে বললো।
~~ বোন ঠিক আছিস তো?? তোর কিছু হয়নি তো?? ‘কপালে চুমু দিয়ে’ শাহরিয়া সামিরার দিকে চোখ বুলিয়ে কঠিন কন্ঠে আবার শুধালো।
~~ এগুলো পড়ে আছিস কেন?? তোর ড্রেস কই?? আর তোর বা এমন অবস্থা কেন?? তো কে এমন লাগছে কেন?? হঠাৎ করে সামিরার দুই বাহু ছেড়ে রক্ত আভা চোখ নিয়ে রিহানের কলাটা চেপে ধরে বলল।
— কি করেছিস ওর সাথে তুই?? তোর এই অবস্থা কেন??
— কলারটা ছাড় ভাই, সম্পর্ক তুই বড় হতে পারিস, তবে বয়সে আমরা কিন্তু সেম সেম, তাই কলার টা ছেড়ে কথা বল। যতই হোক এখন আমাদের দুই দুইটা সম্পর্ক হয়েছে, তাই এখন সাপ আর নেউলের মত যুদ্ধ না করে মি’ট’মা’ট করে নিলেই পারি। ‘রিহান’
— তোর সাহস কি করে হলো ও কে এখানে নিয়ে আসার আগে সেটা বল?? ‘শাহারিয়া’
— ও’হহহ সাহসের কি আছে?? আমার জিনিস আমি নিয়ে এসেছি, বাই দ্যা ওয়ে, তখন যেন কি বলছিলে??
কোন অধিকারে আমি ওকে নিয়ে এসেছি?? তাহলে শোনো স্বামীর অধিকার এ আমি ওকে নিয়ে এসেছি।
আর ভাই এটা তো আমার থেকে তোমার জানার কথা বেশি, অবশ্যই, বিয়ের পর একটা মেয়ের উপর তার স্বামীর অধিকার থাকে সবথেকে বেশি??আর আমার তো মনে হয় না, বউ কে নিজের কাছে নিয়ে আসতে কারো পারমিশন লাগে??
— মানে?? ‘শাহারিয়া’
— সিম্পেল বিষয় টা বুঝতে পারছো না?? সামু, এতদিন তোমার বোন ছিল, এখন সে অন্য কারো বউ।আর সেই অন্য কেউ টা আর কেউ না, ‘আমি’ । আমারা বিয়ে করেছি,আর বিয়ের পর বউ স্বামীর কাছে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। ‘রিহান’
“শাহরিয়া রেগে যেই থাপ্পড় মারতে যাবে, ওমনি রিহান শাহারিয়ার হাত ধরে ফেলে বললো”
~~ এতক্ষণ কলারট দরেছো মানলাম, এখন গায়ে হাত তুলতে চাও, এটা তো মানতে পারছি না,মারতে কিন্তু আমি ও জানি ভাই,so, সেটা ভালো হবে না, তাই হাত টাকে কন্ট্রোল করো ভাই ??
“সামিরা এদের কথা শুরু থেকে ভয়ে ভয়ে শুনছিল, এতক্ষণ মুখ থেকে কোন কথা বের করতে পারেনি, কারণ একদিকে স্বামী আর একদিকে ভাই,আর রাগের কথা বলতে গেলে দুই’জনেই সমান, তবে শাহারিয়া রাগ উঠলে কন্ট্রোল করতে পারলেও রিহান একদমি রাগ কন্ট্রোল করতে পারে না,তাই চুপচাপ তাদের দুজনার কথার শুনছিল, যখন দেখলো,সেটা আর স্বাভাবিক পর্যায়ে নেই, তখন ছুটে গিয়ে দুজন কে থামানোর জন্য বললো”।
— বন্ধ করো এসব তোমারা,কি শুরু করে দিয়েছো তখন থেকে?? আর ভাই তুমি এতো রেগে যাচ্ছো কেন??আর আপনি, সম্মান করতে শিখুন মানুষ কে, তাছাড়া ভাই আপনার একদিনের হলেও বড়ো, তাছাড়া বউ এর বড় ভাইকে সম্মান দিয়ে কথা বলতে হয় এটুকু নিশ্চয়ই আপনার জানা??
“সামিরার মুখে বউয়ের ভাই শব্দটা শুনে শাহারিয়া অবাক এর শেষ সীমানা প্রজন্ত পৌঁছে যায়। তার এই পিচ্চি বোন টা এসব কি বলছে?? এটা হতে পারে না তাই হতভাগ কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল”
— বোন তুই এগুলো কি বলছিস??
“সামিরা ভাইয়ের কথায় তার দিক ঘুরে মুচকি হেসে বলল”
— হ্যাঁ ভাইয়া এটাই সত্যি আমি ওনার স্ত্রী, উনার সম্পূর্ণ অধিকার আছে আমাকে উনার সাথে নিয়ে আসার, আর আমিও বাধ্য স্বামীর সাথে থাকতে,
— তুই পাগল হয়ে গেছিস কি সব আবোল তাবোল বকছিস ?? তুই এক্ষুনি এখান থেকে আমার সাথে চল।
” বলে যেই সামিরাকে নিয়ে যেতে নেয় সামিরা বাধা দিয়ে বলল”
— দাঁড়াও ভাই কখনো কোন ভাইকে দেখেছো কোন বোনকে তার স্বামীর সাথে সংসার করতে না দিয়ে নিয়ে যেতে?? আর না কোন মেয়েকে দেখেছো তার স্বামীকে একলা রেখে চলে যেতে?? তাহলে ভাই তুমি কেন আমাকে নিয়ে যেতে চাচ্ছ?? আমি আমার স্বামীর সাথে থাকতে চাই, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। আমি যদি জানতাম উনি আমাকে অনেক আগে থেকে ভালবাসেন তাহলে অনেক আগে আমি এই বিষয়টাকে নিয়ে ভাবতাম। সবার সম্মতি নিয়ে উনার হাত ধরতাম।
“রিহান সামিরার কথা শুনে শাহারিয়ার মতো বেশ চমকায়, তার তো খুব ভালো করেই জানা ছিল সামিরা কে যখন না পাওয়া যাবে তখন সামিরার স ফ্যামিলি ওর কাছেই আসবে, সামিরাকে নিয়ে যেতে চাইবে আর সামিরা ওর কাছে থাকতে চাইবে না , তখন ওকে এক প্রকার যুদ্ধ করে সামিরা কি নিজের কাছে রাখতে হবে। কিন্তু সামিরা যে নিজে থেকে ওর কাছে থাকতে চাইবে ও কল্পনা তেও আনিনি, ও যদি বুঝতে পারত সামিরা এমন কোন কথা বলবে তাহলে কোনদিন কোন ভাবে সামিরাকে কোন বিষয় জোর করত না। রোমান্স তো দূরে থাক। গায়ে একটা ফুলের টোকা পর্যন্ত দিত না। আর সেখানে কিনা কাল রাতে ও স্বামীদের সাথে জোর করে, ছিঃ মুহূর্তটা ভাবতে ওর ঘেন্না লাগছে। নিজেই নিজেকে ধিক্কার জানাতে ইচ্ছা করছে। বারবার নিজের ভিতরে কেমন একটা খারাপ লাগা কাজ করছে। ও ভুল করছে চরম লেভেলের ভুল করেছে। না পাওয়ার ভয়ে সবকিছু জোর করে পাওয়া যায় না, ওর একটা বার উচিত ছিল সামিরাকে ওর ভালোবাসার বিষয়টা জানানো, কিন্তু কি করলো? না আর ভাবতে পারবো না”
“রিহানের এসব ভাবার মধ্যেই পিছন থেকে হাতে তালির শব্দ শুনে তিনজনই সেদিকে তাকায়,”
হাত-পা বাঁধা ছিল বলে হঠাৎ বাধন খোলার পর শরীরটা এমনি নরম হয়েছিল, এখন থাপ্পড় খাওয়ায় ছিটকে মেঝেতে গিয়ে পড়েছে, শরীরের ভারসাম্য রাখতে না পেরে কিছুক্ষণ মেঝেতে পড়ে মাথার চক্কর গুণ ছিল। মাথার চক্করটা ছাড়াতেই গালে টনটন ব্যথা অনুভব করাতে হাতটা চলে যায় সামিরার গালে, সাথে সাথে সামিরা ফুপিয়ে কেঁদে ওঠে। কিন্তু এতে রিহানের মনে হলো কিছুই যায় আসে না, তাই আবারও সামিরা কে মেঝে থেকে টেনে তুলে দাঁড় করিয়ে যেই কিছু বলবে, সামিরা বিনয়ের সুরে কোনরকম বললো।
সামিরা— প্লিজ ভাইয়া আমার কথাটা তো শুনুন,আ,,
সামিরার বাকিটুকু আর বলা হলো না, সামিরার মুখে ভাইয়া ডাকটা শুনে রিহানের রাগ যেন আরো দাও দাও করে জ্বলে উঠলো। সামিরাকে বিছানায় ধাক্কা মেরে, গায়ের শার্টের বুদাম খুলতে খুলতে গর্জন দিতে দিতে বললো।
~~ ভাইয়া, আবার সেই ভাইয়া ডাক? আজ তোকে বোঝাবো আমি তোর ভাই নয়, অন্য কিছু, যেটা এখন করবো ফের তুই কোনদিন ভাইয়া বলতে চেয়েও পারবি না? ‘রিহান’
~~ প্লিজ আমার কথাটা শুনুন, আমি ওই ছেলেটার সাথে কথা বলতে চাইনি, কিন্তু ওই ছেলেটা অরুর কাজিন ছিল, আমাকে বেয়াইন বলে সমর্থন করছিল, এতটুকুই, আর আপনি তো আমাকে জানেন আমি কেমন? এক রাত দিনের তফাৎ ই আমি অন্য ছেলের সাথে কথা বলবো? ‘সামিরা’
~~ আমি কিছু জানি না, তুই কথা কেন বলবি? তুই আমি ব্যতীত কারো দিকে ফিরেও তাকাবি না। তুই শুধু আমার, এখন সম্পূর্ণ আমার করে নিব। এই কাজে যদি তুই একবারও বাধা দেওয়ার চেষ্টা করিস তো তোকে জ্যান্ত কবর দিব। ‘রিহান’
সামিরা— ভাইয়া প্লিজ এমনটা করবেন না। আমার ভুল হয়ে গেছে, আমি জীবনে কোনদিন কোন ছেলের সাথে আর কথা বলবো না, মরে গেলেও বলবো না, আপনার অবাধ্য তো দূর কোনদিন মুখের উপর দুটো কথা বলবো না। বিশ্বাস করুন ‘ভাইয়া’। উত্তেজিত কন্ঠে
“এই ভাইয়া ,ভাইয়া, ভাইয়া, ডাকটা আমি আর কত শুনবো, বলে সামিরা কে এক মুহূর্ত আর সময় না দিয়ে, সামিরার একটা পা ধরে টান দিয়ে একদম নিজের কাছে এনে, সামিরার গোলাপি রাঙ্গা ঠোঁট দুটো নিজের আয়তে নিয়ে নেয়।”
উহুম,উহুমমমমমমমম, সামিরা অনেকক্ষণ যাবত রিহানের থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য উহুম উহুম করে যাচ্ছে। কিন্তু রিহানের ছাড়াছাড়ির কোন নাম নেই। সে নিজের মত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, এক পর্যায়ে ঠোঁট দুটো ছেড়ে মুখ ডুবায় সামিরা ফর্সা গলায়, হঠাৎ করেই সামিরা ‘আউচ’ এর ন্যায় একটা শব্দ করে উঠলো। কারণ রিহান সামিরার গলায় সুন্দর মত একটা লাভ বাইট দিয়েছে, আস্তে আস্তে ঘাড় থেকে একটু নিচে নামতে সামিরা কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল।
সামিরা— প্লিজ প্লিজ আর না, আর নিতে পারছি না। দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার, আমাকে ছেড়ে দিন।
রিহান— ও মাই হৃদয়ের রানী, মাত্র ধরলাম, ছুলাম না খেলাম না এর ভিতরে ছেড়ে দিব?? প্রশ্নই আসেনা, যখন ছুলাম তখন একটু খেয়ে দেখি টেস্টটা কেমন?
“সামিরার তো, এমনি শরীরে মধু কাপন সৃষ্টি হয়েছে, এর ভিতর আবার রিহানের এমন বিচ্ছিরি কথায় গা ঘিন ঘিন করে উঠলো। ও বেশ ভালই বুঝতে পারছে এই রিহান আজকে ওকে কোনোভাবেই ছাড়বে না, স্বামীর অধিকার আজকে নিয়ে ছাড়বে, কিন্তু সে তো সবার জন্য তৈরি নয়, স্বামী-স্ত্রীর একটা মিল হতে হলে তাদের দুজনেরই সম্মতি থাকা উচিত। এই মুহূর্তে সামিরা সেটা নেই, তাই সজোরে রিহানকে নিজের থেকে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করল, ধাক্কাও দিল, তবে তার ফলাফল শূন্য। কাজ তো হলোই না বরং রিহান আরও ক্ষিপ্ত হয়ে সামিরার জামাটা টেনে গা থেকে ফেলে দিল। সামিরা এমন কিছুর জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না, তাই হঠাৎ এমন হওয়ায় দুহাত বুকের উপর চেপে ধরে চোখ বুজে রইল”।
~~ আহহহ, তোর ফিগার যে এত সুন্দর হবে ভাবতেই পারিনি, যদি একবারও ধারনায় আসতো? তো কখনই তুলে এনে বিয়ে করে নিজের কাছে আবদ্ধ করে রেখে দিতাম, তাহলে এত অপেক্ষা আমি করতাম না, আর এত ভোগপোহিয়ে ভার্সিটির বড় ভাই হয়ে ওখানে থাকতেও হতো না। সত্যি বলছি মাইরি, একদম হট , ঠোঁট কামড়ে চোখ টিপ দিয়ে,’রিহান’
সামিরা রিহানের কথায় চোখ মেলে তাকিয়ে বোকার মত মুখ থেকে ফুস করে বের করে ফেলল।
সামিরা— মানে??
রিহান— তোর কি মনে হয় আমি তোর ভাইয়ের ছোট?? একদমই না, এটা ভাবলে তোর ভুল। কারণ আমাদের দু’জনের বয়সের ডিফারেন্স মাত্র ৬ মাসের। তোর মনে প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে আমি কিভাবে এখনো ভার্সিটিতে পরি?
~~ আমি কোন ভার্সিটিতে পড়ি না। তোর ভাই যেমন প্রফেসর, ঠিক তেমনি আমিও ওই লে’ভে’লে’রি, শুধুমাত্র প্রফেশনে ঢোকা হয়নি তোর জন্য। বাবার ব্যবসায় পর্যন্ত ঢুকিনি তোর জন্য । শুধুমাত্র তোকে নিজের কাছে আগলে রাখো বলে। ঠিক তাই করেছি, সবকিছু ফেলে রেখে ভার্সিটির প্রফেসরদের সাথে কথা বলে দিনের পর দিন অভিনয় চালিয়ে গেছি, তোকে সবার কাছ থেকে এড়িয়ে রেখেছি,এতে তোর ভাই চেয়েও আমাকে বাধা দিতে পারেনি, আর তুই তো আমার কোনদিন তেমনভাবে খুঁজে নিস নি তাই তোর এই বিষয়ে জেনে ওঠা হয়নি আর। তবে এখন তো, তোকে আমি বিয়ে করে নিয়েছি। সব জানিয়েওছি। এখন ভেবে দেখব কোন প্রফেশনে ঢোকা যায়। কারণ আমার জিনিসটা এখন আমার আয়তের মধ্যে চলে এসেছে। এখন নো চিন্তা ডু ফুর্তি।
~~কিন্তু বিশ্বাস কর তোকে এই অবস্থায় দেখে নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারছি না, প্লিজ কাম। ব্যথা দিব না সত্যি বলছি, জোর করে বাধ্য করিস না নিজে থেকে কাছে চলে আয়, বলে আস্তে করে সামিরার বুক থেকে হাতটা সরিয়ে নেয়,
সামিরা না পারছে নিজেকে প্রটেক্ট করতে, আর না পারছে রিহানকে নিজের থেকে সরাতে। একপ্রকার রিহানের কাছে নিজেকে বিলিয়ে দিতে হচ্ছে। কারণ ও জানে এই বন্ধ কুঠুরিতে, ও আজ কোন ভাবে রিহানের থেকে ছাড়া পাবেনা। তার উপর সব থেকে বড় কথা ও রিহানের স্ত্রী, আজ হোক কাল হোক ওকে তো রিহান কে গ্রহণ করতে হতোই। তাই চুপচাপ চোখের অশ্রু ফেলে রিহানকে কাছে স্বইচ্ছায় নিজেকে বিলিয়ে দিল।
*******************************************
“কোন খোঁজ পেলে আমার মেয়েটার? কোথায় ও? কোথায় পাবো ওকে আমরা এখন। শায়লা
আরমান— চিন্তা করো না পেয়ে যাব। শাহরিয়া নাকি জানে সামিরা কোথায় আছে। ‘সামিরার বাবা’
শায়লা— ছেলেটার সবেমাত্র বিয়েটা হল, সকাল হতে না হতে ছুটেছে বোনের খোঁজে। এখন কোথায় আছে সামিরা সেটা বলেনি , আর তুমি বলছো ও নাকি জানে সামিয়া কোথায় আছে?
আরমান— তোমার মেয়ে রিহানের সাথে আছে। রিহান নাকি ওকে তোর বাসায় নিয়ে গেছে,আর শাহারিয়া আমাকে ফোন করে সেখানেই তোমাদেরকে নিয়ে যেতে বলেছে।
মুক্তা তার ভাই সমতুল্য দেবরের কথা শুনে কিছুটা চমকায়। তার মানে তার ওই বদমেজাজি ছেলেটা সত্যি সত্যি মেয়েটার জীবন নষ্ট করে দিল না তো? কতবার ছেলেকে বুঝিয়েছে, জোর করে কোন কিছু হয় না। আর এই ছেলে তো এক কথার ছেলে, তার সামিরা কেই লাগবে, এখন আমার সামিরাকে সত্যি সত্যি তুলে নিয়ে গেছে, কে জানে এটা মেয়েটা এখন কেমন আছে। বাচ্চা মেয়ে কিছু উল্টাপাল্টা না করে ফেলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রিহান আবার খারাপ কিছু না করে ফেলে, মেয়েটার সাথে, চিন্তায় যেন মুক্তার মাথা ফেটে যাচ্ছে। তাই অনুনয়ের সুরে দেবরের নিকট বলল।
মুক্তা— ভাই আমার ছেলেটা নিতান্তই একটা পাগল। এত করে বললাম সামিরার জীবন থেকে তুমি সরে দাঁড়াও, কিন্তু না পাগলের মত কাজবাজ সব ফেলে ভার্সিটিতে গিয়ে পড়ে রয়েছে দিনের পর দিন। তার নাকি তার সামিরা কি প্রটেক্ট করতে হবে, সামিরা অন্য কাউকে ভালো না বেসে ফেলে সেটা তাকে দেখতে হবে। কোন ভাবেই তাকে ফেরাতে পারিনি ভাই, তুমি দয়া করে আমার ছেলেটাকে খারাপ ভেবো না, শাহরিয়া ও যে রাগি ছেলে, কিনা বোনের জন্য আমার ছেলেটার কোন ক্ষতি করে দেয়। তুমি একটু বিষয়টা দেখো ভাই।
আরমান চৌধুরী তার বড় ভাবির এমন কথায় কিছুটা লজ্জা পায়। সে তো রিহানকে ভীষণ পছন্দ করে, ছেলেটা যথেষ্ট বুদ্ধিমান, লম্বাচুরা যথেষ্ট সুন্দর। তাছাড়া সে যখন থেকে জানতে পেরেছে রিহান সামিনা কে পছন্দ করে, তখন থেকে তার মনি সুপ্ত একটা বাসনা হয়েছিল, সে সামিরা কে রিহান এর কাছেই তুলে দিবে। আর যখন শুনেছে সামিরা বাসায় নেই, তারপর খোঁজ নিয়ে জানতে পারলো সেই রিহানের কাছে, তখন থেকেই সে চিন্তা মুক্ত। তাহলে হঠাৎ এমন কথা হচ্ছে কেন, তার বড় ভাবি, তার নিকট বড় বোনের মত। সেই বড় বুনি তার কাছে ক্ষমা চাইছে বিষয়টা একদমই লজ্জা জনক। তাই সে গম্ভীর কণ্ঠে শুধালো।
আরমান—ছি ছি ভাবি’মনি আপনি এমন কোন কথা বলবেন না যাতে আমি ছোট হই। আর কে বলেছে রিহান কে আমি পছন্দ করি না, আমি রিহানের সাথেই আমার সামিরার বিয়ে দেব। এতে যদি আপনাদের মত না থাকতো আমি মত করিয়ে নিতাম। আমার রিহানকে ভীষণ পছন্দ, খুব ভালো ছেলে ও। হ্যাঁ মানছি রাগ টা একটু বেশি। কিন্তু আমি জানি আমার সামিরা ওকে ঠিক সামলে নেবে। আর এই বিষয়ে আমি নিজে শাহরিয়ার সাথে কথা বলবো। তোমার কোন চিন্তা করতে হবে না। এখন চলো শাহারিয়া সবাইকে নিয়ে, রেহানের আলাদা বাসায় যেতে বলেছে।
“অরুপিতা চুপচাপ দাঁড়িয়ে বড়দের কথা শুনছিল। তার বিশ্বাসই হচ্ছে না,’রিহান’ছেলেটা সামিরাকে ভালবাসে, আবার কাউকে না জানিয়ে নিজের সাথে সামিরা কে বাসায় নিয়ে গেছে। রিয়ান কে যতটুকু অরুপিতা দেখেছে তার কাছে কাছে রিহান রাগী বদমেজাজি বলেই মনে হয়েছে। কিন্তু এরকম যে সামিরা কে তুলে নিয়ে যাবে সেটা তো কল্পনাও করতে পারিনি। সেতো সকাল-সকাল তাড়াহুড়া করে উঠেছিল, সামিরার কাছে তার ভুলের জন্য ক্ষমা চাইবে। তাদের সম্পর্কটা ঠিক আবার আগের মত করে নিবে। কিন্তু সকালে উঠেই এমন একটা খবর শুনতে হবে ও কল্পনাতেও আনেনি।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কোথায় আমার বোন?? তোর সাহস কি করে হলো কাউকে না জানিয়ে ওকে নিয়ে আসার?? কোন সাহসে তুই ওকে নিয়ে এলি?? কোন অধিকারে?? আমি তোকে নিষেধ করেছিলাম ওর থেকে দূরে থাকতে?? কিন্তু তোর এত সাহস তুই ওকে না বলে নিয়ে আসলি? আমি আমার বোনকে নিয়ে যাব? কোথায় ও? বল তাড়াতাড়ি। ‘শাহারিয়া’
“ফুল সজ্জিত বিছানায় গুটি’শুটি হয়ে বসে আছে অরুপিতা, বসে আছে বললে ভুল হবে, একপ্রকার তেজি বাঘিনী মরিচ হয়ে বসে আছে, কখন ওর স্বামী আসবে আর ও ওর কঠিন মূল্যবান বাণী শুনাবে, কিছু সময় অতিবাহিত হতেই অরুপিতার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে তার গুনধর স্বামী রুমে প্রবেশ করলো,অরুপিতা ও আঁটশাট বেঁধে নিজেকে তৈরি করলো।”
“অনেক সময় হওয়ার পরও যখন আরুপিতা রিহানের কোন সারা শব্দ পেল না, তখন কিছুটা কৌতুহল নিয়ে মুখের ঘোমটা একটু টেনে দেখার চেষ্টা করলো, তার সাধ্য হওয়া স্বামী কথায় উধাও হয়ে গেল? হঠাৎ রুমের বেলকনি থেকে মুধু কন্ঠে শুনতে পেল,
~~ চাঁদের চেয়েও সুন্দর, নক্ষত্রের চেয়েও দামি,হিরার থেকেও মূল্যবান,এক মায়াবী পরী কে আমি পেয়ে গেছি, এ জীবনে আমার আর কিছুর প্রয়োজন নেই।
“হঠাৎ বলায় কন্ঠ টা ঠিক ধরতে পারলো না অরুপিতা, তবে বেশ আশ্চর্য হয়েছে,রিহানো ঠিক শাহারিয়ার মতো কথা বললো,অরুপিতার চোখ জুরে দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো,খাট থেকে নেমে বেলকনির সামনে দাঁড়িয়ে উল্টো দিকে ঘুরে কন্ঠে তেজি ভাবটা এনে বললো।
অরু— আমি আপনার সাথে এক রুমে থাকতে পারবো না, বিয়েটা আমাদের ঠিকি হয়েছে তবে এই বিয়ের কোনো মূল্যে নেই আমার কাছে,না আছে আপনার, আমি এই বিয়েটা শুধু মা’বাবার জন্য করতে বাধ্য হয়ে হয়েছি, বিশেষ করে আপনারা দুই ভাই-বোন আমাকে বাধ্য করেছেন, তবে শুনে রাখুন আমি আপনাকে ভালোবাসি না,আর না বাসবো। আর আপনাকে আমি আর একটা কথা জানিয়ে রাখছি আমি একজন কে ভালোবাসি, ভিশন ভালোবাসি, বুঝতে পেরেছেন? বলে সামনে থাকা লোকটার দিকে ঘুরে তাকায়, তাকিয়ে মূহুর্তে যেন স্তব্ধ বণে যায়, চোখ দুটো বড়ো বড়ো হয়, মুখটা হা হয়ে গেল,অরুপিতা এ কি দেখছে,ও ভুল দেখছে না তো, সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটা আসলেই এখানে আছে?
~~ কি কি যেন বলছিলে, আমি ভালো করে বুঝতে পারিনি, আবার রিপিট করো, কানে আঙ্গুল দিয়ে লারাতে লারাতে, ‘শাহারিয়া’
অরু— আপনি সত্যিই এখানে এসেছেন?? ‘হাসি হাসি দিয়ে’
শাহারিয়া— আমার ঘর আমার বউ, আমার ফুলসোজ্জা আর আমি আসবো না? হেঁয়ালি করে
অরু— মানে,
শাহরিয়া— কিছু না এদিকে আসো,
” অরুপিতাকে কে এই কথাটা বলতে দেরী হলো কিন্তু দৌড়ে গিয়ে জরিয়ে ধরতে দেরী হলোনা’
~~ আমি আপনাকে ভীষণ ভালোবাসি শাহারিয়া, আমি আপনাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না,আর না অন্য কেউ কে মেনে নিতে, আপনি যখন এসেছেন আমাকে আপনার সাথে নিয়ে যান, না হয় আমি দম বন্ধ হয়ে এখানে মারা যাবো, ‘কান্না করে’
শাহারিয়া বেশ আশ্চর্য হয় আরুপিতার কোথায়, তাই কিছুটা অস্বাভাবিকভাবেই বললো,
শাহরিয়া— তুমি অন্য কাউকে গ্রহণ করতে যাবে কেন? আমাকে ছাড়া থাকতে বা তোমাকে কে বলেছে? আর এখান থেকে তোমাকে নিয়ে বা যাবো কেন?
অরু— কারন আমার বিয়ে হয়ে গেছে। আর এই বিয়েটা আমি মানি না।
শাহারিয়া— কিন্তু আমি তো মানি,
অরু— শাহরিয়া এটা মজা করার সময় নয়, আমাকে নিয়ে চলুন এখান থেকে আমরা পালিয়ে যাই। নয়তো আপনাকে এভাবে দেখলে কুরুক্ষেত্র বেজে যাবে।
শাহারিয়া— আজব কে কুরুক্ষেত্র বাজাবে? আমার ঘর আমার বউ আমি ফুলশয্যা করতে এসেছি, এতে কুরুক্ষেত্র কে বাজাবে? কার এত বড় সাহস যে আমাকে ফুলশয্যা করতে ডিস্টার্ব করবে, কত কষ্ট করে ঝামেলা শেষ করে বউটার কাছে এসেছি আর এখন বউটাই কি’সব উল্টোপাল্টা কথা বলছে।
অরু— কি সব আবোল তাবোল বলছেন আপনার ফুলশয্যা হতে যাবে কেন?
শাহারিয়া— তো বিয়ে টা তোমাকে কে করছে? আমি করেছি, তো ফুলশয্যা তো তোমার আমারি সাথে হবে, তাই না,
অরুপিতা কিছুক্ষণ ‘হা’ করে শাহারিয়ার দিকে চেয়ে থাকলো, সব যেন তার মাথায় উপর দিয়ে গেল, কিছুই মাথায় ঢুকছে না তার। ওর বিয়ে রিহানের সাথে হয়নি,ওর ভালোবাসার মানুষ টার সাথেই হয়েছে? কিন্তু রিহান তো সামিরার ভাই, তাহলে কি করে শাহরিয়ার সাথে, ‘না’ অতঃপর বোকার মত প্রশ্ন করলো।
অরু— তাহলে আপনি ও কি সামিরার ভাই?
শাহারিয়া— হ্যাঁ আমি সামিরার ভাই,আর তোমার বিয়ে আমার সাথে হয়েছে,
অরু— তাহলে ওই রিহান??
শাহরিয়া এতক্ষণ পর বুঝতে পারে তার অরু এই কথা গুলো কেন বলছিল। তাই সুন্দর করে তাঁর মায়াবতী কে বোঝানোর চেষ্টা করে বললো।
শাহারিয়া— আমি জানি না তুমি এ সব কথা কেন বলছো। তবে আমি তোমার অবগতির জন্য বলেছি।
~~ আমার ‘আব্বুরা’ দুই ভাই, বোন নেই, চাচ্চু বড় , আমার আব্বু ছোট্ট, চাচ্চুর এক ছেলে , আর আব্বুর আমারা দুজন, সামিরা আর আমি, আর রিহান আমার আর সমিরা, বড়ো চাঁচার একমাত্র ছেলে, রিহানের আর কোন ভাই বোন নেই।ও একা,আর সেদিন বাবা’মা যখন তোমাকে দেখতে গেছিল, তখন আমার জরুরি একটা ছিল তাই তাদের সাথে যেতে পারিনি,আর বাবা’মাকে তো আর একা পাঠানো যায় না, আর সামিরা ও সেদিন ভার্সিটিতে ছিল, তাই সেদিন রিহান তাদের সাথে তোমাদের বাসায় গিয়েছিল, আর সেখানেই তোমার হয়তো কোনো ভুল ধারণা হয়েছে,
অরুপিতা শাহারিয়ার কথা শুনে স্তব্ধ বণে যায়,ও কি শুনছে, রিহান নয় শাহারিয়া সামিরার আপন ভাই,আর ও কিনা ভুল বুঝে সামিরা কে কত কিছু বলে কষ্ট দিয়ে ফেললো, এখন কিভাবে অরু সামিরার কাছে ক্ষমা চাইবে? সেই মুখ কি তার আছে? না একদম নেই, কিন্তু ক্ষমা তো চাইতে হবে, সেটা যে করে হোক। সামিরার কাছে ওর জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল, কিন্তু সেদিন ঋতু, মায়া যেভাবে বলেছিল, অরু তো আপন ভাই ভেবে নিয়েছিল, ভুল তো তার সামিরার না, তার ভালোবাসার মানুষটির নাম তো একবার ও উচ্চারণ করেনি, শুধু বলে গেছে,সে তার ভাই কে নয় অন্য একজন কে ভালোবাসে, যদি নাম টা বলে দিত, তাহলে তো ভুল বোঝাবুঝি টা হতো না, অরুপিতার এখন নিজের উপর ভিশন রাগ হচ্ছে,যে করেই হোক সামিরার সাথে সব ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিবে।
শাহরিয়ার— যা হাওয়া হয়েছে,যা বোঝার বুঝেছো, এখন তার জন্য আমি আমার বাসোর রাতটা নষ্ট করতে চাই না,মাই চাঁদকুমারী তাই কাম , হাত দিয়ে অরু কে ইশারা করে।
অরু শাহারিয়ার ঠোঁট কাটা কথায় বেশ লজ্জা পায়,তাই স্থির অবস্থায় এখানেই দাঁড়িয়ে রয়,অরু কে লজ্জা পেতে দেখে শাহারিয়া আবার বললো।
~~ আমার কিন্তু টুইন বেবি চাই, তাই এখন থেকেই কাজ চালিয়ে যেতে হবে, তাই দেরি না করে আমার কাছে আসো তো,যতো দেরি করবে তোমারি লচ, কারণ আমার কিন্তু বেবির চাহিদা বাড়বে কোয়ই কমবে না, টুইন এর জায়গায় তৃপল, হয়ে যেত পারে,
“অরুর এমন কথায় কান থেকে ধোঁয়া বের হয়ে যায়, শরীরের মধু মধু কাঁপন শুরু হয়,তাই এমন কথা সহ্য করতে না পেরে আবারো শাহরিয়া কে জরিয়ে ধরে বললো।”
~~ চুপ করুন আপনি, আমি সহ্য করতে পারছি না,
“শাহরিয়া ও আর কিছু না বলে হুট করে অরুকে কোলে তুলে নেয়, আস্তে আস্তে অরুকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে,অরুর গায়ের গহনা খুলতে থাকে, কিছুক্ষণ পর চোখ যায় অরুর লিপিস্টিক লাগানো ঠোঁটের দিকে, ব্যাস অরুর ঠোঁট টা সাথে সাথে নিজের দখলে নিয়ে নেয়।অরু ও শাহরিয়া কে কোন রুপ বাঁধা দেয় না, অরুর বাধা না পেয়ে শাহারিয়া পুরোপুরি অরুতে মত্ত হয়, তাঁরা দুজন চলে যায় এক নতুন ভালোবাসার সূচনায়, দুজন একে অপরের সাথে মিশে যায় এক গভীর ভালোবাসায়।
গভীর রাত, অরু শরীরে শুধু একটা চাদর পেঁচিয়ে শাহারিয়ার বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে, এখানেই যেন অরুর ভিশন শান্তির স্থান, শাহরিয়া ও অরুকে বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছে,অরু শাহারিয়ার বুকে মাথা রাখা অবস্থায় বললো,
~~ আপনি আমাকে কোনদিন ছেড়ে যাবেন না তো?? এভাবেই নিজের কাছে আগলে রাখবেন তো?? ‘অরু’
“শাহরিয়া অরুর কাপালে গভীর একটা চুমু একে দিয়ে বললো”
~~ দেহে যদি রুহ টাই না থাকে তখন মানুষ টাকে মৃত্যু বলে, ঠিক তেমনি শাহারিয়া নামে মানুষ টার জিবনে অরুপিতা নামে মেয়েটা না থাকে তো পুরো জীবন টাই বৃথা যাবে,
কলমে~মরিয়ম জুথি
[জীবনে হয়তো কোনো ভালো কাজ করেছিলাম তাই তো তোমাকে পাওয়া] ‘শাহারিয়া’
********************************************
“কালকে রাত থেকে সামিরা কে কোথাও দেখছি না, রুমে খুঁজলাম, সাড়া বাড়ি খুঁজলাম কোথাও পেলাম না, গেল কোথায় মেয়েটা? ‘সায়লা’
মুক্তা— ছোট্ট এখন ওনাদের তো বিষয় টা জানানো উচিত, মেয়েটা কিছু আবার হলো না তো? রিহান কেও কালকে থেকে দেখতে পারছিনা, ‘রিহানের মা’
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে সামিরা, সামনে হিংস্র হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রিহান, কি অসম্ভব রাগে সাপের মত ফোঁস ফোঁস করছে, সামিরার তো রিহানের এমন ভয়ংকর রাগ দেখে সমস্ত শরীর শিওরে উঠেছে, একটু পর পর কেপে উঠছে ছোট্ট শরীর টা,কাপালে যে তার শনি আছে বুঝতে একটুও অসোবিধা হলো না, মুখ দিয়ে কিছু বলতে ও পারছে না, মুখটা ও টেপকশ লাগানো, সামিরা কে ছোটাছুটি করতে দেখে রিহান বললো।
~~ আমার দেওয়া গহোনা তোর শরীর থেকে খুলতে নিষেধ করেছিম না? কিন্তু না তুই সব তোর শরীর থেকে খুলে ফেললি, তুই আমার অবাধ্য হলি, এই রিহান অরণ্যর অবাধ্য হলি, এমন কি অন্য ছেলেদের সাথে গা গেসাগিসী,করলি। যেটা আমি আমি একদমই সহ্য
করতে পারিনা, এখন তো এর শাস্তি তোকে পেতে হবে, বলে সামিরার হাতে পায়ের বাঁধন খুলে টেনে উঠিয়ে,
অরু— তোর মতো মানুষ আমার বন্ধু হতে পারে না, তোরা সবাই খারাপ, স্বার্থপর নিজেদের টা খুব ভালো করে বুঝিস, অন্য কারো মনের দিক টা বুঝার চেষ্টা করিস না, ‘তেজি কন্ঠে’
সামিরার তো মাথায় আসছে না হঠাৎ অরু এসব কি বলছে,স্বার্থপর, খারাপ নিজেদের টা বুঝি,ওর মোন বুঝি না,ওর মাথায় কিছুই আসছে না তাই আবারো অরু পিতার কাছে মধু কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো।
সামিরা— কি হয়েছে তোর এমন করে কথা বলছিস কেন? বল, আমাকে
অরু— এমন করে কথা বলছিস যেন কচি খুকি তুই, আমার থেকে সব কিছু কেরে নিয়ে এখন আবার আমাকে জিজ্ঞেস করছিস, ‘চোখ দুটো রাঙিয়ে’
সামিরা— আরে বাবা কি করেছি সেটাই তো জিজ্ঞেস করছি,
অরু— আমকে তো তোর ভাবী বানানোর খুব শখ ছিল, তাই তো তোর নিজের ভাইয়ের আসল পরিচয় দিলি না, ভাইয়ের পরিচয় গোপন রাখলি আমার কাছ থেকে, এখন তো তোর ইচ্ছাটা পূরণ হতে যাচ্ছে, তুই যেটা চেয়েছিস সেটাই তো হচ্ছে,
সামিরা— অরু ভাইয়ার বিষয়ে আমি তোকে বলতে চাইছিলাম কিন্তু ভাইয়া তখন তোর কাছে, বলতে নিষেধ করেছিল,সে আমার ভাই হয়, তাই তোকে বলা হয়নি, কিন্তু এখন তো তুই জানিস,
অরু— তাইতো আমি এই বিয়েটা করতে চাই না,
সামিরা— কিন্তু কেন??
অরু— কারণ টা আমি তোকে সেই দিন বলতে ভার্সিটিতে গিয়েছিলাম, কিন্তু তুই কি করলি, তার আগে আমার বাবা মাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে তোর ভাবী বানানোর জন্য রাজী করালী,আর তুই ভালো করে জানিস আমি ‘মা,বাবার’ বাধ্য সন্তান। তাই বাবা মাকে একবার রাজী করাতে পারলে, তোর ইচ্ছে পূরণ হয়ে যাবে। কিন্তু তুই একটা বারও আমার কাছে জিজ্ঞেস করলি না আমি তর ভাইকে বিয়ে করতে চায় কিনা, কিন্তু তুই সেটা জিজ্ঞেস করলি না, তবে শুনে রাখ আমি তোর ভাইকে ভালোবাসি না, আমি অন্য একজন কে ভালোবাসি,
সামিরা— মিথ্যা কেন বলছিস?? তুই আর ভাইয়া তো একে অপরকে ভালোবাসিস, তাহলে,
অরুপিতা ডান হাতটা জাগিয়ে ‘ব্যাস’
~~ মিথ্যা আমি নয় তুই বলছিস, আমি তোর কোন ভাইকে ভালোবাসি না,আর না বাসবো, আমি শুধু একজন কে ভালোবাসি, আমি এই বিয়েটা করতে চাই না সামু, প্লিজ আমাকে হেল্প কর। ‘করুন কন্ঠে’
সামিরা— তোর মাথা ঠিক নেই, এখন তোর গায়ে হলুদ, কালকে বিয়ে লোকসমাজ দাওয়াত দেওয়া হয়ে গেছে, এখন থেকেই মানুষ জন আসা শুরু করে দিয়েছে,আর এই মুহূর্তে আমরা যদি এমন কিছু করি, দুই ও পরিবারের এক পরিবারের ও মানসম্মান বলে কিচ্ছু থাকবে না, তাই আমাকে ক্ষমা করে দিস, এমনটা আমার করা উচিত হয়নি,তোর অনুমতি না নিয়ে এত বড়ো একটা ভুল করার,
অরু— এই বিয়েটা আমি ঠিকই বাধ্য হয়ে করছি, তবে তোর ভাই আমার শরীর টা পেলেও,মোন টা পাবে না, আর না তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড থাকবি, কোনদিন তুই আমার সামনে আসবি না, আমি তোর মুখ ও দেখতে চাই না, সামু ঘৃণা করি এই বন্ধ নামক শক্র কে।আজ থেকে তোর সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই,যা ছিল তা আজ এই মুহূর্তে সব শেষ করে ফেললাম, বেরিয়ে যা তুই এখন থেকে, এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো বলে সামিরা কে একপ্রকার অপমান করে রুম থেকে বের করে দিয়ে কান্না করতে করতে বলে।
~~ হে আল্লাহ আমার কোন পাপের শাস্তি দিচ্ছেন? আমার আপনার দরবারে চাওয়ায় তো কোন ভুল ছিল না, তাহলে কেন আমাকে এভাবে শাস্তি দিচ্ছেন। আমার ধৈর্যর পরিক্ষা এভাবে আর নিয়েন না, মালিক আমাকে সাহায্য করুন। অরু
********************************************
“দূরুত গতিতে রাত ফুরিয়ে সকাল হলো,অরুপিতার চোখে এক ছিটে ফোঁটা ঘুম নেই, অষ্টদাসীর চোখ জোড়া লাল লাল হয়ে কুঁচকে আছে, অপর দিগন্তের আনন্দের সিমা নেই, আজকে ঘরের লোক্ষী ঘরে আসবে তাই কোন দিক থেকে কমতি রাখছে না, তবে কালকের গায়ে হলুদের পর সামিরা যে সেই রুমে ঢুকেছে আর বের হতে দেখা যায় নি,অরুর কথায় তার ছোট মনে ভিশন আঘাত পেয়েছে,তর জন্য যেহেতু এতো কিছু হয়েছে, অরুপিতা ও যখন সব ছিন্ন করেছে তাই সে আর এসবে থাকবে না, তবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিয়েতে যে সবচেয়ে বেশি খুশি ছিল সেই যদি বিয়েতে না থাকে তাহলে সবার মনে সংকোচ থাকতে পারে,তাই কাল বিয়ের পরে, সামিরা আর অরুপিতার সামনে যাবে না, তাই রুম থেকে আর বের হয়নি, বিয়ে বাড়ীতে তো কাজ কর্মের শেষ নেই, তাই সামিরার দিকে কেউ ততটা গুরুত্ব দেয়নি,বর যাত্রী গাড়ি বের হয়ে পরবে, সম সম সময় হয় গেছে, একপ্রকার গাড়ি বহন করতে শুরু করলো।
~~~~~~~~~~~~~~
“অনিচ্ছা থাকার সত্ত্বেও তিন কবুল পরে নিজের ভালোবাসার মানুষ টাকে বিসর্জন দিয়ে বিয়েটা সম্পুর্ন করতে হলো অরুপিতার ‘মা,বাবার’ সম্মান রক্ষার্থের জন্য, হ্যাঁ ‘বাবা,মার’ প্রতিটি বাধ্য সন্তানের জীবন টা এমন, তাঁরা না চাইলে ও বাবা মায়ের কথা অমান্য করার ক্ষমতা যে তাদের থাকে না,অরুপিতার ও তাই হলো, ভিতর টা খা,খা করছে, ভালোবাসার মানুষ টার জন্য।আজ যদি অরুপিতার পাশে এই লোকটা না হয়ে শাহারিয়া নামক মানুষটা থাকতো তবে কি বেশি ক্ষতি হয়ে যেতো?? সে কিভাবে ভুলবে সেই বিকেলের কথা?গোধূলি লগ্নে দুজন একে অপরের কাঁধে কাঁধ রেখে পরোপার পর্যন্ত পার করার কথা? সুখ দুঃখ এক, অপরের সাথে ভাগ করে নেওয়ার কথা?পা,য়ে পা মিলিয়ে চলার কথা? সে তো শাহারিয়া কে কথা দিয়েছিল, আপনি ব্যক্তি টা সুন্দর কি শ্যামবর্ণের হন না কেন এই অরুপিতা টা আপনার”
~~ যদিও হাজারো সুন্দর মানুষের ভিড়ে আমি আপনার হাত টা রোইবো আকরে ধরে, যদি আপনার চেয়ে হাজারো বেটার অফসেন ও থেকে থাকে তুবুও আমার আপনার মতো তুমি টাকেই লাগবে।
কলমে~ মারিয়ম_জুথী
“কিন্তু কোথায় পারলো কথা রাখতে,নিয়তি তাকে রাখতে দিলো, না, ‘কথায় আছে না’ তুমি রাখতে জানলে আমি হাজার বার থাকতে বাধ্য, প্রবাতের মত আরুপিত রাখতে জানলো না তাই ছুটে পালালো। নিয়তি তাকে এই জায়গায় এনে দাঁড় কারালো।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে সামিরা, সামনে হিংস্র হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রিহান, কি অসম্ভব রাগে সাপের মত ফোঁস ফোঁস করছে, সামিরার তো রিহানের এমন ভয়ংকর রাগ দেখে সমস্ত শরীর শিওরে উঠেছে, একটু পর পর কেপে উঠছে ছোট্ট শরীর টা,কাপালে যে তার শনি আছে বুঝতে একটুও অসোবিধা হলো না, মুখ দিয়ে কিছু বলতে ও পারছে না, মুখটা ও টেপকশ লাগানো, সামিরা কে ছোটাছুটি করতে দেখে রিহান বললো।
~~ আমার দেওয়া গহোনা তোর শরীর থেকে খুলতে নিষেধ করেছিম না? কিন্তু না তুই সব তোর শরীর থেকে খুলে ফেললি, তুই আমার অবাধ্য হলি, এই রিহান অরণ্যর অবাধ্য হলি, এমন কি অন্য ছেলেদের সাথে, গা ঘেষা’ঘেশি করলি। যেটা আমি আমি একদমই সহ্য করতে পারিনা, এখন তো এর শাস্তি তোকে পেতে হবে”।
রিহান— আজকে তো ভাইয়ের গায়ে হলুদ,তাও আবার তোর প্রিয় বান্ধবীর সাথে, সেখানে তো নিশ্চয়ই ঢ্যাং ঢ্যাং করতে করতে যাবি??
সামিরা— ,,,, —-
রিহান— চল আমার সাথে, রিহানের সব বন্ধুদের চলে যেত বলে সামিরার হাত ধরে কিছুটা হেঁটে ওর গাড়িতে উঠে একটা গয়নার শপে গিয়ে গাড়ি থামায়।
সামিরা এতক্ষণ রিহানের সাথে ওর সব বন্ধুরা ছিল বলে মুখ থেকে একটা কথা পর্যন্ত বের করেনি, হঠাৎ এখন গয়না শপে আসতে দেখে কিছুটা সাহস নিয়ে জিজ্ঞেস করল।
সামিরা— আপনি আমাকে এখনে কেন নিয়ে এসেছেন??
রিহান— আরে বউ, বিয়ে হয়েছে তোর, তোকে দেখে যদি বিবাহিতা মহিলাদের মতো না লাগে তাহলে তোর কিসের বিয়ে হলো,
~~ এখন ভিতরে চল আমার সাথে।
সামিরা— কিন্তু আমি তো বিবাহিত মহিলাদের মতো হতে চাই না, মিন মিন করে
রিহান— তুই তো আমার বউ, তোকে তো বিবাহিত দের মত হতে হবে,আর সেটা আমি নিজে করবো।
“নাম করা H.N Gold shop, যেখানে রেড করা সব পন্য, একের পর এক গোল্ডের চুরি দেখছে,’রিহান’ কিন্তু ডিজাইন তেমন কোনোটার পছন্দ হচ্ছে না,রিহানের তামসা মুখটা গম্ভীর করে বসে দেখছে সামিরা,না পারছে এখান থেকে যেতে, আর না পারছে রিহান কে কিছু বলতে। চুপচাপ দাঁত কি’ড়’মি’ড় করে সহ্য করছে,”
“রিহান কিছুক্ষণ পর সুন্দর ডিজাইনের মোটা মোটা দুটো রুলি এনে সামিরার হাত দুটো নিজের হাতে নিয়ে সুন্দর মত পরিয়ে দেয়, ‘ফুটোনো’ নাকে ছোট নাকফুল টা খুলে মাঝারি সাইজের নাকফুল পরিয়ে দেয়। সাথে বেশ বড়সড় সাইজের একটা অনামিকা আঙ্গুলে আংটি পরিয়ে দেয়, সামিরা জেন রক্তে গড়া জলজেন্ত একটা শোপিজ , তাই রিহান তখন থেকে একের পর এক আনছে আর পুতুলের মত সামিরা কে পরিয়ে যাচ্ছে, সামিরা ও পুতুলের মত স্তব্ধ হয়ে বসে আছে, এছাড়া যেন এই মুহূর্তে তার নড়াচড়া নিষিদ্ধ, নড়াচড়া করলে তার জন্য মহা শাস্তি অপেক্ষা করছে,
“রিহান সামিরা কে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ভালো ভাবে দেখে ভ্রু জোড়া কুঁচকে বললো”
~~ হুম এবার কিছু টা হলেও বউ টাইপের লাগছে,
“সামিরার এতক্ষণ পর্যন্ত রিহানের এমন আচরণে চুপ থাকলেও এখন যেন সহ্যের সিমার বাহিরে চলে যাচ্ছে, তাই এবার রিহান কে ভয় না পেয়ে, দাঁড়িয়ে রাগী মুড নিয়ে ঝাঁজালো কন্ঠে বললো”
সামিরা— তখন থেকে দেখছি আমার কাছে কিছু না জিজ্ঞেস করেই নিজের মর্জি মত যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছেন, প্রথমে বিয়ে এখন আবার অলংকার কি শুরু করেছেন এগুলো?? বলে যেই হাত থেকে রুলি গুলো খুলতে যাবে তখনই রিহান দাঁত কি’ড়’মি’ড় করে সামিরার দুই বাহু শক্ত করে চেপে ধরে শাসিয়ে বলল।
রিহান— তুই আমায় জ্ঞান দিবি? আমি তোর কথা শুনবো? তোকে জিজ্ঞেস করব? তোর অনুমতি চাইবো? নো ওয়ে, আমার জিনিস আমি যখন যেভাবে চাইবো সেভাবেই হবে,আর তুই আমার ছিলি, এখন সম্পূর্ণ অধিকারের সাথে আমার হয়ে গেছিস, তাই আমি যে ভাবে চাইবো তুই ঠিক সেভাবেই চলবি, আর যদি আমর কথা অমান্য করার চেষ্টা করিস তো তুই ভালো করেই জানিস এই রিহান অরণ্য কি করতে পারে,
“সামিরা রিহান কে এমনেই ভিশন ভয় পেত, এখন এভাবে কথা বলায় ভয়ে ওখানেই চুপচাপ বসে যায়,ওর ভাবতেই গা শিউরে ওঠেছে এই রিহান ওর স্বামী, তার সাথে ওকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত থাকতে হবে,ও এই লোকটার সাথে মোটেই থাকতে চায় না, কিন্তু এই লোক যখন একবার মুখ থেকে বের করছে সামিরা ওর, তো সামিরা কোন ভাবেই এই লোকটার কাছ থেকে মুক্তি পাবেনা, সামিরা শুধু এই লোকটার কবল থেকে একবার ছাড়া পাক তারপর এই লোকটার সামনে একবারের জন্যও আসবে না।”
~~ তোমার গলায় একটা চেন দেখেছিলাম, ওটা খুলে আমার কাছে দেও, আর এটা গলায় পরে নেও,’রিহান’
“সামিরা বেশ আশ্চর্য হলো রিহানের মুখে তুমি শুনে, এই প্রথম রিহান সামিরা কে তুমি বলো।”
রিহান—কি হল কথা কানে যায় নি??
সামিরা— কিন্তু ওটা তো আমার ভাইয়া আমাকে গিফট করেছিল, আমি কেন ওটা আপনাকে দিতে যাবো??
‘রিহান বিরক্তিকর ভাব প্রকাশ করে সামিরা কে বললো’
রিহান— আমকে দিতে কে বলেছে, ওটা খুলে আমার টা পরতে বলেছি,
সামিরা— কিন্তু ও,,
“সামিরা রিহানের রাগী ফেস টা দেখে ভয়ে চুপসে যায়, তাই চুপচাপ হিজাবের ভিতরে হাত ঢুকিয়ে গলা থেকে ভাইয়ের দেওয়া চেন টা খুলে রিহানের দেওয়া চেন টা পড়ে নেয়,”
“ব্যাস এবার তোকে আমার বউ বউ লাগছে, আর একটা কথা, আমি যেন এক মুহূর্তের জন্য ও দেখি না, আমার দেওয়া চিহ্ন একবারের জন্যও তোর শরীর থেকে আলাদা করেছিস,আর যদি এমনটা হয় তো প্রলয় নিয়ে আসবো তোর জীবনে, তুই ভাল করেই জানিস আমার রাগ উঠলে মাথা ঠিক থাকে না, বাকি টা তোর উপর, আর হ্যাঁ ভালো করে শুনে রাখ কোন ছেলের আশে পাশে ঘিসপি না, পরিমাণ তোর জন্য ভালো হবে না”
সামিরা তো মহা চিন্তায় পড়ে গেছে,এই সব পরে যদি বাসায় ঢুকে,তো মা নিশ্চিত এমন যেরা শুরু করবে যতক্ষণ পর্যন্ত না সত্যি টা যানতে পারবে, ততক্ষণে পর্যন্ত ছারবে না,আর যদি একবার ওর ভাইয়ের চোখে পরে তো শেষ, আর এদিকে মহাশয় কে মেনে নিতে না পারলেও তার কথা অমান্য করলে লয়’প্রলয় পাকিয়ে ছারবে,কি করবে কিছুই বুঝতে না পেরে রিহান কে রাগী রাগী ভাবটা আনার চেষ্টা করে বলল।
সামিরা— আমি এই বিয়েটা মানি না, আর না আপনার দেওয়া গহোনা আমি পারবো। তাই এটাই ভালো হবে আপনার জিনিস আপনি নিয়ে যা,
~~ ব্যাস অনেক বলেছিস,’সামু’ তুই এমন কোন কিছু করিস না যাতে আমি কন্ট্রোল হারিয়ে তোর সাথে খারাপ কিছু করি,আর বাকী রইল বিয়ে মানা বা না মানা, আমার যখন মনে চাইবে তোকে আমার সাথে রাখবো তোর ইচ্ছে থাকুক বা না থাকুক তোকে আমার কাছেই থাকবে হবে, এতে তুই বিয়ে মানিস বা না মানিস।
*********************************************
“পুরো বাড়ি রং বেরঙের বাতি জ্বলছে,আলো সাজসজ্জায় সজ্জিত চৌধুরী বাড়িটা পুরো ঝকঝক করছে, কিছুক্ষণ পরেই শুরু হবে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান, খাওয়া দাওয়া,তারপরে রাত ১২ সঙ্গীত অনুষ্ঠান, আনন্দের জেন শেষ নেই, সামিরা তো দিব্বি ভুলে বসে আছে, তখন কার রিহান আর ওর বিয়েটা, তখন বাসায় এসে বিয়ে টা কেউ বুঝে না যায় তাই দরজার সামনে এসেই রিহানের দেওয়া সব গহনা খুলে বাসায় ঢুকছে, তারপর থেকে এমন মুড নিয়ে চলেছে যেন ওর সাথে আজকে কোন কিছুই হয়নি, প্রতিদিনের মত আজও ও স্বাধীন, তাইতো ভাইয়ের হলুদে হলুদ শাড়ি পড়ে হলুদ গহোনা পরে পরী পরী সেজে বসে আছে, ভাইয়ের হলুদ লাগানোর শেষ হলে সেই হলুদ অরু কে লাগাতে যাবে, আনন্দে যেন তর সইছে না, সামিরার অরু তার ভাবি হতে চলেছে,অহহ ভাবলেই খুশি খুশি লাগে,”
“কিছুক্ষণ হলো শাহরিয়া কে, হলুদ লাগানো শেষ সাবাই শাহারিয়া কে গোসলের জন্য নিয়ে গেছে, অনেকের প্রায় খাবার খাওয়া শেষ, মাত্র কিছু নির্দিষ্ট লোক খাইনি কারন, এখন কন্যা পক্ষের বাড়ি সবাই হলুদ তত্ত্ব নিয়ে যাবে,আর যারা যাবে সবাই সেখানেই খাওয়া দাওয়া করে আসবে, সামিরা সেই দলেরি একজন, তত্ত্ব নিয়ে দারিয়া আছে, কখন বড়রা যেতে বলবে, কিছু সময় পরেই সেই মূহুর্ত টা চলে এলো,সামিরা কে আর পায় কে, কেউ বলার আগেই গাড়িতে বসে পরেছে, সামিরার এমন কান্ডে ওখানে থাকা প্রায় সকলে হাসতে হাসতে শেষ,”
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
“ওনারা বেরিয়ে পরেছে, তোমারা অরু কে তারাতাড়ি রেডি করে নিয়ে মঞ্চে বসাও”, ‘আলেয়া’
বিষন্ন আঁধারে ডেকে আছে এক অষ্টদাসীর মন, মনে হাজারও সংকোচ কিভাবে মেনে নিবে ও, ও তো আরেকজন কে ভালোবাসে, তাকে না পেলে এই ব্যর্থ জীবনের কোন মূল্য নেই, কেউ কেন বুঝতে পারছে না,সে এই বিয়েটা করতে চায় না,সে এই বিয়ে করে কখনো সুখী হবে না। সে জীবনে দ্বিতীয় বার একজনকে ভালোবেসেছে, সেই ভালোবাসা সে তৃতীয় কাউকে দিতে পারবে না,আর না সে দিতে চায়,আর শাহারিয়া? সে হয়তো জানেনও না,তার সাথে আরু বেইমানি করছে, যদি জানতে পারে তাখন কি হবে? শাহরিয়া কি অরুপিতা কে ক্ষমা করতে পারবে? নাকি অরু ওনাকে ঠকিয়েছে শুনে সারাজীবন ঘৃণা করবেন?
” সামিরা অরু কে দেখা মাএ ছুটে গিয়ে বুকের সাথে জরিয়ে ন্যায়, অস্থির কন্ঠে বলতে লাগলো।
~~ অবশেষে তুই আমার মিষ্টি ভাবী হতে চলেছিস, আমার যে কি খুশি লাগছে না তোকে বলে বোঝাতে পারবো না,
“অরু সামিরা কে দেখে মনে মনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো,তাই সামিরা কে নিজের থেকে সরিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললো”
অরু— তোর তো মনের ইচ্ছা পূরণ হয়েছে, এখন আমর সামনে থেকে যা, তুই নামক ব্যক্তি আমার সামনে কখনো আসবি না, ‘কিছুটা চেঁচিয়ে’
তার অরু হঠাৎ তার সাথে এমন আচরণ করছে কেন সামিরা বুঝে উঠতে পারলো না, তাই কিছু টা কৌতুহল হয়ে জিজ্ঞেস করলো।
সামিরা— কি হয়েছে তোর অরু , হঠাৎ এমন কথা বলছিস কেন?
অরু— তোর মতো মানুষ আমার বন্ধু হতে পারে না, তোরা সবাই খারাপ, নিজেদের টা খুব ভালো করে বুঝিস, অন্য কারো মনের দিক টা বুঝিস না,
তোর সাথে দেখা করতে হবু ননদ আর সাথে জামাই বাবা এসেছিল??
“অরুপিতা মায়ের কথা শুনল তবে কোন উত্তর কোরলো না, যে ছোড়োপে বাসায় এসেছিল সেভাবেই রুমে চলে যায়।”
“অরুপিতার এমন আচরণে কিছুটা ক্ষিপ্ত হয় আলেয়া। তাই সেও আর কথা না বাড়িয়ে, রাগ নিয়ে রুমের দিক চলে যায়,”
****************************************
“সুন্দর এক সকালের সূচনা, মধু মধু সূর্যের আলো, চারদিক ছড়িয়ে পড়ছে। যে যার কর্ম অনুযায়ী বাহিরে চলে যাচ্ছে, কেউ কেউ আবার নিজস্ব ফুল বাগানে যত্ন নিচ্ছে, আবার কেউ কেউ শরীরের ফিটনেস এর জন্য জগিং এ বেরিয়ে পড়ছে। ঠিক তেমনি বিবাহিত নারীরা সকালের ব্রেকফাস্ট বানানোর জন্য রান্নাঘরে মাতিয়ে রাখছে, সামিরার মা ও প্রতিটি ঘরের গৃহিণীদের মতো রান্না ঘরে ছেলে মেয়ে ও স্বামীর জন্য ব্রেকফাস্ট তৈরি করছেন, তাছাড়া সবচেয়ে বড় বিষয় হলো বাড়ির কর্তা কর্তির হাতে রান্না ছাড়া খাবার খেতে পছন্দ করেন না, তাই বাধ্য হয়ে সামিরার মা কেই খাবারটা রান্না করতে হয়”
সামিরা ভার্সিটি যাওয়ার জন্য সুন্দর একটা কাজ করা থ্রি পিস, সাথে ম্যাচিং হিজাব, জুতা, সাথে হালকা সাজুগুজু করে নিল, ব্যাস এতেই যেন মেয়েটা কে অপসরিয়া লাগছে। রেডি হয়ে সোজা খাবার খেতে টেবিলে বসে যায়,
~~ কালকে বৌমার সাথে কথা বলেছিলিস তোরা, আর হ্যাঁ আমার ছেলে মেয়েদের পছন্দ আছে। ‘শায়লা’
সামিরা— দেখতে হবে না আম্মু কার পছন্দ, প্রথমে তো তোমরা আমার কথা গ্রুপতই দিতে না। দেখলে তো এই সামিরা কতটা দক্ষ,নিও। খুঁজে খুঁজে চাঁদের মত একটা বউ ভাইয়ের জন্য খুঁজে নিয়ে এলাম। গলার সামনের দিকে জামাটা একটু টেনে।
“শাহরিয়া সামিরার মাথায় একটা টোকা দিয়ে ‘রসিয়ে’ ‘রসিয়ে’ বললো।”
শাহারিয়া— হ্যাঁ তা তো দেখতেই পাচ্ছি, নাক বোচা দাঁত উঁচু,,
সামিরা— একদম আমার বেস্টুকে নিয়ে তুমি বাজে কথা বলবে না, যদি তুমি একটা বাজে কথা বলো এই বিয়েটা আমি ক্যানসেল করে দিব।
শায়লা— হয়েছে হয়েছে দুই ভাই বোন এখন ঝগড়া করোনা, ভার্সিটিতে দেরি হয়ে যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি খেয়ে তোমরা যাও।
সামিরা— আম্মু, আজকে ভাইয়ের রাতে গায়ে হলুদ, আর আজকে তুমি আমাদের ভার্সিটি পাঠাচ্ছ, কোথায় আমরা আজকে সকাল থেকে মজা করব তা না ঠেলে ঠেলে ভার্সিটিতে পাঠাচ্ছ।
~~ আম্মু আজকে থাক না, ভার্সিটিতে ভাইয়ের বিয়ের পর থেকে যাই?
শায়লা— তোমার ভাই কেন যাচ্ছে সেটা তো তুমি জানো, আর তোমাকে আজকে ক্লাস করতে হবে, কালকে বিয়ে, তারপর থেকে তুমি তো অনেকদিন যাবত ভার্সিটিতে যেতে পারবে না, তাই আজকে ভাইয়ের সাথে তোমাকে যেতে বললাম, এখন তোমার যদি ভার্সিটিতে যেতে ইচ্ছে না করে তাহলে থাক।
~~ ঠিক আছে, যেহেতু ভার্সিটির জন্য তৈরি হয়েছি দুটো ক্লাস করে টপ করে আবার চলে আসব।
~~ পাগলি মেয়ে, শায়লা
সামিরা—আমি যতক্ষণে ভার্সিটি থেকে না আসছি কোন ইভেন্ট কিন্তু শুরু করবে না এই বলে দিলাম।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
“ভার্সিটি মাঠ পর্যন্ত আসতেই কালকের আরোহী নামের মেয়েটা ছুটে এসে সামিরার হাত দুটো ধরে বলল,”
আরোহী— সামিরা, কি বলেছে তোমার ভাইয়া?? উনি কি আমার সাথে রিলেশনশিপে আসতে রাজি?? কি হল বলো না।
‘সামিরা কিছুটা কাচুমাচু হয়ে বলল’
সামিরা— আসলে হয়েছে কি আপু, কালকে আমার ভাইয়া মাজ পথে আমাকে নিয়ে আমার হবু ভাবির বাসায় গিয়েছিল ভাবির সাথে কথা বলার জন্য, তাই দুর্ভাগ্যবশত আমি আপনার প্রপোজালটা রিহান ভাইকে দিতে পারিনি।
আরোহী— হোয়াট দা হেল? তোমার ভাইয়ের হবু বউ মানে?
সামিরা— আসলে হয়েছে কি আপু, আপনি আমার যে ভাইয়ের কথা বলছেন সে হলো আমার, বড় চাচ্চুর একমাত্র ছেলে, আমার cousin brother, আর আমি কাল আমার নিজের ভাইয়ের উরবি বউর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম, তাই আর রিহান ভাই কে আপনার কথা বলা হয়নি।
আরোহী— ওহ তাই বল, আজকে প্লিজ বলে দাও না। প্লিজ প্লিজ প্লিজ,
সামিরা— মেয়েকি হেসে, জ্বী আপু আমি ভাইয়াকে এক্ষুনি আপনার কথা জানাচ্ছি,
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
উঁহুম, উহুম, ‘সামিরা’
আড্ডা মহলের মাঝখানে হঠাৎ মেইলি কণ্ঠ শুনে, রিহানের দল পিছন ফিরে তাকায়, হঠাৎ ভুল জায়গায় ভুল মানুষকে দেখে কিছুটা চমকায় আড্ডা মহলে সবাই। রাফি তো গলা ছেড়ে প্রশ্ন করেই বসলো,
রাফি— আরে সামিরা যে, তা হঠাৎ এখানে??
“রাফিকে এত সুন্দর মধু গলায় সামিরার সাথে কথা বলতে শুনে রিহান দাঁত কি’ড়’মি’ড় করে রাফির দিকে তাকায়, রাফি রিহানের চাওনি বুঝতে পেরে তক্ষণে অফ যায়।”
সামিরা— রিহান ভাইয়া আপনার সাথে কিছু কথা ছিল??
রিহান— নিষেধ কে করেছে, তুই কথা বলা শুরু কর আমি ,এখানে বসে শুনতে থাকি।
সামিরা রিহানের এমন কথায় কিছুটা অপমানিত বোধ করে, তারপরও এত বড়ো দায়িত্ব নিয়ে যখন এসেছে তখন তো আর পিছপা হওয়া যাবে না, কারণ সামিরা তো রিহানের স্বভাব জেনে বুঝেই এসেছে, তাহলে পিছপা হওয়ার তো কোনো কারণ নেই। তাই নিচের দিক তাকিয়ে মিন মিন করে বললো।
সামিরা— আসলে সবার সামনে আমি কথাটা বলতে চাই না, যদি একটু আলাদাভাবে শুনতেন?
সামিরার এহেন কোথায়, রিহান হঠাৎ রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে, রানের উপর একটা থাপ্পড় মেরে দাঁড়িয়ে, স,জোরে সামিরা দুই বাহু চেপে ধরে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলল,
~~ দুই ভাই বোন কি পেয়েছিস আমাকে? খেলার নমনি পুতুল? তোরা যেমন নাচাবি তেমন নাচবো? তোর কি মনে হয় তুই এখানে কেন এসেছিস আমি সেটা জানিনা? নিজের কোন প্রয়োজোনিও জিনিস নিয়ে তো,কখনো আমার কাছে আসিস না? তাহলে অন্যজনের ওকালতি করতে আমার কাছে কেন আসিস?
সামিরা— ভাইয়া আমার পুরো কথাটা তো আপনি শুনুন,, ভয়ে ভয়ে
রিহান— এই এই, ওয়েট। আমি তোর কোন জন্মের মায়ের পেটের ভাইরে? যে দেখা হলে এমনভাবে ভাইয়া ডাকিস মনে হয় আমি তো তোর জন্ম জন্মান্তরের ভাই হই।
“সামিরা রিহানের এমন হঠাৎ রেগে যাওয়া দেখে, আর কিছু বলতে না পেরে ছোট ছোট কদম ফেলে সেখান থেকে চলে আসার জন্য সামনে পা বাড়ায়। তখনই রিহান গম্ভীর কন্ঠে শুধালো”
ছোট্ট ছোট্ট পায়ে হেটে আসা এক অপরূপ কিশোরী, মস্তিষ্কে সারাক্ষণ বিচরণ করা এক ভয়ঙ্কর নারী, পতি ক্ষণে ক্ষণে মনের রাজ্য কে নতুন ভালোবাসায় সৃষ্টি করা এক অপরূপ মায়াবতী, পূর্ণিমার চাঁদের মতো ঝলঝল করা এক পুনত্ব কন্যা, এই কন্যার পিছনে আমি আর কত ছুটবো কত বোঝাবো, যে আমি অন্য কাউকে নয় সেই ছোট্ট অষ্টদাসীকে ভালবাসি,
~~ সে কি আমার #অপেক্ষা বোঝে না?? নাকি বুঝেও আমার ভালোবাসাকে মূল্য দিতে জানে না??
সামিরা রিহানের এহেন কথায়, পা দুটো যেন ওখানেই আটকে যায়, তার এই রাগী ভাই এতো আবেগি কথা কাকে বলছে?? সে কি সত্যি শুনছে নাকি তার কানে কোন সমস্যা দেখা দিয়েছে??
“সামিরা বুঝে উঠল না, হঠাৎ রেগে যাওয়া আবার হঠাৎ এমন কথা বলার মানে,তাই ওখানে এক মুহূর্ত না দাঁড়িয়ে চলো আসার জন্য পা বারাতেই, পেছন থেকে রিহান আবারও সামিরের দুই বাহু চেপে ধরে নিজের দিক ঘুরিয়ে চিৎকার করে বলল।”
~~ কেন এত অ্যাভয়েড করে চলিস আমাকে? আমার কোন ফিলিংসের দাম নেই তোর কাছে? আর না আছে তোর ওই ভাইটার কাছে। কিন্তু তোর ভাই তো ভালোবাসার মানুষটাকে পেতে যাচ্ছে, তাহলে আমি কেন পাব না, কিন্তু আজ পর্যন্ত এমন তো কোন রেকর্ড হয়নি। যেটা রিহান চেয়েছে সেটার রিহান আজ পর্যন্ত পাইনি, তাহলে আজকে কেন তোর মত একটা মেয়েকে রিহান চেয়েও পাবেনা। ‘রিহান’
সামিরা— কি বলছেন এসব আপনি ভাইয়া,আ,
রিহান— অনেক ভাইয়া বলার শখ তোর তাই না? আজকে তোর সব ভাইয়া বলার ওয়েটাই শেষ করে দিব , চল আমার সাথে,
সামিরা— আমা,,
“রিহান সামিরার কোন কথা না শুনেই সোজা, ওর বন্ধুদের নিয়ে কাজী অফিস চলে আসে।”
“সামিরা তো কাজী অফিস দেখে মুহূর্তে চমকে ওঠে। কি করতে চাইছে এই রিহান? রাগ করে কি এখন উল্টাপাল্টা কোন কাজ করবে। যদি এমন কোন চিন্তা নিয়ে রিহান সামিরা কে নিয়ে আসে তাহলে সামিরা কিভাবে আটকাবে রিহান কে”?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বেলা ১১.২২ কি ২৩ শীত থাকায় সূর্যটার তেজ জানি একটু বেশি ছড়াচ্ছে, যানবাহন গুলো একের পর এক ছুটে চলছে, রিহান সামিরার হাত ধরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে, কিছুক্ষণ আগে যেই সম্পর্কটা ভাই বোনের ছিল, তা এখন একটা পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। হ্যাঁ সেই সময়টা সামিরা চেয়েও রিহানকে আটকাতে পারিনি, রিহান সামিরা কে জোর করে বিয়েটা করে নিয়েছে। সাক্ষী হিসেবে ছিল রিয়ানের সমস্ত বন্ধু মহল। সামিরা একা হওয়ায় ওর স্বার্থে বিয়েটা আটকানো সম্ভব হয়নি। নিজের সাথে কি হয়েছে সেটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে এই মুহূর্তে সামিরার, কোথা থেকে কি হয়ে গেল। সামান্য একটা কাজের জন্য রিহান সরাসরি সামিরা কে বিয়ে করে নিল, সামির এখন আর, এক একটা মানুষ নয়, তার সাথে জড়িয়ে গেছে আরও একটা মানুষ।
রিহান— বউ তুই আমার, তাই এখন থেকে সব কথা শুনতে বাধ্য তুই, আমার অবাধ্য হওয়ার একদম চেষ্টা করবি না। আরে বিয়েটা সম্পর্কে তুই বাড়ি গিয়ে বলতে পারিস আমার কোন প্রবলেম নেই।
“আমি এই বিয়েটা কিছুতেই করতে পারবো না মা, তোমরা আমাকে বোঝার চেষ্টা করো, আমি তোমাদের এই কথাটা রাখতে পারছিনা, দয়া করে তোমরা এই বিয়েটা ক্যানসেল করে দাও।” ‘অরু’
আলেয়া— আমরা ওনাদের কথা দিয়েছি, আর এখন আমরা এ কথা ফিরিয়ে নিতে পারব না। তাছাড়া আমরা তোমার খুশির কথা ভেবে এটা করছি। মা বাবার সিদ্ধান্ত কে সবসময় ভরসা করতে শিখো।
~~ তাছাড়া ছেলেটা খুবই ভালো, দেখতে শুনতে লম্বা চুড়া, সুন্দর তোমার পাশে বেশ মানাবে, তাছাড়া সব থেকে বড় বিষয় হলো ছেলেটা খুবই ভদ্র। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছিলাম। তারপর ছেলের নিজের প্রফেশন আছে, কের উপর ভরসা করে তোমাকে খাওয়াতে হবে না। তুমি ওর সাথে সুখী থাকবে। সেদিন তো তোমায় উনাদের সামনে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তুমি চলে এলে, পরে তো তোমাকে ডাকা হয়েছিল ছেলেকে দেখার জন্য তুমি তো গেলে না।
অরু— কিন্তু মা আমি তো একজনকে ভালোবাসি, আমার ভালবাসা কি কোন মূল্য নেই??
আলেয়া— তোমার ভালবাসা একবার আমরা দেখে নিয়েছি, এবার আমরা তোমার হাতে তোমার জীবনটা ছেড়ে দিতে পারি না, আমরা তোমার ‘বাবা মা’ তোমার কোন খারাপ হোক আমরা চাইনা। তাই আমরা যেটা বলছি সেটাই মেনে নাও, তুমি সুখী হবে।
“অরুপিতা বাধ্য মেয়ের মত মায়ের মুখে মুখে আর কোন কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ রুমে চলে যায়, এক বুক আশা নিয়ে গিয়েছিল তার মার কাছে, কিন্তু তাতেও মা পানি ঢেলে দিল। এখন তার কি করার আছে, মাএ ১৬ টা দিন হলো সে শাহারিয়ার সাথে কথা বলতে পারলো না,এর ভিতর এত সব হয়ে গেল, এখন কি করে কিভাবে সামলে নিবে সবকিছু, একদিনের ভিতর কি পারবে শাহারিয়াকে ম্যানেজ করে ওর বিয়েটা ভাঙ্গাতে, কিন্তু মা তো বলে দিল এই বিয়েটা টা তাকে করতে হবে, কিন্তু সে তো বিয়েটা করতে চায় না। এটা তার মা-বাবাকে কে বোঝাবে। সে শাহারিয়াকে অনেক ভালোবাসে। আর সে লক্ষ্য করেছে শাহরিয়া ও তাকে ভালবাসে, তাকে ঠকাচ্ছে না, তাহলে সে কি মেনে নিতে পারবে অরুপিতা অন্য একজনের হতে চলছে?? সেও হয় তো আমার মত হয়তো ভেঙে পড়বে। কিন্তু আমি কিভাবে আটকাবো, কালকে দিনটা আমার গায়ে হলুদ, পরশুদিনটা আমার বিয়ে, এরা আমার কাছে সময়টাও জিজ্ঞেস করলো না, তারা নিজেরাই তাড়াহুড়ো করে বিয়েটা দুদিনের মাথায় দিয়ে দিতে চাচ্ছে। কে বুঝাবে এদের, আমি শাহরিয়ার নামক মানুষটাকে চাই, অন্য কাউকে না, না আমাকে শাহারিয়া কে জানাতে হবে, আমি আজকে ভার্সিটিতে যাব”
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
প্রতিদিনকার মতো সামিরা দল গল্প করছিল তবে আজ জায়গাটা ভিন্ন, প্রতিদিন মাঠে বসলেও আজ তারা পুকুর ঘাটে বসেছে, তবে দুটো দিন ধরে তাদের দলের সবথেকে থেকে নিরব মেয়েটা তাদের মাঝে নেই। তাই তাদের দলের তিনজন আড্ডা দিয়ে তেমন মজা পায় না, অরু যেদিন থেকে ওদের তিনজনের সাথে ফ্রেন্ডশিপ করেছিল এই দলটা যেন অনেক ভারী হয়ে গিয়েছিল, এখন তাদের দলটা খালি খালি লাগে অরুপিতা কে ছাড়া , তাই আজ মন মরা হয়ে তিনজনই এসেছে পুকুর ঘাটে, সবাই গল্পের মধ্যে থাকলেও সবার চোখ ভার্সিটি গেটের সামনে। এই বুঝি অরুপিতা আজকে ভার্সিটিতে আসলো। তবে তাদের আশায় জল ঢেলে আরুর জায়গায় ভার্সিটির এক ব্যাচ সিনিয়র একটা আপু হাঁপাতে হাঁপাতে ওদের সামনে এসে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলল ।
~~ সামিরা তোমার সাথে আমার ইম্পোর্টেন্ট কিছু কথা আছে, আর সেটা তুমি নিজে আমাকে করে দিবে। প্লিজ বলো করে দিবে, হাত দুটো সামিরা সামনে জোর করে ।
“সামিরা মেয়েটার হাবভাব দেখে, মেজাজ তো চঙ্গে, কারণ সামিরা তো ভালো করেই বুঝে গিয়েছে, এইসব ভার্সিটির মেয়েরা তার কাছে সাহায্য চাইতে কেন আসে, তার দুই দুই জন সুদর্শন যুবক ভাই এই ভার্সিটি তে সৌন্দর্যের তালিকায় রাজত্ব করে। আর মেয়েরা তো সব সময় এই সেই সুতা নিয়ে সামিরা কাছ থেকে হেল্প নিতে আসে, তার জন্যই তো সে ভার্সিটির কাউকে বলে না যে এই সুদর্শন দুই যুবক তার ভাই, কিন্তু কেমনে কিভাবে মেয়েরা যে জেনে যায় কে জানে, এখনো নিশ্চিত এই মেয়ে তার কোন ভাই কে পটানোর কথা বলার জন্যই এসেছে, তাই সিনিয়রের মান রাখার রক্ষার্থে অনিচ্ছাকৃত একটা হাসি দিয়ে বলল।
সামিরা— জ্বি আপু অবশ্যই করবো।
আরোহী— আমি জানতাম তুমি আমায় সাহায্য করবে,
~~ ওই তোমার রিহান অরণ্য নামে যে একজন ভাই আছে প্লিজ ওনাকে পটিয়ে দেও না, অনেক ভাবে টেরাই করলাম কাজ হলো না। এখন তুমি যদি একটু হেল্প করো??
“হ্যাঁয় আল্লাহ এতো দিন গম্ভীর রাগী ভাই টার পিছনে পড়ে ছিল, আজ আবার রাখখোশ ভাই টার, কিন্তু সামিরার কেমন কেমন জেন রাগ লাগছে রিহান তো তার ও ক্রাশ, তাছাড়া রিহান অনেক রাগী কোন মেয়েকে পাত্তাই দেয় না, যেখানে সামিরার সাথেই বেশী কথা বলতে চায় না, সেখানে অন্য এক জনার প্রেম প্রস্তাব শুনলে নিশ্চিত আমাকে একটা কানের নিচে দিবে। কিন্তু কি আর করার সিনিয়র আপু বলছে না ও তো বলতে পারে না। তাই বাধ্য হয়ে একটা নিঃশ্বাস ফেলে বললো।”
সামিরা— ঠিক আছে আপু আমি বলবো ওনাকে আপনার বিষয়,
আরোহী— প্লিজ প্লিজ সামিরা সাহায্য যখন করবে আজকেই বলো,
” কি আর করার বাধ্য হয়ে তাতেও রাজি হয়ে গেল। ভার্সিটির রাগি ভাইয়া কে প্রেম প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে তাও বোনের অধিকার নিয়ে,কে জানে আজ তার কপালে কোন শাস্তি অপেক্ষা করছে। কারণ রিহান ভাই কোনদিন সামিরা কে বোন বলে পরিচয় দেয় না। আর তার ভাই শাহারিয়া রিহানের সাথে মিশতে দেয়। আর না রিহান সামিরা কে নিজের সাথে বেশি গিশতে দেয়, সব যেন সামিরার মাথার উপর ঝামেলা এসে পড়ল। তার ভাই বলে দিয়েছে রিয়ান কে কারো কাছে ভাই হিসেবে পরিচয় না করাতে, তাইতো সে রিহানের নামে কারো কাছে কিছু বলতে গেলে প্রথমেই ভার্সিটির বড় ভাই হিসেবে পরিচয় দেয়।”
**************************************
অরুপিতা প্রায় ভার্সিটিতে এসে অনেকক্ষণ যাবৎ সামিরাকে খুঁজে চলছে। কিন্তু কোথাও সামিরার খোঁজ নেই। কাউকে যে জিজ্ঞেস করবে তারও উপায় নেই, আশেপাশের ঋতু মায়াকেও দেখতে পারছে না। তার এই কষ্টের দিনে তার বন্ধুরা লুকিয়ে বসে আছে। কই তারা তাকে খুঁজে তার কষ্টের কথা জিজ্ঞেস করবে কিন্তু না এরা যে কোথায় নাপাত্তা হয়ে আছে কে জানে। কি আর করার এখন তো তাকেই খুঁজে বের করতে হবে। তাই সামনের কিছুটা পর যেতেই দেখতে পেল, ঋতু মায়া দাঁড়িয়ে আছে, ব্যাস অরুপিতার আর কি চাই, ছুটে গেল ঋতু মায়ের কাছে।
অরু— এই ঋতু সামু কইরে ??
ঋতু— ও তো ওর ভাইয়ের কাছে গিয়েছে।
অরু— ওর আবার ভাই আসলো কোথা থেকে??
ঋতু— আরে বইন তুই মনে হয় এই পৃথিবীতে আজকেই টুপ করে পড়েছিস, যে সামিরার ভাই আছে সেটা তুই জানিস না?
অরু— না আমাকে তো বলেনি, যাইহোক ও কোথায় সেটা বল।
মায়া— এই কানি তুই কি কানে শুনতে পাস না?? মাত্রই তো বলল ওর ভাইয়ের কাছে গেছে।
অরু— ও হ্যাঁ, কিন্তু কোথায় গেছে।
ঋতু— আরে সোজা সাপটা বলে দিতে পারিস না মায়ার বাচ্চা,
~~ অরু আমাদের ভার্সিটি যে রাগী বড় ভাইয়া আছে না, ওই যে রিহান নামে? ও হলো আমাদের সামিরার ভাই। সামিরা তার কাছেই গেছে,
আরুপিতার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। ওই রিহান সামিরার ভাই?? আর সামিরা তাকে একটা বার বলল না, আর সামিরা এই জন্য সব সময় তাকে বলতো ভার্সিটির বড় ভাইটা অনেক সুন্দর অরুপিতা যেন তার ভাইকে ভালোবাসে,শেষ পর্যন্ত সামিরা ওকে ঠকালো? নিজের স্বার্থের জন্য, যার কাছে মনের দুঃখ প্রকাশ করতে এসেছিল, শেষ পর্যন্ত সেই সবকিছুর মূল। অনেক আশা নিয়ে এসেছিল ভার্সিটিতে সেই সব আশায় জল ঢেলে। আবারো বাড়ির পথে হাটা দিল।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
তোর সাথে দেখা করতে হবু ননদ আর সাথে জামাই বাবা এসেছিল?
ব্যাস রিহান কে আর কিছু বলতে না দিয়ে শাহরিয়া রাগী গম্ভীর কণ্ঠে বললো।
শাহরিয়া— জেনে শুনে আমি তোর হাতে কোন দিন ওকে তুলে দেব না,ও ছোট মানুষ বাস্তবতার তেমন কিছুই বুঝে না।আর তোর রাগ সম্পর্কে আমার খুব ভালো ধারণা আছে, তুই রেগে গিয়ে যে আমার ফুলটার খতি করবি না এর কি গ্যারান্টি আছে?
রিহান— আমি এতো কিছু শুনতে এখানে আসি নি, তোমার সিদ্ধান্ত জানতে এসেছি, এখন তুমি তোমার সিদ্ধান্ত আমাকে জানিয়ে দিয়েছো, এবার আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করার পালা,
~~ অনেক অপেক্ষা করছি, ওর জন্য। কিন্তু তা সুশীল ভাবে সম্ভব হলো না, এখন আমি আপসে নয় ছিনিয়ে নেব তারপরেও ওকে আমার করে ছাড়বো পারলে আটকে দেখাও। বলে দফ দফ পা ফেলে হিংস্র তা নিয়ে চলে যায়।
শাহরিয়া বোকার মত রিহানের যাওয়ার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে একটা কিছু আন্দাজ করে নেয় ,ব্যাস চিন্তা টা মাথায় আসতেই ছুটে যায় ভার্সিটির উদ্দেশ্যে,
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
“তিন চারটা মেয়ে, গোল হয়ে বসে ভার্সিটির মাঠে আড্ডা দিচ্ছে, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হাসাহাসিও হচ্ছে তাদের মধ্যে। হঠাৎই একজোড়া হাত এসে ওখানে থাকা মধ্যের একটা মেয়ের হাত ধরে উঠিয়ে, সামনের দিক হাটা ধরে। ওখানে থাকা সবাই বেশ আশ্চর্য হয়েছে, যখন দেখল মানুষটা আর কেউ না স্বয়ং তাদের প্রফেসর শাহরিয়া, আর তাদের ভিতরেই বসা ছিল অরুপিতা, সামিরা, ঋতু, মায়া, কিছু একটা নিয়ে বেশ হাসাহাসি করছিল তারা, শাহরিয়া সোজা অরুর হাতটা ধরে ওখান থেকে সোজা চলে যায়,”
“কি হলো স্যার ওখান থেকে সবার সামনে এভাবে টেনে আনলেন কেন?? অরু
শাহরিয়া— ‘তোমার সাথে আমার অনেক কথা আছে’ তাই তোমাকে নিয়ে এলাম, এখন চুপচাপ এখানে বসো।
অরু— কিন্তু স্যার আমাদের ক্লাস শুরু হয়ে যাবে,
শাহরিয়া— সেটা আমি দেখে নিব, তোমাকে যা বলতে নিয়ে এলাম,
~~ আমি তোমার প্রফেসর রাইট?? তবে আজ থেকে আমি তোমার কোন প্রফেসর নই, একান্ত,একান্তই আমি তোমার ফিউচার, তুমি হয়তো আমার সম্পর্কে অনেক কিছু জানো না, আর সেটা আমি তোমাকে জানতে দেইনি তাই তুমি জানো না। তবে আজ সবই বলবো, আমি প্রফেসর মানুষ, প্রেম ভালোবাসা জিনিসটা কি বিশ্বাস করিনা, এই দুটো জিনিস শুধু একটা ক্ষেত্রেই আমার বিশ্বাস সেটা শুধুমাত্র বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ, তাই আমি কোনদিন হারাম সম্পর্কে জড়াইনি, আর না সে সম্পর্কের বিষয়ে অবগত? তাই আমি তোমাকে সরাসরি প্রেম প্রস্তাব দিতে রাজি নই অরু,। কিছুক্ষণ থেমে গম্ভীর কন্ঠে শুধালো,
~~~ I love you. will you marry me??
“অরুপিতার চোখ যেন ছানা বরাদ্দ, হয়ে উঠেছে। সে কি সত্যি শুনলো?? আল্লাহ কি তার মনের ইচ্ছা এইবার সত্যি সত্যি পূরণ করে দিল? যদি এমন হয় তাহলে অরুপিতা এত সুখ কোথায় রাখবে? কতটা খুশি হবে? ওর জানা নেই, তবে এই মুহূর্তে শুধু ওর একটা কথাই জানা, শাহরিয়া নামুক ব্যক্তিটা শুধু ওর একান্ত’ই ওর।”
শাহরিয়া— কি হল চুপ করে আছো কেন? Answer me?
“অরুপিতার শাহরিয়ার কথায় ধ্যান ভাঙ্গে, সামনে থাকা শাহরিয়ার দিক তাকিয়ে দুহাত সামনের দিক বাড়িয়ে দিয়ে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলল।”
~~ Yes, I will marry you, and will I be with you until death, will you hold your chest until death?
অর্থ-[হ্যাঁ আমি আপনাকে বিয়ে করবো, এবং কি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমি আপনার সাথে থাকবো, রাখবেন কি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আপনার বক্ষ পিঞ্জরে আগলে?]
“শাহরিয়ার তো কল্পনাও করিনি অরু নামে মেয়েটি তাকে এভাবে আহ্বান করবে নিজের জীবনে জড়াতে, সে তো ভেবেছিলে হয়তো তাকে প্রত্যাখ্যান করবে, কিন্তু আল্লাহ যেন দুহাত ভরে রহমত দান করছে,তাদের দুজন কে এক করার জন্য, শাহরিয়ার দেরি না করে, অরু কে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়।”
হ্যাঁ আজ দুই নর নারীকে মনের দিক থেকে আল্লাহ তা’আলা মিল করিয়ে দিলেন, এখন দেখার পালা এরা কি পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে? নাকি কোন উটকো ঝামেলা তাদেরকে পরস্পর আলাদা করে দিবে?
“শাহরিয়া যেন এক মহাকাশ সমান চিন্তা শেষ হল। যাক এই মেয়েটা তো একান্ত তার হল। এখন সামনে কি হবে সেটা পরে দেখা যাবে।
****************************************
“দ্রুতগতিতে সময় পার হয়ে যাচ্ছে, দেখতে দেখতে পেরায় ৭ তা দিন কেটে গেছে, দিনগুলো যে কিভাবে কাটছে কেউ বুঝে উঠতে পারে না, ক্রমশ শীত যেন কমেও বেড়ে যাচ্ছে, তবে বেশ মনে লাগার মত পরিবেশ একটা, আহ প্রকৃতি কত স্নিগ্ধই না লাগছে। শীতকালের প্রকৃতি যেন অন্যরকম এক মুগ্ধতা, যে সময়টাই প্রকৃতির দিক তাকায় না কেন এক অন্যরকম আনন্দ পাওয়া যায়, এই যেমন গায়ে একটু শীত অনুভব হতে গায়ে কাটা কাটা দিয়ে ওঠা, তখনকার ফিলিংসটা যেন এক অন্যরকম অনুভূতি, আবার যখন নিজেকে গরম কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয় তখন যেন শীতটা আরো চেপে ধরে, তখন কাঁপা কাঁপা হাতে নিজেকে গরম কাপড়টা ভিতরে গরম হওয়ার জন্য আরেকটু উত্তাপ শুরু হয় নিজেই নিজের ভিতর। সেই পরিবেশে যদি হাতে হাত ধরে হাঁটার মতো একজনকে পাওয়া যায়, তাহলে তো কোন কথাই নেই? অরুপিতার ক্ষেত্রেও বিষয়টা ভিন্ন হলো না, এইতো কিছুক্ষণ আগে তপ্ত হিমেল হাওয়া বয়ে বেড়াচ্ছে চারপাশের প্রকৃতি থেকে, ঠিক তখনই শাহরিয়া অরুপিতাকে ফোন দিয়ে তার সাথে হাতে হাত ধরে হাটার আহ্বান জানায়। আর এটা তো আরুর অনেক দিনের শখ ছিল তার প্রিয় মানুষের সাথে শীতের গরম কাপড় পড়ে ঠান্ডা ঠান্ডা হাত দুটো নিয়ে তার প্রিয় মানুষের গরম হাত দুটো ধরে প্রকৃতিকে উপভোগ করবে। তাই তো ফোন পাওয়ার সাথে সাথে কোন রকম তৈরি হয়ে চলে এলো”
“আজ অরুপিতা ভার্সিটি সব বন্ধুদের বলবে, হ্যাঁ সে পেয়ে গেছে, তার #অপেক্ষা শেষ হয়েছে। আল্লাহ তার মনের মত একটা মানুষ তার জীবনে পাঠিয়েছে, এবার হয়তো অরুরও একটা ব্যক্তিগত উনি হবে।দীর্ঘ সময় #অপেক্ষা করে সে পেয়ে গেছে তার মনের মতো একটা মানুষকে, তাই আজ সে ভীষণ খুশি, মনে মনে ভেবেও নিল সব বন্ধুদের ট্রিট দিবে।
“তবে সব ইচ্ছে কি আর পূরণ হয়? না মোটেও এমনটা নয়, তাইতো ভার্সিটি যাওয়ার সময় আরুর মা আজকে করা আদেশে ভার্সিটিতে যেতে নিষেধ করেছে, আজকে নাকি বাসায় মেহমান আসবেন’কেন আসবে তা বলেনি।”
“কিচিরমিচির পাখির মুখর্য ডাকে যেন প্রকৃতি এক অন্যরূপে শোভা পাচ্ছে। সেই সাথে ফজরের আজানের ধনী চারপাশ থেকে শোনা যাচ্ছে, সবাইকে আহ্বান করা হচ্ছে আল্লাহর পথে, মহান আল্লাহ তায়ালা নিজে তার বান্দাদেরকে তাদের মনের ইচ্ছেকে চাওয়ার জন্য তার দুয়ারে ডাকছেন, হয়তো অনেক ব্যক্তিই আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে যার যার চাওয়া পাওনা গুলো আল্লাহর দরবারে পেশ করছে, আবার অনেকে আছে ঘুমের তাড়নায় আল্লাহর ডাক শুনেও আল্লাহকে এভোয়েড করে ঘুমের রাজ্যেয় তলিয়ে আছে। অরুপিতা প্রতিদিনের মতো আজও, আল্লাহর দরবারে মনের ইচ্ছা চাওয়ার জন্য তাড়াতাড়ি উঠে অজু করে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে যায়। নামাজ শেষে দুহাত উঠিয়ে আল্লাহর দরবারে কান্না করে বলে,”
~~ “আমি জানিনা কিভাবে ডাকলে আপনি আমার ডাকে সাড়া দেবেন-
“আমি জানিনা আমি আপনার দরবারে কিভাবে চাইলে আপনি আমার চাওয়া পূর্ণ করবেন-
“আমি জানিনা আমার চাওয়া কতটা সৎ হলে আপনি আমার হাত ভরে দিবেন-
“আমি ঠিক জানিনা আমি কিভাবে আপনার কাছে দোয়া করলে আপনি আমার দোয়া কবুল করে নিবেন-
“কিন্তু আপনি তো আপনার এই গুনাহগার বান্দার অন্তরের খবর জানেন-
“ইয়া রব আপনি তো অন্তরের খবর জানেন দেখেন, এবং আপনি তো নিজেই বলেছেন-
“তোমরা আমার কাছে চাও আমি তোমাদের নেক ইচ্ছা পূরণ করে দিব-
“আপনি তো আপনার বান্দাদের জানিয়ে দিয়েছেন আপনি খালি হাতে আপনার বান্দাদের ফিরিয়ে দিতে লজ্জা বোধ করেন-
“আমি আপনার কাছ থেকে কিছু পাওয়ার অযোগ্য, তবুও আপনি আমায় অনেক কিছুই দান করেছেন-
“আমি আপনাকে আমার শেষ নিঃশেষ অব্দি বিশ্বাস করি, আপনি আমাকে নিরাশ করবেন না-
“আমি এও জানি আমি ব্যতীত আপনার নিকট অনেক উত্তম বান্দা রয়েছে, কিন্তু আমার আপনি ছাড়া কেউ নেই মালিক-
“আমার আবদার পূর্ণ করার, ডাকার মত, চাওয়ার মত, গুনাহ গুলো ক্ষমা করিয়ে নেওয়ার জন্য, আপনি ছাড়া কেউ নেই রব-
“ইয়া মালিক আমি দুর্বল, আমি একবার ভেঙ্গে পড়েছি, এবার আর ধৈর্যের পরীক্ষা নিবেন না-
“আমি তার উপযোগী নই, আমার জন্য তাকে সহজ করে দিন-
“আপনি আমার মোনাজাত শুনে থাকলে আমার মোনাজাতের সারাদিন, আমার চাওয়া কবুল করে নিন-
“আমার এই খালি দুহাত আপনি রহমত দিয়ে পরিপূর্ণ করে দিন-
” আমার মনে ভালোবাসা সৃষ্টিকারী কে আমার করে দিন,রব-
“আমি শাহরিয়া নামক মানুষটাকে আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে চাই-
“আপনি তা আপনার রহমতের দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিন-
“আমিন”-
“অরুপিতা চোখের পানির গুলো মুছতে মুছতে জায়নামাজ টা গুছিয়ে রেখে, দুদিন আগের দেওয়া শাহরিয়ার গাঁয়ের কোডটার কাছে এগিয়ে যায়। গিয়ে সেটা হাতে তুলে নেয়, জ্যাকেটটা নাকের কাছে নিয়ে ঘনঘন দুই তিনটা নিশ্বাস নিয়ে জ্যাকেটটার ঘেরানটা সুখে নেয়। অতঃপর সেটা বুকের কাছে সজরে চেপে ধরে, জড়িয়ে নেয় নিজের সাথে। আবারো আগের মত দুচোখে বেয়ে টপটপ করে পানি গড়িয়ে পড়ে। জ্যাকেট টা মুখের সামনে ধরে কান্না করতে করতে বলল।”
আরু— কিভাবে এতটা আপন হয়ে গেলেন আপনি, কেন আবার আমার এই বিষিয়ে যাওয়া মনটায় ভালোবাসা ঝড় তৈরি করলেন? আমি কি বলেছিলাম আপনি আমার মনে আসুন? আবার পুনরায় ভালোবাসা তৈরি করুন। তাহলে কেন এলেন? বলুন? বলবেন না তাইতো? সবাই এমন, সবাই এসে সাগরের নামিয়ে, মাঝ সাগর রেখে চলে যায়, আপনিও ঠিক তাই করবেন আমার সাথে তাই না? দয়া করে এবার আপনি আমার সাথে এমনটা করবেন না। আমি এবার হয়তো সহ্য করে নিতে পারব না, আপনি আমার হয়ে যান না। বিশ্বাস করুন কোনদিন আপনার কথার অবাধ্য হবো না। বিশ্বাস করুন কোনদিন আপনার থেকে মুক্তি চাইবো না, বিশ্বাস করুন আপনার কখন কোনটা প্রয়োজন ,কখন কোনটা প্রয়োজন না, সবটা আমি খেয়াল রাখবো, তবুও আপনি আমাকে আপনার করে নিন না। ভালোবাসা যখন সৃষ্টি করেছেন তখন সেটা পরিপূর্ণ করে দিতে সাহায্য করুন? আমি কথা দিচ্ছি এই অরুপিতা যদি আপনাকে না পায়, তো এ জীবনে আর কাউকে গ্রহণ করবে না, অরুপিতা নামে মেয়েটা শুধু আপনাকে চায়, হ্যাঁ হ্যাঁ শাহরিয়া আপনাকে চায়,
****************************************
“স্কুল ড্রেস পরিহিত পিচ্চি পিচ্চি ছেলে মেয়ে বাবা মায়ের হাত ধরে রাস্তার পার হয়ে যাচ্ছে, একের পর এক গাড়ি আসা-যাওয়া লেগে রয়েছে, কিছু দূর দুই পাশে দুই ছুটি বেঁধে, সাথে লং কামিজ প্যান কার্ড সালোয়ার পড়ে, মনের আনন্দে হেঁটে যাচ্ছে এক ছোট্ট কিশোরী, কি ধাঁধান সেই সৌন্দর্য, একা একাই রাস্তা বয়ে চলছে। রাস্তার চারিদিকে বুড়ো থেকে যুবক এবং কি কিশোর বয়সী ছেলেদের চোখ থেকেও এড়াতে পারেনি মুন নামে মেয়েটি, অসভ্য সমাজে কোন নারী শান্তিতে পদধ্বনি করতে পারেনা। তাদের উপর কুনজর যেন লেগেই থাকে। এইতো মুন কিছুটা পথ আঘাতেই দু তিনটা ছেলে, এসে মেয়েটার সামনে বাধা দিয়ে দাঁড়ায়।”
~~ তা এত সুন্দর করে বডি ফিটনেস বের করে দেখাচ্ছ কাকে? ছেলে
মুন— দেখুন রাস্তাঘাটে অসভ্যর মত ব্যবহার করবেন না, আপনাদের ঘরে যদি বোন নয় মা ও থেকে থাকে তাহলে অন্তত রাস্তার মেয়েদের দেখলে নিজের মায়ের স্থানে বসাবেন। তাহলে আর মেয়েদের দেখলে অসম্মান করতে মনে চাইবে না।
~~ আচ্ছা অসম্মান করলাম না। তবে একটা সুযোগ তো দাও, তোমাকে অনেক তৃপ্তি দেব।
মুন— ছি অশ্লীল, অসভ্য সমাজের অসভ্য লোক কতগুলো, মেয়েদের দেখলে ই উত্তেজনা শুরু হয়ে যায় তাই না, এত উত্তেজনা নিয়ে রাস্তায় না ঘুরে নিজের ঘরে নারীর সাথেই তো কাজ চালাতে পারেন, তাহলে তো আর রাস্তায় মেয়েদের চলাফেররায় ঝামেলায় পড়তে হতো না।
~~ ওহ সুন্দরী এই বয়সে একটু তেজ থাকে সব মেয়েদেরই, আমি বলছি,আমার সাথে চলো পাক্কা প্রমিস করছি এমন তৃপ্তি দেব না তোমাকে বারবার আমার কাছে ফিরে আসতে বাধ্য করবে।
~~ঠাসসসসসসসসস~~~
” জানোয়ারের বাচ্চা, কি মনে করিস নিজেকে। তৃপ্তি দিবি তাই না, অনেক পুরুষত্ব জেগেছে তাই না। তোর পুরুষত্বের যদি আমি বারোটা না বাজাতে পারি তো আমার নামও রিহান অরণ্য চৌধুরী নয়।”
~~ বল কতদিন ধরে এমন মেয়েদের ইভটিজিং করিস? তাড়াতাড়ি বল?
— ——–
রিহান— চুপ করে আছিস কেন বল। আর যদি তোরা চুপ করে থাকিস তো তোদের এমন অবস্থা করব যে নিজেদেরকে নিজেরাই চিনতে পারবি না। তোরা হয়তো ভালো করেই জানিস এই শহরের লোক রিহান অরণ্য কে খুব ভালো করে সবাই চেনে। সেই ক্ষেত্রে তোরাও বাদ যাবি না।
— রিহান ভাই দয়া,করে এইবারের মতো আমাদের ক্ষমা করবেন। বিশ্বাস করুন ভাই জীবনে কোন মেয়েকে ইভটিজিং করবো না। সত্যি বলছি,
রিহান— জীবনে অনেক সত্যি বলেছিস, কিন্তু এইবার তোদের একটু ঝাজ দিতে হবে, নয়তো তোদের মুখের কথায় বিশ্বাসয অন্তত আমি নই। বলে রিহানের বন্ধুদের উদ্দেশ্যে বলল।
~~ এই তিনটাকে আমার আস্তানায় নিয়ে ক্যালানী দিবি। যতক্ষণ পর্যন্ত না এদের দু একটা করে হার ভাঙছে।
এতক্ষণ যাবত রিহান কে শুরু থেকে এখানে যা যা করেছে সামিরা মন দিয়ে দেখছে, এটা সামিনা আজ নয়। প্রায় লক্ষ্য করে রিহান কে, ওর বেশ ভালো লাগে যখন রিহান অন্য একটা মেয়ের সম্মান বাঁচায়। মনে মনে কিছু একটা চিন্তা করে সামিরা মুচকি হেসে ওখান থেকে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে চলে আসে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
“তোমার কাছে দুটো কন্ডিশন ভাইয়া,” রিহান
~~এক তুমি ওকে আমার হাতে তুলে দাও,
~~দুই নয়তো অরুপিতার জীবন থেকে সরে দাঁড়াও।
শাহরিয়া— আমি অরুকে ভালোবাসি রিহান। এটা তুই জেনে এমনটা করছিস তাই না??
রিহান— না ভাই, যখন এই মেয়েটাকে প্রথম দিন দেখেছিলাম বেশ ভালো লেগেছিল, আর লাগার কথা আরুপিতা মেয়েটা সবার চোখে পড়ার মতো। তবে আমার মনে তো একজন বাধা বেধে বেসে আছে, সেই কবে থেকে? কিন্তু তোমার মত ভাই নামক শত্রু থাকতে, আমি কি তাকে পাই বল? কিন্তু যখন দেখলাম অরুপিতা নামে মেয়েটি আমার ভাইয়ের পছন্দ। তো ব্যাস নিজের ভালোবাসার মানুষকে পাওয়ার সুবর্ণ উপায় পেয়ে গেলাম।
শাহরিয়া— রিহান তুই ভালো করে জানিস আমি কেন ওকে তোর হাতে তুলে দিচ্ছি না।
রিহান— কিন্তু ভাই আমি তো তোমাকে আগেই কথা দিয়েছি, আমি যতই খারাপ হই না কেন, ও কে আমার জীবন থাকতে কোন কষ্ট অনুভব করতে দিব না। নিজের শেষ অব্দি ওকে আগলে রাখবো, ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে রাখবো। কোন অযত্ন হতে দিব না।কিন্তু তুমি তো আমার কথা শোনোনি, বাধ্য করেছ ওকে আমার থেকে দূরে রাখতে। আর সেটা তুমি করে ছেড়েছ, তবে আমি হাল ছাড়িনি, সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম, বাস আল্লাহ সুযোগ করেও দিল। এখন তোমার ইচ্ছা,
শাহারিয়া— কখনো একলা চাঁদকে উপভোগ করেছো?? সন্ধ্যাবেলা শ্যাওলা গাছের কাছে কখনো একলা গিয়েছো?? কখনো কি ঝিল গাছে উঠেছ??
কখনো কি মধ্যরাতে প্যাঁচার ডাক শুনেছো?? আবার কখনো হিমেল শীতল গোমোঠ বাতাসকে উপভোগ করেছো??
“আরু তার প্রফেসরের কথা শুনে ভীষণ অবাক হয়ে কিছুক্ষণ তার মুখের দিক ড্যাপ ড্যাপ করে এমন ভাবে চেয়ে থাকলো। জার মনে এগুলো ওর মাথায় কিছুই ঢুকে নি, কি সব অদ্ভুত প্রশ্ন।”
শাহরিয়া— তোমার মুখের expression দেখে বোঝা যাচ্ছে তুমি আমার কথার মানে কিছুই বুঝনি, বোঝার কথা ও না তোমার, তবে তুমি চাইলে?? এই প্রশ্নগুলোর মর্মার্থ তোমাকে আমি নিজ দায়িত্বে একাকিত্ব শুনাবো, “গভীর রাতে পেঁচার ডাক অনুভব করাবো, মধ্য বিকেল টাইমে হিমেল শীতল গোমোট বাতাসকে অনুভব করাবো, ছুটির দিনে নদীর পাড়ে ঝিল গাছে গুলোতে উঠিয়ে স্রোত বহিতো নদীর সূ,সূ শব্দ অনুভব করাবো। আর যদি কখনো নিজেকে আমার থেকে সরাতে চাও তাহলে শ্যাওলা গাছের কাছে সন্ধ্যা বেলায় একলা রেখে আসবো,তখন আমাকে ছেড়ে যাওয়ার মজাটা অনুভব করবে।
“অরু তার প্রফেসরের এমন অদ্ভুত অদ্ভুত কথা শুনে, বেকুব বনে যায়। একজন প্রফেসর হয়ে নাকি এমন অদ্ভুত অদ্ভুত কথা বলেতে পারে, অরুর মাথায় শুধু তার প্রফেসরকে নিয়ে একটা প্রশ্ন বারবার মাথায় আসছে, স্যারের হঠাৎ হলো কি?? একে আবার পাগল রোগটায় ধরল না তো? না হয় এমন কথা তো কোন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ বলে না। কি সব বোঝালো শ্যাওলা গাছ ঝিল গাছ কিছুই মাথায় ঢুকলো না,” আর ‘না’ এসব অদ্ভুত কথা মাথায় ঢুকাতে চাইলো’
অরু— স্যার আমায় এখন যেতে হবে। কিছুক্ষণ পরে অনুষ্ঠান শুরু হবে। তাই এখন না গেলে আমি আর সামিরা সামনে বসতে পারবো না, আর সামনে বসতে না পারলে অনুষ্ঠানে আসল মজাটাই উপভোগ করা যায় না, ‘তাই আমি এখন আসছি’। বলে ওঠে দাঁড়ায়
শাহারিয়া— তোমাকে এখন অনুষ্ঠান উপভোগ করতে হবে না, তুমি বরং এখন আমাকে উপভোগ করো!
অরু— আপনাকে ‘উপভোগ’ করব মানে???
শাহারিয়া— “কিছু না” তুমি এখন বাইরে কোথাও যাবে না এখানে থাকবে। আমি ফেরত না আসা পর্যন্ত।
অরু— কিন্তু কেন স্যার??
শাহারিয়া— ধরে নাও তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে কথাটা বললাম।
অরু— কিন্তু এখন আমি যেতে চাইছি স্যার।
“শাহারিয়া ধমকের ন্যায় বলে উঠলো”
শাহরিয়া— তোমার স্যার আমি তাই তুমি ভার্সিটিতে থাকাকালীন আমি যা বলব তুমি তাই শুনতে বাধ্য।
“আরুপিতা হঠাৎ ধমকে কিছুটা বরকে যায়, তার দেখা সব প্রফেসরদের ভিতর এই শাহারিয়াই একজন যে কিনা আজ পর্যন্ত কাউকে একটা ধমক দেয়নি। আর না রাগ দেখিয়ে কথা বলেছে। শ্যাম বর্ণের পুরুষ রুপে প্রফেসর শাহরিয়ার কে দেখে প্রতিটা পুরুষের থেকে কিছুটা হলেও আলাদা মনে হয়েছিল অরুপিতার কাছে, এখনো তাই মনে হয়।” তাই বাধ্য মেয়ের মত শাহারিয়ার কথা মত চেয়ারে বসে পড়ে। শাহরিয়ার যে রাগ নেই এটা যে বলবে সে এই দুনিয়ার মানুষ না। সে সবার মত চেঁচিয়ে গায়ে হাত তুলে জোর দেখিয়ে কাউকে রাগ দেখায় না। তার রাগটা একটু অন্যরকম, যে একবার দেখবে সে শাহারিয়ার রাগের কথা মনে রাখবে।শাহরিয়া আরু কে সোফায় বসতে দেখে কিছুটা নরম হয়। মনের ভিতর এক অজানা অনুভূতির জাল বোনা তৈরি হয়। তার কঠিন মনে এবার কি সাগরের ন্যায় ঢেউ তুলতে মহান আল্লাহ তালা এই মেয়েকে পাঠালো?? হ্যাঁ আল্লাহতালা এই মেয়েকে শুধু তার জন্যই সৃষ্টি করেছেন। আর আল্লাহতালা তার জন্য সৃষ্টি করেছেন সেটা যথার্থভাবে আগলে রাখবে। এবং সব বিপদের থেকে তাকে ভালো ভাবে প্রটেক্ট করবে। সে যত্ন করতে জানে। কিভাবে ভালবেসে যত্ন করে রাখতে হয় সেটা সে খুবই ভালো মতোই জানে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
~~তোর সাহস কি করে হলো আমার ফুলকে আঘাত করার? তুই জানিস এই প্রথম আমার মা বোনের পর,কোন মেয়ে আমার মনের মত। আর আমার একমাত্র হবু ‘অর্ধাঙ্গিনী’ আর তুই কিনা তাকেই টার্গেট করলি? শাহরিয়া,
রিহান— ভাই ওই মেয়েকে তো আমি আজ নয় অনেক দিন আগে থেকেই পছন্দ করি। কিন্তু মেয়েটাকে বলার সুযোগ হয়ে উঠছিল না। তাই ওইভাবে প্রপোজ করার হ্যাগ কাজে লাগাই। আর মেয়েটা তাতেও রাজি হচ্ছিল না। তাই তো জোর করে,
~~ঠাসসসস,~~
রিহান— ভাই তুমি আমাকে মারলে?
শাহরিয়া— তো, তুই যে কাজ করেছিস এতে আমি তো একটা দিলাম, তোর জায়গায় অন্য কেউ হলে চারটা দিতাম। মেনে নিলাম, আজকে যা করেছিস আজ ভুলবশত করেছিস, নেক্সট টাইম ওর থেকে দূরে থাকবি।
রিহান— তাহলে তুমিও শুনে রাখো? ওই মেয়েটা তোমার নয় আমার। তুমি আমার ভাই বলে কি আমি আমার ভালোবাসা তোমাকে দিয়ে দেবো? তা আমি তোমাকে কখনো দিবোনা।
শাহারিয়া— জানিস তো আমাদের রক্তটাই এমন। যেটা চাই পেয়ে ছাড়ি। আর প্রসঙ্গ যখন আমার ফুলের, তখন শুধু সে আমার। এতে যদি চলতি পথে বাধা আসে, তো আমি সেই বাধাকে মানি না। আর না মেনে কি করতে পারি সেটা তুই জানিস। তাই দূরে থাক ওর থেকে,
“বলে শাহরিয়ার ওখান থেকে রাগ নিয়ে চলে যায়”কেননা এখানে যদি ও আর এক মুহূর্ত থাকে তাহলে ঠিক দুই ভাইয়ের মধ্যে লড়াই শুরু হবে। এক নারীকে নিয়ে। যেটা শাহরিয়া মোটেও চায় না। আরুপিতা নামে ফুলটা শুধু তার। তার জন্য যে অন্য কারো সাথে ঝগড়া করবে সেটা নিয়ে বাড়াবাড়ি হবে সেটা সে চায় না।”
************************************
হাড় কাঁপানো শীতের দিনে যদি টপ টপ বৃষ্টি পড়ে, তখন পরিস্থিতিটা কোন দিকটাই চলে যায় যারা সেই পরিস্থিতিতে পড়েছে তারাই জানে। এইতো দুটো দিন ধরে সত্যপ্রবাহ চলছে, আর কতদিন তাকে কে জানে। কিন্তু জীবনে কিছু করতে হলে যতই হার কাঁপানো শীত থাকুক না কেন। এটা সে করবে, প্রতিটি মানুষের জীবনটাই একটা নির্দিষ্ট ছক, ছকে,ছকেই জীবনটা পার করতে হয়।অরুপিতাদের ক্ষেত্রে ও ভিন্ন নয়।
“এই হার কাঁপানো শীতের মধ্যেও আরুপিতা কালো একটা থ্রি পিস, সাথে প্যান কার্ড পায়ের কাছে প্রিন্ট করা একটা সেলোয়ার পরে, সাথে ম্যাচিং হিজাব পরে, সাথে জিন্সের এটা জ্যাকেট পরে, প্রতিদিন কের মত ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায়। তাছাড়া আজকে আবার তাকে বাসায় তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে। তার উপর আজকে তার প্রিয় বড় আপু অনেকদিন পর বাসায় আসবে। তাই ভার্সিটি থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে আসবে।”
“ভার্সিটি গেট পর্যন্ত আসতেই সামিরার সাথে দেখা মিলে যায়। সেদিনকের মতো আজকেও সামিরা শাহরিয়ার সাথে হাঁটতে হাঁটতে ভার্সিটিতে আসছে। তাই অরুপিতার কাছে বিষয়টি কেমন জানি খটকা লাগলো। তাই সামিরা কাছে আসতেই প্রশ্ন করলো।
আরু— ব্যাপার কি সেদিনও দেখলাম তুই স্যারের সাথে আসছিস আজকেও দেখলাম,
সামিরা— ও তোকে তো বলা হয়নি, স্যার আমার ভা, আর কিছু বলার আগে পিছন থেকে শাহরিয়া বললো।
শাহরিয়া— ওকে সেদিন দেখছিলাম রিস্কা পাচ্ছিল না। তাই সাহায্য করেছিলাম। আর আজকেও সেম কেস, তাই ভাবলাম যেহেতু আমার ভার্সিটির স্টুডেন্ট। আমার সাহায্য করা উচিত। তাই আমি আমার কারে, করে ওকে নিয়ে এলাম,
শাহরিয়া— ওকে সেদিন দেখছিলাম রিস্কা পাচ্ছিল না। তাই সাহায্য করেছিলাম। আর আজকেও সেম কেস, তাই ভাবলাম যেহেতু আমার ভার্সিটির স্টুডেন্ট। আমার সাহায্য করা উচিত। তাই আমি আমার কারে, করে ওকে নিয়ে এলাম,
আরু— সামিরা তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে, তুই আমার সাথে আয়।
সামিরা অরুর সাথে যাওয়ার জন্য পারাতেই পেছন থেকে শাহরিয়া গম্ভীর কণ্ঠে বললো।
শাহরিয়া— পুষ্পের ন্যায় অষ্টদাসী, চাঁদের রাজ্যের ফক,ফকে রাণী,আমার হৃদয়ের ব্যাকুল করা রূপময় কিশোরী, ‘আপনি এখানে দাঁড়ান আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে’
“দুজনেরই হঠাৎ এমন কথায় চমকে যায়, এমতাবস্থায় দুজনেই মুখ চাওয়া চাইয়ি করে পিছনে থাকা শাহারিয়ার দিকে ঘুরে তাকিয়ে বলল।
সামিরা— ভা, গলা খামুড়ি দিয়ে, স্যার এগুলো কি আমাদের বললেন?
শাহরিয়া— সামিরা আপনি যেতে পারেন, আপনার পাশের জন্য সাথে আমার কিছু কথা আছে।
“সামিরা ভাইয়ের দিক তাকিয়ে মুখভঙ্গিমা বোঝার চেষ্টা করলো, কিছুটা সময় পর সফল হল। না এখন এই মুহূর্তে ভাই আর হবু ভাবীর মধ্যে থাকা উচিত নয়। তাই অরুকে কিছু না বলে ওখান থেকে দফ দফ পা ফেলে ক্লাসরুমে দিক চলে যায়।”
“বোকা অরু এদের দুই ভাই বোনের কার্যকলাপ তো ভালো কাজের কাজ কিছুই বুঝল না, ড্যাপ ড্যাপ করে শুধু চেয়ে থাকলো। লম্বা একটা নিঃশ্বাস ত্যাগ করে, ও সেখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়।”
“বয়রা রাজ্যের রাজকুমারী আপনার জন্য অসহায় রাজ্যের রাজকুমার আলাদা ভাবে কথা বলতে চায়। আর আপনি তাকে অসহায় পেয়ে অসহায় ভাবে ফেলে রেখে চলে যাচ্ছেন”?? শাহরিয়া
আরু— স্যার আপনি কিছু বললেন??
শাহরিয়া— মেয়েকি হেসে, আমার বক্ষ পিঞ্জিরার পোষা লেবু আমাকেই তার শরবত খাওয়াতে চায়। এখন আমি কি করতে পারি বলতো??
আরু— মানে??
“শাহারিয়া আরু বোকা বোকা চেহারায়, মানে বলা কোথায় আরো কিছু বলতে চেয়েছিল, কিন্তু যখন খেয়াল করলো অরু দুই হাত কনুর মাঝ বরাবর হালকা হালকা উপর নিচ করছে, ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ বোঝার চেষ্টা করল হঠাৎ বারবার এমন করছে কেন। কিছুটা সময় দেখার পর কোঁচকানো ভ্রু জোড়া স্বাভাবিক করে ধমকের সুরে বলল।”
~~ মন কোথায় রেখে আসো তোমার। এত deeply শীতের ভিতর কেউ এমন খোলামেলা আসে?এখন যদি তোমার ঠান্ডা লেগে যায়? তখন কি করবে? অ্যানসার মি?
“আরু এতক্ষণ শুধু তার প্রফেসরের উদ্ভট কথা শুনে যাচ্ছিল। তবে এটা আজ নয়, এমন উদ্ভট কথা স্যার প্রায়ই বলে থাকে, ও এটা খুব ভালো করে লক্ষ্য করেছে। যখনই স্যার ওকে দেখে কি সব উদ্ভট কথা বলে, তবে এগুলো অরু আগে হাসির নেয় উড়িয়ে দিত। আগেও যে ভালো লাগতো না এমন না, কিন্তু এখন এমন কথা শুনতে অরুর ও বেশ ভালো লাগে। কেমন কেমন একটা অনুভব হয়। তবে হঠাৎ স্যারের এতটা পজিটিভওতা দেখে কিছুটা মুগ্ধ হয়। ও বেশ ভালো করেই বুঝতে পারে স্যার ওকে খুব পছন্দ করে। তবে কখনো প্রকাশে বুঝতে দেয় না যে ও স্যারের ফিলিংসটা বুঝে গেছে।”
শাহরিয়া— কি হল চুপ করে দাঁড়িয়ে আছো, কেন উত্তর দিচ্ছ না কেন?
অরু– —
“শাহরিয়া ঘন ঘন দুই তিনটা নিঃশ্বাস ফেলে, জেগে ওঠা রাগটা কমানোর চেষ্টা করে, গায়ের কোডটা খুলতে খুলতে অরুর দিকে এগিয়ে যায়।অরু শারিয়াকে ওর কাছে আসতে দেখে কিছুটা পিছিয়ে গিয়ে, আমতা আমতা করে বলল”
অরু— স্যার বিশ্বাস করুন আমার একদম মনে ছিল না। আমি আর এমন করবো না, ভার্সিটিতে আসার সময় ১৮+ এলার্ট থাকবো। তাও কোনদিন ভুল করবোনা। অন্তত আজকের দিনের জন্য আমাকে যেতে দিন।
“শাহরিয়া অরুর সব কথাই শুনলো মনোযোগ দিয়ে, তবে অরুর বলা একটা কথায় ঠোট কামড়ে হেসে আরো কাছে এসে অরুর গায়ে ওর জেকেটটা পরিয়ে দিয়ে বলল।
শাহরিয়া— এটা খুলবে না, আর আমি তোমাকে এক্ষুনি ১৮+ হতে বলছি না। তুমি আমাকে সামলে সহ্য করতে পারবে না। কারণ যদি আমি একবার ১৮+ হয়ে তোমাকে ছুঁতে চাই তাহলে তোমাকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।
“কি ঠোঁটকাটা লোক রে বাবা,অরু তো একের পর এক শক হচ্ছে, এটা কেমন কথা। সে হয়তো ভুলে কথাটা বলে ফেলেছে। কিন্তু এই লোকটা তো তার স্যার হয়? তাহলে এই লোকটা কিভাবে তাকে এসব কথা বলতে পারে।”
শাহরিয়া— অনুপর্ণা দেবীর ছোট রাজকন্যা। আপনাকে এতো চিন্তা করতে হবে না, আপনি বরং এখন ক্লাসে যান।
অরু— কিন্তু স্যার,,
শাহারিয়া— সূ,সূ আর কোন কথা নয়। ক্লাসে যেতে বলেছি ক্লাসে যাও।
অরুপিতা বাধ্য মেয়ের মত স্যারের আদেশ পেয়ে সোজা ক্লাসের দিক হাটা ধরে, তখন আবারো শাহরিয়া পিছন থেকে বলল।
~~ ভার্সিটির কোন ছেলের সাথে কোন ধরনের কথা বলবে না। এমনকি প্রয়োজন ব্যতীত কোন টিচারের সাথেও কথা বলবে না। দ’ই একজন ব্যতীত মেয়ে মানুষের সাথে মিশবে না। এটা আমি এলাউ করব না।
[অধিকারের ন্যায় কথাগুলো বলে শাহারিয়া ওখান থেকে চলে যায়]
আরুর কাছে কথা গুলা অদ্ভুত শোনালেও, মুচকি একটা হাসি দিল যখন কথাগুলোর অধিকারের সাথে মিল পেল।
************************************
স্তবদের ন্যায় ধমকে যাওয়া এক বিকাল কে উপভোগ করছে আরুপিতা তার বোনের কাঁধে মাথা রেখে, পরম শান্তি লাগে যখন তার বোন তাকে একলা সময় দেয়। বাস্তবতাকে চেনায়। পরিস্থিতির সাথে মোকাবেলা করতে শেখায়। বন্ধুর মতো হাতটা শক্ত করে ধরে রয়, তখন মনের এক আকাশ পরিমাণ মেঘলা জমে থাকা কালো কালো মেঘকে বনের সাথে শেয়ার করে তা সাদা মেঘে পরিণত করে। যখন তাতে সম্পূর্ণ সফল হয় তখন তৃপ্তির একটা নিঃশ্বাস নেয়।
আনিকা— আজ আমার ছোট অরু পাতার কি হয়েছে? তার কি ভীষণ মন খারাপ? সে কি আমার থেকে কিছু লুকাচ্ছে, আমার কেমন কেমন যেন লাগছে।
“অরু ঠিক জানতো তার চতুর বোন তাকে ঠিকই ধরেই ফেলবে। তাই এতদিন যতই লুকাক না কেন, এখন সামনাসামনি তো কিছুই লুকাতে পারবেনা, আর না সে চায় তার বোনের থেকে কিছু লুকাতে। তাই ব্যথিত মন নিয়ে নিরাশময় কন্ঠে বলল।”
অরু— জানিনা আমার কি হয়েছে, আমিতো ঠকে গিয়েছি , তাই না, তাহলে এই ঠকা মনে আবারো কেউ জাগা করে কেন নিচ্ছে। সবাই এমন কেন আপু, আমার মনে এক আকাশ পরিমাণ ভালোবাসা তৈরি করে কেন ছেড়ে চলে যায়। আমি তো তাদেরকে জোর করে আনি না, তাহলে কেন তারা আমার মনকে জোর করে ভালোবাসার পরিণত করে।
আনিকা— পাতা তুই কি আমার থেকে কিছু লুকাচ্ছিস। তাহলে সরাসরি আমাকে বল। আমি চাইনা আমার পাতার জীবনে পুনরায় এমন কিছু হোক, যে জিনিসে সে আমার পাতা পুরোপুরি ভেঙে পড়ুক।
অরু— আপাই আমার মনে হয়তো সে জাগা করে নিয়েছে, কিভাবে কেমনে কোন দিন আমি জানিনা, তবে এটুকু বলতে পারি আমি তোর সম্পদে নয় চেহারায় নয়, তার উদ্ভট কথার প্রেমে পড়েছি, তার বলা কথা তার করা যত্নে’র প্রেমে পড়েছি। আপু আমি কি করবো বলো। আমি তো তাকে আমার মনে আনতে চাই না, তাহলে বারবার কেন স্বরণে স্বপনে তার কথাই বারবার মনে হয়।
আনিকা— তুই কার কথা বলছিস??
অরু— আমার ভার্সিটির প্রফেসর,
আনিকা— জানিনা তুই কি বলছিস, তবে এটুকু বলতে পারি তোর মনে যে ভালোবাসা পুনরায় তৈরি হয়েছে। তার মানে এটুকু আমি বলতে পারি আর যাই হোক এ ছেলে সবার থেকে আলাদা।
অরু— মুখে যতই আমি না বলি, কিন্তু আপাই আমি তাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
“সময়টা তখন সন্ধ্যা 7.3 ছাদের এক কোনায় বসে স্মোকিং করছে, রিহান। তার এসব কিছুই ভালো লাগছে না। তার শুধু একটা কথাই কানে বাজছে বারবার, অরুপিতা নামে মেয়েটা তার নয়। এই মেয়েটা তার ভাইয়ের। আর তার ভাইতো যা বলে তার মত তাই করে, কিন্তু রিহান তো মেয়েটাকে ভালোবাসে, রিহান তো একজনকে মন থেকে চেয়েছিলাম, কিন্তু তা তার ভাইয়ের জন্য সম্ভব হবে না, তবে সেই নারী ব্যতীত এই প্রথম দ্বিতীয় বারের মত তার কোন মেয়েকে ভালো লেগেছে তাহলে কেন? তার ভাই তার সাথে এমন করছে।”
~~ হয়তো অরুপিতা নামে মেয়েটি আমার, নয়তো আমি যাকে নিজের জীবনের চেয়েছিলাম আগে, এখন তাকে আমার হতে হবে। আর এটা করতে তে যদি আমার ভাই অস্বীকার করে তো আমি কোন দিক থেকে কম যায় না। সে আমার ভাই হলে আমিও তার ভাই। হয়তো আপসে দেবে নয়তো ছিনিয়ে নেব,